Sunday, July 27, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1944



বউ Part- 3

0

Story: #বউ
Part- 3
writer: #Nur_Nafisa
.
.
(নাফিসা সারাদিন রুবিনার সাথে গল্প করে একদিনেই ভালো ভাব জমিয়ে ফেলেছে। রিয়াদ স্কুল থেকে ফিরলে তার সাথে খেলায় মেতে উঠে।)
নাফিসা- এই মটো, চলো তোমাদের পুরো বাড়ি ঘুরে দেখি।
রিয়াদ- আমি মটো!?
নাফিসা- ? তুমি তো একেবারে গুলো মুলো একটা। মটো নামে পারফেক্ট লাগবে ?
রিয়াদ- আম্মু….. দেখো ভাবি কি বলে আমাকে! ?
রুবিনা- দুষ্টুমি বন্ধ করে এদিকে এসে লাঞ্চ করে নাও নাফিসা।
নাফিসা- নো…. আমাকে #বউ ডাকবে..
রুবিনা- আচ্ছা বউ মা ডাকবো ?
রিয়াদ- হিহিহিহিহি…… ? বউ আবার মা!
নাফিসা- ?
(লাঞ্চ করে রিয়াদ কে সাথে নিয়ে পুরো বাড়িটা ই ঘুরে দেখতে লাগলো। বাড়িটা দেখতে পুরো ছোট খাট একটা প্রাসাদ ই মনে হচ্ছে নাফিসার কাছে। প্রতিটা রুমেরই একটা করে বারান্দা আছে। মাঝে গ্লাসের পার্টিশন।)
নাফিসা- চলো ছাদে যাই…. ?
রিয়াদ- এখন ছাদে গেলে আম্মু বকা দিবে।
নাফিসা- তাই নাকি! তাহলে তো আরও বেশি মজা হবে! ?
রিয়াদ- মানে!?
নাফিসা- লুকিয়ে লুকিয়ে যাবো ?
রিয়াদ- না….
নাফিসা- দূর! চলো চলো চলো….
(রিয়াদকে ও টেনে ছাদে যেতে লাগলো)
.
নাফিসা- এই ফ্লোরগুলোতে কেউ থাকে না?
.
রিয়াদ- না।
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
নাফিসা- কেন? তাহলে এতো বড় বাড়ি করার কি প্রয়োজন?
.
রিয়াদ- এটা আমাদের নতুন বাসা। এই ফ্ল্যাট গুলো ভাড়া দেয়া হবে।
.
নাফিসা- অহ! আচ্ছা। এতো বড় ছাদ এভাবে ফেলে রেখেছো কেন! বাগান করতে পারো এখানে, তাছাড়া একটা দোলনা ও রাখো নি।
.
রিয়াদ- এখানে কিছু করলে তো ভাড়াটিয়ারা সব নষ্ট করে দিবে। আমাদের বাগান ও আছে দোলনা ও আছে।
.
নাফিসা- কোথায়?
.
রিয়াদ- এদিকে আসো।
.
(রিয়াদ নাফিসাকে ছাদের কর্ণারে রেলিং এর পাশে নিয়ে এলো)
রিয়াদ- ওই যে নিচে দেখো।
.
নাফিসা- ওয়াও? এতো বড় বাগান ! তাহলে আর শুধু শুধু ছাদে এলাম কেন! চলো চলো নিচে যাই…….
.
(আবার দৌড়ে নিচে এলো। দাড়োয়ান গেইট থেকে দেখেই অবাক! এইডা কি আসলেই বাড়ির বউ! এমন গেঞ্জি আর প্যান্ট পইড়া ঘুরে বউরা! নাফিসা বাগান দেখতে লাগলো। আর রিয়াদ পানির পাইপ নিয়ে ফুলের গাছ গুলোতে পানি দিতে লাগলো।)
নাফিসা- এই মটো, পাইপ দাও আমার কাছে….
রিয়াদ- আমাকে মটো বলো কেন! ? দাড়াও….
(রিয়াদ পাইপের পানি দিয়ে নাফিসাকে ভিজিয়ে দিতে লাগলো)
নাফিসা- ? মাত্র ক্লাস 2 তে পরো, দুষ্টু তো কম না তুমি!

.
রিয়াদ- আমি ক্লাস 5 এ পরি?
.
নাফিসা- really! ? দেখে তো মনে হচ্ছে 2 এর বাচ্চা! এবার দেখো আমি কতো দুষ্ট।
.
(নাফিসা রিয়াদের কাছ থেকে পাইপ নিয়ে রিয়াদকে ভিজিয়ে দিলো। দুজনেই অনেক্ক্ষণ ভিজে গোসল করে বাসায় ফিরে এলো। রুবিনা দেখে চোখ কপালে! কিছুক্ষণ আগে মাত্র গোসল করলো, এখন আবার বাইরে থেকে গোসল করে এসেছে! দুজনকেই ইচ্ছে মতো বকা শুরু করলো। বকা আর শুনে কে! দুজনেই দ্রুত যার যার রুমে এসে চেঞ্জ করে নিলো। বিকেলে নাফিসা রিয়াদকে সাথে নিয়ে আবার নিচে এসে ক্রিকেট খেলতে লাগলো। রিয়াদের ভালোই হলো। একজন খেলার সাথি পেল। বাসায় একা একা কারো সাথে খেলতে পারে না। শুধু মাত্র ছুটির দিনে ভাইয়া আর বাবাকে পায় খেলার জন্য। রুবিনা ও একা একা ঘরে না থেকে তাদের সাথে নিচে নেমে এলো। দোলনায় বসে তাদের খেলা দেখছে।)
.
রিয়াদ- ওয়াও, ভাবি তুমি পাক্কা খেলোয়াড়! আব্বু ও পারে না তোমার মতো। আর ভাইয়া পারে কিন্তু আমার সাথে খেলতে চায়না, আমি নাকি পারিনা!
.
নাফিসা- আচ্ছা, তোমাকে ও পাক্কা খেলোয়াড় বানিয়ে দেব। শাশুড়ি আম্মু আসো না তুমিও।
.
রুবিনা- আমি!? না না, আমি এসব খেলবো না। তোমরাই খেল…
.
নাফিসা- কেন! আমার আম্মু ও তো খেলে আমাদের সাথে।
.
রুবিনা- ? তোমার আম্মুর মতো আমার এতো এনার্জি নেই!
.
নাফিসা- এভাবে বসে থাকলে এনার্জি আসবে কিভাবে! ?
.
রুবিনা- হাহাহা… ? ঠিকই বলেছো।
.
(কথা বলতে বলতে নাফিসা বল নিতে গিয়েছিল। এমনি তার একদম কাছে গাড়ি এসে ব্রেক করলো।)
.
নাফিসা- আয়ায়ায়ায়া….
.
( সবাই ভয় পেয়ে গেছে, আর গাড়ির ভেতর থেকে, রেহান রেগেমেগে তাকিয়ে আছে। এখনি বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটে যেত। রায়হান সাহেব গাড়ি থেকে দ্রুত নেমে নাফিসার কাছে এলো, রুবিনা ও রিয়াদও।)
.
রায়হান- ব্যাথা পেয়েছ?
.
নাফিসা- নাহ! রিয়াদ ব্যাট দাও তো, ড্রাইভার এর আজ খবর নিয়ে ছাড়বো? দেখে গাড়ি চালাতে পারে না!
.
রুবিনা- ?
রায়হান-?
রিয়াদ- হাহাহা ? ড্রাইভার!
.
(নাফিসা ব্যাট নিয়ে তেড়ে ড্রাইভিং সিটের দরজার পাশে যেতেই রেহান বেরিয়ে এলো। নাফিসা রেহানকে দেখে ভেজা বিড়াল হয়ে গেছে। ব্যাট নিচে নামিয়ে ফেললো। গাড়ির ভেতরে উকি দিয়ে আর কাউকে দেখতে পেল না। তার মানে রেহান ই ড্রাইভ করেছে।)
.
রেহান- ড্রাইভারের খবর নিতে এসেছো? ড্রাইভার দেখে গাড়ি চালাতে পারে না! আর যে বল নিতে এসেছে সে কি অন্ধ ছিল! আশেপাশে দেখে হাটতে পারে না!?
.
নাফিসা- ? নো! আ..আই মিন… নাথিং
(বলেই ব্যাট ফেলে এক দৌড়ে ফ্ল্যাট এ এসে নিজের রুমে দরজা লাগিয়ে বসে রইলো। রেহান ছাড়া বাকিরা সবাই হাসতে লাগল।? সন্ধ্যায় রেহান রিয়াদের রুমে এসেছিল তাকে পড়াতে। কিন্তু এসে দেখলো নাফিসা পড়াচ্ছে রিয়াদকে। )
রেহান- রিয়াদ, আমার রুমে আয় পড়তে।
.
রিয়াদ- না, আজ আমি ভাবির কাছেই পড়বো।
.
রেহান- এই কিসের ভাবি! ? কে তোর ভাবি! আপু বলে ডাকবি।
.
নাফিসা- না, ভাবি বলে ডাকবে?
.
রেহান- ভাবি বলে ডাকবে কেন! একদম ভাবি বলবি না। আর এক বার শুনলে তোকে জ্যাকশন মাইর দিবো।
.
রিয়াদ- আম্মু……! ভাইয়া আমার পড়ার ডিস্টার্ব করছে।
.
রেহান- ফাজিল একটা ?
.
(রেহান চলে গেলো)
নাফিসা- রিয়াদ, জ্যাকসন মাইর কি?
.
রিয়াদ- ওইটা ভাইয়ার পিটুনি দেয়ার স্টাইল ?
.
নাফিসা- ?কিভাবে দেয়!
.
রিয়াদ- হাত পা একসাথে বেধে তারপর কাঠের স্কেল দিয়ে পিটুনি দেয়, আবার সুরসুরি দেয়।
.
নাফিসা- তোমার সুরসুরি আছে! দেখি…..
(রিয়াদকে সুরসুরি দিতে লাগলো আর রিয়াদ হাসতে হাসতে খাটে গড়াগড়ি খাচ্ছে!?)
রিয়াদ- প্লিজ স্টপ.
.
নাফিসা- ওকে, ? তোমার ভাইয়ার সামনে বেশি বেশি আমাকে ভাবি ডাকবে। দেখতে চাই জ্যাকসন মাইর?
.
রিয়াদ- ? নায়ায়ায়ায়া….
.
নাফিসা- ইয়েএএএএএস। নাহলে আমি দেব।?
.
রাতে ডিনারের সময়,
রুবিনা- নাফিসা তোমার কি অই রুমে থাকতে ভয় লাগে?
.
নাফিসা- ?আমার একা থাকতে ভয় লাগে, অই দুষ্টু লোক আমাকে একা পেলে আবার ধরে নিয়ে যাবে!
.
রুবিনা- আমাদের বাসায় কেউ আসবে না। তবুও যদি ভয় পাও তাহলে তুমি রিয়াদের সাথে থেকো।
.
নাফিসা- ওকে।
.
রিয়াদ- ওয়াও! ? ভাবি আমার সাথে থাকবে…! আমরা গল্প করে ঘুমাবো। খুব মজা হবে।
.
রায়হান- ঘুমাতে গেলেও মজা!?
.
রুবিনা- গল্প করতে করতে আবার রাত পার করে দিবেন না। সকালে স্কুল আছে। নামাজ ও পড়তে হবে ফজরের সময় উঠে। নাফিসা নামাজ পড়তে পারো না?
.
রেহান- আম্মু, তোমার আর জ্ঞান নেই! যে মেয়ে টিশার্ট পড়ে থাকে সে আবার নামাজ পড়তে পারবে!
.
নাফিসা- ? শাশুড়ী আম্মু, আমি নামাজ পড়তে পারি। কিন্তু সবসময় পরি না। একটু আলসে?। আম্মু সারাদিন বকে নামাজ পর, নামাজ পর। এখন বেশ আছি আম্মুর বকা নেই ?।
.
(মুহুর্তেই হাসিমাখা মুখটা মলিন হয়ে গেল। চোখে পানি ও এসে পড়েছে। সবাই অবাক!)
.
রায়হান- কি হয়েছে নাফিসা?
.
নাফিসা- আমি আব্বু আম্মুর কাছে যাবো। ?
.
(সবাই হকচকিয়ে গেল, পুরো ১দিন পর মেয়েটির তার বাবা-মা এর কথা মনে পড়লো!)
.
রায়হান- কোথায় তোমার আব্বু আম্মু, ঠিকানা বলো। আমি তোমাকে দিয়ে আসবো।
.
নাফিসা- আমি জানিনা। আমার আব্বু আম্মু আমাকে না পেয়ে কান্না করছে।
.
রায়হান- আচ্ছা, আমরা অতি শীঘ্রই তোমার আব্বু আম্মুকে খুঁজে বের করবো। এখন লক্ষী বউ মা ‘র মতো খাওয়া শেষ করো তো।
.
নাফিসা- আচ্ছা।
.

রুবিনা- নামাজ না পড়লে আমি তোমাকে বকা দিবো এখন। কাল থেকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে।
.
নাফিসা- আমার নামাজ কটি লাগবে….
.
রুবিনা- ওটা আবার কেমন?
.
নাফিসা- বোরকার মতো দেখতে।
.
রুবিনা- আমার কাছে সুতি গাউন আছে। ওটা পড়তে পারবে?
.
নাফিসা- ওকে……
.
(নাফিসা আর রিয়াদ রাতে অনেক্ক্ষণ গল্প দুষ্টুমি করে ঘুমিয়েছে।)
.
.
চলবে…..

বউ Part- 2

0

Story: #বউ
Part- 2
writer: #Nur_Nafisa
.
.
(রেহানের মা রুবিনা চৌধুরী দরজা খুলে চরম একটা শকড খেলেন! তার ছেলে বিয়ে করে বউ নিয়ে বাসায় ফিরেছে!ব্যাস! গলা ফাটিয়ে চিৎকার শুরু করে দিলেন!)

রুবিনা- ? ওগো…….! কোথায় তুমি, দেখো তোমার ছেলে কি করেছে! ?

রেহান- ?আম্মু শুন…

রুবিনা- চুপ থাক তুই। কি শুনবো! কত স্বপ্ন ছিল ছেলের বিয়ে নিয়ে, সব শেষ করে দিলি…… এএএএএএ?

(মেয়েটি ভয়ে রেহানের পিছনে লুকিয়ে গেলো! আর রেহান বেচারা কিভাবে বুঝাবে মাকে! তার মা অল্পতেই রিয়েক্ট করে!রেহান যেই ঘরে প্রবেশ করতে যাচ্ছিলো….. )

রুবিনা- খবরদার, ঘরে আসবি না?

(এমনি চশমা পড়তে পড়তে হাজির হলেন রেহানের বাবা রায়হান চৌধুরী। সাথে দৌড়ে এলো রেহানের ছোট ভাই রিয়াদ। এবার রেহান একটু সস্তির নিশ্বাস ছাড়লো। কারণ সে তার বাবাকে বুঝাতে পারবে।)

রায়হান- কি হয়েছে! এমন চেচামেচি শুরু করেছো কেন!

রুবিনা- ?অন্ধ নাকি! দেখতে পাচ্ছো না তোমার বড় ছেলে বউ নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে।

রিয়াদ- ?ভাবি এসেছে!

রুবিনা- চুপ! ? কিসের ভাবি!

(রায়হান চৌধুরী বরাবর ই একজন রসিক মানুষ। এবং তার পুরো পরিবার ই ম্যাজিক্যাল ফ্যামিলি)

রায়হান- ভুল কি বললো! ভাইয়ের বউ তো ভাবি ই হবে। তা এতো চেচামেচি করার কি আছে! ছেলে বউ নিয়ে এসেছে বরন করে ঘরে তুললেই হয়।

রুবিনা- (কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে) আল্লাহ! ? এ কি বলছে! কি সুন্দর কথা! ছেলে বউ নিয়ে এসেছে ঘরে তুলে নিব! দুদিন পর আবার নিজে বউ নিয়ে এসে বলবে বউ নিয়ে এসেছি বরন করে ঘরে তুলে নাও!?

রায়হান- এই এই, দেখো, কোন কথা কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছো! আমার বিয়ের বয়স কি আছে! দুদিন পর তো ছোট ছেলে বিয়ে করে বউ নিয়ে ফিরবে। আমাকে কেন ডেকেছো পরিচিত হবার জন্য? আচ্ছা আমি পরিচিত হয়ে নিচ্ছি, (মেয়েটিকে) বউ মা, শুনো…. আমি হচ্ছি তোমার শ্বশুর আব্বু, উনি তোমার শাশুড়ী আম্মু, এই পিচ্চিটা তোমার দেবর আর তোমার বর তো তোমার সাথেই আছে ? সালাম করো আমাদের….

(মেয়েটি রেহানের পেছন থেকে দ্রুত ঘরে প্রবেশ করে রায়হান চৌধুরীকে সালাম করলো, তারপর রুবিনা চৌধুরীকে সালাম করতে গেলে….)

রুবিনা- এই মেয়ে, একদম কাছে আসবে না। দূরে থাকো, দূরে থাকো…? কত স্বপ্ন ছিল ছেলের বিয়ে নিয়ে, সব শেষ হয়ে গেল! ?

(রেহান হতবাক হয়ে গেল তার বাবার আর মেয়েটির কান্ড দেখে।)

রায়হান- (রেহানকে উদ্দেশ্য করে) গাধা একটা, বিয়ের আগে ফোন করে তোর মায়ের স্বপ্ন জেনে নিলি না!

রিয়াদ- হিহিহিহি….. ?

রেহান- আব্বু আমি বিয়ে করিনি….

রায়হান- ?

রুবিনা- ? বিয়ে করিস নি মানে! কার বাড়ি থেকে বউ নিয়ে পালিয়েছিস!

রেহান- আরে এই মেয়ে বিপদে পড়েছে। আমার কথাটা তো আগে শুনে নাও।

রুবিনা- কোনো কথা শুনবো না। যার বউ তার কাছে দিয়ে আয়।

রায়হান- আরে রেহান বলছে তো বিপদে পড়েছে। আগে শুনে নাও তার কথা। আয় ভেতরে আয়।

(রেহান ঘরে প্রবেশ করলো। মেয়েটিও দ্রুত এসে সোফায় বসে পড়লো। আর দাড়িয়ে থাকতে পারছে না। তারপর রেহান সব ঘটনা খুলে বললো। রেহানের বাবা-মা দুজনেই অবাক হয়ে আছে। মেয়েটির দিকে তাকিয়ে দেখলো মুখে ভয়ের ছাপ। রায়হান চৌধুরী মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলো তার বাসা কোথায়। মেয়েটি কোন উত্তর না দিয়ে রেহানের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ছেড়ে দিলো। রায়হান চৌধুরী বেশ বুঝতে পেরেছে মেয়েটি খুব বেশি ভয় পেয়েছে। তাই আর কিছু জানতে চাইলো না।)

“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

রুবিনা- রাস্তায় পুলিশের কোন ঝামেলা হয়নিতো?

রেহান- না।

রুবিনা- আচ্ছা, রিয়াদের পাশের রূমটা দেখিয়ে দে থাকার জন্য। কাল দেখা যাবে বাকিটা। এখন চল ডিনার করবি প্রায় রাত ১০টা বেজে গেছে।

(সবাই একসাথে খেতে বসলো। রেহান মেয়েটির খাওয়া দেখে অবাক হয়ে আছে! কিছুক্ষণ আগে মাত্র সে দোকান থেকে খাবার কিনে খায়িয়েছে। এখন আবার এতো খাবার খাচ্ছে কিভাবে! যেন ২/৩ দিন ধরে না খেয়ে আছে! খাওয়া শেষ করে যে যার রুমে ঘুমাতে গেল। রিয়াদের পাশের খালি রুমটা মেয়েটিকে থাকার জন্য দেয়া হলো। রেহান মাত্র ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো কপালে এক হাত রেখে হঠাৎ কারো উপস্থিতি বুঝতে পেড়ে কপাল থেকে হাত সরিয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলো মেয়েটি তার রুমের ভেতর দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে। সে উঠে বসে পড়লো। )
রেহান- কি ব্যাপার! এখানে কেন এসেছো?

– আমি শাড়ি পড়ে ঘুমাতে পারি না।

রেহান- ? তো আমি কি করবো!

– আমার ড্রেস লাগবে।

রেহান- আম্মুর থ্রিপিস পড়তে পারবে?
.

– আমি ওসব পড়তে পারিনা?

রেহান- এই মেয়ে! তুমি কোন গ্রহ থেকে এসেছো শুনি! শাড়ি পড়তে পারবে না আবার থ্রিপিস ও না! তাহলে কি পড়বে!?

– একটা টিশার্ট হলেই হবে।

রেহান- (মনে মনে, টিশার্ট পড়বে! তাহলে তো এর বাসা ঢাকাতেই হবে। মাথা মোটা মেয়ে তো কিছুই বলতে পারছে না!)
আমার টিশার্ট পড়তে পারবে?

– হুম।

(রেহান বিছানা থেকে নেমে আলমারি খুললো টিশার্ট নেয়ার জন্য। পেছন থেকে মেয়েটি বলে উঠলো লাল টিশার্ট টা দিতে। রেহান বিরক্তি নিয়ে সেটা ই বের করে দিলো। তারপর মেয়েটি চলে গেলো তার রুমে।)
(মাঝরাতে বুকের মধ্যে ভারি কিছু অনুভব করে রেহানের ঘুম ভেঙে গেলো। সে দেখতে পেল কেউ তার উপর পড়ে আছে! সে ধাক্কা দিয়ে ঝটপট করে বিছানা থেকে নেমে গেল। মেয়েটি নাড়া পেয়ে ঘুমের মধ্যেই বলতে শুরু করলো, ” আমাকে মেরো না, আমাকে মেরো না… প্লিজ! ?”
রেহান ডেকে মেয়েটির ঘুম ভাঙিয়ে দিলো। মেয়েটি ঘুম ঘুম চোখে উঠে বসলো।)
– কি হয়েছে? ডাকছেন কেন!

রেহান- এই তুমি আমার রুমে কি করছো!

– অই রুমে আমার খুব ভয় করছে, যদি ওরা আমাকে ধরে নিয়ে যায়!?

রেহান- কারা ধরে নিয়ে যাবে! এখানে কেউ আসতে পারবে না। যাও অই রুমে যাও….

– প্লিজ আমি এই রুমে থাকবো। আমার খুব ভয় লাগছে।

রেহান- ওকে ঘুমাও।

– আপনি যাবেন না প্লিজ……

রেহান- আমি কি তোমার সাথে থাকবো নাকি!?

– আমার সাথে প্রব্লেম হলে আপনি সোফায় ঘুমান।

(রেহানের মেজাজ চরম খারাপ হয়ে গেল। এই মেয়ের নূন্যতম বুদ্ধি বলতে কিছু নেই! অবিবাহিত একটা ছেলে আর মেয়ে কি একসাথে থাকতে পারে! আপন ভাইবোন হলে মেনে নেয়া যায়! সে কিছু না বলে সোফায় বসে রইলো। মেয়েটিও বিছানায় চুপচাপ শুয়ে পড়লো। রেহান যখন দেখলো মেয়েটি ঘুমিয়ে পড়েছে তখন সে অন্য রুমে চলে গেলো যেখানে মেয়েটিকে থাকতে দেয়া হয়েছিল।)
.
(সকালে রুবিনা চৌধুরী ছেলেদের ডাকতে এলে দেখলেন রেহান অন্য রুম থেকে বের হচ্ছে।)

রুবিনা- কিরে, তুই এই রুমে কেন?

রেহান- কি করবো! ওই মেয়ে আমার রুম দখল করে নিয়েছে। রাতে ভয় হয় দৌড়ে আমার রুমে চলে গেলো। বাধ্য হয়ে আমাকে নিজের রুম ছাড়তে হলো! যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কিছু একটা করে বিদায় করো।

রুবিনা- নিয়ে এলি তুই, এখন আমি বিদায় করবো!

রেহান- সেটাই সবচেয়ে বড় ভুল করেছি।

রুবিনা- এভাবে বলতে নেই। বিপদে পড়লে হেল্প করতেই হয়। দেখছি কি করা যায়।

(রেহান মায়ের সাথে যখন কথা বলছিলো তখন দেখলো, মেয়েটি হাই তুলতে তুলতে তার রুম থেকে বেরিয়ে এলো। রুবিনা মেয়েটিকে দেখে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলো। মেয়েটির পড়নে লাল টিশার্ট আর কালো জিন্স। রেহান কাল রাতে তেমন খেয়াল করে নি।এখন সে ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। টিশার্ট টা মেয়েটার ঢিলেঢালা জার্সি হয়ে গেছে! লাল টিশার্ট আর কালো জিন্স এ ভালোই লাগছে তাকে দেখতে। ফর্সা মেয়েটিকে মানিয়েছে বেশ। রুবিনা একটু হেসে মেয়েটির কাছে এগিয়ে এলো।)

রুবিনা- টিশার্ট দেখে তো বুঝতে পেরেছি এটা রেহানের কিন্তু জিন্স তো রেহানের না, এটা কোথায় পেলে?

– শাড়ির সাথে এটা পড়নে ছিলো।

রুবিনা- ?হাহাহা…. শাড়ির সাথে জিন্স! আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে এসো, ব্রেকফাস্ট করবে।

(তারপর সবাই একসাথে ব্রেকফাস্ট করে নিলো। এ পরিবারের সবাই লক্ষ্য করলো মেয়েটি খুব ভালো স্টাইলে খাবার খাচ্ছে। আচার-আচরণ কথা বার্তা সব কিছু দেখে বুঝা যাচ্ছে শিক্ষিত ও ধনী পরিবারের মেয়ে হবে। কিন্তু সমস্যা একটাই, পরিচয় নিয়ে কোনো প্রশ্ন করলেই মেয়েটি কান্না করে দেয়, গত কালের ঘটনা মনে করে ফেসে ভয়ের ছাপ পড়ে। কথার ছলে রুবিনা মেয়েটির নাম জেনে নিলো।)

রুবিনা- আমাকে তোমার ভালো লেগেছে?

– হুম খুব ভালো তুমি শাশুড়ী আম্মু ☺️

রেহান- ?
রুবিনা- ?আচ্ছা তোমার নাম কি?

– #বউ

রুবিনা- এটা না। তোমার আব্বু তোমাকে কি বলে ডাকে?

– আব্বু বলে “আমার পাগলী মেয়ে।”

রুবিনা- অহ, আচ্ছা। তাহলে তোমার ফ্রেন্ডস কি বলে ডাকে?

– হেই, ফার্স্ট & কিউট গার্ল।

সবাই- ?!!!!!

রুবিনা- তাহলে তোমার আম্মু কি বলে ডাকে?

– আম্মু বলে, ” নাফিসা, এখানে যাবেনা, সেখানে যাবে না, এটা করবে না, ওটা করবে না ব্লা ব্লা ব্লা…..?”

(এবার সবাই খুব বড় নিশ্বাস ছাড়লো, অবশেষে তার নামটা জানা গেছে। কারো আর বুঝতে বাকি নেই সে একজন ধনী বাবার আদুরে মেয়ে। মা নিশ্চয়ই কড়া গার্ড দিয়ে রাখে। কৌশলে তার বাবা মায়ের নামটা ও জানা গেছে। সবাই খাওয়া শেষ করলো। মেয়েটি রিয়াদের সাথে তার রুমে চলে গেলো। রেহান, ও তার বাবা-মা সোফায় বসলো। )
রেহান- আব্বু এখন কি করা যায়! কোথায় দিয়ে আসবো! কিছু তো বলছে না এই মেয়ে! এর কোন বাজে মতলব আছে মনে হয়! না হলে শিক্ষিত এতো বড় মেয়ে আবার ঠিকানা না বলতে পারে!

রায়হান- না, মেয়েটি খুব ভয় পেয়েছে গত কালের ঘটনায়। তাছাড়া একটু পাগলী টাইপের তাই তো তার বাবা পাগলী বলেই ডাকে! ? এখন ওর সামনে এসব কথা তুলা ও যাবে না।

রুবিনা- নাফিসাকে দেখে বুঝাই যাচ্ছে ধনী পরিবারের মেয়ে। পুলিশকে ইনফর্ম করো। তারা সাহায্য করতে পারবে….

রায়হান- ব্যাপার টা পুলিশের কাছে গেলে এ নিয়ে আমাদের ঝামেলায় পড়তে হবে। বাবার যে নাম বললো এমন তো কাউকে চিনিও না।

রেহান- পত্রিকায় দেবো!

রায়হান- আমারা পত্রিকায় দিলে তো তার সত্যিকার গার্ডিয়ান চিনতে পারবো না। তাছাড়া মেয়েটির মনে হয় কোনো শত্রু আছে, তারাও তো নিতে চাইতে পারে! ?
ভালো কথা মনে করেছিস। তার পরিবার নিশ্চয়ই মেয়েকে খুজতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে পারে। ২টা দিন পত্রিকায় চোখ রাখি, তারপর না হয় আমরাই পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেব। ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কাছেই থাকুক।

রেহান- ওকে। অফিস যাবে না, চলো….

রুবিনা- নাফিসার তো জামাকাপড় নেই, তুই শপিংমল এ নিয়ে যা, কিছু কিনে দিস।

রেহান- আমি পারবো না।

রুবিনা- এনেছিস তো তুই ই?

রেহান- এটাই তো সবচেয়ে বড় ভুল আমার! যাও ডেকে নিয়ে আসো…

রুবিনা- আচ্ছা,

(রেহান ও তার বাবা রেডি হয়ে গেলো অফিসের জন্য। নাফিসা এসে ও হাজির….)
নাফিসা- ওয়াও! শপিং এ যাবো। আই লাইক ইট?

রেহান- এই টিশার্ট আর জিন্স পড়ে যাবে!

রুবিনা- তাহলে আর কিভাবে যাবে!

রেহান- যেতে হবে না, এক তো আমি এই বেশে সাথে নিতে পারবো না, অন্যথায় ওর শত্রুরা আবার আমার পেছনে পড়বে।

রায়হান- হুম, ওর এখন বাসা থেকে বের না হওয়াটাই বেটার।

রেহান- কি লাগবে, লিস্ট লিখে দাও আমি নিয়ে আসবো।

নাফিসা- ?ওকে।

(রেহান অফিসে যাওয়ার আগে শপিং করে বাসায় দিয়ে তারপর অফিসে গেছে।)
.


চলবে…..

বউ Part- 1

0

Story: #বউ
Part- 1
writer: #Nur_Nafisa
.
.
নেহার সাথে ব্রেকাপের দুদিন পর সন্ধ্যায় রেহান একা রাস্তায় হাটছে। ফুরফুরে বাতাস, জনশূন্য পথ, রাস্তার লাইটগুলো জ্বালানো । অন্ধকার ও আলোর মিশ্রনে দেখতে ভালোই লাগছে। শহরের রাস্তা। যানবাহন অন্যদিনের তুলনায় আজ একটু কম।
৩মাসের রিলেশন ছিল নেহার সাথে। মেয়েটাকে ভালোবাসতো খুব। কিন্তু মেয়েটা তাকে ঠকিয়েছে। অবশ্য রেহান নিজেই ব্রেকআপ করেছে। কারণ নেহা মেয়েটা ছেলেদের সাথে মেলামেশা বেশিই করতো যা রেহানের একদমই পছন্দ না। কয়েকবার না করা সত্ত্বেও শুনেনি। তারপর সে খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে নেহা একটা লোভী মেয়ে। রেহানের টাকার জন্যই তার সাথে রিলেশনে জড়িয়েছে।
রেহানের বাবা শহরের একজন নামকরা বিজনেসম্যান। মা, বাবা, রেহান ও তার ছোট ভাই রিয়াদ ছাড়া তার পরিবারে আর কোন সদস্য নেই।
রেহান একদম মনমরা হয়ে গেছে। কয়েকদিন আগেই মাত্র মাস্টার্স শেষ করে বাবার বিজনেসের দিকে একটু মনযোগ দিয়েছে। অফিস থেকে ফেরার পর কিছু ভালো লাগছিল না তার। সারাদিন অফিসের কাজে ব্যস্ততা। তাই সন্ধ্যায় একা একটু বাইরে বেরিয়েছে।
রেহান কিছুটা দূর থেকেই দেখতে পাচ্ছে সে যে পথে হাটছে সে পথ দিয়েই একটা মেয়ে দৌড়ে আসছে। এক বার হোচট খেয়ে পড়ে ও গেছে। আবার উঠে দৌড়ে এসে রেহানের উপর ঝাপিয়ে পড়লো। রেহান ও মেয়েটিকে ধরে ফেললো। মেয়েটির পড়নে লাল শাড়ি, সাথে গহনা। বিয়ের সাজ। মেয়েটি হাপাচ্ছে খুব। কোনো কথা বলতে পারছে না।

রেহান- এই মেয়ে, কে তুমি? দৌড়াচ্ছো কেন এভাবে!

– ও.. ওরা… আ আমাকে নিয়ে য যাবে…

(রেহান পেছনে তাকিয়ে কাউকে দেখতে পেল না।)
রেহান- কোথায়! কেউ তো নেই! কোথা থেকে এসেছো তুমি? তোমার পরিচয় কি?

– #বউ ….

(মেয়েটি আর কিছু বলতে পারলো না। নিজের সমস্ত ভাড় রেহানের উপর ছেড়ে দিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লো। রেহান ভয় পেয়ে গেছে। ডাকাডাকি করছে কিন্তু কোন সারা পাওয়া যাচ্ছে না। এই মাঝ রাস্তায় এখন এই মেয়েকে নিয়ে কি করবে সে কিছুই বুঝতে পারছে না। সে কি মেয়েটিকে ফেলে রেখে যেতে পারবে! না না তা অন্যায় হয়ে যাবে। এখন কি করবে সে! এদিকে কোন মানুষ ও নেই যে সাহায্য চাইবে! বেশ কিছুটা দূরে একটা দোকান দেখা যাচ্ছে। সে মেয়েটিকে ফুটপাতের একপাশে ছাউনিতে বেঞ্চে বসিয়ে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে রেখে দৌড়ে গিয়ে দোকান থেকে এক বোতল পানি নিয়ে এলো। তারপর মেয়েটির মুখে ছিটিয়ে দিলো। মেয়েটির হাত ঘষে তাকে ডাকতে শুরু করলো। বেশ কিছুক্ষণ পর মেয়েটি চোখ খুলে তাকালো। মেয়েটি রেহানকে এতো কাছে দেখে ভয়ে কিছুটা পিছিয়ে গেলো। আশেপাশে তাকিয়ে আর কাউকে দেখতে পেল না। )

রেহান- ভয় পেও না। আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো না। পানি খাও।

– মেয়েটি চুপচাপ কিছুটা পানি খেয়ে নিলো।

রেহান- বাসা থেকে পালিয়ে এসেছো?

– মেয়েটি মাথা দু দিকে নাড়িয়ে না করলো।

“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
রাহান- তাহলে দৌড়াচ্ছিলে কেন?

– (মেয়েটি কিছু না বলে রেহানকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো।)
ও.. ওরা আমাকে ধরে নিয়ে যাবে। নাইফ দিয়ে আমাকে মেরে ফেলবে। হেল্প মি প্লিজ। ??

(জড়িয়ে ধরাতে রেহান কিছুটা অসস্তিবোধ করছে। নেহার সাথে ৩মাস রিলেশন থাকলেও কখনো নেহাকে জড়িয়ে ধরেনি। সে মেয়েটিকে সোজা করে বসালো।)
রেহান- কেউ তোমাকে ধরে নিয়ে যাবে না। কান্না থামাও।

( মেয়েটির কান্না থামছেই না। রেহান পকেট থেকে রুমাল বের করে দিলো।)

মেয়েটি- ?ইউজ করেছেন?

রেহান- ? (একে তো হেল্প করছে এখন আবার জিজ্ঞেস করছে রুমাল ইউজ করা নাকি!)
ক্লিন, ইউজ করতে পারো।

( মেয়েটি রুমাল নিয়ে সাথে সাথে চোখের পানি নাকের পানি সব মুছে নিলো। রেহানের রুমাল নষ্ট করে দিলো। রেহান এদিক ওদিক একটু পায়চারি করে আবার মেয়েটির পাশে এসে বসলো। )
রেহান- নাম কি তোমার?

– #বউ

রেহান- ?। এটা আবার কারো নাম হয়! তোমার আজ বিয়ে ছিলো?

– না।

( এবার রেহানের মনে হলো মেয়েটি নিশ্চয়ই তাকে মিথ্যে বলছে। হয়তো বাসা থেকে পালিয়ে এসেছে।)
রেহান- দেখো আমাকে মিথ্যে বলো না। সত্যি করে বলো। আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো না।

– আমি মিথ্যে বলছি না।

রেহান- তোমার বাসা কোথায়?

– লন্ডন।

রেহান- ?( এতোক্ষণ মনে হচ্ছিল মিথ্যে বলছে, এখন তো মনে হচ্ছে এই মেয়ে পাগল! ধমকের সুরে বললো…. )
এই মেয়ে! কি যা তা বলছো! বাসা লন্ডন হলে ঢাকায় কি করছো!

– এএএএএএ….?

রেহান- এই একদম চুপ। ? এখন কোথায় যাবে, সেটা বলো। পারলে হেল্প করবো।

– জানিনা।

রেহান- জানোনা মানে! বাসা থেকে বের হয়েছো কেন!
নিজের বাসার ঠিকানা বলো, আর না হয় কোনো রিলেটিভি এর ঠিকানা বলো।

– জানিনা।

রেহান- কারো ফোন নং?

– জানিনা।

রেহান- আশ্চর্য! জানো কি তাহলে! আমার যতটুকু সম্ভব হেল্প করেছি। নিজের পথ নিজে দেখো এবার। আমি যাই….

– কোথায় যাবো?

রেহান- আমি কি জানি।!….

(রেহান বাসায় ফেরার জন্য চলে গেলো সেখান থেকে। কিছুটা পথ আসতেই তার খারাপ লাগলো। এভাবে একটা মেয়েকে রাস্তায় ফেলে যাওয়া কি তার উচিত হচ্ছে! তার ই বা কি করনীয়! সে তো চাইছিল সাহায্য করতে, কিন্তু মেয়েটি তো কিছুই বলছে না! সে আবার ছাউনিতে গেল। এসে দেখলো মেয়েটি ভয়ে কাচুমাচু হয়ে ছাউনিতেই বসে আছে।)

রেহান- আমাদের বাসায় যাবে?

– ☹️

রেহান- ভয় নেই, যেতে পারো। আমার পরিবার আছে। আম্মু, আব্বু, ছোট ভাই। আজ রাত থেকে কাল নিজের বাসায় চলে যেও।

(রেহান দেখতে পেল মেয়েটি এক হাতে পেট চেপে বসে আছে।)

রেহান- কোন সমস্যা?

– ক্ষুধা লেগেছে ?

(রেহান নিজের মাথায় হাত দিয়ে বসলো! একে তো পালিয়ে এসেছে, এখন আবার ক্ষুধা নিয়ে পড়ে আছে! মেয়েটির যেন কোন চিন্তাই নেই! থাকবে কিভাবে! চিন্তা তো সব অন্যের ঘারে চাপিয়ে দিয়ে বসে আছে।)
রেহান- আমার বাসা সামনেই, ১০মি লাগবে হেটে যেতে। বাসায় গিয়ে খেয়ে নিও।

– খুব ক্ষুধা লেগেছে, আমি উঠতেই পারছি না।

রেহান- ওকে বসো, আমি আসছি….

(কি আর করার, সামনের দোকান থেকে ১টা কলা, ১টা পানির বোতল আর ২টা কেক নিয়ে এলো। মেয়েটির হাতে দিতেই সে একের পর এক সব খাবার খেয়ে নিলো। হয়তো খুব ক্ষুধার্ত, সারাদিন না খেয়ে ছিলো।)
রেহান- হয়েছে এবার। উঠো।

– হুম…
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
(রেহান কয়েক পা এগিয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে মেয়েটি এক জায়গায়ই দাঁড়িয়ে আছে।)
রেহান- কি হয়েছে? যাবে না?

– আমি হাটতে পারছি না। পা ব্যাথা করছে।

রেহান- এবার কি তোমাকে কোলে করে বাসায় নিয়ে যাবো!?

– (ফিসফিসিয়ে) আমি কি সেটা বলেছি!

রেহান- তাহলে কিভাবে যাবে!

– একটা অটো নিলেই তো হয়।

রেহান- এখানে আবার অটো পাবো কোথায়! গ্রাম থেকে এসেছো নাকি! দেখতে পাচ্ছো না বড় বড় বাস ট্রাক চলছে?।

– ?

রেহান- দাড়াও একটু, দেখি রিকশা পাওয়া যায় কিনা!

(রেহান রাস্তার পাশে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে দোকানের ওপাশে দেখতে পেল একটা রিকশা দাঁড়িয়ে আছে। সে সেখানে গেলো রিকশা নেয়ার জন্য। কিন্তু রিকশাওয়ালা বলছে যাবে না। সে অনেক বলে দিগুণ ভাড়া দিয়ে তারপর রিকশা নিয়ে এলো। মেয়েটিকে ডেকে বললো উঠতে। রিকশা ওয়ালা মেয়েটিকে দেখে হা হয়ে আছে যা রেহানের চোখ এড়ায়নি। রিকশাওয়ালা হয়তো ভাবছে হয়তো এই ছেলে বিয়ে বাড়ি থেকে মেয়ে নিয়ে পালিয়ে এসেছে। যে কেউ দেখলে তো তাই ভাববে। রেহান কিছু না বলে মেয়েটিকে নিয়ে রিকশায় উঠলো। তারপর তার বাসার পাশে এসে মেয়েটিকে নিয়ে নামলো। মেয়েটি বাইরে থেকে বাড়িটা দেখলো ৫/৬ তলা হবে বাড়িটা। পুরো বাড়িতেই লাইট জ্বলছে।)
রেহান- দাঁড়িয়ে আছো কেন? ভেতরে চলো। তোমার তো আবার পা ব্যাথা, আমার হাতে ভর দিয়ে হাটো।

(গেইটের কাছে এলে দাড়োয়ান গেইট খুলে হা করে আছে! ” বড় ভাইজান কি বিয়ে কইরা ফেললো নাকি!?)

রেহান- হা করে আছো কেন!

দাড়োয়ান- না কিছুনা।

(মেয়েটি রেহানের হাতে ভর দিয়ে হাটছে। গেইটের ভেতরে অনেকটা পথ হাটতে হবে। বাড়ির সামনে বিশাল ফাকা জায়গা আছে। রাত হওয়ায় আশেপাশে পরিবেশটা ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে না। নিচ তলায় অর্ধেক ভবন ফাকা। ২টা গাড়ি দেখা যাচ্ছে। মেয়েটিকে নিয়ে রেহান ২য় তলায় মেইনডোরের সামনে দাড়িয়ে কলিং বেল বাজালো।)
.
.
চলবে…..

কেমন লাগলো? ? ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ ❤

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_১৬_শেষ_পর্ব

0

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব_১৬_শেষ_পর্ব
#মেঘ_বালিকা
.
.
.
রাস্তায় গিয়ে ভাগ্যক্রমে কিছুক্ষনের মধ্যেই একটা অটো পেয়ে গেলাম..এতো রাত ভেবেছিলাম যাওয়ার মতো কিছুই পাবো না….
.
অটোতে বসে একটা কথাই শুধু আমার মাথায় খেলছে যা এতোক্ষন আমার মাথায় আসেনি সেটা হলো..আমাকে বাসায় কেনো যেতে বললো..এক্সিডেন্ট হলে তাসিনকে হাসপাতালে না নিয়ে বাসায় কেনো রেখে দিয়েছে..এই মুহুর্তে সব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে তাই আর কিছু ভাবতে পারলাম না..
.
আধ ঘন্টার পথ এক ঘন্টা লাগলো বাসায় পৌঁছাতে..ভাড়া মিটিয়ে দ্রুত বাসার ভিতরে ঢুকে গেলাম..ভিতরে ঢুকে আমি একটু অবাক হলাম..কারন দরজাটা খোলা রয়েছে আর কাউকেই দেখতে পারছি না..সব কয়টা রুমে গিয়েও কাউকে খুজে পেলাম না..এবার আমার ভয়টা আরো বেড়ে গেলো..হঠাৎ ছাদ থেকে একটা শব্দ আসায় দৌড়ে ছাদে চলে গেলাম..ছাদের দরজাটা খুলে আমি এবার অবাকের শীর্ষে পৌঁছে গেলাম..কারন পুরো ছাদটা সাজানো বেলুন আর ফুল দিয়ে..চারপাশে ঝারবাতি জ্বলছে..আর দরজার সামনে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে সরু একটা রাস্তার মতো তৈরি করা হয়েছে…আমাকে আসতে দেখেই সবাই একসাথে হ্যাপি বার্থডে বলে শুভেচ্ছা জানাতে লাগলো..আজ আমার বার্থডে কই আমার তো কিছুই মনে নেই..আমি সবার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি..এখানে ফারিয়া নিরব ভাইয়া অবন্তি তাসিন সবাই আছে..তাসিনের তো কিছুই হয়নি দিব্বি হেসে চলেছে..তার মানে ওরা সবাই আমাকে বোকা বানিয়েছে..
.
আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে এবার তাসিন আমার দিকে এগিয়ে এলো..তারপর আমার হাত ধরে ফুলের সরু রাস্তাটা দিয়ে সবার মাঝে নিয়ে আসলো..আমি যেনো বোবা হয়ে গেছি..কোনো কথাই আমার মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না…
.
তারপর কিছুটা রেগে তাসিনের হাতটা ছাড়িয়ে জোরে চিৎকার করে বললাম,,
-এসবের মানে কি?আমার সাথে কি আপনারা মজা করছেন..এভাবে মিথ্যা কথা বলে ডেকে আনার মানে কী??..
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
ফারিয়া আমার কাছে এসে বললো,,
-তনু তুই রাগ করিস না আমরা তোকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্যে এসব করেছি..সরি রে এই মিথ্যা কথাটা না বললে তুই এখানে আসতি না..
আমি ফারিয়ার দিকে রেগে তাকাতেই ও চুপ হয়ে গেলো…
এবার অবন্তি আমার কাছে এসে আমার হাত দুটো ধরে বলতে লাগলো,,,
-আমাকে মাফ করে দিস তনু..আসলে ১বছর আগে আমি যেই ভুলটা করেছি তার জন্যে আমি অনুতপ্ত..তোর কাছে ক্ষমা চাওয়ার মতো মুখ আমার ছিলো না..সব-সময়ই এর জন্যে আমার মধ্যে একটা অপরাধ বোধ কাজ করতো..যখন আমি জানতে পারি যে তোর আর তাসিন ভাইয়ার বিয়ে হয়েছে তখন খুব খুশি হয়েছিলাম..পরে জানতে পারি তোদের সম্পর্কে এখনো আমার জন্যে ভুল বোঝাবুঝি রয়ে গেছে..তাই আমি তাসিন ভাইয়ার কাছে গিয়ে আমার সব কুকর্মের কথা বলি এবং মাফ চাই..ভাইয়াও আমাকে মাফ করে দেয়..আর একটা প্লান করে যাতে তুই নিজে থেকে ভাইয়ার কাছে যাস…কারন কিছুটা ভুল তোর ও ছিলো..সবটা জানার পর তুই না গেছিস ভাইয়ার কাছে ফিরে আর না তাকে সবটা খুলে বলেছিস..তাই ভাইয়া কিছুটা অভিমান থেকেই এসব করেছে..আমাকে টুশি সাজিয়ে ফোনে কথা বলা থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্টের ওই কাহিনি সবটা ভাইয়া প্লান করেছিলো তোকে কাছে পাওয়ার জন্যে.. ফারিয়া আর নিরব ভাইয়া ও আমাদের সাথে ছিলো..কিন্তু রেস্টুরেন্টের ঘটনায় তুই আবার ভাইয়াকে ভুল বুঝে চলে গিয়েছিলি যার জন্যে আজকের এই প্লান..প্লিজ তনু তুই আমাকে ক্ষমা করে দে…আর ভাইয়ার উপরও আর রাগ করে থাকিস না..ভাইয়ার কোনো দোষ নেই এখানে..সে তো ভুল কিছু করেনি..
.
কথাটা বলেই অবন্তি কান্না করে দিলো..আমি ওর কথা শুনে সম্পূর্ন হতবাক হয়ে গেছি..এগুলো তাহলে সবই সাজানো ছিলো..আর এর মূলে রয়েছে তাসিন..আমি এবার তাসিনের দিকে রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম..আমাকে এভাবে তাকাতে দেখে তাসিন মাথা চুলকাতে চুলকাতে ৩২পাটি দাঁত বের করে হেসে দিলো..কতো বড় শয়তান হলে কেউ এমনটা করতে পারে সেটাই ভাবছি আমি..তাসিনের সাথে তাল মিলিয়ে এবার নিরব ভাইয়াও দাঁত কেলাতে লাগলো..এই দুইটাই এক গোয়ালের গরু একজন যা করে অপর জনও তাই করে..
.
অবন্তিকে আর কিছু বলতে পারলাম না আমি..ও ওর ভুল বুঝতে পেরে যখন ক্ষমা চেয়েছে তখন ওকে ক্ষমা করে দেওয়াটাই উচিত মনে করেছি..কেউ ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত..কিন্তু তাসিনের উপর থেকে আমার রাগ যাচ্ছে না..ইচ্ছে করছে ওর মাথার সব চুল আমি ছিড়ে ফেলি..আমাকে এতোদিন ধরে বোকা বানিয়ে আসছে ও…
.
আমি রেগে আছি দেখে তাসিন এবার আমার দিকে এগিয়ে এলো আর আলতো করে জড়িয়ে ধরলো..আমি ছুটার চেষ্টা করলে ও আরো শক্ত করে আমাকে ওর বুকের সাথে চেপে ধরলো..এবার আর আমি নড়াচড়া করতে পারছি না..তারপর তাসিন বললো,,,,
-তুমি ভাবলে কি করে তোমার তাসিন তোমাকে ছেড়ে অন্য কাউকে ভালোবাসবে..তুমি কি জানো না!! #তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা….
শেষ নিঃশ্বাস অব্দি আমি তোমাকেই ভালোবেসে যাবো..এই দেহে যতো দিন প্রাণ আছে ততো দিন তোমার তাসিন তোমারই থাকবে..আর তুমিও আমারই থাকবে..বুঝলে আমার পাগলি বউ(কপালে ভালোবাসার পরশ একে)
.
এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না কান্না করে দিলাম আমি..আর তাসিনের বুকে ইচ্ছে মতো কিল-ঘুষি দিতে লাগলাম..তারপর শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম..এমন ভাবে ধরলাম যেনো ছেড়ে দিলেই তাসিন হারিয়ে যাবে আমার কাছ থেকে…
.
-এহেম এহেম..আপনাদের ভালোবাসার পর্ব শেষ হলে আসুন আমরা কেকটা কাটি..আমি আর এভাবে কেকের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারছি না..(মুখ ফুলিয়ে কথাটা বললো নিরব ভাইয়া)
তার কথা শুনে আমরা সবাই হেসে দিলাম..তারপর কেকটা কাটা হলো..কাকতালীয় ভাবে এই বার্থডেটেই একদিন আমাদের সম্পর্ক ভেঙ্গে গিয়েছিলো আবার এই বার্থডেটেই আমাদের সম্পর্কটা জোড়া লাগলো..বড়ই অদ্ভুত একটা বিষয়…
.
ছাদে আরো কিছুক্ষন আড্ডা চললো..চললো আমাদের খুনসুটি ভালোবাসা..বাবা-মাকে আমার আসার কিছুক্ষন আগেই আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে..তারা সবই জানতো আজকের প্লান এর কথা…এমনকি আমার আব্বু-আম্মুও জানতো..অথচ আমি কিছুই আঁচ করতে পারিনি..রীতিমতো দুই-দুইবার ওরা আমাকে বোকা বানিয়ে ছেড়েছে..
.
রুমে চুপ করে বসে আছি..রুমটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে..ঠিক বিয়ের প্রথম দিনটার মতো..এই রাত তিনটার সময় ফারিয়া আর অবন্তি জোড় করে আমাকে শাড়ি পরিয়ে সং সাজিয়ে এখানে বসিয়ে রেখে গেছে..খুব ক্লান্ত লাগছে এভাবে আর বসে থাকা সম্ভব হচ্ছে না আমার..
.
হঠাৎ দরজা ঠেলে তাসিন রুমে প্রবেশ করলো..রুমে ঢুকে দরজাটা আটকিয়ে দিলো..ওকে দরজা আটকাতে দেখে আমি একটু কেঁপে উঠলাম..গলায় একটা শুকনো ঢোক গিলে সব কিছু ঠিক আছে কিনা চেক করে নিলাম..আমার কান্ড দেখে তাসিন একটু মুচকি হাসলো..কিন্তু কিছু বললো না..তারপর আমার পাশে এসে বসলো..ওকে বসতে দেখে আরো কয়েকটা শুকনো ঢোক গিলে নিলাম..আজকে এতো ভয় কেনো লাগছে আমার..প্রথম দিনও তো এতোটা লাগেনি..তাহলে আজকেই কেনো..
.
তাসিন আমার হাতটা ধরে একটা রিং পরিয়ে দিলো..তারপর বললো,,,
-এইটা বিয়ের প্রথম দিনই দিয়ার কথা ছিলো কিন্তু দিইনি চেয়েছিলাম যখন আমাদের সম্পর্কটা আবার আগের মতো হয়ে যাবে সেদিনই তোমাকে এই রিংটা পরিয়ে দিবো..
তারপর হালকা হেসে আমার হাতে ওর শিতল ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে দিলো…
আমি অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছি..কেনো জানি এই চোখ আজ ওর দিক থেকে ফিরতেই চাইছে না..
.
এবার তাসিনকে আমার দিকে এগিয়ে আসতে দেখেই ওকে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে নিজে কিছুটা দুরে সরে বসলাম..তারপর ওকে কিছু বলতে না দিয়েই আমার হাতের দুটো আঙ্গুল ওর সামনে এগিয়ে ধরলাম..ও কিছুটা অবাক হয়ে বললো,,
-হাতের আঙ্গুল কেনো দেখাচ্ছো?
-যেকোনো একটা ধরো..
-ধরলে কি হবে?
-আহা এতো প্রশ্ন কেনো করো তুমি যা বলছি তাই করো..ধরো..
ও একটা আঙ্গুল ধরার সাথে সাথেই বললাম,,
-পারবে না..
-কি পারবো না?
-আগামী এক মাস তুমি আমাকে টাচ করতে পারবে না..
-অ্যা!!!!!!
-হ্যাঁ..ওকে গুড নাইট..(একটা ফ্লাইং কিস দিয়ে)
তারপর অন্য দিকে মুখ করে শুয়ে পরলাম..ইচ্ছে করেই এমনটা করেছি আমি..অন্য একটা আঙ্গুল ধরলেও আমি একই কথা বলতাম..এই কয়দিন কম কষ্ট দেয়নি ও..এখন বুঝুক ঠেলা..আমাকে বোকা বানানো..ঠিক হয়েছে থাক বসে..এইটা তোর শাস্তি…
.
তাসিন এখনও বোকার মতো বসে আছে..তনুর কথা সব তার মাথার উপর দিয়ে গেলো..বউ এর এতো কাছে থেকেও সে তাকে টাচ করতে পারবে না এ কেমন বিচার..সে বসে বসে এসব ভাবছে আর একটু পর পর তনুকে ডাকছে..তনু ঘুমের ভান ধরে লুকিয়ে লুকিয়ে হাসছে..বেচারা তাসিন কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না..
এভাবেই চলতে লাগলো তাদের খুনসুটি ভালোবাসা..অবশেষে তাদের ভালোবাসা পরিপূর্নতা পেলো…
.
(সমাপ্ত)
.
(সব কিছু হয়তো একটু তাড়াতাড়িই হয়ে গেলো..আসলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই গল্পটা শেষ করে দিতে হলো..গল্পটা শেষ পর্যন্ত পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো আজকে অন্তত কমেন্টে সবাই জানাবেন..তাহলে আমার গল্প লেখাটা সার্থক হবে..জানি লেখায় অনেক ভুল-ভ্রান্তি ছিলো..অনেকে তা তুলে ধরেছেন..তার জন্যে আপনাদের ধন্যবাদ..ভুল গুলো ধরিয়ে দিয়ার ফলে পরবর্তিতে তা আমি শুধরিয়ে লিখতে পারবো..আর এতোদিন কষ্ট করে আমার গল্পটা পড়ার জন্যে আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ..সবাই ভালো থাকবেন..)
#Stay_Home
#Stay_Safe

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_১৫

0

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব_১৫
#মেঘ_বালিকা
.
.
.
রুমে চুপ করে বসে আছি..দুদিন কেটে গেছে..সেদিনের পর আর তাসিনের সাথে কোনো যোগাযোগ হয়নি…ও অনেকবার ফোন দিয়েছিলো ধরিনি..বাসার সবাই সেদিন আমাকে ওইভাবে দেখে খুব অবাক হয়েছিলো তারপর হাজারটা প্রশ্নও করেছিলো কিন্তু কারো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে ছিলাম না আমি..নিজেকে একদম ঘরবন্দি করে ফেলেছি বললেই চলে..তাসিনের বাবা-মাও ফোন দিয়েছিলো কিন্তু ধরিনি..তাদের সাথে কথা বলার মতো মুখ আমার ছিলো না..কি বলতাম তাদের!!
এদিকে আমার এই অবস্থা দেখে আমার আব্বু-আম্মুও বেশ চিন্তিত..
.
.
.
সেদিন অবন্তিকে দেখে আবার অতীতের কথা মনে পরে গিয়েছিলো…অবন্তির সাথে একসময় আমার বেশ ভালো সম্পর্ক ছিলো..সম্পর্কটা ভালো হয়েছিলো তাসিনের সাথে রিলেশনে যাওয়ার পর থেকে.. তার আগে তেমন একটা কথা-বার্তা হতো না..কিন্তু এই সম্পর্কের পিছে যে অন্য কিছু ছিলো তা আমি বুঝতে পারিনি..ও শুধু আমার কাছে তাসিনের কথা শুনতে চাইতো..আমাদের কি কথা হয়!তাসিন আমাকে এই পর্যন্ত কি কি গিফট দিয়েছে ওর সব কিছু জানা চাই..আমিও সব বলতাম..তাসিনের সাথে আমার সম্পর্কটা ১বছরের হলেও আমরা ছিলাম বন্ধুর মতো..আর আমাদের মধ্যে তেমন একটা গোপনিয়তা ছিলো না..তাসিন দেখতে সুদর্শন হওয়ায় আমার ক্লাসের অনেক মেয়েই ওকে পছন্দ করতো..আমি এসব ব্যাপারে তেমন একটা পাত্তা দিতাম না..আমাদের রিলেশন এর ব্যাপারে ক্লাসের প্রায়ই সবাই জানতো..তাই পছন্দ হলেও লাভ ছিলো না..অবন্তির এসব ব্যাপারে আমার কোনো খটকা না লাগলেও ফারিয়ার লেগেছিলো..ও আমাকে অনেকবার বলেছিলো ওর সাথে তাসিনের ব্যাপারে কথা না বলতে কিন্তু আমি ওর কথা শুনিনি..
.
.
এভাবেই আমার কাছ থেকে অবন্তি তাসিনের ব্যাপারে অনেক কিছুই জানতে চাইতো..একদিন তাসিনের ফেসবুক আইডিও চায় আমিও সাথে সাথে বলে দিই..কিন্তু ভাবিনি এর পরিনাম অন্য কিছু হতে পারে…
.
.
একদিন তাসিনের সাথে মিট করতে যাই..তখন জানতে পারি ওকে আজ কয়েকদিন যাবত এফবিতে একটা মেয়ে খুব ডির্স্টাব করছে..তাসিন আমার কাছে বন্ধুর মতোই সব শেয়ার করতো..
মেয়েটার আইডি দেখালে আমার আইডিটা চিনতে দেরি হয়নি..কারন আইডিটা ছিলো অবন্তির..সেদিন খুব রাগ হয়েছিলো আর ম্যাসেজ গুলো দেখে রাগ বেড়ে আরও দ্বিগুন হয়ে গিয়েছিলো..পরেরদিন কলেজে গিয়ে আমি ইচ্ছে মতো কথা শুনিয়ে দিয়েছিলাম…খুব রাগ হয়েছিলো ওকে বিশ্বাস করে এতো কিছু বললাম আর ও কিনা তার সুযোগ নিলো…
.
.
.
এভাবেই আরও কয়েকদিন কেটে গেলো..এর মধ্যে আর কোনো রকম কথা বলিনি ওর সাথে..আর ফারিয়া তো ওকে আগে থেকেই দেখতে পারতো না..এই ঘটনার পর থেকে আমাকেও ওর ধারের কাছে যেতো দিতো না..
.
.
আরও একমাস কেটে গেলো..আমার বার্থডের দিন তাসিনের সাথে আমার দেখা করার কথা ছিলো..অনেক খুশি ছিলাম সেদিন..কিন্তু আমার খুশিটা ছিলো ক্ষনস্থায়ী..তাসিনের সাথে দেখা করতে যাওয়ার কিছুক্ষন আগে অবন্তি আমার সামনে কান্না করতে করতে এসে কিছু ছবি দেখালো..যা দেখার পরে আমি থমকে গিয়েছিলাম..কারন ছবিগুলো অবন্তি আর তাসিনের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছিলো..যা দেখার পর এক নিমিসেই তাসিনের উপর থেকে আমার সব বিশ্বাস উঠে গিয়েছিলো..ফারিয়া আমাকে অনেক বুঝিয়েছিলো এগুলো ভুয়া,,এসব ইডিট করে করা হয়েছে..কিন্তু আমি সেদিন কাউকে বিশ্বাস করিনি..তাসিনের সাথে দেখা করে সম্পর্কের ইতি টেনে চলে এসেছিলাম…
.
.
সেদিন অনেক কান্না করেছিলাম..প্রথম ভালোবাসা ছিলো তাসিন আমার..তাই হয়তো বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম..আামদের মধ্যে বন্ধুর মতো সম্পর্ক থাকলেও সেদিন আমি ওকে একদমই বিশ্বাস করতে পারিনি..ছবিগুলো দেখে ভালোবাসার উপর থেকে বিশ্বাসই উঠে গিয়েছিলো…
.
.
.
তার কিছুদিন পর অবশ্য ফারিয়ার কথাই ঠিক প্রমানিত হয়েছিলো পুরাটাই ভুয়া ছিলো..ওই খানে ইডিট করে তাসিনের মুখ বসানো হয়েছে..ওইটা অবন্তি আর অন্য একটা ছেলের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি ছিলো..আমার আর তাসিনের সম্পর্ক ভাঙ্গার জন্যেই এসব করা হয়েছে..ফারিয়া অবন্তিকে নানা রকম হুমকি ধমকি দিয়ে মুখ থেকে সব সত্যে কথা বের করেছিলো..মাঝে মাঝে ফারিয়ার কান্ড-কারখানা দেখে আমি একদম অবাক হয়ে যাই..ওর জন্যেই আমি সত্যিটা জানতে পেরেছিলাম..
.
.
সেদিন সবকিছুর জন্যে আমি অনুতপ্ত ছিলাম..ফারিয়া বলেছিলো তাসিনের কাছে গিয়ে সব কিছু বলে ক্ষমা চেয়ে ঠিক করে নিতে কিন্তু ওর সামনে দাড়ানোর মতো শক্তি আমার ছিলো না…
.
.
.
হঠাৎ ফোনের আওয়াজে ঘোর কাটলো আমার..ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত ১১টা বেজে গেছে..এদিকে ফোনটা বেজে চলেছে..এতো রাতে কে ফোন দিলো ভাবতে ভাবতেই ফোনটা হাতে তুলে নিলাম..নিরব ভাইয়া..এতো রাতে নিরব ভাইয়া কেনো ফোন করেছে..তার নাম্বারটা ফোনে সেভ করা ছিলো..আগে মাঝে মাঝে কথা হলেও তাসিনের সাথে ব্রেকআপ হওয়ার পর আর কোনো কথা হতো না..তাই নাম্বারটা রয়েই গেছে…
ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে কাপাকাপা কন্ঠে নিরব ভাইয়া বলে উঠলো,,,
-তনু তুমি এক্ষনি বাসায় চলে এসো…
-কেনো ভাইয়া কি হয়েছে আর আপনি এভাবে কেনো কথা বলছেন সব ঠিক আছে তো?
-তনু তা..তাসিনের…
তার মুখে তাসিনের নাম শুনতেই বুকের মধ্যে ছ্যাৎ করে উঠলো..তাড়াতাড়ি জিজ্ঞেস করলাম,,,
-কি হয়েছে তাসিনের??
-তাসিনের এক্সিডেন্ট হয়েছে…তুমি এক্ষনি বাসায় চলে এসো..
তাসিনের এক্সিডেন্টের কথা শুনেই হাত থেকে ফোনটা পরে গেলো আমার..আমার চারপাশ মনে হচ্ছে অন্ধকার হয়ে আসছে..নিজের সমস্ত শক্তি মনে হচ্ছে হারিয়ে ফেলছি আমি…কিন্তু এখন আমাকে দুর্বল হলে চলবে না আমাকে তাসিনের কাছে যেতে হবে..তাই যেই অবস্থায় ছিলাম সেই অবস্থাই বাসার থেকে বেরিয়ে গেলাম..আব্বু-আম্মুর কোনো কথা আমার কানে আসলো না..
.
.
.
চলবে….
.
.
(ছোট করে আর একটা পার্ট দিয়ে দিলাম)

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_১৪

0

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব_১৪
#মেঘ_বালিকা
.
.
.
ভার্সিটির গেট এর সামনে এসে থমকে দাড়ালো তনু…তার থেকে কিছুটা দুরে দাড়িয়ে আছে তাসিন..তাসিন একা না তার সাথে ফারিয়াও আছে..ওরা কিছু একটা নিয়ে কথা বলছে…তনু কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে ওদের কাছে গেলো..তনুকে আসতে দেখে তাসিন আর ফারিয়া ওদের কথা ওখানেই ইতি টেনে দিলো..ব্যাপারটা তনুর মতেও ভালো লাগেনি..কিন্তু কিছু বললো না..চুপ করে পাশ কাটিয়ে চলে আসতে নিলে তাসিন ওর হাতটা টেনে ধরে…তনু এক ঝটকায় হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে আবার হাঁটা শুরু করে..এবার তাসিন দ্রুত তনুর কাছে গিয়ে ওর হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে টেনে নিয়ে এসে তাসিনের গাড়িতে বসিয়ে দেয়..তারপর নিজেও গাড়িতে উঠে বসে…
.
এতোক্ষন নিরব দর্শক এর মতো ফারিয়া সব দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছিলো..ওদের চলে যাওয়ার পর ওর ঘোর কাটলো তারপর হালকা হেসে নিজেও তার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়…
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
তাসিন ড্রাইভ করছে আর তনু তার পাশের সিটে বসে এক দৃষ্টিতে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে..তাসিন ড্রাইভ করতে করতে অনেক কথাই বলছে কিন্তু তার কিছুই তনুর কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না..কারন তনু এখন অন্য ভাবনায় মেতে আছে…
সে বেশ বুঝতে পারছে তাসিন তার থেকে কিছু একটা লুকাচ্ছে..সাথে তার এতোদিনের বান্ধবি ফারিয়া ও জড়িতো আছে..কিন্তু ওরা ঠিক কি লুকাচ্ছে ওর কাছ থেকে এটাই তনু বের করতে পারছে না..
.
গাড়িটা বাসার সামনে এসে থামলে তনু কিছু না বলেই গাড়ি থেকে নেমে হনহন করে বাসার ভিতরে ঢুকে গেলো..আর তাসিন চুপ করে তনুর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো…
.
ভীষন রাগ লাগছে..কিন্তু কার উপর সেটা বুঝতে পারছি না..ফারিয়াও আমার কাছ থেকে কথা গোপন করছে এটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না..কি এমন কথা বলছিলো তখন ও তাসিনের সাথে যে আমাকে দেখেই মাঝ পথে ওরা কথা থামিয়ে দিলো..কি এমন কথা ছিলো যা আমি শুনতে পারবো না..উফফ আমার আর কিছুই ভালো লাগছে না..এদের জ্বালাতনে মনে হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যেই আমার জন্যে পাবনায় সিট বুকিং করতে হবে..
এসবের মধ্যেই ফোনটা আমার বেজে উঠলো..ফোনটা আর বাজার টাইম পায় না এখন এই ফোনের উপরও রাগ লাগছে আমার..একরাশ বিরক্ত নিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি ফারিয়া ফোন করেছে…ও ফোন দিয়েছে দেখে ইচ্ছে করেই ফোনটা রিসিভ করলাম না..কিন্তু ফোনটাও আজ আমার অবাদ্ধ হয়ে গেছে..আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে বার বার বেজেই চলেছে..তাই আর না ধরে থাকতে পারলাম না..রিসিভ করার সাথে সাথেই ওপাশ থেকে কিছু কথা ভেসে আসলো,,,
-কিরে কই থাকিস তুই কতোবার ফোন দিছি দেখিস না?
-বকবক করা হলে ফোন কেনো দিছিস সেটা বল…
-তুই কি আমার উপর রেগে আছিস তনু!!এভাবে কেনো কথা বলছিস?
-আর কিছু বলবি?
-না মানে…
.
ফোনটা কেটে দিলাম..ওর আর কোনো কথা এই মুহুর্তে শুনতে ইচ্ছে করছে না..বিরক্ত লাগছে খুব..
.
.
ক্লাস করে বের হয়েছি তখনি ফারিয়া আমার সামনে এসে খাম্বার মতো দাড়িয়ে পরলো..কাল থেকে কেনো যেনো ওকে আমার খুব বিরক্ত লাগছে..হয়তো কাল ওকে তাসিনের সাথে দেখে আমি জেলাস ফিল করেছি এর জন্যেই ওকে আমার এতো বিরক্ত লাগছে..আমার এসব ভাবনার মধ্যেই ফারিয়া বলে উঠলো,,,
.
-তোকে আমি কতোক্ষন যাবত খুজছি আর তুই এখানে!
.
-ক্লাস ফাকি দিয়ে ঘুরে বেরালে খুজে পাবি কিভাবে!
.
-আচ্ছা যাই হোক..শোন আজকে আমরা একসাথে বাসায় যাবো..বিয়ের পর থেকে তো আর আমার সাথে যাসই না..(মুখ ফুলিয়ে)
.
-রাস্তা আলাদা একসাথে তাহলে কিভাবে যাবো..
.
-উফফ তনু পুরাটা তো আলাদা নয়..মোড় পর্যন্ত তো একসাথে যেতেই পারি তাই না!!
.
ওর কথায় আর না করতে পারলাম না..ভার্সিটি থেকে বের হয়ে একটা রিকশা ঠিক করে দুজনে উঠে বসলাম..
ফারিয়া পাশে বসে বক বক করেই চলেছে..এই মেয়েটা এতো কথা কিভাবে বলতে পারে সেটা ও-ই ভালো জানে..ওর কথায় আমার মাথা ধরে যাচ্ছে..হঠাৎ আমার চোখ কিছু একটার দিকে আটকে গেলো..তাসিন..মনে হলো আমি তাসিনকে দেখলাম..কিন্তু ওর তো এখন অফিসে থাকার কথা ও রেস্টুরেন্টের সামনে কি করছে..আর সাথে একটা মেয়েকেও দেখতে পাচ্ছি..তাড়াতাড়ি রিকশা থামাতে বললাম..তারপর ভাড়া মিটিয়ে নেমে পরলাম..আমাকে এভাবে নেমে পরতে দেখে ফারিয়া জিজ্ঞেস করলো,,,
-কি হয়েছে এভাবে নেমে গেলি কেনো?
-তাসিন!
-ভাইয়া?কোথায় ভাইয়া?(এদিক-ওদিক তাকিয়ে)
-সামনে..
এবার ফারিয়ার চোখ পরলো…
-আরে ভাইয়া এখানে কি করছে!আর সাথে ওই মেয়েটাই বা কে?
.
তাসিন মেয়েটার সাথে কিছুক্ষন কথা বলে রেস্টুরেন্টের ভিতর ঢুকে গেলো…মেয়েটা উল্টো দিকে ঘুরে ছিলো বিধায় তার মুখটা দেখতে পারিনি..
.
ফারিয়াকে নিয়ে আমিএ রেস্টুরেন্টের ভিতর ঢুকে গেলাম..আমিও দেখতে চাই মেয়েটার সাথে ওর কি সম্পর্ক..
কিন্তু ভিতরে ঢুকে আমি যা দেখলাম তার জন্যে আমি প্রস্তুত ছিলাম না..তাসিন মেয়েটাকে হাঁটু গেড়ে প্রপোজ করছে..শেষ পর্যন্ত এটাও আমার দেখার ছিলো..নিজেকে আর স্থির রাখতে পারছি না আমি..আমার সাথে সাথে ফারিয়াও মনে হলো অনেক বড় সড় ধাক্কা খেয়েছে..আমার চোখ বেয়ে আপনা আপনি পানি বেরিয়ে এলো..ঘৃনা হচ্ছে আমার তাসিনের উপর এই মানুষটাকে আমি ভালোবেসেছিলাম যে কিনা আমার অবর্তমানে এসব করে বেরাচ্ছে..
.
এবার আমি তাসিনের সামনে এগিয়ে গেলাম..তাসিন আমাকে এভাবে দেখে অবাক হয়ে গেলো..তারপর কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি আমার শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে তাসিনকে একটা থাপ্পর বসিয়ে দিলাম..আমার থাপ্পর খেয়ে তাসিন চুপ হয়ে গেলো সে হয়তো ভাবেনি আমি এমন কিছু করবো..শুধু একভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে..আর আমি অঝর ধারায় চোখের পানি ফেলছি…
.
আমার এমন কাজে রেস্টুরেন্টের সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে..কিন্তু আমার তাতে কিছু যায় আসে না..এবার আমি মেয়েটার দিকে ঘুরে তাকালাম..এতোক্ষন ওর দিকে আমার চোখই পরে নি..মেয়েটিকে দেখে আমি আরেক দফা ধাক্কা খেলাম..আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেলো…অস্পস্ট স্বরে বলে উঠলাম,,,
-অঅবন্তি…….
.
আমার মুখে অবন্তি নাম শুনে ফারিয়া ও তাকালো…
.
অবন্তির চোখে পানি স্পস্ট..কিন্তু এই পানির কারন আমি বুঝতে পারলাম না…বুঝার দরকারও নেই..ওকে দেখে কিছুক্ষনের জন্যে আমি থেমে গেলাম..তারপর আর এক মুহুর্ত সেখানে না দাড়িয়ে দৌড়ে বের হয়ে এলাম..আমি কখনো ভাবতে পারিনি যার জন্যে ১বছর আগে আমাদের সম্পর্কটা ভেঙ্গেছিলো সেই অবন্তি আবার আমাদের মধ্যে চলে এসে আমাদের সম্পর্কটা আবার এভাবে ভেঙ্গে দিবে…
.
সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাসিনের বাসায় আর ফিরে যাবো না..তাই রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে একবারে নিজের বাসায় চলে এলাম..আজকের পর থেকে আমি আর কোনো রকম সম্পর্ক রাখবো না তাসিনের সাথে…ঘৃনা করি আমি ওকে…
.
.
.
.
চলবে……

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_১৩

0

#তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা #পর্ব_১৩
#মেঘ_বালিকা
.
.
.
তনু মুখ ফুলিয়ে চুপ করে বসে আছে..তার আর এখানে এক মুহুর্ত থাকতে ইচ্ছে করছে না..কেনই বা করবে..তাসিনের যে তার প্রতি কোনো খেয়ালই নেই..সে যে অন্য মেয়েতে আসক্ত হয়েছে..তনুর মতে দুনিয়ার যতো খারাপ কিছু আছে সব তার কপালেই জুটে…
.
তনু বসে বসে এসব ভাবছিলো তার ভাবনার মধ্যেই তাসিন হুট করে এসে সব ভাবনার সমাপ্তি ঘটিয়ে তনুর কোল জোড়া দখল করে নিলো..ঘটনার আকস্মিকতায় তনু অবাক হয়ে গেলো..সে এমন কিছু আশা করেনি..তাসিনকে সে এখন অব্দি বুঝে উঠতে পারেনি..তার মনে কখন কি চলে সবটাই তার অজানা..এই ভালো তো এই খারাপ..
.
তাসিনকে এভাবে কোলে শুতে দেখে কিছুটা বিরক্ত নিয়েই বললাম,,,
.
-আপনি আমার কোলে কেনো শুলেন..উঠুন এক্ষনি..
.
-প্লিজ তনু ডিস্টার্ব করো না…
.
-আজব তো..আপনি হুট করে এসে আমার কোলে শুয়ে পরলেন..এখন যখন আমি উঠতে বলছি উল্টে আমাকেই এখন বলছেন ডিস্টার্ব না করতে!!!মানে কি পেয়েছেন টা কি আপনি!হ্যা..যখন যা ইচ্ছে তাই করে যাবেন আপনি আর আমি কিছুই বলতে পারবো না..
.
এবার তাসিন তনুর কোল থেকে মাথাটা তুলে কিছুক্ষন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আবার মাথা দিয়ে শুয়ে পরলো..তারপর বললো,,,,
-কেশবতি…তোমার এই বকবক করার স্বভাবটা আর গেলো না..
.
ওর মুখে কেশবতি কথাটা শুনে যতোটা না অবাক হয়েছি তার থেকে বেশি অবাক হয়েছি আমার বকবক করার কথা শুনে..কতো বড় ফাজিল বলে কিনা আমি বকবক করি..আমি যতো দুর জানি আমি খুবই অল্প কথা বলি..কিন্তু তাসিন সেটা এক নিমিসেই পাল্টে দিয়ে আমাকে বকবক করার উপাধি দিয়ে দিলো…তাই হালকা রেগে বললাম,,,
-এই উঠুন তো আপনি..এক্ষনি উঠুন.. আপনার তো মানুষের অভাব নেই যান তাদের কাছে..আমাকে দয়া করে রেহাই দিন..
.
-হোয়াট ডু ইউ মিন??মানুষের অভাব নেই বলতে কি বুঝাতে চাইছো তুমি তনু?
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
-কিছুনা আপনি উঠুন তো..বিরক্ত লাগছে আমার..
.
এবার তাসিন কিছুটা গম্ভীর স্বরে বললো,,,
-হুম..এখন আমি নামক মানুষটাই তোমার কাছে বিরক্তির কারন হয়ে দাড়িয়েছি..
.
ওর এমন কথায় আমি চুপ হয়ে গেলাম..আমার হয়তো এভাবে বলা উচিত হয়নি..তাই আর কিছু না বলে চুপ করে রইলাম..
.
তাসিন আবার বলে উঠলো,,,
-তনু আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিবে প্লিজ..
.
ওর এমন আবদারে আমি আর না করতে পারলাম না হালকা হাতে আস্তে আস্তে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম…তাসিন ওর চোখটা বন্ধ করে নিলো..কিছুক্ষন এভাবেই নিরবতা চললো…তারপর তাসিন সকল নিরবতা ভেদ করে চোখ বন্ধ করেই বলে উঠলো,,,
-তনু বাইরে যাবে..খুব ইচ্ছে করছে এই ব্যস্ত শহরের রাতটাকে দেখতে..ইচ্ছে করছে ল্যামপোস্টের নিচ দিয়ে তোমার হাত ধরে হাঁটতে..যাবে তনু??আমার ইচ্ছেটা পূরন করতে?
.
ওর এমন কথায় এমন আবদারে আমি আবারও অবাক হতে বাধ্য হলাম..ওকে সত্যিই আমি বুঝে উঠতে পারিনা…তারপর বললাম,,,
-এই রাত ১টার সময় আপনার বাইরে হাটতে যেতে ইচ্ছে করছে!!!হাটতে ইচ্ছে করলে ঘর দিয়ে হাটুন..বাইরে যাওয়ার কি দরকার..আর তাছাড়া বাবা-মা জানতে পারলে রাগ করবে তো…
.
এবার তাসিন উঠে বসলো..তারপর আমার মুখোমুখি হয়ে বললো,,,
-কেউ কিচ্ছু বলবে না..আর বললেও তোমার এসব নিয়ে ভাবতে হবে না..আর ঘর দিয়ে হাঁটা আর বাইরে দিয়ে হাঁটা এক নয় বুঝলে কেশবতি… (আমার নাকটা হালকা টেনে)
.
আমি নাক দলতে দলতে বললাম,,,
-আমি যাবো না আপনি একাই যান..আমার রাত দুপুরে-এ বাইরে যাওয়ার ব্যারাম উঠে নাই..হুহহ
.
এবার তাসিন কিছুটা রেগে বললো,,,
-যাবে না তুমি??ফাইনাল?
-হ্যা(মুখ ঘুরিয়ে)
.
তাসিন এবার উঠে দাড়ালো..পরনে তার টি-শার্ট আর ট্রাউজার..আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে টি-শার্ট-এর হাতাটা কনুই পর্যন্ত ভাজ করতে লাগলো..আর আমি ওর দিকে ভ্রু-কুচকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছি আসলে ও কি করতে চাইছে…
টি-শার্ট এর হাতা ভাজ করা হলে তাসিন আমাকে হুট করেই কোলে তুলে নেয়..তারপর হাঁটা শুরু করে..আজ ওর কাজ-কর্মে আমি বারবার অবাক হচ্ছি..আজ কি অবাক-ডে নাকি যে আমি শুধু অবাকই হচ্ছি কিছুই বুঝতে পারছি না আসলে আমার সাথে কি হচ্ছে..তাসিন একবারে মেইন দরজার বাইরে এসে আমাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলো..এতোক্ষন আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম..নামিয়ে দিয়ার ফলে আমার ঘোর কাটলো..
.
.
দুজনে পাশাপাশি হাঁটছি..কেউ কোনো কথা বলছি না..এই নিস্তব্ধতার আড়ালে একটা ভালো লাগা কাজ করছে..সেটাই হয়তো নিরব থেকে আমরা উপভোগ করছি..এভাবে রাতে হাঁটতে আমি আগে কখনোও বের হইনি..আজই প্রথম..খুবই ভালো লাগছে..না আসলে হয়তো মিস করতাম..এই ছোট ছোট জিনিসেই আজ সুখ খুজে পাচ্ছি আমি..তাসিন পাশে না থাকলে আমি কখনোও তা বুঝতে পারতাম না…
এভাবেই কিছুক্ষন হাঁটলাম আমরা..তারপর হঠাৎ তাসিন আমার হাতটা আলতো করে ধরে হাঁটতে লাগলো..ওর হাতের উষ্ম ছোঁয়া পেয়ে আমার শরীরে কেমন একটা শিহরন খেলে গেলো..ওর দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে আবার ওর পায়ের সাথে তাল মিলিয়ে হাঁটতে লাগলাম..
.
জনমানবশুন্য রাস্তাটায় শুধু আমি আর তাসিন..সবাই সারাদিন খাটা খাটনি করে এখন নিশ্চিন্তে ঘুমুচ্ছে..রাস্তাটাও হয়তো খুব ক্লান্ত তাই সেও এখন নিশ্চন্তে ঘুমুচ্ছে..
.
কিছু দুর এসে আমরা একটা খোলা জায়গায় গিয়ে বসলাম..মাথার উপরে খোলা আকাশ সাথে থালার মতো বিশাল আকারের একটা চাঁদ..সেই চাঁদের আবছা আলোয় তাসিনকে খুব নিস্পাপ মনে হচ্ছে..হালকা বাতাসে ওর অবাদ্ধ চুলগুলো কপালে এসে পরছে..আর তাসিন বার বার চুলগুলো হালকা হাতে উপরে উঠিয়ে রাখছে..
.
এবার তাসিন আমার হাতটা শক্ত করে নিজের দুহাতের সাথে মুষ্টিবদ্ধ করে ধরলো তারপর আলতো করে ঠোঁট ছুঁয়িয়ে দিয়ে ওর বুকের সাথে চেপে ধরে রাখলো..ওর কাজে আমি কিছুটা কেঁপে উঠলাম..আজ নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষ মনে হচ্ছে…
.
.
-আহহ!!!
হঠাৎ এমন শব্দে তাসিন পিছনে ঘুরে তাকালো..তনু মাটিতে পায়ে হাত দিয়ে বসে আছে..তনুকে এভাবে বসে থাকতে দেখে তাসিন দ্রুত তনুর কাছে গিয়ে হাটু ভাজ করে বসে ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলো,,,
-কি হয়েছে?পায়ে ব্যাথা পেয়েছো?ঠিক ভাবে হাটবে তো তনু..কিভাবে পরে গেলে!!দেখি কোথায় ব্যথা পেয়েছো দেখি…
.
-তেমন কিছু হয়নি..পা টা একটু মচকে গেছে হয়তো..
-আর ইউ ম্যাড??পা মচকে গেছে আর তুমি বলছো তেমন কিছু হয়নি!!
.
তনুর আর কোনো কথা না শুনেই তাসিন তনুকে কোলে তুলে নিলো..আর হাঁটতে শুরু করলো..তনু ইচ্ছে করেই এমনটা করেছে..ওর পায়ে আসলে কিছুই হয়নি..পুরাটাই নাটক ছিলো…
.
তাসিন হাঁটছে আর আমি ওর গলা জড়িয়ে ধরে আছি..ইচ্ছে করছে ওর গালদুটো টেনে দিতে কিন্তু পারছি না..যদি তাসিন রেগে আমাকে নামিয়ে দেয়..আমি তা একদম চাই না..আজ তাসিনের প্রতি আমার এক অন্যরকম ভালোবাসা জন্ম নিয়েছে…যার অনুভুতি প্রকাশ করার মতো নয়..
এসব ভাবতে ভাবতে নিজের অজান্তেই তাসিনের গালে আলতো করে ঠোঁট ছুয়িয়ে দিলাম..আমার এমন কাজে তাসিনের চোখ বড় বড় হয়ে গেলো..এবার আমার হুস এলো..লজ্জায় আমি তাড়াতাড়ি তাসিনের বুকে মুখ লুকালাম..
.
তনুকে লজ্জা পেতে দেখে তাসিন আর কিছু বললো না শুধু একটু মুচকি হাসলো…
.
.
.
.
.
চলবে…..

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_১২

0

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব_১২
#মেঘ_বালিকা
.
.
.
তাসিন অন্য কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে এটা কিছুতেই তনু মেনে নিতে পারছে না..তার বিশ্বাসই হচ্ছে না ব্যাপারটা..তনুর মনে হচ্ছে সে কোনো দুঃস্বপ্ন দেখছে..ঘুম ভেঙ্গে গেলে আবার সব আগের মতো হয়ে যাবে…কিন্তু এটা কোনো দুঃস্বপ্ন না..এটা বাস্তব..আর যা তনুকে প্রতিটা মুহুর্তে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে..সে না পারছে এসব নিয়ে তাসিনকে কিছু বলতে আর না পারছে চুপ করে থাকতে…তনু কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না..সে একবার ভুল বুঝে তাসিনকে হারিয়েছে এবার সে কিছুতেই তাসিনকে হারাতে পারবে না..কোনো কিছুর বিনিময়েও না…
.
.
তনু বসে আছে তাসিনের অপেক্ষায়..কখন সে অফিস থেকে বাসায় আসবে..আজকাল সে একটু লেট করেই আসে বাসায়..তনুর ব্যাপারটা খারাপ লাগলেও মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে না..
.
.
তাসিন একটু আগে বাসায় এসেছে..ওকে দেখে আজকে বেশ খুশি খুশি লাগছে..খুশি তো লাগবেই নতুন একজন পাইছে না..কিন্তু এই খুশি বেশিক্ষন থাকবে না..আজকে আমি কিছু একটা করবোই..বাসায় বউ রেখে বাইরে গিয়ে প্রেম করা আমি বের করছি…
.
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

তাসিন ওয়াশরুমে গেছে এই ফাকে আমি ওর ফোনটা সরিয়ে ফেলি..তারপর দৌড়ে ছাদে চলে যাই..ওখানে থেকে কিছু করা যাবে না..
ছাদে এসে তাসিনের ফোনের কল লিস্ট চেক করে একটা নাম্বার পেলাম..যাতে আজকে প্রায় ৫০বার এর উপরে কথা হয়েছে..নাম্বারটা টুশি নামে সেভ করা..বুঝতে আর বাকি রইলো না এই সেই ডাইনি যে আমার সতীন হওয়ার জন্যে উঠে পরে লেগেছে…তাসিনের ফোন থেকে নিজের ফোনে নাম্বারটা উঠিয়ে নিলাম..এর ব্যবস্থা পরে করবো আগে এই ফোনের ব্যবস্থা করি..তারপর ফোনটা অফ করে খুব সাবধানে ফোনটা লুকিয়ে রেখে রুমে চলে এলাম..
.
.
তাসিন ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসেছে..আমি চুপ করে নিজের ফোন টিপছি..কিছুক্ষন পর মনে হলো ও কিছু খুজছে বুঝতে পারলাম ফোন খুজছে..আজকাল ফোন ছাড়া সে এক মুহুর্ত থাকতে পারে না…
.
.
অনেক খুজেও যখন ফোনটা পেলো না তখন তার নজর আমার উপর পরলো..আমি চুপচাপ ফোনে গেম খেলছি ভাব খানা এমন যেন আমি কিছুই জানি না..কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে তাসিন প্রশ্ন জুড়ে দিলো,,,
-তনু তুমি কি আমার ফোনটা নিয়েছো?
ওর কথায় থতমত খেয়ে গেলাম..দেখেছি কিনা জিজ্ঞেস করতে পারে তা না সোজা নিয়েছি কিনা জিজ্ঞস করছে..তারপর নিজেকে সামলিয়ে বললাম,,,,
-আমার নিজের ফোন থাকতে আমি আপনার ফোন কেনো নিতে যাবো..আর যদি নিয়ার হতো অবশ্যেই আপনাকে বলেই নিতাম..(ডাহা মিথ্যা কথা বলে দিলাম)
-তুমি ছাড়া তো এই রুমে আর কেউ নেই..তাই সন্দেহ টা তোমার দিকেই যাচ্ছে(তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে)
ওকে এভাবে তাকাতে দেখে আমার কথা জড়িয়ে গেলো,,,
-শ..শুনুন আমি আপনার ফো…ফোন নিইনি..আ..আপনি ভালো মতো খুজে দেখুন আশে পাশেই হ..হয়তো বা আছে…
আমার কথা ওর বিশ্বাস হলো বলে মনে হলো না..তাই সেখান থেকে চলে আসলাম..নিচে এসে রহিমা খালার সাথে টেবিলে খাবার সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পরলাম…
.
.
.
ফোনটা হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছি..নাম্বারটায় ফোন দিবো কি দিবো না সেটাই ভাবছি..কেমন একটা সংকোচ বোধ হচ্ছে..কিন্তু ফোন আমাকে দিতেই হবে..আমার পাশে ফারিয়া দাড়িয়ে আছে আর আমাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করছে..তার আমাকে এভাবে পর্যবেক্ষন করার কারনটা আমার জানা নেই..আজকাল ফারিয়াকে নিয়ে আমার মনে হাজারও সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে..তার যথেষ্ট কারণ আছে..যে কিনা কয়েকদিন আগ পর্যন্ত আমার কাছে তাসিনের হাজারও প্রশংসা করেছে বলেছে তাসিন আমাকে অনেক ভালোবাসে..আমি ছাড়া ওর জীবনে আর কারো অস্তিত্ব নেই..সে কিনা এখন আমাকে তাসিনের বিরোদ্ধে রীতিমতো উসকিয়ে দিচ্ছে..এর কারনটা অবশ্যে আমার জানা নেই..হয়তো তার মত বদলে গেছে তাসিনকে নিয়ে..নয়তো অন্য কোনো ব্যাপার আছে..আপাততো ফারিয়ার ব্যাপার টা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললাম কারন এখন আমাকে ওই টুশি নামের ব্যক্তিটাকে শায়েস্তা করতে হবে…
.
.
ফোন হাতে নিয়ে ফোন দিবো কি দিবো না ভাবতে ভাবতে ফোন দিয়েই বসলাম..প্রথমবার রিং হয়ে ফোনটা কেটে গেলো..দ্বিতীয় বারে ফোনটা রিসিভ হলো…তারপর ফোনের ওপাশ থেকে একটা সুমধুর কন্ঠে এক নারীর কথা ভেসে আসলো আমার কানে..খুবই সুন্দর তার কন্ঠস্বর..তার কন্ঠ যে কোনো ছেলের মন কেড়ে নিয়ার জন্যে যথেষ্ট..কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হলো এই কন্ঠটা আমার খুবই পরিচিতো লাগছে..মনে হচ্ছে এই কন্ঠটা আমি আগে কোথাও শুনেছি…
.
.
-আসসালামু আলাইকুম কে বলছেন?(ফোনের ওপাশ থেকে)
-ওয়ালাইকুম আসসালাম..আপনি কি টুশি বলছেন?
.
আমার মুখে টুশি নামটা শুনে মনে হলো মেয়েটা ঘাবড়ে গেলো..তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে উত্তর দিলো,,,
-জ্বী আমি টুশি.. আপনি কে বলছেন?
-আমি কে সেটা জেনে কি হবে!!আর আপনার কথা শুনে তো মনে হচ্ছে আপনি একটা ভদ্র ঘরের মেয়ে তাহলে আপনার স্বভাব-চরিত্র এতো কুৎসিত কেনো?
-জ্বী মানে আমি আপনার কথা কিছুই বুঝতে পারছি না..আপনি একটু ক্লিয়ার করবেন ব্যাপারটা!
-ওই কি ক্লিয়ার করবো রে?কি ক্লিয়ার করবো?বুঝোস না কিছু!না??আমার ঘরে আগুন লাগায় এখন সাধু সাজা হয়তেছে?তুই জানোস আমি কে??এর আগে তিন-চারটা ছেলের হাত-পা ভাঙ্গছি আমি..এইবার তোরটা ভাঙ্গবো..তোরে শুধু আমি একবার সামনে পাই…(রাগের মাথায় কি দিয়ে কি বলছি আমি নিজেও জানিনা..সম্পূর্ন দাহা মিথ্যা কথা..আমি ভাঙ্গবো ছেলেদের হাত-পা..ভাবা যায়)
.
এদিকে মেয়েটা আমাকে অনেকক্ষন ধরে থামানোর চেষ্টা করে চলেছে..কিন্তু আমি কিছুতেই থামবো না আজকে..মেয়েরা সব সহ্য করতে পারে কিন্তু নিজের স্বামীর সাথে অন্য কোনো মেয়েকে কিছুতেই সহ্য করতে পারে না…
.
আমি আবার রেগে বলতে শুরু করলাম,,,
-ওই শোন তুই যদি নেক্সট টাইম আমার হাজব্যান্ড এর সাথে কোনো রকম যোগাযোগ করার চেষ্টা করিস তাহলে তোর খবর আছে..
.
তারপর ফোনটা কেটে দিলাম..এতোক্ষন চিল্লিয়ে আমার অবস্থা কাহিল..এতোক্ষন আশেপাশের কিছুই খেয়াল না করলেও এবার আমার খেয়াল হলো..সবাই আমার দিকে কেমন ভাবে তাকিয়ে আছে..এমনকি ফারিয়াও আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে..বুঝতে পারলাম একটু বেশি জোরে চিল্লিয়ে ফেলেছি..তাই সেখান থেকে তাড়াতাড়ি কেটে পরলাম..ফারিয়াও আমার পিছ পিছ ছুটে আসলো…
.
.
ক্লাসে এসে ঢক ঢক করে পুরো এক বোতল পানি সাভার করে দিলাম..আজকের ব্যাপারটায় আমি নিজেই অবাক..আমি কারো সাথে এভাবে ফোনে কথা বলছি ভাবতেই কেমন একটা লাগছে..আমি কখনোও এভাবে কারো সাথে কথা বলিনি..সত্যিই বিষয়টা আমার কাছে অবিশ্বাস্য..আমার থেকে কয়েকগুন বেশি অবাক হয়েছে ফারিয়া সেও আমার এমন আচরনে হতবাক..
.
.
.
বাসায় এসে তাসিনকে রুমে দেখতে পেয়ে একটু অবাক হলাম..কারন গত কয়েকদিনে সে অনেক রাত করে বাসায় ফিরতো..কিন্তু আজ এতো তাড়াতাড়ি বাসায় আসার কারনটা বুঝতে পারলাম না..ল্যাপটপে খুব মনোযোগ দিয়ে কিছু একটা করছে তাসিন..আমাকে আসতে দেখে আমার দিকে একটু চোখ বুলিয়ে আবার নিজের কাজে মগ্ন হয়ে গেলো..আমিও ব্যাপারটায় পাত্তা না দিয়ে ফ্রেশ হওয়ার জন্যে ওয়াশরুমে চলে গেলাম এবং ভিতরে ঢুকে ভালো ভাবে দরজাটা লাগিয়ে দিলাম..সেদিনের ঘটনাটা আর রিপিট করতে চাই না আমি..
.
.
বিছানায় পা গুটিয়ে বসে আছি আমি…আর আমার থেকে কিছুটা দুরে বসে তাসিন ফোনে কথা বলছে..ওর যে এক্সট্রা একটা ফোন ছিলো তা আমার জানা ছিলো না..শুধু শুধুই ফোনটা লুকিয়ে রাখলাম আমি..এখন ভাবছি জায়গার জিনিস জায়গায় রেখে দিবো..
.
কি সুন্দর হেসে হেসে কথা বলছে..বিয়ের পর আমার সাথেও এভাবে কথা বলেনি..অথচ এই টুশি ডাইনিটার সাথে কি হেসেই না কথা বলছে..শুধু হাসছেই না রীতিমতো গড়াগড়িও খাচ্ছে..এতোদিন লুকিয়ে কথা বললেও আজ একদম আমার মুখমুখি বসে জানু সোনা ময়না পাখি আরও কি কি আছে সব একদম উজাড় করে বলছে…আমি যে ওর সামনে বসে রাগে ফুসছি সেদিকে তার কোনো খেয়াল নেই..ভাবখানা এমন যেন এই রুমে ও ছাড়া আর কেউই নেই..
.
অনেক হয়েছে এবার আমার ধৈর্য্যর বাধ ভেঙ্গে যাচ্ছে..মেয়েটা যে এতো বেহায়া আমার জানা ছিলো না..এতো কিছু বলার পরেও সে আবার তাসিনের সাথে যোগাযোগ করছে..আর তাসিনকে আমার কিছুই বলার নাই..এসব ভাবতে ভাবতে উঠে দাড়ালাম..তারপর তাসিনের সামনা সামনি দাড়িয়ে ফোনটা ওর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে দিলাম এক আছাড়..এক আছাড়েই ফোনটা ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে একাক খন্ড একাক দিকে ছিটকে পরলো..তাসিন আমার কার্যকলাপে অবাক চোখে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে কিছু বলতে যাবে তখনই ওর কোলে বসে ওর ঠোঁট জোড়া নিজের ঠোঁটের দখলে নিয়ে নিলাম..তাসিন এবার অবাকের চরম পর্যায়ে অবস্থান করছে..তার চোখগুলো রসগোল্লার মতো বড় বড় হয়ে গেছে..সেদিকে আমার কোনো খেয়াল নেই আমি আমার মতো কিছুক্ষন কিস করে শেষ ওর ঠোঁটে একটা কামড় বসিয়ে দিই..যতো রাগ ছিলো এই কামড় দিয়ার ফলে তা নিমিসেই পানি হয়ে গেলো..আমার কামড়ে তাসিন আস্তে আহ করে একটু শব্দ করে উঠলো..তারপর ওকে ছেড়ে দিয়ে হনহন করতে করতে সেখান থেকে চলে আসলাম..ওখানে থাকা এখন আর আমার উচিত হবে না..এতোক্ষন লজ্জা না পেলেও এবার নিজের কাজে নিজেই লজ্জা পাচ্ছি..রাগের বসে কাজটা করে ফেলেছি..তাই তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে আসলাম…
.
তাসিন তনুর এমন কান্ডে থম মেরে বসে রইলো..সে বিশ্বাস করতে পারছে না তনু এমনটা করেছে..তার কাছে ব্যাপারটা স্বপ্নের মতো লাগছে….
.
.
.
.
.
.
চলবে…..

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_১১

0

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_১১
#মেঘ_বালিকা
.
.
আজ কয়েকদিন যাবত খেয়াল করছি তাসিন ফোনে লুকিয়ে লুকিয়ে কারো সাথে কথা বলে…আমাকে সামনে দেখলেই সেখান থেকে চলে যায়..ব্যাপারটায় আমার বেশ সন্দেহ হচ্ছে…ও আবার পরোকিয়া করছে না তো..যদি তাই হয় তাহলে ওর খবর আছে…
.
রাতে শুয়ে আছি তাসিন আমার পাশে..হঠাৎ ওর ফোন বেজে উঠায় ও ফোনটা নিয়ে ব্যালকনিতে চলে যায়..ওকে এভাবে যেতে দেখে একটু খটকা লাগে তাই আমিও ওর পিছু পিছু যাই..আর গিয়ে যা শুনি তার জন্যে আমি প্রস্তুত ছিলাম না..
.
তাসিন কারো সাথে জান জান বলে কথা বলছে..
-জান তুমি এতো রাত পর্যন্ত কেনো জেগে আছো তোমাকে না আমি বলেছি এতো রাত অব্দি জেগে থাকবে না..
-………………..
-জান তুমি একদম আমার কথা শুনো না..তুমি আসলে আমায় ভালোইবাসো না…
-…………
-হুম অনেক রাত হয়েছে এখন ঘুমিয়ে পরো জান..আর আমি রাখছি বুঝছো জান নাহলে দেখা যাবে কেউ কান পেতে আমাদের কথা শুনছে…
-………..
-I love u toooo jaan
.
আমি ওর এসব কথা শুনে থম মেরে দাড়িয়ে রইলাম..যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই হলো…তাসিন অন্য কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে..তার মানে ও আমাকে আর ভালোবাসে না..নতুন কাউকে ও পেয়ে গেছে..এর জন্যেই এতো লুকোচুরি…
.
তাসিন দেখে ফেলার আগে তাড়াতাড়ি বিছানায় এসে শুয়ে পরলাম আর চোখের পানি ফেলতে লাগলাম..এদিকে তাসিন রুমে এসে শুয়ে পরেছে..হয়তো এতোক্ষনে ঘুমিয়েও পরেছে কিন্তু আমি ঘুমুতে পারছি না..কিভাবে ঘুমুবো যখন কোনো মেয়ে জানতে পারে তার স্বামী অন্য কোনো মেয়েতে আসক্ত হয়েছে তখন কোনো মেয়েই শান্তিতে ঘুমুতে পারে না…
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখানে আর থাকবো না..নিজের বাসায় চলে যাবো..আমি না থাকলেই হয়তো ও ভালো থাকবে..তাই চলে যাবো আমি..থাকবো না আর এখানে….
.
সকালে আমি ব্যাগ গুছাচ্ছি আর তাসিনের দিক বারবার তাকাচ্ছি..ভেবেছিলাম আমার ব্যাগ গুছানো দেখে ও নানা রকম প্রশ্ন করবে..কিন্তু না ও ওর কাজ নিয়েই ব্যস্ত..একবারও আমার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না..এবার আমার কান্না পেয়ে যাচ্ছে..কারন আমি খুব করে চাচ্ছি ও আমাকে আটকাক..আমি যে ওকে ছাড়া একদম থাকতে পারবো না..এই কয়দিনে ও আমার অভ্যেসে পরিনত হয়েছে..ওকে ছাড়া আমি যে অচল..সেটা কি ও বুঝে না..তাই আর থাকতে না পেরে নিজেই বলে উঠলাম,,,
-আমি চলে যাচ্ছি….
ও আমার কথা শুনে একটুও অবাক হলো না..শুধু ছোট করে একবার ‘ওহ’ বললো তারপর আবার নিজের কাজের মধ্যে ডুব দিলো..এবার আমার প্রচুর রাগ হচ্ছে…
-আমি একেবারের জন্যেই চলে যাচ্ছি..আর এখানে ফিরে আসবো না..
বিনিয়ে এবার তাসিন ‘ওহ’-এর সাথে ‘আচ্ছা’ যোগ করলো…
মানে আমি চলে যাচ্ছি এতে ওর একটুও খারাপ লাগছে না..একবার তো বলতে পারতো যেও না..কিন্তু না এসব তো দুরে থাক এবার কারন তাও জিজ্ঞেস করলো না..ও আসলে চাইছেই আমি চলে যাই..আমি চলে গেলেই তো ওর ভালো হবে..নতুন একটারে বিয়ে করে আনতে পারবে..
যাবো না আমি..আমি কিছুতেই আমার জায়গা ছাড়বো না..আমি এখন চলে গেলেই আমার জায়গায় ভাগ বসানোর জন্যে অন্যকেউ চলে আসবে…
তারপর ব্যাগ থেকে জামা কাপড় গুলো বের করে আবার জায়গার জিনিস জায়গায় রেখে দিলাম..
.
আমাকে জামা-কাপড় রাখতে দেখে তাসিন বললো,,,
-যাবে না তুমি??
আমি দাঁতে দাঁত চেপে উত্তর দিলাম,,
-না..
-মাত্রই তো বললা চলে যাবে আর আসবে না..তাহলে এখন কি হলো..
-মজা করছিলাম এতোক্ষন..বুঝেছেন..আর কিছু জিজ্ঞেস করবেন….(রেগে)
-ওহহ তাই বলো..আমি আরো ভাবলাম তুমি চলে গেলে…..না থাক..এখন যখন যাচ্ছো না তাহলে আর এসব ভেবে লাভ কী…(মুখ গোমড়া করে)
ওর কথায় আমার রাগ আরো বাড়ছে…
– কি??? বলো আমি চলে গেলে কি করতা তুমি বলো????(চিল্লিয়ে বললাম)
-নাহ কিছু না তো…(জোরপূর্বক একটু হেসে)
.
আমি আর কথা বাড়ালাম না..ওর সাথে আর কিছুক্ষন কথা বললে আমার রাগটা আরো দ্বিগুন বেড়ে যেতো..তাই সেখান থেকে চলে আসলাম…
.
ভার্সিটিতে এসে অনেকক্ষন যাবত ফারিয়াকে খুজছি..কিন্তু কোথাও ফাজিলটাকে দেখতে পাচ্ছি না..কই থাকে কে জানে..শেষমেশ খুজে না পেয়ে ক্যান্টিনের দিকে হাঁটা দিলাম…
.
ক্যান্টিনে বসে আছি হঠাৎ ফারিয়া খুব দ্রুত দৌড়ে এসে আমার পাশে ধপ করে বসে পরলো..আর হাপাতে লাগলো..ওকে এভাবে দেখে জিজ্ঞেস করলাম,,,
-কিরে তোর আবার কবে থেকে হাপানি রোগ শুরু হলো!!
ও আমার দিকে তাকিয়ে বললো,,,
-আমার কথা শুনলে এবার তোর হাপানি শুরু হয়ে যাবে…
ওর কথা বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করলাম,,
-কেনো কি এমন বলবি যা শুনলে আমার হাপানি শুরু হবে??
তারপর ফারিয়া সোজা হয়ে বসে বললো,,,
-আমি একটু আগে দেখলাম ভাইয়া গাড়িতে করে একটা মেয়ের সাথে যাচ্ছে…যতোটুকু দেখতে পেয়েছি তাতে মনে হলো দুজনের মধ্যে কিছু একটা আছে..
ফারিয়ার কথা শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি মনে হচ্ছে..তাসিন আমার অবর্তমানে এসব করে বেরাচ্ছে..তার মানে সত্যিই ও অন্যে কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে..একসাথে ঘুরেও বেড়াচ্ছে..আচ্ছা ফারিয়া তো ভুলও দেখতে পারে..এমনও তো হতে পারে ওইটা অন্য কেউ ছিলো…
-তুই ভুল দেখছিস হয়তো বা..তাসিন কেনো অন্য কোনো মেয়ের সাথে ঘুরে বেড়াবে..ও ওইরকম টাইপ এর ছেলে না..তুই কি ওকে নতুন দেখছিস নাকি(নিজেকে স্বাভাবিক করে কথাটা বললাম)
-আমি একটুও ভুল দেখিনি আমি স্পস্ট দেখেছি ওইটা ভাইয়াই ছিলো..আমি জানি ভাইয়া এমন না কিন্তু এরকম হয়ে যায় রে..স্ত্রীর কাছ থেকে যখন কোনো পুরুষ ভালোবাসা না পায় তখন অন্য কারো থেকে সেই ভালোবাসা পাওয়ার আশায় অন্যেতে আসক্ত হয়ে পরে..
.
ওর কথায় আমি আবারও থম মেরে গেলাম..এবার চোখ দিয়ে দুফোটা পানি বেরিয়ে এলো..আমাদের সম্পর্কটা যদি স্বাভাবিক হতো তাহলে হয়তো আজ এমনটা হতো না..অতীতের কথা মনে পরে যাচ্ছে সেদিন যদি ভুল বুঝে তাসিনকে ছেড়ে চলে না আসতাম তাহলে আজ এমন কিছুই হতো না সব কিছুই অন্যরকম থাকতো..আমার জন্যেই এসব হয়েছে..নিজেকেই এখন এর জন্যে দায়ী মনে হচ্ছে…..
.
.
.
.
চলবে………

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_১০

0

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব_১০
#মেঘ_বালিকা
.
.
আজ কয়েকদিন যাবত বাইরের খাবার খেতে খেতে এখন মুখটাই নষ্ট হয়ে গেছে.. তাই ভাবলাম ইউটিউব দেখে কিছু একটা রান্না করবো বাট কি রান্না করা যায়..হ্যা চিকেন বিরিয়ানি…
.
আজ ছুটির দিন তাসিন বাসায়..ও খাবার আনতে চেয়েছিলো ওকে না করে দিয়েছি..ও আমার রান্না করার ব্যাপারটায় রাজি হয়নি..ওর ধারনা আমি রান্না করতে পারবো না তারপর শেষমেশ আমাদের না খেয়েই থাকতে হবে…কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি আজ আমি রান্না করবোই…
.
মাথা নিচু করে চুপচাপ দাড়িয়ে আছি আমি আর তাসিন আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে..তার কারন হলো বিরিয়ানিতে বেশি মশলা দিয়ার ফলে তেতো হয়ে গেছে.. যা মুখে দেওয়ার অযোগ্য..
-রান্না করতে না করেছিলাম তো তোমাকে তারপরও জেদ করে রান্না করলে আমাকে খাবার আনতে দিলে না..এখন কি হলো!!যেটা পারো না সেটা কেনো করতে যাও তুমি হ্যা?আর যদি এতোই করার ইচ্ছা তাহলে সহজ কিছু করতে!তা না..বিরিয়ানি রান্না করতে গেলে..এখন খাও তোমার স্পেশাল বিরিয়ানি.. (রেগে তাসিন কথাটা বললো)
.
তাসিনের কথায় ভীষন কষ্ট পেলাম..চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি গড়িয়ে পরতে লাগলো গাল বেয়ে..তারপর কিছু না বলেই আর এক মুহুর্ত না দাড়িয়ে সেখান থেকে চলে আসলাম..আর কিছুক্ষন দাঁড়ালে হয়তো
আরও কিছু কথা শুনতে হতো..
.
এদিকে তাসিন তনুর চোখে পানি দেখে একটু কষ্ট পেলো..তনুকে একটু বেশিই কথা শুনিয়ে ফেলেছে সে..কিন্তু সে ইচ্ছা করেই এসব করেছে..যাতে তনু কষ্ট পায়..কিন্তু এখন তার কষ্ট হচ্ছে..তনু কতো কষ্ট করে আজ রান্না করলো আর সে কিনা তাকে এতো কথা শুনালো..তারপর সে ওই তেতো বিরিয়ানি টাই নিয়ে খেতে শুরু করলো..ভালোবাসার মানুষগুলোর খারাপ জিনিসগুলোও যেন খুব ভালো লাগে..তাসিন খুব তৃপ্তি করেই খেলো..তারপর উঠে বাইরে চলে গেলো..তনুর জন্যে খাবার আনতে..তনু এই খাবার খেতে পারবে না..
.
রুমে বসে চোখের পানি ফেলছি..তাসিনের উপর রাগও হচ্ছে আাবার খারাপও লাগছে..তার জন্যে তাসিনের খাওয়া হলো না..দোষটা হয়তো আমারই আমি যদি রান্না করতে না যেতাম তাহলে আর না খেয়ে থাকতে হতো না..
.
একটু পর তাসিন রুমে এলো..ওকে দেখে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বসে রইলাম..কথা বলবো না ওর সাথে সিদ্ধান্ত নিয়েছি..তাসিন আমার সামনে খাবারের প্লেটটা এনে রাখলো..তার মানে ও বাইরে গিয়েছিলো খাবার আনতে…ভালো হইছে আমার কি আমি তো খাবো না..ওর ইচ্ছা হলে ও খাক..
তারপর তাসিন বললো,,,
-তনু খাবারটা খেয়ে নেও..
-………..
-আমি তোমাকে কিছু বলছি তনু!তুমি কি শুনতে পাচ্ছো না?খেয়ে নেও…
-খাবো না আমি..ক্ষিধে নেই আমার..
-ক্ষিধে না থাকলেও খেতে হবে তোমার খেয়ে নেও..
-এখন কি জোর করে খাওয়াবেন আমাকে..বলছি না খাবো না আমি..আপনার খেতে ইচ্ছে করলে আপনি খান…
তাসিন বুঝতে পারলো এভাবে বলে ওকে খাওয়ানো যাবে না..তাই ও নিজেই খাবার নিয়ে তনুর মুখে পুরে দিলো..আর তনু মুখে খাবার নিয়ে তাসিনের দিকে হা করে তাকিয়ে রইলো…
-চুপচাপ খেয়ে নেও..এতোক্ষন ভালো ভাবে বলছি শুনোনি..এখন খাইয়ে দিচ্ছি তারপরেও যদি কোনো রকম তেড়ামি করো তাহলে খবর আছে(রাগি চোখে তাকিয়ে)
তাসিনের রাগি চোখে তাকাতে দেখে তনু চুপসে গেলো তাই আর কোনো কথা বারালো না..চুপ করে পুরোটা খাবার খেয়ে নিলো..
খাওয়ানো শেষ হলে তাসিন তনুর কপালে আলতো করে একটা চুমু এঁকে দেয়..তারপর উঠে চলে যায়…
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
সকাল থেকে আজকে বৃষ্টি নামছে..বেশ ভালোই লাগছে..বৃষ্টিতে ভিজতে পারলে আরও ভালো লাগবে এই ভেবে ছাদে চলে গেলাম..আজ বৃষ্টিতে ভিজবো অনেক দিন হলো ভিজি না..আম্মু কখনোও ভিজতে দিতো না..কারন বৃষ্টিতে ভিজলেই আমার জ্বর আসে…
.
প্রায় আধ ঘন্টার মতো ভিজার পর খেয়াল করলাম শীত শীত লাগছে আমার..আর ভিজা উচিত হবে না..তাই নিচে নেমে আসার জন্যে দরজার কাছে গেলাম..কিন্তু একি দরজা আটকানো কেনো!!!দরজা কে আটকালো!!!এবার জোরে জোরে দরজা ধাক্কাতে লাগলাম…কিন্ত কেউ শুনছে বলে মনে হলো না..তাই নিজের সব টুকু শক্তি দিয়ে দরজা ধাক্কাতে লাগলাম আর তাসিনকে ডাকতে লাগলাম..কিন্তু না কেউ দরজা খুলছে না..এদিকে বেশি ভিজার ফলে আমি রীতিমতো কাঁপছি..হাত পা আমার ঠান্ডা হয়ে আসছে..আমার মুখ দিয়ে আর কোনো আওয়াজই বের হচ্ছে না..দরজা ধাক্কানোর শক্তিটুকুও আর পাচ্ছি না..আমি নিচে বসে পরলাম..আমার চারপাশের সবকিছু আস্তে আস্তে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে..মনে হচ্ছে আমি অন্ধকারের মধ্যে তলিয়ে যাচ্ছি..
.
চোখ খুলে দেখি আমার পাশে তাসিন বসে আমার মাথায় জ্বর পত্তি দিচ্ছে..ওর চোখ-মুখ কেমন ফোলা ফোলা লাগছে..মনে হচ্ছে কান্না করেছে..কিন্তু কেনো!!..আর আমারই বা কি হয়েছে..আমি তো ছাদে ছিলাম বৃষ্টিতে ভিজছিলাম..তারপর কিভাবে যেনো দরজা আটকে গেলো আর আমি আমি নাহ আর কিছু মনে পরছে না..মাথাটা ঝিম ঝিম করছে…উঠে বসতে চাইলাম কিন্তু তাসিন উঠতে না করলো..
.
এতোক্ষন আমার কিছু মনে না পরলেও এখন আমার সব মনে পরে গেছে..আর আমি জানি কেউ ইচ্ছা করে ছাদের দরজাটা আটকিয়ে দিয়েছিলো..সেটা আর কেউ না তাসিন..ও ইচ্ছা করেই এমনটা করেছে…এতোদিন আমি ওর সব অত্যাচার সহ্য করলেও আজকে যেটা ও করেছে তার জন্যে ওকে আমি ক্ষমা করবো না…
.
১সপ্তাহ কেটে গেছে আমিও এখন সুস্থ..বাবা-মাও বাসায় চলে এসেছে..বাসাটা এখন পরিপূর্ণ লাগছে..এই এক সপ্তাহ আমি তাসিনের সাথে কোনো রকম কথা বলিনি..ও বলার চেষ্টা করেছে কিন্তু আমি বলিনি..ওকে এড়িয়ে চলছি..২দিন আমি জ্বরে ভু্গছি..ও অবশ্য এই কয়েকদিন আমার খেয়াল রাখছে তবুও ওর উপর থেকে রাগটা আমার কমেনি…
.
রাতে বসে বসে টিভি দেখছি..এখন এই টিভি দেখা ছাড়া আমার আর কোনো কাজ নেই…ফোনটাও তাসিন ভেঙ্গে ফেলছে..অনেকক্ষন টিভি দেখছি এখন আর ভালো লাগছে না..তাই উঠে রুমে চলে এলাম..রুমে এসে যেই বিছানায় বসতে যাব তখন চোখ পরলো বিছানার উপর একটা নতুন ফোন রাখা..ফোনটা দেখেই খুশি হয়ে গেলাম..ফোনটা কি তাসিন আমার জন্যে এনেছে!!তখনই তাসিন কোথা থেকে এসে বলে উঠলো,,,
-হ্যা তোমার জন্যেই এনেছি…(মুচকি হেসে)
.
যাক বাবা ও বুঝলো কিভাবে!!!
ভেবেছিলাম ফোনটা নিবো না পরে ভেবে দেখলাম রাগ আমার তাসিনের উপর তাই ফোনের উপর রাগ দেখিয়ে লাভ নেই..আর তাছাড়া ফোনটা ও ভেঙ্গেছে তাই ও ফোনটা কিনে দিয়েছে…ওর কথার কোনো উত্তর দিলাম না..মুখ ভেংচি দিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখতে লাগলাম..আর তাসিন আমার মুখ ভেংচি দিয়া দেখে হেসে দিলো..আমি বিনিময়ে আর একটা মুখ ভেংচি দিলাম..
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি তাসিন আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে..এমন ভাবে জড়িয়ে ধরেছে যে আমি নরতেই পারছি না..ওকে দেখে একদম নিষ্পাপ বাচ্চা মনে হচ্ছে..কিন্তু আসলে তো ও একটা বদের হাড্ডি…তারপর ওকে একটা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম..ধাক্কা দিয়ার ফলে ওর ঘুম ভেঙ্গে যায়..কিছুক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে থেকে যেই উঠতে যাবো আর ওমনি ও আমার হাত ধরে টান দিয়ে আমাকে একদম বিছানার সাথে মিশিয়ে দেয়..তারপর আমার গায়ে উপর উঠে আমার দুই হাত বিছানার সাথে চেপে ধরে..ওর এমন কাজে আমার খুব বিরক্ত লাগছে ছুটার জন্যে ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে বার বার ব্যর্থ হচ্ছি…কিন্তু ওর মধ্যে কোনো হেরফের নেই..ও আমাকে একইভাবে চেপে ধরে আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে..আমি ওর চোখের দিকে তাকাতে পারছি না কেনো যেনো ওকে এভাবে তাকাতে দেখলে আমার বেশ অস্বস্তি লাগে…কিছুক্ষন ওর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে উঠলো,,,,
-আমাকে ধাক্কা কেনো দিলে?
-ওভাবে সাপের মতো পেচিয়ে থাকলে ধাক্কা দিবো না তো কি করবো(বিরক্ত নিয়ে কথাটা বললাম)
-কি বললে???আমি সাপের মতো পেচিয়ে ছিলাম!!(রেগে)
-কোনো সন্দেহ আছে?
এবার তাসিন বেশ রেগে গেলো আর আমাকে আরও জোরে চেপে ধরলো..এবার আমার দম বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম..আমি বার বার তাসিনকে ছেড়ে দিতে বলছি কিন্তু সে আমাকে কিছুতেই ছাড়ছে না..তারপর শর্ত দিলো তাকে সরি বলতে হবে কিন্তু আমি এমন কিছু বলিনি বা করিনি যে আমাকে সরি বলতে হবে..আমি কিছুতেই সরি বলবো না..কিন্তু ছাড়া পাওয়ার কোনো লক্ষন না দেখে শেষমেশ বাধ্য হয়েই সরি বলতে হলো..তারপর তাসিন আমার ঠোঁটে আলতো স্পর্শ করে আমাকে ছেড়ে দিলো..ছাড়া পেয়ে তাড়াতাড়ি উঠে দাড়ালাম..মেজাজ পুরাই খারাপ হয়ে গেছে…বিড়বিড় করে ওকে গালি গালাজ করছি..আমাকে বিড়বিড় করতে দেখে ও মুচকি মুচকি হাসছে..ওকে হাসতে দেখে আরও মেজাজ খারাপ হলো তাই সেখান থেকে চলে আসলাম..
.
মা একটা কফির কাপ ধরিয়ে দিয়ে বললো তাসিনকে দিয়ে আসতে..আমিও চুপচাপ বাধ্য মেয়ের মতো কফিটা নিয়ে রুমে চলে এলাম..রুমে তাসিনকে দেখতে পেলাম না..ওয়াশরুম থেকে পানির শব্দ শুনা যাচ্ছে মনে হয় শাওয়ার নিচ্ছে তাই কফিটা বেড সাইড টেবিলটায় রেখে বসে রইলাম..হঠাৎ দরজা খুলার শব্দে পিছন ঘুরে তাকালাম..তাসিন খালি গায়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো..ওকে দেখেই আমার চোখ উল্টে যাওয়ার উপক্রম.. এভাবে উন্মুক্ত শরীরে ওকে কখনো দেখিনি আমি…তাই নির্লজ্জের মতো হা করে তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে..ও ওর চুল মুছতে মুছতে আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু-কুচকে জিজ্ঞেস করলো,,,
-এভাবে হা করে কি দেখছো!!
ওর কথায় ঘোর কাটলো আমার..হায়রে আমি এতো নির্লজ্জ কবে থেকে হলাম..ছি কি ভাবলো তাসিন!!একটা মেয়ে হয়ে এভাবে দেখছিলাম ওকে…
তাসিন আমার সামনে একটা তুড়ি বাজিয়ে বলে,,,
-কী ব্যাপার বলো তো!!এতোক্ষন তো আমাকে চোখ দিয়ে গিলছিলে আর এখন আবার কি বিড়বিড় করছো!!
.
ওর কথা শুনে এবার বেশ লজ্জা পেলাম..তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে আসলাম….এই মুহুর্তে আর লজ্জার মুখোমুখি হতে চাচ্ছি না আমি…
.
.
.
.
চলবে……..