সিক্রেট গ্যাংস্টার পর্ব-২৪ এবং শেষ পর্ব

0
1957

#সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
#পর্ব_২৪ এবং শেষ
#লামিয়_রহমান_মেঘলা
রাতে খাবার শেষ করে যে যার রুমে আছে।
আজ সবাই ক্লান্ত তাই একটু জলদি সবার রুমে চলে এসেছে সবাই।
আদ্র তখন আদ্রিয়ান কে বলতেছে,
–আচ্ছা একটা সত্যি বলব আদ্রিয়ান। (আদ্র)
–হ্যাঁ মিথ্যা কেন বলবি। (আদ্রিয়ান)
–ধুর তুই সব সময় মজা করিস কেন?(আদ্র)
–আরে মজা না বল। (আদ্রিয়ান)
–আমার মনে হচ্ছে এই দুই জন মানুষ আর কেউ না আমাদের মা বাবা। (আদ্র)
–সত্যি বলতে আমারও তাই মনে হচ্ছে (আদ্রিয়ান)
–কিন্তু তোর কেন মনে হলো? (আদ্র)
–কারন মা কে দেখেছি বাবা যখন গল্পের শেষ অংশ বলছিল তখন মা মায়া ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল বাবার দিকে (আদ্রিয়ান)
–হায় তুই তো সব দিকে খেয়াল রাখিস।(আদ্র)
–হ্যাঁ একটু একটু রাখি। (আদ্রিয়ান)
–আচ্ছা তো সত্যি করে বলবি এবার। (আদ্র)
–কি?
–ওই মেয়েটা কে যার দিকে তুই বাবা মায়ের দিকে যেমন করে তাকিয়ে ছিল ঠিক তেমন করে তাকিয়ে ছিলি।
আদ্রের প্রশ্নে কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল আদ্রিয়ান,
–তুই কি করে দেখলি?
–আরে রিল্যাক্স আমি শুধু তার চুল গুলো দেখেছি সামনে থেকে দেখি নি।
–ওহ আচ্ছা
–ঘুমো এখন।
–হ্যাঁ গুড নাইট।
দুই জনি ঘুমিয়ে পড়ে,
রাত ১১ঃ৩০ টা,
–আমান
এই আমান।
–হুম বলো
–আমার ছেলে দুটোর আজ জন্মদিন আর তুমি এখনো ঘুমোচ্ছো।
–কতো বাজে?
–১১ঃ৩০ বেজে গেছে উঠো
–হুম উঠছি।
–উঠো।
আমান পিটপিট করে তাকিয়ে মেঘের হাত ধরে একটা টান দেয় যার ফলে মেঘ গিয়ে আমানের বুকে পড়ে।
–আরে কি করতেছো আজব।
–আজবের কি আছে আমার বউ টা খালি পালায় পালায় করে।
–আরে এখন এগুলার সময় ছাড়ো আমাকে।
–না ছাড়বো না।
–ছাড়বা ছাড়ো।
–না।
আমান মেঘের মুখ থেকে ছোট চুল গুলে সরিয়ে দিলো।
–আরে ১২ টা বেজে যাবে উঠো তোমার এই ঢং পরে করো।
আমান একটা বাকা হাসি দিলো,
–পরে কিন্তু (দাঁত বের করে)
–বুড়ো হয়ে গেছো তাও সয়তানি কমলো না উঠো।
মেঘ চলে আসে।
আমান উঠে ফ্রেশ হয়ে নেয়।
মেঘ সুন্দর একটা কেক না দুইটা কেক বানিয়ে নিয়েছে ছেলেদের জন্য।
তার পর কেক দুটো নিয়ে বাইরে আসে।
আমান হাতে একটা এলবাম নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ওরা ছেলেদের গিফট হিসাবে এলবাম টা দিবে।
–চলো।
ঠিক ১২ টা,
আমান মেঘ ছেলেদের রুমে গিয়ে ওদের তুলে উইস করে।
আদ্রিয়ান আর আদ্র মা বাবা কে জড়িয়ে ধরে।
–মাম্মাম ঋতু মা কেন নেই (আদ্র)
–কাল থাকবে কেক কাটো এখন ভিডিও কলে আছে,
মেঘ ঋতুকে ফোন করে,
ফোনের ওপাশে ঋতু কিরন আর আরাব ওদের উইস করে,
ওরা কেক কাটে,
তার পর আমান ওই এলবাম টা ওদের দু ভাই কে দেয়,
–বাবা এতে কি আছে?(আদ্র)
–তোমাদের প্রেশ্নের উত্তর বাবা (আমান মুচকি হেসে বলল)
–বাবা ধন্যবাদ। (আদ্রিয়ান)
–তোমারা এখন ঘুমাও আমরা আসি।
আমান মেঘ চলে যায়।
এদিকপ দু ভাই বসে এলবামটা খুলে,
-প্রথম পাতায় আছে মেঘের ভার্সিটির ছবি।
–আদ্রিয়ান এটা তো মা দেখ আমাদের মা এখনো ঠিক এতোটাই সুন্দর আছে।
–হ্যাঁ চল পরের গুলো দেখি।
দ্বিতীয় পৃষ্ঠাতে আছে আমানের প্রফেসর কলের ছবি।
–বাবাও আগের মতোই আছে আদ্রিয়ান।
–হ্যাঁ তাই তো দেখছি।
তৃতীয় পৃষ্ঠায় আমানের মুখোশ পরা ছবি।
–আচ্ছা আদ্রিয়ান।
–হ্যাঁ।
–আমি যা ভাবছি তুই কি তাই ভাবছিস।
–তাই তো মনে হচ্ছে।
–তার মানে ও-ই দুই জন আর কেউ নয় আমাদের মা বাবা।
–হ্যাঁ বাহ মা বাবার জীবনের এতো বড়ো গল্প।
–হ্যাঁ ওদের মধ্যে ভালোবাসাও দেখ।
–আল্লাহ আমার মা বাবাকে যেন এমনি রাখেন চির কাল।
–আমিন।
চতুর্থ পৃষ্ঠায় ওদের সাথে ঋতু কিরন।
এভাবে একের পর এক গল্পের মতো সব গুলো ছবি ভেষে আসছে ওদের সামনে।
যা দেখে দুই ভাই বেশ আনন্দ পেল।
সব গুলো দেখা শেষ করে ওটাকে আলমারি তে খুব যত্ন করে তুলে রাখলো তারা।
আর ঘুমোতে চলে গেল।
,
,
,
,এদিকে,
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে পুরোবো কথা ভাবছে মেঘ।
শুরু থেকে ভাবতে গেলে ৭ সমুদ্র ১৩ নদী পার করে তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেয়েছে।
ভাবতেই অবাক লাগে যে মেঘ নিজেই একটা বাচ্চা ছিল আজ সে দুই সান্তানের মা।
সত্যি সময়ের বিবর্তন কি না করে ফেলে।
কে জানতো প্রথম ভালোবসাই তার স্বামী।
কে জানতো তার স্বমীকে সে যেভাবে চিনত আসলে তার স্বামী তা নয় এক দম অন্য এক জন।
এভাবে বিয়েটা হওয়া এভাবে ভালোবাসা। এভাবে সুন্দর একটা পরিবার পাওয়াটা এটা আল্লাহ তায়লার খুব বড়ো একটা নেয়ামত।
এতো সুন্দর একটা জীবন তাকে উপহার দিছে আল্লাহ।
হাজার ঝড় পেরিয়ে হাজার বাঁধা পেরিয়ে আজ একটা সুখের সংসার তাদের।
এগুলা ভাবছিল হুট করে পেছন থেকে আমান এসে মেঘের কোমড় জড়িয়ে তার চুলে নাখ ডোবায়।
মেঘ চেখ বন্ধ করে তা ফিল করে,
–কি ভাবছো।
–পুরনো কথা।। –
–মেঘ।
–হুম।
–কবে তুমি আমার দুই সন্তানের মা হয়ে গেলে আমি বুঝলামি না।। কবে এই পিচ্চি মেয়পটা এতো বড়ে হয়ে গেল।
–আমাদের জীবনের কঠিন মুহুর্ত গুলে থেকেই আমি বড়ো হয়ে গেছি।
–আচ্ছা তাই।
–হুম। –
–ভিশন ভালোবাসি তোমাকে।
–আমিও।
–জানো সে দিন যখন তোমায় হসপিটালের বেডে ওভাবে দেখেছিলাম আমার মনে হয়েছিল কেউ আমার বুকে হাজারটা চাকু দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে দিচ্ছে।
–বাবা যখন বলেছিল তুমি আর নেই তখন আমারও ঠিক একি অবস্থা হয়েছিল।
–সব বাঁধা শেষ হয়ে যে সুন্দর এক পরিনতি হবে সুন্দর এক সকাল আসবে তা ভাবি নি।
এবার মেঘ আমানের দিকে ফিরলো।
–আল্লাহ আমাদের উপর দয়াশীল বুঝেছো মি.খান।
–হ্যাঁ মিসেস.খান বুঝেছি।
মেঘ হেসে দিলো।
আমান এই সুন্দর পূর্ণিমার রাতে চিকচিক করা মেঘের মুখের সেই হাসি দেখে নিজেও হেসে দিলে।
পূর্ণতা পেল ভালোবাসা।
হাজার রকম বাঁধা কাটিয়ে তারা আবারো ডুব দিলে ভালোবাসার এক নতুন দুনিয়ায়।

❤️❤️সমাপ্ত ❤️❤️

(আসসালামু আলাইকুম,
আমি কি সবটা গুছিয়ে লিখতে পেরেছি?
সব মিলিয়ে চজ কিছু গঠন মূলক মন্তব্য করবেন।
আজ বিদায় নিচ্ছি দেখা হবে পরবর্তী কোন গল্পে।
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ,, ❤️)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে