Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"আড়ালে অনুভবেআড়ালে অনুভবে পর্ব-২৮+২৯

আড়ালে অনুভবে পর্ব-২৮+২৯

#আড়ালে_অনুভবে
#সাদিয়া_আফরিন_প্রতিভা
#পর্বঃ২৮+২৯

রুকসানা:তোদের বিয়ের ডেট টা তাহলে আগামী শুক্রবার এই রাখা যাক।এমনিতেই আমাদের তেমন কোনো আত্মিয় সজন নেই বললেই চলে। তোদের এই সিদ্ধান্তে যে আমি কি খুশি হয়েছি তা বলে বোঝাতে পারবো না।

সানা:ইয়াহুউউউউউ,এবার ইশুপু আমার ভাবি হয়ে যাবে,ইয়েসসসসসসসস!

আগামী শুক্রবার এর কথা শুনেই ইশার বুকের মাঝে মোচর দিয়ে উঠলো কারণ সেদিন ই তো নিরব আর ওর বিবাহ বার্ষিকী।তবুও মন কে বুঝ দিলো ইশা।যেই বিয়েটাই আর নেই সেখানে বিবাহ বার্ষিকী আর কি করে আসবে।

নূহা এক কোণায় চুপ করে বসে আছে,ওর মুখে কোনো কথা নেই।উজ্জ্বল কে এতোদিনেও বোঝাতে পারলোনা যে সিনথিয়া এমন মেয়ে নয়, একটিবার সবটা খোজ নিয়ে দেখতে কিন্তু উজ্জ্বল কিছুই শোনেনি।
আর সেদিন ইশার অতীত সম্পর্কে অতটুকু শোনার পর থেকেই কেমন যেনো লাগছে ওর।এমন টা নয় যে ও ইশাকে পছন্দ করে না কিন্তু ওর মতে ভালোবাসা ছাড়া,দুটো মানুষের মনের মিল ছাড়া সংসার সুখের হয় না।
আর নূহা ভালো করে জানে উজ্জ্বল আজও সিনথিয়া কেই ভালোবাসে,ইশার মুখ দেখেও নূহার মনে হচ্ছে ও কারোর জন্য কষ্ট পাচ্ছে।
তবুও সকল চিন্তা বাদ দিয়ে একটা কথাই ভেবে যাচ্ছে,যা হবে যেনো ভালো হয়।

_______🌿
আজ ইশার মেহেন্দি অনুষ্ঠান।তাকে একটা স্কাই ব্লু কালার লেহেঙ্গা পড়ানো হয়েছে সঙ্গে চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া।খুব সামান্য মেকাপ এ অসাধারণ লাগছে ওকে।
হসপিটাল এর অনেক ডক্টর কেই ইনভাইট করা হয়েছে বিয়েতে।নিরব কেও ইনভাইট করা হয়েছে তবে ইশার ধারণা সে আসবেনা।
উজ্জ্বল নিজে থেকে গিয়ে সিনথিয়া কে ইনভাইট করেছে।সিনথিয়া শুধু একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো উজ্জ্বল এর দিকে,কিন্তু কিচ্ছুটি বলেনি।

ইশাকে মেহেন্দি পড়াচ্ছে দুজন মেয়ে।আর সে পাথর এর ন্যায় বসে আছে।নিরব এর থেকে তো সে কতোদিন আগেই আলাদা হয়ে গেছে তবে আজ কেনো মনে হচ্ছে একটু একটু করে সে নিরব এর থেকে দূড়ে সরে যাচ্ছে।এমনটাতো হওয়ার কথা নয়।বিয়েতে তো সে নিজের ইচ্ছেতেই মত দিয়েছিলো।

অন্যদিকে,,
সিনথিয়া মাত্র গেইট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো। এই বাড়িতে সে আগেও এসেছে।তখন এসেছিলো উজ্জ্বল এর হাত ধরে আর আজ আসছে তার ই বিয়েতে।
বাগানের পাশে দিকে যেতেই পিছন থেকে নূহা তাকে দেখে ডাক দিলো,

নূহা:সিনথিয়া…

নূহার গলা শুনে সিনথিয়ার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।কিন্তু পিছনে ঘুড়তেই অবাক হয়ে গেলো সে।নূহাকে এভাবে হুইল চেয়ার এ বসে থাকতে দেখে অবাক হয়ে গেলো সে।দৌড়ে গেলো নূহার কাছে।

সিনথিয়া:আপু..কেমন আছো তুমি?

নূহা:কোথায় ছিলিস তুই?আর এখানে কি করে এলি?(চোখ ছোটছোট করে জিজ্ঞেস করে)

সিনথিয়া:তোমার ভাই ইনভাইট করেছে যে। আসতে তো হবেই।

নূহা:ভাই তোকে ইনভাইট করেছে?তার মানে ভাই এর সঙ্গে তোর দেখা হয়েছে?কই ভাই তো আমায় কিছু বললো না।

সিনথিয়া:(মনে হাজারো কষ্ট চেপে রেখে রহস্যজনক হাসি দিলো)

নূহা:বোন আমার প্লিজ সত্যি টা বল।তুই কোথায় ছিলিস এতোদিন!

সিনথিয়া:কোমায়

নূহা:কিহ!

সিনথিয়া:(সবটা খুলে বললো নূহা কে)

নূহা:এটা কি করলো ভাই!আমি ওকে বারবার বলেছিলাম।এটা ঠিক হচ্ছে না সিনথিয়া।আমি এখনি ওকে গিয়ে সবটা বলছি।

সিনথিয়া:তোমাকে আমার কসম আপু কিচ্ছু বলবেনা ওকে।

নূহা:সিনথিয়া…!

সিনথিয়া:একটা কথা বলতো আপু,যেই মানুষটার আমার প্রতি সামান্যতম বিশ্বাস নেই আমি তাকে কেনো আটকে রাখবো? বিশ্বাস ছাড়া কিন্তু ভালোবাসা হয় না আপু।তাই আমি চাই না উজ্জ্বল কিছু জানুক।ও যেমনভাবে আমায় ভুল বুজেছে তেমন ই থাকুক।

নূহা:কিন্তু..

সিনথিয়া:প্লিজ আপু..এই একটা রিকুএস্ট রাখো আমার।
,,
“আপু আপনার হাজবেন্ড এর নামের প্রথম অক্ষর কি?”

ইশা:হ্যা?

মেয়েটি:আপনার হবু স্বামীর নামের প্রথম অক্ষর টা বলুন আপু।মেহেন্দির মাঝে লিখে দেই।

ইশা:ন নাহ,কিছু লিখতে হবেনা।

মেয়েটি:কেনো আপু?

ইশা:বললাম তো লিখতে হবেনা কিছু।

মেয়েটি:ঠিক আছে।

ইশা এবার চোখ সরিয়ে সামনের দিকে তাকাতেই চোখ আটকে গেলো ওর।
কারণ কিছুটা দুরত্বে সয়ং নিরব দাঁড়িয়ে আছে এবং এক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।দৃষ্টি সরিয়ে নেয় ইশা।

কিছুক্ষন পর গান বাজানো শুরু হয়।দু তিন টে পারফরমেন্স এর পর কয়েকজন কলিগ নিরব কে গান গাওয়ার জন্য ফোর্স করতে থাকে,তারা জানে নিরব খুব ভালো গান গায়।অনেকেই একসঙ্গে ডাক্তারি পাশ করেছে তাই।নিরব এবার মুচকি হেসে স্টেজ এ উঠে যায়।গিটার হাতে নিয়ে ইশার দিকে তাকিয়ে গাইতে শুরু করে।

Tum mere ho, iss pal mere ho
Kal shayad yeh alam na rahe

Kuch aisa ho, tum tum na raho
Kuch aisa ho, hum hum na rahe

Yeh raaste alag ho jayein
Chalte chalte hum kho jayein…

Main phir bhi tumko chahunga
Main phir bhi tumko chahunga
Main phir bhi tumko chahunga
Main phir bhi tumko chahunga…

Iss chahat main mar jaunga
Main phir bhi tumko chahunga…

Meri jaan main, har khamoshi main
Tere pyar ke naagme gaungaa..

Hmmmmm….

Main phir bhi tumko chahunga
Main phir bhi tumko chahunga…

Iss chahat main mar jaunga
Main phir bhi tumko chahunga…

Aise jaruri ho mujhko tum
Jaise hawaen saanson ko..

Aise talaash houn main tumko
Jaise ke pair zaminon ko..

Hasna yaaron na ho mujhse
Pagal sa dhudun main tumhe…

Kal mujhse mohabbat ho na ho
Kal mujhko ijazat ho na ho

Tutte dil ke tukde lekar
Tere dar pe hi reh jaunga…
______

Lakin jab yaad karoge tum
Main banke hawa ajaunga…

Ooooo…

Main phir bhi tumko chahunga
Main phir bhi tumko chahunga…

Iss chahat main mar jaunga
Main phir bhi tumko chahunga…

নিরব এবার স্টেজ থেকে নেমে যায়।একবার ইশার দিকে তাকিয়ে কিছুটা আড়ালে গিয়ে মাথা চেপে ধরে।নাহ,আর থাকতে পারবে না এখানে। তার জন্য এই অনুষ্ঠান এ কোনো ব্যাঘাত ঘটুক সেটা চায়না।
আড়াল থেকে বেড়িয়ে যেই না গাড়ির দিকে যাবে তখনি পিছন থেকে ইশা ডেকে ওঠে—

ইশা:চলে যাচ্ছেন কেনো?ভালো লাগছে না আমায় সুখি দেখতে?কষ্ট হচ্ছে খুব?তবে আপনার তো কষ্ট হওয়ার কথা নয় নিরব।

নিরব পিছন ফিরে করুন দৃষ্টিতে তাকায় দিকে।

নিরব:তোমায় সুখি দেখলে আমার কষ্ট হবে দিয়াপাখি? (ছলোছলো নয়নে বললো)

ইশা:হাসালেন নিরব।আমায় সুখি দেখলে তো আপনার কষ্ট হওয়া স্বাভাবিক।আপনি তো চেয়েছিলেন আমায় কষ্টে দেখতে।আমি খুব কষ্টে থাকি সেটাই তো চেয়েছিলেন আপনি।

মাথায় ব্যাথা আরো তীব্র হতে থাকে নিরবের।একসময় টাল সামলাতে না পেরে পরে যেতে নিলে গাড়িতে ভর করে নিজেকে সামলে নেয়।

ইশা:ক কই হয়েছে আপনার?ঠিক আছেন নিরব?

নিরব:আম ফাইন দি..স সরি আমি ঠিক আছি ইশা।আপনি জান,ওরা খুজবে আপনাকে।
কথাটা বলেই গাড়ির দড়জা খুলে উঠে পরে।কিছুক্ষন পর ই গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চলে যায় সেখান থেকে।ইশা কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারলো না।

ইশা:(মনে মনে বললো)রাগে,ক্ষোভে তো ভুলেই গেছিলাম ও অসুস্থ।নাহ,এভাবে বলাটা ঠিক হয়নি আমার।আচ্ছা ও আবার অসুস্থ হয়ে পড়লো না তো!

ঠিক তখনি সানা এসে ইশা কে ভিতরে নিয়ে যায়।

__________🌿
সিনথিয়া:আপু… (ছলোছলো চোখে কথাটা বলে)

ডাকটা শুনে কনে সেজে বসে থাকা ইশা পিছন ফিরে তাকায়।পাশে সানাও ছিলো।

সানা:সিনথিয়া আপু তুমি!

সিনথিয়া:কথা বলছিস না কেনো আপু?

