Sunday, July 27, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1942



লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?র্পব- ৮

0

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?র্পব- ৮
#লেখিকা:তানজিনা আক্তার মিষ্টি ( Tanjina Akter Misti)

গাড়িতে বসে আছি আমার পাশে ড্রাইভ করছে বাবু এখন ও তার নাম আমার অজানা। এটাই তার নাম নাকি অন্য নাম আছে জানি না বাসায় কাউকে বলতে ও দেখি নি। আর আমার জানার ও ইচ্ছে নেই যা খুশি থাক। গাড়ি ছুটে চলেছে দ্রুত গতিতে আমি বাইরে তাকিয়ে শহরের কোলাহল পরিবেশ দেখছি শত শত গাড়ি ছুটে চলেছে আপন গতিতে নিজের গন্তব্যে রাস্তার ধারে হাজারো মানুষ হেটে যাচ্ছে নানান কাজের সন্ধানে। কিছু ময়লা পোশাক পরে বাচ্চা রা ও দাড়িয়ে আছে চোখ মুখ ক্ষুধাকাতর সামনে দিয়ে কেউ গেলেই হাত পেতে ধরছে কেউ কিছু দিচ্ছে তো কেউ ধমক দিয়ে সরিয়ে চলে যাচ্ছে। কিছু মেয়ে ছেলে যাচ্ছে এরা আমার বয়সী ব্যাগ কাধে চেপে চলেছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম এখন দশটা উনিশ বাজে ঘড়িটা ধপ করে থেমে গেলো আমি ভ্র ঢ় কুচকে বাবুর দিকে তাকালাম।

— কি হলো গাড়ি থামালেন কেন? আমরা কি এসে গেছি !

— নাহ আরেকটু সামনে।

— তাহলে এখানে থামলেন যে। তারাতারি চলেন এখন সময় নষ্ট কেন করছেন আমাদের দেরি হয়ে যাবে তো।

— হলে আমি কি করবো আমি কি ইচ্ছে করে গাড়ি থামিয়ে ছি নাকি সামনে দেখো।

— ইচ্ছে করে থামাননি মানে কি? গাড়ি আপনি চালাচ্ছেন থামালেন ও আপনি আর এখন বলছেন আপনি ইচ্ছে করে থামাননি? আমাকে কি পাগল মনে হয় আপনি যে আজেবাজে কথা বলে দিচ্ছেন?

— ও মাই গড তোমাকে আমি ভালোই ভেবেছিলাম কিন্তু তোমার মাথায় যে যে প্রবলেম আছে সেটা জানতাম না এখন জানলাম।

–কিহ বললেন আপনি আমার মাথায় প্রবলেম আছে।

— হ্যা

— আপনার কোন দিক দিয়ে মনে হয় আমার মাথায় সমস্যা আছে। গাড়ি থামিয়ে আমাকে এখন পাগল বলতে চাইছেন অসভ্য লোক একটা।

— তুমি কি কানা নাকি এখন আমার সন্দেহ হচ্ছে? আচ্ছা দেখো তো আমাকে ঠিক দেখছো কিনা আচ্ছা বলো আমি কি রঙের শার্ট পরেছি?

— একবার মাথায় প্রবলেম বললেন আর এখন বলছেন কানা আপনি পেয়েছেন টা কি?

— তো কানা না থাকলে দেখছো না বাইরে কি হচ্ছে?

আমি এবার বাইরে তাকালাম। সব গাড়ি থেমে আছে সামনে সিকিউরিটি রা আছে তার মানে জ্যামে পরেছি আমরা। ইস না জেনেই কতো কথা বললাম আসলেই আমি কানা হয়েছি। বাইরে তাকিয়ে আছি একবার গার ঘুরিয়ে বাবুর দিকে তাকালাম এখন ও ফোন টিপে যাচ্ছে। সারাক্ষণ টিপতে কেমন লাগে আল্লাহ ই জানে। ফোনের ভেতরে ঢুকে যাবে এমন অবস্থা। কিন্তু মুখের দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম এতো সুন্দর কেন এই ছেলেটা চুল গলো উরে এসে কপালে পরছে একটু পর পর তা হাত দিয়ে ঠিক করে নিচ্ছে। আমি তাকিয়ে আছি তার দিকে হঠাৎ কথায় আওয়াজ আসতেই চোখ সরিয়ে নিলাম তারাতারি।

— এই যে মিস আমি সুন্দর সেটা জানি তাই এতো এভাবে তাকিয়ে সেটা প্রমাণ না করলে ও চলবে । সামনে তাকিয়ে ঠিক হয়ে বসেন নয়তো আবার মাথা ফেটে যাবে সিট বেল্ট বাধেন।

কি বেয়াদব ছেলেরে বাবা একটু তাকিয়ে তাই কতো কথা। হুম সুন্দর তাই এভাবে বলার কি আছে কেন তাকাতে গেলাম দূর লজ্জা আমার মাথা কাটা। একেবারে জানালায় দিকে ঘুরে আছি একটু তাকানোর সাহস নেই। কিভাবে থাকবে সত্যি তো তাকিয়ে ছিলাম কি নিজ্জের প্রভাণ দিলাম দূর ভাললাগে না । কি বেহায়া ভাবছে আমাকে?
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
হঠাৎ গাড়ি থেমে গেল আমি আবার কিছু বলতে যাবো দেখি ওনি আমার দিকে চেপে আসছে হাত বারিয়ে দিয়েছে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে চুখ বন্ধ করে ফেললাম হাতরা মনে হচ্ছে আমার গাল শুবে কিন্তু কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ রেখে ও কোন ছোঁয়া পেলাম না তাকিয়ে দেখি হাত আমাকে অতিক্রম করে আমার পাশে পানির বতল নিয়ে নিলো। আমি নিশ্চিত পাগল হয়েছি কি থেকে কি ভাবছি নিজেই বুঝি না। আবার লজ্জায় সমুক্ষিন হলাম ছি ছি ছি কি মন মানুষিকতা আমার কি সব ভাবি।

গাড়ি থেকে নামলাম বিশাল এক ফ্লাটের্র সামনে র্সমনে বড় একটা গেইট একজন দাড়িয়ে আছে সিরি দিয়ে উঠে এলাম বাবুর সাথে সে এগীয়ে যাচ্ছে ব ড় একটা ফ্লোর কতো মানুষ আছে সবাই এদিক ওদিকে যাচ্ছে সামনেই সিড়ি কিন্তু অদ্ভুত টাইপের একসিড়িতে দাড়িয়ে যাচ্ছে আর সিড়ি গুলো উপরে উঠছে আমি অবাক চোখে দেখছি। এগুলো সব জীবনের ফাস্ট দেখছি কি অদ্ভুত সিড়ি এগুলো। হঠাৎ ডাকে ঘুর কাটলো দেখলাম বাবু আর একটু এগিয়ে আমাকে ডাকছে আমি যে তার কথা ভুলে এগুলো দেখা মগ্ন হয়ে গেছিলাম বুঝলাম। রেগে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি দ্রুত তার দিকে গেলাম। আমি মনে মনে ভাবছি আমি ও কি এ অদ্ভুত সিড়িতে যাবো নাকি কিন্তু তা হলো না বাবু আমাকে নিয়ে সিড়ি অতিক্রম করে একটা বক্মের মতো জায়গায় নিয়ে এলো এটা আবার কি আমি দেখছি অবাক হয়ে কিসের যেন চাপলো আর দরজার মতো ফাক হয়ে এলো আমি তো অবাক হয়ে দেখছি। খুলার সাথে সাথে বাবুন ভেতরে ঢুকে গেল আমি ভ্রু কুচকে জিগ্যেস করছি ভেতরে কেন ঢুকলো আমাকে ডাকছে ভেতরে যৈতে কিন্তু আমি যাচ্ছি না কেমন কাচের একটা জায়গায় আমি যাবো না। এটা ভেঙএ যায় যদি কিন্তু এটা করে ই নাকি যেতে হবে আমি বললাম কেন? বলল পাচঁ তালা সিড়ি বেয়ে উঠতে সময় লাগবে সাথে র্জানিও আমি তাও যাচ্ছি না কিছু তেই এটায় যাবো না আমার ভয় করে বাবুন বলল এটা লিফট এটাতে গেলে তারাতারি হবে তবুও যাচ্ছি না এবার রেগে আমাকে টেনে ভেতরে নিয়ে এলো ভেতরে যাওয়া সাথে সাথে দরজা অফ হয়ে গেল।

— আপনি আমাকে মারতে চান নাকি এ কোথায় এলাম আমি দরজা বন্ধ কেন হলো? আমি বের হবো আমাকে বের করেন নয়তো ভরে যাবো এটা তে কি হলো বের করেন না?

— হুয়াট রাবির্শ তাই তোমাকে আমি আনতে চাই নিজের সঙ্গে কিছু হবে না। এমন চেচামেচি না করে চুপ করে শান্ত হয়ে দাড়িয়ে থাক সিড়ি দিয়ে গেলে অনেক সময় লাগতো এখন পাচঁ মিনিটেই হয়ে যাবে।

আমি কিছু বলবো হঠাৎ ঝাকি হলো আমি বাবুনের হাত শক্ত করে ধরে ফেললাম….. নরে কেন এতো আমি ভয়ে মরে যাবো আর জীবন এগুলোতে উঠমু না আমি।

মুখ বন্ধ করে হাত ধরে বলে চলেছি যা খুশি।

— হাত ছার আমরা এসে গেছি।

আমার এখন খেয়াল হলো আমি তো ভয়ে বাবুনের হাত ধরে ছিলাম।

— সরি বাবুন আসলে ভয়ে……

— বাবুন তুমি আমাকে বাবুন বলছো কেন?

— তো কি বলবো আপনার যা নাম তাই য় বলবো।

— এটা জাস্ট আম্মু বলে তুমি কেন বলবে?

— তো আমি কি বলবো?

— আমার নাম বলবে রাজ বলবে এতো সুন্দর একটা নাম থাকতে কিনা বাবু ইস আম্মুর জন্য আমার কি সব বলে কিন্তু মানা করা যায় না ছোট বেলার অভ্যাস তো।

ভর্তি শেষে

— তো তোমার তো ক্লাস হচ্ছে তুমি ক্লাষ করে চলে এসো কেমন আমি যাই।বাই

— যাই মানে আমাকে রেখেই চলে যাবেন?

চলবে❤

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?র্পব- ৭

0

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?র্পব- ৭
#লেখিকা: তানজিনা আক্তার মিষ্টি ( Tanjina Akter Misti)

ঘুমিয়ে আছি হঠাৎ ঘুমের মধ্যে চিৎকার শুনতে পাচ্ছি। ঘুমে তাকাতে পারছি না চোখ খুলতে চেয়ে ও খুলছি না চোখ বন্ধ করেই খাটে থেকে নরে চলেছি হঠাৎ আরেকটা চিৎকার কানে আসতেই চোখ খুলে ঘুরান দিয়ে উঠতে যাব। কিন্তু তা আর পারলাম কই থপ করে খাটে থেকে মেঝেতে পরে গেলাম। মেঝেতে পরে বসে আছি বক্ম খাট হওয়ায় বেশি নিচে পরলে ও ব্যাথা কমই পেয়েছি কারণ বক্ম খাট উচু কম এটা আমি নিচে বসেই সামনে দাড়িয়ে থাকা লোকটির দিকে তাকালাম। সে এতো ক্ষণ চিৎকার করলে ও এখন চুপ করে আছে নিশ্চিত আমাকে পরতে দেখে চিৎকার বাদ দিয়ে আমাকে দেখছে আমি রাগ লজ্জা দুটো মিশ্রণ করে উপরে তাকাতেই আর ও রেগে গেলাম। এই তো সেই ছেলে মামুনির ছেলে এই ছেলে এভাবে ষাঁড়ের মতো চেচামেচি করতেছিল আর যার জন্য কিনা আমি নিচে পরে গেলাম ভয়ে। খচ্চর ছেলের জন্য আমি পরে গেলাম রেগে উঠে দাড়ালাম ছেলেটা আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আচমকা হু হু করে হেসে উঠলো পেট ধরে হেসে চলেছে। রাগে আমার শরীর কাপছে কতো অসভ্য হলে কারো বিপদে হাসতে পারে।
সারা রাস্তা আমাকে অপমান করেছে এখন আবার রুমে এসে এভাবে অত্যাচার।

— এই যে মিস্টার আপনি এখানে কি করছেন? সারা রাস্তা আমাকে জালিয়েছেন আপনার জন্য শুধুমাত্র আপনার জন্য আমি বাইরে রোদ্রের মধ্যে এক ঘন্টা দাড়িয়ে ছিলাম। এখন আবার আমি একটু শান্তিতে ঘুমোচ্ছিলাম তখন এসে চিৎকার করে আমার শান্তির ঘুম নষ্ট করলেন। আপনার জন্য আমি খাট থেকে পরে ব্যাথা পেলাম আর আপনি এখন মজা নিয়ে হাসছেন?? [ রেগে দাতে দাত চেপে বলল মিষ্টি ]

কথা গুলো এক ধুমে বলে রেগে তাকিয়ে আছে উওর এর আশায় কিন্তু উপর পাশের লোক কিছু না বলে হেসে চলেছে আর একবার তাকাচ্ছে।

— কি হলো কথা বলছেন না কেন? এমন পাগলের মতো হাসছেন কেন অন্যকে ডিসটার্ব করে আপনি মজা নিচ্ছেন মামুনি কে বলে ই আপনার যদি খবর না করছি না?

— কি বললে আমার খবর করবে?

— হুম আপনি রীতিমতো আমাকে অপমান অত্যাচার করে চলেছেন?

— আমি তোমাকে কিছু করিনি? আমার রুমে এভাবে শুয়ে না থাকলে আমি কিছু বলতাম না।

— আপনার রুমে তো আমি কি করবো মামুনি আমাকে এ রুমে থাকতে বলেছে তাই এসেছি। এখানে আমার কি দোষ?

— মামুনি মানে আম্মু তোমাকে এ রুমে থাকতে বলেছে?

— হুম বিশ্বাস না হলে শুনে দেখেন।ওয়েট আমি ডাকছি মামুনিকে কে?

বলেই মামুনি ডাকতে যেতে নিলাম তার আগেই মামুনি এসে উপস্থিত। এসেই জিগ্গেস করতে লাগল ” কি হয়েছে”

— আম্মু এই মেয়ে আমার রুমে শুয়ে ছিল আর তুমি তাকে আমার রুমে থাকতে বলেছে? বাট হুয়াই আর কি কোন রুম নাই তুমি ভালো করে ই জানো আমার রুমে আমি কাউকে এলাও করি না আর তুমি ওকে এখানে থাকতে দিলে।

— কি সব বলছিস বাবু আমি মিষ্টি কি এ ঘরে থাকতে বলবো কেন? আমি তো ওই রুমে….
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
— তুমি থাকতে বলেছো ও বলেছে? কি হলো বলো?

— আমি এখানে কেন বললো আমি ওই রুমে মিষ্টি আমি তো তোকে বললাম দ্বিতীয় টায় তুই প্রথম টায় ঢুকে গেছিস।

তার মানে আমি ই গন্ডগোল করেছি। তখনই ভুলে গেছিলাম কিন্তু তাই কি এমন হয়েছে একটু শুয়েছিই তো তাই এমন করার কি আছে।

— মামুনি আমি ভুলে মনে হয় এসেছিলাম। আমার না গোলমাল করে গেছিল কোন তাই এতো না ভেবে রুমে এসে শুয়ে পরেছি। তাই বলে ওনি আমাকে এভাবে অপমান করবে তুমি বলো আমি চিৎকার শুনে ভয়ের চোটে নিচে পরে গেছি ওফ হাতে ব্যাথা ও পেয়েছি। একবার আমাকে নিয়ে জিগ্গেস করলো না উল্টো বকে যাচ্ছে কেন এসেছি আমি কি চিনি নাকি বলো একটু ভুল হতেই পারে।

— বাবুন মিষ্টি ঠিকই বলেছে।ভুল করেই শুয়ে পারে তাই তুই এভাবে ওকে বলতে পারিস না ও আমাদের বাড়ির মেহমান তাই ওকে সরি বল।

— আম্মু আর ইউ ম্যাড আমি ওকে সরি বলবো ইমপসিভল।

— দেখেছো মামুনি সরি বলে না? আমার জন্য তোমার অনেক জামেলা হচ্ছে আমি থাকবো না এখানে আমার কোচিং করা লাগবে না।

— কি সব বলছিস ও বলবে না ওর বাপ বলবে সরি? ওই সরি বল,

এমন সময় একটা আধ বয়সকো লোক রুমে ঢুকে আসে।

— রেহেনা আবার বাপ কে টানছো তুমি? আমি আবার কি করলাম?

— তুমি কিছু করো নি তোমার ছেলে মিষ্টির সাথে খারাপ বিহেভ করছে। মেয়েটা আজই এলো কয়দিনই বা থাকবে এতেই এতো অপমান সরি বলত বলো তোমার ছেলেকে?

দুজন মিলে আমাকে সরি বলতে বলছে ছেলেটাকে। আমি মিটিমিটি হেসে কাণ্ড দেখছি ছেলেটা রেগে আমার দিকে তাকালো আমি কিছু না বলে মামুনি র দিকে তাকিয়ে অসহায় মুখ করলাম মামুনি এক দমক দিলে এবার বাবু হুম মামুনি তো বাবুই বলল কি নামে ছরী বাবু মষে হয় বাচ্চা মিনমিন করে দাথে দাতে চেপে রেগে সরি বলল।
মামুনির সাথে আমি আমার রুমে এলাম।
মামুনি চলে গেল আমি তো সেই খুশি ভালোই হয়েছে আচ্ছা জদ্ব হয়েছে আমাকে খাটে থেকে ফেলা।

ডায়নিং টেবিলে বসে আছি। মামুনি খাবার আনছে। সিড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি বাবু আসছে হাতে ফোন একাধারে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। ওই ভাবেই চেয়ার টেনে বসলো। আমি পাশে বসে তাকিয়ে দেখছি হঠাৎ আমার দিকে তাকালো আমি সঙ্গে সঙ্গে চোখ ফিরিয়ে নিলাম তাকিয়ে আছে কিনা দেখার জন্য আবার তাকালাম না তাকিয়ে নেই। ফোনে কি যেন করছে এতো কী করে কে জানে খেতে বসে ও টিপছে।

— খেতে এসে ও ফোন কতো দিন বললাম খেতে আসলে ফোন রেখে আসবি এতো কি করিস ফোনে?

— দরকারি কাজ।

— কি রাজকার্য যে খেতে বসে করতে হয়? সারা দিন তো টট করো পরতে তো বসো না একবার এখন তুমি কাজ করছো এসব ফোনের আকামের কাজ বাদ দিয়ে খেয়ে নাও আর একটু পড়া লেখা কর।

— আম্মু তুমি কি কখনো আমাকে ফাস্ট বাদে সেকেন্ড হতে দেখেছো?

— আবার সেই কথা ফাস্ট যে কিকরে হস আমি বুজি না সারা দিন রাত পরতে তত দেখি না। আর একটা কথা কাল মিষ্টি কি নিয়ে ওর কোচিং সেন্টারে যাবি ওকে রাস্তা চিনিয়ে দিয়ে আসবি আর ভর্তি করে?

— আমি পারবো না। অন্য কেউকি বলো এই মেয়েকে নিয়ে আমি কোথায় ও যেতে পারবো না। আমার জরুরি ক্লাস আছে কাল।

— অন্য কাকে বলবো তোর আববুর কাল মিটিং আছে জরুরি তাই তোকেই যেতে হবে।

— আমি যেতে পারবো না এই বেয়াদব মেয়েকে নিয়ে।

–বাবুন ঠিক করে কথা বলো।

আমি তাদের কথা শুনছি কিছু বলছি না কিছু বললে ও কি আমি তাদের বাসার আছি। তারা যা বলবে সেটা করা উচিত মামুনি যাকে বলবে তার সাথেই যাবো এই বাবুন হলে তার সাথে পড়া লেখা নিয়ে কোন র্তক আমি করতে চাই। বাবুন ছেলেটি আমার দিকে তাকিয়ে চলে গেল।

পরদিন

রুমে বসে কথা শুনতে পাচ্ছি।

— আম্মু দেখো দশটা বাজে কতো সময় ধরে রেডি হচ্ছে শুনি। এই জন্য মেয়েদের কোথায় নিয়ে যেতে চাই না এতো সাজতে পারে এরা কিন্তু তুমি তো আমাকে পাঠিয়ে ই ছারবে।

আমাকে নিয়ে কথা বলছে আমি নাকি সাজি বেশি। সব কিছুতেই অপমান ন করলে চলে না।

চলবে❤

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?র্পব- ৬

0

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?র্পব- ৬
#লেখিকা: তানজিনা আক্তার মিষ্টি ( Tanjina Akter Misti)
#র্পব- ৬

তার উওরের আশায় না থেকে টান মেরে ফোনটা নিজের হাতে নিয়ে এলাম। সে হয়তো আমার এমন কাজে অবাক হয়েছে আমার তাতে কিছু আশে যায় না আমি এখন আন্টিকে ফোন দিবো এনি সে না হলেও আন্টি কে ফোন দিলে আন্টি বলতে পারবে তার ছেলে আসছে কি না? আন্টির নাম্বার আমার ফোন থেকে বের করে উঠালাম উঠিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি একি নাম্বার তো আগে থেকেই সেভ করা ” Ammo ” দিয়ে আমি ফোন করতে গিয়ে ও করলাম না। তার মানে এই সেই যে আমাকে নিতে এসেছে। না জেনে ঠিক জনকেই চিনেছে ছেলেটার বুদ্ধি আছে বলতে হয় ইস কতো ক্ষণ দাড়িয়ে ছিলাম পা ব্যাথা হয়ে গেছে দাড়িয়ে না থেকে আগেই যদি আসতাম তাহলে এতোক্ষণ বাসায় পৌঁছে যেতাম। আমি ফোন হাতে নিয়ে কথা গুলো ভেবে চলেছি হঠাৎ হাতে টান পরায় তাকিয়ে দেখি ছেলেটা আমার হাতে থেকে ফোন নিয়ে রেগে আমার দিকে তাকিয়ে আছে কিছু বলবো ছেলেটা বলে উঠলো…..
— ইউ তোমার সাহস তো কম না আমার ফোন এভাবে টেনে নিলে?
— ফোন নিতে আবার সাহস লাগে নাকি। আমি তো চেয়েই নিয়েছি আগে তো আপনার কাছে ফোন চেয়েছি তারপর নিয়েছি আপনি দেরি করেছন তাই…..
— আবার মুখে মুখে কথা বলছো আমার ফোন তুমি টেনে নিয়ে এখন উচুঁ গলায় কথা বলছো? বেয়াদব মেয়ে একটা?
— আপনি আমায় বেয়াদব বলছেন?
— হ্যা বলেছি ?
— আপনি কিন্তু আমার সাথে খারাপ বিহেভ করছেন আমি আপনার নামে আন্টির কাছে বিচার দেব? আমাকে বেয়াদব বললেন আমি কি বেয়াদবি করেছি জাস্ট ফোন নেওয়া জন্য এতো বড় কথা বললেন?
— হুম বললাম কোন ভদ্র মেয়ে এভাবে কারো ফোন ছিনিয়ে নেয় না? এভাবে রেগে তাকানোর কিছু নাই আমি যে ভুল বলিনি সেটা তুমি জানো তাই তারাতারি গাড়িতে উঠে বসো। আমার এমনিতে অনেক লেট হয়ে গেছে যদি তুমি না উঠো আমি চলে যাচ্ছি তুমি যেভাবে খুশি চলে এসো?

বলই ছেলেটি আমার পাশে থেকে গাড়ি তে উঠে বসলো আমি রেগে তাকিয়ে আছি। এতো অপমান করলো আমাকে ভেবেই মাথা গরম হয়ে আছে এদিকে পা হাত ও ব্যাথা হয়ে আছে। ছেলেটা গাড়িতে উঠে একবার আমার দিকে তাকিয়ে উঠতে বলল আমি কিছু করছি না রেগে তাকিয়ে আছি যাতে ছেলেটা বাই দেখিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিতে লাগলো। এবার আমার টনক নরলো এনি তো আমাকে নিয়ে যেতে এসেছে এখন চলে গেলে আমি যাবো কিভাবে না এখন রাগ দেখালে চলবে না আমাকে এর সাথেই যেতে হবে।
নিজের মনে নিজেকে বুঝিয়ে গাড়ির দরজা খুলতে গেলাম আমাকে উঠে আসতে দেখে নিজে গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে দরজা ভেতরে থেকে খুলে দিলো আমি ভেতরে উঠে বসলাম। রেগে একবার তাকিয়ে আবার অন্য দিকে তাকালাম দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি ব্যবহার খারাপ। চেহারা দেখে কেউ বলবে না এমন বাজে লোকটা কি ভাবে আমাকে অপমান করে গেল আর আমি কিনা কিছু বলতে পারলাম না। রাগে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি।
হঠাৎ ছেলেটার একটা কথা শুনে আমার রাগ সাত আসমাছে উঠে গেল… আগুন চোখে তাকালাম যাতে সে আর ও বিদ্রপ করলো মনে হচ্ছে
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
— এই যে মিস রেগে আছেন ভালো কথা? কিন্তু আমাকে বিরক্ত করছেন কেন? আপনার এই চুল গুলো আমাকে খুব ডিসটার্ব করছে এক্মিডেন্ট হলে আমার কিন্তু দোষ না?

চুল বেনি করে এসেছি তবুও ও নাকি ডিসটার্ব হচ্ছে আমাকে কি বোকা পেয়েছি।

— আপনি কিন্তু রীতিমতো আমার সাথে বাজে ব্যবহার করছেন।
— সত্যি বললেই গায়ে লাগে এটা মেয়েদের স্বভাব আমি কেন তোমাকে মিথ্যে বলবো। আমার ড্রাইভ করতে প্রবলেম হচ্ছে আপনার এই চুলের জন্য।

রেগে তাকালাম কিন্তু আর কিছু না বলে চুল বেনি সহ খোপা করে নিলাম। কিছু দূর যাওয়ার পর হঠাৎ গাড়িতে অনেক জোরে ব্রেক হলো আর আমি সিট বেল বেধেছিলাম না তাই ছেলেটির হাতে কাছে গিয়ে আমার হাত পরলো। আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম তার নিজেকে ঠিক করে সোজা হলাম।

— আমার জন্য আপনার প্রবলেম তাইনা তাহলে এখন এমন করে ব্রেক করলেন কেন? এখন তো আমার চুল খোপা করা ছিলো আপনাকে ডিসটার্ব ও করেনি?
— আমরা চলে এসেছি নামুন।
— আমার প্রশ্নের উওর দিন আমি নামবো না এভাবে কেউ ব্রেক করে গাড়ি আমি যদি ব্যাথা পেতাম!
— সেটা তোমার জন্য আমার কি দোষ? সিট বেল্ট বাধনি কেন? বাধরে তো আর এসব হতো না অযথা কথা না বলে বের হও আমি এখন বাড়ি যাবো না তুমি চলে যাও এইটাই আমার বাসা আম্মু আছে ভেতরে?
— আপনাকে আমি দেখে নেব।
— ওকে ম্যাডাম?বাই

আমি গাড়ি থেকে নেমে কিছু বলবো তার আগেই গাড়ি হাওয়া চলে গেছে। আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি গাড়ি চলে যাওয়ার দিকে। কি অসভ্য আমাকে এতো অপমান আগে কেউ করেনি আজ এই ছেলে আমাকে এমন অপমান করে গেল।ব্যাগ একটা কাধে নিয়ে আরেকটা হাতে নিলাম তারপর ঘুরে তাকালাম বাসার দিকে গেইট বন্ধ করা পাশে একজন লোক বসে আছে সে হয়তো বাসার দাড়োয়ান বাসা পাহারা দিচ্ছে। আমি একবার তার দিকে তাকালাম তারপর দরজা খুলতে বললাম বাইরে থেকে তাকে দেখা যাচ্ছে। সে আমার ডাকে দরজা ফাক করে জিগ্গেস করলো কাকে চাই? আমি বললাম ভেতরে যাব কিন্তু সে বলছে কার কাছে কি মশকিলে পরলাম।

— চাচা আমাকে ভেতরে যেতে দিন আমার এদের আত্মীয়।
–কাদের কাছে নাম না বললে আমি ভেতরে আসতে দেব না? অচেনা কারো বাসার ঢুকার পারমির্শন নাই।
— আরে চাচা আমি অচেনা না আমাকে আন্টি চেনে প্লিজ ভেতরে যেতে দিন।

কিন্তু চাচা আমার কথা শুনলো না দরজা বন্ধ করে ফেলল আমি বাইরে থেকে ডাকছি শুনছে না দূর কোন বিপদে পরলাম এ তো আমার কথা শুনছে না এখন আন্টিকে বলবো কি করে আমি আসছি। ফোনে তো টাকা ও নেই যে কল করবো একে তে ব্যাথা এখন কতোক্ষণ ভাবে দাড়িয়ে থাকবো রোদ্র ও প্রচুর। এখন রোদ্র চলে যাবে তাই এতো পরেছে গেমে একাকার আরেকবার ঘুরে ডাকতে গেলে ওনি দরজা খুলে বেরিয়ে এলো।

— তুমি এখন ও দাড়িয়ে আছো?

— হুম আমি তো এখানেঈ এসেছি কোথায় যাবো প্লিজ যেতে দিন আমি গ্রামে থেকে এসেছি কোন কিছু চিনি না।

— তোমাকে আমার বিশ্বাস হচ্ছে কিন্তু যেতে দিতে পারছি না এভাবে কাউকে ডুকতে দিলে আমার চাকরি থাকবে না মা তুমি একবার ফোন করে বলো।

— আমার ফোনে তো ব্যালেন্স নাই কি করে দেবো ফোন?

— ওহ আমার ফোন দিয়ে দাও ধরো।

আমি ফোন নিয়ে আন্টির সাথে কথা বললাম ওনি দাড়োয়ান চাচার কাছে দিতে বলল কি জানি বলল দাড়োয়ান চাচা আমার দিকে তাকিয়ে সরী বলল ক্ষমা চাইলো আন্টি কিছু বলেছে বুঝলাম।
আমি মুচকী হেসে ভেতরে চলে এলাম কোন দিক না তাকিয়ে যেতে লাগলাম মেইন দরজার কাছে আসতেই দেখলাম একজন মহিলা দাড়িয়ে আছে দেখতে অনেক সুন্দর বয়স হলেও কেউ বলবে না তার ছেলে আছে এতো বড় কতো ইয়াং আমি এগিয়ে পাোএ হাত দিয়ে সালাম করতে চাইলে করতে দিলো না। আমার মুখে হাত দিয়ে সরি বলল এতোক্ষণ বাইরে ছিলাম কষ্ট করে। ভিতরে গিয়ে সোফায় বসে পরলাম ক্লান্ত লাগছে আন্টি একটা মহিলাকে আমার জন্য যে রুমে রেখেছে সেখানে ব্যাগ পএ রাখতে বলল।

— কতো কষ্ট হলো তোর কিন্তু আমার ছেলেটা কই তুই বাইরে ছিলি কেন ও আসে নি?

— তোমার ছেলে এসেছিল আন্টি কতো খারাপ ব্যবহার করেছে জানো আবার রেখেই চলে গেছে।

— কোথায় গেছে?

— সেটা আমি জানবো কি ভাবে আন্টি?

— কিসের আন্টি বলছিস পর পর লাগে মামুনি বলবি।

— আচ্ছা তোমার ছেলেকে বকবে কিন্তু?

— তা তো বকবোই এভাবে রেখে যাওয়া না।
আন্টিকে সব বললাম আমার সাথে যা যা করেছে। আন্টি আমাকে মামুনি বলতে বলল আমি রাজি হয়ে গেলাম ক্লান্ত লাগছে তাই উঠে পরলাম উপরে গিয়ে বামের প্রথম টা নাকি দ্বিতীয় বলল মনে নেই উপর এসে প্রথম টায় ঢুকে গেলাম কোন দিক না দেখে ঠাস করে খাটে শুয়ে পরলাম। কখন ঘুমিয়ে পরেছি জানি না।
তীব্র কোন আওয়াজ কানে আসতেই ঘুম ভেঙে গেল আমার এমন চিৎকার করছে কে তারাতারি শুয়া থেকে উঠে বসলাম।

চলবে❤

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?পর্ব-৫

0

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?পর্ব-৫
#লেখিকা:তানজিনা আক্তার মিষ্টি ( Tanjina Akter Misti)

গ্রামের মেয়ে আমি। ছোট থেকে গ্রামেই থেকেছি বাবা মা আর ছোট বোন নিয়ে ছিলো আমার ছোট হাসি খুশি পরিবার খুব আনন্দে আমাদের সময় কাটছিল আববু প্রাইমারি স্কুল টিচার নাম মইনুল ইসলাম। মা রুনা আক্তার আর আমি মিষ্টি। ছোট বোন মিনা। আমার থেকে চার বছরের ছোট ও। মধ্যবিও পরিবার আমাদের বাবা মা বোন নিয়ে খুব ভালোই কাটছিল সময় কিন্তু ভালো যে কারো কপালে বেশি দিন থাকে না আমাদের ও থাকলো না তখন আমি এইটে পরি আর আমার ছোট বোন ফাইভে তখনই সব তছনছ হয়ে গেল। সমস্ত সুখ কীরে নিয়ে আমার আববু পারি জমালেন পরপারে। খুব কিদেছিলাম সেদিন সেদিনের আগে এত কষ্ট আর কাদতে কেউ হয়তো আমাকে দেখে নি। খুব দুষ্টু ছিলাম ছোট থেকে বড় মেয়ে ছিলাম আববু আমার খুব ভালো বাসতো মিনাকে ও কিন্তু আমাকে বেশি। আববু কে হারিয়ে একেবারে চুপ হয়ে গেছিলাম আগের মতো আর দুষ্টু মি করতাম না কেন যেন সব আমার থেকে হারিয়ে গেছে চাইলো ও হতে পারতাম না। নিজের কষ্ট ভুলতে গেলে মাকে দেখতাম রাতে একা একা কাদতো তখন আমার বুকটা ফেটে যেত কেন এমন হলো।

কোন দিন নানা বাড়ি দাদা দাদি কাউকে দেখি নি বাবা মায় ছিলো আমার সব বাবাকে এভাবে হারিয়ে সবাই একটা কঠিন পরিস্থিতির সমোক্ষিণ হয়েছিলাম। টাকা পেতাম সেটা সরকারি জব ছিলো বলে কিন্তু কম টাকা যা দিয়ে দুই বোনের পড়া লেখায় হিমসিম খাচ্ছিলো আম্মু যা তার মুখের চিন্তার সাফ দেখে বুঝেছিলাম। কিন্তু আম্মু আমাদের সেই চিন্তায় ফেলতো না। কষ্ট হলেও বুঝতে দিতো না আমি তখন আববুর কষ্ট নিয়ে ছিলাম আস্তে আস্তে সেটা কমে আসে ভুলতে থাকি কষ্ট হালকা হয় আবার আগের মতো হতে থাকি মাঝে মাঝে আববু বলে কাদি মিস করি। আমার মাধ্যমিক পরিক্ষা চলে আসে মন দিয়ে পরি আববু পাশে ছিলো না আম্মু কথা ভেবেই পরি এবং জি পি এ ফাইভ পেয়ে খুশির জুয়ার আসে বাড়িতে আববুর শূন্য তা উপভোগ করি আববু চাঈতো আমি ভালো রেজাল্ট করলে আববু সবাইকে মিষ্টি খাওয়াবে কিন্তু আম্মু সেটি করে না আমি বললে চুপ থাকে আমি বলি আববুর মতো সবাইকে মিষ্টি খাওয়াও না আম্মু আববু তো এটা করবে বলেছিল তুমি কেন করছো না?
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আম্মু সেইদিন আমাকে প্রথম এতো বড় একটা ধমক দিয়েছিল যাতে আমার আত্মা কেপেঁ উঠেছিলো…. আম্মুর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম আম্মু একটা কথায় বলেছিল যাতে আমি বুঝেছিলাম কতো টা কষ্ট ভেতরে চেপে রেখেছে আম্মু আর আমি তা বুঝিনি। বা বুঝার চেষ্টা ও করিনি আববু কে নিয়ে কষ্ট তারপর নিজে সামলে স্বাভাবিক হয়ে আবার সব ভুলে যেতে বসেছিলাভ কিন্তু অভাব ঘিরে ধরে আববু বেতন আস্তে আস্তে কমতে থাকে এক পযার্য়ে তারা বলে আর দেবে না একে বারে অভাবে পরে যায় আমি ডিসিশন নিয়ে নেই কলেজে ভর্তি হবো না কিন্তু আম্মু ধমক দিয়ে ভর্তি করিয়ে আনে ব্যাংকে কিছু টাকা জমানো থাকে যা দিয়ে। আম্মুর এক কথা যাই পরিস্থিতি আসুক লেখাপড়া কখনো ছারতে দেবে না। আমার হাত ধরে বলে….. কথা দে কখনো পড়া লেখা ছাড়ার কথা বলবি না নিজের পায়ে দাড়াতে হবে এই সমাজ থাকা অনেক কঠিক টাকা ছাড়া চলে না তুই ভালো পড়ে আমাদের দেখবি না মা।
সেই দিন প্রতিজ্ঞা নেই যাই হোক ভালো করে পড়া শুনি করবো। কলেজে গিয়ে আমি টিউশনি করি তখন আম্মুর কথা ভেবে কিন্তু আম্মুকে বললে না করবে তাই লুকিয়ে করি কিন্তু ধরা পরে যাই তা নিয়ে কি বকাটাই না বকে আম্মু।

তারপর বাদ দিয়ে দেয় কিন্তু কলেজে টাকা লাগে বেশি এদিকে মিনা ও হাই স্কুলে ওর ও ভালোই লাগে আমি আম্মুকে অনেক বুঝিয়ে বললাম যে প্রাইভেট পরালে আমার পড়ার ক্ষতি হবে না আমি পড়া ঠিক মতোই করবো আম্মু রাজি হয়ে গেল। এইচ এস সি পরিক্ষায় গোল্ডেন পেলাম না A+ পেলাম খালি কিন্তু আমি খুশিই ছিলাম আম্মুর মুখটি ভারছিলো। এখন আসলো ঢাকায় কোচিং নিয়ে আমি বললাম নিজেই পরতে পারবো আম্মু মানতে নারাজ কোচিং করিবেই ন য় পাবলিকে চান্জ পাব না রাজি হলাম বিপদ হলো থাকবো কোথায় তখন হঠাৎ আম্মু তার ভার্সিটির বান্ধবীর কথা মনে পরে আমার আম্মু কিন্তু শিক্ষিত। ধনী ঘরের মেয়ে আম্মু আর আববু ছিলো একা ছেলে যার বাবা মা কেউ নেই আম্মা সাথে আববু রিলেশন ম্যারিজ হয়।
সেই বান্ধবী সাথে ফোনে যোগাযোগ করে আমাকে ও কথা বলায় আর সেখানেঈ থাকতে পাঠায় কোচিং এর জন্য।

দুটো ব্যাগ হাতে নিয়ে ট্রেনে বসে আছি। ফোনের ব্যালেন্স কখন শেষ হলো খেয়াল ই করিনি এখন নেমে আমি তাকে চিনবো কি করে আন্টি বলেছে তার ছেলে আসবে নিতে কিন্তু আমি তো তাকে চিনি না আন্টিকে ফোন দিয়ে যে জিগ্গেস করবো তার ও উপায় নেই।
ট্রেন থেকে নেম দাড়িয়ে আছি প্রচণ্ড ভার হয়েছে ব্যাগ গুলো আম্মু রান্না করে দিয়ে অথচ আমি কিছু ই খায় নি সব সেই ভাবেই আছে। যার জন্য এতো ভার লাগছে।
ঘড়ির কাটায় দুটো বাজে কে আসবে নিতে কেউ তো আসছে না আশেপাশের সবাই কে চোখ ভুলাচ্ছি কাউকে চোখে পরছে না যে আর জন্য আছে। দূর কতোক্ষণ দাড়িয়ে থাকবো দুটো বিশ বেজে গেছে পা ও বিশ হয়ে আসছে। মিষ্টি খেয়াল করলো ওর থেকে কিছুটি দূরে একটা ছেলে গাড়িতে হেলান দিয়ে ফোন টিপছে একবারের জন্য ও উপরে তাকাচ্ছে না। মিষ্টি একবার পরো ক্ষ করলো কি এতো দেখে ফোনে আল্লাহ জানে এভাবে একধ্যানে তাকিয়ে আছে। আশেপাশের সব ধংস হয়ে গেলে ও চোখ উপরে তুলবে না আমি সিউর কিন্তু এভাবে দাড়িয়ে আছে কেন ছেলেটা। ছেলেটার শরীরে সাদা শার্ট হাতে ঘড়ি কালো পান্ট গিয়ের রং ফর্সা একদম সাদা আমার থেকে ও ফর্সা। এতো ফর্সা কেন রে বাবা ছেলেদের এতো ফর্সা ভালো না। আবার দাড়িয়ে আছে আমাকে কি কেউ নিতে আসবে না কাউকেই তো আমার জন্য অপেক্ষা করতে ও দেখছি না। আবার ওই ছেলেটার দিকে তাকালো মিষ্টি।

ওই ছেলেটি তো অনেক ক্ষণ নরে ওই ভাবে আছে ওনি ও কি কারো জন্য অপেক্ষা করছে হ য়তো বা। একবার জিগ্গেস করি এগিয়ে এমন ও তো হতে পারে ওনি আমাকে নিতে এসেছে।
মিষ্টি এগিয়ে গেল সামনের ছেলেটির দিকে।

–এই যে আপনি কি…..

আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই ছেলেটি বলে উঠলো….

— ইউ তুমি এতো লেট করলে তোমার জন্য আমার বেড়িতে যাওয়া কান্সেল হবে সবাই পাগল করে খাচ্ছে এই জন্য আম্মুকে বলেছিলাম এ সব ফালতু কাছে আমাখে পাঠিয় না কিন্তু না আমাকে ই পাঠাতে হবে। তারাতারি খিড়িতে উঠো আমার হাতে সময় খুব কম?

মিষ্টি হা হয়ে কথা শুনছে ছেলেটি কি পাগল এভাবে কেউ কাউকে গাড়িতে উঠতে বলে জীবনে দেখে নি। মিষ্টি ভাবছে আচ্ছা ছেলেটি যদি সত্যি পাগল হয় না ভাঈ এর সাথে যাওয়া যাবে না। চেনে না জানে না হঠাৎ গাড়িতে উঠতে বলেছে নিশ্চিত পাগল হবে কোন আমি যেই পেছনে ঢ়রে চলে আসতে যাব আবার কথা বলে উঠলো…..

— তুমি ওই দিকে কোথায় যাচ্ছে আমি তো গাড়িতে উঠতে বললাম?

— আপনি কি পাগল?

— হুয়াট

এত জোর বশল যে আমি কেপে উঠলাম।

— না মানে রাগবেন না প্লিজ। আমার মনে হচ্ছে আপনি পাগল আমি কি আপনার সাথে কথা বলেছি বলে এভাবে নিয়ে যেতে চাইছিন সরি আসলে।

— স্টপ ইট কি সব আবুল তাবুল বলছো আমি ম্যাড রিয়েলি এটা তুমি আমাকে বলছো আমার মতো এতো কিউট সুইট একটা ছেলেকে তোমার পাগল মনে হচ্ছে লাইক সিরিয়ালি?

— না আপনাকে দেখে একদম তা মনে হয় না পাগল হলে ও কেউ বলবে না আপনি এতো স্মার্ট যে সবাই

— হুয়াট তুমি আবার আমাকে পাগল বলছো।

— হুম আপনি পাগল না হলে এভাবে আমাকে গাড়িতে উঠতে বলতেন না অচেনা কাউকে।

— ও মাই গড এই জন্য। হ্যা এটা ঠিক তোমাকে চিনি না বাট আমি একটা মেয়েকে রিসিভ করতে এসেছি। আর তুমি একটা মেয়ে সো সেই তুমি আমি সিউর।

— এভাবে যাচাই না করে কনফিডেন্স দেওয়া ভালো না আমি সেই মেয়ে নাও হতে পারি। আপনার যাচাই করা উচিত ছিলো আচ্ছা আপনি না করলে ও আমি না করে যাচ্ছি না।

— আমার এমনিতে লেট হয়ে গেছে এখন এত যাচাই করা লাগবে না তুমি চলো পড়ে করে নিয়।

— পরে করলে হবে না এখন ই করতে হবে আপনি সাথে চলে গেলে যদি ভুল জায়গার চলে যায় তখন আমি আসল জায়গায় পৌঁছাবো কি করে? আপনার ফোনটা দেন আমি আন্টি কে ফোন দেব?

— কেন

ওনাকে কিছু না বলে আমি ফোন টান মেলে।আতে থেকে নিয়ে নিলাম।

চলবে❤

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?র্পব-৪

0

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?র্পব-৪
#লেখিকা:তানজিনা-আক্তার-মিষ্টি( Tanjina Akter Misti)

অবাক হয়ে রাজের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। কী থেকে কি হলো আমার মাথায় ঢুকলো না কিন্তু রাজ এমন করলো কেন? জানতে হবে আর ডাকই বা কেন দিয়েছে অদ্ভুত হঠাৎ এমন করার মানে বুঝবো কেমনে? তিথি বলেছিল শুনে যা আমি কেন যে ওমন করে চলে এলাম তখন তো একটু ও শুনতে মন চাই নি। এখন শুনবো কি করে হাত জ্বলছে উঠে নিচে নেমে এলাম। আর কতোক্ষণ বসে থাকবো বসে থাকলে ও তো কিছু জানতে পারবো না রাজের কাছে শুনতে হবে কি জন্য ডেকছিল? হাত লুকিয়ে রুমে এলাম মামুনি দেখলেই চেচামেচি শুরু করে দিবে কি ভাবে হলো? এতো প্রশ্নের উওর দেবো না তাই রুমে এসে নিজেই হাতে মলম লাগালাম।
নয়টার সময় খেতে আসলাম টেবিলে মামুনি খাবার বাড়ছে আন্কেল বসে আছে মুখ ভার আমি গিয়ে টেবিলে বসলাম।
— কি হয়েছে মামুনি তোমরা মুখ এমন করে রেখেছো কেন?
— শান্তি নেই একটু শান্তি নেই কি হলো আমার ছেলেটার বল তো সব সময় এমন রেগে থাকে। চিৎকার করে আমার এতো শান্ত ছেলেটার কি হয়ে গেল।
–কি হয়েছে বলো?
–আজকে ও ভার্সিটি থেকে এসে থেকেই রেগে গেল আমি কিছু বললাম। ডাকতে গিয়ে ও দেখি দরজা বন্ধ এখন পযর্ন্ত বন্ধ করেই আছে ধাক্কা দিলে রেগে উঠে ডাকতে না করেছে।
— ওহ
— তুই তো দেখেছিস মিষ্টি তুই বল আগের রাজের সাথে এই রাজের কোন মিল আছে। যে চিৎকার করতো না এখন সে চিৎকার করেই সব সময় কেমন করে থাকে।
— হুম
–খেতে ও আসলো না তুই একটু দেখবি ডেকে।
— আচ্ছা যাচ্ছি।

এটাই সুযোগ শুনার যেই উঠে যেতে যাব মামুনি আটকে দিল বলল খেয়ে নে আগে তুই তারপর ওর খাবার নিয়ে যাচ্ছ।

আমি ওক বলে। খেতে বসলাম কিন্তু খেতে ভালোলাগছে না পেটে খিদে তাই কোন রকম খেয়ে রাজের খাবার নিয়ে সিড়ির কাছে এলাম। দ্রুত হাটছি আবার আস্তে কিভাবে জিগ্গেস করবো আমি বললে কি আমাকে বলবে চেষ্টা করে দেখতে হবে।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
দরজায় সামনে দাড়িয়ে আছি ঢুকার সাহস হচ্ছে না না জানি কি বলে? মামুনি বলেছিল দরজা বন্ধ কিন্তু দরজা তো খুলা দেখছি মনে হয় ভেবেছে আর কেউ ডাকতে আসবে না। আমি মনে অসীম সাহস নিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে গেলাম রাজ খাটের মাঝে শুয়ে আছে যে ভাবে ভার্সিটিতে ছিলৌ সেভাবে ছাদে ও গিয়েছিল এখন ও সেই পোশাক এই আছে চেন্জ করে নি। চোখ বন্ধ করে কপালে হাত রেখে আছে আমি ধীর পায়ে এগিয়ে পাশের টেবিলে খাবারের পিলেট রাখলাম একটু শব্দ করে যাতে বুঝতে পারে কেউ রুমে এসেছে। শব্দ শুনে রাজ কপালে থেকে হাত সরিয়ে চোখ মেলে তাকালো খুব শান্ত ভাবেই তাকালো।

হাতের ইশারায় আমাকে কাছে ডাকলো আমি কিছু না ভেবেই খাট ঘেষে দাড়িয়ে পরলাম। রাজের দিকে তাকিয়ে আছি চোখ দুটো অসম্ভব লাল হয়ে আছে কেদে এমন লাগছে। হঠাৎ হাতে টান অনুভব করলাম দেখি রাজ আমার হাত ধরে টেনে পাশে বসিয়ে দিলো। আমি অবাক হয়ে আছি এ খাটে কখনো কাউকে বসেতে দূরে থাক রুমে আসলেই বকাবকি শুরু করে দেয়। আমি জোর করে যে কয়বার বসেছি বকা খেয়েছি। রাজের এমন শান্ত দৃষ্টি দেখে কিছু বুঝতে পারছি না আমি সেই সুযোগ পেলাম। জিগ্গেস করতে মুখ খুলবো কিন্তু খুলতে পারলাম না রাজ আমার হাত নিজের বুকে চেপে ধরলো। সঙ্গে সঙ্গে কারেন্টে শক খেলাম হাত সরিয়ে আনতে গেলে রাজ আমার হাত শক্ত করে ধরে।

— প্লিজ সরিয়ে নিয়ো না হাত মিষ্টি। বাস্তবে তো তোমার হাত আমি বুকে চেপে ধরবো না কল্পনায় না হয় একটু রাখো। ( চোখ বন্ধ করে ) আমার বুকের মধ্যে অনেক জ্বলছে কেন আমার কথা শুনো না কেন? আজ কেন এতো কষ্ট দিলে কেন এতো অবহেলা করো আমাকে একটু ও বুঝতে চাও না কেন?

চোখ বন্ধ করে একাধারে কথা বলে চলেছে রাজ আর আমি অবাক হয়ে কথা শুনছি। ঈই ষব আবুল তাবুল বলে যাচ্ছে। পাগল হয়েগেল নাকি আমি টান মেরে হাত সরিয়ে নিলাম আর উঠে দাড়ালাম এখনো শরীর কাপছে। আমি হাত সরিয়ে নিতে রাজ চোখ খুলে ভ্রু কুচকালো আমাকে দেখে কেমন যেন করে উঠে বসলো। এতোক্ষণ যে আমি ছিলাম সেটা মনে হয় দেখেই নি এখন ই দেখেছে।

–তুই এখানে কি করছিস?

— আমি তো খাবার দিতে এলাম কিন্তু আপনি তো।

–আমি তো কি তোর সাহস কি করে হলো আমার ঘরে আসার তোকে বলেছি না। এঘরে আসবি না কখনো?

— না মানে মামুনি বলল আর আপনি ওইসব কি বলছিলেন?

–ক ই ক কি বলছিলাম? তোতলিয়ে

— ওই যে আমার হাত বুকে

— একদম বাজে কথা বলবি না। রা বের হ আমার ঘর থেকে বের হ বলছি!

বলেই রাজ উঠে দাড়ালো।

— নাহ আমি যাবো না কি বলছিলেন আগে বলেন? আর ছাদে ওমন করলেন কেন আমি আপনাকে কি কষ্ট দিয়েছি?

–তুই যাবি আমি তোর ফালতু কথার উওর দিবো তুই ভাবলি কি করে? তুই আমার কাছে কেইফত চাবি আর আমি দেবো।

— বলেন না কি কষ্ট আপনার আজকে আমাকে কেন ডেকেছিলেন?

— তোকে আমি বের হতে বলেছি।

— না আমি নাশুনে যাব না

— যাবি না?

— না

আমি না বলেতে দেরি হলে ও আমি গালে চর পরতে দেরি হলো না গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছি সব সময় আস্তে দিলেও আজকের চর টা অনেক জোরে দিয়েছে। রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে শক্ত করে হাতে ধরলো।

— আমার ভুখে উপর কথা বলা। খুব বেরেছিস তাই না চর খেতে ভাল লাগে তোর ওকে এখন থেকে আর ও খাবি আর কখনো যদি আমার ঘরে আসিস না তোকে আমি মেরে ফেলবো।

— খাবার টা তো খান।

— তুই খা আমাকে এতো দরদ দেখাতে হবে না।

আমি তাও হাত ছুটিয়ে খাবার সামনে আনলাম খাবার দেখলে হয়ত শান্ত হবে কিন্তু শান্ত হবার বদলে আর ও রেখে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এমন কাজ দেখে আমি অবাকের চরম সীমায় পৌছে যায়। এতো রাগতে কখনো দেখি নি খাবার ফেলে দিলো। আমার বাহু চেপে ধরে ধাক্কা দিয়ে রুমের বাইরে বের করে দিলো তারপর ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিলো। মামুনিকে দেখলাম চিৎকার শুনে দৌড়ে আসলো আমি মামুনিকে দেখে উঠে দাড়ালাম। কিছু জিগ্গেস করবে আমি দৌড়ে নিজের রুমে চলে এলাম। এতোটা হিংস্র কি করে হতে পারছে রাজ কি হয়েছে ওর।

খাটে শুয়ে আছি আর কান্না করছি খুব কষ্ট লাগছে খুব মনে পরছে আগের কথা কতো ভালো ছিশলো সময় গুলো কোন কষ্ট ছিলো না।

আগে………………

?

.

চলবে ❤

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?পর্ব- ৩

0

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?পর্ব- ৩
#লেখিকা:তানজিনা আক্তার মিষ্টি( Tanjina Akter Misti)

ভার্সিটিতে

ক্লাস রুমে বসে আছি আমি আর তিথি। কানের কাছে বকবক করেই চলেছে অনবরত থামার নাম গন্ধ ও নেই এমনিতেই আমি রেগে আছি আর ও আমার সেটা নিয়ে মজা নিচ্ছে। কালকে রাতের কথা বলেছি রাজ আমাকে জোর করে খাইয়ে দিয়েছে। সেটা বলার পর থেকেই এভাবে কানের কাছে বকবক করে চলেছে। মেইন টপিক্ম হলো রাজ নাকি আমাকে ভালোবাসে এইটা কোন কথা। এমন অদ্ভুত কথা ও কি করে বলে আমি বুঝে উঠতে পারি না। রাজকে কখনো আমি এমন ভাবে আমার দিকে তাকাতে ও দেখি নি। আর যা করে তাতে মনে হয় আমি তার চরম শত্রু। একটা সময় রাজের সাথে খুব ফ্রেন্ডলি সম্পর্কে ছিলো কিন্তু এখন কি যেন হয়ছে সব সময় রাগী মুড নিয়ে থাকে। কি করে এতোটা পাল্টে গেল কে জানে। আগে হলে না হয় বিশ্বাস করা যেত এখন কি করে তিথি এসব ভাবতে পারছে।

— দোস্ত আমি সিউর রাজ ভাইয়া তোকে ভালোবাসে দেখিস না কোন ছেলে তোকে কিছু বললেই কেমন রেগে যায়!

— চুপপপপ…… আর একটা বাজে কথা বললে তোকে আমি মেরে ফেলবো?
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
— এতো রাগছিস কেন? তুই ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখ ভালো না বাসলে এভাবে কেউ কারো কেয়ার করে?

— তুই কেয়ার কোথায় দেখছিস? ( ভ্রু কুচকে অবাক হয়ে )

— তুই আসলেই বোকা!

— একদম আমাকে বোকা বলবি না তুই যত সব আজাইরা কথা বলছিস? ভালোবাসে তাও আমাকে তোর মাথাটা না একে বারে গেছে। রাজ আমাকে সহ্যই করতে পারে না। দেখিস না সব সময় মারে আর কতো কথা শুনায় ভালোবাসলে এসব কিছু কখনো করতে পারতো না। আর তুই দেখিস না কিছু চোখ কি কানা তোর?

— মানে কানা হতে যাব কোন দুঃখে… কি দেখবো আমি কি দেখার কথা বলছিস( সন্দেহ চোখে তাকিয়ে )

— ( তিথির মাথায় ঠোকা দিয়ে ) কি গাদা তুই দেখছিস? চোখের সামনে এতো সুন্দর একটা জুপি আছে তাদের কে রেখে আমাকে নিয়ে জরাচ্ছিস?

— হেয়ালি না করে ঠিক করে বল?

— মারিয়া আপুকে দেখিস না ওনি তো আমাদের ভাবি। মানে আমাদের রাজের গার্লফ্রেন্ড?

— কিহহহহ;

— মুখে মশা ঢুকবে মুখটা বন্ধ কর?

সারা ক্লাস তিথি কেমন চুপ হয়ে রইল কথা বলল না। ভার্সিটি শেষে……

— কি রে কথা বলছিস না কেন?

— দোস্ত আমি সত্যি অবাক এতো অবাক যে বলে বুঝাতে পারবো। কোথায় আশা নিয়ে ছিলাম ভাইয়া তোকে ভালোবাসে কিন্তু আমার সব আশায় জল ঢেলে দিল ওই মারিয়া। মুখ ছোট করে বলল…

— আজে বাজে চিন্তা বাদ দে। তুই এমন অদ্ভুত কথা মাথায় কি করে আনলি সেটাই আমার মাথায় ঢুকছে না। আমার মতো একটা গ্রামের আনস্মার্ট মেয়েকে ভালোবাসবে কিনা রাজ? যার জন্য সারা ভার্সিটির সব মেরেরা পাগল পারিস ও তুই এমন কথা ভাবলি কেমনে? তার জন্য মারিয়া আপুর মতো শহরের ইস্মার্ট সুন্দর মেয়েকেই মানায় বুঝছিস গাধী?

— একদভ নিজেকে ছোট করবি না। তুই ওই মারিয়ার থেকে অনেক বেশি সুন্দর বুঝছিস। ওটার কি ছোট ড্রেস পরা ওটাকে কি ইস্মাট বলে নাকি?

— তোকে বুঝানো আমার র্কম না চুপ থাক।

কথা গুলো বলে সিড়ি দিয়ে নেমে এলাম। তিথি কমন রুমের কথা বলে গেল ওইদিকে আমি একা নেমে দাড়ালাম ওর জন্য হঠাৎ কেউ পাশে থেকে কথা বলে উঠলো তাকিয়ে শক হয়ে গেলাম। কারণ আর কেউ না ইনি তো মারিয়া আপু আমি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি চুপ করে। উনি বলে উঠলো…..

— হাই মিষ্টি,, কেমন আছো তুমি?

হঠাৎ ওনার মিষ্টি কথায় অবাক হয়ে তাকালাম….
এতো ভালো ভাবে কখনো কথা বলেছে বলে আমার মনে পরছে না আমি চোখ ছোট ছোট করে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি। ওনি আমাকে কথার উওর না দেওয়ায় আবার বলল…

— হে মিষ্টি তোমাকে কিছু বলছি?

–হু আপু ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?

— আমি তো ভালো আছি বললে ও কম হবে। তুমি জানো আমি আজ কতো খুশি?

— না

কতো বড় বেকুব নিজে খুশি সেটা আমি জানি কিনা জিগ্গেস করছে। পাগল একটা বল না বললে জানবো কি করে মাথা মোটা একটা। মুখে বলার সাহস নাই চুপ করে থাকাটাই হয় সব সময়।

— রাজ বলেছে ও আমাকে…..

গেল আমার কথা শুনা ও হলো এখনই ফোনটা আসতে হলো। ফোন কানে নিয়ে চলে গেল দূর কি বলতে চেয়েছিল রাজ ওকে কি বলতো। এতো খুশি তাহলে নিশ্চয়ই ভালোবাসি বলেছে। কথা টা নিজের মনে বলল মিষ্টি কিন্তু বলতে গিয়ে একটা কষ্ট অনুভব করলো বুকে। এই কষ্ট পেয়ে কি হবে এটা মরিচীকার জন্য কষ্ট যা কখনো পাবে না। নিজের মনে একটা দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে এলো।
পেছনে থেকে তিথি ডেকে উঠলো ও আসায় ওর সাথে বেরিয়ে এলাম মাঠ পেরিয়ে যাচ্ছি না চাইতেও একবার ডানে ফিরে তাকালাম।
রাজ কে ঘিরে সবাই বসে আছে মারিয়া ও ওখানেই আছে রাজের পাশে বসে আছে সবাই কিছু নিয়ে হাসাহাসি করছে।
হঠাৎ ওখানে থেকে জয় আমাদের দিকে হাতের ইশারা করলো ওখানে যাওয়ার জন্য। আমি আর তিথি মাঠের মাঝে আছি তিথি অন্য দিকে ফিরে যাচ্ছে। দেখে নি আমি দ্রুত চোখ সরিয়ে তারাতারি হার্ট দিলাম আবার না জানি কি নিয়ে অপমান করে।
কিন্তু এগুতে পারলাম না রাজের চিৎকার কানে এলো এবার তিথি তাকালো আর আমার দিকে ভ্রু কুচকে।

— কি রে শুনছি ডাক তোকে ডাকছে রাজ ভাইয়া?

— হুম শুনছি।

— চল তাহলে?

— নাহ কথা কানে নিচ্ছ না। আবার নিশ্চয়ই কিছু নিয়ে আমাকে কথা শুনাবে তার থেকে বরং না শুনার ভান করে তারাতারি চল।

— আরে শুনে তো নেই কি বলছে ডাকছে কেন? না শুনলে আর ও বেশি রেগে যাবে।

— তুই যা আমি যাব না।

বলেই হাটা দিলাম। তিথি ও এলো আমার পেছনে যায় নি। বাইরে এসেই গাড়ি পেলাম আর সঙ্গে সঙ্গে উঠেই চলে এলাম।

.

.

ছাদে দাড়িয়ে আছে এখন পাচটা বাজে রাজ এখন ও বাড়ি আসে নাই। আমি ছাদে এসেছি অনেক ক্ষণ কে জানে বাড়ি এসে আমার কি অবস্থা কলবে তখন জেদ দেখিয়ে তো চলে এলাম। দোলনায় বসে কথা গুলো আউরাচ্ছছিলাম হঠাৎ কেউ ঝড়ের গতিতে এসে আমাকে টান মেরে দোলনা থেকে ফেলে দিল। আচমকা এমন করার আমি হাথে ব্যাথা পেয়ে আহ করে উঠলাম….
মাথা উচু করে দেখি রাজ চোখ মুখ লাল করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি উঠে দাড়ালাম কিছু বলবো কিন্তু রাজ বলতে লাগল….

— খুব বার বেরেছিস তাই না। খুব পাখনা গজিয়েছে তোর আমার কথা অমান্য করিস? এতো তেজ কিসের তোর হ্যা কিসের এতো অহংকার বল।

আমার কাধে ঝাকুনি দিয়ে বলতে লাগল…
সব সময় কেমন যেন রেগে কথা বলে যখন তাকে হিংস্র লাগে কিন্তু আজকে চোখে মুখে অভিমান দেখতে পারছি আমি।

— কি হয়েছে আপনার?

–কিছু হয় নি কিছু না।

বলেই ধাক্কা দিয়ে নেমে গেল। আমি অবাক হয়ে তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।

প্রথম যেদিন এ ঢাকা আসছিলাম তখন রাজকে যেমন লাখতো আজ ও আমি সেই রাজকে দেখলাম।

সেই সব আবার মনে পরছে…..?

চলবে❤

[ গল্প টা নিয়ে অনেক অভিযোগ শুনতে হয়েছে। যার জন্য গল্প টা আর লিখতে চাইছিলাম না কিন্তু কিছু পাঠক যারা গল্প টা দিতে অনুরোধ করেছেন তাদের কথা ভেবে আবার দিলাম। আর এটাও ভেবেছি যত সমালোচনাই হোক যত খারাপ ই বলুক এই গল্প আমি আমার মতো করেই শেষ করে। কোন চেন্জ আনবো না এতে যত খারাপ বলার বলেন আই ডোন্ট কেয়ার। ঠাসস নিয়ে এতো প্রবলেন আপনাদের আমি গল্প আর ও বেশি ঠাস দেব যাতে আপনারা ভালো মতো সমালোচনা করতে পারেন। আমার কিন্তু ভালোই লাগছে এটা ভেবে যে আপনারা আমার গল্প আর আমাকে নিয়ে এতো ভাবেন না ভাবলে তো আমার সমালোচনা করতে পারতেন না। খারাপ রাইটার আমি খারাপ হয়েই থাকতে চাই ]

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?র্পব:২

0

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?র্পব:২
#লেখিকা:তানজিনা আক্তার মিষ্টি (Tanjina akter misti)

ঘুমের ঘুরে কারো ছোঁয়া পেয়ে ধরফরিয়ে উঠে বসলো মিষ্টি। সারা ঘরে চোখ বুলালো কিন্তু একি রুমে তো কেউ নেই। আমি একাই আছি তাহলে আমার যে মনে হলো কেউ আমায় ছুয়ে দিচ্ছে পায়ে হ্যা পায়ে। মিষ্টি উঠে দাড়ালো বিছানা থেকে দরজা তো ভালো করেই বন্ধ করা আর রুমে ও কেউ নাই তাহলে আমি কি ভুল বুঝলাম। হঠাৎ মিষ্টি খেয়াল করলো আমি দাড়িয়ে আছি পায়ের ব্যাথা ও তো নেই পা আঠা আঠা লাগছে কেন মনে হচ্ছে মলম লাগিয়েছে। কিন্তু মামুনি তো তখন বরফ লাগিয়ে দিয়েছিলো? পরে এসে আবার মলম দিয়েছে মনে হয় ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি তিনটা বাজে আল্লাহ এতো সময় পার হয়ে গেছে আমি এতো সময় ঘুমালাম। কেউ আমায় ডাকলো না কেন? হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো হাতে নিয়ে দেখি মা ফোন দিছে। তারাতারি করে ফোন রিসিভ করলাম?
–হ্যালো আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছো আম্মু?
–ভালো আছি আল্লাহর রহমতে। তুই কেমন আছিস?
–ভালো, মিশু কেমন আছে?
–ভালো কিন্তু সারাদিন তোর কাছে যাওয়ার বায়না করে?
–তাহলে আসো এখানে?
–নারে এখন আর যাব না।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
মার সাথে কিছু ক্ষণ কথা বলে ফোন রেখে দিলাম। মিশু আমার ছোট বোন। ফোন রেখে চোখে মুখে পানি দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম। ডয়িং রুমে দেখি রাজ ভাইয়া সোফায় বসে ফোনে কিছু করছে আমাকে দেখে একবার মাথা উচু করে আমায় দেখলো তারপর আবার ফোনের দিকে তাকিয়ে টিপতে লাগলো। এমন ভাবে তাকিয়ে টিপছে যেন তার আশেপাশের মানুষ আছে না গরু ছাগল আছে বুঝবে ও না। এতো কি করে সারাদিনে ফোনের ভেতরে আল্লাহই জানে। সকালে এতো খারাপ বিহেভ করলো মিষ্টি সাথে সেসব ভুলে গেছে মিষ্টি কারণে এমন ব্যবহার প্রায় ই পায় সে তাই মনে রেখে ও লাভ নেই। মনে রাখতে ও চায় না কিন্তু মাঝে মাঝে কষ্ট ধরে রাখতে পারে না যা চোখের অশ্রু হয়ে বেরিয়ে আসতে থাকে শত বাধা দিলে ও।
মিষ্টি কিছুক্ষণ রাজের দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ ফিরিয়ে মামুনির দিকে যেতে লাগলো। মামুনি রান্না ঘরে কি যেন করছে। আমাকে আসতে দেখেই এগিয়ে এলো আমি আর যেতে পারলাম না মামুনি রেগে বেরিয়ে এলো মামুনির রাগ টা বুঝতে পারছি না কি জন্য রেগে আছে।

–এসব মিষ্টি কতো বার ডেকেছি তোকে জানিস মানলাম পায়ে ব্যাথা উঠতে পারবি না। তাই বলে এতো সময় কিউ ঘুমায় দুপুর ঘরিয়ে বিকেল হয়ে গেছে দেখ চারটা বেজে গেছে। এতো সময় ঘুমিয়ে কাটালি আমি তাতে কিছু বলবো না কিন্তু সময় মতো খাবার টা তো খেতে হবে। সকালে ও ভালো মতো খেলি না দৌড়ে ভার্সিটিতে চলে গেলি। সারাদিন না খেয়ে থাকলি কি সুস্থ থাকতে পারবি অসুস্থ হয়ে যাবি আর তোর মা আমাকে বলবে আমার মেয়েকে দেখে রাখে না?

এক দুমে কথা বলে গেল মাভুনি মাঝে আমার কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। মামুনি এমন ই কথা শুরু করলে আর থামে না অনেক সময় তো বকে ও কিন্তু আমার খারাপ লাগে না। ভালোবেসে এর থেকে হাজার গুন কথা শুনতে ও আমি রাজি। ঘুম এই ঘুমের জন্য মার কাছে ও বকা খেতাম সব ঠিক একবার ঘুমিয়ে পরলে সহজে উঠতে পারি না।

— মামুনি তুমি এতো ব্যস্ত হচ্ছো কেন? আমার খিদে পায় নি তো পেলে খেতামই?
–খিদে পায় নি মানে কি সারা দিন চলে গেল আর তুমি এখন বলছো খিদে পায় নি। তারাতারি খেতে চলো?
— সত্যি বলছি আমি?
–থাক তোমার সত্যি আর আমার শুনে লাভ নেই। আমাদের কি তুমি আপন ভাবো নাকি যে কথা শুনবে নিজের র্মজি মতো চলবে। আর চলছো ও তো আমরা কি কিছু বলেছি?

আমি কিছু বলতে যাবো মামুনি কে কিন্তু বলতে পারলাম না রাজের কথা শুনে…

–আম্মু এতো জোর করার কি আছে বুঝি না আমি? যখন খিদে পাবে একাই খাবে তুমি এতো জোর কেন করছো ওকে?
— কি বলছিস রাজ সারাদিন না খেয়ে রইল আমি জোর করবো না?
— না করবে না; ও কি ছোট বাচ্চা যে তোমাকে বলে বলে খাওয়াতে হবে। খেতে মন চাইলে খাবে নয়তো খাবে না এতো তোলা তোলা করা কি আছে? খেতে বললেই না খাব না, না খেয়ে থাকনা আমাদের কি আসে যায় যতসব?
–রাজ এভাবে কথা বলছিস কেন মেয়েটাকে?
–যথেষ্ঠ ভালো করেই বলেছি। এর থেকে ভালো তুমি বলো দাম দেখায় তাকে খেতে বললে তার খিদে পায় না এতো নেক্যামো কেন করে বুঝি না আম্মু তুমি সেগুলো সহ্য করো?

কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রাজ নিজের রুমে দিকে চলে গেল সিড়ি বেয়ে মামুনি পেছনে থেকে ডেকে বকে যাচ্ছে। আর আমাকে কিছু মনে করতে না করছে। আমি কিছু মনে না করলে ও বুকের ভেতরে কষ্ট অনুভব করছি। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার সব সময় তো এমন ই করে তাহলে কষ্ট কেন পাচ্ছি আমি?
মামুনি কী কি যেন বলছে হাত ধরে ডায়নিং টেবিলের কাছে নিচ্ছে আমার কানে কোন কথা যাচ্ছে না রাজের কথা গুলো কানে বাজছে আমি নেক্যামো করি কিন্তু কখন করলাম। দাম দেখায় সামান্য খেতে মানা করাকে কি কেউ দাম দেখানো বলে আজই জানতে পারলাম। আমার গল্প টা চুড়ি হয়েছে অনেকে করেছে এটার রিয়েল ওয়েটার তানজিনা আক্তার মিষ্টি যারা রাইটার এর জায়গায় এই নাম বাদ দিয়েছে সেখানে দয়া করে একটা করে রিপোর্ট করবেন প্লিজ মামুনির হাত ছাড়িয়ে নিলাম খেতে সত্যিই মনন চাইছে না তবুও এতো বলাতে খেতে চেয়েছিলাম কিন্তু এখন সে টুকু ও মরে গেছে আমার গলা দিয়ে এক ফোটা জল ও নামবে না এখন মামুনি কে অনেক বললাম মামুনি ভাবছে ভাইয়ার জন্য খাবো না আমি বললাম না তার জন্য না এমনি খাবো না। বলে এক মুহূর্তে না দাড়িয়ে রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম। মামুনি আবার এসে ডাকবে জানি তার থেকে দরজা বন্ধ করে থাকাটাই ভালো হবে। হুম তাই হলো দরজা বন্ধ করতেই মামুনির ডাককানে এলো।

— মামুনি আমি কারো সাথে রাগকরি নি বিশ্বাস করো। তুমি এতো চিন্তা করো না তো। আমার পা ব্যাআ করছে তাই এখন শুয়ে থাকবো আজকে আর ডেকো না কাল কথা হবে।

মামুনি কে অনেক বলে পাঠাতে পারলাম। আর একবার এসেছিলো কিন্তু কিছু বলে নি তখন নয়টা বাজে তখন সবাই খাওয়া দাওয়া করে আমি আর গিয়ে রাজের কাছে কথা শুনতে চাই না। এখন গেলে আর ও কথা শুনতে হবে। তার চেয়ে আজ আর বের ই হবো না তাই ভালো শুয়ে আছি ঘুম আসছে না আসবেই কি করে সারাদিন ঘুম এসে এখন আর ঘু কোথা থেকে আসবে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি দশটা দশ বাজে। সারারাত পার করবো কিভাবে এদিকে পেটে ইদুর দৌড়াচ্ছে মনে হয় খিদের জালায় ইস কেন যে রাগ করে ঘরে আসছিলাম। এখন খাবো কি খিদে আমার সহ্য হয় না ঘুম আর খাওয়া ঠিক মতো না করতে পারলে মাথা এলিয়ে যায়। কি খাবো সবাই ঘুমিয়ে পরলে গিয়ে দেখবো কিছু আছে নাকি থাকবে না সিউর এরা গুনে গুনে রান্না করে বেশি থাকেই না। হঠাৎ ভাবনার মাঝে দরজায় ধাক্কা পরলো। এখন আবার কে ডাকছে আমি কে বলার আগে ওই পাশে থেকে একজনের গম্ভীর কথা কানে এলো আর আমি ঠাস করে উঠে দরজা খুলে দিলাম। নিচের দিকে তাকিয়ে আছি আর ভাবছি এতো রাতে ভাইয়া আমার রুমে কি করছে বকতে এসেছে নাকি আবার।

— ওইখানে মূর্তির মতো দাড়িয়ে আছিস কেন?
–না মানে আপনি কি কিছু বলবেন ভাইয়য়য়…

তারাতারি মুখে হাত দিয়ে আটকে ফেললো কথা টা মিষ্টি কি বলতে যাচ্ছিলাম আর একটু হলেই ঠাসসস করে খেতাম একটা সঙ্গে সঙ্গে মিষ্টি বাম হাত গালে চলে গেল। কারণ মিষ্টি যতবার ভাইয়া বলেছে একটা করে চর খেয়েছে তাই আজ এতভয় পেলো রাজর দিকে তাকিয়ে দেখে আগুন চোখে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ খাটের উপর চোখ গেল খাবার হ্যা খাবারের প্রিলেট ভাইয়া খাবার নিয়ে এসেছে কেন?

–কি আবার দাড়িয়ে আছিস তারাতারি খাবার টা শেষ কর?
–আমি খাবো না।
–কি বললি খাবি না?
–নাহ

ঠাসসসস, পরলো এক থাপ্পড় আমি গালে হাত দিয়ে রাজের দিকে তাকিয়ে আছি। সব সময় হাতটা রেডিই থাকে।

–তুই কি ভেবেছিস তোর মতলব আমি বুঝি না। আর কেউ না বুঝলেও আমি ঠিক চিনি তোকে হাড়ে হাড়ে এখন না খেয়ে অসুস্থ হয়ে সবাইকে বলে বেড়াতে চাস যে আভরা তোকে অত্যাচার করি ঠিক মতো খেতে দেয় না তাই না? কিন্তু তা তো হবে না আমি বেচে থাকতে অন্তত হবে না?
–কি বলছেন আপনি আমি এইসব কেন চাইবো? আমি এমন কিছু কখনো চাইনা এমন কি ভাবতে ও পারি না?
–একদম নাটক করবি না ভাফতে ও পারিস না। তুই বলবি আর আমি বিশ্বাস করবো আমাকে এতো বোকা পেয়েছিস নাকি হ্যা?
–আপনাকে বোকা ভাববো কেন? আমি তো জাস্ট…
— নো এক্মকিউজ, আমি সব জানি বিশ্লেষণ শুনতে চাই না?

বলেই আমাকে টেনে খাটে নিয়ে বসিয়ে দিলো।

–তুই না খেয়ে ইচ্ছে করে আমাদের ফাসাতে পারবি না? আমি সেই সুযোগ তোকে দেবো না তোকে খেতেই হবে দরকার পরলে আমি জোর করে খাওয়াবো।

বলেই খাবার নিজে হাতে আমার মুখে ঢুকিয়ে দিলো। চোখের পানি বাধা মানছেই না খাওয়াচ্ছ সাথে বকা মার ফ্রি খাবার গিলতে ও পারছি না গলায় যেন আটকে পরেছে আর একজন হিলিয়ে খালি দিয়েই চলেছে…?

চলবে❤

[ সবার রিকোয়েস্ট এ গল্প দিলাম। ভুলক্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন]

লুকোচুরি_ভালোবাসা?পর্ব:১

0

—ঠাসসসসস, বুকের উপর ওড়না না রাখতে পারলে এটা লোক দেখাতে গায়ে রাখতে হবে না। বলেই রাজ মিষ্টির ওড়না টান মেরে নিচে ফেলে দিলো। ভার্সিটির সবার সামনে কাজটা করলো রাজ যাতে লজ্জা কুকরে উঠলো মিষ্টি। কিছু না ভেবেই রাজকে জরিয়ে ধরে বুকে মুখ গুজে দিলো নিজেকে লজ্জিত হওয়া থেকে আর কোন উপায় নাই মিষ্টির।
ভার্সিটির সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন চোখ দুটো বেরিয়ে আসবে। বড় বড় চোখে তাকিয়ে আছে সবাই মিষ্টি আর রাজের দিকে কারণে সবাই রাজকে চিনে রাজ ভার্সিটির ক্রাশ ভয় ফাইনাল ইয়ার এ পড়ে। সবাই রাজ বলতে পাগল কিন্তু রাজ কোন মেয়ে মেয়ে কে পাওা দেয় না। সব মেয়েরা সেজেগুজে রাজের আসে পাশে ঘুরে বেরায় যাতে রাজের চোখে পড়ে কিন্তু রাজ ফিরে ও তাকায় না আজ রাজের এমন বিহেভার আবার একটা মেয়ে রাজকে জরিয়ে ধরে আছে যা কেউ মেনে নিতে পারছে না সবাই রেগে তাকিয়ে আছে। সবাই মিষ্টি কে হিংস বাঘের মতো দেখছে যেন ধরতে পারলেই উচিত শিক্ষা দিয়ে ছারবে।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
রাজ জোর চিৎকার করে সবাই কে যার যার ক্লাসে যেতে বলল আর সবাই ভয়ে সুরসুর করে চলে গেল সেকেন্ডের ভেতরে মাঠ ফাকাঁ হয়ে গেছে। সবাই চলে যেতেই রাজ ধাক্কা দিয়ে মিষ্টি কে নিজের থেকে সরিয়ে দিলো মিষ্টি আচমকা চিৎকার আর ধাক্কা খেয়ে নিজেকে সামলাতে পারলো না ঠাস, করে নিচে পরে গেল।
–তোর সাহস কি করে হলো আমাকে জরিয়ে ধরার? তোর ওই নোংরা হাতে আমাকে ধরে আমার এতো দামী শার্টটা নষ্ট করে ফেললি?
বলেই শার্ট মুছতে লাগলো,, মিষ্টি অবাক চোখে তাকিয়ে আছে কতোক্ষণ তো ধরে রাখলাম তখন তো কিছু বলল না এখন এভাবে। সব সময় আমার সাথে এমন ব্যবহার কেন করেন ওনি এভাবে সবার সামনে আমাকে অপমান করতে ওনার এতো ভালো লাগে। ভাবতে মিষ্টি চোখ দিয়ে নোনা জল পরতে লাগল।
–নেক্মট টাইম আমাকে টাচ করতে দশ বার ভাববি বুঝছত। আর ওড়না টা ভালো করে পরবি নয়তো এর পর থেকে আর তোর ওই ওড়নাটাই থাকবে না এতো দেখাতে ইচ্ছে থাকলে কষ্ট করে টাকা দিয়ে ওড়না কেন কিনবো?
বলেই রাজ চোখে সানগ্লাস পড়ে চলে গেল আর মিষ্টি রাজের যাওয়ার দিকে অশ্রু নয়ন চোখে তাকিয়ে আছে। এই লোকটাকে কখনো বুঝতে পারে না মিষ্টি কি চাই? বুঝা দুষ্কর সব সময় এতো কষ্ট কেন দেয় আমাকে কেন কি করেছি আমি সামান্য ভুলের জন্য সবার সামনে এভাবে বলতে পারলো। পায়ের কাছে ওড়না পড়ে আছে মিষ্টি ওড়না নিয়ে ভালো করে গায়ে পেচিয়ে উঠে দাড়ালো।

আর দাড়ালো না মিষ্টি আজকে আর ক্লাস করতে পারবো না এতো অপমানিত হয়ে আমি কারো সামনে যেতে পারবো না। চোখ হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে মুছে বাড়ির পথে রওনা দিলো। কিছু দূর যেতেই পায়ের জুতো জোরা ছিরে গেল বিপদের সময় আর বিপদ আসে আজকে বুঝতে পারছি। জুতো খুলে ঠিক করতে চাইলো কিন্তু এটা ঠিক করা গেল না বাম হাতে জুতো নিয়ে হাটা দিলো প্রখর রোদের তাপে পাতের নিচে প্রচণ্ড গরম হাটা যাচ্ছে না আবার জুতো ছেড়া কষ্টে অভিমানে হেটে চলেছে মিষ্টি গরমে পা ফেলা যাচ্ছে না কিন্তু এটা বুকের ভেতরে যে কষ্টে কাছে কিছু না। ওই ভাবে হেটে বাড়ি চলে এলো।

–কি রে এতো তারাতারি চলে এলি যে?
–এমনি মামুনি,ভালো লাগছিলো না তাই ক্লাস না করেই চলে এসেছি।
— তোর হাতে কি? জুতো কি হয়েছে একি পা এতো লাল কেন?
–ও কিছু না মামুনি আমি রুমে যাচ্ছি ঢেকো না।

বলেই মিষ্টি রুমে চলে এলো এখন আর পা ফেলতে পারছে না তখন বুঝতে পারে নি এখন বুঝছে কতো ক্ষতি হয়েছে তাপে পা মুরে গেছে কোন রকম ব্যাগ টা রেখেই মিষ্টি বিছানায় শুয়ে পরলো এতো ক্লান্তি লাগছে পা জলছে। ওমনি মামুনি এলো হাতে বরফ এসেই পায়ে হাত দিতে গেলে আমি উঠে বসি।

— কি করছো মামুনি?
–তারাতারি শুয়ে পর কি করছিস পায়ের।তোকে নিয়ে আর পারি না জুতো ছিরে গেছে ওই ভাবে হেটে এলি কেন? রাজ কে বলতি জুতো কিনে দিতো আর গাড়ি ছাড়া বা আসলি কেন?
–এমনি

আমি আর কিছু বললাম না কথা বলতে ভালো লাগছে না মামুনি কে শত বলে ও যাওয়াতে পারলাম না জোর করে পায়ে বরফ দিতে লাগলো। আমি ব্যথ হয়ে শুয়ে পরলাম কখন ঘুমিয়ে পরেছি জানি না। ঘুমের ঘুরে মনে হচ্ছে কেউ আমার পায়ে নরম হাত ছুয়ে দিচ্ছে চোখের পানি পরছে সঙ্গে সঙ্গে চোখ মেলে তাকালাম…???

চলবে❤

লুকোচুরি_ভালোবাসা?পর্ব:১
#লেখিকা:তানজিনা আক্তার মিষ্টি

“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

বউ Part- 15 (last)

0

Story: বউ
Part- 15 (last)
writer: #Nur_Nafisa
.
.
বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত তারা ফোনে প্রেম করে দিনগুলো কাটিয়ে দিয়েছে। রিয়াদ তার বাবাকে বলে স্কুল থেকে পুরো ৭দিনের ছুটি নিয়ে নিয়েছে। গায়ে হলুদের প্রোগ্রাম যার যার বাসায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিয়ের প্রোগ্রাম কমিউনিটি সেন্টার এ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ নাফিসাকে পার্লারে পাঠায় নি। পার্লারের লোক সেন্টারে আনা হয়েছে। কেননা দুবছর আগের রিস্ক কেউ নিতে প্রস্তুত নয়।
সাজানোর পরপর ই ফটোগ্রাফার তাদের দুজনের একত্রে ফটোশুট করে নিয়েছে।
বিয়ে পড়ানোর সময় রেহানের পাশে নাফিসাকে বসানো হয়েছে ঠিকই কিন্তু রেহান তাকে একবারের জন্যও দেখতে পারেনি। দেখবে কিভাবে! নাফিসা ইয়া বড় ঘোমটা টেনে বসে আছে।
পরিবারের সদস্যরা প্রায় সবাই অবাক! মেয়েটা এতো বড় ঘোমটা টেনে বসে আছে কেন! এখনকার মেয়েরা তো ঘোমটাই দেয় না!
আর রেহান বেচারা ভয় পাচ্ছে! তার পাশে বসা মেয়েটি কি তার বউ নাফিসা নাকি অন্য কেউ!
আশেপাশে মানুষ থাকার কারণে কোনো কথাও বলতে পারছে না। অবশেষে যখন সিগনেচার করলো তখন নিশ্চিত হলো এটা নাফিসা ই।
বিশেষ আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বিয়ে কার্য সম্পাদিত হয়েছে।
.
রিজোয়ান আহমেদ রেহানের হাতে নাফিসাকে তুলে দিলো।
মি ও মিসেস চৌধুরী নাফিসার বাবামায়ের সাথে কুশল বিনিময় করে বাড়ির বউকে নিয়ে বাসায় ফিরেছে।
.
মি ও মিসেস আহমেদ আজ শূন্যতা অনুভব করছে। তাদের মেয়েটা কি বড় হয়ে গেছে! আজ শশুর বাড়ি পাঠাতে হলো একমাত্র মেয়েকে। থাকবে কিভাবে তাদের পাগলীটাকে ছাড়া। কিন্তু কি করার, এটা যে প্রকৃতির নিয়ম! এখন শুধু এটাই প্রত্যাশা, তাদের পাগলী মেয়েটা ভালো থাকুক। সকল বাবামায়ের ই চাওয়া….
.
অন্যদিকে মি ও মিসেস চৌধুরী মহা খুশি। তারা একটা মেয়ে পেয়েছে। মেয়ের অভাব টা তাদের পূর্ণ হয়েছে নাফিসাকে পেয়ে। ছেলের বউ হিসেবে নয়, নিজের মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করেছে তারা নাফিসাকে।
.
রেহান রুমে এসে দেখলো সম্পূর্ণ রুম সাদা আর লাল গোলাপ ফুলে সজ্জিত। খাটের মাঝখানে লম্বা ঘোমটা টেনে বসে আছে এক লাল পরি।
দরজা লক করে জুতা খুলে, ফোনটা বেড সাইড টেবিলে রেখে খাটে এসে বসলো রেহান। দু’হাতে ঘোমটা তুললো বউ কে দেখার জন্য। নাফিসা চোখ বন্ধ করে আছে। ফর্সা মুখে মেকাপে সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তুলেছে। চোখের উপর নিচে মোটা করে কাজল আর্ট করা। ঘন কালো ব্রু গুলো আর্ট করা। গোলাপি ঠোঁট জোড়া লাল লিপস্টিকে ঢেকে আছে। গাল দুটো গোলাপি আভা ছাড়িয়েছে। তার উপর নাফিসার চোখের পাতাজোড়া ঘন ঘন কাপছে। রেহানের ঠোঁটে প্রশস্ত হাসির রেখা ফুটে উঠলো। মুহুর্তে “মাশাল্লাহ ” বলে বউ এর কপালে ভালোবাসার স্পর্শ একে দিলো।
নাফিসা চোখ মেলে তাকালো ঠিকই কিন্তু রেহানের দিকে তাকাতে পারছে না।
.
রেহান- এটা কি আমার পাগলী বউটা?
.
নাফিসা নিচের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলো।
.
রেহান- বউটা এমন নিরব কেন!
.
নাফিসা কোন জবাব দিলো না। রেহান নাফিসাকে কোলে নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো। রেহানের বারান্দা টা অনেকটা বড়। ছোট একটা রুমের মতোই বলা যায়। বারান্দার লাইট অফ করে রেহান নাফিসাকে কোলে নিয়েই একটা টুলে বসলো। নাফিসা এখনো চোখ নিচেই নামিয়ে রেখেছে।
.
রেহান- বউ, আকাশে তাকাবে একটু?
.
নাফিসা গ্রিলের ফাকে আকাশে তাকিয়ে দেখলো পরিষ্কার আকাশ জুড়ে লাখো তারা ঝিকিমিকি করছে আর পরিপূর্ণ চাঁদটা বিস্তীর্ণ আলো ছড়াচ্ছে। নাফিসার মন উৎফুল্ল হয়ে উঠলো। আশ্চর্যমাখা হাসি নিয়ে রেহানের দিকে তাকালো। রেহানের মুখেও হাসির ঝিলিক! চাঁদের আলোতে দুজনের চেহারা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
নাফিসা রেহানের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। রেহান গোল্ডেন শেরওয়ানী পড়েছে, টপার বোতাম টা খোলা। চাঁদের আলোয় রেহানের ফর্সা গলাটা ও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।ইচ্ছে করছে গলায় ঠোঁটের ছোয়া লাগাতে। ফর্সা চেহারা ক্লিন সেভ করা, চুলগুলো কিছুটা এলোমেলো হয়ে কপালে পড়ে আছে, ঠোঁট জোড়া গোলাপি, ঘন কালো চোখের মনি জোড়া এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। নাফিসা যেন সেই দৃষ্টির মাঝে ডুবে যাচ্ছে।
.
রেহান- বউ দেখেছো! আজ গগন, নক্ষত্র এবং চদ্রও আমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। কেমন লেগেছে সারপ্রাইজ টা?
.
নাফিসা- সত্যিই অনেক সুন্দর! অনেক অনেক ধন্যবাদ।
.
রেহান- উহুম, ধন্যবাদ এভাবে দিলে হবে না। স্পেশাল কিছু করতে হবে….
.
নাফিসা এবার ধন্যবাদ জানাতে স্পেশাল কিছু করলো। রেহানের কাধ থেকে হাত সরিয়ে মুখটা ধরে দীর্ঘক্ষণ সময় নিয়ে ঠোঁটে ভালোবাসার স্পর্শ একে দিলো।
.
রেহান- বেস্ট গিফট ফর মি, ডেয়ার….. লাভ ইউ।
.
নাফিসা- লাভ ইউ টু…..
.
রেহান- হানিমুনে যাবো কোথায় আমরা, বলো?
.
নাফিসা- বাংলাদেশের সকল সুন্দর ও মনোরম জায়গাগুলোতে।
.
রেহান- ওকে… সব জায়গায় আবার রিয়াদকে টেনো না…
.
নাফিসা- হিহিহিহি…. ওকে।
.
রেহান- এই হাসিটা যেন সবসময় মুখে লেগে থাকে।
.
নাফিসা- তুমি আমার নিরব ভাষা গুলো বুঝো কিভাবে?
.
রেহান- ফর এক্সাম্পল?
.
নাফিসা- সারাদিন আমি ঘোমটা টেনে বসে ছিলাম। একবারও বলোনি ঘোমটা সরাতে। আবার রুমে এসে ঠিক আমি যেভাবে প্রত্যাশা করেছি, তুমি সেভাবেই আমার ঘোমটা সরিয়েছো।
.
রেহান- উত্তর তো একটাই প্রকাশ করবো। ভালোবাসি তাই, সব বুঝে যাই।
তবুও একবার কনফিউজড ছিলাম, এটা আমার বউ কিনা! হাহাহা….
.
নাফিসা- ঘুম পেয়েছে আমার খুব।
.
রেহান- ঘুমাও।
.
নাফিসা- কোথায় ঘুমাবো! তোমার কোলে বসে!
.
রেহান- হুম…
.
নাফিসা- স্টুপিড, এভাবে ঘুমানো যায়! বিছানায় যাবো…
.
রেহান- (নাফিসাকে কোলে নিয়ে রুমে বিছানার দিকে যেতে যেতে) দেখোতো আমাদের জন্য কত সুন্দর ভাবে ফুল দিয়ে বিছানা সজ্জিত করা হয়েছে, এখানে ঘুমানো কি শোভা পায়!
.
নাফিসা- তাহলে কি নিচে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সারারাত বিছানা দেখবো!
.
(রেহান জবাব না দিয়ে লাইট অফ করে নাফিসাকে নিয়ে শুয়ে পড়লো।)
.
রেহান- নো, সজ্জিত বিছানায় আমরা অন্যকিছু করবো।
.
নাফিসা- কি?
.
রেহান- ভালোবাসা বিনিময় করবো…
.
নাফিসা- (রেহানকে জড়িয়ে ধরে) অনেক বেশি, ভালোবাসি, তোমায় আমি, মাই হ্যান্ডসাম বর।
.
রেহান- সারাজীবন ভালোবাসতে চাই #বউ ……..
.
(শুভ সমাপ্তি)
.
অসংখ্য ধন্যবাদ ও অফুরন্ত ভালোবাসা গল্প পড়ার জন্য, শেষ পর্যন্ত সাথে থাকার জন্য ও আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য। গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে তা আবারো জানাতে ভুলবেন না…. ইনশাল্লাহ দীর্ঘ সময় পর আবার গল্প নিয়ে হাজির হবো। আবার নাফিসাকে ভুলে যাবেন না কিন্তু। ভুলে গেলেও আপনাদের জন্য আবার নতুন গল্প এনে মনে করিয়ে দিবো নাফিসাকে ?। আল্লাহ হাফেজ….
.
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
[ নোটিশ………..
আমার গল্প কেউ কপি করবে না… যদি কারো ইচ্ছে হয় শেয়ার করতে পারেন, কিন্তু কপি করবেন না!
মানুষ এতোটা নির্বোধ কিভাবে হয়!
এমন কাজ কিভাবে করতে পারে তারা!
তাদের মাঝে কি মানবতাবোধ বলতে কিছুই নেই!
তাদেরকে কি মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়!
অন্যের লেখা কিভাবে তারা নিজের নামে চালিয়ে যায়!!!
তারা পশুর চেয়েও অধম! আরে, পশুও তো তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, নীতি, পদ্ধতির মধ্যে চলে। কপিবাজ দের সেই ন্যূনতম বোধ টুকুও নেই! তাহলে কি তারা অন্যের লেখা কপি করে এমন নিজের নামে চালিয়ে দিতো!!! ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারতি, পাবলিকের কাছে নিজেকে তুলে ধরতে নিজের বিবেক-বুদ্ধি তে ভালো কিছু করে দেখা, অন্যের লেখা চুরি করে কেন চোর হিসেবে নিজেকে পরিচিত করছিস!!! পুরো গল্পটা কপি করতে পারিস, আর লেখক/লেখিকার নামটা সাথে কপি করতে কি খুব কষ্ট হয়! যত্তসব ইতর, ভণ্ডামি! ঘৃনা প্রকাশ করছি তাদের প্রতি যারা গল্প কপি করে নিজের নামে প্রচার করে….!
আমি আবারও বলছি পাঠকদেরকে, নূর নাফিসার গল্প কেউ কপি করবেন না। গল্প পড়তে আমার নিজস্ব পৃষ্ঠাকে ফলো করতে পারেন। আর যেখানে যেখানে পোস্ট করার আমি নিজেই করবো। আর আমার সাহায্য করতে যারা আমার লেখা নিজের নামে প্রচার করছে তাদের রিপোর্ট দিন।
গল্প লেখা আমার পেশা না। গল্প লিখে আমি কোনো পারিশ্রমিক পাই না। শখের বসে, আপনাদের বিনোদন দিতে গল্প লিখি। এতে আমার ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ হচ্ছে না। তার উপর এই কপিবাজদের অত্যাচার সহ্য হচ্ছে না! আমি এমন ঘটনা আরো দেখলে গল্প লেখা বন্ধ করে দিবো……… (Nur Nafisa)]

বউ Part- 14

0

Story: বউ
Part- 14
writer: #Nur_Nafisa
.
.
সকালে নাস্তা করার পর মি ও মিসেস আহমেদ ব্যস্ত হয়ে পড়লো গোছগাছ করতে। আর নাফিসা শশুর আব্বুকে বলে রেহানের ছুটি নিয়ে নিলো ঘুরতে যাবে বলে।
.
নাফিসা- মটো, দ্রুত তৈরি হয়ে নাও, ঘুরতে যাবো।
.
রিয়াদ- ওকে….
.
রেহান- এটা কি হলো! রিয়াদ যাবে কেন? তুমি একা যাবে কিনা বলো, না হলে কাউকে যেতে হবে না । তাছাড়া রিয়াদের স্কুল আছে।
.
রিয়াদ- (চিৎকার করে) ভাইয়া! আমিও যাবো। আগামী ১সপ্তাহ আমি স্কুলে যাবো না। আব্বু টিচারকে কল করে বলে দিবে। আর আমি বড় ভাইয়ার বিয়ের উপলক্ষে ৭দিনের ছুটি চাহিয়া একখানা আবেদন পত্র লিখিয়া আব্বুর সিগ নেচার নিয়া জমা করিয়া আসবো, ব্যাস!!!
.
নাফিসা- হাহাহা….
.
রেহান- বাহ! যার বিয়ে তার খবর নেই, প্রতিবেশীর চোখে ঘুম নেই! স্কুলে যা…
.
রিয়াদ- আম্মুউউউ ভাইয়া কিন্তু সবসময় বেশি বেশি করে! কিছু বলো….
.
রুবিনা- আমাকে কিছু বলবি না, যার যা ইচ্ছে তা কর। প্রয়োজনে তোর বাপকে বল। আমাকে বিরক্ত করবি তো মাথায় বারি পড়বে….
.
রিয়াদ- হুহ! তোমার জন্যই ভাইয়া এমন হইছে, শাসন করো না কোনোদিন।
.
রেহান- হাহাহোহো….
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
নাফিসা- যার বিয়ে তার খবর নেই মানে! কোথায় যাবে তুমি!
.
রেহান- আরে, কোথাও না। কথার কথা বললাম।
.
নাফিসা- রিয়াদ ও যাবে আমাদের সাথে। আজ তোমার ইচ্ছায় কোন রাজত্ব চলবে না। আমি যা বলবো তাই হবে।
.
রিয়াদ- ইয়েস! লাভ ইউ কিউট ভাবি….
.
নাফিসা- লাভ ইউ টু…. জলদি যাও….
.
রিয়াদ- ওকে..
.
রিয়াদ চলে গেলো তৈরি হতে। নাফিসাও নিজের রুমে চলে এলো পিছু পিছু রেহান ও। দরজা চাপিয়ে নাফিসাকে জড়িয়ে ধরলো,
.
রেহান- বাহ! দেবর ভাবির কি মহব্বত! লাভ ইউ আবার লাভ ইউ টু!
.
নাফিসা- রিয়াদ আমার দেবর না, আমার ছোট ভাই। ওকে….
বাট তোমার এতো হিংসা হচ্ছে কেন!
.
রেহান- হবে না! কই আমি কখনো লাভ ইউ বললে তো আমাকে রিপিট করো না!
.
নাফিসা- করবো কিভাবে, আমি তো তোমাকে লাভ করি না। (রেহানের গালে চুমু দিয়ে) আমি তোমাকে অফুরন্ত ভালোবাসি।
.
রেহান- এক গালে দিলে কেন! অন্যটা কি দোষ করেছে?
.
এবার অন্য গালেও আরেকটা দিলো।
নাফিসা- স্টুপিড, ছাড়ো রেডি হবো….
.
রেহান- আমিও অফুরন্ত ভালোবাসি আমার বউ কে…
রেহান নাফিসার কপালে গভীর ভাবে চুমু দিয়ে তারপর ছাড়লো।
.
কিছুক্ষণ পর তারা বেরিয়ে গেলো। গাড়ির কাছে গিয়ে…
.
নাফিসা- আমি গাড়ি ড্রাইভ করবো।
.
রিয়াদ- ভাবিইই! তুমি গাড়ি চালাতে পারো?
.
নাফিসা- ইয়েস! কতবার ড্রাইভিং রেস এ ফাস্ট হয়েছি হিসেব নেই…
.
রেহান- ফাস্ট হও আর লাস্ট হও, এখন গাড়ি চালাতে পারবে না। এটা লন্ডন না, এখন তুমি বাংলাদেশে আছো।
.
নাফিসা- সো হোয়াট! আমি চালাবো, জাস্ট তুমি হাইওয়ে ড্রাইভিং গতিবেগ টা বলে দাও। তাহলেই হবে….
.
রেহান- কাউকে এক্সিডেন্ট করে জেলে যাওয়ার শখ হয়নি আমার। সবসময় আমার মতের বিপরীতে থাকো কেন! যাও গাড়িতে উঠো…
.
নাফিসা মন খারাপ করে পিছনের সিটে রিয়াদের সাথে বসলো।
.
রেহান- সামনে না এলে গাড়ি আজ স্টার্ট হবে না।
.
নাফিসা- না হোক, আমার কি! বাসায় ফিরে যাবো।
.
রেহান ড্রাইভিং সিট থেকে উঠে এসে নাফিসাকে কোলে করে সামনে তার পাশের সিটে বসিয়ে দিলো। রিয়াদ ওদিকে হাসতে হাসতে ফেটে যাচ্ছে… নাফিসা আবার নামতে নিলে রেহান গালে একটা চুমু দিয়ে বললো…
.
রেহান- নামবে না, ড্রাইভিং করতে দিবো তোমাকে কিন্তু এখন না। অন্য একটা জায়গায় নিয়ে।
.
নাফিসা আর কিছু বললো না। চুপচাপ বসে রইলো। রেহান গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট করলো। রিয়াদ পেছন থেকে সামনে ঝুঁকে গাড়ির মিউজিক অন করে দিলো। নাফিসা এখনো চুপচাপ। রেহান একহাতে ড্রাইভ করছে অন্য হাতে নাফিসার একটা হাত ধরে তার হাটুতে রাখলো। নাফিসা হাত সরাতে নিয়ে ব্যর্থ, রেহান আরও শক্ত করে চেপে ধরলো। ঢাকার হাইওয়ে প্রায় শেষ প্রান্তে এসে গাড়ি থামালো। নাফিসা আশেপাশে তাকালো মুগ্ধকর কিছুই নেই, না আছে কোন বাড়িঘর, আর না আছে কোনো মনোরম পরিবেশ। একপাশে তাকালে শুধু বালির মাঠ দেখা যাচ্ছে, আর অন্যপাশে ময়লা আবর্জনা। দুর্গন্ধ! সামনে একটা ব্রিজ দেখা যাচ্ছে…
.
রেহান- নামো গাড়ি থেকে..
.
রিয়াদ- ভাইয়া এটা কোথায় নিয়ে এসেছো! ময়লা আবর্জনার স্তূপ!
.
রেহান- নামতে বলেছি নাম
.
দুজনেই নেমে নাক চেপে ধরে রেহানের পিছু পিছু যাচ্ছে। রেহান ব্রিজের ওপর নিয়ে গেলো। রিয়াদ নাফিসা ব্রিজের নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলো কালো পানি দেখা যাচ্ছে ….
.
নাফিসা- লেকের পানি এমন কেন!
.
রেহান- লেক না এটা নদী।
.
নাফিসা- রিয়াদ, এই নদীর নাম কি?
.
রিয়াদ- ভাইয়া, এই নদীর নাম কি?
.
রেহান- তোকে জিজ্ঞেস করছে তুই বল, আমি কেন বলবো!
.
রিয়াদ- তাহলে এই নদীর নাম নামহীন নদী…. হাহাহা….
.
নাফিসা- রাবিশ একটা ….
.
রেহান- ওইদিকে রাবিশ…. হাহাহোহো…
.
নাফিসা- নদীর নাম বলো না হলে ধাক্কা দিয়ে এই কালো পানিতে ফেলবো।
.
রেহান- হাহাহা…. এটা আমাদের বুড়িগঙ্গা নদী যেটা ঢাকার ময়লার ড্রেন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। আবার কারো কারো প্রাণ এই নদীর পানিই।
.
নাফিসা- কি অবস্থা করেছে! ইন্টারনেটে তো এমন কিছু তুলে ধরে না, সেখানে অনেক সুন্দর দেখায়! ভেরি বেড স্মেল….
.
রেহান- আছে, অনেক সুন্দর নদীও আছে…. আউট অফ ঢাকা…
.
নাফিসা- চলো সেখানে যাই….
.
রেহান- এখন না। অন্য কোন সময়… আজ শুধু ঢাকা ঘুরবো। এখন গাড়িতে উঠো। যেখানে যেখানে গাড়ি থামাবো ১০মিনিটের বেশি সময় নিবে না।
.
অনেকটা পথ পেরিয়ে আবার আর একটা ব্রিজের পাশে গাড়ি থামালো। এখানকার পরিবেশ আগের চেয়ে অনেকটা সুন্দর। বলার আগেই রিয়াদ, নাফিসা নেমে গেলো। ব্রিজের উপর উঠলো তারা সবাই। প্রচুর বাতাস এখানে, ঠান্ডা বাতাস সাথে একটা মিষ্টি জাতীয় গন্ধ আসছে। নাফিসার শাড়ির আঁচল উড়ে একদিক থেকে অন্যদিকে চলে যাচ্ছে। রেহান পেছন থেকে শাড়ির আঁচল সহ নাফিসাকে ধরলো।
.
রেহান- এমন বেখেয়ালিভাবে থাকলে তো গাড়ি এসে শাড়ির আঁচলও নিয়ে যাবে সাথে শাড়ির মালকিনও।
.
নাফিসা- এই জায়গাটা অনেক সুন্দর। নদীর পানিও পরিষ্কার দেখাচ্ছে, বিশুদ্ধ বাতাস। আই লাইক ইট! নাম কি এই জায়গার?
.
রেহান- এখন আমরা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ এর সন্ধিস্থলে আছি। যে ব্রিজে দাঁড়িয়ে আছো এটা ডেমরা ব্রিজ নামে পরিচিত। নিচে যে নদী বয়ে চলেছে তা শীতলক্ষ্যা নদী।
.
নাফিসা- নামটাই কতটা শীতল, বাতাসও শীতল পানিও নিশ্চয়ই অনেক শীতল হবে…
.
রেহান- হুম।
.
নাফিসা- মিষ্টি গন্ধ কিসের।
.
রেহান- পাশে মেবি, কোনো রঙের মিল আছে।
.
রিয়াদ- ভাইয়া মোবাইল দাও, ছবি তুলবো।
.
রেহান মোবাইল বের করে দিলো। সবাই একসাথে সেলফি, একা একাও ছবি তুললো অনেক। রেহানের ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও নাফিসা ও রিয়াদের জোরাজোরিতে ব্রিজের নিচে নদীর তীরে নিয়ে এলো তাদের। এখানেও অনেকগুলো ছবি তুললো তারা। নাফিসা শীতলক্ষ্যা নদীর শীতল পানিতে মুখ ধুয়েছে আর রেহান দৃশ্যটা ক্যামেরা বন্দী করেছে।
.
নাফিসা- চলো না নৌকায় করে ওপারে যাই।
.
রেহান- নো, বলেছি না আজ শুধু ঢাকা ঘুরবো। ইনশাআল্লাহ পরবর্তী সময়ে এক এক করে সব জায়গা ঘুরবো।
.
নাফিসা- ওকে।
.
সবাই গাড়িতে উঠলে রেহান আবার গাড়ি চালাতে শুরু করলো। কিছুটা পথ অতিক্রম করে আবার গাড়ি থামালো। একটা দোকান থেকে কয়েকটি চিপস, কোক, কেক, সেন্ডউইচ কিনে এনে পেছনের সিটে দিলো। রিয়াদ ও নাফিসা দুজনেই চিপসের প্যাকেট খুলে চিপস খেতে লাগলো। এই রাস্তায় তেমন গাড়ি নেই। তাই রেহান নাফিসাকে বললো ড্রাইভিং করতে। নাফিসাও চিপস রেখে খুশি মনে সিট চেঞ্জ করলো। ড্রাইভিং করছে সে, আর রেহান নাফিসার প্যাকেট থেকে চিপস খাচ্ছে। রাস্তার দুপাশে গাছপালা। দেখতে পুরো গ্রামের মতো নীরব পরিবেশ। ফাকা রাস্তা হলেও নাফিসার ড্রাইভিং স্লো হয়ে যাচ্ছে। হবেই না কেন! প্রকৃতি তাকে মুগ্ধ করছে!
.
রেহান- এভাবে ড্রাইভ করলে তো পথ কখনোই শেষ করা যাবে না!
.
নাফিসা- (গাড়ি থামিয়ে) আমি পারবো না ড্রাইভিং করতে। আমি কিছুই দেখতে পারছি না। সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছি না। তুমিই চালাও…
.
রেহান- হাহাহা….. শখ মিটে গেছে। এদিকে আসো….
.
নাফিসা- এই জায়গার নাম কি? এটা কি গ্রাম?
.
রেহান- এটা গ্রাম না, এটা উপশহর। আমুলিয়া মডেল টাউন হিসেবে পরিচিত।
.
পরপর তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশেপাশের অঞ্চল ঘুরেছে, ঢাকা সেনানিবাস, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ন্যাশনাল মেমোরিয়াল, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টোডিয়াম, ন্যাশনাল মিউজিয়াম সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে থাকাকালীন নাফিসা কিছুক্ষণ ড্রাইভ করেছিলো।
সারাদিন ঢাকার অনেক জায়গায় ঘুরেছে তারা। লাঞ্চ, ডিনার রেস্টুরেন্টে সেরেছে। রাতে নাফিসাকে তাদের ফ্ল্যাটে রেখে দুভাই বাসায় ফিরে এসেছে।
.
.
চলবে…..