Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"এক মুঠো প্রেম রঙ্গনাএক মুঠো প্রেম রঙ্গনা পর্ব-১৭+১৮

এক মুঠো প্রেম রঙ্গনা পর্ব-১৭+১৮

#এক_মুঠো_প্রেম_রঙ্গনা
লাবিবা ওয়াহিদ
| পর্ব ১৭ |

———————-
মাজেদা বেগম চোখ-মুখ অসম্ভব কুচকালো। এদিকে ইরা’দের এরূপ উক্তিতে নওরির হেঁচকি উঠে গেলো। আর মৌসুমির কাশি। নিদ্র দ্রুত ছুটলো ডাইনিং টেবিল থেকে পানি আনতে। যেভাবে হাওয়ার বেগে গিয়েছে সেভাবেই হাওয়ার বেগে একটি পানির বোতল নিয়ে আসলো নিদ্র। দ্রুত নওরির হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,
–“এটা খাও, হেঁচকি চলে যাবে।”

নওরি নিদ্রকে কোনো উত্তর না দিয়েই দ্রুত ভঙ্গিতে পানির বোতল খুলে ঢকঢক করে কয়েক ঢোঁক খেয়ে নিলো। সারিফা গিয়েছে মৌসুমিকে সামলাতে। ইরা’দ নওরিকে কোণা চোখে দেখে মুখ টিপে হাসলো।

মাজেদা বেগম তিক্ত স্বরে বললো,
–“নাউজুবিল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ। তওবা তওবা! আমার নাতির বউ হইবো এই মেয়ে? আমার নাতির জন্যে তো রাজকন্যে আনবো আমি।”
ইরা’দ নওরির দিকে কোণা নজরে তাকিয়ে বলে,
–“তাহলে তুমি আরেকজন কে বিব্রত করছো কেন? আমিও তো বলিনি, তোমার নাতবউ এখনই রাজকন্যা থেকে রাণী হয়ে তোমার রাজার হালে আসবে।”

নওরি পানি মুখে নিয়ে গোল গোল চোখে ইরা’দের দিকে তাকালো। ইরা’দের নজর এবং কথাবার্তা নওরির মাথার উপর দিয়ে গেলো। সে দ্রুত নজর ঘুরিয়ে ফেললো। ইরা’দ আলতো হেসে মিনমিন করে বলে,
–“যতই চোখের নজর ঘুরিয়ে নিন, হৃদয়ের নজর তো ঠিকই এদিকে পরে আছে।”

ইরা’দের কন্ঠস্বর ছিলো অত্যন্ত ধীর। যা মাজেদা বা মৌসুমি পর্যন্ত পৌঁছালো না।
–“সেই নাহয় বুঝলাম, তা তুই মাইয়া মানুষের পাশে বইসা রইছিস কেন?”
–“যাতে তোমার ভুলভাল কোনো কথা আমার প্যান্ট ঢিলে না করে। এই সোসাইটিতে যথেষ্ট সম্মানের পাত্র আমি। তুমি না বুঝলে কে বুঝবে আমার সুইটহার্ট নানু?”

বলতে বলতেই ইরা’দ নওরির পেছন দিয়ে হাত নিয়ে নিদ্র’র পিঠে চিমটি কাটলো। নিদ্র লাফ দিয়ে উঠে ঘাড় বাঁকিয়ে পিছে তাকালো। ইরা’দের হাত দেখে নিদ্র মাথা বের করে ইরা’দের দিকে তাকালো। ইরা’দ হেসে হেসে মাজেদা বেগমকে কথায় ব্যস্ত রাখতে রাখতে নিদ্র’র গুলতির দিকে ইশারা করলো। নিদ্র সেই ইশারা বুঝতে পারলেও গুলতি দিয়ে কী করবে সেটা বুঝলো না। তাই কিছু না ভেবে নওরির পাশ ছেড়ে ইরা’দ এবং নওরির মাঝামাঝি যতটুকু ফাঁকা ছিলো, সেই ফাঁকা জায়গায় বসলো। ইরা’দ হাসি, হাসি মুখ করে খুব-ই ধীর গলায় বলে,
–“গুলতির সঠিক সময়ে প্রয়োগের সময় এসেছে নিদ্র। যাও, কাজটা সেরে ফেলো। নানুর হাত থেকে নৌরি ফুলকে বাঁচাও।”

