Monday, June 16, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2455



বসের সাথে প্রেম পর্ব- ০৫

0

বসের সাথে প্রেম
পর্ব- ০৫
লেখা- অনামিকা ইসলাম।
ছেলেটির ডায়েরী_
শুয়ে শুয়ে ফোন টিপা-টিপি করছিলাম। প্রায় আধঘন্টার মত ফোন টিপার পর সবার ঘুমের অসুবিধা হবে ভেবে ফোন’টা বালিশের নিচে রেখে কপালে হাত রেখে শুয়ে পরলাম। হঠাৎ’ই মনে হলো কেউ যেন ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলছে, আমার খুব কাছ থেকে’ই শব্দটা আসছে। ভাবলাম বোন শিমু নয়তো?!!!!
বালিশের নিচ থেকে ফোন’টা এনে টর্চটা এনে তার আলোয় দেখার চেষ্টার করলাম। তারপর যা দেখলাম—
‘ নিশ্বাস’টা শিমুর নয়, মায়ার।’
মনে হচ্ছে চোখগুলো শক্ত করে বোজে আছে, ইচ্ছে করে’ই। ফোনের টর্চ’টা নিভিয়ে ডিসপ্লের আলো’টা একটু কমিয়ে নিলাম। ডিসপ্লের মৃদ্যু মৃদ্যু আলোয় স্পষ্ট দেখতে পেলাম, কাঁপা কাঁপা চোখে ও চোখ মেলে তাকাচ্ছে। চোখ মেলে তাকিয়েই ও ফোনের স্কিনের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। একটানা ৪মিনিট স্কিনের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল মায়া। তারপর আলতো করে চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলল। নিঃশ্বাসের শব্দ’টা ধীরে ধীরে কমে আসতে লাগল। ডিসপ্লে’টা অফ করে ফোন’টা হাতে নিয়েই ঘুমিয়ে পরলাম। মাঝ রাত্রে ঘুম ভেঙে যায়। কেন জানি মনে হচ্ছিল, কেউ আমার মাথার নিচের বালিশ’টা ধরে উপড়ে ফেলতেছে। মনে হচ্ছে, বালিশসহ’ই যেন কেউ আমায় ফেলে দিতে চাচ্ছে। চোর-টোর নয়তো?!!! :O
দেখার জন্য এক চোখ একটু একটু করে খুললাম। ঐ একটুখানি দৃষ্টি’তেই বুঝতে পেলাম চোর’ই আসছে। আমার ফোন’টা চুরি করতে আসছে বোধ হয়। ?
হুহ, আমার ফোন চুরি?! :/
দেখে নে চুর?!!!
আজ একা’ই আমি তোর কি অবস্থা করি….?
চোরটা যখন ফোন’টা নিয়ে চলে রুম থেকে বের হয়ে গেল, তখন আমিও আলমারি থেকে বোনের একটা ওড়না বের করে ওর পিছু পিছু ছুটলাম। কিন্তু একি?!!! চোরটি ছাদে যাচ্ছে কেন??
আর এতো দেখছি মেয়ে চোর?!!!?।ওর হাঁটা দেখে তো সেটা’ই বুঝে যাচ্ছে….
ওহ্, তারমানে চোরটা বিয়ে বাড়িতে মেহমান হয়ে ঢুকেছে। ওর ধান্ধা বিয়ে খাওয়া নয়, চুরি করা। যায় হোক, আজ তোর রক্ষা নাই। ছাদ দিয়ে পালাবে ভেবেছিস? দাঁড়া। তোকে আজ রাত’টা ছাদে’ই বেঁধে রাখব। ☺☺☺
মেয়েটির ডায়েরী_
ভীরু এবং কাঁপা দৃষ্টিতে চেয়ে দেখি আমার চোখের সামনে একটা ফোন। তার স্কিনের মধ্যে আমার সিয়ামের ছবি। স্কিন’টা থেকে চোখ সরাতে পারছিলাম না। আবার তাকিয়েও থাকতে পারছিলাম না। ঘুমিয়ে পরি একসময়। মাঝরাত্রে ঘুম’টা ভেঙে যায়। কিছুতেই ঘুম চোখে আসছিল না। ভিতর’টা অস্থির অস্থির লাগছিল। তাহাজ্জদ নামাজ’টা না হয় এখন পরে নিলেই ভালো হয়। উঠলাম নামাজ পরার জন্য। অযু করে ড্রয়িংরুমে গিয়ে নামাজ’টা পরে নিলাম। তারপর ছাদে গিয়ে বেশকিছু ক্ষণ বসে থেকেও যখন দেখলাম ঘুম আসছে না, তখন কয়’টা বাজে দেখার জন্য রুমের দিকে পা বাড়ালাম। মনে হলো ফোন’টা সন্ধ্যারাত্রে সাইমা নিয়েছিল। এতরাত্রে সাইমা’কে ডাকা তো সম্ভব না, তাই মামির কাছে গেলাম। ওনাকে ডাকতে গিয়েও ডাকলাম না ঘুমের ডিস্টার্ব হবে ভেবে। নানুর কাছে এসে বালিশের নিচে হাত দিয়েও ওনার ফোন পেলাম না। এবার মনে হলো স্যার তো ওনার ফোন’টা সাথে নিয়েই ঘুমাইছে। ভীরু পায়ে হেঁটে চলে গেলাম ওনার কাছে। আশেপাশে কোথাও ফোন’টা পেলাম না। বালিশের নিচে থাকতে পারে ভেবে ওনার মাথাসহ বালিশ’টা একটু উপরে তুললাম।হ্যাঁ, ফোনটা বালিশের নিচেই। লুকিয়ে, সাবধানে ফোন’টায় হাত দিলাম। ফোন’টা হাতে আসলে সেটা নিয়ে ছাদে চলে যায় এই ভেবে, ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত ফোন’টা আমার কাছেই থাকবে। এত রাত্রে ওর মুখ দেখা’তো সম্ভব না, তাই স্কিনে থাকা ওনাকেই দেখব। ছাদে যাচ্ছি, কেন জানি মনে হচ্ছে আমায় কেউ অনুসরন করে আমার পিছু পিছু আসতেছে। কিন্তু এত্ত রাত্রে কে আমায় অনুসরন করবে? বিষয়’টা ভ্রম ভেবে উড়িয়ে দিলাম। এগিয়ে যেতে লাগলাম ছাদের দিকে।
হঠাৎ কেউ আমার মুখটা চেপে ধরল। প্রথমে মুখ চেপে ধরলো। তারপর মুখ’টা বেঁধে ফেলল কাপড় দিয়ে। আমি কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারছিলাম না। মুখের সাথে সাথে আমার নাক’টাও কাপড়ে ঢেকে গেছে। আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।

চলবে….

বসের সাথে প্রেম পর্ব- ০৪

0

বসের সাথে প্রেম
পর্ব- ০৪
লেখা- অনামিকা ইসলাম।
মেয়েটির ডায়েরী_
দিন যতই গড়িয়ে যেতে থাকে, ততই সিয়ামের প্রতি খুব খুউউব দূর্বল হয়ে যাচ্ছি। শয়নে-স্বপনে, নিশিথে-জাগরনে, কাজে-কর্মে মানের আমার জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে ও যেন মিশে আছে। আমার প্রতিটা রাত ভোর হয় ওর কথা ভেবে, ওকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। আবার রাত্রে ঘুমুতেও যায় ওকে নিয়ে ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্ন চোখে নিয়ে। আজকাল সিয়াম স্যার’টা যেন কেমন হয়ে গেছে। ওনাকে দেখলে মনে হয় একটা অসহনীয় যন্ত্রনা ওনাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। আচ্ছা, ওনি কি ঠিক আছেন? ওনার কিছু হয়নি তো? সেদিন রাত্রে হাজার চেষ্টা করেও যখন ঘুমুতে পারছিলাম না, তখন মনটাকে শান্তনা দেওয়ার জন্য জানালা দিয়ে ওনার রুমের দিকে তাকালাম। কিন্তু একি?! একটা কিছু মনে হচ্ছে দাঁড়িয়ে আছে। রুমের লাইট জ্বালানো নেই, তাই শুধু আবছায়া’টাই দেখা যাচ্ছে। আচ্ছা, এ আমার সিয়াম, স্যরি সিয়াম স্যার নন’তো?! সেদিন ছাদে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি পাশের ছাদে কেউ একজন অন্যদিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে। ছাদের কর্নারে গিয়ে খেয়াল করে দেখতে যাওয়ার সময় বুঝলাম- এ আমার স্যার’ই।শুধু আমার স্যার। সেদিন একদৃষ্টিতে ওনার দিকে আধঘন্টা তাকিয়ে ছিলাম। মনে হচ্ছে ওনি এদিকেই তাকাচ্ছে। ওনার দৃষ্টির আড়াল হওয়ার জন্য বসে পরলাম নিচু হয়ে। ওনি চলে গেলেন। ইদানিং রাত জেগে থাকা’টা আমার নেশা হয়ে গেছে। প্রতি’টা রাত্রে কখনো ছাদে কখনো বা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকি। কখনো কখনো সেখানের চেয়ারেই ঘুমিয়ে পরি। সেদিনও ওনার রুমের জানালায় একটা আবছায়া নিচের দিকে তাকিয়ে ছিল। বুঝতে পারলাম এ আমার স্যার’ই দাঁড়িয়ে আছে। বোধ হয় রাতের শহর দেখছে। ওনার মত আমিও ল্যাম্পপোস্টের আলোয় আলোকিত রাতের শহর’টাকে দেখার জন্য নিচে তাকালাম। কিন্তু বেশীক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারলাম না। এর থেকে যে আমার রাজপুত্র’টা স্যরি শ্রদ্ধেয় স্যার’টা অনেক সুন্দর,সুদর্শন। ওনি রাতের শহর দেখছে, আর আমি ওনাকে দেখছি। দু’চোখ ভরে দেখছি…..
এ দেখার যেন কোনো শেষ নেই।
ছেলেটির ডায়েরী_
হে আল্লাহ! আমার কেন এমন লাগে? কেন?!!! আল্লাহ, তুমি আমায় মনের শান্তি ফিরিয়ে দাও প্লিজ। আর পারছিলাম না। এক বন্ধুর কথা মতো তাহাজ্জত নামাজ পড়া শুরু করলাম। নামাজ শেষে ছাদে গিয়ে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতাম, ওনি যাতে আমার মনের শান্তি ফিরিয়ে দেয়। একটু রহম করে। ছোট বোন’কে দেখে পছন্দ হয়েছিল পাত্রপক্ষের। আসছে পহেলা বৈশাখ বিবাহের দিন ধার্য করা হয়েছে। দেখতে দেখতে ওর বিয়ের দিনটা গড়িয়ে এলো। আমার অফিসের সব কর্মচারী এবং আমার সব ব্যবসায়ী বন্ধু ও স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি লাইফের সব বন্ধু-বান্ধবদের বিয়েতে দাওয়াত করলাম। মায়াও এলো। কিন্তু সেটা আমার দাওয়াতে নয়, বোনের দাওয়াতে। ওকে দাওয়াত দেওয়ার আগেই মায়া’টা কার কাছ থেকে যেন দাওয়াত পেয়ে গেছে। ও বিয়ের তিনদিন আগেই চলে আসছে। আমি তো মনে মনে ভয় পাচ্ছি, ও তিনদিন আগে কেন চলে আসল। পরে জানতে পারি, এই মায়া’টাই আমার একমাত্র বোনের ভার্সিটির একমাত্র প্রিয় বান্ধবী। অবাক হলাম এই ভেবে, বাবা একজন দক্ষ ব্যবসায়ী হয়ে কি করে তাহলে এই পিচ্চি’টাকে কোম্পানিতে নিল। মায়া’টা শুধু নামেই মায়া না, ওর চেহেরায় অদ্ভুত এক মায়া ছিল। ওর নিষ্পাপ মুখপানে তাকালে বুকের ভেতরটা শীতল হয়ে যেত, সেই মুহূর্তের জন্য ভূলে যেতাম ও শ্যামবর্ণের একটা তরুণী। আমার তখন ওকে কেবলি এক মায়া পরি মনে হতো। কি দারুণ এক মায়ায় আবৃত ওর মুখ, আর মুখের মায়ায় যে কেউ পরে যেতে পারে। আমার বাবাও পরে গেল। আমার মা তো ওকে মা বলেই ডাকতো।
আর বাবা?!!!
বাবা ডাকতো ছোট মা বলে।
কেন জানি আমার ওকে মায়া পরি মনে হতো….
পিচ্চি মায়া পরি।
সেদিন ছিল বোন’টার হলুদ সন্ধ্যা।দুপুর থেকেই মেহমান’রা আসা শুরু করছে। আর বিকেল গড়িয়ে যাওয়ার একটু পরেই বরের বাড়ি থেকে ছেলে-মেয়ে চলে আসছে। হলুদ দিয়ে চলে যাওয়ার আগে বরপক্ষের বাড়ি থেকে আসা একটা ছেলে মায়ার সামনে গিয়ে দাঁড়াই। মায়া কিছু বুঝে উঠার আগেই ওর গালে হলুদ ভরিয়ে দেয়। তারপর সবার কি হাসাহাসি। আমার ভিতর’টা হাহাকার করে উঠল। মায়া দৌঁড়ে চলে গেল রুমের ভিতরে। সেদিন রাত্রে সব আমন্ত্রণিত মেহমানে বাড়ি ভরে গিয়েছিল। থাকার জায়গা সংকুলান হবে না ভেবে কর্ণারের রুমের ফ্লোরে থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। উপরে খাটে দুই মামি এবং তাদের দুইটা বাচ্চা, নিচে আমি, ১৬বছরের মামা’তো ভাই, পুচকি মামা’তো বোন, নানু শুইলাম। ছোট্ট বোন’টাকে ঠিক করে শুয়াতে গিয়ে দেখি ওর সাথেই মায়া শুয়ে আছে…..
মেয়েটির ডায়েরী_
অফিস থেকে এসে সবে মাত্র ফ্রেশ হয়ে রুমে ঢুকলাম, তরকারি গরম করে খাব বলে। ঠিক তখনই মনে হলো পিঠে যেন ভাদ্র মাসের তাল পরছে। কিন্তু এখনো তো বৈশাখ মাস আসেনি, ভাদ্র মাসের তাল কোথা থেকে আসলো। পিছনে তাকালাম বিরক্তির দৃষ্টি নিয়ে। হায়রে!
একি?! এ যে সাইমা। পরাণের বান্ধবী সাইমা….?
এসেছো কলিজা?!!!!
-‘ রাখ তোর কলিজা। কত্তগুলো কল দিয়েছি, দেখছনি একটাও? :/
~সেকি কখন কল দিলি?? দাঁড়া দেইখা লই…. ?
-‘ ঐ কু্ত্তি হাসবি না। আমার সাথে কথা বলতে ভালো লাগে না, সেটাই বলতে পারিস। যাহ, আর বললাম না। শত্রু চিরকালের জন্য বিদায় হইলো। এই নে বিদায়ী মানপত্র। আসি। আল্লাহ হাফেজ।
????
সাইমা চলে গেল হাতে বিয়ের কার্ড দিয়ে। জানতাম, ওর বিয়ের কার্ড’ই হবে। না খুলেই বুঝে গিয়েছিলাম পাত্র আবিরের সাথে বিয়ে’টা হচ্ছে, দীর্ঘ ৭বছরের প্রেমের মিলন হতে যাচ্ছে; না চাইতেও ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল।
ভালো থাকুক ওরা,
ভালো থাকুক পৃথিবীর সমস্ত ভালোবাসা’রা…..
ওর আবদার বিয়ের একসপ্তাহ আগেই যাতে ওর বাসায় চলে যায়, কিন্তু তাতো আর সম্ভব না। তাই বিয়ের তিনদিন আগে ভালো আংকেলের আদেশে চলে এলাম ওনাদের বাসায়। ছোট বেলায় বাবা-মা মরে গিয়েছিল, তাই বাবা-মায়ের আদর কি বুঝিনি। সাইমার বাবা-মা মানে বসের বাবা-মায়ের আদর পেয়ে কেন জানি মনে হচ্ছিল বাবা-মা থাকলে মনে হয় এভাবেই আদর করত।
সাইমার হলুদ সন্ধ্যার দিনে বরের বাড়ি থেকে অনেক ছেলে-মেয়ে আসে। এর মধ্যে ৪টা ছেলে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে ছিল। বুঝি না ওরা কালো মেয়ের মধ্যে কি এমনটা দেখেছে। সাইমাকে হলুদ দিয়ে চলে দেওয়ার সময় একটা ছেলে আমার গালে এনে হলুদ ভরিয়ে দেয়। আমি বিরক্ত হয়ে আশেপাশে তাকালাম। সিড়ির কাছে দাঁড়িয়ে ওনি আমার দিকে চেয়ে আছে, মুখটা অমাবস্যার কালো অন্ধকারের মত হয়ে গেছে। দৌঁড়ে চলে গেলাম ওনার থেকে। রুমে গিয়ে বালিশ বুকে জাপটে ধরে ভাবতে লাগলাম, ওনি আমার দিকে এভাবে তাকালো কেন?
তবে কি ওনিও আমায় ভালোবাসে….?
সেদিন সিড়ি থেকে তাড়াহুড়ো দৌঁড়ে নামতে গিয়ে ওনার সাথে ধাক্কা খেলাম, ওনি তখন উপরে উঠছিল। আমি নিচের দিকে হেলে যায়। ওনি ধরে ফেলেন আমায়। কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে বড়দের মত ভাব নিয়ে বললেন,
দেখে চলতে পারো না?!!! যদি পরে যেতে?!!!
আমি বললাম, আপনি তো আছেন। আমার ভরসা, আমার বিশ্বাস। আমি পরে গেলে আপনি ধরবেন যে… তবে কথাটা প্রকাশ্যে নয়, মনে মনে বলছিলাম।
অধিক মেহমানের কারনে সে রাতে জায়গা হচ্ছিল না থাকার। ঠিক করলাম নানু মামিদের সাথে ফ্লোরে থাকব। ফ্লোরের একদম কর্ণারে শুইলাম। হঠাৎ করে চোখের মধ্যে একটা আলো এসে পরল। তাকিয়ে দেখি, আমার ঠিক পাশেই স্যার শুয়ে ফোন টিপছে, কাছেই, খুব কাছেই। মাঝখানে শুধু পিচ্চি বোন’টা দেয়াল হয়ে আছে….
ভিতর’টা কেমন যেন করে উঠল। চোখ’টা বন্ধ করে ফেললাম। মনে হলো আলো’টা নিভে গেছে। কিন্তু আমার হৃদকম্পন একটু একটু করে বাড়ছে। একটা সময় ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া শুরু করি। হঠাৎ’ই চোখের উপর একটা আলো এসে পরে……
ভীরু এবং কাঁপা চোখে তাকালাম। তারপর যা দেখলাম……..

চলবে……

বসের সাথে প্রেম পর্ব- ০৩

0

বসের সাথে প্রেম
পর্ব- ০৩
লেখা- অনামিকা ইসলাম।

ছেলেটির ডায়েরী…..
পরদিন সকাল সকাল অফিসে পৌঁছলাম। কারন, ও যেন লেইট করে এসে বলতে না পারে তাড়াতাড়ি এসেছে। একটা জিনিস আমি আজো বুঝতে পারলাম না, আমার কর্মচারীরা আমায় দেখলে ভয়ে চুপসে যায় কেন? কেন’ই বা আমায় দেখে তাড়াতাড়ি যার যার মতে কাজ করা শুরু করে। যাকগে। যে কথাটি বলছিলাম। সকাল ১০টা বেজে ০২মিনিটে মেয়েটি মানে আমার পি.এ অফিসে ঢুকে। ওর চেম্বারের দিকে যেতে গিয়ে ও মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে পরল। কারন, আমি তখন ওর চেম্বারেই বসে ছিলাম। ওকে দেখে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম। ও মাথা নিচু করে ফেলল। তারপর বলতেছে- আমি স্যরি স্যার। ০১মিনিট ৫৮সেকেন্ড লেইট হয়ে গেল। ওর দিকে একবার তাকিয়ে আমার রুমে চলে গেলাম। যাওয়ার সময় বলে গেলাম আমার রুমে আসতে। আমি রুমে আসার ক্ষানিক বাদেই অনুমতি নিয়ে মাথা নিচু করেই আমার রুমে প্রবেশ করে। আমি ওর সাথে তেমন কোনো কথায় বললাম না। শুধু ওর দিকে ৯টা ফাইল এগিয়ে দিয়ে বললাম, আজকে রাত্রের ভিতর যাতে এগুলো কমপ্লিট করে দেয়। ও জল ছলছল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, স্যার! এত্তগুলো ফাইল একসাথে একরাত্রের ভিতর কমপ্লিট করা সম্ভব না। দয়া করে কাজ’টা আমায় আরেকটু কমিয়ে দিলে ভালো তো। ওর কথা শুনে কাল সারাদিন থেকে মনের ভিতর পুষে রাখা রাগ’টা দ্বিগুন বেড়ে গেল। ড্রয়ার থেকে আরো তিনটা পুরনো ফাইল বের করে ধরিয়ে দিলাম ওর হাতে। ওর অবাক হওয়ার মাত্রাটা যেন বহুগুনে বেড়ে গেল এবার। ফ্যালফ্যাল চোখে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কি যেন বলতে গিয়েও থেমে গেল, ফাইলগুলো নিয়ে চলে গেল আমার রুম থেকে। সেদিন লাঞ্চের সময় সবাই যখন লাঞ্চ করতে ব্যস্ত, মায়া তখন ফাইল নিয়ে ব্যস্ত। এই শীতের মধ্যেও মেয়েটি ঘামছে। খুব হাসি পেলো আমার। বেচারি!!!!???
হঠাৎ করে মায়া আমার রুমের দিকে তাকালো। আমি দরজার কাছ থেকে পর্দার আড়ালে সরে যায়।

মেয়েটির ডায়েরী_
সে রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি। একে তো সারাদিন পরীক্ষা আর জার্নির ভিতর গেছে, তার উপর রাত্রে কিচ্ছু না খেয়েই ঘুমানোর কারনে শরীর’টা একটু দূর্বল হয়ে যায়। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মরিচ বর্তা দিয়ে কয়টা পান্তাভাত খেয়ে নিলাম। এটা রোজকার খাবার। মামি, মামাতো ভাই-বোন’রা খাওয়ার পর যে উচ্ছিষ্ট থাকে সেটাই খেয়ে নেই। কোনো কোনো সময় সেটাও জোটে না কপালে। ওহ,যে কথাটি বলছিলাম। ভোরে রান্না করে বাড়ির যাবতীয় কাজ করে গুছিয়ে রেখে অফিসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। অফিসে যেতে যাতে লেইট না হয় সেজন্য অন্যদিনের চেয়ে আধঘন্টা আগে বেরিয়ে পড়লাম বাসা থেকে। কিন্তু বিধি বাম। গাড়িটা মাঝ রাস্তায় নষ্ট হয়ে যায়। অন্য গাড়ি আসার অপেক্ষা করতে গিয়ে অফিসে পৌঁছতে লেইট হয়ে যায় ২মিনিট। ভয়ে ভয়ে ভিতরে প্রবেশ করি। কথায় আছে, যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই রাত হয়। সেটাই হলো। সামনে তাকিয়ে দেখি বস আমার সামনে আমার চেম্বারে বসে আছে। থমকে দাঁড়ালাম সেখানেই। ভিতর’টা শুকিয়ে আসছিল ভয়ে। ওনি বসা থেকে উঠে আমার দিকেই এগিয়ে আসছে। আমি মাথা নিচু করে স্যরি বললাম। তারপর ওনি অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রুমে চলে গেলেন। বলে গেলেন,আমি যাতে ওনার রুমে যায়। না জানি, আমার জন্য কি অপেক্ষা করছে ভাবতে ভাবতে ওনার রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। ওনি রাগে ভাব নিয়ে আমায় ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি দিল। কোনো কথা-বার্তা নাই সেদিন ওনি আমার সামনে ৯টা ফাইল এগিয়ে দেয়, রাতের ভিতর এগুলোর সব অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করে দিতে হবে। এই ভেবে ভেতর’টা শুকিয়ে গেল, মামির সংসারে আমাকে তো রাত্রেও গাঁধার মত খাটতে হয়, তারপর ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। ওনার এই ফাইলগুলো দেখতে যে বাড়তি সময় দরকার সেটা আমি কই পাব?! এসব ভেবে কান্না চলে আসছিল তাই আমি ফাইলের কাজের ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করলে ওনি আমার হাতে আরো ৩টা ফাইল ধরিয়ে দিলেন। আমি যেন এতক্ষণ সপ্ত আকাশে ছিলাম আর এখন হঠাৎ করেই সেখান থেকে মাটিতে পরে গেলাম। ওনাকে আর কিছু বলার সাহস পেলাম না। চলে গেলাম ওনার রুম থেকে। সিদ্ধান্ত নিলাম অফিসে কাজের ফাঁকে ফাঁকে ফাইলগুলোও একটু একটু দেখে নিব। লাঞ্চের সময় সেদিন আর বাইরে যায় নি খেতে। কি দরকার আছে সময় নষ্ট করার? তারচেয়ে বরং লাঞ্চের সময়’টা কাজে লাগাব। হঠাৎ’ই মনে হলো সামনে থেকে কিছু একটা সরে গেল। স্যারের রুমের দিকে তাকালাম। নাহ, কেউ নেই……

ছেলেটির ডায়েরী_
দেখতে দেখতে তিন’টা বছর চলে গেল। মায়াকে এখন আর আপনি নয়, তুমি’ই সম্বোধন করা হয়। এই তিন’টা বছরে একটু একটু করে আমি মায়াকে চিনলাম। ওর দক্ষতা সম্পর্কে জানলাম। সত্যি, দেখতে পিচ্চি হলেও মেয়েটি সাংঘাতিক বুদ্ধিমতি এবং কাজের। যাক, এতদিনে এটা বিশ্বাস করতে পারলাম বাবার মন্তব্যগুলো সম্পূর্ণ অমূলকও নয়। হঠাৎ করে মেয়েটা কেমন যেন চেঞ্জ হয়ে গেল। আগের মত হাসে না, বেশী কথাও বলে না। সবসময় কেমন যেন গম্ভীর ভাব নিয়ে থাকে। জিজ্ঞেস করলে বলে, সে কিছু না। ব্যাপার’টা আমার কেন যেন ভালো ঠেকছিল না….

মেয়েটির ডায়েরী_
সেদিন স্যারকে নিয়ে বিদেশী ক্লাইন্টদের সাথে কথা বলতে বলতে অনেক রাত হয়ে গেল। সেদিনও স্যার আমায় একা ছাড়তে সাহস পায়নি। ওনার গাড়িতে করে পৌঁছে দিয়ে আসলেন আমার বাসার সামনে। গাড়ি থেকে নেমে চলে যাওয়ার সময় ওনি আমার সাথে মজা করে বলছিলেন, বাব্বাহ! চলে যাচ্ছ? আমায় একটু সাধলে কি চলে যেতাম নাকি?! আমি মৃদ্যু হেসে বললাম, আরেকদিন স্যার। কি করব?! আমার যে হাত পা বাঁধা। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সাহস হয়নি স্যার’কে বাসায় নিয়ে যেতে। সেরাতে বাসায় পৌঁছে দেখি মামির ভাই’টা আমার রুমের পাশের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। ফ্রেশ হয়ে আমি যখন রুমে শুতে যাব, তখন’ই ওনি আমার পিছু পিছু রুমে প্রবেশ করে। ঝাপিয়ে পরে আমার উপর। প্রাণপনে বাঁচার চেষ্টা করেও যখন ওনার সাথে পারছিলাম না, তখন সতর্কতাসরুপ বালিশের কাভারের ভিতর যে চাকু’টা লুকিয়ে রেখেছিলাম, সেটা দিয়ে ওনাকে আঘাত করি। ওনার হাত কেটে রক্তাক্ত হয়ে যায়। ছেড়ে দেয় আমাকে। সে রাতেই মামির হাত থেকে বাঁচার জন্য মামাতো বোনের সহযোগীতায় বাড়ি ছেড়ে পালাই। প্রথম দিন আমার একটা চিনা আন্টির বাসায় আশ্রয় নিলেও সে বাসায় ২দিনের বেশী থাকতে পারলাম না। ঐ বাসার আংকেল’টার বাজে দৃষ্টি সবসময় আমার উপর ছিল। সেদিন ঐ বাসা ছেড়ে চলে আসি। অনেক দেখে শুনে এবং একমাত্র বান্ধবীর সহযোগীতায় একটা ভালো বাসা খুঁজে পায়। আমার কোম্পানির মালিক ভালো আংকেলের বাসার সাথের বাসা’টায় আমি ভাড়াটিয়া থাকতাম। দেখতে দেখতে আরো একটা বছর চলে গেল। একসাথে কাজ করতে, চলতে চলতে কখন যে সিয়াম’কে নিয়ে বুকের গভীরে ভালো লাগার বীজ বপন করে ফেললাম বুঝতে পারিনি। সেই ভালো লাগা’টা কি শুধু’ই ভালো লাগা নাকি অন্য কিছু সেটা দেখার জন্য স্যারের থেকে ছুটি নিলাম তিনদিনের। স্যারের থেকে তিনদিন দুরে থাকতে পারি কি না সিদ্ধান্ত নিলাম। একদিনও থাকতে পারিনি। কেন জানি দুরে থাকার কথা ভাবতে’ই আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল। আর থাকতে পারলাম না। ছুটে গেলাম অফিসে। সেদিন স্যার আমাকে দেখে এতটা অবাক হয়েছিল যা বলার মত না। অবাক হওয়ার’ই কথা। বহু অনুনয়-বিণয় করে তিনদিনের এই ছুটি নিয়েছিলাম আমি। তারপর কেটে গেল আরো একটি বছর। আমার এম.বিএ’টাও কমপ্লিট হলো। পড়াশোনার কোনো চাপ নেই, বাড়তি কোনো টেনশন নেই। সারাদিন শুধু অফিস আর রাত্রে রুমের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ওর রুম’টার দিকে তাকিয়ে থাকা। আজকাল ওনার বাড়ির ছাদেরও প্রেমে পরে গেছি আমি। প্রেমে পরে গেছি ছাদের ফুলগাছগুলোর। প্রেমে পরে গেছি ওনার রুমের জানালার। যা দেখে’ই প্রতি রাত্রে’ই আমার ঘুমুতে যাওয়া। সময় বয়ে যেতে লাগল, আর আমি ওনার ওনার প্রেমে ভেঙে চূড়ে পরলাম। ওনার প্রতি আমি যেন ভিষন রকম দূর্বল হয়ে যাচ্ছিলাম। আজকাল তেমন কথাও বলি না কারো সাথে। ভাবতে ভালো লাগে। ওনাকে নিয়ে ভাবতে…..

ছেলেটির ডায়েরী_
আজকাল রাত্রে ভালো ভাবে ঘুম হয় না। ছাদে গেলে কেন যেন মনে হয় ওপাশের ছাদ থেকে একটা অস্পষ্ট ছায়া আমার দিকে চেয়ে আছে। তাকালে শূন্যতা ছাড়া আর কিছু’ই দেখতে পায় না। মাঝ রাত্রে ঘুম ভেঙে যায়। জানালার পাশে দাড়িয়ে রাতের যান্ত্রিক শহর’টা দেখতে যাব, তখন’ই কেন যেন মনে হয় ওপাশের বিল্ডিংয়ের জানালা দিয়ে কেউ একজন আমার দিকে তাকিয়ে আছে। পরক্ষণে ঐদিকে তাকায়! নাহ! এবারো শূন্যতা ছাড়া কিছু’ই দেখতে পায় না। ভ্রম ভেবে এসব চিন্তা মাথা থেকে তাড়িয়ে দেয়….. সেদিন সারা রাত ধরে বিছানায় ছটফট করে ঘুমুতে পারলাম। কিসের যেন এক শূন্যতা ভেতর’টাকে অস্থির করে তুলছিল। কিন্তু কিসের শূন্যতা? আমার তো সব আছে। মা-বাবা, ছোট বোন, বন্ধু-বান্ধব। সবাই আছে। তারপরও কিসের এত শূন্যতা?!!! ভাবতে পারছিলাম না, আবার শত চেষ্টা করার পর ঘুমও আসছিল না। বিছানা থেকে উঠে বারান্দায় গেলাম। নাহ, কিছুতেই ভালো লাগছে না। রুমে চলে আসলাম। জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। ভেতর’টা এতক্ষণে শীতল পরশে ঠান্ডা হয়ে গেল। আহ! কত শান্তি…!!!
নাহ, এখন আর খারাপ লাগছে না। আচ্ছা, আমার কি হয়েছে? কেন রোজ রোজ এমনটি হয়? কেন আমার ভিতর’টা এমন লাগে। কিসের জন্য এত হাহাকার বুকে। হঠাৎ’ই আমার এক কাব্যিক বন্ধুর কথা মনে পড়ে গেল। যে প্রায়’ই একটা কথায় ওর গার্লফ্রেন্ড’কে বলত, যদি কখনো কোনো রাত্রে ঘুম ভেঙে যায়, হাজার চেষ্টা করেও ঘুমুতে না পারো, ভিতর’টা যদি অজানা এক শূন্যতা’য় ছটফট করে, ভেবে নিও তোমার পৃথিবীর আরেক প্রান্তে তোমার জন্য অন্য একজন রাতজেগে স্বপ্ন বুনছে। যার কারনে তোমার ঘুম আসছে না। আচ্ছা, আমাকে নিয়েও কি কেউ রাতজেগে স্বপ্ন বুনছে?
-‘ ধূর! এসব কি ভাবছি? এ যুগে এমন ভালোবাসা হয় নাকি? ?
নিজের মাথায় নিজেই হাত দিয়ে থাপ্পর দিলাম। হঠাৎ মনে হলো ওপাশের বিল্ডিংটার রুমের জানালার পর্দা’টা নড়ে উঠল। মনে হচ্ছে, কোনো আবছায়া সরে গেছে ওখান থেকে…….
চলবে।

বসের সাথে প্রেম পর্ব- ০২

1

বসের সাথে প্রেম
পর্ব- ০২
লেখা- অনামিকা ইসলাম।

ছেলেটির ডায়েরী_
অফিসের পুরনো হিসেবের খাতা’টা হাতে নিয়ে দেখতে লাগলাম গত তিন বছরের লাভ ক্ষতির ক্ষতিয়ান। কারন, গত তিন বছর পড়াশুনার স্বার্থে আমায় দেশের বাহিরে থাকতে হয়। এর আগে অবশ্য এখানে ৪বছর কাজ করে গেছি, সেটা অন্য বিষয়। পড়াশুনা শেষ করে দ্বিতীয়ববারের মতো আজ’ই প্রথম বাবার ব্যবসায়ে জয়েন করলাম। হঠাৎ করে’ই শুনতে পেলাম দরজার সামনে মেয়েলি কন্ঠে কেউ একজন বলছে, আসতে পারি স্যার? সামনের দিকে না তাকিয়েই বললাম- Yes, coming. তারপর আমি আবারো লাভ- ক্ষতির দেখতে লাগলাম। হঠাৎ করেই মনে হলো কেউ একজন যে রুমে এসেছে সে বাবার সিলেক্ট করা পি.এ মায়া নয়তো। অতি আগ্রহ নিয়ে সামনের দিকে তাকালাম। কিন্তু একি?! এ যে সেই মেয়ে যাকে কিছুক্ষণ আগে অফিস থেকে একটু দুরে ছেড়ে দিয়ে আসছিলাম। ও এখানে কেন এসেছে? আর আমার অফিস’টায় বা চিনল কিভাবে? মেয়েটির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসো দৃষ্টিতে প্রশ্ন করলাম-
‘ আপনি? আপনি এখানে কেন?’ মেয়েটি বেশ কিছুক্ষণ পর স্বাভাবিক ভঙ্গিতে জবাব দিল-
‘ স্যার, আমি মাত্র’ই অফিসে এসেছি। এসে শুনলাম আপনি আমায় ডেকেছেন স্যার। তাই এলাম।’ তার মানে আপনি..?!!!!!
মেয়েটি আমার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে বলল- স্যার, আমি মায়া। আমি ভ্রু-কুচকে বললাম, মানে আপনি আমার পি.এ মায়া?! মেয়েটি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল। মেয়েটির আপাদমস্তক দেখে কেন যেন মনে হলো এই মেয়েটি খুব বেশী হলে ১৬ কি ১৭ বছরের পিচ্চি। এর বেশী নয়। যাকগে। ওকে বললাম, তা মিস/মিসেস মায়া কতদিন ধরে এমন ফাঁকি দেওয়া চলছে কাজে? আই মিন কতদিন ধরে কাজের প্রতি এই অবহেলা চলছে? মেয়েটি কান্না কান্না ভাব নিয়ে বলল- না, স্যার! আমি কখনো লেইট করি না। আজ’ই প্রথম লেইট হলো। প্লিজ স্যার আজকের জন্য মাফ করে দেন। আর কখনো এমন হবে না। আমি বললাম হুম, মাফ করে দিলাম আজকের জন্য’ই। এখন আসতে পারেন। মায়া চলে গেল।

মেয়েটির ডায়েরী_
স্যারের রুমের সামনে গিয়ে বললাম- আসতে পারি স্যার? রুম থেকে কেউ একজন বলল- Yes, coming. কেন জানি কন্ঠস্বর’টা খুব বেশী চেনা চেনা মনে হচ্ছিল। বুকের ভিতর যে কম্পন’টা এতক্ষণ ধরে চলছিল, সেটি মুহূর্তেই বন্ধ হয়ে গেল যখন দেখতে পেলাম বসের চেয়ারে বসে থাকা লোকটি আর কেউ নই। কিছুক্ষণ আগে যে যুবকটি আমায় হেল্প করেছিল এ সেই যুবক। কিন্তু এও কি সম্ভব? হয়তো সম্ভব! অবাক দৃষ্টি নিয়ে বসের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলাম। যদিও ছুটে এসেছিলাম স্যরি বলার জন্য। কিন্তু এখানে যে আমার জন্য এত বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে বুঝতে পারিনি। ২২বছরের জীবনে আজ’ই প্রথম এত বড় ধাক্কা’টা খেলাম। ৫মিনিট পর বস আমার দিকে তাকালেন। কিন্তু একি?! ওনি এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেন? ও বুঝেছি। আমার মত ওনিও টাস্কি খেয়েছে। ??
‘ আপনি? আপনি এখানে কেন? কিভাবে এসেছেন? এমন আরো কতগুলো প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হলো আমার দিকে। একসাথে এতগুলো প্রশ্নের উত্তর দেওয়া তো আর সম্ভব না। তাই ছোট্ট করে উত্তর দিলাম, আমি মায়া। কলিগ মুক্তা আমায় পাঠিয়েছি। ওনি আমার শেষ করার আগেই ভ্রু কিঞ্চিৎ বাঁকা করে প্রশ্ন করতে যাচ্ছিলেন বোধ হয়, আপনি মায়া? তার আগেই আমিও ওনার কাছ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে বললাম, আমি মায়া। আপনার পি.এ মায়া। ওনি আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে মুখটা কেমন যেন করল। তারপর কেন লেইট হলো, এই ফাঁকি কতদিন ধরে চলছে এসব প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন আমার দিকে। ?
আমি ভয়ে চুপসে গেলাম, কারন ওনার হাতে তখন কর্মচারীদের হাজিরা খাতা। বোধ হয় আমার নামের পাশে কলম ঘুরাচ্ছেন। তাই ভয়ে স্যরি বলে কৃতকর্মের জন্য মাফ চেয়ে নিলাম। খাতায় লেইট মার্ক উঠে গেলে আমি শেষ। কিন্তু না। ওনি খাতা’টা রেখে দিলেন। আর কখনো যাতে এমনটি না হয় সেটা বলে আমায় যেতে বললেন। আমি খুশিতে লাফিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম। ?

ছেলেটির ডায়েরী_
মেয়েটিকে দেখে কাজের মনে হলেও কেন যেন ওর বয়স দেখে মনে হলো না ও কাজের যোগ্য। আর তাছাড়া এই চাকরী করার ক্ষেত্রে যে শিক্ষগত যোগ্যতা’টা থাকে সেটা আদৌ যে আছে সেটাই আমার সন্দেহ হচ্ছে। সে যায় হোক! দেখি এই মেয়ে কতটা কাজের। বাবার কথা তো আর পুরোপুরি মিথ্যে হতে পারে না…
সেদিন ১০টা বাজার আগেই অফিসে পৌঁছলাম। আসা মাত্রই সবাই নিজ নিজ আসন থেকে উঠে আমায় গুডমর্নিং ওয়িশ হলো। হঠাৎ—
একি?! এই মেয়ে তো দেখি আজ’ও লেইট করছে। তার মানে এই মেয়ে রোজ রোজ এমন করে। আজ আসুক, ওর চাকরীর বারো’টা বাজাবো। মনে মনে ভাবতে ভাবতে রুমে চলে গেলাম। আসার আগে বলে এলাম, মায়া আসার সাথে সাথেই সাথে আমার রুমে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলো। মায়া আর আসল না। আমি তো রেগে আগুন। বাবা’কে না জানিয়েই মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম, এই মেয়েকে এর উপযুক্ত শাস্তি দিব’ই।

মেয়েটির ডায়েরী__
অফিসের খাটাখাটি শেষে বাসায় এসেও একদন্ড রেস্ট নিতে পারি না। মামির অসহনীয় অত্যাচার দিনকে দিন বাড়তে থাকে। তারউপর আবার কালকে অনার্স ৪র্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা। যদিও অফিসের বড় কর্মকতার থেকে পারমিশন নেওয়ায় আছে পরীক্ষার দিনগুলোতে কাজে যেতে পারব না তবুও কেন যেন ভয় ভয় লাগছিল। মনে হচ্ছিল বসকে বলে আসলেই ভালো হতো। ভোরে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে রান্না-বান্না করে রেডি হয়ে নিলাম পরীক্ষার জন্য। ১০টা থেকে পরীক্ষা। একটু আগেই যেতে হবে। দেখতে দেখতে সময় চলে গেল। পরীক্ষা দিয়ে এসে যেই না একটু বিছানায় গা এলিয়ে শুইলাম, ওমনি মামি এসে রাজ্যের ঝাড়ি ঝেড়ে নিলেন। ছুটে গেলাম রান্না ঘরের দিকে। কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম। কাজ সেরে রান্না ঘর থেকে এসে না খেয়েই ঘুমিয়ে পরলাম। মনে মনে ভয় হচ্ছে, না জানি আগামীকাল অফিসে গিয়ে বসের কি ঝাড়িটায় না খেতে হয়…..

চলবে….

বসের সাথে প্রেম পর্ব- ০১

1

বসের সাথে প্রেম
পর্ব- ০১
লেখা- অনামিকা ইসলাম।

ছেলেটির ডায়েরী__
অঘোরে বৃষ্টি হচ্ছে। বাসা থেকে যখন বের হয় তখন আকাশটা বেশ পরিষ্কার’ই ছিল। হঠাৎ করেই কোথা থেকে যেন একটুকরো মেঘ আকাশে উড়ে। ক্ষানিক বাদেই পুরো আকাশ’টা ঢেকে গেল ঘন কালো মেঘে। একটু পরেই ঝম-ঝমাঝম বৃষ্টি শুরু হলো। সেকি বৃষ্টি! সকাল ৯টায় এই টং দোকানে আশ্রয় নিয়েছি, তখনো বৃষ্টি ছাড়ার কোনো নাম-গন্ধ’ই নেই। তাই বাধ্য হয়েই বৃষ্টির মধ্যেই গাড়িতে উঠে যায়, অফিসে যাওয়ার জন্য। যদিও বাবা বলেছিল, আকাশ মেঘলা থাকলে যেন গাড়ি না চালাই। আমি যখন গাড়ি নিয়ে রাস্তার মাঝ বরাবর চলে এসেছি, ঠিক তখনই গাড়ির গ্লাসে চোখ পরতেই দেখি একটি মেয়ে এই ঘোর বৃষ্টির মধ্যে হাতে ছাতা আর কাধে ব্যাগ নিয়ে একদম ছুটে চলছে সামনের দিকে। জীবনে কখনো নিজে থেকে কোনো মেয়ের সাথে কথা বলিনি, কিন্তু আজ কেন মেয়েটির জন্য বড্ড মায়া হলো। কোনো হেল্প লাগবে কি না জিজ্ঞেস করতে ছুটে গেলাম মেয়েটির দিকে। মেয়েটির থেকে ঠিক ৩,৪হাত দুরেই গাড়িটা থামালাম। মেয়েটি থমকে তাকালো। জিজ্ঞেস করলাম-
– Can I help you,mem?
প্রতিউত্তরে মেয়েটি কিছুই বলল না। কিন্তু মুখ দেখে মনে হচ্ছে খুব তাড়া আছে। আমি আবারো বললাম, কোনো ভাবে কি আমি আপনাকে হেল্প করতে পারি? মেয়েটি মনে হচ্ছে হ্যাঁ-না কি বলবে সেই দ্বিধা সংকোচে ভুগছে আর বারবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। আমি আবারো বলি- ” ম্যাম, সংকোচ না করে বলেই ফেলেন।” মেয়েটি কোনো কথা না বলে গাড়িতে উঠে বসল। জিজ্ঞেস করলে বলে, সামনেই কোথাও যাবে। আমি বললাম ঠিক আছে, আপনার গন্তব্যে এলে আমায় সংকেত দিবেন। মাথা নেড়ে মেয়েটি সম্মতি জানালো।
,
,
মেয়েটির ডায়েরী__
আজ আমাদের অফিসে নতুন এমডি আসছে। নতুন বললে ভুল হবে। প্রাক্তন’টায় এখানে খাটে। কারন, ওনি এর আগেও এখানে ৪বছর কাজ করে গেছেন। সময়টা কম হলেও এই সংক্ষিপ্ত সময়ের ইতিহাসটা ব্যপক। শুনেছি, ওনি নাকি ভিষন রগচটা আর বদমেজাজি স্বভাবের একজন মানুষ ছিলেন। কাজের ক্ষেত্রে ফাঁকি একদম বরদাস্ত করতেন না ওনি। আবার অফিসে পৌঁছাতে একমিনিট লেইট হলে একদিনের সেলারি কেটে নেওয়া হতো। খাতায় লেইট মার্ক যদি তিনদিনের বেশী হতো তাহলে বেতনের এক তৃতীয়াংশ কেটে নেওয়া হতো। তাই আজ ভয়ে প্রতিদিনের চেয়ে একটু আগেই বের হয়ে গেলাম বাসা থেকে, যদি লেইট হয়ে যায় সেই ভয়ে। কে জানত যেই ভয়ে বাসা থেকে তাড়াতাড়ি বের হলাম, সেই ভয়টায় সত্যি হয়ে যাবে। বাসা থেকে বের হওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই আকাশ মেঘলা হয়ে গেল। ঘোর কালো অন্ধকার করে কিছুক্ষণের ভিতর বৃষ্টি শুরু হলো। কিছুক্ষণ একটা দোকানে আশ্রয় নিলেও বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না বসের ভয়ে। দোকান থেকে ছাতা কিনে ছুঁটতে লাগলাম অফিস পানে। কিন্তু এত জোরে বৃষ্টি হচ্ছিও যে হাতের ছাতাটাও বৃষ্টির কাছে হার মেনে যাচ্ছিল। বৃষ্টিতে আধভেঁজা হয়ে আল্লাহ’কে ডাকছি আর ছুটে চলছি। হঠাৎ করেই একটা গাড়ি পিছন থেকে চলে গেল। হঠাৎ করেই গাড়িতে পিছিয়ে আসল। আমি থমকে দাঁড়ালাম। গাড়ির বন্ধ জানালা খুলে গেল। এক সুদর্শন যুবক গাড়ির ভেতর থেকে আমায় বলছে, Can I help you, mem? আমি যেন যুবকটির কোনো কথায় শুনতে পাচ্ছিলাম না। ক্ষণিকের জন্য হারিয়ে গেলাম দুর অজানায়। ঘোর কাটলো ওনার ডাকে। বলছে, আমি কি কোনো ভাবে আপনাকে হেল্প করতে পারি? ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৯টা বেজে ৩৫মিনিট। আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম। কোনো কিছু না ভেবেই উঠে গেলাম গাড়িতে। জীবনের প্রথম এত দামী গাড়িতে কোনো সুদর্শন যুবকের পাশে বসে আছি। বুকের ভিতর বসন্তের কোকিল কুহু স্বরে ডেকে উঠল, লজ্জা পেয়ে গেলাম।আচমকা ওনি বলে উঠলেন, ‘ আপনার গন্তব্যে এলে আমায় সংকেত দিবেন, কেমন?’ আমি লজ্জায় মুখ দিয়ে কিছু বলতে পারিনি, শুধু মাথা নাড়িয়ে আমার ‘হ্যাঁ’ বলাটা জানান দিচ্ছিলাম….
,
,
ছেলেটির ডায়েরী__
দেখতে দেখতে বাবার অফিসের সামনে এসে গেলাম। এখন বাবার কোনো কর্মচারী যদি দেখে আমার পাশে অচেনা মেয়ে, আমি তাকে নিয়ে অফিসে না গিয়ে, সামনে কোথাও চলে গেছি, তাহলে পরিনতি খারাপ হবে। ছয়কে নয় বানিয়ে বাবার কান ভারি করে দিবে। সেই ভয়ে মেয়েটিকে নামিয়ে দিলাম অফিসের ঠিক একটু সামনেই। মেয়েটি নেমে আমার দিকে তাকিয়ে গিয়ে কৃতজ্ঞচিত্রে একটা হাসি দিয়ে চলে গেল। আমি অফিসে প্রবেশ করলাম। সবাই নিজ নিজ আসন থেকে উঠে আমায় গুডমর্নিং জানালো। হঠাৎ’ই চোখ যায় একটা চেম্বারের দিকে, যেটা এখনো শূন্য পরে আছে। খেয়াল করে দেখলাম আসনটা পি.এর। এ নিশ্চয় বাবার পছন্দে সিলেক্ট করা পি.এ মায়ার আসন! বাবার মুখে মেয়েটির অনেক গুনগান শুনেছি, এই তার লক্ষণ? রাগে গজগজ করতে করতে আমার রুমে চলে গেলাম, যাওয়ার আগে বলে গেলাম পি.এ আসার সাথে সাথেই যাতে আমার রুমে পাঠানো হয়….
,
,
মেয়েটির ডায়েরী_
হঠাৎ’ই গাড়িটা এক জায়গায় এসে থেমে গেল। যুবক’টা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, বৃষ্টি থেমে গেছে, আমারও তাড়া আছে। আপনি বরং এখানেই নেমে যান। ট্যাংক্সি কিংবা রিক্সা করে চলে যান আপনার গন্তব্যে। গাড়ি থেকে নেমে যুবকটির দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞসরুপ একটা হাসি দিলাম। না, না। আমার রিক্সা কিংবা ট্যাংক্সি কোনো’টার প্রয়োজন হয়নি। কারন যুবকটি আমায় অফিস থেকে এমন এক জায়গায় নামিয়ে ছিল যেখান থেকে আমার অফিস মাত্র ২মিনিটের ছিল। পায়ে হেঁটেই পৌঁছে গেলাম অফিসে। হঠাৎ’ই কলিগ মুক্তা ডেকে বলল- মায়া ম্যাডাম, আপনাকে বস ডেকেছে। তাড়াতাড়ি যান, নইলে নামের শেষে লেইট মার্ক বসিয়ে দিবে। কথাটা শুনেই হৃদকম্পন বেড়ে গেল। ছুটে চললাম ওনার রুমের দিকে। দরজার কাছে গিয়ে বললাম__
” আসতে পারি স্যার?”

চলবে….

কাছে_আসার_গল্প

0

কাছে_আসার_গল্প

অনামিকা_ইসলাম_অন্তরা

আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু শুভ্র। সেই স্কুল লাইফ থেকেই ওর সাথে আমার পরিচয়। তারপর কলেজ। কলেজ জীবন একসাথে কাটানোর পর ভর্তি হলাম ভার্সিটিতে। সেখানেও একসাথে। ওর প্রতি আগে থেকেই দুর্বল ছিলাম আমি। ভার্সিটিতে এসে একটু বেশীই ঝুঁকে পড়ি। সেখানে ক্লাসের চেয়ে আড্ডায় হতো বেশী। সেই আড্ডার মধ্যমণি ছিল ‘ও’। ভার্সিটির সবচেয়ে সুদর্শন এবং মেধাবী ছেলে ছিল শুভ্র। মেয়েদের একটা বিশাল লাইন সবসময় ওর পিছনে লেগেই লাগতো। আমি দুর থেকে দাঁড়িয়ে সে দৃশ্য দেখতাম। মেয়েরা হাসাহাসি করে ওর উপর ঢলে পড়ত। সহ্য হতো না আমার। আবার মুখ ফুটে বলতেও পারতাম না। কেননা, ওর সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা হলেও আন্তরিকতা হয়নি তখনো।

আমাদের ডিপার্টমেন্টে ছেলেদের লিডার ছিল ‘ও’ আর মেয়েদের ছিলাম আমি। স্যার একদিন আমাদের দুই লিডারের নাম্বার ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে দিলেন বাকি ছেলে-মেয়েদের যোগাযোগ করার সুবিধার্থে। আমি সে সুযোগটা কাজে লাগালাম। ওর ফোন নাম্বারটা আমি টুকে নিলাম নোট খাতায়। গ্রীষ্মের ছুটি দিয়েছিল। পড়ন্ত এক বিকেলে আমি ওর নাম্বারে কল দেই। শুরুটা সেখান থেকেই। তরপর খুব ভালো একটা বন্ধুত্ব হয় আমাদের।

ভার্সিটি লাইফ শেষ হয়। একেকজন একেকদিকে চলে যায়। কিন্তু আমাদের বন্ধন অটুট থাকে। বছর দু’য়েক আগে ও মহিলা কলেজে বাংলার প্রভাষক হিসেবে জয়েন করে। ওর বিয়ের জন্য পাত্রী দেখার শুরুটা হয় তখন থেকেই। টানা দু’বছর ধরে অসংখ্য পাত্রী দেখেছে ওর ফ্যামিলি মেম্বার’রা। অবশেষে কিছুদিন আগে ওরা ওদের মনের মতো পাত্রীর সন্ধান পায়। খুব তাড়াহুড়োর মধ্য দিয়েই দু’পক্ষের বোঝাপড়া হয়ে যায়। রাত পোহালেই ওদের আংটিবদল হবে। অনেক বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আমার পরিবারের সবার’ই অনুষ্ঠানে থাকা বাধ্যতামূলক জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আব্বা মা অবশ্য বিকেলেই চলে গেছে ঐ বাড়িতে। ঘন্টা খানেক আগে বড় আপু অফিস থেকে আসে। ওরাও চলে গেছে। আমাকে সেধেছিল। যাইনি। নিজে থেকেই বাড়ির প্রহরী হিসেবে রয়ে গেলাম।

রাত্রি ১১টা বেজে ১৭মিনিট__
বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করেছি অনেকক্ষণ। কিন্তু নিদ্রাদেবী কিছুতেই ধরা দিলো না। আর পারছিলাম না। ডায়েরী হাতে নিয়ে আবারো বসলাম। কি লিখা যায় ভাবতেই মনে হলো কবিতাকে ছুটি দিয়েছি বেশ ক’বছর হলো। আজ বরং একটা কবিতা’য় লিখা যাক। মুখ দিয়ে কলমের ঢাকনা খুলে লিখতে শুরু করলাম-

“তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি ভেবে মন খারাপের দোলনায় দোল খেয়েছি সকাল থেকে সন্ধ্যা। পড়ার টেবিলে অবহেলায় খুলে রাখা বইয়ের কালো অক্ষর ঝাপসা হয়েছে কতবার!

মাথার নিচে রাখা বালিশ ভিঁজে গেছে নিরব কান্নায়…

তারপর আবার একদিন মন দোয়ারে দাঁড়িয়ে তুমি! ঠোঁটের কোণে হাসি লুকিয়ে জানতে চাইলাম– “আবার এসেছো?”

তুমি অবাক হয়ে বললে–
“কেন, আর কোথায় বা যাবো…!”

লিখা শেষে কবিতাটা পড়ে নিলাম একবার। নিজের কবিতা পড়ে নিজেরই হাসি পাচ্ছে ভিষন। ‘এও কি সম্ভব? হারানো মানুষরা আদৌ কি ফিরে আসে?’
ভাবছিলাম আরো অনেক কিছুই। ফোনটা বেজে উঠল তখনি। ডায়েরীটা বন্ধ করে ফোন রিসিভ করলাম-
” হ্যাঁ, বল…”
– নতুন নাম্বার দিয়ে ফোন করেছি। তবুও চিনে গেছিস?(শুভ্র)
— তুই ছাড়া যে কেউ নেই আমার। তাইতো চিনে নিতে অসুবিধে হয় না…!
– কি বললি?
— বলছি কি করছিস? এত রাত্রে কল কেন দিলি? ঘুমাবি কখন?
– আরে ঘুমিয়েই ছিলাম। তারপর কি যে এক বাজে স্বপ্ন দেখছি। হুট করে জেগে গেছি। ভাবলাম, তোর কিছু হলো না তো!
— বোকা ছেলে! স্বপ্ন তো স্বপ্নই। এর জন্য এত টেনশনের কি আছে?
– এই! সত্যি করে বল। তুই ভালো আছিস তো?
— হ্যাঁরে, হ্যাঁ। আমি অনেক ভালো আছি।
– কিছু লুকাচ্ছিস না তো?
— আরে গাধা না। তুই বৃথা টেনশন করছিস।
– আচ্ছা, রাতে খেয়েছিস?
— শুভ্র অনেক রাত হয়েছে। তুই ঘুমা।
– তুই ঘুমাইবি না?
— হ্যাঁ, আমিও ঘুমাবো। তুই এখন ঘুমা প্লিজ…
– আচ্ছা, রাখছি। বাই।

কল কেটে দেয় শুভ্র। চোখের জল বাঁধ মানছিল না। হু, হু করে কেঁদে দিলাম। ভিতরে যন্ত্রণা হচ্ছে প্রচুর। মনে হচ্ছে কেউ যেন হাতুড়ি দিয়ে দুরমুশ পিটাচ্ছে। লাইটটা অফ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু ঘুম চোখে ধরা দিল না। অন্ধকারে বিছানায় উঠে বসলাম। হাঁটুতে ভর দিয়ে বসে আছি। চোখের জলে হাঁটু ভিঁজে একাকার হয়ে গেছে। ফোনটা বেজে উঠল আবারো। শুভ্র ফোন দিয়েছে। রিসিভ করে কানে ধরলাম-
” কি হলো? ফোন কেন ধরছিস না? সেই কখন থেকে ফোন দিচ্ছি?”

কান্না লুকিয়ে কন্ঠ’টা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলামঃ-
– ইয়ে, মানে, আসলে…
— আসলে কি?
– ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।
— ওহ, আচ্ছা।
– ঘুমাসনি এখনো?
— তোদের বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছি।
– কিহ?
— হ্যাঁ। আসবি?

ফোন কানে দ্রুত বারান্দায় গেলাম। নিচে তাকাতেই দেখলাম দাঁড়িয়ে আছে ‘ও’। ‘তুই দাঁড়া, আমি আসছি’ বলেই দৌঁড় দিয়ে নিচে নামলাম।
– এত রাত্রে না আসলেও পারতি…!
— এখানে দাঁড় করিয়ে রাখবি?
– আয়। ভেতরে আয়….

ও গেইটের ভেতরে ঢুকলে তালা না লাগিয়েই দোতলায় রুমের দিকে এগুতে লাগলাম। ও আমার পিছু পিছু হাঁটছে-
” বস….”
– তোদের বাড়িটা অনেক সুন্দর।
— Tnq u…
– আচ্ছা, তুই ভালো আছিস তো?
— শুভ্র, এই পানিটুকু তুই খেয়ে নে।
– ………..
— এবার বল। কি এমন স্বপ্ন দেখছিস যার জন্য তোকে এখানে ছুটে আসতে হলো?
– তুই ভালো আছিস তো…
— বার বার একই প্রশ্ন করবি না তো…!
– আমি তোকে ছুঁয়ে দেখতে পারি?
— এসব কি পাগলামী হচ্ছে শুভ্র?
– আমি না খুব বাজে স্বপ্ন দেখছি।
— কি স্বপ্ন? বল শুনি…
– বলবো। তার আগে আমায় ছুঁয়ে কথা দে আমার একটা প্রশ্নের সত্যি উত্তর দিবি।
— কথা দিলাম। এই আমি তোকে ছুঁয়ে কথা দিলাম তোর সমস্ত প্রশ্নের ঠিকঠাক এবং সত্যি উত্তর দেবো।
– ভালোবাসিস কাউকে?

ঘাবড়ে গেলাম আমি। বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম। ও বসা থেকেই জানায়-
” আমায় ছুঁয়ে কথা দিয়েছিস কিন্তু….”
– হু,
— এবার বল। ভালোবাসিস কাউকে?
– হু, বাসতাম।
— বাসতিস? এখন বাসিস না?
– কাল ও অন্যজনের হয়ে যাবে।
— কিহ? কিসব বলছিস তুই? কে সেই ছেলে? বাড়ি কোথায়?
– আমাদের বাসার সবাই ও বাড়িতেই আছে। দাওয়াত দিয়েছে কি না…
— এই মেয়ে! পাগল হয়ে গেলি নাকি তুই?
– পাগলই বটে। ওর প্রেমে পাগল।
— ওকে, ফাইন। এটা বল, নাম কি ছেলের?
– শুভ্র….

শুভ্র ফিরে তাকায় আমার দিকে। আমার জলে ভেঁজা চোখ দুটি যেন ওকে কিছু বলছে। ও গভীর ধ্যানে আমার সেই চোখের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টির ভাষা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছে। মিনিট তিনেক পর উঠে দাঁড়ায়। প্রতিধ্বনিত হয় একটি ছোট্ট শব্দ- ” আসি…..”

ও চলে যায়। কান্নায় ভেঙে পড়ি আমি। টেবিলে মাথা রেখে ছোট বাচ্চাদের মতো হাউমাউ করে কাঁদছি আমি…

এদিকে শুভ্র গেইট থেকে বাহির হতেই একটি যুবক ছুটে আসে ওর কাছে। হাপাতে হাপাতে লোকটি শুভ্রর সাহায্য চায়। তারপরের কথোপকথনঃ-
– কি সমস্যা ভাইয়া?
— ভাই প্লিজ আমাকে কয়টা টাকা দিন।
– কেন? আর কিসের টাকা দেবো আমি আপনাকে?
— আমার গার্লফ্রেন্ড বিষ খেয়ে মারা গেছে। পুলিশ আমাকে খুঁজছে। আমার এখন পালাতে হবে?
– কিকিকি বলছেন এসব? আপনি খুনি?
— আমি খুন করিনি। ওর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। আজ বিকেলে আমায় দেখা করার জন্য ডেকেছিল। আমি দেখা করতে গেলে ওকে বুঝাই- ‘দেখো লিপি! যা হওয়ার তাতো হয়ে গেছে। বাবা মা যেহেতু বিয়ে ঠিক করেছেন। সেহেতু তুমি বিয়েটা করে নাও। আর তাছাড়া আমি বেকার। তোমাকে বিয়ে করে খাওয়াবো কি…?’
– তারপর?
— অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে চলে আসি আমি।
– তখনই ও বিষ খায়।
— কেউ দেখেনি/টের পায়নি?
– নাহ। ও ঐ স্থানে বসে বিষ খেয়েছে, যে নির্জন স্থানে আমাদের শেষ কথা হয়।
— মারা গেছে?
– হ্যাঁ…
— নিন। (২০০০টাকা বাড়িয়ে দিয়ে)
– অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাইয়া।
— সাবধানে থাকবেন।
– আল-বিদা।

দেখতে দেখতে লোকটি দুরে কোথাও মিলিয়ে যায়। পিছু হটে শুভ্র। তালা’টা লাগানো হয়নি, গেইট’টা তখনো খুলা ছিল। দু’তলার ১ম রুম অতিক্রম করে ভিতর রুমের সামনে এসে দাঁড়ায় শুভ্র। দরজার সামনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে মাথা তুলে তাকালাম আমি। ভেঁজা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে শুভ্র। ঠোঁটের কোণের হাসি লুকিয়ে জানতে চাইলাম-
” আবার এসেছিস?”

রুমের ভেতরে চলে আসলো ও। টেবিল ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম আমি। পরম নিবিড়ে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিল ও আমাকে। তারপর অনেকটা কবিতার মতই অবাক করা কন্ঠে বলল-
” কেন, আর কোথায় বা যাবো…!”

  1. #কাছে_আসার_গল্প
    #অনামিকা_ইসলাম_অন্তরা

এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে

0

ছেলেঃ হাই!!!✋?

মেয়ে:কে আপনি???

চিনতে পারছো না??
?

না স্যরি!!!চিনলাম না!!!

যাকে মন থেকে ভুলে গেছো তাকে কি করেই বা চিনবে!!
?

কে বলুন তো আপনি?

কলেজের ফেয়ারওয়েলের দিন যাকে অপমান করে তাড়িয়ে দিলে তাকে এত তাড়াতাড়ি ভুলেও গেলে???

তুমি কি রাহুল???
?

বাহ্ তাহলে এখনও মনে আছে দেখছি!!???

সেদিনের জন্য আমাকে মাফ করো রাহুল।।
????

আমি গরিব বলে আমাদের এত ভালো বন্ধুত্ব ভেঙে,,, আমাকে সেদিন কত অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছিলে।।
মনে আছে????

সব মনে আছে রাহুল,,,
I am very sorry রাহুল।।।
????

যাই হোক তুমি এখন নিশ্চয়ই খুব ভালো আছো।???
তোমার বর আর তুমি নিশ্চয়ই দারুন মজা করছো???????

???

কি হলো বলো।।।

আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে রাহুল!!!??????

কি???কিন্তু কেন???

প্রথমে আমরা দুজনেই আমেরিকায় খুব ভালো ছিলাম।।।
হঠাৎ আমার বর খুব রাত করে বাড়ি আসতে শুরু করলো,,,আর এই নিয়ে আমাকে মিথ্যে বলতেও শুরু করলো।।।

তারপর??????

আমার সন্দেহ বাড়তে লাগলো!!!
এরপরে একদিন একটা মেয়ের সাথে দেখলাম,,,যাকে নিয়ে ও সবসময় আমাকে মিথ্যা বলতো।।
এরপর আমি ওকে ডিভোর্স দিয়ে ইন্ডিয়া তে চলে আসি।।

????
আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই কালইইই।।।

এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে রাহুল।।।
????

দেরি হয়ে গেছে মানে???
কি হয়েছে???
???

কিছু না।।।
ভালো থেকো।।
????

বলো কি হয়েছে তোমার।।????

আমার ব্রেন টিউমার হয়েছে রাহুল।।।
???

কি???
তুমি পাগল হয়ে গেছো!!
আমি বিশ্বাস করি না।।??

এটাই সত্যি রাহুল।।

তোমাকে কে বলেছে এটাই সত্যি?????

আমি গত বছর ডাক্তার দেখানোর পর আমার সি.টি.স্ক্যান রিপোর্ট এ ব্রেন টিউমার ধরা পরেছে!!!?????

?

তাই এত মায়া বাড়িয়ে কি হবে!!!
আমি আর বেশিদিন বাঁচবো না রাহুল!!!?????

এসব কিছুই হবেনা,,,
আমি কিছু হতেই দেবো না।।।।
আমি তোমাকে অনেক বড়ো বড়ো ডাক্তার দেখাবো।।

???
এসব বাদ দাও,,,আমার শেষ ইচ্ছে তুমি আমাকে মাফ করো রাহুল,সেদিন খুব ভুল করেছি।।।

জানো আজও তোমার নাম্বার আমার কাছে “সুইটু” নামে সেভ্ করা আছে।।
আজও ভালোবাসি তোমাকে।।।
??

আমি আজও তোমার সুইটু???
????
কিন্তু আমার তো সময় খুব কম,,,তোমার জীবনে আমি আর থাকতে পারবো না।।

???চুপ।।
???
তুমি আমার কাছেই থাকবে,,কালই আসছি আমি।।

যদি আমি না বাঁচি???

আমার মনে সবসময় বাঁচবে তুমি।।
বুঝেছো???

কিন্তু…

???
কোনো কিন্তু না,,,কালই আসবো আমি।।
তোমাকে সুস্থ করবোই।।

তারপর???

তুমি রাজি থাকলে আমরা বিয়ে করে একসাথে থাকবো।।।☹☹☹☹☹☹

আমি থাকবো তোমার কাছে,,,,রাজি আমি তোমার কাছে থাকতে।।।
????

আজ রাত পেরোলেই আমি তোমার কাছে আসছি,,, আমার সুইটু।।।
????

ওয়েট করছি!!!আসো তাড়াতাড়ি,,,????

আই…..

বলো।আই লাভ ইউ…?????

লাভ ইউ টু সুইটু।।।??????????

??????
কাল তাড়াতাড়ি এসো!!!

হুম!!!
বাই।।।???

 

রোমান্টিক কথোপকথন

2

রোমান্টিক কথোপকথন

ছেলে:হাই✋

মেয়ে:হুম্!!বল।

কি করছিস রে?

কিছুই না!!পড়ছি!!!

আজকাল অনলাইন থেকে পড়িস নাকি?
???

???
পড়ার সাথে সাথে অল্প চ্যাটিংও করছি।।
তুই কি করছিস??

আমি আমার Gf এর সাথে চ্যাটিং করছি।।।???

আমার সাথে কথা বলছিস জানলে তোর gf আবার রাগ করবে না তো???

আরে না!না!
??

এই শোন!?

কি??

আগে কখনো বলিস নি তো তোর গার্লফ্রেন্ড আছে।।
???

তুইও তো আগে জানতে চাসনি!!!

তাহলে এখন বল!
এখন জানতে চাইছি সেই ভাগ্যবতী মেয়েটি কে??

সে হলো এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে।।☺☺☺
যে আমার মন কেড়ে নিয়েছে??

সে তো বুঝতেই পারছি।।।
কিন্তু যে তোকে এতটা পাগল করেছে তার তো কোনো নাম আছে নিশ্চয়ই!!!

হুম্!তা আছে!!
তুই তাকে চিনিস তো!!???

???
আমি চিনি??
কে বলতো?

তুই সত্যি জানতে চাস???

আরে!হ্যাঁ।।
?

তাহলে তোকে একটা কাজ দিচ্ছি!!সেটা করলে নিজেই বুঝতে পারবি মেয়েটা
কে???????

পারলাম না!!
আমি পড়তে বসবো!!তোর Gf এর নাম তাহলে পরেই বলিস!!
বাঈ!!✋?

শোন না!!
তুই আমার বন্ধু তো??

হুম্!তো???

তাহলে মেয়েটাকে দেখে বল আমার সাথে মানিয়েছে নাকি???

বল কি কাজ করতে হবে!!???

কালকে তোকে ইংরাজি খাতা দিয়ে আসার সময়, তোর ঘরের ড্রেসিং টেবিল এর_বাঁ দিকের ড্রয়ার এ একটা গিফট্ বাক্স রেখে এসছিলাম।।?
একটু সামনে গিয়ে দেখ!!!

দাঁড়া দেখছি।।।

দেখেছিস্??

এখানে কিছুই নেই তো।।
?

কে বললো??
আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখ।।

কি দেখবো??

আয়নায় যাকে দেখছিস্!!সেই আমার Gf,,,
কিন্তু আমি ওর Bf কিনা সেটাই জানিনা।।

পাগল হয়ে গেছিস তুই।।।
????

এই অপ্সরাই তো আমাকে পাগল করেছে,,,??????

তুই আর কত মেয়েকে এই এক কথা বলেছিস বলতো??

তুই আমাকে এতটাই খারাপ ভাবিস নাকি???
এত বছর পর আমাকে এরকম চিনলি তুই???
??????

এই স্যরি রে।।

তুই আমাকে এরকম বলতে পারলি??????

স্যরি বললাম তো!!
কিন্তু তুই যে বলিস সব মেয়েই স্পেশাল!!
তাহলে আমি তাদের মধ্যে আলাদা কেন???

হুম্!!সব মেয়ে স্পেশাল,সবাই সুন্দরী,,,কিন্তু আমার একটাই ❤,,,
আর এই একটা মন একজনই নিতে পেরেছে।।
বুঝলি??

?????
কিন্তু !এতদিন ধরে আমার সাথে কথা বলিস।
তাহলে আগে বলিস নি কেন এসব???

ভয় লাগতো!!
যদি এসব শুনে তুই বন্ধুত্ব না রাখিস!!
যদি কথা না বলিস!!??

এখন ভয় লাগছে না??
কি করে বললি এখন???

এমনিতে এটাই স্কুলের শেষ বছর!!
এরপর আর দেখা হবে কিনা!কথা হবে কিনা ঠিক নেই……তাই বলে ফেললাম।।।

বুঝলাম!!
Ok!!Bye!!!
পড়তে বসবো এবার,,কাল কথা বলবো।।✍✋?✍

কিছু তো বলে যা।।।??????

কাল স্কুলে যাওয়ার সময় তোর Gf কে নিতে আসিস আমাদের বাড়িতে!!!
????

সত্যি??????

আচ্ছা আমি অনেক সময় থেকে অনলাইন ,,,,এবার না পড়তে বসলে আম্মু খুব বকবে!!!

আচ্ছা যা পড়তে বস্।।

Ok!Bye

আই লাভ ইউ আমার Gf???
???

আই লাভ ইউ মোর
????
?????
Bye!
আমার Bf
???