বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1192



Love At 1st Sight Season 3 Part – 39

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 39

writer-Jubaida Sobti

দরজা খোলার টুকটাক শব্দ হলো, চোখ মুছে ধীরেধীরে পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে রাহুল,
চোখ-নাক-মুখ সবই লাল হয়ে আছে রাহুলের, নিশ্চয় কেদেছে,

রাহুল : সরি! [ কাদো ভাবে ] আ..আমি চাইনি.. এসব আবার খেতে! তো..তোমাকে মনে পড়ছিলো অনেক, আ..আমি স্নেহা! চেষ্টা ও করিনি তোমাকে ভুলতে…এ..এটা ভাবলেও মনে হয় যেন এটাই জীবনের শেষ মুহূর্ত!

[ ধীরেধীরে হেটে ফার্ষ্ট এইড বক্সটা কুড়িয়ে নিয়ে স্নেহার কাছে এসে বসলো, আহ্লাদী চোখে তাকিয়ে আছে স্নেহা,দুজনের চোখ দিয়ে ঝড়ে যাচ্ছে অজস্র অশ্রু! ]

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] ব্যাব..ব্যান্ডেজ!

স্নেহা চোখ মুছে মাথা নাড়িয়ে রাহুলের হাত এগিয়ে নিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিতে লাগলো, হঠাৎ রাহুল ব্যাথায় আহহ বলে চেচিয়ে উঠলো,

স্নেহা : ওহ! সরি সরি,

রাহুল : [ বুকে হাত রেখে ] ব্যাথা তো এইখানে আরো বেশি করছে, এইদিকের ব্যান্ডেজটাও করে দাওনা স্নেহা! [ স্নেহা রাহুলের বুকের দিক তাকিয়ে আবার মাথা নুয়ে হাতে ব্যান্ডেজ করতে ব্যস্ত ]

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] করে দিবা তো স্নেহা?..

স্নেহা : ভেব…ভেবেনিন আমাদের কখনো দেখায় হয়নি! ওখানের বেন্ডেজ ও হয়ে যাবে,

রাহুল : তুমি পেরেছো এটা ভেবেনিতে?…

স্নেহা : চেষ্টা করলে নাকি সবই পারা যায়!

রাহুল : তাহলে কাদছো কেনো?..

স্নেহা : [ চোখ মুছে ] হয়তো চোখে কিছু পড়েছে,

রাহুল : [ হেসে ] লোকে বলে, যখন কোনো সুন্দরী মেয়ে নাকি মিথ্যে বলে তখন ওকে আরো বেশি সুন্দর দেখায়!

– ফেটে যাওয়া ভয়েসটাও আরো মিষ্টি লাগছে তোমার!

স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনি,

রাহুল : [ স্নেহার মুখে হাত দিয়ে ] শিসস! স্নেহা! মিথ্যে বলার ট্রাই করো সবসময়, কিন্তু তোমার মিথ্যে হার মেনে যায় এই দু-চোখের কাছে, কিছু বলার প্রয়োজন নেই তোমার চোখই সব বলে দিচ্ছে,

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] তো আ..আজ কি বলছে আমার চোখ?…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] এ..এটাই যে তুমি এখন আমার বুকে ঠাই নিতে চাচ্ছো! [ চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে কিন্তু তাও হেসে উঠলো স্নেহা ]

[ রাহুল তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক স্নেহা ও তাকিয়ে আছে চুপটি করে, কেউই কিছু বলছে না দুজনের চোখই কথা বলে যাচ্ছে, ধীরেধীরে উঠে দাড়ালো রাহুল ]

রাহুল : [ পকেটে হাত রেখে দু-কদম পিছিয়ে গিয়ে দাড়ালো ] তুমি আমাকে এখনো অনেক ভালোবাসো স্নেহা! কিন্তু বলছো না, কষ্ট পাচ্ছো কিন্তু দেখাচ্ছো না, আ..আমার কাছে আসতে চাইছো, আমার বুকে মাথা রেখে কাদতে চাইছো, কিক..কিন্তু করছো না

– [ চেচিয়ে ] বাট আই এম নট লাইক ইউ স্নেহা! আই কান্ট লিভ উইদাউট সেয়িং দ্যাট, আই লাভ ইউ! [ বলেই বাচ্চা ছেলের মতো কেদে উঠলো ]

– ইউ নোও না স্নেহা?..হাউ মাচ..আই লাভ ইউ…!

– য..যখনি চোখ বন্ধ করি তোমাকে কাছে ফিল করি..আ..আর চোখ খুললেই তোমার কাছে ছুটে যেতে মন চাই…

– মন শুধু তোমাকেই খুজে, প্রত্যেক ঘন্টা, প্রত্যেক মিনিট, প্রত্যেক সেকেন্ড, আর প্রত্যেক নিশ্বাসে,

– এ..এটাকে তুমি বেকার বলো, পাগলামো বলো, অ..অথবা আমার ভালোবাসা,.. [ একটু হেসে ] আমার জন্য সব একই!

– ভালো তো অনেকজন বাসে স্নেহা! কিন্তু আমার মতো ভালো আর কেউ বাসতে পারবে না কারণ [ কাদো কণ্ঠে ] কারণ কারো কাছে তুমি যে নেই!

– আ..আমি তোমাকে ভুলতে পারবো না স্নেহা, আমি তোমাকে ভু..ভুলতেই চাই না.. তুত..তুমি আমার স্নেহা! শুধু আ..আমার… আমি তোমাকে সারাজীবন ভালোবাসবো, মৃত্যুর শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত.. এবং… এ..এর পরেও!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আজ অনেক খেয়ে ফেলেছেন…

রাহুল : অ..অনেক খেয়ে ও কি হলো, তোমার নেশাকে তো হার মানাতে পারেনি! [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ]

– স্নেহা!

– আ..আমি তোমার ভালোবাসার বদলে ভালোবাসা দিতে চাই, তোমার কষ্টে হাসির কারণ হতে চাই, তোত..তোমার বলা কথার প্রতিটা শব্দ হতে চাই,

– বলো দিবে তো হতে?… [ কাদো ভাবে ] নেক্সট টাইম তোমাকে ভুলতে বলার আগে আমার জানটাই চেয়ে নিও কিক…কিন্তু তোমাকে ভুলতে বলো না স্নেহা!

[ আর সইছিলো না স্নেহার রাহুলের এভাবে বাচ্চা ছেলেদের মতো কেদে যাওয়া, বুকটা দুমড়ে যাচ্ছিলো, দৌড়ে উঠে এসে ঝাপটে জড়িয়ে ধরলো স্নেহা, রাহুল ও ফুফিয়ে কেদে শক্ত করে আগলে ধরলো ]

স্নেহা : আই লাভ ইউ রাহুল! [ মাথা তুলে তাকিয়ে, কেদে কেদে] আই কেন লিভ এ ফিউ মোমেন্ট উইদাউট ব্রেথিং, বাট নট উইদাউট ইউ!

রাহুল : [ হেসে ] আই লাভ ইউ টু, [ বলেই আলতো করে স্নেহার ঠোটে চুমু খেলো, স্নেহা ও একটু হেসে আবার জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে, দুজনেই নিস্থব্ধ হয়ে আছে, রাহুল এই মুহূর্তেই তার বুকের মাঝে ক্ষত দূর করার বেন্ডেজ খুজে পেলো, চোখ দিয়ে এখনো সেই বন্যা বয়ে যাচ্ছে, তবে তা আর দুঃখ্যের নয়, মাঝে মাঝে হেসে ও চলছে,স্নেহার ঘাড়ের সেই ঘ্রাণটাও ভেসে আসছে নাকে, চোখ বুজে স্নেহার পিঠে স্লাইড করে চলছে,]

হঠাৎ কিছুক্ষণ পরই লক্ষ্য করলো রাহুল, স্নেহার শরীরটা অনেক গরম হয়ে আছে, হাত দুটো এতোক্ষণ রাহুলের ঘাড়ে শক্ত করে চেপে ধরা ছিলো কিন্তু এখন হাত গুলো ও ঢলে আছে, নিজের কাছ থেকে সরিয়ে স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহার মাথাটাও ঢলে পড়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি বুকে টেনে নিলো আবার, কপালে হাত দিয়ে বুঝতে পারলো স্নেহার জ্বর এসেছে,মনে মনে অবাক হতে লাগলো কিন্তু স্নেহা বেহুশ কেনো হলো!

আর না ভেবে,আস্তে করে কোলে তুলে নিয়ে নিজের বেডরুমেই শুয়ে দিলো, কম্বলটা গায়ে টেনে দিয়ে স্নেহার পাশে এসে বসলো, তাকিয়ে আছে স্নেহার চেহেরার দিক, মুখের উপর চলে আসা চুল গুলো নিজ হাতে সরিয়ে দিলো, স্নেহার কান্ড ভেবে কাদছে আর হাসছে,

– [ মনেমনে ] পারছিলো না নিজে থাকতে আবার আমাকে বলছিলো ভুলে যেতে,

এতো সহজ?.. আমার ভালোবাসা এতোটাও লুজার না স্নেহা!

– আই ফরগেটিং ইউ ইস্ নেভার গোয়িং টু হ্যাপেন স্নেহা! এ..এন্ড ইউ ফরগেটিং মি আ..আই ওন্ট লেট দ্যাট হ্যাপেন!
_______________________________________

সন্ধ্যা ৭টা বেজে ২০ মিনিট, তাকিয়ে আছে এখনো রাহুল সেই অপলক দৃষ্টিতে, ধীরেধীরে চোখ খুলছে স্নেহা! কিছুটা ঝাপসা দেখছে, পুরো খুলতেই চোখের সামনে রাহুলকে দেখে একটু অবাক হলো,

রাহুল : [ স্নেহার মুখে স্লাইড করে দিয়ে ] গুড ইভিনিং! [ স্নেহা কিছু বললো না মাথা ঘুড়িয়ে চারদিক একবার দেখে আবার রাহুলের দিক তাকালো ]

– জানো স্নেহা! আজ বুঝতে পারলাম আকাশের চাঁদনী থেকে আমার চাঁদনী কতোটা বেশী সুন্দর, [ বলেই স্নেহার কাছে এসে কপালে একটি চুমু খেলো ]

– এখন কেমন লাগছে?…

স্নেহা : কে..কেমন লাগছে মানে! আ..আমার আবার কি হয়েছে?…

রাহুল : [ উঠে বসে ] ফেভার, প্লাস সেন্সলেস্ হয়ে গিয়েছিলে,

স্নেহা : আচ্ছা? [ বলেই উঠে বসার চেষ্টা করে হঠাৎ হাতে ব্যাথা অনুভব করায় আবার শুয়ে পড়লো ]

রাহুল : কামঅন স্নেহা! কি করছো?..শুয়ে থাকো!

স্নেহা : [ তার হাতের দিক তাকিয়ে অবাক হয়ে ] আমার হাতে…?

রাহুল : ডক্টর এসেছে, তখন ইনজেকশন মেরেছিলো!

স্নেহা : ড..ডক্টর এসেছিলো, ইনজেকশন! কিক..কিন্তু এসব কেনো!

রাহুল : তোমার জ্বর উঠেছিলো স্নেহা, [ দাত কিলিয়ে ] তার মাঝে এতোটাই স্ট্রেস নিচ্ছিলে যে…তোমার শরীর.. [ স্নেহা ভীতু হয়ে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক ]

রাহুল : এখন কেমন লাগছে?…

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম ভা..ভালো!

রাহুল : তুমি শুয়ে থাকো আমি খাবার আনছি! মেডিসিন নিতে হবে!

[ স্নেহা কিছু বললো না শুয়েই রইলো, রাহুল রুম থেকে বেড়িয়ে পড়লো, এবার ধীরেধীরে উঠে বসলো স্নেহা, মনে মনে ভাবছে, ডক্টর এসেছে, ইনজেকশন ও মেরেছে অথচ সে একটু ও ঠের পাইনি, ঘড়ির দিক তাকাতেই শকড হয়ে গেছে, ৭টা বাজতে চলছে তারমানে সে এতোক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলো, মাথাটা এখনো প্রচন্ডরকম ভারী হয়ে আছে, উঠে ধীরেধীরে ওয়াসরুমে এগিয়ে গিয়ে মুখটা ঝাপটে ধুয়ে নিলো, রুমে এসে পর্দা সরিয়ে জানালার ধারে এসে দাড়ালো, গ্লাসটা হালকা একটু খুলতেই শীতল বাতাস বেগে আসছে, গা ছুয়ে যাচ্ছে স্নেহার, হঠাৎ কিছুক্ষণ পর, কোমোড়ে কারো স্পর্শ পেতেই শরীরটা শিউরে উঠলো, পেছনে আর তাকালো না বুঝতেই পারলো রাহুলই এসেছে ]

রাহুল : [ স্নেহাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ঘাড়ে মাথা রেখে ] ডক্টর বলেছে তোমাকে বেশী স্ট্রেস না নিতে, আর আমি যাওয়ার সময় বলেগিয়েছিলাম শুয়ে থাকতে, তোমার ফেভার ও এখনো পুরোপুরি কমেনি আর তুমি কিনা এইখানে দাঁড়িয়ে বাতাস উপভোগ করছো!

স্নেহা : চারদিক বেধে রেখেছেন তাই ভাবলাম…

রাহুল : কিভাবে না রাখতাম বেধে, নাহলে ঐ আকাশের চাঁদ যদি হিংসে করে আমার চাঁদনীকে নজর দিয়ে দেই!

স্নেহা : [ হেসে ] আরে! চাঁদ আমাকে হিংসে করবে কেনো, চাঁদের সৌন্দর্য তো আনমোল!

রাহুল : কেনো করবেনা হিংসে, ওর আনমোল সৌন্দর্যে যে দাগ আছে, কিন্তু আমার চাঁদের তো কোনো দাগ নেই!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে হেসে ] আপনি বোরিং হননি এতোক্ষণ একা একা ?..

রাহুল : কেউ বলেছিলো আমাদের এতো সুন্দর সুন্দর মোমেন্ট থাকতে বোরিং কিভাবে হই!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ঘাড়ে হাত রেখে দাঁড়িয়ে ] তাই?…

রাহুল কিছু বলতে যাবে তখনি স্নেহার ভেজা ঠোটের দিক চোখ পড়লো, কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে একটু হেসে আংগুল দিয়ে ঠোটের উপর স্লাইড করে দিলো, চোখ বন্ধ করে কেপে উঠলো স্নেহা! তবে ভালোই লাগছিলো রাহুলের স্পর্শে, চোখ খুলে চোখাচোখি হতেই স্নেহা লজ্জা পেয়ে রাহুলের বুকে মাথা রাখলো,

রাহুল : ইউ নোও স্নেহা এতোদিন বেচে ছিলাম ঠিকই! কিন্তু লাইফে তুমি আসার পরেই উপভোগ করতে শিখেছি!

স্নেহা : [ মাথা তুলে ] রাহুল! আমি বাবাকে কথা দিয়েছি! [ বলতেই চোখের কোণে পানি এসে জমে গেলো ]

রাহুল : ভালোবাসায় কোনো কন্ডিশন থাকে না স্নেহা! হেন্স দেয়ার শুড বি নো রিপেন্টিং!

– [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তুলে ধরে ] স্নেহা! আমার উপর ভরসা আছে?…

স্নেহা : নিজের চেয়েও বেশি!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে চুমু খেয়ে ] সো্ নো টেনশন! শুধু তোমার ভালোবাসা সাথে থাকলে হবে সব ঠিক হয়ে যাবে! [ স্নেহা ও চোখ বন্ধ করে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখলো ]

রাহুল : আচ্ছা হ্যা! চলো নাশতা করতে! তোমার মেডিসিন নিতে হবে, [ বলেই হাত টেনে ধরে নিতে স্নেহা আহহ বলে চেচিয়ে উঠলো ]

রাহুল : ওহ! শিট! সরি সরি! ইউ ওকে!

স্নেহা : [ হেসে মাথা নাড়িয়ে ] হুম ওকে!

রাহুল : হোয়াই আর ইউ লাফিং?..

স্নেহা : আপনার চেহেরা দেখে! সামান্য একটুতেই এতো…সিরিয়াস হয়ে যান!

রাহুল : লাইফে পাওয়া সবচেয়ে দামী জিনিষটায় যদি একটু ও আচঁ লাগে না [ বুকে হাত রেখে ] তাহলে সোজা এইখানে লাগে! [ স্নেহা চুপ হয়ে গেলো ]

[ রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে কোলে তুলে নিয়ে সোফার দিক এগুতে লাগলো ]

স্নেহা : নাশতা আপনি বানিয়েছেন?..

রাহুল : [ হেসে ] আরে না! আমি বানালে আর খাওয়া লাগবে না!

স্নেহা : তাহলে?..

রাহুল : [ স্নেহাকে সোফায় বসিয়ে ] দাদী নিজ হাতে বানিয়ে পাঠিয়েছে!

স্নেহা : দাদী..কিভাবে জানলো আমি..

রাহুল : এসেছিলো! একসাথে তোমাকে দেখে গেছে! আর আমাকে বকছিলো আমিই নাকি তোমাকে স্ট্রেস দিচ্ছিলাম!

স্নেহা : কিক…কিন্তু রাহুল আপনি আমাকে ডেকেদিলেন না কেনো?..

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] তুমি সেন্সলেস্ ছিলে স্নেহা!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] ওহ!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] সো্ এবার চুপচাপ এগুলো খেয়ে নাও! [ বলেই চামচ কেটে সুপ তুলে স্নেহার মুখের দিক এগিয়ে দিলো ]

স্নেহা : আপনি খাবেন না?..

রাহুল : তুমি খেলেই পেট ভরে যাবে!

স্নেহা : কিন্তু রাহুল…

রাহুল : কিছুক্ষণ এর জন্য সাইলেন্ট থাকবে?.. প্লিজজ! [ বলেই চোখ দিয়ে ইশারা করলো খেতে স্নেহার ও কি আর করার বাধ্য মেয়ের মতো খেতে লাগলো আর ব্লাশিং হতে লাগলো, খাওয়া শেষে স্নেহা অবাক হলো রাহুল সব গুছিয়ে একাপাশ করে সরিয়ে রেখে দিলো ]

স্নেহা : আরে! আপনি খাবেন না?…

রাহুল : আগে বলো তোমার পেট ভরেছে?…

স্নেহা : হ্যা!

রাহুল : তাহলে ভেবে নাও আমার ও ভরে গিয়েছে! [ বলেই স্নেহার মেডিসিন ঠিক করতে লাগলো ]

স্নেহা : আরে এটা কেমন কথা!

রাহুল : [ মেডিসিন এগিয়ে দিয়ে ] কিছুটা এমনই দুটো হার্টের একই স্পন্দন! [ স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে ]

[ রাহুল স্নেহার মুখে উপর ফু দিতেই স্নেহা চমকে উঠলো ]

রাহুল : মেডিসিন! [ স্নেহা এগিয়ে নিয়ে খেয়ে নিলো, রাহুলের দিক আবার তাকাতেই দেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে, লজ্জা লেগে উঠায় স্নেহা দাঁড়িয়ে যেতে চাইলো হঠাৎ মাথাটা ঘুড়িয়ে উঠায় মাথা চেপে ধরে আবার বসে পড়লো ]

রাহুল : স্নেহা কি হয়েছে মাথায়?..ব্যথা করছে?..

স্নেহা : না..নাহ এমনিতেই!

রাহুল : ডক্টর বলেছিলো তোমার বেড রেষ্ট দরকার! আর আমিও কিনা তোমার বোকামিতে রেস্পন্স দিচ্ছিলাম! [ বলেই স্নেহাকে দাড় করিয়ে কোলে তুলে খাটের দিক এগুতে লাগলো ]

স্নেহা : রাহুল আমি ঠিকাছি! জাষ্ট একটু মাথা ঘুড়িয়ে উঠলো ব্যাস!

– আর এমনিতেও কতোক্ষণ শুয়ে থাকতে পারবো এইখানে, আমার তো যেতে হবে তাই না!

রাহুল : [ স্নেহাকে খাটে শুয়ে দিয়ে ] তো না যাও! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ]

– এইখানেই থেকে যাও আমার কাছে!

স্নেহা : এমনটা সম্ভব না রাহুল!

রাহুল : [ উঠে বসে ] হুমম! এটাই রিজন তাই না লোকে কি বলবে, সমাজ কি বলবে!

– স্নেহা! ওরা কি বলবে কি ভাববে ওটাও যদি আমরা ভাবি! তাহলে আমাদের আর ওদের মাঝে তফাৎ কি?…

স্নেহা : [ ধীরেধীরে উঠে বসে রাহুলের মুখে হাত বুলিয়ে দিয়ে ] তো এতো টেনশন করছেন কেনো?.. এক্কেবারে বিয়ে করেই নিয়ে আসুন, তাহলে লোক সমাজ কি বলবে এসবে কিছু যায় আসবে না!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে কপাল লাগিয়ে ] সত্যি বলছো? করবা তো আমাকে বিয়ে?..

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] এনি ডাউট?…

রাহুল : [ ধীরেধীরে স্নেহার কাছে এসে আলতো করে ঠোটে চুমু খেয়ে ] নেভার! [ বলেই সরে যাচ্ছিলো তখনি স্নেহা রাহুলের শার্ট মুচড়ে ধরে আটকে ফেললো ]

দুজনেই তাদের ভালোবাসার চাহনীতে চেয়ে আছে একে অপরের দিক, যেনো চোখে চোখেই কথা বলে যাচ্ছে, কিছুক্ষণ পর, ধীরে ধীরে রাহুল মুখ কাছে এনে নিজের ঠোট মিশিয়ে দিলো স্নেহার ঠোটে, স্নেহা বাধা দিলো না রাহুলকে, সে চাইছিলো রাহুল তাকে ভালোবাসুক, সে তো চাইছিলো রাহুলের ভালোবাসায় হারিয়ে যেতে, রাহুলের গালে স্লাইড করতে করতে স্নেহা ও তাল মিলিয়ে যাচ্ছে আজ, ভুলিয়ে দিতে চাইছে রাহুলের কষ্ট সব, বিলিয়ে দিতে চাইছে আজ তার ভালোবাসাগুলো ও সব,

জানালা দিয়ে বয়ে আসছে শীতল বাতাস, সাদা পর্দা গুলো ও উড়ে চলছে,

কিছুক্ষণ পরই রাহুল ছুটে এসে স্নেহার চোখের দিক তাকালো, স্নেহা ও পলক তুলে তাকিয়ে ধীরে ধীরে পিছিয়ে, গা হেলিয়ে বালিশে মাথা রাখলো, রাহুল তাকিয়ে আছে অবাক দৃষ্টিতে, হাত বাড়িয়ে রাহুলের শার্ট মুচড়ে ধরে ধীরেধীরে টেনে নিলো নিজের উপর,

স্নেহা রাহুলের ঘাড়ে স্লাইড করে হাত রেখে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো,
ভালোবাসার নেশায় জমে যাচ্ছে দু-জন, চেয়ে আছে একে-অপরকে তাদের মায়াবী চাহনিতে,

রাহুল ও স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে ধরে ধীরেধীরে আবার স্নেহার ঠোট নিজের ঠোটের দখলে নিয়ে নিলো! গলার চুল গুলো আলতো করে সরিয়ে গভীরভাবে চুমু দিতে লাগলো রাহুল,নিজের ভালোবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছিলো স্নেহাকে,

শিউরে উঠছে স্নেহা, একহাতে রাহুলের চুল মুচড়ে ধরে আছে, রাহুলের কপালে চুমু দিতেই, অন্যহাতে রাহুলের হাতের স্পর্শ পেলো…
ধীরেধীরে দু-জনের হাত এক করে মুঠো বেধে ধরলো,

স্নেহার কপালে চুমু খেলো রাহুল,চোখের কোণ বেয়ে পানি পড়ছিলো স্নেহার, নিজের ঠোট দিয়ে মুছে দিলো পানিগুলো, চুমু খেলো স্নেহার চোখে, গালে, ঠোটে, গলায় চুমু দিয়ে ধীরেধীরে বুকের ধারে আসতেই রাহুল থেমে মাথা উঠিয়ে স্নেহার চোখের দিক তাকালো,

চুপ করে চেয়ে আছে স্নেহা, রাহুলের মুখ কাছে টেনে নিজের গালের সাথে আলতো করে ঘষে স্লাইড করে নিলো,

জোড়ে একটি শাস ফেলে হুট করেই উঠে বসলো রাহুল! কলার টেনে শার্ট ঠিক করে কি কি যেনো চিন্তা করতে লাগলো,

স্নেহা ও অবাক হয়ে উঠে বসে রাহুলের হাত জড়িয়ে কাধে মাথা রেখে মুচকি হেসে রাহুলের দিক তাকিয়ে রইলো,রাহুল ও সোজা তাকিয়ে চুপ করেই আছে কিছু বলছে না,

স্নেহা : রাহুল! কি হয়েছে?

রাহুল : সরি স্নেহা!

স্নেহা : সরি কেনো!

রাহুল : যেটা করছিলাম আমি! জানিনা মাথায় কি হয়েছে,

স্নেহা : কি হয়েছে মাথায়?..

রাহুল : ভুল করছিলাম আমি, তুমি ও বাধা দিচ্ছিলে না…

স্নেহা : [ রাহুলের হাত সরিয়ে তার বুকে মাথা রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে রাখে ] ভালোই তো লাগছিলো বাধা কেনো দেবো!

রাহুল : এখন বলছো, পরে কাদতে চলতে, [ স্নেহা অবাক হয়ে মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকালো, রাহুল স্নেহার হাত ছুটিয়ে উঠে জানালার ধারে গিয়ে দাড়ালো, স্নেহা ও মুচকি হেসে ধীরেধীরে এগিয়ে রাহুলের পেছনে গিয়ে জড়িয়ে ধরে দাড়ালো ]

রাহুল : স্নেহা! এসব এখন…

স্নেহা : শিসস! আমার পুরো ভরসা আছে রাহুল! আপনার উপর,

রাহুল : [ স্নেহাকে ছুটিয়ে হাত ধরে তার সামনে এনে দাড় করিয়ে ] এতোটা ভরসা ঠিক নয় স্নেহা!

স্নেহা : তো আপনি কি ভেবেছেন?.. আমায় ছেড়ে চলে যাবেন!

রাহুল : [ হেসে স্নেহাকে বুকে টেনে জড়িয়ে ] যেদিন চলে গেছি শুনবে, ভেবেনিবে আমি আর এই দুনিয়াতেই নেই! [ কেদে দিলো স্নেহা ]

রাহুল : [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে ধরে চোখ মুছে দিলো ] আবার কাদছো কেনো?..

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে একটু হেসে ] কিছুনা!

– [ জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে ] রাহুল!

রাহুল : হুমম!

স্নেহা : এখন আমার যাওয়া উচিৎ!

রাহুল : কিন্তু তোমার…

স্নেহা : আমি ঠিকাছি! একদম ঠিক! [ মুচকি হেসে ] ব্যাস প্রমিস করেন আমাকে উঠিয়ে নিয়ে যাবেন!

রাহুল : আজ সিকিউরিটিকে লজ্জা লাগবে না?..[ With tedi smile ]

স্নেহা : [ রাহুলের কাধে জড়িয়ে ] ডোন্ট কেয়ার!

[ রাহুল হেসে স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে, কোলে তুলে নিলো স্নেহাকে, স্নেহা রাহুলের ঘাড় জড়িয়ে ধরে কাধে মাথা হেলিয়ে দিলো, বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গাড়ীতে বসিয়ে দিয়ে সেও গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়লো, গাড়ী চলছে রাহুল ড্রাইভ করছে, স্নেহা পা তুলে গুটি মেরে পাশ মুড়ে সিটে হেলান দিয়ে বসে আছে, আর এক পলকে রাহুলের দিক চেয়ে আছে, রাহুল বুঝতে পেরে ও তাকালো না স্নেহার দিক, নাহয় আবারো সেই চোখের মায়ায় পড়ে যাবে, মোটে ও ইচ্ছে হচ্ছিলো না স্নেহাকে দিয়ে আসতে, ইচ্ছে হচ্ছিলো বুকের মাঝে জড়িয়ে রেখে দিতে, কিন্তু কি আর করার অপেক্ষার প্রহর গুনতে হচ্ছে ]

বাড়ী এসে পৌছালো, রাহুল স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা এখনো ঐভাবেই তাকিয়ে আছে!

রাহুল : কি দেখছো এভাবে?..

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] এটাই! যে আপনি অনেক..হ্যান্ডসাম!

রাহুল : কিডিং?..

স্নেহা : নো! আই এম সো্ সিরিয়াস!

– কতো মেয়েরই আশা আপনাকে পাওয়ার! আর আমি কতোটা লাকি দেখেছেন,

রাহুল : আই থিং আই এম লাকি! বিকজ! আমি তো চাইলেই যে কোনো মেয়ে পেয়ে যেতাম! কিন্তু তোমার মতো মেয়ে তো অনলি লাকি পার্সনরাই পাই! [ চোখ টিপ মেরে ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হ্যা বলো?..

স্নেহা : আমি কিন্তু হেটে নামছিনা!

রাহুল : তারমানে আজকে, আশেপাশের লোকজন কি বলবে এতে ও তোমার কিছু আসে যায় না!

স্নেহা : ইয়েস! আই ডোন্ট কেয়ার!

রাহুল : ওকেই! [ With tedi smile ]

[ রাহুল গাড়ী থেকে নেমে স্নেহার কাছে এসে দরজা খুলে স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো ]

রাহুল : [ হেসে ] তাকিয়ে আছে কিন্তু অনেকজন!

স্নেহা : থাকুক!

রাহুল : থাকুক! হু কেয়ার!.. [ বলেই হেসে গেইট দিয়ে ঢুকে পড়লো, স্নেহা রাহুলের কাধে মাথা নুয়ে রাখলো ]

উপরে উঠে বেল বাজাতেই, মার্জান এসে দরজা খুললো, অবাক হলো মার্জান! তাও মনে শান্তি আসলো স্নেহাকে রাহুলের সাথে দেখে!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে চেচিয়ে ] আরে ওয়াহ কি রোমান্টিক সি্ন চলছে! এ..এক মিনিট ওয়েট ওয়েট! [ বলেই মোবাইলের ভিডিও অন করে ] ওকে নাও কাম কাম!

রাহুল হেসে উঠলো জারিফার কান্ডে, স্নেহা ও মুচকি হাসলো, ভেতরে ঢুকে রাহুল স্নেহাকে খাটে বসিয়ে দিলো, মার্জান, জারিফা,শায়লা সবাই এগিয়ে এলো তাদের দিক,

মার্জান : সবাই স্টপ প্লিজ! আমার মন মানছে না এটা না জেনে, রাহুল! সব ঠিকঠাক?. আ..আই মিন আপনার আর স্নেহার! কানেকশন.. আহা..মানে বুঝতে পারছেন তো কি বলছি?…

রাহুল : [ হেসে ] অলরাইট!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আলহামদুলিল্লাহ! জিজু এখন শুধু একটা বিয়ের তারিখ ফিক্সড করে তাড়াতাড়ি বিয়েটা করে নিন…উফফফ আমার তো সইছে না কখন যে হবে বিয়েটা!

শায়লা : বিয়ে তোর না স্নেহার হবে! তুই এতো লাফাচ্ছিস কেনো?..

জারিফা : আরে ফার্ষ্ট টাইম স্নেহার বিয়ে খাচ্ছি তাই অনেক এক্সাইটেড! [ সবাই শকড হয়ে তাকালো জারিফার দিক ]

জারিফা : [ নিজের মাথায় নিজে বাড়ি মেরে ] উফফ! আই মিন ফার্ষ্ট টাইম কোনো ফ্রেন্ড এর বিয়ে খাবো তাই!

– আচ্ছা জিজু! স্নেহা ঠিকাছে তো?.. না মানে আপনি হঠাৎ কোলে তুলে আনলেন তাই বললাম!

রাহুল : ব্যাস! কখনো, কখনো বাচ্চা হয়ে যায়! [ With tedi smile ] তখন এভাবে নিতে হয়!

জারিফা : [ হেসে ] আচ্ছা?..[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে চুপ করে রইলো ]

রাহুল : ওকে গাইস্ নাও বাই! কাল দেখা হচ্ছে! [ স্নেহার দিক তাকিয়ে একটু হেসে স্নেহার মাথা টেনে কপালে চুমু খেয়ে ] বাই! গুড নাইট!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ] গুড নাইট!

জারিফা : [ চেচিয়ে ] ওয়াও জিজু! ওয়ান্স মোর প্লিজ! আমি কাপচার করবো! [ বাকিরা হেসে উঠে ]

রাহুল : সিরিয়াসলি?..

জারিফা : ইয়াহহ!

রাহুল : ওকে! ফরহেড ইয়া লিপ্স্ [ স্নেহা শকড হয়ে তাকালো রাহুলের দিক ]

জারিফা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] যেকোনো একটাই চলবে জিজু! বাট সেকেন্ডটা হলে তো আরো জোস্ হবে! [ বাকিরা ও হেসে উঠে জারিফার কথায় ]

রাহুল : ওকেই! [ বলে স্নেহার ঠোটের দিক এগুতে গেলেই স্নেহা হুট করে পিছিয়ে যায়, রাহুল হেসে স্নেহার মাথা কাছে টেনে নিয়ে কপালে চুমু দিয়ে রাখে, আর জারিফা হুটহাট ছবি কাপচার করতে থাকে ]

রাহুল : [ পিছিয়ে গিয়ে ] টেক কেয়ার! [ উঠে দাঁড়িয়ে ] থেংক ইউ গাইস!

জারিফা : ইয়া..ইয়াহ! এন্ড থেংক্স টু ইউ জিজাজি! আমাদের এতো সুন্দর একটা রোমান্টিক এন্টারটেইমেন্ট দেখানোর জন্য!

রাহুল : [ জারিফার মাথায় বাড়ি দিয়ে ] দিস ইজ নট এন্টারটেইনমেন্ট ওকে! ইটস রিয়েলিটি!

জারিফা : [ চিন্তিত হয়ে ] আচ্ছা?.. [ রাহুল আর কিছু বললো না তেডি স্মাইল দিয়ে বেড়িয়ে গেলো ]

মার্জান : [ একলাফে উঠে স্নেহার পাশে বাসে ] স্নেহা! আমার মুখ দিয়ে কোনো শব্দই আসছে না খুশিতে! মানে তুই আর রাহুল আবার.. ওয়াও!

শায়লা : [ হেসে ] ভালোবাসা যদি সত্যিকারের হয় তাহলে, যতো বাধাই আসুক না কেনো এক তো হওয়ারি ছিলো!

মার্জান : [ স্নেহাকে জড়িয়ে ] ইয়াহহ! দ্যাটস রাইট!
_______________________________________

পরদিন সকালে,

সবাই তৈরী হচ্ছে ভার্সেটি যাওয়ার জন্য, হঠাৎ স্নেহার ফোনটা বেজে উঠলো, স্নেহা ফোন হাতে নিতেই দেখলো তার মায়ের ফোন!

স্নেহা : বলো মা…

মা : কোথায় তুই স্নেহা?…

স্নেহা : রেডি হচ্ছি ভার্সেটির জন্য!

মা : আজ ভার্সেটি না গেলে হয় না?..

স্নেহা : কেনো কি হয়েছে?..

মা : নাহ যদি একটু আসতি বাসায় ?…তোর বাবা বলছিলো!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চিন্তা করে ] ঠিকাছে আমি আসছি! এমনিতেও তোমাদের আমার কিছু বলার ছিলো!

মা : আচ্ছা ঠিকাছে আয়! [ ফোন কেটে টেবিলে রেখে স্নেহা খাটে বসে রইলো ]

মার্জান : কি হয়েছে স্নেহা?..সব ঠিকাছে তো!

স্নেহা : হ্যা ঠিকাছে! ব্যাস আমি ভার্সেটি যাচ্ছি না!

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] তা কেনো?..

স্নেহা : মা ডেকেছে! আর এমনিতেও ওদের সব সত্যি বলে দেওয়া উচিৎ! সব জানার পরও যদি বাবা আমাকে শাস্তি দেই তাহলে আমি মাথা পেতে নিবো, কিন্তু তাও রাহুলকে ছেড়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না!

[ বাকিরাও আর কিছু বললো না, চলে গেলো যে যার মতো ভার্সেটিতে, স্নেহা ও সেই কখন থেক থমকে বসে আছে খাটে, সামির আসার পর থেকে সব কিছু কেমন যেনো উলটে পালটে যাচ্ছে তার লাইফে এসব নিয়েই ভেবে চলছে, হঠাৎ ফোনটা আবার বেজে উঠলো স্নেহার ]

স্নেহা : [ রিসিভ করে ] হ্যালো!

রাহুল : গুড মর্নিং!

স্নেহা : গুড মর্নিং!

রাহুল : তোমার শরীর ঠিকাছে?..

স্নেহা : হ্যা ঠিকাছে!

রাহুল : মার্জান বললো তোমার মামার বাসায় যাচ্ছো!

স্নেহা : হ্যা! এক্সুলি মা যেতে বললো তাই আর ভার্সেটি যাওয়া হয়নি!

রাহুল : একা যেতে হবে না আমি পৌছে দিবো!

স্নেহা : আপনি আবার কষ্ট করে কেনো আসবেন?..

রাহুল : তো কি একা যাবা?..

স্নেহা : না! যয..যদি বাবা দেখে আপনাকে.. না জানি কি কি বলে বসে থাকে..

রাহুল : সেটাই তো চাইছিলাম! যে তোমার বাবা আর আমার সামনাসামনি হোক!

স্নেহা : তা কেনো?..

রাহুল : তোমার বাবার সামনে থেকে তোমাকে উঠিয়ে নিয়ে যাবো বলে! [ হেসে উঠলো স্নেহা ]

– আচ্ছা শুনো আমি আসছি! তুমি তৈরী থাকো!

স্নেহা : আচ্ছা! [ বলেই রেডি হয়ে কিছুক্ষণ বারান্দায় দাঁড়িয়ে রইলো, এদিক ওদিক হাটছে, আর সইছিলো না রাহুলের জন্য অপেক্ষা, আজকাল রাহুলকে দেখার জন্য ওয়েট করা ও মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে স্নেহার! হঠাৎ গাড়ীর হর্ণ বাজতেই একপলক নিচের দিক তাকিয়ে দৌড়ে ভেতরে ঢুকে ব্যাগ কাধে নিয়ে নিচে নেমে গেলো, গেইটের সামনে পা রাখতেই স্নেহা থেমে গেলো ]

– [ মনে মনে ] আরে! এটা তো রাহুলের গাড়ী না! [ বলতেই দেখে গাড়ী থেকে সামির নেমে আসছে, চোখ গুলো বড় করে ফেললো স্নেহা! শকড হয়ে তাকিয়ে আছে ]

সামির : [ স্নেহার কাছে এসে ] হাই!

স্নেহা : আপনি?..

সামির : হ্যা! আমিই! কেনো অন্য কারো অপেক্ষা করছিলে নাকি! [ স্নেহা নাক ফুলিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

সামির : তোমার আশিকের অপেক্ষা করছিলে!

স্নেহা : আপনাকে প্রথম দেখে মোটেও মনে হয়নি আপনি এমন! কি না অভিনয় করেন আপনি!

সামির : অভিনয়ের এখনো কি দেখেছো স্নেহা! [ চোখ মেরে ]

স্নেহা : দেখেন! আমার আপনার এসব ফালতুমি দেখার আর শোনার টাইম নেই! প্লিজ চলে যান এইখান থেকে!

সামির : ভাবছি! এসেছি যখন,তোমার আশিখের সাথেও একটু দেখা করে যাবো!

স্নেহা : হ্যা! আপনার হাড় গুলো ও মজবুত করে রাখেন নাহলে ও আসলে কোন সময় গুড়ো করে ছাড়ে!

সামির : আমি ও সেটাই চাইছিলাম! আসলে, আমি হাত দিয়ে কাজ করিনা দিমাগ দিয়ে করি!

স্নেহা : আপনি আসলেই একটা..চ্যাছড়া! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে গেলো, কিছুক্ষণ পর আড়চোখে তাকাতেই দেখে সামির তার দিকেই এখনো তাকিয়ে আছে, বিরক্তি হয়ে স্নেহা ভেতরে ঢুকে যাচ্ছিলো ঠিক ঐ সময়ই সামির স্নেহার হাত ধরে ফেলে ]

স্নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে চেচিয়ে ] হাত ছাড়েন! [ বলতেই হঠাৎ চোখ পড়লো রাহুলের গাড়ীর দিক ]

স্নেহা : দেখেন হাত ছাড়েন বলছি! রার..রাহুল আসছে! [ সামির কোনো জবাব দিলো না, হাসছে আর স্নেহার বিরক্তিকর কান্ড দেখছে ]

– লাগছে আমার! ছাড়েন প্লিজ!

সামির : হাত আমি ছাড়ছি না! এমন মোমেন্ট বার বার আসেনা স্নেহা!

স্নেহা : বারাবারি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু প্লিজ হাত ছাড়ুন!

সামির : বারাবারিটা আজ নাহয় করেই ফেলি! [ বলতেই হঠাৎ খেয়াল করলো কেউ তার কলার ধরে পেছন ধাক্ষা দিলো ]

সামির : [ হেসে ] আরে রাহুল! তুই! তোরই অপেক্ষা করছিলাম [ বলতেই রাহুল দু-তিনটা ঘুষি দিয়ে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলো সামিরকে ]

রাহুল : ভেবেছিলাম ঐদিনের মারে তোর শিক্ষা হয়ে যাবে! কিন্তু তোর কপালে আমার আরো মার খাওয়া বাকি ছিলো [ বলে বলেই মারতে লাগলো সামিরকে, কিন্তু সামির কিছুই করছে না শুধু হেসে চলছে ]

স্নেহা : [ ঘাবড়ে গিয়ে ] রাহুল! ব্যাস চলেন আমাদের এবার যাওয়া উচিৎ!

সামির : [ হেসে রাহুলকে ফিসফিসিয়ে ] এতো সফট হাত! তাই তো বলি তুই ছাড়ছিস না কেনো! ভাবছি পুরো বডি জুড়ে আরো কতো সফট… [ বলতেই রাহুলের শরীরে আরো যতো জোড় ছিলো তা দিয়েই সামিরকে মারতে লাগলো, হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহা! আশেপাশে অনেকটাই ভীর জমে গেছে, কয়েকজন এগিয়ে এসে রাহুলকে ছুটাতে চাইলেও রাহুলের রাগের কাছে সবাই হার মেনে পিছিয়ে যায় ]

হঠাৎ, শব্দ এলো পুলিশের গাড়ীর, স্নেহার মাথায় যেনো বাজ ভেংগে পড়লো, রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখলে দেখে রাহুল থেমে নেই! মারতেই চলছে সামিরকে, আর সামির অনেকটা সুযোগ পেয়ে ও রাহুলের গায়ে একটা টোকা ও লাগালো না, এবার স্নেহা বুঝতে পারলো এসব সবই সামিরের করা প্লান ছিলো,

পুলিশের গাড়ী এসে থামতেই, চারজন পুলিশ নেমে এলো, তিনজন পুলিশ মিলেই রাহুল থেকে সামিরকে ছুটিয়ে আলাদা করে নিলো!

আরেকজন পুলিশ অফিসার এসে রাহুলের কলার টেনে হাত রাখতেই রাহুল রাগান্বিতভাবে তাকালো!

পুলিশ : কি দেখছিস এভাবে ?…তোর রাজত্ব শেষ এবার থানায় চল!

রাহুল : লিভ মাই কলার!

পুলিশ : [ হেসে ] তুই বললেই ছেড়ে দিবো?..হ্যা?..

রাহুল : অফিসার, পুলিশের গাড়ী এসেছে! আমি গাড়ীর আওয়াজ শুনেছি! কিন্তু পালানোর চেষ্টা করেছি?…

– করিনি তাই তো?.. তাহলে কেনো যে তোমরা নিজেই নিজের প্লেটের খাবার খালি করার ধান্ধায় থাকো বুঝি না!

পুলিশ : ভুলে যাচ্ছিস কার সাথে কথা বলছিস!

রাহুল : বাংলাদেশ পুলিশ [ With tedi smile ]

অফিসার রাহুলের কলার ছেড়ে, কাউন্সটেবলকে ইশারা করলো যাতে রাহুলকে হ্যান্ডকাফস্ পড়িয়ে দেই!

রাহুল : [ হেসে ] ওয়েট! আমিই উঠছি এটা পড়ানোর প্রয়োজন নেই! গাড়ী এটাই তো, তাই না?… [ বলেই রাহুল হেসে পুলিশের গাড়ীতে উঠে বসে ]

স্নেহা : [ দৌড়ে এসে কাদো কন্ঠে ] রাহুল! আপনি সত্যি সত্যিই!… কি দরকার ছিলো ওকে মারার..বলেন তো!

রাহুল : ডোন্ট ওয়ারি! স্নেহা! টেনশন করো না আমি চলে আসবো!

স্নেহা : কিন্তু রাহুল… [ বলতেই একজন পুলিশ কাউন্সটেবল এগিয়ে এসে ]

– লাভ-সাব পরে ঘরে দেখাবে আগে থানায় চলুক! এখন সরে দাঁড়াও!

রাহুল : তোমাদের ট্রেনিং সো্র্স কে ছিলো বলো তো?.. মেয়েদের কিভাবে সম্মান দিয়ে কথা বলতে হয় সেটা হয়তো সে শিখেনি!

কাউন্সটেবল : এসব এটিটউড নিজের ঘরে দেখাইও.. পুলিশের সামনে না!

রাহুল : [ হেসে ] ভাবছি ব্যপারটা কেমন যেনো বাংলা সিনেমার কাহানী হয়ে গেছে তাই না?..আমি যে ওকে মারছি পুলিশকে ইনফর্ম করলো কে?..পুলিশ তো বরাবর টিম নিয়েই হাজির!

কাউন্সটেবল : [ রাহুলের হাত টেনে নিয়ে ] চুপচাপ হ্যান্ডকাফস্ পড়ে নে!

রাহুল : [ হেসে ] ভয় পাচ্ছো? কোনো তোমাদের ফাকি দিয়ে না পালিয়ে যায়!

– আরে এতো টানাটানি করছো কেনো দাও আমিই লাগিয়ে দিচ্ছি [ বলেই রাহুল লাগাতে চাইলো, কাউন্সটেবল তাও টেনে নিজ হাতে লাগিয়ে দিলো ]

[ রাহুল পাশ মুড়ে তাকাতেই দেখে স্নেহা কেদেই চলছে! চোখের দিক আংগুল দেখিয়ে ইশারা করলো স্নেহাকে যাতে কান্না না করে, এক এক করে বাকি পুলিশ গুলো ও গাড়ীতে উঠে বসলো ]

অফিসার : ও হিরো এমন বিহেভ করছিস যেনো তোর বিয়ের বরাত যাচ্ছি!

রাহুল : [ হেসে ] ক্যারেক্ট অফিসার! আমার ও তাই মনে হচ্ছে! কিন্তু আইডিয়া করে পাচ্ছি না ও আমার বরাতির জন্য তোমাদের কতো দিয়েছে হবে!

অফিসার : একবার ইনকাউন্টার হোক তারপর আইডিয়া হয়ে যাবে!
_______________________________________

তাকিয়ে আছে স্নেহা, চলে গেলো পুলিশের গাড়ী, পাশ থেকে গাড়ীর হর্ণ বেজে উঠলো, তাকাতেই দেখে সামির!

সামির : স্নেহা! তুমি তোমার মামার বাসায় যাচ্ছিলে মনে হয় ?.. [ স্নেহা অবাক হলো ও কি করে জানলো ]

– আ..এক্সুলি আমরা আজই আসছিলাম এংগেজমেন্ট করতে, প্লাস বিয়ের তারিখ তোমার পেরেন্টসকে জানাতে! তাই হয়তো তোমাকে আগে থেকেই তৈরী হয়ে থাকার জন্য তোমার মা ইনফর্ম করেছে!

– চলো আমিই পৌছেদি তোমাকে আবার সন্ধ্যার জন্য তৈরী হতে হবে তো!

স্নেহা : লজ্জা হচ্ছে আমার আপনার উপর! আপনি এতোটাই নিচে নামবেন ভাবতেই পারছিনা!

সামির : কেউ ভাববে এমন কাজ আমি করিনা! স্নেহা!

– আচ্ছা এসব বাদ দাও! চলো গাড়ীতে উঠো!

স্নেহা : কেনো করছেন আপনি এমন প্লিজ!

– [ কাদো কন্ঠে ] আপনি বলুন পুলিশকে ওর কোনো দোষ নেই!

সামির : আহা! নির্দোষ একজন ব্যাক্তির উপর হাত তোলা এটা দোষ না স্নেহা?..এটা আইনের বিরোধী!

স্নেহা : [ চেচিয়ে ] প্লিজ! বন্ধ করুন আপনার এসব অভিনয়! কোনো আইনের ধারায় পুলিশ আসেনি! আপনিই এসব প্লান করে টাকা খাইয়ে এনেছেন!

– আপনি ইচ্ছে করেই রাহুলের রাগ তুলেছেন যাতে রাহুল আপনার গায়ে হাত তুলে, সুযোগ পেয়েও আপনি ওর গায়ে হাত তুলেননি যাতে আপনি আপনার করা প্লান কাজে লাগাতে পারেন!

সামির : ওয়াও স্নেহা! তুমিতো দেখছি মারাত্মক ইন্টেলিজেন্ট!

স্নেহা : [ কেদে হাত জোড় করে ] প্লিজ!

সামির : সইছে না তো রাহুলের কষ্ট?..ঠিকাছে! সন্ধায় তৈরী থেকো,তুমিই পারবে রাহুলের কষ্ট কমাতে, আমাদের এক একটা প্রোগ্রাম শেষ হবে

– ধীরেধীরে রাহুলের কষ্ট কমতে থাকবে, [ বলেই চোখ মেরে গাড়ী টান দিয়ে চলে যায় নিস্থব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part : 38

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part : 38

writer-Jubaida Sobti

স্নেহার বাবা : এটাই আশা করেছিলাম [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে ] দেখ স্নেহা! আমি তোর বাবা, তোর ভালোটাই তো চাইবো, সামির অনেক ভালো ছেলে স্নেহা!

– সে নিজেই আমাকে বলে গেছে ও তোকে বিয়ে করবে না, [ সবাই অবাক হলো স্নেহার বাবার কথায় ]

– কারণ ও তোর আর ঐ ছেলেটার ব্যাপারে সব জেনে গেছে, ও নিজেই বলেছে ও তোর অমতে কখনো তোকে বিয়ে করবে না,

– সামির তোকে অনেক খুশি রাখবে স্নেহা! ও তোর খুশির জন্যই আমার সামনে এই ছেলের চরিত্র তুলে ধরেছে, যাতে তুই যেনো পরে কষ্ট না পাশ, ও এটাও বললো যে স্নেহার আমাকে বিয়ে করার দরকার নেই, তবে সে যাকেই বিয়ে করুক আমি চাই ও যেনো সুখী থাকুক,

– আরে এমন ছেলে তো আজকাল পাওয়াই মুশকিল!

– [ আংগুল তুলে রাহুলের ছবি গুলোর দিক ইশারা করে ] আর এমন ছেলেগুলোই তোদের মতো মেয়েদের ফাঁসানোর চেষ্টা করে,

– আর তুই কি ভেবেছিস আমি শুধু সামিরের কথায় এসব বলছি?
নাহ স্নেহা! যখন জানলাম এসব তখন তোর খুশির দিক দেখে নিজেই সব কিছুর খবরাখবর নিলাম,

[ স্নেহা চোখ বন্ধ করে চেপে পানি ফেললো, মাথায় প্রচন্ড রাগ উঠছে আজ, রাহুল এমন না তা সত্ত্বে ও আজ তার নামের সাথে বাজে মন্তব্য জড়ানো হচ্ছে, তার জন্যই রাহুলের বাবা-মায়ের নামে ইনসাল্ট করানো হচ্ছে, মনে মনে আফসোস করছে স্নেহা! রাহুল নির্দোষ এটা প্রমাণ করার জন্য হয়তো তার কাছে কিছু নেই, কিন্তু রাহুলের নামে এসব বলানো তো বন্ধ করতে পারবে ]

স্নেহার বাবা : খবর নিয়ে জানলাম, না আছে ছেলেটার ফ্যামিলি, না আছে ছেলেটার ক্যারেকটার,শুধু বাড়ী-গাড়ী থাকলে কি হবে!

স্নেহা : [ কান চেপে ধরে ] ব্যাস! বাবা! তোমার কথায় তো রাখছি! [ কাদো কন্ঠে ] আমি রাহুলকে ভুলে যাবো বললাম!

স্নেহার বাবা : স্নেহা! এমন ছেলের জন্য কাঁদছিস যে কিনা এমন কতো মেয়ের সাথে… [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ]

– সামির তোকে অনেক খুশি রাখবে স্নেহা! [ বলেই স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে ভেতরে চলে গেলো,স্নেহা ঐদিকটায় থমকে দাঁড়িয়ে আছে, মার্জান ধীরেধীরে এগিয়ে এলো স্নেহার পাশে, স্নেহার দিক তাকাতেই অনেক মায়া লাগছে তার, কিন্তু এই অবস্থায় কি করবে স্নেহার জন্য কিছুই মাথায় আসছে না, স্নেহা ও আহ্লাদী চোখে তাকালো মার্জানের দিক, মার্জান মাথা নাড়িয়ে ইশারা করলো স্নেহাকে কান্না না করার জন্য! দু-তিন সেকেন্ড চেপেই রাখলো ভেতরের আবেগ গুলো, আর না পেরে মুখ চেপে ফুফিয়ে কেঁদে দৌড়ে মেইন ডোর খুলে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায় স্নেহা!

মার্জান, জারিফা, শায়লা ও পেছন পেছন দৌড়ে বেড়িয়ে গেলো, স্নেহা খালি পায়েই দৌড়ে শিরি দিয়ে নেমে যাচ্ছে, স্নেহা বলে বলে চেঁচিয়ে উঠলে ও স্নেহা থেমে নয় ]

মার্জান : শায়লা, যা তুই গিয়ে ব্যাগ গুলো নিয়ে আয়, [ বলেই জুতা পায়ে দিয়ে স্নেহার জুতা গুলো ও হাতে উঠিয়ে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে নিচে এগিয়ে গেলো ]

নিচে নেমে আসতেই দেখে, স্নেহা ফুফিয়ে কেঁদে কেঁদেই হাটতে চলছে, মার্জান আর জারিফা দৌড়ে গিয়ে আটকালো স্নেহাকে!

মার্জান : স্নেহা! কি করছিস তুই! এভাবে করলে অসুস্থ হয়ে পড়বি!
– [ জুতা এগিয়ে দিয়ে ] নে জুতাগুলো পড়েনে!

স্নেহা : [ কাদো কণ্ঠে ] রাহুল এমন না মার্জান!

জারিফা : [ স্নেহার চোখ মুছে দিয়ে ] রিলেক্স স্নেহা! আশেপাশের লোকজন দেখছে! কান্না করিস না!

মার্জান : যেটা আংকেলকে বলেছিস ওটা পারবিতো?.. [ আবারো কেঁদে উঠলো স্নেহা ]

মার্জান : যখন পারবিনা স্নেহা! তাহলে বললি কেনো?…

স্নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে ] তো এটাই বলতাম যে ঠিকাছে আমি চলে যাচ্ছি রাহুলের কাছে, তোমাদের আমি আমার বাবা-মা মানিনা, আর আমার এই চেহেরা ও তোমাদের কখনো দেখাবো না!

– হ্যা?..বল?..এটাই বলতাম?…

[ শায়লা ও এগিয়ে এলো, মার্জান জারিফা দুজনেই চুপ হয়ে আছে ]

স্নেহা : এতোটাও সেল্ফিস কিভাবে হবো মার্জান?.. ওরা না থাকতো তো তাহলে..আজ আমি এই পৃথিবীতেই না হতাম!

– [ চোখ মুছে ] আমি জানি এটা আমার জন্য অনেক কঠিন! কিন্তু আমাকে পারতে হবে, [ বলেই আবার কেঁদে উঠলো ]

শায়লা : উফফ! ঐও কোনদিকটা যাবে তোরা বল?..একদিক প্যারেন্টস্ তো আরেকদিক রাহুল! একবার এই সিচুয়েশনে নিজেদের ভেবে দেখ! তোরা কি আ্যন্সার দিতি!

[ সকলেই নিস্থব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, হঠাৎ ]

মার্জান : [ স্নেহাকে টেনে নিরিবিলি একজায়গায় দাড় করিয়ে ] স্নেহা! তুই আগে জানতি! রাহুলের ফটোগুলোর ব্যাপারে… তাহলে আমাদের বলিসনি কেনো?..

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] ফটো গুলো আমাকে নেহাই দেখিয়েছিলো যখন ও আমাকে কিডন্যাপ করেছিলো, আমি ও বাবার মতোই ভেবেছিলাম রাহুলকে!
[ বলেই ঐদিন রাতে ঘটে যাওয়া নেহা আর রাহুলের কথা সবই খুলে বললো ]

জারিফা : [ মাথায় হাত দিয়ে ] ইয়া আল্লাহ! একটা মেয়ে এতোটা নিচে কিভাবে নামতে পারে?…

শায়লা : আচ্ছা! নাহলে আমরা এক কাজ করি ঐ নেহাকে গিয়ে বলি যাতে আংকেলকে এসে সত্যিটাই বলেদে! যা আংকেল ভাবছে তেমন কিছুই না!

মার্জান : পাগল হয়েছিস! ঐ নেহাকে তুই চিনিস না?..ও আমাদের কথা মানবে তাই না?..আমার তো মনে হয় এসবে নেহার ও হাত আছে! নাহলে সামির ছবি গুলো পেলো কিভাবে!

জারিফা : আরে হ্যা! তাই তো!
– নাজানি রাহুল জানলে এই সামিরের কি হয়!

স্নেহা : [ চোখ মুছে ] রাহুলকে জানিয়ে কি হবে?..ও সামিরের সাথে মারপিট করবে! এটাইতো! বাবা অলরেডিই রাহুলকে অনেক খারাপ ভেবে বসে আছে! যখন জানবে রাহুল সামিরকে মেরেছে, বাবার চোখে ও আরো খারাপ হতে চলবে, আর আমি ও চাই না এমন হোক!

– রাহুলকে ভালো রাখার জন্য যদি ওর চোখে আমাকে খারাপ হতে হয় তাহলেও আমি রাজি,

মার্জান : আমার ও তাই মনে হয়! রাহুল মারামারি করে এটা জানলেও হয়তো আংকেলের রাহুলের প্রতি আরো ঘৃণা জমবে,

– উফফ! এমন কিছুই মাথায় আসছে না যে ছবি গুলোর কাহানী সব সাজানো এটা প্রুফ করবো!

জারিফা : আইডিয়া!

– রাহুল স্নেহাকে যেমন বুঝিয়ে বলেছে তেমন আংকেলকে ও বললে…

মার্জান : তোর বেকার আইডিয়া তোর কাছেই রাখ! আংকেল এখনো ললিপপ খায় মনে হয়?..রাহুল ঐদিন কিছুই করেনি এটা আংকেলকে রাহুল যেভাবেই বলবে আংকেল ওটাই বিশাস করে নিবে! তাই না?

জারিফা : উফফ তাহলে!

– আচ্ছা শোন আমরা সবাই মিলে বললে!

মার্জান : আল্লাহর ওয়াস্তে তুই চুপ করবি?..

স্নেহা : [ চোখ মুছে ] হয়তো সাথে থাকা ভালোবাসা না! হয়তো ভালোবাসা ঐটাই,

– যা সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েও সাথে থেকে যায়, [ বলেই একটু হেসে এক খেয়ালি হয়ে হাটতে থাকে, রাহুলের সাথে কাটানো সব মোমেন্টগুলোই একনাগাড়ে চোখের সামনে ভেসে যাচ্ছে স্নেহার, বুকটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে এসব মনে পড়তেই! ]

স্নেহার ফ্রেন্ডসরা ও পেছন পেছন এগিয়ে আসছে, এই মুহূর্তে স্নেহার জন্য তারাও কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না!
তাই সব ডিসিশন স্নেহাই নিক…এই মনে করে তারউপরই ছেড়ে দিলো!

বাসায় এসে পৌছালো, বিকেল প্রায় শেষের দিকে, বারান্দার রিলিং এ মাথা ঠেকিয়ে স্নেহা বসে আছে, চোখ দিয়ে অজস্র অশ্রু ঝড়ে যাচ্ছে সেই তখন থেকেই, ভেবেও নিয়েছে স্নেহা! যদি পরিবারের সুখের জন্য তার ভালোবাসা ত্যাগ দিতে হয় তাহলে সে দিবে, তবে এই বুকের মাঝে গেথে থাকা রাহুলের ভালোবাসার জায়গা সে আর কাউকেই দিতে পারবে না!
এসব ভাবতে ভাবতে এক খেয়ালিই হয়েগেছে স্নেহা! এর মাঝে কখন থেকে যে ফোনটা বেজে চলছে ধ্যানীই দিলো না!

জারিফা : [ স্নেহাকে নেড়ে দিয়ে ] স্নেহা! ফোন বাজছে!

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] অহ! ..কে করেছে?…

জারিফা : রাহুল! [ বলতেই স্নেহা রুমের দিক তাকালো, দাঁড়িয়ে আছে মার্জান দেওয়ালের সাথে গা হেলিয়ে, শায়লা বসে আছে, খাটের উপর..তারাও স্নেহার দিক তাকিয়ে আছে, হয়তো এটাই ভাবছে সবাইকে যে বললো রাহুলকে ভুলে যাবে, আদৌ কি স্নেহা রাহুলকে ভুলতে পারবে! কিন্তু না স্নেহা উইক হয়ে পড়বে না, সবার সামনে তাকে স্ট্রং দেখাতে হবে, এই ভেবেই ফোনটা রিসিভ করলো ]

স্নেহা : হ্যালো!

রাহুল : কোথায় ছিলা স্নেহা?..কখন থেকেই ফোন দিচ্ছিলাম!

স্নেহা : বাসায়ই আছি!

রাহুল : তোমার ভয়েসে্র কি হলো!

স্নেহা : তে…তেমন কিছুই না..হয়তো ঠান্ডায় হয়েছে!

রাহুল : হোওয়ারি তো কথা! নিজের সময় অলোয়েজ কেয়ারলেস্ থাকো!

স্নেহা : রাহুল! আমার আপনাকে কিছু দেওয়ার ছিলো!

রাহুল : হুম তা কি?..

স্নেহা : আসলেই দেখবেন!

রাহুল : আচ্ছা ঠিকাছে!

স্নেহা : আপনি আসছেন?..

রাহুল : ইয়াহ..আই এম কামিং!

স্নেহা : আমি অপেক্ষা করছি! [ বলেই ফোনটা রেখে দিলো ]

মার্জান : [ দূর থেকে চেঁচিয়ে ] স্নেহা রেগে কাজ করিস না! ব্যাপারটা আরো বেড়ে যাবে!

– এক কাজ কর, আংকেল নেক্সট যে অপশনটা দিয়েছে ঐটাই বেছে নে, তারপর পরে দেখবি আংকেল এমনি এমনিতেই মেনে নিয়েছে,

জারিফা : [ স্নেহার পাশ বসে ] আমিও এটা ভাবছিলাম স্নেহা! রাহুলের সাথেই পালিয়ে যা, পড়ে বিয়ে হয়ে গেলে দেখবি আংকেল এমনিতেই মেনে নিয়েছে!

স্নেহা : চুরি করিনি আমি! না কারো খুন করেছি, আমিতো ভালোবেসেছি! পালাবো কেনো?…

মার্জান : [ এগিয়ে এসে ] স্নেহা! বারবার বলছি রেগে কাজ করিস না, এতে দু-জনেই কষ্ট পাবি!

স্নেহা : রেগে যে কাজ করবো ওটা সবসময় ভুলই হবে, জানিস কেনো?..

– কারণ রাগ সবসময় দিমাগের কথা নয় মনের কথা শুনে,আর মন কখনো নিজের জন্য ভাবে না..ও তো সবসময় ওর জন্যই ভাবে, যার হেফাজতে ওকে রাখা হয়েছে!

– হয়তো রাহুল আমার কপালে নেই, নাহ এটা হবে কেনো?.. ইনফ্যাক্ট আমিই রাহুলের কপালে নেই, [ কাদো ভাবে ] ওর কপালে হয়তো আমার চেয়ে বেশী ভালোবাসবে এমন কেউ আছে!

– আজ যদি আমি বাবার দেওয়া নেক্সট অপশনটাই নিতাম, তাহলে আমার ভালোবাসার অসম্মান হতো! ভালোবাসা আমার কাছে খেলনার পুতুল হয়ে যেতো, রাহুলের জন্য যদি বাবা-মাকে ছেড়ে দিতাম, তাহলে অন্য কারো ভালোবাসার জন্য রাহুলকে ছাড়তে তো আমার দু-সেকেন্ডই লাগবে না!

– [ মুচকি হেসে ] বলা অনেক সহজ মার্জান, যখন কাউকে মনেপ্রাণে চাইবি তখন বুঝবি! ব্যাপারটা করতে কতো কঠিন!

[ মার্জান আর কিছু বললো না, ভেতরে গিয়েই বসে ভাবতে লাগলো, ঠিকই তো বললো স্নেহা, হয়তো সে কাউকে এখনো ভালোবাসেনি তাই হয়তো সেকেন্ড অপশনটাই বেচে নিতে বললো, একদিকে বাবা-মা আরেকদিক যাকে ভালোবাসে সে, দুটো অপশন থেকে একটা, উফফ কি কঠিন বেচে নেওয়া, কিন্তু স্নেহা যেটা নিলো সেটা ওর ক্যারেকটারের সাথে যায়, নিজে কষ্ট চেপে রেখে অন্যকে সুখ দেওয়া এটা ওরই কাজ, ছোট থেকেই তো এমনি স্নেহা, আমরা হলে হয়তো নিজের ভালোবাসার পেছনেই দৌড়াতাম, একবার ও ভাবতাম না যে এই পৃথিবীতে ভালোবাসতেই তো সবার আগে বাবা-মা শিখিয়েছে ]

সময় পেড়িয়ে গেছে, বেলা ও ঘনিয়ে এলো, সবাই সবার মতো মগ্ন হয়ে বসে আছে,
হর্ণের আওয়াজ ভেসে এলো, নিচের দিক তাকাতেই বুকটা ধুক করে উঠলো, হাত দিয়ে ইশারা করছে রাহুল নিচে নেমে আসতে, উঠে ভেতরে এগিয়ে গিয়ে চুল গুলো মুচড়ে খোপা করে নিলো টেবিল থেকে নিয়ে চশমাটাও পড়ে নিলো, যাতে রাহুল আজ স্নেহার চোখ পড়তে না পারে, গায়ে শাল মুড়িয়ে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লো, বাকিরা তাকিয়ে আছে স্নেহার চলে যাওয়া!

গেইটের দিক পৌছাতেই হার্টবিট বেড়ে চলছে স্নেহার, কেনো হচ্ছে আজ এমন?..হয়তো ভালোবাসার উপভোগটা আজ আরো বেশী করেই মায়া ছড়িয়ে দিচ্ছে, ধীরেধীরে রাস্তা পাড় হয়ে রাহুলের কাছে গিয়েই দাঁড়ালো স্নেহা!

রাহুল : ওহ নো স্নেহা! আমার সামনে এভাবে চুল বেধে এসো না, তোমাকে তখন এত্তো কিউট লাগে!

– এক সেকেন্ড [ স্নেহার কপালে হাত দিয়ে ] তুমি কি সি্ক?..

স্নেহা : [ রাহুলের হাত সরিয়ে দিয়ে ] নাহ!

রাহুল : [ স্নেহার নাক টেনে দিয়ে ] কেঁদেছো মনে হচ্ছে!

স্নেহা : ঠা..ঠান্ডায়!

[ রাহুল আর কিছু বললো না চেয়ে আছে স্নেহার দিক, স্নেহা ও চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, শীতের সন্ধ্যাবাতাস গায়ের সাথে মিশে যাচ্ছে, স্নেহার মুখের সামনে পড়ে থাকা ছোট ছোট চুল গুলো ও বাতাসের সাথে খেলছে, দু-হাত একসাথে মোচড়ামোচড়ি করছে স্নেহা! নাক,ঠোট, গাল সবই লালচে হয়ে আছে, সবশেষে রাহুলই নিরবতা ভাঙলো ]

রাহুল : স্নেহা! তুমি ঠিকাছো?..

স্নেহা : হ্যা! ঠিকাছি, [ চোখ পানিতে ঝাপসা হয়ে আসছে স্নেহার ] আপ..আপনি প্লিজ আপনার গাড়ীর লাইটটা বন্ধ করবেন?..

রাহুল : লাইট?..ওখেই [ লাইট বন্ধ করে স্নেহার কাছে এগিয়ে দাঁড়ালো ]

স্নেহা : [ একটু পিছিয়ে দাঁড়িয়ে ] আ..আমি বলেছিলাম আপনাকে কিছু দেওয়ার ছিলো!

রাহুল : ও হ্যা!

স্নেহা : আমি এটা দেওয়ার পর প্লিজ আমার থেকে আর কিছুই জিজ্ঞেস করবেন না! [ রাহুল অবাক হলো স্নেহার কথায় তাও আর কোনো প্রশ্ন করলো না, চুপ করে তাকিয়েই রইলো স্নেহার দিক, কিছুক্ষণের মধ্যেই রাহুল যা দেখতে পাচ্ছিলো তা রাহুল নিজেকে বিশাস করাতে পারছে না, সে কি সপ্ন দেখছে নাকি বাস্তবেই এটা ঘটছে ]

[ রাহুল পড়িয়ে দেওয়া স্নেহার আংগুলের রিংটি খুলে স্নেহা গাড়ীর বনাটের উপর রেখে দিলো ]

স্নেহা : আমাদের এইখানেই থেমে যাওয়া উচিৎ রাহুল!

রাহুল : অও! এতোটা সহজ তোমার জন্য স্নেহা?…

[ স্নেহা কিছু বললো না,রাহুল চমকেই আছে, স্নেহার চেহেরার দিক তাকিয়ে দেখলো স্নেহা মাথা নিচু করে আছে, গাল বেয়ে চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে তাড়াহুড়ো করে মুছেই ফেললো জল গুলো, এবার বুঝতেই পারলো রাহুল গাড়ীর লাইট কেনো বন্ধ করতে বললো, যাতে রাহুল তার চোখের পানি দেখতে না পাই! স্নেহার নিস্থব্দতাই রাহুলের বুকের পাঁজরটা আরো দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে, যেনো কেউ ছুড়ি মেরে বের করে ঐ ক্ষতের উপর আবারো আঘাত করতে লাগলো ]

রাহুল : [ মনের কষ্ট মনেই চেপে রেখে রিংটি নিজের হাতে তুলে ধরে বলে উঠলো ] আমি জানি সামির তোমার বাবাকে আমার আর নেহার ছবি গুলো পাঠিয়েছে, [ স্নেহা শকড হয়ে তাকালো ]

রাহুল : উমহুম! অবাক হবানা.. আমি তোমার সাথেই আছি, আমি সবদিকই আছি, যে দিকটা তুমি কল্পণা ও করতে পারবা না আমি সেইদিকটা ও আছি!

– সামিরের কথা পরে আসছে, তবে তোমার কাছ থেকে এটা আশা করিনি! [ স্নেহা ওড়নার আচলের কোণা ধরে মুচড়ামুচড়ি করছে ]

রাহুল : হ্যা! এটা আশা করেছিলাম ছবি গুলো দেখে তোমার বাবার ধারণা আমার জন্য এই রুপটাই হবে, তবে স্নেহা তুমি?..তুমিতো জানোই সব! [ স্নেহা আর কিছু বললো না তাড়াহুড়ো করে রাস্তা পাড় হতে লাগলো, রাহুল চেয়ে আছে, ]

হঠাৎ, গেইটের দিক পৌছাতেই বিকটভাবে কাচ ভাংগার শব্দ ভেসে এলো কানে, পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে রাহুলের হাত বেয়ে টপ-টপ করে রক্ত ঝড়ছে

স্নেহা : [ দৌড়ে এগিয়ে এসে, চেঁচিয়ে উঠে ] আজিব? পাগল নাকি আপনি?..বাচ্চাদের মতো কান্ড করছেন! [ বলেই ওড়না দিয়ে রাহুলের হাতটি পেছিয়ে দিতে লাগলো ]

রাহুল : স্নেহা আমার দিক তাকাও! তুমি পারবা আমাকে ভুলে থাকতে?..[ স্নেহা কোনো জবাব দিচ্ছে না ওড়না পেছাতেই ব্যস্ত ]

রাহুল : স্নেহা! আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি!

স্নেহা : কাচ হাতে ঢুকেছে কিনা কে জানে! কিসব করেন না আপনি!

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ঝাড়া মেরে স্নেহা থেকে তার হাতটি ছুটিয়ে নিয়ে ] আমাকে জবাব দাও স্নেহা!

[ স্নেহা মাথা নিচু করে রাহুলের হাতটা আবার এগিয়ে নিয়ে ওড়নাটা ভালো করেই পেছিয়ে দিতে লাগলো, রাহুল রেগে হাতটা আবার টেনে নিয়ে স্নেহার দিক এগুতেই স্নেহা পিছিয়ে যায় ]

রাহুল : [ দাতকিলিয়ে ] কামঅন স্নেহা স্টপ দিস্ ননসেন্স! আমার প্রশ্নের জবাব দাও!

স্নেহা : দিলামই তো জবাব! [ রাহুলের হাত তুলে ধরে রিংটির দিক দেখিয়ে ] আমার জবাব!

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে ] ওখে! [ বলেই স্নেহার হাত টেনে নিয়ে রিংটি আবার পড়িয়ে দিলো ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রাহুল কি করছেন আপনি!

রাহুল : রিংটির জায়গা যেখানে ঐখানেই বসিয়ে দিলাম!

স্নেহা : কিন্তু এটা সম্ভব না রাহুল!

রাহুল : [ টান দিয়ে স্নেহার চোখ থেকে চশমাটা খুলে, চোখের নিচ থেকে পানি গুলো আঙুল দিয়ে কুড়িয়ে নিয়ে ] তাহলে এসব?.

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ] হয়তো চোখে কিছু পড়েছে!

রাহুল : তাই?..তাহলে আমার চোখের দিক তাকিয়ে জবাব দাও!

স্নেহা : আপনার চোখের দিক কেনো তাকাবো, আপনি এমনিতেই রেগে আছেন আমার আরো ভয় লাগবে!

রাহুল : বাহানা বানানো বন্ধ করো স্নেহা!

স্নেহা : আমি বাহানা বানাচ্ছি না!

[ রাহুল হাত মুঠি করে চেপে স্নেহা থেকে সরে দাঁড়ালো, ফুফাতে লাগলো এদিকওদিক তাকিয়ে, স্নেহা মাথা নিচু করে ঐদিকটাই ভীতু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, রাগ কন্ট্রোল করে স্নেহার কাছে আবার এগিয়ে এসে দাঁড়ালো! ]

রাহুল : যখন ভালোবাসার সাহস চোখ উঠিয়ে দেখে, তখন ভয় ও মাথা ঝুকিয়ে নেই স্নেহা!

– [ স্নেহার হাত ধরে ] চলো স্নেহা! আমার হাত ধরে, আমার সাথেই!

স্নেহা : রাহুল! আপনার হাতে ব্লিডিং হচ্ছে!

রাহুল : বলো স্নেহা! যাবা?.. আ..আমার সাথে!

স্নেহা : [ রাহুলের হাতের দিক চেয়ে থেকে কাদো কন্ঠে ] ব্যান্ডেজ করে নিবেন!

রাহুল : [ কাদো ভাবে ] কেনো করছো এমন স্নেহা! আমি পারবো না তোমাকে ছাড়া থাকতে!

স্নেহা : কা..কাচ ঢুকেছে কিনা চে..চেক করে নিবেন!

রাহুল : কিছুতো বলো স্নেহা! প্লিজ!

স্নেহা : চে..চেক না করলে! পড়ে ইনফেকশন হয়ে যাবে! [ বলেই মুখ চেপে ফুফিয়ে কেঁদে দৌড়ে চলে যায়, রাহুল আহ্লাদী চোখে তাকিয়ে থাকে স্নেহার নিশ্চুপ হয়ে চলে যাওয়া, চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে রাহুলের, ধীরেধীরে গাড়ীতে উঠে বসলো, কিছুক্ষণ থমকে বসে রইলো, হাতের দিক তাকাতেই স্নেহার মুড়িয়ে দেওয়া ওড়নাটা চোখে পড়লো, নাকের কাছে এনে স্মেল নিলো কিছুক্ষণ, হঠাৎ ফুফিয়ে কেঁদে মুখের মধ্যে চেপে ধরলো ওড়নাটা ]

রাহুল : [ কান্না কন্ট্রোল করে মনে মনে ] আমার তাকদীর বলেছে আমি থুফান থেকে বাচতে পারবো না, বাট স্নেহা! আমি ও তাকদীরকে দেখিয়ে দিবো

– থুফান তো আমি নিজেই! [ বলেই গাড়ী স্টার্ট দিয়ে বেড়িয়ে পড়লো ]
________________________________

[ স্নেহা চোখ-নাক মুছে, ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করতে লাগলো, পেছন মুড়তেই দেখে, তার ফ্রেন্ডসরা তাকিয়ে আছে, শালটা টেবিলে ছুড়ে ফেলে ওয়াসরুমে ঢুকে পড়লো, দরজা আটকে ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো, দু-হাত মেলে তাকিয়ে দেখলো, রাহুলের রক্ত গুলো হাতে শুকিয়ে মিশে গেছে, রিংটিও আজ অতিরিক্ত ঝলমলে দেখাচ্ছে ]

নিস্থব্ধতা আর বেখেয়ালি মনোভাব,নির্ঘুম এবং নিস্ব হয়ে দুজনের দু-ভাংগা দুটি মন, বেইমান রাতটি পার করিয়েই দিলো…

পরদিন ভার্সেটিতে গেলো, মনমরা হয়েই ঢুকছিলো সবাই, পার্কিং এর দিক তাকাতেই দেখে রিদোয়ান আর আসিফ বসে আছে গাড়ীর দরজা খোলা রেখে, আর রাহুল গাড়ীর বনাটের উপর এক পা বটে শুয়ে আছে, মুখের উপর কেপ দিয়ে ঢেকে রেখেছে, স্নেহা এসেছে ঠের পেয়ে আড়চোখে তাকিয়ে রইলো, কিন্তু কোনো রিয়েক্ট করলো না,

রিদোয়ান এগিয়ে আসছে, স্নেহা, মার্জান, শায়লা তিনজনই ক্লাসের দিক চলে গেলো,

জারিফা : আপনারা মারামারি কেনো করলেন?.. আর এসব কি হয়েছে আপনার কপালে?..মার দিতে গিয়েছিলেন নাকি উল্টা খেয়ে এসেছেন!

রিদোয়ান : আরে কপালের এটা রাহুলের মার খেয়েছি!

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] আপনি কার দলে ছিলেন!

রিদোয়ান : [ হেসে ] রাহুলকে থামাতে গিয়ে বাড়ি খেয়েছিলাম!

জারিফা : [ হেসে ] ওহ!

রিদোয়ান : হ্যা! হাসো!

জারিফা : [ মুখ গোমড়া করে ] জানেন!স্নেহা এসব জানলে আবার কষ্ট পাবে?…

রিদোয়ান : আরে জারিফা কষ্ট পাওয়ার কি আছে?..ঐ সামিরের কারণেই ওদের দুজনের আলাদা হতে হচ্ছে! আর তুমি না বললে স্নেহা জানবে না! ব্যাস!

– আজও ভার্সেটি এসেছে স্নেহার প্রটেক্ট এর জন্য! বললাম আমরা আছি, তাও মনকে শান্তি দিতে পারছে না চলে এলো,

জারিফা : স্নেহার টেনশন এটাই মারামারি করতে গিয়ে রাহুলের না কিছু হয়ে যায়,

রিদোয়ান : আচ্ছা! ট্রু লাভার কাকে বলে জানো?..

জারিফা : হয়েছে হয়েছে! ব্যাস! আব.. রাহুল ঠিকাছে! এখন?..

রিদোয়ান : ওর আর কি? কাল রাত থেকেই তো বললাম দেবদাস হয়ে আছে!
– দেখো তুমিও আবার আমাকে দেবদাস বানিয়ে দিয়ো না কিন্তু!

জারিফা : কিসব আজেবাজে কথা বলেন! যাচ্ছি আমি ক্লাসে!

রিদোয়ান : [ হেসে ] ওকে যাও!
________________________________

ভার্সেটি ছুটির পর,

মার্জান : আচ্ছা স্নেহা! চল আমরা আজ কোথাও ঘুরে আসি!

স্নেহা : তোরা যা আমার ভালো লাগছে না! [ সবাই বুঝতে পারলো কেনো ভালো লাগছে না, তাই আর কি করার বেড়িয়েই যাচ্ছে স্নেহার সাথে সাথে, পার্কিং এর দিক এসেই স্নেহা থেমে গেলো, পাশ মুড়ে তাকাতেই দেখে রাহুলকে যেমনটা দেখে গেছে এখনো তেমনিভাবে শুয়ে আছে, মুখের উপর কেপটাও ঐপজিশনে দিয়ে রেখেছে এখনো, হাতের দিক তাকিয়ে লক্ষ্য করলো, যা ভাবলো তাই হলো, ব্যান্ডেজ করেনি, চোখ থেকে পানি পড়ছে স্নেহার, বুঝতে পারলো রাহুল রেগে নিজেকেই কষ্ট দিচ্ছে ]

মার্জান স্নেহার কাধে হাত রাখলে, স্নেহা চোখ মুছে হনহনিয়ে গেইট দিয়ে বেড়িয়ে পড়ে,

বাসায় এসে ব্যাগ কাধ থেকে রেখে বারান্দায় এগিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগলো, মার্জান ও স্নেহার পাশে এসে দাঁড়ায়!

মার্জান : ফিরিয়েই তো দিয়েছিস তাহলে আবার কাঁদছিস কেনো?.. [ স্নেহা নিস্থব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ]

মার্জান : আমি জানি ভুলতে পারবিনা! কিন্তু ভোলার অভিনয় করে যাচ্ছিস!

স্নেহা : আমাকে একটু একা থাকতে দে…[ বলেই ভেতরের দিক চলে যায়, মার্জান ও কি আর করার জোড়ে একটি শাস ফেলে আশেপাশে তাকাতে লাগলো, ভাবছে, থাক কিছুক্ষণ একা থাকলে মনটা ফ্রেশ হয়ে যাবে, হঠাৎ ভেতর থেকে জারিফা আর শায়লা স্নেহা! বলে চেঁচিয়ে উঠার শব্দ এলো, তাড়াহুড়ো করে ভেতরে এগিয়ে গেলেই দেখে, স্নেহা মাঠিতে পড়ে আছে ]

মার্জান : [ শকড হয়ে ] আরে! কি হয়েছে!

শায়লা : হয়তো মাথা ঘুড়িয়ে পড়ে গেছে, স্নেহা! তুই ঠিকাছিস?..

স্নেহা : [ মাথা চেপে ধরে উঠে বসলো ] হ্যা! আমি ঠিকাছি! [ বলেই উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলো, বাকিরা ও ধরে হেল্প করলো উঠে দাড়াতে ]

মার্জান : এতো স্ট্রেস নিলে এমন হবেই স্নেহা!.. চল শুয়ে রেষ্ট কর!

স্নেহা : আ..আমি আসছি..একটু বেরুবো!

শায়লা : আরে এই অবস্থায়?..

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] ও আমার উপর রেগে নিজেকে কষ্ট দিচ্ছে শায়লা! ওকে বলেছি কাল রাতে যেনো ব্যান্ডেজ করে নেই! নয়তো ইনফেকশন হয়ে যাবে,

মার্জান : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] রিলেক্স স্নেহা! শান্ত হো!

স্নেহা : [ চোখ মুছে ] আমি ঠিকাছি! [ বলেই ব্যাগটা কাধে নিয়ে দরজা খুলে বেড়িয়ে যাচ্ছে ]

মার্জান : স্নেহা! তুই একা এই অবস্থায় কোথায় যাচ্ছিস?..

স্নেহা : বললাম তো ঠিকাছি! তোরা টেনশন করছিস কেনো?..

মার্জান : কিন্তু স্নেহা!

স্নেহা : প্লিজ মার্জান! [ বলেই বেড়িয়ে গেলো ]

শায়লা : টেনশন করিসনা! হয়তো রাহুলের কাছেই যাচ্ছে!

মার্জান : কিন্তু শায়লা ওর শরীরের অবস্থা দেখলি?..

শায়লা : আমাদের ওকে বাধা দেওয়া উচিৎ না এখন! ও যেহেতু রাহুলের কাছেই যাচ্ছে!

মার্জান : হুম!
________________________________

রাহুলের বাসার উদ্দেশ্যই স্নেহা বেড়িয়ে পড়লো, বাড়ীর সামনে এসে পৌছাতেই চোখ মুছে নিজেকে স্ট্রং করে নিলো, ধীরেধীরে গেইট দিয়ে ঢুকতেই রাহুলের গাড়ী দেখতে পেলো মনে শান্তি এলো তারমানে রাহুল বাড়ীতেই আছে! ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়াতেই মনটা ছটফট করছে! বেল দিতে সাহস হচ্ছে না স্নেহার! বুকটাও কাঁপছে! কিন্তু কেনোই বা পারছে না রাহুল থেকে দূরে থাকতে, রাহুল কষ্ট পাবে সেটাও তো সে চাইনি!

[ দিয়েই দিলো বেল, পাচ-ছয়বার বাজালেও দরজা খুললো না, হঠাৎ স্নেহা লক মোচোড় দিতেই দেখে দরজাটা খুলে গেলো, ভেতরে ঢুকতেই দেখে সব জিনিষ ভেংগে চুরমার হয়ে এলোমেলো ভাবে চারদিক ছিটে আছে ]

হেটে ভেতরে এগিয়ে গিয়ে চারদিক চোখ বুলিয়ে সোফার দিক তাকাতেই দেখে রাহুল সোফায় শুয়ে আছে,

স্নেহা : [ রাহুলের দিক এগিয়ে গিয়ে ] রাহুল! কি হয়েছে আপনার?.. আপনি ঠিকাছেন?…

রাহুল : [ মাতাল অবস্থায় স্নেহার মুখে স্লাইড করে ] কেনো এসেছো স্নেহা! আমার তো সব শেষ হয়ে গেছে!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আপনি আবার ড্রিংক্স করেছেন?…

রাহুল : [ হেসে ] সবাই ছে..ছেড়ে চলে গেছে! ও যায়নি! [ বলেই বোতোলটা আবার এগিয়ে নিতে লাগলো ]

স্নেহা : [ বোতোল সরিয়ে দিয়ে ] ব্যাস! রাহুল, অনেক খেয়েছেন আর না! আর আপনি হাতে ব্যান্ডেজ করেননি কেনো?..বললাম না ইনফেকশন হয়ে যাবে! [ বলেই উঠে ভেতরে গিয়ে ফার্ষ্ট এইড বক্সটা এগিয়ে আনলো, রাহুল উঠে বসলো, স্নেহা মাঠিতে বসে হাত এগিয়ে নিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে, সাথে চোখ বেয়েও গড়িয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে, রাহুল তাকিয়ে রইলো একপলকে, হঠাৎ কিছুক্ষণ পরে স্নেহা থেকে হাতটা টেনে নিয়ে ফার্ষ্ট এইড বক্সটা লাত্তি দিয়ে সরিয়ে স্নেহাকে তুলে দাড় করিয়ে নেই ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] রাহুল! কি হলো?

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] কি ফাইদা এসবের স্নেহা?..কি হবে এই শরীর সুস্থ রেখে যখন ভেতরের আত্মাটাই জলে যাচ্ছে!

[ স্নেহা মাথা নুয়ে চুপ করে রইলো ]

রাহুল : যখন তুমি চুপ থাকো স্নেহা! তখন তোমার নিশ্চুপ চেহেরায় সব বলেদে! [ বলেই বোতোলটা এগিয়ে নিয়ে কয়েকঢোগ খেয়ে রাগান্বিত ভাবে পাশে ছুড়ে ফেলে হনহনিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো, গাড়ীর দিক এগিয়ে গিয়ে দরজাটা খুললো, হঠাৎ আবার স্নেহার কথা মনে পড়তেই দরজা লাগিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

[ এইদিকে স্নেহা ও কান্নায় ভেঙে মাঠিতে বসে পড়লো! আশেপাশে তাকাতেই সব সৃথি ভেসে উঠছে চোখের সামনে, মনে মনে ভাবছে স্নেহা, যদি রাহুলই তার একটা অপশন হতো! ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part : 37

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part : 37

writer-Jubaida Sobti

কাপড়-চোপড় পড়ে তৈরী হয়ে ব্যাগ গোছাতে লাগলো স্নেহা!

মার্জান : আরে বাহ, স্নেহা! আজ তো রাহুল তোকে দেখলে শুধু হা করেই তাকিয়ে থাকবে,

জারিফা : [ চোখ টিপ মেরে ] স্নেহা! মেরি জান, টিপ গুলো কে দিয়েছে শুনি? হুম..

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হাসলো কিছু বললো না ]

জারিফা : হাও কিউট! মেরি জিজাজি![ স্নেহাকে জড়িয়ে ] ব্যাস! এখন শুধু সামির নামের কালো ছায়াটা যেনো দূরই হয়ে যায়,

মার্জান : দূর হওয়ার কি আছে?..ওকে তো লাত্তি মেরে দূর করা উচিৎ লুচ্চা একটা!

শায়লা : [ হেসে ] আচ্ছা তোরা কি বের হবি?.. বাস্ ছুটে যাবে তো!

জারিফা : ও হ্যা! চল চল,

মার্জান : ওকে স্নেহা! আমরা যাচ্ছি, রাহুল আসলে তুই ও চলে আসিস! [ চোখ মেরে ] বাই!

স্নেহা : বাই!

চলে গেলো স্নেহার ফ্রেন্ডসরা, বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে রাহুলের অপেক্ষা করছে স্নেহা, হঠাৎ কিছুক্ষণ পর গাড়ীর হর্ণ বেজে উঠলো সাথে সাথে নিচে তাকিয়ে দেখে রাহুলের গাড়ীই এসেছে, তাড়াতাড়ি টেবিলের উপর থেকে ব্যাগ কাধে নিয়ে বেড়িয়ে আসলো স্নেহা, নিচে নেমে এগিয়ে এসে গাড়ীতে উঠে বসলো, রাহুল তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক কিন্তু কিছু বললো না, স্নেহা ও চুপ করে রইলো,

রাহুল : [ সোজা তাকিয়ে ] তোমার ফ্রেন্ডসরা কোথায়!

স্নেহা : ওরা চলে গেছে!

রাহুল : ওরা আবার আলাদা গেলো কেনো?.. আমাদের সাথেই তো যেতে পারতো!

স্নেহা : আ…আজকে আমাদের এক্সট্রা ক্লাস ছিলো! তাই! [ রাহুল অবাক হয়ে তাকালে ]

– আ..আমি যায়নি Assignment রেডি করা ছিলো না তাই!

রাহুল : অও, সো্ এখন কি যাবো ?

স্নেহা : [ অবাক হলো রাহুলের বিহেভিয়ারে তাও মাথা নাড়িয়ে বলে উঠলো ] হুম!

গাড়ী চলছে, স্নেহা বার বার খেয়াল করছে রাহুলের দিক, আজ রাহুল না তার দিক তাকাচ্ছে না কথা বলছে, তারমানে রাহুল তারউপর এখনো রাগ করে আছে, মনটা খারাপ হয়ে গেলো স্নেহার, মুখ গোমড়া করে জানালার দিক ফিরে রইলো, এভাবেই অনেক্ষণ কেটে যায়,

হঠাৎ, কিছুক্ষণ পর,

রাহুল : কিউট লাগছে! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালে ]

– আই মিন অলওয়েজ লাগে বাট যখন সেইম কম্বিনেশন করে পড়ি তখন একটু বেশিই লাগে! [ স্নেহা মুচকি হাসলো ]

স্নেহা : আপনি আমার উপর এখনো রাগ করে আছেন?…

রাহুল : আমার তোমার উপর কোনো রাগ নেই স্নেহা!

স্নেহা : আচ্ছা! আপনি ব্রেকফাস্ট করেছেন?…

রাহুল : হুম!

স্নেহা : মিথ্যে বলছেন কেনো?…

রাহুল : আমার পেট ব্যাথা করছে! তাই করিনি,

স্নেহা : ব্রেকফাস্ট করেননি তাই হয়তো পেট ব্যথা করছে!

– আমি জানতাম আপনি ব্রেকফাস্ট করবেননা, আচ্ছা দেখেন আমি আপনার জন্য কি এনেছি [ বলেই ব্যাগ থেকে একটা বক্স বের করলো ]

রাহুল : এটাই কি?..

স্নেহা : ফ্রুট সেন্ডুইচ উইথ ভ্যানিলা বাটার!

রাহুল : অও!

স্নেহা : অও না! এটা এখন আপনি খাবেন!

রাহুল : আগেই বলেছি আমি সেন্ডুইচ পছন্দ করিনা!

স্নেহা : জানি! তাও আনলাম কারণ এটা ব্রেকফাস্টের জন্য হেলদি!

– [ রাহুলের দিক এগিয়ে দিয়ে ] সো্ নিন এটা ফিনিশ করেন!

রাহুল : ড্রাইভ করছি!

স্নেহা : তাহলে গাড়ী কোথাও থামিয়ে নিন!

রাহুল : এখন গাড়ী থামালে সামনে ট্রাফিক এ আটকে পড়বো!

স্নেহা : [ মনে মনে ] খালি বাহানা!..

– এটা খেলে আপনার পেট ব্যথাও চলে যাবে আই গ্যারান্টি!

রাহুল : রিয়েলি স্নেহা! আমার আসলেই…

স্নেহা : আচ্ছা আমি খাইয়েদি?..

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ঠিকাছে! খাওয়াও… তুমি আর কোথায় মানছো!

স্নেহা মুচকি হেসে রাহুলের মুখের দিক এগিয়ে দিলো সেন্ডুইচটি,রাহুলের ও কি আর করার খেয়েই নিলো!

রাহুল : উম! টেষ্টি! …

স্নেহা : আমি বানিয়েছি…

রাহুল : গ্রেট! সেন্ডুইচ তাহলে ঠিক বানাতে পারো!

স্নেহা : বাকিগুলাও পারি! ঐদিন তো…কিজানি কি হয়েছিলো মাথায়!

রাহুল : তাই? [ with tedi smile ]

[ স্নেহা আর কিছু বললো না, খাওয়াতেই লাগলো রাহুলকে ]

কিছুক্ষণপর,

রাহুল : ব্যাস! স্নেহা..ওভার! আজকেই সব খাইয়ে ছাড়বে নাকি?..

[ স্নেহা হেসে পানির বোতোলটা খুলে এগিয়ে দিলো ]
________________________________

ভার্সেটি এসে পৌছালো, স্নেহা গেইট এর দিকই নেমে পড়লো, রাহুল গাড়ী নিয়ে পার্কিং এর দিক চলে গেলো গাড়ী পার্ক করতে, স্নেহা হেটে ক্লাসের দিকই এগিয়ে যাচ্ছে হঠাৎ পাশ থেকে কেউ স্নেহা বলে ডেকে উঠলো, ফিরে তাকাতেই স্নেহা চমকে উঠলো,

সামির : হাই!

[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না তাকিয়েই আছে, আর মনে মনে ভাবছে কেনো যে আজ ভার্সেটি আসতে গেলো,প্রবলেম শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাহুল আর সামির মুখোমুখি হলেই তো সমস্যা ]

সামির : [ হাত নাড়িয়ে ] স্নেহা! ইউ অলরাইট?…

স্নেহা : আসলে আ..আমার ক্লাসে লেইট হচ্ছে, [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

সামির : [ স্নেহার হাত ধরে ] লিসেন্ট টু মি স্নেহা!

স্নেহা : [ সামিরের হাত ঝাড়া মেরে ছুটিয়ে ] এক্সকিউজ মি!

সামির : ওকে আম সরি! [ একটু হেসে ] আচ্ছা তুমি আমার উপর রেগে আছো নাকি টেনশন করছো ঐ ব্যাপারটা নিয়ে?..

স্নেহা : আমার মনে হয় আপনাকে যেটা বলতে বলেছি আশা করি সেটা আপনার বাবা-মা কে বলে দিয়েছেন!

সামির : তুমি আমাকে বলেছো আমি যেনো বলি তুমি আমার পছন্দ না রাইট?..

– [ একটু হেসে ] কিন্তু স্নেহা! তুমি তো আমার পছন্দ! আমি না কিভাবে বলবো? [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ]

সামির : আ..আই মিন, তুমি এতোটাই সুন্দর যে, তোমাকে পছন্দ না এটা বললে কেউ বিশাসই করবে না!

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে ] দেখেন আপনি বলেন আর না বলেন, এতে আমার এখন কিছু যায় আসে না, আমি নিজেই বাবাকে বলবো, আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না!

সামির : ওয়েল! এটা তো গুড নিউজ! [ হঠাৎ পেছন থেকে ]

রাহুল : গুড নিউজ দিয়ে কি হবে? আসল ব্রেকিং নিউজ তো বাকি রয়েগেছে! [ বলেই পকেটে হাত রেখে স্নেহার পাশে এসে দাঁড়ালো ]

– এন্ড আই লাইক দিস্ গেইম ?..

সামির : [ মুচকি হেসে ] i knew that!

– বাই দ্যা ওয়ে, মাত্রই তো শুরু হলো!

রাহুল : ইউ নো! গেইম অলওয়েজ নিজের লেভেল এর প্লেয়ার এর সাথে খেলা উচিৎ, কারণ প্লেয়ার যদি আমার চেয়ে লুজার হয় তাহলে জেতার মজাটাই আসে না,

– এন্ড রিমেম্বার আর যদি প্লেয়ার আমার চেয়েও ভালো হয়, তাহলে হারের দামটাও অনেক বড় দিতে হয়! আই হোপ ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড! [ With tedi smile ]

সামির : গেইম জিততে সুযোগ লাগে,আর সুযোগ কোথাও না কোথাও লুকিয়ে থাকে, ব্যাস ঐ সুযোগটা খুঁজে সঠিকভাবে ব্যবহার করা জানতে হয়,

রাহুল : দেয়ার ইজ আ মিলিয়ন ফিস ইন দ্যা সি, [ স্নেহার হাত ধরে ] বাট শি ইজ মার্মিড ফর হার প্রিন্স, নট ফর ফিসারম্যান! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে চলে গেলো, স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]
________________________________

স্নেহার ক্লাসের সামনে এসে থামতেই,

রাহুল : [ বোতোল এগিয়ে দিয়ে ] তোমার পানির বোতোল গাড়ীতে রয়ে গিয়েছিলো!

স্নেহা : অহ! [ বলেই এগিয়ে নিলো, আর ব্লাশিং হয়ে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক ]

রাহুল : বাই!

স্নেহা : বাই!.. [ চলে গেলো রাহুল,স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে ক্লাসে ঢুকে এগিয়ে গিয়ে সি্টে বসলো ]

মার্জান : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] আরে বাহ! স্নেহা, রাহুল তো আজ ক্লাস পর্যন্ত পৌছে দিয়ে গেলো!

জারিফা : হ্যা! তাতে অবাক হওয়ার কি আছে, [ বাকিরা একসাথে জারিফার দিক তাকালো ]

– আব..আই মিন স্নেহা রাহুলের গার্লফ্রেন্ড, খেয়াল রাখতেই পারে সাভাবিক!

মার্জান : তাতো বটেই কিন্তু তুই হঠাৎ হঠাৎ অসাভাবিক ভাবে বলে উঠিস না যেমনকি দুনিয়া উল্টে গেছে!

জারিফা : হিহি তাই! [ বলেই স্নেহার কাধে জড়িয়ে ধরে ] এনিওয়ে স্নেহা! আমাদের জিজুর সাথে মর্নিং ট্রাভেল কেমন ছিলো! শুনি!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] ভালো! [জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আসলে রাহুল! সবদিক থেকেই আমার খেয়াল রাখে, ইনফ্যাক্ট সবসময় আমাকে হ্যাপি রাখার চেষ্টা করে, [ সবাই হুমম বলে মাথা নাড়ালো ]

– আচ্ছা জানিস আমি কি ভেবেছি?

মার্জান : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] স্নেহা! মাই ডিয়ার! আমরা মনোবিজ্ঞানী নয়! সো্ কেমনি জানবো তুই কি ভেবেছিস?…

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আই থিংক তুই ট্রিট দিবি রাইট?…

শায়লা : আচ্ছা তোর মাথায় ট্রিট ছাড়া আর কিছু আসে না?..

– আর এমনিতেও কাউন্ট করতে গেলে সবচেয়ে বেশী তোর ট্রিটই জমে আছে!

জারিফা : আ…আই থিংক! আমাদের এখন অন্য টপিকে যাওয়া উচিৎ! হুম!

মার্জান : [ হেসে ] হ্যা! এখন তো অন্য টপিকেই যেতে বলবি!

জারিফা : ধুর রাখতো! আচ্ছা স্নেহা! তুই বল কি ভেবেছিস?..

স্নেহা : আ..আমি ভেবেছি..বাবাকে আজ রাহুলের কথা বলেই দিবো!

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] ওয়াও স্নেহা! ফ্যান্টাস্টিক আইডিয়া ইয়ার!

মার্জান : [ জারিফা মুখ চেপে ] শিসসস! জারিফা, পাগল নাকি এভাবে চেঁচাচ্ছিস কেনো?..

জারিফা : অহ! সরি সরি!..

মার্জান : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] গ্রেট স্নেহা! ফাইনালি, তুই অনেক ভালো একটা ডিশিসন নিয়েছিস!
– আমার তো অপেক্ষায় হচ্ছে না ঐ সামিরের বাচ্চাটা কখন দূর হবে,

শায়লা : হ্যা! স্নেহা আই থিংক সামির কি বলবে না বলবে এর অপেক্ষা না করে তোরই আগে বলে দেওয়া উচিৎ!

জারিফা : কিন্তু স্নেহা! তুই বলতে পারবি তো?..নাকি কলেজের পিকনিকে যেতে বলার সময় আংকেল এর সামনে গিয়ে যেভাবে তোতলাচ্ছিলি ঐরকমি করবি?..[ কিটকিটিয়ে হেসে ] বলবি না বাবা কিছুনা..আমিতো তোমাকে দেখতে এসেছি সব ঠিকাছে কিনা!

শায়লা : [ জারিফার মাথায় বাড়ি দিয়ে ] জারিফা! দেখছিস এমনিতেই ও ভয় পেয়ে আছে, তারউপর আরো ভয় লাগিয়ে যাচ্ছিস!

স্নেহা : আরে হ্যা! ঐদিন যেভাবে তোরা বাবাকে পিকনিকে যাওয়ার কথা বলেছিলি, আজও তোরা আমার সাথে চলনা..

জারিফা : আরে বাপরে, ঐদিনের ম্যাটারটা পিকনিক ছিলো…আজকের ম্যাটারটা শুনলে নাজানি আংকেল আমাদের কতোবড় লাঠি নিয়ে পেঠানো শুরু করে!

মার্জান : পেটাবে কেনো?..আজিব! ও কাউকে ভালোবাসে ওটাইতো বলবে, তাই না?

শায়লা : হ্যা! স্নেহা! তুই মোটেও ভয়পাস না, আমারা তোর সাথে আছি!

মার্জান : [ টেবিলে বাড়ি মেরে ] থুফান আসুক আর ঘূর্ণিঝড়, আজকে তোর বলতেই হবে!

জারিফা : ই..ইয়েস! বলতেই হবে, ডোন্ট ওয়ারি স্নেহা! তুই আংকেলকে বলার সময় আমি তোর পাশেই দাঁড়িয়ে থাকবো! তুই আমার হাত ধরে রাখিস হুম!

শায়লা : আচ্ছা? হাত ধরে রাখবে কেনো?..[ হেসে ] লাঠি দিয়ে পেঠানোর সময় হাত ধরে পালানোর জন্য নাকি?..

জারিফা : আরে না গাধী! সাহস রাখার জন্যে!

শায়লা : ওওহ! তাই ভালো!

মার্জান : এতোক্ষন তো লাঠির ভয়ে বাবাকে ডাকছিলি,

জারিফা : আরে ওটা জোকস্ ছিলো! [ সবাই হেসে উঠে ]
________________________________

After Class, [ in varsity garden ]

মার্জান : বাহ বাহ বাহ! শীতের এই কিচিরমিচির পাখীর গানগুলো শুনলে না জাষ্ট ফিদা হয়ে যায়,

শায়লা : ইয়েস, ইয়ার ঐদিকটা দেখ কতোগুলো পাখি,

মার্জান : হ্যা তাই তো! [ বলেই হঠাৎ স্নেহার দিক চোখ পড়তেই দেখে স্নেহা এদিকওদিক উকি দিচ্ছে ]

মার্জান : [ স্নেহার মাথায় টুকা মেরে ] কাকে উকি দিচ্ছিস স্নেহা?..

জারিফা : কাকে আর দিবে?..আমাদের জিজাজিকে উকি দিচ্ছে আরকি!

স্নেহা : আচ্ছা আমি একটু পার্কিং এর দিকটা দেখে আসছি! তোরা এইদিকে থাকছিস তো?

মার্জান : হ্যা! হ্যা! আমরা এইদিকটাই আছি! তুই তোর কাজে লেগে পড়! [ চোখ মেরে ]

স্নেহা মুচকি হেসে চলে গেলো, পার্কিং এর দিক খুজে দেখলো, কিন্তু রাহুল নেই, হঠাৎ আবার চোখ পড়লো রাহুলের গাড়ীর দিক, [ ভাবছে ] তারমানে রাহুল ভার্সেটিতেই আছে, কিন্তু ফোন উঠাচ্ছে না কেনো?.. এদিকওদিক তাকাতে তাকাতে আবার গার্ডেনের দিকই ফিরে এলো,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে মনে মনে ] আরে! এরা আবার কই গেলো?… [ চারদিক উকি দিয়ে খুঁজতে লাগলো ] এইদিকটাই তো থাকার কথা ছিলো! পাখী দেখতে দেখতে তিনজনই উধাও হয়ে গেলো, এমন লাগছে যেনো সবার সাথে হাইড এন্ড সি্ক খেলছি!

[ ক্লাসের দিক এগিয়ে এসে দেখলো, কয়েকজন বসা আছে, কিন্তু তারা নেই ]

[ তিনতলায় উঠে হলরুমের সামনে আসতেই হঠাৎ পেছন থেকে কেউ মুখ চেপে ধরে ভেতরে ঢুকিয়ে নিলো ]

[ স্নেহা হাত ছুটিয়ে নিয়ে পেছন ফিরে জোড়ে একটি শাস ফেললো ]

স্নেহা : পাগল হয়েছেন আপনি?..ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম না আমি!.

[ রাহুল কিছু বললো না তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়েই আছে ]

স্নেহা : কি হলো! এভাবে তেডি স্মাইল দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো? [ বলেই অন্যপাশ ফিরে গিয়ে ] আমার সামনে বারবার তেডি স্মাইল দিবেন না!

রাহুল : [ স্নেহার দিক পা বাড়িয়ে ] কেনো?… [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ পা পিছিয়ে ] ব্যা..ব্যাস! এ..এমনিই!

রাহুল : [ আবারো পা বাড়িয়ে ] অও রিয়েলি?…

স্নেহা : [ পা পিছিয়ে ] হ্যাহ…রি..রিয়েলি!

রাহুল : [ স্নেহার একদম কাছে এসে দাঁড়িয়ে, কানের দিক মুখ এনে ] আই থট! ইউ ফিল সামথিং!

স্নেহা : কিক…কিসব আজেবাজে! বলছেন [ বলেই সরে যাচ্ছিলো, রাহুল আবারো টেনে একই জায়গায় দাড় করালো, স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : নিচে আমাকেই খুঁজছিলে?…

স্নেহা : হুম, ফোন দিচ্ছিলাম আপনার ফোন সুইচড অফ আসছিলো!

রাহুল : [ হেসে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে ] ব্যাটারি লো ছিলো তাই অফ হয়ে গেছে!

স্নেহা : ওহ!

[ মোবাইল পকেটে রেখে রাহুল একদৃষ্টিতেই তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক, না পলক ফেলছে না এন্টেনা নড়ছে ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে তাকিয়ে ] আরে কি দেখছেন এভাবে?…

রাহুল : পড়ছি! তোমার চোখে,

স্নেহা : কিক…কি পড়ছেন?…

রাহুল : এটাই! তুমি আমাকে কতোটা ভালোবাসো!

স্নেহা : তো কি পড়লেন?..কতোটা?..

রাহুল : কাউন্ট করছি, শেষ হচ্ছে না,

– আই থিংক শেষ করা যাবেও না… [ With tedi smile ]

[ স্নেহা হেসে চোখ নামিয়ে অন্যদিক তাকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : আরে?…

[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো আর রাহুল হুট করেই আলগে ধরে স্নেহাকে একটি হায়-বেঞ্চে বসিয়ে দিলো ]

স্নেহা : রাহুল! কি করছেন পড়ে যাবো তো!

রাহুল : পড়বানা আমি আছি! [ বলেই বেঞ্চের দু-পাশ হাত রেখে দাঁড়ালো, এবং আবারো তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে রইলো একপলকে, ]

স্নেহা : [ হেসে ] রাহুল!

রাহুল : পেট তো ভরিয়ে দিয়েছো! তাই এবার তাকিয়ে থেকে মনটাও ভরে নিচ্ছি!

স্নেহা : কি বলছেন আমি কিছুই বুঝছি না, আই থিংক পাগল হয়ে গেছেন!

রাহুল : দিমাগ দিয়ে নয় স্নেহা! মন দিয়ে ভেবে দেখো, বুঝতে পারবা!

স্নেহা : [ হেসে ] তাই?..

রাহুল : ইয়াহ!

[ স্নেহা রাহুলের গাল টেনে দিয়ে হাসতে থাকে ]

রাহুল : কামঅন স্নেহা! আমি ছোট বাচ্চা নয়, গাল টেনে দাও কেনো বলোতো? [ স্নেহা হেসে এবার দু-হাত দিয়েই দু-দিক থেকে গাল টেনে দিলো ]

রাহুল : ওকে! আন্ডারস্ট্যান্ড! তোমাকে নিষেধ করলেই ওটা রিপিট করবা!

– আচ্ছা! তুমি কালরাতে অনেক কেঁদেছিলে তাই না?.. [ স্নেহার হাতের উপর হাত রেখে ] আপসে্ট ছিলে অনেক আমার বিহেভিয়ারে,

– আসলে তখন ওসব শুনে এমন রাগ উঠছিলো না, তাই তোমার উপর ও অনেক রাগ দেখিয়ে ফেলেছি! আমার আসলে তোমার উপর রাগ দেখানো মোটেও উচিৎ হয়নি!

স্নেহা : [ রাহুলের মুখে হাত বুলিয়ে ] আপনার রাগ করা জায়েজ ছিলো রাহুল!

– [ হেসে ] আর আপনার রাগে কি?..দু-মিনিট রাগ দেখাচ্ছিলেন তো আবার দু-মিনিট পর চোখ মুছে দিচ্ছিলেন!

রাহুল : [ স্নেহার কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে ] ব্যাস! তোমার উপর রেগে থাকতে পারিনা,

[ হঠাৎ পাশ থেকে দরজা টুকা দেওয়ার শব্দ এলো, ফিরে তাকাতেই দেখে স্নেহার ফ্রেন্ডসরা, শুরশুর করে সবাই ঢুকে পড়লো ভেতরে ]

রাহুল : আরে! তোমাদের না আইসক্রিম খেতে পাঠিয়েছিলাম, তোমরা এইখানে কি করছো!

জারিফা : আইসক্রিম তো অনেক খেয়েফেলেছি জিজু, এবার আমাদের যাওয়ার পালা,

রাহুল : অহ! ওকে যাও বাই! অল দ্যা বেষ্ট!

জারিফা : বাইইই! জিজু! চল স্নেহা, [ স্নেহা নেমে দাঁড়ালো ]

রাহুল : আরে ও কেনো!

জারিফা : কারণ আমাদের ওকে দরকার,

রাহুল : আচ্ছা কিসের জন্য?..

জারিফা : ওহো জিজু সব কথা কি বলা যায়?…কিছু কথা সিক্রেট থাক, [ ফিসফিসিয়ে ] যেমন আপনাদের সিক্রেট রোমান্স আছে হুম হুম!

রাহুল : আচ্ছা?..তো সিক্রেট রাখার দরকার কি সবার সামনে একটু দেখিয়ে দি [ বলেই জারিফার দিক পা বাড়াতে লাগলো ]

জারিফা : আ..আমিতো স্নে..স্নেহার কথা বললাম…

রাহুল : রোমান্স করতে শুধু স্নেহাকে কেনো লাগবে এতোগুলো শালী থাকতে,[ with tedi smile ]

জারিফা : ছিঃইইইই….[ বলেই রাহুল থেকে সরে স্নেহার পাশে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো, বাকিরা হাসতে লাগলো ]

হঠাৎ, হলে! আসিফের এন্ট্রি, আসিফকে দেখার সাথে সাথেই মার্জান চেহেরার হাসি উড়িয়ে দিয়ে নাক ফুলিয়ে, আড়চোখে তাকিয়ে থাকে,
আসিফ ও একটু তাকিয়ে, হেসে আবার রাহুলের দিক তাকিয়ে ফেলে,

আসিফ : আরে বাহ! সবাই দেখছি এইখানে,

রাহুল : তুই কোথায় ছিলি?..তোকে খুঁজছিলাম!

আসিফ : আমার কথা ছাড় তোর ফোন সুইচড অফ কেনো?…

রাহুল : ওহ ইয়াহ! এক্সুলি ব্যাটারি লো তাই!

আসিফ : [ মোবাইল এগিয়ে দিয়ে ] ওকে! দাদী কল দিয়েছে, তোকে এক্ষুনি যেতে বললো! কি যেনো ইম্পর্টেন্ট কথা আছে নাকি! [ রাহুল ফোন এগিয়ে নিলো, আর আসিফ বেড়িয়ে যাওয়ার জন্য পাশমুড়তেই আবারো মার্জানের সাথে চোখাচোখি হলো, মার্জান মুখ ভেংগিয়ে দিলো, আসিফ ও আর পিছিয়ে কি, সে ও হেসে চোখটিপ মেরে চলে গেলো, মার্জান শকড হয়ে হা করে তাকিয়ে আছে, আর মনে মনে ইচ্ছামতো গালি দিতে লাগলো ]

জারিফা : সো্ জিজাজি, বাইই! আমাদের লেইট হচ্ছে,

রাহুল : এতো তাড়াহুড়ো করছো কেনো? ওয়েট,

জারিফা : সিক্রেট কথা, পড়ে বলিয়েন এখন আমাদের যেতে হবে, [ বলেই কিটকিটিয়ে হেসে স্নেহার হাত ধরে টেনে নিয়ে বেড়িয়ে গেলো ]

রাহুল : আরে?…

[ চেঁচিয়ে উঠলে ও কেউ আর শুনলো না চলে গেলো, জোড়ে একটি শাস ফেলে বেঞ্চে বসে পড়লো কি আর করার, দাদীকে কল দিতে যাবে ঐ টাইমেই দেখে হঠাৎ আবার স্নেহা দৌড়ে ভেতরে এগিয়ে এলো, স্নেহাকে দেখে রাহুল ও অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো ]

স্নেহা : [ হাপিয়ে উঠে ] আব…আপনাকে বাই বলিনি,

[ Rahul give a tedi smile ]

স্নেহা : এক্সুলি আমরা মামার বাসায় যাচ্ছিলাম, তাই তাড়াহুড়ো করছি,

রাহুল : ওহ ওকেই! সো্ তাহলে চলো আমি পৌছেদি!

স্নেহা : আরে না, আমরা যেতে পারবো! আপনি বাসায় যান, দাদীর সাথে দেখা করেন উনি হয়তো অপেক্ষা করছে,

রাহুল : দ্যাটস্ ওকে স্নেহা! সমস্যা নেই! তোমরা একা যাবা নাকি! চলো আমি ড্রপ করেদি!

স্নেহা : [ রাহুলের মুখে হাত দিয়ে ] ওকে রাহুল রিলেক্স! বললাম তো যেতে পারবো! আর আমরা একাও নয় সবাই সাথে আছি তাতে ভয় কিসের!

– ওকে বাইই! ওরা ওয়েট করছে!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু দিয়ে ] বাই! টেক কেয়ার!

স্নেহা : বাই! [ বলেই বেড়িয়ে গেলো ]
________________________________

সবাই মিলে একসাথেই গেলো স্নেহার মামার বাসায়,দরজার ধারেই দাঁড়িয়ে আছে একত্রে,

জারিফা : বাপড়ে,এখনো ভেতরেই ঢুকলাম না বুকটা এখন থেকেই কাঁপছে,

মার্জান : কেনো ওটাতো জোকস্ ছিলো তাই না! জারিফা?…

জারিফা : হিহি! হ্যা! এটাও জোকস্ ছিলো! [ সবাই হেসে উঠলো, মার্জান বেল বাজিয়ে দিতেই, স্নেহার মামী এসে দরজা খুললো, সবাই সালাম করে ভেতরে ঢুকলো, স্নেহার মা ও মহা খুশি সবাইকে একত্রে দেখে, হঠাৎ স্নেহার বাবাকে দেখে সবাই ভয়ে থমকে গেলো, কিনা চেহেরা বানিয়ে রাখলো মনে হচ্ছে এক্ষুণি সবকটাকে গিলে খেয়ে ফেলবে! সবাই সালাম করে একপাশ দাঁড়িয়ে পড়লো, ]

স্নেহার বাবা : ভালো করেছো তোমরা সবাই এসে, অনেকদিন পরই দেখা হয়েছে! এসো ভেতরে বসো! [ স্নেহা তাদের নিয়ে ভেতরে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ ]

স্নেহার বাবা : স্নেহা! তুই আমার সাথে একটু আয়, তোরই অপেক্ষা করছিলাম! কথা ছিলো তোর সাথে, অনেক জরুরী,

স্নেহার মা : আ..আরে ওসব কথা পড়ে হবে, ওরা ভার্সেটি থেকে এসেছে আগে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়েনিক, তাই না! এসো তোমরা ভেতরে এসো!

জারিফা : [ শায়লার কানে ফিসফিসিয়ে ] স্নেহার বাবার চেহেরা দেখে মনে হচ্ছে জীবনেও হাসতে শিখেনি!

শায়লা : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] চুপ করবি তুই?..

জারিফা : ওখে ওখে!

ভেতরের রুমে বসে স্নেহার মা এবং মামীর সাথে আড্ডা জমিয়ে দিলো স্নেহার ফ্রেন্ডসরা, আর স্নেহার মন ঘাবড়াতে লাগলো কিভাবে বলবে তার বাবাকে রাহুলের কথা….

সবাই দুপুরের লাঞ্চ করে এক রুমে বসে আছে, জারিফা পর্দার আড়াল থেকে উকি মেরে মেরে দেখছে স্নেহার বাবা কি করছে,

রাশু : [ এগিয়ে এসে ] চোরের মতো কি উকি দিচ্ছো?..

জারিফা : [ হেসে ] হিহি! কক..কই কিছুই তো না.. ও হ্যা! তোকে দেখছিলাম, কত্তো বড় হয়ে গেছিস তুই রাশু, কি হ্যান্ডসাম লাগছেড়ে তোকে!

রাশু : [ জারিফাকে চিমটি কেটে ] ওকে! নজর দিবানা [ বলেই বেড়িয়ে গেলো ]

জারিফা : বাপড়ে! আমাদের সময় কেউ তারিফ করলে আমরা খুশীতে লাফিয়ে উঠতাম আর এখনের বাচ্চারা চিমটি দিয়ে নজর কাটছে!

শায়লা : [ হেসে] কিন্তু জারিফা! তুই চোরের মতো কি উকি দিচ্ছিলি বলতো?

জারিফা : আরে আংকেলকে দেখছিলাম! ভোর কুচকে কি ধ্যান দিয়ে পেপার পড়ছে,

মার্জান : স্নেহা! তুই আবার বসে আছিস কেনো?…যা গিয়ে আংকেলকে বল! এখন তো উনি ফ্রি আছে!

স্নেহা : বাবা বলেছে কি যেনো ইম্পর্টেন্ট কথা বলবে! ঐটা নিয়ে ভয় হচ্ছে, নাজানি আবার নতুন কি বলে বসে,

জারিফা : যদি এবার বিয়ের ডেট ফিক্সড করে বলে এই তারিখ তোর বিয়ে!

শায়লা : তোর মুখে অশুভ কথা ছাড়া আর কোনো কথা নেই!

মার্জান : উফফ! স্নেহা! দেখ আংকেল ইম্পর্টেন্ট কিছু কি বলবে না বলবে এসব ভেবে টাইম ওয়েষ্ট করে লাভ নেই! অনি কিছু বলার আগে তুই তোরটা বলেদে! যা হবার হবে,

শায়লা : হ্যা! স্নেহা বলতে তো হবেই তাই না!

স্নেহা : আচ্ছা ঠিকাছে! চল,

জারিফা : ওহ মাই গড! আমরা ও?..
[ স্নেহা মুখ গোমড়া করে তাকালো ]

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] জারিফা!

জারিফা : ওকে ওকে!

মার্জান : [ স্নেহার দিক ফিরে ] আরে মন খারাপ করছিস কেনো স্নেহা?..আমরা এসেছিই তো তোর হেল্প করতে! চল আমরা ও সাথে যাবো!
[ বলেই স্নেহার হাত ধরে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো, বাকিরা ও পিছে পিছে এগিয়ে গেলো, সবাই ড্রইংরুমে গিয়ে লাইন হয়ে দাঁড়ালো ]

স্নেহার বাবা : [ অবাক হয়ে ] আরে দাড়িয়ে আছো কেনো তোমরা ? বসো!

মার্জান : না আংকেল! ইটস্ ওকে! আ..আস আসলে..আংকেল স্নেহা আপনাকে কিছু বলতে চাই!

স্নেহার বাবা : হ্যা! বল… [ বুকটা ধুপধুপ করছে স্নেহার, ভয়ে মাথা নিচু করে আছে ]

মার্জান : [ স্নেহার হাতে চিমটিয়ে ফিসফিস করে ] বল স্নেহা! [ চুপ করে আছে স্নেহা! তাও, বার ঢোগ গিলতে লাগলো ]

জারিফা : [ শায়লার কানে ] দোয়া পড় শায়লা, কিছু একটা হতে পারে,

শায়লা : আরে এমন ভাবছিস কেনো?..এটাও তো হতে পারে! আংকেল ভালো ভালোই সব মেনে নিয়েছে!

জারিফা : হ্যা! এটাও ঠিক! [ হঠাৎ পেছন থেকে স্নেহার মা এবং মামী ও এগিয়ে এলো ]

স্নেহার মা : আরে তোমরা সবাই এইখানে! তবে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?..বসো!

মার্জান : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] স্নেহা! বলনা!

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] হ্যা! আ..এক্সুলি..বা..বাবা.. আ..আমিনা এই বিব..বিয়ে করতে পারবো না..

[ স্নেহার বাবা কোনো রিয়েক্ট করলো না শুধু তাকিয়েই রইলো স্নেহার দিক ]

স্নেহার মা : [ স্নেহার পাশে এসে ] কিন্তু কেনো স্নেহা?…যেটা আমরা শুনছি কোনো ঐটা সত্যি নয়তো!

স্নেহা : মা..আম..আমি…[ বলতেই চোখ থেকে গড় গড় করে পানি ঝড়তে লাগলো ] রার…রাহুলকে…[ বলেই চুপ হয়ে গেলো ]

মার্জান : [ চোখ বন্ধ করে একশাসে বলে উঠে ] আসলে স্নেহা রাহুলকে ভালোবাসে, [ সবাই মার্জানের দিক তাকালো শকড হয়ে, স্নেহা ভয়ে মাথা নিচু করে রইলো ]

– রার..রাহুল ও.. ভাব..ভালোবাসে স্নেহাকে!

জারিফা : [ মনে মনে কাদো কন্ঠে ] হ্যা! আল্লাহ উঠাই নাও এই মুহূর্তেই উঠাই নাও!

স্নেহার বাবা : [ স্নেহার কাছে এসে দাঁড়িয়ে ] একমিনিট! [ বলেই ভেতরের রুমে গিয়ে একটা প্যাকেট হাতে নিয়ে এগিয়ে এলো, সবাই কৌতুহল ভাবে তাকিয়ে রইলো ]

– [ স্নেহার কাছে প্যাকেটটা এগিয়ে দিয়ে ] যার কথা বলছিস কোনো এই ছেলেটা নয়তো! [ স্নেহা অবাক হয়ে কাপা হাতে প্যাকেটটা এগিয়ে নিলো, প্যাকেট খোলার সাথে সাথেই কিছু ছবি চোখে পড়লো , চমকে গেলো স্নেহা! মাথার উপর যেনো বাজ ভেংগে পড়েছে

স্নেহা : [মনে মনে ভাবছে ] এটা কিভাবে সম্ভব? এসব, বাবার কাছে কিভাবে?

[ হাত আরো জোড়ে কাপতে লাগলো স্নেহার! কিছু বলছে না দেখে মার্জান স্নেহা থেকে কেড়ে নিলো ছবি গুলো, সাথেসাথে সে ও অবাক হলো, রাহুল আর নেহার এমন ছবি সে কল্পণা ও করতে পারছে না, এক এক করে সবাই ছবি গুলো দেখতে লাগলো ]

স্নেহা ওভাবেই শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,মার্জান ও আর কিছু বলে উঠবে কিন্তু সে নিজেই ভাষায় হারিয়ে ফেলেছে ছবি গুলো দেখে!

স্নেহার বাবা : লোকে বলতো আমি বিশাস করতাম না, কারণ আমার বিশাস তো তুই ছিলি! [ কেঁদে চলছে স্নেহা ]

– কিন্তু তোর যদি কাউকে পছন্দ হয়ে থাকে তাতে আমার ও কোনো আপত্তি নেই! তবে সেটা ভদ্র ফ্যামিলির ছেলে হতে হবে! এমন অশ্লীল আচরণতার ছেলে নয়,

– আমি জেনে শুনে কখনো এমন অশালীন ছেলের কাছে তোকে ঠেলে দিতে পারিনা,

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] বাব..বাবা ছ..ছবি গুলো আমি দেখেছি অ..অনেক আগে!

[ স্নেহার ফ্রেন্ডসরা ও অবাক হয়ে তাকালো স্নেহার দিক, স্নেহা অনেক আগে জেনেছে তবে এই ব্যপারে তাদের ও তো কিছু বললো না ]

স্নেহা : ছ..ছবি গুলো দেখে যেমন মনে হচ্ছে তেমন কিছুই না ওদের মাঝে,

স্নেহার বাবা : ব্যাস! স্নেহা আমি বাচ্চা না, আমি তোর বাবা,

– যার বাবা-মা একসাথে সংসার করতে পারেনি, সে আর তোকে নিয়ে কি সংসার করবে,

– আমি আর কিছু বলবো না, শুধু একটাই কথা বলবো! যদি আমাদের তোর বাবা-মা মনে করিস,আমাদের কাছে থাকতে চাস তাহলে ওকে ভুলে যা

– আর যদি তুই ওকে বিয়ে করতে চাস তাহলে করতে পারিস, আমি বাধা দেবো না, তবে এক্ষুনি ওর কাছে চলে যাবি, আর কক্ষনো আমাদের কাছে আসবি না! তোর চেহেরা আমাকে কখনো দেখাবি না, [ সবাই অবাক হলো স্নেহার বাবার কথায়, থমকে গেলো স্নেহা, কানে শুধু বাবার বলা কথা গুলোই বাজছে, চোখ থেকে ও ঝড়ছে না আর পানি, যেনো বরফ হয়ে জমে গেছে সব, ধুপ করেই মাঠিতে বসে পড়লো, ]

মার্জান : [ স্নেহাকে ধরে ] স্নেহা! রিলেক্স!

[ স্নেহার বাবা ও আর কিছু বললো না কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে সোজা ভেতরে চলে যাচ্ছিলো, তখনি, ]

স্নেহা : [ চোখ মুছে, চেঁচিয়ে ] ঠিকাছে বাবা! [ বাবা থেমে গেলো ]

স্নেহা : [ উঠে দাঁড়িয়ে ধীরেধীরে বাবার দিক এগিয়ে এসে ] ঠিকাছে! আমি…[ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ভুলে যাবো.. রাহুলকে! [ স্নেহার ফ্রেন্ডসরা শকড হলো স্নেহার কথায়, এক একজন একজনের দিক তাকাতে লাগলো ]

জারিফা : [ ফিসফিসিয়ে ] এটাতো সবচেয়ে বড় জোকস্ ছিলো! শায়লা,

– স্নেহা রাহুলকে ভুলবে!

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 36

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 36

writer-Jubaida Sobti

দুজনেই হাসছে মিটিমিটি করে…রাহুল স্নেহার ঘাড়ে মাথা রেখে নাক দিয়ে চুলের স্মেল নিচ্ছে…. [ জানালা দিয়ে বয়ে আসছে হালকা ঠান্ডা বাতাস, কিছুক্ষণ পর পর মুখের উপর এসে পড়ছে লাল-সাদা গাড়ীর ফ্লাস, সবকিছু মিলিয়ে ভালোই লাগছিলো রাহুলের ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত মুঠি বেধে ধরে ] স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : তুমি ঠিকাছো তো?… [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ একটু হেসে মাথা তুলে স্নেহার দিক ফিরে ] সব ঠিকঠাক?

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] হ্যা! স…সব ঠিকই তো আছে!

রাহুল : ইউ নো স্নেহা! ইউ হেভ ফোর স্মাইল!

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] মা..মানে?

রাহুল : মানে হচ্ছে! যখন তুমি খুব খুশি হও তখনের হাসিতে তোমার চোখে এক্সাইটমেন্ট থাকে, সেকেন্ড! যখন তুমি লজ্জা পেয়ে ব্লাশিং হয়ে হাসো! থার্ড যখন তুমি কষ্ট চেপে রেখে চোখের জল ফেলে হাসো, ফোর্থ যখন তুমি কোনো কথা লুকানোর চেষ্টায় মিথ্যে হাসির অভিনয় করো!

[ স্নেহা অবাক হয়ে এক পলকে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ আঙুল দিয়ে স্নেহার নাকে বাড়ি দিয়ে ] আই হোপ ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড স্নেহা!

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] হ্যা..! [ স্নেহার কান্ডে রাহুল হেসে সি্টে হেলান দিয়ে বসলো, তা দেখে স্নেহা ও হেসে রাহুলকে জড়িয়ে বুকে মাথা রাখলো, রাহুল ও এক হাতে টাইট করে জড়িয়ে ধরে রাখলো ]

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] কতো ভালো হতো না রাহুল! যদি আমরা সারাজীবনই এভাবে কাটিয়ে দিতে পারতাম!

– আমি,আপনি আর আমাদের ছোট্ট দুনিয়াটা!

রাহুল : বাট সবাইতো বড় দুনিয়াটাই চাই! তুমি ছোট দুনিয়াটা কেনো চাইছো?…

স্নেহা : বড় দুনিয়াময় তো অনেক মানুষ,অনেক ধরনের,তাদের অনেক বাহানা,অনেক ধারণা,অনেক কষ্ট,অনেক বেদনা,

– [ একটু হেসে চোখ তুলে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আর আমাদের ছোট দুনিয়াতে তো এসব কিছুই হবে না কারণ এই দুনিয়ায় শুধু আমি আর আপনি,

রাহুল : হুমম! হঠাৎ এমন কেনো বলছো?..

স্নেহা : ব্যাস! এমনিতেই!

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : [ বুঝতে পারলো রাহুল তার কাছ থেকে আবারো ঐ প্রশ্নই জিজ্ঞেস করার চেষ্টা করবে ]

– আব…রাহুল! আমার না অনেক ক্ষিধে পেয়েছে!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তুমি কিছু খাওনি?

স্নেহা : হ্যা! খে…খেয়েছি না…অনেক কিছুই তো খেয়েছি! তাত…তারপর ও কেনো যেনো ক্ষিধে পেয়ে গেলো…

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ] যখন মিথ্যে বলতে জানো না তখন বারবার মিথ্যে বলার প্রয়োজন কি বলোতো?… [ চুপ করে রইলো স্নেহা ]

[ রাহুল কিছুক্ষণ চুপ করে অন্যপাশ ফিরে থাকে, স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে মুখ গোমড়া করে আছে ]

রাহুল : ওকে সরি!

স্নেহা : স…সরি কেনো!

রাহুল : রাগ দেখিয়েছি বলে!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] দু-মিনিটই তো হলো না রাগলেন, সাথে সাথে সরি?

রাহুল : আমি সহজে কাউকে সরি বলিনা স্নেহা! একবার রাগ উঠলে তার চেহেরা দেখতে ও আমার পছন্দ না,

– যদি ও সেটা আমার বাবা হোক! আই ডোন্ট কেয়ার!

– [ স্নেহার কাছে মুখ এনে ] বাট! রাগ এর চেয়ে ও আমার ঐ মোমেন্টটা খুব কষ্ট হয় যখন তোমার ফেইস্ সেড থাকে,

– ইউ ডোন্ট নো স্নেহা! তুমি আমার জন্য কতোটা ইম্পোরটেন্ট! তুমি আমার লাইফে আসার পর আবার নতুন করে সপ্ন দেখতে শিখেছি স্নেহা!

[ স্নেহার চোখে জল এসে জমে যাচ্ছে, দু-হাত দিয়ে রাহুলের গাল ছুয়ে দিলো,]

রাহুল : চলো উঠো, সামনে বসো!

স্নেহা : সামনে কেনো?…

রাহুল : রেষ্টুরেন্ট যাবো!

স্নেহা : রে…রেষ্টুরেন্ট না গেলে হয় না…এইখানেই খায় গাড়ীতে!

রাহুল : বাট স্নেহা! এইখানে ভালো ফুড স্টল থাকবে বলে আমার মনে হচ্ছে না!

স্নেহা : [ রাহুলের হাত জড়িয়ে ] তা..তাহলে বাদ দেন! আমরা এইখানেই বসে থাকি! এমনিতেও আমার ক্ষিধে চলে গেছে!

রাহুল : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] স্টপ ইট ওকে ?…[ স্নেহার হাত ছুটিয়ে দরজা খুলে ] তুমি গাড়ীতে বসো আমি আসছি!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : [ বেড়িয়ে দরজা বন্ধ করে চলে যাচ্ছে হঠাৎ আবারো জানালার দিক এগিয়ে এসে ] Listen! গাড়ী থেকে বের হবা না!

স্নেহা : [ হেসে ] হলেও কি?..আমি তো একাই এসেছিলাম!

রাহুল : অনেক ভালো করেছো একা এসে, তাই না?.. [ চুপ হয়ে গেলো স্নেহা ]

স্নেহা : আচ্ছা! আপনার আসতে লেইট হলে?…

রাহুল : লেইট হবে না আমার আসতে,

স্নেহা : আচ্ছা!

[ রাহুল আর কিছু না বলে সোজা পকেট থেকে চাবি বের করে গাড়ি লক করে দেই ]

স্নেহা : আরে! আপনি লক করে দিলেন কেনো ?..

রাহুল : আমি সেইম মিস্টেক দু-বার করতে চাই না! [ বলেই চাবি পকেটে ঢুকিয়ে চলে গেলো ]

স্নেহা মিটিমিটি হাসছে আর ব্লাশিং হচ্ছে, চোখ দুটি জানালা দিয়ে তাকিয়ে রইলো বাহিরের দিক, জানালা দিয়ে মাথা বের করে বাতাস উপভোগ করছে, আর মনে মনে ভাবছে, রাহুল তাকে কতো ভালোবাসে, সত্যিই সে অনেক ভাগ্যবান যে সে রাহুলের মতোই কাউকে পেয়েছে তার জীবনে, ভাবছে সেই দিন গুলোর কথা আর হাসছে, যখন সে রাহুলের কাছ থেকে দূরে দূরে পালানোর চেষ্টা করতো, প্রথম যেদিন রাতে স্টেশনে ধাক্ষা খেয়েছিলো, পরদিন আবার ভার্সেটিতে, লাইব্রেরীতে,

তারপর, র্যাগিং এর সময় হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সিগারেটটা ফেলে দেওয়া,জোড় করে তার সাথে ডান্স করানো, তার সামনে শাড়ী খুলে যাওয়া, জোড় করে ব্রেকফাস্ট করানো, হাত ধরে মার্মিড হাউজ ঘুরে দেখানো, মার্মিড ড্রেস পড়িয়ে ডান্স করানো, একসাথে হরোর মুভি দেখার সময় ভয় পাওয়াতে ওর বুকে লুকিয়ে রাখানো, হস্পিটাল থেকে নিজের কোলে করে গাড়ীতে উঠানো, এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ কিছুক্ষণ পর রাহুল এসে হুটহাট করে দরজা খুলে প্যাকেট হাতে নিয়ে ভেতরে ঢুকে বসলো,

রাহুল : বোরিং হচ্ছিলে একা?..

স্নেহা : আমাদের এতো সুন্দর সুন্দর মোমেন্ট থাকতে বোরিং কিভাবে হই?..

রাহুল : আচ্ছা [ With tedi smile, স্নেহা ব্লাশিং হয়ে সোজা তাকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : ওকে নাও, কিছু পাচ্ছিলাম না এগুলোই পেলাম! খেয়ে নাও!

স্নেহা : সেন্ডুইচ! ওকে এটাই ইনাফ! [ বলেই খুলে নিয়ে এক কামড় খেলো ] উমম! টেস্টি! [ বলেই রাহুলের মুখের দিক এগিয়ে দিলো ]

রাহুল : [ মুখ সরিয়ে ] এক্সকিউজ মি! দুনোটাই তুমি ফিনিশ করবা!

স্নেহা : খাবার কে না করতে নেই!

রাহুল : [ হেসে ] ফরগিভ মি! প্লিজ! আই ডোন্ট লাইক সেন্ডুইচ!

স্নেহা : আচ্ছা?..তাহলে আপনার পছন্দের কিছু নিয়ে আসতেন!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আমারতো ক্ষিধে লাগেনি স্নেহা!

স্নেহা : কিন্তু অল্প একটু খেলে কি হবে!

রাহুল : তুমি আগে থেকেই একটু বেশি জেদ করো না?..

স্নেহা : [ মুখ ভেংগিয়ে ] ওকেই [ বলেই খেতে লাগলো, রাহুল হাসতে লাগলো ]

স্নেহা : [ মনেমনে ] কেমনি না খায় মিস্টার তেডি স্মাইল! আমিও দেখি!

– [ মুচকি হেসে ] আচ্ছা আপনার কি খেতে বেশি পছন্দ?…

রাহুল : বললে রাগবা না তো?…

স্নেহা : উমহুম! রাগবো কেনো আজিব?..বলেন!

রাহুল : সিগারেট! [ বলতেই স্নেহা কেশে উঠে ]
– ইউ ওকে স্নেহা?..[ বলেই পানির বোতোলটা খুলে এগিয়ে দেই ]

স্নেহা : সিগারেট?.. আপনার পছন্দের খাবার?

– দেখেন রাহুল! আপনি প্রমিস করেছেন কিন্তু আমাকে!

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! আমি খাচ্ছি নাকি?..তুমি জিজ্ঞেস করলে তাই আমি বললাম!

স্নেহা : কিন্তু এটা কোনো খাবার হলো?.. ফুড জাতীয় এইধরনের কিছু বলেন!

রাহুল : স্পেশালি তেমন কিছুই আমার ভালো লাগেনা, তবে মায়ের হাতের খাবার হলে তখন ওটা অনেক পছন্দের হয়ে যায়!

– [ একটু হেসে ] আর তুমি সুগার দিয়ে স্পাইসি্ ডিশ যেটা রান্না করেছিলে আমি তো ওটার ও বিগ ফ্যান হয়ে গেছি!

স্নেহা : [ হেসে উঠে রাহুলের গায়ে একটা চড় মেরে ] ঐদিন আপনার কারণেই আমি অর্ধেক কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম ওকে?

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] আচ্ছা?…কি এমন করেছিলাম আমি?..

স্নেহা : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] আব..কিক…কিছুনা! [ রাহুল হেসে জানালার পাশ ফিরে গেলো ]

স্নেহা : আচ্ছা রাহুল!

রাহুল : হুম! [ বলে স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে তার মুখের মধ্যে মেউনেইস লেগে আছে, রাহুল তাকাতেই স্নেহা জিহ্বা দিয়ে তা চেটে নিচ্ছে, আবার কিছুক্ষণ পর পর আড়চোখে রাহুলের দিক ও তাকাচ্ছে, রাহুল বুঝতে পেরে হেসে আবার জানালার পাশ ফিরে যায় ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : [ ফিরে তাকিয়ে ] হুম!

স্নেহা : [ তার মুখ রাহুলের সামনে এনে ] দেখেন তো আর লেগে আছে কিনা ? উফফ!…[ বলেই বিরক্তিকর চেহেরা বানিয়ে ফেললো, এমন ভাব করছে যেন মেউনেইস গুলো খাওয়ার সময়ই লেগে গিয়েছে, রাহুল বুঝতে পেরে একটু হেসে স্নেহার ঠোটের দিক তাকিয়ে আবার স্নেহার দিক তাকাতেই স্নেহা চোখ টিপ মাড়লো ] [ Rahul give e tedi smile ]

স্নেহা ভ্রু নেড়ে কপালে তুলে ইশারায় জিজ্ঞেস করলো, কি হলো?..

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] এবার..সত্যিই ক্ষিধে পেয়ে গেছে!

স্নেহা আবারো ভ্রু নেড়ে ইশারা করলো, তাইই?… মাথা নাড়িয়ে ইশারা করলো ওকে!

সেন্ডুইচটা তুলে ধরে আংগুল নাড়িয়ে কাছে আসতে ইশারা করলো রাহুলকে!
রাহুল কাছে আসতেই হেসে ঠোটের সামনে সেন্ডুইচটা দিয়ে দিলো!

রাহুল : দিস্ ইস্ নট ফেয়ার স্নেহা!

স্নেহা : আচ্ছা?.. [ বলেই রাহুলের নাকের উপর সেন্ডুইচটা লাগিয়ে দেই, নাকে মেউনেইস লেগে যাওয়ায় স্নেহা কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ]

রাহুল : ইয়াহ! স্মাইল প্লিজ! [ বলেই স্নেহার ওড়নার আচল টেনে নাক থেকে মেউনেইস গুলো মুছে নেই ]

স্নেহা : [ হেসে ] মুছলেন কেনো দারুণই তো লাগছিলো! একদম টম এন্ড জেরির টমের মতো দেখাচ্ছিলো!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] বাট স্নেহা! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ মুখ ভেংগিয়ে সিটে হেলান দিয়ে বসে, সোজা তাকিয়ে ] তা, মিলবে না!

[ রাহুল কাছে এসে স্নেহার পেট থেকে স্লাইড করে ধীরেধীরে কোমোড়ের উপর হাত রাখলো, স্নেহা কেপে উঠলো, হার্টবিট বেড়ে চলছে ,আড়চোখে রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : [ স্নেহার কানে ] তাহলে মুছে ফেলছো না কেনো?..

স্নেহা জোড়ে একটি শাস ফেলে ধীরেধীরে রাহুলের দিক তাকিয়ে, তার জ্যাকেটের কলার ধরে একটানে তার মুখের একদম কাছে নিয়ে আনলো,রাহুলের ছুড়ে ফেলা প্রতিটা নিশাসই উপভোগ করছে স্নেহা,

স্নেহা : বিকজ! আই থট! কেউ আমাকে আদর করে মুছে দিবে!

একটু হেসে মুখটা এগিয়ে স্নেহার ঠোটে কিস করলো রাহুল! স্নেহা চোখ বন্ধ করে রাহুলের জ্যাকেটটা শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রাখলো, ধীরেধীরে স্নেহার পুরো ঠোটটাই তার ঠোট দিয়ে দখল করে নিলো রাহুল!

কিছুক্ষণ পরই, কোনো এক গাড়ীর হর্ণে স্নেহা চমকে উঠলো, রাহুলকে ধাক্ষা দিয়ে সরিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিলো স্নেহা!
রাহুল হেসে জোড়ে একটি শাস ফেলে সিটে হেলান দিয়ে বসলো,চোখটাও স্থির হয়ে বন্ধ করে রাখলো!

স্নেহা পাশফিরে তাকালো রাহুলের দিক,তাকিয়েই রইলো, রাহুল বুঝতে পেরে মুচকি হাসলো, স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে হেসে উঠলো,

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে, স্নেহার চুল গুলো স্লাইড করে কানে গুজে দিয়ে ] রিয়েলি স্নেহা! আসলেই অনেক টেষ্টি ছিলো! [ স্নেহা আড়চোখে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : আ..আই মিন মেউনেইস্! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ হেসে সোজা তাকিয়ে ] আই থিংক এখন আমাদের যাওয়া উচিৎ!

রাহুল : [ হুট করেই স্নেহার কাছে মুখ এনে ] তাতো যাবে, তবে আরেকটু টেস্ট নিলে বোধ হয়..

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের মুখ সরিয়ে দিয়ে ] রাহুলল!

রাহুল : ওখেই! [ বলেই দরজা খুলে নেমে দাঁড়িয়ে ] এক্সকিউজ মি! মেম আপনি ও নেমে কষ্ট করে সামনের সিটে্ বসবেন?…নাকি আমি কোলে করে বসিয়ে দিবো?…

স্নেহা : থেংক্স বাট নো নিড! [ বলেই নেমে সামনের সিটে গিয়ে বসলো,রাহুল ও হেসে ড্রাইভিং সিটে এসে বসে গাড়ী স্টার্ট দিলো ]

স্নেহা : আমি পেছনে বসলেও চলতো! আমিতো আর ড্রাইভিং করছি না!

রাহুল : পেছনে বসলে আমি দেখবো কিভাবে?..

স্নেহা : ড্রাইভ করার সময় ড্রাইভিং এ ফোকাস্ করুণ! আশেপাশের মানুষের দিক না!

রাহুল : তুমি সাথে থাকলে তো চোখ শুধু তোমাকেই ফোকাস্ করে!

স্নেহা : আপনার সাথে আর কথায় পারা যাবে না! [ বলেই হেসে জানালার পাশ ফিরে যায়, রাহুল ও আর কিছু বললো না চুপ করে ড্রাইভিং করতে লাগলো ]

বাড়ী এসে পৌছালো, রাহুল গাড়ী থামিয়ে স্নেহার দিক তাকালো,

স্নেহা : [ একটু হেসে ] থেংক্স রাহুল!

রাহুল : কেনো?..

স্নেহা : ব্যাস এমনিই!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] এমনিই?..

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] বাই! [ বলেই দরজা খুলতে লাগলো, হঠাৎ আবার রাহুলের দিক তাকিয়ে ] ও..হ্যা! গুড নাইট! [ বলেই আবার দরজা খুলতে লাগলো, কিন্তু দরজা খুলছে না ]

স্নেহা : রাহুল! আই থিংক ডোর লক করা!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আমিই করেছি!

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] কিন্তু কেনো?..

রাহুল : আমার কিছু জিজ্ঞেস করার ছিলো তোমার কাছ থেকে!

স্নেহা : হ্যা! বলেন?..

রাহুল : ব্রীজের ধারে আপসে্ট হয়ে একা একা কেনো দাঁড়িয়ে ছিলে?.. তখন তুমি কেনো কাঁদছিলে?..আমি এটার জবাব পাইনি এখনো স্নেহা!

[ বুকটা ধুপ করে উঠলো স্নেহার, এতো সময় পেড়িয়ে এসে রাহুল হঠাৎ করে আবার এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবে ভাবেনি]

রাহুল : স্নেহা! আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি! [ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে আবারো দরজাটা খোলার চেষ্টা করলো ]

– [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! আমি যতোবারই এই প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করছি! তুমি এভোইড করে যাচ্ছো!

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ] রার..রাহুল! লক খুলেন এমনিতেও অনেক লেইট হয়ে গেছে!

রাহুল : [ দাত কিলিয়ে ] ডোর ততোক্ষণ ওপেন হবে না যতোক্ষণ না তুমি আমাকে সত্যিটা বলছো!

– আমি আগেও বলেছি স্নেহা! এখনো বলছি ইউ কান্ট লাই টু মি! আমাকে মিথ্যা বলার চেষ্টা করোনা!

স্নেহা : কি হয়ে গেছে আপনার? এতোক্ষণ তো ঠিকই ছিলেন!

রাহুল : ইয়াহ! তোমার চেহেরার খুশিটা দেখতে চাইছিলাম আমি! তুমি হাসছিলা আমার সাথে..খুশিতে ছিলা..তবে তোমার এই হাসিখুশি চেহেরার পেছনে কোনো এক ভয় তোমাকে তাড়া করছিলো!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] তেমন কিছুই না রাহুল…! সবই তো ঠিক আছে! প্লিজ ডো..ডোর ওপেন করেন!

রাহুলের রাগ বাড়তেই চলছে, স্নেহা এখনো সেই একই কথা বলে যাচ্ছে, রাগান্বিত ভাবে গাড়ীরর দরজা খুলে নেমে ধুপ করেই বন্ধ করে দিলো,

ভয়ে কেপে উঠলো স্নেহা, তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক, তার দিকই এগিয়ে আসছে, স্নেহার পাশে এসে দরজাটা খুলে এক টানে নামিয়ে গাড়ীর সাথে হেলান দিয়ে দাড় করালো,

রাহুল : একটু আগে যা বলেছো, তেমন কিছুই না, ঐ সেন্টেন্সটা আমার চোখের দিক তাকিয়ে বলো!

স্নেহা : কি..করছেন রাহুল কেউ দেখবে তো!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] দেখুক! আই ডোন্ট কেয়ার!

[ স্নেহা চমকে উঠে ভীতু হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে, রাগ কন্ট্রোল করে ] প্লিজ স্নেহা! ইউ লাভ মি! না?.. [ স্নেহা মাথা নাড়ালো হুম! ]

– সো্ প্লিজ টেল মি!

[ কেঁদে দিলো স্নেহা নিচের দিক তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : স্নেহা! তুমি আমাকে কিছু না বললে আমি কিভাবে বুঝবো তোমার প্রবলেমটা কি?…

– Listen! প্লিজ! টেল মি!

[ গড় গড় করে চোখ বেয়ে পানি পড়ছে স্নেহার, ফুফাতে লাগলো, কেঁদে কেঁদেই রাহুলকে সব বলে চলছে ]

স্নেহা : আমি ওকে বলেছি! যাতে ও বব..বলে দেই ও..ওর আমাকে পছন্দ না!

[ বলেই মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকালো, চোখ লাল হয়ে আছে রাহুলের, যেনো আগুন জলছে, ধীরেধীরে রাহুলের হাতের দিক তাকাতেই দেখে রাহুলের হাত মুঠি বেধে রেখেছে, এবার আর স্নেহার আর বুঝতে বাকি নেই, রাহুল অনেক রেগে আছে ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত কাছে টেনে নিয়ে মুঠি ছুটিয়ে তার হাতে শক্ত করে ধরে ] রাহুল!

রাহুল : [ রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে ] আমাকে এসব আগেই বলা উচিৎ ছিলো স্নেহা!

স্নেহা : রাহুল! আমি…

রাহুল : [ দাত কিলিয়ে ] তুমি ডান্স ক্লাস যাচ্ছিলে তখন আমি বারবার বলেছিলাম! ফাইনেনশিলাল কোনো প্রবলেম হলে আমাকে বলো!

– কিন্তু আমাকে কিছুই শেয়ার করোনি! আমাকে এসবের ডিসার্ব মনে করোনি তুমি স্নেহা!

স্নেহা : এমন কিছুই না রাহুল! আমিতো ভেবেছিলাম স..সব ঠিকই হয়ে যাবে,

রাহুল : এটাই ভেবেছিলে তাই না যদি আমাকে এসব শেয়ার করো আমি ভাববো তুমি আমার কাছ থেকে টাকা চাইছো ?…

– [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তুলে ] স্নেহা! আমি ঐ দিন ডান্স ক্লাস থেকে তোমাকে বাড়ী ড্রপ করে দেওয়ার সময় এটা বলেছিলাম, তোমার যদি কিছু চাই আমাকে বলতে পারো! তুমি এমনটাও মনে করোনা যে আমি কিছু ভাববো এতে নিজেকে ছোট মনে করার প্রশ্নই আসে না! [ ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : [ হাত দিয়ে গাড়ীতে জোড়ে বাড়ি মেরে ] কতোটাই না বোকা তুমি! এতোকিছু হয়ে যাওয়ার পরেও চুপ করে আছো স্নেহা! আমাকে কিছুই বলার যোগ্য মনে করছিলেনা!

– [ চেঁচিয়ে ] তোমার কি মনে হয় স্নেহা?. সামির গিয়ে ওর বাবা-মা কে ঐটাই বলবে যেমনটা তুমি শিখিয়ে দিয়েছো!

– [ দাতকিলিয়ে ] ওকে তো আমি! [ বলেই গাড়ীতে উঠতে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে আটিকিয়ে ] রাহুল! প্লিজ নো!

– [ কাদো কন্ঠে ] ভেবেছিলাম টাকার ব্যাপারটা ও আপনাকে সব খুলে বলে দিবো, ঐদিনই মা ফোন করে বলে সব ঠিক হয়ে গেছে, তাই আর বলিনি আপনাকে,

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে চেঁচিয়ে ] তাহলে আজ?.. আজকে যা হলো এসব বলা আমাকে ইম্পোর্টেন্ট মনে করোনি?…

– ওকে তো আমি আজ ছাড়ছি না!

স্নেহা : [ রাহুলের জ্যাকেট টেনে আটকে ধরে, কাদো কন্ঠে ] এই কারণে! রাহুল! এই কারণে বলিনি আমি!

– আমি জানি আপনি সামিরের উপর রেগে মারামারি করতে যাবেন!

– আ..আমি চাই না আপনি মারামারি করেন, আপনার কিছু হোক!

[ বলেই কেঁদে কেঁদে রাহুলের বুকে মাথা রাখে স্নেহা, রাহুল জোড়ে একটি শাস ফেলে রাগ কন্ট্রোল করে নিলো, স্নেহার মাথার উপর হাত বুলিয়ে, দু-হাত দিয়ে তুলে ধরে চোখের পানি মুছে দিলো, শালটাও ঠিক মতো গায়ে মুড়িয়ে! দিলো ]

রাহুল : ব..বললাম না..আমার সামনে এভাবে কাঁদবা না! [ দু-হাতে চুল গুলো দু-কানে গুজে দিলো

– যাও! ভেতরে যাও…

স্নেহা মাথা নাড়িয়ে পাশ মুড়তেই দেখে আশেপাশে হেটে চলে যাওয়া অনেক লোকজনই তাকিয়ে তাকিয়ে চলে যাচ্ছে, স্নেহা ও আর কিছু না বলে গেইট দিয়ে ঢুকেই যাচ্ছিলো, হঠাৎ ধুপ করে গাড়ীর দরজা বন্ধ করার শব্দ কানে ভেসে এলো, পেছন মুড়ে তাকাতেই ততোক্ষণে গাড়ী স্টার্ট দিয়ে দিলো রাহুল! সামনের দিক এগুচ্ছিলোই গাড়ী, ঐ মুহুর্তেই তাড়াতাড়ি দৌড়ে গাড়ীর সামনে গিয়ে দাড়িয়ে পড়লো স্নেহা!

রাহুল : [ তাড়াতাড়ি গাড়ী থামিয়ে দরজা খুলে রাগান্বিত ভাবে এগিয়ে এসে চেঁচিয়ে উঠে ] পাগল নাকি তুমি?..এভাবে কেউ দাঁড়ায়?..যদি এক সেকেন্ড লেইট করতাম কি হতো জানো?..

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে কাদো কন্ঠে ] রাহুল! আপনি সামিরের কাছেই যাচ্ছিলেন তাই না?… [ রাহুল চুপ করে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

– আমি জানি আপনি এখনো রেগে আছেন, কেনো করছেন এমন রাহুল! [ চেঁচিয়ে ] এজন্যই তো আপনাকে বলতে চাইনি! আমি জানতাম আপনি এসবই করবেন!

রাহুল : [ দাত কিলিয়ে ] স্নেহা! আই কান্ট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ! [ চেঁচিয়ে ] ওর সাহস কতো বড়?..ও তোমার দিক নজর দিয়েছে!

– ওর তো চোখ তুলে ফেলা দরকার! [ বলেই এগিয়ে গিয়ে গাড়ীর দরজা খুলতেই ]

হঠাৎ,

স্নেহা : [ পেছন থেকে এগিয়ে এসে ধুপ করেই দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে ] আপনি এমন কিছুই করবেন না রাহুল!

রাহুল : বাসায় যাও স্নেহা!

স্নেহা : আগে বলেন আপনি এখন আর কোথাও যাবেন না!

রাহুল : স্নেহা! আমি বললাম বাসায় যাও!

স্নেহা : ঠিকাছে যাচ্ছি! কিন্তু আমার কসম আছে রাহুল! আপনার কাছে, আপনি এখন সামিরের কাছে যাবেন না, সোজা বাসায় যাবেন! আর কোথাও না! [ কাদো কন্ঠে ] কোনো মারামারি করবেন না!

রাহুল : স্নেহা! তুমি….

স্নেহা : [ কানে হাত দিয়ে ] বললাম তো আমার কসম আছে!

রাহুল : [ নিজের চুল নিজে টেনে ধরে ] Damn it! [ বলেই গাড়ীতে জোড়ে একটি লাত্তি মারে ]

[ স্নেহা চেয়ে আছে রাহুলের দিক চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে ]

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে মুখের সামনে আংগুল তুলে ] আই টোল্ড ইউ না! কান্না করবানা…হুম?…[ বলেই আঙুল দিয়ে চোখের পানি গুলো মুছে দিলো, বাতাসে উড়ছে স্নেহার চুল, কাদো কাদো মুখে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক, রাহুল ও তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : কালকের ভুল যদি আজকের সপ্ন ভাংগতে চাই না স্নেহা! তাহলে ওর সাহসকেই ভেংগে দেওয়া উচিৎ!

– [ জোড়ে শাস ফেলে ] এনিওয়ে ভেতরে যাও!

[ স্নেহা মাথা নাড়িয়ে ধীরেধীরে ভেতরে চলে গেলো, উপরে উঠে ভালো করে চোখ মুছে বেল বাজাতেই জারিফা দরজা খুললো! ]

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! এক সেকেন্ড এক সেকেন্ড এইদিকে আয় [ বলেই স্নেহাকে কাছে টেনে পেছন থেকে চোখে হাত দিয়ে ভেতরে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে জারিফা করছিসটা কি?..

জারিফা : আরে দাড়ানা স্যারপ্রাইজ! [ বলেই ভেতরে নিয়ে চোখ থেকে হাত সরিয়ে ] টেট..টেনেড…

স্নেহা : শায়লা! তুইইই [ জড়িয়ে ] কবে এলি?…

শায়লা : হাইইই স্নেহা! বিকেলেই এলাম!

স্নেহা : আই মিসড্ ইউ!

শায়লা : মিসড্ ইউ টু!

– বাই দ্যা ওয়ে, আমি আসতে আসতে তো তোর আর জারিফার সেটিং হয়ে গেছে, কি না লাভ স্টোরি ছিলো! আর আমি কিসব মোমেন্ট মিস্ করে ফেললাম উফফ!

[ জারিফা ব্লাশিং হয়ে হাসতে লাগলো, স্নেহা কেঁদেই দিলো শায়লাকে শক্ত করে জড়িয়ে ]

শায়লা : আরে স্নেহা! কি হলো কাঁদছিস কেনো?… [ স্নেহা কোনো জবাব দিচ্ছে না ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে চলছে ]

মার্জান : [ স্নেহাকে সরিয়ে এনে খাটে বসিয়ে ] কি হয়েছে স্নেহা?..সব ঠিকাছে তো?.. আংকেল আন্টি কিছু বলেছে?..

– আব..রাহুলের সাথে ঝগড়া হয়েছে?..

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] কিচ্ছু ঠিক নেই মার্জান! সব বিগ্রে গেছে!

জারিফা : আরে বিগ্রে গেছে মানে?..কি হয়েছে সেটা তো বল?..

[ স্নেহা কেঁদে সব খুলে বললো, সবার মাথায় যেন বিজলী চমকে পড়েছে ঐভাবেই শকড হয়ে বসে আছে ]

জারিফা : [ মাথায় হাত দিয়ে ] ইয়া আল্লাহ! গতকাল রাত থেকেই রাহুল আর স্নেহার বিয়ের সপ্ন দেখছিলাম..কিন্তু কি হয়ে গেলো এসব!

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] আমার তো প্রথম যেদিন দেখেছি ঐ সামিরটাকে সেদিনই সন্দেহ হয়েছিলো এর মাথায় কিছু পাকিয়ে এসেছে!

– [ দাঁড়িয়ে কোমোড়ে হাত দিয়ে ] কতো বড় সাহস ওর, রাহুল আর তোর রিলেশন আছে জেনে ও আবার তোকে বিয়ে করতে এসেছে!

জারিফা : [ নাক ফুলিয়ে ] একেই বলে কাবাব মে হাড্ডি!

মার্জান : [ স্নেহার পাশে বসে ] কিন্তু স্নেহা! তুই আংকেল আর আন্টিকে রাহুল আর তোর কথা সব খুলে বলে দিশনি কেনো?..

শায়লা : স্টপ ইট! গাইস্ ও বললোই তো আংকেল কি বলেছে এসব লাভসাভের ব্যাপারে!

– হুট করেই কি বলে দেওয়া যায় নাকি?..বাবা আমি সামিরকে বিয়ে করবো না আমি রাহুলকে ভালোবাসি!

– [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] দেখ স্নেহা সামির বলবে কিনা এটা তো শিয়র না! আর যদি নাই বা বলে…তাহলে বাধ্য হয়ে সব সাহস করে বলেই দিবি!

জারিফা : [ স্নেহার চোখ মুছে দিয়ে ] বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা! রাহুলকে সব বলে দিয়ে ঠিক করেছিস! ঐ সামিরকে তো ইচ্ছে মতো একটা ধোলায় দিলে ভালো হবে! [ মুখ ভেংগিয়ে ] এনিমেল একটা!

স্নেহা : মারামারি করলে সব সমাধান হয় না জারিফা! এতে ব্যাপারটা আরো বড় হবে!

– এমনিতেই ওকে বলার সাথে সাথে রেগেমেগে সামিরের কাছেই চলে যাচ্ছিলো!

মার্জান : [ স্নেহাকে জড়িয়ে কাধে মাথায় রেখে ] ডোন্ট ওয়ারি মাই ডিয়ার! সব ঠিক হয়ে যাবে! তোকে তো রাহুলের জন্যই বানিয়েছে, ঐ সামিরের বাচ্চা সামিরকে তো আমি দেখিস কি করি!

জারিফা : আরে স্নেহা তুই কাঁদছিস কেনো?.. এখন তো রাহুল সব জানে!…ঐ সামিরের ছায়া ও আর তোর আশেপাশে আসতে দিবে না হুম!

স্নেহা : [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] রাহুল অনেক আপসে্ট হয়ে আছে! জারিফা! রাতে আর ডিনার ও করবে না আমি জানি!

জারিফা : অউউ! মেরি জান! রাহুলকে কত্তো ভালোবাসে! [ বলেই জড়িয়ে ধরলো ]
________________________________

রাতে সবাই ডিনার করে শুয়ে পড়েছে,
স্নেহা ফোন হাতে নিয়ে তাকিয়ে আছে, ভাবছে রাহুলকে কল দিবে কি দিবে না… হঠাৎ ফোনটা বেজেই উঠলো,সাথে সাথেই রিসি্ভ করলো স্নেহা!

স্নেহা : হ্যালো!

রাহুল : মনে হচ্ছে..আমার ফোনেরই অপেক্ষা করছিলা?..

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আপনি ডিনার করেছেন?..

রাহুল : হ্যা! তুমি?..

স্নেহা : নাহ! যেমনটা আপনি করেন নি!

রাহুল : কামঅন স্নেহা!

স্নেহা : আপনি এখনো রেগে আছেন রাহুল! তাই না! [ চুপ করে রইলো রাহুল ]

– [ কাঁদো কন্ঠে ] সরি! রাহুল!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আই লাভ ইউ স্নেহা!

[ মুখ চেপে ধরে আরো ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : ডোন্ট ক্রাই স্নেহা!

– এন্ড লিসে্ন ডোন্ট ওয়ারি আই এম ওকে!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : ঘুমিয়ে পড়ো! গুড নাইট!

স্নেহা : গুড নাইট!

পরদিন সকালে,

সবাই তৈরী হচ্ছে ভার্সেটির জন্য,স্নেহা মুখ গোমড়া করে বসে আছে বারান্দায়!

মার্জান : [ বারান্দায় এসে ] স্নেহা! ভার্সেটি যাবি না?..আবারো মন খারাপ করে বসে আছিস?..

– তুকে বললাম না এসব নিয়ে টেনশন না করতে!

স্নেহা : আমার টেনশন রাহুলকে নিয়ে মার্জান! তোরা তো জানিস রাহুলকে!

মার্জান : ওকে এক সেকেন্ড [ বলেই ভেতরে গিয়ে স্নেহার ফোনটা এগিয়ে এনে স্নেহার হাতে ধরিয়ে দিলো, স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো মার্জানের দিক ]

মার্জান : নে ধর রাহুলকে ফোন দে!

স্নেহা : কিক..কিন্তু…

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আরে তুই দে না…

– ওকে বলবি! ও ভার্সেটি যাওয়ার সময় যাতে তুকে পিক করে নেই!

স্নেহা : কিন্তু ও পিক করে দেওয়ার কি দরকার…আমরা তো যাচ্ছিই বাস করে!

মার্জান : আরে গাধী! তুই এমনটা ওকে বললে…ওর হয়তো,ভালো লাগবে! ওর মন আপসে্ট থাকলে মনে রাগ থাকলে, ওটা হয়তো সকাল সকাল তুকে দেখেই [ চোখ মেরে ] পাল্টে যাবে!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ ভেবে ] আচ্ছা!

মার্জান : হুম! তুই বল..আমি যায় রেডি হতে হবে!

স্নেহা রাহুলকে ফোন দিলো, দু-তিন রিং পড়তেই রাহুল ফোন উঠালো!

রাহুল : [ ড্রাইভ করতে করতে ] গুড মর্নিং!

স্নেহা : গুড মর্নিং! আ..ব্রেকফাস্ট করেছেন?..

রাহুল : হুম! তুমি?..

স্নেহা : আচ্ছা আপনি কি কালার কাপড় পড়েছেন আজ?…

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] মানে?..

স্নেহা : [ মন খারাপ করে ] কিক..কিছু না!

রাহুল : স্কাই কালার!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] শার্ট? নাকি টি-শার্ট?

রাহুল : শার্ট!

স্নেহা : ওকে! আচ্ছা শুনেন!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : আপনি কি এখন ভার্সেটি যাওয়ার সময় আমাকে পিক করে নিতে পারবেন?…

[ বলতেই রাহুল সামনের দিক তাকিয়ে গাড়ী থামালো,দেখে সে অলরেডি ভার্সেটির গেইটের সামনে পৌছে গেছে, ভেবেছিলো স্নেহা ভার্সেটি আসার আগেই সামিরকে দেখে নিবে, কিন্তু কি আর করার স্নেহাকে ও আর নিষেধ করতে পারবে নাকি…? স্নেহা আগে ইম্পোরটেন্ট! তারপর বাকিসব! ]

স্নেহা : রাহুল! কোথায় হারিয়ে গেছেন?..

রাহুল : ইয়াহ!…আ..আমি আসছি!

স্নেহা : ওকে! তাহলে!

রাহুল : ওকে!

[ স্নেহা ফোন কেটে এক্সাইটেড হয়ে উঠে দৌড়ে গিয়ে আলমারি খুলে স্কাই কালার কাপড় খুঁজতে লাগলো, এইদিকে রাহুল আর গাড়ী গেইটের ভেতর ঢুকালো না পেছনে ব্যাক দিলো স্নেহাকে পিক করার উদ্দেশ্যে ]

চলবে…

love At 1St Sight Season 3 Part – 35

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 35

writer-Jubaida Sobti

সামিরের বাবা-মা স্নেহাকে অনেক প্রশ্নই করে যাচ্ছে…তার কি পছন্দ না পছন্দ,পড়া লিখা কেমন চলছে..এমন অনেক ধরনেরই, কিন্তু স্নেহা কিছুরই জবাব দিতে পারছিলো না বার বার কথা আটকে যাচ্ছে, মুখ দিয়ে কোনো শব্দই বেরুচ্ছিলো না…

স্নেহা একটু লাজুক বলে,সব প্রশ্নের উত্তর স্নেহার বাবাই দিচ্ছিলো…

সামিরের মা : লাজুক তো এমন সবাই হয়…সব সময় লাজুকতায় থাকে নাকি আজ আমাদের দেখে লজ্জা পাচ্ছে!

স্নেহার বাবা : না আসলে ও ছোট থেকেই এমন!

সবাই কথা বলাবলি করছে হাসাহাসি করছে, মামী এসে টেবিলে নাশতা দিয়ে গেলো, স্নেহাকে অনেক জোড় করা শর্তে ও কিছু মুখে দিলো না স্নেহা!

মাথা নিচু করেই বসে আছে, আড়চোখে সামিরের দিক তাকালেই দেখে সামির ও কিছুক্ষণ পরপর তাকাচ্ছে স্নেহার দিক! মোটেও ভালো লাগছিলো না এসব স্নেহার! ইচ্ছে করছে দৌড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে রাহুলের কাছেই ছুটে যাবে…

সামিরের মা : আচ্ছা আমরা একটু ওদের একা কথা বলতেদি! ওদের পার্সোনাল কোনো কথা থাকলে ওটাও ডিসকাস করেনিক!

স্নেহার বাবা : হ্যা! এটাও ঠিক! [ বলেই আমরিনকে ডাক দিলো, আমরিন এগিয়ে আসতেই ]

– শোন আমরিন তুই স্নেহা আর সামিরকে ছাদে নিয়ে গিয়ে ঘুড়িয়ে আন!

আমরিন : আচ্ছা!

[ আমরিন স্নেহা আর সামিরকে ছাদে নিয়ে গেলো, পা চলছিলো না স্নেহার,যেনো পায়ে কেউ কাটা বেধে দিয়েছে, তাও বাধ্য হয়ে ছাদে উঠলো ]

আমরিন : আপনারা কথা বলে বলে দেখুন! আমি ওদিকটাই আছি! [ স্নেহাকে চোখ মেরে ] স্নেহা! তুই ঘুড়িয়ে দেখা! [ বলেই হেসে অন্যপাশ চলে গেলো ]

স্নেহা সামিরের দিক একবার তাকিয়ে আবার মুখ ফিরিয়ে নেয়! এদিকওদিক তাকিয়ে রিলিং এ হাত রেখে দাঁড়ালো, চারদিক তাকাতেও আজ অসজ্য লাগছে স্নেহার! তারউপর এই শাড়ী!

সামির : [ স্নেহার পাশে এসে দাঁড়িয়ে ] আমি জানি স্নেহা! হুট করেই এসব তোমার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে!

– আমি চাইলেই তোমাকে ভার্সটিতে পার্সোনাল অর সবার সামনে প্রপোজ করে মনের কথা বলতে পারতাম! কিন্তু আমি এসব করিনি কারণ…আমি জানতাম তুমি কক্ষনোই হ্যা বলতে না!

– কিন্তু স্নেহা! বিশাস করো যেদিন থেকে তোমাকে দেখেছি… আমার সবই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিলো!

স্নেহা : দে…দেখেন! এসব আমাকে বলে লাভ নেই! আপনিতো জানেনই রাহুল আর আমার ব্যা..ব্যাপারটা!

সামির : হ্যা! জানি!

স্নেহা : তাহলে এসব কেনো করলেন?..

সামির : ভাগ্য! ভাগ্যই আমাকে তোমার কাছে টেনে এনেছে!

– ভালো তো অনেককেই বাসা যায় স্নেহা, কিন্তু ভাগ্যে যার সাথে মিল থাকবে তুমি তো তারই হবে তাই না!

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] আ…আমি আপনাকে বি..বিয়ে করতে পারবো না…

– আমি রাহুলকে…. [ বলতেই চোখে পানি এসে জমে গেলো ]

সামির : রাহুল! [ বলেই হেসে উঠে ] ওর বাবা – মাই তো একত্রে থাকতে পারলো না! আর ও তোমাকে সারাজীবন এক করে রাখতে পারবে তার গ্যারান্টি কি?..

স্নেহা : দেখেন! এসব ফালতু কথা আমার সাথে বলবেন না! আমাদের মাঝে গ্যারেন্টি বলতে কিছু নেই,রাহুল কেমন?..আমাকে কিভাবে রাখবে এসব আমাদের মাঝেই থাক!

সামির : ওকে! সরি!

স্নেহা : আপনার পরিবার আমার পরিবারের জন্য যা করেছে তার জন্য ধন্যবাদ দিলেও ছোট হবে!

– চেষ্টা করবো আপনাদের টাকা গুলো যাতে তাড়াতাড়ি …

সামির : হেইই ওকে ওকে! টাকা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না! ওসব বাদ দাও!

স্নেহা : আ..আপ..আপনি প্লিজ! আপনার বাবা- মা কে বলে দিবেন! যে আপনার আমাকে পছন্দ না! আর আপনি এই বিয়ে করবেন না!

[ বলেই স্নেহা পাশমুড়ে দৌড়ে নিচে চলে যায়, সামির ও একটু হেসে এদিকওদিক তাকিয়ে নিচে নেমে আসে ]

স্নেহা নিচে নেমে রুমে ঢুকে হাতের চুরি কানের দুল সব খুলেই টেবিলে ছুড়ে মারলো!

স্নেহার মা : [ রুমে এগিয়ে এসে ] স্নেহা! সব ঠিকাছে তো! [ স্নেহা চুপ করে রইলো ]

– আরে কি হলো?.. কিছু বলছিস না কেনো?…

স্নেহা : মা আমি এসব শাড়ী পড়ে থাকতে পারছিনা! আমি চেঞ্জ করে আসি!

স্নেহার মা : আরে?..আগে ওদের যেতে তো দে!

[ হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়লো, তাকিয়ে দেখলেই দেখে সামিরের মা এগিয়ে আসছে ]

স্নেহার মা : আরে আপনি আসুন!…

সামিরের মা : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] স্নেহা?..কথা হয়েছে তো সামিরের সাথে?…

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ]…জি! হ…হয়েছে!

সামিরের মা : [ হেসে ] আচ্ছা! [ বলেই তার হাত থেকে দুটো চুড়ি খুলে স্নেহার হাতে পড়িয়ে দেয় ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] জি…এসব?..

সামিরের মা : এসব আমার থেকে তোমার জন্য গিফট! ওকে?.. [ স্নেহা শকড হয়ে তাকিয়ে রইলো! কি হচ্ছে এসব তার সাথে, ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কেঁদে উঠবে ]

– আচ্ছা আমরা এখন আসি হ্যা!

স্নেহার মা : আরে না এভাবে কেনো যাবেন! কিছুক্ষণই তো হলো এসেছেন!

সামিরের মা : আমরা তো স্নেহাকে দেখতে এসেছি, স্নেহাকে দেখা শেষ! তাই এখন চলে যাওয়ার পালা…

– শেষ বললে ও হয়না! মাশাল্লা পরীর মতো দেখতে!

– আচ্ছা স্নেহা! আমরা আসি হ্যা! ভালো থেকো! [ বলেই মাথায় হাত বুলিয়ে বেড়িয়ে যায়, সাথে স্নেহার মা ও পিছু পিছু বেড়িয়ে গেলো ]

[ ধপাস করেই স্নেহা খাটে বসে পড়লো,কি হচ্ছে? কি করবে? কিছুই মাথায় আসছে না! চোখ থেকে পানি ফেলছে আর ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছে ]

[ কিছুক্ষণ পর রুমে কেউ ঢুকার আওয়াজ আসলে স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ মুছে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে ]

আমরিন : ওহো! স্নেহা! সব ঠিকটাক তো?..আচ্ছা হ্যা! তুই ঐ সময় এভাবে না বলে চলে এলি কেনো…বেশি লজ্জা লাগছিলো বুঝি! হ্যা?

– [ স্নেহার হাত টেনে নিয়ে ] ওয়াওও দেখি…কে পড়িয়েছে?..

পেছন থেকে,

স্নেহার মা : কে আর পড়াবে?.. স্নেহার হবু শাশুড়ি পড়িয়ে দিয়েছে! [ বলতেই স্নেহা পেছনে তাকিয়ে দেখে মা আর মামী দুজনেই এসেছে ]

আমরিন : বাহ! তাহলে একটা বিয়ে খাচ্ছি শিঘ্রই!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে খাট থেকে কাপড় গুলো টেনে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়, দরজা আটকাতেই চোখে জমিয়ে রাখা অভিমান সব ঝড়ে পড়তে লাগলো, মুখ চেপে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে উঠছে স্নেহা! ]

মা! ওয়াসরুমের দরজা বাড়ি দিতেই,

কিছুক্ষণ পর, শাড়ী চেঞ্জ করে তার কাপড় পরে বেড়িয়ে আসে স্নেহা, রুমে ঢুকতেই দেখে তার মা বসে আছে, স্নেহা কিছু না বলে সোজা ব্যাগটা এগিয়ে নিয়ে টেবিল থেকে মোবাইল ব্যাগে ঢুকিয়ে কাধে নিয়ে চলে যাচ্ছিলো!

স্নেহার মা : আরে স্নেহা! দাড়া কোথায় যাচ্ছিস!

স্নেহা : [ ফিরে তাকিয়ে ] কো..কোথায় যাবো আর?..

স্নেহার মা : কি হয়েছে স্নেহা?..তুই ঠিকাছিস তো?…

স্নেহা : হ্যা! ঠিকাছি

মা : [ বুঝতে পারলো স্নেহা কেঁদেছে ]

– দেখ স্নেহা হুট করেই এসব হয়েছে তাই হয়তো তোর!

স্নেহা : মা! [ বলেই হাত থেকে চুড়ি গুলো খুলে তার মায়ের হাতে এগিয়ে দিয়ে ] আ..এসব তোমার কাছেই রাখো!

মা : [ অবাক হয়ে ] আরে?..পাগল নাকি?.. এসব তোকে দিয়েছে পড়তে [ বলেই স্নেহার হাত টেনে পড়িয়ে দিয়ে ] এগুলো পড়ে থাক এখন খুলবি না!

স্নেহা : কিন্তু মা এসব আমি…

মা : স্নেহা! সামান্য চুড়িই তো পড়ে থাকতে সমস্যা কি?…

স্নেহা : আচ্ছা!

-আমি! যাচ্ছি…

মা : কিন্তু স্নেহা! আজ থেকে যা নাহয়!

স্নেহা : মা! সা..সামনে এক্সাম আছে! আমার পড়তে হবে! [ বলেই বেড়িয়ে যাচ্ছে হঠাৎ আবার থেমে গিয়ে পেছন ফিরে এগিয়ে এসে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়, মা তাকিয়ে আছে দেখে স্নেহা আয়না থেকে টিপটা হাতে নিয়ে বেড়িয়ে যায় মা ও হেসে পেছন পেছন এগিয়ে আসে ড্রইং রুমে ]

বাবা : স্নেহা! কোথায় যাচ্ছিস?… আজ এইখানেই থেকে যা?…

স্নেহা : আ..বাবা! কাল ভার্সেটিতে Assignment জমা দিতে হবে! ওটা রেডি করা বাকি থেকে গেছে!

বাবা : আচ্ছা চল তোকে আমি পৌছেদি!

স্নেহা : এখনো সন্ধায় তো বাবা! যেতে পারবো আমি!

– আর এতোদিন তো একাই সব করেছি তাই না!

বাবা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা ঠিকাছে যা! কাল আসছিস তো আবার?…

স্নেহা : হ্যা! আ..আসবো! ভার্সেটি শেষ করে!

বাবা : আচ্ছা!

স্নেহা : আসি বাবা!

[ বলেই দরজা খুলে বেড়িয়ে পড়ে, জোড়ে একটি শাস ফেললো স্নেহা! দম আটকে যাচ্ছিলো এতোক্ষণ!
কান্না লুকিয়ে রাখতে যে এতো কষ্ট তা আজই বুঝছে স্নেহা!

কপালে টিপটা লাগিয়ে, হাত থেকে চুড়ি গুলো খুলে ব্যাগে ভরে নেই, নিচে নেমে আসলো, রাস্তায় হাটছে আর ভাবছে,কিভাবে এসব আবার সমাধান করা যাবে, সামির বলবে তো তার বাবা মা কে?..সব আবার আগে মতো হয়ে যাবে তো?.. বিনা বাধায় রাহুলের কাছে ছুটে যেতে পারবে তো?.. এসব চিন্তায় মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে আর চোখ থেকে অজস্র অশ্রু ঝড়ে যাচ্ছে ]

গাড়ী ঠিক করতেও ভুলে গেছে হাটতে হাটতে ব্রীজের ধারে চলে এলো, রিলিং ধরে দাঁড়িয়ে নদীতে বয়ে যাওয়া পানি গুলোই দেখছে! আর চোখ থেকে জল ফেলছে!

হঠাৎ, ফোনটা বেজে উঠলো, ধীরেধীরে ব্যাগ থেকে ফোনটা এগিয়ে নিতেই রাহুলের কল দেখে স্নেহা আরো ফুফিয়ে কেঁদে উঠে, রিসিভ করে কথা বলবে রাহুলের সাথে সে সাহস পাচ্ছে না!

জীবনটা বার বার এভাবেই থমকে যাচ্ছে স্নেহার! যখনি কিছু ভালোবেসে আগলে নিতে চাই! একটা না একটা কাটা বেধে সামনে এসে দাঁড়ায়!

দু-তিনবার কল দিলো রাহুল আর স্নেহা ফোনের দিক তাকিয়ে তাকিয়ে কেঁদে চলছে!
এসময় রাহুলের সাথে কথা বললে ও রাহুল ধরে ফেলবে যে সে কাঁদছে!

দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা! ওভাবেই! এতেই ভালো লাগছে….

ভাবছে,

যদি নদীর ঢেউ হতো বিনা বাধায় এভাবেই বয়ে চলতো! না কোনো কষ্ট থাকতো না চিন্তা থাকতো… রাহুলের সাথে ও আর দেখা হতো না!
রাহুলকে হারানোর ভয় ও আর থাকতো না!

আধ ঘন্টা হয়ে গেলো, এভাবে ভেবে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে,কুয়াশায় চারদিক ভরপুর ঠান্ডা ও লাগছে, আশেপাশে একবার তাকিয়ে দেখলো সবাই সবার মতো করে চলছে.. দূরের দিক মিটিমিটি লাল-সাদা বাতি ঝলছে, কেউ কেউ ফল-ফ্রুট বিক্রি করছে আবার কেউ বাজার করছে, মাঝে মাঝে ব্রীজের নিচ দিয়ে একটা দুটা শিপ আওয়াজ করে চলে যাচ্ছে, শপিংমলের বাইরে কয়েকজন কাপল দাঁড়িয়ে আছে! তারা হাসাহাসি করছে কথা বলছে,

তা দেখে রাহুলের কথাই মনে পড়ছে স্নেহার! রাহুলের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে করছে আর মুচকি মুচকি হাসছে, চোখ মুছে নিলো, ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করলো, রাহুলকে ফোন দিবে বলে, আবার ভাবলো না থাক এক্কেবারে বাসায় গিয়েই ফোন দিবে!

মোবাইলটা ব্যাগে ঢুকাতেই ফোনটা বেজে উঠলো, হাতে নিয়ে দেখে রাহুলেরই ফোন!

স্নেহা : [ রিসিভ করে ] হ্যালো?…

রাহুল : ফোন দিচ্ছিলাম রিসিভ করছিলে না?..

স্নেহা : আ..আসলে ফোন সাইলেন্ট ছিলো তাই?…

রাহুল : কই তুমি?..

স্নেহা : এইতো বাব…বাসায়!

রাহুল : কবে এসেছো?…

স্নেহা : আ..আধ..আধ ঘন্টা হলো!

রাহুল : কি করছো?..

স্নেহা : Assignment কক…করছি!

রাহুল : ব্রীজের ধারে?..

স্নেহা শকড হয়ে গেলো রাহুলের কথা শুনে, তাড়াতাড়ি পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে রাস্তার ওপাড়ে রাহুল তার গাড়ীর সামনে কানে ফোন রেখে দাঁড়িয়ে আছে!

স্নেহা : আ..আপ..আপনি?…

রাহুল : কেনো আমাকে দেখে অবাক হয়েছো?..

স্নেহা ধীরেধীরে কান থেকে ফোনটা নামিয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে রইলো,রাহুল ও ফোন পকেটে ঢুকিয়ে রাস্তা পাড় হয়ে এগিয়ে এলো স্নেহার দিক!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আপনি..আস আসলে….

রাহুল : মিথ্যে বললে কেনো?…

স্নেহা : মি…মিথ্যে…কই নাতো…[ একটু হেসে ] আমি মজা করছিলাম আপনার সাথে?…

রাহুল : তাই?…

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] হ্যা!

রাহুল : এখন যে মিথ্যেটা বলছো ওটাও সাজিয়ে বলতে পারছো না! [ চুপ করে রইলো স্নেহা ]

রাহুল : কাঁদছো কেনো?…

স্নেহা : [ চোখ ফিরিয়ে নিয়ে ] কক…কই?.. নাতো!

রাহুল : [ হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তার দিক ফিরিয়ে ] ইউ কান্ট লাই টু মি! স্নেহা!

– তোমার চোখ আমি পড়তে জানি ওকে?…

স্নেহা : [ চোখ নামিয়ে ] স..সত্যি রাহুল! আমি কাঁদছি না! [ বলতেই গাল বেয়ে গড়িয়ে পানি পড়লো ]

রাহুল : [ চোখ মুছে দিয়ে স্নেহার দু-গালে হাত রেখে ] কি হয়েছে স্নেহা?…বলো আমাকে?..

স্নেহা : [ ঢোগ গিলে ] আ..আপনি কিক…কিভাবে জানলেন আমি এইখানে?…

রাহুল : সিরিয়াসলি? এখন এটা জানা বেশি ইম্পর্টেন্ট ?..

– [ জোড়ে একটি শাস ফেলে পকেটে হাত রেখে ] ওখে! তোমার লোকেশন ট্রেস করলাম!

– [ রাগান্বিত ভাবে ] জারিফাকে ফোন দিলাম বললো ও বাসায় আসেনি!

– তোমাকে ফোন দিচ্ছিলাম রিসিভ করছো না!

– স্নেহা! কথা না বললে অন্তত একটা মেসেজ করে জানাতে পারতে! আমার টেনশন হচ্ছিলো তোমার জন্য! তোমার তো এসবে কিছু আসে যায় না!

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ] স…সরি!

রাহুল : এবার বলো তুমি এইখানে কি করছো একা?…

স্নেহা : আব….চচ..চলেন আমরা..ওদিক থেকে হেটে আসি…ঠান্ডা বাতাস আছে!

রাহুল : [ দাত কিলিয়ে ] Shut-up ok?..just shut-up!
[ স্নেহা ঢোগ গিলতে লাগলো ]

রাহুল : স্নেহা! হোয়াট হ্যাপেন?..প্লিজ টেল মি!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] কিছুই তো হয়নি কি বলবো?..

রাহুল : [ স্নেহার কপালের টিপটা সোজা করে বসিয়ে দিয়ে ] এটাও ঠিক মতো পড়তে পারোনি!

[ স্নেহা মাথা নিচু করে আছে বাতাসে চুল গুলো উড়ছে, রাহুল সামনে চলে আসা স্নেহার চুল গুলো কানে গুজে দিলো ]

রাহুল : তোমার বাবা-মা কিছু বলেছে?…

স্নেহা : না..নাহ তো!

রাহুল : তাহলে কাঁদছিলে কেনো?..কোনো আমার কথা বলায় তোমার বাবা রেগে যায়নি তো!

স্নেহা : নাহ…আ…আসলে বব…বলতে পারিনি!

রাহুল : তাই?.

স্নেহা : জার্নিং করে এসেছে ওরা! ভাবলাম আজ রেষ্ট করুক! কাল না হয় বলবো!

রাহুল : [ একটু হেসে ] ওকেই! বাই দ্যা ওয়ে তোমার বাবা রাজি না হলে ও টেনশন করার দরকার নেই! তোমাকে তুলে নিয়ে বিয়ে করে ফেলবো [ বলেই হেসে দেই ]

[ স্নেহা চুপ করে রইলো ]

রাহুল : [ আশেপাশে তাকিয়ে ] আচ্ছা তোমার ঠান্ডা লাগছে না এইখানে ?…[ বলেই স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] আরে?..স্নেহা!

– তুলে নিবো বলছি তাই কাদছো?..

স্নেহা : [ চোখ মুছে একটু হেসে ] আব..কিছু না! [ রাহুলের হাত জড়িয়ে ] আসলে আপ..আপনাকে অনেক মিস্ করছিলাম!

রাহুল : আচ্ছা তাই তো ফোন রিসিভ করছিলেনা!

স্নেহা : বললাম তো ফোন সাইলেন্ট ছিলো রাহুল!

রাহুল : আচ্ছা চলো! গাড়ীতে উঠো!

স্নেহা : গা..গাড়ীতে কেনো?

রাহুল : স্নেহা! এইখানে অনেক ঠান্ডা তুমি অসুস্থ হয়ে পড়বা! চলো [ বলেই টেনে গাড়ীর দিক এগিয়ে নিয়ে সামনের দরজা খুলে দিলো, স্নেহা কিছু না বলে হুট করেই পেছনের দরজা খুলে উঠে বসে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হেই! পেছনে কেনো উঠলে?…

স্নেহা : আব..আস আসলে আমার মাথাটা না পেইন করছে! সামনে গাড়ীর লাইটিং পড়বে তাই পেছনে এসে বসেছি!

রাহুল : আচ্ছা?.. [ বলেই রাহুল ও স্নেহার পাশে এসে বসে ] ওকে দাও আমি মাথা টিপে দি… [ বলেই স্নেহার মাথা টিপে দিতে লাগলো ]

স্নেহা : আরে রাহুল! [ বলেই রাহুলের হাত সরিয়ে ] ওকে চলে গেছে মাথা ব্যথা!

রাহুল : বাহ! স্নেহা! আগে জানতাম না তো আমার হাতে এতো জাদু আছে, হাত লাগাতেই মাথা ব্যথা উধাও!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা আপনি সামনে যান…আমি এইখানেই ঠিক আছি!

রাহুল : মেইন রিজনটাই বলো স্নেহা তুমি তোমার চোখের পানি লুকাতেই এইখানে এসে বসেছে তাই না?…

[ স্নেহা কিছুক্ষণ রাহুলের দিক তাকিয়ে কেঁদে জড়িয়ে ধরলো রাহুলকে, রাহুল ও অবাক হয়ে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : স্নেহা! ইউ ওকে?…

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আপনাকে অনেক মিস্ করছিলাম রাহুল!

রাহুল : [ স্নেহার পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে ] ওকে ডোন্ট ক্রাই এখন তো তোমার পাশেই আছি!

স্নেহা : [ ধীরেধীরে ছুটে এসে রাহুলের গালে হাত বুলিয়ে ] রাহুল! আমি…আপ..আপনাকে….[ বলেই জলভরা চোখে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক ]

– আপনাকে….

রাহুল : [ একটু হেসে ] আই আন্ডারস্ট্যান্ড! [ বলেই স্নেহার কপালে একটি চুমু দিয়ে ] আই লাভ ইউ টু! [ বলতেই স্নেহা ও হেসে আবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ]

স্নেহা : আই কান্ট লিভ উইদাউট ইউ রাহুল! [ বলেই ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদতে লাগলো ]

রাহুল : [ স্নেহাকে ছুটিয়ে এনে ] রিলেক্স স্নেহা! এভাবে কাদছো কেনো?.. [ চোখের পানি মুছে দিয়ে ] লাল হয়ে যাচ্ছো পুরা স্নেহা! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রাহুল! আপনি আমাকে…কখনো ছেড়ে যাবেননা প্রমিস করেছিলেন!..

– আ…আপনি যাবেননা তো?

রাহুল : [ স্নেহার দু-হাত শক্ত করে ধরে ] কক্ষনো না!

স্নেহা : আপনাকে ছেড়ে থাকবো এমন ভাবলেই মনে হয়…যেনো নিশাসটা আটকে গেছে!

রাহুল : রিলেক্স! তাহলে ভাবছো কেনো?…

[ স্নেহা অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিক বাচ্চাদের মতো ঠোট টেনে টেনে কান্না চেপে রাখছে, তা দেখে রাহুল মুচকি হাসে ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] আহা!স্নেহা বাচ্চা মেয়েদের মতো কেঁদে যাচ্ছো! এভাবে… কি কিউট লাগছে তোমাকে জানো? একটা ফটো তুলি?..

[ স্নেহা চোখ মুছে একটু হেসে সোজা তাকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত তার হাতে শক্ত করে ধরে ] স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : এতো ভালোবাসো?..

স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে তাকালো, রাহুল ও চেয়ে আছে, দুজনেই কিছুক্ষণ চেয়ে রইলো, স্নেহার গাল বেয়ে পানি পড়ছে,

চোখ সরিয়ে অন্যদিক তাকিয়ে ফেললো স্নেহা,

তা দেখে রাহুল স্নেহার গালে একটি চুমু খেলো, স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে তাকিয়ে রাহুলের দাড়ির উপর হাত বুলিয়ে ধীরেধীরে সেও একটি চুমু খেলো, রাহুল তেডি স্মাইল দিলো স্নেহার দিক তাকিয়ে!

স্নেহা চেয়ে আছে রাহুলের চেহেরার দিক, রাহুল চোখ নামিয়ে স্নেহার ঠোটের দিক তাকালো!

চোখ বন্ধ করে ফেললো স্নেহা! রাহুল তার মুখ স্নেহার ঠোটের দিক এগুতেই হঠাৎ পেছন থেকে গাড়ীর লাইটের ফ্লাশ এসে পড়লো!

স্নেহা চমকে চোখ খুলে ফেললো তাড়াতাড়ি, রাহুল হেসে স্নেহার ঘাড়ে মাথা নুয়ে দিলো, স্নেহা ও হেসে দিলো,

রাহুল : [ হেসে ] You know স্নেহা! আমার কিন্তু মিস্ যেতো না! যদি কাজ কন্টিনিউ রাখতাম না!

– তাহলে আমাদের দেখতে দেখতে ওরা এক্সিডেন্ট হয়ে যেতো!

চলবে….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 34

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 34

writer-Jubaida Sobti

জারিফা স্নেহার হাত ধরে কেক কাটিয়ে মুখে তুলে দিলো স্নেহার…

স্নেহা : উমমম! অনেক টেষ্টি! [ বলেই জারিফার হাতের দিক খেয়াল করে দেখে ব্যান্ডেজ করা ]

– আরে! এসব কিভাবে হলো?…

জারিফা : ওহ ওটা! ব্যাস ভার্সেটি থেকে আসার সময়, ছোটখাটো এক্সিডেন্ট হয়েছিলাম…

স্নেহা : [ জারিফার হাতে টেনে নিয়ে ] এক্সিডেন্ট?.. আমাকে কিছু বলিসনি যে ?…ফোন করে বলতে পারতি?…

মার্জান : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে জড়িয়ে ] আরে স্নেহা! এতো টেনশন নিচ্ছিস কেনো?…এক্সিডেন্ট এর কারণে আজ না কি রোমান্টিক সিন দেখতে পেলাম ভার্সেটিতে জানিস! [ স্নেহা কনফিউজড হয়ে তাকালো ]

মার্জান : ও যে গাড়ীর সাথে ধাক্ষা খেয়ে এক্সিডেন্ট হয়েছিলো, ঐ ড্রাইভারটাকে না রিদোয়ান এসে…এমন এমন এমন ভাবে কেলিয়েছে…[ হেসে হেসে ]ওহ মাই গড…নেক্সট টাইম ও আর গাড়ী চালাতে পারবে কিনা আমার মনে হচ্ছে না… [ এক্সাইটেড হয়ে ] তারপর কি হয়েছে জানিস!

– [ জারিফার কাছে এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ] রিদোয়ান সবার সামনে জারিফাকে কোলে তুলে নিয়ে নিজের গাড়ীতে বসিয়েছিলো…

জারিফা : [ লজ্জা পেয়ে খাটে বসে ] আচ্ছা হয়েছে এবার!

মার্জান : আরে বলতে দেনা! কি রোমান্টিক ছিলো স্নেহা! তুই তো জানিস না, আমি তো এই প্রথম লাইভ দেখেছি এসব…

– ও হ্যা! তারপর… কি সফট কন্ঠে বলেছিলো…

– জারিফা!

– বেশি লেগেছে?… তখন তুই জারিফার চেহেরাটা দেখলে না স্নেহা…[ বলতেই জারিফা উঠে মার্জানের মুখ চেপে ধরে ]

জারিফা : ব্যাস! হয়েছে!

স্নেহা : [ একটু হেসে খাটে বসে ] বাহ! তাহলে অনেক রোমান্স হয়েগেছে! [ বলতেই জারিফা আর মার্জান দুজনেই স্নেহার দিক তাকিয়ে একটু হেসে পাশে এসে বসে ]

মার্জান : তা তো অবশ্যয়! তবে আমরা আরেকটা রোমান্স দেখিনি!… [ বলেই আড়চোখ দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে ]

স্নেহা : [ বুঝতে পেরে ] আ..আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসি! [ বলেই উঠে যাচ্ছিলো… তখনি জারিফা আর মার্জান দুজনেই দুদিক থেকে দু-হাত টেনে আবার বসিয়ে দেই ]

জারিফা : আরে স্নেহা! এতো লজ্জা পাচ্ছিস কেনো…? বলনা! [ ফিসফিসিয়ে ] কি কি করেছিস!

স্নেহা : [ ঢোগ গিলে ] কি কি করেছি মানে?…

মার্জান : দেখ! এখন এটা বলিস না যে তেমন কিছুই হয়নি…যেটা তোরা ভাবছিস!

– কিছু না কিছু তো হয়েছেই তাই না!

– [ স্নেহার কানের কাছে এসে ] ফর এক্সাম্পল, হাত ধরা, কাছে আসা, জড়িয়ে ধরা, কিস্ করা…

স্নেহা : কে…কেক কেটেছি! ডিনার করেছি ব্যাস! এসবই হয়েছে!

মার্জান : হোয়াট! এমন ডেট করেছিস তোরা?…কি নিরামিষ! রাহুল এতো বোরিং দেখেতো মনে হয় না!

জারিফা : আমার তো মনে হয় না রাহুল! বোরিং! তবে হ্যা! হতেও পারে বোরিং, কার সাথে ডেট করছে সেটা ও তো দেখতে হবে তাই না?…
[ স্নেহা জারিফার মাথায় বাড়ি দিয়ে হেসে উঠে ]

স্নেহা : আচ্ছা! এসব কথা ছাড়…তোদের আরেকটা কথা বলি…

জারিফা : হুম বল!

স্নেহা : কাল বাবা-মা আসছে! মামার বাসায়!

– আর আমি ডিসাইড করেছি! কালই ওদের রাহুল আর আমার কথা জানিয়ে দিবো…

মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে ] বাহ! বাহ! বাহ!…কি নিউজ ছিলো স্নেহা!..হ্যা বলেদিস তারপর ভালো থেকে একটা তারিখ ডিসাইড করে বিয়েটা তাড়াতাড়ি করেনে,

জারিফা : আরে এতো তাড়াতাড়ি?..আমার ভালো ড্রেস নেই পড়ার! শপিং করতে টাইম লাগবে তো!

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] গার্লস্ আই এম সিরিয়াস ওকে?…

জারিফা : বাট আই এম অলসো্!

স্নেহা : আগে বাবা-মা কে তো জানাতে দে!

মার্জান : সো্ হোয়াট! জানিয়ে দিবি না দিবি এটা তোর ব্যাপার…আমরা তো শুধু বিয়ের দিন গুনছি!

– হলে থাকবে বড় করে বোর্ডে লিখা, রাহুল ওয়েডস্ স্নেহা!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইকুয়েল রাস্নেহা!

মার্জান : ওয়াও দারুণ তো! রাস্নেহা! এটা তো তোদের কাপল টিটল নেম হয়ে গেছে!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইয়েস্!

– [ হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তুলে ] বাহ! স্নেহা তুই বউ সাজবি… তোর বিয়ে হবে…শশুরবাড়ী চলে যাবি [ কাদো কন্ঠে ] আমার তো কান্না আসছে স্নেহা তুই আমাদের ফেলে শশুরবাড়ী চলে যাবি.. [ স্নেহা অবাক চোখে তাকালো ]

মার্জান : [ শকড হয়ে তাকিয়ে জারিফার পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে ] ডোন্ট ক্রাই ডোন্ট ক্রাই!

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] আজিব ব্যাপার! তোরা পাগল হয়ে গিয়েছিস নাকি?…

মার্জান : আরে আমি কি করলাম..যত্তসব ওভার একটিং এর দোকান জারিফা!

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আরে স্নেহা! তোর যদি এখন বিয়ে ঠিক হয়! তাহলে তুই বলে বিয়ের ডেট টা একটু পেছনে দিয়ে দিশ! নাহলে আমি যদি আগের ড্রেসটাই পড়ি তাহলে কেমন দেখাবে?…ওটা দিয়ে তো আমি একশো দেড়শো এর উপরে ফটো তুলে ফেলেছি… উফফ! [ বলেই মাথায় হাত দিয়ে টেনশন করতে লাগলো ]

[ স্নেহা জোড়ে একটি শাস ফেলে দুজনের দিক একবার একবার তাকিয়ে, উঠে ওয়াশরুম চলে যায়, মার্জান মুখ চেপে হাসতে থাকে ]

পরদিন সকালে,

মার্জান : [ ভার্সেটির জন্য রেডি হতে হতে ] স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

মার্জান : তুই না তোর মামার বাড়ী যাবি?..

স্নেহা : [ গায়ে শাল মুড়িয়ে ] হ্যা! যাবোই তো…

মার্জান : তাহলে ভার্সেটি যাচ্ছিস যে?..

স্নেহা : মামার বাসায়! দুপুরবেলা যাবো,

জারিফা : [ ব্যাগ গোছাতে গোছাতে ] হ্যা! মামার বাসায় দুপুরবেলা যাবে, সকাল বেলায় রাহুলকে এক পলক না দেখলে কি হয়! [ স্নেহা মুচকি হাসে ]

মার্জান : আচ্ছা সেটাও ঠিক,
________________________________

In varsity,

রাহুল গাড়ীর দরজা খোলা রেখে ড্রাইভিং সি্টে বসে স্মোক করছে, রিদোয়ান পেছনের সি্টে দরজা খোলা রেখে বসে, আর আসিফ পাশে তার গাড়ীর সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে স্মোক করছে,

রিদোয়ান : আরে রাহুল ওরা দুজন দুজনের সাথে এমন রিয়েক্ট করে যেনো একজন আরেকজনের দুশমন!

আসিফ : ও আমার দুশমনই, এমন মেয়ে আমি আমার জন্মে দেখিনি…কথায় কথায় ট্যাড়ামি!

রাহুল : [ হেসে ] দুশমনকে বাঁচাতে বাঁচাতে, কোনো মোহাব্বত না করে বসো দোস্ত! [ রিদোয়ান হেসে উঠে ]

আসিফ : [ হেসে ] মোহাব্বত?..আর ওকে?..সো্ ফানি!

– আর এমনিতেও ওকে আর ফলো করার প্রয়োজন মনে করছিনা রাহুল! ও স্ট্রং আছে, সামলিয়ে নিতে পারবে,

রিদোয়ান : আরে! তাও মেয়ে মানুষ বলে কথা…এমনিতেও তো তোর আর খেয়েদেয়ে কাজ নেই..এই কাজটাই করতে থাক!

আসিফ : এক্সকিউজ মি! খেয়েদেয়ে কাজ নেই বলে আমি ওর পেছন পেছন ঘুরবো নাকি! [ বলতেই হঠাৎ খেয়াল করে রিদোয়ান সিগারেট টা ছুড়ে ফেলে গাড়ী থেকে বেড়িয়ে দাঁড়ায়, রাহুল আর আসিফ অবাক হয়ে পাশফিরে তাকাতেই দেখে জারিফা! ]

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আপনাকে না নিষেধ করেছি এসব কলকারখানার ধোয়া খেয়ে পেট না পুরাতে! [ জারিফার কথা শুনে রাহুল আর আসিফ লুকিয়ে হেসে উঠে, ধীরেধীরে হাত নামিয়ে না দেখে মতো রাহুল ও তার সিগারেট টা মাটিতে ফেলে পা দিয়ে ঢেকে রাখে ]

রিদোয়ান : এক্সুলি! এটা আমি খাচ্ছিলাম না…নতুন বেড়িয়েছে তো তাই একটু টেষ্ট করে দেখছিলাম!

জারিফা : [ নাক ফুলিয়ে ] টেষ্ট করছিলেন?..

আসিফ : আরে, রিদ! তুকে তো আমি আর রাহুল নিষেধ করেছিলাম, দেখ ভাই এসব খাস না…জারিফা যখন নিষেধ করেছে তুই কথাটা রাখ!

[ রিদোয়ান আড় চোখে তাকালো ]

আসিফ : [ হেসে ] কিরে রাহুল! ঠিক বলেছিনা আমরা নিষেধ করেছিলাম তো ?…

রাহুল : [ কি বলবে কনফিউজড হয়ে আবার একটু হেসে ] আ..ইয়া..ইয়াহ!

রিদোয়ান : আচ্ছা?… [ বলেই এপাশওপাশ তাকিয়ে দেখে স্নেহা কোথায় ]

জারিফা : আপনি এদিকওদিক কি দেখছেন?…

রিদোয়ান : তুমি তোমার বাকি ফ্রেন্ডসদের ওদিক ফেলে রেখে এসেছো কেনো?…ওদের ও ডাকো?..

জারিফা : কেনো?.. ওদের ও কি আপনি সিগারেট টেষ্ট করাবেন নাকি?..

রিদোয়ান : আরে না পাগল নাকি?..আচ্ছা ওকে!

– [ বলেই চেঁচিয়ে ] স্নেহা! [ স্নেহা আর মার্জান ফিরে তাকিয়ে দেখে রিদোয়ান ইশারা করছে কাছে আসতে ]

আসিফ : [ হেসে ] হোয়াট এ আইডিয়া রিদ! রাহুল তুমনে হাসি্ তো পাসি্!

রাহুল : Listen! [ with tedi smile ]

রিদোয়ান : আমি শুনছিনা কিছু! [ জারিফার দিক এগিয়ে গিয়ে ] দেখো তো কি হয়েছে আমার কানে কিছু শুনছিনা কেনো!

আসিফ : [ হেসে ] জারিফা! কষিয়ে একটা থাপ্পড় দাও তারপর শুনবে! [ বলতেই মার্জান আর স্নেহা এগিয়ে আসায় মার্জানের দিক চোখ পড়লো মার্জান মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রিদোয়ান : ওহ! ইয়াহ ফার্ষ্ট অফ অল! [ হ্যান্ডশেক করে ] উইশ ইউ এ ভেরি ভেরি হ্যাপি বার্থডে স্নেহা!

স্নেহা : থেংক ইউ!

আসিফ : [ চেঁচিয়ে ] অহ! শিট [ বলেই স্নেহার দিক এসে, হ্যান্ডশেক করে ]… হ্যাপি বার্থডে! স্নেহা! অল দ্যা বেষ্ট ফর আপকামিং ডে!

স্নেহা : [ হেসে ] থেংক ইউউ! [ রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে, স্নেহা ও একটু হেসে চোখ ফিরিয়ে নেই ]

রিদোয়ান : স্নেহা! [ স্নেহা তাকালে ]

– রাহুলের কের্চ গুলো খুব দারুণ হয়েছে তাই না! [ বলতেই সবাই রাহুলের জুতার দিক তাকালো, রাহুল বুঝতে পেরে হেসে রিদোয়ানের দিক তাকায়, ]

রিদোয়ান : [ চোখ মেরে ] আরে রাহুল একটু হেটে দেখানা…কেমন লাগছে হাটলে দেখি!

আসিফ : ইয়াহ! রাহুল একটু হেটে দেখা!

রিদোয়ান : আচ্ছা যা একটু পা সামনে বাড়িয়ে দেখা ওটাও চলবে! [ রাহুল রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে একটু হেসে পা হেচড়িয়ে সামনে বাড়ালো ]

আসিফ : আরে পায়ের নিচে কিছু একটা মনে হচ্ছে রাহুল?..

জারিফা : কি আজিব! আপনারা ওনার পা নিয়ে পড়ে আছেন কেনো?..[ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আই থিংক আপনার জুতাগুলো ওনাদের বেশি পছন্দ হয়েছে দু-জনকে দু-টো দান করে দিয়েন…নাহলে ওনাদের নজরে দেখবেন জুতা গুলো আজই ছিড়ে গেছে [ বলতেই সবাই হেসে উঠে ]

মার্জান : [ স্নেহার দিক ফিসফিসিয়ে ] কিছু তো গড়বড় হচ্ছে স্নেহা! তোর কি মনে হয়!

স্নেহা : আই ডোন্ট নো আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না…

রিদোয়ান : আরে রাহুল! আসিফ যে বললো তোর জুতার নিচ কিছু আছে সত্যি নাকি?… [ রাহুল আর কিছু বললো না তেডি স্মাইল দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে গাড়ীর দরজা বন্ধ করে সরে দাঁড়ায়, সাথে সাথেই সবার নজর একসাথে রাহুলের জুতার নিচেই যায় ]

রিদোয়ান : [ হেসে চেঁচিয়ে ] ওহ আচ্ছা সিগারেট খাচ্ছিলি! লুকিয়ে রেখেছিস আগে বলবিনা! সরি দোস্ত! সরি! সরি! [ বলেই চোখ টিপ মারে ]

রাহুল : হয়েছে? ড্রামা?… [ with tedi smile ]

রিদোয়ান : আসলে স্নেহা! ওকে আমি নিষেধ করেছি এসব না খেতে…বললাম এসব খেলে ক্যান্সার হয়! ধুমপান সাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক! ক্ষতিকারক! বার বার বলতে লাগলাম তাও শুনেনা…

জারিফা : [ নাক ফুলিয়ে তার দিকে ফিরিয়ে ] এক্সকিউজ মি! আপনি নিষেধ করেছেন?…

রিদোয়ান : [ হেসে ] ডার্লিং তুমি আবার এভাবে ভালোবাসার চোখে তাকিয়ে আছো কেনো?…চলো তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো!

[ বলেই জারিফা আর কিছু বলে উঠার আগেই টেনে অন্যপাশ নিয়ে গিয়ে দাঁড় করায়,
মার্জান কিটকিটিয়ে হেসে উঠে,

রাহুল তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক…আর স্নেহা একবার রাহুলের দিক আরেকবার অন্যদিক দিক তাকিয়ে ফেলছে ]

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে ] তুমি আজ তোমার মামার বাসায় যাওয়ার কথা ছিলো! ভার্সেটিতে এলে যে!

মার্জান : দুপুর!..দুপুরবেলা যাবে! আপনি টপিক চেঞ্জ করবেন না…স্নেহা ধ্যানে আছে আপনাকে কি পানিশমেন্ট দেওয়া যায় চিন্তা করছে!

রাহুল : ঐ তুমি ও ওদের মতো আমার সাথে দুশমনি শুরু করে দিলা!

মার্জান : নো, নো জিজাজি! আমি দুশমনি করবো কেনো?…তবে আমি আমার ফ্রেন্ড কে এতো তাড়াতাড়ি বিধবা দেখতে চাই না!

রাহুল : [ হেসে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তাই?..তবে মারা গেলে বোধ হয় খুশিই হবে! তাই তো কিছু আন্সার দিচ্ছে না…

মার্জান : আহা! আসলে ও এখন লিষ্ট গুনছে যদি আপনি মারা যান…তাহলে নেক্সট কাকে বিয়ে করবে ওটাই ভাবছে!

রাহুল : [ হেসে মার্জানের চুল টেনে দিয়ে ] তোমাকে তো পড়ে দেখে নিবো! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে টেনে অন্যপাশ নিয়ে চলে যায়,]

[ মার্জান হাসতে থাকে হঠাৎ আসিফের দিক চোখ পড়ায় নাক ফুলিয়ে মুখ ভেংগিয়ে সামনে রাহুলের গাড়ীর বনাটের উপর উঠে বসে, আসিফ ও তার কান্ড দেখে হেসে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেলে ]
________________________________

রাহুল : স্নেহা! কি হয়েছে কিছু বলছো না কেনো?…

স্নেহা : কেনো?.. মার্জান বলছে শুনতে পাননি?..আমি লিষ্ট গুনছি! কাকে বিয়ে করা যায়!….

রাহুল : ওহ রিয়েলি! [ বলেই স্নেহার কাছে এগুই, স্নেহা ঘাবড়ে গিয়ে পেছনে পা বাড়াতেই গাড়ীর সাথে ধাক্ষা খেয়ে দাড়িয়ে পড়ে ]

রাহুল : সইতে পারবে তো আমার মারা যাওয়ার খবর?…

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে মাথা নুয়ে ] দেখেন উলটা পালটা কথা বলবেন না!

রাহুল : তাহলে বললে যে লিষ্ট গুনছো!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] ওটা তো এমনিতে বলেছি, রাগ করে আপনি স্মোক করেছেন তাই!

রাহুল : [ একটু হেসে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে স্নেহার দিক ]

– ওকে আই উইল ট্রাই! এমনিতেও আগে থেকে অনেক কমিয়ে দিয়েছি!

স্নেহা : হোয়াট?..ট্রাই মানে?..[ হাত এগিয়ে দিয়ে ] প্রমিস্ করেন..আজকে থেকে এসব আর ছুঁয়ে ও দেখবেন না!

রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা! এটা কি হুট করেই ছাড়া যায় নাকি?…

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] যায়! চেষ্টা করলে পারবেন! এখন আর কথা না বাড়িয়ে প্রমিস করেন!

রাহুল : [ স্নেহার কান্ডে একটু হেসে স্নেহার হাতের উপর হাত রেখে ] ওকে প্রমিস!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে হেসে ] থেংক ইউ!

[ হঠাৎ পেছন থেকে কেউ কেশে উঠার আওয়াজ আসলো, রাহুল আর স্নেহা দুজনেই ফিরে তাকিয়ে দেখে জারিফা আর মার্জান এসেছে ]

জারিফা : সরি! ফর ডিষ্টার্বিং ইউ গাইস্ এক্সুলি এটা বলতে আসলাম যে স্নেহা আমরা ক্লাসে যাচ্ছি! তোর হলে ক্লাসেই আশিস!

স্নেহা : আমিও আসছি ওয়েট! [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] বাই রাহুল! আমি যাওয়ার সময় দেখা করবো আপনার সাথে…

রাহুল : ওয়েট! আমার তোমাকে কিছু দেওয়ার ছিলো..

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] কিহ?..

মার্জান : আচ্ছা! আমরা ঐদিকে সামনের দিকই আছি! [ বলেই জারিফার হাত ধরে নিয়ে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ ]

জারিফা : [ হাত ছুটিয়ে কনফিউজড হয়ে স্নেহার কাছে এগিয়ে এসে গলার চুল গুলো সরিয়ে ] আরে স্নেহা!কিভাবে হয়েছে এসব! এভাবে লাল কেনো হয়েছে?…

স্নেহা : [ শকড হয়ে গলায় হাত রেখে ] লা..লাল হয়েছে মানে?…

মার্জান : আরেহ! হ্যা তাই তো!

জারিফা : আই থিংক কিছু কামড়িয়েছে?… [ বলতেই স্নেহা চোখ বড় করে শকড হয়ে তাকালো রাহুলের দিক ]

[ রাহুল হেসে ঘাড়ে হাত রেখে চুলকাতে চুলকাতে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি চুল সামনে এনে দিয়ে ] তোদের লাগছে হয়তো! আ..আই থিংক ঠা..ঠান্ডায় হয়েছে!

[ Rahul give a tedi smile ? ]

জারিফা : ওওহ!

রাহুল : আ..আই থিংক ঠান্ডায় হয়েছে মনে হচ্ছে না! কোনো মশা কামড়িয়েছে! এমনই লাগছে!

জারিফা : [ হেসে ] ইয়েস্ জিজাজি! রাইট! মশাই কামড়িয়েছে হবে!

[ স্নেহা কিছু বললো না আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে আবার অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

জারিফা : ওকে স্নেহা! আমরা ঐ দিকটা আছি তুই আয়! [ বলেই হেটে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ, আবার পেছন মুড়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে ]

– বাই দ্যা ওয়ে! জিজু…মশাটা কতো বড় হবে?… [ বলতেই রাহুল তেডি স্মাইল দিতে লাগলো ]

জারিফা : আ..আই থিংক আপনার হাইটের সমান তো হবেই তাই না?

– [ চোখ মেরে ] এম আই রাইট জিজাজি?.. [ রাহুল মুচকি হেসে ব্লাশিং হয়ে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেলে, জারিফা আর মার্জান হাসতে হাসতে সামনের দিক এগিয়ে চলে যায় ]

[ স্নেহা রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে লজ্জা লেগে উঠলো স্নেহার, কি আজিব ব্যাপার-স্যাপার, কাধের ব্যাগ ঠিক করে নিয়ে দৌড়ে চলে যাচ্ছিলো, ঐ মুহূর্তেই রাহুল হাত ধরে আটকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : হোয়ার আর ইউ গোয়িং?

– কামঅন স্নেহা! এটা তো শুধু ট্রেলার ছিলো, পিকচার এখনো বাকি আছে [ with tedi smile ]

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ] আ…আই থিংক আমার এখন যাওয়া উচিৎ!

রাহুল : আচ্ছা? তো যাও!

[ স্নেহা রাহুলের ধরে রাখা হাতের দিক তাকালো, কেমনি যাবে ধরে রাখলে! ]

রাহুল : একবার ছেড়ে দিলে আর ধরছি না কিন্তু, স্নেহা!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে তাকিয়ে ] মানে?..

রাহুল : [ হেসে] রিলেক্স স্নেহা! আই জাষ্ট কিডিং!

স্নেহা : [ গোমড়া মুখে ] কেনো? কেনো করবেন এমন মজা?…

রাহুল : ওখে স্নেহা!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] আপনি জানেন! আমার এই ধরনের মজা মোটেও পছন্দ না!

রাহুল : [ স্নেহাকে কাছে টেনে ] ওকে ওকে! আম সরি! আম সরি! [ বলেই স্নেহাকে জড়িয়ে বুকে টেনে নিচ্ছিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলকে সরিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : [ আশেপাশে তাকিয়ে একটু হেসে ] অওহ! সরিইইই!…

স্নেহা : আচ্ছা আমার লেইট হচ্ছে রাহুল!

রাহুল : ইয়াহ! এক সেকেন্ড [ বলেই.. পকেট থেকে একটি প্যাকেট বের করে তা থেকে একটি টিপ ছুটিয়ে স্নেহার কপালে লাগিয়ে দিলো, স্নেহা অবাক হয়ে হেসে উঠে ]

রাহুল : এমনিতে আমার মেয়েদের সাজগোছ সম্পর্কে তেমন আইডিয়া নেই! তবে গতকাল তোমাকে এটা লাগাতে দেখেছিলাম…

– আমার খুব ভালো লেগেছিলো! তাই আসার সময় কিনে এনেছি,

[ স্নেহা একটু হেসে টিপের প্যাকেট টা হাতে এগিয়ে নেই, কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রাহুলের দিক মুচকি হেসে চলে যায়, রাহুল ও পকেটে হাত রেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে থাকে ]

স্নেহা সামনের দিক এগিয়ে যেতেই,

জারিফা : ওহো! কাম কাম স্নেহা! মেরি জান!

মার্জান : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] কাল তো অনেক বলছিলি, কি কি হয়েছে মানে! কেক কেটেছি আর ডিনার করেছি ব্যাস তাই না?…

স্নেহা : কা..ক্লাসে লেইট হচ্ছে [ বলেই দৌড়ে হেটে চলে গেলো ]

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আরে স্নেহা! [ বলেই জারিফা আর মার্জান দুজনেই পেছন পেছন দৌড়ে এগিয়ে গেলো ]

In Class, স্যার লেকচার দিয়ে যাচ্ছে,স্নেহা নোট করছে,

জারিফা : [ স্নেহাকে ধাক্ষিয়ে ফিসফিসিয়ে ] ঐ স্নেহা বলনা! কি কি করেছিস!

মার্জান : বল স্নেহা! আই এম সো্ এক্সাইটেড ইয়ার!

[ স্নেহা চুপ করে লিখেই যাচ্ছে ]

জারিফা : আরে কি আজিব বলনা স্নেহা! আচ্ছা হালকা একটু বল..সব বলিস না…

মার্জান : [ স্নেহার হাতের কলম টেনে নিয়ে ] স্নেহা! মাই ডিয়ার! বল বল আরেকবার বলতে হলে না এই কলম দিয়ে তুকে খুন করবো আজ আমি!

স্নেহা : আরে? নোট করছি তো! এইদিকে দে!

মার্জান : হ্যা করিস! ইচ্ছা মতো করিস..কিন্তু এর আগে আমাদের এটা বলে দে… তোর গলায় লাল রাংগুলির রাজ কি! হুম হুম?

জারিফা : [ হেসে ] বল বল স্নেহা! [ ধাক্ষিয়ে ] আরে বলনা…

স্নেহা : [ আর না পেরে কানে হাত দিয়ে ] ওকেইইই! ওকে…বলছি!

– [ চোখ নামিয়ে মাথা নিচু করে ] কিক…কিস্ করেছিলো…

জারিফা : অওওও! স্নেহা!

মার্জান : এত্তো জোড়ে স্নেহা! আই থট রাহুল বোরিং বাট ও তো জখমি করে দিলো.. [ বলতেই জারিফা মুখ চেপে হেসে উঠে ]

স্নেহা : [ লজ্জা পেয়ে ] হয়েছে মার্জান! কলম দে এইবার!

মার্জান : নো নো স্নেহা! তারপর বল আরো সামথিং..হুম হুম!

স্নেহা : আরে! পাগল নাকি আরো সামথিং মানে!

জারিফা : [ আংগুল দিয়ে স্নেহার মুখে স্লাইড করে ] মানে…জখম কি শুধু, ওহ সরি! কিস্ কি শুধু গলায় করেছে অর…নাকি…আরো অন্যকিছু ও.. মানে

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] ছিঃ জারিফা! [ বলতেই ক্লাসের সবাই স্নেহার দিক তাকায় ]

স্যার : হোয়াট হ্যাপেন স্নেহা!

স্নেহা : [ দাঁড়িয়ে ] আব…নো নো স্যার নাথিং!

স্যার : অলরাইট! সি্ট ডাউন! [ স্নেহা বসে আড় চোখে দু-জনের দিক তাকাতেই দেখে জারিফা আর মার্জান দুজনেই মিটিমিটি করে হাসছে! আর কিছু না বলে স্নেহা ব্যাগটা হাতে নিয়ে অন্য সিটে এগিয়ে গিয়ে বসে পড়লো ]

ভার্সেটি ছুটির পর,

জারিফা : যা মেরি জান! রাহুল ওয়েটিং ফর ইউ!

মার্জান : বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা তোর ফিল কেমন হয়েছিলো?..হুম! বলনা বলনা?

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আজিব এখনো ওসবে পড়ে আছিস? আমি যাচ্ছি! বাসায় ফিরতে লেইট হতে পারে! [ বলেই হাটা শুরু করে ]

জারিফা : [ হেসে চেঁচিয়ে ] ওকে! অল দ্যা বেষ্ট! স্নেহা!

[ স্নেহা বেড়িয়ে বারান্দার দিক খুজলো রাহুলকে ফোন দিচ্ছে রিসিভই করছে না, পার্কিং এর দিক দেখবে বলে গার্ডেন পেড়িয়ে হেটে যাচ্ছে হঠাৎ কেউ এসে হাত টেনে গাছের নিচে এনে দাড় করালো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] রাহুল! ভয়ে পাইয়ে দিলেন তো!

রাহুল : ভয় পাওয়ার কি আছে! [ with tedi smile ]

স্নেহা : আপনাকে ফোন করছিলাম রিসিভ করছিলেন না…

রাহুল : [ পকেটে হাত দিয়ে ] ওহ শিট! মোবাইল গাড়ীতেই ফেলে এসেছি!

স্নেহা : আচ্ছা! আমি যাচ্ছি এখন! আপনার সাথে পরে ফোনে কথা বলবো! বাই! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো হুট করেই রাহুল আবার টেনে পার্কিং এর দিক নিয়ে যাচ্ছে ]

– আরে রাহুল! আবার কই নিচ্ছেন?..

রাহুল : [ পার্কিং এ এনে গাড়ীর দরজা খুলে দিয়ে ] চলো উঠো!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে] আপনি!

রাহুল : নট ওয়ান মোর ওয়ার্ড প্লিজ! উঠো,

[ স্নেহা আর কিছু বললো না, উঠে বসলো, রাহুল ও গিয়ে ড্রাইভিং সিটে উঠে বসে ]

স্নেহা : আপনার আবার কষ্ট করার কি দরকার ছিলো! আমি যেতেই পারতাম!

রাহুল : [ হেসে ] কষ্ট?..কামঅন স্নেহা! তোমার সাথে কাটানো প্রতিটা সেকেন্ড আমার জন্য সর্গের মতো আর তুমি বলছো,

– [ গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ] হোয়াটেবার! [ with tedi smile ]

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে ওপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে মেম!.. যাবো কোন জায়গায়?…

স্নেহা : [ একটু হেসে ] সি্.পি রোড! থার্ড সেন্টার, হাউজ নং টুয়েন্টি ওয়ান!

রাহুল : ওখেই!

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে তাকিয়েই থাকে রাহুলের দিক.. মনে মনে ভেবে যাচ্ছে, কি হ্যান্ডসাম লাগছে রাহুলকে, ইচ্ছে করছে তার খোচা খোচা দাড়ি গুলো একটু ছুয়ে দেখবে ]

হঠাৎ,

রাহুল : একটা খুব ভালো কাজ করেছো কি জানো?…

[ স্নেহা চমকে উঠে তাকালো ]

– তোমার ঐ ডিস্কাস্টিং ওভারটাইম ডান্স ক্লাসটা ছেড়ে দিয়ে,

স্নেহা : হোহ! মোটেও ডিস্কাস্টিং না ডান্স একটা পেশোন রেসপেক্ট দিতে শিখুন!

রাহুল : [ হেসে ] ইয়া…আই লাভ ইয়র সেক্সি ডেন্স! বাট নট ইয়র হোপলেস্ জব! [ স্নেহা শকড হয়ে তাকালো ]

– আরে এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?..

স্নেহা : আপনি কিছুর তারিফ করলে বার বার এই বাজে ওয়ার্ডটা ইউজ করেন কেনো?…

রাহুল : এক্সকিউজ মি! আই সে্ সেক্সি! নট সেক্স! দুটোর আলাদা মিনিং আছে ওকে! [ with tedi smile ]

স্নেহা : ওকে ওকে স্টপ!

রাহুল : ওকেই [ বলে হাসতে থাকে ]

কিছুসময় পর,

স্নেহা : ওকে ওকে! রাহুল! এইখানেই থামান!

রাহুল : বাট এটা তো হাউজ নং আ… [ জানালা দিয়ে তাকিয়ে ] নাইন্টিন!

স্নেহা : যদি বাবা দেখে ফেলে আপনার সাথে এসেছি! তাই একটু আগেই নামছি!

রাহুল : [ হেসে ] Shut-up স্নেহা এতো ভয় পাচ্ছো কেনো?…দেখলে দেখবে আরকি!

স্নেহা : না নাহ! রাহুল! যদি দেখে বাবা না বুঝে হুট করেই আপনার উপর রেগে যায়?

রাহুল : সো্ হোয়াট! রাগলে রাগবে…তারপর পরে বুঝিয়ে দিবো…

স্নেহা : [ একটু হেসে ] বাই!

– আর হ্যা মনে করে আপনার ফোন গাড়ী থেকে নিয়ে নিবেন!

রাহুল : ও হ্যা! [ স্নেহা গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ায় ]

রাহুল : আরে স্নেহা!

স্নেহা : [ জানালা দিয়ে ] বাই রাহুল! [ বলেই হেসে হেটে সামনের দিক চলে যায়, রাহুলের ও আর কি করার,গাড়ী ব্যাক দিয়ে সে ও ফিরে যায় ]
________________________________

বেল বাজাতেই স্নেহার মামী এসে দরজা খুললো,

মামী : আরে স্নেহা! আয় আয় ভেতরে আয়…তোর অপেক্ষায় করছিলাম! [ স্নেহা পা ধরে সালাম করে ভেতরে ঢুকলো, স্নেহার মা এগিয়ে আসতেই স্নেহা ও এগিয়ে গিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ]

মা : কি হয়ে গেছিস স্নেহা! এভাবে শুকিয়ে কাঠের মতো? …খাবার-দাবার ঠিক মতো করিস না তাই তো?…

স্নেহা : করি মা! আচ্ছা বাবা কোথায়?..

মা : আছে ভেতরে আছে,

রাশু : [ চেঁচিয়ে ] ওহো আপু! হ্যাপি বার্থডে…আমার জন্য কি এনেছো?..

স্নেহা : বার্থডে আমার আর গিফট দিবো তোকে?..

রাশু : আমিও এনেছি! হুম!

স্নেহা : কি এনেছিস!

রাশু : বাদাম ছোলার ভর্তা!

স্নেহা : এইদিকে আয় তুই [ বলতেই রাশু হেসে দৌড় মারে ]

হঠাৎ,

স্নেহার বাবা : [ রুম থেকে বেড়িয়ে এসে ] স্নেহা! কেমন আছিস তুই কবে এসেছিস!

স্নেহা : এইতো বাবা..ভালোই এক্ষুনি এলাম!

বাবা : [ হেসে স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] অনেক বড় হয়ে গেছে আমার স্নেহা! দেখলে তো? শহরে একা থেকে পড়ালিখা করছে!

– তো বল পড়ালিখা কেমন চলছে!

স্নেহা : হ্যা! ভালো.. তোমার শরীর ঠিকাছে তো এখন ?..

বাবা : হ্যা! ওসব আর কি বয়স হয়ে গিয়েছে! এসব শরীর-টরীর তো খারাপ হবেই!

– আচ্ছা তুই বয়! রেষ্ট কর..ভার্সেটি থেকে এসেছিস বুঝি?..

স্নেহা : হ্যা! সমস্যা নেই! আমি ঠিকাছি!

আমরিন : [ স্নেহার মামাতো বোন ] আরে স্নেহা?.. [ বলেই এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে ]

স্নেহা : [ হেসে ] তুমি?..কবে এলে?..

আমরিন : এইতো সকালেই এলাম!

স্নেহা : আচ্ছা? তোমার বেবি কোথায় ?..

আমরিন : ভেতরেই আছে,

বাবা : যা স্নেহা! ভেতরে গিয়ে রেষ্ট কর!

[ স্নেহা ভেতরে গিয়েই তার মামাতো বোন আর তার ছোট বাচ্চাকে নিয়ে গল্পসল্পে ব্যস্ত ]

দুপুরে,সবাই একসাথেই লাঞ্চ করলো,

মা : স্নেহা!

স্নেহা : হ্যা?..

মা : একটু এদিক আয়! [ বলেই ভেতরের রুমে গেলো ]

স্নেহা : [ রুমে এসে ] হ্যা বলো!

মা : এদিকে বয়!

স্নেহা : [ পাশে বসে ] আচ্ছা তুমি না আমাকে সারপ্রাইজ দিবে বলেছো কোথায় হুম?..

মা : [ হেসে ] দেখ স্নেহা! হঠাৎ করে এসব শুনলে হয়তো তুই সারপ্রাইজ না হয়ে, তোর খারাপ ও লাগতে পারে, তুই তো জানিস কয়েকদিন আগে আমাদের কি অবস্থা ছিলো! সব শেষ হয়ে যাচ্ছিলো…রাশুর পড়ার খরচ ও বেড়ে গিয়েছিলো কোন দিক থেকে কি করবো কিছুই মাথায় আসছিলো না…

– হঠাৎ করেই কেউ এসে আমাদের সাহায্য করে, আমরা তার থেকে টাকা নিতে চাইছিলাম না! কিন্তু ওনি তোর বাবাকে বললো আমাকে আপনার ভাই মনে করে এই কর্তব্যটা পালন করতে দেন! আপনার যদি তাও সংকোচ হয় তাহলে আমাকে আপনি টাকা গুলো ধীরেধীরে শোধ করে দিবেন!

স্নেহা : আচ্ছা? ভালোই তো মানুষটা! কিন্তু তাও টাকা শোধ করে দিবে বলোনি?..

মা : হ্যা বলেছি!

স্নেহা : ঠিক বলেছো! যারই হোক টাকা শোধ করেই দেওয়াটাই বেটার!

– আচ্ছা! কিন্তু অনি আমাদের এসব ব্যাপারে কিভাবে জানলো..?

মা : বাড়ী নিলামের জন্য ব্যাংক থেকে অর্ডার এসেছে.. যারা কেনার জন্য আগ্রহী তারা এসে বাড়ী দেখে যাচ্ছিলো, উনি নাকি খামার বানানোর জন্য জায়গা খুজছিলো, তখন ব্যাংক থেকে জায়গার কাগজ ওনার কাছে ও যায়, তারপর আমাদের বাড়ী এসে জিজ্ঞেস করলো কেনো নিলাম হচ্ছে?…
তখন সব খুলে বললো তোর বাবা! আর উনি আমাদের সাহায্য করতে চাইছিলো!

স্নেহা : ভাগ্যিস ঠিক সময়ে উনি হেল্প করেছে…আমার তো টেনশনই হচ্ছিলো এতোটাকা কিভাবে জমা করবো কয়েকদিনে!

মা : স্নেহা!

স্নেহা : হ্যা!

মা : উনি বলেছে ওনার ছেলে তোর একই ভার্সেটিতেই পড়ে, তোর সিনিয়র,

– তোকে খুব পছন্দ করেছে ছেলেটা! ফ্যামিলি ও অনেক ভালো, ছেলে ও দেখতে যেনো হাজারে একটা, উনি তোকে নিজের ছেলের বউ করতে চাই!

[ মায়ের কথা শুনে স্নেহা চমকে গেলো, এমন লাগছিলো যেনো পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, ]

মা : তাকে কিভাবে ধন্যবাদ দিবে খুজেই পাচ্ছিলো না তোর বাবা! তখনি উনি বলে উঠে…ধন্যবাদ দিতে হবে না..শুধু দু-পরিবারকে এক করার সুযোগ করে দিন এতেই চলবে! আমরা তো অবাক হলাম!

– [ মুচকি হেসে ] তারপর উনি বললো আপনার মেয়েকে আমি নিজের মেয়ে বানাতে চাই!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] কিক…কিন্তু! মা এসব…

মা : আমি জানি তোর শুনে এমনই লাগবে! আমার তো এর চেয়ে খারাপ অবস্থা হয়েছিলো কেঁদে কেঁদে পুরোদিন পার করে দিয়েছিলাম..

