Wednesday, August 13, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1981



প্রিয় বকুলফুল-Arisha Jannat

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#চিঠি_নং_১

প্রিয় বকুলফুল,
পত্রের প্রথমে আমার তরফ থেকে ঘোষ কাকুর দোকানের পাঁচ টাকা মূল্য নির্ধারিত সন্দেশের চাশনির মতো মিষ্টতা পূর্ণ ভালোবাসা নিবি।আমার জানামতে,নিজ জন্মভূমি রেখে বিদেশ বিভূঁইয়ে গিয়ে তুই খুব একটা ভালো নেই।আমার সম্বন্ধে বলতে চাইলে বলবো যে,গ্রাম ছেড়ে শহরবাসী হয়ে আমিও মোটেও ভালো নেই রে!
.
ছোটকাল থেকে শুরু করে বিয়ে বসার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত আজীবন আমাদের মনের সুপ্ত বাসনা ছিল যে,আমরা মোহনগঞ্জ নামক ছোট্ট গ্রামাঞ্চল থেকে ইষ্টিকুটুম পাখির ন্যায় ডানা মেলে শহরতলীতে উড়ে গিয়ে নিজেরা নিজেদের সঙ্গী পাখিদের সাথে সুখের সংসার গড়ে তুলবো।সঙ্গী পাখি আর ছানাপোনাদের নিয়ে পরিপূর্ণ আমাদের সেই সংসারে সুখ,খুশি,আনন্দ,আমোদ,ফূর্তি ছাড়া আর কোনোকিছুর আনাগোনা থাকবে না। ইচ্ছা বা স্বপ্ন যাই বলি না কেনো বিয়ের পিঁড়িতে বসার মাধ্যমে তা পূরণ হয়েছে।কিন্তু পূরণীয় সেই স্বপ্নের সুখ খোয়াবে অনেক মনোমুগ্ধকর হলেও,বাস্তবে সেই মুগ্ধতার ছিটেফোঁটা পর্যন্ত খুঁজে পাই নি আমি।স্বামী,সন্তান নিয়ে সুখে থাকলেও আগেকার মতো মুক্তভাবে জীবনযাপন করতে পারি না।নিজেকে কিছুটা খাঁচায় বন্দি পাখির মতো মনে হয় আমার!
.
বড়ই মনে পরে রে আগেকার সেই দিনগুলোর কথা!সেই দিনগুলোতে তুই,আমি এখনকার মতো মধ্যবয়স্কা কোনো নারী ছিলাম না।ছটফটে টুনটুনি পাখির মতো টইটই করে সারাদিন ঘুরে বেড়ানো,উড়নচণ্ডী নামে খ্যাতিপ্রাপ্ত দুই কিশোরী মেয়ে ছিলাম আমরা,যাদের বয়স সবেমাত্র পনেরোর কোঠা ছুঁয়েছে।গরুর বাছুরের মায়াবী নয়নযুগলের মতো আমাদের আঁখিকোণেও সবসময় রাঙানো থাকতো কাজলরেখা।পিঠ বরাবর লম্বা কেশে চম্পা ফুলের সুগন্ধিওয়ালা তেল দিয়ে মাথার দুইপাশে দুই ঝুঁটি বাঁধাই ছিল আমাদের নিত্যদিনের সাজ।সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত গ্রামের প্রতিটি জায়গা চষে বেড়ানো ছিল তখনকার দিনে আমাদের প্রধান কাজ।বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রথম দুই ঘণ্টা চুপটি মেরে বসে থাকলেও টিফিনের ঘণ্টা বাজতেই বিদ্যালয় চত্বর থেকে একছুটে বের হয়ে আসা ছিল আমাদের স্বভাব।সেই যে বের হয়ে যেতাম তারপরে সারাদিনে আর নীড়ে ফিরে যাওয়ার মতো কোনোপ্রকার তাগিদ অনুভব করতাম না আমরা।ঘোষ কাকুর দোকানে গিয়ে কখনো নগদে আবার কখনো বাকিতে ভোজন সেড়ে নিয়েই দৌড় দিয়ে চলে যেতাম তমিজ দাদার পুকুরপাড়ে।পুতুলের বিয়ে,রান্না বাটি,লুকোচুরি,এক্কাদোক্কা,বৌছি খেলা থেকে শুরু করে নিতিন কাকুর বাগানের গাছগুলোর ডালে বাঁদরীর মতো বসে থেকে দিনদুপুর পার করে দিতাম দুজনে মিলে।চন্দন তুল্য মাটি অহরহ মেখে থাকতো আমাদের হাতে,পায়ে,কাপড়ে।
অন্যান্য সইদের সাথে মোটামুটিরকম ঘনিষ্ঠতা থাকলেও তোর আর আমার সম্পর্কের গভীরতা ছিল সবচেয়ে বেশি প্রখর এবং নিখাদ ভালোবাসাযুক্ত।দিনশেষে নিজের ঘরে ফিরে গেলেও পরবর্তী দিন থেকে পুনরায় আরম্ভ হতো আমাদের বাউণ্ডুলেপনা।সেই দিনগুলোর কথা ভেবে বলতে গেলে বলা যায় যে,তখন আমাদের দুজনের আত্না ছিল একই কিন্তু সেটি অর্ধেক ভাবে বসবাস করতো আমার দেহে আর বাকি অর্ধেকের বিরাজ ছিল তোর দেহে।সারাদিন আমরা মুক্ত পাখির মতো নিজেদের ইচ্ছেতে উড়ে বেড়ালেও কোনো একটি ক্ষণে আলোচনারত অবস্থায় যদি মনের লুকায়িত কামনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হতো তাহলে সেই ক্ষেত্রে সবসময় মিলে যেতো আমাদের বাণী।প্রিয় মানুষের হাত ধরে গ্রাম ছেড়ে শহরাঞ্চলে গিয়ে সুখের কুঠরি গড়ে তোলাই ছিল আমাদের বাসনা।কথায় আছে না?”মানুষ দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝে না”,আমাদের বেলাতেও ঠিক একই কাণ্ড ঘটেছিল।গ্রামের স্বতঃস্ফূর্তভাবে যাপিত দিনরাত্রি গুলো হয়তোবা তখন আমাদের কাছে একঘেয়েমি হয়ে গিয়েছিল তাই তো নতুন কিছুর আশায় শহরের ভবনে বসবাসের মনোভাব তৈরি হয়ে গিয়েছিল আমাদের ছোট্ট মনে।কিন্তু তখন কি আর জানতাম রে,মোহনগঞ্জের স্বাধীন,খাঁটি মাটির ঘ্রাণ মিশ্রিত বাতাসের সাথে শহরের কালো ধোঁয়ার তুলনা করা ভুল বৈকি আর কিছুই নয়!কোথায় আমাদের সেই সবুজ গাছগাছালি,ধানক্ষেত,পাখপাখালির কলকাকলি মখুর প্রাণের গ্রাম আর কোথায় এই তুচ্ছ কংক্রিটের বাসভবন,গাড়িঘোড়া ভরপুর শহর!আকাশপাতাল তফাৎ!দুটির মাঝে তুলনা করা কখনোই উচিত না রে,কখনোই না!আর যদি কেউ তুলনা করেও ফেলে তাহলে পরবর্তীতে গিয়ে তারও আমাদের মতো বোধগম্য হবে যে,গ্রাম নামক অতি সাদামাটা মানুষের বসবাসরত স্থানটি সবচেয়ে সেরা এবং শ্রেষ্ঠ!
.
তোর সাথে গতবার মুঠোফোনে কথোপকথনরত সময়ে তুই আমাকে গ্রাম সম্পর্কিত তোর বর্তমান মনোভাব জানিয়ে আবারো আগেকার দিনগুলো ফিরে পাওয়ার জন্য আক্ষেপ করলেও এ সম্বন্ধে আমি আমার অনুভূতি তখন ব্যক্ত করতে পারি নি।আমার ইচ্ছা হয়েছিল যে,চিঠিপত্র লিখে আমি আমার অনুভূতিপ্রবণ প্রকাশ করবো।তাই লিখতে বসে গেলাম আমার মোহনগঞ্জের স্মৃতি সম্বলিত অব্যক্ত অনুভবযোগ্য বাণীকে লিখিত রূপে রূপান্তরিত করা এই চিঠি।লিখে যা প্রকাশ করতে পারি আমি,তা মুখে বলেকয়ে ব্যক্ত করা আমার পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়।
.
স্বামী,সন্তান,সংসার সর্বদিক সামলিয়ে শত ব্যস্ততার মাঝেও অবসরে পাওয়া ক্ষণিকের কিছু সময়ে মোহনগঞ্জ আর আগেকার সেই দিনগুলোর স্মৃতিচারণা করি আমি।আমি জানি যে,তোর ক্ষেত্রেও ঠিক একই ঘটনা ঘটে।যখন দুজনের অবস্থায় একই তাহলে চল না স্মৃতিগুলোকে অতীত না বলে বর্তমান বলার জন্য কিছু কার্য সম্পাদন করি আমরা।দীর্ঘদিনের জন্য না হলেও অন্তত এক-দুইদিনের জন্য স্বামী,সন্তান এবং আর সকল ব্যস্ততাকে ভুলে গিয়ে নিজেদের মতো করে একান্তে সময় উপভোগ করার জন্য মোহনগঞ্জের উদ্দেশ্য চলে যাই।ফিরিয়ে নিয়ে আসি আগেকার সেই দিনগুলো।ফিরে যাই নিজ জন্মভূমিতে।আবারো মেতে উঠি বৌছি,কুতকুত,কানামাছি খেলার সমাহারে।মোহনগঞ্জের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যময় প্রকৃতি নিজ চোখে অবলোকন করে আসি।নিজেদেরকে সজীব কিছু সময় দান করি।আমার প্রস্তাবে তুই রাজি থাকলে চল দিনক্ষণ ঠিক করে ঘুরে আসি গিয়ে।
.
আজকের মতো এখানেই ইতি টানি।আমার আশা এবং বিশ্বাস যে,তোর কাছ থেকে ইতিবাচক ইশারা পাবো আমি।দয়া করে,মুঠোফোনে না জানিয়ে চিঠি লিখে বার্তা জানিয়ে দিবি আমাকে।তোর উত্তর বহনকারী চিঠির অপেক্ষায় রইলাম আমি।পরিবারের সবাইকে নিয়ে সবসময় ভালো এবং বিপদমুক্ত থাক এই দোয়াই করি।খোদা হাফেজ।

