অন্যরকম ভালোবাসা পর্বঃ ০৩
– আবির খান
আর এদিকে আবির শুধু মায়ার কথাই ভাবছে…চোখটা বন্ধ করলেই মায়ার মায়াবী মুখটা ভেসে উঠে…হঠাৎ আবিরকে পিছন থেকে একজন ডাক দিলো…
লোকঃ স্যার আপনাকে এখনই যেতে হবে..ওরা আবার সমস্যা ক…..
আবিরঃ আপনাকে না আমি এখানে আসতে না করছি..কেন এসেছেন??আমাকে ফোন দিলেই পারতেন…
লোকঃ স্যার আপনার ফোনতো বন্ধ..স্যার আপনার এখনই যেতে হবে..না হলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে…আর বড় স্যার আমাকে পাঠিয়েছেন..বলেছেন জরুরি..আর এই কাগজ টা পাঠিয়েছেন..
আবির কাগজ টা পড়ার সাথে সাথেই ওর চোখ আগুনের মতো জ্বলে উঠলো..আবির উঠে বেরিয়ে গেলো…লোকটাও নাই হয়ে গেলো..
মায়া আর অনু তাদের কথা শেষ করে বেরই হচ্ছিলো… ঠিক তখনই আবির অগ্নি চোখে মায়ার দিকে আসছিলো…
মায়াঃ অনু ও অনু… আমি মনে হয় আজ শেষ দোস্ত.. ওই দেখ কিভাবে আমার দিকে ওনি আসছেন..
অনুঃ হ্যা দোস্ত…আবির ভাইয়াতো মনে হয় অনেক রেগে আছে…তুই পালা…
মায়া আর অনু পালানোর আগেই আবির ওদেরকে ক্রস করে তারাতাড়ি বাইক নিয়ে সেই স্পিডে চলে গেসে…
মায়াঃ দোস্ত এটা কি হলো?? ওনিতো আমাকে কিছু না বলেই ওরকম রাগ করে চলে গেলেন..
অনুঃ হুম তাই ইতো দেখলাম…
মায়াঃ আল্লাহই জানে কার কপালে আজকে মাইর আছে..
অনুঃ আসলেই…চল আমরা এখন বাসায় যাই..
মায়াঃ হুম…
ওরা যে যার বাসায় চলে গেলো…
মায়ার মাঃ কি রানী এসেছেন??এতো দেরি কেন হলো??
মায়াঃ আমার জামাইয়ের সাথে ঘুরতে গেসিলাম..
মায়ার মাঃ কি সত্যি..কই আমার জামাই বাবাজি কই দেখিতো…মজা করে..
মায়াঃ মা তুমিও না..
মায়ার মাঃ হা হা..আমার মেয়েটাও মজা করলো..আমিও একটু করলাম..
মায়াঃ মা…
মায়ার মাঃ আচ্ছা এখন ফ্রেশ হয়ে আয় খাবিনা…তোর বাবাও আসছে..ফ্রেশ হচ্ছে..একসাথে খাবো সবাই..
মায়াঃ আচ্ছা…
মায়া তার বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে…এবার নতুন ভারসিটিতে ভর্তি হয়েছে..মায়া খুবই সাধারণ একটা মেয়ে..দেখতে কেমন তাতো আপনারা আগেই জানেন..মানে অপ্সরা.. মায়া মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে..তার বাবা একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে আর মা বাসায় থাকে..এতেই তাদের চলে যায়..
মায়ার বাবাঃ তা মা তোর ভারসিটি কেমন চলছে??
মায়াঃ ভালো বাবা..তবে..
মায়ার বাবাঃ তবে কি??
মায়াঃ জানো বাবা একটা ছেলে আছে আমাদের ভারসিটিতে… খুব রাগী আর ডেঞ্জারাস…তবে অনেক ভালো…
মায়ার বাবাঃ রাগী, ডেঞ্জারাস আবার ভালো… এ কেমন ছেলে…
মায়াঃ আমিও বুঝিনা..
মায়ার মাঃ আমরা কিন্তু সবই বুঝি..হাহা..
মায়ার বাবাঃ হ্যা..হাহা..
মায়াঃ এখানে হাসার কি আছে..লজ্জা পেয়ে..
মায়ার বাবা মা মায়ার একদম বন্ধুর মতো.. তাই মায়া তাদের কাছ থেকে কিছুই লুকায় না…
মায়াঃ মা আমার খাওয়া শেষ আমি ঘুমাতে যাচ্ছি..
মায়ার মাঃ আচ্ছা যা..
আবিরের মাঃ কিরে সারাদিন কই ছিলি??আর তোর এ অবস্থা কেন??তোর ফোনও অফ ছিলো..
আবিরঃ আরে ভারসিটিতে একটা কাজ নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম..আর ফোনের চার্জ শেষ..তাই ফোন অফ ছিলো..
আবির তার মাকে মিথ্যা বলল..কারণ সত্যিটা তার মা নিতে পারবে না..আবির এমন কিছু করে যা তার মা হয়তো কোনদিন ভাবতেও পারবেনা…
মাঃ তুই আমার কাছ থেকে কিছু লুকাচ্ছিস বাবা??এর আগেও তুই মাঝে মাঝে নাই হয়ে যাস..
আবিরঃ এই যে আমার চিন্তানু মা..(মায়ের দুই গালে হাত দিয়ে)..খালি চিন্তা করে..আচ্ছা যাও তোমাকে একটা গুড নিউজ দি..তাহলে আর চিন্তা হবেনা..
মাঃ কি বল…
আবিরঃ তোমার ছেলের বউ মনে হয় পেয়ে গেছি..
মাঃ কি সত্যি??
আবিরঃ মনেতো হয়..তবে এখনো সিওর না..আগে সিওর হই..
মাঃ আচ্ছা আমার সাথে একদিন দেখা করাস..এখন যা ফ্রেশ হয়ে আস..কি যে অবস্থা তোর..
আবিরঃ আচ্ছা..
মাঃ আমি খাবার দিচ্ছি টেবিলে চলে আসিস..
আবির ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে তার রুমে বড় বারান্দায় রকিং চেয়ারে বসে আছে..ফোনটা বের করে একজনকে ফোন দিলো..
আবিরঃ আমার ভারসিটির ১ম বর্ষের ছ ইউনিটের ছাত্রী নাম মায়া…ওর সব ডিটেইলস চাই..কালকের মধ্যে…আমাকে মেইল করে দিবে..দেরি যেন হয় না…
ফোনেঃ জ্বি স্যার…পেয়ে যাবেন…
আবির ফোনটা রেখে দিলো…মায়ার কথাই শুধু মনে পরছে বার বার…একটা মেয়েযে এতো সুন্দর হতে পারে তা আবিরের জানা ছিল না..আবিরকে এ পর্যন্ত বহু মেয়েই প্রোপোজ করেছে..কিন্তু আবিরের কাউকেই ভালো লাগে নি…মায়ার মধ্যে সেই ভালো লাগাটা কাজ করেছে প্রথম দেখাতেই…সাধারণ একটা মেয়ে…তবুও কত সুন্দর ও..আল্লাহ যেন তাকে খুব সুন্দর করে বানিয়েছেন..মায়ার কথা গুলোও কত মিষ্টি.. মায়ার চোখ গুলো যেনো কথা বলে..আবিরের মন চাচ্ছে ওই চোখ গুলোতে হারিয়ে যাই..আবিরের এই মায়াবতী মায়াকেই চাই..
মায়ার নাম্বারটা অলরেডি পেয়েগেছে আবির…তাই মায়াকে ফোন দিলো আবির..
মায়াঃ হ্যালো…
আবির কি এবং কি এমন করে সে তা আস্তে আস্তে সামনের পর্বে জানতে পারবেন…সাথে থাকুন..
চলবে…?