টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব_৭
Written by Avantika Anh
.
বাসায়…….
আরোহি : ভাবি কি কি শপিং করলা ?
আমি : অনেক কিছু এখানে আছে ।
আরোহি : ওয়াও
আমি : হুম আমি ফ্রেশ হবো আচ্ছা
আরোহি : ভাবি
আমি : হুম বলো
আরোহি : কিছু হয়েছে নাকি ?
আমি : আরে না কিছু না ।
.
.
বলে চলে আসলাম……
.
আবির : আনহা
আমি : হুম
আবির : নিহা কে কি সবাই মানবে ?
আমি : আমি আছি এতো চিন্তা কই ?
আবির : থেংকু
আমি : জ্বী
.
ওইদিনের পর থেকে আমি মি. আবিরের সাথে যথেষ্ঠ দূরত্ব রাখা শুরু করি ।
.
.
১ মাস পর…
আবির : আনহা
আমি : জ্বী
আবির : তুমি কি হাসপাতাল গেছিলা ?
আমি : না তো ( কিছু টা ভয়ে )
আবির : ওহ
আমি : হুম
আবির : মনে হলো তোমাকে দেখেছিলাম ।
আমি : হাহা আজ কি সূর্য পশ্চিমে উঠছে নাকি ?
আবির : কেনো?
আমি : আমনাে দেখেন যে
আবির : আবার মজা
আমি : হেহে কই মজা ?
আবির : তুমি ভালো হবা না
আমি : খারাপ ছিলাম কবে ?
.
মি. আবির টিকটিকি
আবির : কি কই ?
.
(ঘুরে দেখে সত্যি । আমাকে জড়িয়ে ধরে ফেলে )
আমি : চলে গেছে
আবির ছেড়ে দিলো । সরি
আমি : হুম
.
আজকাল চুপচাপ ই থাকি ।
.
ছাদে বসে ছিলাম ।
.
আরোহি আসলো ছাদে….
আরোহি : ভাবি
আমি : হুম
আরোহি : তুমি প্রেগনেন্ট তাই না ।
আমি : ম.. মানে কি বলো এসব ।
আরোহি : মিথ্যে বলে লাভ নাই । তুমি যার কাছে চেক আপ করো । সে আমার বিএফ
আমি : হুম
আরোহি : এতো বড় গুড নিউজ লুকাচ্ছো কেনো ?
আমি : কিছু জিনিস না জানাই ভালো ।
আরোহি : অনেকদিন ধরে দেখছি বলো কি হয়েছে ?
আমি : কিছু না
আরোহি : এটাও মিথ্যা
আমি : কই কিছু হলো ?
আরোহি : ভাইয়া কে কিছুদিন আগে নিহার সাথে দেখলাম ।
আমি : কোন নিহা?
আরোহি : জেনেও না জানার ভান করছো ।
আমি : না তো
আরোহি : নিহা কি ভাইয়ার লাইফে ফিরে আসতেছে ?
আমি : আমি পরে কথা বলছি
আরোহি : ভাবি তোমাকে আমার কসম বলতেই হবে আজ তোমাকে
আমি : এটা কি করলা ?
আরোহি : কসম দিলাম ।
আমি : নিহা আর আবির একে অপরকে ভালোবাসে । এটা টেম্পরারি বিয়ে……..
.
(সব বললাম)
আরোহি : না এটা আর মানা যাবে না । ভাইয়া এটা করতে পারে না ।
আমি : আরোহি তোমাকেও আমার কসম কাউকে বলবা না
আরোহি : কিন্তু
আমি : আমি আর ১ মাস পর চলে যাবো ।
আরোহি : কিন্তু কোথায় ?
আমি : সেটা জেনে কি করবে ?
আরোহি : প্লিজ আমাকে তো কসম দিয়েছো । এতোটুকু জানাও খালি ।
আমি : সিলেট ।
আরোহি : কেনো ?
আমি : আমার পার্ট টাইম জব হয়েছে । কোনো মতে চলে যাবে । আমি আমার স্টাডি কমপ্লিট করবো পাশাপাশি আমার এক বন্ধু হেল্প করছে ।
আরোহি : ভাবি যেও না প্লিজ
আমি : আমাকে যে যেতেই হবে ।
.
কিছু বললাম না আর ।
.
ওইদিনের পর থেকে আরোহি নিজেও আবিরের সাথে খুব একটা কথা বলতো না ।
.
আবির একদিন আরোহিকে জিজ্ঞেস করলো ।
আবির : কি রে তোর কি হইছে ?
আরোহি : তোর জেনে কি ?
আবির : সত্যি বল কি হইছে ?
আরোহি : না কিছু না
আবির : আচ্ছা
.
.
আমার যাওয়ার দিন চলে এলো ।
সেদিন সকালে…..
আবির : আনহা কই ?
.
আনহা…..
.
পাশে একটা চিঠি পেলো ।
.
“মি. আবির কেমন আছেন মি. রাক্ষস ?
হাহা । আমি চলে যাচ্ছি আজ নিশ্চয়ই হ্যাপি আপনি । আপদ বিদায় হলো । খোঁজ পাবেন না । নিহা কে নিয়ে খুশি হইয়েন । আপনার কাছ থেকে একটা জিনিস লুকালাম । কিন্তু কি তা কখনো জানাবো না । ওটা আপনার স্মৃতি । আপনার কাছে কিছু চাওয়া নেই আমার পরিবারের খেয়াল রাখিয়েন । ডিভর্স পেপারে সাইন করা আছে । আরও কোনো ফর্মালিটি থাকলে আরোহি কে বলিয়েন। আমি পূরণ করে দিবো
.
ইতি
কেউ না”
.
আবির এর চোখ দিয়ে কেনো জানি পানি বইতে লাগলো ।
.
আবির নিহা কে ফোন করে সব জানালো ।
নিহা : ভালোই হইছে এখন জ্বলদি আমাদের বিয়ে হবে ।
আবির : ও একা নিহা বুঝার চেষ্টা করো । ওর কেউ নাই ।
নিহা : তোমার জেনে কি হবে ?
বাবু আমরা আমাদের উপর এখন গুরুত্ব দেই প্লিজ ।
.
আবির : পরে কথা বলছি ।
নিহা : কিন্তু
.
আবির ফোনটা কেটে দিলো ।
.
আবির : আরোহি
আরোহি : কি হইছে টা কি ?
আবির : আনহা কই গেছে ?
আরোহি : জানি না
আবির : বল প্লিজ
আরোহি : তোর মতো পাষাণ কে কোনোদিন খোঁজ দিবো না আমি ।
আবির : আরোহি ( থাপ্পর দিলাম আরোহি কে )
আরোহি : মেরে লাভ নাই । তুই তো জানিস ই না তুই দুইজন কে হারালি ।
আবির : মানে ?
আরোহি : কিছু না ।
.
তারও ২ মাস পরে….
আবির আজকাল আনহা কে খুব মিস করে ।
.
নিজেই ওই ঘড়ি টা বাজায় । আর আনহার জন্য চকলেট কিনে রেখে দেয় ।
.
কোনো এক কাজে আবির কে সিলেট যেতে হয় । কিন্তু রোডে এক ব্যাক্তি এক্সিডেন্ট করে । তাকে আবির সাহায্য করতে হসপিতালে নিয়ে যায় । সেখানে আবির আনহার দেখা পায় । কিন্তু আবির আনহা কে একটা ছেলের সাথে দেখে যে আনহার হাত ধরে ছিলো আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার ছিলো আনহা প্রেগনেন্ট । আবিরের সাথে নিহা ছিলো ।
.
নিহা : দেখছো ও বিয়েও করে ফেলছে । তাও আবার বাচ্চাও আছে । হাহা তুমি এই চরিত্রহীনা কে ভালো বলতা ।
আবির রেগে যায়….
আবির : ছি ছি ছি পরপুরুষের সাথে এতো কিছু
আমি : (কিছু বললাম না)
ছেলেটি : কি বলছেন এসব ?
আবির : গায়ে লাগে ?
হাহা শালি কতো বড় নির্লজ্জ । ডিভর্সের আগেই এতো কিছু কতোগুলো ছেলের সাথে শুঁয়েছিস ।
আমি : ( কিছু না বলে চলে আসলাম )
.
