Monday, August 4, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1966



প্রিয় অসুখ – Sazia Afrin Sapna

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

প্রিয় অসুখ

তুমি আমার আসবে বলেও না আসা অসুখ। তুমি আমার ছুঁয়ে দিয়ে কেড়ে নেয়া কাঙ্ক্ষিত সুখ। তুমি আমার যতটা না সুখ, তারচেয়েও বড় অসুখ।
কর্ণধারহীন সিন্ধুতে লক্ষ‍্যহীন তরণীর মতো একটা ডুবন্ত জীবনে বিফল প্রেমের বীজ বপন করেছিলাম জীবনের মধ‍্যপ্রহরে। লক্ষ‍্যহীন স্রোতে ভেসেও চোখ বন্ধ করে আমার না হওয়া সংসার সাজিয়েছি মনের মাধুরি ঢেলে, যেখানে তুমি ছিলে কেন্দ্রবিন্দু হয়ে। বুকের মাঝ বরাবর তীক্ষ্ণ বিশ্বাস ছিল তোমার প্রতি, সাগরের অবাধ‍্য ঢেউয়ের মতো তুমি ভালোবাসায় ভেঙে ভেঙে পড়বে আমার হৃদয়ের কিনারায়। আমার সারাজীবনের ভালোবাসার শূন‍্যতা ভরিয়ে দেবে ভরাকটালের জোয়ার হয়ে। কস্মিনকালেও ভাটা আসবে না আমার জীবনে। আমরা ভালোবাসার নির্যাসে সাজাবো জীবন। সারা পৃথিবী বিমুখ হলেও তুমি স্বর্ণলতার মতো থাকবে আমাকে আঁকড়ে ধরে। সারা জগত আমাকে তাচ্ছিল‍্য তিরস্কার করলেও তুমি আমাকে গাঢ় আলিঙ্গনে আগলে রাখবে। এই সুতীব্র বিশ্বাসে আমি যে মনে মনে কতটা অহংকারী ছিলাম তা কেউ জানত না। একে অপরের নামে করা শপথ, “কেউ কাউকে ছেড়ে যাব না কখনও।” এই অঙ্গিকার যেন আমাকে অধিক শক্তিশালী আর সাহসী করেছিল।
মনমন্দিরে তুমি ছিলে প্রণয় দেবতা। আমি ছিলাম তোমার পূজারী। তোমায় ভালোবেসে হেমলক পান করা কঠিন কিছু ছিল না। সবটুকু উজাড় করে ঢেলে তোমার অর্চনায় অসংজ্ঞায়িত অনুভূতির ইন্দ্রজালে আমি বিভোর ছিলাম। তুমিই ছিলে আমার পথের শেষ সীমানা, তার ওপারে আর কিচ্ছু নেই। অথচ বাস্তবিক ভাবে আমার কোনো পথই ছিল না। আমি ছিলাম অকূল সাগরের ভাসমান শেওলার মতো এক যাযাবর। এই কথাটা ভুলিয়ে দিয়েছিল তমসায় আচ্ছন্ন আমার ভয়াবহ আকাঙ্ক্ষা। যে আকাঙ্ক্ষার অলৌকিক আবেশে আমি প্রেমময়ী এক প্রেমের দেবী আফ্রিদির মতো শুধু প্রেম নিঃসরণেই বিভোর ছিলাম।

ভালোবাসা মানেই তো লাল নীল হলুদ রঙা স্বপন। আর বিচ্ছেদ মানে সব স্বপনের মরণ।
দিনে দিনে সবকিছুরই রং বদলায়, বদলে যায় ভালোবাসার রং, অনুভূতির রং। সেই রং বদলে আবেগের ঘন কুহেলি সরে স্পষ্ট হয় বাস্তবতা। সুস্পষ্ট ভাবে তমসা সরে সমুখে এলো অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। কাছের মানুষগুলো ছিল আমার প্রতি খুব উদাসীন। জীবনের একটা মোড় ঘুরলেই খাবো কী তা জানতাম না, মাথা গুজার ঠাঁইও থাকবে না। কত শত চিন্তার বোঝা ছিল আমার মাথায়, যা তোমার প্রতি প্রলয়ঙ্কারী প্রণয়ের আবেশে দীর্ঘকাল আচ্ছন্ন ছিল। রং বদলেও সেসব নতুন করে চাপা দিয়ে তোমার সাথে হাসির তরঙ্গ তুলেছি, স্বপ্নের আলিঙ্গনে ঘর বাঁধার স্বপন বুনেছি, বারংবার তোমার প্রেমেই পড়েছি। অনুভূতির মিছিলে তোমায় আঁকড়ে রাখতে চেয়েছি। শব্দের বাঁধনে বাঁধতে চেয়েছি একান্ত নিজের করে।
আমার স্বল্প চাওয়া পাওয়ার তালিকাটা ছিল অতি ক্ষুদ্র। ছোট্ট জীবনের চাওয়া পাওয়ার দ্বিধাদ্বন্দ্বে শুধু তোমাকেই চেয়েছি, তোমার ভালোবাসা চেয়েছি। পুরোনো ঘ্রাণে আমার প্রতি তোমার নিরাকর্ষণে দিনে দিনে চাওয়া পাওয়ার তালিকা ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে গেল। চাওয়া পাওয়ার ক্ষুদ্র পরিসরে শেষ প্রত‍্যাশাটাও ধরে রাখতে অক্ষম হলাম। হায়রে জীবন! সংসারের স্বপ্নও একদিন বিসর্জন দিলাম। এরপর অবশিষ্ট আর কিছুই রইল না। সেই আমাদের একসাথে করা শপথ কালের গহ্বরে বিলিন হয়ে গেল। তারপর, জয়ী হলো বুনো ক্রোধ আর হেরে গেল ভালোবাসা, বিসর্জিত হয়ে গেল সম্পর্ক।

ভাগ‍্যের বিড়ম্বনায় তোমায় পাওয়া হয়ে ওঠেনি। জীবনের সেই মধ‍্যপ্রহরেও আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেয়েছিলাম। তারপর থেকে প্রাণহীন আমিটা নিশ্চল পাথরের মতো হয়ে গেলাম। আমার বেঁচে থাকাটা বেঁচে থাকাই ছিল না। যে বেঁচে থাকায় তুমি পাশে নেই, সেই বেঁচে থাকা কী করে বেঁচে থাকা হয় বলো? কিন্তু সব প্রাণীর ভেতরেই বেঁচে থাকার আকুলতা থাকে। তোমার মুখের একটু কথা শোনার জন‍্য অব‍্যক্ত আকুতিতে তৃষ্ণার্ত চাতকের মতো ছটফট করেও আনুতাপ আত্মগ্লানি আর অভিমানের জমাট দেয়ালে থমকে গিয়েছি। তোমার জন‍্য অপেক্ষমান হৃদযন্ত্রে বেজে উঠেছে মন্দিরের ঘন্টার মতো কাতর রুগ্ন রাগীনি। আমার শ্বাসপ্রশ্বাস রক্তবিন্দু শিরা উপশিরা হৃদপিন্ড আমাকে নিস্তার দেয়নি। সারাজীবনের সঞ্চিত সব ভালোবাসা অবাধ‍্য হয়ে তোমার দিকে তীরের মতো বর্ষিত হতে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল। অবাধ‍্য সেই ভালোবাসার বিদ্রোহকে সামলাতে আমাকে আরও ভয়ানক কঠোর বিদ্রোহী হতে হয়েছিল। একটা অলিখিত উপন‍্যাসের আবর্তনে লুকিয়ে ছিল সহস্রব‍্যাথার ব‍্যঞ্জন, যা সবার অগোচরেই থেকে গেছে। নয়নও চৌকাঠে তোমার নামে মহাসাগর রচনা করেছি। কেউ কখনও দেখেনি বেহিসেবী কান্নার অশ্রুস্রোতে থৈ থৈ করা সেই এক চিলতে উঠোন।

একজীবনে আমার না হওয়া সংসারটা আমাকে খুব করে দগ্ধে দগ্ধে ঝলসাতো। বেদনার ঘূর্ণিপাকে হাহাকার আর আক্ষেপে আমি রোজ মরে গেছি আবার জীবিত হয়েছি পরেরদিন মরব বলে। জীবিত হওয়া আর মরে যাবার খেলার মানে বুঝো তুমি? মাঝরাতে পাশ ফিরতে গিয়ে ঘুম ভেঙে যাবার পরে আর ঘুম না আসার মানে বুঝো তুমি? জানি বুঝো না, বুঝবার কথাও না। তোমাকে একটু ছুঁয়ে দেখার আকুতিতে অন্তর্দহন আমাকে গ্রাস করেছে। সবাই বলে, দিনে দিনে ক্ষত শুকায় অথচ আমার বুকের কোণে ক্ষত বেড়েছে দিনে দিনে। তোমার বুকে মুখ লুকিয়ে হয়নি তোমাকে একটু ছুঁয়ে দেখা। শূন্য জীবনের শূন্য খাতায় শূন্য এই অন্তঃকরণে রয়ে গেছে শুধু শূন‍্যতার এক বিশাল সুড়ঙ্গ। বিধাতার কাছে কত হিসেব নিকেস রয়ে গেছে অথচ আমার বিদায় ঘন্টা বাজতে চলেছে। আমি তোমার পথ চেয়ে জীবনের সব সময় পার করে দিয়েছি। তুমি আসোনি প্রিয় অসুখ, তবে প্রাণঘাতী অসুখ ঠিকই এসেছে আমাকে নিতে। এতদিনে আমি আমার নিজের বাড়িতে যেতে চলেছি। আদৌ কী ওটা আমার নিজের বাড়ি হবে? নারীদের কোনো নিজের বাড়ি থাকে না। এরা বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে যায় তারপর বাকী জীবন কাটায় ছেলের বাড়িতে। অবশেষে চলে যায় আল্লাহর বাড়িতে। আর যারা আমার মতো সৌভাগ‍্য নিয়ে পৃথিবীতে পুড়তে আসে তাদের মরণের আগে বিশেষ একটা বাড়ি থাকে। যার নাম বৃদ্ধাশ্রম। যাযাবর এই জীবনে আমার যে নিজের একটা ঘর হলো না, সংসার হলো না। বিধাতা আমার এই প্রাপ্তির হিসেব কেন দিলেন না তা বলতে পারো?

সব শেষ হবার পরেও প্রিয় অসুখ তোমাকে খুব করে চেয়েছিলাম। পাজরের ভেতরে লুকিয়ে রেখে অনুভব করতে চেয়েছিলাম। ঘুমের ঘোরে অচেতনতায় পাশ ফিরে তোমাকেই চেয়েছিলাম। দিন শেষে তোমার সুবিশাল লোমশ ভরসার বুকটা চেয়েছিলাম। যেখানে কোনো এককালে আমার ঘরবসতি ছিল, ছিল একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়। যে বুকে মাথা রেখে ব‍্যর্থতার সব গল্প করা যায়। ভালোবাসা শূন‍্যতায় রুগ্ন হৃদয়ে আমার হাতের তালুতে তোমার অধরের ছোঁয়া চেয়েছিলাম। আমি তোমাকে চেয়েছিলাম প্রিয় অসুখ, বারংবার ঘুরেফিরে শুধু তোমাকেই চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম, সুখের চেয়েও বড় অসুখ হয়ে বসতি গড়ো আমার পাজরে, মিশিয়ে দাও তোমার নির্যাস আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে। আমি তরুণী থেকে বৃদ্ধা হয়ে গেলাম কিন্তু তুমি আসবে বলেও এলে না প্রিয় অসুখ। তুমি একবার আসিও, আমার মৃত‍্যুর পরে নিশ্চল এই আমিটাকে ময়নাতদন্ত করে দেখিও। নিশ্চিত আমার অন্তর্দেশে দেখতে পাবে, সব স্বপ্ন বিসর্জন দিয়েও মনের কোণে একটা অলিখিত চাওয়া আজও রয়ে গেছে, “তুমি, আমি, ছোট্ট একটা ঘর আর ঘরভরা ভালোবাসা।”

ইতি-
রাধিকা

লেখা:মার্জিয়া সুলতানা নাবিহা – প্রিয় আমার হিয়া

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং:২
লেখা:মার্জিয়া সুলতানা নাবিহা
প্রিয় আমার হিয়া,
তুমি যাকে পাওয়ার জন্য এতো আত্মত্যাগ দিচ্ছ,সে কিন্তু দিব্যি আরামে আছে।এই যে রোজ রাতে তাকে চোখে নিয়ে একটি আরামের ঘুম দিতে এত টানে তোমাকে।কৈ তার হিয়া তো আমাকে চোখে নিয়ে ঘুমাতে চায় না? বিশ্বাস কর আমি বিরক্ত এক‌ই সাথে হতাশ তোমার উপর। এই যে সে যখন টিয়া রঙের টি-শার্ট টি পরে যখন আমাকে পাশ কাটিয়ে যায় তখন তোমার এতো আদর করে “টিয়া পাখি” বলে ডাকতে ইচ্ছে করে কেন?এই! তুমি এত বেহায়া আর সাহসী কেন? সেখানে আমি যে পুরো উল্টো।আর এত বেশি তাকে ভাবো কেন?তাই তো সে মাথায় চরে বসছে।একটু কম ভাবো তাঁকে তাহলে সে আর মাথায় চরে বসবে না। আবার পুরোপুরি ভাবা বন্ধ করে দিয়ো না তাহলে তো আমার ক্ষতি হবে।যাই হোক তাঁকে এই ভালোবাসার কথা জানানোর ভুল করনা। এটা আমার অনুরোধ নয় আদেশ
ইতি,
তোমার একমাত্র মালিক।

প্রিয় গর্ভধারিণী – Mohotamim Mim

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
লেখাঃ মহতামীম হাসান মীম

চিঠিপত্র নংঃ ১

প্রিয় গর্ভধারিণী,

আমার সালাম নিও। তুমি কেমন আছো? প্রার্থনা করি আল্লাহ তায়ালা যেন তোমায় সবসময় ভালো রাখেন। সারাদিন কাজকর্ম করে এখন ক্লান্ত তুমি,তাই না? তবুও নিশ্চয়ই কষ্ট করে ঘুমজড়ানো চোখজোড়া খুলে টেবিল ল্যাম্পটার পাশে বসে চিঠিটা পড়ছো তুমি।

তোমায় কখনো বলা হয়নি,” তুমি আসলে কে?”

দশমাস গর্ভে ধরে হাড়ভাঙা প্রসব বেদনা সহ্য করে আমায় এই পৃথিবীর আলো দেখিয়েছো তুমি। অস্পষ্ট মুখের ভাষায় ‘মা’ ডাকটা শিখিয়েছো তুমি। টলমল পা দুটোকে সামনে হাটা শেখাতে আমার তর্জনীটা নিজের মুঠোয় ধরেছিলে তুমি। নিরানব্বই ডিগ্রি ফারেনহাইট জ্বর আসলেই বুকে টেনে নিয়েছো, কাটিয়েছো কতো বিনিদ্র রাত আমার শিয়রে তখন।
যৌথ পরিবারটার শত কাজের ভিড়েও আমায় সময় দিয়েছো।ক্ষুধার জ্বালা কখনো অনুভব করার সুযোগ হয়ে ওঠেনি তোমার কারণে। খেলার ছলে শিখিয়েছো আমায় “অ,আ”।
তোমার কন্ঠে চাঁদমামার গান শুনে চোখের পাতা নেমেছে আমার। ছড়া-কবিতার ছলে আমার মুখে ভাত তুলে দেওয়া, শত অভাবের মধ্যেও আমার বাইনা করা ঝুনঝুনিটি কিনে দেওয়া -তুমি এগুলোতেই আনন্দ পেতে, তাই না?

হোস্টেলে আসার পথটা দীর্ঘ আর এই দীর্ঘ পথই তোমার আসল পরিচয়টা আমার সামনে তুলে ধরেছে।

তোমার পায়ের গোড়ালির তীব্র ব্যাথা নিয়েও তুমি ফাইফরমাশ খাটো,তাই না? ওষুধটাতো টেবিলেই রেখে এসেছিলাম।খেয়েছো কি সেটা?

তোমার পছন্দের দুধচা নিশ্চয়ই এখন আর একবেলাও খাওয়া হয়ে ওঠে না? আমার সাথে বারান্দায় বেতের চেয়ারে বসে চায়ের কাপে চুমুক না দিলে তোমার তো আবার তৃপ্তি হয় না।

তোমার জন্য পাঠানো লাল পাড়ের শাড়িটা কি পরেছিলে? শাড়িটা পরো দয়া করে।ফিরে এসে যেন ঐ শাড়ির আঁচলে লুকোতে পারি সেই আগের মতোন। তোমার কোলে মাথাটা রেখে একটা রাত জেগে কাটাতে চায়। তোমার পাটা মালিশ করে দিতে চায়। তোমার ঐ পায়ের তলায়ই তো বেহেশত,তাই না?

“তুমি কি জানো তুমি আসলে কে? ”
তুমি আসলে একজন যোদ্ধা। যার পদবীটা “মা”। এই কঠিন দুনিয়ার প্রতিটি মুহূর্তে তুমি ঢাল-তলোয়ার হাতে আমায় রক্ষা করে গেছো। প্রতিকূলতাকে ছাপিয়ে এগিয়ে যাওয়াটা হাত ধরে শিখিয়েছো তুমি। কষ্টটাকে আড়ালে রেখে তুচ্ছ জিনিসে খুশি খুঁজে নাও তুমি। আমার কি মনে হয় জানো,মহান আল্লাহ ‘মা’ নামক এই যোদ্ধাকে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে তৈরি করেছেন।

তোমার নরম হাতটা আমার মাথায় বুলিয়ে দেবে কি,মা?
তোমার হাতটা যে আমি আবার ধরতে চায়।তোমার বুকে মাথা গুঁজতে চায়।তোমার মাতৃস্নেহের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে চায়। তোমায় খুশিতে ভরিয়ে দিতে চায়।

মা,তুমি ভালো থাকলেই আমি ভালো থাকি। দিনশেষে একটু বিশ্রাম নিও। পায়ের ব্যাথা বাড়লে একটু কষ্ট করে ওষুধটা খেও প্লিজ। তোমায় আগে কখনো বলিনি।তবে আজ বলছি,” তোমায় অনেকটা ভালোবাসি,গর্ভধারিণী!”

ইতি
তোমার আদুরে কন্যা,
মীম।

প্রিয় আপু – Mãîshå Zāfrêëñ

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং- ০১

প্রিয় আপু,

নির্ঘুম দীর্ঘ প্রহর কেটে পার হয় রাত,
ঘোর অমানিশা ফুঁড়ে প্রত্যুদ্গমন করে সোনালী প্রভাত।
খরতাপী গ্রীষ্মের পরেই তো হয় বর্ষার আগমন,
হাড়কাঁপুনি শীত সয়েই আসে ঋতুরানী বসন্ত যেমন।

তোমার অবনীঘিরে সুখবৃষ্টি হোক বর্ষিত,
নন্দদের ঢল বারি স্রোতে কষ্টেরা হোক আকুঞ্চিত।
নবদিগন্তের প্রস্ফুটিত ঐ আলোকরশ্মি যেন না হয়,
তোমার সন্ধ্যাকাশের মলিন বিষন্ন লালিমাময়।

উদ্ভাসিত সত্যালোক তার চিরায়ত হাতছানি দিক তোমার পানে,
অনুপস্থিত শুভাকাঙ্ক্ষী তাই কবিতা লেখে তোমার শানে।

শত শিউলী সুবাসের মোহনীয় শুভ্র ভালবাসার শুভ কামনা তোমার প্রতি,
পুষ্পগুচ্ছের গাঁথুনির নির্মল কাব্যমালা তোমার শুভকাঙ্ক্ষায় প্রিয়,
যুগান্তরের প্রজ্বলিত দ্বীপ আলোকময় করুক তোমার বর্ষপঞ্জি,
পবিত্র ভালবাসার চির প্রত্যয়ে শান্তিনীড়ের পথচলা হোক সুখময়।

বাঁধনের সুতোয় স্মৃতির গহ্বরে গেঁথে রেখো নামটি আমার;
হে প্রিয় বোন! তোমার সুপ্ত স্বপ্নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নবযাত্রার এক নিরব দর্শনার্থীর এ অভিপ্রায়।

ইতি________ শুভাকাঙ্ক্ষী ছোট বোন।

[আমার এক কাজিনকে উদ্দেশ্য করে আজকে চিঠিটা পাঠিয়েছিলাম। আজকে ওর বিয়ে, এর আগে যখন ডিভোর্স হয়; খুব কষ্ট পেয়েছিল মেয়েটা। গর্ভধারণকৃত ছেলেটার বিচ্ছেদ, অবহেলা আর নির্যাতনের স্টিম রোলারে পিষ্ট হওয়া মনটাতে আজ অনেকদিন পর আনন্দের শীতল হাওয়া বহমান। চিঠিটি তার কাছে হয়ত পৌঁছে গেছে, আমি দোয়া করি সে যেন সুখী হয়।]

প্রিয় মৌ – Setu Kumar Acharjee

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-০১

প্রিয় মৌ,
কেমন আছিস দাদু।আশা করি ভালোই আছিস।হয়ত আমাকে বাড়ি থেকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসার জন্য তোর মন খারাপ।মন খারাপ করিস নারে দাদু।আমিও যে তোদের ছাড়া ভালো থাকতে পারি না।তারপরও ভালো থাকার অভিনয় করে যেতে হয়।আচ্ছা তোর বাবা কেমন আছে?ভালো আছে তো আমার ছেলেটা?।জানিস আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে ও হয়ত বাহ্যিক দিক দিয়ে ভালো আছে কিন্তু আমি জানি ও কখনো আমাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারে না।আচ্ছা তুইই বল নিজের প্রানটা যদি নিজের থেকে দূরে থাকে তবে কেউ কি ভালো থাকতে পারে।আমি যে একসময় ওর বলতে গেলে প্রানই ছিলাম রে।হয়ত এখন আর নেই।
আচ্ছা তোর মা কেমন আছে রে? তুই কি এখনো মায়ের উপর রাগ করে আছিস?শোন,রাগ করে থাকিস নারে বোন।মায়ের উপর কখনো যে রাগ করতে নেই।মা যে অমূল্য সম্পদ।মা কখনো খারাপ হয় না।সবসময় মায়ের সেবা করিস।
আমার পাগল ছেলেটা কি তোকে এখনো মা ডাকে।জানিস এই ডাকটার উপর একসময় আমার অনেক লোভ ছিলো।দশ বছর সাধনার পরে যে আমি আমার সেই অমূল্য ধনটাকে পেয়েছিলাম।তার মুখে যেদিন প্রথম মা ডাক শুনেছি সেদিন মনে হয়েছিল আমি যেন স্বর্গ সুখ অনুভব করছি।এই ডাকটার যে অনেক ক্ষমতা।এই ডাক শুনতে না পারলে কোন নারীরই যে নারী জীবন স্বার্থক হয় না।কেউ হয়ত সহজে শুনতে পারে কেউ হয়ত সহজে পারে না।আহা কতদিন যে তার মুখে এই মা ডাক শুনি না।একসময় সকলে বলতো আমার ছেলের কারনে আমি জীবনে অনেক সুখ পাব।আসলেই সেই সুখই তো এখন আমি পাচ্ছি এই বৃদ্ধাশ্রম নামক এক অলিখিত কারাগারের পঞ্চাশ ফুট রুমের মধ্যে আবদ্ধ থেকে।
জানিস দিদি তোর বাবা কখনো নিজের হাতে ভাত খেতো না।আমার হাতে না খেলে নাকি তার তৃপ্তি হয় না।এখন হয়তো তার তৃপ্তির জন্য আমার হাতে খাওয়ার প্রয়োজন নেই।কিন্তু তাকে নিজের হাতে খাওয়াতে না পারলে যে আমি এখনো যে তৃপ্তি ভরে খেতে পারি না।দরকার নেই আমার তৃপ্তি ভরে খাওয়ার। তুই অন্তত মা হয়ে আমার ছেলেটাকে দেখিস তার খেয়াল নিস।
আমার শরীরটা ইদানিং তেমন ভালো যাচ্ছে না।একা একা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই যে ভালো।কিন্তু আমার যে কই মাছের প্রাণ। হয়ত এবারও মরব না।তারাতারি মরতে পারলে অনেক শান্তি পেতাম।কিন্তু আমার কপালে হয়ত তা নেই।
যাক অনেক কথাই বললাম।আজ আর না।তোরা সবাই ভালো থাকিস।আর আমার ছেলেটাকে দেখে রাখিস।আমার চিন্তা করিস।আমি মারা যাওয়ার আগে পারলে একবার আমাকে দেখে যাস।তাহলে আমি মরেও শান্তি পাব।
ইতি
তোর দিদিমা

প্রিয় রাফু ভাইয়া – ইনায়াত হাসান ইনায়া

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং: ছয়

প্রিয় রাফু ভাইয়া,

তুই সবার রাফি ভাই ঠিক আছে কিন্তু আমার কাছে রাফু ভাইয়া ডাকটাই বেশি প্রিয়।
তুই যে ঠিক কিভাবে আমার এতো প্রিয় হয়ে উঠলি আমি বুঝতেই পারলাম না ভাইয়া। তোর দুষ্টুমি, বেশি বেশি বলা অপ্রয়োজনীয় কথা আর মাঝে মাঝে হঠাৎ করে তোর গম্ভীর হয়ে যাওয়া এগুলোই হয়তো আমার কাছে তোকে এতোটা প্রিয় বানিয়ে তুলেছে…

তোর মিষ্টি মিষ্টি আবদার, অভিযোগ আর শাসনগুলোর জন্যই হয়তো তোকে এতো ভালো লাগে।
“তোকে ‘ভাইয়া’ বলে ডাকা আবার সাথে ‘তুই’ বলে সম্বোধনের আবদার আমার কাছে তোকে আরও বেশি আপন করে তুলেছে।”

তোর কাছে হ্যাল্প না চেয়ে ক্লাসের অন্য কারো কাছে হ্যাল্প চাইলে তোর করা মিষ্টি অভিযোগগুলোর জন্যেই তুই আমার এতো আপন হয়ে উঠেছিস…

“তোর এই ভাইয়াটা কি ছিলোনা? আমি থাকতে তুই অন্য কারো কাছে সাহায্য চাইবি কেন রে আপু?”
তোর এসব মিষ্টি অভিযোগ গুলোর জন্যে তুই আমার এতো প্রিয় রে ভাইয়া।

“বতর্মান যুগের স্মার্ট মেয়েদের সাথে আমি একদমই বেমানান। ক্লাসের অন্যসব মেয়েদের প্রোফাইল যেমন টিশার্ট পরা, চুল ছাড়া মেকআপযুক্ত ছবিতে ভরপুর থাকে আমার প্রোফাইল টা তেমন না। কারণ আমি একটু অন্যরকম। এটা বোঝাতে গিয়ে পরিচয়ের শুরুতে আমি নিজেকে ব্যাকডেটেড এবং বর্তমান যুগের প্রতিবন্ধী বলেছিলাম। এই নিয়ে তোর কি রাগ…
আমাকে দিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রমিজ করালি যেন নিজেকে আর কখনোই এসব না বলি।”

কখনো ভুলে কিছু উল্টাপাল্টা বলে ফেললেই শুরু হয়ে যায় তোর শাসন। তোর সমাধান এক কথায়,
“থাবরামু ধইরা যদি আর এসব বলিস আপু, থাবরামু ধইরা যদি আর এমন ভাবিস!”

আমি ব্যস্ত থাকি বলে তোকে খুব কম সময় দেয়া হয়। তোর ম্যাসেজ এর আন্সার দিতে আমার লেট হয় বেশিরভাগ সময়ই। তাই তুই আমার নাম দিলি ‘অপেক্ষা আপু’। কারণ আমি নাকি তোকে বেশি অপেক্ষা করাই!
আমাদের ভাই-বোনের এতো মিল, এতো ভালো সম্পর্ক কিন্তু এখন অব্দি আমাদের সামনাসামনি দেখাই হলোনা।

যেই আমি কোনো ছেলেদের সাথে কথা বলিনা, বেশি মিশি না সেই আমার কেমন করে তোর সাথে এতো ভাব হয়ে গেলো বলতো ভাইয়া।কাউকে নিজের আপন ভাবা বা আপন মানুষ বানানো মানে অনেক বড় একটা দায়িত্ব কাঁধে নেয়া। তখন রেসপনসিবিলিটি অনেক বেড়ে যায়। তাই আমি কাউকে সহজে আপন বানাই না। কিন্তু তুই কিভাবে যেন আমার এতো আপন হয়ে গেলি।
লকডাউন টা শেষ হোক, ভার্সিটিতে ক্লাস শুরু হোক। ইনশাআল্লাহ্ আমরা অনেক মজা করবো ভাইয়া।

চিঠিটা হয়তো তোর কাছে পৌঁছাবোনা। কিন্তু এটা সত্যি যে তোর মতো ভাই পাওয়া অনেক ভাগ্যের ব্যাপার এবং তোকে ভাই হিসেবে পেয়ে আমি নিজেকে একজন সৌভাগ্যবতী বোন মনে করি।

ইতি
তোর ‘অপেক্ষা’ আপু

প্রিয় ঝিঁঝিপোকা – ZiAul MoStafa ZiSan

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#চিঠি_নং : ০১

প্রিয় ঝিঁঝিপোকা,
এখন দ্বিপ্রহরের শুরুই বটে, আমি তোমার মত সুরেলা কণ্ঠে গেয়ে আমার গলা ভেজার চেষ্টা করি, কিন্তু তা
সত্ত্বেও পারছি না। অথচ তুমি কি মায়াবী সুরে ডাকতে
পারো। তুমি কি জানো, তোমার সুর শুনা ছাড়া কখনো
আমি ঘুমাই না, বলতে পারো ঘুম আমার আসেই না।
আমি কি ভাবছি জানো, তোমার সাথে যদি রূপকথার
এক গান জুড়ে দিতে পারতাম! কিন্তু তা বোধহয় সম্ভব
নয়। আচ্ছা আমাদের মাঝে এত দেয়াল কেন? বলতে
পারবে?

আমারও না খুবই ইচ্ছে করে তোমার সাথে মিশে সুরে সুরে একাকার হয়ে যেতে, এটা শুধু ইচ্ছে না পাগলামি বা বড্ড ইচ্ছে বলতে পারো। বলছি, তুমি এ সুর কোথায়
পেলে? কোথায় পেলে তোমার সেই নীরব সুর!
আমি তুমিহীনতায় ভুগছি এই কয়েকটা দিন।

শুনো, একটা আবদার রাখবে?
তোমার সুরটা একদিনের জন্য আমায় দেবে?
আমি শুধু এক গান গেয়ে নিবো প্রেয়সীর জন্য।
মেয়েটি বড্ড বায়না ধরেছে ঝিঁঝিপোকার কন্ঠে গান শুনতে। কিন্তু আমি বললাম, ওরা তো শুধু ডাকতে
পারে, কিন্তু গাইতে পারে না। সে বলল, তুমি না বোকা!
যে ডাকতে পারে,সে গাইতে পারে।আমি তার কথা শুনে
অবাক হলাম খুব। এ মেয়েটি ঝিঁঝিপোকার সুরে মোহ
খুঁজে কেন? পরে বুঝলাম মেয়েটি ভীষণ রাতপ্রিয়।
সে হয়তো ঝিঁঝিঁপোকার মতো জেগে থাকত নিত্যদিন।

তবে আমি কি তার ব্যতিক্রম? কখনোই না। আমিও এ
আঁধারটাকে ভীষণ ভালোবাসি। ভীষণ প্রেমে পড়ে গেছি
প্রতিটি দ্বিপ্রহরের। আমার সঙ্গী এ ঝিঁঝিঁপোকাগুলোই।

আচ্ছা ছোট্ট চিঠি কি তোমার কাছে পৌঁছবে?
না ডাকপিয়নের অবহেলায় ডাকপোস্টেই এ নীল রঙের
চিঠি পড়ে থাকবে। একদিন সময় করে চিঠির উত্তরটা
পাঠিয়ে দিও প্রেয়সীর ঠিকানায়, তবে কোন এক নিশীথের অন্ধকারে।আমি না হয়, ততদিন অন্ধকারকে আঁকড়ে ধরে থাকি। চিঠির উত্তরে ওপরে লিখে দিও,

“অরুণিমা, সে এখন অন্ধকারকে বেশি ভালোবাসে”

ইতি,
জিয়াউল মোস্তফা জিসান

প্রিয় বাবা- Naima aktar

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নংঃ০১

প্রিয় বাবা,

জানি না তুমি কেমন আছো বাবা! তবুও জানি তুমি খুব ভালো থাকবে। আল্লাহ তোমাকে কষ্ট দিবেই না।তুমি তো কখনোও কারোর ক্ষতি করো নি বলো! আমি তোমাকে দেখতে পাই না কিন্তু তুমি তো আমাকে দেখতে পাও বলো তাহলে আমাকে এতিম করে কেন চলে গেলে? আব্বু, তুমি তো জানতে আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি। এরপরও ছেড়ে গেলে কেন? মুরুব্বিরা বলত ভালো মানুষ বেশি দিন বাঁচে না কিন্তু আমি তো চাইতাম আমার আব্বু আমার সাথে সারাটা জীবন কাটাক। জানো আব্বু,স্কুলে সবার বাবারা যখন তাদের সন্তানদের নিয়ে আসতে যায় তখন তোমাকে আমি বড্ড মিস করি।আমার সহপাঠীদের যাদের আব্বু আছে আমি না তাদের খুব হিংসে করি খুব।আমাকে যে আর কেউ মা বলে ডাকবে না পূরণ করবে না আমার হাজারো আবদার। আমার যে বাবার স্নেহ চাই তার আদর যে আমার খুব করে চাই। আসলে সব এই নিয়তি। আমরা যা চাই তা কখনো হয় এই না। আব্বু তোমাকে আমি বেশি দিন দেখি নি। কিন্তু আমাদের স্মৃতি গুলি খুবই সুন্দর। সবার ছোট বেলা কেমন কেঁটেছে জানি না কিন্তু আমার তোমার সাথে বড্ড ভালো কেটেছে।আব্বু তোমাকে নিয়ে তো লিখতে বসলে শেষ এই হবে না। চোখের পানি তো আর মানে না! কি করব আমি! আমি দোয়া করি অনেক দোয়া আল্লাহ যেনো তোমাকে জান্নাত বাসি করে আর আমার সাথে যেনো রোজ হাশরের ময়দানে তোমার দেখা হয়।

ইতি,
তোমার অভাগা মেয়ে

প্রিয় বন্ধু – Tamanna Akter

0

#গল্পপোকা_চিঠি _প্রতিযোগিতা-২০২০
চিঠি নং-২

প্রিয় বন্ধু,

শুধু বন্ধু বলে সম্বধন করায় রাগ করিস না। তুই তো জানিস তুই আমার কতটা জুড়ে।তোর সাথে তো প্রতিনিয়ত কথা হয়,ভালো মন্দ না হয় নাই জিজ্ঞেস করলাম।জানিস তো জীবনের ঘেরাকলে কথা হলেও তেমন ভাবে না সময়ের স্বল্পতায়।মহাশূন্য এই পৃথিবীতে বসবাসরত এই আমরাই আমাদের স্বার্থ রক্ষায় আজ আমরা গৃহবন্ধি।আমি জানি অসুস্থ এই পৃথিবীর সংকট কালে মনের দিক হতে সবাই অসুস্থ তেমনি তুই আর আমিও।জানিসতো আমরা পৃথিবীর নিয়মতান্ত্রিক নির্বাক প্রহরী,এই প্রহর কেটে গেলে আমরা আরেকটা প্রহর পাবো। আর আবারও ফিরে পাবো আমাদের ঝালমুড়ি ভাগাভাগি করে খাওয়া দিনগুলো,স্যারদের ক্লাসে লুকিয়ে ছোট্ট চিরকুট আদান-প্রদান। ভীষণ মিস করছি তুর জমানো হাবিজাবি কথা গুলো।

তবে যতই বলিস তুই তখনো আমাকে যতটা সাপোর্ট দিয়েছিলি এখনো দিয়ে যাচ্ছিস এতেই আমি খুশি, তুই আমার বেস্ট সাপোর্টার।সত্যি সেই প্রথম দিক থেকেই দিয়ে আসছিস, তবে আমার উপলব্ধি করতে দেরি হয়ে গেছে রে। জানিস তুকে এত জ্বালাই কেন, কারণ আমার মন খারাপ
থাকলে তুর সাথে কথা বললেই পরক্ষণেই ভালো হয়ে যায়।মাঝে মাঝে মনে হয় তুই মন ভালোর মন্ত্র জানিস,নাহলে কীভাবে পারিস আমার এই অনূভুতি শূন্য মন টাকে ভালো করতে।

তুই ভাবিস না আমি বাড়িয়ে বলছি, আমার বাড়িয়ে বলতে বয়ে গেছে।
ভাবছিস মিথ্যা বলছি তুকে খুশি করার জন্য, আমি বলব তুর ভাবনাটাই মিথ্যে।

হয়তো আমার অনূভুতি শূন্য মন নিয়ে তেমন ভালো ভাবে আমার জানুটার সাথে কাটানো মূহুর্ত গুলো ব্যক্ত করতে পারিনি। তুই নিজের মতো করে বুঝে নিস। আর শোন কখনো আমার প্রতি কষ্ট পেলে বলে দিস কথা বলা বন্ধ করার চিন্তা মাথায়ও আনিস না।

বলি তোর বিয়ের ঘটকালি টা আমি করবো মনে রাখিস,আর তুর মাকেও বলে দিস।
আর যদি রাজি না হস তাহলে তুর পা ভেঙ্গে বিয়ে দিবো, তবুও আমি ঘটকালি করব। আর আমার পাওনা সব চকলেট দিয়া দিবি।

পরিশেষে সর্বদা প্রভুর নিকট প্রার্থনা তুই সবসময় ভালো থাকিস।তুইওতো সর্বদা আমার ভালো থাকার চিন্তাটাই করিস।তুই সত্যি জলমলে প্রদীপ।তুকে সেরা সাপোর্টার হিসেবে পেয়ে আমি গর্বিত।

ইতি
তুর জানু

প্রিয় অভিমানী আমিরাহ্ – ইনায়াত হাসান ইনায়া

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং: পাচঁ

প্রিয় অভিমানী আমিরাহ্,

তোমাকে প্রিয় বলে সম্বোধন করেছি ঠিকই কিন্তু তুমি জানতে পারলে হয়তো এটা কখনোই সহ্য করবে না। সহ্য নাই বা করলে তাতে আমার কি! আমার তো কোনোরকম অধিকার বা অনুমতির প্রয়োজনই নেই। কারণ আমি জানি আমার এই জীবনে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় জিনিস তুমিই। তোমার মধ্যে দিয়ে আমি আমার নিজেকে খুঁজে পেয়েছি। তবে তাও আমি খুব শীঘ্রই তোমাকে ‘প্রিয়’ বলে সম্বোধনের অধিকার এবং অনুমতি দুটোই আদায় করে নেবো তোমার কাছ থেকে।
তোমার সব অভিমান আমি পাল্টে দেবো অনুরাগে। নিজেকে ঠিক তোমার যোগ্য করে গড়ে তুলবো।

আমার মতো অযোগ্য পাত্রের সাথে বিয়ে দেওয়ার যে অপরাধে তুমি তোমার প্রিয় বাবা এবং আমার প্রিয় শ্বশুরের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছো, সেই অপরাধ আমি মুছে দেবো।
আমি তোমার এতোটাই যোগ্য হয়ে উঠবো যে, তুমি তোমার বাবার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে সারাজীবন। শুধুমাত্র আমাকে তোমার জীবনসঙ্গী হিসেবে তোমার জীবনে এনে দেয়ার জন্যে। তুমি দেখে নিও একদিন ঠিক এমন হবে। আর সে একদিন টা খুব জলদিই আসবে।

জানো, খুব কষ্ট হয় আমার, খুব বেশি!
নিজের ভালোবাসার মানুষের ভালোবাসা না পাওয়া, তারউপর সবসময় তাকে নিজের চোখের সামনে দেখতে পেয়েও না দেখার অভিনয় করে যাওয়া। এককথায় অনুভূতি লুকিয়ে রাখা! এটা খুব কঠিন কাজ।
আমার মন চায় সবসময় তোমার সাথে কথা বলতে, গল্প করতে, চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকতে, তোমার মধ্যে ডুবে যেতে…” কিন্তু তোমার আর আমার সম্পর্কটা তো সেরকম না। ভয় হয় যদি তোমার কাছে আমার ভালোবাসা কে বেহায়াপনা মনে হয় তাই নিজের মনটাকে কন্ট্রোল করে রাখি।
তুমি ঘুমিয়ে যাওয়ার পর তোমাকে মন ভরে দেখি। আমার মনে অনেক কথা, ইচ্ছে হয় সব তোমাকে বলি। কিন্তু আমি আটকে যাই। ঐ যে আমি তোমার অযোগ্য, আমাদের সম্পর্কটা যে অন্যসব স্বামী-স্ত্রীদের মতো না। তাছাড়া তোমাকে এখন এই সময়ে পড়াশোনা থেকে ডিসট্র‍্যাক্ট করতে চাই না আমি। তোমার এডমিশন টেস্ট শেষ হোক আর আমিও নিজেকে একটু গুছিয়ে নেই। তারপর সব জানাবো তোমাকে।
“তোমার জন্য আমার ভালোবাসা, মাস্টার্স এ ভর্তি হওয়ার কথা, জুয়া খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথা, মন দিয়ে কাজ শুরু করার কথা… সব! এই সব কথা জানাবো তোমায়।”

জানো তোমার বাবার সাথে আমার প্রতিদিন কথা হয়। ওনি খুব ভালোবাসে তোমায়। কি ভাগ্য আমাদের জামাই আর শ্বশুরের! “একজনের নিজের মেয়েকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে হয় আর আরেকজনকে নিজের একমাত্র বউকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে হয়।”
জানো, প্রতিদিন আমার শ্বশুর সাহেবকে তোমাকে দেখতে সাহায্য করি আমি। রোজ তোমাকে ভিডিও কলে দেখাই আর নাহয় ছবি পাঠাই।

আমার ভালোবাসার আমিরাহ্, তোমার সাথে আমার যে পরিমাণ কথা জমে আছে সেসব লিখে শেষ করা যাবে না। তাই তুমি আমাকে তোমার যোগ্য স্বামী হিসেবে গ্রহণ করার পরই নাহয় এই সব কথার ঝুড়ি নিয়ে বসবো। তখনই নাহয় চোখে চোখে সব কথা হবে…

ইতি তোমার স্বামী
মেহরাব চৌধুরী মেহু