তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব_৯
#মেঘ_বালিকা
.
.
আজ তাসিনের বাবা-মা তাদের দেশের বাড়ি বেড়াতে যাবে..তনুও বেশ খুশি কারণ সেও যাবে তাদের সাথে..কিন্তু তাসিন যেতে পারবে না..ওর কাজ পরে গেছে…
.
সকাল থেকে বেশ খুশি খুশি লাগছে…এতো খুশি মনে হয় এর আগে লাগেনি..কারনটা হলো তাসিন..কিছুদিন হলেও ওর থেকে রেহাই পাওয়া যাবে..ও আমার উপর এইকয়দিন আর কোনো রকম টর্চার করতে পারবে না..
.
ডাইনিং টেবিলে বসে সবাই ব্রেকফাস্ট করছি..সবাই চুপচাপ খাচ্ছি..হঠাৎ সব নিরবতা ভেদ করে তাসিন বলে উঠলো,,
-আব্বু-আম্মু আমার তোমাদের কিছু বলার আছে!!
তাসিনের বাবা খেতে খেতেই জবাব দিলো,
-হ্যা বলো কি বলবে!
-আব্বু আসলে তনু তোমাদের সাথে যেতে পারবে না…
তাসিনের মুখে হঠাৎ এমন কথা শুনে আমার গলায় খাবার আটকে গেলে..এবার সবার নজর আমার উপর পরলো..তারপর মা বলে উঠলো,,,
-কেনো যেতে পারবে না কেনো?
-আসলে আম্মু ও আমাকে ছেড়ে যেতে চাইছে না..আমি একা থাকবো তো তাই আর কি.. ও আসলে তোমাদের লজ্জায় কিছু বলতে পারছিলো না তাই আমাকেই বলতে হলো..
এবার বাবা-মা দুজনেই হেসে দিলো..আর আমি বোকার মতো বসে রইলাম..তারপর বাবা বললো,,
-এই ব্যাপার তাহলে..তা তনু মা তুই তো আমাদের বললেই পারতি আমরা কি তোকে জোর করতাম..বোকা মেয়ে..এর জন্যে এতো লজ্জার কি আছে..জানিস তো বিয়ের প্রথম প্রথম তোর শ্বাশুরি মাও এমন করতো..আমায় একা ছেড়ে কোথাও যেতে চাইতো না..(বলেই উচ্চস্বরে হো হো করে হেসে উঠলেন)
আমার শ্বাশুরি মা মনে হয় এই কথায় একটু লজ্জাই পেয়েছেন..
.
বাবা-মা চলে গেছেন..তাদের যাওয়ার কিছুক্ষন পর তাসিন রহিমা খালাকেও তার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে..যতোদিন বাবা-মা না আসবে ততোদিন তার ছুটি..সেও খুশি মনে চলে গেছে..এবার সারা বাড়িতে শুধু আমি আর তাসিন..আমার খুব কান্না পাচ্ছে..ও ইচ্ছা করে সব করেছে..
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
বিছানায় বসে বই পরছিলাম এমন সময় তাসিন আমার সামনে এক গাদা জামা-কাপড় এনে রাখলো..আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,,
-এতো জামা-কাপড় এখানে কেনো রাখলেন!!এগুলো দিয়ে কী হবে?
-ধোয়া হবে..জামা গুলো ময়লা হয়ে গেছে..যাও এগুলো ধুয়ে দেও..
-কিইইই…আমি!!
-হ্যা এতো অবাক হওয়ার কি আছে!!
-মানে আপনি পাগল এতো গুলো জামা আমি একা কিভাবে ধুবো!!আর তার থেকে বড় কথা জামা গুলো সবই পরিষ্কার এখানে তো আমি কোনো ময়লা দেখতে পাচ্ছি না..
তারপর তাসিন কিছুনা বলেই পাউডার আর তেল এনে জামাগুলোর উপর ঢেলে দিলো..তারপর একটু বাঁকা হেসে বললো,,,
-লুক তনু..এবার জামাগুলো ময়লা হয়ে গেছে এখন তো আর কিছু বলতে পারবে না..সো যাও ধুয়ে ফেলো…
.
পুরো জামার গুষ্টি আমাকে ধরিয়ে দিয়ে তাসিন আরামে বসে বসে ফোন টিপছে..আর এদিকে আমি জামা ধুতে গিয়ে নিজেকেই ধুয়ে ফেলছি..তাসিনের রাগ এখন আমি ওর জামা কাপড়ের উপর দেখাচ্ছি..ইচ্ছা মতো আছড়াচ্ছি তো একবার পানি ভিতর চুবাচ্ছি..জামাগুলাকে তাসিন কল্পনা করে এইসব করছি আমি..আর ইচ্ছা মতো তাসিনকে মনে মনে বকা-ঝঁকা করছি..
.
অবশেষে অনেক কষ্টে জামা-কাপড় গুলো ধুয়া সম্পূর্ন করে ছাদে চলে গেলাম..
.
এদিকে তাসিন এতোক্ষন আড় চোখে তনুর কান্ড কারখানা সব দেখছিলো..আর মিটিমিটি হাসছিলো..ওর বেশ লাগছিলো তনুকে এভাবে রাগী রাগী ফেসে দেখতে..ওকে জ্বালাতে ওর কেনো জানি খুব ভালো লাগে..
.
ছাদে জামাগুলো নাড়া শেষ করে আসতে নিবো তখনই কেউ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আমার খোলা চুলে মুখ ডুবিয়ে দিলো..বুঝতে পারলাম তাসিন তাই একঝটকায় ওকে ছাড়িয়ে চলে আসলাম নিচে..ফাজিল একটা..আমাকে এতো খাটিয়ে এখন ঢং করতে আসছে..ঠিক করছি চলে আসছি..হুহহ
.
রাতে খাওয়ার সময় হলো এক সমস্যা…যা রান্না ছিলো তা দিয়ে দুপুরের খাওয়া হয়েছে..রাতে খাওয়ার জন্যে এখন রান্না করতে হবে..কিন্তু সমস্যা হলো আমি রান্না করতে পারিনা..অল্পের মধ্যে ভাত আর আলু সিদ্ধ ছাড়া তেমন কিছু পারিনা..দুইজন দুইজনের দিক তাকা তাকি করছি..তাসিন আলু সিদ্ধ দিয়ে খেতে নারাজ..তাই আমিও বলে দিয়েছি খেতে হলে নিজে ব্যবস্থা করে নিন..
.
রাত ১০টা বাজে এখনও রান্না হয়নি..
আমার পেটের মধ্যে ইঁদুর গুলো ছুটোছুটি করছে..সেই কখন তাসিন কিচেনে গিয়েছে..সে নাকি নিজে রান্না করবে..এর আগেও নাকি অনেকবার রান্না করেছে..সবাই খেয়ে নাকি প্রশংসাও করেছে..কিন্তু আমার জানা মতে ও রান্নার র ও জানে না..হঠাৎ কিচেন থেকে খুব জোরে কিছু একটার শব্দ হলো..শব্দ শুনে আমি তাড়াতাড়ি কিচেনে গেলাম..গিয়ে আমি অবাক..কিচেনের সব কিছু এলোমেলো..নিচে একটা বাটি পরে আছে আর তাসিন কিচেনের এক কিনারে চুপ করে বসে আছে..তারপর আমি বলে উঠলাম,,
-কি করেছেন এগুলো???কিচেনের এই হাল কেনো??আর দেখে তো মনে হচ্ছে এখনো রান্না শুরুই করেননি..
-তনু এগুলো আমার দ্বারা সম্ভব না..ইমপসিবল..এতোক্ষন ধরে চেষ্টা করেও কি রান্না করবো সেটাই ঠিক করতে পারিনি..আমি কি পারি নাকি এসব করতে…
-তাহলে আপনি যে তখন বললেন আপনি রান্না পারেন?এর আগেও রান্না করেছেন!!!
-ও.ওগুলো তো এমনিই বলেছি হে হে(ক্যাবলা মার্কা একটা হাসি দিয়ে)
মেজাজটাই এখন খারাপ হয়ে যাচ্ছে আমার..না পারলে বলে দে মিথ্যা কথা কেন বলবি!!কিন্তু এখন কি খাবো..দুইজন দুইজনের মুখের দিকে তাকিয়ে আছি…
.
রাত ১২টা…
শেষমেশ কোনো উপায় না দেখে ভাত আর আলু সিদ্ধ রান্না করে এখন খেতে হচ্ছে..আমার অবশ্য তেমন কোনো অসুবিধা হচ্ছে না..আমি বেশ তৃপ্তি করেই খাচ্ছি কিন্তু তাসিনের বেশ কষ্ট হচ্ছে খেতে বারবার গলায় খাবার আটকে যাচ্ছে..ভাতের থেকে পানিই বেশি খাচ্ছে ও..ওর অবস্থা দেখে আমার হাসি পাচ্ছে..সামান্য আলু সিদ্ধ দিয়ে ভাত খেতে পারছে না..
.
.
.
চলবে….
.
.
.
( সরি আজকে পার্টটা ছোট করে দিয়ার জন্যে…আসলে রোযা রেখে গল্প লেখা একটু অসুবিধা হচ্ছে.. আর আজকের পার্টটায় লেখায় একটু ভুল থাকতে পারে…সবাই ভুলগুলো শুধরিয়ে পড়ার চেষ্টা করবেন এবং ভুল-ক্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন..ধন্যবাদ)
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৯
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৮
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব_৮
#মেঘ_বালিকা
.
.
তাসিন চোখ মুখ শক্ত করে আমার সামনে বসে আছে আর আমি তার অপর পাশে বসে আছি…তখন তাসিন আমাকে টেনে নিয়ে এসেছিলো..সেখান থেকে টেনে এনে আর একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে একগাদা খাবার অর্ডার করে..ও আমার সাথে কোনো কথা বলছে না কিন্তু ওর ফেস দেখে বুঝা যাচ্ছে এই মুহুর্তে ও খুব রেগে আছে তাই আমিও কিছু বলছি না..কিছু বলতে গেলে দেখা গেলো উল্টো ফেসে গেলাম..কিন্তু এতো খাবার ও কেনো অর্ডার করলো!!
অবশেষে নিরবতা ভেদ করে তাসিন বলে উঠলো,,
-শুরু করো..
আমি কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,,
-কি শুরু করবো??
-খাওয়া শুরু করো..এখানে যা যা খাবার আছে সব খাবে..এবার শুরু করো..
-মা..মানে কি বলছেন আপনি??আমি একা এই সব খাবার খাবো?
-হ্যা তুমিই..এক কথা আমার বার বার বলা পছন্দ না..তাই আর কথা না বারিয়ে শুরু করো…খুব সখ না তোমার ছেলেদের সাথে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়ার..নেও আজকে তোমার সেই ইচ্ছা টা আমি পূরন করে দিচ্ছি..আজকে এই সব খাবার খাবে তারপর এখান থেকে উঠবে..তার আগে না..(রেগে..)
ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গেছে তারপর ও শুকনো গলায় বারবার ঢোক গিলছি আমি…
-দেখুন আমি তো…..
আর কিছু বলতে পারলাম না..তার আগেই তাসিন আমাকে এক ধমকে থামিয়ে দিলো…আর চুপচাপ খেতে বললো..ওর রাগি চেহারা দেখে আর কিছু বলতে পারলাম না..একপ্রকার বাধ্য হয়েই খাওয়া শুরু করলাম…
.
বিছানায় একবার শুচ্ছি তো একবার উঠে বসছি..কোনো ভাবেই স্থির থাকতে পারছি না..এতো খাবার একসাথে খেলে যে কারো অবস্থাই এমন হবে..মনে হচ্ছে আমি আজকে মরেই যাবো..গলা অব্দি গিলিয়েছে আজকে..পেট আমার ফেটে যাওয়ার উপক্রম..
কিন্তু আমি একটা জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারছি না তাসিন কিভাবে জানলো আমি রিয়াদের সাথে ওই রেস্টুরেন্টে ছিলাম..ওর তো জানার কথাও না..তাহলে কিভাবে জানলো!!!উফফ আর কিছুই ভাবতে পারছি না আমি..আমার দম কেমন যেনো আপ-ডাউন করছে…হঠাৎই আমার ফোনটা বেজে উঠলো..ফারিয়া ফোন করেছে..একরাশ বিরক্ত নিয়েই ফোনটা রিসিভ করলাম..
-ওই ফোন দিছোস ক্যান?
-কিরে তুই এভাবে কথা বলতেছিস কেনো!কি হয়ছে তোর!
-তোর কোনো কথা না থাকলে ফোন রাখ..ফালতু প্যাচাল পারার টাইম নাই..
-আরে তুই রেগে যাচ্ছিস কেনো..আচ্ছা শোন ভাইয়া কী তোকে কিছু বলেছে নাকি?
-কোন ব্যাপারে কি বলবে?
-আরে আজকে আমি যখন ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরছিলাম তখন ভাইয়ার সাথে দেখা হয়েছিলো..সে তোকে খুজছিলো..আর তার একটু আগেই তো তুই ওই রিয়াদে সাথে ভার্সিটির পাশের রেস্টুরেন্টটায় ঢুকে গেলি কতো বার ডাকলাম শুনলিও না..ভাইয়াকে খুজতে দেখে আমিও বলে দিছি তুই ওইখানে গেছিস..ভাইয়াকে দেখে মনে হলো সে এই কথা শুনে বেশ রেগে গেছে..তারপর আর কিছু না বলেই হনহন করে চলে গেলো..তা ভাইয়া কি তোকে কিছু বলেছিলো নাকি?
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
এইবার ব্যাপারটা আমার কাছে একদম পরিষ্কার হলো..তার মানে যেই সুতা ধরে আমি এতোক্ষন টানছিলাম এই হলো সেই সুতার আল..খুব রাগ হচ্ছে আমার এতো রাগ হচ্ছে যা আমি প্রকাশ করতে পারবো না..ফারিয়াকে এই মুহুর্তে আমার সামনে পেলে কি করতাম তা আমি নিজেও জানি না…তারপর রেগে চিল্লিয়ে বলে উঠলাম,,,
-ওই শোন তুই দুইদিন আমার সামনে আসবি না..এর মধ্যে যদি তোরে আমার সামনে দেখি তাইলে তোরে আমি কি করবো!!জানি না কি করবো!!বাট খুব খারাপ কিছু করবো..আর হ্যা ফোনও দিবি না..বাই(বলে ফোনটা রেখে দিলাম)
.
এদিকে বেচারী ফারিয়া তনুর কথার আগা মাথা কিছুই বুঝলো না..কিন্তু এটা বুঝতে পেরেছে সে কিছু একটা ভুল করে ফেলেছে যার জন্যে তনু রেগে আছে তার উপর..আর তনুর কথা অনুযায়ি বোঝা গেলো সামনে পেলে তনু তাকে কাঁচা চিবিয়েও খেতে পারে..তাই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে কোনোভাবেই তনুর সামনে যাবে না..দুইদিন না পুরো এক সপ্তাহ যাবে না..
.
ফারিয়া অলওয়েজ কিছু একটা বোকামি করে আমাকে ফাসিয়ে দেয়..কিন্তু আজকের মতো ফাসা আমি জীবনেও ফাসিনি..তাই আজকে ওর উপর রাগটাও আমার বেশি হচ্ছে..ও তো তাসিনকে নতুন দেখছে না..এই কথা শুনার পর ওর রিয়েকশনটা কেমন হতে পারে এটা বুঝলো না একবারও..তোর বলার কি দরকার ছিলো..ফাজিল মাইয়া..তোর জামাইও তোরে এমনে জ্বালাবে..তখন তুই বুঝবি হুহহ…
.
শাওয়ার নিচ্ছিলাম এমন সময় তাসিন কোথা থেকে হুট করে এসে ভিতরে ঢুকে দরজাটা লক করে দিলো..ওকে এভাবে ঢুকতে দেখে আমি যেমন অবাক হয়েছি তেমনি আমাকে এই অবস্থায় দেখে তাসিনও বেশ অবাক হয়েছে..আমি যে দরজা লক করতেই ভুলে গিয়েছিলাম..আমি একবার ওর দিকে তাকাচ্ছি আরেকবার নিজের দিকে তাকাচ্ছি..তারপর আর কি দিলাম এক চিৎকার..আমাকে এভাবে চিৎকার করতে দেখে তাসিন আমার মুখ চেপে ধরে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে দিলো আর বললো,,,
-চুপ একদম চুপপ..এভাবে ষাড়ের মতো চিল্লাচ্ছো কেনো!আমি বাঘ না ভাল্লুক যে আামকে দেখে এভাবে চিৎকার করতে হবে…
-উমম উমমমমম(মুখ চেপে ধরায় কিছু বলতেও পারছি না..একদিকে যেমন লজ্জা লাগছে অন্য দিকে তেমন ভয়ও লাগছে..ছুটার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করছি কিন্তু কিছুতেই পারছি না..আমাকে এভাবে ছটফট করতে দেখে তাসিন আবার বলে উঠলো,,
-এই এভাবে তিড়িংবিড়িং করছো কেনো..কি সমস্যা?শোনো আমি তোমাকে ছেড়ে দিচ্ছি..বাট একদম চিল্লাবা না..
আমিও মাথা নেড়ে সম্মতি দিলাম..যার অর্থ হ্যা আমি চিল্লাবো..ও না থুক্কু চিল্লাবো না ..তারপর তাসিন আমাকে ছেড়ে দিলো..ছাড়া পেয়ে নিজেকে ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা করতে করতে বললাম,,,
-এই এইইই আপনার কি কোনো কমনসেন্স নাই..আপনি একবারও দরজা নক না করেই হুট করে কেনো ঢুকে পরলেন হ্যা??????
-সাট আপ..একদম বাজে কথা বলবে না..তুমি দরজা কেনো লক করোনি?হ্যা????আমি কি জানতাম নাকি যে তুমি ভিতরে এভাবে আধখোলা অবস্থায় দাড়িয়ে থাকবে!!!
ওর কথা শুনে আমার লজ্জায় এবার মাটি খুড়ে ভিতরে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে…আমারই তো দোষ..কিভাবে দরজা আটকাতে ভুলে গেলাম আমি..কি একটা অস্বস্তিকর অবস্থা..
এদিকে আমার সাথে সাথে তাসিনও কাকভেজা হয়ে গেছে কিন্তু সেদিকে তার কোনো খেয়ালই নেই..সে আমার দিকে নেশাভরা দৃষ্টিতে একধ্যানে তাকিয়ে আছে..এমনিতেই লজ্জায় আমার প্রাণ পাখি যায় যায় অবস্থা তার উপর এই শয়তানটা শকুনের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে..ওরে এবার যা এখান থেকে নইলে আমি এইবার অতি লজ্জায় অকালে প্রাণ হারাবো..কিন্তু না সে একভাবে আমার দিকে তাকিয়েই আছে..আর একটু একটু করে আমার দিকে এগিয়ে আসছে…
কি জ্বালা..এমনে আগায় ক্যান..এখান থেকে বেরও হতে পারছি না..বের হলে এভাবে আমাকে কেউ দেখলে নির্ঘাট জ্ঞান হারাবে…
তাসিন একদম আমার কাছে চলে এসেছে..বিন্দু মাত্র ফাকা নেই আমার আর তাসিনের মাঝে..ও এতো কাছে আসাতে আমার সারা শরীর কেঁপে উঠলো..তারপর ও আমার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো..আর পাগলের মতো কিস করতে লাগলো..আমি ওকে বাধা দিতে পারছি না..আমি যেনো ওর ছোঁয়া পেয়ে একদম পাথর হয়ে গেছি..ও আস্তে আস্তে আমার গলা ছেড়ে এবার আমার ঠোঁটে কিস করতে লাগলো..আমাকে ওর বুকের সাথে চেপে ধরে একের পর এক কিস করেই যাচ্ছে..আজ ওকে আমার উম্মাদ মনে হচ্ছে…আজ ওর ছোঁয়া আমার খুব ভালো লাগছে তাই বাঁধাও দিতে ইচ্ছে করছে না..ওর ছোঁয়ায় আজ আমি স্পস্ট ভালোবাসা দেখতে পারছি… কিছুক্ষন এভাবেই কেটে গেলো..
তারপর ও আমাকে ছেড়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে গেলো..আর আমি এখনও থম মেরে দাঁড়িয়ে আছি…
.
.
.
চলবে…..
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৭
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৭
মেঘ_বালিকা
.
.
মনটা খুব খারাপ..তাসিন তখন যা নয় তাই বলে আমাকে অপমান করেছে..ওর থেকে এমনটা আমি মোটেও এক্সপেক্ট করিনি..আমার ফোনটাও ভেঙ্গে দিয়েছে…কোনো কিছু না শুনেই আমাকে এত্তোগুলা কথা শুনিয়ে গেলো..ওর মাথাটা একটুতেই গরম হয়ে যায় এটাই সমস্যা…সেই যে আমার উপর রাগ করে বাইরে গিয়েছে এখনও আসার নাম নেই তার..চিন্তা হচ্ছে খুব কই গেলো ও..রাত ১১টা বেজে গেছে এতোক্ষন তো ও বাইরে থাকে না…যতোই রাগ থাকুক ওর উপর কিন্তু সবার আগে ও আমার স্বামী…আর স্বামী যখন এতো রাত অব্দি বাইরে থাকে তখন যেকোনো স্ত্রীরই চিন্তা হওয়ার কথা..ফোনও তো করতে পারছি না…একরাশ চিন্তা নিয়েই নিচে নেমে এলাম..বাবা-মা এতোক্ষন জেগে ছিলো একটু আগে তাদের জোর করে ঘুমুতে পাঠিয়েছি..তাদের এই বয়সে এতো চিন্তা করা উচিত না..তাই তাদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি…
দরজার সামনে দাড়িয়ে পায়চারি করছি এক মুহুর্ত স্থির হয়ে বসে থাকতে পারছি না আমি…শেষমেশ কোনো উপায় না পেয়ে রহিমা খালাকে ডেকে তুললাম সেও শুয়ে পরেছিলো..সারাদিন কাজ করে এখন একটু বিশ্রাম নিবে তাও হলো না আমার জন্যে..তার কাছ থেকে ফোনটা ধার চেয়ে তাসিনকে ফোন দিলাম..কিন্তু ওর ফোন অফ..এইবার আমার চিন্তা দ্বিগুন বেরে গেলো..কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না… চিন্তায় আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে..না চাইতেই নানা রকম খারাপ চিন্তা আমার মাথায় চলে আসছে…এভাবেই সারা রাত আমার নির্ঘুমে কেটে যায়..সারারাত ওকে হাজার বার ফোন দিয়েছি আর প্রত্যেক বারই নিরাশ হয়েছি…
অবশেষে সকালে তাসিন বাসায় ফিরে..ওর চেহারা কেমন ফ্যাকাসে লাগছে চোখগুলো ফোলা ফোলা চুলগুলোও এলোমেলো..ওকে দেখে যেনো নিজের প্রাণ ফিরে পেলাম…কিন্তু ওর চেহারার এই হাল দেখে চুপসে গেলাম..বুকের ভিতরটা মোচর দিয়ে উঠলো আমার…তাড়াতাড়ি ওর কাছে গিয়ে বললাম,,,
-সারারাত কই ছিলে তুমি?কতোটা টেনশনে ছিলাম আমি শুধু আমি না বাসার সবাই তার কোনো ধারনা আছে তোমার!কী এমন কাজে ব্যস্ত ছিলে যে একটা বার ফোন করার প্রয়োজন মনে করোনি তুমি..তার উপর ফোনটাও বন্ধ করে রেখে দিয়েছিলে..সারারাত আমার তোমার চিন্তায় কী অবস্থা হয়েছিলো জানো তুমি?????(এক নিশ্বাঃসে সব গরগর করে বলে দিলাম)
কিন্তু এর প্রতিউত্তরে তাসিন শুধু একটু মুচকি হাসলো তারপর আমাকে পাশ কাটিয়ে উপরে চলে গেলো..আমি যে এতোকিছু জিজ্ঞেস করলাম তার উত্তর দেয়ার প্রয়োজনটুকু মনে করলো না..আমি শুধু ওর যাওয়ার দিকে হা করে তাকিয়ে রইলাম..
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে শাড়ি পরছিলাম কিন্তু কিছুতেই শাড়ির কুচি ঠিক করতে পারছি না..আজকে যেন শাড়িটাও আমার অবাধ্য হয়ে গেছে এমনি সময় তো এমনটা হয়না তবে আজ কেনো হচ্ছে..শেষমেশ অনেকক্ষন চেষ্টা করে কুচি টা ঠিক করতে পারলাম তারপর যেই কুচি টা শাড়িতে গুজতে যাব আর ওমনি তাসিন কোথা থেকে হুট করে এসে টুপ করে আমার কুচিটা ধরে এলোমেলো করে আবার বাইরে চলে গেলো…আমি পুরাই বোকা বনে গেলাম ওর কাজে..ওর কাজ কর্মে আমি দিন দিন অবাকের শীর্ষে পৌছে যাচ্ছি..কিন্তু আজকে আমি আমার রাগ কিছুতেই কন্ট্রল করতে পারছি না..রাগে আমার নিজের না ওর মাথার চুল ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে..এতো কষ্ট করে আমি কুচিটা ঠিক করলাম..আর ও এসে তা একনিমিসে লন্ড-ভন্ড করে দিয়ে চলে গেলো…
.
আজকে সবার জন্যে নুডুলস বানাচ্ছি..এই জিনিসটাই একটু রান্না করতে পারি আমি..এর আগে বাসায়ও কয়েকবার রান্না করেছি সবাই ভালো বলেছে…তাসিনকেও একবার রান্না করে খাইয়েছিলাম যখন ওর সাথে রিলেশন ছিলো..ওসেদিন খুব খুশি হয়েছিলো আর অনেক প্রশংসাও করেছিলো..আজকে সে সব কথা মনে পরে যাচ্ছে…সেদিন খেয়ে খুশি হলেও আজকে আর সেই সুযোগ আমি রাখবো না..রাগটা এখনও মাথায় ভর করে আছে ওকে উচিত শিক্ষা না দেওয়া পর্যন্ত আমার শান্তি হবেনা…
.
রান্না শেষ করে সবার জন্যে বাটিতে করে বেরে নিয়ে গেলাম…বাবা-মা খেয়ে আমার অনেক প্রশংসা করলেন..তাসিন এখনও নুডুলসটা মুখে তুলেনি সে তার ফোনে মুখ গুজে আছে..তাকে এভাবে না খেয়ে ফোন টিপতে দেখে বাবা কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলে উঠলেন,,,
-কী ব্যাপার তাসিন তুমি খাচ্ছো না কেনো?বৌমা কতো কষ্ট করে আমাদের জন্যে নুডুলস রান্না করে এনেছে আর তুমি সেটা না খেয়ে ফোনে মুখ গুজে আছো..এখনি ফোনটা রাখো বলছি..ফোন নিয়ে বসে থাকার অনেক সময় পাবে এখন খাও আর বলো কেমন হয়েছে..বৌমা কতো আগ্রহ নিয়ে দাড়িয়ে আছে দেখতে পারছো না!!!
তারপর তাসিন বাবার কথায় একরাশ বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ফোনটা রেখে নুডুলস এর বাটিটা নিয়ে খাওয়া শুরু করলো..
খাওয়ার কিছুক্ষন পর লক্ষ্য করলাম ওর চোখ মুখ কেমন লাল টমেটোর মতো হয়ে যাচ্ছে…ও খাওয়া ছেড়ে কিছুক্ষন বসে রইলো ওকে বসে থাকতে দেখে বাবা বললেন,,
-কী ব্যাপার খাচ্ছো না কেনো?খেতে ভালো হয়নি??
-না বাবা ভালো হয়েছে অনেক মজা হয়েছে(জোরপূর্বক হেসে)
-তাহলে বসে আছো কেনো খাও..
-হ্যা খাচ্ছি তো এই যে খাচ্ছি…
তারপর গপগপ করে পুরোটা খেয়ে হনহন করে উপরে চলে গেলো কাউকে কিছু না বলেই..
এদিকে আমি অনেক কষ্টে হাসি আটকে রেখেছি..ওর ফেসটা যাস্ট দেখার মতো ছিলো..তখন রান্নাঘরে সবারটা বারার পরে তাসিনের বাটিতে আমি ইচ্ছা করে অনেকটা মরিচের গুড়ো মিশিয়ে দিয়েছিলাম..আর এই ঝাল খাওয়ার ফলেই তাসিনের মুখটা লাল টমেটো হয়ে গিয়েছিলো…
.
উপরে এসে তাসিন ঝালে পাগলের মতো করছে..এতো ঝাল খেয়ে তার অবস্থা কাহিল..নিচে বাবার কারনে কিছু বলতে পারেনি..পুরোটা খেতে হয়েছে তাকে..এখন সে বুঝতেছে কতো নুডুলস-এ কতো ঝাল..রুমে পানিও নেই তাই পানিও খেতে পারছে না কি করবে কিছুই বুঝতেছে না..আর সহ্য করতে না পেরে নিজের চুল শক্ত করে চেপে ধরে মাথা নিচু করে বসে পরলো..
হঠাৎ তার সামনে একটা পানির বোতল দেখতে পেলো তারপর আর কিছু না ভেবেই পানির বোতল টা নিয়ে ঢকঢক করে পুরোটা পানি খেয়ে ফেললো..এবার যেন সে কিছুটা শান্তি পেলো..
.
তাসিনকে এভাবে ঝালে ছটফট করতে দেখে আমার খুব খারাপ লাগছিলো তাই পানির বোতলটা নিয়ে আসি…
বেচারা পানি খেয়ে আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে চলে গেলো..আমি তো ভেবেছিলাম আবার কিছু একটা করবে কিন্তু না সে তেমন কিছুই করলো না..যাক ভালোই হয়েছে বেঁচে গেছি আমি…
.
ভার্সিটি থেকে মাত্র ক্লাস শেষ করে বের হয়েছি এমন সময় আমার সামনে রিয়াদ এসে দাড়ালো..এই কচুটা অনেকদিন ধরে আমার পিছে ঘুরঘুর করে চলেছে..কোনোভাবেই পিছ ছাড়াতে পারছি না..কিন্তু এখন এইটা কি চায় আমার কাছে এভাবে পথই বা কেনো আটকালো..ফারিয়াকেও দেখতে পাচ্ছি না..কই আছে কে জানে..ও থাকলে ভালো হতো..
তারপর রিয়াদ বলে উঠলো,,,
-তনু আমার তোমার সাথে কিছু কথা আছে..
-কিন্তু আমার তো নাই..এখন সামনে থেকে সরুন(বিরক্ত নিয়ে)
-প্লিজ তনু আমি বেশিক্ষন টাইম নিবো না যাস্ট কিছু কথা বলবো প্লিজ…
-কি বলবেন বলুন?
-এখানে না চলো একটা রেস্টুরেন্ট-এ বসি..প্লিজ না করো না…প্লিজ!!
এমন ভাবে অনুরোধ করলো যে আমি না করতে পারলাম না রাজি হয়ে গেলাম…
ভার্সিটির পাশের একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে দুজন মুখোমুখি বসে আছি..দুজনই চুপ কোনো কথা বলছি না..তারপর রিয়াদই বলে উঠলো,,
-তনু আমি তোমাকে খুব ভালোবাসতাম কিন্তু তুমি আমার ভালোবাসা বুঝলে না বিয়ে করে ফেললে..তোমার বিয়ের কথা শুনে আমি প্রথমে বিশ্বাস করিনি পরে জানতে পারি সত্যিই তোমার বিয়ে হয়ে গেছে..বিশ্বাস করো খুব কষ্ট পেয়েছিলাম এই কথা শুনে..দুদিন ঘরবন্দিও ছিলাম আমি..তারপর নিজেকে সামলে নিয়েছি..নিয়তি যা ছিলো তাই হয়েছে.. তুমি আমার ছিলে না তাই তুমি আজ অন্য কারো..যাই হোক তোমার হয়তো এসব শুনে বিরক্ত লাগছে তাই আর কিছু বলতে চাচ্ছি না…যার জন্যে এখানে আসা সেটাই বলি আসলে আমি এখান থেকে চলে যাচ্ছি..অস্ট্রেলিয়া..তাই শেষ বারের মতো তোমার সাথে দেখা করতে আসলাম..
আমি রিয়াদের কথা শুনে কি বলবো বুঝতে পারছি না..আজ ওর জন্যে আমার সত্যিই খারাপ লাগছে..রিয়াদ আবার বলে উঠলো,,,
-চুপ করে আছো কেনো তনু!কিছু তো বলো!!আচ্ছা বাদ দাও বলো কী খাবে?
-আমি কিছু খাবো না…
-প্লিজ তনু আমাকে বন্ধু ভেবে আজকের দিন অন্তত কিছু অর্ডার করো..আমার ভালো লাগবে চলে যাওয়ার আগে একটুকু ইচ্ছা অন্তত রাখো…
আমি পরে গেলাম মহা বিপদে..কী জ্বালায় পরলাম ইশশ এখন যদি কেউ আমাকে এর হাত থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে যেতো…
রিয়াদের জোরাজুরিতে শেষমেশ কফি অর্ডার করলাম…তারপর কফিতে যেই মুখ দিবো তখনই কেউ একজন ঝড়ের গতিতে এসে আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরে আবার ঝড়ের গতিতে আমাকে নিয়ে চলে গেলো..ব্যাপার টা এতোটাই দ্রুত হয়েছে যে,না পারলাম আমি বুঝতে আর না রিয়াদ..সে এখনও হা করেই বসে আছে..ঠিক কি হলো তা বোঝার চেষ্টা করছে হয়তো…
.
.
.
চলবে…..
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব-৫
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব-৫
#মেঘ_বালিকা
.
.
Ho-Ho-Ho
Hm-Hm-Hm
Bechainiyon mein raatein kateen
Khwaabo mein doobein hai din
Khamoshiyan chup ho gayi
Baatein adhoori tere bin
.
kye meri (bahoon se)
challi in (rahoon mein)
kaise bhulo yaadein haseen
.
.
হঠাৎ গানের শব্দে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো…ব্যালকনি থেকে উঠে রুমে দিকে পা বাড়াতে গিয়েও বাড়ালাম না থেমে গেলাম..তাসিন গান গাইছে!!!হ্যা তাসিন গিটার বাজিয়ে গান গাইছে… কতো দিন পর ওর কন্ঠে গান শুনলাম..বরাবরই ও গানটা ভালো গায়..যখন ওর মনটা ভিষন খারাপ থাকে তখনই ওকে আমি গান গাইতে দেখেছি..তাহলে কি আজ ওর মন খারাপ!!কিন্তু কেনো!!!
.
I’m sorry, I’m sorry
I will do whatever it takes at all
Forgive me,Forgive me
Baby no matter what did say
.
I can act feel strong
Truth is with a
Truth is no living at all
Don’t leave this is eating me your life
This is so much as giving me inside
.
You don’t know what you got
until this scar
Love is strong than my pride
Baby I can stand the pain
I’m feeling life in me
.
আচ্ছা ওকি গানটা আমাকে ডেডিকেট করে গাইলো!!কেনো যেনো ওর গলায় গানটা শুনে মনটা ভালো হয়ে গেলো..ওর উপর যতো রাগ ছিলো সব পানি হয়ে গেলো… ওর গান গাওয়া শেষ হলে আমি রুমে প্রবেশ করলাম…আমাকে রুমে প্রবেশ করতে দেখে আমার দিকে একপলক তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো তাসিন…আমাকে কিছু বলার সুযোগটুকুও দিলো না…ওকি কী আমায় কখনো ক্ষমা করবে না!!আমাকে কী কখনো আপন করে নিবে না!!জানি ওর জায়গায় ও একদম ঠিক আছে ওর জায়গায় আমি থাকলে আমিও একই কাজই করতাম তাও যদি আমাকে একটাবার সুযোগ দিতো…ভেবেই মনটা আবার খারাপ হয়ে গেলো…
.
.
আজ অনেকদিন পর ভার্সিটিতে এসেছি..বিয়ের ঝামেলায় আসতে পারিনি এতোদিন..বিয়ের এক সপ্তাহ কেটে গেছে..এর মাঝে বাসায়ও গিয়েছিলাম একবার একদিন থেকে চলে এসেছি…ভার্সিটি আসা নিয়েও নানা রকম কাহিনী হয়েছে আমার গুনোধর স্বামী আমাকে কিছুতেই ভার্সিটিতে আসতে দিবে না..সে চায় আমি বাসায় বসে পড়বো আর পরীক্ষার সময় গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে আসবো..কিন্তু আমার শ্বশুর মশাই তাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সে চায় আমি ভার্সিটি আসি বাসায় বসে বসে বোর হবো তাই তার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া…বিষয়টায় আমি বেজায় খুশি..আমিও মনে মনে এটাই চাইছিলাম…তাসিন অবশ্য ব্যাপারটায় একদম খুশি না কিন্তু বাবার উপর কিছু বলতেও পারেনি..
.
.
ফারিয়া আমার পাশে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে..কারন আজ তাকে দেখতে আসবে..সে এই মুহুর্তে বিয়ে করতে চায় না..এই মুহুর্ত বললে ভুল হবে সে আসলে বিয়েই করতে চায় না…তার ধারনা শ্বাশুরিরা খুব দজ্জাল হয় আর তারা তাদের ছেলের বউদের উপর খুব অত্যাচার করে..ছোট বেলায় ‘দজ্জাল শ্বাশুরি’ নামক একটা সিনেমা দেখার পর থেকে সে পণ করেছে সে জীবনে বিয়ে করবে না…
.
বেশ বিরক্ত লাগছে আমার ফারিয়াকে..এতোদিন পর এসেছি ভার্সিটিতে কই একটু গল্প করবে তা না এসেই ন্যাকা কান্না শুরু করেছে..
একটু রেগেই আমি বলে উঠলাম,,,
-তুই যদি এই মুহুর্তে তোর এই ন্যাকা কান্না না থামাস তাহলে তোকে আমি ড্রেনের পানিতে চুবাবো…
-আমার কথা শুনে ফারিয়া চুপ হয়ে গেলো..
কিন্তু ফেস দেখে বুঝা যাচ্ছে খুব কষ্টে কান্নাটা আটকে রেখেছে…
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
.
শুক্রবার ছুটির দিন সবাই বাসায়…সকাল থেকে তাসিনের কোনো পাত্তা নেই..কই আছে কে জানে…এই বাসায় আসার পর আমার সারাদিন শুয়ে বসেই কাটাতে হয়..মাঝে মাঝে জোর করে একটু মাকে রান্নার সময় সাহায্য করি এই যা..রান্নাও ঠিক মতো পারি না তাই সাহায্য ছাড়া আর বেশি কিছু করতেও পারিনা…
.
অনেকক্ষন ধরে বসে আছি তাই ভাবলাম একটু নিচে গিয়ে টিভি দেখি..
নিচে নামার সময় খেয়াল করলাম ড্রইং রুমে একটা ছেলে বসে আছে সাথে তাসিনও আছে..দুজনেই খুব হেসে হেসে কথা বলছে..পাশ থেকে দেখে ছেলেটাকে কেমন যেনো চিনা মনে হলো…হঠাৎই ছেলেটা আমার দিকে ঘুরে তাকালো…এইবার চিনতে পারছি এই সেই নাটের গুরু যার জন্যে আমার আর তাসিনের সম্পর্কটা হয়েছিলো…নিরব ভাইয়া..তাসিনের কলিজার বন্ধু বলতে গেলে..কিন্তু একে তো বিয়ে সময় দেখিনি..তখন কই ছিলো!!
.
আমাকে দেখেই নিরব ভাইয়া মুচকি হেসে সালাম দিলো,,,
-আসসালামু আলাইকুম তনু থুক্কু ভাবী…কেমন আছো আর আমাকে চিনতে পারছো তো??
তোরে আবার চিনবো না…তোর জন্যেই তো আমার এই অবস্থা,,শালা মিচকা শয়তান(মনে মনে)
তারপর একটু হেসে সালাম এর উওর নিলাম,,,
-ওয়ালাইকুমস সালাম…জ্বী ভাইয়া ভালো আছি আর আপনাকেও ভুলিনি…আপনি কেমন আছেন?
-জ্বী আমিও আছি ভালো..তোমাদের বিয়ের কথা শুনে আমি খুব খুশি হয়েছিলাম কিন্তু আসতে পারিনি কাজে আটকে গিয়েছিলাম..তাই আজকে তোমাদের সাথে দেখা করতে আসলাম আরকি…
-উদ্ধার করছোস(মনে মনে)
-জ্বী ভালো করছেন এসে আমি খুব খুশি হয়েছি…(জোর পূর্বক একটু হেসে)
তারপর আরও কিছুক্ষন কথা বলে আবার উপরে চলে আসলাম…ওখানে থাকার থেকে নিজের রুমে চুপচাপ বসে থাকা ভালো…হুহহ….
.
.
ছাদে দাড়িয়ে পুরোনো দিনগুলার কথা ভাবছি আর একা একাই হাসছি..নিরব ভাইয়া যে কিনা তার বন্ধুর প্রপোজাল নিয়ে আমার পিছে প্রায় ১মাস এর মতো ঘুরঘুর করেছে..কলেজের বাইরে দাড়িয়ে থাকা,কলেজ ছুটির পর ফলো করা,বাসার সামনে বাইক নিয়ে দাড়িয়ে থাকা…তার এইসব কান্ড কারখানায় প্রথমে আমি ভেবেছিলাম সে আমাকে পছন্দ করে কিন্তু পরে আমার ধারনা ভুল প্রমানিত হয়…সে তার বন্ধুর হয়ে আমার পিছ পিছ ঘুরঘুর করেছে…এও দেখার ছিলো
প্রথম প্রথম ব্যাপারটায় বেশ বিরক্ত হলেও পরে বেশ মজাই পেতাম..তার ফেস দেখলে খুবই ভদ্র মন হয়..চোখে চশমা,গোলগাল ফেস,চেহারার মধ্যে একটা কিইটনেস ভাব আছে…আমিও তাই ভেবেছিলাম কিন্তু পরে বুঝি ও আসলে একটা মিচকা শয়তান..আমাকে ১মাস একদম জ্বালিয়ে মেরেছে..শেষমেষ একপ্রকার বাধ্য হয়েই রাজি হয়ে যাই…
.
এসব ভাবনার মধ্যেই হঠাৎ রাস্তার দিকে চোখ যায়..ফুসকা…ফুসকা দেখেই জিভে পানি এসে গেলো..দৌড়ে নিচে নামতে যাবো আর তখনই মনে পরলো আমি তো আর এখন নিজের বাড়ি নেই যে যখন ইচ্ছে হলো ছুটে চলে গেলাম বাইরে..শ্বশুর বাড়িতে বউদের এভাবে হুটহাট বাইরে যাওয়া সাজে না..যতোই তারা ভালোবাসুক আমাকে তাও এভাবে যাওয়া তারা মতেও পছন্দ করবেন না..
তাহলে কিভাবে খাবো!!!আমার যে খুব ফুসকা খেতে ইচ্ছে করছে…তাসিনকে বলে দেখবো যদি ও এনে দেয়…
.
.
তাসিনকে অনেকক্ষন ধরে বলে যাচ্ছি কিন্তু সে কিছুতেই আমার কথা শুনছে না..আমি প্রায় ন্যাকা কান্না জুড়ে দিয়েছি কিন্তু তাতেও তার মন গলছে না..এবার আমার সত্যি সত্যিই কান্না পাচ্ছে….
-প্লিজ তাসিন এনে দেও না আমার খুব খেতে ইচ্ছে করছে প্লিজ ও তাসিন প্লিজ(কান্নার ভাব ধরে)
-তনু আমি এখন বিজি আছি বিরক্ত করো না যাও এখান থেকে(চোখ মুখ শক্ত করে)
-না আমি যাবো না তুমি আমাকে ফুসকা এনে দেও না হলে আমি যাবো না প্লিজ তাসিন (হাত ধরে টানতে টানতে)
এবার তাসিন বেশ রেগে গেলো তারপর এক ধমক দিয়ে বলে উঠলো,,,
-স্টপ তনু…দেখছো না আমি একটা কাজ করছি আর এখনই তোমার ঘ্যানঘ্যানানি শুরু হলো!তুমি এই মুহুর্তে এখান থেকে না গেলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না…
.
ওর কথাগুলো আমার বুকে তীরের মতো বিধলো..সামান্য একটু ফুসকাই তো খেতে চেয়েছিলাম তার জন্যে আমাকে এভাবে বললো ও..খুব কষ্ট লাগছে..বুক ফেটে কান্না আসছে..চোখ থেকে দুফোটা পানিও বেরিয়ে এলো..তারপর দৌড়ে ব্যালকনিতে চলে গেলাম..এই মুহুর্তে তাসিনকে আমার খুবই নিষ্ঠুর মনে হচ্ছে….
.
.
চলবে…..
.
.
(গল্পটা আপনাদের কেমন লাগছে??প্লিজ কমেন্টে
জানাবেন..প্রথম প্রথম গল্প লিখছি তাই অনেক ভুল হতে পারে লেখায়..তাই ভুল-ক্রটি ক্ষমার চোখে দেখবেন…আর দোয়া করবেন এবং আমার পাশে থাকবেন…ধন্যবাদ)
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব-৫
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব-৫
#মেঘ_বালিকা
.
.
Ho-Ho-Ho
Hm-Hm-Hm
Bechainiyon mein raatein kateen
Khwaabo mein doobein hai din
Khamoshiyan chup ho gayi
Baatein adhoori tere bin
.
kye meri (bahoon se)
challi in (rahoon mein)
kaise bhulo yaadein haseen
.
.
হঠাৎ গানের শব্দে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো…ব্যালকনি থেকে উঠে রুমে দিকে পা বাড়াতে গিয়েও বাড়ালাম না থেমে গেলাম..তাসিন গান গাইছে!!!হ্যা তাসিন গিটার বাজিয়ে গান গাইছে… কতো দিন পর ওর কন্ঠে গান শুনলাম..বরাবরই ও গানটা ভালো গায়..যখন ওর মনটা ভিষন খারাপ থাকে তখনই ওকে আমি গান গাইতে দেখেছি..তাহলে কি আজ ওর মন খারাপ!!কিন্তু কেনো!!!
.
I’m sorry, I’m sorry
I will do whatever it takes at all
Forgive me,Forgive me
Baby no matter what did say
.
I can act feel strong
Truth is with a
Truth is no living at all
Don’t leave this is eating me your life
This is so much as giving me inside
.
You don’t know what you got
until this scar
Love is strong than my pride
Baby I can stand the pain
I’m feeling life in me
.
আচ্ছা ওকি গানটা আমাকে ডেডিকেট করে গাইলো!!কেনো যেনো ওর গলায় গানটা শুনে মনটা ভালো হয়ে গেলো..ওর উপর যতো রাগ ছিলো সব পানি হয়ে গেলো… ওর গান গাওয়া শেষ হলে আমি রুমে প্রবেশ করলাম…আমাকে রুমে প্রবেশ করতে দেখে আমার দিকে একপলক তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো তাসিন…আমাকে কিছু বলার সুযোগটুকুও দিলো না…ওকি কী আমায় কখনো ক্ষমা করবে না!!আমাকে কী কখনো আপন করে নিবে না!!জানি ওর জায়গায় ও একদম ঠিক আছে ওর জায়গায় আমি থাকলে আমিও একই কাজই করতাম তাও যদি আমাকে একটাবার সুযোগ দিতো…ভেবেই মনটা আবার খারাপ হয়ে গেলো…
.
.
আজ অনেকদিন পর ভার্সিটিতে এসেছি..বিয়ের ঝামেলায় আসতে পারিনি এতোদিন..বিয়ের এক সপ্তাহ কেটে গেছে..এর মাঝে বাসায়ও গিয়েছিলাম একবার একদিন থেকে চলে এসেছি…ভার্সিটি আসা নিয়েও নানা রকম কাহিনী হয়েছে আমার গুনোধর স্বামী আমাকে কিছুতেই ভার্সিটিতে আসতে দিবে না..সে চায় আমি বাসায় বসে পড়বো আর পরীক্ষার সময় গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে আসবো..কিন্তু আমার শ্বশুর মশাই তাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সে চায় আমি ভার্সিটি আসি বাসায় বসে বসে বোর হবো তাই তার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া…বিষয়টায় আমি বেজায় খুশি..আমিও মনে মনে এটাই চাইছিলাম…তাসিন অবশ্য ব্যাপারটায় একদম খুশি না কিন্তু বাবার উপর কিছু বলতেও পারেনি..
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
.
ফারিয়া আমার পাশে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে..কারন আজ তাকে দেখতে আসবে..সে এই মুহুর্তে বিয়ে করতে চায় না..এই মুহুর্ত বললে ভুল হবে সে আসলে বিয়েই করতে চায় না…তার ধারনা শ্বাশুরিরা খুব দজ্জাল হয় আর তারা তাদের ছেলের বউদের উপর খুব অত্যাচার করে..ছোট বেলায় ‘দজ্জাল শ্বাশুরি’ নামক একটা সিনেমা দেখার পর থেকে সে পণ করেছে সে জীবনে বিয়ে করবে না…
.
বেশ বিরক্ত লাগছে আমার ফারিয়াকে..এতোদিন পর এসেছি ভার্সিটিতে কই একটু গল্প করবে তা না এসেই ন্যাকা কান্না শুরু করেছে..
একটু রেগেই আমি বলে উঠলাম,,,
-তুই যদি এই মুহুর্তে তোর এই ন্যাকা কান্না না থামাস তাহলে তোকে আমি ড্রেনের পানিতে চুবাবো…
-আমার কথা শুনে ফারিয়া চুপ হয়ে গেলো..
কিন্তু ফেস দেখে বুঝা যাচ্ছে খুব কষ্টে কান্নাটা আটকে রেখেছে…
.
.
শুক্রবার ছুটির দিন সবাই বাসায়…সকাল থেকে তাসিনের কোনো পাত্তা নেই..কই আছে কে জানে…এই বাসায় আসার পর আমার সারাদিন শুয়ে বসেই কাটাতে হয়..মাঝে মাঝে জোর করে একটু মাকে রান্নার সময় সাহায্য করি এই যা..রান্নাও ঠিক মতো পারি না তাই সাহায্য ছাড়া আর বেশি কিছু করতেও পারিনা…
.
অনেকক্ষন ধরে বসে আছি তাই ভাবলাম একটু নিচে গিয়ে টিভি দেখি..
নিচে নামার সময় খেয়াল করলাম ড্রইং রুমে একটা ছেলে বসে আছে সাথে তাসিনও আছে..দুজনেই খুব হেসে হেসে কথা বলছে..পাশ থেকে দেখে ছেলেটাকে কেমন যেনো চিনা মনে হলো…হঠাৎই ছেলেটা আমার দিকে ঘুরে তাকালো…এইবার চিনতে পারছি এই সেই নাটের গুরু যার জন্যে আমার আর তাসিনের সম্পর্কটা হয়েছিলো…নিরব ভাইয়া..তাসিনের কলিজার বন্ধু বলতে গেলে..কিন্তু একে তো বিয়ে সময় দেখিনি..তখন কই ছিলো!!
.
আমাকে দেখেই নিরব ভাইয়া মুচকি হেসে সালাম দিলো,,,
-আসসালামু আলাইকুম তনু থুক্কু ভাবী…কেমন আছো আর আমাকে চিনতে পারছো তো??
তোরে আবার চিনবো না…তোর জন্যেই তো আমার এই অবস্থা,,শালা মিচকা শয়তান(মনে মনে)
তারপর একটু হেসে সালাম এর উওর নিলাম,,,
-ওয়ালাইকুমস সালাম…জ্বী ভাইয়া ভালো আছি আর আপনাকেও ভুলিনি…আপনি কেমন আছেন?
-জ্বী আমিও আছি ভালো..তোমাদের বিয়ের কথা শুনে আমি খুব খুশি হয়েছিলাম কিন্তু আসতে পারিনি কাজে আটকে গিয়েছিলাম..তাই আজকে তোমাদের সাথে দেখা করতে আসলাম আরকি…
-উদ্ধার করছোস(মনে মনে)
-জ্বী ভালো করছেন এসে আমি খুব খুশি হয়েছি…(জোর পূর্বক একটু হেসে)
তারপর আরও কিছুক্ষন কথা বলে আবার উপরে চলে আসলাম…ওখানে থাকার থেকে নিজের রুমে চুপচাপ বসে থাকা ভালো…হুহহ….
.
.
ছাদে দাড়িয়ে পুরোনো দিনগুলার কথা ভাবছি আর একা একাই হাসছি..নিরব ভাইয়া যে কিনা তার বন্ধুর প্রপোজাল নিয়ে আমার পিছে প্রায় ১মাস এর মতো ঘুরঘুর করেছে..কলেজের বাইরে দাড়িয়ে থাকা,কলেজ ছুটির পর ফলো করা,বাসার সামনে বাইক নিয়ে দাড়িয়ে থাকা…তার এইসব কান্ড কারখানায় প্রথমে আমি ভেবেছিলাম সে আমাকে পছন্দ করে কিন্তু পরে আমার ধারনা ভুল প্রমানিত হয়…সে তার বন্ধুর হয়ে আমার পিছ পিছ ঘুরঘুর করেছে…এও দেখার ছিলো
প্রথম প্রথম ব্যাপারটায় বেশ বিরক্ত হলেও পরে বেশ মজাই পেতাম..তার ফেস দেখলে খুবই ভদ্র মন হয়..চোখে চশমা,গোলগাল ফেস,চেহারার মধ্যে একটা কিইটনেস ভাব আছে…আমিও তাই ভেবেছিলাম কিন্তু পরে বুঝি ও আসলে একটা মিচকা শয়তান..আমাকে ১মাস একদম জ্বালিয়ে মেরেছে..শেষমেষ একপ্রকার বাধ্য হয়েই রাজি হয়ে যাই…
.
এসব ভাবনার মধ্যেই হঠাৎ রাস্তার দিকে চোখ যায়..ফুসকা…ফুসকা দেখেই জিভে পানি এসে গেলো..দৌড়ে নিচে নামতে যাবো আর তখনই মনে পরলো আমি তো আর এখন নিজের বাড়ি নেই যে যখন ইচ্ছে হলো ছুটে চলে গেলাম বাইরে..শ্বশুর বাড়িতে বউদের এভাবে হুটহাট বাইরে যাওয়া সাজে না..যতোই তারা ভালোবাসুক আমাকে তাও এভাবে যাওয়া তারা মতেও পছন্দ করবেন না..
তাহলে কিভাবে খাবো!!!আমার যে খুব ফুসকা খেতে ইচ্ছে করছে…তাসিনকে বলে দেখবো যদি ও এনে দেয়…
.
.
তাসিনকে অনেকক্ষন ধরে বলে যাচ্ছি কিন্তু সে কিছুতেই আমার কথা শুনছে না..আমি প্রায় ন্যাকা কান্না জুড়ে দিয়েছি কিন্তু তাতেও তার মন গলছে না..এবার আমার সত্যি সত্যিই কান্না পাচ্ছে….
-প্লিজ তাসিন এনে দেও না আমার খুব খেতে ইচ্ছে করছে প্লিজ ও তাসিন প্লিজ(কান্নার ভাব ধরে)
-তনু আমি এখন বিজি আছি বিরক্ত করো না যাও এখান থেকে(চোখ মুখ শক্ত করে)
-না আমি যাবো না তুমি আমাকে ফুসকা এনে দেও না হলে আমি যাবো না প্লিজ তাসিন (হাত ধরে টানতে টানতে)
এবার তাসিন বেশ রেগে গেলো তারপর এক ধমক দিয়ে বলে উঠলো,,,
-স্টপ তনু…দেখছো না আমি একটা কাজ করছি আর এখনই তোমার ঘ্যানঘ্যানানি শুরু হলো!তুমি এই মুহুর্তে এখান থেকে না গেলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না…
.
ওর কথাগুলো আমার বুকে তীরের মতো বিধলো..সামান্য একটু ফুসকাই তো খেতে চেয়েছিলাম তার জন্যে আমাকে এভাবে বললো ও..খুব কষ্ট লাগছে..বুক ফেটে কান্না আসছে..চোখ থেকে দুফোটা পানিও বেরিয়ে এলো..তারপর দৌড়ে ব্যালকনিতে চলে গেলাম..এই মুহুর্তে তাসিনকে আমার খুবই নিষ্ঠুর মনে হচ্ছে….
.
.
চলবে…..
.
.
(গল্পটা আপনাদের কেমন লাগছে??প্লিজ কমেন্টে
জানাবেন..প্রথম প্রথম গল্প লিখছি তাই অনেক ভুল হতে পারে লেখায়..তাই ভুল-ক্রটি ক্ষমার চোখে দেখবেন…আর দোয়া করবেন এবং আমার পাশে থাকবেন…ধন্যবাদ)
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৪
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৪
#মেঘ_বালিকা
.
.
এক ঘন্টা যাবত ড্রইং রুমে বসে আছি…মেজাজ খুবই খারাপ এই মুহুর্তে…পাশে তাসিন বসা..সামনে টিভি চলছে কি ছাতার মাথা দেখছে সরি দেখছে না চালিয়ে বসে আছে…আর আপন মনে ফোন টিপছে…রিমোটটাও ধরতে দিচ্ছে না আমাকে আবার উঠতেও দিচ্ছে না..উঠতে গেলেই হাত টেনে আবার বসিয়ে দিচ্ছে..রাগে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে…এর কি আমাকে জ্বালানো ছাড়া আর কোনো কাজ নেই…রান্না ঘরেও যেতে পারছি না..শ্বাশুরি মা বারন করে দিয়েছে..শুনেছে আমার শরীর খারাপ তাই রেস্ট নিতে বলেছেন…এখন মনে হচ্ছে আমি সত্যি সত্যিই অসুস্থ হয়ে পরবো…আর বসে থাকা সম্ভব হচ্ছে না…হাতটাও শক্ত করে ধরে রেখেছে..ছুটাতেও পারছি না…এইবার কিছু একটা করতেই হবে..যেই ভাবা সেই কাজ..হাতটা মুখের সামনে এনে দিলাম জোরে সোরে একটা কামড় বসিয়ে…কামড় দিয়ার ফলে তাসিন কিছুটা চিৎকার দিয়ে ওঠে…তাসিনের চিৎকার শুনে রান্না ঘর থেকে আমার শ্বাশুরি মা আর রহিমা খালা দৌড়ে আসে…আর এইদিকে আমি হাত থেকে ছাড়া পেতেই দিলাম এক দৌড়….
.
.
এদিকে তাসিনের মা আর রহিমা খালা এসে তাসিনকে হাজারটা প্রশ্ন শুরু করে দিলো..সে এভাবে কেনো চিৎকার করলো!!কিছু হয়েছে কিনা..পরে গেছে কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি…তাসিন কোনো রকম কথা এড়ানোর জন্য বললো,,,,
-আম্মু তেমন কিছু না..ওই একটা বড় মশা হঠাৎ এমন ভাবে হাতে কামড় দিলো যে না চাইতেই চিৎকার দিয়ে ফেলেছি…
.
-কি বলিস কই দেখি দেখি…(বলে তাসিনের হাত দেখার জন্যে এগিয়ে এলো)
.
-আহ আম্মু তেমন কিছু হয়নি তো তুমি শুধু শুধুই চিন্তা করছো…
এবার রহিমা খালা বলে উঠলো…
-বাপজান হাতটা দেখবার দেও…তেমন কিছু না হইলে তো তুমি এমবায় চিল্লাইতা না…কোনো সাধারন মশা হইলে এমনে কামড়াই তো না..দেখাও হাতে কিছু লাগাই দিই তাইলে পরে আর সমস্যা হইবোন না…
-আহ খালা এইবার তুমিও শুরু করলে…(বেশ বিরক্তে নিয়েই কথা বললো তাসিন)
তারপর আর কাউকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে উপরে চলে গেলো…তাসিনের মা আর রহিমা খালা তার যাওয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আবার যার যার কাজে চলে গেলো…
.
.
তাসিন রুমে বসে রাগে ফুসসে…এই মুহুর্তে তনুকে সামনে পেলে সে চিবিয়েও খেয়ে ফেলতে পারবে..
-কতো বড় সাহস আমাকে কামড় দিয়ে পালিয়েছে…পালিয়ে আর কতোক্ষন থাকবে এখানে তো আসতেই হবে ওকে….(রাগে ফুসতে ফুসতে বলে তাসিন)
.
.
তাসিনের বাবার রুমে সামনে দাড়িয়ে আছি মানুষটা সারাদিন বইয়ে মুখ গুজে বসে থাকে…বয়স বাড়ায় তাসিনকে ব্যবসার সকল দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন…এখন তাসিনই ব্যবসার সকল দিক সামলায়…আর তিনি সারাদিন বই নিয়ে পরে থাকেন…বাসায় কে আসলো কে গেলো..কখন কি হলো তার কোনো খোঁজই সে জানে না…বইয়ের মধ্যেই সারাদিন ডুব দিয়ে থাকে…বই-ই এখন তার সব….
.
দরজার সামনে দাড়িয়ে বলে উঠলাম,,,,
-বাবা আসবো!!
আমার কথা শুনে বই থেকে মুখ তুলে আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলে উঠলেন,,,,
-বাবার রুমে আসতে আবার পারমিশন নিতে হয় নাকি রে পাগলি মেয়ে!!!আয় মা ভিতরে আয়…
আমি ভিতরে ঢুকে তার পাশে গিয়ে বসলাম…
-কিরে মা এখানে কেমন লাগছে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো?
-না বাবা আপনাদের মতো বাবা-মা থাকতে আর অসুবিধা কিসের!(মুচকি হেসে)
-যাক মা শান্তি পেলাম চিন্তায় ছিলাম নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারবি কিনা…শোন মা আমাদের কখোনো পর ভাবিস না..নিজের বাবা-মাই মনে করিস..কোনো অসুবিধা হলে তোর এই বাবাকে বলবি বুঝলি!!!
-জ্বী বাবা….
.
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
অনেকক্ষন যাবত দরজার বাইরে দাড়িয়ে আছি..ভিতরে ঢুকার সাহস পাচ্ছি না…কিন্তু কতোক্ষন বাইরে দাড়িয়ে থাকবো ভিতরে তো ঢুকতেই হবে আর ঢুকার পর আমার সাথে কি হবে ভাবতেই গলা শুকিয়ে যাচ্ছে…তখন কামড় দিয়ে দৌড় দিয়েছিলাম কিন্তু এর ফল কি হতে পারে তা ভাবিনি..রুমের ভিতরও অন্ধকার ভিতরে কেউ আদোও আছে কিনা জানি না..রুমে ঢুকবো কি ঢুকবো না এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎই একজোড়া হাত আমাকে টেনে ভিতরে নিয়ে গেলো আর দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো…আমি ভয়ে আমার চোখ জোড়া বন্ধ করে দিলাম…বেশ বুঝতে বুঝতে পারছি কাজটা কার…ছুটার জন্যে হাজারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু তার শক্তির কাছে আমি পেরে উঠছি না..ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ…হঠাৎই ঠোঁটে কিছু একটার স্পর্শ পেলাম…তারপর আস্তে আস্তে ঠোঁট ছেড়ে গলায়…হঠাৎ গলায় ব্যাথা অনুভব করলাম..শয়তান খাটাস টা খুব জোড়ে আমার গলায় কামড় বসিয়ে দিয়েছে এতোটাই জোড়ে যে আমি ব্যাথায় ‘আহ’ করে শব্দ করে উঠলাম..কিন্তু আর কিছু করতে পারলাম না তার আগেই ও আমার মুখ চেপে ধরে আর আমার কানের কাছে ওর মুখটা এনে বলে,,
-আর কখনো এমন কিছু করার সাহস দেখিয়ো না…তাহলে তার পরিনতি হবে এর থেকেও ভয়ংকর…
ওর কথা বলার সময় ওর গরম নিশ্বাস আমার ঘাড়ের উপর পরছিলো যার ফলে আমি বার বারই কেপে উঠছিলাম..কিন্তু ওর শেষ কথাটা শুনে আমার কাপাকাপি অফ হয়ে গেলো…আমার ছটফটানিও অফ হয়ে গেলো..কথাটা বলে ও আমাকে ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে গেলো…আর আমি বোকার মতো দাড়িয়ে রইলাম…
.
.
আয়নার সামনে দাড়িয়ে কামড়ের জায়গাটা দেখছি..ইশশ একদম রক্ত জমাট বেধে গেছে..রাক্ষস একটা…এই মুহুর্তে আমার খুব কান্না পাচ্ছে…কেউ যদি এটা দেখে কী ভাববে…লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে…আগের ৫টা বিয়ে না ভেঙ্গে যদি তার মধ্যে থেকে একটারে বিয়ে করে নিতাম তাহলে হয়তো এখন সুখে সংসার করতাম..আমার কপালটাই খারাপ…হঠাৎই ফোনটা বেজে উঠলো..ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি আম্মু ফোন করেছে..তারপর ফোনটা রিসিভ করে কিছুক্ষন আম্মুর সাথে কথা বলে ফোনটা রেখে ব্যালকনির দিকে পা বাড়ালাম..ব্যালকনিটা খুব সুন্দর একদম আমার মনের মতো…পাশে একটা দোলনাও আছে..তারপর দোলনায় বসে চারপাশের পরিবেশটা উপভোগ করতে লাগলাম..এতোক্ষন মন খারাপ থাকলেও আম্মুর সাথে কথা বলে এখন মনটা একদম ফ্রেশ লাগছে…চোখটা বন্ধ করে দোলনায় গা এলিয়ে দিলাম…
.
.
.
.
চলবে……
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৩
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৩
মেঘ_বালিকা
.
.
মুখের ওপর কিছু পরাতে ঘুম ছেড়ে তাড়াতাড়ি উঠে বসলাম…মুখে হাত দিয়ে মনে হলো তরল কোনো কিছু পরে বুঝতে পারলাম পানি…কিন্তু পানিটা কে দিলো মুখে!!সামনে তাকিয়ে দেখি তাসিন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে…আর তার হাতে পানির গ্লাস..বুঝতে আর বাকি রইলো না কাজটা কে করেছে…আমি ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলাম,এটা কি হলো??
সে আমার কথার কোনো পাত্তা না দিয়ে বলে উঠলো,
-যাও ওজু করে আসো নামাজ পরবো…
-ভালো কথা..ডাকলেই তো উঠে যেতাম পানি দিয়ার কি দরকার ছিলো!!
-ডেকেছিলাম উঠো নি..এখন আর একটা কথা বললে ওই যে (ওয়াশরুম দেখিয়ে)এক বালতি পানি রেখে দিয়েছি সেটা এনে পুরোটা তোমার মাথায় ঢেলে দিবো..নাউ গো…
.
.
আমি আর কোনো কথা না বলে এক দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে দরজা আটকে দিলাম..ওখানে আর এক মুহুর্ত থাকালে শয়তান টা সত্যি সত্যিই বালতির পুরো পানি আমার মাথায় ঢেলে দিতো..ওকে দিয়ে বিশ্বাস নেই…চুপচাপ ওজু করে বের হয়ে এলাম…এসে দেখি সে সব কিছু রেডি করে বসে আছে…আমাকে বের হতে দেখেই উঠে দাড়িয়ে জায়নামাজ দুটো পাশাপাশি বিছিয়ে আমাকে ইশারায় তার পাশে দাড়াতে বললো..আমিও কোনো কথা না বলে চুপচাপ তার পাশে দাড়িয়ে নামাজ আদায় করলাম…
.
.
নামাজ আদায় শেষ করে মনে একটা শান্তি অনুভব করলাম…স্বামী-স্ত্রী একসাথে প্রথম নামাজ আদায় করতে পেরে কেমন একটা অদ্ভুত ফিলিংস অনুভব করছি যা এর আগে কখনো করিনি…সবাই কী একই রকম ফিলিংস অনুভব করে!!!
/
/
/
ভোরে ডাকার ফলে ঘুমটা পরিপূর্ন হয়নি তাই ভাবলাম আর কিছুক্ষন ঘুমিয়ে নেই..ঘুম ভালোভাবে না হলে আবার আমার মাথা ব্যাথা শুরু হয়…কিন্তু কোনো একজন এর এটা সহ্য হলো না…আমাকে শুতে দেখেই তাসিন বলে উঠলো,,,
-এক কাপ কফি বানিয়ে আনো তো..সকালে আবার কফি না খেলে আমার শরীর চাঙ্গা হয় না….
-খাবেন ভালো কথা আমাকে কেনো বলছেন!!নিজেও তো বানিয়ে খেতে পারেন..আল্লাহ্ তো আপনার হাত-পা সবই দিয়েছে…
-আমি তোমার কাছে কিছু শুনতে চাইনি…যেটা বলছি সেটা করো যাও কুইক…(দাঁতে দাঁত চেপে)
-পারবো না আমি..আমার এখন ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো..আপনার খেতে ইচ্ছা করলে নিজে বানিয়ে খান…(মুখ ভেংচি দিয়ে)
.
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
হঠাৎ তাসিন আমার কাছে আসতে আসতে বললো,,,,
-কী যেনো বললে শুনতে পাইনি আবার একটু বলো তো!!!!!
.
.
ওকে এভাবে আসতে দেখে এইবার আমার হাওয়া সব ফুস হয়ে গেলো….ও একদম আমার কাছে এসে বলতে লাগলো,,,
-হ্যা বলো কী যেন বলছিলে কী পারবে না তুমি আবার একটু বলো তো তখন ঠিক মতো শুনতে পাইনি…ও আমার এতো কাছে আসাতে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে..না পারছি নড়তে,না পারছি সরে যেতে…কোনো রকম ওকে ধাক্কা দিয়ে দৌঁড় দিতে যাব তার আগেই তাসিন আমার হাতটা খপ করে ধরে ফেললো…এক টানে কাছে নিয়ে এসে বুকের সাথে চেপে ধরলো….আর বললো,,,
-কই পালাচ্ছো?আর তো পালাতে পারবে না তুমি…অনেক পালিয়ে বেরিয়েছো আর নয়..এখন থেকে সব সময় আমার কাছেই থাকতে হবে তোমার চাইলেও পালাতে পারবে না…
.
তারপর হালকা ধাক্কা দিয়ে আমাকে সরিয়ে দিলো নিজের থেকে আর বললো,,,
-এখন তাড়াতাড়ি আমার জন্য কফি বানিয়ে নিয়ে আসো…না হলে যেটা করতে চাচ্ছি না সেটা এখন করতে তুমি বাধ্য করবে..
.
.
আমি যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলাম…কোনো রকমে ওখান থেকে কেটে পরলাম..আর কিছু সময় ওখানে থাকলে না জানি কী করে বসতো…
.
.
কিচেনে এসে কফি বানাচ্ছি…পাশে আমার শাশুরি মা সকালের নাস্তা রেডি করছে…আমাকে প্রথম দিনই কিচেনে দেখে সে অবাক হয়ে গেলো কিছুতেই আমাকে কাজ করতে দিবে না সে…অবশেষে তাকে রাজি করিয়ে কফি বানাতে সক্ষম হয়েছি…ভাগ্যকরমে এমন শশুর-শাশুরি পেয়েছি..তারা দুজনই খুবই ভালো মানুষ…আর আমাকে ও নিজের মেয়ের মতোই দেখেন…কিন্তু তাদের ছেলে এমন বদ কেনো হলো এটাই আমি বুঝতে পারছি না…আগেও আমাকে জ্বালিয়েছে এখনও জ্বালাচ্ছে…
.
.
হঠাৎ মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি চলে এলো…খুব কফি খাওয়ার শখ হয়েছে না তোর দাড়া তোকে আজকে আমার স্পেশাল কফি খাওয়াবো….যা তুই জীবনেও ভুলতে পারবি না…ইচ্ছা মতো কফি গুলিয়ে একটা কাপে নিয়ে নিলাম..তার মধ্যে কোনো চিনি দেই নিই..খুব মজা লাগছে এখন..এটা খাওয়ার পর ওর ফেসের ঠিক কী অবস্থা হবে ভাবতেই খিক করে হেসে দিলাম..ব্যাটা বুঝবে আজকে ঠেলা…
.
.
আধ ঘন্টা যাবত ওয়াশরুমে গিয়ে মুখে চোখে পানি দিচ্ছি..আর একটু পর পর কুলকুচি করছি…আমার এই অবস্থা দেখে তাসিন হেসে কুটিকুটি…এই মুহুর্তে আমার ওর গলা চেপে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে..শয়তান ব্যাটা এইদিকে আমার অবস্থা খারাপ আর ও সেই কখন থেকে হেসেই চলেছে…চোখে মুখে পানি দিচ্ছি আর ওর গুষ্টি উদ্ধার করছি…
.
.
একটু আগে…..
আমি কফি টা নিয়ে রুমে গিয়ে দেখি ব্যাটা ফোনের মধ্যে মুখ গুজে বসে আছে…আমাকে কফি আনতে দেখে ফোনটা রেখে আমার হাত থেকে কফির কাপটা হাতে নিলো…আমিও এইদিকে সেই খুশি…খুব আগ্রহ নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি আমি..কিন্তু ব্যাটা খাচ্ছে না কেনো..আরে খা না এতো কী ভাবিস!!!যা ভাবার পরে ভাবিস আগে খা তোর ওই ফেসটা দেখার জন্যে যে আমি উতোলা হয়ে গেছি…
কিন্তু আমার সব ভাবনার মধ্যে এক বালতি ঠান্ডা পানি ঢেলে তাসিন বলে উঠলো,,,
-নেও কফিটা খাও…
আমি থতমত খেয়ে বললাম,,,
-ক,,ক,,কেনো,,আ,,আমি কেনো খাবো,,,আমি তো এটা তোমার জন্যে বানিয়ে এনেছি তুমিই খাও…
-বউকে না খাইয়ে নিজে কি করে খাই বলো তো…তাই আগে তুমি খাবে তারপর আমি খাবো…নেও এখন খাওয়া শুরু করো….(বাঁকা হেসে)
-আ,,,আমি আসলে কফি খাই না…(ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে আমার)
-কি বলো!!আমি যতদূর জানি তুমি তো কফি খুব পছন্দ করো…তাহলে মিথ্যা কেনো বলছো!!!
-করতাম এখন আর করিনা..আপনি খেলে খান,না হলে আমি নিয়ে চলে যাচ্ছি….
.
.
হঠাৎ তাসিন উঠে দাড়ালো…তারপর একপা দুপা করে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো…আর আস্তে করে দরজাটা বন্ধ করে দিলো…
.
.
এতোক্ষন যাও একটু সাহস ছিলো তাসিনের দরজা আটকানো দেখে তা হাওয়া হয়ে গেলো…
তাসিন দরজার সাথে ঠেস দিয়ে দাড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে একটা ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে আমার দিকে একটু একটু করে এগুতে লাগলো…আমিও একটা ক্যাবলা মার্কা হাসি দিয়ে চুপ করে দাড়িয়ে রইলাম…ওকে এগুতে দেখেও আমি নড়তে পারছি না..মনে হচ্ছে কেউ পা টা শক্ত করে ধরে রেখেছে…
কিন্তু ও তেমন কিছুই করলো না আমার পাশ ঘেসে গিয়ে ধপ করে বিছানায় বসে পরলো আর আমার হাতে কফির কাপটা ধরিয়ে দিলো…সে ইশারায় আমাকে কফি টা খেতে বলছে কিন্তু আমি খেতে নারাজ…কিছুতেই আমি খাবো না…কারনটা আমি খুব ভালো করেই জানি…পুরো কফির কৌটো ঢেলে দিয়েছি এতে আর না দিয়েছি কোনো চিনি..এটা খেলে কি হতে পারে তা বেশ বুঝতে পারছি…
আমাকে চুপ করে দাড়িয়ে থাকতে দেখে এবার তাসিন কিছুটা ধমকের সুরেই বলে উঠলো,,,
-তুমি কি খাবে নাকি আমি অন্য কোনো স্টেপ নিবো!!!
ওর ধমকে আমি কিছুটা কেপে উঠলাম..তাড়াতাড়ি ভয়ে ভয়ে এক চুমুকে পুরোটা কফি খেয়ে ফেললাম…এতোটা তেতো ছিলো যে ওয়াক থু করতে করতে ওয়াশরুমে দৌড় দিলাম আর গিয়ে সোজা বমি করে দিলাম…এরপর থেকেই চোখে মুখে পানি দিচ্ছি আর একটু পর পর কুলকুচি করছি..মুখ পুরো তেতো হয়ে গেছে…আমার এমন করুন অবস্থা দেখে শয়তানটার হাসিই থামছে না…
.
.
এখন,,,,
খুবই ক্লান্ত লাগছে,মাথাটাও কেমন ঘুরাচ্ছে…ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে সোজা বেডে শুয়ে পরলাম..যা অবস্থা হয়েছে এখন শরীর খুব দুর্বল লাগছে..বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই কিছুক্ষনের মধ্যেই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম….
.
.
ঘুমের মধ্যে টের পেলাম কেউ একজন খুব যত্ন সহকারে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে…স্পর্শটা খুব পরিচিত মনে হচ্ছে….হঠাৎ ঠোঁটে শীতল নরম কিছুর স্পর্শ অনুভব করলাম…এমন কিছু ঘটায় তাড়াতাড়ি শোয়া থেকে উঠে বসলাম…কিন্তু আশেপাশে কাউকেই খুজে পেলাম না…কে ছিলো ভাবতে ভাবতে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১১টা বেজে গেছে…ইশশ এতো বেলা অব্দি আমি ঘুমিয়ে ছিলাম…নতুন বউকে এতো বেলা অব্দি ঘুমানো সাজে না…না জানি সবাই কি ভাবছে…আর ওই শয়তানটাও আমাকে একটু ডেকে দিতে পারলো না…এখন তাদের সামনে আমি দাড়াবো কিভাবে!!!এসব ভাবতেই লজ্জা লাগছে…আবার খুব ক্ষিধেও পেয়েছে..ক্ষিধেয় পেট চো চো করছে…হঠাৎ চোখ পরলো বেডের পাশের ছোট টেবিলটায় যেখানে খাবার রাখা…কিছু না ভেবেই খাওয়া শুরু করে দিলাম…এতোটাই ক্ষিধে পেয়েছে যে ভাবার সময় নাই…
.
.
তনু বাচ্চাদের মতো করে খেয়েই যাচ্ছে কিন্তু সে জানে না তার এভাবে খাওয়া দেখে কেউ একজন লুকিয়ে মিটমিট করে হাসছে…হ্যা সে তাসিন..তাসিন এতোক্ষন লুকিয়ে তনুর কান্ড কারখানা দেখছিলো…ওর এভাবে খাওয়া দেখে আর না হেসে পারলো না…তারপর কিছু একটা ভেবে তাসিন গম্ভীর মুখে নিচে চলে গেলো…
.
.
কোন শাড়িটা পরবো কিছুতেই ঠিক করতে পারছি না…হঠাৎ চোখ গেলো সোফার উপর একটা প্যাকেটের দিকে…প্যাকেটটা খুলে দেখি তার মধ্যে মেরুন রঙ্গের খুব সুন্দর একটা শাড়ি…দেখেই পছন্দ হয়ে গেলো…তাড়াতাড়ি শাওয়ার নিয়ে শাড়িটা গায়ে জড়িয়ে নিলাম…তারপর আয়নার সামনে গিয়ে সব ঠিক আছে কিনা দেখে মাথায় একহাত ঘুমটা টেনে নিচে চলে এলাম…
.
.
নিচে নেমে দেখি ফাজিলটা খুব মনোযোগ সহকারে টিভি দেখছে…
.
তনুকে নিচে নামতে দেখেই তাসিনের চোখ যেনো আটকে গেলো…মেরুন রঙ্গের শাড়িটায় তনুকে কোনো এক অপ্সরির মতো লাগছে..আজ তার চোখ যেনো তনুর উপর থেকে সরতেই চাচ্ছে না…বিয়ের পর নাকি মেয়েরা আরো সুন্দর হয়ে যায় তার প্রমান আজ তাসিন হাতে নাতে পেয়েছে… সে নেশাগ্রস্ত চোখে তনুর দিকে তাকিয়ে আছে…সে যেনো এভাবেই তনুর মাঝে হারিয়ে যেতে চায়…
.
.
তাসিনকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে একটা ভেংচি কেটে কিচিনের দিকে হাঁটা দিলাম…এতোক্ষনে তাসিনের ঘোর কাটলো…তারপর একটু মুচকি হেসে আবার টিভি দেখায় মনোযোগ দিলো….
.
.
.
চলবে…..
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_২
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব_২
#মেঘ_বালিকা
.
.
.
সকালে এক টুকরো রোদ চোখে পরতেই ঘুমটা ভেঙ্গে যায়…পাশে তাকিয়ে দেখি ফারিয়া এখনো ঘুমুচ্ছে..সত্যিই মেয়েটা খুবই ঘুম পাগলা…উঠে বসলাম আজকে যে আমার বিয়ে ব্যাপারটা আমি ভুলেই গেছি..বাইরে থেকে চেচামেচির আওয়াজ শুনে বাইরে বেরিয়ে এলাম..দেখলাম সবাই বিয়ের তোড়জোড় করছে..এতোক্ষনে আমার হুস ফিরে…মনটা খারাপ হয়ে গেলো..সবাইকে ছেড়ে চলে যেতে হবে ভেবেই বুকটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে আমার…আম্মুকে দেখে বুঝা যাচ্ছে সে এই মুহুর্তে খুব রেগে আছে কিন্তু রাগের কারনটা বুঝতে পারছি না..আমি গিয়ে পিছন থেকে আম্মুকে জড়িয়ে ধরলাম…আম্মু একঝটকায় আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,,,
-ছাড় ছাড় এখন আর এতো ঢং করতে হবে না..কয়টা বাজে দেখেছিস!!তোর মাথায় কি কিছুই নাই আজ তোর বিয়ে আর তুই এতো বেলা অব্দি ঘুমিয়ে ছিলি…এখুনি যা ফ্রেশ হয়ে আয় একটু পর পারলার থেকে লোক আসবে সাজাতে..যা তাড়াতাড়ি…
.
.
একি আমার মা নাকি অন্য কেউ আমি বুঝতে পারছি না..আজকের দিনে এমন ব্যবহার কেউ করে…
-আম্মু আজকে তো আমি চলেই যাব তুমি আজকের দিনেও আমাকে রাগারাগি করছো!!
-তো কী করবো..যা যা জ্বালাস না..এমনিতেই অনেক কাজ বাকি একা হাতে আর কতো কাজ করবো..বিউটিরও(কাজের মহিলা) কোনো খবর নাই কালকে বলে দিলাম আজকে সকাল সকাল চলে আসতে এখনো তার আসার নাম নাই…
এসব বলতে বলতে আম্মু চলে গেলো…আর আমি হা করে দাড়িয়ে রইলাম..এদের দেখি আমার জন্যে কোনো মায়াই নাই..যেনো আমি চলে গেলেই এরা বাঁচে…ঠিক আছে যাব চলে আর আসবো না..তখন বুঝবে হুহহ…….
.
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
.
একটু আগে পারলারের লোকজন এসে আমাকে ভুত সাজিয়ে চলে গেছে..এতো করে বললাম কম মেকআপ দিতে কিন্তু না তাদের মতে বিয়ের দিনে কনেকে একটু ভাড়ি মেকআপ দিতে হয় নাহলে বউ বউ মনে হয়না যত্তসব…এমন ভাবে সাজিয়েছে যে আমি নিজেকে নিজেই চিনতে পারছি না…
.
.
ফারিয়া আজকে শাড়ি পরেছে..ওকে দেখতে খুব মিষ্টি লাগছে..ও এমনিতেই সুন্দর সাজার ফলে আরোও সুন্দর লাগছে…আমাকেও নাকি আজ সুন্দর লাগছে সবাই বলছে কিন্তু আমার তো তেমনটা মনে হচ্ছে না..আমি ভাবছি আমাকে দেখে তাসিন আবার উলটো দৌড় না দেয়..দিলে অবশ্য মন্দ হবে না…ভালোই হবে বিয়েটা আর হবে না….
.
.
.
রুমে বসে আছি হঠাৎ বাইরে থেকে সবাই চেচিয়ে বলে উঠলো বর এসে গেছে…ওই মুহুর্তে আমার ভিতর কেমন একটা অদ্ভুত অনুভুতি কাজ করতে লাগলো…পাশে ফারিয়া ছিলো ওকে পাঠিয়ে দিলাম তাসিনের একটা ছবি তুলে আনতে…কেনো জানি ওকে বর বেশে কেমন লাগছে সেটা খুব দেখতে ইচ্ছা করছে…
.
একটুপর ফারিয়া আসলো ওর হাত থেকে ফোনটা নিয়ে তাসিনের পিকটা দেখতে লাগলাম…বাহহ খুব সুন্দর লাগছে ওকে আজকে..মনে হচ্ছে কোনো রাজকুমার..শেরওয়ানিতে বেশ মানিয়েছে ওকে…কেনো জানি ওর থেকে আজকে আর চোখ ফিরাতে পারছি না…খালি তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছা করছে… ছবিতেই এতো সুন্দর না জানি সামনা সামনি কতো সুন্দর লাগে….
.
.
.
অবশেষে বিয়েটা সম্পূর্ন হলো…কিভাবে কি হয়ে গেলো কিছুই বুঝতে পারলাম না..কবুল বলার সময় খুব কান্না পাচ্ছিলো..বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো আমার…কিছুতেই মন মানছিলো না আমার…জানি না কি আছে কপালে…
বিদায়ের সময় আব্বু-আম্মুকে জড়িয়ে ধরে খুব কান্না করেছি…এই মানুষগুলো যতই রাগারাগি করুক না কেনো যতই রাগ দেখাক না কেনো আমি জানি তারা ঠিক কতোটা ভালোবাসে আমাকে…সব বাবা-মা রাই তার সন্তানকে খুব ভালোবাসে কিন্তু আমরা কেউ কেউ তাদের এই ভালোবাসা বুঝি না…আমি কখনো আমার আব্বুকে কান্না করতে দেখিনি কিন্তু আজ আমি তার চোখে স্পস্ট পানি দেখেছি…সত্যি সেই ছোটবেলা থেকে মানুষ করে বড় করে তুলে যখন মেয়েকে অন্যের ঘরে পাঠাতে হয় সেই কষ্ট কোনো বাবাই সহ্য করতে পারেনা..না চাইতেও তার চোখে পানি চলে আসে…আম্মু তো কান্না করতে করতে জ্ঞান হারিয়েছে সবাই তাকে ঘরে নিয়ে গেছে…এই অবস্থায় আমার আম্মুকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না…কিন্তু আব্বু জোড় করেই আমাকে গাড়িতে তুলে দিলো আর চিন্তা করতে না করলো…
তারপর তাসিনের হাত ধরে আব্বু বললো,,,,
-বাবা আমার মেয়েটাকে একটু দেখে রেখো..ওকে একটু ভালোবেসে আগলে রেখো..অনেক ভরসা করে ওকে তোমার হাতে তুলে দিয়েছি…ও একটু চঞ্চল স্বভাবের মাঝে মাঝে একটু দুষ্টুমি করে তাই শাসণ করো না হলে আবার মাথা উঠে যাবে(কান্নারত অবস্থায় একটু হেসে)
-আব্বু আপনি চিন্তা করবেন না..ও আমার কাছে খুব ভালো থাকবে..কোনো অভিযোগ করার জায়গা রাখবো না আমি..আপনি আমার উপর ভরসা রাখেন..আর নিজেদের খেয়াল রাখবেন…
আব্বুর মুখে হাসি ফুটে উঠলো…সে আজ খুব নিশ্চিন্ত এমন একজনের হাতে নিজের একমাত্র মেয়েকে তুলে দিতে পেরে…
.
.
.
বাসর ঘরে বসে আছি…রুমটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে…সারা রুমে ফুলের গন্ধে মো মো করছে…এমন একটা পরিবেশ যেকারো মন ভালো করার জন্য যথেষ্ট…কিন্তু আমার বুকের ভিতর তোড়পাড় শুরু হয়েছে…খুব ভয় কাজ করছে…এই দিনটা নিয়ে সব মেয়েরই একটা স্বপ্ন থাকে আমারও ছিলো…অন্য কারো সাথে বিয়ে হলে হয়তো এতোটা ভয় কাজ করতো না যতটা না তাসিনকে বিয়ে করে করছে..জানিনা শয়তানটা কী পরিকল্পনা করে রাখছে আজকের রাতের জন্যে…
.
.
.
অনেক্ষন যাবত বসে আছি কিন্তু তাসিনের আসার নাম নেই…সারাদিন যা ধকল গেলো এখন খুব ক্লান্ত লাগছে..একটু ঘুমের প্রয়োজন কিন্তু ঘুমোতেও পারছি না….অবশেষে সব কিছু সমাপ্তি ঘটিয়ে তাসিন রুমে প্রবেশ করলো…আর এইদিকে আমার হ্রদপিন্ডটা ঢোল বাজানো শুরু করেছে কী একটা অস্বস্তিকর পরিবেশ…আমি মাথা নিচু করে বসে আছি আর ভাবছি এখন আমার সাথে কী হতে পারে…কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে তাসিন আমার পাশে এসে ধপ করে বিছানায় উল্টো দিকে মুখ করে শুয়ে পরলো…আমি একদম বোকা বনে গেলাম…এটা কী হলো!!!তাসিন এতো শান্ত কেনো..আমি তো কতো কিছুই না ভাবছিলাম কিন্তু এমনটাও আশা করিনি…নাকি এটা ঝড়ের পূর্বাভাস…কিছুই বুঝতে পারছি না…ওর মনে ঠিক কী চলছে!!!আচ্ছা ওকি পুরোনো কথা ভুলে আবার সব কিছু নতুন করে শুরু করতে চাচ্ছে!!!!!
হঠাৎ আমার ভাবনার মধ্যে ছেদ ঘটিয়ে তাসিন আমার হাতটা টান দিয়ে ওর বুকের ওপর ফেলে দেয়ে…তারপর বুকের সাথে ঝাপতে ধরে বলে,,,,
-এতো নিশ্চিন্ত হওয়ার কিছু নেই যাও ঘুমিয়ে পরো..গুড নাইট….
কপালে আলতো একটা চুমু দিয়ে আমাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আবার পাশ ফিরে শুয়ে পরে তাসিন…আর আমি থম মেরে বসে রইলাম কী ঘটলো আমার সাথে কিছুই বুঝতে পারলাম না…..
.
.
.
.
চলবে……..
.
.
(ভুল-ক্রটি ক্ষমার চোখে দেখবেন….জানি না কেমন হচ্ছে লেখা…সবাই দোয়া করবেন এবং পাশে থাকবেন..ধন্যবাদ)
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা মেঘ_বালিকা
পাএ পক্ষের সামনে বসে আছি আমি আর আমার সামনে বসে আছে তাসিন… আমার প্রাক্তন… একটু আগে তার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে…
১বছর আগে তার সাথে আমার সমস্ত সম্পর্ক শেষ করে দিই আমি..সে সেদিন আমায় আটকায়নি শুধু একটা কথাই বলেছিলো ‘একদিন তোমাকে আমার কাছেই ফিরতে হবে ‘……
.
.
মাথা নিচু করে বসে আছি আমি…কিন্তু তাও আমি স্পস্ট বুঝতে পারছি তাসিন আমার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছে… ওর এই হাসি আমার সহ্য হচ্ছে না…দেশে কী ছেলের অভাব পরছে যে আব্বু-আম্মু ওর সাথেই আমার বিয়ে ঠিক করলো…যেভাবেই হোক এই বিয়ে আমাকে ভাঙ্গতেই হবে…ওকে কোনোভাবেই বিয়ে করা সম্ভব না আমার পক্ষে…
.
.
বারান্দায় দাড়িয়ে আছি আর আমার পাশে দাড়িয়ে আছে তাসিন… একটু আগে আমাদের আলাদা কথা বলার জন্যে একটা রুমে পাঠানো হয়েছে..কিন্তু দুজনেই চুপ করে দাড়িয়ে আছি..কেউ কোনো কথা বলছি না..কেমন একটা অস্বস্তি কাজ করছে আমার মধ্যে..হঠাৎ তাসিন বলে উঠলো,,,,
-দেখেছো আমার কথাটাই সত্যি হলো…আমার কাছেই তোমাকে আসতে হলো..নিজে থেকে না আসলেও এসেছো তো…
.
আমি কিছু বলছি না…এখন ঠিক আমার কি বলা উচিত বুঝতে পারছি না..তাই চুপ করে আছি…
.
.
তাসিন-আমি ঠিক এই দিনটারই অপেক্ষায় ছিলাম..যতটা না কষ্ট তুমি আমাকে দিয়েছিলে তার থেকে শত গুন বেশি কষ্ট আমি তোমাকে দিবো..শুধু একবার বিয়ে টা হতে দেও…( মনে মনে বাঁকা হেসে )
.
.
.
আব্বু-আম্মু কে অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু তারা আমাকে ছাফ জানিয়ে দিয়েছে আমাকে এই বিয়েটা করতেই হবে…না হলে তারা আমার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দিবে…এই কথা শুনে আমি চুপসে যাই… কোনো সন্তানই এটা চাইবে না..তাই আমিও আর কথা বারাই না..এর আগে ৫টা বিয়ে ভেঙ্গেছি…ছেলে পছন্দ হয়নি বলে বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছি..কিন্তু কয়েকটা ছেলে বেশ সুদর্শন ও ছিলো…তাও আমি না করে দিয়েছি কেনো দিয়েছি জানিনা..এইবার তাই কোনোভাবেই আব্বু-আম্মু আমার কথা শুনছে না…তাদের নাকি তাসিনকে বেশ পছন্দ হয়েছে..পছন্দ হওয়ারও কথা..একটা ছেলের মধ্যে যা যা গুন থাকা দরকার তার প্রায় সব কয়টা গুনই তার মধ্যে আছে…
.
.
.
ভার্সিটির ক্যাটিনে বসে আছি আমি আমার পাশে ফারিয়া হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে…তার এভাবে হা করে তাকিয়ে থাকার কারন হলো সে আমার আর তাসিনের বিয়ের ব্যাপারটা শুনে অবাকের চরম পর্যায়…
ফারিয়া:তনু সব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে প্লিজ সব ক্লিয়ার কর…মানে সিরিয়াসলি তাসিন ভাইয়ার সাথেই তোর বিয়ে টা হচ্ছে নাকি তুই মজা করছিস আমার সাথে??
আমি কিছুটা গম্ভীর স্বরে বললাম,
-তোর সাথে আমার মজা করে লাভ টা কী!!আর আমার কথা শুনে কী তোর মনে হচ্ছে আমি মজার মুডে আছি!!!!!
-তা ঠিক…যাক ভালোই হইছে অবশেষে তোর বিয়েটা তো হচ্ছে আমার কতো দিনের ইচ্ছা ছিল তোর বিয়ে খাব…আর জানিস তো তাসিন ভাইয়া তোকে খুব ভালোবাসে…
আমি ফারিয়ার দিকে রাগি চোখে তাকাতেই ও চুপ হয়ে গেলো…..
.
.
.
বিকালে
একটা আননোন নাম্বার থেকে ফোন আসে…কে ফোন করতে পারে!!এসব চিন্তা করতে করতে একরাশ বিরক্ত নিয়েই ফোনটা রিসিভ করি…
-আসসালামু আলাইকুম কে?
-এখন কি নাম্বারটাও ভুলে গেছো??(ওপাশ থেকে)
আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না কে!!তাড়াতাড়ি নাম্বারটা দেখলাম হ্যা এটা তাসিন এর নাম্বার.. আগের নাম্বারটাই..সেভ করা ছিলো না বিধায় বুঝতে পারিনি….
-কী হলো চুপ করে আছো কেন?(তাসিন)
-হুম বলো কেন ফোন করেছো!
-বউকে ফোন করার জন্যে আবার কারন লাগে নাকি!!
ওর মুখে বউ কথাটা শুনে একটু কেপে উঠলাম..আগের কথা মনে পড়ে গেলো..আগেও ও আমাকে এভাবেই বউ বলে ডাকতো…তখন খুব ভালো লাগলেও এখন কেনো জানি আর লাগে না…
-দেখুন আমাদের বিয়েটা কিন্তু এখনও হয়নি সবে মাএ ঠিক হয়েছে..তাই এখনি এসব বলার কোনো মানেই হয়না..আর এভাবে আমাকে আর ফোন দিবেন না…বাই
বলে ওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোনটা রেখে দিলাম…
.
.
আর এইদিকে তনু ফোন রাখার পর তাসিন কিছুটা গম্ভীর হয়ে কিছুক্ষন ফোনের দিকে তাকিয়ে তারপর কী ভেবে বাঁকা একটা হাসি দিলো..তারপর বলতে লাগলো,,,
-আর তো মাএ কয়েকটা দিনের অপেক্ষা তারপর এই তেজ আর তোমার থাকবে না…তাসিন আহমেদ কী জিনিস তখন বুঝবে তুমি…অনেক কষ্ট দিয়েছো তুমি আমাকে তার সব কয়টা তোমাকে গুনে গুনে ফেরত দিবো…
.
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
.
.
আমি জানি শয়তানটার মনে অনেক শয়তানি জমা হয়ে আছে…যা ও বিয়ের পর আমাকে দেখাবে…এতোদিনের জমা রাগ পুষে রেখেছে…বিয়ের পর সব শুধে আসলে উসুল করবে..কিন্তু আমি এখন কী করবো…আমার কথা তো কেউই শুনছে না…আর ও যেভাবে আব্বু-আম্মু কে পটিয়ে ফেলছে এখন আমি যাই বলি আমার কথা তারা বিশ্বাস করবে না…আমার সাথেই এমনটা হওয়ার ছিলো কেন যে ওর সাথে রিলেশন করতে গিয়েছিলাম…
.
.
.
কাল আমার গায়ে হলুদ….
কোনোভাবেই আমি বিয়েটা আটকাতে পারিনি…তাই নিয়তির উপরই সব কিছু ছেড়ে দিয়েছি..যা আছে কপালে তাই হবে…
বাসায় মেহমান আসা শুরু করে দিয়েছে..সবাই খুব ব্যাস্ত…ফারিয়া ও সাজুকুজু করে এসে হাজির হয়েছে…ওকে একদিন আগেই আসতে বলছি..আমার একা একা ভালো লাগছে না তাই..কিন্তু তার কোনো পাত্তাই নাই..কই কই ঘুরে বেড়াচ্ছে কে জানে…আর এদিকে আমার দম বন্ধ অবস্থা…আম্মু বলছে চুপ করে নিজের রুমে বসে থাকতে একদম ছটফট করতে না করছে..বাসা ভরতি মানুষজন তাই চুপ করে থাকতে বলছে নাহলে মানুষ নানান কথা বলবে..এই বলে রেখে গেছে আমাকে..তাই আমিও কিছু করতে পারছি না…একটু পর পর মানুষজন এসে আমাকে দেখে যাচ্ছে..এতো দেখার কি আছে এটাই বুঝিনা আমি..এর আগেও তো দেখছে আমাকে তাহলে আবার এভাবে দেখার কি আছে….
.
.
.
সং সেজে বসে আছি স্টেজে…আত্মীয়স্বজনরা একাক জন করে এসে হলুদ লাগিয়ে দিয়ে যাচ্ছে..খুব বিরক্ত লাগছে এভাবে আর বসে থাকতে পারছিনা..শয়তান তাসিনটার মাথা ফাটাতে ইচ্ছা করছে আমার…কি দরকার ছিলো বিয়েটা করার…আর এই ফারিয়াকে সেই কখন বললাম আমার রুম থেকে একটু ফোনটা এনে দে..এখন ও বান্দরটার আসার নাম নাই..আসবে কেমন করে সে তো এখন সেলফি তুলায় বিজি…আর বিয়ে বাড়ি বলে কথা কতো ছেলে আছে তাদের সামনে প্রমান করতে হবে তো সে কতো বড় একটা বান্দরি…উফফফ আর এসব সহ্য করা যাচ্ছে না..মানুষ যেন শেষই হচ্ছেনা…আম্মুটাও যে কোথায় কে জানে….
অবশেষে ফারিয়া আমার ফোনটা নিয়ে আসলো…ফোনটা হাতে নিয়ে ওকে কয়েকটা ঝাড়ি দিলাম আর জোর করে পাশে বসিয়ে রাখলাম…
.
.
.
রাত ১১টায় অনুষ্ঠান সম্পূর্ন হলো….রুমে এসে সব খুলতে শুরু করলাম..পুরাই ফুলের দোকান মনে হচ্ছে নিজেকে…আয়নায় সামনে গিয়ে নিজেকে নিজে দেখেই ভয় পেয়ে গেলাম কেমন ভুতের মতো লাগতেছে আমাকে হায় আল্লাহ্ এতো মেকআপ কেউ দেয় এর জন্যেই পারলারে সাজতে ইচ্ছা করে তা…ফারিয়াকে দিয়ে চুলের ক্লিপ গুলো খুলাচ্ছি আর আমি মেকআপ তুলছি…বেচারা ঘুমে তাকাতে পারছে না..তাও জোর করে বসিয়ে দিয়েছি….রাত ১টা বেজে গেছে এসব করতে করতে…
.
.
.
গভীর রাত সবাই ঘুমিয়ে পরেছে..আমার পাশে ফারিয়া ও নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে এতো ঘুম কই থেকে আসে ওর আল্লাহই জানে…কাল আমার বিয়ে কই আমার সাথে একটু কথা বলবে একটু শান্তনা দিবে তা না সে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে..কই আমার তো ঘুম আসছে না..আমার তো ঘুম হারাম হয়ে গেছে…কাল কি হবে এসব ভাবতেই ঘুম আমার উড়ে গেছে..না জানি কী অপেক্ষা করছে আমার জন্যে…
.
.
.
.
.
.
.
.
চলবে….
.
.
তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
মেঘ_বালিকা
#পর্ব-১