Wednesday, July 9, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1501



হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-১৮ এবং শেষ পর্ব

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_১৮_শেষ
#জান্নাতুল_বিথী

সূর্যের মৃদু আলো চোখে পড়তেই অয়নের ঘুম ভেঙ্গে যায়।ঘুম ভাঙ্গতেই তার বুকে ভারী কিছু অনুভব করে।চোখ খুলে দেখে তার বুকে তার দিয়ুপাখি ঘুমিয়ে আছে।এটা দেখেই তার কাল রাতের কথা মনে পড়ে যায়।কাল রাতে দিয়া তার সাথে গল্প করতে করতে তার কাধে মাথা রেখেই ঘুমিয়ে পড়ে।তারপর সে আর দিয়াকে না তুলে কোলে করে বাড়ি নিয়ে আসে।ভাবতেই সে মুচকি হাসে।ঘুমন্ত অবস্থায় দিয়াকে কি কিউট লাগে তাই দেখছে সে।..

“তোমাকে এভাবে দেখে দেখেই যেনো আর আমার দিন শেষ হয় মায়াবিনী।”

কথাটা বলে অয়ন দিয়ার কপালে একটা ভালোবাসার পরশ একে দেয়।কারো শীতল স্পর্শে কেপে উঠি আমি।আমার ঘুম ভেঙ্গে যায় আমার।আমি চোখ পিট পিট করে তাকাতেই তার হাস্যজ্জ্বল মুখ খানা আমার চোখের সামনে ফুটে উঠে।আমি উঠে বসতে নিলেই সে আমাকে এক হাত দিয়ে শুইয়ে দেয় আর আরেক হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে।আমি চোখ বন্ধ করে কাল রাতের কথা মনে পড়তেই তার দিকে তাকাই।.

“কাল রাতে তো আমরা রাস্তায় ছিলাম।ওই খান থেকে আমাদের বাড়ি যাওয়ার কথা আর আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে আসলেন।”

“বা রে যে বাড়িতে সারা জীবন থাকবে ওই বাড়িতে আসলেই বুঝি এতো সমস্যা।.????”

“তারপরও আমরা তো কেবল কালকে গেলাম।আরও দুই একদিন থাকলে কি এমন হতো।”(গাল ফুলিয়ে বলি আমি)

অয়ন আমাকে দুই হাত দিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বলে…

“বউ আমার রাগ করে না।আচ্ছা ঠিক আছে আমরা আর কিছুদিন পরেই যাবো আই প্রমিস।তারপরও রাগ করে না লক্ষী আমার।”

তার কথা শুনে আমি ফিক করে হেসে দেই।অয়ন আমার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছি।..

“আমার বউ টাকে সব লুকেই অনেক কিউট লাগে।বেশি কিউট লাগে যখন রাগ করে গাল ফুলিয়ে রাখো।”

শেষের কথাটা বলতে গিয়ে অয়ন হেসে দেয়।আর আমি তাকে কিল ঘুসি দিতেই থাকি।আমার কাজে অয়ন আরও জোরে জোরে হাসতে থাকে।


ডিনার করা শেষ হলে আমি অয়নের আম্মুর সাথে বসে অনেক্ষন বসে গল্প করি।আমার সে এখন ও বাড়ি আসে নাই।জানি না কখন আসবে।একা বসে বোর হওয়ার চেয়ে উনার সাথে বসে গল্প করাই বেটার।হঠাৎ আমার ফোনে একটা মেসেজ আসে..

“রুমে যাও আর তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিচে আসো আমি অপেক্ষা করছি।”

‘অচেনা পাগল’

নামটা দেখেই আমি ফিক করে হেসে দেই।কোনো ক্রমেই হাসি থামাতে পারছি না।শেষ পর্যন্ত নিজের বরকে অচেনা পাগল বানিয়ে দিলাম।ভাবতেই আবার হেসে উঠি।আমি তাড়িতাড়ি রুমে গিয়ে দেখি খাটের উপর কতো গুল জিনিস রাখা আছে।অয়ন হয়তো এগুলোর কথাই বলেছিলো।যাইহোক আমি আর দেরি না করে তাড়াতাড়ি তৈরি হতে যাই।

অনেক্ষন যাবত অয়ন গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে তার প্রিয় তমার জন্য।এতক্ষন দাড়িয়ে আছে তারপরও তার একটুও বিরক্ত লাগছে না।হয়তো এর নামই ভালোবাসা।হঠাৎ চুড়ির টুংটাং শব্দে সামনে চোখ তুলে তাকায় অয়ন।তার এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে তার সামনে কোনো নীল পরি আকাশ থেকে নেমে আসছে।দিয়া একটা নীল শাড়ি পরছে সাথে মেচিং করা হাত ভর্তি চুড়ি চুল গুলো একটু উপরে উঠিয়ে খোপা করে রাখা আছে।চোখে গাড় করে কাজল দেওয়া ঠোটে হালকা গোলাপি রঙের লিপস্টিক ব্যস এনাফ।এতো টুকুতেই অয়ন নিজের চোখ সরাতে পারছে না।আমি অয়নের সামনে এসে মুখে হাত দিয়ে বলি…

“ইয়া আল্লাহ মিস্টার অচেনা পাগল আপনি হঠাৎ এতো সাজু গুজু করলেন কেনো।কি মতলব আপনার সত্যি করে বলুন তো।আজ আবার কাকে পাগল করতে বের হইছেন.????”

আমার কথা শুনে সে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।আজ আমার অচেনা পাগল নীল পাঞ্জাবী চুল হুলো স্পাইক করা হাতে ব্যান্ডের ঘড়ি চোখ সানগ্লাস উপপপপ সেই লাগছে।আমি তো চোখ সরাতেই পারছি না।আমি আমার চোখের কোন থেকে একটু কাজল নিয়ে তার কানের পেচনে লাগিয়ে দেই।..

“আল্লাহ তুমি দেখো আমার বরটা যেনো শেষ পর্যন্ত আমারই থাকে।যে লুক নিয়ে দাড়িয়ে আছি ভাবছি কেউ আমাকে মেরে তাকে নিয়ে না যায়।”

আমার কথা শুনে অয়ন ফুক করে হেসে দেয়।আর কোনো কথা না বলে আমাকে তাড়া দেয় গাড়িতে উঠার জন্য।আমিও চোখ বন্ধ করে গাড়িতে উঠে যাই।প্রায় ১৫ মিনিট গাড়ি চলার পর হঠাৎ সে গাড়িয়ে থামিয়ে ফেলে।আর আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটা ফিতা দিয়ে আমার চোখ বেধে আমাকে নিয়ে যেতে থাকে।..

“অয়ন কি করছেন আর কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে।.????”

“ট্রাস্ট করো আমাকে।???”

“হুমমম।”

“তাহলে চলো আমার সাথে চোখ বন্ধ করে লক্ষী মেয়ের মতো।”

আমিও আর কিছু না বলে সুন্দর করে তার সাথে তার হাত ধরে হেটে যাই। সে অনেক সাবধানতার সাথে আমাকে নিয়ে যায়।আর এক সময় আমার চোখ খুলে দিতেই আমি চোখ বন্ধ করে ফেলি।চোখে ঝাপসা দেখছি।কিন্তু ভালো করে তাকাতেই আমি বিস্ময়ে হা হয়ে যাই।নিজের চোখ কেই যেনো বিশ্বাস করতে পারছি না আমি।আমি একটা ফুলের বাগানের মাঝখানে দাড়িয়ে আছি।আমার চারপাশে বিভিন্ন ধরনের ফুলে ভরপুর।এখানে মনে হয় সব ধরনের ফুল রয়েছে।সাথে চারদিকে পাখির কিচিরমিচির শব্দ।মৌমাছি রা ফুলের উপর বসে মধু খায়।আমি আনন্দে মুখে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছি।হাত দিয়ে স্পর্শ করে দেখছি আসলেই কি আমি যা দেখছি সব সত্যি।হঠাৎ পেচনে তাকিয়ে দেখি অয়ন অনেক ধরনের ফুল এক সাথে হাতে নিয়ে হাটু গেড়ে বসে আছে।আমি তার দিকে তাকাতেই সে বলে..

“তোমার হাত ধরে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে চাই প্রিয়।ধরতে দিবে কি তোমার হাতটা একটু।তোমার মুখের হাসির কারন হয়ে থাকতে চাই সব সময়।হতে দিবে কি তোমার হাসির কারন প্রিয়।তোমার সুখের অংশীদার হতে চাই প্রিয় হতে দিবে কি তোমার সুখের অংশীধারি।তোমার চোখের জল সব সময় মুছে দিতে তোমার পাশে থাকতে চাই সারাজীবন আমি।রাখবে কি সারাজীবন তোমার পাশে আমাকে।তোমার ছোট ছোট ইচ্ছে গুলো সব সময় পুরন করতে চাই আমি। সেই সুযোগ কি দিবে তুমি আমাকে।তোমার অচেনা পাগল হয়ে তোমার পাশে থাকতে চাই আমি দিয়ুপাখি।?????”

তার কথা শুনে আমার চোখ থেকে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে।সে উঠে দাড়িয়ে আমার চোখের পানি জোড়া মুছে দেয়।আর এক হাতে আমাকে জড়িয়ে ধরে।আমি অয়নকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেই।আজ আমার সব কান্না সুখের কান্না।আমি আমার মনের মতো মানুষ খুজে পেয়েছি।খুজে পেয়েচি আমার অচেনা পাগল কে।..

“এই দিয়ুপাখি আমি কিন্তু আমার প্রশ্ন গুলো এখনো উত্তর পাই নাই।”

“আপনি জানেন না আপনার উত্তর কি হতে পারে।????”

“তারপরও তোমার মুখ থেকে একটি বারের জন্য শুনতে চাই আমি।”

তার কথা শুনে আমি মাথা নাড়াই।যার অর্থ হ্যা।তারপর সে আমার হাত ধরে এগিয়ে গিয়ে একটা বেঞ্চিতে বসে।খোলা আকাশের নিচে তার কাধে মাথা রেখে তার সাথে গল্পে মেতে উঠি আমি।আমার সব হাসি আর কান্নার কারন তাকে বানাতে চাই।আমাদের এই সুখের একমাত্র সাক্ষী রেখেছি চাদকে।আমার স্বপ্ন পুরীতে বসে আমার মনের মানুষের কাধে মাথা রেখে গল্প করার স্বপ্ন পুরন হলো।হয়তো এভাবে আমার সব স্বপ্ন গুলো পুরন করবে আমার অচেনা পাগল।
(আর আপনাদের বলছি দিয়ুপাখি আর তার অচেনা পাগলের সুখের সংসারে কেউ নজর দিবেন না)
সমাপ্ত

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-১৭

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_১৭
#জান্নাতুল_বিথী

রাতের আকাশে মেঘের খেলা দেখতে ব্যস্ত আমি।আপাত অন্য কোনো দিকে মন নেই আমার।অনেক্ষন যাবত এখানে দাড়িয়ে আছি আমি।অয়ন বাসায় নেই।কোনো এক কাজে বের হইছে সেই কখন কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো খবর নেই।সে আমার উপর অনেক রেগে আছে মনে হয়।হয়তোবা আমার আশেপাশে থাকলে কষ্ট পাবে তাই বাসা থেকে বের হয়ে গেছে।তার সাথে এমন ব্যবহার করার পর নিজের কাছেও ভালো লাগছে না।অনেক ভেবে চিন্তে সিদ্বান্ত নিলাম স্বামী যখন আমার আর ভালোবাসি যখন বলে দিলো তাহলে আর দুরে সরিয়ে রেখে কি লাভ।এমনিতেও আমার মতো বউ যখন তার কপালে জুটলো তবে সে শান্তিতে থাকতে পারবে না।জ্বালিয়েই মারবো তাকে।কথাটা ভাবতেই মুখে হাসি ফুটে উঠে আমার।হঠাৎ পেটে কারো শীতল স্পর্শে কেপে উঠি আমি।বুঝলাম সে ফিরে এসেছে।তার স্পর্শ গুলো চোখ বন্ধ করে অনুভব করতে থাকি।এক পর্যায়ে সে আমার চুলের মাঝে ডুব দেয়।এক সময় সে কাপা কাপা গলায় বলে উঠে..

“কি হইছে তোমার দিয়ুপাখি কেনো আমাকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছো। আর কেনোও বা আমাকে এভাবে দুরে সরিয়ে রাখছো।”

তার কথা শুনে আমার মুখে হাসি ফুটে উঠে।আমি কিছু না বলে তার বাধন থেকে আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে তার দিকে ফিরে দাড়াই।আর তার দুই কাধে আমার দুই হাত রেখে ঝাঝালো কন্ঠে বলি..

“আপনার প্রথম অপরাধ আমাকে ভালোবাসেন তারপরও বলেন নাই কেনো।দ্বিতীয় অপরাধ কথায় কথায় মেসেজ করে করে আমাকে থ্রেট দেন কেনো।আর আপনি সব চেয় বড় ভুল করছেন আমাকে বিয়ে করে।জ্বালিয়ে মারবো আপনাকে আমি।”

আমার কথা শুনে সে ফিক করে হেসে দেয়।ভেবেছিলাম আমার ঝাঝালো কন্ঠ শুনে ভয় পাবে (দিয়ুপাখিকে ভয় পাবে আমার অয়ন স্টেঞ্জ😏😇) কিন্তু তা না করে সে হেসে দিলো।উপপ কেমন যে লাগছে আমার।হঠাযঅয়ন আমার কোমড় জড়িয়ে আমাকে তার কাছে টেনে বলে..

“তোমার আগুনে জ্বলেই তো মরতে চাই আমি।”

তার কথা শুনে আমি চোখ পিটপিট করে কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে থাকি।আজ আমার তাকে অনেক কিউট লাগছে।চোখ গুলো ফোলা ফোলা।চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে আছে।মুখে নজর কাড়া হাসি সারাক্ষণ বিদ্যমান থাকে।তার এই হাসি টাতেই যে পাগল আমি।..

“আপনি কান্না করছেন.?????”

আমার কধা শুনে সে আমাকে চেড়ে দেয়।আর অন্যদিকে ঘুরে দাড়ায়।কিন্তু আমার প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয় না।আমি তাকে এক হাত দিয়ে আমার দিকে ফিরিয়ে বুকে দুই হাত ভাজ করে বলি.

“কি হলো এন্সার মি.”

সে আমার দিবে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলে..

“কান্না করলাম কখন আজিব।”

“আপনার চোখ মুখ আমাকে জানান দিচ্ছে আপনি কান্না করছেন।তারপর গিয়ে কতো দিন যাবত ঠিক মতো ঘুমান না সত্যি করে বলেন তো।.????”(ভ্রু কুচকে)

“পাশে সুন্দরী বউ শুয়ে থাকলে তার দিকে যদি সারারাত তাকিয়ে নির্ঘুমে কাটিয়ে দেই তাহলে তো চোখের নিচে কালো দাগ পড়বেই।”

তার কথা শুনে আমি হা করে তার দিকে তাকিয়ে আছি।বলে কি এসব সে।ইয়া আল্লাহ।আমি তার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে বলি…

“ঘুরতে যাবো আমি।”

আমার কথা শুনে সে যেনো আকাশ থেকে পড়ে।আমার দিকে অবাক চাহুনি নিক্ষেপ করে বলে..

“পাগল নাকি তুমি।রাত ১১ টা বাজে এখন।ভয় করে না একথা বলতে।”

আমি তার দিকে তাকিয়ে বিরক্তিকর নিশ্বাস ফেলে বলি…

“উপপপ আপনি যখন আমার সাথে আছেন তাহলে ভয় পাবো কেনো।আর এমনিতেও আমি জানি আপনি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যে protect করবেন।”

আমার কথা শুনে সে কিছু বলে নাই।শুধু মুচকি হেসেছিলো।


ল্যামপোস্টের নিচে একটা বেঞ্চিতে আমি আর অয়ন পাশাপাশি বসে আছি।আমার হাতে আইসক্রিম।দুই হাতে দুইটা।আমি তার দিকে একটা আইসক্রিম ধরে বলি..

“এই যে মিস্টার স্বামী খাবেন।”

সে আমার দিকে অবাক চাহুনিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ফিক করে হেসে দেয়।হয়তো তাকে মিস্টার স্বামী বলাতে হেসে দিছে।সে আমার হাত থেকে আমার এটো আইসক্রিমটা হাতে নিয়ে খেতে শুরু করে।আকস্মিক এমন হওয়ায় পুরো ঘটনা বুঝতে আমার একটু সময় লেগে যায়।যখন বুঝলাম কি হচ্ছে তখন হেসে নিজেই নিজেকে বলে উঠে..

“বুঝলি দিয়া শুনলাম বউয়ের এটো জিনিষ খেলে ভালোবাসা বাড়ে।এখন যদি তোর কপাল ভালো হয়ে থাকে তো এটাই হবে।”

আমার কথা শুনে সে জোরে হেসে দেয়।..

“আমার দিয়ুপাখির কপাল এমনিও অনেক ভালো বুঝলে।সেটা তোমাকে আর বলতে হবে না।শুধু অয়নের কপাল খারাপ আজ পর্যন্ত সে বউয়ের ভালোবাসা পেলো না।”(ইনোসেন্ট ফেস করে বলে)

তার কথা শুনে আমি তাকে ভেংচি কেটে বলি..

“আপনার কপাল খারাপ হতে পারে বাট আমার অয়নের কপাল অনেক ভালো।খারাপ শুধু এতো টুকুই যে সে তার কপালে একটা ঝগড়াটে বউ পাইছে।যে তার সাথে সারাক্ষণ ঝগড়াই করবে।”

অয়ন কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।দিয়ার মুখে আমার অয়ন শুনে তার মুখে বিশ্ব জয়ের হাসি ফুটে উঠে।..

“আমি তো ছোট বেলা হতে এটাই চাইতাম আমার কপালে যেনো একটা ঝগড়াটে বউ জুটে।এখন দেখছি তা কবুল হইছে।”

তার কথা শুনে আমি হেসে উঠি।আর অয়ন আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।তারপর আমার কপালের অবাধ্য চুল গুলোকে কানের পাশে গুজে দিয়ে বলে..

“তোমার এই হাসি মাখা মুখ দেখেই যেনো সারাজীবন পার করে দিতে পারি।”

#চলবে

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-১৬

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_১৬
#জান্নাতুল_বিথী

জানালার ধারে বসে শীতল বাতাস অনুভব করছি।আমার পাশেই অয়ন ড্রাইভ করছে।উদ্দেশ্য আমাদের বাড়ি যাওয়া।যদিও অয়ন আসতে রাজি ছিলো না তবুও আমি একা যাবো বলতেই রাজি হয়ে যায়।মাঝে মাঝে এই অয়নকে আমার একদম অচেনা মনে হয়।কিভাবে এতো রং বদলাতে পারে নিজেই জানি না।মাঝে মাঝে অয়নের কেয়ার দেখে ভাবি হয়তো ভালোবাসে।আবার কিছু কথা শুনে মনে হয় অয়ন আমাকে সহ্যই করতে পারে না।মাঝে মধ্যে নিজেই নিজের কাছে অচেনা হয়ে যাই অন্য কেউ তো ভালো কথাই।আমি অয়নের দিকে আড় চোখে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরেয়ে জানালায় নিবদ্ধ করি।..

“মিসেস অয়ন চৌধুরি হঠাৎ এতো চুপচাপ কেনে।.???”

অয়নের মুখে এই কথা শুনে চমকে উঠে তার দিকে তাকাই।তার দৃষ্টি এখনো সামনে নিবদ্ধ।..

“মানেন নাকি আমাকে আপনার মি-সে-স.???”(টোন টেনে বলি আমি)

আমার কথা শুনে অয়ন আমার দিকে আড় চোখে তাকায়..

“মানে.????”(বুঝেও না বুঝার ভান করে বলে)

“অবশ্যই মানবেন কেনো আমার প্রতি তো আপনার কোনো ইন্টারেস্টই নেই।এককাজ করেন আমাকে বরং এখানে ফেলে আপনি বাড়ি চলে যান।আর গিয়ে বলেন দিয়া মরে গেছে আর কখনো ফিরে আসবে না।আসলেই আমি আর কখনোই ফিরে যাবো না আপনার কাছে। যদি আ….”

আমি কথা শেষ করার আগেই অয়ন জোরে ব্রেক কষে।আমি হুমড়ি খেয়ে পড়তে নিলে অয়ন আমার কোমড় ধরে টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।তার শার্ট খামচে ধরি আমি।সে আমার দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে বলে..

“ইউ ইডিয়েট।শুধু মাত্র তোমার জন্য আমি কতোদিন অপেক্ষা করেছি তার হিসেব নেই।শুধু মাত্র তুমি নামক জিনিসটাকে আপন করে পাওয়ার জন্য আমাকে কতো কি করতে হয়েছে তা জানো তুমি.???আর যখন এতো কিছুর বিনিময়ে শুধু তোমাকে ফেলাম এখন বলছো ছেড়ে চলে যাবে তুমি।তুমি আমার অর্ধাঙ্গীনি আমার শরীরিরের প্রতিটা রক্তের শিরায় উপশিরায় শুধু তোমার নাম লেখা রয়েছে।তুমি নামক বস্তুটা ছাড়া একটা মুহূর্তও চলতে পারি না আমি আর আজ তুমি এই কথা বলছো।???”

চিৎকার করে বলে অয়ন।তার কথা শুনে আমি পুরোই শকড।হা করে তাকিয়ে আছি আমি তার দিকে।তার বলা কথা গুলো কি বিশ্বাস করার মতন।সে আমাকে ওই ভাবেই ধরে রেখে বলে..

“সেদিন জাস্ট মজা করে আমি তোমাকে বলেছিলাম তোমার প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই।আসলেই কি তা সত্যি।তোমার কি মনে হয় যে মেয়েকে দেখার পর আমি নিজের মধ্যে থাকি না একটা নেশা কাজ করে তার প্রতি কিভাবে….
.দিয়ুপাখি তুমি বিশ্বাস করবে না অয়ন নামক মানুষটার কাছে তুমি ঠিক কতোটা দামি। নিজের থেকেও তোমাকে চাই বেশি আমি।”

বলে অয়ন আমাকে আরও কাছে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে।তার কথা শুনে আমি আপাত ছোট খাটো কোমায় চলে গেছি।সে আমার ঘাড়ে ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে আমাকে ডাকে..

“দিয়ুপাখি.. ”

“……………………….”

“দিয়ুপাখি। “(হালকা ধাক্কা দিয়ে ডাকে অয়ন আমাকে।)

তার ধাক্কায় আমার হুশ আসে।হঠাৎ আমি তার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলি..

“আপনি আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরলেন কেনো।আর কি বলছিলেন আপনি এতক্ষন.????”(আমি)

সে আমার দুই হাতে তার দুই হাত রেখে কোমল কন্ঠে বলে..

“দিয়ুপাখি আমি এতক্ষন যা বলেছি তার কিছুই তুমি বুঝো নাই।বা শুনো নাই।???”(অয়ন)

আমি তার দুই হাত আমার গাল থেকে নামিয়ে ঝাঝালো গলায় বলি…

“না শুনি নাই কিছু।নিজের মতো এভাবে বকবক করলে কে শুনবে আপনার কথা।”

সে আবারো কোমল কন্ঠে বলে..

“কি হইছে তোমার দিয়া প্লিজজ বলো আমাকে।তোমার কোথাও কষ্ট হচ্ছে.????”

“কষ্ট হবে কেনো আজিব।”

“তাহলে কি হইছে তোমার বলো আমাকে।”(অয়ন)

“বলবো.?????”(আমি)

“হ্যা বলো কি হইছে তোমার।???”(অয়ন)

“আমার আপনার সাথে থাকতে বিরক্ত লাগছে প্লিজ গাড়ি চালান আর তাড়াতাড়ি বাড়ি চলেন।যতক্ষণ থাকবো মাথা নষ্ট হয়ে যাবে আমার।”

আমার কথা শুনে সে চমকে উঠে আমার দিকে তাকায়।চোখ মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে প্রচুর কষ্ট পাইছে।আমিও মজা নিতে থাকি।ব্যাটা বহুত জ্বালাইছে আমারে।এখন আমার পালা।তার সব কথাই আমি শুনেছি আর খুব ভালো করেই বূঝেছি।কিন্তু এখন আমার পালা।তাই অভিনয় করছি।ব্যাটা ভালো যখন ভাসোচ তাহলে সেটা আগে বললে কি হতো।খামোখা আমি এতো কষ্ট পেতাম না।এবার বুঝো ঠ্যালা।
সে আমার দিকে একবার তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে গাড়ি স্টার্ট দেয়।


বাসায় আসার পর থেকে আমি আর অয়নের সামনে বেশি একটা যাই নাই।কাজ ছাড়া কোনো কথাও বলি নাই।যদিও সে বারবার চেয়েছিলো কথা বলতে কিন্তু আমি পাত্তা দেই নাই।শেষে সে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ছে।আমি তারপাশে এসে বসে তার মুগ্ধ কর চুল গুলোতে বিলি কেটে দেই।আমার মুখে হাসি ফুটে উঠে।..

“আমি কখনোই ভাবি নাই মিস্টার বজ্জার বর।যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন।ইয়াহু ভাবতেই আমার লুঙ্গি ডান্স দিতে ইচ্ছা করে।আমি কিনা তার ভালোবাসা সেই কতো আগে থেকেই পাই।আর সে আমার সাথে মজা করে।উপপপ ভাবতেই অবাক লাগছে।”

অয়ন হালকা একটু নড়ে উঠতেই আমি সরে যেতে নিলেই সে আমাকে ধরে নেয়।আমি চোখ বড় বড় করে তার দিকে তাকাই।..

“আমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে কি করছো তুমি।.???”(ভ্রু কুচকে)

আমি তার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাই।..

“আ-আমি কেনো আপনার ঘুমের সুযোগ নি-তে যাবো।আমি তো দে-দেখতে আসছি আপনি ঘুমান কি না.???”(আমি)

আমার কথা শুনে সে আমাকে আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে..

“love you Diyupakhi… ”

তার কথা শুনে আমি চোখ বড় বড় করে তার দিকে তাকাই।ভাবতেও পারি নাই সে এতো তাড়াতাড়ি আমাকে এই কথা বলে দিবে।আমি তো ভাবছি তাকে আরেকটু নাচাবো।কিন্তু এখন যখন মুখের উপর বলে দিছে এখন আমি কি করবো।..

“আরেহ আপনি না অন্য একজনকে ভালোবাসেন তাহলে এখন আমাকে এই কথা বলছে কেনো.????”(আমি)

“দিয়ুপাখি আমি যাকে ভালোবাসতাম সে তো তু…..”

তাকে কথা শেষ করতে না দিয়ে আমি বলে উঠি..

“ব্যস ব্যস আর বলতে হবে না।আমার জানা হয়ে গেছে আপনি কি বলতে পারেন।ছাড়ুন আমাকে।”

বলেই তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেই আমি।আমার এই কাজে সে আরও বেশি কষ্ট পাইছে।

চলবে কি.????

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-১৫

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_১৫
#জান্নাতুল_বিথী

চোখ পিটপিট করে তাকাতেই দেখি অয়ন আমার দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে আছে।অয়নকে এভাবে তাকাতে দেখেই আমি আবার চোখ বন্ধ করে ফেলি।আমার কাজে অয়ন নিশব্দে হাসে।মাথায় আলতো হাতে বিলি কেটে বলে..

“এখন কেমন লাগছে.????”(অয়ন)

অয়নের কথা শুনে আমি চোখ খুলে লাফদিয়ে উঠতে গিয়ে মাথায় ব্যাথ্যা লাগায় আউচ বলে উঠতেই অয়ন আমাকে ধরে বসায়।আমি অয়নের মুখের দিকে তাকাতেই রেগে বলে উঠে…

“তুমি সারাজীবনের কেয়ারলেস কেয়ারলেসই থেকে যাবে।ইডিয়েট।”(অয়ন)

আমি অয়নের মুখের দিকে তাকিয়ে কাদো কাদো গলায় বলি…

“আমি কি করেছি.???”(আমি)

“কি করছি মানে.??বৃষ্টিতে ভিজতে কে বলছে তোমায়।যদি কিছু হয়ে যেতো তাহলে.???(অয়ন)

“তাহলে কি.????”(ভ্রু কুচকে)

“তোমার মাথা।…”(অয়ন)

“আচ্ছা আমার আবার কি হলো..?????”(আমি)

“কি হয়েছে মানে সারা শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে আর মেডাম বসে বসে বৃষ্টিতে ভিজতেছে।..”(অয়ন)

“কই কি হলো আমি তো একদম ঠিক আছি..”(আমি)

“জ্বরের কারনে উল্টা পাল্টা বকা শুরু করছো আবার বলো যে তুমি ঠিক আছো।???”(অয়ন)

আমি কিছু না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে আছি।

“জীবনেও শুধরাবে না তুমি।”(অয়ন)

“শুধরে দেওয়ার জন্য কেউ থাকলে তবেই তো শুধরাবো।”

“খুব কথা বলতে শিখছো দেখছি।”(অয়ন)

“আমি তো ছোট বেলা থেকেই কথা বলতে পারি।নতুন করে শিখতে হবে নাকি।”(আমি)

আমার কথা শুনে অয়ন মাথায় হাত দিয়ে বিরবির করে বলে..

“ইয়া আল্লাহ কোন পিচ্ছি মেয়ের প্রেমে পড়লাম আমি।”

“কিছু বলছেন আপনি.???”(আমি)

অয়ন কিছু না বলে আমার দিকে ঝুকে আসতেই আমি একটু সরে যেতে নিলেই অয়ন আমাকে এক হাত দিয়ে কাছে এনে কপালে হাত দেয়। তারপর আমার কানের কাছে মুখ এনে বলে..

“দেখছিলাম জ্বর আছে কিনা।এমনিও তোমার প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই।”(অয়ন)

তার মুখে এই কথা শুনে আমি যেনো আকাশ থেকে পড়ি। নিজের দুই কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না আমি।পরক্ষনে ভেবে দেখি সে তো আর আমাকে ভালোবাসে না যাকে ভালোবাসে হয়তো তার কথাই ভাবে সারাক্ষন।আমি কি আর তার কিছু লাগি নাকি।তারপরও চিৎকার করে বলি..

“যদি এটাই সত্যি হয় তাহলে বিয়ে করলেন কেনো।কেনো এতো কেয়ার করেন।এন্সার মি.”(চিৎকার করে)

“তোমার উপর আমার কিছু দায়িত্ব আছে স্বামী হিসেবে।তাই পালন করার চেষ্টা করছি।”(অয়ন)

“চাই না আমি এই ধরনের কেয়ার।এমন দায়িত্ব পালন করার প্রয়োজন বোধ করি না।আমি নিজের খেয়াল নিজেই রাখতে পারি।”

বলেই আমি কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ি।দিয়ার কাজে অয়ন ভ্যবাচেকা খেয়ে যায়।পরক্ষনে নিজেকে সামলে রুম থেকে বের হয়ে যায়।


সারাদিনে আমি আর অয়নের সাথে দেখা করি নাই।অনেক কান্না করেছি আমি সারাদিনে।অয়নের কিছু কাজে মনে হয়েছিলো অয়ন আমাকে ভালোবাসে।কিন্তু আমার ধারনা সত্যিই ভুল ছিলো।এটা আমি মেনে নিতে পারি নাই।তাই কান্না করছি।সারাদিনে অয়নকেও আমি আর দেখি নাই।রাত অনেক হয়েছে অথচ অয়ন এখনো অব্দি বাড়ি আসে নাই।আমি বালিশে হেলান দিয়ে বসে অয়নের জন্য অপেক্ষা করছি।যতোই রাগ বা অভিমান করি না কেনো এখন অনেকটা চিন্তা হচ্ছে। ফোন হাতে নিয়ে অয়নকে কয়েকবার ফোন করি।কিন্তু কোনো সাড়া শব্দ নেই।এক পর্যায়ে ফোন দিতে দিতে আমি ঘুমিয়ে পড়ি।..

রাত ২ টা

অয়ন রুমে ডুকে আস্তে দরজা বন্ধ করে দেয়।যেনো কারো ঘুম না ভাঙ্গে।অয়ন রুমে এসে লাইট না জ্বালিয়েই ফ্রেস হতে চলে যায়।ফ্রেস হয়ে এসে দেখে দিয়া খাটের সাথে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে।হয়তো তার অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ছে।অয়ন আস্তে করে দিয়াকে নিজের বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে।

,
সকালবেলা সূর্যের আবছা আলো মুখে পড়তেই ঘুম ভেঙ্গে যায় আমার।উঠার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই।কেউ আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে রেখেছে।আমি হালকা মাথা উচু করে তাকিয়ে দেখি আমি অয়নের বুকে শুয়ে আছি।দেখতেই মুখে হাসি ফুটে উঠে।কিন্তু অয়নের কপালে ব্যান্ডেজ দেখে আমি আৎকে উঠি।তাড়াতাড়ি অয়নের হাত সরাতে নিতে গেলেই অয়ন আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আমাকে।..

“অয়ন দেখি ছাড়ুন আমাকে।”(আমি)

“দিয়ুপাখি সারারাত ঘুমাতে পারি নাই এখন তো ঘুমাতে দাও।”(ঘুম ঘুম চোখে অয়ন বলে)

“আজিব। আপনি ঘুমান আমাকে ছেড়ে।আর আঘাত লাগছে কি করে আপনার.???”(আমি)

“তোমাকে ছাড়া আমার ঘুম আসবেও না দিয়ুপাখি। “(অয়ন)

“এমনিতে তো আমার প্রতি আপনার কোনো ইন্টারেস্ট নেই।তাহলে একথা বলেন কেনো।.???”

আমার কথা শুনে অয়ন আমাকে ছেড়ে দেয়।আমি উঠে বসতেই অয়নও উঠে বসে।তার হাতেও ব্যান্ডেজ করা।এবার আমি আরও ভয় পেয়ে যাই।তার হাত হাতের মুঠোয় নিয়ে বলি….

“কি হইছে আপনার এতো আঘাত লাগলো কি করে।.????”(আমি)

“আমি ঘুমাবো ডিস্টার্ব করবে না আমাকে।”(অয়ন)

“আগে বলেন কিভাবে এতো আঘাত লাগলো আপনার.????”(আমি)

“কাল রাতে কিছু লোক ট্রাক বোঝাই করে পেনসিডিল নিচ্চিলো তাদের সাথে মারামারি করতে গিয়ে হালকা একটু আঘাত লাগছে দিয়ুপাখি।”(চোখ ছোট ছোট করে বলে অয়ন)

“এভাবে কেউ মারামারি করে।????লাল তেলাপোকা নীল কুমিরের বাচ্ছা এক লাথি দিয়ে উগান্ডায় পাঠিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।তোদের যদি সামনে পাই তাহলে ডিসুম ডিসুম দিয়ে দিমু।কুত্তা।”(আমি)

অয়ন আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।..

“কার চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্দার করতেছো।..????”(অয়ন)

“যাদের কারনে আপনার এই অবস্থা হলো তাদের।”(আমি)

আমার কথা শুনে অয়ন ফিক করে হেসে দেয়।..

“আমি না কোনো দিন নীল কুমির দেখি নাই দেখাবে একটু প্লিজজজজ।..???”(অয়ন)

কথা শেষ করেই অয়ন হাসতে থাকে।অয়নকে এভাবে হাসতে দেখে তার মুখে আমি বালিশ ছুড়ে দেই।তাতে তার হাসির শব্দ আরও দ্বিগুন হলো।আমি ভেংচি কেটে ওয়াশরুমে চলে যাই।ফ্রেস হয়ে এসে আমি সর্তকতার সহিত অয়নের আঘাত গুলোকে ড্রেসিং করে নতুন করে ব্যান্ডেজ করে দেই।এর মধ্যেই অয়ন ঘুমিয়ে গেছে।

#চলবে_কি.??????

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-১৪

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_১৪
#জান্নাতুল_বিথী

পাথরের ন্যায় বসে আছি আমি.চোখ দিয়ে পানি পড়াও বন্ধ হয়ে গেছে।আমি কি করবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।বাবা আমাকে এমন একজনের সাথে বিয়ে দিলো যে কিনা আমাকে ভালোইবাসে না।হ্যা হয়তো এটা ঠিক যে আমি অয়নকে নিয়ে চিন্তা করি।হয়তোবা পছন্দও করি।কিন্তু অয়ন তো আরেক টা মেয়েকে ভালোবাসে।হ্যা অয়নের সাথেই আমার বিয়ে হইছে।সম্পুর্ন ঘরোয়া ভাবে।মা শুধু আমাকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলো অয়নকে তোর কেমন লাগে।আমি ভালো বলতেই তারা বিয়ে অব্দি চলে গেলো।আমি এমনটা কখনোই ভাবি নাই।এখন অয়ন আমাকে কি ভাববে সেটাই ভাবছি।আমি অয়নের দিকে একবার আড়চোখে তাকাই।অয়ন আমার পাশেই বসে আছে গাড়িতে।কিন্তু অয়নকে দেখে সত্যিই আমি অবাক হলাম।অয়ন এমন ভাবে বসে আছে মনে হচ্ছে এটাই হবার কথা।এই নিয়ে তার কোনো ভাবান্তর নেই।গাড়ি এসে অয়নদের বাড়ির সামনে দাড়াতেই অয়ন আমাকে পেলেই চলে যায়।আমার কোনো ভাবান্তর হলো না।কারন আমি জানি এটাই হবার ছিলো।অয়ন কোনোদিনও হয়তো আমাকে মেনে নিবে না।যাই হোক সিমি আর আরও কিছু মেয়ে মিলে আমাকে অয়নের রুমে নিয়ে আসে।আমি যেনো যন্ত্রচালিত বোরট হয়ে গেছি এমন মনে হচ্ছে।অয়নের রুম টা অনেক সুন্দর করে সাজানো হইছে।সারা রুম জুড়ে ফুলের গন্ধ মো মো করছে।আমার মনে হচ্ছে আমি কোনো ফুল বাগানে বসে আছি।

রাত ১১.৪৫

হঠাৎ দার বন্ধের আওয়াজে আমার তন্দ্রা ভাব দুর হয়।তাকিয়ে দেখি অয়ন দুইহাত ভাজ করে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আমি উঠে গিয়ে অয়নকে সালাম দেই।সালামের জবাব নিয়ে অয়ন এখনও আগের ন্যায় দাড়িয়ে আছে।..

“সরি আসলে আমি সত্যিই বুঝতে পারি নাই কি থেকে কি হয়ে গেলো।আপনি যখন অন্য একজন কে ভালোবাসেন তাহলে আমাকে বিয়ে করতে গেলেন কেনো।আপনার বাবাকে তো বলতে পারতেন।..”(আমি)

অয়ন একটা দীর্যশ্বাস ফেলে বলে..

“বাদ দাও তো এসব এখন। আমার ভাগ্যে তো তুমিই ছিলে।তাইতো তোমাকে বিয়ে করলাম।.”(অয়ন)

“সম্পুর্ন নিজের মতামতের বিরুদ্ধে।তাই তো.????”(আমি)

“দিয়া আমি যা করেছি নিজের মতামতের ভিত্তিতেই করেছি।এখন তুমি গিয়ে চেঞ্জ করে ঘুমিয়ে পড়ো।.!!”(অয়ন)

“মিথ্যে কথা কেনো বলেন আপনি।আমি…..”

আমাকে কথা শেষ করতে না দিয়ে অয়ন চিৎকার করে উঠে..

“দিয়া একদম উল্টা পাল্টা কথা বলবে না।তোমাকে যা করতে বলছি তুমি তাই করো।”

বলেই অয়ন বেলকনিতে চলে যায়।আমি অয়নের চিৎকার শুনে ভয় পেয়ে যাই। অয়নের এমন রিয়েকশনে আমি অবাক হয়ে যাই।যাই হোক আমি গেলাম আমাকে ঘুম আপা ডাকতেছে।.


রাত ৩ টা বাজে,

“সরি দিয়ুপাখি তোমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য। তুমি এমন ভাবে বলছো মনে হচ্ছে আমি তোমাকে ঘৃনা করি।আরে বাবা ভালোবাসার মানুষকে কখনো বুঝি ঘৃনা করা যায়।খুব তাড়াতাড়ি আমি তোমার ভুল ধারনা গুলোকে ভেঙ্গে দেবো।হঠাৎ বিয়ে হয়ে যাবে এটা আমার ধারনারও বাহিরে ছিলো দিয়ুপাখি। ভেবেছিলাম তোমাকে ভালোবাসি বলবো তারপর বিয়ে করবো।কিন্তু আমার বাবা কেনো যে এমন করলেন সেটাই জানি না।যাই হোক তবুও তুমি শুধুই আমার।অনেক কষ্ট ত্যাগের পর তোমাকে পেয়েছি আমি।আর কোনো দিনও তোমাকে একা হতে দেবো না।তোমার ছোট ছোট আবদার গুলো পুরন করার দায়িত্ব আজ থেকে আমার।”

তারপর অয়ন দিয়ার হাতে একটা আন্টি পরিয়ে দিয়ে হাতে ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে বলে…

“নতুন জীবনের শুভেচ্ছা তোমাকে দিয়ুপাখি।”

বলে অয়ন দিয়াকে জড়িয়ে ধরে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমায়।


“এই যে মিসেস অয়ন চৌধুরি এবার তো উঠেন।আর কতো ঘুমাবেন।.”

কারো এই ধরনের কথা শুনে আমি চোখ পিটপিট করে তাকাই।দেখি সিমি হাসি মুখে আমার মাথার কিনারায় বসে আছে।ওকে দেখতেই আমি তাড়াতাড়ি উঠে বসি।চারদিকে তাকিয়ে সব কিছু বুঝার চেষ্টা করতেছি।তারর আগেই সিমি বলে উঠে..

“নিজের হবু বরের রুমে আছো তুমি ভাবি।..”(সিমি)

“ভাবি.?????”(আমি অবাক দৃষ্টিতে সিমির দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করি।)

“কেনো কেনো নিজের ভাইয়ের বউকে তাহলে কি বলে ডাকবো আমি।.???”(সিমি)

সিমির কথা শুনে আমি চারপাশে একবার তাকিয়ে নেই।মূল উদ্দেশ্য অয়নকে খোজা।..

“তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেস হয়ে নাও ভাবি ভাইয়া সহ সবাই নিচে আছে তুমিও চলো।”(সিমি)

কথা শেষ করেই সিমি চলে যায়।আমি ফ্রেস হয়ে এসে দেখি চারদিকে মেঘে মেঘাচ্ছন্ন। এখনই হয়তো বৃষ্টি নামবে।এমন আবহাওয়া আমার খুব ভালো লাগে। তাই তা অনুভব করার জন্য আমি ছাদে চলে যাই।অয়নের উপরে হালকা রাগ অনুভব করি।কিন্তু পরক্ষনেই ভাবি নিজের ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে পারে নাই তাই হয়তো মন খারাপ।অবশ্যই খারাপ লাগারই কথা।হঠাৎ আকাশ গর্জন করে উঠে আর সাথে সাথে বৃষ্টি নামে।অনেকদিন পর এমন বৃষ্টি দেখে লোভ সামলাতে না পেরে ভিজতে থাকি।

বৃষ্টি নামতে দেখে অয়ন তাড়াতাড়ি রুমে আসে।যা ভেবেছিলো ঠিক তাই।দিয়া রুমেও নেই বেলকনিতেই নেই তাহলে থাকতে পারে ছাদে।অয়ন খুব ভালো করেই জানে দিয়া এখন বৃষ্টিতে ভিজবে তাই আর দেরি না করে অয়ন ছাদে চলে যায়।যা ভেবেছিলো তাই।দিয়া বৃষ্টিতে ভিজতেছে।অয়ন অনেক বার দিয়া বলে ডাকছে কিন্তু দিয়ার কোনো সাড়া শব্দ নেই।দিয়া দুই হাত মেলে বৃষ্টিতে ভিজতেছে।অয়ন তাড়াতাড়ি গিয়ে দিয়াকে ঝাকিয়ে বলে..

“আর ইউ মেড দিয়া।কি করচো চলো এখান থেকে।..”(অয়ন)

দিয়া অয়নের দিকে একবার তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে ফেলে বলে..

“ওহহ আপনি তাহলে এসে গেছেন।তাহলে চলুন না প্লিজ আমরা দুজনে বৃষ্টিতে ভিজি।”(দিয়া এমন ভাবে কথা বলছে মনে হচ্ছে সে নিজের মধ্যে নেই।)

“তুমি চলো এখন এখান থেকে।বেশি ভিজলে জ্বর চলে আসবে।”(অয়ন)

দিয়া অয়নের হাত ঝাকিয়ে ফেলে দিয়ে বলে..

“আপনি খুব পচা এখন আর আমাকে দিয়ুপাখি বলেও ডাকেন না।জানেন আপনার মুখে দিয়ুপাখি নামটা শুনলে মনটা জুড়ে যায়।আপনি আমাকে ভালো না বাসলে কি হইছে আমি তো আপনাকে ভালোবাসি।তাইতো আমি আপনাকে আপনার lover girl এর কাছে পাঠিয়ে দেবো।আপনাদের দুজনের মিল করে দেবো।..”(দিয়া)

অয়ন এতক্ষন দিয়ার বলা কথা গুলো খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো।কথা গুলো শুনে অয়নের মুখে হালকা হাসি ফুটে উঠে।পরক্ষনেই গম্ভীর মুখে বলে..

“হয়েছে তোমাকে এতো স্টার জলসার শ্রীময়ি হতে হবে না।যেভাবে আছো তাই ঠিক আছে।..”

বলেই অয়ন দিয়াকে কোলে তুলে নেয়।বড্ড কেয়ারলেস যে এই মেয়ে তা অয়নের খুব ভালো করেই জানা আছে।..

#চলবে_কি..??????????

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-১২+১৩

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_১২
#জান্নাতুল_বিথী

“আচ্ছা দিয়ুপাখি তোমার জীবন সঙ্গী হিসেবে কেমন ছেলে পছন্দ।.????”(অয়ন)

কথাটা শুনে আমি অয়নের দিকে আড় চোখে তাকাই।তাকিয়ে দেখি অয়ন আধ ঘন্টা আগে যেমন ছিলো এখন ও ঠিক ওই ভাবে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।আজ সারাদিন আমি অয়নদের বাড়িতে অথচ অয়নকে দেখছি রাত ১০ টায়।তাও আবার কোথা থেকে যেনো এসে আমার হাত ধরে টেনে ছাদে নিয়ে আসে।এসে নিজের পাশে আমাবে বসতে বলে নিজেই হাত ধরে বসিয়ে দেয়।

তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।আজ আকাশের তারাদের খেলা।চারদিকে তারারা জ্বল জ্বল করছে। চারদিকের পরিবেশ আমি মুগ্ধ নয়নে দেখছি।শহরের কোলাহল তো আছেই।কিন্তু তার মাঝেও এমন একটা পরিবেশ দেখে আমি মুগ্ধ না হয়ে পারি নাই।অয়নের গত আধ ঘন্টা ধরে চুপ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলো।এতক্ষনে তার মুখে একটা কথা শুনলাম মাত্র।আমি অয়নের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলি..

“আমি আমার জীবন সঙ্গী হিসেবে এমন একজনকে চাই যে আমাকে অনেক ভালোবাসবে।কখনো চোখে হারাতে দিবে না।সব সময় আমার খেয়াল রাখবে।তার থেকে কেয়ার পাওয়ার জন্য প্রয়োজনে আমি কেয়ারলেস হতেও রাজি।সে প্রতিদিন না হলেও সময় পেলেই আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে।আমার ছোট ছোট আবদার গুলো সব সময় হাসি মুখে পূরন করবে।

আমি ভুল করলে আমাকে শাসন করবে ঠিকই কিন্তু কখনোই ছেড়ে যাবে না।যে আমার উপর রাগ করলেও আড়ালে আমার খোজ নিবে যত্ন নিবে।মুখে না বললেও চলবে যে ভালোবাসি প্রিয় কিন্তু কাজে তা প্রকাশ করতে হবে।যে মানুষটা শতকিছু হয়ে গেলেও আমার হাতের বাধন ছাড়বে না।আর বলবো..????”(আমি)

অয়ন মুগ্ধ চোখে দিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।ও ভাবতেও পারে নাই ওর মনে এমন কিছু আছে।অয়ন মুচকি হেসে বলে..

“না থাক আর বলতে হবে না।যতোটুকু বলছো তাতেই এনাফ।আচ্ছা এটা বলো তুমি কি করতে পছন্দ করো…”(অয়ন)

“Gardening…”(আমি)

“সত্যিই.?? “(অয়ন অবাক চাহুনিতে বলে)

“হুমম সত্যি।জানেন আমার না অনেক ইচ্ছা আমার অনেক বড় একটা বাগান থাকবে যেখানে সব ধরনের ফুল থাকবে।চারদিকে পাখিদের আনাগোনা। আর সেখানে প্রিয় মানুষটির পাশে বসে তার কাধে মাথা রেখে চাঁদনী রাতে দুজনে বসে অনেককক গল্প করবো।মনের কথা বলবো।কিন্তু আমার এই ইচ্ছে টা হয়তো কখনোই পূরন হবে না।..”(আমি)

অয়ন কিছু বলতে যাবে তার আগেই সিমি এসে খেতে ডেকে নিয়ে যায়।

আমি আর ইমা শুয়ে শুয়ে গল্প করতেছি।সিমি শিহাব ভাইয়ার সাথে চেটিং করতেছে।এটা নিয়ে ওকে কিছুটা জ্বলাতন করেছিলাম।কিন্তু সিমি আর কিছুই বলে নাই।..

“জানচ দিয়ু আমি না অয়ন চৌধুরির উপর ক্রাশ খাইছি।..”(ইমা)

ইমার কথা শুনে আমি খানিকটা রেগে যাই।..

“ওই বজ্জাত মাইয়া একদম এই কথা বলবি না।”

ইমা আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে..

“তোর এতো জ্বলে কেনো.???”(ইমা)

ইমার কথা শুনে আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে যাই তারপর আমতা আমতা করে বলতে থাকি..

“ই-য়ে তুই জানচ না ক্রাশ মানেই বাশ।ক্রাশ খাইলেই বাশ খেতে হয়।আর আমি তো চাইনা আমার বন্ধু এই বয়সে বাশ খেয়ে ব্যাকা হয়ে যাক।”(আমি)

আমার কথা শুনে ইমা হেসে দেয়।..

“দোস্ত অন্য কিছুর গন্ধ পাইতাছি কিন্তু।..”(ইমা)

“তোর তো এমনই মনে হবে।যা সর কথা বলবি না একদম আমার সাথে।..”(আমি)

হঠাৎ আমার ফোনে মেসেজের টুংটাং শব্দ হয়। স্কিনে লেখা ‘অচেনা পাগল’ মেসেজটায় যা লেখা

‘Diyupakhi ato rat obdi jage thakle sorir kharap korbe to.jao gumao pakhi.noyto kopale dhukko ase kintu.’

আরেহ আবারও থ্রেট।এবারতো আমার ইচ্ছে করছে ওই অচেনা পাগলকে ইচ্ছে মতো দোলাই দিতে।কিন্তু কে এই অচেনা পাগল।ইমা কে বলতেই ও বলছে অয়ন।আমারও অয়নকে সন্দেহ হয়।কারন অয়নই শুধু আমাকে দিয়ুপাখি বলে ডাকে।হঠাৎ আমার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে।কিভাবে এই অচেনা পাগলকে ধরবো তার উপায় হিসেবে।ভাবতেই মুখে ডেবিল মার্কা হাসি ফুটে উঠে।

(বাবারে বাবা দিয়াও দেখছি ডেকিল মার্কা হাসি দিতে জানে:লেখনিতে লেখিকা আপা)

#চলবে_কি…..?????

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_১৩
#জান্নাতুল_বিথী

এক ঘন্টা যাবত অয়নের পেছনে পেছনে ঘুরতেছি একটু তার নাম্বারটা নিতে কিন্তু সে শুধু বলতেছে তার নাম্বার কোনো মেয়েকে নাকি দিতে পারবেনা সে।তাকে নাকি ডিস্টার্ব করবে।এই কথা শুনে আমার অনেক রাগ লাগে।কিন্তু কিছু বলি নাই।দেখতে দেখতে সিমির বিয়ের দিন চলে আসে।এর মধ্যে দুইদিন আমি অয়নের সাথে কথাও বলি নাই আর না করেছি দেখা।বাড়ি ভর্তি মানুুষ গিজগিজ করছে।আমার বেশি মানুষের মধ্যে থাকতে বিরক্ত লাগে তাই রুমে বসে আছি।সব রুম জুড়েই মানুষের আনাগোনা শুধু সিমির রুম ছাড়া।কারন অয়ন নিষেধ করছে এই রুমে কারো ডুকতে।তাই কেউ সাহস করে ঢুকে না।আর আমিও শান্তিতে আছি।যাইহোক সিমিকে রেডি করানো হচ্ছে।পার্লারের মেয়েরা আসছে।সিমিকে লাল বেনারসি পরানো হইছে।চোখে গাড় করে কাজল দেওয়া গাড় লিপস্টিক মুখে অনেক সুন্দর করে মেকাপ করা।চুলগুলো বেলি ফুল দিয়ে মোড়া।সিমিকে সাজানোর পর আমি ওর দিকে মুগ্ধ নয়নে ছেয়ে আছি।কারন সিমিকে অনেক সুন্দর লাগছে।..

“উপপপপ আজকে তো তুমি শিহাব ভাইয়াকে পাগল করে দিবে।”.(ইমা)

“একদম ঠিক কইছো দোস্ত।এতোটুকুই যথেষ্ট ভাইয়াকে পাগল করার জন্য।..”(আমি)

আমাদের কথোপকথনে সিমি অনেক লজ্জা পায়।..

“উপপ আপু তোমরা এবার একটু রেডি হয়ে নাও প্লিজজ।..”(সিমি)

আমি আর ইমা দুজনেই জোরে হেসে দেই।

_______________________________

অয়ন বেচারির আজ দুদিন অবস্থা বেহাল।আজ দুদিন যাবত নিজের প্রেয়সী কে দেখছে না।কতো চেষ্টা করছে অথচ দেখাই মিললো না।অয়ন নিজের বন্ধুদের সাথে কথা বলছিলো।..

“দুর এর থেকেও নিজেদের বাড়ি থাকলেই আরও বেটার হতো।”(বিরবির করে বলে অয়ন)

“কিরে অয়ন কি বিরবির করচ।.??”(রিহান)

“হ্যা হ্যা জানি অয়ন।এটা কিন্তু প্রেমে পড়ার পূর্ব লক্ষন।..”(টিটকারি করে বলে নিলা)

“প্রেমে তো পড়ছি সেই কতো আগেই।নতুন করে আবার পড়তে হবে নাকি.???”(অয়ন)

কথাটা শুনামাত্রই অয়নের সব বন্ধুরা ওওও বলে চিৎকার করে উঠে।একজন একদিক থেকে প্রশ্ন ছৃড়ে দিতেছে।অয়ন কিছু বলার আগেই একজন বলে উঠে.

“দেখ অয়ন তোর বোন আসতেছে।.???”(নিলা)

অয়ন ওইদিকে তাকাতে তার দুচোখ আটকে যায়।সিমির সাথে তার পরীও যে নামছে।আজ দুদিন পর তার পরীকে সে দেখছে।তাও আবার শাড়ি পরায়।দিয়া আজ মেরুন কালারের একটা শাড়ি পরেছে।সাথে হাত ভর্তি লাল চুড়ি। ঠোটে হালকা লিপস্টিক।চোখে গাড় করে কাজল দেওয়া।মুখে আর কোনো প্রসাদনি ইউজ করে নাই।এই টুকুতেই অয়ন ফিদা হয়ে গেছে।চোখের পলক পড়ছেনা।

________

আমি আর ইমা পাশাপাশি হাটতেছি।আমি বেহায়া দুচোখ কেনো জানি অয়নকে খুজতেছে।হঠাৎ পিচ্ছি মেয়ে এসে আমার হাত হ্যাচকা টাক দিয়ে বলে..

“আপুই আমাকে একটু ওই রুমটায় নিয়ে চলো না প্লিজজ।”

আমি পিচ্ছিটার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলি।.

“আচ্ছা ঠিক আছে চলো।তুই(ইমার দিকে তাকিয়ে) দাড়া আমি এখনই আসছি।”

বলেই আমি পিচ্ছির হাত ধরে এগিয়ে যাই।পিচ্ছি মেয়েটা আমাকে রুমের মধ্যে ডুকিয়ে বলে..

“আপুই ওই দেখো কি এটা…”(পিচ্ছি)

আমি ওই দিকে তাকাই।দেখি ওইখানে একগুচ্ছ গোলাপ রাখা।আমি ওই দিকে যেতে নিলে দরজা বন্ধ করার শব্দে চমকে উঠে পেছনে ফিরে তাকাই।দেখি দরজা বন্ধ করা আর সাথে সাথে পুরো ঘর অন্ধকারে ডেকে যায়।কেপে উঠি আমি।দরের দিকে যেতে নিলেই হাতে টান অনুভব করি।ওই দিকে ফেরার আগেই একজন আমাকে টেনে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।আমি ভয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলি।একটু পিটপিট করে চোখ খুলে সামনে তাকিয়ে আরও ভয় পেয়ে যাই।চারদাকে ঘুটঘুটে অন্ধকার।অচেনা লোকটি আমাকে পেচন দিকে ফিরিয়ে আমার চুলে কি যেনো করছে।এর মধ্যে আমার বকবক তো আছেই..

“আরেহ কে আপনি।আর কি করছেন এটা।ছাড়ুন আমাকে লাগছে আমার।”(আমি)

কিন্তু কে শুনে কার কথা। সে তার কাজ করে আমার হাতে কিছু একটা ধরিয়ে দিয়ে অন্ধকারে মিশে যায়।আর সাথে সাথে দার খুলে যায়।আমি এক দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসি।হাতে তাকিয়েদেখি আমার হাতে একটা চিরকূট।যাতে লেখা..

“আজ তোমার থেকে চোখ তোলা দায় হয়ে পড়ছে প্রিয়।তারপরও তোমার সাজটা কেমন জানি সম্পুর্ন হলো না।তাই সম্পুর্ন করে দিলাম।..”

আমি আমার মাথায় হাত দিয়ে দেখি কতোগুলো বেলি ফুলের মালা দিয়ে মোড়া আমার চুল।আমার মুখে স্নিগ্ধময় হাসি ফুটে উঠে।হঠাৎ আমার সামনে একটা ছেলে এসে দাড়ায়।কিছু বলতে যাবে তার আগেই অয়ন ছেলেটাকে নীল বলে ডাক দেয়।ছেলেটা চলে যায়।আমি অয়নের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। আকাশি রঙের পাঞ্জাবি তে অয়নকে একদম হিরোর মতো লাগছে। অয়ন আমার দিকে একবার আড়চোখে তাকিয়ে স্থান ত্যাগ করে।

_________________________________

দেখতে দেখতে বিয়ে শেষ হয়ে বিদায়ের সময় চলে আসে।সিমি তার বাবা মাকে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্না করছে।উনারাও নিজেদের চোখের পানি আটকাতে পারে নাই।আমি অয়নকে আজ প্রথমবার দেখলাম কাদতে।একটা বোনকে ছেড়ে যাওয়ার পিলিংসটা একজন ভাই ছাড়া হয়তো আর কেউই বুঝে না।আজ আমি আমার ভাইয়ের অভাব বোধ করছি।আজ যদি আমার একটা ভাই থাকতো তাহলে কি হতো।এসব ভাবতে ভাবতেই বাড়ি এসে পৌছাই।বাবা আমাদের জন্য গাড়ি পাঠিয়েছে তাই আমরা চলে আসছি।আজ প্রায় ;;;তিনদিন অয়নের সাথে কথা বলি না আমি।ভালো লাগছে না কিছু তাই।


অন্ধকার রুমের মেঝেতে বসে আছে অয়ন।হাটুতে মুখ গুজে দিয়ার একটা ছবির দিকে পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।তার মনটা অনেক খারাপ।

“দিয়ুপাখি ভেবেছিলাম তোমাকে পড়ালেখা কমপ্লিট করা পর্যন্ত টাইম দেবো।কিন্তু এখন দেখছি তোমাকে ছাড়া আমার একটা মুহূর্ত ও হাজার বছরের মতো লাগে।আমি আর পারছি না পাখি তোমাকে ছাড়া থাকতে।প্লিজজ করবে কি আমায় বিয়ে।খুব শীগ্রই তোমাকে আমার করে নেবো দিয়ুপাখি। তৈরি থেকো।..”(বলতে বলতে অয়নের চোখ থেকে একফোটা জল গড়িয়ে পড়ে)

#;চলবে_কি.?????

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-১১

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_১১
#জান্নাতুল_বিথী

বেশ কিছুদিন পর..

আমি আর আমার ফ্রেন্ড ইমা ভার্সিটি থেকে আসি।আমার সাথেই ইমার আমাদের বাড়ি আসে।আমি ওকে জোর করে নিয়ে আসি।এর মধ্যে আমার পরীক্ষা শেষ।আমাকে আর ওই অচেনা নাম্বার থেকে মেসেজ ও করে নাই কেউ।শেষ মেসেজ করেছিলো আমার পরীক্ষার আগের দিন।শাসনের সুরে যেখানে বলা ছিলো..

“যেভাবে দুষ্টুমি শুরু করছো পরীক্ষায় যদি খারাপ রেজাল্ট করো তাহলে কিন্তু খরচ আছে তোমার।এখন থেকে পড়ো দিয়ুপাখি।.. ”

আমার ভালো লেগেছিলো মেসেজটা।আমাকে শাসন করার মতো তো অন্ত্যত আছে।মাঝে মাঝে ভেবে হাসি।কিন্তু সেদিন মেসেজটা আমার মনে সন্দেহ সৃষ্টি করেছিলো একজনের প্রতি।কিন্তু এই নিয়ে আর ভাবা হয় নাই।যাই হোক আমি আর ইমা বাড়ি এসে দেখি একটা মেয়ে মার সাথে বসে গল্প করছে।পেছন দিকে ফেরা কারনে আমি ঠিক চিনতে পারি নাই।তাই কৌতুহলবশত আমি এগিয়ে যাই ওর দিকে।..

“আরে দিয়া আয় মা তোর জন্যই অপেক্ষা করতেছি।..”(মা)

মাঢ়যের কথারর শুনে মেয়েটা আমার দিকে ফিরে তাকায়।আমি সিমিকে দেখে অবাক হয়ে যাই।সিমি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে..

“কেমন আছো আপু।আমাদের বাড়ি থেকে আসার পর থেকে তো আমাকে একেবারে ভুলেই গেলে।.”(সিমি)

“আরেহ তোমাকে ভুলিবো কি করে সেটা বলোতো।তা বড় লোক্স মানুুষ আমাদের মতো গরীবালয়ে কি করছেন.???”(মুচকি হেসে বলি আমি)

আমার কথা শুনে সিমি আমার দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকায়।আমি ফিক করে হেসে দেই।..

“আমাকে যেহেতু বড় লোক বলছো তো আর কি এখন আমি তোমাথে নিয়ে যাবো।..”

“কিন্তু কোথায়.???”(ভ্রু কুচকে)

“সারা জীবনের জন্য তোমাকে আমাদের বাড়ি নিয়ে যাবো।..”(চোখ মেরে)

“দুর কি যে বলো না তুমি।..”(আমি)

“আচ্ছা যাও গিয়ে এখন রেডি হয়ে আসো.???(সিমি)

আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকাই।আমার মনের কথা ও বুঝতে পেরে হেসে দেয়।আর আমার কানের কাছে এসে বলে..

“৩ দিন পর আমার বিয়ে।যাবে না আমাদের বাড়িতে..?”(সিমি)

সিমির কথা শুনে আমি অবাক হয়ে যাই।এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে হবে ভাবতেও পারি নাই আমি।..

“ওয়াও কনগ্রাচুলেসার। তো শিহাব ভাইয়ার এতো তাড়া কিসের শুনি।..”(আমি)

আমার কথা শুনে সিমি লজ্জা পেয়ে যা্য়।একবার মার দিকে তাকায়।আমার এতক্ষন খেয়ালই ছিলো না যে আমরা ২ জন ব্যতীত এখানে আরও দুজন মানুুষ আছে।

“কি হলো আপু চলো।..??”(সিমি আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলে)

ওর কথা শুনে আমি মার দিকে তাকাই।
“আরে তুমি আন্টির দিকে তাকাচ্ছো কেনো।আন্টি আংকেল রাজি।আর তাইতো আমি তোমাকে নিতে এসেছি।এখন তুমি চুপচাপ রেডি হয়ে যাও।..”(সিমি)
,
সিমিদের বাড়িতে এসে দাড়াতেই আন্টি ছুটে আসে।অনেক মিস করেছিলাম তাকে।তাই আমিও এগিয়ে যাই।অনেক্ষন তাদের সাথে কথা বলে আমি ইমা আর সিমি রুমে চলে আসি।কিন্তু এতোটা সময়েও একজন মানুষকে দেখি নাই।কেনো জানি অনেক খারাপ লাগে। আমি আর ইমা সারা বাগান জুড়ে হাটতেছি।ইমা আমার সাথে থাকার কারনে সিমি ওকেও নিয়ে এসেছে।বলছে আমার বোরিং লাগবে না তাতে।এমনিও এই বাড়িতে আসলে আমার একটুও বোরিং লাগে না।সিমি ঘুমাইতেছে আর তাই আমি আর ইমা ফ্রেস হয়েই বাগানে হাটতে চলে আসি। বিয়ে যেহেতু এখনো ৩ দিন পর তাই এখনো বাড়িতে কেউ এসে পৌছায় নাই।শুধু অয়নের চাচ্ছু কাজিনরা আসছে।আমি আর ইমা কথা বলতে ব্যস্ত এর ফাকে একটা ছেলে আমাদের সামনে এসে দাড়ায়।প্রথমে আমি কিছুটা ঘাবড়ে যাই কিন্তু পরক্ষনেই নিজেকে সামলে নেই।..

“হাই আই এম রিহান।..”(রিহান)

ছেলেটার কথা শুনে আমি ভ্রু কুচকে তাকাই।..

“তো আপনার নাম জেনে আমরা কি করবো।..”(ভ্রু কুচকে)

আমার কথা শুনে ছেলেটা কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।..

“ইয়ে মানে আসলে তোমাদের কে এই বাড়িতে দেখছি কিন্তু চিনি না তাই একটু পরিচিত হতে আসলাম।..”(রিহান)

“ইয়া ইয়া…..”(আমি)

“আচ্ছা তোমার নাম কি..????”(রিহান)

“এই তোর নাম কিরে.???”(ইমার দিকে তাকিয়ে)

আমার কথা শুনে ইমা আমার দিকে তাকিয়ে বলে..

“ওই তুই আমার নামও ভুলে গেলি।আর উনি তোর নাম জিজ্ঞেস করছে আমার না।বুঝলি.???”(ইমা)

আমরা দুজন ইচ্ছে করেই ঝগড়া শুরু করে দেই।ছেলেটা বিরক্ত হয়ে বলে..

“ওকে ওকে রিল্যাক্স।আচ্ছা এটা বলেন যে আপনার বাড়ি কোথায়।.???”(রিহান)

“কেনো আকাশের নিচে।..”(আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলি।)

আমার কথা শুনে ছেলেটা আরও বেশি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।ইমা হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।আমারও হাসা আসছে কিন্তু অনেক কষ্টে বন্ধ করে রাখছি।যেকোনো সময় পেট পুটো হয়ে বের হয়ে যেতে পারে।

“আসলে সরি আপু আপনাদের বিরক্ত করার জন্য.”(রিহান)

“উপপপপ কি ডেন্জারাস মেয়েরে বাবা।”(রিহান মনে মনে বলে)

“ইটস ওকে আমার মন আবার অনেক বড় আমি সবাইকে ক্ষমা করে দেই।..”(আমি)

কথাটা বলতেই ছেলেটা সাথে সাথে চলে যায়।আর আমি ইচ্ছে মতো হাসতে থাকি।হাসার মাঝে আমার মোবাইলে মেসেজের টুংটাং শব্দ আসে। তাকাতেই দেখি ‘অচেনা পাগল’ দিয়ে সেভ করা।আমার মুখে হাসি ফুটে উঠে।কারন অনেকদিন পর এই অচেনা মানুষটার মেসেজ পেলাম।তাকিয়ে দেখি ওইখানে লেখা আছে…

“ছেলেদের সাথে এতো কথা কিসের তোমার সেটাই তো বুঝি না।আর কখনো যদি দেখি যে কোনো ছেলের সাথে দাড়িয়ে কথা বলছো তো খবর আছে তোমার..”

থ্রেট দিয়ে মেসেজ দেয় আমাকে।ইস আইছে।আমার মুখে হাসি ফুটে উঠে।কেউ তো একজন আছে যে আমার বিভিন্ন কাজে জেলাস ফিল করে।ভাবতেই হাসি ফুটে উঠে আমার মুখে।

#চলবে_কি..?????

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-১০

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_১০
#জান্নাতুল_বিথী

ভার্সিটি যেতেই আমার কিছু ফ্রেন্ড এসে আমাকে ঘিরে দরে।সবাই অলরেডি সব কিছু যেনে গেছে।মিলি আমার সাথে কি করেছে ওর ভাই সহ সবাই কি করেছে বা করতে ছেয়েছে সব কিছু এই কয়দিনে সবাই জেনে গেছে।সবাই আমার আর মিলির জুটি নিয়ে অনেক সুনাম করতো কিন্তু এখন এমন টা হওয়ায় সবাই এখন ওকে ঘৃনার দৃষ্টিতে দেখে।ওর কথা এই কয়দিনে কেউ শুনতেও চায় না। আমি কিছুক্ষণ ওদের সাথে গল্প করে তার পর এক বিষয় ক্লাস করে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে আসি।তারপর হেটে একটা নদীর পাড়ে এসে একটা বেঞ্চিতে বসি।জায়গাটা একদম জনমানবশূন্য। কিন্তু তারপর ও আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে কেউ একজন গভীর দৃষ্টিতে মনোযোগ দিয়ে আমাকে দেখছে।আমি চারপাশটা ভালো করে দেখে নেই।কিন্তু কোথাও কাউকে দেখতে পাই না।তাই আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে আবার প্রকৃতির দৃশ্য উপভোগ করতে থাকি।সত্যিই জায়গাটা এক কথায় অসাধারন।আমি একা থাকলে কেনো জানি অয়নের কথা মনে পড়ে যায়।উনাদের বাসায় থাকা কালে আমি কখনোই একা থাকতাম না।আমার সাথে কেউ না কেউ থাকতোই।অয়নের সাথে কাটানো দুষ্টু মিস্টর সময় গুলো মনে পড়ে যায়।আনমনেই হেসে উঠি আমি।আর সাথে সাথে আমার ফোনে মেসেজ আসে একটা যা দেখে আমি পুরোই অবাক হয়ে যাই।তাতে লেখা..

“এভাবে হেসো না প্রিয়সী। পাগল হয়ে যাই তোমার মন মাতালো হাসিতে।”

মেসেজটা দেখে আমি আবারো আশেপাশে তাকাই কিন্তু কাউকে দেখতে পাই নাই।ওই নাম্বারে ফোন করতেই ওই পাশ থেকে বলে উঠে..

“আপনার ডায়াল কৃত নাম্বারটি এই মুহূর্তে বন্ধ আছে। দয়া করে অপেক্ষা করুন নয়তো আবার চেষ্টা করুন।”

এইবার আমি বিরক্ত বোধ করি।আর সব চায়ে অবাক ব্যাপার হলো এই নাম্বারটা থেকেই এখন মেসেজ আসছে যে নাম্বার থেকে কালকেও ফোন+মেসেজ আসছিলো।কালকেও আমি সাথে স্থে ফোন করেছিলাম তখনও ফোন বন্ধ বলেছিলো।এসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতেই আমি উঠে দাড়াই।আর হাটতে শুরু করি।আকা বাকা মেঠো পথ দিয়ে হেটে এসে রাস্তায় দাড়াতেই দেখি একটা শুভ্র রঙের গাড়ি।গাড়িটা দেখতেই আমার আর বুঝতে বাকী রইলো না এটা কার গাড়ি।কিন্তু সে এখানে আসবে কেনো।হ্যা এটা অয়নের গাড়ি। আর এখন আমি এটা ভাবছি যে অয়নের গাড়ি এখানে কি করছে। আমি গাড়ির দিকে এগিয়ে যেতেই দেখি ভেতরে কেউ নেই।একটু খারাপ লাগে।মন খারাপ করে পেছনে তাকাতে গিয়ে আমি কারো বুকের সাথে জোরে ধাক্কা খাই।পড়ে যেতে নিয়েও পড়ি না। আর আমি অয়নের দিকে তাকিয়ে আছি অবাক চোখে।অয়ন কে কি কিউট লাগছে এখন। সাদা-কালো টি-শার্ট হাতা ফোল্ড করা চুল গুল স্পাইক করা আর চোখে সানগ্লাস। মুখে হাসি নেই তবে চিন্তিত মনে হচ্ছে।..

“আর ইউ ওকে দিয়ুপাখি..???? “(ব্যস্ত কন্ঠে বলে অয়ন)

“জ্ব-জ্বি।আপনি এখানে.???”(ভ্রু কুচকে)

“আ-আসলে এখানে একটা কাজে এসেছিলাম..”(অয়ন)

কাকতালীয় ভাবে আজ অয়নের ড্রেসের সাথে আমার ড্রেসের রঙ মিলে যায়।অয়ন আমার দিকে তাকিয়ে বলে..

“হঠাৎ আমার ড্রেসের সাথে মিলিয়ে ড্রেস পড়লে কেনো..???”(অয়ন)

অয়নের কথা শুনে আমি অবাক চোখে অয়নের দিকে তাকিয়ে বলি..

“আজিব আমি কেনো আপনার সাথে মিলিয়ে পড়তে যাবো।আজ জানি না কিভাবে মিলে গেলো। আসলে আমি হোয়াইট আর ব্ল্যাক কালার টা অনেক পছন্দ করি তো তাই সব সময় এই কালার টাই বেছে নিতে পছন্দ করি।..”(আমি)

“আই সি।কিন্তু একটা কথা তোমাকে ব্ল্যাক কালারে অনেক সুন্দর লাগে।একদম পরীর মতো।”(আনমনে বলে উঠে অয়ন)

অয়নের মুখে আমার প্রশংশা শুনতে ভালোই লাগে।কিন্তু পরক্ষনে কিছু একটা ভেবে অয়নের মুখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলি!…

“আপনার লাভার গার্ল যদি এই কথা শুনে তাহলে তুলকামাল হয়ে যাবে।নিজের প্রেমিকের মুখে অন্য একজনের প্রশংসা শুনলে।..”(একটু হেসে বলি আমি)

“কখনোই না। আমার মেডাম এতোটাও হিংসুটে নয়।..”(অয়ন)

“তাহলে তো ভালোই হলো। বাট যদি আমি হতাম তাহলে কিন্তু খবর ছিলো।আমি ছাড়া যদি অন্য কোনো মেয়ের মুখের দিকে তাকায় তাহলে ওর চোখ তুলো ফুটবল খেলতাম।..”(ঠোট বাকিয়ে বলি আমি)

আমার কথা শুনে অয়ন ফিক করে হেসে দেয়।..

“বাপরে বাপ এতো ডেন্জারাস মেয়ে তুমি ভাবা যায়.???”(ভাবার অভিনয় করে)

“আচ্ছা দিয়ুপাখি চোখ তো অনেক চোখ এটা দিয়ে ফুটবল খেলা যাবে না তুমি চাইলে মারবেল খেলতে পারো”(অয়ন)

অয়নের কথা শুনে আমি হেসে দেই।..

“আচ্ছা অয়ন আপনাকে একটা কথা বলি..

“হুমমম..”(অবাক হয়ে)

“আমার দিয়া নামটাতো অনেক ছোট সেটাকে আপনি এতো বড় করে ডাকার কারন টা কি..????”(আমি)

আমার কথা শুনে অয়ন আমার মুখের দিকে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলে..

“তুমি চাইলে ডাকবো না।দিয়া বলেই ডাকবো।..”(অয়ন)

“সেটা বলি নাই আমি..?(আমি)

“তাহলে আর কিছু বলতে হবে না।চলো তোমাকে ড্রপ করে দেই।..”(অয়ন)

তারপর অয়নের সাথে গল্প করতে করতে বাসায় যাই।অয়নের সাথে গল্প করতে করতে কখন যে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলো টের পাই নাই।তারপর আমি বাড়ি এসে ফ্রেস হয়ে ঘুমাই। ঘুম থেকে উঠে দেখি অলরেডি ৮ টা বাজে।আমি তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে হালকা একটু নাস্তা করে পড়তে বসি।এতোদিন এতোকিছুর প্যারায় পড়া লেখা একদম করাই হয় নাই।তার উপর আবার সামনে পরীক্ষা। আজকেই নোটিশ ফেলাম আগামী ৩ দিন পর নাকি আমাদের পরীক্ষা। এতোদিন যা পড়ছি সব খেয়ে ফেলছি (আমার মতো😂😂) তাই পড়তে বসি।

________________________________

“কিরে অয়ন আর কতো দিন এভাবে ব্যাচেলার হয়ে থাকবি।বিয়ে কি করা লাগবে না..????তুই যদি বলচ তাহলে আমরা ওদের বাড়ি বিয়ের প্রোমোজম পাঠাবো।..”(অয়নের বাবা)

“না বাবা ওকে একটু সময় দাও।আমি হুট করেই বিয়ে করে ফেলতে চাই না।আমি চাই যাকে আমি বিয়ে করবো সে আমাকে ভালোবাসুক।তারপর বিয়ের দিকে যাবো।আর তা ছাড়া দুই একেই ওদের এক্সাম শুরু হবে।এতো প্যারার দরকার নেই আপাতো।..”(শান্ত হয়ে বলে অয়ন)

অয়নের কথা শুনে অয়নের বাবা একটা দীর্যশ্বাস ফেলে বলে..

“এতোদিনে হয়তো ও অন্যকারো হয়ে যাবে..??”(অয়নের বাবা)

“কখনোই এমন হবে না বাবা।আমি ওকে একবার হারিয়ে অনেক খোজার পর পেয়েছি।আর হারাতে কখনোই দিবো না।..”

বলেই দাড়িয়ে হাটা শুরু করে।দরজা পর্যন্ত এসে থেমে গিয়ে পেছনে না ফিরেই বলে..

“আমার একটা important মিটিং আছে।যেতে হবে।..”

বলেই হনহনিয়ে বের হয়ে যায় বাড়ি থেকে।

#চলবে_কি..??????

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-০৯

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_০৯
#জান্নাতুল_বিথী

“চলো ভাবী তোমাকে রেডি হতে হবে তো।..”(মিলি)

মিলির কথা শুনে আমি দমে যাই।আমি কখনোই ভাবতেও পারি নাই যে মিলির মতো মেয়ে দিনের পর দিন আমার সাথে বেইমানি করেছে।ওকে তো আমি চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করেছি।আজ ও বেস্ট ফ্রেন্ড নামের কলঙ্ক।আমার হাত ধরে মিলি কথা টা বলতেই আমি ওর হাত ঝাড়ি মেরে সরিয়ে দিয়ে ওকে চড় দেই।..

“আমার ভুল ছিলো কি সেটা বল।তোকে বিশ্বাস করেছিলাম চোখ বন্ধ করে আর তুই সেই বিশ্বাসকে এভাবে ভেঙ্গে দিলি।কিভাবে পারলি তুই এটা।ছিহহহহহ তোর মতো মেয়েকে আমি আমার ফ্রেন্ড ভাবতাম কি করে সেটাই ভাবতেছি তাও আবার বেস্ট ফ্রেন্ড।..”(আমি)

আমার কথা শুনে মিলি হেসে দেয়।কিছু বলতে যাবে তার আগেই আদি হাত উচু করে কিছু বলতে নিষেধ করে।আর আমার কাছে এগিয়ে এসে আমাকে উল্টো থাপ্পড় দেয়।যার ফলে আমি চিটকে নিচে পড়ে যাই।আদি আমার কাছে এগিয়ে এসে আমার সামনে হাটু গেড়ে বসে বলে..

“আমার বোন তো শুধু মাত্র আমাকে সাহায্য করেছে।কখনোই তোকে বন্ধু মনেই করে নাই।শুধু তোর তালে তাল মিলিয়ে অভিনয় করে গেছে।তুই আমার বোনকে চড় মারার কে। এর শোধ সুদে আসলে নেবো আমি।শুধু একটু অপেক্ষা কর।…”

কথা গুলো বলেই আদি আমাকে হ্যাচকা টান দিয়ে দাড় করায়।আর আমাকে টেনে নিয়ে যেতে নেয়।আমার এক হাত আদি ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে একদিকে অপর হাতে টান অনুভব করায় আমি ওই দিকে ফিরে তাকাই।তাকাতেই অয়নকে দেখে আমার প্রান মনে হলো ফিরে পেয়েছি।আদির হাত আমার হাত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আমি অয়নকে জড়িয়ে ধরি।এই মুহূর্তে আমি নিজের মধ্যে নেই।তাই কি করছি নিজেও জানিনা।

অন্যদিকে আদি নিজের হাতে টান অনুভব করায় পেচনে ফিরে যা দেখে তাতে ও রীতি মতো ঘামতে থাকে।কিন্তু পরক্ষনেই ওর মুখে হাসি ফুটে উঠে।..

“আরেহ তোমরা কে কোথায় আছো দেখো হিরো চলে এসেছে তার হিরোইনকে বাছাতে।উপপপপপ দেখার মতো বিষয়।what a romantic moment!!!!!!!! ”

আদির কথা শুনে অয়ন আমাকে চাগিয়ে একপাশে দাড়করিয়ে বলে..

“হিরো কি জানিনা তবে তোর মতো পশুর হাত থেকে কোনো মেয়েকে বাচাতে তো অবশ্যই আসতে পারি।..”

“হ্যা সেটা তো অবশ্যই জানি।তবে এখন অন্যের জীবন নয় নিজের জীবন বাচাও।”

বলেই হো হো করে হাসতে থাকে আদি।হাসা একটু থামিয়ে আবার বলতে শুরু করে..

“এই বাগি পুরো আমার গার্ড দিয়ে ঘেরা।বাড়ির ভেতরে দিয়ার মা বাবা আর তোমরা দুজন ছাড়া সবাই আমার লোক।তো কে বাচবে আর কে মরবে সেটা এখন নিজেই দেখে নাও।…”

বলেই আবারও হাসতে থাকে পাগলের মতো।আদির কথা শুনে আমি ভয় পেয়ে অয়নের শার্ট খামচে ধরি।বাবা মাও প্রচুর ভয় পেয়ে গেছে।শুধু অয়ন কিছু বলছে না চুপ করে দাড়িয়ে আছে।হয়তো কারো অপেক্ষায় আছে।কারন দেখলাম বার বার দরজার দিকে ফিরে ফিরে তাকাচ্ছে।আদি আমার দিকে একটু এগিয়ে এসে বলে..

“আরে জান পাখি আমাকে তুমি এতো ভয় পাচ্ছো কেনো।আমি তোমার স্বামী লাগি যে।এভাবে আমাকে ভয় ফেলে চলে।..আর তুই(অয়নের দিকে তাকিয়ে)তোর হবু বউকে আজ আমি বিদেশে পাচার করে দেবো।একা ওকে না আর ৯৯ টা মেয়েকে ওর সাথেই পাচার করবো তুই শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবি।কিছু করতে পারবি না।..”

বলে যেই না আমার হাত ধরতে যাবে ওমনেই অয়ন আদির হাত ধরে পেছন দিকে মচড়ে ধরে বলে…

“টাইপে একটু মিস্টেক হইছে মিস্টার আদি খান। এখন তুমি না কারো ক্ষতি করতে পারবে আর না দিয়ুপাখির কোনো ক্ষতি করতে পারবেন।…”

বলেই আদিকে মারতে থাকে।হঠাৎ এমন আক্রমনে আদি পাল্টা কোনো আক্রমন করতে পারছে না।মিলি ভাইয়া বলে চিৎকার করছে।আর সব গার্ডদের বলছে আদিকে গিয়ে ছাড়াতে কিন্তু সবাই তাদের মতো করেই দাগিয়ে আছে।কেউ অয়ন আর আদির মাঝখানে যেতে চায় না।মিলি দোড়ে যেতে নিলে কয়েকজন গার্ড এসে ওকে আটকে দেয়। অয়নের কাজে আমি নিজেও ঘাবড়ে যাই।কারন যেভাবে উনি মারতে শুরু করছে ওকে তো মেরেই ফেলবে।আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে অয়নকে ধরতে গেলে শিহাব ভাইয়া আমাকে আটকে দেয়।উনাকে দেখে আমি অবাক হয়ে যাই।কারন উনি এতক্ষন এখানে ছিলেন না।..

“কি করছেন ছাড়েন আমাকে।উনি যেভাবে মারা শুধু করছে একদম মেরেই ফেলবে আদিকে।..”(আমি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলি)

“ভাইয়া নিজের রাগ না তোলা পর্যন্ত মারবে আপনি গিয়েও লাভ নেই।উনার রাগ কমাতে দিন।”(শিহাব)

উনার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে যাই।কিসের এতো রাগ উনার।কিন্তু এখন এসব ভাবার টাইম নেই আমার।তাই আমি তাড়াতাড়ি নিজেকে ছাড়িয়ে অয়নের কাছো দৌড়ে গিয়ে বলি..

“কি করছেন মেরে ফেলবেন নাকি উনাকে..???”(অয়নকে ছাড়াতে ছাড়াতে বলি)

“হ্যা মেরে ফেলবো ওর সাহস হয় কি করে তোমার গায়ে হাত তোলার.ওর হাত ভেঙ্গে ফেলবো আমি…”(অয়ন আদিকে মারতে মারতে বলে)

এবার শিহাব ও এগিয়ে এসে অয়ন কে ছাড়িয়ে নেয়।অয়ন হাপাতে থাকে।আদিকে মারতে মারতে আধমরা বানিয়ে ফেলে।..

“বলেছিলাম না তোর টাইপে একটু না পুরোই ভুল আছে।সব কিছুই আমাদের প্লেন মতো হয়েছে।এখন তোর হাতে না আছে ৯৯ টা মেয়ে আর না আছে দিয়ুপাখি। আর না আছে তোর বাবা।তোর বাবার এই ধরনের কাজের জন্য উনাকে আবার এরেস্ট করা হয়েছে আর এখন তোরা দুজনও ওই এবই জায়গায় যাবি।আর বাকী রইলো এখানের গার্ড ওদের তো অনেক আগেই আমার কন্ট্রোলে নিয়ে এসেছি।..”(অয়ন)

অয়নের কথা শুনে আদি ঘাবড়ে যায়।..

“আমার বাবা তোদের কি ক্ষতি করেছে।আমার বাবাকে কেনো ধরলি..???”(আদি)

“বাবা মায়ের কাজ হলো তাদের সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা।তাদেরকে প্রতিশোধের চিন্তা মাথায় দিয়ে বড় করা নয়।তোর বাবা নিজে অপরাধ করেছে তার জন্য অনুশোচনা করা উচিত।কিন্তু তা না করে আবারও স্মাগলিন শুরু করে তাও আবার দেশের নারীদের। আর সাথে নিজের ছেলে মেয়ে দের নিয়ে।ওয়াও কেমন পিতা তোমার।ভাবতেই অবাক লাগছে।…”(অয়ন)

আদিকে আর মিলিকে নিয়ে যাওয়া হয়।মিলিকে নেওয়ার পরে আমি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি। আমার অনেক খারাপ লাগছে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ডকে জেলে যেতে দেখে।অয়ন এসে আমার কাধে হাত রেখে বলে…

“যারা ভালো তাদের জন্য কাদলে মনকে বোঝানো যায় ভালো কিন্তু দিয়ুপাখি তুমি যার জন্য কাদছো সে কখনোই ভালো ছিলো না।ও শুধু ভালো হওয়ার অভিনয় করেছিলো।এতে তোমার কোনো দোষ নেই।প্লিজ তুমি কান্না করবে না।”(অয়ন)

অয়নের কথা শুনে বাবা মাও আমাকে অনেক শান্তনা দেয়।সবার কথা শুনে মন কে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করি।বাবা অয়নের সাথে কথা বলছে।এক পর্যায়ে অয়ন বলে..

“আংকেল আমাকে এখন যেতে হবে।আমার কিছু কাজ আছে ভালো থাকবেন আপনারা।..”(অয়ন)

অয়ন চলে যেতে নিলে বাবা অয়ন কে বলে..

“আর আসবে না তুমি..????”(বাবা)

“আংকেল দিয়ুপাখি কে আমি বিয়ে করি নাই।সেদিনের সব কিছুই ছিলো কেবর মাত্র অভিনয়।আদিকে ধরার জন্য আমাকে এমন করতে হয়েছে।তাই আমাকে আপনাদের মেয়ের জামাই প্রশ্নই উঠে।…”(অয়ন)

অয়নের কথা শুনে বাবা মা দুজনেই অবাক হয়ে যায়।কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।অয়ন আমার কাছে এগিয়ে এসে আমার কানে কানে বলেন….

“নিজের যত্ন নিবেন কেয়ারলেস মেডাম।আর সময় মতো খাওয়া দাওয়া করবেন।এখন যদি নিজের যত্ন না নাও তাহলে দেখবে তোমার মতো পেত্নিকে কেউ বিয়ে করবে না।…?”(শেষের কথাটা বলতে গিয়ে অয়ন হেসে দেয়)

“আমার মতো পেত্নিকে আসলেই বিয়ে করার মতো কেউ নেই।..”(ঠোট বাকিয়ে বলি আমি)

আমার কথা শুনে অয়ন কিছুটা গম্ভীর হয়ে বলে..

“তোমার মতো পেত্নিকে জীবন সঙ্গী করার জন্য কেউ হয়তো পাগল হয়ে আছে।”

কথাটা বলেই অয়ন চলে যায়।উনার যাওয়ার ফানে তাকিয়ে থাকি আমি।

______________________________

কেটে যায় বেশ কিছুদিন।এর মধ্যেই আমি অনেকটা নিজেকে স্বাভাবিক করে তুলি।বাবা আমার কাছ থেকে ক্ষমা চায়।যদিও আমার বলার মতো কিছুই ছিলো না।না বুঝে বাবা এমন করেছে তাই আমারও বলার মতো কিছুই নেই।এর মধ্যে অয়নের সাথে আমার আর দেখা হয় নাই।আমি ভার্সিটিও যাই নাই এতো দিন।অয়নের কথা আমার প্রতিটা মুহূর্তেই মনে পড়তো।কিছু অনুভুতির সৃষ্টি হয় উনার জন্য।উনার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত মনে পড়ে যায়।কিন্তু আমি নিজেকে দমিয়ে রাখি।তার সবচেয়ে বড় কারন অয়ন একটা মেয়েকে পাগলের মতো ভালোবাসে।এটা ভাবতেই কেনো জানি মেয়েটার প্রতি প্রচুর জেলাস ফিল করছি আমি।এর মাঝেই আমার ফোন বেজে উঠে.তাকিয়ে দেখি আননোন নাম্বার।ভাবতে থাকি কে হতে পারে।আমার ভাবনার মাঝেই ফোনটা কেটে যায়।আবার বেজে উঠায় আমি কল রিসিভ করে হ্যালো বলতেই ফোনটা কেটে যায়।আমি অবাক হয়ে যাই।আর ইচ্ছে মতো গালি দিতে থাকি ফোনের ওই পাশের মানুষ টাকে।শালা ফোন করচ একে তো চিনি না তার উপর হ্যালো বলতেই ফোনটা কেটে দেয়।ফোনে মেসেজের টুংটাং শব্দে চমকে উঠে স্কিনে তাকিয়ে দেখি ওই আননোন নাম্বার থেকেই একটা মেসেজ আসছে যাতে লেখা আছে…

“Amon koro keno jan pakhi just tomar khonto ta sunte iccah korcilo tai phn korlam tar jonno buji ato gali deya lage..???”

মেসেজটা দেখে আমি অবাক হয়ে যাই।আমি ওই লোকটাকে গালি দিতেছি তা ওই লোকটা কিভাবে জানলো..??একটু পর আরেকটা মেসেজ আসে যাতে লেখা..

“মনের এই গহীনে তোমারই আনাগোনা হে প্রিয়।কি মায়া করলে তুমি আমায় চাইলেও যে ভুলতে পারি না তোমায়।আসবে কি ফিরে আমার কাছে.???নাকি দুরেই সরিয়ে রাখবে সারাজীবন।”

#চলবে_কি..?????

হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-০৮

0

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_০৮
#জান্নাতুল_বিথী

দেখতে দেখতে কেটে যায় তিনদিন।এর মধ্যে শিহাব আর সিমি এ্যাংগেজমেন্ট হয়ে যায়। অয়ন আমাকে নিয়ে প্রতিদিন ঘুরতে বের হতো।আজ আমি বাড়ি চলে যাবো। বাড়ি যাবো তা ভাবতেই অনেক খুশি লাগছে।কিন্তু আবার খারাপও লাগছে উনাদের সবাইকে চেড়ে যেতে।এতো দিনের আদর স্নেহ ভুলবো কিভাবে.????আন্টি আংকেল আমাকে নিজের মেয়ের মতো আদর ভালোবাসায় দিয়েছে এতোদিন। অয়ন আমার প্রতিটা মন খারাপের সাথী হয়েছিলো। আমার একটু মন খারাপ হলেই উঠে পড়ে লাগতো মন ভালো করার জন্য।এসব ভাবতেই আর যেতে ইচ্ছে করে না। আমি বেলকনিতে দাড়িয়ে এসব ভাবছি হঠাৎ কারো উপস্থিতি টের পেয়ে আমি ওই দিকে তাকাই।দেখি অয়ন বুকে দুই হাত গুজে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমাকে উনার দিকে তাকাতে দেখেই অয়ন আমার দিকে এগিয়ে আসে।..

“আপনার ফোন টা একটু দিবেন..?????”(আমি)

“এই সময়ে ফোন দিয়ে কি করবা..????”(ভ্রু কুচকে)

“আরেহ মিলিকে একটু ফোন করবো।!!!!!(আমি)

“ওকে দিবো বাট আমি যা শিখিয়ে দেবো তুমি তাই বলবে ঠিক আছে..????”(অয়ন)

আমি ভ্রু কুচকে হ্যা বলি। অয়ন আমার দিকে ফোন এগিয়ে দেয়।মিলিকে ফোন করার পর রিং হওয়ার সাথে সাথে মিলি ফোন ধরে।মনে হচ্ছে ও আমার ফোনেরই অপেক্ষায় ছিলো..

“বান্ধুবি কেমন আছত..???”(আমি)

“তোকে ছাড়া ভালো থাকি কি করে সেটা বল।…???”(মিলি)

“ওপপপপপপস খুব মিস করছো বুঝি..???”(আমি)

“অনেক।আচ্ছা এটা বল যে জিজু কোথায় আর তুই কোন দিন আসবি।..???”(উত্তেজিত হয়ে মিলি বলে)

আমি অয়নের দিকে তাকাতেই অয়ন ইশারায় বলে।আর আমিও বলি…

“আজকেই আসবো একটু পর।”(আমি)

“তুই একা আসবি নাকি জিজু ও আসবে।…???”(মিলি)

আমি অয়নের দিকে তাকাই…

“উনি আমাকে ড্রপ করে দিয়ে অফিসে যাবে।আর ওইখানের কাজ শেষ করে তারপর হয়তো আমাদের বাড়ি যাবে।”(আমি)

“আনুমানিক কয়টায় জিজু তোদের বাড়ি আসবে।..???”(মিলি)

ওর প্রশ্ন শুনে আমি অবাক হয়ে যাই।কিছু বলতে যাবো তার আগেই অয়ন আমাকে ইশারায় না করে কিছু না বলার জন্য।তাই আমি চুপ হয়ে অয়নের কথা শুনে ওকে বলি..

“এখন সকাল টাইমেই আমি চলে আসবো।তারপর উনি মনে হয় রাতে আসবে।”(আমি)

আমার কথা শুনে মিলি একটা নিশ্বাস ফেলে বলে…

“ওকে জান তুমি চলে আসো।তোমার জন্য অনেক বড় একটা সারপ্রাইজ ওয়েট করচে।”(মিলি)

“মানে কিসের সারপ্রাইজ..??? “(অবাক হয়ে)

“সেটা না হয় আসার পরই দেখবে।এখন চলে আসো যটপট আর এখন আমি রাখছি পরে কথা হবে।”(মিলি)

চোখের পলকে মিলি ফোন কেটে দেয়।ওর এমন ব্যবহারে আমি অনেক অবাক হয়ে যাই।অয়নের দিকে তাকিয়ে দেখি উনি মুচকি হাসছে।উনাকে হাসতে দেখে আমি ভ্রু কুচকে কি জিজ্ঞেস করতেই উনি “কিছু না রেডি হও” বলে আমার হাত থেকে ফোন নিয়ে চলে যায়। আমিও একটা দীর্যশ্বাস ফেলে রেডি হতে চলে যাই।…

_________________________

গাড়িতে বসে আছি আমি।বাহিরের দিকে তাকিয়ে।আমার পাশেই অয়ন ড্রাইভ করচে।আমার চোখে পানি। আন্টি সিমি ওরা কান্না করচে।আমার অনেক খারাপ লেগেছিলো উনাদের চেড়ে আসতে।..

“মন খারাপ..????”(অয়ন)

“আপনাকে কে বললো আমাকে ওই বাড়িতে নিতে তাও আবার সীমিত সময়ের জন্য।আর কেনোও বা এতো মায়ার সৃষ্টি করেছিলেন..???”(আমি)

আমার কথা শুনে অয়ন একটা দীর্যশ্বাস শ্বাস ফেলে বলে..

“আজ যদি আমাদের প্লেন মতো সব কিছু হয় তাহলে সব কিছুই তোমার সামনে আয়নার মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে।”(অয়ন)

আমি কিছু বলি নাই আর। কোনো প্রশ্ন ও করি নাই।কারন আমি জানি প্রশ্ন করে লাভ নেই। অয়ন আমাকে আমাদের বাড়িতে নামিয়ে দেয়..

“সোজা ভেতরে চলে যাও। একদম ভয় পাবে না আমি আছি সব সময় তোমার পাশে।আর তোমার মা বাবা কিছু জিজ্ঞেস করলে বলবে যে আমাদের বিয়ে হইছে।তারপর আমি এসে সব সামলে নেবো।”(অয়ন)

আমি অয়নের কথায় মাথা নেগে হ্যা বলি।এখন অনেকটা ভরসা করতে পারি উনাকে।তাই অতিরিক্ত কোনো প্রশ্ন না করেই এগিয়ে যাই। ঘরের ভেতরে গিয়ে তো আমি পুরোই শকড।

_________________________________

আমাকে আসতে দেখে বাবা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে।আমিও দুইহাত বাড়িয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরি।মুহূর্তেই সব রাগ অভিমান হাওয়ায় মিশে যায়।বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরেই বলে উঠে…

“এভাবে কেউ চলে যায়।আমি না হয় একটু রাগ করে যা মুখে দিয়ে আসছে তাই বলছি কিন্তু তুই ও বুঝি বুঝলিনা তোর বাবাকে। এখন যেহেতু ফিরে আসচত আমি আর যেতে দেবো না আমার মেয়েকে কোথাও। আর তুই যা চাইবি তাই হবে কথা দিচ্ছি তোকে।”

বাবার কথা শুনে আমি কিছুই বলি নাই।শুধু জড়িয়ে ধরে রেখেছি।..

“আংকেল আপনার আদর যদি শেষ হয় তবে কি আমরা আসল কথা আসতে পারি..???”(আদি)

আদির কথা শুনে আমি চমকে ওই দিকে তাকাই।আদি যে এখানে আছে সেটা আমি খেয়ালই করি নাই।এখানে আরও আছে মিলি আরও কিছু লোক যাদেরকে চিনি না।আদির গার্ড মনে হচ্ছে।

“কি বলবে তুমি..???”(মা)

“ওহহো আন্টি আপনি জানেন না আমি কি বলবো।আমি দিয়াকে বিয়ে করতে চাই এখন এইখানে এবং এই মুহূর্তেই।..”(আদি)

“দিয়া মা তুই কি আসলেই বিয়ে করচত..???”(বাবা)

একবার ভাবছি সত্যি কথা বলবো। পরে অয়নের কথা মনে হতেই আমি মাথা নেড়ে হ্যা বলি।..

“আমার অলরেডি বিয়ে হয়ে গেছে বাবা।”(মাথা নিচু করে বলি আমি)

আমার কথা শুনে আদি আমার দিকে এগিয়ে এসে বলে..

“তোমার বিয়ে যদি দশটাও হয় তবুও তুমি শুধু আমার।মাইন্ড ইট।”(আদি)

বলেই কাজি ডাকতে থাকে।আদির কাজে সবাই হতবাগ..

“আদি এখানে কোনো সিনক্রিয়েট করবে না তুমি সোজা এখান থেকে চলে যাও।বাধ্য করবে না আমাকে উল্টা পাল্টা কিছু করতে।”(বাবা)

বাবার কথা শুনর আদি গালে হাত দিয়ে কিছু একটা ভাবারর অভিনয় করে তারপর হো হো করে হেসে দেয়।…..

“ওপপপপপপপস সরি আংকেল আপনি তো তখনই কিছু করতে পারবেন যখন কেউ আপনার কথা শুনবে।”(আদি)

“মানে..???”(মা)

“আসলে আন্টি আমি আগে থেকেই জানতাম যে এমন কিছুই হবে তাই তো আমি পুর্বপ্রস্তুতি নিয়েই এখানে আসলাম।প্রতিশোধ যে পূর্ণ করতে হবে।”(শয়তানি হাসি দিয়ে বলে)

আদির কথা শুনে সবাই চমকে উঠে।

“প্রতিশোধ মানে কিসের প্রতিশোধ।..????”(আমি)

“ওহহহ হ্যা তোমাকে তো বলা যেতেই পারে আমার ওয়াইফ বলে কথা।

একটু থেমে আদি আবার বলতে থাকে।..

“আজ থেকে ঠিক ১৫ বছর আগের কথা যখন আমার বাবা ফরিদ খান আর তোমার বাবা খুব ভালো বন্ধু ছিলো। আমার দেশের বিভিন্ন ধরনের সম্পদ স্মাগলিন করতো।কিন্তু তা কেউ জানতো না।একদিন তোমার বাবা হঠাৎ আমাদের বাড়ি চলে আসে আর কিভাবে কোন জায়গা থেকে কি করে সব কিছু দেখে নেয়। তারপর তোমার বাবা গিয়ে পুলিশকে ডেকে আনে আর আমার বাবার জেল হয় ১০ বছরের।তোমার বাবা এমন একজন পশু যে নিজের ছোটবেলার বন্ধুকেও ছাড় দেয় নাই। সেদিন আমি আংকেলকে অনেকবার নিষেধ করছি কিন্তু উনি গিয়ে পুলিককে সত্যিই ডেকে আনে।তারপর থেকে উনার উপর আমার একটা চাপা ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।শুধু আমার না আমার বোন মিলিও আমাকে সাহায্য করে।মিলি গিয়ে তোমার সাথে বন্ধুত্ব করে।তারপর আস্তে আস্তে আমরা ক্লোজ হই তোমাদের পরিবারের।তারপর এখন তোমাকে আমি বিয়ের প্রস্তাব রাখি আর উনারা খুব সহজেই রাজি হয়ে যায়।কিন্তু মাঝখান থেকে তুমি লুকিয়ে বিয়ে করেই আমার সব চাল নষ্ট করে দিলে।কিন্তু তাতে কি এখন তো আমি তোমাকে বিয়েই করবো।”(আদি)

আদির কথা শুনে আমার সারা গা জ্বলে উঠে।বাবা নিজেই হতবাগ হয়ে যায়।..

“তুমি ফরিদের ছেলে.????তাহলে যাদের তুমি মা বাবার পরিচয় দিলে ওরা কারা..???”(মা)

“ওহহহহ হ্যা ভালো কথা ওরা তো আমার মামা আর মামি।”

বলেই হো হো করে হাসতে থাকে।

“আমি যা করেছি বেশ করেছি।তোমার বাবাকে আমি সাবধান করেছিলাম কিন্তু শুনে নাই।তাই আমি বাধ্য হয়ে পুলিশ ডেকেছি।আর তাছাড়া এ দেশে জন্ম হয়ে এদেশের সম্পদ স্মাগলিন করতে লজ্জা করে না..???”(বাবা)

বাবার কথা শুনে আদি হাসতে থাকে।আমার কাছে এগিয়ে এসে বলে..

“চলো দিয়া তোমার বর যে দাড়িয়ে।তাকে বিয়ে করবে না বুঝি..????”

এখন আমার অয়নের কথা মনে পড়ে যায়।উনি হয়তো আগে থেকেই সব জানতো।তাইতো সেদিন আমাদের বাড়ি এসে আমাকে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে উনি নিয়ে যায়।আজ যদি উনি সত্যিই আমাকে নিয়ে না যেতেন তাহলে এতোদিনে হয়তো আমার জীবন নরকে পরিনত হতো।ভাবতেই চোখের কোনে পানি জ্বমে। আর এখন আমার আর আদির বিয়ে টা কিভাবে কে আটকাবে।মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে থাকি।উনি যেনো অয়নকে পাঠিয়ে দেয় আমাকে এই মানুষ নামের পশুর হাত থেকে বাচাতে।

চলবে কি……??????