#একটুখানি ভালোবাসা
#পর্ব_২০_২১
#লেখনীতে_মুগ্ধ_ইসলাম_স্পর্শ
বিদ্যুৎ চমকানোর সঙ্গে সঙ্গেই স্পর্শের মাথা নড়েচড়ে ওঠে। স্পর্শকে রেসপন্স করতে দেখে মিথিলা চমকে ওঠে। মিথিলা নিজের চোখ’কে বিশ্বাস করতে পারছে না যে স্পর্শ নড়েচড়ে উঠলো। এটা হয়তো মিথিলার ভ্রম। তাই সন্দেহ কাটানোর জন্য হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে মিথিলা তার চোখ দুটো ডলে আবার তাকায় স্পর্শের দিকে। কিন্তু না এটা মিথিলার ভ্রম নয়। সত্যিই স্পর্শ নিজের হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরেছে। মিথিলা এতটাই খুশি হয়েছে যে, নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চিৎকার করে সবাইকে ডাকতে লাগলো,
‘ মা বাবা, দাদু, আবীর ভাইয়া, মাধবীলতা আপু তোমরা সবাই দেখো ভাইয়ার জ্ঞান ফিরেছে।
মিথিলা এতটাই জোরে চিৎকার করেছে যে সবাই কান চেপে ধরেছে। সবাই তো এখানেই রয়েছে। তবুও উত্তেজনায় মিথিলা চিৎকার করে ফেলেছে।
সবাই স্পর্শের পাশে এসে দাঁড়িয়ে দেখে স্পর্শ মাথা চেপে ধরেছে। হয়তো তার মাথা ব্যথা করছে। স্পর্শ’কে দেখে সবার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। তবে আনন্দে কেঁদে ফেলে মাধবীলতা। নানু ভাই মাধবীলতার হাত মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
” কিরে পাগলী তুই কাঁদছিস কেনো? আজ তো খুশির দিন। আমাদের গুড্ডু আবারো সুস্থ হয়ে উঠবে। পুনরায় ফিরে আসবে সেই পুরনো দিনের গুড্ডু।
মাধবীলতা নানু ভাইকে জড়িয়ে ধরে মনের আনন্দে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে।
” নানু ভাই এটা কষ্টের কান্না নয়। এটা যে বড় আনন্দের কান্না। আজ কতগুলো বছর পর পুনরায় উনি আমাদের মাঝে সুস্থ হয়ে ফিরে আসছে। আজ আমার সবচেয়ে আনন্দের দিন। আমি বলে বুঝাতে পারবো না আমার কতটা খুশি লাগছে।
কারো কান্নার শব্দে স্পর্শ চোখ খুলে তাকায়। সর্বপ্রথম নানুকে দেখতে পায়। নানুর বুকে কেউ একজন কাঁদছে। তবে মুখটা দেখা যাচ্ছে না। আস্তে আস্তে সবার দিকে তাকায় স্পর্শ। সবার হাস্যজ্বল মুখগুলো ভেসে উঠছে স্পর্শের চোখের সামনে। সব পরিচিত মুখই তার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মাধবীলতা স্পর্শের দিকে ধুরে দাঁড়ালে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল স্পর্শ। স্পর্শের কেন জানি না মাধবীলতার মুখটা চিনতে বড় কষ্ট হচ্ছে। চোখ মুখ লেগে এসেছে, চোখের নিচে কালো দাগের আবরণ, শরীর পুরো শুকিয়ে গেছে। কেমন যেন অচেনা হয়ে গেছে মাধবীলতা। আজ চিরচেনা সেই প্রিয় মানুষটাকেই চিনতে বড্ড হিমশিম খাচ্ছে স্পর্শ। এতকিছুর পরেও স্পর্শ মাধবীলতা’কে চিনতে ভুল করল না। কিছুক্ষণ সবার দিকে তাকিয়ে আবীর এবং মাধবীলতা’কে দেখে রেগে যায় স্পর্শ। স্পর্শের মনে পড়ে যায় সেই পুরনো দিনের কথা গুলো।
স্পর্শ আবীর আর মাধবীলতার দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,
” তোমরা এখানে? এখানে কী করছো তোমরা?
আবীর এবং মাধবীলতা স্পর্শের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চুপ করে রইলো। নানু ভাই এগিয়ে এসে বলল,
” আসলে,,,
স্পর্শ তখনই নানুকে থামিয়ে দিল।
” আমি প্রশ্ন করেছি ওরা এখানে কী করছে? ওদের থাকতে কে দিয়েছে?
” তুই আগে কথা তো শুনবি?
