Monday, October 6, 2025







তুমি রবে ২৫

তুমি রবে ২৫ . . আলোআঁধারি সময়টা আশফির খুব পছন্দের। সদ্য সাঁঝনামা আলোতে ম্যাগাজিনের পাতা উল্টাটে উল্টাটে এলোমেলো ভাবনাতে মশগুল সে। অফিসের কাজ শেষ হয়েছে বহুক্ষণ আগেই। কিন্তু কেন যেন তার আজ কোথাও বের হতেও ইচ্ছে করছে না। সিকিউরিটি এসে দেখল রুমের লাইট অফ করে আশফি কাঁচের দেয়ালের বাহিরে তাকিয়ে সন্ধ্যার শহরটা দেখছে। দরজাতে নক হওয়ার আওয়াজ পেয়ে আশফি ফিরে না তাকিয়েই তাকে বলল, – “আমি যাওয়ার আগে তোমাকে ডাকব আনিস।” – “আচ্ছা স্যার। আর কিছু কি প্রয়োজন?” – “না, কিছুই লাগবে না যাও।” মনটা হঠাৎই খারাপ হয়ে গেছে আজ তার। কেন সে কারণও তার অজানা। তবে এমন মুহূর্ত তার জীবনে প্রায়ই আসে। সে সময়গুলোতে সে একাই থাকতে পছন্দ করে। আসলে সত্যি কথা হলো এই, বিশ বছরের পর থেকে এখন অবধি তার জীবনের একাকিত্ব মুহূর্তগুলোতে সেই একাকিত্বের সঙ্গী সে নিজেই ছিল, নিজেই আছে আর হয়তোবা নিজেই থাকবে। কখনো ইচ্ছা হয়নি তার, সময় কাটানোর মতো কোনো বন্ধুকে পাশে রাখতে। কারণ একাকিত্বের পৃথিবীতে নিজেকে একা রেখেই সময়গুলো উপভোগ করতে শিখে গেছে সে। মাঝে মাঝে তার মনে হয় অবশ্য, কোনো ডোনা(প্রেয়সী) টাইপ সঙ্গী থাকলে মন্দ লাগবে না হয়তো। এই সঙ্গী ভরপুর জীবন সে চাইলেই গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু তাদের প্রতি তার অনুভূতি যে বরাবরই শূন্য ছিল। তবে সেই অনুভূতি শূন্য মন যে কোনোদিনও কারো জন্য এত বেশি গাঢ়ো অনুভূতি অনুভব করবে তা কি সে জানতো? আলস্যপূর্ণ সময় কাটিয়ে উঠে স্যুটটা হাতে নিয়ে আশফি বেরিয়ে এলো। অফিসের নিচে আসতেই আনিস ছাতা হাতে নিয়ে ছুটে তার কাছে এসে বলল, – “স্যার কিছুক্ষণ পরেই যেতেন। হঠাৎ করে ঝর উঠে এসেছে।” – “ঝর?” – “ঝরই তো মনে হচ্ছে স্যার।” – “হ্যাঁ, প্রচন্ড এলোমেলো বাতাস বৃষ্টির সাথে।” আকাশের ভাবগতি দেখে আশফি কিছুক্ষণ দাঁড়াল। কিন্তু আজকের ঝর খুব সহজে থামবার নয়। আকাশ দেখেই বোঝাই যাচ্ছে। – “ছাতাটা দাও আনিস। এভাবে বৃষ্টি কমবার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকলে সারারাতই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে বোধহয়।” – “আর একটু সময় অপেক্ষা করলে ভালো হতো স্যার।” – “না থাক।” ছাতাটা মাথায় নিয়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে আশফি গাড়িতে এসে উঠল। বৃষ্টির ছাট লেগে পিঠ অকেকটাই ভিজে গেছে তার। মাথার চুলগুলো ঝেরে নিয়ে গাড়ি স্টার্ট করল। দোকানের ঝাঁপির নিচে শত শত পথচারীর আশ্রয়। ভেজা রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের মৃদু আলোয় ভেজা শহরটা কাঁচের এপাশ থেকে দেখতে আশফির বেশই লাগে। খু্ব ধীরে ধীরে গাড়িটা