Friday, August 15, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2452



চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_৫

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি

_পর্ব_৫
Written by Avantika Anha
নাহিদ অনুতপ্ত ভাবতে থাকে নিজেকে । তাই সে শাম্মি আর জাহিদকে নিয়ে আমার ফুপির বাড়ি আসতেছে আমাকে নিয়ে যেতে ।
.
.
এদিকে আমি মন খারাপ করে ফুপির বাড়িতে বসে ছিলাম ।
.
ফুপি : আনহা যায়ে দেখ তো গেটে কে ?
আমি : ওকে ।
.
গেট খুলে দেখি শাম্মি , জাহিদ আর নাহিদ শাম্মি কে দেখেই জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলাম ।
আমি : ইনি কেনো এসেছে ? ( নাহিদের কথা জিজ্ঞেস করছিলাম )
শাম্মি : ও জানতে পারছে জান্নাতের সত্য টা ।
আমি : তো আমি কি করবো যেই মানুষ না জেনেই রিয়েক্ট করে আমি তার সাথে কোনো কথা বলবো না ।
নাহিদ : আই এম সরি আনহা । সত্যি না জেনে তোমাকে থাপ্পর মেরে দিছি ।
.
.
আমি কোনো কথা না বলে ভিতরে চলে আসলাম ।
ফুপি : কে আসছে ?
আমি : শাম্মি , একটা ফ্রেন্ড আর একটা টিকটিকি ( নাহিদ কে টিকটিকি বললাম )
নাহিদ ভাবছে “ভুল আমার ছিল । আমি রাগ ভাঙ্গিয়েই ছাড়বো”
আমি ভাবছি “কোনোদিন মাফ করবো না”
ফুপি : তোমরা যখন এসেছো কিছুদিন থাকো । ঘুরে বেড়াও ।
শাম্মি : জ্বী জ্বী ফুপি ।
.
রাতে খেতে বসলাম…..
শাম্মি আমার পাশে কিন্তু আমার সোজা নাহিদ বসলো ।
আমি তাকায় দেখি শাম্মি আর জাহিদ একে অপরের দিকে তাকায় আছে । আই মিন আখিওসে গোলি মারে টাইপ ।
.
চোখ ফেরাতে দেখি নাহিদ আমার দিকে তাকায় কান ধরে মাফ চাচ্ছে ।‌
আমি অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিছি ।
.
.
নাহিদের পা কিছুটা আমার দিকে এগিয়ে ছিলো । চরম রাগে নাহিদের পায়ে লাথি দিলাম ।
নাহিদ : উহ্
ফুপি : কি হলো ।
নাহিদ : না কিছু না
আমি : আবার মুখ বাঁকা করে নিলাম ।

.
.
রাতে আমি আর শাম্মি এক রুমে ছিলাম ।
শাম্মি : মাফ করে দে নাহিদ কে ।
আমি : না না না কোনোদিন না ।
শাম্মি : উফ
আমি : আমি কিন্তু তোর সাথেও কথা বলবো না যদি আরেকবার জোড় করিস ।
শাম্মি : আচ্ছা ঘুমা কাল ঘুরতে যাবো ।
আমি : ওকে
.
.
সকালে উঠে…..
আমি আর সাফানা খেলতেছিলাম ( ফুপির মেয়ে ৩ বছর বয়স )
আমি : ওই বুড়ি কিটক্যাট খাবি ?
সাফা : হুম পিউ আপু খাবো দেও ( আমাকে পিউ আপু বলে )
আমি : দিবো না
সাফা : দাও
আমি : আমি তো দিবো না
.
আমার আর সাফার মারামারি শুরু ।
.
এমন সময় কে যেন বললো : তোমাকে আমি কিটক্যাট দিবো সাফা ।
.
আমি তাকিয়ে দেখি নাহিদ ।
সাফা : সত্যি ভাইয়া
নাহিদ : হুম এদিক এসো ।
আমি : ওই যাবি না ওইটা একটা টিকটিকি
সাফা : হিহি টিকটিকি ভাইয়া
নাহিদ : সাফা আসো এদিক তোমাকে খেলনাও দিবো ।
আমি : সাফা খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু এদিক আয় ।
সাফা : যে কিটক্যাট দিবে তার কাছে যাবো ।
আমি : এই দেখ আমার হাতেই আছে
.
নাহিদের কাছে ছিলো না ।
তাই সাফা আমার কাছেই এলো ।
আর আমি নাহিদের দিকে তাকায় যুদ্ধ বিজয়ের মতো হাসি দিলাম ।
.
নাহিদ : যাই হোক ইনার মায়াবী হাসি হারায় নি ।
আমি : সাফা চল ।
.
.
আমি আর‌ সাফা চলে গেলাম ।
কিছু সময় পর আমরা ঘুরতে বের হলাম
.
আমি : শাম্মি বেবি আইসক্রিম খাবি
শাম্মি : হ
আমি : দ্বারা
.
চারটা নিয়ে আসলাম ।
শাম্মি : নাহিদের জন্য আনছিস ?

আমি : যাই হোক নজর লাগে যদি তাই আনছি ।
নাহিদ : মিথ্যেও বলতে পারে না । ( মনে মনে )
আমি : হুহ
.
আমরা ঘুরছিলাম । এমন সময় কে জানি আমার চোখ ঢেকে ধরলো ।
আমি : ওই কে রে
জবাব দিলো : গেস কর তো কে ?
আমি : আবির ?
আবির : হুম কেমনে বুঝলি ( হাত ছড়িয়ে )
আমি : ছোট বেলার ফ্রেন্ড সহজে ভুলা যায় নাকি ?
আবির : ওমা আপনি তো দেখছি ভালোই বড় হইছেন
আমি : হবো না পিচ্চি থাকবো নাকি
আবির : হাহা আয় আমার ফ্রেন্ড দের সাথে পরিচয় করাই । সবাই ওদিক আড্ডা দিচ্ছে । আর এই তিনজন কারা ?
আমি : এটা শাম্মি , এটা জাহিদ , এটা জাহিদের ভাই
আবির : ওয়াও যমজ সেই তো ।
.
আমি : হুম
.
ওদিক গেলাম ।
আবির আমাকে সবার সাথে পরিচয় করালো ।
.
.
আবির : এটা আনহা আমার ছোট বেলার ফ্রেন্ড যদিও আমার চেয়ে ৩ বছর ছোট । জানিস আনহা সেই গান পারে ?
সবাই : তাহলে শুনাতে বল তো
আবির : হুম অবশ্যই শুনাবে
আমি : না না এখন না
আবির : শোনাতেই হবে
.
সবার রিকোয়েস্টে গাওয়া স্টার্ট করলাম ।
.
“পৃথিবীর যতো সুখ যতো ভালোবাসা
সবই যে তোমায় দিবো
একটাই আশা ।
তুমি ভুলে যেও না আমাকে
আমি ভালোবাসি তোমাকে ।
.
দুয়ারে দাড়িয়ে বিরহ বাড়িয়ে
সুখেতে জড়াবো আমি ।
সেই সুখেরই ভেলায় ভেসে স্বপ্ন সাজায়
এক পলকে পৌঁছে যাবো
রূপকথারই দেশে ।
তুমি ভুলে যেও না আমাকে
আমি ভালোবাসি তোমাকে । ”
.
সবাই তালি দিল ।
আবির : সেই দোস্ত
আমি : থেংকু
.
.
নাহিদ শকড্ এটা তো‌ এলোকেশির গলা ।
তাহলে কি আনহাই । হায় আল্লাহ আমি এতো বড় ভুল করলাম ।
.
.
শাম্মি : কি হলো ভাইয়া ?
নাহিদ : শাম্মি আমার একটা কথা বলো তো ?
শাম্মি : কি
নাহিদ : জান্নাত কি গান পারতো ?
শাম্মি : না জান্নাত গান পারতো না যতদূর জানি ।‌
নাহিদ : আনহার বাসার আশে পাশে কি আর কেউ গান পারে ?
শাম্মি : না ওই পারায় গান শুধু আনহা পারে । কারণ আনহাই শুধু গানকে ভালোবাসে ।
নাহিদ : ও মাই গড এতো বড় মিস্টেক
শাম্মি : মানে ?
নাহিদ সব বললো….
শাম্মি : ভাইয়া অনেক বড় ভুল করে ফেলছেন । আনহা অনেক জেদি । ও সহজে রাগ করে না কিন্তু একবার বেশি করলে আর ভাঙ্গে না ।
নাহিদ : না আমি ওর রাগ ভেঙ্গেই ছাড়বো ।
.
সব শেষে বাড়ি ফিরলাম ।
.
নাহিদ ভাবছে “কেনো জানি এখন আনহার সব ব্যবহার বেশ ভালো লাগছে । হয়তো আমার খোঁজা এলোকেশি টি আনহা এটা জানার কারণেই এমন হচ্ছে”
.
রাতে টিভি দেখছিলাম….
নাহিদ : আনহা আমাকে প্লিজ মাফ করে দাও ।
আমি : মাফ করা এতোই সোজা
নাহিদ : প্লিজ
আমি : না
.
বলেই চলে আসতেছিলাম ।
.
মেঝেতে পানি পড়ে ছিল দেখি নি আর পড়ে গেলাম ।
আমি : আম্মু গো ।
.
.
নাহিদ দেখলো আনহা পড়ে গেছে ।
নাহিদ : হাহা আমাকে মাফ করো নি তাই শাস্তি দিলো আল্লাহ
আমি : হুর
.
উঠতে গেলাম কিন্তু পায়ে ব্যাথা উঠলো ।
আমি : আম্মু
নাহিদ : দ্বারাও‌ আমি দেখি
.
বলেই কোলে তুলে নিল ।
আমি : নামাও আমাকে‌ ।‌
নাহিদ : ওকে
বলেই নামিয়ে দিলো ।
আমি চলতে পারছিলাম না । তাই শাম্মি কে ডাকলাম ।
.
.
শাম্মি : কি রে নিচে পড়ে আছিস কেনো‌?
আমি : পা মচকে গেছে ঘরে নিয়ে‌ চল ।
.
শাম্মির হাত ধরে ঘরে গেলাম ।
.
.
.
রুমে নাহিদ এলো কিছু সময় পর ।
নাহিদ : শাম্মি ওকে এই স্প্রে টা লাগায় দাও
আমি : না আমি কোনো স্প্রে লাগাবো না
শাম্মি : ওই লাগা নইলে মারবো
আমি : হুরররর
.
পরেরদিন ভালো হয়ে গেলাম ব্যাথা ভাগছে ।
.
আমি ফুপি কে নাস্তা বানাতে হেল্প করছিলাম ।
এমন সময় নাহিদ আসলো ।
.
নাহিদ : ফুপি একটু পানি দেন তো ।
ফুপি : আনহা পানি দে তো ওকে ।
আমি : হুর কিছু বললাম না কিন্তু লুকিয়ে পানির মধ্যে লবণ দিয়ে দিলাম‌।
.
নাহিদ পানি খেতেই : লবণ লবণ করে কেন নিশ্চই আনহা করছে এরকম ( মনে‌ মনে )
.
নাহিদ আনহার দিকে তাকালো ।
দেখে আমি মুচকি মুচকি হাসতেছি ।
.
নাহিদ কিছু না বলেই চলে গেলো ।
.
কিছু সময় পর….
আমি আর সাফা আবার খেলতেছিলাম এমন সময় আবার আমার হাত লেগে কি জানি ভাঙ্গে গেল ।
আমি : হায় রে কি যে ভাঙ্গে ফেললাম
.
তাকায় দেখি আমি আবার নাহিদের চশমা ভাঙ্গে ফেলছি ।
.
নাহিদ : হাহা আমার চশমাগুলোর সাথে মনে হয় তোমার শত্রুতা আছে বারবার তোমার হাতেই ভাঙ্গে ।
আমি : হুহ ভালো সরি
নাহিদ : হাহা বাদ দাও
সাফা নাও কিটক্যাট
সাফা : থেংকু
নাহিদ : এটা তোমার আপু কেও দেয় ( নাহিদ ভাবছে জানি এটা মানা করতে পারবা না । শাম্মি বলছে কিটক্যাট তোমার অনেক প্রিয় )
আমি : ( আমি ভাবছি হুর আমি এইটা না করি কেমনে । যাই হোক কিটক্যাট কে না বলুম না )
.
আমি কিটক্যাট নিয়ে দৌড় ।
.
নাহিদ হাসছে আর বলছে : মিস এলোকেশি তুমি তো আমারই
.
চলবে……

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_৪

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_৪
Written by Avantika Anha
নাহিদ ঢাকায় গেলো আর ভাবতে লাগলো কে এই মেয়ে আনহা নাকি তার পাশের বাড়ির মেয়েটা ।
.
নাহিদ এসব ভাবতে ভাবতে সময় পার করতে লাগলো ।
.
এদিকে শাম্মি আর জাহিদের প্রেম গভীর হতে লাগলো ।
.
১ মাস পর….
কোনো এক ছুটিতে আবার নাহিদের ফিরে আসা ।
.
নাহিদ আবার ওই পাড়ার ওদিক যায় । এবার নাহিদ খুঁজে পায় একজনকে কিন্তু সেই মানুষটা যে ভুল মানুষ সে বুঝতে পারে না ।
.
সেদিন জান্নাত দের বাড়িতে আনহা গিয়েছিলো কোনো এক কাজে । জান্নাতের বন্ধুরা ছিলো । তারা রিকোয়েস্ট করেছিলো আনহার গান শুনতে তাই আনহা গান গেয়েছিল । সেই সময়ই নাহিদ এসেছিলো ।
পরে সে জানালা দিয়ে জান্নাত কে দেখতে পায় আর ভাবে এটাই হয়তো তার এলোকেশী ।
.
.
দিন যেতে থাকে আর নাহিদ জান্নাতের সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলে । জান্নাত মেয়েটা ওতোটা ভালো না । কিছুটা পাগল টাইপ । সাইকো ও বলা যায় । কিন্তু অন্য সময় ভালো থাকে ।
.
পরের দিন….
কলেজে
আমি আর শাম্মি বসে আছি । এমন সময় জাহিদ আসলো ।
আমি : কি রে রোমিও লেট কেন জানিস না তোর জুলিয়েট অপেক্ষা করছে
জাহিদ : না রে ঢংগি জানতাম না
আমি : দোস্ত একটা কাম কইরা দে না
জাহিদ : পারুম না
আমি : শাম্মি তোর বফ রে বল কইরা দিতে
জাহিদ : আইছে মেডাম নিজে কর
আমি : কিটক্যাট আইনা দে না শেষ হইয়া গেছে
জাহিদ : পারুম না
আমি : শাম্মি দেখ
শাম্মি : ওই আনহা যা বলছে করো নইলে ব্রেক আপ
আমি : হিহি থেংকু দোস্ত
জাহিদ : দুই বান্ধবী আম্রে শেষ কইরা দিবে আল্লাহ তুইলা নাও
আমি : আগে কিটক্যাট আইনা দে ।
.
.
জাহিদ কিটক্যাট আনতে গেল । এমন সময় নাহিদ আসলো জাহিদ কে কি জানি দিতে । আমি সেই টাইমে নাহিদ কে দেখলাম আর জাহিদ ভেবে টানতে টানতে শাম্মির কাছে নিয়ে আসলাম ।
.
আমি : হারামি আমার কিটক্যাট কই?
নাহিদ : মানে ?
শাম্মি : ওই তুমি না ওর কিটক্যাট আনতে গেলা কই কিটক্যাট ?
আমি : দ্বারা দেখাচ্ছি মজা ।
.
কিল ঘুসি মারতে লাগলাম নাহিদের গায়ে । আমি ভেবেছিলাম ওটা জাহিদ ।
এমন সময় জাহিদ আসলো আর বললো : কি রে কাকে মারিস ?
আমি : জাহিদ রে
জাহিদ : আমি তো এখানে
আমি : মানে ?
.
তাকায় দেখি ওটা জাহিদ
আমি ভুউউউউউউউত বইলা অজ্ঞান ।
.
জাহিদ : ওই নাহিদ তুই এখানে কেন ?
নাহিদ : তোকে এটা দিতে আসছিলাম আর এই মেয়ে আমাকে মারতে লাগলো ।
শাম্মি : এটা কে ?
জাহিদ : আমার যমজ ভাই নাহিদ তোমার ভাসুর হবে সালাম দাও
শাম্মি : আসসালামুয়ালাইকুম ভাইয়া
নাহিদ : ওয়ালাইকুমআসসালাম
.
কিন্তু এই মেয়ে তো ভয়ে অজ্ঞান কি করবি ?
জাহিদ : তোর জন্য হইছে তুই দেখ
নাহিদ : ওকে উঠা
জাহিদ : আমার হাত ব্যাথা শাম্মি আসো আমি গাড়ি বের করি ।
নাহিদ : ওই ওই জাহিদ
.
হুর আমাকেই কোলে উঠাতে হবে ।
নাহিদ আমাকে কোলে তুলে নিলো ।
নাহিদ : বাহ পাতলু মেয়েরো ওজন আছে ভালোই ।
.
.
উঠাতে গিয়ে আমার চুল খুলে গেলো । নাহিদ দেখলো লম্বা চুল মেয়েটার একদম আমার এলোকেশির মতো । কিন্তু ও কেনো জানি চুল কেটে ফেলছে ।‌ ওকে বলবো চুল আর জেনো না কাটে । কিন্তু মেয়েটা বড্ড মায়াবি ।
.
এসব ভাবতে ভাবতে গাড়িতে নিলো আমাকে ।
বাড়িতে আনলো । তারপর আমার মুখে পানির ছিটা দিলো ।
আমার জ্ঞান ফিরলো ।
আমি : আমার কি হইছে ।
.
মনে পড়লো সব পাশে তাকায় দেখি জাহিদ আর নাহিদ । ভয়ে চিল্লায় উঠলাম ।
আমি : আম্মু ভুত
জাহিদ : আর জ্ঞান হারাইস না । এটা ভুত না আমার যমজ ভাই ।
আমি : কি?
শাম্মি : হুম
আমি : তো আগে বলিস নাই কেনো ?
এতোদিন ধরে আমি আন্দাজি ভয় পাইতাম ।
শাম্মি : হুম
.
.
সেদিন বিকেলে…..
আমি , শাম্মি , নাহিদ আর জাহিদ গেলাম বেড়াতে ।
আমি : ওই‌ জাহিদ যা তো কিছু কিনে আন ।
জাহিদ : ওকে নাহিদ চল ।
নাহিদ : হুম চল
আমি : না শাম্মি কে নিয়ে যা
জাহিদ : ওকে
নাহিদ : কেন আমিই তো যাইতে পারবো তোমরা থাকো
আমি : না না ওই‌ তোরা যা আমার নাহিদের সাথে জরুরী কথা আছে ।
নাহিদ : ও বলো
.
জাহিদ আর শাম্মি গেলো ।
.
নাহিদ : বলো কি বলবে ?
আমি : ওই গাধা নাকি আপনি ?
নাহিদ : কেনো ?
আমি : ওরা সময় কাটাবে একটু । তাই আমি ওদের পাঠালাম‌ আর আপনি সাথে যাচ্ছিলেন ।
নাহিদ : ও সরি আমি না বুঝি নি
.
বলেই হাসে দিলো ।
আমি : কিউট হাসি, মায়াবি চোখ সেই তো ( আস্তে বললাম )
নাহিদ : কিছু বললেন
আমি : না ও কিছু না ।
নাহিদ : হেহে তা কি করতে ভালোবাসেন
আমি : কিটক্যাট খাইতে , গান গাইতে আর বকবক করতে আপনি ?
নাহিদ : গান গাইতে একটু ।
আমি : তাহলে তো শুনাতেই হবে ।
নাহিদ : ওকে পরে
আমি : না না এখন নইলে কিন্তু কথা কমু না
নাহিদ : ওকে‌
.
“আমি তোমাকে আরও কাছে থেকে
তুমি আমাকে আরও কাছে থেকে ।
যদি জানতে চাও তবে ভালোবাসা দাও
ভালোবাসা নাও । ভালোবাসা দাও
ভালোবাসা নাও । “
.
আমি : বাহ সেই তো
নাহিদ : আপনাকেও গান গাইতে হবে তাহলে ।
.
এমন সময় জান্নাত এলো ।
জান্নাত : আরে নাহিদ তুমি
আর আনহা তুমিও আছো দেখছি ।
আমি : হুম তুমি একে চিনো ?
জান্নাত : হুম
.
নাহিদ , আমি আর জান্নাত অনেক সময় ধরে গল্প করলাম ।
.
জান্নাত আসলে নাহিদ কে পছন্দ করে । নাহিদও তাই চায় কারণ নাহিদ জানে তার এলোকেশি জান্নাত ।
.
দিন যেতে লাগলো আমি আর নাহিদ ভালো বন্ধু হলাম ।
আমি ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়লাম । কিন্তু নাহিদের অজানা সে তো জানে তার ভালোবাসার মানুষটি জান্নাত ।
আমার ডায়রির পাতা ভরতে থাকলো নাহিদের নামে ।
.
একদিন আমার ব্যাগ নাহিদ কে ধরতে দিছিলাম ফুল ছিঁড়ার সময় ।
এমন সময় নাহিদের হাত থেকে ব্যাগ টা পড়ে গেলো আর ডায়রি টা বেড়িয়ে এলো ।
.
নাহিদ কিছু পৃষ্ঠা পড়ে ফেললো ।
.
আমি ফুল পাড়িয়ে যেয়ে দেখি ও আমার ডায়রির পাতা পড়ছে ।
.
আমি জ্বলদি টেনে নিলাম ।
নাহিদ : আনহা তুমি যা চাও তা কোনোদিন হবে না ।
আমি : না মানে
নাহিদ : আমি জান্নাত কে ভালোবাসি
আমি অনেক পরিমাণ কষ্ট পেলাম কিন্তু কিছু বললাম না
শুধুই বললাম : ওহ
বলেই চলে আসতেছিলাম কিন্তু উষ্টা খেয়ে পড়ে যেতে লাগলাম আর নাহিদ ধরে ফেললো কিন্তু পমি তারাতারি চলে গেলাম ।
.
সেই‌ সময় জান্নাতও এটা দেখে ফেললো । আগেই বলেছিলাম তার মাঝে কিছু সাইকো টাইপ ভাব আছে । সে নাহিদকে একদম হারাতে চাইলো না । সে প্লান করলো যেন নাহিদ আমাকে একদম ঘৃণা করুক ।
.
.
পরের দিন জান্নাত কি একটা কারণে‌ আমাকে তার বাড়ি যেতে বললো । তার রুমে ধুকেই দেখি রুম অন্ধকার ।
আমি : জান্নাত কই তুমি
জান্নাত চাকু নিয়ে : তুমি আমার নাহিদ থেকে দূরে চলে যাও
আমি : আমি তো ওর কাছে যাই নি আপু
জান্নাত : মিথ্যা বলছো আমি দেখছি কাল তুমি ওর কাছে যাচ্ছিলা ।
আমি : ভুল ভাবছো তুমি ।
জান্নাত : না ভুল না
.
তোমাকে আমি থাকতে দিবো না । না না না ।
আমার দিকে এগুতেই আমি চাকুটা কেড়ে নিলাম কিন্তু এমন সময় নাহিদ এসে আমাকে চর মারলো ।
.
.
নাহিদ : নির্লজ্জ , সাইকো মেয়ে । তুমি এতো বাজে । কেনো মারতে আসছো ওকে কি করছে ও । আমি কোনোদিন তোমাকে ক্ষমা করবো না ।
.
জান্নাতের যে এটা প্লান ছিলো আমি বুঝলামও না ।
.
আমি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে এলাম । আমার জীবনের কোনো বিষয়ই শাম্মির কাছে লুকাই নি ।
সাথে সাথে কাঁদতে কাঁদতে শাম্মি কে ফোন দিলাম ।
.
শাম্মিকে সবটুকু জানালাম ।
শাম্মি : একটু দ্বারা আমি আসতেছি জাহিদকে নিয়ে এখনি তুই কাঁদিস না
আমি : জ্বলদি আয় দোস্ত খুব কষ্ট হচ্ছে ।
.
জান্নাত এতেও থেমে থাকে নি । আমি বাড়ি ফিরার কিছু সময় পর নাহিদ আমার মা কে বলে আমি নাকি পাগল ইত্যাদি । জান্নাত সায় দেয় এতে ।
.
জান্নাত যে একটু সাইকো ধরনের আমরা সবাই জানতাম এমনকি জান্নাতের পরিবারও । কিন্তু এমন পরিস্থিতি ছিলো আম্মুও আমাকে ভুল বুঝলো । সেখানে আব্বুও ছিল ।
.
.
সেদিন আব্বু আম্মু লজ্জিত বোধ করেছিলো কিছুটা ।
পরে তারা আমাকে খুব বকলো ।
শেষে মা বললো : কেনো যে তোকে জন্ম দিলাম ?
মরে গেলেই ভালো হতো ।
.
আমি সামান্য জেদ নিয়ে চলি । তাই তারাতারি রুমে গিয়ে রুম বন্ধ করে নিলাম ।
.
ওদিকে জান্নাত : তুমি আমাকে কখনো ছেড়ে যেও না
নাহিদ : যাবো না
জান্নাত : চলো না আমরা বিয়ে করে ফেলি তাহলে কেউ আর আমাদের আটকাতে পারবে না । নাহলে ওই আনহা আমাকে মেরেই ফেলবে
নাহিদ : আচ্ছা চলো
.
নাহিদ জান্নাতকে ভরসা করে ফেলছিলো ।
.
এমন সময় শাম্মি আর জাহিদ আসলো ।
নাহিদ : তোমরা আসছো । জানো কি ওই আনহা কতোটা বাজে ।
শাম্মি : দাড়ান ওর ব্যাপারে কিছু বলার কোনো অধিকার নাই আপনার
নাহিদ : মানে
জাহিদ : তুই যা দেখছিস কীভাবে বুঝলি যে ওটাই সত্য
নাহিদ : তুই জান্নাত কে জিজ্ঞেস কর
.
জান্নাত কিছুটা ভয়ে : হ্যা হ্যা আনহা আমাকে মারতে চাইছে ।
শাম্মি : কেনো মারতে চাইছে ?
জান্নাত : কারণ নাহিদ আর আমি একে অপরকে ভালোবাসি
শাম্মি : তাই
জান্নাত : হুম
শাম্মি : আচ্ছা জান্নাত তোমার কি জানি একটা রোগ‌ আছে না ?
জান্নাত : না মানে
শাম্মি : অনেক হয়েছে আর মিথ্যে না নাহিদ ভাইয়া শুনুন আনহা কিছুই করে নি । আপনি যা দেখছেন তাই বিশ্বাস করছেন । দ্বারান এক মিনিট
.
শাম্মি জান্নাতের মা কে ফোন করে জানালো ।
জান্নাতের মা ভালো করেই জানে জান্নাতের সব সমস্যা ।
.
সে নাহিদ কে সরি বললো আর জান্নাতের সমস্যা সম্পর্কে জানালো ।
সব শেষে জান্নাতও স্বীকার করে নিলো ।
.
নাহিদ : ছি তোমাকে কতো ভালোবাসলাম আর তুমি এতোটা মিথ্যুক ।
.
শাম্মি : জাহিদ চলো আনহার কাছে ও অনেক ইমোশোনাল । কিছু করেও ফেলতে পারে ।
.
ওরা তিনজন আমার বাড়িতে এলো ।
নাহিদ আমার আম্মু ও‌ আব্বুর কাছে ক্ষমা চাইলো ।
.
তারাও ক্ষমা করে দিলো ।
.
সবাই আমাকে ডাকতে লাগলো কিন্তু আমি সেই সময়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছি ।
.
সব সময়ের আমার আপন ছিল ফুপি তাই ফুপিকে ফোন করে সব বললাম । ফুপিও তার কাছে ডাকলো ।
রুমে একটা চিঠি ছাড়ছিলাম,
“আচ্ছা যা দেখা যায় তাই কেনো বিশ্বাস করে সবাই । আমি তো কিছুই করি নি । তবুও সবার চোখে খারাপ হলাম । আমাকে খুঁজবে না কেউ চলে গেলাম ।‌”
.
চিঠিটি পড়ে সবাই কাঁদতে লাগলো । কিন্তু সেই সময় ফুপি জানালো আম্মু আব্বু কে সব ।
তারা একটু স্বস্তি ফিরে পেলো ।
.
সবাই নিজের বাড়ি চলে গেলো । কারণ শাম্মি জানে আমি ফিরে‌ আসবো ।
.
নাহিদ নিজেকে অনুতপ্ত ভাবা শুরু করলো ।
.
চলবে……

