Sunday, June 22, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1579



মেঘের আড়ালে ২ পর্ব-১০

0

#মেঘের_আড়ালে২(ফিরে আসা)
#পর্ব_১০
#লেখিকা_ফাতেমা_জোহরা_নাভিলা

খালামনির ডাকে সকালে হেলেদুলে ঘুম থেকে উঠলাম আমি আর আপি, খালামনি আমাদের তাড়া দিয়ে শটকাটে পরিবেশের ১০২ নং সংকেত বলে নিচে চলে গেলেন। কি বলে গেলেন কিছুই বুঝলাম না সব যেমন মাথার উপর দিয়ে উড়ু উড়ু যাই বলে চলে গেলো শুধু ঘুমো ঘুমো চোখে খালামনির জাওয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলাম। অলস ভঙিতে হামি দিতে দিতে বালিশ এর নিচ থেকে ফোন নিয়ে চোখ আমার বড় বড় হয়ে গেলো ইতিমধ্যে কপাল এর উপরে উঠে। এগারো টা দশ বাজে তার মানে আম্মু রেগে বোম হয়ে আছেন আমার উপর আরো। অউফফফফফফ নূর তুই আর এই জিন্দেগীতে সুনামিকে দাওয়াত দেওয়া আর বাদ দিবি না কপালে। আল্লাহ্ এক লাফে খাট থেকে উঠে চ্রট করে ওয়াশরুমে চলে গেলাম ফ্রেশ হতে।
.

.
তোয়ালে দিয়ে চুল মুচতে মুচতে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখি আয়াত খাট এর উপরে বসে আছে মুখে তার রাগি ভাব।তার পাশে আপি বসে আছে ফোনে সম্ভব তো ইফরান ভাইয়ার সাথে মেসেজিং এ কথা বলছে টুংটাং আওয়াজ কানে ভেশে আসছে। আমি দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে তোয়ালেটা টেবিলের উপর রেখেতে পিছ থেকে আয়াত বলে উঠল তার গর্জন গলায়,,,, 📢

“পাক্কা বিশ মিনিট ধরে আয়াত অর বেস্টি মার্কা দুক্ষু দুক্ষি ভরা কষ্টের ভাষণ বলে হাপিয়ে উঠেছে ”

দেখ আমার উপর অকারনে রাগ নিয়ে থাকিবি না,,, আমার মন মানসিক এখন ঠিক নাই যে আমি এখন তোর দুক্ষু ওয়ালা লাইন শুনে মুড ভাঙাবো। তাই অযথা রাগ দেখিয়ে কাজ হবে না আমার উপর। নূর।
.
আমি আপুর থেকে সব শুনেছি, তাই রাগ করছি না তোর উপর কিন্তু আমাকে একটিবার তো জানাতে পারতি। জল যে রিতিমত এতো দূর গড়ে গেছে।আয়াত।
.
তা, কখন জানাতাম তোকে ঘটানা অতি ৪২০ গতিতে রটে গেছে আমার সাথে, আমি নিজেই একটা ধোঁয়াশার ঘোড়ে ছিলাম। চুল আছড়াতে আছড়াতে বলল নূর।
.
সকালে তো এটলিস্ট জানাতে পারতি। নাও ইউ আর ম্যারিড এটাও আর কাউর না আমারই এক্স ক্রাশ এর বউ।।হতাশ হওয়ার ভঙিতে।।। আয়াত।
.
সকাল তো হলো এখন সখিনার মা,,, জাস্ট চিল এতো প্যারা নেও কেন গো, আর ক্রাশ এক্স হওয়া সাস্থ জন্য অতি ভালো লাভবান খবর,,বুঝসো নাহলে নতুন গুলার আগমন রটবে কি করে এই ছোট জীবনে বলো।চোখ টিপ দিয়ে বলল।।।

“দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে বলে উঠল দিপ্ত,,,,,
.
কেমন আছো। হাসিমুখে।।। রুমে আসতে আসতে।।দিপ্ত।
.
আলহামদুলিল্লাহ, আপনি কেমন আছেন ভাইয়া। বিরক্তি সুরে।।
.
দিপ্ত বেকা চোখে তাকিয়ে বলে উঠল,, থাপ্পড় খাইসো তুমি।আমি তোমার কোন জন্মের ভাই লাগি বেয়াদব।বলছি না ভাই বলতে না বেকুব।।
.
এই জন্ম হাতের কাছে থাকতে আবার কোন জন্মের হবেন, আপনি নূর এর ভাই হলে আমার ও তো ভাই হোন নাকি।আয়াত।
.
দুনিয়াতে সব যদি ভাই আর বোন হয়তে থাকে দিন দিন তাহলে ছাইয়াটা কে হবে শুনি।। দাতেঁ দাতঁ চেপে।। দিপ্ত।
.
কিহহহহ!!! বুঝলাম না কিছু বললেন ভাইয়া।আয়াত।
.
জাস্ট সাট আপ।।। রেগে।।। আর একটি বার তোমার মুখ থেকে ভাই ডাক শুনলেই জিভ কেটে হাতে তুলে দিবো ইডিয়েট।।।। তার পর এসে কানের সামনে বেশী করে ভাইয়া বলো।।।নিচে ইয়াদ আর ইফরান এসে বসে আছে পাচঁ মিনিটে নিচে আয় তোরা কুইক (আয়াত এর দিকে তিক্ষো নজরে তাকিয়ে) ,,,,,, বলে গটগট করে চলে গেলো।।।

.
দোস্ত দেখছিস কি সাংঘাতিক তোর ভাই আমারে খাড়ার উপরে খাড়া কেমনে হুমকি দিয়া গেলো।। এটা ও কি বলা অপরাধে,,,, ভাই বলার অপরাধে জিভ কাটবে আমার খাটাশ।।। তোরে ভাই আর কমুনা খাটাশ,,, কমু ছেঁকা খাওয়া কুত্তা,,, কতো বড় সাহস আমার জিভ কাটবি এই আয়াত এর।।।।বজ্জাত ছেমড়া।।। তোর জীবনে ও ভালা হইবো না কইয়া দিলাম।।।হারামি।।
.

.
♣️
গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি চুপচাপ। পড়ন্ত দুপুরে কড়া রোদের আড়ালে নরম আলো ছড়াচ্ছিলো,রাস্তায় মানুষজন গিজগিজ করছে।আকাশ ভরা মেঘদের দল ছড়াছড়ি করছে হয়তো কিছু সময় এর মধ্যে বৃষ্টি হয়ে নামার অপেক্ষা তারা আছে।

“হঠাৎ ওড়নায় টান পড়াতে ভাবনায় ছেদ ঘটলো,,, চোখ বড় বড় করে বাহির থেকে চোখ ফিরিয়ে নিজের দিকে তাকিয়ে আমি রিতিমত থ্ এইইইইই কিইইইই। আমার গায়ে ওড়নার এক কোনা অংশ ও অবশিষ্ট আর নেই। ওড়না গেলো কই মাএরো তো টান পরলো ,,,, পাশে বসা ইয়াদ এর দিকে তাকিয়ে দেখি,,, বাবা তোমার দরবারে এই কোন পাগল এর আমাদানি হলো নতুন করে বাপু।।।। আশেপাশে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে চোখ বুলিয়ে দেখি সবায় সবার কাজে ব্যস্ত কেউ আমাদের দিকে তাকাচ্ছে না আপাতত, যাক বাবা বাচাঁ গেলো কেউ দেখেনি তাহলে। আমার পুরো ওড়নায় ইয়াদ এর এক হাতে পেচাঁনো আর এক হাত দিয়ে ওড়ানার কোনায় গিট্ট এর দোকান এর পাহাড় সমান তাল করছে একটা উপরে একটা দিয়ে। হাবভাব এমন তার খুব গম্ভীর ভাবে ঠোঁট কামরিয়ে কোনো বিশেষ কাজ মনোযোগ দিয়ে রেখেছেন চোখ দুইটো একটু এইদিক সেইদিক হলে বড় সড় লোস হয়ে যাবে ইতিমধ্যে উনার 🙄।
.
বলি,,, আমার ওড়নায় আপনার কাছে গেলো কি করে,,,, দাতেঁ দাতঁ চেপে ফিসফিস করে বললো উঠলাম ।।। নূর।।
.
কিভাবে আসবে আবার,,,উড়ে এসে ঝুড়ে টপকিয়ে এসেছে কোনো সমস্যা।।। তোমার।। গিট্ট দিতে দিতে বলল।।
.
জানেন দুইদিন আগে না আব্বুর সাথে আই চেনালে একটা খবরে দেখেছিলাম পাবনা থেকে ৪০২ নং কক্ষ থেকে এক পাগল ইঞ্জেকশন জারি দেওয়া প্রেসেন্ট পালিয়েছে ওটা কি বাই এনি চান্স আপনি ছিলেন আমার তো সন্দেহ্ হচ্ছে রিতিমত এখন ,,,
.
ইয়াদ গিট্ট দেওয়া বাদ দিয়ে নূরের দিকে বিস্ময় ভাবে তাকিয়ে আছে। বলে কি এই মেয়ে।।।
.
আমাকে কি আপনার বিয়াইন লাগি যে ফালতু লজিক দিচ্ছেন। নিজেকে অতি চালাক হিরো আলমের বড় ভাই আর আমাকে বোকা ভাবেন তাই না।চুপ চাপ আমার ওড়না দিন কি হাল করছেন। আমার ওওওয়য় কি কিউট টুসটুসি প্রিয় ওড়নাটার,,,, আপনার লে হামলা কি বেহাল ফালুদা হয়ে গেছে বেচারির । আল্লাহ্,,,আপনি একটা অতি লেভেল এর ডোট ডোট আজাইরা পাবলিক,, এতো গিট্ট আমি খুলতে খুলতে রিতিমত ফ্রিতে এখন ৮০ বছর এর বুড়ি হয়ে যাবো দূর,,,।।।। নাক মুখ ফুলিয়ে ফুসফুস করে বলে উঠল।।
.
ইয়াদ ঘাড় ঘুরিয়ে চোরা চোখে নূরের দিকে ঝুকে তাকালো চোখ মুখে তার বিস্ময় ভাব। নাক মুখ কুঁচকে গম্ভীর গলায় বললো,,, হোয়াট ডু মিন বাই ডোট ডোট???বোকা টোকা দিচ্ছো না তো এর মাঝে বাই এনি চান্স আমাকে।।। এতো বিয়াইন সাহেবা হওয়ার শোক তোমার!!!এতো সুন্দর একটা সম্পর্ক অফশেন থাকতে,,, সমস্যা নাই বলিও দুইটাই।আমিতো এখন পুরা দমে তোমারই ।।।আর আমার কি খেয়েদেয়ে কোন কাজ নেই নাকি?? আজব!! চুপচাপ বসে থাকো!! কোথায় উড়ে এসে কোলে ঝুড়ে পরলো তোমার বরিং ওড়নাটা, কই আমাকে একটা থ্যাংক’স জানাবা তার জন্য দেখাচ্ছো গরম চোখ,,, তোমার ওড়নাকে আমি অতি বরিং নেসসস থেকে নিজের ঘুমন্ত প্রতিভা দ্বারা এক নতুন রুপ দিয়ে দিলাম,,, হুহ আজ কাল কাউর আর সেঁচ্চে ভালো করতে নেই।।। বুঝা হয়ে গেলো আমার আজ তোমাকে দেখে।

.
এই আপনার ভালো করার নমুনা লাইক সিরিয়াসলি।।।।। চোখে চোখ রেখে দাতেঁ দাতঁ চেপে রাগিতো সুরে বলে উঠল নূর।।
.
ইয়াদ চোখে সানগ্লাস দিয়ে ডোন্ট কেয়ার একটা ভাব নিয়ে সামনে তাকালো,, ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠলো তার হাসি!!! যাকে বলে মধুরতম হাসি। নূরের সাথে নরমাল ভাবে আগের মতো করে কথা বলতে পেরে খুব ভালো লাগছে তার এখন।

.

.
” নূর আর কিছু বললো না। ওড়নাটা গিট্ট গুলো খুলে পূনরায় গলায় ভালো মতো পেঁচিয়ে আবার ও আগের মতো চুপচাপ বাহিরে দিকে তাকিয়ে আছে”। পেছনের সীটে দিপ্ত,অনিক,ফারদিন বসেছে,নিজেদের মাঝে গুনগুন করে কথা বলছে,মাঝ বরাবর সীটে আমি ইয়াদ আর আয়াত বসেছি,আয়াত ফোনে শিল্পি নাটক দেখছে তাই আপাতত আমাদের দিকে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই।সামনে ড্রাভিং সীটে জিজু আর পাশে সীটে আপি বসেছেন।

♣️
পাক্কা দেড় ঘন্টা জার্নি করে ঢাকা যমুনা ফিউচার শপিংমলে এসে পৌঁছালাম।শপিংমলটা বেশ বড় আর সুউচ্চ, আমি এর আগে একবার এসে ছিলাম আব্বুর সাথে । আর আজ দ্বিতীয়বারের মতো এলাম ইয়াদ এর সাথে নিজের বিয়ের শপিং করতে।

” তিন ঘন্টা যাবত দেখে চলছি নিজের জন্য কিন্তু কিছু পছন্দ হচ্ছে না আমার ঠিক করে। আপুর শপিং প্রায় শেষ এর দিকে “।আয়াত ও নিজের মতো শপিং করছে এক দমে আজ ।আমি ওদের দিকে এক নজর তাকিয়ে দোকান থেকে বের হয়ে গেলাম।পাশে দোকান গুলোতে বাহির থেকে চোখ বুলিয়ে দেখছি। হঠাৎ একটা দোকানে গ্লাসে বেদ করে লেমন ক্লারের একটা শাড়িতে আমার চোখ গিয়ে আটকে পরলো, শাড়িটা অসম্ভব সুন্দর । আমি দোকানে গিয়ে শাড়িতে হাত বুলিয়ে দেখছি। লেমন এর মধ্যে কালো সুতোর চারুকাজ।

“ভালো লেগেছে”!!!
.
ভীষণ!!! শাড়ির দিকে তাকিয়ে বললাম।।
.
এক্সকিউস মি এটা প্যাক করে দিন।
.
“আমি পিছে তাকিয়ে দেখি ইয়াদ দাঁড়িয়ে আছে আমার ঘা এর সাথে একদম লেগে এক হাত ও দূরত্ব নেই আমাদের মাঝে ”
.
আপনি!!
.
তো কাকে আসা করছিলে নিজের এতো কাছে।।।
.
আপনি এতো লুচু বাঘ হলেন কবে থেকে বলুন তো!! আগে তো এমন ছিলেন না, এতো কাছে ও আসতেন না কথা কথা। আজ এতো অদ্ভুত আচারন করছেন কেনো।
.
কারন আজকের কথা সব থেকে আলাদা তাই।
.
কি এমন কথা আলাদা।। আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।।
.
কারন আজ আপনি আমার বউ তাই আপনার প্রতি আমার অধিকার বোধটাও আজ অনেক বেশী কাজ করছে,অন্য দিনের তুলনামূলক থেকে।। নাক টেনে।।। বুঝছেন মেডাম ফুল পরি।।
.
স্যার,, শাড়ির বিলটা আর এই যে শাড়িটা।। শাড়ির প্যাক হাতে দিতে দিতে বলে উঠলেন। দোকানদার।।।
.
ইয়াদ হাসি খুশি ভাবে শাড়ির প্যাকেট টা আর নিজের ক্রেডিট কার্ডটা নিলেন।
.
আমি বিল এর দিকে এক নজর তাকিয়ে পাগল হওয়ার উপক্রম।।।।। এই কে কোথায় আছিস আমাকে কেউ একটু ধরতো এসে আমি পরে যাচ্ছি। এতো চোরের উপর বাটপারি,আড়ং এর বাচ্চা ।।। এই শাড়ি হাইস্ট গেলে সবেচ্চো পাচঁ হাজারই হবে কিন্তু আমাকে ভুল ধারনা প্রমান করে দিলো আড়ং এর বাচ্চা। এই কারনে আমি আড়ং থেকে স্বপ্নেও ভুলে টুলেও ফ্রিতে ও এসে কিছু নিতে চাই না,,, বিল আসছে ৫২ হাজার টাকা ভাবা যায় । আজ মনে হয় ইয়াদ বেটা পুরো দমে ফকির হয়ে গেলো উপ্সসসসসদস। হলে হলো তাতে আমার টাকলা বাবার কি😒,,,
চলবে,,,

মেঘের আড়ালে ২ পর্ব-০৯

0

#মেঘের_আড়ালে২(ফিরে আসা)

#পর্ব_০৯

#লেখিকা_ফাতেমা_জোহরা_নাভিলা

রাত সাড়ে বারোটা দিকে আসিফ আংকেলরা চলে গেলেন নিজ বাসার উদ্দেশে। দুই পরিবার সমাবেশ বোঠকে মিলে ঠিক করা হলো আমার আর ইয়াদ এর পারিবারিক অনুষ্টান হবে আজ থেকে ঠিক এক সাপ্তাহ পর আপি আর ইরফান ভাইয়ার সাথে। এক বাসায় যেহেতু এখন দুই মেয়ের বিয়ে একসাথে হবে তাই এ্যারেঞ্জ মেন্ট ঝামেলা কাজ ও অনেক বেরে গেলো ইতিমধ্যে । আসিফ আংকেলরা জাওয়ার পর পরই আম্মু আব্বু কিছুক্ষন নিজেদের মাঝে আলাপ আলোচনা করে, রিতিমত দাওয়াত এর লিস্ট লিখতে বসে গেছেন সময় যেহেতু হাতে খুব কম। রাত দুইটো বাজে এখন মূহুতে এতো রাতের মধ্যে ও বাসায় ছোটখাটো হট্রগোল তৈরি হয়ে গেয়েছে,খালা,খালু,মামা,মামি,ফুঁপি, ফুপার ব্যস্ততা হৈই হোল্লায়তে। সবায় কমোড় কাপড় বেধে কাজে লেগে পরেছেন।

এতো হৈঁইচৈঁই মাঝে ও আমার বিন্দুমাত্র কিছু ভালো লাগছে না, অতিরিক্ত টেনশনে ভয়ে মাথায় প্রচণ্ড রকমের ব্যাথা টনটন করছে। মনে হচ্ছে মাথায় কোনো টাইমার বোম ফিক্সড করা হয়েছে আর ব্লাস্ট হওয়ার প্রসেস এ আছে এখন। খালামনি আমাকে দেখে হয়তো আমার অব্যস্থা আচঁ করতে পেরে সহানুভূতি হলো আমার জন্য, তাই আমাকে আর আপিকে রুমে যেতে ইশারা দিলেন। উপরে সিঁড়ি পথে পা দিতেই পিছু থেকে আম্মু কাঠ কাঠ গলায় বলে উঠলেন,,,,,,

.
রিনা ওদের বলে দেয় সকালে জেনো দশটার আগেই রেডি থাকে, কাল শপিং এ যেতে হবে। কোনো প্রকার ভাবে যাতে দেরি না হয়।
.
তুমি চিন্তা করোনা আপা আমি ওদের সকাল সকাল ডাক দিয়ে দিবো, দেরি হবে না।
.
আম্মুর বিপরীতে খালামনি বলে উঠলেন। আর আমাকে চোখের ইশারা দিয়ে খালামনি আসশাষ দিয়ে বুঝালেন সব ঠিক হয়ে যাবে আম্মুকে একটু সময় দিতে।আমি খালামনির বিপরীতে শুধু খালি অলস ভঙিতে মাথায় দুলালাম।
.
এমনে তেই মেজাজ আমার তিক্ষোতম চ্রটে আছে এর মধ্যে রুমে এসে দেখি কাজিন নামক বিনা সুইচ এর টেপ রের্কডগুলো সব গোল হয়ে খাটে বসে আছে। সাথে ঘা জ্বালানো মতো মুখে তাদের চকচক ক্লোজ আপ, এনার্জি লাইট এডের বাতি জ্বলে আছে।
.
এখানে কি চাই তোমাদের!!! বেরিয়ে যাও বলছি।কাঠ কাঠ গলায় বলে উঠলাম আমি।
.
লাভ স্টোরি সংজ্ঞাটা জানতে চাই। জামুনা আগে সংজ্ঞা এ টু জেট এর বিবরণ দেয়।দিপ্ত।
.
কোনো সংজ্ঞা নেই।তোমারা আসতে পারো।নূর।। হরাশ হওয়ার সুরে।।
.
বললেই হলো নেই। আমাদের কি নিব্বা ভাবিস বিনা সংজ্ঞাই লেবু পারতে গিয়ে টুপুস করে বিয়ে হয়ে গেলো তোর,এই কথা তুই বলবি আর আমরা হজম করে নিমু সহজে।অই মাইয়া আমাদের কি বোকা ভাবিস আর নিজেকে অতি চালাক নারী ভাবিস, না মালিহা মনে করিস আমাদের কোনটা???যে বংবাং ৪২০ কইবি আর আমরা তা নিমিষে নাইচ্চা মাইননা নিমু বদ্দ এর হাড্ডি ।ফারদিন।
.
দেখ এটা কিন্তু রুলস এর বাহিরে চলে গেলো একদমই। আমরা মিনিমাম হাল্কা পাতলা উপরে একটু ক্রাশ খাইলে ও কাজিন গ্রুপে টুপুস করে শেয়ার করি একে উপর এর কাছে। আর সেখানে তুই তলে তলে টেম্পু চালাইয়া ডাইরেক্ট বিয়া ও করে নিলি। এগুলো মানা যায়,,,,,, একটু বললেই কি হতো ফ্রিতে সাক্ষী দিতে হাজিরায় চলেইই জাইতাম কাজী অফিসে। অনিক।
.
হায়ায়ায়ায়া ভাবতে খুব অবাক লাগে বুঝসো অনিক ভাই,,,,,,, করোনার ট্রেন্ডিং যে এভাবে নিজেদেরই কপালে সুড়সুড় করে চলে আসবে জল্পনাতে ও কল্পনা করিনি কথাটা,বিশ্বাস করো।।। দিপ্ত
.
আর বিশ্বাস।।। অনিক।
.
মানে!!! কি বলতে চাস দিপু,,, বাই এনি চান্স দোস্ত তুই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হসনাই তো।। আল্লাহ।।। ইশারা।।
.
অই চুপ শেওলা গাছের প্রেত্নি ।। যখনই মুখ খুলোস আমার জন্য তখনই অশুভকর কথা সাপ্লাই করস, বেয়াদব মাইয়া কোনো দিন দেখলাম না তোরে আমার জন্য শুভ কিছু বলতে।করোনা ট্রেন্ডিং কি করোনা রে?? কোন দুনিয়াতে বসবাস করস অকাইম্মা ঢেহি ।করোনা ট্রেন্ডিং হলো,,, যারে পিচ্ছিকালে কোলে নিয়ে ঘরছি একসময় আজ তার বিয়ে দাওয়াত পাচ্ছি হাতে অথচ আমি আজ ও সিংগেল রয়ে গেলাম,,,,,, অসহায় ভঙিতে।।। দিপ্ত।

.
তোমরা কি আল্লাহ ওয়াস্তে চুপ হইবা একটু।।। বিনা সুইচ এর টেপ রের্কড গুলি, চললে চলতেই থাকে থামার কানো নাম নেই না। নিচে ফ্লোরে বসে কান্না করে।।।
.

নূর তুই কান্না করছিস কেন।।।। ইশারা।।।

“সবায় হঠাৎ নূরকে কান্না করতে দেখে খাট থেকে নেমে নূরের সামনে এসে দাঁড়ালো। সবার মুখে চিন্তা এসে ভর করলো “নূর কেন কান্না করছে এভাবে।।।
.
তো, আমার কি করা উচিৎ এখন !!! হাসমু হে হে হে করে,(চিল্লিয়ে) বলো চুপ কেন!!!!আমি যে এখনো বাইচ্ছা আছি সহিসালামত তোমাদের চোখের সামনে এটা সুকরিয়া আদায় করো তোমরা আল্লাহর কাছে।।। একদিনেই যে রংধনুর সাত রঙ দেখা হয়ে যাবে আমার আমি কখনো ভাবি নাই। যার কাছ থেকে দূরে জাওয়ার এতো চিন্তা ভাবনা আজ তার সাথেই কিসমত এসে ঝুড়ে গেলো আমার।।।। আল্লাহ।।। মাথায় চুলের ফাঁকে হাত দিয়ে। নূর।।
.
একটু বনিতা ছাড়া ক্লিয়ার কাট করে কথা বলবি আমাদের কি হয়েছে (চিন্তিতো সুরে)। বুঝলাম না ঠিক দূরে জাওয়ার চিন্তা মানে নিচে যতোটুকু শুনে বুঝলাম তুই আর ভাইয়া একে উপরকে ভালোবাসিস আগে থেকে,আজ একটা ভুল তথ্য শিকার হয়ে ভাইয়া রেগে তোকে তুলে নিয়ে বিয়ে করেছে, এম আই রাইট!!! দিপ্ত। (নূর এর সামনে হাটু গেড়ে বসে)
.
নূর দিপ্তর প্রশ্নের বিপরীতে,,, তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে উঠল ইউ আর রং ভাইয়া ,,, আমি তাকে না সেই আমাকে ভালোবাসে।।
.
মানেয়য়য়য়য়য়য়!!!!!!(সবায় এক সাথে বলে উঠল)
.
আমি বলছি।।।ইশারা।।।
.
ইশারা থেকে সব শুনে আর নূর এর থেকে কাজী অফিসের ঘটনা শুনে সবায় সুদ্ধ হয়ে নিচে গোল হয়ে বসে আছে। কি ভয়াংকর ঘটনা রিভালভার দিয়ে ভয় দেখিয়ে শেষমেষ বিয়ে করে নিলো।।। কাউর মুখে কোনো কথা নেই সবায় নিরবতা পালন করছে, নূরের কান্না এখন থেমে গেছে।সবায় আড়চোখে নূর এর দিকে তাকাচ্ছে অর মনের মধ্যে যে কি চলছে বুঝতে চেষ্টা করছে।
.

তুই আসলেই খুব বোকা রয়ে গেলি নূর আর সেই পুচকি আছিস বড় আর হলিনা চিন্তা শক্তিতে। (মুচকি হাসি দিয়ে) কাউকে এতো কাছ থেকে এতোদিনে দেখে তুই মিনিমাম তার গের্টাপ চায়চলন দেখে ও বুঝতে পারলিনা সে আসলে কি, লাইক সিরিয়াসলি!!! শেষমেষ অল্লিগল্লি আবারা নাম দিয়ে দিলি।।। হায়,বোকা মেয়ে (মাথায় ঘাটি দিয়ে)দিপ্ত।
.
আউউউউচচচচচচ,,,ভাইয়া।।।নূর
.
গাধি প্রেম নামক কঠিন রোগে পরলে যে কেউ প্রিয়তমাকে এক নজর চোখে দেখার জন্য ঘন্টা পর ঘন্টা অপেক্ষা প্রহর গুনতে পারে। তাই বলে সে অল্লিগল্লির আবারা হয়ে যায় না।আর যাই হোক আমার সাতাশ বছর এর এক্সপ্রিএন্স বলছে ইয়াদ খারাপ না নিচে যতোটুকু স্কেন করে বুঝেছি তাকে, সে তোকে উম্মাদ এর মতো ভালোবাসে খুব করে চাই তাই তো এই গাধির জন্য তার এতো পাগলামো। উফফফফফ।।দিপ্ত।।
.
তাহলে এখন কি করবো আমি । ।।
.
কি করবি বিয়ে যেহেতু হয়ে গেছে সংসার করবি,বছরে বছরে ক্রিকেট টিম গড়ে তুলবি। মজার করে বললো।।। দিপ্ত।
.
ভাইয়া।।।কাধে চাপট দিয়ে।।

.
এখন আজাইরা প্যারা গাছ মাথায় না ভুনে। এক ঘুম দেয় মনকে শান্তি হতে দেয় একটু কাল বিয়ের শপিং এ যেতে হবে তো। কপালে চুমো দিয়ে।তোকে সব সময় চঞ্চলতা মানায় বনু এভাবে লেটকানো চেহারাতে মানায় না। তাই অযথা মাথায় প্রেশার নিস না। যাহ ফ্রেশ হয়ে এসে এক ঘুম দে।দিপ্ত।
.
ভাইয়ারা সবায় নিচে চলে গেল,,আমি উঠে দীর্ঘ নিশ্বাস নিলাম।এখন মনটা কিছু হাল্কা লাগছে ভাইয়ার কথা শুনে, মনে হচ্ছে বুকের উপর থেকে ভারি যে পাথড়টা এতোক্ষন ছিলো তা সরে গেলো ।ঘুমে চোখ খুব ভার হয়ে আসছে হামি নিয়ে দেয়াল ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি ৪:১০ বাজে এইমা। অলস ভঙিতে ওয়াশরুমে দুরত্ব চলে গেলাম ফ্রেশ হতে,ফ্রেশ হলে রিলাক্স এ ঘুম দিতে পারবো। ওয়াশরুমে থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলাম আপু আর মালিহা আমার বেডে শুয়ে আছে তার মানে আজ তারা আমার রুমেই ঘুমাবে বুঝতে আর সমস্যা হলোনা। বেডে সাইডে ঘা এলিয়ে দিতেই ফোনের মেসেজ টুংটাং টোন বেজে উঠল, চোখ থেকে কাথাঁ নামিয়ে বালিশ এর পাশে থেকে ফোন নিয়ে দেখি মেসেঞ্জার জুগে কেউ ফোনে মেসেজিং দিয়েছে।

প্রিয়তমা 🥰🥰
আজ কি জানো!! যাকে দুই শব্দে যাকে বলে বাসর,,,, যার মাঝে ভুনে আছে এক ঝাক স্বপ্ন তোমার জন্য এই সুপ্ত অনুভুতিতে আমার মনের হ্রদ মাঝারে গবিরে,,,, আর তার সাথে তোমার মুখে একঝাক লজ্জা আভায় যাহ আমার জন্য থাকবে তোমার মুখপানে ।আজকে দিনকে গিরে অনেক ইচ্ছে ছিলো হাত হাত ধরে ব্যালকনি বসে তোমার হাতে কফি খাবো আর গল্প করবো রাত জেগে।তোমার কোলে মাথা রেখে অনেক কিছু বলা জানানো ছিলো তোমাকে। জানো তো মনের গবিরে এতোদিন তোমার জন্য সব কথা জমিয়ে রাখতে রাখতে মন যে বড্ডো পাহাড় সমান ভার হয়ে গেছে আমার শ্বাস নিতে ও খুব কষ্ট হচ্ছে এখন। তুমি বড্ডো খারাপ জানো আমাকে এই তুমিবিহীন এ আসাক্ত করে এখন দূরে বসে দিব্বি ভাবে আরামসে ঘুমানো হচ্ছে মেডাম। ঘুমিয়ে নিন আমার ও সামনে দিন আসছে আমাকে খুব জ্বালিয়েছেন এতোদিন । একবার শুধু আপনাকে খুব করে কাছে পাই তার পর সব সুদেআসলে সদ নিবো বলে দিলাম কোথাও আর যেতে দিবো না অনেক পালাই পালাই করে বেড়িয়েছন আর না।

ইতি আপনার
“সাইকো জামাই”
চলবে

মেঘের আড়ালে ২ পর্ব-০৮

0

#মেঘের_আড়ালে২(ফিরে আসা)

#পর্ব_০৮

#লেখিকাঃফাতেমা_জোহরা_নাভিলা

পুরো হোলরুমে জুড়ে পিনপিন নিরবতা কাউর মুখে কোনো টু শব্দ কথা বার্তা নেই, আসলে কথা বলার ভাষা আপাতত কাউর কাছে নেই। আম্মু অতি সর্কট না নিতে পেরে হাই প্রেশারে গ্যান হারিয়েছে ইতিমধ্যে , এই অতি শীতের মধ্যে ও আম্মু মাথায় আইসব্যাগ দিয়ে রেখেছেন মাথা ঠ্যান্ডা করার জন্য আপি। এক ঝাক প্রশ্ন বিন্দু সন্দেহ চোখ ছুড়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আব্বু।

আর আমি আপাতত তাকিয়ে আছি অসহায় ভাবে আপি আর জিজুর দিকে। মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে কেহেদো এই সাব জুট হ্যা, জুট হ্যা,জুট হ্যা,,,হাউউউউ দিস পসিবল,,,, আল্লাহ,,,,এখন মনে হচ্ছে দুনিয়াটা আসলেই গোল,,, আমি এতোদিন যাকে অল্লিগল্লির একজন আজাইরা পাবলিক বখাটে ছেলে আবারা ভাবতাম সেই আসলে ইফরান ভাইয়ার বড় ভাই ছিলো । সব থেকে বড় কথা উনি একজন ডিফেন্স অফিসার হাউউউউ,,, এইমূহুতে মাথা আমার প্রচণ্ড গরম হয়ে আছে, অসম্ভব চিনচিন ব্যাথা ও করছে অতি প্রেশারে যেই মূহুতে আমি ব্রেন্ড স্ট্রোক করে ফেলবো মারা টারা ও যেতে পারি কোনো সন্দেহ নেই আজ ,,,,😵😵

ভাবনায় ছেদ পরলো ইয়াদ এর হাত স্পষ্ট করায়। পাশে অসহায় ভাবে তাকিয়ে দেখি ইয়াদ আমার বাম হাত তার হাত মুঠো ফাঁকে খুব শক্ত করে ধরেছেন। আমার দিকে এক নজর গম্ভীর ভাবে শক্ত মুখে তাকিয়ে সামনে আব্বুর উদ্দেশ্য বললেন,,,,,

.

.
আংকেল আমি কি খুব খারাপ ছেলে,,,, আমাকে কি অাদৌ মেনে নেওয়া যায় না,,, নূর পাশে হ্যাসবেন্ড হিসেবে!!! আমি কি কোনো ভাবে আপনার কাছে নূরের যোগ্য হ্যাসবেন্ড না।আমি জানি আমি হুট করে যা করেছি একদমই ঠিক করিনি,আমার ভুল হয়েছে সব না জেনে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া।কিছুক্ষন চুপ থেকে ,,, আংকেল আমি আব্বুর থেকে শুনেছি আপনার আর আন্টির লাভ মেরেজ ছিলো (মুচকি হাসি দিয়ে নিচে তাকিয়ে) আর কেউ না হোক আপনিতো আমার সিচিউশনটা কষ্টটা এটলিস্ট বুঝবেন, যাকে নিজের থেকে বেশী ভালোবাসি তাকে এতো সহজে অন্যের হতে দেই কি করে। এই কাজ আর কেউ করতে পারলে ও আমি আদৌ করতে পারবো না। কারন আমি কোনো মহানবান গুনি ব্যক্তি না আর না কোনো ব্যাথ প্রেমিক যে অন্যের হাতে তুলে দিবো । সামান্যা নূরকে চোখের সামনে অন্য কাউর সাথে কথা বলতে দেখলেই যেখানে আমি বিন্দুমাত্র সয্য করতে পারিনা দম বন্ধ হয়ে আসে আমার আর সেখানে অন্যের হাতে কি করে তুলে দেই সারাজীবন এর জন্য,,,

.
.
রফিক তুই কি আমাকে আর বিন্দু মাএরো ভরসা করিস না। অভিমান এর সুরে।।।
.
ইয়াদ এর বিপরীতে আসিফ আংকেল বলে উঠল,,,,
.
এটা কেমন কথা বলছিস তুই, আমি কেন তোকে ভরসা করবো না,আর এর মাঝে এই কথা বলার মানে কি। (রফিক)
.
মানে আছে।।।তাই বলছি,,ভরসা যেহেতু করিস তাহলে, এমন চুপ করে আছিস কেন, তুই আর ভাবীজান। যেখানে সেচ্ছায় তোর বড় মেয়ের হাত তুলে দিচ্ছিস আমার ছোট ছেলের কাছে সেখানে একই বাসায় ছোট মেয়ের হাত দিতে এতো কিসের ভয় জড়তা তোর কাজ করছে।।। তোর কি মনে হয় আমরা কি নূরকে ভালো রাখতে পারবো না।
.
তুই এতো ইজিলি ভাবে কথাগুলো কিভাবে বলছিস আসিফ। আমি জানি তুই নূরকে ইশারাকে ভালো রাখবি আমার কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তাই বলে এমন হুটহাট বিয়ে করে ফেলবে। নূর সবেমাত্র ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে এখনো ও অনেক বাচ্ছা অর পক্ষে সংসার করা মেনেজ করা খুব কঠিন ব্যাপার ।।।।তুই বুঝছিস আমি কি বলতে বা বুঝাতে তোকে চাচ্ছি।।
.
আমি বলছি তোকে কারন আমি মন থেকে চাইতাম ইশারা আর নূর আমার দুই ছেলের বউ হোক। আমি আগে আমার বড় ছেলে ইয়াদ এর জন্য তোর কাছে নূর এর হাত চাইতাম।কিন্তু নূর আপাতত ছোট ইন্টার ও শেষ হয়নি তাই অর কথা বলিনি অপেক্ষা করছিলাম অর এক্সাম শেষ হওয়ার জন্য।এক্সাম এর পরই আমি নূরের হাত চাইতাম তোর থেকে। আর ইয়াদ ও এখন বিয়ে করতে চাইছেনা আপাতত তাইতো বড় ছেলেকে রেখে বিয়ে না দিয়ে আগে ছোট ছেলেকে বিয়ে দিচ্ছিলাম। ভাগ্য কি পরিহাস আজ ছোট ছেলের কথা বার্তা দিনেই বড় ছেলের বিয়ে করে ফেলেছে। আজ যেহেতু একটা ভুলবশতে বিধাতা নূর আর ইয়াদের বিয়ে হয়ে গেছে, আর নূর, ইয়াদ একে উপরকে ভালোবাসে। তাহলে আমাদের উচিৎ নিজেদের মাঝে মন মনতা না করে তাদের মেনে নেওয়া।আর তুই আক্কাস চাচা হইলি কবে,,এমন করছিস কেনো মনে নেই তোর, ভাবীজান এর বিয়ের দিনে তুই কি পাগলামোটাই করছিস, বিয়ের আসর থেকে ডাইরেক্ট কন্যকে তুলে নিয়ে এসেছিস ভুলে গেলি সব,,,

.
আসিফফফফ।।।।চিল্লিয়ে।।।।
.

এখন চিল্লাস কেন, আমার ছেলেতো বিয়ে করে বউ নিয়ে ডাইরেক্ট শশুড় এর কাছে নিয়ে এসেছে। আর তুইতো বিয়ের দুইবছর পর ইশারাকে নিয়ে গেছিস একবারে মনে নেই। দোস্ত যাহ হয়েছে মেনে নেয় তো, আমি কথা দিচ্ছি নূর, ইশারাকে আমি আমার মেয়ের মতো রাখবো কখনো কোনো সমস্যা হতে দিবো না ওদের। ইয়াদ,ইরফান, নূর, ইশারাকে খুব ভালো রাখবে। আমার বাসার লহ্মি হয়ে থাকবে আমার দুই মেয়ে।আর এক বাসায় কি দুই মেয়ের বিয়ে হয়না কখনো ।হ্যা একটু উল্টা পাল্টা হয়েছে বড় ছেলের সাথে ছোট মেয়ের, ছোট ছেলের সাথে বড় মেয়ের।আরে ঝুটিতো উপর তালায় থেকে তৈরি হয়ে আসে। এতো চিন্তা করিসনা যাহ হয় কিছু ভালো ভেবেই হয় আমাদের সাথে।এখন ভাবিকে দেখ তার গ্যান ফিরাবি কি করে,,,
চলবে,,,,,

মেঘের আড়ালে ২ পর্ব-০৭

0

#মেঘের_আড়ালে২(ফিরে আসা)

#পর্ব_০৭

#লেখিকাঃফাতেমা_জোহরা_নাভিলা

এই শীতের মধ্যে ও কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম গুলো জমে আছে,,,তার সাথে হাত ও সমান তালে আজ ঘেমে আছে । হাতে থাকা নীল কলমটা আমার হাতের ঘামে সে ও তালমিলিয়ে ঘেমে গেছে। আমার একটা সমস্যা অতিরিক্ত মাএরায় যখন ভয় পাই বা হাই লেভেল এর সর্কট খাই,, তখন কান দুইটো গরম হয়ে ধোয়া বের হতে থাকে আর কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলি।কিন্তু আজ,, অতিরিক্ত ভয়ের চ্রটে সাথে নতুন কিছু ও হচ্ছে,,,, দম বন্দ হয়ে আসছে আমার শ্বাস গুলো গলার মাঝ পথে এসেই জোটবেধে ভার হয়ে গলায় সুরে এসে আটকে আছে, এখন শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তাহলে কি,,,,এই নিরহ মাসুম মেয়েটা এভাবে অকালে অক্সিজেনের অভাবে আজ মারা টারা যাবো!!! আল্লাহ।।।। জীবনের বিশটে বছর আম্মুর শত শত খুন্তির বারি খেয়ে, রসগোল্লা রাগিতো গরম চোখ দেখেই পার করলাম আর এখন,,,,,,,, কই ভেবেছিলাম এটলিস্ট বিয়ের পর হয়তো বা বাকী জীবনটা ভালো ভালো সুখের মুখ দেখে কেটে যাবে আমার।।।আর ভালো এখন থেকে সব অন্ধকার মনে হচ্ছে আমার জীবন। পাশে ইয়াদ এর দিকে অসহায়তা নিয়ে তাকিয়ে দেখি,,,,,,

.