চালিয়ে তার মূল গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সে। আজ সে নিজের বাইশশো স্কয়ারফিটের ফ্ল্যাটটাতে যাবে। সেখানের খোলা বেলকনিতে বসে আজ একাকি সে রাতের ভেজা শহরটা দেখবে। একটু দূরেই একটা কফিশপের দিকে সুক্ষ্ম নজর গেল তার। কফিশপের সামনে খুব চেনা একজন দাঁড়িয়ে। আর সেই চেনা একজন হলো আজ সকালের হলুদ শাড়িতে সেই অঙ্গনাটি। মন ভারের মাঝেও সেই অঙ্গনাটিকে হঠাৎ দেখতে পেয়ে তার ভাবান্তর বেশ উৎফুল্লপূর্ণ হয়ে উঠল। কফিশপের নিচে কয়েকজন পথচারী দাঁড়িয়ে। এই সময়ে এই পথচারীর মাঝে মাহিকেও সে দেখতে পাবে হঠাৎ ব্যাপারটা খুবই অভাবনীয়। গাড়ি কিছুটা দূরেই সে দাঁড় করালো। উবারের জন্যই সে ওয়েট করছে তা সে বুঝতে পারছে। তাও যতসময় সে দাঁড়িয়ে থাকে ততসময় তো তাকে দেখতে পাওয়া যাবে। এক কাপ কফিতে কিছু মুহূর্ত অন্তর অন্তর চুমুক দিচ্ছে আর তার ফাঁকে ফাঁকে আকাশটা দেখছে মাহি। গাড়ির সিটে হেলান দিয়ে স্টিয়ারিংয়ে হাতটা রেখে খুব গাঢ় চাউনিতে তাকিয়ে আছে আশফি। মেয়েটি তাকে এখন চোখেরবালিই ভাবে হয়তো। কিন্তু মেয়েটি তার সামনে একটাবার এলে সে যে এক বিস্মৃত মানুষে পরিণত হয়ে যায়। বাহিরটা একবার দেখে আশফি গাড়ি থেকে নেমে এলো। হেঁটে গিয়ে কফিশপ থেকে এক কাপ কফি নিয়ে পথচারীর ভীড়ে এসে নিজেকে গুঁজল। কাপে একবার চুমুক দিয়ে অপ্রত্যক্ষ সুরে মাহিকেই বলল, – “কী বলা চলে? বৃষ্টিসিক্ত সাঁঝ না কি বৃষ্টিস্নাত রাত?” মাহি খানিকটা চমকেই তাকাল পাশে। আশফিকে দেখাটা আশাতীত হলেও মুহূর্তেই তার চমকিত চেহারার অস্তিত্ব আড়ালে নিয়ে একটু বাঁকা হেসে উত্তর দিলো, – “বৃষ্টিমুখর সাঁঝরাত।” আশফির ভাবনা ছিল ওইদিনের ঘটনার পর মাহি তার স্বভাবসুলভ আচরণের প্রকাশ ঘটাবে। অর্থ্যাৎ মুখটা অন্ধকার করে থাকবে, চোখ ফিরিয়ে তাকাবেও না আর একদমই এড়িয়ে যাবে। ভাবনাটা ভুল হওয়াতে ভালোই লাগল আশফির। কফিতে আর একবার চুমুক দিয়ে দৃষ্টি উদ্দেশ্যহীনভাবে কোথাও রেখে প্রশ্ন করল, – “সেটা কেমন?” – “সময়টা না পুরোপুরি সাঁঝ না পুরোপুরি রাত। তাই আমার ভাষায় বৃষ্টিমুখর সাঁঝরাত।” আশফি একটাবার আড়চোখে মাহির দিকে তাকিয়ে বলল, – “দারুণ।” মাহি ফিরে চাইতেই আশফি দৃষ্টি ফেরাল। মাহি প্রশ্ন করল, – “কী?” – “চমৎকার রাত। স্যরি সাঁঝরাত।” মাহি হাসলো একটু। – “উবারের সময়-জ্ঞান খুব খারাপ নয়তো?” – “না, তবে বৃষ্টির সময় তো একটু বুক থাকে।” – “আসবে বলেছে?” – “বলল তো।” হাতঘড়িটার দিকে তাকিয়ে সময়টা একবার দেখে নিলো আশফি। আর মাহি আকাশটা দেখল। পাশে ফিরে তাকাতেই দেখল আশফি নেই। তার হঠাৎ এসে আবার হঠাৎ চলেও যাওয়াতে একটু অবাকই হলো মাহি। মাহি ফোনটা বের করে উবার কল করতে গেলে তখন হর্ণ বাজার আওয়াজ পেয়ে সামনে তাকাল। – “শুভাকাঙ্ক্ষী নই জানি। বিপদজনকও নই। আমার গাড়ি আপনাকে লিফ্ট দিতে চায়।” – “আপনার অউডি আরএইট আমায় লিফ্ট দিতে চাইছে?” আশফি উত্তরে মাথা নাড়াল শুধু। মাহি এক মিনিটের মতো কী যেন ভেবে আঁচলে মাথা ঢেকে চলে এলো আশফির গাড়ির কাছে। দরজাটা সঙ্গে সঙ্গে খুলে দিলো সে। আশফির অবাক হওয়ার মাত্রাটা আরও বেশি বৃদ্ধি পেল মাহির নতুন আচরণে। তবে খুব ভালোই লাগছে তার মাহির স্বভাবের এই পরিবর্তনের জন্য। ওই রাতে মাহিকে নতুনভাবে দেখে অনেক ভুল কিছুই ভেবেছিল সে ওকে নিয়ে। দিশানের কথায় ঠিক, মাহি একদমই হামবড়া টাইপ মেয়ে নয়। মাহি বলল, – “আমাকে সামনে নামিয়ে দিলেই হবে। ওখান থেকে সিএনজি পেয়ে যাব।” – “কেন? পুরো পথটা কি আমার গাড়িটা চিনবে না? না কি গাড়ির মালিক চিনবে না?” মাহি হালকা হেসে বলল, – “গাড়িটা চিনবে না তা নিশ্চিত। কিন্তু গাড়ির মালিকের আদৌ মনে আছে কি না আমার বাড়ির গলির মোড় তা নিয়ে নিশ্চিত নই।” – “মালিককে আস্থাশীল বা ভরসাপূর্ণ না লাগলেও অবিশ্বাসপূর্ণও নয় সে।” মাহির স্মিত হাসির দিকে তাকিয়ে চুপ থাকল কিছুক্ষণ আশফি। আর মাহিও নিশ্চুপ। কয়েক মুহূর্ত নীরবে কাটার পর আশফি খুব জড়তা-সংকোচভরা কণ্ঠে বলল, – “সেই রাতের জন্য হয়তো স্যরিটাও বেমানান। তবুও ক্ষমাপ্রার্থী আমার অসংযত আচরণের জন্য।” মাহি বুঝতে পারল আশফি খুবই অনুতাপ করছে সেদিনের জন্য। আশফির কথায় মাহি মৃদু হেসে চোখের ইশারায় জানাল ‘ঠিক আছে’। এত সহজে মাহি তাকে ক্ষমা করবে এটা ভাবতেও আশফি আর এক দফা অবাক হলো। বাড়ি থেকে বেশ কিছু দুরত্বে এসে মাহি বলল, – “ব্যাস ব্যাস এখানেই নামিয়ে দিন। আমার সামনের দোকান থেকে কিছু নেওয়ার আছে।” – “সমস্যা নেই। আপনি যান আমি দাঁড়িয়ে আছি।” – “আমি চলে যেতে পারব। আপনাকে ধন্যবাদ খুব।” – “আচ্ছা ধন্যবাদ পরে আসুক। আগে আপনি কাজ সেড়ে আসুন। আপনার বাসা তো আরও কিছুটা দূরে।” – “আমি হেঁটেই যাব। কোনো সমস্যা হবে না।” খুব মিষ্টি করে হেসে বলল মাহি। এরপর গাড়ি থেকে নেমে আশফির পাশের জানালার কাছে এসে তার জানালার কাচে নক করল। কাচটা নামাতেই মাহি তিনশো বিশ টাকা আশফির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, – “একটু ধরুন প্লিজ।” বেশ বিস্ময়ের সঙ্গে তাকাল আশফি টাকাগুলোর দিকে। – “মানে?” – “আগে ধরুন। তারপর তো বলব।” বিস্ময়ের ঘোর নিয়েই সে মাহির দিকে চেয়ে টাকাগুলো হাতে নিলো। এরপর মাহি বলল,
– “উবারের সার্ভিসটা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আশফি মাহবুব।” চোখে মুখে উচ্ছল হাসি মাহির। আশফির কিছু বলা বা শোনার আগেই মাহি হেঁটে চলে গেল সামনের দোকানটাতে। আশফির মাথা ঝিম ধরে গেছে মুহূর্তেই। মাহির যাওয়ার পথে চেয়ে আছে সে। সামনের দোকান থেকে এক বোতল কোক কিনে ফোনের আলো জ্বেলে অন্ধকার গলির মধ্যে ঢুকে গেল সে। এদিকে অনেকক্ষণ যাবৎ এক বৃদ্ধা ভিক্ষুক আশফির দিকে হাত বাড়িয়ে কিছু সাহায্য চাইছে। সেদিকে আশফির হুঁশ নেই যেন। বিস্ময়ের ঘোর যেন তখনো কাটেনি তার। বৃদ্ধা যখন গাড়ির কাচটাতে টোকা দিলো তখন আশফি তার দিকে তাকাল। – “সার কিছু দেবেন?” টাকাগুলো হাতের মধ্যে নিয়ে মুড়াতে মুড়াতে আশফি কিছু সময় পর হেসে উঠল। মোড়ানো টাকাগুলো সোজা করে বৃদ্ধাকে বলল, – “নামাজ আদায় করেন?” – “জে সার। নামাজ কাযা দেই না।” – “নামাজ নিয়ে মিথ্যা বলবেন না কখনো ঠিক আছে? না পড়লেও আজ থেকে পড়বেন।” ওয়ালেট থেকে দুইশো টাকা বের করে মাহির তিনশো বিশ টাকার সঙ্গে মোট পাঁচশো বিশ টাকা বৃদ্ধাকে দিয়ে বলল, – “আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবেন। বলবেন আমার মনের বাসনা যেন খুব শীঘ্রই পূর্ণ হয়।” বৃদ্ধা হেসে বলল, – “যত্দিন বাঁইচা থায়ুম তত্দিন দুয়া কইরা যামু সার।” আশফি হাসিটা ঠোঁটে ধরে রেখেই গাড়ি ব্যাক করে চলে এলো। বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে খুব দারুণ করে ভুনাখিচুড়ি রান্না করল। ফোন করে দিশানকে চলে আসতে বলল বাসায়। . . – “দারুণ হয়েছে ভাই। তোমার এই রেসিপিটা বরাবরই দুর্দান্ত হয়।” আশফি খেতে খেতে বলল, – “শেষবারের মতো খাচ্ছো কিন্তু।” – “মানে?” আশফি নীরবে খেতে থাকল শুধু। খাওয়া শেষে দুই ভাই বেলকনিতে এসে বসল। গল্পের যেন শেষ নেই আজ দুজনের। কোনদিন থেকে সময় পার হচ্ছে তার খেয়াল কারোরই নেই। রাত বাজতে চলল সাড়ে এগারোটা। দিশান হো হো করে হেসে উঠে বলল, – “তো এজন্যই এত খুশি আমার ভাই?” আশফি কিছু না বলে ঈষৎ হাসলো। – “খারাপ কিছু ভাবছি কি?” – “একদমই নয়। মনের ওপর কার হাত বলো তো? তুমি নিজেই কি জানতে কোনোদিন এমন দিন তোমায়ও ফেস করতে হবে?” – “হ্যাঁ তবে আমি ফেস করতে চাই। খুব আকুলভাবেই।” – “একতরফা হয়ে যাবে না ভাইয়া?” – “দুতরফা করব বলেই তো এতকিছু পরিকল্পনা।” – “সবসময় পাশে আছি ভাই।” – “ধন্যবাদ।” – “হঠাৎ বৃষ্টিটা দারুণ কিন্তু।” – “সে তো অবশ্যই। এখন বলো তোমার ব্যাপারটা কী হচ্ছে মূলত?” – “কোন ব্যাপারটা?” আশফি বাঁকাচোখে তাকাতেই দিশান বলে উঠল, – “ও ওই ব্যাপার! তেমন কিছু না ভাইয়া। মেয়েটা একটু ক্ষেপাটে।” – “কার বন্ধু তা তো দেখতে হবে।” – “ঠিকই বলেছো।” – “তবে দিয়া কিন্তু মাহির পুরোটাই উল্টো।” – “রাগটা দেখাতে চেষ্টা করে খুব। কিন্তু সে মোটেও অতটা রাগী নয়। পথ আগলে ধরার ভান করেছিলাম শুধু রাগানোর জন্যই। কিন্তু কেন যেন সে হঠাৎ রাগল না। আমি খুব হতাশ হয়ে ফিরে এসেছি।” একটু মন খারাপের সুরেই বলল দিশান।” – “রাগলে দারুণ লাগে তাই না?” খুব ভাবনাপূর্ণ চেহারাতে বলল আশফি। দিশান