Monday, August 4, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1967



প্রিয় প্রিয়তম অসুখ – Sumaiya Afrin

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নংঃ ০৩

প্রিয় প্রিয়তম অসুখ,
“নিখোঁজ হল কবিতা আমার,
শব্দেরা গেলো কথার আড়ালে ;
কি বা বলব, কিভাবেই বা তোমায়
এ মনের সুপ্ত প্রেমের জানান আমি দিব ।”

জানিনা ! সত্যিই আমি জানি না । আর এই মুহূর্তে আমার এমন মনে হচ্ছে যে আমি যেন জ্ঞানশূন্য, মেধাশূন্য তোমার ধ্যানে মন উজাড় করে ভালোবাসা বিলিয়ে দেওয়া কোনো এক প্রিয়তমা । যার সকল অনুভূতি শুধু একজনকে ঘিরে । আর সেই একজনটা যে সব সময়ের জন্য শুধুই তুমি । কেন জানি না এতদিন ধরে প্রিয়তম অসুখ হয়ে রয়ে গেলে আমার মন কুঠুরিতে সেটা তোমায় জানানো হয়ে ওঠে নি । কিন্তু আমার যে আজকে তোমার জন্য এই মনে দীর্ঘদিন ধরে জমানো প্রেমটুকু, অনুভূতিটুকুর কথা জানাতে খুব করে ইচ্ছে করছে । যদিও ভালোবাসি কতটা বুঝাতে পারবো না ঠিক ততোটা । তবুও জানান দিচ্ছি হৃদয়ের গভীরতা থেকে “ভালোবাসি, ভীষণ ভালোবাসি, ” হে প্রিয়তম অসুখ রুপি কেউ । তুমি হয়তো জানো না এ মনের গহীনে তোমার জন্য ভালোবাসার অমীয় সুর যে উঠে, তার দরুন প্রতিনিয়ত তোমাতে আমি নতুন করে প্রেমে পড়ি ।তখন তোমায় অনেককিছুই গুছিয়ে বলতে বড্ড বেশি ইচ্ছে করে । কিন্তু কোনো এক অজানা জড়তা বিনা আহবানে যেন কোথা থেকে এসে ভর করে । আর সেই কারণেই তোমায় বলতে চাওয়া গুছানো কথাগুলো, সাজানো স্বপ্নগুলো, তোমার প্রতি একান্ত অনুভূতিগুলো সবকিছু যেন এক নিমেষে এলোমেলো হয়ে যায় । যদি এর কারণ জানতে চাও তবে কারণ খণ্ডাতে আমি সত্যিই পারবো না । কিন্তু তোমার ওই নির্বাক চোখের মাঝে আমি বরাবর অনায়াসেই হারিয়ে যেতে পারবো । মাঝেমাঝে ইচ্ছে করে তোমায় কারণে অকারণে নিজের ভালোবাসার জানান দিতে, দুজন মিলে ভালোবাসার নতুন সুর রচনা করতে, একটু বেশি দুষ্টুমির রেশ টেনে দিয়েই তৃষ্ণাতূর হাত দুটো তোমার দিকে বাড়িয়ে দিতে । কিন্তু তুমি নিজ থেকে কি ভেবে নিবে সেটা ভেবেই এ মনের সুপ্ত ইচ্ছেগুলো করে ফেলেছি তালাবদ্ধ । কিন্তু জেনে রেখো আকাশের বিশালতার মতো যদি তুমি হয়েও থাকো এই আমি সেথা তারা হয়ে মিটিমিটি জ্বলে রবো । তখন এক বর্ণ আলোর রেশ ভালোবেসেই না হয় এঁকে দিব । আমি চাই অপেক্ষার প্রহর শেষে তুমি একদিন আসো । অনেকদিন আগে আবেগ, ভালোবাসা দিয়ে আমার সাদা কালো ক্যানভাসটা রেখেছি যে এঁকে, সেটা রঙে ভরিয়ে দিও । ছড়িয়ে দিও, জড়িয়ে নিও, নিজের মাঝেই আমায় ভালোবেসে একটু ঠাঁই দিও । যদি হও মরুভূমি বৃষ্টির বেশে না হয় এলাম ভেসে তুমি ভিজে নিও। কোনো এক পড়ন্ত বিকেলে তোমার হাতে হাতদুটো রেখে, তোমার স্পর্শ অনুভব করতে করতে একসাথে চলতে চাই অজানা কোনো এক ভালোবাসার গন্তব্যে । জানো তো প্রিয়তম অসুখ রুপি কেউ, সাদাত হোসাইনের ‘নির্বাসন’ বইটা পড়ার সময়ে আমি একটা জায়গায় আটকে হঠাৎ করেই আটকে গেছিলাম । তখন তোমার ভাবনাতে একটু একটু করে হারিয়ে যাই । কারণ আমিও যে সত্যি তোমাকে চেয়েছি অন্ধকারের মতোন, একাকী ভীষণ, গভীর এবং গাঢ়
তোমাকে চেয়েছি প্রার্থনা ও প্রেমে, যতটা রয়েছে তার চেয়ে বেশি আরো ।

হে প্রিয়তম অসুখ, পরিশেষে বলতে চাই এ মনের অব্যক্ত প্রেমের জানান একটা চিঠিতে আমি আদৌ ব্যক্ত করতে পারবো না । তাই তুমি এসে আমার হৃদয় কোণে বস আর এ মনের সব অব্যক্ত অনুভূতিগুলো তখন নিজ থেকে বুঝে নিও । জানি না তুমি আসবে কিনা । কিন্তু আমি যে খুব করে চাই, “তুমি এসে বস আমার পাশে, যেভাবেই আসো তুমি আমার-ই কাছে ।
যদিও যন্ত্রনা হয়ে যাও শেষে
প্রিয়তম অসুখের বেশে আসো তুমি আমার-ই কাছে ।”

ইতি,
“তোমায় ভালোবাসা কেউ,
প্রিয়তম অসুখের প্রিয়তমা হতে চাওয়া এক সাগর ঢেউ ।”

