Tuesday, June 17, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2454



বসের সাথে প্রেম পর্ব-১৫

0

বসের সাথে প্রেম
পর্ব-১৫

লেখা- অনামিকা ইসলাম।

মায়া ভেতর থেকে রুমের দরজায় হেলায় দিয়ে কান্না করছে আর সিয়াম দরজার ওপাশেই দাঁড়িয়ে মায়াকে ডাকছে। কতবার করে বলতেছে দরজা’টা খুলতে মায়া কিছুতেই দরজা খুলছে না। মায়া দরজা খুলে ১ঘন্টা পর যখন দরজার ওপাশ থেকে আর কোনো আওয়াজ না আসে। দরজা খুলে সে আর সিয়ামকে দেখতে পায়নি। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মায়া ওর রুমে চলে যায় আবার…
রাতে মায়া এবং সিয়াম কেউ কারো সাথে একটা কথাও বলেনি। সিয়াম অবশ্য অনেক বার কথা বলার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু মায়া কথা বলার কোনো সুযোগ’ই দেইনি। সে রাতে মায়া একটুও ঘুমাতে পারে নি। সারা রাত কেঁদে কেঁদে রাতটা পার করে দেয় মায়া। ও জানে, ও সিয়ামকে কখনো’ই পাবে না, পাওয়ার আশাও করবে না। ও চাই না সিয়াম ওর হোক। ও চাই সিয়াম ওর বাবা-মায়ের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করোক, ওনাদের ইচ্ছের মূল্য দিক, বিশ্বাসের মূল্য দিক। আর তাই সিয়ামকে এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিল। যতকিছুই হোক সিয়ামকে এড়িয়ে যেতে’ই হবে, ওকে রাজি করাতেই হবে…

পরদিন সকাল বেলা সিয়াম অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে, তখন’ই সিয়ামের বাবা সিয়ামের রুমে প্রবেশ করে কাশি দিয়ে।
সিয়াম- বাবা! দাঁড়িয়ে কেন আসো…
*বাবা- (হালকা কাশি)
★সিয়াম- বাবা কিছু বলবে?
*বাবা- তুই কি অফিসে যাচ্ছিস নাকি???!!!
★সিয়াম- জি, বাবা। অফিসে যাচ্ছি….
*বাবা- আজকে অফিসে যাওয়ার দরকার নেই। কি করতে হবে, না করতে হবে তোর ম্যানেজার আংকেলকে বুঝিয়ে দে, ওনি আজকের দিন’টা সব দেখাশুনা করবে…
★সিয়াম- কিন্তু বাবা….
*বাবা- কোনো কিন্তু নাই। তুই ওনাকে ফোন দিয়ে ডেকে সবটা বুঝিয়ে দে, আজ তোর অফিসে যাওয়ার দরকার নাই।
★সিয়াম- আচ্ছা, বাবা…
*বাবা- হুম, আর শুন…
আজ আশরাফ চৌধূরী ও তার স্ত্রী আসছে। তুই বাসাতেই থাকিস…
আর ওদের একমাত্র মেয়ে আরশিও আসছে। আমি চাই ঐ মেয়েকে এই বাড়ির বউ করে আনতে। আশা করি, এ ব্যপারে তোর কোনো আপত্তি থাকবে না…
★সিয়াম- বাবা! আমার একটা কথা আছে…
*বাবা- তোর যা বলার পরে বলিস, এখন আমি আসি। ওরা আসলে যাতে তোকে খুঁজতে না হয়…

চলে গেল সিয়ামের বাবা।
সিয়ামের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরল।একে তো মায়াকে কাছে পাচ্ছে না, তারউপর আবার বাসায় মেহমান। ওরা আসলে মেয়েটির কি অবস্থা হবে,ভাবতেই সিয়াম ঘেমে একাকার। না, না। এ হতে পারে না। আমাকে যে করেই হোক আজকে মায়ার সাথে কথা বলতেই হবে। আমি শুধু ওকে চাই, আর কাউকে না। বিয়ে করলে আমি ওকেই করব। আর যদি তার জন্য বাবার এই বিশাল সম্পত্তি থেকে আমায় বঞ্চিত করা হয়, তবুও করব। ওকে ছাড়া আমি কাউকেই বিয়ে করতে পারব না।
কিন্তু মায়া’কে পাবো কোথায়? ও যে মেহমান আসার কথা শুনে সকাল থেকেই মায়ের পাশে ঘুরঘুর করছে। এটা করছে, সেটা করছে। কখনো বা বুয়ার সাথে রান্নায় হেল্প করছে। কি করব আমি?!!!
কি করা যায় ভাবতে ভাবতে মাথা ব্যথা শুরু হয়ছে…
মাথায় হাত দিয়ে শুয়ে পরলাম বিছানায়। ক্ষাণিক বাদে’ই রোকসানা ডাক দিল। সাহেব, উঠেন…
শুয়া থেকে উঠে বসে ধমক দিয়ে__
তোকে না কতবার বলছি, আমায় সাহেব ডাকবি না!
আমায় ভাইয়া ডাকবি, ভাইয়া….
তুই আমার ছোট বোন সাইমার মত’ই আরেকটা বোন….
স্যরি, ভাইয়া আর এমন হবেনা।
★হুম, তাই যেন হয়….
~আচ্ছা, ভাইয়া আপনি আসেন, আমি গেলাম…
*এই শোন?!!!
~জি, ভাইয়া….
* মায়া কইরে?!!!
~ মায়া আপু ঘুমুচ্ছে….
*(মনে মনে বলছে সিয়াম, এই অবেলায় ঘুমুচ্ছে?!!!)
ওহ, আচ্ছা। যা তুই…..
~ভাইয়া, একটা কথা বলব?!!!
*বল….
~’ মায়া আপমণিটা না খুব ভালো একটা মেয়ে…
খুব ভালো…
ওর মত মেয়ে’ই হয় না…
প্লিজ, ভাইয়া ওকে আর কাঁদাবেন না….
*রোকসানা…
তুই,
আমার,,
মায়ার….
~সব জানি ভাইয়া…
আপনাদের প্রেমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবটা জানি ভাইয়া….
মায়া’পু এ বাসায় আসার আগে যখন ঐ বাসায় থাকত, তখন ও আমার থেকে আপনার খবর নিত…
ওর কখনো ছাদে, কখনো বা জানালায় লুকিয়ে আপনাকে দেখা পুরোটা’ই আমি খেয়াল করতাম। তখন থেকেই বুঝতে পারি, ও আপনাকে কতটা ভালোবাসে। আর তাছাড়া মায়া আপুমনি এ বাড়িতে আসার পর আপনাদের চোখাচোখি দেখেও সম্পূর্ণ বুঝে গেছি। জানেন, কাল থেকে কেঁদে কেঁদে চোখের কি অবস্থা করেছে? আজও কেঁদে কেঁদে’ই ঘুমিয়ে পরেছে…. সকালে ব্রেকফাস্টও করেনি….
এত করে বললাম তবুও কিছুই খাওয়াতে পারিনি…..

রোকসানার কথা শুনে সিয়ামের চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরছে। রোকসানা’কে কোনো রকম নিচে যা বললাম। তার আগেই নিচ থেকে ডাক পরল। রোকসানা দৌঁড়ে নিচে চলে গেল।
-নাহ, আজ আর চুপ করে থাকব না। আজ বাবা’কে সবটা খুলে বলব…
বাবাকে না বলতে পারি লিজাকে বলব সবটা…
আশা করি, ও আমার কষ্ট’টা বুঝবে। হাজার হোক শৈশবের খেলার সাথি বলে কথা…
চোখের জল মুছে নিচে গেলাম। আংকেল-আন্টিকে সালাম দিয়ে, সোফায় গিয়ে বসলাম।
একি?!!!
লিজা কোথায়?!!!
ও আসে নি তাহলে?!!!
এখন আমি কিভাবে সমস্যার সমাধান করব?
এদিকে বাবা-মা’ও ওনাদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিতেছে। আলোচনার এক পর্যায়ে বাবা আংকেলকে বললেন_
” তো এই কথায় রইল…
লিজা ভ্রমন থেকে আসলে ওকে নিয়ে এ বাড়িতে আসবেন। ওরা দু’জন দু’জনকে আগে ভালো ভাবে বুঝুক, চিনোক….”
আংকেল হেসে হেসে সে কথার সম্মতি দিয়ে বললেন,
তাই হবে…
আমি ওদের থেকে বিদায় নিয়ে উপরে চলে গেলাম। তারপর ঘুমিয়ে পরলাম। ওনারা কখন গেছে কিচ্ছু জানি না….
ঘুম ভাঙে কলের আওয়াজে….এই সন্ধ্যায় আবার কে কল দিল?!!! ফোন হাতে নিয়ে দেখি আননোন নাম্বার। রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে নারী কন্ঠ ভেসে উঠল। সুরেলা কন্ঠে এক নারী বলে উঠল__
” হ্যালো! সিয়াম বলছেন?!!!
* হ্যাঁ, আমি সিয়াম। আপনি কে?!!!
~আমি লিজা…
* ঐ তুই কোন লিজা? আমার ছোট্ট কালের খেলার সাথী নয়তো…?!!!
~হয়ত ছিলাম একসময়ের সাথী…
*মেডাম, আপনার কন্ঠ এমন শুনাচ্ছে কেন?!!!
~সে কিছু না…
দেখা করতে পারবি কালকে…?!!!
* হঠাৎ দেখা?!!! কেন? কোনো সমস্যা?!!!
~সব তোকে পরে বলব। প্লিজ, আগে বল দেখা করতে পারবি কি না….
*হুম, পারব।পারতে যে আমায় হবে’ই। আমার যে তোর সাথে অনেক কথা বলার আছে….
বল কোথায়, কখন দেখা করতে হবে?!!!
~’ আমি একটু পর জানাচ্ছি তোকে।এখন রাখছি….
*এই শুন….
এইরে!!! রেখে দিল….

পরদিন দুপুর দেড়টা_
মায়া ওর চেম্বারে চুপটি করে বসে ল্যাপটপ টিপাটিপি করছে। ঠিক তখন’ই আমি গিয়ে হাজির সেখানে….
‘ স্যার, কি কাজ করতে হবে?’
~তোমার সাথে কি আমার শুধু’ই কাজের সম্পর্ক?!!! কোনো কিছুর দরকার হলেই তোমার কাছে আসব? এর ছাড়া আসতে পারিনা?!!! কথা বলতে পারি না তোমার সাথে…???”
★স্যার, আসতে বলুন।সবাই শুনছে তো…
~শুনোক।?
– – – – – – –
~কোথায় যাচ্ছ?!!!(হাতটা ধরে ফেলে)
★ স্যার, আমার কাজ আছে।
~আমি ছাড়া তোমার আর কোনো কাজ থাকতে পারে না….
★স্যার, সবাই দেখছে….
~দেখুক, দেখার জন্য’ই বলছি এসব….
আচ্ছা, কেন তুমি আমায় এমন ইগ্নোর করতেছ?
কি করেছি আমি?
কেন তুমি আমায় অবহেলা করছ? আমার থেকে দুরে দুরে থাকছ? কোন অপরাধের সাজা তুমি আমায় এভাবে দিচ্ছ?!!!
-‘ মায়া নিশ্চুপ…..
~আচ্ছা, যাও তোমার কিচ্ছু বলতে হবে না।

মায়াকে ছেড়ে দিয়ে সিয়াম কথা’টা বলল।
তারপর ওখান থেকে চলে গেল। মায়া জল চলছল চোখে সিয়ামের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। একটু পর’ই সিয়াম বার্তা পাঠালো মায়াকে_
” মায়া! আজকে আমায় একটু বাইরে যেতে হবে দরকারি কাজে। তোমাকেও আমার সাথে যেতে হবে। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও।”

-‘ মায়া নিঃশব্দে রেডি হয়ে বসে রইল ওর চেম্বারে…
একটু পর’ই সিয়াম মায়ার চেম্বারে এসে বলল,
চলো….
সিয়াম আগে আগে যাচ্ছে,
মায়া সিয়ামের পিছুপিছু যাচ্ছে….
~কি হলো? হাঁটছ না কেন?
★মায়া ঘুমে দুলুদুলু….
~মায়া! তোমার কি খুব ঘুম পাচ্ছে?
★হুম….
~দাঁড়াও,তাইলে হাঁটতে হবে না। কথাটা বলেই সিয়াম মায়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে…
মায়া ঘুম ঘুম চোখে’ই বলল,
কি করছেন?
এদিকে আসছেন কেন?!!
সিয়াম মায়াকে কোলে নিতে নিতে বলল,
ঘুম পাচ্ছে তো তোমার। তাই কোলে নিলাম….
– মায়া ঘুম ঘুম চোখে’ই বলল, ছাড়েন! প্লিজ, নামিয়ে দিন আমায়….
সিয়াম গাড়ির কাছে চলে গেল। মায়াকে আস্তে করে নামিয়ে গাড়ির দরজাটা খুলে ওকে ভেতরে বসিয়ে, সিয়ামও উঠে পরল। গাড়ি গিয়ে একটা পার্কের সামনে থামল। সিয়াম আর মায়াকে ডাকে নি। মায়াকে ঐভাবেই রেখে সাইমাকে ফোন করল। কাছেই সাইমার বাসা ছিল, তাই আসতে দেরী হয়নি। সাইমা ১০মিনিটের ভিতর চলে আসে। সাইমাকে মায়ার পাশে বসিয়ে সিয়াম ক্ষাণিকটা দুরেই লিজার সাথে কথা বলতে যায়। লিজা গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে….
~হ্যাঁলো ম্যাম…..
★Hi! সিয়াম…
কেমন আছিস?!!!
~ আল্লাহ রাখছে….
তুই?!!!
★সেটা কেমন কথা?
আল্লাহ রাখছে মানে?!!!
~সে কিছু না…
তুই না কি বলবি….?!!!
★সিয়াম!
তোর শরীর খারাপ?
তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন?
চোখের নিচে কালো দাগ?!!!
সেটা কবে থেকে হলো?!!!
~ সে কিছু না।
আচ্ছা, তুই জানি কি বলবি?
★ হঠাৎ করে নাটকীয় ভঙিতে লিজা সিয়ামের হাতটা চেপে ধরল।
– তারপর কান্না করে দিল।
সিয়াম তো অবাক….
একি?!!!
এসব কি করছে লিজা…
আর ও কি বলতে চাচ্ছে?!!!
সিয়াম জোর করে হাতটা ছাড়িয়ে বলল,
-এই বোকা মেয়ে?!!!
তোর কি হয়েছে? কাঁদছিস কেন? লিজা আবারো সিয়ামের হাত চেপে ধরে কান্না শুরু করে দিল। সিয়াম হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর__
লিজা নিজে নিজেই হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে চোখের জল মুছল। তারপর বলল,
আমার একটা কথা রাখবি?
★হুম,বল কি কথা?
~আগে বল রাখবি….
★তুই আগে আমায় ছুঁয়ে প্রমিজ কর কথাটা রাখবি…
~আগে, বল না….
★না, তুই আগে প্রমিজ কর আমায় ছুঁয়ে…..
~ওকে, প্রমিজ করলাম তুই যা বলবি সাধ্যের মধ্যে হলে তা করব। এবার হলো তো?
★ হুম…
~এবার বলে ফেল….
★………
~কি হলো বল…..
★………
~এই মেয়ে! হলোটা কি? বল…..
————————————

★সিয়াম! আমি একজনকে ভালোবাসি….. খুউব ভালোবাসি। প্লিজ, তুই আমাদের বিয়েটা ভেঙে দে। কারন, ওকে ছাড়া আমি অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারব না। কাউকে না….
~ এই কথা’টা তুই…….
★পুরো কথা বলতে পারল না সিয়াম। তার আগেই লিজা আচমকা সিয়ামের পায়ে গিয়ে ধরল। সিয়াম চমকে গেল….
এসব কি করছিস?
উঠ, উঠ…..
ছাড় পা……
– না আমি ছাড়ব না পা। আগে বল, তুই আমার কথা’টা রাখবি…. আমার আতিককে আমার থেকে কেড়ে নিবি না?(আতিক নাম শুনে এবং পিছনে আতিককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সিয়াম চমকে উঠল।মনে পড়ে গেল, ঐ সেই লিজা! যার ছবি আতিক ওকে দেখিয়েছে।এই সেই মেয়ে!যার সাথে বন্ধু আতিক রাতের পর রাত কথা বলত।]
~তুই আগে পা ছাড়, তারপর বলছি…..
★লিজা পা ছেড়ে দিল। ওকে মাটি থেকে উঠালো সিয়াম। এখনো বেচারির গাল গড়িয়ে অশ্রু পরছে। পকেট থেকে রুমাল বের করে দিয়ে সিয়াম বলল__

যা কাঁদছিস, এটুকু’ই এনাফ। আর কাঁদিস না…
এই নে রুমাল। চোখ’টা মুছে নে। সব লবন যদি এখন’ই শেষ করে ফেলিছ, তাহলে বিয়ের পর ঘাটতি হতে পারে। তাই এখন থেকে’ই সাশ্রয়ী কর….
আর বিয়ে করার কথা বলছিস না?
বিয়ে আমি করব,
তবে তোকে নয়, আমার মায়া পরিকে….
★তোর মায়া পরি মানে?!!!
~সে পরে বলা যাবে। আগে তো তোর আতিক’কে শান্ত কর….
আমার পায়ে ধরেছিস ওর জন্য, এটা দেখে ও চলে গেছে….
★তুই আতিককে চিনিস?
~লিজা! তোকে আমি সাত বছর ধরে চিনি….
★মানে?!!! তুই তো কেবলি আমায় দেখলি। সেই শৈশব কালের পর তুই তো আজ’ই প্রথম আমায় দেখলি…?!!তাহলে ৭বছর ধরে মানে…
~মানে বুঝতে পারছিস না?!!!
সিয়াম পকেট থেকে ওর ফোনটা বের করে ওর আর আতিকের অনেকগুলো ছবি দেখালো। লাস্ট একটা ছবি দেখালো যেটাতে আতিকের সাথে লিজা দাঁড়িয়ে আছে।
লিজা চোখ বড় বড় করে বলল,
তুই আতিককে…
★সিয়াম মাথা নেড়ে বলল, জি, আমি আতিককে চিনি। আর ও আমার একমাত্র বন্ধ।বেস্ট ফ্রেন্ড। আতিক তোর ছবি আমায় দেখায়। প্রতিদিন আমি তোকে দেখি। ওর ফোনে দেখি। ও যখন চুমু খায়, তখন দেখি, ও যখন তোর ছবিতে হাত বোলায় তখনও দেখতাম। ও যখন তোর দেওয়া কষ্টের পর তোর ছবি বুকে নিয়ে ঘুমাতো, তখনও তোকে দেখতাম।বকা দিতাম। কিন্তু কে জানত ঐ বজ্জাত মেয়েটাই তুই….?
★ঐ কি বললি তুই…(?)…
আমি বজ্জাত?!!!
~না, তুমি লক্ষ্মী মেয়ে!
এবার যাও তোমার আতিকের রাগ ভাঙাও ভালোবাসা দিয়ে….??
~ওহ, আমি আসিরে….
★আচ্ছা, যা। বিয়ের দিন কথা হবে।
~ঐ কি বলছিস???
★ঐ কান ছাড়, আমি ব্যথা পাচ্ছি…
~তাহলে বিয়ের দিন দেখা হবে বললি কেন?
★আরে বাবা মজা করলাম….
~ওকে, আমি আসি। ঐ হাদারামটাকে ধরি গিয়ে আগে….
★ওকে, অল দ্যা বেস্ট….

লিজার সাথে কথা বলতে বলতে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে গেল বুঝতে পারিনি। তাড়াতাড়ি গাড়ি যেখানে আছে সেখানে গেলাম।
কিন্তু একি?!!!
গাড়ি কোথায়?!!!
আর মায়া?!!!
সাইমা’ই বা গেল কই?!!!
মাথার মধ্যে যেন আকাশ ভেঙে পরল। তাড়াতাড়ি সাইমাকে কল দিলাম…
– হ্যালো…..
★রাখ তোর হ্যালো….
তোরা গাড়ি নিয়ে কই গেছিস?
~ স্যরি, ভাইয়া! তোকে না জানিয়েই চলে এলাম….
আসলে মায়া জেগে থাকলে কখনো আমার শ্বশুরবাড়িতে আসতে চাইত না, তাই ঘুমের মধ্যেই ওকে নিয়ে এলাম….
রাগ করিস না, প্লিজ…..
★সিয়াম একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল….
~ভাইয়া, তোর এই দীর্ঘশ্বাসের কারন কিন্তু আমি জানি…..
★কি জা….নো…স…???
তোতলাতে তোতলাতে সিয়াম প্রশ্ন করল….
~মায়া……..
★কি?!!!!
~মায়া……….
★স্যরি…কি বলছিস?
বুঝিনি। আবার বল….
~মায়া……
★ওহ, হ্যালো,
হ্যালো,
হ্যালো…..
সাইমা নেট প্রবলেমে কিছু’ই বুঝা যাচ্ছে না, আমি রাখি এখন… (কান থেকে ফোনটা দুরে নিয়ে)???
~ফাইজলামি হচ্ছে?
মায়া ছাড়া অন্য কথার বেলায় নেট ফুল, আর মায়া বললে নেট প্রবলেম, তাই নাহ?!!!???
★হ্যালো,
হ্যালো, হ্যালো….(মুখে ঠাপাতে ঠাপাতে সিয়াম বলছে)☺☺
~ঐ ব্যাটা কল রাখ…..
এত নেট প্রবলেম নিয়ে কথা বলতে হবে না…..??
★আচ্ছা…
এই শুন না। আমি কি আসব তোর শ্বশুরবাড়িতে?!!!☺
~হ্যালো, কি বলছিস ভাইয়া…
★বলছি, আমি কি আসব তোর জামাইয়ের বাড়িতে…??
~হ্যালো, ভাইয়া।
কোথায় আসবি বলছিস???
★আরে বাববা শুনতে পাচ্ছিস না?!!! আমি তোর শ্বশুরবাড়িতে আসার কথা বলছি….??
~কোথায়? হ্যালো, কোথায়।
ভাইয়া, নেট’টা খুব জ্বালাচ্ছেরে… আবার বল…??
★আরে বইন, আমি তোর শ্বশুরবাড়ি আসতে চাচ্ছি।??
~কি, বলছিস?
হ্যালো…
কিচ্ছু শুনা যাচ্ছে না। জোরে বল…
নেট কেমন যেন করছে….???
★ সাইমা….
তুই কিন্তু খুব ফাজলামু করছিস….?
সত্যি কি নেট প্রবলেম নাকি এটা শোধ…?
~Omg! শোধ হবে কেন ভাইয়া….?
নেট তো সত্যি’ই স্লু…
আচ্ছা,তুই বাসায় চলে যা।
ওখানে গিয়ে কল দিস।☺
নেট ফুল পাবি তখন….

চলবে…..

বসের সাথে প্রেম পর্ব- ১৪

0

বসের সাথে প্রেম
পর্ব- ১৪

লেখা- অনামিকা ইসলাম।

ছেলেটির ডায়েরী_
শার্ট পেয়ে কিছুটা কনফিউশনে থাকলেও প্রকাশ করিনি মায়া’কে। রাত্রে খেয়ে আসার পর শার্ট’টা গায়ে দিলাম।হঠাৎ’ই গলার কাছের বড় ছাপ’টার দিকে চোখ যায়। মনে হয়ে যায় দুপুরে ওর মার্কেটে যাওয়ার কথা। মুহূর্তেই সব ক্লিয়ার হয়ে গেল। সেদিন রাত্রে ঘুমানোর আগে ওকে দেখে আসার জন্য ওর রুমের জানালা দিয়ে তাকাইলাম। তারপর যা দেখলাম তাতে আমি পুরো ‘থ’। মায়া একটা শার্ট ঝাপটে ধরে শুয়ে আছে। চোরকে হাতেনাতে ধরার জন্য দরজায় নক করতে গেলাম। কিন্তু একি!!!
দরজা যে খুলে গেল…
তবে কি ও দরজা খুলা রেখেই ঘুমিয়েছিল?!!!
যাক….
দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকলাম। তারপর শার্ট’টা ধরে টান দিলাম। ওর কোনো সাড়া নেই। ওহ, ওনি তাহলে শার্ট বুকে নিয়েই ঘুমিয়ে পরেছিল?!!!
মনে মনে রাগ হচ্ছিল ভিষণ,
এত ভালোবাসে তবুও বলেনি না, সেই জন্য।
সে রাতে আমি ওর রুমের সোফায় বসে ছিলাম।
মাঝরাত্রে ওর ঘুম ভেঙে যায়। চমকে উঠে ও আমায় দেখে। তারপর কাছে যাওয়া, হাত ধরা, এক সাথে বিছানায় হুমড়ি খেয়ে পরে যাওয়া অনেক কিছু’ই হয়। সবশেষে ও আমায় ঘুমানোর কথা বলে। বলে যে__
“ঘুমাবেন না?”
প্রতিউত্তরে আমি বলেছিলাম, ঘুমাবো।
আমি ঘুমাবো ওর রুমে, ওর বুকে। ও থমকে গিয়েছিল সেদিন। ভয়ার্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে ফিরে তাকিয়েছিল।
তারপর আমাদের দু’জনের মধ্যে যা কথা হয়_
~এভাবে তাকিয়ে আছ কেন?(আমি)
★……..(….)…..(মায়া)
~চলো, ঘুমাতে যায়।সারারাত একটুও চোখের পাতা এক করতে পারিনি (আমি)
★ভাইয়া, আপনি সারারাত এখানে বসে ছিলেন?(মায়া)
~জি, এখন চলো তো। ঘুমাবো….??(ওকে টান দিয়ে বুকের কাছে এনে আমি)
★আমি শরীর’টা বেশী ভালো লাগছে না, আমি মায়ের সাথে ঘুমাবো।??(কাঁপা কন্ঠে মায়া)
~ এত রাত্রে আম্মুকে পাইবা কই? আর তাছাড়া ওনি এখন ঘুমিয়ে আছেন।(আমি)
★আমার শরীর’টা বেশী ভালো লাগছে না। আমি ঘুমাবো। অন্য রুমে গিয়ে ঘুমাবো।প্লিজ ছাড়েন আমায়.. (ছাড়ানোর চেষ্টা মায়া)
~ছাড়ার জন্য তো ধরিনি মায়া পরি! ওকে টান দিয়ে আরো কাছে নিয়ে এলাম। তারপর ওর ঘাড়ের এলোমেলো চুলগুলো সরিয়ে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত হাত দিয়ে রেখা টেনে নিচ্ছি। ও চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলল। ওর ঘাড়ের কাছে মুখ নিয়ে গেলাম। ও ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেওয়া শুরু করে দিল। যেহেতু আমার বুকের সাথে ও মিশে ছিল, তাই ওর প্রতিটা নিশ্বাসের শব্দ আমি শুনতে পাচ্ছিলাম। আর কম্পনগুলোও যেন মনে হচ্ছিল আমি গুনতে পারব। ওর নিঃশ্বাস ক্রমাগত বেড়ে’ই চলছে, আর আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। ক্ষাণিকবাদেই ও চোখ খুলে….
~কি?!!! ভয় পেয়েছ???
★…….(মায়া)
~আচ্ছা, চলো। ঘুমাই এখন। ওকে নিয়ে বিছানায় বসাইলাম। তারপর বালিশ’টা ঠিক করে ওকে জোর করে শুইয়ে দিলাম। তারপর জানালাগুলো ভালো ভাবে আটকিয়ে, রুমের লাইট’টা নিভিয়ে দিলাম। ও স্তব্ধ হয়ে আছে। কোনো কথায় বলেনি। কিছুক্ষণ পর_
‘ আমি কিন্তু বালিশ আনিনি, তোমাকেই বালিশ বানিয়ে ঘুমাবো কিন্তু আজকে….’
★মায়া নিশ্চুপ। আমি আবারো বললাম, আজ কিন্তু তুমি আমার বালিশ…
~নিশ্চুপ মায়া….
★এবার ওর চোখে মোবাইলের আলো ফেললাম। একি?!!! ও যে কান্না করছে, আর ভয়ে কুকড়ে আছে….
ঐ কান্না করছ কেন?
ও কেঁদেই চলেছে। যতই বলি, কান্নার মাত্রা’টা যেন তত’ই বেড়ে যাচ্ছে…..
~ওহ, ভয় পাচ্ছ?!!!?
যাও। শুইব না তোমার বুকে… ?তুমি আমায় জায়গা দাও। আমি ঘুমাবো বালিশে…?
★যেই না কথা’টা বললাম, কান্না থামিয়ে ও লাফ দিয়ে উঠে বসল। আমি ওর বালিশে শুইলে ও লাফ দিয়েই চলে যেতে চাচ্ছিল। তখনি ওর হাত’টা ধরে ফেললাম। ও ভয়ে ভয়ে আমার দিকে তাকালো। ওকে টান দিয়ে বুকের মধ্যে নিয়ে এলাম__
~কি করছেন, এসব?(মায়া)
★করিনি, করব…??
~ও কাঁপা কন্ঠে বলল, কি?
★অনেক কিছু।☺☺
~আমার কথা শুনে এবার আর ও ভয় পেল না। স্ট্রংলি জবাব দিল,
করেন… তাড়াতাড়ি করা শুরু করেন। তারপর আমি ঘুমাবো।
★ এই!!!? তুমি আমায় কি ভাবো বলো’তো?!!?
আমি লুইচ্ছা, ইতর, বদমাইশ..?????
আমাকে কি তোমার তাই মনে হয়?!!!??
এটুকু’ই চিনলা তুমি আমাকে?!!!??
যাক!!!
ভালোই চিনছ…??
কথাগুলো বলে অভিমান করে রুম থেকে বের হয়ে চলে যায়। ও সাথে সাথে দরজা আটকিয়ে দিল।

পরদিন ঘুম ভাঙে ৯টায়। তাড়াতাড়ি করে উঠে রেডি হয়ে না খেয়েই চলে গেলাম অফিসে। রাতের রাগ’টা এখনো যায়নি। ও আমায় এমন ভাবতে পারল???
আজ আর অফিসে এসে ওর খুঁজ নিলাম না। সোজা গিয়ে আমার রুমে বসে ছিলাম। কিছুক্ষণ পর কি মনে করে যেন বাইরে গেলাম। বাইরে গিয়ে দেখি,মায়া নাই…
কনাকে জিজ্ঞেস করলে ও বলে, ‘মায়া আসেনি…’
ওহ, ভালো বলে রুমে চলে গেলাম। খুব ঘুম পাচ্ছিল। কনাকে বললাম, আমাকে যাতে তিনটার আগে ডাক না দেই। যদি আমার বাবাও আসে তাতেও যেন ডাক না দেয়…”
ঘুমিয়ে পরলাম….
ঘুম ভাঙে বাইরে কারো তর্কাতর্কির আওয়াজে। বিরক্তি নিয়ে চোখ মেলে তাকালাম। কনাকে ডাক দিয়ে জানতে চাইলাম কি হয়েছে?!!!
কনা মায়ার কথা বলল।
বলল যে, মায়াকে না করা সত্ত্বেও নাকি ও আমায় ডাকতেছিল।
আমি জোর গলায় বললাম_
কনা! মিস মায়াকে বলে দিন আমি এখন ঘুমোব…
মায়া কিছুতেই কনার কথা শুনতে রাজি নয়। ও কোর করেই রুমে ঢুকল। তারপর আমার কাছে এসে__
ভাইয়া! আপনার খাবার….
চোখ তুলে তাকালাম ওর দিকে। তারপর….
” আপনাকে মানা করেছি, তারপরও চলে এসেছেন?আর কিসের খাবার?!!!?”
★ভাইয়া! আপনি খেয়ে আসেন নি, তাই নিয়ে এসেছি….
~রাখেন আপনার খাওয়া। আমি আপনাকে মানা করার পরও আপনি রুমে ঢুকে গেলেন? কোথায় পেলেন এত স্পর্ধা? অফিসের নিয়ম কানুন কি কিচ্ছু মানবেন না বলে ঠিক করছেন আপনি?
★ভাইয়া! আমি তো আপনার….(……..)….
~স্টুপিড! আর কোনো কথা বলবেন না। আর এটা অফিস, বাসা নয়। এখানে সবাইকে রেসপক্ট দিয়ে চলবেন। কনা আপনার সিনিয়র, ওকে আপু ডাকবেন, আপু। আর আমি আপনার স্যার…
আজ থেকে স্যার ডাকার চেষ্টা করবেন। আর পি.এ পি.এ হয়েই থাকবেন। কারো পার্সোনাল মেটার নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবেন না।?
★ওকে, স্যার….?
~Ohh, hlw!
কোথায় যাচ্ছেন ওকে বলে। বক্সটা নিয়ে যান। এটা ফেলে যাচ্ছেন কেন?
★স্যার, আপনার খাবার…
আপনি দুপুরে খাননি মনে হয়, সকালেও না খেয়ে এসেছেন।তাই বাসা থেকে আমি …….
~আমি বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে খেয়ে নিব। আপনি খাবারগুলো নিয়ে যান এখান থেকে।
★স্যার, আপনি বাইরে থেকে খাবেন কেন? আমি’তো নিজ হাতে…….
~’ এনাফ!
অনেক হয়েছে। এবার যান এখান থেকে….
আমায় একটু একা থাকতে দিন।
★স্যার, স্যরি। কালকে আমি ঐভাবে বলতে চাইনি আপনাকে। আমি জাস্ট একটু মজা করছিলাম….
~মায়া! আমাদের সম্পর্ক’টা মজার ছিল না। তোমার মনে রাখা উচিৎ ছিল তুমি আমার বোনের বান্ধবি, আর আমি তার’ই ভাই….
★স্যার, আপনি আমার সাথে রাগ….. (…)…..
~এনাফ! আর এগুবে না! আশা করি তোমার অবস্থান’টা বুঝে গেছ। এখন রুম থেকে চলে যাও..
★নিশ্চুপ হয়ে মায়া মাথা নিচু করে রুম থেকে চলে গেল বক্স নিয়ে।

মেয়েটির ডায়েরী_
সামান্য কারনে ওনি এতটা রেগে যাবেন বুঝতে পারিনি। আর রেগে গিয়ে ওনি আমায় এত কথা শুনিয়ে দিবেন ভাবতেও পারিনি। যাক!!!
ভালো’ই হয়ছে।
আমার অবস্থানটা চিনিয়ে দিলেন ওনি। বুঝিয়ে দিলেন, আমার জন্য ওনি নয়…
২দিন ধরে ওনার সাথে কথা হয়না। কথা হয় না বলতে, আমি’ই কথা বলি না। কেন জানি, কথা বলার সাহস পাইনি….
২দিন পর_
প্রচন্ড জ্বর আর মাথা ব্যথায় মরে যাচ্ছি। কিছুতেই চোখ খুলতে পারছি না। ইচ্ছে হচ্ছে শরীর থেকে মাথা আলাদা করে ফেলি। মাথা ব্যথার এত যন্ত্রনা সেটা না হলে বুঝতে পারতাম না। তখন ছিল মাঝরাত। উঠে গিয়ে যে ঔষধ খাবো সে সাহসটুকুও পাচ্ছি না।
চোখ বন্ধ করে বিলাপ করছি। হঠাৎ’ই কপালে কারো উষ্ম পরশ টের পাচ্ছি। মনে হচ্ছে, কেউ কপালে হাত রাখছে। চোখ না মেলে’ই বলে দিতে পারি এ হাতের পরশ কার…?!!!
এ সিয়াম স্যারের। গত দু’রাত ভরেই ওনার এই পরশটা পায়। তখন হয়তো আধঘুমে থাকি, কিন্তু ওনার উপস্থিতি আমি ঠিক টের পায়। চোখ বন্ধ করে গন্ধ শুকেই বলে দিতে পারি এ আমার বস। আমার স্যার। সিয়াম স্যার। আজকে ওনি আমার কপালে মলম দিয়ে মালিশ করে দিয়েছে। আমার কপালে চুমুও খেয়েছে। যাওয়ার সময় কান্না করে বলেও গেছে__
আমি স্যরি মায়া পরি। আমি আসলে তোমায় রাগানোর জন্য এমন করছি সেদিন। তুমি এতটা কষ্ট পাবে বুঝতে পারিনি। বুঝতে পারিনি ভুল বুঝে দুরে সরে যাবে। আমাকে এত বড় সাজা হবে। কষ্ট দিবে নিজেকে….
আমায় মাফ করে দিও মায়া পরি….!!!
কথা’টা বলে ওনি চলে যাচ্ছিল। ঘোরের মধ্যেই ওনার হাতটা টেনে ধরি। জ্বরের ঘোরেই সেদিন ওনাকে মনের না বলা কথা গুলো বলে দেই…
ওনি আবেগে আমায় জড়িয়ে ধরেছিলেন। কেঁদেছিলেন খুব…..
সেদিন ওনার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়েছিলাম। সেদিন থেকেই শুরু হয় প্রেম। বসের সাথে প্রেম। ওনাকে কখনো আর ভাইয়া বলে ডাকিনি। এই জন্য রাগারাগি করলেও ডাকিনি ভাইয়া বলে। স্যার বলেই ডাকতাম, এই ডাকের মধ্যেই ভালো লাগা খুঁজে পেতাম।
খুঁজে পেতাম ওনার প্রতি শ্রদ্ধা…. সারাদিন অফিসে চোখাচোখি, বাকিটা সময় বাসায়। কখনো বাসায় অভিমান, অফিসে চোখাচোখি। কাজের চ্ছলে ওনি আমায় ডেকে নিতেন, কখনো বা ফাইল আদান-প্রধানের সময় একটু খানি স্পর্শ। এটুকুই….
আধুনিক প্রেমের মত আমরা কখনো একে অপরকে কিস কিংবা অন্য কিছু করিনি। যদিও আমরা একই ছাদের নিচে থাকতাম। আমাদের প্রেমটা ছিল চোখে চোখে। অনেকে আবার বলবে, আমাদের প্রেমটা বড্ড সেকেলে। আবার অনেকে বা বলবে একে কি প্রেম বলে?!!!
আমি বলব এটাই প্রেম।
এটাই ভালোবাসা।
পবিত্র ভালোবাসা।
আমরা একই ছাদের তলায় থাকলেও আমাদের ছিল লোকলজ্জা, ছিল আল্লাহ ভয়। আমরা মানতাম, প্রেম কেবলি পবিত্র বন্ধন।
আধুনিকতার নামে আমরা প্রেমকে অপবিত্র করিনি।
হোক না চোখে চোখে কথা…
ক্ষতি কি?!!!
আমরা তো একে অপরের আছি’ই….

সবমিলিয়ে সুখেই চলছিল আমাদের দিনগুলো…
কিন্তু সেই সুখ আর বেশীদিন আমার কপালে সইলো না। একদিন__
~সিড়ি দিয়ে নিচে নামার সময় লক্ষ্য করলাম আব্বু-আম্মু(আংকেল ও আন্টি)
ড্রয়িংরুমে বিয়ে নিয়ে কি যেন বলছিল। মাঝ সিড়িতে দাঁড়িয়ে কান পেতে রই।
শুনতে পেলাম__
আন্টি:- যায় বলো! তোমার কিন্তু সিয়ামের সাথে এই ব্যাপারে কথা বলার দরকার। ওর নিজেরও তো পছন্দ থাকতে পারে…
আংকেল:- ওকে জিজ্ঞেস করার কিছুই নাই। সিয়ামের প্রতি আমার এ বিশ্বাস আছে, ও আর যায় হোক আমার কথার অমান্য হবে না। আর তাছাড়া আশরাফের মেয়ের মত এমন সুন্দরী-সুশ্রী,শিক্ষিত মেয়ে ও কোথায় পাবে? এটাই ফাইনাল…
ও বিয়ে করলে ঐ মেয়েকেই করতে হবে….
আন্টি:- বিশ্বাসের মর্যাদা যাতে টিকে থাকে…
আংকেল:- টিকে থাকে মানে? ওকে বিয়ে করতেই হবে। আর ঐ মেয়েকেই…
আমার দৃঢ বিশ্বাস আমাকে ও ছোট করবে না…..
আন্টি:- যদি অন্য কাউকে ভালোবেসে থাকে…???
তখন?!!!
আংকেল:- ঐসব ভালোবাসা’টাসা আমি বরদাস্ত করব না। আমার পছন্দ’ই পছন্দ। তবুও যদি ও আমার কথার বাহিরে যায় তাহলে ওকে ভুলে যেতে বলিও আমায়। বলে দিও, সেদিন থেকে আমি ওর জন্য মৃত থাকবো।
আন্টি:- এসব কি বলছ? চুপ করো…
ও রাজি হবে…..
আর মেয়ে তো আজকে আসবে। ও দেখে নিক…
আংকেল:- তাই যেন হয়…
——–+++++++++++++++++++————
আর নিতে পারছিলাম না…
মাঝ সিড়ি থেকেই দৌঁড়ে উপরে উঠে গেলাম। উপরেই সিয়াম স্যার দাঁড়িয়ে ছিল।ওনিও হয়তো এতক্ষণে সব শুনে গেছে। তাই আমার কান্নাভেঁজা চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বলতে চেয়েছিল। ওনাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই দৌঁড়ে কান্না করতে করতে রুমে চলে গেলাম।

মায়া রুমে গিয়ে দরজা আটকে দিয়েছে।সিয়াম মায়ার পিছুপিছু দৌঁড়ে গিয়েছিল।সিয়াম দরজায় নক করছে, আর মায়া!!!
ভিতরে দরজায় হেলান দিয়ে কান্না করছে….

[সামনেই আসছে দারুণ পর্ব…মহা পর্ব]আর নিতে পারছিলাম না…
মাঝ সিড়ি থেকেই দৌঁড়ে উপরে উঠে গেলাম। উপরেই সিয়াম স্যার দাঁড়িয়ে ছিল।ওনিও হয়তো এতক্ষণে সব শুনে গেছে। তাই আমার কান্নাভেঁজা চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বলতে চেয়েছিল। ওনাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই দৌঁড়ে কান্না করতে করতে রুমে চলে গেলাম।

মায়া রুমে গিয়ে দরজা আটকে দিয়েছে।সিয়াম মায়ার পিছুপিছু দৌঁড়ে গিয়েছিল।সিয়াম দরজায় নক করছে, আর মায়া!!!
দরজার ওপাশে হেলান দিয়ে কান্না করছে….

[সামনেই আসছে দারুণ পর্ব…মহা পর্ব]

চলবে………

বসের সাথে প্রেম পর্ব-১৩

0

বসের সাথে প্রেম
পর্ব-১৩

লেখা- অনামিকা ইসলাম।

এই মেয়ে এই দাঁড়াও….
উপস্থিত সকলে সিয়ামের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে, মায়াও হা করে সেদিকেই তাকিয়ে আছে। শুধু সাইমা মুখ ভার করে দাঁড়িয়ে আছে। ওর প্রাণের বান্ধবির সাথে ওর ভাইয়ার এ হেন আচরণ দেখে স্তব্ধ হয়ে গেছে ও।
~ও হ্যালো! কি বলছি?
কথা কি কানে গেছে?!!! সিয়াম মায়াকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বলছে। মায়া আসছি বলে ধীর পায়ে এগিয়ে যেতে থাকে সিয়ামের দিকে। এদিকে সাইমার এটা সহ্য হচ্ছে না। মায়া যখন সিয়ামের শার্ট’টা পরিষ্কার করার জন্য ওর পাশে গিয়ে বসল, ঠিক তখনই সাইমা দৌঁড়ে গিয়ে মায়াকে বসা থেকে উঠিয়ে ফেলে।
-‘ একদম তুই এসব করবি না….(সাইমা)
~’ কিন্তু ওনার তো শার্টে…..(মায়া)
-‘ থাকুক লেগে, তাতে তোর কি? তোর কি ইচ্ছে করে ফেলছিস নাকি????(সাইমা)
* মানলাম ও ইচ্ছে করে ফেলে দেয়নি, কিন্তু যেভাবেই হোক ওর হাত থেকে তো পরেছে। যেহেতু ওর হাত থেকে পরে শার্ট’টা নষ্ট হয়েছে সেহেতু এটা ও পরিষ্কার করে দিবে..☺(সিয়াম)
★ভাইয়া, অসাবধানতায় হাত থেকে পরে গেছে, এতে মায়ার কোনো দোষ নেই। আর তাছাড়া বাসায় কাজের লোক থাকতে ও পরিষ্কার করবে কেন? ?(সাইমা)
* ও পরিষ্কার করবে কারন যেভাবেই হোক এটা ওর হাত থেকে পরেছে…?(সিয়াম)
★না, ও পরিষ্কার করবে না….?(সাইমা)
*ওকেই করতে হবে…(সিয়াম)
★ও করবে না। ?(সাইমা)
* ও করবে, করতে বাধ্য….?(সিয়াম)
★বললাম তো ও করবে না।?(সাইমা)
* ও করবে…..
করতেই হবে……(সিয়াম)
★তোর সাথে আজাইরা ঝগড়া করার মত এনার্জি আমার নেই। মায়া চলতো….

মায়া ওর হাতটা ছাড়িয়ে নিল সাইমার হাত থেকে….
~`মায়া, কি হলো??(সাইমা)
★ আমি ভাইয়ার শার্ট’টা নষ্ট করে দিলাম। আমার মনে হয় শার্ট’টা পরিষ্কার করাটা আমার অবশ্য করনীয়…(মাথ নিচু করে মায়া)
~`মানে কি? তুই..(…?..)…(সাইমা)
★হুম, আমি পরিষ্কার করব…..
ভাইয়া দিন। আমার পাশে গিয়ে বসে হাত বাড়িয়ে কথা’টা বলল। আমি তো হতবাক। এ হাত বাড়িয়ে আবার কি চাচ্ছে….
জিজ্ঞেস করলাম-
কি দিব?!!!
উত্তরে বলল- শার্ট’টা…
★মানে কি? আমি তোমাকে গায়ে থেকে শার্ট খুলে দিব???
~`হুম, দিবেন….
★ না, না আমি পারব না।☺☺
~`কেন পারবেন না`? আর না পারলেও পারতে হবে।
★ এই!! ছেলে বলে আমাদের কি লজ্জা নেই??… লজ্জা শুধু নারীদের’ই আছে নাকি?!!!?
~আপনি না একটু বেশী’ই কথা বলেন ভাইয়া….
★ কম কথা বললে যে চলে না। ভেবে দেখছি কম কথা বললে আমার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমার বাবা মা কে নাতি-নাতনীর মুখ দেখাতে হলে বেশী কথা আমার বলতেই হবে…।না হলে এগিয়ে যেতে পারছি না সামনে। ☺☺
~`……..
★………..???
~`আচ্ছা, দিতে হবে না…
★দিতে হবে না এটা তো আমি বলিনি। এত বেশী বুঝ কেন?
~আমি তাহলে কি করতে পারি আপনার জন্য,স্যার?আমার সাথে আসো, বলছি কি করতে হবে….
~ঠিক আছে বলে মায়া সিয়ামের পিছু পিছু চলছে…

যেতে যেতে সিয়ামের পিছু পিছু সিয়ামের রুমের সামনে গিয়ে হাজির হলো মায়া…
-‘ কি হলো? এখানে এসে আটকে গেলে যে? ভিতরে এসো….
★না, মানে আপনি….
-‘ এবার তো অনুমতি দিলাম আসো….
মায়া আমার কথায় মাথা নিচু করে আমার রুমে আসলো।
তারপর গায়ের শার্ট’টা খুলে মায়া যেখানে বসে আছে সেখানে এগিয়ে গেলাম। পাগলী আমার লজ্জায় আমার দিকে তাকাতে পারছে না। ওর হাতে শার্ট’টা দিয়ে বললাম, এই নাও! এই শার্ট ধূয়ে দিবা….
মাথা নিচু করে কি যেন বলে সেখান থেকে দৌঁড়ে পালালো মায়া….
দু’দিন পর অফিসে যাওয়ার প্রাক্কালে মায়া’কে ডেকে প্রশ্ন করলাম-
শার্ট’টা শুকিয়েছে কি না?
গত দু’দিন ধরে শুধু একটা কথায় বলে আসছ, শার্ট শুকাইনি। আজ নিশ্চয় বলতে পারবা না শুকাইনি…
কি?!!!
শুকাইতে পারছ তো শার্ট?
★ভাইয়া…
~জি, ভাইয়া বলো….
★আসলে শার্ট’টা এখনো ধুইনি, আজকে ধূয়ে দিব, কালকে শার্টটা আপনাকে দিয়ে দিব….
~`মানে? শার্ট না ধূয়েই তুমি এতদিন আমার সাথে মিথ্যে কথা বলে আসছ? তুমি মিথ্যে কথা বলতে পারলে আমার সাথে..???
অবাক লাগছে তুমিও মিথ্যে কথা বলতে পারলে?!!!
★স্যরি,ভাইয়া….
~`কিছু না বলে চুপ করে অফিসে চলে গেলাম। এদিকে দুপুর হয়ে আসছে, মায়া এখনো অফিসে এসে আমার সাথে দেখা করেনি একবারও…
ও কি অফিসে আদৌ আসছে? দেখার জন্য ও যেখানে বসে সেখানটাই আসলাম। এসে দেখি, ওর আসন শূন্য পরে আছে। কনার থেকে জানতে পারলাম,
ও অফিসে আসছিল।
কিন্তু বিশেষ দরকারে আবার চলেও গেছে….
বাসায় ফোন দিয়ে জানতে পারলাম ও বাসায় নেই….
বাসায়ও যায়নি, অফিসেওও নেই…
তার মানে ও কি আমার কথায় কষ্ট পেয়েছে? আচ্ছা, ও ঐ পার্কে যায় নি তো?
ছুটে চললাম ঐ পার্কের দিকে। পার্কে গিয়েও ওকে পেলাম। এবার ভিতরটা কেমন যেন লাগছে। গাড়িতে উঠে বাসার ড্রাইভারকে ফোন দিলাম। ড্রাইভার কোথায় আছে জিজ্ঞেস করতেই বলল, স্যার! আমি তো এখন মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি…
-‘ মার্কেটের সামনে মানে? কিসের জন্য গিয়েছিস?
★স্যার, মায়া আপুমণির নাকি কিছু কেনাকাটা দরকার আর্জেন্ট। তাই ওকে নিয়ে আসছি…
-‘ ড্রাইভারের থেকে মার্কেটের নামটা জেনে ছুটে চললাম সেখানে। ১৫মিনিটের মধ্যে উপস্থিত হলাম সেখানে।
ড্রাইভারের কথা মত উপরের তলায় গিয়ে গেলাম। ও কেনাকাটা করছে আর আমি তার ঠিক পিছনেই দাঁড়িয়ে জিনিস দেখার নাম করে ওকে ফলো করছি….
ও কেনাকাটা করে চলে গেলে বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলাম, মেয়েটা কি কিনেছে? বিক্রেতা বলল, একটা শার্ট….
ক্ষাণিকটা অবাক হলাম।
ও শার্ট দিয়ে কি করবে?
রাত্রে খাওয়া-দাওয়া শেষে ও যখন মায়ের সাথে গল্প করছিল তখন ওকে ডেকে এনে বললাম,
আমার শার্ট’টা দাও। আমার শার্ট আমি’ই ধূয়ে নিতে পারব। ও দাঁড়ান এখানে আমি আসছি বলে রুমের দিকে ছুটলো।
আমি আমার রুমে চলে গেলাম।কিছুক্ষণ পর আমার কাছে এসে বলল__
এই নিন ভাইয়া….
আপনার শার্ট……
শার্টের দিকে তাকিয়ে আমি অবাক। নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল এ আমার দুইদিনের পুরনো শার্ট…
মনে হচ্ছে সদ্য মার্কেট থেকে কিনে আনা শার্ট….
এত সুন্দর করে কেউ শার্ট ভাজ করতে পারে ওকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না….

মেয়েটির ডায়েরী_
ওনি এখন আগের মত আমাকে আর ইগ্নোর করেন না। আর আমার সাথে একটু একটু কথাও বলেন।
যাক! আল্লাহ এতদিনে তাহলে ওনাকে সুবুদ্ধি দান করেছেন, এটা ভেবেই আল্লাহর প্রতি মনে মনে অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলাম।
সেদিন নববর্ষ উপলক্ষ্যে ওনি ওনার সকল বন্ধু-বান্ধবদের দাওয়াত করেন। সাইমাও এসেছিল সেদিন শ্বশুরবাড়ি থেকে। আমাদের কলেজেরও কিছু বন্ধুরা এসেছিল সেদিন। যেহেতু অনুষ্ঠানটা রাত্রে উৎযাপন করা হবে, তাই পুরো ছাদ’টা লাল-নীল বাতি দিয়ে সাজানো হয়….

রাত্রে যথারীতি অনুষ্ঠান শুরু হলো। সবাই যখন বিভিন্নভাবে দিনটা সেলিব্রেট করছে, আমি তখন ওদের খাবার পরিবেশনে ব্যস্ত। সাইমাও আমার সাথে কাজে হেল্প করছিল। সবাই নেচে-গেয়ে হইহুল্লুর করে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল, তাই সাইমা আর আমি ওদের ক্লান্তভাব দুর করার জন্য একে একে সবার হাতে সরবতের গ্লাস তুলে দিচ্ছি।
সিয়াম ভাইয়ার কাছে চলে এসেছি একদম। তাই ওনাকে সরবত দেওয়ার জন্য যেই না গ্লাসটা এগিয়ে দিলাম ওনার দিকে, ওমনি ওনি আমার হাতটা ধরে ফেললেন। হয়তো ভুল নয়তো ইচ্ছে করে কাজটা ওনি করছে। আমার পুরো শরীর অজানা শিহরণে কেঁপে উঠল। ছেড়ে দিলাম গ্লাসটা। সাথে সাথে সেটা ওনার শরীরে ছিটকে গিয়ে পরল।

ওনি আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
মনে মনে ভাবছি-
একি করলাম?!!!
ওনার এত সুন্দর শার্ট’টা নষ্ট করে দিলাম?
মনে মনে নিজের উপর রাগ হচ্ছে।
ইস! আরেকটু সাবধানে কাজটা করলে তো এমন হতো না। সাইমার ডাক পরল। ধীর পায়ে সাইমার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
ঠিক তখন’ই ওনি পিছন থেকে ডেকে বললেন-
এই মেয়ে,এই?!!!
দাঁড়াও…..
চমকে তাকালাম পিছনে…
সেদিন ওনি আমায় ওনার গায়ে থেকে শার্ট’টা খুলে দিয়েছিলেন, সেটা ধূয়ার জন্য। অবশ্য এ নিয়ে ওরা দুই ভাই-বোন ঝগড়াও করেছে প্রচুর। সাইমার মতে,
আমি ইচ্ছে করে সিয়াম ভাইয়ার শার্ট নষ্ট করিনি, তাই আমার পরিষ্কারের প্রশ্নই উঠে না। সিয়াম ভাইয়ার ভাষ্যমতে,
ইচ্ছে করেই হোক, অনিচ্ছাকৃত ভাবেই হোক,
আমার হাত থেকে সরবতটা পরে যেহেতু ওনার শার্ট নষ্ট হয়েছে তাই পরিষ্কারও আমায়’ই করতে হবে।

সেদিন ওনার শার্ট’টা পেয়ে কি যে খুশি হয়েছিলাম বলার মত না। মনে হয়ছিল রাজ্য জয় করে ফেলেছি।
রাত্রে ঘুমানোর আগে ওনার শার্ট বুকে না জড়িয়ে নিলে ঘুম’ই হতো না।
যখন ওনার কথা মনে হতো, তখন’ই শার্ট’টা নাকের কাছে নিয়ে শুকতাম। মনে হতো যেন ওনার গায়ের চিরচেনা সেই গন্ধ পাচ্ছি। শার্ট’টা ধূতে গিয়েও ধূতে পারিনি, যদি সাবানের সাথে মিশে শার্টে লেগে থাকা ওনার গায়ের গন্ধ’টা চলে যায়?!!!
যদি ওনার গায়ের গন্ধ আর না পাই..!!!
দু’দিন শার্ট শুকানোর মিথ্যে অজুহাত দিয়ে শার্ট আটকিয়ে রাখলেও সেদিন মিথ্যে বলতে পারিনি। ওনাকে বলেছিলাম-
শার্টটা ধূয়া হয়নি।
ওনি যে এতটা রেগে যাবেন বুঝতে পারিনি।
আমার মিথ্যে বলাটা ওনি মনে হয় মানতে পারেন নি, তাই আমাকে রেখে’ই অফিসে চলে গেলেন। আমি পিছন পিছন অফিসে গেলাম। কিন্তু কাজে মন টিকছেনা। না, না! আর আটকে রাখব না ওনার শার্ট…
ম্যানেজার আংকেলকে কাজের ফাইলটা বুঝিয়ে দিয়ে ড্রাইভারকে কল দিলাম। ড্রাইভার এসে আমায় নিয়ে গেলেন। পৌঁছে গেলাম কাছের মার্কেটে। সেখান থেকে অবিকল আরেকটা শার্ট কিনলাম…
Yes, perfect match!
এটাই দিব সিয়াম ভাইয়াকে… ওনি বুঝতেও পারবে না যে এটা ওনার শার্টের মত দেখতে কিন্তু নকল শার্ট…
সেদিন রাত্রে ওনি শার্ট চাইতেই দিয়ে দিলাম। ওনি যখন শার্ট নেড়েচেড়ে দেখছিলেন, তখন আমার কলিজা’টা শুকিয়ে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল-
এই বুঝি ধরা পরে গেলাম…
কিন্তু নাহ!!!
ধরা আমি পরিনি।
প্রতিদিনের মত সেদিন রাত্রেও ঘুমানোর আগে ওনার শার্টটা বুকে জড়িয়ে ছিলাম কিছুক্ষণ।
সেদিন খুব ক্লান্ত ছিলাম, তাই দরজা খুলা রেখে কখন যে ঘুমিয়ে পরছি বুঝতে পারিনি। মাঝরাত্রে মনে হলো-
দরজাটা তো লাগানো হয়নি?!!!
তাড়াতাড়ি উঠে দরজা’টা লাগিয়ে বিছানায় উঠতেই চমকে যায়। মনে হচ্ছে-
কেউ একজন আমার রুমের সোফায় বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
কাঁপা কাঁপা শরীর নিয়ে লাইট’টা জ্বালালাম।
তারপর যা দেখলাম তা দেখে না চমকে পারলাম না।
সিয়াম স্যার স্যরি ভাইয়া সোফায় বসে আছে। ওনার পরনে আমার দেওয়া সেই শার্ট আর হাতে অবিকল সেই রকম আরেক’টা শার্ট…
Oh, my god!
ওনার কাছে এইরকম আরেকটা শার্ট এলো কি করে? তাহলে কি ওনার এইরকম আরো শার্ট আছে? ওনাকে কিছু না বলে তাড়াহুড়ো করে বিছানায় খুঁজতেছি ওনার সেই শার্ট’টা, যা আমি প্রতি রাত্রে বুকে নিয়ে ঘুমাই….
~’ এটাই সেই শার্ট, যা তুমি রাত্রে জাপটে ধরে ঘুমাও…কথাটা পিছন থেকে সিয়াম ভাইয়া বললেন। আমি পিছন ফিরে তাকালাম। ওনি হাসছে আর আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আর আমার বুকটা ধুরোধুরো করে কাঁপছে….
ওনি আমার দিকে এগিয়ে আসছেন, আর আমি পিছু হাটছি….
যেতে যেতে বিছানার একদম সাথে চলে যায়। ওনিও কাছে চলে আসে। আমি বিছানায় ধপাস করে বসে চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলি….
~কয়দিন ধরে চলছে এসব?
অকস্মাৎ এ প্রশ্ন শুনে চোখ দুটো খুললাম। সিয়াম ভাইয়া আমার ঠিক পাশে বসেই আমায় প্রশ্নটা করছে….
বসা থেকে উঠতে যাব, তখন’ই ওনি আমার হাতটা ধরে ফেললেন। ওনার দিকে তাকালে ওনি বলেন-
আমি প্রশ্ন করছি, প্রশ্নের উত্তর দিবা….
তা না করে উঠছ কেন?!!!
না, মানে আপনার সাথে কালকে কথা হবে সকালে, এখন না… কাঁপা কন্ঠে কথাটা বলি। না, না প্রশ্নটা যেহেতু আমি এখন করছি, উত্তরটাও এখনি চাই…
আর জানো তো, আর যা বলি তাই করি।
সো, পালিয়ে লাভ নেই।
বলে ফেলো। জোর গলায় ওনি কথাটা বললেন।
-‘ ভাইয়া, প্লিজ…
দয়া করেন, এখন না।
আপনি যা বলবেন, তারই উত্তর দিব সকালে। আপনি প্লিজ এখন চলে যান। কেউ দেখলে সর্বনাশ হয়ে যাবে…
কথাগুলো বলেই আমি বসা থেকে উঠে চলে যাচ্ছিলাম। ঠিক তখনি ওনি আমায় হাত ধরে টান মারলেন।
এমন জোরে টান মারলেন যে আমি ওনার উপর আর ওনি বিছানার উপর শুয়ে পরলেন….

দু’জনেই দু’জনের দিকে তাকিয়ে আছি। কারো মুখে’ই কোনো কথা নেই….

এভাবে বেশকিছু ক্ষণ থাকার পর আমি যেই না উঠতে যাব, তখনি ওনি আমায় আরো জোরে জাপটে ধরে একটানে ওনার কাছে খুব কাছে নিয়ে গেলেন। আমি কিছু বলতে যাব, তখন’ই ওনি আমার মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করতে বললেন। একদফা টাস্কি খেলাম এটা দেখে।
আমি চুপ করে আছি….
হঠাৎ করেই ওনি আমার কানের কাছে মুখ এনে বললেন-
বলো! এবার বলো!!!
কথাটা ওনি এমনভাবে ফিসফিসিয়ে বললেন যে, আমার হৃদকম্পন বেড়ে গেছে নিমিশেই….
ওনি ফিসফিসিয়ে একের পর প্রশ্ন করে যাচ্ছেন,আর আমি চোখ দুটো বন্ধ করে ঘন ঘন নিশ্বাস নিচ্ছি….
পারছিলাম না আর…
এমন ভাবে কেউ কাউকে ধরে রাখে?!!!
এমন নিবিড় ভাবে ওনি আমায় জড়িয়ে আছেন যে, আমার হৃদকম্পনটা ক্রমাগত বেড়েই চলছিল….
আর ওনি আমায় এমন ভাবে জড়িয়ে ছিলেন যে, ওনার বুকের সাথে আমার বুকটা সম্পূর্ণ লেপ্টে ছিল…
নাহ! আর মনে হয় পারছি না। এবার বোধ হয় মরেই যাব….
চোখ দুটো ধীরে ধীরে খুললাম। তাকিয়ে দেখি, আমার মুখের কাছে ওনার মুখ….
একদৃষ্টিতে তাকিয়েদু’জনেই দু’জনের দিকে তাকিয়ে আছি। কারো মুখে’ই কোনো কথা নেই….
এভাবে বেশকিছু ক্ষণ থাকার পর আমি যেই না উঠতে যাব, তখনি ওনি আমায় আরো জোরে জাপটে ধরে একটানে ওনার কাছে খুব কাছে নিয়ে গেলেন। আমি কিছু বলতে যাব, তখন’ই ওনি আমার মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করতে বললেন। একদফা টাস্কি খেলাম এটা দেখে।
আমি চুপ করে আছি….
হঠাৎ করেই ওনি আমার কানের কাছে মুখ এনে বললেন-
বলো! এবার বলো!!!
কথাটা ওনি এমনভাবে ফিসফিসিয়ে বললেন যে, আমার হৃদকম্পন বেড়ে গেছে নিমিশেই….
ওনি ফিসফিসিয়ে একের পর প্রশ্ন করে যাচ্ছেন,আর আমি চোখ দুটো বন্ধ করে ঘন ঘন নিশ্বাস নিচ্ছি….
পারছিলাম না আর… আছেন….
ছাড়েন বলতেই ছেড়ে দিল আমাকে….
মনে হচ্ছে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। শুয়া থেকে উঠে বসে পরলাম। বসে বসে হাফাচ্ছি।
কিছুক্ষণ পর ওনিও শুয়া থেকে উঠে আমার পাশে বসলেন। কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে আচমকা আমার হাতের উপর হাত রাখলেন।
একবার হাতের দিকে তাকিয়ে ওনার দিকে তাকালাম। ওনি তখন অন্যদিকে তাকিয়ে আছেন।
মুখটা আমি’ই খুললাম__
” ঘুমাবেন না?”
ধীর কন্ঠে ওনার জবাব_
হুম, সেই জন্য’ই তো এসেছি। আমি আবারো জিজ্ঞেস করলাম__
” ঘুমাবেন না?”
ওনি আবারো আগের ভঙ্গিতে বললেন__
ঘুমাবো বলেই তো এসেছি…
~`মানে কি? ঘুমাবেন বলে এসেছেন মানে?
★ এসেছি মানে, এসেছি। আর আমি এই রুমে’ই ঘুমাবো।
~`ওহ, আচ্ছা! আপনি ঘুমান আমি যায় তাহলে….
★কোথায় যাচ্ছ? কোথাও যাবে না। এখানে আমার সাথে ঘুমোবে….(হাত ধরে সিয়াম)
~`এখানে আপনার সাথে ঘুমাবো মানে?(কাঁপা কন্ঠে মায়া)
★ মানে বুঝতে পারছ না?!!!
~`না…
★এখানে এই বিছানায় তোমার বুকে যদি শার্ট ঘুমাতে পারে, তবে আমি কেন নয়?!!! আমি কি অন্যায় করলাম যে আমাকে তোমার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত করা হবে? আর ঐ শার্টের মধ্যে কি এমন আছে যা আমার মধ্যে নেই….

মায়া সিয়ামের কথা শুনে বড়সড় Shocked খেল….

চলবে……

বসের সাথে প্রেম পর্ব-১২

0

বসের সাথে প্রেম
পর্ব-১২

লেখা- অনামিকা ইসলাম।

ফোনের ওপাশ থেকে অদ্ভুত শব্দে হাসির আওয়াজ যেন থামছেই না। ক্রমাগত বেড়েই চলছে সে আওয়াজ।
রাগে ফোন’টা রেখে দিলাম। এদিকে সিয়াম ভাইয়া’টাও কেমন গম্ভীর হয়ে গেছে। একই বাসায়, একই ছাদের নিচে থাকলেও ওনাকে কেন জানি দুরের মানুষ মনে হতো। অনেক বেশী দুরের মানুষ। ওনার এই যে এত ইগ্নোর সেটা আমি মেনে নিতে পারছিলাম না। আর তাছাড়া ইদানিং ওনার ফোনালাপটা খুব বেশী বেড়ে গেছে। যতবার’ই কাজের জন্য কিংবা একটা না একটা বাহানায় ওনার কাছে গিয়েছি, ততবারই দেখি হেসে হেসে কথা বলছে ফোনে। কেন জানি ব্যপারটা সহ্য করতে কষ্ট হচ্ছিল। আজ অফিস থেকে ফেরার পথে ইচ্ছে করেই ওনার গাড়ির সামনে গেলাম। ওনি দেখেও গাড়ি থামালেন না, আমায় একটা বারও জিজ্ঞেস করলেন না-
দাঁড়িয়ে কেন মাঝরাস্তায়?
গাড়িতে উঠ কিংবা
বললও না রাস্তার একপাশ দিয়ে যাও….
প্রচন্ড রকম হতাশা আর কষ্ট বুকে চেপে সেখান থেকে চলে আসি রিক্সা দিয়ে…
বাসায় এসে কিচ্ছু খায়নি,
কেন জানি ভেতরটা অজানা এক অভিমানে কেঁদে উঠল।
রাত্রে কিছুতেই ঘুম আসছিল না। জানালার পাশে চুপটি করে চোখ বোজে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ’ই ফোন’টা বেজে উঠল। রিসিভ করতেই সেই কন্ঠ।
~আপনি আমার এই নাম্বারও জানেন?
★জানিই তো। সেই জন্য’ই তো কল দিতে পারলাম। ঘুমাওনি?!!!
~না….
★কার জন্য জেগে আছ?
নিশ্চয় তোমার সিয়াম ভাইয়ার জন্য…..
~ওনি আমার কে?যে ওনার জন্য জাগতে হবে?
★সেকি! কালকেই না বললে তুমি ওনাকে ভালোবাসো….?!!!
~`আমি ওনাকে ভালোবাসি না। এই সম্পর্কে আর কোনো কথায় শুনতে চাই না।
★কিন্তু আমি যে বলতে চাই। বলতে চাই, আমি তোমাকে ভালোবাসি। অনেক বেশী ভালোবাসি।
~কিন্তু আমি আপনাকে ভালোবাসি না। আমি সিয়াম ভাইয়াকে ভালোবাসি।
★আমি জানি তো। আর সিয়ামও তোমাকে ভালোবাসে।
~এই! আপনি কে বলেন তো? একটু আগে বলছেন আপনি আমাকে ভালোবাসেন, এখন আবার বলছেন সিয়াম ভাইয়াও আমাকে ভালোবাসে। এসবের মানে কি? কে আপনি?
আমার পরিচিত কেউ?
আর সিয়াম ভাইয়াকে কিভাবে চিনেন?
★ভুল তো কিছু বলিনি। সিয়াম তোমাকে ভালোবাসে এটা যেমন সত্যি তেমনি আমিও তোমাকে ভালোবাসি এটা দিনের আলোর মতই সত্যি। আর আমি কে জিজ্ঞেস করছ না?
আমি তোমার শুভাকাঙ্খী….
~ তা শুভাকাঙ্খী সাহেব! আপনি এত কিছু জানেন, এটা জানেন না যে সিয়াম ভাইয়া অন্য একটা মেয়েকে ভালোবাসে..?!!!
★যতটুকু জানার দরকার ঠিক ততটুকুই আমি জানি। আপনার মত এত বেশী আমি জানি না। আমি জানি যে, সিয়ামের জীবনে একটাই ভালোবাসার মানুষ ছিল সে- মায়া! সিয়ামের মায়া-পরি।মানমন্দিরের সিংহাসনে যার বসবাস সে মায়া। মায়া সিয়ামের কল্পরাজ্যের রাজকুমারী। যার মায়া মায়া মুখ দেখে সিয়াম বার বার মরতে রাজি।
~মানে কি? ওনি তো আমায় বলছে…(…)….???
★ভুল বলছে। ও ওর মায়াপরিটাকে ভিষণ ভালোবাসে। এতটাই ভালো যে ওর বিয়ের সমন্ব নিয়ে বাবা যখন মায়ের সাথে কথা বলে তখন ও মুখ লুকিয়ে কাঁদে। কখনো ছাদে আবার কখনো বা বাগানে গিয়ে। ওর মায়া পরির চোখের জল সে সহ্য করতে পারে না, তাই মায়াপরিটা কখন অসুস্থ হয়ে কাঁদে তখন ও ওর রুমের দরজা লাগিয়ে কান্না করে…..
~……..
★কি হলো ম্যাম?
চুপ করে আছেন কেন? এবার বিশ্বাস হলো তো?!!!
~কিসের বিশ্বাস হবে? ওনি কখনো আমায় ভালোবাসেনি, আর বাসতে পারবেনও না। ওনি ভালোবেসে থাকলে আমায় বলত, আর সবচেয়ে বড় কথা হলো ওনি আমায় বোনের মত দেখে….
★বোন ও কখনো’ই তোমাকে মানতে পারেনি, পারবেও না। আর তোমাকে বলার কথা বলছ না?
ও তোমাকে একবার নয়, শতবার বলতে চেয়েছে। কিন্তু প্রতিবার’ই তোমার ভাইয়া ডাকটার কাছে হেরে গিয়ে চলে এসেছে। ঐতো ১৪ফেব্রয়ারির কথা মনে নেই?!!! সেদিন একগুচ্ছ ফুল হাতে ও যে পার্কে গিয়েছিল সেটা তোমার জন্য’ই। কিন্তু আফসোস!
সেদিনও ও তোমায় মনের কথা বলতেতে পারে নি। পারেনি বুঝাতে কতটা ভালোবাসে। তুমিও কি হুম?
পারলেনা ওর চোখ দেখে বুঝে নিতে ওর না বলা কথাগুলো?!!!
প্রিয় মানুষটির চোখ দেখেই তো তার মনের কথা বুঝে ফেলার কথা। আচ্ছা, আদৌ কি তুমি ওকে ভালোবাসতে পেরেছ? মনে হয়ত না!
না হলে ঠিক’ই ওকে বুঝতে। বুঝতে কতটা যন্ত্রণা বুকে নিয়ে ছেলেটা বেঁচে আছে।
আচ্ছা, আজ কি মনে করে ওর গাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলা? মরার শখ জাগছিল নাকি ওকে পুরোটাই মারতে চেয়েছিলস যা ছিল বাকি…

শেষের কথাগুলো মায়া কেন জানি খুব বেশী আপন, খুব বেশী চেনা মনে হচ্ছিল। কে আপনি, কন্ঠটা এমন শুনাচ্ছে কেন? বলতে গিয়ে উত্তরটা আর শুনতে পায়নি। সাথে সাথে ফোনটা কেটে দেয় অচেনা লোকটা….

ছেলেটির ডায়েরী_
দীর্ঘ ৬মাস পর ডায়েরীটা হাতে নিলাম। এই কয়মাস এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে ডায়েরীটা কিছুতেই হাতে নিতে পারিনি। আর নিব’ই বা কিভাবে?!!!
দিনে অফিস, কাজ পাশাপাশি সিসি টিভির ফুটেজে ওকে দেখা নিয়েই ব্যস্ত আর রাত্রে ফোনালাপ। শুভাকাঙ্খী সেজে কন্ঠ পরিবর্তন করে ওর সাথেই যে ফোনালাপে ব্যস্ত থাকা।
ভালো’ই কাটছিল দিনগুলো, মন্দ না। মন্দ তখন লাগত যখন অনিচ্ছা সত্ত্বেও ওকে ইগ্নোর করতে হতো। ওর কথার জবাব না দিয়ে ওকে এড়িয়ে যেতে আমার খুব খুউব কষ্ট হত। তবুও করতে হতো বন্ধুর আদেশে। বন্ধু আতিকের কড়া নির্দেশ ওকে ইগ্নোর করে যেতে আর ফোনে শুভাকাঙ্খী সেজে মিষ্টি আলাপ করতে। আমি বুঝি না ও কেন এমন করতে বলছে? সত্যি’ই কি এটা করলে মায়া আমার হয়ে যাবে? ও আমার কাছে এসে কান্না করে মনের কথা বলবে? কিংবা ফোনে অচেনা লোক সেজে সিয়াম সম্পর্কে কিংবা সিয়াম ওকে কতটা ভালোবাসে এটা বুঝিয়ে বললে ও কি ছুটে আসবে আমার কাছে? জাপটে ধরবে আমায়?!!!!
এসব কিছুর কোনো সঠিক উত্তর আমার কাছে নেই, তবুও একবুক আশা বেঁধে আছি। ও আসবে।
আসতেই হবে ওকে….
ওকে ইগ্নোর করে যখন ওকে ফেলেই একা একা অফিস থেকে চলে আসতাম তখন ও কি করত জানি না, তবে আমি সিয়াম রুমের দরজা আটকে দাতে দাত চেপে কান্না করতাম। কখনও বা গাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে রাস্তায় লুকিয়ে থাকতাম, মায়াপরিটা কি করছে দেখার জন্য। কখনো বা গরমে ভিঁজে ভীর বাসে করে বাসায় যেতাম শুধু ওর কষ্টটা অনুভব করার জন্য।
একটা সময় আসে যখন অনুভব করতে পারি ও কেমন যেন একটা চাপা কষ্ট বুকে চেপে থাকে সবসময়…
– একদিনের কথা মনে হলে এখনও হাসি পায় খুব।সেদিন ও ইচ্ছে করেই আমার রুমে চলে আসে। আমি তাকাতেই ছুটে চলল বাইরের দিকে। পিছন থেকে ডেকে বললাম, কি চাই?!!!
উত্তরে আমতা আমতা করে বলল, চা?!!!
চা খাবেন?!!!
~ মাত্র তো চা রেখে গেলে? এই চা’য় তো খাওয়া শেষ হয়নি? আবার কিসের চা?
আজকে কি তুমি আমায় চা খাইয়েই রাখবে?!!!
মুখ ভার করে পাগলীটা চলে গেল। মনে মনে বলছি-
পাগলী একটা…!!!
বললেই তো হয় আপনাকে দেখতে এসেছি।??
,
সেদিন অফিস ছিল না। দুপুরে রুমে শুয়ে আছি। রাতে ফোনে কিভাবে কি বলব সেটাই ভাবতেছি। হঠাৎ করেই জানালার পাশে এসে দাঁড়ালো। আমি দেখেও না দেখার ভান করলাম। অনেকক্ষণ ধরে উঁকি ঝুকি মেরে আমায় দেখছিল। আমি মুখ টিপে হাসছিলাম। প্রায় আধঘন্টা হয়ে যাওয়ার পরও ও যখন একই ভঙ্গিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, তখন আমি ফিরে তাকালাম। ও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। চা নাকি কফি লাগবে সেটাই নাকি জিজ্ঞেস করতে আসছিল?☺
-‘ ভর দুপুরবেলায় সিয়াম ঘুমায়, সেটা কি তুমি জানো না?!!! মাথা নিচু করে চলে গেল…
,
সেদিন সন্ধ্যার আগে ছাদ থেকে ফিরছিলাম। রুমের কাছে এসে দেখি দরজার ফাক দিয়ে উকিঝুকি মারছে। কাছে এসে কি হলো বলতেই লাফ দিয়ে উঠল।
ইয়ে মানে আপনার কিছু লাগবে কি না জিজ্ঞেস করতে এসেছি।
~মায়া, শুনো! এ বাড়িতে কাজের লোক আছে। ওরাই আমার দেখাশুনা করে। আমার কিছু লাগলে ওদেরকে আমি জানাব। শুধু শুধু তোমার কষ্ট করতে হবে না। যাও, রুমে গিয়ে নামাজ পড়….
মাথা নিচু করে চলে গেল বেচারি… ??
,
পরদিন অফিসে গেলাম।
একটু পরপর রুমের কাছে এসে আমায় দেখে যাচ্ছে, কখনো বা কাজের বাহানায় কাছে আসছে।
-‘ মিস মায়া! আমার আপনাকে দরকার পরলে আমি আপনাকে ডাকব, এভাবে দরজার সামনে এসে উকিঝুকি মারবেন না। কথাটা কর্কশ কন্ঠে বলেছিলাম।
ঠিক আছে, স্যার বলে লজ্জায় মাথা নিচু করে চলে গেল আমার মায়া পরিটা।
-‘ হায়রে!
এতই যখন আমায় ছাড়া থাকতে পারিস না, তখন একটা বার মুখ ফুটে বল না। বাবা-মাকে সেদিন’ই মেনেজ করিয়ে তোকে বিয়ে করে ফেলব। তখন আর উকিঝুকি মেরে দেখতে হবে না।??
,
সেদিন ফোনে আবুলতাবুল কি সব বলছিলাম।
ইচ্ছে করেই বলছি। ওকে জেলাস ফিল করানোর জন্য ফোন কানে নিয়ে মিছেমিছি কথা বলছি। ভেবেছিলাম সিনামার নায়িকাদের মত করে আমার কাছে এসে, হাত থেকে ফোন নিয়ে, কলার চেপে ধরে বলবে!!!
কিসের কথা এত, হুম?
তুই শুধু আমার, অন্য কারো না। আর কখনো যদি ফোনে কথা বলতে দেখি তাহলে মেরেই ফেলব।’
-‘ না, তা আর হলো কই?
স্বপ্ন স্বপ্ন’ই রয়ে গেল….
,
সেদিনও ওকে রেখেই গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরি। বিভিন্ন কারনে মনে প্রচন্ড রাগ ছিল ওর উপর। গাড়ি নিয়ে যখন রাস্তায় চলে আসলাম, তখন দেখি রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাটছে। গাড়ি থেকে নেমে ইচ্ছে হচ্ছিল কয়টা থাপ্পর কিংবা ধমক দেই। কিন্তু দিলাম না। রাগ দেখিয়ে হনহন করে চলে গেলাম। সেদিন বাসায় গিয়ে ওর রুমে ঢুকি। ভেবেছিলাম আমার ডায়েরীটা রেখে আসব ওর বিছানায় কিন্তু রাখতে পারলাম না।
যখন ওর ডায়েরীটা চোখে পরল তখন ডায়েরীটা হাতে নিয়ে রুমের দিকে ছুটে চললাম।
রুমে গিয়ে একের পর এক পৃষ্ঠা পরছিলাম, আর চমকে যাচ্ছিলাম।
-‘ Ohh,my god!
ও আমায় এতটা ভালোবাসে? এতটা?!!!!
অথচ একটাবারের জন্য মুখ ফুটে বলতে পারেনি?!!!
ওর ভালোবাসার কাছে আমার ভালোবাসা যে অতি নগন্য….
দীর্ঘ ৪বছর ধরে নিরবে-নিভৃত্তে, নিঃস্বার্থভাবে ও আমায় ভালোবেসে গেছে। কখনো পাওয়ার আশা করেনি, শুধু দুর থেকেই শুভকামনা করে গেছে….
এতটা ভালোবাসে ও আমাকে?
কোথায় রাখব ওর এত ভালোবাসা?!!!
কাঁদতেছিলাম আর ডায়েরীটা বুকে জড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে মা চলে আসে রুমে। কি হয়েছে জানতে চায়…
ডায়েরীটা লুকিয়ে রেখে বললাম কিছু না….
মা চলে যায় রুম থেকে…
ওর ডায়েরীটা আগের জায়গায় রেখে আসি……
সেদিন আর অচেনা শুভাকাঙ্খী হয়ে ওকে ফোন করার শক্তি পাচ্ছিলাম না। ভেবে নিয়েছিলাম আর ফোন করব না। এবার যা বলার সামনাসামনি বলব। কিন্তু বন্ধুদের অনুরোধে শেষবারের মত ওকে ফোন দিলাম। জানিয়ে দিলাম সিয়াম ওকে কতটা ভালোবাসে….
কথা বলার সময় এতটাই আবেগী হয়ে গিয়েছিলাম যে ভুল করে আমার আসল কন্ঠে কথা বলে ফেললাম। বুদ্ধিমতি মেয়ে বুঝতে না পারলে সেটা টের পায় কিছুটা। তাই জিজ্ঞেস করে,
কে আপনি? আপনার কন্ঠ’টা বলার আগেই লাইনটা কেটে দিয়ে বড়সড় নিঃশ্বাস নিলাম।
ভেবেছিলাম আমার প্রতি ওর ভালোবাসা সবে মাত্র জন্ম নিয়েছে কিন্তু বুঝতে পারিনি ও আমায় এতদিন ধরে ভালোবেসে যাচ্ছে নিরবে….
আর যখন বুঝতে পারলাম তখন আমার ভালোবাসাটাও জানানোর প্রয়োজন মনে করলাম। তাই বলে দিলাম-
সিয়ামের মনের অব্যক্ত কথা….
পরদিন__
নববর্ষ উপলক্ষ্যে বাসায় বিরাট আয়োজন করা হয়েছে।সাইমার বন্ধুবান্ধব সবাই উপস্থিত হয় বাসায়। আমার বন্ধু-বান্ধবও…..

পুরো ছাদ’টা লাল-নীল ভাতি দিয়ে সাজানো হয়। দিনটি নববর্ষের হলেও বাসায় এই যে এত বন্ধুবান্ধব সব ছিল মায়ার জন্য। মায়াকে যেভাবেই হোক মনের কথাটি বলতে পেরেছি আর ও নিজেও আমায় ভালোবাসে এই জন্য মূলত এই পার্টি…
সবাই যখন নেচে গেয়ে বিভিন্ন ভাবে দিনটি সেলিব্রেট করছে মায়া তখন সাইমার সাথে সবার জন্য খাবার পরিবেশনে বিজি…
মায়া একপাশ থেকে একে একে সবাইকে যখন পানির গ্লাস দিয়ে আসছিল, তখন’ই মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি চাপে। ও কাছে এসে যখন সরবতের গ্লাসটা আমার দিকে এগিয়ে দিচ্ছিল তখন আলতো করে ওর হাতটা স্পর্শ করি। ও কেঁপে উঠে। গ্লাসটা ছাড়তে গিয়ে পুরো সরবতের গ্লাসের পুরো সরবত গায়ে পরে যায়। গায়ের কোর্ট’টা ভিঁজে একাকার হয়ে যায়।সাইমার ডাকে ও যখন মাথা নিচু করে চলে যাচ্ছিল,
তখন’ই পিছন থেকে ওকে ডাক দেই _
” এই মেয়ে! এই?!!!
দাঁড়াও…..

ও চমকে পিছনে তাকালো…
এগুলো মুছবে কে?
উপস্থিত সকলে আমার দিকে তাকালো…..

চলবে….

বসের সাথে প্রেম পর্ব-১১

0

বসের সাথে প্রেম
পর্ব-১১

লেখা- অনামিকা ইসলাম।

ভালোবাসা মানে হলো ভালোবাসার মানুষটির সুখের জন্য ত্যাগ,ভালোবাসা মানে দুর থেকে প্রিয় মানুষটির জন্য শুভকামনা…..
ভালোবাসা মানে পাবো না জেনেও তার মঙ্গলের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করা….
সেই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়েই না হয় আমি আমার না পাওয়ার বেদনাকে সুখের পরম প্রাপ্তি মনে করে, ওর জন্য মন থেকে দোয়া করব।
সেদিন অফিসে নতুন করে জয়েন করেছিলাম ওর পি.এ হয়ে। অফিস শেষে ওনার সাথে ওনার গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলাম। মাঝরাস্তায় ওনাকে গাড়ি থামাতে বললাম। ওনি রাস্তার পাশে গিয়ে গাড়ি থামালেন। আমি গাড়ি থেকে নেমে ওনাকে চলে যেতে বলে পাশের পার্কটার বেঞ্চে গিয়ে চুপটি করে বসে রইলাম। ওনি যে কখন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বুঝতে পারিনি। যখন বুঝতে পারলাম তখন ওনার দিকে তাকালাম। ওনি আমার পাশে নিঃশব্দে বসে পরলেন। অনেকক্ষণ চুপ করে থাকার পর ওনি’ই মুখ খুললেন-
‘ আগে কখনো এসেছ?’
-‘ একবার নয়, অনেকবার এসেছি। মন খারাপ হলেই আমি এখানে আসি। চারপাশের সতেজ প্রকৃতি আর এই ফুলবাগান দেখলে মনটা আর খারাপ থাকে না। ভালো হয়ে যায়। আমার মন খারাপের সাক্ষী এই পার্ক….
চারপাশে এই যে এত বৃক্ষলতা, ফুলের বাগিচা এই সবকিছুর সাথে আমার অনেক অনেক সখ্যতা।
ওরা আমায় খুব বেশী আপন করে ফেলেছে। এই দেখেন না আসতে না আসতে কেমন বাতাস শুরু করে গেল…..
-‘ অপূর্ব!(সিয়াম)
-‘ কি?!!!
Ufff! দেখেন না ভাইয়া কেমন বাতাস বওয়া শুরু করে দিয়েছে।(চুল সামলাতে সামলাতে মায়া)
-‘ ওয়াও……(সিয়াম)
-‘ কি?(মায়া)
-‘ তোমার চুল……..(সিয়াম)
-‘………
আচ্ছা, চলেন যাওয়া যাক এবার……..(মায়া)
-‘ আরেকটু বসি না?!?(সিয়াম)
-‘ আচ্ছা…….(মায়া)
-‘ হুম………….(সিয়াম)
-……….(মায়া চুপচাপ)
-‘………(সিয়ামও চুপচাপ)
-‘ ভাইয়া একটা কথা বলব? ওনার দিকে তাকিয়ে আমি কথাটা বলছিলাম…
ওনি আমার দিকে তাকিয়ে বলল- জি, বলো।
-‘ আপনি কি সত্যি’ই কাউকে ভালোবাসেন?কথাটা বলতে গিয়ে গলা আটকে আসছিল আমার। তবুও বললাম।
ওনার দিকে তাকাতে পারছিলাম না, তাই নিচে তাকিয়ে আছি প্রশ্নটা করেই। ওনি আমার দিকে তাকিয়ে হেসে হেসে বললেন, হুম। বাসি।
-‘ কতটুকু বাসেন?(M)
-‘ যতটুকু ভালোবাসলে বুকে হাত দিয়ে বলা যায়, আমার মত ভালো বোধ হয় পৃথিবীর আর কোনো প্রেমিক তার প্রেমিকাকে বাসতে পারবে না।(S)
-‘ আর বসে থাকতে পারছিলাম না। বসা থেকে উঠে পরলাম। ওনি এখনো বসে আছেন। চোখে জল, মুখে হাসি নিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে আবারো জিজ্ঞেস করলাম-
” ম্যাডাম নিশ্চয় আপনাকে খুব ভালোবাসে?!!!
-‘ নির্লিপ্ত কন্ঠে ওনার জবাব-
জানি না, তবে ভালো না বাসলেও ও আমায় ঘৃণা করে না।’
-‘ একতরফা ভালোবাসা?
কিছুটা গম্ভীর হয়ে ও বলল,
আপাতত একতরফা’ই বলতে পার। তবে খুব শিগ্রয় মনের কথা’টা ওকে বলে দিব….(S)
-‘ সেটাই ভালো।
মনের কথা যত তাড়াতাড়ি পারেন বলে দিবেন, ভাইয়া। না হলে পরে প্রস্তাতে হবে….
ও হাসোজ্জল মুখে বলল,
সেটাই করতে হবে।
কেন জানি না চোখ দিয়ে পানি পরতেছে। কন্ঠ আটকে যাচ্ছিল। বহুকষ্টে কান্না থামালা।
আচ্ছা!
ওনি কি অনেক সুন্দর,ভাইয়া?
-‘ সিয়াম জোর গলায় বলল,
হুম, অনেক সুন্দর।
…..দেখতে কেমন? আমার থেকেও বেশী মায়াবী?
– হুম, তোমার থেকেও অনেক সুন্দর সে। তবে সে নিজেও জানে না সে কতটা সুন্দর। ওর ঐ মায়াবী মুখের পানে যতবার’ই তাকাই, ততবার’ই ওর প্রেমে পরে যায়। মায়া জানো, খুব ভালোবাসি আমি আমার ঐ মায়াপরিটাকে।
এতটাই ভালোবাসি যে যা ও কখনো কল্পনাও করতে পারেনি, পারবেও না…..
কেন জানি এবার আর কান্না আটকাতে পারছিলাম না।
অবস্থা বেগতিক দেখে মুখটা হাত দিয়ে চেপে ধরলাম…..
ছেলেটির ডায়েরী_
সে রাতের পর থেকে ও কেমন যেন হয়ে গেল। হাসি-ঠাট্টা, গল্পে-আনন্দে ও কেমন যেন একটু বেশীই মেতে থাকত। আমার সাথেও হেসে হেসে কথা বলত। আগের মত আর চুপ করে থাকত না। পুরো ব্যপারটা’ই আব্বু-আম্মু কিংবা বোনের কাছে স্বাভাবিক হলেও আমার কাছে কেন যেন ব্যপার’টা অস্বাভাবিকের চেয়েও একটু বেশীই মনে হতো। মনে হতো, এই যে ওর এত হাসি-ঠাট্টা, গল্প-আনন্দ সবকিছুই যেন মেকি। কেন জানি মনে হতো- আমি/আমরা যা দেখছি তা সত্যি নয়, আর যা সত্যি তা আমরা দেখছি না। সেদিন ও নতুন করে আমাদের কোম্পানিতে আমার পি.এ হয়ে জয়েন করেছিল। বাবার কড়া নির্দেশ অফিসে নেওয়া এবং আসার সময়ও যাতে ওকে সাথে নিয়ে আসি। সেদিন আসার সময় মাঝ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে ও গাড়ি থেকে নেমে পরে। তারপর আমাকে চলে যেতে বলে। ওর আসতে দেরী হবে তাই ওকে রেখেই চলে আসতে বলে। আমি সেদিন গাড়িতে রাস্তার পাশে রেখে ওর পিছু নিলাম। যেতে যেতে ও রাস্তা থেকে ক্ষাণিকটা দূরবর্তী স্থানে যে পার্কটা রয়েছে ঐখানে হাজির হলো। পার্কটার এককোণে একটা বেঞ্চ ছিল, ও খুঁজে খুঁজে সেখানটাই গিয়ে বসল। আমি যে পিছনে দাড়িয়ে আছি সেটা বোধ হয় ওর দৃষ্টিগোচর হয়নি এতক্ষণ। আর যখন বুঝতে পারল পিছনে কিছু একটা দাঁড়িয়ে আছে, তখন মাথা তুলে একবার পিছনে তাকালো। তারপর চোখ আগের জায়গায় সরিয়ে নিল। আমি ওর সাথে গিয়ে চুপটি করে গিয়ে বসলাম। ও একটা কথাও বলেনি। মৌনতা ভেঙে আমি’ই সেদিন প্রথম প্রশ্ন করেছিলাম।
-‘ এই পার্কটার সাথে ওর পূর্বপরিচয় আছে সেটা সেদিন’ই জানতে পারলাম। আর এটাও জানতে পারলাম পার্ক’টাতে ও তখনি আসে, যখন ওর মনটা খুউব, খুউউব বেশী খারাপ থাকে। ও সেদিন আমায় অনেক কিছু জিজ্ঞেস করেছিল। বেঞ্চ থেকে উঠে গিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল,
– আমার কল্পনার রাজকুমারীকে আমি কতটা ভালোবাসি?! ও দেখতে ওর থেকেও মায়াবী কিনা?!!!
~আমি সহাস্যে বলেছিলাম,
হ্যাঁ, ও তোমার থেকেও সুন্দর! কিন্তু ও নিজেও জানে না ও কতটা সুন্দর…!!!??
-‘ সেদিন মায়াকে আরেকটু বসতে বলেছিলাম, কিন্তু ও নাকি একটু ক্লান্ত ছিল। তাই
ও আমায় রেখে ছুটে গাড়ির কাছে চলে গেল। আমি আসার আগেই গাড়িতে উঠে বসে পরল। আমি গিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলাম। পুরো রাস্তা ও চুপচাপ গিয়েছিল, একটা কথাও বলেনি। কিছু জিজ্ঞেস করলে শুধু হ্যাঁ, না জবাবটাই দিয়েছে।
এভাবেই চলে গেল আরো একটা বছর। মায়া এখন আর সেই আগের মায়াটি নেই। দৈহিক ওও মানসিক গঠনে ও হয়ে উঠেছে এখন একজন পরিপূর্ণ মানবী। একজন পরিপূর্ণ নারীতে যা যা বিদ্যমান থাকে সেটাই ওর মধ্যে ফুটে উঠেছে। ওর চলায়-বলায়, ওর আকার-আকৃতিতে পরিপূর্ণ নারী ছাপ স্পষ্ট….
মায়া এখন আর মামার সংসারের অবহেলিত সেই মায়াটি নেই, ও এখন বিশিষ্ট শিল্পপতি খন্দকার মো. আশিকুর রহমান সাগরের মেয়ে। সেই হিসেবে দেশের নামী-দামি ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি মহলের অনেকেই মায়া’কে পুত্রবধূ করে নেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে। বাবা দক্ষ ব্যবসায়ীর মত মায়ার বিয়ে দেওয়া নিয়েও দক্ষতার পরিচয় দিবেন, এটাই আমার পরিবারের সবাই নিশ্চিত জানে।
-‘ একটা ভয় সারাক্ষণ আমায় তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে, আর সেটা হলো মায়া’কে হারানোর ভয়। বাবা যখন মায়ার জন্য উপযুক্ত পাত্রনির্বাচন করে ফেলবে তখন আমার কি হবে?!!! আর মুখ থেকে সকালের ঘুম থেকে উঠব, আর কি নিয়ে আমি বাঁচব?!!!
আমি যে নিঃস্ব হয়ে যাব একেবারে….
আর পারছিলাম না।
আবার মনের কথাটি ওকে বলতেও পারছিলাম না। যতবার’ই বলতে চেয়েছি ততবার’ই ওর ভাইয়া ডাকটার কাছে হেরে গিয়েছি। ফিরে এসেছি মনের লুকানো কথাটি না বলেই…..
সেদিন জীবনের প্রথম নেশা করেছিলাম। নেশাটা বোধ হয় একটু বেশী’ই হয়ে গিয়েছিল। নেশার বোতল হাতে নিয়ে মাতলামি করতে করতে কখন যে মেইন রাস্তায় চলে গিয়েছিলাম বুঝতে পারিনি। হুশ হয় তখন যখন মাথায় প্রচন্ড আঘাত পায়। মাথায় হাত দিয়ে উপরের দিকে তাকাতেই দেখি বন্ধু আতিক আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে। কি হয়েছল জানতে চাওয়ার আগেই গালে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করলাম। ও আমায় রাস্তা থেকে তুলতে তুলতে ৩টা চড় মারল। তারপর বাসায় নিয়ে আমার মাথায় পানি দিল, আমায় টক খাইয়ে। চোখ থেকে নেশা অনেকটাই চলে গেছে। এখন আশেপাশের সবকিছু স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। এখন আর মায়াকে দেখতে পাচ্ছি না চারদিকে।
রাত আনুমানিক ১১টা কি সাড়ে ১১টা বাজে। বন্ধু আতিক ও ওর মা-ভাবির জুরাজুরিতে ডিনার’টা ওদের বাড়িতেই করে নিলাম। ও বাসায় ফোন করে জানিয়ে দিয়েছে, আমি ওদের বাসায় থাকব, তাই টেনশনের কোন কারন নেই। রাত ১২টা_
গালটা ব্যথা করতেছে।
গালে হাত বুলাতে বুলাতে মায়ার কথা ভাবছি। ও কি করছে, খাইছে কি না ইত্যাদি, ইত্যাদি। তখন’ই আতিক প্রবেশ করে রুমে।
-‘ ব্যথা করতেছে?(আতিক)
~’ হুম…?(আমি)
-‘ শালা, দে আর কয়টা লাগিয়ে দেই।?(আতিক)
~’ নে…বলে গালটা বাড়িয়ে দিলাম। গাক বাড়াতে দেরী গালে আরেকটা বোনাস পরতে দেরী না….
-‘ শালা! তুই কিরে? মানুষ না গন্ডার?!!! এভাবে আর কত? আর কত কাঁদবি?!!!(আতিক)
~তো, আমি কি করব??(আমি)
-‘ কি করব মানে? কাল ভালোবাসা দিবস না?!!!
তুই সরাসরি কাল গিয়ে ওকে প্রপোজ করবি। :/ (আতিক)
~’ আমি কি পারব বলতে? আর ও যদি রিজেক্ট করে দেয়? তখন! তখন কি হবে? ওকে তো হারিয়ে ফেলব আমি। অদৃশ্য যে অধিকারে ওর বিষয়ে খবরদারি করতে পারি, তাও হারিয়ে ফেলব…(আমি)
-‘ একসেপ্ট কিংবা রিজেক্ট সেটা পরে দেখা যাবে। তোর বন্ধু আতিক আছে তোর পাশে। তুই শুধু কাল ওকে আই লাভ ইউ’টা বলে দেখ কি হয়। বাকিটা আমি দেখব।
সেদিন সারারাত ভর একটা নিদারুণ ভয় আর উত্তেজনার মধ্যে ছিলাম।
তারপর শেষরাতে ঘুমিয়ে পড়ি। ঘুম ভাঙলো কারো কলের আওয়াজে। ফোনে তাকিয়ে দেখি ১২টা বাজে। বাবা আরআর সাইমা মিলে ৭৪টা কল দিয়েছে। সর্বনাশ! এত বেলা অবধি ঘুমালাম?!! তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আতিকের ভাবিকে বলে ছুটে চললাম ফুলের দোকানের দিকে। একটা সুন্দর ফুলের তোড়া কিনে বাবাকে কল দিলাম। স্যরি বললাম। জরুরী কাজের কথা বলে গাড়ি পাঠাতে বললাম। বাবা, ড্রাইভারকে দিয়ে গাড়ি পাঠিয়ে দিল। তারপর গাড়ি নিয়ে ছুটে চললাম অফিসের দিকে। সেখানে গিয়ে মায়াকে খুঁজে পায়নি। মেনেজার আংকেলের থেকে খবর নিয়ে জানতে পারলাম, অসুস্থতার কথা বলে ও নাকি একটু আগেই বাসায় চলে গেছে। বাসায় ফোন দিয়ে জানিয়ে দিলাম, মায়া বাসায় পৌঁছালে আমায় জানাতে।
১ঘন্টা,
২ঘন্টা,
৩ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেল। বাসা থেকে রোকসানা ফোন করেনি। আমি আবারো কল দিলাম। জানতে পারলাম,
ও তখনো বাসায় পৌঁছায়নি।
টেনশনে পরে গেলাম।
মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলাম। এই মুহূর্তে নানান বাজে চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
,
মলিন মুখে হাসি ফুটে উঠল।
বসা থেকে উঠে পরলাম।
তারপর গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরলাম। গন্তব্য-
‘ মায়ার মন খারাপের সাথী পার্কটা…..’
আধঘন্টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম সেই পার্কটাই। বেঞ্চের এককোণে চুপটি করে বসে একজোড়া দম্পতির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ফুলগুলো হাতে নিয়ে গাড়ি থেকে নামলাম। ওর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক ভালোভাবে তাকালাম। ও হাসোজ্জল মুখে বলল__
‘ আরে সিয়াম ভাই আপনি? কাকে খুঁজছেন?’
~’ এই তো আমার মায়া-পরিটাকে…….'(আমি)
-‘ ওহ, আপু কি এখানে আসবেন বলেছিল? (মায়া)
~’ বলেছিল তো আসবে।'(আমি)
-‘ তো কোথায় ওনি, ভাইয়া?(মায়া)
~এদিক ওদিক তাকিয়ে বললাম,
ও মনে হয় আজকে আসেনি মায়া…….
ও আমার হাতে রাখা ফুলের দিকে তাকিয়ে বলল,
-‘ আপুর জন্য এনেছিলেন বুঝি?’
-‘ হুম, ও তো আসে নি। আমি এ ফুল দিয়ে কি করব? তার চেয়ে বরং এগুলো তুমি’ই নিয়ে যাও মায়া…….(আমি)
মায়া মিষ্টি হেসে ফুল নিতে নিতে বলল-
‘ফুল সৌন্দর্য এবং পবিত্রতার প্রতিক। এ ফুল উপেক্ষা করার ক্ষমতা আমার নেই….’
ও ফুলগুলো হাতে নিয়ে বসা থেকে উঠে পরল। আসি বলে আমাকে রেখে’ই ফুলগুলো নিয়ে চলে গেল……
আমি গাধা হা করে সেদিকে তাকিয়ে আছি।
রাত্রে আতিকের সাথে দেখা।
-‘ কিরে?! বলতে পেরেছিস মনের কথাগুলো?
★আমি:- নারে! আমি পারলাম না। কি করব বল? যতবার’ই বলতে চাই ততবার’ই ওর ভাইয়া ডাকটার কাছে হেরে যায়।
★আতিক:- বুঝতে পারছি তোকে দিয়ে হবে না। যা করার আমাদের করতে হবে।
★আমি:- কি করবি তোরা?
★আতিক:- শুন তাহলে…..(……….)……???
এটাই শেষ।
★আমি:- কিন্তু ও যদি বুঝে যায়?!!!
★আতিক:- বুঝার জন্য তো আমরা এ পরিকল্পনা করিনি। যত বুদ্ধিমতি’ই হোক না কেন, ও তোকে ধরতে পারবে না।তুই শুধু কাজটা শুরু কর…
★আমি:- অতঃপর…
★আতিক:- অতঃপর ওর মনের ঘরে প্রবেশ করে ভালোবাসার বীজ বপন করে বেরিয়ে আসবি। বেরিয়ে আসার সময় ও যদি তোকে চিনতে পারে, বুঝতে পারে তোর ভালোবাসাকে তাহলে ও তোর, সাথে সাথে ভালোবাসার শিকল পরিয়ে দিবি ওর পায়ে…..
★আমি:- আর যদি না বুঝতে পারে?
★আতিক:- আর যদি না বুঝতে পারে তাহলে উড়িয়ে দিবি শূন্যে। মুক্তবিহঙ্গের মত উড়ে যাক দুর অজানায়। তবে, এটা যেন কখনো না হয়……
★আমি:- ওকে, তাহলে তাই হবে………..
মেয়েটির ডায়েরী_
ওর দেওয়া ফুলগুলো যতনে রেখে দিয়েছি আমার বেডরুমে। রাত ১১টা……
ফুলগুলোর দিকে একদৃষ্টিতে সেই সন্ধ্যা থেকে তাকিয়ে আছি। রাত্রি গভীর। চোখ থেকে অঝোরে জল গড়িয়ে পরছে আর বুকের বামপাশটাই অজানা চিনচিনে এক ব্যথা অনুভূত হচ্ছে। ঠিক তখনি এ রুমের টেলিফোন’টা বেজে উঠল। চোখের জল মুছে রিসিভারটা উঠালাম। হ্যালো! বলতেই ফোনের ওপাশ থেকে পুরুষ কন্ঠ ভেসে উঠল।
★মিস মায়া বলছেন?
~হুম, কিন্তু আপনি কে?
★মানুষ…..
~ হুম, জানি আপনি মানুষ। এর ছাড়া তো প্রাণী ফোন করতে পারে না। তো আপনার নাম’টা কি?(কর্কশ কন্ঠে)
★ মিস মায়া!
আপনি বোধ হয় রেগে যাচ্ছেন! আচ্ছা, এখন তাহলে রাখি। আপনার সাথে আমি পরে কথা বলব।
– কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না আমি। তার আগেই ফোনটা কেটে দিল লোকটা…..
কে হতে পারে লোকটা? ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলাম। সারাদিনে একবারও সিয়াম ভাইয়ার সাথে কথা বলতে পারিনি। ও কেমন যেন এড়িয়ে যাচ্ছে আমাকে। সেদিন আর লোকটা কল দেয়নি।
২দিন পর……..
ঠিক একই টাইমে টেলিফোন’টা বেজে উঠে।
ছোঁ মেরে ফোন’টা রিসিভ করলাম। এতরাত্রে সজাগ থাকার একটাই কারন। সে হলো সিয়াম ভাইয়া……
যাকগে!
রিসিভারটা উঠিয়ে হ্যালো বলতেই আবারো সেই কন্ঠ ভেসে আসল।
★কারো জন্য অপেক্ষা করছিলেন বুঝি?
~ না……
★ তাহলে এত রাত্রে জেগে আছেন যে?
~আমার ভালো লাগছে তাই।
★ আমার কিন্তু মোটেও ভালো লাগছে না আপনার ভেঁজা কন্ঠ। আচ্ছা, কেউ কি আপনাকে ছ্যাঁকা-ত্যাকা দিল নাকি?
~ You…….বকতে গিয়েও বকলো না। রেগে রিসিভারটা উপুরমুখী করে রাখল মায়া।
অসহ্য লোকটা…….
ঘুমিয়ে পরে মায়া।
৪,৫দিন পর__
মনটা ভিষন ভিষন খারাপ। আগে কখনো এতটা কাঁদেনি মায়া, যতটা এখন কাঁদে।
– ইদানিং ও আমায় খুব বেশী ইগ্নোর করছে। আগের মতমত কথা বলছে না, অফিসে যতকক্ষণ থাকি, ওনার দিকেই তাকিয়ে থাকি। অথচ ওনি?!!!
একটাবারও চোখ তোলে দেখে না।ডাকে না আমায়। সেরাতে আবারো কল আসে। রিসিভার উঠিয়ে কান্না ভেঁজা কন্ঠে হ্যালো বলতেই ওপাশ লোকটি বলে উঠল-
★ আহারে! বেচারি…..
ছ্যাকা খেয়ে ব্যাকা হয়ে গেছে।
~’ দেখুন, আমি কোনো ছ্যাকা ত্যাকা খায়নি। ব্যাকা হওয়া তো অনেক দুরের কথা…
★প্রেম করবেন, কিন্তু ছ্যাকা পরুটা খাবেন না, তা কি হয়?
না, না। আর যায় হোক, আমি
আমি অন্তত সেটা বিশ্বাস করি না। এ কথা অন্য কাউকে বলবেন, আমাকে নয়। মিস মায়া পরি।
~ আপনি বিশ্বাস করেন আর নাই করেন এটাই সত্যি। আমি প্রেম করি না….
★ Hurreh! তাহলে লাইন ক্লিয়ার…….
ওকে, ঘুমাও মায়া-য়া-পরি।
~’ লাইন ক্লিয়ার মানে?
,
হ্যালো, হ্যালো।
নাহ, ফোনটা কেটে দিল।
একসপ্তাহ পর_
হ্যালো মায়া পরি?!!!
~হ্যালো……….
★ সেকি! তোমার গলা তো বসে গেছে ঠান্ডায়। নিশ্চয় ঔষধ খাওনি? এক্ষণি কিছু খেয়ে ঔষধ খেয়ে নাও…
~ খাবো না…..
★ একদম ঘাড় ত্যাড়ামি করবা না লক্ষ্মী! যা বলছি তাই করো….
~’ আপনি আমার কে যে আমাকে আপনার কথা শুনতে হবে? আর আপনিই বা কেন আমার কেয়ার করছেন?
★ আমি তোমার কেউ না হতে পারি, কিন্তু তুমি আমার অনেক কিছু………
আর কেয়ারের কথা বলছ?
ভালোবাসি তোমায়, অনেক বেশী ভালোবাসি।তাই কেয়ার করি।
~ কিন্তু আমি তো আপনাকে ভালোবাসি না।
★ বাসো না,বাসবে।সমস্যা কি?!!!
~কখনো বাসব না। কখনো না।
★ এত গ্যারান্টি দিও না।
আজ না হয় কাল ভালো তোমাকে বাসতেই হবে।
~আপনি ভুল করছেন….
৬মাস পর_
হ্যালো………
মায়া-পরি প্লিজ ফোনটা কেটো না।
~আপনাকে আর কতবার বলব আমি আপনাকে ভালোবাসি না। বাসতে পারব না।
★ কেন বাসো না? কেন বাসতে পারো না?
~ কারন, আমি একজনকে ভালোবাসি।
★বিশ্বাস করি না।তুমি আমায় ছাড়া অন্য কাউকেই ভালোবাসতে পারো না। তুমি শুধু আমায় ভালোবাসো…
~না, আমি আপনাকে ভালোবাসি না।
★না, তুমি আমায় ভালোবাসো।
~না, আমি বাসি না।
★ না, তুমি আমায় ভালোবাসো।
~না, আমি বাসি না।
★জি,তুমি আমায় ভালোবাসো।
~জি, না। বাসি না।
★জি, হ্যা! বাসো। তুমি আমাকেই ভালোবাসো।
~Ufff! বাসি না।
★জি, বাসো।আমায় ভালোবাসো ডেয়ার……..
~আমি আপনাকে ভালোবাসি না। আমি সিয়াম ভাইয়াকে ভালোবাসি। বিশ্বাস করেন আমি সিয়াম ভাইয়াকে…(.?.)
এটুকু বলে মায়া আটকে গেল। একি বলে ফেললাম আমি।
এদিকে ফোনের ওপাশ থেকে লোকটি-
★জানি তো সিয়ামকেই ভালোবাসো।স্যরি, তোমার সিয়াম ভাইয়াকে।
~আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম।প্রতিউত্তরে কিছুই বলতে পারিনি। এদিকে ফোনের ওপাশ থেকে অদ্ভুতসব হাসির আওয়াজ শুনা যাচ্ছে……

চলবে…..

বসের সাথে প্রেম পর্ব- ১০

0

♦মহাসপ্তাহ♦
বসের সাথে প্রেম
পর্ব- ১০

লেখা- অনামিকা ইসলাম।

ছেলেটির ডায়েরী_
সেদিন আমি ইচ্ছে করে বাথরুমে ঢুকিনি, তবুও ও কেমন যেন হয়ে গেল। সবসময় আমার থেকে দুরে দুরে থাকত, আমি কথা বলতে গেলে আমায় এড়িয়ে চলত, কথা বলত না, আমার দিকে তাকাতো না। যদি ভুল করেও কখনো সামনাসামনি পরে যায় তখন অন্যদিকে তাকিয়ে চলে যায়। আমি বুঝতে পারছিলাম না আমি কি এমন অন্যায় করলাম যার কারনে ও আমার সাথে এমন করতেছে। সেদিন ভাবতেছিলাম আর ডায়েরী লিখতেছিলাম।
আচ্ছা, ও লজ্জায় এমন করছে না তো?!!!
যদি তাই হয় তাহলে তো ও আর আমার সাথে কথায় বলতে পারবে না, বলবে না।আচ্ছা, ওর দুষ্টু-মিষ্টি খুনসুটি হাসি-আনন্দ যদি আমি আর না দেখতে পাই?!!!
না, না….
যে করেই হোক ওকে কাছে আনতে হবে আর স্যরি বলতে হবে।
সেদিন মাথা ব্যথার অভিনয় করে সারাবিকেল কান্না করছি। আম্মু খবর শুনে আসছিল ঔষধ খাওয়াতে, আমি খাইনি। রাত্রে যখন গিয়ে বলি মাথাটা টিপে দিতে, তখন আম্মু শুয়েছিল। আম্মুর শরীরটা এমনিতেই বেশী ভালো লাগছিল না সেদিন। তাই আমি জানতাম আম্মু আমার মাথাটা টিপে দেওয়ার জন্য মায়াকেই পাঠাবে।
হ্যাঁ, তাই হলো। আমি যখন শুয়ে শুয়ে কানে হেডফোন গুজে দিয়ে গান শুনছি, তখন’ই ওর আগমন ঘটে। রুমের সামনে এসে চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। কান থেকে হেডফোনটা তাড়াতাড়ি খুলে ফোনটা বালিশের নিচে লুকিয়ে রেখে জোরে জোরে কান্না জোড়ে দিলাম। আমার কান্না শুনে মায়া আর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকেনি, তাড়াতাড়ি করে রুমে প্রবেশ করে। আমি চোখ’টা মিটমিট করে দেখছি ও দেখছি ও কি করে?!!!??
ও রুমে এসে, আমার দিকে একটু তাকালো। তারপর ধীরপায়ে আমার দিকে’ই এগিয়ে আসতে থাকে। আমি এবার চোখটা পুরো বন্ধ করে দিলাম।☺☺
ও আমার পাশে এসে বসল।
আমার কান্না একটু কমে গেল। ও চুপটি করে বসে আছে ৪,৫ মিনিট হয়ে গেলো তারপরও কিছু করছে না/বলছে না দেখে আমার আর ভালো লাগছিল না। তাই জোরে জোরে কান্না করতে লাগলাম। মনে হচ্ছে, কৌটা জাতীয় কিছু খুলছে, তারই শব্দ হলো। তবুও চোখটা একটু ফাঁক করে দেখে নিলাম। হ্যাঁ, আমার আন্দাজটাই ঠিক। ও কৌটা খুলেছে। মলমের কৌটা। আঙুল দিয়ে একটু মলম নিয়ে কৌটাটা বন্ধ করে আমার কপালের চারিপাশে মলম দিয়ে তা মালিশ করে দিয়েছে। যদিও আমার কিচ্ছু হয়নি তারপরও ও অর্ধেক রাত পর্যন্ত আমার মাথার পাশে বসে থেকে আমার মাথা’টা টিপে দিয়েছে। সেদিন কি যে সুখ পেয়েছিলাম ওর নরম হাতের ছোয়ায় তা বলে বা লিখে বুঝানো যাবে না। বেচারী!
যতবার’ই চেয়েছে উঠে চলে যেতে ততবার’ই আমার কান্না শুনে থমকে গেছে। শেষমেষ যখন বুঝতে পারলাম, ওর চোখ দুটো লাল টকটক হয়ে আছে তখন কান্নাটা থামিয়ে চুপ করে রইলাম। ও তখনো আমার পাশেই বসে আছে। আমি বারবার আড়চোখে ওকে দেখছিলাম। হঠাৎ’ই মনে হলো ও নেই। চোখ যায় নিচে, আমার বিছানায়। হুম, ও আমার বিছানার এককোণে ঘুমিয়ে পরেছে। আধঘন্টার মত আমি শুধু ওর ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়েই বসেছিলাম। তারপর কেন জানি শরীরটা গরম অনুভূত হতে থাকে। আর মাথাটাও একটু একটু করে ব্যথা করতেছে। আর পারছিলাম না। ওকে বিছানার এককোণ থেকে টেনে বিছানায় আনলাম। তারপর বুকের মধ্যে ওর মাথা’টা রেখে শুইয়ে দিয়ে কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম টের পায়নি। সেদিন স্বপ্নে মায়াকে দেখেছিলাম। ও আমার পাশে বসেছিল। মনে হচ্ছে কিছু একটা বলতে এসেছে কিন্তু বলেনি। কিছু না বলে কি মনে করে যেন উঠে চলে যাচ্ছিল। আমি ওর হাতটা ধরে ফেললাম। ও যতবার উঠতে চেষ্টা করেছে ততবার আমি ওর হাত ধরে ওকে আমার বিছানায় বসিয়ে দিয়েছি। হঠাৎ করে মনে হলো,
কেউ যেন কানের খুব কাছে এসে বলছে,
ভাইয়া, কি করছেন এসব? ছাড়েন….ছাড়েন প্লিজ।
শালার কপাল….
ভাইয়া ভাইয়া শুনতে শুনতে আমার মাথাটা গেল আর সেই ভাইয়া ডাকটাই স্বপ্নে এসে ব্যঘাত ঘটালো?!!
চোখ মেলে তাকালাম।
একি?!
এ যে স্বপ্ন নয়, বাস্তব।
আর আমি ওর হাত নয়, ওর মাথাটা চেপে ধরে আছি বুকের সাথে….
তার মানে আমি এতক্ষণ…. (…..?…….)
ভাবতে পারছিলাম না, উঠে বসলাম বিছানায়। ও ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলছে, মনে হয় ভয় পেয়েছে। ওর দিকে তাকালাম, চোখে চোখ পরতেই চোখ ফিরিয়ে নিলাম। তারপর মাথা নিচু করে স্যরি বললাম।
জানি না, ও কি মনে করেছে তবুও স্যরি বললাম। ও যাতে আমায় নিয়ে বাজে কোনো কিছু না ভাবে তাই বলে ফেললাম,
মায়া—
আমি তোমায় ইচ্ছে করে জড়িয়ে ধরিনি। আসলে স্বপ্নে দেখলাম আমার রাজকুমারী পাশে বসে আছে, তাই ওকে মনে করে তোমায় অনেকগুলো কথা বলে ফেলেছি।আমি সত্যি’ই লজ্জিত মায়া। তুমি কিছু মনে করো না প্লিজ। আমি কথাগুলো একনিঃশ্বাসে বলে ওর দিকে ফিরে তাকালাম। ও মনে হচ্ছে এতক্ষণ ধরে আমার দিকেই তাকিয়ে ছিল। চোখে চোখ পরতেই চোখটা সরিয়ে নিল। বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পরল। অন্যদিকে তাকিয়েই বলছে,
মনে করার কি আছে, ভাইয়া? আমি কিচ্ছু মনে করিনি, কিচ্ছুই মনে করিনি। আমি তারপরও কিছু জিজ্ঞেস করছিলাম ও আমার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। আমি ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি……
মেয়েটির ডায়েরী_
সেরাতে ঘুমুতে পারিনি। সারা রাত গুমড়ে গুমড়ে কেঁদেছি। চোখের জল যেন কিছুতেই বাঁধা মানছিল না। গড়িয়ে গড়িয়ে পরছিল দু’চোখের জল। তারপর মনকে এটা বলে শান্তনা দিলাম যে,
পৃথিবীর সব সুখ তো শুধু পাওয়ার মধ্যে না,
মাঝে মাঝে না পাওয়ার মধ্যেও এক নিদারুণ সুখ নিহিত থাকে। আর ভালোবাসা মানেই কি শুধু কাছে পাওয়া?!
না, তাতো নয়।

বসের সাথে প্রেম পর্ব- ০৯

0

বসের সাথে প্রেম
পর্ব- ০

লেখা- অনামিকা ইসলাম।

♦গল্পের নতুন মোড়♦
ছেলেটির ডায়েরী_
সেদিন আমার জন্মদিনে মায়া’কে দেখে যতটা না অবাক হয়েছিলাম তার থেকেও বেশী অবাক হয়েছিলাম মায়া’কে বোন হিসেবে বাবা যখন আমার হাতে সমর্পণ করে দিল। আর অবাক না হয়ে’ই বা যাব কোথায়? মনে মনে যাকে হৃদমাজারে স্থান দিয়ে ফেলেছি, তাকে’ই বোন বানিয়ে দেওয়া হলো..!!!
বাবা যখন কিছু না বলে ওর হাতটা আমার হাতে দেয়, তখন ও নিচের দিকে তাকিয়ে ছিল আর আমি তাকিয়ে ছিলাম ওর মায়া মায়া মুখের দিকে। সেদিন বাবা যখন বলেছিল,
সিয়াম–
আজ থেকে মায়া এ পরিবারের’ই সদস্য। ও যেখানে যে অবস্থায় থাকুক সবসময় তোর ওর পাশে ছায়ার মত থাকতে হবে, ওর খুঁজ নিতে হবে, যেমন’টা তোর বোনের ক্ষেত্রে এখনো করিস। সেদিন কিছুক্ষণের জন্য মন খারাপ হলেও সেই মন খারাপ’টা বেশীক্ষণ স্থায়ি হতে পারে নি। কারন, একটাই চোখের সামনে আমার মায়া পরিটা হাঁটাচলা করে, হাসি-আনন্দ, গল্পে মেতে থাকে বাবা-মায়ের সাথে। এটা দেখে মনটা শান্ত হয়ে যেত। মনটাকে এই ভেবে শান্তনা দিতাম,
যাক-
ও সবসময় আমার বাড়িতে আমার সামনে থাকবে, এটাই অনেক….?
বাবা বোন বানিয়ে দিয়েছে, আমি তো আর বোন মানি না, মানব না….??
ও আমার কল্পরাজ্যের রাজকন্যা ছিল, আছে, থাকবে….??
ভালো যখন বেসেছি, বেসে যাব আজীবন।
বসে বসে এই কথা গুলো’ই লিখছিলাম ডায়েরীর পাতায়। হঠাৎ’ই রোকসানা রুমে প্রবেশ করল-
– স্যার-
আপনাকে বেগমসাহেবা ডাকতেছে। সবাই ডাইনিং টেবিলে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। আপনি চলেন….
~ঠিক আছে, তুই যা। আমি আসতেছি। কাজের মেয়ে চলে গেল। ডায়েরী’টা রেখে নিচে গেলাম। ডাইনিং টেবিলে গিয়ে বসলাম সকালের ব্রেকফাস্ট করার জন্য….
বাবা-মা দু’জনে’ই বসে ছিল।
আমার মায়াপরীটাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। আশেপাশে তাকালাম। নাহ, আশেপাশেও কোথাও নেই। মা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, কিরে?!!!
কি দেখছিস?
এবার’তো খাওয়া শুরু কর!!!
হ্যাঁ, খাচ্ছি….
আচ্ছা মা!!!!
ও কোথায়?
কে?কার কথা বলছিস?….
-‘ আমি আসলে ওর…(.?.)….
কথাটা পুরো’টা বলতে পারলাম না, তার আগেই মায়া এসে উপস্থিত হলো। চেয়ার’টা ফাঁক করে মায়ের পাশে বসে পড়ল। মা হাসোজ্জল মুখে জিজ্ঞেস করল,
কিরে?!!!
হয়েছে তোর কাজ?!!
-‘ হুম, মা। হয়েছে।(মায়া)
-‘ মা, বাবার প্লেটে খাবার তুলে দিতে দিতে বলছে__
” এই নাও…
তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও…
তারপর গোসল করে তোমার না কি জরুরী কাজ আছে ঐখানে যাও।”
বাবা তাড়াতাড়ি খেয়ে উঠে পরল।
-‘ আজ আর গোসল? খেয়ে কেউ গোসল করে?”
বাবা চলে গেল মেনেজার আংকেলের সাথে….
মাকে জিজ্ঞেস করলাম__
” মা! বাবাকে গোসল না করিয়ে খেতে দিলে কেন?”
মা হেসে বলল, আমি কি করব বল? তোর বাবাকে তো পাঠাইছিলাম গোসল করতে, এরই ভিতর গিয়ে দেখি তোর বোন একবালতি কাপড় দিয়ে বাথরুমে ঢুকেছে। সেটা দেখে তোর বাবা চলে এসেছে…
-‘ মানে কি মা? ও উপরে বাথরুম রেখে নিচে কেন গেল??
-‘ সেটা’ই তো! আমিও বুঝতে পারছি না। কতবার করে বলেছি, তুই সাইমার বাথরুমে যাবি, না।।।
কে শুনে কার কথা….?!!!
-‘ স্যরি, আম্মু….?
আর কখনো এমন হবে না।(মায়া)
-‘ এই মেয়ে! মন খারাপের কি হলো এতে? চুপ করে খেয়ে নে….মায়ের কথা শুনে আচ্ছা বলে চুপচাপ খেয়ে উঠে পরল মায়া। আমিও খেয়ে-দেয়ে রুমে চলে গেলাম।
-‘ অাজ শুক্রবার,
অফিসে যায় নি। তাই রুমে চুপটি করে শুয়ে আছি। অনেকক্ষণ ধরে শুয়ে আছি কিন্তু ঘুমাতে পারছি না কিছুতেই।Uff!আর পারছি না। অসহ্য গরম….
এখন’ই গোসল করতে হবে।
শরীর থেকে গেঞ্জী’টা খুলে তাওয়াল হাতে নিয়ে ছুটে চললাম বাথরুমের দিকে। ধাক্কা দিয়ে দরজা’টা খুলে ভিতরে ঢুকলাম। তারপর দরজাটা ক্ষাণিক’টা মিশিয়ে যেই না ঘুরে দাঁড়ালাম ওমনি আমি কুপোকাত…..
‘থ’ হয়ে গেলাম।
এ ঘটনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না আমি….
বুঝতে পারিনি এখানে এসে মায়াকে দেখব।
তাও এইভাবে….
ও লজ্জায় শরীরটা কোনোরকম ঢেকে চোখ’টা বন্ধ করে ফেলল।
আমি ততক্ষণে হাতে রাখা তোয়ালে’টা দিয়ে আমার চোখ দুটো ঢেকে নিয়েছি। তারপর-
স্যরি, আমি রিয়েলি স্যরি….
আসলে বুঝতে পারব তো দুরের কথা কল্পনাও করিনি তুমি আমার বাথরুমে গোসল করছ। বুঝতে পারলে আমি এখানে আসতাম না। বিশ্বাস করো,
আমি সত্যি’ই জানতাম না…
মায়া, চোখ খুলে আমার দিকে তাঁকালো। আমার দিকে কিছুক্ষণ ঢ্যাবঢ্যাব করে তাকিয়ে, চোখটা ফিরিয়ে নিল। ও লজ্জা পাবে কি? আমি নিজে’ই লজ্জা পেয়ে বেরিয়ে গেলাম, যখন বুঝতে পারলাম আমি এতক্ষণ উন্মুক্ত শরীর নিয়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। লজ্জায় কোনোরকম ইয়ে, মানে স্যরি
বলেই ঐখান থেকে বেরিয়ে এলাম……☺☺

মেয়েটির ডায়েরী_
সেদিন ওনার জন্মদিনে ওনি কতটা সারপ্রাইজড হয়েছিলেন জানিনা, শুধু এটুকু জানি….
সেদিন ভালো আংকেল আমায় খুব বড় সারপ্রাইজ দিয়েছিলেন। আমায় ওনার বাড়িতে ওনার মেয়ের সম্মানে থাকতে দিয়েছিলেন। আর দিয়েছেন সিয়ামের মত একজন ভালো মানুষের বোন হওয়ার সুযোগ। আজ আর আমার মনে কোনো কষ্ট নেই, ওনাকে হয়ত আপন করে পাওয়াটা আমার জন্য অসম্ভবের চেয়ে বেশী, সারাজীবন বোন হয়ে ওনার পাশে ছায়ার মত থাকতে পারব। পারব, ওনাকে প্রতিটা মুহূর্ত দেখতে, সেটাই অনেক বেশী প্রাপ্তি আমার জন্য।
ওনাকে পাশবালিশে পাওয়া কিংবা ঘুম ভাঙলে ওনার মুখটা আগে দেখা সেটা না হয় স্বপ্ন হয়েই থাক….
……..
অনেকদিন পর ডায়েরীটা আবার হাতে নিলাম…..
আজ লিখব….
হ্যাঁ, আজ লিখব…..
আমার প্রিয় ডায়েরী আমি আজ তোমাদের সাথে শেয়ার করব কিভাবে সেদিন দুপুরে ওনি আমার বাহুগুলো দেখেছিলেন, আর আমি দেখেছিলাম আমার স্বপ্নের রাজকুমারের উন্মুক্ত বুক। যা ছিল ঘন লোমে ঘেরা…..
আচ্ছা, শুনো তাহলে কিভাবে কি হলো……
সেদিন ছিল শুক্রবার।
বরাবরের মত সেদিন দুপুরে আর বাবার বাথরুমে যায়নি, যেতে চেয়েছিলাম আমার বাথরুমে। যেটা আগে সাইমা ইউজ করত। কিন্তু তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আর সাইমা এবং স্যারের স্যরি ভাইয়ার বাথরুম একসাথে থাকায় ভুল করে সেই বাথরুমেই ঢুকে পরি। তারপর…
তারপর…………
মনে হচ্ছে আম্মু ডাকছে। ডায়েরী’টা হাত থেকে রেখে আম্মুর রুমের দিকে ছুটে চললাম। নিচতলায় আম্মুর রুমে গিয়ে আম্মুর পাশে বসলাম। আম্মু তখন শুয়েছিল, আমাকে দেখে শুয়া থেকে উঠে বসল। তারপর বলল,
ঘুমের ডিস্টার্ব করলাম মা?
আমি আম্মুর হাত’টা ধরে বললাম, এইসব কি বলছো আম্মু?!!! ঘুমের ডিস্টার্ব হবে কেন?? তুমি আমার ‘মা’…..তুমি আমায় ডেকেছ, অন্য কেউ তো নয়। আর তাছাড়া আমি এখনো ঘুমাইনি। এখন বলো কি বলবে?
-‘ তোর ভাইটার না অনেক মাথা। বিকেল থেকেই প্রচন্ড মাথা ব্যথা। ঔষধও খাচ্ছে না, তুই গিয়ে মলম লাগিয়ে ওর কপালের চারপাশটা একটু টিপে দিবি?!!!!
আমার শরীরটা বেশী ভালো লাগছে না তাই তোকে বলছিলাম। না করিস না…….
-‘ মা তোমার মুখের উপর না করব এটা তুমি কল্পনা করলে কিভাবে? তুমি বলবে আর আমি তা শুনব না তা ভাবলে কিভাবে? তুমি নিশ্চিন্তে শুয়ে থাকো, আমি আসছি। মায়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে উপরে চলে গেলাম। উপরে গিয়ে ওনার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। সেদিনের ঘটনায় এতটাই লজ্জা পেয়েছিলাম যে, ওনার সামনে আর যাওয়া হয়নি। গেলেও ওনার দিকে তাকাতে পারিনি। ওনার রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ওনার রুমে ঢুকব কি ঢুকব না সেই দ্বিধা-দ্বন্ধে ছিলাম। হঠাৎ’ই ভেতর থেকে একটা পেলাম। কারো গোঙ্গানির আওয়াজ। আর কিছু না ভেবে’ই ছুটে চললাম ওনার রুমের দিকে। যা ভাবছিলাম তাই……
ওনি চোখ বোজে কান্না করতেছে মাথা ব্যথায়। আমি গিয়ে ওনার কাছে বসলাম। ওনি আরো জোরে কান্না করছে। হাতে রাখা মলমটার কৌটা থেকে কিছু মলম আঙুল দিয়ে নিয়ে ওনার কপালের চারিপাশে লাগিয়ে দিলাম। তারপর আস্তে আস্তে টিপতে শুরু করলাম। ওনি কান্না করতেছে আর আমি ওনার মাথা’টা টিপে দিচ্ছি। আস্তে আস্তে কান্নার মাত্রাটা একটু একটু করে কমে আসে। কপাল থেকে হাত সরিয়ে আমি যখন চলে আসি তখন ওনার কান্নার মাত্রাটা দ্বিগুন বেড়ে যায়।
সাহস হয় না এভাবে রেখে চলে যাওয়ার। আরেকটু টিপে দেওয়ার জন্য এগিয়ে যায় ওনার দিকে। ওনি কান্না করে আর আমি মাথা টিপে দিচ্ছি। আর ভাবছি-
আহারে! বেচারা মাথা ব্যথার যন্ত্রণায় কত্ত কষ্ট পাচ্ছে। ওনার মাথা টিপতে টিপতে কখন যে সে স্থানেই ঘুমিয়ে পরি, বুঝতে পারিনি। ঘুম ভাঙলে নিজেকে ওনার বুকে আবিষ্কার করি। এত্ত রাত্রে ওনার বুকে এভাবে…….
ভয় পেয়ে গেলাম।
ভয়ে ওনাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য যেই না মাথা উঠাতে গেলাম ওমনি ওনি আমার মাথাটা ওনার বুকে চেপে ধরলেন। আবারো উঠার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম।
এবার ওনি আমায় আরো শক্ত করে জাপটে ধরলেন-
– কি করছেন এসব? (আমি)
~শুনো, এই বুকে কান পেতে শুনো আমার প্রতিটি নিঃশ্বাস তোমার কথায় বলছে…..
হৃদকম্পন টের পাচ্ছ কি? বুঝতে পারছো কি আমার না বলা কথাগুলো? (সিয়াম)
-‘ ভাইয়া,কি বলছেন এইসব?
মাথা ঠিক আছে আপনার?(আমি)
-‘ ওনি ধপাস করে বিছানা থেকে উঠে বসলেন। তারপর আমার দিকে একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলেন। মাথা নিচু করে বললেন, স্যরি…….

চলবে….

বসের সাথে প্রেম পর্ব- ০৮

0

বসের সাথে প্রেম

পর্ব- ০৮

লেখা- অনামিকা ইসলাম।

ছেলেটির ডায়েরী_
মায়াকে রাগের বশে থাপ্পরটা মেরেছিলাম, হঠাৎ করে কোথা থেকে এই রাগ’টা চলে আসল বুঝতে পারিনি। বুঝতে পারিনি কেন’ই বা ওর গায়ে হাত তুললাম। আর যখন বুঝতে পারলাম তখন মনে হলো খুব বেশী অন্যায় করে ফেলেছি। ও না হয় অচেনা, অজানা ছেলেদের সাথে কথা বলছে, তাই বলে আমি কেন ওকে মারলাম? ওকে মারার তো আমার কোনো অধিকার নেই। ও যার সাথে কোনো তার সাথেই কথা বলবে, হাসাহাসি করবে। তাই বলে আমি ওকে মারব কেন? তাও আবার অনেক মেহমানের সামনে। কি রকম অপমানিত’ই না হলো মেয়েটি। দৌঁড়ে গেস্টরুমে, মায়াকে খুঁজলাম। নাহ, ও এখানে নেই। তারপর দৌঁড়ে গেলাম সাইমার রুমে। নাহ, ও এখানেও নেই। মা-বাবা সবার রুমে গিয়েও ওকে খুঁজে পেলাম না। হঠাৎ’ই মনে সাইমার রুমের বিছানায় কি যেন একটা দেখে এসেছি। দৌঁড়ে গেলাম সেখানে। গিয়ে দেখি বিছানায় একটা নূপুর পরে আছে। খেয়াল করে দেখলাম মায়াবতীর নূপুর। হয়তো ওর অজান্তেই পা থেকে পরে গেছে, ও খেয়াল করেনি। নূপুর’টা হাতে নিলাম। নূপুরের গায়ে হাতের স্পর্শ বুলিয়ে দিলাম। তারপর সেটা আমার পকেটের ভিতর রেখে দিলাম। রুম থেকে বের হওয়ার সময় আরো একটা জিনিস চোখে পরে। সেটা হলো বোনের ফোন। ফোন’টা দিতে গিয়ে দেখি বোন’টার কাছে গে’ষার তিল পরিমাণ জায়গা নেই। সবাই ওকে নিয়ে ব্যস্ত এখন। কন্যা সমর্পণের শেষে ওকে গাড়িতে তুলে দেওয়া হলো। ভীর ঠেলে ওর কাছে গেলাম। ফোন’টা এগিয়ে দিত যাব, তখন’ই আবির বলল। ভাইয়া মাথা খারাপ হয়েছে আপনার? এই মেয়েকে এখন ফোন হাতে দিবেন তো দেখবেন সারারাত ফেবুতে গুঁতাগুঁতি করছে। আপনি বরং ফোন’টা আপনার কাছে রেখে দেন। ৬টা Y প্রেস করে আনলক বাটনে চাপ দিবেন। ব্যস, হয়ে যাবে।
বোনকে আর ফোন’টা দেওয়া হলো না।
ফোন’টা হাতে নিয়ে বন্ধুকে সাথে নিয়ে রুমে ঢুকলাম। টেবিলের উপর ফোনটা রাখতে যাব ঠিক তখন’ই দেখি মেসেজ ফর্ম মায়া….
লকটা খুলে মেসেজটা ওপেন করলাম। লিখা—
‘ সাইমা….
রাগ করিস না।
শরীর’টা একদম ভালো লাগছিল না, তাই চলে এলাম। আফসোস, বিদায় বেলায় তোর ঐ চাঁদবরণ মুখটা দেখতে পারলাম না। সে যায় হোক।
শোন, তোর ফোনে আমার যে ছবিগুলো আছে সব চোখ বোজে ডিলিট করে দিস। ছবিগুলো খুব বাজে হয়েছে…. “
মায়ার মেসেজ পরে তাড়াতাড়ি অতি আগ্রহ নিয়ে গ্যালারীতে ঢুকলাম। গ্যালারীতে ঢুকে হাজারখানেক ছবি দেখলাম। এর মধ্যে মায়ার একক ছবি শ’খানেক। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ড্রেসে তোলা। নববধূর মত লাজে রাঙা মুখে একটা ছবি তুলেছে, সেটা বোধ হয় আজকেরই। ছবিগুলো দেখে কেন যেন মায়া সামলাতে পারলাম না। আমার ফোনের শেয়ারইট’টা চালু করে নিয়ে গেলাম শত এর অধিক ছবি। তারপর বোনের ফোন’টা রেখে দিলাম আলমারিতে…
ছবিগুলো যতই দেখছিলাম ততই দূর্বল হয়ে পরছিলাম ওর প্রতি। কেন জানি, ছবিগুলো না দেখলে আমার ঘুম আসতো না রাত্রে। মায়ার ঐ মায়াবী মুখটা দেখেই রাত্রে ঘুমুতে যেতাম, ভোরে ঘুম থেকে উঠলাম। অফিস থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম নিজেকে। কারন, খুব বেশী দুর্বল হয়ে পরছিলাম। বাবাকে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে আমি সারাদিন একলা রুমের মধ্যে শুয়ে থাকি। ধীরে ধীরে শরীরটা দুর্বল হয়ে যেতে থাকে। ব্যপার’টা বাবা-মা লক্ষ করল। লক্ষ করল ওনার ছেলে একটা চাঁপা কষ্টের মধ্যে আছে। সেদিন বন্ধুর সাথে রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
আড্ডার টপিক ছিল ‘মায়া’।
আতিক আমার বাল্যকালের একমাত্র বন্ধ হওয়ায় তার সাথে সবকিছু শেয়ার করতাম। সেদিন রুমে শুয়ে কান্না করছিলাম আর হাতে জোরে জোরে আঘাত করছিলাম। ঘটনাক্রমে আতিক এসে উপস্থিত হয় এবং আমার হাত’টা ধরে ফেলে। আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে কান্না করতে করতেই বলি,
বাধা দিস না তুই…
আমি এ হাত দিয়ে ওকে আঘাত করেছিলাম, এ হাত আমি রাখব না। রাখব না আমি এ হাত।
শেষ করে ফেলব আমি আজ….
আতিক আবারো আমার হাতটা ধরে ফেলে। তারপর আমাকে শান্ত করে জিজ্ঞেস করে….
‘ কাকে আঘাত করেছিস?’
আমি মায়া বলতে গিয়ে আতিকের দিকে চেয়ে থেমে গেলাম। আতিক বলল__
” মা বলে থেমে গেলি কেন? বল। বলে ফেল মায়া’কে আঘাত করেছি। তার জন্য কষ্ট পাচ্ছি। আরে ইয়ার! ঐ মেয়েটার সাথে না তোর কোনো সম্পর্ক নেই? তবে কাঁদছিস কেন?!!! নিজেকেই বা কষ্ট দিচ্ছিস কেন? আতিকের কথা শুনে বলে ফেললাম, আছে সম্পর্ক। আছে…
মায়ার সাথে আমার সম্পর্ক আছে। আতিক চোখ বড় বড় করে বলল,
তাই?! তা কিসের সম্পর্ক আছে শুনি? জানি না, আমি কিচ্ছু জানি না। চোখ বোজে উত্তর দিলাম। আতিক আমার মুখটা ওর দিকে ঘুরালো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি…
ও বলছে-
এবার বলতো?!!!
সত্যি’ই কি তুই কিছুই জানিস না? আমি এবার আতিকের থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বললাম,
না…
আতিক রেগে গিয়ে আমায় বললো বলবি না তো?!!!
এবার আর সত্যি গোপন করতে পারলাম না। বলে দিলাম মায়াকে আমি ভালোবাসি। ভিষণ রকম ভালোবাসি। ওকে ছাড়া আমার চলবে না।
বলেই হু হু করে কেঁদে দিলাম। কান্না’টা এত জোরেই করে ফেলেছিলাম যে, আমার কান্না শুনে বাবা-মা ছুটে আসল রুমে।
কি হয়েছে, কি হয়েছে বলে পাগল করে ফেলল।
আমি কান্না থামিয়ে চুপ করে আছি। ওদের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সাহস আমার নেই। আমি ভয়ে চুপসে আছি। ঠিক তখন’ই আতিক এর উপযুক্ত জবাব দিয়ে দেয়।
আতিকের উপস্থিত বুদ্ধির কাছে আমি সেদিন বেঁচে গিয়েছিলাম। আতিক বলেছিল, সাইমাকে ভিষন রকম মিস করি আমি। বোনের শূন্যতায় আমার ভেতর’টা হাঁহাকার করে। বাবা-মা চুপ করে রুম থেকে বের হয়ে গেল। সেদিন আমার জন্মদিন ছিল…..
সবাইকে ইনভাইট করলেও মায়াকে করিনি। করিনি বললে ভুল হবে করতে পারিনি। কেক কেটে সবাইকে খাইয়ে দিয়ে বাবা’কে যখন বললাম, বাবা! আমার এবারের সারপ্রাইজ কি?!!! বাবা আমায় চোখ বেধে উপরে নিয়ে গেলেন। উপরে আমার জন্য এত বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে আমি বুঝতে পারিনি। আমার জীবনের সেরা সারপ্রাইজ বাবা আমায় সেদিন দিয়েছিল। আমার সামনে মায়া দাঁড়িয়ে…..

মেয়েটির ডায়েরী_
অসুস্থ্যতার জন্য ছুটি নিয়েছিলাম অফিস থেকে। বাসায় শুয়ে শুয়ে ছুটি কাটাচ্ছি আর একদৃষ্টিতে দুরের ঐ জানালার দিকে তাকিয়ে আছি। জানি জানালাটায় দেখতে পাব মানুষটাকে নয়। ভাবতে ভাবতেই চোখ’টা ঝাপসা হয়ে এলো, চোখের জল মুছতে যাব ঠিক তখনি ভালো আংকেলের কল। রিসিভ করে সালাম দিতেই ওনি আমায় ২ঘন্টার মধ্যে ওনার বাড়িতে যেতে বললেন। কেন জানি স্যারের সামনে যেতে মন সাই দিচ্ছিল না, তাই অসুস্থ্যতার অজুহাত দেখিয়ে না যাওয়ার কথা বলছিলাম। কিন্তু ওনার কড়া নির্দেশ ওনার ছেলের জন্মদিনে আমায় উপস্থিত থাকতেই হবে। ভালো আংকেল আমার জীবনের আশীর্বাদসরুপ। তিনি আছেন বলেই হয়তো আমি এখনো বেঁচে আছি। তাই ওনার কথা অমান্য করার মত দুঃসাহস আমার ছিল না। ছুটে গেলাম ওনার বাসায়।
আজ সিয়াম স্যারের জন্মদিন। অনেক সুন্দর করে বাড়িটা সাজানো হয়েছে। স্যারকেও আজ অনেক সুন্দর লাগছে নীল পাঞ্জাবীতে। ওনার চোখের নিষ্পাপ চাহনী যেন কাউকে খুঁজছে। একবার ঘড়ি আরেকবার বাইরের দিকে তাকাচ্ছেন ওনি।
যায় হোক….
যথাসময়ে কেক কাটা শুরু হলো। সবাই হাত তালি দিয়ে ওনাকে ওয়িশ করলেন।আমি দুর থেকে মনভরে শুভকামনা করলাম।
অনেক অনেক সুখী হোন স্যার, অনেক অনেক সুখী।
শুভকামনা নিরন্তর……..
আমি ঠিক এভাবেই আপনার জন্য দুর থেকে দোয়া করব।
কাছে কখনো পাব না জানি,তাই দুর থেকেই ভালোবেসে যাব। নিরবে ভালোবেসে যাব।
চোখের পানি মুছতে মুছতে রুমে চলে গেলাম। ক্ষাণিক বাদেই ভালো আংকেলের গলার স্বর শুনতে পেলাম।মনে হচ্ছে এদিকেই আসছে। বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম। সামনের দিকে এগিয়ে যেতেই থমকে দাঁড়ালাম। একি?!!!
ভালো আংকেল স্যারের চোখ বেঁধে নিয়ে আসছে কেন? আমার রুমে এনে স্যারের চোখের বাঁধনটা খুলে দেওয়া হলো। স্যার হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমিও স্যারের দিকে….
কি?!!! চমকে গেলেন বাপজান? স্যার কাঁপা গলায় জবাব দিলেন-
” এসবের মানে কি বাবা?”
আংকেল হেসে বলে উঠল-
” এটুকুতেই চমকে গেলে?
——————
বাবা, এসবের মানে কি?!!!
দাঁড়া বলছি বলে আমাকে
আংকেল ওনার সামনে নিয়ে গেল। আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি। আংকেল আমার একটা হাত ধরে আরেক হাতে সিয়াম স্যারের একটা হাত ধরলেন।
তারপর আমাকে ওনার হাতে তুলে দিলেন। অবাক হওয়ার মাত্রাটা এবার বহুগুনে বেড়ে গেল। আমি চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছি, আর আমার হাত স্যারের মুঠোবন্দি। স্যার এভাবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বলল,
এবার কি করতে হবে বাবা?
আংকেল বললেন-
তুই না বোন হারিয়ে বিহ্বল হয়ে গিয়েছিলে? উদাসী হয়ে গিয়েছিলি? বোনের চিন্তায় চিন্তায় খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলি? তার জন্য এই ব্যবস্থা। আজ এখন থেকে তোরা দু’জন ভাই-বোনের সম্পর্কে আবদ্ধ হইলি। মায়া তোর বোন। সাইমার মত’ই আরেক বোন। এখন থেকে ও এ বাড়িতেই থাকবে। কি বলো সিয়ামের মা?
রুমে ঢুকতে ঢুকতে আন্টির মিষ্টি জবাব,
সে আর বলতে হয়?
আমার মেয়ে হয়ে সে কি ভাড়া বাসায় থাকতে পারে?
কখনো না…..
আর তাই ও এখানেই থাকবে।
-‘ সিয়াম-মায়া…….
তোরা ভাই-বোন কথা বলা শেষ করে নিচে আয়।
নিচে সবাই অপেক্ষা করছে। আংকেল-আন্টি চলে গেল। আমি চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছি মাথা নিচু করে। আর ভাবছি কি থেকে কি হয়ে গেল….
ভাবনাচ্ছেদ ঘটে স্যারের ‘মায়া’ ডাকে।
জি স্যার বলে স্যারের দিকে তাকালাম।
————+++++————–
ওনি রেগে গিয়ে বললেন,
স্যার নয়, ভাইয়া ডাকবা…..
ভাইয়া……………..
বুঝছ মায়া পরি???
আমি তোমার ভাই হয়……
ভাই………..✌✌

– মাথা নিচু করে মনে মনে মুখস্থ করতে লাগলাম—
ভাইয়া…………??

চলবে।

বসের সাথে প্রেম পর্ব- ০৭

0

বসের সাথে প্রেম
পর্ব- ০৭

লেখা- অনামিকা ইসলাম।

মেয়েটির ডায়েরী_
সেদিন(বিয়ের) সারাটা দিন আর স্যারের সামনে যায়নি। শুধু যায়নি বললে ভুল হবে, লজ্জায় যায়নি। রাতের ঘটনায় ভিষণ লজ্জা পেয়েছিলাম। ফোন’টা আমি ভালো নিয়তেই নিয়েছিলাম আর স্যার কি না আমায় চোর ভেবে নিল….!!!!
কি লজ্জা! কি লজ্জা!!!
সত্যি’ই ব্যপারটা চরম লজ্জাকর ছিল আমার জন্য। সকাল থেকেই একমাত্র বান্ধবীটার সাথে বসে আছি। ওর মেহেদি দেওয়া,খাওয়া-দাওয়া, গোসল সবকিছুতেই আমি। আমি ছাড়া যেন ওর চলবেই না। বেলা এগারো’টা। ওকে সাজানোর জন্য পার্লার থেকে চারটা মেয়ে এসেছে। ও ওর বাবা’কে বলল, মাত্র চারটা মেয়ে কেন? আমার কমপক্ষে ১০,১২টা মেয়ে লাগবে। ওর বাবা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল__
১০,১২টা মেয়ে দিয়ে কি করবা সাইমা? বলিষ্ঠ কন্ঠে ওর জবাব- বিয়ের জন্য যেমন ৬টা বেনারসি কেনা হয়েছে, ঠিক তেমনি সাজানোর জন্যওও কমপক্ষে ১২জন মেয়ে তো লাগবেই। কেন লাগবে সেটা এখন জিজ্ঞেস করবা না একদম, উত্তর দিতে পারব না। ওর বাবা আর কথা বাড়ালেন না। সাথে সাথে ফোন দিয়ে ঢাকা শহরের সেরা পার্লার থেকে সেরা ১০জন মেয়েকে আনা হয়। তখন কে জানত ওর মাথার ভিতর এত প্যাচগোচ ঘুরপাক খাচ্ছে?! ওর ইচ্ছে, আবিরের থেকে আমরা টাকা উদ্ধার করি অন্দরমহলে। আর সেটা চেয়ে কিংবা জোর করে নয়। ও যাতে ফাঁদে পরে আপনাআপনিই দিয়ে দেয়, সেই ব্যবস্থাই করল। আমি সহ ওর ৫টা বান্ধবীকে একই সাজে বধূ সাজানো হলো। সেদিন বধূ সেজে আমি গিয়েছিলাম স্যারের রুমে। একা একা নিজেকে বধূরূপে দেখতে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে নিজেই চিনতে ভুল করছিলাম। লজ্জা পেয়ে দৌঁড়ে চলে যাচ্ছিলাম রুম থেকে। ঠিক তখন’ই স্যারের সাথে ধাক্কা খায়। স্যারের কনুই দিয়ে প্রচন্ডরকম এক আঘাত পেলাম বুকে। ওনি স্যরি বলতে সামনে আসলে আমার বধূবেশটা খেয়াল করে। প্রশ্নের পর প্রশ্ন ছুড়ে দেয় আমার দিকে। জিজ্ঞেস করে আমার এই বধূবেশে থাকার কারন। আমি জবাব দিতে ইতস্তত বোধ করছিলাম। ঠিক তখনি সাইমা এসে আমায় টানতে থাকে। সাইমাকে একটা কিছু জিজ্ঞেস করতে গিয়ে থেমে যায় স্যার। তাকিয়ে দেখি সাইমার পাশে ইরা, প্রিয়া, মুক্তা,জান্নাত এবং দিপাও এসেছে। সম্ভবত ওদের বধূবেশ দেখে স্যার কথা বলতে গিয়েও আটকে যায়। হা করে তাকিয়ে থাকে ওদের দিকে। কিছুক্ষণ পর মাথা ঘুরে পরে যায়। সাইমা দৌঁড়ে গিয়ে ওনাকে ধরে। সাথে আমরাও দৌঁড়ে যায়। ওনাকে খাটের উপর শুয়ানো হয়। সাইমা ভাইয়া, এই ভাইয়া করে ডাকার পর চোখ খুলে স্যার। সাইমা চিৎকার করে বলে, ভাইয়া তুই ঠিক আছিস তো?!!! ওনি আমার দিকে তাকিয়ে কি মনে করে যেন একটা মুচকি হাসি দিল। তারপর বলল,
এতক্ষণ ঠিক’ই ছিলামরে, এখন আর ঠিক নেই। মনে হচ্ছে, মাথাটা ঘুরছে তো ঘুরছে। সাইমা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, এই মায়া! একটু পানি এনে দে তো!!! আমি দৌঁড়ে গিয়ে পানি নিয়ে এলাম। সাইমাকে গ্লাস’টা দিতে যাব, তখন’ই স্যার বলল-
ওকে দিবেন না মায়া…..
ওর সাজ নষ্ট হয়ে যাবে। পানিটা বরং আপনি আমায় খাইয়ে দিন। আমার হাত’টা কেন যেন কাঁপছিল। তবুও গেলাম। স্যার’কে উঠিয়ে ধরে পানিটা খেতে দিলাম। স্যার পানি’টা খেয়ে আবার শুয়ে পরল। সাইমা কান্না স্বরে বলল,
-‘ এই ভাইয়া! কি হলো তোর?!
~স্যার মাথা উচু করে বলল, কিছু হয়নি তো। সাইমার পাল্টা প্রশ্ন, তাহলে এভাবে শুয়ে আছিস কেন? উঠ… না….
-‘ উঠব, তার আগে বল, তোদের এইরকম সাজার মানে’টা কি?(স্যার)
-‘ এটা বলা যাবেনা। (সাইমা)
-‘ তাহলে আমিও উঠব না….(স্যার)
ওকে, একমাত্র বোনের বিয়েতে তুই যদি শুয়ে থাকতে পারিস, তাহলে তাই কর। এই তোরা আয়’তো কথাটা বলেই সাইমা চলে গেল। সাইমার সাথে সাথে ওরাও গেল। আমি স্যারের পাশ থেকে উঠে চলে যাচ্ছিলাম, তখন’ই আঁচলে টান পরল। লজ্জায় এবং ভয়ে কুঁকড়ে গেলাম। স্যারের দিকে একটু একটু করে এগিয়ে গেলাম। আস্তে করে ডাক দিলাম স্যার……
স্যার আমার দিকে তাকালো।
মাথা নিচু করে বললাম,
আঁচল’টা আপনার পাঞ্জাবীর বোতামে। ওনি আমায় খুলে আনতে বললেন,আমি তাই করলাম। তারপর দৌঁড় দিলাম রুম থেকে।

ছেলেটির ডায়েরী_
যদিও অজ্ঞান হওয়াটা সত্যি নয়, ছিল অভিনয়। তবুও কেন জানি মনে হলো, অভিনয়’টা করে ভালো’ই হলো। সেদিন আমি আমার পি.এর চোখে আমার জন্য মায়া দেখেছিলাম। ওকে যখন পানি আনার কথা বলা হলো, ও দৌঁড়ে পানি নিয়ে এসে পানির গ্লাসটা সাইমার হাতে তুলে দিতে যাবে, ঠিক তখন’ই আমি সাজ নষ্টের মিথ্যে অজুহাত দিয়ে পানি’টা ওকে খাইয়ে দিতে বললাম। ও যখন আমায় বিছানা থেকে তুলে আধশোয়া অবস্থায় পানি খাইয়ে দিচ্ছিল, তখন ওর চোখে আমার জন্য যে মায়া দেখেছিলাম, সে মায়া আমি এর আগে আমি একজনের চোখেই দেখেছিলাম। তিনি ছিলেন আমার ‘মা’… মায়া যখন আমায় পানি খাওয়াচ্ছিল তখন খেয়াল করলাম ওর শাড়ির আঁচল’টা কাধে নয়, আমার দিকে ঝুলে আছে। খেয়াল করে দেখলাম সেটা আমার পরনের পাঞ্জাবীর বোতামের সাথে আটকে আছে যা মায়া কিংবা ওর বান্ধবীদের কারো চোখে পরেনি। আমি তখন’ই পানি খেয়ে অন্যদিকে মুখ করে শুয়ে বোনের সাথে তর্কে মেতে উঠি। বোন আমার সাথে রেগে একপর্যায়ে মায়া ছাড়া সবাইকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। সবশেষে মায়া বিছানা ছেড়ে ফ্লোরে দাঁড়ালো। চলে যাওয়ার জন্য যেই না পা বাড়ালো, তখনি আঁচলে টান পরল ওর। ও থমকে দাঁড়ায়। আঁচল ধরে ভীরু পায়ে আমার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। আমি ইচ্ছে করেই চোখ’টা বন্ধ করে ফেলি। কাছে এসে ছোট্ট করে কাঁপা স্বরে স্যার ডাক দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে পরল। চোখ খুলে ওর দিকে জিজ্ঞাসো দৃষ্টিতে তাকালে, লজ্জায় মাথা নিচু করে বেচারি আস্তে করে জবাব দেয়-
” আঁচল’টা……
আপনার পাঞ্জাবীর বোতামে….”
আমি ইচ্ছে করেই নিজে না খুলে ওকে বললাম, খুলে নিতে। ও আঁচল’টা খুলতে পারছিল না কাঁপার জন্য। বহুকষ্টে আঁচলটা খুলল। আমি কিছু বলতে যাওয়ার আগেই দৌঁড়ে পালালো রুম থেকে…..

মেয়েটির ডায়েরী_
বিয়ে পরানো শেষ হলে বর-কণে’কল একরুমে দেওয়া হলো। যাকে আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় অন্দরমহল বলে থাকে সবাই। অন্দর মহলে বর এবং বরের একজন বন্ধু প্রবেশ করে। আর আমাদের পক্ষের সিয়াম স্যারকে জরুরী ভিত্তিতে ডেকে আনা হয় বর প্রবেশ করার আগেই। ওনাকে আগেই ওনার কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর আর বরের বন্ধু রুমে প্রবেশ করতে দেরি স্যার রুমের দরজা আটকাতে দেরি করল না। একসাথে ৬টা বউ দেখে বর হতবাক….
আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করে,
এসবের মানে কি ভাইয়া?
স্যার জবাব দেয় মানে একটাই। এখানে তো সবাই আপনার বউ না, বউ হলো একজন। এখন আপনাকে মুখ না দেখে চিনে নিতে হবে কোন’টা আপনার বউ????
কাজটা পারলে ভালো,
না পারলে আরো বেশী ভালো…
-স্যারের কথা শুনে বর বাবা জীবন বোধ হয় ভয় পেয়ে গেছে, আর আমরা?!!! আঁচলের নিচে মুখ লুকিয়ে হাসছি….???
এবার বাছাধন…!!!
টাকা না দিয়ে যাইবা কোথায়?☺
-‘ তো এবার শুরু করা যাক….(স্যার)
-‘ ভাইয়া, কিভাবে চিনব আমি? সবগুলোই যে একইরকম, একই ডিজাইনের শাড়ি পরা।?(বর)
-‘ তুমি কিভাবে চিনবা সেটা তো আমার দেখার বিষয় না, আমি আমার কাজ বুঝিয়ে দিলাম। এখন তুমি তোমার বউ চিনে নাও।☺☺☺(স্যার)
-‘ যদি ভুলে অন্য কাউকে ধরে ফেলি, তাহলে কি আমায় বউ ছাড়া বাসায় যেতে হবে ভাইয়া???। নাকি আমার কাধে অন্যকে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে….???(বর)
বরের কথা শুনে আমরা মুখটা শক্ত করে চেপে রাখছি। আমরা জানি, ওনি আমাদের হাসানোর জন্য এমনটি বলেছেন। স্যার তাড়া দিয়ে বলল, বোকা ছেলে! বউ ছাড়া বাসায় যাবে কেন? বউ নিয়েই যাবে। তবে তার আগে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে যেতে হবে বাকি শ্যালিকা’দের….
আবির(বর) আমাদের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ করে আমার দিকে বারবার তাকাচ্ছে। আমি ভয়ে চুপসে গেলাম। শেষমেষ স্যারের সামনে পরপুরুষে জড়িয়ে ধরবে আমায়? এটাও দেখার ছিল?!!! যাকগে, আল্লাহর নাম নিয়ে বর কি করে সেটা দেখার জন্য চুপ করে বসে রইলাম। হঠাৎ’ই আমাদের সব পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে সাইমার চালাক-চতুর বর’টা রুমের লাইট নিভিয়ে দেয়। সবাই ভয়ে শিউরে উঠে। এ ঘটনায় স্যারও প্রস্তুত ছিল না। সবাই ভয়ে উঠে পরল। শুধু আমি আর সাইমা বসে আছি। বর আমার দিকেই এগিয়ে আসছে। আমি ভয়ে বসা থেকে উঠে দৌঁড় দিলাম। বর সাইমা’কে গিয়ে ধরল আর আমি কার সাথে যেন ধাক্কা খেলাম। মুহূর্তেই রুমের লাইট জ্বলে উঠে…..
বরের মুখে বিজয়ের হাসি আর আমাদের মুখে লজ্জার ছাপ….
বরের উপস্থিত বুদ্ধির কাছে হার মেনে গেল দুষ্টু সাইমার দুষ্টু চাল….

ছেলেটির ডায়েরী_
বিয়ের যাবতীয় কাজ শেষে বর-কণেকে অন্দরমহলে ডাকা হলো। আবির অন্দরমহলে এসে একসাথে ৬টা বউ দেখে একটা বড়সড় ধাক্কা খেল। অনেক কান্নাকাটি করেও যখন মেয়েদের সিদ্ধান্ত থেকে একচুলও নড়াতে পারল না, তখন’ই আবির বুদ্ধি আটতে থাকে কিভাবে জয়ী হওয়া যায়। হঠাৎ’ই আবিরের মুখে অদ্ভুত হাসি ফুটে উঠে। একবার সাইমা আরেকবার মায়ার দিকে তাকাতে থাকে। মনে মনে ভাবছে,
সর্বনাশ! এই ছেলেকি তাহলে দুই শুকনোকে চিনে ফেলেছে?! ধরে ফেলেছে সাইমাকে? বুঝে গেছে এই দুই বধূর একজন সাইমা আরেকজন মায়া?!!!
যাহ, ধারনা করছিলাম ঠিক তা নয়। বর পুরোপুরি চিনতে পারে নি। তবে এটা বুঝে নিয়েছিল যে, এই দুইজনের মধ্যেই ওর বউ আছে। কিন্তু দুজনেই একই স্বাস্থ্যেরর অধিকারী হওয়ায় চিনতে পারেনি। তাই উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে লাইট’টা অফ করে দেয় আবির। মুহূর্তেই পুরো রুমে ওদের ছুটাছুটি শুরু হয়। আবির বসে থাকা দুই মেয়ের দিকে এগিয়ে আসছে, এটা দেখে মায়া উঠে একদৌঁড়। ব্যস!
কেল্লাফতেহ…..
আবির তার আসল বউকে পেয়ে যায়। সেদিন উপস্থিত বুদ্ধির জোরে আবির ওর সম্মান বাঁচাতে পারলেও পারেনি বাঁচাতে পকেটের টাকাগুলোকে। বোনের নাকফুলানো, মুখফোলানো তারপর কান্না দেখে পকেটে রাখা ১৫হাজার টাকা দিয়ে দেয় মায়ার হাতে।
আহ্, আমার বোনের কি হাসি…
বরটা কানের কাছে গিয়ে হয়তো বলছে হলোতো? কিংবা এই রকম টাইপের’ই কিছু….
আমার বোন মুখ বাকা করে বর্ডার থেকে ইন্ডিয়া নিয়ে গেছে।
হা, হা, হা,????
যাক, টাকা তো পেল। এটাই এনাফ। রুম থেকে বেরোতে যাব, তখনি দৃষ্টি পরে আবিরের(বর)বন্ধুর দিকে। যার সাথে একটু আগে মায়া ধাক্কা খেয়েছিল। এখন ছেলেটা কেমন ঢ্যাবঢ্যাব চোখে মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে, মায়াও কি যেন কথা বলতেছে। খুব রাগ হলো। পারছিলাম না থাকতে এখানে। চলে গেলাম বাইরে। কিছুক্ষণ পরে দেখি এই ছেলের সাথেই মায়া বাইরে হাসাহাসি করতেছে। এবার রাগের মাত্রা’টা বহুগুনে বেড়ে গেল। মায়ার সামনে দিয়ে দুইবার করে হেঁটে গেলাম। কিন্তু কি আশ্চর্য!!!
দুরে গিয়েও দেখি একই ভাবে হেসে কথা বলতেছে। এবার আর রাগ কন্ট্রোল করতে পারলাম না। দৌঁড়ে গিয়ে ওদের সামনে দাঁড়ালাম। আমাকে দেখে ছেলেটা পরে কথা হবে, আসি বলে চলে গেল।
তারপর মায়াকে ঠাস করে একটা থাপ্পর মারলাম….
খুব বেড়ে গেছ তাই না?
অচেনা অজানা ছেলেদের সাথে আড্ডা দেওয়া শিখে গেছ, তাই না? কথাগুলো বলে আরেকটা থাপ্পর মারলাম। মায়া চোখ বন্ধ করে কান্না করা শুরু করে দিল। আর আমি?!!!
রাগে গজগজ করতে করতে বেরিয়ে গেলাম সেখান থেকে….

মেয়েটির ডায়েরী_
আজ আমায় স্যার মেরেছে। খুব জোরে জোরে দুইটা থাপ্পর দিয়েছে আমার গালে। অপরাধ কি আমি নিজেও জানি না। আমি শুধু জানি, আমি আমাদের ভার্সিটির ভালো ভাইয়াটার সাথে কথা বলছিলাম। যে কিনা আমায় আপন বোনের মত স্নেহ করত। এর ছাড়া ছেলেদের সাথে কথা আমি কোনো কালেই বলিনি। আর অচেনা, অজানা ছেলে?!! সে তো কল্পনার বাহিরে…..
স্যারের বলা কথায় এতটা কষ্ট পেয়েছি যা বলার মত না। কান্না আটকাতে না পেরে দৌঁড়ে চলে গেলাম সাইমার রুমে….
ওখানে গিয়ে দরজা আটকিয়ে ইচ্ছেমত কাঁদলাম। তারপর শাড়ি পাল্টিয়ে ভীড়ের ভিতরেই আংকেলকে বলে বাসা থেকে চলে গেলাম……

চলবে…..

বসের সাথে প্রেম পর্ব- ০৬

0

বসের সাথে প্রেম

পর্ব- ০৬

লেখা- অনামিকা ইসলাম।

আমি হাত-পা ছুড়া শুরু করলাম। দেখতে পেলাম অন্ধকারেই একটা ছায়া রশি নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। এসেই আমায় ধাক্কা দিয়ে ছাদের মধ্যে ফেলে আমার হাত’টাও বেঁধে ফেললেন।
ভয় এবং কষ্টে আমার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।
হঠাৎ’ই ছায়া’টা বলে উঠল__
আমার বাসায় চুরি করতে এসেছিস? দাঁড়া চুরি করার মজা আজ বের করব…….
কন্ঠ’টা শুনে চমকে উঠলাম। এ যে আমার বস….
” স্যার আমি চোর নয়, আমি মায়া…”
বলতে গিয়েও পারলাম না। শুধু পা গুলো ছুড়তে লাগলাম। আর আল্লাহ’কে ডাকতে লাগলাম। সাথে সাথে’ই ছাদের আলো জ্বলে উঠল। পুরো ছাদ মুহূর্তেই আলোকিত হয়ে গেল। ওনি আমার দিকে দৌড়ে আসতেছে আর বলছে মায়া তুমি?!!!?? চোখটা বন্ধ করে ফেললাম। মনে হচ্ছে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছি;
তারপর জ্ঞান হারালাম…………
ছেলেটির ডায়েরী_
সে রাতে চোর ভেবে অন্ধকারে একটা ছায়া মানবিকে ধাক্কা দিয়ে ছাদে ফেলে ওর হাত সেই সাথে নাক-মুখ বেঁধে যখন চলে যাচ্ছিলাম, তখন শুনতে পাই ও পাগুলো ভিষণ রকম ছুড়াছুড়ি করছে। আলো জ্বালিয়ে রাগান্বিত দৃষ্টিতে চোরটার দিকে তাকাতেই দেখি আঁতকে উঠলাম। শিউরে উঠল ভেতর’টা। চোর ভেবে যার নাক,মুখ, হাত বেঁধে ছাদে ফেলে যাচ্ছিলাম সে আর অন্য কেউ নয়, আমার’ই অফিসের পি.এ,বোনের প্রাণের বান্ধবি ‘মায়া’। একমুহূর্তের জন্য আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না।মায়া মায়া বলে ছুটে গেলাম ওর কাছে। ওকে ধরে উঠালাম। তারপর ছাদে রাখা চেয়ারটায় বসালাম। বলতে লাগলাম-
‘ মায়া তুমি? আমি তো ভাবছিলাম…(..?..)….
বুঝতে পারলাম মায়া কিছু একটা বলতে চাচ্ছে। ওর বাঁধনটা খুলে দিলাম। ও ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে, আমি ওর দিকে চেয়ে আছে।৪,৫মিনিট পর স্বাভাবিক হয়ে ও উত্তর দিল,
‘ আসলে তাহাজ্জদ নামাজ পড়ার পরও যখন দেখলাম ফজরের আযান দিচ্ছে না, তখন কয়টা বাজে এটা দেখার জন্য আপনার ফোন’টা আনতে গিয়েছিলাম। ভাবছিলাম আযান দেওয়ার আগ পর্যন্ত ফোন’টা আমার কাছে’ই রাখব। কিন্তু তার আগেই যে…..(…..)….
মায়া এটুকু বলেই থেমে গেল। I am sorry,maya.আমি আসলে বুঝতে পারিনি….
-‘ ইটস ওকে, স্যার।(মায়া)
ওকে চলো বলে আমি ওকে রেখেই বসা থেকে উঠে পরলাম, কিন্তু একি?!!!
ও এখনো বসে আছে কেন? মায়াকে জিজ্ঞেস করলাম, কি? যাবে না আজকে? নাকি এখানেই ঘুমাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছ?
মায়া মাথা নিচু করে জবাব দিল, সিদ্ধান্তের আর কি আছে? হাতের বাঁধন খুলে না দিলে তো এখানেই ঘুমুতে হবে। ওহ, শিট! বলে ওর হাতের বাঁধন’টা খুলে দিলাম। ও আমার দিকে কিছুক্ষণ একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে চেয়ার থেকে উঠে ছাদের রেলিং ধরে দুরে তাকিয়ে আছে। আমি ওর পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। প্রায় ১০,১৫মিনিটের মত দাঁড়িয়ে আছি, ওর সেদিকে কোনো খেয়ালি’ই নেই। ওর দৃষ্টি দুরে কোথাও আটকে আছে। কেন জানি ওর হাত’টা ধরতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে আবার পারছিও না। অবশেষে ধরেই ওর হাত’টা। ও চমকে তাকালো আমার দিকে…..
মেয়েটির ডায়েরী_
স্যার আমার দিকে মায়া মায়া করে ছুটতে এসে বসল। তারপর আমার মুখের বাঁধন না খুলেই জগতের প্রশ্ন জুড়ে দিল। এদিকে আমার নিঃশ্বাস খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি শুধু স্যারকে ইশারা করছিলাম নাক-মুখের বাঁধনটা খুলে দিতে। স্যার আমার ইশারা বুঝতে পেরেছে কি না জানিনা, তবে ওনি আমার নাক-মুখের বাঁধন’টা খুলে দিয়েছিল। স্যরি, বলে আমাকে রুমে যেতে বলে একবার আমার দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকালো। লজ্জিত ভঙিতে ওনি আমার হাতের বাঁধন’টা খুলে দিল। ওনার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম ৪,৫মিনিট। ওনার দৃষ্টি যখন আমার চোখে পরে তখন আমি দৃষ্টি ফিরিয়ে নেই। বসা থেকে উঠে ছাদের কিনারায় গিয়ে দাঁড়ালাম। কোথায় তাকিয়ে আছি আমি নিজেও জানি না। মনে হচ্ছিল, আমি একটা ঘোরের মধ্যে আছি। হঠাৎ’ই আমার হাতে একটা উষ্ম ছোয়া অনুভব করলাম। চমকে গিয়ে ‘বাম’ পার্শ্বে তাকালাম। অবাক হলাম সিয়ামকে দেখে। মানে আমার শ্রদ্ধেয় সিয়াম স্যারকে দেখে। একবার হাত, আরেকবার ওনার দিকে তাকাচ্ছি আমি। এটাও কি সম্ভব? একি বাস্তব নাকি কল্পনা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ঘোর কাটে ওনার ডাকে। মায়া আযান দিচ্ছে রুমে চলো। নাহ, এ স্বপ্ন নয়, বাস্তব। ওনি আমার হাতটা বাস্তবেই ধরেছে। আমি জানি, কখনো আমার মনের গুপ্ত বাসনা কারো সামনে প্রকাশ করতে পারব না,পারব না বলতে-
” স্যার, আমি আপনাকে ভালোবাসি,ভিষণ ভালোবাসি। কি করে বলব? আমার মত ছিন্নমূল, যার কোনো অস্তিত্ব নেই তার আবার স্বপ্ন থাকে নাকি? আর আমি তো তেমন সুন্দরও না, শ্যামবর্ণের। এই শ্যামবর্ণ নিয়ে কত মুখের কত কথা যে শুনেছি তার কোনো হিসেব নেই। আর ওনারা তো অনেক বড়লোক, ওনারা কি আর একটা ছিন্নমূল, অস্তিত্বহীন মেয়েকে ওনাদের ঘরের বউ করবে? না, করবে না। এসব কথা ভাবতে ভাবতে অজান্তেই কখন যে দু’চোখ ভিঁজে গেছে বুঝতে পারিনি। চোখের জল মুছে নিচে গেলাম……
ছেলেটির ডায়েরী_
ওর হাত’টা ধরতেই ও চমকে উঠল। আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিল। এদিকে চারদিক থেকে ফজরের নামাজের আযান ভেসে আসছিল। মায়া’কে নিচে আসতে বলে আমি চলে এলাম ছাদ থেকে। পরদিন সকাল হলো, সকাল গড়িয়ে দুপুর। মায়াকে একটা বারের জন্য দেখিনি। বিয়ে বাড়ির এত্ত কাজের মধ্যেও আমার দুটি চোখ কেন যেন ওকে’ই খুঁজছিল। ওকে না দেখতে পেয়ে ভেতর’টা কেমন যেন অস্থির লাগছিল। বোনকে জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করিনি, যদি উল্টা-পাল্টা বকার শুরু করে?! ওতো আবার একটু বেশীই ইচড়ে পাকা স্বভাবের। সবকিছুতেই এক লাইন বেশী বুঝে। দুপুরে আমার সব বন্ধুরা আমায় ধরে রেডি করে দিল। এদিকে বর আসারও সময় হয়ে গেছে। বিছানার বালিশের নিচে সকালে ফোন’টা রেখেছিলাম। ফোন’টা আনার জন্য রুমের দিকে ছুটে যাচ্ছিলাম আর কনুই উঁচু করে পাঞ্জাবীর হাতা ঠিক করতে করতে রুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই একজন ‘উহ্’ করে উঠলাম। বুঝতে পারলাম আমার অসাবধানতায় কুনো’ই গুতো লেগে এমন’টি হয়েছে। চোখ বোজে স্যরি বলতে গিয়ে থমকে দাঁড়ালাম। এ যে কোনো এক অপ্সরী বধূবেশে দাঁড়িয়ে আছে আমার সামনে। কিন্তু এও কি সম্ভব?! স্বর্গের অপ্সরী কি মাটিতে আসে কখনো?!!! হয়তো, আসে। না হলে ও আসবে কিভাবে। চলে যাচ্ছিলাম ওকে পাশ কাটিয়ে। হঠাৎ মনে হলো মায়াপরী’টাতো এখনো চোখ বোজেই আছে। ওকে তো ভালো করে স্যরি বলাটাও হয়নি। স্যরি বলার জন্য এবার ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। এবার আমার ঘোর কাটলো।
একি?! মায়া এখানে এই সাজে? এই সাজে তো বোনকে দেখেছি মাত্র। ঠিক একই রকম সাজে, শাড়ি, গহনা সবকিছু একই রকম।এবার ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।
-‘ সেকি?! মায়া তুমি? তুমি বধূবেশে দাঁড়িয়ে আছ কেন? ও চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। কি হলো মায়া?! জবাব দাও। তুমি এ সাজে কেন?
-‘ স্যার ইয়ে মানে বলতে গিয়েও পুরোটা বলতে পারল না। তার আগেই আমার বোন ওকে ধরে টানতে লাগল। আমি বোনের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বলতে গিয়ে ‘থ’ হয়ে গেলাম। একি?! মায়া ছাড়াও বোনের ৫, পাঁচটা বান্ধবী একই সাজে বধূ বেশে দাঁড়িয়ে আছে। আমি আর নিতে পারছিলাম। কেন জানি আমার মাথা’টা ঘুরছিল। মাথা ঘুরে পরে জ্ঞান হারালাম আমি…….

চলবে….