নিদ্র তৎক্ষণাৎ কিছু বুঝতে না পারলেও ধীরে ধীরে বুঝলো৷ মাজেদা বেগম তখনই বলে ওঠে,
–“ওই তুই সর তো! আমি ওরে যা ইচ্ছা প্রশ্ন করুম, তোর কী? মৌসুমি তোর পোলারে ‘ক’ এহান থেইকা যাইতে। পরে আমার মাথা গরম হইলে কী করমু বুঝবার পারতাছোস না!”

মৌসুমি নিজেকে দমিয়ে রেখে কাঠ কাঠ গলায় বললো,
–“ইরা’দ বাবা। এখান থেকে যাও। এখানে তোমার কোনো কাজ নেই। আমি বলছি যেতে!”

ইরা’দ যেন কানেই শুনলো না। উল্টো আরাম করে সোফায় হেলান দিয়ে বলে,
–“আজ খুব ক্লান্ত আমি। সারিফা যা তো সরবত বানিয়ে নিয়ে আয়। তুই না পারলেও তোর এই বোনকে বল। আই হ্যাভ নো প্রব্লেম!”

ইরা’দের এরূপ ত্যাড়া কথায় মৌসুমি রেগে উঠে দাঁড়ালো। কর্কশ কন্ঠে ইরা’দকে ধমকে উঠলো,
–“নিদ্র!!”

সকলে যখন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত, নিদ্র তখন কৌশলে গুলতি নিয়ে কিচেনের একটি গ্লাসের দিকে শুট মারলো। ভাগ্যক্রমে গুলতিটা কিচেনের জানালা দিয়ে বেরিয়ে গেছে। নিদ্র হাফ ছেড়ে বাঁচলো।

কাঁচ ভাঙার শব্দে সকলে কিচেনের দিকে তাকালো। নিদ্র ভালো ছেলের মতো চুপটি মেরে বসে রইলো। নওরি দেখেছে নিদ্র’র গুলতি মা!রা। কিন্তু সে বুঝেনি যে নিদ্র কাঁচ ভাঙবে। কিন্তু এই সময়ে নিদ্রকে কিছু বলার সাহস হলো না নওরির। দেখেও চুপ থেকে গেলো। মাজেদা বেগম চিন্তিত স্বরে বলে,
–“মৌসুমি, কিসের শব্দ হইলো? আয় আমারে উঠা! দেহি কী হইছে ওহানে?”

মৌসুমি কপালে ভাঁজ ফেলে ইতিবাচক মাথা নাড়ায়। অতঃপর মাকে ধরে ওদিকে নিয়ে যায়। মৌসুমি রা চলে যেতেই ইরা’দ নওরির উদ্দেশ্যে বললো,
–“আপনি দ্রুত বাসায় যান। এখানে আর থাকতে হবে না!”

নওরি উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
–“কেন?”
–“তিক্ত কথা শোনার ইচ্ছে থাকলে থেকে যান!”
নওরি বিরক্ত হলো। প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে উল্টো ত্যাড়া কথা শুনাচ্ছে? এটা কীরকম অ!ভদ্রতা?
–“সোজা উত্তর দেয়া উচিত ছিলো।”
–“আমার উত্তর দেবার স্টাইল-ই এটা। সারিফা, ওনাকে নিয়ে যা তো!”

সারিফা ইতিবাচক মাথা নাড়িয়ে নওরির দিকে এগিয়ে এলো। নওরিও বিনা-বাক্যে সারিফার সাথে চলে গেলো। ইরা’দ নিদ্র’র সাথে হাই ফাইভ করে বলে,
–“গুড জব। তোকে আরও গুলতি কিনে দিবো। এখন তুইও যা!”
–“ওকে নিদ্র ভাইয়া!”

বলেই নিদ্র খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে চলে গেলো। ততক্ষণে মাজেদা বেগম বিলাপ করতে করতে বৈঠকঘরের দিকে আসছিলো।
–“বিলাই আইছিলো মনে হয়! বাপের সম্পদ পাইছে তো এজন্যেই জানালা দিয়া আইসা একখান গেলাস ভাইঙা আবার পলাইছে। অ!সভ্য বিলাইয়ের জাত!”

বৈঠক ঘরে দুজনে এসে চমকালো। কারণ, কেউ নেই। মাজেদা বেগম ইয়া বড়ো হা করে অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে,
–“কই গেলো সব?”

————————
পড়তে বসার পরপর নওরির বেশ কয়েকবার নিদ্র’র কথা মাথায় এলো। যদিও নিদ্র তাঁর পাশে-ই বসে আছে। কিন্তু ব্যাপারটা সেটা নয়। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটাটা নওরিকে ভাবাচ্ছে। পড়ায় মনোযোগ দেয়া নিদ্র’র দিকে এক পলক তাকালো নওরি। পরে কী ভেবে বলে,
–“তুমি এখানেই বসে পড়ো নিদ্র। আমি আসছি!”

নিদ্র চঞ্চল চোখে নওরির দিকে তাকিয়ে উপরে নিচে মাথা নাড়ালো। নওরি নিদ্র’র মাথায় হাত বুলিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। নওরি গেলো সারিফার রুমে। সারিফা তখন পড়ার ফাঁকে ফাঁকে ফোন চালাচ্ছে। নওরি চৌকাঠে দাঁড়িয়েই সারিফাকে ডাকলো। সারিফা চমকে মোবাইল বইয়ের নিচে লুকিয়ে নওরির দিকে তাকালো। নওরি আলতো স্বরে বলে,
–“নিক্স বা মুভ জাতীয় ব্যথার মলম আছে?”
–“আছে আম্মুর কাছে। আমার কাছেও একটা নিক্স রয়েছে। কেন?”
–“একটু দরকার দিবে?”
–“কেন আপু? তুমি ঠিকাছো?”
–“হ্যাঁ ঠিকাছি। কিন্তু সময়ের তো আশ্বাস নেই।”

সারিফা আর কথা না বাড়িয়ে ড্রয়ার থেকে নিকস বের করে ফেললো। সারিফা সেটা নওরির হাতে ধরিয়ে দিতে গিয়ে বললো,
–“বুঝেছি। এডমিশনের জন্যে তো প্রচুর পড়াশোনা। মাঝেমধ্যে মাথা ব্যথাও উঠতে পারে। প্রব্লেম নেই, এটা তোমার কাছে রেখে দিতে পারো। আমার এসব লাগে না।”
নওরিকে সেভাবে কিছু উল্লেখ করলো না এবং সারিফার কথার উত্তরেও কিছু বলার প্রয়োজনযোধ মনে করলো না। মুচকি হেসে নিকসটি নিয়ে চলে এলো।

নিদ্র হাতে ছোট আমটি নিয়ে বসে আছে। পড়ায় মনোযোগ নেই তাঁর। বরং আমটি খাওয়ার জন্যে মনে তীব্র এক আকাঙ্খা এবং উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। নওরির অনুপস্থিতিতে সারা ঘর খুঁজে অবশেষে তাঁর সাধের আমটি পেয়েছে।

নওরির উপস্থিতি টের পেলে নিদ্র চট করে আমটি লুকিয়ে ফেললো। নওরি চেয়ারে বসতে বসতে বললো,
–“দেখি নিদ্র এদিকে ফিরো!”

নিদ্র চমকে নওরির দিকে তাকায়। নওরি একপলক নিদ্র’র দিকে তাকিয়ে বিনা-বাক্যে নিদ্র’র চেয়ার টেনে নিজের দিকে ফেরালো। নিদ্র বড়ো বড়ো চোখে নওরির দিকে তাকিয়ে বলে,
–“কী হয়েছে?”
–“সেটা তো তুমি বলবে। ব্যথা কোথায় কোথায় পেয়েছো সেটা বলো?”
নিদ্র আকাশসম বিস্ময় নিয়ে নওরির দিকে তাকিয়ে অস্ফুট স্বরে বলে,
–“তুমি কী করে বুঝলে নৌরি ফুল?”
–“যেভাবে বসেছিলে, কিছুটা ধারণা হয়েছিলো। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটা দেখে নিশ্চিত হয়ে গেলাম। এখন বলো, ব্যথা কোথায় পেয়েছো আমায় বলো। আমি মলম লাগিয়ে দিচ্ছি!”

