Sunday, July 6, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1876



LOVE part:07+8

0

#LOVE❤
part:07+8
Writer: Suvhan Årag(ছদ্মনাম)

এই দুদিন ধরে রিদিতার শরীর টা কেমন যাচ্ছে।মাথা ঘুরাচ্ছে।আর বমি তো আছেই।তবে এরপরে ও কষ্ট করে বেচারী অফিস করছে

-রিদি আজকে ছুটি নে।তোর শরীর আমার ভালো ঠেকছে না।কাল তোকে নিয়ে একবার চেকাপ করাতে যাব
-তাই ভাবছি।কিন্তু আজ নাকি বসের এনগেজমেন্ট।উনি কি ছুটি দেবে
-কেনো দেবে না শুনি।তুই যা গিয়ে ছুটি নিয়ে আয়
-হুম

রিদিতা আবেগের কেবিনে এর দিকে গেল

-নোভা কি হচ্ছে ছাড় বলছি
-আবেগ প্লিজ।একটু জরিয়ে এই তো ধরেছি তোমাকে।এমন করছো কেনো
-তুমি একটা অবিবাহিত মেয়ে হয়ে একটা পরপুরুষ কে এভাবে জরিয়ে ধরতে পারো না ।ছাড় বলছি
-ওহ আবেগ আমরা তো বিয়ে করছি নাকি।আজ তো আমাদের এনগেজমেন্ট।এতে কি হবে শুনি।আজকাল তো বিয়ে এর আগেই সবাই রুমডেট করে।আর তুমি,,,,
-নোভা।একদম চুপপ থাকবে।তোমার মানসিকতা এতো নোংরা জানা ছিল না
-আবেগ সরি প্লিজ রেগো না।আবেগ কিছু না হোক একটা লিপকিস তো করতেই পারো তুমি আমাকে
-কিহহহ
-ওহ আবেগ প্লিজ।আমি কিছু মনে করবো না।একবার তো আমাকে লিপকিস অন্তত করো।দেখবে তোমারি নেশা হয়ে যাবে আমার প্রতি

এই কথা শুনে আবেগের মাথা গরম হয়ে গেল

-নেশা শুধু আমার একজনের প্রতিইই বুঝেছো । সি ইজ মাই ড্রাগ মাই ড্রিংকস মাই অল
-যাস্ট শাট আপনাদের আবেগ।তুমি ঐ মেয়ে টার কথা একদম মুখে আনবে না বলে দিলাম।আজ তোমার ঠোট তো আমি দখল করবোই তোমাকে এটা বুজিয়ে দেব তোমার সব কিছু শুধু আমার বুঝেছো
-নোভাহহহ

নোভাকে আবেগ ছাড়াতেই পারছে না ।এই মেয়ে টা আবেগকে একদম আশটেপিশটে ধরেছে

নোভা আবেগের ঠোঁটের অনেক কাছে চলে যাচ্ছিল।কিন্তু কে জানত এই দৃশ্য রিদিতার চোখে পরবে

রিদিতা আবেগের কেবিনে র দরজা খোলা দেখে ভিতরে ঢুকে

-may I come……

বাকিটা আর বলতে পারেনি।তার আগে সামনের দৃশ্য দেখে রিদিতার পা থেকে যেন মাটি সরে যাচ্ছে

আবেগ নোভাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল।নোভা র তো রিদিতাকে দেখে মাথা গরম হয়ে গেল

-এই মেয়ে তুমি নক করে ঢুকতে পারো না
-আপনারা যদি দরজা না লাগিয়ে লীলা করতে যান তাহলে আমি কেন যে কেউ এটা দেখে ফেলবে (আবেগের দিকে তাকিয়ে)

আবেগের মাথা লজ্জা তে নিচু হয়ে গেল।আর যাই করুক রিদিতার জায়গায় অন্য কাউকে সে ভাবতেই পারে না

-এই মেয়ে তুমি কি বললে
-আমি আপনার সাথে কথা বলতে আসিনি ।আমি স্যার এর সাথে কথা বলতে এসেছি
-ইউউউ,,,,
-নোভা যাও এখান থেকে
-কিন্তু আবেগ
-যাওওও
-যাচ্ছি

নোভা চলে গেল

-আমিও দেখব এই পিরিত কতদিন থাকে।তোমাকে তো আমি আমার বেডে নেবোই তাও বিয়ে র আগে।তোমার স্পর্শ আমার চাই চাই–মনে মনে

আবেগ রিদিতার দিকে তাকিয়ে দেখে রিদিতা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।রিদিতা র চোখের পানি আবেগের চোখ এড়ালো না

-দেখো আমি,,,
-স্যার আমার একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা ছিল
-আমি ইচ্ছে করে নোভাকে,,,
-স্যার আমার কথা ছিল
-বলো(দীর্ঘ শ্বাস ফেলে)
-স্যার আমার আজকের দিনটি ছুটি চাই
-কেনো আমাদের এনগেজমেন্ট দেখতে পারবে না বলে
-না স্যার আমার শরীরটা খারাপ এ জন্য
-কি মনে করেছো অজুহাত দিয়ে তুমি বাঁচবে ।আজকে তোমাকে আমার এনগেজমেন্ট পার্টিতে থাকতেই হবে।কোন ছুটি দেব না তোমাকে।আমি তোমাকে তিলে তিলে কষ্ট দিতে চাই–মনে মনে
-স্যার
-কোন ছুটি দেব না।ইউ ক্যান গো
-স্যার প্লিজ
-আমার এনগেজমেন্ট রিংটা আমি তোমাকে দিয়ে নিয়ে আসবো।আর কোন কথা না
-স্যার,,,,
-ইউ ক্যান গোও
-ওকে স্যার

রিদি যেতে গিয়ে থেমে গেল

-কি হলো
-স্যার একটা কথা ছিল
-কি
-বৃষ্টির ফোটা পাতার ওপর পরলে না ওর বাহিরটাই ভেজে শিরাগুলো কিন্তু ভেতর থেকে ভেজে না।কিন্তু যখন শেষ আশা ডালটা কেউ ভেঙে দেয় তখন আর পাতাটা বাঁচে না
-,,,,,,,,রিদি আমি সত্যি,,,
-এমন না হয় যে কষ্ট টা আপনি আজ কাউকে দিচ্ছে ন সেই কষ্ট টাই আপনার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়ায় আর তার প্রায়শ্চিত্ত আপনাকে জীবনভোর করতে হয়

চোখের পানি মুছে রিদিতা চলে গেল।আবেগ থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কারণ রিদিতার বলা কথার অর্থ তার জানা

চলবে—

#LOVE❤

part:08
Writer: Suvhan Årag(ছদ্মনাম)

আবেগ থ দাঁড়িয়ে আছে

-এখন কেনো কষ্ট পাচ্ছ কেনো তুমি।তাহলে আমার কেমন লেগেছিল যখন তোমাকে আশফির সাথে ঐ ভাবে দেখেছিলাম ।আমি তো ইচ্ছে করে নোভাকে জরিয়ে ধরিনি ।কিন্তু তুমি তো আশফির সাথে,,,,,,ছিহ ।এখন এসব এ তোমার কষ্ট পাওয়ার কথা নয়।এগুলো সব তোমার নাটক।আশফি তোমাকে ছেড়ে ছে বলে এখন আমার সাথে নাটক করছো তুমি।কিন্তু আশফি যদি তোমাকে ভালোই বাসে তাহলে ফেলে গেল কেন,,,

সন্ধ্যা বেলায়

-আবেগ তুমি এই স্যুট টা পড়বে কিন্তু
-নোভা আমি নিজের ইচ্ছে মতো চলি।কারোর ইচ্ছে মতো নয়

হঠাত্ আবেগের মা রুমে এলো

-এটা কোন কথা নয় আবেগ।নোভা যেই স্যুট চুজ করেছে তুই সেটাই পরবি
-মা আমি,,,
-কোন কথা না আবেগ।যা বলছি তাই কর

আবেগের মা চলে গেল

-আবেগ এবার তুমি স্যুট টা পরে নাও
-অসহ্য
-অসহ্য বলো আর যা ইচ্ছে বলো এটা তোমাকে পরতে হবে
-নেও তোমার ফালতু বকবক শেষ হলে যাও এখান থেকে
-যাচ্ছি

নোভা বেরিয়ে গেল

-আজ আমি আর তুমি দুজনেই নীল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো।আর রিদি জলবে এটাই আমি দেখতে চাই–মনে মনে

আবেগ দরজা আটকে দিল

আবেগ স্যুট টা পরতে গিয়ে দেখে এটা ছোট সাইজের

-ওহ অসহ্য ।এটা তো ছোট সাইজের ।ভালোই হয়ে ছে আমার এমনিতেই এই ড্রেস টা পছন্দ না।যাই অন্য কিছু ট্রাই করি

আবেগ ওয়ারড্রব খুলে ড্রেস দেখছে।আবেগের চোখ আটকে গেল সাদা রঙের স্যুট টাই।এটা রিদিতার খুব পছন্দ এর ছিল।আবেগ ওটাই হাতে নিল

-ভালো হলো রিদি।তোমার পছন্দ এর ড্রেস টা পরে যখন আমি নোভা র সাথে থাকবো সেটাই হবে তোমার উপযুক্ত শাস্তি ।কিন্তু তোমাকে তো ভুলতে পারছিনা আমি। I love u I love u I love u রিদি

রিদি র মাথাটা আরো ঘুরছে

-তোকে এই অবস্থায় যেতে হবেনা
-না গেলে হবে না
-কিন্তু তোর যা অবস্থা কখন যে পরে যাস আল্লাহ্ জানে
-আরে না কিছু হবেনা।তুই রেডি হ।আমিও রেডি হব।একসাথে বের হব
-হুম

রিদি তা কি পরবে সেটা ভেবে পাচ্ছে না

-এই সাদা জামদানী শাড়ি টা পরি।আমার জীবনে তো কোন রঙ নেই এই সাদাই আমার জন্য মানানসই

রিদি তা শাড়ি টা সুন্দর ভাবে পড়লো।মাথায় সাদা হিজাব ।শাড়ি দিয়ে শরীর টা ভালোভাবে ঢেকেছে।চোখে একটু কাজল আর হাতে সিলভার কালারের দুটো মোটা চুড়ি

-বাহ।কি সৌভাগ্য আমার নিজের স্বামীর আকদে যাচ্ছি
-রিদি তুই তৈরী,,,,
-হ্যাঁ কি হলো থেমে গেলি কেন
-তোকে কি কিউট লাগছে।আর প্রেগনেন্ট হওয়ার পর থেকে তুই বেশি কিউট হয়ে গেছিস।আমি নিশ্চিত তোর মেয়ে হবে
-কেমনে বুঝলি
-আরে মেয়ে র মার নাকি চেহারা সুন্দর হয়ে যায় এই অবস্থায়
-বাজে কথা বাদ দে চল এখন
-চল

রিদিতা পৌছে গেছে

-শোন তুই এনজয় কর।আমি এই জায়গাটা তে দাড়াই
-আচ্ছা ।তোর শরীর খারাপ লাগলে বলিস আমাকে
-হুম

রিদিকে দেখে নোভা এগিয়ে এলো।নোভা একটা স্লিভলেস জরজেটের নীল রঙের গাউন পরেছে

-হাই।কি কেমন লাগছে নিজের স্বামীর আকদ দেখতে
-সরি আপনি ভুল করছেন।আমি এখানে আমার বসের আকদে এসেছি
-ওহ তাই বুজি।ডিভোর্স ঈ মেয়ে র আবার কথা।হুহহ
-আমার পেছনে না লেগে নিজের কাজে যান।যত্তসব
-ইউউউ,,,,থাক তোমাকে কিছু বলবো না।পরে সব দেখা যাবে

নোভা চলে গেল।রিদি অন্যমনস্ক হয়ে একদিকে তাকিয়ে আছে

হঠাত্ আবেগ নিচে নেমে এলো।আবেগকে দেখে নোভা র মাথা গরম হয়ে গেল।কারণ আবেগ আর রিদিতা দুজনেই সাদা পরেছে

-আবেগগগ ।এসব কি
-কোনসব
-তুমি আমার দেওয়া ড্রেস টা পরোনি কেন
-নিজে ড্রেস কিনেছো ।সাইজটা দেখেছো।আমার থেকে দুই সাইজ ছোট টা কিনেছো।তাই আমি আমার পছন্দ এর একটা ড্রেস পরেছি
-তোমার পছন্দ এর নাকি ঐ মেয়ে টার
-মানে
-মানে ঐ দেখো

নোভা রিদিতা র দিকে ইশারা করলো।আবেগের চোখ গেল অন্যমনস্ক রিদিতা র দিকে।রিদিতা কে দেখে আবেগের চোখ সরছে না।উল্টে বুকের বা পাশটা আরো চিন চিন করে উঠছে

-ভুলতে ও পারিনা।প্রতিবার তোমার মায়াতে আমাকে আটকে ফেলো তুমি।আজ আবার সেজেছো আমার পছন্দ এর সাজে।সেই আবার তোমার আমার মিল।এটা কি কি বলবো হার্ট কানেকশন নাকি কোইনসিডেন্ট–মনে মনে

রিদিতা এদিক ওদিক তাকাতে চোখ যায় আবেগের দিকে।দুজনেই দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে

-সেই স্যুট টা।আজকের দিনে তুমি আমার পছন্দ এর জিনিস টাই পরলে।আমার কষ্ট যে আরো বাড়িয়ে দিলে আবেগ।ভালো থেকো তুমি–মনে মনে

চলবে—–

LOVE part:05+6

0

LOVE❤
part:05+6
Writer: Suvhan Årag (ছদ্মনাম)

রিদিতা র কথা শুনে নোভার পুরো চোখ গরম হ য়ে গেল

-এই মেয়ে তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে এই কথা বলার।দু টাকার রাস্তার মেয়ে তার আবার এতো কথা
-ও হ্যালো মিস।যাস্ট মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গোয়েজ।কাকে রাস্তার মেয়ে বলছেন আপনি।রাস্তার মেয়ে তো আপনি নিজে।আর আমার চরিত্র নিয়ে কথা না বলে নিজের চরিএ দেখুন।এসেছেন তো শর্ট টপস জিন্স পরে যাতে আপনার মতো নোংরা মেয়েদের দিকে অন্তত কোন ছেলে তাকায়।ছেলেদের আকৃষ্ট করার জন্য তো এতো ঢঙ করছেন আবার আমাকে উল্টাপাল্টা কথা বলছেন।আর একবার যদি আমার নামে উল্টা পাল্টা কথা বলেন তো আমার চেয়ে খারাপ আপনার জন্য কেউ হবে না
-এই মেয়ে তুমি আমাকে ভয় দেখাচ্ছো।আবেগ তুমি কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনবে।আবেগ আমি তোমার উড বি ওয়াইফ তুমি কি এভাবে আমার অপমান দেখবে

আবেগ এতোক্খন ধরে রিদিতার দিকে তাকিয়ে ওর কথা শুনছিলো।যে মেয়ে কোনো দিন কাউকে জোর গলায় একটা কথা বলেনা আজ সে কিভাবে নিজের জন্য প্রতিবাদ করছে

-ওহ।তো আপনি এখন স্যারকে বলবেন যে আমার চাকরি যেনো চলে যায় তাই তো।আপনার বলা লাগবে না আমি নিজেই চলে যাচ্ছি।আপনাদের মতো নোংরা মানসিকতা র মানুষের সাথে কাজ করার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।চাকরি হারানোর ভয় আমি করিনা
-ইউউউ
-ইউ শাটার আপ।আমি আপনার খাই ও না পরিওনা না আপনার আন্ডারে কাজ করি।তাই আমাকে কোনো কথা বলার রাইট আপনার নেই।ভুলে যাই নি আমি কোনো কিছুই।একদিন একটা জিনিস হারানোর ভয় ছিলো তাই চুপ করে ছিলাম ।আজ আমার আর কোনো জিনিস হারানোর ভয় নেই তাই আমি আল্লাহ কে ছাড়া আর কাউকে ভয় পাইনা

আবেগের দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো রিদিতা।আর আবেগতো অবাক

-কি জিনিস হারানোর কথা বলছে ও।হারিয়েছি তো আমি।ও তো কিছু হারায় নি। কি চুপ করে থাকার কথা বলছে ও (মনে মনে)

এদিকে নোভা স্পষ্ট খেয়াল করছে যে আবেগ রিদিতার কথাতেই পরে আছে

-না আবেগ।তোমাকে আর কারো হতে দেবোনা ।অনেক কাঠখড় পুড়িয়েছি তোমার জন্য ।এবার শুধু একবার তোমাকে বিয়ে করি তারপর তোমার বাবাকে কিভাবে শায়েস্তা করতে হয় তোমাকে কিভাবে হাতের পুতুল বানাতে হয় দেখিয়ে দেব (মনে মনে)

