Saturday, July 26, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2457



বসের সাথে প্রেম পর্ব- ০১

1

বসের সাথে প্রেম
পর্ব- ০১
লেখা- অনামিকা ইসলাম।

ছেলেটির ডায়েরী__
অঘোরে বৃষ্টি হচ্ছে। বাসা থেকে যখন বের হয় তখন আকাশটা বেশ পরিষ্কার’ই ছিল। হঠাৎ করেই কোথা থেকে যেন একটুকরো মেঘ আকাশে উড়ে। ক্ষানিক বাদেই পুরো আকাশ’টা ঢেকে গেল ঘন কালো মেঘে। একটু পরেই ঝম-ঝমাঝম বৃষ্টি শুরু হলো। সেকি বৃষ্টি! সকাল ৯টায় এই টং দোকানে আশ্রয় নিয়েছি, তখনো বৃষ্টি ছাড়ার কোনো নাম-গন্ধ’ই নেই। তাই বাধ্য হয়েই বৃষ্টির মধ্যেই গাড়িতে উঠে যায়, অফিসে যাওয়ার জন্য। যদিও বাবা বলেছিল, আকাশ মেঘলা থাকলে যেন গাড়ি না চালাই। আমি যখন গাড়ি নিয়ে রাস্তার মাঝ বরাবর চলে এসেছি, ঠিক তখনই গাড়ির গ্লাসে চোখ পরতেই দেখি একটি মেয়ে এই ঘোর বৃষ্টির মধ্যে হাতে ছাতা আর কাধে ব্যাগ নিয়ে একদম ছুটে চলছে সামনের দিকে। জীবনে কখনো নিজে থেকে কোনো মেয়ের সাথে কথা বলিনি, কিন্তু আজ কেন মেয়েটির জন্য বড্ড মায়া হলো। কোনো হেল্প লাগবে কি না জিজ্ঞেস করতে ছুটে গেলাম মেয়েটির দিকে। মেয়েটির থেকে ঠিক ৩,৪হাত দুরেই গাড়িটা থামালাম। মেয়েটি থমকে তাকালো। জিজ্ঞেস করলাম-
– Can I help you,mem?
প্রতিউত্তরে মেয়েটি কিছুই বলল না। কিন্তু মুখ দেখে মনে হচ্ছে খুব তাড়া আছে। আমি আবারো বললাম, কোনো ভাবে কি আমি আপনাকে হেল্প করতে পারি? মেয়েটি মনে হচ্ছে হ্যাঁ-না কি বলবে সেই দ্বিধা সংকোচে ভুগছে আর বারবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। আমি আবারো বলি- ” ম্যাম, সংকোচ না করে বলেই ফেলেন।” মেয়েটি কোনো কথা না বলে গাড়িতে উঠে বসল। জিজ্ঞেস করলে বলে, সামনেই কোথাও যাবে। আমি বললাম ঠিক আছে, আপনার গন্তব্যে এলে আমায় সংকেত দিবেন। মাথা নেড়ে মেয়েটি সম্মতি জানালো।
,
,
মেয়েটির ডায়েরী__
আজ আমাদের অফিসে নতুন এমডি আসছে। নতুন বললে ভুল হবে। প্রাক্তন’টায় এখানে খাটে। কারন, ওনি এর আগেও এখানে ৪বছর কাজ করে গেছেন। সময়টা কম হলেও এই সংক্ষিপ্ত সময়ের ইতিহাসটা ব্যপক। শুনেছি, ওনি নাকি ভিষন রগচটা আর বদমেজাজি স্বভাবের একজন মানুষ ছিলেন। কাজের ক্ষেত্রে ফাঁকি একদম বরদাস্ত করতেন না ওনি। আবার অফিসে পৌঁছাতে একমিনিট লেইট হলে একদিনের সেলারি কেটে নেওয়া হতো। খাতায় লেইট মার্ক যদি তিনদিনের বেশী হতো তাহলে বেতনের এক তৃতীয়াংশ কেটে নেওয়া হতো। তাই আজ ভয়ে প্রতিদিনের চেয়ে একটু আগেই বের হয়ে গেলাম বাসা থেকে, যদি লেইট হয়ে যায় সেই ভয়ে। কে জানত যেই ভয়ে বাসা থেকে তাড়াতাড়ি বের হলাম, সেই ভয়টায় সত্যি হয়ে যাবে। বাসা থেকে বের হওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই আকাশ মেঘলা হয়ে গেল। ঘোর কালো অন্ধকার করে কিছুক্ষণের ভিতর বৃষ্টি শুরু হলো। কিছুক্ষণ একটা দোকানে আশ্রয় নিলেও বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না বসের ভয়ে। দোকান থেকে ছাতা কিনে ছুঁটতে লাগলাম অফিস পানে। কিন্তু এত জোরে বৃষ্টি হচ্ছিও যে হাতের ছাতাটাও বৃষ্টির কাছে হার মেনে যাচ্ছিল। বৃষ্টিতে আধভেঁজা হয়ে আল্লাহ’কে ডাকছি আর ছুটে চলছি। হঠাৎ করেই একটা গাড়ি পিছন থেকে চলে গেল। হঠাৎ করেই গাড়িতে পিছিয়ে আসল। আমি থমকে দাঁড়ালাম। গাড়ির বন্ধ জানালা খুলে গেল। এক সুদর্শন যুবক গাড়ির ভেতর থেকে আমায় বলছে, Can I help you, mem? আমি যেন যুবকটির কোনো কথায় শুনতে পাচ্ছিলাম না। ক্ষণিকের জন্য হারিয়ে গেলাম দুর অজানায়। ঘোর কাটলো ওনার ডাকে। বলছে, আমি কি কোনো ভাবে আপনাকে হেল্প করতে পারি? ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৯টা বেজে ৩৫মিনিট। আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম। কোনো কিছু না ভেবেই উঠে গেলাম গাড়িতে। জীবনের প্রথম এত দামী গাড়িতে কোনো সুদর্শন যুবকের পাশে বসে আছি। বুকের ভিতর বসন্তের কোকিল কুহু স্বরে ডেকে উঠল, লজ্জা পেয়ে গেলাম।আচমকা ওনি বলে উঠলেন, ‘ আপনার গন্তব্যে এলে আমায় সংকেত দিবেন, কেমন?’ আমি লজ্জায় মুখ দিয়ে কিছু বলতে পারিনি, শুধু মাথা নাড়িয়ে আমার ‘হ্যাঁ’ বলাটা জানান দিচ্ছিলাম….
,
,
ছেলেটির ডায়েরী__
দেখতে দেখতে বাবার অফিসের সামনে এসে গেলাম। এখন বাবার কোনো কর্মচারী যদি দেখে আমার পাশে অচেনা মেয়ে, আমি তাকে নিয়ে অফিসে না গিয়ে, সামনে কোথাও চলে গেছি, তাহলে পরিনতি খারাপ হবে। ছয়কে নয় বানিয়ে বাবার কান ভারি করে দিবে। সেই ভয়ে মেয়েটিকে নামিয়ে দিলাম অফিসের ঠিক একটু সামনেই। মেয়েটি নেমে আমার দিকে তাকিয়ে গিয়ে কৃতজ্ঞচিত্রে একটা হাসি দিয়ে চলে গেল। আমি অফিসে প্রবেশ করলাম। সবাই নিজ নিজ আসন থেকে উঠে আমায় গুডমর্নিং জানালো। হঠাৎ’ই চোখ যায় একটা চেম্বারের দিকে, যেটা এখনো শূন্য পরে আছে। খেয়াল করে দেখলাম আসনটা পি.এর। এ নিশ্চয় বাবার পছন্দে সিলেক্ট করা পি.এ মায়ার আসন! বাবার মুখে মেয়েটির অনেক গুনগান শুনেছি, এই তার লক্ষণ? রাগে গজগজ করতে করতে আমার রুমে চলে গেলাম, যাওয়ার আগে বলে গেলাম পি.এ আসার সাথে সাথেই যাতে আমার রুমে পাঠানো হয়….
,
,
মেয়েটির ডায়েরী_
হঠাৎ’ই গাড়িটা এক জায়গায় এসে থেমে গেল। যুবক’টা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, বৃষ্টি থেমে গেছে, আমারও তাড়া আছে। আপনি বরং এখানেই নেমে যান। ট্যাংক্সি কিংবা রিক্সা করে চলে যান আপনার গন্তব্যে। গাড়ি থেকে নেমে যুবকটির দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞসরুপ একটা হাসি দিলাম। না, না। আমার রিক্সা কিংবা ট্যাংক্সি কোনো’টার প্রয়োজন হয়নি। কারন যুবকটি আমায় অফিস থেকে এমন এক জায়গায় নামিয়ে ছিল যেখান থেকে আমার অফিস মাত্র ২মিনিটের ছিল। পায়ে হেঁটেই পৌঁছে গেলাম অফিসে। হঠাৎ’ই কলিগ মুক্তা ডেকে বলল- মায়া ম্যাডাম, আপনাকে বস ডেকেছে। তাড়াতাড়ি যান, নইলে নামের শেষে লেইট মার্ক বসিয়ে দিবে। কথাটা শুনেই হৃদকম্পন বেড়ে গেল। ছুটে চললাম ওনার রুমের দিকে। দরজার কাছে গিয়ে বললাম__
” আসতে পারি স্যার?”

চলবে….

কাছে_আসার_গল্প

0

কাছে_আসার_গল্প

অনামিকা_ইসলাম_অন্তরা

আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু শুভ্র। সেই স্কুল লাইফ থেকেই ওর সাথে আমার পরিচয়। তারপর কলেজ। কলেজ জীবন একসাথে কাটানোর পর ভর্তি হলাম ভার্সিটিতে। সেখানেও একসাথে। ওর প্রতি আগে থেকেই দুর্বল ছিলাম আমি। ভার্সিটিতে এসে একটু বেশীই ঝুঁকে পড়ি। সেখানে ক্লাসের চেয়ে আড্ডায় হতো বেশী। সেই আড্ডার মধ্যমণি ছিল ‘ও’। ভার্সিটির সবচেয়ে সুদর্শন এবং মেধাবী ছেলে ছিল শুভ্র। মেয়েদের একটা বিশাল লাইন সবসময় ওর পিছনে লেগেই লাগতো। আমি দুর থেকে দাঁড়িয়ে সে দৃশ্য দেখতাম। মেয়েরা হাসাহাসি করে ওর উপর ঢলে পড়ত। সহ্য হতো না আমার। আবার মুখ ফুটে বলতেও পারতাম না। কেননা, ওর সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা হলেও আন্তরিকতা হয়নি তখনো।

আমাদের ডিপার্টমেন্টে ছেলেদের লিডার ছিল ‘ও’ আর মেয়েদের ছিলাম আমি। স্যার একদিন আমাদের দুই লিডারের নাম্বার ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে দিলেন বাকি ছেলে-মেয়েদের যোগাযোগ করার সুবিধার্থে। আমি সে সুযোগটা কাজে লাগালাম। ওর ফোন নাম্বারটা আমি টুকে নিলাম নোট খাতায়। গ্রীষ্মের ছুটি দিয়েছিল। পড়ন্ত এক বিকেলে আমি ওর নাম্বারে কল দেই। শুরুটা সেখান থেকেই। তরপর খুব ভালো একটা বন্ধুত্ব হয় আমাদের।

ভার্সিটি লাইফ শেষ হয়। একেকজন একেকদিকে চলে যায়। কিন্তু আমাদের বন্ধন অটুট থাকে। বছর দু’য়েক আগে ও মহিলা কলেজে বাংলার প্রভাষক হিসেবে জয়েন করে। ওর বিয়ের জন্য পাত্রী দেখার শুরুটা হয় তখন থেকেই। টানা দু’বছর ধরে অসংখ্য পাত্রী দেখেছে ওর ফ্যামিলি মেম্বার’রা। অবশেষে কিছুদিন আগে ওরা ওদের মনের মতো পাত্রীর সন্ধান পায়। খুব তাড়াহুড়োর মধ্য দিয়েই দু’পক্ষের বোঝাপড়া হয়ে যায়। রাত পোহালেই ওদের আংটিবদল হবে। অনেক বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আমার পরিবারের সবার’ই অনুষ্ঠানে থাকা বাধ্যতামূলক জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আব্বা মা অবশ্য বিকেলেই চলে গেছে ঐ বাড়িতে। ঘন্টা খানেক আগে বড় আপু অফিস থেকে আসে। ওরাও চলে গেছে। আমাকে সেধেছিল। যাইনি। নিজে থেকেই বাড়ির প্রহরী হিসেবে রয়ে গেলাম।

রাত্রি ১১টা বেজে ১৭মিনিট__
বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করেছি অনেকক্ষণ। কিন্তু নিদ্রাদেবী কিছুতেই ধরা দিলো না। আর পারছিলাম না। ডায়েরী হাতে নিয়ে আবারো বসলাম। কি লিখা যায় ভাবতেই মনে হলো কবিতাকে ছুটি দিয়েছি বেশ ক’বছর হলো। আজ বরং একটা কবিতা’য় লিখা যাক। মুখ দিয়ে কলমের ঢাকনা খুলে লিখতে শুরু করলাম-

“তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি ভেবে মন খারাপের দোলনায় দোল খেয়েছি সকাল থেকে সন্ধ্যা। পড়ার টেবিলে অবহেলায় খুলে রাখা বইয়ের কালো অক্ষর ঝাপসা হয়েছে কতবার!

মাথার নিচে রাখা বালিশ ভিঁজে গেছে নিরব কান্নায়…

তারপর আবার একদিন মন দোয়ারে দাঁড়িয়ে তুমি! ঠোঁটের কোণে হাসি লুকিয়ে জানতে চাইলাম– “আবার এসেছো?”

তুমি অবাক হয়ে বললে–
“কেন, আর কোথায় বা যাবো…!”

লিখা শেষে কবিতাটা পড়ে নিলাম একবার। নিজের কবিতা পড়ে নিজেরই হাসি পাচ্ছে ভিষন। ‘এও কি সম্ভব? হারানো মানুষরা আদৌ কি ফিরে আসে?’
ভাবছিলাম আরো অনেক কিছুই। ফোনটা বেজে উঠল তখনি। ডায়েরীটা বন্ধ করে ফোন রিসিভ করলাম-
” হ্যাঁ, বল…”
– নতুন নাম্বার দিয়ে ফোন করেছি। তবুও চিনে গেছিস?(শুভ্র)
— তুই ছাড়া যে কেউ নেই আমার। তাইতো চিনে নিতে অসুবিধে হয় না…!
– কি বললি?
— বলছি কি করছিস? এত রাত্রে কল কেন দিলি? ঘুমাবি কখন?
– আরে ঘুমিয়েই ছিলাম। তারপর কি যে এক বাজে স্বপ্ন দেখছি। হুট করে জেগে গেছি। ভাবলাম, তোর কিছু হলো না তো!
— বোকা ছেলে! স্বপ্ন তো স্বপ্নই। এর জন্য এত টেনশনের কি আছে?
– এই! সত্যি করে বল। তুই ভালো আছিস তো?
— হ্যাঁরে, হ্যাঁ। আমি অনেক ভালো আছি।
– কিছু লুকাচ্ছিস না তো?
— আরে গাধা না। তুই বৃথা টেনশন করছিস।
– আচ্ছা, রাতে খেয়েছিস?
— শুভ্র অনেক রাত হয়েছে। তুই ঘুমা।
– তুই ঘুমাইবি না?
— হ্যাঁ, আমিও ঘুমাবো। তুই এখন ঘুমা প্লিজ…
– আচ্ছা, রাখছি। বাই।

কল কেটে দেয় শুভ্র। চোখের জল বাঁধ মানছিল না। হু, হু করে কেঁদে দিলাম। ভিতরে যন্ত্রণা হচ্ছে প্রচুর। মনে হচ্ছে কেউ যেন হাতুড়ি দিয়ে দুরমুশ পিটাচ্ছে। লাইটটা অফ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু ঘুম চোখে ধরা দিল না। অন্ধকারে বিছানায় উঠে বসলাম। হাঁটুতে ভর দিয়ে বসে আছি। চোখের জলে হাঁটু ভিঁজে একাকার হয়ে গেছে। ফোনটা বেজে উঠল আবারো। শুভ্র ফোন দিয়েছে। রিসিভ করে কানে ধরলাম-
” কি হলো? ফোন কেন ধরছিস না? সেই কখন থেকে ফোন দিচ্ছি?”

কান্না লুকিয়ে কন্ঠ’টা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলামঃ-
– ইয়ে, মানে, আসলে…
— আসলে কি?
– ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।
— ওহ, আচ্ছা।
– ঘুমাসনি এখনো?
— তোদের বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছি।
– কিহ?
— হ্যাঁ। আসবি?

ফোন কানে দ্রুত বারান্দায় গেলাম। নিচে তাকাতেই দেখলাম দাঁড়িয়ে আছে ‘ও’। ‘তুই দাঁড়া, আমি আসছি’ বলেই দৌঁড় দিয়ে নিচে নামলাম।
– এত রাত্রে না আসলেও পারতি…!
— এখানে দাঁড় করিয়ে রাখবি?
– আয়। ভেতরে আয়….

ও গেইটের ভেতরে ঢুকলে তালা না লাগিয়েই দোতলায় রুমের দিকে এগুতে লাগলাম। ও আমার পিছু পিছু হাঁটছে-
” বস….”
– তোদের বাড়িটা অনেক সুন্দর।
— Tnq u…
– আচ্ছা, তুই ভালো আছিস তো?
— শুভ্র, এই পানিটুকু তুই খেয়ে নে।
– ………..
— এবার বল। কি এমন স্বপ্ন দেখছিস যার জন্য তোকে এখানে ছুটে আসতে হলো?
– তুই ভালো আছিস তো…
— বার বার একই প্রশ্ন করবি না তো…!
– আমি তোকে ছুঁয়ে দেখতে পারি?
— এসব কি পাগলামী হচ্ছে শুভ্র?
– আমি না খুব বাজে স্বপ্ন দেখছি।
— কি স্বপ্ন? বল শুনি…
– বলবো। তার আগে আমায় ছুঁয়ে কথা দে আমার একটা প্রশ্নের সত্যি উত্তর দিবি।
— কথা দিলাম। এই আমি তোকে ছুঁয়ে কথা দিলাম তোর সমস্ত প্রশ্নের ঠিকঠাক এবং সত্যি উত্তর দেবো।
– ভালোবাসিস কাউকে?

ঘাবড়ে গেলাম আমি। বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম। ও বসা থেকেই জানায়-
” আমায় ছুঁয়ে কথা দিয়েছিস কিন্তু….”
– হু,
— এবার বল। ভালোবাসিস কাউকে?
– হু, বাসতাম।
— বাসতিস? এখন বাসিস না?
– কাল ও অন্যজনের হয়ে যাবে।
— কিহ? কিসব বলছিস তুই? কে সেই ছেলে? বাড়ি কোথায়?
– আমাদের বাসার সবাই ও বাড়িতেই আছে। দাওয়াত দিয়েছে কি না…
— এই মেয়ে! পাগল হয়ে গেলি নাকি তুই?
– পাগলই বটে। ওর প্রেমে পাগল।
— ওকে, ফাইন। এটা বল, নাম কি ছেলের?
– শুভ্র….

শুভ্র ফিরে তাকায় আমার দিকে। আমার জলে ভেঁজা চোখ দুটি যেন ওকে কিছু বলছে। ও গভীর ধ্যানে আমার সেই চোখের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টির ভাষা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছে। মিনিট তিনেক পর উঠে দাঁড়ায়। প্রতিধ্বনিত হয় একটি ছোট্ট শব্দ- ” আসি…..”

ও চলে যায়। কান্নায় ভেঙে পড়ি আমি। টেবিলে মাথা রেখে ছোট বাচ্চাদের মতো হাউমাউ করে কাঁদছি আমি…

এদিকে শুভ্র গেইট থেকে বাহির হতেই একটি যুবক ছুটে আসে ওর কাছে। হাপাতে হাপাতে লোকটি শুভ্রর সাহায্য চায়। তারপরের কথোপকথনঃ-
– কি সমস্যা ভাইয়া?
— ভাই প্লিজ আমাকে কয়টা টাকা দিন।
– কেন? আর কিসের টাকা দেবো আমি আপনাকে?
— আমার গার্লফ্রেন্ড বিষ খেয়ে মারা গেছে। পুলিশ আমাকে খুঁজছে। আমার এখন পালাতে হবে?
– কিকিকি বলছেন এসব? আপনি খুনি?
— আমি খুন করিনি। ওর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। আজ বিকেলে আমায় দেখা করার জন্য ডেকেছিল। আমি দেখা করতে গেলে ওকে বুঝাই- ‘দেখো লিপি! যা হওয়ার তাতো হয়ে গেছে। বাবা মা যেহেতু বিয়ে ঠিক করেছেন। সেহেতু তুমি বিয়েটা করে নাও। আর তাছাড়া আমি বেকার। তোমাকে বিয়ে করে খাওয়াবো কি…?’
– তারপর?
— অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে চলে আসি আমি।
– তখনই ও বিষ খায়।
— কেউ দেখেনি/টের পায়নি?
– নাহ। ও ঐ স্থানে বসে বিষ খেয়েছে, যে নির্জন স্থানে আমাদের শেষ কথা হয়।
— মারা গেছে?
– হ্যাঁ…
— নিন। (২০০০টাকা বাড়িয়ে দিয়ে)
– অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাইয়া।
— সাবধানে থাকবেন।
– আল-বিদা।

দেখতে দেখতে লোকটি দুরে কোথাও মিলিয়ে যায়। পিছু হটে শুভ্র। তালা’টা লাগানো হয়নি, গেইট’টা তখনো খুলা ছিল। দু’তলার ১ম রুম অতিক্রম করে ভিতর রুমের সামনে এসে দাঁড়ায় শুভ্র। দরজার সামনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে মাথা তুলে তাকালাম আমি। ভেঁজা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে শুভ্র। ঠোঁটের কোণের হাসি লুকিয়ে জানতে চাইলাম-
” আবার এসেছিস?”

রুমের ভেতরে চলে আসলো ও। টেবিল ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম আমি। পরম নিবিড়ে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিল ও আমাকে। তারপর অনেকটা কবিতার মতই অবাক করা কন্ঠে বলল-
” কেন, আর কোথায় বা যাবো…!”

  1. #কাছে_আসার_গল্প
    #অনামিকা_ইসলাম_অন্তরা

এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে

0

ছেলেঃ হাই!!!✋?

মেয়ে:কে আপনি???

চিনতে পারছো না??
?

না স্যরি!!!চিনলাম না!!!

যাকে মন থেকে ভুলে গেছো তাকে কি করেই বা চিনবে!!
?

কে বলুন তো আপনি?

কলেজের ফেয়ারওয়েলের দিন যাকে অপমান করে তাড়িয়ে দিলে তাকে এত তাড়াতাড়ি ভুলেও গেলে???

তুমি কি রাহুল???
?

বাহ্ তাহলে এখনও মনে আছে দেখছি!!???

সেদিনের জন্য আমাকে মাফ করো রাহুল।।
????

আমি গরিব বলে আমাদের এত ভালো বন্ধুত্ব ভেঙে,,, আমাকে সেদিন কত অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছিলে।।
মনে আছে????

সব মনে আছে রাহুল,,,
I am very sorry রাহুল।।।
????

যাই হোক তুমি এখন নিশ্চয়ই খুব ভালো আছো।???
তোমার বর আর তুমি নিশ্চয়ই দারুন মজা করছো???????

???

কি হলো বলো।।।

আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে রাহুল!!!??????

কি???কিন্তু কেন???

প্রথমে আমরা দুজনেই আমেরিকায় খুব ভালো ছিলাম।।।
হঠাৎ আমার বর খুব রাত করে বাড়ি আসতে শুরু করলো,,,আর এই নিয়ে আমাকে মিথ্যে বলতেও শুরু করলো।।।

তারপর??????

আমার সন্দেহ বাড়তে লাগলো!!!
এরপরে একদিন একটা মেয়ের সাথে দেখলাম,,,যাকে নিয়ে ও সবসময় আমাকে মিথ্যা বলতো।।
এরপর আমি ওকে ডিভোর্স দিয়ে ইন্ডিয়া তে চলে আসি।।

????
আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই কালইইই।।।

এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে রাহুল।।।
????

দেরি হয়ে গেছে মানে???
কি হয়েছে???
???

কিছু না।।।
ভালো থেকো।।
????

বলো কি হয়েছে তোমার।।????

আমার ব্রেন টিউমার হয়েছে রাহুল।।।
???

কি???
তুমি পাগল হয়ে গেছো!!
আমি বিশ্বাস করি না।।??

এটাই সত্যি রাহুল।।

তোমাকে কে বলেছে এটাই সত্যি?????

আমি গত বছর ডাক্তার দেখানোর পর আমার সি.টি.স্ক্যান রিপোর্ট এ ব্রেন টিউমার ধরা পরেছে!!!?????

?

তাই এত মায়া বাড়িয়ে কি হবে!!!
আমি আর বেশিদিন বাঁচবো না রাহুল!!!?????

এসব কিছুই হবেনা,,,
আমি কিছু হতেই দেবো না।।।।
আমি তোমাকে অনেক বড়ো বড়ো ডাক্তার দেখাবো।।

???
এসব বাদ দাও,,,আমার শেষ ইচ্ছে তুমি আমাকে মাফ করো রাহুল,সেদিন খুব ভুল করেছি।।।

জানো আজও তোমার নাম্বার আমার কাছে “সুইটু” নামে সেভ্ করা আছে।।
আজও ভালোবাসি তোমাকে।।।
??

আমি আজও তোমার সুইটু???
????
কিন্তু আমার তো সময় খুব কম,,,তোমার জীবনে আমি আর থাকতে পারবো না।।

???চুপ।।
???
তুমি আমার কাছেই থাকবে,,কালই আসছি আমি।।

যদি আমি না বাঁচি???

আমার মনে সবসময় বাঁচবে তুমি।।
বুঝেছো???

কিন্তু…

???
কোনো কিন্তু না,,,কালই আসবো আমি।।
তোমাকে সুস্থ করবোই।।

তারপর???

তুমি রাজি থাকলে আমরা বিয়ে করে একসাথে থাকবো।।।☹☹☹☹☹☹

আমি থাকবো তোমার কাছে,,,,রাজি আমি তোমার কাছে থাকতে।।।
????

আজ রাত পেরোলেই আমি তোমার কাছে আসছি,,, আমার সুইটু।।।
????

ওয়েট করছি!!!আসো তাড়াতাড়ি,,,????

আই…..

বলো।আই লাভ ইউ…?????

লাভ ইউ টু সুইটু।।।??????????

??????
কাল তাড়াতাড়ি এসো!!!

হুম!!!
বাই।।।???

 

রোমান্টিক কথোপকথন

2

রোমান্টিক কথোপকথন

ছেলে:হাই✋

মেয়ে:হুম্!!বল।

কি করছিস রে?

কিছুই না!!পড়ছি!!!

আজকাল অনলাইন থেকে পড়িস নাকি?
???

???
পড়ার সাথে সাথে অল্প চ্যাটিংও করছি।।
তুই কি করছিস??

আমি আমার Gf এর সাথে চ্যাটিং করছি।।।???

আমার সাথে কথা বলছিস জানলে তোর gf আবার রাগ করবে না তো???

আরে না!না!
??

এই শোন!?

কি??

