Thursday, July 3, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1424



পারফেক্ট কাপল পর্ব-১৪

0

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ১৪
#ইনান

আজকে রিয়াদ-রিমি আর আরিশ-ইশার বিয়ে । সবাই আনন্দেই আছি । কিন্তু এই মিলির বাচ্চাটাকে আমার সহ্য হয় না । ফাজিল মেয়ে হুদাই আমার বরটার পিছনে ঘুরে

“এই নিধি
ইশার ডাকে তার দিকে তাকালাম
“হুম বল
“আমাদের কেমন লাগছে ?
“পুরাই জোস
“থ্যাংক ইউ
“ওয়েলকাম

আমরা গল্প করতে লাগলাম নিজেদের মতো করে । আমাদের সাথে এসে যোগ দিল মিলি । ওকে সহ্য না হলেও সহ্য করে নিলাম
.
.
.
অনি বসে বসে প্ল্যান করছিল আজকে ওর সব শত্রুদের মেরে ফেলবে । অগ্নির ফ্যামিলিকে মেরে ফেলবে । তার পর ডার্ক মাফিয়া গ্রুপের খবর নিবে ।

অনি চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে এগুলো ভাবছিল । তখন ই আকাশ দরজা টেলে ভিতরে ঢুকে

“অনি নেক্সট প্ল্যান কী ?
“ওয়েট
“ওকে
“আজকে সবাইকে কিডন্যাপ করে আমাদের আস্তানায় নিয়ে যাবে
“আজকেই ?
“হুম
“ঠিক আছে

আকাশ চলে যেতে নেয় তখন আবার অনি বলে উঠে
“আর এই কথাগুলো মিলিকে গিয়ে বলো । ওকে কিন্তু স্প্রে করতে হবে ।
“ওকে বলবো
“এবার তুমি আসতে পারো ।
“হুম

আকাশ নিজের মাথা নাড়িয়ে ঐখান থেকে চলে যায় । আকাশ চলে যেতেই অনি অট্টহাসিতে ফেটে পরে ।

“বাবা মা চিন্তা করো না আজকে তোমাদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিবো আর তোমাদের রেড মাফিয়া গ্রুপকে অনেক বড় করবো ।
.
.
.
নিয়ান সেই কখন থেকে বকবক করে অগ্নির মাথা খাচ্ছে কিন্তু অগ্নি হাসি মুখেই তা শুনছে ।

“আচ্ছা ভাইয়া তোমার আমার উপর বিরক্ত লাগছে না ?
“একদম না । বিরক্ত লাগবে কেন ?
“না আসলে এতক্ষণ ধরে কথা বলছি তো তাই
“আমার তো ভালোই লাগছে
“ও আচ্ছা

নিয়ান একটা হাসি দিয়ে আবার তার বকবক শুরু করে দেয় । অগ্নি কাজ করতে থাকে আর নিয়ানের কথা শুনতে থাকে
.
.
.
রিমি ,ইশা আমি আর মিলি কথা বলছিলাম । তখন হঠাত্‍ করে মিলির ফোনটা বেজে উঠে ও চলে যায় কথা বলতে

মিলি কথা শেষ করে আসতেই নিয়ান আসে দৌড়ে

“কিরে এভাবে দৌড়ে আসলি কেন ?
“অগ্নি ভাইয়া বলছে ওদের নিয়ে যেতে
“ও আচ্ছা
“হুম
“তুই যা আমি ওদের নিয়ে আসছি

নিয়ান কিছু না বলে চলে যায় মাথা নাড়িয়ে । আমি আর মিলি ওদের নিয়ে নিচে গেলাম
.
.
.
ভালোই ভালোই ওদের বিয়েটা হয়ে যায় । আমি তো লাফিয়ে অগ্নিকে জড়িয়ে ধরি । পরে ব্যাপরটা বুঝতে পেরে ছেড়ে দেয় । আমার এহেম কান্ডে সবাই মিট মিট করে হাসছে । তখনি অনি মাইক নিয়ে স্টেজে উঠে

“লেডিস এন্ড জ্যান্টেলমেন আজকে রিয়াদ-রিমি এবং আরিশ-ইশার বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে । সবাই সবার পার্টনারকে নিয়ে ডান্স ফ্লোরে চলে আসুন প্লীজ । এনজয় দ্যা সিরেমনি

অনির কথায় সবাই হাত তালি দেয়ে ডান্স ফ্লোরে চলে যায় নিজেদের পার্টনারকে নিয়ে । আগ্নি আর আমিও আসি ডান্স ফ্লোরে

আমরা নাচ ছিলাম তখন হঠাত্‍ করে নাকে কিছুর গন্ধ আসতেই নিচে ঢলে পরি । এরপর আর কিছু মনে নেই
.
.
.
যখন জ্ঞান ফিরে নিজেকে একটা রুমে আবিষ্কার করি ।হাত পা বাধা অবস্থায় আছে । আশে পাশেই তাকাতেই দেখি অগ্নি ,বাবা ,মা সবাই আছে । আর আমাদের চারপাশে রেড কালারের পোশাক পড়া

“কে তোমরা ? আমাদের এখানে ধরে নিয়ে এসেছো কেন ?

আমার কথার উত্তর দিল না কেউ । আমি চিত্‍কার করে ডাকছি কিন্তু কেউ উত্তর দিচ্ছে না । এর মাঝে সবার জ্ঞান ফিরে আসে ।

“আমরা এখানে কী করছি ?
আরিশ বলে উঠে । আরিশের কথায় অগ্নি বলে উঠে
“বিয়ের দাওয়াত খেতে এসেছি ।
তখন রিয়াদ ভাইয়া বলে উঠে
“আরে ভাই আমারে কেন উঠায় আনছে । আমার তো এখন বাসর ঘরে থাকার কথা
রিয়াদের কথায় রিমি রাগী গলায় বলে
“রিয়াদ অফ যাও নয় তো আমি তোমার বারোটা বাজাবো
“ভাই অফ যা আর আমার বউটা কই ওরে দেখি না কেন ?
“ঐ আরিশ কী বাচ্চি অফ যা । আমার রাগ হচ্ছে । নয় তো তোর খবর আছে

ওদের কথায় আমরা হেসে দিলাম ।এদিকে আমরা ভুলেই গেলাম আমাদের কিডন্যাপ করা হয়েছে । আমরা নিজেদের মতো করে এক অপরের পিছন লাগছি । তখনি কেউ একজন বলে উঠে

“যত খুশি হেসে নাও । একটু পর তো তোমরা আর এই দুনিয়াতে থাকবে না

আমরা সেদিকে তাকাতেই অবাক হয়ে গেলাম । অনি আমাদের কিডন্যাপ করেছে আর সাথে আকাশ আর মিলিও আছে । এই মিলিকে তো আমার আগে থেকেই সন্দেহ হতো

“অনি মা তুই ?
“হুম আমি আর আমি তো তোমার আসল মেয়ে না সো মা মা ডাকা বন্ধ কর
“মানে কী বলছিস বোন তুই
“হে রে অগ্নি আমি ঠিকই বলছি । আমি এই রেড মাফিয়া কিং এর মেয়ে ছিলাম
“মানে ?
“মানে টা হলো তোর বাবা আমার মা বাবাকে মেরে ফেলছে
“ওহ আচ্ছা তুই ঐ হারামি গুলোর মেয়ে
বাবার কথায় অনি রেগে গিয়ে বাবার গলা চেপে ধরে বলে
“মুখ সামলে কথা বল বুড়ো ।
“অনি বাবাকে ছাড়ো
“ওহ কাম অন নিধি

বাবাকে ছেড়ে দেয় অনি । বাবাকে ছেড়ে দিতেই বাবা কাশতে থাকে আর বলে
“তোর বাবা ড্রাগের ব্যবসা করতো, মেয়ে পাচার করতো , শিশু পাচার করতো
বাবার কথায় অনি বলে উঠে
“তো ? এগুলোতে খারাপ কিছু তো নেই ।
অনির কথায় তচ্ছিল্য হাসলো বাবা
“বাবা-মা যেমন ছিল মেয়েও তেমন হয়েছে ।
“জাস্ট শ্যাট আপ

আমি অবাক চোখে অনির দিকে তাকিয়ে তাকলাম । তার পর অগ্নির দিকে তাকালাম । অগ্নিও আমার দিকে তাকায় । তারপর একসাথে সামনের দিকে তাকিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পরলাম । যেন এখানে কিছু একটা বড়সড় কমেডি হয়েছে

আমাদের এভাবে হাসতে দেখে বোকার মতো তাকিয়ে আছে অনি । পরক্ষণেই রেগে গিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসতে নিতেই আবার থেমে গিয়ে পিছনে তাকায় । পিছনে তাকাতেই থমকে যায় অনি সাথে আকাশ ও থমকে যায় পিছনে তাকিয়ে

চলবে ?

পারফেক্ট কাপল পর্ব-১৩

0

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ১৩
#ইনান

অনি সিঙ্গেল সোফায় বসে আছে আর তার সামনে আকাশ আর মিলি বসে আছে । মিলির এখন ও ঘোর কাটে নি

“আচ্ছা তুমি অগ্নি আর নিধির ক্ষতি কেন করতে চাও ?
“শুনতে চাও
“হুম

মিলির কথায় অনি চলে যায় ১০ বছর আগের ঘটনায় ।
.
.
.
অনি আর তার মা বাবা ঘুরতে বের হয়েছে । অনির বয়স ৯ বছর তখন । অনি খুব খুশি কারণ অনেক দিন পর তারা ঘুরতে বের হয় ।

“বাবা আমি আইস্ক্রিম খাবো ।
“কোথায় আইস্ক্রিম ?
“ঐতো ।

আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলে । অনির বাবা অনিকে টাকা দিয়ে পাঠায় আইস্ক্রিম অনতে ।

অনি আইস্ক্রিম কিনে পিছনে ঘুরতেই দেখে তার মা বাবার মাথায় কিছু কালো পোশাক পড়া লোক বন্দুক ধরে আছে । অনি ভয় পেয়ে সেখানেই থেমে যায় ।

অনির বাবা রেগে কিছু বলতে যাবে তখনি গাছের আড়ালে অনিকে লুকিয়ে থাকতে দেখে করুণ গলায় বলে

“আমাদের ছেড়ে দিন আমরা কী দোষ করেছি ?
তখন কালো পোশাক পড়া লোকদের লিডার অনির বাবার মাথায় বন্দুক থাক করে বলে
“এতো কিছু করেও বলছিস কী করেছি । যা উপরে গিয়ে জানিস কী করেছিস ।

এটা বলে ঐ লোকটা অনির বাবার মাথায় গুলি করে দেয় । তার সাথে তার মাকেও মেরে দেয় ।
.
.
.
বর্তমান
অনি নিজের চোখের পানি মুছে বলে
“ঐ কালো পাশাক পড়া লোক গুলো ছিল ডার্ক মাফিয়া গ্রুপ এর । আর ঐ গ্রুপের লিডার ছিল অগ্নির বাবা । আর সেদিনের পর থেকে ওদেরকে মারার জন্য প্ল্যান করতে থকি ।
“কিন্তু তুমি এই রেড মাফিয়া গ্রুপের কুইন কিভাবে হলে ?
“কারণ এই গ্রুপের কিং এবং কুইন আমার বাবা ছিল

মিলি আর কিছু বলে না চুপ করে বসে যায় সেখানে । ওর কাছে এখন সব ক্লিয়ার ।
.
.
.
আরিশ আর রিয়াদের বিয়ে ঠিক হয়েছে ইশা আর রিমির সাথে । এই কয়েকদিন এ ওরা একে অপরকে ভালোবেসে ফেলছে । তা ফ্যামিলির লোকদের জানাতেই তারা রাজি হয়ে যায় ।

সবাই বেরিয়ে পরেছি আরিশদের বাংলো তে যাবো । ওদের বাংলো নাকি অনেক সুন্দর । আর বিয়ে ৫ দিন পরে । আমি বুঝলাম না এতো তারাতারি বিয়ে কেন ঠিক করলো ।

“নিধি
রিমির ডাকে তার দিকে তাকালাম
“হুম বল
“আমার খুব ভয় লাগছে
“কেন ?
“ঐ ব্যাপারটায়
রিমির কথায় তার মাথায় চাপ্পড় দিয়ে ইশা বলে
“এই তুই সত্যিই রিয়াদ হাসান …..

পরের নামটা উচ্চারণ করার আগেই ওকে থামিয়ে দিলাম ।
“এই চুপ কর বাতাসের ও কান আছে

তখন পিছন থেকে অনি বলে উঠে
“কী ব্যাপারে কথা বলছো তোমরা
অনির কথায় হালকা হেসে বললাম
“কিছু না তো
তখন মিলি বলে
“কেন জিজ্ঞাসা করছিস ? ও বলতে চায়ছে না

আমি মিলির দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আবার বাইরে তাকালাম । কারণ এই মেয়েকে দেখলেই আমার রাগ উঠে
.
.
.
অগ্নি মুখ ফুলিয়ে ড্রাইভ করছে । তার মুখ ফুলানোর কারণ সে নিধির সাথে আসতে চায়ছিল কিন্তু রিয়াদ আর আরিশ জোর করে এসে গাড়িতে বসে পড়ে

“কিরে অগ্নি মুখকে এভাবে বাংলার পাচ বানিয়ে কেন রাখছিস
রিয়াদের কথায় অগ্নি দাতে দাত চেপে বলে
“তোরা অনেক বড় মহত্‍ কাজ করছোস তাই মুখটা এমনে রাখছি
“ও আচ্ছা
তখন আরিশ বলে উঠে
“আচ্ছা আমাদের করা মহত্‍ কাজ টা কী একটু বল তো
“এই যে আমরা অগ্নিকে নিধির সাথে বসতে দেয় নি

এটা বলে রিয়াদ আর আরিশ হাসতে শুরু করে দেয় আর অগ্নি তা দাতে দাত চেপে সহ্য করছে । ৫ দিন পর এদের বিয়ে না থাকলে মেরে হাসপাতালে পাঠাতো ।
.
.
.
বাংলোতে পৌছাতে আমাদের রাত ৯ টা বাজে । বের হয়েছিলাম বিকেল ৫ টায় । সে যায় হোক সবাই ক্লান্ত তাই যে যার রুমে চলে যায় । আমার আর অগ্নির জন্য আলাদা একটা রুম । আর রিমি, ইশার জন্য আলাদা একটা রুম আর আরিশ এবং রিয়াদের জন্য আলাদা রুম ।

“নিধি চলো খেয়ে আসি
“হুম চলুন
“আচ্ছা নিয়ান কোথায় ?
” ওকে একটা রুম দেওয়া হয়েছে সে সেখানেই আছে
“আচ্ছা

আমি আর অগ্নি এসে অল্প খেয়ে নিলাম । প্রচুর ক্লান্ত লাগায় এসে শুয়ে পড়লাম
.
.
.
ডার্ক মাফিয়া গ্রুপ
কিং আর কুইন গালে হাত দিয়ে কোন মতে তাকিয়ে আছে । তার তাদের সামনে ১ ঘন্টা যাবত্‍ হাত কচলাচ্ছে অভি আর সাব্বির । রাতের ২ টায় ঘুম থেকে ডেকে তুলার কোন মানে হয়

“ঐ শালা কিছু বলবি নাকি এভাবে হাত ই কচলাবি
“একটা কথা জানার ছিল । কিন্তু তুই রেগে যাবি
“আমার রাগকে কবে থেকে পাত্তা দেস তোরা ?
“আচ্ছা শুন বলতাছি
“বল
“কোন গন্ডোগোল হবে না তো
“না
“তুই কেমনে সিউর হলি
“কারণ ওদের সব প্ল্যান আমাদের ও বলে দিছে

কিং এর কথায় অভি আর সাব্বির মাথা চুলকায় । এই ‘ও’ টা আবার কে ? এ কোথা থেকে উদয় হলো ।
.
.
.
সকালে
“এই অগ্নি উঠুন
“হুম নিধি আরেকটু ঘুমোতে দাও
“প্লীজ উঠুন আমি বাগানে ঘুরতে যাবো । আরেকটু পরে গেলে ভালো লাগবে না

অগ্নি আর কিছু না বলে উঠে চলে যায় ফ্রেশ হতে আর এদিকে আমিও শাড়ি ঠিক করে চুল গুলো বেধে নিলাম । অগ্নি ফ্রেশ হয়ে এসে আমাকে নিচ থেকে উপর পর্যন্ত দেখে বলে

“এভাবে সাজার কী আছে ?
অগ্নির কথায় আমি বোকা বনে বললাম
“সাজলাম কই
“তাহলে চোখের নিচে কাজল কেন দিছো
“এটা তো আমি প্রতিদন ই দেয়
“ওহ আচ্ছা
“হুম এখন চলুন

আমি আর অগ্নি চলে গেলাম বাগানে । বাগানে পাশাপাশি হাটছি দুজন খুবই ভালোলাগছে । কিন্তু আমার এই ভালো লাগা মনে হয় কারো সহ্য হলো না তাই তো মিলি শাকচুন্নি চলে এসেছে ধুর ভাল্লাগে না ।

চলবে।

পারফেক্ট কাপল পর্ব-১২

0

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ১২
#ইনান

মেজাজ ৩৬০ ডিগ্রির উপরে আছে । রাগে শরীর কাপছে আমার চোখ দিয়ে পানি পরছে । এটাই আমার প্রবলেম রাগলেই চোখ দিয়ে পানি পরে । আর আমার এতো রাগের কারণ হচ্ছে ঐ স্টুপিড গার্ল মিলি ।

ভার্সিটি থেকে আসার পর অগ্নিকে টানতে টানতে বাইরে ঘুরতে নিয়ে গেছে । জানি না আমার কিউট বরটাকে ঐ শাকচুন্নিটা কোথায় নিয়ে গেছে ।

রুমের এইদিক থেকে ওইদিক পায়চারি করছিলাম । তখন মা আমাকে ডাক দিল । আমি নিচে চলে গেলাম । নিচে গিয়ে আমি খুশি হয়ে গেলাম কারণ নিয়ান আর আব্বু এসেছে

“কেমন আছো আব্বু
“ভালো আছি । তুই কেমন আছিস ?
“আমিও ভালো আছি । তুই কেমন আছিস পুচকে
“একদম আমাকে পুচকে বলবি না ।

ওর কথায় হালকা হাসলাম আমি । আব্বু কিছুক্ষণ থেকে গল্প করে চলে যায় । নিয়ান থেকে যায় । ও আমার কাছে থাকবে কিছুদিন ।

আমি রুমে এসে এদিক থেকে ওদিক পায়চারি করছি আর নিয়ান আমার দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে

“আপু
“কী বলবি বল
“কী হয়েছে রে তোর ? এরকম করছিস কেন ?
“আরে তোর জিজুর জন্য এরকম করছি
“কেন ভাইয়ার কী হয়েছে

আমি নিয়ান কে পুরো ঘটনা বললাম । নিয়ান আমার দিকে তাকিয়ে একটা ভাব নিয়ে বসে বলে

“ডোন্ট ওয়ারি বেহনা । নিয়ান ইজ হেয়ার
“কী করবি তুই ?
“মিলি কে দূরে দূরে রাখবো ভাইয়ার কাছ থেকে আর তোর ঐ কাজটাও করে দিবো । এই কাজের জন্য ই তো আসা
“কিভাবে ?

নিয়ান আমার দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দেয় । আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না এর মাথায় কী চলছে
.
.
.
রেড মাফিয়া গ্রুপ
মেয়েটা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে । আকাশ এপাশ ওপাশ করছে । আকাশের এমন করার কোন কারণ খোজে পাচ্ছে না মেয়েটা ।

“এইভাবে পায়চারি করছো কেন ?
“ডার্ক মাফিয়া গ্রুপ আমাদের কিছু বিশ্বস্ত লোকদের মেরে দিছে
“হোয়াট ?
“হ্যা
“তুমি এই কথা আমাকে আরো আগে কেন বল নি

এই বলে মেয়েটা পাশে থাকা ফুলদানিটা ভেঙে ফেলে । মেয়েটার রাগ দেখে আকাশ ভয় পেয়ে যায় । এই মেয়ের রাগের ব্যাপারে ৪ বছর ধরে অবগত সে
.
.
.
অগ্নি আর মিলি রাত ৯ টায় বাসায় আসে । অগ্নি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে । আমি তার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে রুমে চলে আসি । আমার পিছন পিছন অগ্নিও আসে

“নিধি প্লীজ রাগ করে থেকো না
“আমার সামনে থেকে সরুন
“না । এখানে আমার কী দোষ ? মিলিই তো আমাকে জোর করে নিয়ে গেছে

অগ্নির কথায় আমি রেগে তার কলার চেপে ধরে বললাম
“ও নিয়ে গেলেই তোর যেতে হবে!
“প্লীজ লক্ষী বউ আমার রাগ করে না । আচ্ছা কী করলে তোমার রাগ কমবে ?
“যা বলব তাই করবেন ?
“হুম
“ওকে আমি আপনাকে মেয়ে সাজাবো আর আপনি চুপচাপ থাকবেন ।
“নাআআ
“তাহলে থকুন আপনি গেলাম

অগ্নি আর কোন পথ খোজে না পেয়ে রাজি হয়ে গেলো । অগ্নির মুখের রিয়েকশন দেখে মুখ টিপে হাসলাম
.
.
.
মিলি নিজের রুমে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে । অগ্নিকে নিয়ে আজ সে অনেক্ষণ ঘুরেছে । মিলি ভাবছে নিধিকে কিভাবে পথ থেকে সরাবে । হঠাত্‍ মিলির ফোনটা বেজে উঠে । মিলি বিরক্তি নিয়ে ফোনটা তুলে

“হ্যালো আকাশ
“তা প্ল্যান কতোটুকু এগিয়েছে
“প্রথম ধাপ শেষ
“আর হে এই প্ল্যান এ সাকসেস হতে হলে যদি নিধিকে মেরে ফেলতে হয় তাহলে তাই করো ।
“ওকে! কুইন এর সাথে কবে দেখা হবে ।
“কালকে দেখা হবে ।
“ওকে

মিলি ফোন রেখে দিয়ে আবারো আরাম করে বসে
.
.
.
অনি নিয়ানের সাথে গল্প করছে । গল্প করছে ভুল হবে সে নিধির সম্পর্কে নানা রকম প্রশ্ন করছে । নিয়ান বিরক্ত নিয়ে উত্তর দিচ্ছে । নিয়ানের ইচ্ছে করছে অনির মাথা ফাটিয়ে দিতে

“আচ্ছা নিয়ান ভাবি কী গুলি চালাতে পারে ?
“না আপু এগুলোতে ভয় পায়
“ওহ!
“হুম ।আচ্ছা আমি আসি

এই বলে নিয়ান ঐখান থেকে চলে যায় । নিয়ান চলে যেতেই অনি মাথায় হাত দিয়ে বসে পরে

“কিভাবে পাবো আমি ওদের খোজ । কিভাবে ?
.
.
.
রেড মাফিয়া গ্রুপ
“কুইন মিলি তোমার সাথে দেখা করতে চায় ।
“আমাকে দেখার খুব ইচ্ছে দেখা যায়
“হুম
“ওকে কালকে তোমার বাসায় ওর সাথে দেখা হবে
এই বলে ফোন কেটে দেয় মেয়েটি
.
.
.
আমি অগ্নিকে সাজাচ্ছি আর বেচারা ইনোসেন্ট ফেস করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।

“হয়েছে ?
“না
“আর কতক্ষণ লাগবে ?
“৫ মিনিট

অগ্নি আর কোন কথা বলে না । আমি আবারো কাজে মন দিলাম ।৫ মিনিট পর আমার সাজানো কমপ্লীট হলো । আমি অগ্নিকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে হু হু করে হাসতে লাগলাম । শাড়িতে ওকে জোস লাগছে

“এভাবে হেসো না প্লীজ
“কেন ?
“আমার এখানে লাগে

বুকের বাম পাশে হাত রেখে বলে । ওর কথায় আমি সোজা হয়ে বসলাম । গলাটা পরিষ্কার করে বললাম

“কয়েকটা পিক তুলি চলুন
“এই না
“বউয়ের জন্য এতটুকু করতে পারবেন না

ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করছি রাজি না হয়ে যাবে কোথায় । হায় রে নিধি তুই এতো ভালো ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করতে পারিস আগে জানতাম না তো । আয় সোনা তোর কপালে একটা চুমু খাই
.
.
.
সকালে
আকাশের কথা অনুযায়ী মিলি চলে যায় আকাশের বাসায় । আকাশের বাসায় যাওয়ার সময় মিলির বার বার মনে হচ্ছিল কেউ ওকে ফলো করছিল কিন্তু সে কাউকে দেখতে পায় না । মিলি গিয়ে আকাশের বাসায় ঢুকে পড়ে

“ওহ মিলি এসে গেছো
“হ্যা
“চা খাবে নাকি কফি
“কফি
“ওকে

আকাশ তার সার্ভেন্টদের বলে দেয় কফি আনতে । মিলি বার বার এদিক ওদিক দেখছে । আকাশ তার কারণ বুঝতে পেরে মুচকি হেসে বলে

“কুইন কে খোজছো ?
“হ্যা । কোথায় কুইন
“ওয়েট
“ওকে
“সুইটহার্ট প্লীজ এখানে চলে আসো । আর কতো লুকিয়ে থাকবে

আকাশের কথায় একটা রুম থেকে মেয়ে বের হয়ে আসে । মিলি মেয়েটাকে দেখে বসা থেকে দাড়িয়ে যায় । তার মুখ থেকে আপনা আপনি বেরিয়ে আসে

“অনি

চলবে

বানান ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ।

পারফেক্ট কাপল পর্ব-১১

0

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ১১
#ইনান

সকাল ৮ টায় ঘুম ভাঙে আমার । পাশে তাকাতেই দেখি অগ্নি এক হাত ভর দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । রাতের ঘটনা মনে হতেই লজ্জা লাগছে ভীষণ । আমাকে লজ্জা পেতে দেখে অগ্নি মুচকি হেসে বলে

“ওরে আমার লজ্জাবতিরে

গালে একটা কিস করে আমাকে জড়িয়ে ধরে । আমি ওর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম

“আরে ছাড়ুন আমায় । আনেক দেরি হয়ে গেছে
“উহু
“কী উহু! রাতে অনেক জ্বালিয়েছেন এখন প্লীজ ছাড়ুন ।

আমার কথায় অগ্নি তার মুখ আমার কানের কাছে এনে স্লো ভয়েস এ বলে ।

“কিভাবে জ্বালিয়েছি গো তোমায়

ওর এমন স্লো ভয়েস এ বলা কথা বুকে তোলপাড় শুরু করে দিছে । তার উপর এমন প্রশ্ন । আমি উঠে চলে আসতে নিবো ও আমাকে আরো চেপে ধরে নিজের সাথে ।

“কী হচ্ছে কী ছাড়ুন আমায়
“না ছাড়বো না
এবার অসহায় গলায় বলি
“প্লীজ ছাড়ুন আজকে উঠতে অনেক দেরি হয়ে গেছে

আমার কথায় অগ্নি আমার কপালে একটা কিস করে ছেড়ে দেয় । আমি টাওয়াল পেচিয়ে চলে গেলাম গোসল করতে ।
.
.
.
রেড মাফিয়া গ্রুপ
কুল মুডে বসে আছে মেয়েটি । আকাশ তার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে । আসলে সে বোঝার চেষ্টা করছে মেয়েটার মাথায় কী প্ল্যান চলছে ।

“আকাশ
“বলো
মেয়েটা নিজের নখের দিকে তাকিয়ে বলে
“অগ্নিকে মেরে ফেলতে হবে ।
“কী বলছো অগ্নি তোমার…

আকাশ কে আর কিছু বলতে না দিয়ে হাত দিয়ে থামিয়ে দেয় । আর রাগী দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে বলে

“আমি যেটা বলছি ঐটা করো । অগ্নির কারণে আমাদের অনেক টাকা লোস হয়েছে আর ডার্ক মাফিয়া গ্রুপকে নিয়ে পরে ভাবা যাবে । এখন মেইন টার্গেট হচ্ছে অগ্নিকে মারা ।
“হুম
“ওকে আমি এখন আসি
.
.
.
আমি গোসল করে নিচে আসতেই দেখি অনি বাহির থেকে আসছে । বারবার এদিক ওদিক তাকাচ্ছে । আমি তার কাছে গিয়ে বললাম

“কিগো ননদিনি চোরের মতো এদিক ওদিক কী দেখছো ?

আমার কথায় অনি ভূত দেখার মতো চমকে উঠে । আমি তার দিকে তাকিয়ে হেসে দেই । ও আমাকে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয় বলে

“ও ভাবি তুমি ।
“হুমি আমি ।কোথায় গেছিলে
“জগিং করতে
“ওহ আচ্ছা যাও ফ্রেশ হয়ে আসো

অনি আমার কথায় মাথা নাড়িয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে চলে যায় । আমি মুচকি হেসে চলে গেলাম রান্নাঘরে ।

মা কে রান্নার কাজে হেল্প করছি । প্রথমে মা কাজ করতে দেয় নি । কিন্তু আমি জোর করে কাজ করছি । হঠাত্‍ কলিংবেল বেজে উঠে ।

“নিধি দেখতো গিয়ে কে এসেছে
“আচ্ছা মা

আমি চলে আসলাম দরজা খুলতে । আমি দরজা খুলতেই আমার বয়সি একটা মেয়েকে দেখতে পাই । মেয়েটা আমাকে দেখে কটমট করে আমার দিকে তাকিয়ে ভিতরে চলে যায় ।

“মামি কোথায় তুমি

মেয়েটার চিত্‍কারে মা রান্নাঘর থেকে ছুটে আসে । আমি মেয়েটার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি । মেয়েটার আচরণ মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে । আমার দিকে ঐভাবে কটমট করে তাকানোর কারণ খোজে পেলাম না

মা এসে মেয়েটাকে দেখেই থেমে যায় । মুখে একটা চলতি হাসি ফোটে উঠে

“আরে মিলি কবে এলি

ও আচ্ছা এই মেয়ের নাম মিলি । মিলি আমার দিকে তেছড়া ভাবে তাকিয়ে বলে

“আজকে সকালেই এসেছি
“ওহ । আচ্ছা তোর রুমটা গোছানো আছে যা গিয়ে ফ্রেশ হ । ওহ তার আগে অগ্নির বউয়ের সাথে পরিচিত হ

মা আমাকে ইশারা করে উনার কাছে যেতে আমি তাই করলাম ।

“আগ্নির বউ নিধি

মিলি আমার দিকে তাকিয়ে জোর পূর্বক হেসে
“আমি মিলি
“আমি নিধি

মিলি আর কিছু না বলে চলে যায় । আমি দাত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে রুমে গেলাম । আমাকে এভাবে দেখে ভ্রু কুচকে তাকালো অগ্নি

“কী চিন্তা করছো গো ?
“আপনার কাজিন মিলি এসেছে
“কী ঐ চিপকু মেয়েটা বাসায় এসেছে
আমার দিকে চোখ বড় বড় করে কথাটা বলে । আমি তার কথা বুঝতে না পেরে বলি
“মানে ?
“মিলি বাসায় আসলে সবসময় আমার সাথে চিপকে থাকে ।

ওহ তাহলে এই ব্যাপার । এই কারণে মিলি আমার দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল । আমি অগ্নির সামনে গিয়ে দাড়িয়ে কমড়ে হাত দিয়ে বলি

“ঐ মেয়ের থেকে দূরে দূরে থাকবেন । ঐ মেয়ে একদম সুবিধার না

এই বলে আমি রুম থেকে চলে আসি । আর মিলিকে কিভাবে আমার বরের কাছ থেকে দূরে রাখা যায় সে চিন্তা করছি । আমার এতো কিউট বরটার সাথে ঐ শয়তান মেয়ে চিপকে থাকে । এবার একটু চিপকে দেখ তোরে কী করি
.
.
.
ডার্ক মাফিয়া গ্রুপ
অভি দৌড়ে কিং এর রুমে ঢুকে । অভিকে এভাবে দৌড়ে আসতে দেখে কিং ভ্রু কুচকে তার দিকে তাকায় ।

“দোস্ত রেড মাফিয়া গ্রুপ আমাদের কিছু লোকদের মেরে ফেলছে
“হোয়াট!
“হ্যাঁ
“ওকে তুই যা আমি দেখছি

কিং এর কথায় অভি চলে যায় ।অভি চলে যেতেই কিং একটা বাকা হাসি দিয়ে বলতে শুরু করে

“আকাশ রহমান তুমি বড্ড বোকা ।
.
.
.
সকাল ১০ টা বাজে খাবার টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছি । মিলি গাল ফুলিয়ে বসে আছে । কারণ ও এসে অগ্নির পাশে বসতে চায়ছিল কিন্তু ওর আগে এসে আমি বসে পরি

“আচ্ছা তুমি এভাবে ছুটে এসে আমার পাশে বসলে কেন ?
আমার কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলে । আমিও আস্তে আস্তে করে বলি
“নয়তো ঐ মিলি পেতনি আপনার পাশে এসে বসতো
“বসলে বসতো

অগ্নির কথায় আমি তার দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকাতেই সে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে খাওয়া শুরু করে । তখন বাবা বলে উঠে

“অগ্নি, নিধি তোমরা আজকে থেকে ভার্সিটিতে যাবে
“ওকে বাবা
“আমিও যাবো অগ্নির সাথে ভার্সিটিতে

মিলি বলে উঠে । আমি মিলির দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকাতেই ও আমার দিকে একইভাবে তাকায় । আমি ওর দিকে তাকিয়েই বলতে শুরু করি

“মিলি আমরা আজকে অনেকদিন পর ভার্সিটিতে যাবো তাই একটু বিজি থাকবো । তোমাকে আমরা সময় দিতে পারবো না । তুমি এক কাজ করো অনির সাথে ওর কলেজে যাও ।

আমার কথায় মিলি কিছু বলতে যাবে তার আগেই মা বলে উঠে

“হ্যা নিধি ঠিকই বলছে তুই আরেকদিন যাস

মিলি আর কিছু বলে না । আমি তার দিকে তাকিয়ে বাকা হাসলাম । আর অগ্নি আমার দিকে তাকিয়ে বাকা হাসল । মিলির বাচ্চা তোরে যদি আমি টাইট না দিছি তো আমিও মিসেস অগ্নি চৌধুরী না ।

চলবে

পারফেক্ট কাপল পর্ব-১০

0

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ১০
#ইনান

জ্ঞান ফিরতেই নিজেকে নিজের রুমে আবিষ্কার করলাম । আমার জ্ঞান ফিরেছে দেখেই অগ্নি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ।

“আমি এখানে আসলাম কী করে ?
আমার কথায় অগ্নি সোজা হয়ে বসে বলে
“তোমাকে কিডন্যাপ করা হয়েছিল কিন্তু কিডন্যাপাররা তোমার ফোন বন্ধ করতে ভুলে গেছিল তাই তোমাকে খুব ইজিলি পেয়ে গেলাম
“ওহ!
“হুম এখন যাও রেডি হয়ে আসো
“কোথায় যাবো ।
“আমাদের বাসায়
“আজকেই তো আসলাম এখানে আবার আজকেই চলে যাবো
“তুমি কিডন্যাপ হয়েছো শুনে আম্মু অনেক টেনশন করছে । আর আজকেই চলে যেতে বলছে

আমি আর কিছু না বলে চলে গেলাম রেডি হতে ।
.
.
.
রেড মাফিয়া গ্রুপ
আকাশ আর ঐ মেয়েটি রাগে ফুসছে । তাদের হাতে একটা চিরকুঠ যেখানে বড় বড় করে ‘গাধা’ লেখা ।

ঐসময় তারা রুমে গিয়ে দেখে একটা মেয়েও নেই । সবাইকে উদ্ধার করে নিয়ে গেছে আর তাদের জন্য এই চিরকুঠ টা রেখে গেছে ।

“ডার্ক মাফিয়া গ্রুপ অনেক সাহস পেয়ে গেছে । এদের একটা বিহিত করতেই হবে

রাগে ফুসতে ফুসতে বলে মেয়েটা । আকাশের চোখ লাল হয়ে গেছে । কিন্তু ও একটা বিষয় সিওর হয়ে গেছে ডার্ক মাফিয়া গ্রুপ এর কিং অগ্নি নয় ।

চলুন জেনে আসি আকাশের সিওর হওয়ার কারণ

কিছুক্ষণ আগে
অগ্নি বার বার ঘড়ি দেখছে আর নিধিকে ফোন দিচ্ছে । কিন্তু নিধি ফোন তুলছে না । এদিকে অগ্নির কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে ছে । সে আর কিছু না ভেবে আকাশকে ফোন দেয় । আকাশের সাথে এ কয়েকদিন এ তার খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়েছে । সে যায় হোক দুইবার ফোন বাজতেই রিসিভ করে আকাশ

“হ্যা অগ্নি বলো
“আকাশ নিধিকে খোজে পাচ্ছি না
“হোয়াট!
“হ্যা আজকে দুপুরে ও আর ওর দুই ফ্রেন্ড ঘুরতে বের হয় কিন্তু এখন ও বাসায় ফিরে নি বিকেল হয়ে গেছে ।
“আচ্ছা আমি দেথতেছি

এই বলে ফোন কেটে দেয় আকাশ । আর এতে ও নিশ্চিত হয় যে ডার্ক মাফিয়া গ্রুপ এর কিং অগ্নি নয় ।
.
.
.
ডার্ক মাফিয়া গ্রুপ
“গুড জব কুইন

কিং এর কথায় মুচকি হাসে কুইন । তখন অভি আর সাব্বির দরজায় এসে টুকা দেয় । কিং তাদের আসার অনুমতি দেয় ।

“কংগ্রেচুলেশন আফা
অভির কথায় চোখ গরম করে কুইন বলে ।
“অভি ভাইয়া তুমি এখন মাইর খাবে আমার হাতে আফা কী হে আপুনি বলতে পারো না
“ঐ অইব্বা তুই মাইর খাবি তুই আফা কেন কস আফামণি কইবি বুঝছোস

কুইন সাব্বিরের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকাতেই সাব্বির চুপ হয়ে যায় । তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে এখন ৫ বছরের বাচ্চা । তার মুখের রিয়েকশন দেখে অভি আর কিং হাসতে থাকে আর সাব্বির তাদের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকায়
.
.
.
বাসায় এসে ঢুকতেই অনি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে । মা এসে আমাকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে কোথাও আঘাত লাগছে নাকি ।

“উফ মা দেখো আমি একদম ঠিক আছি ।
আমার কথা শুনে মা আমার দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে বলে
“চুপ থাক আমাকে দেখতে দে
তখন অনি বলে উঠে
“ভাবি আজকে আম্মু তোমাকে এত্তো গুলো খাবার খাওয়াবে ।
আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললাম “এ
“এ না হ্যা । দেখো কিভাবে খাওয়াই
“খাওয়াবো না তো কী করবো ? দেখ মেয়েটা কেমন হয়ে গেছে ঐখানে খেতেও হয় তো দেয় নি ঠিক মতো
মায়ের কথায় অনি কপাল এ হাত দিয়ে বলে
“মেরি মা ভাবি মাত্র ৩ ঘন্টা ছিল কিডন্যাপারদের কাছে । আর এই তিন ঘন্টায় মানুষ শুকায় কেমনে ?

অগ্নি আর থাকতে না পেরে এবার শব্দ করে হেসে দিল । আমার হাসি পেলেও আমি চেপে গেলাম । মা অগ্নির দিকে চোখ গরম করে তাকালো । অগ্নি সেদিকে পাত্তা না দিয়ে হাসতে হাসতে গিয়ে সোফায় বসে বলে

“মম তুমি পারোও বটে
মা তার দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে বলে
“তুই কী বুঝবি মায়ের চিন্তা

এই বলে মা আমার হাত ধরে নিজের মতো বক বক করতে চলে আসে রুমে । রুমে এসে আমায় বিছানায় বসিয়ে আমার পাশে বসে আমার কোথাও ব্যাথা লেগেছে কিনা তা দেখছে । আমি মাকে জড়িয়ে ধরলাম

“আরে আমি ঠিক আছি একদম ।চিন্তা বাদ দাও তো ।
“হুম

আমি মায়ের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে চলে গেলাম আমাদের রুমে । রুমে গিয়ে দেখি অগ্নি গালে হাত দিয়ে কিছু একটা গভীর ভাবে চিন্তা করছে ।

“কি চিন্তা করছেন শুনি ?
“আমার গার্লফ্রেন্ড এর কথা
“কী আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে ?
“হুম

আমার সাথে সাথে রাগ উঠে গেলো । অগ্নির কাছে গিয়ে অগ্নির কলার ধরে নিজের কাছে এনে বলি

“তোর বাস্তবে তো দূরে থাক স্বপ্নেও যদি কোন মেয়ে আসে না তাহলে তোর খবর আছে ।

আমার কথা শুনে অগ্নি আমার কমড় চেপে নিজের কাছে নিয়ে বলে

“কেন গো জেলাস ফিল হয়
“জানি না ছাড়ুন আমায়

নিজেকে ছাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতে লাগলাম । এতে কোন কাজ হয় নি অগ্নি আমাকে আরো নিজের সাথে চেপে ধরেছে । আমি অগ্নির দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকাতেই সে আমার দিকে শয়তানি হাসি নিয়ে তাকায় ।

এর হাসি দেখে আমার গলা শুকিয়ে গেছে । মনে মনে নিজেকে গালি দিতে ইচ্ছে করছে । এতো জিলাস ফিল করতে কে বলছে । এখন একে সামলা তুই আমি গেলাম হুহ

চলবে

পারফেক্ট কাপল পর্ব-০৯

0

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ৯
#ইনান

মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছি বেলকুনিতে । সকালেই আমাদের বাসায় এসেছি আমি আর অগ্নি । বাসায় এসে দেখি সানাই কে কেউ মেরে দিছে । নিজের বিড়ালকে হারিয়ে খারাপ লাগছে খুব । কান্না আসছে কিন্তু কাদছি না ।

হঠাত্‍ পিছন থেকে কেউ কাধে হাত রাখতেই চমকে পিছনে তাকালাম আমি । তাকিয়ে দেখি অগ্নি । ওকে দেখে ফুস করে একটা শ্বাস ছেড়ে আবার আকাশের দিকে তাকালাম

“কিছু বলবে ?
অগ্নি কিছু না বলে আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ।
“আমি একা থাকতে চাই কিছুক্ষণ
“আমি থাকতে দিবো না চুপচাপ রুমে চলো দুপুরে খাবার খাও নি
“আমি খাবো না যান আপনি
“চুপচাপ এসো বলছি

আমাকে অগ্নি জোর করে রুমে নিয়ে আসে । রুমে নিয়ে এসে বিছানায় বসিয়ে দেয় ।

“চুপ করে এখানে বসো
“আমি খাবো না
“তোমার মত জানতে চাই নি
“আমি..

আর কিছু বলতে পারলাম না অগ্নির চোখ পাকানো দেখে । তাই চুপচাপ খেয়ে নিলাম । আমাকে খাইয়ে দিয়ে আমার কপালে চমু খেয়ে সে চলে যায়
.
.
.
রেড মাফিয়া টিম
“ওয়েলকাম কুইন
আকাশের কথায় মেয়েটা হালকা হেসে বলে
“থ্যাংকস ।
“তা জানতে পারলে ডার্ক মাফিয়ার ব্যাপারে ?
ডার্ক মাফিয়ার কথা শুনতেই মেয়েটার চোখ রক্তবর্ণের হয়ে গেলো । দাঁতে দাঁত চেপে বল
“না । এদেরকে পেলে আমি ছাড়বো না । ওদের জন্য আমাদের অনেক টাকা লোস হয়েছে ।
“উপর থেকে ২০/২৫ জন মেয়ে চেয়েছে ।
“তো বসে আছো কেন মেয়ে জোগার করো

কুইন এর কথায় আকাশ মাথা নাড়িয়ে তাদের লোকদের আদেশ করে মেয়ে জোগার করতে ।
.
.
.
ডার্ক মাফিয়া টিম
কিং বসে ল্যাপটপে কাজ করছিল তখন হঠাত্‍ করে অভি রুমে প্রবেশ করে

“কিং তোকে কিছু বলার আছে
কিং ল্যাপটপে তাকিয়ে বলে
“বল
“রেড মাফিয়া আবারো মেয়ে পাচার করবে ২৫ জন
তখন কোথা থেকে কুইন এসে বলে
“সেই ২৫ জনের মধ্যে একজন আমি হবো ।

কিং, কুইন আর অভি একে অপরের দিকে তাকিয়ে রহস্যময় হাসি দিল

ও চুলন আপনাদের বলি রেড মাফিয়া আর ডার্ক মাফিয়ার ব্যাপারে

(রেড মাফিয়া টিম সবসময় খারাপ কাজে নিযুক্ত যেমন ড্রাগস পাচার করা, মেয়ে পাচার আর অনেক কিছু । আর সেই টিম এর কিং আকাশ )

(ডার্ক মাফিয়া টিম সবসময় ভালো কাজে নিযুক্ত থাকে । তাদের আসল লক্ষ্য হলো রেড মাফিয়াদের শেষ করা । আর তাই তারা একে অপরের শত্রু । আর এই টিম এর কিং এবং কুইন পারফেক্ট কাপল একজন আরেকজনের থেকে কম না )
.
.
.
আমি আর অগ্নি ঝগড়া করছি । ঝগড়ার মেইন কারণ হচ্ছে আমি রিমি আর ইশার সাথে ঘুরতে যাবো কিন্তু উনি আমাকে দিবে না

“আমি যাবো
“না তুমি যাবে না
চোখ রাঙিয়ে বলে । ওর চোখ রাঙানো দেকে ভেংচি কেটে বলি
“আমি যাবো বলছি তার মানে যাবোই
“না তুমি যাবে না
“আমি যাবো যাবো যাবো
“তুমি যাবে না যাবে না যাবে না

এবার আমি কিছু বলতে যাবো তখনি রিয়াদ, আরিশ ,রিমি আর ইশা রুমে ঢুকে । রিয়াদ এসে অগ্নিকে পান্চ মেরে বলে

“আমি কী শুধু শুধু তোদের #পারফেক্ট_কাপল বলি । তোরা একজন আরেকজনের থেকে একটুও কম না । কোন কিছুতেই হার মানবি না ।
রিয়াদের মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে আরিশ বলে উঠে
“একে অপরকে ছাড় দেয় না । ভাই ভালো

আমরা সবাই হেসে দিলাম । অনেক কষ্টে অগ্নিকে রাজি করিয়ে আম্মু আব্বুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেলাম
.
.
.
ডার্ক মাফিয়া টিম
“সব ঠিক আছে তো ?
“হুম
“পজিশন ঠিক আছে ?
“হুম

কিং সাব্বিরের দিকে রেগে তাকাতেই সাব্বির ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় । আর বোকা বোকা কন্ঠে বলে

“আমি আবার কী করলাম ?
“হুম কী ধরনের উত্তর
“তো কী বলতাম
“ডিটেইলস এ বল
“কুইন একদম ঠিক পজিশনে আছে কিছুক্ষণের মাঝেই ওরা কিডনাপ করে নিয়ে যাবে তাকে ।
“গুড

সাব্বির বঁত্রিশ পাটি বাসিয়ে একটা হাসি দেয় । তা দেখে কিং ভ্রু কুচকে তার দিকে তাকাতেই হাসি গায়েব হয়ে যায় । সাব্বিরের কাচুমাচু হওয়া মুখটা দেখে অভি হেসে দেয় ।

“ঐ অইব্বা ভেটকাস কেন ?
“আমার নাম অভি সো প্লীজ কল মী অভি
“এহ আইছে
“চুপ শালা
“ইউ শ্যাট আপ
“এই তুই এইন্তে যা
“জীবনেও না তুই যা

কিং এর এদের দুজনের ঝগড়া দেখে কপাল চাপড়ায়তে ইচ্ছে করছে । এখানে একটা ইম্পর্টেন্ট কাজ করছে আর ওরা দুজন ঝগড়া করছে

“১০ সেকেন্ড টাইম দিলাম হয় তোরা থেমে যা নয় তো আমার শুট খা

কিং এর বলতে দেরি আর ওদের থামতে দেরি হয় নি ।
.
.
.
পার্কে আমি, রিমি আর ইশা হাটছিলাম । তখন কয়েকটা লোক আমাদের সামনে এসে থামে

“আপনাদের সাথে কিছু কথা আছে
“কী কথা ?
“একটু ঐদিকে আসবেন
“কেন এখানে দাড়িয়ে বলেন

লোকটা আমাদের আর কিছু না বলে আমাদের নাকের কাছে স্প্রে করে দেয় । আর আমরা ঐখানেই পড়ে যায়
.
.
.
রেড মাফিয়া গ্রুপ
আকাশ রেগে তাকিয়ে আছে তার লোকদের দিকে । আর সবাই মাথা নিচু করে তাকিয়ে আছে । কারণ লোক গুলো নিধিকে কিডন্যাপ করে নিয়ে এসেছে । তখন ই রেড মাফিয়া কুইন আসে সেখানে

“প্রতিটি মেয়ের ছবি পাঠিয়ে দিয়েছে তার নাকি এদেরকেই চায় এছাড়া অন্য কোন মেয়ে দিলে তারা ডিল ক্যানসেল করবে

কুইন এর কথায় আকাশ চমকে উঠে । আকাশ তারতারি করে বলে

“কী বলছো এখানে আমার নিধি ও আছে
“হোয়াট!
“হুম
“এখন কী করবো ? ১০ কোটি টাকার ডিল
“ওকে একটা নিধিকেও পাচার করা হবে ।

আকাশ আর রেড কুইন চলে যায় মেয়েদের কক্ষে যেখানে তারা মেয়েদের আটকে রেখেছে । মেয়েদেরকে তারা খড়া পাহাড়ায় রেখেছে যাতে কেউ পালিয়ে যেতে না পারে ।

“মন খারাপ কর না আকাশ এর থেকেও ভালো মেয়ে পাবে তুমি । আর আমি তো আছিই তাই না

মেয়েটার কথায় হালকা হাসে আকাশ । মেয়েটা আর আকাশ ঐ কক্ষে প্রবেশ করতেই থ হয়ে যায় ।

চলবে ?

পারফেক্ট কাপল পর্ব-০৮

0

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ৮
#ইনান

পতুলের মতো বসে আছি পার্লারের মেয়েরা আমাকে সাজাচ্ছে । আর বসে থাক পসিবল হচ্ছে না । ২ ঘন্টা ধরে সাজাচ্ছে । কী সাজাচ্ছে আল্লাহ জানে

অনেক কষ্টে কিছুক্ষণ সহ্য করে থাকা গেলেও এখন সম্ভব না । তাই না পেরে বলে উঠলাম

“আর কতক্ষণ লাগবে
“ম্যাম শুধু চোখে কাজল আর ঠোটে লিপিস্টিক দিলেই হয়ে যাবে
“তারাতারি করুন প্লীজ
“জ্বী ম্যাম

আবারো কাঠের পতুলের মতো বসলাম । চোখে কাজল আর ঠোঁটে লিপিস্টিক লাগাতেই ১৫ মিনিট লাগিয়েছে ।

সাজানো কমপ্লিট করে বসে আছি । আমার সাথে রিমি আর ইশা বসে আছে । ওরা কী নিয়ে যেন চোখে একে অপরকে ইশারা করছে

“তোরা কী নিয়ে ইশারা করছিস
আমার কথায় ইশা সোজা হয়ে বসে গলা পরিষ্কার বলে

“অগ্নি ভাইয়া কী জানে ?

ইশার কথা শুনে ওদের দিকে তাকিয়ে বাকা হাসলাম । ওরাও আমার দিকে তাকিয়ে রহস্যময় হাসি দিল ।
.
.
.
বাসর ঘরে বসে আছি । কিছুক্ষণ আগেই আমাকে অগ্নির ঘরে বসিয়ে দিয়ে গেছে অগ্নির বোন অনি । অনি মেয়েটা খুব মিষ্টি আর মিশুকে । আমাকে অনেক সহজেই আপন করে নিয়েছে ।

দরজা খোলার শব্দে ভাবনা থেকে ফিরে আসলাম । অগ্নি দরজা খোলে ভিতরে ঢুকে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেল । ও এমন ভাবে গেছে মনে হয়েছে ও ছাড়া এই রুমে আর কেউ নেই

“বেটার ভাব দেখো মনে হচ্ছে ও ছাড়া এই ঘরে আর কেউ নাই । বজ্জাত লোক আইছে আমারে এটিটিউড দেখাতে

আমি আনমনে ওকে বকে যাচ্ছিলাম । তখন অগ্নি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বলে

“আমাকে বকা শেষ হয়ে থাকলে আপনি ফ্রেশ হয়ে আসতে পারেন ।

আমি একটা ভেংচি কেটে কালো রং এর শাড়ি নিয়ে চলে গেলাম ওয়াশরুমে শাওয়ার নিতে ।

ফ্রেশ হয়ে এসে নিজের চুল গুলো ঠিক করে নিলাম । শাওয়ার নিয়ে এখন নিজেকে হালকা লাগছে ।

“ঘুরতে যাবে ?
অগ্নির কথা বুঝতে না পেরে বলে উঠলাম
“হে?
“বলছি ঘুরতে যাবে
“এখন ?
“হ্যা যাবে ?
“হ্যা যাবো
“ওকে চলো

আমি আর অগ্নি চলে গেলাম । আজকে আর গাড়ি নিলাম না । হাটতে ভালোই লাগছে । ল্যাম্পপোষ্টের আলোতে নতুন দম্পতি হেটে যাচ্ছে । আমার কাছে মুহূর্তটা ভালোই লাগছে
.
.
.
আকাশ রেগে বসে আছে । সে কিছুতেই একটা হিসাব মিলাতে পারছে না । রাগে তার গা জ্বলে যাচ্ছে

“আমি রেড মাফিয়া টিম এর কিং অথচ আমার শত্রু দল ডার্ক মাফিয়া টিম এর কিং আর কুইন কাউকে চিনি না । কিন্তু একজন আমার সন্দেহে ছিল সে অগ্নি চৌধুরী । কিন্তু ওর কর্মকান্ডে বোঝা যায় ও এগুলোর সাথে জড়িত না

এগুলো বলে দেয়ালে জোরে নিজের হাতে পান্চ মারলো । এতে হাত কেটে গেছে কিন্তু সেদিকে তার বিন্দু মাত্র ভ্রুক্ষেপ নাই ।
.
.
.
ডার্ক মাফিয়া টিম
একটা ২২/২৩ বছরের ছেলে আর ২০/২১ বছরের মেয়ে কালো ড্রেস পড়ে কক্ষে প্রবেশ করতেই সেখানে সকল কালো পোশাক পড়া লোকের মাথা নিচু করে ফেলে । তা দেখে মেয়েটা বলে উঠে

“মানলাম আমরা কিং আর কুইন কিন্তু তার জন্য মাথা নিচু করার কোন মানেই হয় না পরের বার এরকম করলে সবকটাকে গুলি করে মারবো

কুইন এর কথা শুনে কিং হালকা হাসে । যারা মাথা নিচু করে দাড়িয়ে ছিল তারাও হাসছে । তাদের মাঝে একজন কিং এর ঘনিষ্ট লোক সাব্বির উঠে বলে

“কুইন হোয়াট আ জোকস মারলেন
সাব্বিরের কথায় কুইন তার দিকে তাকিয়ে বলে
“সাব্বির ভাইয়া আপনার কী গুলি খাওয়ার ইচ্ছা আছে
“না বোন আমার এখন ও বিয়ে হয় নি ।
সাব্বিরের কথায় কিং গিয়ে ওকে পান্চ মেরে বলে
“তুই জীবনে শোধরাবি না

তখন আরেকজন কমেডি ম্যান অভি এসে বলে
“আমি শোধরে গেছি

সবাই ওর দিকে তাকিয়ে হেসে দেয় । অভি,সাব্বির আর কিং হলো খুব ভালো বন্ধু ।

অভি সোজা এসে কুইনকে সালাম করে দূরে দাড়িয়ে হাত পেতে আছে ।তা দেখে কিং বলে

“কী রে তুই এভাবে ফকিরের মতো হাত পেতে আছিস কেন ?
“টাকা দে
“কুইন ওকে ২ টাকা দিয়ে দাও তো
“শালা কিপটা

এই বলে অভি তার হাত সরিয়ে নেয় । কিং আর কুইন হেসে দেয় । কিছুক্ষণ মজা করার পর কিং আর কুইন নিজের জায়গায় বসে ।

“রেড মাফিয়া কিং এর খবর কী ?
কিং এর কথায় একটা ছেলে এগিয়ে এসে বলে
“কিং ও এখন ও আপনার পরিচয় খোজছে ।

“বাহ শত্রুকে দেখার এতো ইচ্ছা । আচ্ছা কালকে আমার শত্রুর কাছে একটা চিঠি পাঠিয়ে দিও যে খুব শীঘ্রই ও আমাকে দেখতে পাবে

তখন কিছু একটা ভেবে কুইন বলে উঠে
“রেড মাফিয়ার কুইন কে ?
“এখন ও জানতে পারি নি

লোকটার কথা শুনে কুইন রেগে উঠে দাড়িয়ে যায় । আর হুংকার ছেড়ে বলে

“যত তারাতারি সম্ভব ঐ কুইন এর খবর আমি চাই
“জ্বী কুইন
.
.
.
মাত্র বাইরে থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পরলাম । ক্লান্ত থাকায় খুব তারাতারি ঘুমিয়ে গেলাম । অগ্নি ফ্রেশ হয়ে এসে আমাকে আষ্ঠে পৃষ্টে জড়িয়ে ধরে আছে ।

“আরে কী করছেন আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে
“তোমার কষ্ট হচ্ছে না আমি জানি
“ঘোড়ার ডিম জানেন । ছাড়ুন আমায়
“চুপচাপ ঘুমাও নয় তো কিস করবো

এই লোকটার উপর বিশ্বাস আছে উনি এটা করতে পারবে । তাই চুপ হয়ে গেলাম । আমাকে চুপ হয়ে যেতে দেখে মুচকি হেসে অগ্নি ঘুমিয়ে গেলো ।
.
.
.
সকাল ৮ টায় ঘুম ভেঙে গেল আমার কিন্তু উঠবো কী করে এই মহারাজা আমাকে এমন ভাবে জড়িয়ে ধরে আছে যে আমি একটু নড়তেও পারছি না

“এই যে শুনছেন
“অগ্নি শুনছেন
অগ্নি হালকা নড়ে আবার ঘুমিয়ে যায় । কী ঘুমরে বাবা আমি রেগে অগ্নিকে চিমটি কাটতে লাগলাম । এবার সে বিরক্ত হয়ে চোখ খোলে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে যায় আর আমি বেক্কলের মতো তার দিকে তাকিয়ে আছি ।

চলবে ?

পারফেক্ট কাপল পর্ব-০৭

0

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ৭
#ইনান
আমি রেডি হয়ে ছাদে যাচ্ছি । কারণ অগ্নি আমায়
ছাদে যেতে বলছে । কিন্তু প্রবলেম হচ্ছে গিয়ে
নিয়ান । নিয়ান আমার পিছন পিছন আসছে । এবার
বিরক্ত হয়ে বললাম
“কী চায় ? এভাবে পিছন পিছন আসছিস কেন ?
“তুই অগ্নি ভাইয়ার সাথে ঘুরতে যাচ্ছিস না
আমি ওর কথা শুনে একটা ভাব নিয়ে বললাম
“হুম! তো ?
“এখন তুই আমাকে ২০০ টাকা দিবি
“তোকে টাকা কেন দিবো ?
“তুই আমাকেই টাকা দিবি নয় তো আমি গিয়ে
সবাইকে জাগিয়ে দিবো
“উফ এই নে টাকা
ওর হাতে ২০০ টা ধরিয়ে দিয়ে আমি চলে আসি ।
এখন ওর সাথে ঝগড়া করার মুড আমার নেই । আমি
ছাদে আসতেই অগ্নি আমাকে ফোন দিল ।
“হ্যালো ।
“এসে গেছো ছাদে ?
“হুম এসে গেছি
“ছাদের কিনারায় এসে দেখো একটা মোটা দড়ি
টানানো আছে ঐটা বেয়ে নিচে নেমে আসো ।
“আমি দড়ি বেয়ে নামবো কেন ?
“কারণ মেইন দরজা দিয়ে বেরুতে গেলে দারোয়ান
তোমায় বেরুতে দিতো না । এখন চুপচাপ নেমে
আসো ।
আমি ফোনটা কেটে দিয়ে ছাদের কিনারায় আসলাম ।
দড়িটা ধরে কিনারায় দাড়িয়ে আছি । নামার সাহস
হচ্ছে না । অগ্নির দিকে তাকাতেই সে ইশারা করছে
নেমে আসতে । আমি মনে মনে আল্লাহর নাম নিয়ে
নিচে নামলাম । ভয়ে হাত পা কাপছে আমার
“আরে এতো ভয় পাও কেন ?
“আপনি কী বুঝবেন! একটুর জন্য আমার জানটা
বেরিয়ে যায় নি ।
“হুম হয়েছে এবার চলো
“হুম চলুন ।
অগ্নি আমাকে ফ্রন্ট সিটে বসিয়ে সে গিয়ে
ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করে ।
.
.
.
সত্যি রাতের বেলা ঘুরার মজায় আলাদা । চারদিকে
নিস্তব্দ জনমানব শূন্য । আমার খুব ভালো লাগছে
। সময়টা যদি এখানেই থেমে যেতো । প্রিয় মানুষটা
পাশে বসে থাকলে কার না ভালো লাগে ।
হ্যা আমি অগ্নিকে ভালোবেসে ফেলছি । এই ছয়
দিনে ওকে আমি ভালোবেসে ফেলছি । আমি অগ্নির
দিকে তাকালাম । অগ্নি আড় চোখে আমার দিকে
তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে ।
“বউ কিছু বলবে
আমি নিজের দৃষ্টি সরিয়ে বললাম
“না
“কিন্তু আমার কেন জানি মনে হচ্ছে তুমি আমাকে
কিছু বলতে চাও
“তো আমি কী করবো ?
“কিস করো
ওর কথা শুনে ওর দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালাম
। কিন্তু পরক্ষণেই চোখ নামিয়ে নিলাম । ও
আবারো মুচকি হেসে ড্রাইভ করতে থাকে ।
.
.
.
লন্ডন
সারাঘর তছনছ করছে একটা মেয়ে । আকাশের কাছ
থেকে অগ্নির বিয়ের খবর শুনে ও রাগে ফুসছে ।
তখন একজন মধ্য বয়স্ক লোক ঘরে এসে মেয়েটার
কাধে হাত রেখে বলে
“মিলি মামনি শান্ত হও ।
হ্যা মেয়েটার নাম মিলি বয়স ২০ । মিলি অগ্নির
ফুপাতো বোন । মিলির যখন ১২ বছর তখন
থেকেই সে অগ্নিকে পছন্দ করে । আর আকাশ এবং
মিলি তারা একই ভার্সিটিতে পড়ে এবং তারা ফ্রেন্ড
। এবার গল্পে যাওয়া যাক ।
“আমায় কিভাবে শান্ত হতে বলছো পাপা । ঐখানে
আমার অগ্নির বিয়ে হয়ে যাচ্ছে ।
“উফ মামনি আজকাল ১টা কাগজে সাইন দিলে বিয়ে
হয়ে যায় আরেকটা কাগজে সাইন দিলে ডিভোর্স হয়ে
যায় ।
“তার মানে
“ওদের বিয়ে হবে ঠিক আছে কিন্তু ডিভোর্স হতে
কতক্ষণ ।
মিলি তার বাবার কথা শুনে একটা হাসি দিয়ে তার
বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে
“ইউ আর দ্যা বেস্ট পাপা
“আই নো মাই প্রিন্সেস
.
.
.
সকাল
ঘুম থেকে উঠে দেখি ১১ টা বাজে । অনেক রাত করে
ঘুমানোর জন্য উঠতে দেরি হয়ে গেছে । আমি
তারাতারি উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম । আমি ফ্রেশ
হয়ে এসে দেখি আকাশ আমার রুমে বসে আছে ।
“কীরে তুই এখানে কী করছিস ?
“তোর সাথে অগ্নির ব্যাপারে কিছু বলার আছে ।
“কী কথা ?
“অগ্নি কোন ভালো ছেলে নয় । সে ডার্ক মাফিয়া
টিম এর কিং ।
“আকাশ ও খুব ভালো ছেলে আর তোর কালকের
ঘটনা আমি ভুলে যাই নি । তুই ভাবলি কী করে
অগ্নির মতো সহজ সরল ছেলে মাফিয়া হবে ।
“নিধি আমি তো…
“ব্যস আকাশ বেরিয়ে যা এইখান থেকে ।
আকাশ রেগে বেরিয়ে যায় রুম থেকে । আকাশ চলে
যেতেই একটা বাকা হাসি দিয়ে চলে গেলাম নিচে কারণ
খুব ক্ষুধা লেগেছে আমার ।
খাবার খেয়ে ছাদে চলে গেলাম আমি
.
.
.
আকাল রাগে ফুসছে । যদি পারতো সব কিছু শেষ
করে দিতো । রাগে ওর পুরো শরীর কাপছে ।
“শুধু অগ্নিকে বিশ্বাস করিস । কেন তুই আমাকে
বিশ্বাস করিস না
রাগে ফুলদানিটা আছড় মেরে ভেঙ্গে ফেলল । আর
নিজের রুম থেকে বের হয়ে গেল
.
.
.
রাতে
আজকে আমার মেহেদি অনুষ্ঠান । হাতে মেহেদি
লাগাচ্ছে সেই কখন থেকে বসে আছি । রিমি আর ইশা
আমাকে মেহেদি দিয়ে দিচ্ছে
“কীরে আর কতক্ষণ লাগবে ?
“এই তুই চুপ করে বস তো
“ধুর ভাল্লাগছে না
“তুই মুখ বন্ধ কর তাহলেই তারাতারি শেষ হয়ে
যাবে
“এই নিয়ে তুই ৭০ বার জিজ্ঞেস করছিস ।
আমরা নিজেরা ফিসফিস করছিলাম । তখন আকাশ
হাতে মাইক নিয়ে এসে আমার কাজিনদের মধ্যে
কয়েকজন নাচবে ।
সে যায় হোক নাচ দেখে কিছুক্ষণের জন্য চুপ হয়ে
রইলাম । এই ফাকে ইশা আর রিমি মেহেদি দেওয়া
শেষ করে ফেলছে ।
.
.
.
ফ্যান ছেড়ে মেহেদির হাত গুলো উপরে তুলে শুয়ে
আছি । তখনি আমার ফোনটা বেজে উঠলো ।
“ধুর এই মুহূর্তে আবার কে ফোন দিল
উঠে গিয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি অগ্নি ফোন
দিছে । কিন্তু হাতে মেহেদি ধরবো কী করে ? তখনি
ঐদিক দিয়ে ইশা যাচ্ছিল
“ইশা
“হ্যা বল
“ফোনটা একটু ধরে দিবি
“জিজু ফোন দিছে বুঝি
“হয়েছে তোর ।
ইশা মুচকি হেসে ফোনটা ধরে লাউড স্পিকার দিয়ে
চলে যায় । আমি অগ্নির সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে
ফোনটা রেখে শুয়ে পড়লাম । হাতের মেহেদি শুকিয়ে
যাওয়ার পর হাত ধুয়ে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম ।

পারফেক্ট কাপল পর্ব-০৬

0

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ৬
#ইনান

৬ দিন কেটে গেছে বিয়ের আর ৩ দিন বাকী । এই ৬ দিন অগ্নি আমাকে নানা ভাবে জ্বালিয়েছে । রাতের ৩ টা পর্যন্ত ওর সাথে ফোন এ কথা বলা লাগছে নয়তো বাসার নিচে চলে আসতো । আমার সব কাজিন রা চলে এসেছে বিয়ে তে । আমরা কাজিনরা মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন আমার এক চাচাতো ভাই আকাশ এসে বলে

“নিধি একটু এসে শুনবি ?
“হুম আসছি

আমি উঠে আকাশের পিছন গেলাম । আকাশ আর আমি সমবয়সি । আমাকে আকাশ ছাদে নিয়ে আসে ।

“নিধি তোকে কিছু বলতে চাই
“হুম বল
“আসলে আমি তোকে..
“আমাকে কী ?
“আমি তোকে ভালোবাসি
চোখ বন্ধ করে বলে আকাশ । আমি তার কথা শুনে ওর দিকে তাকিয়ে হেসে দিয়ে বললাম
“এই তোর মজা বন্ধ করতো
ও আমার কথা শুনে সিরিয়াস হয়ে বলে ।
“আমি সত্যিই তোকে ভালোবাসি । মজা করছি না আমি
“হোয়াট! তুই এগুলো কী বলছিস
“যা বলছি ঠিকি বলছি তুই এই বিয়েটা ভেঙে দে । নয় তো চল আমরা পালিয়ে যায় ।

আমি আকাশের কথা শুনে ওর গালে চর মারলাম । পালিয়ে যাবো মানে কী ? আমি ওরে বলছি একবারো যে আমি ওকে ভালোবাসি । আমার রাগ লাগছে প্রচুর ।

“আমার বিয়েতে তোকে যেন আশে পাশে না দেখি ।
“প্লীজ নিধি তুই এই বিয়েটা ভেঙে আমায় বিয়ে করে নে ।
“আরেকটা চর যদি খেতে না চাস তাহলে আমার আশে পাশেও আসবি না

এই বলে ঐখান থেকে চলে আসি । চুপচাপ নিজের রুমে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরি । রাগে হাত পা কাপছে আমার । রাগে ফুসতে ফুসতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম ।

দুপুর ২টা বাজে আমার ঘুম ভাঙে ফোনের শব্দে । তাকিয়ে দেখি কচ্ছপ ফোন দিছে না মানে অগ্নি ফোন দিছে । ওর নাম্বার কচ্ছপ দিয়ে সেইভ করছি । সে যায় হোক ফোনটা ধরলাম

“হ্যালো
“কী করে আমার বউ টা ?
“আপনার বউটা ঘুমায় ।
“আমার বউটার ঘুম হয়ছে ?
“হুম
“খাইছো কিছু ?
“না! আপনি
“হুম । তুমি খাও নি কেন ?
“মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম
“ওকে যাও ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নাও । টাটা

আমিও টাটা বলে ফোন রেখে দিলাম । উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম খেতে । নিচে গিয়ে দেখি অত্মীয় স্বজনরা ভরে গেছে বাসা । আমি চুপচাপ রান্নাঘরে আম্মুর কাছে চলে গেলাম ।

“আম্মু
“হুম বল
“ক্ষুধা লাগছে
“তুই যা আমি নিয়ান কে দিয়ে খাবার পাঠাচ্ছি
“আচ্ছা

আমি রান্নাঘর থেকে বের হয়ে নিজের রুমে যাচ্ছিলাম । তখন কোথা থেকে আকাশ এসে আমার সামনে দাড়ায় । আমি বিরক্ত নিয়ে বলি

“কী
“আমি সরি! আমায় ক্ষমা করে দে
“হুম
“আমি সত্যি আর কখনো বলবো না ঐটা
“ওকে। এটাই লাস্ট
“হুম থ্যাংকস

আমি আর কিছু না বলে মুচকি হেসে ঐখান থেকে চলে আসি । নিজের রুমে গিয়ে বিছানায় বসলাম । কিছুক্ষণের মাঝেই নিয়ান খাবার নিয়ে রুমে আসে । চোখ দুটো কেমন লাল হয়ে আছে । ও বিছানায় খাবার প্লেট নিয়ে বসতেই আমি উঠে হাত ধুতে যেতে যাবো তখন ও বলে উঠে

“আপু
“হুম বল
“আজকে আমি তোকে খাইয়ে দেই
“কেন
চোখ দুটো ছোট ছোট করে তাকিয়ে বললাম । ও আমার কথায় নিজের ঠোট চেপে আবার বলে
“ইচ্ছে করছে
“আচ্ছা দে

ও মাথা নাড়িয়ে হাত ধুতে চলে যায় । ও যে কিছুক্ষণ আগে কান্না করেছে তা ওর চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে । আর ওর কান্নার কারণ হলো আমার বিয়ে । নিয়ান হাত ধুয়ে এসে আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে । আমার খুব কষ্ট হচ্ছে ওর চেহারা দেখে । ও খাওয়ানো শেষ করে হাত ধুয়ে আমার পাশে বসে থাকে । আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি । হঠাত্‍ সে আমায় জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয় ।

“কী হয়েছে ভাই ?
অস্থির হয়ে বললাম । ও ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে কাদতে বলে
“আপু আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারবো না । কী করে থাকবো বল তোর সাথে ঝগড়া না করলে আমার ভালো লাগে না , তোকে না জ্বালালে আমার ভালো লাগে না । তুই ই তো আমার একমাত্র সঙ্গী যার সাথে আমি দুষ্টুমি করি, যাকে প্রচুর জ্বালাই কিন্তু তবু সে আমার অনেক ভুল লুকিয়ে আমাকে বকার হাত থেকে বাচায় । তুই চলে গেলে আমায় কে বাচাবে ?

নিয়ানের কথা শুনে আর কান্না দেখে আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে । কিন্তু কাদতে পারছি না । কাদলে ও আরো বেশি কাদবে । তাই তার মাথাটা আমি তুলে তার গালে হাত রেখে বললাম

“আরে বোকা আমি কী আর আসবো না নাকি । আর যখন তুই বকা খাওয়ার মতো কোন কাজ করবি তখন আমায় ফোন দিয়ে বলবি আর আমি তোকে বলে দিবো কী করতে হবে । এভাবে কেউ কাদে নাকি ?

সে কিছু না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরেই বসে আছে । আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি কাদতে কাদতে হেচকি তুলে ফেলছে । আমি সত্যি ওকে খুব মিস করবো । আস্তে আস্তে নিয়ান ঘুমিয়ে যায় আমি ওকে শুইয়ে দিয়ে বারান্দায় চলে গেলাম ।
.
.
.
“হোয়াট! অগ্নির বিয়ে ?
অপর পাশের মেয়েটার চিত্‍কার শুনে ফোন টা কান থেকে দূরে সরিয়ে নেয় আকাশ ।
“হ্যা তাও আবার আমার ভালোবাসার সাথে
“কী বলছো আকাশ ? অগ্নির বিয়ে হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এই তিনদিনে আমি দেশে আসতে পারবো না । আমি ৫ দিনের আগে দেশে আসতে পারবো না
“এখন কী করবো ?
আকাশ চিন্তা নিয়ে বলে উঠে । তখন অপর পাশের মেয়েটা বলে উঠে
“চিন্তা করো না । বিয়েটা হয়ে যেতে দাও । ওদের কিভাবে আলাদা করতে হয় তা আমরা দুজনই করবো ।
“ওকে

মেয়েটা ফোন কেটে দেয় । আকাশ আশে পাশে তাকিয়ে একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে ঐখান থেকে শয়তানি হাসি দিয়ে চলে যায় ।
.
.
.
আমি বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলাম তখন অগ্নি ফোন দেয় ।

“হ্যালো
“রাতে রেডি থেকো
“কেন ?
“ঘুরতে যাবো
“কোথায় ?
“সারপ্রাইজ
“এইবার ও কী নৌকায় উঠানোর প্ল্যান আছে ?
আমার কথা শুনে অগ্নি হালকা হেসে বলে
“না ।
“আচ্ছা
“ওকে টাটা জান
“ওকে

আমি ফোন কেটে পিছনে তাকাতেই দেখলাম নিয়ান দাড়িয়ে আছে । সে আমার দিকে তাকিয়ে একটা শায়তানি হাসি দিয়ে চলে যায় । আমি হাবলার মতো তারা দিকে তাকিয়ে আছি কী হলো কিছুই বুঝলাম না ।

চলবে ?

পারফেক্ট কাপল পর্ব-০৫

0

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ৫
#ইনান

পাত্র পক্ষের সামনে অবাক হয়ে পাত্রের দিকে তাকিয়ে আছি । পাত্র প্রথম অবাক হলেও এখন ওর দৃষ্টি শান্ত । আমি এখন ও অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছি । পাত্র যে আর কেউ না অগ্নি । আমি নিজের দৃষ্টি সরিয়ে নিই তখন অগ্নির মা বলে উঠে ।

“যাও তোমরা আলাদা কথা বলে আসো

আমি শুধু মাথা নাড়ালাম ।যাক একটা বিষয় নিশ্চিন্ত এই বিয়েটা হবে না কারণ অগ্নি তো আমাকে পছন্দই করে না ।

আমি অগ্নিকে নিয়ে নিজের রুমে আসলাম । অগ্নি গিয়ে আরামসে আমার বিছানায় বসল । আমি দাড়িয়ে ওর দিকে তাকিয়ে একদমে বলতে শুরু করলাম ।

“আমার পক্ষে আপনাকে বিয়ে করা সম্ভব না । আমি জানি আপনিও আমাকে পছন্দ করেন না আমি আপনাকে সিনিয়র ছাড়া আর কিছু ভাবি না তাই প্লীজ নিচে গিয়ে বলবেন আমাকে আপনার পছন্দ হয় নি

কথা গুলো একদমে বলে অগ্নির দিকে তাকাতেই আমার আত্মা কেপে উঠলো । উনার চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে । দেখেই বোঝা যাচ্ছে উনি খুব রেগে আছেন । উনি আমাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরেন ।

“এই মাত্র কী বললে ?
“কে কেন আ.আপনি শু নতে পান নি
“তুতলাও কেন ? কিছুক্ষণ আগে যেভাবে বলছিলে ঐভাবে বলো
“দেখুন ভালো হচ্ছে না
“কী ভালো হচ্ছে না ?
“আমাকে ছাড়ুন ।
“ছাড়বো একটা শর্তে
“কী শর্ত ?
“নিচে গিয়ে সবাইকে বলতে হবে তুমি বিয়েতে রাজি
“আমি কখন ও রাজি হব না
“ওকে তাহলে আমিও ছাড়ছি না তোমায়
“মানে কী ?
“আচ্ছা তুমি কী চায়ছো আমি তোমায় কিস করি

অগ্নির কথা শুনে আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেছে । এই ছেলে পাগল নাকি । আমার ভয় লাগলো আমি বললাম

“না না এরকম করবেন না । আমি রাজি
“গুড এখন নিচে যাই চলো
“হুম

নিচে এসে বললাম আমরা রাজি বিয়েতে । সবাই খুব খুশি সবার মুখেই হাসি লেগে আছে শুধু আমার মুখে নেয় । আমার তো ইচ্ছে করছে এই অগ্নির বাচ্চাকে পানি ছাড়া ধুয়ে দিতে ।

ডেইট ঠিক করা হলো । ৯ দিন পর বিয়ে । আমার কেন জানি খুব কান্না পাচ্ছে । কোন কিছু ভালো লাগছে না
.
.
.
পরের দিন ,
ভার্সিটির মাঠে বসে আছি । ইশা আর রিমি গালে হাত দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে যা আমার জন্য খুব বিরক্তিকর কিন্তু কিছু বলছি না । এখন ঝগড়া করতে ভালো লাগছে না । হঠাত্‍ রিমি বলে উঠে

“অগ্নি ভাইয়া তোকে পছন্দ করে ?
“আমি জানি না

তখন পিছন থেকে অগ্নি বলে উঠে
“আমি জানি গো শালিকারা
“আরে হবু জিজু যে

ইশা বলে উঠে । ইশার কথা শুনে মুচকি হেসে অগ্নি আমার পিছনে এসে দাড়িয়ে বলে
“আমি আমার হবু বউকে নিয়ে যাচ্ছে তোমাদের কোন আপত্তি নেই তো
তখন দুজন একসাথে বলে উঠে
“কোন আপত্তি নেই
“আমার আপত্তি আছে
“এখানে তোমার মত কেউ জানতে চায় নি ।

আমার রাগ লাগলো অগ্নির কথা শুনে । ও নিজেকে ভাবে কী ? আমি যাবো না হুহ ।

“বউ চলো
“আমি যাব না
আমার কথা শুনে অগ্নি আমার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলে
“তুমি কী চাও আমি তোমাকে সব স্টুডেন্টদের মাঝে কোলে তুলে নিয়ে যায়

আমি ওর দিকে তাকাতেই ও আমাকে চোখ টিপ দেয় । আমি রেগে ওর দিকে তাকিয়ে উঠে গেলাম । রিমি আর ইশাকে টাটা বলে আমার হাত ধরে গাড়ির দিকে নিয়ে যেতে থাকে অগ্নি
.
.
.
১ ঘন্টা ধরে গাড়িতে বসে আছি কোথায় নিয়ে যাচ্ছে কিছুই বলছে না । আর কিছু বলতে গেলে এমন ভাবে তাকায় পরে আর সাহস পাই না কিছু বলার মতো ।

“বলছিলাম কী
“হুম বলো
“আমরা কোথায় যাচ্ছি
“গেলেই দেখতে পাবে
“কেন এখন বললে কী হয়
“চুপ করে বসতে পারো না তুমি
“না পারি না
“তোমাকে চুপ করানোর পদ্ধতি আমার জানা আছে জান

বলেই গাড়ি থামিয়ে আমার খুব কাছে চলে আসে । আমি ভয় পেয়ে দরজার সাথে মিশে যাই । যদি পারতাম ভিতরে ঢুকে যেতাম

“এখন কী ঘটতে পারে ভাবতে পারছো ?
“মা নে
“যেমন কিস
“না! আমি চুপ থাকবো । একটা কথাও বলবো না । একদম চুপ হয়ে থাকবো ।
“হুম গুড ।

অগ্নি আমার কাছ থেকে সরে যেতেই একটা লম্বা শ্বাস নিলাম । হার্ট খুব দ্রুত বিট করছে । এই ছেলেটার কারণে নির্ঘাত কোন একদিন হার্ট এট্যাক করবো আমি ।

আমি অগ্নির দিকে তাকিয়ে দেখি ও খুব মনযোগ দিয়ে ড্রাইভ করছে । ওর ভাব দেখে মনে হচ্ছে কিছুই হয় নি । আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি । হঠাত্‍ করে গাড়ি থেমে যেতেই আমি অগ্নির দিকে তাকালাম । সে সামনের দিকে তাকিয়ে বলে

“নামো
“কেন
আমার প্রশ্নে সে দাতে দাত চেপে বলে
“নামলেই দেখতে পাবে

আমি আর কিছু না বলে ফুস করে একটা শ্বাস ফেলে গাড়ি থেকে নামলাম । অগ্নি এসে আমার হাত ধরে নিয়ে যেতে থাকে । সামনে তাকিয়ে দেখলাম আমরা নদীর তীরে আসলাম ।

“আমাকে এখানে কেন নিয়ে এলেন ?
“রোমান্স করতে
“আ মি বাসায় যা বো
“এই তুমি তুতলাও কেন
“কিছু না । আমি বাসায় যাবো এখনি
“বলছি না কিছুক্ষণ পর গিয়ে দিয়ে আসবো । এখন আমরা নৌকায় উঠবো

আমার নৌকা জিনিসটায় উঠতে প্রচুর ভয় লাগে । সেই ছোট থেকেই নৌকায় উঠতে আমার ভয় লাগে । আমার ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে মাথা ঘোরাচ্ছে এরপর আর কিছু মনে নেই চোখ বন্ধ হয়ে এলো ।
.
.
.
চোখ খোলে দেখি আমি হাসপাতালের বেড এ শুয়ে আছি । আমার পাশে চেয়ার টেনে আমার হাত ধরে অগ্নি বসে আছে । চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে । কেবিন এর বাইরে আব্বু আর আম্মু দাড়িয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বলছে । আম্মু কেবিনে এসে বলে

“চল মা বাসায় যাবো
“হুম চলো
“হুম আন্টি চলুন । আমি আপনাদের দিয়ে আসছি

তারপর অগ্নি গাড়ি করে এসে আমাদের বাসায় দিয়ে যায় । অগ্নি কেমন অপরাধীর মতো ছিল । আমার দিকে সে তাকায় নি । ওর চোখ দুটো লাল হয়ে ছিল মনে হচ্ছিল কান্না আটকানোর চেষ্টা করছিল
.
.
.
রাত ১২ টা
ঘুমের মাঝে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল । আমি চোখ খোলেই নিজেকে একটা ছেলের বাহুতে আবদ্ধ পেলাম । চিত্‍কার করতে যাবো তখনি ছেলেটা আমার মুখ চেপে ধরে বলে

“আমি অগ্নি
উনি এটা বলে মুখ ছেড়ে দেন । আমি জিজ্ঞেস করলাম ।
“আপনি এখানে কী করছেন ?
“নিধি আমি সরি । আমি জানতাম না যে তুমি নৌকায় উঠতে এতো ভয় পাও তাহলে কখন ও নৌকায় যেতাম না

আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে অগ্নি । আর এদিকে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে । এই কচ্ছপটার এভাবে জড়িয়ে ধরতে হয় নাকি । তবু মুখে হাসি টেনে বলি

“আচ্ছা ঠিক আছে
এটা বলাতে আমাকে আর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে । আজকে মনে হয় আমি ওয়াক্কা হয়ে যাবো । আজকের পর থেকে নিধি নামক আমিটা থাকবো না । বিদায় পৃথিবী ভালো থেকো ।

চলবে