Wednesday, July 9, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1889



নিয়তি ( পর্ব–২)

0

নিয়তি
( পর্ব–২)
লিখা — আসমা আক্তার পিংকি।
__________________________________________

মিসেস সালেহা বেগমের চিৎকারে নাজিফা ভাবনার জগত থেকে বিদায় নিলো, মিসেস সালেহা তখন নাজিফাকে চেঁচিয়ে — চেঁচিয়ে বলতে লাগলো — চুপ করে ওখানে দাড়িয়ে আছো কেন???
ইমাদকে মুখের উপর কিছু বলে দিচ্ছ না কেন??? আর এভাবে বড় করে ঘোমটা দিয়ে রেখেছো কেন?? ঘোমটা টা সরাও।
ইমাদ তখন মাকে উদ্দেশ্য করে বললো — না মা ওনি ঘোমটা সরাবেন না।
—- মানে কী বলতে চাস তুই??
— আমি বলতে চাই ওনাকে দেখার আমার বিন্দুমাত্র ও ইচ্ছে নেই, সো প্লিজ ওনি যেনো আমার সামনে এট লিষ্ট মুখটা না দেখায়।
—– দিন– দিন তুমি এতো বিগড়ে যাচ্ছ কেন?? একটা মেয়েকে বউ করে এনে ওকে পাপ্য সম্মান টুকু ও কেন দিচ্ছোনা তুমি???
—- কারন এ বিয়েতে আমি রাজি নেই বলে, মা প্লিজ তুমি এসব নিয়ে আর কথা বলোনা, তোমার জীবনটা নাকি আমি শেষ করে দিয়েছি, তুমি আমার কাছে বউয়ের আবদার করেছো, তাই বিয়ে করলাম, কিন্ত ওকে আমার স্ত্রীর পরিচয় দেবার আবদারটা যদি ও করো আমি মরে গেলে ও রাখতে পারবোনা, আর কেন পারবোনা সেটা ও তুমি ভালো করে জানো।
—— হে আমার রব আমাকে সবকিছুর সাথে মানিয়ে নেওয়ার তৌফিক দান করো। নিশ্চয় আপনি আমার জন্য উওম কিছু রেখেছেন, নিশ্চয় আপনি ধৈর্যশীল দের পছন্দ করেন, অতএব আমাকে তাদের ভিতরে অন্তর্ভুক্ত করো।
নাজিফার এরুপ বিড়বিড়িয়ে দোয়া করাটা সালেহার কানে যেতেই, ওনি নাজিফার সামনে এসে ওর হাতটা শক্ত করে ধরে বললো — বাহিরে এভাবে দাড়িয়ে থেকে গুনগুন করেই কী তুমি রাতটা কাভার করবে???
একটা কথা মনে রেখো নিজের অধিকার নিজেকেই আদায় করতে হবে কখনো ছেড়ে দিওনা।


ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
নাজিফা তখন ঠুনকো হেসে সালেহাকে বললো —- আমি সবসময় এটা বিশ্বাস করি যে আর যাই হোক ভালোবাসা আর অধিকার কখনো জোর করে আদায় করা যায়না, আর যে জোর করে আদায় করে সে সবচেয়ে বেশি বোকা। আমি সেই বোকাদের দলে অন্তর্ভুক্ত হতে চাইনা। আমি ভালোবাসাকে —- ভালোবাসা দিয়ে, অধিকারকে— অধিকার দিয়ে আদায় করবো।
ইমাদের কানে নাজিফার কথাগুলো যেতেই ইমাদ হেসে– হেসে নাজিফাকে বললো — সে স্বপ্ন আপনার কখনো পূরণ হবেনা। এনিওয়ে মা অনেক রাত হয়েছে, বাচ্চাদের এতো রাত অবদি জাগা ঠিক হবেনা, তুমি প্লিজ ওনাকে নিয়ে এখান থেকে যাও, আমি নওরীন আর নাবাকে নিয়ে একটু ঘুমাবো।



— মানে কী ইমাদ!!!! নাজিফা তাহলে কোথায় থাকবে???
—- মা তুমি আমাকে হাসালে, দিন– দিন তুমি এমন বোকা কেন যে হয়ে যাচ্ছ!!! আমাদের এতো বড় বাড়ি , এতে রুম থাকা শর্তে ও তুমি ওনার শোয়া নিয়ে চিন্তা করছো!!!!
এটা আমি মানতে পারছিনা , আসলে আমার মনে হয় তুমি ওনার এ ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়াটাই মেনে নিতে পারছোনা। তাই অজুহাত দেখাচ্ছ।
— ঠিক তাই আমি ওর এ ঘর থেকে চলে যাওয়াটাই মেনে নিতে পারছিনা, কারন এটা ওর অধিকার।
নাজিফা ওমনেই শাশুড়ির হাতটাকে আলতো করে ধরে বললো— থাকনা
, আমি না হয় অধিকারটা নাই বা চাইলাম। একদিন ওনি নিজেই হয়তো এই অধিকারটা আমায় ফিরিয়ে দিবেন।



মেয়েটির কথাগুলোয় বেশ মায়া আছে, যা সহসা যে কাউকে ওর মায়ায় বাঁধতে পারে । কিন্তু নিয়তির পরিহাসে আজ মেয়েটি সমাজের কাছে বড্ড বেশি তুচ্ছ , তবে ওকে যে চিনেছে সেই ঝিনুকের ভিতরে মুক্তোর সন্ধান পেয়েছে। যেমন পেয়েছি আমি, এই ভেবে সালেহা ঠোঁটের কোনে একটা শান্তির হাসি ফুটিঁয়ে, নাজিফা কে বললো — তুই আমার এই সংসারকে আলোর পথে আনবি,আর সাথে আমার এই ছেলেটাকে ও একদিন নিজের মতো করে গড়ে নিবি । তুই যেমন স্রষ্টা কে ভালোবাসিস, এই সংসারের মানুষগুলোকেও তার প্রতি ভালোবাসায় মগ্ন করবি। আর আমি তোকে কথা দিচ্ছি আজ যারা তোকে এ ঘর থেকে বের করে দিলো, একদিন তারাই তোকে এ ঘরে ঠাঁই দিবে।



এই বলে সালেহা নাজিফার হাতটা ধরে ওকে টেনে নিজের ঘরে নিয়ে যায়। ইমাদ মেয়েদের নিয়ে দিব্যি নিজের ঘরের দরজাটা লাগিয়ে দেয়। ছেলেটার এরুপ আচরণ হয়তো নাজিফার কাছে ছেলেটিকে অমানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু উপরওয়ালা জানে ছেলেটি কতটা কষ্টে— দিন– দিন এমন অমানুষ হয়ে গেছে।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
প্রতিরাতে জেগে থাকা বালিশ, আর জানালার ফাঁক দিয়ে বাহিরে দেখা সোডিয়ামের আলোয় জানে— ছেলেটি কতরাত হাহাকার করে কেঁদেছে। আজ ইমাদের চোখে পানিই নেই, অশ্রুটাও আজ হারিয়ে গেছে। কিন্তু এতো কঠিন বাস্তবতার মাঝে ও প্রিয়মানুষের শেষ আমানত টুকু তাকে আজ ও বাচিঁয়ে রেখেছে। নওরীন আর নাবার চেহারাগুলো আজ ও ইমাদকে হাজারো কষ্টের মাঝে বলতে বাধ্য করে— এইতো আমি সুখে আছি, এইতে আমি ভালো আছি।



নাজিফাকে সালেহা বিছানার উপর বসিয়ে, রান্না ঘরে গেলো খাবার আনতে। সালেহা খাবার এনে দেখে মেয়েটি এখন ও মাথায় এক হাত ঘোমটাটা দিয়ে বসে আছে। সালেহা নাজিফার কাছে গিয়ে কোনে কথা না বলেই, নাজিফার ঘোমটা টাকে সরিয়ে ফেললো।


অতঃপর দেখলো মেয়টি কান্না করে চোখ দুটোকে লাল করে ফেলেছে। সালেহা অভিমান করে বললো — এটাই করতে পারবে তাছাড়া আর কিছুই করতে পারবেনা।
নাজিফা চোখের জল মুছতে— মুছতে বললো —- মানে????
—- মানে আমরা মেয়েরা কান্না ছাড়া আর কিছুই করতে পারিনা। শুনো একটা কথা মাথায় রাখবে তোমার সুখ তোমার নিজেকে আদায় করে নিতে হবে বুঝলে।
নাজিফা অবাক হয়ে গেলো — আসলেই ওনি কী আমার শাশুড়ি!!!! দুনিয়াতে কত রকমের মানুষ কেউ শাশুড়ি নামক জল্লাদ আর কেউ শাশুড়ি নামক মা।
—- তা এভাবে কী চুপ করে বসে থাকলেই হবে??ক্ষুদা লাগেনি??
—- এ্যা, ইয়ে মানে লেগেছে তো।
—-যাও হাত — মুখ ধুয়ে এসো, আমি খাবার বেড়ে দিচ্ছি।


নাজিফা হাত– মুখ ধুয়ে আসলে, সালেহা বেগম নিজ হাতে ওকে খাওয়াতে গেলে, ও কান্না করে দেয়। সালেহা তখন আলতো করে ওর মাথায় হাত দিয়ে বলে— কী হয়েছে মায়ের কথা মনে পড়ছে???
নাজিফা তখন কাঁদতে– কাঁদতে বলে— মা কখনোই এমন ভালোবাসেনি যে তাকে মনে পড়ার কথা।
— তাহলে কাঁদছিস কেন???
—- আপন মা না হয়ে ও কেউ একজন মায়ের মতো ভালোবাসায়।
— পাগলি, নে খেয়ে নে।
নাজিফা যখন ভাতের প্রথম লোকমা মুখে নিলো, তখন ওর নিজেকে পৃথিবীর সবথেকে সুখী মানুষ মনে হলো। এই প্রথম কেউ একজন ওকে এতো ভালোবাসলো। নিজের মা ও কখনো এভাবে আদর করেনি।


আসলে পৃথিবীতে একজন কে দিয়ে সকলকে বিবেচনা করা উচিত নয়। পৃথিবীর সব মায়েরা যেমন এক হয় না, ঠিক তেমনি পৃথিবীর সব শাশুড়িরা ও এক হয়না।
—- কী রে মা কী ভাবছিস??
— না, কিছুনা, আচ্ছা আমি কী আপনাকে মা বলে ডাকতে পারি?
— এ মা! এ আবার কী কথা, আমি তো তোর মায়েই।
কথাটি শুনে নাজিফা মিসেস সালেহার দিকে ভ্যালভ্যাল করে তাকিয়ে রইলো।
— কী হলো ওভাবে চেয়ে আছিস কেন??
— না, কিছুনা।
—নে ঘুমিয়ে পড়, কাল থেকে দেখবি এই বাড়ির নাটকীয়তা।
হুম দেখতে তো আমাকে হবেই, আর সাথে মানুষগুলোকে ও পরিবর্তন করতে হবে।
( চলবে)

নিয়তি পর্ব-১

0

গল্প: নিয়তি
পর্ব-১
লিখাঃ আসমা আক্তর পিংকি।
____________________________________

আমার দুটো বাচ্চা আছে জেনে ও আপনি আমাকে বিয়ে করলেন?
বিয়ের প্রথম রাতেই ইমাদের মুখ থেকে এমন কথা শুনে নাজিফা একটু শুকনো হেসে বললো —- হাসালেন আপনি আমাকে।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
আরে আমি নিজেই তো একজন ডিভোর্সি মহিলা, স্বামীর সাথে সংসার করতে- না করতেই দু বছরের মাথায় ও আমাকে ডিভোর্স দিলো । আমার আবার পছন্দ— অপছন্দ। পরিবারের কাছে এই ১ টা বছর বোঝার মতো ছিলাম, অবশেষে আপনার সাথে বিয়ে হওয়ায় একটু মুক্তি পেলাম। কিন্তু আপনি আমাকে কেন বিয়ে করলেন?


নাজিফার কথার উওর দিতে গিয়ে ইমাদের চোখ দুটো লাল হয়ে যায়, কিছুসময় নিশ্চুপ থেকে ইমাদ বললো — আমি তো আপনাকে বিয়ে করতে চাইনি, ইনফ্যাক্ট এ বিয়েতে রাজি ও ছিলাম না, কিন্তু মা অনেক জোর করলো, আমাকে নিয়ে হাপিঁয়ে গেছে মানুষ টা, সেদিন আমার সামনে এসে মায়া ময় কন্ঠ বললো

— বাবা তুই কী আমাকে বেঁচে থেকে ও মরার লাশের মতো রাখবি।
সেদিন মায়ের কথাটি শুনে খুব কষ্ট হলো, আলতো করে মায়ের কোলে মাথা রেখে
বললাম— মা তুমি কেন এমন বলছো?
মা তখন দুহাত তুলে আমাকে বললো — দে না বাবা আমাকে একটা বউ, মানুষের জীবনে তো এমন সুখ– দুঃখ থাকেই, কিন্তু তাই বলে কী তুই নিয়তির সাথে রাগ করে জীবনকে থামিয়ে রাখবি??
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
সন্তান গুলোর কথা অন্তত ভাব, ওদের পুরো জীবনটা এখন ও পড়ে আছে। ওদের ও তো মায়ের ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার আছে।
সেদিন কেন জানী মায়ের কথা গুলো খুব লাগলো , মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আপনাকে বিয়ে করতে বাধ্য হলাম।
ইমাদের কথা শুনে বিশাল ঘোমটার আড়ালে লুকিয়ে থাকা মেয়েটির চোখ দুটো অশ্রুতে ভিজে গেলে, কিন্তু ইমাদ সে খবর নিলো না, বরং তিক্ত কথা শুনাতে লাগলো — দেখুন আমি আপনাকে কখনো স্ত্রীর মর্যাদা দিতে পারবো কীনা জানীনা, তবে বন্ধু হিসেবে আপনাকে সবসময় সাহায্য করবো, আর হ্যা আপনার আগের স্বামী আপনাকে ছেড়ে দিয়েছে কেন, সেটা ও আমি জানীনা, তবে জানতে ও চাইনা, কারন আপনাকে নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই, তবে মায়ের থেকে যেটুকু শুনেছি আর এতোক্ষণে আপনাকে যেটুকু দেখেছি তাতে আমার মনে হচ্ছে আপনি খুবেই পরেহেজগার, আর সেই জন্যই হয়তো আমাদের বিয়েটাও মসজিদে হয়েছে, কিন্তু বুঝতে পারছিনা আপনি এতো পরেহেজগার হওয়া শর্তে ও আপনার হ্যাজবেন্ড আপনাকে ছেড়ে কেন চলে গেছে?????
আবার সেই প্রশ্নটার সম্মুখীন, এই ১ বছরে মেয়েটি এই প্রশ্নটি শুনতে– শুনতে প্রায় ক্লান্ত হয়ে যায়। ভেবেছে এবার একটু মুক্তি পাবে কিন্তু তাও হলোনা।

ঘোমটার আড়ালে লুকিয়ে থাকা মেয়েটি ইমাদের প্রশ্নের কোনোই উওর দিলোনা।
ইমাদ একটু সংকোচ করে তখন বললো –আসলেই কী আপনি ভালো? নাকি ভালো হওয়ার অভিনয় করছেন।
নাজিফা তখন শান্ত কন্ঠে বললো —- হয়তো খারাপ তাই আজ অবধি কারো মনে জায়গায় পেলাম। না।
—- আপনি কী আমার কথায় রাগ করেছেন?
— এ মা কী বলছেন, রাগ কী সবার উপর করা যায় বলুন, রাগ করতে হলে মানুষটার উপর অধিকার থাকতে হয়।


ইমাদ আর কোনে জবাব দিলোনা, একটু নিচু করে মুখটাকে রেখে নাজিফাকে উদ্দেশ্য করে বললো — দেখুন আমি জানীনা আপনি দেখতে কেমন? আর আপনাকে দেখার ও আমার কোনো আগ্রহ নেই, তবে আপনাকে একটা কথা বলে রাখি আপনি প্লিজ আমার কাছে কখনো স্ত্রী র অধীকার চাইবেন না।
—- চাইবো না, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলাই আমার জন্য যথেষ্ট ।
নাজিফার কথা শেষ না হতেই দরজায় কেউ নক করতে লাগলো, ইমাদ একটু চিন্তিত হয়ে দরজার সামনে গিয়ে বললো —- কে??
ও পাশ থেকে তখন আওয়াজ আসলো— বাবাই আমরা।
বাবাই শব্দটা ইমাদের কানে আসতেই এক মুখ হাসি নিয়ে ছেলেটি দরজা খুললো, দরজা খুলতেই একটি চার বছরের মেয়ে ইমাদের কোলে উঠে পড়লো, একমুখ হাসি নিয়ে মেয়েটি ইমাদকে বলতে লাগলো — ও বাবাই, আমি তোমার পাতে তুবোনা?
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
কথাটি নাজিফার কানে যেতেই নাজিফা খিলখিল করে হাসতে লাগলো, ওর হাসির আওয়াজ ইমাদের নয় বছরের মেয়ে নওরীনের কানে যেতেই ও বাবাকে রাগী স্বরে বলতে লাগলো — বাবাই তোমার আর মায়ের ঘরে এ কে??
ওকে কেন এই ঘরে এনেছো, আর তাছাড়া ও এভাবে সেজে বসে আছে কেন?
মেয়েটির এমন কথা নাজিফার কানে যেতেই নিমিষে ওর হাসিটা উদাও হয়ে যায়।
ইমাদ নওরীনের মাথায় হাত দিয়ে বললো — মামুনি এনি তোমাদের আনটি হয়।
— আনটি! আচ্ছা মামুনি বলে পরিচয় দিলে কী হতো? ও বাচ্চাদের আম্মু হতে ও বুঝি আপনার স্ত্রীর অধিকার লাগবে। নাজিফা মনে– মনে এই ভাবতে— ভাবতে নিশ্চুপ ভাবে বসে রইলো।
কিন্তু নওরীন বড় জেদি ও এক রোখা টাইপের মেয়ে, ঘরে ঢুকেই নাজিফার হাতটা শক্ত করে ধরে ওকে ঘর থেকে বের করে দিলো, চিৎকার দিয়ে বলতে লাগলো — আমার বাবাইয়ের রুমে তুমি কী করছো, যাও এখান থেকে?
ইমাদ তখন নওরীনকে বলতে লাগলো — আম্মু এমন করেনা, ও তো আমাদের বাড়ির মেহমান।
— না বাবাই, ও কেউ না, ফুফু বলেছে ও আমাদের সৎ মা, বাবাই ওকে চলে যেতে বলো, নাহলে আমি কিন্তু তোমার সাথে আর কোনো দিন কথা বলবোনা, এই বলে নওরীন, নাবার দিকে তাকিয়ে ইমাদকে বললো — নাবা ও তোমাকে কোনো দিন বাবা বলে ডাকবেনা।



নাজিফা অবাক হয়ে গেলো নয় বছরের একটি বাচ্চার মুখে এমন সব আচরণ দেখে , খুব অবাক ভাবে ও নওরীনের দিকে তাকালো, মেয়েটির চেহারায় এতো পরিমান মায়া, যা যে কেউকে ওর প্রতি ভালোবাসায় জড়াবে কিন্তু বড্ড বেশি জেদি ও এক রোখা টাইপের মেয়ে।
—- কী হলো তুমি এখনো দরজার সামনে দাড়িয়ে আছো কেন? প্লিজ এখান থেকে যাও, বাবাই ওকে চলে যেতে বলো।
নওরীনের চেঁচামেচিতে মিসেস সালেহা বেগম উপরে উঠে আসতে বাধ্য হলো , ইমাদের রুমে এসে নতুন বউকে বাহিরে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আর নওরীন, ও নাবাকে ইমাদের সাথে দেখে গম্ভীর কন্ঠে সালেহা বেগম নওরীনকে জিজ্ঞাসা করলো —- কী ব্যাপার তুমি এখানে কী করছো?
নওরীন আমি না তোমাকে আর নাবাকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে আসলাম। তোমরা এ ঘরে কী করছো?
নাবা তখন বাবাইয়ের কোল থেকে দিদুনের কোলে গিয়ে আদৌ — আদৌ করে বলতে লাগলো —- দিদু, বোন, বোন উতিয়ে দিয়েছে আমায়, বোন, বাবাই, বাবাই আতবে বলে।
নাবার কথা শুনে মিসেস সালেহা গরম চোখে নওরীনের দিকে তাকাতেই ও ইমাদের পিছু গিয়ে লুকিয়ে পড়ে। মিসেস সালেহা তখন ইমাদের পিছু থেকে ওর হাতটা শক্ত ধরে ওকে বলে —- দিন– দিন তোমার বেয়াদবি বেড়েই যাচ্ছে।
ইমাদ তখন ওর মায়ের হাতটা সরিয়ে মিসেস সালেহাকে বলে— মা প্লিজ তুমি ওকে ছাড়।


—– এই তোর পশ্রয় মেয়েটি দিন– দিন বিগড়ে যাচ্ছে, তোরা ওকে আদর দিয়ে দিয়ে দিন- দিন বানর বানিয়ে ফেলছিস।
—- আদর আর কী দিলাম, তোমার কথা রাখতে গিয়ে, তোমার জ্বালায় আমাকে আবার বিয়ে করতে হয়েছে, তাও একটা ডিভোর্সি মহিলাকে।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
” ডিভোর্সি মহিলা ” শব্দটি যেনো মেয়েটির একটা নাম হয়ে গেছে। এক সময় নাজিফার খুব কষ্ট হতো যখন পাড়ার মহিলারা ওকে দেখিয়ে বলতো— দেখ মেয়েটি কী দ্বীনদার, অথচ এতো পরেহেজগার হওয়া শর্তে স্বামীর ঘর করতে পারলোনা, ডিভোর্স হয়ে গেলো।
কী যুগ রে বাবা, এরা আবার নাকি পরেহেজগার।
নাজিফার কাছে সেই কথাগুলো একসময় বিষণ আঘাতের অস্ত্র ছিলো, কিন্তু ধীরে– ধীরে মেয়েটি একটা সময় এই কঠিন বাস্তবতার সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়।
তাহলে আজ ইমাদের মুখ থেকে এ কথা শুনে কষ্ট পাওয়ার কোনো প্রশ্নই তো আসেনা। কিন্তু তারপর ও হৃদয়ের মাঝে আজ কেন জানী পুরোনো কষ্ট টা আঘাত করলো আবার, নাজিফা বুঝে উঠতে পারলোনা —- কেন এমন কষ্ট হলো!!!


বিয়ের দুদিন আগে ও তো মা কথায়– কথায় ঠেস মেরে বললো —– কপালে দুই বাচ্চার বাপ জুটেছে এটা ও তোর ভাগ্য ভালো, না হলে যে মেয়ে নিজে স্বামীকে ডিভোর্স দেয় তার আবার কেমন করে বিয়ে হয়????
নিজের আপন মা যখন সবকিছু যেনে ও এমন কথা বলে তখন তো কষ্ট — যন্ত্রনার দরুন জ্বালা পাওয়ার কথা। কিন্তু কই সেদিন তো মায়ের কথাই আমার বিন্দু মাএ কষ্ট হলোনা, সমাজের আর পাঁচটা স্বাভাবিক মানুষের তালিকায় মাকে ও স্থান দিয়ে আমি সে কষ্ট টা নিমিষে দুর করে ফেললাম, তবে আজ কেন এই লোকটার কথায় পুরনো ক্ষতরা আবার মন পাজঁরে উতপাত শুরু করলো!!!!!!



নাজিফা প্রশ্নটির কোনো উওর পেলোনা, বুঝে ফেললো মেয়েটি —- আসলেই পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটা হয়তো সহজ, কিন্তু ভালোভাবে বেঁচে থাকাটা ভীষণ জটিল, আর সেই জটিলতায় আমাদের অনেক প্রশ্নের কোনো উওর হয়না, অনেক কিন্তুর কোনো কারন হয়না, আর অনেক সম্পর্কের কোনো মানেই হয়না।
সালেহা ইমাদের এমন কথা শুনে , ইমাদকে রেগে গিয়ে বলে— তুমি দিন– দিন আসলেই যে কত পরিমান বিপথে যাচ্ছ তা আজ আমি টের পেলাম। ওকে ডিভোর্সি বলছো, তুমি কী? হ্যা, তুমি তো…..
—- মা প্লিজ আমি তোমাকে বলিনি আমি আবার বিয়ে করবো, অতএব আমি কী সে প্রশ্নটা এখানে আসছে কেন???আর এ বিয়েটাই আমার কাছে ছেলেখেলা ছাড়া আর কিছুই নয়।
—- বিয়েটা তোমার কাছে ছেলেখেলা মনে হলে ও তা আমার কাছে নয়, এই সংসারের আর তোমাদের যে অবস্থা তা থেকে তোমাদের সকলকে সঠিক পথে আনার জন্যই আমি ওকে এ বাড়ির বউ করে এনেছি, আর ও শুধু এ বাড়ির বউ না আমার মেয়ে ও।



নাজিফা যেনো বিশ্বাস করতে পারছেনা শাশুড়ি নামক মহিলা তাকে মেয়ে বলায়। কেন জানী মনে হচ্ছে মহিলাটি ভুল করে এমন কথা বলে ফেলেছে, আসলে শাশুড়িদের কাছে কখনো বউরা মেয়ে হয়না, যদি হতো তাহলে……

The_Villain_Lover Last_Part

0

The_Villain_Lover
Last_Part
#Writer:#Tisha_Islam_Nabila

সম্রাট আজ অনেক খুশি….আর খুশি হবারই কথা….বাবা হওয়ার অনুভূতি অনুভর করছে….সেটাও প্রথমবার তিশা ও খুশি….বারবার নিজের পেটে হাত রাখছে….হয়তো নিজের সন্তান কে ফিল করতে চাইছে….সম্রাট দরজার পাশে দাড়িয়ে….তিশা’র কান্ড দেখছে আর মুচকি হাসছে….এবার ভেতরে এসে বললো..!!

—-জান তুমি কি করছো??

তিশা উত্তেজনা নিয়ে বললো……

—-সম্রাট আমি আমার বেবী কে….খুব করে ফিল করতে চাইছি….আমি তো ভাবতেই পারছি না এখনো….আর মাএ কয়েকমাস পর….আমারও একটা কিউট ছেলে থাকবে..!!

সম্রাটঃ ছেলে মানে??

ভ্রু কুঁচকে বললো সম্রাট……

তিশাঃ ছেলে মানে ছেলে….আমি চাই তোমার মতো….একটা কিউট গুলুমুলু ছেলে..!!

সম্রাটঃ নো আমার মেয়ে চাই….তোমার মত কিউট হবে……

তিশাঃ না ছেলে হবে ওকে??

সম্রাটঃ না মেয়ে হবে ওকে??

সম্রাট আর তিশা রীতিমত….ঝগড়া করতে শুরু করেছে….নিলয় রুমে এসে ওদের দেখে….ওর চোখ কপালে ওঠার উপক্রম..!!

নিলয়ঃ আরে ভাই, ভাবী কি করছো তোমরা??

তিশাঃ ভাইয়া দেখো না….আমি বলছি ছেলে হবে আমার….আর সম্রাট বলছে মেয়ে…….

তিশা নিলয় কে ভাইয়া বলে..!!

নিলয়ঃ ভাই এটা একদম ঠিক না….আমিও তো চাই আমার….কিউট একটা ভাতিজা হোক……

সম্রাটঃ হোয়াট??

তিশা, নিলয়ঃ ইয়েস ছেলে চাই……

সম্রাট অসহায় হয়ে বললো..!!

—-দেখো জান আমি বললাম….আমার একটা মেয়েই হবে..!!

তিশাঃ হু আমিও বললাম ছেলে হবে…….

এদিকে তিশা প্রেগন্যান্ট শুনে….সবাই খুব খুশি হয়েছে….অভি, আবির, নীল, কল্লোল….৪জন তো লাফালাফি করছে….আরশাল চৌধুরী, কনিকা চৌধুরী….আর কল্লোলে’র বাবা ছেলেদের কান্ড দেখছে….এরমাঝে বাইরে থেকে আহানিতা এলো..!!

আহানিতাঃ একি কি হচ্ছে এসব??তোমরা এভাবে লাফাচ্ছো কেন??

কল্লোলঃ আরে আহানিতা আমরা মামা হবো….তুই খালামনি হতে চলেছিস……

আহানিতাঃ ভাইয়া সত্যি??

নীলঃ হ্যা রে সত্যি..!!

ব্যাস আহানিতা ও যোগ দিলো ওদের সাথে….সবাই হা করে তাকিয়ে আছে….এরপর সবাই রেডি হয়ে মিষ্টি নিয়ে….সম্রাট’দের বাড়িতে গিয়ে হাজির হলো……

তিশাঃ তোমরা??

ওরা ড্রয়িংরুমে বসা ছিলো….কলিংবেল বাজতেই তিশা দরজা খোলে….আর দরজা খুলে দেখে ওদের বাড়ির লোকজন….তিশা সবাই কে জড়িয়ে ধরে..!!

সম্রাটঃ মাম্মা, পাপা তোমরা এসেছো….খুব ভাল করেছো এসো….এত সহজে আর যেতে দিচ্ছিনা……

আবিরঃ আমরা সন্ধ্যার আগে চলে যাবো..!!

নিলয়ঃ নো ওয়ে সেটা হচ্ছে না…..

তিশাঃ একদম থাকতে হবে অনেকদিন..!!

সবাই অনেক মজা করছে….তিশা রুপ কে ফোন দিয়ে আসতে বললো….তাই কিছুক্ষণ পর রুপ চলে এলো….রুপ আর অভি চোখাচোখি করছে….সম্রাট আর তিশা বাকীরা হাসছে……

সম্রাটঃ আমরা কিন্তুু সব দেখতে পাচ্ছি..!!

নীলঃ আমিতো আগেই দেখেছি……

আবিরঃ আমিও দেখেছি এখন তোমরা দেখো…..

সবাই জোরে হেসে দিলো….রুপ আর অভি লজ্জা পেয়ে….মাথা নিচু করে ফেললো..!!

কল্লোলঃ বাপরে অভি ভাইয়া লজ্জাও পায়??

অভিঃ কেন লজ্জা কি তোদের….ব্যক্তিগত সম্পতি নাকি??যে অন্যদের পেতে নেই??

কল্লোল ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো…….

এদিকে একজন বলছে..!!

খুব শান্তিতে আছো দেখছি….কিন্তুু আফসোস এই শান্তি….আমি বেশী দিন থাকতে দেবো না….একবার তোমাদের বেবী এই পৃথিবীতে আসুক….তারপর হবে আসল মজা……
.
.
.
.
.
.
রাতে ডিনার করছে সবাই..!!

আহানিতাঃ আবির আস্তে খাও…….

আবির সহ সবাই অবাক হয়ে তাকালো..!!

আবিরঃ এই ডায়নি আমি কি রাক্ষস??যে তোর মত খাবো….আমি তো আস্তেই খাচ্ছি..!!

আহানিতা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বললো……

—-কি আমি ডায়নি??তুই ডায়নি তোর ১৪গুষ্টি ডায়নি..!!

সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে….আর সবাই সম্রাট, নিলয়….আর তিশা’র মা বাদে রেগে তাকিয়ে আছে……

তিশাঃ এই কি বললে তুমি আপু??১৪গুষ্টি ডায়নি মানে কি??১৪গুষ্টির ভেতরে যে আমি….আমার মতো মাসুম কিউট ভোলা ভালা….মেয়েটা আছে সেটা তোমার খেয়াল আছে??

আহানিতা দাত কেলিয়ে বললো..!!

—-সরি বোন মিস্টেক হয়ে গিয়েছে…….

সম্রাটঃ তুমি আর ভোলা ভালা??তাহলে তো হয়েই গেলো..!!

তিশা দাত কিড়মিড় করে বললো……

—-কি বলতে চাও তুমি??আমি ভোলা ভালা না??

সম্রাটঃ এই হলো তোমার ভোলা ভালার নমুনা..!!

সবাই হেসে দিলো তিশা রেগে তাকালো……

নিলয়ঃ ভাই এটা কিন্তুু ঠিক না….তুমি শুধু শুধু ভাবী কে জ্বালাচ্ছো..!!

তিশাঃ হ্যা নিলয় ভাইয়া….তুমিই একমাএ আমাকে বুঝলে…..

সম্রাট ভ্রু কুঁচকে তাকালো..!!

তিশাঃ তুমি আর মুখ খুলবে না……

সম্রাট বেচারা ভয় পেয়ে চুপ হয়ে গেলো..!!

রুপঃ ভাবা যায় অভি??আমাদের জিজু মাফিয়া জিজু….তার একমাএ বউ কে ভয় পায়……

আবির হেসে হেসে বললো..!!

—-আসলেই ভাবা যায় অভি??

অভি আর রুপ বিষম খেলো….আর সবাই শব্দ করে হেসে দিলো….নীল হাসতে হাসতে বললো……

—-তো মাম্মা ভাইয়ার বিয়ে কবে হচ্ছে??

অভিঃ ওই নীল কি বলছিস??

আবিরঃ ভাইয়া তুমি কিন্তুু একদম….নীল ভাইয়া কে আটকাবে না….এবার তোমার বিয়ে আমরা দেবো..!!

অভিঃ আর তুমি কবে বিয়ে করবে??এইযে আহানিতা কবে বিয়ে করছো??আর আমার আরো ২ভাই……

আরো ২ভাই বলতেই….নীল আর কল্লোল বিষম খেলো….তিশা আর সম্রাট হা করে আছে..!!

তিশাঃ মানে ওদেরও জিএফ আছে??

অভিঃ আমাদের নীল বাবুর জিএফ হচ্ছে….নীলা রহমান মেঘা….মানে মেঘ আর কল্লোল বাবুর……

কল্লোলঃ হে হে কেউ নেই আমার..!!

নীলঃ কল্লোল মিথ্যে কথা বলতে হয় না….তোর জিএফের নাম রিয়া রাইট??

তিশাঃ আর আমাদের নিলয় ভাইয়া??

নিলয় এতক্ষণ হাসছিলো….এবার চোখ বড় বড় করে তাকালো……

আবিরঃ নিলয় ভাইয়া বলে ফেলো..!!

নিলয়ঃ আমার কেউ নেই……

দাত কেলিয়ে বললো নিলয়..!!

সম্রাটঃ তাহলে আমরা মেয়ে দেখে….তোর ভাল জায়গায় বিয়ে করিয়ে দেবো……

নিলয় চেচিয়ে বলে উঠলো..!!

—-নোওওওওওও তাহলে দিয়া’র কি হবে??

বলে মুখে হাত দিলো….আর সবাই হেসে দিলো……

সম্রাটঃ এবার বলো বিয়ে কবে করছো??

আরশাল চৌধুরীঃ আমি ভাবছি একসাথেই সবার বিয়ে হবে..!!

তিশাঃ ওয়াও পাপা গ্রেট ডিসিশন…….

কনিকা চৌধুরীঃ হুম ভাল বলেছো..!!

এভাবেই মজা করতে করতে….সবাই ডিনার শেষ করলো….এখানে কয়েকদিন থেকে….তিশা’র পরিবারের সবাই ফিরে গেলো….দিন যেতে লাগলো ৪মাস চলে গেলো….এক এক করে সবাই বিয়ে করলো….ওদের জীবনে এখন কোনো দুঃখ নেই….ধুমধাম করেই সবাই বিয়ে করেছে….আফটার অল খাঁন আর চৌধুরী বলে কথা….নিলয়ে’র বউ দিয়া খুব ভাল….সময় পেলেই দিয়া আর তিশা….গল্প করতে বসে যায় নিলয় এখন অফিসে যায়…….

আরো ৩ মাস চলে গেলো….তিশা’র প্রেগন্যান্সির এখন ৮মাস চলে….আগের থেকে খিটখিটে হয়ে গিয়েছে তিশা….সবসময় রেগে থাকে সম্রাটে’র সাথে রেগে কথা বলে….এটা খাবোনা, ওটা খাবোনা….এটা করবো না, ওটা করবো না….রাত নেই দিন নেই….অনেক সময় রাত ৩টা নেই ৪টা নেই….উঠে খেতে চায় সম্রাট হাসি মুখে এনে দেয়….খেতে না খেতে আবার বমি করে দেয়….সম্রাট হাসি মুখে আগে তিশা কে ফ্রেশ করে….এরপর নিজে ফ্রেশ হয়ে নেয়..!!
.
.
.
.
.
.
তিশা মাঝে মাঝে খুব অবাক হয়….একজন মাফিয়া হয়েও সম্রাটে’র ধৈর্য্য দেখে….তিশা নিজেকে এখন লাকি মনে করে….যে জীবনে ও ভাল কিছু করেছে….যার জন্য ও সম্রাট কে নিজের….হাসবেন্ড হিসেবে পেয়েছে…….

দেখতে দেখতে তিশা’র….ডেলিভারীর দিন এগিয়ে আসছে….আর সম্রাটে’র ভয়টাও বাড়ছে….ভয়টা তিশা কে নিয়ে হয়….যেখানে ভয় তিশা’র পাবার কথা….সেখানে ভয় সম্রাট পায়….সম্রাটে’র চোখে ঘুম নেই….তিশা’র মুখের দিকে তাকিয়ে আছে..!!

সম্রাটঃ আল্লাহ প্লিজ তুমি দেখো….আমার জান আর আমার বেবী….দুজনেই যেন সেভ থাকে…….

হঠাৎ তিশা ঘুমের মাঝে….নিজের পেটে হাত দেয়….এপাশ ওপাশ করছে একসময়….জোরে চেচিয়ে ওঠে সম্রাট ভয় পেয়ে যায়..!!

সম্রাটঃ জান কি হলো ব্যথা করছে??

তিশাঃ সম্রাট আমার খুব ব্যথা করছে….আহ সম্রাট আমি মরে যাচ্ছি……

সম্রাট প্রচুর ঘামছে….চোখ ছলছল করছে তাড়াতাড়ি….তিশা কে কোলে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে….নিলয় কে ডাকে ডাক শুনে….নিলয় আর দিয়া দুজনেই বেরিয়ে আসে….এরপর তিশা কে নিয়ে হসপিটালে চলে আসে….ডক্টর তিশা কে নিয়ে ওটিতে যায়….আজও সম্রাটে’র সাহস হচ্ছেনা ওটি করার….তিশা ব্যথায় চিৎকার করছে….যা ওটি ভেদ করে বাইরে আসছে….সম্রাটে’র মনে হচ্ছে কেউ ওর কলিজায়….ছুড়ি দিয়ে অনবরত আঘাত করছে….সম্রাটে’র চোখ দিয়ে পানি পড়ছে..!!

তিশা’র বাড়ির সবাই চলে এসেছে……

নিলয়ঃ ভাই ভাবীর কিছু হবে না..!!

সম্রাটঃ আমি যদি জানতাম….বেবী হওয়ার সময় জান এত কষ্ট পাবে….বিশ্বাস কর নিলয় তাহলে আমরা বেবী নিতাম না….প্রয়োজনে এডোপ্ট করতাম……

কাঁদতে কাঁদতে বলে সম্রাট….সবাই অবাক হয়ে যায়….তিশা’র প্রতি সম্রাটে’র ভালবাসা দেখে….একটুপরেই বাচ্চার কান্নার আওয়াজ এলো….আর সবকিছু স্তব্ধ হয়ে গেলো….সম্রাটে’র হাত পা কাঁপছে এখন….নার্স সাদা কাপড়ে পেচিয়ে….একটা ফুটফুটে বেবী কে নিয়ে এসে বললো..!!

—-বেবীর বাবা কে??

সম্রাট এগিয়ে এসে বললো……

—-আমার ওয়াইফ কেমন আছে??

এবারও সবাই অবাক হলো….নার্স বুঝলো সম্রাট’ই বেবীর বাবা….তবে অবাক হলো বেবী কে না নিয়ে….আগে ওয়াইফ কেমন আছে জানতে চাইছে..!!

নার্সঃ আপনি বেবী কে নেবেন না??

সম্রাটঃ আগে বলুন আমার ওয়াইফ কেমন আছে??

নার্স হেসে দিয়ে বললো…….

—-স্যার আপনার ওয়াইফ….একদম ঠিক আছে এবার….আপনার ছেলে কে কোলে নিন..!!

সম্রাট একটা সস্তির নিঃশ্বাস ফেলে….কাঁপা হাতে বেবী কে কোলে নিলো….খুশিতে ওর চোখে পানি চলে এলো….বেবীর সারা মুখে চুমু খেলো….সবাই বেবী কে কোলে নিচ্ছে….একটুপর ডক্টর বললো তিশা কে কেবিনে দিয়েছে….সম্রাট বেবী কে নিয়ে তিশা’র কাছে গেলো….তিশা তখন তাকিয়েই ছিলো……

তিশাঃ আমার বেবী ওকে দাও..!!

সম্রাট তিশা’র কাছে বেবী দিলো….তিশা বেবী কে কোলে নিয়ে….অজস্র চুমু খেলো এক নিমিষে….সব কষ্ট ভুলে গেলো বেবী কে….বুকের সাথে হালকা ভাবে মিশিয়ে রেখেছে….এমন সময় কেবিনে একজন….মাস্ক পরিহিত ডক্টর এসে বললো……

—-মিস্টার খাঁন এই মেডিসিন লাগবে..!!

সম্রাট ঠিকমত না দেখেই….লোকটার হাত থেকে পেসক্রিপশন নিয়ে….সম্রাট বাইরে চলে এলো….এদিকে সম্রাট বাইরে আসতেই….লোকটা তিশা কে একটা ইনজেকশন দিয়ে দিলো….তিশা সাথে সাথে ঢলে পড়লো….লোকটা তিশা’র বেবী কে কোলে নিলো….সম্রাট বাইরে এসে পিসক্রিপশন দেখে….অবাক হয়ে গেলো কি মনে করে….দৌড়ে আবার কেবিনে চলে গেলো….কেবিনে গিয়ে দেখলো তিশা ঢলে পড়ে আছে….আর লোকটা কেবল জানালা দিয়ে নামতে গিয়েছে….সম্রাট গিয়ে ধরে ফেলে সবাই কে ডাকে……
.
.
.
.
.
.
ডাক শুনে সবাই ভেতরে চলে আসে….এসে দেখে এই অবস্থা….সম্রাট বেবী কে নিয়ে দিয়া’র কোলে দেয়….আর লোকটাকে ইচ্ছে মতো মারতে থাকে….মারতে মারতে মাস্ক খুলে ফেলে..!!

সম্রাটঃ আসলাম তুই??

আসলামঃ হ্যা আমি ছাড় আমাকে…….

সম্রাটঃ তোকে কি করে ছাড়বো??আমার বেবী চুরি করতে এসেছিস….এত বড় কলিজা তোর??তোর কলিজাটা তো আমি দেখবো..!!

এরপর রিয়াজ কে ফোন দেয়….রিয়াজ এসে আসলাম কে নিয়ে যায়….সম্রাট তিশা কে গিয়ে দেখে বোঝে….তিশা সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে….এই সুযোগে সম্রাট চলে যায়……

চেয়ারে শিকল দিয়ে বেধেছে আসলাম কে….সামনে চেয়ারে বসে আছে সম্রাট….মুখে শয়তানি হাসি সম্রাটে’র….আসলাম ভয় পাচ্ছে কিন্তুু প্রকাশ না করে বললো..!!

—-সম্রাট আমাকে ছাড় বলছি….তুই আমার ভাই কে মেরেছিলি….তাই আমি তোর ছেলে কে চুরি করে….তোকে শাস্তি দিতে চেয়েছি…….

সম্রাটঃ তোর সাহস কি করে হলো??তুই আমার সদ্য জন্ম নেয়া….ছেলে কে চুরি করতে এসেছিস??তুই ভুলে গিয়েছিলি আমি একজন ডক্টর….তোকে আমি ভয়ংকর মৃত্যু দেবো….তোর ভাই কে বলেছিলাম….যেন আমার থেকে দুরে থাকে….তোর ভাই উঠে পড়ে লেগেছিলো….দুনিয়ার সামনে আমার চেহারা দেখাতে….আমার অবাধ্য হয়েছে তাই ওকে মেরেছি….এবার তোর পালা আসলাম..!!

সম্রাট আসলাম কে ওর স্টাইলে….মেরে ফেললো এরপর রিয়াজ কে….লাশ গুম করতে বলে হসপিটালে গেলো….২দিন পর তিশা কে বাড়ি নিয়ে এলো….বেবী পেয়ে সবাই খুব খুশী….সম্রাট তো ছেলে ছাড়া পাগল….একদিকে তিশা তো আরেকদিকে ছেলে….ছেলের নাম রাখা হলো আরিয়ান খাঁন……

৭বছর পর..!!

আজ আবিরে’র মেয়ে….সিনথিয়া’র ১বছরের জন্মদিন….সবাই অনেক মজা করছে….অভি’র ১ছেলে নাম বিহান বয়স ৫বছর….নীলে’র ও ১ছেলে নাম রাজ বয়স ৫রানিং….কল্লোলে’র ১টা মেয়ে নাম উপমা….উপমা’র বয়স ৪বছর….নিলয়ে’র ও ১ মেয়ে নাম আদ্রিতা বয়স ৫বছর….আরিয়ান হিরোর স্টাইল করে হাটছে….হঠাৎ ওর মেজাজ গরম হয়ে গেলো….আদ্রিতা কে আরেকটা ছেলের সাথে কথা বলতে দেখে….গিয়ে ইচ্ছেমতো আদ্রিতা কে বকলো….বকা খেয়ে বেচারী ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলো….তিশা আর দিয়া চলে এলো……

দিয়াঃ আদ্রিতা কি হয়েছে??

আদ্রিতাঃ ভাইয়া বকেছে..!!

তিশাঃ আরিয়ান কেন বকেছো??

আরিয়ানঃ মাম্মী ও ওই ছেলেটার সাথে কথা বলেছে….

তিশাঃ তো কি হয়েছে??

আরিয়ান রেগে বললো..!!

—-ও শুধু আমার সাথে কথা বলবে…..

বলে হনহন করে চলে গেলো….দিয়া হেসে দিয়ে বললো..!!

—-ভাবী দেখো আরিয়ান বড় হয়ে….সম্রাট ভাইয়ার দ্বিগুন রাগী হবে……

১৫বছর পর..!!

ভার্সিটি থেকে সবাই ঘুরতে এসেছে….আরিয়ান আর আদ্রিতা ও এসেছে….ওরা একই ভার্সিটিতে পড়ে….আদ্রিতা অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে….আর আরিয়ান ফাইনাল ইয়ারে….আসলেই আরিয়ান সম্রাটে’র চেয়ে দ্বিগুন রাগী….আর স্টাইল, চেহারা ও সম্রাটে’র মতো….এক কথায় হ্যান্ডসাম, ড্যাসিং….আদ্রিতা ও মাশা আল্লাহ দেখতে….আরিয়ান একপাশে ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলছে….এরমাঝে ওর চোখ গেলো….আদ্রিতা হেসে হেসে ওরই ইয়ারের….রাফি’র সাথে কথা বলছে….সাথে সাথে আরিয়ানে’র রাগ উঠে গেলো….রাফি আদ্রিতা’র হাত ধরলো….এবার আর আরিয়ানে’র সহ্য হলো না….সবার সামনে গিয়ে আদ্রিতা কে কিস করলো….সবাই হা করে তাকিয়ে আছে….আদ্রিতা শকড হয়ে গিয়েছে….আরিয়ান আদ্রিতা কে ছেড়ে বললো……

—-আজকের পর কোনো ছেলের সাথে কথা বললে….এর থেকে বেশী কিছু হবে মাইন্ড ইট..!!

আরিয়ানে’র সামনে একজন এসে বললো…….

—-তুমি মাফিয়া সম্রাট খাঁনে’র ছেলে না??

আরিয়ানঃ ইয়েস আই এম আরিয়ান খাঁন….বাট আই এম নট মাফিয়া….আই এম Villain….#The_Villain_Lover..!!

বলে আরিয়ান বাঁকা হাসলো…….

আরিয়ান খাঁন সম্রাট খাঁনে’র ছেলে….সম্রাটে’র কার্বন কপি….রাগটা সম্রাটে’র চেয়ে বেশী..!!

#The_End….♥♥

[আমার গল্পে নাকি ইমোজির বাহার….কমেন্টটা পড়ে ৩সেকেন্ড বেহুশ ছিলাম….?অনেকে ভালবাসা দিয়েছেন….তার জন্য অনেক ধন্যবাদ….???]

রিত্তিকঃ সামান্তা আমার ভালবাসা….সামান্তা আমার জীবন ড্যাড….সামান্তা আমার #জীবন_মরনের_সাথী….বাঁচতে হলে একসাথে বাঁচবো….মরতে হলে একসাথে মরবো..!!

সামান্তাঃ রিত্তিক আমার জীবন….রিত্তিক আমার পৃথিবী….বাঁচতে হলে একসাথে বাঁচবো….মরতে হলে একসাথে মরবো….কারন রিত্তিক আমার #জীবন_মরনের_সাথী পাপা……

পরিবার থেকে মেনে না নেওয়া….একটি ভালবাসার গল্প….কি হবে এর শেষ পরিনাম??

The_Villain_Lover Part_16

0

The_Villain_Lover
Part_16
#Writer:#Tisha_Islam_Nabila

সম্রাটে’র পেটে তিশা ছুড়ি ঢুকাতেই….সম্রাট ফ্লোরে পড়ে যায়….পেট চেপে ধরে আছে সম্রাট….তিশা’র দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে..!!

—-এত ঘৃনা করো আমাকে??

তিশাঃ গুড বাই সম্রাট বেইব……

তানিসা এসে সম্রাট কে ধরে….সম্রাটে’র পেট থেকে গলগল করে রক্ত পড়ছে….তিশা মুচকি মুচকি হাসছে….সম্রাট অসহায় দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে….তিশা মুচকি হেসে রান্নাঘরে যায়….রান্নাঘর থেকে মরিচের গুড়া নিয়ে আসে….সম্রাট ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে..!!

তিশাঃ বেবী এটা চিনতে পারছো??

তানিসাঃ ওটা দিয়ে কি করবে তুমি??

তিশাঃ সেটা কি তোকে বলবো??

তিশা মরিচের গুড়া নিয়ে….সম্রাটে’র পাশে বসে ওর পেটে….যেই জায়গায় ছুড়ি দিয়ে আঘাত করেছে….সেই জায়গায় দিয়ে দেয়….সম্রাট আহ বলে চিৎকার করে ওঠে……

তিশাঃ এখন কেমন লাগছে??অন্য কে আঘাত করতে খুব মজা তাইনা??আঘাতের জায়গায় আবার গুড়ামরিচ দাও….এবার বোঝো কেমন লাগে জান..!!

তানিসাঃ রহিম চাচা তাড়াতাড়ি এসো……

তিশাঃ হসপিটালে নেবে বুঝি??চলো আমি নিয়ে যাচ্ছি….এই কে আছো এখানে এসো..!!

কয়েকজন গার্ড আসে….ওরা সম্রাট কে নিয়ে গাড়িতে ওঠায়….তিশা গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে….তানিসা ও গাড়িতে ওঠে….তিশা ড্রাইভ করে সম্রাট কে হসপিটালে নিয়ে যায়….ডক্টর সম্রাট কে তাড়াতাড়ি অপারেশন থিয়েটারে নেয়….তিশা তানিসা’র সামনে গিয়ে বলে…….

—-শুধু শুধু হসপিটালে আনলাম ওকে..!!

তানিসাঃ মানে??

তিশাঃ ও তো বাঁচবে না সো স্যাড…….

একটুপর ডক্টর আসে মুখ কালো করে..!!

তানিসাঃ ডক্টর সম্রাট কেমন আছে??

ডক্টরঃ আই এম সরি হি ইজ নো মোর…….

তানিসাঃ হোয়াট??এটা কি করে পসিবল??

তিশা হাসতে হাসতে বলে..!!

—-ইয়েস ডক্টর হাউ ইজ দ্যাট পসিবল??

ডক্টরঃ আপনি হাসছেন??

তানিসাঃ প্লিজ ডক্টর বলুন……

ডক্টরঃ দেখুন ছুড়ির আঘাতে….ওনার শরীরের সব রক্তই….ধরতে গেলে বেরিয়ে গিয়েছে..!!

তিশাঃ ডক্টর লাশ কোথায়??

ডক্টরঃ আপনি না ওনার ওয়াইফ??আপনি স্বাভাবিক কি করে আছেন??

তিশাঃ সাট আপ ডক্টর টেল মি……

ডক্টরঃ চলুন ভেতরে..!!

ওরা গিয়ে দেখে সম্রাট কে….সাদা হসপিটালের বেডশিট দিয়ে….ঢেকে রাখা হয়েছে তানিসা কান্না করছে…….

তিশাঃ ডক্টর লাশ মর্গে রেখে দিন..!!

তানিসাঃ এসব কি বলছো??ওকে প্লিজ নিয়ে চলো তিশা…….

তিশাঃ ডক্টর যা বলছি করুন..!!

ডক্টরঃ কিন্তুু……

তিশাঃ মরতে চান??

ডক্টরঃ ওকে ওকে আমরা নিয়ে যাচ্ছি..!!

ডক্টর লাশ নিয়ে মর্গে যায়….এদিকে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে….সম্রাট খাঁন আর বেঁচে নেই….তিশা’র পরিবার থমকে যায়……

নীলঃ মাম্মা এসব কি দেখাচ্ছে টিভিতে??

আবিরঃ এটা কি করে হলো??

কনিকা চৌধুরীঃ তিশা কে ফোন কর..!!

অভি তিশা কে ফোন করে……

তিশাঃ হ্যালো ভাইয়া..!!

অভিঃ বোন এসব কি শুনছি??

তিশাঃ কি শুনছো??

অভিঃ সম্রাট নাকি মারা গিয়েছে??

তিশাঃ ওহ হ্যা মারা গিয়েছে……

অভিঃ তুমি এত স্বাভাবিক কি করে আছো??

তিশাঃ তো কি করবো??

অভিঃ সম্রাট মারা গিয়েছে বোন….ও তোমার স্বামী আর তুমি..!!

তিশাঃ ওহ ভাইয়া প্লিজ স্টপ এনিওয়ে বাই……

তিশা ফোনটা রেখে দেয়….পরেরদিন তিশা ড্রয়িংরুমে বসে আছে….মনের সুখে চকলেট খাচ্ছে..!!

—-তাহলে পথের কাটা শেষ……

কারো কথায় তিশা পিছনে তাকায়….তাকিয়ে অনেকটা অবাক হয়ে বলে..!!

—-চাচ্চু তুমি??

—-ইয়েস আমি আনোয়ার খাঁন……

তিশাঃ পথের কাটা মানে??

—-পথের কাটা তোমার স্বামী..!!

এবার তিশা আরো অবাক হয়……

তিশাঃ নিলয় ভাইয়া তুমিও??

নিলয়ঃ ইয়েস বেবী আমিও..!!

আনোয়ার খাঁনঃ আরো একজন আছে……

তিশাঃ কে??

নিলয়ঃ রহিম চাচা..!!

তিশা অবাক হয়ে যায়…….

তিশাঃ তোমরা এত খারাপ??

নিলয়ঃ সাট আপ খারাপ আমরা না??তুমি এত ভাল হলে নিজের ভালবাসা….নিজের স্বামী কে কেন খুন করলে??

তিশাঃ তোমরা কেন এসেছো??

আনোয়ার খাঁনঃ এই বিশাল সম্পতি একা ভোগ করবে??যেই সম্পতির জন্য এতকিছু করলাম….আমার ভাই, ভাবী, ভাতিজি কে মারলাম….সম্রাট কে মারতে চাইলাম….সেই সম্পতি একা কি করে ভোগ করবে??

তিশাঃ তারমানে তোমরা??

রহিম চাচাঃ হ্যা মা আমরা ছিলাম….তবে এই নিলয় তখন ছোট ছিলো….নিলয় তো এইকিছু দিন হলো….আমাদের সাথে রয়েছে……

তিশাঃ সম্রাট তোমাদের এত ভালবাসে….আর শেষে কি না তোমরা এমন করলে??

নিলয়ঃ সম্রাট তো তোমাকেও ভালবাসতো….অথচ তুমি ওকে খুন করলে..!!

আনোয়ার খাঁনঃ হ্যা একটা কথা বলো তো….তুমি কেন মিথ্যে বললে যে তুমি….সম্রাট কে গুলি করেছিলে??তুমি ওকে পাগল করতে চেয়েছিলে??এসব তো করেছিলাম আমরা…….

—-ওয়াও হোয়াট এ সিন??

সবাই পিছনে তাকালো….আর তাকিয়ে শকড হয়ে তাকিয়ে আছে..!!

আনোয়ার খাঁনঃ সম্রাট তুই??

সম্রাটঃ তো তুমি কি ভেবেছো??আমি এভাবে মরে যাবো??

তিশাঃ আর তোমরা ভাবলে কি করে??আমি আমার স্বামী কে খুন করবো??

নিলয়ঃ তাহলে এসব??

সম্রাটঃ সব নাটক অভিনয়….যেমন তোরা করেছিলি ভাল মানুষির…….

রহিম চাচাঃ তারমানে গেম খেলেছো??

সম্রাটঃ ইয়েস সন্দেহ তো আমার আগেই হয়েছিলো….তোমার উপর যেদিন জান বললো….তুমি ওকে আমার কথা বলে….কবর দেখিয়েছো আর তাতে লেখা….মৃত সম্রাট খাঁন আয়াশ….কিন্তুু তোমাকে বিশ্বাস করতাম….তাই সেসবে পাত্তা দেইনি….এরপর সেদিন রাতে জান হঠাৎ….আমার উপর ছুড়ি নিয়ে আ্যাটাক করে….আমি বুঝতে পারছিলাম না….ও কেন এমন করছে আমাকে আঘাত ও করে….এরপর ওসব বলে এক মুহূর্তে সত্যি মনে হয়েছিলো….আর তাই আমার পাগল পাগল লাগছিলো….পরে আমি ভাবলাম যে আমার জন্য বিষ খেলো….সে আর যাইহোক আমাকে খুন করবে না….তাই ওকে আমি সব বলতে বলি….আর ও আমাকে তোমার কথা বলে….ছিঃ রহিম চাচা তুমি কি করে করলে এসব??

রহিম চাচাঃ অনেক বড় খেলোয়ার তোমরা..!!

তিশাঃ তোমরা কি কম নাকি??

আনোয়ার খাঁনঃ তা এখন কি করবি??৭বছর আগে যখন কিছু করতে পারিসনি….আর এখনও কিছু করতে পারবি না…….

সম্রাটঃ চাচ্চু সামান্য সম্পতির জন্য….তুমি আমাকে এতিম করে দিলে??আমার ড্যাড কে বলতে তাহলেই হতো..!!

আনোয়ার খাঁনঃ তোর বাপ ছিলো লোভী….তাই তো বাবার সব সম্পতি….নিজের নামে করিয়েছিলো…..

সম্রাটঃ না ড্যাড বড় ছিলো….তাই দাদু সব সম্পতি ড্যাড কে দিয়েছিলো….তুমি এর জন্য ওদের মেরে ফেললে??আমার বোন কেও ছাড় দিলেনা??

আনোয়ার খাঁন শয়তানি হেসে বললো……

—-দেখ তোর মা বাবা কে মেরে….আমি আর রহিম তো বাইরে চলে এসেছিলাম….যাদের সাথে নিয়ে গিয়েছিলাম….ওরা বললো তোর বোন কে..!!

আর কিছু বলার আগেই….সম্রাট ওনার নাক বরাবর ঘুষি মারলো….আনোয়ার খাঁনের নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে….নিলয় ক্ষেপে গিয়ে বললো……
.
.
.
.
.
.
—-তুই আমার ড্যাড কে মারলি??

সম্রাটঃ নিলয় তুই এসবে থাকিস না….আমি তোকে অনেক ভালবাসি….আর আমি এটাও বুঝতে পারছি….এই লোকটা তোকে উস্কে দিয়েছে….তুই নিজের কানে শুনলি তো??এই লোকটা আমাকে এতিম করেছে….এবার বল আমার ওনাকে মারাটা কি নাজায়েজ??

নিলয় থমকে গেলো….আর ভাবতে লাগলো সম্রাট যা বলেছে ঠিক..!!

নিলয়ঃ এতকিছুর পরও তুই আমাকে ভালবাসিস??

সম্রাটঃ হ্যা ভালবাসি তুই ভাব….এই লোকটা ভাল হলে….কোনদিনও তোকে খারাপ রাস্তায় আনতো না……

নিলয় আর কি বলবে??সম্রাট যা বলেছে একদম ঠিক….নিলয় চোখ মুখ খিচে বললো..!!

—-ভাই ওনাকে কঠিন শাস্তি দে……

সম্রাট বাঁকা হেসে গার্ডদের ডাকলো..!!

সম্রাটঃ এদের দুজন কে নিয়ে যা আমি আসছি…..

ওরা রহিম আর আনোয়ার খাঁন কে নিয়ে গেলো..!!

নিলয়ঃ ভাই তুই বাঁচলি কি করে??

সম্রাটঃ আমার কিছুই হয়নি….ওইসব নাটক ছিলো…..

নিলয়ঃ তাহলে ওই রক্ত??

সম্রাটঃ কেনা রক্ত সব সাজানো….ডক্টর কেও মিথ্যে বলতে বলেছিলাম….আর তানিসা ও সাজানো একটা ক্যারেক্টার….এবার আমি আসছি তোরা থাক..!!

নিলয়ঃ আই এম সরি ভাই……

সম্রাটঃ ইটস ওকে নিলয়….আমি জানি এতে তোর দোষ নেই….সব ওই লোকটার দোষ..!!

সম্রাট বেরিয়ে চলে যায়….যেখানে ওদের আটকে রেখেছে….সম্রাট গিয়ে চেয়ার নিয়ে ওদের সামনে বসলো……

আনোয়ার খাঁনঃ সম্রাট আমি তোর চাচ্চু….আমাকে ছেড়ে দে বাবা..!!

সম্রাটঃ শুধু আমাকে মারতে চাইলে….আমি হয়তো তোমাকে ছাড়তাম….কিন্তুু তুমি আমার পরিবার কে মেরেছো….কেন চাচ্চু কেন করলে??

সম্রাট এতক্ষণ পর….এখন কান্না করতে করতে বললো….এরপর এক প্রকার গর্জন করে বললো…..

—-রিয়াজ শিক নিয়ে আয়..!!

রিয়াজ শিক আনতেই….সম্রাট নিয়ে আনোয়ার খাঁনের….বুকে ঢুকিয়ে দিলো জলন্ত শিক ঢোকাতে….উনি চিৎকার করে উঠলো….সাথে সাথে সম্রাট ধারালো ছুড়ি দিয়ে….ওনার জিহ্বা কেটে ফেললো….বুক থেকে শিক বের করায়….কলিজাটা বেরিয়ে চলে এলো….রহিম থরথর করে কাঁপছে….সম্রাট আনোয়ারের বুকে মুখে….গুড়ামরিচ দিয়ে দিলো ছটফট করতে করতে….মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো আনোয়ার খাঁন….এরপর রহিম কেও একই ভাবে মারলো….মারার পর সম্রাট কাঁনা করলো….তারপর রিয়াজ কে বলে চলে গেলো……

সম্রাট কিছুক্ষণ বাইরে থেকে….বাড়ি চলে গেলো বাড়ি গিয়ে….রুমে ঢুকতেই সম্রাট থ….পুরো রুম সাজানো পাশেই….তিশা দাড়িয়ে আছে লাল শাড়ি পড়া….তিশা সম্রাটে’র কাছে চলে এলো….কাছে এসে সম্রাটে’র গলা জড়িয়ে ধরলো..!!

সম্রাটঃ জান আর ইউ ওকে??

তিশাঃ ইয়েস আই এম ওকে….আমি তোমার সাথে মিলেমিশে….একাকার হয়ে যেতে চাই সম্রাট…….

সম্রাট বুঝলো তিশা কি চাইছে….সম্রাট ও চায় তিশা কে পেতে….তাই সম্রাট তিশা কে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় গেলো….তিশা কে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে….তিশা’র ঠোটে ঠোট ছুইয়ে….গলায় মুখ গুজে দিলো….ওদের মাঝে আর কোনো বাধা রইলো না..!!

দিন গিয়ে মাস কেটে গেলো….এভাবে ৬মাস চলে গেলো….তিশা আর সম্রাট ভালই আছে….নিলয় ও ওদের সাথে থাকে….ইদানিং তিশা কিছু খেতে পারেনা….গা গুলিয়ে বমি পায়….সম্রাট কে বললে চিন্তা করবে….এটা ভেবে চেপে গিয়েছে….সম্রাট আর নিলয় ড্রয়িংরুমে….তিশা ও শিরি দিয়ে নামছে ওদের কাছে যাবে….লাস্ট শিরিতে এসেই তিশা’র মাথা ঘুরে উঠলো….তিশা পড়ে যেতে গেলেই….সম্রাট দৌড়ে এসে ধরে ফেললো….ততক্ষণে তিশা সেন্সলেস হয়ে গেলো…….

সম্রাটঃ জান কি হলো তোমার??

নিলয়ঃ ভাই ভাবী কে রুমে নিয়ে চল..!!

সম্রাট তিশা কে রুমে নিয়ে….নিজেই দেখতে লাগলো….সম্রাটে’র চোখে মুখে খুশির ঝলক….নিলয় ভ্রু কুঁচকে বললো…..

—-তোর বউ অসুস্থ তোকে খুশি লাগছে কেন??

সম্রাটঃ নিলয় তুই চাচ্চু হবি….আমি পাপা হবো..!!

নিলয়ঃ সত্যি??

সম্রাটঃ সত্যি আমি যে কতটা খুশি হয়েছি…..

নিলয়ঃ আমি এক্ষুণি মিষ্টি কিনতে যাচ্ছি..!!

নিলয় যাওয়ার পর তিশা’র সেন্স এলো…..

সম্রাটঃ জান আমি পাপা হবো তুমি মাম্মা……

তিশা নিজের পেটে হাত রাখলো….সম্রাট খুশিতে কেঁদেই ফেলেছে..!!

সম্রাটঃ আমাদের বেবী ছোট ছোট হাত, পা….ও মাই গড আমাদের সন্তান জান……

তিশা সম্রাট কে দেখছে….কতটা খুশি হয়েছে সম্রাট….ভেবে তিশা ও খুশি হলো..!!

এদিকে কেউ একজন বলছে……

যত আনন্দ করার করে নাও….আসল খেলা তো এবার হবে….আমিও দেখি এত খুশি তখন কোথায় থাকে??

#চলবে….

[গতকাল রাত থেকে….ঝড় নেই বৃষ্টি নেই অথচ নেট প্রবলেম….তাই কালকে #তুমি_আমার_ভালবাসা দিতে পারিনি….তার জন্য আমি দুঃখিত….]

[আর গল্প নিয়ে কিছু বলবো না….জাস্ট এতটুক বলবো ভাল না লাগলে….ইগনোর করুন আমার ২টা গল্প নিয়েই….আজেবাজে কমেন্ট করেছে অনেকে….একজন তো বলেছে গল্প লেখা বাদ দিতে….তো আপনার কথায় আমি কেন লেখা বাদ দেবো??আপনি রিডার্স গল্প কেমন হয়েছে….সেটা বলার রাইট আপনার আছে….আমি লেখবো কি লেখবো না….সেটা বলার রাইট আপনার নেই….এখন অনেকে বলবে তিশা আপু এসব ইগনোর করো….ভাইরে ভাই ভাষন দিতে ২মিনিট লাগে….আপনাদের জন্যই আমরা লেখি….আপনারাই যদি উৎসাহ দেয়ার বদলে….আজেবাজে কমেন্ট করেন তখন খুব খারাপ লাগে…..]

The_Villain_Lover Part_15

0

The_Villain_Lover
Part_15
#Writer:#Tisha_Islam_Nabila

সম্রাট সেন্সলেস হয়ে ওখানেই পড়ে রইলো….যখন সেন্স এলো তখনও নিজেকে….সেই কবরস্থানেই আবিষ্কার করলো….সম্রাটে’র রাতের কথা মনে পড়ে গেলো….নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো….সম্পূর্ণ শরীরেই কাদা দিয়ে মাখামাখি..!!

সম্রাট উঠে বাড়ির ভেতরে গেলো….গিয়ে অবাকের শেষ পর্যায়….তিশা ড্রয়িংরুমে সোফায় বসে….পায়ের উপর পা তুলে মনের সুখে….আপেল খাচ্ছে আর একজন সার্ভেন্ট….তিশা’র পা টিপে দিচ্ছে….সম্রাটে’র মেজাজ বিগরে গেলো….কারন সার্ভেন্টটা বয়সে তিশা’র বড়…….

আর সম্রাট কখনোই….কোনো সার্ভেন্ট কে বিনা কারনে হার্ট করে না….তিশা মাঝে মাঝে খারাপ বিহেভ ও করছে….সম্রাট হনহন করে তিশা’র সামনে গেলো….সম্রাট কে দেখেই তিশা নাক শিটকে বললো..!!

—-ইয়াক ছিঃ এটা কি অবস্থা তোমার??

সম্রাটঃ তার আগে বলো তুমি এটা কি করছো??

তিশা না জানার ভান করে বললো……

—-কোনটা??কি করেছি আমি??

সম্রাটঃ তুমি ওনাকে দিয়ে পা টেপাচ্ছো??

তিশাঃ হ্যা টেপাচ্ছি তো??

সম্রাটঃ জাস্ট সাট আপ উনি তোমার বড় হয়..!!

তিশাঃ আই ডোন্ট কেয়ার……

রহিম চাচাঃ বৌমা এসব কি বলছো??

তিশাঃ চুপ ম্যাডাম বলবে আমাকে..!!

সম্রাটঃ উনিও তোমার বড়…….

তিশাঃ সো হোয়াট??ওর পরিচয় ও একজন সার্ভেন্ট….আর একজন সার্ভেন্ট হয়ে….মালিকের পা টিপে দিচ্ছে এতে….কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হলো শুনি??

সম্রাটঃ কে মালিক শুনি??

তিশাঃ বেইব তোমার সামনে দাড়ানো……

সম্রাটঃ মানে কি??

তিশাঃ আমি জানি তোমার প্রপার্টির….৬০% তুমি আমার নামে করে দিয়েছো….আর সেইদিক থেকে এই সবকিছুর উপর….তোমার থেকে আমার অধিকার বেশী..!!

সম্রাটঃ তুমি কি করে জানো??

তিশাঃ জানি সব জানতে হয়….তুমি কি ভেবেছিলে??তুমি আমাকে রুমে আটকে রাখলে….আর আমি রুমে আটকে থাকবো??হাহ ইউআর রং সম্রাট…….

সম্রাট তিশা কে নিয়ে রুমে গেলো..!!

তিশাঃ ছাড়ো আমাকে তুমি নোংরা……

সম্রাটঃ চুপচাপ থাকো..!!

তিশা কে রুমে এনে সম্রাট বললো……

—-বলো কেন এমন করছো??সামান্য প্রপার্টির জন্য তুমি….আর যাইহোক এমন করতে পারোনা..!!

তিশাঃ সামান্য কোথায় সামান্য??তোমার তো দেশে বিদেশে প্রপার্টি….দেশে বাড়ি বিদেশে বাড়ি….এরপরও সামান্য কেন বলছো??

সম্রাটঃ স্টপ ইট আমি সত্যিটা জানতে চাই??প্লিজ কেউ কি তোমাকে চাপ দিচ্ছে??তাহলে তুমি আমাকে বলো জান….কসম আল্লাহ’র জানে মেরে ফেলবো…….

তিশাঃ ওহ সাট আপ কেউ আমাকে চাপ দেয়নি..!!

সম্রাটঃ তাহলে তুমি মজা করছো??

তিশাঃ রিয়েলী সম্রাট??তোমার এখনো মনে হয় আমি মজা করছি??আসলে মাফিয়া তো তুমি??তোমার মতো ইমোশনাল ফুল তো আমি….আমার জীবনে দুটো দেখিনি..!!

সম্রাট তিশা কে থাপ্পর মারতে গিয়েও….নিজের হাত নামিয়ে নিয়ে বললো……

—-আমি ইমোশনাল ফুল না….তোমাকে ভালবাসি আর তাই….এখনো তুমি বেঁচে আছো ট্রাস্ট মি….তোমার জায়গায় অন্য কেউ যদি….এভাবে আমার সাথে বেইমানি করতো….তাহলে সাথে সাথে তার লাশ ফেলে দিতাম..!!

তিশাঃ অনেক দেখেছি আর দেখতে চাইনা…….

সম্রাট আর কথা না বাড়িয়ে….ওয়াসরুমে চলে গেলো এরপর….প্রায় ২ঘন্টা পর বেরিয়ে এলো….বেরিয়ে এসে একটা লাল টি শার্ট পড়লো….আর থ্রি কোয়াটার প্যান্ট….ভেজা চুলগুলো কপালে লেপ্টে আছে….পায়ের পশমগুলোও লেপ্টে আছে….মাঝে মাঝে নিজের ঠোট….নিজেই কামড়ে ধরছে তিশা তাকিয়ে আছে..!!

সম্রাটঃ এভাবে হা করে তাকিয়ে আছো কেন??

তিশা’র হুশ এলো ও কি করছে….ভেংচি কেটে বিছানা থেকে নেমে বললো……

—-আমার কি খেয়ে দেয়ে কাজ নেই??যে তাকিয়ে থাকতে যাবো??

সম্রাটঃ আমিও সেটাই ভাবছি….তোমার কি খেয়ে দেয়ে কাজ নেই??

তিশাঃ হোয়াট ডু ইউ মিন??

সম্রাটঃ আই মিন টু সে কন্ট্রোল ইউআর সেলফ বেবী….আমাকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছো কেন??

তিশাঃ জাস্ট সাট আপ স্টুপিড..!!

বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো….সম্রাট একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে….বিছানায় নিজের ল্যাপটপ নিয়ে বসলো….এরপর একমনে ল্যাপটপেই ধ্যান দিলো….এদিকে তিশা বাড়ি থেকে বেরিয়ে….কোথাও একটা গেলো সম্রাট কাজ শেষ করে….নিচে গিয়ে দেখলো তিশা নেই…….

সম্রাটঃ আরে ও কোথায় গেলো??

রহিম চাচাঃ কি হয়েছে ছোট সাহেব??

সম্রাটঃ তোমার ম্যাডাম কোথায়??

রহিম চাচাঃ উনিতো বাইরে গেলো..!!

সম্রাটঃ এখন বাইরে কেন গেলো??

সম্রাট ও গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো….তিশা কে খুজতে লাগলো….আর খুজতে খুজতে পেয়েও গেলো….কিন্তুু সম্রাটে’র মনে হচ্ছে এখন….তিশা কে খুজে না পেলেই বেটার হতো….কারন তিশা সৌহাদ্র’র হাত ধরে বসে আছে….আর দুজন হেসে হেসে কথা বলছে….সম্রাটে’র মাথা গরম হয়ে গেলো….গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে ওদের সামনে দাড়ালো…….

তিশাঃ তুমি এখানে??

সম্রাটঃ কেন খুব প্রবলেম হলো??

তিশাঃ অবভিয়েসলি ইউআর এ বিগ প্রবলেম অফ মাই লাইফ..!!

সম্রাটঃ সাট আপ এন্ড কাম উইথ মি……

তিশাঃ আমি তোমার সাথে কোথাও যাচ্ছিনা..!!

সম্রাট তিশা কে টেনে নিয়ে চলে এলে…….

তিশাঃ এই তোমার প্রবলেম কি??সবসময় এরকম টানাটানি করো কেন??

সম্রাটঃ তুমি বেশী ভাল তাই..!!

সম্রাট গাড়ি স্টার্ট দিলো….তিশা আনমনে বসে আছে….তিশা’র গায়ে পিংক কালার শার্ট….আর ব্লাক কালার প্যান্ট….চুলগুলো ছেড়ে দেয়া বাতাসে উড়ছে….তিশা বিরক্তি নিয়ে বারবার সরাচ্ছে….সম্রাট আড়চোখে তাকিয়ে দেখছে……..

দেখতে দেখতে বাড়ি চলে এলো….বাড়ি এসে তিশা রুমে চলে গেলো….এভাবেই ওইদিন চলে গেলো….পরেরদিন সকালে তিশা একটা শাড়ি পড়ে….সম্রাটে’র জন্য পায়েস বানিয়ে নিয়ে এলো….পায়েস সম্রাটে’র ফেবারিট অনেক..!!

সম্রাটঃ পায়েস??

তিশাঃ হুম তুমি পছন্দ করো রাইট??তাই তো আমি বানিয়ে নিয়ে এলাম…….

সম্রাটঃ কিন্তুু তুমি তো আমাকে মারতে চাও..!!

তিশাঃ আই এম সরি সম্রাট….আমি তোমার সাথে মজা করেছি…….

ব্যাস সম্রাট তিশা কে জড়িয়ে ধরে বললো..!!

—-আমি জানতাম তুমি মজা করেছো….এরকম মজা আর কখনো করবে না….আমার অনেক কষ্ট হয় জান……

তিশাঃ এখনো পায়েসটা খাও তো..!!

সম্রাটঃ তুমি খাইয়ে দাও প্লিজ…….

তিশাঃ ওকে দিচ্ছি বসো..!!

তিশা যেই পায়েসটা সম্রাটে’র মুখে দেবে….একটা বিড়াল এসেই লাফ দিয়ে….তিশা’র হাতের বাটির উপর পড়লো….যার জন্য সব পায়েস ড্রয়িংরুমের ফ্লোরে পড়ে গেলো….যা বিড়ালটা খেতে শুরু করলো……

সম্রাটঃ যা পড়ে গেলো তো..!!

তিশাঃ পড়ে কই গেলো??এই বিড়ালটা ফেলে দিলো….আমার সব প্লান ভেস্তে দিলো….এবার মরুক এই বিড়াল…….

সম্রাটঃ এসব কি বলছো তুমি??

তিশাঃ আব কিছুনা তো..!!

একটুপরই সম্রাট দেখলো….বিড়ালটা কেমন একটা করছে….ছটফট করছে বিড়ালটা….সম্রাট অবাক হয়ে গেলো….আর বুঝেও গেলো কেন বিড়ালটা ওমন করছে…….

সম্রাটঃ তারমানে বিষ ছিলো পায়েসে??

তিশাঃ হ্যা বিষ ছিলো….যেটা এই বিড়াল খেয়ে নিলো….তুমি খেলে ওই বিড়ালের জায়গায়….এতক্ষণে তুমি মরে যেতে….আর এটাইতো আমি চেয়েছিলাম….কিন্তুু সব শেষ করে দিলো বিড়ালটা..!!

সম্রাট থম মেরে বসে রইলো……

সম্রাটঃ তুমি আবারও আমাকে ঠকালে??

তিশাঃ হ্যা আর বেশ করেছি..!!

বলে তিশা চলে গেলো….আর সম্রাট সেখানেই বসে রইলো……
.
.
.
.
.
.
রাতে বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে সম্রাট….হঠাৎ ওর মনে হলো ওর পিছনে….কেউ আছে সম্রাট চট করে তাকালো….তাকিয়ে দেখলো তিশা ছুড়ি নিয়ে….মাএই ওকে আঘাত করতে গিয়েছে….সম্রাট তিশা’র হাত ধরে ফেললো..!!

সম্রাটঃ যেটা পারবে না সেটা কেন করো??তুমি সব বার তো ধরা পড়ে যাও……

তিশাঃ হাত ছাড়ো তোমাকে মারতেই হবে..!!

সম্রাটঃ বেশী হয়ে যাচ্ছেনা এবার??

তিশাঃ না যা হচ্ছে ঠিক হচ্ছে…….

সম্রাটঃ অনেক সহ্য করে নিয়েছি..!!

বলে টেনে তিশা কে রুমে এনে ফ্লোরে ফেলে দিলো…….

পায়ের উপর পা তুলে ডান হাতে….পিস্তল নিয়ে মুখে বাঁকা হাসি….বসে আছে সম্রাট আর তার সামনেই….হাত, পা বাধা অবস্থায় পড়ে আছে তিশা….একেরপর এক সিগারেট টানছে সম্রাট….আর ধোয়াগুলো ছাড়ছে তিশা’র মুখের কাছে..!!

তিশাঃ ইউ ইডিয়ট হোয়াট আর ডুয়িং??

সম্রাটঃ ও কানঅন বেবী আমি তো দেখছি….তোমার সাথে সুন্দর সুন্দর দুটো চোখ আছে….তুমিতো দেখতেই পাচ্ছো কি হচ্ছে……

তিশাঃ ছাড়ো আমাকে..!!

সম্রাটঃ কেন ছাড়বো??পারলে ছুটে যাও…….

তিশাঃ সম্রাট ছাড়ো আমাকে..!!

সম্রাট ওর হাতের পিস্তল….তিশা’র কপালে ঠেকালো….তিশা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে….কয়েকবার ঢোক গিললো….সম্রাট বাঁকা হেসে বললো……

—-সাহস কোথায় গেলো??সম্রাট কে মারতে এসেছিলে না??এখন আমি যদি তোমাকে মেরে ফেলি….তোমাকে মারলে আমার কেউ কিছু করতে পারবে না..!!

তিশা মুচকি হেসে বললো…….

—-তুমি আমাকে মারতে পারবে না..!!

সম্রাটঃ রাইট এটাই তো প্রবলেম….তুই হাজার বেইমানি করলেও….আমি তোকে মারতে পারবো না….কারন আমি তো তোকে ভালবেসেছি….কিন্তুু এবার তুই দেখবি তোকে ছাড়া….আমিও চলতে পারবো…..

বলে তিশা’র হাত, পায়ের….বাধন খুলে রুম থেকে চলে গেলো….আর তিশা বলতে লাগলো..!!

—-আমাকে ছাড়া চলবে??তাও আবার তুমি??ওকে আমিও দেখি কতটা সত্যি……

পরেরদিন সকালে সম্রাট….ব্লাক শার্ট, ব্লাক জিন্স প্যান্ট পড়েছে….চুলগুলো স্পাইক করেছে….হাতে ব্লাক বেল্টের ব্রান্ডের ঘড়ি….ফর্সা মুখে খোচা খোচা দাড়ি….ঠোটের নিচে ছোট তিল….জাস্ট ওয়াও লাগছে….তিশা ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে..!!

একটুপর দরজায় কলিং বেল বাজলো….সম্রাট গিয়ে দরজা খুলেই বললো……

—-ওয়েলকাম মাই হাউস সুইটহার্ট..!!

ওপাশ থেকে মেয়েলী কন্ঠে কেউ বললো……

—-থ্যাংক ইউ বেবী..!!

এরপরই একটা মেয়ে কে নিয়ে….সম্রাট ভেতরে এলো মেয়েটা দেখতে….অনেক সুন্দরী একটা শর্ট টপস পড়া….যার কারনে হাটু দৃশ্যমান….তিশা হা করে তাকিয়ে আছে……

সম্রাটঃ তানিসা মিট মাই এক্স ওয়াইফ..!!

মেয়েটির নাম তানিসা……

তানিসাঃ ওহ এখানে কি করছে ও??

তিশাঃ এক্সকিউজ মি এক্স ওয়াইফ মানে??

সম্রাটঃ হওনি হয়ে যাবে……

তিশাঃ হোয়াট রাবিশ??এন্ড ইউ তানিসা গেট আউট..!!

সম্রাটঃ ও কোথাও যাবেনা….ও আমার সাথে এখানে থাকবে……

তিশাঃ ওকে এজ ইউআর উইশ..!!

বলে তিশা চলে গেলো….সম্রাট তানিশা কে নিয়ে সোফায় বসলো….রাতে খাবার টেবিলে সম্রাট আর তানিশা….পাশাপাশি চেয়ারে বসেছে….তার সামনে মুখোমুখি তিশা….সম্রাট তানিশা কে খাইয়ে দিচ্ছে……

তিশাঃ এত ঢলাঢলি করতে হলে….বেডরুমে চলে যাচ্ছোনা কেন??

সম্রাটঃ খাওয়া হলে যাবো..!!

খাওয়া শেষে সত্যি সত্যি সম্রাট….তানিশা কে নিয়ে উপরে চলে গেলো….তিশা ও খাওয়া রেখে চলে এলো……

সম্রাটঃ কি হলো??

তিশাঃ এটা আমার রুম..!!

বলে তানিসা’র হাত ধরে….রুম থেকে বের করে দরজা লাগিয়ে দিলো….এরপর ধপাস করে বিছানায় শুয়ে পড়লো….সম্রাট ও শুয়ে পড়লো…….

এভাবে কেটে গেলো কয়েকদিন….সম্রাট তানিসা কে নিয়ে মেতে থাকে….তানিসা কে নিয়ে ঘুরতে যায়….দুজন দুজন কে খাইয়ে দেয়….তিশা’র সামনে তানিসা….সম্রাটে’র কাধে মাথা রাখে..!!

তিশাঃ ব্যাস অনেক হয়েছে…….

বিকেলে তানিসা রান্নাঘরে….সম্রাট সোফায় বসে আছে….সম্রাট কিছু একটার জন্য দাড়ালো….ওমনি তিশা ওর হাতে লুকিয়ে রাখা ছুড়িটা….সম্রাটে’র পেটে ঢুকিয়ে দিলো….সম্রাট আহ করে উঠলো….যেটা শুনে রান্নাঘর থেকে তানিসা এলো….সম্রাট কে এভাবে দেখে চিৎকার করে….দৌড়ে কাছে এলো আর সম্রাট….ফ্লোরে পড়ে তিশা কে বললো..!!

—-এত ঘৃনা করো আমাকে??

তিশাঃ গুড বাই সম্রাট বেইব……

#To_Be_Continued….♣♣

The_Villain_Lover 14 Bonus_Part

0

The_Villain_Lover
14 Bonus_Part
#Writer:#Tisha_Islam_Nabila

সম্রাট যাকে দেখলো তাকে দেখে….ওর পায়ের তলার মাটি সরে গেলো….চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে….কাঁপা কাঁপা গলায় বললো..!!

—-জাজাজান তুতুতুমি??

তিশাঃ হ্যা আমি…….

সম্রাটঃ তুতুতুমি কেকেকেন??

তিশাঃ ওয়াও দ্যা ভিলেন কাঁদছে??তোতলাচ্ছে তাও সম্রাট খাঁন??হোয়াট এ সিন ইয়ার??

বলেই হো হো করে হেসে দিলো….এরপর নিজের হাতের ছুড়িটা….ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে বলে উঠলো..!!

—-মিস্টার সম্রাট খাঁন….আই উইল কিল ইউ…….

বলে আবার ছুড়ি দিয়ে….সম্রাট কে আঘাত করতে চাইলো….সম্রাট সাথে সাথে তিশা’র হাত ধরে ফেললো..!!

সম্রাটঃ কেন করছো এমন??কেন আমাকে মারতে চাও তুমি??কি করেছি আমি বলো??

তিশাঃ কারন আমার তোমার সব চাই……

সম্রাটঃ মানে??

তিশাঃ মানে তোমার সব প্রপার্টি আমার চাই….আর তাইতো ৬মাস আগে….আমি লোক লাগিয়ে তোমাকে মারতে চেয়েছিলাম….হাহ কিন্তুু তোমার তো কৈ মাছের জান….তাই ৬মাস আগে এত গুলি খাওয়ার পরও বেঁচে গেলে….এরপর আমিই লোক দিয়ে তোমাকে পাগল করতে চাইলাম….তবুও তুমি ঠিক বেঁচে গেলে….তোমাকে প্যারালাইজড করতে চাইলাম….তবুও তুমি বেঁচে গেলে….কিন্তুু আজকে তোমার মরতেই হবে..!!

সম্রাটঃ না না এএএসব তুতুতুমি করোনি….বববলো সসসব মিমিথ্যে…….

তিশাঃ কিচ্ছু মিথ্যে না সব সত্যি..!!

সম্রাট গিয়ে তিশা কে জড়িয়ে ধরে….কান্না করতে করতে বললো……

—-প্লিজ জান বলো সব মিথ্যে….আমি সহ্য করতে পারছি না….আমি জানি তুমি মিথ্যে বলছো….তুমি আমার সাথে মজা করছো তাইনা??

সাথে সাথে তিশা সম্রাটে’র হাতে ছুড়ি দিয়ে….আঘাত করে বসলো সম্রাট পিছনে সরে গেলো….অবাক দৃষ্টিতে তিশা’র দিকে তাকিয়ে আছে….ওর হাত থেকে যে ঝড়ঝড় করে রক্ত পড়ছে….সেদিকে কোনো খেয়াল নেই..!!

সম্রাটঃ তুমি না আমাকে ভালবাসো??আমার জন্য বিষও খেয়েছিলে….তাহলে কেন এখন আমাকে খুন করতে চাইছো??
.
.
.
.
.
.
.
.
তিশা মুচকি হেসে বললো……

—-গুড কোশ্চেন ওয়েল লিসেন….আমি তোমাকে ভালবাসি না….আমি সৌহাদ্র কে ভালবাসি….৩বছর আগে তোমাকে ছেড়ে….এখান থেকে চলে যাওয়ার পর থেকেই….আমি শুধু সৌহাদ্র কে ভালবাসি….আমি জানতাম আমার বিয়ে শুনলে….তুমি পাক্কা সেখানে আসবে….কারন আমি যে তোমার প্রান ভোমরা….আর তাই প্লান করেই আমি বিষ খেয়েছিলাম….আর সেটা দেখে তুমি গলে মোম হয়ে গেলে….তোমার লাইফের বড় ভুল কি জানো??

সম্রাটঃ কি??

তিশাঃ উম আমাকে বিয়ে করা….এখন সেই ভুলের মাশুল দাও..!!

তিশা সম্রাটে’র আরেক হাতে আঘাত করলো….যেই পেটে আঘাত করতে যাবে….সম্রাট ঠাস করে তিশা কে থাপ্পর মারলো….তিশা বিছানায় পড়ে গিয়ে রাগী লুকে তাকালো….সম্রাট তিশা কে রুমে আটকে দিয়ে….মদ দিয়ে ছাদে চলে গেলো…!!

একেরপর এক মদ খাচ্ছে সম্রাট….ওর কলিজায় যেন কেউ আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে….বোতল সব খালি করে ফেললো….এরপর জোড়ে মম বলে চিৎকার করে….ধপ করে হাটু ভেঙে বসে পড়লো……

সম্রাটঃ মম, ড্যাড, শ্রেয়া….কেন চলে গেলে তোমরা??মম আই নিড ইউ….মম আমাকেও নিয়ে চলো মম….আমি বাঁচতে চাইনা মম….এই দুনিয়াটা বড্ড সেলফিস….জীবনের সবচেয়ে বড় যুদ্ধে আমি হেরে গিয়েছি….বাঁচতে চাইনা আমি চাইনা বাঁচতে….ও কেন করলো এমন??ও আমার কাছে প্রপার্টি চাইলেই তো আমি দিয়ে দিতাম….ও তো জানেও না আমার সব প্রপার্টি থেকে….৬০% আমি আগেই ওর নামে করে দিয়েছি….ও চাইলে আমি সব দিয়ে দিতাম….কিন্তুু ও কেন আমাকে ঠকালো??

সম্রাট ছাদ থেকে নেমে গেলো….মদেও যেন নেশা হচ্ছে না….সম্রাট ওর দাদুভাইয়ের কবরের কাছে চলে গেলো….প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে সম্রাটে’র কান্নায়….আজ যেন প্রকৃতিরাও কান্না করছে….সম্রাট ওর দাদু ভাইয়ের কবরের সামনে গিয়ে….চিৎকার করে কান্না করে বসে পড়লো….কান্না করতে করতে বললো……

—-দাদু তুমিও কেন চলে গেলে??দেখো আজ আমার পাশে কেউ নেই….যাকে এত ভালবাসলাম সেও ঠকালো….দাদু ও কেন আমাকে বারবার ঠকায়??দাদু ও কেন বোঝেনা??আমিও একটা মানুষ….আমারও কষ্ট হয় খুব কষ্ট হয়….দাদু আমার খুব কষ্ট হচ্ছে….আমি এখন কি করবো??আমার তো আর কেউ নেই পাশে….প্লিজ আমাকেও নিয়ে যাও তোমাদের কাছে….আমিও তোমাদের কাছে চলে যেতে চাই..!!

সম্রাটে’র সারা শরীরে কাদা….একজন মাফিয়া কতটা কষ্ট পেলে….তার মৃত পরিবারের কাছে চলে যেতে চায়….তবে আফসোস আজ এই কান্না দেখার মত….মুছে দেয়ার মত কেউ নেই….সম্রাট কান্না করতে করতে….সেন্সলেস হয়ে সেখানেই পড়ে রইলো……

#To_Be_Continued….♣♣

[ছোট বলে চিল্লাচিল্লি করবেন না….সবাই আজকেই আরেক পার্ট চাইছিলেন….তাই ছোট করে বোনাস দিলাম….কারন একটু পরে#তুমি_আমার_ভালবাসা (সিজন_২)….এর ৮নাম্বার পার্ট লেখতে হবে….]

The_Villain_Lover Part_14

0

The_Villain_Lover
Part_14
#Writer:#Tisha_Islam_Nabila

সম্রাট দাত কেলিয়ে তাকিয়ে আছে….আর তিশা ভ্রু কুঁচকে বোঝার চেষ্টা করছে….সম্রাটে’র দাত কেলানোর কারন..!!

তিশাঃ দাত কেলাচ্ছো কেন??

সম্রাটঃ আমি কিছু একটা ভাবছি জান…….

তিশাঃ কি ভাবছো??

সম্রাট আস্তে আস্তে তিশা’র….একদম কাছে চলে আসে….তিশা ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে….সম্রাট তিশা’র কোমর ধরে….নিজের আরো কাছে নিয়ে আসে..!!

তিশাঃ ককি কককরছো??

সম্রাট তিশা’র গালে স্লাইড করতে করতে বলে…….

—-ভাবছি বেবী আমাদের ফার্স্ট নাইট….এখনো কিন্তুু হয়নি রাইট??

তিশা কাঁপতে কাঁপতে বলে..!!

—-হ্যা হহহয়নি তততো??

সম্রাটঃ হবে নাকি??

চোখ টিপ মেরে বলে……

তিশাঃ কিন্তুু এখন তো দিন..!!

সম্রাট তিশা কে ছেড়ে….রাগী লুক নিয়ে তাকালো….তিশা হু হা করে হেসে দিলো….সম্রাট রেগে গিয়ে বললো……

—-ইউআর জাস্ট টু মাচ….কত সুন্দর রোমান্টিক মুডে ছিলাম….আর তুমি নষ্ট করে দিলে??

তিশাঃ তুমি যে কত রোমান্টিক….সেটা আমার জানা হয়েছে ওকে??বেরসিক বুড়ো একটা..!!

সম্রাটঃ হোয়াট??হোয়াট আর সেয়িং??আমি বুড়ো??আমাকে কোনদিক দিয়ে বুড়ো লাগছে??বরং দেখো আমি আগের থেকে….আরো বেশী কিউট হয়ে গিয়েছি….হ্যান্ডসাম, ড্যাসিং, হট বয় আই এম ওকে??

তিশাঃ নিজের প্রশংসা নিজে করছো??

সম্রাটঃ ইয়েস বিকজ ইটস ট্রু…….

তিশাঃ নিজের প্রশংসা নিজে মানুষ কখন করে জানো??

সম্রাটঃ কখন??

তিশাঃ যার প্রশংসা করার জন্য….কেউ থাকেনা তখন নিজের প্রশংসা….নিজেই করে যেমন তুমি..!!

সম্রাটঃ ইউউ……

বলে তিশা কে তাড়া করলো….তিশা ও দৌড়াতে শুরু করলো….খাটের এপাশ থেকে ওপাশ….আবার ওপাশ থেকে এপাশ..!!

সম্রাটঃ ওয়েট দাড়াও বলছি…….

তিশাঃ পারলে ধরো..!!

বলে তিশা বিছানায় উঠলো….ওপাশে যাবে বলে সম্রাট একটানে….তিশা কে বিছানায় ফেলে….নিজেও লাফ দিয়ে বিছানায় গেলো….তিশা’র দু হাত বিছানার সাথে চেপে ধরলো….তিশা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে…….

সম্রাটঃ এবার কোথায় পালাবে মাই লাভ??

তিশাঃ ছাড়ো আমাকে..!!

তিশা’র ঠোট কাঁপছে….যা সম্রাট কে ক্রমশ কাছে টানছে….সম্রাট আস্তে আস্তে তিশা’র….ঠোটের কাছে নিজের মুখ এগোচ্ছে….এবার তিশা’র ও কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গিয়েছে…….

তিশাঃ সসসম্রাট সসসসরো প্লিজ..!!

সম্রাটে’র যেন কিছুই কানে যাচ্ছেনা…….

তিশাঃ সসসসম্রাট তুতুতু..!!

আর কিছু বলার আগে….সম্রাট তিশা’র ঠোটে ঠোট মেলালো….তিশা যেন পাথর হয়ে গিয়েছে….সম্রাট তিশা’র হাত ছেড়ে….তিশা’র গালে হাত দিয়ে স্লাইড করছে….তিশা বিছানার চাদর খামচে ধরেছে….সম্রাট কিস করেই যাচ্ছে….হঠাৎ তিশা কি মনে করে….সম্রাট কে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিলো….সম্রাট পাশে গিয়ে পড়লো….এরপর উঠে অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো……

—-হোয়াট হ্যাপেন্ড??নাউ ইউ লাভ মি রাইট??সো হোয়াটস ইউআর প্রবলেম??

তিশাঃ আই এম নট রেডি ফর দিস..!!

সম্রাটঃ মানে??

তিশাঃ আমি এখনো এসবের জন্য তৈরী না…….

বলে তিশা বেলকনিতে চলে গেলো….আর সম্রাট ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে..!!

সম্রাটঃ তুমি কি কোনদিন আমাকে বুঝবে না??তুমি কি করে ভাবলে জান??তোমার পারমিশন ছাড়া আমি তোমার সাথে…….

আর কিছু বললো না….চুপচাপ একপাশে বসে পড়লো….এরপর কিছু একটা ভেবে বললো..!!

—-হোয়াটস রং ইউথ ইউ সম্রাট??কি করছিস তুই??তুই কি ভুলে গেলি??তোকে তো খুনি কে খুজে বের করতে হবে….এরপর তো তাদের খুন করতে হবে….আফটার অল ইউআর মাফিয়া কিং……

বলে বাঁকা হাসলো….এরপর রুম থেকে বেরিয়ে নিচে গেলো..!!

সম্রাটঃ রহিম চাচা হয়ার আর ইউ??

রহিম চাচাঃ কি হলো ছোট সাহেব??

সম্রাটঃ চাচা আমাকে আমার….কবরের কাছে নিয়ে চলো……

রহিম চাচাঃ মানে??

সম্রাটঃ আই মিন নকল কবর..!!

রহিম চাচাঃ কিন্তুু কেন??

সম্রাটঃ সেই কৈফিয়ত তোমাকে দেবো??

রহিম চাচাঃ না চলুন……

রহিম চাচা সম্রাট কে নিয়ে….সেই কবরের কাছে গেলো….সম্রাট ওখানে গিয়ে বললো..!!

—-আচ্ছা এই লাশটা….এই বাড়িতে কে পৌছে দিয়েছিলো??

রহিম চাচাঃ কয়েকজন বিদেশী লোক……

সম্রাটঃ তোমরা না দেখে দাফন করলে??

রহিম চাচাঃ রাতে এসে ওনারা দাফন করেছে..!!

সম্রাটঃ কি বলেছিলো??

রহিম চাচাঃ বলেছিলো আপনারা মাথায়….কারা নাকি গুলি করেছে??মোট ৬টা গুলি তাই আপনি…..

সম্রাটঃ মারা গিয়েছি??

রহিম চাচাঃ হ্যা ছোট সাহেব..!!

সম্রাটঃ ওকে ইউ ক্যান গো নাউ……

রহিম চাচাঃ আচ্ছা..!!

রহিম চাচা যথেষ্ট শিক্ষিত….কিন্তুু এখন উনি কেয়ারটেকার হয়েই আছে….পেটের দায়ে মানুষ কি না করে??

সম্রাট তাকিয়ে আছে লেখাটার দিকে….যেখানে লেখা মৃত সম্রাট খাঁন আয়াশ….সম্রাট হাত মুঠ করে তাকিয়ে আছে….এরপর পাশ থেকে একটা ইট নিয়ে….ওটাতে ইচ্ছে মতো ইট মারছে….কিছুক্ষণ পর ওটা খুলে পড়ে যায়….আর সম্রাট ওটা নিয়ে ফেলে দিতে গিয়েও….কি ভেবে রেখে দেয় হাতে নিয়ে….চলে আসতে গেলেই চোখ যায়….ওর দাদুভাইয়ের কবরে….মনে পড়ে যায় ৩বছর আগের কথা….যেদিন ওর দাদুভাই মারা গেলো….পাগলের মতো কান্না করছিলো সম্রাট….সম্রাট ওর দাদুভাইয়ের কবরের কাছে যায়…..

সম্রাটঃ দাদু খুব মিস করি তোমাকে….কেন এভাবে চলে গেলে??একবারও আমার কথা ভাবলে না??তুমি ছাড়া কেউ আমাকে বোঝেনা….সবার তো মম, ড্যাড পুরো পরিবার আছে….আমার তো সেটাও নেই রিয়েলি মিস ইউ দাদু..!!

সম্রাটে’র চোখ থেকে….পানি গড়িয়ে পড়লো কিন্তুু….সম্রাট সেটা মুছে ফেললো….এরপর ওখান থেকে চলে এলো……

তিশাঃ কোথায় গিয়েছিলে??

রুমে ঢুকতেই তিশা প্রশ্ন করলো..!!

সম্রাটঃ কবরস্থানে…….

তিশাঃ কেন??

সম্রাটঃ আমার নামের কবর দেখতে..!!

তিশাঃ ওহহহহহ…….

দেখতে দেখতে আরো….৫টা দিন চলে গেলো….তিশা সম্রাট কে নিজের কাছে আসতে দেয়না….সম্রাট বুঝেই উঠতে পারেনা….যে তিশা এমন কেন করে??

সম্রাটঃ বেবী কেন এমন করছে??আমিতো ওর স্বামী তাহলে….কেন আমাকে ওর কাছে যেতে দেয়না??এখন তো ও আমাকে ভাল ও বাসে….তাহলে কেন দুরে দুরে থাকছে??

মনে মনে ভাবছিলো এসব….এরমাঝে তিশা রুমে এসে বললো..!!

—-সম্রাট শোনো……

সম্রাটঃ কিছু বলবে??

তিশাঃ আমি আমাদের বাড়ি যাবো..!!

সম্রাটঃ কবে যেতে চাও??

তিশাঃ আজকেই যাবো……

সম্রাটঃ ওকে রেডি হয়ে নাও..!!

তিশাঃ তুমিও রেডি হও……

সম্রাটঃ কেন??

তিশাঃ তুমিও যাবে তাই..!!

সম্রাটঃ আমি তোমাকে পৌছে দিয়ে চলে আসবো……

তিশাঃ জ্বি নো থাকতে হবে সো ফাস্ট..!!

সম্রাট ও রেডি হয়ে নিলো….ব্লু কালার শার্ট ব্লাক জিন্স….শার্টের উপর ব্লাক জ্যাকেট….শার্টে ছোট হাতা….আর জ্যাকেট হাতা কাটা….জ্যাকেটের চেইন খোলা….চুলগুলো হালকা জেইল দেয়া….কয়েকটা চুল কপালে এসে পড়েছে….চোখে কালো সাইন গ্লাস….ঠোটের একটু নিচে ডান পাশে….কালো ছোট একটা তিল….সব মিলিয়ে ক্রাশ লুক…….

তিশা একটা টপস পড়েছে….যেটার কালার ব্লাক….তারসাথে ব্লু কালার জিন্স….তিশা চেন্জ করে এসে….সম্রাট কে দেখে হা করে তাকিয়ে আছে….সম্রাট সেটা বুঝতে পেরে….দুষ্ট হাসি দিয়ে বললো..!!
.
.
.
.
.
.
—-জান তুমি নিজে যদি….নিজের স্বামীর দিকে কু নজর দাও….তাহলে অন্য মেয়েরা কি করবে??

তিশাঃ কি আমি কু নজর দেই??

রেগে গিয়ে বললো…….

সম্রাটঃ এখন তো কু নজর দিচ্ছো..!!

তিশাঃ শোন তুই আমার স্বামী….যেই নজর দেই আমি দেবো….বাইরের মেয়েরা দিলে চোখ তুলে নেবো..!!

সম্রাটঃ ওকে ওকে এখন রেডী হও……

তিশা গিয়ে ঠোটে লিপস্টিক নিলো….মুখে আগে থেকেই হালকা মেকআপ করেছিলো….এরপর চুলগুলো একটা ঝুটি করে বললো..!!

—-চলো আমি রেডি……

সম্রাটঃ এভাবে যাবে??

তিশাঃ হ্যা কেন কি প্রবলেম??

সম্রাটঃ ওড়না কোথায় তোমার??

তিশাঃ ওপস সরি বাট আমি ওড়না নেই না….স্কার্ফ নেই বুঝলে??

এরপর তিশা গলায় স্কার্ফ নিলো….সম্রাট মুচকি হেসে নিচে গেলো….পিছনে তিশা ও গেলো..!!

তিশাঃ আগে আমার ভার্সিটি যেতে হবে……

সম্রাটঃ কেন??

তিশাঃ নোট আনতে হবে..!!

সম্রাটঃ ওকে গাড়িতে ওঠো……

তিশা গিয়ে গাড়িতে উঠলো….সম্রাট গাড়ি স্টার্ট দিলো….গাড়ি চলছে আপনমনে….তিশা বাইরেটা দেখছে….সম্রাট গাড়ি ড্রাইভ করার ফাকে….তিশা কেও দেখছে মাঝে মাঝে….দেখতে দেখতে ওরা ভার্সিটি গিয়ে পৌছালো..!!

তিশাঃ তুমি থাকো আমি যাচ্ছি…….

সম্রাটঃ আমিও যাচ্ছি..!!

তিশাঃ না তুমি থাকো আমি যাবো আর আসবো..!!

সম্রাটঃ ওকে হারি আপ…….

তিশা গাড়ি থেকে নেমে চলে গেলো….সম্রাট গাড়ি থেকে নেমে….হাটতে হাটতে ভেতরে গেলো….তিশা নোট নিয়ে এসে দেখলো….মেয়েরা ভীর করে আছে….তিশা ভ্রু কুঁচকে তাকালো..!!

রুপঃ কি হচ্ছে ওখানে??

তিশাঃ ডোন্ট নো লেটস সি……

রুপঃ ইয়া রাইট..!!

এরপর ওরা দুজন গেলো….ভীর ঠেলে ভেতরে ঢুকেই….তিশা’র মেজাজ গরম হয়ে গেলো……

তিশাঃ সম্রাট..!!

সম্রাট অসহায় ফেস করে তাকালো….এদিকে মেয়েরা তো….সম্রাটে’র সাথে ছবি তুলছে….এত বড় একজন ড্যাসিং বিজনেসম্যান….তার সাথে ছবি তোলার সুযোগ….হাত ছাড়া করতে চাইছে না মেয়েরা….অনেকে তো নাম্বারও চাইছে….তিশা অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে….তাই দেখে সম্রাট কয়েকটা ঢোক গিলে বললো……

—-শোনো আন্টিরা..!!

আন্টি শুনে সব মেয়েরা থ….তিশা নিজেও হা করে চেয়ে আছে….আর রুপ তো হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে……

সম্রাটঃ আমি কোনো হিরো না….যে আমার সাথে ছবি তুলছো….এরপর ছবি তুলতে হলে….আগে আমার বউয়ের পারমিশন নেবে….তারপর ছবি তুলতে আসবে গট ইট??

সব মেয়েরা কাঁচুমাচু করে চলে গেলো..!!

রুপঃ ওয়াও জিজু কি দিলে তুমি??

সম্রাটঃ কি আর দিতে পারলাম??

রুপঃ তবুও আন্টি বানিয়ে দিলে??

বলে আবারও হাসতে লাগলো….তিশা ও মিটিমিটি হাসছে….এরপর আরো কিছুক্ষণ কথা বলে ওরা চলে গেলো….তিশা কে পেয়ে সবাই মহাখুশি……

নীলঃ আরে সম্রাট দাড়িয়ে আছো কেন??

সম্রাটঃ তোমাদের ভালবাসা দেখছি..!!

কনিকা চৌধুরীঃ তুমি কেমন আছো বাবা??

সম্রাটঃ জ্বি আন্টি ভাল……

কনিকা চৌধুরীঃ এখনো আন্টি বলবে??

সম্রাটঃ তাহলে??

কনিকা চৌধুরীঃ তিশা কি বলে??

সম্রাটঃ মাম্মা..!!

কনিকা চৌধুরীঃ রাইট তুমিও মাম্মা বলবে….তুমিও তো আমার ছেলে তাইনা??

সম্রাট ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে……

কনিকা চৌধুরীঃ কি হলো??

সম্রাটঃ মাম্মা..!!

বলে জড়িয়ে ধরলো….কনিকা চৌধুরী বুঝলো সম্রাটে’র….ওর মায়ের কথা মনে পড়েছে….তাই উনি সম্রাট কে জড়িয়ে ধরে….পিঠে হাত বুলিয়ে দিলো……

আরশাল চৌধুরীঃ তা কনিকা তোমার এই ছেলে….আমাকে কি চেনে??আমি কিন্তুু ওর বউয়ের পাপা হই..!!

সম্রাটঃ পাপা……

আরশাল চৌধুরীঃ পাপা কে জড়িয়ে ধরবে না??

সম্রাট ওনাকেও জড়িয়ে ধরলো….তিশা, আবির, অভি, নীল, কল্লোল….তাকিয়ে মুচকি হাসছে..!!

তিশাঃ আমরা কি কিছু হই??

সবাই হেসে দিলো তিশা গাল ফুলিয়ে আছে….সবাই মিলে তিশা কে আদর করছে…….

কনিকা চৌধুরীঃ আচ্ছা এবার তোমরা রুমে যাও..!!

ওরা রুমে চলে গেলো….রাতে ডিনার করার সময়….সবাই খুব মজা করলো….সম্রাট ও ওদের সাথে মিশে গিয়েছে……

তিশাঃ মাম্মা এবার অভি ভাইয়া কে….বিয়ে করানো উচিত তাইনা??

অভি বিষম খেলো..!!

তিশাঃ রিল্যাক্স ভাইয়া তুই যাকে পছন্দ করিস….তার সাথেই তোর বিয়ে হবে…..

সম্রাটঃ ভাইয়া কাকে পছন্দ করে??

অভিঃ সম্রাট ও মিথ্যে বলছে..!!

কনিকা চৌধুরীঃ কিন্তুু আমার তা মনে হয়না অভি……

নীল, আবির, সম্রাটঃ মাম্মা তুমিও জানো??

সবাই ওদের দিকে তাকালো….আর ওরা ৩জন ৩জনের দিকে….এরপর জোড়ে হেসে দিলো….এখানে ২দিন থেকে ওরা চলে গেলো..!!

সম্রাট অফিসে বসে আছে….এমন সময় ওর ফোনে একটা ফোন এলো….সাথে সাথে কপালের রগ ফুলে গেলো……

সম্রাটঃ ধরে নিয়ে আয় ওকে..!!

সম্রাট গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো….চলে গেলো নিজের আস্তানায়….চেয়ারে হাত পা বেধে বসিয়ে রেখেছে একজন কে….লোকটা সম্রাট কে দেখেই বললো……

—-আমাকে নিয়ে এসেছিস কেন??

সম্রাটঃ ইউ ব্লাডি বিচ..!!

বলেই নাকে একটা ঘুষি দিলো……

সম্রাটঃ তোর সাহস হয় কি করে??ভার্সিটিতে আমার ওয়াইফ কে টিচ করিস??ওর ওড়না ধরিস ওর দিকে নজর দিস….তোর চোখ আমি তুলে ফেলবো..!!

বলেই পাশে থাকা চিকন শিক….লোকটার চোখে ঢুকিয়ে দেয়….লোকটা ছটফট করতে থাকে….সবাই থ ভয় পেয়ে অন্যদিকে ঘুরে যায়….সম্রাট একটা ছুড়ি নিয়ে লোকটার শরীর….ছিন্নন ভিন্ন করতে করতে বলে…..

—-তোর কলিজা অনেক বড় তাইনা??রিয়াজ জলন্ত শিকটা নিয়ে আয়…..

রিয়াজ গিয়ে শিক নিয়ে আসে….সম্রাট শিকটা নিয়ে…. লোকটার বুকে ঢুকিয়ে দেয়….লোকটা চিৎকার করছে….আর সম্রাট পাগলের মতো হাসছে..!!

সম্রাটঃ এই জিহ্বা দিয়ে বাজে কথা বলেছিস তাইনা??

বলেই মুখের মধ্যে….গরম শিক ঢুকিয়ে দেয়….বডিগার্ডরা থরথর করে কাপছে….সম্রাট লোকটার চোখে….বুকে, মুখে গুড়া মরিচ দিয়ে পাগলের মতো হাসছে….লোকটা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে….হাসি থামিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলে……

—-রিয়াজ একে গুম কর..!!

বলে হনহন করে চলে যায়….ভাবছেন তো কি হলো??আজকে তিশা একা ভার্সিটি গিয়েছিলো….আর ওই লোকটা সবাই কে….সব মেয়েদের বাজে কথা বলে টিচ করে….কিন্তুু আজকে ভুল জায়গায় হাত দিয়েছে….যার করুন পরিনতি হলো ভয়ংকর মৃত্যু….সম্রাট বাড়ি এসে দেখে তিশা স্বাভাবিক….সম্রাট কিছুটা অবাক হয়….তিশা কে সম্রাটে’র অবাক লাগে এখন……

পরেরদিন রাতে সম্রাট ঘুমিয়ে আছে….হঠাৎ কেউ ওকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করতে যায়….সম্রাট সাথে সাথে চোখ খুলে….তার হাত ধরে ফেলে….যার হাত ধরেছে সে ছোটার জন্য ছটফট করছে..!!

সম্রাটঃ কে তুমি??

লোকটার মুখে মাস্ক….সম্পূর্ণ কালো ড্রেস পড়া….তবে বোঝা যাচ্ছে একটা মেয়ে….ধস্তাধস্তির এক পর্যায় সম্রাট….একটানে মাস্ক খুলে ফেলে….খুলে সম্রাটে’র পায়ের তলার মাটি সরে যায়….সম্রাটে’র চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে….কাঁপা কাঁপা গলায় বলে সম্রাট…….

—-জাজাজান তুতুতুমি??

#To_Be_Continued….♣♣

The_Villain_Lover Part_13

0

The_Villain_Lover
Part_13
#Writer:#Tisha_Islam_Nabila

সবাই স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে….সম্রাট তিশা কে ঝাকছে….সম্রাটে’র ঝাকুনিতে তিশা আবার পিটপিট করে তাকায়..!!

সম্রাটঃ তুমি এটা কেন করেছো??

কাঁদতে কাঁদতে বলে সম্রাট…….

তিশাঃ তো তোমাকে ছা ছাড়া আ আর….কা কাউকে কি ক ক করে স স্বামী মানবো??

সবাই এবার দৌড়ে আসে..!!

নীলঃ মিষ্টি কলিজা কি করলে তুমি??

সবার পাগল প্রায় অবস্থা….সম্রাট তিশা কে কোলে তুলে নিয়ে….তাড়াতাড়ি গাড়িতে শুইয়ে ড্রাইভ করতে থাকে….ড্রাইভ করে হসপিটালে গিয়ে পৌছায়….সম্রাট নিজেই ডক্টর কিন্তুু আজ….আজ কেন জানি ওর সাহস নেই কিছু করার….থরথর করে কাঁপছে সম্রাট….চেচিয়ে ডক্টর কে ডাকতে থাকে ডক্টর এসে বলে……

—-কি হয়েছে ওনার??

সম্রাটঃ ডক্টর ও বিষ খেয়েছে….প্লিজ ওকে বাঁচিয়ে দিন….আমি চাইলেও পারছি না ওয়াস করতে….কারন তখন তো খুব কষ্ট হয়….আমি পারবো না সেটা সহ্য করতে….আপনি ওকে বাঁচিয়ে দিন প্লিজ..!!

ডক্টর অবাক হয়ে দেখছে….সম্রাট আবারও বলে ডক্টর তাড়াতাড়ি….তিশা কে নিয়ে ওটিতে যায়…….

এদিকে সৌহাদ্র একই ভাবে দাড়িয়ে আছে ছাদে….ওখান থেকে চলে এসেছে….তিশা কে দেখতে যেতে চেয়েছিলো….কিন্তুু ওর মা, বাবা যেতে দেয়নি….সৌহাদ্রে’র চোখ থেকে পানি পড়ছে….সৌহাদ্র ওর বাবা মায়ের একমাএ ছেলে….সেই সুবোধে আদরটা একটু বেশী….কখনো ওকে কষ্ট পেতে দেয়নি….আর সেই সৌহাদ্র আজ কান্না করছে..!!

সৌহাদ্রঃ কেন তাকেই ভালবাসলাম??যে আসলে আমার না….কোনদিন আমার ছিলো না হবে ও না….তিশা’র এই অবস্থার জন্য আমি দায়ী….আমাকে বিয়ে করবে না বলে….ও সুইসাইড করতে চেয়েছিলো….আমিতো ওকে ভালবাসি তাহলে….কেন আমি ওকে বুঝলাম না??ও শুধু সম্রাট কে ভালবাসে……..

এদিকে যাদের কাছে এতদিন….সম্রাট আটকা ছিলো সম্রাট চলে যাওয়ায়….তারা সবকিছু ভেঙে চুরে ফেলছে..!!

—-কি করে চলে গেলো ও??

ডক্টরঃ সবাই কে মেরে চলে গিয়েছে……

—-ওকে না ইনজেকশন দেয়া হতো??এই ৬মাসে তো ওর প্যারালাইজড হয়ে যাওয়ার কথা….তাহলে কেন হলোনা??কি ইনজেকশন দিতে হ্যা??

ডক্টরঃ সেটা আমিও বুঝতে পারছি না..!!

আরেকজনঃ আপনি কোথায় ছিলেন??

—-আমি কি তোমাদের সাথে থাকতাম??যাদে সম্রাট আমাকে চিনে ফেলে??

—-বাট এবার কি হবে??

—-এবার যা হওয়ার তাই হবে….সম্রাট কে তো মরতেই হবে….ওর জান ওর বউ না??

—-হ্যা বউ বলতে পাগল……

—-এবার ওর জানেই আঘাত করবো..!!

—-জানে কি আগে আঘাত করোনি??

বলে হেসে দেয়…….

হসপিটালে বসে আছে সম্রাট….তবে শান্ত হয়ে বসে নেই….একটুপর পর গিয়ে ওটির দরজা ধাক্কাচ্ছে….কতক্ষণ বসে থেকে আবারও গেলো..!!

নীলঃ সম্রাট কি করছো??

সম্রাটঃ ভাইয়া ওরা বের হচ্ছেনা কেন??

অভিঃ সম্রাট কাম ডাউন……

সম্রাটঃ পারছি না আমি আপনারা কি হ্যা??কেন ওকে বিয়ে দিতে গেলেন??

সম্রাট কে সবটা বললো….সম্রাট তো বিশ্বাস করতে পারছে না..!!

সম্রাটঃ জান আমার জন্য কান্না করতো??

আবিরঃ শুধু কান্না করতো না….ঠিকমত খেতো না দরজা দিয়ে বসে থাকতো……..

নীলঃ আমি এটা বুঝতে পারছি না….তুমিতো বেঁচে আছে তাহলে তোমাদের….পারিবারিক কবরস্থানে যেই করব….যেটাতে লেখা মৃত সম্রাট খাঁন আয়াশ ওটা কার করব??আর তোমার নামই বা কেন লেখা??

সম্রাটঃ হোয়াট??

আবিরঃ হ্যা একদম তাই..!!

এরমাঝে ডক্টর বেরিয়ে আসে…….

সম্রাটঃ ডক্টর আমার ওয়াইফ??

ডক্টরঃ ডোন্ট ওয়ারী আপনার ওয়াইফ….এখন ঠিক আছে বিষ বের করা হয়েছে….ওনাকে কেবিনে দিয়ে দিয়েছি….আপনারা চাইলে দেখা করতে পারেন..!!

সম্রাট আগে যায় কেবিনে….তিশা’র গায়ে হসপিটালের পোশাক….সম্রাট গিয়ে তিশা’র পাশে বসে তিশা’র হাত ধরে….তিশা আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকায়…….

তিশাঃ সম্রাট কোথায় চলে গিয়েছিলে তুমি??

সম্রাটঃ যেখানেই যাই তোমার কি??তুমিতো আর আমাকে ভালবাসো না..!!

এরমাঝে বাকীরাও চলে আসে……..

আরশাল চৌধুরীঃ তুমি কি করতে যাচ্ছিলে মামনি??

তিশাঃ বিয়েটা করা সম্ভব হতো না পাপা….তাই নিজেকে শেষ করতে চাচ্ছিলাম..!!

আরশাল চৌধুরীঃ এভাবে নিজের পাপা কে….অপরাধী করে দিতে চেয়েছিলে??

তিশাঃ না পাপা ওর জন্য না…….

সবাই এটা ওটা বলছে….এবার কল্লোল সম্রাট কে বলে..!!

—-আচ্ছা সেই রাতে কি হয়েছিলো??আর তুমি এই ৬মাস কোথায় ছিলে??

সম্রাটঃ সেই রাতে জান কে….আমি গুলি করিনি…….

সবাইঃ হোয়াট??

তিশাঃ কি বলছো তুমি??

সম্রাটঃ যাকে ভালবাসি তাকে কি করে মারি??

তিশাঃ কিন্তুু তুমিতো পিস্তল তাক করেছিলে..!!

সম্রাটঃ হ্যা তোমার গুলি লাগার পর….আমি এতটাই ভেঙে পড়েছিলাম….নিজেকে পাগল পাগল লাগছিলো….যার কারনে আমি খেয়ালই করিনি….গুলি আমার পিস্তল থেকে বেরিয়েছে কি না….তুমি ব্রিজের নিচে পড়ে যাও….আর তারপর যা হয়…….

#অতীত..!!

তিশা ব্রিজের নিচে পড়ে যায়….আর সম্রাট যখনি নিজেকে গুলি করতে যাবে….কোথা থেকে একটা গুলি এসে….সম্রাটে’র পিঠে লাগে সম্রাট আহ করে ওঠে….এরপর আরো একটা গুলি ওর পিঠে লাগে….সম্রাট ঘুরে দেখতে চায় আসলে কে??সম্রাট দেখে সেই ৭বছর আগের মতো….নিজেদের কাভার করা ৩জন লোক…….

সম্রাটঃ কারা তোমরা??

বলতে না বলতেই সম্রাটের মাথায়….নিজেদের হাতে থাকা হকিষ্টিক দিয়ে….একজন আঘাত করে বারি মারে….সাথে সাথে সম্রাট মাথা চেপে ধরে….আর পিছন থেকে আবার বারি মারে….সম্রাট মাথা ধরে দাড়িয়ে আছে….মাথা থেকে রক্ত পড়ছে….এরপর ওরা সম্রাটে’র বুকেও আর পেটে গুলি করে….সম্রাট ঠাস করে মাটিতে পড়ে যায়….লোকগুলো ওখান থেকে চলে যায়….সম্রাট নিজের পিস্তল ধরে বলে..!!

—-আমি তোমাকে গুলি করেছি….তাই আমার কথামত নিজেকেও….আমার গুলি করা উচিত…….

সম্রাট পিস্তলের ট্রিগার চেপে….নিজের বুকের বাম পাশে আবার গুলি করে….মোট ৫টা গুলি সম্রাটে’র শরীরে বিদ্ধ হয়….সম্রাট ট্রিগার চেপেই থমকে যায়….ও পিস্তল থেকে গুলি বের করে ফেলে….আর দেখে ৫টা গুলি সম্রাটে’র বুঝতে বাকী থাকেনা….যে ওর পিস্তল থেকে তিশা কে গুলি করা হয়নি….যারা ওকে গুলি করেছে তারাই….তিশা কে গুলি করেছে….কারন ও পিস্তলে ৬টা গুলি ভরে এনেছিলো….এদিকে সম্রাট আস্তে আস্তে শরীর ছেড়ে দেয়….চোখদুটো বন্ধ করে ফেলে….রাস্তা দিয়ে ওর বডিগার্ড রিয়াজ যাচ্ছিলো….রিয়াজ সম্রাট কে এভাবে দেখে….তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যায়….ডক্টর জানায় সম্রাটে’র শরীর….গুলি দিয়ে ধরতে গেলে ঝাঝড়া হয়ে গিয়েছে….৫টা গুলি শরীরে অবস্থা খুব খারাপ….ডক্টর গুলি বের করে দিয়েছে….ওকে লন্ডন নিয়ে যেতে হবে….রিয়াজে’র কাছে সম্রাটে’র অনেক টাকা আছে….তাই কোনো প্রবলেম হয়না রিয়াজ সম্রাট কে….কয়েকজন গার্ড সাথে নিয়ে লন্ডন চলে যায়….প্রথমে ওরা লন্ডনের “বারবিকন সেন্টার” যায়….এরপর সম্রাট কে “দ্যা রোয়েল লন্ডন হসপিটালে” নিয়ে যায়….কিন্তুু ওখানে নেয়ার মাএ ৬দিন পর….সম্রাট গায়েব হয়ে যায় যেই ডক্টর সম্রাট কে দেখছিলো….সেই ডক্টর সহ গায়েব হয়ে যায়….রিয়াজ পুলিশ কে জানায়….কিন্তুু পুলিশও খুজে পায়না….যারা সম্রাট কে নিয়ে যায়….সম্রাটে’র সেন্স আসার পরই নেয়….সম্রাট ইচ্ছে করে সেন্সলেস হওয়ার অভিনয় করে….কারন ও জানতে চায় কারা ওরা??এভাবে সম্রাট ইচ্ছে করে ওদের সাথে থাকে….ওরা রোজ সম্রাট কে ইনজেকশন দেয়….সম্রাট সব বুঝতো তাই ও ইনজেকশন পাল্টে দিতো….সম্রাট খাঁন যে লন্ডনেও রাজত্ব করতো….সেটা হয়তো ওরা জানতো না….এভাবে ৬মাস কেটে যায়….সম্রাট রিয়াজে’র সাথে যোগাযোগ রাখতো….আর রিয়াজ’ই জানায় যে তিশা’র বিয়ে ঠিক….সম্রাট আর ওখানে থাকেনা….যারা ওইদিন ওখানে ছিলো তাদের মেরে….ওখান থেকে চলে আসে….ওর আর জানা হয়না যে কারা….ওকে আর তিশা কে মারতে চায়??
.
.
.
.
.
.
#এখন..!!

সবাই শকড হয়ে তাকিয়ে আছে…….

সম্রাটঃ দিনের পর দিন ওদের টর্চার….আমি মুখ বুজে সহ্য করেছি….শুধু জানার জন্য যে ওরা কারা??কারন আমি এটা বুঝতে পারছি….ওরাই আমার পরিবারের খুনি….আমি ওদের কাউকে ছাড়বো না..!!

আবিরঃ মাই গড এত বড় ষড়যর্ন্ত??

অভিঃ যে বা যারা এসব করেছে….ওরা অনেক চালাক আচ্ছা সম্রাট….তোমার মিথ্যে লাশ কে পাঠালো??

তিশাঃ আমি যদি খুব ভুল না হই….তাহলে যে এসব করেছে….সে আমাদের খুব কাছের কেউ……..

আরশাল চৌধুরীঃ এখন এসব থাক….ডক্টর কে গিয়ে জিগ্যেস করো….তিশা কে আমরা বাড়ি নিতে পারবো কি না??

সম্রাটঃ না আজকে নিতে হবেনা..!!

আরশাল চৌধুরীঃ ওকে…….

পরেরদিন সকালে..!!

আরশাল চৌধুরীঃ মামনি চলো……

সম্রাটঃ ওয়েট ও আমার সাথে যাবে..!!

আরশাল চৌধুরীঃ কিন্তুু…….

সম্রাটঃ কোনো কিন্তুু না..!!

সম্রাট তিশা কে কোলে তুলে নেয়…….

তিশাঃ আরে আমি যেতে পারবো..!!

সম্রাটঃ আমি জানি…….

তিশাঃ সম্রাট আমাকে নামাও….সবাই তাকিয়ে আছে দেখো..!!

সম্রাটঃ আমার বউ আমি কোলে নিয়েছি….আর তুমি চুপ করে থাকো….নাহলে কোল থেকে ফেলে দেবো…….

তিশা ভয় পেয়ে চুপ হয়ে যায়….সম্রাট মুচকি হেসে তিশা কে গাড়িতে বসিয়ে….গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বাড়ি পৌছে যায়….বাড়িতে গিয়ে কলিংবেল বাজায়….সম্রাট কে দেখে রহিম চাচা থ..!!

রহিম চাচাঃ ছোট সাহেব আপনি??

সম্রাটঃ হ্যা এখন সরো যেতে দাও…….

রহিম চাচাঃ আপনি বেঁচে আছেন??

সম্রাটঃ কেন মরে যাওয়ার কথা ছিলো??

রহিম চাচাঃ তাহলে আমরা যাকে কবর দিলাম….সে কে ছিলো ছোট সাহেব??

সম্রাটঃ আমি কি জানি??

বলে তিশা কে নিয়ে চলে যায়..!!

—-রহিম চাচা সব গুছিয়ে দাও….আর আগের সার্ভেন্টদের আসতে বলো……

যেতে যেতে বলে যায় সম্রাট….রহিম চাচা সবাই কে আসতে বলে….সবাই সম্রাট কে দেখে চরম অবাক….সম্রাট ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে….ড্রয়িংরুমে বসে পায়ের উপর পা তুলে….রিল্যাক্স মুডে আপেল খাচ্ছে….এদিকে তিশা ও ড্রয়িংরুমে চলে আসে….তিশা সম্রাটে’র পাশে বসে ভ্রু কুঁচকে আছে..!!

সম্রাটঃ কি হলো??

তিশাঃ আমি কি খাবো??

সম্রাটঃ আপেল খাও বেবী……

তিশাঃ না আমি আপেল খাবোনা..!!

সম্রাটঃ তাহলে কি খাবে??

তিশাঃ তোর মাথা খাবো সম্রাটে’র মাথা ফ্রাই……

বলে হনহন করে চলে যায়….সম্রাট তো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকিয়ে আছে..!!

সম্রাটঃ যাহ বাবা আমি কি করলাম??

কিছু একটা ভেবে উঠে দাড়ায় সম্রাট….এরপর নিজেই রান্নাঘরে যায়……

সার্ভেন্টঃ স্যার আপনি এখানে কেন??

সম্রাটঃ রান্নাঘর কি তোমার বাপের??

সার্ভেন্টরা তো ভ্যাবাচ্যাকা খায়….সম্রাট যে এভাবে কথা বলতে পারে….ওদের কারো জানা ছিলোনা….আরেকজন সার্ভেন্ট বলে..!!

—-মানে স্যার আমরা বানিয়ে দিতাম……

সম্রাটঃ আমার বউ খাবে আমি বানাবো ওকে??

সম্রাট নুডুলস বানিয়ে নিয়ে যায়..!!

সম্রাটঃ জান দেখো আমি কি এনেছি??

তিশাঃ এনেছো তো নুডুলস….এমন ভাবে বলছো আইসক্রিম এনেছো মনে হয়…….

সম্রাট মিনমিন করে বলে..!!

—-খেয়ে দেখো কেমন হয়েছে…….

তিশা নুডুলস নিয়ে খেতে শুরু করে….একবার গালে দিয়ে চোখ বড় বড় করে ফেলে..!!

সম্রাটঃ ভাল হয়নি??

তিশাঃ মাই গড খুব ভাল হয়েছে….তুমি খেয়েই দেখো…..

সম্রাট খুশি হয়ে যায়….তিশা’র পাশে বসে নুডুলস মুখে দেয়….নুডুলস মুখে দিয়ে তিশা’র মত….সম্রাট ও চোখ বড় বড় করে ফেলে….সম্রাট ওয়াসরুমে গিয়ে নুডুলস ফেলে দেয় মুখ থেকে….এরপর তিশা’র কাছে এসে বলে..!!

—-ইয়াক ছিঃ এটা নুডুলস হলো??

তিশা ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে……

—-তো কে বানিয়েছে এই নুডুলস??

সম্রাট মুখ কাঁচুমাচু করে বলে..!!

—-আমি তো বানালাম……

বলেই দাত কেলিয়ে তাকায়….আর তিশা ভ্রু কুঁচকে বুঝতে চাইছে….সম্রাটে’র দাত কেলানোর কারন..!!

#To_Be_Continued….♣♣

[আপনারা প্লিজ শুভ শুভ করবেন না….এখন তো জেনে গিয়েছেন….সম্রাট’ই শুভ হয়ে ছিলো….তাহলে কেন শুভ শুভ করেন??এতে আমি গুলিয়ে ফেলি….যে আসলে হিরো কে সম্রাট নাকি শুভ??সো এটা আমার রিকোয়েস্ট….আপনারা সম্রাট বলেই কমেন্ট করলে খুশি হবো….আমার প্রবলেমটা বুঝবেন আই হোপ….]

The_Villain_Lover Part_12

0

The_Villain_Lover
Part_12
#Writer:#Tisha_Islam_Nabila

তিশা কে নিয়ে স্টেজে আসে….তিশা স্থির হয়ে সবার সাথে যায়….স্টেজে নিয়ে তিশা কে বসিয়ে দেয়….একটুপর কাজী চলে আসে….কাজী এসে সৌহাদ্র’র কাছে যায়….সৌহাদ্র কে কবুল বলতে বললে….সৌহাদ্র সাথে সাথে বলে দেয়….এবার আসে তিশা’র কাছে….তিশা কে কবুল বলতে বলছে….তিশা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে….বারবার বলতে বলার পরও যখন বলেনা….তখন আরশাল চৌধুরী এসে বলে..!!

—-মামনি কবুল বলছো না কেন??

এরমাঝে গুলির শব্দ শুনে….সবাই পিছনে তাকায় প্রায় ৩০জন হবে….যাদের গায়ে কালো পোশাক….সবাই বাইকে বসে আছে হাতে পিস্তল….সবাই বাইক থেকে নেমে রাস্তা করে দেয়….আর তখন সেখানে ঢোকে মাস্ক পড়া একজন….যার হাতে পিস্তল এখনো ধোয়া উড়ছে….কালো শার্ট পড়া তার উপরে কালো জ্যাকেট….কালো জিন্স প্যান্ট চোখে কালো সাইন গ্লাস….মুখে কালো মাস্ক পড়া….ছেলেটা স্টাইল করে ভেতরে ঢোকে….ভেতরে ঢুকেই একটানে মাস্ক খুলে ফেলে দেয়….সবাই হা করে তাকিয়ে আছে……..

তিশাঃ সম্রাট??

তিশা শকড হয়ে তাকিয়ে আছে….হ্যা ইনি আর কেউ না সম্রাট খাঁন….সম্রাট ভেতরে গিয়ে তিশা’র বাবা কে বলে..!!

—-ওয়াট দ্যা হেল ফাদার ইন ল??আমার ওয়াইফ কে আরেকজনের সাথে….আপনারা বিয়ে দিতে চাইছেন??দিস ইজ নট ফেয়ার রাইট??

আরশাল চৌধুরীঃ তুমি বেঁচে আছো??

সম্রাটঃ কেন মরে যাওয়ার কথা ছিলো আমার??

বলেই সম্রাট হেসে দেয়….এরপর দাতে দাত চেপে বলে…….

—-একমাএ আল্লাহ ছাড়া কারো ক্ষমতা নেই….এই সম্রাট খাঁন কে মারার….সবটা তো আমি বের করবোই….আমার ওয়াইফ কে বিয়ে দেবেন….আর আমি চুপচাপ থাকবো??নো স্টেজে যে আছে ও আর কারো না….মাফিয়া সম্রাট খাঁনের ওয়াইফ….ওকে কি করে বিয়ে দেবেন??

সম্রাট ধীর পায়ে তিশা’র কাছে যায়….মুচকি হাসি দিয়ে বলে..!!

—-আমি একজন মাফিয়া….তাই তুমি আমাকে ঘৃনা করো….আচ্ছা একটা কথা বলো তো….মাফিয়া হয়ে কেউ জন্মায়??

তিশা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে…….
.
.
.
.
.
.
সম্রাটঃ এই আমি ১০বছর আগেও….মারামারি ভয় পেতাম অথচ আজ আমি….হ্যা আমি একজন মাফিয়া কিন্তুু কেন??কখনো জানতে চেয়েছো তুমি??তুমি না আমাকে ভালবাসতে??যখন শুভ হয়েছিলাম তখন??সেই ভালবাসা থেকে একবার জানতে চাইতে….কিন্তুু না আমার সাথে প্রতারনা করে….আমাকে ধোকা দিয়ে চলে গেলে….আমি এতটা ভেঙে পড়েছিলাম….সেটা সহ্য করতে না পেরে আমার দাদু মারা গেলো….তুমি জানো??আমি কেন মাফিয়া হয়েছিলাম??তাহলে শোনো ১০বছর আগে….আমি আমার মম, ড্যাড আর আমার….একমাএ আদরের বোন শ্রেয়া….একটা হাসি খুশি পরিবার ছিলাম আমরা….আমার বোন ছিলো আমার ২বছরের ছোট….দাদু তখন বিদেশে চাচ্চুর কাছে ছিলো….সবকিছু ভাল চলছিলো….১দিন আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাড়ি যাই….বাড়ি ঢোকার সাথে সাথে কেউ আমাকে….পিছন থেকে আমার মাথায় আঘাত করে….সাথে সাথে আমি সেন্সলেস হয়ে যাই….যখন সেন্স ফেরে নিজের মম, ড্যাড….আর একমাএ আদরের বোনের….মৃত দেহ আমার চোখের সামনে দেখতে পাই….ওরা আমার বোন কে ধর্ষন করে মেরে ফেলেছিলো….আমি আমার পরিবারের বিভৎস দেহ দেখেছিলাম….শুধু তাইনা ওরা একটা ভিডিও রেখে গিয়েছিলো….যেটাতে ওরা নিজেদের কাভার করে রেখেছিলো….যার জন্য আমি জানিনা ওরা কারা ছিলো??ভিডিওতে মম কে ছুড়ি দিয়ে মারতে দেখি….ড্যাড কে পিস্তল দিয়ে গুলি করে….আর আমার বোনেরটা ওসব দেখতে পারিনি….ওদের আমি নিজের হাতে দাফন করেছিলাম….রাস্তায় দাড়িয়ে কান্না করছিলাম আমি….তখন আমার বয়স ছিলো ১৮….এরমাঝে একটা গাড়ি আমাকে ধাক্কা দেয়….আমি মুখ থুবরে রাস্তায় পড়ি….সেন্স আসার পর জানতে পারি….আমি ৫দিন সেন্সলেস ছিলাম কেউ একজন আমাকে বাঁচিয়েছে….আর যে বাঁচিয়েছিলো সে একজন মাফিয়া ছিলো….ওনার সাহায্যে আমিও হয়ে যাই একজন মাফিয়া….মাস পেরিয়ে চলে যায় বছর….আস্তে আস্তে আমি হিংস্র হয়ে যাই….এবার তুমি বলো আমার কি দোষ??আরে আমি সব পেয়েও হারিয়েছি….আমার জায়গায় আপনি থাকলে কি করতেন নীল ভাইয়া??অভি ভাইয়া আপনি কি করতেন??

সবাই মাথা নিচু করে আছে….সবার চোখেই পানি সম্রাট….কান্না করতে করতে বসে পড়ে বলে..!!

—-তুমিও আমাকে বুঝলে না জান??আমি মৃত জেনে বিয়ে করতে গেলে অন্য কাউকে??বাট জান বেঁচে তো আছি আমি….তোমার কাছে আসতে পারিনি কেন পরে বলবো…….

সম্রাট হুট করে দাড়িয়ে….চোখ মুখ লাল করে দাতে দাত চেপে বলে..!!

—-কিন্তুু আমি তো সেটা হতে দেবোনা….তুমি কি করে বিয়ে করবে??

বলে তিশা কে টান দিয়ে….স্টেজ থেকে নামিয়ে বলে ওঠে..!!

—-আমার বউ কে আমি নিয়ে যাচ্ছি…….

তিশা কে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে..!!

তিশাঃ স সম্রাট আ আ আমার কথা…….

এরমাঝে তিশা কাশতে শুরু করে….কাশতে কাশতে মুখে হাত দেয়….মুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত পড়ছে…. তিশা ঠাস করে নিচে পড়ে যায়..!!

সম্রাটঃ জান কি হয়েছে র রক্ত……

তিশাঃ অ অনেক দে দেরী ক করে ফে ফেলেছো আসতে..!!

তিশা চোখ বন্ধ করে নেয়…….

সম্রাটঃ জাননননননন..!!

এদিকে সবাই স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে…….

#To_Be_Continued….♣♣

[একচুয়েলি এই পার্টটা এখন দিতাম না….পুরো গল্প না পড়েই আপনারা….তিশা কে Judge করতে শুরু করেছেন….তিশা কেমন মেয়ে??স্বামী মরেছে ৬মাস আর এরমাঝে….নাচতে নাচতে বিয়ে করতে চলে গেলো??রাইটার বা কেমন??এমন গল্প কি করে লেখে??ফালতু গল্প আরো এমন….অনেক ধরনের কমেন্ট….এখন নিশ্চয় বুঝেছেন আসল কাহিনী কি??একটা কথা মনে রাখবেন….Do not judge a book by it’s cover….আপনারা বই দেখেই Judge করবেন না….আগে বইয়ের পাতা উল্টাবেন….বইটা পড়বেন পরে Judge করবেন….আই হোপ আমি কি বোঝাতে চেয়েছি….আপনারা বুঝতে পেরেছেন….তবুও যদি না বোঝেন তাহলে বলবেন….আমার সুন্দর করে বোঝাতে হবে….I have no problem….]

[আর সম্রাট কি করে বাঁচলো….কি হয়েছিলো সেসব রহস্য….যা ধীরে ধীরে জানবেন….]

The_Villain_Lover Part_11

0

The_Villain_Lover
Part_11
#Writer:#Tisha_Islam_Nabila

৬ মাস পর..!!

বেলকনিতে রাতের আধারে….দাড়িয়ে আছে তিশা স্থির দৃষ্টি….আকাশের সুন্দর চাঁদটার দিকে….চোখের কোনা বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি….আজকাল এটাই যেন নিয়তি হয়ে গিয়েছে….আজকাল খুব কান্না পায় তিশা’র….কান্না পাবেনাই বা কেন??সম্রাট যে নিখোজ হ্যা সেই রাতের পর….তিশা বেঁচে গেলেও সম্রাট কে আর পাওয়া যায়নি….সেই রাতে তিশা যখন ব্রিজের নিচে পড়ে….তখন ব্রিজের নিচে একটা নৌকা ছিলো….আর তিশা গিয়ে সেই নৌকার উপর পড়ে….আর নৌকাওয়ালা তিশা কে চিনতো….তিশা মাঝে মাঝেই রুপ কে নিয়ে….নৌকায় ঘুরতে যেতো নৌকাওয়ালা….মানুষ ডেকে তিশা কে হসপিটালে নিয়ে যায়….আর হসপিটালের ডক্টর তিশা’র বাবা কে ফোন দেয়….এরপর সবাই হসপিটালে চলে আসে….গুলি তিশা’র বুকে লাগায় অবস্থা খারাপ ছিলো….ডক্টররা হাল ছেড়ে দিয়েছিলো….ঠিক সেই সময় তিশা জোড়ে নিঃশ্বাস নেয়….ডক্টররা আবার ট্রিটমেন্ট শুরু করে….কিন্তুু তিশা কোমায় চলে যায়….তিশা কে নিয়ে সিঙাপুর চলে যেতে বলে….আল্লাহ’র রহমাতে সিঙাপুর নেয়ার….২মাস পরই তিশা’র সেন্স আসে….আর সেন্স আসার পর বাংলাদেশে এসে….জানতে পারে সম্রাট নিখোজ….জুন মাসের ২২ তারিখ রাত থেকে….তিশা’র মনে পড়ে যায় এই রাতেই….সম্রাট ওকে গুলি করেছিলো….আর এটাও মনে পড়ে ও ব্রিজ থেকে পড়ে যাওয়ার পর….সাথে সাথে ও সেন্স হারায়নি….তাই ও ব্রিজের উপরে আরো একটা…. গুলির আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলো….এরপর তিশা সেন্সলেস হয়ে যায়….২মাস পর যখন সেন্স আসে তিশা’র….আর ও যখন জানে সম্রাট নিখোজ….তখন তিশা সম্রাট’দের বাড়ি গিয়েছিলো….কিন্তুু বাড়ি কেউ নেই জনমানব শূন্য….বাইরে থেকে তালা মারা যে সেটা নয়….জনমানব শূন্য মানে সম্রাট বা ওর কেউ নেই….আছে শুধু কেয়ারটেকার রহিম চাচা….আর রহিম চাচা সবসময় চেপে যায়….সম্রাট কে নিয়ে কিছু জানতে চাইলেই….উনি মুখ লুকিয়ে কান্না করে চলে যায়….তিশা’র ব্যাপারটা ভাল লাগেনা…….

তিশাঃ কেন সেই রাতে আমাকে….তুমি মারতে চেয়েছিলে??কেন গুলি করেছিলে??আর গুলি করে কোথায় চলে গেলে??

তিশা কান্না করতে করতে বলে….হয়তো ও মাফিয়া সম্রাট খাঁন কে ঘৃনা করতো….কিন্তুু শুভ আহমেদ কে তো ভালবাসতো….সম্রাট’ই তো শুভ সেজেছিলো..!!

তিশাঃ কেন আমার জীবনটা এমন হলো??যাকে ভালবাসলাম তাকেই ঘৃনা করতে হলো….আসলে কি ঘৃনা করতে পেরেছি??না পারিনি তাহলে আজ তার জন্য কাঁদতাম না….আল্লাহ আমি জানিনা কোথায় সম্রাট….কিন্তুু তুমি ওকে ভাল রেখো প্লিজ…….

তিশা বেলকনি থেকে এসে….বিছানায় বসে ভাবলো কাল….আবার রহিম চাচার কাছে যাবে….আর কাল জেনেই ছাড়বে সম্রাট কোথায়??

এদিকে তিশা’র সব কথা….ওর মা শুনে খুব কষ্ট পায়….নিজের মেয়ের এভাবে কান্না….কোনো মা পারবে না সহ্য করতে….উনি গিয়ে আরশাল চৌধুরী কে সব বলে..!!

পরেরদিন তিশা গাড়ি নিয়ে….সম্রাট’দের বাড়ি চলে আসে….এসেই রহিম চাচা কে ডাকে…….

রহিম চাচাঃ বৌমা তুমি??

তিশা সম্রাটে’র বউ তাই বৌমা বলে….আর তিশা ও কিছু বলেনা..!!

তিশাঃ চাচা আমি তো তোমার মেয়ের মতো বলো??

রহিম চাচাঃ হ্যা মা আমি তোমাকে….সবসময় আমার মেয়ের মতো ভাবি……

তিশাঃ তাহলে আজ একটা সত্যি বলবে চাচা??

রহিম চাচাঃ কি সত্যি??

তিশাঃ আগে কথা দাও সত্যি বলবে..!!

রহিম চাচাঃ কথা দিলাম সত্যি বলবো…….

তিশাঃ সম্রাট কোথায় চাচা??

ওমনি রহিম চাচার মুখ কালো হয়ে যায়….চোখের কোনে পানি ছলছল করছে….তিশা রহিম চাচার হাত ধরে বলে..!!

—-চাচা আজ আমাকে বলো….আমি আর পারছি না এভাবে….প্লিজ বলো কোথায় সম্রাট??

রহিম চাচাঃ সত্যিটা তুমি মানতে পারবে না মা……

তিশা ভয় পেয়ে যায় কাঁপা গলায় বলে..!!

—-তুমি ব বলো চা চাচা……

রহিম চাচাঃ ছোট সাহেব আর নেই মা..!!

তিশা স্তব্ধ হয়ে যায়….চেচিয়ে বলে ওঠে…….

—-এসব কি বলছো রহিম চাচা??

রহিম চাচাঃ হ্যা মা ৬ মাস আগেই….গুলি লেগে উনি মারা গিয়েছে….ওনার শরীরে মোট ৬টা গুলি লেগেছিলো….ডক্টর ৫টা গুলি বের করলেও….ওনার মাথায় যেই গুলি লেগেছিলো….সেটা নাকি বের করতে পারেনি….তাই ওনাকে লন্ডন নিয়ে যায়….কিন্তুু ১ সপ্তাহ পর ওনার লাশ আনে বাড়ি..!!

তিশা’র মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে….তিশা জোড়ে কান্না করতে করতে বলে……

—-না এটা হতে পারেনা তুমি মিথ্যে বলছো..!!

রহিম চাচাঃ মিথ্যে না আমার সাথে চলো বুঝবে……

তিশাঃ কোথায় যাবো??

রহিম চাচাঃ চলো গেলে জানতে পারবে..!!

রহিম চাচা তিশা কে নিয়ে….সম্রাট’দের পারিবারিক কবরস্থানে যায়….তিশা চারপাশে ঘুরে ঘুরে দেখছে….একটা কবরে চোখ যায় যেটাতে লেখা….মৃত খলিল খাঁন সম্রাটে’র দাদুভাইয়ের কবর….একটা কবরের সামনে এসে রহিম চাচা বলে…….

—-এটা দেখো বৌমা..!!

উনি সরে যায় আর তিশা যা দেখে….তা দেখে ওর বুঝতে বাকী থাকেনা….যে রহিম চাচা যা বলেছে সব সত্যি….তিশা চিৎকার করে বসে পড়ে….ওই কবরে লেখা আছে মৃত সম্রাট খাঁন আয়াশ….আর মরার তারিখও লেখা….জুন মাসের ২৯তারিখ….তিশা চিৎকার করে কান্না করছে…….

তিশাঃ সম্রাট এটা হতে পারেনা….আমি কেন বুঝলাম না তোমাকে??কেন তোমাকে রেখে চলে গেলাম??সম্রাট তুমি না আমার চোখের….পানি সহ্য করতে পারোনা??দেখোনা আমি কান্না করছি….তুমি মুছে দেবেনা বলো??তুমি কি করে মরতে পারো??তুমি মরতে পারোনা সম্রাট..!!

তিশা কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়ে….নীল ও চলে আসে কারন নীল….অনেকক্ষণ আগেই তিশা কে ফলো করে এসেছে….নীল দৌড়ে গিয়ে তিশা কে ধরে….তিশা নীলে’র বুকে ঢলে পড়ে….নীল তিশা কে কোলে নিয়ে গাড়িতে শুইয়ে….তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যায়…….

নীলঃ ডক্টর আমার বোন??

ডক্টরঃ মানসিক চাপ থেকে উনি সেন্সলেস হয়েছে….প্রেশার তো একদম লো শরীরও উইক….ওনাকে ঠিকমত খাওয়াবেন..!!

নীলঃ জ্বি ডক্টর…….

নীল তিশা কে নিয়ে বাড়ি যায়….বাড়ি নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়….সবাই চলে এসেছে তিশা’র রুমে….বাড়ি আনার পরই তিশা’র সেন্স আসে….তিশা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে….সবাই অস্থির হয়ে পড়ে ওর কান্নায়..!!

অভিঃ বোন কেন কাঁদছো??

আবিরঃ মিষ্টি বলো প্লিজ কেন কাঁদছো??

কল্লোলঃ মিষ্টি সোনা বলো না…….

আরশাল চৌধুরীঃ মামনি কেউ কিছু বলেছে??

নীলঃ পাপা আমি বলছি..!!

সবটা শুনে সবাই হতবাক…….

অভিঃ ওয়াট কি বলছিস তুই??

কল্লোলঃ সম্রাট মারা গিয়েছে??

নীলঃ হ্যা ৬মাস আগেই আর তাই….মিষ্টি কলিজা কাদছে..!!

কনিকা চৌধুরীঃ ছেলেটা মরে গেলো??

আবিরঃ মাম্মা আমিতো বিলিভই করতে পারছি না……

তিশাঃ এই সব আমার জন্য হয়েছে….সম্রাটে’র মৃত্যুর জন্য আমি রেসপন্সিবল….ও আমাকে সত্যি ভালবাসতো তবুও….আমি ওকে ছেড়ে গেলাম..!!

কনিকা চৌধুরীঃ এখন বুঝে কি হবে??

অভিঃ কিন্তুু বোন তোমাকে তো….সম্রাট গুলি করেছিলো সেদিন……

কল্লোলঃ তবুও তুমি ওকে নিয়ে ভাবছো??

আবিরঃ একদম তাই কেন ভাবছো মিষ্টি??

তিশাঃ কারন সম্রাট আমার স্বামী..!!

বলে তিশা আবার কাঁদতে থাকে….সবাই কে রুম থেকে চলে যেতে বলে….বাধ্য হয়ে সবাই চলেও যায়….তিশা হাটুতে মুখ গুজে কান্না করছে……

এভাবে কেটে গিয়েছে আরো ১০দিন….তিশা কে নিয়ে সবাই এখন টেনশনে আছে….ঠিকমত খায়না রুমের দরজা দিয়ে বসে থাকে….আগে কান্না করলেও কাউকে বুঝতে দিতোনা….সবার সামনে ঠিকই হাসি মুখে থাকতো….এখন তো জোড়ে জোড়ে কান্না করে ওঠে….যখন বুকের ভেতরে কষ্টটা বেশী লাগে….তখন আর সইতে না পেরে চিৎকার করে কান্না করে….তিশা’র বাবা মেয়ে কে নিয়ে….টেনশন করে অসুস্থ হয়ে গিয়েছে..!!
.
.
.
.
.
.
ড্রয়িংরুমে বসে আছে সবাই….এরমাঝে সৌহাদ্র আসে সৌহাদ্র কে দেখে….নীল আর অভি চিনতে পারে তাই বলে……

—-সৌহাদ্র তুমি??

সৌহাদ্রঃ হ্যা গতকাল রাতেই এসেছি..!!

আরশাল চৌধুরীঃ ও কে নীল??

নীলঃ পাপা ও তিশা’র ফ্রেন্ড….বাট ও তিশা’র ৩বছরের সিনিয়র……

সৌহাদ্রঃ আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল..!!

আরশাল চৌধুরীঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম…….

সৌহাদ্র এদিক ওদিক তাকাচ্ছে….তিশা কেই খুজছে না পেয়ে বলে..!!

—-নীল ভাইয়া তিশা কোথায়??

সবাই চুপ হয়ে যায়….সৌহাদ্র আবার জিগ্যেস করে……

অভিঃ তিশা ওর রুমে আছে..!!

সৌহাদ্রঃ ওকে ডেকে দাও প্লিজ…….

নীলঃ ও আসবে না..!!

সৌহাদ্র অবাক হয়ে বলে…….

—-কেন ওকি আমার সাথে কথা বলতে চায়না??

নীলঃ সৌহাদ্র তিশা’র সম্পর্কে….তুমি অনেক কিছুই জানোনা..!!

সৌহাদ্রঃ কি জানিনা??

অভিঃ আগে তুমি বসো এরপর বলছি…….

সৌহাদ্র বসে নীল সব বলতে শুরু করে….সব শুনে সৌহাদ্র শকড হয়ে বলে..!!

—-তিশা ম্যারিড??

আবিরঃ হ্যা ম্যারিড…….

সৌহাদ্রঃ আই ডোন্ট কেয়ার….তিশা’র অতীতে কি ছিলো….আমি যাচ্ছি ওর কাছে ওর রুম??

কনিকা চৌধুরীঃ শিরি দিয়ে উপরে উঠে….একটু এগিয়ে রাইট সাইডে..!!

সৌহাদ্রঃ থ্যাংক ইউ আন্টি…….

সৌহাদ্র উপরে তিশা’র রুমের সামনে গিয়ে তিশা কে ডাকে..!!

তিশাঃ প্লিজ চলে যাও আমি একা থাকতে চাই…….

সৌহাদ্রঃ তিশা ওপেন দ্যা ডোর….ইটস মি ইউআর বেস্ট ফ্রেন্ড সৌহাদ্র..!!

তিশা অবাক হয়ে এসে দরজা খোলে….পরিবারের সবাই অবাক হয়ে যায়….হাজার চেষ্টা করলেও তিশা দরজা খোলেনা….আর সৌহাদ্র একবার বলাতে দরজা খুলে দিলো….কিন্তুু তিশা তো দরজা খুলেছে সৌহাদ্র….এতদুর থেকে এসেছে তাই…….

তিশাঃ সৌহাদ্র তুমি??

সৌহাদ্রঃ আগে সরো রুমে যেতে দাও..!!

রুমে গিয়ে সৌহাদ্র হা করে তাকিয়ে আছে….সম্পূর্ণ রুম অগোছালো বেডশিট ফ্লোরে….মোটকথা গরুর গোয়াল মনে হচ্ছে…….

সৌহাদ্রঃ ওয়াট দ্যা হেল??

তিশাঃ একচুয়েলি..!!

সৌহাদ্রঃ আমি সব জানি কোনো ব্যপার না….ওয়েট আমি সব গুছিয়ে দিচ্ছি……

তিশাঃ আরে না আমি করে নেবো..!!

সৌহাদ্রঃ আমি করছি……

সৌহাদ্র এক এক করে সব গোছায়….তিশা অবাক হয়ে দেখছে..!!

তিশাঃ তুমি কি করে পারো??

সৌহাদ্রঃ আমি সব পারি….আর তোমার কি অবস্থা??তোমাকে এভাবে দেখলে….তোমার পরিবারের লোকের কষ্ট পায় তুমি বোঝোনা??তিশা তোমার ৩ভাই যারা তোমাকে এত ভালবাসে….তাদের কথা একবারও ভাববেনা??তোমার পাপা অসুস্থ তোমার টেনশনে জানো তুমি??

তিশাঃ কি বলছো পাপা অসুস্থ??

সৌহাদ্রঃ হ্যা যাও ফ্রেশ হয়ে এসো….আজকে তুমি নিচে যাবে……

তিশা একটা টি শার্ট….আর প্লাজু নিয়ে ওয়াসরুমে যায়….এরপর ফ্রেশ হয়ে এসে আয়নার সামনে গিয়ে….চুলগুলো একটা ঝুটি করে নিচে গিয়ে….ওর বাবা কে জড়িয়ে ধরে বলে..!!

—-আই এম সরি পাপা……

আরশাল চৌধুরীঃ তুমি যে আমার কাছে এসেছো….এতেই আমি খুব খুশি..!!

তিশা সবার সাথে কথা বলে….এরপর আবার রুমে চলে যায়…….

নীলঃ সৌহাদ্র আমি তোমাকে যা জিগ্যেস করি….তুমি তার সঠিক উত্তর দেবে..!!

সৌহাদ্রঃ হ্যা শিওর বলো……

নীলঃ তুমি কি তিশা কে পছন্দ করো??

সৌহাদ্রঃনা..!!

নীলঃ তাহলে এতকিছু কেন করলে??

সৌহাদ্রঃ কারন আমি তিশা কে ভালবাসি…….

সবাই অবাক হয়ে যায়..!!

অভিঃ সব জেনেও এটা বলছো??

সৌহাদ্রঃ হ্যা ভাইয়া আপনারা রাজি থাকলে….আমি তিশা কে বিয়ে করবো…….

কনিকা চৌধুরীঃ কিন্তুু তিশা কি রাজি হবে??

এরমাঝে আরশাল অসুস্থ হয়ে পড়ে..!!

আবিরঃ পাপা কি হলো??

চেঁচামেচি শুনে তিশা চলে আসে….এসে দেখে এই অবস্থা….আরশাল চৌধুরী কে তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যায়….তিশা সবথেকে বেশী কাঁদছে….ডক্টর ওনাকে ভেতরে নিয়ে যায়….১ঘন্টা পর ডক্টর বেরিয়ে আসে..!!

নীলঃ ডক্টর আমার পাপা??

ডক্টরঃ উনি ব্রেইন স্ট্রোক করেছে……

আবিরঃ ওয়াট??কেমন আছে পাপা??

ডক্টরঃ দেখুন এখন উনি ঠিক আছে….কিন্তুু ওনাকে কোনোরকম টেনশন দেয়া যাবেনা….ওনাকে কোনো চাপ দেয়া যাবেনা….তাহলে কিন্তুু ওনার বড় ক্ষতি হতে পারে..!!

তিশাঃ না ডক্টর আমরা পাপা কে দেখে রাখবো……

কনিকা চৌধুরীঃ আমরা কি ভেতরে যাবো??

ডক্টরঃ হ্যা যান..!!

সবাই ভেতরে আসে তিশা গিয়ে….আরশাল চৌধুরী কে জড়িয়ে ধরে……

আরশাল চৌধুরীঃ তুমি কি চাও আমি মরে যাই??

তিশাঃ পাপা এসব কি বলছো??আমি এসব কেন চাইবো??

আরশাল চৌধুরীঃ তাহলে আমি যা বলবো তুমি করবে??

তিশাঃ করবো পাপা তুমি বললে জীবনও দিয়ে দেবো..!!

আরশাল চৌধুরীঃ জীবন দিতে হবেনা….তুমি সৌহাদ্র কে বিয়ে করো……

তিশা ওর বাবা কে ছেড়ে দিয়ে বলে..!!

—-এসব কি বলছো পাপা??

আবিরঃ মিষ্টি রাজি হয়ে যাও….ডক্টর কি বলেছে মনে নেই??

তিশাঃ আল্লাহ এখন আমি কি করবো??[মনে মনে]

তিশা’র বাবা আবার অসুস্থ বোধ করে….ভয় পেয়ে তিশা বলে ওঠে…….

—-আমি রাজি পাপা….তুমি যা বলবে আমি তাই করবো..!!

বলে তিশা বেরিয়ে গিয়ে কান্না করতে থাকে……

নীলঃ পাপা তুমি কি সত্যি অসুস্থ??

আরশাল চৌধুরীঃ মানে??

নীলঃ নাকি মিষ্টি কলিজা কে….বিয়েতে রাজী করানোর জন্য নাটক করলে??

আরশাল চৌধুরীঃ নীল কি বলছো তুমি??

নীলঃ সরি পাপা..!!

২দিন পর আরশাল চৌধুরী কে বাড়ি নিয়ে যায়….সৌহাদ্র ওর পরিবার কে সব বলে….ওনারা এসে জানুয়ারি ১০তারিখে বিয়ে ঠিক করে….আজ ২তারিখ আর ৮দিন পর….বিয়ের শপিং শুরু করে দিয়েছে….দেখতে দেখতে ৬দিন চলে যায়….এবার আর অত হৈ চৈ নেই….তিশা বারন করে দিয়েছে….তবুও গায়ে হলুদ করছে আজ গায়ে হলুদ…….

—-না না আমি ওটা নেবোনা..!!

এভাবেই বাচ্চাদের মতো….প্রলাপ বকছে একটি ছেলে….কারন ওকে ইনজেকশন দিতে চাইছে……

ছেলেটিঃ আমি পাগল না আমি ওটা নেবোনা..!!

যে ইনজেকশন দিতে চাইছে সে একজন ডক্টর…….

—-এটা নাও তুমি ঠিক হয়ে যাবে….তুমিতো একজন পাগল..!!

ছেলেটিঃ নো আই এম নট ম্যাড…….

বলে ছেলেটি ছুটতে থাকে….তাই দেখে ডক্টর কাউকে ডাক দেয়….সাথে সাথে কয়েকজন ভেতরে আসে….তাদের দেখে ছেলেটি ভয়ে ঢোক গিলে বাচ্চাদের মতো বলে..!!

—-প্লিজ আমাকে ছেড়ে দাও….আমি ওটা নেবোনা ওটা নিলে….আমার শরীর খুব ব্যথা করে…….

ডক্টরঃ তোমরা ওকে ধরো..!!

সবাই গিয়ে ছেলেটি কে চেপে ধরে….আর ডক্টর ইনজেকশন পুশ করে দেয়….এটা এমন একটা ইনজেকশন….যেটা দিলে শরীর অকেজো হয়ে যাবে….কিন্তুু ওনারা বোঝেনা এখনও হচ্ছেনা কেন??এদিকে ইনজেকশন দেয়ার পর ছেলেটি ছটফট করছে….আস্তে আস্তে চোখ বন্ধ করে ঢলে পড়ে…….

আজকে তিশা’র বিয়ে….সবাই নিজেদের কাজে ব্যস্ত….জানালার গ্রিল ধরে দাড়িয়ে আছে তিশা….চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে….একটুপর তিশা কে সাজাতে আসে….বর আসার কথা শুনে সবাই নিচে চলে যায়….রুপ কেও সাথে নিয়ে যায়….তিশা বিছানা থেকে উঠে যায়….একটুপর আবার বিছানায় বসে….চোখের পানি মুছে মুচকি হাসে….সবাই আবার উপরে আসে তিশা কে নিতে..!!

#To_Be_Continued….♣♣

[আগের বার দাওয়াত দিতে পারিনি….এবার দিলাম সবাই আসবেন বিয়েতে……????
আমার জন্য চকলেট আর আইসক্রিম নিয়ে আসবেন…..????]