নোভা আবেগের ধ্যান ভেঙে দিল

-আবেগ তুমি কি এখনো চুপ করে থাকবে।এই মেয়ে টা তোমার সামনে দাঁড়িয়ে তোমার স্ত্রীকে অপমান করছে তুমি কিছু বলবে না
-স্ত্রী??
-হ্যাঁ ।আমিতো আবেগের উড বি।মানে কদিন পরেতো আমি ও মিসেস আবেগ হব
-হাসালেন মিস নোভা।আরে আপনি এই লোকের স্ত্রী হওয়ার আশা করছেন।আগে দেখুন আপনার মতো কয়টা রক্ষিতা রেখেছে উনি।জামা বদলানোর মতো বৌ বদলানোই তো এদের কাজ।প্রথম এ ভালোবাসার নাম করে ভোগ করবে তারপর একটা মিথ্যা বদনাম দিয়ে ছেড়ে দেবে।এটা এরা ভালো পারে

একটু তাচ্ছিল্যের সাথে আবেগকে বললো।আবেগের গায়ে এই কথাটা খুব লাগলো

-রিদিইইই।তোমার সাহস হয় কি করে আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলার
-যে অফিসে নিজের স্টাফ এর হাত ধরে টানাটানি করতে পারে সে আর কতোই বা চরিত্র ধারী হতে পারে সেটা আমার জানা আছে
-রিদিইইই

আবেগ কিছু বলতে পারছেনা।আবেগ ভাবতে ও পারেনি যে রিদির কাছ থেকে তাকে স্পর্শ করার জন্য এই কথা শুনতে হবে।এতোটাই পর হয়ে গেছে সে

আর এই কথা শুনে নোভা তো শেষ

-আবেগগ তুমি
-নোভা আমি সত্যিইই
-আর কিছু শুনবো না।আজকে এই অফিসেই তোমাকে বলতে হবে আমি তোমার কে

বলেই নোভা আবেগকে টানতে টানতে কেবিনের বাইরে এনে সবাইকে ডাকা শুরু করলো রিদিও বাইরে এলো

-নোভা কি করছো তুমি
-এই তো সবাই এসে গেছে।আমি আর কারো অপমান শুনতে চাইনা আবেগ।এখনি সবার সামনে আমাকে তোমার প্রোপোজ করতে হবে।এবং আমাদের এনগেজমেন্ট এর এনাউসমেন্ট দিতে হবে
-কিন্তু নোভা এভাবে হঠাত
-সেটা আমি দেখবো।এখন যা বলছি তাই করো

আবেগ রিদির দিকে তাকালো।রিদির চোখ ছলছল করছে

-আবেগ তুমিকি সত্যিই পারবে অন্য কাউকে ভালোবাসার কথা বলতে(মনে মনে)
-না আমাকে পারতে হবে।তুমি আমার সাথে যেটা করেছো সেটা আমি তোমাকে পদেপদে কষ্ট দেবো(মনে মনে)

আবেগ সবার সামনে নিচু হয় এ সবার সামনে নোভাকে প্রোপোজ করতে বসলো

-I love u নোভা।তোমাকে সারাজীবন আমার পাশে পেতে চাই।আমার করে রাখতে চাই।will u marry me?

আবেগ কথাগুলো বলছে আর আড়চোখে রিদিতার দিকে তাকাচ্ছে

আর নোভাতো আনন্দ এ আত্মহারা।ও ভাবতে পারেনি যে রিদিতা র সামনে আবেগ ওকে এইভাবে প্রোপোজ করবে
নোভা খুশিতে কেঁদে দিয়ে আবেগকে তুলে ওকে সবার সামনে জরিয়ে ধরে

-yes…I will

আবেগ ও আলতো করে নোভাকে জরিয়ে ধরে।আর এদিকে রিদিতার ভেতরটা পুরো জলে যাচ্ছে ।ওর পায়ের নিচের মাটি যেন সরে যাচ্ছে ।ও ভেবেছিল আর যাই করুক আবেগ এইকাজ করবেনা।কিন্তু আবেগ সেটাই করলো আর রিদিতা কে যেভাবে প্রোপোজ করতো সেভাবে নোভাকেও প্রোপোজ করলো

-আপনারা সবাই হয়তো সব বুঝেছেন।ইনি আমার উড বি মিস নোভা।খুব শিগগিরই আমাদের বিয়ে

সবাই করতালি দিয়ে ওদের শুভেচ্ছা জানালো।তারপর চলে গেল

আবেগ পেছনে ফিরে দেখে রিদিতা নেই।বেচারি অনেক আগেই চলে গেছে

আবেগ নোভাকে ছেড়ে রিদিতার কেবিনে গেল।নোভাও পিছু পিছু গেল

আবেগ গিয়ে দেখে রিদিতা ব্যাগ গুছাচ্ছৈ চোখ মুখ ফোলা

-তাহলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছ

আবেগের কথাতে রিদিতা ঘুরে দাঁড়ালো

এর মধ্যে নোভা কেবিনে এলো

-ওকে যেতে দিও না আবেগ।আমাদের বিয়ের সব কাজ ওই করবে
-হ্যাঁ তোমার কথাই থাক নোভা

আবেগের এমন কথাতে রিদিতা অবাক হয় নি

-হুম তা করবো স্যার ।আপনি বরং নাটক করার আগে স্ক্রিপ্ট টা নতুন করে সাজাতে শিখুন।পুরানো স্ক্রিপ্ট এর কথা নতুন আর কতজনকে বলবেন

চলবে—–

#LOVE❤

part:06
Writer: Suvhan Årag(ছদ্মনাম)

-পুরানো স্ক্রিপ্ট !!
-হ্যাঁ পুরানো স্ক্রিপ্ট ।এই পুরানো স্ক্রিপ্ট এর লেখা বলেই তো আগে একজনকে ফাঁসিয়েছেন নিজের জালে।যেই নিজের পাওয়া শেষ সেই তাকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে এখন নতুন ফুল দেখে মেতেছেন ।তা এই ফুল কতোদিন টিকবে আমার মতো দু বছর নাকি আরো কম
-রিদিতাআ
-আস্তে কথা বলুন মি আবেগ।আপনার এই জোর গলা দিয়ে আমাকে আর দমাতে পারবেন না আপনি।আর না

নোভাতো আরো রেগে আগুন ।আবেগ ওকে ছেড়ে রিদিতা র সাথে কথা বলতে বলতে রিদিতা র আরো কাছে চলে যাচ্ছে

-আবেগ তুমি থামবে।তুমি আবার এই নষ্ট মেয়ে টার সাথে কথা বলছো
-ও হ্যালো মিস।আমার নামে অনেক্খন ধরে উল্টোপাল্টা কথা বলছেন।কাকে নষ্ট বলছেন আপনি।নিজে তো একটা নষ্ট মেয়ে ।তার মুখে আবার বড় বড় কথা।আর যদি একবার আমার নামে বাজে কথা শুনি আমার থেকে খারাপ আপনার জন্যে কেউ হবে না বলে দিলাম

বলেই রিদিতা হাঁটা শুরু করলো।কিন্তু আবেগ আবার তাকে পিছু ডাকলো

-আগে যে চার কথাতে রা দিতো না তার মুখ থেকে আজ এতো কথা।এই রূপটাতো এতোদিন ঢাকা রেখেছিলে না নিজের চরিত্রের মতো

রিদিতা আবেগের কথা শুনে ঘুরে দাঁড়ালো

-হাহা রূপ।সবাইকে কি আপনি নিজের মতো মনে করেন মি আবেগ।সবাই আপনার মতো মুখোশধারী মানুষ না।আর চরিত্র ।সেটা না হয় না বললাম

বলে রিদিতা চলে গেল।চোখের কোন থেকে আসা পানিটা মুছে ফেললো

-বাহ আবেগ বাহ।এইদিন ও আমাকে তুমি দেখালে।এই ছিল তোমার ভালোবাসা ।আজ কতো কথা শোনালে তুমি আমাকে।ভালো থেকো আবেগ।তুমি যা চাইছো তাই হবে।আমি নিজে তোমার বিয়ের সব কাজে সাহায্য করবো।আমি তো তোমাকে ভালো রাখতে পারলাম না যদি নোভা পারে তবে তাই হোক।তোমাকে সুখী দেখেই না হয় চলে যাব অনেক দূরে

চোখের পানি মুছে আবার হাঁটা শুরু করলো রিদিতা

রাতের বেলা

আবেগ শুয়ে আছে।আবেগের চোখে ঘুম নেই।কিন্তু চোখ পানিতে ভেজা।

আবেগের আরো কষ্ট হচ্ছে কারণ নোভা বলে দিয়েছে পৌরশু ওদের এনগেজমেন্ট ।এটা কেউ আটকাতে পারবেনা নোভা বলেই দিয়েছে

-আচ্ছা রিদিতা আমাকে ছাড়া তোমার রাত গুলো কেমন কাটে।নিশ্চয়ই ভালো কাটে বলো।কিন্তু আমার তো কাটে না।আমিতো কতো রাত ঘুমাতে পারিনা রিদি।কেমন করে পারলে আমাকে এতো কষ্ট দিতে

চোখবুজে আবেগ ডুব দিলো অতীতে

-আমি পারবো না তুমি মশারি টাঙাও
-রিদি তুমি না আমার মিষ্টি বৌ।তুমি টাঙাও না।আমি না হয় কাল টাঙাবো
-পারব না।তুমি ওরকম বলো কিন্তু পরের দিন আর টাঙাও না।আমি আর শুনবো না।তুমি টাঙাও
-থাক টাঙাতে হবে না।তুমিতো আমাকে ভালোবাসা না তাই তুমি টাঙাতে চাও না

বলে আবেগ দুহাত মুখে বাধিয়ে বসে আছে।রিদিতা র ও ভীষণ রাগ হলো

-ঠিক আছে থাকো তুমি।তোমার মতো স্বামী র আমার দরকার নেই।প্রতিদিন সামান্য মশারী টাঙানো নিয়ে আমাকে উল্টা পাল্টা কথা বলে।চলে যাচ্ছি আমি
-কোথায় যাচ্ছ তুমি
-কি আর করবো।এই রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখি কোনো ভালো ছেলে পাই কি না।তাকে গিয়ে বলবো আমাকে কিছু দিতে হবেনা শুধু মশারী টাঙিয়ে দিলেই হবে রাতে
-মানে
-মানে খুব সোজা আরেকজন কে বিয়ে করে সংসার করবো

রিদিতা একটু মজা করেই কথা বললো ।কিন্তু আবেগতো সিরিয়াস নিলো।রাগে আবেগের চোখ মুখ লাল হয়ে গেল

আবেগ রিদিতাকে হ্যাঁচকা টান মেরে খাটের সাথে চেপে ধরলো

-আআআ আবেগ কি করছো টাকি
-কেনো খুব শখ না তোর অন্য কাউকে বিয়ে করার।তোর সব শখ আমি ঘুচিয়ে দেব।আমাকে ছাড়া অন্য কারোর কথা ভাবলে তোকে আমি গলাটিপে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দেব তারপর নিজে মরবো।বুঝেছিষ

আবেগের কথাতে রিদিতার খুব হাসি পাচ্ছে।আবেগ যে কথাটা এভাবে নেবে রিদিতা ভাবতেও পারেনি

রিদিতা আরো একটু দুষ্টুমি শুরু করলো

-তুমি বললেই হলো নাকি।ছাড়ো আমাকে।আমি আর তোমার সাথে থাকবোনা
-কি বললে।তোমাকে তো আমি,,,,

আবেগের কথা শেষ করার আগেই রিদিতা আবেগের ঠোঁটে ভালোবাসার পরশ দিলো

-এটা কি হলো
-কি করবো।তুমি যে আমার এই তামাশাটা এতো সিরিয়াস নেবে বুঝতেই পারিনি
-তুমি মজা করছিলে
-হুভম
-ফের যদি এই রকম বিষয় নিয়ে মজা করেছো না তোমার খবর আছে
-নেও সরো তো
-নাহ মজা যখন করেছো শাস্তি তো পেতেই হবে
-কি শাস্তি

আবেগ মুখে দুষ্টু হাসি দিয়ে রিদিতার দিকে তাকালো

রিদিতাও এর মানে বুজেছে

-এইইই একদম না সরো বলছি
-হাহা সুন্দরী তোমার কথাই কাজ হবেনা।রাত তো আভি বাকি হে
-এই নাআআআ,,,,,উমমমমম

আবেগ রিদিতার ঠোঁট দখল করে নিলো

তারপর আর কি রাত টা আরো আরেকবার সাক্ষী হলো তাদের ভালোবাসার

এসব ভাবতেই আবেগের চোখ খুলে গেল

-খুব কি খারাপ রেখেছিলাম তোমাকে।একটু কি সুখ দিতে পারিনি।চিন্তা করোনা রিদিতা ভালোই হয় এছে তুমি আমার সামনে থাকবে সবসময় তোমাকে আমি কষ্ট দেবো অনেক কষ্ট দেবো।যতোটা কষ্ট আমি পাচ্ছি ততোধিক কষ্ট তোমাকে দেবো আমি। আই প্রমিস রিদি আই প্রমিস

ঐদিকে

-আর কতোক্খন বসে আকাশ দেখবি
-ঘুম আসছে না রে
-কোনদিন তোর ঘুম আসে বলতে পারিস।কতো রাত হয়ে গেছে চল ঘুমাবি।এই শরীর নিয়ে এতো রাত জাগতে তোকে নিষেধ করি।কেনো শুনিস না
-হুম।তোর জ্বর কমেছে?
-হ্যাঁ কাল থেকে অফিসে জয়েন্ট করবো
-আচ্ছা
-চল ঘুমুতে
-তুই যা আমি আসছি
-আচ্ছা

এখনো আকাশের দিকে চেয়ে আছে রিদিতা

-কাল সকাল হবে।আবার তোমাকে দেখবো আবেগ।জানি তুমি এখন অন্য কারো।কিন্তু কি করবো বলো তোমাকে না দেখলে যে আমি আরো কষ্ট পাই।আল্লাহ হয়তো এজন্য তোমাকে আরেকবার দেখার সুযোগ করে দিলো।আর তো বেশিদিন না।তারপর তো আর তোমাকে দেখতেই পাব না।চলে যাব অনেক দূরে

আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছারলো রিদিতা

-স্যার অনেক কষ্ট এ আপনার পাসপোর্ট টা করেছি
-তোমাকে ধন্যবাদ অনেক ধন্যবাদ ।খুব শিগগিরই যে আমাকে দেশে ফিরতে হবে।অনেক হিসাবনিকাশ বাকি আছে আমার ।তুমি তৈরি থাকো নোভা।আমার সন্তান কে মেরে ফেলেছো তুমি তোমার জন্য আজ আমার এই অবস্থা তোমাকে এই আশফি চৌধুরি এবার উচিত শিক্ষা দেবে

চলবে——

LOVE part:03+4

0

#LOVE❤
part:03+4
Writer: Suvhan Årag (ছদ্মনাম)

কিন্তু আবেগের তো আর নিষেধ নেই

আবেগ ফুলটা নেওয়ার জন্য হাত বাড়ালো সাথে সামনে তাকালো

সামনের মানুষটিকে দেখে আবেগের পুরো শরীর যেনো অবাশ হয়ে যাচ্ছে চোখটা আস্তে আস্তে ঝাপসা হয়ে আসছে।হ্যাঁ সেই মানুষ যাকে একদিন ও না দেখে থাকতে পারেনি আবেগ দুটো বছরে।যেদিন থেকে তার হাত ধরে তাকে এনেছিল আবেগের রাজ্য সেইদিন থেকে।কিন্তু আজ প্রায় আড়াই মাস দেখা হয় নি মানুষটাকে।কিন্তু আজ

-কি দেখছি আমি।সত্য নাকি মিথ্যে ।এমনতো হওয়ার নয়।রিদি এখানে কিভাবে আসবে।ওর তো আশফিকে বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করার কথা।তাহলে(মনে মনে)

-মিস রিদি আপনি দাঁড়িয়ে না থেকে স্যার কে ফুলটা দিন।স্যার আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন
-জি স্যার

-রিদি হ্যাঁ ম্যানেজার তো তাই বললো।তারমানে আবেগ ভুল শোনেনি।ভুল দেখেওনি।(মনে মনে)

নিজের অনিচ্ছা শর্তে ও রিদিকে তাকাতে হলো সামনের দিকে।সামনের দিকে তাকিয়ে রিদি অবাক।সামনের মানুষটাও তার দিকে অবাক হয় এ তাকিয়ে আছে।তার দুচোখ যেনো ভিজে আসছে

রিদির হাত যেনো কাঁপতে শুরু করলো।হঠাত্ করেই হাত থেকে ফুলের বুকেট টা পড়ে গেলো।আর রিদি মাথা ঘুরে পরে গেল।নিচে পরে যাওয়ার আগেই কেউ তাকে ধরে ফেললো

-রিদিইইইইই

কিন্তু রিদি অজ্ঞান সে আর শুনতে পারলো না সেই ডাকটা

-ম্যানেজার উনি এই অফিসে কি করছেন।ওনাকে তো আগে দেখিনি এখানে
-স্যার উনি আমাদের একজন নিউ এমপ্লয় দুমাস হলো জয়েন করেছেন এখানে
-ওও।ওনার জ্ঞান কি ফিরেছে
-স্যার ওনাকে রেস্ট রুমে কিছুক্ষণ রেস্ট করতে বলেছি
-ওও আচ্ছা
-স্যার একটা কথা বলি
-হুম
-আপনি কি মিসেস রিদিতাকে আগে থেকে চেনেন
-মাআনে
-আসলে স্যার উনি অজ্ঞান হওয়ার সময় আপনি যেভাবে ডাকলেন তাই বলছিলাম আর কি

আবেগ কি উওর দেবে ভেবে পাচ্ছে না।আসলেই কি সে তাকে চেনে।সে তো শুধু চেনা নয় সে যে তার রিদির সব সব ছিলো একদিন ।কিন্তু আজ

-স্যার আপনি যদি বলতে না চান তো থাক
-দাঁড়ান ম্যানেজার
-স্যার কিছু বলবেন
-আমি তাকে চিনি না।পথেঘাটে এমন কতোজনের সাথেই তো দেখা হয় পরিচয় হয় তবে তারা তো আর আপনজন হয় না।আপনি বরং ওনাকে একবার জিজ্ঞাসা করবেন উনি আমাকে চেনেন কিনা

আবেগের কথার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝলেন না ম্যানেজার

-ওকে স্যার

ম্যানেজার চলে গেল।আবেগ চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে অতীতে ডুব দিলো

-আবেগ ওঠো সকাল হয় এ গেছে।অফিসে যাবেতো।ওঠো বলছি
-আআহহ রিদি একটু ঘুমাতে দেও না
-না দেবো না।নিজে সারারাত আমাকে জ্বালিয়ে এখন ঘুমানো হচ্ছে ।ওঠো বলছি
-ওহ রিদি আসো তুমিও আমার সাথে একটু ঘুমাও
-আমার তো আর কাজ নেই যে তোমার সাথে বেলাপরে ঘুমাবো ওঠো বলছি

আবেগ চোখ খুলে দেখে রিদি একটা খয়েরি রঙের শাড়ি পরেছে চুলগুলো ভেজা টাওয়েল দিয়ে পেঁচিয়ে একপাশে মুরে রাখা।শাড়ির আঁচলটা সরে যাওয়াতে কোমড়টাও দেখা যাচ্ছে

আবেগতো আবার প্রেমে পরে গেল।প্রতিদিন নতুন করে সে রিদির প্রেমে পরে

আবেগ রিদির হাত ধরে টান মেরে রিদিকে বিছানায় ফেলে রিদির ওপর উঠে গেল

-আআআ আবেগ সকাল সকাল কি হচ্ছে ছাড়ো বলছি
-না ছাড়ব না।একটু আগে যেন কি বলছিলে আমি নাকি তোমাকে সারারাত ঘুমুতে দেইনি।কেনো গো আমি কি করেছিলাম সারারাত (মুখে দুষ্টু হাসি দিয়ে)

আবেগের কথা শুনে রিদিতো লজ্জায় শেষ

-উহ এই লোকটাও না।একটা আস্ত বদমাইশ ।সবসময় কিসব উল্টাপাল্টা কথা বলবে।মনে চাচ্ছে লজ্জায় মাটি খুঁড়ে ভিতরে ঢুকে যাই (মনে মনে)

-উহ।আর লাল হয়ও না।এমনিতেই গালদুটো টমেটোর মতো লাল হয়ে গেছে তোমাকে তো আমার খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে(দুষ্টু হাসি দিয়ে )
-সরুন তো সবসময় শুধু বাজে কথা
-ও তুমি বুঝি লজ্জা পাচ্ছ
-নাআআ।আপনি সরুন তো
-না তুমি লজ্জা পাচ্ছ।আমি তো জানি লজ্জা পেলে তুমি আমাকে আপনি করে ডাকো
-আল্লাহ এই লোকটাকে নিয়ে যদি একটু শান্তি আছে।তাড়াতাড়ি উঠে পরতে হবে।নইলে এই লোককে কোনো বিশ্বাস নেই।যখন তখন রোম্যান্স শুরু করে।লুচ্চু একটা(মনে মনে)
-ও রিদি কি ভাবছো।দেওনা
-কি
-সকাল সকাল মিষ্টি কিছু
-দিচ্ছি।আপনি চোখ বন্ধ করুন
-ওকে

আবেগ চোখ বন্ধ করলেই রিদি আবেগের নাকের ওপর এক কামড় বসিয়ে দিয়ে আবেগকে ধাক্কা মেরে উঠে গেল

-রিদি তুমি আমার সাথে চিট করলে
-হুহহ।তাড়াতাড়ি উঠে পর
-এর ফল ভালো হবেনা।এরপর তোমাকে একবার পাই সুদে আসলে সব মিটিয়ে নেব
-হুহহহ দেখা যাবে(ভেংচি কেটে)

অতীতটা কি সুন্দর ছিল।দুজনের খুনশুটি আর ভালোবাসাতে।ভাবতেই আবেগের চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো

কিন্তু আবেগের ধ্যান ভাঙলো কারোর কথাতে

-May I come in sir(কাঁপা কন্ঠে)

কন্ঠস্বর টা চিনতে আবেগের একটুও কষ্ট হলোনা।চোখের পানি টা মুছে ফেললো আবেগ

-come in

রিদির সাথে ম্যানেজার ও রুমে ঢুকলো

-স্যার ইনি মিসেস রিদিতা
-হুমম।(মিসেস হ্যাঁ মিসেসই তো হবে।আশফির মিসেস-মনে মনে)
-মিস রিদিতা ইনি আমাদের স্যারের ছেলে মি আবেগ রহমান
-আসসালামু আলাইকুম স্যার
-ওয়ালাইকুম আসসালাম
-মিসেস রিদিতা আমাদের এক্সপোর্ট ডিপার্টমেন্ট এর একজন এমপ্লয় স্যার ।আপনি ওনাকে কোনো কাজ থাকলে বলে দিন স্যার ।আমি আসি
-ওকে আপনি যান

ম্যানেজার চলে যাওয়াতে রিদিতা আর মাথা তুলতেই পারছেনা।আজ কতোদিন পর আবার দুজনে নির্জনে এক রুমে হোক সেটা অফিস

আবেগ শুধু রিদিতার দিকে তাকিয়ে আছে আগের চেয়ে একটু মোটা হয় ছে ।শরীরটা আগের মতো রোগা নেই।দেখতেও আগের চেয়ে বেশিই সুন্দর লাগছে।তারমধ্যে আবার ব্লু রঙের বোরখা ও হিজাব পরেছে।দেখতেও বেশ লাগছে

-খুব ইচ্ছে করছে তোমাকে একটু মন ভরে দেখতে।মন চাচ্ছে তোমাকে একটু ছুঁয়ে দিতে।কিন্তু না সেই অধিকার তুমি কেড়ে নিয়েছো আবেগ (মনে মনে)

প্রায় পনেরো মিনিট হয়ে গেলো দুজনেই চুপচাপ ।হঠাত্ নিরবতা ভাঙলো আবেগ

চলবে——
#LOVE❤

part:04
Writer: Suvhan Årag(ছদ্মনাম)

আবেগ একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে রিদিতার দিকে তাকালো

-আশফি কি ছেড়ে দিয়েছে না কি?

আবেগের কথা শুনে রিদিতা কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো

-মানে
-আশফি তো যথেষ্ট বড়লোক বরং আমার থেকেও বেশি তাহলে তার ওয়াইফ এখানে তাও আবার আমার অফিসে উহ এটা কি ভাবা যায়
-স্যার আপনার কোনো কাজের কথা থাকলে বলুন
-আগে যেটা বলছি সেটার উওরটা দিন মিসেস রিদিতা আবে,,,,

কথাটা বলতে গিয়ে আবেগের গলা আটকে আসছে।আর এতোদিন পর আবেগের মুখ থেকে কথাটা শুনবার জন্য রিদিতার বুকের ভেতরটা জলে যাচ্ছে

-ওহ সরি মিসেস রিদিতা আশফি চৌধুরি । রাইট
-স্যার আমি আপনার কি কাজ করতে পারি বলুন

রিদিতার এমনিতে ই এতোদিন পর নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে পেয়ে রীতিমতো শরীর কাঁপছে ।কিন্তু সময় পরিস্থিতি আজ তার প্রিয় মানুষটিকে এতোটাই দূরে নিয়েছে যে তাকে আজ স্যার বলতে হচ্ছে ।তারপর আবার আবেগের এই উদ্ভট প্রশ্ন

-যাস্ট শাট আপ ডেম ইট।আমি যেটা জিজ্ঞাসা করেছি তার উওর দাও
-কাজের বাইরে আমি আর আপনার কোনো প্রশ্নের উওর দিতে বাধ্য নই স্যার
-আলবাত তুমি বাধ্য
-না বাধ্য নই

আবেগের রাগ উঠে গেল।বেচারা চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে রিদিতার হাত ধরে ওকে একটু টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসলো

-তুমি বাধ্য বাধ্য বাধ্য

আবেগের চোখের লাল ভাব স্পষ্ট ।রিদিতা জানে যে ও রেগে আছে।এতোদিন ধরে মানুষটিকে জানে সে

-স্যার আমার হাত ছারুন
-উওর দাও
-স্যার আমার হাত ছারুন
-না ছারব না ।আমার উওর চাই
-আমি আপনার কোনো উওর দিতে বাধ্য নই ।এখন কেনো এসেছেন আপনি উওর নিতে।সেদিন কোথায় ছিলো আপনার এই উওর চাওয়ার ইচ্ছে ।একটা কুকুরকেও মানুষ মাঝ রাতে বাড়ি থেকে তাড়ায় না সেখানে আমি আমিতো একজন মানুষ ছিলাম তাও একজন মেয়ে কোনো বাড়ি র বৌ আবার একজন অপদার্থ লোকের স্ত্রী তারপর আবার একজন প্রেগন্য,,,,,

রিদিতা আর কথা শেষ করলো না কি লাভ বাকিটুকু বলে।সবই তো হারিয়েছে এখন তো আর কিছু পাওয়ার নেই।না থাকনা আবেগ ওর মতো নিজের জীবনটা না হয় নিরামিষ ভাবে সাজাবে সে

-হাত ছারুন
-কেনো থামলে কেনো আরো বলতে ।নিজের কুকর্মের কথাটা তো বললে না
-আপনি আমার হাত ছারুন
-কেনো এখন আমার হাত ধরাতে এতো সমস্যা ।যখন একজন বিবাহিত মেয়ে হয় এ নিজের স্বামী কে ঠকিয়ে পরকীয়া তে মেতেছিলেন তখন কোথায় ছিলো এতো সম্মানবোধ

শেষ কথাটা রিদিতা আর হজম করতে পারলো না।ও নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে আবেগের থেকে নিজেকে ছারিয়ে নিল

-আর একটা বাজে কথা বলবেন না আপনি আমার নামে।আমি কি করেছি কি না করেছি সেটা আমি ভালো জানি এর কোনো সাফাই আপনাকে দিতে হবেনা।কে আপনাকে এতো বড় সাহস দিয়েছে একটা বাইরের লোক হয়ে আমার হাত ধরতে আসেন।আবার আমাকে শুনাচ্ছেন চরিত্রের কথা।তাহলে আপনি কি
-আমি বাইরের লোক!!
-হ্যাঁ আপনি বাইরের লোক।কি অধিকার আছে আপনার আমাকে স্পর্শ করার ।কোন অধিকারে আপনি আমাকে স্পর্শ করেছেন?

রিদিতার কথা গুলো ও আবেগ হজম করতে পারলো না।আবেগ রিদিতাকে টেনে হিচড়ে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলো

-আহহহ
-এইবার বল।কি বলেছিলি ।কোনো অধিকার নেই আমার তোর ওপর?
-না নেই
-সত্যিই কোনো অধিকার নেই তোর ওপর আমার ।কি হলো বল ans mee damn it
-না না না
-ও তাই
-হ্যাঁ তাই
-আমি যদি বলি আছে
-না নেই
-আমি বলছিতো আছে
-ও তাই বুঝি।তা কি অধিকার আছে শুনি।কি হন আপনি আমার
-আমি তোর হাসবে,,,,,,,,
-কি হলো থামলেন কেনো বলুন
-,,,,,,,,
-কি হলো বলুন।কি হন আপনি আমার ।বলুন বলুন আমাকে

রিদিতা আবেগের কলার চেপে ধরলো।আবেগের চোখে পানি ছলছল করছে।রিদিতার ও সেই একি অবস্থা ।কারোর মুখে কথা নেই দুজনে হারিয়ে গেছে একে অপরের চোখে

-তুই পৌছেছিস
-হ্যাঁ বাবা।আমি এখন আবেগের অফিসে
-আচ্ছা তাহলে ওর সাথে মিট করে তুই ফার্ম হাউজে চলে যাস
-ওকে বাই বাবা

নোভা আবেগের রুমে গিয়ে দরজা খুলে যা দেখলো সেই দৃশ্য তার মোটেও কাম্য নয়

নোভা যে রুমে এসেছে সেদিকে ওদের দুজনের খেয়াল নেই।ওরা ডুবে আছে চোখের মায়াতে

নোভা চিত্কার দিয়ে উঠলো

-আবেগগ

নোভা র চিত্কারে আবেগের হুশ ফিরলো ।ও একবার দরজায় নোভার দিকে তাকিয়ে তারপর রিদির দিকে তাকিয়ে রিদিকে ছেড়ে নোভা র কাছে আসলো।ঘটনার আকস্মিকতাতে রিদি ও স্তম্ভ

-নোভা তুমমি
-কেনো ভুল টাইমে এসে পড়লাম
-নোভা তুমি আমাকে ভুল বুঝছো
-ও তাই।তুমি যদি আগের জীবনেই থাকবে তাহলে কেনো বিয়েতে মত দিলে
-নোভা যা দেখছো সেটা ভুল
-ও তাই।তাহলে এই মেয়ে টা এখানে কি করছে

আবেগ কোন উওর দিবে ভেবে পাচ্ছে না।আর আবেগের বিয়ের কথা শুনে রিদিতা র বুক ফেটে যাচ্ছে

-কি হলো বলো
-আমি নিজেই জানিনা।আমি এসে দেখি ও নাকি এই অফিসে চাকরি করে
-কিহহহ
-হ্যাঁ
-কিন্তু কেনো
-আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম আশফি থাকতে ও এখানে কেনো
-আরে আশফি তো বিদেশে।ওকে বোধ হয় নেয়নি

আশফি বিদেশে কথা শুনে রিদিতা চমকে গেল।কারণ সে নিজেও জানেনা আশফি কোথায়

-আর এইসব মেয়েকে তো নিয়ে শুধু ফূরতি করা যায় ।খাওয়া শেষ তো ডাস্টবিনে ফেলে দাও।এদের সাথে তো এটাই হয়

রিদিতা এবার মুখ খুললো।কারণ আজ তার প্রিয় মানুষটার সামনে তাকে কেউ অপমান করছে অথচ সে চুপচাপ তা শুনছে

-কে খাওয়া আর ডাস্টবিন এর ময়লা সেটা বোধ হয় আপনি নিজেকে প্রশ্ন করলে উওর পাবেন মিস নোভা
-এই মেয়ে কি বললে তুমি আমাকে
-যেটা বলেছি তাতো শুনেছেন ।আবার জিজ্ঞাসা করছেন কেন

চলবে—–

LOVE part:01+2+3

0

#LOVE❤
part:01+2+3
Writer: Suvhan Årag(ছদ্মনাম)

-তুই সত্যিই বিয়েতে রাজি তো
-হ্যাঁ মা আমি রাজি
-দেখ আবেগ আমি কিন্তু তোর মনের ওপর জোর দিয়ে কোনো কাজ করতে চাই না
-না বাবা তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারো।তুমি শুধু আমার ব্যবস্থা করে দেও আমি কালই সিলেট গিয়ে আমাদের ওখানকার কোম্পানিতে জয়েন করতে চাই।আমি রিল্যাক্স চাই বাবা
-ok my son।তুমি ঘুমিয়ে পড়ো

নিজের রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলো আবেগ

এমন সময় নোভার ফোন

-আবেগ তুমি ফোন ধরছো না কেনো
-আসলে আমি ডিনারে ছিলাম
-ও আচ্ছা ।আবেগ একটা সত্য কথা বলবে
-কি
-তুমি সত্যিই আমাকে বিয়ে করতে রাজি তো
-,,,,,,,,,
-উওর দাও

একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস নিলো আবেগ যেনো কতোদিনের পাথরচাপা কষ্ট বুক থেকে নামানোর বৃথা চেষ্টা করছে

-হ্যাঁ নোভা আমি রাজি
-আরেকটা কথা ছিলো
-কি
-তুমি কি রিদিতাকে ভুলতে পেরেছো?
-,,,,,,,,
-প্লিজ এই উওরটা আমাকে দেও।আমি কোনো সংশয় নিয়ে নতুন জীবন শুরু করতে চাইনা আবেগ।প্লিজ উওর দাও
-নোভা তোমাকে বলেছি না রিদি র নাম তুমি আমার সামনে নেবে না
-কেনো নেবো না বলতে পারো।আজ তিন মাস ও হয়নি তোমাদের ডিভোর্স হয়েছে।এর মধ্যে তুমি আমার সাথে বিয়েতে মত দিলে।তোমার মনে যদি রিদিতাকে নিয়ে আজো কোনো ফিলিংস থাকে তুমি আমাকে বলতে পারো।কিন্তু প্লিজ তুমি ওর জন্য নিজের মনে জায়গা রেখে আমাকে শুধু শুধু কষ্ট দিয়ো না।প্লিজ ।আমি এটা নিতে পারবো না।আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি আবেগ অনেক
-নোভা প্লিজ কেঁদো না।আমি রিদিকে শুধু ঘৃণা করি শুধু ঘৃণা ।

বলেই ফোন কেটে দিল আবেগ

রিদির ছবির সামনে গিয়ে দাঁড়ালো

-কি দোষ ছিলো আমার ।খুব ভালোবেসেছিলাম এই তো।খুব ভালোবেসেছিলাম তোকে।এই প্রতিদান দিলি তুই আমার ।কি কমতি রেখেছিলাম তোর যে আমার মন নিয়ে এভাবে খেললি।দুইটা বছর দুইটা বছর সংসার সাজালাম তোকে নিয়ে ।তুই নিমিষেই ভুলে গেলি একবারও মনে পরলো না আমার কথা।শেষমেশ কি না আমার বন্ধুর সাথে প্রেমলীলায় মেতে উঠলি ।কেনো রে কেনো করলিরে এমন কেনোওওওও

রিদির ছবিটা দেওয়াল থেকে নিয়ে ছুরে ফেলে দিল

-চাইনা তোকে।তোর কিছু রাখবো না।তোকে চাইনা আমার ।কিন্তু আমি যে পারছি না।চোখ বুজলে যে তোর ঐ মুখটা ভাসে আমার বুকের রক্তক্খরন হয় তোর জন্য ।ছেড়ে ই যদি যাবি তবে এলি কেন।কেনোওও

অন্ধকার ঘরের মাঝে বসে থাকতে আজ আর ভয় লাগে না রিদিতার।যে মানুষটাকে জীবন দিয়ে ভালোবাসলো আজ সেই মানুষটাই তাকে ছুড়ে দিলো অন্ধকারে

-জানিস তোর বাবা আমাকে খুব ভালোবাসতো।কিন্তু দেখ আমাকে একবার বিশ্বাস করতে পারলো না।তোর বাবা এখন নিশ্চয়ই নতুন সংসার সাজাচ্ছে বল ।আচ্ছা তুই তো জানিস তোর মা কিছু করে নি ।তুই ঠিক তোর বাবাকে একদিন বলবি বল ।

আনমনে পেটে হাত দিয়ে এসব বুলি আওরাতে থাকে রিদিতা

তার ভেতর যে বেড়ে উঠছে একটা অস্তিত্ব ।হ্যাঁ অস্তিত্ব ।তার আর আবেগের ভালোবাসার অস্তিত্ব তাদের দুজনের ❤

চলবে——

#LOVE❤

part:02
Writer: Suvhan Årag (ছদ্মনাম)

-আর কতোক্খন এভাবে বসে থাকবি এবার একটু খেয়ে নে
-ভাল লাগেনা রে খেতে
-কেনো এমন করছিস?নিজের না হলেও বাচ্চাটার কথাতো ভাব
-হ্যাঁ বাচ্চা ।আমার বাচ্চাটার কথা ভেবেই তো এখনো বেচে আছি।কিন্তু ওর বাবা কেনো পারলো না রে কেনো পারলোনা একবার ওর কথা ভেবে আমাকে মানতে।এতোটাই কি ঠুনকো ছিলোরে আমার ভালোবাসা যে মুহূর্তেই ঝড় এসে সব তছনছ করে দিলো
-প্লিজ এসব কথা আর ভাবিস না।ভুলে যা
-ভুলতে চাইলেই কি ভোলা যায় বল ।আমার প্রতি নিশ্বাসে মিশে আছে আবেগ প্রতি চোখের জলে মিশে আছে কি করে ভুলবো বল ।আমি তো বোকার মতো ভালোবেসেছিলাম আর সে,,,,
-চুপ কর ।নিজের শরীরের যত্ন নে।বাচ্চাটার তো কোনো দোষ নেই বল ওকে কেনো কষ্ট দিবি বল
-ঠিক বলেছিস নিতু।ওকে কেনো কষ্ট দেবো বল ।ওইতো আমার সব।ওই তো আমার আবেগের অংশ আমার আবেগের সন্তান আমাদের ভালোবাসার ফসল।ওকে আমি কষ্ট দেবো না।কখ্খনো না
-চল খেয়ে নিবি
-হুম ।শোন
-বল
-আমি অন্তত আর চারমাস অফিসে যেতে চাই।তারপর তো ছয়মাসের ছুটি পাবো এতে আমার লাভ কেও বেশি সময় দিতে পারবো
-তুই কি ওর নাম ঠিক করে ফেললি নাকি
-হুম লাভ।আমার লাভ আমার আবেগ আমার শুধু আমার

“ঝড়ো হাওয়ার মতো ফেলে চলে গেলে
দেখলে না একবার
তুমি দেখলে না ঝাপটায় আমি পড়ে গেছি
হেরে গেছি
বারবার
শুধু একবার একবার
তোমাকে জানতে চাই
কি ছিলো আমার ভুল
আমার রিদয়এর রক্ত ঝরিয়ে
তুমি কার বাগানে ফুটেছো ফুল
আজ বৃষ্টিতে একলাবেলাতে
তোমাকে পড়ে মনে
তোমার নেশায় আর মাতালেনা
চলে গেলে শূন্য করে”

কবিতা আওরাতে আওরাতে চোখের পানি যেনো আরো বেহায়া হয় এ উঠছে।একটু থামার নাম নেই

-কেনো করলে এমন রিদি কেনো।রিদি আজও তো আকাশে মেঘ ডাকছে বৃষ্টি পড়ছে মুষলধারে ।আচ্ছা রিদি আজ তুমি কার বুকে মুখ লুকিয়েছো আমাকে একটু বলে যাও না।কার বুকে গিয়ে তোমার আর মেঘের ভয় লাগে না।বলে যাও না একবার দেখতাম তার রিদয় টা কি আমার থেকে বড় নাকি তার রিদয়এ তোমার জন্য হৃদস্পন্দনটা অনেক বেশি আমার থেকে

-নে তুই খুশি তো মা আমি তোর জন্য আবেগকে এনে দিয়েছি ।তুই খুশি তো
-হ্যাঁ বাবা।আমি অনেক হ্যাপি।
-তুই খুশি হলেই আমি খুশি মা।তোর জন্য আমি সব করতে পারি
-thanks বাবা
-ঘুমিয়ে পর

দরজাটা আটকে চলে গেলেন আফরান সাহেব

-বাবা তুমি জানোনা তুমি আমকে কি উপহার দিয়েছো ।আমি আবেগকে অনেক ভালোবাসি অনেক।আর কটা দিন তারপর আবেগ শুধু আমার।তারপর আবেগ শুধু আমাতে মেতে থাকবে শুধু আমাতে

চায়ের বাগান দেখা যাচ্ছে রাস্তা দিয়ে ।পাহাড়ের ভেতর দিয়ে ও কি সুন্দর রাস্তা ।সিলেটের সৌন্দর্য আসলেই চমত্কার

-স্যার আপনার অফিসে যাবেন নাকি বাড়িতে
-অফিসে চলো
-ঠিক আছে স্যার
বাড়িতে গিয়ে কি করবো।বাড়িতে তো আর আমার বৌ বসে নেই চারপদ রান্না করে দরজা খুলে আমার কপালের ঘাম মোছার জন্য।আমিতো ব্যাচেলর ।একবার বিয়ে করে ব্যাচেলর।কি চমত্কার না(মনে মনে)

অফিসে এতো স্টাফ ।সবাই দাঁড়িয়ে আছে আবেগকে বরণ করার জন্য ।সবার হাতে ফুলের বুকেট।সবার সাথে হাত মেলাচ্ছে আবেগ।শুধু মেয়েদের সাথে ছাড়া ।তার যে মানা আছে তার প্রিয়তমা ছাড়া অন্য কারো হাত ধরার

আস্তে আস্তে সামে এগিয়ে যেতে সবার মতো একটা ফুলের বুকেট কেউ সামনে ধরলো।কিন্তু অন্য সবার মতো মুখ উঁচু করে নয়।মাথা নিচু করে।কারণ তার ও যে বারণ আছে নিজের প্রিয় ছাড়া অন্য কারোর দিকে তাকানোর

চলবে—-

#LOVE❤

part:03
Writer: Suvhan Årag (ছদ্মনাম)

কিন্তু আবেগের তো আর নিষেধ নেই

আবেগ ফুলটা নেওয়ার জন্য হাত বাড়ালো সাথে সামনে তাকালো

সামনের মানুষটিকে দেখে আবেগের পুরো শরীর যেনো অবাশ হয়ে যাচ্ছে চোখটা আস্তে আস্তে ঝাপসা হয়ে আসছে।হ্যাঁ সেই মানুষ যাকে একদিন ও না দেখে থাকতে পারেনি আবেগ দুটো বছরে।যেদিন থেকে তার হাত ধরে তাকে এনেছিল আবেগের রাজ্য সেইদিন থেকে।কিন্তু আজ প্রায় আড়াই মাস দেখা হয় নি মানুষটাকে।কিন্তু আজ

-কি দেখছি আমি।সত্য নাকি মিথ্যে ।এমনতো হওয়ার নয়।রিদি এখানে কিভাবে আসবে।ওর তো আশফিকে বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করার কথা।তাহলে(মনে মনে)

-মিস রিদি আপনি দাঁড়িয়ে না থেকে স্যার কে ফুলটা দিন।স্যার আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন
-জি স্যার

-রিদি হ্যাঁ ম্যানেজার তো তাই বললো।তারমানে আবেগ ভুল শোনেনি।ভুল দেখেওনি।(মনে মনে)

নিজের অনিচ্ছা শর্তে ও রিদিকে তাকাতে হলো সামনের দিকে।সামনের দিকে তাকিয়ে রিদি অবাক।সামনের মানুষটাও তার দিকে অবাক হয় এ তাকিয়ে আছে।তার দুচোখ যেনো ভিজে আসছে

রিদির হাত যেনো কাঁপতে শুরু করলো।হঠাত্ করেই হাত থেকে ফুলের বুকেট টা পড়ে গেলো।আর রিদি মাথা ঘুরে পরে গেল।নিচে পরে যাওয়ার আগেই কেউ তাকে ধরে ফেললো

-রিদিইইইইই

কিন্তু রিদি অজ্ঞান সে আর শুনতে পারলো না সেই ডাকটা

-ম্যানেজার উনি এই অফিসে কি করছেন।ওনাকে তো আগে দেখিনি এখানে
-স্যার উনি আমাদের একজন নিউ এমপ্লয় দুমাস হলো জয়েন করেছেন এখানে
-ওও।ওনার জ্ঞান কি ফিরেছে
-স্যার ওনাকে রেস্ট রুমে কিছুক্ষণ রেস্ট করতে বলেছি
-ওও আচ্ছা
-স্যার একটা কথা বলি
-হুম
-আপনি কি মিসেস রিদিতাকে আগে থেকে চেনেন
-মাআনে
-আসলে স্যার উনি অজ্ঞান হওয়ার সময় আপনি যেভাবে ডাকলেন তাই বলছিলাম আর কি

আবেগ কি উওর দেবে ভেবে পাচ্ছে না।আসলেই কি সে তাকে চেনে।সে তো শুধু চেনা নয় সে যে তার রিদির সব সব ছিলো একদিন ।কিন্তু আজ

-স্যার আপনি যদি বলতে না চান তো থাক
-দাঁড়ান ম্যানেজার
-স্যার কিছু বলবেন
-আমি তাকে চিনি না।পথেঘাটে এমন কতোজনের সাথেই তো দেখা হয় পরিচয় হয় তবে তারা তো আর আপনজন হয় না।আপনি বরং ওনাকে একবার জিজ্ঞাসা করবেন উনি আমাকে চেনেন কিনা

আবেগের কথার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝলেন না ম্যানেজার

-ওকে স্যার

ম্যানেজার চলে গেল।আবেগ চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে অতীতে ডুব দিলো

-আবেগ ওঠো সকাল হয় এ গেছে।অফিসে যাবেতো।ওঠো বলছি
-আআহহ রিদি একটু ঘুমাতে দেও না
-না দেবো না।নিজে সারারাত আমাকে জ্বালিয়ে এখন ঘুমানো হচ্ছে ।ওঠো বলছি
-ওহ রিদি আসো তুমিও আমার সাথে একটু ঘুমাও
-আমার তো আর কাজ নেই যে তোমার সাথে বেলাপরে ঘুমাবো ওঠো বলছি

আবেগ চোখ খুলে দেখে রিদি একটা খয়েরি রঙের শাড়ি পরেছে চুলগুলো ভেজা টাওয়েল দিয়ে পেঁচিয়ে একপাশে মুরে রাখা।শাড়ির আঁচলটা সরে যাওয়াতে কোমড়টাও দেখা যাচ্ছে

আবেগতো আবার প্রেমে পরে গেল।প্রতিদিন নতুন করে সে রিদির প্রেমে পরে

আবেগ রিদির হাত ধরে টান মেরে রিদিকে বিছানায় ফেলে রিদির ওপর উঠে গেল

-আআআ আবেগ সকাল সকাল কি হচ্ছে ছাড়ো বলছি
-না ছাড়ব না।একটু আগে যেন কি বলছিলে আমি নাকি তোমাকে সারারাত ঘুমুতে দেইনি।কেনো গো আমি কি করেছিলাম সারারাত (মুখে দুষ্টু হাসি দিয়ে)

আবেগের কথা শুনে রিদিতো লজ্জায় শেষ

-উহ এই লোকটাও না।একটা আস্ত বদমাইশ ।সবসময় কিসব উল্টাপাল্টা কথা বলবে।মনে চাচ্ছে লজ্জায় মাটি খুঁড়ে ভিতরে ঢুকে যাই (মনে মনে)

-উহ।আর লাল হয়ও না।এমনিতেই গালদুটো টমেটোর মতো লাল হয়ে গেছে তোমাকে তো আমার খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে(দুষ্টু হাসি দিয়ে )
-সরুন তো সবসময় শুধু বাজে কথা
-ও তুমি বুঝি লজ্জা পাচ্ছ
-নাআআ।আপনি সরুন তো
-না তুমি লজ্জা পাচ্ছ।আমি তো জানি লজ্জা পেলে তুমি আমাকে আপনি করে ডাকো
-আল্লাহ এই লোকটাকে নিয়ে যদি একটু শান্তি আছে।তাড়াতাড়ি উঠে পরতে হবে।নইলে এই লোককে কোনো বিশ্বাস নেই।যখন তখন রোম্যান্স শুরু করে।লুচ্চু একটা(মনে মনে)
-ও রিদি কি ভাবছো।দেওনা
-কি
-সকাল সকাল মিষ্টি কিছু
-দিচ্ছি।আপনি চোখ বন্ধ করুন
-ওকে

আবেগ চোখ বন্ধ করলেই রিদি আবেগের নাকের ওপর এক কামড় বসিয়ে দিয়ে আবেগকে ধাক্কা মেরে উঠে গেল

-রিদি তুমি আমার সাথে চিট করলে
-হুহহ।তাড়াতাড়ি উঠে পর
-এর ফল ভালো হবেনা।এরপর তোমাকে একবার পাই সুদে আসলে সব মিটিয়ে নেব
-হুহহহ দেখা যাবে(ভেংচি কেটে)

অতীতটা কি সুন্দর ছিল।দুজনের খুনশুটি আর ভালোবাসাতে।ভাবতেই আবেগের চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো

কিন্তু আবেগের ধ্যান ভাঙলো কারোর কথাতে

-May I come in sir(কাঁপা কন্ঠে)

কন্ঠস্বর টা চিনতে আবেগের একটুও কষ্ট হলোনা।চোখের পানি টা মুছে ফেললো আবেগ

-come in

রিদির সাথে ম্যানেজার ও রুমে ঢুকলো

-স্যার ইনি মিসেস রিদিতা
-হুমম।(মিসেস হ্যাঁ মিসেসই তো হবে।আশফির মিসেস-মনে মনে)
-মিস রিদিতা ইনি আমাদের স্যারের ছেলে মি আবেগ রহমান
-আসসালামু আলাইকুম স্যার
-ওয়ালাইকুম আসসালাম
-মিসেস রিদিতা আমাদের এক্সপোর্ট ডিপার্টমেন্ট এর একজন এমপ্লয় স্যার ।আপনি ওনাকে কোনো কাজ থাকলে বলে দিন স্যার ।আমি আসি
-ওকে আপনি যান

ম্যানেজার চলে যাওয়াতে রিদিতা আর মাথা তুলতেই পারছেনা।আজ কতোদিন পর আবার দুজনে নির্জনে এক রুমে হোক সেটা অফিস

আবেগ শুধু রিদিতার দিকে তাকিয়ে আছে আগের চেয়ে একটু মোটা হয় ছে ।শরীরটা আগের মতো রোগা নেই।দেখতেও আগের চেয়ে বেশিই সুন্দর লাগছে।তারমধ্যে আবার ব্লু রঙের বোরখা ও হিজাব পরেছে।দেখতেও বেশ লাগছে

-খুব ইচ্ছে করছে তোমাকে একটু মন ভরে দেখতে।মন চাচ্ছে তোমাকে একটু ছুঁয়ে দিতে।কিন্তু না সেই অধিকার তুমি কেড়ে নিয়েছো আবেগ (মনে মনে)

প্রায় পনেরো মিনিট হয়ে গেলো দুজনেই চুপচাপ ।হঠাত্ নিরবতা ভাঙলো আবেগ

চলবে——

নেশা তুই আমার Part:13(last part)

0

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part:13(last part)

হঠাৎ করেই আমার গালে খুব জোরে একটা চড় পরে।গালে হাত দিয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি বাড়ির সকলের সামনে।
“”থামলে কেন কাকী?আরো দুটো কষে দাও।এই মেয়ে এটার ই যোগ্য।””
আরমান ভাইয়ের কথা শুনে আমার কান্নার বেগ আরো বেশি বেড়ে গেল।কিন্তু আমার মা আমার কান্নাকে পাত্তা না দিয়ে আমার দুই বাহু শক্ত করে ধরে নিজের দিকে ঘোরালো।
“”বলতে পারিস তোর কোন জিনিসটায় আমরা কোন কমতিটা রেখেছি?এতো ভালোবেসেছি তোকে।নিজেরা না খেয়ে তোকে খাইয়েছি।আর তুই?এতো বড় একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলি।এই এদিকে তাকা।বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার সময়ই এক বারো কি তোর আমাদের কথা মনে পরে নি।একবার ও মনে হলো না আমরা কি নিয়ে বাচবো।তুই তো আমাদের একমাত্র সম্বল রে।তোকে নিয়েই বেঁচে আছি আমরা।তাহলে কোন সাহসে তুই এই সিদ্ধান্তটা নিলি?কিভাবে চলে গেলি তুই আমাদের ছেড়ে?
কথা গুলো বলতে বলতেই মা কান্নায় ভেঙে পরল।মায়ের কান্না দেখে আমারো ভীষণ কান্না পাচ্ছে।এবার বুঝতে পেরেছি আমি কত বড় ভুল করেছি।তাঁদের ভালো করতে গিয়েই যে তাঁদের এতটা কষ্ট দিয়ে ফেলেছি বুঝতেই পারিনি।আরমান ভাই ঠিক ছিল আরো কিছু চড়ের যোগ্য আমি।এইটুকু শাস্তি তে হবে না আমার।মাথা নিচু করে কেঁদেই চলেছি তখনই বড় মা এগিয়ে এলো।
“”আমি বলেছিলাম না এই মেয়ে যার জীবনেই যাবে তার জীবনটাই ধ্বংস করে দেবে।এই মেয়ে একবার দেখ আমার ছেলের জীবনটা কি করেছিস তুই।এইকয়দিনে তো ওর মুখটা দেখার ও সুযোগ হয়ে ওঠেনি।যদিও কখনো কখনো বাড়ি ফিরেছে তখন তো তার দিকে তাকানোই কষ্ট দায়ক হয়ে গিয়েছে।কি অবস্থা হয়েছে আমার ছেলেটার চোহারার?সব তোর জন্য হয়েছে।আমার ছেলের এই অবস্থার জন্য তুই দায়ী।””
“”স্টপ ইট মা।এখনো তোমার বলা শেষ হয়নি?সেদিন কি কিছু কম বলেছিলে যে আজ আবার শুরু হয়ে গেলে।হ্যা তোমার ছেলের এই অবস্থার জন্য ওই মেয়েটাই দায়ী।কিন্তু ও আমার জীবনে আসার জন্য নয়। কিছুদিনের জন্য ও আমার জীবন থেকে চলে যাওয়ার জন্য আমার এই অবস্থা।আমি বুঝি না তুমি এমন নিকৃষ্ট মানসিকতার কি করে হতে পারো।কিছু দূর্ঘটনাকে তুমি মিতুর ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছ।””
“”আমি কোনো দূর্ঘটনা কে চাপিয়ে দিচ্ছি না ওর ওপর।যা সত্যি তাই বলছি।””
“”কোন সত্যির কথা বলছো?কাকার ব্যবসায় ধোকার খাওয়ার কথাটা?সেটা কাকার নিজের অনভিজ্ঞতার কারনেই হয়েছে।আর যদি তুমি কাকীর এক্সিডেন্টের কথা বলো তাহলে আমি বলি ঢাকায় এমন অনেক এক্সিডেন্ট ই হয়।তুমি কোন কোন এক্সিডেন্টের দায় ভার মিতুর ওপর চাপাবে?আর ওই পীর যার কথা শুনে তুমি মিতুকে আজ অবধি দোষারোপ করছ সে কিছু বছর আগেই
ভন্ড পীর প্রমান হয়ে এখন জেল খাটছে।আর এখন বাকি রইল দুবার বিয়ে ভাঙার কথা।ওটা মিতুর জন্য নয় আমার জন্য ভেঙেছে।
ভাইয়ার এই কথায় সবাই তার দিকে অবাক চোখে তাকালো।আমার চোখেও প্রশ্নবোধক চিহ্ন আটকে রইল।আমার বিয়ে ভাইয়ার জন্য ভেঙেছে কিন্তু কিভাবে?
“”আমি ভেঙেছি ওই বিয়ে।আমি জানতাম মা মিতুকে ততটা পছন্দ করে না।তাই তার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতাম কিন্তু আমি ওকে অন্যকারোর ও হতে দিতে পারতাম না।তাই সবার আড়ালেই আমি ওর বিয়ে ভেঙেছি।””
“”আর ওই বন্যা?””
“”মাআ বন্যা আসবে এই নিউজটা খবরে নিউজ পেপারে কতদিন আগে থেকে ছাপা হচ্ছিল।এটা একটা প্রাকৃতিক দূর্যোগ যা মিতু গ্রামে গেলেও আসতো না গেলেও আসতো।তবে কি জানো তো মা তোমার এই দৃষ্টিভঙ্গি আমি হাজার চেষ্টা করলেও বদলাতে পারবোনা যদি না তুমি নিজের থেকে বদলানোর চেষ্টা করো।””
বড় মা আরো কিছু বলতে যাবে কিন্তু তার আগে বড় আব্বু বলে উঠল
“”উফ কি হচ্ছে কি এখানে?এতসব কথা কেন হচ্ছে আমাকে বলবে দয়া করে।এতক্ষণ ধরে চুপ ছিলাম কিন্তু আর নয়।বন্ধ করো এসব।আর মিতু তুমি যা করেছ তা অবশ্যই ভুল ছিল।আর ভুলের শাস্তি তোমাকে পেতেই।আর সে শাস্তি হিসেবে তোমাকে আবার আমার ছেলেকেই বিয়ে করতে হবে।””
বড় আব্বুর কথায় আমি চমকে উঠলাম।
“”আমার ছেলে তোমাকে ভালোবাসে।তোমার সাথেই সে সুখে থাকবে।আর একজন বাবার এর থেকে বড় পাওয়া আর কি থাকতে পারে?বিয়ে আবার হবে।ধুমধাম করে হবে।কি বলিস রাজ্জাক।
বলেই বাবার কাঁধে হাত রাখল বড় আব্বু।বাবার চোখ ছলছল করছে।তার সাথে আমারো।
.
.
.
?
প্রায় এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বারের মতো আমাদের বিয়ে টা হলো।তবে এই বিয়েটা পরিবারের সম্মতিতে।ধুমধাম করে।একদম আমার স্বপ্নের মতো করেই পেয়েছি আমি আমার ভালোবাসা কে।কিন্তু এই কয়দিনে আরমান ভাই আমার সাথে তেমন কোনো প্রয়োজন ছাড়া কথাই বলেনি।হয়তো এখনো অভিমান করে আছে আমার ওপর।বড় মাও কেমন ভারী ভারী।হয়তো আমায় মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু যেই কাজটা এতদিন ধরে হয়নি সেটা এত সহজে কি হতে পারে?তারপরও হয়তো নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করছে।আমি এই মূহুর্তে লম্বা ঘোমটা টেনে আরমান ভাইয়ের ঘরে বসে আছি তার অপেক্ষায়।কিন্তু তার আসার এখনো কোন নাম গন্ধ নেই।নিশ্চয়ই বাইরে তার বন্ধুরা তাকে আটকেছে।বেচারার হাল বোধহয় আজ তারা বেহাল করে দিয়েছে।ভাইয়ার বেচারা মার্কা মুখটা ভাবতেই বেশ হাসি পাচ্ছে আমার।আনমনে তার কথা ভেবে হাসছি ঠিক তখনই দরজা খোলার শব্দ কানে এলো।বুঝলাম ভাইয়া এসেছে।আমি উঠে তাকে সালাম করতে যাবো তার আগেই ভাইয়ে সরে গেল।আমি অবাক চোখে তার দিকে তাকাতেই সে অন্যদিকে মুখ করে বলল
“”অনেক রাত হয়েছে শুয়ে পর।””
কথাটা বলেই ও বারান্দায় চলে গেল।তার এমন কথায় আমার ভীষন কান্না পাচ্ছে।ভাইয়া কি তাহলে আর কোনোদিন ও আমার সাথে কথা বলবে না।আমার একটা ভুলের জন্য আমায় এতবড় শাস্তি দেবে ও।ধুর নিকুচি করেছে তার শাস্তির।মানি না আমি কোনো শাস্তি টাস্তি।আজ তো তাঁকে আমার সাথে কথা বলতেই হবে।দেখি কি করে কথা না বলে থাকে।আমি আমার ভারী শাড়িটা দুই হাতে উঁচু করে ধরে বারান্দার দিকে অগ্রসর হলাম।আরমান ভাই উল্টো ঘুরে ব্যস্ত নগর দেখতে দেখতে সিগারেটে ধোঁয়া ওড়াচ্ছে।ও মাঝে মাঝেই স্মোক করত।আমি সেটাকে পোরোয়া না করে সোজা তার সামনে গিয়ে রেলিংয়ে ঠেস দিয়ে দাড়ালাম।আমাকে হঠাৎ ই তার সামনে আসতে দেখে ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে অন্যদিকে যাবে তার আগেই আমি আবার তার সামনে গিয়ে তার পথ আটকালাম।এবার হয়তো আরমান ভাই কিছুটা বিরক্ত হলো ভ্রু কুচকানোর সাথে সাথে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে এককদম আমার দিকে এগিয়ে এসে কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো।তার এগিয়ে আসাতে আমি কিছুটা ভয় পেয়ে পেছনে ঝুঁকে গেলাম।যা রাগ যদি চড় টর মেরে বসে তখন।কিন্তু আরমান ভাই কিছু না বলেই আবার সেখান চলে আসবে তখনই আমি তার ডান হাত চেপে ধরলাম।ভাইয়া এবার প্রচন্ড মাত্রায় রেগেই আমার দিকে এগিয়ে আসতে গেল কিন্তু তার আগেই আমি তার হাত আমার পেটের ওপর রাখলাম।আমার এমন কাজে ও কিছুটা অবাক চোখেই আমার দিকে তাকালো।
“”তুমি যদি আমার সাথে কথা না বলো তাহলে কিন্তু আমরা তোমার ওপর ভীষন অভিমান করবো।””
কথাটা মুখ ফুলিয়ে তার দিকে তাকালাম।যদিও নিজের চেহারায় ইনোসেন্ট লুক নিয়ে ছিলাম তারপরও আমার বুকের ভেতরে একপ্রকার তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল।আমায় কথায় তার অনুভুতিটা কি করকম হবে তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে আমি আরমান ভাইয়ের দিকে তাকালাম।আরমান ভাই নিজের চোখে এক সাগর বিস্ময় নিয়ে একবার আমার দিকে র একবার আমার হাতের দিকে তাকাচ্ছে।আমি ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি আর চোখ এত্ত গুলো আগ্রহ নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি।তার অনুভুতি টা জানার জন্য।আরমান ভাই জিহ্বা দিয়ে নিজের ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে অন্যদিকে তাকালো।হয়তো নিজের চোখের জল টা আড়াল করার জন্য।কিন্তু তার চোখের ছলছল দৃষ্টি টাতো অনেক আগেই আমার কাছে ধরা পরেছে।ভাইয়া দুবার জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে আবার আমার দিকে তাকালো।তারপর কাপা কাঁপা গলায় বলে উঠল
“”ইউ নো হোয়াট?আজ হয়তো এই প্রথম কারো বাসর যে কি না শাসর রাতেই জানতে পারছে সে বাবা হতে চলেছে।””
তার আবেগ পূর্ণ এমন কথায় আমার ভেতর টা কেপে উঠল।তার ছলছল দৃষ্টি আজ আমায় জানান দিচ্ছে আমি কতটা ভাগ্যবতী।আরমান হাঁটু গেড়ে বসে আমার পেটে আলতো করে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে আবার উঠে দাঁড়িয়ে হঠাৎ করেই আমায় জড়িয়ে ধরল।
“”ভালোবাসি মিতু।খুব খুব খুব বেশিই ভালোবাসি তোকে।তুই তো আমার জীবনে এন্জেল হয়ে এলি রে।””
এন্জেল আর আমি?আমি ও কি কারো জীবনের এন্জেল হতে পারি?হ্যা!পারি!কেন পারিনা?আমি এন্জেল!আরমান ভাইয়ের এন্জেল।
এই থুরি কি বলছি আমি?নিজের স্বামীকে ভাই বলে সম্বোধন করছি।কিন্তু যদি ভাই না বলি তাহলে কি বলে ডাকবো?নাম ধরে?এই না না?ও আমার কত বড়!নাম ধরে ডাকলে কেমন জানি দেখায়।তাহলে কি বলবো?””ও গো শুনছো””ইসস কি লজ্জা গো।নিজের লজ্জা লুকোতে আমি তার বুকেই নিজের মাথা গুজে দিলাম।কারণ লজ্জার উৎপত্তি যেখান থেকে তার নিঃশ্বেস ও যে সেখানেই।
বেঁচে থাক এভাবেই হাজারো ভালোবাসা এই সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পেরিয়ে।।।।
সমাপ্তি…..

নেশা তুই আমার Part:12

0

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part:12

প্রায় ভোর রাত।আমি আরমান ভাইয়ের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছি।আর ও আমায় এক হাতে জড়িয়ে বেঘোরে ঘুমোচ্ছে।ঘুমের মাঝেও আমায় জড়িয়ে রেখেছে যেন ছেড়ে দিলেই কোথাও পালিয়ে যাবো।কথাটা ভাবতেই আমার ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠল।আমি মাথা তুলে তার দিকে তাকালাম।ইসস কি মায়া এই মুখে।ঘুমিয়ে থেকে যেন এই মায়া আরো বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।আমি তার গালের খোঁচা খোচা দাড়ি গুলোতে আলতো করে হাত ছুঁইয়ে দিয়ে আবার তার বুকে মাথা রাখলাম।কতদিনের লোভ ছিল এই দাড়ি গুলো ছুয়ে দেয়ার।আজ তা পূরণ হলো।ফজলের আযানের ধ্বনিতে আমি আরমান ভাইয়ের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে উঠে বসলাম
চুল গুলো হাত খোঁপা করতে করতে কাবার্ড থেকে নিজের ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালাম।চোখ গুলো ভীষন জ্বালা করছে।হয়তো সারা রাত ঘুম না আসার কারনে।আসলে আমি ঘুমোতেও চাই নি।আরমান ভাইয়ে সাথে কাটানো প্রত্যেকটা মূহুর্ত কে শুধু অনুভব করতে চেয়েছি।ঘুমিয়ে পরে এই রাতের একটা ছোট মূহুর্ত ও আমি মিস করতে চাই নি।এই মূহুর্ত গুলোকে নিয়েই তো বাকি জীবনটা কাটাতে হবে?আচ্ছা আমি কি পারবো তাকে ছাড়া থাকতে।নাহ্ পারতে আমাকে হবেই আরমান ভাইয়ের জন্য হলেও আমাকে পারতে হবে।তার ভালোর জন্য আমাকে সবকিছুই পারতে হবে।একটা বুক ফুলানো দীর্ঘশ্বাস ফেলে শাওয়ার শেষে ওজু করে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলাম।ফজরের নামাজটা কাজা করলাম।নামায শেষে জায়নামাজ গুছিয়ে রেখে আরমান ভাই একগাদা বই থাকা টেবিলের কাছে গেলাম।একটা নোট পাতার মধ্য পাতা ছিঁড়ে ওটাতে লিখতে বসলাম।লেখা ততটাও ভালো না।ভাঙা ভাঙা হাতা বাকা বাকা অক্ষরে মনের আসছিল তাই লিখে যাচ্ছিলাম।আজ এই লেখাটা আমাদের জীবন বদলে দেবে।এই চিঠিটাই আরমান ভাই আর আমার দুজনের পথ আলাদা করে দেবে।আচ্ছা সামান্য একটা চিঠির ওপর ভিত্তি করে কি ভাইয়া আমার থেকে দূরে সরে যাবে?একবারের জন্যেও খোজার চেষ্টাও করবে না?সে যাই করুক না কেন ও আমি তো চাই ভাইয়া আমায় ভুলে যাক।নিজের জীবন নিজের মতো করে সাজিয়ে নিক।আমার মতো একটা পোড়া কপালির জন্য ও কেন নিজের জীবনে সর্বনাশ ডেকে আনবে।আর আমিই বা কি করে হতে দেই এটা।ভাইয়ার ভালোর জন্য আমাকে তার জীবন থেকে দূরে যেতেই হবে।অনেক দূরে যেতে হবে।
চিঠিটা লেখা শেষ করে কাগজটা ভাঁজ করে বিছানার পাশের টেবিলে ওয়েট চাপা রেখে দিলাম।তারপর নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র নিয়ে বেরিয়ে পরলাম ঘর থেকে।আরমান ভাইয়ের জীবন থেকে অনেক দূরে সরে যাওয়ার জন্য।সারা জীবনের জন্য!!!!!!!!!!!!!!
.
.
.
.
.
.
?
আজ এগারো দিন আমি ওই বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছি।এখানে চট্টগ্রামে বসবাসরত এক বন্ধু টিয়ার বাড়িতে উঠেছিলাম।তার মা এক এনজিও মেম্বার।আমি তাঁদের সাথে কথা বলেই এনজিও তে একটা কাজের কথা বলি।যেহেতু নিজের এডুকেশনের সকল কাগজ পত্র সাথে নিয়েই এসেছিলাম তাই কাজটা পেতে ততটা বেগ পেতে হলো না।কিন্তু আমার অতীত শুনে টিয়ার মা আমার দিকে এক অন্যরকম নজরে তাকানো শুরু করলেন।সেই নজর খুব সহজেই পরে নেওয়া যায়।নিজের লাভের জন্য তো আর অন্যের ক্ষতি করতে পারি না।তাই হাতে যতটুকু টাকা ছিল তার কিছু টাকা দিয়ে একটা ফ্লাট ভাড়া নিয়েছিলাম।আজ আমি পুরো।আর আমার জন্য অন্য কারো কোনো ক্ষতি হবে না কারো না।
?
রাত নয় ল্যম্পোস্টের আলোয় রাস্তার ধার ঘেঁষে আনমনে হেঁটে চলেছি।এনজিওর এ একটা কাজে এলাকা এলাকা গিয়ে মিটিংয়ের মাধ্যেমে সামাজের মানুষদের সামাজিক গুরুপ্ত পূর্ন বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিতে দিতে অনেকটা দেরী হয়ে গেছে।মেইন রোড দিয়েই এলাম।চাইলে রিকশা ভাড়াও নিতে পারতাম।কিন্তু আমি এখনো আমার কাজের মাইনে পাইনি।আর আমার কাছে যতটুকু টাকা আছে সেটা দিয়ে আমায় পুরো মাস চলতে হবে।তাই টাকা বাঁচানোর ছোট্ট একটা পদক্ষেপ মাত্র এটা।ল্যাম্পোস্টের মৃদু আলো ছড়াচ্ছে পুরো রাস্তায়।আর আমি একাই একটা মেয়ে হেঁটে চলেছি এক ধোঁয়াশা জীবনে উদ্দেশ্য।এই মূহুর্তে বাড়ির লোকেদের কথা খুব মনে পরছে আমার।আচ্ছা বাবা মা যখন আমায় বাড়িতে খুঁজে পায়নি তখন তাঁদের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল?নিশ্চয়ই খুব কেদেছে।আর?আর আরমান ভাই?সে কি আমায় খুঁজেছে?নাকি চিঠিটাকেই মান্য দিয়ে নিজের নতুন করে জীবন শুরু করেছে।এই এগারো দিনেই কি ও আমায় ভুলে গেছে।আচ্ছা আমার কথা মনে করে ও?নাকি সবকিছু আবেগ ভেবে উড়িয়ে দিয়েছে?চোখের কোণ টা ঝাপসা হয়ে এলো ডান হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখটা মুছতেই পেছনে খুব দ্রুত চলন্ত গাড়ির শব্দ পেলাম।ভয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখি গাড়িটা খুব দ্রুত আমার দিকে এগিয়ে আসছে।মূহুর্তেই মনে হলো এখানেই আমার থমকে যাবে।নিজের অজান্তেই নিজের হাত কে সাহারা ভেবে ডান হাত মুখের সামনে নিয়ে এসেছে বা চার চেষ্টা করলাম।কিন্তু একি?হঠাৎ ই মনে হলো গাড়িটা আমার খুব কাছে এসে থেমে গেছে।হাত সরিয়ে সামনে তাকাতে যাবো তার আগেই কারো হাত খুব শক্ত করে আমায় গলা চেপে ধরে আমায় পিছিয়ে নিয়ে যেতে যেতে কিছু একটার সাথে আমার পিঠ ঠেকালো।ঘটনা খুব দ্রুত ঘটে যাওয়ার জন্য আমার মাথায় কিছুই ঘুকলো না।নিজের হাত পেছনে নিয়ে গেলে বুঝতে পারলাম আমি গাছের সাথে আটকেছি।এবার আমি গাছ থেকে হাত সরিয়ে গলায় থাকা হাতটা ধরে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলাম।এই যেন আমার দম বন্ধ হয়ে যাবে।আমি বা চার জন্য ছটফট করতে করতে সামনের দিকে তাকাতেই থমকে গেলাম।ল্যাম্পোস্টের আলো সাথে গাড়ির হেটলাইটের আলোয় আরমান ভাইয়ের ভয়ঙ্কর মুখটা আরো বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে।আমি আমার আমার গলায় থাকা হাতটার কথা ভুলে তার দিকে অবাক চোখে তাকালো ইসস কি অবস্থা করেছে নিজের চেহারা টার।উস্কোখুস্কো চুল,খোঁচা খোঁচা দাড়ি গুলোও হালকা বেড়ে গেছে।চোখের লাল আভা টা যেন আমায় জ্বালিয়ে দিচ্ছে।ভাইয়া এবার আমার গলায় হাত রেখেই আমার দিকে কিছুটা এগিয়ে এলো।আমার চোখে চোখ রেখে বলল
“”সাহস হলো কি করে তোর আমার থেকে দূরে পালাবার কথা ভাবতে?””
আরমান ভাইয়ের মুখ থেকে এক উদ্ভট গন্ধ বেরোচ্ছে।বুঝলাম ভাইয়া ড্রিঙ্কস করেছে।আর তাই এতটা কন্ট্রোললেস হয়ে গেছে।আমায় চুপ থাকতে দেখে ভাইয়া আরো কঠিন গলায় বলে উঠল
“”যদি দূরেই চলে যাবি তাহলে সেই রাতে আমার সাথে বিছানায় শুয়েছিলি কেন?নিজের শরীরের খিদে মেটানোর জন্য।””
তার কথায় এবার আমি ঘেন্নায় মুখ সরিয়ে নিলাম।অস্পষ্ট কন্ঠে কিছু বলতে যাবো তার আগেই আরমান ভাই আলমরো শক্ত করে আমার গলা চেপে ধরে বলল
“”চুপ একদম চুপ।একটা শব্দ গলা থেকে বের করলে গলা চেপে মেরে এখানেই পুঁতে রাখবো।কি ভেবেছিস কি তুই আমি তোকে খুজে পাবো না?এই পৃথিবীর যেই কোণাতেই লুকিয়ে থাক না কেন তোকে আমি খুজে বের করবই।আমার থেকে পালোনো এতটা সহজ নয়।খুঁজে তো আমি তোকে সেই কবেই পেয়েছি।কিন্তু প্রচন্ড রকমের রাগ আমাকে জেকে বসেছিল।ভেবেছিলাম যখন তুই আমার থেকে দূরে গিয়ে নতুন জীবন শুরু করতে চাস তাহলে আমি কেন পারবো না?ভুলতে চেয়েছিলাম তোকে।তোকে ভোলার জন্য সব ধরনের মাদকদ্রব্য সেবন করে মাদকাসক্ত হয়েছি।কিন্তু তোর নেশা সবকিছু কে হার মানিয়ে দিয়েছে।একটা মূহুর্তও তোকে ভুলতে দেয় নি আমায়।#নেশা_তুই_আমার।তোর নেশাতে নেশাগ্রস্ত আমি।তোকে ছাড়া থাকা অসম্ভব।””
আরমান ভাই কথা গুলো বলতে বলতেই আমার গলা ছেড়ে গালো বুড়ো আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে লাগল।নিজের ঠোট আমার ঠোটের একদম কাছে নিয়ে এলো।তার এমন আচরচণে আমার বুক দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।ভীষন কান্না পাচ্ছে আমার।কাঁদতে ইচ্ছে করেছে।তার বুকে মাথা রেখে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু আমার সব ইচ্ছে কে ধূলিচাপা দিয়ে ভাইয়া হঠাৎ ই আমার গাল ছেড়ে হাত ধরে টানতে টানতে গাড়ির দিকে নিয়ে যেতে লাগল।
চলবে❤

নেশা তুই আমার Part:11

0

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part:11

পাঁচ কালেমা তিনবার কবুল আর একশো এক টাকা দেনমোহরে আমাদের বিয়েটা সম্পন্ন হলো।এই মূহুর্তে নিজেকে পৃথিবীর সবথেকে বড় স্বার্থ পর বলে মনে হচ্ছে যে নিজের সুখের জন্য বাবা মাকে এভাবে ঠোকালো।বাড়িতে গিয়ে কিভাবে সবার সামনে দাঁড়াবো আমি?কিভাবে তাঁদের জানাবো আরমান ভাইকে পাওয়ার লোভে আমি তাঁদের শখ আহ্লাদকে জলাঞ্জলি দিয়ে এসেছি।তারা কি সহ্য করতে পারবে এটা।বাবা মা কে কি করে বলব যে তাঁদের মেয়ে এতটা স্বার্থপর হয়ে গেছে।খুব কান্না পাচ্ছে আমার খুব।আমার সাথেই কেন এমন হয় আমি বঝিনা।যেখানে আরমান ভাইকে দিয়ে করার খুশিতে আমার লাফানো উচিত সেখানে আমি কি না বাবা মাকে কি জবাব দেব সেই ভাবনায় বিভোর।আমার ভাবনার মাঝেই আরমান ভাই আমায় কোলে তুলে নিলেন।বুঝতে পেরেছি।এই লোক আজ আমায় আর হাঁটতেই দেবে না।সেই কখন থেকে শুধু কোলেই চড়ে বেড়াচ্ছি ছোট বাচ্চাদের মতো।আমি কি হাঁটতে পারিনা নাকি?আমি অসহায় দৃষ্টিতে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।
“”ভাইয়া প্লিজ নিচে নামাও আমায় বাড়ির লোক এইভাবে দেখলে আমায় অসস্থিতে পরতে হলে প্লিজ।””
আমার মিনতির সুর ও বুঝি তার কান অবধি গেল না।সে নিজের মতোই হেটে চলেছে।কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়িতে ঢুকতেই দেখলাম সকলে এখনো বসার ঘরেই বসে আছে।সবার চোখে মুখে চিন্তার ছাপ।নিশ্চয়ই আমাদের জন্যই চিন্তা করছিলেন।কিন্তু মূহুর্তেই আরমান ভাইয়ের কোলে আমায় দেখে এই চিন্তার ছাপ টা বদলে গিয়ে সবাই অবাক চোখে আমাদের দিকে তাকালো।আরমান ভাই সবার সামনে এসে আমায় কোল থেকে নামিয়ে দিল।আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি।আমাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বড় আব্বু বলে উঠল
“”এটা কি রকম আচরণ আরমান।এত রাতে কোথায় গিয়েছিলে তোমরা?””
“”বিয়ে করতে।””
আরমান ভাইয়ের এমন সোজাসাপটা কথায় আমার হার্ট ফেল হওয়ার জোগাড়।এই লোকের কি একটুও ভয় করছে না।
“”কি বলছিস কি আরমান?””
“”যা বলছি সত্যি বলছি।””
“”এসবের মানে কি?পাগল হয়ে গেছিস তুই?এখানে তোর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে আর তুই কি না মিতু বিয়ে করে নিয়ে ঘরে ঢুকলি?আমাদের এক বারো জানানোর প্রয়োজন ও বোধ করলি না?””
“”বাবা বিয়ে টা ঠিক সময় যখন তোমরা আমার মতামত নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করনি তখন আমিও বিয়ে করার সময় তোমাদের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করলাম না।””
আরমান ভাইয়ের এই কথাটার মাঝেই মা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো
“”এসব কি শুনছি কি মিতু?তুই এতোটা নিচে নেমে গেলি।এরকম টা করতে লজ্জা হলো না।নিজের ভাই সমতুল্য কাজিন কে তুই বিয়ে করে নিলি।তোকে আমি…
বলেই আমাকে মারার জন্য হাত তুলতেই আরমান ভাই আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।মায়ের দেওয়া চড় টা তার বাহুতে গিয়ে লাগল।
“”আরমান সরে দাঁড়া তুই।আজ আমি এই মেয়েকে মেরেই ফেলবো।””
“”কাকিমা ভুলে যেও না তুমি তার গায়ে হাত তুলতে যাচ্ছো সে এখন আমার বিয়ে করা স্ত্রী।আর আমার স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার অধিকার আমি কাউকে দেইনি।””
“”আমি ওর মা।আমার অস্বীকার আছে ওর ওপর।””
“”কিন্তু ওর স্বামী।আর স্ত্রীর ওপর সর্ব প্রথম অধিকার তার স্বামির থাকে…””
কথাটা শেষ হতে না হতেই আরমান ভাইয়ের গালে খুব জোড়ে একটা চড় বসল।চড়টা আর কেউ নয় বড় মা মেরেছে।
“”নাটক করছিস এখানে?সার্কাস চলছে?আরে তুই যদি একটা রাস্তার পাগল কে বিয়ে করে নিয়ে আসতি তাঁকেও আমি সসম্মানে বরন করে ঘরে তুলতাম।কিন্তু এই অপয়া মেয়েকে কক্ষনো আমি এই বাড়ির বউ হিসেবে মানবো না।এই মেয়ে তোর জীবন ধ্বংস করে দেবে।সর্বনাশী এই মেয়ে।যার জীবনেই যাক না কেন তার জীবন ই ধ্বংস করে দেয়।””
“”মা ভুলে যেও না তুমি যার সম্পর্কে কথাগুলো বলছো সে এখন আমার স্ত্রী?””
“”নিকুচি করেছে তোর স্ত্রী।মানিনা এই অপয়া কে তোর স্ত্রী হিসেবে।তোকে আমি বারবার বলেছিলাম এই মেয়ের থেকে দূরে থাক দূরে থাক।এই মেয়ে তোর জীবন ধ্বংস করে দেবে।জন্মের পর থেকে শুধু ধ্বংসই করে এসেছে।জন্মের পরপরেই নিজের বাপের ব্যবসাটা খেল।সাথে দুই বছরের জেল ও হলো।তারপরেই নিজের মা কে বান্দি বানালো।সেদিন ওই পীর বাবাও এই মেয়ের হাত গণনা করে বলেছিলেন এর জীবনের সাথে যেই জড়াবে তার জীবনে ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই হবে না।আর সেই কথা সত্যিই প্রমাণ হলো যখন এই গ্রামে তার নানাথ বাড়ি পা রাখতে না রাখতেই বন্যায় তাঁদের তাঁদের ঘর বাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গেল।আর কিছুদিন আগেও দু দু বার বিয়ে ভাঙলো এই মেয়ের।আর কি প্রমাণ চাই এই মেয়ের অপয়া হবার।কতবার আয়শা কে বললাম এই মেয়েকে দূরে কোথাও রেখে আসতে কিন্তু ওতো কোনো কথাই শুনল না আমার।বরঞ্চ এখন আমার ছেলের ঘাড়ে এই মেয়ে কে চাপাতে চাইছে।কিন্তু মা হয়ে নিজের ছেলের এতো বড় ক্ষতি আমি কিছুতেই হতে দেব না।এই সর্বনাশী কে আমি কিছুতে আমৃর ছেলের জীবনে আসতে দেব না….””
বড় মা একনাগাড়ে কথা গুলো বলেই যাচ্ছে।কিন্তু আমার আর শোনার ক্ষমতা নেই।সব কিছু কেমন যেন আবছা আবছা লাগছে।চোখের জল টাও অবাধ্য হয়ে এসেছে।আমি অপয়া!সর্বনাশী।আজ বাবা মার এই অবস্থার জন্য আমি দায়ী।শুনেছিলাম আমি ছোট থাকতেই মায়ের একটা এক্সিডেন্টে মা দ্বিতীয় বারের মতো মা হওয়ার ক্ষমতা হারায় কিন্তু সেটা যে আমি দায়ী সেটা কখনোই বুঝতে পারিনি।শুনেছিলাম
বাবা খূব শখ করে আমার নামে একটা কোম্পানি খুলেছিলেন কিন্তু কারো দেওয়া ধোকার কারনে বাবার কোম্পানি ডুবে যায়।য
সাথে দুই বছরের জেল ও হয়।এরপর আর বাবা না নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে পেরেছিল আর নাই কোথাও জব পেয়েছিল।তখন থেকেই বড় আব্বুর দয়ায় আমরা বেঁচে আছি।সব কিছু আমার জন্য হয়েছে।আমার পোড়া কপালের জন্য।হতে পারে দেখার দৃষ্টি ভঙ্গি আলাদা কিন্তু যা বলেছে তা তো সব সত্যিই বলেছে।আমি নানু বাড়ি যাওয়ার পরের দিন ই তাদের ঘর বাড়ি বন্যায় ভেসে যায় তার মানে বড় মা ভুল কিছু বলেনি।আমি অপয়া সর্বনাশী।আমার জীবনের সাথে যেই জড়াবে তার জীবনই ধ্বংস হয়ে যাবে।নিজের অজান্তেই যে কখনো কখন এক পা দুই পা করে ছাদে চলে এসেছি বুঝতেই পারেনি।হাত পা অবশ হয়ে আসছে।দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি টুকুও নেই।ছাদের মাঝখানেই হাঁটু গেড়ে বসে পরলাম।কাঁদতে ইচ্ছে করছে।চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে আমার হচ্ছে।এতদিন আমার জন্য সবার জীবন নষ্ট হয়ে এসেছে।আর এখন আরমান ভাইয়ের জীবন ও আমার সাথে গেছে।তার কিছু ক্ষতি হয়ে যায় তখন।না না তার কিছু হয়ে গেলে যে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না।আমি কি করে তার ক্ষতির কারন হতে পারি।ভালোবাসি তাকে।নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি।তার জন্য সব কিছু করতে পারি সবকিছু।
হঠাৎ ই মনে হলো কেউ আমার পাশে হাঁটু গেড়ে বসল।আমার কাঁধে হাত রাখতেই আমি ঘুরে আরমান ভাইকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলাম।নিজের মনটাকে হালকা করা খুব জরুরি এখন আমার।ভাইয়া আমায় জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলাতে লাগল।হয়তো কিছু বলতে যাবে কিন্তু তার কিছু বলার আগেই আমি বলে উঠলাম
“”আজ আমায় নিজের করে নেবে আরমান ভাই?””
আমার কথায় আমার মাথায় বুলানো তার হাত থমকে গেল।আমি এমন কিছু বলবো হয়তো আশা করেনি।কিন্তু আমি চাই আজ তাঁকে নিজের করে পেতে।নিজের সব কষ্ট কে ধুয়ে মুছে নিঙরে ফেলতে।আরমান ভাই প্রায় অনেক্ষন ধরেই নিরবতা পালন করছে।আর আমি তার বুকে মাথা রেখে তার বুকের ধুকপুক শব্দ টা শুনছি।আজ বুকে শুধু হতাশাই ধরা দিচ্ছে।আজ আরমান ভাইয়ের এই হতাশার কারণটাও আমি।সবকিছুর জন্য শুধু আমি দায়ী শুধুই আমি।আমার এই ভাবনায় বিচ্ছেদ ঘটিয়ে আরমান ভাই হঠাৎ করেই আমায় কোলে তুলে নিচের দিকে যাওয়া শুরু করলো।আর আমি চুপচাপ তার বুকে মাথা রেখে বুকের হতাশা গুলো গুনছি।কারণ আমি জানি আজ এই মূহুর্তটা শুধু তার আর আমার।এরপর কি হবে তা কালকের ওপরেই নির্ভর করছে…
চলবে❤

নেশা তুই আমার Part:10

0

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part:10
?
বসার ঘরে বসে থাকা সকলে আমাদের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।সকলের এমন চাহনি আমায় বেশ অসস্থিতে ফেলছে।যার কারনে আমি বারবার নিচু গলায় ভাইয়াকে আমায় নিচে নামাতে বলছি।কিন্তু ভাইয়ার তাতে কোনো হেলদুল হচ্ছে না।ও নিজের মতোই আমায় কোলে নিয়ে সবার সামনে দিয়ে বাড়ির বাইরে চলে এলো।পেছন থেকে বাবা বড় আব্বু বড় আম্মু অনেক ডাকার পরেও সে শুনল না।আমি ভেবে পাচ্ছিনা কি হচ্ছে আমার সাথে।কি করতে চাইছে ভাইয়া?আর কোথায়ই বা যাচ্ছি আমরা?আমার সকল ভাবনার মাঝেই ভাইয়া আমাকে গাড়ির সামনের সিটে বসিয়ে সিটবেল্ট লাগিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল।আর ও নিজে ড্রাইভিং সিটে এসে বসল।
“”কোথায় যাচ্ছি আমরা?””
চেহারায় রাগী ভাব এনে কথাটা বললাম।কিন্তু তাতে কোনো কাজ হলো বলে মনে হলো না।ভাইয়া স্বাভাবিক ভাবেই নিজের পকেট থেকে ফোন বের করে ওটাতে মনোযোগ দিল।এবার আমার মাথা একশো ডিগ্রি ঘুরে গেল।এখানে আমি মরছি আমার জ্বালায় আর উনি মনের সুখে ফোন টিপতে লাগলেন।রাগের মাথায় তার হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিতে চাইলেই ভাইয়া হাত সরিয়ে আমার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকালো।আমার দিকে তাকিয়ে থেকেই হাতের ফোনটা পকেটে পুরে এবার গাড়ি চালাতে শুরু করল।এবার আমার টনক নড়ে উঠল।
“”এই এই গাড়ি থামাও।কোথায় যাচ্ছি আমরা?কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আমায়?আমি কোথাও যাবো না তোমার সাথে।শুনেছ তুমি আমি তোমার সাথে কোথাও যাবোনা।গাড়ি থামাও বলছি।””
একনাগাড়ে বকবক করতে করতে তার স্টেয়ারিং এ থাকা হাত ধরে টানাটানি করছী।আর ভাইয়া একদম ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে।
বকবক করতে করতেই হঠাৎই আমার মনে হলো গাড়ি থেমে গেছে।আমি ভাইয়ার হাত ধরে থাকা অবস্থাতেই আশেপাশে তাকালাম।হ্যা গাড়ি থেমে গেছে।তাহলে কি ভাইয়া আমার বকবকানিতে রাগ করেই গাড়ি থামালো।এবার আমার ভয় লাগা শুরু করল।ছোট খাটো একটা ঢোক গিলে ভাইয়ার দিকে তাকাতেই দেখি ভাইয়া গাড়ি থেকে নামছে।
“”আরে কোথায় যাচ্ছো?
আমার প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়েই ভাইয়া গাড়ি থেকে নেমে আমার পাশে এসে গ্ড়ির দরজা খুলে সটান আমার কোলে তুলে নিল।ভাইয়ার এমন বিহেভিয়ারে সত্যিই আমি অবাক হচ্ছি।আসলেই কি করতে চাইছে ভাইয়া?আর আমরা কোথায়ই বা যাচ্ছি।আমি জায়গা টা চেনার জন্য আশেপাশে তাকালাম।হঠাৎ ই আমার চোখ সামনের অফিসে টাঙানো বোর্ডের ওপর আটকে গেল।সাথে সাথেই বুকটা ধড়াস করে উঠল।এ তো ম্যারেজ রেজিস্ট্রি অফিস।কিন্তু ভাইয়া আমায় এখানে কেন নিয়ে এলো।না না আর এই লোককে বিশ্বাস করা যাবে না।এর মতলব আমার কাছে ঠিক লাগছে না।তাই নিজের শরীরের সর্ব শক্তি দিয়ে নিজের হাত পা ছোড়াছুড়ি শুরু করে দিলাম।
“”ছাড়ো আমায়।আমি কোথাও যাবো না।আমায় এখানে কেন নিয়ে এসেছো?আমি যাবো না তোমার সাথে ছাড়ো বলছি আমায়।
হাত পা ছোড়াছুড়ি করেও কোনো লাভ হলো না।ভাইয়া খুব শক্ত ভাবে আমায় ধরে অফিসের ভেতরে ঢুকল।ও ভেতরে ঢুকতেই দুজন ছেলে ওর সাথে এসে দাড়ালো।আমি এই দুজন ছেলেকে চিনি।আরমান ভাইয়ের বেস্ট ফ্রেন্ড রনি আর পিয়াস।ছোট থেকে খুব ভালো বন্ধু এরা।ওরা কাছে আসতেই আরমান ভাই তাঁদের উদ্দেশ্যে বলে উঠল।
“”সব রেডী তো?””
“”হ্যা সব এরেন্জম্যান্ট হয়ে গেছে।আরে আমি কাজী সাহেব কেও রেডী করে রেখে দিয়েছি।শুধু তোদের আসার অপেক্ষা ছিল।””
রনি ভাইয়ার কথা শুনে আমার ভয় আরো দ্বিগুন বেড়ে গেল।একটা ঢোক গিলে ভাইয়ার দিকে তাকালাম পিয়াস ভাইয়া আমায় আরমান ভাইয়ের কোলে দেখে দাঁত কেলিয়ে বলে উঠল
“”কি রে ভাই শেষমেশ ভাবী কে তুলে নিয়েই চলে এলি।””
“”ওতো কথা বাদ দে আর নিজেদের কাজে মন দে””
বলেই আমার একটা চেয়ারে বসিয়ে দিল।আমার সামনেই একজন উকিল কালো কোট পরে বসে আছে।ভাইয়া তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল।
“”কাগজ পত্র সব রেডী?””
“”হ্যা হ্যা শুধু সাইন টা করে দিলেই হয়ে যাবে।””
বলেই উকিল মহাশয় ভাইয়ার সামনে কিছু কাগজ আর আর একটা কলম এগিয়ে দিল।ভাইয়া কলম টা হাতে নিতেই আমি একটা ঢোক গিললাম।আজ তো ঢোক গিলে গিয়েই আমার পেট ভড়াতে হবে দেখছি।আরে আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম।এতো কিছুর মাঝে তো আমার ডিনার টাই হয় নি।আমিই হয়তো একাই একজন যে বিপদে পরলে খাওয়ার কথা মনে পরে।খাওয়ার কথা মনে পরতেই আমার প্রচন্ড রকম খিদে পেল।খিদেয় পেট চো চো করতে লাগল।কিন্তু নিজের খিদে টাকে এই মূহুর্তে দমন করে ভাইয়ার দিকে মনোযোগ দিলাম।ভাইয়া হাতে কাগজ নিয়ে সাথে সাথে সাইন করে দিল।তার সাথে রনি ভাই আর পিয়াস ভাই ও।বূঝলাম তারা সাক্ষী হিসেবে সাইন করল।এবার এলো আমার পালা।ভাইয়া আমার দিকে তাকাতেই আমার বুক ধক করে উঠল।অলরেডী আমার হাত পা কাপা কাপি শুরু হয়ে গেছে।কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।পালাবো নাকি?কিন্তু তার জন্যেও তো হাত পা চলার দরকার।আমার তো হাত পা কিছুই কাজ করছে না।ভয়াতুর দৃষ্টিতে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।ভাইয়ার আমার কাছেই এগিয়ে আসছে।আমার কাছে এসেই পেপার টা আমার সামনে তুলে ধরল।
“”সাইন কর।””
“”না আমি সাইন করবো না।””
বলেই আমি মুখ ঘুরিয়ে নিলাম।কি করে করবো সাইন?যতই আমি আরমান ভাইকে ভালোবাসি না কেন তবুও আমার জীবনে আমার বাবা মার প্রায়োরিটি টা অনেক বেশি।তাঁদের না জানিয়ে আমি কি করে বিয়ে করে নিতে পারি।আমি চাই আরমান ভাই কে বিয়ে করতে কিন্তু এভাবে নয়।পরিবারের সম্মতিতে বাবা মা কে সামনে রেখে বিয়েটা করতে চাই।মা বাবার ও তো কত ইচ্ছে আছে আমার বিয়ে নিয়ে।আমি কি করে তাঁদের এইভাবে ঠাকাতে পারি।আমার কান্না পাচ্ছে ভীষন কান্না পাচ্ছে।ভাইয়া যদি আমায় বিয়েই করতে চায় তো কথাটা সবার সামনে কেন বলল না। এইভাবে সবার আড়ালে বিয়ে করার মানে কি?এসব ভাবনার মাঝেই আমি অনুভব করলাম আমার চেয়ার দুলছে।হঠাৎ এমন হওয়ায় কিছুটা ভড়কে গেলাম।কিন্তু নিজেকে সামলে নিয়ে বুঝলাম ভাইয়া আমাকে তার দিকে ঘুরিয়ে দুই পাশে চেয়ারে হাতলে হাত রেখে একদম আমার মুখের কাছে মুখ এনে বলল
“”সাইন করবি নাকি আমি ওই মেয়েকে গিয়ে বিয়ে করে নেব?যার সাথে আমার বাবা মা আমার বিয়ে ঠিক করেছে।””
চলবে❤

নেশা তুই আমার Part:9

0

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part:9

“”তুই আমার ঘরে কি করছিস?””
আমার সেই চিরচেনা চমত্কার কন্ঠটা শুনে আমি চট করেই পিছু ফিরে তাকালাম।ভাইয়া টাওয়াল হাতে দাঁড়িয়ে আছে।হয়তো চোখ মুখের লাল আভা টা দূর করার জন্যই চোখে মুখে পানি দিয়েছে।আমার হাতে নিজের ডাইরীটা দেখে চোখ মুখ শক্ত করে ধমক দিয়ে উঠল
“”তুই জানিস না কারো অনুমতি ছাড়া তার ডাইরীতে হাত দিতে নেই।মিনিমাম এই কমনসেন্স টুকুও তোর নেই?””
ভাইয়া আমাকে বকেই যাচ্ছে।কিন্তু আমি তার কথা শোনার মতো অবস্থায় নেই।নিজের অজান্তেই হাত থেকে ডাইরীটা পরে যায়।নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না।দৌড়ে গিয়ে ভাইয়া বুকে ঝাঁপিয়ে পরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলাম।আজ এতো সুখ সুখ কেন লাগছে আমার?যেন পৃথিবীর সব সুখ এসে এই বুকে বাসা বেঁধেছে।আর আমি এই বুকের একমাত্র অধিকারিনী।সত্যিই আমি খুব ভাগ্যবতী।এমন ভালোবাসার মানুষ কজনই বা পায়।ভাইয়া হয়তো আমার এমন কাজে বুদ্ধিহীন হয়ে গেছে।হয়তো ভাবতে পারেনি আমি এমন কিছু করবো।এতটা সুখের মাঝেও আমি অনুভব করলাম ভাইয়া ধীরে ধীরে তার হাত তুলছে।হয়তো আমায় নিজের সাথে আরো গভীরে জড়িয়ে নেওয়ার জন্য।তাই আমি আরো শক্ত ভাবে তার বুকে মাথা গুজে দিলাম।এমন সময় বড় মা কন্ঠে কানে ভেসে এলো।বড়মার ডাক শুনে আমি ছিটকে দূরে সরে গেলাম।নিজের চোখ মুখ মুছে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলাম।কিন্তু ভাইয়া এখনো ওই ভাবেই দাঁড়িয়ে আছে।যেন এখনো তার ঘোর কাটে নি।কিছুক্ষণের মধ্যেই বড় মা ঘরের ভেতরে ঢুকল।
“”আরমান তাড়াতাড়ি রেডী হয়ে….””
আমাকে দেখেই বড় মা কথা বলা থামিয়ে দিল।আমি মাথা নিচু করে আছি।আর ভাবছি বড় মা যদি জিজ্ঞাসা করে আমি এখানে কি করছি তাহলে কি উত্তর দেব।কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে বড় মা আমাকে এড়িয়ে আরমান ভাইয়ের দিকে তাকালো।
“”আরমান তাড়াতাড়ি রেডী হয়ে নে আমরা বেরোবো।””
এবার মনে হয় ভাইয়ার ধ্যান ভাঙল।হালকা কেশে বলে উঠল
“”কোথায় যাওয়ার কথা বলছো।”
“”সেটা নাহয় গেলেই দেখতে পাবি এখন তাড়াতাড়ি রেডী হয়ে নে তো।সময় নেই””
“”আমি কোথাও যাচ্ছি না।””
“”আমি এখানে তোর কোনো মতামত নিতে আসিনি তোকে বলতে এসে।তুই যাচ্ছিস মানে যাচ্ছিস।আর কোনো কথা শুনতে চাই না আমি।””
বলেই বড় মা ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে ভাইয়া পা দিয়ে খুব জোরে বেডে লাথি মেরে চোখ মুখ শক্ত করে আমার দিকে তাকালো।আর আমি এই শব্দে আমি কেঁপে উঠলাম।বুঝলাম না বড়মা বাইরে যেতে বলেছে তা নিয়ে এতো রাগ করার কি আছে?সামান্য বাইরেই তো যেতে হবে।সে সব যাক আমি এবার মাথা নিচু করে ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম।রাগের মাথায় আবার আমাকেই না মেরে বসে।
?
রাত আটটা।বসার ঘরে বসে সবাই মিলে এক সাথে জবার সিরিয়াল দেখছি।দেখতে দেখতে বিরক্ত বোধটা চরম পর্যায়ে পৌছেছে।কিন্তু আমার মা এই জবার মারাত্মক ফ্যান।একটা এপিসোড ও মিস করে না।তার সাথে রিপিট ট্যালিকাস্ট তো আছেই।উফফ কিভাবে যে মায়ের ব্রেন এই জিনিসটা সহ্য করে কে জানে?তবে আমার টেনশন হচ্ছে ভাইয়াদের নিয়ে।এখন অবধি এলো না কেন তারা।সেই কখন বড় আব্বু বড় মা আমার বাবা আর ভাইয়া বেরিয়েছে কিন্তু এখন অবধি ফিরল না।কি করছে এতক্ষণ যাবৎ বাইরে।আমার ভাবনা শেষ হতে না হতেই দরজার কলিংবেল বেজে উঠল।আমি দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলাম।হ্যা ভাইয়ারাই এসেছে।দরজা খোলার সাথে সাথে ভাইয়া ভেতরে ঢুকে সোজা উপরে নিজের ঘরে চলে গেল।চোখে মুখে বেশ গাম্ভীর্যতা ফুটে উঠেছে।ভাইয়ার পিছু পিছু বাকি সবাই ভেতরে ঢুকল।বাবা বড় আব্বু বড় মা গিয়ে সোফায় বসতে আমি দৌড়ে রান্নাঘরে গেলাম ওদের জন্য পানি আনতে।পানির ট্রে টা নিয়ে তাঁদের কাছে যেতেই যেতেই বড় মা কথা টা কানে এলো।
“”যাক বাবা এতদিনে টেনশন ফ্রি হলাম।ছেলেটার বিয়েটা একে বার ফাইনাল করেই এসেছি।””
কথাটা শুনতেই আমি থমকে গেলাম।মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিল।কি বলছে কি বড় মা।তারমানে তারা ভাইয়ার জন্য মেয়ে দেখতে গিয়েছিল।ভাইয়া তাহলে বিয়ে করতে যাচ্ছে তাও আবার অন্যকাউকে।আমার হাত পা কাপাকাপি শুরু হয়ে গেছে।যেন এক্ষুনি হাতে গ্লাস গুলো পড়ে যাবে।
“”কি রে পানি নিয়ে আয় খুব পিপাসা পেয়েছে তো!””
বাবার কথায় আমার ধ্যান ভাঙলো।হাতে থাকা ট্রে তাঁদের সামনে ধরতেই তারা পানির গ্লাস তুলে নিল।শুধু বড় মা ছাড়া।আমি পানির ট্রে টা টেবিলের ওপর রেখে সবার পেছনে এসে দাড়ালাম।যেন কারো নজর আমার ওপর না পরে।সবাই ভাইয়া হবু বউ কে নিয়েই কথা বলছে।সে কতো সুন্দর,সে কত স্মার্ট।কিন্তু এসব শুনে যে আমার বুকটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে সেটা কারোর নজরে পরছে না।নিজেকে আর আটকাতে পারলাম না।সবার আড়াল হয়ে ওখান থেকে চলে এলাম।ভাইয়ার নামের সাথে জুড়ে দেওয়া অন্য মেয়ের নাম।এই জিনিস টা যেন আমার একদম ই সহ্য হচ্ছে না।মনের মধ্যে আবার হাজারো অভিযোগ জমা হলো ভাইয়ার বিরুদ্ধে।তাই ছাদে চলে এলাম।আজ আবার এই আকাশকে আমার অভিযোগ শুনতে হবে।কেন?কেন ভাইয়া আমার সাথে এমনটা করল?ভাইয়া তো ওখানে ছিল তাই না।তার সামনে সবাই তার বিয়ে ঠিক করল।অথচ সে কিছুই বলল না।হয়তো ওই মেয়ে খুব বেশিই সুন্দর।তাই তো আমার কথা ভুলেই গেছে ও।কান্না পাচ্ছে।ভীষন কান্না পাচ্ছে।আমি কি করে অন্যের সাথে ভাইয়াকে সহ্য করব?সামান্য নাম শুনতেই তো আমার বুক ফেটে যাচ্ছে।এখন কি করবো আমি?কান্না ছাড়া যে আর কিছুই অবশেষ রইল না আমার।
আপন মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে কেঁদেই চলেছি।তখনই নিজের পেটে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠল।মূহুর্তেই ওই হাত টেনে পিঠ তার বুকে ঠেকালো।বুঝতে বাকি রইল না এই হাতে মালিক কে?রাগে মাথার রক্ত টগবগ করা শুরু করল।আর সহ্য হলো না।আমি ভাইয়ার দিকে ঘুরেই দুই হাতে তার বুকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম।বরঞ্চ ও আমাকে আরো গভীর ভাবে নিজের সাথে জড়িয়ে নিল।আমি তার বুকে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছি।
“”ছাড়ো আমাকে।আমি ছাড়ো আমায়।কেন এসেছো এখানে?কষ্ট দিয়ে সেটাতে মলম লাগাতে। সেটাতো আবার পুরোনো দিনের অভ্যাস এটা তোমার।কিন্তু এই ফর্মুলা কোনো কাজে আসবে না।তুমি খুব বাজে একটা লোক।যদি বিয়ে অন্য কাউকেই করার ছিল তাহলে কেন?কেন আমার এত কাছে এসেছিলে?আমার শরীর কি তোমার কাছে সস্তার মনে হয়?শুধু মাত্র তোমার…তোমার সায় আজ আমি তোমায় এতোটা ভালোবেসে ফেলেছি?এত অপমান সহ্য করেও আমি শুধু তোমাকেই ভালোবেসেছি।তোমার মুখে ভালোবাসি কথাটা শোনার জন্য ছটফট করেছি।এসব কিছু হয়েছে শুধুমাত্র তোমার জন্য।কেন কেন এতো আশকারা দিয়েছো আমায়।ভালো যদি নাই বাসবে তাহলে কেন ভালোবাসার মানেটা শেখালে আমায়?কেন এতো কষ্ট দিচ্ছ?সহ্য হচ্ছে না আমার।ভেতর থেকে দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে পরছি আমি।দয়া করে আর কষ্ট দিতে এসো না।আর সহ্য করার ক্ষমতা নেই আমার।””
একনাগাড়ে কথা গুলো বলেই কান্নায় ভেঙে পরলাম তার সামনে।এতে তার কি ভাবান্তর হলো বলতে পারবো না।কিন্তু হঠাৎ ই কানের কাছে কারো উষ্ণ ন্বাস অনুভব করলাম।
“”ম্যাজিক দেখবি মিতু?””
ফিসফিস করে কথাটা বলেই ভাইয়া আমার দিকে তাকালো।আর আমি তার কথার মানে বুঝতে না পেরে ফ্যালফ্যাল করে তার চোখের দিকে তাকালাম।এটা কি মজা করার সময় যে ও আমায় এখন ম্যাজিক দেখাতে চাইছে।আমি কি বাচ্চা মেয়ে নাকি যে ম্যাজিক দেখেই আমি সব কষ্ট ভুলে যাবো।এসব ভাবনার মাঝেই আমি অনুভব করলাম আমি হাওয়ায় ভাসছি।ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম ভাইয়া আমায় কোলে তুলে নিয়েছে।কি করতে চাইছে কি ভাইয়া।কিছুই তো বুঝতে পারছি না…..
চলবে❤

নেশা তুই আমার Part:8

0

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part:8

সুমনকে মারার জন্য খাতাটা উপরে তুলতেই ভাইয়া ক্লাসে এসে হাজির।ভাইয়াকে দেখেই আমি থমকে গেলাম।এটা কি হলো?কোথায় আমি ভেবেছিলাম,আজ ভাইয়াকে বোঝাবো আমি পড়ালেখায় কতটা মনোযোগী হয়েছি।তাই লিখতে লিখতে হাত ক্ষয় হলেও লেখা বন্ধ করছি না।কিন্তু হলো তো তার উল্টো টা।এখন কি করব?তাড়াতাড়ি হাতের খাতাটা ভালো করে নিয়ে নিজের বেঞ্চে এসে দাড়ালাম।ভাইয়াকে দেখে সবাই অলরেডী দাঁড়িয়ে গেছে।কিন্তু ভাইয়া দরজার কাছে এসেই আমাকে ওইভাবে দেখে কিছুক্ষণ থমকে রইল।তারপর কোনো কথা ছাড়াই রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন।ভাইয়ার এমন কাজে সবাই হতবাক।আমি বেঞ্চ থেকে সরে জানালা দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম ভাইয়া বাইরে কি করছে।গ্রীল ওয়ালা জানালা ভেদ করে দেখলাম ভাইয়া দুই হাত কোমরে রেখে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।বুঝলাম ভাইয়া নিজের রাগ সংবরণ করার চেষ্টা করছে।তার মানে আজ ও আর আমার নিস্তার নেই।আজ ও কি তাহলে আমায় মার খেতে।আজ যদি সেদিনের মতো মারে তো এবার আর জীবিত থাকব না।মরেই যাবো আমি।কথাটা ভাবতেই আমার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠছে।তখনই আমার মনে হলো,আচ্ছা ভাইয়া কি কোনোরকম জেলাস ফিল করছে?আমায় নিয়ে?সুমনের ওপর?কথাটা ভাবতেই আমার চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল।পেয়ে গেছি রাস্তা।কিভাবে ভাইয়ার মুখে ভালোবাসি কথাটা বের করতে হয় তা খুব ভাবেই বুঝে গেছি আমি।আব দেখো আগে হোতা হে কেয়া?
কিছুক্ষণ পরেই ভাইয়া আবার ক্লাস রুমে ঢুকল।কিন্তু এবার আর আমার দিকে তাকালো না।না তাকাক তাতে কি?তবে এবার ভাইয়া দেখবে আমি কি কি করতে পারি।
ভাইয়া তার ক্লাস শুরু করে দিল।আর এদিকে আমি আমার কাজ।ক্লাসের মধ্যেই অনেক বাহানায় সুমনের সাথে কথা বলতে লাগলাম।মুখ টিপে হাসতে লাগলাম।পরা দেখানো নাম গল্প করা শুরু করলাম।লেখার সময় খাতা থেকে ওর হাত সরিয়ে দেওয়ার নাম করে ওর হাত ধরতেই সামনে থেকে ভাইয়া গর্জনরত আওয়াজ কানে এলো।
-এনাফ ইজ এনাফ ড্যাম ইট!
ভাইয়ার এমন গর্জনে ক্লাসে থাকা প্রায় সকলেই চমকে উঠল।হঠাৎ ভাইয়ার এমন ব্যবহারের কারন কারোরই মাথায় ঢুকলো না।ভাইয়া টেবিলের ওপর দুই হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।রাগে চোখ মুখ লাল রক্ত বর্ন ধারন করেছে।ভাইয়ার এই রুপ দেখে আমি নিজেই ভয় পেয়ে গেলাম।এবার এসে আবার আমাকে পিটানো শুরু করবে না তো?মনে মনে হাজারো ভয় কে জয় করার চেষ্টা করলাম।কিন্তু ভাইয়া আমাকে অবাক করে দিয়ে ক্লাস থেকেই বেরিয়ে গেল।যাওয়ার আগে ভারী কন্ঠে বলে গেল
“”Class is dismisse.””
আমি ভয়ে ছোটখাটো একটা ঢোক গিললাম।ডোজ টা কি বেশি হয়ে গেছে।
এরপর থেকে আর ভাইয়ার সাথে দেখা হয়নি।কলেজ থেকে আসার সময়ও ভাইয়া একাই চলে এসে ছিল।আমাদের নিয়েই আসেনি।তাই আমি ছায়া রিকশায় করে চলে আসি।বাড়ি এসে ব্যাগ নিজের ঘরে রেখেই ভাইয়ার ঘরের দিকে এগোলাম।তার ঘরের কাছে আসতেই খুব জোরে কিছু একটা পরে যাওয়ার শব্দ কানে আসতেই চমকে উঠলাম।তাড়াতাড়ি দরজা হালকা খুলে ঘরে উঁকি মারতেই দেখি ভাইয়া দুই হাত কোমরে রেখে ঘরের এপাশ থেকে ওপাশে পায়চারি করছে।
“”ইডিয়ট!একবার নাম্বারের স্টুপিট মেয়ে একটা।এতবার এত শাস্তি দেওয়ার পরেও আবার সেই ছেলেদের কাছেই গিয়ে ঢলে পরে ইডিয়ট টা।সহ্য হয় না আমার ওকে কোনো ছেলের সাথে।এই বিষয়টা কি বোঝে না ওই স্টুপিটটা।””
নিজে নিজেই কথা গুলো বিড়বিড় করে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।চোখ ছোট ছোট করে আয়নায় নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে বলল
“”ভার্সিটির প্রফেসর আমি।আর একজন প্রফেসর হয়ে কি না নিজের ছাত্রের ওপরেই জেলাস হচ্ছি।তাও ওই ইডিয়টটার জন্য।ইউ ফুল!””
কথাটা বলেই খুব জোরে সামনে থাকা টুলে লাথি মেরে ওয়াশরুমে ভেতর ঢুকে গেল।ভাইয়ার এহেন কাজে এতক্ষণ আমি মুখ চেপে হাসছিলাম।ভাইয়া ওয়াশরুমে ঢুকতেই আমি রুমের ভেতরে ঢুকে গেলাম।কেন জানি না এই মূহুর্তে আমার ভাঙড়া নাচার ইচ্ছে হচ্ছে।ইসস ভাইয়া আমায় নিয়ে জেলাস! ভাবা যায়!ভাইয়া??খুবই আনন্দের সহিত ফ্লোরের উপর পরে থাকা টুল টা ঠিক জায়গায় রেখে দিলাম।তারপরে নাচতে নাচতে চলে আসব তখনই আমার নজর গেল ভাইয়া টেবিলের ওপর।টেবিলের লাল কার্পেটের ওপর নীল ডাইরী টা যেন খুব বেশিই দৃষ্টি আকর্ষণ করছে আমার।একটু কৌতুহল নিয়েই আমি টেবিলের কাছে গিয়ে ডাইরী টা হাতে নিলাম।এটা কি ভাইয়ার ডাইরী?কি আছে এই ডাইরী মধ্যে?ভাইয়ার মনের কথা?এবার কৌতুহল টা যেন আরো বেশি বেড়ে গেল।আমি জানতে চাই ভাইয়ার মনে কথা।তাই অন্যের ডাইরী তার বিনা অনুমতিতে পরা অন্যায় জেনেও ডাইরীটা খুললাম।প্রথম পেজ ফাকা পরে আছে।কিছুই নেই।তাই আমি আবার একটা পেজ ওল্টাতেই যা দেখাল তাতে আমার চোখ কিছুক্ষণের জন্য থমকে গেল সেই পৃষ্ঠায়।এটা কে?আমি?
ডাইরীর সাদা পাতায় পেন্সিলের কালিতে হাতে আঁকা আমার প্রতিচ্ছবি।ছবিটা থেকে যেন চোখ সরানো মুশকিল।হ্যা এটাই আমি।চোখ কান নাক মুখ সবটাই প্রমান করে এটা আমি কিন্তু তারপরেও কিছু একটা তফাৎ আছে।এই ছবির সাথে আমার চেহারার কিছু তো একটা পার্থক্য আছে কিন্তু সেটা কি?খুব নিখুঁত ভাবে দেখতে লাগলাম ছবি টাকে।এই ছবি আর আমার চেহারায় কি অমিল আছে। হ্যা পেয়েছি?অমিল আছে।অনেক অমিল আছে।আর সেই অমিল টা হলো ভালোবাসার।ছবিটা খুব ভালোবাসার সাথে অঙ্কন করা হয়েছে।এই চোখ শুধু চোখ নয় এই চোখে যে হাজারো মায়ার ভীর।আচ্ছা আমার চোখে কি আদৌ এতটা মায়া আছে।আমার তো মনে হয়না আছে।আর এই ঠোঁটের কোণে লেগে থাকা মৃদু হাসিটা।এ যেন কোনো সাগরের ঢেউ।আমার হাসি কি সত্যিই এতটা সুন্দর?আচ্ছা এই আমিই কি আরমান ভাইয়ে মনের “”আমি””।ভাইয়ার মনে আমার এতটা সৌন্দর্য বিরাজ করে।চোখের কোন বেয়ে জল গড়িয়ে পরল।কতটা ভালোবাসলে মানুষ এত টা নিখুঁত ভাবে কারো প্রতিচ্ছবি আঁকতে পারে।আমার কৌতুহল আরো বেড়ে গেল।ভাইয়ার বুকে আমার জন্য ভালোবাসার পরিমান জানার আগ্রহ আরো বেশি বেড়ে গেল।তাই আমি আবার একটা পেজ ওল্টালাম।আর ওই পেজে যা দেখলাম তা দেখার পর আমার হার্টবীট কিছুক্ষণের জন্য থমকে গেল।নিজেকে আর আটকে রাখতে পারলাম না শব্দ করে কেঁদেই দিলাম।ড াইরীর সাদা কাগজে বড় বড় অক্ষরে লেখা “”ভালোবাসি মিতু””।
এই লেখাটা দেখে মনে হচ্ছে ভাইয়া যেন
আমার সামনে চিৎকার করে বলছে
“”ভালোবাসি মিতু।খুব খুব খুব বেশিই ভালোবাসি তোকে।””
চলবে❤