Monday, July 7, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1877



নেশা তুই আমার Part:7

0

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part:7

বেশ কিছুক্ষণ পরেই ভাইয়া আমায় ছেড়ে উঠে বসলেন।আর আমি ছাড়া পাওয়ার সাথে সাথে এক লাফে উঠে দাড়ালাম।দরজায় ধাক্কা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।একটা বড় সড় ঢোক গিলে ভাইয়ার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালাম।
“”এখন কি হবে?কেউ যদি এতো রাতে আপনাকে আমার ঘরে দেখে তাহলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।””
আমি কথাটা যতটা দুশ্চিন্তার সহিত বললাম।ভাইয়ার ততটা দুশ্চিন্তা হলো বলে মনে হলো না।খুব আরাম করে পেছনে দুই হাতে ভর করে বসে আয়েশি কন্ঠে বলল
“”সো হোয়াট?সর্বনাশ হবে তোর হবে।আমার কি?আমি তো ছেলে মানুষ না? এটা ওটা বলে কাটিয়ে দেব।তবে তোর কি অবস্থা হবে সেটা তুই ভাব।””
ভাইয়ার কথা শুনে এবার আমার রাগ হলো।প্রচন্ড রকমের রাগ হলো।একটা মানুষ এতটা নিষ্ঠুর স্বার্থপর কি করে হতে পারে?খারাপ,খুবই খারাপ লোক একটা।কেন যে এর ভালোবাসায় হাবুডুবু খেলাম কে জানে?এখন মাঝ দরিয়ায় পরে পস্তাচ্ছি তো?একদম ঠিক হয়েছে।আমি এটাই ডিজার্ভ করি।আমার মতো মেয়ে এমনটাই ডিজার্ভ করে।কাজিনকে ভালোবাসবে তাই না?বাস এখন ভালো করে বাস।আমার কান্না পাচ্ছে।ভীষন কান্না পাশে।কেঁদে কেঁদে বন্যা বইয়ে দেওয়ার ইচ্ছে করছে।সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাক এই বন্যা।পৃথিবীর কোনো কিছুই যেন বাদ না থাকে।এই পৃথিবীর সবকিছু নির্দয় পাষান স্বার্থপর।
আমার ভাবনার বিচ্ছেদ ঘটিয়ে আবারও দরজার ধাক্কার গতি বেড়ে গেল।এমন ভাবে ধাক্কাচ্ছে যেন এক্ষুনি দরজাটা ভেঙে ফেলবে।কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গেলাম দরজার দিকে।দরজা খুলতে হুড়মুড় করে বড় মা ঘরের ভেতর ঢুকে এলো।বড় মা কে দেখে ভয়ে আমার বুকের হৃদস্পন্দন থমকে গেল।এখন কি হবে?বড় মা তো ভাইয়া কে দেখে ফেলবে।কথাটা ভাবতেই বিছানার দিকে চোখ যেতেই আরমান ভাই ওখানে নেই।ওমা গেল কই লোকটা?এক্ষুনি তো এখানেই ছিল।ভ্যানিশ ট্যানিস হয়ে গেল নাকি?তবে যাই হোক না কেন?আমি তো এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম।এটাই ঢের বাবা।একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বড়মার দিকে তাকাতেই বড় মা আমার দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠল
“”এতক্ষণ ধরে কি করছিলি?দরজা খুলছিলিনা কেন?””
“”আ…আ..আসলে বড় মা খুব ঘুম পেয়েছিল তাই ঘুমিয়ে পরেছিলাম।তুমি যে দরজায় ধাক্কা দিচ্ছ আমি তো বলতেই পারবো না।””
“”তাই নাকি?তা এমন কি মরার ঘুম ঘুমোচ্ছিলি যে এতো ধাক্কানোর পর ও তোর ঘুম ভাঙে নি?
“”এসব কথা বাদ দাও না।তুমি বলো এতো রাতে তুমি আমার ঘরে কি করছো?””
মিনমিন করে কথাটা বলতে বড় মা গর্জন দিয়ে উঠল
“”আরমান কোথায় বলতে পারবি?””
কথাটা শুনেই আমি চমকে উঠলাম।বড় মা এদিক ওদিক নজর দিচ্ছেন।
“”আব আ আরমান ভাই কোথায় আমি কি করে বলব?আমি তো ঘুমিয়ে ছিলাম না?কেন কি হয়েছে?””
“”না কিছু না।আরমান ওর ঘরে নেই তাই ভাবলাম এখানে এসেছে কি না?তুই ঘুমো আমি যাই।””
কথাটা বলেই বড় মা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।আর আমি সাথে সাথে দরজা লাগিয়ে ঘরের লাইট জ্বালিয়ে দিলাম।খাটের তলা টেবিলের তোলা বাথরুম আলমারির পেছনে সব জায়গায় খুঁজেও ভাইয়াকে কোথাও খূঁজে পেলাম না।গেল কোথায় লোকটা।ঘরের এদিক ওদিক দেখতে দেখতে বারান্দায় আসতেই দেখি ভাইয়া আমার বারান্দার নিচে দাঁড়িয়ে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।তার মানে ভাইয়া পাইপ বেয়ে নিচে নেমে গেছে।আমাকে এক নজর দেখেই ও সেখান থেকে চলে গেল।বুঝলাম ভাইয়া এবার সদর দরজা দিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকবে।বুকের ওপর এক হাত রেখে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লাম।খুব বড় বাঁচা বেঁচে গেছি আজ।নিজের ঘরে এসে ড্রেসিংটেবিলে নিজের প্রতিবিম্ব ওপরেই নজর পরল আমার।আমি এক পা দু পা করে আয়নার সামনে দাড়ালাম।আমি যে আহামরি সুন্দরি তা তো নয়।গায়ের রঙ একটু চাপা।শুধু একটু না অনেকটাই চাপা।তারপর ও আরমান ভাই আমায় কতটা ভালোবাসে।শুনেছি ভালোলাসার মানুষের অনুভুতি নাকি চোখ দেখেই বোঝা যায়।আমিও বুঝেছি আরমান ভাইয়ের চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি।আর এই অনুভূতি টা সেই ছোট বেলা থেকেই দেখে এসেছি।কিন্তু আমি যে তার মুখ থেকে শোনার জন্য ছটফট করছি।আমার অস্থিরতা টা কি ভাইয়া বোঝে না।আরমান ভাই যেদিন আমায় নিজের মুখে ভালোবাসার কথা বলবে সেদিন আমার কিরকম অনুভুতি হবে সেটা ভাবতেই আমার পেটে শুরশুরি শুরু হয়ে যায়।ইসস তখন কার অনুভুতি টা কি সুন্দর ই না হবে।লজ্জায় নিজের প্রতিবিম্বর দিকেই তাকাতে পারছি না।দুই হাতে নিজের মুখ ঢেকে নিলাম।ইসস কি লজ্জা।
?
নিজের ক্লাসে বসে এক নাগারে লিখে চলেছি।কি লিখছি জানি।শুধু যা মনে আসছে তাই লিখে যাচ্ছি।আজ আমাকে লিখতেই হবে।লিখে লিখে হাত ক্ষয় হয়ে যাক তাও আমায় লিখতেই হবে।কিন্তু আমার এই লেখার মাঝে বাঁধ সাধল সুমন।ব্যাটা আমার কলমটাই কেড়ে নিল।
“”এই চ্যাৎড়া কি করছিস কি।কলম নিলি কেন আমার?””
“”বেশ করেছি নিয়েছি।ইচ্ছে হলে আরো নেব।””
“”এই কলম কি তোর বাপের সম্পত্তি নাকি?ইচ্ছে হলো আর নিলি।দে আমাকে আমার কলম।লিখবো আমি।””
“”আহারে লিখবো আমি(ভেংচি কেটে)।পড়াশুনায় তো নবঘন্ট এখন ইনি আমাদের লেখালিখি দেখাতে এসেছেন।তা কি লেখিছিলি দেখি একটু।””
“”কেন দেখাবো?দেখাবো না।একটুও দেখাবো না।আগে আমার কলম দে বলছি।””
“”এটা এই মূহুর্তে তুই আর পাঁচ্ছিসনা বুঝলি।””
বলেই এক বেঞ্চ পেছনে গিয়ে বসল।
“”আচ্ছা দিবি না তো?দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা।””
কথাটা বলেই হাতে থাকা খাতাটা মুড়িয়ে তার পিঠে সর্ব শক্তি দিয়ে মারা শুরু করলাম।সে আমার হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করে চলেছে আর আমি তাঁকে মেরেই চলেছি।আর আমার পাশে বসে থাকা বন্ধুরা আমাদের কান্ড দেখে হেসেই চলেছে।বুঝলাম না এখানে হাসার মতো কি হলো?আমি একা এতো কষ্ট করে মারছি কোথায় আমায় একটু হেল্প করবে তা না শুধু দাঁত কেলিয়ে যাচ্ছে হারামির দল কোথাকার।
আমি ইচ্ছে মতো সুমনকে খাতার বারি দিয়েই চলেছি এমন সময় ক্লাসের মধ্যে…..
চলবে❤

নেশা তুই আমার Part: 6

0

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part: 6

কলেজ থেকে বাড়ি ফিরেই জুঁই-বিথির সাথে আড্ডা দিতে বসেছি।আজ কিছুতেই এদের নিজের থেকে আলাদা করা যাবে না।ভাইয়ার হাত থেকে বাঁচতে হলে আজ এই দুই জমজ বোনদের ই আমার কাজে লাগাতে হবে।সেই বিকেল থেকে রাত অবধি একবারের জন্যেও নিজেকে ভীরের থেকে আলাদা করিনি। জুই বিথি মা বাবা ছায়া আরিফ সকলেই আজ আমার উপর প্রচন্ড বিরক্ত।কারন আমি কোনো কারন ছাড়াই কথা বলে যাচ্ছি।আমি কি বলছি আমি নিজেও জানিনা।শুধু জানি আজ যে করেই হোক আমায় ভাইয়ার হাতের শাস্তি থেকে বাঁচতে হবে।কিন্তু পুরো সময় টা এমন বকবক করে কাটিয়ে দিলেও রাতের বেলা ঠিকি আমায় আমার ঘরে ঢুকতে হলো।ঘরে ঢোকার সাথে সাথেই আমি দরজা ভালো করে বন্ধ করে দিলাম।যাতে ভাইয়া আর ঘরে না আসতে পারে।দরজার লক ভালো করে চেক করে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে পিছু ঘুরতেই বিছানার ওপর কাউকে দেখে চমকে উঠলাম।ঘরের ডিম লাইটের মৃদু আলোয় সবকিছুই আবছা আবছা।কিছুক্ষণের মধ্যেই এই আবছা আলোয় চোখ সয়ে এলে বিছানার ওপর ভালো করে চোখ বোলানোর চেষ্টা করতেই আমার চোখ চোড়ক গাছ।এ তো ভাইয়া।বিছানায় বসে দুই পা মাটিতে ছড়িয়ে রেখেছে।এই রে কাম সেরেছে।এখন কি করব?আরমান ভাই আমায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নিজেই উঠে আমার দিকে এগোতে লাগল।ভাইয়া কে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ভয়ে আমার বুক ধুকপুক ধুকপুক করা শুরু করে দিয়েছে।আমি নিশ্চিত আমার এই বুকের ধুকপুকানি ভাইয়ার কান অবধি পৌছচ্ছে।ভাইয়াকে আমার খুব কাছে আসতে দেখে নিজের অজান্তেই আমার পা পেছনের দিকে চলতে লাগল।পিছনে যেতে যেতেই আমার পিঠ দেওয়ালের সাথে ঠেকে গেল আর ভাইয়া আমার খুব কাছাকাছি চলে এলো।ভাইয়ার উষ্ণ শ্বাস আমার মুখের ওপর পরছে।এখন কী করব আমি।বুদ্ধি করে পাশ কাটিয়ে চলে আসার চেষ্টা করতেই ভাইয়া তার দুই হাত আমার দুই পাশের দেওয়ালে রাখল।আজ আমি আবার তার বন্দিনী হলাম।ভাইয়া এতো কাছে চলে আসায় আমার প্রায় দম বন্ধ কর অবস্থা।নিজের দম বন্ধ রাখার চেষ্টায় শ্বাসের ঘনত্ব আরো বেশি বেড়ে গেল।চোখ বন্ধ করে ভাইয়ার পরবর্তী পদক্ষেপের অপেক্ষা করতে লাগলাম।তখনই ভাইয়া তার মন কাড়া ভারী কন্ঠে বলে উঠল
“”কান ধর।””
কথাটা শুনেই আমি চট করে চোখ মেলে তাকালাম।
“”কি হলো আমার কথা কানে গেল না?””
“”আআসলে ভাইয়া….””
“”চুপচাপ কান ধর।””
বুঝলাম কান ধরা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।কলেজেও মাস্টারগিরি খাটাবে খাটাবে আবার বাড়িতেও খাটাবে অসহ্য।মনে মনে হাজার গালি দিতে দিতে আমি দুই হাতে কান ধরলাম।
এবার ভাইয়া গিয়ে আয়েশ করে বিছানার উপর বসতে বসতে বলল
“”এবার এক পা উপরে তোল।””
ল্যাও ঠ্যালা!কান ধরাতেই শেষ নয় এখন আবার পাও উপরে তুলতে হবে।আজ তো আমি গেছি।কেন যে ওই হারামিটাকে মারতে গেলাম কে জানি।আমি নিশ্চিত আজ আর পায়ের ব্যথায় রাতে আমার ঘুম হবে না।প্রায় দুই মিনিট এক পায়ে দাঁড়িয়ে থেকে আমার পা ধরে এসেছে।তার পরো জোড় করে আরো এক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর আর পারলাম না।বাধ্য হয়ে বাম পা ফেলে ডান না উপরে তুলে নিলাম।মানে পা এক্সচেঞ্জ করে নিলাম।আরে বাহ ভাইয়া তো কিছুই বুঝতে পারল না।অন্ধকারে হয়তো লক্ষ করেনি।আমার তো বেশ ভালোই হলো।প্রায় আধাঘন্টা ধরে কান ধরে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছি।আর এই আধা ঘন্টায় আমি প্রায় পনের ষোল বারের মতো পা এক্সচেঞ্জ করেছি।আর ভাইয়া সেটা বুঝতেও পারেনি।ইস কি যে ভালো লাগছে।কি সুন্দর একটা শাস্তি।এমন শাস্তি পেলে তো আমি সারাজীবন অপরাধ করে যাবো হিহি।
আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মনে মনে প্রলাপ বকছি এমন সময় ভাইয়া কন্ঠ কানে এলো।
“”মিতু এদিকে আয়।””
আমিও কান ছেড়ে লাফাতে লাফাতে ভাইয়ার সামনে গিয়ে দাড়ালাম।
“”শাস্তি শেষ ভাইয়া?এইটুকু শাস্তিই ছিল বুঝি ?আমি তো আরো কিছুক্ষণ থাকতে পারতাম হুম।””
এবার ভাইয়া শোয়া থেকে উঠে বসে বলল
“”শাস্তি শেষ কোথায়?এখনো তো শুরুই করলাম না।””
ভাইয়ার কথায় আমি যেন আকাশ থেকে পরলাম।বলে কি এই লোকটা শাস্তি এখনো শুরু হয়ইনি তো আমায় এতক্ষন কান ধরিয়ে এক পায়ে দাঁড় করে রাখার কারন কি ছিল?
“”শশাস্তি শুরু হয়নি মানে?””
“”কয়বার পা বদলেছিস?””
“”তওবা তওবা আমি আর পা বদলেছি?কি যে বল না ভাইয়া?””
“”তাই নাকি কিন্তু আমি যে গুনলাম বিশ বার পা এক্সচেঞ্জ করেছিস।””
“”একদমই না আমি তো মাত্র ষোল বারই…..””
ইসস রে!!এ আমি কি বলে ফেললাম।মিতুরে তোর মাথায় সত্যিই গোবর ছাড়া আর কিছুই নেই।ধুর আস্ত গাঁধী একটা তুই।নিজেকে ইচ্ছে মতো গালাগালি করে চোখ পিটপিট করে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। অন্ধকারে ও খুব ভালো করেই বুঝলাম ও আমার দিকে বাঁকা হেসে তাকিয়ে আছে।
“”আ আ স সরি ভাইয়া আসলে…””
কথা বলতে বলতে ভাইয়াকে উঠে আমার দিকে এগোতে দেখে আমার কথা গলার মধ্যেই আটকে গেল।কাঁপা কাঁপা গলায় কিছু বলতে যাবো তার আগেই ভাইয়ার আমার হাতে হেচকা টান মেরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।এবার আমার প্রাণ যায় যায়।কি করব কিছুই মাথায় আসছে না।শুধু পরবর্তীতে কি হয় তা দেখা ছাড়া আমার কাছে আর কোনো উপায় নেই।ভাইয়া নিজের মুখ আমার দিকে এগোতেই আমি দু চোখ খিচে বন্ধ করে নিলাম।সাথে সাথে কানের ওপর ভাইয়ার উষ্ণ শ্বাস অনুভব করলাম।
“”এখন এই ষোল বার তুই নিজে থেকে আমার ঠোঁটে চুমু দিবি।””
ভাইয়ার ফিসফিস কণ্ঠটা যতটা না আমার হৃদস্পন্দন কাঁপিয়ে দিল তার থেকে বেশি চমক দিল ভাইয়ার বলা কথা টা।কি বলছে এসব ভাইয়া?আমি নিজে থেকে ভাইয়াকে চুমু..না না এটা অসম্ভব।আমি কিছুতেই পারবো।এটাও কোনো কথা হলো।আমি নিজে থেকে কি করে?না না এটা একেবারেই ইম্পোসিবল।আমি পারবো না।
আমার ভাবনার মাঝেই ভাইয়া আমাকে ছেড়ে বিছানায় গিয়ে বসে আহ্লাদি স্বরে বলল
“”দেখ মিতু যা করার তাড়াতাড়ি কর।বেশি ভাবতে যাসনা কারন তুই জানিস যদি আমি নিজে থেকে কিছু করি তবে সেটা তোর জন্য কতটা কষ্টকর হবে।””
“”ভাইয়া প্লিজ এমনটা করিস না।আমি পারবো না।””
“”যত কথা বলবি শাস্তি ততই ডাবল হবে।””
“”ভাইয়া প্লিজ।””
“”আর একটা কথা বললে বিশটা চুমু দিতে হবে।””
এবার আমি চুপ করে গেলাম।জানি ভাইয়ার সাথে কথা বলে কোনো লাভ নেই।সেই আমাকেই তার ভুগান্তর দিতে হবে।এখন মনে হচ্ছে কেন যে পা বদলাতে গেলাম।এখন তারও প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে।মনের মধ্যে অস্থিরতা টা বেড়ে চলেছে।অসস্থিতে গা জ্বলে পুরে কয়লা বনে যাচ্ছে।তারপর ও ধীর পায়ে ভাইয়ার দিকে এগোতে লাগলাম।ভাইয়ার থেকে একটু দুরত্ব বজায় রেখে দাড়ালাম।তারপর চোখ বন্ধ করে একটু ঝুঁকে ভাইয়ার ঠোঁটে আলতো ঠোঁট ছোঁয়ার সাথে সাথেই সরে দাড়ালাম।মূহুর্তেই বুকের ধুকপুকানিটা হাজার গুনে বেড়ে গেছে।চোখ বন্ধ করে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করে আবার তার ঠোঁটের দিকে এগোলাম।এবার আর একটা চুমু দিয়ে সরে এলাম না।নিজেকে শক্ত করে আরো একটা চুমু দিলাম।ধীরে ধীরে মনের সংকোচ বোধটা কাটতে লাগল।খুব সহজ ভাবেই যখন একের পর এক চুমু দিতে লাগলাম ঠিক তখনই আরমান ভাই আমার পেছনের চুল আঁকড়ে ধরে আমায় বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ও নিজে আমার ওপর আধশোয়া হয়ে আমার ঠোট নিজের দখলে নিয়ে নিল।ভাইয়াকে আটকানোর চেষ্টা করলে ভাইয়া একহাতে আমার হাত বিছানায় চেপে ধরল।এবার আমি বেকাবু হয়ে পরলাম।আর ভাইয়া নিজের মতো করে আমার ঠোঁটের ওপর তার শাসন চালাতে লাগল।
ভাইয়া যখন তার নেশায় নেশাগ্রস্ত তখনই দরজায় কেউ একটা নক করল।দরজার ধাক্কানোর শব্দে আমি চমকে উঠলাম।নিজেকে ভাইয়ার কবল থেকে ছেড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু ভাইয়ার তাতে কোনো ভ্রূক্ষেপ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।যেন দরজা ধাক্কানোর শব্দ তার কান অবধি পৌছয়ই নি।এদিকে দরজা ধাক্কানো টাও ক্রমাগত বেড়েই এবার মনে হচ্ছে আমি কেঁদেই দেব।কি রকম একটা অবস্থায় পরলাম আমি।একদিকে আরমান ভাই অন্যদিকে দরজার পেছনে আগন্তুক।না জানি দরজার পেছনে কে দাঁড়িয়ে আছে?আর যদি সে আমাকে আর ভাইয়াকে এক ঘরে দেখে নেয় তাহলে কেলেঙ্কারি টাই না হয়ে যাবে….
চলবে❤

নেশা তুই আমার Part:5

0

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part:5

দরজা খুলে বড় মা ঘরের ভেতরে আসতেই দরজার সামনে আমায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কিছুটা অবাক হয়েই প্রশ্ন করল।
“”কি রে মিতু তুই এখানে কি করছিস?””
বড় মার প্রশ্নের উত্তর কি দেব ভেবে না পেয়ে মাথা চুলকাতে লাগলাম
“”আব আসলে ববড়মা আমি..আমি আরমান ভাই কে খেতে যাওয়ার জন্য ডাকতে এসেছিলাম।””
“”ওহহ ডাকা হয়ে গেছে।এবার যা এখান থেকে।আর শোন,আরমান খেতে ডাকার জন্য আমি আছি তোকে এতো কষ্ট করতে হবে না বুঝেছিস?””
“”জ্বী বড় মা””
মাথা নিচু করে কথাটা বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম।যাক বাবা বেঁচে গেছি।তবে ছোট বেলা একটা জিনিস খুব ভালো ভাবেই লক্ষ করেছি আমি।কেন জানি বড় মা সবসময় আমায় এড়িয়ে চলে।বেশি কথাই বলে না।আর যদিও এক আধটু কথা তাও সবসময় খিচখিচ করে।ধুর এসব কথা আমি কেন ভাবছি?বড় মার স্বভাব ই তো খিচখিচ করা।সবার সাথেই করে।তবে আমার টেনশন হচ্ছে আরমান ভাই কে নিয়ে।ভাইয়া আজকেও ভার্সিটিতে টিপটিপ হয়ে যাবে।আর ভার্সিটির মেয়েরা চকোলেটের মতো চিবিয়ি চিবিয়ে খাবে।ধুর অসহ্য।
.
.
.
.
?
ভার্সিটির জন্য রেডী হয়ে বসার ঘরে আসতেই আমার চোখ ছানাবড়া।এ কি দেখছি আমি।এ যে ভাইয়া।আমার দেওয়া শার্ট টা পড়েই আছে।এই মূহুর্তে আমার লুঙ্গি ডান্স দেওয়া উচিৎ এটা ভেবে যে উনি আমার পছন্দের শার্টটা পরেছেন সেটা যতই খারাপ হোক না কেন।কিন্তু এই মূহুর্তে আমার রাগ হচ্ছে ভীষন রাগ হচ্ছে।বেছে বেছে একটা ফ্যাকাশে রঙের শার্ট বের করেছিলাম যাতে ভাইয়াকে প্রতিদিনের মতো হ্যান্ডসাম না দেখায়।কিন্তু এখন তো দেখছি ভাইয়াকে এই রঙ টা এমন ভাবে খাপ খেয়েছে যেন কোনো ফিল্মের হিরো।ধুর বাবা সব মেহনত পানি হয়ে গেল।রাগে গজগজ করতে করতে খেতে বসলাম।কিন্তু খাবার গলা দিয়ে কিছুেতেই নামল না।বারবার ভাইয়ার দিকেই চোখ যাচ্ছে।আর তার চোখে চোখ পরতেই সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিচ্ছি।খাওয়া শেষ হতেই ভাইয়া বেরিয়ে গেল।তার পিছু পিছু আমি আর ছায়াও বেরোলাম।
.
.
.
.
?
ভার্সিটিতে পৌছেই গাড়ি থেকে নেমে চলে আসব তখনই ভাইয়া পেছন ডাকলেন।আমি পিছু ফিরে দেখি আরমান ভাই গাড়িতে হেলান দিয়ে দুই হাত বুকে ভাঁজ করে আমার দিকে বাঁকা হেসে তাকিয়ে আছে।
“”তোর পছন্দ আছে বলতে হবে।সত্যিই শার্ট টা একদম ই পারফেক্ট আমার জন্য… তাই না?””
খুব বুঝলাম।ভাইয়া যে আমাকে পচাচ্ছে তা খুব ভালো করেই বুঝলাম।তাই নে জের মাথার চুল নিজেই ছিড়তে ছিড়তে ভার্সিটির ভেতরে চললাম।নিজের ওপর এ রাগ হচ্ছে।কেন যে ওই শার্টটা বের করতে গেলাম কে জানি?
ভার্সিটিতে প্রবেশ করতেই চোখ গেল সামনের মাঠে।খোকন তার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে।হারামজাদা আমার উপর বাজে নজরে তাকায়।এর তো আজ একটা হেস্তনেস্ত করেই ছাড়বো।এর জন্যই কাল আমায় ভাইয়া সবার সামনে এত এত অপমান করেছিল।নিজের গলার ওড়নাটা ঠিক করতে করতে তার দিকে এগোলাম।বলা যায় না এই ছেলে আবার আমার দিকে নজর নিক্ষেপ করতে পারে।ভালো করে ওড়না কোমড়ে বেধে খোকনের কাছে গিয়ে কোনো কথা ছাড়া উড়াধুড়া পিটুনে শুরু করে দিলাম।
“”হতচ্ছাড়া শয়তান কোথাকার।মেয়েদের দিকে বাজে নজরে তাকানো তাই না।আজ দেখাচ্ছি মজা তোকে।আজ তোকে আমার হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।এই নে এই নে এটাও নে ওটাও নে।সাথে আর একটা নে।বোনাস আর একটা নে আবারো নে।””
মুখে যা আসছিল তাই প্রলাপ বকতে বকতে বেদম পিটিয়ে যাচ্ছি তাঁকে।শরীরের সর্ব শক্তি দিয়ে পিটোচ্ছি।সবাই আমাকে আটকানোর চেষ্টা করছে।কিন্তু আমি?আমার হাত ধরলে পা দিয়ে মারা শুরু করছি।কিছুতেই আজ ছাড়বো না ওকে।মেয়েদের দিকে বাজে নজরে তাকানো সারাজীবন এর জন্য ঘুচিয়ে দেব আজ।নিকৃষ্ট প্রাণী কোথাকার।
আমি খুব তৃপ্তি নিয়েই খোকনকে পিটিয়ে যাচ্ছি এমন সময় আমার হাতে হেচকা টান অনুভব করলাম।টাল সামলাতে না পেরে কিছু একটা ওপর হুমড়ি খেয়ে পরলাম।নিজেকে সামলে সামনে তাকাতেই দেখি আমি আরমান ভাইয়ের বুকে পরে রয়েছি।ভাইয়া দাঁতে দাঁত পিষে আমার দিকে তাকিয়ে বলল
“”মন ভরেছে?””
“”না ভরেনি আমি ওকে আরো কয়েকঘা মারবো।””
বলেই ভাইয়ার থেকে নিজেকে ছাড়াতে চাইলে ভাইয়া আরো জোড়ে আমার হাত চেপে ধরে।
“”কিন্তু ওর ভরে গেছে।””
ভাইয়ার কথার আগাগোড়া কিছু না বুঝেই তার দিকে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকালাম।
“”স্টুপিট কোথাকার যখন শরীরে বিন্দুমাত্র শক্তি নেই তখন এই শরীর নিয়ে একটা ছেলেকে মারতে এসেছো কি তাঁর মনের তৃপ্তি মেটানোর জন্য।””
ভাইয়া কথাটা একটু আস্তে বলায় সবার কানে কথাটা না গেলেও আমার কাছে কথাটা একটা কারেন্টের শকের মতো লাগল।অবাক হয়ে খোকনের দিকে তাকাতেই আমার চোখ কপালে উঠল।এই ছেলে কে আমি এক্ষুনি মেরে মেরে আধমরা করলাম।সে এই ভাবে ফিট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কি করে?তাও আবার ঠোঁটের ওপর হাত বোলাচ্ছে।ওকে দেখে মনে হচ্ছে ও আমার মার নয় ছোঁয়া গুলোই অনুভব করেছে।ছোটবেলা নিশ্চয়ই হরলিক্স খাইনি তাই আজ এই অবস্থা।আমি খুবই ইনোসেন্ট মার্কা চেহারা বানিয়ে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।যেন এবারের মতো আর আমায় কোনো শাস্তি না দেয়।কিন্তু ভাইয়া দাঁতে দাঁত চেপে হিসহিসিয়ে বলল “”তোকে আমি বাড়ি গিয়ে দেখবো।অনেক হিসেব বাকি তোর সাথে।””
বলেই গটগট করে চলে গেল।আর আমি অসহায়ের মতো তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।না জানি বাড়িতে আমার জন্য কি অপেক্ষা করছে…
চলবে❤

নেশা তুই আমার Part:4

0

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part:4
?
“”ভালোবাসো আমায়?””
কথাটা বলেই ভাইয়ার চোখে তাকালাম উত্তর খোঁজার চেষ্টায়।কিন্তু আরমান ভাই আমার সব চেষ্টায় জল ঢেলে আমায় বিছানার ওপর ছুড়ে ফেলে বলল
“” বয়স কত তোর?এই বয়সেই প্রেম পিরিতির কথা ভাবিস লজ্জা করে না?আগে বড় হয়ে নে তারপর নাহয় এসব কথা বলতে আসিস।আর তার আগে হাতে মলম টা লাগিয়ে নে।””
“”এটাও তুমি নিজে লাগিয়ে দেবে না।মারার সময় তো নিজের হাতেই মেরেছিলে।””
“”চাকর নই তোর যে মলম লাগিয়ে দেব।ইচ্ছে হলে মলম লাগা না হলে ছুড়ে ফেলে দে।ডাফার কোথাকার।””
কথাটা বলেই গটগট করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল আরমান ভাই।আমি অবাকের চরম সীমায়।কি এমন বললাম যার কারনে এতো রাগ দেখালো।তবে যাই হোক ভাইয়া আমায় এটা বলেনি যে ও আমায় ভালোবাসে না।বলেছে আমার বয়স হয়নি।কিন্তু আমি তো আঠারো প্লাস আর কতো বড় হতে হবে আমায়?আর যদি প্রেম করারই বয়স হয়নি তাহলে যে ও আমায় এই ভাবে যখন তখন চুমু খায় সেটার বয়স হয়েছে আমার?ধুর বাবা যতই ভাবছি ততই কনফিউশন।আর ভাববো না।তাতে যা হয় হোক।আমার কি হুহ?আমি তো জানি আরমান ভাই আমায় কতটা ভালোবাসে।শুধু সেটা মুখেই স্বীকার করেনা।আর আমি তো তার মুখ থেকে শোনার জন্য পাগল হয়ে আছি।ইসস যখন ভাইয়া আমায় ভালোবাসি বলবে তখন আমার অনুভুতি টা কেমন হবে ভাবতেই গা শিরশির করে উঠছে।উফস।
?
সকাল হতেই আমি আরমান ভাইয়ের ঘরে উঁকি মারা শুরু করলাম।একটু দেখে তো নেই কি করছে এই লোকটা।তার ঘরের দরজা খুলে মাথা ভেতরে নিয়ে উকি মারলাম।কিন্তু একি আরমান ভাই কোথায়।পুরো রুমে কোথাও নেই।হতাশ হয়ে যখন চলে আসব তখনই দেখলাম ভাইয়া ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো।হাতের টাওয়ালটা দিয়ে মাথার চুল গুলো ঝারছে।খালি বুক একটা কাচা হলুদ গ্যাবাডিং এর প্যান্ট পড়া অবস্থায় রয়েছে।ইসস গোসল করার পর একটা লোককে বুঝি এতো সুন্দর লাগে।আমি তো জানতাম এই সৌন্দর্যটা শুধু মেয়েদের জন্য।কিন্তু আজ আরমান ভাই কে দেখে সেই ভুল টাও ভেঙে গেল।ভাইয়ার মাসালওয়ালা বডি…ইচ্ছে করছে একটু ছুঁয়ে দেখি।এ আমার সপ্ন নয় তো।একমাত্র সপ্নের রাজকুমার ই এতটা সুন্দর হতে পারে।ভাইয়া ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে কাবার্ডের দিকে এগোতেই আমার মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি খেলে গেল।ভাইয়া কাবার্ড খুলতেই আমি তার হাতের নিজ দিয়ে গিয়ে সোজা তার সামনে দাড়ালাম।সামনে আরমান ভাই পেছনে খোলা কাবার্ড আর দুই দিকে উনার দুই হাত আমাকে তার বন্দিনী করে রেখেছে।নিজেকে তার বন্দিনী করতে পেরে সত্যিই আজ নিজের প্রতি ভীষন গর্বিত গর্বিত অনুভব হচ্ছে।
“”তুই?””
“”কেন অন্য কারো আসার কথা ছিল বুঝি?””
আমার কথা শুনে আরমান ভাই চোখ মুখ শক্ত করে আমার দিকে এক কদম এগিয়ে বলল
“”তুই আমার ঘরে কি করছিস””
“”এই এই কথায় কথায় এরকম আমার কাছে আসার বাহানা একদম খুঁজবে না বলে দিচ্ছি।””
আমার কথায় ভাইয়া ভ্রু আরো বেশি কুঁচকে গেল।
“”তুমি আমার অনেক ক্ষতি করেছ।””
“”আচ্ছা কি কি ক্ষতি করেছি শুনি””
দাঁতে দাঁত চেপে কথাটা বলতে আমি আমার ঠোঁট গলা আর হাত দেখিয়ে বললাম
“”দেখ কত কত জায়গায় ক্ষত করেছ তুমি আমার।ভীষণ ব্যথা হচ্ছে আমার।আর তাই আমাকে ব্যথা দেওয়ার অপরাধে আজ পানিশমেন্ট পেতেই হবে।””
“”হোয়াট?পানিশমেন্ট তাও আবার আমি?””
“”হ্যা তুমি।একটু দূরে গিয়ে দাঁড়াও।””
আরমান ভাইয়ের বুকে এক আঙুল রেখে তাঁকে একটু দুরে সরিয়ে দিয়ে আমি উল্টো ঘুরে কাবার্ডের কাপড় এদিক ওদিক করা শুরু করলাম।
“”কি করছিস কি মিতু তুই?আমার কাপড় চোপড় এইভাবে অগোছালো করছিস কেন?””
আমি ভাইয়ার কথায় কান না দিয়ে কাপড় অগোছালো করতে ব্যস্ত হয়ে রইলাম।প্রায় বেশ কিছুক্ষণ খোঁজার পর আমি একটা ফ্যাকাশে রঙের শার্ট হাতে ভাইয়ার দিকে ঘুরে দাড়ালাম।
“”আজ এই শার্টটা পরেই তুমি ভার্সিটি যাবে।আমার পছন্দের রঙ।””
“”তুই কোন জাতের চোখ নিয়ে ঘোরাফেরা করিস?এটাও কারো পছন্দের রঙ কি করে হতে পারে?””
“”আমি কিচ্ছু জানি না।তুমি এটা পরবে মানে এটাই পরবে।””
“”ইম্পোসিবল আমি এটা পরছি না।সর আমার সামনে থেকে।””
“”আচ্ছা কি করে না পড় আমিও দেখি।””
বলেই কাবার্ডের লকে লেগে থাকা চাবিটা ঘুরিয়ে কাবার্ড লক করে চাবি খুলে হাতে নিয়ে আরমান ভাইয়ের সামনে থেকে সরে এলাম।
“”এবার আপনি কি পরবেন হুম।এই শার্ট ছাড়া আপনার কাছে কোনো উপায় ও নেই।”
“”মিতু খুব বাড়াবাড়ি করছিস কিন্তু।চাবি দে আমাকে।””
“”না দেব না।””
“”মিতু স্টপ দেয়ার।চাবি আমায় নয়তো খুব খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু।””
“”যা হওয়ার হোক।আমি চাবি দেব না মানে দেব না।””
আরমান ভাই আমাকে ধরার চেষ্টা করছে কিন্তু আমি কখনো টেবিলের আড়ালে যাচ্ছে তো কখনো বিছানার আড়ালে।আমি জানি এই ঘরে থাকলে আমায় ধরা পরতেই হবে তাই আমি সুযোগ বুঝে ঘরে থেকে বের হওয়ার জন্য দরজার দিকে পা বাড়াতেই পেছন কেউ আমার হাতে হেচকা টানে সোজা পাশে দেওয়ালে চেপে ধরল।হঠাৎ এমন হওয়ায় আমি ভয় পেয়ে যাই।ভয়ের চোটে আপনা থেকেই দুই চোখ বন্ধ হয়ে আসে।কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজেকে সামলে পিটপিট করে চোখ খুলতেই দেখি আমি আরমান ভাইয়ের কবলে পরেছি।আরমান ভাই আমার দুই হাত দুই পাশে দেওয়াল চেপে ধরে আমার খুব কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছে।বুঝলাম এবার আর রক্ষে নেই আমার।
“”বলেছিলাম দাঁড়াতে না নয়তো খুব খারাপ হয়ে যাবে।””
“”স…সরি।””
“”তোর সরি দিয়ে আমি কি করবো?””
বলেই আমার হাত থেকে চাবিটা নিয়ে নিল।
“”তোকে আমি পরে দেখে নেব।””
কথা বলেই আরমান ভাই আমাকে ছেড়ে কাবার্ডের দিকে যেতে লাগল।তখনই রুমের ভেতর দরজা খুলে কাউকে ঢুকতে দেখে আমি চমকে উঠলাম….

নেশা তুই আমার Part:2+3

0

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
Part:2+3
?
একের পর এক অনবরত বেতের আঘাতে আমার হাতের সাদা তালু লাল রক্ত বর্নে পরিণত হয়েছে।দুই চোখ খিচে ঠোঁট কামড়ে ব্যথা সহ্য করা চেষ্টা করলাম।কিন্তু তা সহ্য সহ্য করার ধৈর্য বা ক্ষমতা কোনোটাই আমার নেই।আঘাতের অংশের অংশ আরো বেশি আঘাত পেতে পেতে হাত অবশ হয়ে আসছে।চোখ বেয়ে জল গড়াচ্ছে।কিন্তু ভাইয়া কিছুতেই ক্ষান্ত হচ্ছে না।একের পর এক আঘাত করেই চলেছে।হঠাৎই মনে হলো।আঘাত করা বন্ধ হয়ে গেছে।সাথে সাথেই কিছু একটার শব্দ আমার কান আসতেই আমি চমকে উঠলাম।কাপতে কাপতে জল ভর্তি চোখ পিটপিট করে খুলে সামনে তাকাতেই দেখি ভাইয়া আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টি বর্ষণ করছে।তার পাশে দৃষ্টি যেতেই দেখলাম বেতের কিছু ভাঙা অংশ নিচে পরে আছে।বুঝলাম,আমার হাতেই ভাইয়া বেত ভেঙেছে।তারপরো রাগ কমে নি যার কারনে বেত ছুড়ে ফেলে দিয়েছে।রাগ কমেনি তারমানে শাস্তি এখনো বাকি আছে।
“”ভার্সিটিতে কি হাডুডু খেলার জন্য এসেছ?ক্লাসের মাঝে মন নেই,পড়ার সময় পড়া নেই।বয়ফ্রেন্ডের সাথে ডেটিংয়ের জন্য এসেছ নাকি এখানে?”
ভাইয়ার ভয়ঙ্কর গর্জন শুনে ভয়ে নিজেকে তার থেকে একটু দূরে সরিয়ে নিলাম।তারপর কান্না জড়িত কন্ঠে ফুঁপিয়ে ফুপিয়ে বললাম।
“”স..স..সরি স.স্যার।এ.র.পর থেকে পড়া করে আসব।””
“”নো এক্সকিউজ।এখানে তোমাদের এসব লো ক্লাস এক্সকিউজ শোনার জন্য আমি বসে নেই।এই মূহুর্তে তুমি মাঠে যাবে।মাঠের মাঝখানে কড়া রোদের মধ্যে দুই হাতে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে।এটাই তোমার ক্লাসে অমনোযোগী হওয়ার শাস্তি।””
ভাইয়ার কথা শুনে অবাক চোখে তার দিকে তাকালাম।ক্লাস ফাকি দেওয়ার শাস্তি যদি মাঠে কান ধরে দাড়িয়ে থাকা হয় তবে এতক্ষণ ধরে যে গরুর মতো মারল সেটা কি ছিল?
আমি মিটমিট চোখে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিলাম।ক্লাসের সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে।সবার চোখে ভয় স্পষ্ট।এর আগে কখনোই তাঁদের স্যারকে এতটা হাইপার হতে দেখেনি কেউ।তার থেকে ত বড় কথা একজন অনার্স থার্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট কে যে কেউ পড়া না পারার অপরাধে এরকম শাস্তি দেয়।তা হয়তো তাঁদের অজানা ছিল।আমি চোখ নামিয়ে নিলাম।এখানেই কি কম অপমানিত হলাম যে মাঠে গিয়ে নিজেকে আরো বেশি ধুয়ে ধুয়ে অপমানিত করাতে হবে।আড়চোখে একবার আমার পাশে বসে থাকা খোকনের দিকে তাকালাম।ছেলেটার যেন আজ গল্প শেষ ই হচ্ছিল না।ছাগল একটা।ওর জন্যই মার খেতে হলো আমায়।একবার সুযোগ পেলে আছাড় মারবো ধরে হারামি কোথাকার।
“”কি হলো আমার তোমার কানে যায়নি?গেট আউট ফ্রম মাই ক্লাস।””
আর কোনো কথা না বলেই ক্লাস থেকে বেরিয়ে এলাম।
প্রায় আধঘন্টা যাবৎ মাঠের মাঝখানে কড়া রোদে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছি।সিনিয়র জুনিয়র সবাই আমার দিকে কেমন অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।হয়তো ভার্সিটিতে এই প্রথম কাউকে এমন শাস্তি পেতে দেখল।হাত অসম্ভব রকম ফুলে গেছে।যার যন্ত্রণায় ভালোভাবে কানটাও ধরতে পারছি না।তবে আজ এই যন্ত্রণার থেকে বেশি যন্ত্রণা হচ্ছে বুকে।ভাইয়া যে আমায় মারে না তা নয়। কোনো ভুল করলেই ঠাস ঠাস করে গালের মধ্যে পরে।কিন্তু এইভাবে কখনোই মারেনি।খুব কষ্ট হচ্ছে।ভাইয়া কিভাবে পারলো আমায় এই ভাবে মারতে।একটুও কষ্ট হলো না বুঝি।
ভাইয়া এই ভার্সিটিরই ইংলিশ প্রফেসর।আমাদের দুই ক্লাস পরেই তার ক্লাস।দুটো ক্লাস শেষ হতেই খোকনের সাথে গল্প জুড়ে দিয়েছিলাম।এই ফাঁকে কখন যে ভাইয়া ক্লাসে এসে পরে বুঝতেই পারিনি।যখন বুঝলাম তখন অলরেডী ভাইয়ার দৃষ্টি আমার ওপর পরেছে।তার কিছুক্ষণ পরেই পড়ার বাহানা দিয়ে আমার কাছে এসে বেদম পেটানো শুরু করলেন।
ক্লাস শেষ হয়ে গেছে।আমার ফ্রেন্ড রা এসে আমায় কোথাও বসতে বললে আমি মানা করে দেই।ভাইয়া যখন কান ধরে থাকতে বলেছে তখন ভাইয়া না বলা অবধি আমি এই কান ছাড়ছি না।আমিও একরোখা টাইপের মেয়ে।দেখি কতক্ষণ আমায় এই রোদের মাঝে দাড় করিয়ে রাখতে পারে।আমার কথার সাথে হার মেনে সবাই চলে গেল।আর দাঁড়িয়ে রইলাম এই রোদের মাঝে।ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে গেছি।কিছুক্ষণ পর পর মাথা ঘুরিয়ে উঠছে।কিন্তু আমি আমার ছেদ কিছুতেই ছাড়ছি না।যতক্ষন না ভাইয়া নিজের থেকে আমায় রোদ থেকে সরে যাওয়ার কথা বলছে।ততক্ষণে পর্যন্ত আমি এখান থেকে সরবো।গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।তৃষ্ণা পেয়েছে।ভীষন তৃষ্ণা পেয়েছে।জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলাম।তখনই কোথা থেকে ছায়া দৌড়ে এসে আমার সামনে দাড়ালো।
“”মিতু এই নে পানি টুকু খেয়ে নে।””
“”আমি পানি খাবো না।””
“‘উফফ এই পানি ভাইয়া পাঠিয়েছে।ভাইয়া তোকে পানি খেতে বলল।আর খুব তাড়াতাড়ি ছায়ায় গিয়ে বসতে বলল।চল তাড়াতাড়ি এখান থেকে।””
ছায়ার কথায় আমি কান ছেড়ে ভাইয়ার কেবিনের দিকে তাকালাম।ভাইয়া তার কেবিনের সামনে দুই হাত পকেটে রেখে আভার দিকেই তাকিয়ে আছে।তাঁকে দেখেই আমার চোখের বাঁধ ভাঙলো।হয়তো খুব বেশি অভিমান জন্মে গেছে মানুষটার ওপর।
গাছের নিচে বসে আছি।আগ চোখের জলেরা ভিষন অবাধ্য হয়ে গেছে।কিছুতেই আটকাতে পারছি না।আমার পাশে বসে আমার বন্ধু রা আমাকে শান্তনা দিয়েই চলেছে।তখনই খোকন আমার দিকে তার রুমাল এগিয়ে দিল চোখের পানি মুছে নেওয়ার জন্য।আমিও সুযোগ পেয়ে রুমালে চোখের পানি শুদ্ধ নাকের পানিটাও ঝেড়ে দিলাম।নাকটা অনেক্ষন ধরেই শিরশির করছিল…
চলবে❤
আমি নতুন লেখিকা।লেখালিখি তে আমি এখনো অনেকটাই কাঁচা।তাই এখন আমার আপনাদের সাপোর্টের প্রয়োজন।দয়া করে নেক্সট নাইস কমেন্টস না করে গঠন মূলক কমেন্টস করে গল্পে ভুল ত্রুটি ভালো খারাপ গুলো তুলে ধরুন।যাতে আমি গল্পটাকে আপনাদের মতো করে আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে পারি।
হ্যাপি রিডিং❤

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
Part:3
ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে মেঘেদের লুকোচুরি খেলাটা দেখছি।কি অদ্ভুত এই আকাশ।মানুষের থেকে কত দূরের থেকেও তাঁদের সুখ কষ্ট আবেগ অনুভুতি কত সহজেই আপন করে নিতে পারে।কত সহজেই একটা মানুষ ওই আকাশটাকে নিজের থেকেও বেশি ভরসা করে ফেলে। যেই কষ্টটা সবার সাথে ভাগ করতে পারে ওই আকাশের সাথে তা ভাগ করে নেয়।আর ওই আকাশ নিঃস্বার্থ ভাবে সবকিছুর ভাগ নিয়ে থাকে।যেমন আজ আমার ভেতরের সকল অভিযোগ এই আকাশ একের পর এক শুনেই চলেছে।কখনো তো আরমান ভাইয়ে প্রতি থাকা অভিযোগ গুলো তাঁকে শোনাতে পারিনা।আজো পারিনি।তাই আজো এই অভিযোগ শোনার মতো এই আকাশ ছাড়া আর কেউই নেই।দুই চোখ বন্যায় ভাসছে।আজ ভাইয়া যেভাবে কলেজের সবার সামনে আমার অপমান করল সেটা না করলেও পারত।সামান্য তার কথা মানিনি বলে এইভাবে শাস্তি দিলেন আমায়।আসলেই কি এই শাস্তি টা আমার প্রাপ্য ছিল।ভাইয়া আমায় কখনো বুঝেনি।নাই বোঝার চেষ্টা করেছে।একবার ও ভাবল না কেন আমি তার কথাটা মানলাম না।ভাববে কেন?যখন ভালোইবাসে না তখন বুঝতে যাবে কেন?আমিই পাগলের মতো তার পেছনে ছুটছি।আর ছুটবো না।খুব অভিমান জন্মেছে খুব।কখনো কথা বলব না তার সাথে।কখনো না।
ছাদে রাতের আকাশ দেখতে দেখতেই আমি নিজের ভাবনায় বিলীন ছিলাম তখনই হঠাৎ মনে হলো আমি হাওয়ায় ভাসছি।ভয়ে আমি হাতের কাছে যাই পেলাম।সেটাই খামচে ধরলাম।মূহুর্তেই হাত ব্যথাটাও নাড়া দিয়ে উঠল।নিজেকে সামলে সামনে তাকাতেই দেখি ভাইয়া…আমি ভাইয়া কোলে।সাথে সাথে তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম।কোনো কথাই বলব না আজ তার সাথে।তবে আমার মুখ ফিরিয়ে নেওয়াতে আরমান ভাইয়ের কোনো হেলদুল হলো বলে মনে হলো না।সে নিজের মতো সামনে তাকিয়ে আমার নিয়ে আমার রুমে নিয়ে এলো।আমাকে বিছানার ওপর বসিয়ে ভাইয়া আমার সামনে টুল টেনে বসে আমার দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টি নিক্ষেপ করল।আমি সেটাকে না দেখার ভান করে উঠে চলে যেতে চাইলে আরমান ভাই আমার হাত ধরে নিজের সামনে বসিয়ে নিল।আমার হাত ধরায় আমি ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠলাম।কিন্তু ভাইয়া সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে আরো শক্ত ভাবে চেপে ধরল আমার হাত।এবার আমার প্রাণ যায় যায় অবস্থা।
“”কে যেন বলেছিল তোকে ভালোবাসার মানুষের দেওয়া ব্যথা যতটা গভীর হবে ভালোবাসাও ততটাই গভীর হবে।তাই তো হাতে এখন পর্যন্ত মলম লাগাস নি তাই না?””
“”আহহ ভাইয়া ছাড়ো লাগছে আমার।””
“”কেন ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা নেই?””
আমি এবার কোনো কথা বলার অবস্থাতেই রইলাম না।ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলাম।
“”এই চুপ একদম চুপ।এইসব ন্যাকামো করে তুই তোর বয়ফ্রেন্ডের কাছে সিম্প্যাথি পাবি।আমার কাছে নয়।””
আরমান ভাইয়ের কথা শুনে এবার আমি ব্যথা ভুলে তার দিকে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকালাম।আর ও আমার হাত ঝটকা মেরে ছেড়ে দিয়ে পকেট থেকে মলম বের করে আমার দিকে এগিয়ে দিল।
“”নে হাতে লাগিয়ে নে এটা।””
“”লাগাবো না….লাগাবো না লাগাবো না লাগাবো না শুনেছো তুমি লাগাবোনা আমি।””
বলেই বিছানা থেকে উঠে চলে আসতে চাইলে ভাইয়া পেছন থেকে উঠে আমার হাতে হেচকা টান দিতেই আমি টাল সামলাতে না পেরে ভাইয়ার বুকের ওপর পরলাম।এই সুযোগে ভাইয়া একহাতে আমার কোমর জড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।ভাইয়ার এত কাছে আসার কারনে আমার দম বন্ধ হয়ে আসার অবস্থা।ভাইয়ার উষ্ণ শ্বাস আমার মুখের ওপর পরছে।যা আমার ভেতরে তোলপাড় শুরু করছে।আমি ধীরে ধীরে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেই ভাইয়া এবার আমাকে নিজের শরীরের সাথে গভীর ভাবে জড়িয়ে নিল।আমি আর ভাইয়ার চোখে চোখ মেলানোর অবস্থায় রইলাম না।ভাইয়ার এতো কাছে আসাতে অসস্থিতে আমার দম যায় যায় অবস্থা।
“”ভাইয়া প্লিজ দূরে যাও আমার অসস্থি হচ্ছে।””
“”আমি কাছে এলেই বুঝি তোর অসস্থি হয়।খোকন যখন তোর ক্লোজ হয় তখন অসস্থি হয়না।””
“”এখানে খোকন কোথা থেকে আসছে?””
“”আসছে…আসার কারন আছে বলেই আসছে।এই মেয়ে এতো বেখেয়ালি কেন তুই?কে তোর দিকে কোন নজরে তাকাচ্ছে সেটাও বুঝিস না।””
ভাইয়ার কথার সবকিছু আমার মাথার উপর দিয়ে গেল।যার কারনে আমি তার চোখের দিকে অবাক চোখে তাকালাম।আমার চাহনি দেখে ভাইয়া একহাতে আমার পেছনের চুল আঁকড়ে ধরে আমার ঠোঁটের কাটা অংশে তার ঠোঁটের আলতো পরশ একে দিল।ভাইয়ার স্পর্শে আমি কেঁপে উঠলাম।পুরো শরীরে যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল।আবেশে চোখ করতেই অনুভব করলাম ভাইয়া আমার ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নিয়েছে এবার যেন আমার পুরো শরীর অবশ হয়ে আসছে।তার পর ও নিজেকে ভাইয়ার বাঁধন থেকে ছাড়ানোর জন্য তার বুকে মৃদু ধাক্কা দিচ্ছি।কিন্তু এতে করে ভাইয়া আরো বেশি আমাকে নিজের গভীরে ডুবিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।এবার আমি আর নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম না।ডুবে গেলাম তার ভালোলাসার পরশের মাঝে।যতই অভিমান করিনা কেন?ভালো তো এই মানুষটাকেই বাসি।বেশ কিছুক্ষণ পর ভাইয়া আমার ঠোঁট ছেড়ে গলায় নেমে গেল।গলার নিচে থাকা আমার কালো তিলটাতে একটু জোড়ে কামড় বসাতেই আমি ব্যথায় কুকড়ে উঠলাম।ভাইয়া এবার আমার গলা থেকে মুখ তুলে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে মাতাল করা কন্ঠে বলল
“”আমি চাইনা আমার জিনিসে অন্য কারো বাজে নজর পরুক।নিজের জন্য নয় আমার জন্যেও তো নিজের খেয়াল রাখতে পারিস।””
ভাইয়ার কথা শুনে আমার বুক ধক করে উঠল।এই প্রথমবার ভাইয়া আমায় নিজের বলে সম্বোধন করল।

নেশা তুই আমার Part:1

0

নেশা_তুই_আমার
Part:1
Mst.Mitu Rahman

থুতনিতে কামড়ের অনুভব হতেই আমার ঘুম ভেঙে গেল। ব্যাথায় কুঁকড়ে ওঠে থুতনিতে হাত দিতেই সামনে থাকা লোকটি থুতনি থেকে আমার হাত সরিয়ে বিছানায় চেপে ধরে আমার ঠোঁটের ওপর হামলা চালালো।যেন কোনো এক জন্মে আমার এই ঠোঁট লোকটির শত্রুর ভূমিকা পালন করেছিল তাই এই জন্মে সামনে পেয়ে এই ঠোঁটের ওপর অত্যাচারে তা সুদে আসলে মিটিয়ে নিচ্ছে।অন্ধকারে লোকটার চেহারা দেখতে না পারলেও বুঝতে বাকি রইল না লোকটা কে।নিজেকে ছাড়ানোর
কোনো উপায় নেই তবুও হাত মোচড়ানো শুরু করলাম লোকটার থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য।কিন্তু শেষ রক্ষে যখন হলো না।তখন কান্না ছাড়া আমার কাছে আর কিছুই অবশেষ রইল না।ব্যথার চোটে দুই চোখের জল ছেড়ে কাঁদতে লাগলাম।অন্ধকারে আমার চোখের জল গড়ানো বুঝতে পেরে আরমান ভাই এবার আমার ঠোঁট ছেড়ে চোখের দিকে তাকালো।
“”কি রে এই ভাবে বাচ্চাদের মতো কাঁদছিস কেন?””
“”তুমি এমন কেন আরমান ভাই? সবসময় আমায় ব্যথা দাও খালি।চুমু যদি দেবে তো একটু ভালোবেসেই তো দিতে পারো।””
আমার কথায় এবার আরমান ভাই আমার উপর থেকে উঠে বসল।
“”আমাকে কি তোর পাগল মনে হয়?ভালোবেসে চুমু খাবো?তাও আবার তোকে?মিতু নিজেকে কি তুই খুব বড় হিরোইন ভাবিস?যে তোকে ভালোবেসে চুমু খাবো।””
ভাইয়া ওঠার সাথে আমি ও উঠে বসে টেবিল ল্যাম্প টা জালিয়ে দিলাম।তার পর মিনমিন করে বললাম
“”যদি ভালোই না বাসো তাহলে বারবার কেন এতো কাছে আসো যন্ত্রণা দেওয়ার জন্য?””
“”কারণ তোর মতো হ্যাংলা মেয়েকে শুধু যন্ত্রণা দেওয়ার ই ইচ্ছে করে।ভালোবাসতে নয়।””
কথাটা বলতে বলতেই উনার নজর পরে আমার টেবিলে থাকা দুধের গ্লাসটায়।
“”আরে তুই তো দেখি দুধ টাও খাসনি।তাই তো বলি তোকে দিন দিন আমার এতো পিচ্চি পিচ্চি কেন লাগে?দুধ না খেলে কি আর কেউ বড় হয়?””
কথাটা বলেই উনি দুধের গ্লাসটা নিজের হাতে নিলেন।দুধ দেখতেই আমার নাক মুখ কুচকে এলো। আমি নাক ছিটকে বললাম।
“”ইয়াক আমি খাই না।গন্ধ লাগে।””
“”আচ্ছা দেখি কেমন গন্ধ লাগে?””
বলেই আরমান ভাই উনার একহাতের আঙুলগুলো দিয়ে আমার দুই গাল খুব শক্ত করে চেপে ধরে জোর করে গ্লাসের দুধ টুকু খাওয়াতে লাগল।গ্লাসে থাকা দুধের শেষ বিন্দু টুকু ফুরোতেই ভাইয়া আমায় ছেড়ে দিল।ছাড়া পেয়েই আমি জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে লাগলাম।সাথে বমি বমি ভাবটাও চলে এলো।ইস কি গন্ধ ইয়াকক।
“”ওমা মাত্র চুমুতেই তোর এই অবস্থা?এখনো তো কিছুই করলাম না।””
ভাইয়ার কথার আগাগোড়া কিছু বুঝতে না পেরে তার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালাম।কিন্তু ভাইয়া আমার চাহনিকে কোনো পাত্তা না দিয়েই বিছানা ছেড়ে উঠে চলে যেতে যেতে বলল
“”মাঝ রাতে দরজা এইভাবে হা করে রাখলে শুধু আমি কেন?যে কোনো ছেলেই নিজের কামুকতা মেটাতে তোর ঘরে চলে আসবে।””
কথাটা বলেই খুব জোরে দরজাটা লাগিয়ে চলে গেল।আর আমি বোকার মতো তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।সামান্য দরজা খোলা রেখেছি বলে ভাই আমার সাথে এমন করল।
?
সকালের মিষ্টি রোদ চোখে পরতেই ঘুম ভেঙে গেল আমার।এই রোদটা সবসময়ই আমার সাথে শত্রুতা পালন করে।সকাল হতে না হতেই ঘুম ভাঙিয়ে দেয় অসহ্য।কোনো রকম নিজেই নিজের শরীর কে ঠেলতে ঠেলতে ওয়াশরুমে চললাম
ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়াতেই কাল রাতে ভাইয়ার করা অত্যাচারের ফলাফল বুঝতে পারলাম।ঠোঁট ফুলে মৌচাক হয়ে গেছে।অনেকটা জায়গা কেটে রক্তও জমে গেছে।ইসস রাক্ষস একটা।আমার সুন্দর ঠোঁটটা কি অবস্থা করে দিল।এখন আমি এই নিয়ে বাইরে কি করে যাবো।কান্না পাচ্ছে ভীষন কান্না পাচ্ছে।কোনো রকম কান্না আটকে টেবিলের ওপর ধপ করে বসলাম।কিছু একটা করতে হবে।সকাল থেকে ঘর থেকে বের হইনি।একেবারে কলেজের জন্য রেডী হয়ে বেরোলাম।ঠোঁটের অবস্থা সবার থেকে আড়াল করার জন্য আজ ঠোঁটে ডার্ক লিপস্টিক দিয়েছি।ফ্যাকাশে মুখে তো আর ডার্ক লিপস্টিক মানায়না তাই চোখেও গাঢ় কাজল এঁকেছে।সবদিক দিয়ে একদম ফিট হয়েই ঘর থেকে বেরিয়েছি।বসার ঘরে আসতেই মনে হলো হ্যা আমি আমাদের বাড়িতেই আছি।যেই বাড়িটা শুধু একটা বাড়ি নয় আস্ত চিড়িয়াখানা।আমার বাবারা চার ভাই।যৌথ পরিবার হওয়ায় বাড়িতে সদস্য এত এত বেশি যে যেকোনো সময় সরকারি লোক এসে গ্রেফতার করে নিয়ে যেতে পারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির অপরাধে।আমার বড় আব্বুর ছেলে আরমান ভাই আমাদের সব কাজিনদের থেকে বড়।আর আমার থেকে প্রায় আট বছরের বড়।তার ছোট বোন লিজা আপু আমার থেকে পাঁচ বছরের বড়।এই মূহুর্তে সে শশুর বাড়ি বাচ্চা কাচ্চা সামলাচ্ছে।আমি টেবিলের সামনে আসতেই থমকে গেলাম।সামনেই ভাইয়া খুব মনোযোগ দিয়ে পাউরুটি খাচ্ছে।ইসস প্রতিবারের মতো আজ ও একশো ভোল্টের ক্রাশ খেলাম।সাদা শার্ট টা যেন তার সৌন্দর্য দ্বিগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।গালের খোচা খোচা দাড়ি গুলো দেখলে মনে হয় যেন উনার গালের জন্যই এই দাড়ি।আর চুল গুলো উফফ!দেখলেই ছুয়ে দেওয়ার ইচ্ছে করে।একটা লোক এতটা সুন্দর কি করে হয়?একটু কম সুন্দর হলে কি হতো?।আহা কি এটিটিউড!পরিবারের বড় ছেলে যেমন এটিটিউট তেমনি হ্যান্ডসাম তেমনি দায়িত্ববোধ সম্পন্ন।এই চিড়িয়াখানার মতো বাড়িতে বড় হওয়া সত্তেও যে মানুষ এতটা গম্ভীর হতে পারে তা ভাইয়াকে না দেখলে জানতেই পারতাম না।
ভাইয়াকে পর্যবেক্ষন করতে করতেই তার সামনে চেয়ার টেনে বসলাম।আমার পাশে আমার সেজো কাকুর মেয়ে ছায়া।আমার থেকে এক বছরের ছোট।তার পাশে তার বড় ভাই আরিফ আমার থেকে দুই বছরের বড়।আর টেবিলের একপাশে বসেছে নিজেদের মতো আমার ছোট কাকুর দশ বছরের দুই জমজ মেয়ে আর আট বছরে এক ছেলে।এই তিনজনে সবসময় খুঁটিনাটি লেগেই থাকে।এই মূহুর্তেও তাঁদের মধ্যে কাড়াকাড়ি চলছে।এ বলছে ওর পাউরুটি বেশি বড় আর আরেকজন বলছে অন্যজনেরটা বেশি বড়।এই নিয়ে একজন আরেকজনের প্লেট থেকে পাউরুটি উঠিয়ে চলেছে।কিন্তু আমি এত পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর ও আমার দুটো পাউরুটির মধ্য পার্থক্য বের করতে পারলাম না?।
খাওয়া শেষ হতেই ছায়া আর আমি একসাথে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাম।দুজনে একই কলেজে পরি।শুধু ইয়ার আলাদা।আমরা দুজনে আমাদের গাড়ির দিকে এগিয়ে যেতেই পেছন থেকে ভাইয়া ডেকে উঠল।
“”মিতু স্টপ দেয়ার।””
তার ডাকে আমরা দুজনেই দাঁড়িয়ে পরলাম।ভাইয়া আমাদের কাছে এসে ছায়ার দিকে তাকিয়ে বলল
“”তুই গিয়ে গাড়িতে বস আমরা আসছি””
ভাইয়ার কথা শুনে ছায়া কিছু না বলে মাথা নিচু করে গাড়িতে গিয়ে বসল।ভাইয়ার মুখের ওপর কথা বলার সাহস কারোর ই নেই।আমিও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি।ভাইয়া আমার দিকে একটা রুমাল এগিয়ে দিয়ে বলল
“”ঠোঁটের লিপস্টিক টা মুছে নে।তোর ঠোঁটে এই লিপস্টিক মানান সই নয়। বিশ্রি দেখাচ্ছে।””
কথাটা বলেই রুমাল আমার হাতে দিয়ে ভাইয়া গিয়ে গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসল।কিন্তু আমি পরলাম মহা বিপদে।এই লিপস্টিক তো আমি মুছতে পারবো না।লিপস্টিক মুছলেই আমার মান সম্মান সব প্লাস্টিক হবে।আর আমার যা ফ্রেন্ড আমার ঠোঁট কাটা দেখলে আমাকে পচাতে পচাতে শেষ করবে ওরা।কিন্তু ভাইয়ার কথা না শুনলে যে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।ধুর সব চিন্তা ভাবনা দূরে ঠেলে লিপস্টিক না মুছেই গাড়ির পেছনের সিটে ছায়ার পাশে গিয়ে বসলাম।গাড়ি চলতেই ছায়ার বকবকানি শুরু হলো।আজ ডার্ক লিপস্টিক কারন কি?এতো সাজার কারন কি?আমার চেহারার তারিফ করতে করতে শেষ।কিন্তু আমার সেদিকে মনোযোগ নেই।আমি তো সামনের লুকিং গ্লাসে ভাইয়াকে দেখছি।ভাইয়া বারবার লুকিং গ্লাসে আমাকেই দেখছে।দেখেই বোঝা যাচ্ছে কতটা রেগে গেছে তার কথা না শোনার কারনে।যেন এই চোখ থেকে আগুনের গোলা বের করে আমার দিকে ছুড়ছে।আর আমি সেই গোলক টা হাতে নিয়ে আরো ভালো ভাবে গোলক বানিয়ে অন্য দিকে ছুড়ে দিয়ে ছায়ার সাথে গল্পে মেতে উঠলাম।কারণ আমি জানি এখন আর পরে হোক শাস্তি আমাকে পেতেই হবে…..

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
Part:1

প্রেমপিপাসা অন্তিম পর্ব

0

#প্রেমপিপাসা❤
#অন্তিম পর্ব
#writer_শিফা_আফরিন_মিম
.
.
?
রেহানের ম্যাসেজ টা দেখে কুহু মুচকি হেসে ফোন টা রেখে দেয়।

কিছুক্ষন পর কেউ কুহুর রুমে এসে কুহুকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে…

কুহু কিছুটা ভয় পেয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে জেরিন।

কুহু – কিরে তুই..

জেরিন – ওহহ বাবা আমাকে রেখেই বুঝি বিয়ে করে নিবা হুহহ!

কুহু – আরে না পাগল মেয়ে।

জেরিন – হ্যা জানি তো এই জন্যই তো একটা ফোনও দেওনি। আমি না বুঝে একটা ভুল করে ফেললাম তার জন্য কি ক্ষমা করা যায় না?

কুহু – হ্যা গো পাকনি বুড়ি যায়। আর তোমার উপর কিন্তু আমার কোনো রাগ নেই বুঝলে!

জেরিন – হ্যা আপি জানি তো। তুমি আমার বেস্ট আপি! (কুহুকে জড়িয়ে ধরে)

কুহু – হয়েছে এবার বস। পার্লার থেকে মেয়েরা আসবে তুইও সেজে নিস।

জেরিন – আপ্পি এইটা একদম ঠিক বলেছো। বিয়ে বাড়িতে সেজে থাকাটা ভালো। বলা তো যায় না কারো ক্রাশ হতেও পারি।

কুহু – পাজি একটা।

তারপর পার্লারের মেয়েরা এসে কুহুকে সাজাতে শুরু করে।
আর জেরিন কুহুর প্রশংসা করা নিয়ে ব্যাস্ত৷

বিয়ে শুরু হয়ে যায় সবাই অনেক খুশি দু’জন কে এক হতে দেখে।

কুহু বেচারি কান্নাকাটি করে অঙ্গান হয়ে পড়ে আছে।
জেরিন কে কুহুর সাথে যেতে বলা হলেও জেরিন রাজি হয়নি।

চলে যাওয়ার সময় জেরিন দৌড়ে গাড়ির কাছে গিয়ে রেহান কে বলে…

জেরিন – ভাইয়া….

রেহান – কিছু বলবে?

জেরিন – সরি ভাইয়া।

রেহান – ওকে শালিকা (মুচকি হেসে)

গাড়ি রেহান দের বাসার সামনে থামায়। পথেই রেহান কুহুর মুখে পানি ছিটিয়ে ঙ্গান ফিরায়। কুহু গাড়ি থেকে নেমেই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
এতো সুন্দর করে সাজানো বাড়িটা!

কুহু বাড়িতে ঢুকতেই রেহানের অনেক আত্মীয় কুহু কে দেখে।
তারপর কয়েকজন এসে কুহুকে রেহানের রুমে দিয়ে আসে।

এদিকে রেহান কে ওর কাজিন রা আর বন্ধুরা মিলে আটকে রেখেছে।

রেহান – কি চাই তোদের?

সোহান – বেশি না দোস্ত অনলি ১০০০০।

রেহান – হোয়াট??

প্রণয় – ইয়েস বস। দিলে দে না হলে আজ সারা রাত এখানেই পাড় করতে হবে।

রেহান বিরক্ত হয়ে ওদের হাতে ৪০০০ টাকা ধরিয়ে দেয়।

রেহান – এবার তো যেতে দে বাপ।

সোহান – এতো কিপটুস তুই?

রেহান রেগে সোহানের দিকে তাকায়।

প্রণয় – হয়েছে এবার ওরে যেতে দে না হলে বেচারা কেঁদেই দিবে মনে হচ্ছে।

রেহান – তোকে তো আমি দেখে দিবো হুহহ।

রেহান রেগে চলে আসে।

রুমে কারো আসার শব্দ শুনেই কুহু নড়েচড়ে বসে।
মাথাটা একটু উঁচু করে রেহান কে দেখে উঠে সালাম করতে নিলেই রেহান আঁটকে ফেলে..

রেহান – এইসব বিশ্বাস করি না আমি। তাছাড়া পায়ে ধরে মা বাবাকে সালাম করা যায়। আমাকে করো না। (মুচকি হেসে)

কুহু – কিন্তু…

রেহান – কোনো কিন্তু না ফ্রেশ হয়ে ওজু করে আসো নামাজ পড়বো একসাথে।

কুহু মুচকি হেসে লাগেজ থেকে একটা তাঁতের শাড়ি বের করে ফ্রেশ হয়ে আসে। রেহানও ফ্রেশ হয়ে আসলে দু’জন এক সাথে নামাজ পড়ে নেয়।

নামাজ পড়া শেষ হতেই রেহান কুহুর হাত ধরে বেলকনিতে নিয়ে যায়।

রেহান – কফি খাবে?

কুহু – উহুম…

রেহান – শেষে কে জিতলো শুনি?

কুহু – মানে?

রেহান – বলেছিলে তো আমাকে ভালোবাসো না ইভেন বাসবে ও না এখন? (মুচকি হেসে)

কুহু – হুহহহ বাসিও না।

রেহান – তোমাকে বাসতে হবেও না। — বলেই কুহুকে জড়িয়ে ধরে।

রেহান – are u ready for…..(কুহুর কানে ফিসফিসিয়ে)

কুহু রেহানের কথায় মুচকি হাসে। রেহান কুহুকে কোলে নিয়ে রুমে চলে যায়।
কুহু রেহানের টিশার্ট খামচে ধরে আছে।
কুহুর লজ্জামাখা মুখটা যেনো রেহানকে ঘোর লাগিয়ে দিচ্ছে!

সমাপ্ত

প্রেমপিপাসা পর্ব – ১৪

0

#প্রেমপিপাসা❤
#পর্ব – ১৪
#writer_শিফা_আফরিন_মিম
.
.
?
রেহানের পরিবারের সবাই চলে যায়। রেহান এখনো অনেকটা রেগে আছে। কুহুর বাবা মা কিছুই বুঝতে পারছে না হটাৎ রেহানের কী হলো?

কুহুর বাবা – কিছু কি হয়েছে বাবা?

রেহান – না আংকেল।

জেরিনের মা – জেরিন কী হয়েছে?

রেহান – সেটাই বলতে চাই আমি সবাইকে।

জেরিনের বাবা মাও বেশ অবাক হয়ে যায় রেহানের কথা শুনে।

জেরিনের মা – মানে?

রেহান – আপনি নিশ্চয় জেরিনের মা।

জেরিনের মা – হ্যা।

রেহান – আপনার মেয়ে এতোটাই ভালো যে ও আমার আর কুহুর মাঝখানে ঝামেলা বাড়াতে চায়। ইভেন আজকেও ও কুহুর নামে অনেক মিথ্যে বলতে চাইছিলো।

জেরিনের বাবা – তুমি কী সব বলছো? কিছুই তো বুঝতে পারছি না।

তারপর রেহান জেরিনের সব কুকর্ম ওর বাবা মাকে বলে। কুহুর বাবা মাও সব শুনে অবাক হয়ে যায়।

জেরিনের মা জেরিনের কাছে এসে খুব জোরে ওর গালে থাপ্পড় মারে…

জেরিনের মা – তোকে আমরা এই শিক্ষা দিয়েছিলাম? কুহু তোকে নিজের বোন মনে করতো। কতোটা ভালোবাসতো আর তুই মেয়েটার পিছন এই ভাবে লেগেছিস?

জেরিন কিছু বলছে না চুপ করে চোখের পানি ফেলছে।

জেরিনের বাবা – আমি চাইনা তোর জন্য মেয়েটার নতুন জীবনের উপর কোনো রকম অশুভ ছায়া আসুক। কালই আমরা চলে যাবো তোকে সাথে নিয়ে।

কুহু – ফুপা এইসব কি বলছো? ও ছোট একটা ভুল না হয় করে ফেলেছে তাই বলে চলে যেতে হবে?

জেরিনের বাবা – না মা তুই জানিস না ও কতোটা হিংস্র। ও ছোট থেকেই যা চেয়েছে তাই দিতে হয়েছে৷ আমি জানি ও এখানে থাকলে তোর অনেক খতি করে দিবে। ওকে আর রেখে যেতে পারবো না।

কুহু অনেক বুঝিয়েও জেরিনের বাবা মাকে রাজি করাতে পারেনি।
জেরিন ও নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।

রেহান – আমি তাহলে আসি। আর আপনারা আমায় ক্ষমা করে দিবেন প্লিজ। আমার মনে হলো এই বিষয় টা জানানো উচিত তাই…

জেরিনের বাবা – তুমি একদম ঠিক করেছো। না হলে ওর এতো বড় অন্যায় টাকে প্রশ্রয় দেয়া হতো।
আর হ্যা… কুহুকে ভুল বুঝো না মেয়েটা সত্যি ভালো। ও কারো খারাপ চায়নি কোনো দিন।
রেহান কুহুর দিকে হাসিমুখে এক পলক তাকিয়ে চলে যায়।

পরের দিন…

সকালে উঠে সবাই ব্রেকফাস্ট করে নেয়। জেরিনকেও কুহু জোর করে নিয়ে আসে।

জেরিনের বাবা – জেরিন সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছো তো?

জেরিন – হ্যা বাবা।

কুহুর বাবা – কিন্তু এখন তোমরা যাবে কিভাবে?

জেরিনের বাবা – যাবো না। এখন জেরিনের দাদুর বাড়িতে থাকবো। ফ্লাইটের টিকিট পেয়ে পরে চলে যাবো।

কুহুর মা – আমাদের বাড়ি থাকলে কি এমন হতো?

জেরিনের বাবা – না। কুহুর আর কোনো ক্ষতি হোক আমি চাইনা।

কিছুক্ষন পরই জেরিনের বাবা মা আর জেরিন চলে যায়।
কুহুর অনেক খারাপ লাগছে তার জন্যই আজ জেরিন এতো কথা শুনলো। নিজের উপরই অনেক রাগ হচ্ছে কুহুর।

২ দিন কেটে যায়। কুহু ভার্সিটিতে আসে না। রেহান অবশ্য নতুন ফোন ম্যানেজ করে কুহুকে অনেকবার কল করে। ফোনেই কথা হয় দু’জনের। পরের দিন কুহু ভার্সিটিতে যায়।
সানিয়া আর রিহাকে দেখে ওর মনটাও অনেক ভালো হয়ে যায়।

সানিয়া – ট্রিট কবে দিবি?

কুহু – কিসের ট্রিট?

সানিয়া – ও মা তোর বিয়ের!

কুহু – আগে তো বিয়েটা হোক।

রিহা – সে তো হবেই। দেখেছিস কি কাহিনী যাকে কিনা সহ্যই করতে পারতি না এখন তার সাথেই বিয়ে!

ছুটির পর কুহু সানিয়া আর একসাথে আসছিলো হটাৎ একটা ছেলে কুহুর সামনে এসে দাড়ায়।

ছেলেটা – হাই…

কুহু – কিছু বলবেন?

ছেলেটা – না তেমন কিছুই না। আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো আরকি।

কুহু – বলুন

ছেলেটা – আসলে উনাদের সামনে…..

সানিয়া – আচ্ছা আমরা সামনে যাই তোরা কথা বল।

সানিয়া আর রিহা চলে গেলে ছেলেটা বলে…

— আপনার ঐ ফ্রেন্ড এর নামটা জানতে পারি?

কুহু – কোন ফ্রেন্ড? (ভ্রু কুঁচকে)

ছেলেটা – ঐ যে আপনার সাথে যে ছিলো পিংক কালার ড্রেস।

কুহু – রিহা?

ছেলেটা – মেবি। ও কি রিলেশন করে?

কুহু – কেনো? আপনা…..

বাকিটা বলার আগেই কুহুর মুখ বন্ধ হয়ে যায়। কারন সামনে তাকিয়ে দেখে রেহান ৫০০ডিগ্রি রেগে আছে।

কুহু আর কথা না বলে এক দৌড়ে সেখান থেকে চলে আসে। আর ছেলেটা ডাকতেই থাকে…

কুহু রেহানের কাছে এসে বলে…

কুহু – আসলে ও রিহার বিষয়ে….

রেহান – জাস্ট সাট আপ.. (চেচিয়ে)

কুহু রেহানের ধমক শুনে চুপ করে যায়।

রেহান – তোমার কাছ থেকে আমি কিছু জানতে চেয়েছি?
যা দেখার তা তো আমি নিজেই দেখতে পেয়েছি।

কুহু – আ..আমি ব বাড়ি যাবো।

রেহান – তো যাও না। আটকে রাখলো কে?

কুহু – আমি একা যাবো?

রেহান – তোমার জন্য কি উড়োজাহাজ নিয়ে আসবো?

কুহু মাথা নাড়িয়ে না করে।

রেহান – যাও।

কুহু রেহানের কথা শুনে ভয়ে ভয়ে একাই চলে আসতে থাকে।

রেহান কুহুর পিছন থেকে ডাক দেয়…

রেহান – কুহু….দাঁড়াও।

কুহু দাড়িয়ে যায়।

রেহান কুহুর কাছে এসে কুহুর গলা থেকে উড়না টা নিয়ে নেয়। কুহু এবার বেশ ভয় পেয়ে যায়।
রেহান অচমকা উড়না টা কুহুর গলায় প্যাচ দিয়ে ধরে…

রেহান – উড়না ঠিক করে রাখতে না পারলে গলায় প্যাচিয়ে মরে যেও। স্টুপিড!

কুহু মাথা নিচু করে উড়না টা ভালো করে পড়ে নেয়।

রেহান – চলো…

কুহু মুচকি হেসে রেহানের দিকে তাকায়।

তারপর রেহান কুহুকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে নিজের বাড়ি চলে আসে।

৪ দিন পর….

রেহান আর কুহুর আজ গায়ে হলুদ। দুই পরিবারের ইচ্ছায় ওদের একি বাড়িতে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হচ্ছে।

রেহান স্টেজে বসে থাকতে থাকতে ক্লান্ত! এদিকে মহারানীর আসার নাম গন্ধ ও নেই। তাকে দেখার জন্য যে বেচারা পাগল হয়ে আছে।

পার্লারে গেলে কি মেয়েদের আসতে মন চায় না নাকি!
রেহানের এমন অবস্থায় ওর বন্ধুরাও জ্বালিয়ে মারছে।

প্রণয় – কিরে দোস্ত এতো বার গেইটের দিক তাকিয়ে কি দেখছিস?

