Monday, October 6, 2025







আমার তুমি পর্ব-৩০+৩১

#আমার_তুমি
#পর্ব_৩০[অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ]
#জান্নাত_সুলতানা

-“আপনার মনে হয়নি আপনি আমাকে অবহেলা টা বেশি করেন?
আর আমি অনেক বার বলেছি স্টিভ এর সাথে আমার কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই। জাস্ট ফ,,,,

-“মিথ্যা বলা শেষ হয়েছে?
তবে আমি ওই দিন যা দেখেছি সেটা কি?”

-“আমি মিথ্যা বলছি না ওয়াজিদ।
কখনো কখনো চোখের দেখার মাঝেও ভুল হয়।”

কথা টা শেষ করেই রিধি ফোন টা কেটে দিলো।কি দরকার বার বার নিজে কে ছোট করার?
তারচেয়ে ঢেরবেশি ভালো মা বাবার পছন্দ মতো ছেলে কে বিয়ে করে নিবে এবার দেশে যাবে।
রিধি চোখের পানি গুলো একটু পর পর হাত দিয়ে মুছে যাচ্ছে। কিন্তু এতে একফোঁ টা লাভ হচ্ছে না।এই অবাধ্য চোখ জোরা থেকে অঝর দ্বারা জল পরছে।
রিধি মেঝে থেকে উঠে বিছানায় বসে। ওর শরীর বিন্দু পরিমাণ শক্তি পাচ্ছে না। শরীর এর ব্যাথার থেকে যে মনের ব্যাথার বেশি ভারি।
রিধি সুইচ টিপে লাইট টা অফ করে দিয়ে শুয়ে পড়ে।
আর মনে পড়ে যায় আজ থেকে মাসখানেক আগের একটা ঘটনা।
সে দিন অফিস বন্ধ ছিল রিধির। রিধি একটা জব করে।সেখানের একটা রিধির খুব ভালো ছেলে বন্ধু আছে।
ওয়াজিদ ডক্টর হওয়াতে ওদের বেশি একটা দেখা সাক্ষাৎ হতো না তবে ফোনে সব সময় কথা হতো।সে দিন রিধির অফিস বন্ধ ওয়াজিদ তাই রিধির সাথে দেখা করবে বলে। রিধি রাজি হয়।কিন্তু রিধি ওয়াজিদ এর লোকেশান অনুযায়ী সেখানে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যায়।তবে বাঁধ সাধে রাস্তায়।রিধির বন্ধু স্টিভ রিধি কে বলে ওর গার্লফ্রেন্ড কে গিফট দিবে তাই রিধি যেনো একটা কিছু পছন্দ করে দেয়।
রিধি রাজি হয়ে যায়। বেশি সময় তো আর লাগবে না। কিন্তু ভাগ্যক্রমে ওরা যেই রেস্টুরেন্টে এ দেখা করার কথা ওরা সেখানের একটা শপিংমল যায়।
আর সেখানে ওয়াজিদ রিধির জন্য অপেক্ষা করছিল। কিন্তু রিধি ওয়াজিদ কে দেখে নি ওয়াজিদ ঠিকই রিধি কে দেখে ছিল আর ওয়াজিদ ভেবেছে রিধি তাকে ঠকাচ্ছে। তাই সে দিন রিধির সাথে প্রচন্ড ঝগড়া করে তবে রিধি কে কিছু বলতে দেয় আর না রিধির কোনো কথা ওয়াজিদ শুনেছে।
শুনবে কি করে রিধি যে সত্যি আরও একবার দেশে থাকা কালিন অবস্থায় এমন একটা ঘটনা করে ছিল।এবারের ঘটনা মিথ্যা হলেও সেবারের ঘটনা সত্যি ছিল। আর এবারের সত্যি কি ওয়াজিদ কোনো দিন জানতে চাইবে?
এদিকে ওয়াজিদ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রিধির ছবির দিকে।এটা ইতালির একটা রেস্টুরেন্টে যেখানে রিধি শাড়ী পড়ে একটা দোলনায় বসে আছে আর ওয়াজিদ পাশে বসে রিধির দিকে তাকিয়ে আছে। ছবি টা ক্লিক করেছে ওয়াজিদ এর সেখানকার এক ফ্রেন্ড। ছবি টা ছয় সাত মাস আগের হবে।
তখনো তো সে সব পুরনো সৃতি ভুলে আবার নতুন করে বাঁচতে চেয়ে ছিল তবে কেন রিধি সেই একই কাজ আবার করলো?
কেন আগের মতো ওকে ঠাকলো?
দু’টি মনে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্ন কিন্তু প্রশ্নের উত্তর গুলো কি এক?

———–

সাদনান আজ শপথ বাক্য পাঠ করতে যাবে। আজ তাকে সরকারের পক্ষে হতে পুরো সিকিউরিটি সাথে সব দায়িত্ব দেওয়া হবে
সাদনান শোয়া থেকে উঠে বসে। সকাল ছয় টা বাজে এখন প্রিয়তা নামাজ শেষ আবার ঘুমিয়েছ সাদনান নিজেও প্রিয়তার সাথে নামাজ পড়েছে। কিন্তু সে আর ঘুমায় নি মুলত ঘুম আসছে না।
সাদনান এক পলক প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে এলো। বহু দিন হয় নিজের হাতে কফি করে খাওয়া হয় না। বউয়ের হাতে খায় কিন্তু আজ নিজে হাতে বানিয়ে বউ কে খাওয়াবে।
সাদনান নিচে এসে দেখলো লিভিং রুমে সোফায় আম্বিয়া মির্জা বসে আছে। ওনার হাতে চা।
বাড়ির কেউ এখনো উঠে নি শুধু কাজ লোকেরা উঠেছে।
সাদনান লিভিং রুম হতে রান্না ঘর সব চোখ বুলিয়ে নিলো। রান্না ঘরে কেউ নেই ডাইনিং টেবিলে দুইজন কাজের লোক কিছু করছে। সাদনান সব পর্যবেক্ষণ করে নিয়ে রান্না ঘরের দিকে পা বাড়ায়।

-“দাদু ভাই কোথায় যাচ্ছো?
কফি লাগবে তুমি বসো আমি কাউ কে বলছি।”

আম্বিয়া মির্জা সাদনান কে দেখে বলে উঠে।
সাদনান মুচকি হেঁসে মাথা নেড়ে বলল

-“না দাদি।
কাউ কে বলতে হবে না। আমি করে নিচ্ছি।”

আম্বিয়া মির্জা আর কিছু বলে না।এটা নতুন নয় সাদনান আগে প্রায়শই নিজের কাজ নিজে করে। পড়া লেখার সুবাদে বাড়ির বাহিরে থেকেছে নিজের রান্না বান্না কাপড় ধোঁয়া আর সেই থেকে নিজের কাজ নিজে করে।
তিনি চা চুমুক বসায়।সাদনান মিনিট পাঁচ এক পর ফিরে এলো হাতে দুই টা কফির মগ। আম্বিয়া মির্জা যা দেখে ভ্রু কুঁচকে নিলেন তিনি কফি খায় না।তবে নাতি কার জন্য কফি বানিয়েছে?
তিনি কিছু বলবে তার আগেই সাদনান কফি নিয়ে উপরে উঠে নিজের রুমে চলে আসে।
প্রিয়তা তখন সবে মাত্র ঘুম থেকে উঠে বসছে।গায়ে সাদা একটা কুর্তি ওড়না পাশেই রাখা।চুল গুলো হাল্কা ভেজা প্রিয়তা আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে ঘড়ির দিকে তাকায়।সাড়ে ছয় টা বাজে এখন নিচে যেতে হবে নয়তো দাদি আবার কি করে বসে আল্লাহ মালুম। প্রিয়তা গায়ে ওড়না জড়াতে যাবে তখুনি একটা গম্ভীর কণ্ঠে ভেসে এলো

-“ওড়না পড়তে হবে না।
শাড়ী পড়ার কথা ছিল? ”

-“রাতে পড়ে ছিলাম।
আর এখন তো বাহিরে যেতে হবে আপনি নিজে তো না করেছেন বাহিরে শাড়ী পড়ে ন,,,,

প্রিয়তা সব টা কথা সম্পূর্ণ করতে পারে না। তার আগেই সাদনান কফির মগ রেখে এগিয়ে এসে প্রিয়তা কে নিজের কাছে টেনে নেয়।
চুল গুলো নিজের ডান হাত দিয়ে গুছিয়ে দিতে দিতে বলল

-“হুম।
কিন্তু তুমি চাইলে এখন পড়তে পারতে।”

-“এখন তো নিচে যেতে হবে।”

-“রাতে ফিরতে দেরী হবে।”

-“অপেক্ষা করবো।”

সাদনান এর কথার বিপরীতে জানায় প্রিয়তা।
সাদনান মুচকি হেঁসে এগিয়ে যায় সেন্টার টেবিলের দিকে।
এক টা কফির মগ প্রিয়তার হাতে দিয়ে আরেক টা নিজে হাতে নিয়ে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায়।
সূর্য মামা লাল আভা ফুটিয়ে উঠে এসছে অনেক টা দেখতে দারুণ লাগছে।
সাদনান মেঝেতে বসে প্রিয়তা কেও টেনে কোলে বসাল।
দু’জনে চুপচাপ বসে সে দিকে তাকিয়ে রইলো।

————-

-“এই মেয়ে একা একা এখানে কি করছো?”

সারা আকস্মিক রাহানের কণ্ঠ শুনে চমকে উঠলো।তবে নিজে কে সামলে বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে এলোমেলো দৃষ্টি ঘুরালো চার দিকে।
বেশ কয় টা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে গেইট এর বাহিরে সাথে অনেক গুলো বাইক।
সারা’র চঞ্চল মস্তিষ্ক খুব দ্রুত বুঝে গেলো এগুলো তার ভাইয়ের সাথে যাবে আজ।
সারা ওড়না দ্বারা চট করে নিজের মাথা সহ সম্পূর্ণ শরীর ঢেকে নিলো।
সারার এখানে আসার কোনো যুক্তিগত কারণ নেই এমন-ই হাঁটতে হাঁটতে বাগানে এসে কখন যে বসে পড়েছে সে দিকে খেয়াল নেই।
না, কারণ আছে এই রাহান ভাই কে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই তো এমন অবস্থা হলো।
সে দিন রাতের পর আজ দেখা হলো তাদের।রাহান একটা কালো শার্ট পড়ে আছে। সাথে কালো প্যান্ট মুখে ছোট ছোট দাঁড়ি, চুল গুলো অর্ধেক কপালে পড়ে আছে দেখতে দারুণ লাগছে। সারা’র ইচ্ছে করলো চুল গুলো নিজের হাত দ্বারা গুছিয়ে দিতে।কিন্তু সারা’র ইচ্ছে মনেই রয়ে গেলো আর রাহাম
সারা’র ভাবনার মাঝেই ধমকের স্বরে বলল

-“এই মেয়ে এক্ষুনি ভেতরে যাবে।”

-“যাচ্ছি তো।
এভাবে বলার কি আছে।”

সারা শেষ এর কথা টা বিরবির করে বলে।
যা রাহানের কানে যায় না।
রাহান মুচকি হাসে হয়তো প্রেয়সীর কথা না শুনলেও মুখ দেখে বুঝতে পেরেছে মনে কি চলছে।

#চলবে…..

#আমার_তুমি
#পর্ব_৩১[অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ]
#জান্নাত_সুলতানা

মাইশার আজ শেষ পরীক্ষা।তিন্নি আর ও দু’জনে পরীক্ষার হল থেকে বেড়িয়ে দু’দিকে চলে গেলো তিন্নি কবির এর গাড়ির দিকে মাইশা আয়ানের বাইকের দিকে এগিয়ে এলো।
আয়ান বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ফোনে স্ক্রল করছিল।
মাইশা কে দেখে ফোন পকেটে নিয়ে নিজে বাইকে বসতে বসতে তাগাদা দিয়ে বলল

-“তাড়াতাড়ি উঠে বসো।
আমার একটা জরুরি কাজ আছে।”

মাইশার একটু অভিমান হলো।তার কারণ আজ পরীক্ষা শেষ কই ভেবেছে আয়ান তাকে নিয়ে আজ ঘুরাঘুরি করবে। এখন তো সবাই জানে সব টেনশন করবে না
ওরা এক সাথে থাকলে কেউ কিছু বলবেও না। তবে মুখে কিছু বলে না চুপ চাপ ওঠে বসে বাইকে আয়ান বাইক স্টার্ট দেয়।

————

ওয়াসিফ দেওয়ান বসে আছে মির্জা বাড়ির লিভিং রুমের সোফায়। সামনে হরেক রকমের নাস্তা। পাশেই বসে আছে জাফর মির্জা তার উল্টো দিকের সোফায় আজ্জম মির্জা, মফিজুর মির্জা, রাহাত দাদির পাশে।
সারা আর প্রিয়তার রেজাল্ট দিয়েছে আজ তিন দিন হলো।
দু’জনেই ভালো রেজাল্ট করেছে।
ওয়াসিফ দেওয়ান এর এখানে আসার মূল উদ্দেশ্য হলো আজ এনগেজমেন্ট এর তারিখ ঠিক করে যাবে।প্রিয়তা সাদনান কে ফোনে এসব বলা মাত্রই সাদনান রাহান কে নিয়ে বাড়ির পথে গাড়ি ঘোরাতে বলে ড্রাইভার কে।
ওরা যাচ্ছিল রিধি কে রিসিভ করতে। রিধি আজ বাংলাদেশ আসছে।
রাহান ওর বাবা কে ফোন দিয়ে রিধি কে রিসিভ করতে বলে দেয়।
রাহান আর সাদনান বাড়িতে প্রবেশ করতেই ওয়াসিফ দেওয়ান লম্বা চওড়া হেঁসে সাদনান কে জড়িয়ে ধরে। রাহানের মাথায় কিছু ঢুকছে না।
বাড়ির মহিলারাও আছে এখানে।
আম্বিয়া মির্জার পেছনে মাইশা চুপটি করে দাঁড়িয়ে। সারা আর প্রিয়তা রুমে।

-“তা আমি চাইছিলাম এনগেজমেন্ট টা সেরে ফেলতে।
এমপি মহোদয় কি বলেন?”

-“আপনার ছেলে?”

সাদনান ওয়াসিফ দেওয়ান কে জিজ্ঞেস করলো। ওয়াসিফ দেওয়ান মুচকি হেসে বলল

-“আমার কথা শেষ কথা।”

-“আমি এটা বলি নি।
যদি আপনার ছেলের কোনো পছন্দ থাকে?”

ওয়াসিফ দেওয়ান কিছু টা থমথমে হলেন।
আশে পাশে দৃষ্টি বুলিয়ে বলল

-“থাকলে বলতো।”

-“আপনি কি কখনো জিজ্ঞেস করেছেন? ”

ওয়াসিফ দেওয়ান সাদনান এর প্রশ্নের জবাব দেওয়ার আগেই ওয়াজিদ সদর দরজা দিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে।
জাফর মির্জা সহ আজ্জম মির্জা ওয়াজিদ কে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
ওয়াজিদ সবাই কে শান্ত হতে বলে। অতঃপর বাবার পাশে গিয়ে বসে বলল

-“একবারও আমাকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করলে না?”

-“তোমার পছন্দ আছে?”

-“না।
তবে তুমি কি জানো তুমি তোমার অজান্তেই ভুল করতে যাচ্ছিলে?”

-“মানে?”

-“তুমি কি এখনো চুপ থাকে থাকবে রাহান?”

ওয়াসিফ দেওয়ান এর প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ওয়াজিদ রাহান কে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করে।
রাহান হকচকিয়ে উঠে। সবার দৃষ্টি তখন রাহানের উপর কেউ কিছু বুঝতে পারছে না।
এ-র মধ্যে জাফর মির্জা আশ্চর্য হলেন।তিনি কিছু টা আন্দাম করতে পারছেন।
কিন্তু এখন কি বলবে বুঝতে পারছে না। একবার সাদনান এর দিকে তাকালো সাদনান কিছু ইশারা করলে তিনি চুপ থাকেন।নাতির উপর ওনার বিশ্বাস আছে।
আর এটাও শিওর নাতি তার আগে থেকে সব জানতো।
আজ্জম মির্জা ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো

-“রাহান কি বলবে?
আমরা তো তোমার সম্পর্কে জানতে চাইছি।”

ওয়াজিদ উত্তর দেয় না।
শুধু একবার আঁড়চোখে সাদনান এর দিকে তাকালো। রাহানও তাকিয়ে অসহায় চোখে সাদনান এর দিকে। তার যে আজ অগ্নি পরীক্ষা দিতে হবে এখানে এসে তাহলে সে কিছুতেই এখানে আসতো না।
তবে কতদিন আর পালিয়ে বেড়াবে একদিকে না একদিন এটা সবার সামনে আসতো তাই মনের শক্তি আর ভালোবাসার জোরে গম্ভীর কণ্ঠে জানালো

-“আমি সারা কে ভালোবাসি।
সারা নিজেও আমাকে ভালোবাসে।বিশ্বাস না হলে জিজ্ঞেস করে নিন।”

আহ কি সুন্দর নিরদ্বিধায় বলে দিলো কথা টা।সাদনান এর মনে ধরলো কথা টা। সে তো বোধহয় এতো টা সাহস করে শফিক সওদাগরের নিকট বলতে পারে নি।
আচ্ছা সে কি করে চেয়ে ছিল তার ভালোবাসা?
এই তো এখনো মনে পড়ে কি ধমক টায় না আয়ান কে দিয়ে ছিল আর শফিক সওদাগরের কে হুমকি। তবে যা-ই হোক ক’জন পারে এভাবে মেয়ের বাবা কে হুমকি দিয়ে মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব দিতে?
সাদনান এর মনে পড়ে গেলো সে দিনের কথা হোটেলের ভেতর ঢুকেই সোজা শফিক সওদাগরের রুমে চলে গিয়ে ছিল।
অতঃপর ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করে। বলে ছিল আপনার মেয়ে কে বিয়ে করতে চাই আমি।শফিক সওদাগর আমতা আমতা করে বলে ছিল মেয়ে তো এখনো ছোট।
ব্যস সাদনান এতেই ক্ষেপে গিয়ে ছিল।ততক্ষণে আয়ানও এসে উপস্থিত হয়ে ছিল।
বন্ধুর এমন কথা শুনে বলে ছিল দেখ এটা কি করে হয় ওতো ছোট। সাদনান সে দিন আয়ান কে এক ধমক দিয়ে বলে ছিল তোকে কিছু জিজ্ঞেস করি নি।আয়ান দ্বিতীয় বার আর কিছু বলার সাহস পায় নি।
সাদনান এর এই রূপ ততক্ষণে শফিক সওদাগর বুঝতে পেরেছে আর কিছু বলে লাভ হবে না।
তাইতো বিনাবাক্য রাজি হয়ে হয়ে গেলেন এটা নিয়ে তিনি অবশ্য আজ্জম মির্জা সাথে কথা বলে ছিল। সবাই রাজি ছিল সাথে পুরনো সম্পর্ক আবার বড় মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে তাই বেশি ঘাটে নি।
আর সাদনান সে বা কোন দিক দিয়ে কম।
এমন ছেলে পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়।

-“সারা?”

জাফর মির্জা জোরে ডেকে উঠে সারা কে।
সারা প্রিয়তার হাত চেপে ধরে।
ভয়ে মেয়ে টা একদম চুপসে গিয়েছে। চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে।
প্রিয়তা সারা কে আশ্বাস দিয়ে বলল

-“যা কিচ্ছু হবে না।
আর তুই না রাহান ভাই কে এতো ভালোবাসি?
তাহলে ভয় পাচ্ছিস কেন?
যদি রাহান ভাই সবার সামনে বলতে পারে তবে তুই কেন না?
তাছাড়া তোর ভাইয়া তো আছে।”

সারা কিছু টা সাহস পেলো যেনো।
গেস্ট রুম হতে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে এলো লিভিং রুমে।
প্রয়িতাও পেছন পেছন বেড়িয়ে এসে সুফিয়া বেগম এর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পড়ে।
সবাই চুপচাপ নিরবতা পালন করছে।
মূলত সামনে কি হতে পারে তা সেটা ভাবছে।
সারা গিয়ে জাফর মির্জা আর সাদনান এর পেছনে দাঁড়িয়ে মিনমিন করে ডাকে

-“দাদু।”

সাদনান টেবিলের উপর রাখা নাস্তার ট্টে হতে একটা কাবাব তুলে সেটা মুখে পুরো নিনো।
জাফর মির্জা সে দিকে একবার আঁড়চোখে তাকিয়ে সারা কে নিজের সামনে আসতে বলে।সারা কাঁপা কাঁপা পায়ে সামনে এসে দাঁড়াল।
জাফর মির্জা গম্ভীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো

-“রাহান যা বলছে সব সত্যি?”

সারা জাফর মির্জা প্রশ্নে চট করে একবার রাহান এর দিকে তাকিয়ে আবার বাবা বড় ভাই,এক এক করে সবার দিকে তাকিয়ে শেষ সাদনান এর দিকে তাকালো।
সাদনান বোনের দিকে তাকিয়ে আছে।
কিছু ইশারা করতেই সারা বলে উঠলো

-“হ্যাঁ।”

-“যাও।”

জাফর মির্জা সহজ সরল কণ্ঠে আদেশ দেন।
সারা আবারও চার দিকে দৃষ্টি বুলালো।
অতঃপর এগিয়ে গিয়ে মায়ের পেছনে দাঁড়িয়ে পড়ে।আজ্জম মির্জা বাবার উপর দিয়ে কোনো কথা বলবে না এটা সাদনান খুব ভালো করে জানা আছে।
সাদনান দাদার দিকে তাকিয়ে নরম কণ্ঠে বলল

-“তুমি যা বলবে তাই হবে।
আর আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না অন্য কারোর ভালোবাসা কেঁড়ে নিতে? ”

সাদনান ওয়াজিদ কে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন টা করে।
ওয়াজিদ মুচকি হাসলো।সাদনান যে ভীষণ চালাক সাথে প্রচন্ড ভালো সেটা তার এই তিন মাসের ব্যবহার দেখে বুঝে গিয়েছে।
অবশ্য না বোঝার কোনো উপায় আছে?
সাদনান এর জন্যই তো তার চোখ সত্যি মিথ্যা চিনতে পারলো।
যদি সাদনান এর সাথে সে দিন কথা না হতো? তবে সে এতো টা খুঁজ নিতো বুঝি?
সাদনান বলেছে বলেই তো সে খুঁজ নিয়ে সত্যি টা জানতে পারলো।
এখন নিজের প্রেয়সী কে সে নিজের করে নিবে।
ওয়াজিদ এর ভাবনার মাঝেই জাফর মির্জা রাহান কে বলল

-“কাল বাবা মা নিয়ে আসবে।
বাকি কথা আমি ওনাদের সাথে বলতে চাই।”

#চলবে…….

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