#অমানিশায়_সেই_তুমিই
#লেখায়_তেজস্মিতা_মর্তুজা
২.
মেঘালয়া তার নিজের রুমে থাকা উল্টোপাল্টা, বেশ অনেকগুলো ঔষধ খেয়ে নিয়েছে। যার মাঝে শক্তিশালী মিগ্রা’র— প্যারাসিটামল, এন্টিবায়োটিক ও পেইনকিলারও ছিল। যা ওর শরীর সহ্য করতে পারেনি এবং জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েছিল মেঝেতেই। যথাসম্ভব দ্রূত হাসপাতালে ভর্তি করানোর ফলে বিশেষ কোন ক্ষতি হয়নি, তবে শারীরিক দুর্বলতা ও ওষধের প্রভাব পুরোপুরি শরীর থেকে যেতে দু-একদিন সময় লাগবে।
ফোনে এ খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইমতিয়াজ সাহেব হায়-হায় করতে শুরু করলেন। তা দেখে চিন্তিত হয়ে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলেন আনতারা খানম। এবার কি বলে বোঝাবেন, ইমতিয়াজ সাহেব স্ত্রীকে। বললেন, ‘মেঘালয়ার প্রেসার ফল করেছে। সে এখন হাসপাতালে আছে, দ্রুত সেখানে যেতে হবে।’
বের হওয়ার পূর্বমুহুর্তে তার মনে পড়ল, ছেলের কথা। দৌড়ে ওপরে গেলেন। ইরাজের রুমের দরজা হালকা চাপানো। রুমে প্রবেশ করে দেখলেন, উদাম শরীরে হাত-পা ছড়িয়ে ঘুমাচ্ছে সে। শিয়রে বসে কয়েকবার মৃদূ ধাক্কা দিলে, ইরাজ রক্তলাল চোখ খুলে তাকায়। বাবাকে দেখে সামান্য শান্ত হলো। চোখের ইশারায় শুধাল, কি হয়েছে!
ইমতিয়াজ সাহেব হন্তদন্ত বলে উঠলেন, ‘মেঘা হাসপাতালে। কি জানি কি-সব উল্টোপাল্টা ঔষধ খেয়ে ফেলেছে। আমরা যাচ্ছি, তুমি য..
ইরাজ হাত উচিয়ে ধরল। কথা শেষ করতে দিলো না। গম্ভীর স্বরে বলে উঠল, ‘প্রশ্নই ওঠে না। হাসপাতালে, মানে এখনও মরে নি। মরলে খবর দিও, জানাজা পড়ে আসব।’
ছেলের এমন মন্তব্যে ইমতিয়াজ সাহেব ক্ষেপে উঠলেন। তবে কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলেন। ভারী পা ফেলে বেরিয়ে গেলেন ইরাজের রুম থেকে।
_
হাসপাতালের বারান্দায় পায়চারী করছেন হেলাল সাহেব। এবার মেয়ে যা করেছে, সে কর্মের আসলেই আর কোন ক্ষমা নেই তার কাছে। ইমতিয়াজ খান গিয়ে পৌঁছে দেখলেন, হেলাল সাহেব অস্থির চিত্তে এদিক-ওদিক হাঁটছেন। ওনাকে ধরে নিয়ে এসে পাশে থাকা বেঞ্চের ওপর বসালেন।
প্রাইভেট হাসপাতাল হওয়ায়, তেমন লোকজন নেই। হাসপাতালের পরিবেশও পরিচ্ছন্ন ও শান্ত। হেলাল সাহেবের মুখ মেঘাচ্ছন্নতার চাদরে ঢাকা। যা তিনি ইমতিয়াজকে বলবেন বলে মনে পুষেছেন, তা তার অসস্থি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। মেয়ের এতসব কুকর্ম জেনে, কোন বাবা কখনোই এমন মেয়েকে নিজের একমাত্র ছেলের বউ করে ঘরে তুলবেন না নিশ্চয়ই! এ প্রস্তাব রেখে, শেষে অপমানিত না হতে হয়। হতে পারে ব্যাবসায়িক কিংবা বন্ধুত্ব— যে সুসম্পর্ক ছিল তাদের মাঝে; এ প্রস্তাবের মাঝ দিয়ে তা নষ্ট হয়ে যাবে!
তার অস্থিরতা তর-তর করে বেড়ে যাচ্ছে এসব ভেবে। ইমতিয়াজ সাহেব নিজে থেকেই কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলেন,
‘এত কিসের চিন্তা করছিস? মেঘা মা তো ঠিক আছে এখন। যা হওয়ার হয়ে তো গিয়েছে। দেখ ভাই, এ বয়সে ভুল তো সকলেই করে থাকে। বয়সটাই এমন, বুঝলি! আর খারাপ কিছু তো হয়ে যায়নি, রাজ ফিরিয়ে এনেছে তো নাকি? তুই তো এমনভাবে ভেঙে পড়ছিস, যেন মেয়েকে হারিয়ে ফেলেছিস, আর ফেরেনি মেয়ে। মেঘার ছোট বয়স, বুঝতে পারেনি, করে ফেলেছে একটা ভুল। এসব ধরে বসে থেকে নিজের প্রেসার বাড়াস না, হেলাল। আর আনতারাকে জানতে দিস না এসব, আমিও বলিনি। মেয়েলি ব্যাপার-স্যাপার। খুব নাজুক হয়। আমার মেঘা মা যাই করেছে, করেছে। পঁচে যায় নি।’
এমন সব কথা শুনে হেলাল সাহেব আবেগী হয়ে পড়লেন। আপ্লুত হয়ে জড়িয়ে ধরলেন বন্ধুকে। অতঃপর ভেজা কণ্ঠেই বলতে শুরু করলেন,
‘কিসের অভাব দিয়ে মানুষ করেছিলাম ওকে, বলতো? মা মারা গেল ছোট রেখে। দ্বিতীয় বিয়ে করিনি, কেবল ওর জন্য। সকল সমৃদ্ধি দিয়ে বড়ো করে তুলেছি। আজ সে আমার সম্মান রাস্তায় লুটিয়ে এসেছে। সমাজে যে নামটুকু গড়েছিলাম এত বছরের পরিশ্রমে, তা এক রাতের ব্যবধানে ভেঙে খান-খান করে বাড়ি ফিরেছে। চারদিকের কথা কানে আসছে। হেলাল আকবর শাহ এর মেয়ে ভেগে গিয়েছিল।’
ইমতিয়াজ সাহেব বললেন, ‘যখন দুজন মিলে ব্যবসা দাঁড় করছিলাম, তখনও লোকে কত কটুক্তি করেছিল। সে-সবে কান দিলে আজ, তুই-আমি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হতে পারতাম না, হেলাল। লোকে বলবেই, তুই কেন গায়ে তুলবি সে-সব?’
হেলাল সাহেব আর কিছু বললেন না এ পর্যায়ে। চুপ রইলেন। ভেতরে খুব চিট-চিটে অনুভূত হচ্ছে। দোটানা হানা দিচ্ছে। কথাটা বলবেন কি-না! বললে, কিভাবে বলবেন? ইমতিয়াজ কেমন ভাবে নেবে কথাটা! মুখে এসেও আটকে যাচ্ছে। জিজ্ঞেস করলেন, ‘দেখেছিস মেঘকে?’
ইমতিয়াজ সাহেব জবাব দিলেন, ‘দেখেছি। কি সুন্দর স্নিগ্ধ মুখখানা জড়িয়ে গেছে মেঘা মায়ের। আনতারা তো মেঘার কেবিনেই বসে আছে। ভাবীর মতোই সুন্দর হয়েছিল তোর মেয়ে, মা’শা-আল্লাহ! এই অসুস্থ শরীরেও তাকিয়ে দেখার মতো।’
এবার যেন সায় পেয়ে গেলেন হেলাল সাহেব। বলে উঠলেন, ‘সুন্দর হয়েই বা কি? কলঙ্ক যা লাগিয়েছে, তাতে কার ঘরে যাবে ও? এতসব আজেবাজে রটে যাওয়ার পরও কোন ভালো পাত্র আসবে ওকে গ্রহন করে নিয়ে যেতে? পড়তে চায় সে। অথচ এ অবস্থায় কি করে কি করব?’
ইমতিয়াজ সাহেব ঘোর আপত্তি জানান এ কথায়, ‘তুই বেশিই ভাবছিস না কি? কে বলেছে বিয়ে হবে না? আশ্চর্য হচ্ছি তোর মতো শিক্ষিত মানুষের এমন মূর্খের মতো ভাবনায়। এই ছোট বিষয় নিয়ে, মেয়ের জীবনে বিয়ে না হওয়া অবধি চলে গিয়েছিস?’
হেলাল সাহেব দ্রুত বলে উঠলেন, ‘কে নেবে ওই মেয়ে? তুই নিবি তোর ছেলের জন্য?’
বলেই অসহায় মুখ বানালেন। আর অপেক্ষারত রইলেন ইমতিয়াজ সাহেবের প্রতিক্রিয়া দেখার।
ইমতিয়াজ সাহেব এমন একটা কথায় আসলেই থমকে গিয়েছেন। কিছু মুহূর্তের জন্য ঠিক মেলাতে পারেনি তার মস্তিষ্ক হেলাল সাহেবের কথাটুকু। বুঝে উঠতেই, চোখ ফিরিয়ে তাকালেন হেলাল সাহেবের দিকে। তিনি সামনের দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে পাংশুটে মুখে বসে রয়েছেন। ইমতিয়াজ সাহেব এবার নিজেও অপ্রস্তুত বোধ করলেন। কি বলবেন, হেলালের বলা এ কথার পরিপেক্ষিতে! কিছুটা সময় নিয়ে, অতঃপর বললেন,
‘তুই মেয়ে দিবি আমার ঘরে?’
কথাটা কানে যেতেই হেলাল সাহেবের চোখ চিকচিক করে ওঠে। মনে সুপ্ত এক বাসনা জেগে উঠল। অদ্ভুত দৃষ্টি মেলে তাকালেন ইমতিয়াজ খানের দিকে। দু’বন্ধুর চোখে-চোখে অনেক কথা হয়। এভাবে কিছুক্ষন দুজন দুজনের দিকে চেয়ে থেকে— আচমকা ইমতিয়াজ সাহেব মৃদূ হেসে ফেললেন। তবে হেলাল সাহেবের বুকে হাতুরি পিটছে। ইমতিয়াজের এই হাসির সঠিক মানে উদ্ধার করতে পারলেন না তৎক্ষনাৎ। ইমতিয়াজ সাহেব কাঁধ থেকে হাতটা সরিয়ে ঠিকঠাক হয়ে বসলেন এবার। হেলাল সাহেব বন্ধুর মুখে যে-কোনো এক উত্তরের আশায় চেয়ে রইলেন।
ইমতিয়াজ খান ধীর-স্থির কণ্ঠে বললেন এবার,
‘বহু আগে থেকেই চেয়েছিলাম, মেঘাকে ইরাজের জন্য তোর কাছে চেয়ে নেব। তবে সাহস হয়নি কখনও, ইরাজের বাজে স্বভাবগুলোকে কেন্দ্র করে। বন্ধু হয়ে মেঘার মতো লক্ষী মেয়ের হাত আমার ওই বাঁদর ছেলের জন্য চাইতে দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়তাম বরাবর। তবে আজ মেয়ে এক ভুল করে ফেলায় তুই খুব লজ্জায় পড়েছিস, হেলাল!’
হেলাল সাহেব মাথা নত করে নিলেন। ইমতিয়াজ খান তা দেখে আবারও সামান্য হাসলেন। বললেন, ‘সমস্যা তো আমার ছেলেরও আছে। বাবা হয়ে জানি, ছেলের স্বভাব- চরিত্রের ব্যাপারে। ও ছেলে নির্ঘাত হাড়ে বজ্জাত। এ ব্যাপারে লজ্জা আমারও আছে। আর সম্প্রতি মেয়ের করা ভুল নিয়ে লজ্জা তোরও আছে। চল এবার লজ্জা-লজ্জায় কাটাকাটি করে ফেলি।’
বুকটা প্রশান্তিতে ভরে গেল যেন এবার হেলাল আকবরের। বুকের সঙ্গে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন ইমতিয়াজ খানকে। তিনি আসলেই বড়ো সৌভাগ্যতে পেয়েছিলেন সেই জীবনের প্রথমকালে এমন এক বন্ধু। ইমতিয়াজ সাহেব নিজেকে ছাড়িয়ে মুখ ভার করে বলল,
‘আদিক্ষেতা কম দেখা। আর আমার বউ যেন কিছু জানতে না পারে মেঘার ব্যাপারে। চল আরেকবার দেখে আসি মেঘা মাকে।’
ঘাঁড় নাড়লেন হেলাল আকবর। যাবেন না তিনি ওই অকৃতজ্ঞ মেয়েকে দেখতে। যে মেয়ে বাপের ভালোবাসা বোঝে না; বলেছিলেন ক্ষেপে গিয়ে কথাগুলো, এবং যা মেয়ের প্রাপ্য। অথচ সেই মেয়ে জান দিতে প্রস্তত! অনেক বুঝিয়েও ওনাকে নিতে পারলেন না ইমতিয়াজ সাহেব মেঘালয়ার কেবিনে। অগত্যা নিজেই অগ্রসর হলেন সেদিকে।
_
সে-সবের দুদিন পেরিয়ে গেছে। এখন রাতের প্রায় অর্ধেক পেরিয়ে যাচ্ছে। রাত দেড়টা পার হয়ে ঘড়ির কাটা দু’টোতে পৌঁছাবে। এখন মেঘালয়া সুস্থই। হয়ত আগামী কাল সকালেই বাড়ি যেতে পারবে। সে আপাতত কেবিনের বেডে শুয়ে চার-দিন আগে ঘটে যাওয়া সেই অভিশপ্ত দুর্ঘটনাকে মনে করছে ছাদের দিকে দৃষ্টি দিয়ে। সেদিন ইরাজ সঠিক সময়ে না পৌঁছালে হয়ত খারাপ কিছু হয়ে যেত ওর সঙ্গে। এ ব্যাপারে ইরাজের প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়ার কথা থাকলেও, ওকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার সময় গাড়িতে যে কথাগুলো ইরাজ শুনিয়েছে ওকে, তাতে করে ইরাজের ওপর মেঘালয়ার কেবল ঘৃনার বহর বৃদ্ধি পেয়েছে। সামান্য কৃতজ্ঞতাবোধ জন্মাতে গিয়েও যেন আবার সুপ্ত অবস্থায় ভেতরে লুকিয়ে পড়েছে।
আস্তে করে কেবিনের ভিড়িয়ে রাখা দরজা পার করে, কোন পুরুষ অবয়ব ভেতরে প্রবেশ করল। মেঘালয়া তা টের পেয়ে তীক্ষ্ণ নজর মেলে চেয়ে আছে সেদিকে। ইরাজ এসে কেবিনের আলো জ্বালিয়ে, সেখানে থাকা সোফার সম্মুখে দাঁড়াল। সোফার ওপরে মেঘালয়ার দু-একটা ওড়না বা কাপড় রাখা ছিল। সেগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিলো মেঝেতে। হয়ত সেগুলো সরিয়ে সোফায় বসবে! মেঘালয়া দাঁত চেপে ধরে দেখছে সবটা নিরবে।
অথচ ইরাজ সেখান থেকে হেঁটে এসে বেডের অদূরে থাকা চেয়ারের সামনে দাঁড়াল। মেঘালয়ার প্রশ্ন, তাহলে কাপড়গুলো ফেলার মানে কি? মুখে কিছু বলে শুধু-শুধু খিস্তি শোনার ইচ্ছে নেই এই বদমাশ লোকের মুখে। যা ইচ্ছে করুক, দ্রুত এখান থেকে বেরিয়ে গেলেই হলো।
চেয়ারটা টেনে নিয়ে মেঘালয়ার কাছে গিয়ে বসল ইরাজ। নিচের দিকে মাথা নত করে খানিকটা ঝুঁকে বসল। অদ্ভুত গম্ভীর চোখে কিছুক্ষন নিরবে তাকিয়ে থেকে, শীতল কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল,
‘তোর বাপ কি ভাবে আমায়?’
‘আপনি যা তাই ভাবে। আপনি জানেন না আপনি কি?’
মেঘালয়ার দেওয়া চটপটে জবাবে, কপাল কুঞ্চিত করে চোখ তুলে তাকাল ওর দিকে।
‘তর্ক করছিস আমার সাথে? থাপ্পড় মেরে সবগুলো দাঁত নড়িয়ে দেব, অসভ্য!’
মেঘালয়া তাচ্ছিল্য কোরে মনে-মনে ভাবল,
‘অথচ আপনার সভ্যতার চোটে হাসপাতালের বেডে শুয়েও ধন্য আমি।’ কিন্ত মুখে কিছু বলল না।’
চোখ ছোট-ছোট করে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষন ইরাজ। আপাদমস্তক পরখ করে নিলো। অতঃপর স্বাভাবিক গলায় আস্তে করে জিজ্ঞেস করল, ‘মরিস নি কেন এখনও? বেঁচে আছিস বলেই তো তোর বাপ এখন তোকে আমার গলায় ঝোলাতে এনার্জি ড্রিংক খেয়ে লেগেছে।’
ভ্রু কুঁচকে তাকাল মেঘালয়া। শান্ত স্বরে বলল, ‘আপনার জন্যই হয়েছে সব, তাই আমার কানের কাছে প্যানপ্যান করে লাভ নেই।’
ইরাজ ক্ষুব্ধ দৃষ্টিপাত করে কেবল চেয়ে আছে মেঘালয়ার দিকে। ওর নজর বলছে, যখন তখন একটা থাপ্পড় পড়ে যাবে মেঘালয়ার গালে। মেঘালয়া তার আগেই বলে ওঠে,
‘আব্বুর সামনে তো আপনি সাআআধু! আব্বুর ওপর পারমানবিক বোমা বিস্ফোরণ করেও বোঝানো যাবে না, যে আপনার মতো ক্যাকটাস সাহারা মরুভূমির বুকেও দ্বিতীয় জন্মায় নি।’
চলবে..