” কিসের কথা শুনবো নানু? তুমি জানো ওরা আমার সাথে কী করেছে? এরাই আমাকে মেরেছিল।
” হ্যাঁ জানি সবকিছু। এরাই তোকে মারতে চেয়েছিল। কিন্তু এটা শুনবি না যে কে তোকে বাঁচিয়েছে?
স্পর্শ ভ্রুঁ কুঁচকে চাইলো নানুর দিকে।
” আবীরই তোকে বাঁচিয়েছে। ছেলেটা নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি বলেই তুই বেঁচে আছিস। ভুল তো মানুষেরই হয় তাই না গুড্ডু?
স্পর্শ আর কাউকে কিছু বলল না। কেননা তার মাথা যন্ত্রণা হচ্ছিল। নানা- নানু, মামা -মামিরা সবাই প্রাণভরে আদর করল স্পর্শ’কে। আবীর আর মাধবীলতা ঘরের এক কার্নিশে দাঁড়িয়ে আছে। আস্তে আস্তে সবাই যে যার ঘরে চলে যায়। আজ সবার মনে আনন্দের জোয়ার ভেসে এসেছে। তাদের বাড়ির প্রাণ যে আজ সুস্থ হয়েছে।
মিথিলা মেহের’কে নিয়ে স্পর্শের পাশে এসে বসে। মিথিলার কোলে বাচ্চা দেখে স্পর্শ জিজ্ঞেস করে,
” বাবু’টা কে মিথু?
” আমার মেয়ে ভাইয়া।
মিথিলার কথা শুনে স্পর্শ চোখ বড় বড় করে তাকায়।
” কী বলিস এতো তাড়াতাড়ি তোর বাবু হয়ে গেছে?
” তাড়াতাড়ি কোথায় হলো? বিয়ের তিন বছর পর বাবু হয়েছে।
” মানে?
” মানে হচ্ছে তুমি আজ পাঁচ বছর ধরে ঘুমিয়ে ছিলে।
মাধবীলতার দিকে চোখ ছোট করে তাকিয়ে অস্ফুট স্বরে বলল,
” ওহ।
স্পর্শ মেহের’কে কোলে নিয়ে আদর করল। তারপর মিথিলাও চলে যায়। শুধু রয়ে গেল আবীর আর মাধবীলতা।
” চলে যাও এখান থেকে! আমার খারাপ লাগছে। একা থাকতে দাও।
আবীর ভয় পেয়ে রয়েছে এখনো। কারণ সে জানে স্পর্শের রাগ কতটা গভীর। তাই সে চলে যায়। চলে যাওয়ার শব্দ পেয়ে স্পর্শ চোখ দুটো বন্ধ করে নিল। এদিকে মাধবীলতা পা টিপে টিপে স্পর্শের পাশে এসে হাত ধরে। হাতে কারো ছোঁয়া পেয়ে চোখ খুলে চাইলো স্পর্শ।
” তুমি এখনো যাওনি? বললাম না আমার খারাপ লাগছে। একা থাকতে দাও।
মাধবীলতা চুপ করে দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলতে শুরু করে।
” দেখো এসব ন্যাকা কান্না আমাকে দেখানোর কোনো প্রয়োজন নেই বুঝলে? তোমার মুখ দেখতেও আমার ইচ্ছে করছে না। আবারো বলছি চলে যাও।
মাধবীলতা স্পর্শের হাত শক্ত করে বলে,
” আমার একটা কথা শুনো প্লিজ!
হাত এক ঝটকায় ছাড়িয়ে নিয়ে চিৎকার করে বলে,
” এই তোকে বলেছি না চলে যেতে? সময় থাকতেই চলে যা। নাহয় ঘাড় ধরে বের করে দেবো ঘর থেকে।
মাধবীলতা স্পর্শের চিৎকারে ভয় পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে স্থান ত্যাগ করে।
শুয়ে পড়ে স্পর্শ। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে রাতের খাবার শেষ করে ঘুমিয়ে পড়ল। মাঝরাতে যখন বাড়ির সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তখন স্পর্শের ঘুম ভাঙে কারো কান্নার শব্দে।
আশেপাশে কাউকেই দেখতে পায় না স্পর্শ। হঠাৎ অনুভব করে কেউ তার পায়ের কাছে বসে কাঁদছে। আর চোখের পানিগুলো টুপটুপ করে স্পর্শের পায় পড়ছে। আবছা আলোয় ঠিকমতো দেখাও যাচ্ছে না কে পায়ে পড়ে রয়েছে।
” এই কে তুমি? আর এতো রাতে আমার ঘরে এসে পায়ে পড়ে কেনো কাঁদছো?
স্পর্শের কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই সে উঠে চলে গেল। পরদিন সকালে নাশতার টেবিলে স্পর্শ সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে,
” এই বাড়িতে কী নতুন কোনো ভূত পা পেত্নীর আবির্ভাব ঘটেছে?
স্পর্শের মুখে এমন অদ্ভুত কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে যায়।
” কেনো ভাইয়া। তোর হঠাৎ কেনো মনে হচ্ছে এই বাড়িতে ভূত পেত্নী আছে? কই আমাদের চোখে তো কোনদিন পড়ল না।
” কী জানি কেনো তোরা দেখিস না। তবে মাঝরাতে আত্মাটা আমার পায়ের কাছে বসে কাঁদে।
স্পর্শের কথা শুনে নানু মাধবীলতার দিকে তাকিয়ে মুখটিপে হাসছে।
” কী ব্যাপার নানুভাই তুমি হাসছো কেন? মাধবীলতা আড়চোখে নানুর দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
” কিছু না। এমনিতেই হাসছি।
সেদিন রাতে পুনরায় স্পর্শের ঘুম ভাঙে কারো কান্নার শব্দে। এবার আর সে ডাকল না। নিঃশব্দে উঠে খপ করে ধরে ফেলে বিছানায় ফেলে দিয়ে তার উপর উঠে বসে স্পর্শ। মানুষটি ছাড়া পাওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টায় রয়েছে। কিন্তু একটা মেয়ে কী আর একটা ছেলের শক্তির সঙ্গে পেড়ে ওঠে? একসময় স্পর্শ তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে।
” আজ তোমাকে ছাড়ছি না ভূত মশাই।
আশ্চর্যের ব্যাপার হলো স্পর্শ জড়িয়ে ধরতেই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিটি শান্ত হয়ে যায়।
স্পর্শ লাইট জ্বালিয়ে মাধবীলতা’কে দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয়।
” তুমি এখানে? তারমানে তুমিই কাল এবং আজ কাঁদছিলে। কেনো? এসবের মানে কী?
সঙ্গে সঙ্গে মাধবীলতা স্পর্শের পায়ে পড়ে।
” আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি না বুঝে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি।
স্পর্শ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,
” যাকে নিজের বুকের গভীরে জায়গা দিয়েছিলাম আজ সেই পায়ে ধরে কাঁদছে। হাহ। এতো রাতে তুমি এখানে দেখলে বাড়ির লোক খারাপ ভাববে। চলে যাও।
” না৷ দয়া করে আমার একটা কথা শুনো। তোমার দু’টো পায়ে ধরে বলছি।
মাধবীলতার আর্তনাদ দেখে স্পর্শ কিছুটা শান্ত হয়। পা থেকে তুলে সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়।
” আচ্ছা বলো কী বলতে চাও।
” তুমি যেমনটা ভাবছো তেমনটা কিন্তু মোটেও নয়। তুমি হয়তো ভাবছো আমি প্রেমিকের জন্য এরকমটা করেছি। একদমই নয়। আমি জানতাম না ওর বাবা তোমার পুরো পরিবারকে মেরেছিল। আমি তো তোমার কাছে হাজারবার জানতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছি। তুমি বলতেই চাওনি কখনো। রোহান বারবার তুমি তার মা বাবাকে মেরে ফেলেছ বলে আমার মনে বিষ ঢুকিয়ে দেয়। আর ওর মা’ই ছিল আমার খালামনি। আমার মায়ের একমাত্র ছোট বোন। যখন রোহান বলল তুমিই তাকে মেরেছ তখন আমার খালার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার ছিল। তাই তোমাকে,,,,,! কিন্তু পরে যখন জানতে পারি যে রোহান নিজে সম্পত্তির জন্য আমার খালামনিকে মেরে ফেলেছে তখন সব ভুল ধারণা ভেঙে যায়। আর তারপর,,,?
” তারপর কী?
মাধবীলতা স্পর্শের চোখ থেকে চোখ নামিয়ে নিচে তাকিয়ে অস্ফুট স্বরে বলল,
” তারপর আমি নিজ হাতে ওকে খুন করেছি।
” কী বললে শুনতে পাইনি।
মাধবীলতা একটু জোর দিয়ে বলে,
” তারপর আমি নিজ হাতে রোহানকে খুন করেছি।
স্পর্শ অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। কথাগুলো শুনে স্পর্শের রাগ অনেকটাই কমে যায়। তবে মনের কোনো এক কোণে অভিমানের দাগ টা রয়েই গেল।
” একটা প্রশ্ন করব মাধবীলতা?
