টিউশন

0
1053

আপনি কী ভাবছেন?মোবাইলের ওপাশ থেকে,

-এই, ভার্সিটি আসো। আমার দুপুরের ক্লাস ক্যান্সেল হয়েছে। চলো, বাইরে লাঞ্চ করব।
-এখন!!?
-কেন? বিজি নাকি?
-না, আসলে আমার জ্বর উঠেছে। বের হতে ইচ্ছে করছে না।
-ঢং,সকালে ত ভালো ছিলে। এখন কি হল?
-সত্যি খারাপ লাগছে। থাক না আজকে? অন্যদিন যাই? ( টিউশানির টা…)
-টিউশানি কি?
-কিছু না। টিউশানিতে যেতে হবে। নেক্সট উইক যাবো। আজ বাসায় চলে যাও।
-না। আজ ফ্রি আছি। টিউশানিতে বিকেলে যেতে পারবে। আর আমার বিকেলে ক্লাস আছে।
-আজকে বাদ দাও।
– আসতে বললাম আসো।আর না হলে আমি আসছি তোমার বাসায়। দেখি তুমি কতটুক অসুস্থ।
-আরে না। মাথা খারাপ নাকি। বাড়িওয়ালা বলে রেখেছে ব্যাচেলর বাসায় বাড়িওয়ালার অজান্তে কোনো মেয়ে ফ্রেন্ড আসলে তার সাথে বিয়ে করিয়ে দিবে।
-ভালই ত। বিয়েটা তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। আমি আসছি তাহলে।
-হুরর… না বললাম।
-তুই আসবি নাকি আমি আসব তোর বাসায়…?! ?
(রেগে গেলে মেয়ে আমারে তুই থেকে শুরু করে সব কিছু বলা শুরু করে)
-আচ্ছা আচ্ছা আমি আসছি…. ক্যাফেটেরিয়ায় ওয়েট করো।

ভার্সিটি যাওয়ার সময় মনে মনে বলতে বলতে লাগলাম, আজ পকেটে টাকা নাই, আর আজকেই মেয়ের লাঞ্চ করার ক্যারা উঠছে। এই যাত্রায় বাঁচাই নাও উপরওয়ালা। ?

দেখা হওয়ার পর দুই জন রিকশায় উঠলাম। রিকশা থেকে নেমে আমি মানিব্যাগ বের করার আগেই দেখি মেয়ে ভাড়া দিয়ে দিল। (থ্যাংক গড, মনে মনে)
তো রেস্টুরেন্ট এ গেলাম। লজ্জায় খাবার মুখে নিতে পারছিলাম না। মানিব্যাগে ছিল মাত্র ৫০ টাকা আর কয়েকটা ভাংতি পয়সা।

-কি হল, খাচ্ছোনা কেন? (আমার কপালে হাত দিয়ে)
-ফুউউ। মনে মনে( এরকম হলে প্রতিদিনই জ্বরের বাহানা করতে পারি) ?
-কই, জ্বর ত নেই। হুদাই ঢং…
লাঞ্চ শেষে বিল দেওয়ার টাইমে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ। বিল আসল ৯০০ টাকা। মানিব্যাগ খুব স্লো মোশানে বের করছিলাম।
মেয়ে- আমি দিচ্ছি।
আমি- এঁ?
মেয়ে- এঁ কি? আমার গুলা টাকা তোমার গুলা কি ডলার!? আমি দিচ্ছি বিল।
আমি- মনে মনে ( আমার প্যান্ট শার্ট বিক্রি করেও এত টাকা বিল দিতে পারতাম না) ??

রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে আবার রিকশা নিল মেয়ে। ভার্সিটির সামনে নামার পর আমার হাতে একটা কাগজের খাম দিল।

– এটা বাসায় গিয়ে খুলবে। খবরদার এর আগে খুলবে না,বাই।
বাসায় যেতে যেতে ভাবলাম…., হাহ, মোবাইলের যুগে খাম মারানোর কি দরকার… মেয়ের মাথায় কি চলে!!?
বাসায় এসে খুব তাড়াহুড়ো করে খাম খুলে হা করে দেখলাম ৫০০ টাকার ৪ টা নোট। আর একটা কাগজের টুকরায় লেখা ….
“হা বন্ধ করো, মাছি ঢুকবে। তোমার জ্বরের কাহিনী আমি তখনই বুঝতে পারছি। আপাতত এগুলা রাখো। ইগো দেখাবা তো খুন করব। পরে আমি সুদে আসলে নিয়ে নিব “।
.
টিউশন…
M A Anam

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে