Friday, July 11, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1846



তোমাকে আমার প্রয়োজন পর্ব-১৪

0

#তোমাকে আমার প্রয়োজন??
#মেঘ‌ পরী??

??পর্ব-১৪??
.
?
.
নিলয় কিছু বলার আগেই তিথি নিলয়কে ঠাস করে একটা চড় মারলো।নিলয় অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।কিন্তু নিলয়কে আরো অবাক করে দিয়ে তিথি নিলয় কে ধাক্কা দিয়ে পিছনের সোফায় ফেলে দিল,,,তারপর এক হাতে নিজের আঁচল কোমরে গুজে,, নিলয়ের কোলের ওপর উঠে বসে পড়লো,,,তারপর নিজের দুহাতে নিলয়ের গেঞ্জির কলার ধরে ঝাকাতে ঝাকাতে বলতে লাগলো-;

-: এই কোন সাহসে তুই এতদিন আমার ফোন ধরিস নি। নিজেকে কি ভাবিস তুই,,,হ্যাঁ রানী ভিক্টোরিয়ার জামাই,,,যত্তসব ফাউল বাজে ছেলে কোথাকার।আমি যখন তোর ফোন ধরি না,,,তখন তো আমার কান মাথা ধাধা করে দিস।আর এখন তুই নিজে কি করেছিস হ্যাঁ,,,ফোনের উপর ফোন করে গেছি অথচ তুই ফোন তো ধরলিই না,,,উল্টা বারবার কল কেটে দিচ্ছিস,,,কোন সাহসে।এখন আমাকে তোর ভালো লাগেছেনা বুঝি,,,তাইতো বলি কেন ঐদিন আমাকে ওসব কথা বলেই মাত্র,,,,ফুরুত করে চলে গেলি বাসা থেকে।বুঝি বুঝি আমি সব বুঝি,,, আমি ওতটাও বাচ্চা ন‌ই।এখন তোর অন্য কোন মেয়েকে চোখে ধরেছে না,,,তাই তো আমাকে পাত্তা না দিয়েই নাচতে নাচতে চলে যাওয়া,,, হয়েছিল সেদিন।। কিন্তু মনে রাখবি তুই,,,আমি তোকে ওত সহজে ছাড়বো না বুঝতে পেরেছিস তুই।

এক হাতে নিলয়ের গেঞ্জির কলার ধরে আর এক হাতে নিজের চোখের জল মুছতে মুছতে,,,,কথাগুলো বলছিল তিথি।চোখ গুলো তার অসম্ভব লাল হয়ে আছে।কথাগুলো বলার সময় বারবার তার গলা কেঁপে উঠছিল,,পানি টলমল করছে চোখে,,, কিন্তু সেটাকে চেপে আছে অনেক কষ্টে সে।

তিথির এমন অবস্থা দেখে,,,নিলয় অবাক হয়ে তিথির দিকে তাকিয়ে আছে।।নিলয় ভাবতেই পারেনি যে তিথি তার কাছে কোনদিনও আসবে।সে তো ভেবেছিল,,, সেদিনের পর সে আর কোনদিন‌ও তিথির সামনে যাবে না।তিথিকে নিজের মত করে বাঁচতে দেবে,,,তাইতো এত কষ্টের পরেও এই আটটা দিন নিজের প্রিয়তমার মুখ পর্যন্ত দেখেনি সে,,, প্রতিটি রাত তার নির্ঘুমে কেটেছে,,প্রতিটা মুহূর্তে সে ছটপট করেছে শুধু এক পলক নিজের মায়াপরীকে দেখার জন্য।এই আটটা দিন নিলয়ের কেমন কেটেছে,,,তা শুধুমাত্র নিলয়‌ই জানে।

নিলয় তিথির এমন অবস্থা দেখে একহাতে তিথির চোখের জল মুছে কিছু বলতে যাবে,,, তখনই তিথি এক ঝটকায় নিলয়ের হাতটা নিজের চোখের ওপর থেকে সরিয়ে দিল।।তারপরে এক হাত দিয়ে নিলয়ের ঠোঁট চেপে দিয়ে বলল-;

-:চুপ!!একদম চুপ অনেক বলেছিস তুই এতদিন,,, আমি কিচ্ছু বলিনি।আজ শুধু আমি বলবো আর তুই শুনবি।খুব তো বলেছিলি তুই আমাকে ভালবাসিস,,,আমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবি না।কিন্তু একবারও কি আমার মনের কথা ভেবেছিস,,,এতদিন আমি কতটা কষ্ট কাটিয়েছি তোর কোন ধারণা আছে।একবারও খোঁজ নিয়েছিলি যে আমি কেমন আছি।তুই আমাকে ভালবেসেছিস ভালো কথা,,,কিন্তু আমাকেও তো তোকে ভালোবাসার কিছুটা সময় টা দিবি,,,তোর কষ্টগুলো,,, অনুভূতিগুলোকে বোঝার তো সময়টা দিবি কিন্তু তুই কি করলি আমাকে সেই সময়টুকু না দিয়েই আমাকে ছেড়ে চলে গেলি,,,তাও আবার আমাকে ওতগুলো কড়া কড়া কথা শুনিয়ে।একবারের জন্যও ভাবিসনি না যে আমার কি হবে।পাষাণ লোক একটা খুব পাষাণ তুই খুব খুব খুব পাষাণ। শুধু নিজের কষ্টটা বললি কিন্তু আমাকে বুঝলি না,,, বোঝার চেষ্টাও করলি না।ঠিক আছে তুই থাক তোর মতো,,,আমি আর তোকে কোনদিনও ডিস্টার্ব করবো না।।

কথাগুলো বলার সময় তিথি আর নিজের চোখে জল আটকা রাখতে পারল না কেঁদেই ফেলল।কান্নার কারণে তিথির চোখের কাজল গুলো লেপ্টে একাকার হয়ে গেছে।কথা বলার শেষে তিথি একহাতে নিজের চোখের জল মুছে,, আর নাক টানতে টানতে নিলয়ের কোল থেকে যেই উঠতে যাবে,,,তখনই নিলয় নিজের এক হাতে তিথির কোমর চেপে ধরে,,,তিথিকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।তিথি নিজেকে নিলয়ের কাছ থেকে ছাড়ানোর জন্য ছটফট করতে লাগলো,,,নিলয় তিথির ছটফটানি দেখে নিজের ডান হাত দিয়ে,, তিথির হাতদুটো শক্ত করে চেপে ধরলো।তারপর তিথিকে নিজের একদম কাছে এনে,,,বলতে লাগলো-;

-:কোথায় যাওয়া হচ্ছে শুনি??আর এই কথাগুলো বলার জন্য‌ই কি এত সেজেগুজে আসেছ আমার কাছে।আমি তো শুনেছি মেয়েরা ঝগড়া করার জন্য চুলগুলো একহাত খোপা করে বেঁধে,,হাতে একটা ঝাঁটা নিয়ে তেড়ে আসে।কিন্তু তুমি তো একেবারে নায়িকা সেজে চলে এসেছ,,ঝগড়া করতে।তা নায়িকা তোমার সাহস হলো কি করে এত সুন্দর করে সেজে,,,আমার মাথাটাকে একেবারে খারাপ করে দিয়ে আবার আমাকে এত সুন্দর সুন্দর বকা দিয়ে চলে যাচ্ছিলে।তুমি কি ভেবেছো তোমাকে অত সহজে ছেড়ে দেবো।

-:ছাড় আমাকে।তোর সাথে আমার আর কোন কথা নেই।(নিলয়ের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে)

তিথির ছটফটানি দেখে,,নিলয় তিথির কোমরে জোরে একটা চাপ দিল,,এতে তিথি কিছুটা কেঁপে উঠলো। তারপর নিলয় বলতে লাগলো-;

-:এত ব্যাঙের মতো লাফাচ্ছে কেন।ওওওও আমিতো আবার ভুলেই গিয়েছিলাম তোমার তো আবার বর্ষাকালে জন্ম হয়েছিল,,তাই তোমার আর ব্যাঙের DNA অনেকটা similar।আর তাছাড়াও তোমাকে ছেড়ে দেবো মানে??ছেড়ে তো দিয়েছিলাম,,,সেইদিন‌ই।।তাহলে কেন এলে আজ,, আমার কাছে তাও আবার এইরকম ভয়ঙ্কর সাজে,,,আমাকে পাগল বানাতে।ভেবেছিলাম তোমার স্মৃতিগুলা আঁকড়ে ধরেই সারা জীবন বেঁচে থাকবো কিন্তু তুমি তোমার এই ভয়ঙ্কর রুপ দেখিয়ে আমার মাথা একেবারেই খারাপ করে দিয়েছো,,,তাই তুমি এখন চাইলেও আমি তোমাকে ছাড়বো না।। কারণ #তোমাকে আমার প্রয়োজন আমার জীবনের প্রত্যেকটা মুহূর্ত কাটানোর জন্য,,, #তোমাকে আমার প্রয়োজন।।বিকজ আই কান্ট লিভ উইদাউট ইউ।

-:হ্যাঁ হ্যাঁ বুঝি বুঝি সব বুঝি আমি,,,,আমাকে এইসব কথা বলে আমার মন গলানো যাবে না আর এখন তো অন্য মেয়ে…..

কেঁদে কেঁদে তিথি কথাগুলো বলছিল কিন্তু নিলয় আর কিছু বলতে দিল না তাকে,,,তার আগেই তিথির হাতগুলো ছেড়ে তিথির গাল শক্ত করে চেপে ধরল,,,,নিজের ডান হাত দিয়ে,,,তারপর বলল-;

-:এই মেয়ে চুপ একদম চুপ,,,,,কি তখন থেকে যা তা বলে যাচ্ছিস কিছু বলছি না বলে এই নয় যে সব সময় চুপ করে থাকব আমি।তখন থেকে কি বুঝি,,,বুঝি বলছিস হ্যাঁ,,,বাচ্চা মেয়ে একটা।আর কি বললি অন্য কোন মেয়ে,,,এই নিলয় চৌধুরী নিজের লাইফে কোন মেয়ের দিকে সেই নজরে তাকাইনি বুঝছিস,,,,একমাত্র একজনার দিকেই তাকিয়ে ছিল,,,আর সেটা হলো তুই।বুঝতে পেরেছিস তুই।আর একবার এসব কথা বললে না তোর মুখ আমি সেলাই করে দিব।(দাঁতে দাঁত চেপে বলল)

‌ আর এদিকে তিথি চোখের জল নাকের জল এক করে ফেলেছে কান্না করতে করতে।।চোখে কাজল পুরা লেপ্টে গিয়েছে।নিচের দিকে তাকিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে আর দুই হাতে নিজের চোখের জল মুচছে।।তিথিকে এই মুহূর্তে একজন আবেদনময়ী নারীর মতো দেখতে লাগছে।নিলয় এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে তিথির দিকে অসম্ভব মায়াবতী লাগছে আজ তাকে।এবার নিলয় তিথির গাল থেকে হাত সরিয়ে,,তিথির চুলের ভিতরে হাত ডুকিয়ে তিথিকে নিজের আর‌ও একটু কাছে নিয়ে এলো,,তারপর তিথির দিকে তাকিয়ে,,,,আবেগপূর্ণ কন্ঠে ডেকে উঠল -পাখী….

নিলয়ের ডাকে তিথি নিলয়ের তাকাতেই সে বলে উঠলো-;

-:ভালোবাসো আমায়।

নিলয় এমন কথা শুনি তিথির চোখগুলো মুহূর্তেই জলে পরিপূর্ণ হয়ে উঠল।তিথির মনের কথা বুঝতে পেরে,,,,কিছুটা হাসল নিলয়,,,তারপর তিথির গালে নিজের দুই হাত রেখে,,,বলতে লাগল-;

-:থাক আর বলতে হবে না।তোমার উত্তর আমি পেয়ে গেছি।এবার বলতো এই পাগল করা সাজটা কি আমার জন্য‌ই সেজেছ।।

তিথি নাক টানতে টানতে জবাব দিল-;

-:মোটেও না।আমার তো এখান থেকে বেরিয়ে বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান ছিল।তাইতো আমি আজ এমন সুন্দর সেজেছি,,,কেন ভালো লাগছে না আমায়??

নিলয় এবার রেগে গিয়ে নিজের এক হাতে তিথির গাল শক্ত করে ধরে,,,দাঁতে দাঁত চেপে বললো-;

-:আর একবার এসব ফালতু কথা যদি বলেছো,,,তাহলে তোমার ঠ্যাঙ ভেঙে হাতে ধরিয়ে দেবো,,, বুঝতে পেরেছ।।বেয়াদব মেয়ে একটা।

শক্ত করে গাল চেপে ধরায়,,,তিথি হালকা আর্তনাদ করে বলে উঠলো-;

-:আহহহহ লাগছে ছাড়ুন আমায়।।

-: লাগুক,,,,লাগার জন্যই ধরা।।

তিথি এবার কেঁদেই ফেলল,,,তিথির কান্না দেখে নিলয় তিথির গাল ছেড়ে,,ধমক দিয়ে উঠল-;

-:চুপ একদম চুপ।।আর একবার কাঁদলে বেঁধে রেখে দেবো তোমাকে।নিলয়ের এমন ধমকে তিথি এবার আরো জোরে কেঁদে উঠলো,আর বলতে লাগল-;

-:পচা লোক একটা ছাড়ুন আমায়,,,শুধু আমাকে বকা দেয়।একটুও ভালোবাসো না,,,একটুও আদর করে না আমায়।।থাকবো না আমি আর এখানে,,,চলেই যাব এক্ষুনি এখান থেকে।

এই বলে তিথি যেই নিলয়ের কোল থেকে উঠতে যাবে,,,অমনি নিলয় একহাতে তিথির কোমর পেঁচিয়ে ধরে আর এক হাতে তিথির চুলের ভিতরে হাত ঢুকিয়ে তিথিকে নিজের একদম কাছে নিয়ে আসে,,,,এতটা কাছে যে তিথির নাক নিলয়ের নাককে স্পর্শ করছে।।নিলয় কিছুক্ষণ তিথির গোলাপি শুষ্ক ঠোঁট যুগলের দিকে তাকিয়ে থাকলো।অনেক্ষন কান্না করার জন্য তার রসালো ঠোটদ্বয় শুষ্ক হয়ে গিয়েছে,,,এখন এই ঠোঁটের আর্দ্রতার প্রয়োজন।।

এ কথা ভাবতেই,,নিজের মনে হেসে উঠল নিলয়।তারপর আর সময় নষ্ট না করে,,,,নিজের ঠোঁট দিয়ে তিথির ঠোঁট,,,পরম আবেশে চেপে ধরল,,,শুষে নিতে থাকলো তিথির শুষ্ক ঠোঁট জোড়াকে আদ্র করার অভিপ্রায়ে।নিলয়ের হঠাৎ এমন আক্রমণে,,,তিথি হকচকিয়ে গেল,, তারপর নিজেকে নিলয়ের কাছ থেকে ছাড়ানোর জন্য ছটফট করতে লাগলো।নিলয় তিথিকে আর‌ও গভীর ভাবে আঁকড়ে ধরল,,,আর সফ্টলি ভাবে তিথির ঠোঁটগুলোকে শুষে নিতে থাকলো।তিথি একসময় শান্ত হয়ে গেলো।নিলয় তিথির কোমরে স্লাইড করতে লাগলো,,,তিথি বারবার কেঁপে উঠছে নিলয়ের এমন স্পর্শে।নিলয় তিথির নীচের ঠোঁটে হালকা করে কামড় দিল,,,ব্যাস তিথি আর নিজেকে সামলাতে পারলো না,,,সেও নিলয়ের সাথে তাল মিলিয়ে নিলয় ঠোঁট গুলো কে শুষে নিতে থাকলো,,,পরম আবেশে।

প্রিয়তমার কাছ থেকে সাড়া পেয়ে নিলয় যেন আরও উন্মাদ হয়ে উঠল।দীর্ঘ দশ মিনিট পর,,, নিলয় তিথির ঠোঁট ছেড়ে,,,তিথির সারা মুখে নিজের ঠোঁটের স্পর্শ দিতে থাকলো।কতদিন পর তার পাখি তার ভালোবাসাকে বুঝতে পেরেছে,,, নিলয় কল্পনাতেও ভাবেনি তিথি এত তাড়াতাড়ি তাকে ভালোবেসে নিজের কাছে টেনে নেবে।। হঠাৎ নিলয়ের নজর গেল তিথির ঠোঁটের নিচে তাকা তিলটার উপর,,,নিলয় কিছুক্ষন তিলটার উপর হাত বুলিয়ে,,,সেই জায়গায় ঘন ঘন‌ চুমু খেতে লাগল,,,তারপর তিথির গলায় নিজের মুখ গুজে দিল,,,তিথি আর নিজেকে সামলাতে পারলো না,,নিলয়ের চুলগুলোকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরল।নিলয় তিথির ঘাড়ে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকলো,,,এবার নিলয়ের নজর গেল গলার তিলটার দিকে,,কোনোকিছু না ভেবেই সেখানে জোরে কামড় দিয়ে দিল নিলয়।

তিথি নিলয়ের স্পর্শগুলো চোখ বন্ধ করে অনুভব করছিল,,,হঠাৎ নিলয়ের এমন কামড়ে,,,তিথি কিছুটা ব্যথা পেল,,,তাই সঙ্গে সঙ্গে নিলয়কে ধাক্কা দিয়ে উঠে দাঁড়ালো।আয়নার সামনে গিয়ে,,, নিজের গলার দিকে তাকাতেই,,,তিথি রাগ উঠে গেল।নিলয় বেশ জোরেই কামড় টা দিয়েছে,,, গলায় তার দাগ স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।তিথি কিছু বলতে যাবে তার আগেই নিলয় তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে,,শাড়ি দিয়ে ডাকা পেটের উপর হাত রাখল,,তারপর তিথির চুলে নিজের মুখ ডুবিয়ে,,,তিথির চুলের ঘ্রাণ নিতে থাকলো।তারপর তিথির ঘাড়ে থুতনি রেখে নেশাময় কণ্ঠে বলতে লাগলো-;

-: তোমার মধ্যে কি আছে বলতে পার তিথু পাখি,,,যেটা বারবার আমাকে তোমার দিকে আকর্ষিত করে। কি আছে তোমার এই কালো ঘন কেশে যেটা আমাকে মাতাল করে তুলছে।আর না খুব তাড়াতাড়ি তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসবো সারা জীবনের জন্য।তোমাকে ছাড়া একমুহূর্ত আমি আর থাকতে পারব না।।

এই বলে তিথিকে নিজের দিকে ফিরিয়ে তিথির কপালে একটা ভালোবাসার পরশ এঁকে দিল।তারপর কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলতে লাগলো-;

-:আচ্ছা চলো খাবে চলো।তোমাকে আদর করতে গিয়ে আমি খাওয়ার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম,,,,খুব খুধা পেয়েছে আমার তাড়াতাড়ি চলো। তুমি তো আবার খিদে সহ্য করতে পারো না।পাখি আর এমন ভাবে থেকো না প্লিজ,,,ন‌ইলে আমি আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারব না।

তিথি এতক্ষন চোখ বন্ধ করে নিলয়ের কথাগুলো শুনছিল,,, নিলয়ের কথাগুলো শুনে লজ্জায় তার মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছা করছে,,,এমন অসভ্য মানুষ সে তার হোল লাইফে একটাও দেখেনি,,,লজ্জা দেবার‌ও একটা লিমিট থাকে কিন্তু তিনি সেই লিমিটাকে‌ও অতিক্রম করে ফেলেছেন।তিথি আর কিছু না বলে,,,নিলয়ের দিকে তাকিয়ে বলল-;

-:আমি আপনার জন্য নিজের হাতে রান্না করে,,, খাবার নিয়ে এসেছি আজ।

-:ওয়াট আই মিন সিরিয়াসলি।মানে আমি বিলিভ‌ই করতে পারছিনা।একদিনে এত আনন্দ আমি হজম করতে পারবোনা,,,,আমি মাথা ঘুরে পড়েই যাব এবার।পাখি কি রান্না করে এনেছ আজ আমার জন্য।

-:বিরিয়ানি।

-:ওয়াও!!!দিস ইস মাই ফেভারিট ফুড।তাড়াতাড়ি চলো খিদেতে আমার পেট ফেটে যাচ্ছে।

তারপর তারা নিচে গেল লাঞ্চ করতে।।

এবার আপনারা গিয়েও লাঞ্চ করে আসুন।।☺️☺️
.
.
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]

তোমাকে আমার প্রয়োজন পর্ব-১৩

0

#তোমাকে আমার প্রয়োজন ??
#মেঘ পরী??

??পর্ব-১৩??
.
?
.
নিলয় তিথির দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে।।গরমকালে পাখা চলায়,,তিথির অবাধ্য চুলগুলো পাখার হাওয়ায় বারবার তার মুখ ঢেকে দিচ্ছে,,নিলয় আস্তে আস্তে চুলগুলোকে সরিয়ে কানের পিছনে গুজে দিল।তারপর নিজের তর্জনী আঙ্গুল দিয়ে তিথির কপাল থেকে থুতনি পর্যন্ত হালকা করে স্লাইড করে,,,খাটের পাশে বসে এক গালে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ তিথির দিকে তাকিয়ে থাকলো।তিথি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন,,আর নিলয় নেশা জরানো চোখে তার মায়াবতীকে দেখতে ব্যস্ত। নিলয় আস্তে করে তিথির দিকে ঝুঁকে তিথির মুখের উপর ফু দিতে লাগলো।

হঠাৎ নিজের মুখের উপর গরম হাওয়া অনুভব করে তিথির ঘুমটা ভেঙে গেল।চোখ পিটপিট করে তাকাতেই দেখলো একজোড়া তৃষ্ণার্ত চোখ তার দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে,,তা দেখে তিথি ভয়ে যেই চিৎকার করতে যাবে অমনি সেই আঁখিদ্বয়ের মালিক তার মুখ চেপে ধরল।তারপর তিথির কানে তার উষ্ণ ঠোঁটে একটা চুমু এঁকে দিয়ে,,,ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো-;

-:তোমার গোলাপি বর্ণ মসৃণ মুখশ্রীর উপর উন্মুক্ত একজোড়া গভীর কালো চোখ আর গোলাপের ন্যায় কোমল ঠোঁট যুগল দেখে যেদিন আমি প্রথম ঘায়েল হয়েছিলাম তোমার প্রেমে,,,সেইদিন ভেবেছিলাম তোমার রূপের জাদুকাঠি কেবল এইটুকুতেই সীমাবদ্ধ,,,,কিন্তু তোমার ঘুমন্ত নিষ্পাপ মুখশ্রী তোমার জাগন্ত মুখশ্রীকে পরাজিত করে দিয়ে আমার ভুলটা ভেঙে দিল।তোমার বন্ধ চোখের দুয়ারে আর শুষ্ক ঠোঁটের ভাঁজেই লুকিয়ে আছে তোমার রূপের আসল জাদুমন্ত্র পাখী।

এমন নেশা ভরা কন্ঠ শুনে তিথি কিছুটা কেঁপে উঠলো।কারণ এই গলার স্বর যে তার চেনা,,এটা তো নিলয়ের গলার স্বর।কিন্তু এত রাতে উনি এখানে কি করে এলেন।নিলয় আস্তে করে নিজের হাতটা ছেড়ে দিল,,,তিথি সঙ্গে সঙ্গে উঠে বসে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো-;

-:আপনি‌ এখানে কী করে এলেন?কখন এলেন?আর কেন‌ই বা এলেন??

-; চুপ।।একদম চুপ।।এতগুলো কথা একসাথে কি করে বলো তুমি।তুমি কি সারাক্ষণ বকবক ছাড়া কিছুই করতে পারো না আর আমি এখানে তোমার ফালতু বকবক শুনতে আসিনি তোমার ভুলের শাস্তি দিতে এসছি।সো স্টপ টকিং।

নিজের আঙ্গুল দিয়ে হালকা করে তিথির ঠোঁটে চেপে ধরে কথাগুলো বলল নিলয়। নিলয় এর শাস্তি দেওয়া কথাটা শুনে তিথি ভয়েতে শুকনো ঢোক গিলল।

-:দে..দেখুন সত্যি বলছি নিশুর মায়ের শরীর খারাপ ছিল।আমি আপনাকে মিথ্যা কথা বলিনি।

-: চুপ আর একটা ফালতু কথা নয়।অন্যের মাকে নিয়ে এমন মিথ্যা অভিনয় করতে পারলা কি করে তুমি।।(ধমক দিয়ে উঠল নিলয়)

নিলয়ের ধমক খেয়ে তিথি নিজেকে গুটিয়ে নিল তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বলতে লাগল-;

-:য..য..দি অম..অমন না বল..বলতাম তা..হলে আমা..কে বা..সা থে..কে বে..র হতে দিত..না।

-:তাই বলে মিথ্যা কথা বলবে,, এইভাবে অন্যের মাকে নিয়ে।

-:s..sorry ভু..ভুল হয়ে গিয়েছে আর এমন হবে না।।(দু কানে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে বলল)

কিন্তু নিলয়ের আজ খুব রাগ ধরছে তিথির উপর।সে তিথির সাথে কথা বলতে চেয়েছিল,,একান্তে কিছুটা সময় কাটাতে চেয়েছিল।কিন্তু তিথি কি করলো!! তখনকার কথা ভাবতেই নিলয়ের প্রচন্ড মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে।।কালকে অফিসের ইম্পরট্যান্ট মিটিং এর জন্য,,,তাকে এক সপ্তাহের জন্য লন্ডন যেতে হবে,, তাই সে চেয়েছিল তিথির সাথে কিছুটা সময় কাটাতে কিন্তু এই মেয়ে তার সব প্লানে এক বালতি পানি ঢেলে দিল।এসব কথা ভাবতে ভাবতে নিলয় রাগী দৃষ্টিতে তিথির দিকে তাকালে,,,তিথি তখন‌ও মাথা নিচু করে বসেছিল।নিলয় এবার তিথি দুই বাহু প্রচন্ড জোরে চেপে ধরে ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে বলতে লাগলো-;

-:এই মেয়ে তোমার সাহস কি করে হলো আমার সাথে কথা না বলে চলে যাওয়ার,,,একটুও বোঝার চেষ্টা করনা না আমার ফিলিংসগুলোকে,, আমি কি চাই সেটা তুমি আমার চোখ দেখে বুঝতে পার না।

আমাকে মানুষ বলে তোমার মনে হয় না??এই বলোনা আমাকে মানুষ বলে তোমার মনে হয় না,,,এতদিন ধরে কুকুরের মতন,,,তোমার পিছে পিছে ঘুরেছি আর তুমি একটুও বোঝার চেষ্টাই করলে না আমাকে।আরে একটা মেয়ে কোন ছেলের তাকানো দেখলেই বলে দেবে সে ছেলে তাকে কি নজরে দেখছে।।আর তুমি,,,,তুমি এক সপ্তাহ আমার বাড়িতে থেকেও আমাকে বোঝার চেষ্টা করলেনা যে আমি কি চাই?সারাদিন অফিস শেষে শুধু তোমাকে এক পলক দেখার জন্য,,,তোমার স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি আর তুমি কিছুই বুঝলা না।

তোমার একটু কষ্ট হলে আমি আমার বুকের বাম পাশটায় তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করি যানো,,কিন্তু তুমি কিছুই বোঝ না।।ওতটাও বাচ্চা ন‌ও তুমি পাখি।বলতো আর কবে বুঝবে আমাকে,,,আমার মনের ফিলিংস গুলোকে,,,আমি মারা যাওয়ার পর।আমি তোমাকে খুব জ্বালায় না তোমার আমার সাথে কথা বলতে খুব বিরক্ত লাগে।।আমি এত রাতে তোমার বাড়িতে তোমার সাথে দেখা করতে এসেছি,,,তাতেও তোমার খুব রাগ হচ্ছে আমার উপর না।।

ঠিক আমি তোমাকে আর কোনদিন‌ও ডিস্টার্ব করবো না,,,আর কোনদিনও তোমার মুখোমুখি হবো না,,কথা দিলাম তোমাকে।আচ্ছা তিথু পাখী একটা কথা বলবে আমায়,,,আমি মানুষটা কি সত্যি ভালোবাসা পাওয়ার অযোগ্য।ছোটবেলায় তো বাবা মা আমাকে একা ফেলে চলেই গেল,, আর বাকি জীবনটা যাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইলাম সেও আমাকে বুঝলো না।

কথাগুলো বলার সময় নিলয়ের গলা বারবার ধরে আসছিল,,চোখ গুলো লাল টকটকে হয়ে গেছে।।

তিথি কোনদিন নিলয়ের এমন চেহারা দেখেনি।নিলয়ের প্রতিটি কথায় মধ্যে তার মনের কোনে জমে থাকা কষ্টগুলোর সাথে তিথি পরিচিত হচ্ছিল।নিলয়ে এমন কথা শুনে তিথির চোখ ভিজে যাচ্ছে আপনা আপনি।।লোকটার বুকে যে এতটা কষ্ট লুকিয়ে ছিল তিথি বুঝতেই পারিনি এতদিন,,,তার জন্য যে এতটা তীব্র অনুভূতি লোকটার বুকে জমেছিল সে জানতেই পারেনি এতদিন।তিথি অনেক কষ্টে নিজের অশ্রু সংবরণ করছিল কিন্তু নিলয়ের শেষের কথাটা শুনে আর নিজের চোখের জল আটকাতে পারল না।

তার চোখ থেকে টপটপ করে পানি গাল বেয়ে পড়তে লাগলো।নিলয় তিথি চোখের জল দেখে,,তিথির বাহু ছেড়ে দিয়ে তার গালে নিজের দুহাত দিয়ে ধরে,কপালে কপাল ঠেকিয়ে স্লো ভয়েসে বলে উঠল-;

-:তিথু পাখি ডোন্ট ক্রাই।।তোমার কাছে এই অশ্রু মূল্যহীন হতে পারে কিন্তু আমার কাছে এই অশ্রুর একেকটা দানা মুক্তার মতন।সো আমার মতন ফালতু লোকের জন্য এই মুক্ত গুলোকে নষ্ট করোনা এইভাবে।।

এই বলে নিলয় নিজের ঠোঁট দিয়ে তিথির অশ্রুগুলো শুষে নিতে থাকলো। কিছুক্ষণ পর তিথির দুই চোখে আর কপালে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়ে বলল-;

-:পাখি খেয়াল রেখো নিজের।আর পারলে কোনো এক বসন্তের দুপুরে অথবা কোন এক পড়ন্ত বিকালে সন্ধ্যার সন্ধিক্ষণে এই বাজে মানুষটাকে,,,একবার হলেও মনে করো,,,,নিজের অজান্তে।।হয়তো কিছু কাল অতীত তোমার মনকে নাড়া দিবে,,কিন্তু সেটা ক্ষণস্থায়ীর জন্য,,না হয় তুমি সেটা সহ্য করল।।

তারপর নিলয় আর কোন কথা না বলে,,চলে গেল।।আর তিথি মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে ,,আর নিলয়ের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকলো।।
.
.
?
.
.
আজ ৮ দিন হয়ে গেল নিলয় কোন খোঁজ নেয়নি তিথির।আর এদিকে তিথি নিলয়কে এক পলক দেখার জন্য ছটফট করতে লাগলো। অনেকবার নিলয়ের ফোনে ট্রাই করেছে তিথি,, কিন্তু হয় নিলয়ের ফোন সুইচড অফ দেখাচ্ছে আর নয় তো দুবার রিং হলেই ফোনটা কেটে যাচ্ছে।তিথি আর কিছু চিন্তা করতে পারছে না,,,তাই সে ঠিক করল সে নিলয়ের বাড়িতে যাবে নিলয়ের সাথে দেখা করতে।আজকে যেহেতু ছুটির দিন,,,তাই নিলয় বাড়িতেই থাকবে। তিথি আর দেরী করলো না আজকে সে নীলয়ের সাথে কথা বলেই ছাড়বে।

তিথিকে আজ দেখতে পুরো হুর পরীর মত লাগছে।মিষ্টি কালারের একটা সিল্কের শাড়ি পরেছে তিথি আজ,,,দুহাত ভরে সিলভার কালারের চুরি,,,চোখে গাঢ় করে কাজল,, ঠোঁটে পিংক কালারের লিপস্টিক দিয়ে তৈরি করেছে নিজেকে সে।চুলগুলো ছেড়ে রেখেছে তিথি,,তিথির চুলগুলো বেশ লম্বা কোমর পর্যন্ত।। তিথি রেডি হয়ে আয়নার সামনে তাকাতেই নিজেই নিজেকে দেখে লজ্জা পেয়ে গেল।আজকের তিথি সেজেছে,,মন ভরে সেজেছে শুধুমাত্র নিলয়ের জন্য।এতদিন ধরে সে ঠিক করে ফেলেছে তাকে কি করতে হবে,,,তাই আজ নিলয়ের সাথে কথা বলা তার খুবই জরুরী।নিলয় তাকে এভাবে দেখে কী রিয়্যাক্ট করবে এটা ভাবতেই তিথীর মুখ লাল টমেটোর মত হয়ে যাচ্ছে।নিলয় এর জন্য কিছু খাবার নিজের হাতে বানিয়ে ছিল তিথি আজ সকালে।।তিথি সেগুলো টিফিন বক্সে ভর্তি করে,, নিলয়ের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিল।আর বাসায় বলে এসছে যে সে নিশিদের বাসায় যাচ্ছে,,তাই ফিরতে লেট হবে।
.
.
?
.
.
নিজের রুমে বসে ল্যাপটপে কাজ করছিল নিলয়।হঠাৎ দরজায় আওয়াজ হওয়াতে পিছনে ফিরে তাকাতেই নীলয় অবাক হয়ে গেল।।নিলয় বিশ্বাসই করতে পারছে না যে সে কোনদিন তিথিকে এইভাবে তার সামনে দেখতে পাবে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে তিথি কে দেখতে আজ। চোখ ফেরানোই যাচ্ছে না।নিলয় তিথিকে দেখে উঠে দাঁড়ালো,,যেই কিছু বলতে যাবে তখনই তিথি নিলয়কে কষিয়ে একটা চড় মারলো আর বলল……
.
.
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]

তোমাকে আমার প্রয়োজন পর্ব-১২

0

#তোমাকে আমার প্রয়োজন??
#মেঘ পরী??

??পর্ব-১২??
.
?
.
বিঃদ্রঃ ?? আশফি নাম পরিবর্তন করে আবির নাম রাখছি আর মিতু নাম পরিবর্তন করে নিশি নাম রাখছি,,আসলে বারবার টাইপ করতে প্রবলেম হচ্ছে।☺️☺️??
.
.

তিথি মেসেজটা পড়ে কি করবে বুঝতে পারছে না,,নিলয় তাকে এক্ষুনি তার সাথে দেখা করতে যেতে বলেছে।কিন্তু এখন যাবে কিভাবে,, আজ ছুটির দিনে সবাই বাড়িতে আছে।ঠিক তখনই দুলতে দুলতে নিশি তিথির রুমে প্রবেশ করল,,তিথিকে কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই তিথি নিশিকে বলে উঠলো-;

-:দোস্ত বিশাল বড় বিপদে পড়েছি একমাত্র তুই পারিস আমাকে হেল্প করতে,, প্লিজ না করিস না।।

-: বল আমাকে কি হেল্প করতে হবে,,, আজ আমি ভীষণ খুশি তুই যা বলবি তাই করবো।।

তিথি নিশিকে কনুই দিয়ে একটা খোঁচা মেরে জিজ্ঞেস করল-;

-: কিরে ব্যাপারটা কি ভাইয়ার রুম থেকে আসার পর থেকে তোর মনে এত লাড্ডু ফুটছে কেন??

-:উফ্ তিথি কি সব উল্টোপাল্টা বলিস এমন কথা বলতে আছে।(লজ্জায় দুহাত দিয়ে নিজের মুখ ডেকে)

-: আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে অত নটাংকি করতে হবে না।শোন আমি নিচে গিয়ে মামীকে যা যা বলবো তুই শুধু আমার কথার সাথে তাল মিলিয়ে জবাব দিবি।আর একটু মন খারাপ করার এক্টিং করবি,,যাতে সবাই ভাবে যে তোর সত্যি সত্যি মন খারাপ।

-:ওকে।।

তিথি নিচে গিয়ে দেখে মামি রান্নাঘরে রান্না করছে,,,,মামা আর ভাইয়া সোফায় বসে বসে টিভি দেখছে।তিথি চিৎকার করে বলতে লাগল-;

-:নিশি কাঁদিস না সব ঠিক হয়ে যাবে আমি তো আছি আন্টির কিচ্ছু হবে না,,তুই দেখিস।।

তিথির অমন কোথায় বাড়ির সবাই তিথির দিকে তাকালো।।মামি রান্নাঘর থেকে ছুটে এসে নিশি কে বলল-;

-:কি হয়েছে রে নিশি,,তোর মায়ের কি হয়েছে।(চিন্তিতভাবে জিজ্ঞাসা করল)

নিশি কিছু বলতে যাবে তখনই তিথি কান্না করতে করতে(নটাংকি করে) বলতে লাগল-;

-:মামি আর বলোনা,,,আন্টি ফোন করেছিল নিশির ফোনে আন্টির নাকি পেটে প্রচুর গন্ডগোল হচ্ছে,,আমাকে আর নিশিকে এক্ষুনি তাদের বাসায় যেতে বলল,,,হয়তো মেডিকেলে নিয়ে যেতে হতে পারে।

আবির সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল-;

-:সেকি এতটা বাড়াবাড়ি কখন‌ হল আন্টির।।

-:উফ ভাইয়া এসব গন্ডগোল কি দাওয়াত দিয়ে আসবে,,,এগুলো যখন তখন হুটহাট করে চলে আসে।তুই সত্যি সত্যি ডাক্তার তো,,আমার মাঝে মাঝে এইটা নিয়ে সন্দেহ হয়।আচ্ছা আমাদের এখন যেতে হবে,,ওকে আসছি।

আবির বলে উঠলো-;

-: আরে দাঁড়া দাঁড়া আমিও যাব তোদের সাথে,, আমি একজন ডাক্তার হয়ে এভাবে হাত গুটিয়ে তো বসে থাকতে পারব না।।

আবিরের কথা শুনে তিথি চিৎকার করে উঠে-;

-:না তার কোনো দরকার নেই।।

আবির ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই তিথি বলে উঠলো-;

-:না…না মানে এগুলোতো মেয়েলী ব্যাপার,,,আর তাছাড়া আন্টির লজ্জা করবে না তোর সামনে এসব কথা বলতে।তোর মিনিমাম কমন সেন্স বলতে কিছুই নেই ভাইয়া।আন্টি কি তোকে বলবে যে বাবা আমার পেটে না খুব গন্ডগোল করছে?? নিজের মেয়ের জামাইয়ের কাছে কি কেউ কোনদিন এসব কথা বলতে পারে।

-:জামাই!!!! আবির অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো

-:কে কার জামাই??

নিশিও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তিথির দিকে।।তিথি সঙ্গে সঙ্গে বল উঠল-;

-:না…না মানে জা..জামাইয়ের মতোন।।আর তাছাড়া তোর কাছে আন্টি বলতে লজ্জা পাবে আর এত টেনশন করছিস কেন।তেমন যদি কিছু হয় তাহলে তোকে আমরা ফোন করে ডেকে নিবনি।।

তিথির মামি ও বলল-;

-:ঠিক বলেছে তিথি মামনি।তোর এখন যেতে হবে না যদি তেমন কিছু হয় ওরা ফোন করে ডেকে নেবে।

আবির আর কিছু বলল না।।এতক্ষন মামা চুপ করে তাদের কথাগুলো শুনছিল,,,এবার তিথির কাছে গিয়ে মামা সন্দেহ দৃষ্টিতে জিজ্ঞেস করতে লাগলো-;

-:আচ্ছা এমন কি পেটের গন্ডগোল হলো যে,,, এক্ষুনি মেডিকেলে ভর্তি করতে হবে।না তাহলে তো আমাদেরও যাওয়া উচিত,,,তোরা বাচ্চারা একা গিয়ে কি করবি।

তিথি এবার মামীর দিকে করুন চোখে তাকিয়ে বলে উঠলো-;

-:দেখেছ মামি এই দুঃসময়ে ও মামা আমাকে সন্দেহ করছে,, তুমিই বল ওখানে কি নিশির বাবা নেই??আঙ্কেলে আর আমরা দুজন থাকলেই তো হবে,,তাই তো আমি বললাম এখন যেতে হবে না তোমাদের।।

তিথির মামী এবার মামার দিকে তাকিয়ে ঝাঁঝালো স্বরে বলল-;

-: এই সময়ও তোমার সন্দেহ করতে হবে মেয়েটার উপর।।বলি বয়স তো কম হলো না,,এবার এই সন্দেহ করাটা ছাড়ো এই বাচ্চা মেয়েটার উপর।সন্দেহ করতে করতে তো তোমার মাথায় একটাও চুল নেই এখন,, যত্তসব।।

তিথির মামা আর কিছু বলল না চুপ করে গেলে জানে এখন বলে আর কোন লাভ হবে না,,তাই একবার নিজের টাকে হাত বুলিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।।তিথি আর নিশি বেরিয়ে গেল।
.
.
?
.
.

তিথি চরম বিরক্ত নিলয়ের উপর,, কোথায় ভাবলো আজকে ছুটির দিনে সারাদিন ঘুমাবে আর ভাইয়া আর নিশির সেটিংসটা করিয়ে দেবে কিন্তু নিলয়ের জ্বালায় তা আর হলো কোথায়,,,, মেসেজ করে বলল তার সাথে নাকি এক্ষুনি দেখা করতেই হবে নইলে সে বাসায় চলে আসবে,,এই এক প্যারা কেন যে বাসাটা দেখাতে গেলাম ব্যাটাকে,,অসহ্য।(মনে মনে কথাগুলো বলতে বলতে তিথি হাঁটছে)।।

নিশিও হেঁটে যাচ্ছে তিথির সাথে সাথে দেখেই বুঝা যাচ্ছে প্রচন্ডরকম রেগে আছে সে তিথির উপর অনেক কষ্টে নিজের রাগ এতক্ষন চেপে রেখেছিল,,কিন্তু এবার আর পারল না,, বলেই ফেলল-;

-:তুই আমার বেস্টু হতেই পারিস না,,তুই যদি সত্যিই আমার বেস্টু হতিস তাহলে কখনই আমাকে এমন বাঁশ খাওয়াতে পারতিস না।।

-: সরি মেরি জান প্লিজ রাগ করিস না আমার ওপর,,,কি করব বল যদি আমি এটা না বলতাম তাহলে আমাকে বাসা থেকে বের হতেই দিত না আর যদি না আসতাম এখানে তাহলে ব্যাটা লুচু ঠিক বাসায় গিয়ে উঠতো।

-: তাই বলে এমন মিথ্যা কথা,,যে আমার মার পেটে গন্ডগোল হচ্ছে তাই তাকে মেডিকেলে নিয়ে যেতে হবে।আন্টি কিভাবে তোর কথা বিশ্বাস করলো আমি বুঝতেই পারছি না।আঙ্কেল কিন্তু তোর উপর একটুও বিশ্বাস করেনি।।

-:I don’t care..

-:???

কিছুটা দূরে গিয়ে তিথি দেখলো নিলয় গাড়িতে হেলান দিয়ে,,,চোখে সানগ্লাস পড়ে পকেটে হাত ডুকিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে,, নিলয়কে দেখে তিথি নিশিকে উদ্দেশ্য করে বলল-;

-:ওই দেখ ব্যাটা লুচু দাঁড়িয়ে আছে।

নিশী তিথীর কথায় ওপারে তাকাতেই হা হয়ে গেল-;

-: নিলয় চৌধুরী!!ও এম জি দ্যা টপ বিজনেসম্যান নিলয় চৌধুরী তোর জন্য অপেক্ষা করছে,,,আই কান্ট বিলিভ।।যে আজ পর্যন্ত কোন মেয়েকে পাত্তা দেয়নি সে তোর জন্য অপেক্ষা করছে,,লাইক সিরিয়াসলি।।এটা সত্যিই নিলয় চৌধুরীই তো আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না।।বিজনেস টাইকুন নিলয় চৌধুরী এটা!!??

-:??এতটা রিঅ্যাক্ট করার কি আছে।তাহলে এর নাম নিলয় চৌধুরী।আর ওটা কোন বিজনেস টাইকুন ফাইকুন নয়,,ওটা একজন কিডন্যাপার।।

-: Impossible!!উনি আর কিডনাপার কখনোই হতে পারে না।।আমি আব্বুর কাছে শুনেছি নিলয় চৌধুরী দেশের সবচেয়ে বড় বিজনেসম্যান।আর তুই ওনার নাম আজকে প্রথম শুনলি,,তুই কি পাগল নাকি এতদিন উনার বাড়িতে থাকলি আর উনার নাম‌টাই জানিস না।

-:??হুম,,, এবার চল।।
.
.

দূর থেকে তিথিকে আসতে দেখে নিলয়ের মুখ অটোমেটিকলি হাঁ হয়ে গেল,তিথিকে আজ পুরো আকাশী পরি মতোন দেখতে লাগছে।আজ সে আকাশী রঙের চুড়িদার পড়ে এসেছে,,,দুই হাতে চিকন চিকন আকাশচুরি পরা,,,চুলগুলো পনিটেইল করে বাধা,,,এমনকি ওড়না টা পর্যন্ত আকাশী রঙের।।সূর্যের তপ্ত কিরণে মুখটা পাকা টমেটোর মত দেখতে লাগছে,,,চোখ দুটোতে হালকা করে কাজল দেওয়া।কিন্তু এই হালকা কাজলেই সে নিলয়ের চোখে কাজল নয়না হয়ে উঠেছে,,আর চোখে মুখে বিরক্তির ছাপটা যেন তার সৌন্দর্যকে আরও এক কাঠি উপরে নিয়ে গিয়েছে।আর ঠোঁট!!ঠোঁটের কথা না বললেই নয় ঠোঁট যুগল লিপস্টিক ব্যতীত যে এতটা কমল আর গোলাপি হতে পারে,,তা তিথিকে না দেখলে বোঝাই যেত না।।

নিলয় এক ধানে তিথির দিকে তাকিয়ে আছে।তিথির কথাই নিলয়ের ধ্যান ভাঙলো-;

-:কি হয়েছে বলুন??আমাকে ডাকলেন কেন এখানে এই সময়।।

-: তোমাকে দেখতে।।(তিথির চোখের দিকে তাকিয়ে)

-: মানে।।(কিছুটা অবাক হয়ে)

এবার নিলয় তিথি কে কিছু বলতে যাবে,,ঠিক তখনই তার নজর গেল তিথির পাশে থাকা মেয়েটির উপর।।তিথির দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই,,,তিথি একগাল হেসে বলল-;

-:ও,,,ওতো আমার বেস্টু,,ওর নাম নিশি।

‌ নিলয় একটা জোরপূর্বক হাসি দিয়ে,, নিশি কে উদ্দেশ্য করে বলল-;

-:হাই আই এম নিলয় চৌধুরী এন্ড নাইস টু মিট ইউ।।

নিশি একটু মুচকি হেসে বলল-;

-:সেম টু ইউ ভাইয়া। ভালো আছেন।

-:জ্বি।

নিশি বেশ বুঝতে পারছে নিলয় তিথির সাথে একান্তে টাইম স্পেন করতে চাই,,সেটা তার ফেস দেখেই বোঝা যাচ্ছে।তাই নিশি তিথি কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল-;

-: তিথি তুই বরং ভাইয়ার সাথে কিছুক্ষণ কথা বল,,আমি ততক্ষণ ওই দিক থেকে ঘুরে আসি একটু।

‌নিলয় কিছুটা হেসে বলল-; ঠিক আছে।

নিশি যেই যেতে নিবে অমনি তিথি তার হাতটা ধরে ফেলল-;

-:আরে তোর কোথাও যাওয়ার দরকার নেই।ইনি খুব ভালো,,কিছু মনে করবে না তুই এখানে থাকলে।কি আপনি কিছু মনে করবেন??(নিলয়ের দিকে তাকিয়ে)

নিলয় তিথির কথা শুনে নিজেকে কিছুটা কন্ট্রোল করে জোর করে হেসে বলল-;

-:না না প্রবলেম কেন হবে।বল তোমরা কি খাবে,, তোমাদের আজ আমি ট্রিট দিব।

-:ওহ তাহলে আপনি আমাদের ট্রিট দিতে ডেকেছেন আজ,,রাইট।

-:হুম।(তিথির দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে)

নিশি বলে উঠলো-;

-: না না ভাইয়া কিছু লাগবেনা,,আমরা…

নিশিকে থামিয়ে তিথি বলে উঠলো-;

-:এই চুপ কর তো।তুই তো তখন বললি যে তোর নাকি খুব খিদে পেয়েছে আর এমনিতে আমার‌ও খুব খুদা পেয়েছে।।আচ্ছা চলুন আমাদের খাওয়াবেন বলছিলেন না,,,আপাতত ফুচকা দোকানে চলুন।।

নিলয়ের আর কি করার আছে বাধ্য হয়ে তিথির সাথেই যেতে লাগলো।

তিথি মনে মনে ভাবছে-;

-:দেখার খুব শখ না।আজকে যদি আপনাকে প্যারা দিতে না পেরেছি তো আমার নাম তিথি নয়।হুম।।

তিথি নিলয়কে রোডের পাশে দাঁড়ানো ফুচকা দোকানে নিয়ে গেল,,নিলয় ফুচকার দোকান টা দেখে তিথিকে বলল-;

-:দেখো তিথি আগের বারে তোমার কথায় খেয়েছি ঠিক আছে,,,বাট এবারে আমার দ্বারা সম্ভব নয়।।তুমি রেস্টুরেন্টে চলো সেখানে যত ইচ্ছা ফুচকা খাও,, কিন্তু এখানে দাঁড়িয়ে খেও না এইগুলো আনহেলদি শরীরের জন্য।।

-:আরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়া,, আর রেস্টুরেন্টে এসির নিচে বসে ফুচকা খাওয়ার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ আছে।।যদি আপনার খেতে ইচ্ছা না করে,,তাহলে আপনি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকুন,,,শুধু বিল পেমেন্ট করলেই হবে।।

নিশি তিথির হাতটা টেনে বললো-;

-:কি সব বলছিস তিথি।।

-:তুই চুপ কর তো।।আচ্ছা মামা ফুচকা বানান চার প্লেট।

-:এত ফুচকা কে খাবে??

-:এক প্লেট তুই খাবি আর তিন প্লেট আমি খাব। আচ্ছা মামা ঝাল দিয়ে দেবেন একটু বেশি করে।

তিথি,নিশি বসে বসে ফুচকা খাচ্ছে আর নিলয় চুপচাপ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তিথিকে দেখছে।এখন তার প্রচুর পরিমাণে রাগ হচ্ছে তিথি উপর। ভেবেছিল তিথির সাথে কিছুটা টাইম স্পেন্ড করবে,,যেহেতু আজকে তিথির স্কুল ছুটি আছে।। কিন্তু তার সুন্দর প্ল্যানটাকে তিথি কাঁচি দিয়ে কেটে দিল,, নিজের বেস্টুকে সাথে এনে।একবার যদি তিথিকে একা পেত,,তাহলে হারে হারে মজা বুঝায়ে দিত।।

‌ কিছুক্ষণ পর তিথি চিল্লাতে লাগলো-;

-:আআআআআআআ।

‌নিলয় আর নিশি দুজনেই ব্যস্ত হয়ে উঠলো। নিলয়-;

-: কি হয়েছে,,,কি হয়েছে।।

-:ঝাল…প্রচুর ঝাল,,গাল জ্বলছে।।পানি নিয়ে আসুন তাড়াতাড়ি।।

-:তোকে এত ঝাল খেতে বারণ করলাম,,কিন্তু তুই আমার কথা শুনলিই না।।

-:আচ্ছা তোমরা এখানে দাঁড়াও আমি এক্ষুনি পানি আনছি।।

কিছুক্ষণ পর নীলয় একটা পানির বোতল এনে তিথির হাতে দিল।তিথি বোতলটাকে দেখে বলল-;

-:আপনার সাধারন বুদ্ধি নেই আমার ঝাল,, লেগেছে আর সামান্য জল খেলেই ঝালটা চলে যাবে।যান গিয়ে যে কোন জুস জাতীয় পানীয় নিয়ে আসুন আমর জন্য।

-:আচ্ছা দাঁড়াও আমি নিয়ে আসছি।

কিছুক্ষণ পর নিলয় তিথির দিকে একটা জুসের বোতল এগিয়ে দিল।। তিথি জুসের বোতল টা দেখে বলল-;

-:আসলে আমার ঝাল লাগলে,,,আমি প্রাণ লিচু ড্রিংক খাই।।এইসব খাইনা,,একটু গিয়ে নিয়ে আসুন।।

নিলয়ের এখন মনে হচ্ছে তিথিকে তুলে একটা আছাড় মারতে,,,এত ফাজিল মেয়ে সে তার হোল লাইফে একটাও দেখেনি,,,কেন যে এরকম একটা মেয়েকে তার মনে ধরল,,এখনো মাথায় ঢোকেনা।তিথির দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকাতেই,, তিথি বলে উঠলো-;

-: প্লিজজজজজজ যান।আমার খুব ঝাল লাগছে।

নিলয় আর কথা না বাড়িয়ে চলে গেল।।কিছুক্ষণ পর নিলয় চারটে প্রাণ লিচু ড্রিংক এর বোতল এনে,,,তিথির হাতে তিনটে দিল আর নিশি হাতে একটা দিল।।

নিশি নিলয় কে বলল-;

-:ভাইয়া আপনি একটা নেন।।রোদে তো ঘামে যাচ্ছেন।।

এবার তিথি নিলয়ের দিকে তাকালে,, তাকিয়ে পুরো হা হয়ে গেল হোয়াইট কালারের ফুল হাতা শার্ট পরে আছে নিলয়,,শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত গোটানো,,হাতে সিলভার কালারের রিস্ট ওয়াচ,, ব্ল্যাক কালারের প্যান্ট,, গরমের কারণে গলায় রেড কালারের টাইটা লুস করা আছে আর উপরে বোতাম টা খলা আছে,, চুলগুলো এলোমেলো হয়ে কপাল ছুঁয়ে আছে,, প্রচণ্ড গরমে শার্ট পুরো ভিজে গিয়েছে,, দেখেই বোঝা যাচ্ছে সোজা অফিস থেকে এখানে এসেছে।। এবার তিথি নিজেরই খারাপ লাগছে,,, এতবার গরমে ছোটাছুটি করার জন্য মুখটা রক্তিম আভা ধারন করেছে,,হঠাৎ তিথির নজর গেল নিলয় ঠোঁটের উপর,,নিলয় দাঁত দিয়ে নিচের ঠোঁটটা চেপে ধরে ফোন ঘাটছে আর আরেক হাত দিয়ে বারবার কপালের ঘাম মুচছে,,, তিথি এতদিন খেয়ালই করেনি নিলয়ের ঠোঁটগুলোকে।। টকটকে লাল ঠোঁট নিলয়ের,, আর দাঁত দিয়ে চেপে থাকার কারণে নিচের ঠোঁটটা ভিজা ভিজা লাগছে।ছেলেদের ঠোঁট গুলো যে এত সুন্দর হয় তা তিথির জানাই ছিল না।

নিশির ডাকের তিথির ধ্যান ভাঙলো-;

-:কিরে বাড়ি যাবি না।।

-:হ্যাঁ হ্যাঁ চল।

বলে উঠে দাঁড়ালো,, তখনই নীলয় বলে উঠল-;

-:নিশি তুমি একটু দুমিনিট ওপাশে যাবে।আমার তিথির সাথে একটু কথা ছিল।।

-:জি ভাইয়া।(নীলয়ের দিকে তাকিয়ে)

এই বলে নিশি চলে যাওয়ার জন্য এগোতেই তিথি বলে উঠলো-;

-:আরে নিশি কোথায় যাচ্ছিস,,তোর আম্মুর কাছে যাবি না।আন্টির না শরীর খারাপ,,চল চল তাড়াতাড়ি চল।আচ্ছা আমরা এখন আসি,,ওর আম্মুর খুব শরীর খারাপ দেখতে যাব আমরা।। আপনি ডাকলেন বলেই আসতে হল নইলে আজ ওর বাসায় যাওয়ার কথা ছিল আমার।(জোর করে হেঁসে)

নিলয় কিছু বলতে যাবে তার আগেই,,তিথি বলে উঠলো-;

-:আমাদের অনেক লেট হয়ে যাচ্ছে আমরা আসছি।

বলে চলে গেল,,তিথি মনে মনে ভাবছে-; আল্লাহ বাঁচিয়ে নিয়েছো আমাকে,,,আজ আমাকে একা পেলে রাক্ষসটা সিওর গিলে ফেলতে।

এই দিকে নিলয় তিথির দিকে তাকিয়ে,,বাঁকা হেসে বলতে লাগলো-;

-:কাজটা ঠিক করলা না পাখি,,,এবার বুঝবে নিলয় চৌধুরী কী করতে পারে। জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ।

এই বলে সানগ্লাসটা চোখে দিয়ে গাড়িতে উঠে চলে গেল।।
.
.
?
.
.
রাত এগারোটা তিথি ফোনটা বারবার চেক করছে,,,আজকে নিলয় একবারও তাকে ফোন বা মেসেজ দেয়নি।তিথির মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে,,,কিছুই ভালো লাগছে না।তিথি মনে মনে ভাবল-;

-: লোকটা তো প্রতিদিন আমাকে দিনে একবার অন্তত ফোন করে কিন্তু আজ একবারও করল না কেন??আজকের বেলার ঘটনার জন্য কি আমার ওপর রাগ করে আছে। রাগ করলে আমার কি আমার এত কষ্ট লাগছে কেন??বাই দ্যা ওয়ে তিথী অ্যাট এনি চান্স তুই লোকটাকে কোনভাবে মিস করছিস নাতো।একদম না এসব ভাবাও পাপ। ফোন দেয় নাই তো কি হইছে,,, যাক বাবা বাঁচা গেল।। এবার আমি নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাতে পারবো।মনে মনে এসব ভাবতে ভাবতে তিথি একসময় ঘুমিয়ে পরল।কিন্তু তিথি জানতো না তার নিশ্চিন্ত ঘুমটাকে অনিশ্চিন্ত করতে খুব শীঘ্রই নিলয় তার রুমে প্রবেশ করবে।
.
.
.
রাত‌ তখন দুটো,,অনেক কষ্টে তিথিদের বাসার পাঁচিল টপকে,,,পাইপ দিয়ে দোতালায় তিথির রুমে বারান্দায় পৌঁছালো নিলয়।তিথির রুমে ব্যালকনি থাকায় নিলয়ের সুবিধাই হলো।।আস্তে করে ব্যালকনির দরজা টান দিতেই দরজা খুলে গেল। নিলয় কিছুটা অবাক হল তারপর মনে মনে ভাবল-;

-:এই মেয়েটার কখনও বুদ্ধি হবে না।।এরকম ভাবে কেউ দরজা খুলে রাখে,,আমি না হয়ে যদি অন্য কেউ আসতো।

তারপর দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে দেখেল তিথি এলোমেলোভাবে খাটে শুয়ে আছে,, আর চারদিকে চারটে টেডি বিয়ার রাখা আছে।। তিথির অমন শোয়া দেখে হেসে উঠলো নিলয়।। তারপর আস্তে করে তিথির পাশে গিয়ে বসল,,, তারপর…….
.
.
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]

তোমাকে আমার প্রয়োজন পর্ব-১১

0

#তোমাকে আমার প্রয়োজন ??
#মেঘ পরী??

??পর্ব-১১??
.
?
.
.
বিঃদ্রঃ ?? অনেকেই আমার কাছে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন যে তিথি 17 বছর বয়সী মেয়ে হয়েও কি করে স্কুলে পড়ে??? তাদের জন্য আমি বলে রাখি আমি একজন ইন্ডিয়ান।।আর আমাদের ইন্ডিয়ান এডুকেশন রুল অনুযায়ী,,, স্টুডেন্টরা নার্সারি লেভেল থেকে ক্লাস ফোর পর্যন্ত প্রাইমারি স্কুলে পড়ে আর ক্লাস ফাইভ থেকে টুয়েলভ পর্যন্ত হাই স্কুলে পড়ে।HS পরীক্ষা দেওয়ার পর তারা বিভিন্ন কলেজ কিংবা ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হয়।আর গল্পে যেহেতু তিথি ক্লাস টুয়েলভে পড়ে(পর্ব-৪ এ উল্লেখ করা আছে) তাই সে স্কুলে পড়বে এটাই স্বাভাবিক।আশাকরি প্রত্যেকের প্রশ্নের জবাব দিতে আমি সক্ষম হয়েছি।আর গল্প বিষয়ক কোন‌ কিছু জানার ইচ্ছা থাকলে অনুগ্রহ করে আমাকে জানাবেন।ধন্যবাদ।।??
.
.
?
.
.
গাড়ীতে বসে তিথি মুখ ফুলিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে বসে আছে।তার কারণটা হল নিলয়,,, কিছুক্ষণ আগে তাকে জোর করে গাড়িতে বসিয়ে ১ ঘন্টা যাবত ড্রাইভিং করেই যাচ্ছে কিন্তু কোথাও থামার নামই নেই।।এদিকে যে দেরি হয়ে যাচ্ছে বাড়ি ফিরতে সে খবর তার মনেই নেই,,,এখন বাড়িতে না ফিরলে সবাই টেনশন করবে।।কিন্তু সেটা তো এই মুখপোড়া বাঁদর বুঝতেই চাইছে না।তখন থেকে জিজ্ঞাসা করে যাচ্ছে যে তারা কোথায় যাচ্ছে কিন্তু কোন উত্তর তো দিলোই না উল্টে একটা বড়সড় ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিল,,,,ধ্যাত ভালো লাগেনা,,,কেন যে আসতে গেলাম,,,,বিরক্তিকর।এদিকে খিদেতে পেটে অলরেডি ইঁদুরের-বিড়ালের রেস আরম্ভ হয়ে গেছে,,,মনে মনে এসব কথা ভাবছে আর নিজের পেটে হাত বুলাচ্ছে তিথি।

নিলয় কিছুক্ষণ ধরে ব্যাপারটা খেয়াল করছে,,যে তিথি তার পেটে হাত দিয়ে বসে আছে আর মনে মনে কি সব বিড়বিড় করছে।সে তো এতক্ষণ ব্যস্ত ছিল তিথিকে দেখতে,,,কতদিন সে তাকে মন ভরে দেখেনি,,,কতদিন তার এই বাচ্চা বাচ্চা এক্সপ্রেশনগুলো সে দেখেনি,,,আবার এটা ভেবেও খুব কষ্ট লাগছে যে কিছুক্ষণ পর আবার সে তাকে ছেড়ে চলে যাবে।কিছুক্ষণ পর নিলয় একটা রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়িটা থামালো,,,তারপর তিথিকে নামতে বলল।তিথি একবার নিলয়ের দিকে তাকিয়ে,,,আবার মুখ ফিরিয়ে নিল,,, তারপর বলল-;

-: আমি কোথাও যাবো না,,,আমাকে আপনি বাসায় দিয়ে আসুন।।

-:তোমাকে যেটা বলছি,, তুমি সেটাই করবে,, চুপচাপ নিচে নামো,,,সিনক্রিয়েট করা বন্ধ করো।।(শান্ত কন্ঠে বলল নিলয়)

এবার তিথি কিছুটা রেগে গিয়ে বলল-;

-: আমি আপনার কোন কথাই শুনতে চাইছি না আমাকে আপনি এক্ষুনি আমার বাসায় দিয়ে আসবেন।।

নিলয় তিথির দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে,, দাঁতে দাঁত চেপে বলল-;

-:তুমি নামবা কি না,,আর একবার যদি আমাকে বলতে হয়েছে,,,,তাহলে আমি তোমাকে কোলে তুলে নিয়ে যাব,,,বুঝতে পেরেছ।।

নিলয়ের এরকম কথায় তিথি নিলয়ের দিকে ড্যাব ড্যাব চোখে তাকিয়ে থাকল,,, তারপর আর কিছু না বলে চুপচাপ গাড়ি থেকে নেমে গেল।।
.
?
.
তিথির খুব রাগ হচ্ছে নিলয়ের উপর,,,মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে নিলয়ের মাথা ফাটিয়ে দিতে।তিথির সামনে ১৫ থেকে ১৬ ধরনের খাবারের আইটেম সাজানো আছে আর তাকে নাকি সব খাবার গুলো শেষ করতে হবে তবেই সে বাসায় যেতে পারবে।তিথি আর কিছু না ভেবে খাওয়া শুরু করলো,,,,, এমনিতেই তার খুব খুধা পেয়েছিল।তিথি যতক্ষন খাচ্ছিল ততক্ষন নিলয় গালে হাত রেখে তিথির দিকে তাকিয়ে ছিল,,, আর মনে মনে বলতে লাগলো-;

-: আর কিছুদিন অপেক্ষা করো পাখি,,,তোমার পরীক্ষা শেষ হলেই তোমাকে আমি আমার করে নেব আর তার আগে তোমার মনে আমার জন্য ফিলিংস ক্রিয়েট করতে হবে,,, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।

‌‌ এদিকে তিথি ৪-৫ টা আইটেম কমপ্লিট করে আর খেতে পারছে না,,,তাই নিলয় দিকে তাকিয়ে করুন সুরে বলল-;

-: সত্যি বলছি আমি আর খেতে পারছি না। প্লিজ আপনি আমাকে বাসায় দিয়ে আসুন।

নিলয় তিথির দিকে তাকিয়ে বলল-;

-: ঠিক আছে আর খেতে হবে না।।

তিথি নিলয় কথা শুনে খুশিতে গদগদ হয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে,,,বলল-;

-:চলুন চলুন দেরী হয়ে যাচ্ছে আমার জলদি চলুন।।

-: এত তাড়া কিসের তোমার।।

-:আরে অলরেডি ছটা বেজে গেছে,,,তাড়াতাড়ি চলুন নইলে সবাই টেনশন করবে।।

-:ঠিক আছে চলো।।

রেস্টুরেন্টের বিল পেমেন্ট করে নিলয় তিথিকে নিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ালো।।নিলয় যেই গাড়িতে উঠতে হবে,, তখনই তিথি চেঁচিয়ে উঠলো।। তিথির অমন চেঁচানোতে নিলয় তিথির দিকে তাকিয়ে বলল-;

-: আবার কি হল।।

তিথি খুব এক্সাইটেড হয়ে বলে উঠলো-;

-:ওই দেখুন ওই দেখুন আইসক্রিম,,,আইসক্রিম,,, কতদিন আইসক্রিম খাই নি,,,চলুন চলুন আমাকে একটা আইসক্রিম কিনে দেবেন।।

বলে নিলয় হাত ধরে আইসক্রিমের দোকানের দিকে যেতে লাগল।।আইসক্রিমের দোকান দেখে নিলয় নাক সিঁটকে নিল,,,তারপর বলল-;

-: ছিঃ ছিঃ তুমি এইসব স্ট্রীট ফুড খাবা নাকি।। দেখো এটা শরীরের পক্ষে খারাপ,,,এগুলা আনহেলদি।।তুমি চলো আমার সাথে আমি তোমাকে আইসক্রিম পার্লারে নিয়ে যাচ্ছি,,,সেখান থেকে যত ইচ্ছা তুমি আইসক্রিম খাবা।।

-: না আইসক্রিম যদি খেতেই হয় আমি এইখান থেকেই খাবো নইলে খাবো না,,,,আর আপনাকেও আমার সাথে খেতে হবে,,,চলুন।।

এই বলে নিলয়ের হাত ধরে টানতে লাগলো,,,নিলয়ের কি করবে কিছু ভেবে না পেয়ে সেই রাস্তার পাশে দাঁড়ানো আইসক্রিম দোকান থেকেই আইসক্রিম কিনতে হল,,,,, আবার তিথির জন্য আইসক্রিম খেতেও হল।এরপর নিলয় তিথিকে তার বাসার সামনে দিয়ে এলো।যেহেতু তিথি বলেছিল যে সে ছুটির পর মিতুদের বাড়ি যাবে তাই কেউ আর তাকে কোনো প্রশ্ন করেনি।।রাতে আবার নিলয়ের সাথে কিছুক্ষণ ফোনে কথা বলে ঘুমিয়ে পরল।।
.
.
?
.
.
পরের দিন সকাল আটটার সময় মিতু তিথিদের বাসায় এলো।তিথি তখন ঘুমাচ্ছিল,, তাই তিথির মামির সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে তিথির রুমে চলে গেল।মিতু গিয়ে অনেক কষ্টে তিথিকে তুলল,,, তিথি ঘুম জড়ানো কন্ঠে মিতুকে দেখে বলতে লাগল-;

-:উফ্ এই ফকিন্নি তোকে আমি আমার বাড়িতে আজকে আসতে বলেছি বলে,,,,এই না যে তুই এত ভোরবেলা উঠে আমার বাড়ি চলে এসে,,, আমার সাধের ঘুম টাকে নষ্ট করে দিবি।

-:কি???এটা ভোরবেলা,,, কটা বাজে জানিস তুই আটটা।

-: কি আটটা বাজে আর তুই আমাকে এখন ডাকছিস,,,, তোর মতোন দোস্ত যেন আর কারো না হয়।।

-:বাহ তিথু তুই আমাকে এমন কথা বলতে পারলি আমি তো এসেই তোকে ডাকলাম,,,তুই তো এতক্ষণ পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিলি।।(কিছুটা মন খারাপ করে বললো মিতু)

-; আরে আমার ভবিষ্যৎ ভাবি ননদের উপর এত রাগ করতে নেই।(মিতুর গাল দুটো টেনে)

-:যাহ কি যে বলিস না।(কিছুটা লজ্জা পেয়ে)

-:ওহো এখন লজ্জা পেলে হবে পরে তো দেখা যাবে আপনাকে খুঁজেই পাওয়া যাবে না।।

আর কিছুক্ষণ কথা বলে,,,তিথি ফ্রেশ হতে চলে গেল।।ফ্রেশ হয়ে মিতুকে সাথে নিয়ে ব্রেকফাস্ট করতে নিচে গেল।ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবাই বসে আছে শুধু আশফি ছাড়া,,, কিছুক্ষণ পর আশফি চলে এলে ব্রেকফাস্ট শুরু করল সবাই।আশফি মিতুকে দেখে বলল-;

-: আরে তুই কখন এলি??

-:এইতো ভাইয়া কিছুক্ষণ আগে।।

-:ওও…তা পড়াশুনা কেমন চলছে তোর। আমাদেরটা তো পড়াশোনার ওপর দিয়ে যায়।

-: ভাইয়া ওয়াট ইজ দিস?? তুমি আমার বেস্টুর সামনে আমাকে এমন ইনসাল্টু করতে পারলে,,, তোমার দিয়ে এই ব্যবহার আমি আশা করিনি। দেখো তোমার বিয়ে হবে না।আর যদি বিয়ে হয় তো আমার পছন্দের মেয়ের সাথেই বিয়ে হবে।

-: তুই বিয়ে দিলেও আমি বিয়ে করবো না,,,তোর পছন্দ আমার ভালই জানা আছে।আর আমার বিয়ের চিন্তা না করে নিজের বিয়ের চিন্তা কর।।(বলে তিথির মাথায় একটা চাটি মারলো)

-:উফ্ মামি দেখো তোমার গুণধর ছেলে আমাকে মারছে।।(মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)

-: এই কেনরে তুই ওকে মারছিস,,তোর আর তোর বাবার জ্বালায় আমার মেয়েটা একটু শান্তি মতো এই বাড়ীতে থাকতে পারবে না দেখছি।

-: আমার আর আমার ছেলের জ্বালায় নয়,,,তোমার আর তোমার ভাগ্নির জ্বালায় আমাদের এই বাড়িতে থাকার জো নেই।।(মামা)

-:তুমি আর বেশি কথা বলোনা প্যারিসে নিয়ে যাবে বলে তো এখনো সেখানে নিয়ে যেতে পারলে না,,,আবার বড় বড় কথা।

মামীর কথায় সবাই হো হো করে হেসে উঠলো আর মামা করুন চোখে মামীর দিকে তাকিয়ে থাকলো।।
.
.
?
.
.
তিথির মিতুর উপর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে কখন থেকে সে বলছে যে ভাইয়াকে গিয়ে বলতে তাদের ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার জন্য কিন্তু সে কিছুতেই যেতে চাইছে না।। শেষে তিথি রেগে গিয়ে বলল-;

-: এই শেষবার তুই যাবি কি বল।

-: দেখ তিথু এমন রাগ করিস না,,, আমি যেতে পারব না আমার খুব ভয় করছে।।

-: তুই যদি না যাস তো আজ থেকে তোর সাথে আমার সব সম্পর্ক শেষ।

আর কিছু ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করার পর মিতু রাজি হলো ভাইয়ার কাছে যাবার জন্য। মিতু আশফির রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছি অনেকক্ষণ ধরে কিন্তু রুমে ঢোকার সাহস পাচ্ছেনা।এবার তিথি মিতুকে ঠাস করে ঠেলে দিলো আশফির রুমে,,,মিতু তাল সামলাতে না পেরে চিৎ পটাং হয়ে পড়ে গেল রুমের মধ্যে।মিতুকে ওইভাবে পড়ে যেতে দেখে তিথি সেখানে আর না দাঁড়িয় এক ছুটে নিজের রুমে চলে গেল।আশফি তখন সবেমাত্র শাওয়ার নিয়ে বাইরে বেরিয়েছে গায়ে শুধু তাওয়াল জড়ানো অবস্থায়। দরজার সামনে আওয়াজ হতে পিছনে ফিরে দেখল মিতু পড়ে গিয়েছে আর ওঠার চেষ্টা করছে।তা দেখে সঙ্গে সঙ্গে আসফি মিতুর পাশে গিয়ে বসলো,আর বলল-;

-: কি হয়েছে,,আর এইভাবে পড়লি কিভাবে,,দেখি দেখি।।

মিতু এতক্ষন আশফিকে খেয়ালই করেনি,,, এবার সে আশফির দিকে তাকাতেই তার হার্টবিট একশ কিলোমিটার বেগে ধুকপুক করতে লাগলো,,,,আশফিকে এই অবস্থায় দেখবে সে কোনদিন ভাবতেই পারেনি,,,,সবকিছু গুলিয়ে যাচ্ছে তার।জিম করা সাদা ধবধবে উন্মুক্ত শরীরে শুধু একটা টাওয়াল জড়ানো,,আর পুরো শরীরে বিন্দু বিন্দু জলের ফোঁটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে সদ্য শাওয়ার নিয়ে বেরিয়েছে।মাথা ভর্তি চুলগুলো থেকে টপটপ করে জল পড়ছে,,,অপূর্ব সুন্দর লাগছে দেখতে।এমনিতেই আশফিকে খুব সুন্দর দেখতে টিকালো নাক,,,,সুঠাম দেহ,,,ছয় ফিট লম্বা,,,মাথাভর্তি কুচকুচে কালো চুল,,,মায়াবী এক জোড়া চোখ,, আর চোখের সৌন্দর্য আরো ফুটে ওঠে যখন সে তার চোখে চশমা পড়ে,,,পুরো ডাক্তার,,,ডাক্তার ভাব চলে আসে তখন।সব মেয়েরাই তাকে গিলে খায়,,,এটা মিতুর একদম সহ্য হয় না।মিতু আশফির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।।

মিতুর অমন তাকানো দেখে আশফির খেয়াল হলো যে সে শরীরে শুধু একটা টাওয়াল জড়িয়ে আছে,,,,তাই সে তাড়াতাড়ি উঠে খাটের উপর থেকে তার টি-শার্ট টা পড়ে নিল,,,,তারপর মিতুর কাছে এসে তার হাত ধরে তাকে তুলে খাটে বসিয়ে দিল।।আচমকা পড়ে যাওয়ায় মিতু হাতে খানিকটা ব্যাথা পেয়েছে,,,ছিলেও গিয়েছে।।আশফি তার ড্রয়ার থেকে ফার্স্ট এইড বক্সটা নিয়ে এসে মিতুর হাতে ওষুধ দিতে লাগলো,,,,আর বলতে লাগলো-;

-: সাবধানে কোন কাজ করতে পারিস না।।তুই আর তিথি দুজনেই একই রকম,,,একটু সাবধানে হাঁটাচলা করলে কি হয় বলতো তোদের।।

আসফি এতগুলো কথা বলছে কিন্তু মিতুর সেদিকে কোন খেয়ালই নেই সে তো একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আশফির দিকে।।

আর এদিকে তিথি আনন্দে নিজের ঘরে এসে নাচতে লাগলো,,,সে তো ইচ্ছা করেই মিতুকে অমন ঠেলা দিয়েছিল।।

হঠাৎই তিথির ফোন বেজে উঠলো,,,ফোনটা হাতে নিয়ে সে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল,,,এখন সে কি করবে……
.
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]

তোমাকে আমার প্রয়োজন পর্ব-১০

0

#তোমাকে আমার প্রয়োজন??
#মেঘ পরী??

??পর্ব-১০??
.
?
.
.

আজ তিন দিন হল তিথি তার বাসায় এসেছে।তিথি ফিরে আসায় বাসাটা যেন পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।সারাদিন মামা আর ভাইয়ার সাথে দুষ্টুমি করে আর মিতুর সাথে ফোনে কথা বলে তার দিন অতিক্রান্ত করছে।

আর নিলয়ের কাছে এই তিনটে দিন যেন তিনটে বছরের সমান মনে হয়েছে। সারাদিন তিথির ছবিটার দিকে তাকিয়ে নিজের সময় অতিক্রান্ত করছে।তিনটা দিন সে তিথির মুখ দেখেনি সামনে থেকে,,,তিথির গলা শোনেনি। তিথির বাচ্চা বাচ্চা কতগুলোকে খুব মিস করছে নিলয়।তবে বেশিক্ষণ তাকে এসবকিছু সহ্য করতে হবে না,,, নিলয় ঠিক করে ফেলেছে তাকে কি করতে হবে। নিলয় মনে মনে ভাবছে-;

-: অনেক জ্বালিয়েছ তুমি আমাকে তিথু পাখী,,, নাও ইটস মাই টার্ন।সো বি রেডি ফর দিস পাখী।

তারপর নিলয় ফোনটা বের করে কাকে যেন ফোন করলো,, কিছুক্ষণ পর ফোন রিসিভ করার পর নিলয় তাকে বলল-;

-: কাজটা হয়েছে???

ওপর পাশে ব্যক্তিটি কি বলল তা শোনা গেল না,,,তারপরেই নিলয় ফোনটা রেখে দিল। নিলয় ফোনটা রাখার পর বাঁকা হেসে বলল-;

-:এবার কোথায় পালাবে পরী।তোমাকে যে আমার কাছে ধরা দিতেই হবে।কারন #তোমাকে আমার প্রয়োজন।।
.
.
?
.
.
এদিকে তিথির মামি তিথির আনা সোয়েটারটা পড়ে বিভিন্ন স্টাইলে পোজ দিচ্ছে,,, আর তিথি নাচতে নাচতে তার ছবি তুলেছে। তিথির মামা চেয়ারে বসে,,, তার তেল চিটচিটে টাকলা মাথায় আইসব্যাগ দিয়ে রেখেছে এক হাতে,, আর আরেক হাতে ছোট হাতপাখা দিয়ে নিজেকে হাওয়া করতে করতে তিথি এবং তিথির মামির কাণ্ডকারখানাগুলো দেখছে।তিথি বাড়িতে যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত তার মামার টাকে আইসব্যাগ টাও থাকে,,, শুধুমাত্র রাতের শোবার টাইম টা বাদ দিয়ে।কারণ বাড়িতে থাকাকালীন তিথি যে সমস্ত কান্ড করে তা সাধারন মানুষের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব নয়।অথচ তিনি কিছু বলতেই পারেন না তার গুণধরী একমাত্র বউ টার জন্য,,,কিছু বলতে গেলেই খুন্তি নিয়ে তেড়ে আসে,,,আর নয় তো তাকে সব সময় ঝাঁঝালো গলায়, বিদ্রুপ করে বলে-;

-: বলেছিলে তো বাসর রাতে আমাকে নিয়ে প্যারিস ঘুরতে যাবে,,হানিমুনে।তা আজ,,,,তো দেখতে দেখতে ২৭ টা বছর কেটে গেল,,,প্যারিসে যাওয়ার টিকট ও তো চোখের দেখা দেখলাম না। এখন তো ছেলে মেয়েদের সময় হয়ে এসেছে,, হানিমুনে যাওয়ার,,তা কবে হানিমুনে নিয়ে যাবে আমাকে,,শুনি।

ব্যাস এই একটা কথাই তিথি মামার মুখে টেপ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।মাঝে মাঝে তার মনে হয় সংসার জীবন ত্যাগ করে অনেক দূরে কোথাও চলে যেতে।কোন কুক্ষণে যে বাসর রাতে তার বউ কে কথা দিয়েছিল যে সে তাকে হানিমুনে প্যারিস ঘুরতে যাবে,,,তা কেবল উপরওয়ালাই জানে,,যত্তসব।তিথির মামা অনেক্ষন ধরেই মামি-ভাগ্নির লোকাল ড্রামা দেখছিল চুপ করে।। কিন্তু এবার আর চুপ করে থাকতে পারল না বলেই ফেলল-;

-:আচ্ছা তোমাদের কি মিনিমাম কমনসেন্স বলতে কিছুই নেই,,,এই গরমে কেউ এরকম সোয়েটার পড়ে সং সেজে ফটো তোলে নাকি,, যতসব জোকার এসে আমার বাড়িতেই জুটেছে।

মামার এমন কোথায় মামি তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল,, আর বলল-;

-:কি বললা তুমি আমি সং,,,আয়নার সামনে গিয়ে নিজেকে একবার ভালো করে দেখে এসো। কে সং আর কে জোকার তা তুমি নিজেই বুঝতে পারবে।

তিথি তার মামিকে আর একটু ক্ষেপানোর জন্য বলে উঠলো-;

-: আরে মামি,,,বুঝছো না কেন মামা তোমার গ্ল্যামার দেখে হিংসায় জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে।

-: তা আর বলতে।কেউ তো আর ওই চকচকে মাথার জন্য ফিরেও তাকায় ওর দিকে। তাই আমার রূপ দেখে হিংসে হচ্ছে।(মামার দিকে তাকিয়ে দাঁত কড়মড় করে বলতে লাগল)

-: কারেক্ট,,,একদম ঠিক বলেছ মামি।।

-: কি তুমি আমাকে এত বড়ো কথা বলতে পারলে,,, তুমি না আমার বউ। শেষ পর্যন্ত আমার মাথাটাকেও রেহাই দিলানা তোমরা মামি-ভাগ্নি(মন খারাপ করে,, টাকে হাত বুলাতে বুলাতে)

তিথির মামী একবার মামার দিকে তাকিয়ে ভেংচি কেটে আবার নিজের পোজ দেওয়ায় মনোযোগী হলেন।হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলো,,,মামা গিয়ে দরজাটা খুলে সামনে তাকিয়ে দেখলেন একজন কুরিয়ার বয় দাঁড়িয়ে আছে।

-: কাকে চায়?

-:জি এখানে তিথি আহমেদ আছে। আসলে উনার জন্য একটা পার্সেল আছে।

-: আমি তিথির মামা আমার কাছে দিন,,,আমি ওকে পার্সেলটা দিয়ে দেবো।

-:আচ্ছা ঠিক আছে।

তিথি মামা পার্সেলটা নিয়ে ঘরে ঢুকে তিথির হাতে পার্সেল টা দিলেন।।তিথি পার্সেলটার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ভাবছে এইসময় তার জন্য পার্সেল কে পাঠাতে পারে।আর কিছু না ভেবে পার্সেলটা নিয়ে উপরে চলে গেল।পার্সেলটা খুলতেই তিথি অবাক হয়ে গেল কারণ পার্সেল এর ভিতরে একটা দামি স্মার্টফোন রাখা।তিথি স্মার্টফোন টা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে দেখলো।।তিথি কিছুতেই বুঝতে পারছেনা যে এত দামি স্মার্টফোন তাকে কে দিতে পারে। হঠাৎ তিথির নজর গেল পার্সেলটির মধ্যে থাকা একটা সাদা খামের উপর।।সাদা খামটা তুলতেই দেখল যে সেটা একটা চিঠি,,,তিথি চিঠিটা খুলে পরতে শুরু করলো-;

প্রিয়,
আমার পিচ্চি পরী,❤️❤️

কেমন আছে আমার পিচ্চি পাখিটা।আমাকে কী তার মনে পড়ে,,,আমার তো মনে হয় একদমই ভুলে গেছে সে আমাকে।। কিন্তু সে কি জানে তার বিরহে আমি জল ছাড়া মাছের মত প্রতিটা মুহূর্তে ছটফট করছি।।সে তো চলে গেছেই আর তার সাথে চুরি করে নিয়ে গেছে আমার জীবনের রং আর ছন্দ।সে কি জানে এই তিনটা দিন আমার কাছে তিনটি বছরের মত মনে হয়েছে।প্রতিটা মুহূর্তে তার মায়াময় মুখ,,,মুখের কোণে সবসময়ের ঝুলে থাকা তার সেই মনকাড়া হাসি,,আর তার মিষ্টি দুষ্টুমি গুলোকে যে আমি খুব মিস করছি।।পাগলীটা কি জানে তার অস্তিত্ব আমার প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে গিয়েছে।।না সে এসব কিছুই জানে না,,,সে তো একটা বাচ্চা মেয়ে।এই পিচ্চি শুনে রেখে তুমি অবুঝ হতে পারো কিন্তু আমি অতো অবুঝ নয় বুঝেছ তুমি। আমি আর পারছিনা তোমার বিরহ মেনে নিতে। তাই এই ফোনটা পাঠাচ্ছি,,যাতে তোমার মিষ্টি গলার সুর শুনে কিছুটা হলেও আমার হৃদয় কে ভোলাতে পারি।।আর খবরদার ফোনটা ভুলেও কাউকে দেবে না,,,আর ফোনটায় নতুন সিম লাগানো আছে,,,রাতে আমি ফোন করবো ফোনটা সাথে সাথে যেন রিসিভ করা হয় বুঝেছ।।নইলে তোমার খবর আছে।
ইতি-;
তোমার বিরহে পাগল প্রেমিক।♥️♥️

তিথি চিঠিটা পড়ে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে বসে রইল।।কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পেরেছে যে তাকে কে এই চিঠি এবং ফোন পাঠাতে পারে।চিঠি টা পরে নিজের অজান্তেই তিথি হেসে ফেলল।অবশ্যই ফোনটা পেয়ে সে খুশিই হয়েছে,,, তার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল এরকম একটা ফোন কেনার।।কিন্তু মামা তাকে বলেছিল এইচএস এক্সাম দেওয়ার পরেই,,,তাকে ফোন কিনে দেবে।কিন্তু এখন ফোন টাকে লুকিয়ে রাখতে হবে,,,নয়তো কেউ দেখে ফেললেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে।।

তিথি ফোনটা খুলতেই দেখল ফোনে আগে থেকেই সিম দেওয়া আছে এবং ওয়ালপেপারে নিলয় এবং তিথির একটা ছবি সেট করা আছে।।তিথি ছবিটার দিকে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল,,,নিজেও জানেনা যে কখন ছবিটা তোলা হয়েছিল।।সেদিন রেস্টুরেন্টে নিলয় এবং তিথি যখন বসে ছিল তখনকার ছবি এটা।এইবারে তিথি পুরোপুরি নিশ্চিত হলো যে এটা নিলয়ের ই কাজ।।হঠাৎ ফোনে একটা মেসেজ এলো,,তিথি মেসেজটা ওপেন করতেই দেখলো,,, সেখানে লেখা আছে-;

“”রাত দশটায় ফোন করবো।।ফোনটা যেন প্রথমবারেই রিসিভ করা হয়,,,নাইলে খবর আছে।””

তিথি মেসেজটা দেখে মনে মনে বলল-;

-:ঘরে এসেও শান্তি পাবো না।

বলে ফোনটা বালিশের তলায় রেখে দিয়ে,,, চিঠি এবং বক্সটা আলমারিতে ঢুকিয়ে রাখল।।

.
.
?
.
.
তিথি রাতে ডিনার করে,,,যখন ঘরে ঢুকল তখন দেখল অলরেডি দশটা দশ বেজে গিয়েছে।।সঙ্গে সঙ্গে বালিশের নিচ থেকে ফোনটা তুলে চেক করতেই দেখল নিলয়ের টেন প্লাস মিসড কল।।যেই কল ব্যাক করতে যাবে তখনই ফোনটা বেজে উঠলো,,,তিথি সঙ্গে সঙ্গে ফোনটা রিসিভ করল। ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে নিলয় চেঁচিয়ে বলে উঠলো-;

-:কোন কাজে ব্যস্ত ছিল শুনি,,যে আমার ফোনটা ধরার সময় পেলে না।।কি হল কথা বলছো না কেন স্পিক আপ ড্যামেট।।

নিলয়ের ওমন চিৎকারে তিথি কিছুটা কেঁপে উঠলো তারপর নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল-;

-:আ…আসলে ডি…ডিনার করতে এক..একটু লেট হয়ে গিয়েছিল।তাই ফোনটা রিসিভ করতে পারিনি।।

তিথির জবাব শুনে নিলয় কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে তারপরে বলে উঠলো -;

-: কতদিন তোমার গলার আওয়াজ শুনিনি,,,কেমন আছো তিথু পাখি।।

-:জ্বি…জ্বী ভালো,,,আপনি কেমন আছেন।।

-:যেমনটা তুমি রেখে গিয়েছো ঠিক তেমনটাই আছি।।

-:মা..মানে।।

-: মানে আর এখনো যদি না বুঝতে পারো তবে আর কবে বুঝবে।।

বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল,,তারপর আবার বলল-;

-:তবে আর চিন্তা করতে হবে না এবার থেকে আমি তোমাকে সব কিছুই শিখিয়ে দেবো।(বাঁকা হেসে)

-:কি..কি শিখিয়ে দিবেন।।(কনফিউজড হয়ে)

-:এই যে প্রেম,,ভালোবাসা কিভাবে করতে হয়।।

-:কি..কি সব যাতা বলছেন আপনি।।(ঢোক গিলে বলল তিথি)

-: এখন এসব কথা ছাড়ো।।আগে বলতো কাল তুমি স্কুল যাবে।।

-:কেন??

নীলয় রাগী সুরে বলে উঠল-;

-: যেটা বলেছি তার উত্তর দাও যাবে হ্যাঁ অথবা না।।

-:যাবো।।

-:গুড,,,স্কুল ছুটি হওয়ার পর গেটের সামনে দাঁড়াবে,,, আমি তোমাকে নিতে আসবো।আর কোথাও যাওয়ার চেষ্টাও করবে না নইলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না,,, বুঝেছ ওয়াট আই সে।।

নিলয়ের কথা শুনে তিথি অবাক হয়ে নিলয়কে জিজ্ঞাসা করল-;

-:মানে কি যা তা বলছেন,,,আপনি আমাকে নিতে আসবেন মানে।।

-:চুপচাপ যা বলছি তাই করো বেশি কথা আমার একদম পছন্দ না।।অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়ো,,ঠিক আছে আর কালকে সময় মতন পৌছে যাব যদি তোমাকে না পেয়েছি তো তোমার বাসায় চলে আসবো,,,সো বি কেয়ারফুল।ওকে বাই,,,গুড নাইট।।

বলেই ফোনটা রেখে দিল।।এদিকে তিথির মাথা পুরো হ্যাং হয়ে যাচ্ছে।দাঁত দিয়ে নখ কাটছে আর পুরো ঘর এমাথা থেকে ও মাথা হাঁটছে আর বিড় বিড় করে বলছে-;

-: এই উগণ্ডাটা আমাকে একটুও শান্তিতে থাকতে দেবে না।পৃথিবীতে কি মেয়ের অভাব ছিল যে দেখে দেখে আমাকেই ভালোবাসতো হল।আচ্ছা সে কি আমাকে সত্যিই ভালোবাসে।উফ্ আমি আর টেনশন নিতে পারছিনা,,,একটা বাচ্চা মানুষকে পেয়ে এত জালিম আল্লাহ কিছুতেই সহ্য করবে না।।দেখে নিস তোর কি হাল হয় তোর বউ বাসর রাতেই তোকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে।।উফ্ তিথি কি হবে তোর,,,,তুইতো এবার পাগলই হয়ে যাবি।।না না তিথি এসব কথা বাদ দিয়ে,,,এখন ঘুমিয়ে পড়,,,কাল যদি স্কুলে যেতে না পারিস,,,, তাহলে ওই কালা কুমির তোর বাসায় সিওর চলে আসবে।ওই গন্ডারটা পারেনা এমন কোন কাজ নেই।। তুই বরং ঘুমিয়ে পড়।।

এই বলে তিথি খাটে গিয়ে শুয়ে পরলো,,, আর কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি দিল।।
.
.
?
.
.
সকাল দশটায় ব্রেকফাস্ট করে মিতুর সাথে তিথি স্কুলে চলে গেলো।।প্রতিদিন তিথির ভাইয়া তাকে স্কুল থেকে নিতে আসে কিন্তু আজ তিথি তার ভাইয়াকে আসতে বারণ করে দিয়েছে শুধুমাত্র নিলয় এর জন্য।।কারণ নিলয় তাকে নিতে আসবে বলেছে।।

এদিকে তিথি বারণ করেছে বলে তিথির ভাইয়া তাকে নিতে আসবে না এইটা শুনে,,,মিতু মন খারাপ করে তিথির সাথে কথা বলছে না।।মিতু যে মনে মনে তিথির ভাইয়াকে পছন্দ করে,, তা একমাত্র তিথীই জানে। কারণ তিথি আর মিতু ছোটবেলা থেকেই একে অপরের বেস্ট ফ্রেন্ড,,, কেউ কারোর কাছ থেকে কোন কথা লুকিয়ে রাখে না। সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও মিতু তিথির বাড়ি যায় তিথির সাথে কথা বলার অজুহাতে,,, শুধুমাত্র তিথির ভাইয়া আশফিকে একপলক দেখার জন্য।।এই নিয়ে তিথি যে কতবার মিতুকে জ্বালিয়েছে তার কোন হিসাব নেই।।তিথি বুঝতে পারে মিতু মনে মনে তার ভাইয়াকে ভালবাসে।। কিন্তু আশফি তো এইসব ভালোবাসা টালোবাসা বিশ্বাসই করে না,,,তাই কোনদিনও সে এইসবের দিকে ফিরেও তাকায়নি।।

কিন্তু মিতুও হেরে যাওয়ার মেয়ে নয়। সে মনে মনে ঠিক করেই নিয়েছে যদি বিয়ে করেতেই হয় তাহলে একমাত্র আশফি কেই করবে নয়তো কাউকে নয়।অনেকবার সে তার মনের কথাগুলো আশফি কে বলার চেষ্টা করেছিল,,, কিন্তু আশফির কাছে গেলেই তার সব গুলিয়ে যায়,,, তাই আজ পর্যন্ত তার মনের কথাগুলো সে তাকে বলতে পারেনি।তিথি সাত থেকে আট দিন বাড়িতে ছিল না বলে সবথেকে বেশি কষ্ট মিতুই পেয়েছিল কারণ সে আশফিকে সাত থেকে আট দিন দেখেনি।।।তাই সে ভেবেছিল আজ তাকে দেখবে কিন্তু তার আশায় এক বালতি জল ঢেলে দিল তিথি,,,আর তাই সে তিথির সাথে কথা বলছে না।।

পুরো ক্লাসে তার সাথে কথা বলিনি,,তিথি অনেকবার চেষ্টা করেছে কিন্তু তাও বলেনি।।শেষে তিথি নিলয়ের এ ব্যাপারে সবকিছু খুলে বলতে মিতু তিথির সাথে কথা বলেছে।কাল স্কুল ছুটি থাকবে তাই তিথি মিতুকে দুপুরে তাদের বাসায় আসতে বলল কারন কাল আশফিও বাড়িতে থাকবে,,,এতে মিতু খুশিতে তিথিকে জড়িয়ে ধরল।।

বিকেল সাড়ে চারটের সময় স্কুল ছুটি হল।স্কুল ছুটির পর মিতু তিথির জন্য দাঁড়াতে চেয়েছিল কিন্তু তিথি তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।।এরপর নিলয়ের কথামতো তিথি গেটের সামনে দাঁড়িয়ে রইল।কিছুক্ষণ পর একটা কালো গাড়ী তার সামনে এসে দাড়ালো,,দরজা খুলে বেরিয়ে এল নিলয়।তিথি নিলয়ের দিকে একবার তাকালো ব্রাউন কালারের ফুল হাতা শার্ট,, শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত গোটানো।। হোয়াইট কালারের জিন্সের প্যান্ট,,চোখে একটা সানগ্লাস।সিল্কি চুল গুলো কপাল ছুঁয়ে যাচ্ছে বারবার।এককথায় নিলয়কে অসাধারণ লাগছে,,,তিথি নিজের অজান্তেই বারবার নিলয়ের দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে।।

আর এদিকে নিলয় একদৃষ্টিতে তার মায়াপরীর দিকে তাকিয়ে আছে সাদা কামিজের উপর সবুজ ওড়না ভাঁজ করে দুদিকে সেফটিপিন দিয়ে লাগানো,,,দুই দিকে বিনুনি করে চুল বাধা,,,আর কাধে একটা ব্যাগ।।পুরো পিচ্চি পরী লাগছে। চোখ ফেরানো যাচ্ছে না।।

নীলয়ের ওমন তাকানো দেখে তিথি নিলয় কে বলল-:

-:কি বলার তাতাড়ি বলুন আমাকে এক্ষুনি যেতে হবে।।

তিথির কথায় নিলয়ের ধ্যান ভাঙলো,,, তারপর তিথিকে আর কিছু বলতে না দিয়ে,,, তিথির হাত ধরে গাড়িতে বসিয়ে দিল।।তারপর নিজে তিথির পাশে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিল।
.
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]

তোমাকে আমার প্রয়োজন পর্ব-০৯

0

#তোমাকে আমার প্রয়োজন ??
#মেঘ পরী??।

??পর্ব-৯??
.ঙঢ
?
.
.
তিথি খুশিতে গদগদ হয়ে নিজের জামাকাপড় গোছাতে লাগলো।তিথি এ বাড়িতে এসেছিল খালি হাতে,,আর এখন এক ট্রয়লি জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে নিজের সাথে। নিলয়ের দেওয়া চারটে বড় বড় টেডি,,জামা কাপড়, তিথির পছন্দের খাবার।কাল রাতে নিলয়কে বলে মামির জন্যে একটা সয়েটার ও আনিয়ে নিয়েছিল,,,যাতে কেউ সন্দেহ না করে। আর মিশু কেও ফোন করে জানিয়ে দিয়েছে,,,যে কেউ তাকে ফোন করলে সে যেন বলে যে তারা আজই বাড়ি ফিরবে। এরমধ্যে দু-একবার মামি মিতুকে ফোন করে তার ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়েছে,,মিতু প্রত্যেকবার বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দিয়ে তা কাটিয়ে দিয়েছে। আজ তিথি তার বাড়ি যাবে একথা ভেবে তিথি খুব খুশি হচ্ছে,,,,তার সাথে একটু মন খারাপও হচ্ছে যতই হোক এতদিন সে এ বাড়িতে ছিল। তিথি এবাড়ির সবাইকে খুব মিস করবে,,,হয়তো কখনো কোন এক সময় নিজের মনের অজান্তেই নিলয়কেও মিস করবে,,,লোকটা যতই লুচু,,রাগী,,বদমেজাজি লোক হোক না কেন,,,সে তো এতদিন ‌তাকে নিজ দায়িত্বে এ বাড়িতে রেখেছিল,,,যখন যা চেয়েছে তখন তাই দিয়েছে। অন্য কিডন্যাপার হলেও কী তাকে নিলয়ের মতোন এভাবেই যত্ন
করতো,,হয়তো হ্যাঁ আবার হয়তো বা না।এসব কথা ভাবতে ভাবতে তিথি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।

কিছুক্ষণ পর নিলয় তিথির রুমে এসে দেখে তিথি নিজের জিনিসপত্র গোছাচ্ছে।।নিলয় তিথির কাছে গিয়ে তিথিকে জিজ্ঞেস করল-;

-: তোমার সবকিছু গোছানো হয়ে গিয়েছে,, তুমি ‌কী রেডি।। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা বেরোবো।

তিথি নিলয়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বলল-;

-; হ্যাঁ আমার সব রেডি হয়ে গেছে।।

নিলয় কিছুক্ষণ তিথির দিকে তাকিয়ে,, কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেল।তারপর তিথি কে বলল-;

-: তুমি নিচে এসো আমি গাড়িতে ওয়েট করছি।

-:জি।।

তিথি আরো একবার রুমের সবকিছু‌তে নিজের হাতের স্পর্শ দিয়ে দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে গেল।। যাওয়ার আগে শেফালী,, রামু চাচা,,রাফিক চাচা(মালি) সবাইকে বিদায় জানিয়ে এলো।।তিথির যাওয়াতে সবারই মন খারাপ,,, এতদিন তিথি কতইনা দুষ্টুমি করেছে তাদের সাথে,,,ঝগড়া করেছে,,হেসেছে,,খেলেছে।।আর আজ তিথি তাদের কাছ থেকে চলে যাচ্ছে,, আবার আসবে কি কেউ জানে না।। প্রত্যেকেরই চোখ ছল ছল করছে,, এমনকি তিথির নিজেরও।আর নিলয় তো অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে রেখেছে। তিথি যাবার সময় রামু চাচার গাল নিজের এক হাত দিয়ে চেপে ধরে বলল-;

-: এইযে বুড়া আমার ড্রেসতো ভুলভাল এনেছিলে ঠিক আছে কিন্তু অন্যকারোর ড্রেস আবার এরকম ভুল করে আনো না যেন।সবাই কিন্তু আমার মত ভালো হবে না।।(কিছুটা ভাব নিয়ে)

তারপর শেফালী দিকে তাকিয়ে বলল-;

-: এইযে ভিতুর ডিব্বা,, আমাকে তো ফাঁসিয়ে দিয়েছিলে তোমার স্যারের কাছে,,,চাকরি হারানোর ভয়েতে।আমি যদি কোনোদিন শুনেছি তুমি অন্য কারো সাথেও এমন করেছ,, তাহলে তোমার খবর করে ছেড়ে দিব বলে দিলাম।

তারপর রফিক চাচার দিকে তাকিয়ে নিজের দুই হাতে নিজের কান ধরে বলল-;

-:সরি!!এখানে সব থেকে বেশি আমি তোমাকেই জালিয়েছি,,, তুমি যতবার ফুল তুলতে নিষেধ করেছ আমি ততোবারই ফুল তুলেছি। ফুল তুলতে নিষেধ করেছিলে বলে,,তোমার জামার ভিতর লাল পিঁপড়া ও ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম।।

কথাগুলো মজার ছলে তিথি সবাইকে বলছিল,,,যাতে সবাই একটু হাসে।কিন্তু হাসার পরিবর্তে সবাইদের চোখের কোন দিয়ে জল গড়িয়ে পরল। তিথি নিজেকেও সামলে নিল,,, তারপর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠে গেল। গাড়িতে উঠে নিলয়ের দিকে তাকাতেই তিথি ঘাবড়ে গেলো,,, নিলয়ের চোখ লাল টকটকে হয়ে আছে,,, ফর্সা চেহারায় রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে মনের বেদনাকে লুকানোর ব্যর্থ চেষ্টা। কিন্তু তিথির মতো গাধী পৃথিবীতে মনে হয় অনলি ওয়ান পিস ই তৈরি হয়েছে,,, নিলয় কে দেখে তিথি জিজ্ঞাসা করল-;

-: আচ্ছা আপনার কি রোদে এলার্জি আছে।না মানে আপনার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে,,, তাই আর কি।।আপনি সানসস্ক্রিম ইউস করতে পারেন,,, তাহলে আর আপনার কোন প্রবলেম হবেনা।।

তিথিকে দেখে নিলয়ের মনে হচ্ছে এক্ষুনি তাকে গুনে গুনে তিন-চারটে থাপ্পর মারতে,,,তার বিরহে নিলয়ের যায় যায় অবস্থা,, অনেক কষ্ট নিজেকে সামলাচ্ছে,,,,আর তার উপর তিথির এমন জোকার মার্কা উদ্ভট প্রশ্ন। এখন নিলয়ের নিজের কপাল নিজেরই চাপড়াতে ইচ্ছে করছে,,,,কেন সে এমন পিচ্চি মেয়েকেই ভালোবাসতে গেল,,দুনিয়াতে কী মেয়ের অভাব পড়ে ছিল।।নিলয় তিথিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে,,,ড্রাইভ করাতে কনসেনট্রেট করল।

আধাঘন্টার মধ্যে তিথিদের বাড়ির অনেক টা সামনে তারা পৌঁছে গেল,,,আরেকটু সামনে যেতেই তিথি চিৎকার দিয়ে উঠলো,,, নিলয় সঙ্গে সঙ্গে জোরে ব্রেক মারলো,,, তারপর তিথির দিকে তাকাতেই তিথি বলল-;

-: আসলে বাড়ির লোক জানে আমি মিতুর সাথে ঘুরতে গিয়েছি আমি যদি বাড়িতে যান তাহলে বাড়ির লোক সব জেনে যাবে।।তাই আপনি আমাকে এখানেই নামিয়ে দিন আমি একা চলে যেতে পারবো,,,,এইতো সামনেই আমার বাড়ি।।

-:তার কোন প্রয়োজন নেই।।আমি তোমাকে তোমার বাড়িতেই পৌঁছে দিয়ে আসবো।।আর সব সত্যি কথা ও তাদেরকে জানিয়ে আসবো,,,,সত্যি কথাটা তাদের জানা প্রয়োজন।।

-: প্লীজ এমন করবেন না বাড়িতে জানলে সবাই অনেক কষ্ট পাবে।।

নিলয় কিছুক্ষণ তিথির দিকে তাকিয়ে থেকে,,বলল-;

-: ওকে বাট আমি তোমার পিছু পিছু তোমার বাড়ি পর্যন্ত যাবো,,,,তুমি তোমার বাড়িতে ঢুকে গেলে তবেই আমি ব্যাক করব,,,রাজী।।

তিথি কিছু একটা ভেবে বলল-;

-:ওকে ঠিক আছে,,,কিন্তু কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে আসবেন যাতে কেউ সন্দেহ না করে,,,ওকে।।

-:হুম।

-:তাহলে আসছি আমি,,,,আপনি আপনার খেয়াল রাখবেন ঠিক আছে টাটা।

বলে গাড়ি থেকে বেরুতে নিলেই,,, তিথি নিজের হাতে একটা টান অনুভব করলো।পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখলো নিলয় তার এক হাত টেনে ধরে আছে,,,আর মাথাটা ড্রাইভিং সিটের উপর রেখে,,,,একহাত কপালের উপর রেখে,,,,চোখ বন্ধ করে আছে।। কিছুক্ষণ পর নিলয় চোখ খুলে,,,তিথিকে একটানে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিল। তারপর নিজের বাম হাতে তিথির কোমরের সাথে পেঁচিয়ে নিল আর ডান হাতে তিথির সামনে থাকা ছোট ছোট চুলগুলোকে কানের পিছনে গুজে দিল।। তারপর তিথির গালে হাতে রেখে শান্ত কণ্ঠে বলতে লাগলো-;

-:তিথু পাখী নিজের খেয়াল রাখবে,,, সময়মতো ডিনার করবে আর খবরদার রাতে উল্টোপাল্টা জিনিস খাবে না ডিনার না করে ঠিক আছে। ভালো করে পড়াশোনা করবে,,,দুষ্টুমি করবে তবে কম,,ঠিক আছে।আচ্ছা তিথু পাখী তোমার আমার কথা মনে পড়বে না,,, আমার জন্য কষ্ট হবে না।যানো তিথু পাখী আমার না এই জায়গাটাই আজ প্রচন্ড ব্যাথা করছে(নিজের বুকের বাম তিথির হাত চেপে ধরে),,,মনে হচ্ছে আমার কোন প্রিয় জিনিস আমার কাছ থেকে দূরে চলে যাচ্ছে।তুমি এতো পিচ্চি কেন তিথু পাখী,,,একটুও কী বুঝবে না আমার কষ্টটা।

কথাগুলো বলতে বলতে নিলয় গলা বারবার কেঁপে উঠছিল।তারপর কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার তিথি কে বলল-;

-:কিন্তু তুমি যদি ভেবে থাকো যে তুমি আজ বাড়ি যাচ্ছো বলে আমার কাছ থেকে সারা জীবনের মতো মুক্তি পেয়ে যাচ্ছ,,,তা তোমার সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।।দিনের কোনো এক মুহূর্তে তোমার ছায়াও তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে,,কিন্তু নিলয় চৌধুরী দিনের ২৪ ঘন্টাই তোমার পাশে থাকবে।তুমি কোথায় যাচ্ছ,,,কি করছো,,,কার সাথে মিশছো,, সব খবর আমার কাছে টাইমলি চলে আসবে। সো বি কেয়ারফুল তিথু পাখী।ছেলে বন্ধুদের সাথে প্রয়োজন ছাড়া বেশি কথা বলবে না,, আর নিজের খেয়াল রাখবে ঠিক আছে।।

নিলয়ের এমন কথা শুনে তিথি ফ্যাল ফ্যাল চোখে নিলয় এর দিকে তাকিয়ে আছে। আর নিলয় তো তার মায়াপরীকে দেখতে ব্যস্ত,,, আবার কবে দেখা পাবে তার কোনো ঠিক নেই। আর কিছু না ভেবে নিলয় তিথির কপালে গভীর উষ্ণ ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে তিথিকে শক্ত করে নিজের সাথে চেপে ধরল নিজের সাথে।।কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিয়ে,,,তিথির গালে নিজের হাত দিয়ে স্লাইড করতে করতে বলল-;

-: ডু ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড হোয়াট আই টেল???

-:জি…জি।।

তারপর তিথি গাড়ি থেকে বেরিয়ে,,, নিজের বাসার দিকে হাঁটা দিল,,,,আর নিলয় তিথির পিছু পিছু তিথির বাসা পর্যন্ত তিথিকে এগিয়ে দিল,, আর সাথে তিথির বাসাটাও চিনে নিল।। তারপর তিথি বাসায় ঢুকে গেলে,,,নিলয় আবার নিজের গাড়িতে বসে নিজের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিল।।
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]

তোমাকে আমার প্রয়োজন পর্ব-০৮

0

#তোমাকে আমার প্রয়োজন??
#মেঘ পরী??

??পর্ব-৮??
.
?
.
.
তিথি ঘুম থেকে উঠে অবাক হয়ে সামনে সেন্টার টেবিলের দিকে তাকিয়ে আছে,,,সেন্টার টেবিল এর উপর একটি বড় ট্রে রাখা আছে,,, আর ট্রে-র উপর কুড়ি থেকে ত্রিশ টা ফ্লেভারের কটন ক্যান্ডি রাখা আছে,,,একটা বড়ো রেড কালারের টেডি,,,যেমনটা তিথি কিনেছিল সেদিন মল থেকে।।এছাড়াও তিথির ফেভারিট খাবার,,,যেমন চকলেটস,,,,চিপস,,,জুস,,,বিস্কিট ইত্যাদি জিনিসে ট্রে ভর্তি করে রাখা আছে।তিথি এসব দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে খাট থেকে লাফ দিয়ে সেখানে গেল,, সেখান থেকে একটা কটন ক্যান্ডি তুলতেই পাশে দেখল একটা চিরকুট রাখা আছে,,,তিথি চিরকুটটা তুলে,,খুলতেই দেখল সেখানে বড় বড় করে লেখা আছে””Sorry my sweet Thithu pakhi””লেখাটা দেখে তিথি মনের অজান্তেই হেসে ফেলল,,,তারপর সেখানে থেকে একটা রোজ ফ্লেভার কটন ক্যান্ডি তুলে নিয়ে খেতে লাগলো।।খেতে খেতে হঠাৎ তার নজর গেল দরজার দিকে,,নিলয় দুই পকেটে হাত দিয়ে দরজার পাশে দেয়ালে হেলান দিয়ে,, এক ধ্যানে তিথির দিকে তাকিয়ে আছে।।তিথি নিলয় কে দেখে একটু ভোরকে গেল,,,তখনই নিলয় একপা একপা করে এগিয়ে তিথির কাছে এসে দাঁড়ালো,,আর মুচকি হেসে বলল-;

-: জিনিসগুলো কি ম্যাডামের পছন্দ হয়েছে।।

নিলয়ের এমন কথায় তিথি নিলয়ের দিকে একবার তাকিয়ে থেকে,,মনে মনে বলল-;

-: ব্যাটা এক নাম্বারের লুচু তখন আমার সাথে ওইসব করল,,, আবার চিঠি লিখে আমাকে সরি বলা হচ্ছে।কেনরে মুখে সরি বললে,,,কি তোকে পুলিশে ধরে নিয়ে যেত। আমাকে তখন কত কত বকলো,,,আবার এখন এমন ভাব করছে যেন,,কিছুই হয়নি।হুম।

তিথিকে অমন তাকিয়ে থাকতে দেখে নিলয় বাঁকা হেসে তিথিকে বলল-;

-: এমন ভাবে তাকাবেন না মিস,, নইলে যে প্রেমে পড়ে যাবেন।

তিথি নিলয়ের কথা মুখ ভেংচি দিয়ে বলল-;

-: আমাকে কী পাগল কুত্তায় কামড়েছে,,যে আপনার মত লুচু পোলার প্রেমে পড়বো।।

তিথির অমন কথায়,,নিলয় রাগী চোখে তিথির দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো-;

-: কি বললা তুমি আমি লুচু,,তাহলে তো তোমাকে দেখাতেই হয় আসল লুচু কাকে বলে।।

এই বলে নিলয় যেই তিথির দিকে এগোবে,, তিথি সঙ্গে সঙ্গে নিলয় থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ালো তারপর ভয়ে ভয়ে বলল-;

-: না না আমার অত দেখার দরকার নেই।

তিথির অমন কথায় নিলয় মনে মনে একটু হাসলো তবে বাইরে তা প্রকাশ করলো না। তারপর তিথি ক্যান্ডি খেতে খেতে,,জোরে জোরে শেফালী কে ডাকতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর শেফালী এলে তিথি তাকে বলতে লাগলো-;

-:শেফালী।

-:জি আপামনি।

-: তুমি এসব জিনিসপত্র আমার ঘরে রেখে এসো। কিন্তু তুমি মনে রেখো,,,আমি জিনিসগুলো নিচ্ছি বলে এই নয় যে আমি সব ভুলে গিয়েচি,, সব কিছু মনে আছে আমার,,,আমার সাথে কি কি করা হয়েছিল।।আমি শুধু এই জিনিসগুলো নিচ্ছি কারণ কেউ কোন কিছু দিলে ফিরিয়ে দিতে নেই,, শুধুমাত্র তাই জন্যেই নিচ্ছি।।তাই বলে এই নয় যে আমি সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করব।।

তিথির এমন কথা শেফালী ফ্যালফ্যাল করে তিথি দিকে তাকিয়ে আছে,, তিথি কি বলছে,,,সে কিছুই বুঝতে পারছেনা। এদিকে নিলয় খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে যে তিথি তাকে উদ্দেশ্য করেই কথাগুলো বলেছে।। কারণ তিথি কথাগুলো বলছিল নিলয়ের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে।

হঠাৎ নিলয়ের মাথায় একটা দুষ্টুমি বুদ্ধি এলো,, সে শেফালীকে উদ্দেশ্য করে বলল-;

-:শেফালী তোমার আপামনি তোমাকে যে কাজটা দিয়েছে তুমি বরং সে কাজটাই করো। আরেকটুখনি বাইরে যাও তো,,,যাস্ট দুমিনিটের জন্য,,আমার তোমার আপামনি সাথে কিছু কথা আছে।(তিথি দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বলল)

শেফালী নিলয়ের কথা শুনে যেই ঘর থেকে বেরোবে অমনি তিথি চিৎকার করে বলে উঠলো-;

-: শেফালী তোমাকে আমি যে কাজটা বলেছি,, আগে সেই কাজটা কর। তারপর অন্যজনের কাজ করবে আর আমি এখন আমার ঘরে যাচ্ছি তুমি জিনিসগুলো নিয়ে এসো।।

তারপর শেফালীকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তিথি এক দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল কারণ তিথি ভালো করেই জানে নিলয় তাকে একা পেলে কি কি করতে পারে। তিথির এমন কান্ড দেখে নিলয় শব্দ করে হেসে উঠলো,,, আর শেফালী তো আহাম্মকের মত একবার তিথি যাওয়া পানে চেয়ে আছে আর একবার নিলয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। তারপর সব খাবার গুলো তিথির রুমে দিয়ে আসলো।।
.
.
?
.
.
রাতে নিলয় খাবার টেবিলে এসে দেখলো তিথি নেই। শেফালী কে জিজ্ঞাসা করতেই শেফালী বলল তিথি আজকে খাবে না বলেছে।। নিলয় আর কিছু না বলে এক প্লেট খাবার নিয়ে তিথির রুমের দিকে এগিয়ে গেল। তিথির রুমে গিয়ে দেখল তিথি খাটে বসে বসে চিপস খাচ্ছে আর টিভিতে ডোরেমন কার্টুন দেখছে। নিলয় খাবারটা টেবিলে রেখে তিথির পাশে গিয়ে বসলো,,কিন্তু তাতে তিথীর খেয়ালই সে তো টিভি দেখতে ব্যস্ত।। নিলয় খাট থেকে রিমোট টা নিয়ে টিভিটা অফ করে দিল,,টিভিটা অফ হতেই তিথী পাশে তাকাতেই নিলয় কে দেখে জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলো,, নিলয় সঙ্গে সঙ্গে তিথির মুখ চেপে ধরল তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বললো-;

-:এত জোরে চেঁচানোর কি আছে,, আমি বাঘ না ভাল্লুক।।।আর তুমি ডিনার করোনি কেন,,,,ডিনার না করে এত রাতে তুমি এসব উল্টোপাল্টা জিনিস খাচ্ছ।

তিথি কিছু বলতে পারছে না শুধু উম উম করছে।তিথিকে অমন করতে দেখে নিলয় তিথির মুখ থেকে নিজের হাতটা সরিয়ে নিল,,হাতটা সরিয়ে নিতেই তিথি একটা জোরে নিঃশ্বাস নিলো।। তারপর বলল-;

-:এভাবে কেউ মুখ চেপে ধরে নাকি।নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না।

-:তুমি এইসব কথা রেখে আগে আমাকে বল ডিনার করোনি কেন।।

-:আ…আসলে আজকে ডিনার করতে ইচ্ছা করছিল না,,,তা..তাই।।

তিথির কথা শুনে নিলয় ধমক দিয়ে উঠল তারপর বলল-;

-: তা করবে না কেন এসব উল্টোপাল্টা জিনিস খেলে কার ই বা ডিনার করতে ইচ্ছা করে।চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে সোফায় গিয়ে বসো।

তিথি নিলয়ের কথায় কিছুটা কেঁপে উঠলো,, নিলয় কে কিছু বলতে যাবে তার আগে নিলয় বলে উঠলো-;

-: নো মোর ওয়ার্ডস আমি এখন তোমার কোন কথাই শুনতে চাইনা। চুপচাপ ফ্রেস হয়ে এসো।।

তিথি আর কথা না বাড়িয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল,, সে বুঝতে পেরেছে নিলয় তার উপর খুব রেগে আছে,,ডিনার না করাতে।ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো নিলয় সোফায় বসে আছে,,তিথী আর কিছু না বলে নিলয়ের পাশে সোফায় গিয়ে বসল।। নিলয় প্লেটটা তুলে নিজের হাতে এক লোকমা খাবার তিথি মুখের সামনে ধরতেই,,তিথি বলে উঠলো-;

-:আ… আমাকে দিন,,,,আমি নিজের হাতে খেতে পারব।।

নিলয় তিথীর কথা শুনে তিথীর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে,,,দাঁতে দাঁত চেপে বললো-;

-:সেটা আমিও জানি।তুমি নিজের হাতে খেতে পারবে কিন্তু আমি তোমাকে খাইয়ে দেবো এখন,,নাও হা করো।।

তিথি মাথা নিচু করে বলে উঠল-;
-:আ…আমি পারবো।

নিলয় এবার চেঁচিয়ে উঠলো-;
-: চুপচাপ হা করতে বলেছি,,,হা করো নইলে তোমার কি অবস্থা করব তা তোমার ধারণার বাইরে।।

নিলয়ের কথায় তিথী সঙ্গে সঙ্গে হা করে নিল,,,অন্তত আজকের সকালের ঘটনার পর থেকে তিথির বুঝতে বাকি নেই যে নিলয় চাইলেই কি কি করতে পারে।।নিলয় তিথিকে খাইয়ে,,,নিজেও খেয়ে নিল।।তারপর তিথির মুখ ধুইয়ে,,তিথীকে খাটে শুইয়ে দিয়ে তার কপালে একটা ভালবাসার পরশ দিয়ে,,,লাইট নিভিয়ে চলে গেল।।

নিলয়ের চলে যাবার পর তিথি মনে মনে ভাবছে-;

-:আজকের সকাল থেকে কি হচ্ছে,,,ব্যাটা লুচুর মতিগতি ভালো লাগছে না এবার থেকে সাবধানে থাকতে হবে।। যখন তখন আমাকে কিসি-মিসি করে,,,কালা হাতি কোথাকার,, মেয়ে দেখলেই লুচ্চামি করার জন্য মন ছটফট করে,,বুড়া খাটাশ একটা, না না তিথি এবার থেকে তোকে সবধানে চলতেই হবে।।

এরপর আরও কিছু গালি দিয়ে তিথি ঘুমিয়ে পরল।।
.
.
?
.
.
পরের দিন সকালে নিলয় তিথিকে নিজের রুমে ডাকলো।।রুমে ঢোকার পর নিলয় তাকে তার জন্য এক কাপ কফি আনতে বললো।।তিথি নিলয় দিকে তাকিয়ে বলল-;

-:আপনার কফি তো প্রতিদিন শেফালী নিয়ে আসে,, তবে আজ আমি কেন কফি আনবো।।

নীলয় তিথির দিকে তাকিয়ে বলল-;

-: সেটা তোমার না জানলেও চলবে। এখন থেকে তুমি আমার জন্য প্রতিদিন কফি আনবে,, যতদিন তুমি এখানে আছো ততদিন পর্যন্ত,, মনে থাকে যেন আর যদি অন্য কেউ নিয়ে এসেছে তো তোমার কপালে দুঃখ আছে,,,ডু ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড হোয়াট আই সে।।

তিথি নীলয়ের দিকে তাকিয়ে একটা ভেংচি দিয়ে নিচে চলে গেল কফি আনতে। কিছুক্ষন পর নিলয়ের হাতে কফির মগটা ধরিয়ে তিথি যেই বেরিয়ে আসবে,, তখনই নিলয় তিথীর হাত ধরে দাঁতে দাঁত চেপে,,,বলল-;

-: তোমাকে আমি যেতে বলেছি। আমার থেকে পালাবার খুব শখ তোমার তাই না।

-:ন..না আমি আসলে ভেবেছি আপনার আর কোন দরকার নেই,,ত..তাই আমি….

আর কিছু বলতেন না দিয়ে নিলয় বলল-;

-: তোমাকে আর বেশি কিছু ভাবতে হবে না।।এবার থেকে প্রতিদিন আমি অফিস যাবার আগে তোমাকে যেন আমার রুমে দেখতে পাই,,বুঝতে পেরেছ আমি কি বলেছি।।কথার নড়চড় যেন না হয়,,,বুঝতে পেরেছ।।নাও এখন আমার টাই টা বেঁধে দাও তো,,,জলদি।।

নিলয়ের কথায় তিথি এবার রেগে গেল এতক্ষণ ধরে নিলয় ভয়ে সে কিছু বলছিল না এবার সে মনে মনে কিছুটা সাহস নিয়ে বলল-;

-:এই আমি আপনার বউ নাকি যে,,আমাকে দিয়ে তখন দিয়ে সব কাজ করিয়ে যাচ্ছেন।।

নিলয় তিথির দিকে তাকিয়ে,, শান্ত গলায় বলল-;

-:হতে কতক্ষণ।।

-:মানে!!!(কিছুটা অবাক হয়ে বলল)

-:অতকিছু তোমার এখন না জানলেও চলবে।।এখন তাড়াতাড়ি টাইটা বেঁধে দাও আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।।

-:আমি পারবো না,, নিজের টাই নিজেই বেঁধে নিন।।

-:কি বললা তুমি।।(রেগে বলল)

-:বললাম আমি পারবো না।আপনার কিছু করার থাকলে আপনি তা করে নিতে পারেন,, আই ডোন্ট কেয়ার।।।

এই বলে তিথী যেই বেরিয়ে আসতে যাবে অমনি নিলয় তিথীর হাত ধরে হেচকা টানে নিজের কাছে নিয়ে আসলো,,, তারপর দুহাতে তিথীর কোমর জড়িয়ে তিথীকে একদম নিজের কাছে নিয়ে আসল।।তিথী ছটফট করছে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য,, তা দেখে নিলয় আরো রেগে যায়,,,,এক হাতে তিথির কোমরে কিছুটা চাপ দিতেই তিথী কেঁপে ওঠে,,, নিলয়ের হাত নিজের এক হাত দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরে।।তাও নিজেকে নিলয়ের কাছ থেকে ছারানোর চেষ্টা করতে লাগল,,এটা দেখে নিলয় প্রচন্ড পরিমানে রেগে গেল।।একহাতে তিথির পিছনের চুলটাকে নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে আর এক হাতে তিথীর কোমরটাকে জড়িয়ে ধরে। তারপর নিজের ঠোঁট দিয়ে তিথীর ঠোঁট চেপে ধরে,, কোমরে এক হাত দিয়ে স্লাইড করতে করতে তিথীর ঠোঁট লিক করতে লাগলো রুডলি ভাবে,,, যতক্ষণ না তিথি শান্ত হলো ততক্ষণ পর্যন্ত।। প্রায় পাঁচ মিনিট পর তিথিকে ছেড়ে দিয়ে তিথির গালে নিজের দুই হাত রেখে কপালে নিজের কপাল ঠেকিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে লাগলো। তারপর তিথির দিকে তাকিয়ে দেখল তিথি চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে,,,তা দেখে নিলয় বাঁকা হেসে বলতে লাগলো-;

-:দেখলে তো তিথু পাখী আমি কি করতে পারি তোমার সাথে,,,ইউ হ্যাভ নো আইডিয়া। এতোদিন কিছু বলিনি বলে,,, ভেবোনা নিলয় চৌধুরী কিছু বলতে পারেনা। আমি শুধু এতদিন দেখছিলাম তুমি কি কি করতে পারো,,,নাউ তুমি এবার দেখবে নিলয় চৌধুরী কি কি করতে পারে। এখন থেকে আমি যা যা বলবো তুমি ঠিক তাই তাই করবে,,,নইলে এখন যেটা হলো সেটা বারবার হবে।ডু ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড।সো চুপচাপ যা বলছি তাই কর,,টাইটা বাঁধ।

তিথি নিলয় দিকে করুন চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে,, নিলয়ের টাই বেঁধে দিল। নিলয় যাওয়ার সময় তিথি কপালে একটা ভালবাসার পরশ দিয়ে বলল-;

-: চুপচাপ লক্ষী মেয়ের মত বাসায় থাকবে,, নিজের খেয়াল রাখবে।আর দুপুরের লাঞ্চ টাইম মতো করবে,,ওকে বাই।

এই বলে নিলয় অফিসে চলে গেল,, আর তিথী নিলয়ের যাওয়ার পানে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে নিজের রুমে চলে গেল।
.
.
?
.
.
এইভাবে প্রতিদিন অফিসে যাবার আগে নিলয় এর জন্য কফি নিয়ে আসা,,,টাই বেঁধে দেওয়া সব কাজ তিথিকেই করে দিতে হতো। তারপর রাতে তিথিকে নিজের হাতে খাওয়ানো,, মাঝে মাঝে রাতে তিথির সাথে ছাদে গিয়ে চন্দ্রবিলাস করা,, প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার আগে এবং তিথির ঘুমানোর আগে তিথির কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দেওয়ার মধ্য দিয়ে সাতটা দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেল। তিথি আর সবার সাথে দুষ্টুমি করতে পারলেও,,,ঐদিনের পর থেকে নিলয়ের সামনে আর কোন রকম দুষ্টুমি করার সুযোগ পাইনি। তবে মাঝেমধ্যে নিলয় কে জব্দ করার চেষ্টা একেবারেই করেনি তা নয়।এই তো সেইদিন নিলয় এর অফিসে যাওয়ার আগে নিলয় গাড়ির চাকার হাওয়া লিক করে দিয়েছিল,, আর সব দোষ ড্রাইভারের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিল। সেদিন ড্রাইভারকে কি বোকাটা নাই খেতে হল নিলয় এর কাছ থেকে। এইভাবে হাসি,, রোমান্সের মধ্য দিয়ে সাতটা দিন কেটে গেল। তিথি আজ চলে যাবে,, তাই নিলয়ের মন খারাপ সকাল থেকেই। আজ সে অফিসে যাবেনা তিথিকে ছাড়তে তাদের বাড়ি যাবে।। আর তিথি তো সকাল থেকে লুঙ্গি ডান্স দিচ্ছে,, আজ সে এই জেলখানা থেকে মুক্তি পাবে।।
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]

তোমাকে আমার প্রয়োজন পর্ব-০৭

0

#তোমাকে আমার প্রয়োজন??
#মেঘ পরী??

??পর্ব-৭??
.
?
.
.
তিথী ধীরে ধীরে নিলয়ের ঘরের দিকে এগোচ্ছে,,,,যত তার ঘরের সামনে যাচ্ছে ততই তার বুকের ভিতরে কম্পনের মাত্রা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।।আস্তে আস্তে তিথী নিলয়ের ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে,,মনে মনে আর একবার দোয়া পড়ে নিল।।আসতে আসতে দরজাটা একটু ফাঁক করে,,ঘরের ভিতরে একবার উঁকি মেরে দেখল নিলয় কী করছে।ঘরের ভিতর নিলয়কে দেখতে না পেয়ে তিথী কিছুটা স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলে,,রুমের ভিতরে প্রবেশ করলো। চারপাশে নিলয়কে না দেখতে পেয়ে,,মনে মনে তিথী কিছুটা খুশি হল।

হঠাৎ দরজার আওয়াজে পিছনে ফিরে,,, নিলয়কে দরজা বন্ধ করতে দেখে তিথীর কলিজা কেঁপে উঠল।রাগে নিলয়ের চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে,,,দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে নিলয় ভয়ংকর পরিমাণে রেগে আছে।। নিলয় আস্তে আস্তে তিথির দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো,,, আর তিথি নিলয়ের এমন রাগী চেহারা দেখে,,,ভয়ে বিড়াল ছানার মতো নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে।।হঠাৎ তিথি লক্ষ্য করল যে নিলয় তার দিকে ক্রমশই এগিয়ে আসছে,,এটা দেখে তিথির যায় যায় অবস্থা।।।নিলয়ের এমন এগিয়ে আসা দেখে তিথী ও আস্তে আস্তে পিছিয়ে যেতে লাগলো। তিথির হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি এল নিজেকে বাঁচানোর,,,যেই ভাবা সেই কাজ,,, কিন্তু পালানোর জন্য যখনই দৌড় দিতে যাবে তখনই নিলয় তিথীর হাত ধরে,,,,পাশের দেয়ালে চেপে ধরল। তারপর তিথীর দুই বাহু নিজের দুই হাতে শক্ত করে চেপে ধরে জোরে চেঁচিয়ে বলতে লাগলো-;

-:তোমার সাহস কি করে হয় আমার এত বড় একটা ইম্পর্টেন্ট মিটিং টাকে স্পয়েল করার।।ইউ ইডিয়ট থার্ড ক্লাস মেন্টালিটির একটা মেয়ে,,,,তোমার মিনিমাম কমনসেন্স আছে কি নাই???,,,ইউ হ্যাভ নো আইডিয়া আমার কতটা লস হয়েছে আজকের মিটিং টা ক্যানসেল করায়।।কিন্তু তুমি তো তুমিই।। তুমি তো কিছুই বোঝ না,,তাই না।।যেদিন থেকে আমার লাইফে এসেছ সেদিন থেকেই একটার পর একটা প্যারা দিয়েই যাচ্ছে। এই মেয়ে তুমি কি চাও বলো তো আর কি চাও তুমি।

তিথির চোখে পানি টলমল করছে একেই তো নিলায় খুব জোরে তার দুটো বাহু চেপে ধরেছে,,,তার উপর নিলয়ের এমন কঠিন কঠিন কথায় তিথির খুব কষ্ট হচ্ছে।।তবু তিথি নিজেকে অনেক কষ্টে সামলিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল-;

-:স…স…রি।ভু..ভুল হয়ে গি…য়েছে।।

তিথির এমন কথা শুনে,,নিলয় প্রচন্ড জোরে একটা ধমক দিল,,,,তাতে তিথি কেঁপে উঠলো।।এবার আর নিজেকে আটকে রাখতে পারল না,,,,ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদেই ফেলল।।নিলয় তিথির কান্না করা দেখে,,, আরো রেগে গেল,,আর চিৎকার করে বলতে লাগল-;

-:এই চুপ…চুপ,,,,একদম কাঁদবা না বেয়াদব একটা মেয়ে কোথাকার,,,,, আর একবার কাঁদলে তোমায় তুলে আছাড় মারবো অসভ্য পাজি মেয়ে একটা।। আবার আমাকে সরি বলছে। শুধুমাত্র ওই গাধাদের একটা ভুলের জন্যই তোমার মতন একটা স্টুপিড মেয়েকে আমি এতদিন সহ্য করছি,, তোমার এই ফালতু বকবক কে সহ্য করছি।কেন সহ্য করছি জানো,,কারণ মিনিস্টারের কিছু লোক জানতে পেরে গিয়েছিল যে আমার লোকেরা ভুল করে অন্য একটা মেয়েকে তুলে এনেছে,,,আর তখন যদি তোমাকে আমি ছাড়তাম তাহলে তারা তোমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা সাক্ষী দিতে বাধ্য করত,, পুলিশের কাছে।।। এতে আমাদের তো ক্ষতি হতোই তার সাথে আরও ৯০ জন বৃদ্ধের পেনশন আটকে যেত।। শুধুমাত্র এই একটা কারনেই তোমাকে এখানে আটকে রাখা,,,নইলে তোমার মত মেয়েকে কবেই আমি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতাম।।আর মাত্র কিছুদিন অপেক্ষা করো তারপর আর তোমার এই প্যানপ্যানানি আমাকে সহ্য করতে হবে না।।। তোমাকে আমি তোমার বাড়িতে রেখে আসবো,,,আর আমি একটু শান্তিতে থাকতেও পারব।।আর আজকে যে ভুলটা করেছো তার শাস্তি তো তোমাকে পেতেই হবে,,,আজকের ডিলটা সাকসেসফুল হলে কত মানুষের উপকার হত তা তোমার এই ছোট মাথায় ঢুকবে না।।

বলে নিলয় হাত দিয়ে তিথির মাথায় টোকা মারলো।। তিথি অসহায় দৃষ্টিতে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে আছে আর চোখ থেকে পানি পরছে,,কিছুতেই যেন সে তার চোখের পানি আটকাতে পারছেনা,,,আর কিছু বলতেও পারছে না সব কথা যেন গলার কাছে গিয়ে আটকে পড়ছে। নিলয় তিথীকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তিথীর হাত ধরে টেনে নিয়ে ছাদের ওপরে চলে গেল।।।

বেলা তখন ১২ টা,,,সূর্যের ঝাঁঝালো কিরণ তখন ঠিক মাথার উপরে,,,চারিদিকে গাছপালা,,বাড়ী-ঘর যেন রোদের তেজে পুড়ে যাচ্ছে।।একেই গরমকাল তার ওপরে চৈত্র মাসের বিভৎস গরমে,,বাইরে বেরোনোর জো নেই। খোলা ছাদের উপর দুমিনিট দাঁড়ালেই পা পুড়ে যাওয়ার মত অবস্থা। নিলয় তিথিকে ছাদের মাঝ বরাবর জায়গায় দাঁড় করিয়ে বলল-;

-:তুমি এখন এখানে দাঁড়িয়ে থাকবা, কান ধরে আর এইটাই হল তোমার শাস্তি।।আর ভুলেও নড়ার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করবা না কারণ এখানে সিসিটিভি ক্যামেরা সেট করে রাখা আছে সুতরাং নড়ার চেষ্টা করলেই শাস্তি দ্বিগুন হয়ে যাবে,বুঝতে পেরেছ।নাও এবার কান ধরো।।

তিথি কিছু বলছে না চুপচাপ ভেজা চোখে নিলয় এর দিকে তাকিয়ে আছে।তা দেখে নিলয় আবার ধমক দিয়ে বলল-;

-:কি হল কথা কানে যায় না,,কান ধরো বলছি।।

তিথি এবার কাঁপা কাঁপা হাতে নিজের দুটো কান ধরল,,নিলয়ের আর কিছু না বলে নিচে নেমে গেল আর তিথি নিলয়ের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকল।
.
.
?
.
.
প্রায় দেড় ঘন্টা যাবৎ তিথি ওই গনগনে রোদে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে।।আস্তে আস্তে তিথির সমস্ত কষ্ট ক্ষোভে পরিণত হল।।তার নিলয় উপর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে,,,তার সাথে নিজের ওপরও সে প্রচন্ড রকম বিরক্ত।।সে মনে মনে ভাবছে কেন সে নিলয় কে জব্দ করতে গেল,, তার এই বোকামির জন্য শুধু শুধু নিলয় তাকে এত এত অপমান করল।। শুধু নিলয় বলে এত অপমান সহ্য করেছে,,মুখ থেকে রা পর্যন্ত কাটেনি,, নিলয়ের জায়গায় যদি অন্য কেউ হত না তাহলে এতক্ষণে তার মাথা ফাটিয়ে দিত।।তার সাথে আবার কষ্ট ও লাগছে যে শুধুমাত্র একটা ভুলের জন্য নিলয় তাকে আজ এতটা অপমান করতে পারল। তিথি মনে মনে ঠিক করে নেয় যে,,,, যতদিন সে এ বাড়িতে থাকবে ততদিন নিলয়ের সাথে কথা বলবেনা এমনকি নিলয় সামনেও যাবে না।।
.
.
?
.
.
দুপুর দুটো নিলয় আজ রুম থেকে বের হয়নি ঘরে বসেই লাঞ্চ করেছে ল্যাপটপ এ বসে কাজ করতে করতে নিলয় মনে মনে ভাবল আজ একটু বেশিই রিঅ্যাক্ট করে ফেলেছি,,এতটা রেগে যাওয়া উচিত হয়নি।।একেই বাচ্চা একটা মেয়ে,, হয়তো আমার কথায় খুব কষ্ট হয়েছে। নিলয় তুইও না রেগে গেলে মাথা তোর একদম ঠিক থাকেনা,,,,কাকে কি বলিস নিজেও জানিস না।।

হঠাৎ তার তিথির কথা মনে হল পরল। সত্যি তো এতক্ষণ তো সে তিথির কথা ভুলেই গিয়েছিলে,, তিথির কথা মনে পড়তেই,,,তৎক্ষণাৎ ল্যাপটপ টা কে পাশে রেখে দৌড়ে ছাদে চলে গেল,,,,গিয়ে দেখল তিথি এখনো সেইখানেই দাঁড়িয়ে আছে রোদে চোখ লাল টসটসে হয়ে গিয়েছে আর ফর্সা মুখ রোদে ঝলসে রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে,,,ঘামে পরনে কুর্তিটা পুরো ভিজে চুপসে গেছে। তিথির এমন অবস্থা দেখে নিলয় ভয় পেয়ে যায় আর দেরি না করে দৌড়ে তিথির কাছে গিয়ে, তিথির গালে হাত রেখে অস্থির হয়ে জিজ্ঞাসা করল-;

-: তিথি…তিথি ঠিক আছো তুমি।।

নিলয়ের কথাটা যেন তিথির কাছে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো লাগলো। তিথি কিছু বলছে না দেখে নিলয় উদ্বিগ্ন হয়ে বলল-;

-:কি হয়েছে,,,কিছু বলছ না কেন???আর কান ধরে আছে কেন এখন ও।। আর কান ধরতে হবে না,,ছাড়ও।।

তিথি নিলয়ের কোন কোথার ই উত্তর দিচ্ছে না।।নিলয় বুঝতে পারল তিথি এখন কিছুই বলবে না আর নিচে ও যাবে না,,,তাই আর কোন কিছু চিন্তা না করে তিথি কে কোলে তুলে নিল তারপর নিচে নামতে লাগলো।।।তিথি নিলয়ের এমন কাণ্ডে অবাক হয়ে যায় সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে নিলয় এর কাছ থেকে ছাড়ানোর জন্য ছটফট করতে লাগলো।।তিথিকে এমন ছটফট করতে দেখে নিলয় তিথির দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো-;

-:চুপচাপ থাকো,,নইলে এক্ষুনি ফেলে দিবো,,

বলে হাতের বাধন একটু ঢিলা করতেই তিথি সঙ্গে সঙ্গে নিলয়ের গেঞ্জি টাকা আঁকড়ে ধরল তিথীর এমন কাণ্ডে নিলয় না হেসে আর পারল না।। নিলয় কে হাসতে দেখে তিথি গা পিত্তি জ্বলে যাচ্ছে।।নিলয় তিথিকে নিজের রুমে নিয়ে এলো তারপর তিথিকে খাটে বসিয়ে বাথরুম থেকে এক মগ জল আর একটা শুকনো কাপড় নিয়ে এল।।তিথি উঠতে চাইছিল কিন্তু নিলয়ের রাগী ফেইস দেখে আর উঠতে পারল না।।নিলয় শুকনো কাপড় মগের জলে ভিজিয়ে,,,তিথির চোখ-মুখ মুছিয়ে দিলো।তারপর নিচ থেকে খাবার এনে নিজের হাতে মাখিয়ে এক লোকমা ভাত তিথির মুখের সামনে ধরতেই তিথী মুখ ঘুরিয়ে নিল।।। নিলয় প্লেটটা টেবিলের উপর রেখে,,,একহাতে তিথী মুখ ঘুরিয়ে জোর করে এক লোকমা ভাত তিথীর মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দিল।তিথী সঙ্গে সঙ্গে ভাতটুকে মুখের ভিতর নিয়ে,,দৌড়ে গিয়ে বেসিনে ফেলে দিয়ে আসলো।।

তিথির এমন কান্ডে নিলয় প্রচন্ড রেগে গেল,,, তারপর তিথির হাত ধরে টেনে নিয়ে সোফায় বসিয়ে,,নিজেও তিথীর পাশে বসল।। তারপর তিথিকে হ্যাচকা টান মেরে নিজের কোলে বসিয়ে নিল,,নিজের মুখোমুখি।।তিথি নিজেকে ছড়ানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করায়,,, নিলয় রেগে গিয়ে তিথীর কোমর নিজের বাম হাতে শক্ত করে চেঁপে ধরল,,,এতে তিথী কিছুটা কেঁপে উঠল।। তারপর ডান হাতে এক লোকমা ভাত মিশিয়ে জোর করে তিথীর মুখে ঢুকিয়ে দিলো।।তিথি যেই ভাতটুকু আবার ফেলতে যাবে ঠিক তখনই নিলয় তিথির ঠোঁট নিজের ঠোঁট দিয়ে চেপে ধরল,,,যাতে তিথী ভাত না ফেলতে পারে।।নিলয়ের এমন কাণ্ডে তিথির চোখ বড় বড় হয়ে গেল,,আর বুকের ভিতর জোরে জোরে ড্রাম বাজতে লাগলো।।

নিলয় তিথীর নিচের ঠোঁটের জোরে কামড় দিতেই,,,তিথী সঙ্গে সঙ্গে ভাতটুকু গিলে নিলো।। তারপর নিলয় ঠোঁটটা ছেড়ে দিয়ে তিথির দিকে তাকিয়ে দেখল তিথী এখনো হা করে নিলয় দিকে তাকিয়ে আছে।।তিথি কেমন তাকানো দেখে,,,,নিলয় বাঁকা হেসে বলল-;

-:চুপচাপ খাওয়া কমপ্লিট করো,,,,নইলে আবার এই পদ্ধতি অবলম্বন করে খাওয়াবো।।

নিলয়ের এমন কথা শুনে তিথী সঙ্গে সঙ্গে দুই হাত দিয়ে নিজের ঠোঁট চেপে ধরল,,,,,,,তিথি এমন কান্ডে নিলয় শব্দ করে হেসে উঠলো।। আর মনে মনে বলল-;

-:এবার থেকে রেডি থেকো আমার রোমান্টিক টর্চার এর জন্য তিথু পাখী। তোমাকে কিভাবে জব্দ করা যায় সেই ট্রিক আমি পেয়ে গেছি।।

তারপর তিথিকে সবটুকু ভাত খাইয়ে দিল। খাবার খাওয়ানোর শেষে নিলয় তিথির মুখ ধুইয়ে দিল। তারপর তিথিকে কোলে তুলে নিজের খাটে শুইয়ে দিয়ে নিজেও তিথি কে জড়িয়ে শুয়ে পড়ল।আজকের নিলয়ের এমন কাণ্ডে তিথী বারবার অবাক হচ্ছে,,,,আর নিজকে ছাড়ানোর চেষ্টায় ছটফট করতে লাগলো,,, শেষে ব্যর্থ হয়ে,, করুন কন্ঠে নিলয়কে বলল

-:প্লিজ ছেড়ে দিননা। আমি আপনাকে প্রমিস করছি আমি আর অমন দুষ্টুমি করবো না।।আমিতো গুড গার্লের মতো খাওয়াটা কমপ্লিট করেলাম বলুন,,,এবার তো আমাকে ছাড়ুন,,প্লিজ ছাড়ুন না আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।।

নিলয় তিথির কথার কোন জবাব না দিয়ে,,, তিথীর ঘাড়ে নিজের মুখ গুজে দিল তারপর তিথিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে স্লো ভয়েসে বলল-;

-: চুপচাপ শুয়ে থাকো তিথু পাখী,,,বেশী নড়াচড়া করবে না,,,নাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।।

নিলয়ের এমন কথা শুনে তিথি ৪৪০ ভোল্টের শক খেলো,,,কারণ নিলয় যখন কথাগুলো বলছিল তখন বারবার নিলয়ের ঠোঁট তার ঘাড় স্পর্শ করছিল।।তিথি আর কিছু না বলে চুপচাপ শুয়ে থাকলো,,,,কারণ সে বুঝে গিয়েছে নিলয় কে সরানো তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই কিছুক্ষন মনে মনে নিলয়ের নামে হাজারটা গালি দিতে লাগলো,,,,তারপর আস্তে আস্তে নিজেও ঘুমের দেশে পাড়ি রাজ্যে পাড়ি দিল।
.
বিকেলে ঘুম থেকে উঠে তিথি আরো একদফা অবাক হল,,, এমন ও কি সম্ভব……
.
.
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]

তোমাকে আমার প্রয়োজন পর্ব-০৬

0

#তোমাকে আমার প্রয়োজন??
#মেঘ পরী??

??পর্ব-৬??
.
?
.
.
তিথীর এমন চিৎকার শুনে নিলয় খুব জোরে গাড়ির ব্রেক মারলো,,,তারপর তিথীর দিকে তাকাতেই তিথী খুশিতে গদগদ হয়ে বলল-;

-:ওই দেখুন…..ওই দেখুন হাওয়াই মিঠাই,,,,???একটা দিন না কিনে প্লিজজজজ।।আমার না হাওয়াই মিঠাই খেতে খুব ভালো লাগে।।

এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলার পর নিলয়ের দিকে তাকিয়েই তিথি কেঁপে উঠলো,,নিলয় দাঁতে দাঁত চেপে গাড়ির স্টিয়ারিং টাকে শক্ত করে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে,,,নিজেকে কন্ট্রোল করার জন্য।।। নিলয়ের এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে তিথিকে গুনে গুনে দশ বারোটা চড় দিতে।। একেই রেস্টুরেন্টের ঘটনার জন্য নিলয় প্রচন্ড রেগে আছে তিথির উপর তার উপর আবার এই ফালতু বায়না।। নিলয় দাঁতে দাঁত চেপে তিথি কে বলল-;

-: হোয়াট ইজ হাওয়াই মিঠাই??

-: আরে হাওয়াই মিঠাই মানে জানেন না।। হাওয়াই মিঠাই,,,??? হুম হাওয়াই মিঠাই ইজ ওয়ান কাইন্ড অফ বুড়ির চুল।।???

-:তিথী….. প্রচন্ড জোরে ধমক দিয়ে উঠলো নিলয়।।

-: আপনি ইংরেজিতে কটন ক্যান্ডি ও বলতে পারেন,, কেন আপনি কোনদিন খাননি।(ভয়ে কেঁপে কেঁপে বলল তিথি)

-:Shhhhhhut upppppp!!!!!! I say just shut up???????? অনেক বেশি বলে ফেলেছো তুমি সো now keep shut your mouth….

-: একটা দিন না কিনে,,,প্লিজজজজজ???

-:?????

-:???কিপটুস একটা।

-:কী বললা তুমি।।(চিৎকার করে)

নিলয়ের অমন চিৎকারে তিথি গাড়ির দরজার পাশে গা ঘেঁষে বসল,,আর দু তিনটে শুকনো ঢোক গিলে,,বলল-:

-:কিছু না,,সত্যি???

তারপর নিলয় আর কোন কথা না বলে চুপচাপ গাড়ি চালিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল।।

.
?
.
.
রাত নটা,,,তিথি ভাবছে কি করে নিলয় কে জব্দ করা যায়।।তিথি মনে মনে ভাবছে-;

-:শালা উগণ্ডা কে টাকার মাধ্যমে কোনোভাবেই জব্দ করা যাবে না।।কারণ একে ফকির বানাতে গিয়ে আমি নিজেই ফকির হয়ে যাব,,কারন এর বিশাল টাকা আছে।।।আর হবেনাই বা কেন কিডনাপিং করে করে এত বড়লোক হয়েছে ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চাটা।।তাও যদি জানতাম যে কিডন্যাপিং টা অন্তত ভালো কোরে করে,,সেটাও তো পারে না ঠিক করে ইবলিশটা ,,,ভুলভাল মানুষকে তুলে আনে।।কে যে এনাকে অর্ডার দেয় কিডন্যাপিং করতে,,,বুঝে পায়না বাপু। ভাব তিথী ভাব,,, আরে উনি আজকে ফোনে বলছিলেন না কাকে,,, যে কালকে ওনার একটি ইম্পর্টেন্ট মিটিং আছে।।।ব্যাস পেয়ে গেছি আইডিয়া।।হুম এবার বুঝবে হারে হারে তিথী কি চিস,,,,আমাকে হাওয়াই মিঠাই না দেবার শাস্তি এবার আমি আপনাকে দেব।।?????
.
.
?
.
.
পরের দিন সকালবেলা তিথী উঠে রান্না ঘরে গিয়ে দেখলো সার্ভেন্টসরা ব্রেকফাস্ট বানাচ্ছে।।এই বাড়িতে তিথী আসার পর থেকে দুইভাবে ব্রেকফাস্ট বানানো হয়।।একটা তিথীর জন্য পরোটা,,তরকারি,,,ভাজাভুজি আর একটা নিলয় এর জন্য,,,নর্মাল ব্রেকফাস্ট জুস,,স্যান্ডউইচ বাটার টোস্ট,,ফ্রুটস।।।রান্নাঘরে ঢুকে তিথী দেখলো সবাই যে যার মত কাজ করছে।।তিথি শেফালী কে ইশারায় তার কাছে আসতে বলল।। তারপর শেফালী তার কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই,,তিথি তাকে জিজ্ঞেস করল-;

-: এনেছ,,তোমাকে যা আনতে বলেছিলাম।। (ফিসফিসিয়ে তিথি বলল)

-:হ্যাঁ ম্যাম,,,আমি নিয়ে এসেছি কিন্তু আমার না খুব ভয় করতাছে। এগুলো করা কি ঠিক হচ্ছে ম্যাম।যদি স্যার জানতে পারে আমার চাকরিখানা আর থাকবে না।।

-:আরে তুমি বেশি কথা বল না তো।। তুমি চুপ করে থাকবে যা করার আমি করবো।।তুমি বেশি কথা বলবে না তাহলে তোমার চাকরি ও ঠিক থাকবে,,,আর তুমিও।।

-:ঠিক আছে ম্যাম এই নিন ধরেন।।(বলে তিথির হাতে কাগজে মোড়া একটা জিনিস দিল)

-:ওকে তুমি এবার যাও।

তারপর শেফালী চলে যাবার পর,,,তিথি জিনিসটাকে নিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করলো আর মুচকি মুচকি হেসে,,,মনে মনে বলল এবার আপনি কোথায় যাবেন।।

কিছুক্ষণ পর খাবারগুলো টেবিলের উপর সাজিয়ে দিয়ে,,,সবাই যে যার কাজে চলে গেল।। তিথি লুকিয়ে লুকিয়ে নিলয়ের খাবার যেখানে আছে সে গিয়ে খাবারের প্লেটটা তুলে,, খাবার গুলোতে পাউডাররের মতো কী যেন দিয়ে,,আবার প্লেটটা জায়গা মতো রেখে দিল।। তারপর নিজের ঘরে চলে গেল।।কিছুক্ষণ পর নিলয় অফিস ড্রেস পড়ে,,, ব্রেকফাস্ট টেবিলে এসে তিথিকে ডাক দিল,,তিথী ও চুপচাপ নিচে নেমে নিলয়ের পাশের টেবিলে বসে পড়ল এবং এমন ভাঙ করলো যেন কিছুই হয়নি।।ব্রেকফাস্ট করার মাঝখানে নিলয়ের ফোনে ফোন এলো,, নিলয় ফোনটা রিসিভ করে বলল-;

-:২০ মিনিটের মধ্যে আমি পৌঁছাচ্ছি।।বলে ফোনটা রেখে দিল।।

৫ মিনিট পর নিলয় খাওয়া বন্ধ করে,, নিজের পেটে হাত বুলাচ্ছে তারপর হঠাৎ ব্রেকফাস্ট ফেলে দৌড়ে উপরে উঠে গেল।। তিথি বুঝতে পারল যে সে সাকসেসফুল হয়েছে তাই সে মুচকি মুচকি হেসে খাওয়া কমপ্লিট করে উপরে চলে গেল।। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে নিলয় বাথরুমে বসে আছে যখনই উঠতে চাইছে তখনই পেটের ভিতর মচর দিয়ে উঠছে আর আবার বসে পড়ছে।।অনেক কষ্ট করে ঘর থেকে ফোনটা নিয়ে ম্যানেজারকে কল করে মিটিংটি ক্যানসেল করে দিল। তারপর ফ্যামিলি ডক্টর কে কল করল। কিছুক্ষণের মধ্যে ডক্টর চলে আসার পর,, নিলয় কি চেকআপ করে বলল-;

-: তুমি কি কোন উল্টোপাল্টা জিনিস খেয়েছো।।

-: না তো ডক্টর আঙ্কেল,,,সকালবেলা এমনি নরমাল ব্রেকফাস্ট করেছি।

-:হুম, তাহলে খাবারের মাধ্যমে হয়তো ভুলবশত কোন অপদ্রব্য জিনিস পেটের ভিতরে চলে গিয়েছে।। তাই এমন প্রবলেম হচ্ছে। ওকে চিন্তা করো না আমি মেডিসিন দিয়ে যাচ্ছি তুমি সময় মত খেয়ে নেবে,,, আর আজকের দিনটা একটু রেস্ট নাও।দেখবে কালকের মধ্যেই তুমি একদম ঠিক হয়ে গেছ।। আর আপাতত এই মেডিসিন টা খেয়ে নাও তাহলে তোমাকে আর ঘনঘন বাথরুমে যেতে হবে না।হা হা হা হা

-: ওকে আঙ্কেল।?????

আর এই দিকে তিথি তো ঘরের মধ্যে জোরে জোরে গান চালিয়ে,,,লুঙ্গি ড্যান্স দিচ্ছে;; ??????

-:ইয়ে জিঙ্গালালা হু হু,,জিঙ্গালালা হু হু??????

ঠিক তখনই শেফালী এসে দরজায় নক করল তিথি শেফালিকে এই সময় তার রুমে দেখে,,, কিছুটা কিছুটা থতমত খেয়ে গেল।তারপর নিজেকে সামলিয়ে শেফালীকে ঘরে আসতে বলল।। শেফালী ঘরে ঢুকে,,,তিথী দুটো হাত ধরে কেঁদে কেঁদে বলল;

-:ওও….আপা মনি… আপা মনি গো ওওওও।।।?????

-:এই…এই শেফালী তুমি ওমন মরা কান্না কাঁদছো করছো কেন,,,কী হয়েছে তোমার।।????

-:আমাকে ক্ষমা করে দিন আপামনি,,,স্যার আমারে চাকরি ছাঁটাই দেওয়ার ভয় দেখিয়ে,, আমার পেট থেকে সব সত্যি কথা জেনে নিয়েছে।।???

-:এ্যা আর তুমি সব বলে দিলে।।????এই তোমার স্যার তোমাকে চাকরি কাঁটার ভয় দেখালো,,, আর তুমি ফুরুত করে আমার কথা সব বলে দিলে।।।এই তোমার পেট এতো পাতলা কেন গো।। হাই,,হাই এবার আমার কি হবে।।রাক্ষস টাতো এবার আমায় শুলে চড়াবে। ভাব তিথী কিছু একটা ভাব,,, কচুপোড়া বিপদের সময় সব বুদ্ধি কি লুঙ্গি গুটিয়ে শ্বশুরবাড়ি পালাই,,উফফফফ(দাঁতে নখ কাটতে কাটতে,,, বিড়বিড় করে বলছে তিথি)

-:আপা মনি….আপা মনি।।

-: আবার কি হলো।??? যা করার তা তো করেই দিয়েছে,,,এবার আমাকে কিছু ভাবতে সময় দাও।।

-:আপনারে স্যার ডাকতাছে,,আর এক্ষুনি স্যার তার রুমে যেতে কইল।।আর স্যার এও কইল যে স্যারের যদি উঠে আসতে হয়েছে তাহলে আপনার লগে খবর আছে।।

-:?????এক্ষুনি।।।

-:হুম,, তাহলে আমি যাই।।

-:এই তুমি যাও তো যাও,,,আমার চোখের সামনে থেকে এক্ষুনি যাও।।না হলে আমি নিজেই তোমার খবর করে ছেড়ে দেবো যত্তসব ঘুগনিব্যাপারি কোথাকার,,,???

-:?????

শেফালী আর কিছু না বলে চলে গেল। আসলে নিলয় সকল বেলা ফোনে কথা বলতে বলতে উপরে সিঁড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ছিল,,,আর তখনই দেখতে পেয়েছিল যে শেফালী তিথির হাতে কি যেন একটা কাগজে মোড়া জিনিস দিচ্ছে।। নিলয় ভেবেছিল তিথির হয়তো কোন প্রয়োজনীয় জিনিস,,,তাই সে ওতটাও মাথা ঘামায় নি।।কিন্তু তার এই রকম অবস্থা হওয়ার পর তার একটু সন্দেহ হল,,, তাই সে শেফালীকে একটু ভয় দেখাতেই,,,শেফালী সব উগরে ফেলল ঝর ঝর করে।। যাই হোক তিথি এবার মনে মনে দোয়া পড়ে নিলয় রুমের দিকে যেতে লাগলো।।
.
.
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]

তোমাকে আমার প্রয়োজন পর্ব-০৫

0

#তোমাকে আমার প্রয়োজন??
#মেঘ পরী??

??পর্ব-৫??
.
?
.
.
নিলয়ের কথামতো তিথী গুটিগুটি পায়ে নিলয়ের দিকে এগিয়ে,,,নিলয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়াল।নিলয় তিথীর দিকে তাকিয়ে,,,,রাগী স্বুরে বলতে লাগলো-

-:এই মেয়ে তুমি কি ভেবেছ নিজেকে,,যখন যা ইচ্ছা হবে তাই করবে।তোমার সাহস তো মন্দ নয়। তুমি জানো আমি কত ব্যাথা পেয়েছি।আমি হাঁটতে পারব কিনা কে জানে। তোমার তো খুব আনন্দ হচ্ছে না,,,আমার এই অবস্থা দেখে খুশি হয়েছ তুমি।

নিলয়ের এমন কথায় তিথি খুব কষ্ট হল,,,আসলে ও বুঝতে পারেনি যে নিলয় এতটা আঘাত পাবে।। তাই সে নিজের হাতে নিজের দুকান ধরে অসহায় চাহনি চেয়ে নিলয় কে বলল-;

-:???? সরি বিশ্বাস করুন আমি ইচ্ছা করে আপনাকে কষ্ট দিতে চাইনি,,,,মজা করতে গিয়ে বুঝতে পারিনি সেটা সাজা হয়ে যাবে।

তিথির ফেসের এমন রিয়াকশন দেখে নিলয় বেচারা অনেক কষ্টে নিজের হাসিটা কে থামাল,, আসলে নিলয় অতটাও ব্যথা পায়নি,, তিথি কে জব্দ করার জন্যই এমন নাটক করছিল।। তারপর তিথির দিকে তাকিয়ে রাগী গলায় বলল-;

-: তা তো শুনছি না।।ভুল যখন করেছো,,,শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে।।

-: প্লীজ এমন করবেন না।।????

-:উহু তা তো আমি শুনছি না শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে।।

-:??????? বলছি তো ভুল হয়ে গেছে, তবুও শুনবেন না আমার কথা।।।যান আপনার সাথে আড়ি,,,আপনি একটা পচা……

আর কিছু বলতে পারল না তিথি,,,তার আগেই নিলয় তিথির হাত হ্যাচকা টান মারলো,,, যার ফলে তিথী নিলয়ের গায়ের উপর পড়লো আর নিলয় ব্যালেন্স হারিয়ে সোজা তিথিকে নিয়ে খাটের উপরে ধড়াম করে পড়ে গেল।।।। পড়ে যাবার পর তিথি কিছুক্ষন বোঝার চেষ্টা করলো আসলে কি হয়েছিল তার সাথে,,,তারপর বুঝতে পেরে মোচরা মুচরি করতে লাগলো নিলয় এর কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য।।।তিথির এমন ছটফট করা দেখে নিলয় এক হাত দিয়ে তিথির কোমর জড়িয়ে ধরল আর এক হাত দিয়ে তিথি দুটো হাত শক্ত করে চেপে ধরল।।তিথি এদিকে নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত,,,,,আর নিলয়!! নিলয় তো ব্যস্ত তিথি কে দেখতে।।। নিলয় তিথির চোখের দিকে তাকিয়ে আছে পলকহীন ভাবে।।নিলয় মাঝেমাঝে ভেবে পায় না যে কি মায়া জাদু আছে এই চোখে দুটের মধ্যে,, যে মাঝে মাঝে সেও হারিয়ে যায় এই চোখের মায়াজালে।।

তারপর আস্তে আস্তে তিথীর চোখের দিকে থেকে নজর সরিয়ে,,নিলয়ের নজর গেল তিথির গোলাপি ঠোঁট যুগ্মের দিকে।।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার গোলাপি ঠোঁট দ্বয়ের দিকে।। তিথির গোলাপি ঠোঁটের নিচে মাঝ বরাবর তিলটি যেন,,তিথীর ঠোঁটের সৌন্দর্যকে শতগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। নিলয় তিথির কোমর থেকে হাতটা তুলে,, একটা আঙ্গুল দিয়ে তিথির ঠোঁটে স্লাইড করতে লাগলো।।

হঠাৎ নিলয়ের এমন স্পর্শে তিথি কেঁপে উঠলো আর খেয়াল করলো নিলয় তার ঠোঁটের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।।নিলয়ের এমন চাহনি দেখে,,,তিথি মনে মনে বলল-;

-: ব্যাটা লুচুর মতিগতি মোটেও আমার ভালো ঠেকছে না।।

তাই তিথি চিল্লিয়ে উঠলো বাঁচাও বাঁচাও করে।। তিথির এমন চিল্লানো দেখে নিলয় থতমত খেয়ে গেল।।তাই সঙ্গে সঙ্গে তিথির মুখটাকে চেপে ধরল আর এইদিকে তিথির নিজেকে ছাড়ানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে দেখে,,,নিলয় তিথির দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে,,এক ধমক দিল,,,তাতে তিথি কিছুটা কেঁপে উঠলো।। তারপর নিলয় বলল-;

-:চুপপপপপ…একদম চুপ এইভাবে কেউ চাল্লায়।। আর একবার চেচাঁলে তুলে আছাড় মারবো,, বেয়াদব মেয়ে কোথাকার।।

নিলয়ের এমন ধমকে তিথির চুপ মেরে গেল।। তারপর নিলয় তিথি কে ছেড়ে দিল,,তিথি উঠে চলে যেতে যাবে কি নিলয় আবার তিথির হাতটা ধরে ফেলল।।তারপর তিথিকে তার পাশে বসালো আর ড্রয়ার থেকে মুভ মলম বের করে তিথির হাতে দিল।। তিথি মলমটার দিকে তাকিয়ে নিলয় কে জিজ্ঞাসা করল-;

-:এটা দিয়ে কি করব।।

তিথীর কথার উত্তর না দিয়ে,,নিলয় বেডে চুপচাপ শুয়ে পড়ল উবুড় হয়ে।। তারপর তিথি কে বলল-;

-: ব্যাথা যেমনি তুমি দিয়েছো তেমনই ব্যাথা সারানোর দায় ও তোমার,,,চুপচাপ আমার কোমরে মলম লাগিয়ে দেও।

-: অসম্ভব আমি আপনার কোমরে কোন মলম টলম লাগাতে পারবো না।।(অসহায় ভাবি)

-: তুমি লাগাবে কি না।।???যদি না লাগাও তাহলে আমাকে অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে তুমি কি চাও সেটা আমি করি। সেটা কিন্তু তোমার পক্ষে ভালো হবে না।।

-:?????? প্লিজ।

-:?????

-:????দিতেছি।।

এই বলে তিথি তার নরম হাতে নিলয়ের কোমরে মলম লাগিয়ে দিল,,আর নিলয় পরম আবেশে চোখ বুজে তা অনুভব করতে লাগলো,, তার মায়াপারির হাতের স্পর্শ বলে কথা।। মলম লাগানোর পর তিথী-;

-:???? কথা কমু না আর আপনার সাথে।।

-:?????

-: আজকের প্রতিশোধটা তো আমি নিয়েই ছাড়বো,,ইটস মাই চ্যালেঞ্জ।।(মনে মনে) তারপর তিথি নিজের রুমে চলে গেল।
.
?
.
কিছুক্ষণ পর নিচ থেকে তুমুল ঝগড়ার আওয়াজ শুনতে পেল নিলয়। ঝগড়ার কারণ জানার জন্য নিচে গিয়ে দেখল তিথি রামু চাচাকে আচ্ছামত ধুলাই দিচ্ছে। নিলয় গিয়ে তিথির এমন ব্যাবহারের কারণ জিজ্ঞাসা করাতে,,তিথী দাঁত কড়মড় করে রামু চাচার দিকে তাকিয়ে নিলয় কে বলল-;

-:দেখুন কী আনছে,,একবার দেখুন।।আমি বলেছি মিকি মাউস আঁকা টপ আনতে আর উনি এনেছেন লিটিল এলিফ্যান্ট আঁকা টপ।।আর তারচেয়ে বড় কথা হল লিটিল এলিফ্যান্ট এর মতই টপের সাইজও এনেছে।।এই টপের ভিতরে আমি আর আমার মামি দুজন একসাথে ঢুকে যেতে পারব,,যত্তসব আলু থালুর দল।।

নিলয় গেঞ্জি দিকে তাকিয়ে দেখল সত্যিই গেঞ্জি তা অনেক বড় সাইজের এনেছে।।নিলয় চাচার দিকে তাকাতেই,,,,চাচা বললেন

-: সাহেব আমি দোকানদারকে আপনার দেবা লিস্টটা ধরিয়ে দিয়েছিলাম,,,উনি সব দেখেই জিনিসপত্র দিয়েছিলেন।সব জামায় ঠিক আছে শুধু মামুনের গেঞ্জি খানাই যা গন্ডগোল হইসে।।আর তাতেই মামনি অকারনে আমার উপর চিল্লামিল্লি করছে।।

-: কি আমি অকারনে চিল্লামিল্লি করছি।।আমি কি সুন্দর ভেবেছিলাম আজকে শাওয়ারের পর মিকি মাউস টপ আর স্কার্ট পরে,,,ঘুরু-ঘুরু করবো।। কিন্তু আমার সব আশাতেই এক বালতি জল ঢেলে দিল যত্তসব আউলফাউলের দল।।। আমি জানিনা আমার মিকি মাউস আঁকা টপ দিতেই হবে।।

-: আচ্ছা আচ্ছা তুমি এখন অন্য জামা পড়ো বিকালে তোমাকে নিয়ে আমি শপিং মল থেকে তোমার পছন্দমত টপ কিনে আনবো এবার খুশি।।।

-:??????খুবববববববব।।।এই এত্তগুলা।।(বলে দুই হাত ছড়িয়ে দেখালে)

নিলয় তিথির এমন কাণ্ডে হেসে ফেলল,,তবে সবাইকে বুঝতে দিল না।।

-: এবার বুঝবে চান্দু তিথি কি চিস!! ফকির যদি বানিয়ে না দিই তো আমার নাম ও তিথি নয়।। আমাকে শাস্তি দেওয়া,,,হুম???(মনে মনে তিথি বলল)
.
?
.
.
নিলয় বিকাল পাঁচটায় তিথিকে নিয়ে বেরোবে বলেছিল,,,,তাই তিথি চারটে থেকে ড্রেস পড়ে বসে আছে,,,আর সমানে নিলয়ের কাছে গিয়ে,,,নিলয় কে তাড়া দিচ্ছে।।। তারপর নিলয় তৈরি হয়ে যাবার পর তিথি এবং নিলয় বেরিয়ে গেল শপিংমলের উদ্দেশ্যে। শপিংমলে ঢুকে প্রথমে তিথিকে নিয়ে নিলয় ওম্যান সেকশনে গেল এবং সেখান থেকে তিথির জন্য চারটে মিকি মাউস আঁকা টপ নিল।। তারপর আরো কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার পর শপিং মল থেকে বেরোতে যাবে কি তিথি নিলয়ের হাত ঝপাস করে টেনে ধরলে।। নিলয় তিথির দিকে তাকিয়ে ইশারায় জিজ্ঞাসা করতে ই,,, তিথি নিলয় কে সামনে তাকাতে বলল।নিলয় দেখল সামনে টয়েস সেকশনস আছে। তাই তিথির দিকে ভ্রু উচিয়ে, জিজ্ঞাসা করল-;

-:কী????
-:??? আসলে আমি কোন অচেনা জায়গায় বেশি দিন থাকলে,,,যদি টেডিবিয়ার জড়িয়ে না ঘুমাই তাহলে ভূতের স্বপ্ন দেখি তাও আবার যে সে ভূত নয় একেবারে শাকচুন্নির স্বপ্ন দেখি ভীষণ ভয় করে একটা টেডি কিনে দিন না প্লিজ।??????

-:???? এ আবার কেমন ধরনের স্বপ্ন।। কই এমন কারোর হয় তা তো আগে শুনিনি।।

-: সত্যি বলছি,,,আমার এমন হয়।।আপনি আমাকে বিশ্বাস করেন না।????

-: ওকে…ওকে যাও গিয়ে কিনে নাও।

নিলয়ের বলতে দেরি কিন্তু তিথির যেতে দেরি হল না।।দৌড়ে গিয়ে টয়েস সেকশনে থেকে তিনটে বড় বড় টেডি বিয়ার তুলে নিল।তারপর দুটো টেডি বিয়ারের গলা জড়িয়ে,, উঠে দাঁড়ালো,,,,আর একটা টেডি বিয়ার কে নিলয়ের হাতে ধরিয়ে দিল।। তিথি তো টেডি বিয়ার দুটোকে জড়িয়ে ধরে হাঁটতে,,,হিমশিম খাচ্ছে।।নিলয় তিথির এমন কান্ড দেখে তিথি কে বলল-;

-:একটা টেডি বিয়ার নেবে বলে,,, তিনটা নিলে।। আর এখন দুটোকেই সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।।

-:আসলে তিনটে টেডি বিয়ার তিনদিকে থাকলে,, শাকচুন্নি অ্যাটাক করতে পারবে না।।(একটু ভাব নিয়ে বলল তিথী)

-:তাহলে আর একটা টেডি বিয়ার নিয়ে নিতে পারতে। তাহলে চারদিক থেকে তোমাকে কেউ অ্যাটাক পড়তে পারতো না।।
-: ঠিক বলেছেন তো আপনি,,,আমার না একদমই মাথায় ছিলনা আইডিয়াটা।দাঁড়ান আমি চট করে গিয়ে আরও একটা টেডিবিয়ার নিয়ে আসি।।

-:এই না না না আর আনতে হবে না।। তোমার কাছে এমনিতেও কোন ভূত আসবে না।।আর যদি আসে তবে আমি বলে দেবো যে তোমার কাছে যেন না যায়,, শান্তি।।

-:????ঠিক আছে।। এখন চলুন আমার না খুবববব খিদে পেয়েছে।

-: কি!!!!!একটু আগেই তো বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় চিপস,,বিস্কুট,,কুকিজ,,পেস্ট্রি এসব খেয়ে এলে এরমধ্যে আবার খিদে পেয়ে গেল। তোমার পেট এত ঘনঘন খালি হয় কেন।।

-: সে তো চারটের সময় খেয়ে ছিলাম আর এখন ছয়টা বাজে। আর এই আপনি আমাকে খাবার খোটা দিচ্ছেন।।শুনুন আমি আপনার কাছে গিয়ে বলিনি,,আমাকে আপনার বাড়িতে থাকতে দিন,, খেতে দিন।।উল্টে আপনি আমাকে ভুল করে ধরে এনে নিজের বাড়িতে আটকে রেখেছেন।।আর আপনার ভাগ্য ভালো আমি এখনো আপনার বিরুদ্ধে কোন কঠিন স্টেপ নিইনি।সুতরাং ভেবে চিন্তে কথা বলবেন আমার সাথে।।ইস দ্যাট ক্লিয়ার।।???

-:সত্যিই মাঝে মাঝে আমি ভুলেই যাই যে তোমাকে আমি কিডন্যাপ করেছি নাকি দাওয়াত দিয়ে আমার ঘরে এনেছি।।?????
চলো,,,,খাবে চলো।

.
.
?
.
তিথি রেস্টুরেন্টে নিলয়ের সামনে বসে খাচ্ছে আর বারবার আড়চোখে সামনের টেবিলের লোকটিকে দেখছে। নিলয় ব্যাপারটা খেয়াল করে তিথি কে জিজ্ঞাসা করল-;

-:কি হয়েছে??তুমি খাচ্ছো না কেন আর বারবার ওই দিকে তাকাচ্ছ কেন।।নিজের প্লেটের দিকে তাকাও।।

-:আরে দেখুন না সেই কখন থেকে ওই কালা টাকলু ভোঁদর কম্পানি লোকটা আমার প্লেটের দিকে তাকিয়ে আছে,,,,আর আমার খাবারের দিকে কুনজর দিচ্ছে ব্যাটা,,ঢ্যাড়সের ভর্তা।।আমি সিওর এ খাবার খেলে সাত দিনের জন্য আমাকে বাথরুম কেই বেডরুম হিসেবে মানতে হবে।।

নিলয় আর কিছু বলল না কারণ সে জানে তিথিকে বলে কিছুই হবে না।।তাই সে চুপচাপ খেতে লাগলো,,,,কিছুক্ষণ পর খাওয়ার শেষে নিলয় উঠে বিল পেমেন্ট করতে গেল।।কিন্তু বিল পেমেন্ট করে এসে দেখল নিলয়দের টেবিলের সামনের টেবিলে কিছু মানুষে ভীড় করে দাড়িয়ে আছে।তারপর নিজের টেবিলের দিকে তাকিয়ে দেখল যে তিথি সেখানে নেই।।ব্যাপারটা আন্দাজ করতে পেরে নিলয় এগিয়ে গেল সামনের টেবিলের দিকে,,,গিয়ে দেখল তিথি সেই লোকটির কলার ধরে টানছে আর চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলছে-;

-: তোর বাড়িতে তোর বউ তোকে খেতে দেয় না ভালো করে,,,,যে তুই আমার প্লেটের দিকে তাকিয়ে আছিস,,,,তখন থেকে আমি নোটিশ করছি ব্যাপারটা।।মেরে না টাক ফাটিয়ে দেবো অসভ্য লোক একটা।।বাড়িতে মা বোন নেই,, তাদের খাবারের দিকেও কী‌ এমন ভাবে তাকিয়ে থাকিস,,লুচু লোক কথাকার।।

লোকটি তিথীর কথা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।।নিলয় দৌড়ে গিয়ে তিথি কে আটকালো আর সবাই দের কাছ থেকে এবং সেই লোকটির কাছ থেকে ক্ষমা চায়ে নিল,,, তারপর তিথি কে জোর করে টেনে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো,,, তারপর তিথিকে জোর করে গাড়িতে তুলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল।।

তিথি গাড়ির ভেতর চুপ করে বসে আছে,,,, কারণ নিলয় গাড়ি চালাতে চালাতে বারবার তার দিকে রাগী চোখ তাকাচ্ছে।।আর তিথি মনে মনে নিজেকে হাজারটা গালি দিতে লাগলো। হঠাৎ তিথি বাইরের দিকে তাকিয়ে জোরে চিৎকার করে উঠল-:
.
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]