স্পর্শের মুখে নিজের নাম শুনে অবাক হয়ে যায় মাধবীলতা। চোখের কোণে অজান্তেই পানি চলে আসে। কেননা স্পর্শ সবসময় তাকে মায়াবতী বলেই ডাকত। ভাঙা কণ্ঠে বলল,
” হ্যাঁ বলো।
” তুমি তো নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছ। তারপর যদি আমি সত্যিই মরে যেতাম।
মাধবীলতা নিচে তাকিয়ে নীরবে চোখের পানি ফেলছে।
” কী হলো বলো?
মাধবীলতা শীতল কণ্ঠে বলল,
” তোমার সাথে যেটা করেছি সেটাই করতাম।
” কী করতে?
” আমিও মরে যেতাম। অনেকবার চেষ্টাও করেছিলাম। সফল হয়ে ওঠা হয়নি।
স্পর্শ সঙ্গে সঙ্গে সজোরে একটা থাপ্পড় মেরে বসে মাধবীলতার গালে। মাধবীলতা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে স্পর্শকে জড়িয়ে ধরে।
” ঘরে চলে যাও।
” তার আগে বলো ক্ষমা করে দিয়েছ?
” ঠিক আছে ক্ষমা করে দিয়েছি। এখন ঘরে চলে যাও।
মাধবীলতা খুশিমনে ঘরে ফিরল।
পরদিন সকালে নাশতার টেবিলেই নানু বলেন,
” আমি আর একমুহূর্তের জন্যেও অপেক্ষা করতে চাই না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গুড্ডুর বিয়েটা সেরে ফেলতে চাই না। মাধবীলতা তুই আজই তোর মা বাবাকে ডেনে নে।
” আশ্চর্য তো? আমার বিয়ে অথচ আমারই মত নিচ্ছ না তোমরা? এতো তাড়াহুড়োর কী রয়েছে? আর তাছাড়াও আমি এই বিয়ে করতে পারবো না।
” কেনো তুই এই বিয়ে করতে পারবি না।
” আমি মাধবীলতা’কে বিয়ে করতে পারবো না। অন্য কেউ হলে ভেবে দেখবো।
কথাটি বলেই স্থান ত্যাগ করলাম। আর মাধবীলতা সবার সামনেই নীরবে চোখের পানি ফেলতে লাগলো।
চলবে ইনশাআল্লাহ,,,
#একটুখানি_ভালোবাসা
#পর্ব_২১
#লেখনীতে_মুগ্ধ_ইসলাম_স্পর্শ
অবশেষে স্পর্শ আর মাধবীলতার বিয়ে’টা হয়েই গেল। স্পর্শের এই বিয়েতে একদমই মত ছিল না। নানু দিব্যি দিয়ে দিলেন।
সেদিন রাতে স্পর্শ ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে একমনে তার অতীতের ভাবনায় মগ্ন ছিল। হঠাৎই কারো পায়ের শব্দে পিছু ফিরে তাকায় স্পর্শ। আবারো আকাশের দিকে তাকায় স্পর্শ। নানু ভাই পাশে এসে দাঁড়িয়ে স্পর্শের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মেঘলা’কাশ দেখায় মন দিল। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
” তোর অমতে বিয়ে ঠিক করার জন্য আমার উপর রাগ করেছিস তাই না রে গুড্ডু?
স্পর্শ একবার নানুর দিকে তাকিয়ে আবারো মুখ ফিরিয়ে নেয়। ঠোঁট বাঁকা করে হেঁসে বলে,
” রাগ করব কেনো? রাগ করার মতো কী কোনো কাজ করেছ তুমি?
নানু স্পর্শ’কে ধরে নিজের মুখোমুখি হয়ে দাঁড় করালেন৷
” গুড্ডু সোনা! মনের ভিতর নিজের মনমতো গল্প সাজিয়ে কাউকে ভুল বুঝা’ টা নিশ্চয়ই কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
” দেখো সে ভুল করে তারপর এসে ভালোবাসা দেখাচ্ছে। এসব কী আমি বুঝি না নাকি? সব নাটক করছে সে। মানুষ’কে কীভাবে বোকা বানানো যায় এটা সে খুব ভালোমতোই জানে।
” পুরো কথাটা তো শুনবি একবার। অপরাধ করে ভুল বুঝা সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু তুই যে এই পাঁচটা বছর ধরে বিছানায় অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছিলি। তখন আমাদের সবার থেকে বেশি দেখাশোনা মাধবীলতাই করেছে। আমরা রাত হলে তোকে রেখে ঘুমাতাম। কিন্তু বেচারি প্রতিটি রাত তোর পায়ের কাছে বসে কেঁদেছে। এমন কোনো রাত বাদ যায়নি যে, সে গভীর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে তোর সুস্থতা কামনা করেনি। হ্যাঁ আমি এটা মানছি যে সে অনেক বড় একটা অপরাধ করেছে। তাহলে তো আমি বলব অপরাধ তুইও করেছিস।
” নানু?
” একদম আমার সাথে চিৎকার করে কথা বলবি না বলে দিচ্ছি।
” আচ্ছা চিৎকার করলাম না। কিন্তু তুমি খুব ভালো করেই জানো আমি কোনো কারণ ছাড়া অপরাধ করি না।
” সেও তো কোনো কারণ ছাড়া এমনটা করেনি। তার কাছেও কারণ ছিল। কিন্তু যখন সে তার ভুল ধারণা থেকে বেড়িয়ে আসে তখন এক নয়, দুই নয়, পাঁচ পাঁচটি বছর কেঁদেকুটে কাটিয়েছে! তাকে আমি হাজারবার বলেছি আমার গুড্ডু হয়তো কখনো সুস্থও হবে না। তুই বরং বিয়ে করে নে। তোরও তো জীবন রয়েছে। কিন্তু সে আমাকে পরিষ্কার জানিয়ে দেয় তোকে ছাড়া সে অন্য কোথাও বিয়ে করবে না। তোর এতো অবহেলার পরও সে তোর পায়ে পড়ে থাকতে চায়। তুই তো অনেক বুদ্ধিমান গুড্ডু। মানুষকে তার প্রায়শ্চিত্তের জন্য তো একবার হলেও সুযোগ দিতে হয়। আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি যে তোকে এই সাধারণ কথাগুলো বলে বোঝাতে হচ্ছে।
নানু এবার স্পর্শের গালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। কপালে আদর করে দিচ্ছে।
” গুড্ডু সোনা আর রাগ করে থাকে না। তুই আজ হয়তো রাগ করে আছিস। কিছুদিন পর ঠিকি রাগ ভেঙে মাধবীলতার ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে যাবি। কিন্তু ততদিন যদি আমি বেঁচে না থাকি তখন কী করবি? আমি বেঁচে থাকাতে অন্তত আমার শেষ ইচ্ছেটা পূরণ কর। নাহলে মরেও যে শান্তি পাবো না। আমি চাই তুই আর মাধবীলতাকে একসঙ্গে দেখতে, হাসিখুশি দেখতে, তোদেরকে আমি সুখী দেখতে চাই। বল আমার শেষ ইচ্ছেটা পূরণ করবি।
” দেখো নানু,,,
” তোকে আমার কসম।
বলেই নানু ভাই কাঁদতে শুরু করল। স্পর্শের বুঝতে বাকি রইলো না নানু তাকে পটানোর জন্য মিছেমিছি কাঁদছে। স্পর্শ আর উপায়ন্তর না পেয়ে বলল,
” আচ্ছা ঠিক আছে আমি রাজি। এসব কান্নাকাটি ছাড়ো।
” এইতো আমার লক্ষী’সোনা।
নানু স্পর্শের গালে চুমু দিয়ে চলে যায়।
এভাবেই নানু স্পর্শকে রাজি করায়।
বাসর ঘরে মাধবীলতা বসে স্পর্শের জন্য অপেক্ষা করছে। ভাবছে আজ স্পর্শ সকল রাগ, অভিমান ঝেড়ে ফেলে তাকে আপন করে নেবে। আজ মাধবীলতা স্পর্শের আদলে নিজেকে হারিয়ে ফেলবে। ভাবতেও মাধবীলতার গা শিউরে উঠছে। হঠাৎ ঘরের দরজা খোলার শব্দে পেয়ে দরজার দিকে চায় মাধবীলতা। স্পর্শ এসেছে। স্পর্শকে দেখে মিষ্টি সালাম দিল। স্পর্শ সালামের জবাব দিয়েই জিজ্ঞেস করে,
” তোমাকে আমার একটা কথা জিজ্ঞেস করার ছিল।
” হ্যাঁ বলো।
” আচ্ছা তুমি তো রোহানকে ভালোবাসতে? আমাকে তো বলেছিলে আমাকে কখনো ভালোই বাসোনি। তাহলে এতো বছর এখানে কেনো ছিলে?
” সেসব তো বলেছি শুধুই তোমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য। আর আমি তো তার কথার জন্য এসব করিনি মুলত। সবচেয়ে বড় কারণ ছিল আমার খালামনি। রোহান শুধু উস্কে দেয় আমায়৷ তোমার সাথে অভিনয় করতে করতেই ভালোবেসে ফেলেছি আমি। তোমার সাথে যদি কোনো পাথরও মিশে যায় তাহলে সেই পাথরও বাধ্য হবে তোমায় ভালোবাসতে।
” তেল একটু কম করে দেওয়ার চেষ্টা করো কেমন?
মাধবীলতা সঙ্গে সঙ্গে এসে স্পর্শের কলার ধরে নিজের মুখটা একদম স্পর্শের মুখের কাছে নিয়ে আসে।
” এতে তেলের কী হলো হ্যাঁ? আমি কখনোই রোহানকে ভালোবাসিনি। ভালো শুধু তোমাকেই বেসেছি।
স্পর্শ একবার নিজের কলারের দিকে তাকায় তো আবার মাধবীলতার মুখপানে।
” তোমার মনে হচ্ছে না যে, ইদানিং তোমার সাহসটা একটু বেশিই বেড়েছে?
মাধবীলতা কোনো কথা না বলেই স্পর্শের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।
মাধবীলতা এতো দ্রুত এমন কাণ্ড ঘটিয়ে বসবে স্পর্শ আন্দাজই করতে পারেনি।
স্পর্শ ধাক্কা দিয়ে মাধবীলতা’কে বিছানায় ফেলে দেয়। মাধবীলতা ঠোঁট বাঁকা করে হাসছে। ভাব টা এমন! মনে হয় মাধবীলতা ছেলে আর স্পর্শ মেয়ে। মাধবীলতা জোর করে স্পর্শকে কাছে টানছে আর স্পর্শ আলাদা করে দিচ্ছে🤣🤣।
মাধবীলতা বারবার স্পর্শের কাছে আসছে দুষ্টুমি করার জন্য। এদিকে স্পর্শ বারবার মাধবীলতা’কে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। একসময় স্পর্শ বিরক্ত হয়ে মাধবীলতা’কে বিছানায় চেপে ধরে।
” বেশি বাড়াবাড়ি করলে এখানেই গলা টিপে মেরে ফেলবো বলে দিলাম।
” তাহলে অপেক্ষা করছ কেন? মেরে ফেলো আমাকে। তাহলেই তো তোমার জীবনের সব সমস্যা দূর হয়ে যায়।
স্পর্শ মাধবীলতা’কে ছেড়ে দিয়ে দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,
” তুমি আর পুরোনো দিনের কথা ভুলে গেলেও আমি ভুলে যাইনি। হ্যাঁ তোমাকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু আমার যে বিশ্বাসটা তুমি ভেঙ্গেছো! আমার মনে আর তোমার জন্য সেই পুরোনো অনুভুতটা নেই।
কথাগুলো বলেই স্পর্শ বিছানার একদিকে শুয়ে পড়ে আর মাধবীলতা আরেকদিকে।
মাধবীলতা মনে মনে ভাবছে, ” কোথায় ঝুম বৃষ্টির এই রাতে জামাইয়ের সঙ্গে একটা মিষ্টি রাত কাটাবো। তা না, উনি পড়ে রয়েছে পুরনো দিনের সেই কথা নিয়ে। এত সুন্দরী একটা বউকে কেউ এভাবে বাসর ঘরে দূরে ঠেলে রাখে? তুমি যতই দূরে ঠেলে দাও কাজ হবে না। শুধু একবার ঘুমিয়ে পড়ো তারপর দেখবে চান্দু আমার কাণ্ড।
মাধবীলতা বারবার স্পর্শের মুখের উপর হাত নাড়িয়ে দেখছে যে স্পর্শ ঘুমিয়েছে কিনা। স্পর্শ টের পেয়ে বলে,
” কী হচ্ছে এটা? এভাবে বিরক্ত কেনো করছো বারবার?
” না দেখছি যে ঘুমিয়েছ কি-না?
” বেশি বকবক না করে ঘুমিয়ে পড়ো।
” হুহ।
মাধবীলতা মুখ ভেংচি কেটে পাশ ঘুরে চোখ বন্ধ করে।
গভীর রাতে স্পর্শের দম যেন বন্ধ হয়ে আসছে। নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে কেউ কোনো গরম বস্তু দিয়ে মুখ চেপে ধরেছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘুম ভেঙে যায় স্পর্শের। মাধবীলতা স্পর্শের বুকের উপর বসে ঠোঁটে লাগাতার আদর দিয়ে যাচ্ছে। স্পর্শ হাত দিয়ে মাধবীলতাকে সরাতে যাবে কিন্তু হাত নাড়াতে পারছে না। মাধবীলতা স্পর্শের ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে মুখে হাত চেপে হাসছে। স্পর্শ চারিদিকে চোখ বুলিয়ে দেখলো তার হাত পা সবই বাঁধা রয়েছে।
” হোয়াদ্দা? এসব কী হচ্ছে? হাত পা কেনো বেঁধেছ এভাবে।
(কেউ আবার ভাববেন আমি ভুলভাল ইংলিশ মারি 😑)
মাধবীলতা এখনো মুখ টিপে টিপে হাসছে।
” আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি? এভাবে হাত-পা বেঁধে রাখার মানে কী?
মাধবীলতা স্পর্শের কথার জবাব না দিয়ে তার শরীরের দিকে ইশারা করলো। স্পর্শ মাধবীলতার কথা অনুযায়ী নিজের শরীরের দিকে তাকাতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল।
স্পর্শ আহাম্মকের মতো তাকিয়ে রয়েছে মাধবীলতার মুখপানে। মাধবীলতা একটা বিশ্বজয় করার মতো হাসি দিয়ে বলল,
” প্লিজ ওই বিখ্যাত ডায়লগ টা দাও যে, শয়তান তুই আমার মন পাবি কিন্তু দেহ পাবি না। সরি দেহ পাবি কিন্তু মন পাবি না। তাহলে ব্যাপারটার মাঝে একটা জোশ আসবে।
স্পর্শ নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছে মাধবীলতার দিকে। বাসর ঘরে এভাবে স্বামীর সঙ্গে,,,,,,!
স্পর্শ পারছে না দড়ি ছিঁড়ে ফেলে মাধবীলতার কানের নিচে বসিয়ে দিতে।
মাধবীলতা আবারো মজার ছলে বলল,
” যা হবার তা তো হয়েই গেছে। এখন আর কান্নাকাটি করে লাভ নেই! আমি তোমার দড়ির বাঁধন খুলে দিয়ে একটা কম্বল এনে দিচ্ছি। তুমি কম্বলটা তোমার গায়ে পেঁচিয়ে খাটের এক কোণে বসে কান্না করো।
” সেটাই। বাঁধনটা খুলে দাও তারপর দেখাচ্ছি কিভাবে কান্না করতে হয়।
মাধবীলতার মনে ভয় থাকা স্বত্বেও সে দুষ্টুমি করেই চলেছে।
” নাহ থাক। আজ আর বাঁধন খুলে কাজ নেই। এভাবে থাকো সারারাত। এটা আমাকে দূরে ঠেলে দেওয়ার শাস্তি।
স্পর্শ কিছু বলল না। শুধু সময়ের অপেক্ষায় রইল। মাধবীলতা ওভাবেই স্পর্শের বুকে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে হাত-পায়ের বাঁধন খোলা। সে সঙ্গে সঙ্গে ঘরের বাইরে গিয়ে মাধবীলতাকে খুঁজতে শুরু করে। নানুকে ড্রয়িং রুমে দেখে বলল,
” নানু মাধবীলতা কোথায়?
নানু চোখের চশমা টা নাকের ডগায় নামিয়ে মাথা নিচু করে চোখ উপরে তুলে তাকায়।
” কেনো রে? সকাল সকাল বউকে মিস করছিস বুঝি?
” এসব কিছুই না। আগে বলো সে কোথায়?
” বাড়ির সকলে মিথিলার শ্বশুর বাড়ি গেছে।
” ওহ তারমানে শয়তান টা পালিয়ে গেছে।
বিরবির করে বলায় নানু ঠিকমতো শুনতে পায়নি।
” কিছু বললি?
” নাহ।
” আচ্ছা এতো সকালে ওকে কেনো খুঁজছিস বল তো? কিছু কী করেছে?
” কী আর করবে? আমাকে জোর করে একা,,,,,,!
” কী হলো থামলি কেনো? জোর করে একা তারপর?
” কিছু নাহ।
তড়িঘড়ি করে পিছু ফিরে ঘরে এলো। জিভে কামড় দিয়ে মনে মনে বলছে, ” ইশ এখনই মুখ ফসকে সব বেরিয়ে যাচ্ছিল। মানসম্মান সব ধুলোবালির সঙ্গে গড়াগড়ি খাচ্ছিল প্রায়। ফাজিল মেয়ে আমার সর্বনাশ করে এখন টইটই করে ঘুরতে গেছে। আসুক একবার, পইপই করে হিসাব নেব।
ফ্রেশ হয়ে স্পর্শ আবারো নানুর কাছে গেল।
” নানু নাশতা কই?
” টেবিলে রাখা আছে খেয়ে নে। আর হ্যাঁ দুপুরে মতো মিথিলার বাড়িতে দাওয়াত আছে। ভুলিস না যেন।
স্পর্শ দুপুরে নানুকে নিয়ে মিথিলার শ্বশুর বাড়ি চলে যায়।
স্পর্শকে দেখেই মাধবীলতা লুকিয়ে বেড়াচ্ছে সবার পিছু পিছু। স্পর্শ মোক্ষম সময়ের অপেক্ষায় রয়েছে। খাওয়ার সময় হলে সবাই খেতে বসে। স্পর্শের পাশেই মাধবীলতা বসেছে। খাওয়ার মাঝে হঠাৎ স্পর্শ মাধবীলতাকে বলে,
” এই নাও বউ হা করো তোমাকে এক লোকমা খাইয়ে দিই।
স্পর্শের কথা শুনে মাধবীলতার চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। মাধবীলতা নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। খুশিতে মন গদগদ হয়ে ওঠে। মুখ মেলতেই স্পর্শ টুপ করে মাধবীলতার মুখে পুরে দেয় খাবার। মহানন্দে খাবার চিবিয়ে গিলে ফেললো৷
মাধবীলতা অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো স্পর্শের দিকে। ঝালে মুখ লাল হয়ে যাচ্ছে। স্পর্শ মাধবীলতার মতোই ঠোঁট বাঁকা করে হাসছে। তারমানে এটা স্পর্শের কারসাজি।
হঠাৎই ঝালের চোটে মাধবীলতা লাফিয়ে ওঠে।
” পানি পানি পানি!
মাধবীলতার আচমকা এমন চিৎকারে সবাই ভয় পায়।
মিথিলা পানি এগিয়ে দিল। ঢকঢক করে দু’তিন গ্লাস পানি খেয়ে ফেলল।
” এতো ঝাল লাগল কীভাবে ভাবী?
স্পর্শ আগ বাড়িয়ে বলে,
” মনে হয় খাবারের সাথে মরিচ খেয়ে ফেলেছে।
” উফফ ভাবী একটু দেখে খাও।
মাধবীলতা মনে মনে ভাবছে, ” খাটাস, ফাজিল ছেলে। এভাবে আমাকে ঝাল খাইয়ে দিল। কতো সুন্দর করে বলল বউ হা করো আমি খাইয়ে দিই। কী মিষ্টি ডাক। তলে তলে এই ছিল তোমার মনে!
এদিকে স্পর্শ এখনো হাসছে। মাধবীলতাকে খাওয়ানোর আগে বাটি থেকে চুপ করে কয়েকটা মরিচ নিয়ে খাবারের ভিতর লুকিয়ে খাইয়ে দিয়েছে।
এভাবে কাটতে থাকলো সবার দিন।
আবীর সবসময় স্পর্শের দিকে অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকে।
একদিন আবীর রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে একমনে কিছু ভাবছে। হঠাৎ কাঁধে কেউ হাত রাখে। আবীর চমকে ওঠে। তাকিয়ে দেখে স্পর্শ।
” আবীর কেমন চলছে দিনকাল?
আবীর ভাবতেই পারছে না স্পর্শ সেধে তার সাথে কথা বলছে।
” এইতো স্যার ভালোই চলছে।
” হঠাৎ ভাইয়া থেকে স্যার ডাকছো যে?
” কী করব বলুন? কাছের মানুষকেই ভাই ডাকে সবাই। আমি তো এখন আর সেটা নেই। নিজের ভুলেই হারিয়ে ফেলেছি সেই অধিকার। কোন মুখে,,,,!
স্পর্শ আবীরকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
” যে মুখ দিয়ে আগে ভাইয়া ডাকতে আজও সেই মুখ দিয়েই ডাকবে। যাও ক্ষমা করে দিলাম। আর যেম অসহায়ের ছাপ মুখে না দেখি। আর তাছাড়াও সামান্য ছুরিই তো মেরেছ। এ আর এমন কী? ছুরির আঘাত আমাকে অন্তত মারতে অক্ষম। মারছে তো রোহান। মাথার ঘিলু সব উল্টায় ফেলছে৷ যদি কোনো কিছুর প্রয়োজন হয় তাহলে মুখ ফুটে একবার বলবে। আর কখনো বিশ্বাসটা ভেঙ্গো না।চলো হেঁটে আসি।
চলবে ইনশাআল্লাহ,,,