#অপেক্ষা
#Mariam_akter_juthi
#পর্বঃ3
[অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ]
সামিরা— মেয়েকি, হেসে বলল।
~~~~ ও, ও তো আমার ভাবি।
রাফি— হোয়াট ।
সামিরা— হ্যাঁ ভাইয়ের সাথে ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে। আর ভাইয়া ওকে এই ভার্সিটিতে এডমিশন করিয়েছে আমার সাথে।
“রাফি কিছুক্ষণ সন্দেহের চোখে তাকিয়ে ওখান থেকে চলে যায়”
“তুই ওনাকে মিথ্যা কেন বললি।” আরু
সামিরা— আরে তুই এদেরকে চিনিস না। এরা হলো ভার্সিটির সিনিয়র ভাই। আমি এদের কথাই বলছিলাম তখন। ওদের একটা গ্যাং আছে। তাদের একজন লিডার আছে। আর তাদের লিডারের নাম রিহান। ভাই কি বলবো তোকে। লিডার ভাইকে দেখতে কি জোস। কিন্তু ভাইয়া তো কাউকে পাত্তাই দেয় না। তবে একবার একটা মেয়ে ভাইয়াকে প্রপোজ করেছিল। তারপর যে সে কি কাহিনী। তাইতো তোকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আমার ভাইয়ের বৌ বললাম। কেননা তাদের লিডার ভালো হলেও। এই রাফি ভাই একদম মেয়ে বাস। যাকে দেখে তার সাথেই লাইন মারে
অরু— হুম বুঝতে পেরেছি। তোর অনেক বুদ্ধি আছে।
“যাইহোক এখন তো ক্লাস শেষ বাসায় যেতে হবে। নয়তো আম্মু চিন্তা করবে। কালকে দেখা হবে আল্লাহ হাফেজ।”
সামিরা— ওকে আমার কিউট ভাবি। মুচকি হাসে
~~~বর্তমান~~~
“আজকে সারাদিনের ঘটনার বাসায় এসে অরু তার মায়ের কাছে সবটাই বলল। শুধু সামিরার ভাবি ডাকাটা বাদে।” কেননা সামিরা তো তখন বলেই দিয়েছিল। ওকে সেইফ রাখার জন্যই এমনটা বলেছিল। তাই এই বিষয়টা মায়ের কাছ থেকে চেপে গিয়েছে।
**************************************
“রক্তিম আকাশ ধীরে ধীরে লাল লাল মেঘের আবারোনের দেখা মিলে ঠিক সন্ধ্যা হওয়ার আগ মুহূর্তে। ঠিক তখন জানি একাকীত্ব জীবন উপভোগ করতে অন্যরকম আনন্দ পাওয়া যায়।”
“প্রতিদিন কের অভ্যাস এর মত অরুপিতা আজও নিজের একাকীত্ব প্রকাশ করতে আধো আধো সন্ধ্যাবেলায় ছাদের এক কোনাতে দাঁড়িয়ে দূর আকাশে লালচে হওয়া চারটার দিক তাকিয়ে কিছুক্ষণ পর একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ে, কেন তার সাথে এমনটা হল। সে তো নিশিকে খুবই ভালোবাসতো। আর বাকি রইল নিজের সেই মানুষটা তাকে তো তুলনা বিহীন ভালোবাসতো আরু, তাহলে কেন সেদিন একটা বার তার কথা ভাবলো না সে। পুরনো কথাগুলো বার বার মনের ভিতর খুব করে আঘাত বয়েয়ানে ছোট্ট মনে। বিষিয়ে দেয় যখন মনে পড়ে এসব কথা। তবে অরু মন ভরে দোয়া করে হৃদয়ের জন্য। সে যেন ভালো থাকে।”
“কিছুক্ষণ চাঁদ উপভোগ করার পর চোখে পড়ে চাঁদের কিছুটা দূরে ছোট্ট একটা ঝকঝক করা তাঁরা। আশেপাশে আর কোন তারার আভাস নেই। আরুপিতার তাঁরা টার প্রতি কেমন আগ্রহ বাড়লো। নিখুঁত চাউনিতে কিছুক্ষণ দেখলো। তারপর আবারো একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে সেখান থেকে চলে আসবে এমন সময় সামনে আরো একটা একই রকম তাঁরা দেখে দাঁড়িয়ে যায়। পিছন ঘুরে আবারও আগের তাঁরাটার দিকে তাকিয়ে সামনের টার দিকে তাকায়। কি অদ্ভুত দুটো তাঁরা দুই পেরান্তে । আরুপিতা তাঁরা দুটোকে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে। কিছু একটা ভেবে মুচকি হাসি দিলো। বিড়বিড় করে আওরালো। পেছনের তাঁরা টা আমি আর সামনের তাঁরা টা, এটুকু বলতে আরুর মুখটা আঁধারে ঢেকে যায়। বিষিয়ে জাওয়া মনটা নিয়ে দফ দফ পা ফেলে ছাদ থেকে নেমে যায়।
” রক্তিম হওয়া চাঁদ টা শুধু আরু একা নয় অপোর প্রান্তের আরো এক এক ব্যক্তি উপভোগ করতে এসেছে। তার ও এই বিষয়টা চোখে পড়েছে। দুই প্রান্তে, থাকা দু’টো তাঁরা কে। সে ও আরুপিতার মত একি বক্তব্য পেশ করলো। একটা তাঁরা আমি আর একটা তাঁরা তুমি। জানিনা তুমি কোথায় আছো তবে আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।”
“আমি অপেক্ষা করবো তোমার প্রিয়তমা। জীবনে অপেক্ষা করতে রাজি তুবুউ ভুল মানুষের সঙ্গ আমি চাইনা ভুল মানুষ, আমর জীবনে না আসুক।”
এসব চিন্তা করার মধ্যে পিছন থেকে মেয়েই,লি আওয়াজ পেয়ে, শাহারিয়ার বুঝতে সময় লাগলো না। এটা আর কেউ না।তার একমাত্র দুষ্ট মিষ্টি আদরের ছোট্ট বোন সামিরা।
সমিরা— আমার ভাই এখানে কি করছে। তার কি মান খারাপ?? তাহলে বলে দিচ্ছি একদম মোন খারাপ করার দরকার নেই। কারণ তার জন্য সু,মিষ্টি একটা ভাবী পছন্দ করেছি আমি।
~~তাই ভাই এর আর মন খারাপ করার দরকার নেই।
শাহারিয়া— হয়েছে তোর পাগলামি করা।
সামিরা—তুমি সব সময় এরকম করো ভাইয়া। তুমি আমার একটুও মন বুঝনা। এখন যে আমার একটা ভাবি প্রয়োজন সেটা তুমি মোটেও বুঝতে চাইছো না। নিজে তো ভাবিয এনে দিবেনা। এখন আমি নিজে থেকে ভাবি পছন্দ করেছি তাও তুমি ভাই পাত্তা দিচ্ছে না।
শাহারিয়া— বুঝতে পেরেছি আমার পিচ্চির মন খারাপ। কি নিয়ে এমন খারাপ বল।
সামিরা— না ভাইয়া আজ তো আমি ভীষণ হ্যাপি। কারণ মিষ্টি ভাবি তো আমাকে তার বেস্ট ফ্রেন্ড বানিয়ে নিয়েছে। তাইতো আমি তোমাকে আজ তার কথা বলতে এলাম। কিন্তু তুমি তো আমাকে পাত্তা দিচ্ছো না।
~~ বাই দ্যা ওয়ে, ভাইয়া কাল থেকে তো তুমি আমাদের ভার্সিটিতে জয়েন হচ্ছো। রেগুলার তাইনা।
শাহারিয়া— হ্যাঁ কাল থেকে রেগুলার হচ্ছি।
“সামিরার হঠাৎ কিছু একটা মনে উঠতেই লাফিয়ে বলল।”
সামিরা— ভাইয়া তুমি তো বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ নিচ্ছে তাই না। তুমি কি জানো আমার মিষ্টি ভাবিও আমার বিভাগের। মানে তোমার স্টুডেন্ট। আমি শিওর আমার মত তুমিও আমার বেস্টুকে দেখলে প্রেমে পড়ে যাবে।
শাহরিয়া— তোর বকবক করা হয়ে গেছে তাহলে এবার থাম, এখান থেকে চল।
সামিরা— কিন্তু ভাইয়া,,
“শাহরিয়া সামিরার কোন কথা পাত্তা না দিয়ে নিচে নেমে যায়।”
সুবিশার একটা রাত্রি শেষ হয়ে ঘন কুয়াশায় ঢাকা ফুরফুরে এক সকালে দেখা মিলল। শীতের সকাল মানেই অন্যরকমের প্রশান্তি। টিপ টিপ কুয়াশা। মুখ থেকে কথা বলার সময় ধোয়া বের হওয়া। শীতের গরম কাপড় পরা। আহা সে যেন এক মনো মুগ্ধকর পরিবেশ।
অরুপিতা প্রতিদিনকার মতো ভার্সিটির উদ্দেশ্য বের হয়ে যায় বাসা থেকে। আজ যেন একটি বেশি লেট হয়ে গেছে। তাই তাড়াহুড়ো করে একটু বের হলো।তাড়াতাড়ি পৌঁছানোর জন্য, তাড়াহুড়া করতে করতে ভার্সিটিতে প্রবেশ করার সময় একদমই খেয়াল না করে দৌড়াতে দৌড়াতে গেল ক্লাস রুমের দিক।
“ও মাগো,” আপনি কি চোখে দেখতে পান না। নাকি চোখ দুটো থাকতেও অন্ধ। ভেঙে দিলেন তোমার কোমরটা। অরু
এই যে আমি ঠিকই চোখে দেখতে পাই। আপনি তো দৌড়াতে দৌড়াতে আমার উপরে এসে পড়লেন। আবার উল্টা আমাকে কথা শোনাচ্ছেন। জানেন এর শাস্তি কি হতে পারে আপনার। আপনি কার গায়ের উপর পরেছেন।
অরু— আপনি কোথাকার কোন ছাগল তা আমি কেন দেখতে যাব, আপনার দোষ যেমন। আমার একটু তেমন দোষ নেই। আমারতো লেট হচ্ছে বলে এভাবে আসছিলাম। আপনি একটু দেখে চললেই তো হত
তাহলে তো আর দুর্ঘটনা ঘটতো না।
সামনে থাকা যুবকটি আরুপিতার এমন কথা শুনে চিবিয়ে চিবিয়ে বলবো।-
~~ রিহান আমি, আর তুমি আমার সাথে পাঙ্গা নিচ্ছ। জানো এর পরিণত কি হতে পারে। অপেক্ষা কর এর ফল তোমাকে ঠিকই বোঝাবো।
অরু— আপনি রিহান হন কিংবা ফিহান। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আপনার যা ইচ্ছা তাই করেন। তাতে আমার কি। এখন আপনি আমার সামনে থেকে সরে দাঁড়ান। আমি ক্লাসে যাব আমার লেট হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া আজকে তৃতীয় ক্লাসে নতুন প্রফেসর এর ক্লাসে যেতে হবে। ভাই আপনার সাথে এই মুহূর্তে তর্কে যেতে চাই না। বলে রিহান কে আর কিছু বলতে না দিয়ে ওখান থেকে দৌড়ে চলে যায়।
রিহান তো মেটার এমন কান্ড দেখে কিছুটা অবাক হয়। কারণ তার জানামতে ভার্সিটির সবাই তাকে চেনে। ভয় ও পায় তার সাথে কেউ কথা বলে না। আর এই মেয়েটা কিনা তাকে টক্কর দিয়ে কথা শুনিয়ে গেল?
“তবে রিহানের মেয়েটাকে বেশ মনে ধরেছে। মেয়েটার কথা বলার স্টাইল। কথায় কথায় ভ্রু কুঁচানো। চোখদুটো বড় বড় করে ফেলা। বেশ ঘায়েল করেছে রিহানের মনকে,
তবে এবার কি রিহানের মনে কেউ জায়গা করে নিতে পারবে? নাকি মনে ভালোবাসার আবেশ এসেও হারিয়ে যাবে??
তাড়াহুড়োর মাঝে দুই দুটো ক্লাস শেষ করে অরুপিতা ছুটলো নতুন প্রফেসরের ক্লাস রুমে বায়োলজি সাবজেক্ট নিয়ে। কোনমতেই নতুন প্রফেসরের ক্লাসে দেরি করতে চায় না সে, তাড়াতাড়ি আশায় প্রথম বেঞ্চেই জায়গা হল তারার সামিরার।
ক্লাসে মোটামুটি সবাই উপস্থিত হওয়ার কিছুক্ষণ পর প্রফেসর ক্লাস এ ঢুকে সবাইকে স্বাগতম জানালো। সাথে সকল স্টুডেন্টরাও প্রফেসরকে সালাম জানিয়েছে। সাথে সবাই সবার নাম পরিচয়টাও করে নিয়েছে। ক্লাস চলার মাঝামাঝি সময় হঠাৎ শাহরিয়ার মনোযোগ হল প্রথম বেঞ্চের সামিরার পাশে বসা একটা মেয়েকে। এখন বললে ভুল হবে প্রথম থেকেই লক্ষ্য করেছে। একদম চুপচাপ নিষ্পাপের মতো মেয়েটা। চেহারাও বেশ মায়া জড়িয়ে আছে। ক্লাসে আসার পর প্রত্যেকটা মেয়েই তার দিকে আর চোখে তাকিয়েছে শুধু এই মেয়েটা বাদে। তাই সে কৌতুহল বসত বেশ কয়েকবার সামনে বসে থাকা অরুপিতার দিক লক্ষ করেছে মেয়েটা তার দিক তাকায় কিনা,
তবে কি শাহারিয়ার ও মনে ধরল অরুপিতা কে?? কি হচ্ছে চলেছে তাদের তিনজনার জীবন ভবিষ্যতে?? কে পাবে কে হারাবে এই ঠকে যাওয়া মেয়েটা কে?
চলবে,,।