Story: বউ
Part- 13
writer: #Nur_Nafisa
.
.
অফিস থাকাকালীন রেহান ৩বার কল করেছে বউ এর সাথে প্রেম করার জন্য। একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে নাফিসা ও রিয়াদকে নিয়ে শপিং করতে গেলো। বিয়ের শপিং সহ করতে করতে রাত হয়ে গেছে। তাই তারা রেস্টুরেন্ট এ ডিনারের জন্য গেলো। রেহান খাবার অর্ডার দিয়ে দিয়েছে। হঠাৎ নেহা এসে হাজির!
.
নেহা- বাবাহ! বউকে নিয়ে ডিনারে এসেছো!
.
রেহান- হুম..
.
নেহা- ভাইকে সাথে এনেছো, বাচ্চা নিয়ে আসোনি কেন?
.
রিয়াদ- ভাইয়ার বাবু নেই তো, আনবে কিভাবে!
.
নেহা- ওমা! সেকি! দুবছর আগে বিয়ে করেছো এখনো বাবু হয়নি! বউ কি চাইল্ডল্যাস নাকি!
.
নাফিসা এদিকে রেগে আগুন। আর রেহান ভয়ে! না জানি রেস্টুরেন্ট এ কিছু করে বসে!
.
রেহান- মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ মিস নেহা।
.
নেহা- সত্য বললে গায়ে লাগে বুঝি….
.
রেহান- কিসের সত্য! হুম? আমার বউ লন্ডন গ্রাজুয়েট কমপ্লিট করেছে। আজ বাচ্চা নিয়ে আসিনি তো কি হয়েছে! আগামী দুবছর পরে দেখো ২ বাচ্চা নিয়ে এসেছি। তোমার তো মেবি এখনো বিয়েই হয়নি। আর কত বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরবে! সন্নাসী থেকে যাবে নাকি!
.
নেহা দাতভাঙা জবাব পেয়ে আর একমুহূর্ত ও দাড়ালো না সেখানে। দ্রুত বেরিয়ে এলো। রেহান সস্তির নিশ্বাস ছাড়লো, ভাগ্যিস, নাফিসা কোন কান্ড ঘটায় নি। ডিনার শেষ করে বাসায় ফিরে এলো।
.
রিয়াদ- ভাবি আজকে আমার রুমে ঘুমাবে।
.
নাফিসা- ওকে
.
রেহান- না। তোর রুমে কেন ঘুমাবে!
.
রিয়াদ- ভাবি তো সবসময় আমার রুমেই ঘুমায়। কাল শুধু তোমার রুমে ঘুমিয়েছে।
.
রেহান- এখন থেকে এই রুমেই ঘুমাবে। যা ভাগ….
.
রিয়াদ- না, ভাবি আমার রুমে ঘুমাবে। ভাবি চলো…..
.
নাফিসা- (রেহানকে রাগিয়ে দিতে) ওকে মটো চলো….
.
রেহান কড়া দৃষ্টিতে তাকালো, আর নাফিসা হাসতে হাসতে রিয়াদের রুমে চলে গেলো। রেহানের প্রচুর রাগ হচ্ছে, দরজা লক করে সে একাই শুয়ে পড়লো।
.
নাফিসা- মটো, আমি এখন থেকে তোমার ভাইয়ার রুমেই ঘুমাবো।
.
রিয়াদ- কেন?
.
নাফিসা- ওই রুমের অর্ধেক এর মালিক আমি। তাই….
.
রিয়াদ- কে দিয়েছে তোমাকে? আব্বু?
.
নাফিসা- না, আমি তোমার ভাইয়ার কাছ থেকে জিতে নিয়েছি। এখন থেকে আর আমাকে ডাকবে না ওকে? সবাই যার যার নিজের রুমে, ওকে….
.
রিয়াদ- ওকে। গুড নাইট..
.
নাফিসা- গুড নাইট…
.
নাফিসা আবার রেহানের রুমে ফিরে এলো কিন্তু দরজা ধাক্কা দিতেই দেখলো ভেতর থেকে লক করা। বুঝতে পেরেছে রেহান রাগ করেছে। ডাকতে গিয়েও ডাকলো না, “এখন ডাকলে ডিমান্ড বাড়বে রেহানের ” তাই আবার রিয়াদের রুমে এসে শুয়ে পড়লো।
.
রিয়াদ- তুমি আবার এখানে কেন?
.
নাফিসা- ভাবছি আজ এখানেই থাকবো কাল থেকে আমার রুমে…
.
রিয়াদ- ওকে
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে রেহান আর নাফিসার সাথে কথা বলছে না। নাফিসাকে এড়িয়ে চলছে। ব্রেকফাস্ট শেষ করে রেহান অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছে রুমে। নাফিসা এসে দরজা লাগিয়ে দিলো। রেহান শার্ট পড়ছে…. নাফিসা এলো বোতাম লাগিয়ে দেয়ার জন্য রেহান পিছিয়ে গেলো। নাফিসা আবার রেহানের কাছে এসে রেহানের দুহাত তার কোমড়ে রাখলো। রেহান হাত সরিয়ে নিলো নিজের শার্টের বোতাম লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। নাফিসা লাগানো বোতাম গুলো খুলে দিলো। রেহান পাশ কাটিয়ে চলে আসতে চাইলে নাফিসা যে কাজটি করলো তাতে রেহান হাই ভোল্ডেজ শকড! নাফিসা রেহানের শার্টের কলার খুব শক্ত করে ধরে পায়ের আঙুল ভড় দিয়ে উঁচু হয়ে রেহানের ঠোঁটে তার ঠোঁট মিলিয়ে দিলো। ১মিনিট পর নাফিসা ছেড়ে দিতে চাইলেও রেহান ছাড়তে দিলো না। সে ১মিনিটকে ৫মিনিটের অধিক সময় বানিয়ে ফেললো। নাফিসা লজ্জায় আর তাকাতে পারছে না রেহানের দিকে। রেহানের শার্টের ২টা বোতাম লাগানো ছিলো রেহান বাকি দুটোও খুলে দিলো। তারপর নাফিসার কোমড় জড়িয়ে ধরলো আর নাফিসা মাথা নিচু করেই শার্টের বোতাম লাগিয়ে কলার ঠিক করে দিলো। রেহান নাফিসার থুতনি ধরে মুখটা উচু করলে নাফিসা চোখ বুজে ফেললো। রেহান দুচোখের পাতায় ও ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিয়ে বললো….
.
রেহান- বউ ডেইলি এই সারপ্রাইজ টা আমি চাই, মনে থাকে যেন। আল্লাহ হাফেজ….
.
নাফিসা- আল্লাহ হাফেজ।
.
নাফিসা লাঞ্চ করে রুমে এসে দেখলো ৭টা মিসড কল ১টা মেসেজ রেহানের। মেসেজ ছিলো “তোমার আজ খবর আছে বউ ”
নাফিসা মনে মনে বললো, আচ্ছা দেখি তোমার খবরের কথা মনে থাকে কিনা! খবর তো আমি নিবো মিস্টার….
তারপর নাফিসা কল করলো রিসিভ হলো না। ৫মি পর রেহান কল করলো…
.
নাফিসা- আসসালামু আলাইকুম।
.
রেহান- ওয়ালাইকুম আসসালাম। কয়টা কল দিয়েছি কোথায় ছিলে?
.
নাফিসা- বাসায়…
.
রেহান- সেটা তো জানি ই। কি করছিলে ফোন ধরনি কেন ?
.
নাফিসা- তোমার জন্য খাওয়াদাওয়া সব ছেড়ে বসে থাকি, এটাই তো চাও তাই না! এখন যে লাঞ্চ টাইম জানো না!
.
রেহান- ওফ! বউ রাগ করছো কেন! আমি তো তোমাকে মিস করছিলাম তাই…
.
নাফিসা- আমার সাথে এতোক্ষণ বাজে বিহেভ করে এখন ঢং দেখাতে আসছে… একদম কথা বলবা না আমার সাথে।
.
রেহান- সরি বউ, আর হবে না এমন৷ কল কেটো না প্লিজ…
.
নাফিসা- বলো কি বলবা
.
রেহান- নামাজ পড়েছো?
.
নাফিসা- হুম। লাঞ্চ করেছো তুমি?
.
রেহান- হুম।
.
নাফিসা- কাজ নেই তোমার, একটু পর পর কল দাও! আব্বু কিছু বলে না তোমাকে?
.
রেহান- আব্বু কি বলবে! আব্বু নিজেই তো বউয়ের সাথে ফোনে প্রেম করে। ২দিন ধরে ফোনে বউকে পায় না, তাই একটু পর পর এসে আমার প্রেমে ডিস্টার্ব করে।
.
নাফিসা- হাহাহা…. পাবে কিভাবে! আম্মু আর শাশুড়ী আম্মু সারাদিন বকবক করে।
.
রেহান- তাই তো পায়না…
.
নাফিসা- কথা কম কাজ বেশি, এখন কাজ করো। ৩বার হয়ে গেছে, আর একবার কল করলে মোবাইল ভেঙে ফেলবো। আল্লাহ হাফেজ।
.
আগামীকাল রিজোয়ান আহমেদ তাদের নতুন ফ্ল্যাটে উঠবে। রাতে সবাই একসাথে ডিনার করে যার যার রুমে চলে গেলো। নাফিসা রুমে এসে দেখলো রেহান খাটে লম্বা হয়ে শুয়ে আছে আর ফোনে কিছু করছে। নাফিসা দরজা লক করে রেহানের হাত থেকে এক টানে ফোন নিয়ে তার সমস্ত ভাড় ছেড়ে দিয়ে রেহানের উপর আকাশ মুখী হয়ে শুয়ে পড়লো। তার মাথা রেহানের বুকে। তারপর নাফিসা রেহানের ফোনে ফেসবুক চালাতে লাগলো। রেহান নাফিসার কর্মে হেসে নিজের হাত দুটো ভাজ করে নিজের মাথার নিচে রাখলো।
.
নাফিসা- আমি যে তোমার উপর শুয়ে আছি তোমার কষ্ট হচ্ছে না?
.
রেহান- না।
.
নাফিসা- হিহিহিহি…
.
রেহান- বউ
.
নাফিসা- হুম?
.
রেহান- আগে তোমার নাম জিজ্ঞেস করলে বউ বলতে কেন?
.
নাফিসা- শব্দ টা আমার কাছে খুব ভালো লাগে, বউ এর সাজটা ও অনেক ভালো লাগে।
.
রেহান- তোমাকে একটা গিফট দেওয়া বাকি আছে।
.
নাফিসা দ্রুত ফোন খাটে রেখে রেহানের উপরে থেকেই উল্টো দিকে ঘুরে রেহানের মুখোমুখি হলো। রেহান হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরলো।
.
রেহান- আস্তে, পড়ে যাবা।
.
নাফিসা- পড়বো না। কিসের গিফট?
.
রেহান- লং ড্রাইভে নিয়ে যাওয়া।
.
নাফিসা- অপ্স! আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম! কবে যাবো?
.
রেহান- তুমি যেদিন বলবে …..
.
নাফিসা- কাল তো নতুন ফ্ল্যাটে চলে যাবো…. তুমিই বলো
.
রেহান- নতুন ফ্ল্যাটে যাবে মানে! তুমি সেখানে যাবে কেন!
.
নাফিসা- বিয়ের আগে মেয়েরা নিজের বাসায় থাকে, জানো না?
.
রেহান- এক দিনের জন্যও আমার কাছ থেকে দূরে থাকবে না। আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে।
.
নাফিসা- নো, আমাদের বিয়ে আবার হবে। ততদিন পর্যন্ত সেখানেই থাকবো। বিয়ের আনন্দ সব ধুলোয় মিশিয়ে দিবে নাকি! একদম না করতে পারবে না।
.
রেহান আর কিছু বললো না।
.
নাফিসা- এই এমন করে আছো কেন!
.
রেহান- কিছু না।
.
নাফিসা- মাত্র তো কয়েকটি দিন, আব্বু আম্মু কি ভাববে স্টুপিড। মুড অফ করবে না বলে দিলাম। আর আমরা কাল লং ড্রাইভে যাবো। শশুর আব্বুকে বলে কাল তোমার অফিস ছুটি নিয়ে নিবো। ওকে….?
.
রেহান পাশ ফিরে নাফিসাকে খাটে নামিয়ে দিলো। দুষ্টুমি হাসি দিয়ে….
.
রেহান- ওকে। কাল তো চলেই যাবে, বাকি দিনের আদরগুলো এডভান্স করে দেই, কি বলো!
.
নাফিসা- হিহিহিহি….. নো….
.
.
চলবে…..
বউ Part- 13
বউ Part- 12
Story: বউ
Part- 12
writer: #Nur_Nafisa
.
.
(সকালে নাফিসার ঘুম ভাঙতেই দেখলো রেহান পাশ ফিরে ঠোঁটের কোনায় হাসির রেখা ফুটিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। খুব লজ্জা লাগছে নাফিসার। সে রেহানের দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলো। রেহান তার লজ্জামাখা ফেস দেখে হাসির রেখা আরো প্রশস্ত করলো। তারপর নাফিসার ঠোঁটে চুমু দিয়ে বললো…)
.
রেহান- হেভ এ সুইট মর্নিং ডিয়ার। ওয়েলকাম টু ম্যারিড লাইফ বউ।
.
(নাফিসা লজ্জায় রেহানকেই ঝাপটিয়ে ধরে রেহানের বুকে মুখ লুকালো। রেহান কাথাটা আর একটু টেনে দুজনের মাথাসহ ঢেকে দিলো।)
.
নাফিসা- ওঠো… দুষ্টুমি করবে না একদম…
.
কে শুনে কার কথা!
.
নাফিসাকে আজ রুবিনা তার একটা শাড়ি দিয়েছে পড়ার জন্য। নাফিসা শাড়ি পড়ে রান্নাঘরে আছে আয়েশা ও রুবিনার সাথে। রুবিনাকে টুকটাক হেল্প করছে আর আয়েশা ও রুবিনার গল্প শুনছে। রেহান ভোরে নামাজ পড়ে বাসা থেকে বেরিয়েছিলো। বাসায় ফিরে নাফিসাকে রুমে দেখতে না পেয়ে কিচেনে উকি দিয়ে হা হয়ে আছে! নাফিসা আজ তার আম্মুর নীল রঙের কাতান শাড়ি পড়েছে! তার উপর ভেজা চুলগুলো ছেড়ে রেখেছে! খুব কাছ থেকে দেখতে ইচ্ছে করছে তার। কিন্তু ডাকবে কিভাবে! তার শাশুড়ী আর আম্মু এখানে! পানি পান করার অজুহাতে কিচেনে ঢুকলো। রুবিনা একটু অবাক ই হলো, কারণ পানি পান করার জন্য কিচেনে আসার কি দরকার! ড্রয়িং রুমেই তো পানি রাখা আছে! তা ও কিছু বললো না। নাফিসা একবার তাকিয়েছিলো তার দিকে, রেহান রুমে যাওয়ার ইশারা করলে নাফিসা ভেংচি কেটে অন্যদিকে তাকালো। রেহান পানি পান করে বেরিয়ে গেলো। রুমে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবার কিচেনে এলো।)
.
রেহান- নাফিসা, আমার ফোনের চার্জার দেখেছো?
.
নাফিসা- না।
.
রেহান- আম্মু, আব্বু কোথায় গেছে?
.
রুবিনা- বেয়াই সাহেবের সাথে বেরিয়েছে।
.
রেহান- রিয়াদ?
.
রুবিনা- রিয়াদও
.
রেহান রুমে ফিরে এলো। রুবিনা নিরবে হাসলো। সে বেশ বুঝতে পারছে রেহান বারবার কেন আসছে! নাফিসাও হাসলো কিন্তু তা প্রকাশিত হয়নি। রেহানের মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে! এই মেয়ে কি তার ইশারা বুঝতে পারছে না! এবার রুম থেকে জোরে চিৎকার করেই বলতে লাগলো….
.
রেহান- আম্মু, পারলে ১কাপ কফি করো…
.
রুবিনা ৪কাপ কফি বানিয়ে ইচ্ছে করেই ২কাপ নাফিসার কাছে দিলো রেহানকে দেওয়ার জন্য। নাফিসাকে এবার নিরুপায় হয়ে রুমে যেতেই হলো। রেহান টিশার্ট খুলে সোফায় বসে ফোন দেখছে। নাফিসা এসে বেডসাইড টেবিলে ১কাপ কফি রেখে ঘুরে দাড়াতেই দেখল রেহান তার খুব কাছে এসে দাড়িয়েছে। এইটুকু সময়ে রেহান দরজা লাগিয়ে দিয়েছে। তারপর নাফিসার হাত থেকে অন্য কাপটা নিয়ে রেহান টেবিলে রেখে দিলো।
.
নাফিসা- রেখে দিলে কেন! এটা আমার। আমি খাবো না!
.
রেহান- রাখো তোমার কফি খাওয়া! কতোক্ষণ আগে ডেকে এসেছি, এতো লেট করেছো কেন! আগে তার মাশুল দাও….
.
বলেই নাফিসাকে নিয়ে খাটে ঝাপিয়ে পড়লো। দু’হাতে নাফিসার হাত চেপে ধরলো বিছানায়।
.
নাফিসা- কি হচ্ছে কি এসব! সরো…
.
রেহান- (নাফিসার গলায় নাক ঘষতে ঘষতে) এই শাড়ি পড়েছো কেন! আমার মাথা হ্যাং করার জন্য!
.
নাফিসা- তুমিই তো বলেছো শাড়ি পড়তে।
.
রেহান- নীল রঙ টা তোমাকে মানিয়েছে বেশ। ম্যাচিং ব্লাউজ কোথায় পেলে!
.
নাফিসা- শাশুড়ী আম্মুর টা ই। দেখছো না কেমন ঢিলা! সরো, কফি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
.
রেহান- হোক, আমার কাজ আগে।
.
রেহান ১০-১৫ মিনিট পর নাফিসাকে ছাড়লো। তারপর টেবিল থেকে কফি কাপ নিয়ে একটা সে খেতে লাগলো আর একটা নাফিসার হাতে দিলো। নাফিসা কাপ নিয়ে দেখলো কফি ঠান্ডা হয়ে গেছে। সে রেগে রেহানের হাতেই কাপ ধরিয়ে দিলো।
.
রেহান- খাবে না?
.
নাফিসা- তুমিই খাও তোমার কফি
.
রেহান- হাহাহা…. ওকে আমিই খাই। বের হওয়ার আগে শাড়ির আচলটা মাথায় দাও। ঘাড়ের স্পট দেখা যাচ্ছে।
.
নাফিসা দরজার সামনে থেকে দৌড়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে দেখলো সত্যিই ঘাড়ে স্পট দেখা যাচ্ছে। গলার দিকটাও লাল হয়ে আছে। আবার রেহানের দিকে রেগে তাকিয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে রুম থেকে বেরিয়ে রিয়াদের রুমে চলে গেলো।
.
রায়হান চৌধুরী বাসায় ফিরলে সবাই একসাথে ব্রেকফাস্ট করে নিলো।
.
রেহান- আব্বু আজ অফিস যেতে হবে?
.
(সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রেহানের দিকে! ছেলে বাবার কাছে সরাসরি কেমন প্রশ্ন তুলছে! আর রায়হান চৌধুরী মনে মনে ভাবছে ” নতুন বিয়ে করেছিস, অফিস যাওয়ার ইচ্ছে না থাকলে তো কৌশলেও ছুটি নিতি। সবার সামনে ছুটি চাওয়ার কি দরকার ছিল, ব্যাক্কল!”
রেহান সবার অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকা দেখে আবার বলতে শুরু করলো….)
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
রেহান- না, মানে নাফিসাকে নিয়ে শপিং এ যেতাম। তাই বলছিলাম…
.
রায়হান- তোমার ইচ্ছে।
.
রিয়াদ- আমিও যাবো শপিং করতে…
.
রেহান- স্কুলে যাবে কে? আমি….?
.
রিয়াদ- ১দিন অফ করলে কিছু হবে না। টিচারকে বলে দিবো ভাইয়ার বিয়ে ছিলো তাই আসিনি….
.
রায়হান- হাহাহা….. বুঝলেন বেয়াই সাহেব, আমার বড় ছেলের চেয়ে বেশি ইন্টেলিজেন্ট ছোট ছেলে।
.
রিজোয়ান- হাহাহা….
.
রেহান রুমে এসে দেখলো নাফিসা খাটে বসে পা ঝোলাচ্ছে। রেহান দরজা লক করে নাফিসার কাছে এসে এক হাতে জড়িয়ে ধরে বসলো।
.
নাফিসা- রেডি হয়ে অফিস যাও শশুর আব্বুর সাথে। বিকেলে যাবো শপিং এ।
.
রেহান- না, আজ ছুটি নিয়েছি।
.
নাফিসা- নো… কোনো ছুটি নেই। এখনই অফিস যাবে। যাও…
.
রেহান- কি হয়েছে তোমার? আমরা মাত্র কাল বিয়ে করলাম, আমাদের তো একটু আলাদাভাবে সময় কাটানো প্রয়োজন। হুম?
.
নাফিসা- বাকিরা কি ভাববে বলো তো। আর আমাদের বিয়ে নেক্সট উইকে আবার হবে। তাছাড়া বিয়ে হলেও অন্যকাজ রেখে বসে থাকবে এটা কেমন হলো! সব কাজ নির্দিষ্ট নিয়মে চলবে, আর এর মাঝে যে সময়টুকু বাকি থাকবে সেটা ই আমরা ২জন মিলে উপভোগ করবো।
.
রেহান অবাক! বাচ্চা মেয়েটা এতো সিরিয়াস হয়ে গেছে কিভাবে! মাত্র এক দিনেই ওর মধ্যে বাচ্চাভাবটা হারিয়ে ম্যাচিউর ভাব এসে পড়েছে।
.
নাফিসা- কি হলো?
.
রেহান- ওকে মিসেস। যাচ্ছি অফিস।
.
রেহান বসা থেকে উঠতে যাবে নাফিসা আবার হাত ধরে বসিয়ে দিলো…
.
নাফিসা- রাগ করেছো?
.
রেহান মুচকি হেসে নাফিসার কপালে চুমু দিলো…
.
রেহান- না, রাগ করিনি। ভাবছি আমার বউ একদিনে কতটা ম্যাচিউর হয়ে গেছে। পাগলামী একেবারেই কমে গেছে। কিন্তু আমার সাথে পাগলামী করতে হবে অলটাইম। এটা বাদ দেয়া যাবে না।
.
নাফিসা উত্তরে শুধু মুচকি হাসলো।
.
রেহান গোসল করে এলে নাফিসা আলমারি থেকে শার্ট বের করে রেহানকে দিলো কিন্তু রেহান শার্ট নিলো না। এবার নাফিসা রেহানের দিকে চোখ পাকিয়ে শার্ট পড়িয়ে দিলো। রেহান হেসে নাফিসার কোমড় জড়িয়ে ধরে দাড়ালো আর নাফিসা কলার ঠিক করে শার্টের বোতাম লাগিয়ে দিচ্ছে।
.
রেহান- বউ…
.
নাফিসা- হুম?
.
রেহান- আজ আম্মুর ফোন টা সাথে রাখবা। অফিসে থেকে কল করবো। বিকেলে শপিং এ গেলে তোমাকে ফোন কিনে দিবো।
.
নাফিসা- নো…. অফিসে কাজ করতে যাবে প্রেম করতে না। সো নো কল… আর ফোন আমার ই আছে, বিডি সিমকার্ড নেই ।
.
রেহান- কোথায় তোমার ফোন? একবারও তো দেখলাম না।
.
নাফিসা- আমার পার্সে।
.
রেহান- এমন করো কেন! কাজ তো করবোই, ফাকে ফাকে বউ এর সাথে প্রেম ও করবো।
.
নাফিসা- এমন করলে তুমি কাজ করতে পারবে না।
.
রেহান- পারবো…. কোথায় তোমার ফোন? দেখাও…
.
নাফিসাকে ছেড়ে আলমারি থেকে মোবাইলের বক্স নিয়ে সেখান থেকে একটা সিমকার্ড বের করলো আর নাফিসা লাগেজ থেকে পার্স বের করে ফোন দিলো রেহানের কাছে। রেহান সিম লাগিয়ে দিলো….
.
নাফিসা- তুমি আমি মিলে ১জন, সো ১বারের বেশি কল দিবে না।
.
রেহান- তুমি ১, আমি ১ এবং আমরা দুজন মিলে ১। টোটাল ৩টা দিবো। ওকে…..
.
নাফিসা- স্টুপিড।
.
রেহান- হাহাহা….. তোমার ড্রেস গুলো আলমারি তে জায়গা করে রেখে দিও। না পারলে আমি ফিরে রাখবো।
.
নাফিসা- ওকে
.
রেহান নাফিসার মুখটা ধরে ঠোঁটে আলতো করে চুমু খেলো।
.
রেহান- আমার টা দিবে না?
.
নাফিসা- ইশ! আমার লজ্জা লাগে।
.
রেহান- লন্ডন যাওয়ার সময় দিয়েছিলে কেন! ওদিন লজ্জা লাগে নি! না দিলে অফিস যাবো না।
.
নাফিসা- স্টুপিড, চোখ বন্ধ করো….
.
রেহান- না….
.
নাফিসা এক সেকেন্ড সময় নিয়ে রেহানের গালে চুমু দিয়ে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। রেহান ও হাসতে লাগলো। তারপর বাবার সাথে অফিসে চলে গেলো।
.
চলবে…….
বউ Part- 11
Story: বউ
Part- 11
writer: #Nur_Nafisa
.
.
নাফিসা- হোয়াট! পালিয়ে কেন বিয়ে করবো। আব্বু আম্মু তো আমাদের এমনিতেই বিয়ে দিবে। প্ল্যান ও চলছে সব কিছুর।
.
রেহান- পালিয়ে বিয়ে করার মজাই আলাদা। চলো আজই বিয়ে করবো…
.
নাফিসা- ইম্পসিবল ! বিয়ের শপিং ও করি নি! এই ড্রেসাপে বিয়ে! বউ না সেজে বিয়ে করবো না।
.
(রেহান নাফিসার উপর থেকে উঠে বিছানা থেকে নেমে সোজা আলমারি খুললো। নাফিসা ও শোয়া থেকে উঠে বসলো। তারপর ১টা লাল শাড়ি সাথে গহনা এনে নাফিসার সামনে রাখলো রেহান। নাফিসা শাড়ি দেখে রীতিমতো শকড!)
.
রেহান- আপাতত এটা পড়ো, পরে না হয় আবার শপিং করে নিবে…
.
নাফিসা- তুমি এই শাড়ি এখনো যত্ন করে রেখে দিয়েছো!
.
রেহান- আমার বউয়ের শাড়ি আমি রাখবো না!
.
নাফিসা- এটা কিন্তু তুমি দাও নি, দুবছর আগে আব্বু কিনে দিয়েছিলো।
.
রেহান- আজ এটা পড়ো, পরে আমি কিনে দিবো। সেম ওইদিনের মতো সাজবে…
.
নাফিসা- ওইদিন পার্লারে সেজেছি…
.
রেহান- মেকাপ লাগবে না, শুধু শাড়ি আর গহনা পড়ার কথা বলেছি…. চলো চলো….
.
নাফিসা- এই আব্বু আম্মু সবাই ড্রয়িং রুমে বসে আছে… কিভাবে যাবো!
.
রেহান- দাড়াও আমি আসছি….
.
রেহান- চলো, কেউ নেই। আব্বু আংকেল এর সাথে রিয়াদের রুমে দাবা খেলছে। আর আন্টি আর আম্মু কিচেনে।
.
নাফিসা- ওকে…
.
(দুজনেই চলে গেলো বিয়ে করতে। রাত ১০টার দিকে বাসায় এসেছে । আজও রুবিনা দরজা খুলেছে, তিনি সেই দুবছর আগের পরিস্থিতি ই দেখলেন আজ। কিন্তু একটু ও অবাক হলেন না বরং মুচকি একটা হাসি দিলেন…)
.
রুবিনা- আবার সেই দুবছর আগের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিস।
.
রেহান- আম্মু বরন করবে না?
.
রুবিনা- ১৫দিন পর আনুষ্ঠানিক ভাবেই বরন করে নিবো। ফাজলামো বাদ দিয়ে এখন ভেতরে আয়…
.
রেহান- আম্মু আজ সত্যিই বিয়ে করে এসেছি কাজী অফিস থেকে।
.
রুবিনা- কিইইইই!
.
রেহান- হুম। কাজীর ফোন নং ও এনেছি, জিজ্ঞেস করতে পারো কল করে..
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
(ব্যাস! শুরু হয়ে গেল তুমুল কান্ড। সবাই দৌড়ে এলো চিৎকার শুনে।)
.
রিয়াদ- ভাইয়া আবার বিয়ে কিরেছো! আব্বু আমিও কিন্তু ২বার বিয়ে করবো…
.
রায়হান- বেটা, তোর মা আমাকে সহ বাসা থেকে বের করবে।
.
রেহান- আম্মু প্রব্লেম কি! তোমরা তো আমাদের বিয়েই ঠিক করছিলে, আমি অন্য কাউকে তো আর বিয়ে করিনি!
.
রুবিনা- বেরিয়ে যা বাড়ি থেকে। তুই আমার ছেলে না।
.
(সবাই অবাক হয়ে দাড়িয়ে দেখছে শুধু, কেউ কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না!)
.
নাফিসা- (রেহানকে খোচা দিয়ে) এই এখন কোথায় যাবো? শাশুড়ী আম্মু তো বেরিয়ে যেতে বললো…
.
রেহান- আম্মু চলে যাবো? বউ নিয়ে কিন্তু কারো বাসায় যাবো না, রাস্তায় ই থাকবো….
.
রুবিনা- একটা থাপ্পড় দিয়ে সব দাত ফেলে দিবো, একে তো পালিয়ে বিয়ে করে এসেছে এখন আবার বউ নিয়ে রাস্তায় থাকবে! চৌধুরী পরিবারের মানসম্মান কি রাখবি না কিছু!
.
নাফিসা- শাশুড়ী আম্মু, পানি পান করার জন্য একটা দাত রেখে দিও তোমার ছেলের।
.
রুবিনা- পাজি মেয়ে একটা। পানি পান করতে দাতের প্রয়োজন হয় না, ভেতরে আয়।
.
(নাফিসার কথা শুনে এবার সবাই হেসে দিলো, রুবিনা আর রাগারাগি না করে ভেতরে আসতে বললো। দুজনেই সবাইকে সালাম করলো। তারপর বিয়ের অনুষ্ঠান ১৫ দিন না রেখে ১সপ্তাহ পর ফাইনাল করলো। একসাথে ডিনার করে তারপর নাফিসা রেহানের রুমের সামনে আসতেই পেছন থেকে ডেকে রেহান নাফিসাকে থামিয়ে দিলো। নাফিসা “কি” জিজ্ঞেস করতেই রেহান আশেপাশে তাকিয়ে চট করে নাফিসাকে কোলে তুলে নিলো, তারপর রুমে প্রবেশ করলো।)
.
নাফিসা- স্টুপিড একটা, কেউ দেখে ফেললে কি হতো এখন!
.
রেহান- কিছুই হতো না। সবাই তো জানে আমরা এখন ম্যারিড। দরজা লক করো……
.
নাফিসা- পারবো না। নামাও আমাকে….
.
রেহান- নো, লক করতে বলেছি লক করো….
.
নাফিসা- আরে আমি বাইরে যাবো, নামাও।
.
রেহান- কেন?
.
নাফিসা- আমার লাগেজ ওই রুমে, শাড়ি পড়ে আমি ঘুমাতে পারবো না।
.
রেহান- পালানোর চেষ্টা করছো, খুব ভালো করে বুঝতে পারছি।
.
নাফিসা- পালাবো না, সত্যি বলছি।
.
রেহান- ওকে, তাহলে আমি নিয়ে আসছি।
.
নাফিসা- এই না, তুমি চিনবে না আমি যাবো।
.
(রেহান আর কিছু না বলে নাফিসাকে নামিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা লক করে পাশের রুম থেকে নাফিসার লাগেজ নিয়ে এলো। নাফিসা লাগেজ থেকে লাল টিশার্ট বের করলো।)
.
রেহান- এই, এটা কোথায় পেলে! আমি খুজেছিলাম হলুদটা পেয়েছি কিন্তু এটা পাই নি!
.
নাফিসা- হিহিহিহি পাবে কিভাবে! লন্ডন খুজেছো?
এটা আমি সাথে করে নিয়ে গেছি, আর প্রতিটি রাতে আমি এটা পড়ে ঘুমিয়েছি।
.
(নাফিসাকে কাছে টেনে নিয়ে)
রেহান- আমিও কিন্তু হলুদ টিশার্ট পড়ে প্রতি রাতে ঘুমিয়েছি। একটি বার বলে গেলে কি হতো, আমাকে ভালোবাসো। ২টা বছর না হয় আমরা প্রেম করেই কাটিয়ে দিতাম।
.
নাফিসা- সারপ্রাইজ টা তো দিতে পারতাম না!
.
(রেহান নাফিসার হাত থেকে টিশার্ট নিয়ে ঢিল মেরে সোফায় ফেলে দিয়ে আবার নাফিসাকে কোলে তুলে নিলো। বিছানার দিকে যেতে লাগলো… )
.
নাফিসা- কি হচ্ছে এসব! নামাও আমি চেঞ্জ করবো।
.
রেহান- আমি তো ভালো করে দেখলাম ও না, এখনি চেঞ্জ!
.
নাফিসা- এতোক্ষণ কি চোখ বুজে ছিলে!
.
রেহান- হুম, এখন দেখবো। জানো তো, আজ আমাদের স্পেশাল নাইট, বাংলায় যাকে বলে বাসর রাত।
.
নাফিসা- যাহ!
.
(রেহান নাফিসাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে সেও পাশে হাতে মাথা ভর দিয়ে শুয়ে পড়লো। পলকহীন নাফিসার দিকে তাকিয়ে রইলো। নাফিসা চোখ বন্ধ করে ফেললো।)
.
নাফিসা- এভাবে তাকালে আমার লজ্জা লাগে।
.
রেহান- আমি তোমার লজ্জাময়ী সুন্দরের পূজারী।
.
নাফিসা- (রেহানের দিকে তাকিয়ে) এই, ওই ডাইনীটা পরে আর কোনো প্রব্লেম করেনি তো!
.
রেহান- কার কথা বলছো?
.
নাফিসা- নেহা
.
রেহান- এসব ভাষা কোথায় শিখো? লন্ডন নিশ্চয়ই কেউ ডাইনী বলে না।
.
নাফিসা- গুগোলে সার্চ করে শিখেছি। আরো অনেক কিছু জানি বাংলায়।
.
রেহান- আর কিছু খুঁজে পেলে না, এসব ভাষা শিখতে গিয়েছো!
.
নাফিসা- ধ্যাৎ! বলো না….
.
রেহান- না, ওর সাথে আর দেখা হয়নি।
.
(নাফিসার এক হাত নিয়ে খেলা করতে করতে)
.
রেহান- #বউ..
.
নাফিসা- হুম?
.
রেহান- সরাসরি উত্তর দিবে। আমাকে ভালোবাসো কবে থেকে?
.
নাফিসা- যেদিন শশুর আব্বু বলেছিল তুমি আমার বর সেদিন থেকে।
.
রেহান- আমি তোমাকে ভালোবাসি কবে থেকে জানো?
.
নাফিসা- না।
.
রেহান- যেদিন তুমি রাগ করে বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলে সেদিন থেকে আজও ভালোবাসি বউ।
.
নাফিসা- আমিও ভীষণ ভালোবাসি মাই হ্যান্ডসাম বর।
.
রেহান- (নাফিসার কপালে চুমু দিয়ে) এখন থেকে আর টিশার্ট জিন্স পড়বে না।
.
নাফিসা- আমি কামিজ পড়ে থাকতে পারি না।
.
রেহান- শাড়ি তো পড়তে পারো।
.
নাফিসা- হুম।
.
রেহান- সবসময় শাড়ি পড়বে। কিন্তু শরীর দেখা যায় এমন পাতলা শাড়ি পড়বে না । আমি শাড়ি এনে দিবো ওগুলো পড়বে।
.
নাফিসা- ওকে, আমিও যাবো শপিংমল এ।
.
রেহান- ওকে। ঘুমানোর সময় টিশার্ট পড়তে পারবে শুধু আমি দেখবো, অন্যকেউ যেন না দেখতে পারে। প্রতিদিন রাতে লাল আর হলুদ টিশার্ট দুটো পড়ে আমরা ঘুমাবো। ৫ওয়াক্ত নামাজ পড়বে। কোনো বাহানা চলবে না। কুরআন পড়তে পারো?
.
নাফিসা- হুম, বাট পিউর না……
.
রেহান- যখনি সম্ভব হবে, কুরআন পড়বে। আম্মুর কাজে হেল্প করবে। সবসময় বড়দের সম্মান দিয়ে কথা বলবে। দুষ্টুমি করলেও লিমিটেশন রাখবে। কেউ অসন্তুষ্ট হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকবে। তোমার যত উল্টাপাল্টা দুষ্টুমি আছে, সব আমার সাথে করবে। আমার কাছে কোন কিছু লুকাবে না। কোন কিছুর প্রয়োজন হলে ডিরেক্টলি আমাকে বলবে। পারবে না আমার দেয়া রুলস গুলো মানতে?
.
নাফিসা- ইনশাআল্লাহ। আরও কিছু?
.
রেহান- (নাফিসার ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিয়ে) আর আমাকে বেশি বেশি ভালোবাসবে….
.
(রেহান লাইট অফ করে কাথাটা টেনে নাফিসাকে নিয়ে শুয়ে পড়লো)
নাফিসা- এই আমি চেঞ্জ করবো।
.
রেহান- সেই সুযোগ আর আজ হচ্ছে না মিসেস। আজ সবটা আমি করিয়ে দিবো…
.
(ছোট নৌকায় রেহান তার ভালোবাসা #বউ কে নিয়ে ভালোবাসার বিশাল সমুদ্র পারি দিতে চলে গেলো।)
.
চলবে….
বউ Part- 10
Story: বউ
Part- 10
writer: #Nur_Nafisa
.
.
২ বছর পর….
(অফিস থেকে ফেরার সময় রায়হান চৌধুরী রেহানকে নিয়ে একটি ফ্ল্যাট দেখতে গেলো।)
.
রায়হান- রেহান, ফ্ল্যাট টা কেমন?
.
রেহান- আব্বু, এটা দেখে কি করবে? আবার কেনার প্ল্যান করছো?
.
রায়হান- হুম।
.
রেহান- এতো বড় বাড়ি রেখে আবার ফ্ল্যাট কিনবে কেন?
.
রায়হান- আমার জন্য না, আমার ফ্রেন্ডের জন্য। আগামী শুক্রবার তারা দেশে আসবে। ফ্যামিলি ছোটই। বলেছে একটা ফ্ল্যাট দেখতে। ৪দিনের মধ্যে ফ্ল্যাট কিনার ব্যবস্থা করলে ভালো হবে।
.
রেহান- মগের মুল্লুক নাকি! ৪দিনে সব ব্যবস্থা করা যায় কিভাবে! আমাদের বাসায় থাকতে বলো, পরে ব্যবস্থা হলে চলে আসবে।
.
রায়হান- তা না হয় বললাম, কিন্তু এখন দেখবি তো…
.
রেহান- ছোট ফ্যামিলি হলে, খারাপ না, এটাই ভালো হবে। ওনারের সাথে কথা বলেছো?
.
রায়হান- হুম, পছন্দ হলে জাস্ট কিনে নিবো।
.
রেহান- যিনি কিনবে ওনাকে ছবি পাঠাও। দেখো কি বলে…
.
রায়হান- পাঠিয়েছি, বলল ভালো লেগেছে, তাও আমি যাতে ভালো ভাবে দেখে নেই।
.
রেহান- সব ব্যবস্থা তো করেই রেখেছো। তাহলে আর কি! কনফার্ম করে দাও।
.
রায়হান- ওকে….
.
.
শুক্রবার সকালে..
রেহান- এতো আয়োজন কেন, আম্মু?
.
রুবিনা- তোর আব্বুর ফ্রেন্ড আসবে আজ, দুপুর ২টার দিকে তারা আসবে। তোর আব্বু বলেছে এয়ারপোর্ট থেকে তোকে রিসিভ করতে।
.
রেহান- আমি কেন! আব্বু কোথায়!
.
রুবিনা- তোর আব্বু ভোরে একটা কাজে বেরিয়েছে। তোকে বলেছে, যেতে তুই যাবি ব্যাস…
.
রেহান- আমি তো তাদের চিনিও না। কিভাবে রিসিভ করবো?
.
রুবিনা- উনারা তোকে চিনে, ছবি দেখেছে তোর। তোর খুজতে হবে না।
.
রেহান- আচ্ছা।
.
রিয়াদ- আম্মু এই অর্ধেক নারিকেল আমার, আমি যাই….
.
রুবিনা- এই রিয়াদ… সকাল সকাল নারিকেল খেলে পেট খারাপ করবে, নিয়ে আয় বলছি…..
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
রিয়াদ- নায়ায়ায়া…
.
(রেহান দৌড়ে গিয়ে রিয়াদের কাছ থেকে নারিকেল নিয়ে রুবিনার কাছে দিয়ে দিলো। ওদিকে রিয়াদ কান্না করে বাড়ি মাথায় তুলে নিয়েছে)
.
রুবিনা- মেরেছিস?
.
রেহান- তোমার ছেলেকে মারতে হয় আবার!
.
(এমনি ফোনটা বেজে উঠে)
রেহান- হ্যালো আব্বু…
.
রায়হান- রেহান ওরা ২টার দিকে আসবে। তুই একটু আগেই চলে যাস।
.
রেহান- আচ্ছা।
.
(১২টায় রেহান গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো। ১.৫ ঘন্টা জেমে ই আটকে থাকতে হলো। ১:৪২ মিনিটে এয়ারপোর্টে পৌছালো। সেখানে আরো ৩০মিনিটের মতো বসে আছে। কেউ তো আসছে না তার কাছে, আবার বেরিয়ে গেলো না তো! রেহান আবার রায়হান চৌধুরীকে কল করতে যাবে তখনি ফোন পকেট থেকে নিয়েও আবার রেখে দিলো!
এ কাকে দেখছে সে! ভুল দেখছে না তো! রিজোয়ান আহমেদ এসে জড়িয়ে ধরলো রেহানকে। পেছনে আয়েশা আহমেদ ও নাফিসা ও আছে।)
.
রিজোয়ান- হেই ইয়াং ম্যান…. কেমন আছো?
.
রেহান- আসসালামু আলাইকুম।
.
রিজোয়ান- ওয়ালাইকুম আসসালাম।
.
রেহান- আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন?
.
রিজোয়ান- আলহামদুলিল্লাহ।
.
রেহান- আসসালামু আলাইকুম আন্টি…
.
আয়েশা- ওয়ালাইকুম আসসালাম। কেমন আছো রেহান?
.
রেহান- আলহামদুলিল্লাহ, আপনি?
.
আয়েশা- আমিও আলহামদুলিল্লাহ।
.
নাফিসা- আম্মু, হু ইজ হি?
.
আয়েশা- হি ইজ রেহান। ২বছর আগে তুমি তাদের বাসায় ছিলে।
.
নাফিসা- হ্যালো…
.
(রেহানের শরীরের রক্ত সব জমাট বেধে যাচ্ছে রাগে। এতো তারাতাড়ি কিভাবে ভুলে গেছে তাকে! কই সে তো ভুলে যায়নি! মন চাচ্ছে কষিয়ে একটা থাপ্পড় লাগাতে। কিন্তু কোন অধিকারে! তার তো কোন অধিকার নেই! তাই সে নাফিসার কথায় কোন রেসপন্স করলো না। আংকেল আন্টি কে গাড়িতে উঠার জন্য বললো। নাফিসা রেহানের কাছ থেকে কোন রেসপন্স না পেয়ে একটু অবাক হলেও তা নিয়ে আর মাথা ঘামালো না। সারা রাস্তা নাফিসা বকবক করেই যাচ্ছে তার বাবা মায়ের সাথে। রেহান খুব বিরক্ত বোধ করছে। রিজোয়ান আহমেদ রেহানকে কোন প্রশ্ন করলে শুধু তার উত্তর দিয়ে যাচ্ছে রেহান। বাসায় আসার পর….)
.
রিয়াদ- ভাবিইইই!
.
নাফিসা- হু আর ইউ কিউট বয়?
.
রিয়াদ- আই এম রিয়াদ চৌধুরী।
.
নাফিসা- ইন্টেলিজেন্ট বয়। আব্বু আমরা কাদের বাসায় এসেছি?
.
রিজোয়ান- আমার ফ্রেন্ডের বাসায়,
.
নাফিসা- দুবছর আগে কি এ বাসায় এসেছিলাম?
.
রিজোয়ান- হুম।যাও আংকেল আন্টির সাথে কথা বলো….
.
নাফিসা- ওকে।
.
(নাফিসা ও তার বাবা-মা রেহানের বাবা মায়ের সাথে কথা বললো বেশ কিছুক্ষণ।)
রেহান- ( নাফিসার কর্মকাণ্ড দেখে রেহানের মেজাজ প্রচুর খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মাত্র দুবছরে মানুষ এতোটা বদলে যায় কিভাবে! সবকিছু এতো তারাতাড়ি ভুলে যায় কিভাবে! আগে তো শশুর আব্বু, শাশুড়ী আম্মু বলে ডাকতো, এখন আংকেল আন্টি! বাহ! আব্বু আম্মু কিভাবে এই মেয়ের সাথে নরমাল বিহেভ করছে! আমাদের কাউকে তো চিনতেই পারছে না। আগে জানলে কখনো বলতাম না আব্বুকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসতে! প্রয়োজনে হোটেলে ব্যবস্থা করে দিতাম। আল্লাহ জানে এইসব কতদিন দেখতে হয়! এখন তো ইচ্ছে করছে আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাই। হ্যাঁ আমিই কোথাও চলে যাবো আব্বুকে বলে। তাদের ফ্ল্যাট ঠিক হলে এ বাসা ছেড়ে গেলে আসবো।)
.
(দুপুরের পর থেকে রেহান বাড়ির বাইরেই ছিলো। লাঞ্চ ও করেনি বাসায়। বন্ধুদের উছিলায় বেরিয়ে গেছে। রেস্টুরেন্টে খেয়ে নিয়েছে। কিন্তু সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ পড়ে বাসায় ফিরতে হলো। বাবার আদেশ, সন্ধ্যার পর বাইরে থাকা যাবে না। এসে দেখেছে নাফিসা ড্রয়িং রুমে রিয়াদের সাথে বসে লুডু খেলছে, আর রিয়াদকে নাম ধরেই ডাকছে, আগে তো মটো ছাড়া কথাই বলতো না! রেহানের এসব একটুও ভালো লাগছে না। সে রুমে এসে লাইট অফ করে কপালে হাত দিয়ে শুয়ে আছে। আর ভাবছে কালই ঢাকার বাইরে কোথাও চলে যাবে।
নাফিসা আস্তে আস্তে রেহানের রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো। তারপর খুব সাবধানে রেহানের খাটের পাশে এসে রেহানের বুকে মাথা রেখে ঝাপটে ধরে শুয়ে পড়লো। রেহান হকচকিয়ে গেল এমন কান্ডে! সে দ্রুত উঠতে গেলো কিন্তু সম্ভব হলো না। হাতটা বাড়িয়ে টেবিল ল্যাম্প জালালো। নাফিসাকে দেখে তার চোখ জোড়া বড় বড় হয়ে গেল। ধাক্কা দিয়ে সরাতে চাইছে কিন্তু পারছে না)
.
রেহান- একি! আপনি এখানে কেন?
.
নাফিসা- দুবছর আগে কি আমি এখানে এভাবে শুয়ে ছিলাম!
.
রেহান- কি হচ্ছে কি এসব! ছাড়ুন…
.
(নাফিসা মাথা তুলে রেহানের দিকে তাকালো)
নাফিসা- ছাড়বো না…. আপনার কি!
.
(রেহান হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। নাফিসার চেহারা দেখে ইমোশনাল হয়ে গেছে সে। অজান্তে হাত দুটো দিয়ে নাফিসার মুখটা ধরে বলতে লাগলো….)
.
রেহান- নাফিসা, সত্যিই কি তোমার কিছু মনে নেই? এতো সহজে সব ভুলে গেলে কিভাবে!
.
(নাফিসা রেহানকে আরও অবাক করে দিয়ে রেহানের নাকটা টেনে দিয়ে বললো….)
.
নাফিসা- সব মনে আছে রে পাগল…. তোর জন্যই তো আমি এখনো কুমারী।
.
(রেহান স্তম্ভিত হয়ে গেছে, এটা কি বললো নাফিসা! সে ঠিক শুনেছে তো! তার গলা ধাধিয়ে আসছে…মুহূর্তে পাশ ফিরে নাফিসাকে নিচে ফেলে রেহান নাফিসার উপর উঠে পড়লো। )
.
রেহান- কি বলেছো? আবার বলো…
.
নাফিসা- কেন একবারে শুনতে পাও না!
.
রেহান- না, শুনতে পাই না।
.
নাফিসা- ডাক্তার দেখাও…. হিহিহিহি…
.
রেহান- আচ্ছা দেখাবো, আগে বলো আমাকে রেখে চলে গিয়েছিলে কেন?
.
নাফিসা- বা রে! আমার গ্রাজুয়েশন শেষ করতে হবে না!
.
রেহান- এখন এসেছো কেন?
.
নাফিসা- বিয়ে করতে আর আমার বরের সাথে থাকতে।
.
রেহান- আমাকে কেন বিয়ে করবে?
.
নাফিসা- ভালোবাসি বলে…
.
রেহান- আগে বলোনি কেন? যদি আমি বিয়ে করে ফেলতাম অন্য কাউকে!
.
নাফিসা- সেই সুযোগ তোমাকে দিলে তো!
.
রেহান- তুমি কিভাবে জানতে?
.
নাফিসা- আব্বুর সাথে কি শশুর আব্বুর এমনিতেই ফ্রেন্ডশিপ! দুবছর আগেই তো আব্বু আম্মু শশুর আব্বু আর শাশুড়ী আম্মুর সাথে কথা বলে বিয়ে পাকা করে রেখেছে…. আর আমি তোমার সব খবরই রেখেছি। গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট থাকলে তখনই বিয়ে হয়ে যেত…. হিহিহিহি….
.
রেহান- হোয়াট!! তার মানে আমি ছাড়া সবাই সব জানতো!
.
নাফিসা- তুমি আর রিয়াদ ছাড়া সবাই…
.
(নাফিসার গালে রেহান তার গাল ঘষতে ঘষতে)
.
রেহান- এই পাগলী তুমি কতো দুষ্টু তা কি জানো….
.
নাফিসা- আহ!
.
(রেহান মাথা তুলে তাকালো নাফিসার দিকে)
রেহান- কি হলো!
.
নাফিসা- দাড়ির ঘষাতে আমার গালটা মনে হয় ছিলে গেছে! ফেসের কি অবস্থা করেছো! বুড়ো একটা! দেখে মনে হয় দুই বাচ্চার আব্বু হয়ে গেছে!
.
রেহান- হাহাহা…. আমার বয়স মাত্র আটাশ বছর। বুড়ি তো তুমি, মেয়েদের টিনএজ শেষ হয়ে গেলে বুড়ি হয়ে যায়। তোমার তো বিশ হবেই….
.
নাফিসা- হুহ!
.
রেহান- তাছাড়া তুমি দুবছর আগে চলে না গেলে হয়তো আজ দুই বাচ্চার আব্বু থাকতাম।
.
নাফিসা- ইশ! স্টুপিড একটা, যেন বছরে বছরে বাচ্চা জন্ম দিতো….
.
(রেহান “হুম” বলে আবার নাফিসার গলায় মুখ গুজে দিলো। নাফিসা শিউরে উঠলো। নাফিসা আস্তে আস্তে বলতে লাগলো… )
.
নাফিসা- এই কি করছো!আমাদের কিন্তু এখনো বিয়ে হয়নি….
.
(রেহান দ্রুত মাথা তুলে নাফিসাকে বললো…)
.
রেহান- এই #বউ পালিয়ে বিয়ে করবে…?
.
.
চলবে……
.
বউ Part- 9
Story: বউ
Part- 9
writer: #Nur_Nafisa
.
.
বাবা ছেলে দুজনেই রিজোয়ান আহমেদ এর কাছে জানতে পারলো…
বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে এসেছিলো তারা। নাফিসাও কনের সাথে পার্লারে যেতে ও বউ সাজতে বায়না করে। বাবা-মায়ের আদরের সন্তান, মেয়ের যে কোন ইচ্ছে পূরণ করতে তারা বাধ্য। কিন্তু পার্লার থেকে ফেরার পথে কনে এক গাড়িতে ছিল আর নাফিসা এক গাড়িতে ছিল অই বাড়ির ই অন্যান্য মেয়েদের সাথে। কনের বাবার সাথে পুরোনো শত্রুতার কারনে কিডন্যাপাররা কনেকে কিডন্যাপ করতে এসে ভুল করে নাফিসাকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর কিডন্যাপারদের পুলিশ ধরতে পেরেছে ঠিকই কিন্তু নাফিসার কোন সন্ধান তারা দিতে পারেনি!
তারপর রিজোয়ান আহমেদ রেহানের খুব কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন নাফিসাকে বাসায় ঠাই দেয়ার জন্য । মেয়েকে দেখার জন্য তিনি ব্যকুল হয়ে পড়লেন। দুপুরের দিকেই রেহানসহ তারা সবাই বাসায় এসে পড়লো।)
.
(নাফিসা রুবিনার সাথে টিভি দেখছিল ড্রয়িং রুমে। রুবিনা দরজা খুলার পর নাফিসা রিজোয়ান আহমেদ কে দেখে “আব্বু…… ” বলে জোরে চিৎকার দিয়ে হাত থেকে রিমোট ফেলে দিয়ে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো। আয়েশা আহমেদ ও রিজোয়ান আহমেদ মেয়েকে পেয়ে খুশিতে আর ক্ষোভে নিরবে চোখের পানি ফেললো। যেন তাদের কলিজাটা ফিরে পেয়েছে আজ। বাকিরা ও তাদের দেখে খুব খুশি। রেহান অপরাধবোধ করছে খুব। সে নিউজ না দিয়ে, খুব বড় ভুল করতে যাচ্ছিলো। বাবা-মা, আর মেয়েটার খুশি কেড়ে নিতে যাচ্ছিলো। সে আর এখানে দাড়িয়ে না থেকে তার রুমে চলে গেলো। রুবিনা চৌধুরী মেহমানের আপ্যায়ন করছে। আর মি. & মিসেস আহমেদ বারবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে চৌধুরী পরিবারের। তারপর বেশ কিছুক্ষণ তারা কথা বললো। রেহান ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে শুনতে পেলো আগামীকালের ফ্লাইটে তারা লন্ডন ফিরে যাবে। নাফিসা ও বেশ খুশি লন্ডন ফিরে যাবার কথা শুনে। সে রেহানের সামনে দিয়ে দৌড়ে ব্যাগ গুছাতে চলে গেলো, কারো বলার অপেক্ষায় থাকেনি। রুবিনা ও রায়হান চৌধুরী রিজোয়ান আহমেদ কে বললেন কাল যেহেতু চলেই যাবে আজ নাফিসা তাদের কাছেই থাকুক। রিজোয়ান আহমেদ আর মানা করতে পারলো না। কয়েক মিনিটে ব্যাগ গুছিয়ে চলে এলো আবার। সবাই নাফিসার কান্ড দেখে অবাক! রেহান স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে কথা শুনছে আর দেখছে। কাউকে কিছু বলতে পারছে না।)
.
রুবিনা- শাশুড়ী আম্মুকে ছেড়ে এতো দ্রুত চলে যাওয়া হচ্ছে! আমার তো ছাড়তে ইচ্ছে করছে না, তোমার কষ্ট হচ্ছে না একটুও?
.
নাফিসা- তোমরাও আমাদের বাসায় যেও?
.
রুবিনা- আচ্ছা! কিন্তু আজ যে আপনি যেতে পারবেন না।
.
নাফিসা- কেন!
.
রায়হান- আর এক দিন ই তো আছো বাংলাদেশে, কাল এখান থেকে এয়ারপোর্টে যাবে।
.
নাফিসা- আব্বু, আমাকে রেখে আবার চলে যাবে না তো!
.
রিজোয়ান- ইম্পসিবল! আমার পাগলী মেয়েকে রেখে আমি কোথায় যাবো! তোমাকে না দেখে থাকতে পারবো!
.
নাফিসা- ওকে।
.
আয়েশা- আমার মেয়েটা একটু পাগলী টাইপের। নিশ্চয়ই পাগলামি করে খুব জালিয়েছে আপনাদের।
.
রায়হান- ওর পাগলামী গুলোইতো আমাদের আনন্দে মাতিয়ে রেখেছে। খুব মিস করবো পাগলীটাকে।
.
(বিকেলে নাফিসাকে এ বাড়িতে রেখে মেহমানরা চলে গেলো। তাদের থাকার জন্য বলা হয়েছে, কিন্তু কাল চলে যাবে তাই বন্দোবস্ত করতে তারা বন্ধুর বাসায় চলে গেলো। সন্ধ্যায় নাফিসা রিয়াদকে পড়িয়েছে, রায়হান চৌধুরীর সাথে দাবা খেলেছে। সবাই একসাথে ডিনার করে তারপর ঘুমাতে চলে গেছে। এর মাঝে রেহানের সাথে নাফিসার কোন কথা হয়নি।
সবাই ঘুমিয়ে যাবার পর রেহান রিয়াদের রুমে এলো। নাফিসা ও রিয়াদ দুজনেই ঘুমিয়ে আছে। রেহান নাফিসার পাশে খাটে বসে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। এই চেহারা দেখে কেন জানি খুব কষ্ট হচ্ছে তার। নেহার সাথে ৩মাসের রিলেশন রেখে ব্রেকাপের সময়ও এতোটা কষ্ট হয়নি।)
.
(বুকে চাপা কষ্ট রেখে ফিসফিসিয়ে বলতে শুরু করলো)
রেহান- এসেছিলে কেন! আবার চলেই বা যাচ্ছো কেন! কি প্রয়োজন ছিলো এতো অল্প সময়ে এমন মায়ায় জড়ানোর! কিভাবে আজ নিশ্চিন্তে এখানে ঘুমাতে পারছো তুমি! ভয় পাচ্ছো না আজ! আমার সাথে কি ঘুমানোর বায়না আর করবে না! বারবার আমার সামনে এসে বলবে না, তুমি আমার #বউ। এই পাগলী #বউ, একটু কথা বলো না তোমার বরের সাথে।
.
(নাফিসা গভীর ঘুমে মগ্ন। রেহান আরও কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে ছিলো। তারপর নাফিসার কপালে গভীরভাবে একটা চুমু খেয়ে নিজের রুমে চলে গেলো। ঘুম আসছে না তার চোখে। )
.
(ছুটির দিন হওয়ায় সবাই আজ বাসায় আছে। রুবিনা সকাল থেকেই অনেক খাবার বানিয়েছেন নাফিসাকে দেয়ার জন্য। সকাল ৮টার দিকে নাফিসার বাবা-মা চলে এসেছে। ১১ টায় ফ্লাইট। নাফিসাও সব কিছু গুছিয়ে তৈরি। রেহান আজ তার রুম থেকে বের হচ্ছে না। শুধু ব্রেকফাস্ট করার জন্য একবার বেরিয়েছিল। নাফিসা তার আম্মুর কাছ থেকে পার্স নিয়ে রিয়াদকে কিছু গিফট দিয়েছে। ৯টার দিকে তারা বেরিয়ে যাচ্ছে, রিয়াদ কান্না করছিলো তার ভাবি চলে যাচ্ছে। রুবিনা চৌধুরী অনেক্ক্ষণ বুকে জড়িয়ে রেখেছে নাফিসাকে। রায়হান ও রুবিনা চৌধুরীর ও খুব কষ্ট হচ্ছে আজ। মেয়েটা বাসায় এসে তাদের মেয়ের অভাব পূরণ করে দিয়েছিলো। আজ আবার সেই মেয়ের অভাব টা তারা অনুভব করছে। সবার সাথে কুশল বিনিময় করে বের হতে যাবে তখন নাফিসা বললো..)
.
নাফিসা- আব্বু আম্মু তোমরা গাড়িতে যাও আমি আসছি…
.
রিজোয়ান- ok, hurry up…
.
নাফিসা- ওকে
.
(নাফিসা দৌড়ে রেহানের রুমে এলো। রেহান বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলো। নাফিসা রেহানের পাশে এসে দাড়ালো। রেহান তাকে একবার দেখে আবার বাইরে তাকিয়ে আছে।)
.
নাফিসা- hey, handsome boy… Look at me.
.
(রেহান কোন রেসপন্স করলো না। নাফিসা জোর করেই তাকে ঘুরিয়ে দিলো তার দিকে।)
.
নাফিসা- Wanna hug me….plz…
.
(রেহান কয়েক সেকেন্ড পলকবিহীন তাকিয়ে এক ঝটকায় নাফিসাকে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরলো, যতটা শক্ত করে ধরা যায়। ইচ্ছে করছে সারাজীবন এভাবে রেখে দিতে। কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না। আটকাতে পারছে না কেন সে! আচ্ছা, এটা কি ভালোবাসা! তাহলে নেহার সাথে কি সম্পর্ক ছিলো! রেহান ভেবে পাচ্ছে না কিছু! ২/৩ মিনিট পর নাফিসা নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে রেহান তাকে ছেড়ে দিলো। নাফিসা রেহানের গালে আলতো করে চুমু দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
.
রেহান স্তব্ধ হয়ে গেল নাফিসার কর্মে! সে তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে…. দোতলা থেকে দেখতে পেল তারা গাড়ি দিয়ে চলে গেছে।
নাফিসার গিফট যে আর দেয়া হলো না! আজই তো লং ড্রাইভে যাওয়ার কথা ছিলো, নাফিসা তো রেহানকে ছেড়ে দেশ ছেড়েই একা একা চলে গেলো। বারবার তার সাথে কেন এমন হয়! যাকে ভালোবাসে সে ই কেন দূরে চলে যায়! তাকে কি বুঝার মতো কেউ নেই! সবাই ধোকা দেয় কেন তাকে! ভেতরে খুব কষ্ট হচ্ছে তার। চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু ছেলেরা চাইলেও সেটা পারে না কেন!
সারাদিন বাসায় এক প্রকার নিরবতা কেটে গেলো। যেন কত দিনের সম্পর্ক এই মেয়েটার সাথে। আজ সবার আনন্দ কেড়ে নিয়ে তাদের থেকে দূরে চলে গেছে! রেহানও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে গেছে, আর কাউকে ভালোবাসবে না, কারো জন্য তার মনে জায়গা নেই। খুব কঠিন বানিয়ে ফেলবে নিজেকে।
.
.
চলবে….
বউ Part- 8
Story: বউ
Part- 8
writer: #Nur_Nafisa
.
.
(রেহান তার রুমে দরজা বন্ধ করে পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি পড়লো। সেখানে লেখা আছে,
লন্ডন প্রবাসী রিজোয়ান আহমেদের একমাত্র মেয়ে নূর নাফিসা পরিবার সহ বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বাংলাদেশে বন্ধুর বাড়িতে। গত শনিবার থেকে মেয়েটিকে পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশের কোন জায়গা তার পরিচিত না। মেয়েটির পড়নে ছিলো বিয়ের পোশাক। কেউ যদি কোন সন্ধান পেয়ে থাকেন তাহলে নিম্নোক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলো।
রেহান- তারমানে নাফিসা সেদিন যা বলেছে সব সত্যি ছিল! তার বাসা লন্ডন! এখন কি নাফিসা তার বাবা মায়ের সাথে চলে যাবে লন্ডনে! না! ও তো আমার #বউ! আমি ওকে যেতে দিবো না। আমাদের কাছে থাকবে ও। ওর সন্ধান কাউকে পেতে দেব না।
.
রায়হান- রেহান, অফিসে যাবি না? দ্রুত আয়…
.
রেহান- হ্যাঁ আব্বু আমি আসছি। তুমি গাড়িতে যাও…
নিউজ পেপার আব্বু পড়লে আব্বু নাফিসাকে ফিরিয়ে দিবে! আব্বুকে পেপার পড়তে দিব না…
.
( তারপর রেহান পত্রিকা তার আলমারিতে রেখে বাবার সাথে অফিসে চলে গেলো। অফিসের নিউজ পেপার ও লুকিয়ে ফেলেছে। অফিসে আজ রেহান তার বাবাকে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে ব্যস্ত রেখেছে যাতে নিউজ পেপার না পড়তে পারে। বিকেলে বাসায় একটু তারাতাড়ি ফেরায় দেখতে পেল রিয়াদ ও নাফিসা মাত্র বল ব্যাট নিয়ে বেরিয়েছে ক্রিকেট খেলার জন্য। তারা দুজন ফ্রেশ হয়ে রেহান তার বাবাকে ও নিচে নিয়ে এলো ক্রিকেট খেলবে বলে। রুবিনা ও এলো। )
.
রেহান- আমরাও খেলবো…
.
রিয়াদ- ইয়েএএএ,
.
নাফিসা- ওকে, একটা আমার টিম আর একটা তোমার টিম। জিতলে গিফট…
.
রেহান- ওকে ডান..
.
রায়হান- আমি নাফিসার টিমে।
.
রিয়াদ- আমিও ভাবির টিমে।
.
রেহান- ?তাহলে আমার টিমে কে! আমি একা!!
.
নাফিসা- ? শাশুড়ী আম্মু যাও অই টিমে…
.
রুবিনা- না, আমি খেলবো না।
.
নাফিসা- তাহলে! ? দারোয়ান ভাইয়াকে নিয়ে আসো।
.
(তারপর রেহান দারোয়ানকে ডেকে নিয়ে এলো। আর রুবিনা হলো আম্পায়ার ?।নাফিসা বরাবরই পাক্কা খেলোয়াড় আবার সাথে আছে রায়হান চৌধুরী। অন্যদিকে রেহান পাক্কা খেলোয়াড় হলেও দারোয়ান একেবারেই অধম। সুতরাং জয়ী হলো নাফিসা টিম ?। নাফিসা ও রিয়াদ তো খুশিতে লাফাচ্ছে আর সাথে বাকিরাও আত্মহারা। রেহান মুগ্ধ হয়ে দেখছে নাফিসা এ বাড়ির সবার সাথে কত সহজে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। প্রতিটি মুহূর্ত সবাইকে আনন্দে মাতিয়ে রাখছে, না রেহান কিছুতেই নাফিসাকে যেতে দিবে না। সে নাফিসাকে সত্যিই তার #বউ বানাবে।)
.
নাফিসা- ইয়েএএ… নাফিসা টিম ইজ উইনার? গিফট দিতে হবে রেহান চৌধুরী ?
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
রেহান- ?ওকে বলো কি চাও?
.
নাফিসা- ছয় তলার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়তে হবে…. ?
.
রেহান- হোয়াট!!!!! ?
.
সবাই- ?
.
নাফিসা- হিহিহিহি ?, আই’ম জাস্ট জোকিং ইয়ার….. লং ড্রাইভে নিয়ে যেতে হবে ?
.
রেহান- ?ওকে….. বাট আজ না, পরশু দিন অফিস অফ আছে, সেদিন নিয়ে যাবো।
.
নাফিসা- ওকে।
.
রিয়াদ- আমিও যাবো…..
.
নাফিসা- ওকে মটো….?
.
রাতে ডিনারের সময়,
রিয়াদ- ভাইয়া, আমার কালার বক্স এনেছো?
.
রেহান- হুম।
.
রিয়াদ- কোথায়?
.
রেহান- আমার বেড সাইড টেবিলে রাখা আছে।
.
রিয়াদ- ওকে। ভাবি আজ কিন্তু বাকি পেইন্টিং শেষ করবা।
.
নাফিসা- ওকে, দ্রুত ডিনার শেষ করো। এখনি শেষ করবো।
.
রিয়াদ- ওকে?
.
(নাফিসা ও রিয়াদ দ্রুত ডিনার শেষ করে চলে গেলো রিয়াদের রুমে। বাকিদের খাবার ও শেষ।)
রায়হান- রেহান, তোকে না বলেছিলাম ছাপাখানায় যেতে। যাসনি কেন?
.
রেহান- ? মনে ছিলো না।
.
(চেয়ার থেকে উঠে যেতে যেতে কথাটা বলে সেখানে দাঁড়িয়ে না থেকে দ্রুত নিজের রুমে চলে গেলো। রায়হান চৌধুরী ও রুবিনা চৌধুরী বেশ বুঝতে পেরেছেন রেহান নিশ্চই এখন মিথ্যে কথাটি বলে গেলো তাদের। রেহান নিশ্চয়ই চাইছে না নিউজটা পত্রিকায় দিতে।)
.
(৬ষ্ঠ দিন……
নামাজ পড়ে সকালে ব্যায়ামের পর রেহান বাগানের পাশে সুইমিং পুলে সাতার কাটছে। নাফিসা রিয়াদের রুমের জানালা দিয়ে দেখতে পেল রেহানকে।)
.
নাফিসা- রিয়াদ, ফুটবল কোথায়?
.
রিয়াদ- কেন? এখন ফুটবল খেলবে?
.
নাফিসা- না, তারাতাড়ি ফুটবল দাও।
.
রিয়াদ- এই যে, নাও….
.
নাফিসা- ? চলো চলো….
.
রিয়াদ- কোথায়?
.
নাফিসা- আমার পিছু পিছু চলো…
.
(নাফিসা ফুটবল ও রিয়াদকে সাথে নিয়ে দৌড়ে ছাদে চলে গেলো। তারপর কর্ণারে রেলিং এর পাশে এসে ছয় তলার ওপর থেকে ফুটবল দিয়ে রেহানকে ঢিল মারলো। সোজা রেহানের মাথায়! ? রেহান অবাক হয়ে এদিক সেদিক তাকালো কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না। আর রেহানের অবস্থা দেখে ছাদে দাড়িয়ে রিয়াদ ও নাফিসা হাসতে লাগলো ?। এদিকে রেহান আশেপাশে খুজেই যাচ্ছে, বল তো আর নিজে নিজে আসেনি, কেউ তাকে ঢিল মেরেছে! কিন্তু কে! তারপর রিয়াদ চিৎকার করে রেহানকে ডাকলো..)
.
রিয়াদ- ভাইয়ায়ায়ায়ায়া…..
.
( এবার রেহান উপরে তাকিয়ে দেখলো ছাদে দাড়িয়ে নাফিসা আর রিয়াদ হাসছে। তার আর বুঝতে বাকি নেই এটা নাফিসা ঢিল মেরেছে। রেহান পানিতে থেকে ফুটবল এ ভড় করে সাতার কাটছে আর নাফিসাকে দেখছে। সে হাতে ইশারা করে দুজনকে ডাকলো সুইমিং পুলে আসার জন্য। রিয়াদ দ্রুত ছাদ থেকে নেমে এসে পুলে নেমে পড়লো রেহানের সাথে গোসল করতে । আর নাফিসা দোতলায় রিয়াদের রুমে বারান্দার গ্রিল ধরে দাড়িয়ে আছে। রেহান আবারো ইশারায় ডাকলো তাকে পুলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু নাফিসা না করলো সে যাবে না। রেহান রিয়াদ পানিতে ফুটবল খেলে বাসায় চলে এলো। রেহান বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখলো তার বাবা-মা তার রুমে দরজা লক করে খাটে বসে আছে।)
.
রেহান- (মাথা মুছতে মুছতে) আব্বু আম্মু তোমরা এখানে?
.
রায়হান- বস এখানে। কথা আছে তোর সাথে।
.
রেহান- (সোফায় বসে) বলো…
.
রুবিনা- এই পত্রিকা তোর আলমারিতে কেন?
.
রেহান- ?!
.
রুবিনা- দিন দিন বড় হচ্ছিস আর তোর বুদ্ধি কি লোপ পাচ্ছে নাকি! ? ভাগ্যিস, জামাকাপড় ময়লা হয়েছে কিনা দেখতে আলমারি খুলেছিলাম। তা না হলে তো এটা পেতাম ই না কখনো!
.
রেহান- ওফফ!?
.
রায়হান- রুবিনা শান্ত হও, আমি বলছি….
রেহান, তুই কি চাইছিস তা আমরা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছি। কিন্তু এটা কি আদও সম্ভব!
.
রেহান- আব্বু, কেন সম্ভব নয়! নাফিসা আমাদের এখানে বেশ ভালো আছে। তার তো কোন প্রব্লেম হচ্ছে না। আমরা তার সন্ধান কাউকে না দিলেই হয়। সে তো একবারও বলছে না এখান থেকে যাবার কথা!
.
রায়হান- বাবা মায়ের কাছ থেকে সন্তান হারিয়ে গেলে তারা কত কষ্ট পায় তা কি একটুও বুঝতে পারছিস! তার উপর নাফিসা রিজোয়ান আহমেদের একমাত্র সন্তান। তারা কতটা কষ্টে আছে মেয়েকে না পেয়ে সেটা কি একবারও ভেবে দেখেছিস! আমার ছেলে দয়ালু সেটা জানতাম কিন্তু এতোটা পাষাণ হতে পারে তা আমি কখনো ভাবতে পারিনি!
দেখ বাবা, সন্তান সামান্য জ্বরে ভুগলে বাবা-মা ছটফট করে তার সন্তানকে দ্রুত সুস্থ করে তোলার জন্য। কোনো বাবা মা ই চায় না তার সন্তান চোখের আড়াল হোক। তোকে সবসময়ই বলি সারাদিন বাইরে থাকলেও সন্ধ্যার পর যেন ঘরে দেখি। তোর মা কিছুক্ষণ পর পর ফোন করে খোঁজ নেয়। কারণ অন্ধকার নেমে এলেই মন ছটফট করে ছেলে কোথায় আছে, কি করছে! আর মেয়েটি ৬দিন ধরে বাবা মায়ের কাছ থেকে দূরে আছে, তাহলে তাদের কি হাল হতে পারে! আজ হয়তো বুঝতে তোর বিবেক বাধা পাচ্ছে। কিন্তু যেদিন তুই বাবা হবি সেদিন বুঝবি সন্তান কি জিনিস।
.
(বাবার কথাগুলো শুনে রেহানের চোখ লাল হয়ে গেছে। বুকের ভেতরে খুব কষ্ট হচ্ছে তার। এক নাফিসাকে হারাতে হবে, আর অন্যদিকে সে কোন এক বাবা-মা কে কষ্ট দিতে যাচ্ছিলো। সে ও তো তার বাবা-মা কে, ভাইকে খুব ভালোবাসে। তাহলে নাফিসাও নিশ্চয়ই তার বাবা মাকে খুব ভালোবাসে। এজন্যই তো বারবার কান্না করলে বলতো “আমি আব্বু আম্মুর কাছে যাবো “।)
রেহান- পত্রিকায় ফোন নম্বর ও এড্রেস দেয়া আছে, কল করে বলে দাও।
.
(কথাটি বলে রেহান অফিসের জন্য তৈরি হতে চলে গেলো। ব্রেকফাস্ট করার সময় রেহান অল্প কিছু খেয়েই উঠে পড়লো। তারপর বাবার সাথে অফিসে চলে গেলো। এইটুকু সময়ে সে কারো সাথে তেমন একটা কথা বলেনি। রায়হান চৌধুরী রিজোয়ান আহমেদ কে কল করে তাদের অফিসের ঠিকানা দিলেন। তার বন্ধুসহিত রিজোয়ান আহমেদ ও তার স্ত্রী আয়েশা আহমেদ তাদের অফিসে এলো। বাবা ছেলে দুজনেই রিজোয়ান আহমেদ এর কাছে জানতে পারলো…)
.
.
চলবে…..
বউ Part- 7
Story: বউ
Part- 7
writer: #Nur_Nafisa
.
.
৫ম দিন
(সকালে রেহানের ঘুম ভেঙে গেলো। চোখ খুলেই নাফিসার চেহারাটা দেখলো, কারণ রেহান ও নাফিসা পাশ ফিরে মুখোমুখি শুয়ে আছে । নাফিসা ১ হাতে রেহানের গলা জড়িয়ে আছে। আর রিয়াদ পেছন থেকে হাত পা সব রেহানের উপর তুলে দিয়েছে। একটু নড়াচড়া করার সুযোগ নেই রেহানের। নাফিসার মুখটা রেহানের খুব কাছে। ঘুমন্ত মুখটা খুবই মায়াবী দেখাচ্ছে। ফর্সা মুখের ঠোঁট গোলাপি, চোখের পাপড়ি ও ব্রু ঘন কালো। রেহান মুগ্ধ হয়ে দেখছে তাকে। আর মনে মনে ভাবছে, মেয়েটা সত্যি সত্যি তার #বউ হলে সমস্যা কি! না কোনো সমস্যা নেই! এখন তো আর নেহার সাথে বা অন্য কোন মেয়ের সাথে সম্পর্ক নেই রেহানের ! আর মেয়েটা নিজেই তো রেহানের #বউ বলে পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। নাফিসার দিকে তাকিয়ে ভাবনার মুহুর্তেই রেহানের মুখে হাসি ফুটে উঠলো আর মুখ ফসকে অস্ফুট স্বরে একটি শব্দ বেরিয়ে এলো “#বউ ” ?।
রেহান বেশ কিছুক্ষণ নাফিসার দিকে তাকিয়ে ছিলো। তারপর জানালার গ্লাসের দিকে তাকিয়ে দেখলো বাইরে আলো ফুটতে শুরু করেছে, নামাজের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। সে কোন মতো নিজের ১টা হাত মুক্ত করে নাফিসার হাতটা সরিয়ে রিয়াদের হাত পা ও সরালো। তারপর রিয়াদ ও নাফিসাকে ডাকতে শুরু করলো। নাফিসা ঘুমের মধ্যেই রেহানের গলা জড়িয়ে আরো কাছে টেনে বলতে লাগলো, “আম্মু ঘুমাতে দাও তো। এখন উঠবো না।” রেহান হাসলো তার কথা শুনে। আবার নাফিসার হাত সরিয়ে রিয়াদকে ঠেলে বিছানা থেকে নেমে জোরে জোরে ডাকতে শুরু করলো দুজনকে। দুজনেই লাফিয়ে উঠে।)
.
রিয়াদ- ওফ! ভাইয়া সকাল সকাল কি শুরু করেছো!
.
রেহান- দ্রুত উঠে নামাজ পড়, না হলে আম্মুকে ডেকে নিয়ে আসবো এখন।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
(সবাই উঠে নামাজ পড়ে নিলো। রেহান ব্যায়ামাগার থেকে জানালা দিয়ে দেখতে পেল রায়হান চৌধুরী, রুবিনা চৌধুরী ও নাফিসা নিচে হাটাহাটি শুরু করেছে। রেহানও রিয়াদকে সাথে নিয়ে তাদের সাথে যোগ দিলো সাথে একটা ফুটবল নিয়ে গেলো।)
.
রায়হান- সকাল সকাল ফুটবল!
.
রেহান- ফুটবল খেলাটা ও অন্যরকম একটা ব্যায়াম ?
.
রুবিনা- ? তোদের ব্যায়ামের আর কতো কৌশল দেখবো!
.
নাফিসা- শাশুড়ী আম্মু, তুমি ব্যায়াম খুব কম করো কেন ! ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে।
.
রুবিনা- আল্লাহর রহমতে আমি এমনিতেই পারফেক্ট। আর তোমার শশুর আব্বুকে দেখো এতো ব্যায়ামের পরও মেদ বাড়িয়ে নিয়েছে! ? ?
.
রায়হান- ?(রুবিনাকে) সারাটাজীবন আমার সাথে এভাবে লেগে থাকো কেন বলতো!
.
নাফিসা- বেশি ভালোবাসে বলে ?
.
(রুবিনা কিছু বলার আগেই নাফিসা উত্তর দিয়ে পা দিয়ে বল ঠেলতে ঠেলতে তাদের থেকে সামনে এগিয়ে গেলো, পিছু পিছু রিয়াদ ও ছুটলো। আর বাকিরা সবাই ই মুচকি হাসলো। কারণ ভুল বলেনি তো নাফিসা। সত্যি কথাটাই বলে গেছে। বাবা মায়ের মুখে প্রশান্তির হাসি দেখে রেহানের ও খুব ভালো লাগলো তারপর রেহানও দৌড়ে নাফিসা ও রিয়াদের কাছে গিয়ে ৩জনে ফুটবল খেলতে লাগলো। মি. ও মিসেস চৌধুরী দোলনায় বসে দেখছে আর ভাবছে মেয়েটা তাদের বাড়িতে এসে সবাইকে আনন্দিত করে রাখছে। রিয়াদ খেলার সাথি পেয়েছে, রেহান ছেলেটা নেহার সাথে ব্রেকাপের পর একদম বিষন্ন থাকতো এখন সে ও কতো আনন্দিত। দুজনেই সন্তানদের কথা ভেবে প্রশান্তির নিশ্বাস ছাড়লো। এই পরিবারের সবাই সবার সাথে ফ্রী। রেহান নেহার কথাও বাবা মায়ের কাছে লুকায়নি। প্রত্যেকেই বন্ধুসুলভ আচরণ করে একে অপরের সাথে।)
.
(ব্রেকফাস্টের পর রিয়াদ স্কুলে চলে গেছে, রেহান ও রায়হান চৌধুরী অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছে। আর নাফিসা ও রুবিনা ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছিল এমন সময় কলিং বেল বাজলে রুবিনা উঠে দরজা খুলে দেখলো নেহা এসেছে।)
নেহা- কেমন আছেন আন্টি? ?
.
রুবিনা- আলহামদুলিল্লাহ। তুমি কেমন আছো?
.
নেহা- এইতো ভালো। রেহান বাসায় নেই?
.
রুবিনা- হ্যাঁ, আছে। অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছে। আসো ভেতরে এসে বসো।
.
(নেহা রুবিনার সাথে ড্রইং রুমে এসে বসলো। সোফায় বসতেই নাফিসার দিকে চোখ পড়লো। এর আগে ২বার এসেছে এ বাড়িতে, কখনো এই মেয়েকে দেখেনি। আর নেহার জানামতে রেহানের কোন বোন নেই। তাহলে ও কে! নাফিসা একবার নেহাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিয়ে আবার টিভি দেখায় মনোযোগ দিল।)
.
রুবিনা- নেহা ব্রেকফাস্ট করে নাও…
.
নেহা- না, আন্টি। আমি ব্রেকফাস্ট করে এসেছি। রেহানের সাথে একটু কথা আছে তাই এসেছি।
.
রুবিনা- ওহ আচ্ছা, বসো ও এখনি আসবে।
.
নেহা- আন্টি ও কে?
.
(রুবিনা কিছু বলার আগেই নাফিসা জবাব দিলো….)
নাফিসা- #বউ।
.
নেহা- সরি? বউ মানে?
.
রুবিনা- এ বাড়ির বউ।?
.
নেহা- ? এ বাড়ির বউ মানে!!! কার বউ?
.
(পেছন থেকে)
রেহান- আমার #বউ।
.
নেহা- ?whatt!!! কি বলছো এসব!
.
রেহান- ? yes… যা শুনেছো তাই বলেছি। ও আমার #বউ।
.
নেহা- রেহান, কি যা তা বলছো এসব! তুমি না আমাকে ভালোবাসো!
.
রেহান- ব্রেকাপ করে দিয়েছি তো…. মিস নেহা।
.
নেহা- ? এবার বুঝেছি কেন ব্রেকাপ করেছো! তুমি আমাকে বলো আমি দুশ্চরিত্রা! এদিকে তুমি যে ঘরে মেয়ে নিয়ে বসে আছো সেসব কিছু না! আরে দুশ্চরিত্রতা তো তুমি নিজেই।
.
(কথা বলে শেষ করতে পারে নি নেহা, এদিকে নাফিসা নেহার উপর ঝাপিয়ে পড়েছে। নেহার গলা চেপে ধরেছে…! নেহা ছুটার জন্য হাত পা ছুড়ছে! রুবিনা আর রেহান রীতিমতো শকড নাফিসার আচরণে !? তারা দুজনেই নাফিসাকে টেনে সরাতে চাইছে, নাফিসা ছাড়ছেই না কিছুতে।)
.
নাফিসা- তুই এভাবে কথা বলেছিস কেন! আমার হাসব্যান্ড এর দুশ্চরিত্র, শাশুড়ী আম্মু ছাড়ো আজ ওর খবর নিয়ে ছাড়বো…. ?
.
রুবিনা- আরে ও মরে যাবে তো।
.
রেহান- নাফিসা, ছাড়ো বলছি…..
.
( রেহান হেচকা টান দিয়ে নাফিসাকে ছাড়িয়ে নিজের কাছে জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে রইল। নাফিসা রেহানের থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু রেহানের শক্তির কাছে পারছে না। নেহা যেন হাফ ছেড়ে বাচলো। রুবিনা ১গ্লাস পানি এনে নেহাকে খাওয়ালেন।)
.
নাফিসা- ছাড়ো আমাকে… ?
.
রেহান- নাফিসা শান্ত হও…
.
নেহা- ?এসেছিলাম সবকিছু মিটিয়ে নতুনভাবে সম্পর্কটা গুছাতে, এখন বুঝতে পারছি এখানে আসাটাই ভুল হয়েছে। আগে জানলে কখনো আসতাম না…. গুড বাই….
.
রেহান- আরে যাও না… কে বলেছিল তোমাকে আসতে…. যত্তসব ফালতু ?
.
( নেহা চলে গেলো আর এদিকে নাফিসা এতোক্ষণ ছুটার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেও পারলো না, অবশেষে কেরাতি স্টাইলে রেহানের পা মেরে ছাড়া পেল।)
.
রেহান- আউচ….!
.
রুবিনা- ?
.
নাফিসা- ?
.
(নাফিসা রেগে রুমে চলে গেলো। আর রেহান সোফায় বসে পা মালিশ করতে শুরু করলো। ব্যাথা পেয়েছে খুব। অবশ্য রেহান তাকে এখন এমনিতেই ছেড়ে দিতো, বেচারা একটু লেট করে ফেলেছে ?)
.
রুবিনা- ব্যাথা পেয়েছিস?
.
রেহান- না, ঠিক আছি। দেখো আব্বু রেডি হয়েছে কিনা! লেট হয়ে যাচ্ছে…
.
রুবিনা- আচ্ছা দেখছি। আরেকজন যে কি! মনে হচ্ছে মেয়েদের মতো মেকাপ করা শুরু করেছে…..
.
রেহান- ?
.
(রুবিনা চলে গেলে দারোয়ান দরজার কাছে এলো পত্রিকা নিয়ে)
রেহান- রেখে যাও। আজ এতো লেট করে পত্রিকা দিলো কেন?
.
দারোয়ান- কি জানি !
.
(দারোয়ান টেবিলে পেপার রেখে চলে গেলো। রেহানের চোখ পত্রিকার উপর পড়তেই দেখলো কর্ণারে নাফিসার ছবি! ? সে দ্রুত হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো ভালো ভাবে। হ্যাঁ এটা নাফিসা ই। ২টা ছবি দেয়া পত্রিকায়। ১টা তে শুধু হাসিমাখা ফেসটা দেয়া, আর ১টা তে নাফিসা অনেক গুলো লাল বেলুন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কালো জিন্স ও সাদা টিশার্ট, সাদা-কালো মিশ্রিত কেডস সো পড়ে…! রেহান পত্রিকা নিয়ে দ্রুত তার রুমে চলে গেলো। খুব ভয় হচ্ছে তার। সে কি নাফিসাকে হারিয়ে ফেলবে!!! ?)
.
.
চলবে….
বউ Part- 6
Story: বউ
Part- 6
writer: #Nur_Nafisa
.
.
বিকেলে রেহান ও তার বাবা একসাথে বাসায় ফিরলো। প্রতিদিন এসময় বাসায় ফিরে দেখে নাফিসা আর রিয়াদ বাসার সামনে ফাকা জায়গায় ক্রিকেট খেলে কিন্তু আজ খেলছে না।
.
রায়হান- আজ খেলোয়াড়রা কোথায়!
.
রেহান- মুড অফ!
.
রায়হান- কি বলেছিস এমন মুড অফ হয়ে গেছে!
.
রেহান- উচু গলায় কথা বলাতেই এমন।
.
রায়হান- মেয়েটা একটু অন্যরকম। হয়তো ছোট থেকে বেশি আদরে লালিত পালিত হয়েছে। এমন বিহেভ করিস না ওর সাথে।
.
রেহান- তোমাদের মতো তো এতো সহজে সব বুঝতে পারি না!?
.
রায়হান- ছাপাখানায় গিয়েছিস?
.
রেহান- ☹️ না, মনে ছিল না।
.
রায়হান- আচ্ছা কাল যাবি….. এখন তো কিছু একটা করে মুড টা অন করতে হবে, ?
.
রেহান- হুম?.
.
(কথা বলতে বলতে বাবা ছেলে গাড়ি পার্কিং করে দোতলায় চলে এলো। রুবিনা দরজা খুলে দিলো)
.
রায়হান- বউ মা কোথায়?
.
(রেহান বাবার কথা শুনে ঠোঁটের কোনায় হাসির রেখা ফুটিয়ে তুললো।)
.
রুবিনা- বাব্বাহ! এসেই বউ মায়ের খোজ! রিয়াদের রুমে আছে। পেইন্টিং করছে রিয়াদের সাথে।
.
রায়হান- মুড কি অন হয়েছে?
.
রুবিনা- মনে হয় ২০%….
.
রেহান- সারাদিন বাসায় থেকে মাত্র ২০% ঠিক করেছো!?
.
রায়হান- হাহাহা….. ? তোর মায়ের জন্য এটাই অনেক!
.
রুবিনা- চুপ থাক, তুই কোন কথা বলবি না। তোর জন্যই তো সারাদিন মেয়েটা মুড অফ করে রেখেছে! ভাগ্যিস কাল গেইট খোলা ছিলো না। সবসময় না বুঝে বেশি বেশি করে ফেলিস?
.
রেহান- আচ্ছা, বললাম না কোন কথা।
.
(তারপর রেহান রিয়াদের রুমে একবার উকি দিয়ে আবার নিজের রুমে চলে এসে ফ্রেশ হলো। তোয়াল নিয়ে চুল মুছছে এমনি রিয়াদ এসে হাজির)
.
রেহান- তুই এখানে কেন?
.
রিয়াদ- তোমার ফোন দাও।
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
রেহান- কেন?
.
রিয়াদ- ভাবি বলেছে।
.
(রেহান নাফিসার কথা শুনে আর কিছু না বলে ফোন দিয়ে দিলো রিয়াদের কাছে। কিন্তু রিয়াদ ফোন নিয়ে নাফিসার কাছে যায়নি। এই রুমে দাড়িয়েই কিছু করছে।)
.
রেহান- কি করছিস তুই? এখন না বললি নাফিসা বলেছে ফোন নিয়ে যেতে?
.
রিয়াদ- ভাবি ফোন নিয়ে যেতে বলেনি ফোন থেকে ভাবির সব ছবি ডিলিট কিরে যেতে বলেছে। আমি সেটাই করছি।
.
রেহান- ?
.
(রেহান দ্রুত রিয়াদের হাত থেকে ফোন নিয়ে নিলো)
.
রেহান- যা বের হ এখান থেকে ?
.
রিয়াদ- তুমি এমন করছো কেন! যার ছবি সে ই তো বলেছে ডিলিট করতে।
.
রেহান- যেতে বলেছি এখান থেকে ?
.
(রিয়াদ চলে গেলো। রেহানের প্রচুর রাগ হচ্ছে রিয়াদের উপর। ছবি গুলো চেক করে দেখলো কয়েকটি ডিলিট করে ফেলেছে এখনও অনেক বাকি আছে। তারপর ফোনের পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে দিলো। এবার রেহান রিয়াদের রুমে এসে দেখলো নাফিসা আর রিয়াদ খাটে বসে পেইন্টিং করছে জল রঙ দিয়ে। রেহান ও তাদের পাশে বসলো। নাফিসা দেখেও না দেখার মতো নিজের কাজ করতে লাগলো। রেহান লক্ষ করলো নাফিসা চমৎকার একটা দৃশ্য অঙ্কন করছে। দৃশ্যটা রাতের। বিশাল সমুদ্রের তীরে একসাথ ৩টি নারিকেল গাছ, আকাশে চাঁদ, চাদের ঠিক বরাবর পানিতে কিছু একটা আকছে, নৌকা হবে হয়তো। এখনো এটা কমপ্লিট হয়নি। )
.
রেহান- রিয়াদ, আম্মু তোকে ডাকছে।
.
রিয়াদ- কেন?
.
.
রেহান- আমি কি জানি! গিয়ে দেখ, কিছু দিবে হয়তো তোকে…
.
(রিয়াদ দৌড়ে চলে গেলো।)
রেহান- নাফিসা, সরি বলেছি তো! এমন চুপচাপ থাকলে তোমাকে একদম ভালো দেখায় না।
.
(নাফিসা তার কথায় কোন রেসপন্স করছে না। নিজের কাজ করতে ব্যস্ত)
.
রেহান- সরি, #বউ….
.
নাফিসা- ?
.
(এবার নাফিসা রেহানের দিকে তাকালো শুধু, কিন্তু কিছু বললো না। রেহান একটু মুচকি হাসলো। তারপর রঙের কোটা থেকে আঙুল দিয়ে একটু নীল রঙ নিয়ে নাফিসার নাকে লাগিয়ে দিয়ে আবার বললো…..)
.
রেহান- সরি বউ….?
.
নাফিসা- ??
.
(ব্যাস দিলো রাগিয়ে…. নাফিসা তার আর্ট পেপার টা সাইডে রেখে এক হাত পুরো রঙে মেখে রেহানের মুখে মেখে দিলো তারপর নাফিসা খিলখিল শব্দ করে হাসতে লাগলো। রেহানকে পুরো বেড়ালের মতো দেখাচ্ছে । রেহান এবার রঙের ব্রাশটা নিয়ে নাফিসার গালে রঙ লাগিয়ে দৌড় দিতে গেলে রিয়াদ দরজার সামনে আটকিয়ে ধরলো, টেনে রেহানের টিশার্ট ধরে রইল। তারপর নাফিসা রঙের ট্রে নিয়ে সব রঙ রেহানের গায়ে ঢেলে দিলো। তার সাদা টিশার্ট বিভিন্ন রঙে রঙিন হয়ে উঠলো। রিয়াদ আর নাফিসা এবার প্রাণ খুলে হাসতে লাগলো। রেহান কিছুটা তৃপ্তি পেল নাফিসার হাসি দেখে।?তারপর রেহান বেরিয়ে এলো রুম থেকে। ড্রয়িং রুমে রুবিনা ও রায়হান চৌধুরী ছেলেকে দেখে অবাক!?)
.
রুবিনা- একি অবস্থা তোর!
.
রায়হান- রঙের পুকুরে ঝাপিয়ে এসেছিস নাকি!?
.
রেহান- রঙের পুকুরে ঝাপাইনি, তোমার বউ মায়ের মুড ১০০% অন করে এলাম।।
.
রুবিনা- হাহাহা….. ?
.
(এরই মাঝে রিয়াদ এসে কান্না করতে করতে রেহানকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি দিতে লাগলো। রেহান দৌড়ে গিয়ে বাবার পেছনে লুকালো। রিয়াদ তাকে ধরার জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু করলো। )
.
নাফিসা- হিহিহিহি….. ?
.
রুবিনা- এই কি শুরু করলি!?
.
রেহান- (এই ছেলের আবার কি হলো! এখন ই না হাসছিল!) এই তুই আমাকে মারছিস কেন?
.
রায়হান- (রিয়াদকে কোলে নিয়ে) আরে! আরে! কি হয়েছে?
.
রিয়াদ- আব্বু, ভাইয়া আমাকে মিথ্যে বলে আম্মুর কাছে পাঠিয়ে ওইদিকে আমার সব রঙ নষ্ট করে দিয়েছে ???
.
রুবিনা- তোদের নিয়ে আর পারিনা!?
.
রেহান- এই রঙ তো আমিই এনে দিয়েছি?
.
রায়হান- নষ্ট করেছে তো কি হয়েছে! জরিমানা স্বরূপ রেহান রিয়াদকে আবার এনে দিবে। ?
.
রিয়াদ- কালকের মধ্যে আমার নিউ কালার বক্স চাই। ?
.
রেহান- এএএএ!?
.
(রাতে রায়হান চৌধুরী নাফিসাকে কেরাম খেলার প্রস্তাব দিলো। নাফিসার মুড এখন সম্পূর্ণ ঠিক হয়েছে। রিয়াদের ছোট কেরাম বোর্ডে খেলছে নাফিসা, রেহান, রিয়াদ ও রায়হান চৌধুরী। রুবিনা তাদের পাশে বসে খেলা দেখছে। সবাই লক্ষ করলো নাফিসা খুব দক্ষতার সাথে খেলছে।)
.
রায়হান- নাফিসা তো দেখছি একদম পাক্কা খেলোয়াড়!
.
নাফিসা- ?হুম, আমি সব খেলাতে ই চ্যাম্পিয়ন। আব্বু আমাকে শিখিয়েছে সব। আব্বুর সাথে প্রায়ই খেলি।
.
(বাবার কথা মনে করে যাতে আবার কান্না না করে সেজন্য রায়হান চৌধুরী কথার মোড় অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলেন)
রায়হান- আচ্ছা! কি কি খেলা খেলতে পারো তুমি?
.
নাফিসা- ক্রিকেট, হকিস্টিক, ফুটবল, বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন, কেরাম, দাবা, লুডু, কার রেস, ফাইটিং।
.
রেহান- ?
.
রুবিনা- ওয়াও, লুডু আমার প্রিয় খেলা?
.
রায়হান- তুমি লুডু ছাড়া আর পারোই কি!?
.
রুবিনা- ?
.
সবাই- হাহাহা…… ?
.
রায়হান- তাহলে তো তোমার সাথে একদিন দাবা খেলে দেখতেই হয়!
.
রেহান- হুহ! এখন আমি বাদ?
.
রায়হান- হিংসুটে ছেলে ?
.
(তারপর সবাই ডিনার করে যার যার রুমে চলে গেলো। নাফিসা রিয়াদের সাথে বিছানায় শুয়ে গল্পের বই পড়ছে ভুতের গল্প। সম্পূর্ণ গল্পটি নাফিসা পড়ে শুনালো। দুজনেরই এখন ভয় লাগছে।)
(রেহান লাইট অফ করে শুয়ে ছিলো। হঠাৎ কেউ দরজা ধাক্কা দিয়ে খুলে ফেললো। রেহান টেবিল ল্যাম্প টা জালিয়ে দেখিলো রিয়াদ ও নাফিসা দুজনেই বালিশ নিয়ে দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে।)
.
রেহান- কি হয়েছে? তোমরা এখানে কেন?
.
(নাফিসা ও রিয়াদ একে অপরের দিকে তাকিয়ে রেহানকে কোন উত্তর না দিয়ে সেকেন্ডের মধ্যে দৌড়ে এসে রেহানের দুপাশে দুজনে রেহানকে ঝাপটে ধরে শুয়ে পড়লো!)
.
রেহান- আরে আরে! কি হচ্ছে এসব!
.
নাফিসা- ভুত….!???
.
রেহান- কিসের ভুত! কোথায় ভুত!
.
রিয়াদ- ভাইয়া, ওই রুমে ভুত আছে, ভয় করছে। আজ তোমার সাথে থাকবো।
.
রেহান- ভুত বলতে কিছু নেই। যা ওই রুমে যা….
.
নাফিসা- নো নো, ভয় লাগছে খুব। প্লিজ আজ এখানে থাকবো ?
.
(রেহান আর কিছু বললো না। একসাথেই ৩ জন ঘুমিয়ে পড়লো।)
.
.
চলবে…….
বউ Part- 5
Story: বউ
Part- 5
writer: #Nur_Nafisa
.
.
কিছুক্ষণ পর,
রিয়াদ- আম্মু ভাবি কোথায়? ভাবি ঘুমাবে না?
.
রুবিনা- দেখ রেহানের রুমে না হয় নাফিসার রুমে হবে হয়তো।
.
রিয়াদ- রেহান ভাইয়ার রুমে ভাইয়া একা, আর বাকি সব রুমে দেখেছি ভাবি নেই। আমি ভাবলাম ভাবি তোমাদের রুমে এসেছে।
.
রায়হান- এখানে আসেনি তো। ড্রইং রুমে ও নেই?
.
রিয়াদ- না।
.
রায়হান- কি বলিস! কোথায় গেছে তাহলে?
.
( রুবিনা, কিচেনে দেখে এলো সেখানে নেই। কিচেন থেকে বের হতেই দেখলো মেইন দরজা খোলা। সবাই তো বাসায় ই আছে তাহলে মেইন দরজা খুললো কে! নাফিসা আবার এতো রাতে বাইরে বেরিয়ে যায়নি তো! এদিকে রিয়াদ আর রায়হান চৌধুরী রেহানের কাছে গেলো।)
.
রায়হান- রেহান, নাফিসা কোথায়?
.
রেহান- জানিনা।
.
রায়হান- সেকি! তাহলে কোথায় গেছে মেয়েটা!
.
রেহান- ? কোথায় গেছে মানে! ঘরে নেই?
.
রিয়াদ- না..
.
(রুবিনা রেহানের রুমে এলো দৌড়ে)
রুবিনা- মেইন দরজা খোলা কেন? নাফিসা কি বাইরে বের হয়েছে!
.
(কথাটা শুনে রেহানের মনে ছ্যাত করে উঠে! রেহান তো নাফিসাকে চোখের সামনে থেকে বের হয়ে যেতে বলেছে! সে কি এতো রাতে বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে! রেহান দ্রুত বিছানা থেকে নেমে গেলো।)
রেহান- ঘরে দেখেছো তো ভালো করে?
রিয়াদ- হ্যা আমি সব দেখেছি। ভাবি আবার ছাদে চলে যায়নি তো!
.
রেহান- আব্বু তুমি ছাদে দেখে আসো আমি নিচে যাই…
.
(কথা বলে রেহান ফোন নিয়ে দ্রুত নিচে নেমে এলো। গেইট তো তালা দেয়া। ইকবাল ভাই(দারোয়ান) তো এখনেই ঘুমাচ্ছে! দারোয়ান কে ডেকে তুললো রেহান)
রেহান- ভাইয়া, নাফিসাকে দেখেছো?
.
দারোয়ান- নাফিসা আবার কেডা?
.
রেহান- আরে আমাদের বাসায় যে মেয়ে থাকে, তাকে দেখেছো?
.
দারোয়ান- অ… বড় ভাবি?
.
রেহান- ( এই লোক ও ভেবে নিয়েছে আমার #বউ !) হ্যাঁ…. এখন দেখেছো তাকে?
.
দারোয়ান- না তো। বিকালে দেখছিলাম।
.
রেহান- গেইটে তালা লাগিয়েছো কখন?
.
দারোয়ান- সন্ধ্যায়। আপনারা ইশার নামাজ পড়ে আইছেন পরে।
.
রেহান- (তাহলে তো বাইরে বের হতে পারবে না! কোথায় গেছে! ঘরেই কোথাও লুকিয়ে আছে হয়তো! কিন্তু আম্মু যে বললো মেইন দরজা খোলা ছিলো! আবার ঘরের দিকে যেতে নিলে এমনি ফোন টা বেজে উঠে )
হ্যালো আব্বু, পেয়েছো?
.
রায়হান- না, ছাদে নেই।
.
রেহান- আচ্ছা আমি আস….
(ফোনে কথা বলতে বলতে গেইট থেকে বাসার দিকে পা বাড়াতেই বাগানের সাইডে চোখ আটকে গেল। মনে হচ্ছে দোলনা টা দুলছে। হালকা আলোতে কাউকে দেখা যাচ্ছে, নিশ্চয়ই নাফিসা ছাড়া কেউ না!)
আব্বু তুমি রুমে যাও, নাফিসাকে পেয়েছি। আমি ওকে নিয়ে আসছি….
.
রায়হান- ওকে।
.
(রেহান দোলনার কাছে গেল। দেখলো নাফিসা হাত পা দোলনায় তুলে হাটুতে মুখ গুজে কাচুমাচু হয়ে বসে কান্না করছে।)
.
রেহান- এখানে বসে আছো কেন? সবাই এদিকে খুঁজে হয়রান! চলো বাসায় চলো….
.
(নাফিসা মুখ তুলে তাকালো রেহানের দিকে। রেহান তার চেহারা দেখে খুব কষ্ট পেল! কান্না করে চোখ মুখ ফুলে গেছে! রেহানের এখন নিজের উপর প্রচুর রাগ হচ্ছে! কেন সে বকা দিতে গেলো! অন্যদের মতো সে ও তো বুঝতে পেরেছিল মেয়েটির আচরণ একটু আলাদা!কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে রেহান! )
রেহান- নাফিসা, বাসায় চলো। আব্বু আম্মু সবাই টেনশন করছে…
.
নাফিসা- যাবো না আমি। আ.. আমি আব্বু আম্মুর কাছে যাবো… ?
.
রেহান- (নাফিসার কাছে দোলনায় বসে) sorry ওসব বলার জন্য….
.
(নাফিসা লাফ দিয়ে দোলনা থেকে নেমে গেলো। ডুকরে কান্না করতে করতে… )
.
নাফিসা- আমার কাছে আসবে না… আমি মরে যাবো…. একটুও কাছে আসবে না। আব্বু আমাকে নিয়ে যাওওওও ?
.
রেহান- ?
.
(রেহান দোলনা থেকে উঠে দাড়ালে নাফিসা আরও ২পা পিছিয়ে গেলো। তারপর রেহান রায়হান চৌধুরীকে কল করে বললো নিচে আসতে… রায়হান চৌধুরী এসে নাফিসাকে অনেক কৌশলে মানিয়ে বাসায় নিয়ে এলো। রেহান ও নিজের রুমে চলে এলো। সে শুধু ভাবছে নাফিসার সাথে এমন ব্যবহার করা একদম উচিত হয়নি তার। তারপর ফোনটা হাতে নিয়ে নেহার ছবিগুলো সব কাটতে লাগলো। আগেই কেটে দিতো, কিন্তু মনে ছিলো না।নেহার ছবি কেটে অন্য ফাইলে দেখলো নাফিসার ছবি!? নাফিসার ছবি এখানে কিভাবে! রেহান বাকি সব ছবি দেখতে লাগলো। এবার বুঝতে পেরেছে, আজ বাসায় ফোন রেখে যাওয়ায় নাফিসা আর রিয়াদ ছবিগুলো তুলেছে! বিভিন্ন ভঙ্গিতে অনেক ছবিই তুলেছে। অজান্তেই রেহানের মুখে হাসি ফুটে উঠলো ?)
.
৪র্থ দিন, সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে নাফিসা একদম চুপচাপ। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথেই কোনো কথা বলছে না। কোনো দুষ্টুমি ও করছে না। রেহানের দিকে তো তাকাচ্ছে ও না! রুবিনা ব্রেকফাস্ট করার জন্য ডেকে নিয়ে এসেছে। চুপচাপ খাওয়া শেষ করে আবার রুমে চলে গেলো। সবাই ই একটু আপসেট। চঞ্চল মেয়েটার নিরবতা কারো কাছে ভালো লাগছে না। রেহান বসে টিভি দেখছিল, রিয়াদ ব্যাগে টিফিন রাখতে গিয়ে দেখলো নাফিসার চিঠিটা ও তার ব্যাগে!
.
রিয়াদ- ওফ! ভাবির চিঠিও আমার ব্যাগে! ভাইয়া এটা ভাবির কাছে দিয়ে দিও তো আমার লেট হয়ে যাচ্ছে। আমি যাই….
.
রেহান- ওকে। নাফিসার চিঠি মানে!
.
রেহান কাগজ টা খুলে চিঠিটা পড়তে লাগলো….. প্রাপকের নামটা দেখেই হাসি পেল – এলেক্স!?। এবার উৎসাহ নিয়ে বাকিটা পড়তে লাগলো…..
.
ডিয়ার এলেক্স,
আশা করি ভালো আছিস। আমিও ভালো আছি আমার হাসব্যান্ড, দেবর, শশুর আব্বু, শাশুড়ী আম্মুকে নিয়ে। আব্বু আম্মু কোথায় যেন হারিয়ে গেছে! জানিস, আমার হাসব্যান্ড রেহান চৌধুরী অনেক হ্যান্ডসাম, ছোট ভাইটা রিয়াদ চৌধুরীও অনেক কিউট। দুই ভাই ই কিউটের ডিব্বা। অনেক ফর্সা। চুল গুলো সিল্কি সিল্কি। পারফেক্ট বডি। দুই ভাই লাল টিশার্ট পড়লে একদম হিরো হিরো লাগে! হবেই না কেন! আমার শশুর আব্বু ও শাশুড়ী আম্মুও অনেক ফর্সা ও কিউট। আমিও আমার হাসব্যান্ড এর লাল টিশার্ট পড়ে ঘুমাই, আবার একটা হলুদ ও নিয়েছি। রিয়াদের সাথে তো আমি প্রতিদিন ই ক্রিকেট খেলি আবার গার্ডেনে পানি দিতে গিয়ে গোসল করি রিয়াদ ই বললো আজ আমাকে ফ্যামিলি সম্পর্কে ফ্রেন্ডের কাছে চিঠি লিখতে।
অনেক কিছু লিখে ফেলেছি। আর জানতে দিবো না তোকে। বাংলা বুঝতে কষ্ট হলে ইংলিশে ট্রান্সলেশন করে নিস। বাই বাই বেবি….
.
( চিঠিটা পড়ে রেহান হাসতে লাগলো। ভাবছে পাগলী মেয়েটা সত্যিই রেহানকে তার বর ভেবে নিয়েছে। আর তার পরিবারকে নিজের পরিবার হিসেবে নিয়েছে! রেহানের কাছে নাফিসাকে অন্যরকম ভাবে ভালো লাগতে শুরু করেছে।
রেহান চিঠিটা নিয়েই নাফিসার কাছে গেলো। রিয়াদের রুমের দরজার সামনে যেতেই নাফিসা রুম থেকে বের হতে যাচ্ছিল, রেহান পথ আটকালো। নাফিসা নিচের দিকে তাকিয়ে আছে, রেহানকে একবার ও দেখছে না।)
.
রেহান- নাফিসা, সরি…..
.
(নাফিসা কিছু না বলে ডান দিক দিয়ে আসতে চাইলে রেহান ডানদিকে চেপে পথ আটকে আবার বললো “সরি” এবার বাম দিকে পাশ কাটাতে চাইলে রেহান বামদিকে চেপে পথ আটকে আবার বললো “সরি”। এবার নাফিসা পেছনে সরে গিয়ে ধপাসস করে দরজা লাগিয়ে রুমে বসে রইলো! রেহান হতাশ হয়ে ফিরে এলো ড্রয়িং রুমে ?)
.
রায়হান- অফিস যাবি না?
.
রেহান- হুম।
.
রায়হান- ৩দিন কেটে গেছে, পত্রিকায় তো তেমন কোনো নিউজ পেলাম না। এবার আমরাই নিউজ টা দেই। আজ অফিস থেকে তুই ছাপাখানায় নিউজ দিয়ে আসিস….
.
রেহান- ?!
.
.
চলবে…..
বউ Part- 4
Story: বউ
Part- 4
writer: #Nur_Nafisa
.
.
৩য় দিন….
সকালে রুবিনা চৌধুরী নামাজ পড়ার জন্য সবাইকে ডেকে উঠিয়ে দিলেন। সবাই নামাজ পড়ে নিলো। তারপর রায়হান চৌধুরী জগিং করার জন্য নিচে চলে এলেন, বাগানের পাশেই হাটাহাটি করছেন। নাফিসা ও এলো, সকালে ব্যায়াম করার অভ্যাস আছে তার। সে দেখতে পেল রায়হান চৌধুরী অল্প কিছুক্ষণ হাটার পর পর ই দোলনায় বসে পড়ে।
.
নাফিসা- শশুর আব্বু, এভাবে ব্যায়াম করলে তো সারাজীবনেও মেদ কমবে না?
.
রায়হান- আচ্ছা! তাহলে কি করা যায়! একটানা ১ঘন্টা হাটলে তো আর তোমার শশুর আব্বুকে খুঁজে পাওয়া যাবে না ?
.
নাফিসা- wait, I’m coming.
.
(নাফিসা দৌড়ে বাসায় এসে আবার দ্রুত নিচে নেমে এলো। হাতে ২টা কাপ। একটা রায়হান চৌধুরীকে দিলো। আর একটা সে নিজে রাখলো।)
.
রায়হান- গ্রিন টি!
.
নাফিসা- হুম, প্রতিদিন সকালে ১কাপ ও বিকেলে ১কাপ গ্রিন টি খেতে হবে আর টানা ১ঘন্টা হাটাহাটি করলেই এনাফ! অবশ্য এই বাসাটা ২বার রাউন্ড করলেই হয়।
.
রায়হান- হাহাহা…..? তুমি প্রতিদিন জগিং করো?
.
নাফিসা- হুম, আব্বুর সাথে আমার প্রতিযোগিতা চলে ?
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
রায়হান- আচ্ছা! তাহলে আজ আমার সাথে হয়ে যাক…
.
নাফিসা- ?ওকে….
.
( নাফিসা আর রায়হান চৌধুরী কাপ রেখে প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। ২বার বাসাটা রাউন্ড দিয়ে রায়হান চৌধুরী বললো…)
.
রায়হান- চলো এবার আমাদের ব্যায়ামাগার এ….
.
নাফিসা- কোথায়?
.
রায়হান- রেহানের পাশের রুমটাই তো।
.
নাফিসা- দেখিনি তো! আচ্ছা চলো…
.
(রায়হান ও নাফিসা ব্যায়ামাগার এ এসে দেখলো রেহান আর রিয়াদ এখানে ব্যায়াম করছে। রেহান যা করছে রিয়াদ তাকে দেখে তাই করছে। রিয়াদের ব্যায়াম করা দেখে রেহান হাসছে। রেহান হুট করেই রিয়াদকে কোলে তুলে নিয়ে ডাম্বেলের ন্যায় উপর নিচ করতে লাগলো।)
.
রেহান- তুই ই তো আমার ডাম্বেল ?
.
রিয়াদ- আয়ায়া…. ভাইয়া নামাও আমি ব্যায়াম করবো।
.
নাফিসা- এই মটো, তুমি তো এমনিতেই মটো, ব্যায়াম করলে তো আরো বেশি মটো হয়ে যাবে ?
.
(রায়হান চৌধুরী হাসতে লাগলো। রেহান নাফিসা ও তার বাবাকে দেখে রিয়াদকে নামিয়ে দিল।)
.
রিয়াদ- আব্বু দেখো তো ভাবি আমাকে মটো বলে, আমি কি মোটা! অন্যদিকে আমার ফ্রেন্ডস আমাকে শুটকি বলে ?
.
রায়হান- হাহাহা….. যারা তোমাকে শুটকি বলবে তুমি তাদের মটো বলবে, আর যারা তোমাকে মটো বলবে তাকে তুমি তাদের শুটকি বলে দিবে…. ব্যাস?
.
রেহান- এগুলো ই শিখিয়ে দাও, তারপর মারামারি করে আসুক?
.
নাফিসা- মটো আমার দেয়া কিছু রুলস ফলো করবে তাহলেই পারফেক্ট হয়ে যাবে….
.
রিয়াদ- আচ্ছা বলো কি করতে হবে….
.
নাফিসা- বেশি বেশি ভাত খেতে হবে আর প্রতিদিন বিকেলে একটু খেলাধুলা ? এখন চলো স্কুলে যাবে না! HW রেডি করতে হবে…
.
রিয়াদ- ওকে।
.
(নাফিসা ও রিয়াদ চলে গেলো।)
রায়হান- একটু পাগলী টাইপের হলেও মেয়েটি খুব ভালো রেহান।
.
রেহান- (হুহ! ২দিনেই একেবারে মাথায় তুলে নিয়েছে! যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একে বিদায় করলেই বাচি।) আব্বু পত্রিকায় তো কিছু পেলাম না।
.
রায়হান- মাত্র তো একদিন গেল। আরও ২টা দিন দেখি।
.
রেহান- আচ্ছা।
.
(রেহান রুমে এসে দেখলো নাফিসা তার রুম থেকে বের হচ্ছে হাতে হলুদ টিশার্ট।)
.
রেহান- ? এই তুমি আমার টিশার্ট নিয়ে কোথায় যাচ্ছো!
.
নাফিসা- এটা আমি রাতে পড়বো।
.
রেহান- কেন তোমাকে ড্রেস এনে দিয়েছি না। আমার টা কেন নিচ্ছো? আর কার কাছ থেকে পারমিশন নিয়েছো!
.
নাফিসা- হাসব্যান্ড এর ড্রেস নিতে আবার পারমিশনের প্রয়োজন হয়!?
.
রেহান- হোয়াট!!!!! ? কে তোমার হাসব্যান্ড?
.
নাফিসা- কেন, তুমি ?
.
রেহান- এই ষ্টুপিড মেয়ে, আমি তোমার হাসব্যান্ড হলাম কবে! টিশার্ট দাও বলছি….
.
নাফিসা- না দিবো না…. এটা আমার ভালো লেগেছে, আমি পড়বো।
.
রেহান- দিতে বলেছি দাও?
.
(টানাটানি শুরু করে দিলো রেহান।)
নাফিসা- শাশুড়ী আম্মু……..! .
.
রুবিনা- (কিচেন থেকে) কি হয়েছে…?
.
নাফিসা- আমাকে টিশার্ট দেয় না তোমার বড় ছেলে….
.
রুবিনা- রেহান দিয়ে দে….
.
রেহান- আম্মু এটা আমার। আমি কেন দিবো!
.
নাফিসা- এএএএএ…..?
.
রুবিনা- রেহান দিয়ে দে….
.
(রেহান, রেগে ছেড়ে দিলো।)
রেহান- আউট…. ? নেক্সট টাইম আমার রুমের আশেপাশে যেন না দেখি….
.
নাফিসা- ? বললেই হলো! আমার রুম! যখন ইচ্ছে তখন আসবো। তোমার কি!
.
(নাফিসা আর কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে গেলো।)
.
রেহান- আসলেই একটা পাগল! পাবনার পাগলাগার থেকে পালিয়ে আসেনি তো! ? আবার আমার ফ্যামিলিকে পাগল করে দিবে নাতো!
.
নাফিসা- ( রিয়াদের ব্যাগ গুছিয়ে দিয়ে) মটো আজও আমরা গার্ডেনে গোসল করবো, ওকে?
.
রিয়াদ- ওকে?।
.
নাফিসা আজ রুবিনার সাথে রান্না করেছে। রিয়াদ স্কুল থেকে ফিরলে তারা আজও গার্ডেনে পানি দিয়েছে ও গোসল করেছে। লাঞ্চ করে বাগানে চলে গেলো রিয়াদের সাথে। অনেক ফুল আছে বাগানে, পুরো বাগান ফুলে ভরে আছে।
.
নাফিসা- মটো, শাশুড়ী আম্মুর ফোন নিয়ে আসো ছবি তুলবো।
.
রিয়াদ- ওকে….
.
( রিয়াদ দৌড়ে গিয়ে ফোন নিয়ে এলো। তারপর নাফিসার কাছে দিলো।)
.
নাফিসা- এটা তো শাশুড়ী আম্মুর না! কার টা নিয়ে এসেছো?
.
রিয়াদ- ভাইয়ার টা। আম্মুর কাছে যেতেই দেখলাম সেন্টার টেবিলে ভাইয়ার ফোন। মনে হয় ভুলে বাসায় রেখে গেছে। তাই এটাই নিয়ে এসেছি।
.
নাফিসা- ওকে, যার ই হোক ছবি তুলতে পারলেই হলো….
.
(তারপর বিভিন্ন স্টাইলে নাফিসা ও রিয়াদ অনেক ছবি তুললো। আবার বিকেলে ক্রিকেট খেলেছে। সন্ধ্যায় রিয়াদকে পড়াচ্ছে। রেহান এসেছিলো পড়াতে, আজও নাফিসাকে দেখে রেগে নিজের রুমে চলে গেলো। সবার সময় নাফিসার সাথে ভালো কাটে। রেহানের সময় যেন কাটছেই না। অন্যান্য দিন এ সময়টা পার করতো নেহার সাথে ফোনে কথা বলে, রিয়াদের সাথে দুষ্টুমি করে, রিয়াদকে পড়া দেখিয়ে দিয়ে। রিয়াদ নাফিসাকে পেয়ে যেন তার ভাইকে ভুলেই গিয়েছে। আব্বু আম্মুর সাথেও কত দুষ্টুমি করতো, এখন আব্বু আম্মুও যেন নাফিসাকে পেয়ে রেহানকে ভুলে গেছে। সবাই নাফিসার সাপোর্ট করে। মেয়েটা আসার পর রেহানের সব আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। ভালো লাগছে না কিছু তার।)
.
নাফিসা- মটো, ফ্যামিলি সম্পর্কে ফ্রেন্ডের কাছে চিঠি লিখতে বলেছে। পারবে না?
.
রিয়াদ- হুম। তুমিও কিছু লিখো না। তোমার লেখা দেখি কতো সুন্দর।
.
নাফিসা- আমার ইংলিশ লেখা একটু সুন্দর হলেও বাংলা লেখা একদম বাজে…
.
রিয়াদ- হোক বাজে, তাও লিখো।
.
নাফিসা- কি লিখবো!
.
রিয়াদ- তুমিও এরকম চিঠি লিখো, একটা রেস হয়ে যাক কার লেখা আগে শেষ হয় ?
.
নাফিসা- ?ওকে… স্টার্ট নাও…..
.
( দুজনেই লেখা শেষ করে নিলো। রুবিনা ডিনার করার জন্য ডাকলে সবাই একসাথে ডিনার করে নিলো। নাফিসা ডিনার শেষে সোজা রেহানের রুমে এসে রেহানের ফোন নিয়ে বিকেলে তোলা ছবিগুলো দেখতে লাগলো। রেহান নিজের রুমে ফিরে দেখে নাফিসা তার খাটে হেলান দিয়ে রেহানের ফোন নিয়ে বসে আছে। )
.
রেহান- তুমি এখানে কেন?
.
নাফিসা- ইচ্ছে হয়েছে তাই এসেছি।
.
রেহান- নিজের রুমে যাও… আমি ঘুমাবো।
.
নাফিসা- who is she?
.
(রেহানের সামনে ফোন ধরে জিজ্ঞেস করলো। রেহান দেখলো নেহার ছবি দেখছে! )
রেহান- আমার ফোন ধরেছো কেন? ফোন দাও?
.
নাফিসা- না দিবো না, আগে বলো কে? তোমার গার্লফ্রেন্ড?
.
রেহান- ফোন দিতে বলেছি….
.
নাফিসা- আগে বলতে হবে….
.
রেহান- (চিৎকার করে) এই মেয়ে, তোমার কাছে আমার কৈফিয়ত দিতে হবে! ? কি পেয়েছো কি! হ্যাঁ! কখনো আমার রুম দখল করে নিচ্ছো, কখনো আমার টিশার্ট, আমার আব্বু আম্মুকে ও নিজের সাপোর্টার বানিয়ে নিয়েছো, আমার ভাইটাকেও আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছো। একে একে সব দখল করে নিচ্ছো। এখন আমার ফোন ও দখল করে নিতে চাইছ। কি চাইছো কি তুমি! আমার সকল আনন্দ শেষ করে দিয়েছো! রাস্তা থেকে আমি ঘরে কালসাপ তুলে এনে ঠাই দিয়েছি! বের হও আমার চোখের সামনে থেকে ?
.
(রেহানের আচরণে নাফিসা খুব কষ্ট পেয়েছে। রেহানের হাতে ফোন দিয়ে কান্না করতে করতে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।রেহানের খুব বিরক্ত লাগছে সব।)
.
চলবে……
.
(একটু সমস্যায় আছি, তাই এখন নিয়মিত গল্প দিতে পারছি না।)