গল্প : দুষ্টু বউ (২য় পর্ব)

0
1898

গল্প : দুষ্টু বউ (২য় পর্ব)
.
কি করবো কিছুই বুঝতেছি না, আম্মু ওর হাতে মানে ক্ষমতা ওর হাতে।।
জোট সরকারকে আমি বিরোধী দল কি করতে পারবো।
কিন্তু করতে হবে, ভাবতে ভাবতে মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি এলো। এক গ্লাস সরবত বানিয়ে নিয়ে গেলাম।-
.
-সান্তা, সান্তা
.
-ওই আমার নাম ধরে ডাকলি কেন?
.
-তুইনা আমার আদরের বউ।
.
-বাহ বা,, এত পীরিত,, নিশ্চই কোন মতলব আছে
.
-তুইযে কি বলিস, মতলব করবো কেন, তাছাড়া তোরে সেই কবে থেকেই আমার ভাল লাগতো, তোর দিকে তাকিয়ে থাকতাম। (পুরাই ফাপড়)
.
-ওই মুখ ছুটাইস না, তুই তাকাইতি শ্রাবণীর দিকে।।
.
(এই মেয়ে দেখি আমাকে আগে থেকেই ফলো করছে, ফাপর দিয়েও কাপড় ছিড়লো না।। উলটা ধরা খেলাম)
.
.-দুর কি যে বলিস, তুইতো আমার সব, আমার আদুড়ি।
.
–হইছে হইছে কি করতে হইবো সেটা বল।।
.
– এই সরবতটা খা।। তোর জন্য বানিয়ে এনেছি।।
.
–এত ভালবাসিস আমাকে?
.
-হুম, তুই বুঝিস না?
.
-হুম বুঝছি। দে গ্লাসটা

(গ্লাসটা নিয়েই চিল্লাতে থাকে,)
.
–আন্টি, আন্টি,, আন্টি,,,,
.
— আন্টিরে ডাকস কেন,, ওই থাম থাম আম্মুরে কেন?
.
–কি হইছেরে মা? ( আম্মু)
.
–আন্টি, তোমার ছেলে আমারে কি যেন খাওয়াইতে চাইছিলো, এই সরবতে মিসেয়ে
.
–সত্যি? ছিজান বল এমন করেছিস?
.
— না আম্মু কিছু নাই ওটায়।।
.
–তাহলে তুই খাঁ।।
.
(এই সেরেছে,, এটা খেলেতো টয়লেটে গিয়ে বসে থাকতে হবে)
.
–না আম্মু একটু আগে অনেক পানি খেলাম।।।
.
-আন্টি খাবেনা দেইখেন।। কার এডের ভিতর কিছু দিছে।।
.
দুই জনের চিল্লা চিল্লিতে সরবতটা বাধ্য হয়ে খেলাম।। খাওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যে একশন শুরু।। গুনে গুনে ১৭ বার টয়লেটে যাই।। শেষবার টয়লেটে যাওয়ার আগে দেখি টয়লেট তালা দেওয়া।। আম্মুও পাশের বাড়ি গেছে।। নিশ্টই এটা বজ্জাত মায়াটার কাজ।।
.
-ওই বাতরুমে তালা দিছে কে? (আমি)
.
-আমি।
.
-তুই ভয় পাসনা আমারে? আবার বলস “আমি”
.
– তোরে? আর ভয়? হি হি হি
.
-হাসি থামা আর চাবি দে।
.
-না,, চাবিও দিমু না হাসিও থামামুনা,, হি হি হি, হো হো হো।। (আরো যেন বেশি হাসি শুরু করলো, এদিকে আমার যায় যায় অবস্থা)
.
-দেনা চাবিটা?
.
-তাইলে ক আর আমার পেছনে লাগবি না
.
–আইচ্ছা, এবার চাবিটা দে

(পেটে খুব গন্ডগোল করছে। মনে হয় প্যান্ট নষ্ট হয়ে যাবে।।)
–এই নে এবারের মত দিলাম,, আমার সাথে লড়তে আইলে তোর অবস্থা খারাপ করে ফেলবো।।
.
চাবিটা নিয়ে বাতরুমে, গেলাম ইস আরেকটু দেরি হলে প্যান্ট নষ্ট হয়ে যেত।। মেয়েটাকে জব্দ করতে হবে।। আজ বাতরুমে যেতে যেতে অবস্থা শেষ।। দাড়াঁবার শক্তি পাচ্ছি না।। ভাবতেছি আর মনে মনে বলছি-সখী রাতে আসো দেখাবো মজা।।। বাতরুম থেকে বের হয়ে দেখি ও দাড়াঁনো।।
.
–ভিতরে বইসে বইসে কি ভাবলি,, আমারে জব্দ করবি?
.
–না না, তা কেন,,, (ও জানলো কেমনে আমি বসে বসে ওকে জব্দ করার কথা ভাবছি,, মেয়েটাকি তবে কালা জাদু জানে?)
.–দেক আমার সাথে পাঙ্গা লবি না।। মায়া মানুষের সাথে পাঙ্গা লইলে তার ফল ভাল হয় না।।
.
–থাক বাবা, তুই তোর মত আমি আমার মত।।
.
–জি না,, আমি যা বলুম তোরে তা শুনতে হইবো।।
.
–ইস আমার ঠেকা পড়ছে!!
.
-করবি নাতো? ঠিক আছে তোরে দেখে নেবো।।
.
সেদিন রাতে বসে খাচ্ছি সবাই, খাবারটা বেশ মজা হইছে।। আহ কি মজা, গরুর মাংশটা বেশ হইছে।। তাই আম্মুকে জিজ্ঞাস করলাম-
.
-আম্মু গরুর মাংশ কে রান্না করছে?
.
-সান্তা,, কেন?
.
-একটুও মজা হয় নাই। (মজা কিন্ত ঠিকই হইছে, বাট উলটা টা বল্লাম,, বলতে চাইছিলাম মজা হইছে বাট ও রান্না করছে তাই বল্লাম মজা হয় নাই )
.
-মজা হয় নাই? কাওরে খাইতেতো কেও জোর করতাছে না।। আন্টি আপনার কেমন লাগছে?
.
— হুম, অনেক মজা হইছে।। (আম্মু)
.
–আন্টি তোমার মজা লাগলেই হইবো।।
.
মজার মাংশ প্লেটে রেখে উঠতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না। কিন্তু ইজ্জতের একটা ব্যাপার সেপার আছে। উঠে রুমে গেলাম।। আজ নিজের কম্বল আলাদা এনেছি। আজ আর আমাকে জ্বালাতে পারবে না।।
.
কিন্তু যা ভাবলাম তার উলটোটা হলো।। ও জগ দিয়ে পানি আনলো। ভাবছিলাম আমার কম্বলটা ভিজাবে।। একি সে নিজের কম্বলটাই ভিজালো। আবে মায়া নিজেরটা নিজেই ভিজাইলো, মাথা খারাপ হইলো নাকি। যাইহোক আমারটা ভিজায় নি তো।।
.
কম্বল ভিজিয়ে বাইরে চলেগেলো।।
এবার দেখি আম্মুকে নিয়ে এসে রিপোর্ট-
.
–আন্টি দেখো তোমার ছেলে কি করছে?
.
–কি করছে?
.
–আমার কম্বলে পানি ঢেলে দিছে।।
.
(বলেই নেকা কান্না শুরু করছে, আর আমাকে লুকিয়ে, লুকিয়ে ভেঙাচ্ছে।। আল্লাহ কোথায় এসে পড়লাম।।)
.
— আম্মু আমি ভিজাই নি, ও নিজেরটা নিজেই ভিজাইছে।।
.
—থাক, আর বলতে হইবো না।। যা দুইটায় এক কম্বল নিয়েই ঘুমা।।
.
কিছু করার নেই, একই কম্বলের নিচে দুজনে শুতে হলো কিন্তু কম্বলটা কালকের মত আবার নিজেই দখল করে নিলো।। আম্মুকে ডাকতে চাইলাম
.
–আম্মু, আম্মু
.
-বুইড়া পোলা আম্মুরে কেন?
.
-দেখামু কতটুকু কম্বল দিছস।।
.
–ও তাই,, দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা,, তোর কষ্ট করা লাগবেনা আমিই ডাকি।। আন্টি আন্টি
.
–অইে চুপ চুপ।। আর করুম না
.
–কানে ধর
.
–না,,
.
— আন্টি,,,,
.
– ধরছিতো,,
.
–এবার ঘুমা।। কিছু করার চেষ্টা করবি তার ফল ভাল হবে না।।

কিছু বল্লাম না, ঘুমিয়ে পড়লাম।। সারা দিনের ধকলে শরির ক্লান্ত থাকায় ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
প্রতিদিনের মত আজও মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায়।। ঘুম ভাংতেই দেখি তার একটা পাঁ আমার উপর দিয়ে ঘুমাচ্ছে।। ইচ্ছে হচ্ছে পাঁ টা ভেঙে দেই।। কিন্তু শত হলেও আমার বউতো।। তাই আমিও ওর উপর হাত দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।। সকাল বেলাই ওর চিল্লাচিল্লি শুনে ঘুম ভাংলো,।। আম্মুকে ডাকছে-
.
— আন্টি, আন্টি দেখে যাও তোমার ছেলে কি করছে।।
.আবার কি করলাম,
আবার কোন মতলব আটলো দুষ্টুটা?

৩য় পর্ব দ্রষ্টব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে