ঈদের ছুটিতে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।বাসের টিকিট ৯দিন আগেই কেটে রেখেছি।আগের বছর ঠিক সময়ে টিকিট না পাওয়ায় ঈদের পরেরদিন বাড়িতে যেতে হয়েছিল।এবার বাবা মা খুব খুশি হবে বলতে বলতেই ঢাকা টু খুলনার বাসটি চলে আসলো।বাস স্ট্রান্ডের সবাইকে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে বাসে উঠে পড়লাম।
,
বাসে উঠে আমি আমার সিটটাই বসে আছি।হঠাৎ একটি মেয়ে এসে আমাকে বলল,
-আস্সালামু আলাইকুম
-ওয়া আলাইকুমুস সালাম; কিছু বলবেন?
-জ্বী, আপনার পাশের সিটটা আমার।আপনি যদি একটু উঠে দাড়াতেন তাহলে ভালো হতো!
-অবশ্যই।
আমি উঠে একটু সরে দাড়ালে মেয়েটি গিয়ে তার সিটে বসে পরল।তারপর আমি আমার সিটটাই বসে একটা দীর্ঘঃশ্বাস নিলাম।বাস চলতে শুরু করল তার উক্ত গন্তব্যে নিজ গতিতে।তৎক্ষনাথ আমার খেয়াল গেল আমার পাশের সিটে বসে থাকা সেই মেয়েটির উপর।মেয়েটির পা থেকে মাথা অবদি তাকিয়ে দেখি পুরো শরীরটা ঢোলাঢালা বোরকার আবরণে ঢাকা।হাতে, পায়ে মোজা।দেখে বোঝা যাচ্ছে না মেয়েটি আসলে যুবতী নাকি বৃদ্ধা। তারপর ভাবলাম, তখন তো মেয়েটির কন্ঠ শুনেছিলাম অল্প বয়সী যুবতীই হবে!!
বাস চলছে..
জালানার কোন ঘেষে দমকা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। মেয়েটি তার নিকাবের উপরের পার্টটি উঠিয়ে ফেললো।এখন তার চোখদুটি খুব ভালো ভাবেই দেখা যাচ্ছে।স্যামলা বর্ণের বড় বড় হরিণি চোখদুটি ঘন গাঢ় কাজলে খুব মায়াবতী দেখতে লাখছে। মেয়েটির চোখদুটি থেকে আমি যেন চোখ সরাতেই পারছি না। জানালার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো এসে মেয়েটির চোখ ছুয়ে আছে।সূর্যের এই আলোক রশ্মিতে যেন মেয়েটির চোখদুটি আরও উজ্জ্বল দেখতে লাগছে।আমি মেয়েটির চোখের পানে এক অপলক দৃস্টিতে চেয়ে আছি।মেয়েটি হয়তো বুঝতে পেরেছে আমার দিকে তাকাতেই আমি আমার চোখটা নিচে নামিয়ে নিলাম।
আমি সোজা বসে সিটের সাথে মাথাটা ঠেকিয়ে আড় চোখে মেয়েটিকে দেখে চলেছি।আচ্ছা মেয়েটিকে আমার এতো চেনা চেনা কেন লাগছে! এ যেন এক চিরচেনা অতীত আমার সামনে এসে দাড়িয়েছে।না তা কিভাবে সম্ভব??
আচ্ছা, আজকের দিনেও এই ডিজিটাল যুগে ঢাকা শহরে এমন বোরকাওয়ালি মেয়ে দেখতে পাওয়া যাই? (মনে মনে ভাবছি)
,
কিছুক্ষণ পরে,,
,
হুট করেই আমি মেয়েটিকে বলে উঠলাম।
-আপনার নাম?
-…….. (কোনও কথা নেই)
-আচ্ছা, আমি তো আপনার প্রতিবেশী যাত্রী।আপনি আমার সাথে কথা বলতে পারেন।
-…. (নিরাবতা)
-কি হলো আপনি কথা বলছেন না যে?!
-…..(নিরাবতা)
-বলছি কি এই রাস্তাটা আমরা গল্প করে শেষ করতে পারি না?
-…..(আবার নিরাবতা)
এবার একপ্রকার রেগে গিয়ে বললাম।
-আচ্ছা আপনি কি আমাকে পাত্তা দিচ্ছেন না?
-দেখুন আমি অপ্রয়োজনে গায়েরে মাহারাম পুরুষের সাথে কথা বলি না।এতে আপনার এবং আমার দুইজনের জন্যই ক্ষতি।
মনে মনে বললাম যাক, এতোক্ষণে মেয়েটি তার মুখ ফুটে কথা বলল!
-জ্বি, আপনার কথা আমি বুঝলাম না!
-না বোঝার তো কিছু নেই!
আপনি মুসলমান তো?
-হ্যাঁ, কিন্তু আপনি বললেন না গায়রে মাহারাম পুরুষের সাথে অপ্রয়োজনে কথা বলেন না?
-আপনি গায়রে মাহরাম বোঝেন না?
-না যদি একটু বুঝিয়ে বলতেন!
-তাহলে শুনুন,,,,
মাহরাম কি?
মাহরাম কারা?
গায়রে মাহরাম কি ও কারা?
————-_————–
মাহরাম কি?
– যে সকল পুরুষের সামনে নারীর দেখা
দেওয়া,কথা বলা জায়েজ এবং যাদের সাথে বিবাহ
বন্ধন সম্পূর্ণ হারাম তাদের কে শরীয়তের
পরিভাষায় মাহরাম বলে|
.
মাহরাম কারা?
-সূরা আন নূরের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা
নারীর মাহরাম নির্ধারিত করে দিয়েছেন|
পূর্ণ আয়াত টি হল –
“আর মুমিন নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেন
তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের
লজ্জাস্থানের হিফাযত করে।
আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা
প্রকাশ না করে।
তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত
করে রাখে।
আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর,
নিজদের ছেলে,
স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই-এর ছেলে,
বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান
হাত যার মালিক হয়েছে,
অধীনস্থ
যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ
সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে
নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।
আর তারা যেন নিজেদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ
করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে।
হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট
তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা
আন-নূর:৩১)
…
গায়রে মাহরাম কি?
– যে সকল পুরুষের সামনে যাওয়া নারীর জন্য
শরীয়তে জায়েজ নয় এবং যাদের সাথে বিবাহ
বন্ধন বৈধ তাদের কে গায়রে মাহরাম বলে|
বস্তুতঃ গায়রে মাহরামের সামনে একান্ত অপারগ
হয়ে যদি যাওয়াই লাগে তবে নারী পূর্ণ পর্দা
করে সামনে যাবে|
.
গায়রে মাহরাম কারা?
-মাহরাম বাদে সমস্ত বিশ্বে-মহাবিশ্ব
যত পুরুষ আছে সব গায়রে মাহরাম!
নিজ পরিবারে
চাচাত/খালাত/মামাত/ফুপাত সব ভাই,
নিজ দুলাভাই,
দেবর,
ভাসুর,
(আপন,দাদা ও নানা শ্বশুর বাদে) সমস্ত চাচা-মামা-খালু-
ফুপা শ্বশুর…
নিজ খালু/ফুপা এরা সবাই গায়রে মাহরাম!
তাদের সামনে নিজেকে প্রদর্শন করা আল্লাহর
হুকুমের অবাধ্যতা করা!
মাহরাম ছাড়া সকল পুরুষের সামনে পর্দা করতে
হবে।
এক নজরে মাহরাম পুরুষ –
১. স্বামী
(দেখা দেওয়া,সৌন্দর্য প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে
মাহরাম)
২. পিতা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
৩. শ্বশুর, আপন দাদা ও নানা শ্বশুর এবং তাদের
উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
৪. আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের
ছেলে ও তাদের ঔরসজাত পুত্র সন্তান এবং আপন
মেয়ের স্বামী।
৫. স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।
৬. আপন ভাই,সৎ ভাই
৭. ভাতিজা অর্থাৎ, আপন ভাইয়ের ছেলে এবং সৎ
ভাইয়ের ছেলে।
৮. ভাগ্নে অর্থাৎ, আপন বোনের ছেলে এবং
সৎ বোনের ছেলে।
৯. এমন বালক যার মাঝে মহিলাদের প্রতি কোন
আকর্ষণ নেই। (সূরা নূর-৩১)
১০. দুধ সম্পর্কীয় পিতা, দাদা, নানা, চাচা, মামা এবং
তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
১১. দুধ ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের
ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত যে কোন পুত্র
সন্তান।
১২. দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, তার ছেলে, দুধ
সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে এবং তাদের
ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান। এবং দুধ
সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী। (বুখারী শরীফ
হাদীস নং ৫০৯৯, মুসলিম শরীফ হাদীস নং ১১৪৪)
১৩. আপন চাচা, সৎ চাচা।
১৪. আপন মামা,সৎ মামা। (সূরা নিসা-২৩)
……………উপরোক্ত পুরুষ যাদের সাথে দেখা
করতে বা দেখা দিতে পারবে তারা ছাড়া অন্য সমস্ত
পুরুষ কে দেখা দেওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয এবং হারাম।
আর উপরোক্ত পুরুষের সাথে বিয়ে সম্পূর্ণ
হারাম|
-বুঝলাম।তাহলে তো আমি আপনার কাছে গায়রে মাহারাম পুরুষ।
-জ্বী
-আচ্ছা আমি যদি আপনাকে বিয়ে করি,,তখনও কি আমি আপনার কাছে গায়রে মাহারাম থাকবো?
-কি বলছেন কি আপনি?
-না শুধু জিজ্ঞাসা করছি!?
-দেখুন আপনি এ ধরনের মজা না করলেই আমি খুশী হব।
-ঠিক আছে!
,
২ ঘন্টা পর,,,,
,
নিরাবতা ভেঙে মেয়েটিকে আমি বললাম,
-আচ্ছা আপনি যাচ্ছেন কোথায়?
-খুলনায়
-সে তো আমিও যাচ্ছি।কিন্তু আপনি খুলনাতে কোথায় যাচ্ছেন? নামবেন কোথায়?
-আপনি যেখানে নামবেন আমিও সেখানেই নামবো।আর যদি বলেন কোথায় যাচ্ছি তাহলে বলব- দৌলতপুর, ফুপ্পির বাড়িতে যাব।
-ও আচ্ছা। আমার বাসাও দৌলতপুর তাহলে তো আপনি আমাদের এলাকাতেই যাচ্ছেন।আপনার বাসা বুঝি ঢাকাতে?
-জ্বী।
-কতদিন বেড়াবেন ফুপ্পির বাড়ি?
-যানি না
-কেন? ঈদের সময়ে আসলেন প্লান করে আসেন নি?
-না পালিয়ে এসেছি।
-মানে???
-মানে পরসু বুধবার আমার বিয়ে।
-সেটা কেমন কথা আপনার মতো একটা পর্দাশীল মেয়ে বিয়ে না করেই পালিয়ে এলেন?
-দেখুন আমি কোনও পরকিয়া বা ভালোবাসার ফাঁদে পরে পালিয়ে আসি নি!আমি পালিয়ে এসেছি নিজের নিরাপত্তার জন্য।
-আমি কিছু বুঝলাম না আপনার কথা!
মেয়েটি তার হাতের ব্যাগ থেকে একটা কাগজ বের করল।আর বলল,
-আমি তো আপনার এলাকাতেই যাচ্ছি!! আমাকে শুধু আপনি এই ঠিকানাটাই একটু পৌঁছে দিতে পারবেন?! আসলে আমি খুলনা শহরে এর আগে কখনও আসি নি তো!!যদি একটু উপকার করতেন তাহলে ভালো হতো!
আমি মেয়েটির হাতের কাগজটা নিয়ে দেখে কিছুক্ষণ চুপ হয়ে রইলাম।তারপর বললাম,
-আআআআ আবেগগ আমার বাচ্চা
-কিছু হবে না রিদি কিছু হবে না
আবেগ রিদিতা কে নিয়ে গাড়ি র পেছন সিটে শুইয়ে দিয়ে রিদিতা র মাথা নিজের কোলে তুলে নিল।আশফি ড্রাইভি করছে।আবেগের বাবা অন্য গাড়ি তে বাকি সবাইকে নিয়ে আসছে।সবার কান্না আরো বেরে যাচ্ছে
-আবেগগ আমার বাচ্চা
-কিছু হবে না রিদি।আমি আছি তো।আমরা এক্খুনি হসপিটাল এ চলে যাব।আশফি সামনে যেখানে হসপিটাল পাস সেখানে যা।দ্রুত গাড়ি চালা
-চালাচ্ছি আবেগ।তুই ভাবীকে দেখ
আশফি একটা কমিউনিটি ক্লিনিক এ গাড়ি থামালো।আবেগের বাবা ও ফলো করে সবাইকে নিয়ে চলে এসেছে
-আশফি তুই গিয়ে ডক্টর রকে দেখ।আমি রিদি কে নিয়ে আসছি
আবেগ রিদিতা কে কোলে তুলে হসপিটাল এর ভেতর চলে গেল
-আবেগ আমার #LOVE❤ এর কিছু হবে না তো ।আবেগ ওর কিছু হলে আমি বাচবো না
-কিছু হবে না রিদি।তুমি শান্ত হও
আশফি গিয়ে স্ট্রেচার নিয়ে এলো।ডক্টর ও এলেন
-ওহ নো।ওনার এই অবস্থা কি করে হলো।সিস্টার ওটি রেডি করুন এক্খুনি সিজারিং করতে হবে
রিদিতা কে ওটি তে নিয়ে যাবে
-আবেগ পানির তেষ্টা পেয়েছে ।আমি পানি খাব আবেগ
-দাঁড়াও দেখছি
-না মি,চৌধুরি ।ওনাকে এখন অপারেশন করতে হবে।কিছু খেতে দেওয়া যাবে না
-কিন্তু ডক্টর
-সরি মি,চৌধুরি
রিদিতা কে ওটি তে নিয়ে যাচ্ছে আবেগ রিদিতার হাত ছারছে না।মনে হচ্ছে যেন চিরদিনের মতো চলে যাবে রিদিতা হাত ছেড়ে দিল।ওটির দরজা বন্ধ হয়ে গেল
কিছুক্ষণ পর ডক্টর বেরিয়ে এলেন
-মি,চৌধুরি
-ডক্টর কি হয়েছে আমার রিদিতা,,,,
-মি,চৌধুরি আপনার ওয়াইফ এর কন্ডিশন ভালো না।সব কিছু আল্লাহ্ র হাতে।কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আপনাকে ডিসিশন আপনাকে নিতে হবে।আপনার ওয়াইফ কে জিজ্ঞাসা করেছি উনি বলেছেন ওনার বাচ্চা কে বাচাতে।আমরা আপনার ডিসিশন চাই।ওয়াইফ অথবা বাচ্চা যে কোন একজনকে বাছতে হবে আপনার
-কি বলছেন ডক্টর ।আমি,,,,
-মি,চৌধুরি আমাদের হাতে সময় নেই আপনি উওর দিন
-আমার ওয়াইফ কে চাই আমি।আমার রিদিতা কে চাই
হঠাত্ একজন নার্স বেরিয়ে এলেন
-ডক্টর ওনার ওয়াইফ ওনার সাথে কথা বলতে চান
-মি,চৌধুরি আপনি যান।কিন্তু দ্রুত কথা শেষ করবেন আমাদের হাতে সময় নেই
আবেগ ওটিতে গেল।রিদিতা কে শুইয়ে রেখেছে।পাশে স্যালাইন চলছে
-নার্স আপনি একটু বাইরে যান আমি আমার হাসবেন্ড এর সাথে কথা বলতে চাই
-ওকে আমি যাচ্ছি
নার্স বেরিয়ে গেলে আবেগ গিয়ে রিদিতা র বেডের পাশে বসলো
-রিদি
-আবেগ
-রিদি তুমি কেনো বাচ্চা র কথা বললে
-আবেগ তুমি আমার সিদ্ধান্ত এ রাজী হও
-এসব কি বলছো তুমি রিদি ।তোমাকে ছাড়া আমি কিভাবে থাকবো।তুমি থাকলে আমরা পরেও বাচ্চা নিতে পারবো।আমার সিদ্ধান্ত আমি বদলাবো না রিদিতা
-তোমাকে বদলাতে হবে।কেউ না জানলে ও আমি জানি আমার বাচ্চা র ওপর তোমার কোন অধিকার নেই।ওর জীবনের সিদ্ধান্ত তুমি নিতে পারো না
-রিদিতা আআআ
-হ্যাঁ আবেগ এটা সত্যি ।যখন তোমাকে দরকার ছিল আমার তখন তুমি আমার পাশে ছিলে না ।ও ছিল সব সময় প্রতি সেকেন্ডে ।অনেক বার আমি ভেবেছি নিজেকে শেষ করে দিতে।বাঁচার ইচ্ছে ছিল না আমার ।শুধু ওর জন্য আমি নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছি প্রতি মূহুর্তে সব কিছুর সাথে সংগ্রাম করেছি।ওকে চাই আমি আবেগ।আমি নিজের জন্য ওকে হারাতে পারব না।আল্লাহ্ যদি চান তবে দুজনেই ফিরবো।যদি তা না হয় আমার বাচ্চা কে চাই আমি আবেগ আমার বাচ্চা কে চাই।তুমি কোন কথা বলো না আবেগ।তুমি এই সিদ্ধান্ত ডক্টর র কে জানিয়ে দেও
-রিদিতা আমি কি করে,,,,,
-আমি জানিনা আবেগ।একদিন তোমার জন্য সব হারিয়ে ছি আমি আজ তোমার কথাতে আমার সন্তান কে হারাতে পারব না।আমি মা হতে চাই আবেগ আমি আমার বাচ্চা র কান্না শুনতে চাই আবেগ।তোমার পায়ে পরি আমাকে ফিরিয়ে দিও না আবেগ
-রিদি তুমি আমাকে ক্ষমা করতে পারো নি তাই না।এজন্য এসব বলছো।রিদি আমি তোমাকে ছাড়া কিভাবে বাচবো
-জানিনা আবেগ
-রিদি আমাকে ক্ষমা করে দেও
-আবেগ তোমাকে খুব ভালোবাসতাম আবেগ খুব।সেদিন আমি সইতে পারিনি তোমাকে থাপ্পড় মেরেছি ।তুমি ক্ষমা করে দেও আবেগ আমাকে ক্ষমা করে দেও
-রিদি আর লজ্জা দিও না আমাকে।ক্ষমা করে দেও ।আমি তোমাকে ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারব না।এতো বড় শাস্তি দিও না আমাকে
-আবেগ জানিনা বেচে থাকবো কি না।যদি বেচে ফিরি আর আমার বাচ্চা আমার কোলে না থাকে মনে রেখো কখনো তোমাকে ক্ষমা করবো না।
-রিদিতা আআ
-হ্যাঁ আবেগ।আমি আমার বাচ্চা যদি ভালো হয়ে ফিরি তো আমি ওকে নিয়ে দূরে চলে যাব তোমার থেকে দূরে কখনো ক্ষমা করবো না আবেগ
-রিদিতা আআআ
-হ্যাঁ আবেগ।তুমি ক্ষমা চাও বলো।আমি যদি মরে যাই তো মনে রেখো তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি।বেচে থাকতে তোমাকে ক্ষমা করতে পারব না আবেগ পারব না।অনেক ভালোবেসে ছিলাম তোমাকে তুমি আমাকে অনেক নিচে নামিয়ে ছো।একজন বেশ্যা পর্যন্ত বলেছো।তোমাকে বেচে থাকতে কিভাবে ক্ষমা করবো আবেগ
-রিদিতা এতো বড় শাস্তি দিও না।আমি তোমাকে ভালোবাসি রিদিতা ।তোমার পাঠানো ডিভোর্স পেপার এ আমি আজো সাইন করি নি
-মানে
-হ্যাঁ রিদিতা ডিভোর্স পেপার তুমি আমাকে পাঠিয়েছিলে আমি না
-আমি তো নিজের শেষ আত্মসম্মান টা রাখার জন্য আমি পাঠিয়েছিলাম আবেগ
-রিদি তাহলে কেন এই শাস্তি র কথা বলছো
-আবেগ একটু জরিয়ে ধরবে আমাকে
-এভাবে কেন বলছো তুমি
-যদি আর কখনো বলতে না পারি তোমার বুকে একবার জায়গা দেও না আবেগ
আবেগ সজোরে রিদিতা কে জরিয়ে ধরলো
-আবেগ একটু তোমার মুখটা কাছে নিয়ে এসো না।অনেক দিন তোমার কপালে আদর করিনা।একটু এগিয়ে এসো না
আবেগ রিদিতার দিকে এগিয়ে গেল।রিদিতা আসতে করে আবেগের কপালে নিজের ঠোট ছোয়ালো ।আবেগ আর পারলো না আটকে রাখতে নিজেকে।কাঁদতে কাঁদতে রিদিতা কে জরিয়ে ধরে চোখে মুখে রিদিতা র পুরো গালে নিজের ঠোট ছুইয়ে দিল আবেগ
-আবেগ আমাকে একটা কথা দেবে
-কি বলো
-আবেগ আমি যদি মরে যাই আমার বাচ্চা টাকে তুমি দেখো আবেগ।তুমি কখনো বিয়ে করোনা আবেগ।যদি তুমি বিয়ে ই করো তাহলে আমার বাচ্চা টাকে কোন অনাথ আশ্রমে দিয়ে এসো
-রিদি চুপ কর কি বলছো তুমি ।আমার সন্তান কে কেন আমি অনাথ আশ্রমে দেব
-আবেগ জানো আমার বাচ্চা টা না আমার গর্ভ এ থাকা কালীন অনেক কষ্ট পেয়ে ছে।নিজের মায়ের সাথে সাথে ও ও না কুকুর এর মুখে দেওয়া খাবার খেয়েছে।আমার বাচ্চা টা কে আমি তেমন ভালো খাবার ও দিতে পারিনি খেতে।ওর মায়ের সাথে ও ও অনেক কষ্ট সহ্য করেছে।তুমি প্লিজ সৎ মা নামক ঐ কষ্ট টা আমার বাচ্চা টাকে দিও না
-রিদি তা কেনো এই কথা বলছো ।তুমি ও তো থাকবে আমার সাথে
-হয়তো থাক আ হবে না আবেগ।মানুষ মৃত্যুর আগে তার শেষ সময় টা বুঝে যায় আবেগ।আমার শেষ সময় বোধ হয় চলে এসেছে আবেগ
-রিদিতা চুপ করো।কিছু হবে না তোমার
-আবেগ আমার আরেকটা কথা রাখবে বলো
-কি বলো
-আবেগ আমি মরে গেলে তুমি একটা মসজিদের পাশে কবর দিও।আর শোন প্রতি শুক্রবার আমার কবরের কাছে তুমি আসবে।আমার বাচ্চা কেও নিয়ে আসবে আবেগ আমি তোমাদের দেখবো।আবেগ শোন তুমি কিন্তু আমার প্রত্যেক মৃতবারষিকিতে কিন্তু তুমি আসবে আর আমার #LOVE ❤ কে নিয়ে আসবে ।শোন তুমি না আমার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের #LOVE❤ এর জন্মদিন পালন করবে আমি দেখবো।তুমি কিন্তু ঐ নীল পানজাবি টা পরে আসবে আবেগ ঐ যে বৃষ্টি র দিন তোমাকে দিয়ে ছিলাম ।ঐটা ।আমি যত্ন করে রেখেছি আবেগ।জানো তুমি গায়ে দেওয়ার পর ওটা আমি ওয়াশ করিনি।ওতে তোমার গায়ে র গন্ধ লেগে আছে আমি প্রতিদিন তোমার গন্ধ শুকতাম
-রিদিতা চুপ করবে।কিছু হবে না তোমার শুনতে পেয়েছো তুমি কিছু হবে না
-আবেগ তুমি আমার মরা মুখ দেখতে চেয়ে ছিলে তাই না
-রিদিতা আমি সেদিন মুখ ফসকে বলেছিলাম ।আমি মন থেকে বলিনি।তুমি মরলে আমি কি নিয়ে থাকবো
-আবেগ জানো বন্দুক এর গুলি আর মানুষের মুখের কথা এক।একবার বেরোলে আর ফেরে না
-রিদিতা তোমাকে ছাড়া আমি কি নিয়ে বাচবো বলো। I ❤ u রিদিতা I ❤ u
– I ❤ u too আবেগ I ❤ u too
-তাহলে কেন এই কথা বলছো
-আবেগ বাইরে যাও।ডক্টর কে পাঠাও।আর অপেক্ষা করো আমাদের #LOVE ❤ এর জন্য আর আমার মরা মুখ দেখার জন্য
-রিদিতা আর আমাকে কষ্ট দিও না।আর শাস্তি দিও না
-আবেগ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে আবেগ।আমার হাতে সময় নেই।তুমি ডক্টর কে পাঠাও
-এক্খুনি পাঠাচ্ছি
আবেগ উঠে চলে যাচ্ছে সে সময় রিদিতা হাত টেনে ধরে।আবেগ পেছনে ফেরে
-আবেগ ডক্টর কে সিদ্ধান্ত জানিও দিও।আমার সিদ্ধান্ত তোমার সিদ্ধান্ত আমাদের #LOVE❤ এর সিদ্ধান্ত
-রিদিতা আমি,,,,,
-আবেগ ভালোবাসি খুব অনেক বেশি
-রিদিতা আমি ও ভালোবাসি খুব খুব খুব।ভালোবেসে যাব
-আমিও ভালোবেসে যাব
-আমিও
-খোদা হাফেজ আবেগ।অপেক্ষা করো
-খোদা হাফেজ
আবেগ বেরোচ্ছে আর পেছন ঘুরে রিদিতা কে দেখছে।রিদিতা হাত নাড়িয়ে আবেগকে বিদায় দিল।আবেগ কান্না ভরা চোখে রিদিতা কে দেখে বেরিয়ে গেল।আবেগ তখনো জানে না রিদিতা তাকে শেষ বিদায় দিল
-আল্লাহ্ আমি প্রতি রাতে তাহাজ্জুদের নামাজে তোমাকে ডেকেছি।আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না।আমার সন্তান কে তুমি হেফাজত করো।আমি যা যা পাপ করেছি তুমি মাফ করে দেও
আবেগ ডক্টর এর কাছে গেল
-মি,চৌধুরি আপনার ডিসিশন
বুক ফেটে যাচ্ছে তবুও আবেগ কে বলতে হলো
-আমার সন্তান কে বাঁচান ডক্টর
-are you sure মি,চৌধুরি
-yes,I am sure
-okay
ডক্টর ভেতরে চলে গেলেন।ওটির আলো জলে উঠেছে
অপারেশন শেষে র দিকে।ডক্টর নার্স রা একবার রিদিতা র দিকে তাকাচ্ছেন আরেক বার স্ক্রিন এর দিকে।রিদিতা র পালস ক্রমশ কমে আসছে
হঠাত্ কান্না র আওয়াজ হলো।রিদিতা চোখ একটু নড়ছে।রিদিতা চোখ খুলতে পারছে না।চারিদিক অন্ধকার হয়ে আসছে।শেষ বারের মতো রিদিতা র কানে শেষ কথা গুলো গেল।নিজের সন্তান এর কানের আওয়াজ আর নার্স এর কথা
-মিসেস চৌধুরি আপনার একটা ফুটফুটে মেয়ে হয়ে ছে।শুনছেন আপনি।মিসেস চৌধুরি ।স্যার স্যার ওনার পালস
ডক্টর নার্স স্ক্রিন এর দিকে তাকালো রিদিতা র পালস থেমে গেছে।রিদিতা আসতে আসতে ঘুমিয়ে গেল চিরকালের মতো।আর শোনা হলো না মা ডাক দেখতে পারলো না একবারের জন্য তার #LOVE❤ কে
-আল্লাহ্ র কি খেল।ওনার বেবির লাইফ রিস্ক বেশি ছিল।আর সেখানে উনি,,,,সিস্টার বেবিকে ক্লিন করে আনুন আমি ওনাদের খবর দিই
ওটির লাইট বন্ধ হয়ে গেল।বাইরে সবাই অপেক্ষা করছে।আশফি আবেগ ডক্টর কে দেখে বেরিয়ে এলো
-ডক্টর আমার রিদিতা
-,,,,,,,
-ডক্টর কথা বলুন আমার রিদিতা
-মি,চৌধুরি সবার হায়াত আল্লাহ্ র হাতে
-কি সব বলছেন আপনি।বলুন আমার রিদিতা,,,,,
-she is no more
আবেগের পুরো পৃথিবী ওখানেই থমকে গেল।রিদিতা র পরিবার এর সবাই কাঁদছে
-নাহহহহ
আবেগ ডক্টর কে ঠেলে ফেলিয়ে ওটিতে ঢুকলো।রিদিতা র মুখ সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা।আবেগ গিয়ে কাপড় তুলে ফেললো
-এই রিদি এই রিদি ওঠো না।এই রিদি দেখো ডক্টর কি বাজে কথা বলছে।এই রিদি ওঠো।এই ওঠ না।এই রিদিতা ।এই তোকে ছাড়া আমি কিভাবে বাচবো এই আমিতো মরে যাব।তুই শুনেছিস না।ওঠ এই রিদিতা ।এই আমি কি করবো তোকে ছাড়া ।এতো বড় শাস্তি দিস না আমাকে।ওরে আমি মরে যাব তুই বুঝেছিস না এই রিদিতা
আবেগ কাঁদছে আর এই কথা বলছে।আবেগ এর কথা শুনে ডক্টর দের চোখে পানি চলে এলো।নার্স এসে বাচ্চা টাকে আশফি র কোলে দিল
-আপনারা বাচ্চা টাকে নিন।ওর কান্না থামছেই না
আশফি বেবি কে কোলে নিয়ে গিয়ে আবেগ এর কাছে গেলো
-আবেগ দেখ তোর বাচ্চা ।আবেগ তোর আর রিদিতা ভাবির ভালোবাসা আবেগ ও কাঁদছে ওকে ধর
-এই রিদি বুঝেছি আমার ওপর রাগ করেছো না।দেখো আমাদের সন্তান আমাদের ভালোবাসা রিদি আমাদের #LOVE❤।রিদি চোখ খোলো না।এই রিদি চলো আমাদের ছোট্ট সংসার হবে।এই রিদি শুনছো না।ওঠো না।এই রিদিতা ।এই এই দুধের শিশুকে নিয়ে কি করবো আমি ওর যে তোমাকে প্রয়োজন রিদিতা ওর তোমাকে প্রয়োজন
-আবেগ রিদি ভাবি নেই আবেগ।চলে গেছে।মেনে নে আবেগ।দেখ তোর বাচ্চা টা তোর কাছে গিয়ে কান্না থামিয়ে দিয়ে ছে।দেখ তোর বাচ্চা টা তোকে ছোট চোখ দিয়ে দেখছে আবেগ।আবেগ তুই যদি ভেঙে পরিস ওর কি হবে।কোথায় যাবে ও।ও তো দুনিয়া তে এসেই মা কে হারালো।ওর কি হবে
আবেগ ছোট্ট #LOVE❤ কে বুকে জরিয়ে নিল
-না ও আমার #LOVE ❤।আমাদের #LOVE❤।ওর কিছু হতে দেব না আমি।ও যে আমার রিদিতা র শেষ স্মৃতি ।ওর কিছু হবে না ।আল্লাহ্ এ কি শাস্তি দিলে তুমি আমাকে।এ কি শাস্তি দিলে।রিদিতা আআ এই ক্ষমা র দরকার ছিলো না আমার রিদিতা আআআআআ
আজ আবেগ পৃথিবী র সবচেয়ে অসহায় ।রিদিতা র কথা সত্যি হলো।আবেগ আজ হাজার চাইলে ও রিদিতা কে পাবে না
৩ বছর পর
-বাবাই আমার তিলিপ লাদিয়ে দেও
-এই তো মামোনি হয়ে গেছে
-আমার দুতো
-দেখি পা দেখি।এই তো হয়ে গেছে।কি সুন্দর লাগছে আমার প্রিনসেন্স কে
-বাবাই তলো এবার মামোনির তাছে দাব
-যাবো তো
-বাবাই তলো মামোনি কে হামি দেব
-এসো
ছোট্ট লাভ রিদিতা র ছবিতে গিয়ে চুমু দিল
-লাবু উ মামোনি
-নেও বাবাইকে দেব এ না
লাভ বাবা র গালে পাপ্পি দিল
-লাবু উ বাবাই
-লাভ ইউ টু আমার প্রিনসেন্স
হ্যাঁ আজ আবেগ চৌধুরি আর রিদিতা চৌধুরি র মেয়ে আবেদিতা(আবেগ+রিদিতা) চৌধুরি #LOVE❤ এর জন্মদিন ।আজ #LOVE❤ তিন বছরে পা রাখলো।আর আজ রিদিতা র তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী
এই তিন বছরে অনেক কিছু পালটেছে
আবেগ আজ একজন পরিপূর্ণ বাবা।আশফি দিশা কে বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করেছে।নিশিতা প্রেগন্যান্ট ।ওর দ্বিতীয় বাচ্চা এটা।আজাদ চৌধুরি আবেগ চৌধুরি #LOVE❤ কে নিয়ে তাদের তিনজনে র ছোট সংসার গড়েছে
আর হ্যাঁ তারাও শাস্তি পেয়েছে ।নোভা কে দেখলে মনে হয় এখন পন্বাশ বছরের বুড়ি।নোভা র স্কিন ক্যান্সার হয়ে ছে।শুধু তাই না অতিরিক্ত পিল খাওয়ার কারণে নোভা র জরায়ুতে টিউমার হয়ে ছে।নোভা প্রতিক্ষণ এ নিজের মৃত্যুর প্রহর গুনতে চায় ।আজ সে বুঝেছে তার পাপের শাস্তি ।আর লাবনি সেদিন রিদিতা কে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি তে এক্সিডেন্ট করে।তারপর লাবনি র এক পা কেটে ফেলা হয়েছে ।লাবনি আজ ঢাকা শহরের পঙ্গু ভিক্ষুক ।লাবনি যেই হাত দিয়ে রিদিতা কে ধাক্কা দিয়ে ছিল সেই হাত গ্যাঙ্গার রোগে পচে গেছে।মাংস খসে পরছে।আর নোভা র বাবা তাকে আবেগের বাবা মহিলাদের দিয়ে জুতো পিটিয়ে মুখে চুনকালি মাখিয়ে ছেড়ে ছে।সেই শোকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন
আশফি আবেগের ঘরে এলো
– #LOVE❤ আরে কি সুন্দর লাগছে আমার প্রিনসেন্স কে
লাভ নীল রঙে র জামা পরেছে।আর ওর বাবা আবেগ সেই নীল পানজাবি ।লাভ নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে একবার ঘুরপাক দিলো।আশফি ওকে কোলে তুলে নিল
-ওরে আমার প্রিনসেন্স রে
-মামাই তলো আমরা মামোনি র কাছে যাই
-চলো।আবেগ আয়
-তুই ওকে নিয়ে যা আমি আসছি
রিদিতা র মা বাবা নিশিতা দিশা সবাই এসেছে রিদিতা র কবরের কাছে দাঁড়িয়ে আছে।মসজিদের পাশেই আবেগ রিদিতার কবর দিয়ে ছে
-বাবাই মামোনি র কাতে দাব।নামিয়ে দেও
আবেগ কোল থেকে মেয়ে কে নামিয়ে দিল
-মামোনি তুমি কিন্তু কোথাও যাবে না।আমরা একটু দোআ করি তুমি এখানে থাকো
-তিত আতে
আবেগ আর সবাই মোনাজাত তুললো রিদিতা র কবর যিয়ারত করার জন্য ।ছোট্ট লাভ ছোট ছোট পায়ে রিদিতা র কবরের খুঁটির কাছে।ছোট্ট থেকে সে এটা জানে তার মামোনি এখানে থাকে দিনে আর রাতে তারা হয়ে আকাশে থাকে।ও বোঝে না ওর মা কোথায় আছে
সবাই মোনাজাত এ ব্যস্ত ।লাভ গিয়ে রিদিতা কবরের খুঁটি ধরেছে
-মামোনি দেতো আমি এতেছি ।মামোনি তুমি কবে দাবে আমার তাছে।বাবাই বলে তুমি আতবে ।কবে আতবে।ও মামোনি
সবাই মোনাজাত শেষ করে ছোট লাভের কথা শুনে চোখে র পানি ফেলছে।আশফি গিয়ে লাভ কে কোলে তুলে নিল
-প্রিনসেন্স মামোনি আসবে দেখো।তুমি বড় হও তখন আসবে
-আততা মামাই তবাই আমাকে গিফত দেয়।মামোনি দেয় না কেন
-প্রিনসেন্স তোমার মামোনি তোমাকে সবচেয়ে বড় গিফট দিয়ে গেছে।তুমি যখন বড় হবে তখন বুঝবে তোমার মামোনি তোমাকে কি দিয়ে গেছে।চলো আমরা কেক কাটবো
-তলো তলো
-আবেগ চল
-আশফি তুই ওকে নিয়ে যা আমি আসছি
সবাই চলে গেল।আবেগ রিদিতা র কবরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।প্রতি শুক্রবার সে তার মেয়ে কে নিয়ে আসে এখানে।কিন্তু এই দিন কষ্ট টা বেশি হয়।এই দিন রিদিতা চলে গেছে আবেগ কে ছেড়ে
-কেমন আছো রিদি।খুব ভাল লাগছে তাই না আমাকে এভাবে দেখে।জানো রিদি মেয়ে টা খুব পাজি হয়ে ছে তোমার মতো।প্রতিদিন তিন বেলা ওর জন্য রাঁধতে হয়।অফিস করতে হয় ।সারাদিন এ হাঁপিয়ে যাই আমি।কিন্তু কি জানো দিন শেষে আমার প্রিনসেন্স কে দেখে সব কষ্ট মুছে যায় ।শোন এখন কিন্তু বলতে পারবেনা ও র ওপর আমার কোন অধিকার নেই।তুমি তো ফাঁকি দিয়ে চলে গেছো ওকে কিন্তু আমিই মানুষ করছি।যান প্রতি রাতে লাভ কে তোমার গল্প শোনাতে হয়।মামোনি র গল্প না শুনলে তার ঘুম আসে না
ছোট্ট লাভ এর কথা শুনে সবাই হেসে পরলো
আবেগ পেছন এ ফিরলো
-আসছি মামোনি।দেখেছো কি দুষ্টু হয়ে ছে ও।কেক বলে ঠান্ডা হয়ে গেছে।শোন আমি আসবো তুমি কিন্তু অপেক্ষা করবে আমার জন্য একালে তো হলো না হয় হবে ওপারে দেখা জান্নাতে
আবেগ গিয়ে ছোট্ট লাভকে কোলে তুলে নিল।হাতে ছুরি ধরিয়ে দিল।কেক কাটা হলো।সবাই লাভকে উইশ করছে।আবেগের সাথে সাথে ঐ দূরে কবর থেকে মা ও দোআ করে যায় নিজের মৃত্যু ভুলে নিজের সন্তান এর শুভ কামনা করে আবেগ এর সাথে
“”HAPPY BIRTHDAY TO OUR #LOVE ❤”””
——————————সমাপ্ত——————————
সব গল্প এর এনডিং হ্যাপি হয় না।এই গল্প এ সব চরিত্র কাল্পনিক ।রিদিতা র মৃত্যু আবেগ এর সবচেয়ে বড় শাস্তি ।এই গল্প দিয়ে আমি একজন মেয়ে র জীবনের বাস্তব অবস্থা ও রিদিতা র মধ্যে দিয়ে একজন মায়ের ত্যাগ ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।আবেগ রিদিতা র মাধ্যমে স্বামী স্ত্রী র পবিত্র ভালোবাসা।জানিনা কেমন হয় এছে ।আপনাদের সাড়া পেলে আল্লাহ্ বাঁচালে 2020 এ আনবো #LOVE_season_2❤ ….
“”””সবাই নামাজ কায়েম করুন “””””””
-শোনা তুই বড্ড পাজি হয়ে ছিস কিন্তু ।মাকে এভাবে কিক মারছিস খুব ভাল লাগছে না।একবার তোকে পাই তখন দেখিস তোকে আমি কি করি।কি হলো ভয় পেলি নাকি।আরে তোকে মারবো নাকি আমি।তোকে কি আমি মারতে পারি বল।তুই তো আমার সব রে।তাড়াতাড়ি আয় তো আমার কোল আলো করে।তোকে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে ।কিন্তু তোকে কি আদৌ দেখে যেতে পারবো
দিশা ঘরে এসে দেখে রিদিতা পেটে হাত দিয়ে কথা বলছে
-কি রে পুচকু র সাথে কথা বলছিস নিশ্চয়ই
-হ্যাঁ রে।ভারি দুষ্টু হয়ে ছে এখন তো ঘন ঘন কিক মারে।পেটের মধ্যে ফুটবল খেলে
-আমার তো আর তর সইছে না।আর এক সপ্তাহ পর ই তোর ডেলিভারি ।পুচকু কে দেখবো
-হ্যাঁ আমার ও তর সইছে না
আজ রিদিতা র প্রেগন্যান্সি র নয় মাস রানিং।আবেগ এর অফিস থেকে চলে আসার সময় তিন মাস ছিলো ।আজ নয় মাসে পড়লো
কিন্তু এই ছয় মাসে আবেগ খুঁজে পায় নি রিদিতা কে।ঢাকাতে যতো আত্মীয় স্বজন আছে সবার কাছে গেছে।সিলেট এ এসে সেই বাড়িতে গেছিল যেখানে রিদিতা থাকতো।সেখানে গিয়ে আবেগ জানতে পারে যে ঐ বাড়ির মালিক রিদিতা কে মিথ্যা বলে তাড়িয়ে দিয়েছে।সেদিন ই ঐ বাড়িতে গিয়ে বাড়ি র মালিক কে সবার সামনে এনে মারতে মারতে সব সত্যি বলায়।ঐ মালিক কে এলাকা ছাড়া করে
-আশফি আমি কি পাব না রিদিতা কে।আমি কি করবো আশফি।ছয় মাস ধরে খুঁজে চলেছি কোন ক্লু ও পেলাম না
-ধৈর্য্য ধরে আবেগ।মনে রাখিস রিদিতা ভাবি কে তুই নিজের দোষেই হারিয়ে ছিস ।আর ভাবি ও চায় না তোর কাছে ফিরতে।দেখলি এতো দিনে ও ভাবির ফোন নাম্বার টাই অন পেলাম না।এক বার যদি ফোনটা অন করতো তাহলে অন্তত লোকেশন ট্রাক করে পৌছে যেতাম আমরা
-হুম।আমি একটু বেরোচ্ছি
-কোথায় যাচ্ছিস তুই
-অফিসে রিদিতা যেদিন অজ্ঞান হয়ে পরে সেদিন যে ডাক্তার এর কাছে গেছিলাম সে বলেছিল,ওর নাকি লো প্রেসার ।এ মিথ্যা কেন বলেছিল এটাই জানতে যাব
আবেগ আশফি আবেগের বাবা তিন জনেই যেন পরিবার হয়ে উঠেছে।তিনজনে সিলেটে।ঢাকাতে কোন জায়গা বাদ নেই যেখানে রিদিতা কে খোঁজে নি তারা।আবেগ চেয়েছিল পেপারে বিজ্ঞাপন দিতে।কিন্তু আশফি নিষেধ করে।কারণ রিদিতা নিজের ইচ্ছে ই চলে গেছে।নিজের ইচ্ছে তে যে চলে যায় তাকে খুঁজে পাওয়া এতো সহজ নয়
-ডক্টর কেন আমাকে বলেছিলেন যে ওর লো প্রেসার
-সরি মি,চৌধুরি ।কথাটা আমি না আপনার ওয়াইফ ই বলেছিলেন ।আমিতো সত্যি টাই বলতে চেয়েছিলাম
-কি সত্যি
-আপনার ওয়াইফ এর প্রেগন্যান্সি তে ঝুঁকি আছে।ওনার শরীরে ব্লাড এর পরিমাণ প্রয়োজন এর তুলনায় কম।আরো কিছু সমস্যা আছে।আমি ওনাকে বলেছিলাম এখন এবরশন করে এক দুবছর পরে কনসিভ করতে।কারণ ডেলিভারির সময় ওনার লাইফ রিস্ক হতে পারে।কিন্তু উনি আমার কথা শোনেন নি।উনি আপনাকে বলতে নিষেধ করেন।আর তারপর,,
লাইফ রিস্ক কথাটা শুনে আবেগের বুকটা আরো ধক করে উঠলো
-আচ্ছা ডক্টর রিদিতা র শরীর তখন কেমন ছিল।মানে এই সমস্যা ছাড়া
-এই সমস্যা ছাড়া উনি ভালোই ছিলেন।তা ওনার এখন কি অবস্থা ।কোথায় চেকাপ করাচ্ছেন ।ওনার তো ডেলিভারির সময় হয়ে এলো।কেমন আছেন উনি
আবেগ কিছু না বলে হাঁটা শুরু করলো।ডেলিভারির কথা শুনে আবেগের চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো
-আমাদের ভালোবাসার জন্য লাইফ রিস্ক ও নিলে রিদি।আর কিছুদিন পর আমাদের ভালোবাসা পৃথিবীতে আসতে চলেছে।আর এই সময়ে তোমার পাশে থাকতে পারলাম না।আল্লাহ্ আর কতো শাস্তি দেবে আমাকে।এবার তো পথ দেখাও
ঐদিকে
-এই রিদি তোর সেই দারোয়ান চাচা তো আর তোর খোঁজ নিলো না।এতোদিন তো খোঁজ নিতো ।হঠাত্ যোগাযোগ বন্ধ করে দিলো
-আরে না আমিই তো সিম ফেলে দিয়ে ছি।উনি কিভাবে যোগাযোগ করবেন।শেষ বার যখন কথা হয়ে ছিল তখন শুনি চাচি র শরীর ভালো নেই।দিশা তোর ফোনটা নিয়ে আয় তো একটু কল করে দেখি।আমার ডায়েরি তে বোধহয় নাম্বার টা আছে যা নিয়ে আয়
রিদিতা দিশার ফোন দিয়ে দারোয়ান কে ফোন দিলো
-হ্যালো কে বলছেন
-চাচা আমি রিদিতা
-তুমি ।কেমন আছো মা।তোমার নাম্বার এ এতো দিন কল দি বন্ধ পাই
-চাচা ভালো আছি।তুমি আর চাচী কেমন আছো
-এই তো ভালো।মা তুমি কোথায় আছো এখন
-এই তো চাচা সিলেটে আমার দিলরুবা আন্টি,,,,,,হ্যালো হ্যালো
ফোন কেটে গেল
-কি রে কি হলো
-আরে জানি না ফোন কেটে গেল।আবার সংযোগ দিচ্ছি তাও বন্ধ
-আচ্ছা পরে কথা বলিস
ঐদিকে দারোয়ান রহিম এর তো মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে
-আল্লাহ্ মোবাইল টা বন্ধ হওয়ার টাইম পেলো না।এখনি চার্জ শেষ হতে হলো।আমি গিয়ে বড় সাহেব কে বলি।যাই হোক এ দিয়ে যদি রিদিতা মা র কাছে যাওয়া যায়
দারোয়ান গিয়ে আবেগের বাবাকে সব জানায়।তিনি সাথে সাথে আবেগকে কল দেন
-হ্যালো আবেগ
-হ্যাঁ বাবা বলো।আবেগ রিদিতা আজ রহিম কে ফোন করেছিল
তারপর আবেগের বাবা সব খুলে বললেন আবেগকে
-বাবা আর দেরী করা ঠিক হবে না।আমি রিদিতা র মাকে ফোন দিচ্ছি ওনারাই ঠিকানা জানবেন
আবেগ রিদিতার মাকে ফোন দিল
-হ্যালো আবেগ বলো।রিদিতা র কোন খোজ পেয়েছো
-দিলরুবা কে মা
-দিলরুবা কেন
-শিগগিরই বলুন।রিদিতা ওনার কাছে আছে।সিলেট এ
-আরে ও তো আমার ছোট বোন।সিলেট এ এই গ্রামে,,,,,,,, থাকে ও।আমার তো মনে ই ছিল না ওর কথা।ওর কাছে রিদিতা যেতে পারে
-তাহলে দেরী নয় আপনি বাবা নিশিতা আপু সবাই চলে আসুন আজ রাতেই যাব আমরা ওখানে
নিশিতা ওর হাসবেন্ড রিদিতা র মা বাবা আবেগের বাবা সবাই ঢাকা থেকে সিলেট এ চলে গেলেন আবেগ আশফির কাছে
-আবেগ চলো ভাই।আর দেরী নয় রিদি র কাছে যেতে হবে
-হ্যাঁ চলুন সবাই
আবেগ ও সবাই বেরোবে হঠাত্ কোথা থেকে লাবনি এসে হাজির হয়
-আবেগ
-এখানে কেনো এসেছেন আপনি
-আমি দারোয়ান এর কাছে গিয়ে কষ্ট এ খবর পেলাম তোমরা না কি রিদিতা র খোঁজ পেয়েছো।আমি তোমাদের সাথে যাব আবেগ।আমি অনেক পাপ করেছি জীবনে।ওর কাছ থেকে ক্ষমা চাইবো ।এক দিন এর জন্য হলেও তো মা বলে আমাকে ডেকে ছিস ।সেই দাবি নিয়ে বলছি আমাকে নিয়ে চল।আমি ক্ষমা চেয়ে চিরদিনের মতো সবার থেকে দূরে চলে যাব
আবেগ কিছু বলতে পারলো না।এক সময় তো এই মহিলা কে ভীষণ ভালোবাসতো।মা বলে ডেকেছিল
-চলুন।কিন্তু রিদিতা র কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন না
-আচ্ছা
সবাই রওনা হলো
ভোরের আলো ফুটে গেছে।রিদিতা নামাজ সেরে সেই নীল পানজাবি টা নিয়ে বসেছে।বৃষ্টি র সেই রাতে আবেগ যে ওটা পরেছিল রিদিতা সেটা আর ধুয়ে দেয় নি।আবেগের এর গন্ধ লেগে আছে যে।বালিশের নিচে থেকে ওর কাছে থাকা আবেগের শেষ ছবি টা নিয়ে বুকে জরিয়ে ধরলো।দিশা এলো ঘরে
-প্রতিদিন সকালে এ কেনো ঐ লোকটার মুখ দেখিস বলতো
-জানি না।বড্ড ভালোবাসি যে
-কেন বলেছিলি তো ঘৃনা করবি
-পারিনা রে।যাকে ভালোবাসা যায় তাকে কি ঘৃনা করা সম্ভব
-নে খাবি আয়
-আসছি
রিদিতা খেয়ে ঘরের ভেতর আসতে আসতে পায়চারি করছে
-রিদি বস মা।এতো হাটিস না
-আন্টি আর বসতে ভাল লাগছে না।একটু হাটি।আআআহ
-এই কি হলো
-কি আর হবে।জোরে কিক মেরেছে।যা দুষ্টু হয়ে ছে না
-তা যা বলেছিস ।তোকে খালি কিক দেয়।দেখিস ও খুব দুষ্টু হবে
-আমার ও মনে হয়
আবেগ আর সবাই এসে গাড়ি থেকে নামলো ।দেখা যাচ্ছে এক তলা একটা টিনসেটের বাড়ি ।সবাই এগোচ্ছে দরজার দিকে।আবেগের রিদ স্পন্দন বেরেই যাচ্ছে ।সে চলে এসেছে রিদিতা র কাছে
হঠাত্ দরজায় কেউ বারি দিল
-দিশা দেখতো কে এলো
-আন্টি আমি দেখছি
-তুই বস।তোকে বলেছি না এতো হাঁটা হাটি করবি না।দিশা দেখ
-আসি মা
দিশা দরজা খুলে ভুত দেখার মতো তাকিয়ে আছে।দিশা দরজা থেকে সরে এসে রিদিতা র পাশে দাঁড়ালো ।দিলরুবা ও এগিয়ে এসেছে
-কি রে দিশা কে এসেছে
-কে এসেছে দিশা বল তো
দিশা সামনে তাকাতে ইশারা করলো
আসতে আসতে পুরো ঘর মানুষে ভরে গেল।নিশিতা নিশিতা র হাসবেন্ড রিদিতা র মা বাবা আবেগের বাবা আশফি সবাই ঘরে ঢুকলো।সবার শেষে ঢুকলো আবেগ।সবার চোখে পানি চিক চিক করছে
আবেগের ভেতরে ঢুকে রিদিতা কে দেখে কষ্ট টা আরো বেড়ে গেল।রিদিতা পেট ফুলে অনেক বড় হয়েছে।মেক্সি পরেছে ওরনা দিয়ে আবার পেটটা একটু ঢাকা।রিদিতা কে আর আগের মতো লাগছে না।এ পুরো অন্য রিদিতা ।একজন মা
সবার চোখে পানি।হঠাত্ নিশিতা রিদিতা র দিকে এগিয়ে গেল
রিদিতা দিশা দিশা র মা একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে।এতো বড় ধাক্কা সাত সকালে কেউ হজম করতে পারেনি
চলবে——
#LOVE❤
part:24
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
নিশিতা কাঁদতে কাঁদতে রিদিতা কে গিয়ে জরিয়ে ধরলো।রিদিতা ও নিশিতা কে
-আমি কি মরে গেছিলাম বোন।তুই আমার কাছে কেন যাস নি সেদিন।মা বাবা তোকে যাই বলুক আমি কি কখনো তোকে ফেলেছি।তুই একা এই অবস্থায় কিভাবে,,,,,,কেনো আমার কাছে যাসনি তুই
নিশিতা র হাসবেন্ড ও এগিয়ে এলো
-রিদিতা আমি কি কখনো তোমাকে নিজের বোন ছাড়া আর কিছু ভেবেছি।তুমি কেন আমাদের কাছে যাও নি।আমরা দেখতাম তোমাকে ।কেনো আমাদের পর করে দিলে তুমি
-আমি পর করিনি দুলাভাই ।আমি জানতাম মা বাবা আমাকে ফেললেও নিশিতা আপু তুমি আমাকে ফেলতে না।কিন্তু কি বলোতো মা বলেছিল তোমাদের সাথে যোগাযোগ না করতে তাই আমিও তোমাদের সংসার এ বাধা হতে চাই নি
আশফি এগিয়ে এলো রিদিতা র দিকে
-নিশিতা আপু আপনি একটু সরুন
নিশিতা সরে গেলে আশফি রিদিতা র পায়ের কাছে বসে পরে
-আমাকে ক্ষমা করে দেও রিদিতা ভাবি।আমি জানি আমার পাপের কোন ক্ষমা নেই।কি করবো।তুমি যেমন তোমার বাচ্চা র জন্য লড়াই করেছো আমি ও আমার বাচ্চা র জন্য সেদিন ঐ নাটক করতে বাধ্য হই
-তোমার বাচ্চা
-হ্যাঁ ভাবী আমার বাচ্চা
আশফি রিদিতা কে সব খুলে বলে
-ভাবি মাফ করে দেও আমাকে।আমি যদি জানতাম যে এসব নোভা র কারসাজি আমি কোনদিন তোমার আর আবেগের মাঝে আসতাম না
-ওঠো আশফি ভাই।তোমার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই।আর ক্ষমা তোমাকে অনেক আগেই করে দিয়েছি।দোষ তোমার নয়।দোষ আমার ।আমি অন্ধ ভাবে ভালোবেসেছি বিশ্বাস করেছি।কিন্তু আমাকে কেউ বিশ্বাস করেনি।আর সেজন্য ই আজ ,,,থাক আর বললাম না
রিদিতার মা বাবা এগিয়ে এসে রিদিতা কে জরিয়ে ধরতে গেলে রিদিতা বাধা দেয়
-খবর দার আমার কাছে আসবেন না আপনারা
-রিদিতা ।নিজের মা বাবা কে এভাবে বলতে পারলি
-কিসের মা বাবা ।আমার মা বাবা তো সেদিন ই মরে গেছে যেদিন রাতের অন্ধকারে নিজের অসহায় গর্ভ বতী মেয়ে কে তাড়িয়ে দিয়ে ছিল।আমার মা বাবা সেদিন ই মরে গেছে যেদিন আমি জন্মেছিলাম।তার পর থেকে প্রতি মূহুর্তে আমার ওপর অবহেলা ।মানুষ সৎ ছেলে মেয়ে কেও এতো অবহেলা করে না যতোটা আমি পেয়েছি।আমার কোন মা বাবা নেই
-রিদিতা মাফ করে দে মা ।তোর সাথে অনেক অন্যায় করেছি আমরা
-কিসের অন্যায়।কোন অন্যায় না।আপনাদের তো একটাই মেয়ে নিশিতা ।আপনাদের আর কোন মেয়ে নেই।থাকলেও সে মরে গেছে ।এটাই তো বলেছিলেন আপনি মিসেস দিলশাদারা
-রিদিতা নিজের মা কে এভাবে কষ্ট দিস না।দোহাই তোর মাফ করে।কোন অজানা জায়গায় এসেছিস তুই।ফিরে চল মা
-কিসের মা।বললাম না আমার মা বাবা নেই।শোনেন নি আপনি।আর অজানা জায়গায় ।অজানা জায়গায় তো এতো বছর ছিলাম ।এখন আছি জানা জায়গায় ।আমার আপনজনের কাছে।যারা আমাকে ফেলতে পারে নি
দিশা র মা এসে রিদিতা কে ধরলো
-মা এতো হাইপার হোস না।তোর শরীর এমনিতেই ভালো নেই
-কি করবো আন্টি ।একটু শান্তি তে ছিলাম ।সেটা ও এদের সহ্য হলো না ।চলেই তো এসেছি।তোমাদের কিছু তো নিয়ে আসিনি।বেরিয়ে যাও সব।বেরিয়ে যাও।আন্টি ওদের যেতে বলো
-তোর আন্টি বললেই আমি যাব নাকি।ও আমাকে আটকানোর কে।আমার মেয়ে কে আমি নিয়ে যাব
-খবর দার।আমার আন্টি র নামে একটা বাজে কথা বলবেন না আপনি।নিজের বোনের সাথে যে এতো জঘন্য কাজ করতে পারে নিজের মেয়ে র সাথে এমন করতে পারে তার কাছে কখনো যাব না
দিশা র মা ও মুখ খুলল
-ওরা বললেই আমি তোকে দেব নাকি।তুই আমার মেয়ে ।আর দিলশাদারা কিসের এতো অধিকার দেখাস তুই।কোথায় ছিল এতো মায়ের দরদ যখন তোর মেয়ে রাস্তায় ঘুরেছিল ।বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে।ও আমার মেয়ে ।আমার যদি ভিক্ষা করে ও ওকে খাওয়া তে হয় তবে তাই খাওয়া বো তবুও ওকে কারোর কাছে যেতে দেব না
আবেগের বাবা রিদিতা র দিকে এগিয়ে এলেন
-রিদিতা মা।ক্ষমা করে দে আমাকে।আমি সেদিন লাবনি র কথা শুনে,,,,,,,
-না বাবা ।আপনার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই।নিজের বাবা র থেকেও ওতটা ভালোবাসা পাই নি যতোটা আপনি দিয়ে ছেন ।ঐরকম অবস্থায় নিজের বাড়ি র বৌকে দেখলে যে কেউ ঐ সিদ্ধান্ত নেবে।আপনার কোন দোষ নেই বাবা ।ভুল ছিল আমার ভালোবাসায়।ক্ষমা চেয়ে আমাকে ছোট করবেন না
এবার সবার শেষে আসলো রিদিতা র সবচেয়ে কাছের মানুষ টি।আবেগ।চোখের পানিতে একাকার হয়ে চলে গেল রিদিতা র কাছে
-রিদিইই
আবেগের ডাক শুনে রিদিতা র বুকের হাহাকার বেরে গেল।আবেগের দিকে তাকালো না রিদিতা
বলে রিদিতা ঘুরতে যাবে তার আগে আবেগ গিয়ে দুহাত দিয়ে রিদিতা কে জরিয়ে ধরলো
-রিদি আমার সাথে কথা বলবে না
-,,,,,,,,,
-এই রিদি তোমার আবেগের সাথে কথা বলবে না
-,,,,,,,,
না চাইতেও রিদিতা র চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো।এতোদিন মনে মনে একবার হলেও চাইতো অপেক্ষা করতো প্রতীক্ষা করতো যে আবেগ আসবে।কিন্তু ঐ যে অভিমান ।অভিমান বাধা হয়ে দাঁড়ায়
-এই রিদি কথা বলো না আমার সাথে।আমি যে মরে যাচ্ছি।তুমি কথা বলো না আমার সাথে।এই রিদি
-,,,,,,,,,
-এই রিদি একবার কথা বলো আর অভিমান করে থেকো না।আমি যে তোমার অভিমান মানতে পারছি না।আমার বুক ফেটে যাচ্ছে
-ছাড়ুন আমাকে
-রিদি আমাকে ক্ষমা করে দেও।আমি অনেক বড় ভুল করেছি।ক্ষমা করে দেও
-ছাড়ুন আমাকে।আপনি কোন ভুল করেন নি।ভুল আমি করেছি।পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিন।আমার জন্য আপনার জীবন নষ্ট হয়েছে
-রিদি প্লিজ ভুলে যাও সব।ফিরে চলো।আমরা আবার ভালোবেসে ঘর বাধবো ।আমি তুমি আর আমাদের সন্তান কে নিয়ে
-ভুলতে চাইলেই কি সব ভোলা যায় আবেগ চৌধুরি ।পারবেন আমার জীবনের ঐ কষ্ট এর দিন গুলো মুচে দিতে ।পারবেন আমার হারানো সম্মান ফিরিয়ে দিতে।পারবেন আমার সাজানো সংসার ফিরিয়ে দিতে।যদি পারেন তা হলে বলেন আমি সব ভুলে যাব ফিরে যাব
-রিদি আমি জানি এসব পারব না।কিন্তু বাকী জীবন টা তো সাজাতে পারি বলো।ক্ষমা করে দেও আমাকে।আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি ।আমি মরে যাব তোমাকে ছাড়া
-ও তাই।ভালোবাসেন।কোথায় ছিল এই ভালোবাসা এতদিন যখন রাতের আধারে কুকুর এর মতো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিলেন
রিদিতা এবার ঐ দিন এর পর থেকে সব ঘটনা খুলে বললো
-বলুন এই ভালোবাসা কোথায় ছিল তখন
-রিদিতা আমি তোমার পায়ে পরছি তুমি ক্ষমা করে দেও আমাকে।ফিরে চলো
-দয়া করে ছারুন আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।ছাড়ুন কষ্ট হচ্ছে আমার
আবেগ তাড়াতাড়ি রিদিতা কে ছেড়ে দিল।এই অবস্থায় রিদিতা র কষ্ট হওয়া টা স্বাভাবিক
এমন সময় লাবনি এসে রিদিতা র সামনে দাঁড়ালো
-রিদিতা
-এই মহিলা এখানে কি করছে।আন্টি বের করে দেও একে।তোমরা কেন একে নিয়ে এসেছো।আমার জীবন টা শেষ করে দিয়ে ছে।বের করে দেও এই মহিলা কে
লাবনি গিয়ে আবেগকে সরিয়ে রিদিতা কে জরিয়ে ধরে কান্না তে ভেঙে পরলো
-আমাকে ক্ষমা করে দেও রিদিতা ।তুমি ক্ষমা না করলে মরেও শান্তি পাব না
-ছাড়ুন আমাকে
-ঠিক আছে ছেড়ে দিলাম
গাড়ি চলছে আপন গতিতে।রিদিতা আর দিশা ফিরে যাচ্ছে গ্রামে
-রিদি আর কাদিস না
-কাঁদছি না রে।শুধু নিয়তির কথা ভাবছি।কি খেলা খেলছে নিয়তি আমার সাথে
হ্যাঁ দিশা রিদিতা কে নিয়ে ওদের গ্রামে চলে যাচ্ছে।কথায় আছে না মেয়ে দের এক পা এগুতে গেলেও যেন বিপদ ছায়া র মতো দাঁড়িয়ে পরে।ঠিক তাই।গতকাল ঐ ঘটনার পর রিদিতা দিশা বাড়ি এসে দেখে ঐ বাড়ির মালিক ওদের মালপত্র বাইরে ফেলে দিচ্ছে ।উনি নিজের প্রতিশোধ নিলেন।আশেপাশে র লোকজন ও আগের দিন আবেগ এর গাড়ি দেখেছে।গতকাল ও আবেগকে দেখেছে।রিদিতা কে দুশ্চরিত্র সহ অনেক কথা বলে তাড়িয়ে দিয়েছে।রিদিতা আর কোন প্রতিবাদ করেনি ।কারণ কাল সকালটাই কেটেছে সংগ্রাম করে।দিশা মালপত্র নিয়ে রিদিতা কে নিয়ে রওনা হয় গ্রামের পথে
রিদিতা ফোন থেকে সিমটা খুলে ফেলে দিল
-রিদি এটা ফেললি কেন
-আর কোন অতীত এর স্মৃতি রাখতে চাই না।আবেগের নাম্বার এর সাথে মিল রেখে ও সিমটা এনে দিয়েছিল এটাই আমার কাছে ওর শেষ স্মৃতি ।তাই ফেলে দিলাম
-আচ্ছা এবার একটু ঠান্ডা হ
আজ আবেগ নোভা র বিয়ে
-মা আমি এই বিয়ে করতে পারব না
আবেগের বাবা মা সবাই তাকিয়ে আছে আবেগের দিকে
-আবেগ তুমি কি তামাশা পেয়েছো এটা।একটু পর বিয়ে এখন এসব বলছো
-আমি কালকেও মাকে বলেছি বাবা আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়
নোভা বিয়ে র সাজে বসে আছে।আজ তার স্বপ্ন পূরণের দিন।কিন্তু পাশ থেকে আবেগের এসব কথা শুনে নোভা রেগে আগুন।ঘর ভরতি অতিথিদের সামনে আবেগ এসব বলছে।নোভা র বাবাও খেপেছেন
-আবেগ ভুলে যেও না তুমি নিজেই রাজী হয়ে ছো।এখন আমার মেয়ে র সর্বনাশ করবে এটা যদি ভেবে থাকো খুব খারাপ হয়ে যাবে
-আমি কোথায় রাজী হয়ে ছি।আপনারা এক কথা বলছেন।আমি সময় চেয়েছিলাম শুধু ।আপনারাই তো ব্যস্ত হয়ে গেলেন।আমি এই দেশ ছেড়ে চলে যাব কারোর আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না।কিন্তু এই বিয়ে আমি করবো না
নোভা র বাবা নোভা কিছু বলতে যাবে তার আগে সদর দরজা দিয়ে কেউ বলে উঠলো
-এতো হাইপার হোস না আবেগ।তোকে এমনিতেই এই বিয়ে করতে হবে না।আজ তো এখানে বিয়ে না একটা নতুন সিনেমা হবে অনেকের মুখোশ উন্মোচন হবে
এই কথা শুনে সবাই ঘুরে দাঁড়ালো ।নোভা উঠে দাঁড়ালো ।কারণ এই কন্ঠ তার চেনা।পুরো ঘরে বন্দুক হাতে নিয়ে কালো পোশাক পরা লোকজন ঘিরে নিলো।প্রবেশ করলো এই কথা বলা লোকটি।তাকে দেখে নোভা র পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে গা হাত পা কাঁপছে
-তুমমমি
-হ্যাঁ আমি।আশফি আবরাজ ।আবরাজ কোম্পানির এম ডি।এতো তাড়াতাড়ি আমাকে ভুলে গেলে নোভা
আশফিকে দেখে নোভা নোভা র বাবা আবেগের মা র গলা শুকিয়ে এসেছে।আবেগ ও অবাক
-আশফি তুই এখানে
-হ্যাঁ এসেছি।নিজের সব পাপ শিকার করতে।আর অনেকের অনেক কিছু ফিরিয়ে দিতে।তোর সংসার বাঁচাতে
-আমার সংসার
-হ্যাঁ তোর আর রিদিতা ভাবির ভালোবাসার সংসার ।আমি একা আসিনি আরো অনেকে এসেছে।আপনারা আসুন
একে একে ঘরে এলো রিদিতা র মা বাবা নিশিতা ও নিশিতা র হাসবেন্ড ।তাদের সবার চোখ মুখ লাল
-আশফি তুই এদের এখানে,,,
-হ্যাঁ ওনাদের নিয়ে এসেছি।ওনারা সব জেনে গেছেন এবার জানার পালা তোর আর আংকেল এর।আর হ্যাঁ মি,রাশেদ(নোভা র বাবা) আপনি আপনার মেয়ে ভুলেও মুখ খুলবেন না।আমার টিম কে বলা আছে আজ এখানে যে উল্টা পাল্টা শুরু করবে তাকেই একদম শুট করে দেবে
-আশফি কি সত্যি বলবে তুমি
-আংকেল সেই সত্যি যা তিন মাস আগে আবেগ আর রিদিতা ভাবির সংসার ভেঙেছিল।যেটা আপনি আবেগ জানেন না
-কি সত্যি বলবি বল
-দাঁড়া আবেগ।আজ অনেক সত্যি বলবো।একটু ধৈর্য ধর।প্রথম নোভাকে দিয়ে ই শুরু করি।কি বলো নোভা
নোভা তো ভয়ে শেষ
-আআমমার আবার কি সত্যি আশফি
-ওহ তুমি তো ভুলে গেছ।তাহলে শোন আমার কথা।আজ থেকে পাঁচ বছর আগে নোভা কানাডা যায় পড়াশোনা র জন্য ।তার দুবছর আগে যায় আবেগ।আমার বাবা বাংলাদেশী কিন্তু আমার জন্ম কানাডা তে।বাংলাদেশে অনেক বিজনেস আর কানাডা তে ও অনেক বিজনেস ছিল তার।আবরাজ কোম্পানির এমডি ছিলেন।আমি কানাডা তে আবেগ এর সাথে একি কলেজে পড়তাম ।অনেক ভালো বন্ধু হয়ে যাই আমরা দুজন।হঠাত্ বাবা একদিন হার্ট এয্টাক এ মারা যান।আমার মা মারা গেছে ছোট বেলায় ।আমার মাদার ফিয়েরা আমাকে দেখতেন।অনেক ভেঙে পরি আমি।সে সময় আবেগ সবসময় আমাকে সঙ্গ দিত।এর মাঝে নোভা ও কানাডা যায় পড়াশোনা র জন্য ।আবেগের কাছে জানতে পারি নোভা ওর কাজিন ফুফাতো বোন।যেদিন নোভাকে এয়ারপোর্ট এ আবেগের সাথে রিসিভ করতে যাই সেদিন ই ওকে দেখে প্রেমে পরে যাই আমি।আবেগ নোভা আমি সবসময় একি সাথে চলাফেরা করতাম।নোভা র প্রতি দুর্বলতা বেড়েই যায় আমার।কিন্তু মুখে বলতে পারতাম না।এর ই মাঝে একদিন আবেগ পরীক্ষা র জন্য কটেজে থেকে যায় ।নোভা আমার সাথে ঘুরতে যায়।সেদিন নোভা কে মনের কথা বলি আমি।আমি ভাবতে পারিনি নোভা সেদিন ই আমাকে একসেপট করবে।নোভা শুধু একটা শর্ত দেয় যাতে আমার আর ওর সম্পর্কে র কথা আবেগকে না জানাই।আমি ও রাজি হই।শুরু হয় আমাদের প্রেম।নোভা খুব উচ্চাভিলাষী ছিল।ও টাকা গয়না পার্টি এসব ভালোবাসতো ।আমি ওর সব চাহিদা পূরণ করতাম ।এর মাঝে আবেগ বিডি তে ব্যাক করে।তখন নোভা আর আমি একা।দুজনে জুটিয়ে প্রেম করতাম।আমি নোভাকে বিয়ে র কথা বললে ও বলতো যে বাড়ি তে সবাই জানে।দেশে ফিরে তবেই বিয়ে করবে।আমি প্রচন্ড ভালোবাসতাম নোভাকে ।ধীরে ধীরে সম্পর্ক আরো গভীর হয়ে যায় ।শুধু কবুল বলাই বাকি ছিল আমাদের ।স্বামী স্ত্রী র মতো আমরা থাকতাম ।আমাদের সম্পর্কে এর তিন বছরের মাথায় আবেগ জানায় যে ও বিয়ে করেছে।সেদিন নিউজ টা শুনে নোভা যেন কেমন হয়ে যায় ।আমার সাথে রাফ ব্যবহার শুরু করে।ও বলে দেশে নাকি ওর বাবার তেমন কোন সম্পত্তি নেই।আবেগের বাবা র টাকায় ও এখানে এসেছে।আমি ওকে খুব ভালোবাসতাম ।বিডি তে আমার যতো বিজনেস ছিল সব নোভা র নামে করে দেই আমি।তারপর নোভা আবার আগের মতো শুরু করে।আবেগের বিয়ে র দুবছর পূর্তি আবেগ আমাদের ইনভাইট করে।নোভা ও রাজী হয় যেতে।আমাদের রিলেশন তখনো কেউ জানতো না।কিন্তু নোভা র বাবা আবেগের মা সব জানতেন।আর আমার মাদার ফিয়েরা ।ঐ বার বিডি তে ব্যাক করি।বিডি তে আসার কিছুদিন আগে নোভা অসুস্থ হয়ে পরে।ডাক্তার জানায় যে নোভা প্রেগন্যান্ট ।নোভা এই খবরে একটুও খুশি ছিল না।ও বাচ্চা টাকে এবরশন করাতে চাইছিল।আমি ওকে অনেক রিকোয়েস্ট করে বিডি তে নিয়ে আসি।আবেগ এর এঅযানিভারসারি তে রিদিতা ভাবির সাথে দেখা হয় ।নোভা ঐ অনুষ্ঠানে যায় নি।ও বলে শরীর ভালো না।তাই আমি ওকে জোর করিনি।বিডি তে আমি নোভা র বাড়িতে থাকতাম ।সবাই জানতো আমরা বন্ধু ।কিন্তু আসলে তা ছিলাম না।এর মধ্যে হঠাত্ একদিন নোভা আমাকে বলে ওর কথা মতো একটা কাজ করতে হবে।সেদিন ও বলে রিদিতা ভাবির সাথে ঐ,,,,,,আমি রাজী হয়নি।সেদিন নোভা র সাথে অনেক কথা কাটাকাটি হয় ।নোভা বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে যায় ।ওকে ফোন দিয়ে বলি যে ও কেন ও রকম জঘন্য কাজ করতে চাইছে।এতে আবেগের সংসার ভেঙে যাবে।ও বলে যে ও নাকি হসপিটাল এ গেছে এবরশন করাতে ।আমি যদি ঐ কাজ করি তাহলে এবরশন করবে না।আবেগের মা ও সেদিন এই কথা বলে আমাকে ।আমি নোভাকে অনেক ভালোবাসতাম ।আমি চাইতাম আমার সন্তান আসুক পৃথিবীতে ।বাধ্য হয়ে সেদিন রিদিতা ভাবির বদনাম করি।সেদিন রাতে নোভা ফিরে আসে।ও বলে ও এবার আমার সাথে কানাডা ব্যাক করবে।আমি সেদিন খুব অপরাধ বোধ করি।কারণ আমি নিশ্চিত যে আবেগ রিদিতা ভাবি কে ডিভোর্স দেবে।নোভা কে অনেকবার বলি সত্যি টা জানিয়ে দিই আবেগের ক্ষতি করে ওর কি লাভ ।ও শুধু এবরশন করার হুমকি দিত।এর পরের দিন আমরা কানাডা ফিরে যায় ।সেখানে যাওয়ার দুদিন পর আমি অফিসে র কাজে বাইরে আসি সেদিন হসপিটাল এর সেই ডাক্তার এর সাথে দেখা হয় ।যিনি বলেছিলেন নোভা প্রেগন্যান্ট ।ওনাকে দেখে আমি জিজ্ঞেস করি যে নোভা কে এখন কি রকম কেয়ার করা উচিত চেকাপ করাতে হবে কিনা অনেক কিছু।উনি আমার দিকে অবাক হয়ে ইংরেজিতে বলেন,,আপনি কি বলছেন।আপনার স্ত্রী ঐ টেস্ট এর দুদিন পর এসে এবরশন করিয়ে গেছে।আমার মনে হচ্ছিল আমার পা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে ।আমার বাচ্চা কে নোভা মেরে ফেলেছে আমাকে না জানিয়ে ।ও বিশেষ ওষুধ এর মাধ্যমে এই কাজ করে তাই আমি টের পাই নি।তারপর রিদিতা ভাবির সাথে ঐ নাটক।আমি তখন মাদার ফিয়েরা কে ফোন দেই।বলি যেন নোভা কে কোথাও যেতে না দেয়।নোভা কে আটকে রাখে।এই বলে আমি বেরিয়ে যাই ।নোভা র সাথে বোঝাপড়া করতে।বাড়িতে গিয়ে দেখি মাদার ফিয়েরা রক্তাক্ত অবস্থায় পরে আছে।নোভা কোথাও নেই।মাদার ফিয়েরা র অবস্থা খারাপ ছিল।নোভা ওনাকে গুলি করেছিল।উনি আমার সাথে কথা বলার সময় নোভা সব শুনে ফেলে তারপর পালাতে গেলে মাদার আটকাতে গেলে তাকে মেরে দেয় ।এই বলে তিনি মারা যান।এই দিকে পুলিশ এসে আমাকে খুনি ভেবে ধরে নেয়।সরকার আমার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নেয়।আমি জেলে চলে যায় ।আমার এক কানাডিয়ান ফ্রেন্ড ছিল ও ছিল উকিল ।ও পেপারে আমার এসব কাহিনী পরে আমার সাথে দেখা করতে আসে।ওকে সব বলি আমি।ও থেকে আমাকে ছারানোর সব ব্যবস্থা করে।নির্দোষ প্রমাণিত হই আমি।সরকার আমার সব সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয় ।এরপর ই আমি বিডি তে আসা র সব কিছু রেডি করি।সাথে লাগিয়ে দেই আমার সোর্স ।সব প্রমাণ নিয়ে ই আজ এসেছি আমি
আশফির কথা শুনে আবেগ ওর বাবা পুরো অবাক
-এতো বড় নাটক।কেনো করলে নোভা কেন
-দাঁড়া আবেগ।ধীরে ধীরে সব বুঝবি ।নোভা ডার্লিং সত্যি বলে ফেল।আজ তোমার কোন বাঁচার লাইন নেই।মিথ্যা বললে এখানেই তোমাকে মেরে পুঁতে ফেলবো আমি
এবার নোভা ও মুখ খোলে
-আবেগ কে আমি ছোট থেকেই ভালোবাসি।পছন্দ করি।কিন্তু ও আমাকে বন্ধু র মতো দেখতো।কখনো ওকে মনের কথা বলিনি।কানাডা যাওয়ার পর আবেগকে দেখে প্রেমে পরে তাই নতুন করে।ও আরো সুন্দর হয়ে যায় আগের থেকে।কিন্তু ও কখনো আমাকে ফিরেও দেখতো না।সব সময় বইয়ে না হয় ফোনে মুখ গুঁজে থাকতো।এর মধ্যে আশফি আমাকে প্রপোজ করে।আমি ভাবতে ও পারিনি যে আশফি আমাকে লাইক করে।আশফি ও আবেগের থেকে কম হ্যান্ডসাম ছিল না।তারপর ওর পার্সোনালিটি ও ছিল আবেগের থেকে বেশি।আমি টাইম পাসের জন্য ই আশফির প্রস্তাব এ রাজী হয়ে যাই।আশফি কে নিষেধ করি এই সম্পর্কে র কথা কাউকে না জানাতে।এর মাঝে আবেগ দেশে ব্যাক করে।আমি কানাডা তে থেকে যাই গ্রাজুয়েশন এর জন্য ।এই দিকে আশফি তখন আমার প্রেমে সেই হাবুডুবু খাচ্ছে ।আমি আশফি র মোহে পরে যাই।বিদেশে লিভ টুগেদার একটা ফ্যাশন ।আমি ও নিজের জীবনটা কে উপভোগ করতে চাইতাম ।আর আশফির কোন কিছুর ই অভাব ছিল না।মাথা থেকে আবেগকে ঝেড়ে ফেলে আশফির সাথে সব শুরু করি।এরকম ভালো চলছিল দিনকাল।এরপর একদিন আমি আর আশফি অনেক দূরে ঘুরতে যাই ঘুরা বললে ভুল হবে ওটাকে এক প্রকার হানিমুন বলা যায়।যাওয়ার সময় ভুলে আমার ফোন কটেজে ফেলে যাই।ওখানে আমরা দুজনে দশ দিন কাটিয়ে তারপর ফিরি।কটেজে ফিরে দেখি আবেগের মা মানে আমার মা এর অনেক কল।আমি কল ব্যাক দেব তার আগে আশফি জানায় আবেগ বিয়ে করেছে আর বিয়ে র ছবিও পাঠিয়ে ছে।আবেগের পাশে ঐদিন ছবিতে রিদিতা কে আমি মানতে পারিনি।শত হলেও আবেগ কে ভালোবাস তাম।এদিকে আশফি বিয়ে র জন্য জোর করে।আমি ঠিক করি আশফি র সাথে সম্পর্ক শেষ করে দেশে ফিরবো।মা নিষেধ করে।বলে এখন আসলেই আমি আবেগকে পাব না।আবেগ অনেক ভালোবাসে ওর বৌকে ।তাঁর পর বাবা র বিজনেস ভালো চলছিল না।তাই আমি কানাডা তে থেকে আশফি র দেশে থাকা সব সম্পত্তি নিজের নামে করি।যখন ভাবি কাজ শেষ দেশে ফিরবো।তখন জানতে পারি আমি প্রেগন্যান্ট ।আশফিকে না জানিয়ে বাচ্চা নষ্ট করি আমি।কারণ আমার আবেগ এর সাথে বিয়ে করার ইচ্ছে ।তারপর দেশে ফেরা তারপর রিদিতা কে আবেগের জীবন থেকে সরানো আর ঐদিন অফিসে ও রিদিতা কে হেনস্থা করা সব আমার প্লান
-তার মানে ঐদিন অফিসে ও তুমি,,,
-হ্যাঁ আবেগ তাই।কিন্তু আবেগ আমি তোমাকে ভালবাসি বলো।চলো আমরা বিয়ে করি।তুমি এসব ভুলে যা ও
আশফি গিয়ে নোভা র চুলের মুঠি ধরে থাপ্পড় মারে
-বিয়ে করার শক তোর তাই না।আমি মেটাবো ।তার আগে তোর বাবা রাশেদ আর আবেগের সো কোল্ড মা মিসেস লাবনি র মুখোশ টা খুলতে দে
চলবে——
#LOVE❤
part:22
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
আশফি এবার আবেগের মা মিসেস লাবনি র কাছে এগিয়ে গেল
-নিন এবার আপনি মুখ খুলুন ।কেনো এতো নিচে নামলেন।নিজের ছেলেকে কেনো এভাবে ঠকালেন ।বলুন
-কে নিজের ছেলে।আবেগ আমার কেউ না।নোভা আমার সন্তান ।আমার আর নোভা র বাবা রাশেদ এর দীর্ঘদিন এর সম্পর্ক ছিল।আমরা বিয়ে করবো বলে ঠিক করেছিলাম ।হঠাত্ ই রাশেদ কোথায় যেন হারিয়ে যায় ।ওর নাম্বার বন্ধ ।ওর বন্ধু দের কাছেও খোঁজ নেই।সবাই জানায় ও কোথায় কেউ জানে না ।এভাবে এক বছর কেটে যায় আমি রাশেদ এর কোন খোজ পাইনি ।এর মধ্যে বাড়িতে আজাদ ভাই মানে আবেগের বাবা বিয়ে র প্রস্তাব পাঠায়।আজাদ ভাই কলেজ লাইফ থেকেই আমার তিন বছরের সিনিয়র ছিলেন।উনি কলেজ লাইফ থেকে আমাকে পছন্দ করতেন।কিন্তু আমি বারবার রিজেক্ট করে দেই।উনি বিয়ে র প্রস্তাব পাঠালে আমার ফ্যামিলি ও রাজি হয়ে যায় ।এতো বড় বিজনেস ম্যান।তারপর আমার পরিবার জোর করে আজাদ এর সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়।রাশেদ এর কোন খোজ ও আমি তখন পাইনি ।বিয়ে র পর যখন আজাদ এর বাড়ি যাই তখন সেখানে গিয়ে রাশেদকে আমি দেখি।আজাদ পরিচয় করিয়ে বলে রাশেদ আজাদের বোন অনীলার হাসবেন্ড ।সেদিন মনে হচ্ছে আমার দুনিয়া যেন ওখানেই থেমে গেছে।আমি শুধু সুযোগ খুঁজছিলাম রাশেদকে কখন একা পাব।বাসর ঘরে আমাকে বসিয়ে যখন সবাই চলে যায় তখন রাশেদ বেরোনোর সময় আমি ওর পথ আটকাই ।ওকে জিজ্ঞেস করি কেনো আমাকে ঠকালো ।সেদিন রাশেদ বলে যে অনীলা রাশেদকে ভালোবাসে ।আর আজাদ নিজের বোনের জন্য ওকে জোর করে তুলে এনে বিয়ে দিয়ে ছে।আর ও আমাকে এখনো ভালোবাসে।সেদিন থেকে আজাদ এর প্রতি আমার চরম ঘৃনা জন্মায় ।আজাদ ভাইকে আমি শর্ত দি যেন কোন দিন আমার সাথে স্বামী স্ত্রী র সম্পর্কে জরাতে না আসে। আজাদ আমাকে ভালোবাসতো তাই সব মেনে নিয়ে ছিল।এভাবে দিন কাটছিল।অনীলা খুব সরল ছিল ।আজাদ নিজের অফিসে র কাজে সবসময় ব্যস্ত থাকতো।এর মধ্যে আমার আর রাশেদ এর পুরোনো প্রেম ও জেগে ওঠে।আজাদ অফিসে থাকলে রাশেদ অনীলা কে ভুলিয়ে ভালিয়ে আমার কাছে আসতো।আমি রাশেদ কে অনেক ভালোবাসতাম ।তাই ওর সাথে অবৈধ সম্পর্কে জরিয়ে পরি।এরকম একদিন আমি আর রাশেদ দুজনে খুব ঘনিষ্ঠ অবস্থায় আমার ঘরে ছিলাম ।আজাদ হুট করে অফিস থেকে তাড়াতাড়ি চলে আসে ঐদিন।আর আমাদের ঐ অবস্থায় দেখে ফেলে ।অনীলা র কথা ভেবে সেদিন আজাদ রাশেদ কে ছেড়ে দেয়।রাশেদ কে এটা বলে যে ওর বোন যদি এসব জানতে পারে তাহলে ঐ দিন ই আমাদের শেষ দিন হবে।এর পর শুরু হয় আজাদের অত্যাচার ।ও আমাকে সহ্য করতে পারতো না।এর মধ্যে আমি অসুস্থ হয়ে পরি।ডাক্তার জানায় আমি প্রেগন্যান্ট ।আজাদ জানতো যে ওটা রাশেদ এর বাচ্চা ।কারণ আজাদ আর আমার মাঝে কোন সম্পর্ক ই গরে ওঠেনি।আজাদ এবরশন এর কথা বললে ডাক্তার জানায় আমার শারীরিক কন্ডিশন ভালো না।এবরশন করালে জীবন ঝুঁকি আছে।আমি প্রেগন্যান্ট এই কথাটা শুধু রাশেদ আজাদ আর আমি জানতাম ।অনীলা ও জানতো না।এরপর ই আজাদ আমাকে নিয়ে বিজনেস এর নাম করে দেশের বাইরে নিয়ে আসে।সেখানে ই নোভা র জন্ম ।অনীলা খুব বাচ্চা ভালোবাসতো।কিন্তু অনীলার সমস্যা ছিল ও কোন দিন মা হতে পারবে না।তার কিছুদিন পর আজাদ আমাকে নিয়ে দেশে ফেরে ।সেদিন আজাদ আমার কোল থেকে নোভা কে নিয়ে একটা কথাই বলে,তোমাদের দুজনের অবৈধ সম্পর্কের ফসল এটা।রাশেদ শুধু অনীলা র জন্য বেচে যাবে ।কিন্তু তোমার শাস্তি আজীবন নিজের মেয়ে র কাছ থেকে মা ডাক শুনতে পাবে না।সেদিন আমার কোল থেকে নোভাকে নিয়ে অনীলা র কোলে দিয়ে বলে,যে ঐ বাচ্চা টা দত্ত ক নিয়ে ছে আজাদ অনীলা কে দেবে বলে।সেদিন আমি রাশেদ শুধু চুপ করেছিলাম ।আমার বুক ফেটে যাচ্ছিল।কিন্তু মুখ খুলতে পারিনি।আজাদ ওখানেই থামেনি ঐ দিনই অনাথ আশ্রম থেকে একটা দুবছর এর ছেলেকে দত্ত ক নিয়ে আমার কোলে তুলে দেয়।বলে আজ থেকে চৌধুরি গ্রুপ এবং আজাদ চৌধুরি র সবকিছু র উওরাধিকার ঐ বাচ্চা ।ওকে যেন আমি মায়ের আদরের কমতি না দিই।আর ঐ বাচ্চা টাই আবেগ।আবেগকে আমি মায়ের স্নেহ দিয়ে ই বড় করি।আমার সামনে নোভা যখন অনীলা কে মা আর আমাকে মামণি বলে ডাকতো আমি সেটা সইতে পারতাম না।রাশেদ কে ডেকে আমি বলি এর কিছু করতে।ও তখন জানায় যে চৌধুরি গ্রুপ এর 75% শেয়ার আজাদ অনীলা র নামে রেখেছে।বোনকে এতো ভালোবাসতো ও।আর 35% শেয়ার নিজের নামে।সেদিন রাশেদ বলে যে অনীলা র অবর্তমানে এসব কিছু নোভা পাবে।অনীলা কে যে করে হোক সরিয়ে আমরা ওর সব সম্পত্তি নিয়ে চলে যাব।কিন্তু ঐ দিন অনীলা আমাদের সব কথা শুনে ফেলে।আমি আর রাশেদ ওকে ধরতে গেলে ও দৌড়ে বেরিয়ে যায় রাশেদ আমাকে নোভা র কাছে রেখে অনীলা কে ধরতে যায় কিন্তু ততক্ষণে অনীলা অনেক দূরে চলে যায় ।রাশেদ অনীলা কে ফলো করছে এটা অনীলা বুঝতে পেরে গাড়ি দ্রুত ড্রাইভি করতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করে আর ওখানেই মারা যায় ।কিন্তু কে জানো ঐ অনীলা র মনে এতো শয়তানি থাকবে।মরার আগে গাড়ি তে ও উঁকি ল কে ফোন দিয়ে বলে যায়, যে ওর কিছু হলে ওর সব সম্পত্তি যেন আবেগ চৌধুরি র নামে যায় ।পরে সব কিছু ঐ রাস্তার ছেলে আবেগের হয়।আর আজাদের দয়া দক্ষিণ আ তে রাশেদকে নোভাকে নিয়ে থাকতে হয় ।এর মাঝে নোভা কানাডা যাওয়ার আগে একদিন রাশেদ আর আমি কথা বলছিলাম ও সব শুনে।তখন ও জেনে যায় যে ওর মা আমি।কানাডা গিয়ে নোভা জানায় যে ও আবেগকে ভালোবাসে।সেদিন রাশেদ ও বলে যে তাহলে ভালো আবেগের সাথে নোভা র বিয়ে হলে নোভা সব পাবে।কিন্তু আজাদ সেটাও হতে দিল না।ওর কাছে প্রস্তাব দিলে ও রিজেক্ট করে দেয়।তারপর আবেগকে দেশে ব্যাক করতে বলে তারপর ঐ রিদিতা কে এ বাড়ি র বৌ করে আনে।তাঁর পর আমি সব কিছু সাজিয়ে নাটক করি।রিদিতা চলে যাওয়া র পর আমি আজাদের পায়ে পরি যেন নোভা কে আবেগের সাথে বিয়ে দেয়।তখনো আজাদ রাজী হয় নি।আবেগ আমাকে খুব ভালোবাসে তাই আমার কথা ফেলেনি।ও নোভাকে বিয়ে করতে রাজী হলে আজাদ আর কিছু বলে না ।এই হলো সত্যি
নোভা র মার কথা শুনে আবেগ আর ওর বাবা আজাদ চৌধুরি র বিস্ময় এর শেষ নেই
-বাবা আমি তোমার ছেলে না বাবা বলো না
-না তুই আমার ছেলে।কে কি বললো তাতে কিছু যায় আসে না ।তুই আমার ছেলে আমি তোর বাবা
আশফি এবার নোভা র বাবা রাশেদ এর কাছে যায়
-নিন এবার সব বলুন
-আমি অনীলা কে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করি সম্পত্তি র জন্য ।আজাদ অনীলার কথা ভেবে মেনে নেয় আমাকে।কিন্তু যখন দেখি লাবনি র সাথে আজাদের বিয়ে হয় এছে তখন লাবনি কে সব মিথ্যা বলি আমি।আর আমি লাবনি র সাথে মেলামেশা শুরু করি।কিন্তু ঐদিন আজাদের সাথে ধরা পরা আর লাবনি র প্রেগন্যান্ট হওয়া ওগুলো র জন্য ই আমার সব প্লান শেষ।শুধু টাকার জন্য ই আমি এতো কিছু করেছি
নোভা র মা ও অবাক রাশেদ এর কথা শুনে
-তুমি এতো বড় মিথ্যা বলছো আমাকে।তোমার মিথ্যা র জন্য আজ আমি এতো নিচে নেমেছি ।ছিহহহ
এবার আশফি গিয়ে নোভা র চুলের মুঠি ধরে থাপ্পড় মারা শুরু করলো
-আশফি ছেড়ে দেও।আমার লাগছে
-তোর আরো লাগার বাকি আছে
আশফি মারতে মারতে নোভা কে আবেগের পায়ের কাছে ফেললো।নোভা আবেগের পা জরিয়ে ক্ষমা চাওয়া শুরু করলো
-আবেগ তুমি ক্ষমা করে দেও আমাকে।চল আমরা সব ভুলে বিয়ে করে নিই
আবেগ লাথি মেরে নোভা কে ফেলে দিল
-তোকে ক্ষমা ।তোকে জ্যান্ত পোড়ালে ও আমার শান্তি হবে না
নিশিতা গিয়ে নোভা র মার চুলের মুঠি ধরে মারা শুরু করলো
-তুই আমার বোনের সর্বনাশ করেছিস না।তোকে তো আজ আমি মেরেই ফেলবো
আশফি গিয়ে নিশিতাকে আটকালো
-থামুন আপু।নোভা তোমার জন্য কানাডা থেকেই এরেস্ট ওয়ারেন্ট আছে।মাদার ফিয়েরা কে মারার অভিযোগ এ
পুলিশ এসে নোভা কে নিয়ে গেল
-আর মি,রাশেদ নোভা র নামে করা সব সম্পত্তি আমি নিজে র নামে ট্রান্সফার করিয়েছি।এখন আপনি দেউলিয়া
নোভা র বাবাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিল আবেগের বাবা ।তাঁর পর সবার সামনে লাবনি কে তালাক দিয়ে বের করে দিল।লাবনি বের হওয়ার আগে আবেগ তার সামনে গিয়ে দাঁড়াল
-কেনো এমন করলে।একদিন এর জন্য হলেও মা বলে ডেকেছিলাম।এভাবে আমার সংসার টা শেষ করে দিলে।আরে তোমার শত্রু তা তো আমার সাথে আমার নিরপরাধ রিদিতা কে কেন এমন সাজা দিলে
লাবনি কিছু না বলে বেরিয়ে গেল
(নোভা ওর মা বাবা র শাস্তি গল্প এর শেষে না হয় দেখিয়ে দেব)
আবেগ আবেগের বাবা সবাই যেন অবাক হয়ে গেছে আশফির কথা শুনে
-আশফি কি বলছো তুমি ।আবেগের সন্তান মানে
-হ্যাঁ আংকেল রিদিতা ভাবি প্রেগন্যান্ট ।সেদিন এর ঘটনা র কদিন আগে ভাবি এটা জানতে পারে।লাবনি আন্টি সব জানতো উনিই রিদিতা ভাবি কে আপনাদের জানাতে নিষেধ করে আর বলে আবেগ ফিরলে সারপ্রাইজ দিতে ।আর উনিই ভাবি কে তোর দেশে ফেরার কথা জানায়
আশফি র কথা শুনে আবেগের বাবা মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো
-হায় আল্লাহ্ কি পাপ করলাম আমি।সেদিন লাবনি র কথা শুনে ঐ গর্ভবতী মেয়ে টাকে তাড়িয়ে দিতে বললাম ।মেয়ে টা কোথায় আছে কেমন আছে কে জানে
আবেগ ও ধপ করে বসে পরলো।আবেগ এর কাছে সব পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে
-তার মানে সেদিন পার্টি তে অজ্ঞান হওয়া ,তারপর অফিসে,ওর ধীরে হাঁটা চলা,ওর পরিবর্তন, আর সেদিন বিরিয়ানি খাওয়া র সময় ওর বলা-দুজনের খাবার কৈ একা খাচ্ছি আমরা তো দুজনেই খাচ্ছি।এসব আমার বাচ্চা র জন্য ।আমার আর রিদিতা র সন্তান আমাদের ভালোবাসা আসতে চলেছে।এ কি করলাম আমি।রিদিতা আআআ
রিদিতা দিশার সামনে গিয়ে বসে আছে।আর অঝোরে চোখের পানি ফেলছে।আবেগ অন্য রুমে তখনো ঘুমে
-এতো নোংরা একটা মানুষ কিভাবে হতে পারে
-জানিনা।তুই কেনো কাল ওকে ভেতরে ঢুকতে দিলি।তাও নেশা করা অবস্থায়
-আমি এটা বুঝতে পারিনি যে স্যার নেশাগ্রস্ত ছিল।আমিতো ভেবেছিলাম তোর কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছে
-আমার সব শেষ করে দিয়ে আবার নতুন করে আমাকে শেষ করতে বসেছে ও
আবেগের রাতের কথা মনে পড়ে যায় ।চারপাশে তাকিয়ে দেখে আবেগের বুঝতে বাকি নেই যে কাল ও আবার রিদিতা র সাথে,,,,,,
-ওহ নো।আমি আবার,,,,,,এইবার তো রিদিতা র কোন দোষ নেই ।এখনো বেশি সকাল হয় নি।তার মানে রিদিতা বাড়িতে আছে।আমাকে কথা বলতে হবে ওর সাথে
আবেগ জামা কাপড় পরে নিয়ে রুমে র বাইরে এসে ঐ বসার রুমে চলে গেল।গিয়ে দেখলো রিদিতা শাড়ি পরে ভেজা চুল এলোমেলো অবস্থায় হাঁটুতে মুখ গুঁজে বসে আছে।চোখ মুখ ফোলা এখনো কাঁদছে ।পাশে দিশা দাঁড়ানো
-রিদিতা
আবেগকে দেখে দিশা বেরিয়ে এলো।কারণ ওদের কথার মাঝে থাকাটা ঠিক হবে না।রিদিতা আবেগের দিকে ফিরে ও তাকাচ্ছে না
-রিদিতা
-বেরিয়ে যান
-রিদিতা শোন আমার কথা
-কি শুনবো আপনার কথা।কি শোনার বাকি রেখেছেন আপনি।এতো ই যখন চাহিদা মেটানোর শখ আপনার হবু স্ত্রী র কাছে যেতে পারেন নি।এখানে আমাকে শেষ করতে কেন এসেছেন
-রিদিতা আমি সত্যি,,,,,
-বেরিয়ে যান আমার সামনে থেকে।চলে যান আপনি।প্লিজ আর সইতে পারছি না আপনি।মুক্তি দিন আমাকে।বেরিয়ে যান
বলে রিদিতা জোরে কান্না শুরু করে দিলো।আবেগ আর কিছু না বলে রিদিতা র বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে গেল
-রিদি তুই কিছু বললি না কেন ওনাকে।আমার তো মনে হয় তোর ওনার নামে পুলিশ কমপ্লেন করা উচিত
-কি কমপ্লেন করবো।এটা বলবো যে আমার প্রাক্তন স্বামী তিনি আমার বাড়ি তে এসে দুদিন আমার ওপর জোর জবরদস্তি করেছে।আমাকে ধরষন করেছে।আরে মানুষ তো এটা শুনলে হাসবে।আর কতো হাসির পাত্র হবো আমি বলতে পারিস
দিশা আর কিছু বললো না
আবেগ বাড়ি তে গিয়ে দেখে নোভা হাজির।নোভা র চোখমুখ ফোলা।আবেগ কিছু না বলে ওপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে দেখে নোভা ওর রুমে বসে আছে
-এখানে কোন মুখে এসেছো তুমি
-আবেগ সত্যি কথা বলবে বলোতো
-বের হও।তোমার মানসিকতা এতো নোংরা জানা ছিল না
-তার আগে বলো কাল রাতে তুমি কোথায় ছিলে
-জানিনা
-সত্যি কথা বলো আবেগ।তুমি ঐ রিদিতা র কাছে গেছিলে তাই না
-,,,,,,,,
-কি হলো উওর দাও
-,,,,,,,,,
-আবেগ উওর দাওও
-হ্যাঁ হ্যাঁ আমি রিদিতা র কাছেই গেছিলাম
নোভা কিছু বললো না।কান্না শুরু করে দিলো
-আবেগ আমি তাও তোমাকে কিছু বলবো না।কারণ কাল আমিও একটা অপরাধ করেছি তোমার সাথে।আর তুমি ও আমার সাথে।সত্যি করো বলো না আবেগ কাল পার্টি থেকে বেরিয়ে তুমি কি কি করেছো ঐ মেয়ে র সাথে
-,,,,,,,,,
-আবেগ প্লিজ বলো।না হলে আমি শান্তি পাচ্ছি না
-আমি কাল ওখান থেকে বেরিয়ে রিদিতা র কাছে যাই।মাথা এমনিতেই ঘুরছিল।আরো যেয়ে দেখি ও টাওয়েল পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছছে আর তারপর,,,,,,
নোভা আবেগের কলার ধরে বসলো
-আর তারপর ঐ মেয়ে টার সাথে তুমি সারা রাত,,,,,ছিহহ।এই শেষ কথা শুনে নাও আমাকে বিয়ে করতে তুমি নিজেই রাজী হয়ে ছিলে।খুব শিগগিরই আমাদের বিয়ে হবে।সেই ব্যবস্থা করছি।কাল আমিও একটা দোষ করেছি তাই তোমাকে ছেড়ে দিলাম
নোভা বেরিয়ে গেল।আবেগ মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে
নোভা গিয়ে আবেগের মা মানে ওর মার কাছে গেল
-মা
-তুই কি করবি এখন
-মা সেই কাজ।যা কয়েক মাস আগে রিদিতা র সাথে ঘটিয়ে ছিলাম সেটাই
-মানে
-মানে তুমি শুধু দেখ।আজ অফিসে সবার সামনে আমি ঐ রিদিতা র কি অবস্থা করি।বেচারী হাহ
আবেগ রেডি হয়ে অফিসে যাচ্ছে ।এই সময় আবেগের মা এলো
-আবেগ
-বলো
-আজ আমি একটু তোর অফিসটা দেখবো।তোর বাবা তো ঢাকায় ।আর এখানে এসে তেমন কিছু দেখাও হয় নি।তাই তোর সাথে বেরোবে।অফিস দেখে নোভা কে নিয়ে একটু শপিং করে আসবো
-আচ্ছা চলো
আবেগ মা আর নোভাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো
সকাল সাড়ে দশটা
রিদিতা আর দিশা অফিসে ঢুকছে।দেখে তেমন কেউ নেই অফিসে।ওরা রিসেপশনে যায়
-আচ্ছা অফিসে র সব স্টাফ,,,,
-ম্যাম ওনারা স্যার এর রুমে আছেন।আপনিও যান
রিদিতা দিশাকে নিয়ে চলে গেল
-দিশা কি হলো বলতো
-জানিনা রে
রিদিতা দিশা আবেগের কেবিনে ঢুকে দেখে কেবিনে র এক টা সোফাতে নোভা আবেগের মা বসা।পাশে সব স্টাফ ।আর আবেগ রক্ত চক্ষু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আবেগের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক্সপোর্ট এর ম্যানেজার রাশেদ সাহেব ।রিদিতা কে দেখে আবেগ বলে উঠলো
-এই যে মি, রাশেদ আপনার ক্লাইন্ট হাজির।মিসেস রিদিতা ওখানে কেন এখানে আসুন।সবাই দেখবে তো আপনার কুকীর্তি
রিদিতা র মাথায় কিছু ঢুকছে না।ও দিশা র দিকে তাকালো দিশা সামনে যেতে ইশারা করলো
-স্যার আমার কি কুকীর্তি মানে
-মানে টা মি,রাশেদ ই বলুন
মি,রাশেদ মুখ খুলল
-স্যার মিসেস রিদিতা একজন ডিভোর্সি সেটা আমি জানতাম ।কিন্তু ওনার ঐ অসহায় ত্ব দেখে আমি ওনার এই চাকরির ব্যবস্থা করে সবচেয়ে বড় ভুল করি।হ্যাঁ দোষ কিছুটা আমার ও ছিল।কিন্তু উনি নিজেই আমাকে আগে ইশারা দিয়ে ছেন।কাজের ফাঁকে উনি ইশারা ইঙ্গিতে আমাকে অনেক কিছু ই দেখাতেন।অবশেষে আমিও রাজি হয়ে যায় ।মাঝেমধ্যে ওনার বাড়ি তে আসা যাওয়া মানে ইয়ে শুরু করি ।কিন্তু তার জন্য ওনাকে অনেক পেমেন্ট দিতে হতো আমার ।কিন্তু আমি আর পারছি না।ওনার চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।কাল বিকেলে উনি আমাকে ওনার বাড়ি তে আবার ডাকেন।তারপর সন্ধ্যা পর্যন্ত আমি ওনার সাথে কাটাই।ফিরে আসার সময় উনি আমাকে ব্লাকমেইল করে ন যে পেমেন্ট না বাড়িয়ে দিলে উনি সবাইকে সব বলে দেবেন।তিনি এর আগেও ব্লাকমেইল করেন আমাকে।আমি আর না পেরে আজ আপনাকে জানাতে বাধ্য হলাম
ঐদিকে সবাই বলাবলি শুরু করে দিয়েছে
-ইশ মিসেস রিদিতা কে কি ভালোই ভাবতাম আর উনি ছি ছি
রিদিতা র যেন পা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে ।দিশা ও অবাক পুরো
নোভা এসে আবেগের কাছে দাঁড়িয়ে পরে
-আবেগ একটু সাইডে এসো
-কেনো
-এসো
আবেগ কে সাইডে নিয়ে নোভা বলা শুরু করে
-আবেগ ঐ ম্যানেজার কি বললো কাল সন্ধ্যা তে উনি রিদিতা র সাথে ছিল।এটা তো সত্যি ।এর প্রমাণ তো তুমি নিজেই
-আমি কিভাবে
-আবেগ তুমি তো ওকে কাল গোসল করে এসেছে এই অবস্থায় দেখেছো।তুমি ই তো বললে।রাত নয়টা র সময় তাও একটা মেয়ে কেনো গোসল করবে বলতে পারো
আবেগ এর এমনিতেই রাগে শরীর মন জলছে তারপর নোভা র কথা আবেগ এর রিদিতা র প্রতি আরো ঘৃনা হচ্ছে
আবেগ গিয়ে ম্যানেজার কে পাশে সরিয়ে রিদিতা র কাছে গিয়ে আসতে বলা শুরু করলো
-ম্যানেজার এর কথা তো সত্যি ।তুই এতো নিচে নেমেছিস
-আবেগ উনি মিথ্যা বলছে।কাল তো তুমি নিজেই আমার সাথে ছিলে
-সেটাই তো।রাত নয়টা র সময় গোসল করে কি করছিলির তুই।এটা আগে বল।নাকি নিজে ম্যানেজার এর সাথে নষ্টামি করে তারপর গোসল করেছিলি ।শেষ মেষ দেহ ব্যবসা শুরু করেছিস।বেশ্যা হয়ে ই গেছিস
আবেগ এর কথা শুনে রিদিতা র চোখ দিয়ে আজ আর পানি ঝরছে না।আবেগ তাকে এতোটা নিচে নামাবে ভাবতে পারেনি।রিদিতা আবেগের কোন কথার উওর দিল না
রিদিতা একবার দিশার দিকে তাকালো
তারপর রিদিতা যে কাজ করলো তা সবার ভাবনার বাইরে
চলবে——
#LOVE❤
part:20
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
রিদিতা নিজের পা থেকে চটি খুলে ম্যানেজার এর কলার ধরে টেনে এনে ম্যানেজার কে চটি দিয়ে মারা শুরু করলো।রিদিতা র কাছে সবাই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে।দিশা ও গিয়ে রিদিতা র সাথে তাল মেলানো শুরু করলো
-এই জানোয়ার আমি তোকে ইশারা করেছি।আমিই।কি মনে করেছিস মেয়ে হয়েছি বলে কি মানুষ না।আজ তোকে দেখিয়ে দেব একজন মেয়ে কে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার পরিনাম কি
আবেগ না পেরে রিদিতা কে আটকাতে গেল
-একদম এদিকে আসবেন না।না হলের জুতোর বারি আপনাকেও দেব।আজ কাউকে ছারবো না আমি
রিদিতা পুরো জল্লাদের রূপ ধারণ করেছে যেন।আবেগ ও ভয় পেয়ে পিছিয়ে এলো।দিশা ও সেই মার দিচ্ছে
ম্যানেজার আর সইতে পারছে না।জুতোর বারি খাওয়া র চেয়ে অপমান আর কি হতে পারে
-রিদিতা ছেড়ে দিন।আমি সব সত্যি বলছি ।আমি এতোক্খন সব মিথ্যা বলেছিলাম
ম্যানেজার এর কথা শুনে রিদিতা দিশা ছেড়ে দিল
-নে সব সত্যি বল।কেন আমার নামে মিথ্যা কথা বলেছিস এতোক্খন ।সত্যি বল নাইলে আমার চটি এখনো কিন্তু হাতে আছে বলে দিলাম
আবেগ তো অবাক
-ম্যানেজার কি সত্যি বলবেন।এতোক্খন তাহলে এসব কেন বলেছেন
-স্যার আমি নিজে এটা করিনি।আমি তো লোভে পরে করেছি।আমি আজ অফিসে আসবো তার আগে আমার বাসায় ওনারা যায় ।গিয়ে এই অফার দেয়।আমি প্রথম এ রাজী হয়নি কারণ এসব বললে আমার ও চাকরি থাকবে না।কিন্তু আমাকে ওনারা বিশ লাখ টাকা দেয়।আর বলে এই কাজ করার পর যেন আর অফিসে না আসি।তাঁরপর আমাকে ওনার আ থাইল্যান্ড পাঠিয়ে দেবে ন।এই জন্য মিথ্যা বলেছি।স্যার মাফ করে দিন
-এই ওনারা কারা
ম্যানেজার নোভা আর আবেগের মা এর দিকে তাকিয়ে বলতে যাবে তার আগে আবেগের মা কথা সেরে দেয়
-আবেগ।আর কি শুনবি ।সরাসরি এই লোককে।ছিহ কি জঘন্য ।কটা টাকার জন্য
-স্যার না আমাকে বলতে দিন।আপনার জানা উচিত যে আপনার ম,,,,,
-এই আপনারা দাঁড়িয়ে দেখছেন কি।বের করে দিন এই ম্যানেজার কে।কি জঘন্য লোক
অফিসে র বাকি স্টাফ গুলো কলার ধরে ম্যানেজার কে টেনে নিয়ে যাচ্ছে
-দাঁড়াও মা আমি শুনবো কে এই কাজ করেছে
-নোভা দাঁড়িয়ে দেখছিস কি দরজা টা লক করে দে।আবেগ এসব শুনে আর কি করবি বাদ দে
নোভা দ্রুত গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল।ওপাশ থেকে ম্যানেজার এর কথা আর শোনা যাচ্ছে না
-আবেগ বাবা বাদ দে এসব
এদিকে রিদিতা দিশা সব বুঝেছে কার এই কাজ।রিদিতা গিয়ে আবেগের একদম কাছে গিয়ে মুখোমুখি দাঁড়ালো ।রিদিতা কে দেখে আবেগের মাথা লজ্জা য় নিচু হয়ে যায়
-বাদ দিতে চাইলে যে সব হিসাব বাদ যায় না মি,আবেগ চৌধুরি
বলেই রিদিতা আবেগের গালে সজোরে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল।আবেগ গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে রিদিতা র দিকে তাকালো
-রিদিতা আআআ
-হ্যাঁ আমি।এই চড় টা আমার মন ভেঙে দেবার জন্য ।আমার ভালোবাসা টাকে অপমান করার জন্য
বলেই যেই রিদিতা আবেগকে আরেকটা থাপ্পড় মারতে যাবে তখন নোভা এসে হাত ধরে ফেলে
-কি ভেবেছিস নষ্টা মেয়ে তোর সাহস কম নয় আমার আবেগকে,,,,,
নোভা বলতে দেরী রিদিতা হাত ছারিয়ে নোভাকে থাপ্পড় দিল
-এই কাকে নষ্ট বলিস তুই।আর একবার যদি আমার নামে বাজে বলিস না তো তোকে মেরে এখানেই পুঁতে দেব।আর কিসের আবেগকে আমার বলিস।বৌ এখনো হসনি তুই।কিসের এতো অধিকার দেখাস ।আমি এখানে দাঁড়িয়ে আমার স্বামী র সাথে কথা বলছি তুই এর মধ্যে ঢোকার কে।হ্যাঁ স্বামী না প্রাক্তন স্বামী।তার পরেও আমি কথা বলছি আমাদের মাঝখানে থার্ড পারসন হয়ে আসছিস কেন বেহায়া মেয়ে
রিদিতা নোভাকে সজোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দিল
-আজ আমাকে কেউ আটকাতে পারবে না।মানুষ এর যখন পেছনে দেয়াল ঠেকে যাক তখন সে ঘুরে দাঁড়ায়।আজ আমার পেছনে র দেয়াল ঠেকে গেছে ধৈর্য এর সীমা ছাড়িয়েছে ।আমাকে আজ কেউ আটকাতে পারবে না।যে আসবি আমার সামনে তাকে প্রয়োজন এ খুন করতেও হাত কাঁপবে না আমার
আবেগের মা গিয়ে নোভাকে ধরলো।আবেগ মূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কারণ আজ যে রিদিতা কে সে দেখছে তার সঙ্গে আজ আর আবেগ পেরে উঠবে না।দিশা ও অবাক রিদিতা কে দেখে
রিদিতা গিয়ে আবেগকে আরেকটা থাপ্পড় দিল
-এই থাপ্পড় টা আজকের জন্য ।আমাকে সবার সামনে এভাবে অপমান করার জন্য
রিদিতা এবার কেঁদেই দিল।গিয়ে আবেগের কলার ধরলো
-আর কতো জালাবি তুই আমাকে।আর কত পোড়াবি ।আমিও মানুষ । কি ভুল করেছিলাম বল।তোকে শুধু ভালোবেসে সংসার বেধে ছিলাম ।আর তুই আজ আমাকে বেশ্যা বললি।রাস্তায় নামিয়ে দিলি একেবারে।পতিতা মনে হয় তোর আমাকে
-রিদিতা আমি,,,
-একদম চুপ।আজ আমি বলবো আর তুই শূনবি।এই বেশ্যা আমি না তুই।একটা মেয়ে দশটা পুরুষ এর সাথে শুলেই বেশ্যা হয়ে যায় ।আর তোরা পুরুষ জাতি একেক দিন একেক টার সাথে পাড়ায় গিয়ে শুলে তোরা কি।বেশ্যা তো তোরা।তুই তোর চাহিদা মেটানোর জন্য আমার কাছে গেছিস আমি না।তুই নিজে একা পেয়ে আমাকে জোর করেছিস আমি না।বেশ্যা তুই তুই শুনেছিস
-রিদিতা আমার কথা,,,,,
-কোন কথা বলবি না তুই।তোকে ভালোবাস তামা বলে আর কটা থাপ্পড় দিতে পারছি না।আমার হাত কাপে।আমার বুকে রক্তক্ষরণ হয়।বুঝেছিস তুই
দিশা কাঁদছে রিদিতা র কথা শুনে।আবেগ ও কাঁদছে কিন্তু কিছু বলার মুখ আজ ওর নেই।দিশা রিদিতা কে টেনে আবেগের থেকে সরিয়ে আনলো
-ছেরে দে রিদি।এতো হাইপার হোস না।তোর শরীর এর জন্য ক্ষতিকর ।চল এখান থেকে।এদের বলে লাভ নেই
-আর কতো ছারবো আমি।আমার জীবনটা শেষ করে দিয়ে ছে।আরে রাতের অন্ধকারে একটা পোষা কুকুর কেও মানুষ বাড়ি থেকে তাড়ায় না রে।সেখানে আমি তো ঐ লোকটার স্ত্রী ছিলাম।রাতের আধারে একা একটা মেয়ে কে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ছে।কিছু ছিল না আমার সাথে।না একটু টাকা পয়সা যা দিয়ে অন্তত কোথাও গিয়ে মাথা গুজবো ।এরা মানুষ না।এই অমানুষ গুলো একবার খোঁজ ও নেয়নি যে বেচে আছি না মরে গেছি।খুব ভালোবাসার সাফাই গাইতো ।অথচ এই হলো নমুনা ।সেই দিন রাতের অন্ধকার থেকে আজ অবধি একা চলে এতো দূর এসেছি ।এখানে ও এই অমানুষ লোকটা চলে এসেছে ।ওর জন্য আমার শান্তি নেই।আমার সব শেষ করে দিয়েছে
-রিদি চল এখান থেকে।চল
রিদিতা দিশাকে ছারিয়ে আবেগের সামনে গিয়ে দাঁড়াল ।আবেগ ভেজা চোখে রিদিতা র দিকে তাকিয়ে আছে
-একদিন আমার সব ছিল।তুই ছিলি।তোকে হারাবার ভয় এ চুপ ছিলাম ।প্রতিবাদ করিনি।ভাবতাম একদিন তোর ভুল ভাঙবে।তুই আসবি।তোর প্রতীক্ষা ও করতাম মনে মনে।কিন্তু সেদিন ভুল ছিলাম ।সেদিন যদি জানতাম যে জিনিসটা হারানোর ভয়ে আমি চুপ আছি সে জিনিস টাই আমার নয় তাহলে চুপ থাকতাম না।সবকিছু বলে সব পিছুটান ছেড়ে চলে আসতাম।আজ আর আমার কোন পিছুটান নেই
-রিদিতা,,,
-চুপ।একদম চুপ।ঐ মুখে আমার নাম নেবে ন না।একদিন বলেছিলেন আমি আপনার জীবনের অভিশাপ ।শুনে নিন আমি না আপনি আমার জীবনের অভিশাপ ।আপনার খুব শখ না আমার মরা মুখ দেখার।আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমি আমার রিদয়ের সব দিয়ে আল্লাহ্ কে বলছি আল্লাহ্ যেন আমার মরা মুখ ই আপনাকে দেখিয়ে দেয় ।আর এটা ও শুনে নিন আমি যদি মরে ও যায় তো আপনি ও মরবেন ।জ্যান্ত লাশ হয়ে আজীবন নিজের পাপের মাশুল দেবেন।তখন চাইলেও আমাকে পাবে ন না
-রিদিতা আআআ
-একদিন আপনাকে ভালোবেসে নিজের শহর সজন সব ছেড়ে এই শহরে এসেছিলাম ।আজ আপনাকে ঘৃনা করে এই শহর ও ছারবো।জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আপনাকে শুধু ঘৃনা করবো শুনেছেন শুধু ঘৃনা ।। I HATE U ABEG I HATE U I HATE U
বলে রিদিতা দিশার হাত ধরে বেরিয়ে গেল।আবেগ তাকিয়ে আছে যাওয়ার দিকে।রিদিতা তাকে ঘৃনা করে এটা ভাবতেও পারেনি
এদিকে পরিস্থিতি বুঝে আবেগের মা নাটক শুরু করেছে
-আআআহ আআআঋ
আবেগ তাড়াতাড়ি মায়ের কাছে গেল
-মা কি হয়েছে মা
-আবেগ আন্টি র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে বোধ হয় ।তাড়াতাড়ি হসপিটাল এ চলো
আবেগ মা কে নিয়ে হসপিটাল এ রওনা হলো
রাতের বেলা
-আবেগ আমার শেষ কথা রাখবি
-মা কি বলছো তুমি
-আবেগ আমি কখনো চাই নি রিদিতা এই বাড়ি র বৌ হোক আজ না হয় সব ভুল ছিল।ঐদিন তো আমরা সবাই সব দেখেছি
-মা আমি কিছু বলতে চাই না এই ব্যাপার এ
-আজ রাতেই আমরা ঢাকাতে ব্যাক করবো।কাল ওখানে গিয়ে গায়ে হলুদ পরের দিন তোমার আর নোভা র বিয়ে
-মা আমাকে একটু সময়,,,,
-তোমাকে সময় ও দিয়ে ছি।তুমি নিজেই রাজী হয়ে ছিলে বিয়ে তে।তোমার বাবা সব রেডি করে রেখেছেন আর কোন কথা নয়
পরের দিন সকালে
কানাডা থেকে দেশের মাটিতে পা রাখলো আশফি
-ওয়েলকাম স্যার
-ওয়েলকাম না করে নিউজ বলো
-স্যার আজ নোভা আর আবেগ চৌধুরি র গায়ে হলুদ কাল বিয়ে
-এতো তাড়াতাড়ি কেন
-সেই খবর পাই নি
-সব কিছু রেডি তো
-হ্যাঁ স্যার
-ওকে
মুখে বিজয় এর হাসি আশফির
-বিয়ে তো হচ্ছে না নোভা ।এতোদিন ভালোবাসা দেখেছো এবার দেখবে প্রতিশোধ ।অনেক জীবন নষ্ট করেছো তুমি আমার সন্তান, আবেগ,রিদিতা, আবেগের সন্তান ।এবার এর হিসেব তোমাকে দিতে হবে।আর কোন জীবন নষ্ট হতে দেব না আমি
আবেগ ফোন রেখে দিল।আবেগ জানে নোভা কে বলে লাভ নেই।নোভা ওর মা কে বলবে।আর আবেগ আর যাই হোক নিজের মায়ের কথা ফেলতে পারে না
পরের দিন অফিসে
ম্যানেজার এসে আবেগকে কিছু ফাইল দিল
-স্যার আজি ডিলটা করতে হবে ।এম কে কোম্পানি না হলে অন্য কাউকে এই প্রজেক্ট দিয়ে দেবে সেটাই বললো
-ওহ।তাহলে তো এখনি বেরোতে হবে।এই সাইট টা কে সামলায়।তাকে তো সাথে নিতে হবে
-স্যার এটা তো মিসেস রিদিতা সামলান।আমি ওনাকে বলে দিচ্ছি আপনি বের হন ওনাকে নিয়ে
-আচ্ছা যান
ম্যানেজার চলে গেল।আবেগ বসে ভাবছে
-আবার রিদিতা ।যতোই একে দূরে রাখতে চাই ততোই আরো কাছে চলে যাই ওর।ধ্যাত ভাল লাগে না
আবেগ বেরিয়ে গেল
এইদিকে ম্যানেজার এসে রিদিতা কে সব বলেছে।রিদিতা ও আবেগের গাড়ি র উদ্দেশ্য এ গেল
-আল্লাহ্ আর কতো ।এই লোকটার সামনে আর যেতে চাচ্ছি না আর তুমি তার কাছেই খালি পাঠাও
রিদিতা কে দেখে আবেগ গাড়ি র হর্ন বাজালো ।রিদিতা গিয়ে গাড়ি র পেছনে র দরজা খুলতে গেল
-আমি কারোর ড্রাইভার না
রিদিতা বুঝতে পারছে আবেগ ওকেই বলছে।রিদিতা কথা না বাড়িয়ে আবেগের পাশের সিটে গিয়ে বসলো জানালার দিকে তাকিয়ে ।রিদিতা এক বারও আবেগের দিকে ফিরে দেখেনি।এদিকে আবেগ সব লক্ষ করছে
-সিট বেল্ট লাগাও
রিদিতা আবেগের কথায় কান না দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে
-এই তোকে কি একবার বললে কথা কানে যায় না।এতো ঘ্যাছড়া কেন তুই ।গাড়ি একটু জোরে ব্রেক করলে যদি সামনে গিয়ে মাথায় বারি খাস সে দায় কে নেবে শুনি
-চিন্তা করবেন না।আমার জন্য আপনাকে কোন দায় নিতে হবে না।আর মাথায় বারি লেগে যদি মরে যায় তাহলে ভালো হবে।অনেকে খুশি হবে অনেকের আমাকে সহ্য করতে হবে না
রিদিতা বেল্ট লাগিয়ে সিটের সাথে গা এলিয়ে চোখ বুজে রইলো।কিন্তু রিদিতা র বলা শেষ কথা শুনে আবেগের চোখে পানি এসে গেছে।আবেগ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে রিদিতা র দিকে।কারণ রিদিতা তাকে উদ্দেশ্য করেই কথা বলেছে তা বোঝাই যায়
-এতো ই খারাপ মনে হয় তোমার আমাকে।আমি তুমি মরলে খুশি হব।এই কথা টা বলতে পারলে তুমি ।তোমার জন্য তো আমার মরার কথা।প্রতি মূহুর্তে তোমার কষ্ট এ আমি মরি।থাক তোমাকে কিছু বলবো না।তোমাকে বিশ্বাস নেই।ইমোশন নিয়ে তুমি ভালোই খেলতে পারো—মনে মনে
আবেগ কিছু না বলে গাড়ি চালানো শুরু করলো।
ডিল কমপ্লিট করে দুপুরের দিকেই আবেগ রিদিতা কে নিয়ে রওনা হলো।রাস্তায় কেউ কারোর সাথে কথা বলেনি।রিদিতা তো সারা রাস্তা সিটে গা এলিয়ে চোখ বুজে পরেছিল।কিন্তু ও হয়তো চোখ খুললে ভালো করতো।তাহলে দেখতে পারতো পাশের দুটো চোখ বারবার ওকে দেখছে
এদিকে রিদিতা র তো খুব খিদে পেয়েছে ।আসার সময় শুধু ফোন আর ছোট একটা পার্স নিয়ে এসেছে।কোন খাবার সাথে আনেনি।বারোটা র দিকে রেস্টুরেন্ট এ আবেগ চাউমিন স্যুপ নিজে খেয়ে ছিল সাথে রিদিতা কে খাইয়ে ছিল।এখন সাড়ে তিনটা বাজে।এটুকু খাবারে রিদিতা র পেট ভরেনি
রিদিতা বারবার পেটে হাত বুলাচ্ছে ।আবেগ এসব লক্ষ্য করছে।হঠাত্ রিদিতা উঠে বসলো।আবেগের দিকে তাকালো।কারণ যে পরিমাণ খিদে পেয়েছে তাতে আবেগকে না বলে উপায় নেই
-গাড়ি থামান
-কেন
-গাড়ি থামান আমি খাব
-কি
-আমার খিদে পেয়েছে ।আমি খাব
-মানেটাকি।একটু আগে চাউমিন স্যুপ কফি খেলে।তারপর খিদে পাই কি করে
-আমি জানিনা ।গাড়ি থামান
আবেগ সাইট করে গাড়ি থামিয়ে বিরক্তি নিয়ে রিদিতা র দিকে তাকালো ।কিন্তু রিদিতা কে দেখে আবেগের বিরক্তি উধাও।রিদিতা বাচ্চা দের মতো আবেগের দিকে তাকিয়ে আছে আর বায়না করছে
-আমি খাব।আমাকে খাওয়া র এনে দিন
-কিন্তু এখন কোথায় খাবার পাব
-জানিনা ।আমি খাব।আমাকে খেতে দিন না হলে আপনাকেই কামড়ে খেয়ে ফেলবো
রিদিতা র কথা শুনে আবেগ ভুত দেখার মতো তাকিয়ে আছে।উপায় না পেয়ে নেমে গেল
-তুমি বসো।দেখছি কি পাওয়া যায়
আবেগ দেখলো রাস্তার ওপারে দু একটা হোটেল কিছু দোকান আছে।আবেগ একটা হোটেল থেকে এক প্যাকেট বিরিয়ানি আর এক বোতল পানি এনে গাড়ি তে গেল
-নেও খেয়ে,,,,,
আবেগ বলার আগেই রিদিতা আবেগের হাত থেকে নিয়ে গপগপ করে খাওয়া শুরু করেছে।সামনে যে আবেগ আছে সেদিকে খেয়াল নেই।কারণ এই সময়ে আর যাই হোক খিদে সহ্য করা যায় না
আবেগ হা হয়ে তাকিয়ে আছে।এতো খানি বিরিয়ানি দেখতে দেখতে রিদিতা চেটে পুটে খেয়ে ফেলেছে।আবেগ কখনো এরকম খেতে দেখেনি রিদিতা কে
-আরেকটু খাবে
-খাবো।এনে দিন
আবেগ একবার অবাক হয়ে রিদিতা কে দেখে তারপর গিয়ে আরেক প্যাকেট বিরিয়ানি আনলো ।এটাও নিয়ে রিদিতা গপগপ করে খাওয়া শুরু করেছে।আবেগ পাশে বসে হা হয়ে দেখছে
-এই মেয়ে র হলো টাকি।এখন এরকম খাই খাই করে কেন(মনে মনে)
রিদিতা মন দিয়ে খাচ্ছে ।খাওয়া শেষ হলে রিদিতা প্যাকেট ফেলে দিয়ে হাত ধুয়ে পানি খেয়ে সিটের সাথে হেলান দেবে তার আগে পাশে তাকিয়ে দেখে আবেগ ওর পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখছে
-কি দেখছেন আপনি
-দেখছি দুজন মানুষের খাবার একজন মানুষ কিভাবে খায়
-দেখুন খাওয়া নিয়ে কথা বলবেন না বলে দিলাম ।দুজন মানুষের খাবার কৈ একা খেয়েছি।আমরা তো দুজনেই খেয়ে ছি
-কিহ ।খাবার তুমি খেলে এর মধ্যে আরেকজন আসলো কোথা থেকে
এবার রিদিতা র হুস ফিরলো।ওর খেয়াল ছিল না যে ও আবেগকে কি বলছে।আর যাই হোক সন্তান এর কথা আবেগকে জানাবে না।কারণ যেখানে বিশ্বাস ভালোবাসা কিছু নেই সেখানে সন্তান এর দোহাই দিয়ে ও আবেগের কাছে গিয়ে দয়ার প্রার্থী হতে চায় না
-কি হলো বলো
রিদিতা কথা ঘুরিয়ে দিল
-আপনি আমাকে খাওয়া র খোঁটা দিচ্ছেন
-এই মেয়ে ফালতু কথা বলবে না।আমি তোমাকে কখন খোঁটা দিলাম
-তা নয় তো কি।আপনি এবার আমার বেতন থেকে এই খাবার এর বিলটি কেটে রেখেন ।এই বিলের জন্য ই তো খোঁটা দিচ্ছে ন
-এক থাপ্পড় মেরে তোমার দাঁত ফেলাবো।আমি কি বলেছি তোমাকে খাবার এর দাম দিতে।আর একটা কথা বলবে না।মেজাজ টাই খারাপ করে দিল।অসহ্য একটা
আবেগ গাড়ি চালানো শুরু করলো।রিদিতা গা এলিয়ে শুয়ে পরলো
-আমি কারোর দয়া চাই না।আমি নিজেই আমার সন্তান কে দেখবো ।আর দয়া না তোমাকে যদি বাচ্চা র কথা বলি তুমি তো বলবে আমি নাটক করছি।না হলে দুশ্চরিত্রা ।অন্য কারোর বাচ্চা কে তোমার বাচ্চা বলছি।দরকার কি।আল্লাহ্ যেভাবে রেখেছে তেমন ই ভালো আছি(মনে মনে)
আবেগ অফিসে আর গেলো না
-আমাকে নামিয়ে দিন
-কেন।তোমার বাড়ি রেখে তার অনেক পরেই তো আমার বাড়ি ।আমি নামিয়ে দিচ্ছি
-দরকার নেই।আমি এমনিতেই নষ্টা মেয়ে আপনাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া র নাটক করতে পারি।আপনি বরং আমাকে নামিয়েই দিন
রিদিতা র কথা শুনে আবেগ ব্রেক কষে রিদিতা র দিতে তাকালো।এই সুযোগে রিদিতা দ্রুত নেমে একটা অটো নিয়ে চলে গেল।আবেগ রিদিতা র যাওয়ার দিকেই তাকিয়ে আছে
আবেগ বাড়ি র উদ্দেশ্য এ রওনা দিল
রাতের বেলা
-আবেগ ডিনার করতে আয়
-মা কি রেধেছো
-বিরিয়ানি করেছি
বিরিয়ানি র কথা শুনে আবেগের দুপুরের কথা মনে পরলো।আর রিদিতা র খাওয়া র ব্যাপার টা
-আচ্ছা ও এখন এমন হয় এ গেছে কেন।আগে তো এরকম খেতো না।এখন দেখি নিজেই সারাদিন কিছু না কিছু খেতেই থাকে।হাঁটা চলাও করে খুব ধীরে।আগে তো সব কিছুতেই দ্রুত কাজ করতো।এখন এমন হয় এছে কেনো ও(মনে মনে)
চলবে——
#LOVE❤
part:18
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
পরের দিন সন্ধ্যায়
আজ অফ ডে ছিল।অফিস বন্ধ ।আবেগ এর মনটা কেনো জানো ভালো নেই।রিদিতা কে দেখতে পারেনি আজ।না চাইতেও আবেগ রেডি হচ্ছে তার মায়ের আদেশ নোভা র পার্টিতে যেতেই হবে
ঠিক আট টায় আবেগ গিয়ে পার্টি তে পৌছালো।আবেগ কালো টি শার্ট আর জিন্স পরেছে।আবেগকে দেখে নোভা গদগদ হয়ে এগিয়ে এলো
-আবেগগ তুমি এসে গেছো।এতো দেরী করলে কেনো।জানো আমি কখন থেকে তোমার অপেক্ষা করছি
-ন্যাকামি বন্ধ করো।তাড়াতাড়ি আমাকে ছারবে।আমি এক ঘন্টা র বেশি থাকতে পারব না
নোভা আবেগের কথা শুনে কিছু বলছে না
-হাহ এক ঘন্টা আজ তো সারা রাত তোমাকে এখানে থাকতে হবে(মনে মনে)
নোভা সবার সাথে গিয়ে নাচছে।আর আবেগ একটা জায়গায় কোল্ড ড্রিঙ্কস সহ কিছু ড্রিঙ্কস রাখা আছে সেখানে গিয়ে বসেছে।হঠাত্ নোভা এসে আবেগের হাত টানা শুরু করলো
-আবেগ চলো আমরা ড্যান্স করি
-যাস্ট শাট আপ নোভা ।কি পরেছো এটা ।শুধু মা চায় তাই তোমাকে আমি,,,,,,না হলে তোমার মতো মেয়ে দেখলেই ঘৃনা লাগে
-শোন আবেগ ঐ কথা আমার সামনে বলবে না।আমি বাইরে যেমন থাকি আমি ভেতরে তেমন থাকি।তোমার ঐ রিদিতা র মতো বাইরে সাধু সেজে ভেতরে নোংরামী করিনা
-এইখানে রিদিতা কৈ কেনো টানছো ।অসহ্য আমার এখানে আসাই উচিত হয় নি।আমি চলে যাচ্ছি
নোভা তো চিন্তা তে শেষ
-নাহ ওকে যেতে দেওয়া যাবে না।আমার সব প্লান শেষ হয়ে যাবে(মনে মনে)
নোভা ওয়েটার কে কি ইশারা করলো।ওয়েটার কি জুস এনে দিল
-আবেগ জুস খাও ভালো লাগবে
-আমি কিছু খাব না
-আবেগ প্লিজ ।আচ্ছা আমি তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি
নোভা জোর করে আবেগকে জুস খাইয়ে দিল।জুস খেয়ে আবেগের যেন কেমন লাগছে।নোভা বুঝতে পারলো ওষুধ কাজ করছে
-আবেগ চলো আমরা ওপরে যাই
-কেনো
-আরে চলো না
নোভা আবেগকে ধরে এনে উপরে একটা রুম এ এনে দরজা লক করে দিল।আবেগ এর মাথা ঘোরানো বারছেই
-আবেগ কেমন লাগছে এখন
-নোভা আমার মাথা ঘুরছে কেন।আর তুমি দরজা কেন লাগিয়ে ছো।খোল বলছি
নোভা অট্টহাসিতে ফেটে পরলো
-কি হলো হাসছো কেন
-দরজা তো সকালে র আগে আমি খুলব না
-মানে কি বলছো তুমি
নোভা গায়ে র স্কার্ফ টা খুলে ফেলে দিলো
-মানে আজ শুধু তুমি আর আমি।কি করবো বলো আমি তোমার স্পর্শ চাই আবেগ।তাই এই কাজ করতে হলো
-কিহ তুমি এতো খারাপ
-আবেগ চুপ করো তো ।তুমি জানো তোমার জুসে আমি ড্রাগ দিয়ে ছি।একটু পর তুমি নিজেই তোমার কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলবে।তারপর নিজেই আমার সাথে,,,,,উহ আমিতো ভাবতে পারছি না।তুমি বসো আবেগ।আমি তোমার সাথে বাসর করবো বলে তিনদিন আগে ইন্ডিয়া থেকে একটা নাইটি এনেছি।আমি না হয় রেডি হয়ে আসি।তুমি বসো আবেগ
-আল্লাহ্ আমাকে বাঁচাও ।কোথায় ফেঁসে গেলাম আমি।আমার চারপাশ যে ঝাপসা হয়ে আসছে।আমি কিছুতেই এই পাপ কাজ করতে পারব না।আল্লাহ্ রক্ষা করো।আমাকে কিছু করতে হবে
আবেগ আসতে উঠে দাঁড়িয়ে দরজার লক খুলতে গেল।কি মনে করে আবেগ এসে নোভা র ওয়াশরুমে র বাইরে থেকে আসতে করে দরজা লক করে এলো।তারপর ঢলতে ঢলতে গিয়ে দরজা খুলে বাইরে থেকে দরজা লক করে দিলো।
আবেগ যেই বেরোতে যাবে দুজন ছেলে ওর পথ আটকালো
-দাঁড়ান কোথায় যাচ্ছে ন।নোভা ম্যাডাম সকালের আগে আপনাকে যেতে নিষেধ করেছে
আবেগ বুঝতে পেরেছে নোভা কি প্লান করেছে আবেগকে ফাসানোর জন্য
-আল্লাহ্ তুমি শক্তি দেও।আমাকে যে করে হোক বাঁচতে হবে।এদের সাথে নাটক করতে হবে(মনে মনে)
-কি হলো যান ভেতরে যান
আবেগ নিজেকে একটু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে বললো
-নোভা তো আমাকে বলেছে এখানে আসতে।কিন্তু হঠাত্ ও নিচে চলে গেল।আর আমাকে ও যেতে বললো।আগে পার্টি করবো তারপর না হয়,,,,,,
ছেলে দুটো একে অপরের দিকে তাকালো
-কিন্তু আপনি তাহলে দরজা দিয়ে ই বা যাচ্ছে ন কোথায়
-দেখুন রুম খোলা থাকলে যে কেউ রেস্ট করতে ঢুকে পরবে তাই
-না আপনাকে বিশ্বাস হচ্ছে না।নোভা ম্যাম কে তো নিচে যেতে দেখিনি
-আচ্ছা আপনাদের চোখে নাও পরতে পারে।সন্দেহ হলে ডাক দিন।দেখুন সারা পান কি না
ছেলে দুটো ডাকা শুরু করলো ।এইদিকে ওয়াশরুমে নোভা চেঁচাচ্ছে ।কিন্তু ওয়াশরুম বন্ধ ।তারপর ঘরের দরজা জানলা সব বন্ধ ।নোভা র কোন কথায় বাইরে যাচ্ছে না
-দেখলেন বললাম না নোভা নিচে
-আসলেই ।আচ্ছা আপনি যান।আমরা পাহারা দিচ্ছি যাতে এই রুম এ কেউ আসতে না পারে।আপনাদের সময় হলে আসবেন
-আচ্ছা
আবেগ হাফ ছেড়ে আল্লাহ্ র নাম নিচ্ছে আর নিচে নামছে।নিচে নেমে আবেগ দ্রুত ওখান থেকে বেরিয়ে গাড়ি তে গিয়ে বসে গাড়ি স্টার্ট দিল
আবেগ এর চোখ আরো ঝাপসা হয়ে আসছে।চারদিকে কেমন ঘুলিয়ে যাচ্ছে ।গাড়ি ঠিকমতো চালাতে পারছে না
আবেগ ড্রাইভ করছে সামনে রিদিতা র বাড়ি।রিদিতা র বাসা রেখেই আরো দূরে আবেগের ম্যানসন ।কিন্তু গাড়ি চালানোর অবস্থায় আবেগ নেই।ড্রাগ এর ডোজ কাজ করছে
-দিশা বাইরে তো খেয়ে এসেছি এখন ঘুমিয়ে পর
-দাঁড়া এই শো টা শুরু হবে এখন।দেখে ঘুমাবো ।তুই কি করছিস
-একটু গোসল করে আসলাম
-আচ্ছা
বাড়িতে দিশা ছাড়া কেউ নেই।তাই রিদিতা কোন রকম দরজা লাগিয়ে টাওয়েল পেঁচিয়ে বাইরে বেরিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছছে
হঠাত্ দরজায় কেউ ধাক্কা চ্ছে
দিশা তো বিরক্তি বোধ করলো
-এখন আবার কে।বাড়ি য়ালা না তো ।কিন্তু ঐ লোকের তো হাত পায়ে ব্যান্ডেজ ।ঐ লোক আসবে না।কলিং বেল ও বাজছে না।দেখি তো
দিশা গিয়ে দরজা খুলে দেখে আবেগ দাঁড়িয়ে আছে
-স্যার আআপনি
-রিদিতা কোথায়
-ও গোসলের,,,,,
দিশা র কথা শেষ হতে না হতেই আবেগ রিদিতার ঘরের দিকে গেলো
দিশা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে
-আচ্ছা স্যার কি ওর কাছে মাফ চাইতে এসেছে।তাহলে তো ভালো।রিদিতা আর স্যার এর ভুল বোঝাবুঝি মিটে যাক।অনেক কষ্ট পাচ্ছে বোনটা ।আমি বরং আজ এই রুম এ ঘুমাই ।ওরা ওদের মতো আলোচনা করুক
দিশা দরজা লাগিয়ে দিল।তার পর বসার রুমে গিয়ে দরজা লক করে মাদুর বিছিয়ে শুয়ে টিভি দেখা শুরু করলো
ঐদিকে আবেগ আসতে করে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো।ঢুকে দরজা লক করে দিল।রিদিতা চুল মুছছে।ও ভেবেছে দিশা এসেছে
-দিশা তুই বলে শো দেখবি এতো তাড়াতাড়ি শো শেষ।কি হলো।আর তোকে না বললাম গোসল করছি।তুই কেন এলি।তুই একটু বাইরে যা আমি ড্রেস পরে নি।তারপর ঘুমোতে আসিস
রিদিতা দিশার কোন রেসপন্স পাচ্ছে না।এদিকে আবেগ ঢলতে ঢলতে রিদিতা র পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো ।এমনিতেই আবেগ এর নেশা হয়ে ছে ড্রাগে ।তারপর আবার রিদিতা কে চকলেট কালারের টাওয়েল পেঁচিয়ে ভেজা চুলে দেখছে।আবেগের নেশা টা আরো বেড়ে গেল।রিদিতা দিশার কোন রেসপন্স না পেয়ে পেছনে ফিরলো
-দিশা তোকে,,,,,,আআআ আপনি এখানে
রিদিতা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।তাড়াতাড়ি চুলের টাওয়েল দিয়ে ওপর থেকে ঢেকে নিল
রিদিতা দৌড়ে ওয়াশরুমে যাবে তার আগে আবেগ হাত টেনে ধরল
-ছারুন আমাকে।আপনি এখানে কি করছেন।দিশা দিশা,,,,
ওদিকে দরজা লক করে দিশা ভলিউম বাড়ি এ টিভি দেখছে।ওর কানে কিছুই যাচ্ছে না
-ছারুন আমাকে ছারুন বলছি।কেনো এসেছেন এখানে বের হন বলছি দিশা,,,
-তোমাকে না পুরো মনে হচ্ছে কি জানো চকলেট আইসক্রিম ।পুরো চকবার ।আমি খাব
আবেগ এর এবার সত্যি কন্ট্রোল হারিয়ে গেছে।তাই ভুলভাল বকছে
-কি বাজে কথা বলছেন ছারুন আমাকে।দিশা কোথায় তুই
রিদিতা ছুটার চেষ্টা করছে।আবেগ শক্তি দিয়ে রিদিতা কে ধরছে।রিদিতা আবেগের হাতে কামড় দিচ্ছে ছাড়ানোর জন্য ।কিন্তু আবেগের ছাড়া র নাম নেই
-এই চকবার এতো লাফালাফি করছো কেনো।চলো আমি তোমাকে খাব
বলেই আবেগ হাত টানছে রিদিতা র।রিদিতা আবেগের কন্ঠ শুনে বুঝতে পারছে আবেগ নেশা করেছে।আবেগ বাচ্চা দের মতো করে কথা বলছে
-আপনি নেশা করেছেন।নেশা করে আমার কাছে এসেছেন।ছারুন বলছি।আগের দিন কিছু বলিনি বলে ভাববেন না আজ কিছু বলবো না।ছারুন আমাকে
-আমিই নেশা।ইশ ।পচা কথা ওগুলো বলে না।আমার তো চকবার দেখে নেশা লাগছে।আমি চকবার খাব।এই চকবার চলো আমার সাথে
রিদিতা জোরে কামড় দিল আবেগের হাতে।গিয়ে দরজা খুলতে যাবে তার আগে আবেগ এসে ওকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানার দিকে গেলো।রিদিতা হাত পা ছুরছে
-এই চকবার এরকম নড়ছো কেন চুপ করে থাকবে তো
আবেগ রিদিতা কে শুইয়ে দিয়ে রিদিতা র হাত দুটো নিজের মুঠোতে নিয়ে নিল
-আল্লাহ্ এ কোন মুছিবতে পরলাম আমি।ছারুন আমাকে
আবেগগ রিদিতা র কোন কথা না শুনে রিদিতা চুলে মুখ গুঁজে দিল
এদিকে নোভাকে ঐ লোক দুটো বের করেছে।ওদের সন্দেহ হয়ে ছিল।তাই দরজা খুলে ওরা নোভাকে বের করেছে।বের হয়ে নোভা আবেগের ফোনে কল দিচ্ছে
আবেগ ফোনের শব্দ পেয়ে ফোনটা পকেট থেকে নিয়ে খাটের এক কোনে ছুড়ে মারলো।রিদিতা র ঠোট দখল করে নিলো
আবেগ এর টাচে ফোন রিসিভ হয়ে গেছে।নোভা তো হ্যালো বলছে
-হ্যালো আবেগ তুমি,,,,,,,,
নোভা থেমে গেল।নোভা কান পেতে শুনছে ওপাশের আওয়াজ ।নোভা র চোখ দিয়ে যেমন লাল আভা বেরোচ্ছে সাথে পানি।নোভা কান থেকে ফোন সরিয়ে ফোনটা ছুড়ে মারলো
-রিদিতা আআআ ।তোকে ছারবো না আমি ছারবো না,,,তুই আমার আবেগকে নিয়ে গেছিস,,তোকে ছারব না
মাঝরাতে আবেগ রিদিতার বুকে মাথা দিয়ে ঘুমোচ্ছে আর বিড়বিড় করছে
-আমাকে কেন এতো কষ্ট দিলে রিদি।আমার যে ভেতর জলে যায় ।কেন এমন করলে কেন
আবেগ এর কথা রিদিতা র কানে যাচ্ছে না।বেচারির চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পরছে।আবেগ এমন ভাবে রিদিতা কে জাপটে ধরেছে ও উঠতে ও পারছে না
-আল্লাহ্ আমি কি করব এখন।কি করবো।নিজে আসবে আমার কাছে ভোরের আলো ফুটলেই আমাকে আর চিনবে না।আমাকে আবার শুনতে হবে অপবাদ ।আর কতো আর কতো সইবো আমি
-দিশা বলেছিলাম না আবেগ ছুটি দেবে
-কি করবো বল।কদিন আগে দুদিন ছুটি নিয়ে ছি।আজ আবার মা অসুস্থ ।শোন কাল সকালে ই চলে আসবো।ঐ বড়ির মালিক তো আজকে শশুর বাড়ি থেকে ফিরবে ।তুই সাবধানে থাকিস।ঐ বেটা কুনজর দেয় তোর ওপর
-কি করবো।ডিভোর্স ই মেয়ে তাই সইতে হয় কতো শেয়াল কুকুর এর নজর।আচ্ছা চিন্তা করিস না তুই বেরিয়ে যা
-শোন তোর শরীর তো ভালো না।পারলে তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে বাড়ি চলে যাস
-ঠিক আছে তুই যা
দিশা চলে গেল।রিদিতা ব্যাগ থেকে আঙুর ফলের বক্স থেকে আঙুর খাচ্ছে আর কাজ করছে
ঐদিকে সিসি টিভি তে আবেগ সব দেখছে
-এই মেয়ে র হলো টাকি।আগে ধরে বেধে যাকে খাওয়া তে পারতাম না এখন দেখি সারাদিন কিছু না কিছু খাওয়ার তালেই থাকে।দিন দিন তো দেখতেও তেমন হচ্ছে(মনে মনে)
আসলেই মনের মিলন এমনি ।আবেগ রিদিতা কে যতোই ঘৃনা করুক তবুও কোনদিক দিয়ে মনে একটা খুশি থেকেই যায় ।অফিসে প্রতিদিন রিদিতা কে দেখে যেন কি ছু একটু শান্তি পায় ।কিন্তু অতীত মনে পরলেই ভুলে যেতে হয় সব
রিদিতা আসতে আসতে আবেগের কেবিনে এর দিকে যাচ্ছে ।কেবিনে র দরজা নক করবে তার আগেই মাথা ঘুরে ফ্লোরে পরে গেল।আবেগ সিসি টিভি তে সব দেখছিলো ।রিদিতা কে ওভাবে দেখে তাড়াতাড়ি কেবিনের বাইরে এলো।কিছু স্টাফ ও চলে এসেছে।আবেগ রিদিতা র মাথা নিজের কোলে রাখলো
-রিদি চোখ খোল রিদি।কেউ পানি নিয়ে এসো
-স্যার নিন
আবেগ পানি ছিটাচ্চছে কিন্তু কাজ হচ্ছে না
-স্যার আমার মনে হয় রিদিতা ম্যাডাম কে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত।গতকাল আপনার পার্টি তেও উনি অজ্ঞান হয়ে গেছিলেন
-শিগগিরই আমার গাড়ি বের করো
আবেগ রিদিতা কে পাঁজাকোলা করে নিয়ে গাড়ি র দিকে গেল
হসপিটাল এ
-উনি আপনার কে হন।ওনার হাসবেন্ড কোথায়
আবেগ কি বলবে বুঝতে পারছে না
-কি হলো বলুন
-ডক্টর আমি ওর হাসবেন্ড ।আপনি যা বলার বলুন
হঠাত্ একজন নার্স এলো
-স্যার পেসেন্ট এর জ্ঞান ফিরে ছে
-মি চৌধুরি আমি পরে কথা বলছি।আপনি বসুন
আবেগ বসে চিন্তা করছে
-তাহলে কাল ও কোন নাটক করেনি ।আমি শুধু শুধু ওকে অপমান করলাম ।কিন্তু কি হয়েছে ওর
রিদিতা হসপিটাল এ নিজেকে দেখে অবাক হচ্ছে
-ডক্টর আমি এখানে
-আপনি অজ্ঞান হয়ে গেছিলেন ।আপনার হাসবেন্ড মি,আবেগ এখানে এনেছেন
-আবেগ ।ডক্টর আপনি ওনাকে আমার প্রেগন্যান্সি র কথা বলেছেন না কি?
-কেনো উনি জানেন না
-না তা নয়।আমার শরীর এরকম হচ্ছে কেন এটা বলুন
-দেখুন মিসেস চৌধুরি আমার মনে হয় এখন আপনার এই বাচ্চা টা এবরশন করা উচিত
-কিহহ
-হ্যাঁ ।দেখুন এখন হয়তো আপনার তেমন সমস্যা হবে না।কিন্তু আপনার ডেলিভারির সময় আপনার জীবনের ঝুঁকি থাকতে পারে।আপনার ব্লাডের পরিমাণ প্রয়োজন এর তুলনায় কম।তা ছাড়া কিছু প্রবলেম আছে।আপনার পরে সমস্যা হতে পারে
রিদিতা ভাবতে পারছে না কি করবে
-না ডক্টর ।আমি বেবি এবরশন করাবোনা।আল্লাহ্ যদি চান তো আমার জীবন ও আমার বেবি দুজনের জীবন বাঁচবে তো বাঁচবে নাহলে না।কিন্তু আমি এটা করবেন না
-কিন্তু আপনার হাসবেন্ড এর মতামত আমার জানতে হবে
-ডক্টর প্লিজ আমি আপনার পায়ে পরি আমার হাসবেন্ড কে কিছু বলবেন না।আমি অনেক কষ্ট এ ওকে পেয়েছি।আমি আমার সন্তান হারাতে চাই না।প্লিজ
-ওকে
-কি লুকাছ্ছ তুমি
-কই কিছু না
-মিথ্যা বলছো কেন।কি হয়ে ছে সত্যি বলো
-মিথ্যা নয়।এটাও তো আমার নাটকের একটা পার্ট তাই না মি,আবেগ চৌধুরি
বলেই রিদিতা হাঁটা ধরলো।আবেগ কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো না
গাড়ি র কাছে গিয়ে
-গাড়ি তে ওঠো।অফিস যাওয়া লাগবে না।তোমাকে তোমার বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আসি
-ধন্যবাদ ।আমি যেতে পারব।সন্ধ্যা হয়ে গেছে।এমনিতেই আমার পিছনে আপনার আজকে অনেক খাটতে হয় এছে ।আপনি বাড়ি যান।
-একটা কথা বলবে না।রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিন ক্রিয়েট না করে চুপচাপ গাড়ি তে ওঠো
রিদিতা কথা না বাড়িয়ে গাড়ি তে উঠলো।এদিকে প্রচুর বৃষ্টি শুরু হলো।মেঘ ও ডাকছে।আবেগ রিদিতা কে বাড়ি র সামনে নামিয়ে দিল।রিদিতা র ভয় হচ্ছে ।মেঘ ডাকছে।বাঁচ ও পরছে।এ অবস্থায় গাড়ি চালানো ঠিক না।তাই আবেগের কাছে গেল
-স্যার শুনুন
-কি বলবে তাড়াতাড়ি বলো।এই বৃষ্টি তে তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে হবে
-বলছি খুব মেঘ ডাকছে।গাড়ি চালানো ঠিক হবেনা ।আপনি একটু বসে যান।বৃষ্টি কমলে চলে যাবেন।এই বৃষ্টি তে রাস্তা ঘাট ও দেখা যাবে না ।রাত ও অনেক হয়েছে
আবেগ অনেক ভেবে দেখলো আসলেই তাই
-ঠিক আছে
আবেগ গাড়ি টা পার্ক করে রিদিতা র সাথে বাড়িতে ঢুকলো ।রিদিতা দিশা দুজনে একটা রুমে থাকে।আরেকটা রুমে ছোট টেবিলে আর দুটো চেয়ার দিয়ে বসার আর ডাইনিং এর মতো সাজিয়ে ছে।আর রান্না ঘর।একটা বাথরুম ।রিদিতা আবেগকে বসার রুমে বসতে বলে একটা টাওয়েল এনে দিল
-মাথা মুছে নিন।ঠান্ডা লাগতে পারে
-তুমি ও ফ্রেশ হয়ে নাও।ভেজা কাপড় এ থাকলে সমস্যা হবে
রিদিতা চলে গেল রুমে ফ্রেশ হতে।আজ অনেকদিন পর আবার দুজনে এক ছাদের নিচে।এরকম কতো বৃষ্টি তে আবেগ আর রিদিতা ভিজেছে ।রিদিতা নিজের আঁচল দিয়ে আবেগের মাথা মুছে দিয়ে ছে।আর আজ,,,
রিদিতা গিয়ে ঢিলেঢালা একটা গোল জামা পরে মাথাটা সুন্দর করে ওরনা দিয়ে পেচিয়েছে ।রিদিতা নিজের কাবারড খুলে একটা নীল রঙের পাঞ্জাবি বের করলো।এটা আবেগের না।কিন্তু রিদিতা বেবি র জন্য নিজ হাতে সেলাই করে জামা বানাতে গিয়ে কি মনে করে একদিন এই নীল রঙের কাপড় কিনে তাতে কাজ করে আবেগের সাইজ পানজাবি বানিয়েছিল।ভেবেছিল আবেগকে তো কখনোই দিতে পারবে না।কিন্তু আজ এমন সুযোগ পাবে জানা নেই।রিদিতা পানজাবি টা নিয়ে আবেগের কাছে গেল
ওদিকে রাত দশটা বাজে।বৃষ্টি হচ্ছে সেই পরিমাণ এ।আবেগ তো চিন্তা তে আছে বাড়ি ফিরবে কি করে।কিন্তু রিদিতা র কাছে থাকতে আবার ভালো ও লাগছে
-এই পানজাবি টা পরে নিন।আপনার শার্ট ভিজে গেছে ঠান্ডা লাগতে পারে
-বৃষ্টি তো কমছে না।আমাকে যেতে হবে
-এই রকম দুর্যোগ এ না যাওয়াই ভালো।আপনি পারলে রাতে এখানে থেকে যান।অনেক রাতো হয়ে ছে।কাল চলে যাবেন।আপনার ভালোর জন্য বলছিলাম ।বাকি আপনার ইচ্ছে
-তোমার সমস্যা হবে না তো
-না
-আচ্ছা একা থাকো
-না দিশার সাথে থাকি।ও আজ গ্রামে গেছে
-ও
-আপনি শার্ট পাল্টে নিন।ঐ রুমে যান
-হুম
আবেগ পানজাবি টা নিয়ে চলে গেল।রিদিতা রান্না ঘরে গেল।কি রাধবে ভেবে পারছে না
-আচ্ছা ফ্রিজে তো মাংস আছে একটু।ভুনা খিচুড়ি করি।ও তো পছন্দ করতো।আজ একটু খাওয়া নোর সুযোগ হয়েছে।ওটাই করি
আবেগ পানজাবি পরে এসে রিদিতা কে বসার রুমে না পেয়ে রান্না ঘরে গেলো।দেখলো রিদিতা রান্না করছে।ভুনা খিচুড়ি র গন্ধ আসছে
-ভুনা খিচুড়ি করছো
রিদিতা পেছনে ফিরে তাকালো।নীল পানজাবি তে আবেগকে ভালোই দেখাচ্ছে
-হুম
-পানজাবি টা তো আমার মাপের ।তোমার কাছে পানজাবি কেন
-ঐ একটু বুটিকস আর হাতে র কাজ শিখেছিলাম তাই একদিন শখ করে বানিয়ে ছিলাম
-কার জন্য
-আপনি গিয়ে বসুন খাবার হয়ে গেছে
আবেগ কথা না বাড়িয়ে টেবিলে গেল।একটু পর রিদিতা এসে খাবার বেড়ে দিল আবেগের প্লেটে
-তুমি খাবে না
-খাবো পরে
-এখন বসো
-না থাক
-ঠিক আছে তাহলে তুমি খাও আমি খাব না
-কেনো
-আমার সাথে খেতে বসলে তো তোমার অনেক সমস্যা
-সমস্যা আমার না।আপনার ।নষ্ট মেয়ে মানুষ এর সাথে খেতে নেই
-তুমি,,,
-আপনি খাওয়া শুরু করুন।আমি ও বসছি
আজ অনেকদিন পর আবার দুজনে একসাথে খেতে বসলো ।আবেগ অনেক দিন পর রিদিতা র রান্না পেয়ে মন ভরে খাচ্ছে ।রিদিতা আড়চোখে দেখছে
-চালতার আচার দেব
-আছে
-হ্যাঁ
-দেও তাহলে
রিদিতা টেবিল থেকে আচার নিয়ে আবেগকে দিল।আবেগ তাকিয়ে দেখে টেবিলে অনেক রকমের আচার।আর একটা প্রেগন্যান্সি র চার্ট ঝুলানো ।আবেগ খাওয়া শেষ করলো রিদিতা ও
রিদিতা র গলা শুকিয়ে আসছে।আর যাই হোক বাচ্চা র কথা আবেগকে বলা যাবে না।কারণ আবেগকে বললে আবেগ হয়তো চাইলে ও রিদিতা কে বাচ্চা র জন্য অন্তত মাফ করতে পারে।কিন্তু রিদিতা তা চায় না।যেখানে ভুল নেই সেখানে কিসের মাফ।আর যেখানে বিশ্বাস নেই সেখানে না ভালোবাসা না সংসার
-কি হলো বলো
-আসলে,,,,
হঠাত্ রিদিতা র দরজা কেউ জোরে ধাক্কা চ্ছে।রিদিতা র বুঝতে বাকি নেই যে ঐ বাড়ি র মালিক।ঐ লোকটা এর আগেও বদ মতলবে এসেছে।কিন্তু দিশা বেচাকেনা টাইট দিয়ে ছাড়ে
-এতো রাতে কে।দরজা খোল গিয়ে
-না দরজা খোলা যাবে না
-কেনো
-বলতে পারবো না
-আমি দেখছি
বলেই আবেগ দরজা র দিকে গেলো।রিদিতা আটকাচ্ছে ।কিন্তু আবেগ দরজা খুলে একপাশে দাঁড়ালো।সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি র মালিক ঢুকে পরলো
-কি গো সুন্দরী।দরজা খোল না কেন।শুনলাম আজ নাকি তুমি একা।তা করবে নাকি কিছু
-দেখুন মারুফ ভাই।বাড়ি ভাড়া কম বলে আপনার বাড়ি থাকি।তাই বলে আপনি এসব কি শুরু করেছেন।আর ভাবি আপনাকে কতো বিশ্বাস করে আর আপনি
-আরে রাখো ওসব।দেখেছো বাইরে কি বৃষ্টি ।কোন আওয়াজ আজ বাইরে গেলে কেউ শুনবে না।আরে তুমি তো ডিভোর্স ই।তোমার ও তো চাহিদা আছে বলো।কেন রাজি হয়ে যা ও না বলোতো।একবার রাজী হয়ে যাও প্রতিদিন তুমি আমি মজা নেব।আর তোমার ঐ বান্ধবী কে না হয় আমার আরেকটা ঘর ফাঁকা আছে ওখানে থাকতে দেব।চিন্তা করোনা টাকা ও দেবো প্রতি মাসে
-আর একটা নোংরা কথা বলবেন না।বেরোন বলছি
-শালি আজ তো কেউ তোর চিত্কার শুনতেই পাবে না।আজ তো তোকে আমি ভোগ করবোই
বলেই মারুফ যেই রিদিতা র গায়ে হাত দেবে তার আগে তড়িৎ বেগে আবেগ এসে মারুফ কে ঘুষি মারলো।আবেগকে দেখে মারুফ অবাক
-আরে শালি।তুই তো আচ্ছা জিনিস ।ঘরে একটাকে রেখেছিস দেখছি।তাইতো বলি ডিভোর্স ই মেয়ে তোর কিছু লাগে না কেন।আরে ভাই চলেন আজ দুজনে মিলে শালির মজা নেই
আবেগ মারুফ এর কলার ধরে উঠিয়ে মারা শুরু করলো
-জানোয়ার তোর সাহস কি করে হয় ওকে বাজে কথা বলার।ওর গায়ে হাত দিবি।দেখ তো র আমি কি করি
আবেগ মারুফ কে মারতে মারতে দরজা র বাইরে নিয়ে এসেছে।মারুফ এর মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে ।রিদিতা অবস্থা বেগতিক দেখে আবেগকে আটকাচ্ছে
-আবেগ বন্ধ করো।আবেগ মরে যাবে ও
-যাক মরে।আমার কলিজায় হাত দিয়েছে ওকে তো আমি
-আবেগ বন্ধ করো
রিদিতা আবেগকে টেনে ঘরে এনে দরজা বন্ধ করে দিলো
-বললাম আমি দরজা খুলে ন না
-কতোদিন ধরে জালাচ্ছে এই লোক
-অনেকদিন
-এখনো এই বাসায় ভাড়া থাকো
-কি করবো তাহলে।বাসা ভাড়া নিতে গেলে সবাই ডিটেলস চাই।ডিভোর্স ই জানলে কেউ ভাড়া দেয় না।তাইতো এখানে পরে আছি
আবেগ আর কিছু বলতে পারলো না
-আপনি ঘরে গিয়ে শুয়ে পরুন
-তুমি
-আমি বসার রুমে শোব
-তুমি ওখানে শুয়ে থাক ।আমি এখানে শুচ্ছি
-দরকার নেই।আপনি যান
-চলো তুমি ও আমার সাথে শোবে
-পাগল হয়েছেন আপনি
-কেনো কি ভুল বললাম ।আগে মনে হচ্ছে আমার সাথে ঘুমাও নি
-আগে র সময় আর এখন এক নয়।আগে স্বামী ছিলেন তাই ঘুমিয়ে ছি।এখন আপনি পরপুরুষ
-আমি পরপুরুষ
-হ্যাঁ
-ও তাহলে আশফি র সাথে শুতে গেছিলির কেন
-আর একটা বাজে কথা বলবেন না আপনি
-কি বাজে কথা বলবো না ।আশফি পরপুরুষ না।এখন এসব কথা মাথায় আসছে তোর
-আপনি চুপ করুন
রিদিতা র মুখে পরপুরুষ কথা শুনে আবেগের মাথা বিগড়ে গেছে।শত হলেও নিজের স্ত্রী ভালোবাসার মানুষ।সত্যি টা অপ্রিয় হলেও আবেগ মানতে পারছে না।আবেগ রিদিতা কে টেনে নিয়ে রুমে গিয়ে দরজা লাগলো
-এই রুমে ই আমার সাথে শুবি তুই শুনেছিস
-দরজা খুলুন আমি আপনার সাথে এক রুমে থাকবো না।আপনাকে থাকতে বলাই ভুল হয়ে ছে আমার
-ভুল।ভুল বের করছি তোর।আমাকে পরপুরুষ বলা
বলেই আবেগ রিদিতা কে ধাক্কা দিয়ে খাটে ফেলে ইচ্ছে মতো ঠোঁটে কিস করছে।যেন কতো দিনের পিপাসা রাগ সব মেটাচ্ছে ।রিদিতা আটকানোর চেষ্টা করছে পারছে না ।আবেগ আসতে আসতে আরো গভীর এ যাচ্ছে ।রিদিতা কে এতোদিন পর পেয়ে আবেগ নিজের মধ্যে নেই
বৃষ্টি র গতি বারতেই আছে।একসময় কারেন্ট চলে গেল।ঘরের লাইট নিভে গেল।প্রকৃতি ও যেন শায় দিচ্ছে ওদের।রিদিতা আবেগের সাথে পেরে উঠতে না পেরে ধরা দিলো আবেগের কাছে
অনেকদিন পর রাত আবার সাক্ষী হলো তাদের ভালোবাসার
হোক না আজ তাদের মিলন।ক্ষতি কি
চলবে—–
#LOVE❤
part:16
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
পরের দিন সকালে
রিদিতা ফ্রেশ হয়ে জানালার কাছে দাঁড়িয়ে আছে।চোখের পানি বাধ মানছে না।আবেগ এখনো ঘুম
-খুব কি দরকার ছিল এই মিলনের।আবেগ তোমার জেদের জন্য আজ আমাদের জীবন টা এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আছে।তুমি কি পারতে না আমার কথা শুনতে।কাল ও তুমি শুধু তোমার জেদকেই প্রাধান্য দিয়ে ছিল।কে ন করলে এমন।প্রতি মূহুর্তে তোমার দেওয়া কষ্ট এ এমনিতেই ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় ।আর কাল তোমার জন্য আমাকে পুরো জীবন্ত লাশের মতো থাকতে হবে।কিছুদিন পর তো বিয়ে করে সুখেই থাকবে নোভাকে নিয়ে ।আমাকে মেরে ফেলার কি খুব দরকার ছিল
জানলার বাইরে প্রকৃতি টাকেই এসব বলছে রিদি।পেছন ফিরে আবেগ কে একবার দেখে নিল।তারপর রেডি হয়ে অফিসে চলে গেল
আবেগকে আর ডাকলো না।আবেগের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার অবস্থায় রিদিতা নেই
সকাল দশটায় ঘুম ভাঙলো আবেগের।চারপাশটা অচেনা লাগছে।মনে পরলো কাল সে রিদিতা র বাড়িতে ছিল।নিজের দিকে তাকাতেই কাল রাতে র ঘটনা মনে পরে গেলো
-এটা আমি কি করলাম ।ছিহহ।আমার নিজেকে কন্ট্রোল রাখা উচিত ছিল।আমি নিজেই রিদিকে নিজের থেকে সরিয়ে ছি আর কাল আমিই ওকে,,,,,নাহ্ কি করে মুখ দেখাবো ওর সামনে
আবেগ দেখলো বেডের পাশে একটা চিরকুট রাখা।তাতে লেখা
—টেবিলে খাবার রেখেছি।দরজাতে তালা ঝোলানো আছে।খাবার খেয়ে তালাটা সামনে লক করে দিয়ে যাবেন।আর কাল রাতে র কষ্ট টা দেওয়া র জন্য আপনাকে কি বলে ধিক্কার জানাবো সেই ভাষা আমার জানা নেই–ইতি রিদিতা
আবেগ চিরকুট টা পরে খুবই অপরাধ বোধ করছে
-ভুল কিছু বলোনি তুমি ।কালকের জন্য আমি ধিক্কার এর ই যোগ্য
আবেগ ফ্রেশ হয়ে টেবিলে গেল।রিদিতা আলু ডিম ভাজা আর গরম ভাত রেখেছে।আবেগ খেয়ে তালা লাগিয়ে অফিসে চলে গেল
অফিসে গিয়ে আবেগ রিসেপশনে গেল
-গুড মর্নিং স্যার
-রিদিতা কি অফিসে এসেছেন
-জি স্যার ম্যাম তো অনেক আগেই এসেছেন আজ
-ওকে
আবেগ রিদিতার কেবিনের দিকে গেল
-জানিনা ওর সামনে কিভাবে দাড়াবো ।ওর কাছে গিয়ে কি বলে ক্ষমা চাইবো
আবেগ রিদিতার কেবিনে ঢুকে দরজা লক করে দিলো।রিদিতা ল্যাপটপ এ কাজ করছিল।কারোর উপস্থিতি পেয়ে সামনে তাকিয়ে আবেগকে দেখে চোখ সরিয়ে নেয়
-রিদিতা আমি,,,,
রিদিতা উঠে কিছু ফাইল নিয়ে কেবিন থেকে বেরোতে যায় ।আবেগ পথ আটকায়
-কোথাও যাবে না।আমার কথা শোন
-আপনার কোন কথা শোনার ইচ্ছে আমার নেই
রিদিতা আবেগের পাশ কেটে চলে গেল।আবেগ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে
দুপুর গরিয়ে গেল।আবেগ অনেকবার চেষ্টা করেছে রিদিতা র সাথে কথা বলার।কিন্তু রিদিতা এড়িয়ে গেছে।আবেগের মাথা গরম হয়ে গেছে রিদিতা র প্রতি
রিদিতা ক্যান্টিন থেকে লান্চ করে নিজের কেবিনে আসে সাথে সাথে আবেগ ও কেবিনে ঢুকে দরজা লক করে রিদিতা র হাত টেনে দেওয়ালের সাথে লাগায়
-আহহহ ।কি শুরু করেছেন আপনি
-শুরু আমি করেছি না তুই করেছিস।কিসের এতো দেমাক তোর
-মানে কি বলছেন।আমার কিসের দেমাক হবে
-সেটাই তো।কি এমন আছে তোর।না সম্পত্তি না চরিএ ।না আছে নোভা র মতো ভালো চেহারা কিছুই তো নেই কিসের দেমাক দেখাচ্ছিস আমাকে
-ভদ্র ভাবে কথা বলবেন ।এর মধ্যে ঐ নোভা কে কেন টানছেন ।এতো ই যদি ওর রূপ এর ধার থাকে তো তার কাছে যেতে পারেননি।না কি নোভা আপনার চাহিদা ঠিক মতো মেটাতে পারে না তাই আমার ওপর জোর জবরদস্তি করেছেন
-ভেবেছিলাম তোর কাছে ক্ষমা চাইবো।কিন্তু আমার তো মনে হচ্ছে তুই নিজেই কাল নাটক করে আমাকে তোর বাড়ি তে নিয়ে ছিস
-আমি নাটক করেছি
-হ্যাঁ তাই।তোর মতো মেয়ে দের চেনা হয়ে গেছে।যেই দেখেছিস নোভা র সাথে আমার বিয়ে হবে সেই তুই নতুন নাটক শুরু করেছিস যাতে আবার আমার মন গলিয়ে আমার বাড়ি তে এসে আমার টাকা ওড়াতে পারিস
-আবেগগগ
-আশফি তো দুদিন মজা নিয়ে ছেড়ে দিয়ে ছে।তাই এখন আমার পেছনে আবার পড়েছিস।তোর মতলব বুঝি না ভেবেছিস।আমি তো ভেবে ছিলাম কাল সব আমার দোষ ছিল।কিন্তু না এখন ভেবে দেখি সব তোর সাজানো নাটক।তুই বৃষ্টি দেখলি আর নাটক করে তোর বাড়ি তে নিলি ।তুই পারতিস না কাল আমাকে আটকাতে।কিন্তু কই তুই তা করিস নি।কারন তুই তো ওটাই চাইছিলি
-আবেগ আমি তোমাকে আটকিয়েছি বারবার কিন্তু তুমি ই তো,,,,,,,,,,,
-এক দম আবার তোর চোখে র পানি নিয়ে আমার সামনে নাটক করবি না।মা নোভা ঠিকই বলে তুই আসলেই একটা নষ্টা মেয়ে নষ্টা মেয়ে তুই
এই বলে আবেগ দরজা খুলে চলে যায় ।রিদিতা ঠাঁই হয় এ দাড়িয়ে আছে
-ভালোবাসি বলে কাল বিপদে র মুখে তোমাকে ঠেলে দিতে পারিনি।কাল নিজেই আলাদা থাকতে বলেছিলাম তুমি নিজেই তো আমাকে টানলে।আর আজ এভাবে অপবাদ দিলে আমাকে।আল্লাহ্ আর কতো সহ্য করবো আমি।আর কতো।মিথ্যা অপবাদ নিয়ে নিজের সব ছেড়ে সব পিছুটান ছেড়ে নতুন ভাবে বাচবো বলে এসেছি।সেই পিছুটান সেই অপবাদ আবার আমার কাছে চলে এসেছে।আমি কি করবো কি করবো।
রিদিতা কাঁদতে কাঁদতে বসে পরলো।আসলেই রিদিতা র তো ও উচিত ছিল না কাল রাতের জন্য আবেগকে ক্ষমা করা।ও তো ঠিকই ছিল নিজের দিক থেকে।অথচ আবেগ নিজের দোষ ঢেকে মিথ্যা অপবাদ রিদিতা কে দিয়ে দিল।এটা কোন গল্প নয় একটা বাস্তব তা।সমাজে এই ভাবেই তো রিদিতা র মতো মেয়ে রাত শেষ হয়ে যায় দিনে দিনে।সমাজ মেয়ে দের কথা শোনে না ভাবে না কিন্তু যেটা ভুল সেটাকে মেয়ে দের ওপর চাপিয়ে এভাবেই পুরুষের শাসন বজিয়ে রাখছে।আসলেই কি ভুল বললাম ।এটি কি সত্যি ই বাস্তব নয়।
রিদিতা চোখ মুছে উঠে দাঁড়ালো ।তার হার মানলে চলবে না।তার জীবনটাই যে সংগ্রাম হয়ে দাঁড়িয়ে ছে।নিজের সন্তান কে ভালো রাখার জন্য সংগ্রাম তাকে করতেই হবে
সন্ধ্যা বেলা
দিশা রিদিতা র চুল বেধে দিচ্ছে
-এই রিদি এসব কি শুনছি
-কি হয়েছে
-আরে বাড়ি র মালিক নাকি কাল রাতে বৃষ্টি র ভেতর কোথায় এক্সিডেন্ট করেছে।এখন নাকি হসপিটাল এ
-হায় রে দুনিয়া।সব খানেই কাহিনী এক।এরা কি সুন্দর মিথ্যা বলে বেচে যায় রে।কই আমি তুই আমরা তো পারিনা
-কি হয়েছে বলতো
রিদিতা কাল রাত থেকে শুরু করে অফিসে র সব ঘটনা দিশাকে বললো
-ছিহহ।আবেগ ভাই এতো জঘন্য কি করে হতে পারে
-জানিনা
-তুই আর অফিসে যাবি না
– আর কটা দিন।তারপর মাসটা শেষ হলে রিজাইন দিয়ে আন্টি র কাছে চলে যাব।আমি নিজেই হাঁপিয়ে উঠেছি রে।ভেবেছিলাম আর কটা দিন একটু কাজ করবো ।কিন্তু আবেগ এর জন্য আর সেটি হবে না
-তোর আর কাজ করা লাগবে না।আমি গ্রামের একটা স্কুল এর ম্যাম এর সাথে কথা বলেছি ।উনি বলেছেন একটা টিচার লাগবে।আমি ওনাকে বলে দেবো সামনের মাসে জয়েন করবো ।তোকে নিয়ে চলে যাব।আর রাখবো না এখানে।এরা মানুষ না রে
-আমার জন্য তোর আন্টি র কতো কষ্ট করতে হচ্ছে তাই না
-একদম মাইর খাবি।কিসের কষ্ট ।আমি যদি লবণ ভাত খাই তো তুইও তাই খাবি।একদম এসব বাজে কথা মুখে আনবি না।আর পুচকু টা একবার আসুক তারপর তুই ও গ্রামের কোন স্কুল এ চাকরি জোগাড় করে নিবি।আমরা চারজন এ ভালো থাকবো
-তা যা বলেছিস
এদিকে আবেগ শুয়ে ভাবছে
-আজ রিদিতা কে বেশিই বলে ফেললাম ।কিন্তু আসলেই তো কাল ওর ও দোষ ছিল।ও চাইলে আমাকে আটকাতে পারতো।কিন্তু,,,,,
এমন সময় নোভা ফোন দিল।আবেগ বিরক্তি নিয়ে ফোন রিসিভ করলো
-হ্যাঁ লো আবেগ
-কি হয়েছে
-উহ এভাবে কথা বলো কেন তুমি ।আচ্ছা কাল কোথায় ছিলে তুমি ।আমি তোমার মাকে ফোন দিলাম তিনি বললেন তুমি ফেরোনি
-কাল আমার বন্ধু র বাড়িতে ছিলাম ।অনেক দিন পর দেখা তাই ও ছারেনি (মিথ্যা বললো)
-ও।আচ্ছা শোন পৌরশু আমার ফ্রেন্ড রা একটা পার্টি দিচ্ছে যাস্ট আমার জন্য ।কদিন পর তো আমার বিয়ে হবে তাই ওরা এই প্রথম সিলেট এসেছে এই জন্য পার্টি হবে।তুমি কিন্তু আসবে
-আমি কোন পার্টি তে যেতে পারব না
-তোমার কোন কথা শুনবো না আবেগ।আগে র দিন ঐ মেয়ে টার জন্য এনগেজমেন্ট এ মজা করতে পারিনি।তুমি আসবে এটাই শেষ কথা।না হলে আন্টিকে বলবো আমি।বাই
নোভা ফোন কেটে দিল
-পার্ট ই তে তোমাকে আসতেই হবে আবেগ না হলে কিভাবে তোমাকে কাছে পাব বলো।আমি তো আর ঐ রাতের অপেক্ষা করতে পারছি না।শুধু তুমি আর আমি
আবেগ এই প্রথম আমার গায়ে হাত তোলে।আবেগ এর চোখ মুখ পুরো লাল ছিল।ও কাঁদছিল
-বেরো আমার বাড়ি থেকে
-আবেগগগ
-তোর ঐ নোংরা মুখে আমার নাম নিবি না।আমি কটা দিন ছিলাম না আর তাই তুই ছিহহহ
-আবেগ আমার কথা শোন
-কি কথা শুনবো আমি তোর।কি শোনার বাকি রেখেছিস তুই।সব তো আমাদের কে দেখিয়ে ই দিলি।লজ্জা করলো না তোর ।কেনো করলি এমন
-আবেগ তুমি,,,,
রিদি তা কে বলতে না দিয়ে ই আশফি বলা শুরু করলো
-দেখ আবেগ তোর কষ্ট হলেও এটাই সত্যি যে তোর বৌভাতের দিন রিদি ভাবি কে আমার পছন্দ হয়। তারপর তোদের বাড়ি তে আসা যাওয়া করতে করতে রিদিতা ভাবি কে একদিন বলেই দি মনের কথা ।উনিও সাথে সাথে সায় দিলেন।তুই যখন বাড়ি থাকিস না আংকেল আন্টি থাকে না এমন সময় আমি আসতাম ।এরকম ই একদিন এ আমি এসে দেখি রিদিতা ভাবি খুব সেজে গুঁজে বসে আছে সেদিনই উনি নিজেই আমাকে ওনার কথা আছে,,,,,
-আশফি ভাইইইই ।চুপ করো।কি সব নোংরা কথা বলছো তুমি
-আশফি না তুই চুপ করবি।নোংরা কথা শুনতে পারছিস না নোংরা কাজ করার আগে তোর বাধেনি ।আশফি বল
-তারপর থেকে এভাবেই আমরা ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলি।আমার মাঝে মনে হচ্ছিল তোকে ঠকাচ্ছি।আমি তাই রিদি ভাবি কে জিজ্ঞেস করি যে উনি কেন এমন করছে।সেদিন উনি বলে তোর সম্পত্তির জন্য ।আর আমার কাছে তোর থেকে বেশি টাকা তাই,,,,
-আশফি ভাই আপনি কি সব বলছেন
এর মধ্যে আবেগ আমাকে আবার থাপ্পড় মারে
-চুপপ একদম চুপপ।কোন কথা বলবি না তুই।তোর মতো একটা নষ্ট মেয়ে কে ভালোবেসে ঘর বেধেছিলাম ।কেন রে তোকে কি কম ভালোবেসেছি আমি তুই এভাবে আমাকে জ্যান্ত খুন করলি।কি কমতি রেখেছিলাম আমি তোর
-আবেগ তোদের ঝামেলা তোরা মেটা আমি গেলাম
আশফি এটা বলে চলে যায় ।আমি আবেগের পায়ে পড়ি
-আবেগ একদিন এর জন্য হলেও যদি আমাকে ভালোবেসে থাকো তো সেই ভালোবাসার ওপর ভরসা রেখে একটা বার আমার কথা শোন।তোমার কি মনে হয় তোমার রিদি এটা করতে পারে।আবেগ কথা বলো
-আমার মনে হয় না।বিশ্বাস কর আমার এখনো মনে হয় না।কিন্তু আমি যে নিজের চোখে দেখেছি।এবার বল চোখের দেখা ভুল।কি হলো উওর দে
-আবেগ আমি তো তোমার জন্য ই সেজেছিলাম আবেগ।বিশ্বাস করো আমি জানিই না যে আশফি আসবে
-ও তাই এজন্য তুই দরজা র কাছে লিখেছিলি যে,তোমার অপেক্ষায় ।আর আমি আসবো এটা শুধু মা জানে।তুই জানবি কি করে
-আবেগ মা ই তো আমাকে,,,,,
আবেগ এর মা আমার কথা থামিয়ে দেয় ।আবেগ এর বাবা অনেক আগেই ওখান থেকে চলে যান।এটা সত্যি যে উনি আমাকে নিজের মেয়ে র মতো ভালোবাসতেন
-আবেগ এই মেয়ে র কথা আর শুনিস না।একের পর এক মিথ্যা কথা বলছে
-আবেগ আমি কিছু মিথ্যে বলিনি।আবেগ আমি প্রেগ,,,,,,
আমার কথাটা আবেগের মা শেষ করতে না দিয়ে ই আমার চুল ধরে আমাকে টেনে বের করে নিয়ে আসে ঘরের বাইরে
-কোন কথা বলবি না তুই।বেরো আমার বাড়ি থেকে
-আবেগ একটি বার আমার কথা শোন।তুমি কি সত্যি ই চাও আমি চলে যাই।আবেগ আমি তোমার কথা শুনতে চাই আবেগ আবেগগগ
সেদিন আবেগ যেই কথা গুলো বলে তা আজো আমার কানে বাজে
-শুনতে চাস তো তুই।শোন তাহলে।তোর মতো নোংরা মেয়ে কে আমি আমার বাড়ি তে এক মুহূর্ত সহ্য করতে পারছি না।আজ থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তোকে শুধু ঘৃনা করবো আমি।শুনেছিস । I hate u I hate u I hate u রিদিতা ।তুই আমার জীবনের একটা অভিশাপ।আমার রিদয় টাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিলি তুই।আমার জীবন টা শেষ করে দিলি।তোকে আমি কখনো ক্ষমা করবো না। বেরিয়ে যা তুই।যেখানে গিয়ে পারিস সেখানে গিয়ে মর।মরে যা তুই।আল্লাহ্ যেন তোর মরা মুখ আমাকে দেখায়
-আবেগগগ
-হ্যাঁ হ্যাঁ তাই।তোর মরা মুখ দেখতে চাই আমি শুনেছিস।বেরো এখান থেকে
বলেই আবেগ ঘরের দরজা লাগিয়ে দেয় ।আবেগ এর কথাতে আমার পৃথিবী ওখানেই থমকে যায় ।আমার মৃত্যু কামনা করেছে আবেগ।এর থেকে বড় কষ্ট আর কি হতে পারে।শাশুড়ি র থেকে নিজেকে ছারিয়ে নিজেই চলে যাই সদর দরজার কাছে
-যা যা নষ্ট আ মেয়ে
-আপনাকে মা বলে ডেকেছিলাম ।আমি ও আজ এখন হবু মা।আমার গর্ভ এ আবেগের সন্তান বেড়ে উঠছে।এসব জেনেও আপনি এইভাবে আমাকে ফাসালেন ।জানিনা কি লাভ হলো আপনার ।আমিও আর ফিরতে চাই না।যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাব।কিন্তু একটা কথা আল্লাহ্ মানুষকে সব কর্ম এর ফল দেয়।আজ আপনি যেটা করেছেন সেটার ফল যেন আল্লাহ্ আপনাকে দেখিয়ে দেয়
বলেই আমি পা রাখি দরজা র বাইরে।আমার শাশুড়ি যেন একটা হাফ ছেড়ে দরজা লাগালেন।মেইন গেট দিয়ে বেরোনোর সময় একবার পেছন ফিরে দেখে নিই সব।আমার সাজানো সংসার ।আমাদের ঘরের দিকে তাকাতেই দেখি আবেগ বেলকনিত দাঁড়িয়ে আছে আমার দিকে তাকিয়ে ।আমি বুঝেছিলাম যে আবেগ আজ অনেক কষ্ট পেয়েছে।ও আমাকে অনেক ভালোবাসে সেটা আমি জানি।কিন্তু ওর ভালোবাসা টা নিছক মিথ্যা মনে হলো আমার কাছে।যে মানুষটা বিশ্বাস করতে জানেনা তার কাছে ভালোবাসার কোন মূল্য নেই
আবেগ আমাকে দেখে বেলকনির দরজা লাগিয়ে ভেতরে চলে যায় ।সেদিন ভেজা চোখে আবেগের যাওয়া দেখে বুঝেছিলাম আবেগ এর জীবনের কোন দরজা আমার জন্য খোলা নেই।
বোরখা ছাড়া কখনো চলি না ।তারপর আবার সাজগোজ।শাড়ি র আঁচলটা ভালো করে গা ঢেকে গেট দিয়ে বেরোবো এমন সময় দারোয়ান চাচা আমাকে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়াতে বলেন।বাড়ির পেছন দিকে
দারোয়ান চাচা বুড়ো মানুষ।উনি আমাকে খুব ভালো জানতেন।ওনার কথা মতো আমি বাড়ির পেছনে গিয়ে দাঁড়াই ।একটু পর চাচা আসেন
-চাচা ডেকেছিলেন
-মা আমার একটা মেয়ে ছিল তোমার মতো।কিন্তু শশুর বাড়ি তে থেকেই ওর স্বামী ওকে মেরে ফেলে।পয়সা না থাকলে গরিব এর কি আর বিচার হয়।আমি সব জেনেও আজ চুপ মা
-কি জানেন আপনি
-তোমার চাচী অসুস্থ ।তোমার চাচীকে মালকিন কোথায় আটকে রেখেছে।বলেছে আমি যদি বড় বাবুকে কিছু বলি তাহলে তাকে মেরে দেবে।তোমার শাশুড়ি আর ঐ নোভা নামের মেয়ে টাই তোমার এই সর্বনাশ করেছে
-চাচা আমি এখন কি করবো
হঠাত্ বাড়ি র পেছনে একটা গাড়ি এসে থামে
-মা এদিকে এসে লুকিয়ে পরো
-কেনো চাচা
-এসো আগে
আমি দারোয়ান চাচা লুকিয়ে পরি।দেখি গাড়ি থেকে নোভা নামছে।আর একটু পর আমার শাশুড়ি পেছনে র দরজা দিয়ে বেরোলো
-মা,,,,
-নোভা।আনন্দ কর।তোর আপদ বিদায় হয়ে ছে
-হ্যাঁ মা।এবার আমার আর আবেগের মাঝে কেউ থাকবে না
-আশফি র কি করবি
-ওহ মা।ওর ব্যবস্থা করা হয় এ গেছে
সেদিন আমি আর দারোয়ান চাচা ওদের সব কথা শুনতে পাই।বুঝতে বাকি থাকে না কেনো নোভা আমাকে ঐদিন এরকম কথা বলেছিল।ওদের কথা চলতেই থাকে।ওরা কথা বলতে বলতে গাড়ি তে গিয়ে বসে কোথায় চলে যায় ।সেদিন এটাও বুঝি যে আবেগ আমার শাশুড়ি র সন্তান নয়।নোভা তার সন্তান
দারোয়ান চাচা আমাকে একটা চাদর দেয়
-মা এই চাদর টা গায়ে জরিয়ে নেও।আর এই টাকাটা রাখো।আমার কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু নেই
-চাচা আপনি
-মা তোমাকে মেয়ে র মতোন দেখি।এই ক বছর ধরে এই বাড়ি তে এমন অনেক অবৈধ ঘটনা ঘটেছে।যেটা কেউ জানেনা।আমি জেনেও কিছু বলতে পারিনা।আমার হাত পা বাঁধা।মা তুমি যাও
-চাচা একটা কাজ করবেন
-কি বলো
-বাড়ির পেছনের দরজা তো খোলা।বিকেল এ রান্না ঘরে আমার ফোন ফেলে আসি।ওটা একটু এনে দেবেন
-তুমি দাঁড়াও দেখছি
চাচা গিয়ে অনেকখন পর ফোনটা নিয়ে আসে
-এই নাও
-ধন্যবাদ চাচা
-তোমার কাছে আমার মোবাইল নাম্বার আছে
-হ্যাঁ
-কোন দরকার পরলে আমাকে বোলো মা।আমি চেষ্টা করবো।তোমার সংসার বাঁচানোর সাধ্যি আমার নেই।কিন্তু অন্য দিক থেকে তোমাকে সাহায্য করার চেষ্টা করবো
বাড়িতে যেয়ে বেল বাজাতেই বাবা মা দুজনেই এসে দরজা খোলে।তাদের চোখমুখ লাল হয়ে থাকে।পরে তাদের কথা শুনে বুঝতে পারি যে আমার শাশুড়ি তাদের ফোন দিয়ে সব বলেছেন
-তোর কোন জায়গা নেই এই বাড়ি তে
-বাবা আমার কথা শোন
-কি কথা শুনবে তোর।বেরো এখান থেকে
-মা আমি এতো রাতে কোথায় যাব।একটু ঠাঁই দেও আমাকে
-আজ থেকে আমার একটাই মেয়ে নিশিতা।আর কোন মেয়ে নেই আমার ।থাকলে সে মরে গেছে
-মাহহহ
-বেরো এখান থেকে।জাহান্নমে যা তুই।যেখানে গিয়ে পারিস মর
-মাহহহ
-আর ভুলেও যেন কখনো তোকে এখানে না দেখি।আমাদের মুখে চুনকালি মাখিয়েছিস ।নিশিতা র সাথে ও যদি কোন যোগাযোগ করিস তো তোকে আমি ছারব না।বেরো এখান থেকে
মা চলে যায়
-বাবা
-খবর দার আমাকে ঐ নামে ডাকবি না তুই
-চিন্তা করোনা।আমি চলেই যাচ্ছি ।আমার কিছু কাপড় ছিলো তো বাড়িতে ওগুলো একটু দেবে।ওগুলো একটু দেও।আমি চলেই যাব
বাবা ঘরে গিয়ে আমার কিছু জামা আর একটা ব্যাগ ছুরে দিয়ে যায়
-বেরো।তোর কোন জিনিস এমনিতেই রাখতাম না আর।পারলে না হয় গলায় দড়ি দিয়ে মর
-বাবা
বাবাও চলে যায় দরজা লাগিয়ে ।আমি কাপড়গুলো একটু গুছিয়ে ব্যাগে নিয়ে বেরিয়ে পরি অজানা উদ্দেশ্য ।নিজের মা বাবা যে এরকম করবে কখনো ভাবি নি
চলবে———
#LOVE❤
part:14
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
ঐদিন দারোয়ান চাচা আমার জন্য যতটুকু করেছিল নিজের মা বাবা ও তা করেনি
আমি বুঝতে পারছিলাম না কোথায় যাব।নিশিতা আপুর কাছে গেলে আপু দুলাভাই কখনো ফেরাতো না।কিন্তু মা যে নিষেধ করেছিল।আমি শুধু রাতে নিরজন রাস্তা দিয়ে হাটছি ।ছোট বেলা থেকেই অন্ধকার এ ভয় পাই।কিন্তু ঐদিন আল্লাহ্ আমার ভয় সব জেনো দূর করে দিয়েছিল।কারণ আমার জীবনটা তে সব অন্ধকার গ্রাস করেছিল।অন্ধকার এ রাস্তায় লোকজন চলাচল করছে।আমি কোথায় যাব কিছু বুঝতে পারছিলাম না।
আমি সোজা হেঁটেই চলেছি এদিকে হঠাত্ দেখি দু একজন লোক আমার পিছু নিচ্ছে।বুঝতে পারলাম যে রাস্তায় একা মেয়ে পেয়ে শকুনরা ওদের লালসা মেটানোর ধান্দা করছে।আমি দৌড় শুরু করলাম ।কোনদিকে যাচ্ছি কিছু বুঝতে পারছিলাম না।ঐ লোক গুলো ও পেছন নিচ্ছে।রাত তখন হয়তো বারোটার বেশি বেজে গেছে।এদিকে এই শরীর নিয়ে আর কত দৌড়াবো।বাচ্চা টা গর্ভ এ আসার পর থেকে এমনিতেই মাথা ঘুরায় বমি পায়।দুপুর এ একটু খেয়ে ছিলাম কিন্তু সেটা ও পরে বমি হয়ে যায় ।রাতেও খিদে পেয়েছিল।ভেবেছিলাম আবেগ এর সাথে একসাথে খাব।কিন্তু তা যে হবে না এটা ভাবতে পারিনি।শরীরটা ও দুর্বল লাগছে।আর দৌড়াতে ও পারছিলাম না।এদিকে খিদে ও পেয়েছে
বিপদে পরলে দোআ ইউনুস পরতে হয় এটা ছোট থেকে জানতাম ।আমি ওটা মনে মনে পরছি আল্লাহ্ কে ডাকছি আর দৌড়াচ্ছি ।এদিকে এই অবস্থায় দৌড়ালে বাচ্চা টার ও ক্ষতি হবে।কিছু ভেবে পারছিলাম না কি করবো।কিন্তু আল্লাহ্ আমাকে সত্যি পথ দেখিয়ে ছিলেন।কিছুদূর দেখি একটা মসজিদ।তাতে একটা বাতি জ্বলছে।পেছনে একবার তাকিয়ে দেখি ঐ লোকগুলো হয়তো অন্ধকার এ আমাকে দেখতে পাচ্ছে না।দৌড়ে গিয়ে মসজিদ এর বারান্দায় লুকিয়ে পরি।মসজিদের দরজাতে তালা দেওয়া ছিল ভেতরে যেতে পারিনি।একটু পর দেখি লোক গুলো মসজিদের কাছে চলে এসেছে।আমি প্রানপনে আল্লাহ্ কে ডেকে যাচ্ছি অন্তত আমার ইজ্জত টা যেন থাকে।একটু পর দেখি লোকগুলো এদিক ওদিক খুঁজে চলে গেল।ওরা হয়তো ভাবতে পারেনি আমি এখানে থাকবো।আশেপাশে প্রতিবেশী ছিল।কিন্তু তাদের কাছে যাই নি।কারণ নিজের মা বাবা যেখানে জায়গা দেয়নি সেখানে আমি অন্য কারোর বাড়ি কি সাহায্য পাব।
কাউকে ফোন করবো সেই উপায় ও নেই।ফোনে র চার্জ ও শেষের দিকে।তাই ফোনটা বন্ধ করে দি।কারণ যখন দরকার হবে তখন না হয় কাজে লাগাবো ।খিদে আর সহ্য হচ্ছিল না।এদিকে দৌড়ে ছী বলে পেটে একটু ব্যথা ও শুরু হলো।আমি আল্লাহ্ কে শুধু বলছিলাম আমার বাচ্চা টা যেন ভালো থাকে সুস্থ থাকে।বারান্দায় শুয়ে পরি।হঠাত্ পাশে কিছুর আওয়াজ পাই।উঠে দেখি একটা কুকুর মসজিদের পাশের ডাসবিনে কি নিয়ে খাচ্ছে ।আমার এতো ই খিদে পেয়েছিল তাই দেখতে গেছিলাম কুকুর টা কি খাচ্ছে।গিয়ে দেখি একটি প্যাকেট এ কিছু জিলাপি ছরিয়ে আছে।কুকুরটি তাই কুঁড়ি এ খাচ্ছে।বুঝতে পারলাম মসজিদে হয়তো মিলাদ ছিল।আমি ঐ কুকুর টাকে তাড়িয়ে দেই।সেখানে কিছু জিলাপি অবশিষ্ট ছিল না পেরে তাই উঠিয়ে নিই ।মসজিদের বাইরের টিউবওয়েল থেকে ওগুলো ধুয়ে খেয়ে নিই সাথে পানি খাই।খেয়ে বারান্দা তে শুয়ে পরি।খিদে মেটেনি।তাতে কি যা ও কিছু পেট এ পরেছে ।অপেক্ষায় থাকি সকালের
পরের দিন ভোর বেলা কারোর ডাকে ঘুম ভাঙে।দেখি একজন মুরুব্বি হুজুর ।উনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন আমি ওখানে কি করছি।আমি ওনাকে সব বলে দেই।উনি আমাকে মসজিদের ভেতরে পর্দার আড়ালে বসতে বলেন।
-মা মসজিদে মেয়ে দের আসা বারন ।কিন্তু তুমি বিপদগ্রস্ত ।তুমি এখানে থাক।নামাজ শেষ হলে আমি তোমাকে নিয়ে যাব
নামাজ শেষ হলে হুজুর আমাকে ওনার বাড়ি তে নিয়ে যায়।ওনার স্ত্রী কে সব বলে।পরে ওনারাই আমাকে সাহায্য করেন।হুজুর এর স্ত্রী আমাকে ফ্রেশ করিয়ে খাবার দেন।তারপর জিজ্ঞাসা করেন আমার এমন কেউ আছে কি না যার কাছে আমি যেতে পারি।তার পর আমার মনে পরে দিলরুবা আন্টি তোর মায়ের কথা।মা এর একমাত্র বোন দিলরুবা আন্টি ।কিন্তু মা আন্টি বিধবা হওয়ার পর থেকে কোন যোগাযোগ রাখেনি আন্টির সাথে ।কেন সে টা আমরা জানতাম না।কিন্তু আমি আর নিশিতা আপু মাঝে মাঝে চুরি করে আন্টি র সাথে যোগাযোগ করতাম।তারপর ফোন থেকে আন্টি র নাম্বার এ কল দিয়ে আন্টি কে সব বলি।আন্টি বলে যে তোকে নিয়ে তোর দাদা বাড়ি সিলেট এ আছে।আন্টি ঐ হুজুর কে বলে তার কাছে আমাকে রাখতে।
এরপর দুদিন কাটে আন্টি ঐ হুজুর দের বাড়ি থেকে আমাকে সিলেট নিয়ে আসে।সেদিন আন্টি র মুখে শুনি মা কেন আন্টি র সাথে যোগাযোগ করে না।-কারণ আংকেল মারা যাওয়ার আগে মা আন্টি র কাছ থেকে অনেক টাকা ধার নেয়।কিন্তু আন্টি আংকেল মারা যাওয়ার পর ঐ টাকা চাইলে তা দিতে অস্বীকার করে।সেদিন নিজের মায়ের প্রতি যা সম্মান ছিল তা ও শেষ হয়ে যায় ।
লোকে বলে মা আর খালা নাকি একি।তাই আন্টি আমাকে ফেলে দেননি।আন্টিকে বলে আমি তোর সাথে সিলেট এ তোদের গ্রাম থেকে দূরে আসি চাকরির জন্য ।আন্টি অনেক নিষেধ করে কিন্তু কি করবো বল আন্টি বিধবা মানুষ আর তুই একা সংসার চালাস তার মাঝে আমি।এজন্য বলি অন্তত তিন চার মাস চাকরি করি তাতে যা পাই অন্তত ডেলিভারির সময় আমার বাচ্চার কাজে লাগবে।তারপর তোর সাথে এখানে আসা।তোর রিকোআরমেন্ট এ চাকরি।
এভাবে ই শুরু হলো আমার জীবন সংগ্রাম ।মানুষ ভালোবেসে সব ছাড়ে।আসলেই তাই।আবেগ কে ভালোবেসে যা পেয়েছি তার থেকে ছেড়ে ছি বেশি ।আবেগ এর জন্য নিজের পরিবার নিজের স্বজন নিজের শহর সব ছেড়ে ছি আমি সব
এই হলো আবেগ আর রিদিতা র গল্প ।শুনলিতো
দিশার চোখে পানি চলে এলো।ও রিদিতা কে জরিয়ে কান্না শুরু করলো
-দুনিয়া টা এমন কেনরে রিদি।বলতে পারিস।আমি মা র কাছ এ এতো কিছু শুনিনি ।আজ জানলাম সব।কতটা ভালবাসলে মানুষ এতো ত্যাগ করতে পারে।আচ্ছা রিদি আবেগ তোর সব কেড়ে নিয়েছে।কিন্তু তুই তো পারিস নিজের জীবনটা শুরু করতে।আর ওর এই বাচ্চা কেই বা কেনো তুই,,,,,
-কারণ আমি মা।মা রা যে ফেলতে পারেনা।জানি সব মা এক নয়।তবুও ।অনেকবার আত্মহত্যার কথা ভেবেছি ।কিন্তু না তা যে মহাপাপ ।আর আমার বাচ্চাটার তো কোন দোষ নেই।আমি সংগ্রাম করবো।আমার শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে জীবনের শেষ পর্যন্ত শুধু আমার সন্তানের জন্য
-আসলেই রিদি।এতোদিন শুনেছি।আজ প্রমাণ পেলাম একজন মা তার সন্তান এর জন্য কতো কিছু করতে পারে।নে চল এবার খাবি
-চল
নিজের মা যে এমন কথা বলবে ভাবতে পারিনি ।আমার বিদায় এর সময় বাবা আর আমার আপু নিশিতা অনেক কেদেছিল ।মার চোখে কোন পানি দেখিনি আমি।মা তো আরো কষ্ট পাচ্ছিল এটা ভেবে যে নিশিতা আপুর চেয়েও বড়লোক এর ঘরে আমার বিয়ে হচ্ছে
তারপর পৌছালাম আবেগ এর বাড়িতে।গাড়ি তে আমি আর আবেগ আর ড্রাইভার ছিল।বাকিরা অন্য গাড়ি তে।আমার কষ্ট হচ্ছিল নিজের আপনজনদের ছেড়ে দিতে
হঠাত্ আবেগ ওর রুমাল এগিয়ে দিল
-চোখের পানি মুছে নাও ।নাহলে সামনের বাকি জীবনটা ঝাপসা লাগবে
-আপনার কাছে টিস্যু হবে
-কেনো
-না মানে রুমাল টা নষ্ট করবো
-টিস্যু আছে।কিন্তু দেব না
-কেনো
-কারণ চোখের পানিটা আমার কাছে খুব দামি।আর কাজল সেটা মোছার দায়িত্ব ও আমার।এখানে ড্রাইভার আছে নাহলে দেখিয়ে দিতাম কাজল কেমন করে মুছতে হয়
সেদিন আবেগের দিকে তাকিয়ে খুব লজ্জা পেয়েছিলাম ।আবেগ এর কাছ থেকে রুমাল নেওয়া র পর ও বাইরের দিকে তাকিয়ে আমার এক হাত খুব শক্ত করে ধরে।আমি ছাড়া তে চেষ্টা করি কিন্তু পারিনি
আবেগ এর মাকে দেখে মনে হয় এ ছিল উনি বিয়ে টা যেন হজম করতে পারেনি।কিন্তু হাসি মুখে আমাকে বরন করেছেন
বাসর ঘরে বসে আছি রাত একটা বাজে আবেগ এর আসার নাম নেই।হঠাত্ আমার ফোনে মেসেজ আসে
–ঘর থেকে বেরিয়ে বা দিকে সিঁড়ি ।সবাই ঘুমিয়ে আছে কেউ দেখবে না।ছাদে এসো আমি অপেক্ষায় আছি।নিজের স্বামীকে আর অপেক্ষা তে রেখো না
বুঝতে বাকি ছিলো না যে মেসেজটা আবেগের ।খুব সাবধানে আমি ছাদে গিয়ে দাঁড়াই ।দেখি আবেগ বুকে হাতজোড়া বেধে পিছে ফিরে দাঁড়িয়ে আছে
-আপনি এখানে
-জানো আমি কানাডা পরতে গেছি।অনেক হাই লাইফ স্টাইল এ চলেছি।কিন্তু মনের মধ্যে সবসময় একটা আপন লোক খুঁজতাম ।আমার ফ্রেন্ড রাত যখন প্রেম নামক জিনিস নিয়ে মেতে থাকতো আমি তখন প্রতিনিয়ত আল্লাহ্ র কাছে প্রার্থনা করতাম আল্লাহ্ যেন আমাকে শুধু তার কাছেই ধরা দিয়ে দেয় যাকে আমার জন্য আল্লাহ্ পাঠিয়েছে।অবশেষে আজ সেই দিন।তোমাকে প্রথম দেখেই ভালোবেসে ফেলি।কারণ আমার মন বলছিল তুমিই সে যে আল্লাহ্ র পক্ষ থেকে আমার জন্য নির্ধারিত
এই বলে আবেগ আমার সামনে এসে একটা আংটি নিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে
-আমি তোমাকে আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পাশে চাই রিদি।তুমি কি হবে আমার অনুভূতি আমার হৃদস্পন্দন
সেদিন খুশিতে আমার চোখে পানি চলে আসে।আমি মাথা নাড়িয়ে সায় দিলে আবেগ আমাকে আংটি পরিয়ে জরিয়ে ধরে।সেদিন নিজের লজ্জা ভেঙে আমিও আবেগকে জরিয়ে নেই।তারপর রাতের গভীরে পূর্ণতা পায় আমাদের ভালোবাসা।ডুবে যায় দুজন দুজনাতে
এইভাবে শুরু হয় আমাদের ভালোবাসা।আসতে আসতে আমিও আবেগ এর সাথে ফ্রি হয়ে যাই আপনি থেকে তুমিতে ।আমার শশুর আমাকে খুব ভালোবাসাতেন ।কিন্তু আবেগের মা তিনি ও অনেক ভালোবাসাতেন ।আমাকে মায়ের মতো হাতে ধরে সব শিখাতেন ।কিন্তু কে জানতো উনার এই ভালো মানুষি আমার জীবনের কাল
আমাদের বিয়ে র দুবছর পর আবেগকে বিজনেস এর কাজে থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা থাকে
-কি হলো মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছো কেন
-আবেগ তুমি কবে আসবে।আমি তোমাকে ছেড়ে থাকবো কি করে একদিন
বলেই আমি আবেগকে জরিয়ে কেঁদে দেই
-আরে পাগলি কাদছো কেন।আমিতো চলে আসবো তাড়াতাড়ি
-তবুও
-এই রিদি শোন না
-হুম
-আমার না খুব ইচ্ছে হচ্ছে
-কি
-ছোট ছোট হাত পা ধরে খেলব।আমি অফিস থেকে আসলে আমার টাই ধরে টানবে।আমার চুল ধরে টানবে
-মানে
-মানে বোঝ না
-না
-আচ্ছা আমি বোঝাচ্ছি
বলেই আবেগ আমাকে কোলে নিয়ে বিছানায় চলে যায়
-আবেগ কি করছো
-মানে একটা বেবি।আমার তোমার ভালোবাসা।
-তুমি,,,
-এই রিদি দেবে বলো
-,,,,,
-কি হলো বলো
-হুম
-আচ্ছা শোন আমাদের বেবির নাম রাখবো #LOVE❤
-এটা কোন নাম হলো
-হু।কারণ ও আমাদের ভালোবাসা।বুঝলে।দেবে বলো আমাকে আমার #LOVE❤
-হুম
সেদিন শেষ বারের মতো আবেগ এর সাথে ডুবে যাই ভালোবাসাতে
তারপর ঘনিয়ে আসে সেই রাত।আমার জীবনটাকে পুরো তচনচ করে দেয়
চলবে—-
#LOVE❤
part:12
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
আবেগ পরের দিন সকালে চায়।কেটে যায় এক সপ্তাহ
এ কদিন ধরেই আমার শরীরটা কেমন লাগছিল।বারবার বমি মাথা ঘুরানো ।আমি ও তো বুঝতে পারিনি।আমার শাশুড়ি কে বলি।উনি আমাকে তিনটা প্রেগন্যান্সি কিট এনে দেন।আমার শশুর তখন চট্টগ্রাম ছিলেন ওনার এক বন্ধুর বাড়িতে ।কিট তিনটিতেই রেজাল্ট পজিটিভ
আমার আনন্দ এ চোখে পানি এসেছিল।কারণ আবেগ আর আমার ভালোবাসা আমার গর্ভ এ।আমার শাশুড়ি কে বললে তিনি যেন কিছুটা দমে গেছিলেন।উনি বলেন যে আবেগ দেশে ফিরলে আমার শশুর আর আবেগকে একসাথে খবর দিতে তাহলে সারপ্রাইজ পাবে।আমিও বোকার মতো ওনার কথা শুনলাম।আবেগের সাথে কথা বলতাম কিন্তু খবরটা দেই নি ।আমার মা বাবা কেও জানাইনি ।শুধু নিশিতা আপু জানতো।ওকে বলেছিলাম কাউকে না বলতে।কারণ আবেগ আসলে একটা পার্ট ইর আয়োজন করার কথা।সেদিন সবাইকে সব জানাব ভেবেছিলাম ।নিশিতা আপু বলেছিল যে আবেগ বাদে আর সবাই কে জানাতে।কিন্তু আমি শাশুড়ি র কথা শুনলাম ।তখন যদি নিশিতা আপুর কথা শুনতাম তাহলে আজ এতো কিছু হতো না
এর মধ্যে একদিন নোভা আসে বাড়িতে ।আবেগের মুখে ওর কথা শুনি।ও আবেগের ফুফাতো বোন।আবেগের থেকে দুবছর এর ছোট।কিন্তু বন্ধু র মতো সম্পর্ক ।নোভা এসে আমাকে দেখে কেমন চোখমুখ লাল করে আমার শাশুড়ি র কাছে যায় ।ওদের মধ্যে কি কথা হয় তা জানতাম না
ততক্ষণে নোভা আমার সাথে একটা কথাও বলেনি।আর আমার শাশুড়ি ও এ নিয়ে মাথা ঘামাননি।তবে যাওয়ার আগে নোভা আমাকে বলে
-ভালো করে খেয়ে পরে নাও।বলা তো যায় না কখন কি হয়ে যায় কুয়াশার মতো সব ঝাপসা হয়ে যায়
বলেই নোভা চলে যায় ।আমি সেদিন ওর কথার অর্থ সেদিন বুঝিনি।আজ বুঝি
তার পরের দিন আমার শাশুড়ি খুশিতে লাফাতে লাফাতে আমার কাছে আসে
-বৌমা শোন
-হ্যাঁ মা
-শোন আজ রাতে আবেগ ফিরছে।ও অলরেডি এয়ারপোর্ট এ
-কিন্তু আমাকে যে বললো,,,
-হুম।ও নাকি চায় তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে।আমাকে বলতে নিষেধ করেছে।কিন্তু আমি তো জানি তুমি ওকে তার থেকেও বড় সারপ্রাইজ দিতে চাও।তাই তোমাকে বললাম ।শোন আজ সন্ধ্যা তে আমি ও চট্টগ্রাম যাব তোমার শশুর মশাই যেতে বললেন
-কিন্তু আমি
-আরে ভালো হলো।তুমি রাতে তৈরী থেকো।আরে এমন বয়স আমরাও পার করেছি।আর পুরো বাড়িতে তো সিসি টিভি আছে।আবেগ চলে আসবে
সেদিন শাশুড়ি মা সত্যি কথা বলেছিলেন ।কিন্তু মিথ্যা ছিল উনার চট্টগ্রাম যাওয়া।কারণ ঐদিন আবেগ এর বাবা চট্টগ্রাম থেকে ফিরবেন আর শাশুড়ি মা তাকেই আনতে যাই।সব ছিল প্ল্যান কিন্তু আমি কিছু বুঝতে পারিনি
সন্ধ্যা তে শাশুড়ি যাওয়ার পর আমি আবেগের প্রিয় মেরুন কালারের একটা শাড়ি পরে খুব সুন্দর করে সাজি ।আবেগের মনের মতো করে।পুরো ঘর নিজে সাজাই।আর দরজার ছিটকিনি খোলা রাখি যাতে আবেগ এসে সরাসরি রুমে আসে।কারণ আমি জানতাম আবেগ ছাড়া কেউ আসবে না ।আর ড্রয়িং রুমে একটা বড় চিরকুট এ লিখি– অপেক্ষায় আছি উপরে এসো
আমি রুম অন্ধকার করে বসে থাকি।হঠাত্ দরজা খোলার আওয়াজ পাই।আমি মনে করি যে আবেগ এসেছে হয়তো।আমি উঠে দাঁড়িয়ে থাকি ।কিন্তু পেছন ঘুরি না।আর ঘুরলে ও কিছু দেখতাম না।কারণ রুমে র লাইট কেউ এসে বন্ধ করে দিয়ে ছে।আমি ভাবি যে আবেগ করেছে।
হঠাত্ কারোর পায়ের শব্দ আসতে আসতে আমার কাছে আসে সে এসে আমার পিঠ ঘেষে দাঁড়ায় ।আমি মনে করি আবেগ
হঠাত্ ই সে আমার উল্টা দিক থেকেই শাড়ির আঁচলের পিন খুলে আঁচল ফেলে আমাকে ঘুরিয়ে জরিয়ে ধরে ।আমি আবেগ মনে করে তাকে জরিয়ে ধরি।কিন্তু পরে মনে পরে আবেগ আসলে সবসময় আমাকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে আর একাজ আবেগ করবে না ।যখন ই লোকটাকে সরাতে যাই তখন কেউ লাইট অন করে লোকটিও আমাকে ছেড়ে দেয়।আমি তাড়াতাড়ি আঁচল ঠিক করে তাকিয়ে দেখি আশফি ভাই।আবেগের বন্ধ উ।আর আবেগ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে।পেছনে আমার শাশুড়ি তার পেছন থেকে শশুর এগিয়ে আসছে
আশফি কে দেখে আমি পুরো অবাক হয়ে যাই
-আবেগ তুমি ওখানে আর আশফি
-কেনো ভাবি আবেগ না থাকলে তো আমাকে ডাকো।এখন কেন না জানার ভান করছো
-আবেগ আমি,,,,,,
-ব্যস আর কিছু দেখার নেই আমার
-আবেগ শোন আমার কথা
আমার শাশুড়ি বলতে শুরু করেন
-ছিহহ ।আবেগের বাবা এই মেয়ে কে তুমি বৌ করে এনেছো ।ছিহহহ
-আমি ওকে কতো ভালো ভাবতাম নিজের মেয়ে র মতো দেখেছি।আর তুমি
-বাবা আমি,,,
-চুপ করো।বাজে মেয়ে এই মুহূর্তে তুমি আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও
-কি হচ্ছে টা কি চেঁচাচ্ছ কেন
-তা কি করবো।তুমি কই আমাকে দেখবে তা না ঐ মেয়ে টাকে দেখছো
-তুমি কি পরেছো এটা।যাও গিয়ে চেন্জ করে এসো।এসব পোশাক পরে পুরুষ আকর্ষণ করার কি খুব দরকার
-আমি না হয় এসব পরি।কিন্তু ঐ মেয়ে টা খুবতো চলতো হুজুর হয়ে অথচ তলে তলে,,,,
-নোভা আর কোন কথা শুনতে চাই না আমি
আবেগ রিদিতার দিকে এগিয়ে গেল
-তোমার মন থেকে ঐ মেয়ে টাকে একদম মুছে ফেলাবো আমি
রিদিতা আবেগকে দেখে একটু অপ্রস্তুত হয়ে পরলো
-কেমন লাগছে আমার এনগেজমেন্ট দেখতে
-হুমম।ভালো । congratulations স্যার
-তোমার আমাকে congratulations জানানোর ইচ্ছে ও জাগছে
-না জাগার তো কিছু নেই।আপনি নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছেন এটা না জানালে হয়
-খুব কথা শিখেছো না
-উহুমম ।কথা আগে থেকে জানতাম ।কিন্তু দূরভাগ্য ।এই কথাগুলো যদি আগে বলতাম তাহলে হয়তো এই দৃশ্য টা দেখতে হতো না
-মানে
-মানে আর কি।নিজের স্বামী,,,,,,
রিদিতা থেমে গেল
-কি হলো চুপ হয়ে গেলে কেন
-আপনি যান।আপনার মা বাবা হয়তো জানেনা আমি এখানে আছি।সবাই অন্য কিছু মনে করবে।আপনার ফিঅন্সির কাছে যান
-কে কি মনে করলো তাতে আমার কিছু যায় আসে না
-আসবে।যখন নোভা কষ্ট পাবে তখন আসবে
-নোভা কিসে কষ্ট পেলো না পেলো সেটা আমার দেখার বিষয় নয়
-এটা কি বলছেন।আপনার স্ত্রী র ব্যাপার আপনার দেখার বিষয় নয়
-নোভা আমার স্ত্রী নয়।শুনেছো তুমি
-হুমম
-ভালোই লাগছে
-কি
-তোমাকে
আবেগ এর কথা শুনে রিদিতা আবেগের চোখের দিকে তাকালো।অনেক দিন পর তার প্রিয় মানুষটা তাকে এই কথা বললো
-এটা কি আশফির পছন্দ এর রঙ না কি
-না।এটা তো আমার জীবনের রঙ।না লালের মতো উজ্জ্বল না নীলের মতো সুন্দর না হলুদের মতো রঙিন না কালোর মতো আধার।।পুরোটাই সাদা।যার জীবনে কোন রঙ নেই তার সাদাই বেটার
-আমাকে কেমন লাগছে বললে না তো
-আপনাকে দেখার মানুষ ঐ দিকে দাঁড়িয়ে আছে তাকেই জিজ্ঞাসা করুন
-আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি
-বলবো
-হুমম
-যেদিন প্রথম ভালোবেসেছিলাম সেদিনের মতো
বলতেই রিদিতার চোখে পানি চলে আসলো
-হুহহ ভালোবাসা।কাজলটা ঘেঁটে যাবে চোখের পানি মুছে নেও
-নাহ্ আমার কাজল আর ঘেঁটে যায় না।কাজলটা ঠিক করে দেওয়ার কেউ নেই তাই ঘেঁটেও না
-তুমি,,,,
-আপনি প্লিজ যান।আমার কথা বলতে ভালো লাগছে না
-আমাকে তো ভালো তোমার কখনোই লাগেনি
-আমার কিছু বলার নেই
-তুমি প্লিজ রিং পরানোর সময় আমার সামনে থাকবে
-কেনো কষ্ট পেতে দেখতে চান তাই
-হ্যাঁ
-আমি আপনার সামনে থাকবো।নিশ্চয়ই থাকবো।নিজের প্রিয় মানুষটা ভালো থাকতে চাই সেটা দেখবো না।একটা কথা ছিল
-বলো
-শেষবারের মতোই বলবো।আর কখনো বলবো না
-কিইইই
-ভালোবাসতাম ভালোবাসি ভালোবেসে যাব
বলেই রিদিতা অন্য দিকে চলে গেল
আবেগ থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে
-আমিও।ভালোবেসে যাব।কিন্তু আমার টা সত্যি ।তোমার টা নাটক।আমি তোমাকে সামনে থাকতে বলেছি কষ্ট দেব বলে।কিন্তু আমি যে পারব না রিদি অন্য কারোর হাতে রিং পরাতে–মনে মনে
নোভা এতক্ষণ দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিল ।হঠাত্ আবেগের দিকে এগিয়ে এলো
-আবেগ প্লিজ আজকে তুমি আমার জন্য একটা গান গাও
-আমি কারোর জন্য গান গাইতে পারবো না
আবেগের কিছু বন্ধু ও এসে রিকোয়েস্ট শুরু করলো
-ঠিক আছে গাইবো ।কিন্তু আমার পছন্দ মতো
আবেগ মাউথ নিয়ে বলা শুরু করলো
-আজ আমি গান গাইবো ।এই গানটা আমি তার জন্য ডেডিকেটেড করলাম যে হবে আমার অনুভূতি
নোভা ভাবছে আবেগ ওর জন্য গান গাইছে।আর রিদিতা অনেক খুশি আজ অনেক দিন পর আবেগের গান শুনবে
আবেগ শুরু করলো
——chod diya woh raasta
Jis raaste mein tum the rojre
Tod diya o ayna
Jis ayneme
Tera cehra deke
……….
,,,,,,,,,,,,,
,,,,,,,,,,,,,,
Mein seher me tere
Ha roj ghurno
Muje apna koie na mila
,,,,,,,,,,,,,,(chod diya-arijit singh)
(গানটা আমার মুখস্থ না ।ভুল হলে সরি)
চলবে——
#LOVE❤
part:10
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
আবেগ গান শেষে নিজের চোখের কোন থেকে পানিটা মুছে নিল
রিদিতার সেদিকে খেয়াল নেই।রিদিতার শরীরটা আরো খারাপ লাগছে।রিদিতা একটা টেবিল এর গা ঘেষে দাঁড়ালো ।কোথাও তো বসার জায়গা নেই
-আল্লাহ্ আর কিছুক্ষণ।বাড়ি যাওয়ার পর যা করবার কোরো।আল্লাহ্
দিশা রিদিতা র দিকে এগিয়ে এলো
-রিদি তোর কি খারাপ লাগছে
-না ।তেমন না।তুই এনজয় কর
-না আমি তোর কাছে দাঁড়িয়ে থাকি।এই নে।জুস খা দেখ ভালো লাগে কিনা
-হুম
রিদিতা জুস একটু মুখে নিলো
সবাই প্রস্তুত ।নোভা তো খুশীতে যায় যায় অবস্থা ।কারণ এখন রিং বদল হবে।আগে আবেগ তারপর নোভা দুজন দুজনকে রিং পরাবে
আবেগ রিং টা হাতে নিয়ে নোভার হাতে পরাতে যাবে।তার আগে ভেজা চোখে রিদিতা র দিকে তাকালো
এইদিকে রিদিতা র চারিদিক অন্ধকার হয়ে আসছে।হঠাত্ করে হাত থেকে জুসটা পরে গেল।তার শব্দ এ সবাই রিদিতা র দিকে তাকালো।সাথে সাথে রিদিতা ও জ্ঞান হারালো
এই দৃশ্য দেখে আবেগের হাত থেকে রিংটা পরে গেল।আর নোভাকে পরাতে পারলো না সেই রিং
-রিদিতাআআআ
কয়েক ঘন্টা পর
সবাই চলে গেছে।দিশা রিদিতা কে নিয়ে আবেগদের ড্রয়িং রুমে বসে আছে।নোভা রাগে শেষ।আবেগ এর মা বাবা নোভা র বাবা সবার একি অবস্থা ।রিদিতার ঐ অবস্থা দেখে আবেগ ওকে কোলে নিয়ে ড্রয়িং রুমে নিয়ে আসে।সাথে ক্যানসেল করে দেয় এনগেজমেন্ট
রিদিতার জ্ঞান ফিরছে।চোখ খুলছে
-রিদি আসতে ওঠ।আসতে
-দিশা আমি এখানে,,,,
নোভা তো ফুঁসছে
-তুমি কেন এখানে বুঝতে পারছো না ।আমাদের এনগেজমেন্ট ক্যানসেল করার জন্য এই প্ল্যান করলে।শয়তান মেয়ে
আবেগ রিদিতার থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে।রিদিতার জ্ঞান ফিরে দেখে আবেগের যেন দেহে প্রান এলো
আবেগের মা গিয়ে রিদিতা কে টেনে তুলে কষে থাপ্পড় মারলো।ঘটনাটি দেখে সবাই স্তব্ধ
-শয়তান নষ্টা মেয়ে ।আমার ছেলে র জীবন নষ্ট করে তোর শান্তি হয় নি।এখানে ও চলে এসেছিস তুই।নোভা তুই আগে কেন আমাকে বলিস নি যে এই মেয়ে এখানে আছে
নোভা তো কান্না শুরু করে দিয়েছে
-মামোনি আমিতো ভেবেছিলাম এই মেয়ে কে দিয়ে আমাদের বিয়ে র কাজ করিয়ে তারপর একে বের করে দেব।কিন্তু এই মেয়ে যে এতো বড় নাটক করবে সেটি ভাবতে পারিনি
আবেগ দূর থেকে দাঁড়িয়ে সবই দেখছে।কিন্তু কিছু বলছে না
-যদিও আমি চাইছিলাম যেন এনগেজমেন্ট না ক্যানসেল হয়।কিন্তু তুমি যে এভাবে নাটক করবে আমি ভাবিনি।আমি জানি এটাও তোমার নাটক(মনে মনে)
রিদিতা এবার মুখ খুলল
-আজ আপনি বয়সে বড় বলে আপনাকে কিছু বললাম না।নাইলে আপনাকে,,,,
আবেগের মা আবার রিদিতা কে মারতে গেল
-কি করবি তুই দেখি,,,,
রিদিতা মহিলা র হাত ধরে জোরে মোচড় দিল
-আআআ
আবেগ মায়ের চিত্কার শুনে এসে রিদিতা র হাত থেকে ওর মায়ের হাত ছারিয়ে রিদিতা কে কষে এক থাপ্পড় মারলো
রিদিতার চোখের পানি আর বাধ মানলোনা।শেষমেশ যে আবেগ তাকে মারবে এটা ভাবতেই পারেনি
-আবেগগগ,,,,,
– তোমার সাহস হয় কি করে আমার মার হাত ধরার।মা তো ঠিকই বলেছে এসব তোমার নাটক
-আমার নাটক,,,
-হ্যাঁ
রিদিতা র বুকে যেন কেউ সুই ফোটাচ্ছে ।আবেগ যে তাকে এতটা খারাপ ভাবে তা জানা ছিল না।চোখে র পানি মুছে নিল।কারণ তার প্রতিবাদ তাকেই করতে হবে
-স্যার আমি আপনার কাছে সকালেই ছুটি চেয়েছিলাম কিন্তু আপনিই দেননি।আর কোন নাটক না।আমার শরীর ভালো না তাই হয়তো মাথা ঘুরে পরেছি।আর হ্যাঁ আপনার মা ঐ মহিলা কে বলে দেবেন যে তার কোন অধিকার নেই আমার গায়ে হাত তোলার।উনি তো আমাকে নষ্ট আ বললেন।আসল নষ্ট আ কে তা আপনার মাকেই জিজ্ঞাসা করুন
-রিদিইই
-চেচাবেন না।আপনার চেচানো শোনার জন্য আমি বসে নেই।আর হ্যাঁ চাকরি নিজের যোগ্যতা তে পেয়েছি।কারোর কুলাঙ্গার কাপুরুষ ছেলের জন্য নয়
-রিদিইই
-আজ যেই চড় আপনি আমাকে মারলেন।একদিন এই চড়টার জন্য ই আপনার আফসোস করতে হবে।দিশা চল
রিদি দিশাকে নিয়ে চলে গেল
নোভার বাবা তো আবেগের প্রতি খেপেছে
-আবেগ আমি তোমার কাছে অনুমতি নিয়ে ই এই বিয়ের আয়োজন করেছি।এখন যদি তুমি কথা ঘোরাও তোমাকে আমি ছারব না
-আপনি চিন্তা করবেন না।নোভাকে আমি আবেগের বৌ করবো
-ঠিক আছে ভাবি
নোভা গিয়ে কাঁদতে কাদতে আবেগের সামনে দাঁড়ালো
-আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি আবেগ অনেক
নোভা চলে গেল
বাড়িতে ফিরে
-রিদিতা স্যার কে হয় তোর বল আমাকে
-,,,,,
-কি হলো বল।তুই তো আমাকে আগে বলিসনি এই কথা।যে স্যার ই তোর আবেগ
-হ্যাঁ স্যার ই আবেগ।আমার আবেগ।যাকে আমি ভালোবাসি যে আমার সন্তান এর বাবা
-কিহহহ
-হ্যাঁ
-রিদি আজ আমি সব শুনতে চাই।তুই অজ্ঞান হওয়ার পর স্যার যেভাবে ছটফট করছিল তাতে মনে হয় না যে তোকে ঘৃনা করে।কি এমন হয়ে ছিল যার জন্য তোর আর স্যার এর ভালোবাসা আজ এইভাবে পরে আছে
-শুনতে চাস
-হ্যাঁ চাই
-শুন তাহলে আবেগ আর রিদিতা র গল্প
আমি তখন অনার্স ফাসর্ট ইয়ার এ ন্যাশনাল ভারসিটিতে পরি।হঠাত্ কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে শুনি আমাকে কারা দেখতে আসবে
ছোট বেলা থেকে মা বাবা আমাকে পছন্দ করেনা।কারণ মা বাবা ছিল অনেক সুন্দর ।যেন ফিল্ম এর হিরো হিরোইন ।বড় আপু যখন হয় তখন মা বাবা খুশি ছিল।কারণ তাদের প্রথম সন্তান ।আপু ও অনেক সুন্দর ঈ।আপু আমাকে খুব ভালো বাসতো ।আমরা দুই বোন।আমি ছোট বেলা থেকেই দেখতে খারাপ তারপর আপুর মতো পড়াশোনা তেও ভালো না।বড় হয়ে হয়তো চেহারা একটু ভালো হয়েছে।তারপর বাবা মার অনেক শখ ছিল যেন একটা ছেলে হয়।কিন্তু আমি ছিলাম মেয়ে ।তাতে ও আক্ষেপ ছিল না।বাবা আপু আমাকে ভালো বাসতো ।কিন্তু মা সবসময় খারাপ ব্যবহার করতো।আপুকে সবসময় আগলে রাখতো ।কোন কাজ করতে দিত না।আমাকে দিয়ে সব করাত।আপু যখন ক্লাস টেনে পরে তখনই তার বিয়ে হয় অনেক বড়লোক পরিবার এ।ভাইয়া এখন আর্মির একজন মেজর।আর আমার বয়স বাড়ে কিন্তু তেমন কোন সম্বন্ধ আসে না ।আসলেও গায়ে র রঙ চাপা পড়াশোনা ভালো না বলে চলে যায়
এঐদিন আবেগ ওর মা বাবা আমাকে দেখতে আসে।আবেগের নাকি কথা ছিল ওর কোন বড় ঘরের মেয়ে পছন্দ নয়।ছিমছাম ধার্মিক মেয়ে চাই
ওদের সামনে গেলে আবেগের বাবা আমাকে পছন্দ করে ফেলে।আবেগের মা কোন কথা বলেনি।ওনার মুখ দেখে বুঝেছিলাম হয়তো আমাকে পছন্দ হয় নি।কিন্তু আবেগ এর বাবা র ওপর কিছু বলতেও পারছেন না
আবেগ আর আমাকে আলাদা কথা বলতে পাঠানো হয় ।কথা আবেগি আগে শুরু করে
-নাম রিদিতা তাই তো
-হুম
-আমি কিন্তু ও তো বড় নাম বলতে পারবো না রিদি বলেই ডাকবো
আবেগের কথা শুনে অনেক অবাক হই।তারপর আবেগকে প্রথম ভালোভাবে দেখি আর প্রথম দেখাতেই যেন ভালোবেসে ফেলি।এত সুদর্শন পুরুষ
-উহহহম।হা হয়ে দেখবেন না।মাছি ঢুকে যাবে
আমি লজ্জা পেয়ে যাই ওর কথাতে
-আমার নাম জানো
-না
-আবেগ।আচ্ছা সব তো আমি বলছি।তোমার কিছু বলার নেই
-আপনি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন কেন
আমার প্রশ্ন শুনে আবেগ হাসা শুরু করে
-আমি হাসার কি বললাম
-আচ্ছা তোমার কেন এই প্রশ্ন মাথা তে আসলো
-আসবেই তো।আমি দেখতে আপনার মতো না।পড়াশোনা তেও ডাববা ।তারপর,,
-তোমার চোখ তোমার নাকের পাশের তিল ওটাই আমাকে প্রেমে ফেলেছে।আর চেহারা ই সব নয়।উঠি আজ।বিয়ে র দিন দেখা হচ্ছে
এরপর ধুমধাম করে আমাদের বিয়ে হয়
বিয়ে র দিন আমার মা আমাকে বলে
-যা বড়লোক ভেগিয়েছিস দেখ সংসার করতে পারিস কি না।কি দেখে যে ঐ ছেলে তোকে পছন্দ করলো কে জানে