ইতি,
তোর প্রিয় সখী কুঞ্জলতা

প্রিয় হেমেন্দ্র-Faiza Habib Nebula

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-০২
প্রিয় হেমেন্দ্র,
কেমন আছো? জানতে চাইব না, উত্তরটা কি আগেই জানি!হেমেন্দ্র আজ সাতাশ বছর পর তোমাকে চিঠি লিখছি।সাতাশ বছর আগের আমাদের প্রথম দেখার স্মৃতি তোমার কি মনে পড়ে?তুমি তো ভুলে গেছো!আমার যে আজ ও মনে পড়ে তোমার সাথে কাঠানো সেই প্রতিটি মূহুর্ত।আমি আমার মানসলোকের কুঠুরিতে বারবার ফ্ল্যাশব্যাকে দেখি সেই মুহুর্তগুলো।
শিশিরভেজা এক শুভ্রসকালে ভার্সিটির খেলার মাঠে দেখেছিলাম তোমায়,তুমি তোমার বন্ধুদের সাথে নতুন আসা আমাদের ব্যাচমেটদের র্যাগ দিচ্ছিলে।আমার কাছে ছিলে মূর্তিমান আতঙ্ক।তাই তো সারাদিন পালিয়ে বেড়াতাম তোমার কাছ থেকে।কিন্তু গোধুলিবেলায় কন্যাসুন্দর আলোয় তোমার চোখে চোখ পড়েছিলো,স্তব্ধ হয়েছিলো দুই চোখের দৃষ্টির মধ্যে,কি দেখেছিলাম জানি না, পালিয়ে গিয়েছিলাম ভীত হরিণীর মতো।বেশ কিছুদিন ভার্সিটিতে পা দেয়ার সাহস করি নি।তারপর একদিন লাইব্রেরী যাবার পথে পাকড়াও করলে,ভালোলাগার, ভালোবাসার কথা আদায় নিলে মূহুর্তেই।তার পর আর কি আমাদের সেই সোনালী বিকেলগুলো আরো রঙিন হলো এক সাথে পথ চলতে গিয়ে।কিন্তু সোনালী বিকেলগুলোর তো শেষ আছে, রাতের অন্ধকার নেমে আসলো আমাদের জীবনে!…..
মনে পড়ে তোমার?তুমি প্রাতিষ্ঠানিক পড়া শেষ করে পারিবারিক ব্যবসায় বসতে শুরু করলে আর আমি মাস্টার্স পরীক্ষা দেব দেব এর মধ্যে কি নেশায় চাপলো তোমার আমার সর্বস্ব চাইলে,চাইলে আমার পূর্ণ সমর্পণ।গোড়া মুসলিম পরিবারের মেয়ে,তাই ধ্যান ধারণায় বিয়ের পূর্বে সম্পর্কে মন মানতে চাইলো,আমাকে তো আমার চেয়ে বেশি বুঝতে, আমার দ্বিধা মুহুর্তেই বুঝে নিলে,হাত টেনে নিয়ে গেলে আদালত পাড়ায়।দুই ধর্মের বিভেদে রেজিস্ট্রি করাই ঠিক হলো,দুটি নাম জুড়ে গেল।এবার ছিলো পূর্ণ সমর্পণের,আমার মনের মণিকোঠায় তোমার বসবাস ছিলোই কিন্তু এবার আমার রক্তকণিকায় মিশে গেলে,আমি পূর্ণতা পেলাম।ভাবলাম এটাই বোধ হয় ছোটবেলায় পড়া সেই সিন্ড্রেলার গল্পের চমৎকার পরিণতি& they lived happily ever after…….কিন্তু এই বোধ হয় আমার সুখের দিনের শেষ ছিলো, দুঃখের অমানিশার সূচনা।
পরীক্ষা শেষ হলো আমার,অসুস্থ হলাম আমি, এদিকে তোমার ব্যস্ততা বেড়ে গেলো,অফিসের শেষে নানা পার্টিতে ঘুরে বেড়াতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে,এর মাঝেই টের পেলাম নতুন অস্তিত্বের সন্ধান এই আমির মাঝে।এই সুখবর দেয়ার আগেই ব্জ্রাহত হলাম তোমার বিয়ের খবর শুনে!তোমার বাড়িতে তোমার বাবার কাছে সবকিছু খুলে বললাম,উনি ক্ষীয়কাল চুপ করে থেকে তোমাকে ডাকলেন,তুমি আমাকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে গেলে, অস্বীকার করলে আমার অস্তিত্ব।আমি রিক্তের মতো ফেরত এলাম হোস্টেলের ঘরে,এতটাই শক পেয়েছিলাম,আরও বেশি অসুস্থ হয়েছিলাম।একটু সুস্থ হলে ভাবলাম, বাড়ি যাবো!মায়ের কোলে মাথা রেখে কাঁদলে কষ্ট জুড়াবে আমার,কিন্তু অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকিয়ে যায়।চিঠি পেলাম আব্বুর হার্টফেল হয়েছে,আব্বুর ইন্তেকালের সাথে পরিবার থেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছে আমায়।আমার অপরাধ আমি ভিন্ন ধর্মের রাজপুত্রের সাথে ঘর বাধতে চেয়েছিলাম!তোমার বাবা আমার অন্য উপকার না করতে পারলেও ভার্সিটি থেকে ঠিকানা নিয়ে বাড়িতে খবর দেয়ার দায়িত্বটুকু দারুণ পালন করেছিলেন।নিজের উপর রাগে দুঃখে আমি হাতের রগ কেটে সুইসাইড এটেম্পট নেই,কিন্তু রুমের দীর্ঘদিনের সাথী মেডিক্যালে নিয়ে যায়,বেঁচে যাই আমি নাকি মরেও বেঁচে থাকি জানি না…..
তোমার হয়তো মনে হচ্ছে এতদিন পর এই পুরাতন কাসুন্দি কেন ঘাটছি,বিশ্বাস করো আমার ও বলতে ইচ্ছে করছে না,
তোমার গলার শব্দদূষণ
তোমার গলার স্বর
আমার দরজায় খিল দিয়েছি
আমার দারুন জ্বর
তুমি অন্য কারো ছন্দে বেধো গান…….
তোমার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহুর্ত বিভীষিকার মতো লাগছিলো।সেই সময় আমার অন্ধকারআচ্ছন্ন জীবনে একটুকরো আলোর দিশা হয়ে জয় এসেছিলেন।তোমার বন্ধু জয়,আমাদের বিয়ের সাক্ষী।আমার এই দুর্দশার কথা জেনেই নিজেই কষ্ট পাচ্ছিলেন,আমাকে নিজের বাড়ি নিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন হয়তো সাক্ষী হবার দায় থেকে।আমি বললাম সহায়তা যদি করতেই হয় চাকুরির ব্যবস্থা করে দিন,কিন্তু এই শহরে নয়, এই শহর কেড়ে নিয়েছে আমার আমিত্ব।তাই তো জয়ের ব্যবস্থায় দূর এক পাহাড়ি গ্রামে চলে গেলাম শিক্ষকরূপে,ছোট ছোট পাহাড়ি বাচ্চাদের পড়িয়ে কেটে যেতে লাগলো সময়, তারপর জন্ম নিলো নক্ষত্র,আমার ভালোবাসার ফসল বা আমার ধ্বংসের স্মৃতিচিহ্ন।কিন্তু আমি যে ওকে বোঝা ভাবিনি,নক্ষত্রের জন্মের পরেই অসহায় নারীদের জন্য প্রতিষ্ঠা করলাম নক্ষত্র এনজিও যা আজ নক্ষত্র এম্পায়ারে পরিণত হয়েছে।জয়ের সেই সহায়তা আমার শক্তিতে পরিণত হলেও আমায় কখনো অসম্মান করেনি,আমাকে ভালোবাসতেন স্ত্রীর মর্যাদা দিতে চেয়েছিলেন,কিন্তু বাসীফুল দিয়ে পূজার নৈবেদ্য সাজানো যায়?
তোমার কোম্পানি নক্ষত্র এম্পায়ার টেক ওভার করেছে খবর পেয়েছো নিশ্চিত,মদ্যপ মেয়ে আর লোভী স্ত্রীকে নিয়ে আশা করি বাকি জীবন তোমার রাস্তায় ভালোই কাটবে।তোমার ঘরে লাগা আগুনে আমার ঘর দিয়াবাতির মতো আলো দিবে, তোমার দেয়া শিক্ষাকে কাজে লাগালাম।
ইতি তোমার
কাবেরি।

