অঙ্গীকার (৩য় পর্ব)
লেখা – শারমিন মিশু
আফিয়া অনেক কষ্টে নিজের রাগকে সংযত করলো। বাসায় শাফী আছে ওর সামনে কোনপ্রকার সিনক্রিয়েট করা ঠিক হবেনা। জামাই হলে কি হবে ও তো পর। আর পর কখনো আপন হয়না জগতের কঠিন সত্য কথাগুলোর মাঝে এটাও একটা সত্য । কখনো হয়তো কথার ছলে বলতে পারে তোমার বোন এই করেছে সেই করেছে। কি দরকার ওর সামনে কথা বাড়ানোর।
আফিয়া ওর মাকে ডেকে বললো,,, মা কাল ছোট মামাকে আসতে বলো। তোমার মেয়ের পা অনেক লম্বা হয়ে গেছে বেঁধে না রাখলে নাগাল ছাড়া হয়ে যাবে এ বলে ও রুমের দিকে চলে গেলো।
রাদিয়া বোনের কথার আগামাথা কিছুই বুঝলোনা। যে ভূমিকম্প হওয়ার ভয় ও করছিলো তারকিছু না হওয়ায় ও একেবারে বিষ্ময়ের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেলো। ও নিজ জায়গাতে কতক্ষণ স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত হওয়াতে সেও নিজের রুমের দিকে চলে গেলো।
রাদিয়া রুমে বসে আফিয়ার কথাগুলোর মানে খুঁজে বের করার চেষ্টা করলো। আপু ছোট মামাকে কেন আসতে বলেছে? আর বেঁধে রাখবে মানে কি? আমি নাগাল ছাড়া হলাম মানে? এইরকম নানান চিন্তা ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কি বুঝাতে চাইছে আপু । আস্তে করে উঠে সামিহার রুমের দিকে গেলো। ও হয়তো কিছু জানলে ও জানতে পারে। বুদ্ধি খাটিয়ে ওর কাছ থেকে কথা বের করতে হবে।
সামিহা পড়ছিলো রাদিয়া ওর মাথায় টোকা দিয়ে বললো,,, কি করছিস পিচ্ছি?
-আপু কি বোকার মত প্রশ্ন করছিস? দেখছিস আমি পড়ছি তারপরও বলছিস কি করছি। আর তোকে কতবার বলেছি আমাকে এমদম পিচ্ছি বলবিনা আমি এইটে পড়ছি যথেষ্ট বড় হইছি। এমনিতে ও কেউ দেখলে তোর চেয়ে আমাকে বড় ভাববে।
-হুম আইছে আমার নানি। বিয়ে দিতে হবে মনে হচ্ছে।
-বিয়ে আমার না তোর হবে বলে সামিহা মুখে হাত দিলো। বড়াপু সাবধান করে দিয়েছে এ কথা ছোটআপুকে না জানাতে।
-কি বললি?? বিয়ে?? আমার??
-আরে না আমার।
-এই সামিহা ঠিক করে কথা বল?
-আরে আমি এমনি বলেছি তোর কথার তালে।
-কথার তালে সত্যই বেরিয়ে আসে। তাহলে বাসায় বসে আমায় তাড়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। করাচ্ছি তোমাদের বিয়ে এ বলে রাগে গড়গড় করতে করতে রাদিয়া বেরিয়ে গেলো।
কিচেনের সামনে দাঁড়িয়ে বললো,,, কার কি ক্ষতি করেছি যে আমার জন্য ভেতরে ভেতরে এত ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
-মুনিরা রান্নায় মনোযোগ দিলো রাদিয়ার কথা না শুনার ভান করে।
-মা আমি তোমাকে আগেই বলেছি আমি অনার্স কমপ্লিট না করে বিয়ে করবোনা তারপরে ও তুমি।
–
-বড়াপুকে অনার্সের পরে বিয়ে দিতে পেরেছো আর আমাকে এতো তাড়াতাড়ি। বুঝছি তো আমি কেউ চায়না আমি শান্তিতে থাকি। তোমরা যাই করোনা কেন আমি এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করবোনা।
-আস্তে কথা বল ঘরে জামাই আছে।
-তোমার জামাই ঘরে থাকলে আমার কি? সবাই মিলে আমার পিছনে আদাজল খেয়ে পড়েছো আর আমি চুপ করে থাকবো? -থাপ্পড় দিয়ে সব দাঁত ফেলে দিবো যা এখান থেকে তখন থেকে বকবক করে চলেছিস কিছু বলছিনা দেখে মাথায় উঠে নাচবি!!
-মা!!
-রাদি যেতে বলেছি তোর সাথে বকবক করার সময় নেই।
রাদিয়া বকতে বকতে গিয়ে ধড়াম করে রুমের দরজা আটকে দিলো। মুনিরা সেদিকে তাকিয়ে একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
রাত দশটার দিকে আফিয়া শাফীকে নিয়ে খেতে আসলো। আফিয়া মাকে ইশারায় জিজ্ঞেস করলো,, রাদিয়া খেয়েছে কিনা?
মাকে মাথা নাড়াতে দেখে আফিয়া চুপ হয়ে গেলো।
শাফী আটটার দিকে নাস্তা করেই বেরিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় বলে গেলো বাবাকে ডাক্তার দেখিয়ে ও আবার আসবে। আফিয়াকে ছেড়ে একা থাকতে ওর অনেক কষ্ট হবে। আর বড় কথা আফিয়া শুধু ওকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে নিজের খেয়াল রাখার চিন্তা ওর নাই ওর সবকিছু শাফীকেই দেখতে হয়। মেয়েটা বড্ড পাগলী নিজের ঔষধ গুলোও শাফী মনে না করে দিলে খাবেনা। তবে আজকালকার মেয়েদের মতো কারণে অকারণে রাগারাগি ঝগড়াঝাটি ও করেনা। একেবারে শান্ত প্রকৃতির একটা মানুষ। কিন্তু অভিমান করতে পারে বড্ড বেশি। ওর অভিমান ভাঙাতে গেলে শাফীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। চলে আসার সময় ও মেয়েটা কেমন অশ্রুসজল চোখে তাকিয়ে ছিলো।
নয়টার দিকে রাদিয়া একেবারে রেডি হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে নাস্তা না করেই কোচিংয়ে চলে গেলো। মুনিরা কয়েকবার করে বলেছে নাস্তা করার জন্য কিন্তু কে শোনে কার কথা। এ মেয়ে এতো জেদি হয়েছে না আজকাল।
এগারোটার দিকে আফিয়ার ছোট মামা আসলো। আফিয়া উনার কাছে ছেলের সম্পর্কে বিস্তারিত জানলো। তারপর বললো কালই যেন ওদের আসতে বলে।
পরদিন রাদিয়া কোচিং থেকে ফিরে বাসাটাকে এতো সাজানো গুছানো দেখে একটু অবাকই হলো। এতো সাজানোর মানে কি? কেউ আসবে নাকি? ওর ধারনায় ও ছিলোনা ওর মা বোন এতো তাড়াতাড়ি সব করে ফেলবে। ভেবেছে হয়তো রাগের মাথায় বলেছে রাগ কমে গেলে সব আগের মত হয়ে যাবে।
কিন্তু ওর ভাবনা গুঁড়েবালিতে পরিনত হলো যখন আফিয়া এসে বললো,,, রাদি একটা ভালো দেখে জামা পড়ে নে তো।
-রাদিয়া ঘুম ঘুম চোখে বললো,, কেনো? কোথাও যাবি নাকি? আমি যেতে পারবোনা আমার ঘুম আসছে।
-কোথাও যাবোনা বাসায় মেহমান আসবে। আর ঘুম পরেও যেতে পারবি।
-ওহ আপু!! মেহমান আসলে আমার কি? বিরক্ত করিসনা ঘুমাতে দে।
-রাদি মেহমান আসবে তোকে দেখতে।
-মানে?? রাদিয়া চোখ বড় বড় করে উঠে বসলো।
-মানে আবার কি? এতো জবাব দিতে পারবোনা রেডি হতে বলছি রেডি এত প্রশ্ন কেন করছিস?
-আপু আমি এখন বিয়ে করবোনা।
–
-আমার ইচ্ছা অনিচ্ছার কোন মূল্য নেই তোদের কাছে?
-কেনো থাকবেনা?
-তাহলে আমার কথা কেন শুনছিস না?
-রাদি বিয়ে তো বললেই হয়ে যায়না। আর লেখাপড়া বিয়ের পরও করতে পারবি।
-আপু বিয়ের পরে লেখাপড়ার কোন সুযোগ থাকেনা।
-কেন? আমিও তো বিয়ের পরে পড়েছি।
-সব ছেলে কি তোর তোর জামাইয়ের মতো নাকি?
-না হলে কি হবে? আমরা তো জেনেশুনে বিয়ে দিবো। পছন্দ হলে ওদের সবকিছু পরিস্কার করে বলেই আমরা সামনে আগাবো।
-আপু এমন করিসনা আমার সাথে…
-রাদি বড্ড বাড় বেড়েছিস!!! চুপচাপ রেডি হয়ে নে এ বলে আফিয়া বেরিয়ে গেলো।
রাদিয়া দরজা আটকে কিছুক্ষণ কান্নাকাটি করলো। তারপর চোখ মুখ ধুয়ে চুলটা আঁচড়ে একটা ভালো জামা পড়ে ওড়না দিয়ে ভালো করে শরীরে পেঁচিয়ে নিলো।
মা এসে দরজা ধাক্কাতেই উঠে দরজা খুলে দিলো। ছোটমামা রাদিয়াকে নিয়ে ছেলেপক্ষের সামনে গেলো। রাদিয়া সালাম দিতেই ছেলের মা ওকে বসতে বললো। রাদিয়া চোখ তুলে ছেলেকে দেখার চেষ্টা করলো। বিয়ে যখন করতে হবে যাকে তাকে কেন করবে নিজের পছন্দ হলে তবেই বিয়ে করবে এ আশায় সামনের দিকে তাকালো। তাকিয়ে রাদিয়া অবাক হলো। এতো দেখছি পাক্কা হুজুর। ছি!! এ দাঁড়িওয়ালাকে বিয়ে করবো আমি? কখনোই না মনে মনে ভাবে রাদিয়া। ছেলের সাথে ওর একটু চোখাচোখি হয়। চোখাচোখি হতেই দুজনে দৃষ্টি নামিয়ে নিলো। ছেলের মা রাদিয়াকে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলো। রাদিয়া শান্তস্বরে মুখে জবাব দিলো কিন্তু ভিতরে ও রাগে ফেটে যাচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর ভদ্রমহিলা তার ছেলের দিকে তাকিয়ে বললো,,, আবরার তোর কিছু জানার থাকলে জিজ্ঞেস করে নে।
(তাহলে লোকটার নাম আবরার? যেমন দেখতে তেমন তার নাম যত্তসব।)
-না মা তুমি জিজ্ঞেস করো আমি আর কি বলবো।
-তুই কি আলাদা করে কথা বলতে চাস?
-না মা আলাদা কথা বলার নিয়ম ইসলামে নেই। এখানেই ঠিক আছি।
-(রাদিয়া মনে মনে আসছে হাদীস নিয়ে টানাটানি করতে। আসেন না আলাদা কথা বলতে জন্মের শিক্ষা দিয়ে দিবো। বিয়ে করার নাম ও মুখে আনবেন না। তবে এদের মুখ দেখে মনে হচ্ছে সবাই রাজি। যতই হাসোনা কেন আমি রাজি হবোনা।)
-ছেলের মা বললো দেখেন আমাদের আর কিছু বলার নাই। আপনারা আমাদের বাড়িঘর দেখেশুনে মতামত জানালে খুশি হবো।
-রাদিয়ার মামা বললো,, জী আমরা জানাবো।
উনারা বিদায় নিয়ে বেরিয়ে যেতেই রাদিয়া হন হন করে রুমে চলে গেলো। ছেলের মা যাওয়ার আগে ওকে দুহাজার টাকা দিয়ে গেলো। রাদিয়া সেটাকে টেবিলে ছুড়ে মারলো। রাগে ওর শরীর জ্বালা শুরু করেছে। এই মুহুর্তে সব ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু তা করা যাবেনা হিতে বিপরীত হতে পারে।
আটটার দিকে আফিয়া আর ওর মা রাদিয়ার রুমে আসলো। রাদিয়ার কাছ থেকে মতামত জেনে সামনে এগুতে হবে। যত যাই হোক ওর মতের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে দেয়া ঠিক হবেনা।
আফিয়া শান্তস্বরে বললো,,, ছেলে তো দেখলি এখন তোর কি মতামত।
–
-আমরা কি সামনে আগাবো?
–
-রাদি চুপ করে আছিস কেন কথা বল?
-কি কথা বলবো? আমি বললে আমার কথা তোরা শুনবি নাকি?
-শুনবোনা কেন?
-আমি এই লোককে বিয়ে করবোনা?
-কেন?
-কেন আবার কি এই লোক কি পছন্দ করার মত কোন ছেলে নাকি। যত্তসব আনস্মার্ট!!
-রাদি তুই কাকে আনস্মার্ট বলছিস? আবরার চোধুরী একজন বিসিএস ক্যাডার।
-কি!!! এই লোক বিসিএস ক্যাডার? বিসিএস ক্যাডাররা এমন হয় নাকি?
-মামাতো বললো এরকম ছেলে হাজারে একটা পাওয়া মুশকিল আর তুই!! আর সব বিসিএস ক্যাডারদের যে স্মার্টনেস থাকা লাগবে এমন কোন কথা আছে নাকি?
আচ্ছা একটা সত্যি কথা বলতো তুই কি কাউকে পছন্দ করিস?
-আপু আমি খারাপ হতে পারি নির্লজ্জ হতে পারি কিন্তু এতটাও খারাপ না যে বিয়ের আগে প্রেম করবো।
-তাহলে সমস্যা কোথায়?
-লোকটার মুখে কিরকম দাঁড়ি আর কেমন জানি।
-রাদি শুধুমাত্র দাঁড়ি রাখার জন্য তোর ওই ছেলে পছন্দ না। দাঁড়ি রাখা আমাদের নবীর সুন্নাত। আর তুই সেই সুন্নাতকে ঘৃনা করছিস?
-হুজুর টাইপ ছেলে আমার ভালো লাগেনা। আমার দরকার আমার মত ছেলে। যার সাথে আমার সব দিক থেকে মিলে। স্মার্ট,, সুদর্শন পুরুষ আমার পছন্দ এরকম আনস্মার্ট ক্ষ্যাত আর মিনমিনে টাইপের নয়। যদি পারিস ওরকম কাউকে খুঁজবি আর নয়তো না। এই ছেলেকে আমি কোনভাবে বিয়ে করবোনা বলে দিলাম।
-রাদি তুই এত নিচে নেমে গেছিস আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছেনা।
-আমি নিচে নামবো কেন? যা বলছি তা ভুল বলিনি। আর তোরা যদি আমার মতের বিরুদ্ধে জোর করে আমাকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করিস তাহলে এর জন্য তোদের ও জবাবদিহী করতে হবে এটা ও রাসূল বলছে।
-এটা মনে আছে তো আরেকটা কথা ভুলে গেলি কেন রাসূল তো জেনেশুনে মা বাবাকে অসৎপাত্রে কন্যা বিয়ে দিতে ও নিষেধ করেছে। আর এ ছেলে সব দিক থেকে থেকে ভালো আছে। প্রয়োজনে আমরা আরো খোঁজ খবর নিবো।
-এতো কথা বলবিনা মেজাজ খারাপ আছে। একটা কথা শুন আপু,, বিয়ে যখন দিবি আমার পছন্দের ছেলের সাথে না হলে না তারপরও হুজুর বিয়ে করবোনা। এ নাকি আবার বিসিএস ক্যাডার!!
-আফিয়ার রাদিয়ার কথা শুনে তাজ্জব বনে গেলো,,, এ মেয়ের এতো অধঃপতন!!! ভাবা যায়না……
চলবে……..
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept All”, you consent to the use of ALL the cookies. However, you may visit "Cookie Settings" to provide a controlled consent.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checkbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checkbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.