Monday, August 4, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1965



প্রিয় শূচি – Md shahariar kabir

0

আজ লিখবো তুমার কাছে.. চিঠি (০৭)

প্রিয় শূচি……..

আজ ইচ্ছে করছে কয়েক দিস্তা কাগজে তোমায়
একটা প্রেমের চিঠি লিখতে।হয়তো আমি কবি নয় তাই
কবিদের ভাষা না হোক আমার মনের ভাষায় লিখতে।
হৃদয়ের কথা গুলো তুমি মন দিয়ে পড়বে আর হারিয়ে
যাবে আমার ভালোবাসার গভীরে।আগে কখনো তোমায়
চিঠি লিখিনি,আজ লিখবো,আমার খুব ইচ্ছে, প্রেমের কথা এমন করে লিখবো,যা তোমার চোখে
পড়বে,আর তুমি তা পড়বে….(শূচি)
আমার শূচি,,
কেমন আছ তুমি?নিশ্চয় অনেক ভাল আছ,সুখেই আছ।তোমার সুখের পথে
আমি তো একমাত্র বাঁধা ছিলাম।এখন আমি নেই,নেই কোনো অস্তিত্ব কিংবা এমন কোনো স্মৃতি,যা তোমার সুখ স্বপ্নে হানা দিবে। আর তোমার”বাবু
জানি আমি কেমন আছি তা জানবার কোনো আগ্রহই নেই তোমার মাঝে।কখনো কখনো খুব অবাক হয় কেমন করে
এতটা অনুভূতি শূন্য হয়ে গেলে তুমি?জানি এখনও তুমি
সবার সাথে হাসো,হৃদয় দিয়ে সবাই কে ভালবাসো,এর মাঝে শুধু আমার প্রতি তোমার অনুভূতি শূন্যতা কেন?খুব কষ্ট লাগে।
শূচি,,তুমি কি জানো,মানুষ কেন একজন অন্য জন কে ভালবাসার কথা বলে,অনুভূতি দেখাতে কাছে আসে বা আসতে দেয়,তার পড় নিজের সুখের প্রয়োজনে সেই ভালবাসার মানুষকে বলে,
আমি জানিনা তোমায় ভালবাসি কি-না!
অথবা,,আমায় একা থাকতে দাও!
অথচ একবারও ভাবেনা,তাকে ভালবাসলো যে মানুষটি সে একা থাকতে চাই কি-না।
শূচি
ঠিক তুমি যেমনটা আমার সাথে করেছ।নিজেকে অনেক
বেশি সহজ সরল মনে করো,মানবিক গুনাবলী সম্পন্ন ভাব,অথচ ভালবাসি বলে ভালবাসার মানুষকে ময়লার মত ডাস্টবিন এ ফেলে
দেয়া,মানবিকতার কোন পর্যায়ে পড়ে সে ব্যাখ্যা কখনো দাওনি। শূচি জানো কি,
তোমার একটু প্রিয় হওয়ার জন্য,একটু তোমার ভালবাসা পাওয়ার জন্য কত না চেষ্টা করেছি,আর সেগুলো তোমার
কাছে সব সময় মূল্যহীন-ই থেকে গেছে।
শূচি একদিন রাত 12টাই দু’চোখে ঘুম আসছিলোনা,বার বার তোমায় দেখতে ইচ্ছে করছিল,তাই তোমার বাসার উদ্দেশে রাওয়ানা দিলাম,হঠাত্‍ আঝর ধরায় বৃষ্টি এলো
ভেবেছি বৃষ্টি দেখতে হয়তো বরান্দায় আসবে,কিন্ত তুমি আসোনি,পরে
তোমায় বলিনি হয়তো তুমি শুনলে রাগ করতে,যে আমি বৃষ্টিতে ভিজেছি,জানো সেদিন ঠান্ডায় আমি সাত দিন পড়ে বন্ধ ঘরের বিছানায়।
শূচি আমি কোনো কবি ছিলাম না তবুও তোমায় শুনাবো বলে লিখতাম তুমি শুনতে ভাল না লাগলেও বলতে ভাল লেগেছে,ভাল হয়নি আমি জানতাম,তবুও তোমার মুখে
ভাল কথা টা শুনে নিজেকে কবি কবি ভাবতাম।তবে কি জানো তুমি আমার সব কিছুতেই মিথ্যে দোষ দিতে,
কিন্ত মিথ্যে অপবাদ মানুষ কে অনেক বেশি কষ্ট দেই,আমি কষ্ট পেতাম কিন্ত সেগুলো মেনে নিতাম,ভাবতাম তুমি ভুল বুঝতে পেরে হয়তো তোমার হৃদয়ে জায়গা দিবে।
মনে পড়ে শূচি,,
একদিন তুমি বলেছিলে আমায় অনেক বেশি ভালোবাস, এটাই তোমার বড় দোষ।
কষ্ট যতটা না পেয়েছিলাম,তার
অনেক বেশি অবাক হয়েছিলাম তোমার মুখে কথাটা শুনে,অনেক বেশি অভিমান হয়েছিল তোমার উপর। কিন্ত রাগ করতে পারিনি,আজও পারিনা।আজও মনে হয়
আমি তোমার ভালবাসা পাবার যোগ্য নয়।আমার মত একটা অনাড়িকে কেনই বা ভালোবাসবে তুমি মুক্ত পাখি? শূচি।
তোমার সকল অভিযোগের মাঝে ছিল আমি স্বপ্নচারী মানুষ।হ্যাঁ আমি স্বপ্নচারী মানুষ ছিলাম।যখন আমি প্রথম বা
দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি,তখন থেকে এই অভ্যাসের শুরু। বয়স যখন বাড়তে থাকলো,তখন এই কল্পনা গুলো তে সিনামা নাটকের প্রেম ভালবাসার প্রভাব বিস্তার শুরু হলো।
নিজেকে বেশির ভাগ সময় দেবদাস ধরনের চরিত্র দিয়ে কল্পনার সিনেমা তৈরি করতাম।
শূচি,,আমার স্বপ্নের ভূবনে তুমি যে দিন এলে আমার সব কিছু দিয়ে তোমায় আপন
করে নিলাম,কিন্ত তুমি আমার সরলতাকে কাজে লাগিয়ে আমার নিঃস্ব করে,আমার গলায় ছুড়ি ধরে বলে দিলে স্বপ্নচারী মানুষেরা স্বপ্নেই সাথী হয়,বাস্তবে নয়।সময়ের পরিক্রমায় এখন আমি আর স্বপ্ন নিয়ে থাকিনা,অথচ আমি
বাস্তবেও নেই..শূচি,,
তুমি আমায় যতটা খারাব ভেবেছিলে,যতটা নষ্ট বেবেছিলে তত টা হয়তো আমি নষ্ট নয়।তুমি শুধু তোমার যুক্তিগুলো আমার সামনে হাজির করতে,অথচ আমার যুক্তি গুলো বিষ্লেশণ করার প্রয়োজন মনে করতেনা।শূচি…
তুমার কি রাগ হচ্ছে নাকি বিরক্ত হচ্ছো?
না কি আমার লিখা দেখে চোখ সরিয়ে নিবে?
শূচি চিঠিটা শুধু তোমার জন্য লিখা,হয়তো আর কখনো লিখতে পারবোনা।মিম,,তুমি কি জানো আমি কেন তোমায়
আমার জীবনে চেয়েছিলাম,ভেবেছিলে শুধু আমার জন্য না শূচি,আমার জন্য নয়,তোমার জন্যও নিজেকে তোমার সঙ্গে
জড়াতে চেয়েছিলাম।আমি তখনও তোমার সুখের কথা ভেবেছি,এখনো তোমার সুখের কথা ভাবি।তাই তোমার পথে না দাঁড়িয়ে,তোমায় চিঠি লিখছি,কেউ জানবেনা,শুধু শূচি আর বাবু জানবে। শূচি
জোস্না রাতে সবাই যখন ঘুমিয়ে যায়,আমি তখন ঐ দূরের
আকাশে তাকিয়ে ভাবতে থাকি তোমায়,মনে পড়ে যায়
আমাদের সম্পর্ক শুরুর দিন গুলোর কথা,ঈদ এর দিন
প্রথম তোমায় দেখেছিলাম,আর তোমায় দেখেই মনের
মাঝে অনুভব করলাম সারাটা জীবন যদি তোমার হাতে হাত রেখে সাথে সাথী করে চলতে পারতাম,তোমায় মনের কথা জানালাম,তুমিও তো হাসি মুখে গ্রহন করলে।এর পর দিন গুলো ছিল আমাদের স্বপ্নের মত,কিন্ত কিছু দিন পার হতেই তুমি জানালে আমায় ভালবাসনা,তত দিনে আমার যা কিছু ছিল তোমায় দিয়ে দিয়েছি।থাক আর সে কথা বলতে চাই না, ৫টি হয় কাঁদছি,চোখের জল ও শেষ
এখন শুধুই রক্তক্ষরন বাঁকী,আশা করি এতেও তুমি নিস্প্রভ থাকবে ঠিক আগের মত করেই।
আমার প্রিয় ভালবাসার শূচি,,
তুমি যখন যা বলেছ মেনে নিয়েছি,কখনো কোনো জোর
করিনি,আজ একটা অনুরোধ করবো রাখবে?
কাউকে ভালবাসার আগে অথবা কাউকে ভালবাসতে দেওয়ার আগে আর একটু ভেবে নিও?
আমার মত আর কাউকে কাছে আসতে দিয়ে পড়ে ময়লা
ভেবে ফেলে দিওনা নর্দামায়।আর ভালবাসা যদি সত্যিই
শুধু খেলা ভাবো তবে মনে রেখো সে খেলায় সব সময়
জিতা যায়না।কারন সবাই তোমার বাবু’র মত হবেনা শূচি।
মানুষ কে ভালবাসতে না জানলেও মানুষের মন টাকে শ্রদ্ধা করতে জেনো।
শূচি জানা নেই কেন গেলে কি ভুলে আমায় দূরে রাখছো,
তবে সব ভুলের ক্ষমা হয় হয়তো এমন ভুল করিনি যার
ক্ষমা হয় না।তবুও বলবো আমার এই চিঠি শুধু তোমার জন্য,
যদি পারো সব ভুলে সুখে থেকো
তুমি যে ভাবে সুখে থাকতে চেয়েছ নয়তো ফিরে এসো তখনি ভালবাসতাম আজও বাসি তাই আপন করে জড়িয়ে রাখবো হৃদয় ঘরে,শূচি এর জন্য বাবু তত দিন থাকবে যত দিন নিঃশ্বাস থাকবে,কারন শূচি শুধুই
বাবু’র………………………………….।

ইতি
তোমার বাবু…….

কেমন আছিস? – তানজিমা ইসলাম

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-০২

প্রিয়,

কেমন আছিস?কেমন ছিলি সেটা তো আমার জানাই আছে।জানিস ইদানীং আমি না জীবনের হিসেবটা কোনোভাবেই মিলাতে পারছি না।মেলাতে গেলেই কেমন করে জানি গড়বড় হয়ে যায়।জানি জানি!
আমার বয়সইবা হয়েছে কতটুকু যে জীবনের হিসাব মিলাচ্ছি আমি।এটাই তো বলবি তা না? জানি তো।কিন্তু কি করবো আমি বল! আজকাল আমার কেবল সময় আর সময়।সময় যেন আমার চারপাশে হাওরের পরিষ্কার পানির মতো থৈ থৈ করছে।

জানিস সেদিন আম্মু যখন আমার ছোটবেলার ফটোটা আমাকে দেখিয়েছিলেন ভেতর থেকে একটা কথায় বারবার বাজতে লাগলো।”শৈশবটাই ছিল না, ছবি দিয়ে আর কি হবে? লোক দেখানো মেকি স্মৃতিচারণ!”

সময়ের প্রবাহে আমরা বড় হতে লাগলাম।হারিয়ে যেতে লাগলো সেই সোনালী রোদ্দুরের দিনগুলো।আর বুঝতে শুরু করলাম যে কখনো ফেরা হবে না সেই ধানসিঁড়িটির তীরে,শঙ্খচিল কারাগারে!

ফিরতেও চায় না আমি আমার সেই শৈশবে।কারণ তখন যেমন ছিলাম,এখনও তেমন আছি।বরং এখন তো তখনের তুলনায় বেশ ভালোয় আছি।বুঝতে শিখেছি যে! তাই আর কারোর উপর অভিমান করে থাকি না;নিজের ভেতরে ক্ষোভ জমিয়ে রাখি না।
তবে আজকাল একটা উপসর্গ দেখা দিয়েছে___________

রাতের অন্ধকার যতই বাড়তে থাকে,
আবেগগুলো ঝড়তে থাকে।
দিনের আলো যতই ঝলমল করতে থাকে;
আবেগগুলো ততই হৃদয়ের পরতে লুকোতে থাকে!

কখনো পরিবারের কাছ থেকে আলাদা থাকতে চায় নি।কিন্তু আমাকে থাকতে হয়েছে আমার পরিবার ছেড়ে,চেনা মুখগুলোর মায়া ছাড়াতে হয়েছে দিনের পর দিন।বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।এতোটাই ক্লান্ত যে মুখে হাসি রাখতে রাখতে মুখ ব্যাথা করা শুরু করে দিয়েছে।
আজকাল নিজেকে বড্ড অচেনা মনে হয় রে আমার।মাঝে মাঝে চিন্তা করি আমি কতটা নির্লজ্জ কতটা বেহায়া হলে এতো কিছুর পরও আয়নায় নিজের সাথে নিজেকে মেলায়!

জানিস আমি নিজেকে অপরাজিত কেন বলি! কারণ দুঃখ নিয়েও যে মেয়ে হাসতে জানে সে একজন অপরাজিতা।

আচ্ছা, আমি কি আমাত্বেরই আমি’টাকে দিন দিন হারিয়ে ফেলছি?

ইতি
আমি এক শৈশব হারানো অপরাজিত কিশোরী।

কলমে: যারিন সুবাহ। প্রিয় আমার “প্রিয়” গল্প পোকা,

0

#গল্প_পোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

#চিঠি_নং_০৫

কলমে: যারিন সুবাহ।

প্রিয়
আমার “প্রিয়” গল্প পোকা,

প্রথমেই অসংখ্য কৃতজ্ঞতা এবং অবিরাম ভালোবাসা নিয়ে তোমায় জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। এখন বলো তো, কেমন আছো তুমি আমার গল্প পোকা? যদিও খুব ভালো থাকার কথা এতো বড় পরিবার সংগঠন করে! তবুও জিজ্ঞেস করলাম। এটা তো বাঞ্ছনীয়!
প্রিয় গল্প পোকা আমার, এবার আসি আমার তোমার কথায়। খুবই অল্প ক’দিনে তুমি আমার হৃদমাঝারে এক স্নিগ্ধ অনুভূতি নিয়ে বিরাজ করছো সে কী জানো? কী? এখবর কী আর রাখো নাকি!তুমি কী জানো! আমার এই নব লিখনী তোমাকে দিয়ে শুরু না হলেও তোমার মাঝে আমার লিখনীকে দাঁড় করাতে আমি যে কতোটা তড়পাই?
তোমার থেকে আমি পেয়েছি অনবদ্য ভালোবাসা, আমি বুঝেছি দু’টো বাক্য লিখলেও কতো মর্যাদা! তোমার এই প্রশস্ত জমিনে আমি নিয়েছি অনেক অনেক অজানা ভালোবাসা, অজানা অনুভূতি!
আজ আমি তোমার কাছে নতুন কোনো মেহমান হতে পারি। তবে তুমি কী জানো! আমি যদি আবারো এই সুযোগ পাই তোমার জন্যে কিছু লিখার, আমি যদি আবারো ফিরে পাই তোমাকে নিয়ে লিখার কিছু মুহূর্ত…..আমি হারিয়ে যেতে চাই তোমার আমার অনুভূতির সংমিশ্রণে!
আজ তোমার তরে আমার আগাম বার্তা পাঠাচ্ছি খুবই অল্প কিছু বাক্য পরিপূর্ণ করে। তবে একদিন আসবে যেদিন তোমায় নিয়ে আমার মনঝুড়ি থাকবে স্বয়ংপূর্না!
তোমার থেকে আমি অবিরাম ভালোবাসা নিয়েছি আরোও নিবো কিন্তু! তোমার জন্যে মন থেকে চাই আমি, এগিয়ে যাও আমার প্রিয় অনুভূতি! আমার প্রিয় গল্প পোকা!
অবিরত ভালোবাসা রইলো শুধু তোমার জন্যে!

‌ ইতি,
“তোমার জমিনে মিশে থাকা
নব সদস্য”

প্রিয় নেহাল – Orshiya Shohid Anu

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
~চিঠিঃ-০৫

প্রিয় নেহাল,

কেমন আছিস জিজ্ঞেস করে তোকে অপ্রস্তুত করবোনা আজ আর, তোর তো খারাপ থাকার কোনো কারণ নেই। আজ আমার কথা জানাতেই তোকে লিখতে বসেছি। লোকমুখে শুনেছি প্রথম প্রেম নাকি কখনো ভোলা যায়না, তাই বুঝি তোকে আজো ভুলতে পারলাম না? আচ্ছা, তোর কি মনে পড়ে আমাদের একসাথে কাটানো সেই দিনগুলোর কথা, নাকি সবই ভুলে গেছিস আজ?

যে তুই আমাকে নিজের চাইতেও বেশি ভালোবাসতিস, যার সবটা জুড়ে শুধুই আমি ছিলাম, সেই তুই কি করে পারলি বল আমার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিতে? যখন তোকে প্রশ্ন করেছিলাম-কেন এই বিচ্ছেদ ? তুই বলেছিলি-“আমার এই ছন্নছাড়া জীবনের সাথে তোকে বাঁধলে যে, তোর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে,আমি চাইনা আমার কারণে তোর বাকি জীবনটা অনিশ্চয়তায় ডুবে যাক।” কতো সহজ ছিল তোর কাছে কারণ টা নারে?আমাকে তুই একবার সুযোগ ও দিলিনা এইটা বলার যে,”আমি কি চাই, কিসে আমার খুশি?”

আমার থেকে নিজেকে এমনভাবে সরিয়ে নিলি তুই, আমি শত চেষ্টার পর ও আর তোকে খুঁজে পেলাম না। আচ্ছা তোর কেন মনে হয়েছিল,”যে মেয়েটা ছন্নছাড়া তোকে ভালোবাসতে পারে,সেই মেয়েটা ছন্নছাড়া তোর সাথে সারাজীবন সংসার করতে পারবেনা?” তুই বলিস আমাকে সুখী করতে তুই আমাকে ছেড়েছিলিস, জানিস তুই আমি এখন কতোখানি সুখী?

এখন আমি বিশাল সংসারের কর্তৃী, দুই সন্তানের জননী হয়েছি। ইঞ্জিনিয়ার স্বামী আমার,টাকা পয়সার কোন অভাব নেই, অভাব আছে তো শুধু একটাই তা হলো ভালোবাসার। কি ভাবছিস, আমার স্বামী আমাকে বুঝি কষ্ট দেয়? না রে মানুষটা আমাকে প্রচুর ভালোবাসে, কিন্তু আমি? আমি যে পারিনি তোর জায়গাটা অন্য কাউকে দিতে! আমি জানিনা,আমি প্রতিনিয়ত সবাইকে ঠকিয়ে চলেছি কিনা! আমি কি করতাম বলতে পারিস? আমার হৃদয়ের সবটা জুড়ে শুধু তোর বসত, সেখানে অন্য কেউ কোনদিন ঢুকতে পারবেনা। এতে যদি আমি স্বার্থপর,ঠকবাজ হয়ে থাকি তাহলে তাই,তবে আমার পক্ষে তোর জায়গাটা অন্য কাউকে দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই রে!

এই নিয়মমাফিক সংসার টিকিয়ে রাখতে, সামাজিক সম্পর্ক গুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে, আজ আমাকে হতে হয়েছে পারদর্শী অভিনেত্রী। তবুও এই এতো এতো ব্যস্ততার মাঝেও আমি এক মুহুর্তের জন্য তোকে ভুলতে পারিনি? কেন পারিনি তার কারণ আমার অজানা,আচ্ছা তোর কি জানা আছে? মাঝে মাঝে মনে হয় এইসব দায়িত্বের বাঁধা থেকে নিজেকে মুক্ত করে নেই, কিন্তু চাইলেই কি আর সব বাধা থেকে মুক্তি মেলে? আমার ও তেমনি মুক্তি পাওয়া হয়নি।

সুখে থাকতে, সুখে রাখতেই তো বিচ্ছেদ উপহার দিয়েছিলি তুই, তবে আজো সেই সুখকেই কেন খুঁজে পেলাম না বলতে পারিস ? জানিনা রে, কোনদিন সেই সুখ আমার কপালে জুটবে কিনা যে সুখের অযুহাতে তুই আমাকে পর করেছিস। আমার কথা না হয় বাদই দিলাম, আচ্ছা তুই নিজে কি পেরেছিস সুখী হতে? যতই তুই বলিস না কেন সুখে আছিস আমি জানি, আমাকে ছাড়া সুখী হওয়ার ক্ষমতা তোর নেই।

এর থেকে তো ভালো হতো যদি কুড়েঘরে থাকতাম, প্রকৃতির অন্তনীলে তোর সাথে আমাকে জড়িয়ে রাখতাম। অন্তত তোর স্পর্শে নিজেকে রাঙিয়ে সুখী মানুষের দলে নাম লেখাতে তো পারতাম! না হয় আধপেটা খেয়েই থাকতাম, সকল অভাবকে তোর ভালোবাসার পরশে এক নিমেষে হারিয়ে দিতাম। এমনটা কেন ভাবতে পারলি না তুই নেহাল? আমাকে আজীবন সুখে রাখতে গিয়ে আজ সুখকেই জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিস তুই। আকাশ জুড়ে যখন মেঘের ঘনঘটা বিচরণ করে, আমার অন্তরালের জমে থাকা মেঘগুলো থেকেও বৃষ্টিপাতের শুরু হয়। নিজেকে সবার থেকে লুকিয়ে রাখতে রাখতে আজ আমি যে বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।

মাথার নিচের বালিশটা হয়তো টের পায় আমি কতোটা দুর্বল হয়ে গেছি আজ। অথচ জানিস, সবাই বলে আমি নাকি ইমোশনলেস! কি করবো বল-সব ইমোশন কি দেখানো যায়? নিয়তির এই বুঝি চাওয়া ছিল, তাই তো সম্পর্কের এই সমীকরণ মেলাতে পারলাম না আমরা। তিলতিল করে এমন এক অতল গভীরে হারিয়ে যাচ্ছি আমি যেখান থেকে হয়তো একদিন খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিলীন হয়ে যাবো। আর যতদিন না তা হচ্ছে, ততদিন এই সাজানো গোছানো অভিনয় করেই কাটবে তোর-আমার জীবন।

কখনো কোনো একদিন হঠাৎ করেই হয়তো দেখা হয়ে যাবে রাস্তার মাঝে, চোখে চোখ পড়তেই অজানা আশঙ্কায় তা আপনা আপনিই সরে যাবে। তুই হেটে চলবি তোর গন্তব্যে আমিও বিপরীতে ধাবমান! সেদিন আর কেউ কাউকে পেছন ফিরে চেয়ে দেখবো না। জিজ্ঞেস করা হবেনা আর কেমন আছিস? সকল সম্বোধনের ইতি ঘটিয়ে চলমান পৃথিবীর বৃত্তে একটু একটু করে এগিয়ে যাবো দু’জন দু’জনের মতো!

যদি পুণর্জন্ম বলে কিছু থাকে তবে সেই জন্মে আমাকে নিজের করে নিস,প্লিজ! অন্তত সেই জন্মে তুই আমাকে সুখী করতে আমার থেকে নিজেকে আর দুরে সরিয়ে নিসনা!

ইতি
“তোর স্বর্ণলতা”

প্রিয় – Farhana yanmin

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগীতা_২০২০

প্রিয়,

তোমার নাকি চিঠি পড়তে ভালো লাগে? তাই আজ চিঠি দিলাম তোমায়! খুব কি ভালো আছো আমি বিহনে? আমি জানি, তুমি ঠিক ভালোভাবেই চালিয়ে নিচ্ছো আমাকে ছাড়া দিনগুলো। তবুও বড্ড জানতে ইচ্ছে করে, সত্যিই ভালো আছো তো আমায় ছাড়া?

আমি কিন্তু ভালো নেই! একদম ভালো নেই। আমার দিনগুলো ছোট আর রাতগুলো এতো বড় যে জেগে থাকতে থাকতে আমি বুড়ো হয়ে যাই। আমার ব্যস্ততার প্রহর এতো এতো দীর্ঘ যে বসে থাকতে থাকতে আমার চব্বিশ ঘন্টা আটচল্লিশ ঘন্টা হয়ে যায়। তোমাকে ভুলে থাকার আপ্রান চেষ্টা তোমায় আরো বেশি করে মনে করিয়ে দেয়।

প্রিয়, তবুও বলবো, আমার চোখের নোনাজলে যতি তুমি শান্তি পাও তবে তাই হোক। ঝরুক আমার চোখের জল। ভিজে যাক বুকের কাপড় কিংবা শাড়ীর আচল। তবুও তুমি ভালো থেকো। আমার হৃদয় ভাঙায় যদি তোমার স্বস্তি হয় তবে তাই হোক! বুক পাঁজরের হাড়গুলো সব দুঃখের আঘাতে চুরমার হোক। তবুও তুমি ভালো থেকো।

আমি তো কখনো তোমায় বলিনি আমায় ভালোবাসতেই হবে? শুধু চেয়েছিলাম আমার প্রচন্ড অস্থিরতার সময়গুলোতে তুমি আমার পাশে থাকো। বন্ধু হয়ে না হয় শুধুই শুভানুধ্যায়ী হয়ে। তবুও আামর পাশে থাকো। কিন্তু তুমি বুঝলে না। আমার বাড়ানো হাত তুমি ধরলে না। একটাবার শান্তনাও দিলে না। বললে না যে, আমি আছি তো?

আমিও সামলে নিলাম! অনেক ব্যাথা অনেক যন্ত্রণা সয়ে, আমিও আজ সামলে নিতে শিখে গেছি। নিজেকে বেশ আড়াল করতে শিখে গেছি। আমি আবারও হাসতে শিখে গেছি। যে হাসির আড়ালে কান্না লুকিয়ে থাকে।

তবুও আমি চাই তুমি ভালো থেকো। আমার দীর্ঘ শ্বাস গুলো যেন তোমাকে না ছোয়। আমার ব্যাথাগুলো, কষ্ট গুলো যেন তোমায় স্পর্শ না করে।

তুমি ভালো থেকো আমার কথা ছাড়া, আমার বেসুরো গলার গান ছাড়া,আমার অহেতুক অভিযোগ ছাড়া, কারন অকারন ঝগড়া ছাড়া।
তুমি ভালো থেকো, খুব ভালো থেকো।

ইতি
তোমার খুব অপ্রিয় একজন।

©Farhana_Yesmin

প্রিয় ভাইয়া – saima Islam tamanna

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-৫

প্রিয় ভাইয়া,

ভাইয়া তুমি কি ভালো আছো? কখনো জিজ্ঞেস করা হয় নি। তোমার উপরই তো সংসারের সকল বোঝা এসে পড়েছে। আর পড়বে না-ই বা কেন? তুমি ছাড়া আমাদের আর কে ই বা আছে। বাবা মারা যাওয়ার পর তুমিই ছিলে আমাদের একমাত্র অবলম্বন। আমাদের চাওয়া পাওয়া সব ই তো ছিলো তোমার টাকার উপর নির্ভর। তুমি মাঝে মাঝে অসুস্থ হলেও কেউ খোঁজ নিতো না। তুমি কত দিন এই অসুস্থ শরীর নিয়ে কাজ করছো তার হিসাব নেই। থাকবেই বা কিভাবে? তুমি কি একবারও বলতে তোমার অসুখের কথা? বলতে না। চুপটি করে থাকতে। আর গুটি কতেক নাম জানা ওষুধ খেয়ে নিতে। যখন মাত্রা অতিরিক্ত অসুস্থ হও। তখনই আমাদের জানান দাও যে, আমি অসুস্থ। তোমার মুখখানির দিকে কখনো তাকানো সাহস হয় নি আমার। তোমায় যে বড্ড ভয় পাই ছোটবেলা থেকে। তুমি কখনো মারো নি। তারপরও এই ভয়টা কোথা থেকে এলো জানি না। তাই তোমার চোখের দিকে তাকাই নি। যখন ঘুমাতে তখন আমি দেখতাম আমার ভাইটিকে। কতোটা নিষ্পাপ যে লাগে তোমায় ভাইয়া। ভাইয়া জানো,তোমার সাথে আমার অনেক কথা বলতে ইচ্ছা করে। কিন্তু বলা হয়ে উঠে না। ঐ যে বললাম,কোনো কারণ ছাড়ায় ভয় লাগে তাই। এই ভয়কে তো জয় করতেই হবে,তোমার সাথে কথা বলার জন্য। যত চাওয়া পাওয়া সবসময় মাকে দিয়েই জানিয়েছি। খালি আমরাই তোমার কাছে চেয়েছি। আজ আমি তোমায় কিছু দিবো ভাইয়া। কিন্তু দেওয়ার মতো তো কিছুই নেই আমার কাছে। কয়েকমাস ধরে টাকা জমিয়েছিলাম তোমার জন্মদিনের জন্য। তাই তোমার জন্মদিনে নিজের হাতে রান্না করে খাওয়াবো। এটাই থাকবে আমার থেকে তোমায় দেওয়া ছোট্ট উপহার। আজ এই চিঠিটা তুমি পড়বে। তোমায় নিয়ে লেখা আমার প্রথম চিঠি। শুধু এইটুকুই উত্তর চাই, কেমন আছো ভাইয়া?

ইতি
তোমার তাম্মু

প্রিয় অপূর্ণা – Mohotamim Mim

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
লেখাঃ মহতামীম হাসান মীম

চিঠি নংঃ ২

প্রিয় অপূর্ণা,

কেমন আছো তুমি? তুমি কি জানো, তোমাকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম সেদিন আমার এই ডেড বডিটাতে আমি হার্টবিট ফিরে পেয়েছিলাম। তোমাকে একপলক দেখবার জন্য সবসময় মনের ভেতরটা হাসফাস করতো মনে হতো দৌড়ে গিয়ে তোমাকে আমার মনের ইসিজি রিপোর্টটা দেখায়।
মগজে তোমায় নিয়ে কতো শতো ভাবনার খেলা চলে তা তোমার ধারণাই নেই।সিটিস্ক্যানটা দেখাতে পারলে বড্ড ভালো হতো। তোমার সাথে যেদিন প্রথম কথা বলেছিলাম সেদিন আমার দু-একটা ছোটখাটো হার্ট অ্যাটাক তো হয়েছিলই।
তোমাকে প্রথম দেখায় আমার বডিতে প্রচন্ড একটা শক লেগেছিলো এটা ভেবে যে দুইশ ছয়টা হাড় দিয়ে গড়া একটা মেয়ে এতো সুন্দর কি করে হতে পারে। তোমার চোখজোড়া একেবারে টেস্টটিউবের কাঁচের মতো স্বচ্ছ আর লম্বা চুলগুলো এক্স-রে রিপোর্টের চেয়েও কালো। তোমার জোড়া ঠোঁটের মিষ্টি হাসিটা আমার বুকে ইঞ্জেকশনের মতো বিঁধেছিলো সেদিন।

তুমি আমার জীবনের প্রতিটা দুঃখে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে আমার ক্ষতগুলোকে ভরিয়ে দিয়েছো। তুমি “হানিকল” কফ সিরাপের চেয়েও মিষ্টি, নাপা এক্সটার মতো ব্যাথানাশকারী,এন্টাসিডের মতো জ্বালা প্রশমনকারী।

তুমি আমার কাছে বায়োলজি বইয়ের চেয়েও বেশি প্রিয়।আমার স্টেথোস্কোপটির মতো তোমাকেও আমি সবসময় নিজের করে রাখতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমিতো চলে গেলে বহুদূর। বাইনোকুলার দিয়েও তোমার আর দেখা পেলাম না আমি।

নামটার মতোই ভালোবাসাটাও অপূর্ণ রেখে চলে গেলে তুমি। আমার হার্টটা কাঁচের ন্যায় টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে রইলো। তুমিতো ফিরে আসতেই পারতে,জোড়া লাগাতেই পারতে আমার মনটাকে।
আমায় ছেড়ে পরপারে যাওয়াটা কি খুব জরুরী ছিলো? জানো, অপারেশন থিয়াটারের লাল বাতিটার মতোই আমার মনেও লাল বাতি জ্বলছে।সেখানে কারো যাওয়া নিষেধ কারণ তোমার স্মৃতিগুলো ফাস্ট এইড বক্সটাতে খুব যতনে রেখে দিয়েছি তো।

আমার কথা কি মনে পড়ে তোমার?যদি মনে পড়ে তাহলে তারা হয়ে থেকো এই ডাক্তারবাবুর সাথে সবসময়।

ইতি
তোমার মনের ডাক্তারবাবু।

প্রিয় মধুবালা – মাসুদ রানা তাসিন

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং : ২

প্রিয় মধুবালা,

কেমন আছিস তুই? কেমন কাটছে দিনগুলো? কেমন যাচ্ছে নতুন দিগন্তের সূচনায় সংসার জীবন?

মধুবালা একবারের জন্যও কি মনে হয়নি কেন ছেড়ে দিলাম তোকে? এই প্রশ্ন কি একবারও মনে আসেনি, আসেনি বিবেকের কাছে? হৃদয় মাঝে কি দেয়নি দোলা?

তোকে যখন ছেড়ে দিয়েছি, তখন হয়তো অনেকটা ভয় পেয়ে ছেড়ে দিয়েছি। কেনো জানিস? তুই ছাড়লে যদি খুব বেশি কষ্ট পাই। তাহলে তো প্রতিনিয়ত তোর ছেড়ে দেওয়ার যন্ত্রণা কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে। সেই বেদনা সহ্য করার ভয়ে তোকে ছেড়ে দিয়েছি।

আমার অবহেলায় খুব কষ্ট পেয়েছিস। সব দুঃখ মুখ বুঝে সহ্য করেছিস। জানতাম সব আমি, সেজন্য তো ছেড়ে দিয়েছি। যাতে সেই অবহেলা সহ্য করতে না হয় আমার।

সেদিনের সেই বকুল তলার কথাগুলো মনে পড়লে হাসি পায় এখন খুব‌। সেই দিনগুলো কলেজের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখা। মাঠের কোণায় বসে ফুচকা খাওয়া। কিংবা অভিমান করে দুই একদিন কথা না বলা। সেইদিন দিন গুলো যখন তুই আবার চাইলি ফিরে, আমি যে নিরুপায় বড্ড একঘেয়েমিতে ভরে গিয়েছিলাম যেন। সব আবদার পূরণ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি আর যেন। তাইতো তোকে ছেড়েই দিয়েছি।

মনে পড়ে রোদেলা দুপুরে আমার বুকে মাথা গুঁজে হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ার দিনগুলো। তখন তো স্বপ্ন সাজাতাম রোজ। ব্যালকনির কার্ণিশ বারান্দায় কালো, সাদা গোলাপের গাছ গুলো যেন আজো তার সাক্ষী হয়ে আছে। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন কোন অসুখে ধরলো আমায়। এ যেন আমার অন্য রুমালে মুখ মুছার অসুখ। তাইতো দিন থাকতে চলে গেলাম অন্য ডালে‌। তুইতো ছিলি বসে আমার আশায়। যখন তুই বারান্দায় আমার পথ চেয়ে, আমি তখন ক্লান্ত হয়ে চুমুক দিচ্ছি ব্ল্যাক কফিতে। সেই অসুখ এমন ভাবে বাঁধলো মনে তাইতো তোকে দিলাম ছেড়ে‌।

রোজ রাতে যখন দেওয়ালের ওপারে তুই আর এপাশে আমি‌‌। তখন আমার ভাঙা কাঁচের ঝনঝনানিতে ব্যস্ত হতিস তুই। কিন্তু আমার করা অবহেলায় থাকতিস সরে দূরে।‌ তাইতো হঠাৎ করেই ছেড়ে দিলাম তোকে।

তবুও হয়তো কিছু প্রশ্ন থেকে যেতেই পারে? কেনো জানিস? আমার তো আর অন্য কেউ ছিল না মনে‌। এই প্রশ্ন যদি করিস তবে তোকে মনে করিয়ে দিতে চাই। হুমায়ূন ফরিদী ও সুবর্না মোস্তফা দম্পতির কথা। সুবর্ণা মোস্তফাকে একবার প্রশ্ন করেছিল কেউ। এতো ভালোবাসা থাকতেও কেন সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন? তিনি প্রত্যুত্তরে বলেছিলেন যে আগে সম্পর্কের মাঝে বন্ধুত্ব, ঝগড়া, অভিমান ছিল। কিন্তু এখন আর সেটা নেই। তাইতো দূর থেকে দাঁড়িয়ে অটুট বন্ধুত্ব রাখি। এক সম্পর্কে না হয় বিচ্ছেদ করি।

মনে পড়ে শেষ কদিন তোর সাথে বোঝাপড়া ভালো ছিল না। তাইতো দূর থেকে ভালোবাসতেই তোকে ছেড়ে দিলাম মাঝপথে।

আমার বুকের পাঁজর ছিঁড়ে দিয়ে। তুই যাতে অন্য কারো বুকে মাথা রাখিস সেই জন্যে দিলাম ছেড়ে। আমি না হয় তোকে ভুলে কাটিয়ে দেই জীবন নামক গাছটির সাথে।

সেদিন রাস্তায় যখন হাঁটছিলি, মুখে হাসি ছিল অনবরত। সুখ সমুদ্রের পানিতে ডুবে সাঁতার কাটছিস বেশ। আমি না হয় ভ্যাপসা স্মৃতির দূরবীণে চোখ রাখবো। নিজের শরীরে আঘাত সহ্য করে।

তোকে ছেড়ে দিয়ে একবারের জন্যও ভাবিনি। হারলাম না জিতলাম শুধু ভেবেছি সময়ের সাথে সাথে কতো অবুঝ হয়েছে মনটা।

তবুও শেষ বেলা ফুরাবার আগে বলছি অবশেষে। ভালো থাকিস আমার এক টুকরো ভালোবাসা সঙ্গে করে। তোর ভালোবাসা আমার বুকের পাঁজর নামক জীবনীর আঁকে বাঁকে ঘুরে। হয়তো হবে না দেখা কোন এক কুয়াশাচ্ছন্ন রোদের ছায়ায় অনিমেষ হৃদয় ছুঁয়ে। তবুও ভালোবাসি তোকে তাইতো চাই ভালো থাকিস। ভালোবাসা ভালো থাকুক এই কামনা করে শেষ করছি আজ। হয়তো আমার কাছে থেকে এটাই শেষ স্মৃতি হবে তোর কাছে। কিছুক্ষণের মাঝেই যে বিদায় নেবো বসুন্ধরা নামক মায়ের বুক ছেড়ে। সুদূর জান্নাতের দরজাতে ক্যান্সার নামক ব্যাধির কাছে হেরে। ভালোবাসা মানে যে পেতেই হবে কাছে এমন কোন ইয়ত্তা নেই। ভালোবাসা ভালো থাকার মাঝে যে সুখ নিহিত।

ইতি,
তোর অপ্রিয়,
মাসুদ রানা তাসিন।

প্রেরক: সানজিদা তাসনীম রিতু – আমার সোনালী শৈশব,

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-৪
প্রেরক: সানজিদা তাসনীম রিতু

আমার সোনালী শৈশব,
এ্যালবামের পাতায় পাতায় বন্দি জীবন কাটছে কেমন তোমার? ভালো না নিশ্চয়? জানো আমিও ভালো নেই। তোমার কথা মনে হলেই কেমন যেন একটা ধূসর গল্পের জগৎ সামনে চলে আসে। নির্ভার, চিন্তাহীন একটা সময় ছিল। কত কীই–না করেছি আমি সে সময়! কত গল্প, কত দুষ্টুমি আর কত খেলা। তুমি যখন আমার সাথে মিশে ছিলে জীবনটা অদ্ভুত রঙীন ছিল। অসাধারণ চঞ্চল আর অদম্য ছিল। তোমাকে খুব মনে পড়ে আমার, মনে পড়ে সেই পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ে কুমির কুমির খেলা, মনে পড়ে উঠানের কাঁদার মধ্যে গড়াগড়ি করে বৃষ্টিবিলাস করা, মনে পড়ে তড়তড় করে গাছে উঠে ফল চুরি করে খাওয়া। তোমার হাত ধরে ধানের মাঠের আইল ধরে ঘুড়ি উড়িয়ে দল বেঁধে ছুটে বেড়ানোর সেই দিনগুলো এত দ্রুত কেন চলে গেল বলোতো? চিল্লিয়ে পাড়া মাতানোর সেই উদ্দমতা কোথায় যে হারিয়ে গেল! এক ঝাঁক শৈশবের সাথে আম বাগানের মধ্যে কল-কাকলীতে মেতে উঠে আমাদের চড়ুইভাতি আর উদযাপিত হয় না। জানো, আম বাগানটা এখন আর নেই? ওখানে কারা যেন ইটভাটা বানিয়েছে। ঐযে একপাশে বাঁশ ঝাড় ছিল না? যেখানে আমরা ভয়ে ভয়ে যেতাম না কিন্তু খেলার ফাঁকে ফাঁকে ঝাঁক বেঁধে গিয়ে প্রাকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে আসতাম সেখানেও কতগুলো বাড়ি উঠেছে জানো? আর সেই যে আমাদের প্রিয় নবাব বাড়ির পুকুরটা ওটাও একদম শুকিয়ে গেছে, ওখানে আর কোনো শৈশব দল বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ে না।

আমার প্রিয় শিশু পার্ক,
সেই কত আগে আব্বুর হাত ধরে গুটিগুটি পায়ে তোমার কাছে যেতাম। প্রতিবারই বাঘ আর বকের গল্পটা কতটা উত্তেজিত করতো আমাকে। তোমার সবুজ অরণ্যের ফাঁকে ফাঁকে একেকটা কৃত্রিম প্রাণিমূর্তি আনন্দের সাগরে ভাসাতো আমাকে। আব্বু চার টাকা দিয়ে এত্তগুলো বাদাম কিনে দিতো তারপর তোমার খোলা মাঠের সবুজের বুকে শুয়ে আকাশ দেখতাম আর বাদাম চিবুতাম। জানো! কিছুদিন আগে তোমাকে দেখতে গিয়েছিলাম, তোমার সৌন্দর্য ভরা সবুজের আড়ালে লুকিয়ে থাকা নোংরামী আমাকে থাকতে দেয়নি সেখানে।

আমার পুতুল খেলার দিনগুলো,
আমার মেয়েগুলো ঐযে শ্বশুড় বাড়ি গেল আর তো এলো না! কি সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতাম পুতুল মেয়ে গুলো কে তখন। আমার স্মৃতিবাক্সের হাজারো স্মৃতির নীচে চাপা পড়া একটা পুতুলের বাক্স সেদিন বের করেছিলাম। আলতো আদরে ছুঁয়ে দেখেছিলাম ওদের। কোথায় হারিয়ে গেলে আমার সাজানো দিনগুলো? কেন আর সময় হয় না তোমার সাথে সব ভুলে হারিয়ে যাওয়ার? কেন আর বারবার আসর সাজিয়ে বিয়ে দিতে পারি না আমার পুতুল মেয়েদের? কেন হারিয়ে গেলে প্রিয় দিনগুলো?

আমার প্রিয় ছেলেবেলা,
আচ্ছা তোমারও কী আমার কথা মনে পড়ে? মনে পড়ে কলাগাছ আর কচুরিপানা দিয়ে বানানো সেই ভেলাটার কথা? আমি স্কুল শেষে ফিরে এসে ব্যাগটা ছুড়ে ফেলেই ছুটে যেতাম তারপর ভেলায় ভেসে, পুকুরে ডুবে, কাঁদামাটি মেখে বাসায় ফিরেই মায়ের বকা খেতাম। মনে পড়ে, সুপারি গাছের শুকনো ডাল কুড়িয়ে গাড়ি বানিয়ে টেনে নিয়ে বেড়ানোর সেই মন জুড়ানো খেলার কথা? রোজ বিকেলে যখন আইসক্রিম ওয়ালা আসতো মায়ের লুকিয়ে রাখা টাকা চুরি করে এক গাল হাসি নিয়ে দুই টাকা দিয়ে দু’হাতে দুইটা সকাল-সন্ধ্যা আইসক্রিম নিয়ে মেতে থাকতাম। বন্ধুদের সাথে মাঠে গোল হয়ে বসে সেই যে বানিয়ে বানিয়ে বলা ভুতের গল্প গুলোর আতঙ্ক, উফ! আর ভাইয়ার সাথে ছাদে উঠে ঘুড়ি ওড়ানোর সেই রক্তিম বিকেল গুলো কতটা ক্লান্তিবিহীন ছিল তাই না? সারাদিনের অদম্য চঞ্চলতা, ছুটোছুটি শেষে সূর্য মামা তার সবটুকু সৌন্দর্য মেলে যখন ঢলে পড়তো পশ্চিমাকাশে আমিও মায়ের আঁচলের তলে ঘুমে ঢলে পড়তাম। কোথায় গেল সেই শান্তির ঘুম? সারাদিন ক্লান্ত হলেও কেন মায়ের আঁচলের তল খুঁজি না আর? সেই ভেলার দুলুনি আর বিকেলের চঞ্চলতা কেন আর খুঁজে পাই না? গোঁধূলীর আলো মেখে ঘুড়ির মতো আর কেন উড়ে বেড়ানো হয় না?

আমার নানা রঙের দিনগুলো,
কেন হারিয়ে গেলে আমার কাছ থেকে? কেন এক দমবন্ধ করা ঘুপচি ঘরের মাঝে আটকে ফেললে নিজেকে? চলো না আবার যাই মেতে উঠি বিহঙ্গের কলতানে, নেচে উঠি কলরবে, গেয়ে উঠি – অনির্বাণ মিত্র চৌধুরীর ‘পুরনো দিনের কথা’ কবিতার সেই আবেশিত পংক্তিগুলো,

ফেলে আসা কিছু স্মৃতি,
কিছু প্রিয় মুখ
ভালোবাসার আবেশ জড়ানো
কিছু চেনা সুখ।
কিছু কিছু সম্ভাবনা,
আর কিছু কল্পনা
বিস্মৃতির অতলে হারানো
কিছু প্রিয় ঠিকানা।
হারিয়ে খুঁজি নতুন করে
উল্টিয়ে স্মৃতির পাতা
আজ বারে বারে শুধু মনে পড়ে
পুরনো দিনের কথা।

আমার ফেলে আসা অতীত,
তোমার সোনালী ডানায় ভর করে কাটিয়ে দেওয়া প্রতিটা মুহূর্ত যদি আরেকবার ফিরে পেতাম! যদি আরেকবার তোমার ভেলায় ভেসে হারাতে পারতাম, আরেকবার… কী হবে আর এসব বলে তাই না? তুমি তো আমার সঙ্গে সঙ্গে ছায়া হয়ে হাঁটো। আমি আজীবন তোমার স্মৃতি মনে রেখে পথ চলতে চাই। মনের এক কোণে সব সময় ঘাপটি মেরে বসে থাকো প্রিয় শৈশবের অতীত তুমি। তোমার বন্ধনটাই এমন। কেমন লাগলো বলো তো স্মৃতির পাতায় পাতায় ঘুরে আসতে? আমি তো এটাই চেয়েছিলাম। আমি একাই তোমাকে মনে করে করে কষ্ট পাবো না-কী! তুমিও একটু কষ্ট পাও। আমার মতো একটু ছটফট করো। আচ্ছা শোনো, অনেকটা লিখেছি, জানোই তো আমি/আমরা কত ব্যস্ত। তোমার জন্য কি এত সময় আছে বলো? ভালো থেকো আমার রূপকথার দিনগুলো, ভালো থেকো আমার রঙীন ডানামেলা দিনগুলো, ভালো থেকো। আমি আবারও রঙ ছড়াবো কোনো একদিন তোমার স্মৃতিমাখা আমার প্রিয় ক্যানভাসে। আবারও লিখবো তোমার কাছে চিঠি। পাঠিয়ে দিব আমার অতীত স্মৃতির তোমার ঠিকানায়, ততোদিনে আমাকে ভুলে যেও না কিন্তু…

ইতি
তোমার স্মৃতি আকড়ে বেঁচে থাকা
একজন।

সম্মানিত চোর ভাই – মাইসারা মেঘ

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-৫

সম্মানিত চোর ভাই,
তুমি জানো না তুমি আমার ঠিক কত বড় ক্ষতি করেছো।তোমার আচরণে আমার হৃদয় টা কুট্টুস করে ফেঁটে গিয়েছে,এটা তুমি মোটেও ঠিক কাজ করোনি।তুমি যদি মনে করে থাকো যে তুমি চুরি করে বিখ্যাত চোর হতে পারবে তাহলে তোমার ধারণা ভুল ভুল ভুল।তুমি কুখ্যাত চোরই রয়ে যাবে,,কেননা তোমার উপর আমার মত একটি হৃদয় ভাঙা ভদ্র মেয়ের বদদোয়া রয়েছে।আমার সাথে এমনটা না করলেও পারতে চোর ভাই,চুরি করার জন্য তোমাকে আমার সাদাসিধে ইয়ারফোন টা-ই কেনো বেঁছে নিতে হলো চোর ভাই?এই ইয়ারফোন টা লকডাউনে সময় কাটাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে সেটা তোমার একবার ভাবা উচিৎ ছিলো,অথচ সামনেই আমার বইখাতা গুলি ছিলো, সেগুলি তুমি ছুঁয়েও দেখলে না।চুরি করতে আসো একটু বুদ্ধিশুদ্ধি নিয়ে তো আসতে পারো।তোমার কারণে চোর সামাজের মাথা হেট হয়ে যাবে,ছিঃ ছিঃ ছিঃ।চোর যদি হতেই চাও তবে শিক্ষিত চোর-ই হবে,আর শিক্ষিত চোর হতে গেলে বইখাতা চুরি করতে হয়।এসব থার্ডক্লাস ফালতু চোর হয়ে লাভ কি!!যাকগে সেটা বড় কথা নয়,বড় কথা হচ্ছে তোমার কারণে গত তিনদিন থেকে টেনশনে আমার ক্ষুদা বেড়ে গেছে,ফলে অতিরিক্ত খেয়ে খেয়ে আমি গুলগুলি মার্কা হয়ে যাচ্ছি।
বিষয় টা এই পর্যন্ত থাকলেই বোধহয় ভালো ছিলো!কিন্তু না, এই সমাজে গুলগুলি মার্কা মোটা মেয়েদের কপালে খুব সহজে বর জুটে না,
তুমি আমার ফুটন্ত স্বপ্ন গুলোকে এভাবে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারো না চোর ভাই।
বর বাচ্চা নাতিনাতনি নিয়ে মেলা স্বপ্ন আছে আমার,প্লিজ চোর ভাই সময় করে আমার ইয়ারফোন টা দিয়ে যেও,চির কৃতজ্ঞ থাকবো।
আর কথা দিলাম তোমাকে বিখ্যাত ও সম্মানিত চোর উপাধি দেওয়ার ব্যবস্থা করবো,নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রক্ষার্থে হলেও আমার ইয়ারফোন টা দিয়ে যাও চোর ভাই।

ইতি
চুরি হয়ে যাওয়া ইয়ারফোনের মালিক।