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_৩

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_৩
Written by Avantika Anha
রাতে…….
আমি শাম্মি কে ফোন দিলাম ।
শাম্মি : বল
আমি : জাহিদ সেই গান করে তাই না । আমার সেই ভাল্লাগছে
শাম্মি : হুম কিন্তু
আমি : কি?
শাম্মি : কিছুনা ( আসলে শাম্মি জাহিদ কে পছন্দ করে )
আমি : কিছু লুকাচ্ছিস ?
শাম্মি : না কি লুকাবো
আমি : জাহিদ কে পছন্দ করিস তাই না ( আসলে আমি আগেই বুঝছি )
শাম্মি : না এমন কিছু না
আমি : আমার কাছে লুকাবা সোনা আমি তোকে সবচেয়ে বেশি চিনি ।
শাম্মি : হুম পছন্দ করি
আমি : আমি তো জানি ( হাসে হাসে )
শাম্মি : কেমনে
আমি : আমি তোকে বুঝি বুঝলি
শাম্মি : হুম দোস্ত এখন পটায় দে না
আমি : ভরসা রাখ
শাম্মি : ওকে
আমি : বেব্বি
শাম্মি : বল
আমি : আইসক্রিম খামু খাওয়া না
শাম্মি : ওকে
আমি : দুলাভাইরে ডাকতাছি দ্বারা
.
আমি ফোন টা রেখে জাহিদ রে ফোন দিলাম
আমি : ওই জাহিদ্দা
জাহিদ : কি রে কিটক্যাট ( আমি বেশি কিটক্যাট খাই । তাই অনেকে আমাকে কিটক্যাট বলে ডাকে )
আমি : চল আইসক্রিম খামু
জাহিদ : খাওয়াবি ?
আমি : শাম্মি খাওয়াবে
জাহিদ : শাম্মি আসতেছে ?
আমি : হ
জাহিদ : আইতাছি
.
.
দোকানে……
আমি : জাহিদ কি শুনতাছি এইসব
জাহিদ : কিই ?
আমি : তুই শাম্মি কে নাকি ভালোবাসিস ( একটু সিরিয়াস ভাবে )
জাহিদ : কি বলিস ( কিছুটা ভয় পেয়ে কারণ ও সত্যিই শাম্মি কে পছন্দ করে
শাম্মি : ওই আনহু থাম
আমি : না আমাকে বলতে দে
জাহিদ : না মানে
আমি : না মানে কি বাসলে বল
জাহিদ : ম-ম-মানে আ-আ-আ-আসলে হুম
আমি : আমি তো জানি হিহি
জাহিদ : মজা করছিলি ?
আমি : হ কজ আমি দেখছি তুই আড় চোখে শাম্মির দিকে তাকায় থাকিস আর শাম্মিও তোর দিকে তাকায় থাকে। তাই আজ অন্ধকারে ঢিল মারলাম আর লাগে গেলো । এখন ট্রিট দে তোরা
.
শাম্মি আর জাহিদ একসাথে আমার মাথায় মারলো আর বললো হারামিইইইইই ।
.
আমি : মারিস কেন ?
শাম্মি : এমন করলি কেন ?
আমি : এটা না করলে কোনোদিন কেউ কাউকে বলতে পারতি ?
জাহিদ : ও ঠিকই করছে
শাম্মি : হুম
.
ওরা দুজন একে অপরের দিকে তাকায় আছে ।
আমি : হ্যালো লাভ বার্ডস আমিও আছি । হুর আমি পালাই তোরা থাক ।
.
তারা : হুম ( না বুঝেই )
আমি : হায় কপাল আর থাকুম ই না
.
আমি দোকানদার আঙ্কেল এর কাছ থেইকা দুই বক্স আইসক্রিম আর‌ একটা কোন আইসক্রিম নিলাম আর বললাম বিল ওরা পে করবে ।
.
বলেই পালাইছি হিহি । পরে আমার কপালে মার আছে । তার আগে আইসক্রিম ।
.
আলসক্রিম খেতে খেতে যাচ্ছিলাম ।
এমন সময় জাহিদের ভুত কে আবার দেখলাম আর ভয়ে : তুই এখানে কেমনে
(আসলে ওটা নাহিদ ছিল । একটা কাজে বের হইছিল)
নাহিদ : হায় রে এই মেয়ে আবার ( আস্তে বললো )
আমি : ভুউউউউউউউউউউউত
নাহিদ : মানে
আমি : ভুত আমি আপনার কি ক্ষতি করছি ?
বারবার আমাকে দেখা দেন কিনু । ছোট মানুষ ভয় পাই না বুঝি । আপনাকে একটা কিটক্যাট দিমু তবুও আর আইসেন না আমার সামনে ।
নাহিদ : এ্যা ( এই মেয়ে আমাকে ভুত বলে কেন ? হায় কপাল )
আমি : এই নেন কিটক্যাট আর আমি ভাগলাম
.
দিছি দৌড় ।
.
তারপরে বাড়িতে…..
আম্মু : কই গেছিলি ?
আমি : আইসক্রিম কিনতে
আম্মু : ওহ
আমি : প্রেয়সি কই
আম্মু : রুমে
আমি : ওই বক্স টা রাখো আমি আর প্রেয়সি এই বক্স টা খামু
আম্মু : বেশি খাইস না রাতে ঠান্ডা লাগবে
আমি : কিচ্ছু হইবো না
.
আইসক্রিম খাওয়া শেষে ছাদে গেলাম ।
গিটার হাতে ।
গান গাচ্ছিলাম । এমন সময় নাহিদ আমার বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিল । আবার শুনতে পায় এলোকেশির গাওয়া গান ।
স্তব্ধ হয়ে যায় সে । চুপ করে শুনতে থাকে । হঠাৎ গান বন্ধ হয়ে যায় ।
.
.
আসলে আম্মু ডেকেছিল সেই সময়। তাই আমি চলে যাই । কিন্তু নাহিদের হুস ফেরে গান থামতেই । সে খুঁজতে থাকে কিন্তু কারো চিহ্ন পায় না । কারণ আমি তো চলে এসেছিলাম ।
.
নাহিদ নিজেকে বলে : হুর বোকা আগে কে গাচ্ছে দেখতি তারপর ওর গানে ডুব দিতি । গাধা । কিন্তু একটা জিনিস সিওর ও আশেপাশেই থাকে ।
.
নাহিদ চলে যায় ।
.
.
এদিকে নাহিদের বাড়িতে…..
জাহিদ : ভাই তোর ভাবি পাইছি
নাহিদ : ওয়াও খুব ভালো তো
জাহিদ : হ থেংকস টু কিটক্যাট থুক্কু আনহা ।
নাহিদ : ওই গুন্ডি মেয়েটা বাপরে
জাহিদ : কি বলিস
নাহিদ : হ আর বলিস না ( বললো কি কি হইছে )
জাহিদ : হাহা সেই তো ।
মজার কাহিনী জানিস । শাম্মি আর আমার ভালোবাসাও ধাক্কার মাধ্যমে শুরু । তোরও ভাগ্যে মনে হয় আনহা । শাম্মির বেস্টু
নাহিদ : আরে না । আমি আরেকজন কে ভালোবাসি ।
জাহিদ : ওমা কেমনে আমার ভাইও আবার প্রেম করে ।
নাহিদ : হুম এলোকেশি সে । তার গাওয়া গান মুগ্ধ করে
জাহিদ : আনহাও সুন্দর যদিও ওরে চুল ছাড়া অবস্থায় দেখি নি তাই বলতে পারছি না ওর চুল কেমন । কিন্তু ও সেই গান গায় । শুনবি দ্বারা ।
নাহিদ : আচ্ছা শুনা
.
জাহিদ গান অন করবে । এমন সময় তাদের মা ডাক দিলো ।
.
গান টা শোনা হলো না । সেই সাথে নাহিদও জানতে পারলো না যে যেই এলোকেশির স্বপ্নে সে মশগুল সে আর কেউ নয় আনহা ।
.
পরেরদিন….
প্রচন্দ বৃষ্টি হচ্ছিল । জাহিদ বের হয়েছিল কি জানি করতে । এমন সময় দেখলো একটি মেয়ে ছাতার আড়ালে কিন্তু চেহারা পুরোটা দেখলো না । মেয়েটি তার ছাতাটি এক বৃদ্ধা কে দিয়ে দিলো । মেয়েটা অপর প্রান্তে ঘুরে ছিলো । তাই দেখতে পেল না ।
.
কিছু সময় পর দেখলো মেয়েটি আনহা ।
ভাবলো…. ফাজিল মেয়েটা ওতোটাও খারাপ না ।
নাহিদ চলে গেলো । মনের মাঝে নিয়ে গেলো ওই এলোকেশির স্মৃতি ।
.
এরপর থেকে নাহিদ এলোকেশি কে খুঁজতে লাগলো । খোঁজ নিল কিন্তু ওই জায়গায় ২ টা মেয়ে থাকতো প্রায় সমবয়সী । নাহিদ বুঝলো তার এলোকেশি ওই দুটো মেয়ের মাঝে একজন কিন্তু কে ?
পরে জানলো ওই দুটো মেয়ের একজন আনহা আরেকজন জান্নাত নামের এক মেয়ে ।
.
কিন্তু এলোকেশি কে এটাই ছিলো নাহিদের কাছে প্রশ্ন ।
.
.
.
কিন্তু নাহিদের কাছে ওতো সময় ছিল না । তার ভার্সিটি শুরু হওয়ার সময় কাছে আসলো । তাই তাকে ঢাকা ফিরে যেতে হলো । কিন্তু সে মনে গেঁথে নিয়ে গেলো এলোকেশির স্বপ্ন ।
.
চলবে………

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_২

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_২
Written by Avantika Anha
নাহিদ আনহার দিকে তাকিয়ে আছে । কেন যে সে নিজেও জানে না । কেন জানি মায়ার জালে সে তাকিয়ে আছে ।
.
হঠাৎ কে জানি ধাক্কা দিলো নাহিদ কে ।
নাহিদ : ও জাহিদ তুই
জাহিদ : কি দেখিস ভাবি পছন্দ হলো নাকি
নাহিদ : হুম
জাহিদ : কিইইইইই ?
নাহিদ : না কি বলিস আমি কেনো পছন্দ করবো চল চল ওদিক যাই
জাহিদ : (ভাবছে ডাল মে কুচ কালা হ্যা )
আচ্ছা চল ।
.
ঘুরা শেষে রাতে…..
নাহিদ চোখ বন্ধ করে মেয়ে টার কথা ভাবছে ” কি মায়া আছে তার মাঝে বারবার কেন ভাবছি তার কথা । তবে কি আমি ওর মায়ায় জড়াচ্ছি । নাহ এটা কেন হবে ? না এটা হতে পারে না (কেন হতে পারে না পরে জানবেন )
.
তারপরের দিন
খাবার টেবিলে……
জাহিদ : তুই আজ আমার কলেজে চল বন্ধুদের সাথে পরিচয় করাবো তোর ।
নাহিদ : আচ্ছা
.
.
কলেজে……
আমি আর শাম্মি আজও গল্প করতে করতে আসতেছিলো
এখন সাবধানেই চলি আমি । হিহি বারবার ভাঙ্গুম নাকি মানুষের জিনিস ।
.
শাম্মি : তুই দ্বারা আমি একটু রিয়ার সাথে কথা বলে আসতেছি ।
.
আমি : যা
.
শাম্মি গেলো আর আমি ওর অপেক্ষা করছিলাম । সামনে দেখলাম ফুলের গাছে ফুল ফুটছে একটু উপরে কিন্তু ভালো লাগছে । খুব নিতে ইচ্ছে করছিল ।
ভাবলাম পারবো ছিঁড়তে ।‌ যেই ভাবা সেই কাজ । ভাগ্যিস সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যাস্ত আর এদিকে ওতো আসে না ।
.
.
নাহিদ দেখলো একটা মেয়ে ফুল ছিঁড়ার চেষ্টা করছে ।
নাহিদ ওদিকে গিয়ে…
নাহিদ : এই যে মিস কি করেন
.
(আমি হঠাৎ ডাক সামলাতে না পেয়ে পড়ে গেলাম । পড়লাম তো পড়লাম কার উপর জানি পড়লাম । কারো উপর পড়ছি তো পড়ছি দেখলাম কি জানি ভাঙ্গে ফেলছি )
আমি দেখলাম ওই যে ভুত ছেলেটা ।
আমি : আপনি
নাহিদ : ( হায় আল্লাহ আবার চশমা ভাঙ্গে ফেলছে এই মেয়ে )
জ্বী
আমি : আবার সরি এইবার আমার দোষ নাই আপনার দোষ । আপনি ডাক দিলেন কেনো দেখলেন তো পড়ে গেলাম । আপনারো ক্ষতি হলো আমারো । ফুলটাও পেলাম না দুরর থাকেন আপনি আমি হাত ধুয়ে নিবো বাই
.
আমি চলে যাওয়ার পর….
.
নাহিদ : বাহ রে আমি কি করলাম খালি তো জিজ্ঞেস করতে গেছিলাম । থাক যাই হোক চশমা আবার ভাঙ্গে গেছে ভাগ্যিস চোখে বেশি প্রব্লেম নাই । নইলে চশমা ছাড়া দেখতেই পাইতাম না হাহা ।
.
আমি হাত ধুতে যাচ্ছি দেখি শাম্মি , রিয়া আর একটা ছেলে ।
আমি ওদিক গিয়ে দেখি ওই ছেলে ।
আমি শকড : আপনি না ওখানে ছিলেন এখানে কেমনে ?
জাহিদ : কি বলেন আমি তো এখানেই আছি
আমি : কেমনে সম্ভব ?
শাম্মি : হুম রে ও তো এখানেই আছে গল্প করছে আমাদের সাথে
আমি : কিন্তু
শাম্মি : কিন্তু তিন্তু না নে পরিচিতো হ ইনি আমাদের ১ বছর সিনিয়র কিন্তু রিয়ার ফ্রেন্ড সেই অনুপাতে আমাদেরও ফ্রেন্ড
আমি : ওকে
.
আমাদের মধ্যে ফ্রেন্ডশিপ হলো। অনেক গল্পও করলাম । কিন্তু আমি একটা জিনিস নিয়ে ভাবছি । জাহিদ যদি‌ ওখানেই ছিলো তাইলে কি ওইটা ওর ভুত ছিল ।
আল্লাহ গো কি হইতাছে আমার সাথে ।
.
অপরদিকে নাহিদ ভাবছে এলোকেশির কথা , ” নাহিদ কিছুদিন আগে মাঠে এক মেয়েকে দেখে ভিড়ের মাঝে সে শুধুই মেয়েটার চুল দেখতে পেয়েছিলো । সেই সাথে মেয়েটার কাজল কালো চোখ শাড়ি পড়া ছিল মেয়েটা । মুখ না দেখার কারণ মেয়েটা আড়ালে ছিলো আর গান গাচ্ছিলো । ভয়েসও শুনেছিলো নাহিদ কিন্তু খুঁজে পায় নি পড়ে । তারপর থেকে নাহিদের ভাবনায় সেই এলোকেশির স্বপ্ন ।
.
পরেরদিন….
ছুটির দিন হওয়ায় গিটার হাতে নিয়ে মাঠে যাচ্ছিলাম সকাল ৫:৩০ এ । এই সময় মানুষ কম থাকে তাই মাঠে গিয়ে গান করি আমি । আজ সবাই আসবে শাম্মি আর অন্যান্য বন্ধুরা ।
.
.
সবাই আসার পর…
সবাই গান করছিলো সাথে আমিও এমন সময় জাহিদ বললো তোমরা থাকো আমার একটা কাজ আছে ।
.
.
আমরা বললাম ওকে
কিছুক্ষণ পর নাহিদ গেলো । ও রোজ ই যায় সেখানে সকালে হাঁটার অভ্যাস ।
আমি দেখলাম নাহিদ কে । কিন্তু আমি তাকে জাহিদ ই ভাবলাম । কারণ আমি তো জানি না যে জাহিদের যমজ ভাই আছে ।
.
আমি : কি রে কাজ হলো
নাহিদ : আমাকে বলছেন ?
আমি : এখানে কি ভুত আছে ?
অবশ্য হতেও পারে মাঝে মাঝে তো আমি তোর ভুত কে দেখি হিহি
নাহিদ : কি বলছেন?
আমি : চল এবার তোর গান করার পালা
নাহিদ : মানে
আমি : ওই তোরা দেখ জাহিদ গান করতে চায় না
নাহিদ : ( এরা আমাকে জাহিদ ভাবছে কিন্তু আমি তো নাহিদ । এদের বলতে হবে)
শুনুন
আমরা কেউ শুনলাম না ।
.
বাধ্য হয়েই নাহিদ গান করলো কিন্তু ও সেই গানটাই গাইলো যা এলোকেশির মুখে শুনেছিলো ।
.
“তুমি আমার ঘুম তবু তোমায় নিয়ে ভাবতে পারি না ।
তুমি আমার সুখ তবু তোমাত নিয়ে ঘর বাঁধি না”
.
.
আমি : বাহ তুই আমার প্রিয় গানটা গাইছিস থেংক ইউ
নাহিদ : ওয়েলকাম কিন্তু
আমি : কোনো কিন্তু না আচ্ছা চল সবাই বাড়ি যাই আমি যাবো এখন ।
.
সবাই চলে গেলো । কেউ শুনলো না নাহিদ যে বলতে চাইলো যে সে জাহিদ না ।
.
চলবে……..

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_১

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_১
Written by Avantika Anha
.
আমি আনহা আর আমার বেস্টুর নাম শাম্মি । আজ আমাদের দুজনের ই কলেজ লাইফের প্রথম দিন । আমার ব্যাখ্যা দিতে গেলে শেষ হইবো না আমি হলাম ফাজিলের নাতনি । এতো ফাজলামি করি যে শেষ ই হয় না আর শাম্মি শান্ত আবার ফাজিলও । শাম্মি আর আমার পছন্দ প্রায় একই । মাঝে মাঝে বলি দুজনই একই রকম পোলা কে বিয়া করুম । কিন্তু তা তো হয় না । যাই হোক এখনো আসছে না কেন । ওই মাইয়া নির্ঘাত ঘুম থেকে লেট উঠছে । আজ অব্দি যতোবার বলছি আসতে আমার বাড়ি ওয় লেট ই হইছে ।
.
.
আসলো মহারানি……
.
.
আমি : কি আজও দেরি জানু তোমার ( আমরা একে অপরকে জানুই বলি )
শাম্মি : ইয়ে মানে আর কি
আমি : নিশ্চই ঘুমাচ্ছিলি
শাম্মি : কেমনে বুঝলি ?
আমি : তোরে আমি চিনি
শাম্মি : হিহি চল
আমি : হারামি চল
.
.
রিকশায়….
.

আমি : জানু
শাম্মি : কও
আমি : আমার না পছন্দের তালিকায় আরেকটা জিনিস আসছে
শাম্মি : কি আইছে
আমি : চশমাওয়ালা ছেলে
শাম্মি : ওটা আমারো পছন্দ
আমি : হিহি আমি তো জানতাম তোমার আর আমার পছন্দ এক
শাম্মি : হ
.
.
এতক্ষণে তো শুনলেন আমাদের কথা । শাম্মি শান্ত আর আমি চঞ্চল । হিহি আমরা পুরোই বিপরীত ।
.
কলেজে…..
.
.
আমি তো ফাজলামি করতে করতে আর গল্প করতে করতে শাম্মির সাথে যাচ্ছিলাম ।
এমন সময় আমার হাত লেগে কার জানি কি পড়ে গেল এবং তা আবার আমার পায়ের নিচে পড়ে ভেঙ্গেও গেল ।
.
.
আমি ভয়ে পাশে তাকালাম এক ছেলের চশমা ভেঙ্গে ফেলছি ।
আমি : ইইইই সরিইইইইইইই সরিইইইইই আমি ইচ্ছে করে ভাঙ্গি নি সরিইইই সরিইইইই (কান ধরে সরি বলছিলাম )
ছেলেটি : ইটস ওকে ( ছেলেটার নাম হলো নাহিদ । শান্ত স্বভাবের একজন ছেলে । কিন্তু সিরিয়াসও বটে । আবার একটু রাগি বাট সবসময় না । )
আমি : প্লিজ প্লিজ সরি
ছেলে : বাদ দেন ব্যাপার না ভুল হতেই পারে
সামান্য হাসি দিয়ে ( হাসির‌ কারণ মেয়েটা কান ধরছে ঠিক বাচ্চাদের মতো ব্যবহার এটা দেখে নাহিদ না হেসে পারলো না )
আমি : সিওর‌ তো‌
নাহিদ : হুম
.
সামনে থেকে শাম্মি এসে বললো : কি রে কি হইছে
আমি : ওই যে হাত লেগে এক ছেলের চশমা ভাঙ্গে গেছে ।
শাম্মি : দেখে চলিস না কেন
আমি : ভুল হয়ে গেছে তো সরি বললাম তো
শাম্মি : কে ওই‌ ছেলে
.
আমি দেখিয়ে দিতে যাবো তখন দেখি ছেলেটা চলে গেছে ।‌
.
কলেজ এর ক্লাশ শেষে বাড়ি যাচ্ছিলাম ।
এমন সময় শাম্মি এক ছেলের সাথে ধাক্কা খেলো আর দুজনেই পড়ে গেল ।৤
.
.
আমি দুজন কে উঠতে সাহায্য করলাম । ছেলেটার দিকে তাকিয়ে দেখি ওই ছেলেটা কিন্তু এর চোখে চশমা আছে । কিন্তু কেমনে আমার হাত লেগে তো ভাঙ্গে গেছিল মে বি চশমা । আমি ভাবলাম মে বি এক্সট্রা ছিলো । কিন্তু আরেকটা ব্যাপার এই ছেলেটার চোখ গুলো একটু আলাদা লাগছে । সকালে বড্ড মায়াবি লাগছিল । এসব ভাবছিলাম কিন্তু পরেই ভাবলাম আমার কি ।
.
আমি : আপনি ????
ছেলেটি : মানে
আমি : সকালে যে দেখা হলো আমাদের ।
ছেলেটি : কি বলছেন আমি তো প্রথম আপনাকে দেখলাম
আমি : না আমার হাত লেগে যে আপনার
চশমা ভাঙ্গে গেল যে
ছেলেটি : কখন
আমি : এইতো সকালে
ছেলেটি : আপনার মনে হয় ভুল হচ্ছে আমার চশমা তো ঠিক আছে
আমি : আম্মু কি হচ্ছে সকালে কি ভুত ছিলো নাকি
.
কি একটা ভেবে ছেলেটা চলে গেল ।
.
আনহা ভাবলো ওর ই হয়তো ভুল । বাড়ি চলে গেলো সে‌।
.
বাড়িতে বাহিদ বসে আছে । এমন সময় কে যেন তার কাধে হাত দিলো হঠাৎ ।
.
নাহিদ চমকে উঠলো ।
ছেলেটি বললো : কখন আসছিস‌?
নাহিদ : সকালে‌
ছেলেটি : জানাস নি কেনো ?
নাহিদ : ভাবলাম সারপ্রাইজ দিবো তাই তোর কলেজও গেছিলাম কিন্তু তোকে পাই নি । বরং আমার চশমা ভাঙ্গে গেছে ।
.
চশমা ভাঙ্গার কথা শুনে ছেলেটি বললো : একটা মেয়ের হাত লেগে ভাঙ্গে গেছে নাকি‌?
নাহিদ : হুম
ছেলেটি : তার মানে তোর কথাই বলছিলো
নাহিদ : কে ?
ছেলেটি : যার হাত লেগে তোর চশমার মৃত্যু হইছে
নাহিদ : কি বললো ওই মেয়ে
ছেলেটি : বাহ খোঁজ নিচ্ছিস ব্যাপার কি
নাহিদ : হুর না কোনো ব্যাপার না
ছেলেটি : হাহা বাদ দে চল খেতে বসি
নাহিদ : হুম চল
.
ছেলেটি হলো জাহিদ আর নাহিদের পরিচয় তো দিলাম ই । এরা যমজ ভাই । ছোট থেকেই একসাথে থাকতো । কিন্তু এখন তারা আলাদা থাকে । এর মানে এই না যে তারা কোনো বিপদে দূরে থাকে । নাহিদের ব্রেইন অনেক ভালো । তাই সে ঢাকায় থাকে । বুয়েটে চান্স পেয়ে সে চলে যায় ।
জাহিদ এবার এইচএসসি দিবে ।
.
কি ভাবছেন ? এরা একই ক্লাশে কেনো না ? এসএসসি দেওয়ার আগে জাহিদ এর পা ভেঙ্গে যায় তাতে সে এক বছর পিছিয়ে পড়ে । তার ব্রেইনও ভালো ।
.
বিকালে….
জাহিদ : চল ঘুরতে যাই
নাহিদ : আচ্ছা
.
পার্কে….
জাহিদ : তুই দাড়া আমি কোক কিনে আনতেছি
নাহিদ : ওকে
.
নাহিদ হাটছিল…
হঠাৎ লক্ষ করলো এক মেয়ে পিচ্চিদের সাথে খেলছে…
নাহিদ ভাবলো এ তো সেই মেয়ে যার সাথে ধাক্কা খাইছিলাম । হাহা এর চেহারায় অদ্ভুদ মায়া আছে তাই তো ভোলা যায় না ।
.
খেলতে খেলতে নাহিদ আর আমার ধাক্কা লাগলো ।
আমি : আম্মু আবার কার কি ভেঙ্গে ফেললাম
ও না ভাগ্যিস কিছু ভাঙ্গে নি ।
আপনিইইইই ?
নাহিদ : জ্বী
আমি : আমি আপনারই চশমা ভাঙ্গে ফেলছিলাম মনে করে দেখেন ?
তখন তো চলে গিয়েছিলেন
নাহিদ : হুম আমারই ভেঙ্গে ফেলছিলে
আমি : তো কলেজ ছুটির পর অস্বীকার করলেন কেন ?
নাহিদ : কখন
আমি : কলেজ শেষে
নাহিদ : না‌
আমি : হয় আমার মাথা নষ্ট নাহয় আপনার আল্লাহ গো ।
.
এমন সময় পিচ্চি গুলো আমাকে টেনে নিয়ে গেল । কিন্তু আমি কনফিউজ হয়ে গেলাম ।
.
চলবে……..

Angry_Husband _পর্ব_৫_last_part

0

Angry_Husband
_পর্ব_৫
#last_part
Written by Avantika Anha
রাতে শুতে যাবো…..
আমি : আপনার প্রব্লেম টা কি
জিহাদ : কই নাই তো
আমি : তো এখানে কেন আপনি ভাই
জিহাদ : ওই ভাই বলবে না একদম
আমি : হুরররর
জিহাদ : হুহ
আমি : আমি নিচে ঘুমালাম । আপনি উপরে ঘুমান ।
জিহাদ : বললেই হলো
আমি : আমি তো ঘুমাবোই
জিহাদ : আচ্ছা দেখি
.
আমি ঘুমোতে যাবো এমন সময় আমাকে কোলে তুলে নিল ।
আমি : নামান আমাকে
জিহাদ : নামাবো না
আমি : উহু নামান
জিহাদ : না গো
.
বিছানায় শুইয়ে দিতে আমি উঠতে লাগলাম ।
ওমনি জিহাদ : ওই থামো
আমি : উহু
.
ও আমাকে তার বুকে জড়িয়ে শুয়ে পড়লো ।
.
.
আমার রাগ উঠতাছে যখন আমি বারবার ওর কাছে গেছি বারবার আমাকে আঘাত করছে আর এখন আসছে ।
.
পরেরদিন……
সকালে…….
আমি : ফুপি আমি বাড়ি যাবো
ফুপি : আমার কাছে লুকাস কেনো
আমি : কি ?
ফুপি : জামাই এর সাথে ঝগড়া হইছে তাই না । এসব হয় ই এতো রাগ করিস না ।
আমি : হুম ( ভাবছি জানলে আর বলতেন না )
.
বিকেলে…….
একটা পিচ্চিকে কোলে নিয়েছিলাম এক ভাবির সাথে গল্প করছিলাম ভাবির বেবি ছিল পিচ্চিটা ।
.
এমন সময় জিহাদ এলো
জিহাদ : তোমাকে খুঁজছিলাম
আমি : কি করতে
ভাবি : বাপ রে জামাই এর দেখছি আনহা কে ছাড়া চলে না
আমি : হুররর ভাবি কি বলো যে
ভাবি : ঠিক ই তো
আমি : বাদ দাও তো
ভাবি চলো তোমাদের বাড়ি যাবো । আমি নীলের ( পিচ্চির নাম নীল । আমিই শখ করে ডাকি ) সাথে খেলবো ( আমার পিচ্চি খুব পছন্দ )
.
ভাবি : আচ্ছা তুই আর বড় হলি না । বিয়ে হয়ে গেলো তবুও বাচ্চা
আমি : এ্যা কি কও
ভাবি : হাহা
আমি : আমাকে তুমি নিয়ে যেতে চাও না
ভাবি : কে বললো
আমি : আজ আমি পর হয়ে গেলাম তোমার
ভাবি : আরেহ না
আমি : হিহি জানি তো মজা করলাম একটু
ভাবি : দুররর
.
এতক্ষণ জিহাদ চুপ ছিল । এখন বলে উঠলো….
জিহাদ : আমিও যাবো
আমি : কি
জিহাদ : হুম
ভাবি : আরে চলেন চলেন
আমি : দুররর না
ভাবি : এই কি বলিস
আমি : উহু
.
জিহাদও আসলো…..
আমি পিচ্চির সাথেই খেলছিলাম । জিহাদ কে ভাবির সাথে গল্প করতে লাগায় দিছি ।
.
কিছু সময় পর
.
জিহাদ : আনহা চলো বাড়ি যাই
আমি : ইইইইইই না যাবো না
জিহাদ : চলো
আমি : না
.
এমন সময় মেসেজ এলো
ওই রাক্ষস টাই দিছে
জিহাদ : চলো নইলে এখান থেকে কোলে করে নিয়ে যাবো
.
আমি রাগি চোখে তাকালাম
.
ও হাসছিলো মুচকি মুচকি
.
আমি ভাবলাম নাহ ওর ভরসা নাই
.
বাড়ি এলাম
আমি : কি সমস্যা আপনার‌ এভাবে আনলেন কেন আমাকে ।
জিহাদ : ওখানে তোমার সাথে কথা হচ্ছিল না তাই
আমি : হুহ যখন ভালোভাবে বলতাম তখন অনেক কষ্ট দিয়েছেন ।
জিহাদ : তাই তো ঠিক করতে চাই
আমি : লাগবে না
.
রাতে……
বৃষ্টি হচ্ছিল……
আমি রুমে গিয়ে দেখি রুম টা সাজালো
আমি গিয়ে অবাক ভালোই হইছে
.
আমি : কে করলো এসব
জিহাদ : তোমার #Angry_Husband ছাড়া আর কে হবে
আমি : হুহ ভালো
জিহাদ প্রপোজ করলো
” জানি অনেক কষ্ট দিছি । কি করবো বলো আমি যে অমনি । তোমার ভালোবাসার মুল্য কখনো দেই নাই । আমি যে তখন ভাবতাম সবাই খারাপ । কিন্তু তোমার ভালোবাসা তোমার বাচ্চা টাইপ ব্যবহার সব আমাকে তোমার ভালোবাসায় পড়তে বাধ্য করেছে । আমি বাঁচবো না তোমাকে ছাড়া । প্লিজ ক্ষমা করে দাও ।
ভালোবাসি তোমাকে রে । হবে কি তুমি আমার বাবুর আম্মু । ”
আমি : হুররর বাই আমি বাইরে যাবো সরুন
জিহাদ : অনেক হইছে ওই তুই বুঝিস না ভালোবাসি তোকে । তুই আমার বুঝলি ।
আমি : এমা ধমকান কেন
জিহাদ : ওই আপনি বলিস কেন তুমি বল
আমি : আপনি তুই বলেন কেন
জিহাদ : আচ্ছা আর বলবো না
আমি : ওকে
জিহাদ : মাফ করলা ?
আমি : না
জিহাদ : কি করলে মাফ করবে
আমি : আমার সাথে বৃষ্টি ভিজলে
জিহাদ : হায় রে আবার ঠান্ডা লাগবে
আমি : লাগলে লাগুক না ভিজলে মাফ করুম না
জিহাদ : আচ্ছা
.
অতঃপর দুজনে ভিজলাম ।৤
পরেরদিন ভিজার ফল……
আমি : হাচ্চি….
জিহাদ : হাচ্চি…
আমি : হাচ্চি
.
দু জনের ই‌ঠান্ডা লেগে গেল….
.
তারপর থেকে শুরু হলো নতুন এক হাচ্চি ওয়ালা ভালোবাসার গল্প । হিহিহি
.
………………..কাল্পনিক…গল্প…………………..
( হয়তো ছোট হয়েছে আর ওতো ভালো হয় নি । সময় স্বল্পতার জন্য ছোট করলাম । পরবর্তী গল্পের জন্য সাথেই থাকবেন )

Angry_Husband _পর্ব__৪

0

Angry_Husband
_পর্ব__৪
Written by Avantika Anha
ফুচকা খাওয়া শেষে
.
আনহা : ওগো শুনছো
জিহাদ : কি ( এই মেয়ে বলে কি )
আনহা : চলো শপিং এ যাই
জিহাদ : ওকে
প্রেয়সি : দুলাভাই
জিহাদ : হুমম বলো
প্রেয়সি : তোমার সতিন আসবে আজকে শপিং এ
জিহাদ : মানে
প্রেয়সি : আপুর বন্ধু ছোটবেলার মাহফুজ ভাইয়া আসবে
জিহাদ : ওহ ভালোই ( জিহাদ ভাবছে আমার কি যে ইচ্ছে আসুক । ওকে তো আমি বউ ই মানি না )
আনহা : হাসছে আর ভাবছে আজ বুঝবা মজা কারে কয়
.
শপিং মলে………
আনহা….. বলে কে জানি ডাক দিল
আনহা : আরে মাহফুজ আসছিস
কতো দিন পর দেখা রে । বলেই হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে এলাম ।
.
আর জিহাদ তাকিয়ে দেখছে আর বলছে কি মেয়ে রে আমাকে রাখে গেলো । যাক আমার কি ও গেলেই বাঁচি ।
.
কিছু সময় পর জিহাদ ভাবছে ” কি হলো আসে না কেন এখনো ”
.
প্রেয়সি : কাকে খুঁজো দুলাভাই
জিহাদ : না তো কাউকে না
প্রেয়সি : আপু আসতে অনেক দেরি
জিহাদ : মানে
প্রেয়সি : ওরা মনে হয় গল্প‌ করছে‌
জিহাদ : করুক চলে আসবে তো
প্রেয়সি : দেরি আছে
.
জিহাদ : ব্যাপার না ( এতো টাইম কি করে মানুষ । মনে মনে )
.
জিহাদ : চলো ওদের খুঁজি
প্রেয়সি : মিস করছো আপু কে
জিহাদ : আরে না
.
জিহাদ আর প্রেয়সি মিলে আনহা আর মাহফুজ কে খুঁজতে লাগলো‌।

কিছুটা এগিয়ে ….
দেখলো ওরা গল্পই‌ করতেছে । জিহাদের রাগ উঠে গেল ।
.
জিহাদ : আর কতক্ষণ রাগী কন্ঠে
.
মাহফুজ : যা দুলাভাই রাগ করতেছে
আনহা : আরে না উনার ব্যাপার না আমি না থাকলেই উনি হ্যাপি
জিহাদ : হুহ চলো দেরি হচ্ছে
আনহা : না আমি যাবো না
জিহাদ : চলো
আনহা : হুররর ওই‌ বাড়িতে আসিছ নায়ক
মাহফুজ : ওকে নায়িকা
জিহাদ : কেন এমন নাম
মাহফুজ : ও সরি সরি বলা হয় নি । আমরা একে অপর কে এই নামেই ডাকি
জিহাদ : ওহ ( আজাইরা পরের বউ কে আউল ফাউল ডাকা । আল্লাহ আমি কি ভাবছি )
.
বাড়িতে রুমে…..
আমি : আমাকে নিয়ে আসলেন কেন
জিহাদ : থাকে লাভ নাই
আমি : এ্যা কি কন
জিহাদ : এতো কথা বলতে হবে না
আমি : আপনার কি
জিহাদ : ওই চুপ
আমি : করবো না চুপ‌‌
জিহাদ : এই মেয়ে আর কোনোদিন কোনো ছেলের সাথে এতো বেশি হেসে হেসে কথা বলবি না
আমি : বলবো কি করবেন
জিহাদ : মেরে ফেলবো
আমি : আপনার হইছে কি । এমন এমন কথা বলছেন যে
জিহাদ : না কিছু না ( আসলেই তো কি বলছি এসব ভাবছে )
আমি : ( হেহে কাম হচ্ছে ) মনে মনে ভাবছি
.
ও ফ্রেশ হতে গেল….
ফ্রেশ হয়ে এসে
আমি কথা বলছিলাম মাহফুজ এর সাথে ওকে দেখায় দেখায় …..
.
.
জিহাদ রেগে যাচ্ছে
.
.
কিছু সময় পর….
জিহাদ : এখনো কথা শেষ হয় নাই
আমি : আপনি ঘুমান আমার দেরি আছে
জিহাদ : তুমিও ঘুমাবা আমার সাথে
আমি : কিইইইইই
জিহাদ : হুমমম
আমি : নাহ দেরি আছে
জিহাদ : আমি তোমার জবাব শুনতে চাই নি
আমি : আমি ঘুমাবো না এখন
.
জিহাদ আনহা কে কোলে তুলে নিল আর ওর ফোন টা কেড়ে নিলো
.
আনহা : কি করছেন আমাকে নামান
.
বিছানায় নামিয়ে ….
আমি উঠতে যাবো ওমনে ওয় আমাকে আটকে দিলো ।
ওর শ্বাস আমার মুখে এসে পড়ছিলো ।
জিহাদ আনহার মাঝে হারিয়ে যেতে লাগলো । ও কাছে আসতেই
আমি : কি করছেন
জিহাদের ঘোর কাটলো
জিহাদ : না‌ কিছু না
আমি : তাইলে সরেন
জিহাদ : নাহ ঘুমাও ভরসা নাই কখন উঠে যাবে
.
দুজনে শুয়ে দু প্রান্তে । ঘুমাইছে নাকি দেখতে একটু নরতেই
জিহাদ : জানতাম পালাবে এভাবে ছাড়া যাবে না তোমাকে ।
আনহা : কি করবেন
জিহাদ আনহা কে জড়িয়ে ধরে বললো ঘুমাও ।
.
.
আনহা মনে মনে খুশি হলেও দেখালো না জিহাদ কে ।
.
সকালে জিহাদ লক্ষ করলো আনহা ওর বুকে মাথা রেখে আছে ।
আনহার চুল গুলো সামনে আসছে ।‌ জিহাদ সরিয়ে দিলো । নিজের অজান্তেই আনহার কপালে কিস করলো ।
আমি টের পেয়ে গেলাম……
আমি : কি করলেন এটা
জিহাদ : না কিছু না সরি
আমি : এমা এটা কি করলেন
জিহাদ রেগে : যা ইচ্ছে করি আমার বউ কে করেছি
আনহা : এমা
.
জিহাদ লজ্জা পেয়ে চলে গেল ফ্রেশ হতে……
.
.
বিকালে……
মাহফুজ আসলো……
আমি : দোস্ত কাজ হচ্ছে
মাহফুজ : জানি তো হবেই আমার আইডিয়া বলে কথা ।
আমি : হ
মাহফুজ : তোর মিমি তো রাগ করছে
আমি : হাহা দে আমি বুঝাচ্ছি
.
ফোন দিয়ে আমি : জানু রাগ করছো
মিমি : নাহ জানটুস ( মিমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড । ও আর মাহফুজ বফ আর গফ )
মিমি : হুহ
আমি : রাগ ছাড়
মিমি : হিহি ছাড়ছি আগেই মজা নিচ্ছি
আমি : ওমা তাই বেবি লাভ ইউ
মিমি : সেম গো
আমি : বেবি তোর উপর আজ একটু বেশিই ভালোবাসা আসতেছে
মিমি : কেন‌ রে
আমি : কেন আবার পমি তো তোকে‌ কতো ভালোবাসি )
মিমি : হ দোস্ত ( আমরা একে অপরের সাথে এমনেই মজা করি )
.
জিহাদ ছাদের কোণায় দাড়িয়ে লুকিয়ে শুনছিল । ও দেখতে পায় নি আনহা ফোনে কথা বলছে ।
.
রেগে গিয়ে…
জিহাদ আনহা কে চড় মারে
জিহাদ : তুই এরকম জানতাম না এতক্ষণ সব কথা শুনলাম তোর আর তোর আশিকের প্রেম আলাপ
আনহা : আমি তো
জিহাদ : চুপ
বলে আরেকটা চড় দিলো
জিহাদ : তুই তো আরও খারাপ রে ছিহ্ ঘৃণা করি তোকে
.
বলে চলে গেলো বাড়ির উদ্দেশ্যে
আনহা কাঁদছে
মাহফুজ : বললি না কেন
আমি : অনেক হয়েছে রে আর সহ্য হয় না
মাহফুজ : কিন্তু
আমি : তুই বলিস না কাউকে কিছু
.
সেদিন রাতে আমি বাড়িতে বলি যে শশুর বাড়ি যাচ্ছি । কিন্তু আমি চলে যাই ফুপির বাড়ি ।
ফুপির সাথে ছোট বেলা থেকেই ক্লোজ ।‌ আম্মু আব্বু বকলেও এখানেই আসতাম । ফুপিও তাই ভেবেছে । তাই আর কাউকে কিছু বলে নি ।‌
.
আজকাল জিহাদ আরো বেশি রাগ করে
জিহাদ দের বাসায়…
মামনি : জিহাদ
জিহাদ : কি
মামনি : আনহা কই রে
জিহাদ : ওই মেয়ের নাম নিবা না
মামনি : কেনো
.
জিহাদ সব বললো
মামনি : কি বলছিস
জিহাদ : দেখো কতো খারাপ
মামনি : ও খারাপ না
জিহাদ : মানে
মামনি : ও এরকম মেয়ে না যে এমন করবে
জিহাদ : দাড়াও ওর আশিক ই বলবে
মামনি : ডাক
.
মাহফুজ আসলো…..
মাহফুজ : কি দরকার আপনার
জিহাদ : বলুন আপনি আপনার প্রেমিকার কথা যে আমি যা শুনছি সত্যি
মাহফুজ : হাহা জানেন আপনি না অনেক আনলাকি কারণ আপনি আনহা কে হারিয়েছেন । যে আপনাকে এতোটা ভালোবাসে । আর যা কথা সেদিনের সেদিন ও মিমির সাথে কথা বলছিলো ওর‌ বেস্ট ফ্রেন্ড । ওরা একে অপর কে জানটুস বলে । হয়তো শুনছেন ওর কাছে আর মিমি আমার হবু বউ । চাইলে কথা বলুন ।
.
জিহাদ কথা বলে সব জানলো ।
মামনি : ছি তুই মেয়েটাকে এতোটা কষ্ট দিলি
জিহাদ : কিন্তু
মামনি : ও তোকে খুব ভালোবাসে
জিহাদ : আমিই বাসি
মামনি : ওকে ফিরিয়ে আন
জিহাদ : আমিও ওকে চাই । মাহফুজ ভাই ও কই প্লিজ বলেন
মাহফুজ : নাহ
জিহাদ : আর হবে না প্লিজ
.
.
মাহফুজ কে অনেক রিকোয়েস্ট করার পর রাজি হলো আর আনহার ঠিকানা বললো
.
.
বিকালে ছাদে দাড়িয়ে কাঁদছিলাম কারণ আমার #Angry_husband কে মিস করছিলাম
.
কে জানি জড়িয়ে ধরলো পিছন দিয়ে
আমি : কে
জিহাদ : একবার বললে কি হতো
আমি : আপনি সরুন প্লিজ
জিহাদ : নাহ যেতে দিবো না
আমি : সরুন
জিহাদ : নাহ
আমি : দুর হন
ওকে সরিয়ে…..
আমি : যখন ইচ্ছে যা খুশি বলবেন আপনি । যান এখান থেকে
জিহাদ : ভালোবাসো না আমাকে
আমি : নাহ বাসতাম এখন আর বাসি না
জিহাদ : তাই কি
আমি : হ্যা
জিহাদ : আমি তোমাকে কষ্ট দিছি আমি ই তোমার রাগ ভাঙ্গাবো
আমি : হুহ কোনোদিনও না
জিহাদ : আমিও তোমার বর গো রাগ ভাঙ্গাবোই
.
রাতে…..
জিহাদ : ফুপি
ফুপি : হুম বাবা
জিহাদ : আমি আর আনহা আপনাদের সাথে থাকবো কিছুদিন সমস্যা নাই তো
আমি : নাহ আপনি থাকবেন না
ফুপি : কি বলিস কেন থাকবে না
আমি : আমি বলছি তাই
ফুপি : চুপ ও থাকবে
আমি : দুররর
.
জিহাদ হাসছে । আমি তাকাতেই চোখ মারলো।

.
(আমি ভাবছি এর হইছে কি হুররর আমার কি )
.
.
চলবে…….

Angry_husband _পর্ব__৩

0

Angry_husband
_পর্ব__৩
Written by Avantika Anha
রুমে এসে জিহাদ আনহা কে নামিয়ে দিল
.
আনহা বাইরে যেতে ধরলো জিহাদ সামনে পথ আটকিয়ে
.
আমি : ইইই আমি ভিজবো সরুন
.
জিহাদ : নাহ জ্বর আসবে
আমি : না আমি যাবো
জিহাদ : ওই মেয়ে চুপ
আমি : আমি যাবো মানে যাবোই
.
জোড় করে যেতে ধরলাম রুমের ফ্লোর ও কিছুটা ভিজে পিছলা হয়ে গিয়েছিল পা পিছলে গেল কিন্তু কে যে ন ধরলো এমা জিহাদ আমাকে ধরে ও সহ পড়ে গেছে।

ও নিচে পড়ে আছে ওর ওপর আমি কি রোমান্টিক সিন কিন্তু অল্পতেই ভেঙ্গে দিলো।
জিহাদ: ঔ উঠো
আমি: হিহি
জিহাদ: হাসো কেন
আমি: এমনি
জিহাদ: ফাজিল মাইয়া
আমি: জানি
জিহাদ: জ্বর আসছিলো এখন আর ভিজতে হবে না এখনি তো পড়ে গেলে
আমি: নাহহ বৃষ্টি যতক্ষন হবে ততক্ষন ভিজবো
জিহাদ: যেতে দিব না
আমি: হু। আপনি খুব খারাপ
জিহাদ: তো
আমি: সমস্যা নেই ঠিক করে নিব।

তারপর রাতে বৃষ্টিতে ভিজার ইফেক্ট শুরু হয়ে গেল রাতের বেলা দুজনেরই হাচি শুরু হয়ে গেল পাল্লা দিচ্ছি কে কতো জোরে পারে। খাবার টেবিলে বসে
আমি: হাচ্চি
জিহাদ: হাচ্চি
মা বাবা সবাই দেখে হাসছে।
জিহাদ: হাসছো কেন
মামনি: তোদের কান্ড দেখে
জিহাদ: হাসার কি আছে ঠান্ডা তো লাগতেই পারে
মামনি: বউ এর সাথে ভিজলে ঠান্ডা তো লাগবেই
জিহাদ: আমি ইচ্ছা করে ভিজি নি
মামনি: ভিজেছিস তো
জিহাদ: দুররর তোমরা খাও আমি গেলাম
মানমি: না খেয়ে যা

চলে গেল না খেয়ে আমিও খেলাম না উঠে গেলাম। হাচ্চি
রুমে গিয়ে
আমি: না খেয়ে চলে আসলেন কেন
জিহাদ: তোমার কি তুমি খাও
আমি: আমি আপনার বউ
জিহাদ: মানি না আমি
আমি: যান খেয়ে নিন
জিহাদ: চুপ বেশি অধিকার দেখাবে না
আমি: দেখাব। কি করবেন
জিহাদ: যাও তো এখান থেকে ঘুমাবো
আমি: আমি ও না খেয়ে শুয়ে পড়লাম
জিহাদ: হাচ্চি
আমি: হাচ্চি

রাতে আমি শুয়ে শুয়ে কাদছি। আমার জন্য ওর ঠান্ডা লাগল। আর আমার জন্যই না খেয়ে ঘুমিয়ে গেল।

১ টার সময় ঘুমিয়ে গেছে সবাই কারো কান্নার আওয়াজে জিহাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। দেখে আনহা ফুপিয়ে কান্না করছে। খারাপ লাগল জিহাদের ভাবছে কেমন জানি মায়াবি এই মেয়ে টা।
জিহাদ: আনহা
আনহা: হু বলেন
জিহাদ: না খেয়ে ঘুমিয়েছো কেন
আনহা: আপনি না খেলে আমিও খাবো না।
জিহাদ: আমার সাথে তোমার তাল মিলিয়ে চলতে হবে
আনহা: হুমম আমি আপনার বউ তাই
জিহাদ: ঔষুধ খেয়েছো
আমি: না। আপনিও তো খান নি
জিহাদ: ঐ চুপ আমারর টা আমি বুঝব।
আমি: হু
জিহাদ: যাও খেয়ে নাও।
আমি: হুমম। আপনিও চলেন
জিহাদ: তুমি যাও
আমি: তাহলে আমিও খাবো না
জিহাদ: নিরুপায় হয়ে জিহাদ কে যেতেই হলো। দুজনে একসাথে ডিনার করে ঔষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। আস্তে আস্তে জিহাদ ও মায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছে। জিহাদ মনে মনে ভাবে নাহহ মায়ায় জড়ানো যাবে না মেয়েরা সব এক ।
.
পরের দিন…….
মামনি : জিহাদ
জিহাদ : হুম
মামনি : আনহা কে নিয়ে ওর বাবার বাড়ি থেকে ঘুরে আয়
জিহাদ : কিন্তু
মামনি : চুপচাপ যা
জিহাদ : আচ্ছা
.
এদিকে আমি মামনি কে ইশারায় ধন্যবাদ জানালাম
.
রওয়ানা হলাম ।
.
বাড়িতে ঢুকতেই জামাই আদর পাইলো জিহাদ ।
দুররর বুঝি না বিয়ের পর বাড়ির মেয়ের কি দাম থাকে না নাকি । কি আর করার জ্বলতেছি আমি । এদিকে কাজিন গুলো মজা নিচ্ছে ।
.
ও কিছু বলতেও পারছে না । ওর এই অবস্থা দেখে আমি না হেসে পারলাম না ।
.
রাতে……
জিহাদ : তোমার বোন রা এমন কেন দুররর ভাল্লাগে না
আমি : হিহি ভালো হইছে
জিহাদ : আমি বাড়ি যাবো
আমি : ও তাই ওয়েট আম্মু কে বলি যে উনার জামাই বাড়ি যাবে
জিহাদ : আম্মু কে ডাকো কেন উনি মন খারাপ করবে না
আমি : তুমি তো বাড়ি যাবা দাড়াও বলি আম্মুউ
যেই চিৎকার দিতে যাবো মুখে হাত দিলো আমার জিহাদ
জিহাদ : ওই মেয়ে চুপ
আমি : উউউউউ
জিহাদ হাত সরিয়ে : চুপ
আমি : ওকে বাবু
জিহাদ : কিইইইইইই
আমি : কি গো জানটুস
জিহাদ : এই‌ মেয়ে এসব কি বলো
আমি : নিজের বরকেই বলি
জিহাদ : হুররর
.
বলে চলে আসলো বাইরে
.
বাইরে….
প্রেয়সি ধরলো ওকে : দুলাভাই
জিহাদ : কি
প্রেয়সি : চলো ফুচকা খেতে যাই
জিহাদ : এখন ?
প্রেয়সি : হুমমম
জিহাদ : আচ্ছা
( প্রেয়সি আমার ছোট বোন ক্লাশ ৪ এ পড়ে আর জিহাদ বাচ্চা দের ভালোবাসে তাই রাজি হলো )
প্রেয়সি : আপু কে রেডি হতে বলি
জিহাদ : ওকে
.
ফুচকার দোকানে…..
সবাই নিজের নিজের ফুচকা খাচ্ছি
আমি : প্রেয়সি চল দেখি কে আগে খায়
প্রেয়সি : ওকে আমিই জিতবো
আমি : দেখা যাবে
প্রেয়সি আর আমি ফুচকা শেষ করলাম ।
আমার শেষ আমি জিতছি
প্রেয়সি : দুর
আমি : হিহি
.
জিহাদ ভাবছে মনে হচ্ছে দুটোই পিচ্চি
.

.

চলবে…...

Angry_husband _পর্ব__২

0

Angry_husband
_পর্ব__২
Written by Avantika Anha
জিহাদ : চুপপপপ
আমি : এটা আমি করতে পারি না হিহি । কথা বলে থাকি নাই বকবক করুম ই তাই
জিহাদ : তুই এমন কেন
আমি : এমনি বদলাবো না
জিহাদ : দুররররর
.
বলে হাত টা ছেড়ে দিল
.
আমি হাসতেছি আর ভাবছি এমনেই ওরে মানুষ করবো ।
.
বিকেলে
জিহাদ আসলো ।
আমি : কি খবর জামাই লেট কেন
জিহাদ : তোকে বলবো কেন
আমি : কজ আমি আপনার বউউউউ
জিহাদ : বউ আমি মানি না
আমি : ওয়াওওও তো আমি কি করবো । আমি তো মানি
জিহাদ : দুরররর
আমি : কিটক্যাট খাবেন
জিহাদ : মানে
আমি : এমা চকলেট খাবেন জিগাইলাম
জিহাদ : আমি কি বাচ্চা
আমি : ওহ ভালো আমি তো ভুলেই গেছি আপনি বুড়া আমিই খাই হিহি
.
জিহাদ : ( ভাবছে মায়া জড়ানো হাসি )
আমি : যাই গা আমি কিটক্যাট খাই একটু কার্টুন দেখতে দেখতে
জিহাদ : এ্যা
আমি : হ্যাঁ
.
যাই‌গা সরেন তো
জিহাদ : এই‌ মেয়ে কেমন রে আমি এতো আঘাত করি তাও‌ এতো দুষ্টু ।
.
হুহ আমার কি ?
জিহাদ দেখলো আনহা সত্যি ই কার্টুন দেখতেছে ৤আর হাসতেছে ।
.
এটা দেখে ও নিজেও হেসে ফেললো যদিও লুকিয়ে যা আনহা দেখে নি ।
.
কিছুদিন পর
জিহাদের ব্যবহারে পরিবর্তন লক্ষ্য না হলেও ও আজকাল হাসতে শিখেছে ।
.
বিকেলে দেয়ালের উপরের সেল্ফ টা গোছাতে টেবিলের উপর উঠলাম । এমন সময় জিহাদ আসলো।
.
জিহাদ : পিচ্চি মেয়ে আবার কাজ করতে উপরে উঠছে হুহ
আমি : পিচ্চি তো কি হইছে আমি পারবো ।
জিহাদ : ওরে বাবারে নিচে নেমে আয় । আমি করতেছি
আমি : আমিই করবো
জিহাদ : ওই মেয়ে আমার মুখের উপর কথা
আমি : এমা তাই তো আমি উপরে আপনার মুখের উপর
জিহাদ : হুরররর
আমি : এহে বকিয়েন না
জিহাদ : ওই নাম
আমি : আরেহ
.
আরেহ করতেই পা পিছলে গেলো আর পড়ে গেলাম
.
আম্মুউউউউউ
এমা আমার হাড্ডি ভাঙ্গে নি কেমনে ।
আমি : এমা আমাকে ধরছেন
.
জিহাদ তাকায় আছে আনহার দিকে হয়তো ওর মাঝে ডুবে গেছে
আমি : বাহ থেংকু #Angry_husband
.
জিহাদ আনহার কথা টা শুনে ওকে ছেড়ে দিল
.
আমি : মা গো ছাড়ার ই ছিলো তো ধরলেন কেন
জিহাদ : আমার কথা না শুনার মজা বুঝ
আমি : আপনাকে ছাড়বো না ওয়েট এন ওয়াচ আনহার স্টাইল
জিহাদ : হুররর
.
রাতে খাবার টেবিলে
জিহাদ : বাহ খাবার তো ভালোই রেঁধেছো মা
মামনি : আনহা রেঁধেছে
জিহাদ : ওহ
.
খাচ্ছে সবাই
জিহাদ : ( ঝাল লাগে কেন । নিশ্চই এই মেয়ে কিছু করছে )
আমি : ( হাসতেছি আর দিলাম চোখ মেরে )
.
.
আমিই মরিচের গুড়ো দিছি
৤.
.

জিহাদ : রাগী লুকে আনহার দিকে তাকিয়ে সব খেয়ে চলে গেল
আমি : (হায় কপাল কি যে হবে আমার সাথে আজ ভাবছি )
.
রুমে……..
আমি ঢুকতেই……….
আমার হাত ধরে পিছন দিকে নিয়ে গেলো
আমি : আম্মু গো হাত আবার গেছে আমার
জিহাদ : আমার সাথে মজা দেখাচ্ছি ঝাল কাকে বলে
আমি : হিহি সরি
জিহাদ : দাড়া তুইইইই
.
আমাকে রাখে গেল….
.
আমি ভাবছি , আম্মু গো কি হবে এখন পালাবো নাকি ?
.
এই ভেবে যেই পালাতে যাবো ওয় চলে আসছে হাতে গ্লাসে কি শরবত । এ্যা ওয় তো শরবত খাওয়ানোর মানুষ না ।
জিহাদ : খা এবার মরিচের শরবত
আমি : ইইইই না সরি আর করবো না আমি মরিচ খেতে পারি না বেশি প্লিজ
জিহাদ : তুই খাবি এখনি
আমি : প্লিজ না
.
জিহাদ জোড় করে আমাকে ওই শরবত খাওয়ায় দিল ।
.
খাওয়া শেষে…..
আমি শেষ ঝালে
আমি কাশতে শুরু করলাম
.
জিহাদ : বুঝ মজা
.
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না এতো পরিমাণ ঝাল লেগেছে যে
আমি লাল হয়ে গেলাম আর কাঁশতে কাঁশতে চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে আসলো । আমি জ্ঞান হারালাম ।
.
এদিকে জিহাদ : আনহা কথা বলছে না কেনো আমি কি বেশিই করে ফেললাম
.
আমার মাথা টা তার কোলে নিয়ে
.
জিহাদ : আনহা কথা বলো
ওই
.
আনহা….
সরি বেশি করে ফেলছি
.
চোখ খুলো
.
জিহাদ আর কিছু না বলে আনহা কে কোলে করে হসপিতালে নিয়ে গেলো ।
.
ডাক্তার চেক আপ এর পর
ডাক্তার : কি এমন খেয়েছে
জিহাদ : মরিচ
ডাক্তার : মানে কি এতো পরিমাণ
জিহাদ : sorry doctor it’s my mistake
ডাক্তার : মিস্টেক যার ই হোক । উনার তো মনে হয় বেশি মরিচ খাওয়া তে রিয়েকশন করছে
জিহাদ : ডক্তর যে করে হোক ওকে সুস্থ করুন
ডাক্তার : আমি ওষুধ লিখে দিচ্ছি খাওয়াইয়েন আর উনার খেয়াল রাখবেন
জিহাদ : ওকে ডক্তর
.
বাড়িতে নিয়ে আসলো আমাকে আমি তখনো দূর্বল
.
মামনি : কি রে আনহার কি হয়েছে এমন অবস্থা হঠাৎ কিভাবে ?
জিহাদ : আসলে আমি রেগে গিয়ে ওকে অনেক পরিমাণ মরিচ খাইয়ে দিছি
মামনি : এই মেয়ে টা কি করছে তোকে এতো কেন রাগ
জিহাদ : না কিন্তু
মামনি : ও অনেক ভালো রে জিহাদ
জিহাদ : আচ্ছা সরি বললাম তো ভালো লাগছে না আমি গেলাম ওকে নিয়ে রুমে ।
.
রুমে…………
.
আমার কপালে হাত রেখে
জিহাদ : জ্বর আসলো নাকি মেয়েটার
.
হায়রে এই মেয়ে এতো দূর্বল । দুর দোষ তো আমারি । কেন যে এতো রাগ । কি আর করবো দেখি মেয়েটার খেয়াল রাখি ।
.
এসব ভাবছিল জিহাদ
.
সারারাত খেয়াল রাখলো
.
সকালে উঠছিলাম
জিহাদ : সরি
আমি : মাফ করবো না
জিহাদ : কর বলছি
আমি : এক শর্তে
জিহাদ : কি
আমি : আমাকে তুমি বলতে হবে
জিহাদ : ওকে
জিহাদ : শুয়ে থাকো
আমি : আপনি আমাকে তুমি বলছেন সূর্য কোন দিক উঠছে
জিহাদ : (এই‌ অবস্থায় ও‌ মজা করে এই মেয়ে ভাবছে ) ওই চুপ করে থাক ।
আমি : হুরর এখনো অসুস্থ তো আপনার জন্যই হইছি
জিহাদ : তো তোকে ঝাল দিতে কে বলছিলো জানিস না আমার রাগ বেশি
আমি : ফেলে দিছিলেন কেন
জিহাদ : আরও ফেলবো
আমি : কেন ফেলবেন
জিহাদ : তুই আমার বউ তাই
আমি : এমা মানলেন আমি আপনার বউ
.
জিহাদ আর কিছু না বলে বের হয়ে গেল রুম থেকে
.
কিছু সময় পর
জিহাদ আসলো
জিহাদ : খেয়ে নে
আমি : খাবো না‌
জিহাদ : খা
আমি : উহু এটা খেতে ভালো না
জিহাদ : খা
.
বলে খাইয়ে দিল
.
জিহাদ : সরি
আমি : মাফ করবো না
জিহাদ : কর বলছি
আমি : এক শর্তে
জিহাদ : কি
আমি : আমাকে তুমি বলতে হবে
জিহাদ : ওকে
.
দুইদিন পর রাত্রে
আমি আর ও বসে ছিলাম যদিও ও নিজের অফিসের কাজ করছিল ।
.
আমি অনেকটা সুস্থ এই দুইদিনে ।
.
এমন সময় বৃষ্টি আসলো
.
আমি : ওয়াও বৃষ্টি আমি গেলাম
.
জিহাদ কিছু সময় পর লক্ষ করলো
আর বলল : মেয়েটা গেলো কই
.
এদিক ওদিক দেখে
.
পুরো বাড়ি খুজে নাই আনহা
.
যাই তো ছাদে দেখি আছে কি না ?
.
.
.
ছাদে গিয়ে দেখলো আনহা বৃষ্টি ভিজছে
জিহাদ তাকিয়ে দেখছে আর ভাবছে দারুণ লাগছে মেয়ে টাকে । কিছু সময়ের জন্য জিহাদ আনহার মাঝে হারিয়ে গেলো ।
আনহা : ভিজবেন নাকি আসুন
.
.
জিহাদের ঘোর ভাঙলো
.
.
জিহাদ : চলে আসো
আমি : না আমি ভিজবো
জিহাদ : কেবল জ্বর সারলো
আমি : হুর কিছু হবে না
জিহাদ : আসবা না
আমি : না
.
জিহাদ আর কিছু না বলে আনহা কে কোলে নিয়ে আসছিল ।
পথে একটু কিল ঘুসি মারলাম ছাড়ানোর চেষ্টায়
.
.
চলবে……….

Angry_Husband _পার্ট_১

0

Angry_Husband
_পার্ট_১
Written by Avantika Anha
আজ আনহার বিয়ে । অনেকটা জটিলতা প্রবণ ভাবেই বিয়েটা হলো । পারিবারিক বিয়ে হলেও মেয়ে দেখে পছন্দ করার পর তাড়াতাড়ি ই বিয়ে হয়ে গেলো ।
.
বাসরে……..
আনহা একা বসে রয়েছে । ছোট থেকেই মেয়েটা ফাজিল । তার খুব ইচ্ছে এমন একজন কে ভালোবাসার যে তাকে বড্ড ভালোবাসবে ।
.
জিহাদের প্রবেশ……….…
সে : ওই মেয়ে যায়ে কাপড় পাল্টিয়ে নিচে শুয়ে পড় ।৤
আমি : মানে
সে : আজাইরা মানে খুঁজবি না যা বলছি তাই কর আর আমার মুখের উপর কথা বলবি না
আমি : কেন আপনি কি আমার স্যার যে কথা বলবো না আপনার মুখের উপর
সে : আজ থেকে তাই তুই আমাকে একা থাকলে স্যার ই বলবি
আমি : এসব কেমন ব্যবহার আপনার
সে : হাহ তোকে বিয়ে করেছি শুধুই আমার মা কে খুশি করতে
নাহলে আজকাল কার লোভী মেয়েদের কে বিশ্বাস করে‌ । আমার টাকা আছে এখন তাই আসছিস তাই না । কোনো এক ছেলে কে মিথ্যে ওয়াদে করে আমার জীবনে আসছিস তাই না ।
আমি : হইলো আপনার৤?
সে : মানে
আমি : আপনি ছেকা খাইছেন ভালো কথা আমার উপর Angry হচ্ছেন কেন
সে : চুপ আমার মুখের উপর কথা
আমি : বলবো আপনার সমস্যা । আমি আমার বরের সাথে কথা বলছি হুহ
সে : তুই ও একটা লোভী মেয়ে
আমি : ওই চুপ আমি বিয়ের আগে প্রেম করি নি বরের সাথে করবো বলে আর লোভী বলবেন না হুহ
সে : তুই এমন কেন দেখছিস না আমি কতো খারাপ ।
আমি : খারাপ হন আর ভালো আমারি তো বর হিহি ( হাসি দাত বের করে )
সে : (তাকিয়ে হাসি দেখছে বড্ড মায়াবী হাসি । পরক্ষণেই ভাবলো না এ কি ভাবছি সব মেয়ে আজকাল কার লোভী হয় )
আমি : তা ছেকা খাইছেন বুঝছি আপনাকে সোজা করা মুশকিল ।
সে : চুপ করররররর একদম
আমি : ওহো করবো না চুপ
সে : যা নিচে ঘুমা আমার ঘুম পাচ্ছে
আমি : আমি বিছানায় ই ঘুমাবো
সে : না তুই নিচেই থাকবি
আমি : আমাকে নিচে থাকতে হলে আপনাকেও নিচেই রাখবো
সে : হুহ আমি নিচে গেলে তো
আমি : ওকে মিস্টার ওয়েট এন ওয়াচ আনহার কেরামতি
.
আমি চলে আসলাম । ভাবতেছি একে কেমনে শায়েস্তা করা যায় ।
.
.
সে : বড্ড পাগলি টাইপের মেয়ে । এই মেয়েও কি তার মতোই ধোকা দিবে । কিন্তু একে তো নিশ্পাপ মনে হয় । নাহ আমি কারো মায়ায় জড়াবো না আর ।৤
.
আমি এক বালতি পানি এনে বিছানায় ঢেলে দিলাম । সাথে ছোফায়ও ।
.
জিহাদ তো থ
.
.
সে : এটা কি করলিইইইইইই
আমি : কেনো গো দেখতে পাও না
সে : পানি ঢাললি কেন
আমি : আপনি এতো রাগী কেনো হুহ
সে : তুই কথা বলিস কেন এতো
আমি : আপনি রাগ করেন তাই
সে : যাহ এখান থেকে
আমি : ওকে মামনির কাছে গেলাম
সে : ওই না ( ও মামনি কে ভয় পায় )
আমি : হিহি আপনি ভয় পান
সে : নাহ তোকে কে বললো
আমি : ননদিনী
সে : ওরে আমি খাইছি
আমি : চুপপপপপ
সে : আমার মুখের উপর আবার কথা বলিস
আমি : আপনার মুখের উপর কই আমি তো আপনার না আমার #Angry_husband এর মুখের উপর কথা বলছি
.
.
ও আর কিছু না বলে আমার এক হাত শক্ত করে ধরে পিছনের দিকে ঘুরিয়ে নিলো ।
আমি : লাগছে আমার
সে : তুই এমন করলি কেন
আমি : হুহ আপনার জন্য
.
সে আরও শক্ত করে হাত টা ধরলো আর বলল : কিইইই আমার মুখের উপর কথা
.
এবার অনেক লাগলো
.
আমি : ছাড়ুন লাগছে
সে : লাগুক
.
.
আমি আর পারলাম না কেঁদে ফেললাম
.
.
জিহাদ আনহার কান্না দেখে আর খারাপ ব্যবহার করতে পারলো না । নিচে বিছানা করে শুয়ে পড়লো ।
.
আমি কাঁদলাম অনেক সময় ধরে । জিহাদ ও ঘুমের ভান করে সব শুনলো কিন্তু কিছু বললো না ।
.
কিছু সময় পর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম ।
.
ভোরের সময়……
জিহাদ ভোরের আলোতে মেয়েটাকে আরও বেশি মিষ্টি লাগছে । সত্যি কি আনহাও । নাহ সব মেয়ে ই এক ।
.
কিছু সময় পর আনহার ঘুম ভাঙলো
.
নামায পড়তে উঠেছে সে ।
.
নামায শেষে…..
জিহাদের পাশে বসলো …..
ছেলেটা বড্ড মায়াবী । বুঝাই যায় না কালকের রাগী ছেলেটাই হলো ও ।
.
সকালে৤৤৤৤৤৤……..
আমি : উঠুন
জিহাদ : আমি ঘুমাবো
আমি : ওই পোলা উঠেন
জিহাদ : এই মেয়ে যাও তো
আমি : দাড়ান দেখাচ্ছি মজা
.
পানি ঢেলে দিলাম
.
জিহাদ : ইউউউউউউউ
আমি : হ অনেক খারাপ উঠেন এবার
.
জিহাদ গোসল শেষ করে এসে দেখলো………….
.
আনহা ভিজা চুলে দাড়িয়ে রেডি হচ্ছে……
জিহাদ ভাবছে…… (অপরূপ লাগছে মেয়েটি সব মেয়ে ই কি কিউট হয় । নাকি ও ই একটু বেশি মায়াবী । আমি কি ভাবছি এসব । নাহ এর মায়ায় জড়ানো যাবে না । মেয়েরা মায়ায় জড়িয়েই কষ্ট দেয় )
.
.
আমি : কিছু বলবেন ?
জিহাদ : আমার মা কে কিছু বলবি না তুই
আমি : উনি আমারো মা আপনি আমাকে স্ত্রী না ভাবলেও আপনি আমার স্বামী আর আমি আমার মা কে কষ্ট দিবো না হুহ ।
জিহাদ : না দিলেই ভালো
.
রান্নাঘরে
আমি : আসসালামুয়ালাইকুম দেন আমি করছি
মামনি : নাহ রে পাগলি তুই বস
আমি : আমাকে কি মেয়ে ভাবো না
মামনি : তুই তো আমারি মেয়ে
আমি : তাহলে মেয়ে থাকতে মা এতো কাজ করবে কেন
মামনি : আচ্ছা কর
.
রান্নার সময় মা আমার দিকে তাকিয়ে কেনো । আল্লাহ উনি তো আমার হাত দেখছে । কালকের দাগ টা তো এখনো আছে । ভয়ে হাত লুকালাম ।
.
মামনি : জিহাদ করেছে তাই না
আমি : নাহ ওইতো পড়ে গেছিলাম
মামনি : মিথ্যে বলছিস তাই না ।
আমি : না মিথ্যে কেন বলবো
মামনি : চোখ লুকাচ্ছিস কেন
আমি : নাহ কই
মামনি : আমাকে বল আমি কাউকে বলবো না
আমি : ওয়াদা করো যে আমি না বলা অব্দি কাউকে বলবে না
মামনি : আচ্ছা ওয়াদা রইলো
.
আমি বললাম……..
বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললাম
মামনি : মা রে আমার ছেলেটা অমন ছিল না । ওর এমন ব্যবহারের জন্য দায়ী নিহা নামের এক মেয়ে । ও তখন এইচএসসি দিচ্ছিল এক মেয়ে কে বড্ড ভালোবাসতো । আমরাও জানতাম কিন্তু মেয়েটা টাকার লোভে এক ছেলেকে বিয়ে করে । বিয়ের আগে আমি মেয়েটাকে ফোন ও দিছিলাম কিন্তু সে আমাকেই বাজে কথা শুনায় । তারপর থেকেই ও এমন হয়ে যায় ।
আমি : ব্যাপার না মামনি আনহা আছে না
আমি থাকতে এতো চিন্তা কই । ওকে সোজা আমি করবো ।
মামনি : আচ্ছা
আমি : চলো নাস্তা নিয়ে যাই
মামনি : আচ্ছা
.
খাবার টেবিলে জিহাদ কে দেখে ইচ্ছে করে চোখ মারলাম
.
হিহি ওয় তো রাগে শেষ । মনে হচ্ছিল আমাকে খেয়ে ফেলবে ।
.
রুমে আসলাম ।
জিহাদ : চোখ মারলি কেন
আমি : প্রমাণ আছে ?
জিহাদ : আমি দেখছি
আমি : আপনার চোখে সমস্যা আছে
জিহাদ : কিহ্
আমি : এমা আমার বরের চোখে সমস্যা আমার বর কানা এমা……
জিহাদ : চুপপপপ
.
.
.
চলবে………………….