রেহান – কই কিছুনা তো.

প্রণয় – বুঝিরে বুঝি। বার বার তাকিয়ে লাভ নেই রে ভাই মাইয়া মানুষ সাজতে সাজতেই দিন পার করে দেয়। তার উপর যদি নিজের গায়ে হলুদ হয় তাহলে তো কথায় নেই।

রেহান – সেটাই তো! এতো সাজার কি আছে শুনি ও তো এমনি তেই সুন্দরী!

রাকিব – আহারে বেচারা!

অনেকক্ষণ পর রেহান হটাৎ গেইটের দিক তাকাতেই চোখ আটকে যায়। হা হয়ে দেখছে সে!

হলুদ জামদানি শাড়ি সাথে মেচিং করে ফুলের জুয়েলারি!
এতো কোনো হলুদ পরি মনে হচ্ছে!

রেহান একদৃষ্টিতে কুহুর দিকে তাকিয়ে আছে!
কুহু ধীরে ধীরে রেহানের কাছে আসতেই মুচকি হাসে রেহান।
কুহু ও অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে। রেহান কেও কোনো রাজপুত্রর থেকে কম দেখাচ্ছে না তার উপর আবার সেই ক্রাশ খাওয়ার মতো হাসি!

রেহান আর কুহুর একসাথে অনেক ছবি তুলে।

ওদের হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে অনেক রাত হয়ে যায়।
কুহু বেচারি এতো সাজগোজ নিয়ে বেশ ক্লান্ত।
রুমে এসেই ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ে।

রেহান ও শুয়ে পড়ে। কিন্তু তার চোখে ঘুম নেই। সে তার হলুদ পরি কে নিয়ে ভাবতেই ব্যাস্ত!

পরের দিন সকালে…

কুহুর দু’চোখে এখনো ঘুম। এতো রাতে ঘুমিয়েও সকাল সকাল উঠতে হয়েছে।

কুহুর মা – কুহু….

কুহু – হ্যা মা..

কুহুর মা – জেরিন আর তোর ফুপি ফুপা আসছে।

কুহু – সত্যি! (এক লাফে উঠে বসে)

কুহুর মা – হ্যা। আসতে চাইছিলো না। কতো বুঝিয়ে রাজি করেছি আল্লাহ!

কুহু – অনেক ভালো করেছো মা। জেরিন কে ছাড়া আমারও খারাপ লাগতো!

কুহুর মা – হ্যা জানি তো! এই জন্যই তো বললাম। আচ্ছা তুই ফ্রেশ হয়ে নে। কিছুক্ষণ পরই পার্লারের মেয়েরা চলে আসবে।

কুহু – মা আজও!!

কুহুর মা – শুনো মেয়ের কথা! বিয়েতে সাজবি না?

কুহু – আমার তো অসহ্য লাগে এতো সাজ!

কুহুর মা – একদিন কিছু হবে না। তুই ফ্রেশ হয়ে নে আমি গেলাম আমার কাজ আছে অনেক।

কুহুর মা চলে যায় কুহু উঠে ফ্রেশ হয়ে খাটে বসে ফোনটা হাতে নেয়।

ফোনে রেহানের ম্যাসেজ এসেছে দেখে ম্যাসেজ টা ওপেন করে…

” গুড মর্নিং বউ ”

ম্যাসেজ টা দেখেই কুহুর মুখে হাসি ফুটে উঠে।

চলবে…

প্রেমপিপাসা পর্ব – ১৩

0

#প্রেমপিপাসা❤
#পর্ব – ১৩
#writer_শিফা_আফরিন_মিম
.
.
?
রেহানের বাবাও মেয়ের মুখটা দেখে অনেক খুশিই হয়। কারন মেয়ে দেখতে সত্যিই খুব মিষ্টি।

রেহানের বাবা – মনে হয় খুব কেঁদেছে মামুনি টা।

রেহান অবাক হয়ে যায়। দেখতে আসলে কোনো মেয়ে কাঁদে নাকি? অবশ্য যদি বয়ফ্রেন্ড থাকে তাহলে তো কাঁদবেই। যেমনটা আমার অনুভব হচ্ছে। আমি যেমন আমার কুহুর জন্য কষ্ট পাচ্ছি এই মেয়েটাও বোধহয় তার বয়ফ্রেন্ড এর জন্যই কেঁদেছে। (মনে মনে)
না চাইতেও রেহান মেয়েটার দিকে তাকায়।
সাথে সাথেই রেহান দাড়িয়ে যায়….

রেহান – কুহুওওও……..! (খানিকটা চিৎকার করে)

রেহানের মুখে নিজের নামটা শুনতে পেয়ে কুহুও চমকে যায়। সামনে তাকিয়ে রেহান কে দেখতে পেয়ে সেও স্তব্ধ হয়ে যায়।

দু’জন দু’জনার দিকে তাকিয়ে আছে। সবার হাসির শব্দে তাদের ধ্যান ভাঙ্গে।

রেহানের বাবা – কী রেহান? কেমন দিলাম সারপ্রাইজ টা? বলেছিলাম না মেয়ে দেখতে অনেক সুন্দর! তোমার পছন্দ হয়েছে তো?

রেহান একবার তার মায়ের মুখের দিকে তাকায় আরেকবার তার বাবার দিকে। দু’জনের মুখেই হাসি। রেহানের কাকা আর কাকিমাও হাসছে। তার মানে সবাই প্লান করে?
কিন্তু ওরা জানলো কিভাবে কুহুর কথা!

রেহানের মা – আরে এবার তো বসবি নাকি দাড়িয়েই থাকবি।

রেহান তারাতারি করে বসে যায়। কুহুর দিকে তাকাতেই দেখে মেয়েটার চোখমুখ ফুলে গেছে। মনে হয় অনেক কেঁদেছে।

কুহুর মা – দেখেন আপা আপনাদের কথায় আমিও আমার মেয়েটাকে কিছুই জানাই নি। মেয়েটা আমার কতোই না কষ্ট পেয়েছে। (হেসে)

রেহানের মা – হ্যা। তা তো দেখতেই পারছি৷ আর উনি (রেহানকে উদ্দেশ্য করে) সারা রাত বোধহয় ঘুমাতে পারেনি।

রেহানের বাবা – আচ্ছা এবার তো আসল কথায় আসতে পারি।

কুহুর বাবা – হুম নিশ্চয়। ওদের সারপ্রাইজ দেয়া শেষ এবার আমাদের কাজ টা করে ফেলি।

রেহানের বাবা – আমি চাই সামনের সপ্তাহেই বিয়েটা হোক যদি আপনাদের কোনো অসুবিধা না থাকে তো।

কুহুর বাবা – না না আমাদের কোনো সমস্যাই নেই।

হটাৎ রেহান বলে উঠে….

রেহান – আপনারা যদি বলেন তো আমি কি কুহুর সাথে একটু কথা বলতে পারি?

কুহুর মা – শুনো ছেলের কথা আজ বাদে কাল যাকে বউ বানাবে তার সাথে কথা বলতে পারমিশন চাইছে!

কুহুর মার কথায় সবাই হেসে দেয়। রেহান কিছুটা লজ্জা পায়।

কুহুর মা – কুহু রেহান কে নিয়ে যা।

কুহু রেহান কে নিয়ে নিজের রুমে যায়।

রুমে আসতেই রেহান ধুম করে দরজা টা লাগিয়ে দেয়।

রেহান – কান্না করছিলা কেনো? (রেগে)

কুহু অবাক হয়ে রেহানের দিকে তাকায়…

রেহান – কি হলো কথা বলছো না যে?

কুহু – আপনি ফোন বন্ধ করে রেখেছেন এর মধ্যে মা বাবা কাল রাতে আমার রুমে এসে বলছে কাল বাড়িতে মেহমান আসবে। আমি যেনো রেডি হয়ে থাকি। আমি বুঝতে পারছিলাম কি হতে চলেছে। আপনাকে হাজার বার ফোন করেও পাইনি। অনেক ভয় পেয়ে গেছিলাম আমি।

রেহান – ( আমার অবস্থাই দেখি… মনে মনে।)

রেহান কে চুপ থাকতে দেখে কুহু বলে উঠে….

বিয়ে করবেন বলে কাল থেকে ফোন বন্ধ রেখেছেন তাইনা। আজ যদি আমার জায়গায় অন্য কেউ হতো তাহলে তো ঠিকই রাজি হয়ে যেতেন।

রেহান – আমি ইচ্ছে করে ফোন বন্ধ রাখি নি কুহু। কাল বাবা মা বিয়ের কথা বলায় রেগে ফোন আছাড় দিতেই ভেঙে যায়। আর তোমার সাথে কথা বলতে পারিনি। আর তুমি কি হ্যা? তুমিও তো অচেনা ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেছো।

কুহু – আমি কি করবো? বাবাকে অনেক ভয় পাই তাই। (অসহায় ভাবে) আচ্ছা আপনি তো আমাদের বাসা চিনেন তাহলে? আপনি কি বুঝতে পারেন নি মেয়েটা আমিই?

রেহান – আরে বাপ… এটাই তো আমার ভুল আমি তো নববধূর মতো মাথা নিচু করে আনমনা হয়ে হেটেই চলেছি। একবারও চোখ তুলে তাকিয়ে দেখিনি। যদি দেখতাম তাহলে তো খুশিতে নেচে উঠতাম।

কুহু হেসে দেয়।

রেহান – আচ্ছা তোমার ঐ ভিলেন বোন টা কোথায়?

কুহু – জেরিন?

রেহান – ও ছাড়া আর কে ভিলেন হতে পারে বলো?

কুহু – আরেহহ ও তো ফুপা ফুপির সাথে মার্কেটে গেছে। চলেও আসছে বোধহয়।

রেহান – এই জন্যই তো দেখতে পারছি না। যাই বলো এবার আমি নিশ্চিত হলাম। এমনিই তোমার বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে ফেলেছিলো না জানি কোন দিন আবার কাউকে জামাই বানিয়ে ফেলে! তাই আর কোনো রিস্ক নিবো না।

কুহু হেসে দেয়। অনেক্ষন কথা বলার পর কুহুর দরজায় কেউ নক করে। কুহু গিয়ে দরজা খুলতেই দেখে জেরিন।

জেরিন – আপিইইই আমার দুলাভাই এর বাসার লোক এসে গেছে! এই তুমি রাজি তো?

কুহু – হুম। ঘরে আয়। তোর দুলাভাই কে দেখবি না?

জেরিন এর ভেতর তো লাড্ডু ফুটছে। যাক আপি রাজি হয়ে গেছে এখন আমার আর রেহানের মাঝে কেউ নেই। ভাবতে ভাবতে জেরিন রুমে আসে। এসেই ১০০০ বোল্ডের শক খায়। আচমকা জেরিনের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে…

রেহানননন…!

জেরিন হা হয়ে আছে। রেহান মুচকি হেসে জবাব দেয়।

রেহান – ইয়েস শালিকা আমি! কেনো অন্য কাউকে আশা করছিলেন বুঝি?

জেরিন থ মেরে যায়।

জেরিন – আপি আমি কি ভাইয়ার সাথে কথা বলতে পারি?

কুহু – হ্যা বল। — বলেই রুম থেকে চলে যায়।
কুহু চলে যেতেই জেরিন বলে উঠে…

জেরিন – রেহান আপনি কি পাগল হয়ে গেলেন? আপনি তো জানেন আপির বফ আছে। তিশান ভাইয়ার সাথে আপির অনেক ডিপ রিলেশন। আপনি সব জেনে শুনে এমন ভুল টা করছেন কি……

বাকিটা বলার আগেই রেহান অনেক জোরে জেরিনের গালে থাপ্পড় মারে।

রেহান – চুপ বেয়াদব মেয়ে! তোর ভাগ্য ভালো তুই মেয়ে। যদি ছেলে হতি তোর শরীরের কোনো হাড় ঠিক থাকতো না সবকটি ভেঙে দিতাম বুঝেছিস? তোর সাহস কম না আমার কুহুর সম্পর্কে এতো খারাপ কথা বলছিস। তুই কি মনে করেছিলি আমি কিছুই জানতে পারবো না তাই না?

জেরিন গালে হাত দিতে ছলছল ছোখে রেহানের দিকে তাকিয়ে আছে।

জেরিন – আপনি তো নিজেই তিশান ভাইয়ার সাথে….

রেহান – চুপপপ। তিশান না তোর সাজানো তিশান! বুঝে গেছি আমি।

রেহানের কথা শুনে জেরিন ভয়ে চুপসে যায়। রেহান তার মানে সব কিছু জেনে গেলো!

রেহান – চলো আমার সাথে — বলেই জেরিনের হাত টা ধরে টেনে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। কুহু ওদের দেখে ভয় পেয়ে যায়। রেহান এতো টা রেগে আছে দেখে কুহুরও ভয় করছে। কুহু ভয়ে ভয়ে ওদের কাছে যেতেই রেহান হাতে ইশারা করে কুহুকে থামতে বলে। কুহু থেমে যায়।

রেহান আবার জেরিনকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে।
জেরিনের বাবা, মা কুহুর বাবা মা আর রেহানের পরিবারের সবাই বসে কথা বলছে। রেহান জেরিনের হাত টা ছেড়ে দেয়।

রেহানের বাবা – রেহান চলো আমরা এবার বাসায় যাই।

রেহান – বাবা তোমরা যাও। আমার উনাদের সাথে কিছু কথা আছে।

চলবে…

প্রেমপিপাসা পর্ব – ১২

0

#প্রেমপিপাসা❤
#পর্ব – ১২
#writer_শিফা_আফরিন_মিম
.
.
?
রেহান – কী কথা বাবা?

রেহানের বাবা – আমরা তোমার বিয়ের কথা ভাবছিলাম। দেখতেই পারছো আমার শরীর টা বেশি ভালো যাচ্ছে না। তাই দেরি করতে চাইছি না।

রেহান – হোয়াট? বিয়ে?

রেহানের বাবা – হ্যা ঠিকই শুনেছো।

রেহান – কিন্তু বাবা আমি এখন বিয়ে করতে পারবো না। আর আমার পড়াশুনা ও শেষ হয়নি।

রেহানের বাবা – এটা কোনো সমস্যা না। কিছুদিন পর আমি আর অফিস যেতে পারবো না তোমাকেই সব সামলাতে হবে। আর হ্যা আমি যা বলেছি তাই হবে আমার কথার উপর কোনো কথা পছন্দ করি না।

রেহান কিছু না বলে উঠে চলে যায়।

রেহানের মা – দিলে তো ছেলেটাকে রাগিয়ে। কিছু খেতেও পারলো না।

রেহানের বাবা – যাই করোক। আমি রাতে হ্যা কথাটা শুনতে চাই।

রেহান ভার্সিটিতে চলে আসে। এসেই এদিক ওদিক খুঁজে কিন্তু কুহুকে কোথাও পায়নি।

রেহান – বোধহয় ক্লাসে চলে গেছে৷ ধুরর কতোটা দেরি করে ফেললাম আজ।

রেহান ও ক্লাসে চলে যায়।

ছুটির সময় রেহান ক্যাম্পাসে দাড়িয়ে আছে।
হটাৎ কুহুকে দেখতেই মুখে হাসি ফুটে উঠে। কুহু কাছে আসতেই বলে…

রেহান – একটু ওয়েট ও করতে পারলে না?

কুহু – একটু? (ভ্রু কুঁচকে)

রেহান – তো? (মুখ গোমড়া করে)

কুহু – আপনার জন্য ১ ঘন্টা ওয়েট করেছি বুঝলেন?

রেহান – তার মানে তুমি আজ তারাতারি চলে এসেছো?

কুহু – জ্বী।

রেহান – শীটট আমিই আজ দেরি করলাম?
আগে আসলে তো কতো রোমান্স করতে পারতাম।

কুহু – কিহহহ?

রেহান – কিছুনা চলো বাসায় পৌঁছে দিই।

কুহু রেহানের কথা শুনে কিছুটা আন্দাজ করতে পারছে রেহানের মন ভালো না।
কুহু কিছু জিগ্যেস করতে গিয়েও করে না। রেহান বাইকে বসে কুহুকেও ইশারা করে বসতে। কুহু চুপচাপ বসে পড়ে।

রেহান কুহুকে বাসার সামনে পৌঁছে দিয়ে নিজেও নামে। কুহু ভ্রু কুঁচকে রেহানের দিকে তাকিয়ে আছে। উনিও নামছেন কেনো? আমার বাসায় যাবেন নাকি?

কুহুকে চমকে দিয়ে রেহান কুহুর কপালে কিস করে আবার বাইকে এসে বসে পড়ে। কুহু রেহানের দিকে তাকাতেই রেহান মুচকি হেসে চলে আসে।

বাসায় এসেই রেহান নিজের রুমে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে এসে খাটে বসে থাকে। রেহানের ভিতর ভিতর ওর বাবার বলা কথাটার জন্য খুব ভয় হচ্ছে। উনি যা বলে তাই করেন।
কুহুকে হারাতে হবে না তো!
হাজারো চিন্তা রেহানের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।

রেহানের মার ডাকে ধ্যান ভাঙ্গে।

রেহানের মা – খেতে যাবি না?

রেহান – না মা আমার ক্ষিদে নেয়।

রেহানের মা – সকালেও তো খাস নি। এখনও বলছিস ক্ষিদে নেয়।

রেহান – হ্যা। তোমরা খেয়ে নাও।

রেহানের মা – মন খারাপ করিস না তোর বাবা তো তোর ভালোর জন্যই বলছে। কোনো ক্ষতি তো করছে না তোর।

রেহান – মা তুমি যাও খেয়ে নাও। আমি ঘুমাবো কিছুক্ষণ।

রেহানের মা বেশ বুঝতে পারছে রেহান কিছুক্ষণ একা থাকতে চাইছে। তাই কথা না বারিয়ে উনি চলে আসেন।

এদিকে কুহু বিকেলে ঘুম থেকে উঠে ছাদে আসে। অনেক খন নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে কিন্তু রেহান কে দেখতে পায় না। তার মানে রেহান আজ আসেনি?

কুহু মন খারাপ করে রুমে চলে আসে। ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে রেহান ফোন করেছে কি না। কিন্তু না!
রেহান ফোন ও দেয় নি। কুহুর মন টা আরও খারাপ হয়ে যায়। কুহুর এবার কাঁদতে ইচ্ছে করছে। সারা দিন চলে গেলো একটা ফোনও দেয়নি দেখা ও করে নি।
অথচ ভার্সিটি ছুটির পরও রেহান কুহুকে বাসায় পৌঁছে দেয় কিন্তু বেচারির মনে হচ্ছে সারা দিন ধরেই রেহানের সাথো যোগাযোগ নেই।

এভাবেই সন্ধ্যা হয়ে যায় তাও রেহানের কোনো খবর নেই।
রাতে কুহু না খেয়েই শুয়ে পড়ে। কুহুর মা অনেক বার ডাকার পরও খেতে যায়নি।

অনেকক্ষন রেহানের ফোনের জন্য ওয়েট করে রেহানের ফোন না পেয়ে কুহু নিজেই ফোন দেয় কিন্তু রেহানের ফোন বন্ধ।
এভাবে প্রায় ২ ঘন্টা যাবৎ কুহু রেহানের ফোনে ফোন দিচ্ছে কিন্তু ফেন বন্ধই।

কুহু এবার কেঁদে দেয়। অনেক অসহায় লাগছে ওর। এখন তো রেহানের বাসায় যাওয়া ও সম্ভব না। রেহানের বাসাও তো চিনে না। কাঁদতে কাঁদতেই বেচারি ঘুমিয়ে পড়ে।

এদিকে রেহানের ফোন বন্ধ থাকারও কারন আছে।
রাতে রেহানের মা আর বাবা রেহানের রুমে আসে।

রেহানের বাবা – রেহান শোনো আমার একজন চেনা ক্লাইন্ট আছে উনার মেয়ের সাথে তোমার বিয়েটা ঠিক করতে চাই। বলতে পারো আমার বন্ধু। আমি ওর সাথে কথা বলেছি। কাল যাবো ওদের বাসায়। তুমি রেডি থেকো৷ আশা করি মেয়ে তোমার অপছন্দ হবে না।

রেহানের বাবা কথা গুলো বলেই রুম থেকে বেরিয়ে যায়। রেহান অসহায় ভাবে রেহানের মার দিকে তাকায়।

রেহান – মা এই সব কী?

রেহানের মা – দেখ তোর বাবা বুঝেই করছে। আর মেয়ে তোর পছন্দ হবেই। তুই গিয়ে দেখ।

রেহান – তাই বলে? মা আজই তোমরা আমাকে জানালে আর কালই মেয়ে দেখতে চলে যাবো? আমাকে কি মনে হই? কয়েকটা দিন সময় দেয়া যেতো না?

রেহানের মা – রেহান তোর বাবা শুনলে দুঃখ পাবে। তুই কোনো চিন্তা করিস না মেয়ে তোর পছন্দ হবেই দেখিস।

রেহানের মা ও চলে যায় রেহান ধুপ করে খাটে বসে থাকে। রাগে রেহানের সারা শরীর কাঁপছে। হাতের কাছের ফুলদানি টা আাছাড় মেরে ফেলে দেয়। আরেক হাতে মোবাইল ছিলো ওটাও আছাড় মারে। মোবাইল টাও কয়েকটা টুকরো হয়ে ভেঙে যায়।
রেহানের এবার আরও রাগ হচ্ছে এতো রাতে মোবাইল ম্যানেজ করবে কি ভাবে। কুহুর সাথে তো কথাও বলা হয়নি। রেহানের চোখে ঘুম আসে না। সারা রাত ছটফট করে কাটায়।

পরের দিন….

রেহান আজ ভার্সিটিতে যেতে পারবে না। ফোন টাও নেই যে কুহুকে জানিয়ে দিবে। মেয়েটা নিশ্চয় খুঁজবে!
অন্য কাউকে কুহুর জায়গা টা দিতে হবে ভাবতেই রেহানের বুকটায় চিনচিনে ব্যাথা অনুভব হচ্ছে। আজ রেহানের অনেক বেশিই কষ্ট হচ্ছে। কাউকে ভালোবেসে তার জায়গা টা অন্য কাউকে দেয়া সত্যিই অনেক যন্ত্রনাদায়ক!
কুহু নিশ্চয় আমায় ভুল বুঝবে! ও হয়তো ভাববে আমি ওর সাথে প্রতারণা করেছি! কিন্তু ও তো জানেনা আমি নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি ওকে! কোনো দিনও পারবো না ভুলতে। যা করতে হচ্ছে সবকিছুই বাবা মার ইচ্ছে তে। কুহুকে বোধহয় হারিয়ে ফেললাম আমি! ভাবতে ভাবতেই রেহানের গাল বেয়ে দু’ফোটা অশ্রু ঝড়ে পরে।

আত্নহত্যা যে মহাপাপ! না হলে বোধহয় কাল রাতেই রেহান সব কষ্ট থেকে নিজেকে মুক্তি দিয়ে দিতো।

দুপুরে….

রেহানের মা – রেহান… কই তুই?

রেহান বেলকনিতে দাড়িয়ে ছিলো। মায়ের ডাকটা আদৌ তার কানে পৌঁছালো কিনা কে জানে! সে আগের মতোই একদৃষ্টিতে আকাশপানে তাকিয়ে আছে।

রেহানের মা বুঝতে পারে ছেলের মন মরা হয়ে থাকার কারন। বেলকনিতে গিয়ে রেহানের কাঁধে হাত রাখতেই রেহান পেছনে ফিরে তাকায়।

রেহান – মা তুমি? কিছু বলবে?

রেহানের মা – রেডি হয়ে নে।

রেহান তার মাকে অনেক কিছু বলতে চাইছে বুঝাতে চাইছে কিন্তু মুখ ফুটে বলা হয়নি।
রেহানের মা চলে গেলে রেহান টাওয়েল টা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে। অনেকক্ষন পর রেহান রেডি হয়ে নিচে আসে।
রেহান নিচে এসে দেখে রেহানের বড় কাকা আর কাকিমা ও এসেছে।

রেহান কে দেখা মাত্রই ওর কাকিমা বলে উঠে…

— একি রেহান তোর মুখটা এমন লাগছে কেনো?

রেহান – কিছুনা কাকিমা। আমি ঠিক আছি।

— দেখে তো মনে হচ্ছে না তুই ঠিক আছিস!

রেহান – ওসব কিছুনা বসো তোমরা।

— হুম বুঝলাম মন খারাপ নিশ্চয়! টেনশন করিস না ভাইয়ের (রেহানের বাবার) কাছে শুনলাম মেয়েটা দেখতে নাকি অনেক মিষ্টি। তোর ও পছন্দ হবে দেখে নিস।

রেহান অনিচ্ছা স্বত্তেও শুকনো হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে আসে।

সবাই মেয়ের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। রেহানের ইচ্ছে করছিলো সেখান থেকে পালিয়ে চলে আসতে কিন্তু উপায় নেই। তার বাবার রাগের কাছে তাকে হার মানতেই হবে।
বেল বাজাতেই একজন লোক এসে দরজা খুলে দেয় রেহানের পরিবারের লোকদের দেখেই হাসি মুখে ভেতরে আসতে বলে। কিন্তু রেহানের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। সে কখন থেকেই মাথা নিচু করে আনমনা হয়ে আছে। সিড়ি বেয়ে উঠার সময় কয়েকবার হোচট ও খেয়েছে। তা দেখে রেহানের বাবা রেগে গিয়ে বলে…

— মেয়েদের মতো মাথা নিচু করে হাটা ধরলে কেনো? তুমি কি নতুন বউ? আর হাটাচলার সময় মন কোথায় থাকে তোমার? এখনি তো পড়ে যেতে।

এতো কথা বলার পরও রেহানের বিন্দু মাত্র পরিবর্তন নেই। কোনো কিছুই দেখার বিন্দু মাত্র ইচ্ছে নেই তার।

রেহান একটা সোফায় বসে মাথা নিচু করে আছে। আর অপর পাশে রেহানের পরিবারের সবাই।

মেয়ের বাবা – ভাইজান পথে কোনো অসুবিধে হয়নি তো?

রেহানের বাবা – একদম না।

মেয়ের বাবা – রেহান… বাবা তোমার কি অসুবিধে হচ্ছে?

রেহান মুখ তুলে একবার লোকটার দিকে তাকায়।
তারপর মাথা নাড়িয়ে ” না ” বুঝায়।

রেহানের বাবা – আসলে ওর সকাল থেকে মাথা ধরে আছে তাই। আপনি ব্যাস্ত হবেন না। ও ঠিক আছে।

সবাই কথা বলছে শুধু রেহান আনমনা হয়ে তার কুহুকে নিয়েই ভেবে যাচ্ছে। হটাৎ করেই এমন একটা মূহুর্ত চলে আসবে সে ভাবতেও পারেনি।

কিছুক্ষণ পরই মেয়েকে নিয়ে এসে রেহানের পাশাপাশি বসায়। মেয়েকেও মাথা নিচু করে বসে থাকতে দেখে রেহানের কাকিমা বলে উঠে…

মেয়েও দেখি আমাদের ছেলের মতো লজ্জা পাচ্ছে!
রেহানের মা মেয়ের মুখটা একটু উঁচু করে দেখে বলে…

” মাশআল্লাহ ”

চলবে…