বস যখন বর _পার্ট_৫ #_শেষ_পর্ব Written by Avantika Anha আদ্র : উফফফফ এই মেয়েটা আস্ত পাগলি আমি : কেমনে আদ্র : যা ভয় পাও তা দেখতে চাও কেন আমি : ভালো লাগে (দাত বের করে হাসি দিয়ে) আদ্র : তুমি নিজেই তো একটা পেত্নি আমি : এ্যা আদ্র : হ্যা আমি : ইইইইইই না আদ্র : আমি যাই তাহলে থাকো আমি : স্যার আদ্র : কি আমি : আমাদের কোম্পানি কাল কিছু নতুন মেম্বার নেওয়া হবে । তাদের ইন্টারভিউ আপনার নেওয়ার কথা । আদ্র : হুমমম ওকে এক কাজ করো কাল ইন্টারভিউ শেষে আমার সাথে এক মিটিং এ যাবা এক রেস্টুরেন্ট এ (যদিও মিটিং বাহানা । আসলে মিটিং নাই) আমি : আসলে স্যার কাল আমার এক ফ্রেন্ড আসবে বিদেশ থেকে তাকে আনতে যাওয়ার কথা ছিল আদ্র : No excuse আমি : but sir আদ্র : আমি যা বলেছি তাই হবে আমি : ওকে . পরেরদিন ইন্টারভিউ শেষে মিটিং যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলাম । আসলে মুড টাই অফ হয়ে গেছে স্যার এর কথায় । আমার একটুও স্বাধীনতা নাই পঁচা ছেলে , খাটাস একটা ( মনে মনে বলছিলাম ) . বস : আমাকে গালি পরে দিও নাও মিটিং টা বেশি জরুরী । আমি : হুহ . . গাড়িতে বস : চেক করো সব ওকে কি না আমি : দেখেছি বস : ওকে আমি : ( আর কিছু বললাম না )
. রেস্টুরেন্টে আমি : কই মিটিং বস : ওয়েট আমি কল করছি ( ফোন দেওয়ার বাহানা করলো ) আমি : কি বললো বস : মিটিং আজ হবে না ওদের প্রব্লেম আছে আমি : কিইইইইই বস : হুম থাক আমরা লাঞ্চ করে নেই আমি : আমি যাই স্যার আমার ফ্রেন্ড কে আনতে বস : না মানা করো বলো পরে দেখা করবে তোমার বান্ধবীর সাথে আমি : দুররর ওকে কিন্তু বান্ধবী কেন ? বস : কেন আমি : আরে স্যার ও তো ছেলে নাম নীল বস : ওহ ( ছেলে ফ্রেন্ড এর জন্য এতো যাওয়ার জ্বলদি । দিচ্ছি আমি যেতে । মনে মনে ) আমি : দাড়ান ওকে মেসেজ এ জানাই যে আমি যেতে পারছি না হুহ ( কিছুটা রেগে ) বস : তা কি খাবে আমি : আপনার মাথা বস : ও তাহলে খাও আমি : কি কন আপনার আজকাল কি হচ্ছে স্যার বস : তোমার যাদু ( আস্তে ) কিছু না আমি : ভালো আমি রাগ করছি বস : তাহলে কি করা উচিত আমার তোমার রাগ ভাঙ্গানো ? আমি : লাগবে না বস : আচ্ছা আমার কাছে মনে হয় কিটক্যাট আছে নিবে নাকি ? আমি : লাগবে না বস : ওকে আমি খাই আমি : খান গা বস : হিহি ( আমাকে দেখায় দেখায় খাচ্ছে ) আমি : রাগে লাল হচ্ছি বস : চুল টা ছাড়ো তো আমি : মানে বস : মানে এটা ( চুল ছেড়ে দিল আমার ) আমি : এ্যা এসব কি হচ্ছে বস : আজকের পর চুল ছেড়ে রাখবে আমি : কেন বস : আমি বলছি তাই আমি : হুহ . সব শেষে বাড়িতে…… হাসাহাসি নিশ্চই নীল আসছে . আমার ধারনা ঠিক নীল : তা ম্যাডাম আসলেন আপনি আমি : নীল কেমন আছিস নীল : কেমন আর থাকবো তোকে ছেড়ে আমি : হাহা . রাতে…. নীল : তা ম্যাডাম কাউকে ভালোবাসলেন আমি : আরে না নীল : তা আসলি না কেন আমি : আরে বলিস না . (কাহিনী পুরো বললাম ) নীল : হাহা আমি : হাসিস কেন নীল : তুই কি সত্যি বোকা আমি : কেন নীল : গাধী তোর বস তোকে ভালোবাসে আমি : আরে না তোর মাথা গেছে নাকি নীল : তোর মাথা গেছে আমি : চল আঙ্কেলের বাড়ি আঙ্কেলের সাথে তোর দেখা করাবো । নীল : আমি তো তোর বসের সাথে দেখা করবো আমি : ইইইই যাবোই না নীল : ওকে আমি : ওই চল ফুচকা খেতে যাই নীল : চলতে থাক আমি : হ . বাড়ি থেকে বের হলাম । আদ্র বেলকোনি তে দাড়িয়ে ছিল । আনহা কে নীলের সাথে যেতে দেখে রেগে গেল । কিন্তু কিছু বললো না . পরেরদিন অফিসে নীল আর আনহা আসলো । আসলে আমি মিমির সাথে নীলের পরিচয় করাতে নীল কে নিয়ে আসলাম । . আড্ডা দিচ্ছিলাম । বস দেখতেছে আর রাগে ফুলতেছে । . বস : নাহ আর পারছি না যেতেই হবে . আড্ডায় বস : এখানে কি হচ্ছে আমি : না স্যার মানে বস : চুপ সবাই কাজে মন দাও নীল : আচ্ছা আমি বাড়ি গেলাম আনহু পরে বাড়ি আয় তারপর আড্ডা দিবো আমি : ওকে বস : আনহা come to my cabin now আমি : ওকে . Cabin এ আমি : বলুন কি কাজ বস আমার কাছে এসে আমি : এমা আপনি এতো আগাচ্ছেন কেন বস : ( কিছু না বলেই আগাচ্ছে আর আমি পিছাচ্ছি । হঠাৎ দেয়ালে গিয়ে থেকলাম আমি । আম্মু গো এখন কই যাবো । দেয়ালো আর আসার জায়গা পেল না ) . বস দু হাত আমার দুপাশে দেয়ালে রাখলো আমি : স্যার কি করছেন সরুন বস : মাথা নিচু করছো কেন মাথা তুলো আমি : না বস : তুলো বলছি আমি : আম্মুর কাছে যাবো বস : না আমার কাছে থাকো আমি : কেন বস : বুঝো না আমি : কি বুঝবো বস : দুরর পাগলি কবে বুঝবি আমি : কি বুঝবো (আর কিছু না বুঝে কান্না করে দিলাম) বস : এই কাঁদো কেন আমি : আপনি এতো কাছে আসছেন কেনো আমার ভয় করছে । . বস : ও সরি ছেড়ে দিলো . আমি : বাপরে আমি ভাগলাম টাটা . জ্বলদি পালালাম । যাক বাঁচা গেলো । মিমি : দোস্ত আমি : কিচ্চে মিমি : ক্রাশ খাইছি আমি : বাহ কার উপর মিমি : নীল আমি : বাপরে বাপ এখন তো দেখছি তুই আমার ভাবি হয়ে যাবি মিমি : মজা করিস না সত্যি আমি : হিহি ট্রিট দে মিমি : ওকে সব ডান . অফিসে কথা হচ্ছে কিছু জন : এটা মনে হয় আনহার বিএফ আরেক জন : ভালোই মানিয়েছে একজন : হুমমম চয়েজ আছে . বস সব শুনলো…. . বস ভাবছে : নাহ আর এভাবে চুপ থাকলে ওকে হারাতে হবে । আজ ই কিছু করা লাগবে । . বাড়িতে আড্ডা শেষে নীল : আনহু আমি : হুম নীল : চকলেট খাবি আমি : কি করা লাগবে বল নীল : মিমি কে ভাল্লাগছে আমি : হিহি এক শর্তে নীল : অল ডান আমি : শপিং নীল : ওকে . তারপর ওদের মিলিয়ে দিলাম . রাতে…….. আঙ্কেল আমাদের বাড়িতে এলো । কি জানি কথা বললো আম্মুর সাথে । . . কিছুদিন পর…… আমি অফিস যাচ্ছিলাম । এমা কে এইটা মুখোশ পড়ে । আমাকে গাড়িতে টেনে নিয়ে গেলো । . এমা আমি কিডন্যাপ । কিডন্যাপার : এই মেয়ে চুপ আমি : আগে বলেন আমি কি কিডন্যাপ কিডন্যাপার : হুমমমম আমি : আম্মুর কাছে যাবো আমাকে ছাড়ে দেন কিডন্যাপার : চুপ . কই জানি থামলো । এমা এ তো কাজি অফিস আর কিডন্যাপার তো স্যার । . একি দেখছু আমি । . ওখানে আম্মু , আব্বু , আঙ্কেল , নীল , মিমি সবাই আছে । আমি : এখানে কেনো আমি বস : কারণ আজ তোমার আর আমার বিয়ে আমি : কিইইইইই বস : হুম আমি : আমি বিয়ে করবো না বস : করতেই হবে জানু আমি : না আঙ্কেল : মা আমার জন্য কর আমি : ইইইইইই আঙ্কেল : অনুরোধ করলাম আমি : ( আঙ্কেলের অনেক ঋণ তাই রাজি হতেই হলো )
. . বিয়ে শেষে……. আমি : এটা কি হলো বস : কেনো গো তোমার আর আমার বিয়ে আমি : কিছু বুঝছি না বস : আরে পাগলি আমি তোমাকে ভালোবাসি । তোমার পাগলামি গুলোর প্রেমে যে কখন পড়লাম নিজেও জানি না । আমি : ইইই আমি থাকবো না বস : ভুতের মুভি ছেড়ে দিবো কিন্তু সবচেয়ে ভয়ানক আমি : ওকে বস : ঠিক ই ছেড়ে দিলো . মুভি দেখে আমি শেষ এমন সময় কারেন্ট গেল । আমি : আম্মুুুউউউউউউউ . বলে স্যার কে জড়িয়ে ধরলাম বস : আমাকে ছেড়ে যাবে আমি : হ্যা বস : তাহলে ছাড়লাম তোমাকে আমি : না না যাবো না বস : ভালোবাসো আমাকে আমি : না বস : তোমার চোখ ই আমাকে বলে ভালোয় ভালোয় স্বীকার করো আমি : হুম বাসি অনেক বেশি বাসি বস : হিহি তা বউ কাল কি মিটিং আমি : DS কোম্পানির সাথে স্যার বস : আবার স্যার আমি : কি করবো অভ্যাস হয়ে গেছে বস : বদলাও আমি : কিন্তু বস : কোনো কিন্তু না আমি তোমার বস আমি : ওকে #বসযখনবর হয়েই গেলো আর কি করার বস : হুম আমি : কিন্তু বাড়িতে কিন্তু আমি বস আপনার আদ্র : ওকে ম্যাডাম তা এবার ছাড়ুন আমি মেইন সুইচ অন করে আসি আমি : মানে আদ্র : হাহা বুঝা লাগবে না আমি : এটা চিটিং আদ্র : তাই নাকি আমি : হু . মেইন সুইচ অন করার পর…… আদ্র : সেদিনের কাতুকুতু মনে হয় বাকী ছিল আমি : এমা না আদ্র : আমি তো দিবোই আমি : ইইইইইই আদ্র : হাহা . অতঃপর দৌড়াদৌড়ি শুরু……… . দুজনেই বিছানায় পরে গেলাম আমি : আই লাভ ইউ আদ্র : আই লাভ ইউ টু আমার আহিয়ার আব্বু আমি : আহিয়া কে ? আদ্র : কেন আমাদের মেয়ে আমি : কবে হলো আদ্র : হবে ফিউচারে আমি : কবে ঠিক করলেন আদ্র : আগেই আমি : হিহি সুন্দর আদ্র : হাহা হুম . …………………..সমাপ্ত……………………..
বস যখন বর _পার্ট_৪ Written by Avantika Anha
বাসে কেমন লাগতেছিল । সময় স্যার বললো
আদ্র : আমাকে গালি দিচ্ছ নাকি
আমি : ( এমা কেমনে বুঝলো )
আরে না স্যার
আদ্র : হাহা ম্যাডাম আপনার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে
আমি : কইলেই হইলো
আদ্র : ভাষা ঠিক করে বলো আমি তোমার বস
আমি : ও আমি তো মনে হয় ভুলেই গেছিলাম
আদ্র : হাহা আবার গালি দিচ্ছ নাকি
আমি : আপনি তাকাইয়েন না তো আমার দিকে
আদ্র : আমি বস আমার ইচ্ছা
আমি : এ্যা এটা চিটিং
আদ্র : চুপ পাগলি
আমি : দুরররর আমি গান শুনবো টাটা
.
এরপর ইয়ারফোন লাগায় গান শুনা শুরু করলাম
.
বাস পৌছে গেল ….
আমি মিমির সাথে গল্প করছিলাম
আমি : দোস্ত মজা হইলো শুন না অনেকদিন ফুচকা পার্টি হয় নাই
মিমি : হ কবে খাওয়াচ্ছিস
আমি : ইইইই প্রতিবার আমি খাওয়ামু নাকি এইবার তুই খাওয়া
মিমি : ওকে ডান তুই ও কি মনে রাখবি
আমি : এএএ আইছে শুন না তারপর
.
এমন সময় বস : আনহা
আমি : কিচ্চে
.
ওমা পিছনে ঘুরে এইটা তো বস
.
আমি : সরি সরি বলেন স্যার
বস : চল বাড়ি
আমি : আপনি যান আমি পরে যাবো একটু গল্প করছি
বস : No excuse . I said you to come now means now .
আমি : okay huh it is cheating
বস : its not
.
কার এ……..
বস : কি হইছে চুপচাপ যে
আমি : কথা বলবো না এখন
বস : হাহা রাগ করছো
আমি : হুম
বস : রাগ করা যাবে না আমি তোমার বস
আমি : আপনি বারবার এমন করেন এটা চিটিং
বস : নাহ
আমি : হুহ
বস : আনহা কিটক্যাট খাবা ?
আমি : হ দেন
বস : হাহা তুমি না রাগ করছো
আমি : ও হ্যা আমি রাগ করছি হুহ ভুলে গেছিলাম
বস : এই নাও কিটক্যাট
আমি : থেংকু
বস : বড় হবা কবে এখনো পিচ্চি বিহেভ
আমি : হবো না হিহি
বস : হায়রে
.
বাড়িতে ……..
আম্মু : কেমন কাটলো পিকনিক
আমি : সেই
আম্মু : আমি আর তোর বাবা ভাবছিলাম তোর বিয়ে টা
আমি : আমার ঘুম পাচ্ছে টাটা
আম্মু : কথা বদলাচ্ছিস
আমি : হ
আম্মু : বড় হচ্ছিস
আমি : হ ৫” ৫
আম্মু : মজা অফ বিয়ে করবি কবে
আমি : করুম না
আম্মু : চুপ
আমি : ইইইই
আম্মু : আমার আর তোর বাবার এক ছেলে পছন্দ হয়েছে
.
কিছুদিন পর তোকে দেখতে আসবে
আমি : ওহ
.
.
কিছুদিন পর আদ্র আনহার পাগলামির প্রেমে পড়ে গেছে । কখন যে পড়ছে তা সে নিজেও জানে না । আজকাল আদ্র নিজে নিজেই তার অজান্তে হেসে ফেলে । আনহা কে না দেখে থাকতে পারে না ।
.
বিকেলে……
আমি তাদের বাড়ির গাছগুলোতেও পানি দিচ্ছিলাম । আপন মনে গান গাইতে গাইতে । এমন সময় বস আসলো ।
বস : তোমার কি অভ্যাস হয়ে গেছে আমাদের গাছে পানি দেওয়া
আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম হঠাৎ ডাকে স্যার এর দিকে পানির পাইপ হাতে ঘুরলাম ।
.
(ভুলে স্যার পানি পানি আই মিন ভিজে গেছে)
আমি : হইছে কাম স্যার সরি
বস : হায় কপাল এই মেয়ে তোমার শত্রুতা কি আমার সাথে নাকি
আমি : এএএএএএএএ আপনিই হঠাৎ আসছেন কেন
বস : আমার দোষ নাকি হুহ
(ভ্রূ কুচকিয়ে)
আমি : সরি স্যার (এই লুক আমার ভয় লাগে। তাই দৌড় মারছি নিজের বাড়িতে)
.
আদ্র ভাবছে । আমি এই ফাজিল মেয়ের ই প্রেমে পড়তে হবে । হাহা
.
পরের দিন অফিস শেষে ।
বস : আনহা কই মিমি
মিমি : স্যার আজ আমরা ফুচকা পার্টি করবো তাই বাকী কিছু বান্ধবীদের ধরে আনতে গেছে ।
বস : ওহ
.
ফুচকার দোকানে…….
আরামে আমি আর সবাই কম্পিটিশন করতেছিলাম……..
.
আর বস ওই টাইমে
বস : আনহা এখানে কি করো (যদিও জানে তবুও আনহা কে নিয়ে যাবে সাথে বলে)
আমি : ফুচকা খাই খাবেন
বস : হুম
আমি : কিইইইইইইইইইইইইই
বস : কি এতো এক্সপ্রেশন কেন
আমি : ঠিক ঠিক খাবেন
বস : হুমমম
আমি : স্যার হা করেন
বস : আআআআআআআ
আমি : খান
( বস মনে হয় কখনো ফুচকা খায় নি । স্যার এর খাওয়ার স্টাইল দেখে না হেসে পারলাম না । আর আমার হাসা দেখে সবাই হেসে ফেলল।)
স্যার আমাকে কিছু বলল না এমা ব্যাপার কি ।
আমি : স্যার আপনি এর আগে খান নি কখনো ?
স্যার : না
আমি : হিহি আপনার বউ এর লাইফ শেষ ।বেচারীর সাথে ফুচকা খাবেন কেমনর
স্যার : হুহ
( তুমিই হবা আমার বউ ,”মনে মনে” )
ফুচকা শেষে আনহা চলো
আমি : মানে আমি কই যাবো ?
বস : কেন বাড়ি
আমি : না আমি থাকবো
বস : চলো কাজ আছে কাল মিটিং আছে ফাইল নিয়ে আসবে বাড়িতে কাজ আছে ।
আমি : বস না গেলে হয় নস
বস : চলো চুপচাপ
আমি : উহু চলেন
.
কার এ
বস : কি হয়েছে মুখ ভার করে আছ যে
আমি : আমাকে নিয়ে আসলেন কেন । ওরা কতো মজা করতেছে আর আমি নাই
বস : ওরা কেমনে মজা করবে ?
আমি : আইস্ক্রিম পার্টি করবে তারপর শপিং
বস : ওহ মেয়েরা বুঝি এমন হয়
আমি : ইইইইই কি বলতে চান
বস : ভাবতেছি আমার বউ কেমন হবে
আমি : আপনার বউ আমার মতো ফাজিল কেউ হবে হিহি
বস : তাই নাকি দোয়া করছো নাকি ( মনে মনে ” তুমিই হবা”সে
আমি : হুম ( বলে মোবাইল বের করলাম আর নেট এ বর ভাগানোর উপায় সার্চ দিলাম )
বস : কি করছো
আমি : পাত্র দেখতে আসলে তাদের কেমনে ভাগাতে হয় তা দেখতেছি
বস : কার পাত্র কে ভাগাবা
আমি : আমার
বস : মানে ( শকড )
আমি : পরে বলবো নে
বস : না বলো এখন
আমি : ওই আম্মু কোন পানাথগর কে ডাকছে কাল নাকি আসবে কিন্তু আমি বিয়ে করবো না
বস : ওকে কয়টায় আসবে
আমি : ৫ টায় কেন
বস : না এমনি
.
বাড়িতে…..
আদ্র ভাবছে “আনহা তো পারবেই মনে হয় বিয়ে আটকাতে । আমার চিন্তা করার কিছু নাই।”
.
কিন্তু আমার বাড়িতে…….
পাত্র আর আমাকে একা পাঠালো….
আমি : আমি বিয়ে করবো না
পাত্র : কেন
আমি : আমার বফ আছে ( মিছা কথা )
পাত্র : হাহা
আমি : হাসেন কেন
পাত্র : আপনার আম্মু বলেছিল আপনি এরকম কিছুই করবেন
আমি : এ্যা না আমার সত্যি বফ আছে
পাত্র : আচ্ছা আমি দেখবো আই মিন কথা বলতে চাই
আমি : ওয়েট । এমন সময় ই স্যারের ফোন আসলো ।
পাত্র : কি বফ ফোন দিছে
আমি : হ্যা ( এমা কি কইলাম )
পাত্র : কথা বলো
আমি : হ্যালো জানু
বস : মানে কি
আমি : এই দেখ না আমাকে যেই পাত্র দেখতে আসছে ও মানছেই না যে তুমি আমার বফ
বস : সাহায্য লাগবে নাকি
আমি : হুম গো
বস : ওকে ছেলেটাকে দাও
আমি : ওকে জান
.
দোয়া করছি আল্লাহ বস যেন পারে…….
বস কি জানি বললো আর কিছু বললো না ওই ছেলে ।
.
বিয়া ভাঙ্গে গেছে ।
.
.
বিকেলে
আমি : স্যার তখন কি বলছিলেন ওই ছেলেকে
বস : না জানলেও চলবে
আমি : বলেন
বস : বলছি আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে আর তুমি আমার বাবুর আম্মু হতে চলেছো
আমি : কিইইইইইই
বস : হুমমমমম
আমি : হায় আল্লাহ
বস : চলো আনহা
আমি : কইইইইই
বস : গেলেই বুঝবে যে
বস আর আমি গেলাম শপিং এ
.
আমি : এমা শপিং
বস : হুমমম সেদিন করতে পারো নি যে
আমি : ওওওওওও
.
শপিং শেষ করতে না করতেই
কে যেন : আনহু
আমি : কে রে
কে যেন : ওই হালি আমি
আমি : নীল তুই
নীল : হুমমমম
আমি : কতোদিন পরে
নীল : তুই তো ভুলেই গেছিস
বস : ( এইটা কে রে )
আমি : আরে না
নীল : এটা কে রে তোর বর নাকি
আমি : স্যার আমার
নীল : এ্যা স্যারের সাথে শপিং নাকি
আমি : হ
নীল : হ
.
বস : ভাবছে ( দুররর একা সময় পেলাম ভাবলাম ওকে বলবো মনের কথা আর এই আপদ আসছে )
নীল : আয় একটু একা কথা বলি
আমি : ওকে স্যার ৫ মিনিট দাড়ান
.
৫ মিনিট শেষে
বস : এখনো আসে না কেন
.
যেয়ে দেখে এখনো হেসে হেসে কথা বলছে রাগ উঠে গেল
বস : আনহা চলো
আমি : একটু
বস : কাজ আছে আমার
আমি : প্লিজ
বস : no excuse I told u to come with me now means come now
আমি : you always do this .
বস : চলো
আমি : চলেন
.
গাড়িতে…..
বস : চুপচাপ কেন
আমি : কথা বলছি না
বস : কি হলো কথা কানে যায় না
আমি : কথা নাই
বস : চুপ বাড়ি চল আর আমার কাজ আছে আমার বাড়িতে আসিও
আমি : হুহ
.
স্যার এর বাসায়…..
আমি : কথা বলছি না
বস : ওই মেয়ে
আমি : কি
বস : তোমাকে এভাবে মানায় না চঞ্চল ই ভালো তুমি
আমি : হুহ উঠে যাচ্ছিলাম
.
বস হাত ধরে দিল টান
.
হঠাৎ এটা সামলাতে না পেরে পড়ে গেলাম স্যারের উপর
.
আমি : এমা গো
বস : এএএএএ পড়ছে আমার উপর আর চিল্লায় উনি
আমি : উহু
বস : বাহ ভালোই ভারি তো তুমি দেখে মনে হয় না
আমি : টান দিতে কে বলছে
বস : কেন আমি নিজে
আমি : ভালো
বস : মোটি
আমি : আমি মোটা
বস : মোটি
আমি : এ্যা
বস : হ্যা
.
.
চলে আসলাম
.
পরের দিন
আয়নায় দেখছি আমি নিজেকে কোননদিক দিয়ে মোটি আমি দুরররর .
.
অফিসে…..
খাওয়ার টাইমে
মিমি : কিরে খাবি চল
আমি : না আমি ওজন কমাচ্ছি
মিমি : তুই মোটা হলি কবে
আমি : হইছি
মিমি : এ্যা
আমি : হ
.
সারাদিন না খেয়ে বিকালে কাজ শেষে….
অজ্ঞান হয়ে গেলাম
.
বস : কি হয়েছে ওর
মিমি : ও বললো ওজন কমাচ্ছে নাকি তাই খায় নি
বস : কি
.
আমাকে কোলে করে নিয়ে গেল বাড়ি
.
বাড়িতে….
জ্ঞান ফিরার পর……
আমার রুমে স্যার বসে ছিল…..
আমি : স্যার আপনি
বস : এই মেয়ে তোমাকে না খেয়ে থাকতে কে বলেছে
আমি : আপনিই তো বললেন ওজন বাড়ছে তাই আরকি
বস : পাগলি আমি মজা করেছি
আমি : আমি তো ভাবলাম সত্যি
.
বস আমাকে জড়িয়ে ধরে
বস : আর এমন করবা
আমি : না সরি স্যার
বস : তোমার কিছু হলে আমার কি হবে রে
আমি : মানে
বস : না কিছু না আই এম সরি
আমি : এক শর্তে
বস : কি
আমি : আজ রাতে আমার সাথে ভুতের মুভি দেখবেন
বস : ওকে
.
রাতে…….
মুভি চলছে আর আমি ভয়ে শেষ
আমি : স্যার
বস : কি
আমি : আপনি মানুষ তো ?
বস : না ভুত
আমি : আমি আম্মুর কাছে যাবো
বস : হায় রে
.
কিছু টাইম পর
আমি ভয়ে স্যার কে খামচি দিলাম
বস : ওমা গো
আমি : সরি স্যার
বস : আমার হাত পা তে তো নখের আছর বসায় শেষ করলে
আমি : সরি ভুলে হলো
বস : হাহা
আমি : স্যার আপনাকে হাসলে ভালো লাগে
বস : তাই নাকি
.
.
আমি আবার ভয়ে খামচি দিছি
বস : এই মেয়েটা যে কি করে এতো খামচায় ভয়ও পায় আবার দেখবেও
.
আমি : ইইইইইই ভুত
বস : নাই
আমি : স্যার ভয় লাগে
বস : পরে পাগলি কিছু হবে না
আমি : আম্মুর কাছে যাবো
.
চলবে………..
বস যখন বর _পার্ট_৩ Written by Avantika Anha রাতে বস : আনহা আমি : জ্বী স্যার বস : কাল ক্লাইন্ট দের সাথে মিটিং আছে বি রেডি আমি : ইয়েস স্যার . সকালে আমি : জ্বলদি যেতে হবে বাপরে . যাই একটু আঙ্কেল কে দেখে আসি . স্যারের বাড়িতে………. আমি : আঙ্কেল আপনি কই আঙ্কেলের সাড়া নাই কেন . চিন্তিত হলাম . গিয়ে দেখি আঙ্কেল নিচে পড়ে আছে . চিন্তিত হয়ে গেলাম . বাড়ির কাজের লোকদের ডাকলাম….. পরে শুনলাম তিনি ওষুধ খেতে ভুলে গেছিলেন . এসব করা শেষে আমি সময়ের কথা ভুলেই গিয়ে ছিলাম আই ওয়াজ লেট . অফিসে বস : What the heck. You are late. আমি : Sorry sir I am late cz বস : stop it don’t give any excuse আমি : স্যার আসলে বস : get out now আমি : স্যার বস : বললাম না এখন এখান থেকে যেতে আমি : আমার কথা টা তো শুনুন বস : outtttt আমি : ওকে
. . চলে আসলাম । একবারো শুনলো না কিছুই দুররররর আমার কি হুহ। . আমি বাড়ি গিয়ে রুম লাগায় বসে পড়লাম । . রাতে ওই বাড়ি গেলাম বস : দাড়াও এখানে এতো আসা যাওয়া পছন্দ করি না আমি যেতে পারো আমি : হুহ ওকে . কিছুদিন পর ( আর যাই না আঙ্কেলের বাড়ি ) আঙ্কেল : কি ব্যাপার আনহা আসে না কেন ? আগে যে মেয়ে কতো আসতো আদ্র : আমি মানা করেছি আঙ্কেল : (রেগে) কেনো আদ্রের কাছে সব শুনে . আঙ্কেল : সব আমার জন্য হয়েছে আদ্র : মানে . সব বললো …… . আঙ্কেল : দোষ তোর মেয়েটা অনেক ভালো জানিস এর আগেও ও আমাকে সাহায্য করছে এই জন্য ওকে এতো মেয়ের মতো ভালোবাসি । আদ্র : সরি আঙ্কেল : আমাকে না আনহা কে বল . আদ্র ভাবছে ” আসলে দোষ টা আমার কেনো যে এতো রাগ করি । “ . আনহার বাড়িতে আম্মু : আরে বাবা তুমি এখানে আদ্র : আম্মু এই তো এমনি আনহা কই ? আম্মু : রুমে আদ্র : আমি কি যেতে পারি আম্মু : আচ্ছা . রুমে মুড অফ ছিল ভুতের মুভি দেখতেছিলাম
যদিও ভয় পাই . এমন সময় কে জানি আনহা বলে ঘাড়ে হাত দিল . আমি : আম্মু গো আমি কই যাবো ভুতততততত বলে কারে জানি জড়িয়ে ধরলাম . সে : ভুত নেই ভয় পেও না আমি : স্যার আপনিইইই বস : যা ভয় পাও তা দেখো কেন আমি : ভালো দেখবো বেশি করে আপনি কি করবেন গালি দিবেন সেদিনের মতো দেন হুহ বস : চুপ আমি : না করবো না আমি চুপ বস : শুনো আমি : আপনি শুনছিলেন আমার কথা বস : একদম চুপ আমি : হুহ . এমন সময় মুখ চাপে ধরে বললাম না চুপ সরি সেদিন আমার ভুল ছিল . কি করুম কাতুকুতু দিয়া ছাড়ালাম . বস হাসতে হাসতে শেষ আমি : হিহি ইটস ওকে বাই দা ওয়ে আপনাকে হাসলে ভালোই লাগে স্যার বস : আমি তোমার বস আমি : ইইইইই মাফ করুম না আপনাকে বস : দুররর আমি : হিহি ওকে ওকে বস : কাল অফিসে টাইম মতো আসবা কাজ আছে আমি : স্যার….. বস : কি আমি : আমরা ভাবতেছিলাম কোম্পানির সবাই পিকনিকে যাবো আপনি যদি যেতেন বস : ওহ ওকে ভেবে দেখবো আমি : চলেন প্লিজ বস : আচ্ছা কবে আমি : এই তো সামনের শুক্রবার বস : ওকে আমি : থেংকু স্যার লাভ ইউ ফর দিস বস : কিইইইই আমি : এমা সরি বান্ধবীদের বলে বলে অভ্যাস তাই ভুলে বলে ফেলছি বস : হায়রে আমি : স্যার একটা কথা বস : কি আমি : না থাক বস : বলো আমি : স্যার ভুতের মুভি দেখবেন আমার সাথে ভয় লাগতেছে বস : না আমি : হুহ টাটা বস : হুম . বস যেতে যেতে আজব মেয়ে আমি : খাটাস . পিকনিকে………. আমি : মিমি শাড়ি টা না পড়লে হয় না মিমি : ওই অনেকে পড়বে আমি : তাই বলে আমিও মিমি : হুমম আমি : কোনটা পড়বো? মিমি : নীল টা আমি : ওকে . রেডি হয়ে…….. বসের বাড়িতে তাকে ডাকতে গেলাম আমি : আঙ্কেল আসসালামুয়ালাইকুম আঙ্কেল : মা তোকে খুব সুন্দর লাগছে আমি : ধন্যবাদ স্যার কই আঙ্কেল : উপরে আমি : স্যার আসবো বস : হুম . বস হা করে আছে ব্যাপার কি আনহা : স্যার ( আসলে আনহা কে অনেক সুন্দর লাগছিল । তাই আদ্র তাকিয়ে ) আনহার কথায় হুশ ফিরলো আদ্র : হুমমমম আমি : চলেন আদ্র : চলো .
. বাসে যাবো বলে . স্যার গাড়ির ওদিক যাচ্ছিল আমি : স্যার আপনি বাসে উঠবেন না ? বস : না আমি : চলেন না বস : কখনো উঠি নি আমি : হিহি কি বলেন বস : হুম আমি : আসেন জানালার পাশে বসিয়েন বস : ওকে . বাসে সবাই বস কে দেখে থ . আমি : বসলাম জানালার পাশে বস : আনহা আমি : স্যার বসেন বস : তোমার পাশে বসি আমি : কিইইইইইইই বস : কি মানে আমি তোমার বস আমি বসবো সরো আমি : জ্বী বস : হুমমম . আমি : জানালার পাশে দিবো না কিন্তু বস : ওকে আমি : যাচ্ছি . ( আমার চুল গুলো উড়ছিল আর সব আদ্রর মুখে যাচ্ছিল ) আদ্র : ( ভালোই লাগছিল ) আমি : দেখে সরি স্যার বলে চুল গুলো বাঁধতে ধরছিলাম আদ্র : কিছু বললো না বাসে ঘুমিয়ে পড়লাম . আদ্র দেখছে নিশ্পাপ লাগছে । বোঝাই যায় না ও এতোটা চঞ্চল । চুপ করে আদ্র আনহার চুল গুলো ছেড়ে দিল । পৌছে …. আমি ব্যান্ড খুঁজছিলাম . আদ্র বুঝেও জিজ্ঞেস করলো : কি খুঁজো ? আমি : ব্যান্ড পাচ্ছি না আদ্র : থাককক বাদ দিয়ে চলো আমি : আচ্ছা . পুরো পিকনিক ভালোই কাটলো . মিমি : কি রে স্যার এর সাথে কি চলে আমি : মানে মিমি : বুঝো না মামনি আমি : আরে না এটা স্যার মিমি : স্যার কে বর হতে সময় লাগে না আমি : দুররর না . বাসে ফিরছিলাম . স্যার তাকায় ছিল আমি : স্যার বস : ও ফাইল গুলো রেডি কালকের আমি : ( এই রে ভুলে গেছিলাম ) আসলে বস : ভুলে গেছ তাই তো আমি : জ্বী বস : আজ কমপ্লিট করিও আমি : ওকে স্যার আপনি বসুন আমি মিমির কাছে যাবো বস : থাক পড়ে যেতে পারো চলন্ত বাস আমি : আরে না বস : ওকে . আমি উঠে যেতে ধরলাম . ঠিক ই পড়ে যেতে ধরলাম . স্যার ধরলো . পুরাই ফিল্মি সিন সবাই হেসে ফেললো আমি : হাসার কি বস : কথা বললে শুনো না কেন আমি : ওইতো বস : আর হাসার কি আছে সবার . সবাই চুপ সাথে আমিও চলবে
বস যখন বর _পার্ট_২ Written by Avantika Anha আদ্র : এই ফাজিল মেয়েটা দুররররর . রাতে আদ্র : অনেক দিন পর বাড়ি এলাম একটু ঘুরে আসি . …..আদ্র বাগান দেখছিল আর ভাবছিল “বাহ মেয়েটা ভালোই ফুলগাছ লাগিয়েছে” . . আমি এমন সময় বেলকোনিতে দাড়িয়ে ছিলাম দেখলাম কে জানি ফুল ধরতেছে রাগে : ওইইইই কে রে ফুলে হাত দিচ্ছে আদ্র : কিইইইইইই আমি : ওমা স্যার আপনি সরি সরি দেখি নি ( দাত বের করে হাসি দিয়ে ) আদ্র : রাগী লুক আমি : আরে এতো রাগেন কেন স্যার কিটক্যাট খাবেন আদ্র : what the heck আমি : খান অনেক ট্যাস্টি আদ্র : লাগবে না আমি : ওকে আমারি বেঁচে গেল হিহি আচ্ছা আমি ঘুমাবো টাটা
. . আদ্র ভাবছে এই মেয়ে ফুল পাগলি . পরের দিন অফিসে আমি : ওই মিমি মিমি : বলতে থাক আমি : আজ নতুন স্যার আসবে মিমি : ওহ কেমন দেখতে রে আমি : ভালো না খাটাস একটা মিমি : হেহে ওইটারে তোর বর বানাবো আমি : না বইন মিমি : হেহে ওটাই হবে তোর বর + বস আমি : নো ওয়ে মিমি : হুমমম . বস আসলো আমি তো জানি ই সবার হাতে ফুল . আমিও দিলাম . বস নিলো ঠিক ই বাট রাগী লুক আমি : বস আপনি হাসতে পারেন না তাই না এমা কি বললাম ( মুখে হাত ) . সরি সরি আমি কিছু বলি নাই . বস : কিছু বললো না . কাজ করছিলাম এমন সময় সিয়া আসলো সিয়া : তোমাকে বস ডাকছে আনহা আপু আমি : খাইছে রে ডাকে কেন সিয়া : জানি না . আমি : May I come in sir ? আদ্র : আসো আমি : জ্বী আদ্র : তোমার প্রব্লেম কি আমি : কি করলাম আদ্র : এতো পাগল কেন তুমি আমি : এটা বলতে পারলেন আমি তো পাগল না পাগলি ? আদ্র : just shut up আমি : সরি স্যার আদ্র : অফিসের রিসেন্ট কাজ গুলোর ফাইল রেডি চাই আমার আমি : আচ্ছা আমাকে একটু টাইম দেন আদ্র : ডু ইট ফাস্ট আমি : ওকে . আমি বের হয়ে কাজে বিজি হয়ে পড়লাম . আমি ভাবতেছি সালা এতো রাগী কেন . এমন সময় মিমি : কি রে আমি : আরে খাটাস টা ভালো না মিমি : পাগলামি একটু কমা আমি : নো বেবি পাগলামি আমার লাইফ হিহি মিমি : হাহা তুই বদলাবি না আমি : হুম . অফিস শেষে . বিকেলে ছাদে বসে ছিলাম . মুড টা ফ্রেশ ফ্রেশ লাগছিল । যাই গা গিটার টা নিয়ে আসি . গান গাচ্ছিলাম . এমন সময় বস আসলো . আমি : বস কে দেখে বাপরে বলে দৌড় . বস : বাহ ভালোই গান পারে কিন্তু পালালো কেন . সত্যি পাগলি . আমি : যাক বাঁচলাম নইলে ফির গালি দিবে . রাতে আম্মু . আম্মু : কি রে আর আঙ্কেলের বাসায় যাস না যে আমি : ওই বস কে ভয় লাগে আম্মু : বাপরে তুই আর ভয় পাস আমি : ওই আমি ভয় পাই না নাকি আম্মু : হাহা আমি : আঙ্কেলের খোঁজ নেইনি সারাদিন যাই গা নিয়ে আসি আম্মু : যা . . তাড়াতাড়ি গেলাম . …….ধাক্কা….. . আমি : সরি প্লিজ বস : চোখ কই আমি : মুখে বস : দেখে চলো না কেন আমি : ওই তো লাফায় লাফায় আসতেছিলাম তো বস : দেখে চলবা . আর এতো রাতে এখানে কেন আমি : আঙ্কেল এর খোঁজ সারাদিন নেই নি বস : আব্বু কে বস বলো না কেন আমি : না আসলে বস : স্যার বলবে আমি : ওকে . পঁচা বস ( আস্তে ) বস : কিছু বললে আমি : না আমি কিছু বলি নি বস : ভালো চলো ভিতরে আমি : আঙ্কেল…… সরি স্যার আঙ্কেল : কি রে মা স্যার বলছিস কেন আমি : না এমনি আঙ্কেল : বল আদ্র : আমি বলছি বলতে আঙ্কেল : কি বললি আদ্র : কেন আঙ্কেল : ও আমাকে আঙ্কেল ই বলবে আদ্র : আচ্ছা . আমি কথা শেষে বাড়ি ফিরলাম . এভাবে দিন যেতে লাগলো একদিন আমার জ্বর এলো . মা : আজ আর যাস না আমি : দাড়াও . ফোন দিলাম বস কে আমি : আসসালামুয়ালাইকুম স্যার আজ কি ছুটি পাওয়া যাবে বস : ( আজ প্রতিশোধ নিবো ) না জ্বলদি আসো মিটিং আছে আমি : স্যার আমার জ্বর বস : কোনো কথা না আসো . আমি : আর কি করার . অফিসে মিটিং করলাম বহু কষ্টে . মাথা ঘুরছিল . . বস নাকি ডাকলো . গেলাম . আমি : স্যার আসবো আদ্র : হুম এই ফাইল গুলো কমপ্লিট করো আমি : স্যার পরে করি শরীর টা একটু খারাপ আজ যদি যেতাম বাড়ি বস : নো ডু ইট নাও আমি : নিয়ে যাচ্ছিলাম মাথা ঘুরছিল . অজ্ঞান হয়ে গেলাম . আদ্র : আনহা ওই আনহা . এর তো সত্যি অনেক জ্বর . বেশি করে ফেললাম ও তো খারাপ না কেন যে করলাম . বাড়িতে . আদ্র আমাকে নিয়ে এলো . আম্মু : মানা করেছিলাম তবুও গেল আদ্র : না মানে দোষ আমার আম্মু : না বাবা ও ই বেশি করে আসলে ও একটু ফাজিল বেশি কিছু হলে ক্ষমা করো আদ্র : না ব্যাপার না . আচ্ছা আমি আসি . আম্মু : খেয়ে যাও বাবা আদ্র : না থাক আম্মু : আমি তোমার মা হলে কি মানা করতে আদ্র : আচ্ছা . খাওয়া শেষে ….. আদ্র : জানেন আন্টি আমি না মায়ের আদর কখনো পাই নি আপনাকে মা এর মতো লাগে আম্মু : তাহলে আন্টি কেন মা বলো আদ্র : ধন্যবাদ আম্মু . আম্মু : আজ আমি ছেলে পেলাম . পরেরদিন আমি তো চাঙ্গা সকালে আমি : এমা বস এখানে কেন আম্মি : আমি ডেকেছি আমি : ও আদ্র : আম্মু আমাকে খাওয়ায় দেও না আম্মু : আচ্ছা নে বাবা আমি : আম্মু উনি তোমার ছেলে তাহলে আমি কে আম্মু : তুই তোর আঙ্কেলের মেয়ে আমি : পর করে দিলা হুহ আদ্র : ( মেয়েটা সত্যি পিচ্চি পিচ্চি ) আমি : স্যার অফিস যাবো চলেন আদ্র : যাওয়া লাগবে না আমি : কেন আদ্র : জ্বরে যাবে কেন আমি : এমা ওকে . আমি ভাবছি বস এতোটা খাটাস না . . পরেরদিন . ছাদে বসে লুকিয়ে আইস্ক্রিম খাচ্ছিলাম . এমন সময় আদ্র : এই মেয়ে আমি : কে (আইস্ক্রিম লুকিয়ে ) আদ্র : কেবল জ্বর ভালো হলো আর আবার আইস্ক্রিম আমি : ইইই একটু আদ্র : ফেলো আমি : না আদ্র : ফেলো বলছি আমি : হুহ . ( খাটাস একটা ) চলবে…..
বস যখন বর _পার্ট_১ Written by Avantika Anha
আমি আনহা । পড়া শুনা এখনো শেষ হয় নি । তবুও শখ করে একটা কম্পানি তে জব নিলাম । শুধু হাতখরচের জন্য ।
.
মেয়ে বলতে আমি ফাজিলের ডিব্বা আবার আবেগের দিক দিয়েও আমি ১ নাম্বার খালি কেঁদে ফেলি সহজে ।
.
তাই বান্ধবীরা আমাকে পাগলি বলার পাশাপাশি একটু আবেগী মাইয়াও বলে । ব্যাপার না । এমা আপনাদের এতো বলছি কেন । আপনারা যদি আমাকে পাগলি বলে ফেলেন । হিহি
.
সকাল বেলা আজ অফিস এর প্রথম দিন ।
.
সকালে
মা : শখ করে তো নিলি পারবি তো ?
আমি : আরে মা ব্যাপার না তো
মা : আচ্ছা যা
আমি : ওকে আমার সেন্টি রাগি মা টাটা
.
স্কুটি নিয়ে দিলাম দৌড় ।
.
এমা রাস্তায় আঙ্কেল টার হইছে কি ?
.
এখন কি করবো জিজ্ঞেস করবো কি হইছে ? যদি দেরি হয়ে যায় চাকরি তো যাবে । দুরর মানবতা আগে ।
.
আমি : আঙ্কেল আপনার শরীর কি খারাপ রাস্তায় এভাবে দাড়িয়ে যে । কোনো কি সমস্যা ?
আঙ্কেল : আসলে ছিনতাইকারী গাড়ি , টাকা নিয়ে গেছে আর আমার গরমে থাকার অভ্যাস নাই । তাই শরীর টা খারাপ লাগছে
.
আমি ভাবতেছি কি করুম এভাবে রেখে গেলে তো নিজেকে মুখ দেখাতে পারবো না । দুর চাকরি গেলে যাবে । উনাকে সাহায্য করি আগে ।
.
আমি : আসুন আমি পৌছে দিচ্ছি আপনাকে
আঙ্কেল : কিন্তু মা তোমার তো মনে হয় কাজ আছে
আমি : ব্যাপার না চলুন
আঙ্কেল : ধন্যবাদ আজকাল এমন হয় না রে মা
আমি : কোনদিকে আপনার বাড়ি ?
আঙ্কেল : আমাকে অফিসে পৌছে দাও তাতেই হবে ।
আমি : কোনদিকে ?
আঙ্কেল : ওইতো আদ্র গ্রুপ এন্ড কম্পানি
আমি : আপনি কি ওখানে জব করেন জানেন আমারো আজ ওখানেই জব হয়েছে কিন্তু মনে হয় হবে না জব টা কারণ আমি লেট হয়ে গেছি
আঙ্কেল : আমি ওখানকার মালিক মা
আমি : কিইইইইই স্যার আপনি আমার
আঙ্কেল : তুমি আমাকে আঙ্কেল ই বলিও আর চাকরি যাবে না
আমি : ধন্যবাদ আঙ্কেল
.
অফিসে কাজের জীবন শুরু । আঙ্কেল আমাকে খুব ভালোবাসতেন ।
.
অফিস বাড়ি থেকে দুর হয়ে যায় ভেবে আমি আম্মু আর আব্বু সহ ভাড়া বাসা খুঁজছিলাম । আঙ্কেল যখন জানতে পারে তখন তার বাড়িতে উঠতে বলে । তখন আমি রাজী হই না কারণ তা দয়া টাইপ লাগতো ।
.
তখন আঙ্কেলদের পাশের ওদিক একটা বাসা নিলাম আমরা । হয়ে গেলাম প্রতিবেশী । আঙ্কেলের ভালোবাসার পরিমাণ বেড়ে গেল । আঙ্কেলের বউ মারা গিয়েছে । আপন বলতে এক ছেলে যে বিদেশে থাকে ।
.
.
কিছু মাস পর এতোদিনে অফিসের সবাই অনেক আপন হয়ে গিয়েছে । আজ আঙ্কেলের ছেলে আসবে ।
.
আঙ্কেলের বাড়িতে গিয়ে গাছগুলোয় পানি দিচ্ছিলাম আর
গান শুনছিলাম ইয়ারফোন লাগিয়ে কার সাথে জানি ধাক্কা ।
.
আমি : কে রে ধাক্কা দিল?
সে : হোয়াট
আমি : হোয়াট পরে এইটা কি করলেন আমাকে কাদা কাদা করে দিছেন
সে রেগে : আপনি জানেন আমি কে
আমি : এমা এটা কি আঙ্কেলের ছেলে নাকি ?
ভুলেই গেছিলাম
সে : আমি এই বাড়ির মালিকের ছেলে
আমি : খাইছেরে সরি ??
সে : হুহ যত্তসব
আমি : এএএএএএ
সে : কে আপনি
আমি : পাশের বাড়ি + আপনাদের কোম্পানি তে জব করি
সে : হুহ তো এখানে কি
আমি : আঙ্কেলকে বলে এখানে বেশ কিছু গাছ লাগিয়েছি তাই নিজেই ফুলগাছ গুলোর যত্ন নেই আর এতো রাগেন কেন আপনি রাগ কইরেন না কিটক্যাট দিব
( এমা কি বলতেছি )
সে : আব্বু আব্বু
আমি : সরি আমি একটু বেশি বকবক করি
সে : হুহ
আমি : এতো রাগেন কেন পিচ্চির উপর
সে : কে পিচ্চি
আমি : এখানে আর কে আছে আমি ছাড়া
সে : ভালো
.
পরিচিত হলাম । খাটাস একটা কেমন রাগি আঙ্কেলের ছেলে মনেই হয় না ।
.
রাতে
আম্মু : মা
আমি : কিচ্চে
আম্মু : তোর আঙ্কেল কে এগুলো দিয়ে আয় তিনি অনেক সাহায্য করেছেন ।
আমি : আচ্ছা
.
তারা খেতে বসেছিল
আমি : আঙ্কেল দেখেন কু এনেছি
ও নামটা বলতে ভুলে গেছি তার নাম আদ্র
আদ্র : আবার ওই মেয়ে
আঙ্কেল : কি মা
আমি : আম্মু দিছে
এই নিন আমি যাই
.
আঙ্কেল : খেয়ে যা
.
আমি : না থাক অন্যদিন বলে আসলাম
.
আর আদ্র ভাবছে এই মেয়ে আমার আব্বু কে পটিয়ে রেখেছে এর উপর তো রাগ উঠতেছে
.
চলবে……
নিশ্চুপ_ছেলে #শেষ_পার্ট Written by Avantika Anha বাস থেকে আমাদের বাড়িতে পৌছালাম । এই আশায় যে ওর রিয়েল লাইফে ওকে আনবো টেনে । কিন্তু আমি তো আমার পায়েই কুড়াল মারলাম । আমার আম্মু আব্বু এমন আদর করছে ওকে মনে হয় বাড়ির জামাই । যদিও হবে কিন্তু মেয়েকে কি ভুলে যাবে নাকি । আম্মু : নীল বাবা অনেক বড় হয়ে গেছিস তো নীল : জ্বী ( আজকাল একটু ভালো হইছে ) আম্মু : নে ফ্রেশ হয়ে নে আমি : আম্মু আমিও আছি কিন্তু আম্মু : দ্বারা দ্বারা তুই তো আছিস ই । ও তো আসছে । আমি : আর আসুম না আমি আম্মু আম্মু রইলো না . আম্মু আর নীল হেসে উঠলো । . সাথে আমিও । . বিকেলে আমি : চল তো নীল : কই যাবো আমি : আমার বান্ধবীদের কাছে নীল : আমি কি করবো ওখানে আমি : মুড়ি খাবি চল তো নীল : ওকে . বান্ধবীদের সাথে হালিরা আরো শয়তান । জানে আমি নীল কে ভালোবাসি কিন্তু নীল জানে না । তাই মজা নিচ্ছে । . আমিও মজা করছি . ৪ দিন পর আজকাল নীল নিজে থেকেই আমার সাথে কথা বলে কিন্তু সমস্যা একটাই । ও ওর সব কথা ভার্চুয়ালে শেয়ার করে । ও যে আমাকে ভালোবাসে ওটাও আমি জানি ও ই বলেছে আমার ফেক আইডি টাতে । এসব যদি ও জানে আমার উপর রাগ করবে এই ভয়েই দিন কাটাই । . বিকেলে আমি : আম্মু নীল কই আর আমার ফোন কই আম্মু : তোর ফোন মনে হয় নিছিল ওর আব্বু কে ফোন দিবে বলে । আমি : কিইইইইই আম্মু : কেন কি হয়েছে আমি : আমি শেষ ও কোনদিক আম্মু : মনে হয় বাগানের ওদিক . ( নীল যদি জানে ফেসবুকের তানহা আর আমি একজন ও যে কি করবে আমাকে এই ভেবে দৌড় দিলাম ) . নীল কথা না বলে ফোন টিপে কেন . ..আম্মু ও দেখলে কি হবে এই ভেবে চিৎকার দিলাম নীলললললললললললল নীল : চুপ একদম চুপ আমি : আল্লাহ গো ও কি জানছে নাকি নীল : রেগে আমি : কি হইছে নীল : বাহ ছেলেদের সাথে এতো পিক কেন আমি : কোন পিক নীল : এইটা আমি : ( বাঁচলাম এক ফ্রেন্ড এর সাথে তুলা পিক দেখছে ) আমার এক ফ্রেন্ড নীল : তাই বলে এতো কাছে পিক তুলবা আমি : হিহি কিউট আসছে তাই না নীল : কিইইইই ( রেগে আমাকে থাপ্পর দিল ) আমি : কান্না করে ফেললাম নীল : কান্না দেখে কিছু বলল না সরি বলল শুধুই আমি : ওটা ফ্রেন্ড ছিল এরা স্কুল জীবনের বন্ধু শুধুই ধন্যবাদ দোষের জন্য নীল : কি করবো তোমাকে অন্যের সাথে দেখলে রাগ হয় আমি : হিহি নীল : চুপ আমি : ওকে দূররররর আমি তো কাঁদতেছিলাম ভুলেই গেছিলাম আর কান্না আসে না কি করবো নীল : হাহা পাগলি আমি : এমা গো এ আমি কি দেখলাম নীল : কি আমি : তুই হাসতে পারিস নীল : হুম পারি আমি : হিহি নীল : এতো হাসো কেন আমি : হাসুরি যে আমি তাই নীল : দূররররর . .
পরেরদিন শুনলাম ফুপা সামান্য অসুস্থ । এতোদিন পরে আব্বু কে কাছে পেয়ে নীল হারাতে চায় না । তাই ও চলে গেল । ফুপা অসুস্থ শুনে আমি আর আমার আব্বুও গেলাম ওর সাথে । . আমি : কি ফুপা আমি গেলাম আর অসুস্থ হয়ে গেলা ফুপা : হ্যা রে মা তাই তো আর তোকে যেতে দিতে চাই না নীল আর আমি একসাথে : মানে ফুপা : ভাই ভাবতেছি নীলের সাথে আনহার বিয়ে টা দিয়ে দিলে ভালো হয় । আমিও বা আর কয়দিন বাঁচবো ছেলেটাকে কখনো ভালোবাসা দিতে পারি নি । আব্বু : তোমার যা মনে হয় দুলাভাই আমি তো খুশিতে : এমা আমার বিয়ে নীল তো স্টাচু কিন্তু ফুপার মুখের উপর কিছু বলল না রাতে আমি : কি গো রাগ করে বসে আছ নাকি নীল : আনহা তোমার কি জ্বর এসেছে এসব কি বলছো আমি : বিয়ের আগেই প্রাকটিস হিহি নীল : এ কেমন মেয়ে আমি : হিহি ( হারামি মনে মনে যে কত হ্যাপি কস না কেন ) আস্তে বললাম . কিছু মাস পর বিয়েটা হলো । আজকাল মাইন থুক্কু আপন দুররর নীল এতো নাম রে বাবা কনফিউজ খায়ে যাই । . বিয়ের রাতে নীল আসলো আমি : ওগো তুমি এসেছো নীল : এসব কি আনহা আমি : কি নীল : ফেসবুকের তানহা তুমিইইই ? আমি : না মানে নীল : কত বিশ্বাস করতাম আমি তোমাকে আমি : আমাকে ক্ষমা করো আমি শুধু তোমাকে ভার্চুয়াল থেকে বের করতে চেয়েছিলাম নীল : রেগে তোমার মতো মিথ্যে বাদীর সাথে কথা বলতে চাই না আমি : নীল সরি গো প্লিজ নীল : বেহায়া নাকি তুমি আমি : সরি নীল : যাস্ট গেট লস্ট মজা নেও তাই না আমি : আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি সেই ছোট থেকেই নীল : ড্রামা আমি : ওহ ওকে নীল : ন্যাকামি চোখের পানি আমি : সরি . নীল রেগে চলে গেল । . বাইরে……….. নীল নিশ্চুপ দাড়িয়ে শ্বশুর আব্বু : বাবা নীল : আরে আব্বু তুমি শ্বশুর : আনহা মেয়েটা ভালো রে নীল : ও মিথ্যে আইডি খুলে চ্যাট করছে আমার সাথে বিশ্বাস ভাঙ্গছে আমার শ্বশুর : শুধুই তোকে ভালো করতে একবার ভেবে দেখ ওকে কষ্ট দিস না . নীল ভাবলো ঠিক ই তো . রুমে নীল : সরি আমি : কাঁদছি নীল : সরি বাবু ( জড়িয়ে ধরে ) আমি : ( ছাড়িয়ে নিয়ে ) নীল : জানোই তো আমি কেমন একটু রেগে গেছি আমি : ভালোবাসি তোমাকে তাই এমন করছি নীল : আমিও রে অনেক ছেড়ে যাস না আমাকে আমি : যাবো না . ………..শেষ……… #কাল্পনিক_গল্প
নিশ্চুপ_ছেলে #পার্ট_২ Written by Avantika Anha ফুপা বসে ছিল এমন সময় নীল আসলো । এমন সময় ফুপা বলল , আনহা মা নীলকে খাবার দে আমি আর নীল দুজনেই অবাক । নীল এর চোখের কোণে বিন্দু জলের দেখা পেলাম হয় তো তা একটু ভালোবাসা পেয়ে । আমি খাবার দিচ্ছিলাম এমন সময় চোখ মারলাম ওকে হিহি । . নীল রাগান্বিত চোখে আমার দিকে তাকালো । . আমি এমন ভাব নিলাম যেন কিছুই করি নি । . রাতে চ্যাটিং এ তানহা ( ফেসবুকে ) : কি খবর নীল : হাসি ইমোজি ভালোই আপনি তানহা : তা তো ভালোই তা এতো খুশি কেন ( যদিও জানি তবুও ) নীল : আজ প্রথম আব্বু আমার কেয়ার করলো বিশ্বাস করুন এতো খুশি কোনোদিন হই নি আমি : তা তো খুব ভালোই তাইলে কিটক্যাট খাওয়ান সেই খুশিতে হিহি নীল : হাহা আজ এতো খুশি সামনে থাকলে ঠিক খাওয়াতাম আমি : হাহা সময় আসুক নিবোই আমি নীল : হুমমম . . পরের দিন নীল : আনহা আমি : হুম নীল : আমার ফোন দেও আমি : আমি নেই নি এবার নীল : মজা ভালো লাগে না দেও বলছি আমি : সত্যি নেই ( সত্যিই নেই নি এবার ) নীল : ভালো লাগে না দেও বলছি
( জোরে আমার হাত ধরে ) ( আম্মু ভয় লাগে এতো রাগ কেন নেই নি তবুও ) আমি : জানি না সত্যি নীল ধাক্কা দিল হঠাৎ ধাক্কা সামলাতে না পেরে লোহার টেবিলে মাথা লেগে কিছুটা আঘাত পেলাম । যদিও তা একটুই ছিল । আমি কেঁদে চলে গেলাম নিজের রুমে । . কিছু সময় পর ফুপা : নীল নীল : জ্বী ( খুশিতে তার বাবা তাকে ডাকছে ) ফুপা : তোমার ফোন টা একটু নিয়েছিলাম । আামার ফোনের চার্জ ছিল না একটু দরকার ছিল তাই । নীল : ব্যাপার না ( যদিও নীল অনেক টাই লজ্জিত হলো আনহা কে কষ্ট দিয়ে ) নীল আনহার রুমের ওদিক গেল । কিন্তু কান্নার আওয়াজ পেল । ( অনেক সময় রুমে বসে কাঁদছিলাম ) . নীলের নিজেকে লজ্জিত মনে হলো । . বিকেলে নীল : আনহা আনহা : কিছুটা কষ্টে তাই জবাব দিলাম না নীল : আমাকে ক্ষমা করে দেও আমি : নিশ্চুপ নীল : সরি রে আমি : কিছু না বলে কেঁদে ফেললাম নীল : প্লিজ কেঁদো না আমি : ( কাঁদুরি বেশি আরও জোড়ে কেঁদে ফেললাম ) নীল : চুপ করো প্লিজ আমি : আর কিছু না বলে ওকে জড়িয়ে ধরে কাঁদা শুরু করলাম নীল : ( কি আর বলবে ) কেঁদো না আমি : চুপ করে বললাম । এমন করিস কেন আমার সাথে তোর ছোট হলেও আমি তো তোর খারাপ চাই না । আজ তো কিছু করিও নি । আমি তো নিলে স্বীকার করি যে হ্যা নিছি । নীল : আমি জানি সরি আনহা : এক শর্তে মাফ করবো নীল : কি শর্ত আনহা : আমাকে ফুচকা খাওয়াতে নিয়ে যাবি আর কিটক্যাট আর আইসক্রিম কিনে দিবি এক বক্স নীল : আচ্ছা ঠিক আছে . আনহা : চল তাহলে নীল : এখনি আনহা : হুম . ফুচকার দোকানে নীল : এতো জ্বলদি খাও কেনো আস্তে খাও আমি : তুই কি মেয়ে নীল : মানে ( ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে ) আমি : তুই মেয়ে না তাই বুঝবি না নীল : ওহ আমি : এই দেখ আমার শেষ নীল : আমার শেষ হোক ওয়েট আমি : ( ওর প্লেট থেকে একটা উঠিয়ে ) নীল : এটা কি করলা আমি : কি আর তুই খাচ্ছিস ধীরে তাই উঠায় নিলাম নীল : রাক্ষসী আমি : কি বললি নীল : রাক্ষসী বললাম আমি : ইসস তুই তাইলে ভুত নীল : তুমি পেত্নী আমি : হুম তোমারি ( আস্তে ) নীল : কিছু বললা আমি : না ও কিছু না নীল : ওহ . সেদিন বিকেলে অনেক ঘুরলাম । . বাড়িতে গিয়ে ফুপা : তোরা কই গেছিলি আমি : কেনো ঘুরতে গেছিলাম ফুপা : তা আমাকে বলবি না আমি : হিহি না ফুপা : ফাজিল মেয়ে তা নীল কই আমি : চকলেট আনতে গেছে আমার জন্য ফুপা : মা আমি এতকাল মিছে রাগ করছি ছেলেটার উপর তুই ঠিক ই বলছিলি । তাই ওর খেয়াল রাখার চেষ্টা করছি । তুই ওর পাছে থাকিস ওকে স্বাভাবিক করিস । তুই ছাড়া এটা কেউ পারবে না রে আমি : আচ্ছা ফুপা তুমি চিন্তা করো না ফুপা : আমি আর কতোদিন বাঁচবো যাওয়ার আগে নীলের দায়িত্ব তোর হাতে দিয়ে দিবো । আমি : আচ্ছা ফুপা আমি করবোই ওকে ঠিক । . রাতে খাওয়ার টেবিলে , ফুপা : নীল নীল : জ্বী আব্বু ফুপা : আনহার তো রেজাল্ট বের হবে কিছুদিন পর নীল : হুম ফুপা : আনহা কে রেজাল্ট বের হওয়ার পর এখানকার ভার্সিটি এ ভর্তি করায় দিস ও এখানেই থাকবে নীল : আচ্ছা ফুপা : তার আগে কিছুদিন ওদের বাড়ি থেকে ঘুরে আয় নীল : আচ্ছা ( কখনো ফুপার কথা অমান্য করে না ) আমি : ফুপা আমার যে একটা ইচ্ছে আছে ফুপা : হ্যা মা বল আমি : বাসে যাবো নীলের সাথে ফুপা : কেন গাড়ি থাকতে বাস কেন আমি : ইইইই ওই যে ইইই ফুপা : ও হ্যা হ্যা নীল ও যেভাবে যেতে চায় নিয়ে যা ( ইশারা বুঝছে ) . যাওয়ার দিন বাসে , নীল : জোড় করে বাস এ নিয়ে এলে আমি : হিহি এটার মজা আছে নীল : ভালো আমি : নে ইয়ারফোন টা কানে ঢুকা নীল : লাগবে না আমি : আচ্ছা . কিছু সময় পরে ওর কাধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করলাম । কিছুটা ঘুমের ভানেই । . নীল : কিছুটা নড়তে গিয়েও নড়লো না ভাবলো আমার ঘুম ভেঙ্গে যাবে এই ভয়ে আমি : চুপচাপ হাসি পাচ্ছিল কিন্তি হাসলাম না . . কিছু সময় পর আমার চুল বাতাসে মুখের সামনে এসে পড়লো নড়তে গিয়ে নড়লাম না । এই ভেবে যে নড়লেই ও বুঝবে আমি জেগে । . নীল : তাকিয়ে আছে আর ভাবছে কি নিশ্পাপ লাগছে এই ফাজিল মেয়ে টাকে . নীল হাত দিয়ে চুল সরাতেই . আমি : একটু নড়ে ঘুম ভাঙ্গার অভিনয়ে . আমরা পৌঁছাইছি ? নীল : হুম আরেকটু . চলবে….. ( দেরির জন্য ক্ষমা প্রার্থী )
পার্ট_১ Written by Avantika Anha প্রতিদিনের মতো ছেলেটি ফেসবুক এ ঘুরাঘুরি করছিল । ছেলেটির নাম হলো নীল মাহমুদ আপন। ভার্চুয়াল জীবন টাকে একটু বেশিই আপন করে ফেলেছে সে । কেনই বা করবে না । যার আশেপাশের মানুষগুলো কখনো তার খোঁজ নেয় না । সে ছিল চুপচাপ ছোট বেলায় মা মারা যায় তার । তারপর থেকেই একা হয়ে যায় সে । তার বাবা থাকতো ঠিক ই কিন্তু নিজের অফিস নিয়েই ব্যাস্ত । ছেলেটির মনে মাঝে মাঝে একটা প্রশ্ন জাগে । আচ্ছা সে কি এই পরের জীবনে আখিরাতে নিজের সাথী পাবে । ছেলেটাকে তার বাবা আরও বেশি দূর করে কারণ ছেলেটাকে বাঁচাতে গিয়েই তার স্ত্রী এর মৃত্যু হয় । . তারপর থেকে কষ্টের শুরু । ছেলেটা চুপচাপ হয়ে পড়ে যায় । . জীবনে চলার পথে ভার্চুয়াল টাকেই সে আপন করে নেয় । মাঝে মাঝে মন ভুলাতে গান করে । গানের গলা বেশ ভালোই কিন্তু তার গান স্থান পায় শুধুই ভার্চুয়াল লাইভে । . হঠাৎ একটা মেয়ের আইডি রিকোয়েস্ট পায় সে । যদিও ভুলে রিকোয়েস্ট টা গেছিল । মেয়েটার আইডি টার প্রতি কেন যেন এক আকর্ষণ পড়ে যায় ।এক্সেপ্ট করে নেয় । . প্রথম মেসেজ ছেলেটার ছেলেটি : আমি কি আপনাকে চিনি মেয়েটি : এমা সরি ভুলে মনে হয় রিকোয়েস্ট গেছে ছেলেটি : ও ব্যাপার না বাই মেয়েটি : আপনি বিজি নাকি হিহি নাকি ভাপি ডাকে ছেলেটি : বিজি না আর ভাপি কি জিনিস মেয়েটি : হিহি আই মিন আপনার গফ ছেলেটি : নাই মেয়েটি : ওওওও চকলেট খাইবেন ছেলেটি : নাহ মেয়েটি : এমা কিনু ছেলেটি : মিষ্টি খাই না মেয়েটি : কেন আন্টি কি মিষ্টি খেতে দেয় না ছেলেটি : নেই আম্মু মেয়েটি : কই গেছে ছেলেটি : বেঁচে নেই ( কথাটি বলতেই ছেলেটির কান্না চলে আসে ) মেয়েটি : সরি এভাবে বলতে চাই নি আমি একটু বেশি মজা করি তাই আর কি ছেলেটি : আচ্ছা মেয়েটি : আমি আনহা আপনি ছেলেটি : আপন মেয়েটি : এমা কে আপনার আপন ছেলেটি : আমি আপন আনহা : এমা আপনি কার আপন আপন : আরে আমার নাম আপন ( রাগ ইমোজি ) আনহা : হিহি আপন : (রাগ ইমোজি ) আনহা : হিহি রাগেন কেন আপন : দুরররররররর আনহা : কোনদিক দুর হবো আপন : ওই আপনি ভাগবেন আনহা : না আপন : হায় আল্লাহ এ কি মেয়ে . এই মেসেজ দিয়ে ছেলেটি অফলাইন হয়ে গেল । . পরেরদিন আনহা : গিট্টু আপন : গিট্টু কি আনহা : গিট্টু হলো গিট্টির ভাই আপন : গিট্টি কি আনহা : গিট্টুর বোন গিট্টি আপন : গিট্টু আর গিট্টি কি আনহা : ভাই বোন আপন : ওই আপনি আমার মাথা খান কেন আনহা : কইইইইইই আমি তো কিটক্যাট খাচ্ছি আপন : হায়রে . পরবর্তী চ্যাট এ আনহা : ইয়ো ইয়ো আপনি কই থাকেন আপন : ঢাকা আপনি আনহা : দিনাজপুর আপন : ওহ আনহা : কিটক্যাট খাইবেন মিস্টার আপন : না আনহা : বুইরা আপন : পিচ্চি আনহা : আপনি বিল্লি আপন : আপনি গরু আনহা : টিকটিকি আপন : ছাগল . এভাবেই ধীরে ধীরে আনহার পিচ্চি বিহেভ গুলোর অভ্যাস হতে থাকে ছেলেটির । . এভাবেই কথা হতে থাকে । সময় পেরুতে থাকে । . মজার ব্যাপার ছেলেটি এখনো মেয়েটিকে দেখে নি . আসলে আমি ছিলাম ছেলেটার কাজিন । ছেলেটির এই একা থাকা দুর করতেই সে ছেলেটির সাথে যোগাযোগ করেছিল । ছেলেটি জানতো তার কাজিন দের নাম ।কিন্তু কখনো দেখে নি ওতো কারো সাথে । আমাকেও অনেক আগে দেখছিল । . মেয়েটি ছেলেটিকে ভালোবেসে ফেলে । হয়তো ছেলেটিও কিন্তু ছেলেটি তো তার মনের কথাও বুঝে না । . আমি ঘুরতে যাই ওর বাড়িতে । যদিও কারণ শুধুই ওকে ভার্চুয়াল থেকে টেনে আনা । তাই ভার্চুয়াল আর রিয়েল সব দিকেই আমি থাকবো ওর । হিহি দেখি ফাজিল আনহা পারে কি না ভালো করতে । . ইয়ো ইয়ো আইসা পড়ছি । জানি না ওই পোলা কোনহানে । আমি : কেমন আছেন ফুপা ফুপা : এইতো ভালো মা তুমি আমি : ভালো নীল কই ( আপনের ই নাম নীল ) ফুপা : জানি না . ( গম্ভীর ভাবে চলে গেলেন । এই গম্ভীরতার মানে যদিও আমি জানি । কিন্তু এসব আমি ভালো করবোই ) . গম্ভীর টা এখনো ঘুমাচ্ছে . . আমি : নীল ওই নীল : কি হইছে আর আপনি কে আমি : আমি তোর বউ নীল : আজে বাজে কথা বলবেন না বের হয়ে যান আমার রুম থেকে আমি : ওই আমি আনহা নীল : ওহ আমি : এখনো গম্ভীর আছিস হিহি নীল : যাবা তুমি ( ও তুমি ই বলে ) আমি : না নীল : যাও বলছি আমি : না না না উঠ তুইইইই নীল রেগে আমার হাত জোরে ধরে দেয়ালের সাথে লাগিয়ে নিল আমি : এমা কি করবো আসছি একে মানুষ করতে আমি ই না ভুত হয়ে যাই নীল : আমি একা থাকতে চাই আমি : ওরে বাবারে এতো রাগ . কাতুকুতু দিয়ে ভাগছি . নীল : একটু হেসেই ফেলল আবার আনহার পালানো দেখে কিন্তু আবার গম্ভীর হয়ে বলে না আমি একাই থাকবো । . …………….খাবার টেবিলে…………….. আমি , ফুপা আর নীল । ফুপা আর নীল কেউ কারো সাথে কথা বলে না । নীল অনেক ভালোবাসে ফুপা কে কিন্তু ফুপা বুঝে না । আমাকেই কিছু করতে হবে । আমি : ফুপা দিনদিন তো ভালোই দেখতে হচ্ছ কয়টা মেয়ে ফিদা হচ্ছে ফুপা : এরকম আর হয় মা আমি : নীল আর তোমাকে দেখলে তো এখন ছেলে বাপ না ভাই মনে হবে ফুপা : নিশ্চুপ আমি : নীল এতো কম খাস কেন নীল : এমনি আমি : তোর তো শক্তি ই হবে না নীল : ভালো . ………আবার সব নিশ্চুপ টেবিলের নিচে নীল কে গুতাচ্ছি কথা কয় না এই জন্য । . এমা এমা রাগে উঠে পালাইলো । . আমি ই ঠিক করবো আগে ফুপা কে বলি কিছু কথা । আমি : ফুপা একটা কথা বলবো ছোট হয়ে ফুপা : বলো মা আমি : জীবন আছে তো মৃত্যু ফুপির মৃত্যু এ নীলের কি দোষ ও তো ছোট ছিল তখন । খেলতে গিয়ে এরকম । তাই কি ওর দোষ । আপনি একবারো ওর কষ্ট দেখছেন । আপনার তো সব আছে । ও সবসময় একা এতোটাই চুপচাপ সে । ও একা শুধু আপনার ভালোবাসা চায় ওর চাহনি বুঝেন না আর কিছু না তো ওকে বুঝুন একটু ওর নিরব কান্না থামান ওর ভালোবাসা বুঝুন । . বলে খাবার নিয়ে চলে এলাম নীলের জন্য । . নীল চুপচাপ বসে ছিল । . আমি : না খেয়ে আসলি কেন আমি তো মজা করছিলাম নীল : নিশ্চুপ আমি : ওই হারামি কথা বল আর এটা খা . নীল রেগে প্লেট ফেলে দিল ।
আমি : ফেলাস কেন হা নীল আবার রেগে আমাকে দেয়ালের সাথে আটকে নিল আমি : এবার কি হবে নীল : এমন কেন করছো কি করছি আমি তোমার । একা থাকতে দাও না কেন আমাকে । আমি : চিরকাল একা ছিলি এবার আর না তোকে আমি ভালো করবোই এই নিশ্চুপ থাকা ছাড়াবোই । নীল : পারবা না কখনো . (আরও শক্ত করে হাত ধরে এবার খুব লেগেছিল তাই চোখে পানি চলে এল । তা দেখে নীল আমাকে ছেড়ে দিল ) ও বাইরে কই যেন চলে গেল . আমি : আমি ওকে ভালো করবোই . পরের দিন নীল : আনহা আনহা : এমা আমাকে ডাকে কেন নিশ্চই বুঝছে যে আমি লুকায় রাখছি নীল : আনহা….. আমি : হঁ্যা কিচ্ছে নীল : প্রব্লেম কি তোমার আমি : আমার প্রব্লেম তোর এই নিশ্চুপ ভাব নীল : আমি এমনি থাকবো (একটু চিৎকার দিয়ে) আমি : ভয় পেয়ে গেলাম . সরি নীল : ফোন দেও আমি : না দিবো না এতো ফোন টিপা ভালো না নীল : আমার লাইফ এটা আমি : হিহি এহন আমি চালাবো নীল : দূরররর ( চলে গেল জানে যে আমার সাথে পারবে না ) হিহি . তারপর এফ বি তে ধুকলাম , আমি : কি করেন নীল : কিছু না আমি : মন খারাপ নাকি নীল : হুম এক কাজিন আসছে খালি জ্বালায় আমি : হিহি মেয়ে নাকি নীল : জ্বী আমি : এমা তাইলে প্রেম করুন সেই ভাবি হইবো নীল : আরে না আমি : কেন কিউট না নাকি নীল : না ও অনেক সুন্দর আমি : মানমে লাড্ডু ফুটা নাকি নীল : না আচ্ছা পরে কথা বলবো . ( নীল লজ্জা পেল । কারণ ও কখনো আনহার ব্যাপারে ভাবে নি )
. দুপুরে দেখলাম রুম এ গেলাম ওর । ঘুমোচ্ছিল আমি মনে মনে : জানি তোমার কষ্ট । জানি আমি তোমাকে ভালোবাসি । তাই আমি ই সব ঠিক করবো । ঘুমালে কত কিউট লাগে গো তোমাকে । ( এমা ওয় ছেলে আমি মেয়ে । কি উল্টা তারিফ হিহি ) . চলে আসলাম । বিকালে , ফুপা বসে ছিল এমন সময় নীল আসলো ।
চলবে……… (প্রথম একটু আলাদা গল্প চেষ্টা করতেছি । এই গল্পের পার্ট আমার টাইমলাইনে পাবেন)
ঠিক বুঝতে পারলাম না… বউ পালাইছে মানে???(জয়া) _ মানে আর কি? পালাইছে মানে পালাইছে।(বিজয়) _ একটু খুলে বলবেন তো। কিভাবে কি হয়েছে???(জয়া) _ হয়েছে আর কি… নুসরাত আমায় বিয়ে করবে না জানিয়ে দিয়েছে।(বিজয়) — মানে? কেন???(জয়া) _ ওকে নাকি শুনেছে একটা মেয়ে আমায় ভালোবাসে। ভিষণ ভালোবাসে। এখন ওর একটা কথা। ও আমায় বিয়ে করবে না। আমাকে এখন ঐ মেয়েকে’ই বিয়ে করতে হবে, যে আমায় ভালোবাসে।(বিজয়) __ তাই বলে বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে…(….)…???(জয়া) _ হউক বিয়ে ঠিক, তাতে কি? বিয়েটা তো হয়ে যায় নি। তাই আমি ঠিক করেছি আমি তাকে’ই বিয়ে করব, যে আমায় ভালোবাসে…(বিজয়) _ তা কে সেই সুভাগ্যবতী রমনী….???(জয়া) _ যদি বলি আপনি….(বিজয়)
কথা’টা শুনে জয়া পিছিয়ে যেতে থাকে আর বিজয় জয়ার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। রাস্তার মানুষজন হা করে তাকিয়ে রুমিও জুলিয়েটের প্রেমের এই রোমান্টিক দৃশ্য দেখছে আর হাসছে। কেউ বা বলাবলি করছে- ” কি যুগ আইলোরে ভাই… লজ্জা শরম সব উইঠা গেল।” বিজয় কিংবা জয়া যেন কেউ সেসব শুনছে না। ওরা একজনের দিকে আরেকজন ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে। এদিকে যেতে যেতে ওরা রাস্তার খুব কাছে চলে যায়। আর একটু হলে গাড়ি ওদের ধাক্কা দিয়ে চলে যেত। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে যায় ওরা। কেউ একজন খুব জোরে সোরে জয়াকে ধাক্কা দেয়। জয়া হুমড়ি খেয়ে বিজয়ের উপর গিয়ে পরে। এ যেন এক মধুর দৃশ্য। একজন আরেকজনের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। এদিকে অজ্ঞাত যে লোক’টা জয়াকে ধাক্কা দিয়েছিল সে সহ সব মানুষ বিজয়-জয়ার পাশে ভীড় জমায়। বিজয় মাটিতে পরে আছে আর তার উপর জয়া। বিজয় জয়াকে আঁকড়ে ধরে আছে। ঠিক তখনি কেউ একজন পাশ থেকে বলে উঠে__ ” পাবলিক প্লেসে এভাবে বেশীক্ষণ শুয়ে থাকলে চরিত্রের উপর লাল দাগ লেগে যাবে।” — জয়া ধড়মড়িয়ে উঠে দাঁড়ায়। বিজয়ও কালক্ষেপণ না করে উঠে দাঁড়ালো। বিজয় লোক’টার দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে যাবে ঠিক তখন’ই থমকে যায় সে। একি… নুসরাত? তুমি??? _ হুম, এসেছিলাম পাগলা-পাগলীর শুভ পরিণয়ের সাক্ষী হতে। এসে দেখা হয়ে গেল এই ভাইয়া’টার সাথে। (নুসরাত) __ আমার যদি ভুল না হয় আপনি নুসরাতের কলেজের সেই সিনিয়র ভাইয়া পিয়াস। কি??? আমি কি ঠিক বলছি জনাব…(…)….???(বিজয়) _ পিয়াস। ঠিক ধরেছেন আমি সেই পাগলাটে ছেলে পিয়াস।যার কাজ ছিল মেয়েদের পিছনে ঘুরঘুর করা….(পিয়াস) _ মেয়ে নয় বলেন নুসরাতের পিছনে। হা, হা, হা….(বিজয়) __ নুসরাত?!!!?? তুমি সব ভুলে দিয়েছ???(পিয়াস) _ হুম…☺☺(নুসরাত) __ ওহ, মাই গড! তুমি আর মানুষ হলে না…(পিয়াস) _ জনাব পিয়াস সাহেব! এবার তো আপনি এসে গেছেন। এবার আপনি’ই না হয় মানুষ করেন। কি বলো জয়া???(বিজয়) __ জয়া চুপ। __ এসেছিলাম বিয়ে খাইতে। মনে হচ্ছে ফেসে যাব। এক উড়নচন্ডী বালিকাকে বিয়ে করে বাসায় ফিরতে হবে….??(পিয়াস) _ আমি উড়োনচন্ডী??? হুহ্! যান। বিয়ে করতে হবে না। আমি চিরকুমারী’ই থাকব।(নুসরাত) _ ওরে আমার চিরকুমারী! তোমায় থাকলে দিলে তো…কাল রাত্রে’ই কুমারীত্ব ঘুচে যাবে.!….???(পিয়াস) _ আপনি এত্ত খা…(..)…(নুসরাত)
নুসরাত ওনাকে নিয়ে বাসায় আসো। পাবলিক প্লেসে এসব কথা বার্তা বললে মানুষ কি ভাববে…☺☺ আর জয়া চলো….(বিজয়) __ আমি আমার বাসায় যাব।(জয়া) _ কেন???(বিজয়) ___ আম্মু অসুস্থ, তাই…(জয়া)
জয়া আমি কিন্তু সব জানি। তুমি এখন পালাতে চাচ্ছো। অসুস্থ্যতা সেতো অজুহাত… কথা’টা বলতে না বলতে’ই বিজয় অবাক বিস্ময়ে সামনে গাড়ির দিকে তাকালো। গাড়ি থেকে চেনা একজন মহিলা নামছে। বিজয়ের মনে হলো এই সেই মহিলা যাকে চিকিৎসার টাকা দিয়ে এসেছিল বিজয় আজ থেকে ছয় বছর আগে। বিজয়ের এভাবে তাকানো দেখে জয়াসহ অন্যান্যরাও পিছনে তাকালো। জয়া একবার তাকিয়ে দৌঁড়ে গেল ঐ মহিলাটির কাছে। – মা তুমি??? __ হ্যাঁরে! মায়া কলের পর কল দিচ্ছে গত একটা সপ্তাহ ধরে। ওর ভাইয়ার নাকি বিয়ে, আমাকে বিয়েতে যে করে’ই হোক নাকি থাকতে হবে। এত করে বলতেছে তাই না এসে পারলাম না।(মা)
জয়া ওর মাকে জড়িয়ে ধরল। একবছর পর মাকে আবার দেখল। আনন্দে জয়া কেঁদে ফেলল। বিজয় জয়ার মায়ের কাছে গিয়ে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করল। তারপর বাসায় নিয়ে গেল জয়ার মাসহ সবাইকে। বাসায় গিয়ে সবটা খুলে বলল বিজয় ওর হবু শাশুড়িকে। হবু শাশুড়িতো খুশিতে লাফিয়ে উঠল। ওনার চোখ থেকে দু’ফোঁটা আনন্দঅশ্রু গড়িয়ে পরল। পরদিন একই সাথে দুটো বিয়ে হয়। একদিকে পিয়াস এবং নুসরাত, অন্যদিকে বিজয় এবং জয়ার। নুসরাত এবং জয়া একই সাথে বধূবেশে একই বাসায় ছিল। বিজয় বরযাত্রী নিয়ে নুসরাতের বাড়ি থেকে ওর প্রাণপাখি জয়াকে নিয়ে আসে আর নুসরাত চলে যায় ইঞ্জিনিয়ার পিয়াসের সাথে ওর বাসায়।
রাত্রের কথা বলছি_ মায়া চুপচাপ বারান্দার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। গত রাত্রে সিয়ামের সাথে একটু ঝগড়া হয়ছিল। খুব সামান্য বিষয় নিয়ে সে ঝগড়া। গতকাল মায়া সিয়ামকে বলেছিল একটু তাড়াতাড়ি’ই কাজ সেরে চলে আসতে, ওকে নিয়ে ঘুরতে যাবে, কিন্তু কাজের চাপে সিয়াম ভুলে গিয়েছিল মায়াকে দেয়া প্রতিশ্রুতির কথা। ব্যস, এতে’ই হয়ে গেল। সেই থেকে মহারানী গাল ফুলিয়ে আছে। __ মণিকে ঘুম পাড়িয়ে সিয়াম ধীর পায়ে মায়ার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। মায়া বুঝতে পেরে বারান্দা থেকে একটু দুরে সরে যায়। সিয়াম আস্তে আস্তে মায়ার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। মায়া এবারও আরেকটু সরে যায়। সিয়াম আরেকটু এগিয়ে যায়। মায়া আবার সরে যায়।???
সিয়াম এবার সরে গিয়ে মায়ার কাঁধে হাত রাখে। ??? __ মায়া সিয়ামের হাত’টা দুরে ছুড়ে মারে। ?? অতঃপর হনহনিয়ে বারান্দা থেকে বের হয়ে ছাদের সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকে।?? __ সিয়ামও বউয়ের পিছুপিছু ছুটতে থাকে।☺☺☺ __ মায়া গিয়ে ছাদের এককোণে দাঁড়ায়। অতঃপর মনোযোগ দেয় আকাশে ভেসে বেড়ানো একরাশ মেঘকণার দিকে। মায়া যখন আকাশের দিকে তাকিয়ে মেঘেদের ছুটে চলা দেখতে ব্যস্ত ঠিক তখনি সিয়াম মায়াকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে স্যরি বলে। মায়া হেঁচকা টান দিয়ে নিজেকে সারিয়ে নিয়ে ছাদের অপর পার্শ্বে চলে যায়। সিয়াম মায়ার পিছুপিছু সেখানেও যায়। জড়িয়ে ধরে মায়াকে পিছন থেকে। মায়া ছাড়াতে চাইলে সিয়াম আরো নিবিড় করে জড়িয়ে ধরে মায়াকে।??
মায়া শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে যখন সিয়ামের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে যাচ্ছিল ঠিক তখনি সিয়াম ওর হাত দুটো মায়ার পেটের দিকে নিয়ে যায় আর নাক দুটো ডুবে যায় মায়ার চুলের গহীন দেশে। ?? সিয়াম মায়ার চুলে নাক-মুখ গোজে চুলের মিষ্টি ঘ্রাণ নিচ্ছে আর দু’হাত দিয়ে মায়ার পেটে হাত বুলাচ্ছে। মায়া তবুও ছাড়ানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছে। সিয়াম এবার মায়ার ঘাড়ের চুলগুলো সরিয়ে নাক-মুখ ঘষতে থাকে মায়ার ঘাড়ে। মায়া যেন এবার কুপোকাত হয়ে’ই যাবে।?? সিয়াম যখন মায়ার ঘাড়ে এলোপাথাড়ি ভাবে চুমু দিতে থাকে, তখন মায়া ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে চোখ বোজে। সিয়াম মুচকি হাসি দিয়ে মায়াকে ওর দিকে ফিরিয়ে নিলে মায়া চোখ খুলে, সিয়ামের মুখ যখন ওর ঠোঁটের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে তখন আবারো বন্ধ করে ফেলে চোখ দু’টো। মুহূর্তে’ই সিয়ামের দু’টো ঠোঁট গ্রাস করে নিল মায়ার ঠোঁটজোড়াকে। এভাবে কিছুক্ষণ অমৃতরস পান করার পর একটা সময় মায়া উন্মাদ হয়ে যায়। ঝাপটে ধরে সিয়ামকে। সিয়াম কোলে করে মায়াকে নিচে নিয়ে যায়। অতঃপর_
অতঃপর কি হয়ছে জানতে চাহিয়া লজ্জা দিয়েন না। আমি চিটার কিন্তু নির্লজ্জ নহে। আমারো লজ্জা আছে……
যায় হোক… সব কথার এক কথা সিয়াম-মায়ার টুনা-টুনির সংসার এভাবে’ই ছোট্ট ছোট্ট মান-অভিমান, হাসি-আনন্দ, দুষ্টু-মিষ্টি খুনসুটির ভেতর চলতে থাকে। বেশ ভালো’ই আছে ওরা। দোয়া করিও, ওদের এ সুখ যেন সারাটা জীবন এমনি থাকে…..
অতঃপর সে বৃষ্টিমুখর রাত্রে অনেক কিছু’ই হয়ে গিয়েছিল।
পরদিন সকালে সিয়াম মায়াকে নিয়ে বাসায় যায়। মায়া বাসায় গেলে আবির ও আবিরের ফ্যামিলিসহ মায়ার মামার বাড়ি থেকে সবাই আসে। মায়াকে ওর মামা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মায়া-সিয়ামের আবার নতুন করে বিয়ে দেওয়া হয়। ওদের বাসর ঘর’টা মায়ার মামাত বোন জয়া নিজ হাতে সাজায়। সে রাত্রে সিয়াম-মায়া নতুন করে ওদের বৈবাহিক জীবন শুরু করে। ছোট্ট বাবা পাগল মণি’কে কৌশল করে বিজয় ওর কাছে নিয়ে যায় সিয়াম-মায়া যাতে একান্তে কিছুদিন সময় কাটাতে পারে সে জন্য।
এদিকে দায়িত্ব নিয়ে মণি’কে নিয়ে যাওয়ার পর আরেক’টা ঝামেলায় পরে বিজয়। সকালে চেম্বারে গিয়ে ফিরতে হতো সন্ধ্যায়। কিছু’তেই যেন মণিকে সময় দিয়ে পেরে উঠছিল না বিজয়। যার কারনে মণি প্রায় অভিমান করত মামার সাথে। সেদিন চেম্বার থেকে ফিরে মণির রুম থেকে বিকট হাসির আওয়াজ পায় বিজয়। কেন জানি মনে হলো রুমে মণির সাথে এ বাড়ির কোনো কাজের মেয়ে নই, অন্য কেউ আছে। বিজয় দৌঁড়ে রুমে যায় কিন্তু কাউকে পেল না। মণিকে জিজ্ঞেস করলে বলে- কোথায়? কেউ নেই তো… মামা তুমি ভুল শুনছো। বিজয় মনের ভুল ভেবে চিন্তা’টা উড়িয়ে দেয় মাথা থেকে। কিন্তু পর পর কয়েক দিন ধরে’ই যখন লক্ষ্য মণি কার সাথে যেন হাসে-খেলে, আর বিজয় নিজেও দেখছে ওর রুম’টা কেমন যেন সুন্দর করে গোছানো তখন বিজয়ের সন্দেহ বাড়ে। কিন্তু কাউকে ধরতে পারে না।
সেদিন চেম্বার থেকে ফিরে বিজয় ওর রুমে গেলে কেমন যেন চেনা গন্ধ অনুভব করে। এই গন্ধ’টা বিজয় এর আগেও বহুবার পেয়েছে। খুব চেনা গন্ধ। কিন্তু সেই গন্ধ’টা কোথা থেকে আসে বিজয় জানে না। পরদিন রাত্রে__ বিজয় একটু তাড়াহুড়ো করে’ই বাড়ি ফিরে। এতটা তাড়াহুড়ো যা কখনো আগে হয়নি। বিজয় ওর রুমের ভেতর যাওয়ার পর আবারো সেই চেনা গন্ধ পায় যেটা বিগত ৫বছর ধরে পেয়ে আসছে। বিজয় টাই খুলতে খুলতে বারান্দায় যায়। হঠাৎ’ই মনে হলো পিছন থেকে কেউ যেন সরে গেছে। বিজয় টাই খুলা রেখে দৌঁড়ে যায় রুমের বাহিরে। কিন্তু নাহ। কোথাও নেই। সেদিনও মনের ভুল ভেবে বিষয়’টাকে এড়িয়ে যায় বিজয়। পরদিন সকালে চেম্বারে গিয়ে বিশেষ প্রয়োজনে চেম্বার থেকে ফিরে আসে বিজয়। সেদিন গোসল খানায় ঢুকলে একটা নূপুর পায় বিজয়। নূপুর’টা হাতে নিয়ে বিজয় যেন চমকে যায়। এটা পেত্নী তেত্নীর নূপুর নয়তো???? হতেও পারে। কারন- এখানে এই গোসলখানায় পেত্নী ছাড়া ২য় কোনো মেয়ে আসতেই পারে না।
যায় হোক নূপুর’টা হাতে নিয়ে বিজয় কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করল। তারপর ভাবতে লাগল__ ” এটা এই বাসার কোনো কাজের মহিলা/মেয়ের নইতো?” ব্যাপারটা জেনে যার নূপুর তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। সেদিন দুপুরে কাজের মহিলারা আসলে বিজয় জানতে পারে ওরা কেউ নূপুর পরে না। বিজয় যেন সপ্ত আকাশ থেকে পরল। তাহলে কি পেত্নী???? ??? যায় হোক….
পরদিন সকালে সিয়াম-মায়া এসে মণিকে নিয়ে যায়। যাওয়ার আগে মণি যেন বার বার কিছু একটা বলতে চাইছিল বিজয়কে যেটা এখন টের পায় বিজয়। আচ্ছা, মণি আমায় কি বলবে? আর ও কেন যেতে চাইনি সিয়াম-মায়ার সাথে? আর কেন’ই বা যাওয়ার সময় বার বার আমার রুমের দিকে তাকাচ্ছিল? আর কেন’ই বা বলে গেল ভালো থেকো সবাই??? এখানে তো আমি ছাড়া কেউ ছিলাম না? মণি কি বুঝাতে চাচ্ছিল??? ব্যাপারটা সত্যি’ই রহস্যজনক।
আর সেই রহস্য উন্মোচন করার সময় এবং সুযোগ কোনো’টাই হয়ে উঠেনি বিজয়ের। তার আগে’ই অসুস্থ হয়ে গেল সে। সে রাতে প্রচন্ড জ্বরে কাঁপছিল বিজয়। শেষ রাত্রে হঠাৎ করে শরীরে উষ্ন পরশ অনুভব করে সে। মনে হচ্ছে কেউ শরীরে কম্বল/কাথা টেনে দিয়েছে। জ্বরের ঘোরের মধ্যেও বিজয় টের পায় রুমে কারো উপস্থিতি। সেই চেনা গন্ধ….. মনে হচ্ছে কেউ একজন কপালে আলতো করে চুমু দিচ্ছে। বিজয় চোখ মেলে তাকাই। একটা অস্পর্শ মানবি ওর পাশ থেকে সরে যাচ্ছিল। যাওয়ার সময় বিজয় হাত’টা ধরে ফেলে। বেড সুইচ’টা জ্বালিয়ে বিজয় হতবাক। এ যে মায়ার মামাতো বোন….
বিজয়ের জ্বর যেন মুহূর্তে’ই সেরে গেছে। ওর সারা শরীর ঘামছে। কিছু’তেই বুঝে উঠতে পারছে না এ মেয়ে এখানে কেন?
– জয়া আপনি? আপনি এখানে? এত রাত্রে???(বিজয়) __……. (নিশ্চুপ জয়া) __ কি হলো? কথা বলুন? আর আপনার এই অবস্থা কেন? চোখ এমন লাল কেন? আর কোথা থেকে আসছেন এত রাত্রে???(বিজয়) __ জয়া তখনো নিশ্চুপ। __ কি হলো? কথা বলুন..(বিজয়) _ জয়া কাঁপতেছে। আর আমতা আমতা করতেছে। বিজয় কড়া গলায় বলল, কি হলো? কিছু’তো বলুন। জয়া বলার মতো কোনো ভাষায় যেন খুঁজে পাচ্ছে না। কি বলবে সে??? কি করে সত্যি’টা বলবে। কি করে বলবে, আমি আপনার এখানে দীর্ঘ ৫মাস’টা বছর ধরে’ই আছি। আপনার ঋন শোধ করার জন্য কাজের মেয়ের বেশে আছি। আপনার টাকাতে আমার মায়ের জীবন বাঁচলো, সেই কৃতজ্ঞতা থেকে আছি। আর চেষ্টা করছি আপনার ঋন পরিশোধ করার। আর সেই সুবাধে আপনাকে রান্না করে খাওয়াতেও পারছি, পারছি আপনার অসুস্থতার সেবা করতে…
কি হলো? কিছুতো বলেন? আপনি এখানে কেন???(বিজয়) __ আপনার জ্বর এসেছিল তাই….কাঁপা কাঁপা গলায় জয়া জবাব দিল। __ আমার জ্বর আসছে আপনি কিভাবে জানলেন? আর কিভাবে এখানে আসলেন?(বিজয়)
– জয়া মনে মনে বলছে_ আমি আপনাকে ভালোবাসি ডাক্তার বিজয়, আমি আপনাকে বড্ড ভালোবেসে ফেলেছি। আর তাই আপনি কখন কি করেন, সেটা সব খবর আমার নিতে হয়।
_ বিজয় এবার বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। একের পর এক প্রশ্নে জয়া যেন আর পেরে উঠতে পারছিল না। পারছিল না চুপ থাকতে। যার কারনে মিথ্যে বলতে’ই হলো_ ” আমি এসেছিলাম মণি’কে দেখতে। এসে দেখি ও নেই। জার্নি করে এসেছিলাম তো, যার কারনে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরেছিলাম। ঘুম ভাঙ্গে মাঝ রাত্রে। কিন্তু আমি ভাবছি কেবলি রাত হয়েছে। তাই আপনার সাথে দেখা করার জন্য এসেছিলাম।”
– ওহ! খেয়েছেন??? আর চোখগুলো এত লাল কেন? সত্যি’ই কি ঘুমাইছিলেন নাকি অন্য কিছু?????(বিজয়)
– কেবল’ই ঘুম থেকে উঠলাম,তাই লাল হয়ে আছে।(জয়া) _ আর খাওয়া!!! হয়েছে??? (বিজয়)
জয়া নিশ্চুপ… – ওহ! খান নি তো???(বিজয়) – আসলে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।(জয়া) _ বুঝলাম। এখন খাওয়ার চিন্তা ভাবনা আছে???(বিজয়) – আমার ক্ষুদা নেই। (জয়া) – ঠিক আছে। আপনি গিয়ে ঘুমান তাহলে।(বিজয়)
জয়া চলে যাচ্ছিল, কি যেন মনে করে ফিরে আসল। বিজয় জয়ার দিকে তাকিয়ে বলল__ ” কিছু বলবেন?”
– আপনার জ্বর কমেছে?(জয়া) বিজয় কপালে হাত দিয়ে বলল__ হ্যাঁ, জ্বর সেরেছে। আর যা করছেন তা সেরে তো উপায় নেই।(হাসতে হাসতে বিজয়) _ জি??? কি করলাম?(জয়া) __ করছেন আর কি! মাঝরাত্রে ভেলকি দেখালেন। এই আর কি…!!!(বিজয়) _….. (জয়া) — আচ্ছা, যান। ঘুমান গিয়ে…..(বিজয়)
জয়া চলে গেল। পরদিন সকাল বেলা জয়া বিজয়ের কাছে গিয়ে এ বাসায় ভাড়া থাকার অনুমতি চাই। নিকটভর্তি কোনো কলেজে চাকরী হয়েছে,যার জন্য কারনে এখানে থাকতে হবে। এই অজুহাত দেখিয়ে বিজয়ের কাছে সে বাসায় থাকার অনুমতি চেয়ে নেয়। বিজয়ও সাত-পাঁচ না ভেবে রাজি হয়ে যায়। জয়াকে বলে দেয় এ বাসায় থাকতে, তবে ভাড়াটিয়া হিসেবে নয়, কুটুম হিসেবে। জয়া কোনো ছদ্মবেশ ছাড়া’ই অবাধে এ বাসায় ঘুরাফেরা করতে পারবে, ভাবতে’ই আনন্দে ওর মুখে একচিলতে হাসি ফুটে উঠল।
দেখতে দেখতে একটা বছর চলে গেছে। বিয়ে নিয়ে বিজয়ের কোনো চিন্তা-ভাবনা ছিল না, কিন্তু একমাত্র চাচার পিড়াপিড়ি’তে বিজয় রাজি হয়। চাচাকে বিয়ে করবে বলে জানায়। চাচা মায়াকে খবর দেয়। মায়া আসলে মায়াকে বলে বিজয়ের হসপিটালে’ই ডাক্তার নুসরাতের সাথে দেখা। ডাক্তার নুসরাত ওনার ভালো লেগেছে, ঐ মেয়েকে দেখার জন্য পাঠালো বিজয়ের চাচা। পরিবারের সাথে আগে’ই কথা বলে রেখেছে। মায়া গিয়ে নুসরাতকে দেখে আসে। দেখতে শুনতে ভিষণ লক্ষ্মী মেয়ে নুসরাত। যাকে পছন্দ না করে উপায়’ই নেই। মায়া বাসায় এসে বোন হিসেবে ওর সম্মতি জানালে বিজয়ের আর কিছু’ই বলার থাকে না। চাচার সাথে আলহামদুলিল্লাহ বলে রাজি হয়ে যায় বিজয়। বিজয়ের চাচা বিজয়ের বিয়েটা সামনে মাসে’ই হবে বলে জানিয়ে দেয়। যদিও একটু বেশীই তাড়া মনে হচ্ছিল তবুও চাচার অসুস্থ শরীরের কথা চিন্তা করে সেটাই মেনে নেয় বিজয়। এই মাসের ১৫তারিখ চলতেছে। সামনে মাসে বিয়ে হলে হাতে আছে মাত্র ১৫দিন। এর ভিতরে সব করতে হবে। আর কেনাকাটার ব্যাপার’টা বিজয় মায়া এবং সাইমার উপর দিয়ে দিয়েছে।
অবশ্য জয়াকে বলছিল,কিন্তু জয়ার কলেজে সময় দিতে হয় তাই ও কেনাকাটা’ই থাকতে পারবে না বলল। দেখতে দেখতে ঘনিয়ে আসে বিয়ের দিন। সেদিন জয়ার কাছে মণিকে রেখে মায়া সাইমাকে নিয়ে শপিংয়ে যায়। তারপরের কথোপকথনের কথা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরলাম এখানে_ মণি:- খালামণি! তুমি বউ হবে না? ও খালামণি বলো না… জয়া:-……. মণি:- খালামণি! তুমি না বলছ তুমি বউ হবে। বিজয় মামার বউ হবে??? জয়া:- মণি, মামণি! প্লিজ চুপ করো। কেউ শুনবে তো…. মণি:- কেন চুপ করব? আমি কি মিথ্যে বলছি নাকি? তুমি তো বিজয় মামার ঘর লুকিয়ে গুছিয়ে আসতে, লুকিয়ে মামার জন্য রান্না করতে। লুকিয়ে মামাকে দেখতে। তাহলে বিয়েটা করছ না কেন??? বিয়ে না করলে এসব করছ কেন??? জয়া:- ওরে আমার পাকনা বুড়ি! এত কথা বলেরে… তোমার মামা আমার বন্ধু। তাই এসব করতাম… মণি:- বন্ধুকে বুঝি লুকিয়ে দেখতে হয়? বন্ধুর বিয়ে হলে বুঝি মানুষ কাঁদে??? জয়া:- মণি মা! আমার মাথা’টা একটু ব্যথা করতেছে। একটু টিপে দিবে? মণি:- ঠিক আছে, এখন ছেড়ে দিলাম। চুপ করে শুয়ে থাকো। তবে হ্যাঁ… মামাকে বিয়ে করোনি কেন সেটা কিন্তু আমায় বলতে হবে….
জয়া আর কোনো কথা না বাড়িয়ে চুপ করে শুয়ে পরল চোখ বোজে। মণি ছোট্ট ছোট্ট হাতে মাথা টিপে দিচ্ছে। মাথা টিপতে টিপতে’ই জয়া ঘুমিয়ে পরে। ঘুম ভাঙে মায়ার ডাকে। জয়া ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলিয়ে মায়ার দিকে তাকালো। তারপর__ ” তুই? কখন এলি?!!” _ এইতো, এলাম। মণি কই???(মায়া) __ কই? এখানে’ই তো ছিল।(জয়া) __ এখানে ছিল, নাহ??? তোমাকে দিয়ে গেছি ওকে খাইয়ে ঘুম পাড়ানোর জন্য আর তুমি কি না ওকে রাস্তায় ছেড়ে দিয়েছ।(মায়া) _ মায়া! কি বলছিস তুই এসব? ও তো রুমে’ই ছিল…(জয়া) __ রুমে ছিল, তাহলে রাস্তায় গেল ক্যামনে?(মায়া) __ কই? মণি কই??? ওকে আনতো….(জয়া) _ বিজয়ের সাথে ওর রুমে আছে। যা তুই। আমি ফ্রেশ হচ্ছি….(মায়া) _ আচ্ছা…. (জয়া)
কিছুক্ষণ পর জয়া বিজয়ের রুমের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। মণির নজরে পরে সেটা। খালামণি, খালামণি করে দৌঁড়ে যায় জয়ার কাছে। আঙ্গুল ধরে টেনে এনে বিজয়ের পাশে বসায়। তারপর__ মণি:- আচ্ছা, মামা! তোমাকে কি আমি কয়’টা কথা বলতে পারি??? বিজয়:- বলো মামণি… মণি:- বন্ধু মানে কি??? জয়া:- মণি মামণি! তোমরা গল্প করো, আমি চা করে নিয়ে আসছি…. মণি:- ঠিক আছে….
বিজয় মণিকে কোলে টেনে নিয়ে বলল__ বন্ধু মানে হলো দুঃখের সাথী, তোমার বিপদে-আপদে যে সবসময় তোমার পাশে ছায়ার মত থাকে সেই বন্ধু। হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন বলো তো??? মণি:- বলছি… আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও…. বিজয়:- আচ্ছা, ঠিক আছে বলো। মণি:- আচ্ছা, মামা! বন্ধুদের জন্য কি মানুষ কাঁদে? বিজয়:- হুম, বন্ধুর বিপদে কাঁদে। বন্ধুর কষ্টে কাঁদে। মণি:- আর বন্ধুর বিয়ের কথা শুনেও কাঁদে???
মণির প্রশ্নের ধরন দেখে বিজয় এবার অবাক হয়ে যায়। অবাক বিস্ময়ে প্রশ্ন করে__ ” বিয়ে? সে তো খুশির খবর। কাঁদবে কেন?” মণি:- তার মানে কাঁদে না, তাই তো? বিজয়:- হুম…
মণি গালে হাত দিয়ে গুনগুনিয়ে বলতে লাগল, তাহলে খালামণি কেন কাঁদল? ওনিও তো মামার বন্ধু….
বিজয়:- কি হলো মামণি??? মণি:- তবে ঐ খালামণি’টা কাঁদলো কেন??? বিজয়:- কোন খালামণি??? মণি:- সে তুমি চিনবা না… বিজয়:- আচ্ছা, তোমার খালামণির বন্ধু কি ছেলে??? মণি:- হুম… বিজয়:- তোমার খালামণির বন্ধুর অন্য জায়গায় কি বিয়ে ঠিক হয়ছে?? মণি:- হুম। বিজয়:- বুঝলাম। মণি:- কি বুঝলা মামা??? বিজয়:- তোমার খালামণি ওনার বন্ধুকে ভালোবাসে। তাই কাঁদতেছে। মণি:- ভালোবাসা কি মামা???
ঠিক তখন’ই জয়া চা হাতে রুমে প্রবেশ করে। বিজয়ের দিকে চা’য়ের কাপ এগিয়ে দিতে দিতে বলে__ ” চা….” আপনিও বসেন….(বিজয়) _ আমি বৃষ্টির দিন ছাড়া চা খাই না।(জয়া) _ বৃষ্টির দিন কেন?(বিজয়) ___ ভালো লাগে, তাই।(জয়া) __ আপনার রুচি আছে বটে..(বিজয়) _ আপনি খা’ন। চা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।(জয়া)
এই বলে জয়া মণিকে নিয়ে চলে যায় রুম থেকে। বিজয় চা খাচ্ছে আর মনে মনে বলছে__ ” আমি বৃষ্টির দিন ছাড়া চা খাই না…” ইস! কি মিষ্টি করে কথা বলেরে মেয়েটা….
গায়ে হলুদের দিনের বলছি। সবাই যখন বিজয়কে হলুদ দিতে ব্যস্ত, মণি তখন চুপিচুপি লুকিয়ে-চুরিয়ে সাইমার ছেলে সাইমকে নিয়ে পৌঁছে গেল ডাক্তার নুসরাতের বাসায়। পাশাপাশি বাসা হওয়ায় খুঁজতে বেগ পেতে হলো না বাচ্চা দুটির। পৌঁছে গেল নুসরাতের বাসায়। গেইট খোলা ছিল বিধায় অতি সহজেই খোলা গেইট দিয়ে উপরে চলে গেল সাইম-মণি। ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করলে ওদের দেখে অবাক হলো সবাই। পরে বুঝতে পারল হয়তো ঐ বাসা থেকে মেয়েরা আসছে হলুদ দিতে, বাচ্চা দুইটা বোধ হয় আগেই চলে আসছে। নুসরাত সিড়ির উপরেই দাঁড়িয়ে ছিল। বাচ্চা দুইটাকে দেখে নিচে নামল। ওদের নিয়ে উপরে চলে গেল।
মণি’ই প্রথমে কথা শুরু করল। মণি:- ভালো আন্টি… আপনাকে একটা কথা বলব? নুসরাত:- জি, বলো….
মণি জয়ার ব্যাপারে সব’টা বলল। সব’টা শুনার পর ওর পায়ের তলা থেকে যেন মাটি সরে যাচ্ছিল। কি বলছে ওরা এসব? আর জয়ার ফোনে বিজয়ের এত্তগুলো ছবি।তার মানে বাচ্চারা যা বলছে একটু হলেও সত্যি। জয়া বলে মেয়েটা বিজয়কে ভালোবাসে। ভিষণ ভালোবাসে। নুসরাত মনে মনে নিজেকে ধিক্কার দিল। নুসরাত! একি করতে যাচ্ছিলে তুই? না জেনে শুনে হুট করে বিয়ে করে একটা মেয়ের তিলতিল করে গড়া স্বপ্নকে ভেঙে তছনছ করে দিচ্ছিলে তুই। তুই এতটা খারাপ? ছি! নুসরাত। ছি….. মনে মনে নিজেকে নিজেই ধিক্কার দিল নুসরাত। এদিকে মণি কেঁদে’ই চলছে। নুসরাত মণিকে কোলে নিয়ে বলল__ ” কেঁদো না মা! আমি থাকতে কিচ্ছু হবে না। আমি সব ঠিক করে দিব। তোমার মামা আমাকে নয়, তোমার জয়া খালামণি’কে বিয়ে করবে।”
মণি একটু শান্ত হলো এ কথা শুনে….
নুসরাত বাড়ির ড্রাইভারকে দিয়ে সাইম-মণিকে পাঠিয়ে দিয়ে বিজয়কে ফোন করে আনলো। বিজয় আসলে সব’টা খুলে বলে নুসরাত। বিজয় যেন আকাশ থেকে পরল। স্তব্ধ হয়ে গেছিল কিছুক্ষণের জন্য। তারপর নুসরাতের দিকে তাকিয়ে বলল__ ” নুসরাত! এরা বাচ্চা মানুষ। এরা ভালোবাসার কি বুঝে? এরা হয়ত না বুঝে’ই এসব বলছে।”
নুসরাত শক্ত গলায় বলল__ ” বিজয়! বাচ্চারা কখনো মিথ্যে বলে না। আর এই দেখো জয়ার ফোন। তোমার অগোচরে এই ছবিগুলো ও তুলছিল। ওর সমস্ত গ্যালারী খুঁজে দেখো, কেউ আছে? না নেই। তার মানে কি? ও কেন এসব ছবি রাখতে যাবে? কেন রেখে দিবে যতনে??? বিজয়… ওর নোটপ্যাডের সেভ করা একটা লিখাগুলো দেখো। ৬বছর আগেকার লেখা এটা। যাতে লিখা__ ওনার ঋন কখনো শোধ করা যাবে না। আবার পরিশোধ করাও যাবে না। কারন, আমরা খুব’ই নিম্নবিত্ত পরিবারের একজন। একসাথে ৫লক্ষ টাকা পরিশোধ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু পারছিলামও নিরবে ওনার দান মেনে নিতে। আর তাইতো আজ চলে আসলাম ওনার বাসায় কাজের মেয়ের ছদ্মবেশে। বিজয়… দেখো। তুমি তো এই মেয়ের মায়ের চিকিৎসার জন্য’ই টাকা দিয়েছিলা, তাই না? ও তার’ই ঋন পরিশোধ করতে এসেছিল। বিজয়! ও ছায়ার মত ৫টা বছর তোমার পাশে থেকেছে। গত বছরে যখন ধরা পরল তখন মিথ্যে কলেজের অজুহাতে তোমায় বাসায় থাকার অনুমতি চেয়েছিল। বিজয় দেখো… এখানে কি লিখা… এখানে লিখা ও একটা হসপিটালে জব করে। আর সেটা শুধুমাত্র তোমাকে দেখার জন্য’ই করে। তার মানে কি বিজয়? ও তোমাকে ভালোবাসে। ভিষণ ভালোবাসে। বিজয় এতেও যদি তোমার বিশ্বাস না হয় তাহলে তুমি ২য় কাজের মেয়েকে ফোন করে এখানে আসতে বলো। আমার মনে হয় ঐ মেয়েটি সব জানতো। বিজয় নুসরাতের কথা মতো কল দিল ২য় কাজের মেয়েকে। মেয়েটি এসে প্রথমে কাঁপতে লাগল, তারপর বলল__ ” স্যার আমায় মাফ করে দেন। জয়া বলে মেয়েটা ছয় বছর আগেই এখানে আসে। ও ওর মায়ের ঋন পরিশোধ করতে চেয়েছিল, তাই রোজিনাকে সরিয়ে রোজিনার জায়গায় ঐ মেয়েকে দিয়েছিলাম। ওনি’ই রান্না বান্না করত, আর যা টাকা পেত সব দান করে দিত আপনার নামে। ও আপনার রুম গুছাতো। আর ঐ নূপুরটাও জয়া মেয়েটার। ও মানা করছিল, তাই বলিনি। স্যার, আমায় মাফ করে দিন। ঐ মেয়ে চলে যাচ্ছে আজকে। আর এমন ভুল হবে না। স্যার, আমায় তাড়িয়ে দিবেন না।
__ নুসরাত কাজের মেয়েকে বাসায় পাঠিয়ে দিল। _ বিজয় অসহায়ের মত নুসরাতের দিকে তাকালো। বিজয়ের অসহায় দৃষ্টির ভাষা নুসরাত বুঝে যায়। আর তাই বিজয়ের কাধে হাত রেখে বলে_ ” বিজয়! আমি জানি তুমি কি বলতে চাচ্ছো। আমাদের বিয়ে ঠিক হয়েছে কিন্তু বিয়ে’টা হয়ে যায় নি। এখনো হাতে অনেক সময় আছে বিজয়। তুমি যাও জয়ার কাছে। ওকে চলে যেতে দিও না। ফিরাও ওকে। বিজয় ঋন পরিশোধ করতে এসে ও তোমায় চরম ঋনী করে চলে যাচ্ছে। বিজয় চুপ করে থেকো না। ওকে ফেরাও। বিজয় আমার জন্য চিন্তা করো না। তুমি প্লিজ, জয়াকে ফেরাও।”
বিজয় আর কোনো কথা না বলে ছুটে চলল বাসার দিকে। ৫মিনিটের রাস্তা ২মিনিটে পৌঁছালো বিজয়। এদিকে জয়া..?!!! মায়ের অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে মায়াকে বলে কোনো রকম বেরিয়ে পরল বাসা থেকে। যাওয়ার আগে কথা দিয়ে গেল__ “বিজয় ভাইয়ার বিয়েতে অবশ্যই আসব আমি….দুপুর ২টায় পৌছে যাব বিয়ে বাড়িতে….”
এদিকে বিজয় বাসায় ঢুকে’ই ছুটে চলল জয়ার রুমের দিকে। জয়াকে না পেয়ে দৌঁড়ে আসল মণির কাছে। হাপিয়ে জিজ্ঞেস করল__ ” মা! জয়া কই?” __ মণি কাঁদতে কাঁদতে বলল, হাতে ইয়া বড় ব্যাগ নিয়ে চলে গেছে খালামণি। চলে গেছে…”
বিজয় বসা থেকে উঠে দৌঁড়ে ছুটে চলল বাসস্টপের দিকে। চট্টগ্রামেরর উদ্দেশ্যে গাড়ি এখনো ছাড়েনি। মনে হচ্ছে জয়া এখনো যায় নি। – হুম, ঠিক তাই। জয়া এখনো যায় নি।
বাসস্টপে একটা বেঞ্চে চুপ করে বসে আছে জয়া… মুখ’টা শুকিয়ে কালো হয়ে আছে। বোধ হয় বিয়ের কথা’টা শুনার পর থেকে ঠিক মত খাইওনি। বিজয় গিয়ে জয়ার পাশে’ই বসল। জয়া আনমনে উদাস দৃষ্টিতে তখনো দুরের দিকে তাকিয়ে আছে। এমন সময় বাস এসে যায়। বাসের আগমনে ধ্যান ভাঙে জয়ার। বেঞ্চ থেকে উঠে ব্যাগটা হাতে নিতে যাবে ঠিক তখন’ই থমকে দাঁড়ায় জয়া। এ যে ডাক্তার বিজয় দাঁড়িয়ে। যার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে আসছি, সেই ডাক্তার সাহেব’ই দাঁড়িয়ে। জয়া অবাক বিস্ময়ে মুখ খুলল__ ” ভাইয়া আপনি? এখানে?!!! __ হুম, আমি। কেন কোনো সমস্যা???(বিজয়) __ না, ঠিক সেটা না। আজ তো আপনার হলুদ সন্ধ্যা…তাই বলছিলাম…(জয়া) __ হলুদ সন্ধ্যা?!!!?? তাই না?????(বিজয়) __ আচ্ছা, মিস জয়া! আপনি জানেন তো হলুদ সন্ধ্যার পর কি হয়?!!!(বিজয়) __ বিয়ে….(জয়া) __ ঠিক তাই।বিয়ে। বিয়ে হয়। আচ্ছা, বিয়ে হলে তো বউ লাগে তাই না???(বিজয়) _ জি…(জয়া) _ আর যদি সেই বউটা’ই না থাকে তাহলে কি বিয়েটা হয়?????(বিজয়) _ মানে??? কি বলছেন এসব???বউ নেই মানে??(জয়া) — মানে অতীব সহজ। বউ আমার পালাইছে…..???(বিজয়)