ফোনটার দিকে চেয়ে মৃদু হাসতে হাসতে বলল, – “ভালোই তো লাগে।” . . পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে জিএম হাফিজ কামাল, ম্যানেজার খন্দকার মোশতাক, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সৈকত রহমান আর মাহি এলো কনফারেন্স হলে। নিজেদের মাঝে আলোচনায় ব্যস্ত তারা। কিছু সময়ের মাঝেই চলে এলো প্যারোটের চেয়ারম্যান আশফি মাহবুব। সঙ্গে তার অ্যাসিসটেন্ট আনোয়ার। আশফিকে দেখামাত্রই মাহি দৃষ্টি ঝুঁকাল। আজ সে পুরোপুরি ফরমাল বেশে। মিটিংয়ের সময় হওয়ার পূর্বেই আশফি অনুরোধ করল আলোচনাসভা শুরু করতে। এ কোম্পানির এমডি বাহিরের দেশের নিবাসী হওয়াই তার সঙ্গে স্কাইপেই কথা সাড়ল আশফি। মিটিংয়ের সময় শেষে আশফি হাসি মুখ করে হাফিজ কামালকে বলল, – “তাহলে আমার ফ্যাক্টরিতে যাচ্ছেন কে আমাকে তা পরবর্তীতে জানিয়ে দেবেন নিশ্চয়।” – “জি অবশ্যই।” আশফি মিটিং শেষে চলে এলো তার অফিসে। আজকের মধ্যেই যে মাহির সঙ্গে তার আবার দেখা হবে সেটা ভাবতেই খুব আনন্দ লাগছে তার। এ ব্যাপারে মাহি নিজেও অবগত নয়। তবে আশফির এই নতুন ডিলের জন্য একটু হলেও মাহি নিশ্চয় অবাক হয়েছে। দুপুর সাড়ে বারোটার সময় ইন্টারকম থেকে কল এলো আশফির কাছে। আশফি বলল, – “আনোয়ারকে যেতে হবে না। আমি নিজেই যাব। অপেক্ষা করতে বলুন ওনাকে।” আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শার্টের উপরের দুটো বোতাম খুলে দিলো আশফি। এরপর স্যুটটা গায়ে ঢুকিয়ে ওয়েটিং রুমে গিয়ে তাকে বলল, – “চলুন তাহলে।” মাহি রীতিমতো মুখে বিরক্ত নিয়ে উঠে দাঁড়াল। গাড়িতে উঠে বসতেই আশফির চাপা হাসি প্রকাশিত হলো। সে বারবার আশফির হাসিটার তাকিয়ে প্রচন্ড অস্বস্তি হতে থাকল তার। এক পর্যায়ে সে জিজ্ঞেস করে বসলো, – “হাসছেন কেন এত?” – “খুব ভালো লাগছে।” – “কী?” – “শাড়িতে।” ফ্যাক্টির সামনে আসতেই মাহি নামতে গেলে আশফি বলল, – “কিছু ভুলে গেছেন আপনি।” মাহি ভ্রু উঁচিয়ে তাকালে আশফি বলল, – “আমার সার্ভিসিং চার্জ।” বলার মতো কিছু খুঁজে পেল না মাহি। অত্যন্ত অসহ্যবোধ করে হাত কচলাতে কচলাতে মাহি ব্যাগ থেকে টাকা বের করতে গিয়েও করল না। বলল, – “ভাংতি নেই। আপনার কাছে ভাংতি হবে?” – “আমার কাছে ভাংতি?” – “ও স্যরি ভুলে গিয়েছিলাম। ব্যাপারটা অস্বাভাবিক। আপনি বসুন, আমি দোকান থেকে ভাংতি করে আনছি।” মাহি উঠতে গিয়েও উঠতে পারল না। কারণ আশফির হাতটা মাহির শাড়ির আঁচলের ওপর। খুব নম্র সুরেই মাহি বলল, – “হাতটা ওঠান।” আশফি হাতটা উঠিয়ে নিলো ঠিকই কিন্তু খুব সাংঘাতিক কিছু ঘটানোর প্রস্তুতি নিলো সে। ব্যাপারটা বুঝতেই মাহি….. ……………………………. (চলবে) – Israt Jahan Sobrin
পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