ইশা:ক কে আপু?আ আমি চিনিনা তোমায়।

সিনথিয়া:তুই আমায় চিনিসনা আপু?আমি তোর বোন।আর নাটক করিসনা।সবটা জেনে গেছি আমি।

ইশা:কি জেনেছিস তুই?আর যদি জেনেও থাকিস তাতেও আমার কোনো যায় আসেনা।কেনো এসেছিস আমার কাছে?আর কিসের বোন?নিজের বোনের সংসার ভাঙার সময় মনে ছিলোনা এই কথা? (বেশ চেচিয়ে বলে কথাটা)

ইশার কথা শুনে নূহা,রুকসানা এবং উজ্জ্বল সেখানে উপস্থিত হয়।

সিনথিয়া:আপু তুই কিচ্ছু জানিসনা!

উজ্জ্বল:আর কি জানার বাকি আছে প্রথা?

সিনথিয়া:উজ্জ্বল আমি তোমার সঙ্গে কথা বলছিনা।আর আপু আজ তোকে সবটা জানতে হবে।

ইশা:আমি কিছু জানতে চাই না।

সিনথিয়া:আপু তুই কি জানিস চাচ্চু বেচে আছে কি না?

ইশা:(বিষ্ফরিত দৃষ্টিতে তাকায়)এসব কি বলছিস তুই!

সিনথিয়া:হ্যা আপু,চাচ্চু বেচে আছে।বেচে আছে চাচ্চু।কার জন্য জানিস?নিরব ভাইয়ার জন্য।হ্যা আপু,নিরব ভাইয়ার জন্য চাচ্চু আজ বেচে আছে।তুই জানতে চাইছিলিস না?আমি কেনো তখন ভুলে গেছিলাম তুই আমার আপু?আমি কিচ্ছু ভুলিনি আপু।

উজ্জ্বল:তুমি কি বলছো টা কি এসব?

সিনথিয়া:বলছি,সবটা বলছি।
পাচ বছর আগে,
সবকিছু ঠিক ছিলো তখন।কিন্তু হঠাত করে একদিন নিরব ভাইয়ার ফোনে একটা মেসেজ আসে।যেখানে আপুর ব্যাপারে অনেক আজাবাজে কথা লেখা ছিলো,ভাইয়া খুব রেগে গিয়েছিলো।ঐ মেসেজ যে দিয়েছে তার খোজ করার অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু তার কোনো খোজ ই পাওয়া যায় নি।কিছুদিন পর ভাইয়া সবটা ভুলেও যায়।কিন্তু আবারো একদিন হঠাত করে হোয়াটস এপ এ একজন মেসেজ দেয় সাথে একটা ভিডিও।আর সেই ভিডিও টা দেখেই আতকে ওঠে ভাইয়া।কারণ সেই ভিডিও টা ছিলো চাচ্চুর,খুব বাজেভাবে আঘাতের চিহ্ন শরীরে।আর মেসেজটাতে লেখা ছিলো যদি ওনাকে বাঁচাতে চায় তাহলে আপুকে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে।
সঙ্গে সঙ্গে আইডিটা ডিয়েক্টিভেট হয়ে যায়।আর খুজে পাওয়া যায় না।অনেক চেষ্টা করেও হ্যাক করানো যায়নি।আর তখন আমি আপুর রুমে বসে আপউ আর ভাইয়ার সঙ্গে গল্প করছিলাম।
ভাইয়া ওয়াশরুম এ যায়ার আপু কিচেন এ।ঠিক সেই সময় মেসেজ টা আসে।আমিও আগ্রহ নিয়ে দেখে ফেলি মেসেজ টা।তখনি ভাইয়া বেড়িয়ে আসে।ভাইয়া কে সেটা দেখানোর পর সেও বিষ্মিত হয়ে যায়।আর মেসেজ এর সঙ্গে আরো বলা ছিলো আপু যদি এই বিষয়ে কিছু জানতে পারে তাহলে ওরা আপুকে.. ভাইয়া অনেকটা ভয় পেয়ে যায়,তাই আপুকে কিচ্ছু জানায়নি।নানান ভাবে খোজ নেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু কোনো লাভ হয় নি।ধীরেধীরে ওরা আরো মেসেজ পাঠাতে থাকে।আর তা পরে স্পষ্ট বোঝা যায় যে ওরা বা সে এটাও চায় যেনো আপু যেনো ভাইয়াকে ঘৃণা করে।আবারো একটা ভিডিও তে চাচ্চুর খুব খারাপ অবস্থা দেখে আমি আর ভাইয়া এই অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নেই।আর এটা জানতাম যে বা যারা এই মেসেজগুলো পাঠায় তারা রেগুলার আমাদের উপর নজর রাখে।আমাদের উদ্দেশ্য সফল ও হয়।তারা বা সে ধীরেধীরে ভাইয়াকে বিশ্বাস করতে শুরু করে।ভাইয়াও বিভিন্ন মাধ্যমে ওদের প্লান কিছুটা ধরতে পারে।
জানিস আপু,সেদিন রাতে যখন তুই দড়জা খোলার পর ভাইয়া তোকে সরিয়ে দিয়ে ভিতরে ঢুকে যায়।তারপর ও নিজের রুমে গিয়ে সেই হাতে বাজেভাবে আঘাত করছিলো।আমি সেখানে গিয়ে কোনোভাবে আটকাই ভাইয়া কে।ভাইয়া তখন খুব কাঁদছিলো জানিস তো?ছেলেরা নাকি সহজে কাদে না,আর কাদলেও আড়ালে।কিন্তু সেদিন বুঝে গেছিলাম ভাইয়া তোকে কতটা ভালোবাসে। ভাইয়া তখন আমায় জড়িয়ে ধরে বলছিলো,
“আর পারছিনা বোন,আমার দিয়াপাখিকে আর কষ্ট দিতে পারছিনা।” আমি কোনোরকম ভাইয়া কে সামলে হাতে ব্যান্ডেজ করে দেই।তুই হয়তো খেয়াল করিসনি তাই না? সেই সময় তুই দেখে ফেলিস।আমি আর ভাইয়া দুজনেই খেয়াল করেছিলাম সেটা।ভাইয়া তখন ঠিক প্লান করে তোর সাথে কিছুটা খারাপ ব্যাবহার করবে যার ফলে তুই রেগে গিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাবি। যেহেতু ওরা তোকে ফলো করে তাই এই সুযোগ টা অবশ্যই হাতছারা করবে না।আর সেটাই আমরা কাজে লাগাবো।কিন্তু সেটাও সম্ভব হলো না। তোর চোখের জল দেখে ভাইয়া যা ভেবেছিলো তার কিছুই বলতে পারলোনা তোকে।পরবর্তিতে ভাইয়া সিদ্ধান্ত নেয়,তোকে সবটা জানিয়ে দেবে।কিন্তু সেটাও সম্ভব হলো না।পরেরদিন সকালে (বাকিটা সবাই জানেন।এখন বলি ভিডিও আর মেসেজ টা কি ছিলো,ভিডিও তে ফাহাদ কে কারেন্ট এর শক দেওয়া হচ্ছিলো এবং মাথায় বন্দুক ঠেকানো ছিলো।আর মেসেজ এ আরো বড় হুমকি,প্রভাকে আজকের মধ্যেই ডিভোর্স দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিতে হবে।ওরা যেমনটা বলেছে তেমনটাই করতে হবে।প্রভাকে মিথ্যে পরকিয়ার দায় দিয়ে বাড়ি থেকে বের করতে হবে।) তুই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পর ই আমি তোকে ফলো করতে শুরু করি।ভাইয়ার ও যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু ও ভাগ্যক্রমে তখন ই খবর পায় আইডিটা হ্যাক করা গেছে,যার ফলে আমি একাই যাই।
(বাকিটাও সবাই জানেন।সিনথিয়া সবটা বলে প্রভা কে)

ইশা:নিশ্চুপ(চোখ থেকে অনবরত জল গড়িয়ে পরছে তার)

সিনথিয়া:আমি জানতাম না আপু যে এটা তুই।আজ যখন ভাইয়া নিজের রুমে তোর ছবির দিকে তাকিয়ে বলছিল তখন বুঝতে পারি।জানিস আপু, ভাইয়া সেদিন ই চাচ্চু কে খুজে বের করে।আর জানতে পারে এসবের পিছনে রয়েছে আশরাফ এর পরিবার।তারাই সম্পত্তির লোভে বিদেশ থেকে চাচ্চু কে কিডন্যাপ করায়।আর প্লেন ক্রাশ করায় ওদের কাজ আরো সোজা হয়ে যায়। চাচ্চুর সব সম্পত্তি তোর নামে তাই ওরা তোকে চেয়েছিলো।কাকিমনি ও ওদের সাহায্য করে সব কাজে,চাচ্চু কে ফিরে পাওয়ার লোভে।কিন্তু বাকিটা আর জানা যায় নি।
জানিস আপু,তোর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে নাকি ভাইয়া কেমন হয়ে গেছিলো।তোর মৃত্যুর জন্য নিজেকে দায়ি করতো সব সময়। আমি তখন কোমায় থাকায় কিছুই জানিনা, ভাবির থেকে শুনেছি মাত্র।

ইশা:এখনো চুপ করে আছে।

সিনথিয়া:আমি উজ্জল কে ছাড়া বাচতে পারবো আপু,তাই তখন ওকে বাধা দেই নি আমি।কিন্তু ভাইয়া তোকে ছাড়া বাচতে পারবে না রে।আমি তোর কাছে আমার ভাই এর সমতূল্য একজন মানুষের জীবন ভিক্ষ্যে চাইছি আপু।ভাইয়া কখনো তোকে সবটা বলতোনা কারণ সে মেনেই নিয়েছে সে কদিনের অতিথি মাত্র।কিন্তু আমি জানি আপু,তুই সুস্থ করে তুলতে পারবি ভাইয়া কে।

নূহা এবার বলে ওঠে,
নূহা:যাহ ইশা,একজন নিরপরাধি কে এভাবে শাস্তি দিস না।

ইশা এবার উজ্জ্বল এর দিকে তাকায়।উজ্জ্বল ও এবার মাথা নাড়িয়ে হ্যা সম্মতি দেয়।
উজ্জ্বল সিনথিয়ার দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারছে না,ভাবতে পারছে না সে কিকরে ওকে এভাবে অবিশ্বাস করতে পারলো।
উজ্জ্বল এর হ্যা সূচক অনুমতি পাওয়া মাত্রই প্রভা লেহেঙ্গা উঁচু করে ধরে ছুটে চলে যায় গাড়ির দিকে।
উজ্জ্বল যেতে চাইলে নূহা বাধা দিয়ে বলে,
উজ্জ্বল:যাসনা।আজ ওদের একা কথা বলতে দে। সব ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিতে দে।
_________🌿
জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে নিরব। চেষ্টা করেও পারেনি বিয়েতে যেতে।প্রভা আজ থেকে অন্য কারোর হয়ে যাবে ভাবতেই দম আটকে আসছে তার।
নিরব চোখ বন্ধ করে বলে উঠলো,

~~বলবনা ভালোবাসি,
কারণ আমি ভালোবাসা মানেই বুঝিনা

~~বলবনা অনেক বেশি ভালোবাসি,
কারণ আমি ভালোবাসার সম্মান দিতে জানিনা

~~বলবনা তোমায় পাশে চাই,
কারণ আমি তোমার যোগ্য নই

~~বলবনা আমার মনের মাঝে শুধু তোমার বসবাস,
কারণ আমার মনটাই তো পাথর হয়ে গেছে

~~বলবনা তোমায় ছাড়া বাঁচতে পারবো না,
কারণ আমি তো সেই কবেই বেঁচে থেকেও মরে গেছি

••বলবো শুধু একটা কথাই,
তবুও তুমি ভালো থেকো🥀

এতোকিছুর পর ও কি এক হতে পারবে নিরব আর তার দিয়াপাখি?নাকি আবারো কোনো ঝড় এসে ঘীরে ধরবে তাদের🙃

#চলবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