আগে কখনো বলিস নি তো তোর গার্লফ্রেন্ড আছে।।
???

তুইও তো আগে জানতে চাসনি!!!

তাহলে এখন বল!
এখন জানতে চাইছি সেই ভাগ্যবতী মেয়েটি কে??

সে হলো এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে।।☺☺☺
যে আমার মন কেড়ে নিয়েছে??

সে তো বুঝতেই পারছি।।।
কিন্তু যে তোকে এতটা পাগল করেছে তার তো কোনো নাম আছে নিশ্চয়ই!!!

হুম্!তা আছে!!
তুই তাকে চিনিস তো!!???

???
আমি চিনি??
কে বলতো?

তুই সত্যি জানতে চাস???

আরে!হ্যাঁ।।
?

তাহলে তোকে একটা কাজ দিচ্ছি!!সেটা করলে নিজেই বুঝতে পারবি মেয়েটা
কে???????

পারলাম না!!
আমি পড়তে বসবো!!তোর Gf এর নাম তাহলে পরেই বলিস!!
বাঈ!!✋?

শোন না!!
তুই আমার বন্ধু তো??

হুম্!তো???

তাহলে মেয়েটাকে দেখে বল আমার সাথে মানিয়েছে নাকি???

বল কি কাজ করতে হবে!!???

কালকে তোকে ইংরাজি খাতা দিয়ে আসার সময়, তোর ঘরের ড্রেসিং টেবিল এর_বাঁ দিকের ড্রয়ার এ একটা গিফট্ বাক্স রেখে এসছিলাম।।?
একটু সামনে গিয়ে দেখ!!!

দাঁড়া দেখছি।।।

দেখেছিস্??

এখানে কিছুই নেই তো।।
?

কে বললো??
আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখ।।

কি দেখবো??

আয়নায় যাকে দেখছিস্!!সেই আমার Gf,,,
কিন্তু আমি ওর Bf কিনা সেটাই জানিনা।।

পাগল হয়ে গেছিস তুই।।।
????

এই অপ্সরাই তো আমাকে পাগল করেছে,,,??????

তুই আর কত মেয়েকে এই এক কথা বলেছিস বলতো??

তুই আমাকে এতটাই খারাপ ভাবিস নাকি???
এত বছর পর আমাকে এরকম চিনলি তুই???
??????

এই স্যরি রে।।

তুই আমাকে এরকম বলতে পারলি??????

স্যরি বললাম তো!!
কিন্তু তুই যে বলিস সব মেয়েই স্পেশাল!!
তাহলে আমি তাদের মধ্যে আলাদা কেন???

হুম্!!সব মেয়ে স্পেশাল,সবাই সুন্দরী,,,কিন্তু আমার একটাই ❤,,,
আর এই একটা মন একজনই নিতে পেরেছে।।
বুঝলি??

?????
কিন্তু !এতদিন ধরে আমার সাথে কথা বলিস।
তাহলে আগে বলিস নি কেন এসব???

ভয় লাগতো!!
যদি এসব শুনে তুই বন্ধুত্ব না রাখিস!!
যদি কথা না বলিস!!??

এখন ভয় লাগছে না??
কি করে বললি এখন???

এমনিতে এটাই স্কুলের শেষ বছর!!
এরপর আর দেখা হবে কিনা!কথা হবে কিনা ঠিক নেই……তাই বলে ফেললাম।।।

বুঝলাম!!
Ok!!Bye!!!
পড়তে বসবো এবার,,কাল কথা বলবো।।✍✋?✍

কিছু তো বলে যা।।।??????

কাল স্কুলে যাওয়ার সময় তোর Gf কে নিতে আসিস আমাদের বাড়িতে!!!
????

সত্যি??????

আচ্ছা আমি অনেক সময় থেকে অনলাইন ,,,,এবার না পড়তে বসলে আম্মু খুব বকবে!!!

আচ্ছা যা পড়তে বস্।।

Ok!Bye

আই লাভ ইউ আমার Gf???
???

আই লাভ ইউ মোর
????
?????
Bye!
আমার Bf
???