নিদ্র মুখ ছোট করে হাটুতে এবং ডান কনুইয়ে দেখিয়ে দিলো। দুই জায়গায় নীলচে ভাব ফুটে উঠেছে। যা দেখে নওরি চমকে উঠলো।
–“এ কী নিদ্র! পরে যাওয়ার কথা কাউকে বলোনি কেন?”
–“ভয় পেয়েছিলাম। সুযোগও হয়নি। তবে বাথরুমে গিয়ে পানি দিয়েছি ব্যথার জায়গা গুলোতে।”

নওরি তড়িৎ গতিতে নিকসের মুখটা খুলে ফেললো। নিদ্র’র ব্যথার জায়গাতে অতি যত্ন সহকারে মলম লাগিয়ে দিতে দিতে বলে,
–“এটা অন্যায়! ব্যথা পেলে তোমার অবশ্যই বলতে হবে। পরবর্তীতে আর লুকাবে না। ঠিকাছে?”

নিদ্র ইতিবাচক মাথা নাড়ায়। কিছুক্ষণ নিরবতা চললো। হঠাৎ নিদ্র বলে ওঠে,
–“তুমি এত ভালো কেন নওরি ফুল?”
–“তুমি যে ভালো ছেলে তাই।”

নিদ্র হাসলো। সাথে নওরিও। দু’জনের কাজ কর্ম সৈকত সাহেব দরজায় দাঁড়িয়ে দেখছিলো। কী মনে করে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে নিজের রুমের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হলেন।

———————–
–“কখনো তো দেখিনি কোনো মেয়ের ধারেকাছে, তো আজ কোন অষ্টম আশ্চর্য হলো যে তুই ওই মেয়ের পাশে বসে ওই মেয়ের হয়ে কথা বলতে বসেছিলি?”

ইরা’দের উত্তর নেই। সে এক মনে টিভিতে নিউজ দেখতে ব্যস্ত। গুরু-গম্ভীর মুখশ্রী। বড্ড সিরিয়াস অভিব্যক্তি। ছেলের তরফ থেকে মৌসুমি পাত্তা না পেয়ে তেঁতে উঠলেন।
–“কিছু জিজ্ঞেস করেছি ইরা’দ! উত্তর দে। নয়তো টিভি বন্ধ করে দিবো!”
–“কিসের উত্তর?”
–“ওই মেয়ের সাথে এত কী তোর? আগে থেকেই চিনিস নাকি?”
–“চিনলে তোমার কী?”
–“আমার উত্তর এটা নয়।”
–“হ্যাঁ চিনি। এর বেশি বলা সম্ভব না। কফি লাগবে আমার, মাথা ম্যাজম্যাজ করছে!”
মৌসুমি অসম্ভব রকম রেগে গেলেন।৷ রাগ গলায় আটকে কিড়মিড় কন্ঠে বললেন,
–“তোর জন্যে নতুন মেয়ে দেখেছি। আগামী পরশুই আমার সাথে মেয়েটাকে দেখতে যাবি ব্যাস!”

——————————

~চলবে, ইন-শা-আল্লাহ্।
রিচেক দেয়া হয়নি।

#এক_মুঠো_প্রেম_রঙ্গনা
লাবিবা ওয়াহিদ
| পর্ব ১৮ |

———————
পড়া শেষে স্টিলের স্কেল দিয়ে ছোট সাইজের আমটিকে দু’ভাগ করলো নিদ্র। নওরি গোল গোল চোখে দেখেই গেলো সবটা। নিদ্র অর্ধেক ভাগ নওরির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে,
–“এটা তোমার কাছে গিফট। এই আমের জন্যেই আমি পায়ে ব্যথা পেয়েছিলাম।”
–“পেলে কোথায়?”
–“গুলতি মে!রে আদায় করেছি। চুরি করে আম খেতে মজাই আলাদা।”

