Monday, October 6, 2025







অমানিশায় সেই তুমিই পর্ব-০৬

#অমানিশায়_সেই_তুমিই
#লেখায়_তেজস্মিতা_মর্তুজা

৬.

সকাল দশটা। নাশতা খেতে বসে ইমতিয়াজ সাহেব ইরাজের খোঁজ করলেন,

‘মেঘা মা, রাজকে ডাক দিসনি!’

মেঘালয়া গোপনে বিদ্রুপাত্মক হাসি হাসল। নিজেকে সামলে নিয়ে বলতে চাইল, ‘রাতে মাল খেয়ে টাল হয়ে পড়ে আছে, আপনার রত্ন।’ তবে মুখে কিছু বলল না। চুপচাপ মাথা নত করে খেতে শুরু করল। ইমতিয়াজ সাহেব তাকিয়ে দেখলেন, মেঘালয়ার দিকে। তার বুঝতে বাকি থাকে না, দুজনের সম্পর্ক মোটেই স্বাভাবিক নয়। দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। তিনি ছেলেকে জানেন। ওই ঘাঁড় ত্যাড়াকে বোঝানোর সামর্থ তার কোনদিন হয়ে ওঠেনি। তবে এবার কিছু দরকার। প্রিয় বন্ধুর ঘরের আমানত তুলে এনেছেন। সেই আমানতকে সুখে না রাখতে পারলে, নিজেকে বন্ধুর কাছে বড্ড ছোটো মনে হবে যে!

খাওয়া শেষ করে উঠতে যাবেন তিনি, মেঘালয়া ইতস্তত করে বলে উঠল, ‘বাবাই!’

ইমতিয়াজ সাহেব ফিরে তাকালেন। মেঘালয়ার কথা শুনতে তৎপর হয়ে চেয়ে রইলেন। মেঘালয়া আড়ষ্টতায় কাচুমাচু হয়ে যাচ্ছে। তবুও সকল সংকোচ কাটিয়ে বলে উঠল, ধীর-স্থির স্বরে,

‘আব্বু হয়ত অনুমতি দেবে না। তবে আমি পড়া-লেখা চালিয়ে যেতে চাই।’

ইমতিয়াজ সাহেব কেন জানি কথাটা শুনে অপ্রস্তুত বোধ করলেন। তবে মেঘালয়ার সুশ্রী, শ্রী মুখখানার দিকে তাকিয়ে প্রত্যাখান করার সাহস হলো না। জোরপূর্বক মৃদূ হেসে বললেন,

‘ঠিক আছে। রাজের সঙ্গে কথা বলে দেখি। তুই খাওয়া শেষ কর।’

একরকম এড়িয়ে চলে গেলেন যেন তিনি।

মেঘালয়া রুমে চলে এলো। এসেই দেখল ইরাজ বিছানার সাথে মিশে ঘুমে বিভোর। কেন জানি সহ্য হলো না, ইরাজের এমন শান্তির ঘুম দেখে। ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে পারফিউম হাতে তুলে নিয়ে তা সজোরে শব্দ করে রাখল। তাতে ইরাজ নড়লও না। অথচ মেঘালয়ার ওকে ঘুম থেকে ওঠাতেই হবে। পারফিউমের কৌটা হাতে তুলে নিয়ে বিছানার কাছে এসে বিকট আওয়াজে মেঝেতে ফেলে দিলো। এবার ইরাজ সামান্য নড়ে ওঠে। একটু এপাশ-ওপাশ হয়ে আবার শুয়ে পড়ল। মেঘালয়ার রাগ হচ্ছে। সরাসরি ডাকতে শুরু করল,

‘ইরাজ ভাই, কানে তুলো গুজে ঘুমান? ইরাজ ভাই? উঠবেন নাকি বাবাইকে গিয়ে বলে আসব, আপনি মাতাল হয়ে পড়ে আছেন!’

কাজ হলো খানিকটা, তবে পুরোটা না। এবার ইরাজকে ধরে ঝাঁকাতে শুরু করল। ইরাজ চোখ মেলে তাকায়। লাল টকটকে হয়ে আছে চোখ। মেঘালয়া ছিটকে সরে দুরে দাঁড়াল। দ্রুত সাফাই গাওয়ার স্বরে বলে উঠল, রিল্যাক্স ইরাজ ভাই। কথা বলার আপনার সাথে। নয়ত, আপনি
ম রে থাকলে আমারই শান্তি। আই মিন, আপনি ঘুমিয়ে থাকলে।’

ইরাজ উঠে বসল। মাথাটা এখনও ঝিমঝিম করছে। ব্যাথায় ভেঙে আসছে যেন। চেপে ধরে বসল। অ্যালকোহলের প্রভাব পুরোটা কাটেনি এখনও। মেঘালয়া ইরাজকে টলমল পায়ে উঠে দাঁড়াতে দেখে, আরও খানিকটা দুরে সরে দাঁড়াল। ইরাজ ওর দিকে না তাকিয়ে হেলেদুলে হেঁটে গিয়ে বাথরুমে ঢুকল। মেঘালয়া চিন্তিত মুখে, সোফায় গিয়ে বসে। এমন জাহিল পুরুষের সঙ্গে জীবন কাটাতে আব্বু তাকে কত ঘটা করে এ বাড়িতে পাঠিয়েছে। নিজের ওপরই তাচ্ছিল্য করে হেসে উঠল।

ইরাজ বেশ কিছুক্ষণ পর একেবারে গোসল নিয়ে বের হলো। মেঘালয়া ভেবেছিল, বেরিয়ে চোটপাট শুরু করবে। তবে তেমন কিছুই হলো না। শান্ত পায়ে বেরিয়ে এসে বিছানার ওপর বসল। শীতল, ভারী স্বরে আদেশ করল,

‘টক-জাতীয় কি আছে বাড়িতে?’

মেঘালয়া অবাক হয়ে চেয়ে রয়। ইরাজকে নিয়ে কি তার কোন ভাবনা-ই কখনও সঠিক হবে না? এ কেমন অদ্ভুত মানসিকতার মানুষ! বলল,

‘সকালে ফ্রিজে লেবু দেখেছি।’

‘শরবত বানিয়ে নিয়ে আয়। সামান্য পানি দিবি লেবুর রসে।’

এমন শান্ত স্বরের আদেশ শুনে, চোখ বুঁজে একটা নিশ্বাস নিলো মেঘালয়া। কেন জানি ইরাজের কথা মানতে ইচ্ছে না করলেও উঠে দাঁড়াল। এখন আর তামাশা না হোক।

লেবুর শরবত এনে দিলে, তা এক চুমুকে শেষ করল ইরাজ। মাথার দুপাশ চেপে ধরে, ওভাবেই মাথা ঝুঁকিয়ে বসে রইল খানিকক্ষন।

মেঘালয়া মুখ কুঁচকে প্রশ্ন করে ওঠে, ‘এসব না গিললে পাপ হয়? নাকি গিললে, ছোয়াব!’

ইরাজ অর্ধখোলা চোখ মেলে তাকাল মেঘালয়ার দিকে। মেঘালয়ার প্রশ্ন এড়িয়ে, শীতল স্বরে জিজ্ঞেস করল, ‘কি বলবি?’

মেঘালয়া প্রায় তেজী কণ্ঠে বলে উঠল, ‘আপনি আমার প্রশ্ন এড়িয়ে যাবেন না। প্রশ্ন করেছি উত্তর দিন।’

ইরাজ নিচের দিকে মাথা ঝুঁকিয়ে ঠান্ডা স্বরে বলল, ‘তোর প্রশ্নে আমার কোন যায়-আসে বলে মনে হয়, তোর? ধাক্কা মেরে দোতলা থেকে নিচে ফেলে দেই, তার আগে উপযুক্ত কিছু বল, যা বলতে চেয়েছিলি। তোর বলা কথা প্রয়োজনীয় মনে না হলে, জিহ্বাটা এক টানে ছিঁড়ে ফেলব।’

শেষের কথাটুকু শুনতে কেমন হিংস্র শোনাল। মেঘালয়া এসবে অভ্যস্ত। সে আর ইরাজের কাছে অন্যকিছু আশাও রাখে না।

চোখ বুঁজে দ্রুততার সাথে বলে ওঠে, ‘আমি পড়ালেখা কন্টিনিউ করতে চাই। আর বাবাই আপনার অনুমতি পেলে, অনুমতি দেবে।’

এক ভ্রু উঁচিয়ে সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে তাকাল ইরাজ। অতঃপর মুখ বেঁকিয়ে হেসে ওঠে। তিরস্কার করে বলে, ‘পড়তে গিয়ে এবার পালিয়ে গেলে, এবার আমার বাপের মুখ পুড়বে। তোর বাপেরটা কালা করেই এসেছিস।’

মেঘালয়ার বুকটা ভার হয়ে উঠল। চোখটা ঝাপসা লাগে। চোখে তরল জমেছে। ওপরের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কাঁমড়ে ধরল। গিলে নেয় কান্নাটুকু। তীর্যক কণ্ঠে জোর দিয়ে বলে ওঠে,

‘পালাব না আর। এবার গেলে আপনাদের জানিয়েই যাব। আর যদি আমাকে পড়তে না দেওয়া হওয়া হয়..

কথা শেষ করতে দিলো না ইরাজ। ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘না দিলে? না দিলে কী? আমার তো এবার ভয় লাগছে রে মেঘ! না দিলে তুই আবার না কারও সাথে পালিয়ে যাস। প্লিজ যাস না। মেঘ! না দিলে কী?’

ইরাজের ঠাট্রা মেঘালয়ার শরীরে জ্বালা ধরায়। চুপ হয়ে গেল একদম। আর কোন কথা না বলে, চুপচাপ উঠে চলে গেল সেখান থেকে। ইরাজও আর ফিরে তাকাল না সেদিকে।

ইরাজ দুপুর বারোটার দিকে, তৈরী হয়ে বাইরে চলে গেল। মেঘালয়া বসার রুমে বসে ছিল। ইরাজের বেরিয়ে যাওয়া দেখল। ইরাজের গাড়ি, বাড়ি থেকে দুর হতেই সে নিজেও বেরিয়ে পড়ল অজানার উদ্দেশ্যে। কোথায় যাবে জানা নেই। অথচ এত অপমান, আর গ্লানি নিয়ে অন্তত এ বাড়িতে থাকতে পারবে না। গভীর ক্ষত অনুভূত হচ্ছে বুকে। ভেতরে যেন রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। প্রায় দিন তিনেক তো কেটে গেল। আব্বু ভুলেও একবার তার খোঁজ নেয় নি। এত ঘৃন্য হয়ে উঠেছে, সকলের কাছে মেঘালয়া! তাহলে তার উচিত, নিজের খারাপ চরিত্র নিয়ে এই সম্মানী মানুষগুলো থেকে দুরে থাকা।

এসব ভাবতে ভাবতে এগিয়ে চলল, নিরুদ্দেশ। কিছুক্ষন পর মনে পড়ল, কাছে চার-আনা পয়সাও নেই। একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। কাছেই এক শিশুপার্ক। সেখানে ঢুকে একটা বেঞ্চির ওপর বসল। রোদ লাগছে গায়ে, তবে সেসবে আর আজ যায়-আসল না মেঘালয়ার। মনে মেঘ জমে আছে। একটু ঢিল দিলেই ঝরঝর করে ঝরে পড়বে বৃষ্টি হয়ে দু চোখ বেঁয়ে।

_

আনতারা খানম সারাদিন ভেবেছিলেন, হয়ত না বলেই, আব্বুর সঙ্গে দেখা করতে চলে গিয়েছে। কিন্ত বিকেল হয়ে আসার পরও মেঘালয়াকে ফিরতে না দেখে ভাবলেন, তিনি নিজেই গিয়ে নিয়ে আসবেন। সাথে বেড়ানোও হয়ে যাবে। তিনি বেরিয়ে পড়লেন। হেলাল সাহেবের বাড়ির পাশেই তার বোনের ননদের বাড়ি। তার বাড়ি পার করে যেতে হয়, হেলাল সাহেবের বাড়ি। গাড়ি থেকে নেমে বাকিটুকু হাঁটার পথ। সামান্য খানিকটা রাস্তা। বাড়ির সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছে, সেই বোনের ননদ মেরিনা শিকদার। আনতারা খানমকে দেখেই মুখটা কালো করে ফেলল সে। একটু এগিয়ে দাঁড়াল। তাকে দেখে থামল আনতারা খানম। মেরিনা নিজেই বলে ওঠে,

‘কোথায় চললে? ছেলের শশুর বাড়ি?’

চোখ-মুখ কেমন বিকৃত করেই বলেছে কথাটা। তা আনতারা খানমের চোখে লাগলেও, তিনি মৃদূ হেসে ঘাঁড় নাড়লেন। মেরিনা আবার নিজেই বলে ওঠে, ‘তোমরা নেহাত ভালো মানুষ গো বুবু। নইলে ওমন ভেগে যাওয়া মেয়েকে ঘরের বউ করে তুলতে নাকি?’

এ পর্যায়ে আনতারা খানম ভ্রু কুঁচকে তাকালেন। তার ঠিক বোধগম্য হয়নি মেরিনার কথাটা। হতবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কার কথা বলছো তুমি?’

মেরিনা তাচ্ছিল্য করে বলে, ছেলে কয়টা তোমার? আর বিয়েই বা কয়টা দিছো?’

আনতারা খানম এবার থমকে গেলেন যেন। একটা শুকনো ঢোক গিলে বললেন, ‘মেঘা। মেঘার কথা বলছো?’

‘মেঘাকেই তো ছেলের সাথে বিয়ে দিছো না?’

‘মেঘা পালিয়েছিল? কার সাথে? মজা করছো?’ উদগ্রীব হয়ে ওঠেন আনতারা খানম।

যা শুনেছেন, তার মাথা এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। দৌড়ে গেলেন হেলাল সাহেবের বাড়ির দিকে। সেখানে গিয়ে জানতে পারলেন, মেঘালয়া এখানে আসেনি। আনতারা খানমের মুখটা কেমন কঠিন আকার ধারণ করেছে। ভেতরে তোলপাড় চলছে।

হেলাল সাহেব শুনলেন, মেয়ে ও বাড়িতে নেই। এখানেও আসেনি। তাহলে গিয়েছে কোথায়? অজানা আশঙ্কায় বুক কেঁপে ওঠে তার।

আনতারা খানম আর একটি কথাও না বলে বেরিয়ে এলেন সেখান থেকে। হেলাল সাহেব, আনতারা খানমের মুখ দেখেই বুঝেছেন, এই অসন্তুষ্ট চাহনির পেছনের কারন। তার বুকটা আবারও ধুক করে উঠল। মেয়ের ঘর ভেঙে যাবে এবার?

আনতারা খানম বেরিয়ে এসে, রাস্তার একপাশে দাঁড়ালেন।
মাগরিবের আজান হচ্ছে আশেপাশের মসজিদে। ইরাজকে কল করলেন। কয়েকবার রিসিভ হলো না। তিনি আবার চেষ্টা করলেন। এবার ইরাজ কল রিসিভ করেই, উত্তেজিত স্বরে বলে উঠল,

‘কী সমস্যা, আম্মা! এতবারে যখন কল রিসিভ করছি না, মানে বোঝো না? আমি ব্যস্ত আছি।’

আনতারা খানম কঠিন গলায় প্রশ্ন করলেন, ‘কোথায় আছিস তুই?’

মায়ের কণ্ঠস্বর এমন গম্ভীর শুনে, ইরাজ বুঝে যায় কিছু একটা হয়েছে হয়ত। বিরক্ত হয়ে বলল, ‘এত শিরোনাম না দিয়ে, আসল কথা বলো।’

আনতারা খানম তিরস্কার করে ওঠে, ‘ভেগে যাওয়া বউ ঘরে তুলেছিস বাপ-ব্যাটা জেনে শুনে। একটু সতর্ক থাকলেও তো পারিস। আবার যেতেই পারে।’

ইরাজের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। শীতল স্বরে জিজ্ঞেস করল, ‘মেঘ, বাড়িতে নেই?’

আনতারা খানম আর কোন কথা না বলে, কল কেটে দিলেন। তার ভেতরটা এলোমেলো হয়ে আছে। তাকে না জানিয়ে এমন একটা কাজ করে ফেলেছে সকলে! যেখানে রাস্তায় ধরে লোকে কটু কথা শোনাচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পারে? আজ হেলাল সাহেবের মুখ দেখে ঘৃনা হয়েছে তার। নিজের মেয়ে মুখ পুড়িয়েছে, তা ইরাজের ঘাঁড়ে ঠেলে দিলেন কি করে তিনি? আনতারা খানম বিক্ষিপ্ত পায়ে বাড়ির দিকে অগ্রসর হলেন, এসব ভাবতে ভাবতে।

_

ইরাজ ক্লাবে বসে দলবল নিয়ে আড্ডায় মেতে ছিল। এমন একটা খবর শুনে, বিরক্তিতে মুখ কুঞ্চিত করে উঠে দাঁড়াল। পকেটে হাতরে বাইকের চাবি বের করে, চুপচাপ বেরিয়ে এলো ক্লাব থেকে।

বাড়িতে এসে, ছুটে নিজের রুমে গেল। আলমারী খুলে দেখল, সব ঠিকঠাক। কোন কাপড় বা টাকা কিছুই সরেনি। টি-টেবিলের ওপর মেঘালয়ার ফোন পড়ে আছে। অর্থাৎ মেঘালয়া খালি হাতে বেরিয়ে গেছে।

সেই দুপুর থেকে, এখন সন্ধ্যা পার হয়ে প্রায় অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। মেঘালয়া প্রানহীনের মতো বসে আছে। চারদিকের ঘটে যাওয়া চলমান পরিবেশের ঘটনা অথবা শব্দ, প্রকৃতির হাওয়া কোনকিছুই তাকে প্রভাবিত করতে পারেনি আজ। প্রাণহীনের মতো বসে আছে সেই ঘন্টার পর ঘন্টা। পার্কের এক কর্নারের একটি বেঞ্চের ওপর বসে আছে সে। পার্কের বিভিন্ন স্থান আলোকিত হলেও মেঘালয়া যেখানে বসে আছে, সেখানে দুর থেকে আসা মৃদূ টিমটিমে আলো। চোখ দুটো শান্ত, অচঞ্চল মেঘালয়ার। ছটফটে, আহ্লাদী, চঞ্চল মেঘালয়া জীবনে ঘটে যাওয়া কয়েকদিনের টানপোড়েনে, কেমন স্তব্ধ, শান্ত আর বাস্তবতার জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে যেন। এ কদিনের সবটা যেন মিলছে না তার হিসেবে। কেমন কোথাও একটা গড়মিল রয়ে যাচ্ছে। তার মাঝে ইরাজের আচরণ সবকিছুর ঊর্ধ্বে!

আচমকা কয়েকটি ছেলে এসে পাশেই দাঁড়াল ওর। সবগুলোর হাতে সিগারেট, কেউ কেউ আবার স্পিড অথবা টাইগারের বোতলে চুমুক দিচ্ছে। দেখতে অবশ্য ভালোমানের বখাটেই লাগছে সবগুলোকে। মেঘালয়া অত খেয়াল করল না। ছেলেগুলো মেঘালয়াকে ওভাবে একা বসে থাকতে দেখে, নিজেদের মধ্যেই কিছু বলে হাসাহাসি করছে। মেঘালয়া এতক্ষনে সম্বিত ফিরে পায়। এ পাশটা একটু নির্জন প্রায়। আর এটা শিশুপার্ক, বাচ্ছারা নিশ্চয়ই এই রাত করে এখানে আসবে না? পার্ক প্রায় ফাঁকা। আশেপাশে তাকিয়ে গা শিউরে উঠল, মেঘালয়ার।

কিছুক্ষন পর ছেলেগুলোর মাঝে দুটো ছেলে উঠে এলো। মেঘালয়ার সামনে এসে দাঁড়াল। মেঘালয়া মুখ তুলে তাকায় ওদের। বখাটেদের মুখের দিকে চেয়ে কেমন অদ্ভুত এক ভয় জেঁকে বসল বুকের মাঝে।

নিজেকে আজ দ্বিতীয়বার আবার এমন অসহায় লাগছে। প্রথমবার ইরাজ এসে দাঁড়িয়েছিল আল্লাহ প্রদত্ত দূতের মতো। আজও কেন জানি, নিজের অজান্তেই মেঘালয়া ওই চির অপছন্দের, অসভ্য, কঠিন রুক্ষ পুরুষকেই এদের সম্মুখে নিজের ঢাল হিসেবে আশা করল। নিজের ভাবনায়, নিজেই একবার শিউরে ওঠে মেঘালয়া। যার মুখ দেখবে না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে এই মুসিবতের সম্মুখীন হয়েছে সে, সেই মুসিবত থেকে রক্ষা পেতে তাকেই কেন আশা করছে মেঘালয়া?

চলবে..

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