ওগো কুলসুমের বাপ- মাইসারা মেঘ

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

চিঠি নং-৪

ওগো কুলসুমের বাপ,
তুমি কোথায় আছো!কেমন আছো?
সেই যে বাদাম বেঁচতে গিয়া নিরুদ্দেশ হইলা তোমার আর কোনো খবর মিললো না।কুলসুমের বাপ গো তুমি তাড়াতাড়ি ফিরা আসো।তোমারে আর ঝাঁড়ি মাইরা কথা কমু না বিদ্যার কিরা কুলসুমের বাপ। বিশ্বাস করো কুলসুমের বাপ আমার হাঁসের বাচ্চা গুলান কাউয়া খাওনের পরেও আমি এত কষ্ট পাইনাই তোমারে হারাইয়া যত কষ্ট পাইছি।
ওগো কুলসুমের বাপ তুমি জলদী ফিরা আসো,
দোকানদার কদমআলীর দোকানে সতেরো টেকার সিগারেট খাইয়া গেলা হেই টেকাও দিয়া গেলা না কুলসুমের বাপ।
কতদিন কইলাম সিগারেট খাইয়ো না, তুমি হুনলা না কুলসুমের বাপ।ও কুলসুমের বাপ তোমার কুলসুম গরু বাঁদতে গিয়ে ঠ্যাং ভাইঙ্গা ফালাইছে কুলসুমের বাপ।মাইয়ার ভাঙা ঠ্যাং লইয়া আমি কোথায় যামু।
তুমি তাড়াতাড়ি ফিরা আসো।তোমারে ছাড়া আমরা ভালা নাই গো কুলসুমের বাপ।

ইতি তোমার কুলসুমের মা।

প্রিয় রাহান – শুভদীপ হালদার

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

#চিঠি নং -০৩
???

প্রিয় রাহান,

বালিকার প্রথম প্রেমের মতন সর্বনাশা আর কিছু নাই। বালিকা আজীবন তাতে পোড়ে। জানো আমি কখনো দাবী করতে চাইনি। চাইনি পড়ে পাওয়া তোমাকে আঁচলে গেঁরো বেধে ঘোরাতে। খুব নীরবে তোমায় বুঝতে চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম ছোট ছোট আনন্দের সাথে নিজের দুষ্টুমিগুলো ভাগ করে নিতে। জানো আমি খুব অবুঝ হতে চেয়েছিলাম, যেন তুমি আমাকে শাসন করবে, বুঝিয়ে বলবে কোথায় ভুল করেছি। এতে আমি কিন্তু এতটুকুও রাগ করতাম না। না বলা অভিমানগুলো বুঝে নিয়ে তা আসতে ভাঙাতে একগুচ্ছ দোলনচাঁপার সুবাসে। জানোইতো আমি খুব চাপা স্বভাবের, স্বভাবত দুরন্তপনার পেছনে আমার একটা ভাবুক মুখচোরা কিশোরী লুকিয়ে ছিল। যে তোমাকে ভালোবেসে ছিল।কিন্তু মুখ ফুটে আদৌ বলত কিনা কে জানে। আমার ভাবের ঘরের গোপন খবর যখন তুমি পেলে,তখন সে কী তোমার বিস্ময়! তুমি ভাবতেই পারোনি আমি তোমার প্রেমে পড়েছিলাম। যখন জানলে তখন বললে মেরে ফেলো আমাকে, গজিয়ে ওঠা প্রেমকে দুহাতে দুমড়ে মুচড়ে ফেললে আস্তাকুড়ে। তারপর বললে -” শোনো বালিকা আমি জানি পারবে তুমি ভুলে যেতে আমাকে ”। হায় ! কত ভুলই না তুমি জানতে ……
আমার মন খারাপের আকাশে রাতপাখির ডানা ঝাপটানোতে, অলস দুপুরের নীল আকাশটাতে সকালের মিষ্টি আদুরে রোদটাতে তোমাকে খুঁজে নিতে আমার কোন সমস্যাই হয়নি। আমি তোমার কাছে যা চেয়েছিলাম, তা ঐ আকাশের কাছে খুঁজে নিতে শিখেগেছি। নির্বাক মূক ঐ বিশাল আকাশটাই আজ আমার বন্ধু। ও কথা না বলতে পারলে কী হয়েছে, খুব ভালো আঁকতে পারে। শোনো আমি কাউকে মারতে শিখিনি, তোমার মতন খুনে তো আমি নই। যদি পারতাম সেদিন সন্ধ্যায় তোমাকে আমি মেরে ফেলে মত্স্যগন্ধ্যা সেই নারীর মতন নতুন এক জীবন শুরু করতে পারতাম। কিন্তু বেহুলার মতন আমি জাতিস্মর। গাঙুরের জলে ঘুঙুর পায়ে আমি একাই জল ছিটাবো। কিশোরের ছেঁড়া সাদা পালে বিষন্ন চিলের মতন উড়ে উড়ে হৃদয় খুড়ে বেদনার স্মৃতি জাগাইয়া মালা গাথব। আমার অতীতই আমার সোমরস।তাই আমার হেমলক। নীল কন্ঠের বেদনা আমি বুঝি, কিন্তু বিভূতিকে আমি দু-চোখে দেখতে পারি না।

– ইতি
আমাকে নাহয় মাধুকরী নামেই চিনো!!!

প্রিয় জিপিএ-৫ – Orshiya Shohid Anu

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
~চিঠিঃ- ০৪

প্রিয় জিপিএ-৫,

তুমি কেমন আছো তা আমার জানা নেই,তবে তোমাকে পাওয়ার জন্য যে হাজারো শিক্ষার্থী নিত্য লড়াই করে চলেছে,তারা যে একেবারেই নিশ্চিন্ত মনে ভালো নেই সে কথা আমি শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি। বর্তমানের এই সময়ে দাড়িয়ে তোমার গুরুত্ব শিক্ষার্থীদের মাঝে এতোটাই বেশি যে, তাদের রাতের ঘুম থেকে শুরু করে,নিয়মিত নাওয়া-খাওয়া, আনন্দ,অনুভূতি,সুখ সাচ্ছন্দ্য সবকিছুকে সংকীর্ণ গণ্ডিতে মাটি চাপা দিতেও প্রস্তুত তারা।

তুমি কি জানো-তোমার কতোটা মূল্য আমাদের এই প্রতিযোগিতার যুগে?তোমাকে যারা নিজেদের নামের পাশে স্থান দিতে সক্ষম হয়ে ওঠেনা আমাদের এই জ্ঞানী সমাজের কাছ থেকে তারা কতোখানি তুচ্ছতাচ্ছিল্য পেয়ে থাকে তা যদি তুমি জানতে তবে হয়তো নিজেই এসে ধরা দিতে। আচ্ছা তুমি কি জানো-একজন বাবার কাছে তার সন্তানের গুরুত্ব বৃদ্ধিতে তোমার অবদান কতোখানি?তুমি কি জানো-একজন মায়ের ইচ্ছে পূরণের জন্য তোমার প্রয়োজন কতোটুকু?

তোমাকে পাওয়ার লড়াইটা এক দিনের জন্য নয়, তোমাকে পাওয়ার লড়াইটা শুরু হয় সেই ছোট্ট বেলা থেকে।পরিষ্কার শিশু মস্তিষ্কে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তুমি যদি আমার না হও,তবে আমি হয়ে যাবো মূল্যহীন। তুমি হীনা এ সমাজে আমার কোন দাম রইবে না। আচ্ছা তুমিই বলো-এরকম হলে তখন কি আর তোমাকে পাওয়ার যুদ্ধে না নেমে পারা যায়? তোমাকে পেলে বাবার আদর পাবো, মায়ের মুখে হাসি ফুটবে,তোমাকে পেলে ভবিষ্যৎ এর স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে রইব। তোমার এতো এতো উপকারীতা সম্পর্কে হয়তো তুমিও অজ্ঞই রয়েছো।

আচ্ছা তোমাকে না পেলে কি হয় তা কি জানো তুমি? হয়তো জানোনা,জানলে কি আর তুমি এতো দূর্লভ্য হতে বলো? তোমাকে না পাওয়ার কষ্টে কত মায়ের কোল খালি হচ্ছে! তোমাকে না পাওয়ার যন্ত্রণায়, ডিপ্রেশনের মতো কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হচ্ছে সদ্য যৌবনে পা দেওয়া ছোট ছোট প্রাণগুলো। তোমাকে পাওয়ার লড়াইটা যেমন কঠিন তেমনি আবার সহজ ও। তুমি কতোটা সিকিউর থাকো বলতো? তোমাকে পেতে হাজারো মানুষ হাজারো পদ্ধতি অবলম্বন করে চলে নিত্য প্রতিদিন। তুমি হয়তো ভাবো যে এই মানুষের মধ্যে তোমাকে পাওয়ার জন্য এতো যুদ্ধ কেন? আসলে তুমি যে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার একমাত্র উপায় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছো। যার কাছে তুমি নেই তার কাছে কোন সুযোগ নেই,তোমাকে হারিয়ে ফেললে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ কেউ দেয়না। তুমি যার সঙ্গে রবে সুযোগ আপনা আপনিই তার কাছে ধরা দিবে।

তোমাকে ছোয়া যায়না,দেখা যায়না,তুমি কোন বস্তু নও,না আছে তোমার জীবন,তবুও তোমাকে পাওয়া নিয়ে এই সৃষ্টার সৃষ্টি প্রাণীগুলোর মাঝে লড়াইয়ের শেষ নেই। বন্ধুত্বের মতো বড় আত্মার সম্পর্ক দ্বিতীয়টি হয়না, আর সেই বন্ধুত্বের মাঝেও দূরত্ব বাড়াতে তোমাকে পাওয়ার জেদই যে যথেষ্ট সেটাও হয়তো তোমার জানা নেই। শুধু মাত্র তোমার জন্য আত্মিক সেই বন্ধুত্বের সম্পর্ককে এক নিমেষে ভুলে যেতেও অনেকেই পিছ পা হবেনা।

তুমি কি জানো-তোমাকে পাওয়ার জন্য শুধুমাত্র সৎ পথেই সংগ্রাম চলে না, তোমাকে পেতে অল্পবয়সী মস্তিষ্ক গুলো ছল চাতুরির কৌশল অবলম্বন করা শিখে যায় যেন পারদর্শীর মতোন। তোমাকে না পেলে সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ে উঠবেনা সেই ভয় যখন জেঁকে বসে বাবা মায়ের মনে,তখন পিতৃহৃদয় আর যেন কোন উপায় খুঁজে পায়না! সন্তানের ভালোর জন্য অসৎ পথের সন্ধানী হয়ে ওঠে তার অস্থিরতা গুলো। তোমাকে পাওয়া নিয়ে হাজারো জীবনের হাজারো নতুন গল্প থাকে। তোমাকে পাওয়ার জন্য মেধার নানারকম অপব্যবহার হয়ে চলেছে রোজ দিন, অথচ যাদের কাছে তুমি আছো তাদেরকেই আমরা সর্বোচ্চ লেবেলের মেধাবী বলে জানি।

আমাদের পারিপার্শ্বিক বাস্তবতা আমাদের বুঝতে শেখায়, তুমি নেই মানে আমি জীবনে একেবারে হেরে গেছি। তুমি ছাড়া আমি যেন মেরুদন্ড সোঁজা করে দাড়াতে পারবো না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় তোমাকে এতোটাই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যে, তোমাকে অর্জন করতে না পারলে আমি যোগ্যতা প্রমাণ করার সুযোগটিও পাবোনা। এই সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার কারণে হেরে যায় শত শত মেধাবীর কলম,তোমার কাছে নিজের হারকে অনায়াসে স্বীকার করে জীবনের বাকি লড়াইগুলোকে এক মূহুর্তের মধ্যেই ভুলতে বসে তারা,অথচ জীবনের কতো শত কঠিন লড়াই পড়ে আছে আমাদের। সেখানে সামান্য তোমাকে না পেলে সবকিছু ছেড়ে আআত্মহত্যার পথ বেঁছে নিচ্ছে সতেজ প্রাণ গুলো,কখনো এ ভাবে ভেবে দেখেছো কি তোমার গুরুত্ব কতোখানি আমাদের জীবনে?

যখনই কেউ পরিশ্রম এর পরিশেষে তোমাকে নিজের নামে অর্জন করে নেয়,তার কাছে তুমি যেন অমর এক পাওয়া। আবার,অনেকের কাছেই তুমি আকশের চাঁদের ন্যায়, যাকে নিজের করে পাওয়ার ইচ্ছে সকলেরই মনে জমে কিন্তু পেয়ে ওঠা হয়না।

ইতি,
“তোমাকে না পাওয়াদের দলের একজন”

-Anu

প্রিয়, আমার ভালোবাসা – কলমে – প্রমা মজুমদার

0

#গল্প_পোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

#চিঠি_২
কলমে – প্রমা মজুমদার

প্রিয়,
“আমার ভালোবাসা”

কতোদিন তোমাকে বলা হয়না ভালোবাসি, কতোদিন তোমার সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা ফোনে কথা বলা হয়না,কতোদিন শুধু দুজনে ঘুরতে যাইনা।
অনেকদিন পর তোমাকে চিঠি লিখছি।মনে আছে সেই এস,এম,এস এর কথাগুলো,সেই রাতজাগা দিনগুলো?প্রতিদিন কতো কথা হতো আমাদের, সারা রাত জেগে কতো স্বপ্ন বুনতাম আমরা দুজনে।বাসার সবাইকে না জানিয়ে লুকিয়ে তোমার সাথে দেখা করতে যাওয়া, বৃষ্টির মধ্যে পাশাপাশি বসে রিক্সার হুড তুলে অচেনা পথে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুরে বেড়ানো।একটা চুইংগাম দুজনে মিলে ভাগ করে খাওয়া। কিছু সময় একসাথে কাটাতে পাড়ার আনন্দ ভয় মিশ্রিত একটা অনুভূতি।
আরো কতো কিছুই না করেছিলাম সেই সময়।আমার রাগ,অভিমান সবকিছুই তোমার ওপর ছিল আর তুমি ব্যাস্ত থাকতে সেগুলো ভাঙানোর জন্য। তোমার রাগ আর অভিমান ভাঙাতে আমার বেশি সময় লাগতো না শুধু ১০১ বার “আমি তোমাকে ভালোবাসি ” এটা বলার পর তোমার আর কিছু বলার থাকতো না।আমরা সত্যিকারের ভালোবাসার জুটি ছিলাম।মেঘের ভেলায় ভেসে গেছিলাম সেইসময়।
ফোনের জন্য প্রতিদিন অপেক্ষা, দেখা করার চেষ্টা,প্রয়োজন অপ্রয়োজনে কথা বলা। তোমার সেই মোবাইলের রিচার্জ করা কার্ডগুলো জমানো দেখে অবাক হয়ে বলেছিলাম, এতো টাকা খরচ করেছ কথা বলার জন্য?
যেই মানুষটাকে প্রথম ভালোবেসেছিলাম সেই মানুষটির সঙ্গেই সারাজীবন কাটানোর সু্যোগ পেয়েছি।বন্ধুদের চোখে বেস্ট কাপল ছিলাম তুমি আর আমি।প্রথম কয়েকটা দিন স্বপ্নের মতোই কেটেছে, যখন তখন বেড়িয়ে পড়া,রাতজেগে টিভি দেখা,ঝগড়া করা, আবার রাগ ভাঙানোর জন্য কতো চেষ্টা,তখন সারাদিন একটা ঘোরের মধ্যেই থাকতাম দুজন কতো ছেলেমানুষ ই না করতাম। ধীরে ধীরে সময় এগিয়ে যেতে লাগলো। আমরাও পরিনত হয়েছি।একটা নতুন পরিচয় পেয়েছি মা-বাবা।

জানো সেই সময়টাকে এখন খুব মিস করি, এখন আমরা দম্পতি,মা বাবা! অনেক দায়িত্ব, কর্তব্য।সারাদিন একসাথে থাকি,কিন্তু সংসারে মা বাবা পরিচয়টার মধ্যে কোথায় যেন সেই সুখী জুটিটাকে হারিয়ে ফেলেছি।এখন আর বৃষ্টির মধ্যে রিক্সা দিয়ে ঘুরতে যাওয়া হয়না,এখন ফোনে শুধু প্রয়োজনীয় কথাই হয়।সন্তানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে ব্যস্ত থাকতে হয়,সংসারের প্রয়োজনে আমরা কেউ এখন আর নিজেদের সময় দিতে পারিনা।আমি বুঝতে পারি কোন কোন সময় তুমি চাও আমি তোমার পাশে কিছুটা সময় থাকি কিন্তু “ব্যাস্ততা আমাকে দেয় না অবসর”।আবার আমার যখন মনে হয় তোমার সাথে কিছুটা সময় কাটাই তখন তুমি অফিসের কাজে ব্যাস্ত। এখন আমাদের মান অভিমান হলে কেউ ব্যাস্ত হয়ে পরিনা সেটা মিটানোর, সময়ের তাগিদেই ঠিক হয়ে যায়।এখন আর প্রথম দেখার দিনটা সেলিব্রেট করা না,এখন আর হাত ধরে নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনা,তোমার বুকে মাথা রেখে বলা হয়না ভালোবাসি,
কতোদিন তুমি আমাকে বলনা চলনা কোথা থেকে ঘুরে আসি,
এখন শুধু সংসার,বাজারের হিসাব আর বাচ্চাদের পড়াশোনার বাইরে আমাদের কোন কথা হয়না। বিয়ের পর তুমি সবসময় ঠিক করে দিতে আমি কোন জামাটা পড়বো,কোন শাড়িটা পড়বো আমার রাগ হতো আমার মতের কোন দাম নেই, সেই সাজে তোমার সামনে দাড়ালে তোমার চোখে যে ভালোলাগাটা দেখতাম তখন সেই রাগ জল হয়ে যেতো।
কিন্তু এখন যখন তুমি কিছু বলোনা তখন খারাপ লাগে আসলে তুমি আমার অভ্যাস হয়ে গেছো,আমিও হয়তো তাই সকালে বেড়িয়ে যাওয়ার আগে আমাকে তোমার সামনে থাকতে হয় নাহলে তুমি মন খারাপ করো।আমরা সত্যিই একজন আরেকজনের অভ্যাস,প্রয়োজন।

আচ্ছা আমাদের ভবিষ্যৎটাও কি এমনই থাকবে?

মনে হয় না।আমি একটা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করেছি যখন আমরা বুড়ো-বুড়ী হয়ে যাবো তখন শুধু আমরা আমাদের সময় দিবো।সবসময় একসাথে থাকবো।সংসার এর চিন্তা ছেড়েই দিবো।আমাদের হারিয়ে যাওয়া সময়টাকে আবার ফিরিয়ে আনবো যখন যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাবো,কোন বাঁধ মানবো না, নতুন করে হাতে হাত রেখে পথ চলবো।তখন তোমার ওপর খুব রাগ করবো আর তুমি আমার রাগ ভাঙাতে ১০১ বার বলবে, “আমি তোমাকে ভালোবাসি “।আমিও উত্তরে বলবো ভালোবাসি শুধু তোমাকে।
সেই দিনের অপেক্ষায় রইলাম।
ইতি তোমার
“ভালোবাসা “

প্রিয় মেহরাব – ইনায়াত হাসান ইনায়া

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং: চার

প্রিয় মেহরাব,

আমি যদিও আপনাকে প্রিয় বলে সম্বোধন করেছি। কিন্তু সেই অধিকার যে আমার নেই তা আমি খুব ভালো করেই জানি। আপনাকে প্রিয় বলে সম্বোধন করার অধিকার আপনি আমাকে দেননি আর কখনোই হয়তো দেবেনও না। কারণ এই অধিকারটা দেওয়ার জন্য প্রয়োজন অনূভুতির, কিন্তু আপনার তো কোনো অনুভূতিই নেই। আপনার শুধু আছে জুয়ার নেশা! জুয়া খেলতে খেলতে সেটা আপনার নেশায় পরিণত হয়েছে। আর এই জুয়ার নেশাই আপনাকে একজন অনুভূতিশূন্য মানুষে পরিণত করেছে।
আচ্ছা, কেমন করে জড়িয়ে গেলেন এই নেশায়?
মামণি মাঝেমাঝেই আমাকে আপনার ছোটবেলার গল্প শোনায়। কতো সুন্দর আর মধুর সেই গল্পগুলো…
কিন্তু হুট করে কিভাবে চেইঞ্জ হয়ে গেলেন আপনি?
আচ্ছা মামণি আর বাবার চিন্তাও কি একবারের জন্য আপনার মনে আসেনা!

যানেন মেহরাব, আপনার জন্য কেন জানি আমি শতচেষ্টার পরেও মনের মধ্যে কোন ঘৃণা সৃষ্টি করতে পারিনা। তবে আপনি চাইলেই বা একটু চেষ্টা করলেই আপনার ভুলগুলোকে শুধরে নিতে আমি আপনার সাহায্য করতে পারতাম। কিন্তু আপনি তো আমায় সেই অনুমতি কখনোই দেননি আর দেবেনও না। আপনি তো আমায় প্রথম দিনই বলে দিয়েছিলেন,
“বিয়ে করেছি ভালো কথা কিন্তু তুমি তোমার মতো থাকো আর আমাকে আমার মতো থাকতে দাও। আমার কোনো ব্যাপারেই তোমার হস্তক্ষেপ আমি সহ্য করবেনা।”
জানেন মেহরাব,
মামণি যখন আপনাকে মেহু মেহু বলে ডাকে আমার খুব ভালো লাগে শুনতে। আমারও খুব ইচ্ছে হয় আপনাকে মেহু বলে ডাকতে। কিন্তু সে অধিকার যে আমার নেই! আমি অবশ্য সেই অধিকার চাইও না। যদি আপনার সাথে আমার সংসারটা টিকে যায় তাহলে বাবা জিতে যাবে। নিজের ভুলটা কখনোই বুঝতে পারবেনা। এখন থাক সে কথা।

“আপনার সম্পর্কে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে কোন ব্যাপারটা জানেন?
“সেটা হলো আপনার কোনো ব্যাড ইনটেনশন নেই, আপনার নজর ভালো এবং এই ব্যাপারে আপনি খুবই অনেস্ট। নারীর নেশা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং মারাত্মক নেশা। কিন্তু আপনার সেই নেশা নেই। কারণ এক ঘরে এক ছাদের নিচে থেকেও আপনি কখনোই আপনার সীমা অতিক্রম করেননি।”

আরেকটা ব্যাপার হলো আপনার মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই নানারকম পজিটিভ পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। যেমন: অফডেতে বাসায় থাকা, সবার সঙ্গে একসাথে বসে খাবার খাওয়া, রাতে ড্রাঙ্ক না হয়ে বাসায় ফিরা…”

আবার আমার সাথে মাঝে মাঝেই কি সুন্দর হেসে হেসে গল্পও করেন।তবে দেরী করে বাসায় ফিরার অভ্যাসটা এখনো আছে। এটাই একটু সমস্যা। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে একটুখানি কম্প্রোমাইজ করলেই আপনর সাথে মানিয়ে নেয়া যেতো..

যানেন, আপনার সাথে গল্প করতে বেশ ভালো লাগে আমার। তাছাড়া কি সুন্দর করে গুছিয়ে পড়াতে পারেন আপনি! গল্পে গল্পেই সব শিখিয়ে ফেলেন। তাই এখন খুব ভালো লাগে আপনার সঙ্গ আর আপনাকে।

সরাসরি আপনাকেই বলতে চাচ্ছিলাম কথাগুলো। কিন্তু সেই সাহস আর ইচ্ছে কোনটাই আমার নেই। তাই আপনার নামে এই চিঠি লিখা। যদিও এই চিঠি আপনার হাতে কখনোই পৌঁছবোনা আমি। শুধুমাত্র নিজের মনের কথাগুলো শেয়ার করার জন্যই এই চিঠির আশ্রয় নেওয়া…

ইতি আপনার স্ত্রী
আমিরাহ্ বিনতে হাসান

প্রিয়ন্তি! – মুহাম্মাদ সা’দ সাকী

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-১

প্রিয়ন্তি!
ভালো আছিস নিশ্চয়? ভালো থাকবি, এ প্রত্যাশা ও কামনাই সর্বদা করেছি। আমি জানি, তুই ভালো থাকতে না পারলেও ভালো থাকবি। মানুষের স্বপ্ন ও আশা থাকে জীবনের চেয়েও বেশি। একজন মানুষ যতগুলো সেকেন্ড বাঁচে তার চেয়ে অধিক পরিমাণে আশা ও প্রত্যাশা নিয়ে জীবন অতিবাহিত করে। আর সে সব স্বপ্ন কিংবা আশা ভঙ্গ হলেই কষ্ট পায়, দুঃখ বোধ করে। কিন্তু পৃথিবীতে অযুত-কোটি মানুষের মাঝে আমি তোকে একটু ব্যতিক্রম দেখেছি। যার স্বপ্ন ছিল না, আশার দানারা ডোরে গাঁথতে চাইত না। তাই তোর কষ্টও কম ছিল। তোকে পাথর ছুড়ে ভেঙে ফেলা কাঁচের মতো হাসতে দেখেছি অনেক। সুখের গানে আকণ্ঠ হাবুডুবু খেতে দেখেছি। অথচ কাঁদতে দেখেছি একটা মাত্র দিন। মেয়েদের চোখের কোণায় নাকি জল জমে থাকে? সেটা কি তবে মিথ্যা?

আমি তোর ভাই। তাই না? কারো পাতিয়ে দেওয়া ভাই নই কিন্তু। স্রষ্টার নিয়মে জন্ম নিয়ে তোর ভাই হয়েছি। এ আমার বড় সৌভাগ্য। জানিস, তোর ভাই হয়ে যতটা সৌভাগ্য অর্জন করেছি, ‘প্রিয় ভাই’ না হতে পেরে নিজেকে ততটাই হতভাগা মনে হয়? বরং এর চেয়েও বড় দুর্ভাগ্যটা নিয়ে আমার পৃথিবীতে আসা হয়েছে।

তোর কি মনে আছে, একবার তোকে খুব পিটিয়েছিলাম? ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়েছিলাম। আমি জানি, সে কথা তুই ভুলে যাসনি। বরং সেদিন তো কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলি, ‘তোমার এ আচরণ আমি কক্ষনোই ভুলব না। লজ্জা থাকা উচিত, ছোট বোনকে পেটাচ্ছো।’
সেদিনই তোকে কাঁদতে দেখেছিলাম। আমার জীবনের একটা কালো অধ্যায়ে লিখিত একটা দিন সেটি।

সত্যিই, আমি তখন নির্লজ্জ হয়ে গিয়েছিলাম প্রিয়ন্তি! এতটাই বেহায়া হয়ে গিয়েছিলাম যে, পরম সৌভাগ্য দিয়ে যে মানুষটা আমার বোন হয়েছে; আমি তাকেই পিটিয়েছি। সেদিনটা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলে মরমে মরমে মরে যেতে ইচ্ছে করে। শক্ত শুকনো ঢাল যেভাবে চুলার উপরে উঠতে চাওয়া আগুনে মরমর করে জ্বলে, কয়লায় রূপ নেয়, ঠিক সেভাবে আমারও ভিতরটা অনুশোচনায় পুড়তে থাকে। মরমে মরমে মরে যেতে ইচ্ছে করে। এরপর ভেবেছিলাম আর কখনোই তোকে মুখ দেখাব না। এ পোড়া মুখ দেখিয়ে তোকে কষ্ট দিতে চাইনি। কিন্তু সে তুই-ই কিনা গভীর রাতে এসে আমাকে কফি হাতে ধরিয়ে বলেছিলি, ‘আমার কোনো রাগ নেই। দুপুরে যা হয়েছে তা আমি ভুলে যেতে চাই। যিনি কাল সকালে বাড়ি ছেড়ে পালাতে চাচ্ছেন, তিনি যেন কিছুতেই না পালান! তাহলে তার বোনটা খুব কষ্ট পাবে। কখনোই তাকে ক্ষমা করবে না।’

জানিস, সেদিন তুই কষ্ট পাবি বলে আমি বাড়ি ছাড়িনি। কিন্তু সত্যিই আমার তোকে মুখ দেখাতে বড় লজ্জা লাগছিল। ইচ্ছে হচ্ছিল, তোর পায়ে পড়ে কাঁদি। হাউমাউ করে কাঁদি! পারিনি বলে আফসোসটা আজও রয়ে গেল।

তোকে কখনো মার্কেটে যেতে দেখিনি। বাবাকে দিয়েই সবটা কিনিয়ে আনতি। তোর ফ্রেন্ড ছিল না। কারো সাথে মেলামেশা করতি না। কেমন যেন একা-ফাঁকা থাকতি। কেন এমনটা করতি? আজকাল বন্ধুত্ব করিস তো?
মেয়েদের নাকি সাজগোছের একটা বাতিক থাকে। অথচ তোর ঊনিশটা বসন্ত আমার সামনেই পেরিয়ে গিয়েছিল। কোনোদিনই তোকে সাজতে দেখিনি। আমার বড় আকাঙ্ক্ষা ছিল তোকে মেকাপে দেখব! সেটা ভেবে ঢাকা থেকে তোর জন্য পায়েল আর মেকাপবক্স কিনে নিয়েছিলাম। সেদিন তোর চোখেমুখে আমি হাসির ঝিলিক দেখেছি, খুশির চমক দেখিনি! কেন বল তো? তোর কি উপহারগুলো পছন্দ হয়নি? ভেবেছিলাম তোর হাঁটায় ছন্দ থাকবে। পায়েল পরে হাঁটলে রিনিঝিনি শব্দে ঘরটা অনুরণিত হবে। অথচ হয়নি!

প্রিয়ন্তি,
আমি বাড়ি ছাড়লে তুই কষ্ট পাবি, বলেছিলি। এরপর ঠিকই আমি বাড়ি ছেড়েছি। এতগুলো দিন বাবা-মায়ের সাথে অভিমান করে কাটিয়ে দিয়েছি। আমার মতো তোরও কি অভিমান জমে আছে? আমার কিংবা বাবা-মায়ের উপর? বাড়ি ছাড়ার কারণে তুই কষ্ট পাসনি বোন? এখন কি আমায় ঘৃণা করিস, নাকি অপছন্দ?

তোর কাছে আমার এ চিঠি জীবনের প্রথম ও শেষ চিঠি। আর হয়ত কখনোই চিঠি লিখব না। তেমন ইচ্ছে নেই। হয়ত ইচ্ছে হলেও সুযোগ হবে না!

শ্রাবণের মেঘ যেভাবে এখন আসে তখন যায়, আমারও তেমনি সুখ আসে, দুঃখ যায়। ফের আবারও ঘিরে ধরে দুঃখের পঙ্গপাল। তুই কি শান্তাকে চিনতি? আমি কিন্তু ওকেই বিয়ে করেছিলাম। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় আবার বাবাও হয়েছিলাম। সেসব তোরা শুনেছিস প্রিয়ন্তি? মা-বাবা জেনেছে? কে জানে! আমি তো পরিচিত কাউকে জানাইনি। স্বার্থপর হয়ে গিয়েছিলাম তো, তাই।

শান্তা বাচ্চা জন্মদানকালে মারা গিয়েছিল। মায়ের অবর্তমানে ওর সন্তানকে আমি বাঁচাতে পারিনি। ওরা দুজনই আমার সাথে অভিমান করে ওপারে চলে গেছে। শুনছি, ওদের অভিমান নাকি শেষ হয়েছে। তাই আমিও একসঙ্গে থাকতে চাই। রওনা দিব অতিশীঘ্র!

পিঠটা এখন আর বিছানা ছাড়তে চায় না। এত ধকল সইবে কীভাবে, বল! ডাক্তার বলেছেন আমার নাকি দুটোই কিডনিই শরীর চালাতে অযোগ্য। তাই যাত্রা শুরু করতে চাই। অতিশীঘ্র মিলিত হব শান্তা আর ওর কষ্টের রক্তটার সঙ্গে।

মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে তোর প্রিয় ভাই হওয়ার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল। চৌকাঠ পেরিয়ে গেলেই কি তোর নাম প্রিয়ন্তির ‘প্রিয়’ মর্যাদা দিবি? নাকি এ আমার আমৃত্যু স্বপ্নই থেকে যাবে?

যা হোক, অনেক কথা বললাম। ভালো থাকিস আগের মতো। খিলখিলিয়ে হাসবি। বাবার দিকে খেয়াল রাখিস, মাকে ভালোবাসিস। তোর প্রিয় বড় ভাইকে আরো প্রিয় করে আগলে রাখিস। আমাকে ভুলে যেতে নিষেধ করব না কিছুতেই। এ অধিকারটাই বা কবে অর্জন করেছিলাম?

ইতি
আমৃত্যু প্রিয় হওয়ার স্বপ্ন দেখে যাওয়া তোর ভাই
মুহাম্মাদ সা’দ সাকী

প্রিয় বাবাই – Rochana Das

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

প্রিয় বাবাই,
কেমন আছো তুমি? আজকের তারিখটা মনে আছে নাকি ভুলে গেছো? তুমি তো আমার ভালো পঁচা বাবাই। তুমি খালি আমার জন্ম তারিখ ভুলে যাও তারপর মাম্মাম যেই মনে করিয়ে দেয় তখন কত সুন্দর উপহার দাও! আজও কি তুমি আসবে? মাম্মাম বলেছে তুমি নাকি আসবে না। তাই আমার ভীষণ মন খারাপ। আচ্ছা বাবাই তুমি আর আমাদের সাথে থাকো না কেন? জানো, তোমাকে আর মাম্মামকে নিয়ে ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করে, তোমার আদর মাখা চুমু খেতে ইচ্ছে করে, দুজনে মিলে দুষ্টুমি করার পর মাম্মামের বকা খেতে ইচ্ছে করে। জানো বাবাই, মাম্মাম প্রতি রাতে চুপি চুপি কাঁদে।যেদিন সাদা চুলের দাদুটা হাতুরী ঠুকে কিছু বলার পর মাম্মাম আমায় নিয়ে চলে এলো তারপর থেকে শুক্রবার ছাড়া তোমার দেখাই পাই না।গত দু সপ্তাহের একটা শুক্রবারেও তুমি আসোনি। ডাক্তার কাকু মাম্মামকে বলেছে, তোমার নাকি অসুখ করেছে। আমি তোমার জন্য একটা ঘুড়ি রেখেছি। তুমি ঠিক হলে দুজনে ছাদে গিয়ে ওড়াবো। তুমি আসবে তো বাবাই? ডাক্তার কাকুর থেকে চিঠিটা পেলে ফিরতি চিঠি দেবে।যদি চিঠি না দাও তুমি নিজেই চলে আসবে কিন্তু। আমি গেটের সামনে অপেক্ষা করবো । আমার তো কিচ্ছু চাই না শুধু তোমাকে চাই বাবাই। আসবেই কিন্তু!

ইতি
তোমার টুকুন

ওহে – সানজানা লাইশা

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#চিঠি_নং_০১

ওহে,

তোমাকে কি নাম হিসেবে সম্বোধন করবো তা আমি আজ অব্দি বুঝে উঠতে পারিনি। কারণ বেনামি সম্পর্কগুলোর কোনো নাম থাকে না। আমরা পারিনা সেই সম্পর্কের কোনো নাম দিতে। আমাদের সম্পর্ক গড়ে উঠা হয় না আর! তবে তুমি নিঃসন্দেহে আমার জীবনের প্রিয় একজন মানুষ। তার কারণ? কারণ যে একটাই!” আমার হৃদয় ও বাহিরে অন্তরে অন্তরে, আছো তুমি হৃদয় জুড়ে!” তবে কেন তোমায় প্রিয় বলে সম্বোধন করলাম না? এর উত্তর তোমার কাছে ভালো করেই আছে।

মনে আছে তো, সেই দিনের কথা! যখন তুমি ব্যস্ত ছিলে কথা ব্যক্ত করায়, আর আমি মগ্ন ছিলাম তোমার কথা শোনায়! দিনগুলো কি সুন্দর ছিলো তাই না! জানো মাঝে মাঝে অবাক হতাম যে এই মানুষটা কি করে এত সুন্দর করে কথা বলতে পারে! তোমার মাঝে আমি আমার এক নতুন আভা খুঁজে পাই। তবে আমি ছিলাম সন্ধিহান। নিজের মনের মাঝে আওড়িয়েছিলাম কত কথা! তোমায় নিয়ে আমার ভাবনা, আকাঙ্ক্ষা সব যেন হুট করে বেড়ে যাচ্ছিলো। আমি উপলব্ধি করলাম যে আমি তোমার মাঝে ডুবে গিয়েছি। আমার পাগলামিগুলো যেন বেড়েই চলছিলো দিন দিন। নতুন স্বপ্ন, নতুন আশা, নতুন পথ, আর তোমার মধ্যে কিছু ইতিবাচক ইশারা! এইসব নিয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষা জন্মে গিয়েছিলো যে এই ক্ষুদ্র হৃদমাঝারে। এভাবেই যে কবে তোমার প্রতি আমার মায়া জমে গিয়েছে আমি নিজেই আজও এর উত্তর খুঁজে পাইনি। তোমার হাত যে ধরতে চেয়েছিলাম আমি! চেয়েছিলাম সারাজীবন তোমার হাত মুঠো করে ধরে হাতে হাত রেখে চলতে। তবে আমি তো জানতাম না যে তুমি তা চাওনি। তোমার মনে যে অন্যকারো বসবাস তা তুমি আমাকে কখনোই বলোনি! জানো তোমার প্রতি আমার আছে আমার একরাশ অভিযোগ! একরাশ! যেই অভিযোগ হাজার তপস্যা করলেও যে মুছে ফেলা নয় সম্ভব। তোমাকে নিয়ে ভাবলে আমার বুক কেঁপে উঠে। তোমাকে না পাওয়ার আর্তনাদ জেগে উঠে। তোমাকে জোর করে পাওয়ার ইচ্ছে জাগে। তবে তুমি খুব ভালো করেই জানো কাউকে জোর করে পাওয়ার আগ্রহ বা ইচ্ছে আমার কোনোটাই নেই। তবে তুমি খুব গম্ভীর জানো তো! এক কথায় চাপা স্বভাবের! তাই তো টানা দেড় বছর তোমার সাথে তোমার মনের বিপক্ষে লড়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছিলাম আমি। কিন্তু তোমার সেই ভালোবাসার প্রাক্তনকে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা! সেই প্রতিজ্ঞার কারণে তুমি আমায় সফল হতে দিলে না। তাহলে আগে কেন বললে না বলো তো? এভাবে পুড়িয়ে মেরেছিলে কেন আমায়? এখনও মারছো! আর যেই ওয়াদার জন্য আমার হাত ধরোনি সেই ওয়াদা চিরকাল পালন করে যাবে তো? নাকি কেবল আমাকে উপেক্ষা করার বাহানা করলে শুধুমাত্র। জানো, খুব বিরক্তির কারণ হয়ে গিয়েছিলাম আমি তোমার। তোমার বিরক্তিতেও আমার যায় আসতোনা! আত্মসম্মান, অভিমান সব ছুড়ে ফেলে দিয়ে তোমাকে আমার করতে চেয়েছিলাম। ভিক্ষা চেয়েছিলাম যে আমাকে একটু ভালোবাসো! আমার প্রতি করুণা করো। তবে তুমি তাও আমার কথা রাখলে না। বেনামি সম্পর্কটাতে ঝুলিয়ে রাখলে আবারও! বারবার! বহুবার!

অবশেষে আর পারিনি এই বেনামি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে। সর্বশান্ত হয়ে পড়েছিলাম একদম। যন্ত্রণা যেন কমছিলো না। তখনও অনুরোধ করেছিলাম তোমায়। কিন্তু সব সেই আগের মতো। একদম ঘোলাটে! পরিশেষে, একরাশ তিক্ততার মধ্য দিয়ে সব শেষ করে দিয়েছিলাম সেদিন। একদম শেষ! জানি যে আমি হয়তো সেই আগের চিরচেনা মানুষটিকে আমি আর কোনোদিন ফিরে পাবো না। আমার আর তোমার একাধিকবার প্রেমে পড়া হবে না। তোমার হাসির আওয়াজ শুনে আমার প্রেমে পড়া হবে না। আর হৃদস্পন্দন কেঁপে উঠবে না তোমার সেই চিরচেনা কন্ঠস্বর শুনে। তবুও আমাদের দেখা হবে। দেখা হবে সেই দুই প্রান্তের দুই মানুষের। সেদিন একমনে তোমার দিকে চেয়ে থাকবো আমি যেমনটা তুমি আমায় বলেছিলে! তবে তোমার প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। ভালোবাসার মানুষের কাছে কোনো অভিযোগ রাখতে হয় না যে!যদিও তোমার সাথে আমার হয়তো কোনো সম্পর্ক আর নেই, কখনও ছিলো না হয়তো! তবুও যে বলতে হয়,

” নয়নে তোমায় পায় না দেখিতে,রয়েছ নয়নে নয়নে। ”

ইতি

তোমার মনের অপর প্রান্তের একজন সাধারণ মানুষ

প্রিয় ভাইয়া- সাইফা শান্ত

0

#গল্প_পোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

প্রিয় ভাইয়া,

প্রথমেই আদুরে বোনটির সালাম ও শ্রদ্ধা গ্রহণ করে নিও। আশা করি ভালোই আছো। আমি ও আলহামদুলিল্লাহ। জানো কি ভাইয়া? আজ কতটা বছর হয়ে গেলো তুমিহীন পথ চলতে হচ্ছে। খুব ভয় করে আমার পথ চলতে জানো। আমি আজ ও মাঝে মাঝে থমকে যাই পথ চলতে গিয়ে। তুমি পাশে ছিলে বলে স্কুলজীবনে আমি কোন ভয় পাইনি। সদা বিপদে-আপদে তুমি আমার সাথে সাথেই থাকতে। কখনো বুঝতেই দিতেনা ভাইয়া আমি যে এতোটা ভীতু। যেই তুমি এসএসসি পরীক্ষার পর বাহিরে চলে গেলে,সেই থেকে আমার প্রতিটা দিনই কেমন যেন আতঙ্কের মধ্যে কাটে। ভাইয়া তুমি তো জানতে? তোমার এই বোনটা কতটা ভয় পেতো সবকিছুতে। সহজেই ঘাবড়ে যেতো। আজ তোমার কথা প্রতিনিয়ত ই মনে পড়ে। জানো ভাইয়া,আমি সবার সামনে দিনে কাঁদতে পারিনা বলে,সবসময় একা থাকি,নামাজে তোমাকে প্রতিটা প্রার্থনায় রাখি। একা থাকি কেন জানো? ভাইয়া তুমি চলে যাওয়ার পর দূর প্রবাসে সেই থেকে আমি ও নিজেকে একলাই গুছিয়ে নিয়েছি। রাতের আঁধারে তোমার ছবিগুলো কে দেখে দেখে হঠাৎই কান্নায় আমি ভেঙে পড়ি। কেউ যাতে না বুঝতে পারে সেই জন্য আমি দিনে ও অন্ধকারে ঘরের এককোণে বসে থাকি আর তোমায় ভাবি ভাইয়া। ভাবতে থাকি,তুমি আমার পাশে থাকাতে আমার দিনগুলো কেমন ছিলো, আর আজ তুমি পাশে না থাকাতে দিনগুলো কতটা দুর্বিষহে কাটছে তা সত্যি অকল্পনীয়। তোমার জন্য কোন ছেলে আমাকে রাস্তা-ঘাটে কিছু বলার সাহস পেতোনা। আর আজ তুমি নেই বলে আমাকে সেগুলোর ও সম্মুখীন হতে হচ্ছে। জীবনের মানেটা বুঝতে পারিনি ভাইয়া তুমি পাশে থাকাতে। কিন্তু আজ ভীষণ করে অনুধ্যান করতে পারছি জীবন নামক বাস্তবতা টা কতটা কঠিন? মানিয়ে নেওয়াটা ও একদিন শিখে যাবো ভাইয়া। শুধু দোয়া করো ভাইয়া। আর আমার মোনাজাতে তুমি সর্বদা ই থাকো। যেখানেই থাকোনা কেন? মুখে সেই মিষ্টি হাসিটা রেখো। অনেক মিস করছি ভাইয়া,অনেক অনেক বেশি।

চিঠিটা লিখতে গিয়ে,বলা হয়নি একটি কথা,প্রচন্ড ভালোবাসি ভাইয়া তোমায়,অনেক বেশি ভালোবাসি তোমায়। কে বলেছে তুমি পাশে নেই,আমি তো তোমাকে প্রতিটা মুহূর্তে এ পাশে অনুভব করি। তুমি মিশে আছো আমার এই অন্তরে। ভাইয়ের শ্রেষ্ঠতম বন্ধন হিসেবে।

কি অদ্ভুত দেখছো? লিখতে বসছি চিঠি,আর চোখের পানি গড়িয়ে পড়েই যাচ্ছে। চোখের পানি গুলো ও কেমন যেন? আচমকা ঝড়ে পড়ে।

আজ আর নয় ভাইয়া। সুস্থ থেকো,ভালো থেকো। আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুক। আমিন।
অশেষ ভালোবাসা রইলো।

ইতি তোমার আদুরিনী,
শান্তি।