Tuesday, August 5, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1968



মা – Rinku Saha

0

#গল্প_পোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

চিঠি নং:০২

মা,
শব্দটা ছোট হলেও যে এর তাৎপর্য কতখানি তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এই আমাদের জন্যই তুমি কত কষ্ট করো,দিনের পর দিন শুধু আমাদেরকে ভালো রাখার জন্য কি অক্লান্ত পরিশ্রম টা-ই না করো, অথছ আমরা কখনো তোমার দিকটা ভেবেও দেখিনা। কখনো তোমায় জিজ্ঞেসও করি না, মা….তুমি কি ক্লান্ত, তোমার কি কোনো সাহায্য লাগবে, বা, আজকে তোমায় কাজ করতে হবে না, আজকে বিশ্রাম নাও। আজকে তোমার ছুটি। উল্টো সারাক্ষণ শুধু হুকুম করতে থাকি আমরা, এটা দাও, ওটা দাও, এটা করে দাও, সেটা করে দাও। কত ধরনের চাহিদা আমাদের। অথচ আমরা একটা বারও ভাবি না তুমিও একটা মানুষ, আমাদের মতো তোমার শরীরও শরীর। ক্লান্ত তোমারও লাগে। এতকিছুর পরও তুমি কোনো অভিযোগ করো না। হাসি মুখে সবটা করে দাও। জানো তো মা, মাঝে মাঝে নিজেরই কেমন কষ্ট হয় তোমার জন্য, কিন্তু বলতে পারি না। আমাদের সকলের এই এক সমস্যা, বাইরের লোককে কি অকপটে বলে দেই ভালোবাসি, অথচ যে আমাদের সবচেয়ে আপন, যে দশ মাস দশ দিন পেটে ধরেছে, মৃত্যুযন্ত্রণাকে হার মনিয়ে আমাদের এই পৃথিবীর আলো দেখিয়েছে তাকে মুখ ফুটে কখনো বলা হয় না, মা আমি তোমায় অনেক ভালোবাসি। আজ দুদিন হলো তুমি বড়িতে গেছো, অথচ মনে হচ্ছে যেনো এক যুগ হয়ে গেছে। তুমিহীনা ঘরে থাকতে দম বন্ধ মতো লাগে। আমরা দুই বাবা-মেয়ে মিলেও যে তোমার ঘাটতি পূরণ করতে পারছি না। তুমি কত সুন্দর ভাবেই না এই পরিবরকে সামলাও, আমদের দ্বারা যে তার ছিটেফোঁটাও হয় না। আগে আমাদের কোনো কথা না রাখলে তোমায় বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিবো বলতাম, এখন দেখছি তুমি ছাড়া আমাদের ভাগ্যে শুধু যাযাবর জীবনই লেখা আছে। তুমি তাড়াতাড়ি আমাদের কাছে চল আসো মা। দেখো, তোমার জন্য চিঠি লিখতে লিখতে আমার নয়ন জুড়ে অশ্রুধারা বয়ে চলেছে। সবশেষে একটাই কথা বলব ভীষণ ভালোবাসি তোমায় মা।
ইতি,
তোমার রাজকন্যা।

ভালোবাসবো আজীবন তোকে – Morsheda Parvin

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

ভালোবাসবো আজীবন তোকে,,,

চিঠির শুরুতে সালাম, ভালো-মন্দ জিজ্ঞেসের বিষয় থাকে। কিন্তু তুমি তো আমাদেরকে ছেড়ে চলে গিয়েছো না ফেরার দেশে, তাহলে কী বলব বা বলার প্রয়োজন তা জানি না। শুধু জানি ভালোবাসি, প্রচণ্ড ভালোবাসি !
আর সেটা তুমি নিশ্চয়ই জানো কারণ তুমি তো এখন শরীরি ভাষায় নেই, তুমি তো আত্মা! তোমার তো জানারই কথা!

প্রতিদিনের মতই আজও চিঠি লিখতেছি তোমাকে
কিন্তু জানা নেই কীভাবে তোমার কাছে পাঠাতে পারব! না ফেরার দেশে চিঠি পাঠানোর ঠিকানাটা আমার সত্যি জানা নেই!

কই এতদিন তো হলো, তুমিও একটিবারেও বললে না। আপু তোকে খুব মনে পড়ছে। একটা চিঠি দিও। আমি হয়তো জানি না, না ফেরার দেশের ঠিকানা, কিন্তু তুমি তো জানো ভাই, কারণ তুমি সেখানেই আছো! তাহলে তুৃমি আমাকে, আমার স্বপ্নের মধ্যে এসে ঠিকানাটা দিয়ে যেতে পার। সেটাও দাও না!

তুমি সেই চলে গিয়েছো আর কোনো খোঁজ খবর নেই। এতটা স্বার্থপর কিভাবে কবে থেকে হতে পারলে ভাই তুমি!
তুমি জানো! তুমি চলে যাওয়ার পর থেকে তোমাকে রোজ মনে করে ফোন দেই! কিন্তু কেনো জানি সব সময়ই ফোন থেকে কিছু কথা ভেসে আসে, “” আপনি যে নাম্বারে ডায়েল করেছেন, সে নাম্বারে এই মুহূর্তে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না! অনুগ্রহ করে আবার ডায়েল করুন,ধন্যবাদ! “” বল না ভাই, ওখানে কী ফোনের নেটওয়ার্ক নেই!

বল না ভাই, এতদিন কেউ কী ফোন বন্ধ রাখে! তোর কী একবারেও মনে হয় না আমাদের কথা! মায়ের কথা!
জানিস, মা তোর জন্য রোজ বড় গলায় কাঁদে। চার বছর হলো তবুও যেন মায়ের কান্না দেখলে মনে হয়, তুই যেন গতকালকেই মারা গেছিস!
তোর চলে যাওয়ার কষ্টটা তাজা দগদগে এখনো বুকের মধ্যে! আমাদের কথা না হয় বাদই দিলাম। কিন্তু মায়ের কথা ভেবেও তো তুই তোর ঠিকানাটা দিতে পারতিস বল! বল পারিস না!

কিন্তু তুই দিবি না জানি। কারণ অনেক শান্তিতে আছিস তুই পরপারে! সেজন্যই তো মায়ের কথা, আমাদের কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছিস!

মনে রাখিস আমি যখন তোর মত না ফেরার দেশে যাব, তখন আমিও তোর সাথে কথাই বলব না। দেখে নিস।
আমি তোকে চিনেও না চেনার ভান করব, দেখিস! তাহলে বুঝতে পারবি কত কষ্ট হয়। প্রিয় মানুষ কথা না বললে, কত কষ্ট হয় প্রিয় মানুষের সাথে অনেকদিন দেখা না হলে! তার কোনো খোঁজ খবর না পেলে কতটা অস্থির হয় প্রিয় মানুষগুলো! বদলা কিন্তু আমি নিবই, নিব দেখিস! আমি তোর আমাদের প্রতি এত উদাসীন দেখে সত্যি আশ্চর্য হই! সত্যি কী তুই আমাদেরকে ভালোবাসতিস!

এইটুকু বয়সে কী চলে যাওয়ার সময় বল ভাই। আমি তো বড় আমার গেলে হতো না! মোটে ২৫ টি বছর কাটিয়েছিস দুনিয়ায়! আর কিছু বছর থেকে যেতে পারতিস! তুই জানিস তোর মৃত্যুর দিনটা আমার বড্ড কষ্ট দেয় আমাকে! আমার জন্মদিনেই তোকে চলে যেতে হবে! আমাকে এভাবে শাস্তি না দিলেও পারতিস! তুই হয়তো ভেবেছিস তুই না থাকলে, আমি তোকে ভুলে যাব তাই না! সেজন্যই তুই আমার জন্মদিনটা তোর মৃত্যুদিন হিসেবে বেছে নিয়েছিলি!

( এটা আমার আবেগি চিন্তা ভাবনা। কারণ জন্ম মৃত্যু সবই আল্লাহর ইচ্ছে। সবার ছোট ভাইকে হারিয়ে প্রায়ই এমন আবেগপ্রবণ হয়ে উঠি আমি)

ইতি,
তোর বড় বোন
মোরশেদা পারভীন

প্রিয় অচেনা – Arushi Asha

0

গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং : ০২

প্রিয় অচেনা,
ভেবেছিলাম এই বেনামী পত্র আর লিখবো না। একতরফা আমি শুধু লিখেই যাচ্ছি। না পাচ্ছি পত্রের কোনো উত্তর। না পাচ্ছি আমায় নিয়ে কিছু অব্যক্ত কথার ব্যক্ত কথামালা। তাই এক প্রকার পণই করেছিলাম। নাহ! আর লিখবো না।
কিন্তু অবাধ্য কিশোরীর মতো অবাধ্য মন তেজী কন্ঠে আমায় বলল, ‘তুমি লিখে যাও। একদিন দেখবে তোমার জং ধরা চিঠির বাক্সে কত শত চিঠি ভীড় করেছে।’
তাই আবারো লিখলাম বেনামী পত্র আপনাকে ভেবে।

স্বপ্ন কুমার,
আপনার জন্য রইল এক ফালি চাঁদের মিষ্টি আলোর শুভেচ্ছা। মিষ্টি আলো দেয়ার একটা কারণ আছে জানেন। কারণ, আপনাকে নিয়ে যখন লিখছি তখন চাঁদের মিষ্টি আলো আমার জানালা দিয়ে প্রবেশ করেছে। চাঁদের এই মিষ্টি আলোকে সাক্ষী রেখে, আজ আমি আপনাকে লিখছি। আপনিহীনা এই চাঁদের আলোটাই আমার এই মুহূর্তের সঙ্গী। মনোমুগ্ধকর এ লগ্নে আজ আমি আপনার শূণ্যতা অনুভব করছি।

আমার কল্পরাজ,
আপনি কি জানেন? আপনি যে আমার দিবস ও রজনীতে ভবনার জগতে প্রবেশ করার কারণ? এই যে আপনায় ভেবে আমার আধেক দিন অতিবাহিত হয়, হঠাৎ হঠাৎ দৃষ্টিভ্রম হয়, যামিনী পাড় হয় স্বপ্নপুরীতে। এর কারণ কী জানেন?
আপনার জন্য মন কুঠুরিতে লালন করা এক অদৃশ্য ভালোবাসা। আপনি হয়তো ভাবছেন, অদৃশ্য ভালোবাসাও বুঝি হয়? হ্যাঁ হয় তো। ভালোবাসা তো অদৃশ্য এক সুন্দর অনুভূতি। যেটা অনুভবে মিশে থাকে। যাকে অনুভব করতে হয়।

প্রিয় অদেখা,
আমি আপনাকে কখনো দেখেনি। তবে আমি এঁকেছি আপনাকে। হ্যাঁ আপনাকেই; আমার কল্পনার ক্যানভাসে। একবার নয় সহস্রবার এঁকেছি। কিন্তু ছবিটা না সবসময় ঝাপসাই হয়। আচ্ছা কল্পনায় আঁকি বলেই বুঝি এমনটা হয়? তবে যদি আপনাকে এক পলকের জন্য হলেও একবার দেখতাম। তবে দেখতেন, আমি কেমন একজন পাঁকা চিত্রশিল্পী। আচ্ছা আপনিও কি আমার মতো করে কল্পনায় কাউকে আঁকেন? কে জানে। হয়তো আঁকেন।

আমার বাক্স বন্দী ভালোবাসা,
আচ্ছা আপনি কি কাউকে ভালোবাসেন? নাকি মনের গোপন ড্রয়ারে ভালোবাসাকে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন? কাঙ্ক্ষিত চাবিটি পাননি বলে। চাবির সন্ধান পেলে তবেই খুলবেন আপনার ভালোবাসার গোপন ড্রয়ার? ঠিক আমারই মতো।

প্রিয়তম অসুখ,
আমি প্রায়ই “আপনি” নামক প্রিয় অসুখে আক্রান্ত হই। এই রোগের একমাত্র ঔষধ কি জানেন? আপনি, আপনার দর্শন। তাই আমি “আপনি” নামক মহা ঔষধের অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছি।

“রাতের আকাশ জানে, একাকী সে তারা, আঁধারেই খসে পড়ে, খসুক,
নির্ঘুম রাত জানে, চোখের পাতায় জমে, তোমাকে দেখার অসুখ।”

কবিতার লাইন দুটি প্রিয় লেখক সাদাত হোসাইনের “তোমাকে দেখার অসুখ” বই থেকে নেয়া। জানেন, লাইন দুটির ভাবার্থ যেন আমার মনের কথাকেই ব্যক্ত করছে। ভীষণ প্রিয় দুটি লাইন। যেমন আপনি আমার প্রিয়তম অসুখ। হে প্রিয়তম অসুখ, আবদ্ধ দ্বার খুলে রেখেছি আজ আপনারাই অপেক্ষায়।

অনেক লিখে ফেলেছি। আজ এতটুকুই থাক। তাই বলে
আপনায় নিয়ে লেখা একেবারে শেষ হয়নি! কারণ আপনার আর আমার মাঝে শেষ বলে কিছু নেই। এটা তো কেবল আজকের সমাপ্তি।
এই শেষটায় এসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি লাইন মনে পড়ছে, “শেষ হয়েও হইলো না শেষ”।

আবার লিখবো কোনো এক লগ্নে, চিত্তে ঠাসা অনুভূতি আর ভালোবাসার কথাকুঞ্জ গুলো আপনার ঠিকানায়।

ইতি
কল্পবিলাসী

প্রিয় প্রজ্ঞামণি – ইনায়াত হাসান ইনায়া

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং: তিন

প্রিয় প্রজ্ঞামণি,
তুমি আমার ‘বেস্ট ফ্রেন্ড ফরেভার’, আমার কলিজা বন্ধু, আমার ভাঙা ঘরে জ্যোৎস্নার আলো, আমার সাপোর্ট সিস্টেম, আমার ফিলিংস বক্স। তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় কিন্তু অপ্রকাশিত বস্তু…
তুমি আমার একটা পাগল বন্ধু যার সবকিছুই পাগলামিতে ভরপুর। তুমি সবসময় আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট করে গেছো। আমি সবার চেয়ে আলাদা, অন্যরকম ধরনের মানুষ। আমার মুড সুয়িংস হয় প্রতি মিনিটে মিনিটে। নিজের যেটা মন চায় সেটাই করি। কিন্তু তুমি সবকিছুই চুপচাপ মেনে নাও। সব অবস্থায়ই আমার পাশে থাকো। যতোযাই হোক, পৃথিবী পাল্টে গেলেও তোমার জায়গাটা কেউ নিতে পারবেনা। তোমার মতো করে কেউ আমায় ভালোবাসবে না, আমায় বুঝবেনা।তুমি কখনোই আমার উপর গিবআপ করো না, হতাশ হওনা। আমার মন খারাপ থাকলে মন খারাপের কারণগুলো খুঁজে বের করা না পর্যন্ত তোমার শান্তি হয়না। তুমি আমার মন ভালো হওয়ার কারণ।
হুটহাট রাতের বারোটা একটায় আমার বারান্দায় চকলেট ছুড়ে মারা, পাশের বাসার ছাদ থেকে আমাদের ছাদে তোমার চকলেট ফেলে যাওয়া। তারপর হুট করে ফোন দিয়ে বলা,
“দোস্ত তুমি একটু ছাদে যাও তো, দেখোতো গিয়ে কি আছে।”

কিন্তু এতোকিছু সহ্য করতে করতে তুমি কিভাবে যেন বদলে গেলে! আমি তোমাকে একটু একটু করে ফিলিংসলেস বানিয়ে দিলাম। কিভাবে বানালাম সেটা বুঝতেও পারলাম না। এখন তোমার এই পরিবর্তন আমার সহ্য হচ্ছে না। এখন আমি পারছিনা কোনভাবেই তোমাকে আগের মতো স্বাভাবিক করে তুলতে।
কখন আমার থেকে এতো দূরে চলে গেলে আমি বুঝতেই পারলাম না। আমাকে যত্নের সাথে একটু একটু করে গড়ে তুলেছো তুমি! আর আমার ভাঙা অংশগুলো জোড়া লাগানোর চেষ্টায় কোনো এক সময় তুমি নিজেই ভেঙ্গে গেছো ভিতর থেকে।
বিশ্বাস করো দোস্ত আমি আর বলবোনা ভালো থেকো। কারণ তোমাকে ভালো রাখার দায়িত্ব আমার। আমি হতাশ হবোনা তোমাকে নিয়ে। যতক্ষণ না আগের মতো হয়ে উঠবে, আমি চেষ্টা করেই যাবো…

ইতি তোমার
মোহজান

লেখা:মার্জিয়া সুলতানা নাবিহা – প্রিয় আম্মু

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং:১
লেখা:মার্জিয়া সুলতানা নাবিহা
প্রিয় আম্মু
তোমার প্রতি সবচেয়ে বড় ঋণী হচ্ছি আমি।এই যে আমার জন্মের প্রথম থেকেই কষ্ট সহ্য করছ ।এই যে আমি মেয়ে হলাম এতেও যে তোমাকে লোকে কথার অস্ত্র দিয়ে আঘাত করল তাতেও তুমি দমন হলে না। এই যে আমি কালো হলাম এতেও যেনো লোকের ঘৃনা আরো বাড়লো। তাঁরা আবারো কষ্ট দিলো কালীর মেয়ে বলে বলে।এই যে আমার জন্য এতো এতো কষ্ট পেলে ক‌ই আমাকে তো কখনো কোনো কষ্টে থাকতে দিলে না। বরং আমাকে তাদের মতো না হ‌ওয়ার জন্য যে শক্ত লোহার প্রলেপ দিয়ে তৈরি করলে তা তুমি ছাড়া আর কারো ভাঙ্গার সাধ্য নেই। শুধু এতটুকু বলে রাখি যে তোমার স্বপ্ন আমি ব্যর্থ হতে দিব না।এই সমাজ কেউ যেই আঘাত তোমাকে করেছে সেই আঘাতের প্রায়শ্চিত্ত তাদের ও একদিন করতে হবে
শ্রদ্ধা নিও আম্মু
ইতি
তোমার কঠোরতর মেয়ে
মার্জিয়া সুলতানা নাবিহা

প্রিয় ধর্ষক -কলমে:যারিন সুবাহ।

0

#গল্প_পোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#চিঠি_নং_০৪

কলমে:যারিন সুবাহ।
________________

প্রিয় ধর্ষক,

আপনাকে কেনো প্রিয় বলে সম্বোধন করলাম তা নাহয় একটু পরেই জানবেন।
শুরুতেই বলে রাখি আপনার কাছে আমি বড্ড ঋণী। আপনার কাছে তো কখনো কোনো ধর্ষিতা চিঠি লিখতে বসবে না বরং প্রচন্ড ঘৃণা করবে। অথচ দেখেন আজ আমি নামের এক ধর্ষিতা আপনার তরে চিঠি লিখতে বসেছি। আসলে আপনাকে চিঠি লিখার পিছনে আমার সব থেকে বড় কারন হচ্ছে, “আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য!”। অবাক লাগছে পড়ে তাইনা? কিন্তু আমার মোটেও ভিন্ন কোনো অনুভূতি হচ্ছে না। বরং আমি আরো উৎসাহিত, আগ্রহী এবং প্রফুল্ল মন নিয়ে বসেছি চিঠি লিখতে।
আপনি কি জানেন, শুধু মাত্র আপনার জন্য একটা ১৭ বছরের মেয়ে এখনি বাস্তবতা শিখেছে? যে মেয়েটা কাঁধে স্কুল ব্যাগ উঠিয়ে রাস্তায় চলতো আজ তাকে ঘর থেকে বের হওয়া মানা।কেনো?আমার কী খুব দোষ ছিল? তবে যাই হোক। আপনাকে তো আমি ধন্যবাদ জানাবোই জানাবো! কেননা, আপনার জন্যে আজ আমি আমার বাবাকে চিনেছি। যে বাবা রোজ দোকান থেকে এসে আমাকে প্রথম খুঁজে বেড়াতো সে বাবা আজ চুপিসারে আমার মাকে বলে,” ও যেনো ঘর থেকে বের না হয়!” যে মায়ের কাছে তার সন্তান কিনা সবচেয়ে দামী থাকে সেই মা আজ আমাকে বলে, এখন বড় হয়েছিস! লোকে মন্দ বলে ঘরের বাইরে পা দিবিনা!” আপনি জানেন? মাকে একবার মুখ ফুটে বলেই দিয়েছিলাম, “দোষ তো আমার না!”
সেদিন মা শুধু আমার মুখ চেপে ধরে বলেছিলো,”সমাজে বাঁচতে চাইলে চুপ থাক!”। আমি সেদিন হাসি মুখে তা মেনে নিয়েছি!দেখলেন তো? আমি সমাজ মেনে নিয়েছি। এ সমাজে থাকলে নাকি চুপ থেকে সব সহ্য করতে হয়। আমিও করলাম নাহলে! তবে আজ আমি অনেক খুশি, অনেক। শুধু মাত্র আপনার জন্যে আমি বুঝতে পারলাম, আমার বাবা মায়ের কাছে আমি দামী না তাদের সম্মান! অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। শুধুমাত্র আজ আপনার জন্যে আমি আমার কাছের মানুষগুলোকে চিনেছি।যারা এখন আমাকে উঠতে বসতে বুঝিয়ে দেয়, “তুমি ধর্ষিতা”।ক’দিন আগেও আমার যেসব ফ্রেন্ড আমাকে তাদের রুমডেটের কর্মকলাপ শুনাতে আসতো আজ তারা আমাকে দেখে বলে,”আসলে তোর সাথে চললে লোকে খারাপ বলবে, তুই যে ধর্ষিতা!” আচ্ছা,আপনার কি এসব শুনতে হয়?
তবে কি জানেন? আজ আমাকে আমার ভিতরের এক অন্য সত্তা খুব কাছে এসে বলে গিয়েছে, “তুমি চলে যাও।নিজের মতো করে বাঁচো!এখানে থাকলে দিনকে দিন পঁচে পঁচে মরবে। তুমি বড় হও, অনেক বড় হও! একদিন আসবে তোমার জয়ের দিন। যদি তোমার ভাগ্যে কেউ লিখা থাকে তুমি বড় ভাগ্যবতী! কারণ, সে সত্যিকারের মানুষ পরিচয়ে তোমার ভাগ্যে এসে ঘর বুনবে!”
আমার না কথাগুলো খুব ভালো লেগেছে।তাই তো! আজ যেসব নারীগণ নিজ ইচ্ছায় তাদের সতীত্বকে বিলীন করতে পারে তাদের জন্য সমাজের মাথা নিচু হয় না আর তাদেরকে জেনে শুনেই সবাই মেনে নিতে পারে আর যারা অনিচ্ছায় নিজেদের সম্ভ্রম হারিয়ে ফেলে তারাই হলো ফেলনা? আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন থেকে আমি নিজের জন্য বাঁচবো শুধু। আমি দাঁড়িয়ে দেখাবো তাদেরকে। আমি তাদেরকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিবো, তোমরা আজীবন শুধু মরীচিকার পেছনে ছুটে চললে!
আমি চলে গেলে ওদের ঘাড় থেকে বোঝা নেমে যাবে তা আমি খুব ভালো করে জানি।তাই আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকবো। তবে আমি সেদিনের অপেক্ষায় সবসময় থাকবো যেদিন সত্যিই কেউ এসে আমার জীবন রঙিন করবে।আমি সত্যিই সেদিন আমার জীবনের বড় পাওয়া পাবো! কেনো বলেন তো? কারণ, আমি একজন সত্যিকার অর্থের পরিচয়ের কোনো সত্তার অর্ধাঙ্গিনী হতে পারি!
ভালো থাকবেন আপনি। আবারো বলছি, আমাকে এই দিন দুনিয়া, বাস্তবতা, সমাজ, সমাজের এতো সম্মান সম্পর্কে জানান দেয়ার জন্যে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ!

ইতি,
“আমি নামের কোনো এক ধর্ষিতা”

প্রিয় মা – আঁখি আক্তার

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং ০১
প্রিয় মা,
তোমাকে কতোখানি ভালবাসি কখনো মুখ ফুটে বলতেই পারিনি। মা ডাকটা নাকি অতি সুমধুর! আমার জন্ম তো মা তোমার গর্ভেই,মাগো আমার ডাক কি মধুর লাগে নি তোমার কাছে??
তোমার আর বাবার যখন বিচ্ছেদ হয়ে যায়,তখন আমার জীবন ছিল ভাসমান। তোমাদের দুজনের অভিমানের গন্ডির মাঝ বরাবর ছিলাম আমি।
তোমাদের দুজনের দায়িত্ব ছিল আমার খেয়াল রাখা। কিন্তু তুমি মাঝপথে আমাকে আর বাবাকে দুঃখের অতল গহবরে তলিয়ে চলে গেলে। বাবার ভালবাসাকে তুচ্ছ ভেবে গড়ে ওঠা স্বপ্নগুলো ধুলিসাৎ করে চলে গেলে। বাবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তোমাকে আটকাবার সাহস পায়নি। চোখের জলে বুক ভাসানো ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না মানুষটার।
তোমার আর বাবার সম্পর্কটা মরিচিকা ধরে গেছিল। সম্পর্কের ফাটল জোড়া লাগে না হয়তো। একজীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছো হয়তো,তাইতো আরেক জীবনে সুখের সন্ধানে নেমেছো। সেই সুখ হয়তো পেয়েছ,তাই আর আমার খোঁজ নাও নি।
তোমাদের দুজনের মাঝখানে ঝুলে ছিল আমার জীবন। আমাদের ভালবাসাকে জলাঞ্জলি দিতে একটুও কি বুক কাঁপে নি তোমার? তুমি কি পারতে না আমার মুখ চেয়ে বাবাকে মানতে??বাবা আমার দেখতে কুৎসিত ছিল হয়তো। কিন্তু খারাপ ছিল না। আমি হাজার বার তাকে চুমু খেয়েছি।বিশ্বাস করো মা আমার একটুও ঘৃণা লাগে নি। বিচ্ছেদের সময় যখন তুমি চলে যাচ্ছিল,তখন আমি তোমার আঙুল মুষ্টিমেয় করে ধরে রেখেছিলাম। ছোট ছিলাম তবুও এটুকু বুঝেছিলাম তুমি আমার থেকে দূরে চলে যাচ্ছ। আমার সেই মায়া জড়ানো কন্ঠের ডাক তোমাকে ফেরাতে পারে নি।
তারপর যখন মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যেত,বিছানায় হাত বুলিয়ে তোমাকে খুঁজে পেতাম না বলে চিৎকার করে কান্না করতাম। তখন বাবার চোখ আদ্র হয়ে উঠতো করুণ সুরে বলতো মাকে এনে দেবো সোনা আর কাঁদে না। বাবাই তখন আমাকে বুকে জড়িয়ে নিতো। তবুও আমি চারিপাশে শুধু মা মা করে ডেকে বেড়াতাম। বাবা আমাকে নতুন একটা মা এনে দিয়েছিল। মাগো,তোমার মতো তারও হয়তো আমার মা ডাকটা মধুর লাগেনি। যতদিন বাবা বেঁচে ছিল ততদিনে এটা বুঝতেই পারিনি। তোমার মতো বাবাও আমাকে ফাকি দিয়েছে,আমাকে না বলেই না ফেরার দেশে চলে গেছে। লোকে বলে যার বাবা নেই তার অর্ধেক পৃথিবী নেই,আর যার মা নেই তার পুরো পৃথিবী নেই। কিন্তু আমার বেলায় উল্টো ছিল। বাবাকে হারিয়ে বুঝেছি বেদনা কাকে বলে! বাবা নামের ছায়াটা হারিয়ে বুঝতে পেরেছি রোদের তীব্রতা কতোটা প্রখর আমার জন্য।
আমি আমার বাবার কাছে রাজকন্যা ছিলাম। বাবার আকাশে ইচ্ছেমত ডানা মেলে উড়ে বেড়াতাম। খেতে না চাইলে বাবা আর আমার নতুন মা আমাকে জোর করে খাওয়াতো। কোনো কাজ করতে দিতো না। কিন্তু এখন আর কেউ খোঁজ রাখে না আমার। ছোট মা এখন আর আমাকে সহ্য করতে পারে না দুর দুর করে।
জানো মা,আমি এখন ঘর মোছা,রান্না করা,থালাবাসন ধোয়া সব করতে পারি। তোমার সেই ছোট্ট মেয়ে এখন অনেক বড় হয়ে গেছে। তোমাকে খুব মনে পড়ে। ছোটবেলায় যখন তোমার কথা মনে পড়তো,চিঠি লিখে আকাশে উড়িয়ে দিতাম। আদৌ সেই চিঠি তোমার কাছে পৌছাতো কিনা না জেনেই অভিমান করতাম। এখন আর সেই অভিমান নেই। একজন ক্যান্সার রোগীর রাগ-অভিমান,বেদনা- যাতনা কিছুই থাকতে নেই। তবে তোমায় খুব দেখতে ইচ্ছা করে। শরীরটাও ভালো যাচ্ছে না আজকাল। সকলে আমার থেকে দূরে দূরে থাকে। আচ্ছা মা ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে রোগ?? মাগো আমিতো চিরকাল ভালবাসার কাঙাল। সুখ পাখি কিছুতেই থাকতে চাই না বেশিক্ষণ ।
কাল রাতে বাবাকে স্বপ্নে দেখেছি। আমাকে বাবার কাছে নিতে চাই । আমাকে ছাড়া সেও বোধহয় ভালো নেই। খুব শীঘ্রয় বাবার আর আমার দেখা হবে। আমার প্রাণ বায়ু এখন কচু পাতার পানির ন্যায়। জীবনের প্রদীপ নেবার আগে তোমায় দেখার যে বড়ই স্বাদ।

কতোদিন হয়ে গেছে মাগো, তুমি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়াও না। সময় পেলে দেখে যেও।

ইতি তোমার অভাগী মেয়ে
আখিঁ আক্তার

প্রিয় দেশবাসী – Sumaiya Afrin

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং: ০২

প্রিয় দেশবাসী,
২০২০ সাল যেটা দেখলেই মনের ভিতর এক অজানা ভয় কাজ করে । কারণ এর শুরুটাই হয়েছিল নানা ভীতিকর পরিবেশের মধ্য দিয়ে । একদিকে অস্ট্রেলিয়ার ভয়ংকর দাবানল, হাজারো প্রাণীর পুড়ে যাওয়া দেহ, আগুনের লেলিহান শিখা অন্যদিকে ইরান ও আমেরিকার পাল্টা হামলার মধ্য দিয়েই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশংকা । কিন্তু ঠিক সেই সময়ে অনেকটা আড়ালে আবডালে চিনে চলছিল এক প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিস্তার । যা পাল্টে দিয়েছে আমাদের জীবনের বাস্তবতা । আমাদের কয়েক প্রজন্ম এর আগে কখনো বিশ্বজুড়ে এমন ভয়াবহ কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি ৷ আমরা প্রতিনিয়ত নানা সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে গিয়েছি, যাচ্ছি ৷ কিন্তু কখনোই এমন কিছু আমাদের সবাইকে সমানভাবে প্রভাবিত করেনি যা আজকের এই বীভৎস ভাইরাসের হানা দেওয়ার ফলে হচ্ছে ৷

রোহিঙ্গা সংকট, রাজনৈতিক বিভেদ , ভারতে হিন্দুত্ববাদের উত্থান, মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষ করে ইয়েমেনের ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক মানবিক সংকট, ইউরোপে শরণার্থী সংকট এবং ডানপন্থি উগ্রবাদের উত্থান ৷ এতকিছুর পরেও এইসব ইস্যুকে আমরা বৈশ্বিক সংকট না ভেবে স্থানীয় সংকট ধরে নিয়ে দিনের পর দিন নির্বিকার থেকেছি ৷ কিন্তু এখন এমন এক বিপদের সম্মুখীন আমরা, যা আমাদের সবাইকে এক জোট হতে বাধ্য করেছে প্রায় ৷ বিশ্বজুড়ে এখন মানবজাতির একটাই শত্রু নোবেল করোনা ভাইরাস ।এটি এমনি এক ভাইরাস যে কোনো ধর্ম চেনে না, দল চেনে না, জাতীয়তা মানে না ৷

প্রিয় দেশবাসী, আপনারা হয়তো জানেন ইটালি, ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগাল, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, এস্তোনিয়াসহ ইউরোপের প্রায় প্রতিটি দেশ হয় লকডাউনে আছে, না হয় জরুরি অবস্থা জারি করেছে , অথবা কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে৷ কারণ একটাই, সবাইকে নিরাপদে রাখতে বাধ্য করা৷

অথচ আজ আমি যখন এই চিঠি লিখছি, তখনও বাংলাদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হয়নি ৷ কিংবা হলেও যথোপযুক্তভাবে তা বাস্তবায়ন করা হয়নি বা হচ্ছে না । এছাড়া যখন বাংলাদেশ সরকার লকডাউন ঘোষণা করলেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলো, ঠিক তখনও আমরা কেউ সতর্কতা অবলম্বন করিনি বরং চাকরিজীবি যারা ছিলেন তারা গৃহবন্দি না থেকে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে বেড়ানোর জন্য হানা দিয়েছে যত্রতত্র । শিক্ষার্থীরা সাধারণ সতর্কতা অবিলম্বে মাস্কটুকু পর্যন্ত না পরে আড্ডাতে মশগুল থাকছে । অথচ চ্যান্সেলর ম্যার্কেল জাতির উদ্দেশে তার ভাষণে বর্তমান পরিস্থিতিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় দুর্যোগ বলে উল্লেখ করেন এবং তিনি যেকোনো খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন ৷ তবে সবচেয়ে বড় কথা, তিনি বলেছেন, “বিষয়টা খুব গুরুতর, আপনারা সিরিয়াস হোন ৷ গুজবে কান দেবেন না বরং সচেতনতা বাড়িয়ে দিন, বিজ্ঞানী ও ডাক্তারদের কথা শুনুন, সেই মোতাবেক কাজ করুন ।”

চারিদিকে এখন করোনা, করোনা গুঞ্জনে, আলাপে আলাপে মুখর শহর থেকে শহর, গ্রামের প্রতিটা প্রান্তর । তাই এই মুহূর্তে জনগণকে সবচেয়ে নিরাপদ রাখতে হবে আর তার জন্য সর্বপ্রথমে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপদে রাখতে হবে ৷ অথচ এখনো হাসপাতালগুলো প্রস্তুত নয় , ডাক্তারদের নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা৷ সর্বোপরি গাউন, মাস্ক, গ্লাভস সবকিছুরই যেন অভাব৷
তাই করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধ এবং এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে বিশ্ববাসীকে বেশ কিছু সাধারণ অথচ কার্যকর বিধি নিষেধ পালন করতে আহবান জানাচ্ছি ।
কারণ এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে সুস্থ ব্যক্তির দেহে অনায়াসে হাঁচি কিংবা কাঁশির মাধ্যমে এটি ছড়াতে পারে । কোনো সুস্থ ব্যক্তি যদি করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির সংস্পর্শে আসে আর সেই সুক্ষ্মকণা শ্বাসপ্রশ্বাস বা হাতের স্পর্শের দ্বারা মুখে যায়, তখন সেই সুস্থ ব্যাক্তির দেহেও ভাইরাসটি সংক্রমিত হতে পারে ।

এছাড়া করোনায় আক্রান্ত অনেকের মাঝে রোগের উপসর্গ প্রকাশ পাওয়ার পূর্বেই এসব রোগীর মাধ্যমেও ভাইরাসটি বিস্তার লাভ করতে পারে । কোভিড-১৯ ভাইরাস সম্পর্কে এখনো অনেক কিছুই অজানা রয়ে গেছে । তাই এই রোগীদের থেকে ভাইরাসটি সংক্রমণের ঝুঁকি ঠিক কতটা সেটা সঠিকভাবে এখনো জানা যায়নি।

তাই সকলের করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হলে উক্ত ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকার উপায় যেমন জানতে হবে তেমনি স্বাস্থ্যবিধিও সঠিকভাবে মানতে হবে । এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হলে যে সকল কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো_____

১. বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজের দুই হাত যতোবার সম্ভব পরিষ্কার করুন , স্বচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর হাতে সাবান লাগিয়ে হাতের তালু এবং পৃষ্ঠতল ঘষে ফেনা তুলুন । আঙ্গুলগুলোর মাঝেও একইভাবে পরিষ্কার করুন । এরপর আবারও পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন ।

২. হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলুন । এরপর সেই টিস্যু যেখানে সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলে আবারও নিজের হাত পরিষ্কার করুন । এছাড়া মনে রাখতে হবে হাঁচি বা কাঁশি আটকাতে কখনোই নিজের হাত বা কনুই ব্যবহার করা যাবে না ।

৩. মুখে মাস্ক পড়া । কারণ করোনা ভাইরাসের তরল উৎস হাঁচি-কাঁশির ফোটা থেকে মুখমণ্ডলকে মাস্ক কিছুটা সুরক্ষা দিতে পারে । তবে এর মাধ্যমে ভাইরাসের অতি সূক্ষ্মকণা আটকানো সম্ভব নয় । এছাড়া, মাস্ক পড়লেও চোখ খোলাই থাকে। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু ব্যক্তির দেহে চোখের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে । তাই খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বাইরে অবস্থান না করা ।

৪. এই ভাইরাসের লক্ষ্মণ দেখা মাত্রই চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা । যদি জ্বর, কাশি এবং শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ।

৫. ভাইরাস আক্রান্ত অঞ্চলে জীবন্ত পশুবাজার এড়িয়ে চলতে হবে এবং পশুপাখিকে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে ।

৬. কাঁচা খাবার যথা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে ।

এছাড়া আক্রান্ত এলাকা থেকে ফিরে থাকলে ১৪ দিন নিজেকে জনসমাগম থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ রাখুন অর্থাৎ এই সময় কর্মস্থল থেকে শুরু করে অন্যান্য জনসমাবেশস্থল এড়িয়ে চলতে হবে ।

প্রিয় দেশবাসী, দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের কাছে চিঠির ইতি টানার এই শেষ ক্ষণে এসে একটাই অনুরোধ আপনারা স্ব স্ব জায়গায় অবস্থান করুন । ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন । একটা চিঠির দ্বারা হয়তো সবাইকে সম্পূর্নভাবে সচেতন করা যাবে না ঠিকই । কিন্তু চিঠির মর্মস্পর্শী কথাগুলো অনুধাবন করে যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাই সচেতনতার হাত বাড়িয়ে দেই । তবেই খুব দ্রুত পৃথিবী ফিরে পাবে নতুন রূপে তার পূর্ব সত্তা ।

ইতি,
সুমাইয়া আফরীন

প্রিয় প্রাণপ্রিয়া- Ayan chy

0

#গল্প_পোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#চিঠি_নং_০১

প্রিয় প্রাণপ্রিয়া,
ভালোবাসা নিও।হঠাৎ চিঠি পেয়ে অবাক হয়েছো নিশ্চই! যতটা অবাক তার চেয়ে হয়তো বেশি বিরক্ত! একসময় তোমার প্রিয়জনদের মধ্যে একজন থাকলেও এখন বিরক্তিকর মানুষদের কাতারে পড়ি! সেই সম্পর্কে আমি অবগত।তুমি কিন্তু আমার সেই প্রাণপ্রিয়া ছিলে আর এখনো আছো।মাঝে মাঝে নিজেরই অবাক লাগে,যাকে আমি এত ভালোবাসলাম সেই আমার প্রতি বিরক্ত আর সেই আমাকে এত ধোকা দেওয়ার পরও কেন আমি তার প্রতি এত আসক্ত? কেন তাকে ঘৃণা করতে পারিনা? কেন তাকে ভালো না বেসে পারা যায়না? নাহ,পেলাম না। এসব প্রশ্নের উত্তর আমি আজও পেলাম না।

আজও তোমাকে ভুলতে পারলাম না এক বিন্দুও। যখন শীতের সকালে রাস্তা দিয়ে একাকী হেঁটে যায় তখন তোমাকে মনে পড়ে।যখন বৃষ্টি নামে পৃথিবীর বুকে তখনও তোমাকে মনে পড়ে।হঠাৎ যদি খেয়াল করি কোনো রাতে চাঁদের আলো বেশি তখনও তোমাকে মনে পড়ে। তুমি বলতে না? আমি তোমার প্রথম প্রেমিকপুরুষ তোমার প্রথম ভালোবাসা! কবি গুরু বলেছিলেন, “পৃথিবীতে বালিকার প্রথম প্রেমের মতো সর্বগ্রাসী প্রেম আর কিছুই নাই।প্রথম জীবনে বালিকা যাকে ভালোবাসে তাহার মতো সৌভাগ্যবানও কেহই নেই।” তাহলে,কেন তোমার প্রেম সর্বগ্রাসী হলোনা প্রাণোবতী? কেন আমি হতে পারলাম না সৌভাগ্যবানদের মধ্যে একজন? আমার কাছ থেকে তোমার যদি এই দূরত্বই কাম্য হয় তাহলে,মেনে নিলাম এই দূরত্ব। মেনে নিলাম এই বিচ্ছেদ।মেনে নিলাম আমার প্রতি তোমার এই অনীহা।

মনে পড়ে তোমার স্বপ্ন দেখিয়েছিলে,শিশির ভেজা সকালে,রৌদ্রোজ্জল দুপুরে, ঘন আঁধারময় রাতে হাতে হাত রেখে পায়ে পায়ে তাল মিলিয়ে চলবে। জীবনের বাকি পথ আমাকে সাথে নিয়ে পার করবে।কিন্তু দেখো,হাতটা ধরে দু কদম দিয়েই হাতটা ছেড়ে দিলে।নেই কোনো অভিযোগ।ভালো থেকো তুমি,খুব ভালো থেকো।আল্লাহ হাফেজ।

ইতি
তোমার প্রাক্তন

প্রিয় তুমি – Orshiya Shohid Anu

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
~চিঠিঃ-০৩

প্রিয় তুমি,

পুরো গ্রাম এখন ঘুমের দেশে তলিয়ে গেছে।চারিদিকে নিস্তব্ধতার আবেশ,যান্ত্রিক ফ্যানের একটা শোঁ শোঁ শব্দ ছাড়া আর তেমন কোন আওয়াজের ছিটেঁফোটা নেই।যদিও,আমার চোখে ঘুমপরীরা এখনো উঁকি দেয়নি। রাত যত গভীর হয় আমার ভাবনা গুলোও ততো বেশি গাঢ় রুপ লাভ করে।আজ ও তেমনি এক সময়। তোমাকে লিখতে কোনো কারণের প্রয়োজন হয়না,আর না প্রয়োজন হয় নির্দিষ্ট কোন সময়ের।জোনাকি জ্বলা সন্ধ্যারাত হোক, কিংবা শুকতারা উঁকি দেওয়া ভোর রাত,তোমার বসত আমাকে জুড়ে সর্বদায় বিরাজ করে।

আজ উত্তরের জানলা খুলে দিয়েছি,তোমাকে নিয়ে ভাবতে বসলেই আমি জানলা খুলে দি,আকাশে আজ গোলগাল একটা চাঁদ উঠেছে। বেশ ইচ্ছে করছে বাইরে যেতে, তবে তা এই মাঝ রাতে হবার নয়।তোমাকে নিয়ে আমার একটা কাল্পনিক সংসার আছে,সেখানে আমি আর তুমি ছাড়া অন্য কারো আনাগোণা নেই।আমার কাল্পনিক সংসারের সেই তুমিটা একটু বেশিই ভালোবাসে আমাকে,বাস্তবের তুমি তো খোঁজ নেওয়া ছেড়েছো,তবে কল্পনাতে তুমি একেবারেই অন্যরকম।

আমার অনুভূতিরা সাত রাজ্য ঘুরেও তোমার মতো আপন করে কাউকে স্পর্শ করতে পারেনা।সর্বদা এক জোড়া বিশ্বস্ত হাতের অপেক্ষা প্রতিটি মানুষের জিবনেই থাকে।আমিও এই মানবকূলের বিপরীত নই।আমারো তেমন দুটি হাতের খুব প্রয়োজন ছিল।সেই হাত বাড়িয়ে আমাকে ঠিকই তুমি আলোর দিশাতে তুলেছিলে,
সেটা হয়তো আমার দুর্ভাগ্য ছিল যে,তোমার সে হাতের মালিকানা আমি পাইনি।

তোমার আঁকড়ে ধরে রাখার ক্ষমতার কাছে আমার নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা টা নেহাতি তুচ্ছতম কাজ ছাড়া আর কিছুই ছিলনা।ভালোবাসা কাকে বলে তার সঠিক ধারণা আমার নেই,তোমার জন্য আমার অনুভূতিকে কি বলে তাও আমার জানা নেই।হটাৎ ঘুম ভেঙে গেলে, উঠেই প্রথম তোমাকে মনে পড়ে,”তুমি ঠিক আছো কি?”এরকম চিন্তারা ভীড় করে। বৃষ্টি যখন ছন্দতালে মত্ত থাকে, আমি তখন প্রতিটি বৃষ্টিকণায় তোমাকে ভাবতে থাকি।

তোমার কাছে এ অনুভুতি প্রকাশ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তোমার সামনে গেলেই নিজেকে আমি হারিয়ে ফেলি। তোমাকে গোপনীয়তার ভীড়ে জমা করে রেখেছি খুব সযত্নে। তোমার জিবনের সুতা বাঁধা পড়ে আছে অন্য কারো জীবনের সাথে, সে বাঁধনে আমার কোন জায়গা নেই তাও আমার জানা ৷তবে আমার জীবনের সুতার অপর পাশ এখনো খালি পড়ে আছে,আর ভবিষ্যতেও তাই থাকবে। যে স্বপ্ন তোমাকে নিয়ে বাঁধা,সে স্বপ্নে অন্য কারো আগমণের কোন রাস্তা নেই।”তুমি সুখি হবে তোমার ভালোবাসার সুখে,আর আমি সুখি রবো
তোমার সুখে”।

তোমাকে নিয়ে লেখা এমন হাজারো চিঠি বন্দি রয়েছে আমার ধুঁলোজমা বাক্সে,যে চিঠিগুলো কোনদিনই ডাক পিয়নের দেখা পাবেনা।

ইতি
“তোমার না হতে পারা সেই মেয়েটা”