Monday, July 7, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1879



প্রেমপিপাসা প্রথম পর্ব

0

প্রেমপিপাসা
প্রথম পর্ব
শিফা_আফরিন

হটাৎ পেটে কারো ছোঁয়া পেতেই চমকে উঠে কুহু।
মানুষ টা কে? এটা না দেখে কুহু আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কেউ দেখছে কিনা?

তারপর এক ঝটকায় হাত টা সরিয়ে দিয়ে পেছনে তাকাতেই চিৎকার করে উঠে….

কুহু – আপনিইইই….

রেহান – ইয়াপ জানপাখি! বলেছিলাম না তুমি যেখানেই যাবে আমি তোমার ছায়ার মতো থাকবো।

কুহু – আপনার সাহস দেখে আমি অবাক না হয়ে পারছি না!!
আপনি আমায় ফলো করতে করতে আমার ভার্সিটি পর্যন্ত চলে এসেছেন?
দেখেই তো মনে হচ্ছে এক নাম্বারের গুন্ডা। অবশ্য আপনাদের মতো ছেলেদের এই একটাই কাজ মেয়েদের পিছু ঘুরঘুর করে তাদের বিরক্ত করা!

রেহান – হেই স্টুপিড গার্ল জাস্ট স্টপ।
কি কখন থেকে যা তা বলে যাচ্ছো তুমি!

কুহু – যা তা নয় সত্যিই তো বললাম! না হলে আপনি আমার পিছু নিলেন কেনো বলুন?
আর এখন আমার ভার্সিটিতেও ঢুকে পড়েছেন?
আপনি জানেন এখানে বাহিরের কাউকে ঢুকতে দেয়া হয় না। আমি চাইলে দারোয়ান কে দিয়ে এখনি আপনাকে ঘাড় ধরে বের করে দিতে পারি।
সো ভালোই ভালোই বলছি নিজ থেকে বের হয়ে যায়। নয়তো আমি দারোয়ান কে গিয়ে বলছি।

প্রণয় (রেহানের ফ্রেন্ড) – ইউ ক্রেজি গার্ল। জানো তুমি কার সাথে এই ভাবে বিহেভ করছো? চেনো তুমি ওকে? (রেগে)

প্রণয় আরও কিছু বলতে যাবে তার আগেই রেহান হাত দিয়ে ইশারা করে প্রণয় কে থামতে বলে।

রেহানের চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে। রাগে রেহানের হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রেখেছে।
কুহুর দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে। চোখ দিয়ে যেনো আগুন বের হচ্ছে।

রেহান – তোমার সব কথার জবাব কাল পাবে। (রেগে)

রেহান আর এক মূহুর্ত না দাঁড়িয়ে চলে আসে সেখান থেকে।

কুহু রেগে রেহানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।

কিছুক্ষন পরই সানিয়া আর রিহা (কুহুর বান্ধবী) আসে।

সানিয়া – কুহু… কি হলো তোর?

রিহা – রেগে আছিস কেনো? বল না কি হলো?

কুহু কোনো জবাব দিচ্ছে না শুধু প্রচন্ড রেগে একদৃষ্টিতে মাটির দিকে তাকিয়ে আছে।

সানিয়া – রিহা তোকে বলেছিলাম তুই কুহুর সাথে থাক তা না তুইও আমার সাথে চলে গেলি। এখন কি করবো বল তো? ও কি জন্য রেগে আছে কিছুই তো বলছে না।

রিহা – আমার শাড়ির কুঁচি খুলে যাচ্ছিলো পায়ে লেগে। তোর সাথে না গেলেও পরে তো যেতেই হতো একা একা। তাই তো গেলাম তোর সাথে। ভেবেছিলাম দু’জন একসাথেই কমন রুমে চলে যাই। আর আমি তো কুহুকে বলেছিলাম আমাদের সাথে যেতে। ওইতো গেলো না।

সানিয়া – কুহু প্লিজ বল না তোর কি হয়েছে? (চিন্তিত হয়ে)

সানিয়া আর রিহা কুহুর রাগ সম্পর্কে ভালো করেই জানে। সহজে কুহুর রাগ ভাঙ্গানো সম্ভব না আর রেগে থাকলে মুখ থেকে কথা বের করাও সম্ভব না।

রিহা – সানিয়া চুপ থাক। নয়তো আরও রেগে যাবে। ও যখন কিছু বলতে চাইছে না থাক না।

কুহু – রাগবো না তো কি করবো বল! ঐ অসভ্য গুন্ডা ছেলেটা আজ ভার্সিটি পর্যন্ত চলে এসেছিলো।

রিহা – কোন অসভ্য? কার কথা বলছিস তুই?

সানিয়া – আমিও তো কিছু বুঝতে পারছি না। কুহু বুঝিয়ে বল কি হয়েছে? কে এসেছিলো?

কুহু – আরে তোদের বলেছিলাম না কাল। ঐ ছেলেটা আজও এসেছে। আর এসেই কালকের মতো আবার অসভ্যতামি করেছে। আমি তো এটাই বুঝতে পারছি না ও এখানে ঢুকলো কি করে?

সানিয়া – কুহু কুল ডাউন। দেখ আজ যেহেতু অনুষ্ঠান তাই বাহিরের সবাই আসতে পারে। এটা তো কমন তাইনা। আর ছেলেটা এসেছিলো তুই দেখিস নি? তুই চলে আসতি কমন রুমে! আমরা তো ঐ খানেই ছিলাম। তখন ওরে বুঝাই দিতে পারতাম মেয়েদের পিছু করার ফল। তাছাড়া কমন রুমে তো ছেলেদের যাওয়া নিষেধ ছিলো। সো কোনো ঝামেলা হতো না।

কুহু – আমি কি ওকে আসতে দেখেছি নাকি। ও কোথা থেকে এসে হটাৎ করে আমার পেটে টাচ করেছে। ইচ্ছে করছে ওর হাত দুটো কেটে কুকুর কে খাওয়াতে।

রিহা – বলিস কি? এই ছেলে তো আসলেই একটা অসভ্য।

সানিয়া – এই যাহহহ! এই বজ্জাত ছেলেটার জন্য আমাদের আনন্দ টাই মাটি হয়ে গেলো।

রিহা – সেটাই তো। আমি তো ভেবেছি ইচ্ছে মতো পিক তুলবো। তা আর হলো না। (হতাশ হয়ে)

কুহু – কেনো তোদের আনন্দ নষ্ট হবে কেনো? (ভ্রু কুঁচকে)

রিহা – কেনো আবার? ঐ হনুমান টা তো তোকে রাগিয়ে দিয়ে গেলো। আর তোর যা রাগ!
তুই রেগে থাকলে কি আমরা আনন্দ করতে পারবো বল তো?

কুহু – হুহহ হয়ছে। চল এবার।

সানিয়া – এই তোর রাগ কি চলে গেলো নাকি?

কুহু – হুম মঙ্গলগ্রহে পাঠিয়ে দিয়েছি। (হেসে)

সানিয়া আর রিহা ও হেসে দেয়।

এদিকে…

রেহান, প্রণয়, সোহান, তিয়াস পার্কে বসে আছে।

সোহান – দেখ রেহান আজ মেয়েটা তোর সাথে যে বিহেভ করলো! আমার তো মারাত্মক রাগ হচ্ছে।
বলে কিনা তোকে দারোয়ান দিয়ে বের করে দিবে!!

তিয়াস – হ্যা। আমার তো ইচ্ছে হয়েছিলো কষে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিই গালে। ফাজিল মেয়ে।

তিয়াসের কথা শুনে রেহান চোখ রাঙ্গিয়ে তিয়াসের দিকে তাকাতেই ভয়ে তিয়াস চুপ করে যায়।

রেহান – ভাবি হয় তোর বুঝতে পেরেছিস? নেক্সট টাইম যেনো আর এমন ভুল না হয়।

প্রণয় – ভাবি!! ঐ মেয়ে তো তোকে সহ্যই করতে পারে না আর তুই বলছিস ভাবি! হাউ ফানি!!

রেহান – মানতে পারেনি তো কি হয়েছে? মানতে তো ওকে হবেই। নিজ থেকে হোক বা জোর করে!

কুহু, রিহা আর সানিয়া একসাথে ছবি তুলায় ব্যাস্ত।

সানিয়া – ওওও ইয়ার! আজকের বসন্ত উৎসব আমার জীবনের বেস্ট বসন্ত উৎসব হবে!

রিহা – হুম!! অন্নেক ভালো লেগেছে।

কুহু – এবার চল না বাড়ি যাই। আমার ক্ষিদে পেয়েছে খুব।

সানিয়া – চল রেস্টুরেন্ট এ যাই।

কুহু – কিইই!! এই সাজে রেস্টুরেন্টে যাবো? পাগল হয়েছিস তুই?

রিহা – সো হোয়াট? চল না যাই।

সানিয়া – হুম চল প্লিজ না করিস না। আর আমাদের সাজ টা তো মন্দ না দেখেছিস না কতো কতো ছেলে আমাদের দেখছিলো! রেস্টুরেন্টে ও দেখবি সবাই আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকবে। (ভাব নিয়ে)

রিহা – এই তুই চুপ কর। যতো আজাইরা কথা। শাকচুন্নির দিকে নাকি সবাই তাকিয়ে আছে হুহহ।

সানিয়া – এটা কি হলো! আমি শাকচুন্নি? (রেগে)

কুহু – ওফফফ!! তোরা থাম না বাবা। চল তারাতারি।

সানিয়া – হুহহ।

রিহা, সানিয়া আর কুহু রেস্টুরেন্ট এ চলে যায়।

সানিয়া – কুহু তুই অর্ডার কর। আফটারওল তোর বেশি ক্ষিদে পেয়েছে!

কুহু – আপাতত পিৎজা অর্ডার করি। কিছুক্ষণ পর তো বাসায় যাবোই। আর বাসায় গেলে না খেয়ে থাকলে আম্মু আমার বারোটা বাজাবে।

রিহা – হুম সেই ভালো। আমার জন্যও পিৎজাই কর।

কুহু – সানিয়া তুই?

সানিয়া – পিৎজাই। সাথে কোল্ড কফি।

কুহু ওদের খাবারের অর্ডার দিয়ে দেয়।

সানিয়া – কুহু একটা কথা বলি? রাগ করিস না প্লিজ।

কুহু – রাগ করার মতো কিছু বলিস না তবেই হলো।

সানিয়া – না মানে… ঐ ছেলেটার সাথে তোর কিভাবে দেখা হয়েছিলো সব বল না প্লিজ।

কুহু – দেখ এই সব এখন না বলাই ভালো। শুধু শুধু মাথা গরম করতে চাইনা আমি বুঝতে পেরেছিস।

রিহা – সানিয়া প্লিজ চুপ কর। আবার রেগে গেলে তো আমার পিৎজা খাওয়া টাই মাটি হয়ে যাবে।

সানিয়া – ওকে তোর ইচ্ছে। বলতে হবে না শুধু জানতে চেয়েছিলাম তাই আরকি।

কুহু – আচ্ছা বাবা বলছি। তোদের বলেছিলাম না জেরিনের (কুহুর কাজিন) সাথে ঘুরতে যাবো। একটা পার্কে গিয়েছিলাম। আসলে আমাকে একা তো বের হতে দেয় না তাছাড়া একা ঘুরতেও মজা নেই তাই জেরিন কে নিয়ে বের হয়েছিলাম।
আমি আর জেরিন একসাথেই ছিলাম। জেরিন এতোদিন আমেরিকা ছিলো তো ও এতো দিন কিভাবে কাটিয়েছে ঐ খান কার মানুষজন এই সব নিয়েই গল্প করছিলো।
( জেরিন – আপি জানো আমার না এখানে তোমাদের সাথে থাকতেই বেশি ভালো লাগে। বাট বেড লাক থাকতে পারিনা। তবে আই উইশ স্টাডি শেষ হলে আমি তোমাদের এখানেই চলে আসবো।

কুহু – হ্যা। তুই আসলে আমারও অন্নেক ভালো লাগে। এমনিতে তো ভার্সিটিতে গেলে সানিয়া আর রিহার সাথেই শুধু আড্ডা হয় তাছাড়া বাসায় আর কেউ নেই যে আড্ডা দিতে পারবো অনেক বোরিং লাগে রে জানু।

জেরিন – আমার ওতো। —- এই আপি দেখো না।

কুহু – কী দেখবো? (অবাক হয়ে)

জেরিন – আরে সামনে দেখো না।

কুহু – সামনে কী দেখবো বলবি তো? ভুত দেখবো নাকি? (কিছুটা রেগে)

জেরিন – ধুরর বাবা তুমিও না! এই সময় এমন একটা জায়গায় ভুত আসবে কোথা থেকে শুনি?
সামনে ঐ ছেলেটাকে দেখো ব্ল্যাক শার্ট কনুই অব্দি ফোল্ড করা, ব্ল্যাক জিন্স, চোখে সানগ্লাস, হাতে ব্ল্যাক ঘড়ি…. এতো মনে হচ্ছে ব্ল্যাক কিং। এতো হ্যান্ডসাম ছেলেও কি আছে আপি। আমর তো মনে হই এ নিশ্চয় কোনো হিরো। শুটিং করতে করতে এই পার্কে চলে এসেছে।

কুহু – এই তুই থামবি? কী কখন থেকে আরেক ছেলের গুনগান করে যাচ্ছিস। এই সব ছেলেদের দেখতে হ্যান্ডসাম হলে এরা ভেজালযুক্ত।

জেরিন – ভেজাল, ফরমালিন যাই বলো আপি আমি তো এই ছেলের উপর ৩০ কেজি ক্রাশ খাইছি।
এই ছেলে তো আমার রাতের ঘুম হারাম করে দিলো গো!! (ঢ্যং করে)

কুহু – রাতের ঘুম হারাম করলো কিভাবে শুনি? কয়টা রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছিস শুনি? (ধমক দিয়ে)

জেরিন – আপি তুমি এতো আনরোমান্টিক কেনো বলো তো? এমন একটা ছেলে কে দেখে তো যে কেউ পাগল হবে আর তুমি এইসব কথা শুনাচ্ছো।

কুহু – তোর মতো তার ছিঁড়ে মেয়েই পাগল হবে।

জেরিন – আপি এই ছেলে তো দেখি এদিকে আসছে। কি হলো বলো তো!

কুহু – নে এবার ঠ্যালা সামলা। তখন থেকে বক বক করে যাচ্ছিস নিশ্চয় ছেলে শুনে ফেলেছে। এখন তোর বারোটা বাজাবে। যদি ছেলের গার্লফ্রেন্ড থাকে তাহলে তো কথাই নেই!!

জেরিন – আপি এইসব বলো কেনো? আমি তো এখানেই কথা বলছি এই ছেলে শুনবে কিভাবে এতো দূর থেকে।

কুহু – সেটাই তো ভাবছি।

চলবে…

#প্রেমপিপাসা
#প্রথম পর্ব
#শিফা_আফরিন

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে পর্ব-০৮/শেষ পর্ব

0

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে?-
?পর্ব: ৮/শেষ
লেখা :Sakib Nisi❤

বেশ খুনসুটিতে মেতে ছিলাম সবাই,, তারপর আন্টি উঠে ওনার রুমে চলে গেলেন। আমি আর অপি টিভির রুমে গিয়ে বসলাম।
আগে রিমোটটাকে নিজের আয়ত্ত করলাম তাতে অপি আমাকে দু তিনটা চিমটি দিলো। আমি ডিসকভারি চ্যানেলে বেয়ার গ্রীলস এর ম্যান ভারসেস ওয়াইল্ড অনুষ্ঠানটা দেখতে লাগলাম,,, অপি বললো।
> এসব না দেখে দু একটা রোমান্টিক গান তো শোনা যায়??
> আমার মনে কোন রোমান্টিকতা নাই।
> তা তো দেখতেই পাচ্ছি শুকনো বরই একটা।
> চুপ করে থাকো একটু,,, তোমার কথা শুনব না টিভি দেখব।
> থাকো তুমি আমি গেলাম,,
অপি রেগে উঠে যেতে লাগলো আমি ওর হাত ধরে টেনে সোফায় বসিয়ে জড়িয়ে ধরলাম।
> ছাড়ো ছাড়ো আমাকে।
> ছাড়ার জন্য কি ধরেছি নাকি কটকটি।
> তুমি টিভি দেখো আমাকে ছেড়ে দাও তো।
অপির গলায় ঘাড়ে স্লাইড করছি আঙ্গুল দিয়ে আর অপি চোখ বন্ধ করে আছে ওর শরীর কাপছে,,, তারপর ওর কানের কাছে ফিসফিস করে বললাম।
> ছেড়ে দিয়েছি তো এখন যাও না কেন?
> আবির প্লিজ দুষ্টামি করো না।
> আমি কি কিছু করেছি জানটা আমার।
অপির গালে আস্তে আস্তে কিস করছি অপি আমাকে শক্ত করে ধরে আছে,,, তারপর অপি নিজেই আমাকে লিপকিস করতে শুরু করলো,,,,, একটা অজানা ভালো লাগায় হারিয়ে যাচ্ছি দুজন,,,, ????
হটাৎ আন্টির ডাক শুনলাম অপিকে ডাকছে,,, আমি এক লাফে অন্য সোফায় বসে পড়েছি অপিও আলাদা,, ভাগ্যিস আন্টি দেখেনি তাহলে আজ আমার পিঠ লাল হতো নিশ্চিত।
অপি ওর আম্মুর রুমে গেলো তারপর এসে বললো আম্মু ঘুমাবে তাই ওনার ওষুধ টা দিতে ডাকছিলো।
আমি ভাবলাম এখন তাহলে এখানে থাকা টা ঠিক হবে না,, আন্টিকে বলে আমি আমার রুমে চলে আসলাম।
রাতে আব্বু আম্মু সবাই এলে অপির কথা সব খুলে বললাম। আব্বু আম্মু দুজনই খুশি হলো। তখনই তারা চলে গেলো অপিদের বাসায়। সাথে ভাই ভাবীও।
কিছু সময় পর অপি আমাকে ফোন দিল।
> এই শয়তান উল্লুক নাকবোচা বিয়ে করবি আমাকে??
> আমার বয়েই গেছে তোমাকে বিয়ে করতে।
> তাহলে আংকেল আন্টি কেন এসেছে শুনি।
> কি জানি আমিতো জানিনা
> এত পাগল হয়ে গেছো যে তর সইছে না বুঝি।
> যেভাবে কিস করে আমাকে পাগল করলে তাতে ভালো থাকি কি করে,,
> হুমমম দাড়াও এখানে কি কথা হয় আগে শুনি।
> তোমার আম্মু কি রাজি হবে??
> গাধা আম্মু আব্বু তো অনেক আগেই তোমার আম্মু আব্বু কে আমাদের বিষয়ে বলেছে,, তারপর থেকেই তো তোমাকে এত বিরক্ত করি,, তোমার রুমে যাই,, আমার বাসায় এসে আমার সাথে থাকো,,, এমনি এমনি কি হয়েছে নাকি এসব??
> তারমানে তোমরা সবাই মিলে আমাকে বোকা বানানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছো।
> হাহাহা গাধারাম।
> দাড়াও বাসর রাতে বুঝাবো মজা।
> যাও যাও কচু করবা।
> কল কেটে দিলাম,,,
ওদিকে মুরুব্বীরা আলোচনা করছে আমাদের বিয়ের বেপারে।
বিয়ে হবে এ বাড়িতেই।৷ বাসর হবে আমার রুমে, আর বিয়ের পর আমাদের গ্রামের বাড়িতে আরেকটা অনুষ্ঠান করবে। বিয়ে টা এক সপ্তাহ পরেই ঠিক হলো।। অপির পরীক্ষার দেরী আছে তাই আর সমস্যা হবে না।
দু পরিবারের সবাই বিয়ে নিয়ে খুব আয়োজনে মেতে আছে। আমিতো লাজুক পোলা,, তাই ঘর থেকে তেমন একটা বের হইনা কে কি বলবে,, আবার ঠিক করেছি বিয়ের পরও তিনমাস ঘর থেকে বের হবো না কে কি বলবে সেজন্য,, এছাড়া অন্য কিছু না। ????
এখন সবসময়ই অপি আমাদের রুমে যাওয়া আসা করে,,, খুব ভালোবাসে সবাই ওকে। আর আমি??? বড্ড বেশি ভালোবাসি,,, ও সামনে থাকলে বা ওর গলা শুনলেই আমার ভেতর একটা খুশি কাজ করে,, সবকিছুই ভালো লাগে।
একসাথে সবাই মিলে শপিং এ গেলাম একদিন।। বিয়ের যাবতীয় সবকিছু কেনাকাটা করলাম সবার পছন্দ মত।
বিয়ের দিন পুরো বাড়িটাই খুব জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে সাজানো হয়েছে। এক বাড়িতেই বিয়ে। আজিব বিয়ে যাকে বলে।
কত শখ ছিল গাড়ি করে যাব বউ আনতে আর এখন সিড়ি বেয়ে উঠে বউ আনতে হবে। ?
তাও আবার ছাদে সাজিয়ে রেখেছে কতোগুলো সিড়ি বেয়ে উঠতে হবে,,, ধুররর ভালো লাগে না।
সেরোয়ানি পাগড়ি পরেছি, কেমন জানি লাগছে লজ্জায় মুচকি হাসি আসছে তাই একটা রুমাল দিয়ে লোকচক্ষুর আড়াল করলাম।
ভাইয়া এসে বললো।
> কি রে বদমাশ কোথাকার এত হাসিস কেন?
> ছোট ভাইকে জীবনের সবচেয়ে বড় হাটে কুরবানি দিতে উঠে পড়ে লাগছিস সবাই তাই শেষ হাসি হাসতেছি।
> হুমম তা ঠিক আমিও আর হাসতে পারিনা তোর ভাবীর জন্য,,, তুইও পারবি না,, যত পারিস এখন হেসে নে,,
কোথা থেকে ভাবী এসে ভাইয়ার সামনে এসে।
> কি বললে তুমি?? আমার জন্য হাসতে পারো না?? তোমার সব খুশি শেষ করে দিছি আমি??
> আরে ধুররর আমি কখন বললাম এসব,,, আবিরকে বলছিলাম ওর সুখ নাই,,, তোমাকে কিছু বলিনি তো,, ??
আমি আরো বেশি হাসতেছি ওদের ঝগড়া দেখে,, অপি ওর বান্ধবীকে পাঠিয়ে আমাকে খবর দিল,, আমি যেন এভাবে হাসাহাসি না করি,, সবাই নাকি খারাপ ভাববে।
মনে মনে বলি শেষ হাসিটা দেখে রাখুক,,,,
যথাসময়ে বিয়ে শেষ করে এবার মেয়ে বিদায়ের পালা কিন্তু বিদায় টা আর কোথায় দিবে??
অপি কান্না শুরু করলো আমি ওর কানের কাছে গিয়ে বললাম।
> এতো ঢং এর কান্না করে দেখাতে হবে না,,, মনে হচ্ছে দুরে চলে যাবা,,, যাচ্ছ টা কই,, উপরতলা আর নিচতলার বেপার,, কান্না বন্ধ করো।
অপির রাগ কে দেখে এখন,,, বুঝলাম রুমে গেলে শনি বা ফনি কিছু একটা আছে আমার কপালে।
বউয়ের কান্না দেখে খুব মায়া হলো ভাবলাম আমিও একটু কেদে দেই তাতে যদি বউয়ের কান্নাটা একটু কমে। পরে ভাবলাম থাক দরকার নেই কে কি বলবে আবার।?
বাসর ঘর রেডি,,, অপিকে এনে রুমে রাখলো সবাই।।
আমি তো আমার বাসায় এসে টিভির রুমে গিয়ে টিভি চালু করেছি, মেহজাবিন গিয়ে আম্মু কে বললো একথা।
বিড়াল পেটানো লাঠি হাতে আম্মু তেড়ে এসে আমাকে কয়েকঝাক বকা দিয়ে পাঠালো বাসর ঘরে। দরজা আটকাতেই অপির খ্যাচখ্যাচানি শুরু হলো।
> কি বলছিলে তখন?? ঢং করি আমি??
> তা নয়তো কি শুনি,,, কান্না করার কি আছে? তুমি তো আর চলে যাওনি তোমার বাবা মা কে ছেড়ে তাহলে এমন কান্না করলে কেন?
> হারামি তুমি এর কি বুঝবা।
> আমি যা বুঝি তা ভালোই বুঝি,, শুনো তুমি একমাত্র মেয়ে যে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি যেতে লাগবে ৩০ সেকেন্ড,,, রাগ করে যখন বলবা চলে গেলাম বাপের বাড়ি তখন আমি বলব বাপের বাড়ি ই তো আছো।। কত লাকি তুমি একবার ভাবোতো।
> আমার পরীক্ষা শেষ করে আমি এবাড়িতে থাকব না।
> আমিও ঘরজামাই হবো না।
> আমি এখন ঘুমাবো লাইট অফ করে শুয়ে পড়ো।
> আহারে বেচারী,, ঘুমালে হবে?? ওটা কে করবে?
> কোনটা??
> ওইটা ওইটা।??
> একদম নাক ফাটিয়ে দিব বলে দিলাম।??
> ইশশশশ কেন?? তুমি না আমার বউ?? তাহলে কেন হবে না??
> বিয়ের ৫ বছর হলে তারপর এর আগে না।
> বলো কি?? এর থেকে ভালো ছিল বিয়ের আগে যা দু একটা কিস পেতাম ওটা দিয়েই কাটিয়ে দিতাম কি লাভ হলো বিয়ে করে??
> এতকিছু বুঝিনা যাও তো।
> আমি লাইট অফ করে এসে অপিকে জড়িয়ে ধরি…….
(এই মিয়ারা বাকিটাও কি শুনতে চান নাকি????((তোমাদের এসব না শুনলেও চলবে)))
এভাবেই কিছু খুনসুটি আদর ভালোবাসা নিয়ে চলতে থাকে আমাদের ছোট্ট সংসার। যেখানে সবার অপরিসীম ভালোবাসা আছে আর আছে বাবা মায়ের দোয়া।
বাড়িওয়ালার মেয়েকে বিয়ে করে এখন আমি বাড়িওয়ালার জামা

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে পর্ব-০৭

0

?বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে?-
?পর্ব: ৭
লেখা :Sakib Nisi✌

অপি মুচকি হেসে চলে গেলো…
আমি খুশি মন নিয়ে আম্মু কে ডাকলাম,,,
আম্মু এসে আমাকে বললো।
> অামার লাজুক ছেলেটা আজকাল একটু অন্য রকম হয়ে গেছে মনে হয়??
> আম্মু কি যে বলো না,,, আমি তো আগের মতই আছি।
> হুমম তা তো দেখতেই পাচ্ছি,, তা অপি কি বলে গেলো।
> কই কিছু না তো,, এমনি দেখে গেলো,, এই আরকি।
> অপিকে তোর ভালো লাগে??
আমি তো পুরাই টাসকি খেয়ে গেলাম আম্মু কি করে বুঝলো?? মায়ের মন তো বুঝবেই।
আমি আহ্লাদে গদগদ হয়ে আম্মুর কোলে শুয়ে পড়লাম,, আম্মুর আচল দিয়ে মুখ ঢেকে লজ্জায় লাল হয়ে বললাম।
> ওই ডাইনিটাকে তোমার ছোটবউ বানাবা??
> ডাইনি বললে একদম মুখ ভেঙে দিব,, কত লক্ষী একটা মেয়ে।
মনে মনে বলি,,, হুমম কত যে লক্ষী তা তো তুমি জানো না আম্মু,,, তোমার ছেলেকে দু বার পিটিয়ে তক্তা বানিয়েছে,,
> জানো আম্মু ও না আমাকে কোন মেয়ের সাথে দেখলে একদম সহ্য করতে পারে না,,,
> সেজন্যই তো পা ফাটালো সেটা কি আমি জানিনা ভাবছিস।
> মা মা মানে তুমি কি করে জানলে??
> অপিই বলেছে দুপুরে ।
তোকে রুমে রেখে আমার কাছে গিয়ে বললো।
আন্টি তোমার নাকবোচা ছেলেকে বলে দিও,, আর কোনদিন যদি কোন মেয়ের সাথে দেখি তো ওর পা সত্যি সত্যি ভেঙ্গে দিব,,
তখনই বুঝেছি আমার ভাড়াটিয়া ছেলেটার প্রেমে পড়েছে বাড়িওয়ালার মেয়েটা।
অপিকে প্রপোজ করেছিস??
> ধুররর আম্মু ওর মনটাই তো বুঝিনা কিছু,, কখন কি বলে কি করে কিচ্ছু বুঝতে পারিনা,, এই একমিনিট ভালো তো ৫ মিনিট আগুন হয়ে থাকে।।। কি করব বলোনা একটু,,, আচ্ছা আব্বু তোমাকে কিভাবে প্রপোজ করছিল??
> চুপপপপ, বদমাস ছেলে,, তোর আব্বু আমাকে ৮ বছর পর এসে প্রপোজ করে তারপরই বিয়ে করে। নিরবে দুজন ভালোবেসেছি কেউ কাওকে কিছু বলিনি।
> আমি বাপু এতবছর ওয়েট করব না,,, তুমি সব ব্যবস্থা করবা হুমমমম।
> আগে ওকে জানা তারপর।
শোন কাল তোর খালার বাসায় যাব সবাই সকালে তোর এ অবস্থায় যেতে হবে না আমি অপির আম্মু কে বলে যাব দুপুরে ওখানে খেয়ে নিবি আমরা রাতে চলে আসব।। মেহজাবিন তো এখনই যেতে পারলে খুশি হয়।
>যাও যাও তোমার বউমা আছে না ও আমার খেয়াল রাখবে।
> বান্দর ছেলে আয় খেতে আয়।
> উম্মাহ চলো।
খাবার খেতে বসেছি আব্বুকে বললাম।
> আব্বু কাল সবাই যখন যাচ্ছো আমার জন্য একটা খরগোশ নিয়ে আসবা আন্টির বাসা থেকে আমাকে দিতে চাইছিলো।
> কেন হটাত খরগোশ পোষার শখ হলো যে।
আম্মু বললো।
> আরো কতকিছু শুনবা এখন তো খরগোশ চাচ্ছে পরে শুনবা বউ পুষবে।
> তাই নাকি?? ছেলে মনে হয় প্রেমে পড়েছে।
> হুমমমমমমমমমমমম।
> তা কে সে শুনি।
> কে আবার?? উপর তলায় থাকে।
> অপি?????
> হ্যা ছেলে আমার বড় হয়ে গেছে।
> সিগনাল কেমন ওদিকের।
> খুব ভালো।
> চালিয়ে যাও বাবা।
আমি আর কি বলব সব তো আম্মু ই বলে দিলো তাড়াতাড়ি খেয়ে রুমে চলে গেলাম।।।
আব্বু আম্মু দুজনই খাবার শেষে অপিদের বাসায় গেল। আমি মনে মনে বললাম একবারে বিয়ের কথাটা পাকা করে এলেই তো পারতো……
আমি ঘুমালাম তারা কি আলোচনা করলো জানিনা।
সকালে আম্মু সব গোছগাছ করে চলে গেলো আমি উঠে ফ্রেশ হলাম হটাৎ কলিং বেল বাজলো ভাবলাম ময়লাওয়ালা আসলো ময়লা নিতে।।
ময়লার ঝুড়ি টা হাতে নিয়ে দরজা খুলে ঝুড়িটা এগিয়ে দিলাম কিন্তু না তাকিয়েই,,
> মামা নিয়ে যান।
> ওই হারামি আমি কি ময়লা নিতে আসছি নাকি।
কড়া গলার ধমক খেয়ে হুশ ফিরলো তাকিয়ে দেখি অপি,,,
> ওহহহ কটকটি তুমি আজ স্কুলে যাওনি???
> মুখ ভেঙে দিব একদম।।।
> সরি সরি আমি তো দেখিনি আপা।
হাত থেকে ঝুড়িটা নামাতেই অপি তেড়ে এলো আমার দিকে,,,,
> আপা লাগি আমি তোর???
> তো কি লাগো শুনি।
> জানতে হবে না। খাইছো তুমি?
> না মাত্র ফ্রেশ হলাম।
> আচ্ছা একটু ওয়েট করো আমি নাস্তা রেডি করে দিচ্ছি।
> উহহহহহহহ,,, কত ঢং রে বাবা,, নিজে কখনো পানি ঢেলে খায়না আবার আসছে আমার নাস্তা করতে।
> সব পারি শুধু ওয়েট করো তারপর দেখবা।
আমি তাকিয়ে দেখছি অপিকে,,, ওড়না টা বেধে নিয়ে তারপর নাস্তা বানাচ্ছে,,, এই না হলে হবু বউ??
খুশিতে ডেন্চ মারতেছি মনে মনে,,, কিচেনে এগিয়ে গেলাম,, অপির পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ওর ঘাড়ে একটা চুমু দিতেই…..
> একদম দুষ্টামি করবা না কিন্তু,
> কই নাতো পায়ে বেধে পড়ে যাচ্ছিলাম তাই তোমার ওপর এসে পড়েছি।
> শয়তান উল্লুক নাকবোচা ছাড়ো নাস্তা বানাতে দাও।
> একটু ধরে থাকি কোন দুষ্টামি করব না সত্যি।
অপির শরীরের উষ্ণতা আর ওর সুবাসে পাগল হয়ে যাচ্ছি কিন্তু কোন দুষ্টামি করব না কথা দিছি।
> অপি???
> হুমমম।
> এই অপি,
> বলো?
> শুনোনা।
> কি হলো বলো?
> আমার দুষ্ট মিষ্টি বউ হবা।
> বয়েই গেছে আমার।
> কেন কেন?
> তোমার মত নাকবোচা কে কেন বিয়ে করব?
অপিকে ঘুরিয়ে ওর নাকের সাথে নাক মিশিয়ে বললাম।
> দেখতো আমার নাকবোচা কই।?
> হইছে হইছে সরো,
> বলোনা বউ হবা।?
> না না না। ?
> তাহলে আমি খাবো না।
অপি রেগে আগুন হয়ে গেছে,
> এত কষ্ট করে নাস্তা বানালাম আর তুই খাবিনা তাইনা দাড়া কেমন করে খাওয়াতে হবে তা আমার জানা আছে। ☺
অপি নাস্তা এনে আমার রুমে গিয়ে আমার মুখ চেপে ধরে মুখে ঠেসে খেতে বললো।?
> হারামি খা এবার। ?
> এভাবে কি খাওয়া যায়?? একটু মিষ্টি করে বললেই তো হয়।?
> পারিনা মিষ্টি করে বলতে
> তাহলে রাগ করো না আমি তো এমনি বলছি,,, তুমি আমার জন্য এতক্ষণ কষ্ট করে বানিয়েছো আমি কি না খেয়ে থাকতে পারি বলো।??
> থাক থাক বুঝি সব,,, ওই মেয়েটা হলে তো আর বলতে না খাবে না,, আমাকে তো সহ্য করতে পারো না তুমি।
আমি অপিকে জড়িয়ে ধরে বললাম।?
> পাগলি আমি তোমাকে ভালোবাসি তুমি কি বুঝোনা???
> তুমি কি বুঝো??
> কি বুঝবো?
> আমিও তোমাকে…..
> কি?
> কিছু না।
> বলবা না আবার শাস্তি দিব?
> আমিও তোমাকে ভালোবাসি নাকবোচা।
কিছু সময়ের জন্য তোমরা চোখ বন্ধ করো৷ আমরা একটু রোমাঞ্চ করে আসি।
সময়টা মনে নেই কতক্ষণ ওকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম।
> নাকবোচা ছাড়ো এখন আম্মু জানলে বকবে,, আমি দুপুরে আবার আসব।
> না থেকে যাও আমার কাছে।
> হুমমমমম আগে বিয়ে হোক তারপর।
> কেন বিয়ে না করলে হয় না?
> মানে?
> মানে শুধু প্রেম করব বিয়ে করে কি হবে।
> আহারে…. গুলুমুলু বাচ্চার বাবা হবা না??
> কি??? সত্যি????
> ধুরররর শয়তান ছেলে।?
> এই অপি শুনো।
অপি দৌড়ে চলে গেলো..
যাক অপি আমাকে বলেছে এখন আমি আম্মু আব্বু কে বলতে পারব বিয়ের জন্য।
দুপুরে অপি এসে বললো ওদের সাথে খেতে হবে আন্টি যেতে বলেছে।
আমি অপির কপালে চুমু দিয়ে একটু আদর দিলাম।
তারপর গেলাম ওদের রুমে।
আন্টি আদর করে খাওয়ালো তারপর বললো।
> আবির তোমার আম্মু না আসা অবধি আমাদের এখানে থাকো।
আমি মনে মনে ভাবি এইতো আর কিছুদিন তারপর জামাই হয়েই থাকব।
আবার ভাবলাম অপি তো রাজি ওর বাবা মা রাজি না হলে তো আরেক বিপদ।
অপি বললো..
> ইশশশশশ দরকার নেই নাকবোচাকে আমাদের ঘরে রাখার।
> তুই চুপ থাক আবির থাকবে।
> ঢং,,,, এত আদর তো আমাকেও করোনা।
আমি আন্টিকে জড়িয়ে ধরে বললাম..
> মা তো আমার তাই আমাকে এত আদর করে।?
অপি ও রেগে আগুন হয়ে বললো।?
আমার আম্মুকে ছাড়তে।??
বেশ একটা জমানো খুনসুটি তে মেতে ছিলাম সবাই।
তাতে বুঝলাম আন্টিও আমাকে পছন্দ করে এখন অপেক্ষা আমার পরিবার থেকে বিয়ের কথা জানানোর… দেখা যাক কি হয়…….
চলবে……..

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে পর্ব-০৬

0

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে?-
?পর্ব: ৬
লেখা :Sakib Nisi❤
.
> মেয়ে নিয়ে ঘুরিস তাইনা,??? কোকিলের ডাকে কৃষ্ণচুড়া ঝরাস??? এখন দেখবি ভালোবাসাও ঝরাবো।
> ওওওও অপি আর মাইরো না আমারে মইরা যামু তো।
> তোরে কি আদর করার জন্য এখানে বসে আছি??? তোর কত বড় কলিজা হইছে সেটা আমি এখন দেখব,,, আমার সামনে মেয়ে নিয়ে ঘুরিস তাইনা।
> কয়দিন আগে হাত গেলো এখন আবার পা,, খুব ব্যাথা পাইছি আমি প্লিজ একটু ধরে উঠাও আমাকে,,,,
> কুত্তা তোর দুই পা আজ ভেঙে ঘরে ফেলে রাখব দেখি তুই কি করে আবার ঘুরতে পারিস।
> এএএএহহহহ,,, আমি মেয়ে নিয়ে ঘুরি আর যাই করি তাতে তোমার কি? আমি কি তোমার বর নাকি??
>বকি বললি তুই??
আবার দুই বাড়ি মারলো।
আজ আমি আবার অসুস্থ হয়ে গেলাম।। খুব ব্যাথা পাইছি,, হাটতে পারছিনা,,, তবে এতটুকু শিওর হয়ে গেছে যে অপি আমাকে ভালোবাসে নাহলে এভাবে মারতো না…. ?? কিন্তু কেউই তো কাউকে কিছু বলিনি,,,
অপি একটু শান্ত হয়ে আমার সামনে এসে বসলো…
> আমার হাতে কি বিষকাটা আছে??
আমার চোখ থেকে কি অতি বেগুনি রশ্মি বের হয়??
আমার কন্ঠ কি খুব বিশ্রী??
> কি বলো এসব?? এমন কেন হবে??
> তাহলে আমাকে রেখে অন্য মেয়ে নিয়ে কেন ঘুরলে আমার সামনে?? খুব নরম গলায় অভিমানের সুরে বললো।
> তোমাকে রাগানোর জন্য এমন করছি যেমনটা তুমি করছিলে।
> রাগাও আরো বেশি রাগাও আর নিজে হাত পা ভেঙে ঘরে পড়ে থাকো যত্তসব লুচ্চা পোলা। ???
> প্লিজ আমাকে বাসায় নিয়ে চলো আমার পায়ে খুব ব্যাথা করছে।
অপির চোখে রাগ থাকার পরও চোখের কোনায় পানিতে ছলছল করে উঠলো।
আমাকে ধরে উঠালো তারপর ওর ঘাড়ে ভর করে হাটতে লাগলাম,,,
অপি রাগে গজগজ করতে করতে বলছে,,
> তোকে আরও কয়েক ডোজ দিলে ভালো হতো,,
মনে মনে ভাবছি,,, আর কয়েক ডোজ দিলে খুবই ভালো হতো তাহলে আর বেচে থাকবো না।
কেমন মেয়ে রে বাবা?? হটাত হটাৎ রেগে যায় বেধড়ক পেটায়,,, ওর মনটার কিছু ই বুঝতে পারছিনা।
বাসায় গিয়ে কলিং বেল বাজালাম আম্মু আমাকে দেখে অপির কাধে ভর দিয়ে দাড়ানো আমি।
> কি হইছে আজ আবার তোর?
> আন্টি আর বইলো না তো,, তোমার ছেলে এখনো হাটা শিখেনি আজ আবার ফুটপাত দিয়ে হাটতে গিয়ে পড়ে পায়ে ব্যাথা পাইছে,, ভাগ্যিস আমি দেখছি না হলে যে কি হতো। ?
আমার সেন্সলেস হবার যোগাড় হলো,,, বলে কি এই মেয়ে?? এমন করে বললো যেন আমি ই বিশ্বাস করে নিলাম আমাকে অপি মারেনি আমি সত্যি পড়ে গিয়ে ব্যাথা পাইছি ।????
> আয় ভেতরে আয়,,,, সোফাতে বসিয়ে দে।
> আন্টি একমিনিট দাড়াও আমি First Aid বক্স টা নিয়ে আসি।।
> ওকে।
আমি প্যান্টটা একটু হাটুর উপরে উঠালাম,,, খুব জোরে মারাতে চামড়া ফেটে গেছে,, মাগো কি ব্যাথা।
আম্মু তো বকতেই আছে থামছেই না আমি এককানে শুনে আরেককানে বের করে দিচ্ছি।
অপি এসে আমাকে আমার রুমে নিয়ে গেলো আম্মুকে বললো তুমি যাও তোমার ছেলের ড্রেসিং আমি করিয়ে দিচ্ছি।
আম্মুও আর কিছু বললো না।
আমার রুমে গিয়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো,,,পা ধরে জোরে টান দিয়ে স্যাভলন তুলায় ভিজিয়ে ঠেসে ধরলো কাটা জায়গায়,,, একটু দয়া মায়াও নাই নাকি ওর??? আমি চেচিয়ে উঠলাম কিন্তু আমার গলা মনে হয় কেউ শুনলোই না।
ব্যান্ডেজ পেঁচিয়ে দিলো,,,
> শুয়ে থাকবি এখন একদম উঠবি না,,, খেয়ে ঘুমাবি আমি বিকালে এসে দেখে যাবো।
> কোন দরকার নেই আমাকে দেখার,,, আমাকে নিয়ে কারো ভাবতে হবে না,,,
> এএএএএএএইইইই ছেলে, একটু শব্দ করবি তো শেষ করে ফেলব মনে রাখিস।
আমি কাচুমাচু হয়ে মাথা নিচু করে বললাম আচ্ছা,,, চোখে পানি এসে গেছে এক ধমকে। ??
অপি আমার দিকে মুখ ঘুল্লি দিয়ে চলে গেলো।
আম্মু এসে খাইয়ে দিলো আমাকে। তারপর আব্বুকে কল দিয়ে বললো পেইন কিলার আনতে। আমি ঘুমায় গেলাম,,, কখন যে মেহজাবিন এসে আমার কোলের ভেতর শুয়ে পড়লো টের পাইনি।। আমার কলিজাটাহ।
বিকেল হতেই ডাইনিটা এসে হাজির,,, এসেই চিমটি দিতে দিতে ঘুম ভাঙ্গালো কেমন ডা লাগে তখন।
> আমাকে কি একটু শান্তিতে থাকতে দিবা না??
> তোমার শান্তির দিন শেষ,,, অপি কি জিনিস তা হাড়ে হাড়ে টের পাবা।
> আমি কিন্তু আম্মু কে ডাকবো তারপর সব বলব।
> ওই কি বলবা?? বলো দেখি?? নিজের মানসম্মান নিজেই ডুবাবা,, একটা মেয়ের হাতে মার খেয়ে চিত হয়ে আছো সেটা বলতে লজ্জা করবে না?? ইডিয়ট একটা হাদারাম।
আমিও ভাবলাম তাইতো,,, ইজ্জতের ফালুদা বানানো যাবে না।
> তো কি দরকার এখন আমার রুমে শুনি?? একটা ছেলের রুমে আসতে লজ্জা করে না??
> তোমার রুমে আসতে কিসের লজ্জা???
> আমি তোমার কি লাগি যে লজ্জা করে না??
> তুমি আমার কচু লাগো কচু।
> অপি তোমাকে একটা মাইর দিব কিন্তু।
> কি???? মারবি আমাকে?? মারতো দেখি।
> আজ শুয়ে আছি বলে,, কাছে থাকলে বুঝাতাম।
> ওকে এলাম তোর কাছে দেখি এবার মার।।
অপি হাতের নাগালে আসতেই ওকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে ওর ঠোটগুলো নিজের দখলে নিয়ে শুয়ে আছি
কিছু সময় পর….
> কুত্তা, নাকবোচা উল্লুক কতদিন বলছি ঠোটে কামড় দিবি না??
> এটাই তোমার শাস্তি হিহিহিহিহি।
আবার রাগিয়ে দিছি অপিকে,,,
> আমাকে রাগালে তোর ভালো হবে না বলে দিলাম।
> মারবা আমাকে জানু?? আসো আসো মারো আমিও তোমাকে চুমু খাবো। তুমি একটা মারবা আমি ৫ টা কিস দিব,,, রাজি???
> বুঝছি তোরে আরও মারতে হবে শয়তান একটাৃ
> অপি??? আমি যদি সত্যি সেদিন গাড়িতে এক্সিডেন্ট করে মরে যেতাম তাহলে খুব খুশি হতে তাইনা?? প্রতিশোধটা কিন্তু সেই মজার হতো কি বলো??
অপি আর নিজের রাগকে সামলাতে পারলো না,,, কষে একটা থাপ্পড় মারলো আমাকে তারপর জড়িয়ে ধরে কাদতে শুরু করলো…….
> তুই মরে গেলে আমাকে কে বিরক্ত করবে?? আমি কার জন্য প্রতিদিন সিড়ি তে অপেক্ষা করব?? কাকে শাষন করব?? আমাকে কষ্ট দিবা দাও কিন্তু ছেড়ে চলে যেতে চাইলে আমিই খুন করে ফেলব বলে দিলাম,,,
অপি বাচ্চাদের মত কাদতেই আছে,, আমি ওর কপালে চুমু দিয়ে বললাম,,
> আমাকে ভালোবাসো??? বলোনি তো কখনো??
> ওই কে তোকে ভালোবাসে হুমমম?? আমি তোকে ভালোবাসি না বুঝলি,,, আমি তো এমনি এমনি মজা করছি হুহহহহ।
আবারও চোখপল্টি নিলো অপি,,,
> তাহলে আমার জন্য এভাবে কাদছো কেন??
> মন চাচ্ছে তাই কাদছি,, বেশি বুঝবা না বলে দিলাম।
> আচ্ছা বুঝলাম না,,, এবার ছাড়ো আমাকে আম্মু দেখলে সর্বনাশ হয়ে যাবে কিন্তু,,,
অপি জলদি আমাকে ছেড়ে উঠে গেলো।
> কাল সকালে আমি নিতে আসব,,, রেডি থেকো।
> আচ্ছা কটকটি।
> কচু কচু কচু।
> শয়তান উল্লুক নাকবোচা।
> তোমার ভাড়াটিয়া……
অপি মুচকি হেসে চলে গেলো…..
তোমরা বসে আছো কেন?? আজকের পর্ব এখানে শেষ।।??
চলবে……..

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে পর্ব-০৫

0

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে?
?পর্ব:৫
লেখা : Sakib Nisi??
.
সারারাত ব্যাথায় ঘুম হলো না।
গীটার টাও ধরতে পারছিনা।
নানান চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে,,
সব উল্টো পাল্টা লাগছে।
সব তো ঠিকই ছিল তাহলে কেন এমন হলো হটাৎ??
সকালে ঘুম থেকে উঠতে অনেক দেরি হলো।
আজ আর ভার্সিটি যাবো না। তাই ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে রুমে শুয়ে আছি এমন সময় আন্টি এলো আমাদের বাসায়।
আম্মু বললো আমি এক্সিডেন্ট করেছি তাই শুনে আন্টি রুমে এলো দেখতে। তাকেও একই কথা বললাম। সত্যি কথাটা কাওকে না জানালোই ভালো। তাতে অপিকে সবাই খারাপ ভাববে৷ অপিকে কিছুদিন ক্লাস নিব না বলে দিলাম। আন্টি কিছু সময় কথা বলে চলে গেলো।
বিকেলে একটু ছাদে যাব ভাবলাম তাই মেহজাবিনকে নিয়ে সিড়ি দিয়ে উঠছি। অপিদের রুমের সামনে দিয়ে জলদি উঠে গেলাম যাতে ওর সাথে দেখা না হয়।
কিন্তু কপাল খারাপ হলে যা হয়,,, ছাদে গিয়ে দেখি অপি ওখানে দাড়িয়ে আছে।
মেহজাবিন ওকে দেখে আমার কাছ থেকে ওর কাছে চলে গেলো। অপি মেহজাবিনকে কোলে নিয়ে আমার দিকে তাকাতেই আমি মাথা নিচু করে চলে আসলাম। ওর সামনে যাবার কোন ইচ্ছে নেই আমার।
> আন্টি জানো চাচ্চু কাল রিকশা থেকে পড়ে ব্যাথা পেয়েছে,, সারারাত ঘুমায়নি।
অপি আর কিছু বললো না মেহজাবিনকে।
সন্ধ্যা হয়ে গেলে মেহজাবিনকে বাসায় রেখে যায় অপি।
আমিও আর কোন কিছু আমলে নিলাম না।
৫ দিন পর আমি মোটামুটি সুস্থ। বিকেলে গীটার নিয়ে বসলাম বন্ধু দের সাথে। কিছু সময় পর একটা মেয়ে এলো আমাদের সামনে….
> আপনি আবির তাইনা??
> জি,, কিন্তু আপনাকে তো চিনলাম না।
> আমি মাহি,, আপনার গান শুনেছিলাম সেদিন আমার বান্ধবীর ফোনে। আপনার বাবাও ছিলেন সাথে।।
> ওহহ আচ্ছা।
> আপনার গানের গলা ভালো। মুগ্ধতা ছেয়ে যায়। এতদিন এখানে খুজতে আসতাম আজ পেলাম আপনাকে।। এতদিন কি আসেন নি??
> আমি একটু অসুস্থ ছিলাম তাই আসিনি।।
> ওহহ এখন কেমন আছেন?
> আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।।
> আমি এখানেই থাকি।। ইন্টার পড়ছি।। আপনার সাথে কথা বলে ভালো লাগলো। একটা রিকুয়েষ্ট করব রাখবেন??
> জি বলেন।
> আপনি যখন এখানে এসে গানের আড্ডা দিবেন আমাকে একটু জানাবেন আপনাদের সাথে বসে আড্ডায় ভাগ বসাবো।।
> সত্যি বলছেন??
> হুমম সত্যি বলেন জানাবেন??
> ওকে আপনার নাম্বার টা দিন।
> ওকে…
> আমরা তো বন্ধু হতে পারি তাহলে?
> হুমম অবশ্যই।।
> আরেকটা রিকুয়েষ্ট করব।
> বলেন।
> আপনার বাবার সাথে ও পরিচয় করিয়ে দিবেন।
> হাহাহা আচ্ছা।
মাহিকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম। ওদিনকার আড্ডা খুব জমে ছিল। মাহি অনেক মিশুক মেয়ে। ভদ্র স্মার্ট বন্ধুসুলভ। আর চেহারাটাও খুব মায়াবী।
রাতে বাসায় ফিরার সময় গেটের সামনেই দেখি অপি দাড়িয়ে আছে। আমি দুর থেকে ওকে দেখে সামনে যাচ্ছি না।। অপি মনে হয় কারো জন্য অপেক্ষা করছে। আমারও তাড়া নেই বলে দাড়িয়ে আছি। এভাবে কিছু সময় থাকার পর আম্মুর ফোন এলো বাসায় যেতে বলছে তাই আর দেরী না করে সোজা চললাম। গেটে ঢুকে পা রাখতেই অপি আটকালো আমাকে।
> আবির শুনো?
> আমি চুপ করে পা বাড়ালাম।।
> আবির প্লিজ শুনো,,, আমি সেদিন খুব ব্যবহার করেছি তোমার সাথে।। im SRY”!!
> আমি চুপ করে আছি।
> প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ভুলেই গিয়েছি তুমি আমার জীবন বাঁচিয়েছো। আর আমি তোমাকে সবার সামনে হাত তুলে অপমান করেছি। আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ।। তুমি তো চাইলে আম্মুকে বলতে পারতে তবুও বলোনি।।। এ কয়দিন তোমাকে দেখিনি। তোমার সেই বিরক্ত করা গুলোকে খুব মিস করেছি।
> শুনুন,,, আপনি কোন ভুল করেননি। আমার মত ছোটলোক রাস্তার ছেলের জন্য এটাই উচিত ছিল। ভুলেই গিয়েছিলাম আপনি বাড়িওয়ালার মেয়ে আমি ভাড়াটিয়া। আমি ক্ষমা চাচ্ছি আমাকে ক্ষমা করবেন। আর আমি আপনার সামনেও আসতে চাইনা।
অপি আমার হাত ধরতে গেলে আমি ছাড়িয়ে চলে এলাম। কয়েকবার ডাকলো আমি কানে তুলিনি।
রাতে খাবার সময় অপি আবার বাসায় এলো। একটা চিরকুট আমার রুমে ছুড়ে দিয়ে কিছু সময় পর চলে গেলো।
আমি চিরকুট খুলে পড়লাম।
“””তোমাকে জ্বালানোর জন্য ওই ছেলের হাত ধরে হেসেছিলাম। ও আমারই ক্লাসমেট। আমার কোন বফ নেই। তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য সরি। কাল থেকে একসাথে যাব। সিড়িতে অপেক্ষা করব সকালে,, না এলে কপালে শনি আছে “”।
এখন আমি পড়লাম আরেক টেনশনে,, এখন আমি কি করব??
একেকসময় একেকরকম আচরন কিছু ই বুঝতে পারিনা। আবার কোন নাটক সাজিয়ে আমাকে মারবে কে জানে।
হটাৎ মেসেজের টুং-টুং শব্দ এলো। মাহির মেসেজ এলো। কল দিলাম… বেশ কিছু সময় কথা বললাম। মনটা ফ্রেশ হয়ে গেলো।
পরদিন সকালে বের হতেই দেখি অপি দাড়িয়ে আছে। আমি ওর দিকে খেয়াল না করেই সোজা নেমে গেলাম। ও আমাকে ডাকলো শুনলাম না। রিকশা নিয়ে জলদি চলে গেলাম। হয়তো অপি কষ্ট পেয়েছে তাতে আমার কি। আর কষ্ট পাবার কি আছে?? তারমতে আমিতো রাস্তার ছেলে একটা।
যাইহোক দুপুরে ফিরার সময় দেখি ভার্সিটির সামনে মাহি আর ওর বান্ধবী দাড়িয়ে কথা বলছে,,, মাহিকে ডাক দিতেই ও অবাক হয়ে গেলো…..
> আবির তুমি এখানে।
> হুমম আমার ভার্সিটি এটা,,, তুমি এখানে কার জন্য?? বফ আছে এখানে??
> আরে ধুররর কি বলো,,, শপিং এ এসেছিলাম বাসায় যাব এখন।
> তো চলো একসাথে যাই।
> ওকে।
মাহি ওর বান্ধবী কে বিদায় জানিয়ে আমার সাথে হাটছে। দুজনে হাসতে হাসতে হাটছি।
ভাবলাম আজ একটু আমিও নাটক করব অপির সামনে। আমাকে জ্বালানো তাইনা?? আমিও জ্বালাতে পারি।
অপির স্কুলের সামনে আসতেই মাহির হাত ধরে হাটছি আর ইচ্ছের বাইরে হাসছি ওর দিকে তাকিয়ে।
> চলো ফুসকা খাই।
> হুমমম চলো।
ফুসকার দোকানে বসতেই দেখি অপি আমার সামনে হাজির। ওর চেহারাটা তখন দেখার মত,,, এত রাগ আগে দেখিনি,, মনে হচ্ছে ওর রাগে ভস্ম হয়ে যাব। পাত্তা না দিয়ে মাহির দিকে তাকিয়ে আছি।৷
> জানো মাহি,,, তোমার চেহারায় একটা মায়া আছে,, নিষ্পাপ চেহারা,,, কোকিলের মত তোমার কন্ঠ যেন ডাকলেই বসন্ত জেগে ওঠে মনে। আর অবিরত ঝরতে থাকে কৃষ্ণচুড়া মন প্রান্তরে………..
মাহি মুগ্ধ হয়ে গেছে একথা শুনে,,, লজ্জা পাচ্ছে তাকাতে আমার দিকে। আর ওদিকে অপি??? খুন করতে পারলে বাচে……
আমি মাহিকে ফুসকা খাইয়ে দিলাম।।। যেন হাজার বছরের তিলে তিলে সঞ্চিত প্রেম আমাদের,, আহা।
অপিকে জ্বালানোর জন্য এর বেশি কিছুর দরকার নেই। কিন্তু আমার বুঝতে বাকি রইলো না সামনে আমার কপালে সত্যি খুব শনি আছে……
মাহিকে ওর বাসার সামনে নামিয়ে আমি খুশি মনে কিছু টা লাফিয়ে লাফিয়ে হাটছি…. আমার প্রতিশোধ সাকসেসফুল….
কিন্তু বাসার কিছু টা আগেই অপি দাড়িয়ে আছে হাতে হকিস্টিক…. ওর চোখদুটো লাল হয়ে গেছে রাগে। এখন আমি কই যাব???
ভয় পাচ্ছি আবার পাচ্ছি না।। হাসিমুখ নিয়ে বুক ফুলিয়ে অগ্রসর হলাম,,,, অপি সোজা এসে হকিস্টিক দিয়ে পায়ে সজোরে বসালো দু তিনটা,,, পড়ে গেলাম।
মেয়ে নিয়ে ঘুরিস তাইনা,??? কোকিলের ডাকে কৃষ্ণচুড়া ঝরাস??? এখন দেখবি ভালোবাসাও ঝরাবো………………
চলবে……….

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে পর্ব-০৪

0

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে?
?পর্ব:৪
লেখা : Sakib Nisi
.
> হুমম আজই নাকবোচা।
> দেখো অপি,, আমার নাক অন্তত তোমার থেকে ভালো বুঝলে।
> আমি তোমাকে নাকবোচাই বলব কি করবা শুনি।
> তোমাকে আমি ছেচে শরবত বানিয়ে খাব কটকটি।
> তাহলে কিন্তু যাব না একসাথে।
> ওই না না,, আমিতো এমনি বলছি। দুষ্টামি করছি হেহেহেহে।
>,একসাথে যাব বলেছি কিন্তু তার মানে এটা না যে আমার গা ঘেঁষে থাকবা যাও ৩ হাত দুর থেকে হাটো।
> আজিব তো,, আমি কখন তোমার গায়ে পড়লাম?? নিজেই তো বারবার আমার গায়ে গায়ে চলতেছো।
> ওহহ আমি গায়ে ঘষে চলি তাইনা,?? ওকে সরেই গেলাম এবার দেখি কে কাছে আসে।। [ মুখ ঘুল্লি দিয়ে বললো ]
আমি অপির হাতে আস্তে করে আমার হাতটা রাখার চেষ্টা করলাম। আমার আঙ্গুল দিয়ে ওর একটা আঙ্গুলে ছোয়া দিতেই ও আমার হাতটা ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে দিল। আমি আবারও চেষ্টা করলাম আবার ফেলে দিলো।
এবার আমি শক্ত করে ধরে বসলাম ওর কোমল হাতটা। ও আমার দিকে তাকিয়ে রাগি চোখ দুটোতে আগুন দেখালো। আমি মুচকি হাসি দিলাম।
কিন্তু ও হাত ছাড়ানোর কোন চেষ্টা করেনি। একটু পর বললো,,,
> এই যে মিস্টার নাকবোচা, তুমি যেভাবে আমার হাতটা ধরে আছো এটা যদি আমার বফ দেখে তবে আমার রিলেশনশিপ টা নষ্ট হয়ে যাবে।। ও কষ্ট পাবে,, আর ওর কষ্ট আমি কি করে সহ্য করব বলো?? হাতটা ছেড়ে দাও
অপির মুখে এই কথা শুনে আমি যেন বোবা হয়ে গেলাম।। ওর বফ আছে?? আমি তাহলে এতদিন ভুল জেনেছি।
> অপি?? কি বলছো এসব?? তোমার বফ এলো কোথা থেকে?? আগে তো শুনিনি?? আর কে তোমার বফ??
> আজিব তুমি কয়দিন চিনো আমাকে?? আমার সবকিছু কি তোমাকে বলে করতে হবে নাকি?? কড়া গলায় বললো।
কষ্ট পাচ্ছি মনে মনে কিন্তু মুখে মিথ্যা হাসি দিয়ে বললাম..
> আগে বলবা না আমাকে?? আমি ওর সাথে পরিচিত হতাম।।।
> সময় হলেই জেনে যাবে।। এখন যাও আমার স্কুল এসে গেছে।। টাটা বাই।
> হুমমম বাই,,, সাবধানে থেকো।
অপি চলে গেলে আমি ভার্সিটির দিকে যাচ্ছি।।। কি শুনলাম আমি?? যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম আর সে অন্যের স্বপ্নের রাণী হয়ে আছে,,,,,,, হায়রে আবির তোর কপালে ভালোবাসা নাই।।। ভুলে যা সবকিছু কাওকে বুঝতে দিস না তাহলে সবাই হাসবে।। নিজেকে কোনরকম একটা বুঝ দিচ্ছি।।
দুপুরে ফেরার পথে অপিকে দেখি একটা ছেলের হাত ধরে হাসছে। মন চাচ্ছে ওই ছেলের হাতদুটো কেটে ফেলি। আমার অপির হাত ধরে হাসছে কত বড় সাহস ওর।।। এটাই তাহলে ওর বফ মনে হয়।
ওদের পাশ দিয়ে যাচ্ছি আর ওদের দিকে তাকিয়ে আছি,, অপি আমাকে দেখেই ওই ছেলের হাতটা আরো জড়িয়ে ধরে নেকামো করছে,,, আমার ভেতরটা জ্বলে যাচ্ছে। রাগকে কন্ট্রোল করে চলে আসলাম। দুপুরে খেতেও ইচ্ছে করছে না। বিকেলের অপেক্ষায় আছি কখন অপির কাছে যাব।
কখন যে ঘুমিয়ে গেছি টের পাইনি হটাত চিমটির বেথায় ঘুম ভাংলো। দেখি অপি আমার পাশে বসে রাগি চেহারা নিয়ে তাকিয়ে আছে।।
> পড়ে পড়ে ঘুমানো হচ্ছে?? ক্লাস নিবে কে??
> ওহহ ঘুমায় গেছিলাম সরি।। একটু ওয়েট করো ফ্রেশ হয়ে আসি।
> আমি ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি আমার বিছানায় নিজের দখল নিয়ে গীটার নিয়ে টুংটাং করছে অপি।
> শুনো গীটারের প্রথম কথা হলো প্রতিটা স্ট্রীং কে ফিল করতে হবে। কান দিয়ে নয় মন দিয়ে অনুভব করবে।
অপির একটা আঙ্গুল দিয়ে স্ট্রীং গুলোকে ছুয়ে দিচ্ছি আর ও চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে। আজ ওকে শুধু স্ট্রীং গুলোকে পরিচিত করালাম আর বেসিক টা নিয়ে বললাম। একটু পর আম্মু কিছু নাস্তা দিয়ে গেলো। আমি অপিকে বললাম….
> তোমার বফ টা খুব কিউট আছে।। খুব মানিয়েছে তোমাদের।।
> কি হিংসে হয়??
> না তা কেন হবে?? এমনি বললাম। কাল থেকে তো আর তোমার সাথে শুধু বিকেল ছাড়া দেখা হবে না আমিও আর তোমাকে বিরক্ত করব না। আমি তো চাইনা আমার জন্য তোমার রিলেশন নষ্ট হয়ে যাক।
> হটাৎ এত ভালো হলে কি করে?? এলাকায় কোন মেয়ের প্রেমে পড়ছো নাকি??
> ধুররর না,,,
> হুমম বুঝি, যদি এমন কেউ থাকে তো বইলো অপি সব মেনেজ করে দিবে।।
> দরকার নেই।
> ওকে এখন বাসায় যাব থাকো তুমি।
> আচ্ছা যাও।
মন খারাপ করে চুপ করে মাথা নিচু করে আছি। অপি বুঝলো ওর সাথে ওই ছেলেকে দেখে আমার মন খারাপ। রুম থেকে যাবার আগে আমার লম্বা চুলগুলো টেনে কিছু চিমটি দিয়ে দৌড়ে চলে গেলো…
আমি ওদিকে খেয়াল না করে গীটারটা নিয়ে বারান্দায় চলে গেলাম। আমার রুমের ঠিক ওপরটাই অপির রুম। একই ভাবে বারান্দা। আমি গীটার নিয়ে গান গাইছি হটাত্ৎ দেখি আমার বারান্দায় ওপর থেকে একটা সুতায় পেচানো চিরকুট নেমে এলো। এটা নিশ্চয়ই অপির কাজ।। চিরকুটটা খুললাম তাতে লেখা
“” বারান্দায় বসে গীটার বাজালে কারো মনে প্রেম জাগে দয়া করে এভাবে কাউকে নাজেহাল করবে না “”
আমি অবাক হয়ে গেলাম। পাগল নাকি মেয়েটা কখন কি করে কি বলে কিছু ই বুঝিনা।
আমি চিরকুটে লিখে দিলাম।
“””যার যার বফ নিয়ে সে সে সুখি থাকুক “””
চিরকুটটা পেয়ে অপি কিছু সময় পরেই আমার রুমে এসে আমার কান টেনে বললো।
> কি বললি তুই?? আমার বফ আছে তাতে তোর কি?? তুই এসব বলার কে??
> আরে ছাড়ো ব্যাথা লাগছে তো,,, সত্যি বললে ফোস্কা পড়ে জানিতো।
> শয়তান নাকবোচা আজ তোকে মেরেই ফেলব আমি।।
একাধারে কিল ঘুষি চিমটি দিতেই থাকলো আমাকে। আর সহ্য করতে না পেরে অপিকে বিছানায় ফেলে দিলাম ধাক্কা দিয়ে। তারপর ওর হাত দুটো শক্ত করে ধরে ওর কানের কাছে আস্তে করে বললাম।
> এভাবে আমার ওপর অত্যাচার করলে আমার বউ কষ্ট পাবে কেন মারছো আমাকে?? আমি তোমার কে??
> তুই আমার কচু,,, তোকে মেরে তোর বউকেও মারব।
> তোমার খুব রাগ তাইনা আজ তোমার রাগকে পানি করব।
> বলেই অপির ঠোঁটে…………. থাক না বললেও বুঝবে সবাই।।। টানা ৫ মিনিট কিস করে অপির চোখে চোখ রেখে বললাম
> আজ থেকে কোন ছেলের সাথে যদি দেখি হাত ধরে হাসাহাসি করতে সত্যি খুব খারাপ হয়ে যাবে বলে দিলাম।
> এএএএহহহহ আসছে জমিদার তোমার কথা শুনতে আমার বয়েই গেছে। আর আমাকে কিস করা তাইনা এর শোধও আমি তুলব মনে রেখো।
আমি অপিকে ছেড়ে দিলাম। ছাড়া পেয়ে ই আম্মুকে ডাকতে ডাকতে মিনিয়ে মিনিয়ে কান্না শুরু করলো।
আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম সত্যি কি কথা বলে দিবে আমার অবস্থা আজ শেষ……
আম্মু আসতেই।
> আন্টি দেখোনা তোমার ছেলে আমার সাথে……..
> কি হইছে মামনি বলো।
> আমার সাথে সবসময় খারাপ ব্যবহার করে।
> কি করছে ও আমাকে বলো?
> আমি বললাম কাল সকালে আমাকে নিয়ে যেতে,, একসাথে স্কুলে যাব তা সে শুনবে না এটা বলতেই আমাকে একটা চড় দিছে।। এই দেখো হুহুহুুহু।
এটা কি মেয়েরে বাবা??? এমন পল্টি নিলো চোখেমুখে??
আর আম্মু ও ঠাস ঠাস করে গোটা কয়েক বসালো আমাকে।
আম্মু অপিকে নিয়ে চলে যাচ্ছে আর অপি পিছনে তাকিয়ে দুষ্ট হাসি আর চোখ মারতে মারতে চলে গেলো। শরীর জ্বলছে আমার ওর এমন ব্যবহার দেখে।
পরদিন সকালে উঠে ভার্সিটির জন্য রেডি হচ্ছি তখন দেখি অপি সোজা বাসায় এসে হাজির। আমাকে জালিয়ে মারবে এখন উফফফ,,,, কেন যে ওর পিছনে লাগতে গেছিলাম…. ?????
> আমার সাথে নাকি যাবেনা কেউ তাহলে এত নাটক করে কেন এখন????
> বফ তো নাই থাকলে ওরে সাথে নিয়ে যেতাম। ??
> যাওনা তারে নিয়ে আমার কাছে কি?? ??
> তুই যাবি না আন্টি কে ডাকব?? ??
> থাক আর ডাকা লাগবে না যাচ্ছি।। আবার চড় খাওয়ার ইচ্ছে নেই আমার। ????
বিকেলে ফিরছি অপির স্কুলের সামনে আসতেই দেখি রাস্তার কিছু টা মাঝের দিকে অপি দাড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে ওর কানে হেডফোন। ওর বান্ধবী দোকানে কি জানি আনতে গেলো আর অপি দাড়িয়ে আছে।
এদিকে গাড়ি আসতে দেখে আমার বুকটা কেপে উঠলো দৌড়ে গেলাম ওর দিকে। প্রানের মায়া ছেড়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলাম বিনিময়ে আমি ও পড়ে গেলাম কিন্তু বুঝলাম কিছু টা ধাক্কা গাড়ির পাশ থেকে আমি পেয়েছি।
কিছু সময়ের জন্য সবকিছু জেনো থেমে গেছে চারপাশে। লোকজন আসতেছে দৌড়ে। অপি উঠে এসে সবার সামনে আমাকে ঠাস করে দুটো চড় বসিয়ে দিলো……
আমি অবাক হয়ে গেলাম,,,
> আমাকে টাচ করার সাহস কি করে হয় তোর?? রাস্তায় এসেও তোর জন্য একটু শান্তি নেই,, বাড়িতে ও জ্বালিয়ে মারিস এখানেও তাই,, আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলি কেন?? রাস্তার ছেলে একটা ছোটলোক মেয়ে দেখলেই এসব করিস তোরা,,,,,,,
বুঝলাম ওর হেডফোন এর জন্য ও বুঝেনি ও কোন পরিস্থিতি থেকে বেচে গেছে। আশেপাশের মানুষের কথায় ও বুঝলো সবটা।
> এই মেয়ে তোমার জীবন বাচালো ওই ছেলেটা আর তুমিই তাকে মারছো???
> আমি মরলে মরতাম তাতে ওর কি?? আমাকে কেন টাচ করবে ও?? আর আপনারা জানেন ও আমার বাড়ির সামান্য একটা ভাড়াটিয়া মাত্র।
আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না খুব সুন্দর করে প্রতিশোধটা নিলো অপি। চরম সুযোগ টা কাজে লাগিয়েছে।। আমি বাকি সবাইকে থামিয়ে বললাম।
> Im sry,, আমি বুঝতে পারিনি।। আর কখনো আপনার সামনে এসে বিরক্ত করব না।।।
বলে হাটা শুরু করলাম পাশ থেকে কয়েকজন এসে বললো বাবা তোমার হাত থেকে রক্ত পড়ছে চলো আগে ড্রেসিং করাতে হবে। এতক্ষণ পর খেয়াল করলাম হাতের বেশ কিছু জায়গায় অনেক কেটে গেছে আর পিঠে ও কেটেছে।। রক্ত পড়ছে অনেক।।
হাতে ব্যান্ডেজ করে রিকশায় করে বাসায় এলাম ঘন্টা খানেক পর। আম্মু আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করলো কি করে হলো এমন বললাম।
> রিকশায় এক্সিডেন্ট করেছি পড়ে হাত আর পিঠে কেটে গেছে।
তাড়াতাড়ি বিছানায় শুইয়ে দিলো আম্মু। আর কিছু বললাম না।।। যতটা ব্যাথা শরীরে না পেয়েছি তার থেকেও কয়েকগুণ বেথা মনে পেয়েছি অপির কথায়। এভাবে না করলেও পারতো সবার সামনে।। তবুও ভালো আমার অবস্থান টা ভালো করে বুঝিয়ে দিলো।।
ঠিক করলাম ওর সাথে কোন কথাই আর বলব না… ওর সাথে দুষ্টামির ফল পেয়ে গেছি আমি।।। আর নয়…..
চলবে……..

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে পর্ব-০৩

0

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে?
?পর্ব:৩
লেখা :Sakib Nisi?
.
আমি যে অপিকে ভালোবেসে ফেলেছি সেটা কি করে জানাবো এটাই ভেবে পাচ্ছি না। রাতভর চিন্তা করতেছি।
একে তো রাগী তারওপর বাড়িওয়ালার মেয়ে কি করা যায়???
যাইহোক আস্তে আস্তে ঠিক হবে। এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম।
পরদিন সকালে আব্বু অফিস যাবার আগে আমাকে বললো বিকেলে থাকতে। আমিও বুঝে গেলাম আজ আব্বু আবারো আড্ডা দিবে আমার সাথে। মানে হলো আব্বু আর আমি বেস্টুর মত (বাস্তবেও)।
আমরা একসাথে গান গাই আড্ডা দেই। আমার বন্ধু বান্ধবীরা সবাই আফসোস করতে থাকে এমনটা দেখে।
সকালে মেহজাবিনকে স্কুলে দিয়ে আমিও ভার্সিটি চলে গেলাম। সকাল থেকে অপিকে দেখিনি কেমন জানি লাগছে ওর জন্য। ভাবলাম দুপুরে যাবার সময় দেখা হবে নিশ্চয়ই।
সেদিনের মতো আজো ওর স্কুলের সামনে দিয়ে আসছি। কিন্তু পাচ্ছি না কোথাও। মনটা খারাপ হয়ে গেলো। হটাৎ দেখি কটকটি ওর বান্ধবীর সাথে বসে ফুসকা খাচ্ছে। আমি চুপচাপ ওর পিছনে গিয়ে দাড়াতে ওর বান্ধবী তাকিয়ে আছে মুখে একটা ফুসকা থাকায় কথা বলতে পারছে না। আমি অপির ফুসকার প্লেট থেকে দুহাতে ৪ টা ফুসকা উঠিয়ে টপাটপ গালে পুরে হাটা শুরু করলাম। এটা দেখে আশেপাশের সবার মুখে হাসির ঝলক। আর কটকটিটা চিল্লাতে চিল্লাতে কান ঝালাপালা করে দিলো। তাতে আমার কি?? আমি তো শুধু ফুসকা খেয়েছি।
বাসায় এসে খেয়ে অপিদের বাসায় গেলাম আন্টি নাকি যেতে বলেছে। ভয়ে তো আমার অবস্থা যায় যায়। অপি নিশ্চয়ই কিছু বলেছে, এভাবে ওর সাথে এমন করাটা মনে হয় আমার ঠিক হয়নি। আমি সবসময়ই একটু বেশি বেশি করে ফেলি। ধুরররর, আন্টি এখন কি বলবে আমাকে,,, না আর ওকে বিরক্ত করব না। এসব ভাবতে ভাবতে কলিং বেল বাজালাম। আন্টি এসে…
> আরে আবির এসো এসো।
> আন্টি কেমন আছেন?
> ভালো তুমি কেমন আছো, পড়াশোনা কেমন চলছে?
> এইতো আন্টি সবই ভালো চলছে। আম্মু বললো ডেকেছিলেন নাকি কি বলতে।
> হুমমম আসলে অপি বলছিল,,,,,,,,,,
[এটা শুনেই হার্টবিট বেড়ে গেলো আজ আমি শেষ ]
> কি কি কি বলছিলো আআআআন্টি?
> তুমি নাকি সুন্দর গীটার বাজাতে পারো…. অপি চায় তুমি ওকে প্রতিদিন গীটার বাজানো শিখাবে কিন্তু কোন না শুনতে চায় না।।
[ওওওওওওহহহহহহ বাচলাম তাহলে অপি উপরেই রাগ দেখায় আমার সাথে আর ভেতরে এতকিছু বাহ বাহ ]
> ওহ আচ্ছা এই কথা।।। ও যে রাগী আমার কথা শুনবে তো??
> না শুনলে পিটাবে,, আমি পারমিশন দিলাম হাহাহা।
> ওকে আন্টি ?? কিন্তু কখন শিখাবো??
> বিকেলে তুমিও ফ্রি ও ফ্রি। তখনই ভালো হবে। আর বাকি টাইমেও তুমি শিখাতে পারবে। এমন তো নয় যে খুব দুরে থাকো তুমি তাইনা।
> আচ্ছা সমস্যা হবে না। কিন্তু সে কই এখন??
> ওই যে টিভি দেখছে। যাও
> ওকে আন্টি।
যাক এখন একটু নয় অনেকটা ভালো লাগছে। আমি অপির আরো কাছে আসার সুযোগটা পেলাম। টিভির রুমে গিয়ে দেখি সোফায় বসে রিমোট হাতে নিয়ে বসে আছে। গিয়েই ওর হাত থেকে রিমোট কেড়ে নিলাম আর সাথে সাথে চিল্লাতে শুরু করলো।
> আমমমমমমমমম্মু দেখো নাকবোচাটা আমার রিমোট নিয়ে গেছে এএএএএএএ।
> আমি কিছু বলব না তোরা তোরা সামলা।
আমি বললাম।
> এত চিল্লাও কেন? ক্যাচকেচি পাখি একটা।
> তুমি দুপুরে আমার ফুসকা খাইছো না বলে এখন আমার রিমোটটা ও নিলে তোমার সাহস কিন্তু দিনদিন বাড়ছে। এর ফল কিন্তু ভালো হবে না।
> সে তো পরে দেখব আগে বলো, আম্মু কে গীটার বাজানোর কথা বলেছো আর কিছু বলোনি তো??
> আর কি বলব।
> ওহ তাহলে ঠিক আছে।
> কি ঠিক আছে?
> কিছু না ,, শুনো আজ বিকেলে আমরা বাইরে আড্ডা দিব তুমি রেডি থেকো। আমি তোমাকে নিয়ে যাব।
> কই যাব শুনি?
> এইতো বাসার সামনেই আমার বন্ধু বান্ধবী আর আব্বু ও থাকবে যেখানে আমরা গান গাই আড্ডা দেই। আজ থেকে তুমিও থাকবে।
> সত্যি??
> হুমমম সত্যি আমি তোমার আম্মু কে বলেছি আমার কথা না শুনলে তোমাকে পিটানোর ও পারমিশন দিছে।
> ইশশশশ কত্ত শখ আমাকে পেটাবে। অপির হাতে উল্টো পেটানি খাবা।
অপির চুলগুলো এলোমেলো হয়ে উড়ছে বাতাসে। তাই চুলগুলো ধরে জোরে টান দিয়ে বললাম।
> আজ থেকে তোমার ঘুম হারাম করবে এই আবির বলেই চলে এলাম।
অপির ওই রাগী চোখটা খুব মায়াবী। ইচ্ছে করে ওর চোখের কাঠগড়ায় আসামি হয়ে সব দোষ স্বীকার করে সারাজীবন থেকে যাই। অসম্ভব সুন্দর ওই চোখ আর তার মুখের মায়া। ভালো না বেসে কই যাব আমি??
বিকেলে গীটারটা নিয়ে বের হতেই মেহজাবিন জড়িয়ে ধরে বসে আছে সে ও সাথে যাবে। ও গান শোনার পাগলি। এদিকে অপিকেও সাথে নিয়ে বের হলাম। বন্ধুরা সব এসে বসে আছে আমাদের পুরানো জায়গায়। কিছু সময় পর আব্বু আসবে।
আমার সাথে অপিকে দেখে সবাই খুব অবাক হয়ে গেছে। কারন আমি এই প্রথম কোন মেয়েকে সাথে নিয়ে বের হয়েছি। গান গাওয়ার সুবাদে অনেক মেয়ে কাছে আসতে চায়। কারন মেয়েরা গীটার বাজানো ছেলেদের অন্য রকম ভাবে পছন্দ করে।
তারপর সবার সামনে গিয়ে অপিকে পরিচয় করিয়ে দিলাম। সবাই মিলে একসাথে Hi বলে উঠলো। আর বান্ধবী গুলো ওকে পেয়ে খুব মজা করতে লাগলো। মেহজাবিন কে কোলে নিয়ে আদর করছে সবাই।
তখন আমি গীটার নিয়ে বসলাম। এরমধ্যে আব্বু ও হাজির। আব্বু এসে আমার পাশে বসলো। মেহজাবিন আব্বুর কোলে। আমার আরেকপাশে অপি। তারপর গান ধরলাম একসাথে….
ধন্য ধন্য মেরা সিলসিলা…
এলো দিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়া……..
গানের কোরাস ছাড়তেই চারপাশে সবাই জড়ো হয়ে একতালে গান শুনছে আর হাততালি দিচ্ছে। এমনটা হরহামেশাই হয়। বিশেষ করে শহরে।
এর পর আব্বু তার কোমল কন্ঠে সুর তুললো লালনের বিখ্যাত একটা গান,,,, আমার গান শেখাটাও মুলত আব্বুর থেকে। উনি আমার বেস্টু, ( বাস্তব জীবনেও)।
মিলন হবে কতদিনে………
ওহ আমার মনের মানুষের ও সনে….
আমি গীটারে সুর তুলি আব্বু গায়, আবার আমিও।। এভাবেই জমপেশ আড্ডা চলতে থাকে। হটাৎ খেয়াল করি দু তিনটা অল্পবয়সী মেয়ে আমাদের ছবি তুলছে।
এড়িয়ে গেলাম। অপি খুব খুশি হয় এমন আড্ডায়। ওকে বললাম..
> আজ তোমাকে শুনালাম কাল থেকে প্রাকটিস শুরু করাবো।
> তুমি আংকেল এত সুন্দর গান গাও জানতাম না তো।
মুগ্ধ করে দিয়েছো।
> থাক এতকিছু বলতে হবে না। কাল দেখব।
সন্ধ্যা হয়ে গেছে আমরা সবাই উঠলাম। মেহজাবিন ফুসকা খাবে বলে বায়না করলো। আব্বু আমাকে ৫০০ টাকা দিয়ে বললো ওদের কে নিয়ে ফুসকা খেয়ে বাসায় আসতে। আমিও খুশি। ??
একটা দোকানে বসে ফুসকার অর্ডার করলাম।
অপিকে বললাম…
> দুপুরের গুলো ফেরত দিব টেনশন করো না। ৪ টা ফুসকা নিছিলাম বলে কেমন করে চিল্লা চিল্লি করেছো কটকটি একটা।
> এই ছেলে একদম পিটাবো কিন্তু এখন। আমার ফুসকা খেয়ে আবার বড় বড় কথা।
> এএএএএহহহহ কটকটি।
> নাকবোচা।
> তোমার নাকে ভিট নাই, প্লায়ারস দিয়ে টেনে লম্বা করে দিব একদম।
ঝগড়া করতে করতে ফুসকা চলে এলো। মেহজাবিন একা একা খাচ্ছে। আর আমি অপিকে আস্তে করে বললাম।
> আমি খাইয়ে দেই??
> ইশশশ কত শখ নাকবোচাটার। আমার হাত আছে আমি একাই খেতে পারব হুহহহহ।
ওর দিকে করুন হয়ে তাকিয়ে আছি।
একটার পর একটা খেয়েই যাচ্ছে।
আমি চুপচাপ বসে আছি ওর খাওয়া শেষ হলে আমার টাও ওকে দিলাম। কিছু না বলেই এটাও খাচ্ছে। রাক্ষসী একটা।
তারপর আমরা সবাই বাসায় ফিরতে লাগলাম।
> অপি কাল সকালে একসাথে বের হবা??
> কেন?? কি দরকার??
> না মানে একসাথে ই যেতাম। একদিকে তো স্কুল আর ভার্সিটি।
> দরকার নেই। আমি একাই যেতে পারি। সব ছেলেদের একটাই মতলব সুযোগ খোজা। আজ সাথে যাবে কাল বলবে ভালোবাসি। যতসব। এসব শুনতে শুনতে কানটা পচে গেছে আমার।
> কি বলো এসব অপি। আমি তো শুধু বললাম একসাথে যাব আর তার জন্য এমন সব কথা??
> সব ছেলেদের চেনা আছে। তুমি শুধু গীটার বাজানো শিখাবে এর বেশি কোনকিছুতে সুযোগ খুজলে তোমার খবর আছে। মনে রেখো।
ওকে এখনো আবিরকে চিনোনি এবার থেকে চিনবে।
মনে মনে ভাবলাম এত রাগ সামলাবো কি করে। যা ভেবেছিলাম হয়তো তা নয়। ও তো সুযোগই দিচ্ছে না। ঠিক আছে কাল থেকে আমিও আর বিরক্ত করব না। নিজের মত করে থাকতে হবে। দেখি তাতে ফলাফল কি আসে।
ওকে ওর বাসার সামনে দিয়ে আমি রুমে এলাম। ওর ওই কথাগুলো খুব ভাবালো আমাকে। একটু আগেও ভালো করে কথা বললো আবার এত রাগী রাগী কথা শুনালো। কিছু ই বুঝিনা ওর মনের বেপার।
পরদিন সকালে অপি ওর বাসা থেকে বের হবার ২০ মিনিট আগেই আজ বের হয়ে আমার বাসার সিঁড়ি তে ওয়েট করছে। আমি বের হতেই এমন একটা ভাব নিলো কেমন জানি ও মাত্র ই নামছে আর আমি ওর জন্য ওয়েট করে আছি।
> লজ্জা করে না তোমার?? কাল বললাম যে একসাথে যাব না। আর তুমি আমার জন্য ওয়েট করে আছো পিছু নেয়ার জন্য?? বেহায়া একটা। ????
অপির কথা শুনে আমার হার্টঅ্যাটাক হবার যোগাড়। বলে কি এই মেয়ে??? আমি নাকি ওর জন্য ওয়েট করে আছি???
> মানে কি?? কে তোমার জন্য ওয়েট করে আছে?? আমি তো মাত্র নামলাম।।
> চুপ বেহায়া,, কি মনে করো কিছু বুঝিনা তাইনা। সুন্দরী মেয়ে দেখলে ই তোমরা এমন করো যতসব।
> অপি বেশি হচ্ছে কিন্তু এখন।
> ওকে ওকে শুধু আজই সাথে যাব কাল থেকে আর না মনে থাকে যেন ঠিকাছে?? (খুব ভাব নিয়ে নাকে আঙুল ঘসে বললো)।
অপির এই স্টাইল টা আমার সবচেয়ে প্রিয় ?
> শুধু আজই???
> হুমমম আজই নাকবোচা………..
চলবে……….

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে পর্ব-০২

0

?বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে?
?পর্ব:২
লেখা :Sakib ণিসি

আমি একবার একসিড়ি নামি তো দু সিড়ি উঠে যাই।
তারপর সাহস নিয়ে নামলাম কিছু না জানার ভান করে ওর পাশ দিয়ে যাবার আগেই আমার কলার ধরে বললো……?
> এই রোহিঙ্গা দাড়ান এক পা নড়বেন না। ( ভীষণ রেগে ),
> ওই কটকটি কি বললে আমি রোহিঙ্গা??
> কাল এসেই আমার পিছনে কেন লেগেছেন?? খুব সাহস তাইনা?? এখনো তো চিনেন নি আমাকে তা হলে আর এমন সাহস হতো না। হুুুহহহহ!!
> সাহস???? দেখবা???
> কি???
ওর লম্বা চুল গুলো জোরে টেনে এক দৌড়ে সিড়ি দিয়ে নেমে আমি হাওয়া হয়ে গেলাম।
আর অপি রাগে জ্বলতেছে। আমি শিওর, পরের বার আমার কপালে শনি আছে।
আমার ভার্সিটির পাশেই ওর স্কুল।
আমি বিকেলে ভার্সিটি থেকে ফিরার সময় খেয়াল করলাম অপির স্কুলের কিছু মেয়ে দুইটা এলাকার বখাটে ছেলেদের খুব পিটাচ্ছে। সে কি মাইর।??
রাস্তায় ফেলে। একজনকে দেখে বুঝেছি ও হয়তো ওদের দলপতি। চুলগুলো বাধা খোপা করে। ছেলেদুটির কলার দু’হাতে ধরে বলছে।
> আর যদি কোনদিন কোন মেয়ের দিকে কুনজরে তাকাস বিরক্ত করিস তাহলে……
> আপা আমাগো ভুল হইয়া গ্যাছে মাফ কইরা দেন।
আমি কিছুটা দুর থেকে অন্য সবার মত দাড়িয়ে দেখছি। বেপারটা আসলেই ইন্টারেস্টিং। আর ওদের ওই দলপতির ঠিক পেছনে আমি। তাই ওর ফেসটা দেখতে পারছি না। খুব ইচ্ছে হচ্ছে ওকে দেখতে।?
> হুমমম নামটা শুধু মনে রাখিস….. অপি আমার নাম।
বলেই ওদের ছেড়ে দিয়ে খোপাটা খুলে মুখ ফিরিয়ে রাস্তায় হাটা শুরু করলো। আমি তো পুরাই অবাক। এতো সেই কটকটি মানে অপি। তাহলে এতক্ষণ ওই মেয়েটা ওদের কেলাচ্ছিলো। [OMG?]
আর আমি এমন গুন্ডী লিডার এর সাথে কাল থেকে ঝগড়া করছি। ওরে বিরক্ত করছি। সকালে তাহলে ও ঠিকই বলছিল। চিনলে এমন সাহস হতো না।??
এমন ভাবেই ফেঁসে গেলাম ওইরকম মাইর যদি আমাকে দেয় তাহলে তো আমি শেষ। এসব ভাবতে ভাবতে হটাত দেখি অপি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ওর চোখে চোখ পড়তেই আমি এক পা দুপা করে হাটা শুরু করলাম। দুনিয়ায় আমি এখন কাওকে চিনিনা। কারো ডাকে সাড়াও দিব না।??
ওদিকে অপি ওর ছেলাবেলাকে আমার দিকে দেখিয়ে দিলো। ওরা দৌড়ে আসছে বাধ্য হয়ে আমিও দে দৌড়।?
বেশিদুর যেতে পারলাম না। ওরা চার পাচ জন আমাকে চারপাশ থেকে আটকে নিলো। আমি কাচুমাচু হয়ে মাথা নিচু করে চোখ পিটপিট করে দেখছি অপির দিকে। খুব ভাব নিয়ে আসতেছে আমার দিকে। খোপার চুল গুলো ছেড়ে যে ভঙ্গিতে আসছে যে কোন ছেলে কিছু সময়ের জন্য ওর প্রেমে পড়তে বাধ্য।?
আমার সামনে এসে নাকে একটু আঙ্গুল ঘসে খুব মুড নিয়ে বললো…..
> কি নয়া মিস্টার?? খুব তো কাল লাগলে অপির পিছনে,, আজ দেখলে তো আসল রুপ অপির??
> সরি আপা, কে অপি?? কোথাকার অপি?? আমিতো কোন অপিকে চিনিনা?? আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে। আমিতো ভার্সিটি থেকে সোজা বাসায় যাচ্ছি। আমাকে কেন আটকালেন হুমমম???
কথাগুলো একবারে বলে হাঁপাচ্ছি ওর দিকে তাকিয়ে।
> হাহাহাহাহা আরে লে লে বাচ্চা ছেলেটা কিচ্ছু জানেনা।।
ওই আমার হকিস্টিক টা দে তো। ওর হাটুর বাটি ছুটালে সব কিছু চিনে যাবে।
> আরে আরে কি বলেন এসব। এমন গুন্ডি কেন আপনি?? আমি কিন্তু আপনার আব্বু কে সব বলে দিব তখন বুঝবেন মজা।
> তাই নাকি?? সে টা তো বাড়িতে যাবার পর আগে তো হাটু ভাঙ্গবো আপনার।
আমার সামনে এসে হকিস্টিক টা আমার পায়ে রেখে টোকা দিচ্ছে আর দুষ্ট হাসি হাসছে অপি ।?
> দেখো অপি ভাল হবে না কিন্তু।
অপি কিছু না শুনেই যেই আমাকে মারতে যাবে ঠিক তখন ওর হাত থেকে হকিস্টিক টা কেড়ে নিয়ে ওর হাত ধরে বললাম।??
> এত সুন্দর হাতে হকিস্টিক নয় বালিকা ফুল মানায়। তোমার চোখে রাগের ছাপটা সত্যি মনকাড়া। এভাবে তাকিও না প্রেমে পড়ে যাবো।?????
অপির রাগ যেন আরো বেড়ে গেলো। এই প্রথম কোন ছেলে ওর হাত ধরে এমন কথা বলার সাহস পেলো।??
> তোর কপালে খুব দুঃখ আছে,
> এত রাগি মেয়েকে সামলাতে একটু কষ্ট তো হবেই।
> উফফফ অসহ্য।
অপির হাতে একটা চুমু দিয়ে ওখান থেকে চলে আসলাম। অপির বান্ধবী রা সব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আর বলছে তুই কেন কিছু বললি না ওকে।
> আরে যাবে আর কই?? রাতে দিনে সবসময় ওরে পাবো আমার বাড়িতে। ওর জীবন তেজপাতা করে ছাড়ব বলে দিলাম।
বাসায় এসে গোসল করে খেয়ে নিলাম। আমার ভাতিজি দৌড়ে এসে আমার বিছানায় শুয়ে পড়লো আমার সাথে। যত প্রকার দুষ্টামি আছে এক এক করে শুরু করলো। আমার ঘুমটা আর হলো না।
হটাত কে জানি এলো কলিং বেল বাজলো। ভাতিজি দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দিল। অপি রুমে ঢুকে মেহজাবিন কে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে সোফায় বসলো। আম্মু ভাবীও এসে গল্প শুরু করলো ওর সাথে। আমি বুঝলাম এমনি এমনি আসেনি। নিশ্চয়ই কোন ভাবে আমাকে জালাতে এসেছে। তাই আমি আর গেলাম না ওখানে।
আমি আমার গীটারটা বের করে বাজাচ্ছি আর গান গাইছি।
কিছু সময় পর মেহজাবিন অপির কোল থেকে নেমে আমার কাছে আসবে বলে দৌর দিল।
> আন্টি গীটার বাজায় কে?
> কেন আবির বাজাচ্ছে।
> ভাইয়া গীটার বাজাতে পারে।
> হুমম গান গীটার নিয়েই তো থাকে আর আমাদের কান ঝালাপালা করে।
> আমি যাব ভাইয়ার কাছে??
> যাও এটা আবার জিজ্ঞেস করতে হয়।
> ওকে আন্টি।
তারপর রুমে ঢুকে চুপ করে দাড়িয়ে শুনছে অপি। আমি দেখেও না দেখার ভান করে গান গেয়ে যাচ্ছি। হটাৎ আমার পাশে বসে অপির বড় নখ দিয়ে আমাকে গোটা ৬ চিমটি দিলো।
>খুব গান গাওয়া হচ্ছে তাইনা?? গেয়ে নাও গেয়ে নাও পরে আর গান বের হবে না গলা দিয়ে।
> মানে কি হুমম?? এত রাগ কিন্তু ভালো না বুঝলে কটকটি।
> দেখো এবার কিন্তু আন্টিকে ডেকে বলব তুমি আমাকে মেরেছো তখন তোমার অবস্থা কি হয় বুঝবে।
> তুমি এত ফাজিল কেন? হুমমম।
> আমার পিছনে আর লাগতে এসো না ফল ভালো হবে না।
মেহজাবিন কে বললাম আম্মু আমাদের জন্য নাস্তা নিয়ে আসোতো। তোমার কটকটি আন্টির ক্ষুধা লেগেছে।
মেহজাবিন চলে গেলে অপির গালে দুই টা কিস করে বললাম।
> তোমার রাগী চেহারাটা খুব ভালো লেগেছে তাই আরও বেশি রাগাতে ইচ্ছে করে।
> কুত্তা হারামি শয়তান উল্লুক তোর এত সাহস আমাকে কিস করলি?? দাড়া আন্টিকে বলতেছি।
> যাও যাও ডেকে বলো আন্টি আবির আমাকে কিস দিছে যাও বলো।
অপির রাগ যেন থামছেই না কিছু বলতেও পারছে না।
> তোকে আমি দেখে নিব মনে রাখিস।
> মেকাপ করে আসব?? তারপর দেখবা??
> এমন হাল করব আয়নায় নিজেকে চিনতে পারবা না।
> দেখা যাক।
এভাবে প্রতিদিন টুকটাক ঝগড়া লেগেই থাকে আমাদের।
অপি অনেক প্ল্যান করছে আমাকে শায়েস্তা করার জন্য।
অপির সাথে প্রতিদিন সকালে রাতে খুনসুটি করতে করতে একসময় মনে হলো আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। কিন্তু ওকে জানাতে হবে……
চলবে…………T͟o͟ b͟e͟ c͟o͟n͟t͟i͟n͟u͟e

বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে পর্ব-০১

0

?বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে?
?পর্ব:১
লেখা :Sakib Nisi?
.
.
> ব্যাগটা ধরুন তো!!
> মানে কি?? আমি কেন ব্যাগ ধরব? ?
> এত কথা বলেন কেন?? দেখছেন না সব জিনিসপত্র নিতে হচ্ছে?? ধরুন। ( কড়া গলায় বললাম ) ?
> আজিব তো এই কে আপনি?? আমাকে চিনেন আমি কে?? ??
> আমি নতুন ভাড়াটিয়া ৩ তলায় উঠেছি। আর আপনি কে সেটা জেনে আমার কি হুমমম। একটু হেল্প করলে কি হাতে ফোস্কা পড়বে নাকি???
> এটা আমার বাবার বাড়ি। আমি বাড়িওয়ালার মেয়ে আর আমাকেই বলছেন কাজ করতে এত সাহস আপনার??? ??
> ওহ তাহলে আপনি সেই কটকটি বেগম থুক্কু আপনি সেই মেয়ে যার কথা আংকেল বলেছিল?? ?
> এইইইই কি বললেন আমাকে?? খুব সাহস দেখছি আপনার। একটা উল্টাপাল্টা কথা বললে খুব খারাপ হবে বলে দিলাম। ??
> সেটা পরে দেখব আগে ব্যাগটা নিয়ে উপরে চলুন।?
ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে গেলাম তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও । ?
ওহহ হ্যা তোমাদের তো পরিচয় দেয়া হয়নি। আমি সফিয়ার কিন্তু এই গল্পে ছদ্মনাম থাকবে অাবির। আজ নতুন বাসায় উঠলাম পরিবার সহ। আব্বু আম্মু ভাইয়া ভাবী ভাতিজি এটাই আমার পরিবার। বাবা সরকারি চাকরি করেন। আর সাথে এতক্ষণ ঝগড়া করলাম মানে ফাউ কাজ করিয়ে নিলাম সে হলো এই বাড়ির একমাত্র মেয়ে মানে বাড়িওয়ালার মেয়ে। নাম টা এখনো জানা হয়নি ওর। তবে পরে জেনে নিব কোন উসলত দিয়ে। ??
ওরা ৪ তলায় থাকে আমরা ৩ তলায়। বড় ফ্লাট ৩ টা রুম। বেলকোনির সাথে আমার রুম। ?
এই বাসাটা নেবার একমাত্র কারন হলো বাবার অফিস, ভাইয়ার অফিস আর আমার ভার্সিটি ৩ টাই পাশাপাশি।
আর বাড়িওয়ালা আংকেলও খুব নরম মানুষ। ট্রাক থেকে সব মালামাল বাসায় উঠিয়ে সেগুলো গুছাতেই রাত হয়ে গেলো। ৯ টার দিকে বাড়িওয়ালা এলো দেখা করতে। আব্বু দরজা খুলে ভেতরে এনে আংকেলকে সোফায় বসতে দিল।
> ভাই কোন সমস্যা হচ্ছে নাতো?
> না না সব ঠিক আছে। বাসাটা সত্যি খুব সুন্দর।
> সারাজীবন পরিশ্রম করে একটা আশ্রয় বানিয়েছি আপনাদের দোয়ায়। কোন প্রকার সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন।
> সে তো ঠিক আছে। আজ তো সব গুছালাম কাল ভাবী কে নিয়ে আসবেন বেড়াতে।
> সে তো আসবই। আপনার ভাবী আসতে চেয়েছিলেন কিন্তু পরে উনিই বললো সবকিছু ঠিকঠাক করতে সময় লাগবে এখন না গিয়ে কাল যাব তাই আমিই এলাম।
> তাহলে তো ভালোই হলো।
> ওহহ হ্যা আপনারা আজ রাতে আমার বাসায় খাবেন। আপনার ভাবী রান্না করেছে। আজ আর গ্যাস নষ্ট করে লাভ নেই কাল সকালে করবেন। আপনারা গুছিয়ে চলে আসুন আমি গিয়ে ওদিকে সব ঠিক করি।
> হাহা ভাই আপনি দেখছি সব খবর রাখেন।
> কি যে বলেন ভাই আমি কখনো ভাড়াটিয়া বাড়িওয়ালা সম্পর্কে বিশ্বাস করিনা। সবাই এক পরিবার।
কথা হচ্ছিল আব্বু আর আংকেলের।
ডিনারের দাওয়াত পেলাম, এমনি তে কাজ করে ক্ষুধা লেগেছে অনেক। আমার মত একটা পিচ্চি পোলা কি এত কাজ করতে পারে?? ভাইয়া টা ও হারামি একটা কাজ করেনি সব আমাকে দিয়ে করিয়েছে। বাড়ির ছোট বলে কেউ আদর করে না। ??
ফ্রেশ হয়ে সবাই ওপর তলায় গেলাম আংকেল দরজা খুলে আমাদের দেখে আন্টিকে ডেকে বললো।
> কই অর্পিতার আম্মু দেখো কারা এসেছে।
আমি বুঝে নিলাম ওই কটকটির নাম তাহলে অর্পিতা। ??নামটাও যেমন ঠিক তেমনই কর্কট মেয়ে একটা।
তাতে আমার কি?? আমি তো ভালো ছেলে। ☺☺
আন্টি এসে সালাম দিলো তারপর সবাইকে নিয়ে গেলো ভেতরে। আমার ছোট মামনিকে আগে কোলে নিয়ে দাদু দাদু বলে আদর করলো। সবাই ওকে দেখে বলে এত মিষ্টি একটা মেয়ে। ?
বুঝলাম তারা সবাই খুব মিশুক। ভালোই লাগলো। সবার সাথে কথা বলছিলাম। আন্টি আমাকে জিজ্ঞেস করলো কিসে পড়াশোনা করি কোথায়। সবই জানালাম।
> অপি এই অপি দেখে যা কারা এসেছে বাসায়।
আন্টি তার মেয়ে কে ডাকলো। আবারও বুঝলাম বাসায় তাকে আন্টি অপি বলে ডাকে। একটা মানুষের এত নামের কি দরকার?? ??
রুমের দরজা খুলে কটকটি মানে অপি ম্যাডাম বের হলেন অবশেষে। সাদা একটা জামা পরা। লম্বা চুল, হাসিমুখ, খুব সুন্দর লাগছিলো দেখতে।?
ওয়েট ওয়েট আমি ক্রাশ,
খাইনি কিন্ত শুধু বলছিলাম আর কি।??
এসে সালাম দিয়ে বসলো সোফায়। একে একে সবার সাথে পরিচিত হলো। তখন জানলাম সে এবার ৯ম ক্লাসের ছাত্রী। সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলে শেষে যখন আমার দিকে তাকালো দুজনেরই মুখে যেন কালো মেঘ জমে গেলো। আমি মুখ ভেংচি দিলাম আগে।? তাতে তার মুখটা খুলে গেলো হা করে। ?
রাগে ফুলছে তাতে আমার কি?? ?
আন্টি বললেন,
> কিরে তোর ওই ভাইয়ার সাথে পরিচিত হলি না??
আমি বললাম আন্টি আমি কটকটিকে চিনি। থুক্কু ও যে আপনার মেয়ে সেটা জানি। সকালে দেখলাম রাস্তায় চিৎকার করে সবাইকে বলছে। ও এই বাড়ির মেয়ে। তখনি জানছি,, ??
> একদম মিথ্যা কথা বলবেন না নিজে আমাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিছে আবার বড় বড় কথা। ??
তখন সবাই আমার ওই কথা শুনে হাসতে লাগলো।
> আমার মেয়েকে আজ অবধি পানি ঢেলে খাওয়াতে পারিনি আর তুমি আজ ওকে দিয়ে কাজও করিয়ে নিলে বাবা হাহাহাহা। ভালো করেছো।?
> আন্টি আমি এসব ভালো পারি কাকে কখন কোথায় টাইট দিতে হয়।?
সবাই আরেকচোট হাসলাম। আর ওদিকে কটকটি বেগম রাগে জলছে। যেন পরে আমাকে চিবিয়ে খাবে।
তারপর সবাই মিলে ডাইনিং টেবিলে বসলাম খেতে আমার সামনেই বসলেন অপি ম্যাডাম। ওর চোখে চোখ পড়তেই আমি জগটা ঠিক ওর সামনে রাখলাম যাতে ওর চেহারা না দেখা যায়। ??
ভাবী আমার পাশে বসে এসব খেয়াল করছে আর চিমটি দিচ্ছে। ?
আন্টির হাতের রান্না খেয়ে খুব ভালো লাগলো যদিও আম্মুর রান্না ছাড়া কারোটা আজ অবধি ভালো লাগে নি।
> আন্টি মাঝে মাঝে এসে খেয়ে যাব এত সুন্দর রান্না।?
> যখন মন চায় এসো কোন সমস্যা নেই।
আমি মাথা নাড়িয়ে খেয়েই যাচ্ছি হটাত দেখলাম কে যেন আমার দিকে শকুনি চোখে তাকিয়ে আছে। কটকটি বেগম ছাড়া আর কে এমন করবে। ওর দিকে তাকাতেই মুখ ভেংচি কেটে আগেরটা শোধ দিল।
প্রথম দিনই এমন অবস্থা না জানি সামনে কি আছে আমার কপালে।
খাওয়া শেষ করে যখন বের হবো তখন অপির পাশে দাড়িয়ে বললাম।
> সারাক্ষণ মুখে ঠাডা পড়ার মত চেহারা না বানিয়ে একটু হাসবে। না হলে পেচার মত লাগে। ???
বলেই দরজা দিয়ে দৌড়ে চলে গেলাম।
আর সে রাগে জলতে থাকলো। ???
রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। সারাদিন অনেক খাটাখাটি হইছে শরীরটা ক্লান্ত তারওপর এত ঝগড়া করলে এনার্জি কই পাবো। ?
তারপর ভাবলাম, মেয়েরা সারাদিন এত ঝগড়া করার এনার্জি কই পায়?? রক্তে ওদের ঝগড়ার কোন কণা আছে মনে হয়। ???
চোখটা বন্ধ করতেই অপির মুখটা ভেসে উঠলো। ফাল দিয়ে উঠে বুকে থুড়থুড়ি মেরে দোয়া পড়লাম। আল্লাহ ওই মেয়ের চেহারা আর চোখে ভাসাইও না। ??
ঘুমটা রাতে ভালোই হলো। পরদিন সকালে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে বাসা থেকে বের হবো তখন দেখি সিড়িতে কে জানি দাড়িয়ে আছে চোখগুলো বড় বড় করে রাগে জলছে আমাকে দেখে।
আমি একবার একসিড়ি নামি তো দু সিড়ি উঠে যাই।
তারপর সাহস নিয়ে নামলাম কিছু না জানার ভান করে
ওর পাশ দিয়ে যাবার আগেই আমার কলার ধরে বললো ……………..
চলবে……..T͟o͟ b͟e͟ c͟o͟n͟t͟i͟n͟u͟e

হঠাৎ হাওয়া (২৪) __অন্তিম পর্ব

0

হঠাৎ_হাওয়া (২৪)
__অন্তিম পর্ব

মায়া সাবধানে ধীরে সুস্থে বাইরে বেরিয়ে এলো, ও যদিও গাড়ি নিয়ে এসেছে তবুও হাটছে, এলোমেলো চলন, বড় রাস্তা পার হতে গিয়েই মায়ার মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো,নিজেকে সামলে কোনোরকম বাসায় পৌঁছে নিজের ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো।
মায়া ভেতরে যাওয়ার পরেও অনেক্ষণ হিমালয় মায়ার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রইলো, মেয়েটা একটা পাগল কখন কি করে বোঝা যায় না দুশ্চিন্তা লেগেই থাকে,এতদিনের রাগ অভিমান ক্ষোভ থেকেই হিমালয় মায়াকে এতগুলো কথা শুনিয়েছে, আসলে ধ্রুব যে অর্নাকে ভালোবাসে সেটা তো মায়া জানে না, আর এবার ধ্রুব একদম সিরিয়াস অর্নার পাস্ট জেনেও সে অর্নাকেই চায় কম দিন ধরে তো অর্নার পেছনে ঘুরছে না ধ্রুব কিন্তু অর্নাই জড়তা কাটিয়ে সায় দিচ্ছে না, হিমালয় জানে মায়া আবার ওর কাছে আসবে তখন আর মায়াকে ফেরাবে না।হিমালয় কে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে দিয়ে মায়া আর একবারো হিমালয়ের কাছে গেলো না,শুধু তাই নয় হিমালয়ের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ মায়া করলো না তবে হিমালয় জানতে পারলো মায়া ঢাকাতেই আছে।কিছু কিছু সম্পর্কের মান অভিমান এমন হয় যে অপরপক্ষের কাছে নিজের সমস্ত সত্ত্বা বিলীন করে দিলেও সামনে থেকে গিয়ে বলা যায় না কতটা ভালোবাসা অন্তরে পোষা আছে, মায়া আর হিমালয়ের ও তাই হলো কেউ আর অভিমান ভেঙে দাড়াতে পারলো না।

মায়ার সাথে হিমালয়ের আবার দেখা হলো দিহান আর কথার বিয়েতে, মায়াকে দেখে সবাই চমকে উঠলো, ও কালো রঙের একটা জামদানি শাড়ি পড়ে এসেছে কোনো সাজ নেই গায়ে, একটুও না ওকে কতটা কাহিল লাগছে হিমালয় এবার থাকতে না পেরে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো
—তোমার কি হয়েছে মায়া? এমন দেখাচ্ছে কেন
মায়া খুব স্বাভাবিক ভাবে জবাব দিলো
—বাবা, একটু অসুস্থ তো তাই একটু চিন্তা হয়।
মায়া হিমালয় কে পাশ কাটিয়ে কথার কাছে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলো, কথা হুট করে কেদে ফেললো,মায়া হেসে বলল,
—তোমার জন্যে আমি এই পৃথিবীতে সবচেয়ে চমৎকার কিছু সময় কাটিয়েছি তুমি কি তা জানো?
—আর আমার জন্যেই তুমি সব খুয়েছো মায়া।
—তোমার আর দিহানের জন্যে আমি খুবই খুশি।
মায়া সবার সাথে দেখা করলো পুষ্প আর নিরবও এসে পরেছে, মিষ্টির হালকা ফোলা পেটে হাত বুলিয়ে মায়া মিষ্টি কে জড়িয়ে ধরলো।
অর্নার সাথেও চোখে চোখ পড়তে হাসি ফিরিয়ে দিলো,মায়া কথার বাবার সাথেও কুশল বিনিময় করলো তারপর হিমালয়ের বাবা মায়ের সামনে গিয়ে দাড়ালো, হিমালয়ের মায়ের সাথে মাঝে একবার মায়ার কথা হয়েছিলো তিনি ক্ষমা চাইলেন তার ছেলের স্বাভাবিক জীবনের আবদার করলেন, মায়া তো চেষ্টাও করলো কিন্তু সব কি ওর ইচ্ছে মতো আর হয়?যদিও হিমালয়ের এটাই ধারণা তবুও তা তো আর সত্যি না। হিমালয়ের বাবা খুব স্নেহের সাথে মায়ার মাথায় হাত রাখলেন,
—তুই এত্ত শুকিয়ে গেছিস কেন মায়া? তুই কি অসুস্থ?খাওয়া দাওয়া ঠিক মত করিস না?
—উহুহ জানেনই তো বুদ্ধিমতীদের মস্তিষ্কে কত গ্লুকোজ এর প্রয়োজন, তাই সব খাবার মাথায় চলে যায়,
তারপর দুজনেই শুকনো করে হাসলো।মায়া সবার সাথে দেখা করে বাবার অসুস্থতার অজুহাত দিয়ে না খেয়েই বিদায় নিলো।
হিমালয় মায়ার পিছু পিছু বাইরে এসে বললো,
—মায়া দাঁড়াও
মায়া অনিচ্ছা সত্ত্বেও থমকে দাড়ালো, এই ডাক উপেক্ষা করার ক্ষমতা ওর নেই,মায়া হিমালয়ের সামনে চোখে চোখ রেখে বলল,
—কিছু বলবেন?হিমালয়?
হিমালয় চমকে তাকালো ওর মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো মাথার মধ্যে চিনচিন একটা ব্যাথা হলো,এই মেয়ে অসম্ভব জেদী ইচ্ছে করেই এসব করে,
—তুমি কি নিজের যত্ন নাও না?
—হু নিই তো।
—তাহলে শরীরের এই হাল কেন?
—আসলে আগে আশে পাশে ডাক্তাররা থাকতো তো তাই সুস্থ থাকতাম এখন সব রোগীরা থাকে তাই আমিও অসুস্থ থাকি।
—ধ্রুব অনেক রিসার্চ করেছিলো সাহিত্যের ব্যাপারটা নিয়ে কিন্তু..
—ও…আমি যাই আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে,
মায়া আরো কিছুক্ষণ দেরি করলে হয়তো ধ্রুব আর অর্নার এনগেজমেন্টটার সাক্ষী হতে পারত অর্না শেষ মেষ সমাজ সংসার এর ভয় ভুলে শ্রুব কে আপন করে নিয়েছে।

হাসপাতালের কেবিনে মায়ার হাত মুঠোবন্দী করে দাঁড়িয়ে আছে সাহিত্য, ওর ইচ্ছে করছে এক্ষুনি একটা চড় ঠাটিয়ে মায়ার গালে লাগাতে, কিন্তু পারছে না মেয়েটা না খেয়ে না খেয়ে এতটাই দুর্বল হয়ে গেছে যে নাকের ভেতর নল দিয়ে খাবার দেওয়া হচ্ছে,স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। এই মেয়েটা এত বেয়াদব কেন?
মায়া জ্ঞান ফিরে দেখলো ওর সামনে কতগুলো চেনা মুখ কিন্তু এদের কাউকেই মায়া চায় না মায়া চোখ বন্ধ করে ফেললো,এত আলো অসহ্য লাগছে ও ঘুমিয়ে পড়লো।সন্ধ্যায় মায়ার পুরোপুরি জ্ঞান ফিরলো, এখন অনেকটাই সুস্থ সে তবুও মাথা তুলতে পারছিলো না, খুব কাঙ্খিত একটা হাতের ছোয়া পেলো যে ওর পালস চেক করছে,কথা মায়াকে উঠে বসিয়ে মুখের কাছে স্যুপ ধরলো মায়া কোনো কথা না বকে খেয়ে নিলো, হুট করে মায়া ওর বা হাতে দিকে তাকিয়ে আতকে উঠলো! ওর হাতের অনামিকায় হিমালয়ের দেওয়া আংটিটা নেই!মায়া এবার কেদে ফেললো ওই একটাই তো জিনিসই তো ছিলো মায়ার কাছে হিমালয়ের দেওয়া! সেটাও, সেটাও হারালো হিমালয় মায়াকে দেখে বলল,
—কেমন আছো মায়া এখন?
মায়া ক্লান্ত কণ্ঠে বলল
—আমার আংটিটা কোথায়!
সাহিত্য পাশে থেকে বললো
—বেচে দিয়েছি তোর চিকিৎসার জন্যে অনেক টাকা খরচ হলো তোর আংটি বেচেই বিল করছি হসপিটালে তোর কোনো সমস্যা?
—সাহিত্য আমার আংটিটা কই?
হিমালয় আবার জিজ্ঞেস করলো,
—তুমি কেমন আছো মায়া?
মায়া আড়চোখে তাকিয়ে হিমালয় কে দেখলো হিমালয় যথেষ্ট শান্ত কন্ঠে কথা বলছে তাও মায়ার গা শিরশির করে উঠলো এটা কোনো ঝড়ের পূর্বাভাস নয় তো!
মায়া তাও অনেকটা সাহস সঞ্চয় করে বলল,
—আপনাকে কেন বলবো? আপনি কি ডাক্তার?
আবির পাশে থেকে বললো
—হুম কালই জয়েন করেছে।
ধ্রুব বললো
—তোমার কি কান্ডজ্ঞান নেই মায়া? কতদিন না খেয়ে থেকে নিজের এই হাল করেছ?
হিমালয় বললো তোরা একটু রুম থেকে যা তো,সবাই বিনাবাক্য ব্যয় করে চলে গেলো,মায়া করুন চোখে সাহিত্যের দিকে তাকালে সাহিত্য ও মুখ ঝামটা মেরে চলে গেলো মায়া এবার কান্না আর আটকে রাখতে পারলো না ওর সাথেই এমন হয় কেন?
—আর ঠিক কতভাবে তুমি একজন মানুষকে মারতে চাও মায়া? এর চেয়ে একবারে মেরে ফেলো,
মায়া মাথা নিচু করে রইলো,
—আমার আংটি টা কই?
—আংটি আংটি করে পাগল হয়ে যাচ্ছো কেন?
—ওটা আমার চাই
—আংটি আমার কাছে।আংটির প্রতি এত দরদ কিসের যখন মানুষ টাই অবহেলিত?
—মানুষ টা তো আর এখন আমার নয়, তাকে আকড়ে ধরার অনেক মানুষ আছে,আমার বেচে থাকার জন্যে ওই আংটিটাই চাইই
—তাহলে মরতে যাচ্ছিলে কেন?
—আমি কেন মরতে যাবো?আত্মহত্যা মহাপাপ
—থাপ্পড় মেরে গাল লাল করে দেবো বেয়াদব মেয়ে আবার কথা প্যাচাও।
—আপনি এখন আর আমাকে থাপ্পড় মারতে পারেন না আপনার থাপ্পড় খাওয়ার অনেক মানুষ আছে
হিমালয় আর কোনো ভুল বোঝাবুঝি বাড়াতে চায় না মায়া কে শিক্ষা দিতে গিয়ে ওর নিজেরই উচিত শিক্ষা হয়েছে,
—ধ্রুব অর্না কে ভালোবাসে কথার বিয়ের দিন একটু দেরী করলেই ওদের এনগেজমেন্টটা দেখে যেতে পারতে, কিন্তু তুমি তো তা করবে না, তুমি তো তাই করবে যা তোমার মন চায়?
—মানে কি!?
—মানে বোঝার ক্ষমতা আছে তোমার?
মায়া মাথা নিচু করে বললো
—নষ্ট হয়ে গেছে আমার সব ক্ষমতা এত ক্ষমতা আমার নেই,যার হুট করে বিয়ে ঠিক হয় আর ঠিক বিয়ের দিন জানতে পারে না তার বিয়েটা হবে না, বাড়ি থেকে পালাতে হয়,যে মেয়েটা একজনকে পাগলের মত ভালোবাসে তাকে ছাড়া একটুও থাকতে পারে না সেই ভালোবাসার মানুষটার ভালো থাকার জন্যে যখন হাজারটা গড়া স্বপ্ন ভেঙে ফেলতে হয়,একই ঘরের দরজা আটকে যখন মা ছেলে দুজনেই পা ধরে বসে সসম্পূর্ণ ভিন্ন আবেদন নিয়ে আসে,সবচেয়ে কঠিন সময়ে পাশে থাকা মানুষটার যখন দূরারোগ্য অসুখ হয়, ভালোবাসার মানুষ যখন তার সামনে অন্য কাউকে বাচার অবলম্বন বলে তখন আর ওই মেয়েটির বোঝার ক্ষমতা থাকে না।আর থাকে না,

মায়া শব্দ করে কাদতে কাদতে কথাগুলো বলল,হিমালয় মায়ার মাথায় হাত রাখলো সান্ত্বনা দিলো না, এই মেয়েটাকে কি বলবে সে? কি? সে তো সজ্ঞানে কখনো ওকে কষ্ট দিতে চায় নি, কেন ও ছেড়ে গেলো তাই তো হিমালয়ের এত অভিমান হলো।
—আর কেদো না, আংটিটা ফিরিয়ে দেবো
মায়ার চোখ চকচক করে উঠলো
—তবে কথা দিতে হবে আংটির মতো করে আংটিদাতাকেও আকড়ে ধরতে হবে, এক মুহুর্তের জন্যেও কাছ ছাড়া করা যাবে না।

মায়া আহ্লাদে ঠোঁট বাকিয়ে কেদে ফেললো, হিমালয় মুখ এগিয়ে বলল,
—কি রাগ হচ্ছে?
—উহুহ কষ্ট হচ্ছে খুব কষ্ট,
—সব কষ্ট ভুলিয়ে দেবো, তোমার মত করর,এখান থেকে রিলিজ হলে কাজী ডেকে আগে বিয়ে হবে তারপর অনুষ্ঠান হলে হবে না হলে নাই,তোমাকে শক্ত করে বেশে ফেলতে হবে তোমার বড্ড পালিয়ে যাওয়া স্বভাব।

শেষ
সামিয়া খান মায়া