প্রিয় চ্যালেন্জ!-নাফীছাহ_ইফফাত

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#কলমে___নাফীছাহ_ইফফাত
#চিঠি_নং_১

প্রিয় চ্যালেন্জ!

তোমার নামটা যেমন অদ্ভুত তেমনই তুমিও। জন্মের সময়ই হয়তো নিজেকে সকল অবস্থাতেই কন্ট্রোলে রাখার চ্যালেন্জ নিয়ে জন্মেছিলে তুমি।
আমি জানি না তুমি আমাকে কি ভাবো। কেন আমাকে সবসময় কন্ট্রোলে থাকতে বলো তাও জানি না। ভালোবাসা কি কন্ট্রোলে রাখা যায়? এটা কিভাবে যেন হয়ে যায়। কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। তুমিও ঠিক সেভাবেই আমাকে ভালোবেসেছিলে। আমি আজও জানি না সেটা সত্যিই ভালোবাসা ছিলো কিনা! কারণ ভালোবাসায় কোনো কন্ট্রোল থাকে না। একজন অপরজনকে সারাক্ষণ মিস করে, একে-অপরকে সারাক্ষণ কারণে অকারণে মনে পড়ে। প্রতিটা ভালো, সুন্দর মুহুর্তে একে অপরকে মনে পড়ে। অথচ তুমি দিনের পর দিন আমাকে মনে না করে থাকতে পারো। নিজ থেকে কখনো খোঁজ না নিয়ে থাকতে পারো। এজন্যই হয়তো তোমাকে চ্যালেন্জ ডাকে সবাই।

তুমি কখনো নিজ থেকে আমাকে না করো কোনো টেক্সট আর না করো ফোন। বরং আমি ফোন করলেই তুমি কেটে দাও। কেন এতো অবহেলা করো আমাকে?
ফোন করতে বললে তুমি বলো, বেশি ফোন করলে নাকি বেশি মিস করবো তাই ফোন করা যাবে না। আবার সারাক্ষণ টেক্সটও করা যাবে না। তাহলে নাকি কোন সমস্যার কারণে একদিন টেক্সট করতে না পারলে আমরা চিন্তিত হবো। শুধুমাত্র সেই একটা দিনের কথা ভেবে এত কষ্ট দিচ্ছো আমায়? কেন?

