অপেক্ষা পর্ব-১২

0
7

#অপেক্ষা
#Mariam_akter_juthi
#পর্বঃ12 [ভুল বোঝাবুঝি]

[অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ]

অরু— তোর মতো মানুষ আমার বন্ধু হতে পারে না, তোরা সবাই খারাপ, স্বার্থপর নিজেদের টা খুব ভালো করে বুঝিস, অন্য কারো মনের দিক টা বুঝার চেষ্টা করিস না, ‘তেজি কন্ঠে’

সামিরার তো মাথায় আসছে না হঠাৎ অরু এসব কি বলছে,স্বার্থপর, খারাপ নিজেদের টা বুঝি,ওর মোন বুঝি না,ওর মাথায় কিছুই আসছে না তাই আবারো অরু পিতার কাছে মধু কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো।

সামিরা— কি হয়েছে তোর এমন করে কথা বলছিস কেন? বল, আমাকে

অরু— এমন করে কথা বলছিস যেন কচি খুকি তুই, আমার থেকে সব কিছু কেরে নিয়ে এখন আবার আমাকে জিজ্ঞেস করছিস, ‘চোখ দুটো রাঙিয়ে’

সামিরা— আরে বাবা কি করেছি সেটাই তো জিজ্ঞেস করছি,

অরু— আমকে তো তোর ভাবী বানানোর খুব শখ ছিল, তাই তো তোর নিজের ভাইয়ের আসল পরিচয় দিলি না, ভাইয়ের পরিচয় গোপন রাখলি আমার কাছ থেকে, এখন তো তোর ইচ্ছাটা পূরণ হতে যাচ্ছে, তুই যেটা চেয়েছিস সেটাই তো হচ্ছে,

সামিরা— অরু ভাইয়ার বিষয়ে আমি তোকে বলতে চাইছিলাম কিন্তু ভাইয়া তখন তোর কাছে, বলতে নিষেধ করেছিল,সে আমার ভাই হয়, তাই তোকে বলা হয়নি, কিন্তু এখন তো তুই জানিস,

অরু— তাইতো আমি এই বিয়েটা করতে চাই না,

সামিরা— কিন্তু কেন??

অরু— কারণ টা আমি তোকে সেই দিন বলতে ভার্সিটিতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তুই কি করলি, তার আগে আমার বাবা মাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে তোর ভাবী বানানোর জন্য রাজী করালী,আর তুই ভালো করে জানিস আমি ‘মা,বাবার’ বাধ্য সন্তান। তাই বাবা মাকে একবার রাজী করাতে পারলে, তোর ইচ্ছে পূরণ হয়ে যাবে। কিন্তু তুই একটা বারও আমার কাছে জিজ্ঞেস করলি না আমি তর ভাইকে বিয়ে করতে চায় কিনা, কিন্তু তুই সেটা জিজ্ঞেস করলি না, তবে শুনে রাখ আমি তোর ভাইকে ভালোবাসি না, আমি অন্য একজন কে ভালোবাসি,

সামিরা— মিথ্যা কেন বলছিস?? তুই আর ভাইয়া তো একে অপরকে ভালোবাসিস, তাহলে,

অরুপিতা ডান হাতটা জাগিয়ে ‘ব্যাস’

~~ মিথ্যা আমি নয় তুই বলছিস, আমি তোর কোন ভাইকে ভালোবাসি না,আর না বাসবো, আমি শুধু একজন কে ভালোবাসি, আমি এই বিয়েটা করতে চাই না সামু, প্লিজ আমাকে হেল্প কর। ‘করুন কন্ঠে’

সামিরা— তোর মাথা ঠিক নেই, এখন তোর গায়ে হলুদ, কালকে বিয়ে লোকসমাজ দাওয়াত দেওয়া হয়ে গেছে, এখন থেকেই মানুষ জন আসা শুরু করে দিয়েছে,আর এই মুহূর্তে আমরা যদি এমন কিছু করি, দুই ও পরিবারের এক পরিবারের ও মানসম্মান বলে কিচ্ছু থাকবে না, তাই আমাকে ক্ষমা করে দিস, এমনটা আমার করা উচিত হয়নি,তোর অনুমতি না নিয়ে এত বড়ো একটা ভুল করার,

অরু— এই বিয়েটা আমি ঠিকই বাধ্য হয়ে করছি, তবে তোর ভাই আমার শরীর টা পেলেও,মোন টা পাবে না, আর না তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড থাকবি, কোনদিন তুই আমার সামনে আসবি না, আমি তোর মুখ ও দেখতে চাই না, সামু ঘৃণা করি এই বন্ধ নামক শক্র কে।আজ থেকে তোর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই,যা ছিল তা আজ এই মুহূর্তে সব শেষ করে ফেললাম, বেরিয়ে যা তুই এখন থেকে, এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে সামিরা কে একপ্রকার অপমান করে রুম থেকে বের করে দিয়ে কান্না করতে করতে বলে।

~~ হে আল্লাহ আমার কোন পাপের শাস্তি দিচ্ছেন? আমার আপনার দরবারে চাওয়ায় তো কোন ভুল ছিল না, তাহলে কেন আমাকে এভাবে শাস্তি দিচ্ছেন। আমার ধৈর্যর পরিক্ষা এভাবে আর নিয়েন না, মালিক আমাকে সাহায্য করুন। অরু

********************************************
“দূরুত গতিতে রাত ফুরিয়ে সকাল হলো,অরুপিতার চোখে এক ছিটে ফোঁটা ঘুম নেই, অষ্টদাসীর চোখ জোড়া লাল লাল হয়ে কুঁচকে আছে, অপর দিগন্তের আনন্দের সিমা নেই, আজকে ঘরের লোক্ষী ঘরে আসবে তাই কোন দিক থেকে কমতি রাখছে না, তবে কালকের গায়ে হলুদের পর সামিরা যে সেই রুমে ঢুকেছে আর বের হতে দেখা যায় নি,অরুর কথায় তার ছোট মনে ভিশন আঘাত পেয়েছে,তর জন্য যেহেতু এতো কিছু হয়েছে, অরুপিতা ও যখন সব ছিন্ন করেছে তাই সে আর এসবে থাকবে না, তবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিয়েতে যে সবচেয়ে বেশি খুশি ছিল সেই যদি বিয়েতে না থাকে তাহলে সবার মনে সংকোচ থাকতে পারে,তাই কাল বিয়ের পরে, সামিরা আর অরুপিতার সামনে যাবে না, তাই রুম থেকে আর বের হয়নি, বিয়ে বাড়ীতে তো কাজ কর্মের শেষ নেই, তাই সামিরার দিকে কেউ ততটা গুরুত্ব দেয়নি,বর যাত্রী গাড়ি বের হয়ে পরবে, সম সম সময় হয় গেছে, একপ্রকার গাড়ি বহন করতে শুরু করলো।
~~~~~~~~~~~~~~

“অনিচ্ছা থাকার সত্ত্বেও তিন কবুল পরে নিজের ভালোবাসার মানুষ টাকে বিসর্জন দিয়ে বিয়েটা সম্পুর্ন করতে হলো অরুপিতার ‘মা,বাবার’ সম্মান রক্ষার্থের জন্য, হ্যাঁ ‘বাবা,মার’ প্রতিটি বাধ্য সন্তানের জীবন টা এমন, তাঁরা না চাইলে ও বাবা মায়ের কথা অমান্য করার ক্ষমতা যে তাদের থাকে না,অরুপিতার ও তাই হলো, ভিতর টা খা,খা করছে, ভালোবাসার মানুষ টার জন্য।আজ যদি অরুপিতার পাশে এই লোকটা না হয়ে শাহারিয়া নামক মানুষটা থাকতো তবে কি বেশি ক্ষতি হয়ে যেতো?? সে কিভাবে ভুলবে সেই বিকেলের কথা?গোধূলি লগ্নে দুজন একে অপরের কাঁধে কাঁধ রেখে পরোপার পর্যন্ত পার করার কথা? সুখ দুঃখ এক, অপরের সাথে ভাগ করে নেওয়ার কথা?পা,য়ে পা মিলিয়ে চলার কথা? সে তো শাহারিয়া কে কথা দিয়েছিল, আপনি ব্যক্তি টা সুন্দর কি শ্যামবর্ণের হন না কেন এই অরুপিতা টা আপনার”

~~ যদিও হাজারো সুন্দর মানুষের ভিড়ে আমি আপনার হাত টা রোইবো আকরে ধরে, যদি আপনার চেয়ে হাজারো বেটার অফসেন ও থেকে থাকে তুবুও আমার আপনার মতো তুমি টাকেই লাগবে‌‌।

কলমে~ মারিয়ম_জুথী

“কিন্তু কোথায় পারলো কথা রাখতে,নিয়তি তাকে রাখতে দিলো, না, ‘কথায় আছে না’ তুমি রাখতে জানলে আমি হাজার বার থাকতে বাধ্য, প্রবাতের মত আরুপিত রাখতে জানলো না তাই ছুটে পালালো। নিয়তি তাকে এই জায়গায় এনে দাঁড় কারালো।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে সামিরা, সামনে হিংস্র হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রিহান, কি অসম্ভব রাগে সাপের মত ফোঁস ফোঁস করছে, সামিরার তো রিহানের এমন ভয়ংকর রাগ দেখে সমস্ত শরীর শিওরে উঠেছে, একটু পর পর কেপে উঠছে ছোট্ট শরীর টা,কাপালে যে তার শনি আছে বুঝতে একটুও অসোবিধা হলো না, মুখ দিয়ে কিছু বলতে ও পারছে না, মুখটা ও টেপকশ লাগানো, সামিরা কে ছোটাছুটি করতে দেখে রিহান বললো।

~~ আমার দেওয়া গহোনা তোর শরীর থেকে খুলতে নিষেধ করেছিম না? কিন্তু না তুই সব তোর শরীর থেকে খুলে ফেললি, তুই আমার অবাধ্য হলি, এই রিহান অরণ্যর অবাধ্য হলি, এমন কি অন্য ছেলেদের সাথে, গা ঘেষা’ঘেশি করলি। যেটা আমি আমি একদমই সহ্য করতে পারিনা, এখন তো এর শাস্তি তোকে পেতে হবে”।

চলবে,,

[ভুল-ত্রুটি মার্জনা দৃষ্টিতে দেখবেন,😊☺️☺️😊]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে