এক মুঠো প্রেম রঙ্গনা পর্ব-৩৩

0
1258

#এক_মুঠো_প্রেম_রঙ্গনা
[২য় পরিচ্ছেদ]

৩৩.
লতিফা থতমত খেয়ে তাকালো নিদ্র’র দিকে। নিদ্র তখনো সন্দিহান নজরে চেয়ে আছে লতিফার দিকে। মাজেদা বেগম এবার খ্যাঁক করে উঠলেন। ক্ষিপ্ত হয়ে বলে ওঠে,
–“চো!র! মানুষের কথা কান পাইতা শুনোস! এই শিখাইসে তোর মায়ে? যা এহেন্তে! অ!ভদ্র পোলাপাইন। চো!রামি করে বড়োগো কথা হুনতে আইয়ে।”

নিদ্র সূক্ষ্ম নজরে চাইলো দুজনের দিকে। অতঃপর পিছে ফিরে চলে যাওয়ার সময় বিড়বিড় করে বলে,
–“ফটকি বেগম! তোমাকে তো আমি পরে দেখে নিবো! আমার নৌরি ফুলকে নিয়ে বা!জে কথা বলো! বুঝবে ঠ্যালা!”

—————–
ইরা’দ বেশ কয়েকবার বারান্দার দরজা ধাক্কালো। দরজা ধাক্কানোর শব্দ শুনেও না শোনার ভান ধরে নওরি শয্যাশায়ী। চোখ দুটো শক্ত করে বন্ধ করে রেখেছে সে। একপ্রকার ঘুমের ভান ধরছে সে। ইরা’দ আসার আগেই সে দরজা ভালোভাবে লাগিয়ে দিয়ে শুয়ে পরেছে। ইরা’দ যা বলেছে তা মোটেও নওরির হজম করার শক্তি নেই।
ইরা’দ বারবার বলছে,
–“এটা ভারী অ!ন্যায় নৌরি ফুল। আমি বলেছিলাম আমি আসবো, তাও তুমি বারান্দার দরজা লাগিয়ে দিলে। এভাবে শা!স্তি দিতে তোমার বুক কাঁপলো না? এই নৌরি ফুল?”

নওরি শব্দহীন। টু-শব্দও করলো না। হাসি সংবরণ করে সেভাবেই শুয়ে রইলো। হঠাৎ ইরা’দের বিলাপ থেমে গেলো। মিনিটখানেক কোনো সাড়াশব্দ নেই। পায়ের শব্দও সে শুনতে পাচ্ছে না। কী হলো হঠাৎ? কৌতুহলী হয়ে কান আরও খাড়া করে ফেললো। নাহ, কোনো শব্দ-ই কানে আসছে না। উপায়ন্তর না পেয়ে পিটপিট করে চাইলো। আশেপাশে নজর বুলিয়ে উঠে বসলো। পিছে ফিরে জানালার দিকে তাকাতেই বিষম খেলো। কড়ারকম। চমকে চেয়ে রইলো বারান্দার সাথে এটজাস্ট জানালার দিকে।

ইরা’দ জানালায় দুই হাত ঠেকিয়ে নওরির দিকে-ই তাকিয়ে। ঠোঁটে ঝুলছে মিষ্টি হাসি। সেই হাসি নওরিকে শিহরণ অনুভব করালো। গা পিত্তি কেঁপে উঠলো তাঁর। সামান্য শুকনো ঢোঁক গিলতেই ইরা’দ বলে ওঠে,
–“জানতাম নাটক করছিলে। যত চালাকী-ই করো না কেন বউ, তোমার ডিয়ার হাসবেন্ড তোমার চালাকী ঠিক-ই ধরে নিয়েছে!”

পুণরায় শুকনো ঢোঁক গিললো নওরি। সবকিছু ঠিক রাখলেও জানালাটা লাগাতে কী করে ভুলে বসলো সে? এই জানালাটা একদম নওরির মাথার কাছে। নওরি আশেপাশে তাকালো। ফ্রিশাকে খুঁজলো। সে তো রুমের এক কোণায় কুসুম বালিশের উপর পা ছড়িয়ে ঘুমোচ্ছে।
–“কী খুঁজছো? পালাবে? পালাও দেখি।”
–“আ..আপনি প্লিজ চলে যান!”
–“যাবো, তবে এক শর্তে!”

থমকালো নওরি। ভয়কাতুরে নওরি আমতা আমতা করে বললো,
–“ক..কী?”
–“এত ভয়? পালানোর সময় ভয় করেনি?”
–“মজা নিচ্ছেন?”
–“নিতে হয়। বউ তো তুমি!”
ইরা’দের সহজ স্বীকারোক্তি শুনে নওরি কিছুক্ষণ চুপসে রইলো। আধ মিনিটের মধ্যে ইরা’দ থমথমে সুরে বলে ওঠে,
–“এদিকে এসো!!”

নওরি তাঁর নতমুখ হঠাৎ তুলে ফেললো। বিস্ময় ভরা নজরে চেয়ে রইলো ইরা’দের পানে। ইরা’দ নওরিকে একই জায়গায় থম মেরে বসে থাকতে দেখে ধমকের সুরে বললো,
–“সুন্দর ব্যবহার কানে যায়নি? আমি বলেছি এদিকে এসো, জানালা ঘেঁষে দাঁড়াও। দরজা খোলার কথা বলিনি!”

নওরির সম্বিৎ ফিরতেই সে নির্জীব হয়ে এগিয়ে এলো। লাজ, জড়তায় নজর নিচে দিকে গিয়ে ঠেকেছে। কী অদ্ভুত, দম বন্ধ হওয়া অনুভূতি। জানালা ঘেঁষে দাঁড়াতেই ইরা’দ জানালার মধ্যে দিয়ে আঙুল প্রবেশ করিয়ে নওরির থুঁতনি ধরে নিজের সম্মুখে রাখলো। নওরি ঘনঘন পলক ফেললো। এদিক ওদিক নজর লুকানোর প্রচেষ্টা চালালো। বাহিরের সোডিয়াম আলো আবছা বিস্তৃত। এতে নওরির সব কান্ড বেশ ভালো ভাবেই দৃশ্যমান। ইরা’দ পকেট থেকে একটি প্যাকেট বের করে একটি ছোট বক্স হাতে নিলো। প্যাকেটটি ফেলে সেই ছোট বেগুনি ফিতায় মোড়ানো বাক্সটি নওরির সম্মুখে খুললো। নওরি চমকে তাকালো সেই বাক্সের ভেতর। আবছা আলোয় দুইটি নথ দৃশ্যমান। একই ধরণের। নওরি চোখ পাকিয়ে চেয়ে রইলো দুটি পাথরের নাকফুলের নিকট। তাঁর তো একটি নাক ফুটানো। ইরা’দ তাঁর জন্যে কেন দুটি নথ আনলো? আশ্চর্য তো।

ইরা’দ দুটির থেকে নির্ধারিত একটি নথ হাতে নিতে নিতে বললো,
–“চেয়েছিলাম ডায়মন্ড পাথরের নথটি দিতে। কিন্তু যতদিন না তোমায় আমার করতে পারছি ততদিন এই নথটি আমার নিকট আমানত হয়ে-ই রইলো নৌরি ফুল। দ্রুত আমার ঘর আলো করে প্রবেশ করো, এটাই আমার কামনা!”

মুহূর্তে-ই নওরির চোখ ভিঁজে যায় অশ্রুতে। ইরা’দের কন্ঠে অদ্ভুত আকুলতা উপলব্ধি করেছে সে। তাঁর এখনো সবকিছু কেমন স্বপ্নের মতো লাগে। কেউ বুঝি এত ভালোবাসতে পারে? তাও তাঁর মতো এরকম সাধারণ মেয়েকে? সে তো কোনোদিন ভাবতেই পারেনি। মায়ের পর এই মানুষটাই বুঝি তাকে এতটা ভালোবেসেছে? সৃষ্টিকর্তা চাইলে কী না সম্ভব! সম্ভব হয়েছে বলেই তো ইরা’দের মতো মানুষরূপী ফেরেশতাকে স্বামী হিসেবে পেয়েছে। মানুষটা ত্যাড়া স্বভাবের হলেও তাঁর ভালোবাসায় খাদ নেই। সে ভালোবাসতে জানে, ভালোবাসাতেও জানে।

যখন নওরি ইরা’দকে নিয়ে মুগ্ধতায় ব্যস্ত তখন ইরা’দ একপ্রকার জোর করে নওরির নাকে নথ পরিয়ে দিলো। নিজের কার্য হাসিল হতেই ইরা’দের অধরে তৃপ্তিময় হাসি বিচরণ করলো। নওরি শুধু অবাক হয়ে চেয়ে রইলো। ইরা’দ চমৎকার হাসি দিয়ে বললো,
–“আমার দেয়া চিহ্নে আমার বউ, ইরা’দের বউ। ইরা’দের নৌরি ফুল।”

গাল গরম হয়ে এলো নওরির। চোখ নামিয়ে নজর লুকাতে চাইলো যেন। ইরা’দ এবার নওরির দু-গাল ধরে জানালার শিকের সাথে লাগিয়ে ফেললো। আস্তে করে নওরির কপালে অধর ছুঁয়ে দেয়। নওরির সর্বাঙ্গ জুড়ে যেন বিদ্যুৎ খেলে গেলো। উষ্ণ পরশে চোখ বুজে এলো তাঁর। ক্ষণিক সময় পর ইরা’দ নওরির কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে,
–“আমি কিছু মনে করিনি নৌরি ফুল। দরজা লাগানোর কারণ আমি বুঝতে পেরেছি। আমার বউটা যে ভীষণ লাজুক। লাজুক’রা নিজেদের লজ্জায় মুড়িয়ে রাখতে ভালোবাসে। আমিও ভালোবাসি লাজে রাঙা আমার বউকে। তুমি সময় নাও ফুল, কোনো তাড়া নেই। তবে মনে রেখো, দিনশেষে এই ইরা’দ নামক পুরুষটি শুধু তোমার। তোমার নীরব আধা ঘরওয়ালা।”

——————-
পুণরায় নওরি ভার্সিটি যাওয়া শুরু করবে। পরেরদিন নওরি নাস্তার টেবিলে সকলের সাথে খেতে ব্যস্ত। এমন সময় সারিফা বলে ওঠে,
–“তোমার নাকে নথ কবে পরলে আপু। আগে তো দেখিনি!”
সারিফার এহেম প্রশ্নে নওরি থতমত খেলো। অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে সকলের দিকে তাকালো। সৈকত সাহেব, নূরজাহান, নিদ্র সকলের চাহনি নওরির দিকেই। নওরি চুপ থেকে কিছু খাবার টেবিলের নিচে ফ্রিশার বাটিতে দিতে দিতে বললো,
–“নাক কেমন খালি খালি লাগে তাই পরছি। নিউ মার্কেট থেকে পছন্দ করে কিনেছিলাম!”

উবুত হয়ে ফ্রিশার দিকে ফিরেই কথাগুলো বলছিলো নওরি। কারণ, ওদের চোখে চোখ রেখে মিথ্যা বলা মুশকিল নওরির জন্যে। নূরজাহান বেশি না ভেবে সারিফার মাথায় গাট্টা মে!রে বললো,
–“খালি পকরপকর! তাড়াতাড়ি শেষ কর খাবার। দেরী হচ্ছে তো!”
সারিফা মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে,
–“সমস্যা নেই। ইরা’দ ভাই বলেছে কলেজে ড্রপ করে দিবে!”

নূরজাহান আর কথা বাড়ায় না। খাওয়া শেষে নিদ্রকে নিয়ে সৈকত সাহেব বেরিয়ে পরলেন। নওরিও তাঁর ব্যাগ গুছিয়ে সারিফাকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পরলো। ফ্রিশা শুধু ব্যাকুল নয়নে সকলের চলে যাওয়া দেখলো। একবার চতুরতার সাথে সদর দরজা দিয়ে বের হতে গিয়েছিলো। কিন্তু ঠিক সময়ে নূরজাহান তাকে কোলে তুলে নেয় এবং বের হওয়াটা বৃথা যায়। এজন্যে এখন মুখে গাম্ভীর্য ফুটিয়ে সোফার এক কোণে বসে আছে।

নওরি সারিফাকে নিয়ে নিচে নামতেই দেখলো গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করছে ড্রাইভার। এবং ইরা’দ একপাশে বেশ ভাব-সাব মে!রে পকেটে দুই হাত পুরে দাঁড়িয়ে আছে। ইরা’দ আজ লম্বা সাদা পাঞ্জাবি পরেছে। পদ উন্নতি হওয়ার পর থেকেই ইরা’দকে বেশিরভাগ সময়ে পাঞ্জাবি পরা অবস্থায় দেখা যায়। গাম্ভীর্য তো আছেই। ইরা’দকে দেখে নওরি সারিফার গা ঘেঁষে দাঁড়ালো। তাঁর কপালে ইরা’দের দেয়া ছোঁয়া যেন এখনো নতুন। শিরশির করে উঠছে তাঁর দেহ। সারিফার গা ঘেঁষে দাঁড়ানো বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। সারিফা নওরিকে ফেলেই ইরা’দের দিকে ছুটেছে। নওরি সেখানেই গুটিশুটি মে!রে দাঁড়িয়ে রইলো।

সারিফার ডাক কানে আসলে ইরা’দ প্রথমে নওরির দিকে চাইলো। ইরা’দের শীতল চাহনি দেখে নওরি জড়তায় বোরকার একাংশ খামচে ধরলো। সারিফা কথা বলতে বলতে সর্বপ্রথম সে-ই গাড়িতে উঠে বসলো। এবার নওরি পরলো মুসিবতে। এবার কী দুই ভাই-বোনের মাঝখানে তাকে বসতে হবে? নওরিকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ইরা’দ বললো,
–“দাঁড়িয়ে কী ভাবছো? উঠো। তোমাদের দিয়ে আমার কাজে যেতে হবে!”

এবার হাতে কোনো উপায় নেই। একপ্রকার বাধ্য হয়ে উঠে বসলো। তার পরপর ইরা’দ। একদম নওরির গা ঘেঁষে। নওরির পিলে চমকে উঠলো। কিছু বলতে গিয়েও সারিফার জন্যে বলতে পারলো না। সন্তপর্ণে, সারিফার নজরের আড়ালে নওরির আঙুলের ভাঁজে নিজের আঙুল প্রবেশ করিয়ে ইরা’দ ড্রাইভারের উদ্দেশ্যে বললো,
–“চলো!”

নওরি নিজের হাত বেশ কিছুক্ষণ মোড়ামুড়ি করেছে। কিন্তু ইরা’দের শক্ত হাতের বাঁধন থেকে ছাড়া পেলো না তাঁর হাত। কিছু বলতেও পারলো না। সারিফার কলেজ পর্যন্ত ইরা’দ কিচ্ছুটি বলেনি, আর না বলেছে নওরি নিজে কিছু। পুরো রাস্তা নৈঃশব্দতায় কেটেছে। সারিফা বের হতেই ইরা’দ বিরক্তির স্বরে বলে ওঠে,
–“আমার বউয়ের হাত, আমার বউয়ের সম্পত্তি আমি ধরেছি! তোমার এত মোড়ামুড়ি কিসের? ভদ্র মেয়ের মতো বসে থাকা যায় না?”

নওরির অভিমান হলো। সে কোনোরকম কথা না বলে অন্যদিকে ফিরে রইলো। ইরা’দ আড়চোখে নওরির মুখ ফিরিয়ে নেয়া দেখে নীরবে হাসলো।

————
নিদ্র দুই হাতে কাঁধের ব্যাগের হাতল ধরে সিঁড়ি বেয়ে উঠছে এবং গুণগুণিয়ে গান গাইছে। গানটি এমন,
–“তুমি জ্বালাইয়া গেলা
মনের আগুন,
নিভাইয়া গেলা না।”

এমতাবস্থায় হঠাৎ এক প্রতিবেশি আন্টি নিদ্র’র পথ আটকে দাঁড়ালো। নিদ্র দাঁড়িয়ে মহিলার দিকে তাকালো। মহিলার মুখের হাসিটা অদ্ভুত যা নিদ্র ধরতে পারলো না। মহিলা হাসি আড়াল করে ভ্রু কুচকে বলে ওঠে,
–“শুনলাম তোর ওই বোন নাকি কোনো ছেলের হাত ধরে পালিয়েছিলো?”

নিদ্র চোখা চোখে চাইলো মহিলার দিকে। এসমস্ত বাজে কথা মহিলা বলছে কী করে? তাঁর আবার কোন বোন? নিদ্র চোখ পাকিয়ে বলে,
–“কে? সাবানা?”
মহিলা ঠাওর করতে পারলো না সাবানা কে। এছাড়া যে পালিয়েছে তাঁর নামটাও মহিলা জানে না। কঠিন নাম কী না, মনে রাখা মুশকিল। তবে মহিলা আকারে – ইঙ্গিতে বুঝালো নওরির কথা।
–“ওইযে তোদের বাসাতে থাকতে এসেছে যে!”

নিদ্র এবার বুঝলো তাঁর নৌরি ফুলকে নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। ক্ষ্যা!পা হলো নিদ্র। নিদ্র ছোট হলেও বিচক্ষণতা বেশ ভালো। বাজে কথাবার্তা বেশ ভালো করেই ধরতে পারে সে। ক্লাস টু তে পড়ছে বলে কথা, এতটাও দুধের বাচ্চা নয়। নিদ্র এবার ফুলে উঠে বলে,
–“পালিয়ে যেতে বুঝি আপনি দেখেছিলেন? ছেলেটা কোন কালারের ছিলো আন্টি? পিংক নাকি এ্যাশ! আমার আবার ছেলেটাকে দেখার খুব ইচ্ছে!”

বিচ্ছু ছেলের কথা শুনে থতমত খেলো মহিলা। হয়তো প্রত্যাশা করেনি এরকম কথা। এসেছিলো তো কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিঁটা ফেলতে। এখন তো দেখছে হীতে বিপরীত হলো। মহিলা হতভম্ব স্বরে বলে,
–“আমি তো দেখিনি। শুনেছি!”
–“কে গুজব ছড়ালো? তাকে একটু ডেকে দিবেন? আমিও একটি গুজব ছড়াবো। লিটল নিদ্র বিয়ে করেছে। তাঁর বউ চাঁদ কেও হার মানাবে। তখন মানুষ আমার বউ দেখতে আসবে, আপনার মতো করে খোঁচাবে। সুন্দর না?”

এবার ভীষণ বিরক্তিতে মহিলার চোখ-মুখ কুচকে গেলো। বুঝলো এই ছেলের সাথে কথা বলে কাজ নেই। এ তো পুরো পাকনা কাঁঠাল। কিছু বললে নিজে উল্টো ফেঁসে যাবে। তাঁর উপর বাড়িওয়ালার ছেলে বলে কথা। মহিলা তৎক্ষণাৎ সরে গেলো। মহিলা চলে যাওয়ার পরেও নিদ্র মহিলার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। হ্যাঁ, চার তলার প্রথম সারির এক ফ্ল্যাটের দরজা খোলা শব্দ হলো। এই শব্দ নিদ্র বেশ ভালো করেই চিনতে পেরেছে। তাঁর জানা আছে কোন কোন ফ্ল্যাটের দরজা কী রকম শব্দ করে। কারণ, এগুলা নিয়ে বেশ গবেষণা করে ফেলেছে। নিদ্র কী মনে করে বলে ওঠে,
–“ওই বাসাতে সেদিন ফটকি বেগমকে ঢুকতে দেখেছিলাম, এর মানে কী এসব গুজব এই মহিলা ছড়াচ্ছে? ফটকি বেগম! তুমি এখনো বেঁচে আছো কেমতে? নিদ্র বাঁচিয়ে রেখেছে বলে?”
বলেই দ্রুত পায়ে সিঁড়ি বেয়ে চলে গেলো।

—————–
ইরা’দ ড্রয়িংরুমে বসে যখন ফোনে নিউজ দেখতে ব্যস্ত তখন হঠাৎ মৌসুমি তাঁর সম্মুখে এসে বসলো। ছেলেকে লক্ষ্য করে বললো,
–“শুনলাম সারিফার সাথে যেই মেয়েটা ছিলো সে নাকি পালিয়েছে? তুই কী কিছু জানিস?”

®লাবিবা ওয়াহিদ
—————————–
~চলবে, ইন-শা-আল্লাহ্।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে