Monday, October 6, 2025







“আকাশী”পর্ব ২

“আকাশী”পর্ব ২

আকাশী তৎক্ষণাৎ হাত সরিয়ে দৌড়ে বাইরে চলে যায়। অপূর্ব তা টের পায়নি। জ্বরের ঘোরেই আগের মতো ঘুমিয়ে পড়েছে। মাম্মার ঘরে এসে সে হাঁপাতে লাগল। বুকের ভেতরটা তার উঠা-নামা করছে। এর আগে সে এমন কিছুর শিকার হয়নি। সে অদ্ভুত এক দ্বিধাদ্বন্দে পড়েছে।

ঠোঁট চেপে ভাবতে লাগল, ভুল কিছু করেনি তো? জ্বরে আক্রান্ত ভাইয়াকে কেবল সাহায্য করতে চেয়েছিল। কিন্তু এমন কেন মনে হচ্ছে যে, অতিরিক্ত হয়ে গেছে? না না, অতিরিক্ত কেন হবে? উনি তাকে পড়ান, গাইড করেন, সেই সুবাদে সে সাহায্য করতেই পারে।
ঘরের এককোণে ভাঁজ করা হুইলচেয়ারের দিকে আকাশীর নজর পড়ে। মাম্মা এখানে একসময় বসতেন। এখন আর বসবেন না। জীবন কি এতই নিষ্ঠুর? আজ আছে কাল নেই? আকাশী ভেবে দেখে, এখন থেকে এই বাড়িতে আসা-যাওয়া তার কমে যাবে। বরং এই কয়দিন সে আসবেই না। অপূর্ব ভাইয়া কী ভাবছেন কে জানে! শত হোক, উনি বলেছিলেন শুধু কপালে হাত বুলিয়ে দিতে, তাই সারা গায়ে হাত বুলিয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। বিশেষ করে ওই জায়গায়। ভাবতেই সে আবারও শিউরে উঠল। ভাইয়ার ওই জায়গায় লোম কেন আছে? তার নিজের তো নেই। এমনকি অনিক তার চেয়ে বছর দুয়েক বড়। তার কাছেও তো নেই। তাহলে মেয়েদের সম্ভবত থাকে না। তাই স্থির করে সে উঠে পড়ল।
সাধারণত কারও মৃত্যুর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে যতটা দিন সময় লাগে, ততটা আকাশীর মাম্মার ক্ষেত্রে লাগেনি। কারণ এই বৃদ্ধা অনেক কষ্ট পেয়ে শেষে সবাইকে কষ্ট থেকে পরিত্রাণ দিয়ে নিজেও মুক্তি পেয়েছেন। এটিই স্বাভাবিক একটা বিষয়। বিবিজানের বাড়িতে এই আখের আশির ঊর্ধ্বের বৃদ্ধা পরলোকে গমন করেছেন। ভেবেই আকাশী রোমাঞ্চিত হলো। তাহলে এখন এই বাড়িতে ওরকম বৃদ্ধা আর নেই। পড়তে বসে সে মিটিমিটি হাসছিল।
বিভা বলল, ‘হাসছিস কেন? পড়। আমি আজকে অপূর্ব ভাইয়ার কাছে পড়তে গিয়েছিলাম।’
আকাশী আর বিভার পড়ার জায়গা একত্রে নয়। আকাশী বিছানায় পড়ে, বিভা টেবিলে। বিছানা থেকেই সে উত্তর দেয়, ‘আমাকে ডাকিসনি কেন?’
বিভা তার স্বভাবের গাম্ভীর্য ভাবটা বজায় রেখে বলল, ‘আমি কেন ডাকতাম? নিজ দায়িত্বে যাবি।’
‘বাহ্! আমি তোর বোন না? আর উনার দাদু মারা গেছেন বলে পড়তে যাওয়াটা কেমন ঠিক মনে হয়নি।’
‘মাম্মার মৃত্যুটা স্বাভাবিক ছিল। এখন সব ঠিক হয়ে গেছে। তুই উনাকে এতদিন দেখা দিসনি কেন? নইলে তিনিই তোকে পড়তে যেতে বলতেন, যেভাবে আমাকে বলেছেন।’
আকাশী থতমত করল। সেই লোম ছোঁয়ার মুহূর্তটা মাথায় আসতেই সে আবারও শিউরে উঠে। এরপর অপূর্ব ভাইয়াকে সে কীভাবে দেখা দেয়!
‘আমার কথা কি ভাইয়া জিজ্ঞেস করেছিলেন?’
‘হ্যাঁ, তোকে দেখেনি কেন জিজ্ঞেস করেছে।’ বিভা আড়চোখে তাকিয়ে বলল, ‘ওই বাড়িতে তো শুধু মাম্মাই তোকে আদর করত না। ছোটচাচির তো কিছু হয়নি। তিনি বড় তোর কথা জিজ্ঞেস করছিলেন।’ হালকা ভেঙচি কেটে সে পড়ায় মনোনিবেশ করল।
আকাশী যে সবার স্নেহের পাত্রী, তা বিভাকে হয়তো মনে মনেই বিষিয়ে তুলছে। আর সত্যই তো, দোষ না করে সে ওখানে যাওয়া কেন বন্ধ করে দিয়েছে? আকাশী বিভাকে পড়ায় পুরোপুরি মত্ত দেখে বইয়ের নিচ থেকে আস্তে করে ড্রয়িং-এর খাতা বের করল। তারপর একটা পেন্সিল নিয়ে বইয়ের নিচ থেকেই একটু একটু আঁকতে লাগল। হঠাৎ তার কাছে বাড়ির নামের কথা মনে পড়ে, একটু আগে যেটা নিয়ে মনে আলোচনা করতে গিয়ে সভা বসার আগেই মোড় পাল্টে গিয়েছিল। খাতা ঢুকিয়ে রেখে সে বলল, ‘সেজ আপা, আমাদের বাড়ির নাম বিবিজানের বাড়ি কেন?’
‘আমি কি জানি! পড়া পড়। ডিস্টার্ব করিস না।’
আকাশী ঠোঁট চেপে রাখল। ওর সাথে কথা বলার চেয়ে ঢের ভালো দেয়ালের সাথে কথা বলা। দেয়াল অন্তত তো শুনেই যায়, উল্টো প্রশ্ন করে না। অথচ এই মেয়েটি ছোট বোনের একটি কথাও শুনতে চায় না। আচ্ছা, যারা সবসময় শুধু নিজেকে নিয়েই ভাবে তারা কি মানুষ? বিভার হাড়-মাংস-চামড়া সবকিছুই আছে, তবে সে তো মানুষ। ওই মানুষ আর এই মানুষে পার্থক্য কী? আকাশী আর আঁকাজোখা করতে পারে না। বিভা তাকে পড়তে দিয়েছেই এমন জায়গায়, যেখানে লেখা গেলেও আঁকা যায় না। বিভা ধমকে উঠল, ‘বড় বড় করে পড় আকাশী।’
‘তুই পড়। পড়া আমার জন্য না।’
বিভা কী ভেবে যেন বলল, ‘আচ্ছা, পড়িস না। তবে এটা বল, তোর সমাপনী পরীক্ষার প্রিপারেশন কেমন?’
বিভা তাকে পড়তে জোর করছে না দেখে আকাশী বিস্মিত। এই প্রথম বিভা বোনের মতো আচরণ করায় আকাশী যতখানি চমকাচ্ছে, ঠিক ততখানি খুশি হয়ে বলল, ‘মোটামুটি।’
‘ভালোই।’ বলে বিভা পড়ায় মন দিলো।
আকাশী দাঁতে জিভ কাটে। অপূর্ব ভাইয়া বলেছিলেন, আমি জানি তুমি পড়ালেখায় আহামরি কিছু নও, তবু একটু পড়াশোনা কর। তোমার পড়াশোনা ‘মোটামুটি’ ধরনের হলেও মানুষকে এটা বলতে গেলে ওরা প্রসন্ন হবে না। বলবে প্রিপারেশন ‘ভালো’ বুঝলে?