নওরি হাসলো। চোখের সামনে ভেসে ওঠে সোনালী দিনগুলো। ছোটবেলায় সেও মাঝে মধ্যে ঢিল ছুঁড়ে আম চুরি করে খেতো। আম চুরিতে মজাই আলাদা। সাথে লবণ, মরিচ হলে তো কথাই নেই। নওরি সৌজন্যতার সাথে আমের টুকরোটা নিজের হাতে তুলে নিলো। নিদ্র এক গাল হাসি দিয়ে বলে,
–“দাঁড়াও আমি লবণের ব্যবস্থা করছি!”
–“মরিচের গুঁড়োও আনো!”
–“ও হ্যাঁ। অপেক্ষা করো!”

নিদ্র যেতে নিলে নওরি নিদ্রকে আটকায়।
–“প্রয়োজন নেই। আমি গিয়ে আনছি৷ তুমি রেস্ট করো!”
নিদ্র বাধ্য ছেলের মতো বসে রইলো। ফ্রিশা চট করে নিদ্র’র কোলে গিয়ে উঠলো। নওরি ওদের রেখে বেরিয়ে এলো। কিচেনে যেতেই দেখলো নূরজাহান তাঁর বড়ো ছেলে তুষারের সাথে কথা বলতে ব্যস্ত। নওরি তাঁর পাশ কাটিয়ে লবণের বয়াম নিতে গেলে তুষার তাকে দেখে ফেলে। কিছু মুহূর্ত মুগ্ধ নয়নে চেয়ে হঠাৎ বলে ওঠে,
–“ওটা নওরি না? হেই নওরি। কী অবস্থা?”

পুরুষালি কন্ঠস্বর শুনে নওরি চমকে ঘাড় বাঁকিয়ে তাকালো। নূরজাহান হাসি হাসি মুখ করে ফোনের ক্যামেরা নওরির দিকে ঘুরিয়ে দিতেই নওরি অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে মাথায় কাপড় দিলো। নূরজাহান বেশ চমকে বলে,
–“ওহ দুঃখিত। নাও, তুষারের সাথে কথা বলো।”

নওরি হ্যাঁ, না কিছুই বলার সাহস পেলো না। হালকা শুকনো ঢোঁক গিললো। নূরজাহান মোবাইল নওরির হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলো। নওরি তৎক্ষণাৎ ক্যামেরায় আঙুল দিয়ে বন্ধ করে রাখলো। অস্বস্তিতে তাঁর ঘনঘন নিঃশ্বাস পরছে। মোবাইলের স্ক্রিনে ফুটে আছে এক অচেনা পুরুষের প্রতিচ্ছবি। তাঁর চাহনি বড্ড অস্বস্তিকর নওরির জন্যে। কোনো পুরুষের সাথে সে কমফোর্ট ফিল করে না। তুষার স্ক্রিনে তাকিয়ে বলে,
–“নওরি? ঠিক আছো? ক্যামেরা বন্ধ করলে কেন?”

নওরি আমতা আমতা করে সালাম দিলো তুষারকে। তুষার এবার হাসলো। হাসি বজায় রেখে সালামের উত্তর দিয়ে বললো,
–“কেমন আছো?”
–“ভালো। আপনি?”
–“ভালো। অন্ধকার কেন? তোমায় দেখা যাচ্ছে না যে?”

নওরি চুপ করে রইলো। ফোনের ওপাশে উত্তরের অপেক্ষায় তুষার বসে রইলো। নওরির সাড়াশব্দ না পেয়ে তুষার কল কেটে দিয়ে আবার কল করলো। নওরি কল রিসিভ করার সাহস পর্যন্ত পেলো না। চুপ করে ফোন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। হঠাৎ টুংটাং শব্দে মেসেজ আসলো। নওরি মেসেজটা ওপেন করতেই দুইশো ভোল্টের ঝটকা খেলো।
–“আনকমফোর্ট হচ্ছিলে নওরি? আরে আমরা আমরা-ই তো। কথা বললেই কমফোর্ট ফিল করবে। এছাড়া তোমার কন্ঠও খুব মধুর। এই কন্ঠস্বর আড়ালে রাখতে নেই। মন খুলে কথা বলবে।”

এরূপ মেসেজ দেখে নওরির তীব্র এক ইচ্ছা জাগলো মেসেজের উত্তর দেবার। উত্তর হিসেবে বলতে ইচ্ছা করছিলো,
–“অচেনা পুরুষের সাথে মন খুলে কথা বলতে পারি না আমি, আর না পারতে চাই৷ আপনি সারিফার বড়ো ভাই, এর চাইতে কোনো পরিচয় বা কথাবার্তার প্রয়োজন নেই৷”

নওরি মেসেজ টাইপ করতে গিয়েও করলো না। উল্টো তুষারের মেসেজটি ডিলিট করে নওরি লবণ-মরিচের গুঁড়ো নিতে ব্যস্ত হয়ে পরলো।

———————
আজ ইরা’দকে নিয়ে মৌসুমি মেয়ে দেখার জন্যে যাওয়ার কথা ছিলো৷ ইরা’দ কাজের ছুঁতোয় বেরিয়েছে সেই সকালে। অথচ এখন বিকাল হয়ে গেলো ইরা’দের আসার কোনো খবর নেই৷ মৌসুমি চৌকাঠে দাঁড়িয়ে ফুঁসছে। মেয়েদের বাড়িতে লাঞ্চের সময় পৌঁছানোর কথা ছিলো। এখন আছরের আযান দিবে। কেমন লাগে? ইরা’দের সব চ্যালা, বন্ধুদের কল দিয়েছে সে। কিন্তু অ!পদার্থগুলো একটায়ও কল রিসিভ করেনি। সবার ফোন বলেছে ব্যস্ত। অপ!মানে রীতিমতো গা জ্বালা দিয়ে উঠছে মৌসুমির। রি রি করছে সবার্ঙ্গ। যত্তোসব ব্যস্ততা আজকের দিনে-ই হলো? মৌসুমি শেষমেষ ক্লান্ত হয়ে ভেতরে ঢুঁকে গেলো।

মৌসুমি ভেতরে যেতেই নওরি সিঁড়ি দিয়ে নেমে পরলো। পাক্কা পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলো সে। কারণ একটাই, মৌসুমি অর্থাৎ ইরা’দের মা। মহিলার ব্যবহার এবং চাহনি বড্ড অস্বস্তিজনক। সেদিন যা নমুনা দেখেছে, কাউকে বিশ্বাস নেই। তাইতো আড়ালে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হলো। নওরি আর অপেক্ষা না করে দ্রুত ভঙ্গিতে সিঁড়ি বেয়ে নামতে লাগলো। বড্ড তাড়া তাঁর। মৌসুমির চোখের সামনে না পরার তাড়া। বলা তো যায় না, আবার কখন বেরিয়ে আসে।

প্রতিবারের মতো আজও রিকশা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো নওরি। নওরি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে অন্য রিকশা নিয়ে চলে গেলো। ভুলক্রমেও তাঁর জন্যে নির্ধারিত রিকশায় সে উঠলো না। নওরি এবং তাঁর রিকশা চোখের আড়াল হলে টঙ থেকে ইরা’দের বিশ্বস্ত দু’জন কর্মী বেরিয়ে এলো। ওরাও ইরা’দের সাথে রাজনীতিতে যুক্ত। একজন তাঁর পাশের জনের উদ্দেশ্যে বলে ওঠে,
–“কী চালু এবং ত্যাড়া স্বভাবের এই মেয়ে।”
–“মুখ সামলে কথা বল। ভাবী হয় আমাদের। তোর জবানে এসব শুনলে ইরা’দ ভাই তোর জিহবা টেনে ছিঁ!ড়বে।”
–“আচ্ছা আর বলব না। কিন্তু সত্যি-ই তো বললাম।”
অপর ছেলেটি হেসে তাঁর সহকারীর কাঁধে হাত দিয়ে বলে,
–“আমাদের ইরা’দ ভাইয়ের বউ তাঁর মতোই তো হবে নাকি? তুইও না বেশি বেশি!”

নওরি রিকশা থেকে নেমে স্টুডেন্টের বাসায় ঢুকতেই দেখলো সিঁড়ির সাথে হেলান দিয়ে ইরা’দ দাঁড়িয়ে আছে। নওরি প্রথমে অপ্রস্তুত হলেও পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিলো। ধীর গলায় বললো,
–“আপনি?”

ইরা’দ সেসব নিয়ে কিছু বললো না। সোজা-সাপটা প্রশ্ন ছুঁড়লো নওরির উদ্দেশ্যে।
–“রিকশায় উঠেননি কেন?”
–“ও। এর মানে এসব আমার কীর্তি?”
–“উত্তর জানতে চেয়েছি আমি।”
–“আমিও জানতে চাই। রিকশা কেন ঠিক করেছেন? কেন ওই ছেলেগুলো আমার পিছু নেয়?”
–“তোমায় প্রটেক্টের জন্যে।”
–“সারিফাকে তো এত প্রটেক্ট করেন না, তাহলে আমার বেলাতেই কেন? প্রয়োজন নেই আপনার এই সুরক্ষার!”

ইরা’দ প্রশস্ত হাসলো। অমায়িক কন্ঠে শুধায়,
–“আপনি আমাদের স্পেশাল গেস্ট। সারিফা নয়। আর স্পেশাল মানুষদের স্পেশাল সুরক্ষা তো দিতেই হয়। আগামী থেকে খেয়াল রাখবেন। আমি রিকশা পাঠালে রিকশায় চড়বেন। ভাড়া আপনি দিলেও কোনো সমস্যা নেই। তবে সমস্যা হলো, আপনাকে আমার করা নির্ধারিত রিকশাতেই উঠতে হবে।”

–“জোর করছেন?”
–“না, আমার সিদ্ধান্ত জানাচ্ছি।”
–“আপনি কে?”
–“হৃদয়ের আয়না।”
–“মানে?”
–“বুঝবেন না!”
–“আমার অস্বস্তি হয়।”
–“নতুন শহরে নিজের জন্যে এইটুকু ত্যাগ করলে কিছু হয় না! অস্বস্তি ত্যাগ করুন।”
–“আপনার কথা যদি না শুনি?”
–“এর উত্তর আমার কাছে নেই নৌরি ফুল। তবে আমি এইটুকু বলতে পারি, আমি ভয়া!নক রেগে যাব। আসছি!”

বলেই নওরির পাশ কাটিয়ে চকে আসতে নিলে ইরা’দ হঠাৎ থমকে দাঁড়ায়৷ নওরির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,
–“অতিরিক্ত কথা বলা আমি পছন্দ করি না নৌরি ফুল। আমার তো আপনার সেই শান্ত, ভীত সুলভ স্বভাবটি-ই চমৎকার পছন্দ।”

বলেই নওরির মাথায় ফুঁ দিয়ে ইরা’দ চলে গেলো। নওরি তো কতক্ষণ ওখানেই হ্যাবলার মতো দাঁড়িয়ে রয়। শূণ্য দৃষ্টিতে সামনের দিকে চেয়ে সবকিছু বোঝার চেষ্টা করলো। অতঃপর সম্পূর্ণ ঘটনা মস্তিষ্কে নাড়া দিতেই নওরি চমকে পিছে ফিরে তাকালো। ততক্ষণে ইরা’দ তাঁর দৃষ্টি সীমানার বাহিরে চলে গিয়েছে। কিছুক্ষণ রাস্তার দিকে তাকাতেই হঠাৎ মনে পরলো, আজ তো ইরা’দের মেয়ে দেখতে যাবার কথা। নূরজাহান আন্টির থেকে শুনেছে মৌসুমির ইচ্ছের কথা। যদি তা-ই হয় তাহলে ইরা’দ তাঁর সাথে কী করছে? অদ্ভুত ছেলে তো!