আমি যদি এক্সিডেন্ট করে হাত-পা ভেঙে রাস্তায় পড়ে থাকি এবং এটার জন্য কোনোভাবে তোমাকে ফোন দিই তাহলে তো তুমি কখনোই এই ঘটনা জানতে পারবে না। কারণ তুমি আমার ফোন পিক আপ করাতো দূরে থাক, কল দিয়েছি সেটা দেখেও ব্যাক করোনা। বরং সাথে সাথেই তুমি কেটে দাও। আচ্ছা ধরলাম তুমি বিজি থাকো। আচ্ছা বলতো, একটা মানুষ কি সবসময় বিজি থাকতে পারে? আমি যখনই ফোন করি তখনই তুমি বিজি। এটা কিভাবে সম্ভব? তুমিই কি একমাত্র ব্যাক্তি যে সবসময় বিজি থাকো? নাকি আমি যখনই ফোন করি তখনই বিজি হয়ে যাও। আচ্ছা এটাও ধরলাম যে সবসময় বিজি থাকো। তাহলে ফ্রি হয়ে কলটা কি ব্যাক করা যায় না? কখনো জানতে চেয়েছো আমি কেন ফোন দিয়েছিলাম? তোমার কি মনে হয়, তুমি সবসময় বিজি থাকো আর আমি সবসময় ফ্রি? আমি সবসময় তোমাকে আজাইরা কাজে ফোন দেই? কখনো আমার কিছু বলার থাকেনা? সবসময় উতলা হয়ে থাকি বলে কি সবসময় আজাইরা কাজে ফোন দিব? কখনো কখনো তো অসম্ভব দরকারেও ফোন দিতে পারি। বা তোমার কেয়ার… নাহ, নাকি তুমি চাওনা আমি তোমার কেয়ার করি? তুমিও যেমন আমায় করো না? আসলে কি জানো, আমি পারিনা তোমার কেয়ার করা ছাড়া, খোঁজ নেয়া ছাড়া থাকতে। একচুয়েলি আমি চাইও না। অনেক বেশি ভালোবাসি তো। থাক সেটা নাই বা বললাম। বুঝবে না তুমি।

আবার ধরো, আমি টেক্সট করা অফ করে দিয়েছি হঠাৎ করে। যেমনটা আমি সচরাচর তোমার সাথে রাগ করে করি। নাহয় আমার অনলাইনে না আসার কোনো কারন নেই। শত ব্যস্ততার মধ্যেও শুধু তোমার খোঁজ নেয়ার জন্য কয়েকমিনিটের জন্য হলেও অনলাইনে আসি। আর বারবার তোমার টেক্সটের জন্য ওয়েট করি। এবার ধরো এমনই একদিন আমি টেক্সট করছি না, আমার ভয়ংকর অসুখ করেছে যেটা তুমি জানোও না। প্রয়োজনই মনে করোনি জানার। তখন যদি আমি মরেও যাই, তাহলে তিন-চারদিন তুমি অনায়াসে চুপ করে থাকবে। তুমি ভাববে, হয়তো এমনিই করছে না। বা হয়তো ভাববে, ভালোই তো হয়েছে টেক্সট করছে না, আমাকে এখন ডিস্টার্ব করার কেউ নেই। বা ভাববে, হয়তো ব্যস্ত। (আগেই বলেছি, তোমার জন্য আমার কোনো ব্যস্ততা নেই। আমি মরতে মরতেও যদি তুমি টেক্সট বা কল করো, আমি না মরে আগে ফোন উঠাবো, আই সোয়্যার।) বা হয়তো আমার কথা ভাববেই না। মনেই পড়বে না যে আমি টেক্সট করছি না। তিন-চারদিন পর মনে পড়বে। ততদিনে আমি কবরে থাকবো। তুমি চারদিন পর ফোন দিয়ে জানবে আমি চারদিন আগে মারা গেছি। তখন তুমি মেজবান খেতে আসতে পারো। আর কিছুই করার থাকবে না৷

আচ্ছা বলতো, আমি কি এত্তটাই মূল্যহীন তোমার কাছে? যে তোমার জন্য সারা দুনিয়াকে ভুলে যেতে পারে তাকেই তুমি ভুলে যাও সারা দুনিয়ার জন্য? কেনে এরকম হয় আমার সাথে বলতো? আমি এতটা মূল্যহীন কেন? আমি জানি তুমি এখন আমাকে শত ব্যস্ততা দেখাবে। অনেক কিছুই বলবে। আমিও হয়তো কিছুই না বলে সবটা মেনে নেবো৷ আমি আসলে সবটা বুঝি। তুমি উল্টাপাল্টা বোঝালেও ঠিকটা আমি বুঝি। শুধুমাত্র তোমার সাথে ঝগড়া করতে চাইনা বলে তর্কে যাইনা। আর আমি চাই আমার কাছ থেকে যেন অন্তত তুমি কোনো কষ্ট না পাও। তাই সবসময় তোমার সব কথা রাখি। তোমাকে কক্ষনো কোনো মিথ্যে বলিনা আমি৷ এত বেশি ভালবাসি তোমায়। তারপরও যদি কোনো কমতি থাকে আমাকে বলো। আমি ভরিয়ে দেবো৷ সবটা দিয়ে ভরিয়ে দেবো তোমাকে। তাও আমাকে ইগনোর করোনা। আমাকে শুধু একটু ভালবাসলেই হবে। অল্প একটু৷ আর রোজ অল্প একটু সময় দিলেই হবে। আর কিচ্ছু চাইনা আমি৷ কিচ্ছু না৷

এত কথা তোমাকে কখনো সরাসরি বলা হবে না। হয়তো গুছিয়ে বলতেও পারবো না। তাই চিঠির মাধ্যমে জানালাম। এতকিছুর মধ্যেও আমি একটাই জিনিস চাই তোমার কাছে, “ভালোবাসা”। আমি বড্ড ভালোবাসার কাঙ্গাল। এরচেয়ে বেশি আর কিছুই চাই না আমি। তোমাকে আমি নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। সবসময় চাই তুমি ভালো থাকো। ভালোবাসি সবসময়।

ইতি,
তোমার অপ্রিয় পাগলীটা।

চিঠি নং- ১ -সোহাগুর রহমান (সোহাগ)

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

চিঠি নং- ১

কবিতা,
গোধূলির আলোহীন এই মেঘাচ্ছন্ন প্রহরে সদ্য ফোঁটা গন্ধরাজের শুভেচ্ছা নিও। অনেকদিন আগে একটা চিঠি লিখেছিলাম তোমার ঠিকানায়, আজ আবার লিখতে বসলাম। উদাস মন যেন আজ হারিয়ে গেছে একটি সুরতোলা নদীর ঢেউয়ের দোলায়। তার রিনরিনে উচ্ছোষিত স্রোতে অনুভূতিরা স্বপ্নাচ্ছন্ন কত কথা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে , আমি তার কিছুই জানি না। এসব রঙিন স্মৃতি, বয়ে বেড়ানো তোমার ভালোবাসা গল্পের পাতায় তুলে রাখছি, সময়ের কফিনে ওরা বন্দি হতে থাক। যদি কখনো আমাদের সম্পর্কের অবনতি হয় ওদের নিয়ে বেঁচে থাকা যাবে। আচ্ছা, কেমন আছো কবিতা?

আজ এই তুমুল বর্ষায়, ডুবে যাওয়া শহর কিংবা আমার উৎকন্ঠিত একটি আধখোলা জানালার পাশে তোমার থাকার কথা। কই তুমি? অপেক্ষাদের ফুরিয়ে যাওয়া সময়ের একেকটি হিসেব জমাচ্ছি ডায়েরির রঙচটা পাতায়। যেন দীর্ঘশ্বাসের ভিতর শুয়ে থাকা হৃদয়ের তুমুল হাহাকার নিয়ন আলোয় পিষে যাচ্ছে ; শহর থেকে বন্দরে কখনো বা দিক থেকে দিগন্তে। একদিন আমাদের উঠোনে বৃষ্টি হবে, ল বাঁধনহারা পাখির মত ভিজে যাবো একসাথে। সেদিন একান্তই আমাদের হবে সেই বৃষ্টিবিলাস।

মুঠো ভর্তি রঙিন ইচ্ছে নিয়ে সারাদিনমান ঘুরে বেড়াচ্ছি, লোক থেকে লোকান্তরে। অথচ আমার জন্য নাকি তোমার হাতে সময় নেই। বাতাসের তোড়ে বিষাদের ছাপ লেগে আছে, হৃদয়ের গহীনে শুয়ে থাকা সর্গও বুঝি ডুবে গেছে নরকে। তোমার শহরের বাহিরে অনেকটা দিন ছিলাম। ফিরে এসে ভাবলাম আমার জন্য তুমি আজও অপেক্ষায় আছো; চুপ করে থাকো গাছের পাতার মত। পড়ন্ত বিকেলের বুকে মাথা রেখে কতদিন তোমাকে ভালোবাসি বলা হয়নি। যাক সে কথা সূর্যটা ডুবে গিয়ে সন্ধ্যাকে আহ্বান করছে এবার উঠি। নৈঃশব্দে ডুবে যাওয়া শহর থেকে শতদল তুলছি আনমনে। হঠাৎ, অনেকটা বে-খেয়ালে তুমি আমার কাঁধে মাথা রাখলে। স্বপ্নের ভেতরে আরেকবার তাকাতেই আমি তোমাকে হারিয়ে ফেললাম। তারপর আবার ঘুমিয়েছি কিন্তু তুমি আর আসোনি!

তোমার চোখ স্বচ্ছ কাঁচের মত, আমার জন্য তোমার মনের ভেতর কি যেন চলছে তা ও চোখে স্পষ্ট। জানো, মাটিতে পড়ে থাকা শুভ্র ফুল হাতে কুড়িয়ে নিলে ফুলগুলো যত খুশি হয়, আমি তারও বেশি খুশি হই তোমার মুচকি হাসির স্ফুরণে। যাই হোক, আমাকে কষ্ট দেয়াও তোমার জন্য বৈধ।খামখেয়ালির বশে আমার উপর রাগ করো, তখন আমার চোখ জুড়েও নামে অন্ধকার। ফিরে এসে সে আঁধার মুছে দাও নিবিড় যত্ন। আজ এক উদভ্রান্ত পথিকের মতো অজস্র বিমর্ষতা নিয়ে এসব স্মৃতি পরখ করছি। খুব দূরে, অচেনা কোন জায়গা থেকে হাতছানি দেয় তোমার হাসি। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন আমরা আমাদের হই! আল্লাহ হাফেজ।

ইতি
তোমার সরল নির্দোষী

সোহাগুর রহমান (সোহাগ)
জেলা: মাগুরা

প্রিয়… Writer: Saima Islam Tamanna

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-২

প্রিয়….!

আচ্ছা, প্রিয়’র পর কি আর কিছু লিখতে হবে? তুমি তো সব সময়ই আমার প্রিয় ব্যক্তি। আজ তোমায় অন্য কোনো সম্বোধন করবো না। কারণ এখন সম্বোধন করার মতো চমৎকার শব্দ ভান্ডার আমার কাছে নেই। তুমি না হয় আমার এই পত্রটি পড়েই খুঁজে নাও তোমার কাঙ্ক্ষিত সম্বোধন। যে সম্বোধনে তুমি খুশি হবে। হাসি ফুটবে তোমার ওই কালচে লাল ঠোঁটের কোণে। আমি তো এটাই চাই তুমি সবসময়ই তোমার ওই দীপ্তিমান হাসি হাসে। হাসতেই থাকে আর আমি হারিয়ে যেতে চাই তোমার ওই হাসির মাঝে। তোমাতে তো বিলীন হয়ে আছি আমি অনেক আগেই প্রিয়। আজ না হয় আরও একবার হবো, হতে যে চাই আমি। তোমার বাম হাতের কব্জির খানিকটা উপরে কুচকুচে কালো তিলটার প্রেমে পড়েছি আমি বারবার প্রিয়। আচ্ছা? প্রিয়! তুমি কি আমার মতো বৃষ্টি বিলাস করো? আমার মতো কি হুটহাট রেগে যাও? আবার একটুখানি আদর মাখা কথায় হারিয়ে যাও। সেখানে থাকে না কোনো রাগ, শুধু থাকে প্রিয়’র কথার ধ্বনি। যা বারবার কানে আঘাত করে আর আমি হারিয়ে যাই অন্য এক ভালো লাগার মাঝে। আচ্ছা তোমারও কি আমার মতো হঠাৎ করে কান্না পায়? বুকে ব্যাথা হয়? তোমায় হারানোর কথা মাথায় এলেই ছটপট করি। জানে,তখন কি পরিমাণ কষ্ট বুকে চেপে রাখি। জানে, প্রিয়? আমি তোমার প্রতিক্ষায় কতগুলো দিন কাটিয়েছি। অপেক্ষা করি। সেই অপেক্ষার নাম একগুচ্ছ শুভ্রতা। হ্যাঁ, আমি অপেক্ষার নাম দিবো শুভ্রতা। আকাশের যেমন রঙ আছে। কখনো নীল,কখনো ঘন কালো, কখনো বা সাদা। তাই আমার অপেক্ষার নাম তবে সাদাই দিলাম। প্রিয় ইতিমধ্যে হয়তো তুমি আমার সম্বোধন পেয়ে গেছো।

ইতি
তোমার প্রেয়সী

প্রিয় অনুরাগ -Fahmida Akhi

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং – ১

প্রিয় অনুরাগ,

সে বছর বর্ষণমুখর এক সন্ধ্যায়, বৃষ্টিতে ভিজে চুপচুপে হয়ে আপনার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। তবে তার আগে আপনার একলা থাকার সেই ছোট্ট ঘরের দরজায় কাঁপা কাঁপা হাতে কড়া নেড়েছিলাম বেশ কয়েকবার। ক্ষাণিক পরে দরজা খুলে আমাকে এমন অবস্থায় দেখে খুব অবাক হয়েছিলেন। কিন্তু পরমুহূর্তেই ভ্রু কুঁচকে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘কি সমস্যা তোমার? আর এসব পাগলামির মানে কী? কেন এমন করছো? তোমাকে কতবার বলবো, আমি বাস্তববাদী মানুষ। আমার কাছে এসব পাগলামীর কোন মূল্য নেই। যাও, বাড়ি ফিরে যাও।’ আপনার সেই অবজ্ঞা, অবহেলায় আমার ভেতরটা তখন ব্যথায় জর্জরিত হয়ে যাচ্ছিল। যে ব্যথা আমি আজও আমার ভেতরে পুষে রেখেছি অতি যত্নে। জানেন, আমি সেই ব্যথার একটা নাম দিয়েছি। সেই ব্যথার নাম “ভালোবাসার অসুখ”। যে অসুখ কখনো ভালো হবার নয়।

সেদিন আমাকে ফিরে যেতে বললেও, আপনি কিন্তু তখনও ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন। আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলাম আপনার নিঃশ্বাসের অস্থিরতা। অনেকটা সাহস করেই সেদিন আপনার চোখে চোখ রেখে তাকিয়েছিলাম। আর এক মুহূর্তেই আমার মনে হচ্ছিল, আমার সামনে এই আপনি, এক বিশাল সমুদ্র। যার গভীরতায় আমি তলিয়ে যাচ্ছি। আমার চোখদুটো ক্রমশ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল। আমি তখন কাতর কণ্ঠে বলেছিলাম, ‘আমাকে ভালোবাসুন, প্লিজ!…আমাকে ভালোবাসুন। একটুখানি ভালোবাসুন।’ কান্নার দমকে আমার গলা ধরে আসছিল। নিজেকে সামলাতে বড্ড কষ্ট হচ্ছিল। আপনি তখন অনুরোধের সুরে বলেছিলেন, ‘প্লিজ! ফিরে যাও। তুমি যা চাও, তা কখনো পূরণ হবার নয়। এ জীবনে ভালোবাসাটা আমার দ্বারা আর হয়ে উঠবেনা।’ আমি কাঁদতে কাঁদতে আপনার পায়ের কাছে বসে পড়েছিলাম। তবুও আপনি নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। আপনার নীরবতা দেখে আমি ভেবেছিলাম, এই বুঝি ভালোবাসার পাখি হয়ে আমার মনের খাঁচায় ধরা দিবেন। কিন্তু আমাকে আশাহত করে, কণ্ঠে দৃঢ় ভাব এনে বলেছিলেন, ‘এভাবে পাগলামি করোনা। এসব পাগলামির কোনো মানে হয় না। আমাকে নিয়ে ভাবা বন্ধ করো। নিজেকে নিয়ে ভাবো। নিজের পরিবারের কথা ভাবো। কিছুদিন পর দেখবে, সব ঠিক হয়ে গেছে। তখন এসব ভেবে তোমার নিজেরই খারাপ লাগবে।’ আমি কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলেছিলাম, ‘আমাকে এভাবে ফিরিয়ে দেবেন না প্লিজ! আমি অপেক্ষা করবো। সারাজীবন অপেক্ষা করবো।’ আপনি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘আমার জন্য অপেক্ষা করোনা মেয়ে। আমার ভেতরটা রিক্ততায় ভরা। তোমাকে দেবার মতো আমার যে কিছুই অবশিষ্ট নেই।’ আপনার বলা এই শেষ কথাগুলো শুনে আমার যে তখন কী হলো। অভিমানের ডালপালায় ভর করে ছুটে চলে এসেছিলাম। মনে মনে বলেছিলাম, আর কখনো আপনার সামনে যাবো না, কখনো না। আপনি আমার কেউ নন, কেউ নন। কিন্তু তখনো আমার ভেতর থেকে কে যেন বলছিল, ‘আপনিই আমার প্রিয় একজন।’

কবে, কীভাবে, কখন আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি তা আমি জানিনা। শুধু জানি আমি আপনাকে ভালোবেসেছি। নিজের সবটা উজার করে ভালোবেসেছি। আর সবসময় বাসবো। জানেন, কেউ যখন আমাকে বলে, ‘তোমার বয়ফ্রেন্ড নেই।’ আমি তখন তার দিকে উদাস হয়ে তাকিয়ে থাকি। তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে, নিজেকে সামলে নিয়ে বলি, ‘না, নেই। তবে আমার একজন ভালোবাসার মানুষ আছে। যাকে আমি আমার সমস্ত সত্তা দিয়ে অনুভব করি। প্রতিদিন, প্রতিরাত, প্রতিমুহূর্তে।’

আপনি হয়তো ভেবেছেন, আপনাকে ঘিরে আমার সব অনুভূতিগুলো একসময় শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমি তো জানি, আমার এই অনুভূতিগুলো কখনো শেষ হবে না বরং দিন দিন তা বেড়েই চলবে। আর আমার ভেতরটা তিলে তিলে শেষ হয়ে যাবে। কি করবো বলুন, আমি তো চেষ্টা করি আপনাকে ভুলে যাওয়ার। কিন্তু চাইলেই কি কাউকে ভুলে যাওয়া যায়? শুধু ভুলে থাকার চেষ্টা করা যায় মাত্র। তাই হয় তো আমার অবচেতন মন এখনো আপনার কথা ভেবে বারবার বলে ওঠে, “দিবস রজনী আমি যেন কার আশায় আশায় থাকি।”

সেদিন আমাকে ফিরিয়ে দেবার আগে একটিবার যদি বলতেন, ‘কি চাও তুমি?’ তখন হয় তো বলতাম, ‘চাওয়ার তো কিছু নেই। শুধু মনে রাখবেন, এই ছোট্ট বাংলাদেশের কোনো এক শহরের অতি আবেগপ্রবণ একটা মেয়ে আপনাকে ভালোবাসে, ভীষণ ভালোবাসে…

ইতি
আপনার ভালোবাসায় কাতর এক প্রাণ
রাগিণী

প্রিয় দেশবাসী – মাসুদ রানা তাসিন।

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং : ১

প্রিয় দেশবাসী,

আসসালামু আলাইকুম, ও অন্যান্য জাতির প্রতি আমার শুভেচ্ছা। আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বসেছি চিঠি বুননে। আগে যে চিঠি বুনন করেছি তাও নয়। মূলতঃ চিঠির মাধ্যমে আপনাদের সবার নিকট জানিয়ে দিতে চাই কিছু স্মৃতি, কিছু অনুরোধ।

আজ আমরা পার করছি এক কঠিনতম সময়। শুধু আমরা বললে ভুল হবে, পুরো পৃথিবী আজ মহাসংকটে রয়েছে। মহামারী কোভিড ১৯ নামক করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত আজ বিশ্ব চরাচর। বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের তুলনায় আমার মাতৃভূমি এখনো অনেক সুষ্ঠু অবস্থায় আছে।

সৃষ্টি হতে মানুষ দূরে সরে গিয়েছে। আর তাই সৃষ্টিকর্তার ক্রোধের অনল থেকে সৃষ্ট মহামারী দিনদিন ভয়ংকর রুপ নিচ্ছে। একমাত্র সৃষ্টিকর্তার ইবাদাতের ও তুষ্টির মাধ্যমে এর থেকে আমাদের নিস্তার মিলবে।

চীনের উহান থেকে উৎপত্তি করোনা ভাইরাস নামক মহামারী যখন বিশ্ববাসীর নিকট মৃত্যু কূপ হিসেবে পরিচিত । তখন অন্যান্য রাষ্ট্র পরিচালকরা তা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলো। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের রাষ্ট্র পরিচালক এর জন্য কঠোর কর্মসূচি হাতে নেন। যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল পাওয়া ও প্রশংসনীয়।

বাংলাদেশ সরকার যখন লকডাউন ঘোষণা করলেন, এবং তা বাস্তবায়নের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেন। তখন যদি আমরা সরকারের দেওয়া নিয়মনীতি মানার চেষ্টা করতাম। তবে আজ তা ভয়াবহ আকারে ছড়াতো না।

সাধারণ ছুটি ঘোষণা ছিল ঘরবন্দি হওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদের দেশে চাকুরীজীবী কিছু মানুষ, সারাবছর ছুটি না পাওয়ায় কাজের চাপে বেড়াতে যেতে পারেননি। তারা এরকম একটা বিশাল সুযোগ পেয়ে এক মোটরসাইকেলে পাঁচজন পর্যন্ত আত্মীয়দের বাড়িতে অতিথি হয়েছেন। অথচ ছুটির মুল উদ্দেশ্য ছিলো। ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন। কিন্তু আমরা সেটা কে না মেনে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠি।

গ্রামের কিছু মানুষ অর্ধেক দিন ঘরে থাকলেও, বিকেলে কাছের বাজারে কি ঘটছে তা দেখার জন্য দৌড়ে যেতো। অনেকেই আবার দল বেঁধে যেতো। তখনও আমরা সঠিক নিয়মে চলিনি।

আর তাই এখন বাংলাদেশে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা দৈনিক বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন নাজুক অবস্থায় আছে। এমতাবস্থায় লকডাউন খুলে দেওয়া হয়েছে। গণপরিবহন চালু করে দেওয়া হয়েছে। তাতে বিপদ বেশি বেড়ে গেছে। এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় মানুষ অবাধে চলাচল করছে। তাইতো ছড়াচ্ছে মহামারী অবলীলায়।

আমার বাংলার মানুষ মনে করেছে, করোনা বাংলাদেশ থেকে উধাও হয়েছে। তাইতো মাস্ক ব্যবহার করার প্রয়োজন মনে করছে না। সমস্ত ধারণা ভুল করে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। নিজেরা সচেতন হচ্ছি না। নিজেদের সচেতন হতে হবে।

সামনে আসছে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও আত্মত্যাগের সময়। পবিত্র ঈদুল আজহার অগ্রিম শুভেচ্ছা, ও শুভকামনা। ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানে শান্তি। কিন্তু এবার ঈদে সারাবিশ্ব ভুগছে অশান্তিতে।

ঈদে ছুটি পাওয়া মানুষ যেন, যে স্থানে অবস্থান করছে সেই স্থানেই অবস্থান করে। তারা যেন প্রতিবারের ন্যায় ঘরমুখো না হয়। এবার আমাদের সুস্থ থাকা প্রয়োজন।

ঈদে প্রতিবারের মতো এবার কোন দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করবো না। এবার ঈদ না হয় ঘরেই কাটাই। পরের বছর থেকে ঈদ মধুময় বানাই।

সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রতি ওয়াক্তের সালাতের মোনাজাতে। মুসলিম উম্মাহর ও সমগ্র বিশ্বের সকল জাতির জন্য দোয়া কামনা করি। বিশ্ব সুস্থ হয়ে উঠুক, আমার বাংলা মা সুস্থ হোক।

এবারের ঈদে ঘরে ঘরে রয়,
আগামী ঈদ করবো মধুময়।

ঘনঘন হাত ধুবো।
মুখে সর্বদা মাস্ক ব্যবহার করবো।
বিনা প্রয়োজনে বাহিরে বের হবো না ।
নিজে সচেতন হবো, অন্যকে সচেতন হতে বলবো।
নিরাপদ থাকুন, সচেতন থাকুন।
ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন।

ইতি,
মাসুদ রানা তাসিন।

প্রিয় শ্যাম -Rimy Islam

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#চিঠি_নং_০১

প্রিয় শ্যাম,

” আঁকলে পারে বুকের খাঁচায়
মরবো আমি মারণ জ্বালায়।”
লাইন দুটো কেন যেন তোমাকে বলতে ইচ্ছে হল। ভালো লেগেছে না! নিশ্চয়ই আমার বুকে দাগ কেটে নিজে ভীষণ ভালো আছো! রঙচটা দুনিয়ার রঙহীন মানব আমি। তুমি এলে এক ডালি রঙের ঝাঁপি বেশে। স্বআল্পনায় আমাকে রঞ্জিত করে আবার চলেও গেলে। যেতে যদি হত তবে এসেছিলে কেনো? কষ্ট হয় না বুঝি! গেল বছর ঈদে তোমার অপেক্ষায় শাড়ি পরে বসে ছিলাম। তোমার প্রিয় রঙের খয়েরী শাড়িটা। তুমি এলে না। এবার আসবে তো? শিশির মাখা নম্র সকালে ঘাসে পা ডুবিয়ে বসে থাকি। যেমনটা তুমি আমাকে অভ্যস্থ করে দিয়ে গেছ। মানুষ মাত্রই অভ্যাসের দাস। এত সহজে কি আর ছাড়ে!

” যেতে যদি নাহি চাও যেওনা কভু
শুধু যেতে বলে যাও ভালোবাসি নভু।”

ইশ! ভাবছ এত কবিতা শিখলাম কোথ থেকে? শুনেছ নিশ্চয়ই? প্রেমে পড়লে মানুষ কবি, সাহিত্যিক হয়ে যায়? কখনো কি ফিরবে না তোমার নভুর কাছে? এই যাহ, আমিও নভু বলছি। এই নামটা শুধু তোমার মুখেই শোভা পায়। আমার নভা নামটার কি ছিরি বানিয়ে দিয়েছ বলো তো! রাগ করো না আবার। রাগলে তোমাকে টম এ্যন্ড জেরির টমের মতো দেখায়।
কাল মুষল ধারার বারির প্রেমে পড়ে নিজেকে স্নান সিক্ত করার লোভ সামলাতে পারিনি জানো! এইযে এখনো তোমাকে লিখছি মাথার একপাশটা ভার এবং লম্বা নাকের লাল ডগা দিয়ে। বকবে না বলে দিচ্ছি! এই অভ্যাসটাও তোমার থেকেই প্রাপ্ত। শত শত প্রাপ্তি দিয়েও মূল প্রাপ্তির যোগফল এসে শূণ্য কেন হয় বলতে পারো? কারণ সেই প্রাপ্তিদাতা আজ নেই। নক্ষত্রখচিত তারার দেশে তারা হয়ে ভীষণ আনন্দে আছ! আমি তো তোমাকে তারা হিসেবে দেখতে চাইনি! চেয়েছিলাম আমার তারার মেলা দেখার চিরসঙ্গী হয়ে থাকবে। বৃষ্টিতে ভিজতে আমাকে বারণ করবে, খুব বকবে। খুব! কিন্তু ভুলে গিয়েছিলাম, সময়ের সাথে সাথে মানুষের জীবনটাও ঘটমান। তফাৎ শুধু এইটুকু যে, সময়ের বিনাশ নেই।
সর্বশেষ বলবো, ওপারে ভালো থেকো। আমার অপেক্ষা করো।

ইতি
তোমার নভু

প্রিয় পৃথিবী -Suraiya Nipa

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং ১

প্রিয় পৃথিবী,
সুভাশিষ নিও। জানি, বেশ কিছুদিন ধরে তুমি ভালো নেই। গত কয়েকমাস তোমার উপর দিয়ে এক মহামারীর ঝড় বয়ে চলেছে। তুমি তো মাতৃধরণী। চোখের সামনে হাজার হাজার সন্তান প্রতিদিন ঝরে যাচ্ছে, হার মানছে এক ক্ষুদ্র ভাইরাসের কাছে। এসব দেখে তুমি কি ভালো থাকতে পারো? আসলে আমরা কেউ ই ভালো নেই। মৃত‍্যুভয়ে জড়োসড়ো হয়ে ঘরের কোণে বসে থাকাকে কি বেঁচে থাকা বলে, তুমিই বলো?

আজ পাঁচমাস হতে চলেছে তোমার সাথে আমার দেখা হয় না। তোমার নদীর কুলকুল ধ্বনি, খোলা প্রান্তর, সাঁঝের আকাশ, পানিতে টইটুম্বর ঝিল এসব কিছুই দেখা হয় না। খুব মনে পড়ে আগের দিনগুলো যখন মুক্ত পাখির মতো ছুটে বেড়াতাম পথে-প্রান্তরে, প্রাণ ভরে নিতাম বিশুদ্ধ অক্সিজেন, তোমাকে অনুভব করতাম হৃদয়গহীনে।

সেই যেদিন তোমার বুকে বিধাতা আমাকে পাঠিয়েছিলেন সেদিন থেকেই তোমার-আমার সম্পর্ক। তোমার বুকে হামাগুড়ি দিয়েছি, ছোট ছোট পা ফেলে হাঁটতে শিখেছি। ধীরে ধীরে বড় হয়েছি আর জীবণ যুদ্ধে লড়তে শিখেছি…। কী হল, হাসছো? ভাবছো, সেদিনের মেয়ে হয়ে এতো কথা বলছি? তা ঠিক, তোমার ঝুলি যে অনেক অভিজ্ঞতায় পূর্ণ। কত যুদ্ব, কত তুফান, কত মহামারীর সাথে পাঞ্জা লড়েই তো টিকে আছো তুমি।

আমরা, তোমার সন্তানেরাই কত আঘাত দিয়েছি তোমাকে, দূষিত করেছি তোমার নদী, সাগর, বাতাস আর মাটি। তুমি সব বুক পেতে নিয়েছো। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে চালিয়ে দিয়েছি নিজেদের কর্মফলগুলোকে। আচ্ছা, এই মহামারীও কি আমাদেরই কর্মফল? তুমি কি সত্যিই কষ্ট পাচ্ছ আমাদের দুর্ভোগ দেখে নাকি খুশী হচ্ছো তোমার প্রকৃতি পুনরায় প্রাণ ফিরে পাচ্ছে বলে? শুনেছি নদী আর সাগরগুলোর পানি পরিষ্কার হয়ে গেছে, বাতাস শিশামুক্ত হয়েছে, সমুদ্র সৈকতগুলোতে জন্মেছে লতাপাতা, এসেছে অনেকরকম জলজ প্রাণী। সত্যিই কি তাই? তোমার এই বেপরোয়া সন্তানদেরকে আটকে রেখে বোবা সন্তানদের প্রাণোচ্ছল খেলাধুলা দেখছো প্রাণভরে?

হয়তো আমরা এই শাস্তির-ই যোগ‍্য। তবু ক্ষমা করো আমাদেরকে। এ অভিশাপ থেকে মুক্তি দাও। আমরা যে ভালো থাকতে চাই। তুমিও ভালো থেকো। ভালোবাসা নিও।

ইতি
তোমার এক অযোগ্য সন্তান।

প্রিয় তুমি -orshiya

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

প্রিয় তুমি,

শ্রাবণের এই বারিধারা কেন জানি হটাৎ করেই তোমাকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে তোলে,আমার দমিয়ে রাখা মন টাকে। ভালোবাসা বুঝি এমনই হয় ?কি জানি আমি,হবে হয়তো! ভালোবাসার মানে তো শুধুই কাছে পাওয়া নয়,একান্তই নিজের করে চাওয়ার নাম ও ভালোবাসা হতে পারেনা। তোমাকে আমি নিজের করে পায়নি,তা বলে আমি কি তোমায় ভালোবাসিনি ?

বলতেই পারো আমার ভালোবাসার জোর কম ছিল তাই হয়তো তোমাকে নিজের সাথে বেঁধে রাখতে পারিনি। কিন্তু আমি মোটেও তেমনটা ভাবিনা,কেন জানো?কারণ আমি বিশ্বাস করি,তুমি আমার সাথে জড়িয়ে আছো আমার প্রতিটি নিঃশব্দের নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে,আমার সকল একাকিত্বের মাঝে আঁটকে আছো তুমি!নিত্য আমি তোমাকে স্বপ্নে আবিষ্কার করি নতুন নতুন ভাবে,আমার সঙ্গে তুমি কত শত ঘন্টা পার করো আমার ভাবনার জগৎ এ,তা হয়তো হিসেব করা যাবেনা। ভালোই তো আছি বলো,কি প্রয়োজন নামের ? সম্পর্ক নাম না পেলে বুঝি ভালোবাসা কমে যায় ? যদি তাই হবে,তাহলে আমি কেন ভুলে যেতে পারিনা তোমাকে ?

আমার হৃদয়ে তোমার গভীরতা কতোটা তা হয়তো কখনোই তোমার জানা হবেনা,আর জানা হলেও হয়তো মানতে চাইবেনা।বাস্তবতার বেড়াজাল ভেদ করতে পারিনি তাই দুজন দুজনের থেকে দুরত্বকে সাদরে গ্রহণ করেছি,কিন্তু মন থেকে মনের কি কোনরকম দুরত্ব হয়েছে ?হয়তো সেই নিয়ম করে কথা বলা আজ হয়না, তোমার চোখে চোখ রেখে হারিয়ে যাওয়া, তোমার বুকে মাথা রেখে নিজেকে শান্তির ছোঁয়াতে ভরিয়ে তোলা, কোনোটাই আর আগের মতো নেই,তা বলে তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা এক ফোটাও কমে যায়নি!

নিয়মে বাধা ভালোবাসার স্থায়ীত্ব কতোটা ?আমার এই অনিয়মিত ভালোবাসাকে আঁকড়েই আমি বেঁচে আছি।আমি জানি তুমিও আমার স্মৃতিকে জড়িয়ে থাকো,আজ প্রকাশ করা হয়না তাই হয়তো অজানা আমরা দুজনের কাছে,তবুও অপ্রকাশিত অনুভুতি গুলো মন কাননে ঠিকই ভাবনার উদয় ঘটায়।শুধু সমাজের সামনে আমার অধিকার নেই তোমার উপর,তবে আত্মহৃদয়ে তোমার চেয়ে বড় বেশি অধিকারী যে আর কেউ নেই আমার!

বিষণ্ণতার জালগুলো কেমন জানি! হটাৎ ভাবনায় ঝড় তুলে সে আমাকে উত্তাল ঢেউয়ের অতলে ডুবিয়ে দেয়।আমি চেয়েও যেন উঠতে পারিনা,দম আটকে আসে আমার,চেষ্টা যখন মাত্রাছাড়া হয়ে যায় তখনো যেন আমি অতলের বুকেই তলিয়ে রই। এই বিষণ্ণতার কারণ কি তুমি ?কি জানি, হবে হয়তো!দিন কে দিন যেন বেড়েই চলেছে আমার এই অযাচিত ভাবনার লুকোচুরি খেলা। লড়াই করার ক্ষমতা লোপ পাচ্ছে নিজের মাঝে,আচ্ছা আমি কি হারিয়ে যেতে চলেছি ?

এটাই বুঝি ডেসটিনি ছিল আমাদের ?সত্যিই আমি জানিনা, তোমাকে অন্তরালে পুষে রাখতে রাখতে আমার অন্তরালে এক তীব্র ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে,দিন দিন সে ক্ষত এতো মাত্রায় পীড়া দিয়ে চলেছে যা মাঝে মাঝে আমার সহ্যশক্তিকে একেবারে হারিয়ে দেয়। জানিনা আমি এই পীড়ার আদৌ কোন শেষ আছে কিনা! তবে হয়তো আমার এই অসহনীয়তাকেই পূর্ণ করে তুমি জড়িয়ে থাকো আমার গভীরে। ভালোবাসা ছাড়া আর কি বলে একে ?যাক বাদ দাও,ভালোবাসার সংজ্ঞা নিরূপণে তো আর তোমাকে লিখছি না।

মাঝে মাঝে তীব্র ইচ্ছে করে জানো- একবার যদি আমার এই খোলা চিঠিগুলো তোমার ডাকবাক্সে পাঠাতে পারতাম!নিয়তির পরিহাসে এমন জগৎ এ বিচরণ আমাদের এখন, যেখানে থেকে কোন দিনও আমার এই ইচ্ছের পূর্ণতা আসবেনা।তাই চাওয়া আজো শুধু একটাই, “ভালো থেকো তুমি”!

ইতি
“তোমার না হতে পারা মেয়েটা”