.
সেদিনের পর আমি বেশি বাইরে যেতাম না বেশি ।
.
আবির বাড়ি ফিরে….
আবির : আরোহি
আরোহি : কি
আবির : তোর ভাবি তো বাজে মেয়ে
আরোহি : কি বলতেছিস এসব ?
আবির : আজ সিলেটে দেখলাম । প্রেগনেন্ট তাও আবার একটা ছেলের সাথে ছি । কথা শুনায় দিছি । নির্লজ্জ টাকে ।
আরোহি : অফ ইট ভাইয়া । তুই কি করলি এটা ।
ভাবি একটুও বাজে না ।
আবির : এ্যা বললেই হলো ।
আরোহি : ভাবির পেটে তোর সন্তান ।
আবির : মানে
আরোহি : মানে ভাবি প্রেগনেন্ট ছিলো যাওয়ার আগেই ।
আবির : কিন্তু কীভাবে ? ( আবিরের মনে পড়লো সেদিনের ঘটনা )
আমি কি করে ফেললাম ?
আরোহি : ছি ভাইয়া ছি । মেয়েটা শুধু ওই বাচ্চা টার জন্য বেঁচে ছিলো । তুই এসব করে বাঁচার ইচ্ছাও মেরে ফেলছিস ।
আবির : (কিছু না বলে রুমে চলে গেলো)
.
আবির নিজেও আনহা কে ভালোবেসে ফেলছে । সে নিজেও বুঝছে । নিহার কথায় তার রাগ উঠে যায় আর সে কন্ট্রোল করতে না পেরে এতো কিছু বলে ফেলে ।
.
.
আবির কিছু সময় পর আবার আরোহির কাছে যায়….
.
.
আবির : আরোহি আমাকে ক্ষমা কর বোন । আমিও আনহা কে ভালোবেসে ফেলছি তাই এতোসব । আমার সন্তান আর আমার স্ত্রী কে আমি ফেরত চাই ।
আরোহি : হাহা কোনোদিন ফিরবে না ভাবি ।
আবির : মানে
আরোহি : জানি না ভাবি সিলেট ছেড়ে দিছে ফোনও লাগছে না । কই গেছে জানি না । তুই বেশি দেরি করে ফেললি ।
কাজ
আবির তবুও খুঁজতে গেলো সিলেট কিন্তু পেলো না ।
.
নিহা অনেকবার আবির কে ফোন করে কিন্তু আবির নিহার সাথেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ।
.
১বছর পর…..
এই এক বছরে আবির নিজেকে অনেক ব্যস্ত করে ফেলেছে । কাজ , কাজ আর কাজ ।
.
এখনও খুঁজে যাচ্ছে সে আনহা কে । তার মনে হয় সে একদিন না একদিন তাকে পাবেই । সাথে তার সন্তান কেও ।
.
সে আনহার দেওয়া ঘড়ি টা এখনো যত্নে রেখে দিয়েছে ।
.
কাজের জন্য একটা কম্পানির সাথে ডিল ফাইনাল করতে আবির থাইল্যান্ড যায়।
.
.
একটা বেবি কে দেখে আবিরের কেনো জানি কোলে নিতে ইচ্ছে করে । বাচ্চাটার বয়স সম্ভবত ৭ মাস ।
.
কোলে নিয়ে তার মনে হয় তার বেবিটাও হয়তো এরকমই হবে ।
.
মেয়েটাকে বলে
Abir : Your baby is so cute .
Unknown girl : No it’s not my baby . it’s my friend’s baby .
Abir : no worry . Is this a boy ?
Unknown girl : Yahh
Abir : Really a cute one .
Unknown girl : Thank’s
.
আবির চলে আসলো ।
.
মিটিং এ…..
.
.
Anha : Hello gentlemen and ladies . I am from CWO company . Nice to meet you all.
আবির থ হয়ে যায় কারণ এ আর কেউ না আনহা । এদিকে আমিও একটু হকচকিয়ে যাই ।
.
চলবে…..
.
( আর একটুই বাকী গল্পের । এর পরের পার্টগুলোয় জানবেন আবির কীভাবে আনহার রাগ ভাঙ্গায় । সাথেই থাকুন )