.
চোখগুলো চিকচিক করছে,,ফর্সা চেহারাতে খোঁচা খোঁচা গাল ভর্তি দাড়ি মাঝে ও টিউব লাইট এর মতো অতি সুন্দর তার টোল ফুটে আছে তার সাথে আকা-বাকা দাঁতের এক বিশ্বজয় করা হাসি মুখে। রেজিষ্ট্রিশন প্যাপারে হাত বুলিয়ে প্রশান্তি হাসি দিচ্ছে।।। তার প্রশান্তি হাসি দেখে আমার পিত্ত আত্ত , রুহু, কলিজা, গুর্দা সব জ্বলে উঠল ।তার হাসি আমার কাছে আজ,,, এখন ঠিক এইমূহুতে থেকে পৃথিবীর সব থেকে বাজে জঘন্য অসহ্য হাসি মনে হচ্ছে।শালা উগন্ডার বেয়াদ্দপ খচ্চোর এর সাথে বিয়ে হয়ে গেলো আমার শেষমেষ।।।।। এই অসহ্যকর বান্ধাকে আমি সারাজীবন সহ্য করবো কি করে,, আল্লাহ মালুম।।।।ভেবেই দুঃখে কপাল কুঁচকে চোখ ফিরিয়ে কান্না আবার মন দিলাম।আপাতত কান্না মন দিতে হবে,কান্না করা ছাড়া আমার এখন আর কোনো কাজ নেই তাই খুব করে কান্না করতে হবে । কিন্তু এখানেও বাধল বিপত্তি,,, ঔই যে কথায় আছে না,, অতি সুখ কেউর কপালে সহ্য হয়না,, আমার ক্ষেতে কথাটা প্রমান হলো আপাতত উল্টো আমার দুঃখ কেউর সহ্য হলো না বলে মনে হচ্ছে। তাইতো কান্নার মাঝে হঠাৎ নাকে এক দূর গন্ধ আসাতে আমি কান্না মাঝ পথেই ব্রেক কষে দিলাম। ওয়েট,,,,,, কেডাইরে কোন শালায় যার কাছে আমার দুঃখো গুলো সহ্য হলো না(চোখ মুছতে মুছতে)।।।।নিতান্ত মনে মনে।।

.

.
“কপাল কুঁচকে নাকে হাত দিয়ে পাশে বসে থাকা ইয়াদ এর দিকে তাকালাম।ইয়াদ ও সেম কপালের ডান সাইডের ভ্রুটা কিছুটা উঁচু করে কুঁচকে চোখগুলো ছোট করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। দুইজন একে উপরের দিকে তাকিয়ে একসাথে সন্দেহ দৃষ্টিতে সামনে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি মওলবি সাহেবের পাশে বসে থাকা লোকটা কাচুঁমুচুঁ করে নিচের দিকে তাকিয়ে হাতের রুমাল দিয়ে কপাল মুচছে, মুখে তার কিছুটা লজ্জা অসহায় ভাব। নিচে তাকিয়ে দেখি ঘটনা ইতিমধ্যে রটে গেছে😑😑।অতিরিক্ত চাপে প্রকৃতিক চাপ সেরে ফেলছে🤧। ইয়াদ উনার দিকে বিরক্তি চাহনিতে চেয়ে হাতে থাকা প্যাপারটা বাজ করে উঠে এক হাত পকেটে ঢুকিয়ে অন্য হাত দিয়ে টেবিলের উপর থেকে আমার হাত নিয়ে বলে উঠল চলো।।।

♣️

পিনপিন নিরবতা গাড়ীতে বসে আছি ইয়াদ এর পাশে। ইয়াদ ড্রাইভিং করছে আর সাথে আড়চোখে তার নিভ্র লুচু চোখ দিয়ে আমাকে দেখছে।মন প্রান উজাড় করে দেখুক শালায় খচ্চোর ,,,,,,,সেদিকে আমার আপাতত মাথা ব্যাথা নেই, মাথা ব্যাথা হলো,,, এতোক্ষন ইয়াদ এর ছোবলা ছিলাম বলে দুনিয়াদারির কোনো হাদিস এর কথা মাথা ঘুরপাক ছিলো না। হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত দশটা বাজতে চললো তার মানে আম্মু হাতে গরম গরম খুন্তি নিয়ে অপেক্ষা প্রহর গুনছে আমার জন্য নিশ্চয়(ঢোগ গিলে)।।। বাগান থেকে লেবু ছিড়ে আনতে পাঠিয়ে ছিলো আমাকে আর আমি সেখানে লেবু না নিয়ে রেডিমেড ডিস্কিয়াও ডিস্কিয়াও সাইকো জামাই সাথে করে নিয়ে ফিরছি বাসায়।।।কি হবে এখন আমার।।।।দাঁত দিয়ে নখ কামড়িয়ে ।।।।

🍁🍁🍁
কিছুক্ষন আগে,,,,,

দরজা খুলে আমি থ রিতিমত আমার মুখ অটোমেটিক হ্যা হয়ে গেলো,,,,,আমি চিল্লিয়ে বলে উঠলাম,,,,,,,,, ফারদিন,,,,,,,জড়িয়ে ধরে।।।।হোয়াট এ সারপ্রাইজ দোস্ত। অস্ট্রেলিয়া থেকে কবে আসলি।।। তোরে আমি যে কতো পরিমান মিসস করসি কুত্তা। তুইতো আমারে ভুলেই গেসোস হারামি।

.
ছাড় ছেমরি,,,,,দূরে যাহ দূরে যাহ,,,, হারামি এমনেই দিন কাল ভালা না, বিশ্বাসে মাইর ও নাই বাপু,,, যদি করোনা হয়ে যায় আমার তোর থেকে।।আল্লাহ।।।। আর ভুলতে দিলিই কই আমারে,,, মরে গেলেও তোরা ভুলা যাইবো না এই জীবনে।তুই যে আমার ফুলোকা তারোকা সাবকা কেহেনা হে,,,, এক হাজারো মে মেরি এক লতি বজ্জাত হারামি বেহেনা হেয়।
.
কুত্তা,,,,তুই আর ভালা হইলিনা।।। তুই দূরে যাহ হারামি,,, বিশ্বাস এর মাইর তোর লগে নাই যদি অস্ট্রেলিয়া থেকে পকেটে করে করোনা নিয়া আসিস আমাগো বাসায়, যাহ ফোট এন্তে ।।।।

.

বলি,,, অনিক ভাই বুঝসো,,, আমাদের কি কেউ মিসস করসে, না শুধু একজনেরেই মিস করসে।আমরা কি দাঁড়িয়ে থাকবো,,,,

.
নারে মনে হয়না, আমাদের আর মিস করার মতো কেউ আসে এই বাসায় দিপ্ত,,,,আহহহহহ ক্লান্তি নিশ্বাস ছেড়ে।।একজন যেটুকুই মিস করতো তার তো আজ বিয়ের কথা বার্তি,, দুইদিন পর বিয়ে হয়ে যাবে,,, তারপর তো কেউই আর নেই আর মনে করার মতো আমাদের।।।।

দিপ্তর বিপরীতে অনিক বলে উঠল,,,

.

বলি, দুইজনে একটু কেশে কথা বলো,,,,কে কারে কতো মিস করে আমার জানা আছে।কথা বলবা না তোমরা দুইজন। আপিকে চ্রটগ্রামে পেয়েতো আমাকে একটা ফোন করে ও খবর নেওনি। হুহ।।

.
কারন তোর এক্সাম ছিলো তাই।জড়িয়ে ধরে।কেমন আছিস পুচকি।।।দিপ্ত।
.
এতোক্ষন বাবা-মার চৌদ্দ গুষ্টির ভিরের মাঝে দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। কিন্তু তোমাদের দেখে আপাতত জানের মধ্যে রুহু এসেছে তাই এখন আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি, তুমি কেমন আছ,আর অনিক ভাই তোমার কি খবর।।

.

ভালো রে পাকনি,,,বলি কি বইন লং জার্নি করে এসেছি, কোনো রুমকি ফাকা আছে।।।অনিক।
.
পুরো বাড়ী ৬৬ জন এর কব্জা আছে। দম ছাড়ার মতো ও বিন্দু মাএ কোনো যায়গা অবশিষ্ট আর নেই এই বাসায়।নূর।
.
কি সাংঘাতিক ব্যাপার।।।।। এখন কি হবে!!!ফারদিন।
.
চলো ছাদে যাই, মা, খালা, চাচিগো তো ভূতের ভয় টয় আছে মনে তাই তারা ছাদে ভুলেও আসবো না।আমরা জমে আড্ডা দিতে পারবো,,,, নূর
.
হ্যা, চল। দিপ্ত।
.

.
ছাদে চার ভাইবোন দাঁড়িয়ে আড্ডামত্ত হয়ে আছি। দশ মিনিট আগে ইফরান ভাইয়ারা এসেছেন আম্মু নিচ থেকে আমাদের পিচ্ছি বাহানীদ্বারা খবর পাঠিয়েছে নিচে আসার জন্য।এতো ভিরের ঠ্যালাঠ্যালিতে আপাতত নিচে জাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই আমাদের। তাই বিন্দাস ভাবে চিল মুডে দাঁড়িয়ে আছি আমরা কাজিন নামক চার ভাইবোন । কথার মাঝে ছাদের গেইট হঠাৎ জোড়ে খোলাতে আমরা কথা থামিয়ে গুরে তাকালাম পিছে,,,তাকিয়ে দেখি মালিহা দৌড়ে আসছে,,,,,
.
নূর আপি,খালা তোমাকে ডাকছে,,হাপিয়ে কমোড় দুই হাত গুঁজে,, জলদি নিচে যাও।
.
কেনো!!
.
জানিনা, কিন্তু খেপে আছে অনেক।তাপমাত্রা খুব হাই।।
.
সে নতুন কিরে, আমার অতি শান্তশিষ্ট নানা ঘরে নানি আমার জন্য ওয়ান পিস কোথা থেকে যে এই খুন্তিকা নারী কপালে নিয়ে এলো।।।আফসোস এর শুরে।।কি আর করা চল যাই।।
.
জলদি করে বড় বড় লাফে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে বাধল আর এক বিপত্তি, বলে না জলদির কাজ শয়তান এর কাজ।তাইতো নিজের প্লাজোতে নিজেরই পায়ের টান পরাতে নিচে ছিটকে পড়ে যেতে,,,, চোখ মুখ খিচ্ছে,,,,,আল্লাগো আমার কমোড় গেলোগো গেলো আর মনে হয়না আমি আর বাচমু,,, কে কোথায় আছিস আমাকে বাচাঁ। মালু ধোর আমাকে গাদি,,,আম্মুউউউউ।কিন্ত একমিনিট আমি ব্যাথা পাচ্ছি না কেন,,, এক চোখ খিচ্ছে পিটপিট করে ঝুকে নিচে তাকালাম, নাহ আমি পড়ে যাই নি আমি হাওয়াতে কাউর বাহুডোর আবদ্ধ আছি,কিন্তু কার।।। কোন হে ওয়য়য় জিস্নে মুঝে ফিল্মি স্টাইল মে পাকড়া,হু ইজ হি!!!,,,,এভার দুইচোখ খুলাম, খুলে সামনে তাকিয়ে আমি থ,,,,,,,

“আমার সামনে রাহাত ভাই দাঁড়িয়ে আছে।এক হাতে আমাকে ধোরে আছে আর এক হাত দিয়ে ফোনে কার সাথে জেনো কথা বলছে। কিন্তু রাহাত ভাই এনে হাউউউউ,,,, রাহাত ভাইও আমাকে রিতিমত এখানে দেখে অবাক যা তার চাহনিতে স্পষ্ট।
.
নূর তুমি ঠিক আছ,,,,,বাহুডোর থেকে উঠাতে।
.
হ্যা,ভাইয়া ঠিক আছি।ধন্যবাদ আমাকে কমোড় ভাঙা জীবন থেকে বাচাঁনোর জন্য।
.
তুমি এখানে কি করছো, আই মিন এই বাসায়।।।কোনো রিলেটিভ এর বাসা তোমার।দাওয়াতে আসছো নিশ্চয়!
.
লে হালুয়া এই কি কয় ছেমড়ায় মনে মনে,,, না ভাইয়া মুচকি হেসে।এটা আমার কোনো রিলেটিভ এর বাসা না। বরং এটা আমারই বাসা।
.
মানে!!!!
.
এতো অবাক হওয়ার কি আছে ভাইয়া। এটা আমারই বাসা।কোনো সমস্যা?
.
মানে আজ তোমার!!আই,,, মিন,, এনগেজমেন্ট।।।
.
জ্বী আজ আমার, ব,,,,,,,

“নূরররররররররররর”এই নূর

ভাইয়া আম্মু ডাকছে আমি পরে এসে আপনার সাথে কথা বলছি,,,,

.
এতো চিল্লাছো কেন আম্মম্মমুউউউ মানুষ কি বলবে,,, (রান্নাঘরে এসে)
.
চুপ বেয়াদ্দপ,,, তোরা বাপ বেটি দুইটা তো কসম খাইছিস আমাকে অশান্ত রাখার জন্য(ঝাঁজালো গলায়) আর এখন বলছিস চিল্লাও কেন।তোর বাপ সেকখন লেবু আনতে গেছে,,,,,এখন নিরউদ্দেশ লেবু হয়ে গেছে।আর তুই দরজা খুলতে গিয়ে দরজা হয়ে গেসোস।কোনো দায়িত্ব আছে তোগো।।।রেগে।।
.
আই হেব এ এই মূহুতে গবিরতম ওয়ান অফ প্রশ্ন আম্মু।মানুষ দরজা হয় আবার কিভাবে 🙄।
.
থাপ্পড় চিনিস,,, কতো প্রকার ও কি কি, না চিনামু তোরে এখন কোনটা।আমার সামনে থেকে এখন যাহ গিয়ে বাগান থেকে বড় বড় দেখে চার পাঁচটে লেবু ছিঁড়ে নিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার কর।।
চলবে,,,,,,

মেঘের আড়ালে ২ পর্ব-০৬

0

#মেঘের_আড়ালে২(ফিরে আসা)

#পর্ব_০৬

#লেখিকাঃফাতেমা_জোহরা_নাভিলা

লাল রঙ এর পুরানো আরএফএল চেয়ারে জোড়ো হয়ে গুটিসুটি পায়ে বসে আছে নূর।হাতের সাথে তালমিলিয়ে কিছুক্ষন পর পর নাক টানছে আর ডান হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে নাকের সাথে তালের ছন্ধ মিলিয়ে চোখের পানি গুলো মুচঁছে আপাতত। নূর যে রুমে বসে আছে রুমটি ঝুড়ে চারপাশে পিনপিন নিরবতা ছায়া,,, কোনো টু শব্দ নেই বললেই চলে,,,,আছে শুধু একঝাক জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস ছাড়ার শব্দ। নূরের এক হাত দূরে একটা চেয়ারের সামনের দিকটা ভেঙে দুইখন্ড হয়ে নিচে করুন অব্যস্থা ছিটকে উল্টো হয়ে পরে আছে। নূরের ঠিক সামনে বরাবর টেবিলে দুইজন মাঝ বয়সি লোক বসে আছে,একজন কাপাঁকাপাঁ হাতে টেবিলের উপর থেকে কাচের গ্লাস হাতে নিয়ে ঢোগ ঢোগ করে পানি খাচ্ছে,আর পাশের জন খাতা কলম নিয়ে থরথর হাতে কিজানি লিখছে আর তার সাথে হাতে থাকা গোলাপি রুমালটা দিয়ে কপালের বিন্দু বিন্দু জমে থাকা ঘাম গুলো মুচঁছে।

.

.

নূর এভার কাঁদোকাঁদো হয়ে এক বুক সাহস সঞ্চয় নিয়ে মাথা তুলে সামনে সাদা কালো ফর্মাল পোশাকে সুর্দশন ছেলেটার দিকে তাকালো।
.

.

ব্রাউন ক্লার সিল্কি চুল গুলো উল্কোসুল্কো হয়ে সামনের দিকের কিছু চুল কপালের বিন্দু বিন্দু জমে থাকা ঘামে লেপ্টে আছে,নিভ্র চোখ জোড়া গুলো আজ অনেক ভয়ংকর লাগছে মনে হচ্ছে নীল মণির এর মধ্যে এক খন্ড জ্বলন্ত লাল লাভা জ্বলছে ,,সাদা ফর্সা চামড়া কপালের দুইদিকের সবুজ রগগুলো ফুলে উঠেছে যার উপর বাম হাতের চার আঙুল মুঠো করে বৃদ্ধা আঙুল দ্বারা কিছুক্ষন পর পর কপালে ঘষছে। সাদা শার্টে বুকের দিকে তিন চারটে বোতাম খুলা যার ফাঁকে আপাতত সাদা লোমহীন উম্মাদ বুক দেখা যাচ্ছে, হাতা কনুই পর্যন্ত ঘোঁটানো, নাম না জানা বেশ দামি কোনো এক ব্রান্ডের ফর্সা ডান হাতের কব্জিতে সিলভার ক্লার এর ঘড়িটা চিকচিক করছে, তার সাথে সামান তালে চকচক করছে হাত মুঠো থাকা কালো রিভালভার। আজকের এই ইয়াদ এর সাথে কালকের ইয়াদ এর সাথে আকাশ জমিন তফাৎ। দুইটি জেনো ভিন্ন দুই রুপ এক পানি তো দ্বিতীয় আগুন। পানি আর আগুনকে যেমন হাজার চেষ্টা করে ও মিলানো যায় না, তেমনই এই ইয়াদকে ও কালকের সেই ইয়াদ এর সাথে নূর মিলাতে পারছে না। নূর পূনরায় এক ঢোগ গিলে নাক টেনে টেনে কাপা কাপা শুরে বলে উঠল,,,,,,

সসস স শুন্নন্ননননাহ, এমমম্মন কররর কর করচচছেন কেনো!!আয়ায়ায়ামার কথা বুঝার,,,

“নূরের কথার বিপরীতে ইয়াদ রেগে হাতে থাকা রিভলভার দ্বারা নিচে ছিটকে পরে থাকা চেয়ারে শুট করে দিলো” যা কিছুক্ষন আগে লাথি দিয়ে একপাশ ভেঙে ছিলো ।
.

.
এভাবে হুটহাট শুট করাতে নূর কানে দুইহাত চেপে কেপে ফুঁপিয়ে কান্না করে দিলো।
.
.
সামনে বসে থাকা দুইজন লোক ও ভয়ে থরথর করে কাঁপছে, আর মনে মনে ভাবছে,,আজ কি তারা সুস্থসবল ভাবে আদৌ বাসায় ফিরতে পারবে তো,,, না আজ তাদের কপালে শেষদিন লিখা আছে।।।।
.

.
শুনবো!!! হ্যা,,,শুনবো তো!! কিছু শুনা বা দেখা আর কিছু কি বাকী রাখসো তুমি?? চিল্লিয়ে টেবিলে দুই হাত দিয়ে ভারি দিয়ে।
.

.
টেবিলে জোড়ে ভারি হওয়াতে নূর আবার ও কেপে উঠল,,, কথা বলার শক্তি তার মধ্যে বিন্দু মাএরো আর অবশিষ্ট বাকী নেই। তার শরীল থরথর করে কাঁপছে আর চোখ বুঝে নাক টেনে ফুঁপিয়ে কান্না করছে।।।
.

.
একদম ন্যাকা কান্না করবা না বলে দিলাম। কাকে দেখাচ্ছে এই ন্যাকা কান্না আমাকে??? কেন!!ভয়ে!! তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে।।
.

.
এখন ভয় লাগছে(নূরকে ঝাঁকিয়ে) তাকাও আমার দিকে ড্যেমেইইড,,,,আই সেইড ওপেন ইউর আইস,,, (মুখ শক্ত করে চেপে ধরে) খুব ভয়ংকর লাগছে আমাকে তাই না দাঁতে দাঁত চেপে ।।। এতোই যেহেতু ভয় পাও তাহলে কেন করলে আমার সাথে এমন।। হোয়াই হোয়াই নূর হোয়াই!!!(চিল্লিয়ে) এতো বড় জঘন্য এক কাজ করার আগে মনে আসেনি মাথায় একবারো,,,, একবারো ও আমার কথা।।। দুইটো,, থরথর করে কেপে উপরের ঠোটঁ দিয়ে নিচের ঠোটঁ চেপে ধরে চোখ বুঝে,,, ঘনঘন শ্বাস নিয়ে,,,, তাকিয়ে,

পুরো দুইটো বছর আমি তোমাকে দূর থেকে আড়ালে আবডালে দাঁড়িয়ে দেখে পার করেছি।। দুইটো বছরে কতোদিন,কতো সময় হয় তা জানো??আমি বলছি,,৭৩০ দিন, ১৭,৫২০ ঘন্টা, ১,০৫১,২০০ মিনিট, ৬,৩০,৭২০০০ সেকেন্ড। আমি দূর থেকে দাঁড়িয়ে চোখ বুলিয়ে খুঁজে এক নজর তোমাকে দেখতাম শুধু তোমাকে, তাও শত অপেক্ষার পর। একনজর দেখেই চলে যেতাম সারাদিন এর তিষ্ঠা মিঠিয়ে, দিনের পর দিন শুধু এক নজর চোখের দেখার জন্য কড়া রোদের,বৃস্টির মঝে টং এর দোকানে, কলেজের ক্যাম্পাসে শত ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে কতো দিনেই পার করেছি তার হিসেব নেই।বলতে পারবে,,

কখনো বাজে বিহেভিয়ার করেছি তোমার সাথে,,, বাজে নজরে তাকিয়েছি অাদৌ,বা কাউকে তাকাতে দিয়েছি তোমার দিকে। আমি নিজেই ভালো করে চোখ তুলে তাকায়নি আর সেইখানে,,,,,তার পর ও তোমার,,,, আমাকে নিয়ে অনেক সমস্যা ছিলো,, হুট করে আমার সামনে এসে কন্ডিশন দিয়ে দিলে, আমি যদি গিটার বাজিয়ে ক্যাম্পাসে মাঠে মাঝ বরাবর বসে তোমার ফ্রেন্ড এর সামনে গান গেয়ে শুনাতে পারি তাহলে আমার প্রোপস এক্সসেপ্ট করবে।আমি,,,,,তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে,,,

দেখো না আমি কতো বোকা পাগল ছেলে,, তোমার কথা অনুযায়ী হাসিখুশি ভাবে তা ও মেনে নিলাম। পুরো দুই দিন ৪৮ ঘন্টা,২,৮৮০ মিনিট, ১,৭২,৮০০সেকেন্ড প্রিয়সিকে না দেখে শুধু গিটার শিখেছি কতো কষ্টে তা জানো, কাছ থেকে সারাজীবন এর জন্য পাশে বসে দেখতে পারবো ভেবেই, দুইটো দিন এক রাত এক করে খুশির মনে গিটার শিখেছি নির্ঘুম ভাবে না খেয়ে ।।।।। আর সেই তুমি আজ এনগেজমেন্ট করছো ওয়াওওওও গ্রেট জান্নাতুল নূর গ্রেট। একটা ছেলেকে হাতের আঙুলে উপরে নাচিয়ে আর একজন এর সাথে এনগেজমেন্ট করা।।হোয়াট এ গ্রেট আইডিয়া নূর তাইনা।।। হাতে তালি দিয়ে।। কিন্তু, আফসোস,,, তুমি তো ভুল মানুষ এর উপরে আইডিয়াটা পরক্ষ করার কথা ভাবছো।। এই ইয়াদ ইমতিয়াজ সিদ্দীক কখনো নিজের জিনিশের উপরে কাউর ভাগ তো দূরে থাক নজর ও কাউকে দিতে দেয় না।।। আর সেখানে তো তুমি তার জিনিশের ভাগ অন্য কাউকে দিতে যাচ্ছিলে এর শাস্তি যে তোমাকে এখন থেকে সারা জীবন এর জন্য পেতে হবে,,,,ডেবিল স্মাইল দিয়ে,,,,

“কাজী সাহেব কালেমা পড়ানো শুরু করুন।।। ধমক এর শুরে।।। টেবিলের উপর রিভলভার রেখে।।।

ইয়াদ এর ধমকে কাজী সাহেবের সাথে নূরের পিত্ত আত্তা রুহু জেনো কেপে উঠল।।।

__জ্বজ্জী জ্বী পরছি,,

চলবে,,,,

মেঘের আড়ালে ২ পর্ব-০৫

0

#মেঘের_আড়ালে ২(ফিরে আসা)
#পর্ব__০৫
#লেখিকাঃফাতেমা_জোহরা_নাভিলা

বাম হাতে কব্জির জোড়ার উপরে কিছুটা লাল ছপ ছপ হয়ে ফুলে আছে।আমি ঘুমো ঘুমো চোখে কাঁদোকাঁদো হয়ে একবার হাতের দিকে তাকাচ্ছি তো আর একবার মাথা তুলে দুই হাত দূরে আমার সামনে স্টার জলসা স্টাইলে দ্যা ঘসিটি বেগেমের আফতারে দাঁড়ানো আম্মু হাতের চকচক খুন্তির দিকে তাকিয়ে আছি।।।
.

.
তোর বাপ এক জমিদার ছিলো তার ঘরে তুই হইসোস অবিকল আর এক জমিদার।।।তোরা বাপ বেটি দুইটা কি কসম খাইসিস সারা জীবন আমার জানটার তেসপাতা বানানোর।। খুন্তি নাচিয়ে নাচিয়ে রাগে ঝাঁজালো গলায় ফুঁসতে ফুঁসতে বললেন।।

কারন আমরা জমিদার এর বংশধর নতুন কি (হাতে চা এর কাপ নিয়ে রুমে প্রবেশ করতে করতে )। ভুলে গেলা তুমিই তো পদবী দিয়েছো আমাদের এক গাল হাসি দিয়ে, আর কতোবার তোমাকে বলবো এভাবে কথায় কথায় বলবানা তো,,, আমার শুনতে বড্ডো কষ্ট হয় আমরা জমিদার আর তুমি আফসোস এর সুরে । এখন সেই সব বাদ,,, যাও তো আমার জন্য আর এক কাপ চা নিয়ে এসো মাথাটা প্রচণ্ড ব্যাথা করছে।।(নূরের বাবা)

আর সাথে আমার জন্য ও আম্মু।(বালিশের নিচ থেকে ফোন নিতে নিতে বলল নূর)

খুন্তির বারি কি আরো খাইতে মন চায় তোর তাইলে দ্বারা আমি চুলারজ্বালটা অফ করে আসতেসি, তারপর শুরু করছি।।

নূরের বিপরীতে কটমট সুরে বলে উঠল মিসেস রাবেয়া অরফে নূরের আম্মু।।

মানে!!

যদি কথা বলার জন্য আর ফোন গুতানোর জন্য অতন্ত্য মাথাটা আস্ত ঠিকঠাক দেখতে চাস,,, তাইলে চুপ চাপ ওয়াশরুমে যায়,,, ফ্রেশ হয়ে নিচে আয় বেদ্দপ মাইয়া। আজ যে তোর বইনের এনগেজমেন্ট ভুলে গেসোস।কয়টা বাজে ঘড়ির দিকে তাকাইসিলি একবারো ,,,, একটা দিন জমিদার এর মতো না ঘুমাইলে কি হয় মরে যাইবি,,,, ভড়ং আরো একদিন বেশী বাঁচতি।।।। আর তুমি (গুরে নূরের বাবার দিকে তাকিয়ে)

সকাল থেকে দুই কাপ চা অলরেডি সাবাড় করে ফেলসো এখন আবার আসছো,,, আরো চা লাগবে তোমার। চা খেয়ে এই মাথা ব্যাথা না কমিয়ে কাজ করে মাথা ব্যাথা কমাও,,,, আর আমাকে উদ্ধার করো এই যুদ্ধ থেকে।।। আজ মেয়ের যে বিয়ের পাকা কথা বার্তা সেই খেয়াল কি আছে তোমাদের। রেগে বললেন।।।। চুপ চাপ বাপ বেটি দুইজন নিচে এসে আমাকে কাজে হেল্প করে উদ্ধার করো।।।একা হাতে আর কতো কি সামলাবো, অাদৌ একা একজনের পক্ষে কি এতো কাজ করা সম্ভব।।। বলে চলে গেলেন হনহন করে।
.

.
হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে হোলরুমে সোফায় বসে বিরক্তি নিয়ে মটরশুঁটি বাছছে নূর।আপাতত বাছছে কম বিরক্তি নিয়ে চারপাশে ফেলছে বেশী। তার ঠিক পাশে ইশারা আর রফিক সাহেব বসে বসে পুদিনাপাতা বাছছেন।
.
.
রান্নাঘর থেকে তাড়া দিয়ে বলে উঠলেন মিসেস রাবেয়া,,,,,

এইইই তোদের পুদিনাপাতা বাছা হইসে, হইলে নূরকে বল পদিনা জার্যটা তারাতারি বানাতে আর,, অর থেকে মটরশুঁটি নিয়ে আমাকে বেছে তারাতারি পাঁচ মিনিটের মধ্যে দেয় তো।।
.
.
জীবনে প্রথম মনে হয় আম্মুর কথা শুনে নূর এতো খুশি হয়েছে।।। মটরশুঁটি বাছতে বাছতে তার জান তেসপাতা হয়ে যাচ্ছিলো এতোক্ষন ধরে। সে বসা থেকে চ্রট করে উঠে পরলো ইশারা হাত থেকে টেনে পুদিনাপাতা নীল কাঠাঁটা নিয়ে,, সাদা মটরশুঁটি পূর্ন পলি ব্যাগ দিয়ে হনহন করে রান্নাঘরে চলে আসলো।।। আর কিছু করতে পারুক ইয়া না পারুক এই ইন্ডিয়া স্টাইলে টকদই আর পুদিনার জার্যটা ও ঠিক লাজাভাব ভাবে করতে পারে। রান্নাঘরে এসে খুশি মনে ব্লান্ডার অন করে দিলো।।
.

.
বাসায় ছোটখাটো জোট বেধে গেছে ইতিমধ্যে দুপুরে ও পুরো বাড়ী খালি ফাঁকা রাস্তা ময়দান ছিলো, আর এখন ছোটখাটো ঢাকা মিরপুর দশ এর জ্যামে মাথা হাত দিয়ে রিক্সা বদলে সোফার উপরে বসে আছি খুব কষ্ট করে। চারপাশে বাচ্চাকাচ্চা হৈঁচৈঁতে মাথা বনবন করছে। ইরফান ভাইয়ার বাসা থেকে আসবে বেশী হলে হাতেগনা পাঁচ থেকে ছয়জন। আর সেখানে আমার চৌদ্দ গুষ্টি এসে বসে আছে ৬৬ জন ভাবা যায় । আপাতত তিনটে বেড রুপ কিচকিচ করছে মানুষজন বাচ্চাকাচ্চা দিয়ে দম ছাড়ার যায়গা ও আর বিন্দুমাত্র অবশিষ্ট নেই এই বাসায়। এই মূহুতে মনে হচ্ছে চা না খেলে মাথা ব্যাথায়, মাথা ফেটে দুই খন্ড হয়ে ছিটকে সাদা টাইলসে উপরে পরে যাবে ইতিমধ্যে। না, নূর নিজের অলসের জাহাজকে সাইডে রেখে উঠে গিয়ে নিজ থেকেই এক কাপ চা করে খেতেই হবে, না হলে আমাকে মিনিট পাঁচ এর পর আর কেউ মনে হয়না খুঁজে পাবে ইহা কালে।।। উঠে অলস ভঙিতে রান্নাঘরে উদ্দেশে পা দিতেই পিছু থেকে উচ্চশুরে কলিংবেল বলে উঠল,,,,

প্লিজ ওপেন দ্যা ডোর!!!

আশেপাশে তাকিয়ে দেখি এতো মানুষ থাকতেও কেউ দরজার ধারে কাছে যাচ্ছে না। বলি আমিও যাবো না, আমি কি এই বাসার দারাওয়ান না কি খালি দরজা খুলা খুলির ডিউটি পালন করবো। বলি দারাওয়ানকে তো তারপর মাস শেষে এক মোটা অংকে টাকা দেওয়া হয় দরজা খুলার জন্য।আর আমাকে তো এক আনিও কিছু দেওয়া হয়না, ফ্রিতে এতো জন জন সেবা দেওয়া ঠিক না। কপাল কুঁচকে দরজা থেকে চোখ ফিরিয়ে রান্নাঘরের সামনে পা দিতেই আবার পিছ থেকে মেয়েলি কণ্ঠে বলে উঠল,,,,,, পিজ ওপেন দ্যা ডোর।।। বলার সাথে সাথে,,,,

আম্মু রান্নাঘর থেকে হাতে লাল মশলাযুক্ত খুন্তি নিয়ে বের হলেন রুক্ষচোখে ,,,,আর আমার দিকে কপাট রাগ নিয়ে বলে উঠলেন,,,, সবার সামনে থাপ্পড় খাওয়ার বড্ডো শক হইসে তোর, কতোক্ষন ধরে কলিংবেল বাজছে দরজা খুলছিস না কেন বেয়াদব।।।।। ভালো ভালো চড় না খাইতে চাইলে খুল।।।।। রেগে।।। তোর বাপ মনে হয় আইসে লেবু আনতে বাজারে পাঠিয়েছি সেই কখন, সব আনছে লেবু আনতে ভুলে গেসে মহাশয়।।। ধেইধেই করে দাঁড়িয়ে আছিস কেন বলার ও পর,,, যা দরজা খুল।।। ধমক এর শুরে।।।

আমি আম্মুর ধমকে রিতিমত কেপে উঠলাম,,,,, এক ঢোগ গিলে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে আগে পরিবেশ এর সংকেত বুঝে নিলাম কেউ দেখলো কিনা। না কেউ দেখেনি ওফফফ বাচাঁ গেলো ,,,দেখলে এতোক্ষনে ইজ্জৎ এর উল্ফাত হালুয়া হয়ে যেতো।।। চোখ গুরিয়ে কপাট রাগ দেখিয়ে আম্মুকে বলে উঠলাম,,, আজ যদি নানাজান বেচে থাকতো তাহলে আমিও তোমাকে বুজতাম আম্মু কথায় কথায় চিল্লাইলে কেমনডা লাগে তখন,, বলেই দরজা খুলার জন্য পা বাড়ালাম,,,

একঝাক বিরক্তি নিয়ে দরজা খুলে আমি রিতিমত থ মুখ আমার অটোমেটিক হা হয়ে গেলো,,,,

চলবে,,

মেঘের আড়ালে ২ পর্ব-০৪

0

#মেঘের_আড়ালে ২(ফিরে আসা)
#পর্ব_০৪
#লেখিকাঃফাতেমা_জোহরা_নাভিলা

আমিই মনে প্রথম মেয়ে যার জন্য, রোডের একপাশে তার বাবা দাঁড়ানো আর অপরপাশে প্রেমিক কি কপাল আমার। একজনের মুখে আমার জন্য এক গাল মিস্টি হাসিতো আর একজনের চোখ জোড়াতে নিজের জন্য রাগ স্পষ্ট, কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো পুরো দুনিয়াতে আমাকে যদি কেউ নিসার্থ ভাবে পাগল এর মতো অতি ভালোবেসে থাকে,,, তাহলে তারা দুইজনই হবে তাতে আমার কোনো সন্দেহ নেই ।
.

.
আমার সামনে হঠাৎ নীল রঙ এর মিশুটা এসে থামায় ইয়াদ মাঝ পথেই টং এর দোকানেই থেমে গেলো। নিভ্রনীল চোখ জোড়াতে আমার জন্য রাগগুলো স্পষ্ট ফুটে উঠেছে হাত মুঠো করে যা নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টা আছে। হয়তো এই রাগগুলো আমাকে দেখাতে চাচ্ছে না আপাতত তাই।তার চোখে নিজের জন্য এতো রাগ দেখে আজ আর ভয় করছে না বরং ভালো লাগছে(দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে)।আমি তাকে রাগানোর জন্য কিছু বলিনি,,,, কথাগুলো আজ ইচ্ছে করেই বলেছি ইয়াদকে, হয়তো আমার কথা গুলো বলা তাকে খুব দরকার ছিলো। একসময় শত রাত জেগে ক্লাসে টপ বয়, ভালো রেজাল্ট এর জন্য, এতো পড়াশুনা করে কি লাভ হলো।যদি তাকে এখন এইসময় এসে এমন টং এর দোকানে ঘুরে বেড়াতে হবে। হয়তো তার এই অদ্ভুত পাগলামো গুলো নিতান্ত আমার জন্য করে বেড়াছে, কিন্তু আমি তো তা চাইনা,আমি চাইনা আমার জন্য তার ক্যারিয়ার নষ্ট হোক এইভাবে দিনের পর দিন কোনে এক টং এর দোকানে আড্ডায় বসে।
.

.
ভাবনার ছেদ পরলো আব্বুর হাতের ইশারাতে,,,,,,আব্বু হাতে দিয়ে ইশারা দিয়ে যাচ্ছেন মিশুর ভিতরে আসতে। আড়চোখে ইয়াদ এর দিকে একবার তাকিয়ে আমি আব্বুর পাশে মিশুতে উঠে বসলাম ।।।
.

.
ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছি আর পাশে আপির দিকে ভ্রু- যুগল কুঁচকে তাকিয়ে আছি। আচ্ছা প্রেমে পরলে অতি শান্তশিষ্ট স্বভাব এর মানুষগুলো ও কি এমন হুট করে চেঞ্জ হয়ে অশান্ত আর চঞ্চল হয়ে উঠে।কিজানি বাপু হয়তো হয়।।। কোনো সন্দেহ নেই,,প্রেম যে কাঠাঁলের আঠা লাগলেই ভড়ং কাউকে আর ছাড়েনা।তাইতো সব সময় আমার অতি চুপচাপ থাকা আপি তখন থেকেই হেসে হেসে মুখে লজ্জা আভাষ রেখে ফোনে এতো কথা বলে চলছে।

আপি এভার ফোন রেখে আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন। মুখে তার এক দুষ্ট হাসি,,,,

আমি আপির বিপরীতে বিরক্তি সুরে বলে উঠলাম,,,,,

কি হয়েছে সখিনার মা,,,এভাবে চিরল দাঁত এর এড দেখাচ্ছো কেন।।

কি হয়েছে এটাতো তুই আমাকে বলবি জরিনার মা,,,,ভ্রু নাচিয়ে।।। আমি যেতে না যেতে এতো কাহিনী রটে ও গেলো!! আর আমি টের ও পেলাম না।।

বলি,,,পাবা আর কি করে,,, যদি চ্রটগ্রামে গিয়ে বসে থাকো।।।আর কাহানী তো রটালো তোমার গুনোধর বলদ জামাই।।।

এই ইরফানকে কিছু বলবিনা।।।। বলে দিলাম।।

তো ঠিক কাকে বা কি বলবো।।। রেগে।।। তুমিই বলে দাও!!!

ইফরান কি আর জানতো তোর সাইকো আশিক দুইদিনেই গিটার এর মতো কঠিন কাজ শিখে উদ্ধার করে ফেলবো আমাদের।।।তাহলে তো আর সাধে বলতো না এমন কিছু বলতে।।।যাই হোক কি ট্রুউউউউ ভালোবাসা ভাবা যায় এইগুলা,,, আমার তো ছেলেটার জন্য চোখে পানি এসে পরলো,,,,, প্রিয়সি একবার বলল আর সে শিখে ও ফেললো, আমার তো মনে হয় ছেলেটা আসলেই তোকে ভালোবাসেরে নূর,,, তার ভালোবাসায় আর কোনো সন্দেহ নেই।।।নাহলে দুইটো বছর বিনাসার্থে তোর পিছে পরে থাকবে কেন,,শুধু দূর থেকে আড়ালে আবডালে দাঁড়িয়ে দেখার জন্য।। শত ইগনরে ‘ও’ তো,,, তোর সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার ও করেনি আজ পর্যন্ত।।।বল।।।

জানিনা,,,দীর্ঘ শ্বাস ত্যাগ করে।।।

তুই এখন ঠিক কি করতে চাস!!!

এটাও জানিনা।।।

আচ্ছা তুইকি, বাই এনি চান্স সাইকো কে ভালোবেসে ফেলেছিস।।।সন্দেহ দৃষ্টিতে।।।

আপুউউউউউ।।।কাঁদোকাঁদো হয়ে।।।

আচ্ছা তোর এই সাইকোটার আশিক আবারার নাম কিরে,,,এসব ছাড়াতো এতোদিন তার কোনো নাম শুনলাম না তোর মুখ থেকে।।।আর দেখতে কেমন রে।আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাস করলো।।

তা জেনে তুমি কি করবা।।

আরে বলনা।।।

ইয়াদ।।। দেখতে অতো খারাপ না স্মার্ট আছে বটে,সব থেকে সৌন্দর্য হল তার নিভ্র চোখ জোড়া। এক সময় ২০১৬ তে টপার ছিলো কলেজের, কলেজে বোর্ডে এখনো তার নাম টপার লিস্টে উপরে আছে।।। কিন্ত এতো ভালো রেজাল্ট থাকলে কি হবে সে আবারা দের মতো ঘুরে বেড়ায়। সারাদিন খালি টইটই করে,,, আপুর দিকে তাকিয়ে,,,, কি ভাবছো,,,

হোয়াট এ কোয়েন্সিডেন্স,,, জানিস ইরফান এর ভাই এর নাম ও ইয়াদ(হেসে)।বাই এনি চান্স এই ইয়াদ আর সেই ইয়াদ যদি এক হয়,তাহলে কতো ভালো হবে বল, দুইবোন এক বাড়িতে যাব, কষ্ট করে আর দুই বাড়িতে থাকা লাগবেনা ।।। আর তুই জানলি কি করে সে টইটই করে, কিছু না জেনে কিছু বলা ঠিক না। ভ্রু কুঁচকে।।

আমি সবই জানি,,,তার ব্যাপারে নতুন করে আর কিছু জানা লাগবেনা।।। আর সপ্ন কম দেখো মেরি বেহেন।।তোমার ভাসুর মশায় একজন সম্মানিত ডিফেন্স অফিসার আর এই ইয়াদ একজন টং এর দোকানে হইহোল্লো করা মানুষ। তাই কষ্ট করে আকাশ কুসুম মিলানো চেষ্টা করো না।

আচ্ছা তোর কাছে কি, ইয়াদ এর কোনো ছবি আছে।।

হ্যা, আছে তো। আমি তো তার ছবি নিয়ে ঘুরে বেড়াই কি কথা,বার্তা তোমার।তোমার না কাল এনগেজমেন্ট যাও তার চিন্তা করো। বলেই হনহন করে ছাদ থেকে চলে গেলো নূর।
চলবে,,,

মেঘের আড়ালে ২ পর্ব-০৩

0

#মেঘের_আড়ালে২(ফিরে আসা)
#পর্ব_০৩
#লেখিকাঃফাতেমা_জোহরা_নাভিলা

০৫.
রাতে আর কোন ভাবেই আমার চোখে ঘুম দেখা মিললো না ঠিক করে, বলি হবে কি করে,,,,, এতো অতিরিক্ত মাএরায় হাই বোল্ড এর মাথায় চাপ নিয়ে কি শান্তিতে ঘুমের সমুদ্র পারি দেওয়া যায় অাদৌ।।

একে তো উগন্ডারিয়ান বদ প্রেসিডেন্ট এর অতি হাই লেভেল এর টেনশনের গরম গরম চাপ উড়ি উড়ি করে রটে চলছে মনে। দ্বিতীয় তো যমের আলতা প্রো মেক্স বাপের বাপ অতি সম্মানী ভদ্র লোক হাই প্রেশার এর নানা আইসিটি বাবাজিকা এক্সাম। ,,,,একদিনেই যদি এমন দেড় ইঞ্চি ফুটা কপালে গুরুদশা রেডিমেড দুই বাশঁ শনি,,, রাহু এক্কেবারে হক্কাল হক্কাল গরম গরম রেডি হয়ে থাকে এই মাসুম বাচ্চার জন্য,,,,তাহলে কি এই জীবনে আর সুস্থ থাকা সম্ভব ।।।।

অলস ভঙিতে সামনে দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাতটা পাঁচ বাজে। এক্সাম সাড়ে নয়টায় মানে হাতে এখনো ঠিক ঠাক চিন্তা করার জন্য আড়াই ঘন্টা বাকী আছে। নূররেএএ (খাট থেকে উঠে হাটতে হাটতে) এই ছোট জীবনে নাতি পুতিদের বিয়া সাদি তে উড়াধুরা ভাবে লুঙ্গি কাপাল ডান্সে নাচতে মন চাইলে,,,,আর নিজের ওয়য় কি লুতুপুতু কিউট ক্রিকেট টিম করতে চাইলে, আর তাদের বাবাকে প্রান মন দিয়ে দেখতে চাইলে,,, সুস্থসবল ভাবে বাসায় বসে বসে আমার গুনোধর টাকলু বাবা আম্মাজানের দ্যা গ্রেট আমাজন বাসিন্দার ঝগড়াফসাদ দেখতে হলে ও তোকে আজ যে করে হোক বাচঁতে হবেই।।। এই অভিযান নূরের অভিযান।।।।। মাথা ঠিক রাখার জন্য আর ঘুমন্ত আইডিয়া জাগ্রত করার জন্য এখন এইমূহুতে প্রয়োজন এক কাপ গরম গরম কড়া চা,,,,

ব্যালকনি দাঁড়িয়ে মিনি জগিং করছি আর চা খাচ্ছি সাথে ভাবছি,,, আজ যদি কলেজে পিটেস্ট নামক পরীহ্মা না থাকতো কপালে, তাহলে মাথা এতো হিটার না করে কলেজ অনায়াসে মিস করা যেতো, কি আর করা নসিব বলে কথা আমার,,, কিন্তু এখন যেহেতু,,,,

আরে আরে রফিক ভাই যে,,,

আরে আরফাজ,, ,কেমন আছো।।

ভালো, আপনি কেমন আছেন,এতো সকাল সকাল যে জগিং এ গিয়ে ছিলেন নিশ্চয় ভাইজান ।।মুচকি হেসে।।।

দূর মিয়া কি যে বলো না তুমি, এই জগিং ফগিং আমার দ্বারা হবে না।বউ আমার বাড়িতে নাই, চ্রটগ্রাম গ্রামে বোনের বাড়ি থেকে আজ ফিরছে, সেই সুযোগে সৎ ব্যবহার করে আক্কাঁস এর দোকান থেকে সকাল সকাল গিয়ে এক্কেবারে গরম গরম রুচি আর আলুর দোম নিয়ে আসলাম। জীবন যেহেতু একটাই এতো বেঁচে সেঁচে অখাদ্য খাবার খেয়ে কি লাভ বলো।।।চলো এক সাথে জমে আজ আমার সাথে নাস্তা করবা।।। লুচি আর আলুদোম দিয়া।।।। আহহহহ

আরেএএ ভাহহহ হোয়াট এ টেনে টুনে আইডিয়া,আব্বু।।। মাথা হাত দিয়ে।।।।।।।।

অরে আমার আব্বুরে আমি যে তোমার আসল মেয়ে তা কোনো সন্দেহ নেই।।। কি চিন্তা শক্তি আমাদের দুইজনের আহহহ( ব্যালকনি গ্রিল ধরে নিচে তাকিয়ে বলল নূর)

০৬.
সবেমাত্র এক্সাম দিয়ে কলেজে মাঠে পেরিয়ে বের হচ্ছে নূর মুখে তার এক রহস্যময় হাসি ঝিলিক । তার পাশে আয়াত নূরের সাথে হাটছে আর কিছুক্ষন পর পর নূরের মেখের দিকে তাকিয়ে হাবভাব বুঝার চেষ্টা করছে আজ অশান্ত মাইয়া এতো শান্ত যে।।।

তাহলে কি সংকেত বুঝলি।।।নূর।

কিসের!!!

আমার মুখের (আয়াত এর দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞাস করল)

বলি,তোর কি ভয় ডয় নাই বইন।

কিসের!!! চিন্তিতো সুরে।।

তোর শনির,রাহু থাকতে আর কিছু লাগে তোর।।।

“নূর কিছু বলতে নিবে তখনই তাসফি টনেডো গতিতে দৌড়ে আসলো ওদের সামনে”।।।

দোস্ত।।।হাপিয়ে।।। জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে।।

কিরে ছেঁকা খাওয়া বেকা হওয়া ১০২ নম্বর প্রেত্নির বীর পুরুষ হাপানি রোগীদের মতো হাপাচ্ছিস কেন।।(নূর)

আবার কি ছেঁকা টেকা খাইয়া আইলি তাসফি,,, মানইজ্জত কি আর কিছু বাকী রাখবিনা আমাগো শালা।। (আয়াত)

অই শাঁকচুন্নিরা চুপ থাকবি তোরা,, যাদের জন্য করি চোর তারাই কই আমায় চোর চোর।। আল্লাহ কি কপাল আমার।।।(তাসফি)

ছি তাসফি ছিহ তুই শেষমেস চুরি ডাকাতি ভয়াংকর কাজে নেমে পরলি।। আল্লা কি সাংঘাতিক ব্যাপার স্যাপার, ছেঁকা খাইয়া মার্কেট পাসনা বলে শেষমেস ।।। মুখে দুইহাত দিয়ে তোবা কেটে বলল নূর।।

অই চুপ,,,, ফাজিল মাইয়া।।।বলি মুখে যে এতো ভলি ফুটছে তা বাহিরে গেলে অাদৌ মুখে থাকবো তো।। আসার সময় দেখে আসলাম,,, তোর যমরাজ,,,,,, কলেজের বাহিরে মামা টং এর দোকানে বসে চা খাচ্ছে আর তোর জন্য কোনো খাড়া বাশ টাশ মনে রেডি করছে।।।

কি বলছিস তাসফি ঢোক গিলে।। দোস্ত এখন কি করবি তুই,,,(আয়াত)

কি আর করবো,এখানে সারাদিন তো আর থাকা যাবে না বাহিরে তো যেতেই হবে,,, চল কিছু হবে না,,,আজ এর একটা বিহিত আমাকে করতেই হবে।।।। রেগে।।।

কক ক ক কি তা ককরবি শুনি,,,, তোঁতলি বলল আয়াত।।।

জানি না কিছু একটা তো করবো। তুই ভয় পাচ্ছিস কেন বেকুব।। ফোনে কাউকে ফোন করতে করতে।।।

দোস্ত কারে ফোন দেস।।।তাসফি।

হুসসসসসস,,,,,কই তুমি,,, আর কতোক্ষন,,,,আচ্ছা ঠিক আছে আমি রাখছি। আল্লা হাফেজ।

চল দাঁড়িয়ে আছিস কেন। বলে নূর হাটা ধরলো সামনে।।।

০৭.

বুঝিস তাসফি,,, এইই পড়া শুনা করে কি লাভ,,আর ক্লাসে এক সময় টপার হয়ে ও কি লাভ, হুদাই টাইপ পাস যতসব।।।। কিছুটা উচ্চশুরে বলল নূর।।।

নূরের কথায় ইয়াদ চায়ের দোকানে বেঞ্চি থেকে গুরে তাকালো তার দিকে কিছুটা কপাল কুঁচকে,,,তার কথা বুঝার চেষ্টা করছে,,,।।।

কি বলছিস এইসব,,, অতি চাপে মাথা গেসে তোর। ফিসফিস করে বলল তাসফি।।

ঠিকই তো বলছি,,ভুল কি বললাম বল, যদি এতো পড়া শুনা করে শেষমেস আবারা অল্লি গল্লি টাইপ পোলাপাইন দের মতো চাল্লা ফাল্লা নিয়ে গুরে ফিরবি, আর মামার দোকানে আজ থেকে ঠিক পাঁচ বছর পর এসে বেঞ্চিতে বসে পায়ের উপর পা তুলে চা খাইবি, তাইলে এতো কষ্ট করে ডিগ্রি অর্জন করে কি লাভ তোর। পড়ালেখা বাদ দিয়া দোস্ত,,, মামা ঠিক পাশের অই দোকানটা ভাড়া নেয়,,,,(হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে) আর চায়ের দোকান দে নিজের, যদি পরে খালি না পাস।।। ইয়াদ এর দিকে তাকিয়ে তিক্ষো নজরে কথাগুলো বলল নূর ,,,,,

সেকেন্ড এর মধ্যে ইয়াদ এর হাতে থাকা চায়ের কাচের ছোট গ্লাস হাত মুঠো দ্বারা ঠুসসসসস করে ভেঙে গেলো। তার আওয়াজে ইয়াদ পাশে থাকা দুই ফ্রেন্ড আর তাসফি আয়াত এর জান যায় যায় অবস্তা। কিন্তু নূর খুব রিলাক্স ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।। তার হাবভাব যাহা বলিছি এক্কেবারে ঠিক কইসি,,হুহ।।।

রাগে ইয়াদ এর মুখে লাল লাভা ধারন করেছে ইতিমধ্যে ।। হাত মুঠো করে চোখ বুঝে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে কোবরার মতো অতি ফুসঁফুসঁ করে,,,

ইয়াদকে রাগতে দেখে নূর এক গাল প্রশান্তি হাসি দিলো,,,, ইয়াদ নূরের হাসি দেখে আরো চোয়াল শক্ত করে রেগে বেঞ্চিতে হাথি দিয়ে সামনে আসতেই,,,,,,
চলবে,,,,,

মেঘের আড়ালে ২ পর্ব-০২

0

#মেঘের_আড়ালে ২(ফিরে আসা)
#পর্ব___০২
#লেখিকা_ফাতেমা_জোহরা_নাভিলা

০৩
বাসায় এসে দেখি মেইন দরজায় পুরো খোলা,, তোবে কি আজ আমার হার্ট এট্টেক খাওয়ার দিবস।। আমি শুকনো ঢোক গিলে ভিতরে এসে দরজায় ভিরে ভয়ে ভয়ে আশেপাশে মাথা ঢুকিয়ে উক্কি ঝুক্কি দিয়ে চোখ বুলিয়ে বুঝার চেষ্টা করছি। এই ভর দুপুরে কোনো চোর ডাকাত এর আগমন আবার রটলো না তো বাসায়। আশেপাশে চোখ বুলিয়ে সামনে তাকিয়ে আমার চোখ ইতিমধ্যে চৌড়গ গাছ।।

আমার প্রান প্রিয় গুনোধর আব্বাজান হোলরুমে সোফায় বসে খুব মনোযোগ দিয়ে সময় টিভিতে নিউজ দেখছে, আজ যদি আমার জায়গায় ভুলবশত আম্মু আসতো তাহলে বিনা নোটিশে ছোটখাটো বৈশাখ মাসের আধি তুফান হয়ে যেতো বাসায়।। আমি দরজায় লাগিয়ে আব্বুর সামনে গিয়ে কপাট রাগ নিয়ে দাঁড়ালাম।।।।

” আহহা নূর,,, কি হচ্ছে কি,টিভির সামনে থেকে সরে দাড়া আম্মু ” দেশের নিউজটা দেখতে দেয়, দেশের কি অবস্তা। (মাথা ডানে বামে এইদিক সেইদিক করে)

রাখো তোমার দেশের নিউজ,,,,, এখানে নিজের মেয়েরই নিউজ ঠিক নাই, আর তুমি সেখানে দেশের নিউজ নিয়ে বসে আছো আব্বু।

মানে!!!

মানে টানে বাদ দাও।।এখন বলো আম্মু আর আপি চ্রটগ্রাম থেকে কবে আসছে, তোমার সাথে কথা হয়েছিলো আম্মুর সাথে এই বিষয়।।।সামনে থেকে সরে দাঁড়িয়ে টেবিল থেকে পানি খেতে খেতে।।

হ্যা, হয়েছিলো আজ।

কি, বললো আম্মু।।।

বলল,আজ রাতের বাসে উঠছে তোর আম্মু আর আপি। বুঝছিস আম্মু বাপ মেয়ের শান্তির দিন শেষ(হতাশ এর সুরে) কাল সকাল সকাল আসছে তোর আম্মু আমাদের বাপ বেটিকে পূনরায় আবার জ্বালাতে। তাইতো অফিস থেকে আজ ছুটি নিয়ে এসেছি।বাব মেয়ে আজ জমে আড্ডাবাজি করবো আর ফুচকা পার্টি করবো। আইডিয়াটা কেমন।।

হোয়াট এ আইডিয়া স্যার জ্বী।।। ৩২ বাতি দিয়ে।। লাঞ্চ করেছো আব্বু।

না, তোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম একসাথে খাবো বলে।

অরে আমার আব্বুরে (গালে চুমো দিয়ে) আচ্ছা তুমি টিভি দেখো তাহলে, আমি দশ মিনিটে ফ্রেশ হয়ে আসছি।তার পর এক সাথে লাঞ্চ করছি।

আচ্ছা।

আর শুনো,, আব্বু আর ভুলে ও কোনদিন এভাবে দরজায় খুলা রেখে টিভি দেখবেনা । দেশের খবর প্রেমিক এর সাথে একটু বাড়ি প্রেমিক ও হও । আমার জায়গায় বাই এনি চান্স আম্মু থাকলে তোমার টাক্কলু মাথায় এতোক্ষনে ছোটখাটো টনেডো বয়তো ।।রুমে যেতে যেতে।।।

০৪.
লাঞ্চ করে রুমে এসে, গোসল সেরে আসর এর নামাজ পরে নিলাম। নামাজ শেষে ফেন ফুল রারিয়ে ছেড়ে খাটে এসে বালিশে ভিজা চুল এলিয়ে ক্লান্তি শরিলে সারাদিন চিন্তা ভাবনা ভুলার জন্য এক শান্তি ঘুম দিলাম। আব্বু ডাকে সন্ধায় ছয়টা ঠেলেদুলে ঘুম থেকে উঠলাম। উঠে ফ্রেশ হয়ে চ্রটজলদি আগে মাগরিব এর নামাজ আদায় করে নিলাম।তার পর রেডি হয়ে বাপ মেয়ে মিলে বের হলাম ঘুরতে। বের হওয়ার আগে ফোন চার্জিং দিয়ে গেলাম। আব্বুর সাথে যেহেতু বের হচ্ছি সেখানে ফোনের কি দরকার আছে। ফোনে তেমন চার্জ ও নেই মাএরো তিশ প্রাসেন্ট তাই ফোন বেটা আজ বাসায় ঘুমাক চার্জিং পয়ন্টে এ।

রাত দশটায় আব্বু সাথে বাসায় ফিরলাম,,, আজ দিন যেমন কাটুক কিন্তু আব্বুর সাথে কাটানো সন্ধায় মূহুতটা বেস্ট ছিলো আমার কাছে,,, ফুচকা পার্টি সাথে পাঠাগার এর সিনেমাহলে দেবী মুভি, আর ডিনারে দ্যা কাচ্ছি ভাই এর কাচ্ছি, আহহহ কাল আপিকে জ্বালানোর মতো যথেষ্ট ।।। আমাকে রেখে একা একা আম্মুর সাথে চ্রটগ্রামে জাওয়ার শাস্তি হুহ।।

ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছি আর ফেবুতে পোস্ট করছি, বেস্ট ডেইট উইথ আব্বু আপুকে ট্যাগ করে পোস্ট টা করলাম। ইহাকে এক ধরনের পোড়ানো নিঞ্জা টেকনিক বলে,,হা,,হা,,। পোস্ট করে ইজি চেয়ারে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আজ আকাশে একটাও তারা নেই, মেঘ গুলো জমে ছুটাছুটি করছে হয়তে বৃস্টি হবে।।।

হঠাৎ ফোনে দুই তিনটে মেসেজিং এর টোন বেজে উঠল এক সাথে। মেঘলা আকাশ থেকে চোখ ফিরিয়ে হাত মুঠো ফোনে তাকিয়ে দেখি আননোন নাম্বার থেকে মেসেজ এসেছে।।। মেসেজিং অফশেন গিয়ে আমি থ এক ঢোক গিলে ভয়ে ভয়ে,,, কাপা কাপা হাতে কল লিস্টে গেলাম । কল লিস্টে আমি তাকিয়ে পুরো শুদ্ধ ভুনে গেলাম ৬৬ মিসেডকল হাউউউউউ,,, আমি থ হয়ে বসে আছি আর ভাবছি কি করবো এখন,,,

প্রথম মেসেজ,,,
“তোমার সাহস এর তারিফ না করে আমি পারলাম না,,, ভালো ভালো বলছি ফোন রিসিভ কর।।।। ৮:৫৬ pm

দ্বিতীয় মেসেজ,,,

“বলেছিলাম না আজ রাতে ফোন দিবো”।। প্রথম কলেই ফোন রিসিভ করা চাই।।। তাহলে রিসিভ কেনো করছো না😡😡😡।।। ইগনোর করছো আমাকে এইইই ইয়াদ কে,,,, যদি করে থাকো বা ভেবে থাকো তাহলে এর ফলাফল কিন্তু ভালো হবে না।
৯:৩০ pm

তৃতীয় মেসেজ,,,,,

জান পাখি আজ তুমি বড্ডো বড় ভুল করে ফেলেছো এর শাস্তি যে তোমাকে পেতে হবে ময়নার মা,,, তুমি এই ইয়াদ কে ইগনোর করেছো তার শাস্তি তো আর ছোটখাটো হবে না বেবী🥰🥰 কালতো তোমার ক্লাস টেস্ট আছে তাইনা।।। বি রেডি অ্যান্ড প্রিপেয়ার ইওর মাইন্ড ফর টুমোরোও মাই গার্ল😉।।। কাল দেখা হচ্ছে।।। ১১:৩০ pm

বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম রাগে ভয়ে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে,,,, ইয়াদ কি করবে কাল।।।। মুঠো ফোনের দিকে তাকিয়ে লক্ষ খুলে কল লিস্টে গেলাম। গিয়ে দ্বিতীয় নাম্বারে ফোন দিলাম,,,, প্রথম রিং হতে অইপাশ থেকেই,,,

হ্যালো,,,,, ঘুমো ঘুমো কণ্ঠে।।।

অই বজ্জজাত মাইয়া দেশে কি ছেলেটেলে অভাব পরসে যে তুমি সে দুঃখে এই আহাম্মকের সাথে প্রেমে পরসো আপি,,, ঝাঁজালো গলায়,,,,

কি হইসে নূর এভাবে বলছিস কেন।।।চিন্তিতো সুরে।।। ইরফান কি করসে।।। কিছু বলছে তোরে!!

আপি আমি কইয়া দিলাম তোমার এইই ইরফান এর ফালতু আইডিয়ার জন্য। আমি যদি আমাদের কলেজের এক্স স্টুডেন্ট এর হাতে অকালে কাল মারা টারা যাই তাহলে আমি ভূত হয়ে হলেও সর্ব প্রথম এসে তোমার বড্ড এর হাড্ডির ইরফাইন্ননার গাড় আগে মোটকিয়ে যাবো,,,
চলবে,,,,

মেঘের আড়ালে ২ পর্ব-০১

0

#মেঘের আড়ালে💞(ফিরে আসা)
#সিজেন_টু
সূচনা পর্ব
লেখিকাঃ ফাতেমা জোহরা নাভিলা

০১.সবুজ ঘাসের মাঝ বরাবর উল্কোসুল্কো ভাবে
দাঁড়িয়ে আছে ইয়াদ। মুখে তার সেই আঁকা বাকা দাঁতের মুগ্ধ করা হাসি। তার ঠিক সামনে ভ্রু কুঁচকে মাথা নিচুঁ করে দাঁড়িয়ে দুই হাত এর বৃদ্ধা আঙুল দিয়ে কাঁধের ব্যাগের বেল্ট কচঁলাচ্ছে নূর। নূর এভার মাথা তুলে কিছুটা ভয়ে ভয়ে আড়চোখে ইয়াদ এর দিকে তাকালো, সাদা থ্রিকোয়াটার প্যান্ট এর উপরে গোলাপি ক্লার এর শার্টের উপরে বুকের দিকে দুই তিনটে বোতাম খোলা, যার দমকা হাওয়াতে কিছুক্ষন পর ফাঁকে ফাঁকে ফর্সা কালো লোমহীন উম্মাদ বুক দেখা যাচ্ছে, শার্টের ফাঁকে কালো সানগ্লাসটা ঝুলানো, হাতা কনুই পর্যন্ত ঘোঁটানো, চেহারাতে এক ক্লান্তির ছাপ, চোখগুলো কিছুটা ফুলে লাল হয়ে আছে , চোখের নিচে কালছে দাগ ও পরেছে, কই এই দুইদিনে তো এর আগে এই দাগ গুলো ছিলো না তাহলে।।।

ইয়াদ এভার ধীরো পায়ে আমার সামনে আসতে লাগলো মুখে তার সেই আকা-বাকা দাঁতের মাতাল করা মুগ্ধ হাসি রেখাটেনে,,, আমার কাছে এসে নিজের এলোমেলো চুলে হাত বুলিয়ে,আমার দিকে এক নজর তাকিয়ে হাত টেনে তার সাথে হাটা ধরলো সামনের দিকে, সেই দশ বারো জনের ভিরে মাঠের মাঝ বরাবরা বট গাছের সামনে আমাকে তাদের মাঝে নিয়ে আসলো । তাদের মাঝে এনে আমার হাত ছেড়ে দিলো আর ইশারা করলো তাদের সাথে বসতে।।।।

আমি কিছুটা ভয়ে কৌতূহল নিয়ে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে সবুজ ঘাসের উপর বসার সাথে সাথেই,,, উনি উনার ফ্রেন্ডকে হাতের ইশারা দিলেন, দিয়ে আমার দিকে বাকা হয়ে ঠোটঁ কামড়ি এক হাসি দিলেন আর বুক থেকে সানগ্লাসটা নিয়ে খুলে চোখে দিলেন। তার হাসিতে আজ কিছুটা রহস্যময় খিচুরির গন্ধেয় টের পাচ্ছি আমি।।। আচ্ছা ছেলেটার মাথায় ভুলে টুলে এই বট গাছের কোনো ছেঁকা খাওয়া বীর নারীর প্রেত্নি এসে তার ঘাড়ে আছড় টাছড় করলো নাতো আবার এমনেই যেই ধলা বিদেশী বিলাতি বিলাই করলে করতেই পারে কোনো সন্দেহ নাই, সেই সুখে হয়তো কথা নাই বার্তা নাই এতো চিরল দাঁত এর এড দেখাচ্ছে। যে আগে ভুলে ও একটু হাসতো না কথা কথায় খালি আইটেম বোম হয়ে ব্লাস্ট হতো সেই আজ।।।

০২.

“ভাবনায় ইত্যি পরলো গিটার এর টোনে”,,,,

“চুপ চাপ বসে তুমি মেঘের আড়ালে”
“দূতেরা তোমায় নিয়ে গান লিখে যাবে”

“তোমার পথ চেয়ে সারাটা জীবন”
“আমার দিন রাত আজ হয়েছে পাগল

“এই মন”
” কিছু বোঝেনা ”
“জীবন তোমাকে ছাড়া”
“ঝড়িয়ে দাও”
“অসীম অগচরে”
“ঝড়িয়ে দাও”
“বৃষ্টি সুর ধরে”
“ঝড়িয়ে দাও”
“তোমার শীতল প্রেমে🎶🎶🎶🎶

“মেঘে উড়ে উড়ে”
“আসো বৃষ্টি সুরে”
“ভেজা শালিক এর কলরবে ”
“যেটুকু সময়
পাবো তোমায় কাছে”
আপন করে নেব ভুলে”
“এই মন কিছু বোঝেনা”
জীবন তোমাকে ছাড়া(পুরোটা গান উনি আমার দিকে তাকিয়ে গায়লেন)

তো এভার কি বলবে ম্যাডাম ,,,,, কথার খেলাপ করবে না কি কথা রাখবে। কথার খেলাপ করা কিন্তু ভুলে করা যাবে না, আমি একদমই কথার খেলাপ করার পছন্দ করিনা। আমি তোমার কথা রাখার জন্য এই দুইদিন তোমার সামনে আসিনি। তাই আসা করবো তুমি তোমার কথা,,,,

আপনি আগে থেকেই গিটার বাজাতে পারতেন ইয়াদ ভাই,,,,আর গান ও।।। কিছুটা অসহায় হয়ে।।। ধোকা এতো বড় দিলেন শেষমেস আমায়,,,

ইয়াদ এর বিপরীতে নূর বলল,,,

উঁহু,,, আমি ছোট থেকেই ভালো গান গায়তে পারতাম কিন্তু গিটার বাজানো একদমই জানতাম না। তোমার জন্য এই দুইদিনে দিন রাত এক করে শিখতে হয়েছে।তুমি যে এমন এক শত্য দিয়েছিলে গিটার বাজিয়ে সবার সামনে গান গায়ে শুনাতে পারলে তুমি আমার প্রোপস এক্সেপ্ট করবে।।। তো এখন কি করবে।।।ভ্রু নাচিয়ে বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে।।

নিজের কথায় প্যাঁচে নিজেই যেই এমন বাজে ভাবে ফেঁসে যাবো তা কখনো কল্পনা জল্পনাতে ও চিন্তা করিনি,আমার এখন জিজুর উপরে রাগ লাগছে তার কথায় তো এমন কন্ডিশন দিয়েছিলাম।।। এখন কি করবো না ও তো করতে পারবো না আর। হোয়াট এ টেনে টুনে কপাল কি হবে এখন আমার যে সাইকো থেকে দূরে থাকার জন্য এতো কিছু সেই এসে জুটলো।।।

আমার থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে ইয়াদ ভাই আবার ও বলতে লাগলেন,,,

তো, রেডি তো কাল থেকে ফাইনালি শুরু হতে যাচ্ছে। ৩২ বাতি শয়তানি হাসি দিয়ে।।।

আমি উনার কথায় ভাবলেশহীন ভাবে উত্তর দিলাম,,, কি শুরু হবে আবার,,,, আর কি কোনো টনেডো, আইলা,লাইলা আসার বাকি আছে এই ছোট জীবনে।।।

যাহ দুষ্টু,নাক টেনে আইলা লাইলা (ভ্রু নাচিয়ে) কেন আসবে তোমার জীবনে। আসলে এই ইমতিয়াজ ইয়াদ সিদ্দীক আসবে, তোমার ভাষায় মেঘেড় আড়ালে এক চিলতে প্রেমের আগমন নিয়ে।। কাল রেডি থেকো কলেজের শেষে এই ইয়াদ এর লাভ টর্চার সহ্য করার জন্য ম্যাডাম। আর শুনো রাতরে ফোন দিলে প্রথম ফোনেই ফোন ধরবা। যদি না ধরো তাহলে,,,, ডেবিল স্মাইল দিয়ে চোখ থেকে সানগ্লাস নামিয়ে চোখ টিপ দিয়ে চলে গেলো।।।
নূর হন্তদন্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর মনে মনে খুব বাজে গালি গালাঁজ আসছে ইফরান এর উপর তার জনই আজ ছোবলা পরতে হলো,,,,,
চলবে

[ভুলগুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আসা করি।আবার ও ফিরে আসলাম তাদের নিয়ে, এভার থিম আগে থেকে অনেকটা আলাদা, জানিনা কেমন লাগবে আপনাদের।আপনাদের মতামত কমেন্ট অবশ্য জানাবেন]