আকাশী তৎক্ষণাৎ বলল, ‘প্রিপারেশন ভালো।’
বিভা চমকে ফিরে তাকালো। আকাশী এটার অর্থ বুঝল না। তবে এটুকু বুঝা যায়, আপার এই কথা হজম হয়নি। বিভা এবার কিছু বলল না। তবে তার পড়ার আমেজটা আর আগের মতো নেই। প্রায় নেতিয়ে পড়েছে।
বিভা আর আকাশী যথারীতিতে সন্ধ্যায় অপূর্বের বাড়িতে পড়তে গেল। অপূর্ব কখনও সাতটা আবার কখনও সাড়ে সাতটা পর্যন্ত বাইরে থাকে। মসজিদে নামাজ শেষ করে বাইরে ঘোরাঘুরি করে বন্ধুদের সাথে। বিভা এসে নিজ দায়িত্বে পড়তে বসে যায়। কিন্তু আকাশী বিলম্ব করতে এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করে। প্রথমে ছোটচাচুর কাছে গিয়ে তাঁকে বিরক্ত করে এলো। এই লোকটি অপূর্বের মতোই গম্ভীর। বয়স হলেও বইয়ের ভেতর গুঁজে থাকেন। তার শিক্ষার তেজটা চেহারার উপরেই ভেসে উঠে। একবছর আগে যখন আকাশী এখানে পড়তে আসা শুরু করে, তখন নিছক মজার ছলেই মাহবুবের লাইব্রেরিতে ঢুকে খেলতে থাকে। ভদ্রলোক বেশ চটে যান। উচ্চস্বরে বললেন, লাইব্রেরি একটা পবিত্র জায়গা। তুমি এখানে ময়লা জুতো নিয়ে কেন এলে? আর এটা কি খেলার জায়গা? বাবার গর্জন শোনে অপূর্ব তড়িঘড়ি করে এসে ক্ষমা চেয়ে ছাত্রীকে নিয়ে আসে। এসেই আকাশীকে কড়া ধমক দিল, এটা যেমন-তেমন কোনো জায়গা নয়। তুমি এখানে পড়তে এসেছ। আত্মীয়তা পরে। প্রতিবেশী হিসেবেও এতো ছাড় দেয় না কেউ। তোমাকে কি এসব কেউই শেখায়নি?

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

আকাশী উত্তর দিতে পারল না। প্রতিবেশীদের ঘনিষ্ঠ হতে কী লাগে বা কেন ভালো না তা সে জানে না, কেউ শিখিয়ে দেয়নি। বিভাও তেমন কোনো প্রতিবেশীর বাড়িতে ঢোকে না, এখানে পড়ার সময় ব্যতীত। আকাশী মায়ের কাছে কথাটির মর্মার্থ জিজ্ঞেস করেছিল। তিনি ‘বিরক্ত করিস না’ বলে দূরে ঠেলে দিলেন। আকাশী প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজেই জানতে নানা প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়া-আসা শুরু করল। নানা রঙের, নানা ঢঙের মানুষের সামনে খেলাধুলা করল, হাসি- মজা করল, কিন্তু খুব কম মানুষই তাকে বকা দিয়েছে। ঘনিষ্ঠ হলে আর কিছু লাগে না। এই এক বছরে প্রায় সবাই তার কাছে আন্তরিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামের চেয়ারম্যানের বাড়িতেই তার আসা-যাওয়া বেশি থাকে। অতিরিক্ত সুন্দর বলেই ওখানে সবাই তাকে ফুলি বলে ডাকে। এই নামকরণের ইতিহাস সে তাদেরই ছোট ছেলে এবং বন্ধু অনিকের কাছে জানতে পেয়েছে, তুই একদম কোমল লাজুক সুন্দর একটি মেয়ে। ফুল জিনিসটা একদম তোর ধরনগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই ফুল থেকে ফুলি দিলাম। সবাই পছন্দও করল। এরপর সে একদিন অপূর্বকে তার প্রশ্নের জবাব দেয়, প্রতিবেশী আর পরিবারে পার্থক্য তেমন একটা হয় না। ভিন্ন হলো পরিবারের লোকদের সাথে রক্তের সম্পর্ক থাকে। নইলে দুটো বিভাগের মানুষই এক অর্থে মানুষ নামে পরিচিত। কেবল পরিবারের সাথে জন্ম থেকে খাপ খাওয়া যায়, প্রতিবেশীর সাথে না। অপূর্ব এই পাল্টা জবাব এটুকু মেয়ের কাছে শোনে হতভম্ব হয়ে যায়। সেদিন অপূর্ব বুঝল, এই মেয়েকে কোনো প্রশ্ন করলে নিজের কাছেই ভারি পড়বে। প্রশ্নকারীকে সে জব্দ করেই ছাড়বে।
অপূর্ব আসার পর দেখল আকাশী তার মা’কে রান্নার কাজে সাহায্য করছে ছোটখাটো কাজ করে দিয়ে। অপূর্ব রান্নাঘরের দিকে পা বাড়াতেই দেখল মা নিচে সবজি কাটছেন, আকাশী অন্য তরকারিতে নিজ আন্দাজেই লবণ দিচ্ছে।
অপূর্ব বলল, মা, ও আন্দাজে লবণ দিয়ে দিচ্ছে। বেশি হয়ে গেলে…
মা বলল, ‘দেবে না। ও তরকারি কয়েকটা রাঁধতেও জানে।’
অপূর্ব হা করে চেয়ে রইল। পরক্ষণে আকাশীর পড়া ফাঁকি দেওয়ার কথা মাথায় আসতেই গলা উঁচু করে বলল, ‘পড়তে না বসে এখানে কী? তোমার পিঠের ওপর অনেকদিন মার পড়েনি। কিছু একটা করতে হবে দেখছি।’ বেতের ন্যায় কিছু খোঁজার ভঙ্গিতেই অপূর্ব এদিক-ওদিক হাতরাতে লাগল। তাতেই কাজ হলো। আকাশী দৌড়ে পড়তে অপূর্বের ঘরে চলে গেল। অপূর্ব হঠাৎ মা’কে জিজ্ঞেস করল, ‘আচ্ছা, এটুকু মেয়ে বাড়াবাড়ি রকমের পণ্ডিত হয়ে যাচ্ছে না?’
‘আমার কাছে তা লাগছে না। যে মেয়ে নিঃসঙ্গ থাকে, সে সংগ্রাম করে দুনিয়াকে নিজ দায়িত্বেই চিনতে শুরু করে বলে হয়তো বয়সের আগে পেকে যায়। তবে হ্যাঁ, রোকসানা একটু বাড়াবাড়ি করছে। ছোট মেয়েকে অতিরিক্ত শাসন করে। অথচ আভা প্রভা বিভা এদের ক্ষেত্রে এমনটা সে করেনি। আকাশীর বাবা যা একটু ঠিক আছে। মেয়ে দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। যখন দেখলেন, আকাশীতে অনেক গুণ আছে, তখন থেকে ওকে অন্যান্যদের মতো আদর করলেন। রোকসানা আকাশীকে কেমন দেখতে পারে না!’
‘তা কেন?’
‘কি জানি! ওদের একের পর এক মেয়েই হয়ে যাচ্ছিল। আকাশীর সময় ওরা ছেলের জন্য বুকভরা আশা নিয়ে ছিল। যেই ও এলো, সবার কাছ থেকে ছেলের ভালোবাসাটাই খেয়ে বসল।’
‘আজও ছেলেদের কত দাম!’ সহাস্যে অপূর্ব বলল, ‘আমার বন্ধুরা বলে, তুই তোর গ্রামীণ পরিবেশ থেকে অনেক উন্নত। এটাই ঠিক। ওদের লাগে আমাদের গ্রামটা এখনও অন্ধকার যুগে বসবাস করছে। মা-বাবারা মেয়ের ওপর এক আনা বিশ্বাস করেন না। অথচ চাইলেই অনেক মেয়ে ধরাবাঁধা নিয়ম থেকে সঠিক পদ্ধতিতে বেরিয়ে আসতে পারে। আমাদের নবীগণও মেয়েদের কত সম্মান দিয়েছেন! অথচ এখনও অনেক মূর্খ মানুষ মেয়েদের মাটিতে পূতে না দিলেও তদ্রূপ কাজ করে।’
ছেলের এইসব কথা সানজিদা বেশিক্ষণ শুনলেন না। কাজে মশগুল ছিলেন। অপূর্ব ঘরে চলে এলো পড়াতে। তৎক্ষণাৎ আকাশী বইয়ের নিচের খাতাটা আরেকটু ঢুকিয়ে ফেলে। অপূর্ব ড্রয়ার থেকে স্কেল বের করল। তা দেখে আকাশীর গলা শুকিয়ে যায়। অপূর্ব শান্ত ভঙ্গিতে বলল, ‘হাত পাতো, হাত পাতো।’
আকাশী চোখ বন্ধ করে হাত এগিয়ে ধরে কয়েকটা মার সয়ে নেয়।
অপূর্ব বলল, ‘বইয়ের নিচের ড্রয়িং খাতাটা ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখ। মা কিন্তু আগুন জ্বেলেছেন। যদি বলো, পুড়ে ফেলতে দিয়ে আসব?’
‘না না,’ ভয়ার্ত হয়ে সে খাতাটা ব্যাগে তাড়াতাড়ি ঢুকিয়ে রাখে।
অপূর্ব বিরক্ত গলায় বিভাকে বলল, ‘তোমার ধ্যান কোথায়? পড়ার পাশাপাশি বোনকে একটু ডাক দিতে পারো না?’
আকাশী বসার পর সে বলল, ‘সামনে তোমার ফাইনাল এক্সাম। আমি কোনো ড্রয়িং চাই না। এই সময় স্রেফ পড়ায় মন দিতে হয়। এগারো বছর চলছে তোমার, অথচ বোঝব্যবস্থা এইদিক থেকে একদমই নেই। বিভা, তোমার মা’কে বলবে খাতাটা তুলে রাখতে। ওর অভ্যাস খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’
আকাশী ভয়ে গড়গড় করে পড়তে শুরু করল।
অপূর্ব হঠাৎ বলল, ‘কোনো কাজ করার আগে ভাবা উচিত আকাশী। তুমি এখন আর ছোট বাচ্চা নও। সবকিছুর পার্থক্য করতে শেখ। মেয়েদের সাথে যেরূপ আচরণ করো, সেরূপ সবই ছেলেদের সাথে করতে পারো না।’
আকাশী প্রথমে কিছুই বুঝেনি। বিভা কথাগুলো খেয়ালই করেনি, পড়েই চলেছে। আকাশীর মনে পড়ে গেল সেইদিনের কথা। ভাইয়া ওটাকে ইঙ্গিত করছেন না তো? মেয়ে আর ছেলে ভিন্ন, তা আকাশীর পূর্বে কমই জানা ছিল। মেয়েদের যেকোনো পরিস্থিতিতে ছোঁয়া গেলেও ছেলেদের ছোঁয়া যায় না, এটাই কি বোঝাতে চাইছেন? আসলে এটা সে সেসময় বুঝতে পারেনি। ভুল করেছে নাকি সঠিক, তা মাথায় আসেনি। চিন্তিত আকাশীকে কিছুটা লজ্জিত হতে দেখে অপূর্ব মুচকি হাসল। ব্যাস! আর দুয়েকটা বছর, আকাশীর কিশোরী হওয়ার। এরপর এসব ওকে আর বুঝাতে হবে না। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত তো সাবধান করতে হবে।
(চলবে..)
লেখা: ফারিয়া কাউছার

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