Thursday, July 10, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1502



হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-০৭

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_০৭
#জান্নাতু্ল_বিথী

মুহূর্তেই সব কিছু বদলে গেছে। একটু সময়ের মাঝেই সিমির মুখে হাসি ফুটে উঠে।শিহাবও অনেক খুশি এই বিয়ের জন্য। শিহাবকে বিয়ের কথা বলতেই ও কোনো দ্বিমত প্রকাশ করে নাই। ৩ দিন পর শিহাব আর সিমির এ্যাংগেজমেন্ট।আমি রুমে এসে দেখি সিমি শুয়ে আছে। আমি ওর পেছনে গিয়ে দাড়িযে ওর কাধে হাত রেখে বলি..
“সিমি এখন আবার কি হলো তোমার।এখন তো খুশি থাকার কথা।..”
“শুয়ে নেই আপু ভাবছি…”(সিমি)
“কি ভাবছো..????”(অবাক হয়ে)
“না সেরকম কিছু না। ভাইয়া এতো সহজে রাজী হয়ে গেলো কেনো…????”(সিমি গালে হাত দিয়ে এমন ভাব করে মনে হচ্ছে গভীর কিছু মাথায় ঘুর পাক খাচ্ছে।)
“সেটা তো তোমার ভাইয়াই জানে….”
“শুধু ভাইয়া না আমিও জানি…”(চোখ মেরে)
“কি জানো..???”(অবাক হয়)
“না কিছুই না। থ্যাংকইউ আপু আজ তোমার জন্যই সব কিছু সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে হয়েছে।”(আমাকে জড়িয়ে ধরে)
“তোমার জন্য শিহাব ভাইয়া ছাদে অপেক্ষা করছে….”(মুচকি হেসে)
আমার কথা শুনে সিমি অনেকটা চমকে যায়।লজ্জায় লাল হয়ে যায়।
“আমি কখনোই উনার সাথে সরাসরি কথা বলি নাই।আর এখন ও বলতে পারবো না।”(সিমি)
“ইয়া আল্লাহ সরাসরি কথা না বলেই এভাবে ফেসে গেলে আর যদি কথা বলতে তাহলে জানি কি হতো।এখন যাও তাড়াতাড়ি উনি অনেক্ষন যাবত অপেক্ষা করেছেন।”(আমি)
“আমার কথা শুনে সিমি লজ্জা পেয়ে যায়।আর রুম ত্যাগ করে।

____________________

শিহাব সেই কখন থেকে সারা ছাদ জুড়ে পায়চারী করছে।কিন্তু যার জন্য অপেক্ষা করছে তার আসার নাম নেই। হঠাৎ কারো পায়ে শব্দে পায়চারী বন্ধ করে শব্দ লক্ষ্য করে ওই দিকে তাকাতেই মনে হলো তার অপেক্ষার অবসান ঘটলো। কিন্তু ও খেয়াল করলো সিমি দারের সামনেই দাড়িয়ে আছে নিচের দিকে তাকিয়ে।এটা দেখে শিহাব মুচকি হাসলো।ও খুব ভালো করেই জানে যে সিমি ওর কাছে আসতে লজ্জা করে।তাই ও নিজেই সিমির দিকে এগিয়ে গেলো।..
“এখানে দাড়িয়ে আছো যে….???”(শিহাব)
উত্তরে সিমি কিছুই বলে নাই।শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।…
“এই মেয়ে নাকি আমাকে বিয়ে করবে।বলছি যে মেডাম একটু কথা বলবেন দয়া করে।”
“কেনো ডাকছেন..।। “(সিমি)
“ওহহহহ হ্যা গুড পয়েন্ট। তুমি কি আমাকে ভালোবাসো..????”(শিহাব)
“হঠাৎ এখন প্রশ্ন কেনো..????”(সিমি)
“যদি সত্যিই ভালোবাসো তাহলে আমাকে বলো নাই কেনো।জানো তো তোমাক বিয়ের কথা শুনে কতো কষ্ট পাইছি…????”(শিহাব)
সিমি তো শিহাবের কথা শুনে পুরোই অবাক..
“বিয়ে আমার কষ্ট আপনি পান কেনো..???”(সিমি)
“ভালোবাসি তাই।…”(শিহাব সোজা ভাবে বলে দেয়।)
সিমি এখন ও অবাক চোখে তাকিয়ে আছে শিহাবের দিকে।..
“দেখো সিমি আমি তোমাকে সত্যিই ভালোবাসি।এবং অনেক আগে থেকেই।কিন্তু কখনো বলার সাহস পাই নাই।ভাবতাম তুমি কি ভাববে বা অয়ন ভাইয়া কি ভাববে তাই বলতে পারি নাই।কিন্তু এখন বলতে কোনো অসুবিধা নেই।আমি তোমাকে কথা দিচ্চি সারাটা জীবন তোমাকে আগলে রাখার চেষ্টা করবো আমি।”(শিহাব)

_________________________

অয়নের সাথে বসে আছি আমি। দুজনেই গল্প করছি বসে বসে।কথার মাঝখান দিয়ে অয়ন আমাকে প্রশ্ন করে…
“আচ্ছা দিয়া তোমার কাছে এই ভালোবাসাটা আসলে কি…????”(অয়ন)
“আমি কখনোই কাউকে ভালোবাসি নাই তাই এ সম্পকে কোনো ধারনা আমার নেই।”(আমি)
এই ধরনের উত্তরে কখনই কেউ খুশি হয় না।কিন্তু অয়নকে খুশি হতে দেখলাম।..
“আমার কাছে ভালোবাসা মানে দুজন দুজনার হাত ধরে একসাথে চলার অঙ্গীকার করা।দুজন দুজনার সুখ দুঃখের সাথী হওয়া।এক জনের বিপদে আরেক জন ঝাপিয়ে পড়া ইত্যাদি ইত্যাদি বুঝি।”(অয়ন)
আমি অয়নের কথা মন্ত্র মুগ্ধের মতো শুনছি।অয়ন অনেক শক্ত মনের মানুুষ উনার মুখে এই ধরনের কথা শুনা আমি সত্যিই অবাক হয়ে যাই।…
“আচ্ছা আপনি কখনো কাউকে ভালোবেসেছিলেন..????”(আমি)
“হুমমম ভালোবেসেছিলাম ভালোবাসি এবং সারাজীবন ভালোবেসেই যাবো।…”(অয়ন)
“কে সে..???????”(অনেকটা উৎসাহ নিয়ে)
“কে সে সেটা বলতে পারবো না। ও নিজেই জানে না যে আজ ১ টা বছর যাবত কেউ একজন ওকে নিয়ে এতো স্বপ্ন দেখছে।তাকে একটি বার দেখার জন্য পাগল হয়ে আছে।সে তো নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত অন্যদিকে তার এতো খেয়াল আছে নাকি।কখনো হারিয়ে ফেলি আবার কখনো বা অনেক কাছে পাই কিন্তু এক বারও বলতে পারি না “মায়াবিনী তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি।আমার প্রতিটা নিশ্বাসে মিশে আছো তুমি। আমার এই #হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি। তোমাকে ছাড়া সত্যিই আমি অচল।”জানোতো আমার এই মনে অনেক কষ্ট।আমি এমন একজন মানুুষ যে তার ভালোবাসার মানুষকে বলতে পারে না ভালোবাসি। যদি সে ছুড়ে ফেলে দেয় সেই ভয়ে।”(অয়ন)
অয়নের কথা শুনে আমার চোখে পানি টলমল করছে।অয়ন আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে কথা গুলো বলছে।অয়ন দেখার আগেই চোখের পানি গুলোকে আড়াল করি আমি।আমার অনেক খারাপ লাগচে এটা ভেবেই যে অয়ন কতো কষ্ট বুকে নিয়ে বেচে আছে।
” By the way তোমার সাথে অনেক কথা শেয়ার করলাম।কাউকে বলবা না কিন্তু।আসলে ও মনে হচ্ছে অনেক কষ্টে আছে তাই ওর কথা মনে পড়লো।…”(অয়ন)
“আচ্ছা ও কি আপনাকে চিনে..????”(আমি প্রশ্ন করি অয়নকে)
“এখন হয়তো চিনে কিন্তু আজ থেকে ঠিক ১ বছর আগে যখন ওকে প্রথম দেখি তখন ও আমাকে চিনতো না।!!!!!!!(অয়ন)
একটু থেমে অয়ন আবার বলতে থাকে..
“আজ থেকে ১ বছর আগে আমি আমার কাজিনের বিয়েতে গিয়ে ওকে দেখেছিলাম।ভেবেছি ও নিজেও বিয়েতে এসেছে কিন্ত পরে দেখি ও আসলে বিয়েতে আসে নাই হয়তো কোনো কাজে এসেছে এখানে।আর আমি দ্বিতীয় বারের মতো খোজ নিতে গিয়ে দেখি ও আর নেই। প্রথমবার ওর কথা বলার স্টাইল দেখে প্রেমে পড়লাম। তার পর আর ওকে ভুলতে পারি নাই।তার ঠিক ছয়মাস পর আবারও একটা শপিংমলে ওকে দেখি।তারপর থেকে প্রতিদিন ওকে একবার করে হলেও দেখতাম। কিছুদদিন আগে একটা কেসের সাথে ও যুক্ত হয়ে পড়ে। তারপর ওর সাথে প্রথমবারের মতো কথা বলি।…”(অয়ন)

____________________________

“বাবা ভাবতেছি এখানকার সমস্যা গুলোর সমাধান হলেই ওদের কে পাচার করে দেবো।কি বলো তুমি…????(…….)

“এই অয়ন চৌধুরি অনেক চালাক ওর ফাদে পড়ার আগেই আমাদের সব কাজ শেষ করতে হবে।যেনো শেষে অয়ন চৌধুরি এসে কোনো কিছুর চিহৃ টুকুও না পায়।..”(…….)
“ঠিক আছে বাবা তুমি যেভাবে চাইবে সেভাবেই হবে।তার আগে যার জন্য তোমাকে এতো বছর জেলে থাকতে হলো তাকে শাস্থি দিতে হবে।…”(…..)
“হুমমম আমার ছেলে মেয়ের প্রতি আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে বেটা।….”(…….)
তার পর দুজনেই পুরো ঘর কাফিয়ে হেসে উঠে……..

চলবে কি……..?????

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-০৬

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_০৬
#জান্নাতুল_বিথী

ছাদের রেলিং ঘেসে দাড়িয়ে আছি আমি। আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। যখন আমার মন খারাপ থাকতো তখন আমি এমন করতাম।কিন্তু এখন আমার মন খারাপ না বরং মন টা অনেক ভালো। তার পর ও আকাশ ফানে তাকিয়ে আছি।আকাশে মেঘের খেলা দেখছি। অয়নের সাথে ঘুরতে যাওয়া পর মন অনেকটা ভালো হইছে।হঠাৎ ঘাড়ে কারো স্পর্শে আমি কেপে উঠি।ওই দিকে তাকাতেই দেখি অয়ন এক হাত পকেটে আর অন্য হাত আমা্র ঘাড়ে দিয়ে দাড়িয়ে আছে।..
“কি হইছে মন খারাপ…????”(অয়ন)
আমি মাথা দুই দিকে দুলিয়ে না বলি। অয়ন একটা দীর্যশ্বাস ফেলে বলে..
“তো মন খারাপ কেনো…???”(অয়ন)
“ধন্যবাদ…”(আমি)
“কেনো..???”(ভ্রু কুচকে)
“সত্যিই আমার মন টা অনেক খারাপ ছিলো কিন্ত আজ যখন আপনি আমাকে নদীর পাড়ে নিয়ে গেছিলেন তখন থেকে মনে ভালো হয়ে গেছে।..”(অনেকটা খুশি হয়ে)
আমার কথা শুনে অয়নের মুখে হাসি ফুটে উঠে। আমি অয়নের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।আসলে আমি অয়ন কে যেমন ভেবেছিলাম অয়ন ঠিক তার উল্টো। অয়ন অনেক হাসি খুশি স্বভাবের ছেলে।আর তা আজই প্রমান ফেলাম।আমাকে এভাবে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে অয়ন আমাকে ভ্রু উছিয়ে কি জিজ্ঞেস করে।..
“কিছু না।আচ্ছা একটা কথা রাখবেন..????”
“হুমমম রাখার মতো হলে অবশ্যই রাখবো।…”(অয়ন)
“আমাকে প্রতিদিন ঘুরাতে নিয়ে যাবেন…????”
“খুশি হবে তাতে..?????(অয়ন)
“অনেক…!!!!!!!!!!!”(হেসে বলি)
অয়ন আমার চুলের মাঝে আলতো বিলি কেটে বলেন..
“তোমার মুখে হাসি ফুটানোর জন্য তোমার চোখে খারাপ হয়েছি। তোমার হাসি মাখা মুখ খানা দেখার জন্য যদি এতোটা দিন অপেক্ষা করতে পারি তাহলে এখন কেনো সামান্য এতোটুকু করতে পারবো না কেনো..????”
অয়নের কথা শুনে আমি হা করে তাকিয়ে আছি। উনার কথার আগা থে মাথা পর্যন্ত আমি কিছুই বুঝতে পারি নাই।
“মানে কিসের অপেক্ষা করেছেন আপনি।…???”(ভ্রু কুচকে)
“যদি বলি বিশ্বাস করবে…???”(অয়ন)
“বলেন….”
“আমি তোমাকে অনাক আগে থেকেই ভালোবাসি।প্রথম যেদিন তোমাকে দেখি সেদিনের কথা আমি আজও ভুলতে পারি নাই।সত্যি বলতে তুমি অনেক কিউট ছিলে তখন। প্রথম দেখাতেই তোমার প্রেমে পড়ে যাই আমি।সেদিনই আমাদের প্রথম দেখা। তারপর তুমি হঠাৎ হারিয়ে গেলে।যখন তোমায় খুজে পাই তখন আর কিছুই করার ছিলো না।প্রায় হারাতে বসি আমি তোমাকে।….”(অয়ন)
আমি অয়নের মুখের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি।বলে কি এই লোকটা। আমার তো এই কথা গুলো একদম বিশ্বাসই হচ্ছে না।আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অয়ন অনেক জোরে হেসে দেয়। উনাকে এভাবে হাসতে দেখে আমি ভাবছি আরও উনি পাগল হয়ে গেছে।…
“তোমাকে যে কেউ অনেক সহজেই বোকা বানিয়ে ফেলতে পারে বটে।আমি তো ভাবছি তুমি অনেক বুদ্ধিমান।এখন তো দেখছি পুরোই বোকা তুমি।আরে বাবা আমি তোমার সাথে মজা করছি।।।।”(অয়ন)
“ওই একদম আমাকে বোকা বলবেন না।আপনি যেভাবে বলছেন যে কেউ বলবে আপনি সত্যি সত্যি বলছেন।আর আমি কিভাবে বুঝবো যে আপনি মজা করছেন নাকি সিরিয়াসলি বলছেন।….”(ইনোসেন্ট ফেস করে)
আমার কথা শুনে অয়ন হেসে দেয়।তারপর আমরা দুজন আরও অনেক্ষন গল্প করি।অয়নের সাথে এখন কথা বলতে অনেক ভালো লাগে।এখন অনেক সুন্দর করে হেসে হেসে কথা বলেন।মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই উনার ব্যবহারে।

_____________________________

আমি রুমে এসে দেখি সিমি কান্না করছে।ওকে এভাবে কান্না করতে দেখে আমি অবাক হয়ে যাই।এতো হাসি খুশি মেয়েটার আবার কি হলো…..
“সিমি কি হইছে…????”
আমাকে দেখে ও দৌড়ে এসে জাপটে ধরে কান্না করতে থাকে।..
“কি হইছে..?????”
“আপু শিহাব ভাইয়া এসেছে।….(সিমি)
“তাতে কান্না করার কি আছে সেটাই তো বুঝতে পারচি না।..”
“বাবা আমার বিয়ে ঠিক করছে অন্য একটা ছেলের সাথে।ভেবেছিলাম আমার মনের কথা যেহেতু কেউ জানে না তাহলে কাউকেই জানাবো না।বাবার পছন্দ করা ছেলেই বিয়ে করবো।কিন্তু এখন উনাকে দেখে আমি আর নিজেকে সামলাতে পারচি না।”(সিমি)
ওর কথা শুনে আমার অনেক খারাপ লাগে..
“আচ্ছা আমি দেখছি।….”
বলেই আমি চলে আসি। নিচে এসে দাড়াতেই দেখি অয়নের বাবা অয়ন আর একটা ছেলে সোফায় বসে গল্প করে।আমাকে দেখেই অয়নের বাবা ডাকে। আমি গিয়ে একলা একটা সোফায় বসি।উনারা আবার কথা বলতে শুরু করে।..
“অয়ন তোমাকে যেটা বলছি কাল সিমিকে দেখতে আসবে আর আমাদের ছেলে পছন্দ হয়েছে।যদি ওরা সিমি কে পছন্দ করে তাহলে কালই আন্টি পরিয়ে যাবে।”(অয়নের বাবা)
আমি এতক্ষন শিহাব ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কথাটা শুনার পর উনার মুখ বিষন্নতায় চেয়ে যায়।এটা আমি খুব ভালো করেই খেয়াল করি।..
“ঠিক আছে বাবা।…(অয়ন)
অয়নের বাবা উঠে যেতেই আমি গিয়ে অয়নের কাছে গিয়ে বলি…
“আপনার সাথে আমার কথা আছে..”(আমি)
অয়ন আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে…
“আর ইউ সিউর…???”(অবাক চোখে)
“হুমমম…”(আমি)
“শিহাব তুমি একটু বসো আমি আসছি…”(অয়ন)
অয়ন আমার সাথে চলে আসে।…
“কি বলবে…???”(অয়ন)
“আমি যা বলবো শুনবেন..????”(আমি)
“আরে বাবা বলো..”(অয়ন)
“সিমি শিহাব ভাইয়াকে পছন্দ করে ওকে অন্য কারো সাথে বিয়ে দিবেন না প্লিজ।আপনার তো একমাত্র বোন ওর দিকে একটু নজর দিন.. “(আমি)
আমার কথা শুনে অয়ন অবাকের চরম সীমায়। মনে হচ্ছে আমার কথা উনি বিশ্বাস করছেন না।..
“তোমাকে কে বললো এ কথা।সিমি নিজে বলেছে..???”(অয়ন)
“জ্বি…”
“থ্যাংকইউ। আমি দেখছি কি করা যেতে পারে। আর হ্যা রেডি থাকবে দুই একদিনের মধ্যেই তুমি বাড়ি যাবে।আর কষ্ট দিতে চাই না তোমাকে।..(অয়ন)
অয়নের কথা শুনে আমি অনেক খুশি হয়ে যাই। ভাবতেই অবাক লাগছে যে আমি আবার বাড়ি যাবো।বাবা মা নিশ্চয় এখন ও আমার উপর রেগে নেই।এসব হাজারো জিনিষ আমি চিন্তা করচি…

চলবে কি…????????

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-০৫

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_০৫
#জান্নাতুল_বিথী

অয়নের ল্যাবটপে বড় বড় করে লেখা “Adi Khan”s information ” আর তার নিচেই আদির একটা ছবি। এটা দেখে আমি চোখ বড় বড় করে অয়নের দিকে তাকাই। আমাকে এভাবে তাকাতে দেখে অয়ন নিজেও ওই দিকে তাকায়।উনাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে উনি বেশ ঘাবড়ে গেছে।…

“আদির information দিয়ে আপনি কি করবেন।…???”(আমি)

“আ-ম আসলে দেখছিলাম কেমন ছেলের সাথে তোমার বিয়ে হচ্ছে।”(অয়ন)

“সেটা দেখার জন্য তো আমার বাবা মা আছে।তাহলে আপনি দেখছেন কেনো..???”(ভ্রু কুচকে)

“দেখো তোমাকে আমি সব প্রশ্নের উত্তর দিকে বাধ্য নয়।আর এতো প্রশ্ন করা আমি পছন্দ করি না।(অয়ন)

বলেই আমার পাশ দিয়ে গটগট করে নিচে চলে যায়। কি ছেলেরে বাবা। হঠাৎ আমার মনে হলো একবার ভেতরে গিয়ে দেখলে কেমন হয়।অয়ন যেহেতু এখানে নেই।তাহলে আমি বরং একবার গিয়ে দেখে আসি অয়ন আদির ব্যাপারে কি জানতে চায়। যে ভাবা সেই কাজ।আমি অয়নের রুমে যাবো এমন সময় সিমি আমাকে ডাক দেয়। তারপর ওই দিকে না গিয়ে সোজা নিচে যেতে শুরু করি। মাঝে মাঝে এটা মনে হয় যে ওরা পুরো ফ্যামিলি আমার পেছনে পড়ে আছে।উফফফ ভাবতেই বিরক্তি লাগছে। কিন্তু অয়নের মা বাবা সিমি ওরা পুরোই অয়নের চাইতেও ভিন্ন। অয়ন তো পুরোই ঘোমড়া মুখো। কারো সাথে একটু সুন্দর করে কথাও বলে না। অবশ্যই সেটা মনে হয় শুধু আমার বেলায়। আর নয়তো সবার সাথেই সুন্দর করে কথা বলে।

___________________________

“সামান্য একটা মেয়ে কে তোমরা খুজে পাচ্ছো না আজ ৩ দিন ধরে।ভাবা যায় এসব গর্দভের দল। তোমাদের এতো টাকা করে কেনো দেই আমি।…???”(……..)

“স্যার আমরা অনেক খুজেছি কিন্তু মেম কে কোথাও পাই নাই। এখন কমন জায়গার মধ্যে শুধু অয়ন চৌধুরি দের বাড়ি বাকী আছে।”.(অপর পাশে)

” ওদের বাড়িতে খোজার দরকার নেই।অয়ন চৌধুরি নিজের বাবাকে যথেষ্ট পরিমানে ভয় পায়।আর এভাবে একটা মেয়েকে লুকিয়ে বিয়ে করে কখনোই নিজের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার মতো বোকামি ওই ছেলে করবে না।”(……….)

“ওকে স্যার আমরা উনাকে খুজে বের করার চেষ্টা করবো।..”(অপরপাশে)

“দিয়া হলো আমার সোনার ডিম।ওকে কখনোই হাত ছাড়া করা যাবে না।ওর যতো বিয়েই হোক না কেনো আমার ওকে চাই ই চাই।…”(……….)

বলেই ফোনটা কেটে দেয়। আর সাথে সাথে ফোনটা চুড়ে ফেলে দেয় মেঝেতে। অন্ধকার রুমে জোরে জোরে পায়চারী করতে থাকে। হঠাৎ কারো স্পর্শে চমকে উঠে ওই দিকে তাকায়।…

“কি হইছে তোমার ভাইয়া….????”(……)

“আমার কিচ্ছু ভালো লাগছে না।দিয়াকে এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায় নাই। আমি…..”(…..)

“কুল ভাইয়া এমন করছো কেনো। ওর খবর তো আমি পেয়ে গেলাম…(…..)

“সত্যি…???কোথায় ও…???”(…..)

“রিল্যাক্স ভাইয়া। দিয়া এখনও অয়ন চৌধুরির সাথেই আছে।কিন্তু কোথায় আছে সেটা এখনও জানতে পারি নাই।”.(…….)

“কিভাবে জানলে তুমি এসব…..???”(….)

“উফফ ভাইয়া সব কাজ কি তুমি একাই করবে নাকি।আমাকেও একটু করতে দাও। “(শয়তানি হাসি দিয়ে)

_________________________

বিকেল বেলা……

অয়ন আমার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। আর আমিও বাধ্য মেয়ের মতো উনার পেছনে পেছনে হাটতেছি। কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে নিজেও জানিনা। গাড়ি থেকে নামার পর প্রায় ১০ মিনিট ধরে হাটতেছি।এখনও পর্যন্ত থামার কোনো নাম গন্ধও নেই। আমার পা আর চলে না।তাই দাড়িয়ে পড়লাম। আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে অয়ন পেছনে ফিরে ভ্রু কুচকে তাকায়….

“কি হলো…???”(অয়ন)

“আমি আর হাটতে পারছি না।কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে……”(হাপাতে হাপাতে)

আমাকে এভাবে হাপাতে দেখে অয়ন হেসে দেয়। উনাকে এভাবে হাসতে দেখে আমি উনার দিকে তাকিয়ে থাকি।আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অয়ন ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে কি….???

” কিছু না… “(আমি)

“ওহহহহ ঠিক আছে চলো এখন। আর অল্প একটু আছে।.

বলেই আবার হাটতে শুরু করে।..

“কোথায় যাচ্ছি আমরা..????(আমি)

“গেলেই দেখতে পাবে…”

“দেখেন ভালো হচ্ছে না কিন্তু।একে তো আমাকে জোর করে এখানে আনলেন তার উপর এখন কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন তা বলছেন না।…”

“কি প্রমান আছে যে আমি তোমাকে জোর করে এনেছি…????”

“কিহহহহহ এখন আপনাকে প্রমান দিতে হবে..????”

“হুমমমম কেনো নয়। ”

“অবশ্যই আপনি তো আইনের লোক আপনারা প্রমান ছাড়া কিছুই বুজেন না।হলেও হতে পারে।”(বিরবির করে)

“কিছু বলছো……”

উনার কথা শুনে হঠাৎ আমি থমকে যাই। এতক্ষন অয়নের সাথে কথা বলতে বলতে আসার কারনে আমি চারদিকে খেয়াল করি নাই। কিন্তু এখন আমি কথা বলার ভাষাই হারিয়ে ফেলেছি। একটা নদীর ধারে আমরা দাড়িয়ে। নীল আকাশের ফানে চারদিকে সবুজ গাছপালা। আর আমরা কাশফুলের মাঝখানে দাড়িয়ে আছি। বাতাশের কারনে কাশফুলের ক্ষুদ্র কনা গুলো উড়ে যাচ্ছে। আর একদিক থেকে অন্য দিকে হেলে পড়ছে।যা প্রকৃতির দৃশ্যকে আরও মনোরম করে তুলছে।আমি শুধু মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছি। আমার ঠোটের কোনে হাসি ফুটে উঠে। আমি দৌড় দিয়ে আরও মাঝখানে চলে যাই। বাতাশের কারনে আমার অবাধ্য চুল গুলো বারবার মুখের উপর আছড়ে পড়ছে। কিন্তু সেদিকে আমার কোনো খেয়াল নেই। আমি দুহাত মেলে শ্বাস নেই।আমার সাথে যে আরও কেউ আছে তা যেনো আমি ভুলেই গেছি। অনেক্ষন মন খুলে হাসি আমি। নিমিষেই চারপাশের সব কথা ভুলে যাই আমি।

অন্যদিকে….
অয়ন…..

আমি মুগ্ধ নয়নে দিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।সত্যিই ওকে হাসলে এতটা মায়াবি লাগে যে ওর দিক থেকে চোখ সরানো যায় না। কেনো যে এই মেয়েটা হাসে না আল্লাহই জানে।সামান্য ওর মুখে হাসি ফোটানোর জন্যই তো এতোকিছু। আমার সব কিছু সার্থক হলো এবার। আমি আস্তে আস্তে দিয়ার দিকে এগিয়ে যাই।ওকে এই মুহূর্তে কেউ দেখলেই বলবে এতো ফুলের মাঝে একটা নীল পরী দাড়িয়ে।…

“তোমার মুখের এই হাসিটার মাঝেই যে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। কিন্তু তুমি তো কখনোই হাসতে জানো না।এবার থেকে সব সময় নিজের মুখে এই হাসি টা যত্ন করে লাগিয়ে রাখবে…..”(আলতো হাতে মুখের উপর থেকে চুল গুলো সরিয়ে)

চলবে……..

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-০৪

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_০৪
#জান্নাতুল_বিথী

“দিয়া তোর হবু বর না অনেক কিউট।”(মিলি)

“ইয়া আল্লাহ এই শাকচুন্নি তো এখন বকবক করতেই থাকবে।কুত্তি তো আর এটা জানবে না যে এখন ও কার সামনে কথা বলছে।এখন আমি কি করি।”(মনেমনে)

“ওই কিরে অন্য সময় হলে তো বক বক করে আমার মাথা নষ্ট করে দিতেও তোর কষ্ট লাগতো না। তাহলে এখন এতো চুপ করে আছত কেনো দোস্ত।জিজু তোর উপর কোনো জাদু করে নাই তো।..???”(মিলি)

আমি একবার অয়নের দিকে আড় চোখে তাকিয়ে ফোন নিয়ে বেলকনিতে চলে আসি। এতক্ষন যতো কিছু বলছে সব কিছু এখন সুদে আসলে গুনে হিসাব নিতে হবে।এতক্ষন অয়ন সামনে ছিলো কারনে কিছু বলতে পারি নাই।কিন্তু এখন তো ইচ্ছে মতো দোলাই দিতে পারবো।

“তুই একটু দয়া করে চুপ করবি।কি সেই কখন থেকে জিজু জিজু করচ।তোর যদি জিজুকে এতোই পছন্দ হয় তো আমাকে বল প্যাকিং করে তোর কাছে পাঠিয়ে দেই।..(ধমক দিয়ে)

আমার ধমক শুনে মিলি চুপ করে যায়।আমতা আমতা করে বলতে থাকে..

“এতো রেগে যাচ্ছো কেনো কলিজা।জাস্ট একটু তো মজা করলাম।জানচ দিয়া আমি কতো লাকি সকল মেয়েদের ক্রাশ অয়ন চৌধুরি আমার জিজু।আহা ভাবতেই লুঙ্গি ডান্স দিতে ইচ্ছে করে।..”(মিলি)

“আপনার যদি জিজুর সুনাম করা শেষ হয় তাহলে যার জন্য ফোন করেছি সেটা বলা যাক…???(বিরক্তি মাখা কন্ঠে)

“ওহহহ সরি সরি হু এবার বল।..”(মিলি)

“তোকে জিজ্ঞেস করছি বাড়ির কী অবস্থা..??? “(আমি)

“হ্যা তুই ভালো কথা মনে করচত।আন্টি আংকেল অনেক কান্না করছে।তুই চলে যাওয়ার পর আংকেল নিজেই বলেছিলো।উনি যদি একবার তোর কথা শুনত। হয়তোবা তুই এমন কিছুই করচ নাই।আর যদিও করে থাকচ তাহলে হয়তোবা ট্রাফে পড়ে এমন করচত।এখন আংকেল তোকে খুজতেছে। তুই কোথায় বল আমাকে।আমি গিয়ে তোকে নিয়ে আসি।নয়তো আংকেলকে বলব তোকে আনার ব্যবস্থা করতে।..”(মিলি)

মিলির কথা শুনে অজান্তেই আমার মুখ দিয়ে দীর্যশ্বাস বেরিয়ে আসে।..

“এখন যা হবার হয়ে গেছে।যাই হোক আমি এখন…….”

কথা শেষ না করতেই অয়ন আমার কাছ থেকে ফোন নিয়ে যায়। ফোন কেটে আমার দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে বলে….

“দিয়ুপাখি তুমি ভুলে যাচ্ছো আমি তোমাকে কি বলেছিলাম।বলছি না যে যতোদিন আমি চাইবো ততোদিন তুমি এখানেই থাকবে।তার আগে যদি এখানে থেকে যাওয়ার চেষ্টা করো বা কাউকে এই বাসার ঠিকানা দাও তো অনেক খারাপ হয়ে যাবে। তখন বুঝবে এই অয়ন চৌধুরি কতো টা খারাপ।মাইন্ড ইট।….”(রাগী লুক নিয়ে)

বলেই রুমের ভেতরে চলে যায়। আমি ওই খানেই দাড়িয়ে আছি। এই লোকটা কেনো আমার সাথে এমন করছে সেটাই তো বুঝতে পারছি না।

________________________

দুপুরে লাঞ্চ করার জন্য নিচে আসতেই সিমি আন্টিকে হেল্প করার জন্য চলে যায়।…

“আন্টি আমি কি একটু হেল্প করবো।…??”(আমি)

“সে কি মা এটা কি বলছো তুমি।তুমি আমাদের মেহমান। তুমি কেনো কাজ করতে যাবে। ওকে যদি হেল্প করতে চাও তাহলে গিয়ে একটু অয়নকে ডেকে নিয়ে আসো।..(অয়নের মা)

কথায় আছে না যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধা হয়।এখন আমার অবস্থা ও সেইম হলো।কেনো যে হেল্প করবো বলতে গেলাম।এখন নিজের কথার জালে নিজেই ফেসে গেলাম। এসব ভাবতে ভাবতেই অয়নের রুমের সামনে গিয়ে কাপা কাপা হাতে নক করি।….

অয়ন….

“কি কাজ করতে পারো তোমরা।একটা কাজও কখনো ঠিক মতো করো না।কিভাবে একটা পুচকির মুখ থেকে তোমরা কথা বের করতে পারো না।পালিয়ে যায় কিভাবে তোমাদের মতো অপদার্থের দল গুলো থাকতে।…???”(অনেক জোরে চিৎকার করে)

আমি ফোনে কথা বলতে বলতে একটাই রেগে যাই যে ইচ্ছে করছে সব গুলোকে মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলতে।হঠাৎ দরজায় কেউ নক করায় আমি ফোন কেটে ওই দিকে যাই। রুমটা সাউন্ডপ্রুফ হওয়ার কারনে বাহিরে কেউ থাকার সত্ত্বেও কিছু বুঝতে পারে নাই। এমনিই অনেক রেগে আছি তার উপর এখন অসময়ে আমাকে বিরক্ত করছে ভাবতেই মুখে বিরক্তির আভা ফুটে উঠে। বিরক্তি মাখা মুখ নিয়ে দার খুলতেই আমি হা হয়ে যাই। আমার সামনে দিয়া দাড়িয়ে। ব্ল্যাক স্কার্ট,সাথে হোয়াইট কালারের টপস,গলায় ওড়না জড়ানো,চুল থেকে টপ টপ করে পানি পড়ছে,মুখে কোনো রকমের মেকাপ নেই।তারপরও ওর থেকে চোখ সরানো দায় হয়ে পড়ে।আমি কখনোই দিয়াকে এভাবে দেখি নাই। আমি ভাবছি মেকাপ ছাড়াও একটা মেয়েকে কতোটা সুন্দর লাগতে পারে তা দিয়াকে না দেখলে হয়তো বুঝতেই পারতাম না। কিন্তু আমার একটাই কষ্ট এই পর্যন্ত ওকে একটা বারও হাসতে দেখি নাই।এমনকি ওকে আমি কখনোই হাসতে দেখি নাই।প্রথম যেদিন দেখেছিলাম ওই দিন ও ওর হাসি মাখা মুখ খানা দেখতে পারি নাই। আচ্ছা এই মেয়েটা কি কখনো হাসতে জানে না।….

অন্যদিকে….

আমি সেই কখন থেকে দাড়িয়ে আছি অথচ অয়ন দার খুলে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়েই আছে।তাতে আমার একটুও ভালো লাগছে না। অসম্ভব অস্ততি লাগছে। আমি একটু নড়ে চড়ে দাড়াই।তারপরও অয়নের চোখের পলক পর্যন্ত পগে নাই।উপায় না পেয়ে আমি উনার মুখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলি….

“এই যে অয়ন আপনাকে খেতে ডাকছে।….(আমি)

” তোমার মুখে আমার নাম টা অনেক সুন্দর মানিয়েছে। এমন আবেগ মাখা কন্ঠে ডাকলে যে পাগল হয়ে যাবো।…”(অয়ন)

অয়ন এমন ভাবে কথা বলছে মনে হচ্ছে উনি এই পৃথীবিতে নেই।উনার দেহটা এখানে ঠিকই কিন্তু মন হয়তো অন্য জায়গায়। আর উনার মুখে এই ধরনের কথা শুনে তো আমি পুরোই শকড।

“এই সব কি বলছেন আপনি নিজে জানেন…????”( হালকা ধাক্কা দিয়ে)

ধাক্কা খেয়ে অয়ন কল্পনার জগৎ থেকে ফিরে আসে।..

“কি-কি জানবো।….???”(অয়ন)

” আজব তো…???”(আমি)

“হোয়াট…???? “(অয়ন)

“কিছু না।আপনাকে খে…….”

এতো টুকু বলার পর আমার মুখ থেকে আর কথা বের হচ্ছে না।আমার চোখ যায় অয়নের খাটের উপর রাখা ল্যাপটপের স্কিনে। যেখানে বড় বড় করে লেখা আছে……

চলবে কি…………..?????

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-০৩

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_০৩
#জান্নাতুল_বিথী

“আমি বাড়ি যাবো!!!!”

“তো আমি কি করবো।…???”

“আপনি কি করবেন মানে। আমাকে যেখান থেকে এনেছেন সেখানে গিয়ে দিয়ে আসুন। ”

কথাটা বলার সাথে সাথে অয়ন আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।আমি ও উনার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি। আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে উনি বলেন..

“তোমার বাবা মা এখন আর তোমাকে সহ্য করতে পারবে না। গিয়ে লাভ নেই। আর তাছাড়া যে বাবা মা নিজের মেয়ের উপর ভরসা করতে পারে না সামান্য এতো টুকুতেই বিশ্বাস ভেঙ্গে ফেলে সেই বাবার কাছে ফিরে যেতে চাইছো তুমি।…???”(অয়ন)

“হ্যা চাইছি তার কারন তারপর ও উনারা আমার বাবা মা। আর এই সব কিছুই আপনার জন্য হয়েছে। কেনো এমন করছেন আপনি।বুঝি না কি এমন ক্ষতি করেছি আমি আপনার।আমি তো আপনাকে চিনিও না।তাহলে কেনো এমন করলেন আমার সাথে।…???”

“কেনো মেডাম আমার বউ হতে বুঝি ইচ্ছে করে না। আমি কি তোমার উটবি হাজবেন্ট এর চাইতেো খারাপ দেখতে।….???(অয়ন)

কথাটা শুনে আমি অয়নের দিকে ভালো করে তাকাই।একদম ফর্সা,মুখে খোচা খোচা দাড়ি,ব্ল্যাক টি-শার্ট, চুল গুলো স্পাইক করা হাতে ব্যান্ডের ঘড়ি আর মুখে হালকা হাসি যার মধ্যে কোনো কৃত্বিমতা নেই। এক কথায় যে কোনো মেয়ে এক দেখায় তার প্রেমে পড়ে যাবে।আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অয়ন আমার মুখের সামনে তুড়ি বাড়িয়ে বলে।..

“এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো প্রেমে পড়ে যাবে তো।”

উনার কথা শুনে আমি ভেংচি কাটি।আমাকে ভেংচি কাটতে দেখে অয়ন হাসতে থাকে।

“দেখো কি সুন্দর সবাই তোমাকে আমার বউ বলছে তাহলে মেনে নাও না গো।..”(চোখ মেরে)

অয়নের এই কথাটা শুনে আমার কিছুক্ষণ আগের কথা মনে পড়ে যায়। যখন ওই মহিলাটা বলেছিলো আমি কি অয়নের বউ নাকি। তখন সাথে সাথে অয়নের বাবা বলেছিলো।..

“হ্যা ও আমার পুত্র বধু।কেনো অয়নের পাশে কি দিয়া কে মানায় নাই…??”(অয়নের বাবা)

“অনেক সুন্দর মানিয়েছে দুজন কে। এমন লক্ষী মেয়ে হাজারে একটা।অনেক ভালো লাগলো।”

আমি তো হা করে তাকিয়ে ছিলাম।বলে কি উনারা। ইয়া আল্লাহ। তারপর অয়ন নিজের রুমে চলে আসে। আমিও রুমে এসে কিছুক্ষণ পায়চারি করে চাদে চলে যাই। গিয়ে দেখি অয়ন ছাদে বসে কফি খাচ্ছে।

বর্তমানে…..

“আমার বয়েই গেছে। দেখেন আমার ভার্সিটি যেতে হবে।আর তাই বাড়ি যাবো।”(আমি)

“তোমার যদি এখন বিয়ে হয়ে যেতো তাহলে কি তুমি ভার্সিটিতে যেতে পারতে।..????”(অয়ন)

“কিন্তু এখন তো আমার বিয়ে হয় নাই। বিয়ে হলে ভেবে দেখতাম।!!!”(আমি)

“তুমি এই বাড়িতে ততোদিন থাকবে যতোদিন আমি চাইবো।..”(অয়ন)

“কেনো এমন করেন আমার সাথে কি করেছি আমি আপনার।যদি কোনো ভুল করে থাকি তাহলে ক্ষমা চাচ্ছি তারপর ও এমন করবেন না প্লিজজ???”(আমি)

“আমি এতো কথা শুনতে চাই নাই। বেশি কথা আমি একদম আমি পছন্দ করি না।”

“আজব তো আমি আমাকে কেনো আনলো এখানে বা যদি বলি বাড়ি দিয়ে আসতে এই ধরনের কথা বললে ইগনোর করে কেনো এই লোকটা..??(মনে মনে)

কথাটা বলেই অয়ন আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।আমার এই মুহূর্তে এতো রাগল
লাগে যে ইচ্ছে করছে এই ছেলেটার ঘাড় মটকে দেই। এই ছেলে নাকি সিবিআই অফিসার তাহলে মেয়েদের সম্মান করতে জানে না…??আচ্ছা এই ছেলেটা তো একজন সিবিআই অফিসার তাহলে কি আমাকে এখানে আনার পেছনে তার কোনো কারন আছে।..?? আন্টি যে বললো আমার ভালোর জন্যই আমাকে এখানে এনেছে তাহলে কি তাই সত্যি…?? উফ কিছুই ভাবতে পারছি না।মাথাটা প্রচুর ব্যাথা করছে।

________________

“সিমি আমি একটা ফোন করবো তোমার ফোনটা একটু দিবে।…???”(আমি)

আমার কথা শুনে সিমি আমার দিকে ইনোসেন্ট ফেস করে বলে।…

“আপু দিতে তো কোনো সমস্যা নেই।কিন্তু ভাইয়া যদি আমাকে বকা দেয় তাহলে কি হবে। ভাইয়া তোমাকে মোবাইল দিতে নিষেধ করছে??”(সিমি)

“আরে ধুর কিছু বলবে না তুমি দাও।…”(আমি)

“আপু প্লিজজজজজ।..”

“আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে এটা বলো যে তোমার ভাইয়া কি ঘরে আছে।….???”

“হু কেনো…???”

“কাজ আছে।কোন দিকে রুম…???”

“ডানদিকে গিয়ে ২ য় রুম টা।কেনো কি করবে বলো না আপু।”

আমি কিছু না বলেই বের হয়ে যাই।আর সোজা গিয়ে উনার রুমের সামনে দাড়াই।যতোই সাহস নিয়ে আসি না কেনো এখন অনেক ভয় লাগছে। এই ছেলেটা নাকি অনেক রাগী। কিছু বললে যদি আমাকে লকাফে ডুকিয়ে দেয় তাহলে কি হবে।..???”দাড়িয়ে দাড়িয়ে আমি এসব ভাবছি। অতঃপর সিদ্বান্ত নেই রুমেই যাবো না।যেই ভাবা সেই কাজ।আমি ফিরে আসবো তখনই..

” চোরের মতো ওইখানে দাড়িয়ে কি দেখছো।চাইলে ভেতরে আসতে পারেো।…”(অয়ন)

হঠাৎ এই কথায় আমি চমকে উঠে। দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখি দরজা ভেড়ানো।তাহলে আমাকে দেখলো কিভাবে।…?এসব ভেবেই ভেতরে যাই আমি। গিয়ে দেখি অয়ন ল্যাপটপে কাজ করছে।

“আচ্ছা আমি আসছি সেটা আপনাকে কে বললো।…???”(আমি)

“এখানে আমি আর তুমি ছাড়া কাউকে দেখছি না। তাহলে কে বলবে।…(গম্ভীর কন্ঠে)

অয়নের কথা শুনে আমি চুপ হয়ে দাড়িয়ে আছি।

“কোনো দরকার।..???”(অয়ন)

“আসলে ইয়ে মানে।…(কাপা কন্ঠে)

“আসলে ইয়ে মানে এর কোনো মানে হয় না.যা বলবে সোজা বলো।”

“তোর মাথা বলবো ইডিয়েটা ছেলে।(মনে মনে)

“আসলে আমি একটা ফোন করবো।”

কথাটা বলার সাথে সাথে অয়ন নিজের ফোন বের করে বলে।…

“নাম্বার বলো।…”(অয়ন)

উনার কথা শুনে তো আমি অবাকের চরম সীমায়। আমি কখনোই ভাবি নাই যে অয়ন এতো তাড়াতাড়ি আমাকে ফোন দিতে দিয়ে দিবে।যাই হোক এতো কিছু ভেবে আমার কাজ কি।….???

“01823*****2।(বাকী গুলো নিজ দায়িত্বে দিয়ে ফোন করবেন।-লেখিকা😁)

অয়ন ফোন করে লাইড স্পিকারে দিয়ে আমার হাতে দেয়।এবারে আমি তার চাল বুঝতে পেরেছি।বেটা বজ্জাত আমি কি বসে বসে প্রম করবো নাকি তোর ফোন দিয়ে।আমার বয়েই গেছে।

“আসসালামুআলাইকুম।কে গো আপুনি…??”(মিলি)

“বান্ধুবি আমি দিয়া।….”

“ওই হারামি তুই আমাকে একদম ফোন করবি না।কেমন বেষ্ট ফ্রেন্ড আমি তোর যে তুই আমাকে একটা বারও এই কথাটা বলতে পারলি না।..???”

“মিলি প্লিজজ বিশ্বাস কর আমি এসবের…….

এতোটুকু বলার পর অয়ন আমার দিকে কটমট চোখে তাকায়।যার মানে এসব যেনো না বলি।

“আসলে হয়েছে কি সব কিছু এতো তাড়াতাড়ি হলো যে তোকে বলার সময়ই পাই নাই।”(আমি)

“ওহহহ তাই বুঝি।..??হ্যা অবশ্যই সময় না থাকারই কথা। আমার জিজু তো অয়দনেক হ্যান্ডসাম। তো উনাকে সময় দিতে দিতেই তো আপনার সময় পুরিয়ে যায়।আমাদের আর কি ভাবে সময় দিবেন।???”

“কুত্তি চুপ করবি তুই।..???এটা বল যে বাড়ির কি অবস্থা।….??? ”

চলবে…….

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-০২

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_০২
#জান্নাতুল_বিথী

বেলকনিতে দাড়িয়ে চোখের পানি ফেলেই যাচ্ছি। কিছুতেই ভুলতে পারছি না এসব। আর কেনো এমন হলো আমার সাথে তাও বুঝতে পারছি না। আন্টি বললো ভালো কিছু নাকি হতে চলেছে আমার সাথে।তাহলে ভালোর কিছুর পরিনাম বুঝি এমন। কেনো এমন হচ্ছে আমারর সাথে। আমার মা বাবা আমাকে ভুল বুঝলো এটা ভাবতেই বেশি কষ্ট হচ্ছে। হঠাৎ ঘাড়ে কারো স্পর্শ পেয়ে পেছনে ফিরে দেখি সিমি দাড়িয়ে আছে।

“এভাবে কাদছো কেনো আপু।..?”(চোখের পানি মুছে দিয়ে)

“এমনিই ভালো লাগছে না।”

” আচ্ছে ভেতরে আসো তাহলে।

বলেই আমাকে এক প্রকার টেনে রুমে নিয়ে গেলো। আমার সামনে খাবারের প্লেট ধরে বলে…

“আজ সারা দিন মনে হয় কিছুই খাও নাই।এখন লক্ষী মেয়ের মতো চুপটি করে খেয়ে নাও।”(সিমি)

“এতো কিছু হয়ে যাওয়ার পর ও বলছো যে খেয়ে নিতে..??(অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে)

“আপু প্লিজ খেয়ে নাও। তুমি যদি এখন না খাও তাহলে ভাইয়া আমাকে বকা দিবে। আর তাছাড়া কবি বলেছে সব কিছুর উপর রাগ করো তবে খাবারের উপর রাগ করা ভালো না।”(সিমি)

“আমি রাগ করি নাই শুধু এটাই বলতে চাইছি যে এখন আমার গলা দিয়ে কিছুই নামবে না।”

“উফফফ তুমি ও না। ”

বলেই আমাকে খাইয়ে দিতে শুরু করে। এমন আদর কে মিস করতে চাই নাই। তাই আমিও খেতে শুরু করি।

________________

আমাকে ড্রপ করে দেওয়ার পর অয়ন এখনও বাড়ি ফিরে নাই। রাত ১১ টা বাজতে চলেছে।অথচ আমাকে ড্রপ করে দিছে বিকালে। এসব চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।হঠাৎ আমার মনে হলো আমি অয়নের কথা ভাবছি কেনো।যার জন্য আমাকে আজ এতো কষ্ট পেতে হচ্ছে। জাহান্নামে যাক ও। আমার তাতে কিচ্ছু যায় আসে না।আমার পাশেই সিমি শুয়ে আছে।ওর দিকে তাকিয়ে দেখি ও কারো সাথে চেটিং করতে ব্যস্ত।আমাকে ওর দিকে ফিরতে দেখে সিমি আমার দিকে তাকিয়ে বলে।…

“কিছু দেখো নাই তো আপু।”(মুচকি হেসে)

“হুমমম ছেলে টা কে।..???”

“ছেলে..???কোন ছেলে..???কোথা কার ছেলে।..??”

“ওহহহ ওকে বলতে হবে না।কালকে আন্টিকে বলবো আন্টি সিমি আপু রাত জেগে একটা ছেলের সাথে চেট করে।কথা বলে।ইত্যাদি ইত্যাদি।(চোখ মেরে)

“ইয়া আল্লাহ। আপু তুমি তো দেখছি ভাইয়ার থেকেও বড় ব্ল্যাকমেইলার।”(চোখ বড় বড় করে)

ওর কথা শুনে আমি অনেক জোরে হেসে দেই।

“তোমাকে হাসলে অনেক সুন্দর লাগে। এখন থেকে সব সময় হাসি খুশিই থাকবে।কেমন..???”

ওর কথা শুনে আমি হাসা বন্ধ করে ওর মুখের দিকে তাকাই।আর মাথা নেড়ে হ্যা সম্মতি জানাই।

“এখন তাড়াতাড়ি বলো ছেলেটা কে।..???”

“বলবো একটা শর্তে।”

” কিসের শর্ত।..???”

“আমি তোমার ছোট তাই তুমি আমাকে আমার নাম ধরেই ডাকবে।মানে সিমি বলেই ডাকবে কেমন…????”

“ওকে মেডাম। এবার বলেন।..”

“ওর নাম শিহাব। ভাইয়ার সাথেই চাকরি করে। ভাইয়া আর ও দুজনেই সিবিআই অফিসার। আর যেহেতু দুজনেই বন্ধু তাই ওই ভাবেই আমার সাথে পরিচয়। আমি ওকে ভালোবাসি কিন্তু কোনো দিন বলতে পারি নাই। এখন কথা বলছি ভাইয়া বলছে আমাকে জানিয়ে দিতে যে ওর আসতে একটু লেট হবে।আর তা নিয়েই কথা বলছি। ”

“ওহহহহহহহ।”

এভাবে আমি আর সিমি আরও অনেক্ষন কথা বলি।আসলেই মেয়েটা অনেক মিশুক প্রকৃতির। সহজেই সবার সাথে মিশে যায়। আমার সাথে যেভাবে হেসে হেসে কথা বলছে কেউ দেখলে বলবে নিশ্চয় অনেক বছরের পুরোনো সম্পর্ক।কেউই বলবে না আমি ওদের বাসায় নতুন এসেছি আর ওর সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।

_____________________

সকালে…..

আমি আর সিমি কথা বলতে বলতে নিচে আসি। এসে দেখি আন্টি রান্না ঘরে রান্না করছে। অয়ন সোফায় বসে এক ধ্যানে কাজ করছে। এই ছেলেটা সারাদিন শুধু কাজ করে। কি কাজ করে আল্লাহই জানে । আর অয়নের পাশেই একজন ভদ্র লোক বসে পেপার পড়ছে। মনে হচ্ছে অয়নের বাবা। আমাদের আসতে দেখে মিমি(কাজের মেয়ে) বলে।..

“আপা আপনাগো লাইগাই অপেক্ষা করতাছি। আপনেরা খাইতে আসেন।(মিমি)

ওর কথা শুনে সবাই চোখ তুলে একবার আমাদের দিকে তাকায়। তারপর সবাই এসে ডাইনিং এ বসে। আমার একপাশে সিমি আর বিপরীত পাশে অয়ন খাইতেছে। আর একটু পর পর আমার দিকে আড় চোখে তাকায়।

“তোমরা ভাই বোন কয় জন।…???”(অয়নের বাবা নরম গলায় বলে)

আমি উনার দিকে একবার চোখ তুলে তাকিয়ে বলি…

“আমার কোনো ভাই বোন নেই আমি একাই। ”

“ওহহহহ তাহলে তো দেখছি সবার আদরের।”(মুচকি হেসে বলে)

উত্তরে আমি শুধু মুচকি হাসি।

“অয়ন তোমার কাজ কতোটুকু এগিয়েছে…??”

“বাবা মাত্র তো শুরু করলাম। জানিনা কোনদিন সব কিছু সামনে আনতে পারবো। ”

” মন দিয়ে সুন্দর করে করো।একটা ভুল করলেই কিন্তু সব শেষ হয়ে যাবে। তোমাদের একটা ভুলের মাশুল কিন্তু অন্য কাউকে দিতে হবে। ”

উত্তরে অয়ন কিছু বলে নাই। মাথা নেড়ে হ্যা সম্মতি জানায়।আমি হ্যাবলার মতো উনাদের দিকে তাকিয়ে আছি। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছি না। কি এমন কাজ যে একটু ভুল হলেই এতো বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।এমন সময় একজন মহিলা আসে। এসে কারো সাথে কোনো কথা না বলেই ডিরেক্টলি আমার দিকে একবার আড় চোখে তাকিয়ে বলে।…

“রানী আপা (অয়নের মা) এই মেয়েটা কে। আমাদের অয়নের বউ নাকি।…???”

খাবার শেষ করে অয়ন চলে যাচ্ছিলো।এমন কথা শুনে থমকে দাড়ায়।আর হঠাৎ আমি এই কথা শুনে আমি বিষম খেয়ে যাই।

চলবে কি…….????

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-০১

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#সুচনা_পর্ব
#মায়াবিনী_জান্নাত_বিথী

জানালার ধারে বসে একাধারে কান্না করেই যাচ্ছি আমি।একটু আগেই আমার বিয়ে ভেঙ্গে গেছে। তাতে আমার তেমন কোনো আপসোস নেই।আমার কান্নার আওয়াজে আমার পাশে বসা ছেলেটা মানে যার জন্য আমার বিয়ে ভেঙ্গে গেলো সে বিরক্তি মাখা কন্ঠে বলেন।..

” এই মেয়ে একদম কান্না করবে না। উফফ মাথা টা ব্যাথা করে দিলো।”

“কেনো এমন করলেন আপনি।কি ক্ষতি করেছি আমি আপনার। যার জন্য এমন করলেন।..??? (চিৎকার দিয়ে)

“ওরে বাবা। একটা বিয়েই তো ভেঙ্গেছে তাতে এতো কান্না করার আর চিৎকার করার কি দরকার। আজিব।”

“বিয়ে ভেঙ্গে যাক তাতে আমার কিছুই আসে যায় না। শুধুমাত্র আপনার জন্য আজ আমার পরিবার আমাকে অবিশ্বাস করছে। আর আপনি আমার কোন জনমের স্বামী লাগেন হুমম।..???”

আমার কথা শুনে উনি মুচকি হাসেন। আর ড্রাইভ করায় মনোযোগ দেয়।কিন্তু কোনো উত্তর দেয় না। আমার বুঝা হয়ে গেছে যে উনি আমাকে উত্তর দিবে নাকি দিবে না। তাই আমি আবার জানালা দিয়ে মুখ বের করে একটু আগেই আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা টা মনে করছি।

আমি দিয়া রহমান। এবার অনার্স ২ য় বর্ষের ছাত্রী। বাবা মায়ের একমাত্র আদরের মেয়ে। আমি একটু দুষ্টু হলেও ৯৯% ভালো। আমার বাবা বিজনেস করে। আর আজ আমার বিয়ে ছিলো। যদিও আমি বাবাকে বলেছিলাম বিয়ে করবো না। আগে পড়া লেখা কমপ্লিট করবো তারপর বিয়ে।কিন্তু কে শুনে কার কথা।বাবার একটাই কথা বিয়ের পর ও পড়ালেখা করা যাবে। আর ছেলে নাকি অনেক ভালো। আরও কতো কি।শেষে উপায় না পেয়ে রাজি হয়ে যাই। যার সাথে আমার বিয়ে তাকে আমি একটি বারের জন্যও দেখি নাই।মানে দেখার চেষ্টা করি নাই। বাবার উপর রাগ করে। যাই হোক এখন আমাকে এটাই মেনে নিতে হবে। আমাকে রেডি করে নিচে নামিয়ে আনা হয়। লাল লেহেঙ্গা হাত ভর্তি চুড়ি সারা শরীর গহনা দিয়ে মোড়া। চুল খোপা করে বেলি ফুল দিয়ে বাধা। আর মুখে হালকা মেকাপ। যাই হোক আমাকে এনে একপাশে বসানো হয়। আমার বিপরীত পাশে আদি (বর) বসে আছে।মাঝখানে পাতলা একটা পর্দা দেওয়া।কবুল বলতে যাবো ঠিক তখনই একটা ছেলে এসে আমাকে হ্যাচকা টান দিয়ে দাড় করায়। আর আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে।..

“বেবি আমি না হয় একটু ভুল করছি তার জন্য তুমি এভাবে আমাকে রেখে আরেক জন কে বিয়ে করে নিবে।..???”

হঠাৎ এমন টা হওয়ায় আমি অনেক টা ঘাবড়ে যাই। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। কি হচ্ছে এসব। আর বিয়ে বাড়ির সবাই আমাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমার বাবা মা অনেক টা অবাক হয়ে যায়।

“এই ছেলে কে তুমি।আর এসব কি বলছো তুমি। “(বাবা)

“দেখেন না বাবা আপনার মেয়ে কতো জেদি। ওর সাথে আমার সামান্য একটু ঝগড়া হইছে তাতেই ও নিজের স্বামি কে ছেড়ে অন্য একজন কে বিয়ে করতে যাচ্ছে।কেনো এমন করছো দিয়ু পাখি।..???

উনার কথা শুনে আমি চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকাই। ভালো করে পর্যবেক্ষক করে দেখে নেই। কিন্তু না আমি উনাকে কখনোই দেখি নাই। কথাও বলি নাই। আর বিয়ে তো অনেক দূরের কথা। উনার কথা শুনে বাবা আমার কাছে এগিয়ে এসে বলে।..

“দিয়া মা এই ছেলেটা যা বলছে সব কি সত্যি..???”

আমি বাবার দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবো তার আগেই অয়ন বলে উঠে।..

“বাবা দিয়ুপাখি এখন আমার উপর রেগে আছে। তাই এখন আপনি জিজ্ঞেস করলেও মিথ্যাই বলবে।তার চাইতেও ভালো আপনি আমাদের বিয়ের কাবিন নামা দেখেন। “(অয়ন)

কথাটা বলেই বাবার হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দেয়। বাবা আমার সামনে এসে বলে..

“দিয়া কি হচ্ছে কি এসব। তুই বিয়ে করলি। তাও আবার এক বছর আগে।কেনো আমাদের বললে কি হতো। এই কারনেই বুঝি তুই সেদিন ঘুরতে যাওয়ার নাম করে কক্সবাজার বিয়ে করার জন্য গেছো।..???”

বাবার কথা শুনে আমি যেনো আকাশ থেকে পড়ি। আমার চোখ থেকে এক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ে।

“বাবা বিশ্বাস করো আমি এসব কিছুই করি নাই। আর না আমি বিয়ে করেছি। এই লোকটাকে আমি চিনিও না।(কান্না করে)

আমার কথা শুনে বাবার আমাকে মারার জন্য হাত তুলতেই অয়ন ধরে ফেলে।..

“আমার বউয়ের গায়ে হাত দিতে আপাত আপনারা পারবেন না।Because she is my wife.

বলেই অয়ন আমাকে টেনে নিয়ে যেতে নেয়। আমি বাবার দিকে তাকিয়ে বলি।..

“বাবা………”

“খবরদার তুই আমাকে বাবা বলে ডাকবি না।আজ থেকে আমার কোনো মেয়ে নেই। যেই মেয়ে তার বাবার সম্মানের দিকে একটি বারও তাকায় নাই তাকে আমি কি করে মেয়ে বলে মেনে নিতে পারবো।”

কথাটা বলেই মুখ ঘুরিয়ে নেয়। মা আচল দিয়ে মুখ ঢেকে ফুফিয়ে কেদে উঠে। আদি এখনো শকড। কি হচ্ছে সব যেনো সবার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। অলরেডি প্রতিবেশি দের কানা ঘোসা শুরু হয়ে গেছে।অয়ন আমাকে কোলে তুলে নেয়। আর এসে গাড়িয়ে বসিয়ে দেয়।

বর্তমানে…..

গাড়ি এসে একটা বড় বাড়ির সামনে থামে। অয়ন গাড়ি থেকে নেমে আমাকেও নামিয়ে নেয়। দরজার সামনে একজন মধ্য বয়স্ক মহিলা আর একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে উনারা আমাদের জন্যই অপেক্ষা করছিলো। অয়ন আমার হাত ধরে এগিয়ে যায়। উনাদের সামনে দাড়িয়ে বলে..

“সিমি ওকে ভেতরে নিয়ে যা। আর মা আমি একটু আসছি। ”

বলেই অয়ন সেখান থেকে চলে যায়। মধ্য বয়স্ক মহিলাটি মানে অয়নের মা আমার দুই গালে হাত রেখে বলেন..

“মাশাআল্লাহ।কি মিষ্টি তুমি মা। নাম কি তোমার।..???

আমি হালকা হেসে বলি..

“দিয়া রহমান।..”

উনারা আমাকে ভেতরে নিয়ে যায়। তারপর অয়নের বোনের সাথে আমাকে ওর রুমে পাঠিয়ে দেয়। রুমে যাওয়ার পর সিমি আমার হাতে একটা ড্রেস ধরিয়ে দিয়ে বলে..

“আপু ফ্রেস হয়ে নাও।”

আমি কিছু না বলে ড্রেস টা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যাই। ফ্রেস হয়ে এসে দেখি অয়নের মা ও রুমে বসে আছে। আমাকে বের হতে দেখে আমার কাছে এগিয়ে এসে বলেন..

“সব ঠিক হয়ে যাবে মা। তুমি এসব কিছু ভুলে যাও। কিছুদিনের মধ্যেই তোমার জীবন আবার আগের মতো হয়ে যাবে।..

আমি উনাকে জড়িয়ে ধরে কেদে দেই। আর বলি..

“কি ঠিক হবে আন্টি।ঠিক হওয়ার মতো আর কিছুই নেই। আমার সাথেই কেনো এমন হয়।আমি তো উনাকে চিনিও না। তাহলে কেনো উনি আমার সাথে এমন করলেন। উনি অনেক খারাপ।”

উনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন..

“আমি জানি অয়ন যা করছে ঠিক করে নাই।আর সেটা ও তোমার কাছে পরিষ্কার হবে দেখিও।

চলবে কি………….

সিক্রেট গ্যাংস্টার পর্ব-২৪ এবং শেষ পর্ব

0

#সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
#পর্ব_২৪ এবং শেষ
#লামিয়_রহমান_মেঘলা
রাতে খাবার শেষ করে যে যার রুমে আছে।
আজ সবাই ক্লান্ত তাই একটু জলদি সবার রুমে চলে এসেছে সবাই।
আদ্র তখন আদ্রিয়ান কে বলতেছে,
–আচ্ছা একটা সত্যি বলব আদ্রিয়ান। (আদ্র)
–হ্যাঁ মিথ্যা কেন বলবি। (আদ্রিয়ান)
–ধুর তুই সব সময় মজা করিস কেন?(আদ্র)
–আরে মজা না বল। (আদ্রিয়ান)
–আমার মনে হচ্ছে এই দুই জন মানুষ আর কেউ না আমাদের মা বাবা। (আদ্র)
–সত্যি বলতে আমারও তাই মনে হচ্ছে (আদ্রিয়ান)
–কিন্তু তোর কেন মনে হলো? (আদ্র)
–কারন মা কে দেখেছি বাবা যখন গল্পের শেষ অংশ বলছিল তখন মা মায়া ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল বাবার দিকে (আদ্রিয়ান)
–হায় তুই তো সব দিকে খেয়াল রাখিস।(আদ্র)
–হ্যাঁ একটু একটু রাখি। (আদ্রিয়ান)
–আচ্ছা তো সত্যি করে বলবি এবার। (আদ্র)
–কি?
–ওই মেয়েটা কে যার দিকে তুই বাবা মায়ের দিকে যেমন করে তাকিয়ে ছিল ঠিক তেমন করে তাকিয়ে ছিলি।
আদ্রের প্রশ্নে কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল আদ্রিয়ান,
–তুই কি করে দেখলি?
–আরে রিল্যাক্স আমি শুধু তার চুল গুলো দেখেছি সামনে থেকে দেখি নি।
–ওহ আচ্ছা
–ঘুমো এখন।
–হ্যাঁ গুড নাইট।
দুই জনি ঘুমিয়ে পড়ে,
রাত ১১ঃ৩০ টা,
–আমান
এই আমান।
–হুম বলো
–আমার ছেলে দুটোর আজ জন্মদিন আর তুমি এখনো ঘুমোচ্ছো।
–কতো বাজে?
–১১ঃ৩০ বেজে গেছে উঠো
–হুম উঠছি।
–উঠো।
আমান পিটপিট করে তাকিয়ে মেঘের হাত ধরে একটা টান দেয় যার ফলে মেঘ গিয়ে আমানের বুকে পড়ে।
–আরে কি করতেছো আজব।
–আজবের কি আছে আমার বউ টা খালি পালায় পালায় করে।
–আরে এখন এগুলার সময় ছাড়ো আমাকে।
–না ছাড়বো না।
–ছাড়বা ছাড়ো।
–না।
আমান মেঘের মুখ থেকে ছোট চুল গুলে সরিয়ে দিলো।
–আরে ১২ টা বেজে যাবে উঠো তোমার এই ঢং পরে করো।
আমান একটা বাকা হাসি দিলো,
–পরে কিন্তু (দাঁত বের করে)
–বুড়ো হয়ে গেছো তাও সয়তানি কমলো না উঠো।
মেঘ চলে আসে।
আমান উঠে ফ্রেশ হয়ে নেয়।
মেঘ সুন্দর একটা কেক না দুইটা কেক বানিয়ে নিয়েছে ছেলেদের জন্য।
তার পর কেক দুটো নিয়ে বাইরে আসে।
আমান হাতে একটা এলবাম নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ওরা ছেলেদের গিফট হিসাবে এলবাম টা দিবে।
–চলো।
ঠিক ১২ টা,
আমান মেঘ ছেলেদের রুমে গিয়ে ওদের তুলে উইস করে।
আদ্রিয়ান আর আদ্র মা বাবা কে জড়িয়ে ধরে।
–মাম্মাম ঋতু মা কেন নেই (আদ্র)
–কাল থাকবে কেক কাটো এখন ভিডিও কলে আছে,
মেঘ ঋতুকে ফোন করে,
ফোনের ওপাশে ঋতু কিরন আর আরাব ওদের উইস করে,
ওরা কেক কাটে,
তার পর আমান ওই এলবাম টা ওদের দু ভাই কে দেয়,
–বাবা এতে কি আছে?(আদ্র)
–তোমাদের প্রেশ্নের উত্তর বাবা (আমান মুচকি হেসে বলল)
–বাবা ধন্যবাদ। (আদ্রিয়ান)
–তোমারা এখন ঘুমাও আমরা আসি।
আমান মেঘ চলে যায়।
এদিকপ দু ভাই বসে এলবামটা খুলে,
-প্রথম পাতায় আছে মেঘের ভার্সিটির ছবি।
–আদ্রিয়ান এটা তো মা দেখ আমাদের মা এখনো ঠিক এতোটাই সুন্দর আছে।
–হ্যাঁ চল পরের গুলো দেখি।
দ্বিতীয় পৃষ্ঠাতে আছে আমানের প্রফেসর কলের ছবি।
–বাবাও আগের মতোই আছে আদ্রিয়ান।
–হ্যাঁ তাই তো দেখছি।
তৃতীয় পৃষ্ঠায় আমানের মুখোশ পরা ছবি।
–আচ্ছা আদ্রিয়ান।
–হ্যাঁ।
–আমি যা ভাবছি তুই কি তাই ভাবছিস।
–তাই তো মনে হচ্ছে।
–তার মানে ও-ই দুই জন আর কেউ নয় আমাদের মা বাবা।
–হ্যাঁ বাহ মা বাবার জীবনের এতো বড়ো গল্প।
–হ্যাঁ ওদের মধ্যে ভালোবাসাও দেখ।
–আল্লাহ আমার মা বাবাকে যেন এমনি রাখেন চির কাল।
–আমিন।
চতুর্থ পৃষ্ঠায় ওদের সাথে ঋতু কিরন।
এভাবে একের পর এক গল্পের মতো সব গুলো ছবি ভেষে আসছে ওদের সামনে।
যা দেখে দুই ভাই বেশ আনন্দ পেল।
সব গুলো দেখা শেষ করে ওটাকে আলমারি তে খুব যত্ন করে তুলে রাখলো তারা।
আর ঘুমোতে চলে গেল।
,
,
,
,এদিকে,
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে পুরোবো কথা ভাবছে মেঘ।
শুরু থেকে ভাবতে গেলে ৭ সমুদ্র ১৩ নদী পার করে তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেয়েছে।
ভাবতেই অবাক লাগে যে মেঘ নিজেই একটা বাচ্চা ছিল আজ সে দুই সান্তানের মা।
সত্যি সময়ের বিবর্তন কি না করে ফেলে।
কে জানতো প্রথম ভালোবসাই তার স্বামী।
কে জানতো তার স্বমীকে সে যেভাবে চিনত আসলে তার স্বামী তা নয় এক দম অন্য এক জন।
এভাবে বিয়েটা হওয়া এভাবে ভালোবাসা। এভাবে সুন্দর একটা পরিবার পাওয়াটা এটা আল্লাহ তায়লার খুব বড়ো একটা নেয়ামত।
এতো সুন্দর একটা জীবন তাকে উপহার দিছে আল্লাহ।
হাজার ঝড় পেরিয়ে হাজার বাঁধা পেরিয়ে আজ একটা সুখের সংসার তাদের।
এগুলা ভাবছিল হুট করে পেছন থেকে আমান এসে মেঘের কোমড় জড়িয়ে তার চুলে নাখ ডোবায়।
মেঘ চেখ বন্ধ করে তা ফিল করে,
–কি ভাবছো।
–পুরনো কথা।। –
–মেঘ।
–হুম।
–কবে তুমি আমার দুই সন্তানের মা হয়ে গেলে আমি বুঝলামি না।। কবে এই পিচ্চি মেয়পটা এতো বড়ে হয়ে গেল।
–আমাদের জীবনের কঠিন মুহুর্ত গুলে থেকেই আমি বড়ো হয়ে গেছি।
–আচ্ছা তাই।
–হুম। –
–ভিশন ভালোবাসি তোমাকে।
–আমিও।
–জানো সে দিন যখন তোমায় হসপিটালের বেডে ওভাবে দেখেছিলাম আমার মনে হয়েছিল কেউ আমার বুকে হাজারটা চাকু দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে দিচ্ছে।
–বাবা যখন বলেছিল তুমি আর নেই তখন আমারও ঠিক একি অবস্থা হয়েছিল।
–সব বাঁধা শেষ হয়ে যে সুন্দর এক পরিনতি হবে সুন্দর এক সকাল আসবে তা ভাবি নি।
এবার মেঘ আমানের দিকে ফিরলো।
–আল্লাহ আমাদের উপর দয়াশীল বুঝেছো মি.খান।
–হ্যাঁ মিসেস.খান বুঝেছি।
মেঘ হেসে দিলো।
আমান এই সুন্দর পূর্ণিমার রাতে চিকচিক করা মেঘের মুখের সেই হাসি দেখে নিজেও হেসে দিলে।
পূর্ণতা পেল ভালোবাসা।
হাজার রকম বাঁধা কাটিয়ে তারা আবারো ডুব দিলে ভালোবাসার এক নতুন দুনিয়ায়।

❤️❤️সমাপ্ত ❤️❤️

(আসসালামু আলাইকুম,
আমি কি সবটা গুছিয়ে লিখতে পেরেছি?
সব মিলিয়ে চজ কিছু গঠন মূলক মন্তব্য করবেন।
আজ বিদায় নিচ্ছি দেখা হবে পরবর্তী কোন গল্পে।
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ,, ❤️)

সিক্রেট গ্যাংস্টার পর্ব-২৩

0

#সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
#পর্ব_২৩
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

আমান চুপচাপ বসে আছে।
চোখের সামনে শুধু মেঘের সেই চনচল কথা গুলো।
তাদের এক সাথে কাটানো কিছু সুখের মুহুর্ত এগুলাই আসছে।
আল্লাহর কাছে দু হাত তুলে দোয়া করা ছাড়া কোন উপায় নেই।
সেই রাতটা কেটে গেল।
সকালে ফজরের আজান দিতে আমান নামাজ আদায় করে।
তার সাথে আমনের বাবা।
মেঘের মা বাবাও।
কিন্তু আমান নামাজ শেষ করে আর উঠে না।
সিজদাহ্ তে বসে কাঁদতে থাকে।
খুব কষ্ট হচ্ছে তার।। বুকের ভেতর হাজার টা চাকু বিঁধছে মেঘকে দেখে।
কোন মতে নিজেকে শান্ত করার উপায় খুঁজে পাচ্ছে না সে।
শুধু মেঘের কথা ভাবছে।
সকলের ভাবনার অবসান ঘটিয়ে ডক্টর বললেন,
–আল্লাহ আপনাদের ডাক কবুল করেছে মিসেস.খানের জ্ঞান ফিরেছে ।
কিন্তু উনি দুর্বল আর আমাদের ধারনা এই দুর্বলতা খুব শীঘ্রি যাবে না।
কথাটা বলে ডক্টর চলে আসতে গেলে আমান বলে উঠলো,
–দেখা করতে পারব ডক্টর?
–হ্যাঁ পারবেন।
আমান ছুটে মেঘের কেবিনে ঢুকে গেল।
গিয়ে মেঘের পাশে বসে আলত হাত টা মেঘের মাথায় রাখলো,
মেঘ তার দুর্বল চোখ দুটো পিটপিট করে খুলে দিলো
।আমান শক্ত করে মেঘের হাতটা ধরে,
–কেন করেছিলে এমন একটা বার আমার কথা ভাবো নি তোমার কিছু আমি যে মারা যেতাম মেঘ।
★★★
খুবই অস্পষ্ট কন্ঠে আমি বলতে চাইলাম
–আ মি তো,
আমাকে কষ্ট পেতে দেখে উনি বললেন,
–থাক কথা বলতে হবে না।
কিছু বলো না শুধু আমার বুকের মাঝে নিজের বিস্তার রেখো চিরো কাল।
আমি মৃদু হাসলাম।
আমান আমার কপালে গভীর চুমু দিলো।
সত্যি নিজেকে বড্ড ভাগ্যবান মনে হচ্ছে এতো সুন্দর একটা ভালোবাসার মানুষ কে পেয়েছি আমি যে কিনা শুধুই আমার।
ওর উপর অধিকার শুধুই আমার।
আমি তো ভেবেছিলাম আর সময় বোধহয় নেই কিন্তু আল্লাহ তায়লা আমাকে তার সাথে জীবন কাটানোর জন্য সময় দিয়েছে আমি হাজার সুকরিয়া আদায় করছি তার জন্য।
ভালোবাসি এই মানুষ টাকে বড্ড ভালোবাসি।
আমাকে শুধু তার বুকের মাঝে রাখলেই হবে।
আমার আর কিছু চাওয়ার নেই।
সত্যি আমি ওকে ভিশন ভালোবাসি।
কথায় বা বাক্যে প্রকাশ করা সম্ভব না ঠিক কতোটা ভালোবাসি।
★★★
ধিরে ধিরে পার হলো সময়।
মেঘ এখন প্রায় সুস্থ কিন্তু ও এখবো ক্লান্ত।
এখন মেঘকে বাসায় নিয়ে যাবে।
আমান মেঘের জন্য একটা লাল শাড়ি নিয়ে এসেছে বেনারসির মতো
–এটা কেন পড়বো? (মেঘ)
–আছে একটা কারন এসো পরিয়ে দেয়।
আমন খুব যত্ন করে শাড়িটা পরিয়ে দিলো মেঘকে।
তার পর,
আমান মেঘকে পাজ কোল করে হসপিটালের মধ্যে দিয়ে নিয়ে আসছে।
সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।
এমন কেউ করে।
করে না কিন্তু আমান করে শুধু মাত্র ওর পক্ষে এমন পাগলামি করা সম্ভব।
মেঘ কিছুটা লজ্জা পেলেও পরিশেষে ভালো লাগাই কাজ করলো।
আমান মেঘকে নিয়ে বাসায় এলো,
★★★
আমি গাড়ি থেকে নামতে অবাক
এ মা এগুলো কি পুরে বাড়ি আমাদের বিয়ের দিনের মতো করে সাজানো হয়েছে ঠিক সেই দিনের মতো।
আমি আমানের দিকে তাকালাম।
আমন তার গাল ভরা হাসি টি আমার জন্য নিক্ষেপ করলো।
আমিও হাসলাম
ভেতরে আসতে দেখি সবাই উপস্থিত।
ঋতু, কিরন দাদা, মা, বাবা, বাবা(শ্বশুর মসাই) সবাই ঠিক বিয়ের মতো সেজেছে ঠিক যেমন আমার বিয়েতে সাজ ছিল।
আমি পুরোই অবাক।
আমানের দিকে তাকালম সে হাসছে।
বাবা আমাকে ঠিক সেই প্রথম দিনের মতো বরন করে ঘরে তুললেন,
আমি সত্যি ভাগ্যবান তাদের মতো মানুষ কে আমার জীবনে পেয়েছি।
আমি ঘরে প্রবেশ করলাম।
মনে হচ্ছে আজ সত্যি নতুন করে বিয়ে হয়েছে।
ঘরে এসে আরেক ধামাকা।
কাজি সাহেব বসে আছেন।
আমি তো সত্যি এবার আরো বেশি অবাক।
দ্বিতীয় বারের মতো বিয়েটা সম্পন্ন হলো।
আমি সত্যি ভাবতে পারি নি ওরা আমার জন্য এতো সুন্দর সারপ্রাইজ রেখেছে।
দিনটা খুব আনন্দে কাটলো।
সন্ধ্যায় সবাই চলে গেল মানে ঋতু আর কিরন দাদা।
মা, বাবা।
আমাকে আমাদের ঘরে আনা হলো।
ঘরটাকেও সেই দিনের মতো করে সাজানো হয়েছে।।

আমি হাত দিয়ে ফুল গুলেকে ছুয়ে দিচ্ছি।
ঠিক তখনি পেছন থেকে কেউ আমায় জড়িয়ে ধরলো।
আমি বুঝতে তো পেরেইছি সে কে।
–ধন্যবাদ।
–কেন?
–আমাকে এতো সুন্দর একটা দিন উপহার দেবার জন্য।
–তোমাকেও ধন্যবাদ।
–আমাকে কেন?
–আমাকে এতো সুন্দর একটা বউ উপহার দেবার জন্য।
এতো মিষ্টি একটা ভালোবাসার সম্পর্ক দেবার জন্য।
–হুম আচ্ছা একটা কথা বলুন।
–হুম বলো।
–এই যে মি.গ্যাংস্টার।
ও সরি #সিক্রেট_গ্যাংস্টার
এটা যে আমার স্বামী হবে আর সেই মুখোশ পরা লোকটা আমার প্রথম ভালোবাসা না সরি প্রথম এবং শেষ ভালোবাসা।
কেন বলেন নি আগে।
–বলে দিলে কি আর আজকের দিন পেতাম বলো।
–ও মা সে কি কথা।
–সব ঝড় শেষ আমি আর কোন গ্যাংস্টার নই আমি এখন শুধু মাত্র তোমার ভালোবাসা তোমার স্বামী।
কথাটা বলে সে আমাকে কোলে তুলে নিলো।
আর বেলকনিতে চলে এলো।
চাঁদের আলোয় পরিবেশ আলোকিত।
আমি তার বুকে মাথা রেখে উপভোগ করলাম তার দেওয়া সমস্ত উপহার আর তার দেওয়া এক আকাশ ভালোবাসা।
সত্যি একটা মানুষ এতো ভালোবাসতে পারে জানা ছিল না।
(ঠিক ১ বছর পর তাদের দুই জমজ সন্তান হয় যাদের নাম আদ্রিয়ান আর আদ্রি।
ঋতু এবং কিরনের তার ২ মাস পরি আরাব) জন্ম নেয় আরাব।
বর্তমান,
–আচ্ছা মা একটা কথা বলো তো (আদ্রিয়ান)
–হ্যাঁ বাবা বলো কি কথা (ঋতু)
–হুম বলো শুনছি তোমার কথা (মেঘ)
–এই দুজন মানুষ আসলে কারা?
–এই দু’জন মানুষ কারা তা তো বলতে পারব না বাবা তবে একটা কথা বলতে পারি। (ঋতু)
–কি কথা? (আদ্র)
–এরা তোমাদের খুব কাছে থাকে।
–আচ্ছা
আদ্র এবং আদ্রিয়ান চিন্তায় পড়ে যায় ।
তাদের চিন্তা দেখে মেঘ আমান, ঋতু কিরন হেসে দেয়।
★★★
রাতে,
মেঘ আমান বাসায় চলে আসে।
আসলে আজ করিন আর ঋতুর বাসায় দওয়াত ছিল তার জন্য ওরা সবাই গিয়েছিল৷
যেয়ে ঋতুর মুখে গল্প শুনতে ব্যাস্ত ছেলে ৩ টা।
৩ টা ছেলের মধ্যে ভিশন মিল।
সব সময় এক জায়গায় থাকে
আরাব ২ মাসেী ছোট হলেও ওরা একি ক্লাসে পড়ে।
বাসায় এসে আদ্রিয়ান আর আদ্র তাদের রুমে চলে যায়।
মেঘ আমানও।
মেঘ রুমে এসে গোসল করে রুমে এলো।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে মেঘ চুল গুলো মুছতে ব্যাস্ত।
তখন আমান বলল,
–আচ্ছা মেঘ।
–হুম।
–বাচ্চা দের বলে দিলে হতো। গল্পটা কাদের।
–অপেক্ষা করো তোমার ছেলের তো তোমার মতোই গ্যাংস্টার।
দেখো তারা নিজেরা বার করে নিবে।
–হ্যাঁ দেখা যাক ওরা কি করে।
–হুম।
–তবে আজ ঋতু পুরোনো স্মৃতি তাজা করে দিলো বলো।
–হুম সত্যি আগের দিন গুলোর কথা মনে পড়লে ভলো লাগে আবার ভয় ও হয়।
চলবে,

সিক্রেট গ্যাংস্টার পর্ব-২২

0

#সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
#পর্ব_২২
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
ঋতু তাদের তিন জনের মুখের দিকে তকিয়ে আছে তখনি দরজা দিয়ে ঋতুর বয়সি একটা সুন্দরী মেয়ে প্রবেশ করলো,
–কি রে কার গল্পের কথা হচ্ছে শুনি।
–মাম্মাম দেখো না মা একটা গল্প বলছিল হুট করে থেমে গেল এমন একটা যায়গায় কি বলব। (আদ্রিয়ান)
মেয়েটা হেঁসে দিলো,
তখনি রুমে কিরনের সাথে একটা ছেলে প্রবেশ করে,
–আমি বাইরে থেকে শুনে বুঝতে পারলাম কিসের গল্প।
কো মিস সলিকা কই থেমেছেন বাকি গল্প না হয় আমি পুরোন করে দেয় (ছেলেটা)
–আরে ভাইয়া মেয়েটির চারিদিকে যখন অন্ধকার ছিল,
ঋতুর কথা শুনে ছেলেটা মুচকি হেসে মেয়েটার পাশে বসে তার হাতটা ধরে বলে,
–চলো গল্পটার বাকি যে অংশ সেটা আমি বলি,
অতিত,
হসপিটালের মধ্যে ছুটে এসেছে আমান সারা হসপিটাল সে শুধু মেঘকে খুজতেছে।।
এমন সময় একটা কেবিনে নিথর শরীরে শুয়ে থাকা মেঘকে দেখতে পেল আমান।
ফ্যাকাসে হয়ে আছে ধবধবে সাদা বর্ণের হয়ে যাচ্ছে ধিরে ধিরে।
আমান দৌড়ে গিয়ে মেঘের হাতের ক্যানলা টা খুলে দেয়।
–মেঘ তুমি এগুলা কি করছো আমাকে একটু সময় দিতে তুমি এটা কি করেছো।
ডক্টর ওকে এমারজেন্সি ব্লাড দেবার ব্যাবস্থা করুন এক্ষুনি।
আমানের চিৎকারে কেঁপে উঠেছে সবাই।
মেঘের এমন অবস্থা থেকে আমান নিজেকে মোটেও ঠিক রাখতে পারছে না।
বুঝের মধ্যে জড়িয়ে রেখেছে মায়াবী কে।
এতোটা কষ্ট তার আগে কখনো বোধ হয় নি আজ যেমন কষ্ট হচ্ছে তার।
বুকের মাঝে হাজারটা ছুড়ি গেথে দেওয়া হয়েছে তার।
আমানের চিৎকারে পুরো হসপিটাল নিস্তব্ধ হয়ে গেছে।
ডক্টর রা কেঁদে দিছে আমানের পাগলামি দেখে।
–মি.খান আপনি মিসেস.খান কে ছেড়ে এদিকে আসুন আমি ওকে রক্ত দিবো আমার সাথে ওর রক্তের ম্যাচ আছে কিন্তু এই এন্টিডিউট টা শুধু ওর রক্তেই হতো এটা আপনি জানেন।
আপনি প্লিজ খোদার কাছে দোয়া করুন আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব মেঘকে বাঁচিয়ে তোলার
ডক্টের কথায় ডক্টরের দিকে তাকায় আমান,
–ও আমাকে এতো ভালোবাসে আমাকে বাঁচানোর জন্য আমি যেন কারোর সামনে খারাপ না হই তার জন্য এমন একটা ডিসিশন নিয়ে নিলো এক মুহুর্তে ওকে ছাড়া আমার পৃথিবী অচল ডক্টর।
আমি ওকে ছাড়া বাঁচবো না সত্যি বাঁচবো না আমার মেঘকে ফিরিয়ে দিন ডক্টর।
আমি সত্যি আর কিছু চাই না।
আমান পুরা বাচ্চাদের মতো কান্না করছে।
তা দেখে সত্যি সবাই স্তব্ধ এমন কেউ নেই যা চোখে পানি নেই।
আজ সবাই কাঁদছে।
এমনও হয় ভালোবাসা সত্যি এমন হয়।
আমানের অস্থিরতা দেখে ডক্টর তাকে সরে যেতে বলল,
আমান মেঘকে রেখে সরে আসলো,
এই মুহুর্তে আমানের কাছে ডক্টরের বলা প্রতিটি কথা যেন বহু মুল্যবান।
–মি.খান আমি আকাশ মেঘের বন্ধু ও আমার কাছেই এসেছিল সব কিছু নিয়ে
আমি চাইছিলাম না এটা করতে কিন্তু ওর কথায় আর ওই সাধারণ মানুষ গুলার মুখের দিকে তাকিয়ে করতে হয়েছে।
দেখুন আমার রক্ত আর ওর রক্তের গ্রুপ সেম
আসলে আমি এতোটাই ভেঙে পড়েছিলাম।
আমার মাথায় তখন কিছুই আসছিল না।
আমি ভুলেই গেছিলাম ওর আর আমার ব্লাড গ্রুপ এক
আপনি বাইরে গিয়ে বসুন আমরা দেখছি আল্লাহকে ডাকুন।
আকাশ আমানকে বাইরে এনে বসিয়ে দেয়,
আমান ঠায় হয়ে বসে আছে চোখের সামনে শুধু মেঘের সেই ফর্সা মুখটা দেখতে পাচ্ছে সে।
জান পাখি আমানের ভেতরে নেই বললেই চলে,
এরি মধ্যে আরিফ খান চলে এসেছে,
ছেলেকে এভাবে বসে থাকতে দেখে দৌড়ে তার কাছে আসে,
–বাবা আমার মেয়ে কই। তুমি কই ছিলা আমান।
–বাবা আমি ওদের মারার পর যখন দেখলাম তুমি সত্যি বলেছিলে ওদের থেকে এক মিনিটের মধ্যে সব জায়গায় ছড়িয়ে যাচ্ছে জীবাণু গুলো তখন আমি আমাদের বান্দরবানের বাংলো বাড়িতে চলে যাই ওখানে আমার তৈরি করা অন্য পদ্ধতির অনেক গুলো ভ্যাক্সিন ছিল।
আমি সেখান থেকে ফিরে আমার গার্ড দের কাছে সবটা শুনতে পাই।
মেঘের কথা।
আর তখনি ছুটে হসপিটালে এসে দেখি আমি অনেক দেরি করে ফেলেছি।
বাবা ও না শুধু আমার জন্য এতো কিছু করেছে।
শুধু আমাকে বাঁচানোর জন্য ও নিজেকে কুরবানী করতে একট মুহুর্ত ভাবলো না।
আমানের ভেঙে পড়া দেখে আরিফ খান কি বলবে ভাষা পাচ্ছে না।
আসলে তারি ভুল আমানের উপর আস্থা রেখে মেঘকে আটকানো উচিৎ ছিল।
আরিফ খান মেঘের মা বাবাকে বলে দেয় ওদের বলা হয় মেঘের এক্সিডেন্ট হয়েছে।
এদিকে ঋতু আর কিরন ও উপস্থিত হয়।
–ভাই জান এমন টা কি করে হলো আমার মেয়ের সাথে (মেঘের মা কান্না করতে করতে বলল)
–কিছুই বুঝতে পারি নি সব কিছু না হটাৎ করেই হয়ে গেল।
আরিফ খানের কথায় ঋতু তাকে শান্তনা দিতে লাগলো।
কিন্তু ঋতুর মনেও ভিশন ভয় চেপেছে।
যে যেভাবে পারছে ঠিক সেভাবে নিজের সৃষ্টিকর্তা কে ডাকছে।
আমানের অবস্থা দেখে কেউ সহ্য করতে পারছে না।
সত্যি কি ভিশন করুন অবস্থায় পরে আছে এক কোনে চুপচাপ।
বিন্দু বিন্দু পানিকনা সমানে ঝড়ছে তার চোখের কোন দিয়ে।
হয় ত আজ সব সৃষ্টিকর্তার হাতে।
,
,
,
,
,
রাত ১ঃ০০ টা।
চারিদিক পিনপিন নিরবতা।
আমান পাথরের মূর্তির মতো বসে আছে চুপচাপ করে।
সবাই নিরবে চোখের পানি ফেলছে।
মৃত্যু যেন আসে পাশে কোথাও লুকিয়ে আছে।
এই বুঝি হুট করে চলে আসে।
ডক্টর বেরিয়প আসে,
ডক্টর কে বেরোতে দেখে সবাই তার দিকে এগিয়ে যায়,
–ডক্টর আমার স্ত্রী। (আমান)
–ওনার শরীরের সভাবিক বর্ন এখানো ফিরে আসে নি।
যে রক্ত দিয়েছে তাকেও তো বেঁচে থেকে রক্ত দিতে হবে
আর আনফরচুনেটলি মিসেস.খানের শরীর থেকে মাত্রাতিরিক্ত রক্ত বের হয়ে গেছে।
সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করছি আমরা। বাকি আল্লাহর ইচ্ছে।
ডক্টরের কথা শুনে আমান মেঘের কেবিনের দিকে তাকায়।
কাচের এপাশ থেকে ভেতরে প্রানহিন মেঘকে দেখা যাচ্ছে।
,,,,,
–আরে বাবা তুমি চিন্তা করো না আমার মেয়েকে আমি তোমার সাথে বিয়ে দিবো দেখো তুমি বতুন বৌ পাবে আমার প্রথম মেয়েই হবে। (মেঘ)
–ওহো তাহলে তো আমার আর দুঃখই থাকবে না (আরিফ খান)
–পিচ্চি মেয়েটা এখন মা হতে চায় (আমান)
মেঘ আমানকে দেখে ভিশন লজ্জা পেলো।।
এই লেকটা যে সামনে ছিল তা তো মেঘ ভুলেই গেছিল।
,,,,,,,,
কিছু স্মৃতি যা মেঘের সাথে কাটানো মিষ্টি মুহুর্তের জন্ম দিয়েছিল।
মেয়েটা ছিল খান বাড়ির আলো।
সব সময় নিজের কথায় আর কাজে ঘরটাকে আলোকিত করে রাখতো।
আমানের যে জানটা মেঘের ভেতর আছে

ওর দিছু হয়ে গেলে তো আমন বাঁচবে না।
এটা সবাই জানে।
আমান উঠে ওজু করে নামাজ পড়তে বসে।
যে যার সৃষ্টিকর্তাকে ডাকছে।
আমানের চোখের সামনে শুধু আসছে মেঘের নিথর শরীর যা ওই বেডে পরে আছে।
চলবে,