———————–
রাত প্রায় দশটা বেজেছে। ইরা’দ এখনো বাড়ি ফিরেনি। লোকমুখে শোনা গেছে পাশের এলাকার গার্লস স্কুলের দিকে ছোটখাটো ঝামেলা হয়েছে। মা!রা-মারি পর্যায়ের নয় অবশ্য। তাও হুলস্থুল লেগেছে। এই ঘটনা শুনেই মৌসুমি কেঁদে-কেটে হয়রান। তাঁর ভয় নিশ্চয়ই বড়ো কিছু ঘটেছে। এজন্যই তাঁর ছেলে বাড়ি ফিরেনি। এসব হাঙ্গামায় নওরি পড়তে পারলো না। নিচ থেকে চাপা কান্নার সুর ভেসে আসছে। নওরির পাশে নিদ্র নেই। নির্ঘাত দো’তলাতেই গিয়েছে। নওরি বিরক্ত না হলেও তাঁর মাথা ব্যথা করছে। তাঁর জানা নেই কেন এত সোড়গোল, চাপা কান্নার স্বর কানে আসছে। জানার ক্ষীণ আকাঙ্খা জাগলেও তা নিজ দায়িত্বে মাটি চাপা দিলো সে। রুম থেকে বের হতেই দেখলো নিদ্র সদর দরজা দিয়ে বের হচ্ছে।

নওরি পিছু ডাকলো। নিদ্র থেমে পিছে ফিরে তাকালো। নওরি এদিক ওদিক তাকিয়ে বলে,
–“ফ্রিশা কই?”
–“আম্মুর রুমে ঘুমোচ্ছে।”
–“নিচে কী হচ্ছে নিদ্র? এত সোড়গোল?”
–“বড়ো চাচী কাঁদছে। কোথায় নাকি নিদ্র ভাইয়া ঝামেলা করেছে। হয়তো ঢিশুম ঢিশুমও হয়েছে। আচ্ছা তুমি থাকো, আমি দ্রুত গিয়ে দেখে আসি নিদ্র ভাইয়া এসেছে কিনা!”

বলেই নিদ্র চলে গেলো। নওরির আর ফ্রিশাকে দেখতে যেতে ইচ্ছে হলো না। ভীষণ খারাপও লাগলো তাঁর। এত বড়ো দামড়া ছেলে কী না মা!রামারি করে বেড়ায়? অথচ বাড়িতে দেখো! মা কেঁদে অস্থির। কে বলে এসব রাজনীতি করতে?

পরক্ষণে বিকালের ঘটনা মনে পরতেই নওরির সর্বাঙ্গ শিথিল হয়ে গেলো। সে সুস্থ, সাবলীল থাকার পরেও কী করে ইরা’দ তাঁর কাছে আসলো? সে কেন ওইরকম একটা অবস্থায় নিজের সব হতবুদ্ধি হারিয়ে ফেলেছিলো? নিজের প্রতি-ই রাগ হতে শুরু করলো নওরির।

নওরির এখন একটু শান্তির প্রয়োজন। সোড়গোলে নওরির মাথা ব্যথা বাড়ছে বৈ কমছে না। কী তীব্র ব্যথা। নওরি উপায়ন্তর না পেয়ে ছাদে যাবার সিদ্ধান্ত নিলো। যদিও রাত বেড়েছে। কিন্তু বাহিরের ব্যস্ততা এখনো কমেনি। তাই ভয় পাওয়ারও কারণ নেই। সারিফার কাছে শুনেছে ছাদে আলোর ব্যবস্থা রয়েছে। তাই নওরি মাথায় চটজলদি ঘোমটা পরে ছাদে চলে গেলো। যাওয়ার পূর্বে দরজা ভালোভাবে ভিড়িয়ে দিতে ভুললো না। হতেও পারে, ফ্রিশা ফাঁকফোকর পেলেই বেরিয়ে যাবে।

ছাদের এক কোণায় দাঁড়িয়ে ইরা’দ যেই সিগারেট জ্বালালো ওমনি তাঁর পাশ থেকে কেউ একজন বলে ওঠে,
–“ছিহ!”

————————-
~চলবে, ইন-শা-আল্লাহ্।
রিচেক হয়নি। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