টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব_৫

0
3758

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব_৫
Written by Avantika Anha
আমি রুমে গেলাম ।
.
আইস্ক্রিম খাওয়ার কুফলও আছে কিছু । জ্বর চলে আসলো পরেরদিন ।
সকালে……
আবির উঠে ফ্রেশ হলো । দেখলো আমি এখনো ঘুমাচ্ছি এটা দেখে আবিরের মনে প্রশ্ন জাগলো ও এখনো ঘুমায় কেনো ?
.
আবির এসে আমাকে ডাকলো : মিস আনহা উঠেন নি যে আজ ।
আমি : উহ
আবির : কি ?
আমি : উঠতেছি । কয়টা বাজে আল্লাহ এতো লেট । আমি তো নামায ও পড়ি নি ।
.
আমি উঠে যাচ্ছিলাম বাথরুমের ওদিক । কিন্তু পড়ে যেতে ধরলাম । আবির ধরলো ।
আবির : এই আপনার তো জ্বর এসেছে ।
আমি : হুম একটু মনে হয় ।
আবির : একটু জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে
আমি : মিথ্যুক গা পুড়লে তো আগুন লাগতো এখানে আগুন কই ?
আবির : এখনো আপনার মজা মনে হচ্ছে জ্বরকে
আমি : হিহি না তো
আবির : তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হন । আমি ঔষধ নিয়ে আসতেছি আপনার আম্মুর কাছ থেকে ।
আমি : হুম
.
আবির ঔষুধ নিয়ে আসলো….
আমাকে দিতে ধরলো..

আমি : ইইইই ছি আমি খাবো না এটা ।
আবির : খেতে হবে জ্বর এসেছে ।
আমি : না না না খাবো না
আবির : খেতেই হবে
আমি : ইইই আপনি খান আমি তো ভাগলাম ।
.
পালাতে গেলাম কিন্তু শক্তি কম হওয়ায় আবার মাথা ঘুরে গেলো ।
আবির এবার জোড় করে খাওয়ায় দিলো ।
আমি : সুস্থ হই খালি আপনার উপর শোধ তুলবোই ।
.
পরেরদিন সুস্থ হয়ে গেলাম ।
.
রাতে আবির ঘরে এলো । আমার দিকে তাকিয়ে দেখলো আমি ঘুমানোর ভান করে শুয়ে ছিলাম ।
আবির কিছু না বলে টেবিলের উপর থেকে পানি নিয়ে যেই মুখে দিলো ।
আবির : এটা কেমন পানি এতো লবণ কেনো ?
আমি : ( হেসে ফেললাম )
আমার হাসি দেখে আবির বুঝে গেলো এই কাজ ওয়ান এন অনলি আমার ।
আবির : এটা কি করছেন ?
আমি : কাল আমাকে ওই তিতা ওষুধ খাওয়াইছিলেন যেমন তার ফল ।
আবির : হুহ
.
আবির কিছু না বলে ঘুমায় গেলো ।
.
আমি পরের দিন নাস্তার পরে আমার কিটক্যাট খুঁজছিলাম ।
আমি : কই গেলো ?
আবির : কি খুঁজছেন ? কিটক্যাট বুঝি ?
আমি : আপনি আমার কিটক্যাট লুকাইছেন তাই না
আবির : হুম কাল কি করছিলেন আমার সাথে
.
আমি : আমার কিটক্যাট দিন
আবির : না
আমি : দেন নইলে খামচি দিবো
আবির : হাহা পারবেন না
.
আমি আগায় গেলাম খামচি দিতে ।
.
আমি খামচি দিতে যাবো । এমন সময় আবির আমার হাত দুটো ধরে ফেললো ।
আবির : এবার কেমনে খামচি দিবেন ?
আমি কামড় মেরে দিলাম আবিরের গলার কাছে ।
আবির : কামড়ালেন কেনো ?
আমি : হিহি কিটক্যাট না দেন আমি আবার কিনে নিবো । তাও আপনার টাকায় । কিন্তু শাস্তি তো আপনি পেয়েছেন ।
.
সেদিন কিটক্যাট কিনে খেয়ে নিয়ে আবিরের মানিব্যাগ তাকে ফেরত দিলাম ।
আবির : আমিও দেখে নিবো ।
আমি : ওমা দেখুন দেখুন ভালো করে দেখুন ।
.
সেদিন বাড়ি ফেরার দিন ছিলো । তাই রওয়ানা হলাম । হাজার হোক নিজের বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছিলাম কষ্ট তো হবেই ।
.
গাড়িতে আমি কাঁদছিলাম ।
আবিরের দেখে খারাপ লাগলো ।
আবির : আপনি কাঁদছেন বাহ বাহ এটাও তো দারুণ মিস ডেইলি সোপ
আমি : আমি মোটেও কাঁদছি না
আবির : এই যে চোখে পানি ।
.
আমি : ইইইই নাই তো ( মুছে ফেললাম )
আবির : হাহা‌
.
সেদিন বাড়ি পৌছালাম ।
মা আমাদের দেখে খুশি হলেন ।
মা : তোদের অনেক মিছ করেছি ।
.
আরোহি : ( আবিরের গলায় দাগ লক্ষ্য করলো ) বাহ ভাইয়া ভাবির লাভ বাইট নিয়ে ঘুরতেছিস ।
.
এই কথা শুনে আবির আর আমি দুজনেই লজ্জা পেলাম ।
.
আমি : আমি কাপড় পাল্টে ফ্রেশ হয়ে আসছি । ( বলে কেটে পড়লাম )
আবির : আমারো ঘরে কাজ আছে । গেলাম ।৤
.
রুমে এসে আবির আমার হাত ধরে টেনে আমাকে দেয়ালের সাথে আটকে ধরলো ।
আবির : আমার সাথে মজা নেওয়া । আজ আপনার জন্য আমাকে এমন লজ্জা পেতে হলো ।
আমি : আপনার দোষ
আবির : আমিও আপনাকে কামড় দিবো এখন ।
আমি : না না না
আবির : আপনাকে শাস্তি পেতেই হবে
.
আবির কামড় দেওয়ার আগেই…
.
আমি : ( কেঁদে ফেললাম ) ভ্যা ভ্যা ভ্যা
আবির : হুহ আমি তো কিছুই করলাম না । তাতেই কাঁদছেন ।
আমি : আপনি আমাকে কামড় দেন খালি আমি আপনার আম্মু কে বলে দিবো ।
আবির : এ্যা
আমি : হ্যা আপনাকেই লজ্জা পেতে হবে ।
আবির : ( মেয়েটা চালাক আছে ।)
.
আবির আমাকে ছেড়ে দিলো…..
রাতে খাবার টেবিলে….
মা : বাবা আবির তোরা হানিমুনে কবে যাচ্ছিস ?
.
এই কথা শুনে আবির আর আমার দুজনেরই গলায় খাবার আটকে গেলো ।
.
মা : কি রে বল ?
আবির : হ্যা যাবো যাবো জ্বলদি ই যাবো ।
আরোহি : কবে যাবি সেটা বল ?
আবির : দেখি
মা : শুন আমি বলছিলাম বিদেশ যাবি নাকি দেশেই কোথাও ?
আবির : বাইরে যেয়ে কি করবো দেশেই যাই
মা : না বাইরে যা আমি টিকিট কেটে রাখছি লন্ডন যা ।
আবির : কেটেই তো রাখছো তাহলে জিজ্ঞেস করার কি আছে ?
মা : আন্দাজি জিজ্ঞেস করলাম ।
আবির : মা তুমিও না
মা : পরশু ফ্লাইট ।
আমি : এ্যা আমার পাসপোর্ট যে বাড়িতে ।
মা : আমি আগেই আনাইছি । তোমার ব্যাগে আছে দেখে নিও ।
আমি : ওকে ( একবার ইন্ডিয়া গেছিলাম । তখন পাসপোর্ট বানানো ছিলো )
.
.
যাওয়ার দিন..
আমি : মি. আবির কি মজা হবে তাই না ?
আবির : এতো এক্সাইটেড হওয়ার কিছু নাই । ভুলে যাইয়েন না এটা টেম্পরারি বিয়ে ।
আমি : আরে জানি তো মনে আছে । এটা আমার কাছে এমনিও হানিমুন না ঘুরতে যাওয়া ।
.
প্লেনে….
আমি : মি. আবির আমার ভয় লাগছে বাড়ি চলুন ।
আবির : কি মাথা কি নষ্ট
আমি : আম্মুর কাছে যাবো ।
আবির : আনহা বিহেভ ইয়োরসেল্ফ
আমি : আপনার হাত টা দেন
আবির : কেনো ?
আমি : আরে দেন তো ( বলেই টেনে নিলাম )
.
প্লেন উপরে উঠার টাইমে মি. আবির কে এমন খামচে ফেলছিলাম । যে উনি চিল্লায় উঠছিলেন । যদিও পরে এর জন্য আমাকে বকেছেন । কিন্তু পমার সেই ভয় লাগছিলো ।
.
ওখানে পৌঁছে এক হোটেলে উঠলাম আমরা ।
আমি : মি. আবির শুনেন তো
আবির : কি
আমি : আমরা এখানে কয়দিন আছি ?
আবির : ৭ দিন
আমি : ওয়াও কতো মজা হবে । আমি অনেক ঘুরবো আর শপিং ও করবো
আবির : করিয়েন
আমি : চলেন না চকলেট কিনতে যাই ।
আবির : মাথা খারাপ এতো লং ওয়ে পার করে আসলাম একটু রেস্ট নিবো ।
আমি : ওকে তাহলে রাতে
আবির : কালকে
আমি : উহু
আবির : নইলে যাবো না
আমি : ওকে মি. রুড
আবির : কিছু বললেন
আমি : না আমি কখন বললাম । আপনি বেশি শুনা শুরু করছেন ।
আবির : হুহ । আমি গোসল করবো ।
আমি : টাটা ।
আবির : ও শুনুন একা আবার বাইরে যাইয়েন না ।
আমি : আমি বাচ্চা নাকি ?
আবির : বাচ্চার মতোই
আমি : হুহ যান তো আপনি
আবির : হুম
.
চলবে…….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে