Thursday, August 14, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1982



শ্রদ্ধেয় জননী-উর্মি

0

# গল্পপোকা_চিঠি প্রতিযোগিতা_২০২০

শ্রদ্ধেয় জননী,
আমার সালাম নিও। আশা করি ভালো আছো। আমিও ভালো আছি, আমার জন্য চিন্তা করো না। আজকে তোমার কথা খুব মনে পড়ছে। আচ্ছা মা, গগনের কুঞ্জে মানব-মানবীরা কতটুকু ভালো থাকে?খুব জানতে ইচ্ছে করছে।
সেইখানে কি ভূ-মন্ডলের ন্যায় ঝগড়া,মারপিট,হিংসা,প্রতারণা এসব কর্ম চলে?নাকি কানন কুঞ্জের পুষ্প সুবাসে মোহিত থাকে?

যখন শুনি ভূ-মন্ডলের মানবেরা প্রফুল্লচিত্তে গদ ভক্ষণ করে গঙ্গাপ্রাপ্তি পেয়েছে তখন মনে হয় দেবলোক খুব ভালো স্থান।যার কারণে মানবেরা তিক্ততায় আচ্ছন্ন গদ গ্রহণ করে হাসিমুখে ভূ-লোক ত্যাগ করে। আবার যখন দেখি মৃত্যুপথযাত্রীরা অশ্রুবিসর্জনের মাধ্যমে দেবলোক গমনের পথে তীব্র বিরোধীতা জানায় তখন মনে হয় ঐ স্থানটা খুব খারাপ যার কারণে উক্ত মানব সেখানে প্রবেশ করতে ভয় পাচ্ছে। আমি এই প্রসঙ্গে বড্ড দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। আমার এই সংশয় তুমি অপনোদন করে দাও। আমারও যে মাঝে মাঝে ইচ্ছে জাগে তোমার দ্বারে চলে আসতে।
যখন জীবন তরী সুখ সাগরের স্রোতে ভাসমান থাকে তখন বেঁচে থাকার আগ্রহ জন্মায় কিন্তু জীবন তরী অকূল-পাথার সরণিতে দাঁড়িয়ে গেলে
পরলোকগমনের আকাঙ্ক্ষা উদয় হয়।
আচ্ছা মা,জাগ্রত প্রহরগুলোতে কি তুমি আমাকে স্মরণ করো?
গগন কুঞ্জে কীভাবে প্রতিটি প্রহর নিঃশেষ করো?
সেখানে কি তোমার আমার মতো বন্ধুমহল আছে?সব বন্ধুরা কি ভালো? নাকি খারাপ বন্ধুও আছে?
জানো মা, আমার বন্ধুমহলে অনেক বন্ধু আছে কিন্তু ভালো বন্ধু মাত্র দু’জন আছে।এই ভূ-লোকে ভালো বন্ধুর সংকটকাল চলছে।

তুমি চলে যাওয়ার পরে বাবা আমাদের বাসায় একটা তুলতুলে পুতুল বৌ এনেছে।পুতুল বৌ আমাকে খুব আদর করে। পুতুল বৌ যখন আমার সাথে গল্প করে তখন তোমার কথা খুব মনে পড়ে।
কালকে পুতুল বৌয়ের সাথে নতুন নানুবাড়িতে যাবো।ঐ বাড়ির কেউ আমাকে আদর করে না,সবাই ভীষন পচা।কিছুদিন আগে যখন পুতুল বৌয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম তখন এক নতুন আন্টি আমার হাতে খুন্তির ছ্যাকা দিয়েছিলো।এখনো কালশিটে পড়ে আছে।সেদিন আমি ভীষন কেদেঁছিলাম।

আমি এখন খুব মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করি।এখন আর পড়ায় কোনো ফাঁকিবাজি করি না। আমাকে পড়াশোনা করে অনেক টাকা উপার্জন করতে হবে।সেই টাকা দিয়ে একটা রকেট কিনবো।তারপর রকেটের ভিতর খাবার ভরে তোমার কাছে পাঠিয়ে দিবো।পুতুল বৌ আমাকে বলেছে,তোমার সেখানে ভালো খাবার পাওয়া যায় না।
আমাদের স্কুলের গণিত শিক্ষক খুব বাজে দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো।কোন অজুহাত পেলেই আমার গায়ে হাত দিতে আসতো।একদিন আমি প্রতিবাদী সুরে মানা করেছিলাম আমাকে স্পর্শ করতে,সেদিন স্যার আমাকে বেত দিয়ে খুব পিটিয়েছিলো। আমার জ্বর এসে পড়েছিলো।এর দু’দিন পর স্কুলে গিয়ে শুনতে পেয়েছিলাম,’বজ্র্যপাতে স্যার মারা গেছে।’
স্যার আমার সাথে অন্যায় করেছিলো বলে তুমি আকাশ থেকে বজ্র্য নিক্ষেপ করেছিলে,তাই না?

সন্তানের অথান্তরমুহুর্তে মা’য়েরা ছায়া হয়ে পাশে থাকে। আর আমি তোমাকে রোদ-বৃষ্টিরূপে পেয়েছি সর্বদা। আমার সকল সফলতায় সকল সংকটাবস্থায় তোমাকে স্মরণ করি।তোমার অঙ্গ থেকে আমার উৎপত্তি,তাই সুখকর মুহুর্তগুলোতেও তোমাকে ভুলে থাকা সম্ভব নয়।

আরো অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে কিন্তু পায়রা টিমটিম একটার বেশি পাতার ভার বহন করতে পারবে না তাই এখানেই ইস্তফা রেখা টানছি।লেখায় অন্তিমদশা এঁকেছি বলে মন খারাপ করো না।তোমাকে বলবো বলে অনেক কথা জমিয়ে রেখেছি। আগেতো জানতাম না তুমি অম্বরপানে ছিলে,তাই চিঠি দিতে পারিনি।কিন্তু এখন থেকে রোজ তুমি একটা করে চিঠি পাবে।

এই চিঠিতে ব্যবহৃত প্রতিটি প্রশ্নবোধক চিহ্নের উত্তর আমার চাই। আমি পাঠ্যবইয়ে পড়েছিলাম,গগনে কোন গাছ-পালা নেই।তাই আমার প্রশ্নের উত্তরমালা লিখার জন্য খাতা-কলম পাবে না।সেজন্য আমি বেলুনে সুতো দিয়ে খাতা-কলম বেধেঁ পাঠিয়ে দিবো। আর শুনো, পত্রবাহক পায়রার গায়ে একটু তোমার হাতের পরশ মেখে দিও। আমি তোমার আদরের ঘ্রাণ নিবো।

ইতি
তোমার রাজকন্যা
উর্মি

প্রিয় তমেষু -শঙ্খিনী

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

লেখা : শঙ্খিনী

প্রিয় তমেষু,

কখনো হিসেব করেছেন কতবার আমার সঙ্গে দেখা হয়েছে? আমি করেছি। আপনার সঙ্গে আমার সবমিলিয়ে দেখা হয়েছে আটত্রিশবার।

প্রথম যেদিন নীল পাঞ্জাবিটা পরে এলেন আমাদের বাড়িতে, আমি সেদিন হাঁটতে বেরিয়েছি পোষা কুকুরটাকে নিয়ে। বাড়ির সামনে আমাকে ওভাবে দেখে ভাবলেন, আমি বুঝি তাড়িয়ে দিচ্ছি তাকে। এক ধমক দিয়ে বললেন, “পালতে যখন পারবেই না, তখন এনেছিলে কেন ওকে বাড়িতে?”
সেদিন আপনার কঠিন কঠিন কথাগুলো আমার কান দিয়ে ঢুকছিলো না। আমি মুগ্ধ চোখে চেয়ে ছিলাম আপনার দিকে। মনে আছে? মনে থাকাবার অবশ্য কথা নয়। আমি তো আর আপনার জীবনে কোনো ভূমিকা রাখতে পারিনি। তবে আপনি রেখেছেন, আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাটা তো আপনারই। আমার মনটা বোঝার চেষ্টা করলেন না কেন সিফাত ভাই?

আপনার মনে আছে? যেবার আমরা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেলাম! আপনিও গিয়েছিলেন আমাদের সাথে। আমি খেলতে খেলতে পরে গেলাম গ্রামের নর্দমায়। বাড়ির সবাই আমাকে ওভাবে দেখে হাসাহাসি করলেও, আপনি হাসেননি। এক বিন্দুও হাসেননি। উল্টো হাত বাড়িয়ে দিলেন আমার দিকে, টেনে তুললেন নর্দমা থেকে। আমার হাত পা ভালোই কেটেছিল। আপনি পরম মমতায় আমাকে নিয়ে গেলেন গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। দুটো স্টিচ লাগলো, কি কি যেন ইনজেকশন দেওয়া হলো আমাকে। জানেন, কোনো ব্যাথাই আমাকে সেদিন স্পর্শ করতে পারছিল না। আমাকে শুধু স্পর্শ করছিল আপনার মায়া, আপনার মমতা।

মনে আছে? একবার স্কুলের অ্যানুয়াল ডে তে আমি ‘দূর দেশী সেই রাখল ছেলে’ গানটা গাইবো বলে ঠিক করলাম। কিন্তু বাড়ির কেউ সেই গান জানে না,জানে না আমার কোনো বান্ধবীও। তাহলে আমাকে গানটা শেখাবে কে? ভারী বিপদে পরলাম, সেই বিপদ থেকে আমাকে উদ্ধার করলেন আপনি। আপনার কিন্নরকণ্ঠে গান গেয়ে শোনালেন সেই গান। আমি শুধু মুগ্ধ হয়ে আপনার কণ্ঠে গান শুনেছি। বুঝতে পারলাম, পৃথিবীর কোনো অশ্রাব্য গানও আপনার কণ্ঠে মধুর শোনাবে।

আমার বাবা মা আপনাকে অসম্ভব পছন্দ করতেন। আপনাকে কখনোই বাবার অফিসের সামান্য কর্মচারী মনে করেননি তারা। আপনিই বরং মনে করিয়ে দিয়েছিলেন বারবার।

গত মাসে বাবা যখন আপনাকে বাড়িতে ডেকে সবার সামনে বলল, “সিফাত বাবা, আমি যে তোমাকে অত্যন্ত স্নেহ করি এটা কি তুমি জানো?”
আপনি ভদ্রভাবে বললেন, “জি জানি।”
বাবা বলল, “আমি চাই আমাদের সম্পর্কটাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে। আমি চাই, তুমি আমার বড় কন্যা জেরিনকে বিবাহ করো।”
বাবার মুখে এমন কথা শুনে আমি ভাবলাম, ঠাট্টা করছে বুঝি! কিন্তু না। বাবা ঠাট্টা করেনি।
আপনার সঙ্গে বিয়ের ব্যাপারটা আপা সহজভাবেই মেনে নিল, আপনিও নিলেন। শুধু মানতে পারলাম না আমি। বুঝলাম আমার বিয়ের বয়স হয়নি, কিন্তু ভালোবাসতে কোনো বয়স লাগে না-কি? ক্লাস টেনে পড়া একটা মেয়ে কি কাউকে ভালোবাসতে পারে না? না-কি অধিকার নেই ভালোবাসার? আচ্ছা, আপনার প্রতি আমার ভালোবাসা কি কারোই চোখে পড়েনি?

আমি আপনাকে ভালোবাসি সিফাত ভাই। প্রথম দেখায় যেদিন আপনি আমাকে ধমক দিয়েছিলেন, সেদিন আপনার প্রেমে পরেছিলাম। আর যেদিন আপনি আমাকে নর্দমা থেকে টেনে তুললেন, সেদিন থেকে শুরু করলাম আপনাকে ভালোবাসা। আচ্ছা আপনি কি এক মুহূর্তের জন্যেও আমাকে ভালোবাসেননি? নির্ঘাত বাসেননি!
বাসলে কি আর পারতেন হতে অন্য করো?

আজ যখন আপনাদের বিয়ে পরানোর সময়ে কাজী সাহেব আপনাকে কবুল বলতে বললেন, আমার ইচ্ছে করছিল দৌড়ে গিয়ে আপনার মুখটা বন্ধ করে দিতে। পারলাম না! তার আগেই আপনি কবুল বলে ফেলেছেন।

সিফাত ভাই, আমি কিন্তু দুর্দান্ত অভিনেত্রী। আজ আপনাদের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর মা যখন আমাকে বলল আপনাকে ‘দুলাভাই’ ডাকতে, কি নির্বিকারভাবে হাসিমুখে ‘দুলাভাই’ ডাকলাম আপনাকে। আচ্ছা, আপনার তো কতো জ্ঞান! আপনি কি বলতে পারেন, স্বর্গে অভিনয় করার কোনো সুযোগ আছে কিনা?

আমার জীবনে আপনার ভূমিকা যে কতটা প্রখর সেটার একটা উদাহরন দেই। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ডক্টর হবো, মানুষের সেবা করবো। আপনার জন্যে সেই স্বপ্ন বিসর্জন দিতে যাচ্ছি। আপনাকে নিজের করে না পাওয়াটা কষ্টের কিছু না। কিন্তু চোখের সামনে আপনাকে অন্য করো হতে দেখাটা অসহনীয় কষ্টের। আমি বরাবরই কষ্ট সহ্য করতে পারি না। আজও পারলাম না। তাই চলে যাচ্ছি আমি। চলে যাচ্ছি আকাশের তারা হতে, কিংবা বৃষ্টির ফোঁটা হতে। অথবা হয়তো মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়ানো কোনো এক শঙ্খচিলের সঙ্গী হতে। আমি চলে যাচ্ছি।

আপনি যখন এই চিঠি পড়বেন, ততক্ষণে সিলিয়ের সঙ্গে ঝুলতে থাকা একটা লাশ হয়ে থাকবো আমি। জানি আমার কথাগুলো আপনাকে দারুন অপরাধবোধে ভোগাবে। কিন্তু কিছু সময় পর আপনি ঠিকই নিজেকে ক্ষমা করে দেবেন। আপনি যে কখনো আমার মনটাকে বুঝতে পারেননি।

ইতি,
আকাশের তারা হয়ে যাওয়া,
তারিন

প্রিয় অনুভূতি -ইফফাত আরা ঐশী

0

#গল্প_পোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#চিঠি_নং_০১

কলমে: ইফফাত আরা ঐশী
________________

প্রিয় অনুভূতি,
রাত দুইটা উনিশ।কেন জানি মনটা অস্থির লাগছে। সময়ের সাথে সাথে ঘড়ির কাঁটা যে স্থায়ী হবে তা কিন্তু নয়। আকাশে মিটিমিটি তারা জ্বলছে। চারপাশের পরিবেশ টা অনেক সুন্দর। সৌন্দর্যের মাধুর্য তাকে যদি বলা হয় তাহলে বলব রাতের আধার টাকে উপভোগ করো। শুনতে পাচ্ছো ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ।
মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে আর স্মৃতিচারণ গুলো যেন উঁকি মারছে।

অভিলাষী ভাবছো কি বলতো। তোমার হাসি মাখা মুখ আমার সারাদিনের কর্মব্যস্ততা দূর করে। অভিমানী হৃদয় কে বল অভিমান ভেঙে ভালোবাসার অনুভূতি জাগ্রত করতে।

প্রিয়তম আগের মত তোমার দেখা যে মেলে না।ঐ যে দেখো দূর আকাশে স্বপ্ন বোনা কিছু রঙিন স্মৃতি। চলনা সুজন রাতের নিস্তব্ধ পরিবেশ উপভোগ করি। কখনো কি এমন ভেবেছো আমি তুমি না থাকলে হয়তো আমাদের ভালবাসার মিলন হয়তো হতো না। শুধু কি আমার অভিমানী হৃদয় টাই দেখলে, আমার ভিতরে যে নিগূঢ় ভালোবাসা তার স্থায়িত্ব অনুভব করলে না।

অভিলাষী আমার স্মৃতিতে যে তুমি আছো।কখনো হয়তো ভাবতে পারি নি তোমার সাথে আমার সখ্যতা গড়ে উঠবে।এ যেন ভালবাসার গল্প কথা । আমার স্বপ্নবিলাসী তে তোমার আনাগোনা তো আজ থেকে নয়, অনেকদিন থেকে।

প্রিয়তম আমার স্মৃতিময় দিন গুলো তে আমার পাশে তোমাকে পেয়েছি।মাঝে মাঝে তোমার সাথে বৃষ্টি বিলাস করেছি।কখনো তোমার সাথে রাতের আঁধারে একান্ত সময় কাটিয়েছি। তোমার সাথে প্রথম যেদিন দেখা,তখন মনে হয়েছিল চীরচেনা কেউ। ভরসার একজন মানুষ। বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসার প্রথম অনুভূতি । প্রথম ভালোবাসা আর শেষ ভালোবাসার মাঝে অনেক কিছু ব্যবধান থাকে। ভালোবাসার মানুষ কে আগলে রাখা কষ্টসাধ্য।

অভিলাষী সারাদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে প্রিয় মানুষটি কে নিয়ে ভালোলাগার মুহূর্ত গুলো কে ফ্রেমে আবদ্ধ হয়ে যায়। তুমি হীনা যে আমি শূন্য। আমার প্রতিটা মুহূর্ত শুধু তোমাকে ঘিরে।চোখ বন্ধ করে তোমাকে অনুভব করি।

প্রিয়তম আমার শহরে তুমি ছাড়া অন্য কোনো অস্তিত্ব নেই। ভালোবাসার উৎস তো তোমার থেকে সৃষ্টি। আচ্ছা এত্তো ভালোবাসার ভিড়ে আমাদের অনুভূতি গুলো হারিয়ে যাবে না তো।

অভিলাষী ঘুম কি ভাঙলো। ভোরবেলার সকালটা পাখির কিচিরমিচির শব্দে চারদিক মুখরিত করেছে।চারদিক নিস্তব্ধ জনমানবহীন।

প্রিয়তম সকাল বেলায় যখন ঘুম ভাঙে তখন তোমার হাতের কফি না পেলে আমি যেনো অনুভূতিহীন। তোমার ঠোঁটের ঊষ্ম অনুভূতি প্রতিটা সকালের সূচনা।তুমি আছো তাই আমার অনুভূতি গুলো উঁকি মারে।
অভিলাষী তুমি যে আমার হৃদমোহিনী। তোমার মিষ্টি চাহনিতে যে মায়া ছিল তা অন্য কারোর মাঝে খুঁজে পাই নি।
যদি কখনো হারিয়ে যাই তাহলে কি আমায় আগের মতোই ভালোবাসবে। আমার অস্তিত্ব কে কখনো কি ভুলতে পারবে। আমাদের ভালোবাসার সাক্ষী তো প্রকৃতি।বল না প্রিয় তোমার হৃদমাঝারে আমি কি থাকবো?যদি কখনো হারিয়ে যাই তাহলে মনে রেখো আমি তোমার অস্তিত্বের সাথে মিশে আছি। প্রতিনিয়ত ভাবি আমাদের ভালোবাসার নতুন অধ্যায় সূচিত হবে। তুমি ভেবো না এগুলো আমার কল্পনা, তুমি ভেবো না এগুলো আমার আবেগ, তুমি ভেবো না আমি দুর্বল, ভালোবাসার প্রকাশ হয়তো কখনো সম্ভব না, তবুও বলবো ভালোবাসি । মৃত্যুর পর ও তোমার সাথে আমি থাকতে চাই। ভালোবাসা তো ছোট পরিসীমা নয়, ভালোবাসার গভীরতা যে না বলা কথা গুলো প্রকাশ পায়।আজ ও ভালোবাসি তোমায়।
ইতি
তোমার ই অভিলাষী

প্রিয়…….Rifat Ara Rinthy

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

প্রিয়…….
আসসালামুআলাইকুম।ডট ডট দিলাম কারন আমি তোমার নাম জানি না। আর নাম না জেনেই তুমি বললাম কেন জানো কারনটা হলো তুমি তো আমার অনেক কাছের। তোমাকে নিয়ে লিখবো ভেবেছিলাম কিন্তু কিভাবে লিখবো তোমার তো কোন ঠিকানা আমি জানি না। শুধু জানি তোমার অস্তিত্ব আছে। আজ যেহেতু একটা সুযোগ পেলাম তাই লিখেই ফেললাম। কখন ও আমি সেভাবে চিঠি লিখি নাই। তাই জানি না কি লিখতে হয়। হাবিজাবি লিখছি বলে কি তুমি রাগ করবে? জানো তো আমি কখনো কারো প্রেম এ পড়ি নাই। এমন নয় যে কাউকে ভালো লাগে নাই। আচ্ছা বলো তো ভালোবাসা টা কি? আমি আমার বাবা -মা, ভাই এর একটু কষ্ট সহ্য করতে পারি না।একটু অসুস্থ হয়েই আমার অনেক বেশী কষ্ট হয়। মনে হয় আমি অসুস্থ হলেই ভালো হতো। এটাই কি ভালোবাসা? জানো আমি সব সময় তোমাকে কল্পনা করি । তুমি আমাকে অনেক বুঝো। জানো আমার অন্ধকার রাতে হাঁটতে ভালো লাগে। কিন্তু ভয় ও লাগে অনেক। মনে হয় তুমি পাশে থাকলে আমি ভয় পাবো না। হাঁটবে তো আমার সাথে? আমার ঘুরতে যেতে ভালো লাগে। পাহাড়, সমুদ্র তোমার সাথে দেখবো। অজানা অনেক কিছু দেখবো জানবো তোমার সাথে। আমাদের সুন্দর একটা বাড়ি হবে সেখানে আমারা সবাই এক সাথে থাকবো। সবার সাথে খুনশুটি তে মেতে থাকবো সারাক্ষণ। তোমার পরিবার আর আমার পরিবার বলে কিছু থাকবে না। রাতের খাবার কিন্তু তোমাকেই খাইয়ে দিতে হবে।রাতে খাইতে আমার ভালো লাগে না। আম্মু জোর করে খাইয়ে দেয়। তোমার মাকে কিন্তু আমি মামনি বলবো। মামনি ও খাইয়ে দিবে মাঝে মাঝে বাবা এসে বলবে শুধু মামনির হাতেই খাবা এই বাবার হাতে খাবা না। তুমি যখন থাকবে না তখন আমি সারা দিন এর গল্প তোমাকে শুনাবো। চিঠিও লিখবো তোমাকে,আমি জানি তোমার অস্তিত্ব আছে। আল্লাহ একদিন ঠিক তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে। আমার ভালোবাসা গুলো সব তুলে রেখেছি তোমার জন্য। আর শুনো নিজের যন্ত নিবা,পরিবারের যন্ত নিবা। পৃথিবীটা অনেক অসুস্থ। হয়তো আমিও এই মৃত্যুর মিছিলে চলে যেতে পারি।
আজ আর কিছু লিখবো না।যদি আর কখনো সুযোগ হয় সেদিন আবার লিখবো। জানি না আমার এই আকাশের ঠিকানার চিঠিটা তুমি পড়বে কি না,
ভালো থেকো,

ইতি
হয়তো তোমার কেউ

শ্রদ্ধেয় বাবা-Samsiha Jannat Mimi

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

শ্রদ্ধেয় বাবা,
আসসালামু আলাইকুম । বাবা যখন আমি ছোট ছিলাম তোমার এই প্রবাসে থাকা নিয়ে আমার অনেক অভিযোগ ছিল । তুমি কেন আমাদের সাথে থাকো না তাই নিয়ে । আমি তো তখন ওতো কিছু বুঝতাম না । তবে আমার খুব কষ্ট হতো । ছোট বেলার আমার বয়সী ছেলে মেয়েরা যখন বাবার হাত ধরে কোনো মেলায় যেত আমি মায়ের কাছে কান্না করতাম আমাকে কে মেলায় যাবে বলে…
মা বলতো তোর মামাকে বলেছি নিয়ে যাবে । যদি বলতাম না আমি বাবার সাথেই যাবো, বাবা কেন আসে না?? মা বলতো এবার ঘুরে আয় পরের বার আসবে । আমিও চুপ হয়ে যেতাম ।

যখন একটু বড় হলাম ৫ম শ্রেণীতে পড়ি কোনো বিয়ে বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে নিয়ে বাবার যত্নাত্তি দেখলে নিজেকে একা লাগতো মা কে বলতাম আব্বু কে এভাবে কখন পাবো । মা বলতো ছোট মামার বিয়ের সময় তুমি আসবে তখন পুসিয়ে দেবে । আমি চুপ করে থাকতাম ওদের দিকে আর তাকাতাম না ।

কিন্তু বাবা তুমি তো বাড়ি এসে আমাকে কখনো সময় দাওনি । আমি সব সময় কান পেতে থাকতাম কখন তুমি আমাকে একটু ডেকে আদর করবে । বাবা তুমি যখন বাজার যাবার সময় আমার মাথায় হাত রেখে বলতে আমার প্রিয় মিষ্টি আনবে আমার তখন মনে হতো আমি আকাশে ভাসছি । কিন্তু তুমি যখনই আমাকে একবারও ডাকতে না খুব কান্না পেত আমার বাবা ।

বাবা তুমি দেশে আসার সময় আমার কিছু লাগবে কি না? আমি তখনই সব পেয়ে গেছি মনে হতো । সেই তুমি যখন বাড়ি আসলে যখন আমার মামাতো ভাইদের আদর করো আমার খুব হিংসে হতো বাবা । আমি যখন দেখলাম তুমি আমার পাওয়া সময় গুলো ওদের দাও আর মা তোমাকে বললে যখন বলতে, “মেয়ে কে ভালোবাসি বুঝতে দিলে মেয়েটা বকে যাবে” । আমি শুনেই সেদিন থেকে আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নিতে থাকলাম । মনে হতে থাকলো আমার বাবা অন্যদের বাবার মতো নয় । টিভিতে মীনা-রাজুর কার্টুন দেখলে মীনার বাবা মীনাকে আদর করছে দেখলে আমার খারাপ লাগতো, চোখ জোড়া কিছুক্ষণ বন্ধ করে রাখতাম । আর মনে হতো, “ইশশশশ যদি আমার বাবা একটু আমায় ভালোবাসতো ।”

বড় হবার পর বান্ধবীর বাবা কে তার সাথে ফ্রেন্ডলি মিশতে দেখলে আমার মনে তুমুল ঝড়বৃষ্টি শুরু হতো । কিন্তু ততোদিনে আমি নিজেকে ঘুটিয়ে নিয়েছি । নিজেকে বোঝাতে শিখেছি, আমার বাবা একজন প্রবাসী । তিনি আমাদের সুখের জন্য সব কিছুকে উপেক্ষা করে সূদুর সে প্রবাসে থাকছেন । তিনি অন্য বাবাদের মতো নয় ।

কিন্তু বাবা, ছোট বেলার সেই মনটা তো আজও সেই একি রকম আছে বাবা । সেই মান-অভিমান আঁকড়ে ধরেই দিন কে দিন অভিমান অভিযোগের পাল্লাটা ভারি করেই চলেছে । বাবা!!! তুমি কী কখনোই বুঝবে না? বাবা কখনো তুমি জানবে এই অভিযোগ গুলো? তোমাকে ছাড়া ছোট বেলা, বড় বেলা দুটোই যে খুব কষ্টে আর একা কেটেছে ও কাটছে বাবা । বাবা কখনো কি সেই কাঙ্খিত বাবার মতো করে তোমাকে পাবো না?? তা না হলে তো সব অভিযোগ গুলো বাড়তেই থাকবে বাবা….

ইতি
তোমার মেয়ে
শামসিহা জান্নাত মিমি

প্রিয় বাবা – ফাবিহা নুজহাত আফিপা

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

চিঠি নং-০১

প্রিয় বাবা,
জানো?ছোটবেলায় মা যখন রাজকুমারির গল্প বলতো তখন ভাবতাম, ইশ!আমার জীবনেও যদি ঐ রাজকুমারির মতো একজন রাজকুমার আসতো।যে কিনা আমার ইচ্ছাগুলো নিজের ইচ্ছা ভেবে নিয়ে পূরণ করে দিবে অনায়াসে,যে কিনা আমার চাওয়াগুলো বুঝে নিবে বলার আগে আর নিরবে ভালোবেসে যাবে আমায় নিঃস্বার্থভাবে।জানো বাবা?এখন ভাবি তখনকার ভাবনাতে ভূল কি ছিল?নাহ্!কোনো ভূল ছিলো না আমার সে ভাবনাতে।স্বার্থপর এই দুনিয়াতে কেউ আমাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে যাক।কিন্তু বাবা আমি নিজেই এ বেলায় বড্ড স্বার্থপর ছিলাম।মা বলেছিলো আমাকে যদি তুমি আল্লাহ্ তায়ালার কাছে মন উজাড় করে কিছু চাও তবে আল্লাহ্ তোমাকে কখনও ফিরিয়ে দিবে না।জানো বাবা,সেই থেকে প্রত্যেক নামাজের পরে আমার প্রার্থনাতে ছিলো সেই মানুষটা।সব সময় ভাবতাম এখনো কেনো সে আসলো না।কিন্তু আমি এখন বুঝি আমার প্রার্থনা বৃথা যায় নি।আমার রব আমায় ফিরিয়ে দেয় নি।তবে সে আমার জন্য রাজকুমার পাঠায়নি,পাঠিয়েছে স্বয়ং মহারাজাকে।যার কাছে সত্যিই আমার ইচ্ছাগুলোই একান্ত তার নিজের ইচ্ছা।বাবা,তোমাকে আমার একটা গোপন কথা বলি কারণ তুমি তো জানোই সামনাসামনি এই কথা তোমাকে বলতে পারবো না।আচ্ছা তাহলে বলেই ফেলি আমি না প্রায়ই টের পাই রাতে কে যেনো আমার গায়ের কাঁথা ঠিক করে দিয়ে কপালে চুমু এঁকে দেয়।আরে বাবা তুমি বলা লাগবে না আমি এটাও জানি কিভাবে পড়ার টেবিলে ঘুমিয়ে গেলে সকালে উঠে নিজেকে বিছানায় পাই।যখন আমার মন খারাপ থাকে তখন কেউ সদ্য অফিস থেকে ফিরে ক্লান্ত শরীরটা বিছানায় এড়িয়ে দেয়ার কথা না চিন্তা করে আমার মন ভালো করার উপায় খুঁজে।সেদিন স্কুল আমাকে জিজ্ঞেস করা হলো তোমার প্রিয় শিক্ষক কে?একমুহুর্ত চিন্তা না করে বলেছিলাম আমার বাবা।এই কথা শুনে তুমি স্যারদের সামনেই একগাল হেসে উঠলে। জানো বাবা,আমার প্রিয় মুহুর্ত হচ্ছে কফি নিয়ে তোমার সাথে আড্ডা।তুমি একমাত্র ব্যক্তি যে আমার ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপ্ররণা।আমার শক্তি।আমার শিকড়। কেউ যখন আমাকে তোর বাবা বড্ড ভালোমানুষ তখন আমি মুচকি হাসি আর মনে মনে বলি তুমি কি জানো আমার বাবা আমার কাছে আরও বেশি ভালো।আমি কখনো কারো সাথে লংড্রাইভে যাই না কেন জানো?কারণ তোমার সাথে হোস্টেল থেকে ফেরার পথে একলা রাস্তায় তোমার খালি গলায় গাওয়া গানটা যে আমায় আরও বেশি টানে।বন্ধুদের সাথে লংড্রাইভে গিয়ে আমি সেই আনন্দ হারাতে চাই না বলেই যাই না।কিন্তু আমি তো তোমাকে সে কথা বলবো না।মাধ্যমিকে উঠার পর যখন এক বড় ভাই আমার হাতে চকলেট আর প্রেমপত্র ধরিয়ে দিয়েছিলো। সেদিনও কেঁদেছিলাম আমি।আর তুমি হাসছিলে। একসময় তোমার হাসিটা আমার রাগের কারণ হয়ে যায়।আর নিশ্চুপে মাথা থেকে সরে যায় সেই ছেলেটার কথা।কিন্তু পরদিন ঐ ছেলেটাই আমাকে ছোট আপু বলায় বড্ড হেসেছিলাম।বাবা আমি কিন্তু আপু বলার রহস্যটাও জানি।জানো?বাবা ভাইয়ের মৃত্যুর পরে তুমি যখন বাড়ি ফিরছিলে তখন হঠাৎ করে ওরা বলেছিলো সেই সর্বনাশা নদীটা নাকি তোমাকে আমার কাছে থেকে নিয়ে চলে গেছে।বিশ্বাস করো বাবা,আমার মনে হয়েছিলো কে যেনো আমার সবচেয়ে বড় সম্পদটা ছিনিয়ে নিয়েছে।মনে হচ্ছিলো নিজের জীবনেরর বিনিময়ে তোমাকে ফিরিয়ে আনি।আমার জীবনের সেই দিনটি ছিল এক কালো অধ্যায়।মনে হচ্ছিলো আমি সারাজীবনের জন্য তোমায় হারিয়ে ফেলেছি।হয়তো সেদিনও প্রভু আমার উপর সহায় ছিলেন।তাই হয়তো আমার কল্পনার সেই মহান মানুষকে আমি ফিরে পেয়েছি।আজও আমার মোনাজাতে সেই মহারাজায় থাকে।কখনো বলা হয়নি বাবা ভালোবাসি,বড্ড বেশি ভালোবাসি।
ইতি,
তোমার পুচকি

প্রিয় বাবু – প্রমা মজুমদার

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
প্রমা মজুমদার

প্রিয় বাবু,

যেখানেই আছো মনে হয় ভালোই আছো। কারণ সবাই বলে ভালো মানুষের কোন কষ্ট হয়না।আচ্ছা বাবু তোমার কি আমার কথা হয়?আমার তো সবসময় তোমার কথা মনে হয়,যেদিন প্রথম মা হয়েছিলাম তুমি ওটির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলে।সেদিন হয়তো খুব কষ্ট পাচ্ছিলে আমার কথা ভেবে।নাতনি হওয়ার পর হাসপাতালের সবাইকে মিস্টি খাইয়েছিলে।নিজে দাঁড়িয়ে থেকে আমার মেয়ের জন্য ছোট ছোট বালিশ, কোলবালিশ বানিয়ে নিয়ে এসেছিলে আরও কতো কিছু আমি মনে মনে খুব খুশি ছিলাম কিন্তু কারো মনে হয় নজর লেগেছিল আমাদের সুখে কিছুদিনের মধ্যেই আমাকে একা করে চলে গেলে।
যখন আমার মেয়ের বাবা অপেক্ষা করতো কখন তার মেয়ে বাবা ডাকবে আর আমার বুক ভেঙে কান্না আসতো আমিতো কাউকে আর কোনদিন বাবা ডাকতে পারবো না।
বাবু তোমার মতো কেউ আমাকে মা বলে ডাকে না।বাসায় গেলে এখনো মনে হয় কিছুক্ষণ পরেই তুমি আসবে দরজার বাইরে থেকেই মা বলে ডাকবে।বয়স্ক মানুষ দেখলে মনে হয় ওরাতো বেঁচে আছে তুমি কেন চলে গেলে?
বাবু জানো আমি যখন দ্বিতীয় বার মা হয়েছিলাম তখন মনে মনে ভাবছিলাম তুমি যদি সেখানে থাকতে?বাবু তোমার যাওয়ার এতো কি তারা ছিল,আমাকে কেন একা করে চলে গেলে তোমাকে কতোটা ভালোবাসি সেটা কখনোই বলতে পারিনি বাবা দিবসে আমার মেয়েরা তাদের বাবার জন্য কতো আয়োজন করে আমি ওদের কিছু বুঝতে দেইনা আমার মনটা সেদিন কতোটা খারাপ থাকে।বাবু জানো আমি খুব হিংসুটে হয়ে গেছি আমার বাচ্চাদের যখন তাদের বাবা আদর করে তখন খুব কষ্ট লাগে আমার ভাগ্যটা কেন এতো খারাপ, কেন আমার বাবা নেই?মন খারাপ হলে কেন তোমাকে পাশে পাইনা।
কিন্তু আমার ছোটবেলা তো এরকম ছিলো না। বাড়ির প্রথম সন্তান একমাত্র মেয়ে সবার সবচেয়ে আদরের।কেউ আমাকে বকা দিতে পারতো না তোমার ভয়ে মা সবসময় বলতো তুমি আমাকে বিগড়ে দিচ্ছ।
একদিন মা’র কাছে বকা খেয়ে কিছু খাইনি তুমি নিজের হাতে ভাত মেখে খাইয়ে দিয়েছিলে আমার একদম ধৈর্য্য নাই কথায় কথায় রাগ
ভাইয়ের সাথে ঝগড়া করে কতদিন ওকে খিমচি আর কামড়ে দিতাম। তুমি ভাইকে বলতে, দিদিকে মারিস না আমাকে মার!ও রাগে গজগজ করতো।আমার বন্ধুরা বলত আমার সাথে তোমার সম্পর্কটা খুব সুন্দর তুমি কোনদিন আমাকে বকা দাওনা যা চাইতাম সবকিছুই এনে দিতে। দোকানের সবচেয়ে ভালো জামাটাই আমার হতো।যখনই কোথাও যেতে আমার জন্য কিছুনা কিছু নিয়ে আসতে,একটুও কষ্ট পেতে দাওনি।তাহলে সারাজীবনের জন্য এতো কষ্ট কিভাবে দিতে পারলে?তুমি তো জানতে তোমাকে ছাড়া আমার একটা দিনও ভালো কাটতো না।বাসায় ভালো রান্না হলেই ফোন করতে এখনই চলে আয় আমাকে না খাইয়ে তো তুমি খেতে পারতেনা এখন কিভাবে আছো আমাকে ছেড়ে।
যেদিন তুমি চলে গিয়েছিলে প্রথম কয়েকদিন মন থেকে মেনে নিতে পারিনি তোমাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম মনে হয়েছিল তুমি ঘুমাচ্ছ আমি আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো বন্ধুটাকে সেদিন হারিয়েছিলাম সেদিনের পর থেকে আর কাউকে ফোন করে বলতে পারিনা আজ সারাদিন কি কি করলাম কাউকে বলতে পারিনা আজ আমার মেয়ে প্রথম মা ডেকেছে, প্রথম হাটতে পারছে,কেউ আমার গলা শুনে বুঝতে পারে না আমার মন খারাপ।বাবু তোমাকে আমার আরও অনেক দিন প্রয়োজন ছিল।
এখন তোমার পাগলি মা অনেক বড়ো হয়ে গেছে।অনেক সহ্য,ধৈর্য হয়েছে এখন আর কথায় কথায় রাগ করেনা।কিন্তু এমন কোন দিন নেই যেদিন তোমার কথা মনে হয় না, যখনই ভালো কিছু হয় ভাবি তুমি থাকলে কি করতে কতোটা খুশি হতে।কেন যেন মনে হয় তুমি সবসময় আমার পাশে আছো যখনই কোন খারাপ পরিস্থিতিতে পরি মনে হয় তুমি সব কিছু দেখতে পাচ্ছ আর ভাবছো তোমার মেয়ে কিভাবে সব কিছু সামলাতে পারবে?বাবু আমি এখন আমি অনেক ব্যস্ত মা কে তো
আমার কাছেই রেখে গেছো তার একাকিত্বটাও তো দুর করতে হবে
তুমি ফাঁকি দিয়ে অনেক তাড়াতাড়ি
চলে গিয়েছিলে মাকে আমি আগলে রাখতে চাই।আমার স্মৃতিতে তুমি এখনো হাসিখুশি সেই মানুষটিই আছো।
বাবু পরজন্ম বলে যদি কিছু থাকে আমি কিন্তু তোমার মেয়ে হয়েই জন্মাতে চাই আমার এই কথাটা কিন্তু তোমাকে রাখতেই হবে।আর কি লিখবো যদি এই চিঠি তুমি কোনদিন পরো তাহলে যেনো তোমার মা তোমাকে অনেক ভালোবাসে।
ইতি
তোমার আদরের মা

প্রিয় লতা আন্টি-Lutfun Nahar Azmin

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগীতা_২০২০

প্রিয় লতা আন্টি,

আশা করি ভালো আছো।আর ভালো থাকবে নাই বা কেন!আমাদের সবাইকে কাঁদিয়ে তো তুমি নভেম্বরে আল্লাহর কাছে চলে গেছো।একবারও ভাবলে না আমাদের কথা!অবশ্য আমাদের কথা না ভাবলেও হতো।কিন্তু জেসি-জিসান?ওরা না তোমার কলিজার টুকরা!ওদের কথা একবারো ভাবলে না?রাগ করে মেডিসিন নেয়া বন্ধ করেছিলে তুমি।আর এই তোমার রাগের কারণেই আজ জেসি-জিসান ওদের মা কে হারিয়েছে।তুমি যদি নিয়মিত বাতজ্বরের মেডিসিন গুলা নিতে তাহলে হয়তো তুমিও এখন আমাদের সাথে থাকতে পারতে।না হতো তোমার ডায়াবেটিস,না হতো লিভার আর কিডনির প্রবলেম। তুমি যখন আইসিএউতে ছিলে তখন ডাক্তার আব্বু আর জাহিদ ফুপাকে বলেছিলো তোমার বাতজ্বর থেকেই বলে লিভার,কিডনি,ব্রেইনের সমস্যা হয়েছিলো।আল্লাহর কাছে খালি তোমার প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছি।বিশ্বাস ছিলো আল্লাহ আমায় খালি হাতে ফিরাবে না।কিন্তু না।আল্লাহ আমায় খালি হাতেই ফেরালো।নভেম্বরের ১৫তারিখ রাত ১০টায় আল্লাহ তোমায় আল্লাহর কাছে নিয়ে গেলো।আর ফিরালো আমাদের খালি হাতে।জানো লতা আন্টি তুমি আল্লাহর কাছে যাওয়ার ১মাস পরেই না আমারো তোমার মতো বাতজ্বর ধরা পরে।ডাক্তারের কাছে তোমার কথাও বলেছিলাম।ডাক্তার বলেছে তুমি অনিয়মিত মেডিসিন নেওয়া আর ঠিক মতো ব্যায়াম না করার কারণেই তোমার এই ছোট্ট রোগ থেকে কত গুলা বড় বড় রোগ হয়েছে।খুব রাগ না তোমার? রাগ নিজের ওপর ঝাড়লে ঠিকই কিন্তু ফল ভোগ করতে হচ্ছে আমাদের,জেসি-জিসানের।আর বেশি কথা বলবো না লতা আন্টি।শুধু এইটুকুই বলবো তুমি যেখানেই থাকো ভালো থাকো।
রেস্ট ইন পিস লতা আন্টি।উই আর রিয়ালি মিস ইউ।

ইতি
তোমার আদরের
বুড়ি

ভাইয়া – তানজিমা

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নংঃ ০১

ভাইয়া,

আপনি একবার জানতে চেয়েছিলেন,আমি আপনার জন্য চিঠি লিখবো কিনা! হ্যাঁ,আমি আজ আপনার জন্য সেই চিঠিটাই লিখছি।এইটা আমার থেকে আপনার জন্য লিখা প্রথম ও শেষ চিঠি।
আপনি দেখতে খানিকটা আমার প্রথম ভালোলাগার মানুষটার মতো!তাই আপনার সাথে আমি কথা বলেছি।সত্যি বলতে বন্ধুত্ব করতে চেয়েছিলাম।
বন্ধুত্ব করতে চেয়েছিলাম প্রেম নয়! বন্ধু হতে চেয়েছিলাম প্রেমিকা নয়।
অপনি একবার বলেছিলেন লকডাউন এর পর প্রথম দেখা যেন আপনার সাথেই করি।তা আর করা হয়ে উঠবে না।আমি আপনাকে বলেছিলাম আমি অবহেলা সহ্য করতে অপরাগ। কারণ আমার নাম রূপান্তি হলেও হিমুর সেই রূপা আমি নই! রূপা হওয়া আমার সাধ্যের বাইরে।
আপনি আমায় দেখতে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন;চেয়েছিলেন আমার একখানা ফটো! আপনার আগ্রহের দামটুকু দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগটুকু হচ্ছে না!
থাকুক না কিছু চেনা পরিচিত মানুষের মাঝে অচেনা অপরিচিত মুখ।
আপনি বলেছিলেন আপনার শখ কেউ আপনার নাম লিখবে তার হাতে।একদিন নিশ্চয়ই কোনো প্রেয়সীর হাত মেহেদী রঙে রাঙ্গিত হবে আর তাতে লিখা থাকবে আপনার নাম।নিশ্চয়ই আপনি তার মাদকতা মেশানো চুলে কাঠগোলাপ লাগিয়ে দিয়ে তার সাথে গোধূলির সৌন্দর্য উপভোগ করবেন।
আপনাকে একটা কথা তো বলা হয় নি! আপনার সাথে কথা বলে সত্যি আমার খুব ভালো লেগেছিলো আমার আপনাকে মনে থাকবে।
আপনি বলেছিলেন কোনো বৃষ্টিমুখর দিনে দেখা হলে যেন শাড়ি পরে আসি।আর কোনো বৃষ্টিভেজা দিনে শাড়ি পরা হবে না;কাঠভাঙ্গা রোদেও পথ থমকে দাড়ানো হবে না কদম ফুল হাতে!
ও হ্যাঁ আরেকটা কথা আমার নাম রূপান্তি না!তানজিমা আমার নাম। ঠিক করা হয়েছিল রূপান্তি রাখা হবে কিন্তু তানজিমা রেখে দিলো!
ঠিক জানিনা কতটুকু গুছিয়ে চিঠিটা লিখেছি।আপনি বলেছিলেন আপনার সাথে সর্বোচ্ছ কথা হলে একটা চিরকুট দিবেন। আফসোস!

(বিঃদ্রঃ জানি না আপনি এই চিঠি দেখে বিস্মিত হয়েছেন কিনা;তবে আমি নিজে হতবিহ্বল হচ্ছি! আমি জানতাম আমি অনেক পাগলাটে তবে এই ধরণের পাগলামো আমার জানার বাইরে ছিলো। কয়েকবছর পর একদিন নিশ্চয় এই চিঠি দেখে আমি বলে উঠবো, “ইশ কী পাগলামিটাই না করেছিলাম।” যাইহোক ভবিষ্যতেরটা ভবিষ্যতেই জানা যাবে।কৈশোরকালটা কি এমনই পাগলামোতে ভরপুর!?)
ভালো থাকবেন।একবারের জন্য হলেও “বন্ধু” ডাকটিতে ডাক দিতে চেয়েছিলাম ; তা আর হয়নি।আপনার আর আপনার প্রেয়সীর জন্য শুভ কামনা।

ইতি
তানজিমা

প্রিয় অতীত – মেঘ

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

চিঠি নং.১

প্রিয় অতীত,

তুমি আসবে বলে সেদিন এক গুচ্ছ কাশফুল হাতে নিয়ে অপেক্ষা করেছিলাম,
তোমায় দেবো ভেবে।
আজও কাশফুল গুলি আমার বই এর ভাজে চুপসে আছে,
তুমি আসবে বলে বকুল ফুলের মালা গেঁথে রেখেছিলাম,
মালা টা আজও আছে কিন্তু ফুল গুলি শুকিয়ে গেছে।

তবে বিশ্বাস করো,
তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা আজও বিন্দু পরিমান শুকায়নি।
বুকের ভেতর বিন্দু বিন্দু করে ভালোবাসার বিশাল সমুদ্র গড়েছি,
সেই সমুদ্রের প্রতিটি ঢেউ এর মাঝে আজও তোমায় খুঁজে বেড়াই।

তোমার জন্য রেখে দেওয়া আধফোটা গোলাপ টাও আজও আছে,
অনেক যত্ন করে আগলে রেখেছি,
আমার বাঁ হাতে কব্জির নিচে পুড়ে যাওয়া দাগ টায় আজও তোমার স্পর্শ অনুভব করি।

মাথা ব্যাথার অজুহাতে সেদিন যখন আমার কোলে মাথা রেখেছিলে আর আমি আলতো করে তোমার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছিলাম,
ঠিক তখনই আমার ডান হাত টা তোমার গলায় জড়িয়ে নিয়েছিলে,
মূহুর্ত গুলো মনে পড়তেই হৃদয়ে রক্ত ক্ষরন হয়।

তোমার কিনে দেওয়া কাঁচের চুড়ি জোড়ার টুংটাং শব্দে আজও তোমার মায়া জড়ানো কন্ঠস্বর খুঁজে বেড়াই।

তুমি নেই তাতে কি?
তোমায় ঘেরা হাজারো রঙিন স্মৃতি নিয়ে দিব্যি ভালো আছি আমি।

জীবন কেটে যায় জীবনের মত,
কেবল মাঝে মাঝে স্মৃতি গুলো নাড়া খেয়ে ঝলসে ওঠে চোখের পাতায়।
দুচোখের পাতা এক করে বেশ অনুভব করি,
একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে,
পিছু খুনসুটি ভুলে নতুনের মত করে ফিরে পাবো সব,এই আশ্বাস নিয়েই ঘুরে বেড়ানো।

গল্প এখানেই শেষ নয়,
জীবন যতদিন চলবে গল্পের কল্পনা গুলিও ততদিন সাজবে রঙিন রুপে,
এটাই দুঃস্বপ্ন এটাই সুস্বপ্ন,
উজ্জ্বল থাকুক স্মৃতিরা,
ভালো থাকুক স্মৃতিদের অবয়ব,
এটাই আশা এটাই প্রত্যাশা।

ইতি
তোমার অতীত।

~মেঘ