ডিটেকটিভ রনি পর্বঃ০৩(শেষ পর্ব)
#রহস্য_উদঘাটন
– আবির খান
রাত ১০টা…
রনি আস্তে করে ফ্ল্যাটটার ভিতরে ঢুকলো…হঠাৎই পিছন থেকে হোটেল বয় রনিকে ডাক দেয়…
হোটেল বয়ঃ স্যার এতো রাতে আপনি এখানে??
ডে.রনিঃ আজ আমি এখানে থাকব…
হোটেল বয়ঃ ওকে স্যার…আপনার খাবার পাঠিয়ে দিবো??
ডে.রনিঃ হুম দেও…
হোটেল বয় খাবার দিয়ে চলে গেলো… রনি খাবার খেয়ে চুপচাপ শুয়ে পরলো ১১.৩০ এর মধ্যে…রনির কেন যেন কোন ভাবেই ঘুম আসছে না..
১২.০২ মিনিট… হঠাৎ রুমটা অস্বাভাবিক ভাবে ঠান্ডা হয়ে গেলো এতোই ঠান্ডা যে রনির হাতপা রীতিমত কাপছে…রনি ব্যপারটা বুঝার চেষ্টা করছে..একটু পরেই আবার ঠান্ডা থেকে প্রচন্ড গরম লাগছে রনির…গরমে ঘেমে একাকার হয়ে যাচ্ছে…আবার একটু পরই সব নরমাল হয়ে গেলো… এভাবে প্রায় টানা ১ ঘন্টা চলল…কিন্তু রনি চুপচাপ বসে সব সহ্য করছে…
রাত ১ টা…হঠাৎই বাথরুমে পানি পরার শব্দ পাচ্ছে রনি..রনি খুব ভালো ভাবেই জানে সে বাথরুমের কোন কলই ছেড়ে আসেনি…রনির আর বুঝতে বাকি রইল না যে কি হচ্ছে বা কে করছে তার সাথে এসব..রনি ঠাস করেই উঠে বসে পরলো..তার চোখটা বন্ধ করে বসে আছে..আর মুখ দিয়ে কি যেন বিড়বিড় করে বলছে…
হঠাৎই বিকট এক আওয়াজ হলো… রনি চোখ খুলে তাকালো…কিন্তু কেউই নেই..পরিবেশটা কেমন নিস্তব্ধ হয়ে গেলো… রনি বলতে লাগলো..
রনিঃ আপনি যেই হোন আমার সামনে আসুন…আমি আপনার সাহায্য করবো…
হঠাৎ কে যেন মেয়ালি কণ্ঠে করা ভাবে বল উঠলো…
প্রেতঃ তুই এখান থেকে চলে যা না হলে তোকে আজ শেষ করে ফেলবো…
রনিঃ দেখুন আমি জানি…আপনি আমার কিছুই করতে পারবেন না…যদি পারতেন তাহলে এতক্ষণেই করতেন..
প্রেতঃ হ্যা এই প্রথম আমি কোন মানুষের ক্ষতি করতে পারছিনা…তোকে মারতে পারছিনা…কে তুই??
রনিঃ আমি যেই হই তা আপনার জানতে হবেনা…কিন্তু আপনি এভাবে নিরীহ মানুষদের মারছেন কেন??
প্রেতঃ আমার কাছে এখন আর কোন মানুষই নিরীহ না…তারা পশু…
রনিঃ আচ্ছা আপনি আমাকে ওই পাশের পুকুর থেকে ডাকছিলেন কেন???
প্রেতঃ তুই আমার ডাক শুনেছিলি??
রনিঃ হ্যা…
প্রেতঃ তাহলে আজ তোকে সব বলব…কারন একমাত্র তুই আমাকে বুঝতে পারবি…
রনিঃ আমাকে সব খুলে বলুন…কেন অাপনার কাছে মানুষরা অার নিরীহ না..বলুন…
এরপর প্রেতটা তার সাথে ঘটে যাওয়া সব আস্তে আস্তে বলতে বলতে শুরু করল…
“আমি মরিয়ম…গত ৫/৫/২০১৮ তারিখে ভারসিটি থেকে বাসায় যাচ্ছিলাম বাসে করে…তখন প্রায় সন্ধ্যা…. হঠাৎ ১ টা ছেলে আমার পাশে এসে বসে…ও আমার মুখের সামনে কি যেন মারলো..সাথে সাথে আমি জ্ঞান হারাই..এরপর যখন আমার জ্ঞান আসে আমি এই হোটেলেই এই রুমটায় নিজেকে পাই…এরপর তারা তিনজন পুরো রাত মিলে আমাকে হিংস্র পশুর মতো চিরে খায়…এতেও তাদের মন ভরে নি..আমার সব কেরে নিয়ে আমাকে গলা টিপে হত্যা করে এই বিছানার চাদরে পেচিয়ে পিছনের ওই পুকুরে ফেলে দেয়..আমি ওই শরীরের জ্বিন… তার এই করুন মৃত্যুর বদলা আমি নিবোই…এখানে যে আসবে তাকেই মেরে ফেলবো…আজ তোকেও মারতাম..কিন্তু কোন এক অজানা শক্তি তোকে বাচিয়ে রাখছে…তোর ক্ষতি করতে পারছি না..
রনিঃ আচ্ছা এই নিরীহ মানুষদের মারা কি ঠিক বলুন?? তার চেয়ে আপনাকে মুক্ত করে দেই??
প্রেতঃ নাহহহ…আমার মুক্তি তখনই হবে যখন ওই জানোয়ার গুলো কে শাস্তি দিতে পারবো..
রনিঃ ওদের শাস্তি আমি দিবো..আপনি শুধু ওদের পরিচয় টা বলুন..
এরপর প্রেতটা তার শক্তিদিয়ে ওদের সব তথ্য রনিকে বলে দেয়…রনি প্রেতাত্মার কাছে মাফ চায়..এবং বলে তাকে চলে যেতে.
প্রেতঃ ওই পুকুরে আমি যে শরীরে থাকতাম তা এখনো পরে আছে…তুই যদি আমার ওই শরীরটা কবর দিতে পারিস আমার বাবামায়ের কাছে আর ওদের শাস্তি দিতে পারলেই আমি চলে যাবো…
রনি প্রেতের সব কথা মেনে নেয়…
পরদিন সকালে…
রনি পুলিশদের নিয়ে সেই চাদরে মরানো লাশ পানি থেকে তুলে…জাহিদ সাহেব এতোটাই অবাক হয়ে যান যে কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন..এরপর এই লাশের হত্যাকারীদের খুজে রনি উপযুক্ত শাস্তি দেয়…এবং লাশ টাকে প্রেতের কথা মতো তার বাবামার কাছে তুলে দিয়ে কবর দেওয়া হয়…এরপর প্রেতটা চলে যায়…
>>>>>সমাপ্ত<<<<<