বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1191



Love At 1st Sight Season 3 Part – 59

1

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 59

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : এমনিতে ও ভীতু! তারমধ্যে ওকে আরো ভয়…

– দাঁড়াও দেখাচ্ছি তোমায় ডেঞ্জার কিভাবে হয়!

জারিফা : নোওও স্নেহাআআআআ! প্লিজ সেভ মি! আমি তো মজা করছিলাম জিজু!
[ বাকিরা হাসতে লাগলো, রাহুল এগিয়ে আসলে জারিফা খাট থেকে একলাফে নেমে পড়ে ]

রাহুল : আরেহ ওয়েট! পালাচ্ছো কই!

নেহাল, আসিফ এবং রিদোয়ান, রুমে ঢুকতেই দেখে রাহুল আর জারিফা কাবাডি খেলার মতো এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে

জারিফা : জোকিং জিজু জোকিং!

রাহুল : বাট! আম নট জোকিং! চলো দেখায় তোমাকে ডেঞ্জার কিভাবে হয়!

জারিফা : ইয়া আল্লাহ! এমন ভাবে বলছেন যেনো আপনার কতো আগের এক্সপেরিয়েন্স আছে!

রাহুল : হাহা! নাইস্ জোকস্! ইউ নোও মাই আধী-ঘারওয়ালী, কোনো কাজ করার পূর্বে রাহুলের এক্সপেরিয়েন্স এর দরকার পরে না, কজ,

শায়লা : কজ রাহুল নিজেই তো একটা এক্সপেরিয়েন্স তাই না জিজু [ বলতেই বাকিরাও হেসে উঠলো ]

জারিফা : [ কান ধরে ] সরিইইইইই জিজু!

নেহাল : হেইইই হোয়াট হ্যাপেন গাইস্?

রাহুল : [ জারিফার কান্ড দেখে হেসে ] চলো, যাও মাফ করলাম! [ বলেই স্নেহার পাশে গিয়ে বসলো ]

জারিফা : হিহি নাথিং! মিষ্টার অষ্ট্রেলিয়া!

নেহাল : [ কনফিউজড হয়ে মাথা চুলকিয়ে ] নাথিং?

রিদোয়ান : [ নেহালের কাধে হাত রেখে ] গাইস্ তোমাদের জন্য না, নেহাল একটি গেইম প্লান করেছে রুফ-টপে!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওয়াওও গেইমমম!

রিদোয়ান : মানে নাটকীয় সব কাজে তোমার এক্সাইটমেন্ট ফাষ্টে থাকবে,জানতাম!

জারিফা : [ মুখ গোমড়া করে ] আচ্ছা? হুহ! ঠিকাছে ঠিকাছে যান আমি খেলবোই না!

রিদোয়ান : আরেহ! বেবী আই জাষ্ট কিডিং![ জারিফা মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো, রিদোয়ান জারিফার দিক এগুতে যাচ্ছিলো তখনিই ]

জারিফা : [ চেচিয়ে ] স্টপ! স্টপ! খবরদার আমার কাছে ও আসবেন না!

রিদোয়ান : [ আহ্লাদি কন্ঠে ] সরি তো বেবী!

নেহাল : [ রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] মানে তুই না আসলেই একটা ডিষ্টার্ব! কি দরকার ছিলো ওটা বলার? ইন্নোসেন্ট, কিট্টি, প্রিটি, সুইটি মেয়েটার মনটা খারাপ করে দিলি!

– মাই ডিয়ার ভাবীর শালী! উপস্ সরি! মাই ডিয়ার জারিফা! প্লিজ ডোন্ট বি আপসে্ট!

জারিফা : [ মুখ ভেংগিয়ে ] হুহ!

নেহাল : [ জারিফার দিক এগিয়ে গিয়ে ফিসফিসিয়ে ] লিসেন্ট! গেইমে না তুমি আর আমি একই টিমে থাকবো! তারপর ওখানেই রিভেঞ্জ নিয়ে নেবো ওর, ডান?

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে হেসে ] ডান মানে! আফকোর্স ডান!

রিদোয়ান : কিসের ডান?

জারিফা : [ নেহালের কাধে হাত রেখে ] আওর বিজনেস ইজ আওর বিজনেস! নান অফ ইয়র বিজনেস! [ রিদোয়ান শকড হয়ে তাকালো, জারিফা হেসে মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়, নেহাল ও রিদোয়ানকে চোখ টিপ মেরে হাসতে থাকে ]

আসিফ : [ হেসে ] রিদ! কিছু মনে পড়ছে? ভার্সেটির র্যাগিং? আগে তুই থ্রেট দিতি এখন তোকে দেওয়ার জন্য একজন তৈরী হয়েছে! বাট আই লাইক ইট বস্!

রিদোয়ান : ইয়াহ! এঞ্জয় এঞ্জয়! টু সুন তোরটাও তৈরী হতে যাচ্ছে! এম আই রাইট?[ রাহুল, আসিফ এবং নেহাল তিনজনই হেসে উঠলো রিদোয়ানের কথায় ]

রাহুল : আরে রিদ! নেইম মেনশন করে বল?

রিদোয়ান : আরে ঠিক বলেছিস তো!

আসিফ : [ রিদোয়ানের মুখ চেপে ধরে,চেচিয়ে ] হ্যা! হ্যা! চলো চলো সবাই, গেইম খেলবো, লেইট হয়ে যাচ্ছে! কাম কাম হারি-আপ!

আলিসা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] ইয়েস আম কামিং!

জাফসিন : আম অলসো্ গাইস! [ সবাই এক এক করে উঠে দাড়াতে লাগলো ]

শায়লা : [ মার্জানকে টেনে তুলে ] চল মার্জান! [ মার্জান পেছন মুড়ে খাট থেকে উঠে দাড়াতেই, চোখ পড়লো আসিফের দিক ]

আসিফ : লেটস্ গো গাইস্! আম ওয়েটিং [ বলেই মার্জানকে চোখ টিপ মেরে হেসে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে, বাকিরাও বেরুতে লাগলো এক এক করে ]

নেহাল : [ স্নেহার হাত ধরে ] আরে ভাবী বসে আছেন কেনো? গেইম খেলবেন না?

স্নেহা : হ্যা! খেলবো! কিন্তু…

নেহাল : তাহলে চলেন কাম কাম! [ বলেই হাত টেনে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার টান খাওয়ায় পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে রাহুল খাটে আধবসা হয়ে শুয়ে, তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার আরেক হাত আটকে ধরে আছে, স্নেহা ও নেহালকে চোখ দিয়ে ইশারা করে রাহুলের ধরে রাখা হাতটি দেখালো ]

নেহাল : হেইই ব্রো! হোয়াট হ্যাপেন?

রাহুল : নেহাল! আমার না তোর ভাবীর সাথে কিছু কথা বলার ছিলো! তোরা যা আমরা একটু পর আসছি!

নেহাল : তোকে না সারাবছর দিলেও কথা শেষ হবে না আমি ভালো করে জানি!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হোয়াট আই ডু,ও যে এমনি!

নেহাল : লিসেন্ট! ব্রো পুরো রাত পরে আছে রোমান্স এর জন্য তখন করিস, নাও উই শুড বি গো!

রাহুল : আহা! বললাম তো! বেশিক্ষণ লাগবে না!

নেহাল : অনলি টু-মিনিটস্! ওকে?

রাহুল : [ হেসে ] ওকে ওকে! [ নেহাল ও হেসে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে, স্নেহা রাহুলের দিক তাকাতেই রাহুল একটানে স্নেহাকে তার বুকের উপর শুয়ে নিলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরেহ! রাহুল…

রাহুল : শিসসস! [ বলেই স্নেহার সামনে চলে আসা চুল গুলো কানে গুজে দিলো ]

স্নেহা : কোথায় ছিলেন এতোক্ষণ?

রাহুল : মিস্ করছিলে আমায়? [ বলেই স্নেহাকে পাশ মুড়িয়ে শুয়ে দিয়ে রাহুল স্নেহার উপুর হয়ে শুয়ে পড়লো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] না..নাতো!

রাহুল : অহ! রিয়েলি?

স্নেহা : [ চোখ সরিয়ে ] হু..হুম!

রাহুল : তাহলে জিজ্ঞেস করছো যে কোথায় ছিলাম?

স্নেহা : কে..কেনো আমি জিজ্ঞেস করতে পারিনা?

রাহুল : হ্যা! তাতো অবশ্যই! বউ হোও আমার হক আছে জিজ্ঞেস করার!

স্নেহা : মানে সোজা জবাব দিলে হয় না?

রাহুল : [ হেসে স্নেহার বুকে হাত রেখে ] এইখানে ছিলাম আমি! তোমার হার্টের প্রতিটা বিটে! [ স্নেহা লজ্জা পেয়ে হেসে চোখ নামিয়ে ফেললো, রাহুল ও হেসে আংগুল দিয়ে স্নেহার গলায় স্লাইড করে চুল গুলো সরিয়ে নিলো, শিহরে উঠছে স্নেহা, তা দেখে রাহুল আলতো করে একটি চুমু খেলো স্নেহার গলায়,নিমিষেই চোখ বন্ধে কেপে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার চোখের দিক তাকিয়ে,আংগুল দিয়ে ঠোটে স্লাইড করে ] নেশা লাগে চোখে, নিশানা থাকে ঠোটে, হোয়াই স্নেহা হোয়াইইই!

স্নেহা : রার..রাহুল! দরজা খোলা!

রাহুল : তাহলে দরজা বন্ধ করে আসি?

স্নেহা : নাহ! [ বলেই হাত দিয়ে রাহুলকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে উঠে বসে, টেনেটুনে শাড়ী ঠিক করতে করতে ] আ..আপনি কি যেনো বলবেন বললেন?

রাহুল : [ হেসে স্নেহার কানের দিক ফু দিয়ে ] এতো টেনেটুনে ঢেকে রাখার কি আছে স্নেহা! নাও আম ইয়র হাজবেন্ড! বি কমফোর্টেবল!

স্নেহা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] ও..ওরা ওয়েট করছে,আমাদের যাওয়া উচিৎ!

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে দাঁড়িয়ে ] আরে!ওয়েট, কথা ছিলো তো সত্যি! [ স্নেহা মাথা তুলে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : স্নেহা! রোডে তোমার বাবার সাথে দেখা হলো! উনি পরশুর ট্রেনের টিকিট কাটতে যাচ্ছিলো!

– আ..আই মিন, এখন তো সব ঠিকঠাক সো্ এগেইন গ্রামে যাওয়ার কি দরকার? এইখানেই তো আবার নতুন করে স্টে করতে পারে!

স্নেহা : রাহুল! রাশু গ্রামের স্কুলে এডমিটেড!

রাহুল : সো্ হোয়াট? ওকে শহরের ভালো কোনো একটি স্কুলে এডমিট করিয়ে দিবে! ছেলেই তো ওয়ান ইয়ার গ্যাপ গেলে প্রবলেম কি?

স্নেহা : এ..এক্সুলি রাহুল! আপনি যে টাকাগুলো সামিরকে দিয়েছেন ঐগুলো আমি এখনো বাবাকে বলিনি,

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হোয়াইই?

স্নেহা : কারণ আমি চাচ্ছিলাম যে বাবা! গ্রামে গিয়ে তাড়াতাড়ি করেই টাকার ব্যবস্থা করুক!

রাহুল : ওয়াও রিয়েলি? টাকাগুলো আমাকে রিটার্ন করার জন্য বুঝি? [ চুপ করে রইলো স্নেহা ]

রাহুল : স্নেহা! আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি আন্সার দাও!

স্নেহা : রাহুল! প্রবলেম আমার ফ্যামিলির ছিলো, এর ভোজা আপনি কেনো তুলবেন? আর এমনিতেও বাবা নিজ মুখেই বলেছিলো, গ্রামের বাড়ীটা বিক্রি করে হলেও সামিরের টাকা শোধ করে দিবে, তাই ভাবলাম টাকা গুলো রিটার্ন করিয়ে দেওয়ায় ভালো হবে,

রাহুল : আচ্ছা! ফ্যামিলি কার?

স্নেহা : আ..আমার!

রাহুল : বাবা কার?

স্নেহা : আমার!

রাহুল : তুমি এখন কার?

স্নেহা : আ..আপ..আপনার!

রাহুল : তাহলে যেটা আমার সেটা তোমার ও! সো্ আমাকে টাকা রিটার্ন করার কথা ভাবলে কেনো?

– [ দু-হাতে স্নেহার মুখ তুলে ] স্নেহা! তোমার ফ্যামিলির প্রবলেম মানে তোমার প্রবলেম, আর তোমার প্রবলেম মানে আমার প্রবলেম! সো্ ইটস্ সিম্পল!

– তুমি আমার ফ্যামিলিকে নিজের ফ্যামিলি মনে করতে পারলে আমি কেনো তোমার ফ্যামিলিকে নিজের মনে করতে পারবো না? বলো?

– পারবো না? [ মাথা নাড়ালো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত শক্ত করে ধরে ] ঠিকাছে! তাহলে আজ থেকে আমি তাদের জন্য যা কিছুই না করবো এতে তুমি বাধা দিতে পারবে না! প্রমিস করো?

স্নেহা : [ হেসে মাথা নাড়িয়ে ] প্রমিস!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে ] ওকে চলো এবার! ওরা ওয়েট করছে! [ বলেই হুট করে স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো ]

স্নেহা : আরেহ! রাহুল! কি করছেন আপনি নামান প্লিজ! [ রাহুল হেসে হেসে স্নেহাকে নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়ে, আর স্নেহা ছুটাছুটি করে নেমে যেতে ব্যস্ত ]

রাহুল : [ স্নেহাকে আরো শক্ত করে ধরে ] শক্তি কি আমার থেকে বেশি হ্যা? ছুটাছুটি করছো কেনো বলো তো?

স্নেহা : রাহুল! দাদী,ফুফিরা কেউ দেখবে!

রাহুল : তো দেখুক! আমি তো আমার ঘরে আমার বউকেই উঠিয়েছি! আর তুমি তোমার হাজবেন্ডের কোলে উঠেছো, সো্ হোয়াট?

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] আপনি না একদম..

রাহুল : [ হেসে ] একদম বেশী আমি তাই না? [ স্নেহা আশেপাশে তাকাতে লাগলো বারবার ]

রাহুল : আচ্ছা স্নেহা! তুমি এতো লজ্জা পাও কেনো বলো তো? বাই দ্যা ওয়ে আই লাভ দিজ মোমেন্ট! যখন তুমি লজ্জায় স্ট্রোভেরী হয়ে যাও! [ স্নেহা রাহুলের কথায় ধ্যান না দিয়ে আশেপাশে তাকাতে লাগলো কেউ দেখছে কিনা, রাহুল বুঝতে পেরে আরো চেচিয়ে বলে উঠলো ] স্নেহাআআআআ লাভ ইউউউউউ

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি রাহুলের মুখ চেপে ধরে ] আরে আরেহ! স্টপ ইট! রাহুল, [ রাহুলের হাসি থামছে না স্নেহা মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে রাখা শর্তেও হেসে যাচ্ছে ]

স্নেহা : ইডিয়ট! [ বলতেই রাহুল মুখের উপর স্নেহার দিয়ে রাখা হাতে একটি কামড় দিতেই স্নেহা আহহ বলেই হাত সরিয়ে নিলো ]

রাহুল : [ হেসে ] তোমারিই তো ইডিয়ট!

স্নেহা : নামান এবার এসেই তো পড়েছি!

রাহুল : আমার যখন ইচ্ছে তখন নামাবো তুমি কে?

স্নেহা : আমি কে মানে? আমি আপনার বউ না?

রাহুল : [ থেমে গিয়ে ] আবার বলো? [ স্নেহা লজ্জা পেয়ে হেসে মুখে হাত দিয়ে ঢেকে ফেললো ]

রাহুল : ইশশশ! কি লজ্জা! [ রাহুল স্নেহাকে নিয়ে ছাদে উঠতেই বাকিরা চেচিয়ে উঠলো ]

শায়লা : এসো এসো তোমাদের সিটটাই খালি ছিলো শুধু!

স্নেহা : এইবার তো অন্তত নামান! এসেই তো পড়েছি!

রাহুল : তখন যেটা বলেছিলে সেটা আরেকবার বলো! নামিয়ে দিচ্ছি

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : না বললে নামাচ্ছিনা! [ বলেই আরো শক্ত করে ধরে নিলো ]

স্নেহা : আচ্ছা বব..বলছি!

রাহুল : হুম! বলো!

স্নেহা : আ..আ..আম..আমি

রাহুল : হোয়াট! আ আ আ?

স্নেহা : আ..আমি আপ আপনার বউ না?

রাহুল : [ হেসে ] হ্যা! তুমি আমার বউ, জান,আমার নিশ্বাস, বেচে থাকা আশ্বাস সবই তো তুমি!

স্নেহা : [ রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] হয়েছে এবার নামান! [ রাহুল হেসে নামিয়ে দিলো স্নেহাকে, স্নেহা হেটে গিয়ে বিছিয়ে রাখা বেডের উপর পা গুটিয়ে বসে পড়লো ]

নেহাল : কাম কাম ব্রো! শেষ হয়েছে রোমেন্স?

রাহুল : [ এগিয়ে গিয়ে স্নেহার পাশে বসে ] নো হয়নি!

নেহাল : তোকে সারাদিন দিলেও রোমেন্স শেষ হবে না! [ সবাই হেসে উঠে ]

রোহানী : ওকে গাইস লেটস্ স্টার্ট দ্যা গেইমস!

রাহুল : [ হঠাৎ শেম্পিং এর বোতোল দেখে ] ওয়াওও! শেম্পিং..

রিদোয়ান : [ বোতোল হাতে তুলে ধরে ] এতো খুশি হোওয়ার দরকার নেই দোস্ত এটা খালি বোতোল!

রাহুল : তাহলে এটা কেনো?

রোহানী : আমি বলছি! আমি হলাম আওট অফ গেইমস্! কজ আমার ভয় লাগে এসবে আমি কিছু বলতেও পারবো না করতেও পারবো না! তাই বোতোলটা আমিই ঘুরাবো! দেন বোতোলের হেডটা যারদিক ঘুরে পড়বে তাকে ট্রুথ এন্ড ডের এই দুটি অপশন থেকে যে কোনো একটি নিতে হবে!

– তারপর ট্রুথ হলে ট্রুথ বলবে ডের নিলে ডের দেখাবে!

রাহুল : ওয়াও লাভ ইট!

রোহানী : ওকে লেটস্ প্লে!

জাফসিন : [ এক্সাইটেড হয়ে ] শিয়র শিয়র! [ বলতেই রোহানী বোতোল ঘুরিয়ে দিলো, নিস্তব্ধ চারদিক, রাতের অন্ধকার রুফটপের কালারফুল স্পোর্ট লাইটগুলো জ্বলছে, কুয়াশা ভরা শীতল ঠান্ডা বাতাস বইছে, সবাই এক্সাইটমেন্ট নিয়ে তাকিয়ে আছে বোতোলের দিক,বোতোলের হেড গিয়ে থামলো আসিফের দিক, হাত তালি দিয়ে চেচিয়ে উঠলো সবাই ]

আসিফ : ওহ নো এট ফাষ্ট আমিই!

জারিফা : বলেন বলেন ট্রুথ অর ডের?

আসিফ : টু…ট্রুথ!

রাহুল : স্কিটিশ!

নেহাল : [ হেসে ] ইয়াহ! রাহুল রাইট!

আসিফ : আচ্ছা তোদের সময় আসুক দেখবো!

শায়লা : ওকে ওকে! ট্রুথ হলে আমি বলছি আপনাকে কি বলতে হবে! [ সবাই তাকালো শায়লার দিক ]

শায়লা : আপনি বলুন! আপনি যাকে সত্যিকারের ভালোবাসেন যার জন্য আপনি সব কিছুই করতে রাজি, তার নামের ফাষ্ট লেটারটা কি?

রিদোয়ান : ইয়েস্! ইন্টেলিজেন্ট শায়লা! নাইস কুয়েশ্চন! বল বল আসিফ?

জারিফা : [ শায়লার মাথায় বাড়ি দিয়ে ] আরে শুধু লেটার কেনো? পুরো নাম বলতে বললে কি হতো?

আসিফ : নো রুলস্ ইজ রুলস্! কুয়েশ্চন চেঞ্জ করা যাবে না!

জারিফা : আচ্ছা যান যান! ওকে!

আসিফ : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ] যাকে আমি সত্যিকারের ভালোবাসতে শুরু করেছি, যার জন্য আমি জান দিতেও দ্বিধা বোধ করবো না, যার বিনা কারণে রেগে যাওয়া, বাচ্চামী এবং বদমাইশি কান্ডনামাগুলো আমি আজীবন ভালোবেসে যেতে রাজি! তার নামের ফাষ্ট লেটার হলো,

– এম! [ বলতেই সবাই মিটিমিটি হেসে মার্জানের দিক তাকাতে লাগলো ]

রাহুল : ওয়াহ! দোস্ত এতো ভালোবাসিস! গেইমটা না খেললে হয়তো আমরা জানতামই না!

মার্জান : আজীব সবাই আমার দিক কেনো এভাবে তাকিয়ে আছো! এম দিয়ে কি শুধু আমার নাম হয় নাকি? দুনিয়ায় আর কারো নাম নেই বুঝি!

নেহাল : ইয়া..ইয়াহ! [ হেসে উঠলো সবাই, মার্জান ও আসিফের চোখাচোখি হতেই হঠাৎ লজ্জা লেগে উঠায় হেসে দিলো ]

শায়লা : সি্ গাইস্ শি ইজ ব্লাশিং!

মার্জান : ধুর! [ বলেই উঠে চলে যাচ্ছিলো, তখনিই ]

রাহুল : [ আবার হাত ধরে টেনে বসিয়ে দিয়ে ] আরে এটা ভালোবাসা নয় তো কি ডার্লিং! যখন ও তাকাবে আর তুমি ব্লাশিং হয়ে হাসবে!

মার্জান : দেখেন সবাই উল্টোপাল্টা কিসব বলছেন আমি.. কক..কবে ব্লাশিং হলাম!

রাহুল : আচ্ছা ওকে! নরমাল নরমাল! [ চোখ টিপ মেরে ] বাট উই আর আন্ডারস্ট্যান্ড হিহি! ওকে ওকে সরি! [ হেসে উঠলো সবাই ]

রোহানী : ওকে গাইস্! এটেনশন! [ বলেই আবারো ঘুরিয়ে দিলো বোতোল, উত্তেজিত সকলেই, কারদিক গিয়ে বোতোলের হেড থামবে এই আশায়, হঠাৎ বোতোলের হেড গিয়ে থামলো রাহুলের কাজিন আলিসার দিক ]

আলিসা : [ চেচিয়ে ] আমিও ট্রুথ ট্রুথ! ডের না বাবা!

নেহাল : হাহা! তুই তো দেখি বিগ স্কিটিশ! আগে থেকেই স্যালেন্ডার!

আলিসা : এক্সকিউজ মি! ডের আমার সত্যিই অনেক ভয় লাগে!

___এইদিকে, রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখে, স্নেহা ঠান্ডায় হাত পা বটে কুড়িয়ে গেছে,

স্নেহা : [ ফিসফিসিয়ে ] কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?

রাহুল : ঠান্ডা লাগছে তোমার?

স্নেহা : মো..মোটেও না! আচ্ছা গেইম দেখেন!

রিদোয়ান : [ আলিসার দিক তাকিয়ে ] ওকে ওকে! আমি বলছি! তুই তোর একটা ডার্ক সিক্রেট বল!

আলিসা : আই হেভ নো ডার্ক সিক্রেট গাইস্!

আসিফ : কামঅন গুড ডার্ক সিক্রেট ওতো থাকতে পারে মানুষের!

আলিসা : [ কিছুক্ষণ চিন্তা করে ] ওকে! আমি না কখনো পর্ণ ভিডিও দেখিনি!

রাহুল : [শকড হয়ে ] হোয়াট? লায়ার!

রিদোয়ান : রিয়েলি?

নেহাল : ইজ ইট পসিবল?

আসিফ : আই থিংক শি ইজ কিডিং!

আলিসা : গাইস্ আম নট কিডিং! ইটস্ ট্রু! আই নেভার ওয়াচড!

রাহুল : হাও ইটস্ পসিবল?

জারিফা : এক সেকেন্ড স্টপ ইট! অল বয়স্!

– এটা আনবিলিভেবল কিছুইনা! কজ মেয়েদের ডার্ক সিক্রেটগুলো এমনিই হয়!
আপনারা ছেলেরা মেয়েদের ও কি আপনাদের মতোই মনে করেন নাকি? এখন আপনাদের ডার্ক সিক্রেটগুলো বলতে বলিনা! বের হবে এক এক নবাবের কুন্ডলী!

রিদোয়ান : নো নো! আই বিলিভ ইট! হতেই পারে এমন! চলো বাদ দাও নেক্সট স্টার্ট করো!

জারিফা : হ্যা! এখন তো বাদ দিতে বলবেনই!আপনার আগের কুন্ডলী গুলো যে ফাঁস হবে! [ কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো বাকিরা ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক ফিরে ফিসফিসিয়ে ] আই কান্ট বিলিভ দিজ! এটা সম্ভব নাকি? আচ্ছা স্নেহা তুমি দেখেছো নাকি কখনো?

স্নেহা : ছিইইইই! নেভার!

রাহুল : রিয়েলি? [ হেসে ] এমনিতে তুমি দেখেছো বললেও আমি কখনো বিলিভ করতাম না!

– আচ্ছা ডোন্ট ওয়ারী আমার সাথে দেখিও আজ!

স্নেহা : [ রাহুলকে চিমটিয়ে ] ছিই রাহুল স্টপ ইট! তারমানে আপনি দেখেছেন?

রাহুল : নাহ! হ্যা কই না! হ্যা! না নাহ!

স্নেহা : [ রাহুলের কান টেনে দিয়ে ] দেখবেন আর?

রাহুল : আহহ! কখনো না!

স্নেহা : প্রমিস?

রাহুল : তোমাদের বাসার নিচে যে দারোয়ানটা ছিলো না? ওর প্রমিস!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে হেসে ] হোয়াট? [ বলেই কান আরো মুচড়ে দিতেই ]

রাহুল : ওকে ওকে ইয়র প্রমিস! স্নেহা!

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের কান ছেড়ে দিয়ে ] আপনি শুধুশুধু দারোয়ানের প্রমিস খাচ্ছিলেন কেনো বলেন তো?

রাহুল : কারণ যাতে আমি ইচ্ছে করেই প্রমিস ভাংগতে পারি! আর প্রমিস ভাংগলে ও মরে যেতো!

স্নেহা : বেচারা দারোয়াণকে মেরে আপনার কি হবে বলেন তো?

রাহুল : বেচারা! তাই না? ইডিয়ট ও তোমায় ওর কূনজরে দেখেছিলো! [ স্নেহার মনে পড়তেই মুচকি হেসে রাহুলের হাত জড়িয়ে ধরে, বাকিদের দিক তাকালো ]

রোহানী : শেষ? আপনাদের ফিসফিস করা?

রাহুল : [ হেসে ] ইয়াহ ডান! [ বাকিরাও হেসে উঠলো ]

রোহানী : ওকে গাইস্ লেটস্ প্লে এগেইন! [ বলেই বোতোল ঘুরিয়ে দিলো আবারো সবাই উত্তেজিত হয়ে তাকিয়ে আছে বোতোলটির দিক, এইবার গিয়ে বোতোলের হেড থামলো রাহুলের দিক, চেচিয়ে উঠলো সবাই ]

জাফসিন : ভাইয়া এইবার দেখবো তুমিও স্কিটিশ নাকি ব্রেভ?

রাহুল : আম অ্যা ব্রেভ বয়! ওকে সো্ আম ডের!

জারিফা : আমি দিবো আমি আমি!

রাহুল : ওখেই!

জারিফা : যেহেতু নিউলি ম্যারেড! তাই রোমান্টিক কিছুই দি! এমনিতে তো রোমান্সে আপনি ওস্তাদ! [ হেসে উঠলো সবাই ]

– স্নেহাকে যেভাবে পেয়েছেন এটা এক্সপ্লেইন করেন! স্নেহার চোখের দিক তাকিয়ে এক পলকে! এজ অ্যা সিংগার! সো্ গানের মাধ্যমেই করতে হবে!

রাহুল : [ হেসে ] ওখে!

রোহানী : বাট উইদাউট গিটার? এক মিনিট আমি নিয়ে আনছি গিটার! [ বলেই গিটার আনতে দৌড় দিলো রোহানী ]

শায়লা : বাহ! শীতল বাতাসে, কুয়াশা ভরা রাতে এই সময় রোমান্টিক একটা সং ও হবে! ওয়াওও ভাবতেই ভালো লাগছে!

নেহাল : পাশে একটি পার্টনার হলে বোধহয় আরো বেশী ভালো লাগতো?

শায়লা : আজকালকার পার্টনারদের ভরসা করা যায় না! তাই আই থিংক পার্টনার না থাকাটাই বেটার হবে! [ হেসে উঠলো বাকিরা ]

নেহাল : একবার ভরসা করেই তো দেখো!

শায়লা : তাই?

জাফসিন : [ হেসে ] নেহাল ভাইয়া স্টপ ফ্লার্টিং উইথ ভাবীর শালী ওকে? [ কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো বাকিরাও ]

নেহাল : তোকে তো পড়ে দেখে নেবো! [ বলেই আবার শায়লার দিক তাকিয়ে রইলো, কিছুক্ষণ পরেই রোহানী গিটার নিয়ে এগিয়ে এসে রাহুলের হাতে ধরিয়ে দিলো ]

জারিফা : ওকে স্টার্ট স্টার্ট জিজু! [ আসিফ এক পলকে তাকিয়ে আছে মার্জানের দিক, মার্জান কিছুক্ষণ পর পর আড়চোখে তাকালেও আবার সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিচ্ছে ]

রাহুল : [ গিটার ঠিক করে হাতে নিয়ে স্নেহার দিক ফিরে বসে, চোখের দিক তাকিয়ে গিটার বাজাতে লাগলো, স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে মুচকি মুচকি হাসছে ]

♪ নাহ রাস্তা মালুম ♪
♪ নাহ তে্রা নাম পাতা মালুম ♪
♪ কেসে্ মেরে পিয়ারেমে তুঝকো ♪
♪ ঢুন্ডা কিয়া মালুম ♪

♪ নাহ রাস্তা মালুম ♪
♪ নাহ তে্রা নাম পাতা মালুম ♪
♪ কেসে্ মেরে পিয়ারেমে তুঝকো ♪
♪ ঢুন্ডা কিয়া মালুম ♪

♪ সি্ধা তে্~রে পা~স্ ♪

♪ সি্ধা তে্রে পাস্ মে আপনি ♪
♪ জানে ভি লেকে আগাইয়া ♪

♪ সা্থ সা্মান্দার পার মে তে্রে ♪
♪ পিছে পিছে আগাইয়া ♪
♪ মে তে্রে পিছে পিছে আগাইয়া ♪
♪ জুলমি তে্রি জা~~ন ♪
♪ ও জুলমি তে্রি জান ♪
♪ তে্রে কাধমোকি নিচে আগাইয়া আ~~♪

♪ সা্থ সা্মান্দার পার মে তে্রে ♪
♪ পিছে পিছে আগাইয়া♪
♪ মে তে্রে পিছে পিছে আগাইয়া ♪

[ গান শেষে এক্সাইটেড হয়ে তালি দিয়ে উঠলো সবাই, কিন্তু রাহুলের চোখ এখনো সরলো না স্নেহার চোখের দিক থেকে ]

রিদোয়ান : উহহহ! এক্সিলেন্ট দোস্ত!

আসিফ : ♪ জুলমি তে্রি জান তে্রে কাধমোকি নিচে আগাইয়া~আ~আ ♪

নেহাল : ♪ সা্থ সামুন্দার পার মে তে্রে, পিছে পিছে আগাইয়া ♪

শায়লা : হোয়াট অ্যা বেসূরা ভয়েস্!

নেহাল : হিহি, জানতাম! কপালে এই প্রশংসাটাই থাকবে [ আবারো কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো বাকিরা ]

আলিসা : [ রাহুল এখনো স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকায় ] রাহুল ভাইয়া! গান তো শেষ! এইবার গেইমে জয়েন করতে পারবে আবার! নয়তো ভাবীকে এইভাবে দেখতে থাকলে চোখে ক্যাটেরেক্ট পড়ে যাবে [ হাসতে লাগলো বাকিরা, স্নেহা ও হেসে লজ্জা পেয়ে রাহুলের মুখ ধরে সোজা ফিরিয়ে দিলো ]

রোহানী : ওকে ওকে! গাইস লেটস্ প্লে এগেইন! [ বলেই বোতোল ঘুরিয়ে দিলো ]

____আর এইদিকে,

রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার পেছনে হাত দিয়ে পিঠে স্লাইড করে চুলের ভেতর হাত রাখলো, ঠান্ডা ঠান্ডা রাহুলের হাতের স্পর্শে শিহরে উঠলো স্নেহা! না পারছে চেচাতে, না পারছে উঠে দাড়িয়ে যেতে, কারণ বাকি আরেকটি হাত ও রাহুল তার হাতের মুঠোয় বন্ধি করে ধরে রেখেছে,

মাথা মুড়িয়ে স্নেহা রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল হাসছে আর মুঠি বেধে ধরে রাখা স্নেহার হাতটি তার ঠোটের কাছে এনে একটি চুমু খেয়ে আবার নিজের দাড়িতে স্লাইড করছে, মুচকি হাসলো স্নেহা রাহুলের কান্ডে,

রাহুল ও স্নেহা তাকিয়ে আছে বুঝতে পেরে বাকি হাতটি স্নেহার পিঠের উপর থেকে স্লাইড করে শোল্ডার পর্যন্ত নিয়ে নিজের অনেকটা কাছাকাছি টেনে নিলো স্নেহাকে, যা দ্বারা রাহুলের আগলে ধরে রাখার আবরণে স্নেহার শীত ও কম লাগতে লাগলো, তাও ইচ্ছে করছিলো স্নেহার যেনো একদম গুটিশুটি হয়ে রাহুলের বুকের মাঝেই ঢুকে পড়বে, কিন্তু সবার মাঝে লজ্জা লাগছে, তাই আপতত এইটুকুতেই ইনাফ তার জন্য,

হঠাৎ বাকিদের চেচিয়ে উঠার শব্দে স্নেহা সোজা ফিরে তাকাতেই দেখে বোতোলের হেড নেহালের দিকই থেমেছে,

আসিফ : স্কিটিশ! তাই না? এইবার দেখি কি নিবি!

নেহাল : একটাই অপশন নেহালের জন্যে! ওয়ান এন্ড অনলি ডের ফর মি!

জারিফা : বাহ! এতো সাহস?

রাহুল : [ হেসে ] সুপার্ভ! আমি বলছি তোর কি করতে হবে!

নেহাল : [ দাঁড়িয়ে জ্যাকেটের কলার ঠিক করে ] বল বল!

রাহুল : প্যান্টের ভেতর আন্ডারওয়েল নাকি থ্রি কুয়াটার প্যান্ট! [ বাকিরা মুখ চেপে হেসে উঠলো ]

নেহাল : ছি! ব্রো এতোগুলো লেডিসের সামনে এসব জিজ্ঞেস করতে লজ্জা করেনা? শেইম অন ইউ! কমপক্ষে ভাবীকে তো খেয়াল কর!

রাহুল : [ হেসে ] আরে বলনা?

নেহাল : ও হ্যালো! আমি ট্রুথ নেইনি, সো্! কিছু বলতে পারবো না ডের নিয়েছি কি করতে হবে বল?

রাহুল : ডেরটা কমপ্লিট করার জন্য এটার আন্সার দেওয়া ইম্পরট্যান্ট নেহাল! [ নেহাল অবাক হয়ে তাকালো রাহুলের দিক ]

রিদোয়ান : আরে নেহাল ভয় পেয়ে গেলি? একটু আগেই তো বললি! একটাই অপশন তোর জন্য ওয়ান এন্ড অনলি ডের ফর ইউ!

নেহাল : না নাহ! ভয় পাবো কেনো! [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] দুটোই আছে আন্ডারওয়েল ও তি…থ্রি কুয়াটার প্যান্ট ও!

রাহুল : গ্রেট! তাহলে তুই এখন পুলে সুইমিং করে টু-রাউন্ডস দিবি! উইদাউট ক্লথস্! বাট থ্রি কুয়াটার প্যান্টটা রাখতে পারিস যেহেতু এইখানে লেডিসরা আছে! সো্ অতোটা সলিড কাজ দেবো না তোকে! জাষ্ট এটাই কর!

নেহাল : হোয়াটট হোয়াটট? তোকে কি রোমেন্টিক ডের দিয়েছে আর তুই আমাকে এটা দিবি? তারমধ্যে এই নিপিং উইন্টারে!

রাহুল : ডের নিয়েছিস নেহাল! সো্ ইউ আর অ্যা ব্রেভ বয় প্রুফ কর!

স্নেহা : রাহুল! এতো রাতে ঠান্ডায় সুইমিং করবে? পাগল হয়ে গেছেন আপনি? পানি কতো ঠান্ডা হবে ভেবে দেখেছেন?

রাহুল : ডের স্নেহা! ডের! সো্ হোয়াট?

স্নেহা : বাট রাহুল…

রাহুল : ওহো! ডোন্ট ওয়ারি না স্নেহা! [ বাকিরা ও হাসতে লাগলো নেহালের অবস্থা দেখে ]

জাফসিন : নেহাল ভাইয়া! তুমি সত্যিই ভয় পেয়ে গেছো! আমি তো ভেবেছিলাম তুমি দু-তিন মিনিটেই ডের ডান করবা!

আসিফ : [ হেসে ] ফেসে গেলো নেহাল! নিজের গেইমে নিজেই!

নেহাল : নো ফেসে যায়নি! আই উইল! [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] ওয়েট ব্রো নেক্সট তোর আবার আসুক! তারপর তোকে কি ডের দেই দেখিস! [ হেসে উঠলো সবাই, নেহাল সুইমিং এর দিক এগিয়ে গিয়ে জ্যাকেট, টি-শার্ট, জিন্স সবই খুলে রাখলো শুধু থ্রি কুয়াটার প্যান্টটি ছাড়া, ধীরেধীরে এক-পা এগিয়ে পানিতে পা রাখতেই ঠান্ডায় আবার তাড়াতাড়ি পা উঠিয়ে নিলো ]

স্নেহা : রাহুল! স্টপ ইট! একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না? ফেভার হয়ে যাবে তখন!

রাহুল : [ হেসে ] এতো টেনশন করো কেনো বলো তো? কিছু হবে না ডোন্ট ওয়ারি! [ বলতেই পানিতে ঝাপিয়ে পড়ার শব্দ এলো, রাহুল-স্নেহা দুজনেই পুলের দিক তাকাতেই দেখে নেহাল সুইমিং করছে, বাকিরা কেউ হাসছে আবার কেউ শিস বাজাচ্ছে ]

কিছুক্ষণ পরই নেহাল ভেজে ভেজা কাপা শরীর নিয়ে উঠে এলো, পুল থেকে,

রাহুল : [ হেসে ] ইউ ওকে নেহাল?

চলবে….

Love At 1st Sight Season 3 Part : 58

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part : 58

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : [ হুট করে চেচিয়ে বলে উঠলো ] বাবা!

[ হতভম্ব সবাই,পথচলা থেমে গিয়ে চমকে উঠলো রাহুলের বাবা, আজ কতটা বছর পর এই কন্ঠের বাবা ডাকটি শুনতে পেলো, তাড়াতাড়ি মাথা মুড়িয়ে পেছন ফিরে তাকালো, রাহুল স্নেহার দিক একবার তাকিয়ে আবার ধীরেধীরে এগিয়ে গেলো তার বাবারদিক, এতোটা বছর পর আজ চোখাচোখি ও মুখোমুখি হচ্ছে, নির্দিধায় কি বলবে তার বাবাকে, কতো কিছুতে বাবাকে ইগনোর করে চলে গিয়েছিলো, কতোবার দাদীকে এইধরনের কথা গুলো বলতে শুনে ফেলেছিলো,

– হি ইজ অ্যা ইররেসপন্সিবল পার্সন, ফেইক ফাদার, দাদী! হি নেভার ডিজার্বড মি এন্ড মাই মাদার!

– অলসো্ হি নেভার ডিজার্ব অ্যা ফ্যামিলি!

পুরনো এসব কথাগুলিই এই মুহূর্তে রাহুলের মাথায় ঘুরঘুর করে বেড়াচ্ছে, চোখ বাবার সাথে মেলালেও আবার নার্ভাস বোধ হোওয়ায় কিছু কিছু মুহুর্তের জন্য সরিয়ে নিচ্ছে, বাবার সামনে নিজেকে খুবই ছোট মনে হচ্ছে আজ, নিস্থব্দতায় কাটছে চারদিক, এইভাবে চুপ হয়ে দাড় করিয়েও তো রাখতে পারবে না, নিজেকে কন্ট্রোল করে নিস্থব্দতা ভেংগেই আমতা আমতা করে বলে উঠলো ]

রাহুল : জ্বি, এ..একচুলি! আ… [ বলেই দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আবার স্নেহা, এবং দাদীর দিক তাকালো, গুলিয়ে যাচ্ছে রাহুলের সবকিছু, কি বলবে? কি বলাটা দরকার? এটাও মাথায় আসছে না, তাই আবার মাথায় হাত দিয়ে চুলকাতে চুলকাতে ভেবে নিলো সরি বলবে,তার মিসবিহেভিয়ারের জন্য ]

রাহুল : আ..আম, কল্ড ইউ কক..কজ!

– এ..এক একচুলি! আম সরি! [ জলচোখে মুচকি একটি হাসি দিয়ে কাছে টেনে জড়িয়ে নিলো তার বাবা, মুহূর্তেই রাহুলের চোখ দুটিও ঝলমল হয়ে উঠলো,আবেগ গুলোও বোধহয় বাবার বুকে ঠাই পেয়ে বিলিয়ে পড়লো, তাই বাবার পিঠে হাত মেলে শক্ত করে আগলে জড়িয়ে ধরে ফুফিয়ে কেদে উঠলো রাহুল ও ]

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] আম সরি! বাবা! আই হার্ট ইউ!

বাবা : ডোন্ট সে্ সরি মাই চাইল্ড! আই ডিজার্বড ইট! [ দূর থেকে চেয়ে আছে বাকিরা, দাদীর চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে বাবা-পূত্রের মিলনে,স্নেহার চোখটাও ঝলমল করছে খুশিতে, পুরনো ভালোবাসা ফিরে পাওয়ার আনন্দটা বুঝি এমনই, যা আবেগ দিয়ে প্রকাশ করা যায়, মুখের ভাষা দিয়ে নয়,

রাহুলের বাবা দুহাতে রাহুলের মুখ তুলে গাল বেয়ে পড়া পানিগুলো মুছে দিলো ]

বাবা : কিপ স্মাইল অলোয়েজ! ওকে? [ মাথা নাড়ালো রাহুল ]

বাবা : [ হেসে ] এতো বছরের এটিটিউড আজ হঠাৎ কেটে গেলো!

– বুঝার আর বাকি নেই হ্যান্ডসাম! বিয়ের পরেই যখন কেটেছে বউ এর চাপ পড়েছে জড়োসড়ো!

রাহুল : [ চোখ নামিয়ে হেসে ] ইয়াহ! বাবা শি প্রেশারাইজড টু মি!

– এক্সুলি! ও আমার লাইফে না আসলে হয়তো! লাইফ কিভাবে ফিল করে বাচতে হয় সেটাই জানতাম না! আমার মিষ্টেক গুলো রিয়েলাইজ করতে পারতাম না কখনো!

বাবা : শি ইজ এঞ্জেল ফর ইয়র লাইফ!

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে হেসে ] ইয়াহ! রাইট! [ রাহুলের বাবা ও হেসে রাহুলের কাধে হাত রেখে হেটে নিয়ে গেলো স্নেহার দিক, এইবার তো স্নেহা নিজেই নার্ভাস ফিল করছে, তারদিকই কেনো আসলো ]

বাবা : স্নেহা! ইউ বোথ মেড ফর ইচ আদার! এন্ড ইউ এঞ্জেল নট অনলি ফর রাহুল! ইউ এঞ্জেল ফর মাই হাউজ! ফর মাই ফ্যামিলি! [ বলেই স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] নাও আই শুড বি গো! ফর মিটিং, সি্ ইউ লেটার! ওকে? [ স্নেহা মাথা নাড়ালো, রাহুলের বাবা রাহুলের মাথায় ও হাত বুলিয়ে দিয়ে আনন্দিত মনটা নিয়ে অফিসের পথে রওনা দিলো, স্নেহা তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক, রাহুল তাকালো না কারোর দিক, সোজা উপরের রুমের দিক চলে গেলো ]

দাদী : এতো বছরের খুশি সব! যেনো আজই চারদিক বিলিয়ে পড়ছে!

লিনিসা ফুফি : আমাদের স্নেহা অনেক ভাগ্যশালী! আমার তো মনে হচ্ছে ও একটা খুশির ভান্ডার!

– যদি আমারও একটা ছেলে থাকতো না! তাহলে আমিও আজ স্নেহার মতোই মিষ্টি একটা বউ আনতে পারতাম!

নাফিসা ফুফি : মিষ্টি বউ হলেও কিন্তু শুধু চলে না,আই মিন ফ্যামিলি ক্লাস ও থাকতে হয়!

লিনিসা ফুফি : আরে! ফ্যামিলি ক্লাস দিয়ে কি করবো? বউটা মিষ্টি হলেই তো হলো! বিয়ে কি ফ্যামিলির সাথে করাতাম নাকি?

– রুপ নয় গুণ দেখে করাতাম! আর আমাদের স্নেহার তো রুপ,গুণ দুটোই আছে! তাই সে একটু বেশিই মিষ্টি!

নেহাল : [ চেচিয়ে ] খাম্মী!

লিনিসা ফুফি : হ্যা বল?

নেহাল : ডোন্ট ওয়ারি না! জাষ্ট ইন কেজ্ সাপোস্ আম ইয়র সন! সো আমার জন্যই ভাবীর মতো সুইট’স একটি উমমম হুমমম!

গীতালি : নেহাল ভাইয়া! আপনে না, বিয়ার চিন্তা এহন বাদ দিয়া, আগে শালী ভাবীর না ভাইয়ের অয় এইডা শিইখা নেন! তারপরে স্নেহাভাবীর মতো বউয়ের চিন্তা কইরেন!

– নাইলে আবার যদি বউরে শ্বাশুড়ী আর শ্বাশুড়ীরে বউ ডাইকা বসেন! হায় আল্লাহ! আল্লাহয় না করুক! [ বলেই গালে তওবা খেতে লাগলো, বাকিরা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

নেহাল : ওহহহ নো গীতালি! সব সময় আমার ডিফেক্ট খুজে বেড়াও কেনো?

গীতালি : পাফিক্ট কথা কইলে কয় ডিফিট করি! আই এম আন্ডাসট্যান ইউ মাইক মি ক্রাজি! বাই [ বলেই কিচেনের দিক চলে যায় ]

নেহাল : [ চেচিয়ে ] গীতালিইইই মাইক মি ক্রাজি না, মেক মি ক্রেজিইইইই!

গীতালি : [ চেচিয়ে ] অয় অয়! এতো ইংলিশ শিখান লাগদো না! [ সবাই হেসে উঠলো আবারো, হঠাৎ তখনিই ]

নেহাল : [ হাত নাড়িয়ে চেচিয়ে ] হেইইইই! ব্রোস্! [ বলতে সবাই মেইন ডোরের দিক তাকাতেই দেখে আসিফ আর রিদোয়ান এসেছে ]

মার্জান : [ আসিফের চোখাচোখি হতেই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিয়ে মনে মনে ] নরমাল মার্জান নরমাল! এমন রিয়েক্ট কর যাতে ও বুঝতে না পারে যে, ওকে দেখলেই তোর কিছু আসে যায় না,

– আচ্ছা আমি তো ওকে ভয় পায় না! তাহলে ওকে দেখলেই ইদানিং বুকটা কাপে কেনো? [ এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ ফিল করলো পাশে কেউ এসে বসেছে, মাথা ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখে আসিফ! চোখাচোখি হতেই মুচকি একটি হেসে চোখ টিপ মারলো আসিফ ]

মার্জান : [ মনে মনে ] আজিব তো এতো গুলো সিট থাকতে এইদিকেই এসে বসতে হলো নাকি!

আসিফ : [ মনে মনে হেসে ] মিস্ এংড়ি বার্ড আপনার মনে এখন কি ভাবছেন তা আমি ভালো করেই জানি, তবে আদারসাইড বসলে আপনাকে কাছ থেকে দেখতাম কিভাবে!

রোহানী : [ আসিফ এবং রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] আচ্ছা! রিসি্পসনের সবকিছুর দায়িত্ব না গতকাল রাতে পন্ডিতি করে তোমরা নিয়েছিলে? কোথায় গেলো তোমাদের দায়িত্ব?

রিদোয়ান : তোদের না,এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে না বুঝেছিস? দায়িত্ব যখন আমরা নিয়েছি, পার্টি হবে এন্ড আমাদের মতোই হবে ধামাকা!

– [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] গুড মর্নিং স্নেহাআআআ! ওপস! সরি এখন তো ভাবী! হিহি! বাই দ্যা ওয়ে ভাবী! আপনার ওনাকে দেখতে পাচ্ছিনা যে, [ চোখ টিপ মেরে ] একরাতেই টায়ার্ড হয়ে গেছে নাকি!

জারিফা : [ রিদোয়ানকে চিমটিয়ে ] শিসসস! ধীরে বলেন না! দাদী আর ফুফিরা আছে ঐদিক দেখছেন না?

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] আরে জারিফা! ধীরে বলার কি আছে, ওরাও যেমনকি করেনি? এসব না করলে তুমি, আমি কি দুনিয়ায় আসতে পারতাম নাকি? ডোন্ট ওয়ারি সামনে আমরাও করবো আমাদের ও বাচ্চা-কাচ্চা…

জারিফা : [ রিদোয়ানের মুখ চেপে ধরে ] ছিইইই! স্টপ ইটটটট! [ বাকিরা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো রিদোয়ান আর জারিফার কান্ড দেখে স্নেহা ও হেসে আবার উপরের দিক তাকাতে লাগলো ]

আলিসা : ভাবীইইই! এইভাবে বারবার উপরের দিক লুক না দিয়ে,মন যেদিকে যেতে চাচ্ছে ঐদিকেই চলে যানননন!

আসিফ : বাই দ্যা! ওয়ে রাহুল কোথায়?

নেহাল : ব্রোস্! তোদের ফোন দিয়েছিলাম কবে! আর তোরা এসেছিস এখন! কি গ্রেট এন্ড লাভিং মোমেন্ট দেখা মিস্ করে দিলি!

রিদোয়ান : কিরকম গ্রেট লাভিং? [ নেহাল এক্সাইটেড হয়ে বলতে লাগলো কিছুক্ষণ আগেই ঘটে যাওয়া রাহুল আর তার বাবার কথা গুলো ]

মার্জান : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] স্নেহা! রাহুল কিছু না বলেই চলে গেছে, আই থিংক নাও হি ইজ ইন ইমোশন! ইউ শুড বি গো দেয়ার! ওর পাশে এখন কাউকে প্রয়োজন! তুই যা আমরা ওদের সাথেই আছি!

স্নেহা : আচ্ছা! [ বলেই মাথা নাড়িয়ে উপরের দিক চলে গেলো, রুমের কাছাকাছি আসতেই এক্সাইটমেন্টে তাড়াতাড়ি হেটে গিয়ে দরজা খুললো স্নেহা,রাহুল পকেটে হাত রেখে জানালার দিক দাঁড়িয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে, স্নেহা মুচকি একটি হাসি দিয়ে দৌড়ে গিয়ে পেছন থেকে রাহুলের বাহুর দু-দিক হাত রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো, রাহুল পকেট থেকে হাত উঠিয়ে, স্নেহার মুঠি বেধে জ্যাকেট ধরে রাখা হাতগুলোর উপর হাত রাখলো ]

স্নেহা : আপনি জানেন না রাহুল! আমার কতোটা খুশি লাগছে!

– আপনি আমার লাইফে আসার পর থেকে সবই স্বর্গীয় মনে হচ্ছে আমার, জানেন! মাঝে মাঝে রাতে ঘুমানোর আগে এমন মনে হতো, যেনো! এইসবটায় সপ্ন! আপনাকে পাওয়াটাও সপ্ন!

– [ কাদো কন্ঠে ] এতোটা ভালোবাসেন কেনো আমায়? [ রাহুল মুচকি হেসে স্নেহার হাত ছুটিয়ে পেছন ফিরে তাকালো,দু-হাতে স্নেহার মুখ উঠিয়ে ধরলে দেখে স্নেহার চোখে জলে টলমল করছে ]

রাহুল : স্নেহা! তোমাকে ছাড়া আমার জীবন আদুড়ে ছিলো! মন খুলে হাসা তো আমি ভুলেই গিয়েছিলাম, নিঃস্বংগ ছিলাম আমি! তুমি আমার লাইফে আসার পরই আমার একাতীত্ব জীবনটি খুশিতে ভরে দিয়েছো! তাই তোমাকে আমি যতোই ভালোবাসবো আমার জন্য ততোই কম পড়বে! [ বলেই স্নেহার চোখ মুছে দিয়ে কপালে একটি চুমু খেয়ে বুকে টেনে জড়িয়ে ধরলো, স্নেহাও রাহুলের বুকে মাথা রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাদতে লাগলো ]

রাহুল : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে চুলে বিলি কাটতে কাটতে ] কামঅন স্নেহা! হোয়াই আর ইউ ক্রায়িং?

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আ..আপনি এতোগুলো ভালোবাসেন তাই!

রাহুল : এতো বোকা কেনো তুমি হ্যা? [ মৃদু হেসে ] বিটউইন আই লাইক ইট! [ বলেই আবার দু-হাতে স্নেহার মুখ তুলে ধরে ] আচ্ছা আর কাদতে হবে না! তোমার সাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তো! [ চোখের পানি মুছে দিয়ে ] অলরেডি কাজল লেপ্টে ফেলেছো ইডিয়ট! [ হঠাৎ দেখে স্নেহা রাহুলের বুকের দিক টি-শার্টে হাত দিয়ে ঘষে কি যেনো মুছতে লাগলো, রাহুল অবাক হয়ে তাকালে দেখে টি-শার্টে স্নেহার লিপস্টিক লেগে গেছে ]

স্নেহা : স..সরি! আ..আমি..

রাহুল : [ হেসে ] দ্যাটস্ ওকে স্নেহা! এটা নিয়েও চেহারায় টেনশন ছাপ নিয়ে আসতে হয়?

– আচ্ছা চলো আমি আবার সাজিয়ে দি [ বলেই স্নেহার হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে ড্রেসিং এর সামনে দাড় করালো ]

রাহুল : এক সেকেন্ড! [ বলেই ড্রেসিং এর উপর থেকে স্নেহার কসমেটিকস গুলো ঘাটতে লাগলো ]

স্নেহা : কিক..কি খুজছেন?

রাহুল : খুজছি ওয়েট!

– হ্যাঁ পেয়েছি! [ বলেই কাজলটা হাতে নিয়ে স্নেহার চোখের নিচে লাগিয়ে দিতে লাগলো,হেসে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার দু-চোখে কাজল লাগিয়ে দিয়ে ] এক সেকেন্ড স্নেহা! আরেকটা জিনিষ বাকি আছে! [ স্নেহা মাথা নাড়ালো, রাহুল লিপস্টিকটা এগিয়ে নিয়ে স্নেহার ঠোটে লাগিয়ে দিতে লাগলো, স্নেহা তাকিয়ে আছে রাহুলের চোখের দিক, আর রাহুল তাকিয়ে ভাবছে স্নেহার কাপা কাপা গোলাপী ঠোটের দিক, একটা ঠোট এতোটা আকর্ষীত কিভাবে হতে পারে? কিভাবে হতে পারে এতোটা মলিন, কিভাবে পারে তাকে বারবার তৃষ্ণার্থ করে দিতে এই ঠোট!
ধীরেধীরে লিপস্টিকটা স্নেহার ঠোট থেকে সরিয়ে নিলো রাহুল! হার্টবিট বাড়ছে স্নেহার কারণ রাহুলের ঠোট এগুচ্ছিলো তার ঠোটের দিক, পরক্ষণে রাহুলের ঠোটের আলতো স্পর্শ পেতেই ]

স্নেহা : [ চোখ কুচকে বন্ধ করে ] রার..রাহুল! দর..দরজা খোলা!

রাহুল : হোয়াট? [ বলেই অবাক হয়ে তাকালো স্নেহার চোখের দিক ]

স্নেহা : দদ..দরজা খোলা! যয..যদি কেউ আসে.. [ কোমোড়ে হাত রেখে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে হেসে উঠলো রাহুল,স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ]

রাহুল : জানো স্নেহা! তোমাকে না বড় একটি নোবেল দেওয়া দরকার! রোমান্টিক মোমেন্ট বিগড়ে দেওয়ার প্রধান শিফটেন হিসেবে! [ স্নেহা মুখ ভেংগিয়ে মন খারাপ করে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেললো ]

রাহুল : আরে রাগছো কেনো? আমি তো..

স্নেহা : মজা করছিলেন?

রাহুল : [ হেসে ] হ্যা!

স্নেহা : মোটেও না মিথ্যে বলছেন আপনি! সিরিয়াসলিই বলেছেন! আ..আমি আমি কি ইচ্ছে করেই এমন করি নাকি? ওটা তো হঠাৎ, মানে! কেমন জানি! আ..আপনি কাছে আসলেই লাগে নিশ্বাসটা এক্ষুণি বন্ধ হয়ে যাবে, তখন মনে হয় যেনো… [ বলেই রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : যেনো…?

স্নেহা : যেনো কিছু না! আপনি আবারো মজা নিচ্ছেন আমার কথায়!

রাহুল : আরেহ! মোটেও না স্নেহা! [ পাশ থেকে গিটারটা উঠিয়ে নিয়ে ] আচ্ছা চলো তোমাকে আজ গিটার বাজানো শিখাবো!

স্নেহা : লাগবে না! আমি জানি গিটার বাজাতে! ঐদিন বাজিয়েছিলাম না ভার্সেটিতে!

রাহুল : হ্যা! বাজিয়েছো, তাই তো বলছি চলো আজ একদম ফুলফিল বাজানো শিখিয়ে দেবো,

স্নেহা : ফুলফিল? তারমানে ঐদিন আমি যা বাজিয়েছি তা ঠিক হয়নি?

রাহুল : হ্যা! হয়েছিলো তবে টার্নিং পয়েন্ট গুলোতে টোন হাইলাইট করতে জানোনি! সো্ ইটস্ সিম্পল এসো শিখিয়েদি!

স্নেহা : না লা..লাগবে না আমার শিখতে হবে না [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

রাহুল : [ পেছন থেকে হাত ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে ] আরেহ! কই যাও! আমি যেতে দিলেই তো যেতে পারবা!

স্নেহা : ছাড়ুন রাহুল! প্লিজ! নিচে ওরা ওয়েট করছে!

রাহুল : করুক! [ হেসে স্নেহার পেটে শুরশুরি দিয়ে ] আচ্ছা! আজ একটু অভিমান বেশী হচ্ছে না! হুমম উমম?

স্নেহা : আরেহহ! রাহুল প্লিজ!

রাহুল : কিভাবে অভিমান ভাংগতে হয় স্নেহা! আমার জানা আছে কিন্তু! [ বলেই হাত দিয়ে স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করতেই ]

স্নেহা : রাহুল! পাগল নাকি কি করছেন আপনি? বব..বললাম না দরজা খোলা!

রাহুল : সো্ হোয়াট?

স্নেহা : উফফ! [ বলেই রাহুলের হাত ছুটিয়ে চলে যাচ্ছিলো তখনিই ]

রাহুল : [ আবারো স্নেহাকে একটানে কাছে এগিয়ে নিয়ে ] ভাগছো কেনো স্নেহা! লেটস্ স্টার্ট আমরা কিন্তু আবারো টাইটানিক পোজে আছি! [ স্নেহা দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে চুপ হয়ে রইলো ]

রাহুল : [ হেসে ] হাপিয়ে গেলে এইটুকুতেই! এখনো তো কিছু করলামই না ভালো করে [ স্নেহা হাত পেছন করে রাহুলের পেটে একটি চিমটি দিলো, রাহুল ও হেসে একহাতে স্নেহাকে ধরে রেখে আরেকহাতে গিটার বেল্টটা লুজ করে স্নেহাকে সহ ঢুকিয়ে নিলো গিটার বেল্টে, গিটারটা স্নেহার সামনে রেখে স্নেহাকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে ড্রেসিং এর পাশের দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়ায় ]

স্নেহা : কিক..কি করছেন আপনি এসব? এভাবে কেউ গিটার বাজায় নাকি?

রাহুল : হ্যা! আমি বাজাবো এখন থেকে! [ বলেই নিজ হাতে স্নেহার হাত দিয়ে গিটারের তারে বীট করাতে লাগলো ]

স্নেহা : [ গিটার থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে ] রাহুল! আপনিই বাজান! আমি অন্যকোনো সময় শিখে নেবো!

রাহুল : যতো বাহানা দাও স্নেহা! আমি কিন্তু তোমাকে যেতে দিচ্ছিনা!

স্নেহা : [ রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] আমি কোথাও যাচ্ছিওনা!

রাহুল : আওও! স্নেহা! [ বলেই গিটার সরিয়ে নিচ্ছিলো তখনিই ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত থামিয়ে দিয়ে ] আরেহ! সরিয়ে নিচ্ছেন কেনো? আপনি বাজাবেন না ?

– আপনি বাজান প্লিজ! গান সহ হুমম?

রাহুল : সত্যি?

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম সত্যি!

রাহুল : সত্যি তো?

স্নেহা : হ্যা! বাবা সত্যি!

রাহুল : কামঅন স্নেহা! আই টোল্ড ইউ না? আম নট ইয়র বাবা! ইয় কেন কল মি, বেইবি, জান, সুইটহার্ট..

স্নেহা : [ হাতের কুনি দিয়ে রাহুলের পেটে ঘুষি দিয়ে ] রাহুললল! আপনি গাইবেন? নাকি আমি যাবো?

রাহুল : আচ্ছা ওকে ওখেই! [ বলেই রাহুল গিটার? বাজাতে লাগলো, স্নেহা ও মনে মনে হাসলো রাহুলের কান্ডে ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ]

♪ কা্জরা মুহাব্বাত ওয়ালা ♪
♪ আখি্ওমে এসা্ ডালা ♪
♪ কা্জরা মুহাব্বাত ওয়ালা ♪
♪ আখি্ওমে এসা্ ডালা ♪
♪ কা্জরেনে লেলি্ মেরী জান ♪
♪ হায় রে মে তে্রে কুরবান ♪

♪ দুনিয়া হে্ মেরে পিছে ♪
♪ লেকি্ন মে তে্রে পিছে ♪
♪ দুনিয়া হে্ মেরে পিছে ♪
♪ লেকিন মে তে্রে পিছে ♪
♪ আপনা বানা্লে মেরি জান ♪
♪ হায় রে মে তে্রে কুরবান ♪

রাহুল : [ নাক দিয়ে স্নেহার ঘাড়ে স্লাইড করে ] স্নেহা তোমার ঘাড়ে এতো খুশবো কেনো?

স্নেহা : এটা গানের লিরিক্স ছিলো? [ রাহুল হেসে দিলো স্নেহার দিক তাকিয়ে, স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে মুচকি হাসলো ]

স্নেহা : [ রাহুল তাকিয়ে আছে বুঝতে পেরে ] কান্টিনিউ দ্যা সং!

রাহুল : [ হেসে ]

♪ আয়ে হো কাহাসে্ গড়ি ♪
♪ আখো্মে পিয়ার লেকে্ ♪
♪ চা্রতি জাওয়ানিকি ইয়ে্ ♪
♪ বেলি্ বাহার লেকে্ ♪
♪ দিল্লি শেহে্র কা সা্রা ♪
♪ মীনা বাজা্র লেকে্ ♪
♪ দিল্লি শেহে্র কা সা্রা ♪
♪ মীনা বাজা্র লেকে্ ♪

♪ জুমকা বাড়েলী ওয়া্লা ♪
♪ কানোমে এসা্ ডালা ♪
♪ জুমকা বাড়েলী ওয়া্লা ♪
♪ কানোমে এসা্ ডালা ♪

♪ জুমকে নে লেলি্ মেরী জান ♪
♪ হায় রে মে তে্রে কুরবান ♪
♪ হায় রে মে তে্রে কুরবান ♪

[ গান শেষ করেই রাহুল গিটার সরিয়ে ড্রেসিং এর উপরে রাখলো, আর স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে ব্লাশিং হয়ে হেসে বুকে মাথা রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো, রাহুল ও মুচকি হেসে স্নেহাকে আগলে নিলো ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম?

স্নেহা : আমাকে প্রতিদিন এভাবে গান শোনাবেন আপনি!

রাহুল : উমম! আর আমায় প্রতিদিন এভাবে টাইট করে হাগ দিবে তুমি!

– আর সাথে একটা করে কিসসস! উমহুম! একটা না আনলিমিটেড ওকে?

স্নেহা : [ হেসে ] হুমম!

হঠাৎ,

জারিফা : [ দরজায় কড়া নেড়ে ] হ্যালো গাইস্ আর ইউ দেয়ার? [ বলেই ভেতরে ঢুকতেই রাহুল আর স্নেহার জড়িয়ে ধরে রাখা দেখে ] ইইইইই! রোমান্স চলছে বুঝি! তাই তো বলি দুজন উপরে এতো লেইট করছেন কেনো! [ জারিফার পেছন পেছন মার্জান,শায়লা এবং রাহুলের কাজিন গুলো ও ঢুকলো ]

_____এইদিকে স্নেহার আপ্রাণ চেষ্টা রাহুল থেকে সরিয়ে দাড়াতে, কিন্তু এতে রাহুল এক কদম ও পিছিয়ে নেই! সে জারিফার দিক তাকিয়ে হেসে হেসে আরো টাইট করে স্নেহাকে জড়িয়ে ধরে রাখলো,

স্নেহা : কি করছেন রাহুল! ছাড়েন প্লিইইজ!

রাহুল : নেভার!

রোহানী : অওওও! হাও রোমান্টিক গাইস্!

হঠাৎ,

গীতালি : [ রুমে ঢুকে ] রাহুল ভাইয়া আপনারে… [ বলেই ঢোগ গিলে হা করে তাকিয়ে রইলো ]

স্নেহা : রাহুল প্লিজ! ছাড়ুন! দেখেন এসব ঠিক হচ্ছেনা কিন্তু! [ বলেই রাহুলকে জোড়ে একটি চিমটি দিলে, রাহুল হেসে ছেড়ে দিলো ]

রাহুল : গীতালিইই তুই কি যেনো বলছিলি!

গীতালি : হো কিক..কি যেনো বলতে আ..আইসি্লাম! [ সবাই হেসে উঠলো গীতালির অবস্থা দেখে ]

গীতালি : স..সবাই রুমে আছে দেইখা আর নাক আর দেইনাই! ভাবছি সবার সামনে কি আর লঞ্চ…

রাহুল : [ হেসে ] দ্যাটস ওকে! গীতালি ইটস্ অ্যা কমোন ম্যাটার! [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হ্যা! না স্নেহা? [ স্নেহা আড়চোখে তাকিয়ে আবার অন্যপাশ ফিরে গেলো, হাসতে লাগলো রাহুল ]

গীতালি : ও হ্যা! মনে পড়ছে! আপনারে নিচে ডাকতাসে্ রিদোয়ান ভাইয়া আর আসিফ ভাইয়া!

– টুমারো আপনের রাসি্পসন যে অইবো এসবের সাজানি নিয়া ডিজ… [ কনফিউজড হয়ে ] ডিজ.. কি যেনো..

রাহুল : [ হেসে ] ডিজকাস্!

গীতালি : [ চেচিয়ে ] হো! ডিজকাস্ করোন লাইগা!

রাহুল : ওকে! গাইস্, তোমরা কথা বলো! আই শুড বি গো!

– আর হ্যা! আমার বউয়ের খেয়াল রেখো কিন্তু! [ বলেই স্নেহার দিক তাকিয়ে চোখ টিপ মারলো, স্নেহা আড় চোখ তাকিয়ে আবার মুখ ফিরিয়ে নিলো, রাহুল ও হাসতে হাসতে রুম থেকে বেড়িয়ে নিচে চলে গেলো ]

আলিসা : ভাবীইইইই আমাদের আপনার লাভ স্টোরীর বাকি কাহাণীটুকু কিন্তু বলেন নি!

– [ স্নেহাকে টেনে নিয়ে খাটে বসিয়ে ] চলেন চলেন এইবার শুরু করেন! পুরো না শোনা পর্যন্ত কিন্তু আপনাকে ছাড়ছি না!

সন্ধ্যা, ৬ টা বেজে ২০ মিনিট,

জাফসিন : [ পেটে হাত বুলিয়ে ] গাইস্! আজ না লাঞ্চ একটু বেশি করে ফেলেছি! ছয়-টা ওভার হয়ে যাচ্ছে বাট আমার খাবার গুলো এখনো হজমই হয়নি!

আলিসা : জাফসিন! তুই না একটু বেশি কথা বলিস! এভাবে বসে থাকলে কি হজম হবে নাকি? এদিক ওদিক হাটতে থাক হজম হয়ে যাবে, তাও বকবক কম কর, দেখছিস না ইম্পর্টেন্ট কথা শুনছি!

– [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] হ্যা! তারপর তারপর বলো!

জারিফা : তারপর মেয়েটির চাওয়া না চাওয়াতেও তার হাজবেন্ড! ঝাপিয়ে পড়বে তারউপর! [ সবাই অবাক হয়ে তাকালো জারিফার দিক ]

মার্জান : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] জারিফা! তোকে না এখন এক থাপ্পড়ে দাত সব ফেলে দিবো! তুই এতোকিছু কিভাবে জানিস বলতো?

জারিফা : [ মাথা স্নেহার পেছন নিয়ে মার্জানকে চোখ মেরে ] আরেহ! কিক..কিভাবে জানি মানে? শুনেছি! শুনেছি আরকি!

– [ মাথায় হাত রেখে আফসোস বোধ করে ] এমন দুঃখ ভরা কতো জনের কাহাণীই না শুনলাম, [ বলেই আবার আড়চোখে স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখে স্নেহার চেহেরায় ভয়ের ছাপ ]

জারিফা : [ চেচিয়ে ] স্নেহা! তুই ভয় পাস না! নরমাল নরমাল! ওকে? [ স্নেহা মাথা নাড়ালো ]

___ এইদিকে,

নেহাল,রাহুল,আসিফ,রিদোয়ান তিনজনই উপরে উঠে রাহুলের রুমের দিক এগুচ্ছে,

নেহাল : [ রাহুলের কাধে হাত রেখে ] ব্রো! আমার না একটা জোস্ গেইম মাথায় আসছে,রুফ-টপে চল! গেইমটা খেলে দেখ আই সয়ার! অনেক এঞ্জয় হবে!

– দেন তুই আর ভাবী পাশাপাশি বসবি! আর আমাকে শুধু একটু শায়লার পাশে বসতে দিবি হিহি চলনা চলনা!

রাহুল : হুমম!

নেহাল : আরে হুম হুম মানে কি হ্যা বলনা!

রিদোয়ান : আচ্ছা তোর মাথা আওট হয়ে গেছে? বাচ্চাদের মতো গেইম গেইম করছিস কেনো বলতো? ডিরেক্ট লাইন মার! এতো গেইম টেইম খেলার মানে আছে নাকি?

নেহাল : ব্রো ইটস্ অ্যা কাপল গেইমস কাপল!

– অল লেডিস্ আর নট ইজি! ব্রো!

আসিফ : ইয়াহ! দ্যাটস রাইট! চল খেলবো! বাট ওয়ান কন্ডিশন!

নেহাল : ইয়েস্! ইয়েস্!

রিদোয়ান : [ হেসে ] আমি বলি! গেইমে মার্জানকে ওর পাশে চাই! রাইট দোস্ত ?

আসিফ : ইয়াহ দ্যাটস রাইট!

নেহাল : ইয়া..ইয়াহ! ডান ডান ব্রো ডান! লেটস্ গোওওও!

– আচ্ছা ওয়েট, লেডিসদের ও বলতে হবে তো রুফটপে আসতে! [ বলেই রাহুলের দিক তাকিয়ে ] হেইই রাহুল ওয়েটট, রাহুল রুমের দরজার সামনে আসতেই শুনতে পেলো ]

জারিফা : এসব হাজবেন্ডরা না হিংস্র পশুর মতোই হয়, হিংস্র পশুদের যখন ক্ষিধে লাগে এরা ছোট প্রাণীদের উপর অত্যাচার করে, আর হাজবেন্ডরা বেচারি বউদের উপর, স্নেহা! তুই আবার ভয় পাস না!

– এমনিতেও আর কদিনই বা এভাবে ভাগতে থাকবি? কোনো না কোনো সময় তো এমন হিংস্র পশুর হাতের শিকার হতেই হবে, [ আড়চোখে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] সেটা আজ রাত ও হতে পারে!

আলিসা : ওহ নো! ম্যারেড লাইফ ইজ সো্ ডেঞ্জারর!

জারিফা : ইয়াহহ! ভেরী ডেঞ্জার!

রাহুল : [ রুমে ঢুকে ] ডেঞ্জার! তাই না? [ সবাই শকড হয়ে ফিরে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : এমনিতে ও ভীতু! তারমধ্যে ওকে আরো ভয়…

– দাঁড়াও দেখাচ্ছি তোমায় ডেঞ্জার কিভাবে হয়!

জারিফা : নোওও স্নেহাআআআআ! প্লিজ সেভ মি! আমি তো মজা করছিলাম জিজু!
[ বাকিরা হাসতে লাগলো, রাহুল এগিয়ে আসলে জারিফা খাট থেকে একলাফে নেমে পড়ে ]

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 57

0

Love At 1st Sight
~~~ Season 3~~~

Part – 57

writer-Jubaida Sobti

নেহাল : লেডিস্ আমি ও আসছি ওকে? [ বলেই সে ও রাহুলের দিক দৌড়ে বেড়িয়ে গেলো ]

– [ চেচিয়ে ] হেইই ব্রো ওয়েট!

রাহুল : [ গাড়ীর দরজা খুলে ড্রাইভিং সিটে বসে ] রাহুল কারো জন্য ওয়েট করে না!

নেহাল : [ পাশের সিটে বসে হাপিয়ে উঠে ] হোয়াই ম্যান হোয়াইইইই? এখনো আগের মতোই থেকে যাবি! বিয়ে হয়েগেছে নাওলেজেবল হো!

রাহুল : [ সানগ্লাসটা চোখে লাগিয়ে ] ডোর বন্ধ হয়নি! [ নেহাল দীর্ঘশ্বাস ফেলে দরজাটা ভালো করে বন্ধ করে দেই, রাহুল ও তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ী টান দেই ]

নেহাল : বাট ব্রো! ইয়র এটিটিউড! [ হেসে ] আই লাইক ইট, ডেম! আই লাইক ইট,

___এইদিকে,স্নেহা রাহুলের কাজিনদের সাথেই বসে আছে, আর রাহুলের দাদী আর ফুফিরা মিলে একপাশে কথা বলছে!

রোহানী : [ স্নেহার হাত ধরে ] ভাবীইই আপনার হাতে কি হয়েছে?

স্নেহা : ও..ওটা তেত..তেমন কিছু না! জাষ্ট একটু কেটে গেছে?

রোহানী : বাট! হাওওও?

স্নেহা : চুচ..চুড়িতে!

রোহানী : অও! কেয়ারফুল ওকে? [ স্নেহা হেসে মাথা নাড়ালো ]

আলিসা : ভাবী! আমাদের, আপনার আর ভাইয়ার লাভস্টোরীটা শোনান না!

জাফসিন : হ্যা! ঠিক বলেছিস, ভাবী শোনান না! রাহুল ভাইয়া আর আপনার বন্ডিংটা দেখে মনে হচ্ছে আপনাদের লাভস্টোরিটা ও ভেরী ইন্ট্রেষ্টিং হবে!

স্নেহা : আ..আমাদের লাভস্টোরী?

আলিসা : হ্যা! ভাবী আপনাদের লাভস্টোরী! লাইক আপনার আর রাহুল ভাইয়ার ফাষ্ট মিট কোথায় হয়েছে,কিভাবে হয়েছে,দেন ভাইয়া আপনাকে প্রোপোজ কিভাবে করেছে!

– বলেননা বলেননা ভাবী প্লিইইইইইজজজ!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] আচ্ছা! ওকে! [ বলতেই বাকিরাও এক্সাইটেড হয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে কান পেতে রইলো ]

স্নেহা : বাবা-মা এবং রাশু গ্রামে চলে যাচ্ছিলো, তাদের বিদায় দিয়ে স্টেশনে আমার ফ্রেন্ডসদের অপেক্ষা করছিলাম, এক্সামের পর তাদের সাথে ও অনেকদিন পর দেখা হচ্ছিলো, তাই আর তর সইছিলো না, তাদের তিনজনকে স্টেশনে দেখার সাথে সাথেই দৌড়ে ছুটে যাচ্ছিলাম, এবং ঐসময়ই হঠাৎ রাহুলের সাথে ধাক্ষা লাগে,

– এবং ঐটাই আমাদের ফাষ্ট মিট ছিলো!

জাফসিন : বাট ভাবী এটা তো বলেন, যখন আপনাদের ধাক্ষা লেগেছিলো তখন কি হয়েছে?

স্নেহা : ধা..ধাক্ষা লাগাতে আমি আন-ব্যালেন্স হয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম,কিন্তু…

আলিসা : কিন্তু কিন্তু ভাইয়া ধরে ফেলেছিলো এম আই রাইটটট?

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে হেসে ] হুম!

আলিসা : আচ্ছা দেন দেন?

স্নেহা : ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই অবাক লাগলো, হুট করে পড়ে যাওয়া আবার হুট করেই কেউ এসে ধরে ফেলা, [ মুচকি হেসে ] পরে রাহুল থেকেই জানতে পারলাম ঐদিন, ও ইচ্ছে করেই আমাকে ফেলে দিয়েছিলো!

আলিসা : ইইইই! নটি বয়!

রোহানী : আচ্ছা ভাবী! ফাষ্টে তো আপনি জানতেন না যে ভাইয়া ইচ্ছে করেই ফেলেছিলো সো্ যখনি মোমেন্টটা হয়েছে তখন আপনার কিছু স্পেশাল ফিল হয়নি?

– লাইক সামথিং এমনটাই যে হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, অর রোমান্টিং ফিলিং!

স্নেহা : হোহ! হার্টবিট তো বেড়েছিলো ওর স্পর্শে কিন্তু তা রোমান্টিক ফিলে নয় ভয়ে,

– কালো টি-শার্ট, কালো জ্যাকেট, কালো প্যান্ট, যে হাতে ধরে রেখেছিলো ঐহাতে কালো একটি ওয়াচ! সবচেয়ে ইন্ট্রেষ্টিং যে জিনিসটা খেয়াল করেছিলাম অতোরাতে চোখে কালো সানগ্লাস ও লাগিয়ে রেখেছিলো,

জাফসিন : ওয়াও ম্যান ইন ব্লাক!

স্নেহা : আমি ভেবেছিলাম ডাকাত-টাকাত হবে, [ বলতেই বাকিরা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

– পরে ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম পেছনে একটি গিটার ব্যাগ ও আছে, তারপর ভাবলাম হয়তো সিংগার-টিংগারই হবে!

আলিসা : আচ্ছা ভাবী! আপনি যখন এসব খেয়াল করছিলেন তখন ভাইয়া কি করছিলো?

স্নেহা : ওর আর কি! সেই তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়েই ছিলো!

আলিসা : আই থিংক তখন ভাইয়ার আপনাকে দেখে লাভ এট ফাষ্ট সাইট হয়েগিয়েছিল! তাই শুধু তাকিয়েই ছিলো! হি-হি! আচ্ছা তারপর বলেন!

স্নেহা : তা..তারপর আমি ছুটে আমার ফ্রেন্ডস্ দের দিক চলে আসি, দেন সবাই মিলে বাসায় চলে যায়!

জাফসিন : ওহ নো! কেউ কিছু বললোই না? আম এক্সাইটেড দেন কি হয়েছে?

স্নেহা : পরদিন মর্নিং এ ভার্সেটি যায়, মার্জান বললো ফর্ম এনেছি কিনা ভালো করে চেক করে দেখতে, ব্যাগ থেকে ফর্মের কাগজটা বের করতেই হঠাৎ বাতাসে ফর্মটা উড়ে পার্কিং এড়িয়ার দিক চলে যায়, আমি দৌড়ে নিতেই যাচ্ছিলাম ঠিক ঐ টাইমেই ফর্মের উপর গাড়ীর চাকা এসে পড়ে,

– কলিজাটা আমার ছিড়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিলো যখন গাড়ীর চাকাটা আমার ফর্মের উপরই এসে পড়ে,

রোহানী : ওহ নো! কে ছিলো ঐ ড্রাইভার? গাড়ী থেকে বের করে বিট করেননি?

স্নেহা : বিট করবো? আমিতো ওনাকে দেখে পালানোর চেষ্টা করি! আই মিন গাড়ীতে তোমার ভাইয়াই ছিলো!

জাফসিন : [ এক্সাইটেড হয়ে ] রিয়েলি?

আলিসা : জুটি যখন উপরওয়ালাই সে্ট করে রেখেছে আবার দেখা হোওয়ার তো ছিলোই!

জাফসিন : যতোই ভাগো না কেনো ভাবীইই! ঘুরেফিরে ভাইয়ার সামনেই হাজির হয়েছো! [ হাসতে লাগলো স্নেহা,এবং এরপরের বাকি কাহানীটুকু ও কন্টিনিউ বলতে লাগলো ]

একঘণ্টা হয়ে গেলো,

রোহানী : হোয়াট দ্যা হেল! এই সামিরের এত্তবড় সাহস! অলোয়েজ ব্রেক করে দিচ্ছে!

স্নেহা : বাট! আমার মন তখন কেনো জানি বলছিলো, রাহুল ওখানে আসবেই!

জাফসিন : উমমম! ভাবী ওখানে এসেছিলো কিনা তো জানিনা, বাট ভাইয়া এইখানে অবশ্যই চলে এসেছে! হি-হি! সি্ গাইস্ আজ ও সে্ইম পোজ ম্যান ইন ব্লাক! [ বলতেই সবাই একসাথে মেইন ডোরের দিক তাকালো, স্নেহা ও তাকাতেই দেখে রাহুল ঢুকছে ]

– উপস্! আজকে সব ব্লাক হলে ও কের্চ হোয়াইট হয়ে গেছে!

রাহুল : কি কথা হচ্ছে আমার বউ এর সাথে! [ বলেই সোফায় গা হেলিয়ে বসে পড়ে ]

আলিসা : ভাইয়া! আমরা না ভাবীর কাছ থেকে তোমাদের লাভ-ষ্টোরী শুনছিলাম!

রাহুল : আরে স্নেহা! যাকে তাকে আমাদের লাভ-স্টোরি জানিয়ে দিচ্ছো কেনো? স্পেশাল লাভ-স্টোরি বলে একটা কথা আছে না, যা শুধু স্পেশাল মানুষদের বলা যায়,এগুলো তো সব অষ্ট্রেলিয়ান খামারের গরু!

আলিসা : [ সোফার কশুন নিয়ে রাহুলের গায়ে ছুড়ে মেরে ] কি বললে? আমরা অষ্ট্রেলিয়ান গরু? [ বলেই আরো কয়েকটা ছুড়ে ছুড়ে মারতে লাগলো, রাহুল কশুন কেচ নিয়ে নিয়ে হাসছে আর আবার উল্টো ছুড়ে মারছে,স্নেহা ও হাসতে লাগলো তাদের কান্ড দেখে, হঠাৎ ]

নেহাল : [ দৌড়ে এসে ] ভাবীইইই! কাম, কাম, [ বলেই স্নেহার হাত ধরে বসা থেকে উঠিয়ে চোখে হাত দিয়ে রাখে ]

স্নেহা : কিন্তু কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?

নেহাল : সারপ্রাইজ ভাবী সারপ্রাইজ!

রোহানী : ওয়াওওও! আম অলসো্ সারপ্রাইজড গাইস্!

নেহাল : [ রোহানীর দিক তাকিয়ে ] শিসসসস! [ বলেই স্নেহাকে কিছুটা সামনের দিক এগিয়ে নিয়ে ধীরেধীরে চোখ থেকে হাত সরিয়ে নেই, আর স্নেহা চোখ খুলে সামনের দিক তাকাতেই জারিফা মার্জান আর শায়লাকে দেখে শকড হয়ে যায়, চোখে পানি চলে এসেছে স্নেহার, দৌড়ে গিয়ে তিনজনকেই একসাথে জড়িয়ে ধরলো, তারাও হেসে আগলে নিয়ে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে ]

মার্জান : অওও স্নেহা! আই মিসড ইউ সো মাচ!

স্নেহা : [ চোখ মুছে ] আই মিসড ইউ টু!

নেহাল : ভাবী! ভাবী! কেমন লেগেছে সারপ্রাইজ? আই মিন আপনার শালীদের দেখে কেমন ফিল হচ্ছে আপনার হুম উম? [ হেসে উঠলো সবাই নেহালের কথা শুনে]

গীতালি : [ মুখে হাত দিয়ে কনফিউজড হয়ে এগিয়ে এসে ] নেহাল ভাইয়া? এরা ভাবীর শালী অয় কেমনে? এরা তো রাহুল ভাইয়ার শালী অইবো তাই না?

জারিফা : [ হেসে ] মিষ্টার অষ্ট্রেলিয়া! আমরা ভাবীর শালী নয়য়য়য়য়! রাহুলের শালীইইইই!

নেহাল : আরে আগেও তো বলেছি একই তো! ভাবী মানে রাহুল! রাহুল মানে ভাবী সো্ হলো না ভাবীর শালী?

গীতালি : খাইছে! এতো উবার ইস্মাট ভাষা আমার বুঝন আসে না, ভাবীর ও বলে আবার শালী অয়!

নেহাল : ওহো গীতালি! উবার ইস্মাট না, ইটস্ কল ওভার স্মার্ট!

গীতালি : আপনের ভাবীর শালী কওনের থেইকা,আমার উবার ইস্মার্ট কওনডা বহুদ পার্ফিক্ট আছিলো!

নেহাল : হোয়াট হোয়াট পার্ফিক্ট?

গীতালি : হো পার্ফিক্ট! [ বলেই চলে গেলো ]

আলিসা : নেহাল ভাইয়া! তোমার এখন বেশি টেনশন না করে এইদিকে এসে বসে যাওয়াটা আরো পার্ফিক্ট হবে! [ সবাই আরো কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

নেহাল : [ কনফিউজড হয়ে একটু হেসে ] পার্ফিক্ট! ওখেই! আই থিংক শি ইজ রাইট! [ বলেই সোফায় গিয়ে বসে পড়লো ]

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে স্নেহার কাছে এসে ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! লাষ্ট নাইটের কাহাণী বল! কি কি হয়েছে,

স্নেহা : পাগল হয়েগেছিস নাকি?

শায়লা : আমার ও তাই মনে হচ্ছে! কমোনসেন্স নেই তোর?

– এইদিকে দাড়িয়েই সব জেনে নিবি নাকি! বাকিদের সাথে ও আগে দেখা করেনে তারপর নাহয় শুনবি!

জারিফা : নেভার নেভার! আমি এক্ষুনি শুনবো! বলনা স্নেহা কি কি হয়েছে, আচ্ছা চল ঐদিকে ফাকা আছে ঐ দিকে গিয়ে বল! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে নিয়েই যাচ্ছিলো তখনি ]

রাহুল : লাভ নেই! [ স্নেহার পাশে এসে দাঁড়িয়ে ] আধি ঘারওয়ালি, আমার পুরো ঘারওয়ালিকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো? লাষ্ট নাইটের কাহাণী শুনতে? [ জারিফা জিহবায় কামড় দিয়ে হাসতে থাকে ]

রাহুল : হি-হি কোনো লাভ নেই! কজ লাষ্ট নাইট কিছুই হয়নি! ইউ নো আমার না, ফুটিকিস্মত!

শায়লা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] আহা! বেচারা!

মার্জান : এক্সুলি ভালোই হয়েছে, এতোদিন হুটহাট যেখানে সেখানে রোমান্স শুরু করে দিতেন না? তাই এখন আপনার বিয়ের পরের রোমান্সে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হচ্ছে!

রাহুল : হ্যা তাই ভাবছি, স্নেহা যেহেতু অপেক্ষার প্রহর গুনাচ্ছে তোমাদের থেকে কারো একজনের সাথে সেই প্রহর শেষ করে নিবো!

– [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] কি বলো স্নেহা? [ স্নেহা হেসে রাহুলের পেটে দিলো একটি চিমটি ]

মার্জান : [ গলা ঝেড়ে ] এহেম এহেম! আমি আসি! [ বলেই হুড়হুড় করে সোফার দিক চলে গেলো ]

রাহুল : আরে এইতো পালালো! [ মুচকি হেসে ] এনিওয়েস্ তাহলে তোমরা দুজনের মধ্যে থেকে ডিসাইড করে নাও আমার সাথে বেড শেয়ার কে করছো!

জারিফা : শাশ..শায়লা সিংগেল আছে জিজু! আ..আমি ঐদিকটা যাচ্ছি রোহানী ডাকছে! [ বলেই দৌড় দিলো ]

রাহুল : [ হাত উঠিয়ে আলসে কেটে ] উমমমম! তাহলে আমার অপেক্ষার প্রহর এবার শেষ হতে যাচ্ছে, সো্ ভাবছি কোনদিক থেকে শুরু করবো! [ বলেই শায়লার কাছাকাছি এসে দাড়াতেই ]

শায়লা : ছিইইই জিজু! [ বলেই রাহুলকে সরিয়ে দিয়ে দৌড়ে চলে যায় ]

রাহুল : [ হেসে হেসে ] আরেহ! পালাচ্ছো কেনো তোমরা? [ স্নেহা ও রাহুলের কান্ড দেখে হেসে বাকিদের দিক এগিয়ে যাচ্ছিলো তখনিই ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে কাছে টেনে ] তুমি আবার কই পালাও! সবাইকে পালাতে দিলেও তোমাকে পালাতে দিচ্ছিনা!

স্নেহা : [ হাত ছুটানোর চেষ্টা করতে করতে ] কি করছেন রাহুল! ছাড়েন কেউ দেখবে!

রাহুল : দেখুক! [ with tedi smile ]

স্নেহা : আরেহ পাগল নাকি? দাদী,ফুফী সবাই আছে, আর আপনার লজ্জা বলতে কিছু নেই?

রাহুল : [ হেসে ] একদমই নেই স্নেহা! কিভাবে পাই লজ্জা দেখি? [ বলেই স্নেহার পেটের শাড়ীর নিচে হাত দিতেই ]

স্নেহা : রাহুল! আপনার বাবা! [ বলেই রাহুলকে ধাক্ষা দিয়ে সরিয়ে এগিয়ে যায় সোফার দিক, রাহুল ও হেসে পেছন পেছন এগিয়ে এসে স্নেহার পাশে সোফায় হেলান দিয়ে দাঁড়ায় ]

দাদী : ভালোই করেছো তোমরা এসে, আমি তো ফোন করতেই ছিলাম নাফিসা আবার নিষেধ করে বললো তোমরা হয়তো টায়ার্ড থাকবে তাই আর ফোন করলাম না,

নেহাল : আরে মম! নিষেধ করেছো কেনো! ফোন করতে?

নেহালের মা : নেহাল! ওরা টায়ার্ড থাকবে ভেবে নিষেধ করেছিলাম!

জারিফা : হাইই! আংকেল গুড মর্নিং!

রাহুলের বাবা : গুড মর্নিং! ডিয়ার!

____এইদিকে,

নেহালের মা : [ নেহালের দিক ফিসফিসিয়ে ] নেহাল! ঐ মেয়েটার থেকে দূরে দূরেই থাকবি!

নেহাল : হোয়াই মম? দূরে দূরে কেনো থাকবো? ওর কাছে খারাপের কি আছে?

নেহালের মা : কারণ এসব মেয়েগুলোর উপর আমার মোটেও বিশ্বাস নেই! তোদের মতো ছেলেদের দেখলে এরা…

নেহাল : [ বিরক্তি হয়ে ] স্টপ ইট মম! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে গেলো, নেহালের মা ও নাক ফুলিয়ে রাগান্বিত ভাবে লিভিং সাইডে গিয়ে বসে পড়লো ]

রাহুলের বাবা : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! ব্রেকফাস্ট করেছো?

স্নেহা : জি! করেছি!

দাদী : সবাই করেছে শুধু রাহুল! [ বলেই থেমে যায়, রাহুল ও অন্যপাশ ফিরে গিয়ে স্নেহার শাড়ীর আচল নিয়ে আংগুলে পেচাতে থাকে ]

রাহুলের বাবা : আমি অফিস যাচ্ছি মা! লাঞ্চে আসবো!

দাদী : কিন্তু তুই যে বললি যতোদিন না রাহুলের সব প্রোগ্রাম শেষ না হয়, ততোদিন কোনো অফিসে যাবি না!

রাহুলের বাবা : হ্যা! বলেছিলাম এক্সুলি, ইতালির একটা নিউ প্রজেক্ট এসেছে, মুরাদ ও না বলে মিটিং রেখে দিয়েছে তাই যেতে হচ্ছে!

দাদী : আচ্ছা ঠিকাছে যা! কিন্তু এর আগে ব্রেকফাস্ট করেনে!

রাহুলের বাবা : ব্রেকফাস্ট আমি অফিসে করে নিবো! [ বাকিদের দিক তাকিয়ে ] এঞ্জয় গাইস্ [ বলেই মুচকি হেসে চলে যাচ্ছিলো তখনিই ]

স্নেহা : [ পাশ মুড়ে দাঁড়িয়ে ] ব্রেকফাস্ট করে না গেলে আপনার মেডিসিন টাইমলি নিতে পারবেন না! [ রাহুলের বাবা থেমে গিয়ে অবাক হয়ে তাকায় স্নেহার দিক ]

স্নেহা : জি! হাহ..হার্টের মেডিসিন! টাইমলি নেওয়া ভালো, তাই! [ রাহুলের বাবা স্নেহার কথা শুনে, মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে ডাইনিং টেবিলের দিক চলে যায় ব্রেকফাস্ট করতে ]

দাদী : [ স্নেহার ফ্রেন্ডসদের দিক তাকিয়ে ] তোমরা আবার দাঁড়িয়ে আছো কেনো চলো এসো ব্রেকফাস্ট করতে!

জারিফা : নাহ দাদী আমরা তো আজ এতোগুলো ব্রেকফাস্ট করেছি যে আজ সারাদিনে আর খেতে পারবো কিনা ও কে জানে!

লিনিসা ফুফি : কিন্তু তোমরা এইখানে যখন আসছো তাহলে বাসা থেকে কেনো ব্রেকফাস্ট করে আসলে,

জারিফা : না,নাহ বাসায় ব্রেকফাস্ট করার সময়টুকু ও কই দিলো, রাহুল গিয়ে আমাদের এমন তাড়াহুড়ো করে নিচে নামতে বলেছে যে, [ হেসে ] পরে গাড়ীতে উঠে দেখি এতোগুলো খাবার! [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] হাউ সুইট জিজু! আমাদের কত্তো কেয়ার করে, [ রাহুল ও হেসে চোখ টিপ মারে ]

দাদী : আচ্ছা তাহলে তোমরা গল্প করো আমরা ঐদিকটা আছি! [ বলেই দাদী,এবং লিনিসা ফুফিও লিভিং সাইড চলে গেলো ]

আলিসা : কাম ভাবী! দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?

[ স্নেহা সোফায় বসতে যাওয়ার জন্য পা এগুচ্ছিলো তখনিই শাড়ীর আচলে টান খাওয়াই পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে,রাহুল আচল দাত দিয়ে কামড়ে ধরে এক ধ্যানে কি যেনো চিন্তা করছে ]

স্নেহা : আরেহহ! [ বলেই আচল ঝাড়ি মেরে টেনে নেই ]

রাহুল : [ দাতে ব্যথা পাওয়ায় মুখ চেপে ] আআহ! স্নেহা![ স্নেহা হেসে সোফায় গিয়ে আলিসার পাশে বসে পড়ে ]

রাহুল : আরে দাঁড়াও না কথা ছিলো তো! [ বলেই স্নেহা আর আলিসার মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে ]

– এইই হাট, হাট সাইড দে!

আলিসা : [ স্নেহার পাশে আরো লেগে বসে ] নেভার! কখনোই দিবো না সুন্দর করে বলো!

রাহুল : আমার পিচ্চি আলিসা, আমার বোন! প্লিজ দয়া করে সাইড দে!

আলিসা : হিহি! সো্ সুইট! [ বলেই রাহুলকে স্নেহার পাশে বসার জায়গা দিয়ে সে সাইড হয়ে বসে ]

রাহুল : [ সোফায় বসে ] মুটি! অষ্ট্রেলিয়ান খামারের গরু!

আলিসা : [ চেচিয়ে ] আআআআ! [ রাহুলকে চিমটিয়ে ] মাই ওয়েট ফরটি সেভেন কিলো অনলি! ওকে?

রাহুল : ওও! তাই তো বলছি আমি ফুটা খাচ্ছিলাম কেনো! হাড্ডির দোকান!

আলিসা : [ কাদো ভাবে ] ওওহ! নোওও [ বলেই কশুন দিয়ে রাহুলকে বারি মেরে উঠে অন্য জায়গায় গিয়ে বসে পড়ে, রাহুল হাসতে থাকে,বাকিরাও সবাইমিলে হেসে আড্ডা দিতে লাগলো ]

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা!

স্নেহা : হুম?

রাহুল : তুত..তুমি কিভাবে জানো, যে বাবার হার্টের প্রবলেম?

স্নেহা : আজ সকালে! আপনার ড্রেসিং এর ড্রয়ারে একটা ফাইল ছিলো ওটাই দেখেছি!

রাহুল : ওহ!

স্নেহা : সরি রাহুল! আপনার পার্মিশন ছাড়া আপনার জিনিষে হাত দিয়েছি বলে, এক্সুলি আমি চুড়ি নিতে গিয়ে তখন হঠাৎ…

রাহুল : ওহো শাট-আপ স্নেহা! সরি কেনো বলছো! আমার জিনিষ মানে তোমারই তো! এতে পার্মিশন কেনো লাগবে!

– বাব..বাট স্নেহা! তুমি যা দেখেছো ফাইলে! তা আর কাউকে বলার দরকার নেই! ওকে?

স্নেহা : কেনো? আপনার বাবার হার্টে আরো তিনটে ব্লগ আছে এটা তিনি জানলে কষ্ট পাবে তাই?

– রাহুল!

রাহুল : হুমম?

স্নেহা : আপনি চাইছেন না যে আপনার বাবা কষ্ট পাক! তাই তো? [ চুপ করে থাকে রাহুল কোনো জবাবই দেইনা স্নেহাকে ]

স্নেহা : আ..আপনিও তো ব্রেকফাস্ট করেননি! আপনার বাবা একা বসে ব্রেকফাস্ট করছে, আ..আই মিন আপনি ও সাথে করেনিন!

রাহুল : শাট-আপ!

স্নেহা : শাট-আপ বলে বলেই সব সময় চুপ করিয়ে দেন! একই ছাদের নিচেই আছেন দুজন, অথচ একজন একজনের সাথে কথা বলা তো দূরের কথা, চোখাচোখা হতেও চান না,

– কেনো রাহুল? ভুল তো মানুষ করেই থাকে, তাই বলেকি ক্ষমা পাওয়ার অধিকারটাও হারিয়ে ফেলে?

রাহুল : স্নেহা! কি হয়েগেছে তোমার? হঠাৎ এসব আবার কেনো বলছো?

নেহাল : গাইস্ তোমরা কি ঝগড়া করছো?

রাহুল : না! কক..কথা বলছি জাষ্ট! [ স্নেহার দিক তাকিয়ে কাধে হাত রেখে ফিসফিসিয়ে ] অন্য টপিকে কথা বলি স্নেহা! ওকে?

স্নেহা : কতোদিন টপিক চেঞ্জ করতে থাকবেন রাহুল? [ রাহুল দীর্ঘশ্বাস ফেলে নাক ফুলিয়ে স্নেহার কাধ থেকে হাত সরিয়ে দুহাত একত্রে মুঠি বেধে মুচড়া মুচড়ি করতে থাকে ]

স্নেহা : নিজেও কষ্ট পাচ্ছেন, ওনাকে ও কষ্ট দিচ্ছেন! আপনি চাইলে আবারো…

রাহুল : প্লিজ স্নেহা প্লিজজ! চেঞ্জ দ্যা টপিক!

স্নেহা : [ রাহুলের হাতের মুঠি ছুটিয়ে, নিজের হাতের মুঠিতে ভরে ] রাগ উঠছে? হুমম?

– হারিয়ে দিন এই রাগকে! আপনার বাবার ভালোবাসার থেকে তো আর বড় নয়!

– আপনার খুশির জন্য! মিথ্যে অভিনয় করে আমার ফ্যামিলির কাছে পর্যন্ত নতো হয়েছে!তারমানে তিনি ও চাইছেন তার পরিবারকে আগের মতো ফিরে পেতে!

রাহুল : স্নেহা! এতোটা বছর যা হয়েছে [ মুচকি হেসে ] তুমি সাথে আছো এখন!

– সো্ আর কিছু চাই না,নাও আই হ্যান্ডেল ইট!

স্নেহা : এতোটা বছর কি হয়েছে এটা ভাবা জরুরী নয় রাহুল! এতোটা বছর কিভাবে কেটেছে এটা ভেবে দেখুন!

– রাগের মাথায় নয় একবার ভালোবেসে ভেবে দেখুন! চাইলে তিনিও আপনাদের সবাইকে ত্যাগ দিয়ে নতুনভাবে জীবন শুরু করতে পারতো, কিন্তু তিনি তা করেনি কারণ তিনি আপনাদেরকেই চাই!

– নিজে কি ইনকাম করছেন একটাকা? আর খরচ করছেন লাখ লাখ টাকা! এতোটাকা কই যাচ্ছে, কি করা হচ্ছে এই টাকায়? কখনো হিসাব চেয়েছে আপনার কাছ থেকে?

– ঐদিন পুলিশ স্টেশনে আপনাকে অ্যারেষ্ট করেছে শুনতেই দৌড়ে এগিয়ে গেলো, দোষ আপনার ছিলো নাকি ছিলো না এটাও যাচাই করেনি!

– তারমানে রাহুল! আপনার জন্য তার ভালোবাসা একবিন্দু ও কমেনি!

রাহুল : শেষ হয়েছে এবার? তোমার ওরেষণ দেওয়া?

স্নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে ] আমার কথা গুলো আপনার ওরেষণ মনে হচ্ছিলো!

রাহুল : নাহ স্নেহা আমি ওটা…

স্নেহা : আমি ভাষণ দিচ্ছিলাম এতোক্ষণ?

রাহুল : লিসেন্ট..

স্নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে ] কথার মাঝে কথা বলবেন না বলেদিলাম!

রাহুল : [ শকড হয়ে ] ও..ওখে!

স্নেহা : আপনার এটিটিউড সবার আগে! এই এটিটিউডের পেছনে কার মনে কি চলছে এতে আপনার কোনো কেয়ারই নেই!

– আপনাকে এবং আপনার এটিটিউডকে আমার তরফ থেকে মোবারক!

রাহুল : ঈ..ঈদ মোবারক?

স্নেহা : নাহ! এটিটিউড মোবারক! [ বলেই উঠে যাচ্ছিলো, তখনিই ]

রাহুল : [ হাত টেনে বসিয়ে দিয়ে ] কোথায় যাচ্ছো? আচ্ছা ওকে সরি!

স্নেহা : সরি চাই না রাহুল! ডিজপোস্ চাই! আপনার আর আপনার বাবার মাঝে!

– পারবেন? দিতে? [ রাহুল হতভম্ব হয়ে চুপ করে তাকিয়ে আছে স্নেহার চোখের দিক ]

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] পারবেন না!

– কারণ আপনার কাছে আপনার এটিটিউডই সবার আগে! এর আগে কিছুই না!

– আমি ও না! [ বলেই স্নেহা উঠে চলে যাচ্ছে ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] স্নেহা! ওয়েট, রাগছো কেনো? [ সবাই অবাক হয়ে একবার রাহুল আরেকবার স্নেহার দিক তাকাতে লাগলো ]

রাহুল : স্নেহা! এটিটিউড আগে না তুমিই আগে!

– কামঅন স্নেহা প্লিজ! [ থামলো না স্নেহা চলেই যাচ্ছিলো ]

রাহুল : [ স্নেহার এভাবে কষ্ট পেয়ে চলে যাওয়া সজ্য আর করতে না পেরে, চোখ কুচকে চেচিয়ে বলে উঠলো ]

– ও..ওকে স্নেহা! আমি যাচ্ছি,

– ডিড..ডিজপোস্ করবো! [ থেমে গেলো স্নেহা, পেছন ফিরে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : [ কাদো ভাবে ] এ..এটিটিউড আগে না তুমিই আগে! [ চেয়ে রইলো স্নেহা কিছু বললো না, রাহুল ও কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ধীরেধীরে এগিয়ে গেলো ডাইনিং টেবিলের দিক, বাকিরা ও হা করেই তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক, গীতালি ও রান্নাঘরের চুলার সুইচড অফ করে দিয়ে তাকিয়ে রইলো ]

রাহুল : [ তার বাবার চেয়ারের পেছনে দাঁড়িয়ে থেকে, মনে মনে ] কামঅন রাহুল! কিছু তো বল!

– কি বলবি? [ আড়চোখে স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখলো, স্নেহা দাঁড়িয়ে চেয়ে আছে তার দিক ]

রাহুল : [ মনে মনে কাদো কন্ঠে ] যদি জানটাই না চেয়ে নিতা স্নেহা! খুশি খুশিতে দিয়ে দিতাম!

– জান দেওয়ার চেয়েও বাবার সাথে ডিজপোস্ করাটাই ভয়ংকর কাজ মনে হচ্ছে আমার! [ বাবার প্লেটের দিক তাকিয়ে ] মাই ডিয়ার ফাদার এতো তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করছো কেনো! আরো কিছু তো খাও এক্সুলি সবই খেয়ে নাও!

– তাও এখন এইদিকে ফিরো না!

– যদি এইদিক ফিরে আমি ফেইস করবো কিভাবে? এখনো সময় আছে রাহুল! কেটে পর! [ বলেই চলে আসার জন্য পাশ ফিরছিলো তখনিই আবার স্নেহার দিক চোখ পরাই তাড়াতাড়ি আবারো ফিরে যায় ]

– শিট! শিট! রাহুল, কেটে পড়লে আবার স্নেহা ভাববে,এটিটিউড আগে তারপর ও!

– আই লাভ ইউ স্নেহা! বুঝো না কেনো কতো ভালোবাসি! এসবের সাথে এটিটিউড, ডিজপোস্ এসব কেনো মেলাতে যাচ্ছো কে জানে! [ হঠাৎ খেয়াল করলো চেয়ার সরিয়ে তার বাবা দাড়াচ্ছে, রাহুল নিজের কপালে হাত দিয়ে ঘাম মুচতে লাগলো, তার বাবা ফিরে তাকাতেই রাহুলকে দেখে চমকে উঠে, রাহুল ও কি আর করবে, নার্ভাসনেস্ কাজ করছে তাই তাড়াতাড়ি টেবিলের কাছে গিয়ে জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢালতে লাগলো,

রাহুলের বাবা ও কিছু বললো না ভাবলো পানি খেতেই এসেছে, তাই বেড়িয়ে যাওয়ার জন্য হাটা ধরলো, রাহুল তাড়াতাড়ি পাশমুড়ে স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা ও তারদিক থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে উপরের দিক চলে যাচ্ছে, এইদিকে তার বাবার দিক তাকিয়ে দেখে তিনিও চলে যাচ্ছেন, কোনদিক যাবে সে, আর না পেরে ]

রাহুল : [ হুট করে চেচিয়ে বলে উঠলো ] বাবা!

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 56

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 56

writer-Jubaida Sobtii

রাহুল : [ স্নেহার নাকে নাক ঘষে ] নট এডভান্টেজ স্নেহা! নাও আম ইয়র হাজবেন্ড ছুতেই তো পারি! [ বলেই স্নেহার ঠোটের দিক তাকিয়ে মুখ এগুচ্ছিলো, তখনিই ]

স্নেহা : [ চোখ কুচকে বন্ধ করে ] রা..রাহুল! বাট লে..লেইট..

রাহুল : শাট-আপ স্নেহা! মাই মর্নিং কিস্! [ বলেই স্নেহার ঠোটে আলতো করে নিজের ঠোট লাগাতেই হঠাৎ দরজায় নক পড়লো, স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ খুলে তাকালো রাহুলের দিক আর রাহুল আড়চোখে দরজার দিক একবার তাকিয়ে আবারো স্নেহার ঠোটে ঠোট মেশাতেই ব্যস্ত ]

স্নেহা : [ রাহুলের বুকে হাত রেখে ঠেলে দিয়ে ] রাহুলল! দরজায় নক করছে!

রাহুল : [ দীর্ঘশ্বাস ফেলে ] হ্যা! আমিও শুনেছি!

– আচ্ছা স্নেহা! ওদের কমোন সেন্স বলতে কিছু নেই! এই টাইমেই মানে এই টাইমটাতেই দরজা নক করতে হলো?

– আরে বাবা অন্তত আর দুটা মিনিট পর করলে ও তো…

– এনিওয়ে! লিভ ইট! [ বলেই এগিয়ে গেলো দরজা খুলতে, দরজা খুলতেই রাহুলের কাজিন রোহানী,সাইফা আর জাফসিন,তিনজনই একত্রে বলে উঠলো ]

– গুড মর্নিংং! রাহুল ভাইয়া! [ স্নেহা দূর থেকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে ]

রাহুল : গুড মর্নিং তাই না? ইউউ, বোথ হেল মাই মর্নিং!

রোহানী : কামঅন ভাই! ফুলনাইট তো ভাবীর সাথেই ছিলে, [ চোখ টিপ মেরে ] এবার একটু আমাদের সাথে ও থাকতে দাও! [ বলেই তিনজনই একত্রে হেসে হুড়হুড় করে রুমের ভেতর ঢুকে পড়লো, রাহুলের ও কি আর করার দীর্ঘশ্বাস ফেলে লিভিং সোফার নিচ থেকে সাদা কের্চ গুলো পড়ে সোফার উপর থেকে কালো জ্যাকেটটা গায়ে দিয়ে স্নেহার দিক একবার তাকিয়ে নিচে নেমে গেছে ]

ড্রইং রুমের সোফায় রাহুলের ফুফিরা সাথে বাকী কাজিনগুলো আর দাদী বসে কথা বলছে,নেহাল সোফায় হেলান দিয়ে শুয়ে শুয়ে টেব হাতে নিয়ে গেইমস খেলছিলো, রাহুল গিয়ে নেহালের পাশে বসে টেবটা কেড়ে নিয়ে গেইম খেলা শুরু করে দেই,

নেহাল : [ চমকে উঠে, আবার রাহুলকে দেখে হেসে ] হেইই! ব্রো! গুডড মর্নিংংনিংনিংনিংনিং!

রাহুল : হোয়াট? কি! নিংনিংনিং লাগিয়ে রেখেছিস?

নেহাল : হোহোহো ব্রো! [ রাহুলের পেটে শুরশুরি দিয়ে ] হাউ ওয়াজ দ্যা লাষ্ট নাইট? হুমম..উমম..হুমম!

রাহুল : তোর মাথায় সমস্যা নেই তো? ইডিয়ট! লাষ্ট নাইট কেমন ছিলো তুই দেখিসনি?

নেহাল : উপস্! সরি! সরি! আচ্ছা ভাবী ঠিকাছে এখন?

রাহুল : হুম!

নেহাল : হুমম! বাট আই ফিল রিগ্রেটিং ফর ইউ ব্রো!

রাহুল : হোয়াই?

নেহাল : হিহি! ফর লাষ্ট নাইট!

রাহুল : [ আড়চোখে নেহালের দিক তাকিয়ে ] মজা নিচ্ছিস্ তুই, হ্যাঁ?

নেহাল : [ হেসে রাহুলের কাধে হাত রেখে জড়িয়ে ] কিডিং ব্রো কিডিং!

দাদী : [ মুচকি হেসে ] কি এমন বলছিস রাহুল! আমাদের ও তো শুনিয়ে বল!

নেহাল : [ চোখ টিপ মেরে ] লাষ্ট নাইট গ্রেন্নী লাষ্ট নাইট! [ বলতেই রাহুলের বাকী কাজিন গুলো ও এক্সাইটেড হয়ে লাফিয়ে রাহুলের পাশে এসে বসে ঘুরঘুর করে তাকিয়ে থাকে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] এক্সকিউজ মি!

আলিসা : ভাই আমাদের ও বলো না এবাউট লাষ্ট নাইট!

সুজানা : ডিটেইলসে না বললেও চলবে! সামথিং সামথিং শেয়ার তো করতেই পারো হুমম উমম!

রাহুল : লিসেন্ট! তোরা আমায় বারবার এটা মনে করিয়ে দিসনা যে লাষ্ট নাইটে কিছুই…

সুজানা : কিছুই?

রাহুল : ফরগেট ইট! আম হাংড়ি! [ বলেই রাহুল উঠে ডাইনিং টেবলে গিয়ে বসে পড়লো ]

আলিসা : [ কনফিউজড হয়ে ] সুজানা! ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড?

সুজানা : নো!

নেহাল : আম অলসো্! হিহি! [ বলেই দু-তিন লাফে সোফা থেকে পেড়িয়ে ডাইনিং টেবলের দিক চলে যায় ব্রেক ফাষ্ট করতে, চেয়ার টেনে বসে রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল মুখে হাত দিয়ে কি যেনো চিন্তা করছে ]

নেহাল : [ রাহুলের মুখের সামনে হাত নাড়িয়ে ] হেই ব্রো ইউ ওকে?

রাহুল : [ মনে মনে কাদো ভাবে ] নো আম নট ওকে! আমার মর্নিং কিস্ মিলেনি আমার কাছে!

নেহাল : ইয়াহ! ইউ থিংকিং এবাউট ভাবীইইই [ চেচিয়ে ] ভাবী..ইয়েস্ ভাবী…

রাহুল : আরে এভাবে চেচাচ্ছিস কেনো!

নেহাল : আরে ঐদিক দেখ ভাবী [ বলেই হাত দিয়ে রাহুলের মাথা ঘুড়িয়ে দেই শিরির দিক, রাহুল ও নেহালের কাধে হাত রেখে হা করে তাকিয়ে থাকে শিরির দিক, স্নেহা রাহুলের কাজিনদের সাথে নামছে শিরি দিয়ে,ঠোটের কোণে মিষ্টি একটি হাসি ঝুলানো ]

রাহুল : [ মুগ্ধকর অবস্থায় ] শাড়ীর কুচি গুলো কি যত্ন করে ধরেছে দেখ! তারাও এই সফট সফট হাতের প্রেমে পড়ে যাবে, আর শাড়ীর আচলটা শিরি দিয়ে কিভাবে বেয়ে আসছে দেখ সমুদ্রের ঢেউ ও মনেহয় এভাবে বয়ে আসে না, সিল্কি সিল্কি চুল, মিল্কি মিল্কি গাল,পিংকি পিংকি ঠোট, হেলিয়ে-দুলিয়ে গ্লামারাস ওয়েষ্ট..

নেহাল : স্টপ! স্টপ ব্রাদার স্টপ! [ রাহুল চমকে উঠে তাকালো নেহালের দিক ]
– আর ডিটেলে যেতে হবে না ব্রো! আই আন্ডারস্ট্যান্ড!

রাহুল : আমি এসব তোকে বলছিলাম কেনো?
– আচ্ছা তুই অন্তত কান চেপে রাখতে পারতি!

নেহাল : হোয়াট! [ কনফিউজড হয়ে ] ওহহ নো! ব্রো আমি পাগল হয়ে যাবো তোর কথা শুনে! [ বলেই গ্লাসে জুস ঢেলে খেতে লাগলো ]

রাহুল : তুই ঠিক ছিলি কবে যে পাগল আজ হবি! [ নেহাল কিছু বলতে যাবে তখনি ]

রাহুল : [ নেহালের কাধে হাত রেখে হেসে হেসে ] আচ্ছা শোন না শোন শোন!

নেহাল : একে তো কনফিউজড করে দিচ্ছিস! তারউপর উল্টো আমাকেই পাগল বলছিস! দিস ইজ নট ফেয়ার ব্রো ওকে!

রাহুল : আচ্ছা! আচ্ছা! শোন ওদিকে তাকিয়ে দেখ স্নেহা কি করছে?

নেহাল : মাথাটা পাশ ফেরালে তো তুই ও দেখতে পাচ্ছিস! আমার থেকে জিজ্ঞেস করার কি আছে?

রাহুল : এক্সুলি আম এংগার উইদ স্নেহা!

নেহাল : [ অবাক হয়ে ] হোয়াটটট? কাল বিয়ে হতে না হতে আজই?

রাহুল : আরে সিরিয়াসলি না আই মিন ওকে আমার বোঝাতে হবে যে আমি ওর উপর নারাজ! তাই তাকাতে চাচ্ছিনা যদি চোখাচোখি হয়ে যায়, [ বিরবির করে ] এমনিতে আজ শাড়ী পড়াতে, চোখ সরিয়ে রাখাটা তো আরো মুশকিল হয়ে দাড়িয়েছে

নেহাল : হোয়াট?

রাহুল : আরে ওসব তুই বুঝবি না! একবার বিয়ে কর তারপর আপনা-আপনি বুঝে যাবি, এখন আপাতত তোকে যা বলছি তাই শোন! ঐদিকে তাকিয়ে বল,কি করছে স্নেহা? [ বলেই নেহালের মাথা ধরে পাশ মুড়িয়ে দিলো ]

নেহাল : কথা বলছে,গ্রেন্নীর সাথে!

রাহুল : [ জুস খেতে খেতে ] কি কথা হতে পারে!

নেহাল : আই থিংক! গ্রেন্নী ভাবীকে গীতালির সাথে ইন্ট্রোডাক্ট করে দিচ্ছে, ফর এক্সাম্পল, স্নেহা তোমার কিচেনে কিছু দরকার হলে গীতালির কাছ থেকেই চেয়ে নিবা! ও হচ্ছে কিচেন কুইন! হিহি এমনই বলছে হবে,

– আচ্ছা ব্রো গীতালিকে কিচেন কুইন এর ডিগ্নীফাইস্ না দিয়ে, শাউট কুইন এর ডিগ্নীফাইস্ দিলে পার্ফেক্ট ম্যাচ হয় তাই না! ওকে আমি গতকাল বললাম মিট লেমন জুসটা দারুণ বানিয়েছিস! ব্রো ও এমন শাউট করে থেংক ইউ বললো না আরেকটুর জন্যই আমার ইয়ার ড্রাম ফেটে যায়নি!

রাহুল : শাট-আপ ইডিয়ট! তোকে গীতালির ডিগ্নীফাইস এক্সপ্লেইন করতে বলিনি! বললাম ঐ দিক তাকিয়ে বল স্নেহা কি করছে,

নেহাল : ওহ ইয়াহ! ভাবী এখন হাসছে রোহানী কি যেনো বলায়! এইদিক ও একটু তাকিয়ে ছিলো!

রাহুল : আমার দিকে?

নেহাল : হেইইই ব্রো আম নট আ নিউজ চ্যানেল ওকে?

রাহুল : [ হেসে ] আচ্ছা আচ্ছা! থামলি কেনো বলতে থাক! তারপর, তারপর..

নেহাল : তারপর তুই নিজেই দেখতে পারবি! কজ্ সবাই এখন এইদিকটাই আসছে![ এইদিকে আসছে শুনে রাহুল আড়চোখে তাকিয়ে দেখলো হ্যা! সত্যি সত্যিই সবাই এইদিকটাই আসছে, মোটামোটি সবাই টেবিলের কাছাকাছি আসতেই ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] আরে নেহাল! প্লিজ! বললাম তো খাবো না তুই খা! আমার খিধে নেই, এক্সুলি আমার মুডই নেই খাওয়ার! [ নেহাল হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক ]

দাদী : মুড নেই মানে? সকাল সকাল তোর মুডের আবার কি হলো?

রোহানী : ভাই! তোমার মুড চলে এসেছে! এবার ব্রেকফাস্ট স্টার্ট করে দাও! [ বলেই রাহুলের পাশের চেয়ার টেনে দিয়ে স্নেহাকে বসার জন্য ইশারা করলো, স্নেহা ও মুচকি একটু হেসে চেয়ারে বসে পড়লো ]

রাহুল : এক্সুলি আমার ক্ষিধে নেই গাইস্! দাদী আমি আসি তোমরা ব্রেকফাস্ট করে নাও!

দাদী : আরে রাহুল! সকালে কিভাবে মানুষের ক্ষিধে থাকেনা? কিছু অন্তত খেয়ে যা! [ রাহুল শুনলো না উঠে চলে গেলো উপরে, স্নেহা ও মুখ গোমড়া করে তাকিয়ে ছিলো রাহুলের চলে যাওয়া, কিছুই বুঝতে পারছিলো না,হঠাৎ কি হয়ে গেছে রাহুলের,খাবার টেবিলে বসার পরও আবার না খেয়ে চলে যাওয়া,

মাথায় নানানরকম চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিলো স্নেহার, সে কি কোনো ভুল করেছে নাকি অন্যকারণে, কিছুই তো বলে গেলো না, কি হয়েছে, তবে কিছু একটা হয়েছে এটাই স্নেহা নিশ্চিত, কিন্তু কি হয়েছে রাহুলের এটা না জানা পর্যন্ত তো স্নেহার নিজের পেঠেও কিছু ঢুকবে না ]

দাদী : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! তুমি চিন্তা করোনা তুমি খেয়ে নাও! ও তো সবসময়ই এমন ব্রেকফাস্ট না করে ভার্সেটি চলে যায়, ভেবেছিলাম বিয়ের পর অন্তত রুটিন মেইনটেইন করে চলবে!

আলিসা : ডোন্ট ওয়ারি গ্রেন্ড মা! ভাবী যখন এসে গেছে ভাইয়াকে এখন থেকে ভাবীই রুলস্ মেইনটেইন করে চলাবে! আর ভাবীর কথা তো ভাইয়া ইগনোরই করতে পারে না, হিহি তাই না ভাবী? [ মুচকি হাসলো স্নেহা ]

লিনিসা ফুফি : আরে সে তো বড়ই বৌ পাগলা তার কান্ড দেখেই বুঝা যায়, [ স্নেহার পিঠে হাত বুলিয়ে ] তুমি ব্রেকফাস্ট করে নাও স্নেহা,ওর ক্ষিধে লাগলে ও নিজে নিজেই এসে খেয়ে যাবে! ওকে… [ স্নেহা মাথা নাড়ালো ] গুড গার্ল!

[ সবাই হাসিখুশী ভাবেই ব্রেকফাস্ট করছিলো,স্নেহা ও করছে তবে মনটা উপরে রাহুলের দিকই পড়ে আছে,গলা দিয়ে একটা খাবার ও নামছিলো না,সবই নিজ জোড়ে জোড় করে করে মুখে ঢুকাচ্ছিলো নাহলে বাকিরা কি মনে করবে মনে করে, অল্প একটু খেয়েই স্নেহা পানি খেয়ে নিলো ]

গীতালি : [ চেচিয়ে ] ভাবী আরেকটা পরোটা দেই?

স্নেহা : না নাহ! আমার শেষ আর খাবো না!

গীতালি : আরে ভাবী খাবার মজা হয়নাই নাকি? এত্তো একটু কইরায় খাইলেন?
– আমি তো আজকে রাহুল ভাইয়ার ফেভারিট লুচি-ভাজী,আর আলু পরটাও বানাইছি,ভাইয়া তো খাইয়ি নাই আর আপনে তো কবুতরের মতো টুকটুক মুখ লাগাইয়া বলেন খাওয়া শেষ!

স্নেহা : না নাহ! খাবার অনেক মজা হয়েছে, এক্সুলি আমার পেট ভরে গেছে তাই এইটুকুই খেয়েছি!

গীতালি : আইচ্ছা! দুপুরে কিন্তু বেশী কইরা খাইতে হইবে বইলা দিলাম! [ স্নেহা হালকা একটু হেসে মাথা নাড়ালো ]

নেহাল : [ গ্লাসে জুস ঢেলে স্নেহার দিক এগিয়ে দিয়ে ] ভাবী অরেঞ্জ জুস! এটা তো খেতেই হবে!

স্নেহা : থেংক ইউ বাট…

রোহানী : টেক ইট ভাবী! মর্নিং ফ্রেশ জুস! ইটস গুড ফর হেলথ! [ স্নেহার ও কি আর করার জুসের গ্লাস এগিয়ে নিয়ে সামনে রাখলো, গলা দিয়ে পানি নামছে না জুস খেতে তো আরো মুশকিল হয়ে দাড়াচ্ছে ]

দাদী : স্নেহা! তুমি ঠিকাছো তো? রিলেক্স হয়ে খাও! চিন্তিত মনে হচ্ছে!

স্নেহা : নাহ! এ..এক্সুলি আ..আমার ফোনটা উপরে ফেলে এসেছি, মা হ..হয়তো ফোন দিতে পারে!

আলিসা : ডোন্ট ওয়ারি ভাবী তুমি রিলেক্স হয়ে খাও! আমি তোমার ফোন নিয়ে আসছি!

স্নেহা : নানাহ! তুত..তুমি কষ্ট করতে যাবে কেনো, তুমি ব্রেকফাস্ট ফিনিশ করে নাও!আমার তো অলরেডি শেষ,আ..আমি যাচ্ছি, ফোফ..ফোন নিয়ে আসি!

দাদী বুঝতে পেরে মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো, স্নেহা ও খুশি হয়ে উপরের দিক চলে গেলো, রুমের দরজার ধারে আসতেই কানে গিটারের টোন ভেসে আসছে, সাথে রাহুলের গান করা মিষ্টি ভয়েসটুকু, বুকটা স্নেহার কাপতে লাগলো গানটা শুনে, যেদিন প্রথম রাহুল তার গেষ্ট হাউজে গানটা গেয়েছিলো, সেইদিনটির কতো সৃতি স্নেহার চোখে ভেসে যাচ্ছে, আর এক্ষুণি তো রাহুলের কাছে দৌড়ে ছুটে যেতে মন চাচ্ছে,কিন্তু স্নেহা তা করলো না কারণ সে চাই না রাহুল তার গান গাওয়াটা পুরো শেষ না করেই বন্ধ করে দিক, তাই ধীরেধীরেই দরজাটা খুললো,রুমের দু-পাশের জানালা খুলে রেখেছে যেকারণে শীতল হাওয়া অনুভব করছে স্নেহা, বারান্দার দিক তাকাতেই দেখে রাহুল বারান্দার স্লাইডিং গ্লাসটা ও খুলে রেখে দেওয়ালে এক পা বটে রেখে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে, কপালে পড়ে থাকা ছোট ছোট চুল গুলোও এলোমেলো ভাবে উড়ছে, হাতে গিটার নিয়ে বাজাচ্ছে আর বাইরের দৃশ্য দেখে দেখেই গান করে যাচ্ছে..

♪♪ আখে্ মুন্দে তো জা্নে কিসে্ ঢুন্ডে
কে সো্য়া জায়ে না কে সো্য়া জায়ে না
কিসে্ ঢুন্ডে ইয়ে খাহিশোকে্ বুন্দে
কে সো্য়া জায়ে না কে সো্য়া জায়ে না ♪♪
♪♪ মানো্ নিন্দিয়াপি রো্য়া জা্য়ে না
মানো্ নিন্দিয়াপি রো্য়া~~জায়ে না ♪♪

আল্লাহ মুঝে্ দারদে্ কে কাবি্ল বানা্দিয়া,
থুফা্ন কই কাশথি্ কা সা্হিল বানা্দিয়া,
বেচে্নিয়াসা্ মেটে্কে সা্রে জাহান্ কি
যাব্ কুচনা্ বান্ সা্কা তো মেরা দিল্ বানা্দিয়া

ও সা্থিইইইই তে্রে বিনা্ আ~~
রাহি~~কা্ রা~~ দিখে না~~
ও সা্থিইইইই তে্রে বিনা্ আ~~
সা্হিল~~ ধুয়া ধুয়া আ~~

[ গান শেষ করে রাহুল গিটারটা দেওয়ালে ঠেকিয়ে দিয়ে, হাত দুটো পকেটে রেখে ঐ অবস্থায়ই দাঁড়িয়ে আছে, রাহুলের এটাও বুঝার বাকি ছিলো না যে স্নেহা অনেক্ষণ ধরেই ঐদিকে দাঁড়িয়ে তার গান গাওয়া শুনছিলো,

রাহুল জানতো স্নেহা তার কাছে ছুটে আসবে, না বলে মনের প্রতিটা শব্দ জেনে যাওয়াটাই তো রাহুল-স্নেহার ভালোবাসার চিহ্ন!

অবশ্য রাহুল আজকের এই গানটাও স্নেহাকে শোনানোর জন্য গেয়েছে, কারণ রাহুল স্নেহাকে এটাই মনে করিয়ে দিতে চাই, যে তার কাছে স্নেহার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্তই জীবনের প্রতিটি মুহুর্তের চেয়ে দামী! যা সে কখনোই ভুলতে পারবে না, মুচকি একটু হাসলো রাহুল, কারণ স্নেহা তার পাশে এসেই দাঁড়িয়েছে, তাকালো না রাহুল বাহিরে শীতল বাতাসে সবুজ গাছপালা গুলোর হেলিয়ে যাওয়া দৃশ্যটুকুই দেখে দেখে বলে উঠলো! ]

রাহুল : এভাবে চুপিচুপি দাঁড়িয়ে থাকবা নাকি কিছু বলবা!

স্নেহা : আপ…আপনি ব্রেকফাস্ট করলেন না কেনো?

রাহুল : বলেই তো এলাম! ক্ষিধে নেই!

স্নেহা : মিথ্যে বলছেন আপনি,সকালবেলা কি কারো ক্ষিধে থাকে না নাকি?

রাহুল : ওহ কামঅম স্নেহা কারো সাথে আমার কমপের করো না! রাহুল ইজ রাহুল! আন্ডারস্ট্যান্ড?

স্নেহা : [ রাহুলের মুখ ধরে তারদিক ফিরিয়ে ] কি হলো আপনার? আমার দিক তাকাচ্ছেনই না! ওদিক তাকিয়ে কথা বলছেন কেনো?

রাহুল : [ স্নেহার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত একবার চোখ বুলিয়ে ] হট পিংকিস লাগছো এই শাড়ীতে, আমি উইক হয়ে যাচ্ছি! মানে এক কথায় আউট অফ কন্ট্রোল! ওয়েষ্ট দেখো তোমার, হাটার সময় হালকা একটু পেটও দেখা যাচ্ছে! তখন আমি নিজেকে কতো কষ্টে কন্ট্রোল করেছি জানো?

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] আপনার কি,শাড়ীতে স..সব মেয়েদের দেখলেও এমন হয়?

রাহুল : শাট-আপ! ইডিয়ট! সব মেয়েদের সাথে তোমার কমপের করছো কেনো! তুমি তো তুমিই! তুমি তো স্নেহা! স্নেহা তো স্নেহাই! স্নেহা তো রাহুলের! রাহুল তো স্নেহার! [ হেসে উঠলো স্নেহা রাহুলের কথা শুনে, রাহুল ও মুচকি হেসে স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ]

– সব মেয়েদের শাড়ীতে দেখলে ঐ ফিলটা আসে না স্নেহা যেটা তোমায় দেখলে আসে!

স্নেহা : আচ্ছা! কিন্তু আপনি তো এর আগেও একবার আমাকে শাড়ীতে দেখেছিলেন!

রাহুল : কামঅন স্নেহা! তখন তুমি গার্লফ্রেন্ড ছিলে, তাই ফিল আসলে ও মাইন্ডে বাধা দিতো! [ বলেই স্নেহাকে দেওয়ালের সাথে লাগিয়ে দাড় করিয়ে ] আর এখন তো বউ হয়ে গেছো! হুমম? কি বুঝলে?

– আচ্ছা! এতো গ্লসি লিপস্টিক লাগিয়েছো কেনো স্নেহা! এমনিতে মাইন্ড কন্ট্রোল করা যাচ্ছে না! আমাকে আরো থার্সতি বানিয়ে দিচ্ছো!

স্নেহা : হুমম! থার্সতি হলে পানি খান,পিপাসা মিটে যাবে, কিন্তু এখন চলুন ব্রেকফাস্ট করবেন! [ বলেই রাহুলের হাত ধরে এগুতে যাচ্ছিলো তখনিই রাহুল স্নেহার ধরে রাখা হাতদিয়ে স্নেহাকে সহ টেনে এনে আবার একই জায়গায় দাড় করিয়ে নেই ]

স্নেহা : রার..রাহুল! ব্রে…ব্রেকফাস্ট…

রাহুল : [ আংগুল দিয়ে স্নেহার ঠোটে স্লাইড করে করে ] শিসসসসস! বললাম তো ক্ষিধে নেই!

– বাট! পিপাসা পেয়েছে অনেক! [ বলেই স্নেহার ঠোটের দিক ঠোট এগুচ্ছিলো, আর এই দিকে স্নেহার বুক কাপতে লাগলো, জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলছে রাহুলের ঠোট তার ঠোটের দিক যতো এগুচ্ছে ]

রাহুল : [ স্নেহার ঠোটে আলতো করে একটি চুমু খেয়ে ] ইউ নো স্নেহা! আমার ছোয়ায় যখন তুমি জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলো! তখন আমার চোখের ইন্টেনশন কিন্তু ঠিক থাকে না, অনেক জায়গায় চলে যায়! [ কথাটি বলতেই স্নেহা লজ্জা পেয়ে পেছন ফিরে যায়, তা দেখে রাহুল ও তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার পিঠ থেকে চুলগুলো সরিয়ে কাধে রেখে, ধীরেধীরে আংগুলের স্পর্শ দিয়ে স্নেহার পিঠ থেকে কোমোড়, আবার কোমোড় থেকে পিঠ পর্যন্ত স্লাইড করতে থাকে, এর মাঝে রাহুল মুচকি মুচকি ও হাসছে স্নেহার হঠাৎ হঠাৎ কেপে উঠে জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলা দেখে,

কিছুসময় পর রাহুল তার মুখ এগিয়ে স্নেহার পিঠে তার ঠোট দিয়ে স্লাইড করে আলতো একটি চুমু খেলো! আর স্নেহা সাথে সাথেই কেপে উঠে চোখ কুচকে বন্ধ করে তার শাড়ীর আচল শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রাখলো,

রাহুল : [ স্নেহার কাধে মুখ এনে ফিসফিসিয়ে ] কাপছো কেনো স্নেহা?

স্নেহা : ঠা..ঠান্ডা বাতাস আ..আসছে তাত..তাই!

রাহুল : তাহলে আমাকেই তোমার সুয়েটার বানিয়ে নাও! [ বলেই স্নেহার পেটেরদিক শাড়ীর নিচে আলতো করে হাত রেখে স্লাইড করে ধরে ]

স্নেহা : রার..রাহুল! আমায়..নিন..নিচে যেতে হবে!

রাহুল : [ স্নেহার ঘাড়ের চুল সরিয়ে গভীর একটি চুমু খেয়ে ] তো যাও! আমি কবে না বললাম! [ বলেই স্নেহাকে তারদিকে ফিরিয়ে দেওয়ালে ধাক্ষে লাগিয়ে গলায় এবং ঘাড়ে চুমু খেতে লাগলো, এক পায়ের কের্চ খুলে ধীরেধীরে স্নেহার পায়ে স্লাইড করতে লাগলো,

স্নেহার দম আটকে আসছিলো রাহুলের প্রতিটি চুমুতে,হঠাৎ করেই রাহুলের এমন আদর পাওয়া, যেনো সুখের সাগরে ডুব দিচ্ছে তাকে নিয়ে, শাড়ীর আচল থেকে স্নেহার হাতের মুঠি ছুটিয়ে নিজ হাতে মুঠি বেধে ধরে দেওয়ালে হাত রাখতেই ধাক্ষা লেগে গিটারটাও মাটিতে পড়ে গেলো, এসবে তো রাহুলের খবরই নেই, সে তো স্নেহাকে আদর দিতেই ব্যস্ত! ]

স্নেহা : রার..রাহুল গিগ..গিটার!

রাহুল : [ নাক দিয়ে স্নেহার গলায় স্লাইড করে স্নেহার ঠোটের কাছে নিজের ঠোট এনে ] স্নেহা একটা গান মনে পড়ছে তোমার চোখ আর ঠোট দেখে!

– বলবো? [ স্নেহা মাথা নাড়াতেই রাহুল নটি মাইন্ডেড একটা স্মাইল দিয়েই গান গেয়ে উঠলো ]

♪ পিলু তে্রে নিলে নিলে নেনোসে্ শাবনাম ♪
♪ পিলু তে্রে গীলে গীলে হোঠো্সে্ সা্রগাম ♪
♪ পিলু হে পিনে্ কা মোসা্মম উমমমম….

বলেই হেসে স্নেহার ঠোটে ঠোট মেশাতেই, হঠাৎ দরজার পাশ থেকে..

গীতালি : ভাবী আপনার ফোন তো…

রাহুল : শীটট! [ বলেই তাড়াতাড়ি কের্চে পা ঢুকিয়ে বারান্দায় হেটে চলে যায়! ]

গীতালি নিচের দিক তাকিয়ে,রোবোট হয়ে মোবাইল হাতে হাত বাড়িয়ে দিয়ে থেমে আছে, না তার মুখ দিয়ে কোনো সাউন্ড বেরুচ্ছিলো, না পাশ মুড়ে চলে যাওয়ার শক্তিটুকু আসছিলো,

স্নেহা তাড়াতাড়ি শাড়ীর কুচি ঝেড়ে ঠিক করে, চুল গুলো হাত দিয়ে সমান করে কাধে ঠিক করে এনে গিতালীর দিক এগিয়ে এসে দাড়ালো..

স্নেহা : [ ফোন এগিয়ে নিয়ে ] থেংক ইউ! আ..আমার মনে হয়েছিলো ফোফ..ফোন রুমে রেখে গিয়েছিলাম!

গীতালি : সারি! ভাবী, আমি কিন্তু আপনাদের লঞ্চ দেখিনাই, চোখ নিচে নামাই ফেলছিলাম! আমি তো আপনার ফোন…

– কিন্তু ভাবী আপনেরা দরজা বন্ধ কইরা লঞ্চ করবেননা এইভাবে দরজা খোলা রাইখা কেউ লঞ্চ করে নাকি?

স্নেহা : লল..লঞ্চ মানে?

গীতালি : লঞ্চ মানে বুঝেননা? আপনারা এখন যেটা… বুঝছেন তো?

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে মাথা নাড়িয়ে ] হুমম!

গীতালি : আইচ্ছা ভাবী আমি নিচে যায়! আমার আবার দুপুরের লেঞ্চ ও বানাইতে হইবো!

স্নেহা : লাঞ্চ?

গীতালি : হো এইডা এইডা! লেঞ্চ, আমার ইংলিশ এতো ভালা না তাই একটু ভুল অয় আরকি! কিন্তু নেহাল ভাইয়ার বাংলার চাইতে বহুদ ভালা আমার ইংলিশ! হি-হি [ বলেই হেসে বেড়িয়ে গেলো, স্নেহা ও হাসতে লাগলো গীতালির কথা শুনে, পেছন ফিরতেই দেখে রাহুল বারান্দার পর্দা সরিয়ে রুমে ঢুকছে ]

স্নেহা : এই গীতালি অনেক মজার তাই না?

রাহুল : হ্যা! মজার তো বেশ! সাথে ওর চিৎকার গুলো ও বিশেষ,পেটে একদমই কথা থাকে না মেয়েটার!

– [ হেসে ] নাজানি নিচে গিয়ে এখন কি কি বলবে ওদের!

স্নেহা : [ চেচিয়ে ] হোহ! মানে কি?

রাহুল : হোহ! মানে হচ্ছে তোমার বোকামিতেই তুমি ফেসে গেছো! নিচে গেলে এখন রোহানীদের কাহানী শোনাতে হবে তোমার উপরে কি কি করেছো!

স্নেহা : আ..আমার বোকামী কেনো হবে? আপনার খেয়াল রাখা উচিত ছিলো দরজা বন্ধ ছিলো নাকি খোলা!

রাহুল : এক্সকিউজ মি! আমি ভেবেছি তুমি দরজা বন্ধ করেই এসেছো! আমি কি জানি? যে তুমি দরজা ওপেন রেখে এসেছো!

স্নেহা : হ্যা! ওপেন রেখে এসেছি কারণ আমি ও কি জানি যে আপনি…

রাহুল : থামলে কেনো? বলো আমি [ with tedi smile ]

[ স্নেহা আর কিছু বললো না লজ্জা পেয়ে দৌড়ে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে ]

___________ এইদিকে,

গীতালি : [ নিচে গিয়ে ] আমি ভাবছি ভাবী সত্যি সত্যিই মোবাইল আনতে গেছে,তাই টেবিলে মোবাইলডা দেইখা দিতে গেছিলাম!

দাদী : গীতালি তোর বোঝা উচিৎ ছিলো স্নেহা টেনশন করছিলো রাহুল ব্রেকফাস্ট না করায়!
– তাই! আমরা মোবাইলটা দেখার পরেও স্নেহার কাছে পাঠায়নি!

গিতালী : সা্রি সা্রি!

নেহাল : ওহো গিতালী নট সা্রি ইটস্ সরি্!

গিতালী : হা ঐডাই সরি,সারি! একই, আমার মনে ছিলো না,যে রাহুল ভাইয়ার তো এহন বিয়ে হইয়া গেছে,রুমের দরজা নাক দিয়া ঢুকা উচিৎ আছিলো!

নেহাল : গীতালি নাক না ইটস নক! নক দিয়ে ঢুকা উচিৎ ছিলো!

গিতালী : দেহেন আমি কি ইচ্ছা কইরাই তাদের লঞ্চ দেখতে ঢুকছি নাকি? বলছি তো এরপর থেইকা নাক দিয়াই ঢুকমু!

নেহাল : হোয়াট হোয়াট হোয়াট? এগেইন লঞ্চ? ইটস্ কল রোমেন্স! গীতালি রোমেন্স! [ নেহাল আর গীতালির কান্ড দেখে বাকিরা হাসতে লাগলো ]

গীতালি : অইসে সব একই লাগে আমার, এতো বেশি ইংলিশ শিখন লাগবো না আমার! আমি যায় রান্না করতে! [ বলেই চলে গেলো কিচেনের দিক ]

শিরির দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা নেমে আসছে, রাহুল ও পেছন পেছন আসছে!

আলিসা : [ চেচিয়ে ] ভাবীইইইই! কাম কাম সি্ট সি্ট! [ স্নেহা হালকা একটু হেসে আলিসার পাশে গিয়ে বসলো ]

নেহাল : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] হোয়াটস্ আপ ব্রাদার!

রাহুল : [ নেহালের পাশে বসে ] ডিরেক্ট কথা বল! কথা পেচাবি না!

রোহানী : ভাই! গীতালি বললো ও নাকি উমম হুমমম দেখেছে!

আলিসা : [ হেসে ] লঞ্চ লঞ্চ দেখেছে! [ বলতেই বাকিরা ও কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো,রাহুল ও মুচকি হেসে স্নেহার দিক তাকালো, স্নেহা লজ্জা পেয়ে হালকা একটু হেসে মাথা নুয়ে আছে ]

রোহানী : ভাবী! আপনার ফ্রেন্ডসগুলো ও এখন আমাদের সাথে হলে অনেক এঞ্জয় হতো তাই না? ওরা অনেক ফানি! আই রিয়েলি লাভ দেম! [ কথাটি বলতেই স্নেহা মুখ গোমড়া করে ফেললো,রাহুল ও স্নেহার চেহেরা দেখে বুঝতে পারছে স্নেহা ঐ নটি কোম্পানির দলদের খুব মিস করছে, নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে স্নেহা রোহানীর কথায় সম্মতি জানিয়ে মুচকি হাসলো, যে হাসির পেছনে লুকিয়ে থাকা স্নেহার কষ্ট শুধু রাহুলের চোখেই পড়ছে, দীর্ঘশ্বাস ফেলে রাহুল উঠে দাঁড়ালো ]

নেহাল : হেই ব্রো হোয়ার আর ইউ গোয়িং নাও?

রাহুল : আসছি আমি! [ বলেই স্নেহার সাথে চোখাচোখি হোওয়ায় স্নেহাকে একটি চোখ টিপ মেরে হেটে বেড়িয়ে গেলো ]

নেহাল : লেডিস্ আমি ও আসছি ওকে? [ বলেই সে ও রাহুলের দিক দৌড়ে বেড়িয়ে গেলো ]

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 55

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 55

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : সাস..সামান্য একটুই, কেটে গেছে হয়তো কোথাও, খেয়াল নেই! [ বলেই হাত আচলের ওড়নায় বটে রাখলো, আর রাহুল নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ]

স্নেহা : এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো! বব..বললাম তো সামান্য একটু…

রাহুল : স্টপ ইট! স্নেহা! [ বলেই স্নেহার হাত টেনে নিয়ে দেখে, হাত ক্ষত হয়ে রক্তশুকিয়ে লাল হয়ে আছে ]

– স্নেহা! এসব কিভাবে হয়েছে? আর তুমি আমাকে কিছু বলোনি কেনো?

স্নেহা : আরে! আপনি এতো চিন্তা করছেন কেনো! এটা তেমন কিছুই হয়নি, জাষ্ট সামান্য একটুই কেটে গেছে! [ বলেই হাত টেনে নিয়ে নেয় ]

রাহুল : কিভাবে কেটেছে?

স্নেহা : [ চোখ নামিয়ে ] কোক…কোথায় কিভাবে কেটেছে অতোকিছু মনে নেই!

রাহুল : [ ধমক দিয়ে ] শাট-আপ স্নেহা! কেনো মিথ্যে বলছো!

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] সস..সত্যি রাহুল!

রাহুল : [ হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে ধরে ] তাহলে আমার চোখে চোখ রেখে বলো! [ স্নেহা চোখ নামিয়ে ফেললো ]

– পারবানা বলতে, তাই তো? [ চুপ হয়ে থাকে স্নেহা, রাহুল দীর্ঘশ্বাস ফেলে এদিক ওদিক একবার তাকিয়ে আবার মাথায় হাত দিয়ে নিজের চুল মুঠোয় ভরে রাগ কমাতে লাগলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের কাধে হাত রেখে ] রা..রাহুল!

রাহুল : [ হঠাৎ ভোর কুচকে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] এক সেকেন্ড স্নেহা! এটা কোনো তখন নেহা… [ বলেই কিছুক্ষণ চিন্তা করে ]

– ওহ শিট! ডেম ইট! এটা নেহাই করেছে রাইট? [ স্নেহা চুপ করে চেয়ে থাকে ]

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে ] ইয়াহ! আই আন্ডারস্ট্যান্ড! তারমানে ও হ্যান্ডশেক করার সময় মনে মনে যেটা ভেবেছিলাম সেটাই হয়েছে!

– [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] ইডিয়ট! তাই তো তোমাকে ওর সাথে হ্যান্ডশেক করতে বাধা দিয়েছিলাম! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ]

রাহুল : ওর মিডল ফিংগারে একটি রিং আছে! যেটা দ্বারা আমার সাথে কোনো মেয়ে দেখলে,হাত মেলানোর বাহানা করে সবার হাতেই,আঘাত করে বসে,

– আর তোমাকে তো ও পারছেনা যে…

– [ জোড়ে নিশ্বাস ফেলে খাটে পা দিয়ে বারি মেরে ] আমারই মিস্টেক ছিলো, ঐদিন পেট্রোল গুলো ঢেলে কেনো যে ওকে জ্বালিয়ে দিলাম না,

– [ চেচিয়ে ] আর তুমি! ইডিয়ট বাধা দেওয়ার পরে ও, ওর এক্টিং গুলো বিশ্বাস করে হাত মিলিয়ে নিলে!

স্নেহা : আ..আমার,মনে হয়েছিলো ও সস…সত্যি..সত্যিই…

রাহুল : ইউ ডোন্ট নোও স্নেহা! ও কতোটা নিচু নামতে পারে! শি ইজ আ ছিপ গার্ল! এসব ছিপ আইডিয়াগুলো শুধু ওর মাথায়ই আসতে পারে!

– আচ্ছা দেখি হাত দেখাও [ বলেই স্নেহার হাত টেনে নিয়ে ] কি হয়েছে হাতটার? আর তুমি যখন ও করেছিলো তখন আমায় কিছু বলোনি কেনো?

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আপ..আপনি রেগে যাবেন তাই!

রাহুল : তুমি! [ বিরক্তি হয়ে ] তুমি আসলেই একটা বোকা! ইডিয়ট! [ বলেই পকেট থেকে মোবাইল বের করে ফোন দিতে লাগলো ]

স্নেহা : কাকে ফোন দিচ্ছেন?

রাহুল : ডক্টর!

স্নেহা : ডক্টর কেনো?

রাহুল : আমরা তিনজনে মিলে হাইড এন্ড সিক খেলবো বলে!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] না মানে… সামান্য একটুই কেটেছে এটার জন্য ডক্টরকে ফোন দেওয়ার কি প্রয়োজন?

রাহুল : তুমি যদি কোনটা প্রয়োজন অপ্রয়োজন বুঝতে তাহলে আর এই ঘটনাটা ঘটাতে না!

– [ কান থেকে ফোন নামিয়ে ] এই ইডিয়ট ডক্টরটা ও ফোন রিসিভ করছে না, এসব ডক্টরকে ভাদ্র মাসে পাগলা কুকুরের সামনে ছেড়ে দৌড়াতে দেওয়া উচিৎ,

– এতো রাতে অন্য ডক্টর পাবো কিনা ও কে জানে!

– [ হঠাৎ ] আরে হ্যা! নেহাল আছে তো!

স্নেহা : নেহাল?

রাহুল : হিমেটোলোজি স্টুডেন্ট!

স্নেহা : ওহ! [ রাহুল আর কিছু বললো না নেহালকেই ফোন দিলো ]

নেহাল : হ্যালো!

রাহুল : নেহাল! একটু আয়তো আমার রুমে!

নেহাল : ওহোহো ব্রাদার! আমার এসবের এক্সপেরিয়েন্স নেই! আমি কিছুই বলতে পারবো না!

রাহুল : শাট-আপ! তাড়াতাড়ি আয়!

নেহাল : এনি প্রবলেম ব্রো?

রাহুল : ইডিয়ট! আই সে্ কাম ফাষ্ট রাইট নাও!

নেহাল : ও..ওখে! ওখে কুল ব্রো কুল! আম কামিং! [ রাহুল ফোন রেখে তাকালো স্নেহার দিক, চোখাচোখি হোওয়ায় স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে এপাশ-ওপাশ চোখ নাড়াতে লাগলো ]

রাহুল : ম্যাথমেটিকস নিয়ে পড়ছো, মাথায় বুদ্ধিতে ভরপুর থাকার কথা,কিন্তু তুমি দেখছি পুরো উল্টো,পুরো মাথাটায় বোকামির ভান্ডার!

স্নেহা : কিছু হতে না হতেই আমার সাবজেক্টকে টেনে নিয়ে আসেন কেনো?

রাহুল : অহ রিয়েলি? কারণ এটা পড়তে পড়তেই তোমার মাথা আউট হয়ে গেছে!

স্নেহা : মো..মোটেও না!

রাহুল : নেক্সট টাইম থেকে উইদাউট মাই পারমিশন, ফ্যামিলি মেমবাররা ছাড়া কারো সাথে হ্যান্ডশেক, অথবা কেউ এসে যদি বলে ঐ মানুষটা সেন্সলেস হয়ে আছে অর ও মরে যাচ্ছে,

– দুনিয়া উল্টে গেলে ও তোমার যাওয়ার প্রয়োজন নেই!

স্নেহা : হোহ! কেউ বিপদে পড়েছে বললেও যাবো না এটা কেমন কথা?

রাহুল : হোহ! তাই না? [ বলেই স্নেহার হা করে থাকা মুখটা লাগিয়ে দিয়ে ] গিয়েছিলে তো ঐদিন ভার্সেটিতে,উল্টো নিজেই সেন্সলেস হয়ে কিডন্যাপ হয়ে বসেছিলে! [ স্নেহা ঢোগ গিলে চুপ হয়ে গেলো ]

রাহুল : স্নেহা! আমি তোমাকে বাধা দেওয়ায়, তুমি আমাকে এসবের জন্য বেড হাজবেন্ড মনে করলে ও আই ডোন্ট কেয়ার!

– কজ তোমার সেফটির জন্য আমি বেড কেনো? ভেরি বেড হাজবেন্ড হতেও রাজি! [ মনে মনে হাসতে লাগলো স্নেহা, কিছুক্ষণ পরেই দরজায় নক পড়লো, রাহুল উঠে গিয়ে তাড়াতাড়ি দরজা খুললো ]

নেহাল : অলরাইট ব্রো?

রাহুল : কাম! [ নেহাল রাহুলের পেছন পেছন ভেতরে এগিয়ে এলো, খাটের দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে ]

নেহাল : [ হাত নাড়িয়ে ] হ্যালো ভাবী!

রাহুল : সি্ হার হ্যান্ড!

নেহাল : হ্যান্ড? কি হয়েছে ভাবীর হাতে?

রাহুল : চেক ইট!

নেহাল : [ তাড়াতাড়ি স্নেহার পাশে বসে হাত এগিয়ে নিয়ে ] অহ মাই গড ভাবী! কিভাবে হলো এটা? হাওওওও?

রাহুল : নেহা করেছে ওর ফিংগার রিং দিয়ে, তুই জাষ্ট চেক কর যে,উল্টোপালটা কিছু এড করে দেইনি তো?

নেহাল : ইয়া..ইয়াহ! আই উইল চেক ইট! বাট এট! ফাষ্ট গিভ মি সা্ম কটোন এন্ড হ্যান্ড-রাব! [ রাহুল ড্রয়ার থেকে পুরো ফাষ্ট এইড বক্সটায় এনে দিলো নেহালকে, নেহাল কটোনে হ্যান্ড-রাব লাগিয়ে স্নেহার হাতের ব্লাড ক্লিন করে নিলো ]

রাহুল : [ অস্থির হয়ে ] টেল মি! না ইডিয়ট! হোয়াস্ দ্যা প্রবলেম?

নেহাল : ডোন্ট ওয়ারি ব্রো! জাষ্ট পিন প্রেস্ করেছে নাথিং এলস্!

রাহুল : ভালো করে চেক করে দেখ কোনো…

নেহাল : লুক! ভাবীস্ ব্লাড ইজ সো্ স্মুথ! যদি কিছু ডেঞ্জার হতো তাহলে ব্লাড কনজিয়েল্ড থাকতো!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] দে..দেখেছেন! ডেঞ্জার কিছুই না আপনি শুধু শুধুই টেনশন করছিলেন! আর ওনাকে ও এতোরাতে ডিষ্টার্ব করলেন!

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] তাই?

নেহাল : [ হেসে স্নেহার হাত ব্যান্ডেজ করতে করতে ] নো নো ভাবী টেনশন করে চেকড করাটাও ইম্পর্ট্যান্ট! থেংক গড যে ডেঞ্জার কিছু ছিলো না, বাট হতেও তো পারতো!

– ফর এক্সাম্পল যে পিন দ্বারা হিট করা হয়েছে তাতে, এরসেনিক, বেল্লেডোনা, একোনেট, এই জাতীয় নামের কিছু পয়জন মিশিয়ে ও বডিতে পুশ করা যায়! এই পয়জন গুলো ব্লাডে মিশে গেলে ব্লাড প্লায়িং করা বন্ধ হয়ে যায় আই মিন ব্লাড কনজিয়েল্ড হয়ে যায়, প্লাস যে স্থানে পুশ করা হয় ঐ স্থানে ব্লাকপ্যাচ দেখা দেই! [ স্নেহা তাড়াতাড়ি হাতের দিক তাকিয়ে দেখতে লাগলো কোনো ব্লাকপ্যাচ আছে কিনা ]

নেহাল : [ হেসে ] ব্লোওজবস্ ভাবী! কিছু হয়নি! তবে হ্যা! আম শিয়র আপনার হাত প্রচুর পেইন করছে রাইট? আর এটা পিন পুশ করার পর থেকেই করছে, ইয়েস্ অর নো? [ স্নেহা আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল তার জবাব শোনার জন্য অনেক কৌতুহলি ভাবে তাকিয়ে আছে, হ্যা বলার সাথে সাথেই আরো কিছু স্পিচ দেওয়া শুরু করে দিবে, তাই ভেবেচিন্তে জবাব দেওয়া টাই ব্যাটার মনে করলো ]

স্নেহা : [ হেসে ] হ্যা! কক..করেছিলো কিন্তু এখন আর করছেনা!

রাহুল : লায়ার!

স্নেহা : সস..সত্যি!

নেহাল : না করলে তো ভালোই! বাট মোষ্ট অফ অল! পেইন করে, যার কারণ হলো রিং পিন গুলো সামুদ্রিক মাছের পয়জোনেস্ থিত দ্বারা তৈরী করা হয়! বাট পেইনটা ফিউ আওয়ারস্ এর জন্যই থাকে! এতে ফেয়ার থাকার কিছু নেই!

রাহুল : বাট পেইন কমবে কিভাবে?

নেহাল : ন্যাচারাল মেডিসিন! আই মিন রাইট নাও হট মিল্ক!

রাহুল : ওহ..ওখে!

নেহাল : ওখে! নাও আই শুড গো! গুড নাইট এন্ড টেক কেয়ার ভাবী!

স্নেহা : গুড নাইট! [ বেড়িয়ে গেলো নেহাল ]

রাহুল : তুমি বসো আমি আসছি!

স্নেহা : আ..আমি ঠিকাছি রাহুল..

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম! তোমার চোখ ও তাই বলছে! [ বলেই দরজা লাগিয়ে বেড়িয়ে গেলো ]

স্নেহা : একটা মিথ্যেও বলে থাকা যায় না,সবই ধরে ফেলে এই মিষ্টার তেডি স্মাইল! [ বলেই পাশফিরতে হঠাৎ চোখ পড়লো ফাষ্ট এইড বক্সের উপর, মুচকি হেসে বক্সটা গুছিয়ে নিয়ে ড্রয়ারে ভরে রাখলো, সাজানো রুমটির চারদিক চোখ বুলিয়ে দেখে আবারো হেটে খাটের ধারে এগিয়ে এসে বসলো,বিছানায় ছিটে থাকা ফুলের কিছু পাপড়ি হাতে তুলে নিয়ে ব্লাশিং হয়ে তাকিয়ে রইলো,কিছুক্ষণ আগেই রাহুলের গান গাওয়া ওড়না কেড়ে নিয়ে মাথায় দেওয়া মোমেন্ট গুলো ভাবছে আর হাসছে,

হঠাৎ, কিছুসময় পরই দরজা খোলার শব্দ এলো,পাশফিরে তাকাতেই দেখে, রাহুলই এসেছে হাতে গ্লাস ভরা দুধ নিয়ে ]

রাহুল : [ স্নেহার পাশে বসে ] নাও এটা ফিনিশ করো!

স্নেহা : [ ঢোগ গিলে ] এতো গুলো?

রাহুল : আবার বলো?

স্নেহা : নাহ! মানে, হাফ গ্লাস খেলেই আমার পেট ফুল হয়ে যায়! আর এইখানে তো…

রাহুল : পুরোটা ফিনিশ করবা! [ স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনি ]

রাহুল : নট ওয়ান মোর ওয়ার্ড! জাষ্ট ফিনিশ ইট! [ স্নেহা আর কিছু বললো না মুখ গোমড়া করে গ্লাস হাতে নিয়ে নিলো,জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে গ্লাসে মুখ দিতেই সাথেসাথেই গরমের আচ লাগায় তাড়াতাড়ি চোখ-মুখ বটে রোবোট হয়ে যায় ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] কেয়ারফুল ডেম ইট! এটা গরম তো! [ বলেই স্নেহার হাত থেকে গ্লাস এগিয়ে নিয়ে নিলো,স্নেহা চোখ বটে মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে রাখলো ]

রাহুল : [ তাড়াতাড়ি স্নেহার মুখ থেকে হাত সরিয়ে ঠোটে স্লাইড করে ] বেশি লেগেছে? [ স্নেহা ধীরেধীরে চোখ খুলে মাথা নাড়ালো ]

রাহুল : এত্তো কেয়ারলেস্ কেনো তুমি? [ স্নেহা চুপ করে রইলো ]

– ওখে ওয়েট! [ বলেই রাহুল টেবিল থেকে পানির গ্লাস এনে স্নেহাকে খাইয়ে দিলো ]

স্নেহা : [ পানি খেয়ে ] আমি ঠিকাছি রাহুল!আমার হাত সত্যিই ব্যাথা করছে না,

রাহুল : আমি ঠান্ডা করে দিচ্ছি চুপচাপ খেয়ে নাও আর কোনো কথা নেই!

স্নেহা : কিন্তু! [ বলতেই রাহুল স্নেহার মুখে আংগুল দিয়ে চুপ করিয়ে দিলো,আরেক হাতে দুধের গ্লাস তুলে নিয়ে ফু দিয়ে ঠান্ডা করতে লাগলো, এবং কিছুক্ষণ পরপরই স্নেহার মুখের সামনে এগিয়ে দিচ্ছিলো,স্নেহার ও কি আর করার বাধ্য মেয়ের মতো পুরো গ্লাসের দুধ ফিনিশ করতে হলো ]

স্নেহা : [ মনে মনে ] আমি দোষ করেছি বলে আমাকে ইচ্ছে মতো খাওয়াচ্ছে! একবার আপনার দোষ খুজে পাই তারপর দেখবেন কিভাবে খাওয়ায়!

রাহুল : কি ভাবছো?

স্নেহা : কক..কই কিছুই তো না!

রাহুল : রিয়েলি? [ with tedi smile ]

স্নেহা : হুম!

রাহুল : সরি!

স্নেহা : সরি? কে…কেনো?

রাহুল : বকেছি তাই!

স্নেহা : [ সোজা তাকিয়ে ] তো কি হয়েছে! হক আছে আপনার, বউ হইতো!

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] তাই? [ মাথা নাড়ালো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত কাছে টেনে নিয়ে ] ব্যথা করছে অনেক তাই না?

স্নেহা : [ রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] হুম অনেক!

রাহুল : কামঅন স্নেহা! কতোবার বলেছি আমি বাচ্চা না!

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের মুখের সামনে চুরি বাজিয়ে ] নিন! খুলে দিন! [ রাহুল স্নেহার হাত এগিয়ে নিয়ে দু-হাতের চুরি গুলো খুলে দিলো, সাথে সাথেই আবার স্নেহা খাটে পা তুলে পেছন হয়ে বসে পড়লো, রাহুল বুঝতে পেরে হেসে ধীরেধীরে স্নেহার গলার নেকলেস, কানের-দুল, মাথায় লাগানো টায়রা, সবই খুলে দিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] থেংক ইউউ! [ বলেই আবারো গাল টেনে দিয়ে ] ওহ! সরি,আপনি তো বাচ্চা না! [ রাহুল হেসে তাকালো স্নেহার দিক,স্নেহা ও বুঝতে পেরে হেসে খাট থেকে অর্নামেন্টস্ সব কুড়িয়ে নিয়ে ড্রেসিং এ রাখতে চলে গেলো ]

রাহুল : [ হাতে মাথা ভর দিয়ে শুয়ে উপরের দিক তাকিয়ে তাকিয়ে ] স্নেহা! তুমি আমার রিপ্লাই দাওনি কিন্তু এখনো!

স্নেহা : কিসের রিপ্লাই? আমার তো কিছু মনে নেই!

রাহুল : তোমার একটা চুড়ি রয়েগেছে এইদিকে! নিয়ে যাও!

স্নেহা : [ বুঝতে পেরে হেসে ] হ্যা ওটা আপনিই রেখে দিন! [ বলতেই রাহুল হেসে উঠে বসে দেখে, স্নেহা ড্রেসিং এর মিরর দেখে দেখে মাথার খোপা খুলছে, রাহুল মুচকি হেসে এগিয়ে গেলো স্নেহার দিক, পেছন থেকে ধীরেধীরে স্নেহার ওড়না সরিয়ে কোমোড়ে হাত রেখে দাড়ালো, স্নেহা ও মাথা থেকে হাত নামিয়ে স্থীর হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে, হাত আর চলছিলো না খালি কোমোড়ে রাহুলের স্পর্শ পেয়ে ]

রাহুল : [ স্নেহার ঘাড়ে নাক দিয়ে স্লাইড করে ] আম সো্ হ্যাপি স্নেহা! ইউ নোও হোয়াই?

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে কাধে হাত রেখে জড়িয়ে ] ইয়েস্ আই নোও! বিকজ নাও আম অনলি ইয়র!

রাহুল : এক্সকিউজ মি! নাও মানে? আগে ছিলানা?

স্নেহা : আরে নাহ! আমি তো আগেও আপনার ছিলাম…

রাহুল : তাই? [ with tedi smile ]

[ স্নেহা লজ্জা পেয়ে হেসে রাহুলের বুকে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরে, রাহুল ও হেসে কিছুক্ষণ জড়িয়ে রেখে আস্তে করে কোলে তুলে নেয় স্নেহাকে, খাটের দিক এগিয়ে এসে বিছানার মাঝে শুয়ে দিলো,আর স্নেহা অপলক চোখে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক, রাহুল আলতো করে স্নেহার নাকে একটি চুমু খেয়ে উঠে যাচ্ছিলো তখনিই হঠাৎ স্নেহা রাহুলের হাত ধরে কাছে টান মারে, আর রাহুল ও আনব্যালেন্স থাকায় স্নেহার গায়ের উপর এসে পড়ে, দুজনেরই কপালের সাথে কপাল লেগে বাড়ি খেয়ে আঘাত হানি করে ]

স্নেহা : [ চেচিয়ে ] আআহহ!

রাহুল : শিট! সরি সরি সরি! [ বলেই স্নেহার কপাল ঘষে দিতে লাগলো, আর স্নেহা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে হেসে ] হোয়াই আর ইউ লাফিং?

স্নেহা : [ হাসতে হাসতে ] আপনি ও তো হাসছেন!

রাহুল : [ হেসে ] হ্যা! কিন্তু তুমি কেনো হাসছো?

স্নেহা : বলছি! [ বলেই বসার জন্য মাথা উঠাচ্ছিলো তখনিই আবার রাহুলের মুখের সাথে বাড়ি খেয়ে নাক চেপে হেসে শুয়ে পড়লো ]

রাহুল : কেয়ারফুল ডেম ইট! [ বলেই স্নেহার নাকে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ] হোয়াট আর ইউ ডোয়িং হ্যা? কি হয়ে গেছে তোমার? ব্যথা পাচ্ছো আবার নিজে নিজে হাসছো!

স্নেহা : [ হেসে হেসে ] আই ডোন্ট নোও কি হচ্ছে!

রাহুল : [ হেসে স্নেহার পাশে মাথা রেখে শুয়ে ] পাগল হয়ে গেছো!

স্নেহা : আই থিংক! [ বলেই রাহুলের বুকে মাথা রেখে হাসতে হাসতে ] আই থিংক ইউ আর রাইট!

রাহুল : অহ রিয়েলি! তার মানে তুমি মেনে নিয়েছো তুমি পাগল!

– [ হেসে ] তাহলে আমি তখন যেটা বলেছিলাম ম্যাথমেটিকস্ পড়তে পড়তে তোমার মাথা আউট হয়েগেছে ওটাও রাইট বলেছি! [ স্নেহা তার জড়িয়ে রাখা হাত দিয়ে,দিলো একটা চিমটি রাহুলের পেটে ]

রাহুল : আআওও! [ বলেই আবার হেসে হেসে টাইট করে জড়িয়ে রাখলো স্নেহাকে, দুজনেই চুপচাপ হয়ে শুয়ে আছে, কিছু সময় পেড়িয়ে যাওয়ার পর স্নেহা মাথা তুলে তাকালো রাহুলের চেহেরার দিক, চোখ বন্ধ রাহুলের ]

স্নেহা : [ মনে মনে ] গতকাল রাতের না ঘুমানো ঘুম গুলো এক্ষুণিই দিচ্ছে! আর আমি সকালে ঘুমুতে বলায় কি বলে! ডোন্ট ওয়ারি স্নেহা! আমার না ঘুমিয়ে থাকার এক্সপেরিয়েন্স আছে! [ বলেই কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো রাহুলের চেহেরার দিক, মুচকি হেসে সামনের চুল গুলোর উপর হাত বুলিয়ে দিলো,ঠোটের দিক চোখ পড়াতে ব্লাশিং হয়ে হেসে হাত দিয়ে স্লাইড করে দিতে লাগলো দাড়ির উপর, হঠাৎ মনে পড়লো যদি তার হাতের স্পর্শে রাহুলের ঘুম ভেংগে যায়, তাই তাড়াহুড়ো করে সরিয়ে নিলো হাত, আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়ে, আবারো আস্তে করে রাহুলের বুকে মাথা রেখে চোখ বটে শুয়ে পড়লো ]

রাহুল : গুড নাইট স্নেহা! [ বলতেই স্নেহা অবাক হয়ে চোখ খুললো, মাথা উঠিয়ে রাহুলের চেহেরার দিক তাকাতেই দেখে,চোখ বন্ধ অবস্থায় ও হাসছে রাহুল, বুঝতে পারলো স্নেহা তার মানে রাহুল জেগে আছে ]

স্নেহা : [ মুচকি হেসে রাহুলের গালটা টেনে দিয়ে ] গুড নাইট! [ বলেই রাহুলকে জড়িয়ে বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো, রাহুল ও হেসে স্নেহাকে আগলে নিয়ে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখলো, এভাবেই দুজনে ঘুমিয়ে পড়লো ]

পরদিন সকাল ৯টা বেজে ১০ মিনিট,

আলসেমি কেটে কম্বল থেকে হাত বের করে ধীরেধীরে চোখ খুললো রাহুল, বুকে স্নেহাকে না পেয়ে অবাক হলো, পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখলো স্নেহা নেই! রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে ওয়াসরুমের সুইচের দিকও তাকিয়ে দেখলো সুইচ অফ!

রাহুল : [ মনে মনে ] তারমানে স্নেহা নিচে চলে গেছে, কিন্তু সবাইকে গুডমর্নিং বলার আগে আমাকে বলে যাওয়া উচিৎ ছিলো তো! বিয়ের পরের ফাষ্ট মর্নিং বলে কথা! [ হঠাৎ গায়ের কম্বল এর দিক চোখ পড়ায় কিছুক্ষণ চিন্তা করে মুচকি হেসে ] বাহ! বউ এর কেয়ার পাওয়া তাহলে শুরু!

– কিন্তু এই মেয়েটা নিজের ক্ষেত্রে পুরোই উল্টো! কেয়ারলেস্ গার্ল কোথাকার! হাতের পেইন কমেছে কিনা ও কে জানে! [ বলেই কম্বল সরিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে আলসেমি কেটে, আলমীরার দিক এগিয়ে গিয়ে কাপড় নিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো,

ফ্রেশ হয়ে ওয়াসরুম থেকে বেড়িয়ে, টাওয়েল দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে ড্রেসিং এর দিক এগুচ্ছিলো, হঠাৎ রাহুলের এমন মনে হলো যেনো পেছন দিয়ে কেউ তাড়াহুড়ো করে আলমিরার কর্ণারে লুকে পড়েছে, পাশ ফিরে তাকালো রাহুল কিন্তু কাউকেই দেখা যাচ্ছে না, তবে কারো গোলাপী রঙের শাড়ীর আচলটা মাটিতে ঝুলে আছে! অবাক হয়ে মুচকি হাসলো রাহুল,কারণ সে বুঝতে পেরেছে এটা স্নেহারই কান্ড!

রাহুল : [ মনে মনে ] পাগলী একটা! ও কি তখনও এইদিকটা লুকে ছিলো নাকি?

– [ অবাক হয়ে ] কিন্তু এই স্নেহা আমার কাছ থেকে লুকছে কেনো?

[ টাওয়েলটা বিছানায় ছুড়ে ফেলে ধীরেধীরে এগিয়ে গেলো আলমীরার কর্ণারের দিক, আর স্নেহা রাহুলকে দেখতেই তাড়াহুড়ো করে উল্টোপাশ ফিরে গেলো, রাহুল ও অবাক হলো স্নেহার কান্ডে ]

রাহুল : হেইই দেয়ার! আই কেন সি্ ইউ! [ স্নেহা তাও ফিরে তাকালো না,বরং শাড়ীটা আরো টেনেটুনে নিয়ে গায়ে পেচিয়ে রাখলো,

রাহুল ও মুচকি হেসে স্নেহার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত তাকিয়ে, আধপেচানো শাড়ী পড়া দেখে বুঝতে পারলো, তারমানে স্নেহা নিচে যায়নি তখন ও এইদিকটা লুকিয়ে ছিলো তাকে দেখে,আর এই শাড়ী পড়ার মহানচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এতোক্ষণ ধরে ]

রাহুল : কামঅন! স্নেহা নাও আম ইয়র হায়বেন্ড! সো্ আমাকে লজ্জা পেয়ে লুকানোর কি আছে?

– কাম! [ স্নেহা তাও এলো না,লজ্জায় গুটি মেরে দাঁড়িয়েই আছে ঐ জায়গায় ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে টেনে বের করে এনে ] হোয়াট স্নেহা?এতো লজ্জা? [ স্নেহা নিচের দিক তাকিয়ে চুপ হয়ে আছে ]

– আচ্ছা! শাড়ী পড়ছিলে?

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম!

রাহুল : সো্ পড়া শেষ!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে মাথা নাড়িয়ে ] নাহ!

– এক্সুলি! গতকাল রাতে দাদী বলে রেখেছিলো যাতে সকালে এই শাড়ীটাই পড়ি!

– বাট আ..আমি শাড়ী পড়তে জানিনা!

রাহুল : [ হেসে ] হুমম! তা তো দেখেই বোঝা যাচ্ছে!

স্নেহা : হাসছেন কেনো? আমি শাড়ী পড়িনা তাই জানিনা, এর আগে ভার্সেটি প্রোগ্রামে একবার পড়েছিলাম, তাও মার্জান পড়িয়ে দিয়েছিলো, [ রাহুলের ও মনে পড়লো সেই মোমেন্টটির কথা, যখন সে এন্ট্রি লাইট ঠিক করে অন করেছিলো, তখনি নীল রঙের একটি শাড়ী পড়ে স্নেহা গেইট দিয়ে ঢুকছিলো ]

রাহুল : আর কি না লেগেছিলো তোমাকে ঐদিন! ইচ্ছে করেছিলো…[ বলতেই স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ]

রাহুল : আব.. ও..ওকে ডোন্ট ওয়ারি! টেনশন করছো কেনো, আজ আমি পড়িয়ে দেবো!

স্নেহা : আপনি?

রাহুল : হ্যা! আমি! তাতে অবাক হোওয়ার কি আছে? ছেলেরাও কি শাড়ী পড়ানো জানতে পারে না?

স্নেহা : হ্যা! পা..পারে! বাট আপনি?

– মানে কিভাবে?

রাহুল : শাট-আপ স্নেহা! এখন আবার কিভাবে জানি ওটার ডিটেইল ও বলতে হবে নাকি!

– এসো পড়িয়েদি [ বলেই স্নেহার হাত ধরে একদম কাছে টেনে নিলো,স্নেহা ও শকড হয়ে মুর্তির মতো দাঁড়িয়ে গেছে, আর রাহুল মনে মনে হেসে স্নেহার ঘাড় থেকে ভেজা ভেজা পানি চুপসানো চুল গুলো সব একপাশ করে এনে রাখে, হাত দিয়ে ঘাড়ে স্লাইড করে আচল টেনে নিয়ে নেয়, ধীরেধীরে স্নেহাকে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে চারদিকের পেচানো শাড়ীটা খুলে নিলো, আর এইদিকে স্নেহা লজ্জায় কোন দিকে না কোন দিকে ঢেকে রাখবে বুঝতে পারছিলো না, হাতদিয়ে কিচ্ছুক্ষণ পেট ঢাকছে তো কিছুক্ষণ ঘাড়ে হাত রেখে বুক ঢাকছে, আর রাহুল শাড়ী পড়ানোর বাহানা নিয়ে স্নেহার, পেটে, ঘাড়ে, হাতে স্লাইড করে ধরে ধরে স্নেহার নার্ভাসনেস্ এর মজা নিচ্ছে সাথে স্নেহার কান্ড দেখে মনে মনে হাসি ও পাচ্ছিলো প্রচুর ]

রাহুল : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! তুমি এতো সফট! কেনো? একদম মালাই কুলফির মতো! [ বলেই স্নেহার পেটে স্লাইড করে শাড়ী খুচে দিতে লাগলো আর এইদিকে স্নেহার রাহুলের হাতের স্পর্শে দম বন্ধ হয়ে আসছিলো, চোখ বন্ধ করে, জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলতে লাগলো স্নেহা ]

রাহুল : [ দাড়ি দিয়ে স্নেহার ঘাড়ে স্লাইড করে ] ইউ ওকে স্নেহা!

স্নেহা : [ ঢোগ গিলে ] তা..তাড়াতাড়ি! পড়ান.. লে..লেইট হচ্ছে তো!

রাহুল : [ হেসে ] ই..ইয়াহ শিয়র! [ বলেই হাতের পাঁচ আংগুলে পাঁচ বটা দিয়ে একটি কুচি বানিয়ে খুচে দিলো স্নেহার পেটিকোটে, তারপর ধীরেধীরে আচলটা টেনে নিয়ে স্নেহার কোমোড় থেকে ঘুড়িয়ে ঘাড়ে ঝুলিয়ে দিলো ]

রাহুল : ডান! [ বলেই কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে এক্সাইটেড হয়ে ] বাহ! স্নেহা আমি শাড়ী পড়িয়ে দিয়েছি! আর তোমাকে তো এমন লাগছে যেনো রেড কার্পেটে ওয়াক দিতে যাচ্ছো! সো্ সেক্সি!

স্নেহা : কিহ?

রাহুল : কিক..কিছুনা! তুমি এসো এইদিকে মিররে এসে দেখো! [ স্নেহা মাথা নাড়িয়ে হেসে এক পা সামনে এগুতেই, ঝরঝর করে শাড়ীর সামনের কুচি সব খুলে পড়লো, শকড হয়ে স্নেহা রাহুলের দিক একবার তাকিয়ে তাড়াতাড়ি কুচি ধরার জন্য নিচে ঝুকতেই ঘাড় থেকে শাড়ীর আচলটা ও খুলে পড়ে গেলো, রাহুল ও অবাক হয়ে চোখ বড় করে করে তাকিয়ে আছে, স্নেহা আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে তাড়াতাড়ি শাড়ী কুড়িয়ে নিয়ে গায়ে পেচিয়ে উঠে দাড়ালো ]

রাহুল : [ লজ্জা পেয়ে ঘাড় চুলকাতে চুলকাতে ] স্নেহা! তুমি এখনো ভালো করে হাটতেও শেখোনি! [ বিরবির করে ] দু-বার হয়েছে ভাগ্যিস দুনোবারই আমার সামনে হয়েছে!

স্নেহা : আর আপনি যে বললেন আপনি শাড়ী পড়াতে পারেন?

– এক পা বাড়াতেই শাড়ী খুলে গেলো!

রাহুল : [ জিহবায় কামড় খেয়ে ] এ..এক্সুলি! আই কান্ট!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আচ্ছা? তারমানে আপনি এতোক্ষণ…

– এতোক্ষণ এডভান্টেজ নিচ্ছিলেন?

[ রাহুল পকেটে হাত রেখে তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার কাছে এসে দাঁড়ায়,স্নেহা ঢোগ গিলে পা পিছিয়ে নেই ]

রাহুল : [ স্নেহার নাকে নাক ঘষে ] নট এডভান্টেজ স্নেহা! নাও আম ইয়র হাজবেন্ড ছুতেই তো পারি!

চলবে….

Love At 1st Sight Season 3 Part – 54

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 54

writer-Jubaida Sobti

মার্জান : [ নেহাকে পাশ মুড়িয়ে দিয়ে ] আরে দেখ না..

নেহা : [ দীর্ঘশ্বাস ফেলে মার্জানের দিক তাকিয়ে ] হ্যা! দেখেছি! সুন্দর লাগছে..

মার্জান : [ হেসে ] তাইইই! ভেরি গুড! [ নেহা আর কিছু না বলে সামনের দিক এগিয়ে যাচ্ছিলো তখনিই ]

শায়লা : [ নেহাকে আটকে ধরে ] ড্রেস তো অনেক সুন্দরই পড়ে এসেছো! আচ্ছা কোথায় থেকে কিনেছো? এই ওকেশন এর জন্যই কেনা হয়েছে নাকি? আচ্ছা প্রাইজ কতো হবে এটার? গোল্ডেন কালার! উমমম নাইস্ কালার!

নেহা : লুক! এতো রিয়েক্ট করার কি আছে? তোমাদের কি মনে হচ্ছে আমি ওদের দেখে জ্যালেস হচ্ছি বা ওদের বিয়ে ভাংগতে এসেছি এমনটাই?

শায়লা : দেখে তো তাই মনে হচ্ছে! তুমি যে কিছু করতে আসোনি মিস্! তার ওতো কোনো গ্যারান্টি নেই! হিহি,

নেহা : জ্যালেস্ হলে আমি এইখানে আসতামই না, আর যদি বিয়ে ভাংগার ইন্টেনশন থাকতো তাহলে এটা সিনেমা নাটক নয় যে আমি বিয়ের দিনই এসে বিয়ে ভেংগে দিয়ে চলে যাবো [ মুখ গোমড়া করে ] ইনফ্যাক্ট আমি তো এসেছি রাহুল আর স্নেহা দুজনকেই সরি বলতে,

মার্জান : শায়লা! আমি যা শুনেছি তুই ও কি তাই শুনছিস?

শায়লা : তুই ও শুনেছিস তার মানে সত্যিই ও এমনটা বলেছে!

নেহা : এক্সুলি! আমি জানি আমি যা করেছি সবটাই রোং ছিলো! জোড় করে চাইলেও কারো ভালোবাসা পাওয়া সম্ভব নয়, ভালো তো মন থেকে বাসতে হয়,যেটা রাহুল আর স্নেহার মতো কাপলদের দেখেই বুঝা যায় [ মুচকি হেসে ] আর আমি কিনা পাগলের মতোই রাহুলকে জোড় করে যাচ্ছিলাম [ মার্জান আর শায়লা অবাক হয়ে ঘুরঘুর চোখে তাকিয়ে আছে নেহার দিক ]

নেহা : আসলে আমি এসবে অনেক শেইম ফিল করছি! [ হঠাৎ স্টেজের দিক থেকে উল্লাসিত চিৎকার আর তালির আওয়াজ ভেসে আসলো ]

শায়লা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আরে বিয়ে তো হয়েই গেছে মার্জান!

মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে নেহার কাধে হাত রেখে ] অওও! তার মানে বলে ফেলেছে কবুলল! [ নেহার দিক তাকিয়ে ] ওহ সরি সরি! [ বলেই নেহার কাধ থেকে হাত সরিয়ে নেয় ]

শায়লা : এক হয়ে গেলো, রাহুল এবং স্নেহা,আই মিন ” রাস্নেহা ” এখন হ্যাপি ম্যারেড কাপল!

– আরে মালা পড়াচ্ছে, আমি যায়! [ বলেই দৌড়ে চলে গেলো স্টেজের দিক ]

মার্জান : [ হেসে ] আমিও দেখে আসি,বাইইই! মিস্ নেহা! ও হ্যা! এইবার আপনার যা খুশি তাই করতে পারেন,এতে আপনার আর কোনো লাভ হবে বলে আমার মনে হচ্ছে না, কজ! বলে ফেলেছে “কবুল” [ বলেই হেসে পাশ ফিরতে যাবে তখনিই কানের ধারে ]

আসিফ : [ মাথা এগিয়ে দিয়ে ] আমারও, কবুল! [ কথাটি শুনতেই চোখ বড় করে ফেললো মার্জান, ধীরেধীরে পাশফিরে আসিফের দিক তাকিয়ে ঢোগ গিলতে লাগলো ]

আসিফ : [ হেসে মার্জানকে চোখ টিপ মেরে আবার নেহার দিক তাকিয়ে ] আরে নেহা? তুই কবে এলি?

নেহা : এইতো কিছুক্ষণ হলো এলাম! [ মার্জান আর কিছু না বলে লেহেংগা হাতে ধরে হুড়হুড় করে এগিয়ে চলে গেলো, আসিফ বুঝতে পেরে হাসতে লাগলো ]

মার্জান : [ হাটতে হাটতে ] কি আজিব! আমি কি ওকে বললাম নাকি কবুল! আমি তো রাহুল স্নেহা, উফফফ! দিন দিন এই ইডিয়ট টা মাথায় চড়ে বেড়াচ্ছে! [ হঠাৎ মনে পড়ে গেলো ওয়াসরুমে আসিফের জোড় করে কিস করার সিনটা ]

– ছিঃ অসভ্য একটা [ বলেই হাত দিয়ে ঠোট মুছতে যাবে হঠাৎ তখনি মনে পড়লো সে তো লিপিস্টিক লাগিয়েছে তাই আবার থেমে গিয়ে, দু-পাশে একবার চোখ বুলিয়ে স্টেজের দিকই হাটা ধরলো, স্টেজের কাছাকাছি আসতেই অবাক হলো মার্জান, রাহুল আর স্নেহার মালা পড়ানো এখনো হলো না, সাথে জারিফা, শায়লা এবং রাহুলের ফ্রেন্ডস আর কাজিনদের চেচামেচিতে মেতে উঠছে আশেপাশের আরো অনেকের হাসি ]

জারিফা : আরে জিজু! আপনি আপনার জায়গা থেকে নড়তে পারবেন না,লাষ্ট ওয়ার্নিং!

রাহুল : আরে তোমরা বার বার স্নেহাকে তোমাদের দিক টেনে নিয়ে নিচ্ছো, তাহলে না নড়ে কিভাবে পড়াবো?

শায়লা : [ চোখ টিপ মেরে ] এটাই তো আপনার এক্সাম জিজু! হিহি!

হঠাৎ,

রিদোয়ান : [ নিচের দিক ইশারা করে চেচিয়ে ] ককরোচচচ! [ বলতেই, মেয়েরা সব চমকে উঠে নিচের দিক তাকালো, মুহূর্তেই আর দেরি না করে রাহুল হেসে স্নেহার গলায় মালা পড়িয়ে দিলো, স্নেহা ও চমকে গিয়ে হেসে উঠলো ]

জারিফা : [ চেচিয়ে ] ওহহহ! নো নো! হবে না এটা চিটিং! আপনারা চিটিং করেছেন!

নেহাল : আরে ভাবী! আপনার শালীদের বলুননা! যে গেইম ইজ গেইম!

শায়লা : [ বিড়বিড় করে ] এই অষ্ট্রেলিয়ান শালীর বাচ্চা শালীকে তো আমি!

রিদোয়ান : আরে গাধা ভাবীর শালী না! রাহুলের শালী!

নেহাল : আচ্ছা? হলোই তো এক! ভাবী মানে রাহুল, রাহুল মানে ভাবী! [ হাসতে লাগলো স্নেহা আর রাহুল ]

জারিফা : ও হ্যালো মিষ্টার অষ্ট্রেলিয়া! গেইম ইজ গেইম হলে, রুলস ইজ রুলস! ওকে? নো চিটিং!

মার্জান : [ এগিয়ে এসে ] ওকে ওকে গাইস্! গেইম ইজ গেইম, রুলস ইজ রুলস, চিটিং ইজ চিটিং! সো্ আপনারা যখন চিটিং করেছেন তাহলে আপনাদের ও সেক্রিফাইজ করতে হবে, আর কোনো তালবাহানা না করে জিজু! ডিরেক্ট দাড়িয়ে থাকবেন আর স্নেহা মালা পড়িয়ে দিবে! ব্যাস!

জারিফা : হ্যা! ক্যারেক্ট!

রিদোয়ান : ওখেই! [ পেছন ফিরে ] গাইস্ আর ইউ রেডি? [ বলতেই ইয়েসসস্ বলে চিৎকার করা জবাব এলো ]

জারিফা : [ হেসে ] আরে! সবাই রেডি হোওয়ার কি আছে মালা সবাইকে পড়াবে নাকি স্নেহা! ওতো শুধু রাহুলকে পড়াবে!

নেহাল : নো ইটস্ এক্সুলি পিপারেশন এলার্ট! হিহি! ওখে ওখে! ভাবী, রাহুল ইজ রেডি!

শায়লা : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে ] পড়িয়ে দে স্নেহা! [ স্নেহা মাথা নেড়ে হাত এগিয়ে পড়াতেই যাচ্ছিলো, হঠাৎ তখনিই রাহুলের ফ্রেন্ডসরা মিলে রাহুলকে আলকে উপরে তুলে ধরে ]

জারিফা : [ চেচিয়ে ] আরে আরেহহ! [ আশেপাশের মেহেমান সবাই আবারো হেসে উঠলো রাহুলের ফ্রেন্ডসদের কান্ড দেখে,স্নেহার ও মারাত্মক হাসি পাচ্ছিলো এসব কমিডিয়ান কান্ড দেখে, মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকাতেই রাহুল ও হেসে চোখ টিপ মারলো ]

মার্জান : এটা তো ডাবল চিটিং!

নেহাল : [ হেসে ] গেইম ইজ গেইম! গার্লস্!

শায়লা : কিন্তু আমাদের সাইডে তো কোনো ছেলে নেই! যে স্নেহাকে উঠাবে!

রাশু : [ লাফাতে লাফাতে ] আমি আছি, আমি আছি! চলো আপু তোমাকে আমি উঠিয়েদি [ বলেই স্নেহার কোমোড় জড়িয়ে ধরে শক্তি ব্যয় করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, হাসতে লাগলো স্নেহা সাথে বাকি সবাই ও হাসতে হাসতে কাতচিৎ হোওয়ার অবস্থা ]

রাশু : ওরে বাবা! পারছিনা তো! আরো শক্তিশালী হতে হবে!

– রাহুল ভাইয়া! তোমার বডি স্ক্যানারটা দিও আমিও বডি বানাবো তোমার মতো,তারপর আপুকে উঠাবো!

জারিফা : দুইকড়ির ডিব্বা! তুই বডি বানিয়ে উঠাতে আসতে আসতে,ওরা এইখানে দাঁড়িয়ে কংকাল হয়ে থাকবে,

রাহুল : [ রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] আরে দোস্ত হয়েছে, এইবার নামিয়ে দে,

রিদোয়ান : বিয়ে তো হয়েই গেছে তোর, এখন আবার কিসের তাড়া?

মার্জান : তাড়া থাকতে হয় নাকি? ওনি ওনার বউ এর কষ্ট বুঝতে পারছে, কখন থেকে মালা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বেচারি, তাই বলছে আরকি নামিয়ে দিতে, নামিয়ে দিন!

নেহাল : আরে ভাবী আপনার মালা ধরতে কষ্ট হচ্ছে? ভারী নাকি? মে আই?

শায়লা : [ বিড়বিড় করে ] এই অষ্ট্রেলিয়ান গাধাটাকে তো কোরবানীর সময় হাটে নিয়ে গরু বলে বিক্রি করে দেওয়া উচিৎ! [ জারিফা, মার্জান, স্নেহা তিনজনই হেসে উঠলো মুখ চেপে ]

নেহাল : ওহোহো ভাবী, লজ্জা পেয়েছে, লজ্জা পেয়েছে, রাইট? [ জারিফা আর মার্জান আরো জোড়ে হেসে উঠলো ]

হঠাৎ পেছন থেকে,

রাহুলের বাবা : [ স্নেহার কাছে এসে ] আরে ডোন্ট বি আপসে্ট মাই চাইল্ড! আমরা আছি না? তোমার সাইড থেকে আমরা উঠাবো!

স্নেহার বাবা : [ এগিয়ে এসে ] আমাদের বয়স হয়েছে বলে কি শক্তিও কমে গেছে নাকি? চল আমরা উঠাচ্ছি! [ স্নেহা তো চমকের উপর চমক পেলো একদিকে খুশি লাগছে তারউপর আবার লজ্জা ও লাগছে ]

রাশু : [ চেচিয়ে ] ইয়েএএএ! [ বলতেই স্নেহার বাবা এবং রাহুলের বাবা আলগে তুলে ধরলো স্নেহাকে, রাহুল হেসে মাথা ঝুকে দিলো, স্নেহা ও মুচকি হেসে মালা পড়িয়ে দিলো রাহুলকে, বাকিরা ও খুশিতে চেচিয়ে হাত তালি দিতে লাগলো, দু-জনকেই আস্তে করে নামিয়ে রাখলো, রাহুল হেসে স্নেহার পাশে দাঁড়িয়ে হাত ধরে রাখলো ]

মার্জান : আরে আংকেল আপনারা কোথায় যাচ্ছেন? ছবি তুলতে হবে তো!

নেহাল : এক সেকেন্ড আমি আন্টিদের ও নিয়ে আসছি! [ বলেই একলাফে নেমে স্নেহার মা এবং রাহুলের মা কে ও টেনে তুললো স্টেজে, মাঝামাঝি এক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাহুল স্নেহা এবং স্নেহার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে রাহুলে বাবা তারপর স্নেহার বাবা, রাহুলের পাশে এসে দাড়ালো রাহুলের মা তারপর স্নেহার মা, ক্যামেরা মেন ছবি তুলছে আর এইদিকে স্নেহা কিছু বলার জন্য রাহুলের হাতে চিমটাতে আছে, রাহুল মাথা ঝুকে দিলে ]

স্নেহা : [ ফিসফিসিয়ে ] আপনি এবার এইদিকে দাড়ান ওদিকে দাঁড়িয়ে তো অনেক ছবিই তুলেছেন, [ বলতেই রাহুল আড়চোখে স্নেহার পাশে তাকিয়ে, তার বাবাকে দেখে বুঝতে পারলো স্নেহা মাথায় আসা বাহানা, যেটা পূরণ করা রাহুলের পক্ষে ইম্পসিবল ]

স্নেহা : কি হলো আসেন না?

রাহুল : শাট-আপ স্নেহা! স্টেজে উঠার পর তুমিই তো বললে যে তুমি আমার বাম পাশে দাড়াবা এটাই নিয়ম! সো্ মেইনটেইন করো [ বলেই আবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়, স্নেহা আবারো চিমটাতে লাগলো রাহুলের হাত, আর না পেরে রাহুল আবারো মাথা ঝুকিয়ে কান পেতে দিলো ]

স্নেহা : আরে এমন কেনো করছেন আপনি! আমার আপনার মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা হয়নি! [ রাহুল দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার ও সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়,এইবার স্নেহা আর রাহুলের হাতে চিমটালো না, এক্কেবারে রাহুলের হাত ধরে টেনে তার জায়গায় দাড় করিয়ে দিয়ে সে গিয়ে রাহুলের জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়ে, রাহুল অবাক হয়ে স্নেহার দিক তাকাতেই স্নেহা আর তাকালো না, মুচকি হেসে রাহুলের হাত শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রাখলো, এইদিকে রাহুলের তার বাবার এতোটা কাছাকাছি দাঁড়িয়ে অকোয়ার্ড ফিল,নার্ভাসনেস সবই একত্রে কাজ করছে, ছবি তোলা শেষে একে একে সবাই নেমে পড়লো ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আ..আপনি এইবার আপনার জায়গায় আসতে পারবেন!

রাহুল : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] তোমার আসল ইন্টেনশন আমাকে বাবার পাশে দাড় করানোটাই ছিলো তাই তো?

স্নেহা : আরে! মো..মোটেও না! আচ্ছা বাদ দেন! তখন সবাই দেখলে বলবে বরটা ঝগড়াটে, আর আমার কাছে এখন কোনো চুইংগাম নেই যে আপনার মুখে ঢুকিয়ে দেবো [ হাসি চলে এলো রাহুলের স্নেহার কথা শুনে ]

স্নেহা : [ ফিসফিসিয়ে ] গুডবয়! [ হেসে ] এইদিকে আসেন এইদিকে [ বলেই রাহুলকে তার আগের জায়গায় দাড় করিয়ে স্নেহা স্নেহার জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়লো ]

রাহুল : [ হেসে ] তুমি আসলেই..

স্নেহা : আমি আসলেই যেটাই হই, যেমনি হই! আপনারই তো [ বলেই চোখ টিপ মারলো, রাহুল মুচকি হাসলো, এবং সাথেসাথেই সেই দিন রাতে গাড়ীতে রাহুল স্নেহাকে বলা কথাটি মনে পড়লো…
______________________________________

স্নেহা : [ রেগে মিউজিক বন্ধ করে দিয়ে ] আপনি আসলেই একটা [ বলেই চুপ হয়ে যায় ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] বলো আমি আসলে একটা? ইডিয়ট?.. রাব্বিশ? ইউজলেস্? [ কিটকিটিয়ে হেসে সোজা তাকিয়ে ] স্নেহা ইউ নোও আমি যেটাই হই যেমনি হই, তোমারি তো!
_______________________________________

ভাবতেই ব্লাশিং হয়ে হেসে উঠলো রাহুল, হঠাৎ পাশ ফিরতেই অবাক হলো ]

নেহা : [ হেসে হাত নাড়িয়ে ] হ্যালো গাইস্! কনগ্রেচুলেশনস্ [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] তুই তো ইনভাইট করলি না,তাই আমি নিজ দায়িত্বেই চলে এলাম!

রাহুল : [ নরমালি হেসে ] ইনভাইট করিনি, কারণ আমি জানতাম! উইদাউট ইনভাইটেশনে ও তুই চলে আসবি!

নেহা : ইয়াহহ! আসার তো ছিলোই! কজ তোদের সরি বলাটাও যে বাকি ছিলো!

রাহুল : নো নিড ইয়র সরি!

নেহা : নো রাহুল! আই এম এক্সট্রেমলি সরি ফর মাই অল মিস্টেকস্!

রাহুল : এক্সুলি উই ডোন্ট ডিজার্ব ইয়র সরি!

নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] আই নোও তুই আমার উপর অনেক রেগে আছিস! বাট,তাও সরি বলছি যদি পারিস ক্ষমা করে দিস! [ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

নেহা : [ স্নেহার কাছে এসে ] আই থিংক তোমার সাথে এতোটা অন্যায় করার পর,আমি তোমার সামনে চেহেরা দেখানোটাও আসলে ডিজার্ব করিনা,

স্নেহা : নো নো ইটস্ ওকে! এখন তো সবই ঠিকঠাক, ভুল সবারই হ…[ বলতেই দেখে রাহুল স্নেহার দিক রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে আছে, স্নেহা ও ঢোগ গিলে চুপ হয়ে যায় ]

নেহা : [ হেসে ] ওখে,সো্! অল দ্যা বেষ্ট! বোথ অফ ইউ! হ্যাপি ম্যারেড লাইফ! [ বলেই স্নেহার সাথে হ্যান্ডশেক করার জন্য হাত বাড়ালো, কিন্তু স্নেহা হাত এগিয়ে দেওয়ার আগেই ]

রাহুল : [ নেহার হাতে হ্যান্ডশেক করে ] থেংক ইউ! বাইই!

নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] বাইই!

স্নেহা : [ মনে মনে ] আজিব! রাহুল এমন কেনো করছে? ও তো ওর ভুল বুঝতে পেরে সরিই বলতে এসেছে! [ নেহা চলে যাচ্ছিলো তখনিই ]

স্নেহা : [ চেচিয়ে ] বাইই নেহা! [ নেহা পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে স্নেহা হ্যান্ডশেক করার জন্য হাত বাড়িয়ে আছে, রাহুল জোড়ে নিশ্বাস ফেলে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেলে, ]

নেহা : [ মুচকি হেসে হাতের মিডল ফিংগার রিং ঠিক করে, স্নেহার কাছে এগিয়ে এসে হ্যান্ডশেক করে ] থেংক ইউউ! [ বলতেই হঠাৎ স্নেহা খেয়াল করলো তার হাতে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে,ব্যথা অনুভব করায় চিৎকার করতে চেয়ে ও আর করলো না, চোখ বটে নিস্তব্ধ হয়ে পড়লো স্নেহা, হাতছুটিয়ে চলে গেলো নেহা, রাহুল ও আর রেগে তাকালো না স্নেহার দিক, চুপ করে অন্যপাশ ফিরে আছে! নিজেকে কন্ট্রোল করে চোখ খুলে স্বাভাবিক হয়ে সোজা তাকিয়ে রইলো স্নেহা! ]

___________ এইদিকে,

শায়লা : এভাবে বুফে খেতে থাকলে তো আমার ওয়াইট ফিফটি ফাইভ থেকে হান্ড্রেট ক্রস করবে,

নেহাল : [ ছবি তুলতে তুলতে ] ইয়া..ইয়াহ

শায়লা : [ খাবার বারতে বারতে ] আচ্ছা আপনার ছবি তুলা ছাড়া কি, আর কোনো কাজ নেই?

নেহাল : [ ছবি তুলতে তুলতে ] ইয়া..ইয়াহ! আছে আছে!

শায়লা : হ্যা তা কি শুনি?

নেহাল : তার আগে তুমি আমার একটা কুয়েশ্চন এর আন্স দাও! তুমি কি সিংগেল নাকি.. আব..আ..আই মিন কেউ আছে?

শায়লা : [ নেহালের দিক তাকিয়ে ] যদি বলি কেউ আছে, তো? আর যদি বলি কেউ নেই, তো?

নেহাল : ওখে ওখে! [ বলেই শায়লার প্লেটে আরো কিছু তুলে দিয়ে ] কুল কুল!

শায়লা : হোয়াটেভার! [ বলেই আবার খাবার চয়েস করে করে বারতে লাগলো ]

__________ অন্যদিকে,

মার্জান : [ হাটতে হাটতে ] ক্ষিধে তো এবার আমারো পেয়ে গেছে, তখন শায়লার সাথেই খেতে চলে যাওয়া উচিৎ ছিলো! আর এই জারিফার তো খবরই নেই! [ বলতেই হঠাৎ ধাক্ষা খেলো কারো সাথে,পাশফিরতেই দেখে নেহা পা চেপে ধরে পাশে একটি চেয়ারে বসে পড়লো ]

মার্জান : ও হ্যালো! আর ইউ ওকে?

নেহা : [ পা ঘষতে ঘষতে ] হ্যা! জাষ্ট, পা একটু মোচর খেয়েছে!

মার্জান : ওহ!

নেহা : [ মুচকি হেসে ] ওকে! বাই! [ বলেই উঠে দাড়াতে যাচ্ছিলো তখনি আবার ] আহহহ! [ বলেই চেয়ারে বসে পড়লো ]

মার্জান : কি হলো?

নেহা : পায়ে ভর দিয়ে হাটতে পারছি না, কে্ন ইউ হেল্প মি প্লিজ! [ মার্জান অবাক হয়ে তাকালে ]

নেহা : জাষ্ট পার্কিং পর্যন্ত পৌছে দিলেই হবে!

মার্জান : [ মনে মনে ] ঢং করছে নাকি সত্যি সত্যিই হয়েছে কে জানে! [ চিন্তা করতে করতে ] এমনিতে আজ খারাপ কিছু করতে তো দেখলাম না এই পেত্নীকে, হয়তো শুধুরে গেছে কি জানি! এনিওয়ে তাতে আমার কি..

নেহা : কি চিন্তা করছো?

মার্জান : ও..ওখে! [ বলেই হাত বাড়ালো ]

নেহা : [ মার্জানের হাতে হাত রেখে উঠে দাঁড়িয়ে, ধীরেধীরে হেটে পার্কিং পর্যন্তই গেলো ]

মার্জান : গাড়ী কোথায়?

নেহা : লাষ্ট স্টেপে! প্লেস খালি ছিলো না তাই ঐদিকটাই রাখতে হয়েছে,

মার্জান : [ জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে ] ওকে! [ বলেই আবার হেটে নেহাকে তার গাড়ী পর্যন্ত পৌছে দিলো ]

নেহা : আসোলে থেংক ইউ বললেও কম হবে,আমি তোমাদের সাথে এতোটাও মিসবিহেভ করেছি, তাও তোমরা…

মার্জান : ইটস্ ওকে!

নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] গুড নাইট!

মার্জান : গুড নাইট [ বলেই হাটা ধরলো, নেহা ও গাড়ীতে উঠে স্টার্ট দিলো ]

মার্জান : [ মনে মনে হেসে ] ফাইনালি,তাহলে এই পেত্নীর মাথায় বুঝ এলো, আফসোস! যদি আরো কিছুদিন আগেই চলে আসতো বুঝগুলো, তাহলে আর রাহুল, স্নেহার এতো কষ্ট পেতে হতো না, [ এসব ভেবে ভেবেই কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর খেয়াল করলো, পেছন থেকে গাড়ীর লাইটের ফ্লাশ আসছে, তাই আবার সাইড হয়েই ওড়নার আচল নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাটতে লাগলো, হঠাৎ মনে বাড়ি খেলো কেমন যেনো গাড়ীটা তার খুব নিকটেই আসছে,পেছন ফিরতেই যাবে ঠিক ঐ মুহুর্তে আর ফেরা হলো না,পাশ থেকে আসিফ হাত ধরে টেনে বুকে মুড়িয়ে নিলো, চোখ পড়লো নেহার গাড়ীটির উপর, কর্কট এক শব্দ নিয়ে আরেকটি গাড়ীর সামনের বনাট ভেংগে চুরমার করে দিলো, তা দেখে মার্জান সাথে সাথেই চোখ বটে কুকরে গেছে আসিফের বুকে, ভয়ে বুকটা ধুপধুপ করছে, জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলছে দুজনেই ]

নেহা : [ গাড়ী বেক দিয়ে এসে,জানালার গ্লাস নামিয়ে ] এইবার বেচে গেছো! নেক্সট টাইম!

আসিফ : [ রাগান্বিত ভাবে ] ইয়াহ! অল দ্যা বেষ্ট! [ বলতেই নেহা নাক ফুলিয়ে জানালার গ্লাস তুলে গাড়ী টান দিয়ে চলে যায়, আশেপাশে থেকে কয়েকজন লোক ও এগিয়ে এলো ]

আসিফ : [ মার্জানের মাথায় হাত রেখে ] ইউ ওকে? [ মার্জান ধীরেধীরে আসিফের বুক থেকে মাথা তুলে তাকালো,চোখ পানিতে টলমল করছিলো, যা এই মুহুর্তেই গড়িয়ে পড়লো, চেহেরায় ভয়ের ছাপ ]

আসিফ : [ আংগুল দিয়ে চোখের পানি মুছে দিয়ে ] অলরাইট! কান্না করার দরকার নেই!

মার্জান : আপনি এইখানে কখন…

আসিফ : তোমাকে ওর হেল্প করতে দেখে ফলো করতে করতে এলাম, আর এই নেহাকে দেখে আমার মনে যা ভেবেছিলাম তাই হলো,

মার্জান : [ আসিফ থেকে সরে দাঁড়িয়ে ] থে..থেংক ইউ!

আসিফ : [ মুচকি হেসে পকেটে হাত রেখে ] ব্যাস? জাষ্ট থেংক ইউ? [ মার্জান কৌতুহলি ভাবে তাকালো ]

আসিফ : আজকের লিপিষ্টিকটা দারুণ মানিয়েছে! [ মার্জান আর কিছু বললো না আশেপাশে একবার তাকিয়ে লেহেংগা ধরে দৌড় দিলো সোজা ভেতরে, হাসতে লাগলো আসিফ, ভেতরে ঢুকে ব্লাশিং হয়ে হয়ে হাসতে লাগলো মার্জান ও হঠাৎ ]

জারিফা : [ এগিয়ে এসে ] হেইইই মার্জান কোথায় ছিলি এতোক্ষণ?

মার্জান : আ..আমি?

জারিফা : ওহো এমন লজ্জা পেয়ে লাল হয়ে আছিস কেনো কি বেপ্পার?

মার্জান : কিছুনা! আমার অনেক ক্ষিধে পেয়েছে চল খাবো [ বলেই জারিফার হাত ধরে টেনে নিয়ে চলে যায় ]
___________এইদিকে স্টেজে,

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম

স্নেহা : আপনি রেগে আছেন আমার উপর?

রাহুল : নাহ! [ জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে ] বাট এটাই তো সমস্যা! আমার এখন তোমার উপর রাগ দেখানো উচিৎ,কিন্তু আমি পারিনা তোমার উপর রেগে থাকতে [ স্নেহা ও আর কিছু বললো না মুখ গোমড়া করে সোজা তাকিয়ে চুপ করে থাকলো ]

রাহুল : কি হলো? আবার মন খারাপ করে আছো কেনো? আমি কি বললাম রেগে আছি?

স্নেহা : নাহ!

রাহুল : তাহলে?

স্নেহা : কিছুনা!

রাহুল : লিসেন্ট! বিয়ে পাঁচ মিনিটে করে শেষ করা যায়, এসব এতোক্ষণ ধরে স্টেজে রোবোটের মতো হয়ে বসে থেকে, ফুল ফ্যামিলি নিয়ে বিয়ের নীতি-টীতি পালন করে বিয়ে করার আমার মোটেও ইচ্ছে ছিলো না, এসব আমি সবই তোমার খুশির জন্য করছি ওকে?

– কিন্তু তুমিই দেখছি মন খারাপ করে বসে আছো!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] করবো না? আপনিও তো এতোক্ষণ ধরে মন খারাপ করেছিলেন!

রাহুল : হ্যাঁ! আমি করেছিলাম তাই বলে তোমার ও মন খারাপ করতে হবে নাকি?

স্নেহা : আপনার মন খারাপ থাকলে আমার মন ভালো থাকবে কেমনি? [ মুচকি হাসলো রাহুল ]

স্নেহা : হাসবেন না!

রাহুল : [ হেসে ] তাইই?

স্নেহা : [ সোজা তাকিয়ে ] হুম!

রাহুল : আই লাভ ইউ! [ স্নেহা ও হেসে দিলো ব্লাশিং হয়ে ]

[ এভাবেই সময় পেরিয়ে, রাত ঘনিয়ে,আনন্দে ভরে,প্রোগ্রাম শেষ পর্যায়ে পৌছে যায়, কাদলো স্নেহা তার ফ্যামিলিকে জড়িয়ে, তার ফ্রেন্ডসদের জড়িয়ে,বিদায়ের পালা শেষ করে,নতুন জীবনের পাড়ায় রাহুল এবং তার পরিবারের সাথেই বেড়িয়ে যায় স্নেহা ]

রিদোয়ান : [ জারিফাকে টেনে এক কোণে নিয়ে গিয়ে ] কি হলো এভাবে আপসেট হয়ে আছো কেনো?

জারিফা : [ রিদোয়ানকে জড়িয়ে ধরে কেদে কেদে ] স্নেহাকে মিস্ করছি, এতোদিন ধরে তো যেখান থেকেই হোক বাসায় আমাদের সাথেই ফিরেছে, রাতে আমাদের আড্ডায় আর থাকবে না,গায়ের কম্বল সরে গেলে টেনে দেবে না, ঝগড়া না করার জন্য সকালে সবার আগে উঠে ব্রেকফাষ্ট আমি বানাবো বলবে না, [ বলেই ফুফিয়ে কেদে উঠলো ]

রিদোয়ান : আরে এতে কান্না করার কি আছে! তোমার যখনি স্নেহার সাথে মিট করতে মন চাইবে,জাষ্ট আমাকে একটা কল দিবা!

– আর এমনিতেও আমার ভাবীকে দিয়ে অনেক ব্রেকফাস্ট বানিয়ে খেয়েছো এবার নিজেরাও বানিয়ে খাও! ওকে?

জারিফা : [ হেসে উঠে ] অনেক খুশিও লাগছে আজ! স্নেহার ভালোবাসা পরিপূর্ণতা লাভ করেছে,

রিদোয়ান : হ্যা! কতো ঝড়-তুফানই না গেলো দু-জনের উপর!

হঠাৎ,

শায়লা : [ এগিয়ে এসে ] জারিফা?

জারিফা : [ রিদোয়ান থেকে সরে দাঁড়িয়ে ] হ্যাঁ?

শায়লা : চল! যাবি না?

জারিফা : হ্যা! [ বলেই রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] ওকে আসি!

রিদোয়ান : [ জারিফার কপালে একটি চুমু খেয়ে ] বাই! [ চলে গেলো জারিফা শায়লাকে নিয়ে ]

______ রাহুলের গাড়ী এসে ঢুকলো গেইটের ভেতর,পেছনে লাইন ধরা সব গাড়ী ও এক এক করে ঢুকছে গেইট দিয়ে,

বাড়ীতে ঢুকে দীর্ঘক্ষণ ড্রইং রুমে বসে আছে স্নেহা! রাহুলের কাজিনদের সাথে কথা বলছে, আর রাহুল তার দাদীর সাথেই কথা বলছে,স্নেহার ও বোঝার বাকি রইলো না রাহুল তার দাদীর সাথে কি নিয়ে ঝগড়া করছে, কারণ সে তো এই বাড়ীতে থাকতে রাজি নয়, পাশের গেষ্ট হাউজটাই নিজের বাড়ী করে রেখেছে,তবে এখন বিয়ে হয়েছে বউকে কি গেষ্ট হাউজে রাখা যায়, দাদীর জবাব ও ঠিক এমনটাই হবে, ভাবতেই মুচকি হাসলো স্নেহা! তবে রাহুলের সাথে গেষ্ট হাউজ কেনো সে গাছতলায় থাকতেও রাজী আছে, কিন্তু রাহুলকে তার বাবার কাছে আনতে এই বাড়ীতে একসাথে থাকাটাও অনেক জরুরি!

রোহানী : ভাবী চলেন আপনাকে আপনার রুমে দিয়ে আসি! অনেক টায়ার্ড ও লাগছে হয়তো! আসেন রেষ্ট করবেন! [ বলেই স্নেহাকে রাহুলের কাজিনরা রাহুলের রুমে বসিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ হাসাহাসি শয়তানি করে চলে গেলো,স্নেহা ও পা গুটে খাটের উপর বসে আছে চুপচাপ,চোখ বুলিয়ে দেখছে চারদিক, অর্কিড ফুলের বাগিচার মতোই ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে,মিটিমিটি করে জ্বলছে ক্যান্ডেল লাইট গুলো ও ]

হঠাৎ কিছুক্ষণ পর, দরজা খোলার আওয়াজে পাশফিরে তাকালো স্নেহা, পাগড়ীটা হাতে নিয়ে দরজা বন্ধ করে হেটে খাটের সামনে এগিয়ে এলো রাহুল! ঘুরঘুর করে তাকিয়ে আছে স্নেহা! রাহুল একটা তেডি স্মাইল দিলো স্নেহার চাহনিতে,স্নেহা ও লজ্জা পেয়ে হেসে মাথা নুয়ে ফেললো,

রাহুল : [ হেসে ] ইশশ! কি লজ্জা! [ বলেই হুট করে স্নেহার পাশে বসে স্নেহার কোল থেকে হাত সরিয়ে নিজের মাথা রেখে শুয়ে পড়লো, অবাক হয়ে তাকালো স্নেহা ]

রাহুল : আই লাভ ইউ! [ চুপ করে তাকিয়ে আছে স্নেহা ]

– তোমার রিপ্লাই দু-বার বাকি রয়ে গেছে কিন্তু! [ মুচকি হাসলো স্নেহা, রাহুলের চোখে তাকিয়ে রিপ্লাই করতে ও হঠাৎ লজ্জা লাগছে ]

রাহুল : [ স্নেহার গালে স্লাইড করে ] স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : তোমাকে দেখে এখন একটা গান মনে পড়ে গেলো!

স্নেহা : কি গান?

রাহুল : ♪♪ চান্দ ছুপা, বাদাল মে ♪♪
♪♪ শারমাকে মেরি জানা ♪♪

♪♪ আজা্ রে আজা্ চান্দা কি জা্বতাক তু না আয়েগা ♪♪
♪♪ সা্জনা কি চেহেরে কো দেখনে ইয়ে মাংগাল সা্জায়েগা ♪♪

♪♪ না নাহ চান্দা তু নেহি আনা তু জো্ আয়া তো ♪♪
♪♪ সা্নাম শারমাকে কাহি চালা জা্য়েগা ♪♪

[ ব্লাশিং হয়ে হাসতে লাগলো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার মাথার ঘোমটা নিজের মুখ পর্যন্ত টেনে নিয়ে ]

♪♪ আচালমে তু ছুপ জানে দে ♪♪
♪♪ জুলফোমে তু খো জানে দে ♪♪

[ কোল থেকে মাথা তুলে স্নেহার গলায় কিস্ দিতেই স্নেহা লজ্জা পেয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়, তখনিই রাহুল হেসে স্নেহার ঘোমটা খুলে নিয়ে নিজের মাথায় পড়ে, স্নেহার গায়ে ধাক্ষা দিয়ে নেচে নেচে]

♪♪ হেইই রেহেনেভি দো ♪♪
♪♪ জা~নেভি দো ♪♪
♪♪ আব ছোড়ো না ♪♪
♪♪ মু মোড়ো না♪♪
♪♪ ইয়ে সামা হা ইয়ে সামা কুচ অর হে ♪♪

[ কিটকিটিয়ে হাসতে লাগলো স্নেহা রাহুলের কান্ডে, রাহুল ও হাসতে হাসতে খাটে মাথা রেখে, স্নেহার হাত কাছে টেনে নিলো চুমু দেওয়ার জন্য, হঠাৎ ঐ মুহুর্তে স্নেহার হাতের দিক চোখ পড়তেই রাহুল অবাক হলো,স্নেহা তাড়াতাড়ি হাত টেনে নিয়ে নিলো ]

রাহুল : [ উঠে বসে ] স্নেহা? কিভাবে হয়েছে এটা?

স্নেহা : সাস..সামান্য একটুই, কেটে গেছে হয়তো কোথাও, খেয়াল নেই! [ বলেই হাত আচলের ওড়নায় বটে রাখলো, আর রাহুল নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ]

চলবে..

Love At 1st Sight Season 3 Part – 53

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 53

writer-Jubaida Sobti

শায়লা ক্যামেরার সামনে এসেই দাত দেখানো একটা হাসি দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লো, নেহাল হঠাৎ ভয় পেয়ে চমকে উঠে ক্যামেরা হাত থেকে ফেলে দিতেই যাচ্ছিলো আবার তাড়াহুড়ো করে ধরে ফেলে মুচকি হেসে তাকিয়ে রইলো,

জারিফা : [ দৌড়ে এসে হাপিয়ে উঠে ] এই রাশুর বাচ্চাটা আজ একদিনেই আমায় শুকিয়ে ছাড়বে [ বলেই নেহালের দিক চোখ পড়তে ] হ্যালো মিষ্টার অষ্ট্রেলিয়া, আপনার ভাবী তো ঢুকেই যাচ্ছে, আপনার এন্ট্রি ভিডিও করা শেষ? [ কথাটি শুনতেই নেহালের হঠাৎ মনে পড়লো আরে সে তো রাহুলকে কথা দিয়েছে, ভাবীর এন্ট্রি ভিডিও সেন্ড করে রাখবে হোয়াটস্ অ্যাপ এ]

নেহাল : নো নোহ..!

জারিফা : সো্ লেটস্ গো! [ বলেই হাটা ধরলো ]

চারদিক সাজানো হচ্ছে, স্নেহা এবং তার ফ্রেন্ডসরা কনফিউজড হয়ে পড়েছে কোনদিক যাবে,

নেহাল : [ দৌড়ে এসে ] ওয়েট ওয়েট লেডিস! কনফিউজড হোওয়ার কিছু নেই! কাম উইথ মি, কাম উইথ মি, [ বলেই ক্যামেরা ধরে ভিডিও করতে করতে শিরি দিয়ে উঠতে লাগলো, স্নেহা এবং তার ফ্রেন্ডসরা ও হেসে হেসে উঠে পড়লো নেহালের সাথে, নেহাল গিয়ে বড় একটি রুমের দরজা খুলে এগিয়ে আসতে ইশারা করলো, রুমে ঢুকতেই যাবে হঠাৎ তখনি থমকে দাঁড়িয়ে যায় স্নেহা, সাথে তার ফ্রেন্ডসরা ও, রুম থেকে এক ঝাক মেয়ের দল ]

– ইয়েএএএ ব্রাইড ইজ কামিং [ বলেই চেচিয়ে ছুটে এলো তাদের দিক, হরেক রকমের চুলের কালার দেখেই স্নেহা বুঝে গেলো নিশ্চয় এরাই হবে রাহুলের বিদেশী কাজিন গুলো, এদের মাঝে মধ্যবয়সী দু-জন মহিলা ও রয়েছে হয়তো রাহুলের খালা-ফুফুরা কেউ হবে ]

রাহুলের মা : [ এগিয়ে এসে ] রিলেক্স গার্লস রিলেক্স!

– স্নেহা! এসো আমার সাথে [ স্নেহার ফ্রেন্ডসদের উদ্দেশ্যে করে ] আরে তোমরা আবার দাঁড়িয়ে আছো কেনো এসো এসো ভেতরে এসো [ বলেই সবার মাঝ থেকে স্নেহাকে কাধে ধরে ভেতরে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে ] দেখো স্নেহা তোমাকে দেখার অপেক্ষায় এরা কখন থেকে এক্সাইটেড হয়ে বসে আছে, [ স্নেহা মাথা ঘুরিয়ে সবার দিক একবার তাকাতেই, একত্রে সবাই হ্যালোওও বলে চেচিয়ে উঠলো, স্নেহা ও মুচকি হেসে মাথা নাড়ালো ]

রাহুলের মা : নেহালের সাথে তো তোমার নিচে পরিচয় হয়েছে নিশ্চয়!

নেহাল : [ চেচিয়ে ক্যামেরা ধরে রেখে ] ইয়া..ইয়াহ! মামী আমার সাথেই এট ফাষ্ট ইন্ট্রোডাক হয়েছে, ভাবীর সাথেও এবং ভাবীর শালীদের সাথে ও!

রাহুলের মা : [ হেসে ] ভাবীর শালী না পাগল, রাহুলের শালী!

নেহাল : [ জিহবায় কামড় খেয়ে ] উহ! সরি,রাহুলের শালী! [ বাকিরা হেসে উঠলো ]

রাহুলের মা : এসো স্নেহা! তোমায় পরিচয় করিয়েদি বাকিদের সাথে, ইনি হচ্ছেন রাহুলের বড় ফুফি,নেহালের মা, রাহুল নাফিসা ফুফি বলেই ডাকে সো্ তুমি ও তাই বলে ডাকতে পারবে!

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] জ্বি! [ বলেই সালাম করলো স্নেহা,মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো রাহুলের ফুফি ]

রাহুলের মা : আর ইনি হচ্ছেন লিনিসা,রাহুলের ছোট ফুফি, [ স্নেহা পা ধরে সালাম করার আগেই রাহুলের ছোট ফুফি জড়িয়ে ধরলো স্নেহাকে, স্নেহা ও হেসে জড়িয়ে ধরলো ]

লিনিসা ফুফি : সো্ সুইট ডিয়ার! আল্লাহ ব্লেস্ ইউ!

স্নেহা : [ ধীরো ভাবেই বলে উঠলো ] থেংক ইউ!

রাহুলের মা : আর এগুলো হচ্ছে সব রাহুলের কাজিন, ওর নাম সাইফা, জাফসিন, রোহানী, লুমিসা, ইয়ানা, আলিসা, সুজানা, নেন্সি [ এক এক করেই রাহুলের মা রাহুলের কাজিনদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো স্নেহাকে, কেউ হ্যালো কিউটি, কেউ হাই ভাবী, কেউ হ্যালো ডিয়ার, বলে বলেই হাত নাড়িয়ে ইন্ট্রোডাক হতে লাগলো, স্নেহার ও ভালোই লাগছিলো সবার সাথে পরিচয় হতে, কারণ তাদের মাঝে কোনো এটিটিউডই দেখতে পাচ্ছে না, তাদের বিহেইভিয়ারে স্নেহার মনে হচ্ছিলো যেনো কতো আগে থেকেই তাদের সাথে পরিচয় ]

রাহুলের মা : আর গার্লস্ এরা হচ্ছে স্নেহার ফ্রেন্ডস! জারিফা,মার্জান,শায়লা! [ স্নেহা ও মুচকি হেসে তার ফ্রেন্ডসদের দিক ফিরে তাকালো, সাথে সাথেই শকড হয়ে চোখ উঠলো কপালে, জারিফা আর শায়লা, রাহুলের ছোট ফুফির সাথে হেসে হেসে কি কি যেনো গল্প করে ফেলছে, যেনো তিনি তাদের বাল্যকালের সাথী, দৃশ্যটি দেখেই হেসে উঠলো স্নেহা, তার ফ্রেন্ডস বলে কথা, এরা আবার চুপ থাকবে? তা হতেই পারেনা, যেখানেই যাবে হৈ হুল্লোড় করতেই থাকবে, পাশ ফিরতেই চোখ পড়লো নেহালের দিক, সবার মুখের সামনে গিয়ে গিয়ে ক্যামেরা ধরে ভিডিও তুলছে ]

রাহুলের মা : [ নেহালের মাথায় বাড়ি দিয়ে ] হয়েছে! ভিডিও অনেক করেছিস বাকি গুলো ইভিনিং এ করেনিস এবার চল আমাদের বেরুতে হবে,

নেহাল : ইয়া..ইয়াহ! শিয়র শিয়র! কাম [ ক্যামেরা বটে ] বাই গাইস্! সি্ ইউ সুন ভাবী! [ বলেই বেড়িয়ে যায় ]

রাহুলের মা : [ বাকি সবাইকে উদ্দেশ্য করে ] আর গার্লস তোমরা কিছুক্ষণ রেষ্ট নিয়েই তৈরী হওয়া স্টার্ট করে দাও! ইভিনিং হতেও আর বেশীক্ষণ নেই কিন্তু! [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] স্নেহা! কিছু প্রয়োজন হলে ওদের বলবা,একদম লজ্জা পাবা না, দরকার পড়লে আমায় ফোন করে বলবা,

– আর আমি সারভেন্ট দিয়ে এইখানে সব কিছুই ঠিকঠাক করে রেখেছি, সবার নাম ও লিখা আছে প্যাকেটে! সো্ তৈরী হয়ে নিও কেমন?

জারিফা : [ এগিয়ে এসে ] ডোন্ট ওয়ারি আন্টি! ব্রাইডের চিন্তা করতে হবে না,আপনি বিনা টেনশনে যান! এইদিকের সব আমরা হ্যান্ডেল করে নিবো! আপনি তো জাষ্ট গ্রুমকে তৈরী করে নিয়ে আসুন!

রাহুলের মা : [ হেসে ] পাগলী! [ বলেই জারিফার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে, রাহুলের ফুফিদের নিয়ে বেড়িয়ে যায়,

তারপরই শুরু হলো সবার একত্রে বসে আড্ডা দেওয়া, পার্সোনাল ইন্ট্রোডাক হোওয়া, স্নেহাকে যেনো রাহুলের কাজিনরা সাজিয়ে রাখা পুতুলই পেয়েছে,কতোক্ষণ এই এসে জড়িয়ে রাখছে তো কতোক্ষণ ও এসে জড়িয়ে রাখছে, তবে ভালোই লাগছিলো এসব স্নেহার ]

___________ বিকেল ৫ বেজে ৩০মিনিট..

সূর্য ডুবতে চলছে,

রেসোর্টের চারদিকের সাজিয়ে রাখা লাইটিং গুলো মিটমিট করে জ্বলছে, সাদা পর্দার আড়ালের ঝারবাতি গুলো ও জ্বলে উঠা শুরু করছে, গেষ্টদের জন্য চেয়ার টেবিল, ফুলদানি,খাবারদাবার এর সব আয়োজন ও কমপ্লিট!

জানালার পাশে রাখা টেবিলের উপর বেজে চলছে স্নেহার ফোনটা, তবে তা এখন থেকে নয়,সে কবে থেকেই! স্ক্রিনে মিষ্টার তেডি স্মাইল নামটাই ভেসে উঠছে বারবার, মনটা স্নেহার ছটফট করছে ফোন রিসিভ করার জন্য,কিন্তু কি করার তার এই ফাজিল ফ্রেন্ড গুলোর কান্ডে ঐ দিকে রাহুলের ছটফট করতে হচ্ছে, আর এইদিকে স্নেহার!

জারিফা : [ মোবাইল হাতে নিয়ে কিটকিটিয়ে হেসে ] কেটে গেছে!

মার্জান : আরে জারিফা! আর কতোক্ষণ ওয়েট করাবি বেচারাকে! দিয়ে দে নাহয় একটু কথা বলেনিক!

জারিফা : আরে দেখছিস না! ব্রাইডকে সাজাচ্ছে! ওর সাজের ডিষ্টার্ব হবে তো [ বলতেই আবারো বেজে উঠলো ফোন ]

জারিফা : আর এমনিতেই আজ সারারাত ধরেই তো অনেক কথা হবে! [ চোখ টিপ মেরে ] এখন না হয় একটু ছটফট করুক!

রোহানী : [ রাহুলের কাজিন ] আমার তো মনে হচ্ছে আমাদের ব্রাইডের ও মনটা ছটফট করছে অনেক [ স্নেহার গলায় নেকলেস পড়িয়ে দিতে দিতে ] তাই না ভাবী!

জারিফা : উহহ! তাই নাকি স্নেহা? আচ্ছা ওকে ওয়েট একমিনিট! [ বলেই ফোনটা রিসিভ করে ] হ্যালো জিজু!

রাহুল : থেংক গড! ফোনটা রিসিভ হয়েছে! স্নেহা কোথায় বলোতো?

জারিফা : ডুবে গেছে!

রাহুল : হোয়াট?

জারিফা : না মানে কাপড় আর অর্নামেন্টস এর ওজনে ও কাপড়ের মাঝেই ডুবে গেছে! হিহি,তাই হয়তো হেটে এসে ফোনটাও রিসিভ করতে পারছিলো না…

– আ..আচ্ছা আপনি বলুন না কিক..কিছু বলবেন ওকে?

রাহুল : ফোনটা দাও ওর কানে! [ জারিফা ফোন দিতেই যাচ্ছিলো স্নেহার কানে তখনিই ]

শায়লা : [ ফিসফিসিয়ে ] লিসেন্ট! লাউড করে দে!

জাফসিন : ওয়াও! দ্যাটস আ গ্রেট আইডিয়া! [ বলতেই জারিফা মাথা নাড়িয়ে ফোন স্পিকার লাউডে রেখে স্নেহার মুখের সামনে এনে ধরলো ]

স্নেহা : হ্যালো!

রাহুল : [ চেচিয়ে ] হোয়াটস্ রোং উইথ ইউ স্নেহা! কখন থেকে করছি আমি ফোন?

জারিফা : [ ফিসফিসিয়ে ] অওও! স্নেহা আমার জিজু বেচারাটাকে এতোক্ষণ ওয়েট করাচ্ছিলি কেনো বলতো! [ বাকিরা হেসে উঠলো মুখে চেপে ]

রাহুল : আরে কি হলো আবার চুপ হয়ে আছো কেনো?

স্নেহা : শু..শুনছি আমি বলেন কিক..কি বলবেন?

রাহুল : আমি তোমার ড্রেস দেখিনি!

স্নেহা : হ্যা! তো?

রাহুল : হ্যা! তো মানে? আমি তোমার ড্রেস দেখিনি! আমি কিভাবে বুঝবো তোমার ড্রেসে কি কি কালার আছে?

– আ..আই মিন আম কনফিউজড! কি কালারের শেরোয়ানী পড়বো?এইখানে অনেক দেখাচ্ছে বাট,আমি ডিসাইড করতে পারছিনা!

– তাই তুমিই বলো না কি কালার পড়বো?

স্নেহা : আপনি আসিফ,রিদোয়ান ওদের কাউকেই বলুন.. ওরা আপনাকে..

রাহুল : বউ তুমি হচ্ছো ওরা না! [ বলতেই বাকিরা মুখ লুকিয়ে লুকিয়ে হেসে উঠলো, আর এইদিকে স্নেহার লজ্জায় জান বেড়িয়ে যাচ্ছে, আর না পেরে,চেয়ার থেকে উঠে, জারিফার হাত থেকে মোবাইলটা কেড়ে নিয়ে জানালার পাশে চলে যায় ]

স্নেহা : আগেই দেখা উচিৎ ছিলো তো তাই না?

রাহুল : আরে এভাবে বলছো কেনো? আমি রেসোর্টে যায়নি তাই আর দেখা হয়নি! কোথায় আদর করে বলবা সুইটহার্ট তুমি এই কালার শেরোয়ানীটা না, ঐ কালার শেরোয়ানীটা পড়বা, তা না বলে উল্টা চেচাচ্ছো..

স্নেহা : এক্সকিউজ মি! আমি কবে চেচালাম?

রাহুল : আচ্ছা যেটাই করেছো বাদ দাও, এবার বলো আমি কি কালার পড়বো?

স্নেহা : যেটা আপনার মন চাই সেটাই পড়ুন!

রাহুল : এখন আমি পাশে থাকলে না দেখতা তোমায় কি করতাম!

স্নেহা : [ হেসে ] আরে এই লেহেংগায় তো অনেক কালার কম্বিনেশন করা আমি কোন কালারের কথা বলবো, আপনি তো আমাকেই কনফিউজড করে দিচ্ছেন!

রাহুল : এক এক করে সব কালার বলে যাও!

স্নেহা : আচ্ছা?

রাহুল : লিসেন্ট স্নেহা! কথা আর পেচাবা না কিন্তু, ক্যারেক্টালি অ্যান্সার দাও!

স্নেহা : [ হেসে ] লোওয়ার পার্ট হোয়াইট কালার, আচলের ওড়না ব্লু কালার, আর ঘোমটার ওড়না রেড কালার,

রাহুল : হেইই! টপসে্র কালার বলতে ভুলে গেছো কিন্তু!

স্নেহা : [ জোড়ে একটি নিশ্বাস ছেড়ে ] ব্লু কালার!

রাহুল : বাহহ! স্নেহা আমি ইমেজিন করছি তোমায় কেমন লাগবে উফফ!

স্নেহা : আচ্ছা শুনেন!

রাহুল : ইয়েস্!

স্নেহা : আমি বলি আপনাকে কি কালার পড়বেন?

রাহুল : তোমরা মেয়েরা না আসলেই কথা পেচানো ছাড়া ডিরেক্টলি কথা বলতে পারো না,আমি তো ফাষ্ট থেকেই বললাম যে তুমিই বলো কি কালার পড়বো?

স্নেহা : তার মানে আপনি বোঝাতে চাচ্ছেন যে আমি পেচি? বুঝেছি আসলে ছেলেরা এমনিই হয়, নতুন নতুন প্রেম করার সময় ভেজা বেড়ালের মতো কথা আর যখন পেয়ে যায় তখন…

রাহুল : আরে আরে! আমি তেমনটা বোঝায়নি! রাগ করছো কেনো! ওকে আম সরি! প্লিজ এইবার সুইট করে বলে দাও..

স্নেহা : এইবার সুইট করে বলবো! মানে আগে সুইট ছিলাম না?

রাহুল : আরে না নাহ! তা হবে কেনো? তুমি তো আগেও সুইট,স্পাইসি,বিটার সবই ছিলে ইনফ্যাক্ট এখনো আছো!

স্নেহা : হোহ! আমি বিটার ও?

রাহুল : ওহ নো স্নেহা! রহোম করো একটু! মুখ পিছলে বেড়িয়ে গেছে হয়তো!

স্নেহা : [ হাসি চেপে ] রাখছি আমি বাই! এখন তো আপনার আমাকে এমনিতেও তিক্ত লাগবে!

রাহুল : লিসেন্ট স্নেহা! সরি তো বাবা..ভুল হয়েছে আর হবে না,

স্নেহা : বাই!

রাহুল : আই লাভ ইউ!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] হোয়াইট কালার পড়বেন!

রাহুল : ওকে! থেংক ইউ!

স্নেহা : আর শুনেন! পাগড়ীটা ব্লু কালারের পড়বেন ওকে?

রাহুল : ওকে বেবী!

স্নেহা : আচ্ছা শুনেন!

রাহুল : হ্যা বলো?

স্নেহা : [ হেসে ] আমি অপেক্ষা করছি!

রাহুল : ওহো ডার্লিং আর বেশি অপেক্ষা করতে হবে না, আই এম কামিং!

স্নেহা : বাইই!

রাহুল : আচ্ছা রিপ্লাইটা করোনি তো! [ স্নেহা হেসে কেটে দিলো ফোন ]

_______ সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো! সবারই তৈরী হোওয়া শেষ,স্নেহার বাবা-মা এবং আরো অনেক গেষ্ট ও এসে পড়েছে নিচে!

স্নেহা বসে আছে রুমের সোফার মধ্যে আর ঘুরঘুর করে তাকাচ্ছে তার ফ্রেন্ডস এবং রাহুলের কাজিনদের কান্ড, কারো চুলের বাহার, কারো রঙ-বেরঙের কাপড়ের বাহার, কারো পার্ফিউমের স্মেল তো কারো চুড়ির ঝংকার, সব মিলিয়েই স্নেহার মনে হচ্ছিলো যেনো তারা সবাই মিলেই কোনো সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করতে যাচ্ছে,মনে মনেই হেসে উঠলো স্নেহা, না আসলে কোনো সুন্দরী প্রতিযোগিতায় নয়, সবই তো তার বিয়ের উপলক্ষে করা হচ্ছে,

রোহানী : লিসেন্ট! আমরা নিচে যাচ্ছি! [ হেসে ] এখন কিন্তু আমরা আবার গ্রুম সাইড হয়ে গেলাম! সো্ নিচে এসে আমাদের ভালো করে সার্ব করবা! ওকে?

জারিফা : হি-হি বহোদ খুব! উমহুম! অনেক ভালো জোকস্ ছিলো! এই জোকসে্র কারণে আপনাদের আরো এক্সট্রা খাতিরযত্ন নেওয়া হবে! [ জারিফার কথা শুনে রাহুলের কাজিনরা হাসতে হাসতেই এক এক করে বেড়িয়ে নিচে নেমে গেলো প্রোগ্রামে ]

আর এইদিকে স্নেহা রাহুল আসার অপেক্ষায় রুমেই বসে আছে তার ফ্রেন্ডসদের নিয়ে, শায়লা দাঁড়িয়ে আছে জানালার ধারে,জারিফা পার্ফিউম লাগাচ্ছে! মার্জান লিপিষ্টিক গ্লস করছে, মানে আয়নার সামনে থাকলে এদের সাজ কখনোই শেষ হবে না!

হঠাৎ,

শায়লা : [ জানালার ধার থেকে চোখ বন্ধ করে নাকে স্মেল নিতে নিতে স্নেহার পাশে এসে বসে ] বাহ! বাহ! খাবারের ঘ্রাণটা খিদে পাইয়ে দিচ্ছে!

মার্জান : তুই রুমে বসে খাবারের স্মেল নিলি কিভাবে?

শায়লা : উইন্ডোতে দাঁড়িয়ে দেখ কুয়াশার সাথে সাথে ভেসে আসছে! উমমম! কি টেষ্টি হবে!

জারিফা : [ শায়লার পাশে এসে বসে ] আরে! খাবারের স্মেল না, একবার আমার পার্ফিউমের স্মেল নিয়ে দেখ! কেমন স্মেলটা!

শায়লা : [ জারিফার শোল্ডারে নাক লাগিয়ে ] উমমম! বেলি ফুল! দেখ রিদোয়ান এই স্মেল পেলে কোনো ব্রেকিং নিউজ হয়ে যাবে না তো? আই মিন রাহুল স্নেহার জায়গায় কোনো তোদের না বাসর রাত হয়ে যায়!

জারিফা : হোয়াট ননসেন্স! [ বাকিরা হেসে উঠলো খিলখিল করে ]

খানিক্ষণ পরেই হঠাৎ, হৈ-হুল্লোড় ভাবে আওয়াজ ভেসে এলো! সাথে, ডাক-ঢোল, শানাইয়ের আওয়াজ! কারোই বুঝার বাকি রইলো না কে এসেছে!

শায়লা : [ এক্সাইটেড হয়ে চেচিয়ে ] গাইস্ আমার মনে হয় রাহুল এসে গেছে! [ বলতেই শানাইয়ের আওয়াজ আরো নিকটে ভেসে এলো ]

জারিফা : আরে তো ওয়েট করছিস কেনো চল চল চল চলনা! তখন দেখা মিস্ হয়ে যাবে! [ বলেই এক দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে বেড়িয়ে গেলো,জারিফার পেছন পেছন শায়লা ও দৌড় দিলো ]

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] আশ্চর্য ব্যাপার! এরা গ্রুম সাইড নাকি ব্রাইড সাইড?

[ স্নেহা ও আর কিছু বললো না মুচকি হেসে সোফা থেকে উঠে, দু-হাতে লেহেংগার দু-পাশ ধরে জানালার দিক এগিয়ে গেলো, মার্জান এর ও কি আর করার দৌড়ে এসে সে ও স্নেহার পাশে দাঁড়িয়ে পড়লো, পর্দা সরাতেই দেখতে পেলো রাহুল আর তার ফ্রেন্ডসদের কান্ডনামা, কান ফেটে যাওয়ার অবস্থা মিউজিকের আওয়াজে আর ঐদিকে বরের ঘোড়ার গাড়ী ভাংগার অবস্থা সবার উরাধুরা ডান্সে ]

_____গান চলছে~~

♪♪ হিরিয়ে সে্হরা বান্দকার মে তো আয়ারে ♪♪
♪♪ ডোলি বারাত ভি সাথ মে তোহ লায়ারে ♪♪

♪♪ আব তো না হতা হে এক রোজ্ ইন্তেজা্র ♪♪
♪♪ সনি আজ নেহি কাল হে তুজ কো তো ♪♪ ♪♪ বাস মেরি হনিরে ♪♪

♪♪ তেনু লে~কে মে জাভাংগা ♪♪
♪♪ দিল দে~কে মে জাভাংগা ♪♪

স্নেহা খেয়াল করছে রাহুলের জামার দিক যেমনটা বলেছে হোয়াইট শেরোয়ানী ব্লু পাগড়ী তেমনটাই পড়ে এসেছে মিষ্টার তেডি স্মাইল!

হঠাৎ একত্রে চমকে উঠলো স্নেহা এবং মার্জান, জারিফা আর শায়লা ও গিয়ে জয়েন হয়ে গেলো রাহুলের কাজিন আর ফ্রেন্ডসদের সাথে,ওহো শুধু রাহুলের কাজিন আর ফ্রেন্ডস কোথায়, ডান্সে রাহুলের সাথে সাথে রাহুলের বাবার ফ্রেন্ড, এবং আংকেলরা ও বাদ নেই, বাচ্চাদের মতোই নেচে যাচ্ছে, সবাই মেইন ডোরের সামনাসামনি আসতেই

মার্জান : [ স্নেহার হাত ধরে ] চল স্নেহা!

স্নেহা : মার্জান! আমার না অনেক লজ্জা লাগছে!

মার্জান : [ হেসে ] ওরে বাবা কিসের লজ্জা? অর্ধেকের বেশিই তো পরিচিত মানুষ! চল চল,

– [ চোখ টিপ মেরে ] তোর রাহুল দাঁড়িয়ে আছে তো… [ বলেই স্নেহার হাত ধরে নিয়ে শিরি দিয়ে নামাতে লাগলো, স্নেহাকে দেখতেই সবার একত্রে চিৎকার,রাহুল মুগ্ধকর অবস্থায় মুচকি হেসে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক,চোখ বলছে সর্গের পরি নেমে আসছে, আর হার্ট বলছে তার বিট ফিরে পাচ্ছে ]

নেহাল : [ স্পিকার নিয়ে ] লেডিস এন্ড জেন্টেলম্যান মে আই প্লিজ
হেভ ইউর এটেনশন এজ ওয়েলকাম দ্যা ব্রাইড এন্ড গ্রুম!

[ স্নেহা শিরি থেকে নামতেই রাহুল এগিয়ে আসছে স্নেহার কাছে, তখনিই বড় একটি রঙিন ফিতার বাধা পড়লো রাহুলের পথে,

পাশ মুড়তেই দেখলো শায়লা আর জারিফারই কান্ড,মুচকি হাসলো রাহুল ]

রিদোয়ান : হেই হোয়াট আর ইউ ডোয়িং হ্যাঁ?

জারিফা : কেনো চোখে দেখছেন না? কি করছি?

শায়লা : জিজু! আমাদের জিনিষ আমাদের দিয়ে দেন! তারপর আপনি আপনার স্নেহার কাছে চলে যান! এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই!

আসিফ : জিনিষ কি শুধু তোমাদের দু-জনকে দিলেই হবে? নাকি, বাকি আর কাউকে ও দিতে হবে? [ বলতেই মার্জানের চোখ পড়লো আসিফের দিক, সাথে সাথেই চোখ দু-টো বড় হয়ে গেলো, ওয়াসরুমে আসিফের হুট করে কিস দিয়ে দেওয়া সিনটাও ভেসে উঠলো চোখের সামনে, কি আজিব! বুকটাও দ্রুত কাপছে আসিফের কন্ঠে শুনে, মনে মনে ভাবতে লাগলো ]

– একি আমার ওকে দেখে লজ্জা লাগছে কেনো? [ বলেই ধীরে ধীরে স্নেহার পিছে গিয়ে লুকিয়ে পড়লো, মার্জানের কান্ড দেখে হেসে উঠলো আসিফ ]

রিদোয়ান : এই লিসেন্ট! কি এসব পুরানা জবানাই পড়ে আছো বলোতো? চলো চলো ভেতরে চলো [ বলেই ফিতাটা বটে নিতেই ছিলো তখনি ]

জারিফা : [ চেচিয়ে ] আইই! খবরদার! হাত লাগাবেন না বলে দিলাম!

নেহাল : [ চেচিয়ে ] আরে ভাবী আপনার শালীদের বলুন না আমাদের ভেতরে আসতে দিতে! [ কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো সবাই ]

শায়লা : এক্সকিউজ মি! আমরা ভাবীর শালী না রাহুলের শালী!

নেহাল : উফফ! সরিইইই! রাহুলের শালী, মিস্টেক মিস্টেক!

রোহানী : আরে আমার তো এটার কথা মোটেও মনে ছিলো না, এমন জানলে তো আমি ব্রাইড সাইডেই থেকে যেতাম!

রাহুল : [ রিদোয়ানের কানে ফিসফিসিয়ে ] দোস্ত! কতো অপেক্ষার পর দিনটা আসলো, আর অপেক্ষা করাস না আমায়!

– দিয়ে দে না!

রিদোয়ান : আরে দোস্ত বিয়ের এতো তাড়া কিসের? সবুর করনা আরেকটু!

রাহুল : [ রিদোয়ানের কানে ] আচ্ছা যা,তোকে ডাবল এমাউন্ট দিবো!

রিদোয়ান : রিয়েলি দোস্ত? বাট আমার এমাউন্ট না! প্যাক চাই! চলবে তো!

রাহুল : [ দীর্ঘ একটি নিশ্বাস ফেলে ] ওখে!

রিদোয়ান : এই না হলো আমার দোস্ত! [ বলেই পকেট থেকে বের করে জারিফার হাতেই দিয়ে দিলো তাদের জিনিস ]

জারিফা : [ আর চোখে প্যাকেট চেক করে মনে মনে ] ওয়াও একদম নতুন নতুন নোট! মনে তো হচ্ছে সোজা ব্যাংক থেকে এইখানেই এসেছে!

রিদোয়ান : আরে কি হলো দিলাম তো এইবার তো অন্তত ঢুকতে দাও! [ জারিফা মাথা নাড়িয়ে রাহুলের হাতেই কাচিটা এগিয়ে দিলো, রাহুল ফিতা কেটে স্নেহার সামনে গিয়ে হাত বাড়ালো, স্নেহা ও রাহুলের হাতের উপর হাত এগিয়ে দিলো, দুজনেই একসাথে এগিয়ে গেলো স্টেজের দিক ]

মার্জান ও ঐদিকটা এগিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়াবে তখনিই কেউ এসে হাত চেপে ধরে রাখলো! পাশ ফিরে তাকাতেই চমকে উঠলো!

আসিফ : [ হেসে সোজা তাকিয়ে থেকে ] একটা কিস্ করতেই এতো লজ্জা পাচ্ছো? ভাবছি যদি…আরেকটু কিছু বাড়িয়ে করতাম তাহলে?

মার্জান : হাত ছাড়ুন! [ বলেই হাত ছুটানোর চেষ্টা করতে লাগলো ]

আসিফ : দেখো ছুটাছুটি করো না! তখন চুড়ি ভেংগে হাতে ঢুকবে!

মার্জান : আরে মানুষ দেখছে তো! কি মনে করবে! ছাড়ুন! [ বলতেই আসিফ মার্জানকে আরো কাছে টেনে নিজের পাশেই লাগিয়ে দাড় করাই, ওড়নার আচলে, ধরে রাখা হাতটাও ঢেকে যায় ]

আসিফ : রিলেক্স হয়ে দাঁড়িয়ে থাকো, নড়াচড়া না করলে কেউই কিছু মনে করবে না!

– আর এমনিতেও এভাবে দেখলে কি মনে করার কি আছে, হয়তো ভেবে নিবে আমরা গার্ল্ফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড অর হাজবেন্ড ওয়াইফ!

মার্জান : দেখেন আমি কিন্তু চিৎকার করবো এইবার!

আসিফ : ওকে করো!

মার্জান : [ বিরক্তি হয়ে ] আপনি!..উফফ!

আসিফ : [ হেসে ] গতকাল না বলে চলে গেছো! একটা বাই ও বললে না!

মার্জান : আপনাকে কেনো বাই বলবো?

আসিফ : হুমম! সেটাও ঠিক!

মার্জান : আহহ! ব্যাথা লাগছে আমার! প্লিজ ছাড়ুন! [ বলতেই আসিফ হাত লুজ করে ধরলো, অমনিই ঝাড়ি দিয়ে হাত ছুটিয়ে দৌড় দিলো মার্জান, আসিফ ও ব্লাশিং হয়ে হেসে উঠলো ]

এইদিকে, শায়লা মার্জানকে খোজার জন্য চারদিক উকি দিয়ে দিয়ে হেটে যাচ্ছিলো হঠাৎ কারো পিঠের ধাক্ষা খেয়ে থেমে গেলো,

নেহাল : [ ক্যামেরা হাতে ছবি তুলতে তুলতে ] সরি সরিইইইই!

শায়লা : ইটস্ ওকে!

নেহাল : ইটস্ ওকে? ওহ! ওয়াওও থেংক ইউউ! [ বলেই শায়লার মুখের সামনে ক্যামেরা ধরে ] স্মাইলল! [ বলতেই হঠাৎ আবার সকালের শায়লার দাত দেখানো ভয়ংকর হাসিটির কথা মনে পড়লো নেহালের, সাথে সাথেই ক্যামেরা সরিয়ে ] নো..নোহ নট স্মাইল! নট স্মাইল! [ শায়লা ও নেহালের নট স্মাইল বলার কারণ বুঝতে পেরে ভোর কুচকে মুচকি একটা হাসি দিলো, যে হাসি দেখে নেহাল এইবার আর ভয় পেলো না মুগ্ধ হয়ে হা করে তাকিয়ে রইলো, শায়লা হাসতে হাসতেই চলে গেলো ]

নেহাল : প্লিজ ডোন্ট স্টপ ইউর স্মাইল!

হঠাৎ,

আসিফ : [ নেহালের কাধে হাত রেখে ] আরে নিজে কার সাথে কথা বলছিস?

নেহাল : [ চমকে উঠে ] নো..নোহ! নাথিং!

এইদিকে,

শায়লা : [ মার্জানকে নাড়িয়ে ] কোথায় ছিলি?[ বলতেই চমকে উঠলো মার্জান ]

শায়লা : আরে! কি হলো এইভাবে ভয় পেয়ে আছিস কেনো?

মার্জান : [ হেসে ] কক..কই নাতো! আমি তো তোদেরই খুজছিলাম!

শায়লা : ঐ দিকে চল! [ চোখ মেরে ] স্নেহা আর রাহুলের কবুল বলাও তো শুনতে হবে তাই না!

– তোকে খোজার চক্রে পড়ে সব নাকি মিস্ করে দিচ্ছি কে জানে! চল তাড়াতাড়ি!

মার্জান : ওকে! চল! [ বলেই পেছন ফিরতেই দুজন শকড হয়ে গেলো, কিছুক্ষণের জন্য চোখ কে বিশ্বাস করাতে পারছিলো না আদৌ কি তারা যাকে দেখছে সেই এইখানে এসেছে ]

শায়লা : মার্জান! আমি যাকে দেখছি তুই ও কি তাকে দেখছিস?

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] তুই ও দেখছিস, তার মানে এই পেত্নী এইখানে সত্যি সত্যিই এসেছে [ বলেই হনহন করে এগিয়ে গেলো নেহার কাছে, নেহা ও মার্জানকে দেখে হাতে হাত বটে দাড়ালো ]

মার্জান : উফফ! মানে আল্লাহ কি তোকে এক ফুটাও লাজ-লজ্জা দেইনি? বিনা ইনভাইটেশনে এই নির্লজ্য চেহেরাটা নিয়ে আবার হাজির হয়ে গেলি!

– [ একটু হেসে ] বাই দ্যা ওয়ে এমনিতে এসে ভালোই করেছিস! একবার স্টেজের দিক ও তাকিয়ে দেখ! কি কিউট লাগছে জুটিটা তাই না?
[ নেহাকে পাশ মুড়িয়ে দিয়ে ] আরে দেখ না!

চলবে….

Love At 1st Sight♥ Season 3 Part – 52

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 52

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : এক্সুলি আমি নিষেধ করেছি আন্টিকে তাও ডেকে দিয়েছে! এনিওয়ে ঘুমাও তুমি আমি পরে কল দিবো!

স্নেহা : [ কম্বল সরিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে ] না নাহ! সমস্যা নেই বব..বলেন!

রাহুল : আই লাভ ইউ! [ কথাটা শুনতেই স্নেহার বুকটা কেপে উঠলো, অজানা এক ভালো লাগা কাজ করছে মনের মধ্যে, বিবাহের সকালটা অতিমধুর করতে শুধু তার মিষ্টার তেডি স্মাইল এর মতো একজন জীবন সাথীই যথেষ্ট মনে হলো, ব্লাশিং হতে চলছে স্নেহা, ধীরো পায়ে হেটে এসে বারান্দার দরজার চৌকাটে হেলান দিয়ে দাড়ালো ]

রাহুল : এক্সকিউজ মি! আমি কিছু বলেছি?

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] কই? আমি তো কিছু শুনিনি!

রাহুল : আচ্ছা? তাহলে ব্লাশিং হচ্ছো কেনো?

স্নেহা : [ গালে হাত রেখে ] কক..কই নাতো!

রাহুল : আমি তো দেখছি তুমি এখন মালাই আর স্ট্রোভেরি মিস্রিত আইস্ক্রীম ফ্লেভার হয়ে যাচ্ছো! [ স্নেহা আর কিছু বললো না হেসে দিলো, বারান্দায় এগিয়ে গিয়ে রিলিং এ হাত রেখে দাড়ালো,শীতল বাতাস এসে গা ছুয়ে দিচ্ছে! ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে! ওড়না ছাড়া দেখতে কিন্তু তোমাকে আরো হট লাগে!

[ স্নেহা অবাক হয়ে গলায় হাত রেখে তাকালো,মনে মনে ভাবতে লাগলো, হ্যাঁ সত্যিই ওড়না ছাড়ায় তো সে, কিন্তু রাহুল কিভাবে জানলো বলেই পাশ ফিরে নিচের দিক তাকাতেই রাহুলকে দেখে চমকে উঠলো, চোখে ব্লাক সানগ্লাস, মুখে হাজারো খুশীর দাত দেখানো একটি হাসি, ডার্ক ব্লু-শার্ট, ব্লাক জিন্স,কানে ফোন রেখে,গাড়ীর সামনের বনাটের উপর দু-পা তুলে বসে স্নেহার দিকই তাকিয়ে আছে, স্নেহা ও অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক, আশ্চর্য ব্যাপার রাহুলকে তো সে আজ নতুন দেখছে না,তবে কি আজ একটু বেশীই হ্যান্ডসাম লাগছে? তা না হলে চোখই সরছে না কেনো রাহুলের দিক থেকে, ডার্ক ব্লু কালারের শার্টটা গায়ের রঙের সাথে ফুটে উঠেছে রাহুলের, ভাবতেই অদ্ভুত লাগছে স্নেহার এমন একটা হ্যান্ডসাম ডেসিং বয়ের লাইফ পার্টনার হতে চলছে সে, গ্রামে স্নেহার কাজিনরা ফরমাল ড্রেসের কোনো ছেলে দেখলেই পাগল হয়ে যেতো, যদিও বা ছেলের মাথার মাঝে চুল না থাকুক, ফিগার থেকে পেটের সাইজ একটু বাড়তি থাকলে ও সে তাদের ক্রাশে পরিণত হয়ে যেতো, এইবার স্নেহা ভাবছে যদি এই স্পাইক চুল ওয়ালা মিষ্টার তেডি স্মাইলকে একবার তাদের গ্রামে এন্ট্রি করা যায় তাহলে তো আর এই হ্যান্ডসামের রেহায় নেই,

মনে মনেই হেসে উঠলো স্নেহা! ]

রাহুল : [ হেসে হাত নাড়িয়ে ] হেইইই! আর ইউ দেয়ার?

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] আ..আপনি? এইখানে? কক..কখন এলেন?

রাহুল : এই কথাটা বলতে এতোক্ষণ চিন্তা করতে হলো?

স্নেহা : নাহ আমি তো, এ..এমনিই…

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] এসেই ফোন করেছি তোমাকে!

স্নেহা : ওহ!

রাহুল : আমার কথাটার রিপ্লাই দাওনি কিন্তু এখনো, [ লজ্জা পেয়ে পেছন ফিরে নিচের দিক তাকিয়ে ফেললো স্নেহা ]

রাহুল : বাহহ! আমার লজ্জাবতীটা, [ বলেই হাসতে লাগলো, স্নেহা ও মিটিমিটি হাসছে ]

রাহুল : কথা ছিলো, নিচে এসো!

স্নেহা : এখন আবার এতো কিসের কথা, সন্ধ্যায় তো দেখা হচ্ছেই!

রাহুল : শোনো আমার দাদীজানের মতো কথা বলবা না বুঝেছো? কোথায় বলবা আমার নম্র সম্র হাজবেন্ডটা কতদূর থেকে সব ছেড়ে কষ্ট করে এসেছে, তা দেখে দৌড়ে দৌড়ে আসবা তা না, উল্টো দাদীর মতো,[ মুখ ভংগি করে ] সন্ধ্যায় তো দেখবি এখন আবার দেখার কি দরকার, [ হাসতে লাগলো স্নেহা রাহুলের কান্ডে ]

রাহুল : হেই..হেইই আম নট জোকার ওকে? ওয়েট করছি, তাড়াতাড়ি এসো!

স্নেহা : আচ্ছা! বাবা, আসছি! [ বলেই ফোন কান থেকে সরিয়ে, মুচকি হেসে রাহুলের দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ভেতরে ঢুকে গেলো,

ভেতরে ঢুকতেই দেখে বাকিরা যেভাবেই ছিলো ঐভাবে কাতচিৎ হয়ে ঘুমাচ্ছে, স্নেহা তাড়াহুড়ো করে ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে, বালিশের পাশ থেকে ওড়নাটা নিয়ে গায়ে মুড়িয়ে, টেবিল থেকে চশমাটা চোখে লাগিয়ে নিচে নেমে এলো, গেইট পেড়ুতেই স্নেহাকে দেখে রাহুল গাড়ীর বনাটের উপর থেকে লাফ দিয়ে নেমে পড়লো, স্নেহা ও মুচকি হেসে এগিয়ে গেলো ]

রাহুল : [ সানগ্লাস খুলে ] বাহ! ভোর হলো তো বেরুলো চাশমিস! [ চোখ মেরে ] আচ্ছা আমাকে চশমা ছাড়া দেখতে পাও তো স্নেহা?

স্নেহা : [ চশমা ঠিক করে ] শাট-আপ রাহুল! আমি আগেও বলেছি এটা হ্যাডেক এর জন্য!

রাহুল : [ স্নেহার কপাল টিপে ] অহ শিট! মাথা ব্যাথা করছে এখন?

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের হাত সরিয়ে দিয়ে ] আরে নাহ! এক্সুলি তাড়াহুড়ো করে এসেছি, চোখে গতকালকে দেওয়া কাজলের কালি-টালি লেপ্টে আছে তাই পড়ে এসেছি,

রাহুল : [ হুট করেই স্নেহার চোখের চশমা টেনে নিয়ে ] আচ্ছা আমিও তো দেখি লেপ্টে থাকা কাজল গুলো!

– বাহ! স্নেহা বাহ! কাজলে কালো মায়াবীনি চোখ, লাল লাল গাল,গোলাপী গোলাপী ঠোট! নেশা ছড়ানো ওয়েদার! আমাকে পাগল করার ইন্টেনশন নিয়ে আসোনি তো?

স্নেহা : আপনি তো অলরেডিই পাগল আমি আর কি পাগল করবো! [ বলেই হাত থেকে টেনে নিয়ে চশমাটা পড়ে নেই ]

রাহুল : নো নো স্নেহা! নো! তোমার এই পাগল প্রেমীর প্রতি তুমি এতোটাও অবিচার করতে পারো না,

– আচ্ছা! আজকাল একটু বেশীই কিউট হয়ে যাচ্ছো না? হি-হি হোওয়ারি কথা বিয়ের ফুল ফুটলে নাকি মেয়েরা অতিমাত্রায় সুন্দর হতে থাকে,

স্নেহা : আচ্ছা? আপনি এতোকিছু কি করে জানেন?

রাহুল : [ চোখ টিপ মেরে ] শুনেছি আজ সকালে দাদী থেকে,যখন দাদীকে এক্সপ্লেইন করছিলাম কাল তোমায় কেমন লেগেছিলো উফফ!

স্নেহা : হুমম! আর কি কি বললেন দাদীকে?

রাহুল : সে অনেক কিছু! সব তোমায় বলা যাবে নাকি! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালে ]

রাহুল : [ হেসে ] আচ্ছা বাদ দাও এইদিকে এসো, [ বলেই স্নেহার হাত ধরে গাড়ীর পেছনের দরজা খুলে, টেনে নিয়ে ভেতরে বসে পড়লো ]

– আরে, স্নেহা! তোমার শরীর তো ঠান্ডা হয়ে আছে! তোমার শীত লাগছে না? সুয়েটার পড়োনি কেনো?

স্নেহা : হ্যা! তা তো লাগছে, তাড়াহুড়োতে ভুলে গিয়েছি! আচ্ছা বাদ দেন! কি যেনো কথা আছে বললেন?

রাহুল : [ স্নেহার শোল্ডারে হাত রেখে জড়িয়ে ধরে ] আচ্ছা চলো এই মুহূর্তের জন্য আমাকে তোমার সুয়েটার মনে করে নাও!

স্নেহা : [ হেসে ছুটার চেষ্টা করতে করতে ] আরে! রাহুল..কি করছেন কেউ দেখবে তো!

রাহুল : [ আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] আবারো একই কথা? [ হাসতে লাগলো স্নেহা ]
– আচ্ছা তুমি ব্রেকফাস্ট করেছো?

স্নেহা : উমহুহ!

রাহুল : আচ্ছা চলো ব্রেকফাস্ট করতে! [ বলেই রাহুল গাড়ীর দরজা খুলতে যাবে তখনিই ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে ] নাহ! রাহুল..প্লিজ! আমি এখন কোথাও যাবো না! [ রাহুল মুখ ভেংগিয়ে কি কি যেনো বলে ফেললো, মুচকি হাসলো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার কাছে মুখ এনে ] আচ্ছা ঠিকাছে চলো তোমায় একটু সুইট টেষ্ট করিয়েদি! [ বলেই স্নেহার ঠোটে কিস করতে যাবে তখনি ]

স্নেহা : [ রাহুলের মুখ সরিয়ে দিয়ে ] নাহ! আমাকে সুইট টেষ্ট করাতে হবে না! তখন ডায়াবেটিস হয়ে যাবে!

রাহুল : [ হঠাৎ নিজের লেফট চোখ চেপে ধরে ] আহহ!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] রাহুল! কি হয়েছে? দেখি? [ বলেই রাহুলের হাত সরিয়ে চোখ চেক করতে লাগলো ]

রাহুল : আই থিংক কিছু ঢুকেছে স্নেহা! দেখো তো! [ স্নেহা রাহুলের মাথা কাছে টেনে চোখে ফু দিতে লাগলো, রাইট চোখে নটি ইন্টেনশন নিয়ে স্নেহার ফু দেওয়া ঠোটের দিক লোভনীয় ভাবে তাকিয়ে আছে রাহুল, এতোটাও অপেক্ষার করার মতো পাত্র নয়, মুহূর্তেই স্নেহার কোমোড়ে হাত রেখে নিজের ঠোট স্নেহার ঠোটে মিশিয়ে দিলো,শকিং হয়ে রাহুলের শার্ট হাতে মুঠি বেদে মুচড়ে ধরলো স্নেহা, হাসি পাচ্ছিলো রাহুলের তাই কিছুক্ষণ চেপে ধরে চুমু দিয়ে রেখে ছেড়েই দিলো স্নেহাকে, স্নেহা চোখ নামিয়ে সোজা হয়ে বসে পড়লো চুপচাপ, কিসব হয়ে গেলো মুহূর্তে কিছুই বুঝতে পারলো না সে ]

রাহুল : জানো স্নেহা! ফ্রিজ থেকে যখন সকাল সকাল লাল টকটকে ফ্রেশ আপেলটা কামড় দিয়ে খায় না তখন ও ঐটা এমন মিষ্টি লাগে না যখন তোমার পিংক পিংক…

স্নেহা : [ রাহুলের মুখে হাত রেখে ] ব্যাসসস! রাহুল…ওকে! স্টপ ইট! [ রাহুল মাথা নাড়ালো, স্নেহা ও আর কিছু না বলে হাত নামিয়ে চুপ হয়ে বসে রইলো সাথে মিটিমিটি হাসছে আর ব্লাশ হচ্ছে, হঠাৎ রাহুল ও হেসে স্নেহার শোল্ডারে হাত রেখে, কানে একটি চুমু খেয়ে শক্ত করে চেপে জড়িয়ে ধরে রাখলো ]

স্নেহা : [ হেসে ] আপনি যে বললেন কি কথা আছে?

রাহুল : হুমমমম! মা বলেছে তোমাদের সবাইকে রেসো্র্টে নিয়ে আসতে,বিয়ের জিনিষপত্র সব ওখানেই রেখেছে,

– এক্সুলি দাদী! ড্রাইভারকেই পাঠাচ্ছিলো তোমাদের পিক করতে, সো্ ঐ সুযোগে আমিও চান্স নিলাম ড্রাইভারের কি দরকার? আমি আছিনা! আমার বউকে আমিই পিক করে দিবো!

স্নেহা : আপনার ঘুম ভাংগলো কিভাবে এতো তাড়াতাড়ি?

রাহুল : আব..ভেংগেছে আরকি! আচ্ছা বাদ দাও! এবার শুনো উপরে যাও..আর ঐ নটি কোম্পানির দলদের ও বলে দাও যে ওদের জিজু! নিচে অপেক্ষা করছে ওদের জন্য! তাড়াতাড়ি চলে আসতে! আচ্ছা শুনো এখন যেও না আরেকটু জড়িয়ে ধরে রাখি!

স্নেহা : সত্যি করে বলেন তো আপনি ঘুমিয়েছেন?

রাহুল : মিথ্যে করে বলছি,আমি ঘুমুইনি!

স্নেহা : [ রাহুলকে সরিয়ে দিয়ে ] ঘুমুননি কেনো? কি করেছেন আপনি ?

রাহুল : হ্যা..হ্যাপি..হ্যাপিনেস্! বিয়ে হচ্ছে আমার স্নেহা! কতো হ্যাপি লাগছে জানো? তাই খুশিতে ঘুম আসছিলো না! আর…

স্নেহা : আর কথা বানাতে হবে না! এবার বলুন সত্যি সত্যি কি করেছিলেন?

রাহুল : তোমার ভাই! আরে বাচ্চা একটা আমার শালা! বোরিং হচ্ছিলো বাসায় বসে,ইনফ্যাক্ট আমার ও বোর লাগছিলো,আর ওকে এভাবে বোর হতে দিতে পারি তুমিই বলো? তাই আমরা…

স্নেহা : থেমে গেলেন কেনো বলেন?আপনারা?

রাহুল : আমরা এমনিতে ঘুরতে বেড়িয়েছিলাম! [ চোখ টিপ মেরে ] উইদাউট সানরুফ গাড়ী নিয়ে,

[ বুঝতে পারলো স্নেহা! রাহুল এখনো কথাটি মনে রেখে দিয়েছে, যখন ঐদিন গাড়ীতে বসে স্নেহা বলেছিলো, জানেন রাহুল! আমার না অনেক ইচ্ছে ছিলো! এমন…উইদাউট সা্নরুফ গাড়ীতে চড়ার, ইনফেক্ট! ছোটবেলায় যখন স্কুলে যেতাম তখন এমন গাড়ী দেখলে না, হা করে তাকিয়ে থাকতাম! (একটু মুচকি হেসে) আর রাশু, আমার ছোট ভাই, টিভিতে এমন গাড়ী দেখলে বাবাকে বলতো বাবা আমার ও এমন গাড়ী চাই ]

রাহুল : কি ভাবছো?

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] কিছু না! [ বলেই দীর্ঘ একটি নিশ্বাস ছেড়ে, রাহুলের বুকে মাথা হেলে দেই,চোখে পানি টলমল করছে স্নেহার ]

রাহুল : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] তুমি কাদছো স্নেহা? কিন্তু কেনো?

স্নেহা : আমি কতোটা লাকি! সেটা বুঝতে পেরে, [ মুচকি হেসে ] আই লাভ ইউ টু রাহুল!

রাহুল : [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে ধরে, কপালে একটি চুমু দিয়ে ] এতো ইমোশনাল হলে চলবে? হুমম? [ বলেই স্নেহার চশমা টেনে খুলে চোখ মুছে দিয়ে ] স্নেহা! রেসোর্টে আমার অনেক কাজিনরা তোমাকে দেখার জন্য এক্সাইটেড হয়ে বসে আছে!

স্নেহা : কিন্তু গতকাল তো আপনার কোনো কাজিনকেই পরিচয় করিয়ে দিলেন না!

রাহুল : আসলেই তো করাবো! সবই তাড়াহুড়োতে হয়েছে! গতকাল ওরা কেউই ছিলো না দেশে! সবাই বিয়ের খবর পেয়ে দু-তিন দিনের জন্য আর্জেন্ট মিডনাইটের ফ্লাইট নিয়ে আজ সকালেই এসে পৌছেছে!

– সবশেষে আবারো ফ্লাই হয়ে যাবে!

স্নেহা : বাংগালী তো ওরা তাই না?

রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] ইয়াহ আফকর্স বাংগালী!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] আচ্ছা আমি তাহলে রেডি হয়ে আসি! [ বলেই দরজা খুলতে যাবে তখনিই আবার রাহুলের দিক ফিরে ] বাট রাহুল!

রাহুল : হুমম!

স্নেহা : ওদের এখন ঘুম থেকে উঠানো তো অনেক মুশকিল! কমপক্ষে আট-নয় ঘন্টা ওদের ফুলফিল ঘুমাতে হয়! আর যদিও উঠে ওরা এতোটাই অলস যে সব ধীরেধীরে আলসেমি কেটে কেটে করবে, আপনি এতোক্ষণ গাড়ীতে বসে থাকবেন? এক কাজ করুন ভেতরে আসুন!

রাহুল : নো নো দ্যাটস্ ওকে! ঘুমালে ঘুমুতে দাও! এখন ডেকো না! ততোক্ষণে তুমিও বাসায় গিয়ে ব্রেকফাস্ট করে আরো কিছুক্ষণ রেষ্ট নাও!

– ব্যাস! তোমরা সবাই রেডি হলে আমাকে কল দিবা আমি নিতে চলে আসবো!

স্নেহা : বাট! আপনার ওতো রেষ্টের দরকার! আপনি তো একটু ও ঘুমাননি!

রাহুল : ওহো আমার চিন্তা করোনা, আই এম ওকে!

স্নেহা : [ রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] চিন্তা করবো না মানে? আপনার আর আমাদের নিতে আসতে হবে না! এখন বাসায় গিয়ে ডিরেক্ট ঘুমাবেন,আপনি রেসোর্টের এড্রেস বলেদিন আমরা পৌছে যাবো!

রাহুল : পাগল নাকি? পৌছে যাবো বললেই হলো? তাই না?

স্নেহা : দেখেন জেদ করবেননা যা বলছি তাই শুনুন! আপনার শরীর খারাপ হবে এভাবে না ঘুমিয়ে থাকলে!

রাহুল : আরে স্নেহা! এভাবে অনেক রাত না ঘুমিয়ে থাকার এক্সপেরিয়েন্স আছে আমার কাছে!

স্নেহা : হ্যা! তা আপনার ব্যাচেলার লাইফে চলেছিলো এখন আর চলবে না সো্ এখন আমি যা বলছি তাই!

রাহুল : বাট স্নেহা…

স্নেহা : দেখেন রাহুল আপনি কিন্তু আমার কথা রাখছেন না!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে ] ওখে!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] থেংক ইউ

রাহুল : তবে একটা শর্তে! [ অবাক হয়ে তাকালো স্নেহা ] আমি ড্রাইভার পাঠাবো ওর সাথেই আসবে! [ স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনিই ]

রাহুল : নট ওয়ান মোর ওয়ার্ড!

স্নেহা : আচ্ছা! [ বলেই স্নেহা দরজা খুলে বেড়িয়ে গেলো ]

রাহুল : [ বেড়িয়ে এসে চেচিয়ে ] আরে স্নেহা! বাই বলো?

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] বাইই!

রাহুল : বাই! [ With tedi smile ]

[ যতোক্ষণ না পর্যন্ত স্নেহা গেইটের ভেতর ঢুকে পড়লো না ততোক্ষণ চেয়ে রইলো রাহুল! স্নেহা চলে যাওয়ার পরই চোখে সানগ্লাসটা লাগিয়ে মুচকি হেসে গাড়ীতে উঠে বেড়িয়ে পড়লো ]

____________ এইদিকে,

স্নেহা রুমে ঢুকেই বাকীদের ডাকতে লাগলো, হঠাৎ আলমীরার দিক চোখ পড়তেই দেখে স্নেহার মা স্নেহার ব্যাগ গুছিয়ে দিচ্ছে! দৃশ্যটা দেখতেই স্নেহার চোখ ঝাপসা হয়ে এলো! সবেই বুঝি স্নেহার বিদায়ের পালা শুরু! না তবে ভেংগে পড়লে চলবে না,তাই কন্ট্রোল হয়ে নিলো!

স্নেহার মা : আরে স্নেহা! শোন না, এই জ্যাকেটটা কার বুঝছি না? আর বাকি সবকিছুই তোর ব্যাগে ভাজে ভাজে রেখে দিয়েছি!

স্নেহা : মা! জ্যাকেটটা রাহুলের!

স্নেহার মা : আচ্ছা? তাহলে তো এটাও ভরে দিতে হবে! [ বলেই ভাজ করে ব্যাগে ভরতে লাগলো জ্যাকেটটা ]

জারিফা : [ ঘুম কন্ঠে ] আন্টি! রাহুলের জ্যাকেট স্নেহার কাছে কিভাবে এলো জিজ্ঞেস করেন না..

স্নেহার মা : [ হেসে ] আরে জিজ্ঞেস করার কি আছে, হয়তো ও ফেলেটেলে গিয়েছে!

স্নেহা : [ এগিয়ে গিয়ে সবার কাছে থেকে কম্বল ছিনিয়ে নিয়ে ] সবাই উঠবি নাকি পানি ঢালবো?

স্নেহার মা : আরে ঠিক মনে করেছিস তো! কখন থেকে ডাকছি এরা উঠছেই না এইবার এটাই কাজে লাগাতে হবে বুঝছি! [ বলেই ওয়াসরুমের দিক এগিয়ে যেতে না যেতেই ]

জারিফা : [ লাফিয়ে উঠে ] আরে আন্টি নাহহহ! আমি তো কতো আগেই উঠে গিয়েছি! এমনিতেই শুয়ে ছিলাম! [ শায়লা আলসেমি কেটে চোখ কচলে কচলে উঠে বসলো, আর মার্জান মাথার উপর কম্বল দিয়ে গায়ে মুড়িয়ে ধীরেধীরে হেটে বারান্দায় এগিয়ে চলে গেলো ]

স্নেহা : সবাই তৈরী হয়ে নে,কারণ..

জারিফা : [ চেচিয়ে ] কারণ চিকনি-চ্যামেলী আন্টি বলেছে সবাইকে রেসোর্টে চলে আসতে! বিয়ের জোড়া, কাপড় -চোপড়, সবই রেসোর্টে রাখা হয়েছে তাই তো?

স্নেহা : তুই কিভাবে জানিস?

জারিফা : ওহো বস্ আমার সব জানা আছে বুঝলি!

শায়লা : হ্যা! সব জানা আছে! রিদোয়ান বলেছে এটা বলনা হুহ!

স্নেহার মা : আরে জানা যখন আছে তাহলে ঘুমাচ্ছিলি কেনো? যাহ উঠ, সব গুলো ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি নাশতা করে তৈরী হয়ে নে! [ বলেই পাশের রুমে চলে গেলো ]

জারিফা : [ বুকে হাত রেখে মাথা ঝুকিয়ে ] আজ্ঞে আন্টি! যাহা আপনার আদেশ! [ স্নেহা আর শায়লা হেসে উঠলো ]

_________ দুপুর ২টা বেজে ৪৫ মিনিট,

গাড়ী রেসোর্টের গেইট দিয়েই ঢুকছে,

শায়লা : [ গাড়ীর জানালা দিয়ে মাথা বের করে ] আরে বাহ! জারিফা দেখ! ঐ দিকের মাঠেই লাইটিং করা হচ্ছে, ওয়াও বোর্ড ঐদিকটা লাগাচ্ছে নিশ্চয় স্টেজ ও ঐ দিকটাই হবে,

জারিফা : ইয়ার! শায়লা, রেসোর্টটা দেখ, কি লাইটিং করছে!

শায়লা : হ্যা! যাতে রাত হলে ঝাকানাকা ঝাকানাকা করে!

মার্জান : [ শায়লার মাথায় বাড়িয়ে দিয়ে ড্রাইভারের দিক আংগুল দেখিয়ে ইশারা করে ] কমনসেন্স নেই? ওনি মনে মনে কি বলবে বলতো?

জারিফা : [ হেসে ] বলবে নিশ্চয় জীবনে দেখেনি! মূর্খ্য গুলো!

শায়লা : কিন্তু ঠিকই তো বাস্তবে কি জীবনে দেখেছি নাকি? আমি তো জন্মের পর সব বিয়ে ক্লাবেই খেয়েছি!

মার্জান : শিসসস! নাম এইবার! [ দরজা খুলে একে একে সবাই নেমে পড়লো, রিদোয়ান রাশু, এবং একজন সারভেন্ট এগিয়ে এলো ]

রিদোয়ান : [ সারভেন্টকে উদ্দ্যেশ্য করে ] বেক বনাটে জিনিষপত্র থাকলে উপরের রুমে রেখে আয়!

রাশু : [ দাত দিয়ে চকলেটের প্যাকেট ছিড়তে ছিড়তে ] ওহো এসেছো তাহলে তোমরা? একটাও কাজের না ১২টার থেকে আমরা এইদিকে বসে আছি তোমাদের রিসিভ করার জন্য! [ রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] এখন কটা বাজছে?

রিদোয়ান : টু-ফিফটি ওয়ান!

রাশু : বাহহ! দেখো আরেকটু পরই ৩টা বাজবে, আসোলেই এদের দ্বারা কোনো কিছু হবে না!

জারিফা : আইই! দুই কড়ির ডিব্বা কি বললি?আমাদের দ্বারা কিছু হবে না তাই না? আমরা কি তোর মতো সুবিধা পার্টি নাকি? যে যেইদিকে সুযোগ ঐদিকে দৌড়ে চলে যাবো,আমরা কনে পক্ষ আস্তে ধীরে আসবো, বরপক্ষ আমাদের খাতিরযত্ন করবে! আরো কতো কি আপ্যায়ন বাহহ! ভাবতেই শান্তি লাগছে,

রিদোয়ান : এক্সকিউজ মি! বরপক্ষ খাতিরযত্ন
করবে না, কনে পক্ষ বর পক্ষকে করবে!

জারিফা : হু কেয়ারস্! দুনিয়ে বদলে গেছে! দেখছেনই তো কারা কাদের খাতিরযত্ন করছে, হুহ [ শায়লার দিক তাকিয়ে ] তাই না?

শায়লা : ইয়েস্ বিশ্বাস না হলে ভেবে দেখুন আপনারায় তো বললেন ১২টা থেকে আমাদের রিসি্ভ করার অপেক্ষায় বসে আছেন!

জারিফা : [ হেসে ] ইয়াহ! কামঅন গার্লস্! [ বলেই কাধ থেকে চুলটা ঝাড়ি মেরে সরিয়ে হাটা শুরু করলো, রিদোয়ান পকেটে হাত রেখে হেসে তাকিয়ে আছে ]

শায়লা : [ রাশুর দিক তাকিয়ে হাটতে হাটতে ] তুই ডিব্বাকে তো বাসায় আয়! ডাব্বা বানিয়ে ছাড়বো! [ বলতেই হঠাৎ সজোড়ে বাড়ি খেলো কারো মাথার সাথে ] আওওও [ বলেই মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে সামনের দিক তাকাতেই চমকে উঠে ]

রাশু : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] হ্যা! এটাই হচ্ছে হাতেনাতে শাস্তি! নেহাল ভাইয়া ভালোই করেছো বাড়িটা মেরে!

নেহাল : ওওহহ! সরি সরি! খেয়াল করিনি! এক্সট্রেমলি সরি [ বলেই শায়লার মাথায় হাত দিতে যাবে তখনি শায়লা পিছিয়ে গেলো ]

নেহাল : [ কানে হাত রেখে ] সরি! এক্সুলি আমি ক্যামেরার দিক তাকিয়ে হাটছিলাম তাই খেলায় করিনি!

– [ হেসে বাকিদের দিক তাকিয়ে হাত নাড়িয়ে ] আ..হেইই গাইস্ আমি আসলে ভাবীর এন্ট্রি শুট করতে আসছিলাম! তাই তাড়াহুড়োতে!

জারিফা : [ ভোর কুচকে ] কোন ভাবী?

নেহাল : [ মাথা চুলকিয়ে ] নামটা কি যেনো?

রিদোয়ান : স্নেহা! [ বলেই হেসে এগিয়ে এসে স্নেহার কাধে হাত রেখে ]

– স্নেহা ও হচ্ছে রাহুলের কাজিন! আজই এসেছে! অষ্ট্রেলিয়া থেকে,আর নেহাল এটাই তোর ভাবী! মিসেস রাহুল!

নেহাল : হ্যালো! [ বলেই হ্যান্ডশেক করে ]

স্নেহা : হ্যালো!

রিদোয়ান : আর এরা ভাবীর ফ্রেন্ডস্

নেহাল : ইউ মিন ভাবীর শালী! রাইট?

রিদোয়ান : [ হেসে ] ইয়াহ! শালী, বাট ভাবীর না রাহুলের!

নেহাল : ওহ সরি ইয়া! ইয়াহ!

রাশু : আরে ভাইয়া! শালী না এগুলো! সবই মা কালী! এক একটার আসল রুপ এখনো দেখেন নি আপনি…

জারিফা : তোকে তো আমি! [ বলেই দৌড়াতে লাগলো, রাশু ও হেসে হেসে দৌড়তে লাগলো ]

রিদোয়ান : [ চোখ মেরে জারিফার দিক দেখিয়ে ] নেহাল! তুই ইনাকে ও ভাবী ডাকতে পারবি!

নেহাল : ওনাকে ও?

শায়লা : [ হেসে ] আরে হ্যা! ও ওনার গার্ল্ফ্রেন্ড! সো্ আপনার ফিউচার ভাবী হয়ে গেলো না ব্যাস!

নেহাল : ও ইয়া! ইয়াহ!

মার্জান : আমরা কি এবার ভেতরে যেতে পারি?

নেহাল : শিয়র! লেটস্ কাম [ বলেই কিছুটা পেছন দৌড়ে গিয়ে ক্যামেরা অন করে ভিডিও করতে লাগলো ] কাম কাম! স্মাইল ভাবীইই! [ হাসতে লাগলো স্নেহা, এক এক করে সবাই ঢুকছে, শায়লা ক্যামেরার সামনে এসেই দাত দেখানো একটা হাসি দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লো, নেহাল হঠাৎ ভয় পেয়ে চমকে উঠে ক্যামেরা হাত থেকে ফেলে দিতেই যাচ্ছিলো আবার তাড়াহুড়ো করে ধরে, মুচকি হেসে তাকিয়ে রইলো ]

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 51

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 51

writer-Jubaida Sobti

মার্জান : [ মনে মনে ] গেলো কই? উফফফ! ওভার করে ফেলেছি নিশ্চয়! [ বলেই বাহিরের দিক এগিয়ে এলো, রাত প্রায় গভীরে, কাউকেই চোখে পড়ছে না ছোট ছোট কয়েকজন বাচ্চা দৌড়াদৌড়ি করছে পার্কিং এর দিক ,হঠাৎ চোখে পড়লো রাশুকে,রাশুও মার্জানকে দেখে দৌড়ে এগিয়ে এলো ]

রাশু : [ হেসে হেসে ] কি হলো খাইয়েছো চিলি জুস?

মার্জান : হ্যা! খাইয়েছি, কিন্তু খাওয়ানোর পর আর খুজে পাচ্ছিনা কোথায় গেলো বলতো? তুই দেখেছিস?

রাশু : না আমি তো এইদিকটাই ছিলাম,এদিকেও আসলো না দেখিওনি, কিন্তু দেখার খুব ইচ্ছা! কেমন হাল হয়েছে, [ বলেই হাসতে লাগলো ]

মার্জান : [ মনে মনে ভাবতে লাগলো ] আজিব এইদিকেও এলো না ভেতরে ও নেই তাহলে গেলো কই?

রাশু : আচ্ছা বাকি মরিচ গুলো কি করবো? [ মার্জান আর রাশুর কথার প্রতি ধ্যান দিলো না পেছন মুড়ে ভেতরের দিক এগিয়ে যাচ্ছিলো তখনি আবার, ]

রাশু : আরে বাকি মরিচ গুলো কি করবো বললে না যে,

মার্জান : উফফ! [ বিরক্ত হয়ে ] এক কাজ কর ঐগুলো দিয়েও জুসওয়ালাকে বল আরেকগ্লাস বানিয়ে দিতে তারপর এনে আমাকে খাইয়ে দে,

রাশু : সত্যিইই! দাঁড়াও আমি এক্ষুণি বানিয়ে আনছি,

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] তোকে তো আমি…[ বলতেই রাশু হেসে হেসে দৌড় দিলো ]

দীর্ঘ একটি নিশ্বাস ছেড়ে ভেতরের দিকই হাটা ধরলো,চারদিকই তো খুজে দেখলো কোথাও নেই, মনে মনে ভাবতে লাগলো এতে তারই বা কেনো এতো টেনশন হচ্ছে, যাক গিয়ে যেখানে যাওয়ার, উফফফ! কিন্তু গেলো কই এটাও তো জানার বিষয়, এসব ভেবে হাটতে হাটতে হঠাৎ পাশে ওয়াসরুম চোখে পড়লো, মাথা এগিয়ে একবার ওয়ারুমে ও উকি দিলো, কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলো না, তাই আবার ও চারদিক চোখ বুলিয়ে হাটা ধরলো, হঠাৎ দু-তিন কদম এগিয়ে যেতেই থমকে দাঁড়িয়ে যায়, তাড়াতাড়ি পেছন ফিরে আবারো ওয়াসরুমের দিক এগিয়ে এসে ধীরেধীরে লেডিস ওয়াসরুমের দিকই ঢুকলো,মিডলে সাদা একটি পর্দা লাগানো,পাশে জ্যামস ওয়াসরুম, বেসিনে পানি ছেড়ে রাখার আওয়াজ আসছে, মনে মনে ভাবছে, কি আজিব ব্যাপার পানির ট্যাংক খালি করে ছাড়বে নাকি, তবে সাদা পর্দার ছায়ার ওপারের মানুষটাকে কেনো যেন যাকে খুজছে এতোক্ষণ সেই মনে হচ্ছে, তাই শিয়র হওয়ার জন্য ধীরেধীরে পর্দাটা ফাক করতেই এক্সাইটেড হয়ে একচিৎকার করে উঠলো ]

মার্জান : আরে! এইতো দেখছি আপনিইই! [ বলেই পর্দা সরিয়ে আসিফের কাছাকাছিই এগিয়ে আসলো, আসিফ মাথা ঝুকিয়ে আছে বেসিনে, মার্জানের চেচানিতে মাথা তুলে মিররের দিক তাকালো ]

মার্জান : ও হ্যা! আপনার তো এমনিতেও এইখানেই থাকা উচিৎ! কিন্তু আপনি ওয়াসরুমে কেনো আপনার তো টয়লেটে হওয়া উচিৎ ছিলো! [ বলতেই হঠাৎ চোখ পড়লো বেসিনে,সাথেই হাসি উদাও হয়ে যায় মুখ থেকে, ধীরেধীরে আড়চোখে তাকালো আসিফের দিক, ভালো করে চোখের দিক তাকিয়ে খেয়াল করলো চোখ দুটো লাল হয়ে আছে ]

মার্জান : আপনি বব..বমি করেছেন? [ চুপচাপ চেয়ে রইলো আসিফ ]

মার্জান : [ আসিফের চোখের দিক তাকিয়ে ] কাক..কাদছেন নাকি আপনি? কি হয়েছে? [ আসিফ কোনো জবাব দিলো না চোখ নামিয়ে বেসিনের দিক তাকিয়ে, হাতে পানি নিয়ে আবার কুলি করে বেসিনে ফেললো ]

মার্জান : আরে কি হয়েছে কিছু বলছেননা কেনো? আচ্ছা ঠিকাছে আমি..

– সরি! [ বলতেই আসিফ অবাক হয়ে তাকালো, হঠাৎ একজন সারভেন্ট জুস হাতে নিয়ে এগিয়ে এলো ]

সারভেন্ট : সরি! ভাইয়া আনতে একটু লেইট হয়ে গেছে, এটা খেয়ে দেখেন,হয়তো ভালো লাগবে!

মার্জান : [ অবাক হয়ে আসিফের দিক তাকিয়ে ] আপনার ঝাল লাগছে এখনো?

সারভেন্ট : হ্যা! কে যেনো স্পাইসি কি খাইয়ে দিয়েছে, ভাইয়ার নাকে মুখে স্মেলটা প্রবলেম করছে! তাই তো বমি হচ্ছে, [ বলেই আবার মিররের দিক তাকাতেই আসিফের চোখাচোখি হোওয়ায় জুসটা বেসিনের পাশে রেখে ]

– ভাইয়া আর কিছু লাগবে? [ আসিফ মাথা নাড়িয়ে কাছে আসতে ইশারা করলো, সারভেন্ট মাথা এগিয়ে দিলে আসিফ কানে কানে কি যেনো বলতে থাকে, মার্জান ও মাথা কিছুটা এগিয়ে কান পেতে রাখলো, কিন্তু কিছুই শুনতে পারলো না, সারভেন্ট মাথা নাড়িয়ে বেড়িয়ে গেলো, কথা শেষে আসিফ মার্জানের দিক তাকাতেই ]

মার্জান : [ তাড়াহুড়ো করে ঠিক হয়ে দাঁড়িয়ে ] রিভেঞ্জ নিচ্ছেন আমার কাছ থেকে? আমি কিছু বুঝি না ভেবেছেন? কি শিখিয়ে দিয়েছেন ওনাকে হ্যা? [ আসিফ পাশমুড়ে মার্জানেরদিক এক পা এগিয়ে দিতেই পিছিয়ে গিয়ে পাশের বেসিনের সাথে লেগে দাড়ালো মার্জান ]

– দে..দেখেন তখন থেকেই আপনি আমার ইন্সাল্ট করে যাচ্ছিলেন সবার সামনে,তাই আমিও রিভেঞ্জ নিয়েছি আপনার কাছ থেকে.. হ্যা.. আ..আমারটা এ..একটু ওভার হয়েছে বুঝতে পারছি…কিন্তু এখন দুজনের বরাবর! মানে সে্ইম সে্ইম! এরপর ও যদি আপনি আপনার চামচা-টামচা দিয়ে কিছু করিয়ে ছাড়েন না..তাহলে দেখবেন আমি…[ বলতেই থমকে চুপ হয়ে যায়, আসিফ তার দু-হাত বেসিনে রেখে মার্জানের একদম কাছে মাথা নুয়ে দাড়ালো ]

আসিফ : থেমে গেলে কেনো? বলো তুমি! কি করবে?

মার্জান : কক..করবো! আগে জেনে তো নেই..আপনি কি করছেন!

আসিফ : এতো কেপে কেপে বলছো কেনো? ভয় লাগছে আমাকে?

মার্জান : না তো.. ভব..ভয় কেনো পাবো আপনাকে! নেভার কক..কখনোই না!

আসিফ : আমি ওকে জাষ্ট বলেছি! বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে,ভেতরে কেউ আসলে যেনো ইনফর্ম করে, কারণ…

মার্জান : [ শকড হয়ে ] কারণ?

আসিফ : [ মুচকি হেসে ] কারণ,তুমি জ্যামস ওয়াসরুমে, কেউ দেখলে তোমাকে খারাপ ভাববে!

মার্জান : দেখেন কে কি ভাববে সেটা জানার আমার বিন্দু পরিমাণ ও ইন্ট্রেষ্ট নেই! আমি তো জাষ্ট এসেছি আপনাকে…

আসিফ : হ্যা! বলো আমাকে?

মার্জান : দূ..দূরে সরে দাড়ান! আপনি..এতো কাছে এসে দাড়িয়েছেন কেনো? [ আসিফ মুচকি হেসে হাতেহাত বটে সোজা হয়ে দাড়ালো, মার্জান কিছুক্ষণ চুপ হয়ে একবার আসিফের দিক আরেকবার অন্যদিক তাকাতে লাগলো ]

– [ মনে মনে ] কি আজিব! এভাবে ঘুরঘুর করে তাকাচ্ছে কেনো! [ আর না ভেবে, সামনে চলে আসা চুল গুলো কানে বটে, বেড়িয়ে যাওয়ার জন্য দু-পা বাড়াতেই, হঠাৎ হাত ধরে একটানে, একই জায়গায় আবারো দাড় করিয়ে নিলো আসিফ, মার্জান ভোর কুচকে শকড হয়ে তাকালো ]

আসিফ : এমনিতে মরিচ ছাড়া আর কিছু দিয়ে তো রিভেঞ্জ নিতে পারো না তুমি,ইউ নো! এর চেয়ে বড় রিভেঞ্জ নেওয়ার ক্যাপাসিটিই তোমার কাছে নেই! [ বলেই হুট করে নিজের ঠোট দিয়ে মার্জানের ঠোটে শক্ত করে চেপে চুমু দিয়ে রাখলো, চোখ দুনোটা বড় হয়ে গেছে মার্জানের, কয়েক সেকেন্ডের জন্য মনে হয়েছে সে পৃথিবীতেই নেই ]

আসিফ : [ ধীরেধীরে ঠোট ছেড়ে মার্জানের চোখের দিক তাকিয়ে ] কখনো কখনো আমার মতো ও রিভেঞ্জ নিতে শেখো! মিস্ এংগ্রী বার্ড! [ বলেই মার্জানের ওড়নার আচলটা টেনে নিয়ে ঠোটে লেগে যাওয়া লিপিষ্টিক গুলো মুছে নেই, মার্জান এখনো শকিং এক্সপ্রেশন নিয়ে চেয়ে আছে আসিফের দিক, আসিফ ও চোখ টিপ মেরে দাত দিয়ে ঠোট কামড়ে ধরে একটি হাসি দিয়ে বেড়িয়ে চলে গেলো, শকিং এখনো শেষ হলোনা মার্জানের, আকাশের সবচেয়ে বড় বাজটায় যেনো তার মাথায় পড়লো, মুখ হাত দিয়ে চেপে ধরে আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়ে হুরহুর করে পাশের লেডিস ওয়াসরুমে চলে গেলো ]

মার্জান : [ মনেমনে ] ছিইইইইই! কি অসভ্য! আর আমিই বা কেমন? ও যখন কাছে এসেছিলো তখন ধাক্ষা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেওয়া উচিৎ ছিলো তো তাই না?

– কিন্তু ও কাছে আসাতে আমি কিছু বললামই না, মুখ দিয়ে কিছু বেরুচ্ছিলোই না, এমন কেনো লাগছিলো যেনো হৃদস্পন্দন গুলো খোলা হাইওয়ে পেয়েছে, তীব্র গতিতেই চলছিলো তখন!

– ছিঃ ছিঃ ছিইইই! আমি এসব কি ভাবছি!

___________এইদিকে,
সবাই বাড়ি ফেরার জন্য রেডি,হলের বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছে সবাই, গাড়ী সব পার্কিং থেকে হলের সামনে এসে দাড়াচ্ছে,

স্নেহা : শায়লা! এই মার্জানটা কই গেলো বলতো! রিং পড়ানোর সময় ও ওকে কাছে দেখলাম না,

শায়লা : আরে হবে কোথাও! [ চোখ মেরে ] আই মিন আসিফের সাথেই হবে নিশ্চয়…

স্নেহা : কিন্তু আসিফ তো রাহুলের সাথে কথা বলছে ঐ দেখ!

শায়লা : আরে হ্যা!

স্নেহা : কোথায় গেছে মেয়েটা! আমাদের যাওয়ার সময় হয়ে গেছে, বেরুতে হবে তো তাই না,

শায়লা : আচ্ছা টেনশন নিস না! আমি খুজে আনছি তুই দাড়া! [ বলেই খুজতে চলে গেলো ]

হঠাৎ স্নেহার দিক এগিয়ে এলো,

রাহুলের মা : আরে স্নেহা! টেনশনে মনে হচ্ছে! কাউকে খুজছো নাকি?

স্নেহা : না..নাহ! তেমন কিছুই না, এক্সুলি মার্জানকে দেখা যাচ্ছে না, যাওয়ার ও সময় হয়ে গেছে,

রাহুলের মা : আরে ওকে তো দেখলামই কিছুক্ষণ আগে,আচ্ছা দাঁড়াও আমি কাউকে পাঠিয়ে খুজে আনছি,

স্নেহা : না না..অতোকিছুর দরকার নেই, শায়লা গিয়েছে! হয়তো এদিকে কোথাও হবে!

রাহুলের মা : [ হেসে ] আচ্ছা ঠিকাছে! [ বলতেই দেখে জারিফা এবং স্নেহার মা ও পাশে এসে দাড়ালো ]

জারিফা : সব রেডি স্নেহা! এবার চল!

স্নেহার মা : আরে এই শায়লা আর মার্জান কই গেলো আবার?

রাহুলের মা : [ হেসে ] শায়লা গিয়েছে মার্জানকে খুজতে! আর যাওয়ার এতো তাড়া কিসের? ধীরেসুস্থে যান!

জারিফা : ওহো আন্টি! তাড়া থাকবে না? একটু পড়ই সকাল হতে চলবে, আর আপনাদের বউমাকে ঘরে তোলার এতো তাড়া যে গায়ে হলুদের পরের একটা দিন যে রেষ্ট করবো সেটাও রাখলেন না,

রাহুলের মা : আরে এতে আমার কি দোষ! আমি তো চেয়েছিলাম সব সাজিয়ে-গুছিয়ে করবো কিন্তু [ বলতেই দেখে রাহুল এগিয়ে এসে হুট করেই মাঝ থেকে স্নেহার হাত ধরে টেনে এগিয়ে নিয়ে চলে যায় ]

রাহুলের মা : [ হেসে ] দেখলা? কার কতো তাড়া আছে তাতো জানিনা কিন্তু এর অনেক তাড়া!
– আমাকে তো বিকেলে অনেক ঝাড়িটাড়ি দিলো, ও যতোবারই নাকি স্নেহাকে একদম তার নিজের করতে চাই তখনি নাকি বারবার কেউ না কেউ বাধা প্রধান করে এবং ঐ লিষ্টে নাকি এখন আমিও যোগ হয়েছি, [ জারিফা আর স্নেহার মা হেসে উঠলো ]

রিদোয়ান : [ এগিয়ে এসে ] হ্যালো গাইস্! কি কথা হচ্ছে আমাকে ফেলে? আরে এই দুলা-দুলহান কই গেলো?

জারিফা : দুলা নিয়ে গেছে দুলহানকে! কোনো এক জায়গায়,লাষ্ট মুহুর্তের লাষ্ট রোমেন্স করতে!

রিদোয়ান : তো কোনো এক জায়গায় যাওয়ার কি দরকার এইখানে করলেও তো পারতো! [ সবাই অবাক হয়ে তাকালো রিদোয়ানের দিক ]

রিদোয়ান : [ হেসে ] আরে এভাবে কেনো দেখছো, রাহুলের জন্য নতুন কি সবার সামনে রোমেন্স করার [ স্নেহার মায়ের দিক তাকিয়ে ] তাই না আন্টি? আন্টিও অনেক দেখেছে তার মেয়ের বরের রোমেন্স! [ সবাই আবারো হেসে উঠলো ]

রাহুলের মা : আরে! আমার ছেলেটা একটু বউ পাগলা আরকি! তাতে কি হয়েছে? ছেলেদের এমনিতেও এমন হওয়া উচিৎ!

জারিফা : দ্যাটস্ রাইট আন্টি! কিন্তু এমন ছেলে আজকাল পাওয়া ও অনেক মুশকিল! [ বাকিরা বুঝতে পারলো কাকে ডেডিকেট করে বলছে, রিদোয়ান ও আর দেরী কিসের এক মিনিট ও অপেক্ষা করলো না, সাথেসাথেই জারিফার গালে একটি কিস করে বসলো, জারিফা অবাক হয়ে পাশ ফিরে তাকাতেই রিদোয়ান হেসে দিলো দৌড়, বাকিরা হাসতেই রইলো ]

____________ এইদিকে নিরিবিলি এক কোণে,স্নেহা দাঁড়িয়ে আছে দেওয়ালের সাথে লেগে, রাহুল দেওয়ালে হাত রেখে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক,

স্নেহা : এভাবে আনাটা ঠিক হয়নি আপনার!

রাহুল : আচ্ছা তাই?

স্নেহা : নয়তো কি? সবাই নাজানি কি কি ভাবছে এখন!

রাহুল : এক্সকিউজ মি! সবাই কি ভাবছে মানে? অন্য কাউকে টেনে আনিনি! আমার বউকে আমি টেনে এনেছি!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] বউ এখনো হইনি!

রাহুল : তাতে কি হয়েছে? আমি মন থেকে মেনে নিয়েছি মানেই তুমি আমার বউ হয়ে গেছো! এসব প্রোগ্রাম টোগ্রাম তো মানুষ জাষ্ট সবই শো অফের জন্য করে!

স্নেহা : মোটেও না! সব ধর্মেরই আলাদা আলাদা একটা রীতি আছে বিয়ের, হ্যা! এসব প্রোগ্রাম করাটা জরুরি নয়,তবে রীতি অনুযায়ী বিয়ে করাটাও জরুরী, নাহলে হাজবেন্ড ওয়াইফ মানা যায় না, [ বলেই রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] বুঝেছেন?

রাহুল : [ বিরবির করে ] এক্সট্রা লজিক! [ বলেই হেসে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

স্নেহা : কি বললেন বিরবির করে?

রাহুল : আরে স্নেহা! মন থেকে বড় রীতি আর কি হতে পারে বলো? কাগজে কলমে সই করে দিয়ে শুধু দুনিয়াকে দেখানো যায় যে তুমি আমার বউ, আসল তো আগে মন থেকে মেনে নিতে হবে তাই না?

স্নেহা : হুমম! সেটাও রাইট!

রাহুল : রাহুল অলোয়েজ রাইটই বলে! [ with tedi smile ] সো্ স্নেহা! এখন তো মানছো তাই না? তুমি! আমার বউ! [ মুচকি হেসে মাথা নাড়ালো স্নেহা ]

রাহুল : [ ও মাথা নাড়িয়ে ] ওখেই! সো্ ইউ নো দ্যাট! হাজবেন্ড যা যা বলে তা নাকি বউদের সরাসরি মেনে নিতে হয়!

স্নেহা : [ হেসে ] হুম তারপর?

রাহুল : হাসছো কেনো? সত্যিই বলছি এর আগে শুনোনি তুমি? না শুনলে যার থেকেই ইচ্ছে তার থেকে জিজ্ঞেস করে নিও! হাজবেন্ড এর কথা না শুনলে নাকি গুনাহ হয়!

স্নেহা : হ্যা! হ্যা! তারপর…

রাহুল : [ হেসে ] সো্ বলছিলাম যে, যেহেতু গুনাহ হবে, তাই চুপচাপ মেনে নাও! আমি এখন কিস্ করবো! [ বলেই স্নেহার ঠোটের দিক নিজের ঠোট এগুচ্ছিলো তখনি ]

স্নেহা : [ রাহুলের মুখে হাত রেখে বাধা দিয়ে ] কি করছেন আপনি? কেউ এসে গেলে!

রাহুল : আরে কেউ আসবে না! এতো ভয় পাচ্ছো কেনো,দেখো তুমি হাজবেন্ড এর কথা রিফিউজড করছো গুনাহ হবে তো!

স্নেহা : [ হেসে,হাত তুলে দু-দিকের গাল টেনে দিয়ে ] গুনাহ! তখনি হবে যখন ব্যাপারটা লজিক্যাল হবে! এবার চলুন লেইট হচ্ছে সবাই আমাদের অপেক্ষা করছে! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো তখনি ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ফেলে ] আরে স্নেহা! লজিক্যাল মানে? এটাও তো আমার হক! [ পেছন ফিরে তাকালো স্নেহা ]

রাহুল : [ হেসে মাথা চুলকাতে চুলকাতে ] না মানে বলছিলাম যে জাষ্ট কিসি্ই তো! [ স্নেহা ও মুচকি হেসে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার কি ভেবে দাড়িয়ে পড়লো কে জানে, তা দেখে রাহুল ও মুচকি হাসলো,পেছনে ফিরে আবার রাহুলের দিকই এগিয়ে এলো স্নেহা! তাকিয়ে আছে রাহুল স্নেহার চোখের দিক, ধীরেধীরে পা আলগে তুলে রাহুলের গালে আলতো করে চুমু খেলো! ]

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] জানতাম তুমি হাজবেন্ডকে নিরাশ করবা না!

স্নেহা : হ্যা! সেটা তখনি, যখন হাজবেন্ডটা বউকে আপনার মতো এত্তোগুলা ভালোবাসে [ Rahul give e tedi smile ]

স্নেহা : এবার চলেন! [ বলেই হাটা ধরলো, রাহুল হেসে ঘাড়ে হাত রেখে চুলকাচ্ছে আর ব্লাশিং হচ্ছে ]

স্নেহা : [ কিছুদূর হেটে গিয়ে আবার পেছন ফিরে ] আরে কি হলো? চলেন!

রাহুল : ই..ইয়াহ! কাম ইন! [ বলেই দৌড়ে এসে দাড়ালো স্নেহার পাশে, দুজনেই একসাথে এগিয়ে গেলো বাকিদের কাছে ]

জারিফা : ওহো! আপনাদের রোমান্স তাহলে এবার শেষই হয়েছে তাই না!

রাহুল : [ হেসে জারিফার মাথায় বাড়ি দিয়ে ] শাট-আপ ইয়ার!

স্নেহা : [ মার্জানের দিক এগিয়ে গিয়ে ] কোথায় ছিলি মার্জান তুই?

মার্জান : এইতো এইদিকেই ছিলাম!

স্নেহা : এইদিকে?

মার্জান : আচ্ছা চল এবার! আমার অনেক টায়ার্ড লাগছে! [ বলেই এগিয়ে গিয়ে গাড়ীর দরজা খুলে বসে যায়, স্নেহা ও আর কিছু বললো না, বাকিরা ও এক এক করে উঠতে লাগলো গাড়ীতে, স্নেহা গিয়ে রাহুলের বাবা-মা এবং বাকিদের থেকে বিদায় নিয়ে গাড়ীতে উঠতে যাবে তখনিই রাহুল এসে গাড়ীর দরজা আরো পাশ করে খুলে দেই, মুচকি হেসে উঠে বসলো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার শাড়ী এবং ওড়না ভালো করে গাড়ীর ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে জানালায় হাত রেখে উকি দিয়ে ] বাই গাইস্!

জারিফা : ওহো জিজু! এতো কেয়ারিং চলছে!কালকের জন্য ও কিছু বাচিয়ে রাখুননা!

রাহুল : বাচিয়ে রাখতে হবে না! [ With tedi smile ] ওর জন্য তো সবই অফুরন্ত!

জারিফা : ব্যাস ব্যাস জিজু! স্নেহা লাল হয়ে যাচ্ছে! [ বলতেই স্নেহা চিমটি দিলো জারিফাকে ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] বাই!

স্নেহা : বাই! [ সরে দাড়ালো রাহুল, গাড়ী টান দিয়ে চলে গেলো ]

________ ভোর ৪টা বেজে ২০ মিনিট! বাড়ী এসে সবাই কাপড়-চোপড় জিনিষপত্র খুলছে!

স্নেহা : আরে! মা রাশু কোথায়? ওকে দেখছি না যে?

স্নেহার মা : ওর চিন্তা বাদ দে! ও আছে ওর মজাই!

স্নেহা : মানে?

জারিফা : একশয়তান আরেক শয়তানকে নিয়ে গেছে! ঐ যে কথায় আছে না শয়তান শয়তান ভাই ভাই

শায়লা : ওকে রিদোয়ান সাথে নিয়ে গেছে, আমরা তো অনেক বললাম, কিন্তু ও এলো না,

স্নেহার মা : উল্টো বলছে ও নাকি আজ থেকে কনে পক্ষ না, বর পক্ষ! [ বলেই হেসে কাপড়-চোপড় বিলিয়ে দিয়ে চলে যায় পাশের রুমে ]

স্নেহা : আচ্ছা?..কিন্তু তাও…

জারিফা : ডোন্ট ওয়ারি স্নেহা! আমার কথা হয়েছে রিদোয়ানের সাথে ওরা সবাই রাহুলের গেষ্ট হাউজেই আছে একসাথে! [ স্নেহা ও আর কিছু বললো না,তাওয়েল নিয়ে মুখ মুছে,খাটে শুয়ে পড়লো,কম্বল টেনে নিতেই হঠাৎ পাশে মার্জানের দিক চোখ পড়লো,একধ্যানে উপরের দিক তাকিয়ে সোজা হয়ে শুয়ে আছে মার্জান ]

স্নেহা : মার্জান?

মার্জান : হুমম?

স্নেহা : তুই ঠিকাছিস?

শায়লা : [ পাশে এসে শুয়ে ] আরে আমার ওতো একই প্রশ্ন কখন থেকে এক ধ্যানে উপরের দিক তাকিয়ে আছে, গাড়ীতেও আমরা বকবক করে গিয়েছি আর ও রোবোট হয়ে বসে ছিলো!

জারিফা : [ লাইট বন্ধ করে এসে কম্বল টেনে শুয়ে ] আরে মার্জান কোনো আসিফের ধ্যানে মগ্ন হয়ে আছিস নাকি?

মার্জান : [ জোড়ে একটি নিশ্বাস ছেড়ে ] মোটেও না! [ বলেই মুখের উপর কম্বল টেনে দেই, বাকিরা ও হেসে শুয়ে পড়ে ]

হঠাৎ, কিছুক্ষণ পর,

মার্জান : [ মুখ থেকে কম্বল সরিয়ে ] স্নেহা!

স্নেহা : হুমম!

মার্জান : তুই কি রাহুলের সাথে কিস্ করেছিস? [ জারিফা আর শায়লা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো, স্নেহা ও অবাক হলো মার্জান হঠাৎ এমন প্রশ্ন করাই ]

জারিফা : আরে! মার্জান স্নেহা রোমেন্স কিং এর সাথে রিলেশন করেছে, মানে বুঝতে পারছিস কতোবার কিস্ করেছে!

– তুই বরং এটাই জিজ্ঞেস কর! স্নেহা রাহুলের সাথে রিলেশন হওয়ার পর তুই কোনদিন কিস্ করিসনি! [ বলেই আবার হাসতে লাগলো ]

স্নেহা : [ জারিফাকে চিমটিয়ে ] হ্যা! বলেছে তোকে শয়তান কোথাকার!

শায়লা : আরে মার্জান! কিন্তু এতো রাতে হঠাৎ! তোর কিসে্র কথা কেনো মনে পড়লো?

জারিফা : বলেছিলাম না আমি হান্ড্রেট পার্সেন্ট শিয়র ও আসিফকে নিয়েই ভাবছে তাই না! মার্জান?

মার্জান : আরে তেমন কিছুই না পাগল নাকি ওকে নিয়ে কেনো ভাববো? ব্যাস এমনিতেই জিজ্ঞেস করছি! রাহুল যখন ওকে ফাষ্ট কিস্ করেছিলো তখন ওর কেমন ফিল হয়েছে! ব্যাস এইটুকুই, কাল স্নেহার বিয়ে হয়ে যাবে এরপর কি আর জিজ্ঞেস করতে পারবো নাকি!

জারিফা : [ হেসে ] আরে আর দুটো দিন পর জিজ্ঞেস করলে, কিস্ কেনো স্নেহা তোকে আরো অনেক কিছুর এক্সপেরিয়েন্স জানিয়ে দিতো!

স্নেহা : জারিফাআআআআ!

জারিফা : [ হেসে ] ওকে সরি সরি!

শায়লা : বাই দ্যা! ওয়ে জারিফা নাহয় তুই বল! তোর কেমন ফিল হয়েছিলো ফাষ্ট কিসে্!

জারিফা : এহহ! আমি কেনো বলবো! আগে স্নেহা থেকে কুয়েশ্চন করেছে!

স্নেহা : [ মুখের উপর কম্বল টেনে ] আমার ঘুম পাচ্ছে গাইস্ গুড নাইট!

মার্জান : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] আরে স্নেহা বলনা!

শায়লা : হ্যা! স্নেহা বলনা! আমরাও তো একটু শুনি আমাদের রাহুল এবং স্নেহার রিলেশনের কখন থেকেই রোমান্স স্টার্ট হয়েছে! হুমহম!

স্নেহা : রিলেশন তো দূরের কথা! ওকে দেখলেই তখন আমার ভয় হতো! তখনি একদিন হলরুমে! ও হঠাৎ করে কিস্ করেছিলো! ফুললি আনেক্সপেক্টেড!

শায়লা : কিস্ দিয়েই সব শুরু! তাইতো বলি তোদের প্রেম এতো মিষ্টি কেনো!

জারিফা : আরে আমি ভালোবেসেছি, তবে সময়ের অপেক্ষা কেনো করবো! তখনি রাহুলের মন বলছিলো, চুম্মা চুম্মা দে দে! [ বাকিরা হেসে উঠলো ]

শায়লা : আচ্ছা নেক্সট নেক্সট স্নেহা তারপর কি হয়েছে বল না!

স্নেহা : তারপর ঘোড়ার ডিম হয়েছে! এবার ঘুম যা [ বলেই শক্ত করে মাথায় কম্বল টেনে শুয়ে পড়লো ]

শায়লা : এইই জারিফা এবার তুই বল?

জারিফা : ভাই আমাদের কিস্ তো রিলেশনের পরই হয়েছিলো! ব্যাস এটাই বলবো! বাকি ডিটেইল বলা যাবে না কেমন ফিল হয়েছে! ছিঃ তোদের লজ্জা করে না এসব শুনতে ছোট ছোট বাচ্চারা এগুলো কি শোনার জন্য বসে আছিস যা ঘুম যা [ বলেই কম্বল টেনে পাশ মুড়ে শুয়ে গেলো, স্নেহাও জারিফার কথা শুনে কম্বলের ভেতর হাসতে লাগলো ]

শায়লা : আচ্ছা আমরা ছোট বাচ্চা তাই না? বাই দ্যা ওয়ে মার্জান! তুই চিন্তা করিসনা! আসিফকে বললে ও তোকে ফিল করিয়ে দিবে! [ বলতেই আড়চোখে তাকালো মার্জান,শায়লা কিটকিটিয়ে হেসে মুখের উপর কম্বল টেনে শুয়ে পড়লো ]

মার্জান : [ উপরের দিক তাকিয়ে মনে মনে কাদো ভাবে ] বলার দরকার হলো কই! আমার ভার্জীনিটাই শেষ করে দিলো,শয়তান একটা! [ এভাবেই ভাবতে ভাবতে চোখ লেগে এলো সবার ]

_________ সকাল ১১ টা বেজে ৪৫ মিনিট! ফোন বেজে চলছে স্নেহার! কিন্তু খবরই নেই কারো, বেঘোরের মতোই ঘুমিয়ে আছে সবাই!

পাশের রুম থেকে,

স্নেহার মা : [ এগিয়ে এসে ] আরে ফোন বাজছে স্নেহা রিসিভ করছিস না কেনো? [ বলেই ফোন হাতে নিয়ে রিসিভ করে ] হ্যালো! কে?

রাহুল : গুড মর্নিং আন্টি!

স্নেহার মা : আরে রাহুল! গুড মর্নিং!

-এক সেকেন্ড দাঁড়াও ও ঘুমাচ্ছে তো তাই!আমি এক্ষুনি ডেকে দিচ্ছি! [ বলেই মোবাইল কান থেকে সরিয়ে নেড়ে নেড়ে ডাকতে থাকে স্নেহাকে ]

রাহুল : [ গাড়ী একপাশে সাইড করে রেখে ] আরে আন্টি! দ্যাটস্ ওকে! ঘুমালে ঘুমুতে দিন! ডাকতে হবে না! আমি পড়ে কথা বলে নিবো!

স্নেহার মা : স্নেহা ওঠনা!

স্নেহা : ওহো! মা আরেকটু ঘুমুতে দাওনা!

স্নেহার মা : আরে রাহুল ফোন করেছে! নে ধর কথা বল, [ বলেই স্নেহার কানে লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো ]

স্নেহা : হ্যালো! [ বলতেই রাহুল মুচকি হেসে উঠলো, স্নেহার ঘুমন্ত কন্ঠটি যেনো তার আজকের সকালটি আরো মধুর করে দিয়েছে ]

রাহুল : নাইস্ [ বলতেই রাহুলের কন্ঠ শুনে স্নেহার মনে বাড়ি খেয়ে উঠলো,চোখ খুলে হুট করে উঠে বসলো ]

রাহুল : এক্সুলি আমি নিষেধ করেছি আন্টিকে তাও ডেকে দিয়েছে! এনিওয়ে ঘুমাও তুমি আমি পরে কল দিবো!

স্নেহা : [ কম্বল সরিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে ] না নাহ! সমস্যা নেই বব..বলেন!

চলবে….

Love At 1st Sight Season 3 Part – 50

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 50

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা খুশিতে তালি দিয়ে কখন যে রাহুলের হাত জড়িয়ে ধরে রাখলো খেয়ালই নেই! রাহুল বুঝতে পেরে হেসে তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক, স্নেহা ও খেয়াল করতে পেরে চিমটি দিয়ে আড়চোখে তাকালো রাহুলের দিক,

রাহুল : আহহ! স্নেহা!

স্নেহা : আমার দিক নয় ডান্স ফ্লোরের দিক তাকান!

_________এইদিকে,

মার্জান : [ আসিফের দিক এগিয়ে গিয়ে চিৎকার করে ] শুনেন! ভোট নিবেন বললেন না? কোথায়?

আসিফ : [ কানে হাত রেখে মাথা এগিয়ে দিয়ে ] কি বলছো শুনছি না!

মার্জান : [ আরো জোড়ে চেচিয়ে ] ভোট কোথায়?

আসিফ : শুনছিনা মিউজিকের আওয়াজে!

মার্জান : আরে বলছি আপনি বললেন না ভোট নিবেন সবার কাছ থেকে!

আসিফ : নোট?

মার্জান : ভোট, ভোটটট!

আসিফ : [ পকেটে হাত রেখে ] আপাতত পকেটে দু-টাকার নোট আছে! চলবে?

মার্জান : ইউউ…ইডিয়ট!

আসিফ : [ ডান্স করে করে ] এক্সুলি মিউজিক চলছে তো তাই কন্ট্রোল করতে পারছি না নিজেকে!

মার্জান : [ মুখ ভেংগিয়ে ইচ্ছে করেই গায়ে লেগে ধাক্ষা দিয়ে ] উফফ! সরি! [ বলেই চোখ টিপ মেরে নেচে নেচে শায়লার পাশে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে, হাসতে থাকে আসিফ ]

শায়লা : [ তালি দিয়ে লাফিয়ে উঠে ] উফফ গাইস্! কি না ডান্স! ছিলো..কিন্তু সবাই ডান্স দিচ্ছে আমি বাদ যাবো কেনো?

রিদোয়ান : ওহ! নটি গার্ল হোয়াই আর ইউ ওয়েটিং?

জারিফা : আরে তো যা না… [ বলেই ডান্স ফ্লোরের দিক ধাক্ষা দিলো ]

মার্জান : হেইই! শায়লা ঐ গানটায় ওকে?

শায়লা : [ দৌড়ে চেচিয়ে ] ওকে!

___________ মিউজিক ~~~

♪♪ মুনডা থোডা অফবিট হে ♪♪
♪♪ পার কুরিয়া দেনাল বহোদ সুইট হে ♪♪

♪♪ ডোংগিসা্ ইয়ে বাডা ডিট হে ♪♪
♪♪ ভাইরাল হোগেয়া ইয়ে টুইট ♪♪

[ তাল সামলাতে না পেরে রিদোয়ান ও নেচে নেচে এগিয়ে গেলো ডান্স ফ্লোরে ]

♪♪ পার ফুল ভুল কারনে মে কুল ♪♪
♪♪ তু বাডি তেজ কিটারি হে ♪♪

♪♪ সাগান তেরি কি, লাগান তেরি কি ♪♪
♪♪ হামনে কারদি তায়ারি হে ♪♪

[ আসিফ ও পেছন থেকে এগিয়ে শোল্ডার দিয়ে মার্জানকে ধাক্ষা দিয়ে দৌড়ে জয়েন করে ডান্স ফ্লোরে ]

♪♪ নাচদে নে সা্রে রাল মিলকে ♪♪
♪♪ আজ হিল ডুল কে ♪♪
♪♪ লে সা্রে কে সা্রে নাজা্রে ♪♪

♪♪ নাচদে নে সা্রে রাল মিলকে ♪♪
♪♪ আজ হিল ডুল কে ♪♪
♪♪ লে সা্রে কে সা্রে নাজা্রে ♪♪

♪♪ খাস্ মানু খানে ♪♪

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইয়ার মার্জান, চলনা আমরা ও যায়,

[ মার্জান কোনো জবাব দিলো না, রাগ চাপা হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে আসিফের দিক, ঐ দিকে রাহুল ও সি্টে বসে হাত নাড়িয়ে, নেচে নেচে শিসস বাজাতে লাগলো, সাথে স্নেহাকে ও টিস্ করে করে ধাক্ষাতে লাগলো,জারিফার চোখ পড়তেই সে ও দৌড়ে গিয়ে রাহুল স্নেহা, দুজনকেই টানতে থাকে ডান্স ফ্লোরে আসার জন্য, স্নেহা তো হাত ছুটিয়ে আবারো বসে পড়লো সিটে, কিন্তু রাহুলকে আর কে থামায়, জারিফার হাত ধরে নিয়ে সে ও নেচে নেচে এগিয়ে চলে আসে ডান্স ফ্লোরে ]
_______ ♪♪

♪♪ জোর জোরসে্, সোর বোর কারে ♪♪
♪♪ ডিজে গানে বাজানে আ ♪♪
♪♪ রুঠডে রুঠডে জিজা, ফুফাদ ♪♪
♪♪ হামনে সা্রে মানানে হা ♪♪

রিদোয়ান : [ মার্জান এর দিক দৌড়ে এসে ] আরে ডার্লিং তুমি আবার এইখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো! [ বলেই টেনে নিয়ে চলে যায় ডান্স ফ্লোরে ]

♪♪ পার ফুল ভুল কারনে মে কুল ♪♪
♪♪ তু বাডি তেজ কিটারি হে ♪♪

♪♪ সাগান তেরি কি, লাগান তেরি কি ♪♪
♪♪ হামনে কারদি তায়ারি হে ♪♪

♪♪ নাচদে নে সা্রে রাল মিলকে ♪♪
♪♪ আজ হিল ডুল কে ♪♪
♪♪ লে সা্রে কে সা্রে নাজা্রে ♪♪

♪♪ নাচদে নে সা্রে রাল মিলকে ♪♪
♪♪ আজ হিল ডুল কে ♪♪
♪♪ লে সা্রে কে সা্রে নাজা্রে ♪♪

সবাই আনন্দে মেতে উঠে আরো অনেকেই জয়েন করে ডান্স ফ্লোরে একসাথেই উরাধুরা ডান্স করতে লাগলো একের পর এক গানে, রাহুল তার মা এবং স্নেহার মা কে ও টেনে নিয়ে চলে আসে ডান্স ফ্লোরে, অন্যদিকে রিদোয়ান, আসিফ এবং রাশু মিলে স্নেহার বাবা এবং রাহুলের বাবাকে না চাইতেও জোড় করে করে নাচাতে লাগলো, স্নেহা বসে বসে দেখছে আর হাত তালি দিচ্ছে, খুশিতে যেনো তার চোখ থেকে এক্ষুণিই পানি গড়িয়ে পড়বে,

একদুঘন্টা একনাগাড়ে নাচানাচি করে হাপিয়ে উঠে স্নেহার পাশে এসেই বসলো রাহুল,মুচকি হেসে তাকিয়ে আছে স্নেহা, উইন্টার সিজন অথচ তাও ঘাম দিচ্ছে রাহুলের শরীরে, ওড়নার আচল তুলে ঘাম মুছে দিতে লাগলো স্নেহা,রাহুল ও চান্স পেয়ে এদিক আছে ওদিক আছে বলে বলে ইচ্ছে করেই স্নেহার দিয়ে আরো এক্সট্রা মুছাতে লাগলো, অতপর রাহুলের হাসিতে স্নেহা বুঝতে পেরে যা শক্তি ছিলো তা দিয়েই দিলো আবার চিমটি,

আসিফ : হেই গাইস্ কাম!

রাহুল : কোথায়?

আসিফ : ডিনার করতে!

রাহুল : অহ! শিয়র! শিয়র, আমার তো অলরেডি ক্ষিধেই পেটের মধ্যে ডান্স চলছে,কাম স্নেহা! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে নামিয়ে নিলো ]

ডিনার টেবিলে আসতেই দেখে, বাকিরা আগে থেকেই বসে আছে,

জারিফা : মিসেস্ রাহুল, আপনি তো ডান্স মাষ্টার, আজ সবাই ডান্স করলো অথচ আপনি একটু ও ডান্স করলেননা!

স্নেহা : আমি তোদের বিয়েতে ডান্স করবো তাই!

জারিফা : হুমম! তাতো অবশ্যই বাট তাও নিজের বিয়ে বলে কথা,

হঠাৎ,

রাহুলের মা : [ এগিয়ে এসে ] আরে তোমরা এখনো শুরুই করোনি, ক্ষিধে পাইনি তোমাদের? না খেয়ে ডান্স করতে করতে তো আজ সবাই শুকিয়ে যাবা!

মার্জান : এক্সুলি আন্টি আমরা না আপনার জন্য ওয়েট করছিলাম!

আসিফ : হ্যা! অলরেডি এক প্লেট খেয়ে!

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] আপনি কখন দেখলেন আমাকে খেতে?

রাহুলের মা : [ আসিফের মাথায় বাড়ি মেরে ] শয়তান! এমন করছিস কেনো ওদের, যা খেতে বয়!

আসিফ : [ মার্জানের বরাবর অপোজিটে বসে ] ওহো আন্টি! এই টেবিলে খাওয়ার পাবো বলে তো মনে হচ্ছে না,লিটল এলিফ্যান্ট বসেছে বলে কথা, [ বলেই চোখ টিপ মারলো মার্জানকে, বাকিরা হেসে উঠলো মুখে হাত দিয়ে ]

রাহুলের মা : কি বলছিস এসব এইখানে এলিফ্যান্ট আসবে কোথার থেকে, পাগল একটা! [ বলেই খাবার সার্ব করে দিতে লাগলো, নাকফুলিয়ে আসিফের দিক আড়চোখে তাকিয়ে রইলো মার্জান,যেনো এক্ষুণিই গিলে খেয়ে ফেলবে ]

রাহুলের মা : আচ্ছা তোমরা খাও! আমি আসি! [ এইদিকে, রাহুল ইচ্ছে মতো স্নেহার প্লেটে ঢালতে আছে ]

স্নেহা : আরেহ কি করছেন এসব? [ বলেই নিজের প্লেটটা রাহুলকে দিয়ে রাহুলেরটা নিয়ে নিলো, রাহুল ও কি করার তারটা পাশে বসা শায়লাকে দিয়ে শায়লার প্লেটটা নিয়ে নিলো ]

শায়লা : অহ মাই গড এত্তগুলা কে খাবে? [ বলেই পাশে বসা রিদোয়ানকে প্লেটটা দিয়ে রিদোয়ানের প্লেটটা নিয়ে নিলো, রিদোয়ানের আর খবর নেই পাশে বসা জারিফার দিক তাকিয়ে আছে ]

রিদোয়ান : [ জারিফাকে ফিসফিসিয়ে ] বেবী! খাইয়ে দাওনা!

জারিফা : কতো বছরের বাচ্চা আপনি?

রিদোয়ান : এইতো মাত্র! চব্বিশ হবে!

জারিফা : মাত্র?

রিদোয়ান : [ মাথা নাড়িয়ে ] ইয়েস্

জারিফা : [ ডেজার্ট থেকে চামচ কেটে নিয়ে রিদোয়ানের মুখে ঢুকিয়ে দিয়ে ] তাহলে তো আপনাকে এভাবে সেরেলাক খাওয়ানো উচিৎ! রাইস্ না!

রিদোয়ান : [ মুখ থেকে চামচটা প্লেটে রেখে ] তুমি না আসলে অনেক সেল্ফিশ হয়ে গেছো, আগে থেকে! [ শায়লার দিক তাকিয়ে ] আরে শায়লা আস্তে খাওনা লিপ স্টিক চলে যাবে তো!

শায়লা : [ চমকে উঠে ] যাক বাবা এখনো মুখেও দিলাম না! [ হেসে উঠলো বাকিরা ]

আসিফ : আরে তাড়াতাড়ি মুখে দাও নাহয় পড়ে পাবা না, মানে বুঝছো তো কি হতে পারে,

শায়লা : [ মার্জানের দিক তাকিয়ে শান্তনা দিয়ে ] আরে তোর কথা বলছে না,লিটল এলিফ্যান্ট এর কথা বলছে! [ খাবার মুখে হাসতে গিয়ে কেশে উঠলো আসিফ, পানি এগিয়ে দিলো রাহুল ]

শায়লা : [ তাড়াতাড়ি জিহবায় কামড় দিয়ে মার্জানের দিক তাকিয়ে ] সরি! আমি ওটা মিন করিনি! [ রাগান্বিত চোখে আসিফের দিক তাকিয়ে আছে মার্জান, আসিফ বুঝতে পারছে রাগে ফুলছে, যে কোনো মুহূর্তেই তার সাথে অঘটন ঘটিয়ে দিতে পারে, কিন্তু কি করার মজাও লাগছে অনেক তার,যা হবার হবে তাও রাগিয়ে ছাড়বে ]

আসিফ : আরে শায়লা! সত্য গোপন থাকে না মুখ পিছলে ও বেড়িয়ে যায়!

রিদোয়ান : [ মার্জানকে আরো খাবার সার্ব করে দিয়ে ] আরে ডার্লিং খাচ্ছো না কেনো! তুমি খেতে থাকো,ওর কাজই পাপির মতো বক বক করা!

মার্জান : থেংক্স! এন্ড নাইস এক্সাম্পল! [ মুচকি হাসলো আসিফ ]

অতপর, ডিনার শেষে সবাই হ্যান্ড-ওয়াস করে ধীরেধীরে উঠতেই যাচ্ছে,

মার্জান : [ তার প্লেটে থাকা চিকেনের কিছু হাড্ডি সহ প্লেটটা হাতে তুলে ধরে ] সো্ পাপ্পিস্ ফেভরিট ফুড ইস রেডি! [ আসিফের দিক তাকিয়ে ] আপনার ও একবার ও টেষ্ট করা উচিৎ! সবার প্লেটে প্লেটে ও আছে লাগলে আরো নিতে পারেন!

আসিফ : এক্সুলি আই ডোন্ট লাইক পাপ্পি বাট! আই থিংক এলিফ্যান্ট হলে ভালো হতো! অহ সরি, লিটল এলিফ্যান্ট,[ বলতেই মার্জান সামনে থাকা পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে, পানি সব ছুড়ে মারলো আসিফের মুখে ]

শায়লা : [ মুখে হাত দিয়ে ] অহ মাই গড! [ আসিফ, রাহুল,জারিফা তিনজনই কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো আসিফের হাল দেখে, মার্জান দাত দেখানো একটা হাসি দিয়ে হনহন করে চলে যায় ]

স্নেহা : ওয়াও! দিস্ ইস্ সো্ মাচ ফানি! [ এক্সাইটেড হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] কেন আই ট্রাই দিস রাহুল?

রাহুল : মানে?

স্নেহা : ওয়েট! [ বলেই টেবিল থেকে গ্লাসটা এগিয়ে নিয়ে,হুট করেই গ্লাসে থাকা পানি সব ছুড়ে মারলো রাহুলের মুখে, রাহুল তো হতভম্ব,চোখ কুচকে বন্ধ করে অতোটুকুতেই স্থির হয়ে গেছে, এক মুহুর্তের জন্য ও প্রস্তুত ছিলো না রাহুল ]

রিদোয়ান : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] বাহ বাহ! স্নেহা! গুড জব! দোস্ত তোকে এখনি লাগছে দুলার মতো! [ বলতেই হঠাৎ নিজের মাথায় ভেজা ভেজা কিছু অনুভব করতে লাগলো,মাথায় হাত দিয়ে উপরের দিক তাকাতেই, আর কিছু খেয়াল করতে পারলো না মুখের উপর আধা জাগ পানি ঢলে পড়লো শুধু এটাই বুঝতে পারলো ]

জারিফা : আমি ও বাদ যাবো কেনো,সবাই করেছে আমারও কি ইচ্ছে হয়না!

রিদোয়ান : [ ফু মেরে মুখ থেকে পানি ফেলে ] তাই বলে তুমি একধাপ এগিয়ে, গ্লাস থেকে ডিরেক্ট জাগ এ চলে গেলে,

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আরে! রাহুল! জাগেরটা ও একবার ট্রাই করি!

রাহুল : না স্নেহা! জাগ কেনো? আমি কি পানির ট্রাংক এনে দেবো?

স্নেহা : আরে না! পাগল নাকি!

জারিফা : [ স্নেহাকে টেনে নিয়ে ] চল স্নেহা!

স্নেহা : কোথায়?

জারিফা : আরে আয় না! [ বলেই টেনে নিয়ে চলে যায় ]

[ ওয়েটার মুচকি হেসে টিসুর বাক্স টেবিলে এগিয়ে দিলো ]

রাহুল : ব্রো আজকে কি হলি?

ওয়েটার : [ মুচকি হেসে ] না স্যার!

শায়লা : আপনাদের তো বাসায় গিয়ে আর শাওয়ার নিতে হবে না, আজই করিয়ে দিলো! [ হেসে ] এবার আমিও যায়..

রিদোয়ান : [ শায়লার ওড়না টেনে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে ] তুমি আবার কই যাও! [ বলেই শায়লার ওড়নার আচল দিয়ে মাথা মুছতে লাগলো, রাহুলের ও কি আর করার শায়লার ওপাশের আচল ধরে সেও মুছা শুরু করে দিলো ]

শায়লা : [ মাথা ঘুরিয়ে দু-পাশে চোখ বুলিয়ে ] এক্সকিউজ মি! আপনারা আমার ওড়নাটাই পেলেন মুছতে!

রিদোয়ান : দেখো তোমার ফ্রেন্ডসরা আমাদের সাথে বেইমানী করেছে, পানিশমেন্ট তো শুধু আসিফের পাওয়ার উচিৎ ছিলো তাই না!

আসিফ : হ্যাঁ আমার পানিশমেন্টের খুশিতে নাচতে গিয়েই তো উল্টো নিজেই পড়ে গেলি সেই পানিশমেন্টে!

শায়লা : ভালোই করেছে আপনাকে পানি মেরে,আপনি কখন থেকেই ওকে রাগাচ্ছেন বলেন তো?

আসিফ : আসলে পানিসব রাহুলকেই মারা উচিত ছিলো!

রাহুল : এক্সকিউজ মি!

আসিফ : আজ সকাল থেকে পানি মারার শুরুটা তুই আগে শুরু করেছিস!

হঠাৎ,

রাহুলের মা : [ এগিয়ে এসে ] আরে তোরা ভিজে আছিস কেনো?

রাহুল : গগ..গরম লাগছিলো..মা তাই ভাবলাম একটু মাথায় পানি ঢালি!

রাহুলের মা : [ শাড়ীর আচল টেনে আরো মুছে দিতে দিতে ] কিসব আজেবাজে কান্ড করিস না তোরা! এটা মাথায় পানি ঢালার সময়? আর এই উইন্টার সিজনে তোদের একদম কোন গরমে জড়িয়ে রেখেছে!

শায়লা : হ্যা! আন্টি আ..আমিও এটাই বলছিলাম ওদের! [ বলেই মুচকি হেসে ধীরেধীরে হাটা ধরে ]

রাহুলের মা : মেয়েগুলো থেকে কিছু শিখ! কি সুন্দর খাবার-দাবার খেয়ে ঐখানে সবার সাথে ছবি তুলছে কথা বলছে, আর তোরা আছিস তোদের বদমাইশি নিয়ে!

রিদোয়ান : [ ফিসফিসিয়ে ] হ্যা আমাদের ব্যান্ড বাজিয়ে এখন ওরাই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলো!

রাহুলের মা : কি বলছিস ফিসফিস করে বড় করে বল!

রিদোয়ান : না আন্টি বলছি যে আসলেই কি নাজুক নাজুক মেয়েগুলো তাই না!

রাহুলের মা : তা তো বটেই! আর তুই তো পুরা শাওয়ারই নিয়ে নিয়েছিস মনে হচ্ছে! [ বলেই মাথা টেনে মুছে দিতে লাগলো, রাহুল আর আসিফ হেসে উঠলো ]

এইদিকে, স্নেহা রাহুলের অপেক্ষায় বসে আছে একা চেয়ারে, আর জারিফা আর শায়লা ডান্সে যোগ হয়ে গেলো আবার,মার্জানের তো খবরই নেই!
হঠাৎ পাশ মুড়তেই দেখে মিষ্টার তেডি স্মাইল চুল-টুল ঠিক করে আবারো সেই সানগ্লাস চোখে লাগিয়ে এইদিকটায় এগিয়ে আসছে,মুচকি হাসলো স্নেহা!

রাহুল : [ স্নেহার পাশে বসে ] কাজটা কি করে এসেছো তুমি?

স্নেহা : এটা আপনার পানিশমেন্ট ছিলো সকালের কান্ডের! এতো এক্টিং করেছিলেন কেনো তখন বলেন তো? জানেন আমি সারাদিন কতো টেনশনে ছিলাম? তারউপর মোবাইলটাও সুইচ-অফ করে রেখেছিলেন!

রাহুল : মোবাইলের ব্যাটারী লো ছিলো,

স্নেহা : আপনার মোবাইলের কখনোই চার্জ থাকে না, আচ্ছা চার্জার ও ছিলো না নাকি? যে চার্জ দিয়ে ও ফোন দিতে পারেননি,

রাহুল : তোমার সাথে দেখা করে আমি বাসায় গিয়েছিলাম বিকেলে,

স্নেহা : হোহ! এতো লেইট লাগলো কেনো পৌছাতে?

রাহুল : সামিরের কাছে গিয়েছিলাম তাই!

স্নেহা : আপনি আবার…

রাহুল : [ স্নেহার মুখে হাত রেখে ] স্টপ!

স্নেহা : আরে কিন্তু..

রাহুল : বললাম তো স্নেহা! স্টপ! [ মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় স্নেহা ]

________ এইদিকে,

শায়লা : আরে মার্জান তুই কোথায় হারিয়ে গিয়েছিস খুজতে খুজতে শেষ হয়ে যাচ্ছি,

মার্জান : একটা ইম্পর্টেন্ট মিশন কমপ্লিট করছিলাম, ব্যাস এখন শুধু কোনো ভাবে কাজটা চালাতে হবে,

শায়লা : কিসের মিশন?

মার্জান : তুই বুঝবি না!

শায়লা : [ কনফিউজড হয়ে ] আমি বুঝবো না? ওকেই! আচ্ছা হ্যা! শোন [ চোখ টিপ মেরে ] আসিফ ও খুজছিলো!

মার্জান : খুজবেই তো সময় খারাপ আসলে নাকি রাজা ও মাথা ঝুকিয়ে নেই! বাই দ্যা ওয়ে, এসব ইডিয়ট পার্সনদের জন্য আমার কাছে টাইম নেই! হুহ! [ বলেই পাশ ফিরে চলে যাবে তখনিই দেখে দু-তিন-হাতের দূরত্বেই একটা চেয়ারের দিক এসে বসেছে আসিফ ]

মার্জান : [ কিছুটা কাছে এগিয়ে গিয়ে ] এই লুজার চেহেরা নিয়ে উইনারের সামনে আসতে লজ্জা করে না আপনার ?

আসিফ : রেজাল্ট তো এখনো আমার হাতে,তুমি কিভাবে বুঝলে যে তুমিই উইনার! [ বলেই পাশের আরেকটি চেয়ার টেনে, একটি বক্স এগিয়ে নিয়ে ] এই বক্সের কাগজেই আছে রেজাল্ট, আমার ভোট আছে সেভেন্টি পার্সেন্ট, তোমার টুয়েন্টি.. আচ্ছা যাও আরও ফাইভ পার্সেন্ট বাড়িয়ে দিলাম, টুয়েন্টি ফাইভ পার্সেন্ট তোমার!

মার্জান : এসব ভোট কবে হয়েছে শুনি? আমি কি এতোক্ষণ উগান্ডায় ছিলাম?

আসিফ : তুমি উগান্ডায় ছিলা নাকি আফ্রিকায় ছিলা তাতো আমি জানিনা, বাট ভোট হয়ে গেছে এটাই জানি!

মার্জান : শুনেন আপনার এসব ফালতু চোরামির ভোটে না, আমার কোনো ইন্ট্রেষ্ট নেই! টুয়েন্টি ফাইভ পার্সেন্ট ভোট গুলো ও আপনার নামেই করিয়ে নিন, সব মিলিয়ে নাইন্টি ফাইভ পার্সেন্ট চোরা ভোট হয়ে যাবে আপনার!

– আর কান খুলে শুনে রাখুন আমার জন্য রেজাল্ট না, পাবলিকের তালিই ইনাফ! হুহহ! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো, তখনিই ]

আসিফ : দেখলা শায়লা? লুজাররা কিভাবে ভয়ে চ্যালেঞ্জ এর রুলস ভংগো করে? বাট ডোন্ট ওয়ারি আমি এমনিও আগে জানতাম এমনটাই হবে,

মার্জান : ঠিকাছে যান, আমিই হেরেছি, আপনিই উইন হয়েছেন, বাট হু কেয়ারস্? এভ্রিওয়ান নোও দ্যাট, হু ইস বেট্যার ডান্সার! [ বলেই চলে যাচ্ছে তখনি আবার ]

আসিফ : [ হেসে ] বাট রুলস্ আরেকটা ভংগো করছো! যেহেতু আমি উইনার তাহলে.. রুলস অনুযায়ী উইনার যা বলবে লুজার তাই করবে!

মার্জান : [ দাঁত দেখানো একটা হাসি দিয়ে ] আচ্ছা তাইইই? তো বলুন কি করতে পারি আপনার জন্য?

আসিফ : কঠিন কিছু না! সিম্পল একটা জিনিষ! আমার পেছন পেছনই থাকবা, যতোক্ষণ প্রোগ্রাম চলবে,

মার্জান : আপনার মাথা ঠিকাছে? আমি আপনার পেছন পেছন ঘুরবো?

শায়লা : আরে মার্জান সিম্পলই তো, শুকোর কর এর চেয়ে বেশি কঠিন কিছু দেইনি!

মার্জান : তুই চুপ কর!

আসিফ : [ হেসে ] আচ্ছা ঠিকাছে! তোমার জন্য নেক্সট অপশন! যেহেতু আমরা বরপক্ষ তাহলে তোমার এমনিতেও উচিৎ আমাদের এক্সট্রা আপ্যায়ন করা! সো তুমি এককাজ করো… [ আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়ে ] হ্যা! ঐখান থেকে দু-গ্লাস জুস আনবা, একটা তোমার জন্য একটা আমার জন্য! আমার অপোজিটে বসে খাবা আমার সাথে,[ মুখ কাছে এনে ] ও হ্যা! চোখে চোখ রেখে!

মার্জান : [ মনে মনে ] ওয়াও! নট বেড আইডিয়া! এই সুযোগে তো আমার মিশনটাও কমপ্লিট হয়ে যাবে! কিন্তু জুস না চেয়ে আইসক্রিম চাইলে কাজটা আরেকটু সহজ হতো, ঠিক এমনটাই আইস্ক্রীমের বরফ মুখে লাগিয়ে রস টেনে নিতেই মুখ জ্বলেপুরে ছায় হয়ে যাবে!

– বাট ডোন্ট ওয়ারি মিষ্টার! কাজটা নাহয় জুস দিয়েই চালিয়ে দিবো!

আসিফ : [ মুখের সামনে হাত নেড়ে ] ও হ্যালো! এক্ষুণিই চোখের মাঝে হারিয়ে গেলে! নট বেড কাজে তো অনেক ফাষ্ট বেড়িয়েছো তুমি আই লাইক ইট!

মার্জান : [ মুচকি হেসে ] জ্বি! স্যার এবার আপনি পার্মিশন দিলে আমি কি আপনার আপ্যায়ণের কাজে লেগে যেতে পারি?

আসিফ : শিয়র! [ মার্জান মাথা নাড়িয়ে চলে গেলো জুস আনতে ]

শায়লা : আরে ওয়াহ! এতো সহজেই মেনে নিয়েছে! আপনার চোখের জাদু কাজে লেগে গেছে বোধ হয়, [ হাসতে লাগলো আসিফ ]

– আচ্ছা আমি আসি, আর আপনি আপনার কাজে লেগে পড়িয়েন, হিহি! [ বলেই হুরহুর করে চলে গেলো ]

কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ওয়েট করলো আসিফ, মনে মনে ভাবছে, জুস আনতে গিয়ে নিজেই জুস হয়ে বসে আছে নাকি কি জানি! পাঁচ দশমিনিট পেড়িয়ে যাওয়ার পর চোখ পড়লো, আসছে এংগ্রি বার্ড,

মার্জান : [ মুচকি হেসে ] হ্যালোওও! আপনার জুস রেডিইই! একটা অরেঞ্জ ফ্লেভার আরেকটা গ্রেপ ফ্লেভার এনেছি, [ বলেই অরেঞ্জ জুসটাই নিজ হাতে এগিয়ে দিলো আসিফকে ]

আসিফ : [ মনে মনে ] ওয়াও নিজ হাতেই এতো সুন্দর করে এগিয়ে দিচ্ছে…উমম! এতো সহজে ট্রাষ্ট করা যায় না এই এংগ্রি বার্ডকে, ও যেটা এগিয়ে দিচ্ছে, আম শিয়র, নিশ্চয় কিছু না কিছু মিশিয়ে এনেছে এই জুসের সাথে!

মার্জান : আরে কি ভাবছেন? নিন! অরেঞ্জ জুস, হেলদ এর জন্য ও পুষ্টিকর!

আসিফ : না থাক, অরেঞ্জটা তুমিই খাও আমি গ্রেপটা খায়! [ বলেই গ্রেপ জুসের গ্লাসটায় এগিয়ে নিলো ]

মার্জান : আরে আরে! আপনি অরেঞ্জটা খান,এটা স্পেশাল ভাবে বানিয়ে এনেছি,আপনাকে যাতে স্পেশালভাবে আপ্যায়ন করতে পারি, গ্রেপ জুসটা ছোলা সহ বানিয়েছে নিশ্চয় তাই দেখছেন না ডার্ক গ্রীন!

আসিফ : [ জুসের গ্লাসের দিক তাকিয়ে কিছুক্ষণ চিন্তা করে ] নো থেংক্স স্পেশালটা তুমিই খাও, আমি এটাই খায়, [ চেয়ার টেনে দিয়ে ] কাম! সি্ট! [ মার্জানের ও কি আর করার বসে পড়লো চেয়ারে ]

আসিফ : [ মনে মনে হেসে ] হুমম! নিজেকে অতি চালাক মনে করলে এমনি হয়! এবার নিজেই ফাসো নিজের জ্বালে! [ বলেই তাকিয়ে রইলো মার্জানের চোখের দিক ]

মার্জান : [ মুখ গোমড়া করে আসিফের দিক তাকিয়ে মনে মনে ] আহা! এখন তো দেখছি, উট পাহাড়ের নিচে নয়,পাহাড়ই উটের নিচে চলে এলো, নিজেকে অতি চালাক মনে করলে এমনিই হয় মিষ্টার!

আসিফ : কি ভাবছো খাও!

মার্জান : হ্যা! আ..আপনিও খান! [ বলেই গ্লাস মুখের দিক এগিয়ে নিলো, সাথে আড়চোখে ও তাকাচ্ছে আসিফের দিক, আসিফ ও হেসে জুস মুখে দিতেই চোখ বড় করে ফেলে, মুখ থেকে ফেলতেই যাবে তখনি ]

মার্জান : [ চেচিয়ে ] আরে আরে কি করছেন ফ্লোর নষ্ট হবে তো, [ বলেই মুখ চেপে ধরে ] গিলে নিন,গিলে নিন! [ ততোক্ষণে গিলেই ফেললো আসিফ, জ্বালে জিহবা জ্বলে পুরে এক হয়ে যাচ্ছে,কান দিয়ে যেনো ধুয়া বেরুচ্ছে ]

মার্জান : কি করছিলেনটা কি আপনি? মানুষ দেখলে কি বলবে, এতো সুন্দর হ্যান্ডসাম একটা ছেলের মেন্যার নেই! সবার সামনেই বমি করছেন ভাবতো! হুহ… [ ভোর কুচকে গড়গড় চোখে তাকিয়ে রইলো আসিফ ]

মার্জান : [ মুচকি হেসে ] আচ্ছা অরেঞ্জ জুস খাবেন? থাক আপনি তো খাবেন না বলেছেন, এটা আমি স্পেশাল ভাবেই বানিয়েছিলাম, তাই আমিই খায়, [ বলেই গডগড করে পুরো অরেঞ্জ জুসটা খেয়েই নিলো ] আরে আরেহ! আপনি টমেটোর মতো লাল হয়ে যাচ্ছেন কেনো? বাহহ! কাউকে দেখে ব্লাশিং হচ্ছেন নাকি? আশেপাশে তো অনেক মেয়ে..কাকে বুঝবো! উমমম [ চোখ টিপ মেরে ] নাকি কোনো আমাকে দেখে! [ বলেই কিটকিটিয়ে হেসে, মুখ ভেংগিয়ে উঠে হনহন করে চলে আসে, ডান্স ফ্লোরের দিক ]
_______________ অন্যদিকে,

রাহুলের মা : [ স্নেহা আর রাহুলের দিক এগিয়ে এসে, দুটো রিং বক্স আগলে দিয়ে ] এই নাও, এবার দুজন দুজনকে, রিং দুটো পড়িয়ে দাও, হুটহাট করেই প্রোগ্রাম সব করতে হচ্ছে, তাই আলাদা করে এনগেজমেন্ট করার টাইমই পায়নি! [ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকালো স্নেহার দিক, স্নেহা চোখ সরিয়ে ফেললো, বুঝতে পারলো রাহুল আবারও রেগে আছে ]

জারিফা : ওহো আন্টি! যে প্রোগ্রাম দিলেন না, দুটো প্রোগ্রামের চেয়ে কম নাকি!

শায়লা : ওহ কামঅন! কামঅন! স্নেহা হাত এগিয়ে দে! [ রাহুল রিং এগিয়ে নিয়ে স্নেহার হাতে পড়াতেই যাবে হঠাৎ তখনি আবার থেমে গিয়ে, উঠে দাঁড়ায়, সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে নিয়ে ডান্স ফ্লোরের দিক এগিয়ে চলে গেলো ]

শায়লা : [ ফিসফিসিয়ে ] আরে জারিফা! এরা কই যাচ্ছে রিং না পড়িয়ে?

জারিফা : [ চোখ মেরে ] আই থিংক কিছু আলাদা আন্দাজ দেখাতে! আচ্ছা চল [ বলেই এগিয়ে গেলো ]

[ রাহুল স্নেহার হাত ছেড়ে মিউজিশিয়ানদের কাছে এগিয়ে গিয়ে, কানে কানে কি যেনো বলে ওদের কাছ থেকে স্পিকারটা এগিয়ে নিলো ]

শায়লা : অও! এবার বুঝলাম! [ রিদোয়ান শিস! বাজিয়ে উঠলো রাহুল আর স্নেহাকে ডান্স ফ্লোরে দেখে, হঠাৎ মিউজিক টোন বেজে উঠলো ]

রিদোয়ান : [ দৌড়ে গিয়ে আরেকটি স্পিকার এগিয়ে নিয়ে ] লেডিস এন্ড জ্যান্টেলমেন উড ইউ হ্যান্ডস্ টুগেদার ফর আওয়ার দুলা এন্ড দুলহান, মিষ্টার এন্ড মিসেস রাহুলললল! [ এক্সাইটেড হয়ে তালি বাজিয়ে উঠলো সবাই, স্পিকার হাতে সরে দাড়ালো রিদোয়ান, চারদিক মিউজিকের ধুমধুম আওয়াজ, যেনো সবারই নাচের তাল উঠতে চলছে ]

_____রাহুল ♪♪

♪♪আরে কাবতাক জাওয়ানি ছুপা ওগি রাণী ♪♪
♪♪ খানওয়ারো কো কিতনা সা্থা ওগি রাণী ♪♪
♪♪ কাভী তো কিসি্ কি দুলহানিয়া বানোগি ♪♪

♪♪ মুঝসে্ শাদী কারোগি ♪♪
?
♪♪ মুঝসে্ শাদী কারোগি ♪♪

♪♪ মুঝসে্ শাদী কারোগি ♪♪
♪♪ মুঝসে্ শাদী কারোগি ♪♪

[ হেসে উঠলো স্নেহা, রাহুল রিং সহ হাত বাড়িয়ে রাখলো,স্নেহা হাত বাড়াতে যাবে তখনি রিদোয়ান এসে স্নেহার সামনে নেচে নেচে হাত বাড়ালো, স্নেহা ও সুযোগ পেয়ে রিদোয়ানের হাতে হাত ঢুকিয়ে রাহুলকে বাই দেখালো, রিদোয়ান কমোড় ধুলিয়ে নেচে নেচে স্নেহাকে নিয়ে একপাশ হয়ে দাঁড়িয়ে গেলো, রাহুল ও কি আর করার হাসতে লাগলো ]

জারিফা : আরেহ! [ বলেই দৌড়ে গিয়ে স্নেহার হাত ধরে টেনে রাহুলের দিক নিয়ে যাচ্ছিলো, রিদোয়ান ও ছাড়ছে না অতো সহজে স্নেহার আরেক হাত টেনে ধরে রাখলো, জারিফা ও হাল ছাড়ার পাত্র নয়, টানতেই চলছে স্নেহাকে, এইদিকে বাকিরা হাসতে হাসতে লোড হয়ে যাচ্ছে, জারিফার পক্ষে শায়লা ও এসে যোগ দিলো ]

অবশেষে রিদোয়ান আস্তে আস্তে স্নেহাকে ছেড়ে দিলো, জারিফা আর শায়লা ইয়েএএ বলে চিৎকার করে স্নেহাকে রাহুলের দিক এনে দিলো,

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে কাদো কন্ঠে ] নো স্নেহা নো ডোন্ট লিভ মি! [ সবাই আবারো হাসতে লাগলো, রাহুল ও হেসে রিং পড়াতে যাচ্ছিলো তখনি খেয়াল করলো স্নেহার ফিংগারে অলরেডি রিং পড়া! রাহুল খুলে নিতে চাইলো কিন্তু স্নেহা বাধা দিলো ]

রাহুল : কামঅন স্নেহা! দুটো এক ফিংগারে কিভাবে পড়াবো?

স্নেহা : এটা আমাদের ভালোবাসার প্রথম নিশান রাহুল! এটা এই আংগুলেই থাকবে, [ বলেই ডান হাত এগিয়ে দিলো ]

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] ওকেই! [ বলেই ডানহাতেই পড়িয়ে দিলো রিংটি, স্নেহা ও রাহুলকে পড়িয়ে দিলো, সবাই একত্রে তালি দিয়ে উঠলো আবারো, মার্জান ও এক্সাইটেড হয়ে তালি দিয়ে এপাশ,ওপাশ উকি দিতে লাগলো, সবাই আছে কিন্তু আসিফকে দেখতে পাচ্ছে না, এতোক্ষণ মজা করছিলো, কিন্তু এখন আবার কই গায়েব হয়ে গেলো, মরিচের জুসের জ্বালে লাল হয়ে যাওয়া মুখটা ভেসে উঠলো চোখে, আশেপাশে ও দেখা যাচ্ছে না, কেমন যেনো মায়া লেগে উঠলো মার্জানের, পেছন ফিরে হাটা শুরু করলো, উকি দিয়ে দিয়ে চারদিক খুজতে লাগলো, ডান্স ফ্লোরের দিক আরেকবার চোখ বুলিয়ে নিলো, রাহুল হেসে হেসে স্নেহাকে কি কি যেনো বলছে স্নেহা লজ্জায় হেসে রাহুলের হাত জড়িয়ে ধরে আছে, রিদোয়ান, জারিফা, শায়লা, রাহুলের মা, স্নেহার মা ও পাশে আছে, রাহুলের বাবা, স্নেহার বাবা,দাদী বাকি আরো অনেকেই চেয়ারে বসে আছে…কিন্তু আসিফই নেই!

মার্জান : [ মনে মনে ] গেলো কই? উফফফ! ওভার করে ফেলেছি নিশচয়!

চলবে….

বি.দ্র : [ আমি আমার ইচ্ছে মতো স্টোরি সাজাবো লাষ্ট দিকে এসে তাড়াহুড়ো করে ইন্ডিং দিয়ে সৌন্দর্য নষ্ট করার ইচ্ছে নেই আমার মেহনতের লিখা এগুলো,গল্প ভালো না লাগলে বা বোরিং লাগলে ইগনোর করবেন, সবাইকে মিন করছি না কিছু মানুষদের আমি জাষ্ট জানিয়ে রাখলাম, ]

Love At 1st Sight Season 3 Part – 49

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 49

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : না..নাহ! ওকে! আ..আমি তো মজা করছিলাম! আপনার কিক..কিছু করতে হবে না [ বলেই জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে সোজা তাকিয়ে রইলো, হাসতে লাগলো রাহুল ]

আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখছে স্নেহা, সচরাচর সবাইকেই দেখা যাচ্ছে..কিন্তু যারা পাশে থাকবে বলেছে তারাই উদাও!…গেলো কই এই তিনোটা?..

হঠাৎ রাহুলের ফ্রেন্ড শ্রেয়া এগিয়ে এলো,

রাহুল : হেই বেবী! [ বলেই জড়িয়ে ধরলো ]

শ্রেয়া : [ রাহুলকে সরিয়ে ] সর! তুই তোর সাথে কোনো কথা নেই! [ বলেই স্নেহাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : আরেহ!

শ্রেয়া : ইউ লুক! গরজিয়াস্ স্নেহা!

স্নেহা : থেংক ইউ!

রাহুল : হুমম! মাশাল্লাহ বল! নাহলে আমার সুন্দর বউটার নজর লেগে যাবে!

শ্রেয়া : তাইই?

রাহুল : হুমম.. আচ্ছা আর আমাকে কেমন লাগছে ?

শ্রেয়া : হুমম! নট বেড! [ হেসে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : এবার সত্যিই মার খাবি কিন্তু!

শ্রেয়া : রিভেঞ্জ ছিলো! হুহ!

রাহুল : দেখলা স্নেহা! জেল্যাস করে আমাকে! [ চুল ঠিক করে ] তুমি প্রাউড ফিল করো, রাহুলকে তুমিই পেয়েছো..

শ্রেয়া : লিসেন্ট স্নেহা! তুমি জানো না, ওরা অলোয়েজই আমাকে নট বেড বলে কমেন্ট করে, কখনোই বলেনি যে দোস্ত তোকে না আজ অনেক সুন্দর লাগছে, দারুণ লাগছে, প্রিটি লাগছে!

– আর আমার থেকে জিজ্ঞেস করলে আমি কি বলি, হ্যা? অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে, ডেসিং লাগছে!

রাহুল : আরে তোকে লাগলেই তো বলবো!

স্নেহা : আরে আপনি মিথ্যে বলছেন কেনো? [ শ্রেয়ার দিক তাকিয়ে ] সত্যিই তোমাকে অনেক…

রাহুল : ক্ষেত লাগছে! হিহি! এটাই বলতে ছিলো স্নেহা! তাই না!

স্নেহা : [ রাহুলকে চিমটিয়ে ] মোটেও না..

শ্রেয়া : লিভ ইট স্নেহা! ওদের কাজই অলোয়েজ আমার পিছে লেগে থাকা, [ স্নেহা হাসতে থাকে ]

শ্রেয়া : বাই দ্যা ওয়ে কনগ্রেটস্ বোথ অফ ইউ! খুব শিঘ্রই, ম্যারেড লাইফে পা দিতে যাচ্ছো! হুম হুম…

– আর তুই! এখন থেকেই তো স্নেহাকে পেয়ে আমাদের ভুলে গেছিস! বিয়ের পর দেখলে বলবি, হু আর ইউ? আই নো ইউ? হ্যা?

রাহুল : আরে কি করবো বল! স্নেহা এমন একটা জিনিষ যাকে দেখলেই আমার নেশা ধরে যায়..আশেপাশের খবরাখবর থাকেনা..[ বলেই স্নেহার মাথার সাথে মাথা লাগিয়ে রাখলো, স্নেহা লজ্জায় সরিয়ে দিলো রাহুলকে ]

শ্রেয়া : হুমম! লাভ বার্ডস্ তাই না!

রাহুল : আচ্ছা এইদিকে আয় ছবি তোল, [ বলেই কাছে টেনে নিলো ] আর তোকে কেমনি ভুলবো বল? তোকে ভুললে জ্বালাবো কাকে?

শ্রেয়া : এক মিনিট! তোর পাশে অনেক তুলেছি, এবার স্নেহার পাশে তুলবো! [ বলেই স্নেহার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে পোজ দিতে লাগলো ]

রাহুল : হুমম! ধীরেধীরে এভাবেই বঞ্চিত হবো আমি! [ হাসতে লাগলো স্নেহা আর শ্রেয়া ]

___________এইদিকে পার্কিংএ____________

রিদোয়ান : [ ফিসফিসিয়ে ] ইউ নো জারিফা!তোমার পেট দেখা যাচ্ছে আজ! তাই এত্তো হট লাগছে..

জারিফা : [ কোমোড়ের ওড়না টেনে ] আপনার চোখগুলো না আজকাল বেশীই উড়ছে..

রিদোয়ান : [ হেসে ] তাই? দেখাই তো যাচ্ছিলো আর আমি বললেই দোষ?

জারিফা : হ্যা! দোষ.. আপনি দেখবেন কেনো?

রিদোয়ান : [ ধীরেধীরে ওড়না সরিয়ে জারিফার কোমোড়ে স্লাইড করে হাত রেখে ] দেখালে তো দেখবোই…

জারিফা : দেদ…দেখেন..ওড়না সরেগিয়েছিলো হয়তো…

রিদোয়ান : [ একটানে কাছে এগিয়ে নিয়ে ] হ্যা! তারপর…

জারিফা : তাত..তাই খেয়াল.. [ বলতেই দেখে রিদোয়ান চোখ বন্ধেই নিমিষেই জারিফার ঠোটের দিক তার ঠোট বাড়াচ্ছে, আশেপাশে আড়চোখে তাকিয়ে হুট করেই ধাক্ষা দিয়ে সরিয়ে দিলো রিদোয়ানকে ]

রিদোয়ান : [ অবাক হয়ে ] হোয়াট?

জারিফা : পাগল নাকি আপনি? কেউ চলে আসলে…

রিদোয়ান : সব সময়ের বাহানা [ বলেই আবার কাছে আসতে চাইলো, তখনিই জারিফা মুচকি হেসে ঘাগড়া হাতে ধরে দৌড়ে চলে গেলো ]

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] আরে জারিফা! ওয়েট…

______________ অন্যদিকে _______________

মার্জান : একটা ছবি ও ঠিক করে তুলতে পারিসনি তুই…আমার কি সুন্দর সুন্দর পোজ সব নষ্ট করে দিলি…

শায়লা : আরে এতো আফসোস করছিস কেনো? আবার তুলে দিবো নাহয়!

মার্জান : ওহো! দরকার নেই! আর তুই কেমন ছবি তুলে দিবি তা আমার জানা হয়ে গেছে.. [ বলতেই হঠাৎ ধাক্ষা খেলো কারো সাথে, নিচের দিক তাকাতেই দেখে রাশু ]

– আরে রাশু এইভাবে দৌড়ে কোথায় যাচ্ছিস, আস্তে হাট, মানুষ পড়ে যাবে তোর ধাক্ষায় ?

রাশু : আরে আমি ঠিকই হাটছি, তুমিই তো চোখ নামিয়ে মোবাইল দেখে দেখে হাটছো!

মার্জান : আচ্ছা বাদ দে! এতো লেইট করলি কেনো আসতে? মামার বাড়ীতে কি মধুর হাড়ী ছিলো যে আমাদের বাসায় আসিস নি থাকতে!

রাশু : আরে সামনে এক্সাম বাবা আনলেই তো আসবো, খালি বলে পড় পড় পড়! আমাকে তো বললোই না কেউ এসব বিয়েশাদী হয়ে যাচ্ছে, নাহয় আমি পালিয়েই চলে আসতাম!

– আর স্নেহাকে তো আমি দেখেই নিবো!

মার্জান : কি বললি স্নেহা? ডিরেক্ট নাম ধরে?

রাশু : আরে ও জানে রাগ উঠলে আমি ওকে স্নেহা বলেই ডাকি!

মার্জান : হুমমম! ঠিক বলেছিস! একটা মাত্র ভাই.. আর ও তোকে একটু জানালোই না বিয়ে করছে!

শায়লা : বাই দ্যা ওয়ে রাশু! দেখা করেছিস স্নেহার সাথে!

রাশু : নাহ! ঐ দিকটা আইস্ক্রীম দিচ্ছে, আগে আইস্ক্রীম খেয়েনি বাকি সব পড়ে [ বলেই দৌড়ে চলে গেলো ]

শায়লা : আরে কথা তো শোন… [ মার্জান আর শায়লা হাসতে লাগলো, হঠাৎ স্টেজের দিক চোখ পড়তেই ]

শায়লা : ওহো! ঐদিকটা দেখ! কি দারুণ জুটি লাগছে! মাশাল্লাহ.. [ বলতেই মার্জান হেসে হাত নাড়ালো, রাহুল ও হেসে হাত নাড়িয়ে কাছে আসতে ইশারা করলো, এগিয়ে গেলো দু-জনই ]

মার্জান : আমার তো মনে হয়েছে আজ, স্নেহা তার শশুড়বাড়ির সবাইকে পেয়ে আমাদের ভুলেই গেছে..

আসিফ : ভুলে যাওয়ায় উচিৎ! তাই না স্নেহা! এখন তো এদের সাথেই থাকবা.. আলতু-ফালতু মানুষদের মনে রেখে আর কি হবে!

মার্জান : [ নাকফুলিয়ে ] কি বললেন? আলতু-ফালতু?

শায়লা : শিসসস! মার্জান আস্তে! সবাই দেখছে!

মার্জান : আপনাকে তো পরে দেখে নিবো!

আসিফ : আই নো আমাকে দেখার জন্য সবাই পাগল, সো্ তুমি আবার লিষ্ট থেকে বাদ যাবে কেনো?

মার্জান : ওওও…তাই বুঝি!

আসিফ : ইয়েএএসস! তাইই…

মার্জান : ইডিয়ট!

রাহুল : [ হেসে ] আবারো শুরু হয়ে গেছে টম এন্ড জেরীর?

শায়লা : আচ্ছা! কে টম কে জেরী?

মার্জান : তুই চুপ কর! [ বলেই স্নেহার পাশে গিয়ে বসে ] স্নেহা! কেমন লাগছে সব হুম হুম?

রাহুল : ফাইনালি তোমাদের পাওয়া গেছে.. এতোক্ষণ তো তোমাদের চিন্তায় চিন্তায় স্নেহা বুড়ি হয়ে যাচ্ছিলো!

স্নেহা : [ হেসে রাহুলকে চিমটি মেরে মার্জানের দিক তাকিয়ে ] কোথায় ছিলি তোরা? আর জারিফা কোথায় ?

মার্জান : কি জানি কোথায়! রিদোয়ানের সাথেই যেতে দেখেছি..হবে কোথাও!

শায়লা : ঐ যে আসছে দুজনই!

রিদোয়ান : [ এগিয়ে এসে ] কি অবস্থা সবার [ বলেই রাহুলের পাশে গিয়ে বসলো ]

রাহুল : আমাদের অবস্থা তো সবাই দেখছেই কিন্তু তোরা কোথায় ছিলি,

রিদোয়ান : দোস্ত! গিয়েছিলাম একটু প্রেম করতে কিন্তু সেটাও ব্যার্থ!

আসিফ : [ রিদোয়ানে কাধে হাত রেখে ] উফফ! সো সে্ড! মন খারাপ করিস না,দোস্ত! প্রেমসেম অনেক করতে পারবি, এখন ছবির জন্য পোজ দে!

রিদোয়ান : [ আসিফের পেটে ঘুষি মেরে ] তুই তো সেটাই বলবি!

[ সবাই পোজ দিয়ে দিয়ে ছবি উঠাতে ব্যস্ত, হঠাৎ মার্জান স্নেহার ভাইকে দেখে হাত নেড়ে ইশারা করলো আসতে, রাশু ও দৌড়ে এগিয়ে এলো ]

মার্জান : কি মিষ্টার আইস্ক্রীম খাওয়া হয়েছে?

রাশু : হুমম! দারুণ ছিলো! [ বলেই স্নেহার দিক তাকিয়ে কোমোড়ে হাত রেখে ] এই স্নেহা! আমাকে বললে না যে বিয়ে করছো? [ রাহুল আর তার ফ্রেন্ডসরা সবাই অবাক হয়ে তাকালো ]

স্নেহা : বব..বলেছিলাম তো বাবাকে তোর কথা! বাবা বললো তোর নাকি অনেক পড়া আছে তাই মামাদের সাথেই আসবি আজ…

রাশু : হ্যা? বাবা বললো তাই না? বাবা কোনদিন বলে না পড়ার কথা…? শোনো এসব বাবা-টাবা আমি বুঝিনা,

– বাবাকে তুমি বলবা আজ আমাকে মামার বাড়ি না পাঠাতে,সব প্রোগ্রাম কমপ্লিট করে যাবো বলে দিলাম! কিভাবে হবে এসব আমি বুঝিনা, সব দায়িত্ব তোমার!

রিদোয়ান : বাহ! ইন্ট্রেষ্টিং…তো!

রাহুল : [ রাশুকে কাছে টেনে নিয়ে ] আরে এইতো দেখি আমার মতো,

জারিফা : হবেই তো! জিজু আপনার শালা বলে কথা!…

মার্জান : আরে রাশু একটা কথা বল..ঐ যে তোর আপুর জন্য ঐদিন একটা ছেলে দেখলো না ঐটা সুন্দর নাকি এটা..হুমম?

রাশু : [ রাহুলের দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে ] উমমম..একটাও না..

মার্জান : আয়হায়! নিজের চেহেরাটা দেখেছিস একবার আয়নায়..

রাশু : আমারটা ছাড়ো আগে তোমারটা দেখো…

আসিফ : [ কিটকিটিয়ে হেসে রাশুর পাশে এসে হাটু গেরে বসে ] ভাই! সাইজে ছোট হলে কি হবে জবাবটা মাইন্ডব্লোয়িং দিলি, এবার শুধু বল তোর কি চাই… [ মার্জান আর কিছু বললো না রাগ চাপা হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে, বুঝতে পারলো আসিফ, মাথায় কিছু না কিছু পাকাচ্ছে ]

রাশু : আরে বলো না তিনোটাই পেচি সারাক্ষণ পেকপেক করতে থাকে!

রিদোয়ান : বাট এরা তো চারজন!

রাশু : আমার আপু ছাড়া!

শায়লা : ওও..এতোক্ষণ স্নেহা! এখন আবার আপু!

জারিফা : আচ্ছা আমরা আংকেলকে লাগিয়ে দি বলে আমরা পেচি! আর তোর আপু বাচিয়ে নেই বলে ভালো!

– এখন থেকে আরো বেশী করে লাগাবো, কাল বিয়েতে আসবি তুই বিদায়ের মাত্র পাচ মিনিট আগে, দেখেনিস!

রাহুল : আরে না! তোমরা আমার একমাত্র পিচ্চি শালাটাকে এমন কেনো করছো বলো তো?

– কাল ও সবার আগে আসবে তাই না..?

রাশু : [ রাহুলের গালে একটি কিস করে ] ইয়েসস! [ বলেই স্নেহার দিক তাকিয়ে ] এই স্নেহা আরেকটু যাও তো.. [ স্নেহা মাথা নাড়িয়ে আরেকটু সাইড হয়ে বসলো ]

রাশু : [ স্নেহা আর রাহুলের মধ্যে বসে ] এইইই! ক্যামেরা মেন! ফটো তুলুন!

জারিফা : আরে বাপরে! আসছে একদম নবাব! কিভাবে অর্ডার করে দেখো! [ বাকিরা হাসতে লাগলো, রাহুল আর স্নেহাও রাশুকে মধ্যে নিয়ে কাধে হাত রেখে জড়িয়ে ছবি তুলে নেই ]

রাশু : আচ্ছা আমার কাজ শেষ এখন ঘুরে আসি! [ জারিফার দিক মাথা এগিয়ে ] শুনো কোনো ছেলে ডিষ্টার্ব করলে আমায় বলবা!

জারিফা : জ্বী জ্বী বড় ভাই আপনাকেই বলবো! [ চলে গেলো রাশু ]

রাহুল : [ হেসে ] সিরিয়াসলি?

জারিফা : আসলে গ্রামে, স্নেহার এক কাজিনের বিয়ে ছিলো! ঐখানে একটা ছেলে আমাদের ডিস্টার্ব করছিলো, তখন, ও মার্জান, আর আমি মিলেই ছেলেটাকে উল্লু বানিয়ে পুকুরে ফেলে দিয়েছিলাম!

– আর কাউকে উল্লু বানাতে ও ওর অনেক মজা লাগে! [ সবাই হেসে উঠলো ]

মার্জান : এক্সকিউজ মি! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : কোথায় যাচ্ছিস?

মার্জান : ঐদিকটাই আছি!

শায়লা : আরে দাড়া আমিও আসছি [ বলেই দুজনে নেমে চলে যাচ্ছে আসিফ মার্জানকে চোখ টিপ মেরে তাকিয়ে আছে, মার্জান ও মুখ ভেংগিয়ে নেমে গেলো ]

জারিফা : আচ্ছা! আমি ও আসি! এবার…

রিদোয়ান : হ্যা আমার সাথে!

জারিফা : মোটেও না! [ বলেই দৌড়ে নেমে গেলো,রিদোয়ান ও হেসে পিছু পিছু নেমে পড়লো ]
________________ এইদিকে_______________

মার্জান : নিজেকে কি মনে করে এই ইডিয়ট! সবসময় আমার ইনসাল্ট করে!

শায়লা : তুই ও তো কোনো দিক থেকে ওর ইনসাল্ট করার পিছু ছারিস না,

মার্জান : তুই চুপ কর! তুই আছিসই ওর পক্ষে! ঘুষ খোর কোথাকার!

শায়লা : যাক বাবা ঘুষ খেলাম কবে! জাষ্ট অফারই তো করলো! [ বলতেই হঠাৎ খেয়াল করলো মার্জান এদিকওদিক উকি দিচ্ছে ]

শায়লা : আবার কাকে খুজছিস?

মার্জান : একমিনিট তুই এইদিকে দাড়া,আমি একটু আসছি, [ বলেই দৌড়ে গেলো রাশুর দিক, শায়লা তাকিয়ে আছে দূর থেকে, কি কি যেনো বুঝিয়ে দিচ্ছে রাশুকে, হঠাৎ পাশে আসিফ এসে দাড়ালো ]

শায়লা : আরে আপনি! ভালোই হয়েছে এসেছেন! শুনেন আপনি ওকে বারবার রাগান কেনো বলেন তো? রাগালে কি পটাতে পারবেন! অনেক ডেঞ্জার ও..অতো সহজে পটছে না!

আসিফ : আচ্ছা? তাহলে আমিও দেখি কতো ডেঞ্জার হতে পারে!

– এখন কই গেছে ও?

শায়লা : ঐ যে! আসছে! [ এগিয়ে এলো মার্জান আসিফকে দেখে দাত সব বের করে একটি হাসি দিলো ]

আসিফ : [ মুচকি হেসে অন্যপাশ ফিরে গিয়ে ] নাইস্ তিথ!

মার্জান : চিকচিক করছে তাই না?

আসিফ : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুমম!

মার্জান : ছায় দিয়ে মাজি তো তাই! [ শায়লা মুখ লুকিয়ে হেসে উঠলো ]

আসিফ : ওহ! তাই নাকি!

মার্জান : হ্যাঁ! একদম! আপনিও ট্রাই করে দেখতে পারেন!

– বাই দ্যা ওয়ে, ফলো করছেন নাকি আমাকে?

আসিফ : লল! তোমাকে ফলো করবো? [ হেসে ] পিচ্চিটাই তো বলে গেলো আয়নায় আগে নিজের চেহেরা দেখতে!

– আমি তো শায়লার সাথে কথা বলতে এসেছি! ও কি গানে ডান্স করবে ঐটাই আস্ক করছি! তোমার দ্বারা তো ডান্স ইম্পসিবল! তাই জিজ্ঞেস করাটাও বেকার!

মার্জান : আচ্ছা! নিজে একদম কি ডান্স পেরে তরিয়ে ফেলেন ভালো জানি হুহু!

আসিফ : তোমার থেকে তো অন্তত বেটার জানি!

মার্জান : আচ্ছা? করে দেখান দেখি?

আসিফ : [ মার্জানের কাছে মুখ এনে ] চ্যালেঞ্জ করছো?

মার্জান : [ একটু পিছিয়ে গিয়ে ] ই..ইয়েস! চ্যালেঞ্জ করলাম!

আসিফ : ওকে! সে্ইম গানেই, দুজন পার্ফমেন্স করবো তারপর পাবলিক যার ডান্সে বেশি ভোট করবে সে উইনার!

– আর লুজার এর কি করতে হবে জানো তো?

মার্জান : জানার দরকার নেই! লুজার কে হবে তা চেহেরায় ভেসে উঠছে!

শায়লা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আচ্ছা আপনারা কোন গানে ডান্স করবেন?

আসিফ : ওউ! শাট-আপ! আমি এতোটাও কঠোর নয়! যাও তোমার ফ্রেন্ড এর জন্য সহজ করে দিলাম! [ অবাক হয়ে তাকালো মার্জান ]

আসিফ : রিসেন্টলি তুমি তোমার ফেইসবুকে লিসেনিং সং স্ট্যাটাস দিয়ে তোমার ফেভারিট হিরোর একটা সং শেয়ার করেছো!

শায়লা : রিতিক রোশন?

আসিফ : ইয়াহ! [ মার্জানের কাছে এসে ] মুজসে্ দোস্তি কারোগি! [ অবাক হয়ে তাকালো মার্জান ]

– [ হেসে ] এই ফ্লিমের!

মার্জান : কখনোই না! এই গানে তো ইম্পসিবল!

আসিফ : জানতাম তুমি ভয় পাবা!

মার্জান : আজিব ভয় কেনো পাবো? আমিতো..

শায়লা : আরে মার্জান! গানে কি এসে যায়! বাদ দে না! তখন ভাববে তুই ডারপোক!

আসিফ : সো্ ডান?

শায়লা : হ্যা! হ্যা! ডান ডান!

মার্জান : এক সেকেন্ড! আপনার সাথে তো আমার ফেইসবুকে এড নেই! তাহলে আপনি কিভাবে জানলেন আমি কি শেয়ার করেছি না করেছি?

আসিফ : ওহ! শাট-আপ! আমার এতোটাও শক পড়েনি তোমার আইডি চেক করার!

– ঐটা তো ব্যাস! ঐদিন রাহুল তার মোবাইল আমার হাতে রেখে গিয়েছিলো তখন ওর মোবাইল এ ফেইসবুক দেখতে গিয়ে তোমারটাও চোখে পড়ে,

মার্জান : আপনার কাছে আর কি আশা করা যায়! অন্যজনের ফেইসবুক ঘাটাঘাটি করা ছাড়া!

আসিফ : এক্সকিউজ মি! রাহুল ইজ মাই ফ্রেন্ড! ওর কিছুই আমার কাছ থেকে হাইড থাকে না সো্ ফেইসবুক তো জাষ্ট সিম্পল ম্যাটার!

– আর আমরা ছেলেরা তোমাদের মেয়েদের মতো এতো কিপ্টে না, তোমরা তো ফেইসবুক নিয়েও কিপটামি করো!

মার্জান : কি বললেন?..মেয়েরা কিপটা?

শায়লা : উফফ গাইস্! আবারো শুরু ঝগড়া? এবার তো ডান্স শুরু করেন! পাবলিক কমে গেলে ভোট ও কমে আসবে মাইন্ড ইট!

আসিফ : ইয়াহ! আই থিংক আমাদের এখন শুরু করা উচিৎ!

– উমমম! ও হ্যা! ফাষ্ট লিরিক্স তো মেয়ের সো্ গো… [ মার্জান নাক ফুলিয়ে এগিয়ে গেলো ডান্স ফ্লোরে, আসিফ আর শায়লা ও হেসে হেসে পেছন পেছন এগিয়ে গেলো ]

শায়লা : বাহ! বাহ! বাহ! গানটাও বরাবর দিলেন! কিন্তু আপনি যদি না জিতেন?

আসিফ : ডোন্ট ওয়ারি না জিতলেও ভোট ওর চেয়ে আমার বেশি আসবে বুঝেছো! যে বক্সে ভোট নিবো ওখানে আমি আগে থেকেই আমার নাম দিয়ে অর্ধেক এক্সট্রা কাগজে ভরে রেখেছি!

শায়লা : আরে ওয়াহ! কি বুদ্ধি আপনার!

হঠাৎ, পেছন থেকে,

জারিফা : [ এগিয়ে এসে ] বাহহহ! ডান্স শুরু? ইয়েএএএ! এবার তো আমিও ডান্স করবো!

শায়লা : আরে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে! [ চোখ মেরে ] ঐ যে!

জারিফা : [ আসিফের কাধে হাত রেখে ] ওহহহ! বুঝেছি এবার! লাইন মারা হচ্ছে বুঝি! হ্যা হ্যা!

[ মার্জান ঠিকঠাক হয়ে দাঁড়িয়ে হাত নেরে ইশারা করলো মিউজিক ছাড়ছে না কেনো ]

জারিফা : মিউজিক মিউজিক!

শায়লা : আরে মিউজিক ছাড়তে বলছে! তাড়াতাড়ি! আপনিও থাকেন ঐদিকটা ওর পর সাথে সাথে আপনার ও তো যেতে হবে তাই না! [ আসিফ হেসে এগিয়ে গিয়ে মোবাইল স্পিকারে কানেক্ট করে গান ছাড়লো ]

সবাই তালি দিয়ে চিৎকার করতে লাগলো, ঐদিক থেকে স্নেহা আর রাহুল ও এক্সাইটেড হয়ে তাকিয়ে রইলো..রিদোয়ান ও এগিয়ে এলো..

জারিফা : [ চেচিয়ে ] ইয়েএএএ…মার্জান মার্জান মার্জান!

_________মার্জান

♪♪ আজেকি লাডকে আই টেল ইউ ♪♪
♪♪ কিতনে লাল্লু হোয়াট টু ডু ♪♪

জারিফা : আরে ইয়ার! শায়লা আমার ও তো ডান্স করতে মন চাইছে..

♪♪আজেকি লাডকে আই টেল ইউ ♪♪
♪♪ কিতনে লাল্লু হোয়াট টু ডু ♪♪
♪♪ কই মুঝে পুছে হাউ আর ইউ ♪♪
♪♪ কই মুঝে বলে হাউ ডু ইউ ডু ♪♪
♪♪ কাভি্ কয়ি মুঝসে্ না কাহে ♪♪
♪♪ ওহ মাই ডার্লিং আই লাভ্ ইউ♪♪
♪♪ ওহ মাই ডার্লিং আই লাভ্ ইউ♪♪

_________আসিফ

♪♪ আজেকি লাডকি আই টেল ইউ ♪♪
♪♪ নাখড়ে ওয়ালি সুনলে তু ♪♪

রাহুল : ওহ মাই গড! স্নেহা! সব মজা তো এরাই করছে, আর আমাদের কখন থেকে দরবেশ বাবার মতো বসিয়ে রেখেছে!

স্নেহা : [ হেসে এক্সাইটেড হয়ে ] শাট-আপ রাহুল! ঐ দিকে দেখুন!

♪♪ আজেকি লাডকি আই টেল ইউ ♪♪
♪♪ নাখড়ে ওয়ালি সুনলে তু ♪♪
♪♪ না মে পুছু হাউ আর ইউ ♪♪
♪♪ না মে বলু হাউ ডু ইউ ডু ♪♪
♪♪ আভি্ ইয়েহি মে কেহেতা হু ♪♪
♪♪ ওহ মাই ডার্লিং আই লাভ্ ইউ ♪♪
♪♪ ওহ মাই ডার্লিং আই লাভ্ ইউ♪♪

[ সবাই তালি দিচ্ছে, হাসি পাচ্ছিলো মার্জানের, তাও আসিফকে মুখ ভেংগিয়ে দৌড়ে চলে এলো জারিফা আর শায়লার দিক ]

জারিফা : [ মার্জানকে জড়িয়ে ধরে ] ওহ! মাই ডার্লিং আই লাভ ইউউউউ [ বলতেই রিদোয়ান এসে হাত ধরে জারিফাকে টেনে নিয়ে চলে গেলো ডান্স ফ্লোরে, হাসতে লাগলো বাকিরা ]

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] মিউজিক! [ জারিফা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, এতোক্ষণ তো ডান্সের জন্য লাফাচ্ছিলো তবে হঠাৎ লজ্জা কেনো লাগছে ]

♪♪ বান্নো কি সে্হেলি রেশামকি ডোরি ♪♪
♪♪ চুপ চুপকে শারমায়ে দেখে চরি চরি ♪♪

[ জারিফাকে ঘুরিয়ে নিয়ে ]

♪♪ বান্নো কি সে্হেলি রেশামকি ডোরি ♪♪
♪♪ চুপ চুপকে শারমায়ে দেখে চরি চরি ♪♪
♪♪ ইয়ে মানে ইয়া না মানে ♪♪
♪♪ মে তো ইস্ পে মারগায়া ♪♪
♪♪ ইয়ে লাডকি হায় আল্লাহ ♪♪
♪♪ হায় হায়রে আল্লাহ ♪♪
♪♪ ইয়ে লাডকি হায় আল্লাহ ♪♪
♪♪ হায় হায়রে আল্লাহ ♪♪

______ জারিফা

♪♪ বাবুল কি গালিয়া না ছাডকে জানা ♪♪
♪♪ পাগাল দিওয়ানা ইস্ কো সামজানা ♪♪

[ রাহুল এক্সাইটেড হয়ে শিস বাজিয়ে উঠলো ]

♪♪ বাবুল কি গালিয়া না ছাডকে জানা ♪♪
♪♪ পাগাল দিওয়ানা ইস্ কো সা্মজানা ♪♪
♪♪ দেখো জি দেখো ইয়ে তো মেরা ♪♪
♪♪ পিছে পারগায়া ♪♪
♪♪ ইয়ে লাডকা হায় আল্লাহ ♪♪
♪♪ হায় হায়রে আল্লাহ ♪♪
♪♪ ইয়ে লাডকা হাহ আল্লাহ ♪♪
♪♪ হায় হায়রে আল্লাহ ♪♪

[ কোলে তুলে নিলো রিদোয়ান জারিফাকে সবাই তালি দিয়ে উঠলো, জারিফা লজ্জায় হেসে মুখে হাত দিয়ে ঢেকে রাখলো ]
_______________এইদিকে________________

স্নেহা খুশিতে তালি দিয়ে কখন যে রাহুলের হাত জড়িয়ে ধরে রাখলো খেয়ালই নেই! রাহুল বুঝতে পেরে হেসে তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক…

চলবে….

Love At 1st Sight Season 3 Part – 48

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 48

writer-Jubaida Sobti

হাসতে লাগলো রাহুল,স্নেহা ও মুচকি হেসে কেটে দিলো ফোন,

ভেতরের রুমে এসে খাটে বসে তার নাটকীয় ফ্রেন্ডগুলোর কান্ড দেখতে লাগলো, রাহুলের মায়ের দিয়ে যাওয়া হলুদের জিনিষপত্র গুলোর প্যাকিং খুলছে তারা,অবাক হচ্ছে সাথে আনন্দ ও নিচ্ছে… স্নেহার ও ভালোই লাগছে এসব দেখতে সাথে রাহুলের আসার অপেক্ষা করতে…

বেশিক্ষণ লাগলো না রাহুলের আসতে,বিশ-পচিশ মিনিটের মধ্যেই চলে এলো,দু-তিনবার নাগাতার গাড়ীর হর্ণ বাজতেই স্নেহার আর বোঝার বাকি রইলো না কে আসলো..

উঠে তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত তখনি,

শায়লা : স্নেহা! কোথায় যাচ্ছিস?

স্নেহা : রাহুল এসেছে ওর কাছে..

জারিফা : অহ মাই গড রাহুল! কেনো? কোনো রেগেমেগে আসলো না তো?

স্নেহা : আরে না আমিই বলেছি আসতে,[ এক্সাইটেড হয়ে ] আমি চাচ্ছিলাম ওকে এসব সামনাসামনিই বলবো..[ বলেই দৌড়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে তখনি, ]

স্নেহার মা : আরে স্নেহা? আবার কোথায় যাচ্ছিস?

স্নেহা : এসে বলবো মা, আসি! [ বলেই বেড়িয়ে গেলো ]

স্নেহার মা : [ চেচিয়ে ] আরে কিন্তু কোথায় যাচ্ছিস সেটা তো বল?

মার্জান : ডোন্ট ওয়ারি আন্টি, নিচেই যাচ্ছে রাহুল এসেছে ওর সাথে দেখা করতে! তাই..

জারিফা : [ স্নেহার মা কে টেনে বসিয়ে ] আরে আন্টি আপনি কই যাচ্ছেন? এইদিকে বসুন দেখুন কতো শপিং করা হয়েছে আমাদের জন্য! আমার তো মনে হচ্ছে সব সপ্নই দেখছি.. [ হাসতে লাগলো স্নেহার মা ]

______________এইদিকে_________________

স্নেহা গেইট থেকে বেড়িয়ে রাহুলের গাড়ীর দিক এগিয়ে সামনের দরজা খুলতেই দেখে রাহুল নেই…

রাহুল : [ পেছনের সিটের গ্লাস নামিয়ে ] আম হেয়ার স্নেহা! [ বলেই চোখ টিপ মারলো, মুচকি হেসে স্নেহা ও পেছনের দরজা খুলে এগিয়ে বসলো ]

রাহুল : কি ব্যাপার অনেক খুশি খুশি লাগছে! আমি তো ভেবেছিলাম তুমি লজ্জা পাবা!

স্নেহা : লজ্জা কেনো পাবো? আপনার সাথে ফাষ্ট টাইম নাকি? বাই দ্যা ওয়ে ভালোই করেছেন পেছনে বসে!

রাহুল : [ এক্সাইটেড হয়ে ] তাই ? না? আমি ও এটাই ভেবে পেছনে বসেছি! করতে সুবিধা হবে!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোয়াট?

রাহুল : [ হুট করেই স্নেহার একদম কাছে এসে ] কিস্!

স্নেহা : রাহুলল! [ বলেই ধাক্ষা দিয়ে সরিয়ে ] আমি কথা বলার জন্য বলেছি! মানে পেছনে বসে কথা বলতে সুবিধা হবে ওটা বুঝিয়েছি!

রাহুল : [ মুখ গোমড়া করে ] আচ্ছা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : কিন্তু তুমি কিস্ দেওয়ার কথা ছিলো তো…

স্নেহা : মজা করবেননা রাহুল! সিরিয়াসলি…আপনি কথাটা শুনুন…

রাহুল : [ আবারো স্নেহার কাছে এসে ] বাট! আমি বলেছিলাম কিস্ দিতে হবে সো্… [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার ঠোটের দিক তাকিয়ে রইলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের ঠোটের দিক তাকিয়ে ] কিক…কিন্তু রাহুল কেউ দে..দেখলে..

রাহুল : ব্লাক গ্লাস স্নেহা! কেউই দেখবে না…

স্নেহা : পুপ..পুলিশ আসলে…

রাহুল : পুলিশ কেনো আসবে স্নেহা!

স্নেহা : আপ..আপনি বলেছিলেন..পুলিশ ধরেছিলো কক…কয়েকবার ব্লাক গ্লা..গ্লাসের জন্য…

রাহুল : [ চেচিয়ে ] হোয়াট? [ চমকে উঠলো স্নেহা ] আর ইউ ক্রেজি? [ হেসে ] কামঅন স্নেহা! ওটার সাথে এটার কি সম্পর্ক?

স্নেহা : নাতো কি আপ..আপনিই তো বলেছিলেন ঐ দিন!

রাহুল : সামনের গ্লাস ব্লাক লাগালে! তখন পুলিশ ধরবে পেছনের না!

স্নেহা : আ..আচ্ছা?

রাহুল : [ স্নেহার নাকে নাক ঘষে ] বাহানা কম বানাও স্নেহা! এর আগেও গাড়ীতে করেছি ইউ রিমেম্বার? [ মাথা নাড়ালো স্নেহা ]

রাহুল : সো্ ভয়ের কি আছে… [ বলেই স্নেহার হাতে হাত মুঠি বেধে ধরে ধীরেধীরে স্নেহার ঠোটের দিক এগুতেই দেখে স্নেহা কপাল কুচকে চোখ বটে কুড়েমুড়ে এক হয়ে গেছে ]

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] কামঅন স্নেহা এতো ঘাবড়াচ্ছো কেনো? [ স্নেহা চমকে গিয়ে তাড়াতাড়ি চোখ খুলে তাকালো, রাহুল ও অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক, কেমন যেনো স্নেহার এই ভীতু মায়াবী চাহনিতে বারবার ডুবদিতে মন চাই রাহুলের ]

রাহুল : [ হেসে সিটে হেলান দিয়ে বসে ] আচ্ছা বলো কি বলতে ডেকেছিলে? [ স্নেহা চুপ করে রইলো, ওড়নার আচলের কোণা হাতের আংগুলে প্যাচাচ্ছে আর খুলছে ]

রাহুল : [ আবারো উঠে বসে স্নেহার সাইড ফিরে ] কি হলো বলো? [ তাকিয়ে রইলো স্নেহা রাহুলের দিক, দুজনের চোখই যেনো কথা বলে যাচ্ছে, ধীরেধীরে স্নেহা মুখ এগিয়ে রাহুলের গালে আলতো করে একটি চুমু খেলো ] [ Rahul give a tedi smile ]

[ সরে এসে পলক তুলে রাহুলের চোখেচোখ মিলালো স্নেহা, দুজনেই অজান্তে ব্লাশিং হতে চলছে, স্নেহার মাথা টেনে কপালে চুমু খেলো রাহুল, আলতো করে নাকের উপর ও একটি চুমু খেলো, মুখের উপর ফু দিতেই চোখ নামিয়ে ফেললো স্নেহা..

গলার চুল গুলো ও ফু দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে রাহুল…শুরশুরি লাগায় মুখ এপাশ-ওপাশ ফিরিয়ে নিচ্ছে স্নেহা, সাথে মুচকি হাসছে আর ব্লাশিং হচ্ছে রাহুলের কান্ডে, রাহুল কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে তেডি স্মাইল দিয়ে হেলান দিয়ে বসে পড়লো, দু-জনেই চুপ করে রইলো কিছুক্ষণ, নিরবতা ভেংগে স্নেহাই বলে উঠলো ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : আপনার বাবা আর মা এসেছিলো কিছুক্ষণ আগে!

রাহুল : [ হেসে ] আমাকে মজা করতে নিষেধ করে এখন নিজেই মজা করছো!

স্নেহা : মজা করছি না সিরিয়াসলি রাহুল! [ এক্সাইটেড হয়ে ] এই নেকলেসটা দেখেন আমাকে আগে পড়তে দেখেছেন এটা? [ রাহুল স্নেহার গলার দিক তাকালো ]

স্নেহা : আপনার মা পড়িয়ে দিয়েছে দেখেন! আমি তো ওদের দেখে ফাষ্টে পুরাই অবাক,

– আপনার মতো আমিও নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না, নাও আই এম সো্ সো্ হ্যাপি! [ রাহুল অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ]

স্নেহা : কি হলো বিশ্বাস হচ্ছে না? ঠিকাছে তাহলে আপনার দাদী থেকেই ফোন করে জিজ্ঞেস করেনিন! আচ্ছা আচ্ছা না হয় আপনার মায়ের কাছ থেকেই জিজ্ঞেস করেনিন!

রাহুল : লিসেন্ট! এটা কিভাবে সম্ভব?

স্নেহা : সম্ভব রাহুল! আপনার ফ্রেন্ডস আমার ফ্রেন্ডস আর দাদী মিলেই ওদের একসাথে আনার প্লানটা করেছে দারুণ না? সব বরাবরই হয়েছে!

– রাহুল! আমরা চেষ্টা করলেই ওদের আবার এক করতে পারবো!

রাহুল : কিন্তু স্নেহা!…

স্নেহা : কোনো কিন্তু না রাহুল! আমরা যেমনটা চেয়েছিলাম তেমনটাই তো হচ্ছে তাই না? আপনার প্যারেন্টস আমার প্যারেন্টস এর সাথে কথা বলে গিয়েছে..সবাই কতো খুশি!

– আপনার মা তো এটাও বলে গিয়েছে যে বিয়ে আজ হচ্ছে না কাল হচ্ছে! আজ রাতে ওনি গায়ে হলুদের জন্য হল বুকিং করে রেখেছে! আই মিন আজ রাতে আমাদের গায়ে-হলুদ হবে!

রাহুল : হোয়াট? আর তুমি মেনে নিয়েছো?

স্নেহা : হ্যাঁ! কেনো কি হয়েছে?

রাহুল : আর আমি যেটা ফিক্সড করেছি ওটার কোনো ভেলু নেই তাই না? স্নেহা! তুমি পাগল হয়ে গিয়েছো? ওরা বললো আজ বিয়ে হবে না তুমি ও সেটা মেনে নিয়েছো! কি হয়ে গেছে তোমার?

স্নেহা : রাহুল! ওরা সবাই অনেক খুশি! আমরা যে ডিশিসনটা নিয়েছি এটাই শুধু আমরা আমরাই থাকতাম, এখন আমাদের দু-পরিবার আত্মীয়স্বজন সকলেই থাকবে…

– আপনার বাবা-মায়ের ওতো কতো আশাছিলো আপনার বিয়ে নিয়ে তাই না?

রাহুল : তারমানে তুমি বলতে চাচ্ছো আজকে বিয়ে করবে না!

স্নেহা : বিয়ে আজ হোক আর কাল হোক তাতে কি এসে যায় রাহুল?

রাহুল : [ দাত কিলিয়ে ] তোমার কিছু না হতে পারে স্নেহা! কিন্তু আমার অনেক কিছু এসে যায়,

– ভালোবাসি তোমাকে স্নেহা! নিজের থেকে দূরে রাখতে ভয় হয়! তোমাকে হারানোর অস্থিরতা কাজ করে প্রতিটা সেকেন্ড, প্রতিটা মিনিট, প্রতিটা ঘন্টা, প্রতিটা মুহুর্ত!

স্নেহা : [ রাহুলের হাতের উপর হাত রেখে ] রাহুল! আই নো আপনি আমাকে অনেক ভালোবাসেন! কিন্তু…একবার ওদের কথা ও ভাবুন! আর একটা দিনই তো… এরপর তো আপনার স্নেহা আপনার কাছেই থাকবে তারপর আপনার আর ভয় পেতেও হবে না.. [ রাহুল স্নেহার হাত সরিয়ে দরজা খুলে বেড়িয়ে সামনের সিটে গিয়ে বসে পড়ে ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে তাকিয়ে ] আরে রাহুল! আপনি রেগে যাচ্ছেন কেনো?

রাহুল : [ সানগ্লাস চোখে লাগিয়ে গাড়ী স্টার্ট দিয়ে ] বাসায় যাও স্নেহা!

স্নেহা : [ পা তুলে পেছন থেকে সামনের সিটে এগিয়ে এসে বসে ] যাবো না!

রাহুল : জেদ করো না স্নেহা! বাসায় যাও!

স্নেহা : আর আপনি কি করছেন? [ জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে ] দেখেন রাহুল! এখন তো সবই ঠিকঠাক! আমার পরিবার খুশি,আপনার পরিবার খুশি, ইনফ্যাক্ট আমি ও অনেক খুশি এসবে, আর কি চাই!

রাহুল : ব্যাস স্নেহা! বাসায় যাও আমার বেরুতে হবে,পরে কথা বলবো!

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে ] আপনার ভেতরের এই এটিটিউডের কারণে কারো খুশিই আপনার চোখে দেখছেন না! প্রবলেম আপনার বাবাই এটা খুলে বললে প্রবলেম কি? [ জানালার উপর হাত রেখে বাইরের দিক তাকিয়ে রইলো রাহুল ]

– আপনি ঐ দিক ফিরে আছেন কেনো? আমি এইদিকে, এইদিক থেকে কথা বলছি! এইদিকে তাকান!

রাহুল : আচ্ছা বাবা হয়েছে! তোমরা আজ গায়ে-হলুদ করো! বিয়ে যখন কাল, আমি কালই আসবো বিয়ে করতে!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে এটা কেমন কথা?বিয়ে কি শুধু আমার নাকি? যে গায়ে হলুদ আমার একার হবে!

– দেখেন এখন থেকে আপনার কথায় চলবে না, আমার কথায় হবে, সো্ আপনার আজ ও আসতে হবে কাল ও আসতে হবে!

রাহুল : দেখা যাবে!

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] আপনি? [ বলেই গাড়ীর চাবিটা মুচড়া-মুচড়ি করে টেনে খুলে ছুড়ে মারলো রাহুলের গায়ে ]

রাহুল : আরেহ? [ বলতেই রাহুলের চোখ থেকে সানগ্লাসটা টেনে নিয়ে নাক ফুলিয়ে দরজা খুলে বেড়িয়ে, ধুপ করেই আবার দরজা লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো,

তাকিয়ে আছে রাহুল গ্লাস দিয়ে স্নেহার চলে যাওয়া, অপেক্ষায় আছে স্নেহা কখন ফিরে তাকাবে, তাকালোই না স্নেহা! ঢুকে গেলো গেইটের ভেতর, মনেমনে ভাবতে লাগলো রাহুল, আজিব একবার তাকালো ও না, বলেই চাবি লাগিয়ে গাড়ী স্টার্ট দিতেই দেখে গেইট থেকে মাথা বের করে আবার উকি দিচ্ছে স্নেহা, হনহনিয়ে এগিয়ে আসছে এইদিকটায়, রাহুল অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ]

স্নেহা : [ জানালা দিয়ে সানগ্লাসটা ছুড়ে মেরে ] আমি আপনাকে বাই বলতে আসিনি! আপনার সানগ্লাসটা দিতে এসেছি! [ বলেই চলে যাচ্ছে, মনে মনে হাসতে লাগলো রাহুল গেইটের সামনে গিয়ে আবারো একবার ফিরে তাকিয়ে ঢুকে পড়লো স্নেহা, রাহুল ও তেডি স্মাইল দিয়ে সানগ্লাসটা চোখে লাগিয়ে গাড়ী টান দিয়ে চলে গেলো ]

________________সন্ধ্যায়_________________

মার্জান : মাশাল্লাহ! স্নেহা! বললাম না তোকে আজ এইড্রেসে টিয়াপাখি লাগবে! [ মুচকি হাসলো স্নেহা ]

শায়লা : হোয়াট স্নেহা! সব ঠিকাছে তো? রাহুলের সাথে মিট করে আসার পর থেকে দেখছি মুখ গোমড়া করে রেখেছিস!

স্নেহা : [ হেসে ] আরে নাহ! তেমন কিছুই না সবই ঠিকাছে…ব্যাস একটু নার্ভাস লাগছে ওখানে সবার সামনে তাই…

জারিফা : আরে নার্ভাসের কি আছে! আমরা সবাই তো থাকবোই তুই একা নাকি?

মার্জান : আর বিশেষ করে রাহুল তো থাকবেই তোর পাশে! তাই না!

জারিফা : হ্যাঁ! রাহুল তো তোর পাশেই আঠার মতো লেগে থাকবে!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] আচ্ছা! তোদের আর কি কি বাকি আছে পড়ে নে! আমি একটু রাহুলকে কল করে আসছি!

জারিফা : ওকে ওকে যাহ! বলে আয় যা বলার!

[ মোবাইল হাতে নিয়ে বারান্দায় এগিয়ে এলো স্নেহা, মনে অস্থিরতা কাজ করছে এক তো তার ফ্রেন্ডসদের মিথ্যে বললো রাহুল রাগ করেনি, আবার এটাও ভয় করছে রাহুল আসবে নাকি আসবে না, কি আজিব পাচ-ছয় ঘন্টা হয়ে গেলো অথচ একটা ফোন ও করলো না, তারউপর মোবাইলটা ও বন্ধ করে রেখেছে! ]

স্নেহা : [ মনে মনে ] হয়তো রেগে আছে, তাই কল দেইনি, না নাহ, এটাও তো হতে পারে যে রাগ করেনি আমি ব্যস্ত থাকবো মনে করে কল দেইনি!

– কিন্তু যাওয়ার সময় তো রেগেই গিয়েছিলো,উফফ এতোটা রাগার কি আছে, একটা কল তো করতে পারতো!

– আরে হ্যা! রাহুল তো আমার উপর বেশিক্ষণ রেগে থাকতে পারে না, তারমানে হয়তো ও বিজি, তাই কেউ ডিস্টার্ব না করার জন্য বন্ধ করে রেখেছে, হ্যা! এটাই হবে [ বলেই হেসে ভেতরে ঢুকে যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার দাঁড়িয়ে গিয়ে ] কিন্তু যতো বিজিই থাকুক আমার সাথে কথা না বলে তো থাকতেই পারে না, তার মানে রেগেই আছে,

হঠাৎ,

জারিফা : [ এগিয়ে এসে ] স্নেহা! হয়েছে? গাড়ী বসে আছে কখন থেকে, তখন তোর চিকনিচ্যামেলি শ্বাশুরী বলবে নাজানি আমার ছেলের বউকে এরা কোন ভূত সাজাচ্ছে তাই এতো লেইট হচ্ছে!

স্নেহা : [ হেসে ] হ্যা..হ্যা! হয়েছে!

জারিফা : তাহলে চল! যাওয়া যাক! [ মাথা নাড়ালো স্নেহা, সবাই গিয়ে গাড়ীতে উঠে বসলো, গাড়ী রওনা দিলো ]

আধঘন্টার মধ্যেই হলে এসে পৌছালো,

জারিফা : আরে ওয়াহ কি সুন্দর সাজিয়েছে!

মার্জান : হ্যা! তাতো আমরাও দেখছি! এবার নামবি?

জারিফা : হ্যা! নামছিই তো! [ বলেই এক এক করে সবাই এসে নামতে শুরু করলো, স্নেহা নামতে যাবে ঐ সময় ]

রাহুলের বাবা : [ এগিয়ে এসে ] স্নেহা! এক মিনিট ওয়েট করো এখন নেমো না! [ বাকিরা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, স্নেহা ও অবাক হলো ]

হঠাৎ

শায়লা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আরে ওয়াহ! পালকি? স্নেহা দেখ!

রাহুলের বাবা : এইদিকে রাখো! এইদিকে [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! এসো!

জারিফা : আংকেল! স্নেহা ভেতরে পালকি করে যাবে?

রাহুলের বাবা : হ্যা! পালকি করেই যাবে!

জারিফা : ওয়াও আংকেল! দারুণ তো আইডিয়াটা! আরে স্নেহা আয়..উঠনা!

[ স্নেহা মাথা নাড়িয়ে নেমে এসে পালকিতে উঠে বসলো, মনে মনে ভাবছে স্নেহা, কি আজব ব্যাপার যা কখনো কল্পনাও করেনি সেসবি হতে চলছে.. এখন তো ব্যাস একটাই চিন্তা শুধু রাহুলটা ও যেনো রাগ না করে এসে যায়, পালকি উঠিয়ে হলের ভেতর প্রবেশ করানো হচ্ছে, বাকিরা ও পেছন পেছন এগিয়ে আসছে, ওয়াকিং ওয়ের রেড কার্পেটের শুরুতেই পালকি এসে থামলো,

পালকি নিচে রাখতেই, ধীরেধীরে স্নেহা পর্দা সরিয়ে এক পা মাঠিতে রেখে মাথা বের করতেই চারদিকের ঝলমলে বাতি সব বন্ধ হয়ে যায়,

বেড়িয়ে উঠে দাড়ালো স্নেহা, দু-পাশ থেকে আগুনের ঝলক ভেসে এলো, লাইন ধরেই সারিসারি রাহুলের ফ্রেন্ডস সব ক্যান্ডেল লাইট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কি অদ্ভুত দেখতে লাগছে চারদিক হলুদ রঙের ছায়া হয়ে আছে, ফুলের মালা দিয়ে তো কখন থেকে সেজে বসে ছিলো স্নেহা, কিন্তু সুভাষ ছড়াচ্ছিলো না, এখনি বুঝি ফুলগুলিও সুভাষ ছড়িয়ে দিচ্ছে, চুড়ি আর পায়েলের ঝংকার গুলিও এখন কানে ভাসছে,

হঠাৎ সামনে কারো ছায়া দেখতে পেলো, এক মুহুর্ত ও লাগেনি স্নেহার সেই ছায়াটি কার চেনার জন্য,ঠোটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো স্নেহার, উপর থেকে ছায়াটির উপর হলুদ বাতি জ্বলে উঠলো, বরাবরের মতোই চোখে সানগ্লাস লাগিয়ে হোয়াইট পাঞ্জাবি ব্লাক চুরিদারী প্যান্ট সাথে তেডি স্মাইল দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাহুল, স্নেহা থেকে যেনো সে চোখই সরাতে পারছিলো না, সাদা দেহের মাঝে সবুজ রঙ এর শাড়ীতে ডার্ক হয়ে আছে আজ স্নেহা, মাথায় লাগানো ফুটে থাকা সবুজ ফুল গুলোর মতো, লাল ঠোটের কোণে মুচকি হাসিটিও আজ অপরুপ লাগছে স্নেহার, আজ কারো নজর লাগুক না লাগুক রাহুলের নজর তো নিশ্চয় লাগবে স্নেহার,পাশ থেকে রিদোয়ান এসে রাহুলের হাতে স্পিকার ধরিয়ে দিলো,

স্নেহা : [ মনে মনে ] সব জায়গায় গান নিয়ে উপস্থিত থাকে আর নিজের বিয়েতে গান করবে না এটা কি হয় নাকি! তবে এতো ঢং করে এন্ট্রি নেওয়ারি যখন ছিলো তখনের ঢংটা না করলেই চলতো,শুধুশুধু সারাদিন টেনশনে ছিলাম! [ কানে মিউজিক টোন ভেসে আসলো সবার ]

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আরে ওয়াহ! জিজু! হারিয়াপ গাওনা আর তো ওয়েট হচ্ছে না শোনার!

মার্জান : শিসস! চুপ করবি! শুনতে দে না!

রাহুল : ♪♪ সুরাজ্ হুয়া্ মাধ্যাম ♪♪

♪♪ চাঁদে জ্বালনে লা্গা ♪♪

♪♪ আসে্মায়ে হায় ♪♪

♪♪ কিউ ভি্গালনে লা্গা ♪♪

[ মুচকি হাসলো স্নেহা, রাহুল ও একটু হেসে কিছুটা এগিয়ে এসে আবার থেমে গিয়ে ]

– ♪♪ মে ঠে্হরা রাহা যা্মি চালনে লাগি ♪♪

♪♪ ধা্রকায়ে দিল সা্সে্ থা্মনে লাগি ♪♪

♪♪ ওও কিয়া ইয়ে মেরা পে্হেলা পে্হেলা পি্য়ার হে ♪♪

[ স্নেহার কাছে এসে হাটু মাটিতে রেখে বসে ]

♪♪ সা্জনা~আ~ কিয়া ইয়ে মেরা পে্হেলা পে্হেলা পি্য়ার হে ♪♪

[ মাইকটা আসিফের হাতে ছুড়ে মেরে স্নেহার হাত ধরে একটি চুমু খেয়ে এগিয়ে, স্টেজের দিক নিয়ে যেতে লাগলো, সবাই একত্রে চিৎকার করে জোড়ে-সোরে তালি দিতে লাগলো, ক্যান্ডেল লাইট গুলো নিভাতেই চারদিক গ্রীন ঝলমলে ডোম লাইট গুলো ও জ্বলে উঠলো ]

মার্জান, জারিফা, শায়লা তিনজনই এক্সাইটেড হয়ে চারদিক ঘুরে ঘুরে দেখছে, হঠাৎ রাহুলের মা কে দেখে,

জারিফা : আরে ওয়াহ আন্টি! মাশাল্লাহ!

রাহুলের মা : মাশাল্লাহ! তোমাদের ও ওয়াও লাগছে! আর তোমাকে দেখে তো রিদোয়ান আজ হা করে তাকিয়ে থাকবে! [ জারিফা লজ্জা পেয়ে চুপ হয়ে যায় ]

মার্জান : আন্টি! আপনি কিভাবে..

রাহুলের মা : হুমম! আজই শুনেছি রাহুল থেকে সব, [ হাসতে লাগলো সবাই ]

রাহুলের মা : আচ্ছা তোমরা এঞ্জয় করো আমি আসি! ওকে!

মার্জান : ওকে আন্টি! [ চলে গেলো রাহুলের মা ]

শায়লা : [ চারদিক চোখ বুলিয়ে ] গাইস্ হল তো মনে হচ্ছে না যেনো লাগছে তাজমহল?

মার্জান : এই প্লেসটা দেখ নিশ্চয় ডান্সের জন্য বানিয়েছে…উফফ! ডান্স কবে করবো! আমার তো এক্ষুণি নাচতে মন চাইছে!

জারিফা : [ হেসে ] শুরু হয়ে যা! তোকে কে নিষেধ করছে নাকি? [ বলতেই হঠাৎ পাশ থেকে রিদোয়ান এসে হাত ধরে টেনে নিয়ে একপাশ নিয়ে গিয়ে দাড়করায়, শায়লা আর মার্জান হাসতে থাকে ]

রিদোয়ান : ওয়াও! হোয়াটে এ সেক্সি লুক!

জারিফা : আচ্ছা? থেংক ইউ! বাই! [ বলেই দৌড় দিচ্ছিলো ]

রিদোয়ান : [ টেনে ধরে ] বাই? তাই না?

জারিফা : দেখেন আসেপাশে সবাই দেখছে!

রিদোয়ান : সো্ হোয়াট? আমরা প্রেম করছি ওরাও একটু দেখুক!

________________এইদিকে_______________

মার্জান আর শায়লা সেল্ফি নিচ্ছিলো হঠাৎ,

মার্জান : আরে ওয়াহ! শায়লা তুই তো দারুণ শিস বাজাতে পারিস!

শায়লা : [ একটু কেসে ] শিস এপাশ থেকে নয় ওপাশ থেকে বেজেছে! [ বলতেই মার্জান পাশ ফিরে তাকিয়ে অবাক হলো ]

আসিফ : হুমম! থেংক্স ফর ইউর কমপ্লিমেন্ট!

মার্জান : এত্তোটাই বাজে ছিলো না! কি বলবো? মরা মানুষ শুনলে ও জেগে উঠে বলতো এক্সকিউজ মি প্লিজ আপনার শিস বাজানোটা বন্ধ করবেন! আমি মরেও আপনার শিস বাজানো শুনে শান্তি পাচ্ছি না!

আসিফ : [ হেসে ] তাইই! [ শায়লাও কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

মার্জান : জ্বি তাইই!

আসিফ : বাই দ্যা ওয়ে যতোটা সুন্দর লাগবে ভেবেছিলাম ততোটাও লাগছো না!

মার্জান : আচ্ছা? আপনি অন্তত আমার ব্যাপারে ভেবেছেন হলেও..বাট আফসোস আমি তো আপনার ব্যাপারে সেটাও ভাবিনি!

– আর হ্যা! আপনার ড্রেস লুকে মনে হচ্ছে ছোলা ছাড়া ডিমের কুসুম হুহ! [ বলেই মুখ ভেংগিয়ে শায়লার হাত ধরে টেনে নিয়ে চলে যায়, আসিফ হাসতে থাকে ]

____________অন্যদিকে স্টেজে____________

স্নেহা : [ ফিসফিসিয়ে ] বলেন না! তখন আমার সাথে এতো ঢং করলেন কেনো!

রাহুল : শাট-আপ স্নেহা!

স্নেহা : আমিতো শাট-আপই ছিলাম! আপনার কারণেই অর্ধেক বকবক করতে হয়েছে!

– এখন আবার আপনি চুপ করে আছেন কেনো? বলেন না, আপনি ইচ্ছে করেই তখন ঢং করেছিলেন তাই না! [ হাসি পাচ্ছিলো রাহুলের স্নেহার কান্ডে, পকেট থেকে চুইংগাম একটা বের করে প্যাকেট খুলে স্নেহার মুখে ঢুকিয়ে দিলো, শকড হয়ে গেছে স্নেহা ]

রাহুল : এবার চুপচাপ এটা চিবাতে থাকো,প্রশ্ন পরে করিও! [ with tedi smile ]

আড়চোখে তাকিয়ে মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো স্নেহা,

রাহুল : [ হেসে ] ক্যামেরায় উঠবে মুখ ভেংগানো, তখন সবাই বলবে বউটা ঝগড়াটে,

স্নেহা : বাস্তবে তো হতে পারলাম না অন্তত ক্যামেরায় হতে সমস্যা কি?

রাহুল : তবে আজ বাস্তবেই একটু বেশি ঝগড়া করছো!

স্নেহা : আপনার বিহেভিয়ারে ঝগড়া করতে হচ্ছে, হুহ! [ মুচকি হেসে চুপ করে রইলো রাহুল ]

স্নেহার নিজেকে সেলেব্রেটিই মনে হচ্ছে আজ, সবাই যেভাবে তাদের ছবি নিতে ব্যাস্ত! দূর দিক তাকাতেই স্নেহার রাহুলের বাবার দিক চোখ পড়লো, তার বাবার সাথেই কথা বলছে,আসেপাশে আরো কয়েকজনও আছে কিন্তু স্নেহা চিনে না, মাথায় বুদ্ধি এলো রাহুলকে নাচানোর,

স্নেহা : [ রাহুলকে চিমটিয়ে ] শুনেন!

রাহুল : আহ! মুখে বললেই তো হয় বাচ্চাদের মতো চিমটানো আর গাল টেনে দেওয়া ছাড়া কিছু জানো না?

স্নেহা : আচ্ছা ঐদিকে দেখেন আপনার বাবা, আমার বাবা, [ রাহুল হেসে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

– আরে দেখেন না, কি হ্যান্ডসাম লাগছে আপনার বাবাকে তাই না, ও হ্যা! আমার বাবাকে ও!

রাহুল : আমি শুরু করলে কিন্তু লজ্জায় কোথায় লুকাবা জায়গা খুজে পাবানা স্নেহা?

– ইউ নো রোমান্স করতে আমার টাইমিং আর ক্যারেক্ট প্লেস লাগে না,

স্নেহা : না..নাহ! ওকে! আ..আমি তো মজা করছিলাম! আপনার কিক..কিছু করতে হবে না [ বলেই জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে সোজা তাকিয়ে রইলো, হাসতে লাগলো রাহুল ]

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 47

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 47

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : আমি সপ্ন দেখছি? নাকি সত্যি সত্যিই দেখছি ?

মার্জান : স্নেহা সপ্ন না সত্যিই দেখছিস! [ বলেই স্নেহাকে সামনেরদিক ধাক্ষা দিলো, স্নেহা তাতে ও শক্ত হয়ে হা করে তাকিয়ে আছে ]

স্নেহার মা : [ পিছিয়ে এসে মার্জানের দিক তাকিয়ে ধীরো ভাবেই বলতে লাগলো ] এরা কারা?

জারিফা : আরে আন্টি এরা আপনার মেয়ের হবু শ্বশুর আর শ্বাশুরী! আই মিন রাহুলের বাবা-মা!

স্নেহার মা : কিন্তু আমিতো শুনলাম ওরা একসাথে থাকে না তাহলে…

মার্জান : ব্যাস! আন্টি আপনি ও এখনো ঐ সামিরের কথায় পড়ে আছেন! আগে বাড়ুন, আর ওদের আপ্যায়ন করুন! যান যান! [ বলেই এগিয়ে দিলো ]

স্নেহার মা : হ্যাঁ! হ্যাঁ! [ বলেই সোফা ঠিক করে দিয়ে ] আরে আসুন আসুন ভেতরে..এইখানে বসুন! [ রাহুলের বাবা-মা দুজনই ভেতরে এগিয়ে এসে দাড়ালো ]

রাহুলের মা : কেমন আছো স্নেহা ?

স্নেহা : আ..আন্টি..আং..আংকেল! আ..আপনারা একসাথে…মা..মানে…

রাহুলের বাবা : স্নেহা! শকড হয়ে আছো কেনো?

রাহুলের মা : [ চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে ] নিশ্চয় স্নেহার কারো একজনের চেহেরা মোটেও পছন্দ হয়নি!

– [ মুচকি হেসে ] তুমি আমার সাথে এসো [ বলেই স্নেহার হাত ধরে নিয়ে এগুচ্ছিলো, হঠাৎ আবার পেছন ফিরে এসিস্ট্যান্ট এর দিক তাকিয়ে ] জিনিষপত্রগুলো এইখানে একপাশ করে রেখে দাও [ বলেই স্নেহাকে নিয়ে সোফায় বসে পড়লো ]
_______________________________________

জারিফা : [ ফিসফিসিয়ে ] আরে গাইস্ কি স্টাইল ছিলো সানগ্লাস খোলার, আমি ছেলে হলে তো এতোক্ষণে লাইন মারা শুরু করে দিতাম,

শায়লা : তুই চুপ করবি! সিরিয়াসলি ম্যাটার চলছে আর তুই আছিস তোর নাটক নিয়ে!
_______________________________________
রাহুলের মা : তোমার ফ্রেন্ডসদের দেখছিনা? ওরা কোথায়?

জারিফা : [ পর্দার আড়াল থেকে চেচিয়ে ] হ্যালো আন্টি! উই আর হেয়ার!

রাহুলের মা : ঐখানে কি করছো এইখানে এসে বসো!

মার্জান : নো নো আন্টি! ইটস্ ওকে, আমরা এইখানেই ঠিক আছি! [ হঠাৎ স্নেহার বাবা ও এসে ঢুকলো, স্নেহার মা ইশারায় বুঝিয়ে দিলো এরা রাহুলের বাবা-মা, সাথেসাথেই কোলাকুলি আর হ্যান্ডশেক করে রাহুলের বাবার পাশেই বসলো স্নেহার বাবা ]

রাহুলের মা : হঠাৎ করে আপনাদের না জানিয়ে এভাবে চলে আসার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি!

স্নেহার মা : না না এতে কোনো সমস্যা নেই!

রাহুলের মা : আসলে আপনারা ও হয়তো জানেন ব্যাপারটা যে রাহুল আর স্নেহা,দুজন দুজনকে পছন্দ করে,এবং তারা চাইছে তাদের বাকি জীবনটা একসাথেই কাটিয়ে দিবে, সো্ আমিও তাদের সাথে একমত হয়ে বলতে চাচ্ছি যে ওদের ভালোবাসার রাস্তায় যেনো আমাদের মাঝ থেকে কেউ কাটা হয়ে না দাড়ায়,

– স্নেহাকে পাওয়ার পর আমার রাহুলের লাইফটাই বদলে গেছে, সে তার গম্ভীর দুনিয়া থেকে বেড়িয়ে এসেছে, আবার নতুন করে হাসতে শিখেছে, রাহুল অনেক খুশি স্নেহাকে পেয়ে, আর আমার মনে হয় না ওর জন্য স্নেহার চেয়ে বেটার লাইফ পার্টনার আর কেউ হতে পারে বলে,

– ছেলে তো আমার আছে, তবে একটা মেয়েরই কমতি ছিলো, আশা করি আপনারা চাইলে আমার সেই কমতিটাও স্নেহাকে দিয়ে পূরণ হয়ে যাবে,

রাহুলের বাবা : [ স্নেহার বাবার দিক তাকিয়ে ] কি বলেন ব্রাদার? শুনলাম আপনি নাকি রাহুলের জন্য একদমই রাজি না?

স্নেহার বাবা : [ মুচকি হেসে ] রাজি তো ছিলাম না, তবে গতকাল সন্ধ্যায় আমাকে যে ঠ্রেড দিয়ে গিয়েছিলো তখনি আমি বুঝে গিয়েছিলাম কিছু তো আছে এই ছেলের মধ্যে,

– হয়তো যেমনটা খুজছিলাম স্নেহার জন্য তেমনটা ও নিজেই খুজে নিয়েছে,

– তাই ডিশিসন নিয়েছিলাম আমার মেয়ে যেহেতু ওকেই চাইছে তাই কথাবার্তা বলে রাজি হয়েই যাবো,

– রাতে যখন বাসায় এসেছে রাহুল, ঐসময় ওর ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছিলো আমি যদি এখন কিছু বলি তাহলে ও আমাকেই রিপিট জবাব দিবে আমার চেয়েও বেশি ভালোবাসে ও স্নেহাকে, আর আমি চাইছিলাম ও এমন একজন যে আমার চেয়ে বেশি আমার মেয়েকে ভালোবাসবে,

– আর তারপর কি করেছে? স্নেহাকে বিয়ে করলে আমি ওর শ্বশুর হবো তো তাই না?

– আমার সামনেই সে কি কান্ড, হ্যা আমি জানি ও স্নেহাকে অনেক ভালোবাসে তাই বলে আমার সামনেই…[ সবাই মিটিমিটি হাসতে লাগলো ]

– আচ্ছা রেসপেক্ট নামের একটা জিনিস আছে তো তাই না? আমাকে দেখলেই এমনভাব করে যেনো আমাকে ও চিনেই না, আমি স্নেহার কিছুই হই না, না কোনো সালাম, না হাই-হ্যালো কিছুই করে না খালি বলে সাইড প্লিজ, [ হঠাৎ কিটকিটিয়ে হেসে দিলো জারিফা, সবাই পাশফিরে তাকানোর আগেই জারিফার মুখ চেপে ধরে ভেতরে ঢুকিয়ে নিলো মার্জান ]

রাহুলের বাবা : ভাই! আপনার সাথে হাই-হ্যালো কি করবে? আমি তো ওর বাবা তাই না? আমার সাথেই কখনো হাই-হ্যালো করেনি! কথা বলতে হলে আমার এসিস্ট্যান্ট মুরাদের দিক তাকিয়ে বলবে, মুরাদ ভাই বলে দাও এমন করতে হবে, বলে দাও ওমন করতে হবে, [ হেসে উঠলো স্নেহার বাবা, সাথে বাকিরাও ]

স্নেহার বাবা : রাহুলের প্রতি আমার সব ধারণাই ভুল ছিলো ওকে দেখার পর বুঝলাম ওর চেয়ে বেশি খুশি স্নেহাকে আর কেউই রাখতে পারবে না, হ্যা তবে একটু চঞ্চলতা বেশি,

রাহুলের মা : [ হেসে ] একটু না অনেক বেশি!তবে যাকে একবার ভালোবাসবে তারজন্য মনপ্রাণ উজাড় করে দিবে,

স্নেহার বাবা : হ্যা! তাতো দেখলামই গতকাল রাতে, আরো কতো কি উজাড় করতে পারে, [ স্নেহার মা ও হাসতে লাগলো ] আসলে আপনাদের দু-জনের প্রতি ও আমাদের অনেক ভুল ধারণা ছিলো, [ চুপ করে রইলো রাহুলের বাবা-মা ] কিন্তু এখন সব ক্লিয়ার হয়ে গেছে,

রাহুলের বাবা : আচ্ছা এসব বাদ দেন, এবার বলুন স্নেহা আমাদের মেয়ে হচ্ছে তো?

স্নেহার বাবা : কথাটা তো আমারই বলার দরকার! আপনাদের মতো এতোবড় পরিবারে আমার স্নেহাকে নিতে চাইবেন এটা আমাদের ভাগ্যের ব্যাপার!

রাহুলের বাবা : আরে এসব কি বলছেন! স্নেহার মতো কাউকে নিজের মেয়ে হিসেবে পাওয়া এটা আমাদের সৌভাগ্য!

স্নেহার বাবা : [ হেসে ] রাহুল! কাল বলে গেলো আজই নাকি বিয়ে করছে, আমাদের তো দাওয়াত ও দিলো না, তাই আমিও আর কিছু বললাম না ভেবে রাখলাম বিনা দাওয়াতেই চলে যাবো!

রাহুলের মা : [ হেসে ] ভেবে রাখার আর দরকার নেই, এখন তো আমরা সবাই রাজি, সো্ তাই এখন আর ওদের কথায় চলবে না, আমরা যা বলি তাই হবে,

– বিয়ে আজ হচ্ছে না, [ অবাক হয়ে তাকালো স্নেহা, জারিফা, মার্জান, শায়লা ]

রাহুলের মা : [ মুচকি হেসে ] কাল হবে বরং আরো ধুমধাম করে, [ স্নেহার ফ্রেন্ডসরা এক্সাইটেড হয়ে তালি দিয়ে উঠলো ]

রাহুলের মা : [ মুখ গোমড়া করে ] আমার একমাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা, কতো তৈরী সৈরী বাকি, আজকের মধ্যেই যদি বিয়ে হয় এতো কিছু আ্যরেঞ্জ করবো কিভাবে?

জারিফা : আরে আন্টি কতোদিন ধরে অপেক্ষা করছি এই বিয়ের, তারমানে আজ ও কেন্সেল, আমিতো ভেবেছি আজ রাতে সেজেগুজে রাহুল আর স্নেহার জন্য একটা ডান্স দিবো,

রাহুলের মা : আরে মন খারাপ করছো কেনো ডান্স ও হবে অবশ্যই, তাও আজ রাতেই!

জারিফা : [ কনফিউজড হয়ে ] কিক..কিভাবে?

রাহুলের মা : বিয়ের আগেরদিন কি হয়?

মার্জান : [এক্সাইটেড হয়ে ] গায়ে হলুদ!

রাহুলের মা : হ্যা! গায়ে হলুদ! আমি আসার সময় এসিস্ট্যান্টকে বলে কার্বন-হল বুক করে ফেলেছি, রাতে আপনারা আপনাদের রিলেটিভসদের সবাইকে সাথে নিয়ে চলে আসবেন, লেইট করবেন না কিন্তু বাকিদের ও এক্ষুণি বলেদেন নাহয় লেইট হয়েই যাবে,

রাহুলের বাবা : আর হ্যা! এসব অনেক তাড়াতাড়ি হচ্ছে বলে সব অ্যারেঞ্জমেন্ট কিভাবে করবেন এটা নিয়ে মোটেও চিন্তা করবেন না,স্নেহা যেহেতু এখন আমাদের তাই ওর সব কিছুর দায়িত্ব ও আমাদের!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওয়াও! আন্টি তারমানে রাহুল আর স্নেহার বিয়ের সব প্রোগ্রাম হবে! ইয়েসস্!

[ রাহুলের মা হেসে ব্যাগ থেকে বক্স বের করে, একটি গোল্ড নেকলেস পড়িয়ে দেই স্নেহার গলায় ]

মার্জান : [ ফিসফিসিয়ে ] মাশাল্লাহ! কি না লাগছে আমাদের স্নেহাকে,

রাহুলের মা : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] এদিকে এসো, [ বলেই শপিং করে আনা জিনিষপত্রগুলোর পাশে নিয়ে গিয়ে দাড় করিয়ে ] এগুলো আমিই পছন্দ করে কিনেছি, সো্ সব কিছু পড়ে তৈরী হয়ে থাকবা! আমি গাড়ী পাঠিয়ে দিবো চলে আসবা, [ স্নেহার ফ্রেন্ডসদের দিক তাকিয়ে ] আর তোমরা শুনো ওর সাজে যেনো কোনো কমতি না হয়, নাহলে রাহুলকে বলে তোমাদের গেইট ধরার টাকা কমিয়ে দিবো,

মার্জান : [ এগিয়ে এসে ] আরে না না আন্টি! এমন ভাবে সাজাবো ওকে, হলে পা রাখতেই দেখবেন সবাই পাচমিনিটের জন্য সেন্সলেস হয়ে গেছে, আর এই রঙের ড্রেসে তো ওকে পুরো টিয়াপাখি লাগবে!

শায়লা : আরে সবাইকে সেন্সলেস করতে হবে না শুধু রাহুলকে করতে পারলেই হবে,

রাহুলের মা : [ হেসে ] আচ্ছা! হ্যা তোমাদের ড্রেস গুলো ও দেখেনিও, আর সাথে তোমরা ও এমনভাবে সেজে এসো যাতে বাকি ছেলেদের তোমরাই সেন্সলেস করে দিতে পারো!

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] আমাদের জন্য ও শপিং?

রাহুলের মা : হুমম! আরে রাহুলের শালী বলে কথা! তাই না স্নেহা? [ মুচকি হাসলো স্নেহা, বিশ্বাসই হচ্ছে না এসব তার ]

জারিফা : বাই দ্যা ওয়ে আন্টি, বাকিদের সেন্সলেস আমাদের করা লাগবে না আপনার এন্ট্রিতেই অর্ধেক ছেলে ফিদা হয়ে যাবে, একটু আগেই না কিভাবে সো্য়েগ দিয়ে চশমা খুললেন! আমি তো অলরেডিই ফিদা! ব্যাস আরেকবার সো্য়েগটা যদি দেখিয়ে দিতেন আন্টি! [ রাহুলের মা হেসে চশমায় ফু মেরে চোখে পড়ে নিলো ]

জারিফা : ওয়াহহ আন্টি ওয়াহহ!

রাহুলের মা : [ হেসে ] আচ্ছা এখন আসি! রাতে দেখা হচ্ছে!

স্নেহার মা : আরে এভাবে খালি মুখে?

রাহুলের মা : খুশিতেই পেট ভরে গেছে আর কি লাগে! আজ আসি অন্য একদিন নিশ্চয় খাবো!

[ তাকিয়ে রইলো স্নেহা, রাহুলের বাবা-মা সবাই হাসিখুশি ভাবে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে গেলো, স্নেহা দৌড়ে গেলো বারান্দায়, স্নেহার ফ্রেন্ডসরা ও পেছন পেছন এগিয়ে এলো ]

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] গাইস্ আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না রাহুলের বাবা-মা একসাথেই..ইটস্ আন-বিলিভেবল!

শায়লা : আরে তোর চোখে পানি কেনো? তোর তো খুশি হওয়ার কথা!

স্নেহা : খুশি আমি অনেক অনেক খুশি! [ বলে নিচে তাকাতেই দেখে তিনটি গাড়ীর মধ্যে একটাই রাহুলের মা উঠেছে, আরেকটাই আলাদাভাবে রাহুলের বাবা, আরেকটা গাড়ী খালিই যাচ্ছে, অবাক হলো স্নেহা! এরাতো মিল হয়ে গেলো তাহলে আলাদা আলাদা যাচ্ছে কেনো, মার্জান বুঝতে পেরে স্নেহাকে টেনে ভেতরের রুমে নিয়ে চলে গেলো, হঠাৎ স্নেহার বাবা ও রুমে ঢুকলো ]

স্নেহার বাবা : [ স্নেহার চোখে পানি দেখে ] আরে স্নেহা! আবার কাদছিস কেনো? এখন তো সব ঠিক হয়েগেছে,

জারিফা : খুশিতে কান্না করছে আংকেল!

স্নেহার বাবা : [ মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে ] না জেনে অনেক কষ্ট দিয়েছি তোকে, অনেক কঠোর কথা ও বলে ফেলেছি, যদি সম্ভব হয় মাফ করেদিস!

স্নেহা : আরে বাবা,তুমি কেনো মাফ চাইছো? আমি রাগ করিনি, ব্যাস একটু অভিমান করেছিলাম, কিন্তু এখন সেটাও চলে গেছে,
– [ মুচকি হেসে ] আর তুমি অন্তত অভিনয় না করলে পারতে,

স্নেহার বাবা : আরে তুই ওতো বললি না যে বাবা আমরা আজ বিয়ে করতে যাচ্ছি, তুমিও এসো দোয়া দিতে, তাই আমি ও ভাবলাম তোদের না বলে আমিও গিয়ে সারপ্রাইজ দিবো, [ জড়িয়ে ধরলো স্নেহা তার বাবাকে ]

জারিফা : আরে আংকেল, স্নেহাকে আজই সব কান্না করিয়ে নিবেন নাকি? কালকের জন্য ওতো কিছুটা বাচিয়ে রাখতে দিন!

শায়লা : আংকেল! সবাইকে ইনভাইট করা ওতো বাকি রয়েগেছে তাই না?

স্নেহার বাবা : আরে হ্যা! আমিতো ভুলেই গেলাম!

শায়লা : আপনিই যদি ভুলে যান তাহলে কিভাবে হবে আংকেল?

স্নেহার বাবা : আচ্ছা আমি আসি তোরা কথা বল! [ চলে গেলো স্নেহার বাবা ]

মার্জান : [ স্নেহাকে টেনে খাটে বসিয়ে ] আরে স্নেহা, আবার কি ভাবছিস?

স্নেহা : তোরা আগে থেকেই জানতি রাহুলের বাবা-মা আসবে তাই না? কিন্তু কিভাবে?

মার্জান : সব বলছি স্নেহা! রিলেক্স!

জারিফা : [ হেসে ] ফ্লাশবেক!

মার্জান : তুই আর রাহুল বেরুনোর পরপর আমরাও বেড়িয়ে পড়েছিলাম..

স্নেহা : কোথায়?

মার্জান : আ..আমি, শায়লা, আর ঐ যে ইডিয়ট একটা আছেনা,

শায়লা : আসিফ!

মার্জান : হ্যা! হ্যা যেটাই ওর নাম, [ জারিফা আর শায়লা হাসতে লাগলো ] তোরা আবার হাসছিস কেনো? শয়তানদের নাম মুখে না আনায় ভালো, আর আজকের এই শুভ দিনে তো মোটেও না,

শায়লা : আচ্ছা? তাহলে আজ তো ওর গাড়ী করেই ঘুরে এলি,

মার্জান : এক্সকিউজ মি! তোর জন্য! তোর জন্যই আমার ওর গাড়ীতে উঠতে হয়েছে, আমিতো চেয়েছিলাম, জারিফা আর রিদোয়ানের সাথে উঠতে কিন্তু তুই…

শায়লা : আরে লাভ আছে দেখেই তো [ আড়চোখে তাকালো মার্জান ] না না..মানে তুই,জারিফা, তোরা দুজনই একসাথে চলে গেলে আমি অতো কিছু বুঝতাম নাকি?তখন উল্টোপালটা কিছু যদি বলে ফেলতাম

মার্জান : [ একলাফেই ঝাপিয়ে ধরলো শায়লাকে ] কথা ঘুরাবিনা, বল কি লাভ আছে? নাহলে তো জানিষ আমি ক্লাস ফাইভে ক্যারাটিতে মেডেল পেয়েছি,

শায়লা : আরে ছাড়, ব্যাথা পাচ্ছি!

মার্জান : না বললে ছাড়ছি না,

শায়লা : আচ্ছা ছাড় বলছি, [ ছেড়ে দিলো মার্জান ] আস..আসলে..ও বলেছে যদি তোকে ওর গাড়ীতে বসাতে পারি, [ এক্সাইটেড হয়ে ] তাহলে রাহুলের গেইট ধরার সময় তোদের দিবে পঁচিশ পার্সেন্ট করে, আর বাকি পঞ্চাশ পার্সেন্ট ফুল আমাকে ওয়াও!

মার্জান : তুই আমার ফ্রেন্ড নাকি ওর, ঐ শয়তানটার ঘুষ খাচ্ছিস?

শায়লা : আরে তাতে প্রবলেম কি, যাই হোক ও বললো আমার ফিউচার জিজ…

মার্জান : থামলি কেনো বল? বলনা!

শায়লা : [ একলাফে খাট থেকে নেমে ] আমার ফিউচার জিজু হবে,

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] ওয়াআওও!

মার্জান : দাড়া তুই! পালাচ্ছিস কোথায় [ বলেই দৌড়াতে লাগলো ]

স্নেহা : তোদের মারামারি হলে এবার বলবি ঘটনা কি?

মার্জান : [ দীর্ঘ একটি নিশ্বাস ছেড়ে খাটে এসে বসে ] বলছি ওয়েট! [ শায়লার দিক তাকিয়ে ] কিন্তু তোকে পড়ে দেখে নিবো,

স্নেহা : হ্যাঁ বাবা পরে সব দেখেনিস এবার তো বল,

মার্জান : আমি, শায়লা, আর ঐ শয়তানটা, আমরা গিয়েছিলাম রাহুলের মায়ের কাছে, শয়তানটাকে নিতামই না, নিতে হয়েছে কারণ আমরা তো আর রাহুলের মায়ের বাসা চিনি না তাই! তারপর ওখানে গিয়ে বসলাম, [ হেসে ] আন্টি সামনে আসার পর হাই-হ্যালো বলে বসে রইলাম, কারণ আমি ওনাকে ভেবেছি, নিশ্চয় রাহুলের বড় কোনো কাজিন টাজিন হবে,পরে ঐ শয়তানটা যখন আন্টি বললো তখনিই বুঝলাম যে নাহ এটাই রাহুলের মা, ওনার সামনে তো আমাদের নিজেকে খালাম্মাই মনে হচ্ছিলো, ভেবেছি রাগি-টাগি হবে, কিন্তু কথা বলে বুঝলাম না একদম রসমালাইয়ের মতো মিষ্টি,

স্নেহা : কি কথা বললি, যে ওনারা একসাথে আসার জন্য রাজি হয়ে গেছে,

মার্জান : আরে আমরা তো প্লান করেছি আলাদায় আসুক সমস্যা নেই, কিন্তু এইখানে আসলেই হলো, একত্রে আনার ক্রেডিট টা আরেকজনের,

স্নেহা : কার ক্রেডিট?

মার্জান : আরে বলছি বলছি, এতো অস্থির হচ্ছিস কেনো? সিরিয়ালি বলি,

স্নেহা : আচ্ছা!

মার্জান : তারপর রাহুলের মাকে বললাম, আন্টি আপনি কি রাহুলকে হারিয়ে ফেলতে চান? ওনি বলবে কখনোই না এটা আমার জানাই ছিলো,

– তারপর আমি বললাম রাহুল তো দেবদাস হয়ে গেছে আন্টি, ও কাল রাত থেকে ড্রিংক্স করছে তো করছে থামছেই না, আমাদের এটাও বলেদিয়েছে [ কাদোভাবে ] যদি ও স্নেহাকে না পায়, তাহলে সুইসাইড করবে, তখন আন্টির চোখগুলো রসগোল্লার মতোই হয়ে গেছে, ঐ চান্সে আমিও বললাম আপনি কি চান এটা ও করুক?

– আর ওনি বললো কখনোই না, কিন্তু স্নেহা আর ওর মাঝে তো সব ঠিকই চলছিলো হঠাৎ আবার কি হলো?

– তারপর আমি বললাম, না আন্টি নাহ, কিছুই ঠিক নেই, সব শেষ হয়ে যাচ্ছে, স্নেহার বাবা রাহুলকে বললো যেখানে তোমার বাবা-মা একসাথে সংসার করতে পারেনি সেইখানে তুমি আর আমার মেয়ের সাথে কি সংসার করবে, আমি তোমার সাথে স্নেহাকে বিয়ে দেবো না,

– তারপর আমি বললাম, আন্টি! রাহুল অনেক রিকোয়েষ্ট করলো কিন্তু স্নেহার বাবা মানলোই না, বরং স্নেহাকে আরো এটাও বলেদিয়েছে যদি ও রাহুলকে বিয়ে করে তাহলে চিরজীবনের জন্য ওর ঐ ঘরের দরজা বন্ধ থাকবে,

– তারপর আন্টি বললো এটা কেমন কথা ওরা দুজন-দুজনকে ভালোবাসে,

– তারপর আমি বললাম, কি করার আন্টি স্নেহা ও বাধ্য হয়ে তার বাবার কথা মেনে নিয়েছে, কিন্তু রাহুল বলছে সে স্নেহাকে ছাড়া…

স্নেহা : তারপর কি বলেছে বলনা?

মার্জান : তারপর আন্টি বলেছে, আমার রাহুল যা চাইনি তা সবকিছুই পেয়েছে, কিন্তু যেটা চাই সেটা থেকেই বঞ্চিত হয়েযায়, কিন্তু আমি বেচে থাকতে ওকে আর ওর চাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে দেবো না, আমিই বলবো স্নেহার বাবার সাথে কথা,

স্নেহা : কিন্তু রাহুলের বাবা?

মার্জান : সেটা জারিফা থেকেই শোন ও গিয়েছে,

জারিফা : আমিও আর কি তুই যেভাবে শিখিয়ে দিয়েছিস ঐভাবেই বললাম, রাহুল দেবদাস হয়ে গেছে, স্নেহাকে ছাড়া নাকি ও থাকতে পারবে না ব্লাহ ব্লাহ ব্লাহ, তারপর দাদী আর রিদোয়ান মিলেই কয়েকটা লাইন আরো বাড়িয়ে বলে দিয়েছে,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] দাদী ও?

মার্জান : হ্যা! দাদী ও! দাদীকে রিদোয়ান আর ঐ শয়তান কি যেনো নাম ওর, যেটাই হবে, ওরা দুজন মিলে বুঝিয়ে দিয়েছে, তারপর দেখলাম দাদী তো আমাদের চেয়ে ডেরিং বেশী,

স্নেহা : মানে?

মার্জান : মানে রাহুলের মা যখন রাজি হয়ে আমাদের সাথে রাহুলের বাসায় আসলো, দাদী বললো একসাথে বিয়ের জন্য শপিং করে রাখা জিনিষ গুলো ও নিয়ে যেতে,

– তারপর রাহুলের মা কি বললো জানিস?

শায়লা : আরে! ও কেমনি জানবে?

মার্জান : বললো এগুলো একটাও যাবে না স্নেহার বাসায়, আমার একমাত্র ছেলে, ওর বিয়ের শপিং আমি নিজ হাতেই নিজ চয়েসে করবো,

শায়লা : কিন্তু স্নেহা! সবচেয়ে মজার ব্যাপার তো তখনি হয়েছে যখন রাহুলের বাবা আর মা সামনাসামনি হয়েছে,

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] কি হয়েছে বলনা!

মার্জান : আরে আংকেল তো ফিরে তাকালো হলেও আন্টির দিক, কিন্তু আন্টি কি না এটিটিউড, আড়চোখে ও তাকালো না, চোখে সানগ্লাস পড়ে মডার্ণ ওয়াক দিয়ে গাড়িতে চলে যাচ্ছিলো,

– কিন্তু তখনিই দাদী বলে উঠলো, আরে তোমরা আলাদা আলাদা গেলে তো স্নেহার বাবা-মা এমনিতেও বুঝে যাবে,একসাথে গেলে হয়তো ওরা বুঝবে যে ওদের ধারণাটা ভুল! তখন আবার রিজেক্ট করে দিলে কি হবে আমার রাহুলটার? কিছুই তো করতে পারলা না জীবনে ওর জন্য! আজ না হয় তোমরা এইটুকুটা করো!

শায়লা : বাহ! কি অভিনয় ছিলো দাদীর! মাশাল্লাহ, মাশাল্লাহ!

মার্জান : ইয়েস্! তখনি আন্টি থেমে গিয়ে কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললো,স্নেহার বাসায় একত্রে ঢুকলেই হলো, কিন্তু গাড়ী! আমি আমারটাই উঠবো, কারো হেল্প এর প্রয়োজন নেই!

– তারপর আমি দাদীকে বললাম, দাদী এইটুকুতেই চলবে! কিন্তু তাড়াতাড়ি করুন রাহুল আসার আগে,

স্নেহা : তারপর বল, কি হলো?

মার্জান : তারপর দাদী বললো, আচ্ছা ঠিকাছে কিন্তু বিয়ের জিনিষপত্র গুলো তো নিয়ে যাও,

– তারপর আন্টি বললো, যাওয়ার পথে আমিই শপিং করে নিবো,

– তারপর আর কি আন্টি শপিং করে আসতে আসতে, এর আগে আমরা বাসায় এসে হাজির!

স্নেহা : রাত থেকে মাথায় এসব পাকাচ্ছিলি? কিন্তু তোরা আমাকে এসব কিছুই জানাসনি কেনো?

জারিফা : তোকে জানালে কি হতো! তুই এটাই বলতি,

– না,নাহ এসব করা ঠিক হবে না, যদি উল্টোপালটা কিছু হয়ে যায়, আরো ব্লাহ ব্লাহ কতো কি, হুহ!

মার্জান : হ্যা! তারপর আমরা তোর গায়েহলুদ, বিয়ে, আলাদা আলাদা প্রোগ্রাম খাওয়াটাও মিস করে দিতাম, [ হেসে ] সাথে তোর চিকনিচ্যামেলি শ্বাশুরীটাকে ও!

জারিফা : ওমা আমারতো তো ফাষ্টে দেখে বিলিভই হচ্ছিলো না, সিল্কি কুচি শাড়ী, চোখে কালো সানগ্লাস, কুড়ানো-কাড়ানো লম্বা ফিগার, সব মিলিয়ে পুরা কাট্রিনা কাইফই মনে হচ্ছিলো!

– [ উঠে দাঁড়িয়ে ] স্নেহা তুই আর তোর শ্বাশুরি মিলে না বিয়ের পর এই গানটায় ডান্স করতে পারবি ♪ মাই নেইম ইজ, শিলা~শিলা কি জাওয়ানি, আম টু সেক্সি ফর ইউ, মে তেরে হাতে না আনি ♪ [ হাসতে লাগলো সবাই ]

স্নেহা : থেংক ইউ! গাইস্ এসব আমি কখনো এক্সপেক্ট করিনি!

জারিফা : [ জড়িয়ে ধরে ] আরে স্নেহা! আমরা এসব করেছি যাতে, তোর বিয়েতে মন খারাপ না থাকে, হাসিখুশিতেই সব হয়, আর তুই কিনা কাদছিস!

স্নেহা : তোদের সাথে থেকে আমার বোন নেই এটা কখনোই ফিল হয়নি! আর আজ প্রুভ ও করেদিয়েছিস তোদের চেয়ে বেটার বোন, বেটার ফ্রেন্ড,আর কেউ হতেই পারবে না!

মার্জান : আরে আরে,দুলহান এখন থেকেই আমাদের ইমোশনাল করে দিচ্ছে,

শায়লা : বাই দ্যা! ওয়ে স্নেহা! এখন কাদলে রাতে ফেইস ফেকাসে দেখাবে, আর তোর চিকনিচ্যামেলি শ্বাশুরিই তো দেখলি কি বলে গেলো, সাজে যাতে কোনো কমতি না হয়, [ স্নেহা হেসে তিনজনকেই জড়িয়ে ধরলো ]

মার্জান : ব্যাস! স্নেহা! আমাদের শুধু এখন তোর মিষ্টার তেডি স্মাইলকেই নিয়ে ভয়, আমরা যে এসব মিথ্যে বলেছি…

স্নেহা : [ হেসে ] ওকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না, ঐ ওতো চাইছিলো যে ওর বাবা-মা একসাথে হয়ে যাক,

শায়লা : কিন্তু একসাথে হলো কই?

স্নেহা : আচ্ছা আমি আসছি! রাহুলকে কল দিয়ে [ বলেই ফোন হাতে নিয়ে রাহুলকে কল দিয় বারান্দায় চলে গেলো ]

রাহুল : [ রিসিভ করে ] কি ব্যাপার! সুইটহার্ট মিস্ করছিলে আমায়! আমি জানতাম তুমি আমার সাথে রেগে থাকতে পারবে না!

স্নেহা : মোটেও মিস্ করছিলাম না আপনাকে!

রাহুল : আচ্ছা! তুমি তো এতোদিন শান্ত,নরম মনের তুলতুলে ছিলা,আজ হঠাৎ এতো কুড়কুড়ে স্পাইসি্ হয়ে গেলা কিভাবে বলো তো?

স্নেহা : আচ্ছা! শুনেন আমি না আপনার সাথে দেখা করবো! তাও এক্ষুণি! আপনি যেখানেই হোন আমি অতো কিছু বুঝি না কোনো বাহানাও চলবে না, ব্যাস এক্ষুণিই আসবেন!

রাহুল : হোয়াট? কিক..কিন্তু মাত্রই তো তোমাদের ঐখান থেকে এলাম!

– আচ্ছা বুঝেছি! ঐ যে কিস্ দাওনি ওটা দেওয়ার জন্য? [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! আজ রাতে না হয় দিয়ে দিবা!

স্নেহা : আপনার কাছে নিগেটিভ কথাগুলো ছাড়া আর কিছু মাথায় আসে না?

রাহুল : কামঅন স্নেহা! এটা রোমান্টিক মোমেন্টের রোমান্টিক কথা ছিলো,

– আর এমনিতেও নিগেটিভ এর আমি এখনো কিছু বলিনি, [ হেসে ] আচ্ছা বলবো নাকি? তুমি চাইলেই আমি বলতে পারি, আমার কোনো প্রবলেম নেই!

স্নেহা : আমি মজা করছি না!

রাহুল : আরে! তো আমি কবে বললাম আমি মজা করছি!

স্নেহা : আপনি আসবেন কি আসবেন না?

রাহুল : সিরিয়াসলি?

স্নেহা : আরে হ্যা! তো বাবা, সিরিয়াসলি!

রাহুল : আম নট ইউর বাবা! ইউ কেন কল মি সুইটহার্ট!

স্নেহা : রাখছি আমি ফোন!

রাহুল : [ হেসে ] আরে আরে! রেগে যাচ্ছো কেনো! আসছি! আমি,

– আজ আমাকে তুমি তোমার বাসায় যাওয়ার রাস্তাগুলোর মধ্যে গাড়ী দিয়ে জগিং করিয়ে নিচ্ছো!

স্নেহা : হ্যা! এগুলো যাতে আপনার বিয়ের পরেও মনে থাকে,

রাহুল : হ্যা তাতো থাকবেই! আচ্ছা শুনো আমি তো আসছিই, আমার কিসটা ও কিন্তু দিতে হবে বলেদিলাম!

স্নেহা : বাইই! [ হাসতে লাগলো রাহুল, স্নেহা ও মুচকি হেসে কেটে দিলো ফোন ]

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 46

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 46

writer-Jubaida Sobti

মার্জান, শায়লা, জারিফা তিনজনই বেড়িয়ে পড়লো..
_________ এইদিকে,

রাহুল ড্রাইভ করছে, স্নেহা কোলের উপর লেপটপ রেখে কাপড় এর ডিজাইন দেখছে, গালে হাত দিয়ে হুটহাট একটার পর একটা খালি চেঞ্জ করতেই চলছে, মাথায় কনফিউজড এ ভরপুর হয়ে যাচ্ছে স্নেহার,ঠাস করেই লেপটপটা বন্ধ করে রেখেদিলো!

রাহুল : আরে কি হলো?

স্নেহা : দেখেন রাহুল! এসব আমার দ্বারা হবে না, আপনিই যে কোনো একটা চয়েস করে নিয়ে নিন ব্যাস!

রাহুল : কনফিউজড হওয়ার কি আছে? তুমি যেটাই পড়বে সেটাতেই তোমাকে এঞ্জেল লাগবে, [ চুপ করে জানালার পাশ ফিরে রইলো স্নেহা ]

রাহুল : কি হলো স্নেহা? তোমার মন খারাপ মনে হচ্ছে! একটু আগেই তো মেসেজে অনেক হুমকিটুমকি দিলা, আমি তো ভয়ে আমার ইম্পর্টেন্ট কাজটাজ সব ফেলে তাড়াহুড়ো করে চলে এলাম,

স্নেহা : মেসেজ গুলো আমি দিইনি!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] তাহলে?

স্নেহা : ওরা তিনজন মিলে দিয়েছে!

রাহুল : আচ্ছা ইউ মিন ঐ নটি কোম্পানির দল?

স্নেহা : হুমম!

রাহুল : হোয়াটট? হোয়াট, হোয়াট? আমাকে বোকা বানিয়েছে? [ হঠাৎ স্নেহার হাসি চলে এলো রাহুলের কথা শুনে ]

– হাসো তুমি ওরা আমার ইমোশন নিয়ে খেলেছে, আমি ভাবলাম তুমি নিজেই আমার সাথে টাইম স্পেন্ড করতে চাচ্ছিলে, হয়তো আমাকে খুব মিস্ করছিলে তাই আদর করে বললে সুইটহার্ট তুমি কোথায়? এক্ষুনি আসো..[ কাদো ভাবে ] তার মানে সব বানানো ছিলো! ইডিয়ট কোথাকার ওদের তো আমি আজ রাতেই দেখে নিবো!

স্নেহা : [ হেসে ] নিজেকে অতিচালাক মনে করলে এমনই হয়! [ রাহুল ও আর কিছু বললো না, শার্ট থেকে সানগ্লাসটা ছুটিয়ে নিয়ে চোখে পড়ে নিলো, বুঝতে পারছে পাশ থেকে স্নেহা তাকিয়ে আছে হাসি পাচ্ছিলো রাহুলের, তাও হাসি চেপে রেখে শিস বাজিয়ে গান করতে করতে গাড়ী চালাতে লাগলো, হঠাৎ খেয়াল করলো কেউ টান মেরে সানগ্লাসটা খুলে নিয়ে নিলো, পাশ ফিরে তাকাতেই দেখে সানগ্লাসটা স্নেহাই পড়ে নিচ্ছে, মনে মনে হারিয়ে যাচ্ছে রাহুল, স্নেহার সানগ্লাস পড়া রকিং স্টাইল দেখে, কিনা লাগছে উফফ! ইচ্ছে করছে গালটা টেনে একটা টাইট করে কিস দিবে, কিন্তু সবই ভাগ্যের খেলা এই সময় স্নেহা তার থেকে কমপক্ষে একহাত দূরে, তারউপর ড্রাইভিং ও করছে ]

হঠাৎ,

স্নেহা : [ চেচিয়ে ] রাহুলল! সামনে থাকান! [ রাহুল মাথাঘুরিয়ে সামনে তাকাতেই সাথেসাথে গাড়ী জোড়ে একটা ব্রেক নিয়ে থেমে গেলো, ভয়ের সাথে দীর্ঘ একটি শ্বাস ও বেড়িয়ে এলো দু-জনের, আর একটুর জন্য এক্সিডেন্ট হতে হতে বেচে গেলো, স্নেহার দিক আর তাকালো না রাহুল, কারণ সে জানে এখন স্নেহা তাকে বড় একটা কম্পোজিশন শুনিয়ে দিবে, তাই ধীরেধীরে গাড়ীটা সাইড করে একপাশ করে দাড় করালো, এর আগেও অনেকবার এক্সিডেন্ট এর মুখোমুখি হয়েছে রাহুল, কিন্তু মনে ভয় ছিলো না বরং আরও ফ্রিডম কাজ করতো, কিন্তু আজ হঠাৎ কেনো যেনো বুকটাও কাপছে, কারণ তার সাথে আজ স্নেহা ও আছে, যদি কিছু হয়ে যেতো? ]

স্নেহা : আজিব! ধ্যান কোথায় ছিলো আপনার?

রাহুল : তোমার কাছে!

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে, সানগ্লাসটা খুলে রাহুলের কাছে ছুড়ে মেরে ] ঠিকাছে! [ বলেই হুটহাট গাড়ীর দরজা খুলে পেছনের সি্টে গিয়ে বসে পড়লো, অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুল ]

রাহুল : আরে স্নেহা রাগ করছো কেনো?

স্নেহা : এখন থেকে আমি পেছনেই বসবো, তারপর আপনার ধ্যান শুধু ড্রাইভিং এ ফোকাস্ হবে,

রাহুল : [ গাড়ী থেকে নেমে, পেছনের সিটে এগিয়ে এসে বসে ] ওকে তো বাবা সরি আর হবে না,

– আচ্ছা নাও কান ধরলাম! [ চুপ করে রইলো স্নেহা ]

রাহুল : তুমি সানগ্লাস পড়েছিলে, কিনা লাগছিলো তোমায়,আমিতো পুরো… [ আড়চোখে তাকালো স্নেহা, চুপ হয়ে গেলো রাহুল, ধীরেধীরে স্নেহার হাতের উপর হাত রাখতেই হুট করে হাত সরিয়ে নিলো স্নেহা ]

রাহুল : [ ইমোশনাল হয়ে ] আ..আজকে আমার বিয়ে, কিছুটাতো রহোম করো স্নেহা! আর কখনো হবে না, ফোকাস্ অলোয়েজ ড্রাইভিং এ থাকবে, প্রমিস! [ জানালার পাশফিরে গেলো স্নেহা, হঠাৎ শুরশুরি লেগে উঠলো, কানের ধারে চুল সরিয়ে ফিসফিস করে কেউ বলতে লাগলো, আই লাভ ইউ! চোখ বন্ধ করে জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে ভাবতে লাগলো স্নেহা কেনো যেনো রাহুলের মুখ থেকে আই লাভ ইউ! কথাটি শুনতেই নিজেকে স্বর্গে আবিস্কার করছে এমনই মনে হয়, হালকা করে কানে একটি কিস্ করলো রাহুল, শিউরে উঠে মাথা সরিয়ে ধীরেধীরে রাহুলের পাশ ফিরে তাকালো স্নেহা, তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে রাহুল, হঠাৎ লজ্জা লেগে উঠলো স্নেহার, ব্লাশিং হয়ে সেও হেসে উঠলো ]

রাহুল : [ স্নেহার গাল টেনে দিয়ে ] কামঅন স্নেহা! স্ট্রোভেরি ফ্লেভার হয়ে যাচ্ছো [ বলেই স্নেহার গালে কিস্ করতেই যাচ্ছিলো, হুট করেই স্নেহা পিছিয়ে গিয়ে,হেসে রাহুলের গালটাও টেনে দিলো ]

রাহুল : আও! স্নেহা! আগেই বলেছি আমি বাচ্চা না!

স্নেহা : তাহলে কি আমি বাচ্চা আমাকেও টানলেন কেনো?

রাহুল : তুমি বাচ্চা না তো কি? কথা নেই বার্তা নেই বাচ্চাদের মতো গালফুলিয়ে অপ করে পেছনে এসে বসে গেছো!

স্নেহা : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] কথা নেই বার্তা নেই তাই না? একটু আগে এতোবড় ভূলটা কে করতে ছিলো শুনি? [ বলেই রাহুলের নাকটা টেনে চেপে ধরে রাখলো ]

রাহুল : [ হেসে নাক থেকে স্নেহার হাত ছুটিয়ে দিয়ে ] আচ্ছা ওকে সরি,এটা আর বারবার মনে করিয়ে দিতে হবে না! [ বলেই স্নেহার মাথা টেনে কপালে একটি চুমু খেলো, মুচকি হেসে রাহুলের হাত জড়িয়ে কাধে মাথা রাখলো স্নেহা, এভাবেই গল্প করতে করতে এক ঘন্টা কাটিয়ে দিলো তারা ]

রাহুল : এখন তো অন্তত সামনে এসে বসবা! হুম?[ স্নেহা মাথা নাড়িয়ে একবার না করে দিলো, রাহুলের মুখটা গোমড়া করে ফেলায় আবার মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ করে ফেললো স্নেহা, দু-জনেই একসাথে হেসে উঠলো, বরাবরের মতোই স্নেহা সামনে এসে বসে পড়লো আর রাহুল ড্রাইভিং সি্টে বসে ড্রাইভ করছে, কিছুক্ষণ পরই রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখলো, স্নেহা অনেক চিন্তিত ভাবে বসে আছে ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম?

রাহুল : কি চিন্তা করছো?

স্নেহা : কিছুই না! [ রাহুল বুঝতে পারলো স্নেহা মিথ্যে বলছে, তাই গাড়ী তাড়াতাড়ি মোড় ঘুড়িয়ে নিলো, গাড়ী এসে থামলো সেই জায়গায় যেখানে তারা রাতের শীতে দাঁড়িয়ে আইস্ক্রীম খেয়েছিলো ]

রাহুল : চলো আইস্ক্রীম খাবা!

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] আমি কি বলেছি আইসক্রীম খাবো?

রাহুল : এমনিতে তো আইস্ক্রীমের গাড়ীটা দেখলেই লাফাতে থাকো আজ এতো কনফিউজড হচ্ছো কেনো? চলো নামো! [ রাহুলের কথা মতো স্নেহা ও নেমে দাড়ালো,আগের মতোই স্নেহার পছন্দের ম্যাংগো ফ্লেভার এর কুলফিটা নিলো, তাকিয়ে আছে রাহুল স্নেহার দিক, আইস্ক্রীম গলে পড়ে যাচ্ছে আর স্নেহার খবরই নেই! অন্যমনস্ক হয়ে আছে স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] স্নেহা! কোথায় হারিয়ে গেলা?

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] হ্যাঁ?.. নাহ কিছুনা [ বলেই অল্প একটু আইস্ক্রীম খেলো ]

রাহুল : স্নেহা তুমি ঠিকাছো তো? আজ তো তোমার সবচেয়ে বেশী খুশি হওয়ার কথা,আমি তো ভাবলাম খুশিতে তুমি চারপাচটা আইস্ক্রীম একসাথেই খেয়ে নিবা, কিন্তু তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি অনেক চিন্তিত!

স্নেহা : [ আইস্ক্রীমটা গ্লাসে ভরে রেখে ] আমার ইচ্ছে করছে না আইস্ক্রীম খেতে [ বলেই হুরহুর করে গাড়ীর পেছনের সিটে গিয়ে বসে পড়লো, রাহুল অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, কি হলো স্নেহার এমন বিহেভ করছে কেনো,আইস্ক্রীমের টাকা পে করে স্নেহার দিক এসে দরজা খুলতে গেলো, কিন্তু দরজা খুলছে না,বুঝতে পারলো রাহুল স্নেহা ভেতর থেকে লক করে রেখেছে, কিন্তু হঠাৎ এমন করার মানে কি? ]

রাহুল : স্নেহা! হোয়াট হ্যাপেন টেল মি! [ চুপ করেই বসে রইলো স্নেহা ]

রাহুল : [ গ্লাসে টোকা মেরে ] লক খুলো! [ কোনো জবাবই দিচ্ছে না স্নেহা ]

রাহুল : কি সমস্যা এমন কেনো করছো? আমি কিছু ভুল করেছি? [ মাথা নাড়ালো স্নেহা ]
– তাহলে?

স্নেহা : [ আরো একটু গ্লাস নামিয়ে ] রাহুল! আমি বাসায় যাবো!

রাহুল : লক খুলো!

স্নেহা : দেখেন আমার মন এমনিতেই খারাপ,আপনি গিয়ে গাড়ী চালান,আমাকে একটু একা থাকতে দিন,

রাহুল : আচ্ছা! এককাজ করি আমি রোডের মাঝে গিয়েই দাঁড়ায়,গাড়ী সবাই আমার উপরই চালিয়ে দিক! [ বলেই হেটে চলে যাচ্ছে ]

স্নেহা : [ দরজা খুলে চেচিয়ে ] আরে আরে! কই যাচ্ছেন! [ পেছন ফিরে তাকালো রাহুল ]

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] খু..খুলেছি!

রাহুল : [ এগিয়ে এসে ] আরেকটু ভেতরে ঢুকো! [ পিছিয়ে গেলো স্নেহা,রাহুল ও স্নেহার পাশে বসে দরজা লাগিয়ে দিলো ]

– এইবার বলো মন কেনো খারাপ? আর যদি চুপ করে থাকো তাহলে দেখবা কি করি!

স্নেহা : ব..বললে আপনার মন ও খারাপ হয়ে যাবে তাই আপনি না জানাটাই ব্যাটার!

রাহুল : লিসেন্ট আমি না জানলে তোমার মন ভালো করবো কিভাবে?

স্নেহা : বললাম তো! তখন আপনার নিজের মনই খারাপ হয়ে যাবে!

রাহুল : আচ্ছা সমস্যা নেই আমার মন খারাপ হোক! তোমার মন ভালো করতে পারলেই হলো!

স্নেহা : বলবো?

রাহুল : হ্যা বলো!

স্নেহা : রাগবেন না কিন্তু বলেদিলাম!

রাহুল : ওকেই ওকে, রাগবো না!

স্নেহা : ব..বলছিলাম যে বিয়েতে যদি আপনার বা..বাবাকেও.. [ স্নেহার মুখে হাত দিয়ে থামিয়ে দিলো রাহুল, স্নেহা আবারো কিছু বলতে যাবে তখনি ]

রাহুল : শিসসস! আজকে আমি তোমাকে বিয়ে করছি, আমি আজ অনেক অনেক খুশি! সো্ আজ এসব কথা বলে মুডটা নষ্ট করতে চাই না! হ্যাপি থাকো, যে চিন্তাটা করতে ছিলা ওটা মাথা থেকে ফেলে দাও!

স্নেহা : [ নাকফুলিয়ে রাহুল হাতটা ঝাড়ি মেরে সরিয়ে ] আপনি আসলেই একটা..

রাহুল : হ্যা! আমি অনেক কিছু! তাও হ্যাপি থাকো! কিন্তু যেটা বলতে ছিলা ওটা আর মাথায়ও আনবা না! চলো সামনে এসে বসো

স্নেহা : কখনোই না!

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে ] ওকে! [ বলেই স্নেহার হাত টেনে ধরে বের করে আনলো ]

স্নেহা : দেখেন আপনি জবরদস্তি করছেন!

রাহুল : জবরদস্তির এখনো কি দেখেছো! হেটে গিয়ে বসবা নাকি কোলে তুলে বসাবো? [ মুখ ভেংগিয়ে হনহন করে সামনে গিয়ে বসে ধুপ করেই দরজা লাগিয়ে দিলো স্নেহা, হাসতে লাগলো রাহুল স্নেহার কান্ডে, আর না ভেবে গাড়ীতে গিয়ে উঠে বসলো, স্নেহা জানালার পাশ ফিরে রইলো ]

রাহুল : মন এখন খারাপ থাকলে সমস্যা নেই! রাতে ঠিক করে দিবো! [ with tedi smile ] [ স্নেহা বিরবির করে কি কি যেনো বলে নাক ফুলিয়ে রাখলো ]

রাহুল : ওহ গড স্নেহা! আর কতো লাল হবা রেড স্পাইসি্ ডিশ হয়ে যাচ্ছো! [ চুপ করেই রইলো স্নেহা ]

রাহুল : মনে মনে ভাবছো বিয়েই করবে না আমাকে তাই তো! [ হেসে ] কিন্তু এখন আর আমি তোমার পার্মিশন এর অপেক্ষায় থাকছি না, বাচ্চা মেয়ে থেকে আবার কিসের পার্মিশন? [ স্নেহা আড়চোখে একবার তাকিয়ে আবারো জানালার পাশ ফিরে গেলো ]

রাহুল : কাধে তুলে উঠিয়ে নিয়ে আসবো, [ অভিমান করে চুপচাপই রয়ে গেলো স্নেহা,রাহুল বকবক করে স্নেহাকে আরো রাগ তুলে দিতে দিতে এসে পৌছালো স্নেহার বাসার সামনে, তাড়াহুড়ো করে দরজা খুলে নামতে গেলো স্নেহা, কিন্তু দরজা খোলা যাচ্ছিলো না পাশ ফিরে রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! এতো তাড়া কিসের?একটা কিস্ দাও লক খুলে যাবে [ জোড়ে একটি শ্বাস ফেললো স্নেহা ] আচ্ছা শুনো! সন্ধায় তোমার জন্য কাপড় পাঠিয়ে দিবো, তৈরী থাকবা, [ মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো স্নেহা ]

রাহুল : [ হেসে ] আচ্ছা ঠিকাছে না পড়লে সমস্যা নেই! আমি এসে নিজ হাতেই পড়িয়ে দিবো! [ স্নেহা তাকাতেই রাহুল চোখ টিপ মারলো, হঠাৎ খেয়াল করলো স্নেহা রাহুলের দিক এগুচ্ছে, একদম কাছে এগিয়ে আসতেই অবাক হয়ে স্নেহার চুলের স্মেল নিতে লাগলো রাহুল, হাতটা এগিয়ে সুইচড চেপে ডোর লক ওপেন করলো স্নেহা ]

রাহুল : অও! আমাকে বললেই পারতে! [ with tedi smile ]
নাকফুলিয়ে হনহন করে নেমে চলে যাচ্ছে স্নেহা,

রাহুল : [ হেসে চিৎকার করে ] আরে স্নেহা! একটা বাই তো বলো! [ উপরে উঠে গেলো স্নেহা, বাসায় গিয়ে বেল বাজাতেই দেখে জারিফা,মার্জান,শায়লা তিনজনই একত্রে মিলে তাড়াহুড়া করে দরজা খুললো ]

জারিফা : তুই?

মার্জান : দু-ঘন্টাতেই শেষ! আরেকটু লেইট করে আসলেই পারতি! [ স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনিই জারিফা স্নেহাকে সরিয়ে আশেপাশে উকি দিয়ে দিয়ে দেখতে লাগলো ]

স্নেহা : আরে কাকে খুজছিস?

জারিফা : [ কনফিউজড হয়ে ] আব..রার..রাহুল রাহুলকে! ও আসেনি!

স্নেহা : নাহ! কিক..কিন্তু তোদের ভাবসাব দেখে তো মনে হচ্ছে তোরা আর কারো অপেক্ষা করছিলি!

শায়লা : মোটেও না, আ..আমরা তো রাহুলের অপেক্ষা করছিলাম! রাহুলের!

মার্জান : আরে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকবি নাকি? আয় ভেতরে আয়! [ বলেই স্নেহাকে টেনে নিয়ে রুমে চলে যায় ]

স্নেহা : এ..এক মিনিট, তোরা তখন আমার মোবাইল থেকে রাহুলকে ঐ মেসেজ গুলো কেনো দিলি?

জারিফা : আরে স্নেহা! আমরা চাচ্ছিলাম যে তোরা কিছুক্ষণ একসাথে টাইম স্পেন্ড কর তাইই!

স্নেহা : [ তিনজনের দিক কিচ্ছুক্ষণ ঘুরঘুর করে তাকিয়ে ] মাথায় কি চলছে তোদের বলতো?

মার্জান : আব..দে..দেখ স্নেহা! [ আলমারি খুলে ] এই কাপড়টা আজ পড়বো ভাবছি! দারুণ না? হুমম?

জারিফা : আর আমি এটা! দেখ দেখ!

শায়লা : আরে এই জুয়েলারি গুলি দেখ! উফফ আমার তো ওয়েটই হচ্ছে না কখন রাত হবে!

স্নেহা : বাহানা বানিয়ে বারবার কথা ঘুরিয়ে দিচ্ছিস! আর এসব তো আমাকে গতকাল রাতেও দেখিয়েছিস!

জারিফা : [ হেসে ] আরে তখন তো রাত ছিলো তাই না? তাই এখন আবার দিনে দেখাচ্ছি! কেমন দেখতে বল? হুম হুম? [ হঠাৎ বেল বেজে উঠলো দরজায়, স্নেহা খেয়াল করলো বেল এর সাথে সাথে এই তিনজনের চোখ দু-টো ও বড় বড় হয়ে গেছে, দৌড়ে দরজা খুলতে যাচ্ছিলো তিনজন ঐ সময় স্নেহা রুমের দরজায় হাত রেখে পথ আটকিয়ে ধরলো ]

মার্জান : আরে স্নেহা সর বেল বাজছে!

স্নেহা : তাতো আমিও শুনতে পাচ্ছি! কিন্তু সকাল থেকে দেখছি, দরজা খুলতে তোদের অনেক তাড়া?

মার্জান : আরে সকালে তো রাহুলকে মেসেজ করেছিলাম তাই ওর জন্য তাড়াহুড়ো করে দরজা খুলতে যেতেছিলাম!

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুমম! তো এখন কিসের তাড়া?

জারিফা : আরে স্নেহা সর! [ বলেই স্নেহাকে সরিয়ে দরজা খুলতে যাবে তখনিই স্নেহার মা চেচিয়ে চেচিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলো, বাকিরা উকি দিয়ে তাকাতেই স্নেহা ও উকি দিয়ে দেখলো কে, সাথে সাথেই স্নেহা থমকে গেলো, চোখ দু-টো রসগোল্লার মতো বড় বড় হয়ে গেলো স্নেহার, নড়াচড়া বন্ধ একদম স্টেচিউ! ]

মার্জান : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে এক্সাইটেড হয়ে ] আরে এসে গেছে! ওয়াও!

জারিফা : [ স্নেহাকে ধাক্ষা দিয়ে ফিসফিসিয়ে ] আরে স্নেহা দাঁড়িয়ে আছিস কেনো যা না!

স্নেহা : আমি সপ্ন দেখছি? নাকি সত্যি সত্যিই দেখছি ?

চলবে….

Love At 1st Sight Season 3 Part – 45

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 45

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : [ উঠে বারান্দায় গিয়ে ] হ্যালো!

রাহুল : আহহ! মন যেনো শান্তি খুজে পেলো?

স্নেহা : তা এতোক্ষণ অশান্তিতে ছিলেন বুঝি?

রাহুল : তা তো বটে, কারণ! তোমার পাশে থাকলে শান্তি লাগে, তোমাকে বুকে জড়িয়ে রাখলে শান্তি লাগে, তোমার কন্ঠ শুনতে শান্তি লাগে,সো্ তাই এখন শান্তি লাগছে! [ মুচকি হাসলো স্নেহা ]

– আচ্ছা! আমার ফাদার-ইন-লো কোথায়? আছে নাকি চলে গেছে? [ বলেই হাসতে লাগলো ]

স্নেহা : আম শিয়র! জারিফা,মার্জান আর আপনার তিনজনেরই মাথার একটা করে তার ছিড়া!

রাহুল : [ হেসে ] আচ্ছা? তা কেনো?

স্নেহা : আপনি তো করে গেলেন বাবার সামনে কান্ড সব, আর আপনি যাওয়ার পর শুরু করলো ওরা দু-জন!

রাহুল : কি করলো ওরা? [ স্নেহা হেসে হেসে সব বলতে লাগলো আর রাহুল ঐ দিকে হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাচ্ছে ]

স্নেহা : এমনভাবে বানিয়ে সাজিয়ে বাবার মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে, বাবা কোনো জবাবই দিলো না, চুপচাপ চিন্তা করতে করতে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে,

রাহুল : [ হেসে ] ইহাদের বলে আমার কিউট শালী, বাই দ্যা ওয়ে, ওরা কিন্তু সব সত্যিটাই বললো এইখানে বানানো কিছুই তো দেখলাম না,

স্নেহা : আচ্ছা? তো শুনি আপনার সানগ্লাস খোলা দেখে ক-জন মেয়ে বেহুশ হয়েছে?

রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা এসব কাউন্ট করে রাখার টাইম আছে নাকি?

স্নেহা : আচ্ছা! তাহলে আমি হলাম না কেনো বেহুশ?

রাহুল : হতেই তো ছিলা প্রথমদিনই স্টেশনে আমার প্রেমে পড়ে বেহুঁশ হয়ে যেতে ছিলা, বাট আমি ধরে ফেলেছিলাম,

– [ হেসে ] এনিওয়ে বলেও লাভ নেই তুমি এমনিতেও শিকার করবে না,

স্নেহা : নেভার! আমি কখনোই ঐ দিন বেহুশ হতে ছিলাম না! ওটাতো..

রাহুল : হ্যা! হাফ বেহুঁশ হয়েছিলা,কজ আমি সানগ্লাস খুলিনি পড়েইছিলাম! তাই..

স্নেহা : এক্সকিউজ মি! আপনি নিজের মুখে বলেছেন ঐদিন আপনি আমাকে ইচ্ছে করেই ধাক্ষা দিয়ে ফেলেছেন!

রাহুল : কি করার বলো ঐদিন তো আমি নিজেই বেহুঁশ গিয়েছিলাম, তোমাকে দেখে মনের মধ্যে গিটার বাজা শুরু করে দিয়েছিলো,

– হালকা বাতাসে উড়ছিলো তোমার কালো কালো চুল, লাল লাল গাল, গায়ে পেছানো কালো শাল, হলুদ রঙের জামা পড়ে যখন দৌড়ে যাচ্ছিলে পুরো মনে হচ্ছিলো বাদামে ভরা রসালো ভ্যানিলা আইস্ক্রীম,ধরার আগেই যেনো গলে পড়ে যাবে,

– সো্ আমি জাষ্ট সামনে পা এগিয়ে দিলাম তুমি হোচোট খেলে আমি ধরে ফেললাম, হিহি এত্তো সহজে গলতে দেই কিভাবে এই ভ্যানিলা আইস্ক্রীমকে বলো?[ স্নেহা একটু লজ্জা পেয়ে হেসে উঠে ]

রাহুল : আচ্ছা স্নেহা! একটা কথা জিজ্ঞেস করার ছিলো!

স্নেহা : হুমম! বলেন?

রাহুল : সামির তোমার বাবাকে কতো টাকা দিয়েছিলো?

স্নেহা : হ..হঠাৎ এটা জিজ্ঞেস করছেন?

রাহুল : স্নেহা! তুমি এখনো আমাকে ফাইনেন্সিয়াল ব্যাপারগুলো শেয়ার করতে আনইজি ফিল করো!

– কেনো? [ চুপ করে রইলো স্নেহা ]

রাহুল : লিসেন্ট! আমি চাইনা ঐ সামিরের ছায়া ও আর তোমার ফ্যামিলির উপর পরুক! সো্ বলো কতো টাকা দিয়েছিলো ?

স্নেহা : থা..থার্টি লাকস্!

রাহুল : ওকে![ স্নেহা কিছু বলতে যাবে হঠাৎ তখনি ]

মার্জান : [ ফোন কেড়ে নিয়ে ] আজ এতো কথা বলে ফেললে কাল কি বলবেন শুনি? কিছু কথা তো অন্তত জমা রাখেন জিজু!

রাহুল : আরে লিসেন্ট!

মার্জান : কিসের লিসেন্ট! কাল থেকে তো আপনার বকবক শুনতে শুনতে বেচারির কান জ্বালাপালা হয়ে যাবে, সো্ আজ আপনার ছুট্টি বাইইই! গুড নাইটটট! [ বলেই কেটে দিলো ফোন, রাহুলের ও কি আর করার হাসতে লাগলো সে, আর স্নেহাকে নিয়ে তার ফ্রেন্ডসরা আড্ডা দিতে দিতে রাত ঘনিয়ে ফেললো ]

পরদিন সকালে,

আজ তাড়াতাড়িই ঘুম ভাংলো রাহুলের,উঠেই দেখে লিভিং সোফায় ব্যাঙের মতো চিৎ হয়ে শুয়ে আছে আসিফ, আর দরজার দিক তাকাতেই দূর থেকে দেখা যাচ্ছে ড্রইং রুমের সোফায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে রিদোয়ান,

মনে মনে হাসতে লাগলো রাহুল,দুনোটা রাতে ড্রিংক্স খেতে খেতে ওতোটুকুতেই ঘুমিয়ে পড়েছে, আলসেমি কেটে উঠে পাশ থেকে পানির জাগটা নিয়ে আসিফের দিক এগিয়ে গেলো, বেখবর হয়েই ঘুমুচ্ছে একদম, রাহুল ও আর দেরী কিসের ঝরঝর করে ঢেলে দিলো পানি সব আসিফের মুখের উপর,

মুখে হাত রেখে চমকে উঠে বসলো আসিফ, মাথা নেড়ে পানি ঝেড়ে উপরের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল হেসে হেসে দাঁড়িয়ে আছে, আসিফ ও আর এক সেকেন্ড লেইট করলো না পাশ থেকে ছোট একটি কশুন নিয়ে ছুড়ে মারলো রাহুলের গায়ে, রাহুল কেচ নিয়ে আবার রিটার্ন আসিফের দিক ছুড়ে মেরে হাসতে হাসতে ওয়াসরুমে চলে গেলো,ফ্রেশ হয়ে কাপড় চোপড় চেঞ্জ করে রুম থেকে বেড়িয়ে দেখে আসিফ দাঁড়িয়ে আছে ড্রইং রুমের বারান্দায়,আর রিদোয়ান এখনো ঘুমুচ্ছে চিৎ হয়ে,

রাহুল : [ রিদোয়ানের পাশে গিয়ে বসে কের্চ পড়তে পড়তে ] হেইই রিদ! উঠনা, আমাদের ওর আগে পৌছাতে হবে তো তাই না!

রিদোয়ান : [ ঘুমন্ত অবস্থায় ] ইয়াহ বেবী! আ লাভ ইউ টু

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হোয়াটট?

আসিফ : [ হেসে হেসে এগিয়ে এসে ] এই তো দিনের মধ্যে সপ্ন দেখছে এখনো!

রাহুল : [ রিদোয়ানকে নাড়িয়ে দিয়ে ] ও হ্যালো! আম নট জারিফা! আই এম রাহুল!

রিদোয়ান : রাহুল! আজকে, হ্যা! আজকেই ওর বিয়ে!

রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] ওহ মাই গড! এই তো এখনো ড্রাংকে!

আসিফ : হ্যা! তো পানি গুলো ওকেই মারা উচিৎ ছিলো না? ইডিয়ট [ বলেই ডাইনিং টেবিল থেকে এক গ্লাস পানি ঢেলে নিয়ে ছুড়ে মারলো রিদোয়ানের মুখের উপর ]

রিদোয়ান : [ চমকে গিয়ে মাথা ঝেড়ে উঠে বসে ] হোয়াট দ্যা হেল?

আসিফ : [ চোখ টিপ মেরে ] গুড মর্নিং!

রিদোয়ান : উইন্টারে ঠান্ডা পানি মেরে ঘুম থেকে উঠিয়ে আবার বলিস গুড মর্নিং, [ চেচিয়ে ] এটাতো বেড মর্নিং এর চেয়ে ও খারাপ!

আসিফ : এক্সুলি তোর মাথায় চেপে থাকা ভুতটা ঝাড়ছিলাম!

রিদোয়ান : ভুত আমাকে না! তোদের চেপেছে, আর এসব কি পড়ে ঘুরছিস? জামা কাপড় না পড়ে, হাফ-প্যান পড়ে হট সেজে বসে আছিস!

আসিফ : আচ্ছা? আর তুই জামাকাপড় পড়ে অনেক কুল সেজে বসে আছিস তাই না! [ বলতেই রিদোয়ান নিজের দিক তাকিয়ে দেখে অলরেডি সে নিজেও থ্রি-কুয়াটার প্যান্ট পড়ে খালি গায়ে বসে আছে ]

রিদোয়ান : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] ওওও আবার আপনি কোথায় যাচ্ছেন এভাবে ক্রেজুয়েল সেজেগুজে, সেক্সি সেক্সি পার্ফিউম লাগিয়ে? বিয়ে তো রাতে তাই না?

রাহুল : তো আমি কি ক্রেজুয়েল পড়ে বিয়ে করতে যাবো? তোর দিমাগ গেছে আজ! [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আমি যাচ্ছি দাদীর কাছে, তোরা ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে আয়,

রিদোয়ান : ওকে, দাদীকে আমার পক্ষ থেকে গুড মর্নিং বলেদিস! [ বলেই আবার শুয়ে যায় ]

রাহুল : ওকে [ বলেই এগিয়ে গিয়ে টেবিল থেকে জাগটা হাতে নিতেই, রিদোয়ান একলাফে উঠে দৌড় মারে ওয়াসরুমে,রাহুল আর আসিফ হাসতে থাকে ]

রাহুল দাদীর কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গেষ্ট হাউজ থেকে বেড়িয়ে বাড়ীতে ঢুকলো, ড্রইং রুমে আসতেই দেখে দাদী বসে আছে ডাইনিং টেবিলে নাশতা নিয়ে,

রাহুল : গুড মর্নিং দাদী! [ বলেই চেয়ার টেনে দাদীর পাশে গিয়ে বসলো ]

দাদী : আরে! তোর সারভেন্ট বললো আসিফ আর রিদোয়ান ও এসেছে ওরা কই?

রাহুল : আসছে! ফ্রেশ হচ্ছে!

দাদী : আচ্ছা! এই নে, তাহলে তুই শুরু কর! [ বলেই বাটার লাগিয়ে একটি ব্রেড এগিয়ে দিলো রাহুলের প্লেটে ]

রাহুল : দাদী! আমার একটা চেক লাগবে! থার্টি লাকস্ এর!

দাদী : এবার আবার কোন গাড়ীর উপর ক্রাশ খেয়েছিস? গাড়ী কিনতে কিনতে তো গ্যারেজটাকে শো-রুম বানিয়ে ফেললি!

রাহুল : উফফো দাদী গাড়ীর জন্য না! ব্যাস লাগছে!

দাদী : তা আমি দিতে যাবো কেনো? তোর একাউন্ট থেকেই নে!

রাহুল : ফিনিশ!

দাদী : তোর একাউন্ট ফিনিশ করে আমার একাউন্ট ফিনিশ করার ধান্ধায় থাকিস সবসময়!

রাহুল : আহা এতো কিপ্টামি করছো কেনো? তোমার তো বড়লোক ছেলে আছে, ওয়ান-টু তেই একাউন্ট ভরিয়ে দিবে!

দাদী : এর চেয়ে বড়লোক তো নাতি আছে, বিনা মেহনতে যার একাউন্ট ভরে যায়, নিজেরটা শেষ হলে ও কোনো চিন্তা নেই দাদীরটার পেছনে পড়ে থাকে, আজেবাজে কাজে টাকা অপচয় করতে থাকে সারাক্ষণ!

রাহুল : দেখো দাদী, দাদা তো নেই! তুমি সিংগেল মানুষ, এতো টাকা একাউন্টে ফেলে রাখলে মরিচা ধরে যাবে, সো্ কিছু টাকা আমাদের শেয়ার করলে প্রবলেমটা কই বলো তো?

দাদী : ব্যাস! রাহুল শুধু তোকে এটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য যে এভাবেই জীবনটা চলে যাবে না, তোর বাবার ও বয়স হচ্ছে, একজন মানুষ একা এতোকিছু সামলাতে কতো কষ্ট হচ্ছে জানিস?

– এখন তো তুই ও বিয়ে করতে যাচ্ছিস তোর ও এসব দায়িত্ব নেওয়া দরকার, বিজনেসে হাত বাটা, তারপর যা নিজের ইচ্ছা মতো কর তাতে আমার কোনো প্রবলেম নেই!

– এমনিতে ঠিকই তো করছে স্নেহার বাবা! এমন বেকার ছেলেকে নিজের মেয়ে কেই বা দিতে চাইবে!

রাহুল : তুমি আর স্নেহার বাবা, আই মিন আমার ফাদার-ইন-লো সেইম ব্লাডের তৈরী এবার বুঝলাম,

দাদী : আর তুই তো স্পেশাল ব্লাডের তৈরী তাই না?

রাহুল : তা নয়তো কি? যদি তোমার ব্লাড আমার ব্লাডের মতো স্পেশাল হতো তাহলে আমার বিরুদ্ধে কথা বলতে না,

– আচ্ছা আচ্ছা প্লিজ এসব বাদ দাও, এবার বলো দিচ্ছো কি দিচ্ছো না?

দাদী : কি করবি শুনি এতো টাকায়?

রাহুল : [ দাত দেখানো একটা হাসি দিয়ে ] আমার কাফনের কাপড় কিনবো!

দাদী : থার্টি লাকস্ টাকার?

রাহুল : জী! মিসেস ওয়াহিদ তাওয়াবের নাতি বলে কথা!

দাদী : [ হেসে ] শয়তান কোথাকার! [ বলেই উঠে রুম থেকে চেক আনতে চলে যায় ]
_______________________________________
এইদিকে স্নেহা ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরুতেই দেখে মার্জান,জারিফা,শায়লা তিনজনই কাপড়-চোপড় পড়ে রেডি হচ্ছে,

স্নেহা : আরে! তোরা ভার্সেটি যাচ্ছিস?

মার্জান : না..নাহ তো! আ..আমরা একটু শপিং এ যাচ্ছি!

স্নেহা : এই সময়?

[ কনফিউজড এ পড়ে গেলো মার্জান, পড়লো তো ধরা, কি বলবে মাথায় কিছুই আসছে না ]

শায়লা : [ হেসে ] মজা করছিলো মজা! কোথাও তো যাচ্ছিলাম না! তাই না!

জারিফা : হ্যা! হ্যা!

স্নেহা : কিছু লুকাচ্ছিস তোরা আমার কাছ থেকে?

মার্জান : আ..আন্টি ডাকছে ব্রেকফাস্ট করতে! হ্যা! [ বলেই চলে গেলো পাশের রুমে ]

জারিফা : খিধেই পেটে ডিজে চলছে, ব্রেকফাস্ট করে আসি! তুই ও আয়! কেমন [ বলেই চলে গেলো মার্জানের পিছু পিছু শায়লা ও একটু হেসে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে ]

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] আজিব! সকাল সকাল সবাই এমন বিহেভ করছে কেনো?

– এনিওয়ে, এদের মাথায় তো ভুত চড়তে দু-মিনিটই লাগে না,

[ বলেই মাথা আঁচড়ে চোখে চশমা লাগিয়ে টেবিলে চলে যায় ব্রেকফাস্ট করতে, ব্রেকফাস্ট শেষে সবাই আবারো রুমে এসে বসে থাকে, স্নেহা সবার দিক ঘুরঘুর করে তাকাচ্ছে, কেমন যেনো মনে হচ্ছে ওদের মাথায় কিছু পাকিয়েছে ]

স্নেহা : গাইস্ তোরা ঠিকাছিস তো?

জারিফা : হ্যা! ঠিকই তো আছি! একদম ফাটাফাটি! তুই বল? তোর কি অবস্থা?

স্নেহা : আমার কি অবস্থা মানে?

মার্জান : [ জারিফাকে চিমটিয়ে ] না নাহ! এক্সুলি ও এটা বুঝাতে চাইছে যে রাহুল আর তোর রাতে কথা হয়েছে, যা যা কথা হয়েছে সব ঠিকাছে তো?

স্নেহা : কিসব পাগলের মতো কথা বলছিস তোরা? সবই তো ঠিকাছে!

মার্জান : আচ্ছা?

স্নেহা : হুমম!

মার্জান : রাতে তো ভালো করে কথা বলতে পারিস নি, ফোন নিয়ে ফেলেছিলাম এখন ফোন দিয়ে কথা বল,

স্নেহা : এখন হয়তো ঘুমাচ্ছে! আর এমনিতেই লাগলে ও নিজেই দিবে, কিন্তু তোরা হঠাৎ..

জারিফা : [ চেচিয়ে ] না নাহ আসলে ও ভাবছিলো তুই এখন রাহুলের সাথে কথা বলবি, আর যদি না বলিস তোর মোবাইল ফ্রি থাকলে একটু গেইমস খেলবে! তাই..

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] সিরিয়াসলি?

মার্জান : [ একটা তালি দিয়ে ] আরে ওয়াহ! মাইন্ডব্লোয়িং আইডিয়া!

[ স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে তাদের দিক কিছুই বুঝতে পারছে না ]

মার্জান : আই মিন..বোরিং হচ্ছিলাম এতোক্ষণ তাই গেইমস খেলাটা কি মাইন্ডব্লোয়িং আইডিয়া তাই না?

জারিফা : হ্যা হ্যা! মোবাইলটা দে এইবার!

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] টে..টেবিলেই আছে!

মার্জান : [ মোবাইল এগিয়ে নিয়ে ] আরে হ্যা! টেবিলেই তো ছিলো! [ দাতকিলিয়ে জারিফার দিক তাকিয়ে ] দেখিস নি এতোক্ষণ!

[ স্নেহা আর কিছু বললো না তাদের বিহেইভিয়ার দেখে সে নিজেই পাগল হয়ে যাচ্ছিলো ]

আধঘন্টা হয়ে গেলো, হঠাৎ দরজায় বেল বেজে উঠলো,জারিফা, মার্জান, শায়লা তিনজনই একলাফে উঠে এগিয়ে যেতে লাগলো দরজা খুলতে, তাদের কান্ড দেখে অবাক হয়ে স্নেহা ও এগিয়ে গেলো তাদের পেছন পেছন, স্নেহার বাবাই আগে গিয়ে দরজা খুললো,

স্নেহা : [ মনে মনে অবাক হয়ে ] রাহুল?

রাহুল : [ হাত নাড়িয়ে ] হ্যালো স্যার! আ..স্নেহা আছে বাসায়?

– [ একটু চিন্তা করে ] ওহ সরি! স্নেহা তো এইখানেই থাকবে তাই না? একটু সাইড প্লিজ! [ স্নেহার বাবা সাইড দিয়ে পেপার হাতে নিয়ে সোফায় বসে পড়লো ]

রাহুল : [ ভেতরের দিক এগিয়ে গিয়ে চিৎকার করে ] হেইই সুইটহার্ট, অওওও কিনা লাগছে তোমায়, আজ বিয়ে বলে একদম গোলাপের পাপড়ির মতো ফুটে উঠেছো! [ স্নেহা তার বাবার দিক একবার তাকিয়ে সাথে সাথে আবার মাথা নিচু করে ফেললো ]

রাহুল : [ হালকা করে স্নেহার ঘাড়ের চুল সরিয়ে দিয়ে, আলতো করে স্লাইড করে করে ] কি যেনো একটা এইখানে? [ বাকিরা মিটমিট করে হেসে মুখ লুকাতে ব্যস্ত ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত তাড়াতাড়ি সরিয়ে দিয়ে ] কি করছেন আপনি?

রাহুল : [ আবারো স্নেহার চুলের দিক ঝেড়ে দিয়ে ] নাহ কিছু না! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার ফ্রেন্ডসদের দিক তাকিয়ে চোখ টিপ মারলো ]

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! সব ঠিকাছে তো? আই মিন তুমি ঠিকাছো তো? যেভাবে মেসেজ দিয়ে বললা, সুইটহার্ট এক্ষুনি দেখা করো আমার সাথে লেইট করলে কিন্তু দেখবা বিয়ে ক্যান্সেল! যেভাবে হুমকিটুমকি দিলা আমিতো ভয়ে তাড়াহুড়ো করে চলেএসেছি,

– বাই দ্যা ওয়ে! আই লাইক ইট! সরাসরি বলতে না পারলে ও মেসেজে তুমি করেই বললা!

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] এক্সকিউজ মি? আমি আপনাকে এসব মেসেজ কবে দিলাম?

– সুইটহার্ট তারউপর তুমি করে ? দেখেন আপনার হয়তো কোথাও ভুল হচ্ছে,

রাহুল : ওকে, [ বলেই পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে মেসেজ গুলো এনে স্নেহার হাতে ধরিয়ে দেই ]

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] আরে এসব আমি.. [ বলতেই হঠাৎ মাথায় এলো মোবাইল নিয়ে তো এতোক্ষণ ঐ তিনজনই ঘাটাঘাটি করছিলো, পাশফিরে আড়চোখে তাকালো তিনজনের দিক, সাথে সাথে তিনজন চেহেরায় এমনভাব নিয়ে এলো যেনো কিছুই জানেনা ]

রাহুল : কি হলো?

স্নেহা : কিছুনা! [ মার্জান, জারিফা, শায়লা তিনজনই মাথা এগিয়ে কান পেতে রইলো কি বলাবলি করছে ]

রাহুল : আচ্ছা আমার সাথে চলো একটু গাড়ীতে, লেপটপে তোমার ড্রেসের ডিজাইন দেখাবো!

মার্জান : [ এগিয়ে এসে ] আরে জিজু! শুধু ডিজাইন কেনো? ডিজাইন চয়েজ করার পর দুজন একসাথে গিয়ে ড্রেসটাও নিয়ে আসুন,একসাথে ঘুরাঘুরি ও হয়ে যাবে!

রাহুল : বাট! আমাদের গিয়ে আনতে হবে না! সিলেক্ট করে দিলে ওরাই পাঠিয়ে দিবে সন্ধ্যার আগে!

মার্জান : আচ্ছা! তাহলে এমনিই ঘুরে আসুন কোথাও,

– আ..আই মিন আর কিছু ঘন্টার জন্যই তো ব্যাচেলর থাকবেন এরপর তো আপনারা ম্যারেড হয়ে যাবেন তাই না?

রাহুল : ওহ ইউ মিন! ব্যাচেলর পার্টি!

মার্জান : ইয়া ইয়াহ!

রাহুল : ওওও..নট বেড আইডিয়া! থেংক ইউউ! বাট তোমরাও সাথে চলো আরো মজা হবে!

মার্জান : না নাহ! [ হেসে ] আমরা আপনাদের মাঝে কাবাব মে হাড্ডি হয়ে যাবো! আপনারাই যান শুধু! আর আমাদের এমনিতেও রাতের জন্য অনেক কিছু তৈরী করা বাকি!

রাহুল : নো দ্যাটস্ ওকে চলো কিছু হবে না, তৈরী সৈরী এগুলো এসেও করা যাবে,জাষ্ট দু-তিন ঘন্টায় তো!

মার্জান : আরে জিজু বললাম তো, আপনারাই যান শুধু, আমার তো সকাল সকাল কোথাও বেড়াতে গেলে প্রেশার বেড়ে যায়, আর জারিফার?

– ওর মাথা ঘুরায়, শায়লার কথা তো বাদই দিলাম ও বমি করতে থাকে,ইয়াককক! [ জারিফা আর শায়লা ও মাথা নাড়ালো, রাহুল আর স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে ]

মার্জান : আরে এ..এতো অবাক হচ্ছেন কেনো? যান! লেইট হয়ে যাচ্ছে তো, ঐদিকে আবার তাড়াতাড়ি ও তো ফিরতে হবে তাই না?

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুমম! ওকে চলো স্নেহা!

স্নেহা : আমি এখন কোথাও যাচ্ছিনা! আর অতো ডিজাইন-টিজাইন ও লাগবে না আমার ড্রেসে, আপনি যে কোনো একটা নিলেই হবে!

জারিফা : ইয়াকক, কতো নিরামিষ এই স্নেহা!

শায়লা : চুপ কর!

রাহুল : [ হুট করেই স্নেহাকে কোলে তুলে নিয়ে ] তুমি না গেলে তোমায় উঠিয়ে তো নিয়ে যেতে পারি! [ স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনিই ]

রাহুল : শিসসস! চেচাবা না, তোমার বাবা হয়তো পেছন থেকে দেখছে, তুমি চেচালে উনি ভাববে হয়তো আমি তোমাকে জোড় করে নিয়ে যাচ্ছি!

স্নেহা : ঠিকিতো জোড় করেই তো নিচ্ছেন!

রাহুল : কথা বেশি বলো!

স্নেহা : নামান আমাকে, আপনার লজ্জাশরম কিছু নেই! বাবার সামনে এসব..

রাহুল : [ চেচিয়ে ] স্নেহা! তোমার বাবা-মা তোমাকে ঠিক মতো খাওয়াতো তো?

– না আসলে তোমাকে কোলে তুলে ওজন দেখে মনে হচ্ছে ঠিকমতো খাবারটাও দিতো না,

স্নেহা : আপনি আবার..

রাহুল : শাট-আপ! [ বলেই স্নেহাকে নিয়ে হেটে চলে যাচ্ছে, হঠাৎ স্নেহার মাকে দেখে ]

– হ্যালো আন্টি! গুড মর্নিং! ব্রেকফাস্ট করেছেন?

স্নেহার মা : [ মুচকি হেসে ] হুমম! তুমি করেছো?

রাহুল : না এক্সুলি,আমি না স্নেহার সাথে দেখা হোওয়ার পর থেকে ওর হাত ছাড়া ব্রেকফাস্ট করতে পারিনা,তাইই…

স্নেহা : মিথ্যুক!

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] শাট-আপ স্নেহা! কথার মাঝে কথা বলে আটকিয়ে দিও না,[ বলতেই স্নেহা দিলো একটা চিমটি ]

রাহুল : [ ব্যাথা কন্ট্রোল করে স্নেহার মায়ের দিক তাকিয়ে ] ওকে আন্টি আসি! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক একবার তাকিয়ে সোজা হেটে বেড়িয়ে যায় ]
_______________________________________

মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে ] বাহহ! প্লেন তো বরাবর কাজে লেগেছে! কিন্তু এখন আমাদের বেরুতে হবে তাড়াতাড়ি,তুই বলেছিস রিদোয়ানকে?

জারিফা : হ্যা হ্যা! চল এইবার তাড়াতাড়ি!

শায়লা : আমাদের কিন্তু রাহুল স্নেহাকে নিয়ে বিজি থাকা অবস্থায় তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে,নাহলে একবার রাহুলের চোখে পড়লে পুরাই সর্বনাশ!

মার্জান : দেখ টেনশন দিশ না! এমনিতেই টেনশনে আছি যেটা করতে যাচ্ছি ওটা হয় কিনা কি জানি, [ জারিফা আর শায়লা বেড়িয়ে যাচ্ছে ব্যাগ কাধে নিয়ে ]

মার্জান : [ চেচিয়ে ] আরে আরে কোথায় যাচ্ছিস?

জারিফা : কেনো?

মার্জান : [ বারান্দায় উকি দিয়ে ] রাহুলের গাড়ী এখনো বেরুইনি, ওর গাড়ী বের না হওয়া পর্যন্ত আমরা বের হতে পারবো না,

– তখন আমাদের বেরুতে দেখলে সন্দেহ করবে!

শায়লা : হ্যা সেটাও ঠিক! [ বলেই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো সবাই ]

জারিফা : আরে দেখ বেড়িয়ে যাচ্ছে রাহুলের গাড়ী!

মার্জান : ওকে ব্যাস! চল এইবার!

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 44

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 44

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : এইবার শিয়র করবাতো বিয়ে? নাকি আবারো কথা না শুনে কিছু একটা করে বসবা [ মুচকি হেসে রাহুলের হাত জড়িয়ে কাধে মাথা রাখলো স্নেহা ]

জারিফা : আরে জিজু! কই যাবে ও, আপনাকে বিয়ে না করে [ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে মাথা তুলে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : যাবে কই? যেতে দিলেই তো যাবে! তাই না?..

জারিফা : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] ♪♪ মেহেদী লাগাকে রাখনা, ডোলি সাজাকে রাখনা, লেনে তুজে ও গড়ি আইয়েংগে তেরে সাজনা ♪♪ [ লজ্জায় হেসে মাথা নিচু করে ফেললো স্নেহা ]

আসিফ : সবই অ্যারেঞ্জ করে ফেলেছিলাম! এই সামিরের বাচ্চা বাম হাত ঢুকিয়ে, আমার মেহনতে পানি ফেলে দিলো,

মার্জান : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] আপনি করেছেন অ্যারেঞ্জ?

আসিফ : হ্যা! আমিই করেছি! এতে হাসার কি আছে?..

মার্জান : না আসলে বিয়েশাদী এগুলো অনেক সেনসিটিভ জিনিষ, যাকে তাকে দিয়ে এসব অ্যারেঞ্জ করালে তো কূনজর লাগারই ছিলো, [ হেসে উঠলো সবাই খিলখিল করে ]

আসিফ : হ্যা! তোমার দিয়েই করানো উচিৎ ছিলো তুমি তো অনেক ভাগ্যশালি তাই না?..

মার্জান : অফকোর্স! এখনি তো দেখলেন আমি আসার পরই সব সলভ হলো!

আসিফ : ওহো, মরিচের গুড়া মেরে নিজেকে দুম ফ্লিমের হিরোইন মনে করছো তাই না?..

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] এক্সকিউজ মি! আর আপনি কি দুম ফ্লিমের আমির খান মনে করছেন নিজেকে, আমি মরিচের গুড়া মেরে হলেও তো বাচিয়েছি! তখন যা মারার রাহুলই তো মারছিলো, আর আপনি কি করছিলেন হাতে হাত বটে দাঁড়িয়ে শুধু দেখছিলেন,

– হুহহহ! নিজেকে এতো রোমিও মনে করলে, মারলেন না কেনো সবকটাকে,

আসিফ : তোমার সাথে কথা বলায় বেকার!

মার্জান : [ হেসে আসিফের গালে টুকা মেরে ] ইয়াহহ! এখন তো বেকারই মনে হবে, কারণ আপনার কাছে তো আমার কথার জবাবি নেই! তাই না! [ সবাই আবারো হেসে উঠলো মার্জানের কথায়, আসিফ ও মুচকি একটু হেসে জানালার পাশ ফিরে গেলো ]

গাড়ী চলছে নিস্থব্দ চারদিক, বাতাসের শা-শা আওয়াজটাই আসছে শুধু, রাহুলের কাধে মাথা রেখে চুপটি হয়ে আছে স্নেহা, গাড়ীর গ্লাসটা একদমি নামিয়ে দিলো রাহুল,বসে থাকা স্নেহার চুল গুলো মুহূর্তেই বিলিয়ে পড়লো

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : তুমি বলেছিলে জিকির করার মতো আমার নাম মনে করছিলে, উমম..আই মিন তোমার কনফিডেন্স ছিলো আমি আসবো?

স্নেহা : [ মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] কিছু হয়েও যদি যেতো,তাও আমার মন বলছিলো আপনি আসবেন,

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] এমনিতেও আসার তো ছিলোই!

স্নেহা : আম সরি রাহুল! [ বলতেই চোখে পানি এসে জমে যায় ] আমার মোটেও উচিৎ হয়নি যাওয়া, [ কাদো ভাবে ] আমি তো ব্যাস ওদের একবার…

রাহুল : শিসসস! দ্যাটস্ ওকে স্নেহা! আই আন্ডারস্ট্যান্ড, তোমার জায়গায় আমি হলেও হয়তো আমিও এমন করতাম!

স্নেহা : বাট আই প্রমিস রাহুল! আজকের পর থেকে আপনি যেখানে নিষেধ করবেন ঐখানে আর কখনোই যাবো না! [ রাহুল হেসে স্নেহার কাধে হাত রেখে বুকে টেনে নিলো ]

রাহুল : এই বাবা গুলো না স্নেহা! আমাদের ফিলিংসটাই কখনো বুঝবে না, বাট…তুমি দেখিও আমি যখন বাবা হবো না? তখন আমার চাইল্ডরা বলবে ইউ আর দ্যা বেষ্ট বেষ্ট বেষ্ট ফাদার ইন দি ওয়ার্ড! [ হেসে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : [ হেসে ] হোয়াই আর ইউ লাফিং?..আই এম সিরিয়াস!

স্নেহা : আপনিও তো হাসছেন!

রাহুল : হ্যাঁ! আমিও হাসছি…বিকজ নাও আই এম সো্ হ্যাপি! [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] আর তুমি?..

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] আমিও! [ বলতেই রাহুল আরো টাইট করে আগলে ধরলো ]

হঠাৎ পাশ ফিরে তাকাতেই দেখে, মার্জান জানালার গ্লাস নামাচ্ছে, আর আসিফ উঠাচ্ছে, এভাবেই কন্টিনিউ করছে দু-জন!

রাহুল : তোরা এভাবে টম এন্ড জেরীর মতো ঝগড়া করতে থাকবি?..

মার্জান : দেখেছেন ওনি?..আমি জানালা খুলছি আর ওনি বাধতেই চলছে,

আসিফ : আরে বাতাস আসছে, ঠান্ডা লাগছে তো!

মার্জান : সো্ হোয়াট?..আমার কি?.. আমার গরম লাগছে [ বলেই আবার নামিয়ে দিলো, রাহুল হেসে স্নেহার পাশ ফিরে গেলো, স্নেহা ও হাসতে লাগলো তাদের কান্ডে ]

আসিফ : দেখো তোমার চুল গুলো উড়ে আমার মুখে পড়ছে,

মার্জান : তাহলে কি, ওদের নিষেধ করবো?.. ওকে, [ কিছু চুল হাতে তুলে ] এই চুল, চুল শুনছো! তোমরা উড়োনা কারণ কেউ একজন এতে ডিষ্টার্ব ফিল করছে, [ বলেই হেসে আসিফের দিক তাকিয়ে ] হয়েছে?.. আমি কিন্তু ওদের নিষেধ করে দিয়েছি এরপরও উড়লে এটা ওদের ব্যাপার,ওদের ও একটা ফ্রিডম আছে তো তাই না! হুহহ! [ বলেই সোজা তাকিয়ে থাকে, মুচকি হেসে এখনো তাকিয়ে রইলো আসিফ, চুলগুলো আবারো উড়ে এসে মুখে বারি খেয়ে যাচ্ছে, এতো কিউট করে চুলের সাথে কথা বলাটা যেনো তার মন ছুয়ে গেছে, আর কিছু বললো না চুপ করেই তাকিয়ে রইলো ]

রিদোয়ান : জারিফা!

জারিফা : হুমম?..

রিদোয়ান : আমার মনে হয় আমাদের ও এবার বিয়ে করে ফেলা উচিৎ, আর কতোদিন এভাবে একা একা থাকবা বলোতো, একা থাকার একটা লিমিট আছে তো তাই না? [ হেসে উঠলো বাকিরা ]

জারিফা : কথাটা কি আমার দিক থেকে বলছেন নাকি নিজের ফিলিংসটা আমার দিক করে চাপিয়ে দিচ্ছেন!

রাহুল : [ হেসে ] ইয়াহ! শি ইজ রাইট রিদ! তুই নিজের ফিলিংস বলনা! ওর বলে চাপিয়ে দিচ্ছিস কেনো?..

রিদোয়ান : আহা! আমার ফিলিংস বোঝার মানুষ কই আছে! [ আড়চোখে তাকালো জারিফা ]

রিদোয়াস : [ হেসে ] হোয়াই আর ইউ সো্ সিরিয়াস? আই জাষ্ট কিডিং বেবী!

[ এভাবেই হাসি মজা করে সবাই এসে পৌছালো, রাহুল দরজা খুলে দিলো স্নেহাকে, স্নেহা নেমে দাড়ালো, রাহুল ও পেছন পেছন নেমে আসে, বাকিরা ও বেড়িয়ে এলো ]

রাহুল : স্নেহা! [ বলতেই স্নেহা ফিরে তাকালো, মুচকি হেসে হাটু গেড়ে মাটিতে বসলো রাহুল, সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে হা করে ]

রাহুল : তোমার পা, টা দাও!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] পা? আ..আপনি কি করছেন রাহুল?..উঠে দাড়ান!

জারিফা : [ মার্জানের কানে ] প্রপোজ করতে তো হাত চাইতে দেখলাম মার্জান, কিন্তু পা?..আমি তো এই ফাষ্ট দেখছি!

মার্জান : চুপ কর! বেশি কথা বলিস!

[ রাহুল স্নেহাকে আর কোনো জবাব না দিয়ে স্নেহার বাম পা টি তার হাটুর উপর তুলে নিলো, স্নেহা আনকমফোর্টেবল ফিল করাই সরিয়ে নিতে চাইলো কিন্তু রাহুল হেসে শক্ত করে ধরেই রইলো স্নেহার পা ]

স্নেহা : কি করছেন রাহুল! ছাড়ুন প্লিজ! লোকজন দেখছে!

রাহুল : দেখুক! [ বলেই স্নেহার পায়ের দিক তাকাতেই রাহুল শকড হয়ে যায়, স্নেহা এখনো টানাটানি করছে পা নিয়ে ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] স্নেহা এটা কেমনি হলো?

মার্জান : ওহ মাই গড স্নেহা! তোর পা কিভাবে কাটলো?..

স্নেহা : ও..ওটা তেত..তেমন কিছুই না! ব্যাস কাচের টুকরো তে সামান্য একটু কেটে গেছে!

রাহুল : সামান্য একটু তাই না?..ব্লিডিং হচ্ছে তাও বলছো সামান্য একটু!

স্নেহা : হ্যা! সা..সামান্যই তো! আচ্ছা আপনি পা ছাড়ুন! আমি বাসায় গিয়ে মেডিসিন লাগিয়ে নিবো! [ বলেই পা টেনে নিচ্ছিলো ]

রাহুল : [ স্নেহার পা ধরে রেখে ] ওয়েট! আমার কাজ এখনো শেষ হয়নি! [ বলেই জ্যাকেটের পকেট থেকে স্নেহার পায়েলটি বের করে নিলো ]

জারিফা : অওও! এবার বুঝলাম! [ স্নেহাও এবার বুঝতে পেরে ব্লাশিং হয়ে হাসলো ]

রাহুল : তোমার পায়েলটা রয়েগিয়েছিলো! [ বলেই ধীরেধীরে পড়িয়ে দিতে লাগলো, মুচকি হেসে, সুবিধার্থে স্কার্টটা হালকা একটু উঠিয়ে দিলো স্নেহা, জারিফা আর মার্জান হাত তালিয়ে দিয়ে উঠলো, রিদোয়ান শিস বাজালো ]

আসিফ : [ হেসে ] দোস্ত! তুই অলোয়েজ বিনাটিকিটে লোকজনকে রোমান্স দেখাতে থাকবি নাকি এভাবে?..

রাহুল : [ হেসে উঠে দাঁড়িয়ে ] রোমান্সের নির্ধারিত কোনো সময় থাকে না, জাষ্ট মন কি বলে শুনো তারপর শুরু হয়ে যাও, আর লোকজনের কাজই তো পিঠপিছে কথা বলা! [ বলেই হুট করে কোলে তুলে নিলো স্নেহাকে ]

স্নেহা : [ চেচিয়ে ] আরে?..

রাহুল : হোয়াট আরে?..আরে আবার কি? ফাষ্ট টাইম নিচ্ছি নাকি? [ বলেই হাটা শুরু করলো ]

জারিফা : আরে আপনারা আবার হা করে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো! চলেন একটু ফ্রেশ হয়ে নিলে রিলেক্স লাগবে! [ বলেই আসিফ আর রিদোয়ান দুজনেরই হাত ধরে টেনে নিতে লাগলো ]
_______________________________________

স্নেহা : আপনার লজ্জাশরম বলতেই কিচ্ছু নেই! একদিকে রাস্তায় কয়েকজন লোক তাকিয়েছিলো, তারউপর আপনার ফ্রেন্ডসরা, আর আপনি সবার সামনেই….

রাহুল : হ্যা হ্যা! সবার সামনেই! এমোনি করবো! কে কি ভাবছে আই ডোন্ট কেয়ার! এক্সুলি লজ্জা তুমি পেলেই চলবে, [ চোখ মেরে ] ও হ্যা! উইথ ব্লাশিং! [ বলতেই স্নেহা মুচকি হাসলো ]

রাহুল : ব্যাস স্নেহা! ব্যাস! এক্ষুণিই এতো ব্লাশ না হোও প্লিজ! ফ্রিজে সাজিয়ে রাখা স্ট্রোভেরি আইস্ক্রিমের মতো লাগে, কোন সময় কামড়িয়ে খেতে বসি আই ডোন্ট নো! [ স্নেহা হেসে রাহুলের নাক টেনে দিয়ে কাধে মাথা রাখে ]

[ উপরে উঠে বেল বাজিয়ে দাড়ালো সবাই, একটু পর দরজা খুলতেই, রাহুল স্নেহা দু-জনই শকড হয়ে যায়, পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা মার্জান, জারিফা, আসিফ, রিদোয়ান, তারাও অবাক হলো ]

স্নেহা : [ ভীতু হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] রাহুল! না..নামান..

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] কেনো? কাকে ভয় পাচ্ছো?..

স্নেহা : [ ধীরো কন্ঠে ] বা..বাবা!

রাহুল : [ স্নেহাকে আরো টাইট করে ধরে ] সো্ হোয়াট?..চুপচাপ যেভাবে আছো ঐভাবেই থাকো! [ কোণা চোখে তাকালো স্নেহা তার বাবার দিক, ভয়ে আবার উল্টো ফিরে রাহুলের কাধের উপর মাথা রেখে মুখ লুকিয়ে রাখলো ]

রাহুল : [ স্নেহার বাবার দিক তাকিয়ে ] এক্সকিউজ মি! একটু সাইড প্লিজ! [ স্নেহার বাবা সরে দাড়ালো, রাহুল হুড়হুড়িয়ে হেটে ভেতরের রুমে চলে গেলো, বাকিদের অধিক জোড়ে পেট ফেটে হাসি আসছিলো তাও হাসি চেপে রাহুলের পেছন পেছন ভেতরের রুমে এগিয়ে গেলো,রাহুল স্নেহাকে খাটে বসিয়ে দিলেও স্নেহা রাহুলের ঘাড় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে ]

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রাহুল! আমার অনেক ভয় করছে, আপনি এইদিকেই থাকুন!

রাহুল : [ স্নেহার পাশে বসে, স্নেহার মুখে হাত বুলিয়ে দিয়ে ] আরে এভাবে ভয় পাচ্ছো কেনো তুমি! রিলেক্স থাকো স্নেহা! কিচ্ছু হবে না! [ বলেই পাশফিরে শায়লার দিক তাকিয়ে ] ফাষ্ট এইড বক্সটা দাও!

[ শায়লা ফাষ্ট এইড বক্স আনতে যাচ্ছিলো, তখনিই দেখে স্নেহার বাবা এবং মা ও রুমে এগিয়ে আসে, রাহুল তারা ঢুকেছে বুঝতে পেরে, স্নেহার সামনের চুল গুলি নিজ হাতে কানে গুজে দিলো, স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] আর কে আছেই বা তোমার আমি ছাড়া, ভয় পেলে আমায় পেয়ো, একদম আর কাউকে ভয় পাওয়ার দরকার নেই! বুঝেছো! [ চুপ করে আছে স্নেহা ]

– লিসেন্ট! কেউ কিছু বললে আমায় বলো, গলা কেটে হাতে ধরিয়ে দিবো, [ নাক ফুলিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো স্নেহার বাবা, বাকিদের মারাত্মক হাসি পাচ্ছিলো তারা মুখ লুকাতে ব্যস্ত, স্নেহার মা ও হেসে উঠলো মুখে হাত দিয়ে,
আসিফ আউট অফ কন্ট্রোল, হাসি মোটেও আটকাতে পাচ্ছিলো না স্নেহার বাবার ফেইস দেখে, সামনে ড্রেসিং এর উপর একটা পানির বোতোল পেলো ঐটা নিয়েই গডগড করে গিলে পানি খেতে লাগলো ]

রাহুল : আর তুমি তো জানোই আমি তোমাকে কতো ভালোবাসি, ইউ আর মাই হার্ট, ইউ আর মাই ব্রেথ, ইউ আর মাই হার্টবিট, ইউ আর মাই সফটেড মিউজিক, ইউ আর মাই এব্রিথিং স্নেহা! [ বলেই স্নেহার মাথা কাছে টেনে কপালে একটি চুমু খেলো, কাঠ হয়ে গেলো স্নেহা! রাহুলের কান্ডে, বাকিদের চোখ কপালে উঠে গেলো, মুখ থেকে ফুস করে পানি বেড়িয়ে এলো আসিফের,হাসি কন্ট্রোল করে তাড়াহুড়ো ভাবে বোতোল রেখে বেড়িয়ে নিচে চলে গেলো আসিফ, কোণা চোকে তাকালো রাহুল স্নেহার বাবার দিক, চেয়ে আছে কিনা, হ্যা চেয়েই তো আছে, মনে মনে ভাবছে আরেকটু মজা নেওয়া যাক বলেই ধীরেধীরে হালকা করে স্নেহার গালে আরেকটি চুমু খেলো, জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে পাশের রুমে চলে গেলো স্নেহার বাবা, বাকিরাও মজা নিয়ে হাসতেই রইলো, শায়লা ফাষ্ট এইড বক্স এগিয়ে দিলো, রাহুল মুচকি হেসে স্নেহার পায়ে মেডিসিন লাগিয়ে দেই, বাকিরা তাকিয়ে থাকে তাদের কিছুক্ষণ পর করা চোখাচোখি রোমেন্স ]

রাহুল : পায়ে ব্যাথা পেয়েছো, বলা দরকার ছিলো আমাকে!

– এখন বলবা সামান্য একটুই তো! তাই না?..লিসেন্ট এখন থেকে মশা কামড়ালেও আমাকে বলবা, মশাটাকে ও ছাড়বো না! [ এবার আর স্নেহা ও না হেসে পারলো না ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] ব্যাস! এই স্মাইলটারই কমতি ছিলো!

– [ দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে ] তুমি রিলেক্স করো! আমি যাচ্ছি! [ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে যায়, আড়চোখে মার্জানের দিক তাকিয়ে চোখ দিয়ে ইশারা করলো স্নেহার বাবা কোথায়, মার্জান ও ইশারা করে বললো পাশের রুমে আছে ]

রাহুল : [ দরজার দিক তাকিয়ে চেচিয়ে ] স্নেহা! আগামীকাল লাল শাড়ী পড়ে একদম লাল টুকটুকে বউ সেজে তৈরী থাকবে, আমি আসবো তোমাকে নিতে, আরে আরে স্নেহা! কি এতো ভাবছো বিয়ে করবো আমরা! কাকে ভয় পাচ্ছো আবার?..সবার সামনে থেকেই উঠিয়ে নিয়ে যাবো তোমাকে! [ সবাই হাসতে লাগলো রাহুলের কথায় ]

রাহুল : [ মুচকি হেসে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] বাই স্নেহা! টেক কেয়ার! [ বলতেই রিদোয়ান পেছন থেকে হাসতে হাসতে এগিয়ে এসে রাহুলকে জড়িয়ে ঠেলে নিয়ে বেড়িয়ে যায়, দুজনেই কিটকিটিয়ে হাসতে হাসতে শিরি দিয়ে নামতে থাকে, গেইট দিয়ে বেরুতেই দেখে আসিফ গাড়ীর সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ]

রাহুল : আরে তুই চলে এলি কেনো?..

আসিফ : [ হেসে ] থাকার মতো অবস্থায় রাখলি! রোমান্স করছিস তুই তাও আবার আংকেল আন্টির সামনে, লজ্জায় মরে যাচ্ছিলাম আমি,

রিদোয়ান : দোস্ত! শশুর-শাশুরীর সামনেও রোমান্স বাদ দিলি না তুই!

রাহুল : আরে একটু আগেই তো বললাম রোমান্স করতে সময় লাগে না জাষ্ট তোর মন কি বলে শোন!

রিদোয়ান : [ হেসে ] রোমান্স কিং হয়ে গেলি, তাহলে, রোমান্সের তাজটা তোকেই পড়িয়ে দেওয়া হোক!

রাহুল : উমম! নট বেড! [ বলেই গাড়ীতে উঠতে যাচ্ছিলো তখনি আবার ] আচ্ছা গাইস্! ভাবছি সামিরের কাছে আবার যাওয়া উচিৎ!

রিদোয়ান : তা কি জন্য শুনি?..

আসিফ : [ হেসে ] কাল তোর বিয়ে এটার ইনভাইট করতে!

রাহুল : আরে না! এগুলো কোনো মার হলো? ওকে আরো দিতে মন চাচ্ছে! প্লাস! ও স্নেহার বাবাকে যে টাকাগুলো দিয়েছে ঐগুলো ও ওকে রিটার্ন করবো!

আসিফ : দোস্ত এক্ষুনিই যাওয়াটা ঠিক হবে না! কাল সকালে ভার্সেটিতে পার্ফেক্ট প্লেস হবে!

রিদোয়ান : ইয়াহ! দ্যাটস রাইট!

রাহুল : [ কিছুক্ষণ চিন্তা করে ] ওকেই!

রিদোয়ান : [ গাড়ীর চাবি ছুড়ে মেরে ] ড্রাইভটাও কর দোস্ত! শুধু ভাবীর সাথে রোমান্স করলে চলবে না [ আলসেমি কেটে ] আই এম সো্ টায়ার্ড, এখন জাষ্ট পেছনে শুয়ে রিলেক্স করবো!

রাহুল : [ চাবি আসিফের দিক ছুড়ে মেরে ] কাল তোর দাওয়াত, আমার বিয়েতে চলে আসিস, দাওয়াত পাওয়ার খুশিতে ড্রাইভটাও তুই করে ফেল!

আসিফ : আমি জানতাম! চাবিটা গুড়ে ফিরে আমার কাছেই আসবে! [ রাহুল আর রিদোয়ান হেসে উঠে বসলো গাড়ীতে ]

আসিফ : তিনজন এক গাড়ীতে থাকলে কোনদিন তোরা দু-জন ড্রাইভ করেছিস বলতো?..

রিদোয়ান : ও হ্যালো! আসার সময় কে করলো?..

আসিফ : আজ! তাও আবার বিপদে পড়ে বাচার জন্যে!

রাহুল : দিজ ইস নট ফেয়ার রিদ! কখনো কখনো তুই ও কর! বেচারাকে অলোয়েজ..

আসিফ : আচ্ছা?..এমন ভাবে এডভাইস দিচ্ছিস যেনো নিজে কতোবার করে তরিয়ে ফেলেছিস!

রাহুল : [ হেসে গান ছাড়তে ছাড়তে ] আরে তোদের মতো দোস্ত থাকলে, আমার আবার কষ্ট করতে হয়?..

আসিফ : আমার বাসায় আগে যাচ্ছি! তারপর তুই ড্রাইভ করে তোর বাসায় যাবি! তারপর রিদ! ড্রাইভ করে ওর বাসায় চলে যাবে ব্যাস! [ চোখ মেরে ] ফিফটি ফিফটি ডান!

রাহুল : আরে আসিফ! আই এম অলসো্ টায়ার্ড! ইয়ার!

আসিফ : হোয়াটএভার!

রাহুল : আচ্ছা আমার বাসায় চল আজ!

আসিফ : এলকোহল চললে আসতে পারি!

রাহুল : প্রমিস করেছি স্নেহাকে!

আসিফ : তোকে কে খেতে বলছে?..আমরা খাবো! আরে সেলেব্রেটিং মুহূর্তে তো একটু চলতেই পারে,

রাহুল : তোরা খাবি আর আমি তাকিয়ে থাকবো?..

রিদোয়ান : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] তুই চোখ বন্ধ করে স্মেল নিস দোস্ত!

রাহুল : [ মুখ ভেংগিয়ে ] স্মেলে আর কি! আচ্ছা চল!

আসিফ : [ হেসে ] তুই মুখ লাগালেই কিন্তু স্নেহার কাছে ফোন!

রাহুল : একবার তোর গার্লফ্রেন্ড হতে দে, খুব বিপদে পড়বি দেখেনিস!
– বাই দ্যা ওয়ে! এসব আমি আর এমনিতেও খায় না! যা তোরা খেয়েনিস এবার আল্লাহর ওয়াস্তে আমার বাসায়ই চল!

আসিফ : ইয়াহহ!
_______________________________________
এইদিকে, স্নেহার আশেপাশে গোল হয়ে বসে রইলো তার ফ্রেন্ডসরা!

শায়লা : ওহ মাই গড! রাহুলের কান্ডে তো আজ আমি ক্রাশই খেয়ে ফেলেছি! [ মার্জান আর জারিফা ঘুরে তাকালো ] আ..আই মিন ভাইওয়ালা ক্রাশ স্নেহা! ভাইওয়ালা! [ হেসে উঠলো স্নেহা ]

মার্জান : [ হেসে ] তোর বাবার ফেইস রিয়েকশনটাই মনে পড়ছে আমার! কি না বানিয়েছিলো ফেইস টা!

জারিফা : রাহুল যখন কিস্ দিচ্ছিলো স্নেহাকে! আয়হায়! আমার কি লজ্জা লাগছিলো!

হঠাৎ, স্নেহার মা এগিয়ে আসে রুমে,

শায়লা : আরে আন্টি বসেন না এইদিকে!

স্নেহার মা : না না..তোমরা বসো আরাম করো আমি তোমাদের জন্য রাতের খাবার রেডি করছি!

মার্জান : উম্মাহ আন্টি! থেংক ইউ থেংক ইউউউ! আহহ..কতোদিন পর আন্টির হাতের রান্না খাবো! [ স্নেহার মা মাথা নাড়িয়ে হেসে চলে যায়, জারিফা আর মার্জান মিলে হেসে হেসে মারামারিতে হয়ে যাওয়া সব ঘটনায় বলতে লাগলো শায়লাকে, হঠাৎ খেয়াল করলো স্নেহার বাবা রুমে ঢুকে হাজির! সবাই ঢোগ গিলতে লাগলো ]

শায়লা : [ চেয়ার এগিয়ে দিয়ে ] বব..বসেন আংকেল! [ চেয়ার টেনে বসলো স্নেহার বাবা, ভয়ে মাথা নিচু করে আছে স্নেহা ]

স্নেহার বাবা : কি হয়েছে?..স্নেহা কোথায় ছিলো?..

জারিফা : এ..এক্সুলি আংকেল! ঐ যে সামির আছে না! ও স্নেহাকে জোড় করে উঠিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছিলো!

– আ..আর ওর উদ্দেশ্যটা মোটেও ঠিক ছিলো না!

মার্জান : আংকেল ও মোটেও ডিজার্ব করে না স্নেহাকে! [ নাকফুলিয়ে ] শালাকে তো দেখলেই মন চাই দু-চারটা বসিয়ে দেই! [ অবাক হয়ে তাকালো স্নেহার বাবা ] আ..আই মিন..আজ কতো বড় বিপদ এসেছিলো স্নেহার উপর, সস..সব ওরই কান্ড ছিলো আংকেল!

– যদি ঠিক মতো রাহুল না পৌছাতো, কি হতো আজ আমাদের স্নেহার!

জারিফা : [ কাদো ভাবে ] কি হতো এই ভোলাভালা মাসুম চেহেরাটার, কই থাকতো এই হাসির মুখখানি!

মার্জান : আপনি মোটেও চিন্তা করবেন না আংকেল, রাহুল আছে এখন স্নেহার সাথে, স্নেহার কিছু হতেই দিবে না ও, একটু আগেই তো দেখলেন কিভাবে ঝাটকি দিয়ে গেলো আপনাকে! [ শকড হয়ে তাকালো স্নেহার বাবা ]

শায়লা : [ চিমটি দিয়ে ফিসফিসিয়ে ] আরে! কি বলছিস এসব! তারিফ কর তারিফ!

মার্জান : [ হেসে ] মা..মানে কিভাবে সবাইকে বলে গেলো, স্নেহাকে ও কতোটা…হুমম!

জারিফা : আরে আংকেল ঐ সামিরটা দেখতে ও তো কাচকলার মতো! গাছে লটকে থাকা কালো বাদুড়ের মতো, নাকটা একদম হাতির শূরের মতো,কান দুটো খরগোশের মতো, চুল গুলো… আ..চুল গুলো..

মার্জান : [ চেচিয়ে ] শকুনের কাটার মতো,

জারিফা : হ্যা! আর পেটটা জলহস্তির মতো, ইয়া বড়, মনে হয় দশ প্লেট ভাত একসঙ্গেই খায়,আর ঘাড়টা গন্ডারের ঘাড়ের মতো,

মার্জান : আর রাহুলকে দেখেন আংকেল, পুরোই হিরার টুকরা আংকেল হিরা হিরা! যে জায়গায় পা রাখে যেনো মনে হয় ঐ জায়গায় চমকে উঠেছে, চারদিক আলোয় ভরে যায় যেমন! ও যখন চোখের পলক তুলে মেয়েদের দিক তাকায় না, সব মেয়েরায় ওর প্রেমে হাবুডুবু খেতে থাকে, আর যখন সানগ্লাস খুলে, তখন তো অনেক মেয়ে বেহুঁশই হয়ে যায় আংকেল [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] তাই না?..

জারিফা : হ্যা! আংকেল আমাদের তো কয়েকবার অনেক মেয়েকে হসপিটাল ও নিয়ে যেতে হয়েছে

মার্জান : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম আংকেল! আর ও যখন গান করে না! [ হাত নাড়িয়ে ] গাছের পাতারা ও হেলেদুলে নাচতে থাকে, কি মিষ্টি সূর আংকেল, পাখিরাও তাল মেলাতে থাকে তার সাথে কিচিরমিচির কিচিরমিচির,

জারিফা : কিচিরমিচির!

মার্জান : [ চেচিয়ে ] আরে আংকেল! [ চমকে উঠলো স্নেহার বাবা ]

– আপনি জানেন না! ভার্সেটিতে হাজার মেয়ে লাইন ধরে আছে রাহুলের জন্য! তার মধ্যে ঐ বাদুড়ের বাচ্চা সামির এর বোন নেহাটাও আছে, একদম ফেভিকলের মতোই রাহুলের পেছনে লেগে পড়েছে [ চেচিয়ে ] আংকেল!

স্নেহার বাবা : [ চমকে উঠে ] হ্যা!

মার্জান : [ মুচকি হেসে ] কিন্তু রাহুল! কাউকেই কেয়ার করেনি! তার তো শুধু স্নেহাকেই চাই! স্নেহা! স্নেহা! স্নেহা! আংকেল স্নেহা ছাড়া ও কিছু বুঝেই না! [ হা করে তাকিয়ে আছে স্নেহা মার্জানের দিক ]

জারিফা : একমিনিট আংকেল আমি বলছি এবার ঐ নেহাটা দেখতে কেমন! আফ্রিকান হনুমান দেখেছেন কখনো, দেখেননি তাই তো, ঠিকাছে আপনি রুটি বেলার আগে, খামিটা ময়দায় লাগিয়ে হাতে চাপ দিয়ে চেপ্টা করতে দেখেছেন কখনো?.. [ স্নেহার বাবা মাথা নাড়ালো ]

জারিফা : হ্যা! ঐ নেহার নাকটাও একদম তেমন চেপ্টা! [ হাসি আসছিলো বাকিদের তাও কন্ট্রোল করে রাখলো ]

জারিফা : গাছে লটকে থাকা তেড়াবেকা কাঠাল দেখেছেন আংকেল, ওর ফেইসকাটিংটাও পুরো এমনিই! আর ঢং এর কথা তো বললামই না [ চেচিয়ে ] আংকেল! এত্তো এত্তো ঢং করে, মিস ওয়াল্ডের মেয়েরাও মনে হয় অতো ঢং করে না

স্নেহার বাবা : [ কনফিউজড হয়ে ] সামিরের একটা বোন ও আছে! কিন্তু আমাদের তো বললোই না!

মার্জান : আরে আংকেল! কি করে বলবে, ওর ঐ লুচ্চা বোনটা রাহুলের পাশে শুয়ে ফোটো তুলে আপনাদের আমাদের মতো ওর ভাই বাদুড়ের বাচ্চাটাকে ও বোকা বানিয়ে রেখেছে! ফটো দিয়ে ব্লাকমেইল করে রাহুলকে পেতে চাইছে এই তেড়াবেকা কাঠালের মুখখানা!

– [ চেচিয়ে ] আংকেল আপনি সিটি গোল্ড আর রিয়েল গোল্ডের ডিফারেন্টায় বুঝেননি!

– ঐ বাদুড়ের বাচ্চা সিটি গোল্ডটাকে আপনি রিয়েল গোল্ড মনে করে স্নেহাকে তার হাতে তুলে দিতে ছিলেন আংকেল, আর রাহুল! রিয়েল গোল্ড দূর থেকেই চকচক করছিলো, কিন্তু আপনার চোখের ধুলোই আপনি অন্ধ হয়ে আছেন, [ চেচিয়ে ] চোখ খুলুন আংকেল, রিয়েল গোল্ড আর সিটি গোল্ডের পার্থক্য বুঝুন!

[ জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে উঠে পাশের রুমে চলে গেলো স্নেহার বাবা, বাকিরা হা করে তাকিয়ে আছে স্নেহার বাবার চলে যাওয়া, তিনি বেরুতে না বেরুতেই কিটকিটিয়ে হেসেই জারিফা আর মার্জানকে জড়িয়ে ধরলো স্নেহা, হাসতে হাসতে চারজনই একে অপরের গায়ে উঠে জড়িয়ে হাসতে লাগলো ]

স্নেহা : [ হেসে ] কি বলছিলি এসব তোরা হ্যা?..

শায়লা : হাসি আটকানো আর শ্বাস আটকানো একই মনে হচ্ছিলো আমার! জানটায় না বেড়িয়ে যাচ্ছিলো!

মার্জান : তোর বাবার মাথা গেছে আজ! সারারাতই চিন্তা করবে! [ বলেই হাসতে লাগলো ]

[ রাতে সবাই খাবারদাবার খেয়ে নিলো, স্নেহার বাবা আর মা চলে যেতে চাইলো, কিন্তু স্নেহার ফ্রেন্ডসরা তাদের জোড় করেই আজ রাত এইখানে থাকতে হবে বলে রেখে দিলো ]

ফ্রেশ হয়ে এসে শায়লা রুমে ঢুকতে যাবে তখনিই দেখলো স্নেহা আলমারির পাশে দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে রাহুলের জ্যাকেটটা জড়িয়ে ধরে স্মেল নিচ্ছে, শায়লা ও আর কি এক সেকেন্ড ও দাড়ালো না, তাড়াহুড়ো করে জারিফা আর মার্জানকে ও ডেকে এনে দেখালো, চুপি চুপি দেখে তিনজনই কুটকুট করে হাসছে, হঠাৎ স্নেহা ঠের পেয়ে আড়চোখে তাকিয়ে তাড়াহুড়ো করে জ্যাকেটটা বটে আলমিরায় ঢুকিয়ে রাখতে যাবে তখনি মার্জান এসে ধুম করে আলমিরার দরজাটা লাগিয়ে দেই! চমকে উঠলো স্নেহা!

শায়লা : আরে মার্জান! আস্তে! পাশের রুমে আংকেল আন্টি আছে!

মার্জান : ওহ সরি সরি! [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] বাই দ্যা ওয়ে! স্নেহা মাই ডিয়ার! জ্যাকেটের পারফিউমটা কোন ব্রান্ডের ছিলো! হুম হুম!

স্নেহা : [ লজ্জা পেয়ে ] সর এটা রাখতে হব!

মার্জান : আরে আরে! রাখবি কেনো! নিতে থাক স্মেল! কি কিউটই তো লাগছিলো!

জারিফা : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] ডোন্ট ওয়ারি! মেরি জান, জ্যাকেট থেকে আর স্মেল নিতে হবে না, [ চোখ মেরে ] কাল থেকে সরাসরিই নিবি হুমম!

স্নেহা : আরে তোরা এমনভাবে বলছিস যেনো এই প্রথমিই দেখছিস আমাকে এই জ্যাকেটটার স্মেল নিতে,

মার্জান : [ স্নেহাকে টেনে নিয়ে খাটে বসে ] আরে স্নেহা তোকে না আজ ইচ্ছে মতো জালিয়ে নিচ্ছি, কাল থেকে আর আমাদের পাবি কই?..[ মুখ গোমড়া করে ফেললো স্নেহা ]

মার্জান : [ বুঝতে পেরে ] আ..আই মিন,কাল থেকে আমরা প্রতিদিন রাতেই ফোনে গুডনাইট বলে ঘুমাবো কেমন! নতুন করেই… [ বলতেই হঠাৎ চোখ থেকে গড়িয়ে পড়লো পানি, স্নেহা ও কেদে জড়িয়ে ধরলো, বাকি দুজন ও বাদ গেলো কই, তারাও জড়িয়ে ধরে রাখলো ]

মার্জান : আরে এখন এভাবে কাদিস না কেউ! প্লিজ তখন স্নেহার বিদায়ের সময় চোখের পানি শর্ট পড়বে! [ হেসে উঠলো সবাই,রাতে চারজনই একসাথে এক খাটে শুয়ে আড্ডা দিচ্ছিলো, হঠাৎ বেজে উঠলো স্নেহার ফোন, স্নেহা রিসিভ করতেই যাবে তখনিই ]

জারিফা : [ কেড়ে নিয়ে ] ওহো মিষ্টার তেডি স্মাইল! রিয়েলি?..এই নামে সে্ইভ করেছিস! [ সবাই কিটকিটিয়ে হাসতে লাগলো ]

স্নেহা : এইদিকে দে ফোন!

জারিফা : ওয়েট ওয়েট! বাবা এতোটাও জলদি কিসের! [ বলেই রিসিভ করলো ]

রাহুল : হ্যালো!

জারিফা : হ্যা! কে বলছেন?..

রাহুল : এক্সকিউজ মি! কে বলছি মানে?..

জারিফা : হ্যা! আপনি আগে ফোন করেছেন তাই আপনিই আগে বলেন কে আপনি কাকে চাই?..

রাহুল : [ হেসে ] অও! নটি কোম্পানির দল তোমরা? আমার স্নেহা কোথায়?..

জারিফা : আপনার স্নেহা?..স্নেহাটা আবার কে.. এই নামের কাউকে তো চিনিনা!

রাহুল : চেনা লাগবেও না! কাল থেকে মিসেস রাহুল নামেই চিনবা!

জারিফা : ওহো! [ বলেই মার্জান আর শায়লাকে কাছে ডেকে নিলো এবং সবাই একসাথেই বলে উঠলো ] স্নেহা! ইউ আর মাই হার্ট, ইউ আর মাই ব্রেথ, ইউ মাই হার্টবিট, ইউ মাই সফটেড মিউজিক, ইউ আর মাই এব্রথিং

রাহুল : [ হেসে ] শাট-আপ এব্রিওয়ান!

জারিফা : বাই দ্যা ওয়ে জিজু! আপনার নাম্বার কি নামে সেভ করেছে বলেন তো?..

রাহুল : ডোন্ট নো!

জারিফা : উফফো জিজু ডোন্ট নো না! মিষ্টার তেডি স্মাইল!

রাহুল : রিয়েলি?..

জারিফা : ইয়েস্

রাহুল : তাহলে আমিও মিসেস তেডি স্মাইল দিয়ে সেভ করে ফেলি!

জারিফা : হাউ কিউট!

রাহুল : আচ্ছা এবার দাও ওকে!

জারিফা : উমহুম নেভার!

রাহুল : আরে একটু দয়া করো প্লিজ!

জারিফা : ওয়ান কন্ডিশন!

রাহুল : ডান! ডান!

জারিফা : আরেহ না শুনেই ডান? আগে শুনুন তো!

রাহুল : আচ্ছা আমার মা বলো!

জারিফা : কাল! আপনার বিয়েতে বিগ বাজেট রাখবেন! নাহলে আপনাকে স্নেহার সামনে এন্ট্রি করতে দেবো না!

রাহুল : [ হেসে ] অও ওখেই!

জারিফা : ডান?..

রাহুল : হান্ড্রেট পার্সেন্ট!

জারিফা : হাউ সুইট মাই জিজু! ওকে নিন! [ বলেই স্নেহাকে দিয়ে দিলো ফোন ]

স্নেহা : [ উঠে বারান্দায় গিয়ে ] হ্যালো!

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 43

0

Love At 1st Sight
~~~ Season 3~~~

Part – 43

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : হ্যালো!

মার্জান : হ্যালো! পেয়েছেন স্নেহাকে?..

রাহুল : না এখনো পাইনি আই ডোন্ট নো হয়ার ইজ শি! বারবার বলেছিলাম একা বের হবা না বাট আমার কথা কেয়ারই করলো না!

মার্জান : আ..আচ্ছা!

রাহুল : পেলে জানাবো!

মার্জান : ওকে! [ ফোন কেটে রাগান্বিত ভাবে পাশের সিটে ছুড়ে মারলো রাহুল, ফাষ্ট ড্রাইভিং করছে, তাও যেনো পথ ফুরাচ্ছেই না ]
_______________________________________
শায়লা : কি বললো রাহুল?..

মার্জান : [ চিন্তিত ভাবে ] এখনো পাইনি! রাহুল ও অনেক রেগে আছে,

শায়লা : রাগারই তো কথা, তখন আসলে ওকে আমাদের যেতে দেওয়া উচিৎ ছিলো না! রাহুল যখন নিষেধ করেছিলো নিশ্চয় কোনো কারণ ছিলো তাই হয়তো নিষেধ করেছে!

মার্জান : আমিও তাই ভাবছি! এ..এক সেকেন্ড [ বলেই ফোনটিপে আবার জারিফাকে কল দিলো ]

জারিফা : হ্যা মার্জান বল?..

মার্জান : জারিফা! স্নেহাকি তোর সাথে আছে?..

জারিফা : স্নেহা? ওকে তো অনেক আগেই পৌছেদিলাম!

মার্জান : আচ্ছা?..

জারিফা : কেনো কি হয়েছে? সব ঠিকাছে তো?..

মার্জান : কিছুই ঠিক নেই! রাহুল ওকে রিসিভ করতে গেলো, কিন্তু গিয়ে দেখে ও নেই,

জারিফা : নেই মানে?..

মার্জান : হুমম! ভাবলাম তুই কিছু জানিস নাকি একটু চেক করে দেখি! কিন্তু তুই ও তো দেখছি কিছু জানিস না,তাহলে গেলো কই!

জারিফা : আরে এমনি কেমনি নেই! গেলো কই ও?..

মার্জান : আই ডোন্ট নো! [ কাদো ভাবে ] আমারই দোষ ছিলো কেনো যে তখন ওকে পাঠালাম!
– আচ্ছা আমি এখন রাখছি পরে কথা হবে! [ বলেই কেটে দিলো ]

শায়লা : [ অবাক হয়ে ] কোথায় যাচ্ছিস?..

মার্জান : [ ব্যাগ কাধে নিয়ে ] তাহলে কি বসে থাকবো?ওকে আমরা পাঠিয়েছি দোষ আমাদের!

শায়লা : কিন্তু কোথায় খুজবি?..

মার্জান : ওর মামার বাসায় গিয়ে আরেকবার চেক করে আসি, উফফ আর যেখানেই খুজতে হয়না কেনো! খুজতে তো হবেই!

শায়লা : আচ্ছা চল আমিও যাবো!

মার্জান : নাহ তুই থাক, জারিফা এক্সট্রা চাবি নিয়ে যায়নি! যদি বাসায় আসে দরজা কে খুলবে! তুই থাক,

শায়লা : আচ্ছা সাবধানে যাস! [ বেড়িয়ে গেলো মার্জান ]
_______________________________________
এইদিকে, গাড়ী চলছে,জারিফাও টেনশনে পড়ে গেলো,
– [ মনে মনে ] কোথায় হবে স্নেহা! উফফ কেনো যে একা রেখে এলাম ওকে! আমার ও সাথে থাকা উচিৎ ছিলো,

রিদোয়ান : কি হয়েছে? অনেক টেনশনে মনে হচ্ছে?

জারিফা : স্নেহাকে পাওয়া যাচ্ছে না! রাহুল ওকে খুজে বেড়াচ্ছে, না জানি কই আছে,

রিদোয়ান : হোয়াট?.. পাওয়া যাচ্ছে না মানে কি?..

জারিফা : [ চেচিয়ে ] সেটাই তো!

রিদোয়ান : আচ্ছা ওয়েট আমি দেখছি! [ বলেই মোবাইলটা এগিয়ে নিয়ে রাহুলকে ফোন দিলো ]
_______________________________________
ফোন বেজে উঠলো রাহুলের,

রাহুল : [ বিরক্তি হয়ে ] ডেম ইট! আবার কে! [ হাত বাড়িয়ে পাশের সি্ট থেকে এগিয়ে নিলো ফোনটা ]

আসিফ : রাহুল! কোথায় তুই দোস্ত ? কখন থেকে বসে আছি সব আ্যরেঞ্জ করে, [ হেসে ] এবার বল আমাদের ভাবিকে নিয়ে কবে আসছিস [ চুপ করে রইলো রাহুল, কথাটা শুনতেই বুকটা মোচোড় দিয়ে উঠলো ]

আসিফ : কি হলো? কিছু বলছিস না কেনো?

রাহুল : [ কাদো ভাবে ] আরে ওকেই তো পাচ্ছি না!

আসিফ : [ শকড হয়ে ] এটা কি বলছিস?..

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে দাতকিলিয়ে ] সামির!

আসিফ : ওহ নো! কই আছিস এখন?..

রাহুল : নেহার বাসায় যাচ্ছি!

আসিফ : ওকে আমি আসছি!

রাহুল : লিসেন্ট! গাড়ীর পেট্রোল ও বোতোলে ভরে আনিস! ইজিলি মুখ খুলবে না, মাথার রাগ সব ওকে জালিয়ে ঠান্ডা করবো,

আসিফ : ওকে ডোন্ট ওয়ারি! রিলেক্স থাক, [ রাহুল ফোন রাখবে ঐটাইমেই রিদোয়ানের কল এসে হাজির ]

রিদোয়ান : কার সাথে কথা বলছিলি ?

রাহুল : আসিফ!

রিদোয়ান : পেয়েছিস! স্নেহাকে?

রাহুল : নো! ব্যাস যাচ্ছিই..

রিদোয়ান : কোথায়?

রাহুল : ঐ শেমলেস্ লেডির কাছে!

রিদোয়ান : [ অবাক হয়ে ] নেহার বাসায়?.. কিন্তু ওর বাসায় কেনো?..

রাহুল : এখন কিছু আস্ক করিস না দোস্ত!

রিদোয়ান : আচ্ছা চিন্তা করিসনা! বাট আমার মনে হয়, নেহার কাছে না গিয়ে ডিরেক্ট সামিরের কাছে যাওয়া উচিৎ নিশ্চয় ওই স্নেহাকে,আই মিন বুঝতে পারছিস তো!

রাহুল : আই ডোন্ট নো হয়ার ইজ সামির! এন্ড আই এম ডেম শিয়র! স্নেহা সামিরের সাথেই আছে, সো্ সামির কোথায় এটা জানার একমাত্র ওয়ে হচ্ছে নেহা!

রিদোয়ান : দ্যাটস্ দ্যা পয়েন্ট! আচ্ছা ওকে তুই ফোন রাখ! [ বলেই কেটে দিলো ]

জারিফা : কি হলো?ঐ সামিরই নিয়ে গেছে স্নেহাকে তাই না!

রিদোয়ান : হুম!

জারিফা : [ কাদো ভাবে ] যেটা ভাবিওনি সেটাই হয়ে গেলো! নাজানি স্নেহা কোন অবস্থায় আছে, [ চেচিয়ে ] আর আপনি করছেনটা কি?চলেন তাড়াতাড়ি সামিরের কাছে,

রিদোয়ান : আরে টেনশন নিচ্ছো কেনো! কিছু হবে না স্নেহার! [ বলেই গাড়ী ফাষ্ট ড্রাইভ করে নেহার বাসায় এসে পৌছালো ]

জারিফা : এটা কার বাড়ি!

রিদোয়ান : তুমি গাড়ীতে থাকো বের হবা না! আমি আসছি!

জারিফা : বাট আপনি কোথায় যাচ্ছেন?

রিদোয়ান : জারিফা! এটা নেহার বাসা!

জারিফা : [ চেচিয়ে ] আপনি এই পেত্নীর বাসায় কেনো আনলেন এইখানে কাজ কি?..

রিদোয়ান : দেখো! এখন এতোকিছু বলার টাইম নেই! আমি তোমাকে সব পরে বুঝিয়ে দিবো! ব্যাস দয়া করে গাড়ী থেকে নেমো না!

জারিফা : কিন্তু আপনাদের যদি আমার প্রয়োজন হয়? [ আড়চোখে তাকালো রিদোয়ান ]

জারিফা : আচ্ছা আচ্ছা! ঠিকাছে! [ রিদোয়ান বেড়িয়ে এলো গাড়ী থেকে, তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে গিয়ে নেহার বাসার বেল বাজালো, সারভেন্ট এসেই দরজা খুললো, রিদোয়ান ভেতরের দিক তাকালো কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলো না, তাহলে গেলো কই বাকিরা]

রিদোয়ান : নে..নেহা কোথায়?

সারভেন্ট : মেম রুফটফে আছে, এক্সারসাইজ করছে!

রিদোয়ান : আ..আর কেউ আছে সাথে?..

সারভেন্ট : দু-জন ফ্রেন্ড এসেছে! রুফটপেই আছে!

রিদোয়ান : ওকে থেংক্স [ বলেই হুটহাট করে শিরি বেয়ে রুফটপে উঠে পড়লো, সামনে এগুতেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে, রাহুল বসে আছে চেয়ারে দু-হাত একসাথেই মুচরামুচড়ি করছে, আসিফ দাঁড়িয়ে আছে পকেটে হাত রেখে, নেহা হেসে হেসে দাঁড়িয়ে জুস খাচ্ছে ]

নেহা : [ চেচিয়ে ] ওয়াওও হোয়াট এ সারপ্রাইজ রিদ! কাম কাম,ব্যাস তোরই কমতি ছিলো,বল কি নিবি?..চা,কফি,জুস?.. [ রিদোয়ান অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

নেহা : আরে ওদের দিক তাকিয়ে কি দেখছিস?ওদের অনেক্ষণ ধরেই আস্ক করে যাচ্ছি কি নিবে কিন্তু ওদের মুখে সেই একই কথা!

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে দাঁড়িয়ে ] দেখ নেহা! তুই মেয়ে! সো আমি চাই না তোর গায়ে হাত তুলতে!

নেহা : [ রাহুলের কাছে এসে ] বাট আমি চাই রাহুল! তুই আমার গায়ে হাত তুল [ নিজের গলায় নিজে স্লাইড করে ] এভাবে আদর করে!

রাহুল : [ নেহার হাতে বাড়ি মেরে জুসের গ্লাসটা ফেলে দিয়ে ] লিসেন্ট লাষ্ট ওয়ার্নিং

নেহা : বাট রাহুল! আই লাভ ইউ..[ চেচিয়ে কেদে কেদে ] আমিতো ওর আগে থেকেই তোকেই ভালোবেসেছি! এখনো বাসি, কই আমার জন্য তো কখনো এভাবে অস্থিরতা বোধ করিসনি…

রাহুল : [ দাতকিলিয়ে ] বিকজ আই ডোন্ট লাভ ইউ! ইনফ্যাক্ট আই হেট ইউ!

নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] ইয়াহ! আই নো ওর জন্য! তাই না? [ চেচিয়ে ] ওর জন্যই এখন আমাকে হেট করছিস!

রাহুল : [ নেহার হাত চেপে ধরে ] লিসেন্ট আমি তোর সাথে এসব ফালতু কথা বলে টাইমওয়েষ্ট করতে আসিনি বল সামির কোথায়?..

নেহা : বলবো না! যদি তুই আমার না হস! তাহলে আর কারো হতে পারবি না সেটার জন্য কারো জানই যদি নিতে হয় তাও আমি রাজি [ প্রচন্ড রাগ উঠছে রাহুলের নেহার কথা শুনে,ইচ্ছে করছিলো এই মুহুর্তেই মেরে লাশ বানিয়ে দেবে, কিন্তু মেয়েদের গায়ে হাত তোলার অভ্যাস নেই রাহুলের, তাই বেচে গেলো, নাহলে এতোক্ষণে ওর ফেইস আয়নার সামনে ও নিজেই চিনতে পারতো না, রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে আশেপাশে যতোসব চেয়ার, টেবিল,আম্ব্রেলা ছিলো সবই টেনে লাত্তি মেরে মেরে ভাংগতে শুরু করলো ]

আসিফ : রাহুল! কন্ট্রোল! [ মুখে হাত রেখে মাটিতে বসেই ফুফিয়ে কেদে উঠলো রাহুল, চোখ-নাক-মুখ সবই লাল হয়ে গেছে, সকালে স্নেহার সাথে কাটানো মুহুর্তগুলোই মনে পড়ছে বারবার, স্নেহার ব্লাশিং করা চেহেরাটা চোখের সামনে ভেসে উঠতেই ভেতরের কলিজাটা মুচড়ে যাচ্ছে, বাচ্চা ছেলেদের মতো হাত দিয়ে ঘষে চোখ মুছে উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে এলো নেহার দিক ]

রাহুল : প্লিজ! নেহা! দেখ..জোড় করে ভালোবাসা হয়না! সেটা মন থেকে আসতে হয়, তোকে দেখে আমার ঐ ফিলিংসটাই কখনো আসেনি যেটা স্নেহার জন্য আসে প্লিজ বল কোথায় নিয়ে গেছে সামির স্নেহাকে?[ মুচকি হাসলো নেহা ]

নেহা : বাট আমার তো তোকে দেখে ঐ ফিলিংসটা আসে রাহুল! [ চেচিয়ে ] তাহলে আমার কি হবে? [ বিরক্তি হয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো রাহুল ]

রাহুল : [ চিৎকার করে ] দ্যাটস! নট মাই ম্যাটার নেহা! তোর কি হবে তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না, বাট স্নেহার যদি কিছু হয় তাহলে তখন..

– [ জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে ] তাহলে তখন কেনো এক্ষুনি দেখ কি করি… [ রাহুল ইশারা করলো আসিফকে, আসিফ ফোন কানে দিয়ে ওপাশ সরে গেলো ]

নেহা : [ রাহুলের জ্যাকেট ধরে ] লিসেন্ট রাহুল! আই রিয়েলি লাভ ইউ! দেখ! আমি সত্যিই তোকে অনেক ভালোবাসি! আ..আমি তোকে স্নেহার চেয়েও অনেক ভালোবাসি…

রাহুল : [ চেচিয়ে ] গেট লষ্ট! [ বলেই ধাক্ষা দিলো নেহাকে ]

রিদোয়ান : দেখ নেহা! তুই বাচ্চা নাকি?..সবই তো বুঝিস! তাহলে এমন কেনো করছিস?.

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে আসিফের দিক এগিয়ে গিয়ে ] হোয়ার ইজ ইট?..হ্যা?..

আসিফ : ড্রাইভার আনছে!

রাহুল : ড্রাইভার এর দরকার নেই আমিই আনছি [ বলেই দৌড়ে অর্ধেক শিরি নামতেই দেখে ড্রাইভার পেট্রোল এর বোতোল নিয়ে উঠছে, রাহুল দৌড়ে গিয়ে বোতোল কেড়ে নিয়ে উপরে উঠলো, রিদোয়ান আর আসিফ তাকিয়ে আছে চুপ করে, রাগে ফুফাতে লাগলো রাহুল, এদিকওদিক না তাকিয়ে সোজা গিয়ে বোতোল খুলে পেট্রোল সব নেহার গায়ে ঢালতে লাগলো শকড হয়ে তাকিয়ে আছে নেহা ]

নেহা : [ চেচিয়ে ] হোয়াট দ্যা হেল রাহুল! কি করছিস এসব!

রাহুল : তোকে জ্বালাবো এখন! আর আমার রাগ মেঠাবো!

নেহা : দেখ এসব নিয়ে মজা করিস না!

রাহুল : [ চিৎকার করে ] তখন থেকে এটাই তো বলে যাচ্ছি! এসব নিয়ে মজা করিস না না..আমি সিরিয়াসলি আস্ক করছি সিরিয়াসলি জবাব দে![ ভয়ে চমকে উঠলো নেহা ] লিসেন্ট আই এম নট কিডিং! [ বলেই পকেট থেকে লাইটার বের করলো ]

নেহা : দেখ আমি কিন্তু পুলিশকে ফোন দিবো!

রাহুল : তো দে! পুলিশের ট্রেড দিচ্ছিস আমায়?

নেহা : মা..মাই ফোন! [ বলেই পাশফিরে তাকিয়ে মুখ গোমড়া করে ফেললো, অলরেডিই রাহুল তখন টেবিল লাত্তি মারতে গিয়ে নেহার ফোন ভেংগে ফেলেছে ]

রাহুল : লাষ্ট বার বলছি নেহা! সামির স্নেহাকে কোথায় নিয়ে গেছে? [ চুপ করে থমকে দাঁড়িয়ে রইলো নেহা, রাহুল ও অপেক্ষা করছে নেহার জবাবের, দুই থেকে তিন মিনিট পেড়িয়ে গেলো, কিন্তু নেহা সাইলেন্টই রয়ে গেলো কোনো জবাবই এলো না ]

রাহুল : ওখে আই আন্ডারস্ট্যান্ড! [ বলেই লাইটার এর সুইচ চাপ দিলো, সাথে সাথেই ফায়ার জ্বলে উঠলো লাইটারের, বুক ধরে উঠলো নেহার, চোখ বড় করে শকিং হয়ে তাকিয়ে রইলো রাহুলের হাতের দিক ]

রিদোয়ান : আরে রাহুল! অতো কি ভাবছিস ছুড়ে ফেল! [ রাহুল হাত নড়াচড়া করতেই ]

নেহা : [ হুট করে রাহুলের হাত ধরে ফেলে ] নো রাহুল! আ..আ..আমি ব..বলছি!

রাহুল : থিংক নেহা আমার তোকে মারতে হাত কাপছে না আর ভালোবাসা তো অনেক দূরের কথা! সো্ ওভার এক্টিং কম কর! আমার কাছে এসব দেখার টাইম নেই!

নেহা : সি..স্লিভিং স্টেডিয়ামের পাশে!

আসিফ : [ চেচিয়ে ] সানফ্লাওয়ার গার্ডেন? [ নেহা মাথা নাড়ালো,দৌড়ে নেমে পড়লো রাহুল,পেছন পেছন আসিফ আর রিদোয়ান ও নামলো, আসিফ ড্রাইভার কে পাঠিয়ে দিয়ে রাহুলের গাড়িতেই উঠে বসলো, রিদোয়ান গিয়ে তার গাড়িতে উঠলো ]

জারিফা : কোথায় ছিলেন এতোক্ষণ?..

রিদোয়ান : জারিফা বললাম না সব পড়ে বলবো! ব্যাস এটা জেনে নাও স্নেহাকে কোথায় নিয়ে গেছে এটা জেনে গেছি এখন জাষ্ট ওখান থেকেই ওকে আনতে যাচ্ছি!

জারিফা : কিন্তু আপনারা ডিরেক্ট সামিরকেই ফোন দিলে তো পারেন!

রিদোয়ান : আসিফ থেকে শুনলাম ফোন অফ! ট্রেস করার ভয়ে শালা বন্ধ করে রেখেছে! [ আর কিছু বললো না, জারিফা চুপ করে আছে, হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো ]

জারিফা : হ্যালো!

মার্জান : এতোবার কল দিচ্ছিলি কেনো ?..

জারিফা : আর তুই রিসিভ করছিলি না কেনো?

মার্জান : আরে আমি স্নেহার মামার বাসায় ছিলাম কথা বলছিলাম তাদের সাথে তাই রিসিভ করতে পারিনি!

জারিফা : বাট স্নেহাকে তো ঐ সামির শয়তানটা নিয়ে গেছে!

মার্জান : [ শকড হয়ে ] হোয়াটটট?…

জারিফা : হুম কিন্তু চিন্তা করিসনা আমি যাচ্ছি ওকে আনতে..

মার্জান : তুই যাচ্ছিস ওকে আনতে হ্যা?..এটা ভিডিও গেমস চলছে?..

জারিফা : নাহ..মানে রাহুল,রিদোয়ান, আসিফ ওরা ও..আছে!

মার্জান : আচ্ছা কোথায় যাচ্ছিস এড্রেস বল?..

জারিফা : [ রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] আ..আমরা কোন জায়গায় যাচ্ছি?..

রিদোয়ান : সানফ্লাওয়ার গার্ডেন!

জারিফা : [ ফিসফিসিয়ে ] সানফ্লাওয়ার গার্ডেন!

মার্জান : ডেটিং করতে নিয়ে গেছে নাকি শালা! সানফ্লাওয়ার গার্ডেন কেনো নিয়ে গেছে! ওকে তো আজ আমি…[ বলেই ফোন কেটে দিলো, জারিফা কনফিউজড হয়ে ফোনের দিক একবার তাকিয়ে আবার ব্যাগে ভরে নিলো ]
_______________________________________
একঘন্টা হয়ে গেলো,সন্ধ্যা গভীর হতে চলছে,
এইদিকে টেবিল সাজানো রয়েছে হরেকরকমের ক্যান্ডেলাইট,স্নেহা চেয়ারে বসে আছে,আর ফুফিয়ে কেদে কেদে চোখ থেকে পানি ফেলছে,

সামির : ওহ কামঅন স্নেহা! আমি তোমাকে কিডন্যাপ করেছি নাকি? জাষ্ট তোমার সাথে কিছু টাইম স্পেন্ড করতে এলাম! কতো কিছুই অর্ডার করলাম কিছুই খেলে না,আর তুমি কিনা সেই কখন থেকে কেদে চলছো [ বলেই স্নেহার সামনে চলে আসা চুলগুলো সরিয়ে দিতে চাইলো, সাথেসাথেই স্নেহা হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে দিলো ] দেখো, তুমি কেদো না,আমি তোমাকে বিয়ে করবো না, বাট এক রাত তোমার সাথে স্পেন্ড করবো!

স্নেহা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আপনি খারাপ জানতাম কিন্তু এতোটা খারাপ ভাবিওনি!

সামির : [ হেসে ] আরে খারাপের কি হলো?

স্নেহা : দেখেন আমার ফোন দেন প্লিজ! [ বলতেই সামির স্নেহার ফোনটা জোড়ে ছুড়ে ফেললো সাথে সাথেই ফোন ভেংগে দু-খন্ড হয়ে গেলো ]

স্নেহা : আরে আপনি কি করছেন এসব?..

সামির : [ রাগান্বিতভাবে স্নেহার কাছে এসে ] এখনো কিছু করিনি, আর কি বললে আমি খারাপ? তাই না? কেনো আমার সাথে রাত কাটালে তোমার আশিক তোমাকে মেনে নেবে না? বিয়ে করবে না তোমায়?..

স্নেহা : দে..দেখেন প্লিজ! এসব বাজে ক..কথাবার্তা আমার সাথে বলবেননা!

সামির : বাজে তাই না? তাহলে দেখিয়েই দেবো আজ বাজে কি জিনিষ! যতোটুকু না কষ্ট আমার বোন পেয়েছে তোমার অবস্থা দেখে তারচেয়ে দিগুণ কষ্ট তোমার আশিককে পেতে হবে!

স্নেহা : [ কাদোভাবে ] দেখেন আপনি কি বলছেন আমি কিছুই বুঝছি না প্লিজ আমাকে যেতেদিন!

সামির : [ স্নেহার হাত ধরে ] এসব আমার জন্য নতুন কিছুই না! স্নেহা! তবে জোড় করে কখনো কোনো মেয়েকে নেওয়া হয়নি! আজ এটার এক্সপেরিয়েন্স ও হয়ে যাবে সাথে তোমার রাহুলের করা ভুলের রিভেঞ্জ!

স্নেহা : রা..রাহুল কি ক্ষতি করেছে আপনাকে? কখন থেকেই একই কথা বলে যাচ্ছেন, কি করেছে ওটাতো বলেন!

সামির : কি করেছে ওটা মুখে বললে তো মজা নেই! ও যেমন হাল করেছে আমার বোনের আমিও তেমন হাল করবো তোমার, তারপর ও বুঝবে কষ্ট কি জিনিষ!

স্নেহা : কেক..কে..আপনার বোন? কিক..কি করেছে? [ সামির আর কোনো জবাবই দিলো না স্নেহাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো তার গাড়ির দিক ]

স্নেহা : [ হাত ঝাড়ি মেরে ছুটিয়ে ] কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আপনি?

সামির : [ চেচিয়ে ] চুপপ! একদম আওয়াজ করবা না [ শান্ত গলায় ] কামঅন স্নেহা সবাই ভাবছে আমরা কাপল এসেছি! আর তুমি এমন করলে ওরা কি ভাববে বলোতো? [ মুচকি হেসে ] আর তুমি চেচালেও তোমাকে কেউ বাচাতে আসবে না, সবাই সবার পার্টনার নিয়ে ব্যস্ত! সো্ কাম উইথ মি!

স্নেহা : প্লিজ দেখেন আপনি [ বলতেই হঠাৎ কাচের একটি বোতোল এসে পড়লো সামিরের মাথায় ভয়ে চমকে উঠলো স্নেহা, সামির শকড হয়ে মাথায় হাত রেখে পেছনে ফিরে তাকালো ]

রাহুল : উপসস্ সরি সামির! আই থট অন্য কেউ ছিলো! [ স্নেহা ফুফিয়ে কেদে দৌড়ে ঝাপিয়ে জড়িয়ে ধরলো রাহুলকে, রাহুল ও আগলে নিলো ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] এতো লেইট করেছেন কেনো আসতে হ্যা! জিকির করার মতো আপনার নাম মনে করছিলাম, [ বলে বলেই কাদতে লাগলো, রিদোয়ান আর আসিফ হেসে উঠলো স্নেহার কান্ডে, আশেপাশের কয়েকজন তাকিয়ে আছে, সামিরের দিক তাকিয়ে চোখ টিপ মারলো আসিফ, নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে সামির ]

রাহুল : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] ওকে ডোন্ট ক্রাই!

স্নেহা : [ কেদে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ] আম সরি রাহুল! আমার একদমি বের হওয়া উচিৎ ছিলো না,আর কখনো হবে না এমন প্রমিস!

রাহুল : [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে ধরে ] রিলেক্স স্নেহা! ইটস ওকে! যাও ওদিকে গাড়ী আছে ওখানে গিয়ে বসে পড়ো!

স্নেহা : কিন্তু আপনি?

রাহুল : আসছি! ওর চেহেরার পেন্টিং করে!

রিদোয়ান : আরে সামির তুই আর জায়গা পেলিনা, ড্রাইভ করতে করতে আমার হাত ব্যাথা হয়ে গেলো,কাছাকাছি কোথাও বুকিং করতি,

রাহুল : গো্ স্নেহা! [ স্নেহা আর কিছু বললো না কিছুটা দূর হেটে এগিয়ে যাওয়ার পর আবারো কাচ ভাংগার শব্দ এলো,তাড়াতাড়ি ফিরে তাকিয়ে দেখে, রাহুল সামিরের মাথায় আবারো কাচের বোতোল ভাংগলো সামির রাহুলের জ্যাকেট মুচড়ে ধরে ছিলো, রক্ত বেয়ে পড়ায় মাথায় হাত দিয়ে চেয়ারে বসে পড়লো সামির, থমকে চেয়ে আছে স্নেহা ]
_______________________________________
এইদিকে, ১০মিনিট হয়ে গেলো, গাড়ীতে বসে অপেক্ষা করছে জারিফা, টেনশনে মাথাটা ছায় হয়ে যাচ্ছে তার, এখনো তারা আসেনি স্নেহাকে নিয়ে, হঠাৎ গাড়ীর সামনে দিয়ে চেনা কেউ হেটে চলে যাচ্ছে এমন কাউকে দেখতে পেলো, উকি মেরে নামবে কি নামবে না আবার ভাবতে লাগলো, সাথেসাথে ফোনটা বেজে উঠলো,

জারিফা : হ্যালো!

মার্জান : ইডিয়ট জারিফা! কোথায় মরেগেছিস তোরা কাউকেই দেখতে পাচ্ছিনা!

জারিফা : তুই এইখানেই?

মার্জান : হ্যা! এক্ষুনি এসে পৌছেছি কিন্তু তোরা কই? পেয়েছিস স্নেহাকে? আমার তো জানই বেড়িয়ে যাচ্ছে!

জারিফা : এ..একমিনিট দাড়া [ বলেই গাড়ি থেকে নেমে দাড়িয়ে ] ডানদিকে দেখ, [ মার্জান ডানদিক ফিরে তাকাতেই দেখে জারিফা হাত নাড়াচ্ছে, দৌড়ে এগিয়ে গেলো মার্জান ]

মার্জান : ওরা কই? স্নেহা কোথায় পেয়েছে?..

জারিফা : আমাকে সাথে নিয়ে গেলেই তো জানবো!

মার্জান : আচ্ছা বল কোনদিকে গেছে [ জারিফা আংগুল দিয়ে দেখাতেই মার্জান আর এক সেকেন্ড ও ভাবলো না দৌড়ে চলে গেলো ঐদিকটা, জারিফার ও আর মন মনছিলো না কি আর করার সেও পেছন পেছন এগিয়ে গেলো মার্জানের ]
_______________________________________
[ স্নেহা পিছিয়ে যাচ্ছিলো এসব মারামারি দেখতে না পেরে হঠাৎ জোড়ে কারো সাথে ধাক্ষা খেয়ে চমকে উঠলো ]

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] স্নেহা! তুই! থেংক গড ঠিকাছিস!

স্নেহা : মার্জান! [ বলেই জড়িয়ে ধরলো ]

জারিফা : সরি স্নেহা! আমাদের আসলে তোকে পাঠানো উচিৎ হয়নি!

মার্জান : হ্যা তোকে না পাঠালে হয়তো আজ এসব হতো না!

স্নেহা : আরে তোরা নিজেকে কেনো দোষ দিচ্ছিস! ভুলটা আমারই ছিলো!

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] ভুল তোর না ভুল তো ঐ শয়তানটা করেছে ওকে তো আমি আজ [ বলেই দৌড়ে এগিয়ে গেলো ]

স্নেহা : আরে মার্জান শোন! [ মার্জান দৌড়ে সামিরের দিক এগিয়ে যাচ্ছিলো ঐ টাইমেই ]

আসিফ : [ মার্জানের হাত টেনে ধরে আটকিয়ে ] আরে তুমি?তোমরা এইখানে কি করছো!

মার্জান : [ চেচিয়ে ] ছাড়েন! আমাকে ওকে তো আজ আমিই মেরেই শান্তি পাবো! শয়তান একটা তোর এতোবড় সাহস! আমার ফ্রেন্ডকে তুলে এনেছিস তুই! কে দিলো তোকে এই সাহস [ আসিফের হাত ছুটাতে ছুটাতে ] আরে ছাড়েন বলছি,

আসিফ : [ মার্জানকে আলগে ধরে টেনে একপাশে নিয়ে গিয়ে ] আরে পাগল হয়ে গেছো তুমি শান্ত হও! আমরা দেখছি!

মার্জান : দেখছেন মানে? এমনি এমনি যদি আজ ওকে ছেড়ে দেওয়া হয় না! আমিই আপনার ব্যান্ড বাজিয়ে দিবো বলেদিলাম!

আসিফ : ওকে! এইদিকেই থাকো! সলভ করছি আমরা! [ নাকফুলিয়ে দাড়িয়ে আছে মার্জান, পাশে জারিফা আর স্নেহা ও এসে দাড়ালো, কি কি যেনো কথা হচ্ছে রাহুল আর সামিরের মধ্যে কিছুই শোনা যাচ্ছিলো না জাষ্ট একটু একটু শোনা যাচ্ছে, মার্জান কৌতুহলি ভাবে একপা একপা এগিয়ে কান পেতে রইলো ]

স্নেহা : দেখ মার্জান ওরা করছে যা করার! এতো সামনে যাস না বলা যায় না কি হয়! একটু আগেই দেখছিলাম রাহুল ডিম ভাংগার মতো, সামিরের মাথায় কাচের বোতোল ভাংছিলো [ বলতেই সাথেসাথে আবারও কাচভাংগার শব্দ এলো, চমকে উঠে তাকালো স্নেহা ]

মার্জান : [ শিস বাজিয়ে ] ওহো গ্রেট গ্রেট রাহুল! আরো কয়েকটা ভাংগো ওর মাথায়! কেমন নির্লজ্য ছেলে দেখ মার খেয়ে ও হাসছে!

জারিফা : আরে কি যেনো বলছে শুনতে দে না! [ বলেই কান পেতে রইলো সবাই ]
_______________________________________
রাহুল : [ দাতকিলিয়ে ] হ্যা! আমি মানছি আমি ডেট করেছি ওর সাথে তবে কন্ডিশন অনুযায়ী, কিন্তু ঐদিন রাতে তেমন কিছুই হয়নি যেমনটা তোকে বলেছে [ চেচিয়ে ] আমি নেহার সাথে চিট করিনি!

সামির : আচ্ছা! তো দিয়ে দে স্নেহাকে! আমিও এক-দু-মাস ডেট করে একরাত কাটিয়ে, বলবো ঐদিন রাতে তেমন কিছুই হয়নি রাহুল যেমনটা তোর স্নেহা বলছে!
[ রাহুল সামিরের গলা চেপে কাচ ভাংগা বোতোলটা গলায় ধরতেই রিদোয়ান রাহুলকে টেনে ধরে হাত থেকে কেড়ে নেই ভাংগা কাচটি ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] উলটাপালটা বলবি স্নেহার ব্যপারে! তাহলে ঐ দিকেই পুতে রাখবো!

সামির : আরে বলবো কেনো, আমিতো করবো যেমনটা তুই করেছিস আমার বোনের সাথে, [ রাহুল রিদোয়ানকে পেছনে ধাক্ষা দিয়ে দৌড়ে গিয়ে আবার ধরলো সামিরের গলা, দুজনেই বেজে গেলো মারামারি, আসিফ আর রিদোয়ান মিলে টেনেটুনে ছুটিয়ে নিলো ]

আসিফ : [ ফিসফিসিয়ে ] কন্ট্রোল রাহুল! প্লিজ কন্ট্রোল, এক্কেবারে মেরেফেলবি নাকি! নয়তো আবার পুলিশ-কোর্ট এসব নিয়ে পড়ে থাকতে হবে,

রাহুল : ওকে মেরে জেলে থাকাটা ও শান্তি লাগবে আমার,

আসিফ : লিসেন্ট রাহুল উল্টোপালটা কথা বলিস না, স্নেহার দিক তাকা একবার, এখন সিংগেল না তুই! [ চেচিয়ে ] দেখ সামির! তুই অলরেডি জানিস তোর বোন কেমন! ও রাহুলকে চাই, কিন্তু একজনের চাওয়াই তো সব হয় না, আর ও যা বললো তুই ও তা বিশ্বাস করে ফেললি!

সামির : একমাত্র বোন আমার! ছোট থেকে গায়ে একটা আচ ও আসতে দেইনি আমি! [ হঠাৎ টুকটাক আওয়াজে সবাই পাশ ফিরে তাকালো ]

জারিফা : ওহ মাই গড! মার্জান এরা কারা?..

[ স্নেহা দৌড়ে রাহুলের কাছে যেতে চাইলো, জারিফা আটকে ধরলো স্নেহাকে, আসিফ পেছনের দিক তাকিয়ে ইশারা করলো মার্জানদের যাতে গাড়ীতে চলে যায় ]

মার্জান : আরে বাপরে এই সৈন্যদলের হাতে তো লাঠিসোটা আছে! এখন কি হবে? ওরা তিনজন আর ওরা দশজন, আর এ..এই নেহা পেত্নীটা এই শয়তানের বোন আগে তো জানতাম না,

রাহুল : [ হেসে ] আই থট! সামির, তুই অনেক সাহসী, বাট মুখে তো অনেক গালবাজি করিস, তবে এই বাচ্চাদের ভাড়া করে এনে!

সামির : আমিও ভেবেছি তুই অনেক সাহসী, কিন্তু তাহলে তো একা আসতি, ফ্রেন্ডসদের সাথে নিয়ে না,

রাহুল : আমার ফ্রেন্ডসরা তোর গায়ে হাত তুলেনি!

সামির : বাধ্য হয়ে সবকিছুই করতে হয় রাহুল!তাই আমিও করেছি,

রাহুল : ওকে উই আর রেডি! গাইস্! চোরের দশদিন তো গেরস্তের একদিন, আজ না হয় মার খেলাম, কিন্তু কোনো না কোনো একদিন তো ভার্সেটি আসতেই হবে বাচ্চারা, তোমরা সেকেন্ড ইয়ারের মেবি! রাইট! [ চুপ করে রইলো ছেলেগুলো ]

রিদোয়ান : পুরুষ বলা যায় না তোকে সামির, এসব বাচ্চাদের সাহারা নিয়ে আসলি!

মার্জান : [ দৌড়ে এগিয়ে এসে ] একমিনিট একমিনিট [ হাত টেনে ধরলো আবার আসিফ ]

মার্জান : [ রেগে রিদোয়ানের হাত থেকে কাচের বোতোলটা আসিফের গলায় ধরে ] কথা ক্লিয়ার করতে দিন আটকাবেন তো সবার আগে আপনাকে টপকাবো,

রাহুল : [ অবাক হলো মার্জানকে দেখে তাও এইসময় এতো প্রশ্ন করা ঠিক হবে না ভেবে জাষ্ট এটাই বললো ] আরে মার্জান! তুমি কার টিমে?..

মার্জান : উফফো আমি তো আপনাদের টিমেই! [ চেচিয়ে ] ওকে গাইস্ কেউ পুরুষ কাপুরুষ এটা মুখে ডিসাইড করলে চলবে না! কাজে ও তো করে দেখাতে হবে তাই না, তারপর ডিসাইড হবে কারা পুরুষ, কারা কাপুরুষ! আপনারা যেহেতু দশ-এগারো জন, তাহলে আমি বর্ডার করছি আপনারা টিম করে একপাশ দাড়ান আমরাও দাড়াচ্ছি! তারপর আপনাদের থেকে দু-জন আসবে বর্ডারের মাঝে আর আমাদের থেকে একজনই যাবে,

জারিফা : [ স্নেহার কানে ] আরে স্নেহা! তুই মারপিট পারিস আমার তো এখন থেকেই বুক কাপছে, আমি একা কেমনি যাবো, এই মার্জানটাও না কেমন কেমন রুলস্ করে বসে,

সামির : দেখ এসব হাবিজাবি করার টাইম নেই আমার, বলেই রেগে লাঠি উঠাচ্ছিলো!

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] আরে বাদ দাও মার্জান! ও কাপুরুষ না ডারপোক ও, টিম নিয়ে এসে ও ভয় পাচ্ছে চ্যালেঞ্জ নিতে,

সামির : [ নাক ফুলিয়ে ] ওকে চ্যালেঞ্জ এক্সেপ্টেড! [ বলেই একটিম হয়ে দাড়ালো, বড় করে পাশ কেটে একটি বর্ডার বানিয়ে মার্জানরা ও একটিম হয়ে দাড়ালো ]

মার্জান : ও..ওকে! এট ফার্ষ্ট আমি!

সামির : [ হেসে ] ওহহ লেডিস ফাষ্ট! [ সামিরের পুরো টিমই হেসে উঠলো ]

রাহুল : লিসেন্ট মার্জান এটা রিস্ক!

স্নেহা : হ্যা! মার্জান প্লিজ ডোন্ট গো! আমরা ওদের বুঝিয়ে বলি,

মার্জান : ভরসা রাখেন আমার উপর জাষ্ট স্নেহার হাত ধরেন শক্ত করে,আর আপনার হোপলেস্ ফ্রেন্ডটাকে ও ধরেন! [ বলেই এগিয়ে বর্ডার এর পাশে দাড়ালো, মন মানছিলো না রাহুলের তাও ভরসা রাখলো সে তো আছেই পাশে, সবাই তাকিয়ে আছে মার্জান এর দিক, হেসে হেসে দু-জন লাঠি নিয়ে এগিয়ে এলো, মেয়ে মানুষ বলে হেসে লাঠি গুলো ও ফেলে দিলো, যেই না মার্জান এর পাশে এলো দু-জন, হাতে থেকে ছুড়ে মাড়লো মরিচের গুড়ি, চোখ কচলে চেচিয়ে বসে পড়লো দু-জন ]

মার্জান : [ চিৎকার করে ] ভাআআগোওও!

রাহুল, আসিফ, রিদোয়ান হাসবে নাকি দৌড়াবে কিছুই বুঝতে পারছিলো না, তাও হাসতে হাসতে দৌড়ে গাড়ীর দিক এগুতে লাগলো,

জারিফা : [ হেসে ] আরে তাড়াতাড়ি দৌড়ান ওরা আসছে, [ আসিফ আর রাহুল দুজনেই একটু থেমে পেছন তাকালো, রাহুল ধাক্ষা দিলো আসিফকে ]

আসিফ : [ চেচিয়ে ] তোকে দোস্ত বললে দুনিয়ায় ভুল হবে,

রাহুল : আরে মার্জানের হাত ধর, ও পিছিয়ে পড়ছে, [ আসিফ হাত বাড়ালো, মার্জান ও বেখেয়ালি হয়ে হাসতে হাসতে হাত এগিয়ে দিলো, সবাই মিলেই তাড়াহুড়া করে একগাড়ীতে উঠে পড়লো, রিদোয়ান তাড়াহুড়ো করে গাড়ী স্টার্ট দিয়ে টান দিলো,বাকিরা জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে আর কিটকিটিয়ে হাসছে ]

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] ওহোওও উই আর সাক্সেস্

জারিফা : [ হেসে ] ভাই আমার তো অনেক মজা লাগছে বলেদিলাম! [ বলছে আর হাসছে ]

আসিফ : কিন্তু কাপুরুষ তো এবার আমরাই হয়ে গেলাম পালিয়ে এসে তাই না?..

মার্জান : মার খাওয়ার চেয়ে পালিয়ে আসা অনেক বেটার বুঝেছেন! ওদের হাতের হকিস্টিক গুলো দেখেছেন?

রাহুল : [ হেসে ] দোস্ত আমাদের বউ জানলে হলো আমরা পুরুষ নাকি কাপুরুষ! [ সবাই হেসে উঠলো খিলখিল করে ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে সে গাড়ীর গ্লাস দিয়ে পেছন তাকিয়ে আছে ]আরে স্নেহা! ওদিক কি দেখছো ওরা আর আমাদের ধরতে পারবে না,

স্নেহা : আপনার গাড়ি [ বলতেই সবাই মাথা গুড়িয়ে পেছন তাকালো, এবং দেখতে পেলো রেগে গিয়ে সবাই ধুমধাম করে রাহুলের গাড়ীটাই ভাংচুর করছে ]

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] ফরগেট ইট!

রিদোয়ান : আরে নিজে বাচলে,কতো গাড়ীই আসবে আর যাবে, বাই দ্যা ওয়ে মার্জান ইউ আর গ্রেট!

রাহুল : আরে আমিতো অবাক হচ্ছিলাম টোটালি মাথায় আসছিলো না মার্জান কি করতে যাচ্ছে! [ কিটকিটিয়ে হেসে ] তারপর দেখলাম মরিচের গুড়া!

আসিফ : বাই দ্যা ওয়ে! তুমি মরিচের গুড়া পেলে কোথায়!

জারিফা : আরে ওর ব্যাগে তো মরিচের গুড়া বাধে ছুড়ি ও থাকে!

মার্জান : [ আসিফের দিক তাকিয়ে ] ইয়াহ কোন সময় কোন কাজে লাগে কে জানে!

রাহুল : [ মার্জানকে জড়িয়ে আগলে ধরে ] ওয়েল ডান! ডেরিং বেবি!

মার্জান : [ ঝাড়ি দিয়ে রাহুলকে সরিয়ে ] ছুড়িটাও বের করবো নাকি বলবেন, বিয়েটা কবে করছেন? [ রাহুল স্নেহার দিক তাকালো, স্নেহা ও হেসে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : এইবার শিয়র করবাতো বিয়ে? নাকি আবারো কথা না শুনে কিছু একটা করে বসবা [ মুচকি হেসে রাহুলের হাত জড়িয়ে কাধে মাথা রাখলো স্নেহা ]

চলবে..

Love At 1st Sight Season 3 Part – 42

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 42

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : [ হেসে মাথা নাড়িয়ে ] রিয়েলি! আই কান্ট লিভ উইদাউট ইউ রাহুল! ব্যাস যেখানেই নিয়ে যাবেন যান আমার এসব আর সজ্য হচ্ছে না!

– আ..আই লাভ ইউ রাহুল

রাহুল : [ মুচকি হেসে স্নেহার কপালে চুমু খেয়ে ] আই লাভ ইউ টু! [ চোখ বন্ধ করে নিলো স্নেহা গড়িয়ে পানি পড়ছে গাল বেয়ে ]

রাহুল : স্নেহা! বিয়ে করবে আমায়?..[ স্নেহা চোখ বন্ধ অবস্থায় হেসে মাথা নাড়ালো, রাহুলের খুশির উত্তেজনা শেষ হচ্ছে না স্নেহার মাথা নাড়ানো দেখে, সে হাসবে নাকি কাদবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না, তার এই ইন্নোসেন্ট বার্ড সব কিছু ছেড়ে তার হাত ধরে যেতে রাজি হয়ে গেছে, এর চেয়ে খুশির মুহুর্ত জীবনে আর কি হতে পারে, সাত-পাচ না ভেবে মাথা আগলে নিয়ে বুকে টেনে নিলো স্নেহাকে, স্নেহা ও রাহুলের বুকে মাথা লুকিয়ে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে ]

রাহুল : ইউ নো স্নেহা…মাঝে মাঝে এমন মনে হয়, আমার জন্মটাই হয়েছে তোমাকে ভালোবাসার জন্য! [ মুচকি হেসে ] আর তোমার জন্ম হয়েছে একদিন পুরোপুরি আমার হয়ে যাওয়ার জন্য! [ স্নেহা ও মুচকি হেসে মাথা তুলে তাকালো ]

রাহুল : বুকের বা পাশের স্পন্দন এর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর স্পন্দনটাই তুমি… ইচ্ছে করে বার বার স্পন্দন করুক…

স্নেহা : [ রাহুলের গালটেনে দিয়ে ] বারবার করলে তো হার্ট এট্যাক চলে আসবে,

রাহুল : তাহলে ঐ হার্ট এট্যাকটাই বারবার করতে চাই! [ With tedi smile ]

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে মুচকি হেসে আবারো শক্ত করে চেপে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : ডো ইউ নো স্নেহা! হাও ডেঞ্জারাস ইওর স্মাইল?…

স্নেহা : [ হেসে ] ব্যাস রাহুল!

রাহুল : সিরিয়াসলি স্নেহা!

স্নেহা : যদি এমন হয়, তাহলে ঐ ডেঞ্জারাস স্মাইল এর পাসওয়ার্ডটাই আপনি! [ হেসে উঠলো রাহুল ও ]

রাহুল : সো্ স্নেহা! তাহলে তুমি এক্ষুণি আমার সাথে চলছো তো?

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] এক্ষুনি?…কোথায় যাবো?..কোক..কোথায় থাকবো?

রাহুল : আমার বাসায়?..

স্নেহা : [ মাথা তুলে ] উইদাউট ম্যারেজ?..

রাহুল : নো! আজই বানাবো তোমাকে মিসেস রাহুল!

– কি? হবে তো মিসেস্ রাহুল?

[ লজ্জা পেয়ে জড়িয়ে ধরলো স্নেহা, রাহুল ও মুচকি হেসে স্নেহার মাথায় চুমু খেয়ে পিঠে হাত বুলিয়ে জড়িয়ে ধরে রাখলো, স্নেহা ও রাহুলের বুকের মাঝে চোখ বটে মুখ লুকিয়ে চুপটি করে আছে..টেনে নেওয়া প্রতিটা শাসই রাহুলের বুকের স্মেল এর সাথে গ্রহণ করছে…যেনো ইচ্ছে হচ্ছে এক শ্বাসেই সব স্মেল আটকে নিবে, টেনে নেওয়া শ্বাসগুলো আর ছুড়ে ফেলতে মন চাইছে না স্নেহার, চোখ বটে দু-জনেই জড়িয়ে ধরে আছে ]

এভাবেই কিছু সময় পেড়িয়ে যাওয়ার পর, হঠাৎ টুকটাক আওয়াজ ভেসে এলো কানে…
চোখ খুললো রাহুল,স্নেহার তো খবরই নেই…হারিয়ে গেছে রাহুলের বুকের মাঝে..

রাহুল : স্নেহা! [ বলেই ছুটিয়ে আনতে চাইলো কিন্তু স্নেহা তাও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে ]

হঠাৎ,

জারিফা : [ চেচিয়ে ] ওহ গড! [ চোখে হাত দিয়ে ] সরি সরি..আমি কিছু দেখিনি! [ মার্জান আর শায়লা ও এগিয়ে এলো, জারিফার কান্ডে হেসে উঠলো রাহুল, তাড়াহুড়ো করে ছুটে দাড়ালো স্নেহা! ]

মার্জান : স্নেহা তুই?..এইখানে?..তোর না মামার বাসায় যাওয়ার কথা ছিলো… আমরা তো আরো তুই বাসায় নেই ভেবে চাবি দিয়ে দরজা খুলে এলাম!

স্নেহা : হ্যা! যাওয়ার কথা ছিলো..কিক..কিন্তু যাওয়া হয়নি!

জারিফা : [ একটু কেশে ] হুমমম! বুঝতে পেরেছি কেনো যাওয়া হয়নি [ চোখ মেড়ে রাহুলের দিক ইশারা করে ] হুম হুম..রাইট?..

স্নেহা : নট রাইট!

রাহুল : [ হেসে স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ] সো্ গাইস্ একটা গুড নিউজ! [ সবাই কৌতুহলি ভাবে তাকালো রাহুলের দিক ]

– আমরা বিয়ে করছি! [ জারিফা, মার্জান, শায়লা তিনজনই অবাক হয়ে থমকে, হা করে চেয়ে আছে ]

রাহুল : [ হাত নাড়িয়ে ] হ্যালো, গাইস্! আর ইউ দেয়ার?..

জারিফা : [ চেচিয়ে ] কিহহহহহ?…বিয়ে?…[ রাহুল চমকে উঠলো জারিফার চেচানিতে ]

মার্জান : [ জারিফাকে ধাক্ষা দিয়ে ] হায় আল্লাহ, কানের পর্দা ফাটিয়ে দিবি নাকি?..

রাহুল : [ মুখ গোমড়া করে ] হোয়াট গাইস্ তোমরাও খুশি না আমাদের বিয়েতে?..

জারিফা : নো নো..জিজু তেমন কিছুই না আমরা তো খুশি অনেক খুশি..ইনফ্যাক্ট আমরা এতো খুশি, যে খুশি হজম করাই যাবে না… [ কাদো ভাবে ] কিন্তু জিজু আমাদের শপিংই তো করা হয়নি! [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] আরে ডান্স?..ডান্সই তো রিহর্সল করিনি.. [ রাহুল মুখ লুকিয়ে মাথায় হাত দিয়ে হেসে উঠে, স্নেহা ও মুচকি হাসলো ]

শায়লা : [ জারিফাকে চিমটিয়ে ] আরে ওসবের চিন্তা বাদ দে..বিয়ে হচ্ছে এটাই বেশ.. [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আপনারা এক কাজ করেন তাড়াতাড়ি বিয়েটা সেরেনেন! বাকিসব তারপর নাহয় দেখা যাবে!

মার্জান : ক্যারেক্ট আগে বিয়েটা সেরেনিন..বাকি সব পরে দেখা যাবে…

জারিফা : [ চেচিয়ে ] গাইস্! ইউ মিন..রাহুল এবং স্নেহা! পালিয়ে বিয়ে করছে?..

রাহুল : নো নো আমি পালিয়ে না, স্নেহা পালিয়ে করছে [ স্নেহা আড়চোখে তাকালো রাহুলের দিক, বাকিরা হেসে উঠে ]

জারিফা : ওয়াও আই এম সো্ এক্সাইটেড এই প্রথম পালিয়ে বিয়ে দেখবো.. ইয়েস্!

মার্জান : [ দৌড়ে এসে স্নেহাকে জড়িয়ে ] স্নেহা মাই ডিয়ার! কনগ্রেচুলেশন ইন এডভান্স!

রাহুল : আরে বিয়ে আমিও তো করবো, আর কনগ্রেচুলেশন শুধু ও কে?..

মার্জান : [ হেসে ] ওকে মাই জিজাজি! আপনাকে ও কনগ্রেচুলেশন!

রাহুল : দিস্ ইজ নট ফেয়ার! ওকে জড়িয়ে ধরে আর আমাকে এমনিতে [ সবাই আবারো হেসে উঠলো ]

মার্জান : হ্যা ওটাও মিলবে! বাট আগে বিয়েটা করেনিন তারপর!

জারিফা : বাই দ্যা ওয়ে! জিজু এতোক্ষণ তো তাই করছিলেন! পাশেরটাকে যতো ইচ্ছে ততো জড়িয়ে রাখেন আমরা কবে নিষেধ করলাম? [ চোখ টিপ মেরে ]

রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকালো স্নেহার দিক স্নেহা ও হেসে একটু তাকিয়ে লজ্জায় আবার মাথা নিচু করে ফেললো,

মার্জান : আচ্ছা আপনারা বসেন একসাথে, আমরা ফ্রেশ হয়ে আসি [ সবাই হেসে হুরহুর করে পাশের রুমে চলে গেলো, স্নেহা আর রাহুল ঐ রুমেই দাঁড়িয়ে আছে ]

রাহুল : [ স্নেহার কোমোড়ে হাত রেখে কাছে টেনে নিয়ে ] সো্ স্নেহা! আপনার পার্মিশন পেলে এবার আমি যেতে পারি! আর…সন্ধ্যায় রেডি থাকবেন মিসেস্ রাহুল হওয়ার জন্য!

স্নেহা : কেমন যেনো সব সপ্নই মনে হচ্ছে!

রাহুল : সপ্ন না স্নেহা! সপ্নটা সত্যিতে পূরণ হতে যাচ্ছে! [ মাথা নাড়ালো স্নেহা ]

– [ স্নেহার ঘাড়ের চুল গুলো স্লাইড করে সরিয়ে দিয়ে ] যেতে তো ইচ্ছে হচ্ছে না তোমাকে ছেড়ে… [ বুকেটেনে শক্ত করে জড়িয়ে ] ইচ্ছে হচ্ছে এইভাবে জড়িয়ে ধরে রাখি, [ হেসে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তুলে ধরে ] কিন্তু যেতে হচ্ছে, [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] সব ঠিকঠাক করা ও তো বাকি! [ কিছু বলছে না স্নেহা কেমন যেনো লজ্জা লেগেই চলছে হঠাৎ ]

রাহুল : তাহলে আসি এবার আমি!.. আর হ্যা! কোথাও একা বেরুবা না..যেতে হলে আমাকে ফোন দিবা! এমনিতেও তোমার আজ আর কোথাও বেরুনোর দরকার নেই!

– এন্ড তোমার মামার বাড়িতে তো মোটেও দরকার নেই!

– জাষ্ট ওয়েট ফর ইভিনিং! [ চোখ টিপ মেড়ে ]

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে হেসে ] হুমম!

রাহুল চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো হঠাৎ তখনি আবার থেমে গিয়ে স্নেহার দিক তাকালো, স্নেহা ও অবাক হয়ে তাকাতে তাকাতে ততোক্ষণে রাহুল আড়চোখে আশেপাশে তাকিয়ে, একহাত স্নেহার কোমোড়ে রেখে কাছে টেনে আরেকহাত স্নেহার থুথনিতে রেখে মাথা তুলে ধরলো, আলতো করেই ঠোটে চুমু খেলো স্নেহার, চোখ কুচকে জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলতে লাগলো স্নেহা! রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে রইলো স্নেহার ব্লাশিং হয়ে যাওয়া চেহেরার দিক,

রাহুল : বাহহ! স্নেহা! সেকেন্ডেই লাল হয়ে যাও! [ লজ্জায় চোখ নামিয়ে রাখলো স্নেহা ]

কপাল টেনে আরেকটি চুমু খেয়ে হেসে চেয়ারের উপর থেকে জ্যাকেটটা এগিয়ে নিয়ে পড়তে পড়তে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে রাহুল,

থমকে দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা! মনে মনে ভাবছে, রাহুলটাও মাঝেমাঝে এমনভাবে আদর করে যায় না, ইচ্ছে করে ঐ আদরে ডুবে মরেই যাবে!
পাশের রুম থেকে রাহুল আর তার ফ্রেন্ডসদের কথা বলার আওয়াজ আসছে.. কিন্তু না স্নেহা যাবে না লজ্জা লাগছে, সাথে ব্লাশিং ও হচ্ছে, হ্যা! অবাকটাই বেশি লাগছে, তবে অনেক খুশি ও ফিল হচ্ছে, কারণ আজ তো সে চিরজীবনের জন্যই রাহুলের হয়ে যাবে, আজ তার বিয়ে,

– [ চমকে গিয়ে ] হোয়াট আজ আমার বিয়ে? [ ধীরেধীরে টেনশন চেহেরা নিয়ে খাটে বসে পড়লো ]

এগিয়ে এলো জারিফা, হেসে স্নেহার দিক তাকাতেই কনফিউজড হয়ে গেলো, ধীরেধীরে কাছে এসে পাশে বসলো, স্নেহা ও অবাক হয়ে আড়চোখে তাকালো,

জারিফা : স্নেহা! জানেমান! ইউ ওকে! [ স্নেহা মাথা নাড়ালো, মার্জান আর শায়লা ও এগিয়ে এলো, শায়লা আপেল কেটে কেটে প্লেটে রাখছে ]

জারিফা : স্নেহা তুই আর রাহুল আজ বিয়ে করবি! [ একটু কেশে ] আ..আই মিন..[ ফিসফিসিয়ে ] তোদের বাসর রাত আজ রাতেই হবে?..

স্নেহা : ছিঃ জারিফা! তোরা কোন কথা থেকে কোথায় চলে যাস বলতো?..

মার্জান : [ আপেল খেতে খেতে ] বাট স্নেহা! শি ইজ রাইট! তুই রেডি থাকিস!

জারিফা : [ চোখ মেরে ] স্নেহা! নেক্সট মানথসে্ই আমাদের গুড নিউজ শুনিয়ে দিশ কেমন!

মার্জান : [ স্নেহার পাশে এসে বসে ধীরেধীরে স্নেহার মুখ থেকে গলা পর্যন্ত স্লাইড করে ] ভাবছি স্নেহা! রাহুল কোনদিক থেকে শুরু করবে,

জারিফা : [ স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে ] আই থিংক এইখান থেকে, না নাহ…[ স্নেহার ঠোটে স্লাইড করে ] আই থিংক এইখান থেকেই, [ শায়লা মিটিমিটি হাসতে লাগলো তাদের কান্ডে ]

স্নেহা : [ হাত সরিয়ে দিয়ে ] কিসব আজেবাজে ছি! [ বলেই উঠে চলে যাচ্ছিলো, মার্জান হেসে পেছন থেকে টেনে আটকিয়ে আবার খাটে বসিয়ে দিলো ]

মার্জান : ওহো স্নেহা! এতো লজ্জা পেলে চলবে, [ হেসে ] আচ্ছা বল তুই তোর মামার বাড়িতে গেলিনা কেনো?..

[ স্নেহা দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে সকাল থেকে হয়ে যাওয়া সব ঘটনায় খুলে বললো তাদের ]

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] হমুমানের বাচ্চা, গন্ডারের বাচ্চা, বানরের বাচ্চা, শকুনের বাচ্চা সব জানোয়ারের চেয়েও নিকৃষ্ট এই সামির! কতোবড় সাহস ওর!

জারিফা : কতোকিছুই না হয়ে গেলো এর মাঝে! আমার তো শুনেই বুকটা এখনো কাপছে!

শায়লা : কিন্তু স্নেহা! তুই একটা কাজ ভালো করেছিস, রাহুলের বাবার কাছে গিয়ে, রাহুল মুখে শিখার না করলেও অন্তত মনে মনে তো বুঝতে পেরেছে ওর বাবা ওর জন্য কেয়ার করে!

মার্জান : হ্যা! যদি রাহুলের বাবা-মা ও এক হয়ে যেতো তাহলে আর তোর বাবা ও রাহুলের প্যারেন্টসকে নিয়ে কিছুই বলতে পারতো না!

[ চোখে পানি টলমল করছে স্নেহার ]

জারিফা : আরে স্নেহা! কাদছিস কেনো?..

স্নেহা : আমরা চাইলেই ওর বাবা-মা কে নিয়ে কতো কিছুই বলছি! একমাত্র ওই জানে ওর মাঝে ওর প্যারেন্টসদের নিয়ে কি চলছে!

– এখন বুঝছি প্যারেন্টস সাথে না থাকলে কতো কষ্ট হয়! আজ তাদের না জানিয়েই রাহুলকে বিয়ে করবো এটা কখনোই ভাবিনি! কিন্তু আমি বাধ্য! রাহুলেরওতো কোনো দোষ নেই! ওর শুধু এটাই দোষ ও আমাকে ভালোবেসেছে!

মার্জান : [ স্নেহার কাধে মাথা রেখে ] ডোন্ট ক্রাই ডিয়ার, সব ঠিক হয়ে যাবে!

শায়লা : [ স্নেহার চোখ মুছে দিয়ে ] আরে স্নেহা! আজ খুশির দিন এভাবে কাদছিস কেনো, আজ তো তুই যেটা চাইছিস সেটাই পূরণ হতে যাচ্ছে!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] বাট শায়লা! একবার বিয়ে হয়ে গেলে এরপর বাবা আমার সামনে আসা তো দূরের কথা চেহেরাও দেখবে না আমার!

– ওদের একবার দেখতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে! মা, রাশু ওদের…[ বলেই কাদতে লাগলো ]

মার্জান : [ স্নেহার চোখ মুছে দিয়ে ] আরে তো কান্নার কি আছে, এমনিতেও ঠিক বলছিস এরপর আর ওরা দেখা করেকি না করে কে জানে! তাই আজ গিয়েই দেখে আয়!

স্নেহা : কিক..কিন্তু! রাহুল করতে দেবে না! ও নিষেধ করে গিয়েছে কোথাও একা না বেরুতে,আর মামার বাড়িতে তো মোটেও না,

জারিফা : এক সেকেন্ড! তোর একা বেরুতে হবে না! আমরা কি মরে গিয়েছি নাকি?..আমি যাবো তোর সাথে ডোন্ট ওয়ারি! আ..আই মিন এমনিতেও আমার বের হওয়ার ছিলো, আমার ব্লাড টেষ্ট ডেট আজকে!

মার্জান : একা যাচ্ছিস নাকি তোর ওনিও!

শায়লা : [ হেসে ] হুম হুম ওনি ও বুঝি?..

জারিফা : [ মাথা নাড়িয়ে ] ইয়েস্! ওনিও!

মার্জান : তাহলে তো প্রবলেম সলভ! তুই ওর সাথেই বেড়িয়ে যা!

স্নেহা : কিন্তু…

মার্জান : আরে এতো কিন্তু কিন্তু করছিস কেনো?.. তুই বল তোর ইচ্ছা আছে তো?.. [ স্নেহা মাথা নাড়ালো ] একবার ওখানে গিয়ে পৌছা, তারপর আসার সময় রাহুলকে বুঝিয়ে বলে দিবি যেনো ও তুকে ঐখান থেকেই পিক করে নেই!

শায়লা : হ্যা! আসার সময় রাহুলকে ফোন করে বলেদিস তারপর ও আর নিষেধ করতে পারবে না, এমনিতেও আজ ও তোর সাথে রাগ দেখাবে না কেনো বলতো?..

জারিফা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] কারণ আজ রাগলে রাহুলের কপালে শনি আছে! বিয়ে করবে কাকে?.. [ সবাই খিলখিল করে হেসে উঠে, স্নেহা ও আর হাসি থামিয়ে রাখতে পারলো না, হেসে উঠলো ]
_______________________________________

দুপুরের লাঞ্চ করে, কাপড় চোপড় পড়ে তৈরী হয়ে বেরুতে বেরুতেই ৪টা বেজে গেলো, জারিফা স্নেহাকে তার মামার বাসায় নামিয়ে দিয়ে সে চলে যায়!
স্নেহা বেল দিতেই তার মা এসে দরজা খুললো, জড়িয়ে ধরেই কেদে উঠলো দু-জন!

মা : আমি জানতাম তুই আসবি! আয় ভেতরে আয়!

[ স্নেহা ভেতরে ঢুকতেই দেখে তার বাবা বসে আছে ড্রইং রুমে, রাশু পাশে পড়ছিলো, স্নেহাকে দেখে খুশি হয়ে এগিয়ে এলো, স্নেহা ও হেসে গাল টেনে দিলো রাশুর, ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলো বাবার কাছে ]

স্নেহা : বাবা!

বাবা : সকালে আসতে বলেছিলাম!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ থেকে ] স..সকালেই আসতাম বাবা, তোমাদের কিছু বলার ছিলো, কিন্তু কিছু ঘটনা ঘটে যাওয়ার কারণে আর আসা হয়নি! তবে এখন এসেছি সেগুলো বলতে, [ স্নেহার বাবা স্নেহার দিকই ফিরে তাকালো ]

– আ..আমি বলেছিলাম…রার..রাহুলকে ভুলে যাবো, কিক..কিন্তু আমি করিনি..আমি গিয়েছিলাম বাবা রাহুলের কাছে! আমি পারিনি ভুলতে রাহুলকে [ কাদো কন্ঠে ] আমি পারবো না, হহ..হয়তো কখনোই না,

– বাবা রাহুলকে ছেড়ে থাকা ছাড়া তুমি আর যাই বলবে আমি তাই করতে রাজি!

– আ..আমি জানি আমি তোমাদের অবাধ্য হচ্ছি, কিন্তু বাবা.. রাহুলকে ছেড়ে থাকাও সম্ভব নয় আমার পক্ষে,

বাবা : [ রাগান্বিত ভাবে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ] তাহলে কোন মুখ নিয়ে এসেছিস আমার সামনে নিজের চেহেরা দেখাতে? [ আংগুল দিয়ে ইশারা করে ] দরজা ঐদিকে, বেরুতে পারিস, এইখানে আসার আর দরকার নেই! আমাদের কোনো মেয়েই নেই! [ অবাক হয়ে তাকালো স্নেহা ]

স্নেহার মা : আরে কিসব বলছো?..

স্নেহার বাবা : যা বলছি তাই! ওকে বলো বেড়িয়ে যেতে ওর এই চেহেরা দেখতেই আমার ঘৃণা লাগছে! এতো বছর মেয়েভেবে কিই বা হয়েছে, ধোকাটাই পেয়েছি!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] ধোকা তো তোমরাও দিচ্ছিলে বাবা আমায়, না বলে আজই সামিরের সাথে এনগেজমেন্ট ঠিক করে রেখেছো!

স্নেহার বাবা : তোর ভালোর জন্যই করছিলাম! সামিরের চেয়ে অন্য কোনো ছেলে তোর জন্য ভালো হবে বলে আমি মনে করি না,

স্নেহা : বাবা আমি রাহুলকে ভালোবাসি ওর জায়গায় অন্য কাউকে এটা ভাবতেও আমার কষ্ট হয়, আমি জানি তোমরা আমার ভালো চাইছো, কিন্তু…

বাবা : [ চেচিয়ে ] ব্যাস! চিনি না আমরা তোকে আজ থেকে! [ বলেই ভেতরে চলে গেলো, চেয়ে আছে স্নেহা, চোখ থেকে গড়গড় করে পানি ছুটে পড়ছে, মায়ের দিক তাকাতেই মা এগিয়ে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দেই, ধীরেধীরে পাশ ফিরে হেটে বেড়িয়ে গেলো স্নেহা ]

স্নেহা : [ কেদে কেদেই শিরি দিয়ে নিচে নামছে আর ভাবছে ] বাবা এভাবে নিষ্ঠুর কিভাবে হতে পারলো? মহান কিছুই তো চাইনি, শুধু রাহুলকে চেয়েছি , সামিরের সাথে এভাবে জোড় করে বিয়ে দেওয়াটা এমনি মনে হচ্ছে বাবা তুমি তোমার জমির টাকা আমাকে দিয়েই শোধ করছো! [ চোখ মুছে ] তবে যাই হোক আমি আর পিছে হাটবো না, এখন থেকে রাহুলই আমার সব! ওকে তো আমার কিছু বলারই প্রয়োজন হয় না, দূর থেকেই আমার মন কি চাই সব বুঝে নেই! ওকে তো যতোই ভালোবাসবো ততটাই কম পড়বে! [ গেইটের ধারে এসে চোখ-মুখ ভালোভাবে মুছে ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করে রাহুকে ফোন দিলো ]

রাহুল : [ ফোন রিসিভ করে ] হেইই! তোমার কথায় বলছিলাম এখন দাদীকে! দাদী বলছে তোমাকে এক্ষুনি নিয়ে আসতে, [ হেসে ] কে কি বলবে এতে কিছু যায় আসে না নাকি দাদীর, এখানে এনেই নাকি ধুমধাম করে বিয়ে দিবে, আমিও বললাম স্নেহা এই ঘরে নেক্সট পা রাখবে তো এক্কেবারে মিসেস্ রাহুল হয়েই পা রাখবে, তারপর ধুমধাম বাকিসব তোমাদের যা করার করো, এরআগে স্নেহাকে এক্কেবারের জন্য আমার করা চাই! [ রাহুলের কন্ঠ শুনতেই স্নেহার বুক ফেটে আরো কান্না আসছিলো, কথা বের হচ্ছিলো না মুখ দিয়ে চুপ করেই রাহুলের কথা গুলো শুনে রইলো ]

রাহুল : স্নেহা! ইউ ওকে?..

স্নেহা : [ ফুফিয়ে উঠে ] হুমম! ঠিঠ..ঠিকাছি!

রাহুল : স্নেহা তুমি কাদছো?.. [ মুখ চেপে ধরে রাখলো স্নেহা ]

– স্নেহা! কি হয়েছে?..কিছু তো বলো?..আমি জানি তুমি কাদছো!

স্নেহা : [ হিচকিয়ে কেদে কেদে ] রাহুল! আ..আমি মামার বাসায় এসেছি! ওদের দেখবো বলে, বাব..বাবাকে আরেকবার বলে দেখলাম… [ ফুফিয়ে কেদে ] ওনি বললো ওনার নাকি কোনো মেয়ে নেই! [ বলেই কাদতে লাগলো ]

রাহুল : [ জোড়ে শ্বাস ফেলে ] ও..ওহ..ওকে! প্লিজ ডোন্ট ক্রাই!

– স্নেহা! আমি নিষেধ করেছিলাম কোথাও না বেরুতে! [ কেদেই চলছে স্নেহা ]

– আচ্ছা ওকে ওকে! প্লিজ! কান্না করতে হবে না, এখন কোথায় আছো বলো?

স্নেহা : গেগ..গেইটের দিকই আছি!

রাহুল : ঠিকাছে! ওখানেই থাকো, ওখান থেকে কোথাও যাবা না, আমি আসছি!

স্নেহা : আচ্ছা!

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : ডোন্ট ক্রাই! ওকে?..

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম! ওকে!
_______________________________________

[ রাহুল ফোন রেখে পকেটে ঢুকিয়ে টেবিল থেকে তাড়াহুড়ো করে গাড়ীর চাবিটা এগিয়ে নিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে ]

দাদী : আরে রাহুল! কই যাচ্ছিস?..সব ঠিকাছে তো?..

রাহুল : [ চেচিয়ে ] হ্যা দাদী! আসছি পরে কথা হবে!

[ বেড়িয়ে গেলো রাহুল গাড়ী নিয়ে, যতো তাড়াতাড়ি পারছে ততো তাড়াতাড়িই ড্রাইভ করছে, আধঘণ্টা পরই গেইটের সামনে এসে পৌছালো, গাড়ী থেকে নেমে চারদিক চোখ বুলালো কিন্তু স্নেহাকে কোথাও দেখা যাচ্ছিলো না, মোবাইল বের করে ফোন দিতেই রাহুল অবাক হলো স্নেহার ফোন সুইচড অফ আসছে, কিন্তু এই সময় হঠাৎ স্নেহা ফোন কেনো সুইচড অফ করলো, গেইটের ভেতর ঢুকে দেখলো ওখানেও নেই, ফোন দিলো আবার মার্জানের কাছে ]

মার্জান : হ্যালো!

রাহুল : স্নেহা! বাসায় আছে?..

মার্জান : [ জিহবায় কামড় মেরে ] আ..এক্সুলি স্নেহা তো বাসায় নেই! ও ওর মামার বাড়ি গিয়েছে! কিন্তু আসার সময় আপনাকে জানাবে বলেছে!

রাহুল : আমি ওর মামার বাসার নিচেই আছি! ও গেইটের দিকই দাঁড়িয়ে আছে বললো, এসে দেখি নেই! ফোন দিচ্ছি সুইচড অফ আসছে!

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] আচ্ছা?..আশেপাশে আরেকটু খুজে দেখুন! হয়তো ঐদিকটা কোথাও হবে!

রাহুল : আচ্ছা! আমি দেখছি!

মার্জান : পেলে জানাবেন কিন্তু!

রাহুল : হুম ওকে!

[ বলেই রাহুল ফোন পকেটে ঢুকিয়ে তাড়াহুড়ো করে উপরে উঠলো, বেল বাজাতেই স্নেহার মা এসে দরজা খুললো,
রাহুল জানে না তিনি কে হবে স্নেহার,বা হঠাৎ রাহুলকে দেখে কি ভাববে তারা…একমাত্র এখন রাহুলের মাথায় স্নেহা কোথায় এটাই ঘুরছে, স্নেহার মা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো, বেল এর আওয়াজ শুনে স্নেহার বাবা ও এগিয়ে এলো ভেতর থেকে ]

রাহুল : স্নেহা কোথায়?..

স্নেহার মা : স্নেহা?..ও তো বেড়িয়েছে অনেক্ষণ হলো! তুমি কে?..

রাহুল : বেরুবার পরে আর আসেনি?..

স্নেহার মা : নাহ! আ..আসেনি!

রাহুল : তার মানে আপনারাও জানেননা স্নেহা কোথায়?..

স্নেহার মা : ওর ফ্রেন্ডসদের সাথেই তো থাকে হয়তো ওখানেই গিয়েছে!

রাহুল : হয়তো? ওয়াও গ্রেট!

– আই থট শুধু আমার প্যারেন্টসরাই এমন! বাট না আমি ভুল…এখন দেখছি শালার সব প্যারেন্টসরাই এমন!

– আর হ্যা! আমি কে জানতে চেয়েছিলেন তাই না? তো শুনুন আমি সেই যার জন্য স্নেহাকে তার প্যারেন্টস তাদের মেয়ে বলে অস্বীকার করছে!

[ বলেই রাগান্বিতভাবে নিচে নেমে চলে এলো রাহুল,গেইট থেকে বেড়িয়ে আশেপাশে তাকাচ্ছে বারবার ফোন দিচ্ছে স্নেহাকে কিন্তু সুইচড অফই আসছে! বন্ধ অবস্থায় ফোন ট্রেস করা ও পসিবল হচ্ছে না, মাথায় নানাধরনের চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে, হঠাৎ চোখ পড়লো অপোজিটের একটি দোকানের উপর, দৌড়ে এগিয়ে গেলো দোকানের দিক! ]

রাহুল : এক্সকিউজ মি ভাইয়া! এইদিকে গেইটের দিক কোনো মেয়েকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছেন?..

দোকানদার : কতো মেয়েই তো দাড়াই ভাই! কোন মেয়ের কথা বলবো?..

রাহুল : হাইট আমার কাধ পর্যন্তই হবে, ফর্সা করে, কিছুক্ষণ আগেই ছিলো! ঐদিকে গেইটের দিক, একটু মনে করেন! [ ভাবতে লাগলো দোকানদার ]

রাহুল : হয়তো ফেইসে কান্নারভাব ও ছিলো!

দোকানদার : কান্নার ভাব না কাদতেই দেখছি একটা মেয়েকে! কিন্তু ওনি তো অনেক আগেই চলে গেছে!

রাহুল : চলে গেছে?..

দোকানদার : একটা ছেলে আসছিলো ওনার সাথেই চলে গেছে!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] ছেলের সাথে ?

দোকানদার : হ্যা! একটা ছেলে আসলো গাড়ী নিয়ে, ওনার সাথে কি কি বললো এতো ধ্যান দেইনি! যেতে চাচ্ছিলো না মেয়েটা, হাত ধরে টেনেই নিয়ে গেছে! [ হেসে ] হয়তো বয়ফ্রেন্ডই হবে! রাগ করেছে তাই মানাইতে নিয়ে যাচ্চে!

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ] শিট!

– শিট! শিট! শিট! উফফফ [ বলেই রেগে মাথায় হাত দিয়ে চুল টেনে ধরে রাখলো, তাড়াহুড়ো করে দৌড়ে গিয়ে গাড়ীতে উঠলো,

মাথায় ও কিছু আসছিলো না সে কোথায় কোন জায়গায় গিয়ে খুজবে স্নেহাকে? রাগে চোখ-মুখ লাল হয়ে যাচ্ছে রাহুলের, এই মুহূর্তে প্রত্যেক জায়গায় গিয়ে গিয়ে খোজবে ওই টাইমটাও নেই,

না জানি স্নেহা কোন হালে কি অবস্থায় আছে, ভাবতেই রাগে মাথার রগ সহ ভেসে উঠছে রাহুলের,

চিন্তা করতে লাগলো কি করা যায় কোন জায়গায় গিয়ে খুজবে,

হঠাৎ, কিছুক্ষণ পরই মাথায় আসলো আজ সকালে স্নেহার সাথে ঘটা ঘটনাটি, এবার ধীরেধীরে ক্লিয়ারলি বুঝতে পারছে রাহুল,কি হতে চলছে,

হুমম তবে এটাও ভেবে নিয়েছে রাহুল, আজ হয়তো সামিরের লাশ পড়বে আর নয়তো ওর লাশ, [ স্টার্ট দিয়ে টান দিলো গাড়ী, মোবাইলটাও বেজে উঠলো ]

চলবে…

Love At 1st Sight ♥ Season 3 Part – 41

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 41

writer-Jubaida Sobti

মনে মনে ভাবতে লাগলো রাহুল, কি বলে ফেললো সে স্নেহাকে,

স্নেহা ও আর কিছু বললো না রাহুলের চেপে ধরা হাতটি পেছনে সরিয়ে নিলো, আরেক হাতে চোখ মুছে নিয়ে পাশ কেটে চলে যাচ্ছে, হঠাৎ পেছন থেকে, রাহুল স্নেহার হাত ধরে আটকে ফেললো, স্নেহা থেমে গিয়ে পেছন ফিরে তাকালো,

রাহুল : স্নেহা! আম সরি! আ..আমি আসলে..

স্নেহা : [ রাহুলের কাছে এসে দাঁড়িয়ে ] সরি বলতে হবে না রাহুল! আমি জানি, আমি কিছু মনে করিনি,
– [ মুচকি হেসে ] এমনিতেও আপনার বকাগুলো অনেক মিস্ করছিলাম!

রাহুল : [ স্নেহার হাত এগিয়ে নিয়ে ] তোমার হাত…

স্নেহা : আরে ওটা কিছুনা!

রাহুল : [ গোমড়া মুখে ] ব্যথা?..

স্নেহা : সে..সেরে যাবে! [ বলেই হাত টেনে সরিয়ে নিলো ]

রাহুল : এক কাজ করো তুমিও আমায় ব্যথা দাও..[ মাথা চুলকিয়ে একটু চিন্তা করে ] আচ্ছা শুনো আমাকে জোড়ে একটা থাপ্পড় দাও!

স্নেহা : কিহ বলছেন এসব?..পাগল হয়েগিয়েছেন?..

রাহুল : হ্যা! যেটাই মনে করো স্নেহা! ব্যাস থাপ্পড় দাও!

স্নেহা : রাহুল! আমি আপনাকে থাপ্পড় দিবো? এটা কিভাবে সম্ভব হবে না আমার দ্বারা!
– আ..আর আমি কখনো কারো গায়ে হাত তুলিনি…সো্ এটাতো ইম্পসিবল!

রাহুল : [ এক্সাইটেড হয়ে ] তার মানে আমিই ফার্ষ্ট হবো! ওয়াও স্নেহা.. কামঅন স্লেপ মি!

স্নেহা : আপনি আসলেই কি বলবো [ বলেই বিরক্তি হয়ে চলে যাচ্ছে ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] স্নেহা তুমি কেদেছো! তার মানে ব্যথা পেয়েছো! [ স্নেহা থেমে গেলো ]

– আই সয়ার স্নেহা! তুমি থাপ্পড় না মাড়লে আমি…আ..আমি নিজেকে ক্ষতি করবো!

স্নেহা : [ এগিয়ে এসে ] এটা কোনো কথা রাহুল, আমি সত্যিই ব্যথা পাইনি,

রাহুল : আমি বলেছি আমি নিজেকে ক্ষতি করবো, ঠিকাছে! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে ] আচ্ছা ঠিকাছে!

রাহুল : [ হেসে ] ওকে! [ স্নেহা রাহুলের মুখের সামনে হাত এগুলো কিন্তু গালে লাগানোর আগেই স্নেহার হাত কাপতে লাগলো ]

স্নেহা : [ হাত নামিয়ে নিয়ে ] হবে না রাহুল!

রাহুল : কামঅন স্নেহা! রাগ তুলো নিজের মধ্যে, আমি তোমার হাত চেপে ধরেছি, বকেছি, মনে করো এসব বারবার, [ হেসে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : আমি হাসতে বলিনি, রাগ উঠাতে বলেছি,

স্নেহা : বাট রাহুল!

রাহুল : ঠিকাছে [ বলেই জোড়ে হেটে এগিয়ে চলে যাচ্ছে তখনিই স্নেহা রাহুলকে আবার টেনে ধরে, রাহুল থামতেই ]

স্নেহা : ওকেওকে! দিচ্ছি!

রাহুল : [ নাকফুলিয়ে ] তাড়াতাড়ি!

[ স্নেহা মাথা নাড়িয়ে ধীরে ধীরে হাত এগিয়ে রাহুলের গালে হালকা একটু টাচ করেই দু-হাত দিয়ে নিজের মুখ নিজে চেপে শকড হয়ে গেলো, রাহুল অবাক হয়ে তাকালো স্নেহার দিক, ]

স্নেহা : হোহ! সস..সরি! ব্যা..ব্যাথা পেয়েছেন?..

রাহুল : এটা থাপ্পড় ছিলো?.. [ স্নেহা চুপ হয়ে চোখ বড় করে তাকিয়ে রইলো, রাহুল কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো, আর স্নেহা অবাক হয়েই হা করে তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : রিয়েলি স্নেহা! আসলেই তোমার দ্বারা হবে না!

হঠাৎ,

স্নেহা : [ পাশ ফিরে তাকিয়ে ] রাহুল! আপনি দু-মিনিট দাড়ান আমি এক্ষুনি আসছি, [ বলেই হাটা শুরু করলো ]

রাহুল : আরে কিন্তু কই যাও [ বলে পাশ ফিরে তাকাতেই দেখে তার বাবা বেরুচ্ছে পুলিশ স্টেশন থেকে, স্নেহা ও কোথায় যাচ্ছে এটা বুঝার আর বাকি ছিলো না রাহুলের, জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে মুখ ফিরিয়ে নিলো ]

স্নেহা : [ দৌড়ে রাহুলের বাবার দিক এগিয়ে গিয়ে হাপিয়ে উঠে ] থেংক ইউ আংকেল!

রাহুলের বাবা : [ হেসে ] মাই প্লেজার!

স্নেহা : এক্সুলি রা..রাহুল ও আপনাকে থেংক্স বলেছে! [ মুচকি হাসলো রাহুলের বাবা স্নেহার কথা শুনে ]

স্নেহা : ও আসেনি কাক..কারণ [ একটু চিন্তা করে ] ল..লজ্জা পাচ্ছিলো হ্যা! [ হেসে ] লজ্জা পাচ্ছিলো তাই! আমি বললাম ঠিকাছে আমিই জানিয়ে আসি!

রাহুলের বাবা : অনেক ভালো লাগলো, তোমার সাথে দেখা করে,

স্নেহা : আ..আংকেল ও চাই আপনাকে, কিক..কিন্তু মনের মধ্যেই দাবিয়ে রেখেছে, ঠিক আপনার মতোই!

রাহুলের বাবা : ওর জেদ এর আগে কিছুই করেনা! যেটাই জেদ ধরবে ওটাই করে ছাড়বে! আসলে ওর জেদ দেখানো আমার উপর স্বাভাবিক!

– [ মুচকি হেসে স্নেহার মাথায় উপর হাত বুলিয়ে ] আগে ওকে দেখতে খুব গোমড়া লাগতো, তুমি ওর লাইফে আসার পর আবারও হাসতে শিখেছে! আর আমি দূর থেকে ওর হাসি দেখেই খুশি!

– আমিতো পেরেও পারলাম না, ব্যাস! তুমি ওকে এভাবেই রেখো, কখনো ছেড়ে যেও না!

[ স্নেহা মুচকি হেসে মাথা নাড়ালো ]

– বি হ্যাপি অলোয়েজ! মাই চাইল্ড!

স্নেহা : থেংক ইউ আংকেল! [ রাহুল আড়চোখে তাকালো চলে যাচ্ছে তার বাবা, স্নেহাটা এখনো ঐদিকে দাঁড়িয়ে আছে, তার বাবার গাড়ী বেরুবার পড়েই স্নেহা মুচকি হেসে এগিয়ে আসছে ]

রাহুল : আর না আসলেই পারতে!

স্নেহা : আরে আমার ফাদার-ইন-লো এর সাথে কথা বলছি সময় তো লাগবেই!

[ রাহুল মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো, স্নেহা বুঝতে পেরে হেসে রাহুলের হাত জড়িয়ে টেনে হাটা শুরু করলো ]

স্নেহা : আপনার পুরা নাম এটা আগে বলেননি যে!

রাহুল : হুম! বলে কি হতো! রাহলই ইনাফ!

স্নেহা : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] বললে কি একদম হয়ে যেতো?..

রাহুল : [ হেসে ] আমার আইডি কার্ডে দেওয়া ছিলো স্নেহা!

স্নেহা : আইডি কার্ডে দেখা এক কথা,আর আপনি বলা এক কথা! [ রাহুল হাসলো আর কিছু বললো না ]

স্নেহা : হার্শ নামটা আগে প্লেসের নাম শুনেছিলাম, ঐ যে আমাদের ভার্সেটির ঐদিকে..

রাহুল : হুমম!

স্নেহা : হার্শ এড়িয়া, হার্শ হস্পিটাল, হার্শ রেষ্টুরেন্ট, হার্শ শপিং মল! সবটাই শুনেছি, এবার হার্শ মানুষের নাম ও হয় এটাও শুনলাম!

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] হার্শ কোনো গুন্ডার নাম শুনেছো?..

স্নেহা : আরে হ্যা! শুনেছিলাম, বড়োরা বলাবলি করতো কিন্তু তখন অনেক ছোট ছিলাম,

রাহুল : হার্শ ইন্ডাস্ট্রির, এড়িয়া, রেষ্টুরেন্ট, শপিংমল, হস্পিটাল, সবই ঐ গুন্ডার!

স্নেহা : আচ্ছা?.

রাহুল : [ থেমে গিয়ে ] আর ঐ গুন্ডাটা তোমার ফাদার-ইন-লো!

স্নেহা : গুগ..গু..গুন্ডা!

রাহুল : ভয় পাচ্ছো?..

স্নেহা : আপনি মজা করছেন তাই না?..

রাহুল : একটু চিন্তা করে দেখো মিলছে কিনা! তারপর আমি মজা করছি কিনা তা আপনাআপনি জবাব পেয়ে যাবে, [ বলেই তেডি স্মাইল দিতে লাগলো, আর স্নেহা সত্যি সত্যিই চিন্তা করতে ব্যস্ত হয়ে গেলো ]

স্নেহা : কিন্তু রাহুল ওনাকে দেখে মোটেও মনে হয়নি ওনি এমন! কতোই ভালো ভালো কথা বললো গুন্ডা হলেতো আগে পিছে ছোট খাটো আরো গুন্ডা থাকতো, হাতে বন্ধুক-টন্ধুক থাকতো তাই না!

রাহুল : [ হেসে ] আমার ফোন গাড়ীতে ফেলে এসেছি! তোমার ফোনটা দাও! একটা কল করবো!

স্নেহা : [ ফোন এগিয়ে দিয়ে ] কাকে করবেন?..

রাহুল : ড্রাইভারকে! গাড়ী আনতে!

স্নেহা : আরে ড্রাইভারকে আবার গাড়ী আনতে বলার কি প্রয়োজন, আমরা টেক্সি করেই যায়!

– মাঝে মাঝে এসবে চড়তে ও শিখুন! এমনিতেও কবে এসবে চড়েছেন এটাও হয়তো মনে নেই আপনার! তাই না?..বড়লোক মানুষ আমাদের মতো কি আর টেক্সি-রিকশায় সয় নাকি!

রাহুল : [ হেসে ] ওহো, শাটআপ স্নেহা!

স্নেহা : তাহলে ডান?..

রাহুল : ইয়াহ! [ বলেই একটা টেক্সি ডেকে ঠিক করে নিলো, দুজনেই উঠে বসলো, চুপচাপ, টেক্সি চলছে ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক ফিরে ] কি হলো? কি ভাবছো?.. [ হেসে ] তোমার ফাদার-ইন-লো কে?.. [ স্নেহা আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে আবার চুপচাপ সোজা হয়ে তাকিয়ে রইলো ]

রাহুল : [ জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে ] আগে ছিলো, এখন আর না!

– আমার দাদা ওয়াহিদ তাওয়াব, দাদা থেকেই শোনা ঘটনা, ওনার বিজনেস এর সব ডিল হতো স্কটল্যান্ডের ক্লাইন্টদের সাথে, একদিন দাদার এক ফ্রেন্ড তুরস্কতে থাকতো অনি, ওনার সাথে হটাৎ বিজনেস ডিল হয়, দাদা তুরস্কতে যায় ঐ ডিলের ব্যপারে, এবং তুরস্কের সৌন্দর্যতা ওখানের মানুষের আচরণ, ওখানের বাসস্থান দাদাকে মুগ্ধ করে দেই, দাদা স্কটল্যান্ডের সব ডিল আস্তে আস্তে ছুটিয়ে নিয়ে তুরস্কের ক্লাইন্টদের সাথে করা শুরু করে দিলো, এতে দাদার ঐ ফ্রেন্ডের সাথে দাদার আরো গভীর বন্ধুত্ব হয়ে গেলো, এমনটাই যে একজন আরেকজনের জন্য জান সহ দিয়ে দিবে ঠিক এমনি, দাদা তো বাংলাদেশের সবকিছু ছেড়ে তুরস্কে সেটেল হয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করে দিলো, কিন্তু দাদী এতে মোটেও রাজি ছিলো না, তাই দাদীকে এইখানে রেখেই দাদাকে মাঝে মাঝে বিজনেস এর ব্যপারে তুরস্কে যেতে হতো,

– তখনকারই একদিন, দাদী তখন প্রেগন্যান্ট ছিলো, ডেলিভারির সময় ও একদম নিকটে, কিন্তু দাদার ইম্পর্ট্যান্ট মিটিং তুরস্কে যেতে হবে, তবে দাদীকে এই অবস্থায় রেখে দাদা কিভাবে যাবে ? তখনি দাদার ঐ ফ্রেন্ডই দাদার মিটিং সামলিয়ে নিবে বলে ডিসাইড করে,

– পরদিন সকালে গুডনিউজ আসে, আই মিন আমার বাবা জন্ম নিয়েছিলো! দু-ঘন্টা পরই আবার বেড নিউজ আসে, ঐ মিটিংয়ে বাড়াবাড়ি হয়েছে ডিল নিয়ে, এতে দাদার ফ্রেন্ড চলে গিয়েছে!

স্নেহা : অন্য কান্ট্রিতে?..

রাহুল : [ হেসে চোখ দিয়ে ইশারা করে ] উপরে!

স্নেহা : হোহ!

রাহুল : অনি মারা যাওয়ার পর দাদা আর তুরস্কের কোনো ক্লাইন্টের সাথে ডিল করেনি, এবং ওনার নামেই বাবার নামকরণ করে হার্শ রাখা হয়!

স্নেহা : মানে আপনার দাদার ঐ ফ্রেন্ডের নাম হার্শ ছিলো?..

রাহুল : হুমম!

স্নেহা : এই নামের পেছনে এত্তো কাহিনী!

রাহুল : ঐ নামের মানুষটার মতোই বাবা হয়েছে! অনি তুরস্কের মাফিয়া ছিলো, আর বাবা বাংলাদেশের! [ স্নেহা শকড হয়ে তাকিয়ে রইলো ]

রাহুল : [ হেসে ] স্নেহা! সব মাফিয়ায় যে খারাপ কাজ করে তা না,
– আগে বাবার সাথে বড়বড় মাফিয়াদের হাত ছিলো, ইনফ্যাক্ট এখনো আছে তবে বাবা ওসব ছেড়ে দিয়েছে!

– নাইট-ক্লাব, লেইট নাইট পার্টি, ড্রিংকস করা এসব বাবার জন্য এভেইলেবল ছিলো, তারপর একদিন আমার মায়ের সাথে দেখা, মা অষ্ট্রেলিয়া থেকে পি.এইচডি কমপ্লিট করে এসেছিলো, বাবার স্কুল ফ্রেন্ড ছিলো মা,

– মায়ের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলো বাবা,কিন্তু মাকে বলতে বলতে টু-ইয়ারস্ লাগলো, মা ও রাজি হলো, বিয়ে ও হলো, বাবা ফুল চেঞ্জ সব ছেড়ে দিয়েছে, সব ঠিকঠাক চলছিলো, এর মাঝেই হঠাৎ কি হয়েগিয়েছিলো বাবার কে জানে?.. আবারও আগের মতো হয়ে যায়, লেইট নাইটে বাসায় ফিরতো, উলটাপালটা কথা বলে মাকে বকতো, মা-রাগ করে চলে যায় বাসা ছেড়ে,

বাবা আবার মাকে মানিয়ে নিয়ে আসে, এর মাঝে কিছু ভালোবাসা কিছু রোমান্স ছিলো নিশ্চয়, যার কারণে আমি জন্ম নেই, তিন-চারবছর ভালো ভালোই কাটছিলো,

কিন্তু তিনি আর ঠিক হতে পারলো না,

মাকে আবারও সন্দেহ, নতুন নতুন দোষ খুজে বেড়ানো মায়ের এসবই চলছিলো, এরপর আর কি? মা আর না পেরে এক্কেবারে চলে যায়,

আর উনি ওনার মতো দিন কাটাচ্ছিলো, মা চলে যাওয়ার কয়েকবছর পর বাবা আবার সব ছেড়ে দেই, বিজনেস এ ধ্যান দিতে থাকে,সবাই ভেবেছিলো উনি আবারো ওসবে জড়াবে, কিন্তু এরপর আর করেনি, কি হয়েছিলো কি জানি, তাতে আমার কি? আমি আমার মতো চলছিলাম,

স্নেহা : হুমম! তারমানে আপনার বাবা-মায়ের ও লাভ ম্যারেজ ছিলো!

রাহুল : হুমম!

স্নেহা : আপনার নামের সাথে আপনার বাবার নাম হাফ জুড়ানো, তাই কিছুটা ওনার ক্যারেক্টার এর সাথে আপনার ক্যারেক্টার ও মিল আছে!

রাহুল : এক্সকিউজ মি ?..

স্নেহা : এই যে যেখানে সেখানে হুটহাট রেগে মারামারি করতে বসেন, তারপর পার্টি-শার্টি, ডিংক্স এসব তো বাদই দিলাম,আমার সাথে মিট হওয়ার আগে আপনিও এসব কম করেছেন নাকি?..[ রাহুল হেসে উঠলো ]

– আর রোমান্টিক আপনার বাবা ও নিশ্চয় ছিলো তাই তো লাভ ম্যারেজ করেছে তাই না! আর আপনিও এমনটা হয়েছেন!

রাহুল : [ স্নেহার কাছে মাথা এনে ফিসফিসিয়ে ] লিসেন্ট বাবার বলতে দু-বছর লেগেছে! আমার বলতে ওয়ান উইক ও লাগেনি!

– আর বাবা যদি অতোটাও রোমান্টিক হতো এতোদিনে আমার আরো দু-তিনটা ভাই-বোন থাকতো! সো্ রোমান্স কাকে বলে তা আমি…

স্নেহা : [ রাহুলকে সরিয়ে দিয়ে ] ছিঃ রাহুল! স্টপ ইট! কথাটা কোথার থেকে কোথায় নিয়ে চলে যান! [ রাহুল হাসতে থাকে ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে ] রাহুল, অনি লাষ্টে যখন এসবে আর জড়ায়নি নিশ্চয় অনি ওনার ভুল বুঝতে পেরেছে! ভুল তো সবাই করে থাকে শুধরানোর জন্য আমাদের উচিত মাফ করে দেওয়া!

– অন্ধকারকে তো অন্ধকার দিয়ে আলোকিতো করা যায় না! তাতে আলো দিতে হবে! [ রাহুল ঠিক হয়ে বসে অন্যপাশ ফিরে থাকে ]

স্নেহা : রাহুল! ওনি আপনাদের এখনো ভালোবাসে, ওনার চোখের দিক একবার তাকিয়ে দেখেন সব বুঝতে পারবেন আপনি! অনি চাইলেই তো আরেকটা বিয়ে করতে পারতো…

রাহুল : [ বিরক্ত হয়ে ] অন্য টপিকে কথা বলি স্নেহা!

স্নেহা : আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন আপনি আপনার বাবাকে ভালোবাসেন না?…এখনো বাসেন আপনার চেহেরায় বলছে!

রাহুল : স্নেহা! প্লিজ!

স্নেহা : তাহলে আপনি যে বলেছেন একটু আগে আপনার আইডিকার্ডে আপনার নামের সাথে আপনার বাবার নামে টিটল দেওয়া আছে! ওটা দিয়ে রেখেছেন কেনো?..এতোই যখন ঘৃণা করেন ওটাও সরিয়ে ফেলতেন!

রাহুল : ওটা আমি দেইনি! স্কুল থেকেই সার্টিফিকেটে দেওয়া ছিলো তাই বাধ্য হয়ে দিতে হয়েছে!

স্নেহা : আচ্ছা?.. তাহলে আপনার বাবার বাড়ির পাশের গেষ্ট হাউজে কেনো থাকেন এক্কেবারে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যেতেন!

– আপনি ওখানে এই কারণেই থাকেন যাতে আপনার বাবাকে আপনি প্রতিদিন দেখতে পারেন!

রাহুল : তুমি কি চাও আমি নেমে যায়?..

স্নেহা : [ আড়চোখে তাকিয়ে রাহুলের হাত আরো শক্ত করে জড়িয়ে চেপে ধরে ] দরকার নেই!

রাহুল : তাহলে অন্য টপিকে কথা বলো আর নয়তো চুপ করে থাকো!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আপনার বাবা…

রাহুল : আবার?..

স্নেহা : আরে পুরো কথাটাতো শুনেন!

– আপনার বাবা বলেছিলো আপনি অলোয়েজ পুলিশের সাথে পাংগা নেড়ে আসেন আজ লকাপে বন্ধি হলেন কিভাবে!

– আ..আই মিন এর আগেও আপনি পুলিশের কাছে আরেষ্ট হয়েছিলেন?..

রাহুল : কয়েকবার ধরেছিলো লেইট নাইটে বাড়ি ফেরার সময়, ড্রাংক অবস্থায় গাড়ী চালানোর জন্য, গাড়ীতে ব্লাক মিরর লাগিয়েছিলাম তার জন্য! ব্যাস কয়েকমিনিটের জন্যই, টাকা দিতেই ছেড়ে দিয়েছে!

স্নেহা : টাকা দেওয়ার কি দরকার ছিলো আপনার বাবার নাম বললেই তো ছেড়ে দিতো! নয়তো আপনার পুরো নাম বলতেন! [ রাহুল আড়চোখে তাকাতেই ]

স্নেহা : [ হেসে ] ওকে সরি সরি! [ কিছুক্ষণ পরই স্নেহার বাড়ির সামনে এসে পৌছালো, দু-জনেই টেক্সির দু-দিক থেকে নেমে দাড়ালো, স্নেহা খেয়াল করলো রাহুল পকেটে হাত দিয়ে টেনশন ভাব নিয়ে হাত দিয়ে চেক করছে ]

স্নেহা : [ মনে মনে ] নিশ্চয় টাকা সব ঐপুলিশই নিয়ে নিয়েছে! [ চেচিয়ে ] শুনেন! আ..আমি আনছি উপর থেকে একটু ওয়েট করেন!

রাহুল : নো নো ওয়েট! গাড়ীতেই আছে মানিব্যাগ! [ বলেই রাহুল গাড়ীর দিক এগিয়ে গিয়ে মানিব্যাগটা নিয়ে আবার এগিয়ে এসে টেক্সির ড্রাইভারকে ভারা দিয়ে দেই, টেক্সি সামনেরদিক কিছুটা এগিয়ে চলে যেতেই হঠাৎ রাহুল হুট করে একটানে স্নেহাকে কাছে টেনে নিলো,
আনব্যালেন্স থাকায় দুজনেই একসাথে মাটিতে পড়ে গেলো যেখানে ছিলো ছোট ছোট পাথরের কণা, যা রাহুলের পিঠে চুপকে ধরলো, খানিকটা ব্যথা অনুভব করলেও রাহুল তাড়াতাড়ি পাশ মুড়ে তাকালো, রাগান্বিত ভাবে উঠে দাড়াতে যাবে কিন্তু খেয়াল করলো স্নেহা রাহুলের গায়ের উপর ভয়ে কুকরে আছে ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] স্নেহা সরো! [ বলেই উঠতে যাচ্ছিলো! ]

স্নেহা : [ রাহুলকে চেপে ধরে ] না রাহুল প্লিজ! যাবেননা!

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ] স্নেহা প্লিজ! [ পাশফিরে তাকিয়ে চেচিয়ে ] শিট!

রাহুল : হোয়াট দ্যা হেল স্নেহা?.. তোমার সেন্স কই থাকে?..

স্নেহা : [ তাড়াহুড়ো করেই উঠে বসে ] আমার কি দোষ?.. আপনিই তো হঠাৎ টান দিলেন!

রাহুল : [ দাতকিলিয়ে ] আমি এটার কথা বলছিনা, [ পাশফিরে তাকিয়ে ] ঐ গাড়ীটা তোমার দিকই আসছিলো আর তোমার খবরই নেই!

স্নেহা : কিন্তু কোনো আওয়াজই তো হলো না! তাই…

[ রাহুল আর কিছু না বলে উঠে দাঁড়িয়ে, স্নেহাকে ও হাত ধরে টেনে উঠে দাড় করালো, রাগান্বিত ভাবে ফুফিয়ে ফুফিয়েই শ্বাস ফেলছে রাহুল ]

স্নেহা : আ..আপনি ঠিকাছেন?..

রাহুল : গাড়ীর নাম্বারটা খেয়াল করতে পারলাম না! [ চেচিয়ে ] তোমার জন্য!

স্নেহা : আরে এমন ওতো হতে পারে ঐ দিকটা রাস্তা ছোট তাই ভুলে আমার দিক এগিয়ে দিলো,

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ] ড্রাইভ আমিও জানি, কোন রাস্তায় কতো বড় গাড়ী যাওয়া যাবে এটাও ভালো জানি! আচ্ছা বাদ দিলাম এসব, গাড়ীর হর্ণ তো ছিলো!

স্নেহা : হ..হয়তো নষ্ট হয়ে গেছে!

রাহুল : তোমার মাথায় বুদ্ধি বলতে কিছু নেই! ঐদিকে এতো বড় জায়গা খালি..ও এইদিকটাই কেনো এগিয়ে এলো, তারমধ্যে তোমাকে সরিয়ে নেওয়ার পর গাড়ীটা কিছুদূর গিয়েই থেমে গেলো, আমি উঠতে উঠতেই পালালো!

স্নেহা : ভালোই হয়েছে পালিয়েছে! হয়তো সামিরই ছিলো! আর আপনি আবার মারামারি করার জন্য যেতেছিলেন তাই না?..

রাহুল : সামির না সামির হলে আমার দিকই আসতো গাড়ী তোমার দিক না!

[ স্নেহা রাহুলের গলার দিক তাকিয়ে, মুখে হাত রেখে হোহ বলেই চেচিয়ে উঠলো ]

রাহুল : কি হলো?..

স্নেহা : [ রাহুলের গলায় হাত রেখে ] ব্লাড?.. কেমনি হলো ?..

রাহুল : [ স্নেহার হাতের নখের দিক তাকিয়ে বুঝতে পেরে ] বাদ দাও…

[ স্নেহা কিছুক্ষণ চিন্তা করে মনে পড়লো সে তো ভয়ে রাহুলকে খামছে ধরেছিলো ]

স্নেহা : সরি রাহুল..আ..আমি আসলে..তখন..

রাহুল : ডোন্ট-ওয়ারি! তুমি বাসায় যাও এখন! আমি আসছি পরে দেখা করবো… [ বলেই তাড়াহুড়া করে গাড়ীর দিক এগুচ্ছিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে ] কোথায় যাচ্ছেন আপনি আমি ভালো করেই জানি!
– আমার সাথে চলেন বাসায়, আমি ঔষধ লাগিয়ে দিচ্ছি!

রাহুল : স্নেহা জাষ্ট সামান্য একটুই সেড়ে যাবে!

স্নেহা : একটু হোক আর বেশি আপনি এখন আমার সাথে বাসায় যাবেন ব্যাস আমি আর কিছু শুনবো না…

রাহুল : লিসেন্ট!

স্নেহা : [ কান চেপে ধরে ] নো লিসেন্ট!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ওকে চলো! [ স্নেহা একটু হেসে রাহুলের হাত ধরলো, রাহুল ও হাত ধরে উপরে নিয়ে গেলো, দুজনেই রুমে গিয়ে ঢুকলো, স্নেহা টেবিলের ড্রয়ার থেকে কটোন আর ঔষধ নিয়ে পাশ ফিরতেই দেখে রাহুল তার জ্যাকেট খুলে চেয়ারের উপর রাখছে, অমনিই রাহুল বলে চেচিয়ে উঠলো স্নেহা! ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] কি হলো?..

স্নেহা : [ দৌড়ে এগিয়ে এসে ] দেখি আপনার পেছনে?…

রাহুল : অও! ওটা তেমন কিছুনা সামান্য একটু ব্যথা পেয়েছি! হয়তো ছোট ছোট পাথর ছিলো!

স্নেহা : কিন্তু রাহুল ব্লিডিং হচ্ছে! আপনার শার্টের উপরই ভেসে উঠছে…

রাহুল : আচ্ছা?..

স্নেহা : আপনি এইদিকে বসেন আমি মেডিসিন লাগিয়ে দিচ্ছি, [ বলেই স্নেহা কটোন আর ঔষধ নিয়ে খাটে বসলো, রাহুল শার্ট খুলে চেয়ারে বিলিয়ে রেখে স্নেহার পাশে এসে বসলো, স্নেহা কটোনে মেডিসিন লাগিয়ে রাহুলের দিক তাকাতেই চমকে যায় ]

[ রাহুল কিছুক্ষণ নিজের চুলগুলো এপাশ-ওপাশ করে ঠিক করতে থাকে.. দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে হাত পেছনে রেখে ভর দিয়ে বসলো, স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে সে চমকে চেয়ে আছে ]

রাহুল : [ ভোর তুলে ইশারা করে ] কি হলো?..

স্নেহা : নাহ.. কিক…কিছুনা..আ..আপনি পেছনে ফিরেন!

রাহুল বুঝতে পেরে তেডি স্মাইল দিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আবার ধীরে ধীরে পেছন ফিরে বসলো, স্নেহাও ধীরে ধীরে মেডিসিন লাগিয়ে দিচ্ছে.. ব্যাথা অনুভব হচ্ছিলো রাহুলের তবে স্নেহার হাতের স্পর্শে ব্যথাটাও ভুলে যেতে বাধ্য হচ্ছে,

স্নেহা : [ পিঠে মেডিসিন লাগিয়ে দেওয়ার পর ] এ..এবার সামনে ফিরতে পারবেন..

রাহুল ধীরে ধীরে স্নেহার পাশ ফিরে ঘুরে বসলো.. স্নেহা নিচের দিক তাকিয়ে কটোনে মেডিসিন লাগাচ্ছে, চোখ তুলে মেডিসিন লাগাতেই যাবে তখনি থমকে গিয়ে আবার আড়চোখে রাহুলের দিক তাকালো, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়েই আছে স্নেহার দিক..স্নেহা কাপা হাতে রাহুলের গলার দিক কটোন দিয়ে মেডিসিন লাগাতে লাগলো, আর রাহুল ধীরে ধীরে স্নেহার ঘাড়ের কাছে মাথা আনলো, হাত দিয়ে চুল গুলি সরিয়ে একপাশ করে রাখলো, স্নেহা ঢোগ গিলতে লাগলো, তাও মেডিসিন লাগাতে নিজেকে ব্যস্ত রাখার অপারগ চেষ্টা, হঠাৎ ঘাড়ে কারো ঠোটের স্পর্ষ পেতেই স্নেহা চোখ বন্ধ করে শিউরে উঠলো, নিজের অজান্তে রাহুলের ক্ষত জায়গায় মেডিসিন লাগানো কটোনটি জোড়ে চেপে ধরলো, রাহুল ব্যথা অনুভব করায় স্নেহার কোমোড়ে হাত রেখে চেপে ধরলো, সাথে স্নেহার ঘাড়ে আরো গভীরভাবে চুমু দিলো

চোখ খুললো স্নেহা, রাহুল তার দাড়ি দিয়ে স্নেহার গাল ঘষে দিলো স্নেহা আবারো কেপে উঠলো..
ধীরেধীরে স্নেহার ঠোটের দিক তাকিয়ে এগুতেই স্নেহা কটোনটি ক্ষতো জায়গায় আবার ও জোড়ে চেপে ধরলো,

রাহুল : আহহ! স্নেহা! [ কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো স্নেহা ] হোয়াট আর ইউ ডুয়িং? হ্যা!

স্নেহা : [ হেসে ] আর আপনি কি করছিলেন?..

রাহুল : আ.. আমি তো [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে নটি মাইন্ডে তাকিয়ে থাকলো, একটু হেসে চলে যাচ্ছিলো স্নেহা হুট করেই রাহুল স্নেহার হাত ধরে টান দিয়ে আবার বসিয়ে দিলো ]

রাহুল : আহা..মেডিসিন কমপ্লিট করে যাও..

স্নেহা : কিক..কিন্তু লাগালামই তো…

[ রাহুল হাত দিয়ে গলার মেডিসিন সব মুছে ফেলে খাটের মাঝে শুয়ে পড়ে, স্নেহা অবাক হয়ে হা করে তাকিয়ে রইলো ]

রাহুল : চলে গেছে সব! এবার লাগাও…

স্নেহা : কিন্তু আপনি তো ইচ্ছে করেই…

[ বলতেই রাহুল একটানে স্নেহাকে কাছে টেনে নেই, স্নেহার মুখ দিয়ে কিছুই বেরুচ্ছেনা রাহুলের খালি বুকের মাঝেই সে পড়ে আছে… রাহুল স্নেহার সামনে নুয়ে যাওয়া চুল গুলো কানের ধারে গুজে দিলো,স্নেহা চোখ বন্ধ করেই জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলতে লাগলো ধীরে ধীরে স্নেহাকে কাত করে পাশে শুয়ে দিয়ে রাহুল স্নেহার উপুর হয়ে শুলো ]

রাহুল : কামঅন স্নেহা ভয় পাচ্ছো কেনো ঐদিনই তো বলেছো আমার উপর ভরসা আছে, [ স্নেহা চোখ নামিয়ে রাখলো ]

রাহুল হাতে ভর করে মাথা রেখে তেডি স্নাইল দিয়ে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ,

ধীরে ধীরে হাত এগিয়ে স্নেহার ওড়না সরাতে লাগলো ঐ সময়ই হুট করে স্নেহা লাফিয়ে উঠে বসলো, আর কিছু না ভেবে খাট থেকে উঠে দৌড়ে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ ওড়না কারো হাতে টান পড়তেই স্নেহা আবার থেমে যায়, কোমোড়ে স্পর্শ পেলো কারো, বুকটাও কেপে চলছে এবার.. রাহুল তার দিকই ফেরালো স্নেহাকে,

রাহুল : কই যাও…

স্নেহা : আ..আমি..

রাহুল : ইয়েস ইউ…

পিছিয়ে গেলো স্নেহা..আর রাহুল পা বাড়িয়ে এগিয়ে এলো স্নেহার নিকটে, লেগেপড়লো স্নেহা আলমারির সাথে! পেছানোর আর জায়গা নেই, পাশ কেটে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই রাহুলের হাত আলমারিতে রেখে বাধা দিলো… অন্যহাতে স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে ধরলো, চোখ তুলে রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল এমনভাবে তাকিয়ে আছে, যে চাহনিতে সে বারবার মরতে চাইবে, চোখ বন্ধ করে ফেললো স্নেহা! ঠোটে রাহুলের ঠোটের আলতো স্পর্শ পেলো..

রাহুল : [ ধীরে ধীরে স্নেহার হাত স্লাইড করে ধরে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] ব্যথা পেয়েছিলে তখন স্নেহা?.. [ স্নেহা মাথা নাড়াতেই, হাতটি মুখের কাছে তুলে চুমু খেলো রাহুল, শিউরে উঠলো স্নেহা যেনো শরীরের সব লোমই দাঁড়িয়ে পড়েছে ]

ধীরেধীরে গলায় হাত রেখে ওড়নাটা টেনে ফেলে দিলো রাহুল! চুল সরিয়ে আলতো করেই চুমু খেলো গলায়,
চোখ বন্ধ করে রাহুলের খালি কাধেই খামছে ধরলো স্নেহা! রাহুল স্নেহার কপালে চুমু খেয়ে ধীরেধীরে সরে পিছিয়ে দাড়ালো,স্নেহা চোখ নামিয়ে ঐ দিকটাই দাঁড়িয়ে আছে…চেয়ার থেকে শার্টটা এগিয়ে নিয়ে পড়ে নিলো রাহুল! কলার ঠিক করে পকেটে হাত রেখে হেসে স্নেহার দিক তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ, ব্লাশিং হয়ে চোখ নামিয়ে মুচকি হাসছে স্নেহা ও,

ধীরে ধীরে স্নেহার কাছে এগিয়ে এসে দাড়ালো রাহুল,গলায় হাত দিয়ে স্লাইড করে দিলো,স্নেহা চেয়ে আছে রাহুলের দিক,

রাহুল : স্নেহা আমার কিছু বলার ছিলো তোমাকে! [ স্নেহা কৌতুহল চোখে তাকালো ]

– আই নো স্নেহা ইউ লাভ মি! এন্ড ইউ অলসো্ লাভ ইউর প্যারেন্টস!
– তোমার বাবার মাথায় আমার ব্যপারে যা ঢুকেছে হয়তো ওনার জায়গায় আমি হলে ও এটা মেনে নিতাম না!
– সো্ আমি কি বোঝাতে চাচ্ছি বুঝতে পারছো?…

স্নেহা : [ কাদো ভাবে ] রাহুল! বাবা আমার এংগেজমেন্ড ঠিক করেছে আজ সামিরের সাথে! তাও আবার আমাকে না জানিয়ে! ঐ সামিরই বলে গেলো যাওয়ার সময়! [ রাহুল রাগান্বিতভাবে হাত মুঠি বেধে অন্যপাশ ফিরে গেলো স্নেহা বুঝতে পারলো রাহুলের রাগ উঠছে ]

স্নেহা : [ রাহুলের কাছে এগিয়ে গিয়ে ] রাহুল আপনি…

রাহুল : তো কি ভেবেছো স্নেহা ? করে নিবে এনগেজমেন্ট সামিরের সাথে?..

স্নেহা : কি বলছেন আপনি আমি ওর সাথে কেনো এনগেজমেন্ট করবো!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তাহলে চলো আমার সাথে! [ স্নেহা চুপ করে চেয়ে রইলো ] কি হলো স্নেহা?..এতো কি ভাবছো?.. পারবানা আমার হাত ধরে যেতে! [ চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো স্নেহার, কষ্টমাখা একটি দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো রাহুলের, স্নেহার চোখ মুছে দিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

রাহুল : আমি আমার রাগ মেঠানোর জন্য সামিরকে মারবো ঠিকই স্নেহা! কিন্তু তাও তোমার বাবা আমাকে মেনে নিবে না! আর সামির ও থেমে থাকবে না ও এসবের জন্য অনেক নিচুই নামতে পারে,
– আর ওকে মারার পর তোমার একা চলাটাও মোটেও সেফটি না! ইনফ্যাক্ট তোমাকে বাসায় একা রাখাটাও আমার সেফটি মনে হচ্ছে না!
– আর এইদিকে তুমিও আমার সাথে যেতে রাজি নও! আমি আর কি করতে পারি স্নেহা! তুমিই বলো কি করবো?..

স্নেহা : [ রাহুলের শার্ট মুচড়ে ধরে তারদিক ফিরিয়ে ] তাহলে নিয়েই চলুন আপনার সাথে! [ কাদো ভাবে ] আমি না কবে বললাম?..

রাহুল : [ অবাক হয়ে তাকিয়ে ] রি…রিয়েলি স্নেহা!

স্নেহা : [ হেসে মাথা নাড়িয়ে ] রিয়েলি! আই কান্ট লিভ উইদাউট ইউ রাহুল! ব্যাস যেখানেই নিয়ে যাবেন যান আমার এসব আর সজ্য হচ্ছে না!

– আ..আই লাভ ইউ রাহুল!

চলবে….

Love At 1st Sight Season 3 Part : 40

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part : 40

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : কেনো করছেন আপনি এমন প্লিজ!

– [ কাদো কন্ঠে ] আপনি বলুন পুলিশকে ওর কোনো দোষ নেই!

সামির : আহা! নির্দোষ একজন ব্যাক্তির উপর হাত তোলা এটা দোষ না স্নেহা?..এটা আইনের বিরোধী!

স্নেহা : [ চেচিয়ে ] প্লিজ! বন্ধ করুন আপনার এসব অভিনয়! কোনো আইনের ধারায় পুলিশ আসেনি! আপনিই এসব প্লান করে টাকা খাইয়ে এনেছেন!

– আপনি ইচ্ছে করেই রাহুলের রাগ তুলেছেন যাতে রাহুল আপনার গায়ে হাত তুলে, সুযোগ পেয়েও আপনি ওর গায়ে হাত তুলেননি যাতে আপনি আপনার করা প্লান কাজে লাগাতে পারেন!

সামির : ওয়াও স্নেহা! তুমিতো দেখছি মারাত্মক ইন্টেলিজেন্ট!

স্নেহা : [ কেদে হাত জোড় করে ] প্লিজ!

সামির : সইছে না তো রাহুলের কষ্ট?..ঠিকাছে! সন্ধায় তৈরী থেকো,তুমিই পারবে রাহুলের কষ্ট কমাতে, আমাদের এক একটা প্রোগ্রাম শেষ হবে,ধীরেধীরে রাহুলের কষ্ট কমতে থাকবে,

[ বলেই চোখ মেরে গাড়ী টান দিয়ে চলে যায় নিস্থব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা, সামিরের বলা কথাটা কানে বেজে উঠছে বারবার চোখ দিয়ে পানি ছুটে চলছে, গাড়ীর লুকিং গ্লাস দিয়ে স্নেহার কাদো চেহেরা দেখে হেসে হেসে ড্রাইভ করে চলে যাচ্ছে সামির ]

মনে মনে ভাবছে আর হাটছে স্নেহা!

– সামিরের আশায় থাকলে রাহুলকে এতো সহজে পুলিশ স্টেশন থেকে নিয়ে আসা সম্ভব না! কিছু একটা তো করতেই হবে, [ কাদো ভাবে ] কিন্তু কি করবে কিছুই তো মাথায় আসছে না, কিছুদূর হেটে গিয়ে একটা টেক্সি ঠিক করে নিয়ে উঠে পড়লো! টেক্সি চলছে, স্নেহার মনটা ছটফট করছে রাহুলের জন্য! পথটাও যেনো আজ শেষ হচ্ছে না,
_______________________________________

In Police Station,

রাহুল বসে আছে একটি টুলের মধ্যে, আশেপাশে আরো অনেক আসামীই রয়েছে, কাউকে চুরি করতে গিয়ে ধরে চুল কামিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিলো তো কাউকে ইপটিজিং এর কারণে ধরে আনা হলো, আবার কারো বাইকের লাইসেন্স না পাওয়ায়, আবার কিছু ড্রাগ এডিক্টেডদের,

রাহুল বসে বসে তাদেরই ক্লাস নিচ্ছিলো, তারাও কেউ গোমড়া মুখে জবাব দিচ্ছে তো কেউ হাসি মুখে,

সবার ক্লাস নেওয়া শেষে রাহুল হেসে, হাত ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে হ্যান্ডকাফটি দেখছিলো, ঐ সময়ই জানালা দিয়ে অফিসারের দিক চোখ পড়লো, অফিসার আর কাউন্সটেবল এর মধ্যে কথোপকথোন হচ্ছে,

কাউন্সটেবল : [ ফিসফিসিয়ে ] স্যার, ঐ হিরোর লাভারটা এসেছে!

অফিসার : হুমম!… কোথায়?..

কাউন্সটেবল : স্যার, বাহিরে অপেক্ষা করছে, আসতে বলবো কি ভেতরে?…

অফিসার : হ্যা! বলো আসতে!

স্পষ্ট কিছু বুঝতে পাচ্ছিলো না রাহুল, তবে তাও আড় চোখে কান পেতে, জানালার দিক চেয়ে রইলো, কাউন্সটেবল বেড়িয়ে পড়লো, বাকি কাউন্সটেবল গুলো যার যার কাজে ব্যস্ত, আর অফিসার! তার তো কোনো কাজ নেই চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে আর চা খাচ্ছে, অফিসারের পেট দেখে রাহুল ভাবতে লাগলো, যেনো কোনো হাতির বাচ্চাই জন্মই নিবে এটা থেকে, শালা ঘুষ খেতে খেতে পেট টা গন্ডারের মতো করেছে, ভেবেই রাহুল আবার মুখ ফিরিয়ে ফেললো,

হঠাৎ, কিছুক্ষণ পরই কানের কাছে সেই চেনা মিষ্টি সুরটি ভেসে আসলো, পাশ মুড়ে আবার জানালা দিয়ে তাকাতেই রাহুল অবাক হয়ে গেলো!

স্নেহা : স্যার সত্যিই ওর কোনো দোষ নেই!

অফিসার : দোষ আছে কি না আছে সেটা! আমরাই ভালো বুঝবো তাই না?..

রাহুল : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে মনে মনে ] ওহ গড! ডেম ইট! স্নেহা এইখানে কেনো এলো!

স্নেহা : আচ্ছা! আ..আমি একটু দেখা করতে পারি ওর সাথে?

অফিসার : কি হবে দেখা করে?…

স্নেহা : জাষ্ট একটু কথা বলবো! প্লিজ!

কাউন্সটেবল : আমার মনে হয় আপনি পুলিশ স্টেশনের রুলস জানেন না!

স্নেহা : জি! বুঝেছি.. কিক..কিন্তু আমার কাছে অতো টাকা নেই! যা আছে আমি তাই দিচ্ছি! [ বলেই ব্যাগে দু-তিনশ টাকার মতো ছিলো এবং তাই তাড়াতাড়ি বের করে দিয়ে দিলো ]

কাউন্সটেবল : আরে আস্তেআস্তে ম্যাডাম!

– [ হেসে ধীরে কন্ঠে ] আপনাকে আপনার ইয়ের সাথে দেখা করতে দিবো, আর আপনি এতো কম বকশিস!

[ স্নেহা টেনশনে পড়ে গেলো আর তো টাকা নেই তার কাছে, তবে রাহুলের সাথে দেখা করাটাও খুব জরুরী! ]

অফিসার : ঠিকাছে যাও কিন্তু সময় ঘড়িধরা দু-মিনিট! শুধু, এর চেয়ে একসেকেন্ড ও বেশি হবে না!

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো অফিসারের কথায় ]

কাউন্সটেবল : আসেন ম্যাডাম! [ হাত দিয়ে ইশারা করে ] ঐ যে!

[ রাহুলের দিক চোখ পড়তেই চোখে আবার পানি এসে জমে গেলো স্নেহার, তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে গিয়ে দাড়ালো জানালার ধারে, ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেদে চলছে, মুখ দিয়ে কিছু বলতেই পারছে না স্নেহা! ]

রাহুল : রিলেক্স! স্নেহা! এভাবে কাদছো কেনো?… আমি একদম ঠিকাছি!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আপনি এইখানে এই অবস্থায়.. কিভাবে ঠিকাছেন!

রাহুল : শুধুশুধু চিন্তা করছো! তুমি, আমি সত্যিই ঠিকাছি!

– আর তুমি এইখানে আসলে কেনো স্নেহা ?..

স্নেহা : আপনি এইখানে আর আমি আসবো না?..[ কাদো ভাবে ] শুধুশুধু এসব বাড়িয়েছেন.. কি দরকার ছিলো ওর সাথে মারামারি করার…

রাহুল : [ দাতকিলিয়ে ] স্নেহা! ও তোমার হাত ধরেছে! পুলিশ না আসলে তো ওকে ঐদিকেই পুতে রাখতাম

স্নেহা : [ মাথা নুয়ে ] সব আমার জন্যই হচ্ছে তাই না!

রাহুল : শাট-আপ স্নেহা!

[ স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনিই আশেপাশের দিক চোখ পড়তে স্নেহা চুপ হয়ে যায় ]

স্নেহা : এ..এরা কাক..কারা?..

রাহুল : [ একটু হেসে ] এরা! পুলিশ স্টেশন এর গেষ্ট! আমার মতো! [ সবাই হেসে উঠে ]

রাহুল : [ পেছন ফিরে ] গাইস্ তোমাদের ভাবি! [ বাকিরা হাত নাড়ালো ]

স্নেহা : ইনার চুচ..চুলে কি হয়েছে?..[ বলতেই চোরটা মাথায় হাত দিয়ে ঢেকে নিলো, বাকিরা আবারো হেসে উঠলো ]

রাহুল : অও ওর চুলে?.. [ হেসে ] আসলে ও নাকি ইয়ো ইয়ো হানি সিং এর বিগ ফ্যান তাই এভাবে কেটেছে!

স্নেহা : আচ্ছা!

হঠাৎ পাশ থেকে,

কাউন্সটেবল : [ এগিয়ে এসে ] ওহ! ম্যাডাম টাইম ওভার! এখন আসতে পারেন!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে?..এখনো তো পুরোপুরি একমিনিট ও হয়নি!

কাউন্সটেবল : [ মুখে পান ঢুকিয়ে ] ম্যাডাম আপনি হয়তো পুলিশ স্টেশন এর রুলস জানেন না! [ বুঝতে পারলো স্নেহা! কি চাই তার, কিন্তু কি করবে স্নেহা! টাকাও তো শেষ তার, হঠাৎ মাথায় এলো আইডিয়া, উপুর হয়ে বসে পা থেকে পায়েলটি খুলে নিলো ]

স্নেহা : এটা চান্দীর, বিক্রি করলে প্রথমে যা দিয়েছি তার চেয়েও কিছুটা বেশি পেতে পারেন! [ বলেই এগিয়ে দিলো ]

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ] স্নেহা তুমি পাগল হয়ে গেছো?..

কাউন্সটেবল : [ এগিয়ে নিয়ে ] ঠিকাছে! আরো একমিনিট দিলাম যাও! [ বলেই সরে গেলো ]

রাহুল : কি করছো স্নেহা তুমি এসব?.. ওরা এভাবেই করতে থাকবে, যাও বাসায় যাও!

[ স্নেহা জল চোখে রাহুলের দিক তাকালো, রাহুল ও তাকিয়ে রইলো, চেয়ে ও হাত বাড়িয়ে স্নেহার চোখের জল মুছে দিতে পারছিলো না ]

রাহুল : স্নেহা! প্লিজ ডোন্ট ক্রাই! এইধরনের পুলিশদের নজর খারাপ হতে ও দু-সেকেন্ডের বিশ্বাস নেই!

– প্লিজ বাসায় যাও!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রাহুল! ওরা তো টাকার ডিমান্ড করবে! কিক..কিন্তু আমার কাছে তো অতো টাকা নেই!

– আ..আপনি তো সব বুঝেন, আর অন্য কোনো তো ওয়ে হবে আপনাকে বেড়িয়ে আনার!

রাহুল : আরে তুমি ওসব নিয়ে টেনশন করছো কেনো?..ওরা আমায় কালই ছেড়ে দিবে!

– ওদের সামির টাকা খাইয়েছে যাতে আমাকে একদিনের জন্য রিমান্ডে দেই! জাষ্ট! একটা দিনই তো স্নেহা! কালই চলে আসছি আমি!

স্নেহা : [ চমকে গিয়ে ] কিহহ! রিমান্ডে?.. আপনি কি কারো খুন করে দোষ শিকার করছেন না নাকি?..আপনাকে কেনো রিমান্ডে দিবে?.. [ কাদো কন্ঠে ] আপনি পাগল হয়েগেছেন! এটাকে জাষ্ট একটা দিন বলছেন?..

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! আমি চাচ্ছি এই অফিসার এর চাকরি খাবো, জাষ্ট একবার রিমান্ডে দিক! এরপরদিন বেড়িয়ে ও ওর চাকরি কই রাখে আমি দেখবো!

স্নেহা : দেখেন! রাহুল আপনার মাথা ঠিকাছে?..আপনি রিমান্ডে দিবে এটাকে কি ইজিলি নিচ্ছেন! আমি শুনেছি রিমান্ডে নাকি অনেক অত্যাচার করে [ কাদো কন্ঠে ] খুব মারে!

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] তো কি হয়েছে?.. মার খাবো! এটাতো সামান্য ব্যাপার স্নেহা, তোমার জন্য জানটাও হাজির!

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] আপনি!.. [ বলতেই হঠাৎ পাশ থেকে কাউন্সটেবল এসে কাশি দিলো ]

কাউন্সটেবল : ম্যাডাম! টাইম ওভার!

স্নেহা : দেখেন প্লিজ! আর বেশিক্ষণ না জাষ্ট একটু!

কাউন্সটেবল : রুলস হিসেবে টাইম কিন্তু ওভার!

রাহুল : হয়েছে স্নেহা! এবার বাসায় যাও চুপচাপ, রিলেক্স থাকো, আমি প্রমিস করছি, কাল এসেই তোমার সাথে আগে দেখা করবো!

স্নেহা : কিন্তু! রাহুল..কাল পর্যন্ত…তো

কাউন্সটেবল : দেখেন ম্যাডাম! সময় শেষ! এবার বেড়িয়ে যান! নয়তো রুলস অনুযায়ী কাজ করেন তারপর আমি আরো এক মিনিট বাড়িয়ে দিতে পারি!

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ] শাট-আপ! কমপক্ষে গায়ে পড়া ইউনিফর্মটাকে তো রেসপেক্ট করতে শিখো! লজ্জা করেনা এসব করতে,

কাউন্সটেবল : সয়ে গেছে! লজ্জা কিসের, আর তুই ভেতরে বসে চিড়িয়াখানার সাপের মতো টুকাটুকরি করিস না! চুপচাপ বইসা থাক! [ রাগ উঠছিলো রাহুলের তাও কন্ট্রোল করে নিলো ]

রাহুল : লিসেন্ট স্নেহা! বাসায় যাও!

[ স্নেহা চিন্তা করতে লাগলো আর তো কিছু নেই তার কাছে, তবে রাহুল ও তো বললো না কিছু কিভাবে ছুটিয়ে আনা যাবে ]

কাউন্সটেবল : ম্যাডাম এতো কি ভাবছেন! সময় নাই ভাবার! চিকচিক করছে,

দু-হাত মুঠি বেধে একসাথে মোচড়ামুচড়ি করতে লাগলো, হাতের দিক তাকিয়ে ভাবতে লাগলো, এটা রাহুলের পড়িয়ে দেওয়া রিং, তাদের ভালোবাসার নিশানা, এটা কিভাবে দেওয়া সম্ভব!

[ রাহুল ও কিছু বললো না, স্নেহার কান্ড দেখে যাচ্ছে চুপ করে, জলভরা চোখে একপলক তাকিয়ে আবার কাউন্সটেবল এর দিক তাকালো স্নেহা! আর কিছু বললো না পাশ মুড়ে কিছুদূর হেটে গিয়ে আবার পেছন ফিরে তাকালো রাহুলের দিক, মুচকি হাসলো রাহুল, মুখের দিক হাত উঠিয়ে স্নেহাকে ও হাসার জন্য ইশারা করলো, কষ্ট চাপা হাসি দিয়ে বেড়িয়ে গেলো স্নেহা! ]

ধীরেধীরে হাটতে লাগলো, খুব অসহায় ফিল করছে নিজেকে, তবে কি রাহুলের বলা কথায় চুপ করে বাসায় গিয়ে বসে থাকবে নাকি? এটা কিভাবে সম্ভব! রাহুলকে তার জন্যই পুলিশ স্টেশন যেতে হলো, তবে রাহুলকে ফিরিয়ে আনতে হলে যা করা লাগবে সে করবে..এভাবে চুপ হয়ে বসে থাকলে চলবে না! রাহুল তার জন্য এতোকিছু করতে পারলে এইটুকুতো রাহুলের জন্য সে করতেই পারে,

টেক্সি ঠিক করে তাড়াহুড়ো করে বাসায় গিয়ে উঠলো, আলমিরা খুলে বাকি কিছু টুকটাক টাকা ছিলো সেগুলো গুছিয়ে ব্যাগে ভরে নিয়ে আবার টেক্সি করে বেড়িয়ে পড়লো,

রাহুলের বাড়ির গেইটের কিছুটা দূর দাঁড়িয়ে চুপ করে রইলো, বুকটা কেপে চলছে স্নেহার, ভেতরে গিয়ে কি বলবে, উফফ! বলতে তো হবেই! সে জানে রাহুল জানলে তার উপর রাগ করবে! কিন্তু কি করার এটাই একটা রাস্তা!

ধীরেধীরে গেইটের দরজা খুলতেই সিকিউরিটির সালাম শুনে চমকে উঠলো স্নেহা!

সিকিউরিটি : মেম! রাহুল ভাইয়া তো বাসায় নেই! বেড়িয়ে গেছে, আপনি দাদীর কাছে যেতে পারেন!

স্নেহা : হ্যা! জানি..আ..আমি রাহুলের সাথে দেখা করতে আসিনি!
– আচ্ছা আপনি বলতে পারবেন দাদী এখন কি করছে হবে ?

সিকিউরিটি : [ কিছুক্ষণ চিন্তা করে ] সেটাতো বুঝতে পারছিনা! তবে আপনি ভেতরে আসুন..

স্নেহা : না না..ঠিকাছে,
– আচ্ছা রা..রাহুলের বাবা আছে বাসায়?..

সিকিউরিটি : পাচঁমিনিট হলো অফিসের জন্য বেড়িয়েছে!

স্নেহা : [ মনে মনে ] দাদীকে বললে খামাখা টেনশন করে অসুস্থ হয়ে পড়বে, রাহুলের বাবাকেই বলি,

সিকিউরিটি : মেম! আ..আসুন ভেতরে!

স্নেহা : আচ্ছা আপনি আমাকে একটু বলতে পারবেন রাহুলের বাবার অফিস কোথায়?..

সিকিউরিটি : ক্রসিং রোড, হারশ ইন্ডাস্ট্রি!

স্নেহা : থেংক ইউ ভাইয়া! [ বলেই স্নেহা তাড়াহুড়ো করে বেড়িয়ে পড়লো, টেক্সি যতো অফিসের দিক এগুতে চলছে ততো স্নেহার শরীর কাপতে লাগলো, অবশেষে পৌছাতেই স্নেহা নেমে এসে টেক্সি বিদায় করলো, মাথা তুলে অফিসে বিল্ডিং এর দিক তাকিয়ে রইলো ]

– [ মনে মনে ] মুখ উঠিয়ে তো চলে এলি স্নেহা কিন্তু বলবি কি?..বাহির থেকে কাপতে লাগছিস ভেতরে গিয়ে তো মরেই যাবি! [ কাদো কন্ঠে ] না না..থাক অন্যকিছু ভেবে দেখি কি করা যায়, রাহুলের বাবার সামনে যাওয়া পসিবল না, [ বলেই পাশ মুড়ে যাচ্ছিলো, হঠাৎ আবার থেমে গিয়ে ] অন্যকিছু কি আর ভাববি?..অনেক তো ভেবেছিস আন্সার জিরোই এসেছে, হাতে সময় ও বেশি নেই! নাজানি রাহুল কি অবস্থায় আছে, থাক [ বলেই ধীরে ধীরে এগিয়ে শিরি দিয়ে উঠে মেইন ডোরের সামনে আসতেই সিকিউরিটি দরজা খুলে দিলো, স্নেহা একটু হেসে ভেতরে ঢুকে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো, আশেপাশে তাকিয়ে স্নেহা হতভম্ব হয়ে পড়েছে, এতো বড় হলের কোন দিকটাই যাবে কিছুই বুঝতে পারছে না, হঠাৎ একজন মহিলা এগিয়ে এলো স্নেহাকে দেখে,]

মহিলা : হ্যালো আই এম আনিতা, কেন আই হেল্প ইউ মেম!

স্নেহা : .হ্যালো! [ মনে মনে ভাবতে লাগলো স্নেহা সে তো রাহুলের বাবার নামই জানে না কার সাথে দেখা করতে এসেছে বলবে ]

আনিতা : এক্সকিউজ মি মেম! কেন আই হেল্প ইউ?..

স্নেহা : আব..হ্যা! হ্যা..এক্সুলি আমি বব..বস্ আপনাদের বসের সাথে দেখা করতে এসেছি!

আনিতা : ওয়েল! আপনার পরিচয়?..

স্নেহা : আ..আমি স্নেহা! রার..রাহুলের ফ্রেন্ড!

আনিতা : ওকে মেম! কাম এন্ড সিট হেয়ার! প্লিজ! ওয়েট ফর ফিউ আওয়ারস্!

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] ফিফ..ফিউ আওয়ারস্! অনেক লেইট হয়ে যাচ্ছে না?..

আনিতা : সরি মেম! একটু পরেই স্যার কনফ্যারেন্স রুমে ঢুকবে! কনফ্যারেন্স এর আগে কারো সাথে দেখা করবে না!

স্নেহা : দেখেন প্লিজ! আমার হাতে বেশি সময় নেই! খুবই ইম্পর্টেন্ট!

আনিতা : ওকে আমি স্যারকে আপনার ব্যাপারে ইনফর্ম করে দিচ্ছি! কনফারেন্স শেষ হতেই আপনার সাথে আগে দেখা করিয়ে দিবো!

[ স্নেহা কিছু বললো না দম আটকে যাচ্ছিলো, বুক ফেটে একটি ক্লান্তিকর দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো, ধীরেধীরে এগিয়ে গিয়ে পাশের সোফায় বসে পড়লো, মুখ গোমড়া করে আনিতার চলে যাওয়া চেয়ে আছে ]

– [ মনে মনে ] কপালটাই খারাপ,কোনো কাজই ঠিক মতো হয়না আমার! কিন্তু রাহুলকে আজ পুলিশ থেকে ছুটিয়ে আনতে না পারলে আমি নিজেকে নিজে কখনোই ক্ষমা করতে পারবো না!.. আর এই রাহুলটাও কম না একদম তার স্মাইল এর মতো তেডা, আমাকেই বলতে পারতো কি করতে হবে, কোনো না কোনো ওয়ে তো ছিলোই, কিন্তু তিনি আগে রিমান্ডে যাবে সাথে অফিসারের চাকরি ও খাবে, এসব কোনো কথা, [ মুখ গোমড়া করেই বসে আছে স্নেহা, কিছুক্ষণ আশেপাশে তাকাচ্ছে তো কিছুক্ষণ রাহুলকে ভাবছে, হঠাৎ খেয়াল করলো আনিতা মেয়েটি তার দিকই এগিয়ে আসছে ]

আনিতা : এক্সকিউজ মি মেম! আপনি আসুন! স্যার আপনার সাথে এক্ষুনি দেখা করবে!

[ স্নেহা খুশি হবে নাকি ভয়ে কাদবে কিছুই বুঝতে পারছে না, তবে এইটুকু এসে হার মানলে ও চলবে না, মাথা নাড়িয়ে আনিতার পেছন পেছন এগিয়ে গিয়ে লিফটে উঠে পড়লো ]

আনিতা : [ রুম দেখিয়ে দিয়ে ] এটাই স্যারের রুম!

স্নেহা : থেংক ইউ! [ বলেই দরজার নক ধরে কাপতে লাগলো, আনিতা তাকিয়ে আছে দেখে চোখ-মুখ বটে খুলেই ফেললো দরজা ]

রাহুলের বাবা : [ মাথা তুলে তাকিয়ে ] স্নেহা! রাইট?..

স্নেহা : জিজ..জি!

রাহুলের বাবা : কাম! কাম! [ স্নেহা ধীরে ধীরে দরজা বন্ধ করে এগিয়ে এলো ]

– দাঁড়িয়ে আছো কেনো?..সিট ডাওন প্লিজ!

[ চেয়ার এগিয়ে ধীরেধীরে বসে পড়লো স্নেহা ]

রাহুলের বাবা : আমার বিশ্বাসই হচ্ছিলো না তুমি এসেছো, তোমাকে দেখার অনেক ইচ্ছে ছিলো, ভেবেছিলাম রাহুল ওর মতো তোমাকে ও…[ বলেই চুপ হয়ে গেলো ]

– [ একটু হেসে ] টেন ইয়ারস্ হয়ে গেলো, এর মধ্যে রাহুলের কোনো ফ্রেন্ডসই কখনো আমার সাথে অফিসে মিট করতে আসেনি! এমনিতে কোনো প্রোগ্রামে দেখা হলে হাই হ্যালো হয়!

– তবে তোমার আর রাহুলের কথা আমার মায়ের কাছ থেকে শুনেছি! হ্যাঁ মাশাল্লা বলতেই হবে, মা যতোটুকু তোমার সৌন্দর্যের এক্সপ্লেইন করেছে, এর চেয়েও দিগুণ মিষ্টি দেখতে তুমি!

[ স্নেহা চোখ নামিয়ে রাখলো, মাথায় আসছে না কি বলবে, এখন অনেকটা ভয় কম লজ্জায় বেশি লাগছে তার ]

রাহুলের বাবা : আচ্ছা আমিতো জিজ্ঞেসই করলাম না কি খাবে তুমি?.. [ স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনি ] নো নো নো..না করা একদমই চলবে না!

[ স্নেহা খেয়াল করলো রাহুলের বাবা অনেকটাই খুশি, রাহুল ও যেভাবে কষ্ট চেপে আছে তেমনি রেখেছে তিনি, তাই আজ খুশি গুলো তার কথার মধ্যেই ভেসে উঠছে, ]

স্নেহা : এক্সুলি আংকেল! আ..আমি অন্যসময় খাবো,

রাহুলের বাবা : এমনটা সবাই বলে!

স্নেহা : না নাহ! সত্যি! অবশ্যই আসবো খেতে, কিন্তু আংকেল আমার খুব ইম্পর্টেন্ট কথা বলার ছিলো আপনাকে!

রাহুলের বাবা : আচ্ছা হ্যা! বলো?..

স্নেহা : এক্সুলি রার..রাহুল পুলিশ স্টেশনে!

রাহুলের বাবা : [ শকড হয়ে ] হোয়াট?..কিন্তু কেনো?..

স্নেহা : ও ওর ক্লাসমেট, সামির ওর সাথে মারামারি করছিলো ওদের মাঝে বন্ধুত্ব কম দুশমনিই বেশি! তখনি হঠাৎ পুলিশ চলে আসে…আসলে পুলিশকে ঐ সামিরই ইনফর্ম করেছে!

– [ মুখ গোমড়া করে ] আ..আর মারামারিটা আমার জন্যই হয়েছে আংকেল..কিন্তু রাহুলের কোনো দোষ নেই! ঐ সামির শুধুশুধু রাহুলকে ফাসানোর চেষ্টা করছে!

রাহুলের বাবা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] গড! ডেম ইট! সবসময়ই তো পুলিশের সাথে পাংগা নেড়ে আসে..এবার ডিরেক্ট স্টেশনে বন্ধি হয়ে রইলো কেনো? [ নিজ জায়গা থেকে বেড়িয়ে এসে ]

– নিশ্চয় এর মাঝে ও কোনো প্লান আছে, আসলে ওকে আমি কখনো বুঝতেই পারিনা ও কি চাই! আর পুলিশ ও বা এমন করলো কেনো ও কি জানে না কার ছেলে? আরে আমার ছেলে বলার ও কি প্রয়োজন নিজের নামটা বললেই তো হতো!

স্নেহা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] ওকে বকবেন না আংকেল, ওর কোনো দোষ নেই!

রাহুলের বাবা : [ মুচকি হেসে ] ওকে বকবো?.. আমি?.. [ স্নেহা কিছু বললো না চুপ হয়ে গেলো ]

রাহুলের বাবা : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে ] টেনশন করোনা এসো আমার সাথে! [ বলেই দরজা খুলে বেড়িয়ে পড়লো,স্নেহা ও পিছু পিছু বেড়ুলো ]

এসিস্ট্যান্ট : স্যার! কনফ্যারেন্স রেডি! ক্লাইন্ট ও চলে এসেছে!

রাহুলের বাবা : অল ক্যান্সেল! [ বলেই হাটা শুরু করলো,স্নেহা ও অবাক হয়ে পিছু পিছু হাটতে লাগলো, হঠাৎ রাহুলের বাবা থেমে গিয়ে স্নেহাকে পেছন থেকে পাশে এগিয়ে নিলো, স্নেহা অবাক হলো সাথে মনে মনে খুশিও হতে লাগলো, আশেপাশের সব এমপ্লয়িরা তাকিয়ে আছে, নিচে নেমে বাহিরে বেড়িয়ে রাহুলের বাবাই গাড়ীর দরজা খুলে দিলো স্নেহাকে, হা করে তাকিয়ে আছে স্নেহা! ]

রাহুলের বাবা : কাম ডিয়ার! হারিয়াপ! [ স্নেহা মাথা নাড়িয়ে উঠে বসলো, তারপর রাহুলের বাবা ও উঠে বসলো ]

[ গাড়ী চলছে এইদিকে স্নেহা মনে মনে রাহুলের জন্য টেনশন করছে আবার খুব খুশি খুশি ও ফিল করছে, ভাবতেই অবাক লাগছে স্নেহার, এসব তার কাছে সপ্নই মনে হচ্ছে ]

পুলিশ স্টেশন পৌছাতেই এবার আর স্নেহাকে কারো দরজা খুলে দিতে হয়নি, নিজেই হুট করে দরজা খুলে সবার আগে নেমে পড়লো! রাহুলের বাবার এসিস্ট্যান্ট নেমে দরজা খুলে দিলে রাহুলের বাবাও নেমে দাড়ালো, স্নেহার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে মুচকি হাসলো রাহুলের বাবা,পুলিশ স্টেশনের দিক এগুতেই স্নেহা ও পিছু পিছু এগিয়ে গেলো!

স্নেহা তাকিয়ে আছে, রাহুলের বাবাকে না কোনো কাউন্সটেবল আটকাচ্ছে না কোনো অফিসার এর পার্মিশন লাগছে, স্নেহা ও ঘুরঘুর করে পেছন পেছন এগিয়ে গেলো,

অফিসার এর রুমে ঢুকতেই,

অফিসার : [ হুট করে দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আরে হারশ স্যার! আপনি..হঠাৎ? কোনো সমস্যা হয়েছে?..[ বলতেই স্নেহার দিক চোখ পড়াই একটু অবাক হলো ]

– আ..আপনি আসলেন কেনো আমাদের ইনফর্ম করতেন! [ কাউন্সটেবলকে ইশারা করে ] আরে যাও চা আনো! [ জানালা দিয়ে রাহুল মাথা ফিরিয়ে তাকালো, স্নেহা ও তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুলের বাবা : আমি চা খেতে আসিনি অফিসার!

– কি কারণে আ্যরেষ্ট করা হয়েছে জানতে পারি?..

অফিসার : [ অবাক হয়ে ] কা..কাকে স্যার?..[ স্নেহার দিক তাকিয়ে বুঝতে পেরে ] ওহ আচ্ছা! ঐ ছেলেটা মারামারি করছিলো রাস্তায়! একটা ছেলের সাথে?..

রাহুলের বাবা : কেনো করছিলো মারামারি? রিজনটা কি ছিলো জেনেছেন?.. [ অফিসার চুপ করে রইলো ]

– এফায়ার কে লিখেছে?.. [ অফিসার কাউন্সটেবলের দিক তাকালো, কাউন্সটেবল মাথা নাড়ালো কোনো এফায়ার লিখা হয়নি ]

অফিসার : এক্সুলি অনেক কাজ পড়েছিলো তাই এফায়ার লিখা হয়নি! মানে লিখতেই ছিলাম!

রাহুলের বাবার এসিস্ট্যান্ট : আ্যরেষ্ট কাকে করেছেন জানেন?…

অফিসার : আব..নাম নেওয়া হয়েছে, কি যেনো বললো নাম..

কাউন্সটেবল : স্যার! রাহুল!

এসিস্ট্যান্ট : রাহুল হারশ!

রাহুল মুখ ফিরিয়ে নিয়ে নাক ফুলিয়ে মনে মনেই বলে উঠলো

– আমার কারো দয়া চাইনা মিষ্টার হারশ! শুধুশুধু এসেছে দয়া দেখাতে, ডিস্কাষ্টিং!

অফিসার : রাহুল হাহ..হারশ! [ একটু হেসে ] আগে বললেই হতো! আমাদের শুধু রাহুলই বলেছে!

রাহুলের বাবা : কেনো? যে আ্যরেষ্ট করতে বললো সে বলেনি?..

অফিসার লজ্জা পেয়ে কাউন্সটেবলকে ইশারা করলো যাতে রাহুলকে বেড়িয়ে আসতে দেই, কাউন্সটেবল তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে গিয়ে রাহুলের হ্যান্ডকাফস্ খুলে দেই, স্নেহা ও ধীরেধীরে এগিয়ে গেলো জানালার দিক,রাহুল হ্যান্ডকাফাস খুলেও ঐদিকটা বসে রইলো,

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে রাগান্বিত ভাবে] কি দরকার ছিলো স্নেহা! ওনার কাছে যাওয়ার!

স্নেহা : আমি জানি আপনি রাগবেন! হ্যা! রাগ দেখান সমস্যা নেই! কিন্তু তাও বেড়িয়ে আসেন!

রাহুল : ইডিয়ট! [ স্নেহা মুখ গোমড়া করে চুপ হয়ে রইলো ]

কাউন্সটেবল : স্যার রাগ দেখাবেন না আসলে এটা মিষ্টেক! [ রাহুল আড় চোখে তাকালে ] বব..বলছিলাম যে.. আ..আপনার ছুটি!

রাহুল : তুই থেকে ডিরেক্ট আপনি তাই না?..ছুটি আমার নাকি কার এটা বেড়ুনোর পরই দেখবি! [ বলেই রাহুল ধীরেধীরে বেড়িয়ে এলো, অফিসারের টেবিলের দিক এগিয়ে যেতেই ]

অফিসার : [ হ্যান্ডশেকের জন্য হাত বাড়িয়ে ] এক্সট্রেমলি সরি মিষ্টার রাহুল! ইট ওয়াজ মিষ্টেক!

রাহুল : [ পেকেটে হাত রেখে ] অফিসার! আপনার কাউন্সটেবলকে একটু ডাকবেন?..

[ অফিসার হাত বটে নিয়ে কাউন্সটেবল এর দিক তাকালো ]

কাউন্সটেবল : [ পাশথেকে ] জি! আমি এইখানেই!

রাহুল : [ তার বাবার এসিস্ট্যান্ট এর দিক তাকিয়ে ] মুরাদ ভাই একটা ওয়ান কে নোট দেন তো!

[ এসিস্ট্যান্ট রাহুলকে একহাজার টাকার একটা নোট বের করে দিলো ]

রাহুল : [ নোট টা কাউন্সটেবল এর দিক এগিয়ে দিয়ে ] টেক ইট! পায়েলটা বেক করো!
[ রাহুলের কান্ডে স্নেহা বিরক্ত হলো মনে মনে ভাবছে এটা কোনো কথা! চিন্তায় আছি কখন এইখান থেকে বের হবো আর ও কিনা পায়েলটা নিয়ে পড়ে আছে ]

কাউন্সটেবল : [ লজ্জা পেয়ে পায়েলটা এগিয়ে দিয়ে ] না স্যার এটার দরকার নেই পা..পায়েলটায় নিয়ে নিন!

রাহুল : আরে?..রুলস মনে করিয়ে দিতে হবে নাকি?.. [ বলেই হাত টেনে টাকাটা ঢুকিয়ে দিয়ে পায়েলটা নিয়ে নিলো ]

রাহুল : [ এসিস্ট্যান্ট এর দিক ফিসফিসিয়ে ] বলে দিও ওনাকে আমার ওনার হেল্প এর দরকার ছিলো না! [ এসিস্ট্যান্ট মাথা নিচু করে রইলো রাহুলের বাবা ও বুঝতে পেরে চুপ করে রইলো ]

[ রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে নিয়ে চলে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলকে আটকিয়ে ধীরো কন্ঠে ] রাহুল! একটা থেংক্স তো বলেন আপনার বাবাকে,

[ রাহুল স্নেহাকে কোনো জবাব না দিয়ে হাত ধরে টেনে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লো ]

স্নেহা : আরে রাহুল! এতো রাগ করছেন কেনো?.. একটা থেংক্সই তো ওনার কতো ভালো লাগবে জানেন?..

রাহুল : [ পুলিশ স্টেশনের বাহিরে এসে স্নেহার হাত চেপে ধরে ] স্টপ ইট! স্নেহা! জাষ্ট স্টপ ইট! প্লিজ.. আমার ওনার সাথে কোনো কথা নেই! থেংক্স বলা তো অনেক দূরের কথা!

– আর তোমাকে কে বলেছে ওনার কাছে যেতে?..আমি বলেছিলাম না কালই চলে আসছি! কথা বললে কানে যায় না?..

স্নেহা : আপনাকে ওখানে দেখে আমার জানই বেড়িয়ে যাচ্ছিলো! কি করবো কিছুই মাথায় আসছিলো না, তাই গিয়েছি..আর ওনি ততোটাও খারাপনা রাহুল! ভুল জীবনে সবাই করে থাকে,

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ] ভুল করলে ওটা শুধরাতে জানতে হয়! আমি চাইলেই আমার পুরো নাম আর পরিচয় দিলে পুলিশ আমাকে এইখানে আনা তো দূরের কথা টাচ ও করতে পারতো না!

– আমি চাইলেই তোমাকে বলতে পারতাম তখনি, কেনো বলিনি সেটাও তুমি ভালো করে জানো কিন্তু তাও অবাধ্য হয়ে আমার জন্য হেল্প চাইতে চলে গিয়েছো স্নেহা! আমার ওনার দয়ার দরকার ছিলো না!

স্নেহা : রা..রাহুল ওনি আপনার বাবা! ওটা দয়া কেনো হবে?..ওটা ওনার দায়িত্ব!

রাহুল : [ রাগ উঠায় স্নেহার হাত আরো জোড়ে চেপে ধরে ] স্টপ ইট! স্নেহা! ওনার দায়িত্ব তো ঐদিনই আমার উপর থেকে উঠে গেছে! আর আমি মনে করছিনা উনি আমার দায়িত্ব পালন করাটা ডিজার্ব করে,

স্নেহা : কিন্তু রাহুল…

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ] মোটেও উচিত হয়নি স্নেহা! তোমার ওনার কাছে যাওয়া,

স্নেহা : [ চোখের পানি ফেলে ] রাহুল! আমিতো..

রাহুল : প্লিজ স্নেহা তোমার মাথা ঘামাতে হবে না এসব নিয়ে, দ্যাটস মাই পার্সোনাল ম্যাটার!

স্নেহা : [ চোখের পানি ফেলে কাদো কন্ঠে ] রাহুল! আমার চিন্তা হচ্ছিলো আপনার জন্য! আ..আমি মিস করছিলাম আপনাকে!

[ মায়া লেগে উঠলো রাহুলের, স্নেহার চোখের পানি দেখে আড়চোখে হাতের দিক তাকালো,
রাহুলের হাত স্নেহার হাতে চেপে ধরা এখনো, তাড়াতাড়ি হাত ছুটিয়ে নিলো রাহুল, শরীরে ও ঘাম ছুটছে, কপালে হাত দিয়ে মুছে নিলো, স্নেহার সাথে চোখ মেলাতে পারছিলো না, মনে মনে ভাবতে লাগলো, কি হয়েছে তার? কি বলে ফেললো সে স্নেহাকে, ]

চলবে….