গল্পের নামঃ প্রয়োজন পর্বঃ ০৩

0
1229

#ধারাবাহিক_গল্প_প্রতিযোগিতা_২০২০
গল্পের নামঃ প্রয়োজন পর্বঃ ০৩
লেখায়ঃ তানিয়া তানু

“মেজ আপা, তোমার বান্ডুলি আইসে”
তিন বছরের পিচ্চি বোন দ্যুতির মুখে বান্ধুবির উচ্চারণ শুনে হেসে মনে মনে বললাম, “ও এতদিন পর!”

আমি শুধু তোমার আপার না তোমারও বান্ডুলি। মনে থাকবে। নিলা রুমে এসেই দ্যুতি গাল দুটো টেনে এই কথা বললো। দ্যুতি মাথা নাড়িয়ে মুখে বললো, “আসসা”

দ্যুতি চলে যাবার পর নিলা আমার কাছে এসে বলে,
__কেমন আছিস?
__তুমি কোন কালাদাস গো? যে তোমায় বলা লাগবে আমি কেমন আছি? দূর হও এখান থেকে?
__এতো হাইপার হচ্ছিস কেন? এই কথাটি বলেই দু হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম,
__কেন হবো না শুনি? টিউশনি খুঁজে না দিস একবার তো আমার খুঁজ নিতে পাড়তি। আমার তো মাঝের মধ্যে মনে হয় আমি তোর বেস্টু নই।
__ ওরে বাবা টিউশনি দেইনি বলে এতো রাগ। তাইলে নে তোর টিউশনি।
এই বলেই একটা কাগজের টুকরো আমার হাতে দিয়ে দিলো। সেখানে একটা বাড়ির ঠিকানা লেখা।
__আর রইলো বাকি, আমি কেন এতদিন তোর খোঁজ নেইনি? প্রথমত তোর খোঁজ না নেওয়ার কারণ হলো আমি ইদানীং খুব অসুস্থ ছিলাম। সারাদিন বিছানায় ছিলাম। দ্বিতীয়ত আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। তাই ভাইয়া আমার বিয়ে ঠিক হওয়ায় টিউশনিটা ফেরত নিতে গেলে আমি তোর নাম বলি। ভাইয়াও রাজি হয়ে যায়।
ওর বিয়ে ঠিক হওয়ার কথা শুনে আনন্দে মন ভরে গেল। কবে কখন কার সাথে ঠিক হলো তা জানার জন্য বললাম,
__পাত্র কী করে? নাম কী? বিয়ে কবে ঠিক হলো?
উত্তরে নিলা বললো,
__পাত্রের নাম সাইদুইর রহমান। বাসা মৌলভীবাজার। পেশায় একজন শিক্ষক।
__আলহামদুলিল্লাহ। একজন ভালো জীবনসঙ্গী পেলি। বস, এই খুশির খবর মাকে দিচ্ছি। আর ডেকে আনছি।

মাকে নিয়ে এসে দেখলাম ও আমার রুমটায় চোখ বুলাচ্ছে। এই রুমে আমি আর বেবলি থাকি। আগে আপাও থাকতো। সে চলে যাওয়ায় আমরা দুজনই থাকি। মাঝে মাঝে বিথী এসেও থাকে। পাশের রুমে জিনিস। তারপাশে মা-বাবার ঘর। সেখানে মা-বাবার সাথে বিথী ও দ্যুতি থাকে।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


__কীরে নিলা? কী শুনছি! তোর নাকি বিয়ে ঠিক হয়েছে?
__জি, আন্টি। দোয়া করবেন
__শান্তিতে থাকিস মা। সংসার জীবনে শাশুড়িকে অনুসরণ করিস। যে সংসারে যাবি সেটা তোর হওয়ার আগে মনে রাখিস ঐটা তোর শাশুড়ির। তাই তাকে কখনো অবহেলা করবি না । তার প্রত্যেক কথা মেনে চলবি। দেখবি ঠিক একদিন তুই একজন পরিপূর্ণ সংসারী হয়েছিস।
__আপনার কথা অবশ্যই মান্য করবো আন্টি। আমার জন্য দোয়া করবেন।
__দোয়া তো তোর সাথে সবসময়ই আছে।

__আন্টি, ভাইয়া কাল এসে আপনাদের ইনভাইটেশন কার্ড দিয়ে যাবে। বাবা বিয়ের জিনিস পত্র কেনায় আছেন। তাই ভাইয়াই আসবে। আশাকরি আপনারা সবাই যাবেন। যদিও এইভাবে পাত্রী নিজে কখনো দাওয়াত দিতে আসে না। কিন্তু আমি এলাম আপনাদের দিতে। কারণ দীপ্তি আমার বেস্টু।
বাবার কাশির শব্দ শুনে মা আর এখানে থাকলেন না। পাশের ঘরে চলে গেলেন।

__নিলাপু তুমি দেখি দিন দিন সুন্দর হচ্ছো। কী ব্যাপার!
হঠাৎ করে বেবলির কথায় আমি ও নিলা পেছন ফিরে তাকালাম। দেখলাম বেবলি পর্দা দুই ফাক করে নিলার উদ্দেশ্যে এই কথা বলছে। নিলা মুচকি হেসে বলে,
__ ওরে বেবলি, আমার যে বিয়ে ফুল ফুঁটেছে। তাই সুন্দর হচ্ছি।
বেবলি হা করে তাকিয়ে বললো,
__ বিয়ের ফুল ফুটলেই মানুষ সুন্দর হয় বুঝি?
__হ্যাঁ, তো।
__তাইলে আমার বিয়ের ফুল কবে ফুটঁবে? আমিও বিয়ে করবো?
__বিয়ে করবি? কিন্তু তোরা সব বোন কী সুন্দর! তাই তোদের বিয়ের ফুল না ফুটঁলেও হবে।
__না, আমার ফুল প্রয়োজন।
__ তো যাহ, আন্টিকে গিয়ে বল। তুই যে বিয়ে করবি।
মা, ও মা, মাগোওওওওও আমি বিয়ে করবো। এই বলেই বেবলি গেল মায়ের কাছে।
আচ্ছা আমার কবে বিয়ের ফুল ফুটবে? আর ফুটঁলে আপুর মতো এই সংসারকে রাস্তায় ফেলে যাবো কি? আপু তো দুই বছর হলো আমাদের সাথে দু-চারটে গল্পও করে না। আমাদের কোনো খোঁজও নেয় না। যাও চার-পাচঁ ঘন্টার জন্য বাড়িতে আসে। এসেই নিজের বাচ্চাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আমরা বার বার আপুর কাছে যাই। আশা করে থাকি, আমাদের দেখেই বলবে,
__এই দীপ্তি, এইভাবে ঘরে উঁকি দিচ্ছিস কেন? আয় আমার কাছে আয়।
কিন্তু এটা শুধু আমাদের চার বোনের কল্পনা। বাস্তবে তৃপ্তিদের বিয়ে হবার পর এরা এসে খোঁজ নেয় না। বাপের বাড়ির লোকদের আপন মনে করে না। যদি সংসারে অভাব-অনটন থাকে। তারা শুধু তাদের সংসার নিয়েই ব্যস্ত থাকে। সময়ের পালাক্রমে ওরা বদলে যায়। তাইলে বাবা আমার কোনো বিয়ের ফুল দরকার নেই। যেমন আছি, তেমনই ভালো।
চলবে„„„„„

বিঃদ্রঃ যতি চিহ্নের কোনো ভুল হলে প্লিজ জানাবেন। তাহলে আমি শুধরে নিয়ে শিখতে পারবো। আর পরবর্তীতে কোনো ভুল হবে না।