– বিয়ের কথা শুনলে প্রত্যেক মেয়েরই এমন হয়! সাভাবিক…পড়ে মানিয়ে যাবে ধীরেধীরে!

– [ একটু হেসে ] ও হ্যা! তোর স্ট্যাডি ও কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না…ওরা বলেছে তুই যতোটুকু চাস ততোটুকু পড়বি!

[ হতাশ হয়ে গেলো স্নেহা, কি বলবে এসময় কিছইু বুঝতে পারছে না ]

মা : এসব শুনে, এমন পরিবার দেখে তোর বাবা ও আর না করতে পারেনি! বরং খুশিতে কাঁদতে বসেছিলো! বলছে আমার স্নেহার জন্য এমনই একটা পরিবারের চেয়েছিলাম..তা আল্লাহ মিলিয়েই দিলো…

– আমাদের বিপদে ওরা এগিয়ে এলো.. তোর কথা বলায় তোর বাবা ও হ্যা বলেদিয়েছে!

– ওরা এটাও বলেছে! তোর মতামত ও জেনে নিতে, কিন্তু তোর বাবা বলেছে তুই তোর বাবা যেটা ভালো বলে সেটাই করিস,

[ ভাষা হারিয়ে ফেলেছে স্নেহা! মুখ দিয়ে আর একটা শব্দই বের হচ্ছে না খালি ঢোগ গিলছে আর এক পলকে তাকিয়ে মায়ের কথা শুনছে ]

মা : ও হ্যা! এটা দেখ [ বলেই পাশ থেকে একটা প্যাকেট এগিয়ে নিলো ] এই শাড়ীটা তোর বাবা নিজ হাতে পছন্দ করে কিনেছে তোর জন্য!

স্নেহা : শা..শাড়ী কেনো?…

মা : আজ বিকেলে ওরা তোকে দেখতে আসবে! তখন এটা পড়বি!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] আজ?..

মা : হ্যা কি হয়েছে?..

স্নেহা : না বলছিলাম যে ওরা তো আমাকে দেখেছে তাই না…আবার আজ দেখতে আসার কি প্রয়োজন!

মা : [ একটু হেসে ] আরে পাগলী দেখেছে তো শুধু ছেলে তাই না?…আর ওভাবে দেখা এক কথা আজ দেখা এক কথা..

– সবাই মিলে কথাবার্তা বলবে,সব ঠিকটাক করবে তারপরই তো বিয়ে হবে তাই না?…

[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো ]

মা : [ চোখ মুছে দিয়ে ] আরে কাঁদছিস কেনো বিদায় কি আজ দিবো নাকি পাগলী?…

– আচ্ছা তুই যেনো কি বলবি বলেছিলি?.. [ বলতেই স্নেহার মামাতো বোন আমরিন রুমে ঢুকে ]

আমরিন : কি কথা হচ্ছে মা মেয়ের?.. হুম?..

স্নেহার মা : আরে! এইদিকে আয়! তুই ওকে রেডি করে দে!

আমরিন : হ্যা! হ্যা! এমনভাবে রেডি করে দিবো যাতে হবু বর তার চোখই সরাতে না পারে!

স্নেহার মা : [ একটু হেসে ] সাজানোর ও কি দরকার আমার মেয়েকে ও তো এমনিতেই ও দেখতে সর্গরাণীর মতো,

[ স্নেহার শুধু রাহুলের কথায় মনে পড়ছে এই মুহূর্তে, ইচ্ছে করছে দৌড়ে ছুটে যাবে রাহুলের কাছে, জড়িয়ে ধরবে তাকে টাইট করে ]

মা : আরে হ্যা স্নেহা! বলনা কি বলবি?..

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] হ্যা?…নাহ! কিক..কিছুনা!

মা : কিন্তু তুই বলেছিলি যে কি যেনো বলার আছে?..

স্নেহা : তে..তেমন কিছুনা!

মা : আচ্ছা! [ বলেই মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে উঠে চলে যায় ]

বিকেল হয়ে গেলো,

স্নেহা ড্রেসিং টেবল এর সামনে বসে আছে,মেজেন্ডা রঙের শাড়ী পড়ে, আমরিন স্নেহাকে সাজিয়ে দিচ্ছে,

আমরিন : আরে স্নেহা! কি হয়েছে তোর, মুখটা এমন গোমড়া বানিয়ে রেখেছিস কেনো?.. [ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না ]

আমরিন : [ ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! কোনো লাভার-সাভার আছে নাকি?.. [ বলেই চোখ মারে ]

[ স্নেহা হতাশ হয়ে চোখ তুলে তাকালো আমরিনের দিক, না চাইতেও একটু হেসে মাথা নাড়িয়ে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেললো, হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ালো, আমরিন ভেতরে আসতে বললে দেখে স্নেহার বাবা এসে ঢুকলো ]

বাবা : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] বাহ! পরী লাগছে আমার মেয়েকে!

[ স্নেহা কিছু বলবে বলে তার বাবার দিক তাকিয়ে ঢোগ গিলতে লাগলো ]

বাবা : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] আমি জানতাম তুই আমার কথা ফেলবি না, আমার মান রাখবি! আর আমি তো তোর ভালোই চাইবো!…হুম?.. [ গোমড়া মুখে একটু হাসলো স্নেহা! ]

বাব : আরে! অনেকে আমার কান ভরিয়েছে তোর সাথে নাকি কোন ছেলের কি কি চলছে! কিন্তু আমার তোর উপর পুরো বিশাস ছিলো! আমার মেয়ে কখনোই এসব ফালতু কাজ করবে না!

[ দম আটকে গেছে স্নেহার, তার বাবার কথা শুনতেই ,গলা শুকিয়ে আসছে,]

বাবা : আচ্ছা তুই তাড়াতাড়ি তৈরী হয়েনে! ওরা এক্ষুণি চলে আসবে আমি নিচে যাচ্ছি ওদের রিসিভ করতে!

[ বলেই স্নেহার বাবা চলে যায়, জমিয়ে রাখা চোখের পানি গুলো টপ করেই গাল বেয়ে পড়লো স্নেহার! ]

আমরিন : স্নেহা?..তুই ঠিকাছিস তো?..

স্নেহা : [ চোখ মুছে হেসে ] হ্যা! চোখে কিছু ঢুকেছে হয়তো তাই!

আমরিন : আচ্ছা আমি আসছি! তুই বস!

[ বলেই বেড়িয়ে গেলো, স্নেহা ধীরেধীরে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ালো, নিজের দিক তাকিয়ে রইলো, খুব অসহায় মনে হচ্ছে নিজেকে, কিছুই করতে পারছে না,

রাহুলের তেডি স্মাইল, বার বার স্নেহার কানে চুল গুজে দেওয়া,জোড় করে করে কোলে তুলে নেওয়া, এসব মনে করছে আর হাসছে,

হঠাৎ কপালের দিক তাকাতেই আজ সকালে রাহুল পড়িয়ে দেওয়া টিপটার কথা মনে পড়লো, তাড়াতাড়ি নাক ফুলিয়ে কপাল থেকে টিপটা খুলে আয়নায় লাগিয়ে দিলো, আর মনে মনে ভাবছে টিপ পড়িয়েছে রাহুল আর ওকে কেনো দেখাবে? শুধু রাহুলই দেখবে আর কেউ না,

বিরক্তি হয়ে পাশ মুড়ে ধীরেধীরে মোবাইল টা হাতে এগিয়ে নিয়ে খাটে বসলো, ডায়াল লিষ্টে রাহুলের নাম্বারটা এনে তাকিয়ে আছে আর চোখ থেকে জল ফেলছে, রাহুলকে এখন বলবে কিনা ও ভাবছে! আবার ভাবছে, রাহুল তো হুট করেই রেগে যায় না জানি আবার কি তোলপাড় করে বসে,সব তাড়াহুড়োতে করলে ও ঠিক হবে না, থাক ঐ ছেলেটাকেই বুঝিয়ে বলে দিবো যে আমি রাহুলকে ভালোবাসি ওকে বিয়ে করতে পারবো না ]

কিছুক্ষণ পরই আমরিন এগিয়ে এলো,

আমরিন : ওয়াও স্নেহা! ছেলে কি হ্যান্ডসাম রে,

স্নেহা : [ শকড হয়ে মনে মনে ] এসেই গেছে! উফফ…

আমরিন : পুরাই ফরমাল গেটাপে! যেমন লম্বা তেমন হ্যান্ডসাম!

স্নেহা : [ মনে মনে ] হুহ! আমার রাহুলের থেকে কমই হবে!

হঠাৎ,

রাশু : [ দৌড়ে এসে ] ওয়াও আপু! কি গাড়ী নিয়ে এসেছে জানো?..ঐ যে তোমাকে দেখিয়েছিলাম না একদিন…ঐরকম রেড কালারের,

স্নেহা : [ মনে মনে ] আজিব তো! তাতে কি হয়েছে রাহুল থেকে ও আছে এমন! ওর টা আরো সুন্দর,হোয়াইট কালারের!

– রেড! ইয়াক ছিঃ এটা কোনো কালার?

আমরিন : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] আরে স্নেহা! তুই কি ভাবছিস মনে মনে?..

স্নেহা : [ মনে মনে ] আমি?..পাগলই তো হয়ে গেছি! তোমাদের মতো পাগলামো টপিক নিয়ে ভাবছি!

হঠাৎ,

স্নেহার মা : আরে আমরিন! স্নেহাকে নিয়ে আয়! [ বুকটা ধুপ করে উঠলো স্নেহার ভয়ে,কেমন যেনো লাগছে, শরীর কাঁপতে লাগলো,কি ভেবেছিলো আর কি হয়ে যাচ্ছে, ]

আমরিন : [ হেসে ] স্নেহা! আমার তো মনে হচ্ছে! তোকে আজই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে তোর চেহেরার কি না হাল করে রেখেছিস,

স্নেহা : এ..এখন যেতে হবে?.. আরেকটু পরে গেলে হয় না?..

আমরিন : আরে এতো লজ্জা পাচ্ছিস কেনো?..[ ফিসফিসিয়ে ] ওর সামনে গেলে লজ্জা পাস এখন না! [ বলেই টেনে বের করে ড্রইং রুমে এগিয়ে নিয়ে যায়, স্নেহা তার বাবার দিক তাকালো ]

বাবা : আয় স্নেহা! [ বলেই স্নেহাকে এগিয়ে নিয়ে সোফায় বসতে দিলো, স্নেহা সোফায় বসতে যাবে তখনি আড়চোখে পাশে তাকাতেই স্নেহা থমকে যায়, বাজ ভেঙে পড়েছে যেনো মাথায়, মনে মনে ভাবছে ” সামির “? ও…? কিক..কিন্তু ও তো আমার আর রাহুলের ব্যাপারটা ও জানে!

সামির ও স্নেহার দিক তাকিয়ে একটু হাসলো, স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ ফিরিয়ে ফেলে, ]

বাবা : বয় স্নেহা!

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] হ্যা! [ বলেই বসলো ]

চলবে….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 33

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 33

writer-Jubaida Sobti

রাহুল হাত দিয়ে স্নেহার পিঠ আলগে ধরে স্লাইড করছে, ক্রীম গুলো সব স্নেহার পিঠেই মাঝতে লাগলো তাতেও খবর নেই, হারিয়ে গেছে রাহুল অজানা এক ভালো লাগাই!…

স্নেহা : [ ছুটে এসে ] রার…রাহুল! ড্রেস খারাপ হচ্ছে…

রাহুল : হোক! [ বলেই স্নেহার গলায় কিস্ করতে লাগলো ]

কিছুক্ষণ পরেই স্নেহা রাহুলকে ধাক্ষা দিয়ে দৌড়ে সরে যাচ্ছিলো …. রাহুল ও ব্লাশিং হয়ে হেসে স্নেহার হাত ধরে টান দিয়ে আবার দেওয়ালের সাথে লাগিয়ে দাড় করায়,

রাহুল : সামান্যতে এতো লজ্জা স্নেহা?…[ with tedi smile ]

স্নেহা কিছু বললো না লজ্জায় ঘাবড়ে গেলো, চুপ করে মাথা নুয়ে আছে,জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে,

রাহুল : [ স্নেহার একদম কাছে মুখ এনে ] কামঅন স্নেহা! ভয় পেতে হবে না, আমি তোমার পার্মিশন ছাড়া আর কিছু করবো না…

– উইদাউট কিস্ [ বলেই স্নেহার গালে একটি চুমু খেলো, স্নেহা শকড হয়ে তাকালে, রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার গায়ে ওড়নাটা পড়িয়ে দিলো, তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে কাছে টেনে হুট করে কোলে তুলে নিলো ]

স্নেহা : আরে ?…

রাহুল : অওহ! স্নেহা! তোমাকে দেখে লাগছে না, কিন্তু আগে থেকে একটু ভারী হয়ে গেছো!

স্নেহা : দেখেন উল্টা পাল্টা কথা বলবেন না,আপনি যে ড্রেস টা কিনেছেন এটাই তো কমপক্ষে চল্লিশ-পঞ্চাশ কেজি হবে!

– [ মুখ ভেঙিয়ে ] এমনিতেও! আমি কি বলেছি আপনাকে কোলে নিতে?…

রাহুল : না বলোনি কিন্তু আমার ইচ্ছে হয়েছে নিয়েছি! যখন ইচ্ছে হবে নিবো, এবং সারাজীবনই নিয়ে যাবো,

স্নেহা : [ একটু হেসে ] নিয়ে যাবেন?.. কোথায়?..

রাহুল : স্মার্ট কুয়েশন!.. [ with tedi smile ]

– বাকি গুলো পরে দেখে নেবো, তবে আপাতত এখন রুফটপে নিয়ে যাচ্ছি, [ বলেই হাটা শুরু করে ]

স্নেহা : রুফ টপে?..কিন্তু কেনো?..

রাহুল : আগে চলোতো…তারপর নিজেই দেখে নিবে! [ আর কিছু বললো না স্নেহা, ব্লাশিং হয়ে মুচকি হেসে রাহুলের কাধ শক্ত করে জড়িয়ে তাকিয়ে রইলো এক পলকে ]

রুফ টপে পৌছাতেই স্নেহা আশেপাশে তাকিয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলো,চারদিক সাদা কাপড় আর অনেকগুচ্ছো সাদা গোলাপে মুড়িয়ে সাজানো হলো…

রাহুলের কোল থেকে নেমে দাঁড়ালো স্নেহা!

সামনে হেটে এগিয়ে যেতেই দেখে মাঝে একটি ডিনার টেবিল ও রেডি করা আছে, তারউপর হলুদ বাতির দুটো ক্যান্ডেল লাইট জলছে! হঠাৎ খেয়াল করলো রাহুল পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, স্নেহা তাকাতেই,

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : আজ ডিনার করবে তো?..নাকি আজ ও পেট ভরে গেছে সামথিং অর ক্ষিধে নেই!…

[ রাহুলের কথা শুনে স্নেহা লজ্জায় একটু হেসে তাড়াতাড়ি অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : তবে আজ কিন্তু পেট আমার অনেক ভরেছে…ডিলেশিয়াস্ ক্রিমি প্লাস…

স্নেহা : [ লজ্জায় চেঁচিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : [ হেসে ] ওকে ওকে.. ফিনিশ!

[ বলেই হাত বাড়িয়ে দিলো স্নেহার দিক, একটু হেসে রাহুলের হাতের উপর হাত রাখলো স্নেহা!, এগিয়ে নিয়ে একটি চেয়ার টেনে বসালো রাহুল স্নেহাকে!]

স্নেহা : এমন লাগছে যেনো,কোনো সাদা গোলাপের বাগানে এসেছি!

রাহুল : পরীরা যেখানে পা রাখবে জায়গাটা ডেফিনিটলি ফুলের বাগানের মতোই তো লাগবে!

স্নেহা : হোহ?.. পরী কে?…

রাহুল : তুমি!

স্নেহা : ওও! তাহলে আপনি?…

রাহুল : [ কিছুক্ষণ ভেবে ] আমি ভুত!

স্নেহা : [ হেসে ] ভুত হতে যাবেন কেনো?..

রাহুল : [ হেসে ] তাহলে আর কি হবো?..ভুত ছাড়া?..সব ইউজলেস জিনিষের সাথেই ছেলেদের তুলোনা করা হয়!

– মেয়েদের ডেডিকেট করার জন্য, পরী আছে, ফুল আছে, চাঁদ আছে, আরো কতো কি…আর এগুলোর অপোজিট ডেডিকেট করো ছেলেদের,

– তুমি পরী হলে আমি ভুত!, ভুত দেখলেই তো মানুষ ভয়ে কাঁপতে থাকে, কারণ এর চেহেরা ভয়ানক আর কুৎসিত,

– তুমি ফুল হলে আমি কাটা, একটা সুন্দর ফুল দেখে মুগ্ধ হয়ে যখন সেটা ছিড়তে যাবে তখন ঐ যে কাটায় গিয়ে আঘাত পাবে [ একটু হেসে ] তারপর নাও কাটার উষ্টিগুষ্টিকে গালি দিয়ে ভরিয়ে ফেলবে!

– তারপর তুমি চাঁদ হলে আমি সূর্য, ইংলিশ ট্রান্সলেটে ও মুনকে ফিমেল ধরে আর সা্ন কে মেল, চাঁদ দেখলেই মানুষ পোয়োট্রিক হয়ে যায়, চাঁদের আলো আর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তাকে মেয়েদের সাথে তুলোনা করে, আর সূর্য যার আলোতে গোটা পৃথিবী ভরে যায় তাকে মানুষ গালি দিতে থাকে কারণ তার তাপ একটু বেশী,

[ স্নেহা রাহুলের কথা শুনে কিটকিটিয়ে হেসে উঠে ]

রাহুল : হুম! হুম! হাসো…

স্নেহা : কিন্তু রাহুল! আপসে্ট হচ্ছেন কেনো?…সব স্ট্রং জিনিষই তো ছেলেদের সাথে তুলোনা করা হয়েছে!

– এই যে যেমন বলছেন ভুত, যেটা দেখলে মানুষ ভয় পায় কারণ তার সাথে মানুষ মোকাবেলা করতে পারবে না,

– সেকেন্ড কাটা, কাটাতো ফুলের সুরক্ষকারী যার ভয়ে মানুষ ফুল ছিরতে ভয় পায়,

– আর সূর্য যার তাপ অনেক বেশি যেমনটা ছেলেদের রাগ বেশি, ইনফ্যাক্ট সূর্যের এমন আলো যার কারণে মানুষ চোখ তুলে ও সূর্যের দিক বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারে না, সো্ দ্যাটস্ ইট!

রাহুল : হুম! এবার বুঝলাম তোমার চশমা কেনো প্রয়োজন হয়েছে! লজিক আছে কথায়, ব্রিলিয়ান্ট!

স্নেহা : এক্সকিউজ মি! চশমা আমি Headache এর জন্য ইউজ করি!

রাহুল : ঐ তো Headache তখনিই তো হয় যখন তুমি প্রেশার দিয়ে এসব চিন্তাভাবনা করো!

স্নেহা : হয়েছে?..হুম?..

রাহুল : হুম! হয়েছে [ with tedi smile ]

– ওকে..এবার ডিনার শুরু করো!

– আচ্ছা ওয়েট…ওয়েট ফার্ষ্ট মি..ওকে.?.[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো, রাহুল স্পুনে খাবার তুলে স্নেহার মুখের দিক এগিয়ে দিলো ]

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] ওয়েট! [ বলেই সে ও তার স্পুনে খাবার তুলে রাহুলের মুখের দিক এগিয়ে দিলো, দুজনেই হেসে উঠে দুজনের হাতে এগিয়ে দেওয়া স্পুনের খাবারগুলো খেয়ে নিলো ]

After Dinner,

রাহুল ব্লাশিং হয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক, স্নেহা হেসে হেসে পানি খেয়ে একটা টিসু এগিয়ে নিয়ে মুখ মুছে নিলো…

মুখে হাত দিয়ে বসে আছে স্নেহা..আর রাহুল তাকিয়েই আছে… [ Then Eye Contact ]

কিছুক্ষণ পর, স্নেহা চোখ দিয়ে ইশারা করলো রাহুলকে… দেখা হয়েছে কিনা..?

রাহুল ও ভোর কুঁচকে ইশারা করে বললো… না হয়নি!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আই থিংক আমার এখন ড্রেসটা চেঞ্জ করা উচিৎ! রাহুল!

– আমি যাচ্ছি! [ বলেই উঠে দাঁড়ালো ]

রাহুল : আরে চেঞ্জ করবা মানে ?…ভালোই তো লাগছে!

স্নেহা : পাগল নাকি?.. আমি এটা কেড়ি করে নিয়ে এখন বাসায় যাবো?…

রাহুল : [ উঠে দাঁড়িয়ে ] হ্যা তো কি হয়েছে…?

– ওকে তোমার হাটতে হবে না আমি কোলে করে গাড়ীতে তুলে দিবো তারপর আবার কোলে করে গাড়ী থেকে নামিয়ে আবার কোলে তুলে…

স্নেহা : ব্যাস! ব্যাস! [ হেসে ] এতোবার কোলে তুলতে হবে না…এটা এখানেই থাক…

রাহুল : এখানে থাকবে কেনো ?..আমি পড়ার জন্য?…

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] আপনি পড়তে যাবেন কেনো…. [ রাহুলের কাছে এসে জ্যাকেট টেনে ঠিক করে দিয়ে.. ]

– আসবোই তো একদিন এইখানে, এক্কেবারের জন্য…. হুম?…তখন পড়বো!

রাহুল : [ স্নেহার কোমোড়ে হাত রেখে কাছে টেনে ] আচ্ছা?… তো ঐ দিনটা কবে আসছে…?

স্নেহা : আসছে! ওয়েট করুন!…

রাহুল : [ স্নেহার নাকের সাথে নাক লাগিয়ে ] ওহ নো স্নেহা! আই কান্ট ওয়েট!

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] বাট ওয়েট করতে হবে! [ বলেই কোমোড় থেকে রাহুলের হাত ছুটিয়ে ঘাগড়া হাতে তুলে দৌড়ে চলে যাচ্ছে ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা!

[ স্নেহা থেমে গিয়ে পেছন মুড়ে তাকায়, রাহুল এগিয়ে এসে তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে কোলে তুলে নেয়! স্নেহা ও আর কিছু বললো না… ব্লাশিং হয়ে হেসে রাহুলের গলায় জড়িয়ে কাধে মাথা রেখে তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিক ]

নিচে নেমে আসলে…রাহুল কোল থেকে নামাতে না চাইলেও স্নেহা ছুটাছুটি করে নেমে বেডরুমে চলে যায়,রাহুল হাসতে থাকে,

কিছুক্ষণ পর স্নেহা চেঞ্জ করে ড্রইংরুমে এগিয়ে এসে দেখে রাহুল সোফার হাতের উপর বসে আছে, পা নাড়িয়ে গুণগুণ করে গান করছে….

রাহুল : [ স্নেহাকে দেখতেই ঘুমের আলসেমি কেটে ] স্নেহা! আমার না আসলে অনেক টায়ার্ড লাগছে…আ..আই মিন ঘুম পাচ্ছে চোখটা খুলে রাখতে পারছি না, চলো ঘুমিয়ে পড়ি!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] তাই?…কম্বল আর বালিশটাও কি এইখানে সোফায় এনে দেবো?..

রাহুল : না..নাহ থাক ওসবের দরকার নেই! [ চোখ টিপ মেরে ] শুধু তুমি আসলেই চলবে…

স্নেহা : তাই?…

রাহুল : ইয়েস্! [ With tedi smile ]

স্নেহা ধীরেধীরে রাহুলের কাছে এগিয়ে এসে দাঁড়ালো, রাহুল ব্লাশিং হয়ে তাকিয়ে স্নেহার হাত ধরতেই যাবে..তখনি

স্নেহা : [ হেসে হাত কাধে উঠিয়ে ব্যাগ ঠিক করে ] বাই! [ বলেই হেটে দরজার দিক চলে যায় ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] আরে স্নেহা ওয়েট! [ বলেই দৌড়ে এগিয়ে যায় স্নেহা হেসে দরজা খুলে বেড়িয়ে গেলো ]

রাহুল : [ পেছন থেকে স্নেহার হাত ধরে ] ঐ…

স্নেহা : ইয়েস্

রাহুল : নাহ বলছিলাম যে.. আজ না হয় থেকে যাও…

স্নেহা : থেকে কি হবে?…

রাহুল : থেকে কি হবে মানে?..কিছু তো করতে দিবা না…এমনিতেও আর একদিনে কি বা..হয়ে যাবে…আফটার অল! টেন মানথস্ তো লাগবেই!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] ছিঃ রাহুল!

রাহুল : [ স্নেহার কাছে মুখ এনে ] Listen! জাষ্ট তাকিয়ে থাকবো তোমাকে!…

স্নেহা : [ রাহুলের নাক চেপে দিয়ে ] অনেক তাকিয়ে ফেলেছেন আজ! আর তাকিয়ে থাকতে হবে না! [ বলেই হাটা শুরু করে ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] ওহো স্নেহা! আমি যেমনকি বাচ্চা! নাক চেপে আদর করে দিলা তো ব্যাস! হয়ে গেলো!

[ স্নেহা ফিরে তাকিয়ে একটু হেসে মুখে আংগুল দিয়ে আস্তে বলার জন্য ইশারা করে, রাহুল ও তেডি স্মাইল দিয়ে দৌড়ে গিয়ে স্নেহাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ]

স্নেহা : আরে রাহুল! কি করছেন! পাগল নাকি?..সিকিউরিটি দেখছেন না?…[ বলেই ছুটাছুটি করতে থাকে, রাহুল হেসে স্নেহাকে টেনে তারদিক ফিরিয়ে কোলে তুলে নেয়! ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে রাহুল! নামান প্লিজ! এসব ভালো হচ্ছে না…[ বলেই নেমে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে ]

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে, সিকিউরিটিদের দিক তাকিয়ে,কাঁকা বলে চেঁচিয়ে উঠে, এবং সিকিউরিটি দু-জনই হেসে আঙুল দেখিয়ে অল দ্যা বেষ্ট ইশারা করে ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] জানো ওরা কি বললো?… মানে অল দ্যা বেষ্ট! প্রেম চালিয়ে যাও!

স্নেহা : আপনি না একটু বেশিই করছেন রাহুল!

– নামান আমাকে প্লিইইজ!

[ রাহুল একটু হেসে গাড়ীর দিক এগিয়ে গিয়ে স্নেহাকে নামিয়ে দরজা খুলে দিলো, স্নেহা নাক ফুলিয়ে গাড়ীতে উঠে বসে, রাহুল দরজা বন্ধ করার আগেই স্নেহা ধুম করে টেনে দরজা বন্ধ করে দিলো, রাহুল ও তেডি স্মাইল দিয়ে ড্রাইভিং সি্টে এগিয়ে গিয়ে বসলো ]

গাড়ী চলছে স্নেহা কিছু বলছে না জানালার দিক তাকিয়ে আছে…রাহুল কিছুক্ষণ সোজা তাকাচ্ছে তো কিছুক্ষণ হেসে আবার স্নেহার দিক তাকাচ্ছে, রেগে আছে স্নেহা! তবে রাগ দেখালে স্নেহাকে আরো একটু বেশিই কিউট লাগে…

রাহুল : এতো রাগার কি আছে…ওরা আমার ঘরের মানুষের মতোই! ইনফ্যাক্ট আমার কয়টা গার্লফ্রেন্ড আছে না আছে, ওরা কবে আমার বাসায় আসছে না আসছে সব খবরই ওদের থাকে…এক কথায় আমার ভেতর বাহিরের খবর…

– [ একটু হেসে ] দাদী যদি ওদের জিজ্ঞেস করে বাসায় কবে ফিরেছি…লেইট নাইটে ফিরলেও ওরা বাচিয়ে নেই! দ্যাটস্ হোয়াই আই লাভ দেম!

স্নেহা : [ আড় চোখে অবাক হয়ে তাকালো ] কয়টা গার্লফ্রেন্ড আছে না আছে মানে?…কয়টা আছে?…

রাহুল : [ হেসে ] ওহহো এভাবে তাকাচ্ছো কেনো… গার্লফ্রেন্ড মিনস্ আ..জাষ্ট লাইক শ্রেয়া!

– নট ইউ! [ With tedi smile ]

[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না জানালার দিক ফিরে গেলো ]

রাহুল : ওয়াও! স্নেহা জলতে ও পারে!

স্নেহা : আই এম নট ফিলিং জ্যালা্স! ইফ দেয়ার অনলি ফ্রেন্ডস!

– লাইক শ্রেয়া!

রাহুল : ওকেই! [ With tedi smile ]

স্নেহা : আর আপনি বক বক না করে না সোজা তাকিয়ে গাড়ী চালান! প্লিজ!

রাহুল : তুমি যতোই রাগো না কেনো স্নেহা…আমার মন চাইলেই কোলে তুলে নিবো… সেটা পাবলিক প্লেস্ হোক অর প্রাইভেট প্লেস্ আই ডোন্ট কেয়ার!

[ স্নেহা আর তাকালো না রাহুলের দিক, মনে মনে হাসছে রাহুলের কথায়, আর ব্লাশিং হচ্ছে ]

বাড়ী এসে পৌছালো, গাড়ী থামিয়ে স্নেহার দিক তাকালো রাহুল!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] রাহুল! আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো!

রাহুল : ইয়েস্!

স্নেহা : আমি কাল থেকে আর ডান্স ক্লাস যাচ্ছিনা!

রাহুল : ওওয়াও! দ্যাটস্ আ..গ্রেট নিউজ!

স্নেহা : কাল! বাবা-মা আসছে, মামার বাসায়!

রাহুল : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওউউউ! গুড নিউজ!..

স্নেহা : আমি কাল আপনার কথা বাবা-মা কে জানিয়ে দিবো!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] ওহ! ওয়াওও! দ্যাটস্ আ…ব্রেকিং নিউজ ফর টুডে!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] উফফো! রাহুল! আমি সিরিয়াসলি কথা বলে যাচ্ছি…আর আপনি মজা করেই যাচ্ছেন! [ বলেই দরজা খুলে নেমে পড়ে ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! ওয়েট! [ বলেই নেমে স্নেহার দিক এগিয়ে আসে ] আমি মজা করছিলাম না সত্যি! বাই দ্যা ওয়ে ব্রেকিং নিউজই তো হবে তাই না? ফাইনালি স্নেহা তার পেরেন্টস্ কে তার ভালোবাসার কথা বলবে! হুম! হুম!

স্নেহা : সব কিছু যতোটাও সোজা মনে করছেন রাহুল! ততোটাও সোজা না! ভালোবাসায় দু-জনের মনের মিল করে! আর বিয়ে! দুটো পরিবারকে এক করে!

– রাহুল! আপনার পরিবারের স্ট্যাটাস আর আমার পরিবারের স্ট্যাটাস আসমান-জমিনের তফাৎ!

রাহুল : বাট! স্নেহা! আমি কারো স্ট্যাটাসকে ভালোবাসিনি… আমি তোমাকে ভালোবেসেছি! আমাদের ভালোবাসায় স্ট্যাটাস কেনো আসবে?

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে ] আই হোপ সো্… যাতে কোনো বাধা না আসে!

রাহুল : বাধা কেনো আসবে?…কে বাধা দেবে?..

– [ হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তুলে ] Listen! তোমাকে রাহুল ভালোবেসেছে ওকে?…

স্নেহা : [ একটু হেসে রাহুলের নাক চেপে দিয়ে ] হুম! রাহুল ভালোবেসেছে…

রাহুল : ইয়েস্ মাইন্ড ইট!

স্নেহা : [ রাহুলের দুহাত মুঠি বেধে ধরে ] রাহুল!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : বাবা অনেক সেনসিটিভ মাইণ্ডের মানুষ! ছোট থেকেই আমি বাবাকে মুখ ফুটে কিছু বলিনি! মনের মধ্যে ভয় কাজ করে কিছু বলতে!

– কিন্তু আজ উদ্দ্যেগ নিয়েছি! বাবাকে বলবোই, আমার আপনাকেই চাই সারাজীবনের জন্য!
[ চোখে পানি টলমল করছে স্নেহার তাও হেসে উঠে ] এই প্রথম কিছু বলবো তো!.. তাও ভালোবাসার কথা… একটু নার্ভাস লাগছে…

রাহুল : [ হেসে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিয়ে ] You know স্নেহা?

– জীবনে হয়তো কোনো একটা ভালোকাজ করেছিলাম..যার কারণে আমি তোমাকে পেয়েছি!

– দেখোনা তুমি তোমার ফাদারকে কতো রেসপেক্ট করো, কতো ভালোবাসো… আর আমাকে দেখো.. [ বলেই হেসে উঠে ] তোমার এই পিউর লাইফের সাথে না আমার এই ডিস্কাস্টিং লাইফের তুলোনাই হয়না!

স্নেহা : [ রাহুলের চেপে রাখা কষ্ট!বুঝতে পেরে তার হাত আরো শক্ত করে ধরে ]

– রাহুল!

রাহুল : আচ্ছা স্নেহা! তোমার বাবাও তোমাকে এমনভাবে ভালোবাসে তাই না!

স্নেহা : রাহুল! পাষ্ট সবারই থাকে…পাষ্ট দিয়ে কি থেমে থাকা যায়?.. এসব নিয়ে নিজেকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ? চাইলেই আপনি আপনার বাবা… [ বলতেই রাহুল জোড়ে একটি শাস ফেলে স্নেহার দুগালে হাত রাখে ]

রাহুল : ওকে স্নেহা! অল দ্যা বেষ্ট!…সব ঠিকটাকই হবে…ডোন্ট ওয়ারি!

– এন্ড আই এম ওয়েটিং! [ with tedi smile ] কখন আসবে এক্কেবারের জন্য! হুম?…

স্নেহা : [ একটু হেসে ] রাহুল!

রাহুল : হুম?…

স্নেহা : আপনি আপনার বাবাকে ভালোবাসেন?..

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে অন্যপাশ তাকিয়ে ] ঠান্ডা অনেক ভেতরে যাও…গুড নাইট!

স্নেহা : [ বুঝতে পেরে মুচকি হেসে কিছুক্ষণ একপলকে রাহুলের দিক তাকিয়ে থেকে ] গুড নাইট!

চলে গেলো স্নেহা, তাকিয়ে আছে রাহুল, চোখ লাল হয়ে আসছে রাহুলের কেনো যেনো,
তাও কন্ট্রোল করে নিচ্ছে নিজেকে…

গাড়ীতে উঠে বসলো,

ভাবতে লাগলো সেই মোমেন্ট গুলো, একা একা রাতে বসে বাবার বার্থডে সেলেব্রেট করা, সব গাড়ীর টায়ার ইচ্ছে করে পাম্পচার করে দেওয়া, যাতে বাবা গেইটের দিক তার থেকে লিফট নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে! চোখ ভিজে যাচ্ছে রাহুলের!
________________________________

এইদিকে,

স্নেহা বেল বাজাতেই জারিফা আর মার্জান দুজনেই একসাথে এগিয়ে এসে দরজা খুললো,

মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওউ বার্থডে গার্ল কামিং!

[ স্নেহা ঢুকতেই জারিফা মার্জান দুজনেই ঝাপিয়ে জড়িয়ে ধরে,]

– হ্যাপি বার্থডে মেরি জান!

স্নেহা : [ দুজনকে জড়িয়ে দুজনের কপালে চুমু দিয়ে ] থেংক ইউউ!

জারিফা : [ স্নেহাকে টেনে ভেতরের রুমে এগিয়ে নিয়ে ] চল চল! স্নেহা… কেক টেষ্ট করে বল কেমন হয়েছে! [ স্নেহা হাসতে লাগলো জারিফার কান্ডে ]

চলবে….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 32

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 32

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : স্নেহা আই সে্ প্লিজ ডোন্ট ক্রাই!

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো, কিন্তু তাও চোখ দিয়ে পানি ঝড়ে যাচ্ছে ]

রাহুল : Listen! তোমাকে কান্নাচোখে এতোটা কিউট লাগছে না, কোন সময় সবার সামনে কিস্ দিয়ে বসি কে জানে সো্ বি কেয়ারফুল! স্নেহা আমি কিন্তু বেশিক্ষণ কন্ট্রোল করতে পারবো না নিজেকে! [ স্নেহা চোখ মুছে রাহুলের দিক তাকিয়ে হেসে উঠে ]

রাহুল : Now better! [ with tedi smile ]

স্নেহা : আপ…আপনি..কি? রের..রেগে আছেন আমার উপর?…

রাহুল : মোটেও না! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ একটু হেসে হুট করেই স্নেহার গালে একটি চুমু খেয়ে ] বাই!

বলেই ড্রাইভিং সি্টের দিক এগিয়ে গেলো, স্নেহা অতোটুকুতেই শকড হয়ে গেছে আশেপাশে তাকিয়ে দেখবে কেউ দেখেছে কিনা সে সাহসটুকু ও হারিয়ে ফেলেছে,রাহুল ওদিক দিয়েই দাঁড়িয়ে থেকে স্নেহার দিক তাকিয়ে তাকিয়ে হাসতে লাগলো, মনে মনে ভাবতে লাগলো স্নেহা,এই রাহুলটাও না মাঝেমাঝে এমন কান্ড করে বসে থাকে লজ্জায় ইচ্ছে করে ওদিকের মাটি কুড়েই ঢুকে পড়বে,আর কিছু না বলে পেছন মুড়ে চুপচাপ চলে যাচ্ছিলো স্নেহা, হঠাৎ বুকটা আবার ধুপ করে উঠলো,কোনো এক ভয় বুকের মধ্যে আঁকড়ে ধরে বসেছে,তাড়াতাড়ি রাহুলের দিক আবার ফিরে তাকালো, রাহুল গাড়ীর চালের উপর হাত রেখে ঐভাবেই হেসে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ,হঠাৎ স্নেহার মুখ গোমড়া আর চোখে পানি দেখে তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে এলো!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] স্নেহা! আবার কি হলো?…

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে কাঁদো কন্ঠে ] রার…রাতে বব..বলেছিলাম না…

রাহুল : হোয়াট হ্যাপেন স্নেহা?.. এইভাবে কাঁদছো কেনো?…দেখো আশেপাশে অনেকে তাকিয়ে আছে![ স্নেহা কান্না কন্ট্রোল করে রাহুলের হাত আরো শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রাখলো ]

রাহুল : স্নেহা!..তুমি এভাবে ভয় পেয়ে আছো কেনো?…কি হয়েছে?..আমাকে বলো…

স্নেহা : রার..রাহুল আ…আমি ঐ সপ্নটা এমনই দেখেছিলাম…আপ..আপনি এইভাবেই…

রাহুল : [ হেসে ] পাগলী একটা তুমি! আমরা এতো রাস্তাই তো পেড়িয়ে আসলাম কই কিছুই তো হলো না তাই না?..

– আর তোমাকে বললাম না এসব বিলিভ না করতে, স্নেহা! জাষ্ট একটা ড্রিমই তো! এটাকে এতো সি্রিয়াসলি নিচ্ছো কেনো?…

স্নেহা : কিন্তু রাহুল…

রাহুল : ওকে স্টপ ইট! যাও ভেতরে যাও….

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! তুমিও না দাদীর মতো সামান্য বেপারটাকে এতো বড় করে ভাবো! [ চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে স্নেহার ]

রাহুল : ওকে Listen! তুমি তো দোয়া করছো আমার জন্য যাতে আমার কিছু না হয় তাই না ? [ একটু হেসে ] সো্ এতো কিউট একটা মেয়ের দোয়া কি আল্লাহ কবুল করবে না?..হুম?..

স্নেহা : [ হাত এগিয়ে দিয়ে ] আপনি সানগ্লাস পড়বেন না ড্রাইভ করার সময় প্রমিস্ করেন!

রাহুল : [ হেসে ] এক্সকিউজ মি! তুমি কি সপ্নে আমাকে সানগ্লাস পড়ে ড্রাইভ করতে দেখেছো?…

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] মনে নেই রাহুল! ব্যাস আপনি প্রমিস্ করেন!

রাহুল : [ স্নেহার হাতে হাত রেখে ] ওকে প্রমিস্!

স্নেহা : ফার্ষ্ট ড্রাইভ করবেন না! স্লোলি করবেন!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ওকে! প্রমিস্ ফার্ষ্ট ড্রাইভ করবো না স্লোলি করবো!

স্নেহা : ওভারটেক করবেননা বারবার!

রাহুল : [ আহ্লাদী কন্ঠে ] ওহো স্নেহা! এটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না?…

স্নেহা : [ চোখ রাঙিয়ে ] প্রমিস্ করেন?

[ কি আর করার রাহুল বাধ্য হয়ে স্নেহার মনের ভয় দূর করতে প্রমিস্ করেই দিলো ]

রাহুল : হ্যাপি?..

[ স্নেহা মুখ গোমড়া করে মাথা নাড়ালো ]

রাহুল : ওকে! এবার ভেতরে যাও তারপর আমি গাড়ীতে উঠবো!

[ স্নেহা তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিকে,রাহুল আবার ও চোখ দিয়ে ইশারা করলো ভেতরে যেতে, স্নেহার ও আর কি করার বাধ্য মেয়ের মতো ভেতরে ঢুকে পড়লো তবে ভেতরে ঢুকেছে ঠিক…কিন্তু মনটা রাহুলের কাছেই পড়ে আছে… তাড়াতাড়ি দু-তলায় উঠে শিরির জানালার গ্লাস খুলে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক, রাহুলের মুখটাও গোমড়া দেখাচ্ছে…নিশ্চয় তারমনটাও স্নেহাকে খুঁজছে, না চাইতেও বাধ্য হয়ে চলে যাচ্ছে রাহুল…তাকিয়ে আছে স্নেহা, যতোক্ষণ না রাহুলের গাড়ী দেখা যাচ্ছিলো, চলে গেলো রাহুল ]
________________________________

দুপুর ৩ টা বেজে ১০ মিনিট,

রেষ্টুরেন্টের বারের মধ্যেই বসে আছে রাহুল তার ফ্রেন্ডসদের সাথে,সবাই এসেছে লাঞ্চ করার নামে অথচ কেউই লাঞ্চ করার ধারেকাছে নেই, সামনে গ্লাস নিয়ে এলকোহল খাওয়া শুরু করে দিয়েছে সবাই, ইনফ্যাক্ট তাদের কথা বলেও কি হবে রাহুল ও আগে সে্ইম কাজটাই করতো, বাট এখন তো খাওয়া দূরের কথা ছুঁয়ে ও দেখছে না, তা দেখে অবশ্য রাহুলের অনেক ফ্রেন্ডসরাই তাকে নিয়ে মজা করছে, কিন্তু তাও রাহুল এসব কথায় কেয়ার করছে না, কারণ ঐদিন শিপে স্নেহাকে কথা দিয়েছিলো রাহুল!…

হঠাৎ,ফোনটা বেজে উঠলো রাহুলের,স্নেহার কল দেখে তাড়াতাড়ি রিসি্ভ করতে গেলো রাহুল! তখনি

রিদোয়ান : [ টেনে নিয়ে রিসি্ভ করে ] হাই ডার্লিং!

[ স্নেহা অবাক হয়ে কান পেতেই রইলো, সাথে সাথেই রাহুল হেসে রিদোয়ানের মাথায় বাড়ি দিয়ে ফোনটা কেড়ে নিলো ]

রিদোয়ান : আরে দোস্ত আমাদের ও একটু বলতে দে!

রাহুল : [ ফোন কানে দিয়ে ] আমি জানতাম এরমধ্যেই তোমার ফোন আসবে, [ রিদোয়ান ও কান লাগিয়ে রাখলো রাহুলের ফোনের সাথে ]

স্নেহা : হুম! কিন্তু আপনি কোথায় এখন?…

রাহুল : আমি..আ..আমি এখন রেষ্টুরেন্টে,

রিদোয়ান : [ হেসে চেঁচিয়ে ] আরে রাহুল মিথ্যে বলছিস কেনো…? বলনা তুই এখন বাড়ে বসে ড্রিংক্স করছিস… [ রাহুল চোখ রাঙিয়ে তাকালো ]

রিদোয়ান : [ চোখ মেরে ফিসফিসিয়ে ] আই এমমম জোকিংং!

স্নেহা : আপনি ড্রিংক্স করছেন রাহুল?..

রাহুল : নো! স্নেহা! [ বলেই গ্লাস টেনে হাতে নিলো রিদোয়ানকে মারার জন্য সাথে সাথেই রিদোয়ান উঠে হেসে অন্যপাশ চলে গেলো ]

স্নেহা : কিন্তু রাহুল! ওখানেই কেউ এখন বলে উঠলো আপনি ড্রিংক্স করছেন!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] রিদোয়ান ছিলো! মজা করছে,

স্নেহা : [ একটু হেসে ] ওহ!

রাহুল : তবে মিথ্যে বলছিনা, আমি বাড়েই আছি! কিন্তু এসব ড্রিংক্স ট্রিংক্স কিছুই ধরে দেখিনি!

স্নেহা : হোহ! তাহলে আপনি ওখানে কি করছেন…?

রাহুল : আরে ওরা এসেছে লাঞ্চ করবে বলে আমি ও ভাবলাম তাই…কিন্তু এসে দেখি উলটা হয়ে গেছে,

স্নেহা : হুম! কিন্তু আপনি ওখানে বসে আছেন…আমিও কেমনি বিশাস করবো আপনি ধরে ও দেখেননি!

রাহুল : তাই?..[ with tedi smile ]

স্নেহা : হুম..তাই!

রাহুল : নিজেকেও ততোটা বিলিভ করোনা যতোটা আমাকে করো আই নো দ্যাট স্নেহা ওকে!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা লাঞ্চ করেছেন?…

রাহুল : নাহ! তুমি?…

স্নেহা : আমিও নাহ!

রাহুল : তোমার তো ওসব Disgusted unlogical টেনশনে পেটে কিছু ঢুকছিলো না তাই না?…

– বাই দ্যা ওয়ে প্রুফ হলো তো? যে এসব বোকাস্!

স্নেহা : বাট রাহুল আমি অনেক শুনেছি দূর্সপ্ন তখনি দেখে যখন কোনো বিপদ ঘুরঘুর…

রাহুল : Again?…

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] আচ্ছা আপনি লাঞ্চ করেননি কেনো এখনো?…

রাহুল : কারণ আমি জানতাম তুমিও করোনি! তোমার ফোনেরই অপেক্ষা করছিলাম!

স্নেহা : তাই? তাহলে এবার লাঞ্চ করেনিন আমিও রাখছি…

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] আরে শুনোতো [ একটু হেসেই ফোনটা কেটে দিলো স্নেহা ]

রাহুল : [ মনে মনে ] আজিব মেয়ে!
________________________________

রাত ১০টা বেজে ২০মিনিট,

চুলটা খোপা করে,শালটা গায়ে মুড়িয়ে, ব্যাগটা কাধে ঝুলিয়ে বেড়িয়ে এলো স্নেহা! নিচে নেমে আসতেই দেখে রাহুল হাতে হাত বটে গাড়ীর সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,

স্নেহাকে দেখেই,

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে পকেটে হাত দিয়ে ] হেইইই! [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

স্নেহা : [ একটু হেসে এগিয়ে এলো ] আপনি?…

রাহুল : কেনো? অবাক হওয়ার কি আছে..আগেই তো বলেছি আমি ড্রপ করে দিবো!

স্নেহা : কিন্তু শুধু আসার সময় ড্রপ করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন!

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] তোমার কথা শুনে না মাঝে মাঝে সুইসাইড করতে ইচ্ছে করে আমার!

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে রাহুলের পাশে এসে দাঁড়ায় ] হুট করেই রেগে যান কেনো বলেন তো?…

– আমি মজা করছিলাম!

রাহুল : কটা বাজছে বলোতো?…আজ ২০মিনিটস্ লেইট!

স্নেহা : হ্যা তো কি হয়েছে! আপনি আছেন না সাথে!

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকালো স্নেহার দিক, স্নেহা ও হঠাৎ লজ্জা পেয়ে ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

রাহুল : [ হেসে ] গাড়ীতে ওঠো! [ বলেই দরজা খুলে দিলো, স্নেহা উঠে বসলো, রাহুল ও ওপাশ গিয়ে উঠে বসে ড্রাইভ করতে লাগলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আপনি…আপ…আপনার জ্যাকেট চেঞ্জ করে ফেললেন যে?..

রাহুল : মানে?..

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে ] মানে আপনি তখন ব্লু-জ্যাকেট পড়েছিলেন,এখন আবার হোয়াইট!

রাহুল : [ একটু হেসে ] শাওয়ার নিয়েছিলাম তাই!

স্নেহা : [ আড় চোখে তাকিয়ে ] আপনি উইন্টারে একদিনে কয়বার শাওয়ার নেন বলেন তো?..আচ্ছা মানলাম শাওয়ার নিয়েছেন! কিন্তু ব্লু-জ্যাকেট টা তো আবার পড়া যেতো তাই না?..

– এ..এক মিনিট! আপনি মিথ্যে বলছেন কেনো? আপনি যদি সত্যিই আবার শাওয়ার নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার হোয়াইট শার্ট ব্লাক প্যান্টটা তো ঠিকই আছে,

রাহুল : এক্সকিউজ মি! তখন হোয়াইট শার্ট ছিলো এখন টি-শার্ট!

স্নেহা : যাই হোক সব গুলো তো সেইম রাখলেন কিন্তু যেটা আমার সাথে ম্যাচ হয়েছিলো ওটাই চেঞ্জ করে ফেললেন!

রাহুল : রাগছো কেনো?..[ with tedi smile ]

স্নেহা : রাগবো কেনো! এ..এমনিই বলছি!

রাহুল : তাহলে মানছো যে তখন ইচ্ছে করেই আমার সাথে ব্লু ম্যাচিং করে পড়েছিলে!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] হুম!

– তবে তাতে আপনার কি?..আপনার তো আমার সাথে ম্যাচিং করে পড়ার কোনো ইন্ট্রেষ্ট নেই!

[ রাহুল হেসে কিছু বলতে যাবে তখনি স্নেহার ফোনটা বেজে উঠে,স্নেহা ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখে তার মা ফোন দিয়েছে, রাহুলের দিক তাকাতেই রাহুল চোখ দিয়ে ইশারা করলো কে?. ]

স্নেহা : মা!

রাহুল : ওহ! [ বলেই আবার ড্রাইভ করতে ব্যস্ত ]

স্নেহা : রার..রাহুল একটু গাড়ী থামান!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] কেনো?..

স্নেহা : এক্সুলি! আ…

[ রাহুল বুঝতে পারলো স্নেহা রাহুলের সামনে হয়তো তার মায়ের সাথে কথা বলতে চাইছে না ]

রাহুল : [ হেসে ] ওকে ওকে! রিলেক্স! আই আন্ডারষ্ট্যান্ড! [ বলেই রাহুল একপাশ করে গাড়ী থামালো, স্নেহা দরজা খুলে গাড়ী থেকে নামতেই যাচ্ছিলো তখনি, ]

রাহুল : Listen! [ স্নেহা ফিরে তাকালো ]
তুমি ভেতরে বসো আমিই নামছি! কথা শেষ হলে নক দিও! [ বলেই রাহুল গাড়ী থেকে নেমে দরজা বন্ধ করে দিলো ]

কিছুক্ষণ নিস্থব্ধ হয়ে বসে রইলো স্নেহা! কেনো যেনো রাহুলের এতো কেয়ার,এতো ভালোবাসার মাঝে তার ভালোবাসাকে খুবই ক্ষুদ্র মনে হচ্ছে আজ! কখনো ভাবেনি স্নেহা তার জীবনে এমন একজন ভালোবাসার মানুষ আসবে! যে তাকে চোখের আড়াল হতে দিবে না, ভাবতেই চোখে জল জমে আসছে স্নেহার! সাথে ব্লাশিং ও হচ্ছে!
চোখ মুছে ডায়াল লিষ্টে গিয়ে তার মা কে আবার কল ব্যাক করলো!

মা : হ্যালো!

স্নেহা : হ্যা! মা বলো.! সব ঠিকাছে তো?..এতো রাতে ফোন দিলে যে!

মা : সব ঠিকটাক! এবং সব ঠিক হয়ে গেছে আলহামদুলিল্লাহ! এখন আর কোনো টেনশন নেই! সব ধীরেধীরে শোধ করতে পারবো স্নেহা!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] কিন্তু মা এসব কিভাবে হলো ?…

মা : ব্যাস! কাউকে পাঠিয়েছে আল্লাহ! ফেরেশতা বানিয়ে!

স্নেহা : মানে?..

মা : [ একটু হেসে ] মানে সব কাল এসেই বলবো!

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে চেঁচিয়ে ] কাল এসে মানে?..তোমরা কাল শহরে আসছো?..

মা : হ্যা! তোর মামার বাসায় আসছি!আর শোন এখন থেকে সব ধ্যান পড়ার মধ্যেই দিবি! ডান্স ক্লাস নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না!

স্নেহা : মা! তুমি জানো না কতো বড় সারপ্রাইজ দিয়েছো!

মা : তোর জন্য তো আরেকটা সারপ্রাইজ আছে!

স্নেহা : তাইই?.. কি সারপ্রাইজ?

মা : কাল দুপুরবেলাই পৌছাবো আমরা,তখন তুই মামার বাড়ীতেই এসে দেখেনিস সারপ্রাইজটা!

স্নেহা : আরে মা! আমি এমন সারপ্রাইজ পছন্দ করি না তুমি তো জানো…আমার রাতে ঘুম হবে না সো্ বলে দাও কিহ সারপ্রাইজ!

মা : এখন বললে লজ্জায় তোর আরো ঘুম হবে না আমি জানি! তাই কালই দেখিস!

স্নেহা : উফফ! আচ্ছা বাদ দাও, বাই দ্যা ওয়ে আমার ও তোমাদের কিছু বলার ছিলো…

– কাল আসলে তখন বলবো!

মা : আচ্ছা!

স্নেহা : বাবা কেমন আছে…?

মা : ভালো আছে…তোর জন্যই চিন্তা সারাক্ষণ!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আর রাশু!

মা : সে তো মহাখুশি! কাল আপুর সাথে দেখা হবে!

স্নেহা : তাই?.. আচ্ছা মা শোনো আমি না এখন রাখছি তোমার সাথে পড়ে কথা বলবো!

মা : আচ্ছা ঠিকাছে! [ স্নেহা ফোন কেটে বেগে ঢুকিয়ে ড্রাইভিং সি্টে এগিয়ে গিয়ে বসে জানালার গ্লাসটা নামালো ]

স্নেহা : হ্যালোও! [ রাহুল এগিয়ে এসে দরজা খুললো ]

স্নেহা : উমম! ভাবছি ড্রাইভ আমি করি!

রাহুল : [ একটু হেসে ] তাই?..তাহলে বোধ হয় তোমার সপ্নটা আজ সত্যি হতে চলছে! [ স্নেহা মুখ গোমড়া করে রাহুলের দিক তাকাতেই রাহুল চোখ টিপ মাড়লো! ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে! তোমার এক্সপেরিয়েন্স থাকা উচিৎ আসলে! সব মেয়েদেরই উচিৎ ড্রাইভিং জানা! তুমি চাইলে আমার কোলে বসে ড্রাইভ শিখতে পারো আগে! আমি মাইন্ড করবো না!

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে হেসে ] থেংক্স বাট নো নিড! [ বলেই স্নেহা তার সি্টে চলে গেলো, রাহুল ও হেসে উঠে বসে গাড়ী স্টার্ট দিলো, কিছুদূর যাওয়ার পরেই ]

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] আরে ওদিকে কই যাচ্ছেন! [ রাহুল কোনো জবাব দিলো না ]

স্নেহা : রাহুল! কিছু বলছেন না কেনো?..

রাহুল : ভরসা আছে আমার উপর?…

স্নেহা : হ্যা! আছে…

রাহুল : তাহলে অস্থির হচ্ছো কেনো?…

[ স্নেহা আর কিছু বললো না সি্টে হেলান দিয়েই বসে থাকে, কিছুক্ষণ পর দেখে গাড়ী রাহুলদের বাড়ীর গেইটের ভেতরই ঢুকছে, স্নেহা উঠে বসে অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : [ গাড়ী থামিয়ে ] কাম!

স্নেহা : রাহুল…আপনি এইখানে হঠাৎ…

রাহুল : এতো প্রশ্ন করো কেনো বলোতো?..ওহ ইয়াহ! আমি তো ভুলেই গেলাম তুমি ম্যাথমেটিকস্ এর স্টুডেন্ট![ রাহুলের কথা শুনে স্নেহা একটু হেসে উঠে ]

রাহুল : [ হাত জোড় করে ] ক্রিপিয়া করুণ স্নেহা মেম! যদি আপনার হাতে কিছু সময় থাকে তাহলে আমার প্রতি দয়া করে একটু ভেতরে আসবেন?…

-প্লিইইইজ!

[ স্নেহা একটু হেসে রাহুলের গালটা টেনে দিয়ে গাড়ী থেকে বেড়িয়ে আসে, রাহুল স্নেহাকে নিয়ে তার গেষ্ট হাউজের ভেতরই ঢুকলো, দরজা খুললেই ]

স্নেহা : এতো অন্ধকার কেনো?..

রাহুল : আমার হাত ধরো,

স্নেহা : কিন্তু রাহুল লাইট জালালেই তো হয়! [ রাহুল কোনো জবাব দিলো না তাতে স্নেহা বুঝতে পারলো রাহুল রাগছে তাই স্নেহা হেসে রাহুলের হাতটা জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : তোমরা মেয়েরা এমনই! বিশেষ করে ম্যাথমেটিকস্ এর স্টুডেন্টরা, স্যার এই সূত্রটা না ঐ সূত্রটা ছিলো মনে হয়,কিছুক্ষণ চিন্তা করবে তারপর ধীরেধীরে লাইনে আসবে ওহ নো স্যার সরি স্যার এক্সুলি এটাই ছিলো!

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে রাহুলের হাত আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : হুম?..

স্নেহা : আপনি আমার সাবজেক্ট এর পেছনে কেনো লেগে আছেন বলেন তো?

রাহুল : এক্সেম্পল দিলাম!
[ বলেই স্নেহাকে হাত ধরে নিয়ে বেডরুমে ঢুকিয়ে লাইট জালালো, হঠাৎ স্নেহা খেয়াল করলো, খাটের উপর কয়েকটা গিফট বক্স পড়ে আছে, রাহুল এগিয়ে গিয়ে সব চেয়ে বড় যেটি সেটি হাতে নিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো ]

রাহুল : টেক ইট! [ স্নেহা অবাক হয়ে হাতে নিলো ] ওপেন করো! [ স্নেহা ধীরেধীরে ওপেন করে দেখে একটি সাদা ড্রেস! ]

স্নেহা : এটা?…

রাহুল : এটা তুমি এখন পড়বা!

স্নেহা : কিক…কিন্তু কেনো?…

রাহুল : বিকজ আমার ও [ বলেই রাহুল হাত দিয়ে তার জ্যাকেটের কলার ধরে নাড়ালো,] ইন্ট্রেষ্ট আছে! [ স্নেহা অবাক হলো রাহুলের কান্ডে তাও হাসলো ]

স্নেহা : এসবের কি দরকার ছিলো..ব্লুতে ও তো আমরা ম্যাচিং ছিলাম!

রাহুল : আমার দরকার আছে! সো্ আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ এটা পড়ে নাও!

স্নেহা : রাহুল! ড্রেসটা দেখেই মনে হচ্ছে অনেক ভারী হবে!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] আচ্ছা?..দেখি [ বলেই রাহুল প্যাকেট থেকে ড্রেসটা বের করে হাতে ধরলো ] আরে হ্যা! তাই তো অনেক ভারী! নিচের পার্ট এটা, কি যেনো বলে এটাকে উমমম!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] ঘাগড়া!

রাহুল : ইয়া..ইয়াহ! ঘাগড়া ক্যারেক্ট! বাট নিচের পার্টটাই এতো ভারী আর পুরোটা পড়লে তোমার শরীর বলছে তুমি এদিকেই কাত হয়ে যাবে…[ বলেই হেসে উঠে রাহুল স্নেহা চোখ রাংগিয়ে তাকিয়ে রইলো, রাহুলের দিক ]

রাহুল : ওকে ওকে আম সরি! আম সরি!

– এক্সুলি অনলাইনে এটাই ভালো লেগেছে তাই এটাই অর্ডার করেছি আমি আসলে বুঝতে পারিনি!
– আর তুমি তো দেখেই বুঝে গেছো ব্রিলিয়ান্ট

– আচ্ছা এমন ভারী ড্রেস মেয়েরা কেড়ি করবে কেমনি বলোতো? যারা ড্রেস গুলো বানিয়েছে তাদের এগুলো দিয়ে কবর দেওয়া উচিৎ! [ স্নেহা হেসে উঠে রাহুলের কথা শুনে ]

রাহুল : [ মুখ গোমড়া করে ড্রেসটা খাটে ছুড়ে মেরে ] এনিওয়ে বাদ দাও এসব! অন্য একটা ট্রাই করবো!

স্নেহা : আচ্ছা আপনার ফেভারিট কালার কি?…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার কানের কাছে মাথা এনে ফিসফিসিয়ে ] তোমার স্কিন কালার! [ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে একটু পেছন সরে দাঁড়িয়ে ড্রেসটা খাট থেকে এগিয়ে নিলো ]

রাহুল : Listen!

স্নেহা : শিসসস! [ বলেই হেসে উঠে, রাহুল ও হেসে উঠে ]

স্নেহা প্যাকেট থেকে টপসটা হাতে নিয়ে ওয়াসরুমের দিক এগিয়ে যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার থেমে গিয়ে টপসটা হাতে তুলে ধরে শকড হয়ে তাকিয়ে রইলো,

রাহুল : [ এগিয়ে এসে ] আবার কি হলো ?..

স্নেহা : রার…রাহুল টপসটা অনেক ছোট আমি এমন টপস কখনো পড়িনি,

রাহুল : [ একটু হেসে ] পড়েছিলে, [ স্নেহার কাছে এসে ] মার্মেড হাউজ!

স্নেহা : হ্যা! কিক..কিন্তু এটা ওটার চেয়েও ছোট!

রাহুল : আসলে কি জানো তখন তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড ছিলেনা,তাই ওটা একটু বড় ছিলো, আর এখন তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড তাই এটা একটু ছোট [ বলেই চোখ টিপ মেরে স্নেহার কাছে মুখ এনে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে থাকে, স্নেহা ও লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নিচের দিক তাকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : কামঅন স্নেহা! এতো ভাবছো কেনো?…শুধু আমিই তো দেখবো…[ বলতেই স্নেহা শকড হয়ে তাকায় ]

– রিলেক্স স্নেহা, ওড়না মুড়িয়ে আসবা দ্যাটস ইট! [ বলেই স্নেহার চুলের খোপাটা খুলে দিলো, স্নেহা ব্লাশিং হয়ে একটু হেসে কাপড়গুলো নিয়ে ওয়াসরুমে চলে যায় ]

কিছুক্ষণ পরই দরজা খোলার টুকটাক আওয়াজে রাহুল ফিরে তাকালো,স্নেহা বেড়িয়ে আসলো গায়ের ওড়নাটা কতোক্ষণ এদিক টানছে তো কতোক্ষণ ওদিক, কয়েক মিনিটের জন্য রাহুল নিস্থব্ধ হয়ে হারিয়েই গেছে,ধীরেধীরে রাহুল পা এগিয়ে স্নেহার কাছে আসতে লাগলো আর তা দেখে স্নেহার হার্টবিট বেড়েই চলছে….এদিকওদিক তাকাতে লাগলো স্নেহা,একহাত ঘাড়ে রেখে আরেক হাতে পেট ঢেকে রাখলো….রাহুল তার কাছে আসতেই

স্নেহা : [ অন্যপাশ তাকিয়ে ] ওড়নাটা অনেক পাতলা এর চেয়ে ঘঘ…ঘনো তো মশারি ও থাকে…

রাহুল : বাট এটাই তোমাকে অনেক সেক্সি লাগছে! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে চেঁচিয়ে ] হোয়াট!

রাহুল : আব…আমি কিছু বলেছি?.[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : [ স্নেহার কোমোড়ে হাত রেখে কাছে টেনে ] এনিওয়ে এখন তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড বলতেই পারি! [ স্নেহার কানের দিক মুখ এনে ] রিয়েলি ইউ লুকিং সো্ সেক্সি এন্ড হট! ইন দিস্ ড্রেস্ [ স্নেহা তার কোমোড় থেকে রাহুলের হাত ছুটিয়ে সরে দাঁড়ালো ]

স্নেহা : আব…দেদ…দেখা শেষ…আমি চেঞ্জ করে আসি…[ বলেই স্নেহা মোড় ফিরে চলে যাচ্ছিলো বাট রাহুল হুট করেই স্নেহার হাত ধরে কাছে টেনে নেই ]

রাহুল : আমি বলেছি?.. চেঞ্জ করতে! [ বলেই স্নেহার পিঠে স্লাইড করে হাত রেখে চুল গুলো একপাশ করে রাখলো,ধীরেধীরে স্নেহার কাধে হাত রেখে স্নেহাকে পেছন ফেরালো, বুকটা ধুপধুপ করছে স্নেহার হঠাৎ খেয়াল করলো তার গলায় রাহুল কিছু পড়িয়ে দিচ্ছে তাকিয়ে দেখে একটি হোয়াইট স্টোনের নেকলেস ]

স্নেহা : [ মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] রাহুল! এসব….

রাহুল : [ স্নেহার মুখে আঙুল দিয়ে ] শিসসস!….[ বলেই স্নেহাকে নেকলেসটি পড়িয়ে দিলো, ধীরেধীরে রাহুল স্নেহার কানের দিক স্লাইড করে চুল গুলো গুজে দিলো, স্নেহা চোখ বন্ধ করে শিউরে উঠলো, রাহুল স্নেহার দু-কানেই ইয়ার রিং পড়িয়ে দিলো, স্নেহার হাতে স্লাইড করে তার দিক ফিরিয়ে নীল চুড়ি গুলো খুলে নিলো… ধীরেধীরে হোয়াইট স্টোনের কিছু চুড়ি পড়িয়ে দিলো,স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক…]

রাহুল : [ স্নেহার দু-গালে হাত রেখে ] ব্যাস! এইদিনটার অপেক্ষা ছিলো…তোমাকে নিজের হাতে সাজাবো…. [ বলতেই স্নেহা রাহুলের বুকে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরে ]

কিছুক্ষণ পর,

রাহুল : [ স্নেহাকে ছুটিয়ে ] ব্যাস ব্যাস স্নেহা তোমার চোখ বন্ধ করো,লেইট হচ্ছে!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] চোখ বন্ধ করবো?..কিন্তু কেনো…?

রাহুল : ওহো! [ বলেই স্নেহার চোখে হাত দিয়ে চেপে ধরে, ড্রইং রুমের দিক এগিয়ে নিয়ে যায় ]

স্নেহা : রাহুল কোথায় নিচ্ছেন?…

রাহুল : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] ব্যাস আমি যতোক্ষণ বলবো না ততোক্ষণ চোখ খুলবানা প্রমিস করো!

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আচ্ছা! [ রাহুল স্নেহা থেকে সরে দাঁড়িয়ে লাইট জালাতে এগিয়ে গেলো হঠাৎ আবার স্নেহার দিক তাকাতেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে, অন্ধকারে স্নেহাকে এমন ঝলমলে দেখাচ্ছে যেনো লাগছে রাতের কালো আকাশে চাঁদের আলো ভেসে আছে, ব্লাশিং হয়ে মাথা চুলকে লাইটের সুইচটা অন করলো রাহুল! বিকট এক শব্দ কানে ভেসে আসলো স্নেহার! চমকে উঠে চোখ খুলে ফেললো…সামনের দিক তাকাতেই দেখে সবদিক অন্ধকার শুধু কিছু হলুদ রঙের বাতি জলে উঠলো এবং তা দিয়ে বড় করে লিখা আছে ” HAPPY ” মাথার উপর থেকে কিছু ঝড়ে পড়ছে, তাই উপরের দিক তাকালো এবং দেখতে পাই গোলাপের পাপড়ি হঠাৎ আবারো সেই বিকট শব্দ, স্নেহা চমকে উঠে কানে হাত দিয়ে চেপে আবার সামনে তাকাতেই দেখে আরো কিছু বাতি জলে উঠলো, যেখানে লিখা আছে ” BIRTHDAY ” আবারো সেই শব্দ কানে ভেসে এলো চমকে উঠে চোখ বন্ধ করে ফেললো স্নেহা! ধীরেধীরে কোমোড়ে কারো স্পর্শ পেতে স্নেহা চোখ খুলে তাকালো, সামনে তাকিয়ে যে লিখাটা দেখতে পেলো একই সাথে সেই শব্দগুলো ও কানের ধারে কেউ বলে উঠলো, ” HAPPY BIRTHDAY SNEHA” চোখের পানি আটকে রাখতে পারছিলো না স্নেহা! গড়গড় করেই ঝড়ে যাচ্ছে, রাহুলের দিক চোখ তুলে তাকাতেই সে তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিলো,

রাহুল : আজ একদম কাঁদবা না বুঝেছো! আজকের দিনটা খুবই স্পেশাল! [ রাহুলে পকেটে হাত দিয়ে একটু পেছন সরে দাঁড়িয়ে ] কারণ আজকের দিনে পৃথিবীতে একটা এঞ্জেল এর জন্ম হয়েছিলো! যে এঞ্জেলটা এখন আমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে, যে এঞ্জেলটাকে অন্ধকারে ও ঝলমলে দেখাচ্ছে… ওয়াহ স্নেহা আমার মাথা তো পুরাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তোমাকে যতো দেখছি! [ স্নেহা চোখ মুচছে আর হাসছে, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে দু-হাত মেলে দিলো,বুকে আসতে ইশারা করলো স্নেহাকে!…স্নেহা ও একটু হেসে দৌড়ে এসে রাহুলের বুকে ঝাপটে পড়লো, রাহুল ও হেসে টাইট করে জড়িয়ে ধরলো স্নেহাকে ]

রাহুল : [ স্নেহাকে ছুটিয়ে ] ওয়েট আরেকটা সারপ্রাইজ বাকি আছে, [ বলেই পকেট থেকে মোবাইলটা নিয়ে নিয়ে টিভিটা অন করলো, সাথে সাথেই জারিফা আর মার্জান একসাথে বলে উঠে, হ্যাপি বার্থডে স্নেহাআআআ, স্নেহা অবাক হয়ে খুশিতে মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে রাখে ]

জারিফা : আরে ওয়াহ মাশাল্লা স্নেহা! কিনা লাগছে তোকে!

মার্জান : ইয়া আল্লাহ! বদমুখের নজর থেকে দূরেই রাখো আমার স্নেহাকে

জারিফা : [ মার্জানকে চিমটিয়ে ] এইই আমি মাশাল্লা বলেছি ওকে?..হুহ!

– বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা! ওড়নাটা সরানা ফুল ড্রেস দেখি!

[ স্নেহা অবাক হয়ে একবার আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে পকেটে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে সাথে সাথে অন্যপাশ ফিরে গেলো স্নেহা ]

মার্জান : [ জারিফাকে ধাক্ষিয়ে ফিসফিসিয়ে ] পাগল হয়েছিস দেখছিস না রাহুল আছে!

জারিফা : [ জিহ্বায় কামড় খেয়ে একটু হেসে ] ডোন্ট ওয়ারি! জিজু ডোন্ট মাইন্ড আমরা কিন্তু সব দেখতে চাইনি জাষ্ট কাপড় দেখতে…[ বলতেই মার্জান জোড়ে একটি চিমটি দিলো ]

জারিফা : আআআহ! [ রাহুল হেসে উঠে ]

জারিফা : ওকে ওকে! হেই স্নেহা দেখ! আমি তোর জন্য কি বানিয়েছি! চকলেট কেক হুম!

মার্জান : ওই! তুই বানিয়েছিস?…

জারিফা : আচ্ছা ও হ্যা! মানে ঐও হালকা একটু হেল্প করেছে… বাট বেশি ক্রেডিট কিন্তু আমারই!

মার্জান : ব্যাস! জারিফা ব্যাস! এখন ভিডিও কলে আছি তাই কিছু বলছি না…

জারিফা : আচ্ছা আচ্ছা! দুজনে মিলেই বানিয়েছি! স্নেহা তুই ঐ দিকে কাট আমাদের জিজুর সাথে আর আমরা এইদিকে কাটছি ওকে! [ স্নেহা জলভরা চোখে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : স্টপ ইট! স্নেহা! [ বলেই চোখ মুচে ছুরিটা হাতে ধরিয়ে দিলো ]

মার্জান : কামঅন স্নেহা! এসব কান্নাকাটি বন্ধ কর তাড়াতাড়ি কেক কাট! [ স্নেহা চোখ মুছে কেক কেটে আগে রাহুলকে খাওয়াতে চাইলে রাহুল স্নেহা থেকে কেড়ে নিয়ে আগে স্নেহাকেই খাওয়ালো ]

জারিফা : বাই দ্যা ওয়ে! এখন আমরা নিজের হাতে নিজেই খাচ্ছি বাসায় আসলে তুকে খাইয়ে দিবো [ বলেই কেক কেটে মুখে ঢুকিয়ে নিলো ] ওয়াহ কি টেষ্ট!

মার্জান : [ হেসে ] খা! নাদানের বাচ্চা!

– আচ্ছা গাইস্! আমরা এখন রাখছি আমাদের কাজ শেষ! টাটা

জারিফা : বাইইই! স্নেহা…ওহহো! জিজাজি এতো ব্লাশিং হচ্ছেন কেনো…বলেন তো ?[ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

রাহুল : Shut-up [ জারিফা আর মার্জান দু-জনেই হেসে উঠে ]

মার্জান : ওকে ওকে! গুড নাইট [ বলেই কেটে দিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আপনাকে ওরা বলেছে আজ আমার বার্থডে?…

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ] নো! ঐদিন ভার্সেটিতে তোমার ফর্ম নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো..ওটা Solve করার সময় হঠাৎ তোমার বার্থ ডেট খেয়াল করি! ব্যাস…

স্নেহা : [ রাহুলের মাথা টেনে তার কপালে লাগিয়ে ] সো্ মিষ্টার রাহুল!

রাহুল : হুম?…

স্নেহা : আমার বার্থডে স্পেশাল আরেকটা গিফট চাই?…

রাহুল : ইয়েস্?..

স্নেহা : আপনি এখন! গিটার বাজিয়ে একটা গান করবেন!

রাহুল : [ একটু হেসে ] রিয়েলি?..এটাই?..

স্নেহা : হ্যা এটাই!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে ] আচ্ছা ঠিকাছে! [ বলেই স্নেহাকে সোফায় বসিয়ে ওয়াল থেকে গিটারটা ছুটিয়ে নিয়ে স্নেহার কাছে এসে পাশে বসলো হঠাৎ স্নেহা রাহুলের কপালের দিক নেমে যাওয়া চুল গুলো হাত দিয়ে সোজা করে দিলো, রাহুল চোখ দিয়ে ইশারা করলো কিহ?..]

স্নেহা : কিছু না [ বলেই গিটার বাজাতে ইশারা করলো, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার চোখের দিক তাকিয়ে বাজাতে লাগলো আর স্নেহা মন দিয়ে শুনতে লাগলো ]

রাহুল : ? ??

” পে্হলি নাযা্র মে কেসা্ জাদু কারদিয়া, তে্রা বান্ বে্ইটা হে্ মে্রা জি্য়া,
জানে্ কি্য়া হোগা্ কিয়া্ হোগা্ কি্য়া পাতা্
ইস্ পাল্ কো মি্লকে আ জি্ লে যা্রা
মে্ হু ইয়া্হা তু হে্ ইয়া্হা
মেরি বা্~হো্মে আ আভি্যা্
ও জা্নে জা্~~ দোনো্ জাহা্ মেরি্ বা্~হো্মে আ ভুলে্ যা্

ও জা্নে জা্~~ দোনো্ জা্হা মে্রি বা্~হো্মে আ ভুলে্ যা্

বেবি্ আ লাভ্ ইউ
বেবি্ আ লাভ্ ইউ সো্ মোর্
ওহ্ বেবি্ আ লাভ্ ইউ….

[ গিটার টা হাত থেকে পাশে রেখে রাহুল স্নেহার হাত টেনে দাড় করিয়ে ঘুড়িয়ে এক হাত স্নেহার কোমোড়ে আরেক হাতে স্নেহার হাত মুঠি বেধে ধরলো ]

রাহুল : মে আই?…[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে মাথা নাড়ালো রাহুল ও একটু হেসে স্নেহাকে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে নাচাতে লাগলো ]

রাহুল : ♪♪ হার্ দুয়া্ মে্ শামিল্ তে্রা পি্য়ার হে ♪♪
বিন্ তে্রে লামহা্ বি্ দুশ্ওয়া্র হে্ ধাডখো্নো কো্ তুঝসে্ হি দারকা্র হে!

” তুঝ্সে্ হি্ রাহা্তে হে্ ”
” তুঝ্সে্ হি্ চাহা্তে হে্ ”

তু জো্ মিলি্ একদিন্ মুঝে্ মে্ কাহি্ হো্ গায়া্ লাপা্তা~~

ও জা্নে জা্~~ দোনো্ জাহা্ মেরি্ বা্~হো্মে আ ভুলে্ যা্

[ রাহুল হেসে হেসেই গানটা গাইতে লাগলো আর স্নেহাকে নাচাতে লাগলো,রাহুলের কান্ডে স্নেহা ও হাসতে লাগলো হঠাৎ টেবিলের ধারে আসতেই স্নেহা কেক থেকে কিছু ক্রিম নিয়ে রাহুলের গালে লাগিয়ে দিলো ]

রাহুল : [ শকড হয়ে ] আচ্ছা?.. [ স্নেহা মুখ চেপে একটু হেসে রাহুলের আরেক গালে ও লাগিয়ে দিলো ]

রাহুল : তবে আমি কিন্তু শুরু করিনি তুমিই করেছো! [ বলেই রাহুল কেক থেকে অনেক গুলো ক্রিমই তার হাতে উঠিয়ে স্নেহাকে লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো তাতে স্নেহা ও পিছিয়ে নয় সে ও দৌড়াতে লাগলো হঠাৎ পেছন ফিরে তাকাতেই Unfortunately রাহুল স্নেহাকে নিয়ে লিভিং সোফায় ঝাপিয়ে পড়ে, আর স্নেহা ও Unbalance থাকায় ভয়ে চেঁচিয়ে উঠে ]

রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা কিছু করিওনি মাত্র শুলাম এতেই এতো বড় চিৎকার!

স্নেহা : ছিঃ রাহুল! [ বলেই উঠে দাঁড়াতে চাইলো কিন্তু ব্যর্থ, হঠাৎ খেয়াল করলো রাহুল স্নেহার ওড়না সরিয়ে ক্রিম গুলো স্লাইড করে পেটে লাগিয়ে দিচ্ছে, কেপে উঠছে স্নেহা! রাহুলের জ্যাকেট খিঁচে ধরলো শক্ত করে, রাহুলের হাত ধীরেধীরে উপরের দিকই উঠছে তা খেয়াল করে স্নেহা লজ্জা পেয়ে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো, দু-কদম পা বাড়াতেই স্নেহা থেমে গেলো,কেউ ওড়নাটা ধরে ফেলেছে, পেছন মুড়ে তাকালে দেখে রাহুল তার ওড়না টেনে ধরে তেডি স্মাইল দিয়ে উঠে দাঁড়ালো ]

স্নেহা : রার…রাহুল! [ রাহুল কোনো জবাব দিলো না স্নেহার ওড়নাটা তার হাতে বটতে লাগলো আর পা স্নেহার দিক বাড়াতে লাগলো, স্নেহা ঢোগ গিলছে আর রাহুলের কাছে আসা দেখে সে পেছাতেই আছে, এক পর্যায়ে স্নেহা পেছাতে গিয়ে দেওয়ালের সাথে ধাক্ষা খেলো আর পেছানোর জায়গা নেই বুঝতে পেরে নিচের দিক চোখ নামিয়ে রাখলো স্নেহা! ওড়নাটাও পুরোটা রাহুল তার হাতেই বটে নিলো, পেটের দিক থেকে লাগিয়ে দেওয়া কিছু ক্রিম রাহুল তার আংগুল দিয়ে কুড়িয়ে নিয়ে স্নেহার গলায় স্লাইড করে লাগিয়ে দিলো!.. জোড়ে জোড়ে শাস নিতে লাগলো স্নেহা! যতোবারই রাহুলের ছোয়া শরীরে লাগছে স্নেহার বুকটা কেপে উঠছে…

ধীরেধীরে রাহুল স্নেহার গলায় চুমু খেয়ে ক্রিম গুলো চুষে নিলো…কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্নেহা হারিয়েই গেছে এক অদ্ভুত ভালো লাগায়, রাহুল ছুটে আসলে স্নেহা চোখ মেলাতে না পেরে সরে যেতে চাইলো..কিন্তু রাহুল দেওয়ালে হাত রেখে স্নেহাকে আটকিয়ে ফেলে,স্নেহা নিরুপায় চোখে তাকালো রাহুলের দিক!… রাহুল স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে তার গালে লাগিয়ে দেওয়া ক্রিম গুলো ঘষে স্নেহার দু-গালে স্লাইড করে লাগিয়ে দিলো..এবং ধীরেধীরে গালে চুমু খেয়ে ক্রিম গুলো ও চুষে নিলো…

শরীরের লোম শিউরে উঠছে স্নেহার চোখ বটে নিজের কাপড় নিজেই শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রেখেছে স্নেহা…

রাহলে তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার পেট থেকে আঙুল দিয়ে স্লাইড করে আবারো কিছু ক্রিম কুড়িয়ে নিয়ে স্নেহার ঠোটে স্লাইড করে লাগিয়ে দিলো… ঠোট কাঁপছে স্নেহার রাহুলের হাতের স্পর্শে সাথে বুকটাও ধুপধুপ করে কেপে যাচ্ছে…

কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো রাহুল স্নেহার দিক,চোখ বন্ধ করে জোড়ে জোড়ে শাস নিচ্ছে স্নেহা…

রাহুল একটু হেসে ধীরেধীরে তার ঠোট দিয়ে স্নেহার ঠোটের ক্রিম গুলো ও চুষে নিতে লাগলো,

নিস্থব্ধ হয়ে গেছে স্নেহা…রাহুল তাকে পাগলের মতো ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিচ্ছে….

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 31

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 31

writer-Jubaida Sobti

রাহুলের বুকে মাথা রেখেই শুয়ে আছে স্নেহা,স্নেহার চুল বিলি করে দিচ্ছে রাহুল…

ঠেরই পেলো না কখন যে চোখটা লেগে এলো….

গাড়ীর হর্ণে ঘুমটা ভেঙে গেছে স্নেহার…. চোখ খুলতেই চোখে সকালের আবছা আলো ভেসে আসছে…হঠাৎ খেয়াল করলো সে রাহুলের বুকের মাঝেই এখনো শুয়ে আছে রাহুল তাকে জড়িয়ে রেখেছে…

চোখ তুলে তাকালো রাহুলের দিক,

রাহুল : গুড মর্নিং [ With tedi smile ]

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি সোজা হয়ে উঠে বসে আশেপাশে তাকিয়ে দেখে রাস্তাঘাটে মানুষজন ও কাজে বেড়িয়ে পড়েছে ]

রাহুল : না এই শহর দেখো, না এই লোকজনকে দেখো, [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ]

– ব্যাস চোখ খুলো আর তোমার রাহুলকে দেখো [ বলেই চোখ টিপ মারলো, স্নেহা মুচকি হাসে ]

রাহুল : [ স্নেহার কাছে মাথা এনে কানে নাক লাগিয়ে স্মেল নিয়ে ] আগুন সূর্যের কাছে আছে,কিন্তু জলতে হয় জমিনকে, সকালের খুশবু আছে তোমার কাছে কিন্তু জলতে হয় আমার এই বেচারা দিলকে,

স্নেহা : [ হেসে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দিয়ে ] সকাল সকাল পাগল হয়ে গিয়েছেন নাকি?…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] পাগল তো হয়েছি সেদিন রাতে যেদিন তোমাকে প্রথম স্টেশনে দেখেছি, [ স্নেহার কাছে মাথা এনে ] পাগল তো হয়েছি সেদিন সকালে যেদিন প্রথম তোমাকে ভার্সেটিতে দেখেছি, [ চোখ মেরে ] আর তুমি এই পাগলের পাগলী বুঝলে,

[ স্নেহা লজ্জায় ব্লাশিং হয়ে হেসে নিচের দিক তাকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : ” হেসো না এতো যেনো এই সকাল না ঠের পাই ” নাহলে তারিফ করতে থাকবে ও তোমার, আর নজর লেগে যাবে আমার স্নেহার ”

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] হয়েছে?…হুম?…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার কাছে মুখ এনে ] আমার মর্নিং কিস্!

স্নেহা : [ হেসে হাত দিয়ে রাহুলের মুখটা সরিয়ে দিয়ে ] কোনো মর্নিং কিস্ টিস্ না বাই! [ বলেই গাড়ীর দরজাটা খুললো হঠাৎ তখনি ]

রাহুল : “তোমার চুল উড়বে বাতাসে আর জলবে গাছের পাতা ” “কাধ থেকে সরতে দিওনা ওড়না, নাহলে পাগল হবে আমার মতো আরো কতোজনের মাথা ”

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি ধুপ করে দরজাটা আবার বন্ধ করে দিলো,রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : Listen! আজকে আর ভার্সেটি আসতে হবে না,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোহ! কেনো?…

রাহুল : [ ভেংগিয়ে ] হোহ! কেনো? তাই না?..তিনঘণ্টা ঘুমিয়েছো শুধু! বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো, আর ডান্স ক্লাসে যেতে নিষেধ করলে তো শুনবানা, বলবা নাহ রাহুল এটা আমার জন্য খুব দরকার আপনি বোঝার চেষ্টা করছেন না কেনো! এই সেই আরো কতো কিছু!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] কিন্তু রাহুল! আমি ভার্সেটি ও যেতে পারবো, কারণ রাতে ও তিনঘণ্টা ঘুমিয়েছি, আমার ঘুমতো দুটোই ভেঙেছে তাই না!

রাহুল : কথা যা বলছি তা শুনো! যাবা না বলছি ব্যাস যাবা না!

স্নেহা : আচ্ছা ওকে!

রাহুল : আর শুনো ডান্স ক্লাসে আমি ড্রপ করে দিবো!

স্নেহা : কিন্তু রাহুল! আপনি সারারাত ও ঘুমাননি!

রাহুল : ঘুম তো তুমি আমার অনেক আগেই হারাম করে দিয়েছো! [ With tedi smile ] ডোণ্ট ওয়ারি আমি ম্যানেজ করে নিবো!

স্নেহা : তাও রাহুল…

রাহুল : আবার?..

স্নেহা : আচ্ছা ঠিকাছে! [ বলেই গাড়ীর দরজা খুলে আবার বেরুতে ছিলো হঠাৎ মনে পড়লো সে তো ওড়না ছাড়া এভাবে হেটে যাবে কি করে ধুপ করে আবার বন্ধ করে দিলো ]

রাহুল : [ একটু হেসে তার জ্যাকেটটা খুলে স্নেহার দিক এগিয়ে দিয়ে ] এটা পড়ে নাও, [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ] ইটস্ ওকে স্নেহা! আমি জানি তোমার শীত লাগছে! তাই বেরুতে পারছো না! অন্যকিছু মনে করিনি,

[ স্নেহা বুঝতে পেরে একটু হেসে রাহুল থেকে জ্যাকেটটা এগিয়ে নিয়ে পড়ে নিলো ]

রাহুল : স্নেহা একটু বডিসডি বানাও, জ্যাকেটটা তোমাকে গিলে খেয়েছে!

স্নেহা : হোহ! আমি কেনো বডি বানাবো?.. আপনি নিজেই বডি কমিয়ে আসুন তাহলে আপনার জ্যাকেট পড়লে আমার ফিট হবে,

রাহুল : কামঅন! স্নেহা এই সিক্সপেক বডি বানাতে কতো মেহনত করতে হয় জানো?..

– তুমি তো রেডিমেড পেয়েছো তাই গুরুত্ব দিচ্ছো না, [ স্নেহার কাছে মুখ এনে চোখে চোখ রেখে ] নাহলে কতো মেয়েই লাইন ধরে আছে জানো এই সিক্সপেক বডির জন্য

[ বলেই রাহুল তার শার্টের বাটন খুলতে লাগলো, দুটো খুলতেই ]

স্নেহা : [ ঘাবড়ে গিয়ে রাহুলের হাত থামিয়ে দিয়ে ] ওকে ওকে! স্টপ…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] দেখলা তো দুটো বাটন খুলতেই ভয় পেয়ে গেছো… আর যদি সব বাটন খুলি….

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] ছিঃ রাহুল! [ বলেই দরজা খুলে নেমে দৌড়ে গেইটের দিক গিয়ে দাঁড়ালো, রাহুল ও হেসে নেমে দাঁড়ালো ]

রাহুল : বাট স্নেহা! আমার মর্নিং [ বলেই হাত দিয়ে ঠোটের দিক ইশারা করলো ]

স্নেহা : [ হেসে ] বাইই! [ বলেই ভেতরে ঢুকে গেলো ]

[ রাহুলের ও আর কি করার একটা তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ীতে উঠে বেড়িয়ে পড়লো ]

[ স্নেহা বাসায় ঢুকতে গেলে দেখে দরজা বন্ধ,তাই বেল দিলো ]

জারিফা : [ দরজা খুলে হাতে হাত বটে স্নেহার দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ] স্নেহা! মেরি জান! আমার জিজুটাকে ও সাথে নিয়ে আসতি বিনা ব্রেকফাস্টে পাঠিয়ে দিয়েছিস ?…

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] তুত…তুই কি করে…

জারিফা : আমি কি করে জানি?..[ হেসে ] ঘুম ভাংগলে দেখি তুই নেই আর মার্জান তো মাইকে এনাউন্স করার জন্য ও রেডি হয়ে গিয়েছিলো, তাই না মার্জান? [ বলেই কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ]

স্নেহা : [ হেসে জারিফার মাথায় বারি দিয়ে ] সিরিয়াসলি জারিফা তুই ও না,[ বলেই ভেতরে ঢুকে পড়ে ]

জারিফা : [ পেছন পেছন এগিয়ে গিয়ে ] আসলে তুকে বাসায় না দেখে প্রথমে তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তারপর টেবিলে তোর সেলফোনটা দেখতে পাই, আর লাষ্ট কলটা দেখি আমাদের জিজুর [ বলেই স্নেহাকে ধাক্ষাতে থাকে ]

স্নেহা : লাষ্ট কল দেখেই শিয়র হয়ে গিয়েছিস আমি ওর সাথে? এমন তো না ও হতে পারতো!

মার্জান : আরে বারান্দা থেকে রাহুলের এতো বড় খাটারা টা দেখা যাচ্ছিলো না ওটা দেখে আরো ডেমন শিয়র হয়েছিলাম!

স্নেহা : খাটারা না এটা গাড়ী!

জারিফা : [ হেসে ] ওহো গায়ে লাগলো স্নেহার! [ চেঁচিয়ে ] এই মার্জান তুই রাহুলের গাড়ীকে খাটারা বললি কেনো?… গাড়ী বল গাড়ী… [ বলতেই মার্জান জারিফা দুজনেই হেসে উঠে ]

স্নেহা : তোরা ও না [ বলেই লজ্জা পেয়ে খাটে বসে কম্বলটা গায়ে টেনে নিলো ]

মার্জান : বাই দ্যা ওয়ে! স্নেহা মাই ডিয়ার! রাহুলের জ্যাকেটটা তুকে অনেক স্যুট করেছে, কি বলিস জারিফা?..

জারিফা : [ স্নেহার পাশে বসে গান করে করে ] ” শা্রমানা মাথ্ সা্জান নে পেহনায়া জ্যাকেট আব্ তো্ উথা্রনা নেহি হে ইসে্ সি্নে মে লাগাকে রাখনা হে বাস্ …..

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] Shut-up জারিফা!

জারিফা : আচ্ছা! সারাদিনে তো রোমান্স করা যায়…কিন্তু অর্ধেক রাতে উঠে তোরা কি রোমান্স করতে গিয়েছিলি বলতো?…হুম? হুম?

মার্জান : আহা, ছাড় জারিফা আমাদের কি আর বলবে কি কি করেছে….

স্নেহা : তেমন কিছুই না যেমনটা তোরা ভাবছিস!

জারিফা : আচ্ছা তাহলে তুইই বলেদে কেমনটা হয়েছে!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে ব্লাশিং হয়ে একটু হেসে মুখের উপর কম্বল দিয়ে শুয়ে পড়ে ]

মার্জান : আরে স্নেহা! ভার্সেটি যাবিনা?..

স্নেহা : [ মাথা থেকে কম্বল তুলে ] নাহ!

জারিফা : আচ্ছা সারারাত তো ঘুমোইনি রোমান্সে কাটিয়েছে,বেচারিকে ঘুমাতে দে!

মার্জান : ওহ হ্যা! আমিতো ভুলেই গেছি!

[ বলেই জারিফা আর মার্জান দুজনেই হাসতে থাকে ]

স্নেহা : হয়েছে?..এখন না খিলখিলিয়ে রেডি হয়েনে!

[ বলেই স্নেহা আবার মুখের উপর কম্বল দিয়ে দেই, চোখ বন্ধ করতেই স্নেহার রাতে রাহুলের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে পড়ছে, ব্লাশিং হতে হতে ঘুমিয়ে পড়লো স্নেহা ]

মার্জান আর জারিফা বেড়িয়ে পড়েছে ভার্সেটি যাওয়ার উদ্দেশ্যে, রাস্তার একপাশ দাঁড়িয়েছে বাসে্র জন্য! হঠাৎ শা– করে একটা কালো গাড়ী এসে তাদের সামনেই থামলো,

জারিফা আর মার্জান অবাক হয়েই তাকিয়ে আছে, ধীরেধীরে গ্লাস নামালে দেখে আসিফ,

জারিফা : আরে! আপনি?…

আসিফ : ভার্সেটি যাচ্ছো?…

জারিফা : হ্যা!

আসিফ : আমি ও ভার্সেটিতেই যাচ্ছি,

– সো্ চলো.. সে্ইম রাস্তায় যখন যাচ্ছি একসাথেই যায়!

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] Listen! আমাদের না আপনার হেল্প এর কোনো প্রয়োজন নেই! আল্লাহর ওয়াস্তে আপনি আমার সামনে থেকে দাফা হয়ে যান বলেদিলাম!

জারিফা : [ মার্জানের কানে ফিসফিসিয়ে ] আরে মার্জান এভাবে বলছিস কেনো অনি কি মনে করবে?…

মার্জান : সো্ হোয়াট?..

[ আসিফ কিছু বললো না হেসেই তাকিয়ে রইলো মার্জানের দিক ]

জারিফা : এক্সুলি ও আজ সকালে নাশতা করেনি তো তাই মাথা একটু বিগ্রে আছে!

আসিফ : তাই নাকি?…যে কোনো একটা আইটেম হলে ও খেয়ে আসা উচিৎ ছিলো… যেমন হাতি তো আর ঘাস খেয়ে বেচে থাকতে পারে না…ঠিক..তেমনি…

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] স্টপ! কি বুঝাতে চাচ্ছেন আপনি হ্যা! [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] এই আমাকে কি দেখতে হাতির মতো লাগে?..

জারিফা : [ একটু দূরে সরে দাঁড়িয়ে মার্জানের বডির দিক তাকিয়ে ] কইই নাতো… দেখেতো ছাগলের বাচ্চাই মনে হচ্ছে, [ বলতেই আসিফ কিটকিটিয়ে হেসে উঠে ]

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] কিহ?..ছাগলের বাচ্চা?..

জারিফা : নাহ.. আই মিন…আমি ও এনিমেল দিয়ে এক্সেম্পল দিলাম আরকি! আচ্ছা চল রাগ করিস না [ বলেই গাড়ীর দিক টেনে উঠাতে চাইলে ]

মার্জান : আরে! পাগল নাকি?.. আমি বাসে্ই যাবো ওনার গাড়ীতে উঠবো না!

আসিফ : আসলে জারিফা কি জানো?…ও ভয় পাচ্ছে গাড়ীতে উঠতে…আই মিন যেমন ধরো এখন যদি কোনো হাতি আমার গাড়ীতে উঠে তাহলে তো গাড়ী এখানেই দুমড়ে-মুচড়ে যাবে তাই না?…

[ মার্জান রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে আছে আসিফের দিক ]

জারিফা : [ মুখ লুকিয়ে হেসে ] দেখেন আপনি কিন্তু আমার ফ্রেন্ডকে ইন্সাল্ট করছেন…ও মোটেও হাতির মতো না…সেটা আপনাকে প্রুফ করে দেখাবে!

আসিফ : তাই?.. তাহলে দেখাও…

জারিফা : [ মার্জানের কানে ] দেখা মার্জান…নাহলে প্রাউড করে যা বলেছি সব ধুলোই মিশে যাবে!

মার্জান : [ মুখ ভেংগিয়ে ] হুহ! আমার কেনো ওকে প্রুফ দেখাতে হবে?…এসব ওর বাহানা আমি বুঝি সব ওকে? হুহ!

আসিফ : দেখলা? ও জানে এমনটাই হবে! তাই এখন বাহানা বলে উড়িয়ে দিচ্ছে!

জারিফা : [ নাক ফুলিয়ে ] নাহহহ! এ হতে পারেনা… আপনাকে ও এক্ষুণি প্রুফ করে দেখাবে…আর ইউ রেডি মার্জান?…

[ মার্জান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে জারিফার দিক ]

জারিফা : [ একটু হেসে ] যা…মেরি জান! নাহলে সত্যিই তোকে হাতি ভেবে বসে থাকবে!

[ মার্জান কিছু না বলে নাক ফুলিয়ে গাড়ীর পেছনের সি্টের দরজা খুলে উঠে বসলো, আসিফ ইশারা করতেই জারিফা ও দরজা লাগিয়ে দিয়ে দৌড়ে গিয়ে উঠে বসলো ]

মার্জান : [ হেসে ] লুক! দেখলি তো আমি বললাম না এসব ওর বাহানা, আর তুকে তো আমি পড়ে দেখে নেবো! [ বলেই দরজা খুলার চেষ্টা করে কিন্তু দরজাটা ওপেনই হচ্ছে না, রাগান্বিত চোখে আসিফের দিক তাকালে আসিফ লুকিং গ্লাস দিয়ে তাকিয়ে হেসে গাড়ী টান দেই ]

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আপনি অটো লক দিলেন কেনো?…

আসিফ : জারিফা!

জারিফা : হুম?…

আসিফ : বলছি যে এমন মেয়েকে বউ বানাবো যে অল্প খাবার খায়, কারণ বেশি খেলে তো আবার হাতির মতো লাগবে তাই না!

জারিফা : হ্যা হ্যা! ঠিক…

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] জারিফা!

জারিফা : [ চমকে উঠে ] হ্যা! বল…

মার্জান : কিছুক্ষণ চুপ থাকবি?…

জারিফা : ওকে…ওকে!

আসিফ : [ হেসে ] আচ্ছা জারিফা! তুমি মিনিমাম একবসায় কইটা ডিশ খেতে পারবে?…

জারিফা : ডিশ ইউ মিন আইটেম?…

আসিফ : ইয়াপ!

জারিফা : ফুলফিল হলে…তিনটা ফুল কমপ্লিট করতে পারবো!

আসিফ : ওয়াহ! মেয়েতো নয় যেনো ফুলের পাতা,

[ মার্জান নাক ফুলিয়ে আসিফের দিক একবার তাকিয়ে আবার জানালা দিয়ে তাকিয়ে ফেলে ]

আসিফ : জানো জারিফা! ঐদিন ক্যান্টিনে আমার পাশে একটা মেয়ে বসেছিলো খেতে… একসাথে দশ-বিশটা আইটেম অর্ডার করে খেয়েছে! কি মেয়েরে বাবা!

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] দশ-বিশটা?..অহ মাই গড কোন খাদকের বাচ্চা এটা!

[ আসিফ হেসে উঠে ]

মার্জান : [ নাকফুলিয়ে ] এক্সকিউজ মি! আমি সব গুলো থেকে একটু একটু করে খেয়েছি ফুলফিল খায়নি! ওকে?

জারিফা : তুই ছিলি এটা?…

মার্জান : আব…না হ্যা! [ চেঁচিয়ে ] মানে হ্যা! [ বলেই জানালার পাশ ফিরে যায় ]

[ জারিফা কিটকিটিয়ে হেসে উঠে, সাথে আসিফ ও ]

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] জারিফাআআ!

জারিফা : ওকে ওকে! ওকে…আমি চুপ!
________________________________

দুপুর ১২ টা বেজে ১০ মিনিট, ফোন বাজছে স্নেহার!

স্নেহা : [ ঘুম কন্ঠে ] হ্যালো!

রাহুল : ওয়াও! হোয়াট এ ভয়েস্!

স্নেহা : মানে?…

রাহুল : ওয়েক আপ! মাই এঞ্জেল!

স্নেহা : [ একটু হেসে কম্বল আরো মুড়িয়ে নিয়ে ] আপনি…গুড মর্নিং!

রাহুল : [ একটু হেসে ] মর্নিং অনেক আগেই শেষ!

[ স্নেহা উঠে বসে ঘড়ির দিক তাকিয়ে দেখে ১২টা বাজতে চলছে, ]

স্নেহা : সরি! আমি… আসলে…

রাহুল : আচ্ছা বলো ঘুম কেমন হয়েছে?…

স্নেহা : ভালো! আপনি ঘুমিয়েছেন?…

রাহুল : আমি রাত ছাড়া ঘুমাতে পারিনা,

স্নেহা : রাতে ও বা কই ঘুমিয়েছিলেন?…

রাহুল : আচ্ছা ছাড়ো এসব,রেডি হয়ে নিচে আসো আমি গাড়ীতে আছি!

স্নেহা : আপনি নিচেই?…

রাহুল : হুম! কেনো ভুলে গেছো কি বলেছি?…

স্নেহা : হুম! মনে আছে…

রাহুল : হুম!

স্নেহা ফোন কেটে টেবিলে রেখে ওয়াসরুমে যাওয়ার জন্যই উঠলো হঠাৎ আবার বারান্দা দিয়ে উকি দিয়ে দেখে রাহুল হোয়াইট শার্ট, ব্লু-জ্যাকেট, ব্লাক জিন্স, সাথে ব্লাক সানগ্লাস পড়ে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে এদিকওদিক তাকাচ্ছে, উপরের দিক একটু তাকিয়ে গাড়ীতে ঢুকতেই যাচ্ছে হঠাৎ স্নেহার দিক চোখ পড়লো, স্নেহা তাড়াহুড়ো করে লুকে পড়লো, আর রাহুল বুঝতে পেরে তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ীতে ঢুকে পড়ে,

কিছুক্ষণ পর রাহুল গেইট এর দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা এগিয়ে আসছে, সাথে রাহুল এটাও খেয়াল করলো স্নেহা একটি ব্লু সালোয়ার কামিজ পড়েছে…চোখে আজ চশমা পড়েনি,ঘন করে কাজল লাগিয়েছে…হালকা ভেজা ভেজা চুল গুলো ও বিলিয়ে রেখেছে, কপালে সিলভার স্টোনের ছোট্ট একটি টিপ, হাতে সিলভার চুরি,কানে সিলভার ইয়ার রিং!

গাড়ীর দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে বসলো স্নেহা,রাহুল হা করেই তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক,

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] কি হলো?..এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?..

রাহুল : স্নেহা! তোমার কি আমাকে মেরে ফেলার প্লান আছে নাকি?…

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোহ! তা কেনো হবে?

রাহুল : আই থিংক উপরওয়ালা তোমাকে বানানোর পড়ে যা খুঁটিনাটি বেচে গিয়েছিলো তা দিয়েই চাঁদকে বানিয়েছে! [ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে অন্যপাশ ফিরে যায়, ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে, নাইস্ কম্বিনেশন! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক একবার তাকিয়ে আবার সোজা তাকিয়ে ফেলে ] তাইতো! মিলে গেছে!

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : তোমাদের বারান্দায় একটা বেড়াল ঢুকেছে মনে হয় চেক করে নিও,আমাকে উকি দিচ্ছিলো,

[ স্নেহা হেসে লজ্জায় জানালার দিক তাকিয়ে ফেলে ]

কিছুক্ষণ পর, স্নেহা রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল এখনো তেডি স্মাইল দিয়ে তার দিক তাকিয়েই আছে,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] রাহুলল!

রাহুল : [ একটু হেসে ] আহহ! মনে হয় খোদা রেখেছে আমার দিল তার নিজের হাতে, নিলো স্নেহা আমার নাম খুব যত্নের সাথে!

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] সত্যি রাহুল! আপনি তো দেখছি সিংগার থেকে পোয়েট্রিক হয়ে যাচ্ছেন!

রাহুল : [ ব্লাশিং হয়ে ] ব্যাস্ এভাবেই হাসতে থেকো চিরজীবন, আমি পোয়েট্রি বলে যাবো আজীবন!

স্নেহা : হুম! এবার যাবেন?..লেইট হচ্ছে!

রাহুল : [ গাড়ী স্টার্ট দিয়ে ] হলে সমস্যা কি?…

স্নেহা : হোহ! লেইট হলে স্যালারি কেটে নিবে,

রাহুল : [ হুট করে গাড়ী থামিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তুমি এসব টাকার জন্য করছো রাইট?…

স্নেহা : আব…টা..টাকা? কক..কই নাতো?…

[ আড় চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়েই আছে মাথায় ও কিছু আসছে না স্নেহার কি বলবে! ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আস…আসলে আপনি বডি বানানোর জন্য জিমে যান না?…তো আমি ও ফিগার মেইনটেইনের জন্য এটা করছি! [ বলেই হেসে সোজা তাকিয়ে ফেলে ]

– [ একটুপর রাহুলের দিক আবার তাকিয়ে ] কি হলো চলেন!

রাহুল : বোকা পেয়েছো আমাকে? তাহলে ওভারটাইম করছো কেনো?…

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আই থিংক আমাদের এখন যাওয়া উচিৎ রাহুল!

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] ইয়াহ! [ বলেই জোড়ে গাড়ীর Steering ঘুড়িয়ে টান দিলো ]

কিছুক্ষণ পর স্নেহা রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল কিছু বলছে না নিশ্চয় মন খারাপ করে আছে,

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! তোমার টাকার প্রয়োজন এটা আমাকে বললেই পারতে,এতে কি বিগ্রে যেতো?…

স্নেহা : তেমন কিছুই না রাহুল!

– আচ্ছা! আপ..আপনি দেখেছেন…আমি আজ চশমা পড়িনি,

রাহুল : দেখেছি, কাজল পড়েছো…

স্নেহা : মন খারাপ করে বলছেন কেনো?..

[ রাহুল কোনো জবাব দিলো না চুপ করেই রইলো ]

ডান্স ক্লাসে এসে পৌছালো,দুজনেই চুপ করে আছে,

রাহুল : কি হলো এভাবে হয়ে আছো কেনো?…

স্নেহা : কিছু না!

[ বলেই গাড়ী থেকে নেমে দাঁড়ালো, রাহুল ও নেমে বেড়িয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো ]

রাহুল : [ অন্যপাশ তাকিয়ে ] সরি!

স্নেহা : কেনো?…

রাহুল : তোমার মন খারাপ করে দিয়েছি তাই! কিন্তু স্নেহা আমি আসলে…

– ওকে ফরগেট ইট! [ বলেই স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে ]

রাহুল : হেইই! হোয়াট হ্যাপেন,.. আর আরে কাদছো কেনো?…ওকে ওকে আম সরি! আর চেঁচাবো না…প্লিজ ডোন্ট ক্রাই! [ বলেই যত্ন করে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দেই যাতে কাজল না লেপ্টে যায় ]

চলবে…..

Love At 1St Sight Season 3 Part – 30

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 30

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : বাই দ্যা ওয়ে, রাহুল!

রাহুল : হুম?..

স্নেহা : আপনি লোকটাকে দেখে এমন রিয়েক্ট করলেন কেনো?…

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] আমার জাষ্ট এটা জানার ছিলো ওকে কে পাঠিয়েছে!

স্নেহা : কিন্তু রাহুল আপনার এমন কেনো মনে হচ্ছিলো যে লোকটাকে কেউ পাঠিয়েছে!

রাহুল : তুমি যখন বেড়িয়েছো ও তখন তোমার পিছু নিচ্ছিলো, আমি গাড়ীতে বসেই দেখেছিলাম, ইনফ্যাক্ট ও ফোনে কারো সাথে কথাও বলছিলো তখন আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিয়র হয়েগিয়েছিলাম যে একে কেউ পাঠিয়েছে,

স্নেহা : [ একটু হেসে ] এমন ও তো হতে পারে লোকটা নিজের পার্সোনাল মেটারে কাউকে ফোন দিয়েছে!

রাহুল : তোমার মতো বোকা মেয়েরা এসব ভেবেই বোকামি করে ফেলে!

– আরে ওর কোনো প্লান না থাকলে ওর থেকে আমি যখন জিজ্ঞেস করছিলাম তখন ও পালালো কেনো?…

[ স্নেহা আর কিছু বললো না চুপ হয়েই রইলো ]

বাড়ী এসে পৌছালো, স্নেহা গাড়ী থেকে নামতেই রাহুল ও বেড়িয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো,

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম! [ বলেই হেসে উঠে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হাসছো কেনো?

[ স্নেহা হেসে হেসে হাত দিয়ে রাহুলের নাকের দিক ইশারা করলো ]

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] অহ ইয়াহ! [ বলেই স্নেহার ওড়নার আচল টেনে নিয়ে নাকের উপর লাগিয়ে দেওয়া Mayonnaise গুলো মুছে নেয় ] এবার হাসো!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] বাই গুডনাইট! [ বলেই ওপাশ ফিরে চলে যাচ্ছিলো ]

রাহুল : Listen! [ স্নেহা ফিরে তাকালো ]

রাহুল : আই লাভ ইউ!

স্নেহা অবাক চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক, হঠাৎ কেনো যেন অনেকটা মায়াবী লাগছে আজ রাহুলের চেহেরাটা! স্নেহার ইচ্ছে করছিলো জোড়ে টাইট করে রাহুলকে জড়িয়ে ধরবে…কিন্তু কি করার আশেপাশে কেউ এসে দেখে ফেললে!

রাহুল ও তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ,ধীরেধীরে এগিয়ে রাহুলের একদম কাছে এসেই দাঁড়ালো স্নেহা, আশেপাশে একবার তাকিয়ে, পা কিছুটা আলগা করে রাহুলের গালে একটি চুমু খেলো, তা দেখে রাহুলের চেহেরায় হাসি ফুটলো!

স্নেহা : [ লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি সরে দাঁড়িয়ে ] বাই!

রাহুল : বাই! [ With tedi smile ] [ চলে গেলো স্নেহা, রাহুল ও হেসে বেড়িয়ে পড়লো ]

[ বাসায় ঢুকে স্নেহা ফ্রেশ হয়ে খাটে বসলো ]

মার্জান : স্নেহা! ডিনার করবিনা?..কখন থেকেই ডাকছি!

স্নেহা : এক্সুলি মার্জান আমার না খিদে নেই তোরা খেয়েনে!

জারিফা : [ স্নেহাকে হাত ধরে টেনে দাড় করিয়ে ] একটা সেন্ডুইচে পেট ভরে উলটে যায় না, ওকে! চল…

– আর এমনিতেও সারাদিনে যে ডান্স ডান্সে পার করিয়ে দিস এতে তো ক্ষিধে আরো বেশি লাগা উচিৎ তাই না!

স্নেহা : [ একটু হেসে জারিফা থেকে হাত ছুটিয়ে আবার খাটে বসে ] সত্যি ক্ষিধে নেই আমার, আর তোরা… ফোর্সড করিসনা প্লিজ…এক কাজ কর খাবার টেবিলে রেখে দে আমার ক্ষিধে লাগলে তখন নিয়ে খেয়ে নিবো!

জারিফা : [ মুখ ভেংগিয়ে ] ওকেই…[ বলে উঠে চলে যায় ]

স্নেহা হেসে চোখ থেকে চশমাটা খুলে টেবিলে রাখে, কম্বলটা টেনে শুতে যাবে তখনি রাহুলের পড়িয়ে দেওয়া রিংটির দিকে চোখ পড়লো সাথে সাথেই ব্লাশিং হতে লাগলো! আর রাহুলের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে করতে লাগলো,

কিছুক্ষণ পর, পাশ থেকে মোবাইলটা নিয়ে রাহুলকে ফোন দিলো!

রাহুল : ব্যাস! ফোন দিতেই ছিলাম আর তুমি দিয়ে দিলা!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা?..তো কি করছিলেন?…

রাহুল : এইতো তোমাকেই মিস্ করছিলাম!

– উম! তুমি?…

স্নেহা : [ লজ্জায় কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আ…আমি ও!

রাহুল : রিয়েলি? [ with tedi smile ]

স্নেহা : [ কম্বল গায়েটেনে শুয়ে ] হুম! রিয়েলি!

রাহুল : আচ্ছা শুনো তুমি আমাকে তুমি বলেই বলো! এসব আপনিটাপনি…

স্নেহা : হোহ! আপনাকে তুমি বলবো?

রাহুল : ইয়েস্!

স্নেহা : ইম্পসিবল রাহুল! আমার জন্য আপনিটাই ঠিক আছে!

রাহুল : Shut-up স্নেহা!

স্নেহা : আই কান্ট রাহুল প্লিজ!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ওখে! As ur wish!

স্নেহা : [ হেসে ] থেংক্স!

রাহুল : আচ্ছা চলো এইবার ঘুমিয়ে পড়ো!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোহ! কেনো?..

রাহুল : হোহ কেনো?…সকাল থেকে কতোটা এনার্জি লস্ট করেছো ঐ Disgusted ওভারটাইম জবের পিছনে…

স্নেহা : [ হেসে মনে মনে ] আবারো শুরু হলো!

রাহুল : কি বলছি শুনছো?…

স্নেহা : হুম! কিন্তু…

রাহুল : নো এক্সকিউজ!

স্নেহা : বাট রাহুল…

রাহুল : এগেইন?..

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ওকে!

রাহুল : [ হেসে ] বাই গুডনাইট!

স্নেহা : গুডনাইট!

[ কেটে দিলো ফোন, স্নেহা ও হেসে ব্লাশিং হয়ে ফোনটা টেবিলে রাখতেই জারিফা এসে হাজির হয়! ]

জারিফা : ওহো মেরি জান! কি খুশি দেখাচ্ছে…গালটাতো গোলাপের পাপড়ি হয়ে গেছে ব্লাশিং হতে হতে!

– [ স্নেহার পাশে এসে বসে ] আমার জিজুর সাথে কথা হচ্ছিলো বুঝি?..হুমহুম?…[ বলেই স্নেহাকে ধাক্ষাতে লাগলো ]

স্নেহা : [ লজ্জা পেয়ে ] Shut-up জারিফা! আমার ঘুম পাচ্ছে ঘুমাতে দে! [ বলেই কম্বলটা নাকে মুখে টেনে শুয়ে পড়ে, জারিফা স্নেহার কম্বলটা টেনে সরাতে চাইলো কিন্তু স্নেহা হেসে শক্ত করে চেপে ধরে রাখলো ]

জারিফা : [ স্নেহার কানের দিক ফিসফিসিয়ে ] আচ্ছা যা ছেড়ে দিলাম…বাট স্নেহা অনাথসনাথ কিছু করলে আমাকে আগে বলবি কিন্তু! আই মিন কিছুটা এমন!

– আচ্ছা তুই মার্ডার ফ্লিমটা দেখেছিস ইমরান হাশমির

স্নেহা : [ লাফিয়ে উঠে ] ছিঃ জারিফা…

জারিফা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] অমনি ছিঃ হয়ে গেলো?…আচ্ছা রাহুলকে ফোন দিচ্ছি ওর থেকে জিজ্ঞেস করি ও দেখেছে কিনা [ বলেই স্নেহার ফোনটা টেবিল থেকে এগিয়ে নিলো ]

স্নেহা : [ জারিফার কাছ থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে ] স্টপ ইট জারিফা!

জারিফা : [ হেসে ] আরে!

মার্জান : কি হচ্ছে?…

জারিফা : ওহ হ্যা! বলছিলাম যে ইমরান হাশমির…

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] ইয়াককক!

[ বলতেই জারিফা আর স্নেহা দু-জনেই হেসে উঠে ]

স্নেহা : হয়েছে অনেক যা এবার ঘুমিয়ে পড় আমাকে ও ঘুমাতে দে!

জারিফা : জি! মেম যাহা আপনার আজ্ঞা!

[ স্নেহা হেসে জারিফার মাথায় হালকা একটা বারি দিয়ে শুয়ে পড়ে ]

রাত ২টা বেজে ১০মিনিট! অনেকটাই গভীর ঘুমেই ঘুমিয়ে আছে সবাই!
________________________________

দিনটা শীতকালই চলছে! রাহুল আর স্নেহা দুজনেই গাড়ীতে বসে আছে,

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] ব্যাস! ব্যাস! রাহুল দাড়ান ঐ যে দেখেন কুলফি আইসক্রিম এর গাড়ীটি!

রাহুল : বাট স্নেহা! শীতে এভাবে আইসক্রিম খেলে তোমার গলা খারাপ হবে!

স্নেহা : আচ্ছা! আমি আপনার মতো সিংগার না আমার গলা খারাপ হলেও সমস্যা নেই! প্লিজ রাহুল!

[ বাধ্য হয়ে গাড়ী থামালো রাহুল! স্নেহাকে ও তার ইচ্ছামত কুলফি আইসক্রিম খাইয়ে তারপর আবার গাড়ীতে উঠালো, এবং ডান্সক্লাসে এসে পৌছাতেই রাহুল আগে নেমে এসে স্নেহার দিক দরজাটা খুলে দিলো,একটু হেসে নেমে এলো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু দিয়ে ] বাই!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ] বাই!

[ স্নেহা তাকিয়ে রইলো রাহুল গাড়ীতে উঠে বসলো জানালার গ্লাস নামিয়ে আবারও একটা ফ্লায়িং কিস্ দিলো স্নেহাকে…স্নেহা মুচকি হাসে, একটা তেডি স্মাইল দিয়ে চলে যাচ্ছে রাহুল! স্নেহা তাকিয়েই রইলো, কিছুটা দূর চলে যাওয়ার পর স্নেহা ও পাশফিরে ভেতরে ঢুকতেই যাচ্ছে হঠাৎ বিকট এক কর্কট আওয়াজ কানে ভেসে আসলো, তাড়াতাড়ি পেছন মুড়ে তাকাতেই দেখে বড় এক ট্রলি গাড়ীর সাথে মুখোমুখি হয়ে রাহুলের গাড়ীটি দুমড়ে মুচড়ে গেছে,

– রাহুল! বলেই চিৎকার করে উঠলো স্নেহা! ]
________________________________

হুট করেই চোখ খুলে ফেলে স্নেহা! উঠে বসলো তাড়াতাড়ি! শরীরে ঘাম দিচ্ছে, জোড়ে জোড়ে শাস নিচ্ছে! চারদিক নিস্থব্দ হয়ে আছে,ঘড়ির টিকটক টিকটক আওয়াজটায় শুধু কানে বাজছে! তাকিয়ে দেখে ২টা বেজে ৩৫ মিনিট!

মার্জান আর জারিফার দিক তাকিয়ে দেখলো তারা ঘুমিয়েই আছে!

ধীরেধীরে চোখ বন্ধ করে বুকে হাত দিয়ে দেখে,বুকটা এখনো ধুপধুপ করে কাপছে! চোখের কোণে জমে থাকা পানিটি গড়িয়ে পড়লো! মনেমনে ভাবতে লাগলো ভাগ্যিস সপ্নই ছিলো!
কিছুক্ষণ এভাবেই চুপ হয়ে বসে রইলো!

কম্বল সরিয়ে বিছানা থেকে নেমে দাড়ালো! টেবিল থেকে মোবাইলটা হাতে নিয়ে বারান্দায় এগিয়ে গেলো! চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার, কুয়াশায় ভরপুর,রাস্তার লাল ল্যাম্পপোস্ট গুলোই জলছে,

ডায়াল লিষ্টে রাহুলের নাম্বারটার দিক তাকিয়ে রইলো! আর মনে মনে ভাবছে কল দিবে কি দিবে না! আবার ভাবছে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে ডিষ্টার্ব করা ঠিক হবে না!

আর কিছু না ভেবে রুমের ভেতরেই ঢুকে পড়লো! জারিফা আর মার্জানের গায়ের কম্বলটা ঠিক করে দিয়ে দিলো!

ধীরেধীরে আবারো বারান্দায় এগিয়ে গেলো! রাহুলের নাম্বারটা এনে হুট করেই কল দিয়ে দিলো! প্রথম রিং পড়তেই রাহুল রিসি্ভ করে স্নেহা! বলে উঠলো! স্নেহা মুখ চেপে ধরে হতোভম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে!

বাতাস এসে গা ছুয়ে যাচ্ছে স্নেহার! এলো মেলো হয়ে থাকা চুল গুলো ও উড়ছে,ঠান্ডায় গায়ের লোমগুলো ও দাঁড়িয়ে পড়ছে!

রাহুল : স্নেহা!

[ জোড়ে মুখ চেপে ধরে ফুফিয়ে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : স্নেহা! তুমি কি কাঁদছো?…[ চুপ করেই রইলো স্নেহা! ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] Talk to me sneha! কিছু বলছো না কেনো?…

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রার…রাহুল [ বলেই আবার ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

রাহুল : আরে?.. কি হয়েছে স্নেহা ?..
– ওকে আমি আসছি! ওয়েট

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে চেঁচিয়ে উঠে ] না.. নাহ রাহুল! আ…আমি ঠিক…ঠিকাছি!

রাহুল : বাট আমার তোমাকে মোটেও ঠিক লাগছে না!

স্নেহা : [ কান্না কন্ট্রোল করে নিয়ে ] আপ…আপনি ঘুমাননি?…

রাহুল : আমারটা ছাড়ো! তুমি এতোরাতে জেগে আছো কেনো?…

স্নেহা : ব্যাস্ ঘুঘ…ঘুম ভেঙে গেছে!

রাহুল : তাহলে কাঁদছিলে কেনো?…

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে কাদো কন্ঠে ] আপ…আপনাকে মনে পড়ছিলো [ বলেই আবার ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

রাহুল : ওকে রিলেক্স স্নেহা! ডোন্ট ক্রাই,

– এতে কান্নার কি আছে….আমি তো সবসময় তোমার সাথে আছি,

স্নেহা : [ ফুফিয়ে ] হুম!

রাহুল : স্নেহা প্লিজ! ডোন্ট ক্রাই…

[ কেঁদেই চলছে স্নেহা ]

রাহুল : ওকে! আমি আসছি…[ বলতেই ]

স্নেহা : [ আবার চেঁচিয়ে কাদো কন্ঠে ] নাহ প্লিজ রাহুল! ওকে আমি কাঁদছিনা প্লিজ! আসবেন না!

রাহুল : কেঁদে কেঁদেই বলছো আমি কাঁদছি না!

স্নেহা : [ চোখমুখ মুছে রিলেক্স হয়ে ] ওকে! এখন ঠিকাছি! আমি রাখি ঘুম পাচ্ছে আপনি ও ঘুমান!

রাহুল : হুম! [ স্নেহা ফোন কেটে বুকে জড়িয়ে আবারো ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো ]

[ ধীরেধীরে রুমে এগিয়ে এসে খাটে বসলো ]

স্নেহা : [ মনমনে ] হঠাৎ এমন সপ্ন কেনো দেখলাম!

– না নাহ! এসব আজেবাজে ভেবে লাভ নেই কিছুই হবে না রাহুলের,এটা তো সপ্নই ছিলো [ কিছুক্ষণ নিস্থব্দ হয়ে থেকে ]

– তবে দূর্সপ্নই কেনো দেখলাম! [ চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে ] উফফ! স্নেহা…এসব কেনো ভাবছিস হ্যা দূর্সপ্নই তো ছিলো তাতে কি হয়েছে [ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে এদিকওদিক ছুটাছুটি করে হাটতে লাগলো, বেসি্নের দিক এগিয়ে গিয়ে মুখে ঝাপটে পানি দিলো, মুখ মুছে আবার খাটে এসে শুয়ে পড়ে ]

কিছুক্ষণ এপাশ ফিরছে তো কিছুক্ষণ ওপাশ ফিরছে,ঘুম আসছেই না চোখ বন্ধ করতেই রাহুলকে মনে পড়ছে!

হাটু কুড়িয়ে মুখ গোমড়া করে বসে আছে, ঘড়ির দিক তাকিয়ে দেখে ৩টা বাজতে চলছে, কম্বলটা ঠিক করে টেনে নিয়ে আবার শুয়ে পড়ছে হঠাৎ মোবাইলটা বেজেই উঠলো,

স্নেহা : [ ফোন রিসি্ভ করে ] হ্যালো!

রাহুল : আমায় মিস্ করছিলে?…

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] হুম!

– [ কাদো কন্ঠে ] অনেক!

রাহুল : তাহলে নিচে আসো!

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] রার..রাহুল আপ..আপনি?..

রাহুল : আই এম ওয়েটিং [ বলেই ফোন কেটে দিলো ]

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে উঠে বারান্দায় এগিয়ে যায়, রাহুলকে দেখতেই চেহেরায় খুশির ঝলক ছুটছে সাথে চোখ বেয়ে পানি পড়ছে, রাহুল ইশারা করলো নিচে নেমে আসতে, স্নেহা মাথা নাড়িয়ে চোখ মুছে তাড়াহুড়ো করে দৌড়ে নিচে নেমে আসে, গেইট দিয়ে বেরুতেই রাহুল স্নেহার দিক এগিয়ে আসে, হুট করেই স্নেহা রাহুলকে জড়িয়ে ধরে ফেললো, রাহুল ও একটু হেসে জড়িয়ে নিলো ]

রাহুল : এতোটা মিস্ করছিলে?…

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আপনাকে নিষেধ করেছিলাম না?..না আসতে?…

রাহুল : আচ্ছা ঠিকাছে তাহলে চলে যাচ্ছি [ বলেই স্নেহাকে ছুটিয়ে আনলো,স্নেহা মুখ গোমড়া করে তাকালো ]

রাহুল : বাই!

স্নেহা : [ হেসে চেঁচিয়ে ] রাহুল!

[ বলেই রাহুলের জ্যাকেট ধরে টান দিয়ে কাছে টেনে নিয়ে বুকের মাঝেই মাথা লুকালো স্নেহা ]

[ রাহুল ও হেসে দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে ধরে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিলো ]

রাহুল : সব ভালোবাসা কি আজ রাস্তায় দেখিয়ে দিবে নাকি?… [ With tedi smile ]

[ এইবার স্নেহার মাথায় এলো সে তো রাস্তায় দাড়িয়েই রাহুলকে জড়িয়ে ধরে আছে তাড়াতাড়ি সরে দাঁড়ালো স্নেহা ]

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! কেউ দেখেনি!

– আর সবাই এখন ঘুমের মধ্যেই ব্যস্ত! কার টাইম আছে আমাদের মতো এতোরাতে প্রেম করার [ বলেই স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে কাছে টেনে নেই ]

স্নেহা : রার…রাহুল! [ বলেই আশেপাশে তাকাতে লাগলো ]

রাহুল : আর তোমাকেই দেখো, আমাকে এতোটাই মিস্ করছিলে যে স্কার্ফ ছাড়ায় বেড়িয়ে এলে! [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

[ স্নেহা গলায় হাত দিয়ে তাকিয়ে দেখে সত্যিই তো স্কার্ফ, ওড়না, শাল কিছুই তো পড়ে এলো না, ছিঃ রাহুলের সাথে চোখ মেলাতেই লজ্জা লাগছে স্নেহার, আড়চোখে তাকিয়ে দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে, স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে পাশমোড়ে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়ীর পেছনের সি্টে ঢুকে বসে পড়লো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] রাহুল! কি করছেন?…

রাহুল : ডোন্ট ওয়ারি কিছুই করবো না [ বলেই গাড়ীর দরজাটা বন্ধ করে স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়েই আছে ]

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! [ স্নেহা ও একটু মুচকি হেসে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেলে ]

[ রাহুল স্নেহার সামনের চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে স্নেহার দিক, স্নেহা ও কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রাহুলের বুকে মাথা হেলিয়ে দেই! সাথে সাথে রাহুল ও জড়িয়ে নেই ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : আপনাকে ফোন দিতেই রিসি্ভ করে ফেলেছেন! আপনি…ঘুমাননি?…আই মিন…

রাহুল : কারণ আমি জানতাম যে তুমি ফোন দিবা তাই!

স্নেহা : [ মাথা তুলে রাহুলের বুকে বারি দিয়ে ] সিরিয়াসলি রাহুল!

রাহুল : [ হেসে স্নেহার কপালের একটি চুমু দিয়ে ] ব্যাস! আমি ও তোমাকে মিস্ করছিলাম তাই ঘুম আসছিলো না! জেগে ছিলাম!

– কিন্তু তুমি এভাবে মিস্ করছিলে কেনো বলোতো?.. কেঁদে কেঁদে তো নাক মুখ লাল বানিয়ে ফেলেছো! [ বলতেই স্নেহার চোখে আবার পানি টলমল করছিলো ]

রাহুল : আরে?…আবার কি হলো?..এখন তো পাশেই আছি!

স্নেহা : [ রাহুলের বুকে মাথা রেখে ] ব্যাস! রাহুল একটা স..সপ্ন দেখেছি!

রাহুল : [ হেসে ] তাই?..আচ্ছা কি দেখলা…

স্নেহা : [ মাথা তুলে ] দেখেছি…একটা বব…বড় গাড়ি… [ কাদো কন্ঠে ] মানে আপ…আপনার এক্সিডেন্ট! [ বলতেই চোখ থেকে গড়গড় করে পানি ছুটতে লাগলো ]

রাহুল : [ স্নেহার চোখ মুছে দিতে দিতে ] রিলেক্স স্নেহা! এভাবে কাদছো কেনো [ হেসে ] এটা তো সপ্নই ছিলো!

– আর রিয়েলিটিতে আমি অনেকবারই এক্সিডেন্ট হয়েছি! কিন্তু গুড লাক আমার [ চোখ মেরে ] কিছু হয়নি!

– [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] সো্ ডোন্ট ওয়ারি প্লিজ!

[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না চুপ হয়েই রইলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : আম সরি!

[ স্নেহা রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : সকালে আমি যা বলেছি! আসলে!
– স্নেহা আমি এখন বুঝছি এসব হুট করেই….

স্নেহা : [ রাহুলের মুখে হাত দিয়ে থামিয়ে দেই ] সরি! বলার দরকার নেই রাহুল!

– ইনফ্যাক্ট আমিতো খুশিতে আত্নহারা হয়ে গিয়েছিলাম! তখন [ বলতেই চোখে আবার পানি টলমল করছে ]

রাহুল : [ স্নেহার দুনো হাত তার হাতের মুঠোই নিয়ে ] স্নেহা! You know তুমি আমার লাভ এট ফার্ষ্ট সাইট!

– আমি তোমার বেকগ্রাউন্ড,ফ্যামিলি, তোমার স্টেটাস্ এসব কিছুই দেখে তোমার প্রেমে পড়িনি! ইনফ্যাক্ট এসবে আমার কিছু আসে যায় না!

– আমি তোমাকে দেখেই তোমার প্রেমে পড়েছিলাম! [ স্নেহার কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো ]

– [ একটু হেসে ] স্টেশনে যখন তুমি দৌড়ে আসছিলে,তোমার ভীতু চেহেরাটা… [ চোখ খুলে ] এক্সুলি স্নেহা! ঐদিন…

– তোমাকে আমি ইচ্ছে করেই ধাক্ষা দিয়ে ফেলেছিলাম! [ স্নেহা চোখ বড় করে অবাক হয়ে তাকালো ] কন্ট্রোলই হচ্ছিলো না…আমার ঐ মুহূর্তটা তখন সর্গীয় মনে হয়েছিলো,তোমাকে কাছে না পেলে পাগলই হয়ে যেতাম আমি!

[ স্নেহা হেসে উঠে,রাহুল ও হেসে চোখটা বন্ধ করে নেই ]

রাহুল : স্নেহা তোমাকে ভালোবাসার পর আমার নিজের চেয়ে ও তোমার উপর ট্রাষ্ট বেশি হয়ে গেছে! আমি হয়তো তোমাকে ছেড়ে দূরে যেতে পারি কিন্তু তুমি আমাকে ছেড়ে কখনো দূরে থাকতে পারবে না!

[ পানি গড়িয়ে পড়ছে স্নেহার চোখ থেকে ]

রাহুল : স্নেহা! তোমার প্রতিটা ফিলিংস্ই আমি ফিল করতে পারি!

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম?…

স্নেহা : একটা প্রশ্ন করি?…

রাহুল : [ চোখ খুলে ] শিয়র!

স্নেহা : [ নিচের দিক তাকিয়ে ] ব্যাস আমার চোখের দিক তাকাবেন না!

রাহুল : [ একটু অবাক হয়ে ] ওকেই [ বলেই চোখটা আবার বন্ধ করে নিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] যদি! কখনো জানেন আমি আপনার কাছ থেকে কিছু লুকিয়েছি…তাহলে আপনি রার..রাগ করবেন?…

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] লুকিও না স্নেহা!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] Compulsion [বলেই ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

– আমাকে কিছুটা সময় দেন!

রাহুল : স্নেহা! আমার সাথে খুশি গুলো ঠিকই ভাগ করছো… কিন্তু দুঃখ্য গুলো একাই সইছো….

– স্নেহা! You know হাউ মাচ্ আই লাভ ইউ…

[ বলেই রাহুল চোখ খুললো স্নেহা তাকিয়ে দেখে রাহুলের চোখ দুটো লাল হয়ে আছে চোখে পানি টলমল করছে, স্নেহা একটু হেসে রাহুলের মাথা টেনে নিয়ে কপালে একটি চুমু খেলো, ধীরেধীরে রাহুলের দু-চোখে চুমু খেলো নাকের সাথে নাক ঘষে হেসে উঠলো ]

স্নেহা : ইয়েস্ I know হাউ মাচ্ ইউ লাভ মি!

[ রাহুল ও হেসে স্নেহার দু-গালে দাড়ি দিয়ে ঘষে দিলো, স্নেহা শিউরে উঠলো, দু-হাত গালের উপর রেখে স্নেহা রাহুলের খোচা খোচা দাড়িগুলোর উপর হাত বুলাতে লাগলো ]

স্নেহা : আপনি…ডিনার করেছেন?…

রাহুল : [ স্নেহার কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে ] তোমার হাতেই তো করেছি!

স্নেহা : ব্যাস! ঐ দু-কামড় সেন্ডুইচে?..

রাহুল : হুমমম! এমনভাবে বলছো যেনো নিজেও আরো অনেক কিছু খেয়ে তড়িয়ে ফেলেছো!

স্নেহা : হ্যা! কিন্তু তাও আমিতো আপনার চেয়ে বেশিই খেয়েছি তাই না!

রাহুল : সো্ কি করা যায়?… [ with tedi smile ]

[ স্নেহা ঢোগ গিলে রাহুলের মুখ থেকে হাত সরিয়ে সোজা হয়ে বসে ]

রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা! আমি তোমার থেকে কিস্ চাইছি নাকি [ বলেই হেসে সি্টে হেলান দিয়ে বসলো ]

– আর শোনো তুমি ভার্সেটি থেকে ডান্স ক্লাসে একা যাবা না! আমি ড্রপ করে দিবো!

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হুম বলো! [ স্নেহা চুপ হয়ে রইলো ]

রাহুল : [ উঠে বসে ] কি হলো বলো?..

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে সি্টে হেলান দিয়ে বসে,রাহুল অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক! ধীরেধীরে স্নেহা রাহুলের জ্যাকেট ধরে তার একদম কাছে টেনে নেই, রাহুলের নিশাসগুলো স্নেহার মুখের উপরই পড়ছে! ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : শিসস! [ বলেই চোখটা আলতো করে বন্ধ করে ফেলে,এবং ধীরেধীরে রাহুলের ঘাড়ে স্লাইড করে হাত রেখে মুখটা কাছে টেনে ঠোটে একটি চুমু খেলো! রাহুল আকষ্মিক চোখে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক চোখের কোণ থেকে পানি বেয়ে পড়ছে স্নেহার, কিছুক্ষণ পর ধীরেধীরে রাহুল ও স্নেহার পুরো ঠোট নিজের দখলে নিয়ে নেই! স্নেহা রাহুলের চুল গুলো মুঠি বেধে ধরে আছে, হারিয়ে যাচ্ছে স্নেহা রাহুলের ভালোবাসায়…হ্যা এভাবেই হারিয়ে যেতে চাই সে…

রাহুল ছুটে এসে হাত দিয়ে স্নেহার চোখের কোণ বেয়ে পড়া পানি গুলো মুছে দিলো,

ধীরেধীরে স্নেহার গলার দিক থেকে চুলগুলো সরিয়ে নিলো…. স্নেহা জোড়ে জোড়ে শাস নিচ্ছে…রাহুল স্নেহার গলায় একটি গভীরচুমু খেলো,শক্ত করেই রাহুলের চুল গুলো মুঠি বেধে চেপে ধরলো স্নেহা!

রাহুল মাথা তুলে স্নেহার দিক তাকাতেই স্নেহা ও চোখ খুললো….উঠে বসলো স্নেহা….

রাহুলের কাছে মুখ এগিয়ে এনে ধীরেধীরে রাহুলের ঠোট নিজের করে নিলো, রাহুল ও স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে স্লাইড করে স্নেহাকে আরো কাছে টেনে নেই! আলতো করে রাহুল ও স্নেহার ঠোটের সাধ গ্রহণ করতে লাগলো!

ছুটে আসলো রাহুল,স্নেহার বন্ধ করে রাখা দু-চোখ ভরে চুমু দিলো, কপালে, দু-গালে,

ধীরেধীরে ঘাড় থেকে চুল গুলো সরিয়ে একপাশ এনে রাখলো…খালি পাশে একটি চুমু খেয়ে নাক দিয়ে স্মেল নিতে লাগলো… স্নেহা শিউরে উঠে রাহুলকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফেললো…

[ রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে বুকে টেনে সি্টে হেলান দিয়ে বসলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : তোমার ভালোবাসা আমাকে পাগল করে দিচ্ছে! [ স্নেহা একটু হেসে রাহুলের গালটা টেনে দেই ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 29

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 29

writer-Jubaida Sobti

In Restaurant,
জারিফা আর রিদোয়ান বসে আছে লাঞ্চ অর্ডার করে,

জারিফা : এতোকিছু অর্ডার করার মোটেও প্রয়োজন ছিলো না!

রিদোয়ান : আহা! অর্ডার করেছি যা মন চাই খাবা না খেলে ইগনোর করবা ব্যাস! [ বলেই চোখ টিপ মারলো ]

জারিফা : যা মন চাই খাওয়ার প্রয়োজন নেই ব্যাস আমাকে তাড়াতাড়ি পানি খাওয়ান আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে!

রিদোয়ান : ওয়েটারকে তো বললাম আগে একটা পানি দিতে কই গেলো ইডিয়টটা, আচ্ছা তুমি বসো আমি আসছি, [ বলেই চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালো ]

[ হঠাৎ, কোনো একটা মেয়ে এসে হেইই রিদ বলে জড়িয়ে ধরলো, রিদোয়ান অবাক হয়ে তাড়াতাড়ি জারিফার দিক তাকালো ]

– হ্যালো রিদ! ইউ রিমেম্বার মি?…

রিদোয়ান : ইয়া,ইয়াহ! তারিনা রাইট?..

তারিনা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইয়েস্! [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] হু ইজ শি?…

রিদোয়ান : আব…শি ইজ জারিফা! এন্ড জারিফা শি ইজ তারিনা!

তারিনা : অউউ! সো্ সুইট, হ্যালো!

জারিফা : [ হ্যান্ডশেক করে ] হাই!

তারিনা : নাইস্ টু মিট ইউ গাইস্ নাও বাই, সি্ ইউ লেটার! ইনজয় ইয়র ডে, বাইইইই!

রিদোয়ান : বাই!

[ চলে গেলো তারিনা, ওয়েটার এসে পানি দিয়ে গেলো, জারিফা গ্লাসে পানি ঢেলে নিচ্ছে ]

রিদোয়ান : [ চেয়ারে বসে হালকা একটু হেসে ] আর ইউ জেলাস্?

জারিফা : ওহ! নো শি ইজ এ ফ্রেন্ড! [ বলেই পানি খেতে লাগলো ]

রিদোয়ান : ইয়াহ! শি ইজ এ ফ্রেন্ড! বাই দ্যা ওয়ে! জারিফা You know আমি তোমার সাথে রিলেশনের আগে…

জারিফা : [ পানির গ্লাস টেবিলে রেখে ] ইয়াহ I know আমার সাথে রিলেশনের আগে আপনি আরো রিলেশন করেছিলেন, ভার্সেটির র্যাগিং মাষ্টার ছিলেন,মেয়েদের সাথে টিচ্ করতেন,পার্টিসার্টি, ডান্স, বেয়ার,গার্লস্ উইথ লং ড্রাইভ, Etc Etc

– আব..আই মিন লাইক এ প্লে বয় রাইট?…

রিদোয়ান : [ একটু হেসে ] ইয়াহ! রাইট বাট নো্ এক্সুলি রিলেশন তো শুধু তোমার সাথে করেছি এর আগে করিনি,

– কিন্তু জারিফা! এতোকিছু জেনে ও তুমি আমাকে হ্যা বললে যে?..

জারিফা : [ মুচকি হেসে ] তো আপনার কি মনে হয়?… আমার হ্যা বলাটা উচিৎ হয়নি?…

রিদোয়ান : [ ব্লাশিং হয়ে ] ইয়াহ দ্যাটস্ ইন্টেলিজেন্ট কুয়েশন [ বলতেই জারিফা ও হেসে উঠে ]
________________________________

গাড়ীতে,

আসিফ : [ একটু হেসে ] তুমি যা করেছো তাতে আমি একটু ও অবাক হয়নি! You know বেশিরভাগ মেয়েরায় এই কাজটা করে থাকে… সো্ সিম্পল!

মার্জান : হুহ! I know আপনি আমাকে বাকি মেয়েদের মতোই মনে করবেন! বাট you know what!

– no chance!

আসিফ : এক্সুলি আই হেভ নো ইন্ট্রেষ্ট! [ বলেই হেসে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] আচ্ছা আপনি নিজেকে নিজে কি মনে করেন বলেন তো?…আমি কি ক্লাস টু তে পড়ি?..আমাকে আপনি বোকা পেয়েছেন?…

– [ মুখ ভেংগিয়ে ] হুহ! এতোটাই ইন্ট্রেষ্ট না থাকলে আমার পিছন ঘুর ঘুর করছিলেন কেনো?…আপনি কি ভেবেছেন আপনি আমাকে কেন্টিনে ফলো করে ঢুকেছিলেন সেটা আমি ঠের পাইনি?…পার্কিং এ ও আমাকে ফলো করতে করতে এসে হাজির হয়েছিলেন,

আসিফ : Compulsory ছিলো?…

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] হোয়াট?..Compulsory ছিলো মানে?… কে করেছে Compulsory ?..

– আরে বলেন কে বলেছে আপনাকে আমাকে ফলো করতে?…

আসিফ : সব কথা বলা যাবে না!

মার্জান : গাড়ী থামান!

আসিফ : বাট হোয়াই?..

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আই সে্ স্টপ দ্যা কার!

আসিফ : হাইওয়েতে আছি, বললেই কি হুট করে গাড়ী থামানো যায় নাকি?..কিন্তু কি হয়েছে সেটা তো বলো!

মার্জান : [ গাড়ীর দরজা ধরে ] আপনি গাড়ী থামাবেন নাকি আমি লাফ দিবো?…

আসিফ : ওকে ওকে ওয়েট!

[ বলেই আসিফ একপাশ করে গাড়ী থামালো এবং সাথে সাথেই মার্জান গাড়ী থেকে হুটহাট করে বেড়িয়ে এলো ]

আসিফ : হ্যালো কই যাও!

মার্জান : [ জানালা দিয়ে মাথা ঢুকিয়ে ] জাহান্নামে যাচ্ছি! যাবেন?..[ আসিফ হেসে উঠে ] এন্ড You know I have no interest on your help! so get lost! [ বলেই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে টেক্সি একটা ঠিক করে চলে যায় ]

আসিফ রাহুলকে ফোন দিলো,

রাহুল : হ্যালো!

আসিফ : ইয়ার কি মেয়েরে বাবা! আমাকে এমন ভাবে ধমক দেই যেনো আমি ওর আগের জন্মের গোলাম ছিলাম,

রাহুল : এগেইন হোয়াট হ্যাপেন?..

আসিফ : ও বুঝতে পেরেছে আমি ওকে ফলো করেছিলাম, আমি বললাম আমার ইন্ট্রেষ্ট ছিলো না এটা করা আমার জন্য compulsory ছিলো,

রাহুল : এটা বলার কি দরকার ছিলো?..

আসিফ : আরে না বলে পারছিলাম না ও আমাকে মনে করছে আমি আমার নিজ ইচ্ছায় ওকে ফলো করছিলাম…

রাহুল : আচ্ছা এখন কই?…

আসিফ : গাড়ী থামিয়ে টেক্সি নিয়ে বেড়িয়ে গেছে!

রাহুল : আরে তুই পাগল নাকি একা যেতে দিলি কেনো?…আমি স্নেহাকে কথা দিয়েছি আসিফ!

আসিফ : আরে গাড়ী থামাচ্ছিলাম না বলে ও বলছে নাহলে লাফ দিবে! তাই আর কি করার!

রাহুল : বাড়ী না পৌছা পর্যন্ত টেক্সি ফলো কর! আর আমি রাখছি পরে কথা হবে এখন Busy আছি,

[ বলেই ফোন কেটে পকেটে ঢুকিয়ে নিলো, কিছুক্ষণ পরেই হসপিটাল এসে পৌছালো, তাড়াহুড়ো করে উপরে উঠতেই দেখে কেবিন থেকে দাদী বেরুচ্ছে ]

রাহুল : [ দাদীর দিক এগিয়ে গিয়ে ] দাদী! কি হয়েছে আব…ডক্টর এসেছে ?…

দাদী : হার্ট এট্যাক করেছে!

রাহুল : টাইমলি মেডিসিন না নিলে তো এমন হবেই! [ বলে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

দাদী : [ বিরক্তি হয়ে ] রাগ দেখানোর সীমা আছে একটা রাহুল!

– কতোবারই বলেছি বাবার সাথে বিজনেসে্ টুকটাক হাত বাটা,

রাহুল : আবার এসব স্টার্ট করোনা দাদী আমি আগেও বলেছি ওনার বিজনেসে্ আমার কোনো ইন্ট্রষ্ট নেই! ওনাকে বলো ওয়ার্ক প্রেশার কমাতে যাকে ইচ্ছে তাকে পার্টনার করে নিতে!

দাদী : পাঁচ-দশটা ছেলে আছে তাই না?.. যে যাকে ইচ্ছে তাকে বিজনেস্ পার্টনার করে নিবে?… [ রাহুলের হাত ধরে ] দেখ রাহুল! এসব সবই তো তোর জন্য…করছে

রাহুল : ফরগেট ইট দাদী! এটা বলো এখন কেমন আছে?…

দাদী : [ নাক ফুলিয়ে ] আমি কি জানি কেমন আছে?..জানার ইচ্ছে থাকলে নিজে গিয়ে দেখ!

রাহুল : [ একটু হেসে দাদীর গাল টেনে ] উফ! দাদী তুমি রাগ করলে না ইচ্ছে করে টাইট করে দুইটা পাপ্পি দি!

দাদী : [ রাহুলের হাত ঝাড়ি দিয়ে ] ছিঃ বদমাইশ!

[ রাহুল হেটে এগিয়ে গিয়ে কেবিনের দরজা খুলে তাকাতেই দেখে তার বাবা শুয়ে আছে, মাথা ফিরিয়ে তার বাবা ও দরজার দিক তাকাতেই রাহুলকে দেখতে পাই, সাথে সাথেই রাহুল দরজা বন্ধ করে আবার দাদীর দিক এগিয়ে আসে ]

দাদী : [ রাগান্বিত ভাবে ] হয়ে গেছে দেখা তাই না?…

রাহুল : [ হেসে ] ডিসচার্জ কখন দিবে?…

দাদী : তোকে বলার প্রয়োজন নেই!

রাহুল : [ হেসে ] ওকে ডক্টর থেকেই জেনে নিবো!

[ দাদী নাকফুলিয়ে রাহুলকে হাত দিয়ে সরিয়ে কেবিনে ঢুকে গেলো, রাহুল হাসতে থাকে দাদীর কান্ডে হঠাৎ আবার কেবিনের দিক তাকিয়ে মুখ গোমড়া করে ফেলে , চোখে পানি টলমল করছে…আশেপাশে তাকিয়ে কন্ট্রোল করে নিলো নিজেকে,ডাক্তার থেকে ও জেনে নিলো তার বাবাকে ডিসচার্জ কখন দিবে, নিচে গিয়ে বাইকে উঠে বসলো হঠাৎ আবার স্নেহার কথা মনে পড়তেই মোবাইলটা বের করলো ]
________________________________

In Dance class,
সব ডান্স টিচারদের কনফারেন্স রুমে একত্র করা হলো,

সিনিয়র টিচার : যা বলেছি সব বুঝতে পেরেছো তো! আমি এসব বারবার বলবো না,

– বার বার ব্রেক নেওয়া আমাদের স্টুডেন্টসদের জন্য অনেকটাই ক্ষতি হচ্ছে!

[ হঠাৎ, স্নেহার ফোনটা বেজে উঠলো, সাথে সাথেই সবাই স্নেহার দিক তাকালো, ফোনটা কাটতেই ছিলো স্নেহা, কিন্তু রাহুলের কল দেখে তাড়াতাড়ি রিসি্ভ করলো ]

স্নেহা : [ ধীরো কন্ঠে ] হ্যালো!

রাহুল : কামঅন স্নেহা! তুমি আমার সাথে বিনা দেখা করেই চলে গেলা! আর এসব কি শুনছি তুমি নাকি ওভারটাইম…

স্নেহা : রার…রাহুল আমি আপনাকে পড়ে কল দিচ্ছি [ বলেই স্নেহা ফোন কেটে দিলো ]

সিনিয়র টিচার : স্নেহা! ইউ আর এ গ্রেট ডান্সার! বাট তোমার ক্ষেত্রেই কিছুদিন ধরে দেখি…তুমি রুলস একদমই…
[ বলতেই স্নেহার ফোনটা আবার বেজে উঠলো ]

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি কেটে দিয়ে ] সরি! স্যার!

সিনিয়র টিচার : তুমি অনেকদিন এভসে্ন ছিলা! এই কারণে স্যালারি কাটা যায় তুমি নিশ্চয় জানো?..

স্নেহা : জি স্যার!

সিনিয়র টিচার : আই হোপ নেক্সট থেকে এমন হবেনা, [ বলতেই স্নেহার ফোনটা আবার বেজে উঠে ] ফোনটা সুইচ অফ করলে ভালো হয়!

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি ফোন বন্ধ করে দিলো
রাহুল আবার ও কল দিলে দেখে স্নেহার ফোন বন্ধ, রেগে ফোন পকেটে ঢুকিয়ে বেড়িয়ে পড়লো হসপিটাল থেকে, বাসায় এসে রুমে ঢুকতেই দেখে ফোনটা বেজে উঠলো ]

রাহুল : জরুরী ছিলো না আমাকে ফোনটা করার,

স্নেহা : আরে রাগছেন কেনো রাহুল! আমি কনফারেন্স রুমে ছিলাম তাই..

রাহুল : ওহ ইয়াহ স্নেহা! আই গেট ইট প্রতিদিনই তোমার কোনো না কোনো বাহানা, ঐ দিন মামা সামনে ছিলো তাই রিসি্ভ করতে পারোনি,আজ কনফারেন্স রুমে ছিলা,কাল অন্য জায়গায় থাকবা, বাট স্নেহা বেরুবার সময় অন্তত আমার সাথে একবার দেখা করে যেতে পারতে,

স্নেহা : রাহুল আপনি রেগে বেড়িয়েছিলেন, আপনাকে কিছু বলবো ঐ সময়টাই আপনি আমাকে দেননি,

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ] ওভারটাইম জব করার এতোটাই কি দরকার ছিলো ?…কিছু লাগলে আমাকে বলতে পারতে আমাকে শেয়ার করতে পারতে, ওহ ইয়াহ, কেনো বলবা আমি কে তোমার?…

স্নেহা : রাহুল আপনি এভাবে রাগছেন কেনো?..

রাহুল : স্নেহা! I don’t know তুমি আমার থেকে কি হাইড করছো, [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আমি তোমাকে বুঝতেই পারছি না,

স্নেহা : রাহুল!

[ কেটে দিলো রাহুল ফোন,স্নেহা আবার কল বেক করতে যাবে তখনি রুমে সিনিয়র টিচার এসে হাজির হয়, ফোনটা তাড়াতাড়ি সরিয়ে বেগে ভরে নিলো

এইদিকে,

মাথার চুল মুঠি বেধে ধরে চোখ বটে সোফায় বসে পড়লো রাহুল, কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে আবার উঠে গিয়ে ফ্রিজ থেকে বেয়ারের বোতোলটা এগিয়ে নিলো, বোতোলের দিক তাকাতেই শিপে স্নেহাকে বলা কথাটি মনে পড়লো ]
________________________________

{ রাহুল : i swear স্নেহা আমি Addicted না! বাট, যখনি পেইন লাগে…সজ্য হয় না..তখনি এটাকে পার্টনার করেনি!

স্নেহা : [ রাহুলের হাত কাছে টেনে জড়িয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে কাধে মাথা রেখে ] এখন তো আর একা নয়! হুম?…

[ রাহুল মুচকি হেসে স্নেহার হাত মুঠি বেধে শক্ত করে তার হাতে ধরে স্নেহার দিক তাকিয়ে মাথা নাড়ালো! ]

স্নেহা : আজ থেকে আর খেতে হবে না!ওকে?…আর যখনি এসব সামনে থাকবে…আপনি আমার কথা মনে করবেন দেখবেন! আপনার খেতে ইচ্ছেই করবে না }
________________________________

ভাবতেই বোতোলটা আবার ফ্রিজের মধ্যে ছুড়ে ধপ করেই ফ্রিজটা বন্ধ করে দিলো, মোবাইলটা আবার বেজে উঠলো স্নেহা মনে করে তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে গিয়ে রিসি্ভ করতেই গেলো দেখে ড্রাইভার ফোন করেছে,

রাহুল : হ্যা বল,

ড্রাইভার : রাহুল ভাইয়া গাড়ী সব সার্ভিসিং থেকে এনে রেখেছি!

রাহুল : ওকে ডোর ওপেন আছে চাবি টেবিলে রেখে যা!

[ বলেই ফোনটা সোফায় ছুড়ে মাড়লো, ওয়াসরুমে গিয়ে শাওয়ার নিয়ে তৈরী হয়ে নিলো, আলমিরা থেকে রেড জ্যাকেটটা নিতেই যাচ্ছিলো হঠাৎ স্নেহাকে পড়তে দেওয়া এশ কালারের জ্যাকেটটার দিক চোখ পড়লো আর কিছু না ভেবে ঐটাই নিয়ে পড়ে নিলো, নিচে গিয়ে টেবিল থেকে সানগ্লাস টা টি-শার্টে ঝুলিয়ে নিলো, ফোন, মানিবেগ, কার কিইস্ পকেটে ভরে বেড়িয়ে যাচ্ছে, হঠাৎ স্নেহার বলা কথাটি মনে পড়লো ]
________________________________

{ স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] জানেন রাহুল! আমার না অনেক ইচ্ছে ছিলো! এমন…উইদাউট সা্নরুফ গাড়ীতে চড়ার, ইনফেক্ট! ছোটবেলায় যখন স্কুলে যেতাম তখন এমন গাড়ী দেখলে না, হা করে তাকিয়ে থাকতাম }
________________________________

ভেবে উঠতেই আবার টেবিলের দিক এগিয়ে এসে হাতে নেওয়া গাড়ীর চাবির দিক তাকালো Audi Q7 কার কিইস্ দেখেই টেবিলে রেখে দিয়ে BMW I8 কার কিইসটা উঠিয়ে নিলো, একটা তেডি স্মাইল দিয়ে বেড়িয়ে পড়লো স্নেহার ডান্স ক্লাসে যাওয়ার উদ্দ্যেশে!

বিকেল হয়ে গেলো,গাড়ীতেই বসে আছে রাহুল দু-ঘন্টা ধরে স্নেহাকে ফোন দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু স্নেহা রিসি্ভই করছে না!
________________________________

In dance class, হঠাৎ একজন সিকিউরিটি এগিয়ে এলো স্নেহার কাছে,

সিকিউরিটি : স্নেহা! মেম আপনার জন্য বারান্দায় কেউ একজন অপেক্ষা করছে,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আচ্ছা! আসছি, [ বলেই স্নেহা দু-মিনিটের ব্রেক দিয়ে বারান্দায় বেড়িয়ে এলো, হঠাৎ রাহুলকে দেখে চমকে উঠলো স্নেহা ]

স্নেহা : [ রাহুলের কাছে এগিয়ে এসে ] আপনি? এইখানে?…

রাহুল : আমি তোমাকে ফোন করছিলাম!

স্নেহা : [ রাহুলকে টেনে একপাশ দাড় করিয়ে ] সরি রাহুল! ফোন সাইলেন্ট ছিলো! দেখেন প্লিজ আমি জানি আপনি রেগে আছেন কিন্তু রাহুল….

রাহুল : ওকে স্টপ! [ স্নেহা থেমে গেলো ] আই এম সরি!

স্নেহা : সরি?..কিক…কিন্তু কেনো?

রাহুল : তখন তোমার উপর চেঁচিয়ে ছিলাম বলে!

স্নেহা : পাগল নাকি আপনি সরি বলছেন কেনো?..সরি তো আমার আপনাকে…

রাহুল : আমার কথা এখনো শেষ হয়নি!

– স্নেহা!

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : আমি তোমাকে মিস্ করছিলাম!

[ স্নেহা অবাক দৃষ্টিতে রাহুলের দিক তাকিয়ে রইলো,কিছুক্ষণ পর ঠোটের কোণে একটু হাসি ভেসে উঠলো ]

রাহুল : তোমাকে মনে পড়ছিলো বার বার,

[ স্নেহা মুচকি হেসে রাহুলের টি-শার্ট থেকে সানগ্লাসটা ছুটিয়ে নিয়ে চোখে লাগিয়ে দিলো ]

স্নেহা : দু মিনিটের ব্রেক নিয়েছি! যেতে হবে!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : রাতে কথা হবে!

রাহুল : আমি নিচে ওয়েট করছি তুমি! আই মিন শেষ করে আসলে তখন ড্রপ করে দিবো!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] রাহুল! আমার শেষ হতে রাত হবে!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] I know!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] পাগল হয়েছেন আপনি?…আমি বাসে্ই যাবো! আর আপনি এখন বাসায় যান! রেষ্ট করেন…রাতে কথা হবে!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : [ তাড়াহুড়ো করে ] ওকে রাহুল! বাই হুম! তখন আবার ওরা চেঁচাবে এবার যান!

[ রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে ধীরেধীরে পেছনে পা বাড়িয়ে বেড়িয়ে গেলো আর স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলের কথাটি ভাবছে { রাহুল : স্নেহা আমি তোমাকে মিস্ করেছি } মুচকি মুচকি হেসে ক্লাসে চলে এলো স্নেহা ]

রাত হয়ে গেলো, স্নেহা সব শেষ করে বেড়িয়েছে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে, দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার একপাশ বাসে্র অপেক্ষায়! বাস্ আসতেই উঠে পড়লো স্নেহা, খালি একটা সি্টে গিয়ে জানালার পাশেই বসলো, বাস ছেড়ে দিলো কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পরই স্নেহা খেয়াল করলো তার পাশের সিটে কেউ এসে বসেছে, তাকিয়ে দেখে অপরিচিত একজন লোক, লোকটার বিহেভিয়ার স্নেহার মোটেও পছন্দ হলো না গায়ের সাথে একদম লেগেই বসেছে, কিছুক্ষণ পায়ের সাথে পা লাগাচ্ছে তো কিছুক্ষণ হাতের সাথে হাত, ইচ্ছে করেই গায়ের মাঝে হেলিয়ে পড়ছে খুব একটা সুবিধা না লাগায় স্নেহা উঠে যেতে চাইলো কিন্তু লোকটি এমনভাবে বসেছে যে উঠে অন্যসিটে যাওয়ার কোনো ওয়ে রাখেনি,ডাক দিয়ে সা্ইড দিতে বললেও লোকটি না শোনার ভান হয়ে থাকে…

হঠাৎ, খেয়াল করলো বাস্ খুব জোড়ে ব্রেক নিয়ে থেমে গেলো, মাথা তুলে তাকাতেই দেখে রাহুল এগিয়ে আসছে…এবং এসেই স্নেহা কিছু জিজ্ঞেস করবে এর আগেই স্নেহার পাশের সিটে বসা লোকটির কলার ধরে দাড় করিয়ে ফেললো রাহুল!

লোকটি : আরে কি করছেন?…

রাহুল : সোজা প্রশ্ন করবো সোজা উত্তর দিবি! বল কে পাঠিয়েছে?… [ বাসে্র সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ]

লোকটি : আরে কে পাঠিয়েছে মানে?..আপনার মাথা ঠিক আছে?…

রাহুল : [ লোকটিকে টেনে বের করে ] তুই কি ভেবেছিস আমি কিছু দেখিনি?..অনেক্ষণ ধরেই তুই ওকে ফলো করছিলি! ইনফ্যাক্ট বাস্ অনেকটাই এসেছে কিন্তু তুই একটাই ও উঠিসনি যেই না ও এইবাসে্ উঠলো হুট করেই তুই ও উঠে পড়লি হোয়াই?…

[ লোকটি হিমসিম খেয়ে আর কোনো জবাব না দিয়ে হুট করে রাহুলের হাত ঝাড়ি দিয়ে ফেলে দৌড়ে বাস্ থেকে নেমে গেলো ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] এই দাড়া…[ বলেই দৌড়াতে ছিলো কিন্তু স্নেহা রাহুলের হাত ধরে ফেলে শক্ত করে ]

স্নেহা : ব্যাস্ রাহুল!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা প্লিজ!

স্নেহা : নাহ! [ বলেই রাহুলের হাত আরো শক্ত করে ধরে রইলো ]

রাহুল : Damn it! [ বলেই স্নেহাকে সহ নিয়ে বাস থেকে নেমে গেলো, স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : গাড়ীতে উঠো!

স্নেহা : আপ…আপনি?…

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] কোথাও যাচ্ছিনা আমি ও উঠছি! [ স্নেহা চমকে উঠে দরজা খুলে উঠে বসলো, রাহুল ও আশেপাশে একবার তাকিয়ে উঠে বসলো গাড়ীতে ]

গাড়ী চলছে, স্নেহা ভয়ে ভয়ে রাহুলের দিক তাকাচ্ছে রাহুল গাড়ীর Steering এমনভাবে ঘুরাচ্ছিলো তা দেখে স্নেহার কলিজাটা বিন্দু পরিমাণ হয়ে যাচ্ছে!

রাহুল : [ দাত কিলিয়ে ] ব্যাস! একবার জেনেনি কে পাঠিয়েছে ওকে… [ বলেই হাত দিয়ে steering এ জোড়ে বাড়ি মারলো, স্নেহা ভয় পেয়ে উঠলো ]

কিছুক্ষণ পর,

স্নেহা : আপ…আপনি বাব..বাসায় যাননি?…

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] ভাগ্যিস যায়নি! আর তোমার মাথার এসব ওভারটাইম Disgusted আইডিয়া গুলা না!

– কি বলবো…

[ স্নেহা মাথা নিচু করে চুপ হয়ে রইলো ]

রাহুল : ডিনার করেছো?…

স্নেহা : নাহ! আপ…আপনি?…

[ রাহুল হাত বাড়িয়ে স্নেহার সামনের ডেক্সটা ওপেন করে একটা খাবারের প্যাকেট এগিয়ে দিলো স্নেহাকে ]

স্নেহা : এটাই কি?…

রাহুল : সে্ন্ডুইচ!

স্নেহা : আপনি খেখ…খেয়েছেন?…

রাহুল : খিধে নেই! তুমি কমপ্লিট করো!

– [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] কি হলো কথা কানে যায় না?..বললাম খাবার কমপ্লিট করতে!

[ স্নেহা ধীরেধীরে প্যাকেট খুলে এক কামড় খেয়ে নিলো ]

রাহুল : সরি!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে তাকিয়ে ] আবার সরি! কেনো?..

রাহুল : তোমার উপর চেঁচালাম বলে!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] ওকে নো্ নিড সরি কিন্তু একটা কথা শুনলে ভালো লাগতো!

রাহুল : কি?…

স্নেহা : আমার সাথে সেন্ডুইচ শেয়ার করতে হবে!

রাহুল : ড্রাইভ করছি!

স্নেহা : তাতে কি হয়েছে আমি খাইয়ে দিবো! [ বলেই রাহুলের মুখের দিক সেন্ডুইচটি এগিয়ে দিলো, রাহুল স্নেহার দিক একটু তাকিয়ে এক কামড় খেয়ে নিলো ]

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ] সারাদিনে খেয়েছেন?..

রাহুল : [ হেসে ] কার কি যায় আসে ?…

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] এমনটাও না রাহুল! আমি জানি আপনি রেগে আছেন! কিন্তু রাহুল ওভারটাইম জব করা আমার জন্য খুবই দরকার!

রাহুল : স্নেহা! তোমার যদি কিছু চাই আমাকে বলতে পারো! তুমি এমনটাও মনে করোনা যে আমি কিছু ভাববো এতে নিজেকে ছোট মনে করার প্রশ্নই আসে না!

স্নেহা : হুম [ বলেই একটু হেসে রাহুলের মুখের সামনে আবার সেন্ডুইচটা এগিয়ে দিলো ]

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] কথা এভোইড করছো কিন্তু স্নেহা!

স্নেহা : আরে আপনি খাবারের মাঝে এতো কথা বলেন কেনো বলেন তো?..

রাহুল : এটা তোমাকে ফিনিশ করতে দিয়েছি ওকে?

[ বলেই একহাত দিয়ে স্নেহার ঠোটের কোণে লেগে থাকা Mayonnaise গুলো আংগুল দিয়ে মুছে দিলো, স্নেহা তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিক, রাহুল ড্রাইভ করছে, কিছুক্ষণ পর রাহুল বুঝতে পারলো স্নেহা এখনো তাকিয়ে আছে তাই রাহুল ও তেডি স্মাইল দিতে লাগলো! স্নেহা ও হেসে রাহুলের মুখের দিক সেন্ডুইচটা আবার এগিয়ে দিলো, রাহুল খেতে গেলেই স্নেহা রাহুলের নাকের সাথে সেন্ডুইচের Mayonnaise লাগিয়ে দিয়ে কিটকট করে হাসতে থাকে ]

রাহুল : This is not fair sneha!

স্নেহা : [ হেসে ] দারুণ লাগছে আপনাকে সত্যি!

[ রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে হুট করেই স্নেহার চুলের ক্লিপটা খুলে নিলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে?…

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে গাড়ীর সানরুফটা নামিয়ে দিলো, সাথে সাথেই বাতাস এসে স্নেহার চুল গুলি বিলিয়ে দিচ্ছে, স্নেহা বুঝতে পেরে ব্লাশিং হয়ে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেললো ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 28

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 28

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : [ হেসে মার্জানের কাছে এসে ] ইউ আর এ জিনিয়াস্ মার্জান [ বলেই আবার নেহার ফেইস রিয়েকশন মনে করে কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ] ওর চেহেরা কেমন বানিয়ে ছিলো…আই কান্ট এক্সপ্লেইন!

মার্জান : ইয়েস্ ইয়েস্ [ হেসে ] বাই দ্যা ওয়ে, ওকে তো আমি আরো বাড়িয়ে দিতাম শিক্ষা! এই স্নেহা আমার হাতই ছাড়ছিলো না! [ বলতেই আসিফ, মার্জান, রাহুল তিনজনই আবার হেসে উঠে ]

রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখে সবাই হাসছে অথচ স্নেহা টেনশন চেহেরা বানিয়ে রেখে মার্জানের দিক চেয়ে আছে,

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে ] কি হয়েছে?…

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] হ্যা?.. না কক..কই কিছুনা! [ বলেই ঢোগ গিলে মুখটা আবার গোমড়া করে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] ঐ স্নেহা! তোর চেহেরাটা এভাবে বানিয়ে রেখেছিস কেনো?…আরে আপসে্ট তো ও হবে…সবার সামনে যে সুন্দরীর চেহেরায় কালো চান লেগে গেছে [ বলেই কিটকিটিয়ে হাসতে লাগলো হঠাৎ আসিফের দিক চোখ পড়তেই হাসি বন্ধ করে মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় আসিফ ও হেসে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] কাম!

স্নেহা : কোক…কোথায়?…

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে স্নেহার হাত ধরে নিয়ে চলে গেলো ]

মার্জান ব্যাগটা কাধে ঠিক করে নিয়ে আসিফের দিক তাকালো আসিফ তাকাতেই মুখটা ভেংগিয়ে চলে যাচ্ছিলো,

আসিফ : [ হেসে উঠে ] বাই দ্যা ওয়ে!মানতে হবে,

[ মার্জান অবাক হয়ে ফিরে তাকালো ]

আসিফ : সাহস আছে তোমার!

মার্জান : [ এগিয়ে এসে ] You know! আমি না! এখনো আমার আসল সাহস দেখায়নি!

আসিফ : [ হেসে ] তাই নাকি?..

মার্জান : [ হালকা একটু মুচকি হেসে ] এই যে আপনি নিজেকে নিজে যে ওভার স্মার্ট মনে করেন না! হাহা…ওটা না প্লিজ আমার সামনে দেখাবেন না…[ নাক ফুলিয়ে ] নাহলে তো দেখলেনই কেমন হাল করি,

আসিফ : আমি কি কিছু ভুল বলে ফেলেছি?..

মার্জান : [ কাধের পাশ থেকে চুলটা ] সরিয়ে দিয়ে ] ক্লাস ফাইভে ক্যারাটিতে পিংক এবং গোল্ডন বেল্ট মিলেছিলো আমার!

– এক চুটকিতে ধুল জমিয়ে দিতে পারবো মিষ্টার!

আসিফ : [ অবাক হয়ে চোখ বড় করে ] ওহ! ওয়াও এক্সিলেন্ট! তো এটাই তোমার ফিগারের রাজ?..

মার্জান : [ তাড়াতাড়ি ওড়না আর ব্যাগ ঠিক করে নিয়ে নাক ফুলিয়ে ] Listen! চোখ একদিকেই রাখেন বুঝলেন.. বেশি উড়লে না চোখটা টপাক করে গেলে নিয়ে ফেলবো!

আসিফ : আমাদের কি তোমরা দেখিয়ে রাখলে চোখ তো যাবেই [ বলেই হেসে পাশ কেটে চলে যাচ্ছিলো, ]

মার্জান : [ দৌড়ে সামনে এসে পথ আটকিয়ে ] এক্সকিউজ মি! হোয়াট ডো ইউ মিন?…

আসিফ : আহা! আমি আজকের কথা বলছি না! [ মার্জানের কাছে মাথা এগিয়ে নিয়ে ফিসফিসিয়ে ] যখন ড্রাংক ছিলে!

[ বলেই হেসে চলে যায়, আর মার্জান স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ধীরেধীরে পাশ মুড়ে তাকিয়ে দেখে, আসিফ ও পেছন মুড়ে একটা হাসি দিয়ে আবার সোজা তাকিয়ে চলে যাচ্ছে ]

মার্জান : যয…যখন ড্রাংক ছিলাম মানে? [ বিরক্তি হয়ে চেঁচিয়ে ] মানে সে কি বুঝালো? [ নাক ফুলিয়ে ] আর এভাবে হাফ বলে চলে গেলো! আই মিন ওর বুঝিয়ে বলতে হবে না ড্রাংক অবস্থায় কি কি দেখেছে! [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] ছিঃ ছিঃ মার্জান কিসব আজেবাজে ভাবছিস! [ বলেই হনহনিয়ে হেটে ক্লাসে চলে গেলো ]
________________________________

এইদিকে, গার্ডেনের কোণায় গাছতলার চৌকাটে বসে আছে রিদোয়ান আর জারিফা,

রিদোয়ান : আমি আজ ভার্সেটিতে কটা বাজে এসেছি জানো?

জারিফা : যতোটাই না আসেন আমার কি?..হাহা আমার জন্য তো আর আসেননি! [ বলেই নাক ফুলিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রিদোয়ান : [ হেসে ] আব…এখন আর রাগ করোনা বলেদিলাম! মানে আমি সরি! তো গতকাল থেকেই বলে যাচ্ছি!

– মাই গড! সকালে লেইটে গুড মর্নিং বলায় এতোবড় শাস্তি, না জানি আমার আরো কতো রকমের শাস্তি অপেক্ষা করছে!

[ রিদোয়ানের কথা শোনে জারিফার হাসি পাচ্ছিলো তাও হাসি কন্ট্রোল করে রাখে ]

রিদোয়ান : চাও তো সবার সামনে এইদিকে কান ধরে উঠবস করতে রাজি তাও এভাবে কথা না বলে থেকো না প্লিজ!

জারিফা : [ কোণা চোখে তাকিয়ে ] আব..আসলে আইডিয়া খারাপ না…

রিদোয়ান : [ মুখ গোমড়া করে হেসে ] হিহি…হ্যা! আস…আসলেই!

জারিফা : সো্…. [ বলেই চোখ দিয়ে ইশারা করলো ]

রিদোয়ান : [ কাদো কন্ঠে ] সস..সত্যি জারিফা?…

জারিফা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম!

[ রিদোয়ান মুখ গোমড়াকরে ধীরেধীরে উঠে দাঁড়াতে চাইলো হঠাৎ জারিফা আবার হাত টেনে বসিয়ে হেসে গালটা টেনে দেই, রিদোয়ান অবাক হয়ে তাকালো ]

জারিফা : [ রিদোয়ানের হাতে হাত পেঁচিয়ে কাধে মাথা রেখে ] মজা করছিলাম!

রিদোয়ান : [ হেসে ] হুম হুম! করে নাও মজা আমাকে নিয়ে! সবই তো আমার আগের করুণার শাস্তি! [ আকাশের দিক তাকিয়ে কাদো কন্ঠে ] হে আল্লাহ তুমি বেশী দূরে না সবই তো দেখছো এই বাচ্চা ছেলেটার উপরে হওয়া অবিচার, তুমি এতোটাও নিষ্টুর নও I know!

জারিফা : [ হেসে জোড়ে একটা চিমটি দিয়ে ] চুপ!

[ রিদোয়ান ও ব্লাশিং হয়ে হেসে জারিফার মাথার সাথে মাথা টেকিয়ে রেখে হাতটা আরো শক্ত করে পেঁচিয়ে নেই, জারিফা চোখ বন্ধ করে রাখে ]

রিদোয়ান : তাহলে লাঞ্চ একসাথে করছি?…

জারিফা : উম!হুম!

রিদোয়ান : আবার?..

জারিফা : [ হেসে ] ওকে হুম!
________________________________

হলরুমে, রাহুল আর স্নেহা এক বেঞ্চে বসে আছে,…স্নেহা মুখ গোমড়া করে চুপ হয়ে রয়েছে…রাহুল স্নেহার চুল গুলো একবার কানে গুজে দিচ্ছে…আরেকবার সরিয়ে আনছে,

রাহুল : ব্যাস,স্নেহা! আর কতোক্ষণ এইভাবে সাইলেন্ট মুড নিয়ে বসে থাকবা?..

[ স্নেহা চুপ করেই রইলো ]

রাহুল : [ স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে ] আমাকে খুলে বলোতো কি নিয়ে এতো ভেবে যাচ্ছো?…

স্নেহা : কিছুনা রাহুল! ব্যাস…এটাই ভাবছি…

রাহুল : বলো?…

স্নেহা : আসলে রাহুল নেহার সাথে আজ যা হয়েছে তা মোটেও ভালো হয়নি!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] তুমি এতোক্ষণ ধরে এসব ভাবছিলে?…Unbelievable স্নেহা এটা কোনো মানে হয়?…

স্নেহা : কিন্তু রাহুল সবার সামনে এইভাবে…

রাহুল : সবার সামনে ওর সাথে যা হয়েছে ভালোই হয়েছে! আর তুমি ভুলে গেছো ও তোমার সাথে কি কি করেছে?…

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ] সেটাই তো ভাবছি… [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] রাহুল! ও যদি… মার..মার্জানকে কিছু করে?…

রাহুল : [ স্নেহার হাত তার হাতের উপর নিয়ে ] ডোন্ট ওয়ারি স্নেহা! ও মার্জানকে কিছুই করতে পারবে না!

স্নেহা : তাও রাহুল! আমার খুব ভয় করছে!

রাহুল : [ স্নেহার কপালটা টেনে তার কপালের সাথে লাগিয়ে ] আমি বলছি তো!
– ও কিছুই করতে পারবে না! রিলেক্স থাকো…ওকে?…

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো ]

রাহুল : স্মাইল করো!

[ স্নেহা চোখ নামিয়ে একটু হাসলো,রাহুল ও তেডি স্মাইল দিতে থাকে ]

রাহুল : এনিওয়ে স্নেহা! একটা কথা বলার ছিলো!

[ স্নেহা কৌতুহলি হয়ে তাকালো..]

রাহুল : [ স্নেহার দুহাত তার হাতের মুঠোই ধরে ] গতকাল তোমাকে ড্রপ করে মায়ের কাছে গিয়েছিলাম!

– আর আমাদের কথা বলেছি! এন্ড মা আমাদের বিয়ের কথা বললো!

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলের হাতটা আরো শক্ত করে চেপে ধরে ]

রাহুল : স্নেহা আমি সারারাত ভেবেছি ইনফ্যাক্ট! আজ সকালে দাদী ও আমাদের বিয়ের কথায় বলছে!

– স্নেহা?…

স্নেহা : হুম?…

রাহুল : তুমি খুশী তো? হুম?..

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম!

[ রাহুল উঠে দাঁড়িয়ে স্নেহাকে ও টেনে দাড় করায় স্নেহার দু-হাত মুঠি বেধে ধরে তার একদম কাছে টেনে নেই! ]

রাহুল : সো্ মিস্ স্নেহা! উইল ইউ মেরি মি?… [ With tedi smile ]

[ স্নেহা শকড হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত নাড়িয়ে দিয়ে ] স্নেহা?…

– উইল ইউ মেরি মি?…

স্নেহা : [ একটু হেসে ] রাহুল! আই কান্ট এক্সপেক্ট দিস্ বাট, আপনার মনে হচ্ছে না খুব..একটা তাড়াতাড়ি হচ্ছে?…

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] আমার কথা এতোটাও কমপ্লিকেটেড ছিলো না স্নেহা! সোজা প্রশ্ন করছি সোজা আন্সার দাও!

স্নেহা : [ রাহুল থেকে তার হাত ছুটিয়ে রাহুলের জ্যাকেটটা ঠিক করে দিয়ে কাছে টেনে নেয় ] রাহুল! আই এম নট সেয়িং নো!, বাট আই এম সেয়িং….. আপনি যে ডিসিশনটা নিয়েছেন…

– আ..আই থিং ইউ আর হায়ার ইমোশোন…

রাহুল : ওকে ! স্নেহা..আই গেট ইট!

– স্নেহা যখন আমি রিলেশনে পড়ার জন্য তৈরী, আমাদের রিলেশন আগে বাড়ানোর জন্য তৈরী…বাট ইউ আর বেকিং অফ হোয়াই?…

স্নেহা : রাহুল! প্লিজ আপনি ভুল বুঝছেন…

রাহুল : নো স্নেহা! আই থিংক আমিই ভুল বলে ফেলেছি!

স্নেহা : Listen to me রাহুল!

রাহুল : [ তার জ্যাকেট থেকে স্নেহার হাত ছুটিয়ে দিয়ে ] দ্যাটস্ ওকে স্নেহা! আই আন্ডারস্ট্যান্ড! [ বলেই হেটে চলে যেতে যেতে ] ক্লাসে যাও স্নেহা! লেইট হচ্ছে তোমার!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] রাহুল! Listen to me প্লিজ!

চলে গেলো রাহুল নিস্থব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা, চোখে জল এসে জমে যাচ্ছে! কিভাবে বোঝাবে সে রাহুলকে…রাহুল যা বলেছে তা আনএক্সপেক্টেড ছিলো তার কাছে..এতোটাই খুশির খবর ছিলো যে সে বোঝাতে পারবে না তার কেমন লাগছিলো ঐ মুহুর্তটা, রাহুলকে তো সে না বলছে না! রাহুল এমন বিহেভ করছে কেনো? [ কেঁদে কেঁদেই চোখ থেকে পানি ফেলছে স্নেহা ]

আর এইসময় তো স্নেহা তার ফ্যামিলিতে ও বিয়ের কথা বলতে পারবে না, এমন অবস্থা হয়ে আছে ফ্যামিলির,

– মাকে বলবে?..মা তো অলরেডি ডিপ্রেশনে আছে…

– বাবা?.. বাবা তো লোনের টেনশনে আধমরা হয়ে আছে! এই সময় বাবাকে ও সাহস করে গিয়ে বলাটা ইম্পসিবল, এইদিকে ১মাসের মধ্যে এতোটাকা জমা করাটা ও মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে! না পারছে রাহুলকে এই ব্যাপারে কিছু বোঝাতে না পারছে ফ্যামিলির জন্য কিছু করতে,

কি করবে এইসময় কিছুই মাথায় আসছে না স্নেহার!

[ চোখ মুছে ধীরেধীরে বেড়িয়ে পড়লো হলরুম থেকে, ক্লাসে যাবে ভাবছে…কিন্তু এখন আর ক্লাসে ও মনটা বসবে না তাই এক্কেবারে ভার্সেটি থেকেই বেড়িয়ে পড়লো স্নেহা! হেটে হেটে চলছে…আর ভাবছে! ]
________________________________

এইদিকে মার্জান ক্লাসে বসে আছে, স্যার লেকচার দিয়ে যাচ্ছে…কিন্তু তার মাথায় আসিফের বলে যাওয়া কথাটাই ঘুরঘুর করছে…

মার্জান : [ মুখে হাত দিয়ে মনে মনে ] একতো মাথার মধ্যে ঐ ইডিয়ট টার কথাটা ঘুরপাক খাচ্ছে তার উপর ইনার বাকওয়াস্ লেকচার উফফ! [ বলেই ব্যাগটা কাধে নিয়ে ধীরেধীরে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে পড়লো, এবং হাটতে হাটতে ক্যান্টিনের দিক এগিয়ে গেলো, না স্নেহাকে দেখতে পাচ্ছে না জারিফাকে…যাক ভেতরে ঢুকে একটু পেট পুজো করলে খারাপ হয়না এই ভেবেই ক্যান্টিনের ভেতরে ঢুকে পড়লো এবং একটা চেয়ারে গিয়ে বসলো… ]

মার্জান : [ মনে মনে ] ওহো! অর্ডারই তো করলাম না! [ বলেই উঠে এগিয়ে যায় অর্ডার করতে ]

– ভাইয়া একটা সেন্ডুইচ! আর একটা..উমম! হ্যা কোল্ড ড্রিংক্স ওকে!

[ বলেই পাশ মুরে আবার টেবিলে এগিয়ে আসতে গেলে দেখে ঐ টেবিলে আসিফই বসে আছে, নাক ফুলিয়ে এগিয়ে গেলো ]

আসিফ : [ হঠাৎ মার্জানকে দেখে ] হেইই! তুমি?..

মার্জান : ওটা আমার সি্ট ছিলো!

আসিফ : এক্সকিউজ মি!

মার্জান : ও হ্যালো! আপনাকে আগেও বলেছি আমার সামনে আপনার ওভার স্মার্টগিরি দেখাবেন না!

আসিফ : তুমি আমার পিছু নিচ্ছিলে?..

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] হোয়াট?.. মাথা ঠিকাছে আপনার?.. আমি আপনার পিছু নিবো?..

আসিফ : ওকে! আই আন্ডারস্ট্যান্ড!

মার্জান : Listen! এইখানে আরো অনেক সি্ট আছে আপনি ঐখানে গিয়ে বসতে পারতেন…মানে আপনার আমার মেটারে দখলবাজি করা ছাড়া পেটের ভাত হজম হয়না রাইট?…

আসিফ : আরে এইখানে কি তোমার নাম লিখা ছিলো?..আমি খালি পেয়েছি তাই বসেছি! সো্ হোয়াট?.. তোমার এতোটাই প্রবলেম হলে তুমি নিজেই গিয়ে অন্যসি্টে বসে পড়ো!

মার্জান : [ রেগে ] ইউ! ইডিয়ট

হঠাৎ,

ওয়েটার : মেম! আপনার সেন্ডুইচ! [ বলেই টেবিলে রেখে দিলো, আসিফের দিক তাকিয়ে ] ভাইয়া আপনার জন্য কিছু?..

আসিফ : [ একটু হেসে ] ইয়াহ! ওয়ান কফি!

ওয়েটার : ওকে থেংক ইউ! [ বলেই চলে গেলো ]

[ মার্জান রাগান্বিত ভাবে নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে আসিফের দিক ]

আসিফ : [ একটু হেসে ] যদি চাও তো আমি তোমার সাথে টেবল শেয়ার করতে পারি! মাইন্ড করবো না আমি! বসতে পারো! নো প্রবলেম..

মার্জান : আপনি আমার সাথে শেয়ার করবেন?..ও হ্যালো এই চেয়ারে আমি আগে এসে বসেছিলাম..আপনি তো উড়ে এসে কাবাব মে হাড্ডি হয়ে বসলেন! কিন্তু আমি ও এতো সহজে হার মানছি না! ওকে [ একটু হেসে ] আমিই শেয়ার করে দিলাম! আপনাকে..

[ বলেই মুখ ভেংগিয়ে চেয়ার টেনে বসে পড়লো,এবং সেন্ডুইচের প্লেটটি সামনে টেনে নিলো ]

আসিফ : চিজি সেন্ডুইচ খেলে তো এই ফিগার এর ১২টা বাজবে!

মার্জান : হুম! ১২টা না ১৩টা বাজুক…পারলে ১৪টা বাজুক, এবং খেয়ে এতোটাই মোটা হবো যে আমার পাশে লিটল এলিপেন্ট এর ফিগার ও হার মানবে… সো্ হোয়াট?..হুম [ চেঁচিয়ে ] তাতে আপনার প্রবলেম কি?…

আসিফ : এমনিতেই ও এখনো লিটল এলিপেন্ট থেকে কম না!

মার্জান : [ খেতে খেতে ] এক্সকিউজ মি!

আসিফ : না নাহ! ঐ দিন তোমাকে উঠাতে হলো না?..তখন বুঝেছি বাব্বা আমার একমাসের এনার্জি লস্ট হয়ে গিয়েছিলো!

[ মার্জান হাত থেকে সেন্ডুইচটা থপাস করে প্লেটে রেখে দিলো,আসিফ একটু হেসে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

ওয়েটার : স্যার কফি!

আসিফ : ইয়াহ! থেংক ইউ! [ ওয়েটার চলে গেলে ]

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] এক্সুলি না! আপনি এতোটাই লুজার যে আপনার অতোটাই অকাত ছিলো না,

– [ একটু হেসে ] এনার্জি লষ্ট ছাড়া উঠিয়ে রাখতে,

আসিফ : [ এক চুমুক কফি খেয়ে ] তুমি একজেটলি ভুলে গেছো হয়তো ঐদিন আমার এনার্জি কতোটুকু ছিলো! ইনফ্যাক্ট লুজার তো তুমিই হয়েগিয়েছিলে তাই আমার উঠিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছিলো [ বলেই চোখ টিপ মারলো ]

[ মার্জান কনফিউজড হয়ে তাকিয়ে আছে আসিফের দিক ]

আসিফ : আরে কি হলো খাচ্ছো না কেনো?.. ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো!

মার্জান : [ আড়চোখে তাকিয়ে বিড়বিড় করে ] ইডিয়ট উফফ! কেনো যে ঐদিন ড্রিংক্স করতে গেলাম, নাহলে আজকে ওকে হাড়ে হাড়ে জবাব দিতাম শয়তান একটা,

আসিফ : [ হাত দিয়ে ইশারা করে ] হ্যালো!

মার্জান : [ দাতকিলিয়ে হেসে ] ইয়াহ! খাবো! [ বলেই ওয়েটারকে ইশারা করলো কাছে আসতে ]

ওয়েটার : জি!

মার্জান : আপনাদের কাছে আইস্ক্রিম আছে?..

ওয়েটার : জি! আছে…

মার্জান : আপনি লিখেন আমি বলছি [ ওয়েটার লিখার জন্য কলমটা পকেট থেকে নিয়ে খাতায় ধরলো ] ওকে সো্ যতোটা ফ্লেভারের আইস্ক্রীম আছে সব গুলো থেকে একটা একটা করে নিয়ে আসেন!

ওয়েটার : ওকে!

মার্জান : আচ্ছা শুনেন! আপনাদের কাছে সুপ আছে?..

ওয়েটার : জি! অনলি মাশরুম সুপ!

মার্জান : নো প্রবলেম! ওটাও ডান! বাট এক ফ্লেভারের খেয়ে মন ভরবে নাকি?..

– উমম! আচ্ছা আপনি এক কাজ করেন! ঠান্ডা ঠান্ডা একটা লাচ্চি ও নিয়ে আসবেন, আর কিছুক্ষণ পর তো এমনিতেই লাঞ্চের টাইম হয়ে যাবে আপনি একটা ফ্রাইড রাইস্, এক প্লেট চিকেন, এক প্লেট ক্যাশোনাট সালাদ উমম, ও হ্যা সাথে চিলি চাটনি আর টক দই, আরে হ্যা মিষ্টির মধ্যে তো ভালো কিছু অর্ডারই করা হলো না, আপনি এক কাজ করেন আপনাদের কাছে যতো ফ্লেভারের পেষ্টি আছে সব গুলো থেকে একটা একটা নিয়ে আসবেন ও হ্যা! সাথে কুকিজ থাকলে কুকিজ ও নিয়ে আসবেন!

ওয়েটার : [ একটু ঢোগ গিলে ] ওকে মেম! আর কিছু?…

মার্জান : [ একটু হেসে ] হ্যা! একটা মিনারেল ওয়াটার প্লিজ!

ওয়েটার : ওকে! [ বলেই চলে গেলো ]

[ মার্জান আসিফের দিক তাকাতেই দেখে আসিফ হা করে তাকিয়ে আছে তার দিকে ]

মার্জান : আরে কি হলো?…আপনি কিছু অর্ডার করবেন নাকি?…

আসিফ : [ ঢোগ গিলে ] নাহ! আমার পেট ভরে গেছে!

মার্জান : এক কাপ কফিতেই?…[ কিটকিটিয়ে হেসে ] আরে আমার মতো খেতে শিখুন! বাচবেনই আর কয়দিন?…

[ আসিফ একটু হেসে অন্যপাশ ফিরে গেলো, চুপ করে রইলো দুজন, আসিফ কিছুক্ষণ পর পর মগে চুমুক কেটে কফি খাচ্ছিলো আর মার্জানের দিক তাকাচ্ছিলো, মনে মনে ভাবছে এতোগুলো খাবার ও একা খাবে কি করে…দেখতে তো ফুল ফিট ফিগার, এসব ডেইলি খায়? নাকি আজ খাচ্ছে?..নাজানি মাথায় কি খিচুড়ি পাকিয়েছে ]

[ কিছুক্ষণ পরেই ওয়েটার অর্ডার অনুযায়ী সব খাবারই এনে দিলো ]

মার্জান : [ চোখ বন্ধ করে নাক দিয়ে ঘ্রাণ নিয়ে ] ওয়াহ! কি স্মেল! [ বলেই ফ্রাইড রাইসের প্লেটটা এগিয়ে নিয়ে দু-তিন চামচ খেয়ে নিলো, [ আসিফের দিক তাকিয়ে ] চিকেনটা খুব স্পাইসি্ মনে হচ্ছে তাই না?..[ বলেই রাইসে্র বাটি রেখে একটা চিকেন এগিয়ে নিয়ে এক কামড় খেলো এবং সাথে সাথেই আআহ বলে চেঁচিয়ে উঠলো ]

আসিফ : [ তাড়াতাড়ি পানির বোতোল খুলে গ্লাসে ঢেলে এগিয়ে দিলো ] আরে কেয়ারফুল গরম-ঠান্ডা দেখে খাও,

মার্জান : [ মুখে হাত দিয়ে ] আই এম ওকে! [ একটু হেসে সুপের বাটিটা এগিয়ে নিলো ] You know আই লাভ মাশরুম, [ বলেই নেড়ে এক চামচ ফু দিয়ে ঠান্ডা করে মুখে দিলো ]

[ আসিফ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে ]

মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আরে কেশোনাট সালাদ! [ বলেই প্লেটটা এগিয়ে নিয়ে এক চামচ মুখে দিলো ] ওয়াহ! কি টেষ্ট এটার যতোই তারিফ করি কম হবে, ওহ হ্যা! আইস্ক্রিম গুলো তো টেষ্টই করা হলো না [ বলেই সব গুলো থেকে এক চামচ এক চামচ কেটে নিয়ে খেয়ে সাধ নিলো ] আসলে আমি পেষ্টি তেমন খায় না…সব ফ্লেভারের পেষ্টি শুধু শুধু অর্ডার করেছি বাট চকলেট ফ্লেভার ওয়াও ওটা কিভাবে বাদ দিবো [ বলেই চকলেট ফ্লেভারের পেষ্টিটা এগিয়ে নিয়ে দু-চামচ কেটে খেলো ] আই লাভ কুকিজ, [ বলেই একটা কুকিজ মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দিলো ] আসলে ফ্যাট কমানোর জন্য টক দই খাওয়া খুবই জরুরী, আর খাওয়ার পর টক দই খাওয়ার মজাটাই আলাদা [ বলেই টক দইয়ের প্লেটটা নিয়ে একচামচ খেলো ] আরে! ওনাকে বললাম টক দই দিতে এতো দেখি মিষ্টি দই উফ! [ বলেই বাটিটা পিছে ঠেলে দিলো, একটু হেসে লাচ্ছির গ্লাসটা এগিয়ে নিয়ে হাফ খেয়ে আবার টেবিলে রেখে দিলো, জোড়ে একটা শাস ফেলে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো, আসিফ একটু হাসলো, মার্জান ও একটু হেসে ব্যাগের ভেতর হাত দিয়ে মোবাইলটা বের করে নিলো ] আহা টাইমতো অনেক পেড়িয়ে গেছে,আসলে লাস্ট ক্লাসটা করা আমার জন্য খুব জরুরী! আমি আসি হ্যা! [ বলেই ব্যাগটা কাধে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো ওয়েটার এর দিক তাকিয়ে ] এক্সকিউজ মি ভাইয়া,

ওয়েটার বিল পেইজ টা নিয়ে এগিয়ে আসলো!

[ মার্জান হেসে কাগজটা এগিয়ে নিয়ে আসিফের কফির মগের নিচে চেপে রাখলো আসিফ মার্জানের দিক তাকাতেই মার্জান একটা চোখ টিপ মেরে মুচকি হেসে হাটা শুরু করে,এবং কিছুদূর হেটে গিয়ে আবার মোড় ফিরে তাকালো, তা দেখে আসিফ ও একটা মুচকি হেসে অন্যপাশ ফিরে গেলো,]

মার্জান : [ মনে মনে হেসে ] এভারেস্ট জয় করলেও বোধহয় আমার এমন খুশি লাগতো না যা এই মিষ্টার ওভার স্মার্টকে শিক্ষা দিয়ে লাগছে, [ হাসতে হাসতেই ক্লাসের দিক চলে গেলো ]

ওয়েটার : ভাইয়া! ভার্সেটি কেন্টিনে এই অবস্থা, না জানি রেষ্টুরেন্টে ডেটে নিয়ে গেলে আপনার কি হাল করতো,

আসিফ : [ একটু হেসে পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে টেবিলের উপর টাকা রেখে বিল প্রেমেন করে দিলো ] এক্সুলি এটা রিভেঞ্জ ছিলো! ব্রো,

ওয়েটার : রিভেঞ্জ?..

আসিফ : [ ওয়েটারের কাধে বারি দিয়ে ] বুঝবিনা! [ বলেই একটু হেসে বেড়িয়ে গেলো ]
________________________________

ভার্সেটি ছুটি,

মার্জান : [ স্নেহাকে ফোন দিয়ে ] কোথায় তুই?..রাহুলের সাথে নাকি?..

স্নেহা : আব…না আস..আসলে আমি ডান্স ক্লাসে চলে এসেছি,

মার্জান : হোয়াট?…কিন্তু তুই তো বলেছিস ভার্সেটি ছুটির পর যাবি!

স্নেহা : হ্যা তাই তো করলাম!

মার্জান : ও হ্যা! কিন্তু একটু দেখা করে যেতে পারতি! আচ্ছা বুঝেছি রাহুল পৌছে দিয়েছে বুঝি?..হুম হুম?..

স্নেহা : নাহ! একাই এসেছি,

মার্জান : অহ!

স্নেহা : আচ্ছা আমি এখন রাখি সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে!

মার্জান : আচ্ছা ওকে বাই! রাখি [ বলেই ফোন বেগে ঢুকিয়ে হেসে বেড়িয়ে পড়ছে ভার্সেটি থেকে হঠাৎ পার্কিং এর দিক চোখ যেতেই দেখে রাহুল বাইকের উপর একা বসে আছে,]

মার্জান : [ এগিয়ে গিয়ে টিচ্ করে ] হোয়াট হ্যাপেন রাহুল! এতো আপসে্ট কেনো?..

রাহুল : [ একটু হেসে ] নো! নাথিং! আব…তুমি একা? আই মিন স্নেহা কোথায়?…

মার্জান : কেনো আপনাকে বলে যায়নি?..

রাহুল : বলে যায়নি মানে?..কোথায় গেছে?…

মার্জান : আরে ডান্স ক্লাস গেছে!

রাহুল : কিন্তু ওর ডান্স ক্লাস তো বিকেল ৫টা থেকে তাই না?…

মার্জান : ও হ্যা! আজ থেকে ওভারটাইম করবে ও! তাই…

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] এতোটাই কি দরকার ছিলো যে ওর ওভারটাইম জব করতে হচ্ছে?…

[ মার্জান টেনশনে পড়ে গেলো রাহুলকে কি জবাব দিবে তাই সে এদিকওদিক তাকাতে শুরু করলো ]

রাহুল : [ দাতকিলিয়ে ] Damn it! আমাকে একবার বলে যাওয়াটা ও ইম্পরট্যান্ট মনে করলো না! [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] এনিওয়ে, তুমি বাসায় যাচ্ছো?..

মার্জান : [ হেসে ] হ্যা! বাসায় যাচ্ছি

রাহুল : জারিফা?..

মার্জান : আর কোথায় হবে?..

রাহুল : [ একটু হেসে ] ওহ! আচ্ছা চলো তোমাকে পৌছেদি,

মার্জান : না নাহ! ইটস্ ওকে আমি বাসে্ই যাবো! আর এমনিতেও আমার বাইকে অনেক ভয় করে!

রাহুল : অহ! এক্সুলি গাড়ী সব সার্ভিসিং এ দিয়ে দিছে ড্রাইভার, তাই বাইক আনতে হলো!

পেছন থেকে,

আসিফ : নো প্রবলেম চাইলে আমার গাড়ী থেকে লিফট নিতে পারে!

মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে পেছন তাকিয়ে ] থেংক্স বাট নো নিড!

রাহুল : ইয়াহ! হি ইজ রাইট! তুমি আসিফের সাথেই যাও ও গাড়ীইই এনেছে বাইক না! [ with tedi smile ]

আসিফ : [ কাছে এগিয়ে এসে মার্জানের দিক তাকিয়ে ] ভয় পাচ্ছো নাকি?..

মার্জান : এক্সকিউজ মি! ভয় কেনো পাবো?…

আসিফ : তাহলে?..

মার্জান : [ মনে মনে ] বোধ হয় ইনার শিক্ষা পাওয়াটা কম হয়ে গেছে ডোজ আরেকটু বাড়াতে হবে! বুঝেছি!

– [ একটু হেসে ] ওকে!

আসিফ : ওকেই!

মার্জান : বাই রাহুল!

রাহুল : বাই!

[ আসিফ গিয়ে গাড়ীর দরজা খুলে দিলে মার্জান নাক ফুলিয়ে হেসে হেসে উঠে বসে, তা দেখে আসিফ ও হাসতে থাকে ]

মার্জান আর আসিফ চলে যাওয়ার পর,

রাহুল : [ ভাবতে লাগলো ] কি হলো এই স্নেহার?…ও আমাকে বলে যেতে পারতো এনিওয়ে না বললে অন্তত একটা ফোনকল করতে পারতো, ঐদিন স্যারের বার্থডে বলেও ডান্স ক্লাস চলে গেছে আর আমাকে একটু ও বললো না আর আজ ও সেইম ওভারটাইম ডান্স ক্লাস, [ মুখটা গোমড়া করে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আই মিস্ ইউ স্নেহা!

[ হঠাৎ একটু হেসে সানগ্লাসটা চোখে লাগিয়ে বাইকে উঠে স্টার্ট দিলো স্নেহার ডান্স ক্লাসে যাবে বলে কিছুদূর এগিয়ে যাওয়ার পরই ফোনটা বেজে উঠলো, বাইক থামিয়ে ফোনটা রিসি্ভ করলো ]

রাহুল : হ্যা বল?.. [ বলতেই ফোনের ওপাশ থেকে যা শুনলো তা শুনে রাহুল শকড হয়ে গেলো ] হোয়াট?… ওকে ওকে আমি এক্ষুণি আসছি!

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 27

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 27

writer-Jubaida Sobti

After 5 mins,

রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার ঠোটের স্পর্শ ত্যাগ করে,চোখ খুলে তাকালো স্নেহার দিক….

লালচে হয়ে আছে স্নেহা, বাতাসে কিছু চুল বারবার মুখের সামনে এসে বাড়ি খেয়ে যাচ্ছে, লজ্জায় চোখটা এখনো বন্ধ করে রেখেছে,জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে…

[ রাহুল ধীরেধীরে দু-কদম পিছিয়ে গিয়ে দাঁড়ালো ]

রাহুল : যদি প্রতিদিন রাতের ডিনার এটাই হয়! তাহলে সারাদিনই উপাস থাকতে রাজি আমি!

[ চুপ করে আছে স্নেহা চোখটা এখনো বন্ধ, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে….ক্যান্ডেল লাইটের হলদে আলো স্নেহার গায়ে নিবু নিবু করে ভেসে যাচ্ছে, সব মিলিয়ে স্নেহার দিক তাকাতেই অপরুপ লাগছে স্নেহাকে ]

রাহুল : এতোটাই ব্লাশিং হইয়ো না স্নেহা! স্ট্রোভেরি ভেবে কখন যে কামড়াতে শুরু করি ঠেরই পাবা না…

[ একটু মুচকি হেসে ধীরেধীরে চোখ খুললো স্নেহা… রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল পকেটে হাত রেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে, চোখেচোখ রাখতে না পেরে হুট করেই দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়লো স্নেহা, রাহুল ও ব্লাশিং হয়ে হেসে মাথা চুলকাতে লাগলো ]

[ স্নেহা ড্রইং রুমে গিয়ে সোফার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বুকটা এখনো ধুপধুপ করে স্নেহার,

কিছুক্ষণপর খেয়াল করলো কানের ধারে ফু দিয়ে কেউ চুল গুলো সরিয়ে দিচ্ছে…স্নেহা শিউরে উঠে কোণা চোখে তাকিয়ে দেখে রাহুলই পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, স্নেহা রাহুলের দিক না তাকিয়ে ব্লাশিং হয়ে মাথা নিচু করে রাখে ]

রাহুল : আমি খাবার অর্ডার করেছি,কিছুক্ষণ পরই চলে আসবে!

স্নেহা : রাহুল! আমার এখন..যাওয়া উচিৎ!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] আর ডিনার?..

স্নেহা : খাবো না! খিখ…খিধে নেই!

রাহুল : কেনো? কিস্ করে পেট ভরে গেছে নাকি ?…[ With tedi smile ]

[ স্নেহা লজ্জায় সরে যাচ্ছিলো ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] আমি ভেবেছি খালি আমার পেট ভরেছে….

স্নেহা : এ..এমন কিক..কিছুই না…

রাহুল : [ স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ] তাহলে কেমন!

স্নেহা : তেত…তেমন কিছুই না যেমন টা আপনি ভাব..ভাবছেন!

রাহুল : অহ! রিয়েলি

[ বলেই স্নেহাকে সোফার সাথে হেলান দিয়ে দাড় করালো, স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক, ]

রাহুল : খিধে নেই তাহলে খিধে কিভাবে মিটেছে স্নেহা?…

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে হেসে ] হাটেন রাহুল! প্লিজ

[ বলেই রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দিয়ে টেবিল থেকে ব্যাগটা কাধে তুলে নিলো ]

রাহুল : আরে স্নেহা! ডিনার অর্ডার করেছি খেয়েতো যাও….

স্নেহা : বললাম তো খিধে নেই!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে চেঁচিয়ে ] অহ! ইয়াহ আই গট ইট! খিধে কই গেছে….

[ স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে তাকিয়ে দেখে রাহুল তার মজা উড়িয়ে হাসছে ]

স্নেহা : বাই! [ বলেই এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলতে লাগলো ]

রাহুল : আরে একা কই যাচ্ছো?..

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] একাইতো এসেছি! আর আমি বাচ্চা না এখনো… একা চলতে পারি! সো্ বাইই

[ বলেই স্নেহা দরজাটা ধুম করে লাগিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে আসে আর মুচকি মুচকি হাসতে থাকে…কিছুদূর হেটে যেতেই দেখে রাহুল এসে স্নেহার হাত ধরে টেনে গাড়ীর দিক এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ]

স্নেহা : আরে! বললাম তো আমি একা যেতে পারি!

রাহুল : ইয়া! i know! [ বলেই গাড়ীর দরজা খুলে ইশারা করলো ভেতরে বসতে ]

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে রাহুল থেকে পাশ কেটে চলে যাচ্ছে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে চেঁচিয়ে ] কামঅন স্নেহা বাচ্চাদের মতো জেদ করছো কিন্তু!

স্নেহা : [ ফিরে তাকিয়ে পেছন হয়ে হাটতে হাটতে ] কিন্তু আমি গাড়ীতে উঠবো না!

রাহুল : But why?…

স্নেহা : আরে ভুলে গেছেন?..আপনিই তো বলেছিলেন…যদি গাড়ীতে না উঠি তাহলে আপনার কাছে উঠানোর অনেক ওয়ে আছে…সো্ ডু ইট! [ বলেই হেসে সামনে ফিরে ব্যাগটা নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাটতে লাগলো ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে মনে মনে ] ওহ! এখন বুঝছি!

[ বলেই দৌড়ে এগিয়ে গিয়ে স্নেহার হাত ধরে টেনে তার দিক ফেরালো ]

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] মুখে বললেই তো হতো কোলে চড়বা! [ with tedi smile ]

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে চলে যাচ্ছিলো রাহুল টেনে নিয়ে হুট করেই কোলে তুলে নিলো, স্নেহা কিছু না বলে তাকিয়ে থেকে ধীরেধীরে রাহুলের কাধের দিক হাত রেখে জড়িয়ে জ্যাকেটটা শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে, রাহুল ও কিছু না বলে তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ীর দিক এগিয়ে এসে স্নেহাকে সিটে্ বসিয়ে দিলো এবং সে গিয়ে ড্রাইভিং সি্টে বসে ড্রাইভ করতে লাগলো… ]

কিছুদূর আসার পর,

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : এইদিকে সামনে রেষ্টুরেন্ট আছে ডিনার করে নাও! [ With tedi smile ]

[ স্নেহা চোখ রাংগিয়ে রাহুলের দিক তাকালে ]

রাহুল : [ হেসে ] ওহো! তোমার তো আবার পেট ভরে গেছে!

– আচ্ছা স্নেহা! তুমি তো বললা না কিভাবে ভরলো?..

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : [ হাসতে হাসতে ] ওক্কে ওকে! সরি! [ বলেই আবার হাসতে লাগলো ]

স্নেহা : আপনি! হাসছেন কেনো?..

রাহুল : এমনিতেই!

স্নেহা : হোহ! এমনিতে তো পাগলরাই হাসে! আপনি পাগল নাকি?…

রাহুল : পাগল তো তুমি আমাকে করেই দিয়েছো আজ!

[ স্নেহা লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি জানালার পাশ ফিরে যায় ]

হঠাৎ, চোখে পড়লো… সামনে সেই বরফওয়ালা কুলফি আইসক্রিম এর গাড়ীটি! তা দেখে রাহুল স্নেহার দিক তাকালো…স্নেহা ও রাহুলের দিক তাকালো কিন্তু কিছু বললো না!

রাহুল : স্নেহা! সামনে একটা আইসক্রিম পার্লার আছে চলো ওখান থেকে আইসক্রিম খাই!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] বাট রাহুল আমি এটাই খাবো!

রাহুল : [ হেসে ] I knew that!

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে হেসে ] থেংক ইউ!

রাহুল : বাট উইন্টারে আমি তোমাকে আইসক্রিম খাইয়ে ভুল করছি!

স্নেহা : আরে উইন্টারে আইসক্রিম খাওয়ার মজাটাই আলাদা!

রাহুল হেসে গাড়ী একপাশ সাইড করে রেখে স্নেহাকে নিয়ে নেমে আইসক্রিম ভ্যান এর সামনে এগিয়ে এলো,

রাহুল : [ স্নেহার দিক ফিরে ] ম্যাঙ্গো ফ্লেভার তো তাই না?..

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম!

[ রাহুল দু-টো ম্যাঙ্গো ফ্লেভারের আইসক্রিমই অর্ডার করলো এবং আইসক্রিম দিতেই একটা স্নেহাকে এবং একটা সে নিলো,…চেয়ে আছে রাহুল আবারো স্নেহার বরফ চুষে আইসক্রিম খাওয়া…কিছুক্ষণ পর রাহুল ইচ্ছে করেই তার আইসক্রিমটা হাত থেকে ছেড়ে দিলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে?..

রাহুল : আ..আমার কি দোষ পড়ে গেছে!

স্নেহা : [ বুঝতে পেরে ] আচ্ছা তাই?..কিন্তু আমি শেয়ার করছি না…

রাহুল : কামঅন স্নেহা! তুমি অতোটাও সেল্ফিস হতে পারো না!

স্নেহা : I know রাহুল! আপনি ইচ্ছে করেই ফেলেছেন!

রাহুল : বুঝতেই যখন পেরেছো তাহলে…

স্নেহা : তাহলে?..

রাহুল : তাহলে এটা আমাকে দাও [ বলেই স্নেহা থেকে আইসক্রিমটা কেড়ে নিয়ে নেই ]

স্নেহা : রাহুল! সব আইসক্রিমই তো সেইম টেষ্ট! আপনি আমার মুখেরটা নিয়ে কাড়াকাড়ি করছেন কেনো?…

রাহুল : হ্যা সব গুলোর সেইম টেষ্ট তাই খাচ্ছি না…আর এটাই তোমার ঠোটের ছোয়ায় স্পাশাল টেষ্ট হয়ে গেছে তাই আমি এটাই খাবো!

– [ চেঁচিয়ে ] মামা ওনাকে আরেকটা আইসক্রিম দেন!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] না.. নাহ আর লাগবে না…

রাহুল : আরে…

স্নেহা : মানে…আ..আমি ও এটা থেকে শেয়ার করে…নিবো [ বলেই ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে যায় ]

[ Rahul give a tedi smile ]

[ রাহুল অল্প একটু খেয়ে আইসক্রিমটা স্নেহাকে দিলো… এবং স্নেহা ও অল্প একটু খেয়ে আবার রাহুলকে নিজ হাতে খাইয়ে দিলো, দুজনেই এভাবে শেয়ার করে আইসক্রিম টা খেয়ে নিলো, স্নেহা মনে মনে হাসছে রাহুলের কান্ডে…রাহুল আইসক্রিম খাবে তা না…বরং স্নেহার মুখে দেওয়া আইসক্রিমটাই খাবে এটা তার আসল বায়না ]

[ অতঃপর রাহুল স্নেহাকে বাড়ী পৌছে দিয়ে চলে গেলো… ]

[ বাসায় এসে বেল দিতেই জারিফা দরজা খুললো, স্নেহা ভেতরে ঢুকলো ]

জারিফা : [ স্নেহার পিছে পিছে এগিয়ে গিয়ে ] স্নেহা! মেরি জান…তোর ঠোট লাল কেনো…কি করেছে রাহুল হুম হুম [ বলেই স্নেহাকে ধাক্ষাতে লাগলো ]

স্নেহা : Shut-up জারিফা! আইসক্রিম খেয়েছি তাই লাল হয়েছে!

জারিফা : ওহ! আমিতো ভেবেছি রাহুল করে দিয়েছে…

[ জারিফার কথা শুনে মার্জান ও হাসতে লাগলো, স্নেহা রিলেক্স হয়ে খাটে গিয়ে বসলো ]

মার্জান : [ স্নেহার পাশে এসে ] আচ্ছা স্নেহা তোর ডান্স ক্লাসেরটা কি হলো?..

স্নেহা : ওভারটাইম করবো কাল থেকে!

মার্জান : মানে?..

স্নেহা : [ মার্জানের দিক ফিরে ] স্যালারি ৪ হাজার…আর যদি ওভারটাইম করি তাহলে ৮হাজার!

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আর বাসায় কবে আসবি?..

স্নেহা : রাত দশটা সাড়ে দশটা তো হবেই!

মার্জান : আর যাবি কবে?..

স্নেহা : ভার্সেটি থেকে সোজা চলে যাবো!

মার্জান : এমনিতেই তো ধুবলি! এসব ওভারটাইম ডান্স শেখাতে শেখাতে আরো ধুবলি হয়ে যাবি স্নেহা!

জারিফা : [ স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে ] ইয়ার! মেরি জান…তুই সারাদিন এসবে থাকবি নাকি?…

স্নেহা : বাট জারিফা আমার করতে হবে! বাবার লোনের এখনো ১৫লাখ টাকা বাকি আছে! ১মাসের মধ্যে টাকা জমা না দিতে পারলে বাড়ীটা ও চলে যাবে!

– [ মুখ গোমড়া করে ] আমার তো মাথায় আসছে না কিভাবে ১মাসের মধ্যে এতোটাকা জমা করবো!

মার্জান : ডোন্ট বি সে্ড ডিয়ার [ স্নেহাকে জড়িয়ে ] কিছু না কিছু হাল তো বেড়িয়ে আসবে!

স্নেহা : আচ্ছা! আমার না তোদের কিছু দেখানোর ছিলো…

মার্জান : [ মাথা তুলে ] কিহ!

[ স্নেহা তার হাত উপর করে ধরে হাতের রিংটি দেখালো ]

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] রাহুল পড়িয়েছে?..[ স্নেহা মাথা নাড়ালে ] ওয়াও… স্নেহা! [ বলেই জড়িয়ে ধরলো ]

মার্জান : আরে আমি দেখছিনা তো [ বলেই স্নেহার হাত এগিয়ে নিয়ে দেখে ] নাইস্! স্নেহা তোর হাতে তো দারুণ মানিয়েছে! আচ্ছা শোন আর কি কি করেছিস? [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

স্নেহা : ডিনার রান্না করেছিলাম ওর জন্য!

জারিফা : আচ্ছা…তাই? তো বল খেয়ে কি বললো?…

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] লবণ এর জায়গায় সব চিনিই দিয়ে দিলাম!

মার্জান : [ মুখে হাত দিয়ে ] হোয়াট!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ] বাট ও তাও মজা হয়েছে বলে খাচ্ছিলো!

জারিফা : ওহো! খাবে না বুঝি! বিকজ রাহুলের স্নেহা বানিয়েছে বলে কথা! হুম হুম…

[ স্নেহা ব্লাশিং ]

মার্জান : বাট স্নেহা! তুই এতো বড় ভুল কিভাবে করলি! তুই তো রান্না ভালোই পারিস!

স্নেহা : আসলে আমরা তো আনপ্যাকড লবণ কিনে খায়, আর আমাদের লবণ গুলো ও দেখতে প্রায় চিনির মতো, তাই লবণ ভেবে চিনিই ঢেলে দিয়েছি!

[ মার্জান আর জারিফা হাসতে থাকে স্নেহার কথা শুনে ]

মার্জান : [ হেসে হেসে ] স্নেহা! তোর মাথায় রাখা উচিৎ ছিলো রাহুল তো আর আমাদের মতো খোলা লবণ খাবে না… ব্রান্ডেড সল্ট খাবে তাই না…[ বলেই আবার কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ]

স্নেহা : ব্যাস! এবার তোরা এটা নিয়ে ও মজা শুরু করে দিস না! [ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে যেতে চাই ]

জারিফা : [ হাত টেনে আবার বসিয়ে দিয়ে ] আচ্ছা স্নেহা! খাবার কে তো তুই মার্ডার করে দিলি… সো্ ডিনার করলি কি দিয়ে?…

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে হুট করেই উঠে চলে যায় ]

জারিফা : আরে স্নেহা! কিছুতো বল…[ চেঁচিয়ে ] কোনো অনাথসনাথ কিছু খাওয়াই দিলি নাতো?…

[ স্নেহা ওয়াসরুমে ঢুকতেই ছিলো জারিফার কথা শুনে আবার ব্লাশিং হয়ে হেসে দেই,]
________________________________

পরদিন ভার্সেটিতে, সবাই কথা বলে বলে ঢুকছিলো…হঠাৎ রিদোয়ান সামনে এসে দাঁড়ায়!

রিদোয়ান : হ্যালো গাইস্!

[ মার্জান আর স্নেহা জারিফার দিক তাকালো দেখে সে রিদোয়ানকে দেখে মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেছে ]

মার্জান : হ্যা..হ্যালো রিদোয়ান গুড মর্নিং!

রিদোয়ান : [ হেসে ] গুড মর্নিং!

– গুড মর্নিং স্নেহা!

স্নেহা : গুড মর্নিং!

জারিফা : লেটস্ গো গাইস্ আমাদের ক্লাসে লেইট হচ্ছে [ বলেই এগুতে চাইলো ]

রিদোয়ান : [ জারিফার হাত ধরে ] সকালে, ২৫টা কল ৫৬টা মেসেজ করেছি আমি!

জারিফা : [ নাক ফুলিয়ে ] আচ্ছা তাই? কই আমিতো দেখিনি ?..

রিদোয়ান : দেখোনি মানে?..জারিফা তুমি আমার সাথে কথা বলছো না কেনো?…

জারিফা : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] আপনার সাথে কথা বলাটা জরুরী মনে করছি না তাই! [ বলেই হাত ছুটিয়ে চলে যাচ্ছিলো, রিদোয়ান জারিফাকে টেনে গার্ডেনের দিক নিয়ে চলে গেলো ]

মার্জান : [ হেসে ] এই নটাংকির কান্ড দেখলি?…ভার্সেটি আসার আগে ওর মেসেজ গুলো ব্লাশিং হয়ে হয়ে পড়ছিলো আর এখন ওর সামনে কি না নাটক করছে!

[ স্নেহা ও হেসে দিলো ]

মার্জান : বাই দ্যা ওয়ে আজ রাহুলকে দেখছি না!

স্নেহা : হয়তো এখনো আসেনি! আচ্ছা চল ক্লাসে [ বলেই হাটা শুরু করলো, ]

মার্জান : চল পার্কিং এ দেখি [ বলেই স্নেহাকে টেনে নিয়ে পার্কিং এর দিক চলে গেলো ]

স্নেহা : আরে মার্জান! আসলে তো মিট করতোই!

মার্জান : [ স্নেহার হাত জড়িয়ে নিয়ে হাটতে হাটতে ] আসলে না আমার আজ ক্লাস করতে মন চাইছে না…তাই হাটছি!

স্নেহা : [ হেসে ] আচ্ছা তো এটাই রিজন!

হঠাৎ দেখে,পার্ক করা একটি গাড়ী থেকে নেহা বেড়িয়ে আসছে! স্নেহা নেহাকে দেখে চোখ সরিয়ে ফেললো তাড়াতাড়ি!

মার্জান : [ দাত কিলিয়ে স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] আহারে! এই পেত্নীটার চেহেরা দেখতে হবে জানলে এইদিকে আসতামই না!

নেহা : [ তাদের সামনে এগিয়ে এসে দাঁড়িয়ে ] হেই স্নেহা! এইখানে কি করছো?..ওউ! ইয়াহ! আই আন্ডারস্ট্যান্ড কাউকে খুজছো বোধ হয়!

মার্জান : যাকেই খুজছে ইটস্ নান অফ ইয়র বিজনেস ওকে?…

নেহা : [ একটু হেসে ] অন্যের কথায় নাক গলাতে তোমাদের বলতে হয়না! [ মুখ ভেংগিয়ে ] হুহ! অন্যের জিনিষ চুরি করা ও তোমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] এম আই রাইট স্নেহা?..

স্নেহা : [ মার্জানকে টেনে ] ক্লাসে চল মার্জান!

নেহা : হ্যা হ্যা! যাও…এমনিতেই তো চুরি করে নেওয়া ছাড়া এই রুপে কেউ মরবে না!

মার্জান নাক ফুলিয়ে স্নেহা থেকে হাত ছুটিয়ে এপাশ ওপাশ ফিরে তাকিয়ে দেখে দুটো গাড়ী বাদেই আসিফ তার গাড়ীর পাশে দাঁড়িয়ে আছে এবং একটা পিচ্ছি ছেলে তার গাড়ীর উপর লেগে যাওয়া কিছু ময়লা হয়তো তা পরিষ্কার করে দিচ্ছে

পাশে ছোট একটি বালতি এবং তাতে কিছু নোংরা পানি ও আছে…নিশ্চয় গাড়ী পরিষ্কার করে রেখে গেছে!

দৌড়ে গিয়ে বালতিটা হাতে নিয়ে এগিয়ে এলো…

আসিফ : [ চেঁচিয়ে ] হেইই! কই নিচ্ছো এটা?…[ বলেই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে ]

মার্জান সাতপাঁচ না ভেবেই নেহার গায়ে ছুড়ে মারলো নোংরা পানি গুলো!

[ স্নেহা শকড হয়ে মুখে হাত দিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো ]

মার্জান : [ হাত থেকে বালতি ছুড়ে ফেলে ] এখন দেখি তোর এই রুপে কজন মরে?…

নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে চেঁচিয়ে ] ইউ! ব্লাডি… স্টুপিড…বাস্টার্ড [ বলতেই আসিফ দৌড়ে এগিয়ে আসে ]

আসিফ : হেই, হেই,স্টপ স্টপ! গাইস্!

[ আশেপাশে সবাই ভীর জমিয়ে তাকিয়ে আছে ]

নেহা : [ মার্জানের দিক আংগুল তুলে ] Listen! যা করেছো অনেক বড় ভুল করেছো…পঁচতাতে হবে কিন্তু তোমার!

– এর চেয়ে বড় ইন্সাল্ট হবা তুমি মাইন্ড ইট!

মার্জান : [ হেসে ] আরে যা যা…তোর ধমোকে কে ভয় পায়! আগে নিজের দিক একবার তাকিয়ে দেখ কি হাল হয়েছে!

আসিফ : শিসস! মার্জান স্টপ! [ মার্জান মুখ ভেংগিয়ে হাতে হাত বটে অন্যদিক ফিরে যায় ]

নেহা : [ আশেপাশে একবার তাকিয়ে ] কি হচ্ছে?..সিনেমা চলছে এইখানে…সবাই এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?..

স্নেহা : [ মার্জানের কানে ফিসফিসিয়ে ] কি দরকার ছিলো মার্জান এসব করার?..

মার্জান : তুই চুপ কর!

[ আশেপাশের সবাই মুখ লুকিয়ে একটু একটু হেসে সরে যায়, তা দেখে নেহা হনহনিয়ে চলে যাচ্ছে, হঠাৎ দেখে সামনের দিক থেকে রাহুল আসছে বাইক করে, নেহা নাক ফুলিয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে থাকে

রাহুল : [ বাইক থামিয়ে সানগ্লাসটা খুলে অবাক হয়ে সবার দিক একবার তাকিয়ে আবার নেহার দিক তাকিয়ে হেসে ] হেইই নেহা! কিভাবে হলো এই হাল!

[ নেহা কোনো জবাব না দিয়ে নাকফুলিয়ে ফুফাতে লাগলো ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে ইউ লুকিং [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] ফরগেট ইট!

[ বলেই সানগ্লাসটা আবার চোখে লাগিয়ে বাইকটা পার্কিং এ পার্ক করে রাখলো, নেহা চলে গেলো ]

রাহুল : [ হেসে হেসে আসিফের দিক এগিয়ে এসে ] কেমনি হলো দোস্ত?..

[ আসিফ হেসে চোখ দিয়ে ইশারা করে মার্জানের দিক দেখিয়ে দিলো ]

চলবে….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 26

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 26

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে জড়িয়ে ধরলো রাহুলকে,দুজনে চোখ বন্ধ করে রাখলো…অন্যরকম অজানা এক ভালো লাগা কাজ করছে…যা পৃথিবীর সকল ভালো লাগাকে হার মানাবে,

কিছুক্ষণ পর,

রাহুল : হেই!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : ফাইনালি তুমি এখন আমার হয়ে গেছো!

স্নেহা : উমম! কই?.. নাতো!

রাহুল : Shut-up স্নেহা!

স্নেহা : [ হেসে ] হ্যা! আপনার তো হয়েছি কিন্তু এখনো ফাইনালি হয়নি!

রাহুল : আচ্ছা? তো ফাইনালি কবে হবা?..

স্নেহা : [ রাহুলকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] যখন আমাদের বিয়ে হবে! তখন আমি ফাইনালি আপনার হবো!

রাহুল : [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে তার দিক ফিরিয়ে নিয়ে ] তাহলে চলো..বিয়ে করে ফেলি..

[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : আমি তোমাকে ফাইনালি আমার করে নিতে চাই!

[ স্নেহা হেসে রাহুলের বুকে আবার মাথা রাখলো ]

রাহুল : স্নেহা যখনি তোমাকে বুকে জড়িয়েনি এমনই মনে হয়…যেনো পৃথিবীতে আর কিছু পাওয়ার বাকি নেই! সব পেয়েগেছি!

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আর আমি যখনি আপনার বুকে মাথা রাখি এমনই মনে হয় যেনো এর চেয়ে শান্তির স্থান আর কোথাও পাবো না…সব শান্তিই এইখানে!

রাহুল : [ স্নেহার কপাল টেনে নিয়ে একটি চুমু খেয়ে ] আই লাভ ইউ স্নেহা!

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলকে আবার জড়িয়ে ধরে, রাহুল ও হেসে জড়িয়ে ধরে রাখে ]
________________________________

এইদিকে,

জারিফা আর মার্জান বই হাতে দু-জন খাটে বসে আছে,

মার্জান : ইয়ার! জারিফা এখন তো অন্তত ফোনটা ধর,

জারিফা : তুই চুপচাপ পড় আর আমাকে ও পড়তে দে!

মার্জান : [ মুখ ভেংগিয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে জানালার সাথে হেলান দিয়ে বসে ] বাহ! কি ওয়েদার…ঠান্ডা ঠান্ডা বাতাস, আমার তো ইচ্ছে হয় যেনো সারাজীবনই শীতকাল থেকে যাক, আরে হ্যা! এই স্নেহা কই গেলো বলতো?.. একটু পর ৯টা বাজবে আর ও এখনো বাসায় আসেনি!

জারিফা : রাহুলের সাথেই আছে!

মার্জান : কথা হয়েছে তোর সাথে?..

জারিফা : মেসেজ করেছে!

– ইয়ার! একতো রাহুল গতকাল রাতে এতোকিছু হয়ে যাওয়ার পরে ও সকাল সকাল আবার ভার্সেটি এসে স্নেহার সাথে মিট করে গেছে…এখন আবার স্নেহার সাথে…মানে স্নেহা স্নেহা

– স্নেহা ছাড়া ও কিছু বুঝেই না…[ নাকফুলিয়ে ] আর এইদিকে ওকে দেখ… না ভার্সেটি এসেছিলো… না সকালে আমাকে ফোন দিয়ে একটা গুড মর্নিং বলেছে! জনাব দুপুর, ১২টায় আমাকে ফোন দিয়ে বলে গুড মর্নিং! [ বলেই মুখ ফুলিয়ে বই বন্ধ করে অন্যপাশ ফিরে বসে থাকে ]

মার্জান : [ হেসে ] আরে ওর ঘুম যখনি ভেংগেছে, তখন গুড মর্নিং বলেছে আরকি! আর ও তো বললোই ঘুমাতে ঘুমাতে সকাল ৬টা বেজে গেছিলো,

জারিফা : আরে! ওরা তিনজন মিলেই তো ঐ দারোয়ানটাকে ধোলায় করছিলো! নিশ্চয় রাহুলের ও ঘুমাতে লেইট হয়েছিলো তাও তো রাহুল স্নেহার জন্য ভার্সেটি চলে এসেছে!

মার্জান : [ বই বন্ধ করে জারিফার পাশ এসে বসে ] ইয়ার! সবার মাঝে ভালোবাসার ফিল আছে,কিন্তু সবার ফিলিংসটা সেইম না! এক এক জন এক এক তরিকায় সেটা প্রকাশ করে থাকে, রাহুল রাহুলের মতো করে তার ভালোবাসা প্রকাশ করে, আর রিদোয়ান রিদোয়ানের মতো,

– আর ও বেচারা কখন থেকেই তো তোকে সরি বলে যাচ্ছে, তুই তোর জেদ নিয়ে বসে আছিস!

জারিফা : ব্যাস! একবারে ওর শিক্ষা হয়ে যাক,এরপর থেকে ওর মনে থাকবে,

মার্জান : [ হেসে ] গুড মর্নিং মিস্ করেছে বেচারা! তাই এতোবড় শাস্তি, এরপর তো একটাও মিস্ করে নাই! গুড নুন, গুড আফটারনুন, গুড ইভিনিং এখন খালি গুড নাইটটা বলা বাকি আছে, [ বলেই কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ]
________________________________

এইদিকে,

স্নেহা : রাহুল! ডিনার ঠান্ডা হচ্ছে,

রাহুল : উমম! ব্যাস আর কিছুক্ষণ জরিয়ে ধরে রাখি!

স্নেহা : [ হেসে ] ব্যাস, ব্যাস আর কিছুক্ষণ কতোবারই তো বলেছেন!

[ বলেই রাহুল থেকে ছুটে দাঁড়ায় এবং একটু হেসে রাহুলকে টেনে চেয়ারে বসিয়ে দেই, রাহুল ও হেসে স্নেহার হাত ধরে টেনে পাশের চেয়ারটিতে বসিয়ে দেই! স্নেহা প্লেটে খাবার বাড়ছে আর রাহুল মুখে হাত দিয়ে এক পলকে স্নেহার দিক তাকিয়ে আছে,]

স্নেহা : আর তাকিয়ে না থেকে নিন! এবার শুরু করুন!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] ওকে! [ বলেই চামচ এগিয়ে নিয়ে প্লেটে রাখলো ]

স্নেহা চেয়ে আছে রাহুল তার ব্যান্ডেজ করা আংগুলটি বাদে বাকি আংগুল গুলোদিয়ে চামচটা সুবিধা করে ধরে খাবার মুখে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে…

একটু হেসে চামচটা কেড়ে নিলো স্নেহা!
রাহুল অবাক হয়ে তাকালো স্নেহার দিক!

স্নেহা : আ…যয..যদি চান আমি খাওয়াতে পারি! [ বলেই অন্যদিক ফিরে গেলো ]

[ Rahul give a tedi smile ]

স্নেহা : [ কোণা চোখে তাকিয়ে দেখে রাহুল হাসছে ] আব..বলছি যে যদি আপনি চান, তাহলে,

রাহুল : [ স্নেহার কাছে মুখ এনে ] উইদাউট স্পুন, যদি আপনি আপনার হাত দিয়ে খাওয়ান তাহলে খেতে পারি [ With tedi smile ]

স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে একটু হেসে বন প্লেটে হাতটা ধুয়ে নিলো,

রাহুল তাকিয়েই আছে স্নেহার চেহেরার দিক! স্নেহা রাহুলের প্লেটটা কাছে টেনে হাতে খাবার নিয়ে রাহুলের মুখে তুলে দিলো!

[ রাহুল খাবার মুখে নিয়ে বুকে হাত দিয়ে চোখ বড় করে করে চিবাতে লাগলো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] কিক..কি হয়েছে?..ঠিকাছেন আপনি?..[ পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে ] পাপ…পানি খান!

রাহুল : [ পানির গ্লাসটা নিয়ে টেবিলে রেখে দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! তোমার হাতে যাদু আছে মানতে হবে! কি না রান্না করেছো তোমারতো মাষ্টার সেফ এ জয়েন করা উচিৎ!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আপনার রিয়েক্ট দেখে তো আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম.. আমার মনে হয়েছিলো আপনার গলায় খাবার আটকে গেছে! [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আর আপনি যতোটাই রিয়েক্ট করছেন ততোটাই মজা হয়নি তা আমি ভালো করেই জানি!

রাহুল : রিয়েলি স্নেহা! আমি মিথ্যে বলছিনা…এক তো তোমার হাতের রান্না করা খাবার… তারউপর..তোমার সেই যাদুকরী হাতে খাইয়ে দিচ্ছো! ওয়াহ! সব মিলিয়ে একদম জমে ক্ষীর!

– বাই দ্যা ওয়ে তোমাকে অলরাউন্ডার বলে নোবেল দেওয়া উচিৎ! সব দিকে ব্রিলিয়ান্ট তুমি, স্টাডি, ডান্স, সিংগিং, কুকিং সবই ফাটাফাটি!

স্নেহা : একটু বেশী হয়ে যাচ্ছে না?..

রাহুল : আচ্ছা আমার ক্ষিদে বেড়ে গেছে তাড়াতাড়ি খাওয়াও… [ স্নেহা আবার খাইয়ে দিলো ]

রাহুল : ওয়াহ! স্নেহা সুপ্পার!

– আচ্ছা শুনো… এগুলো সবই কিন্তু আমি খাবো! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালে ] মানে যদি পেট ভরে যায়, সারারাত মিলে যখনি খিদে লাগবে একটু একটু করে খেয়ে নেবো! তাও সব আমিই খাবো!

– এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?..তুমি রান্না করেছো বলে কথা!

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে মনে মনে ] আসলেই কি খাবার এত্তো মজা হয়েছে?..আমি এর আগে রান্না করেছি,কই কখনো তো রাহুলের মতো করে কেউ তারিফ করেনি!

রাহুল : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] আরে কি হলো খাওয়াবে না?..বললাম তো খিদে পেয়ে গেছে আমার অনেক!

স্নেহা : হুম খাওয়াচ্ছি..এ..এক সেকেন্ড [ বলেই স্নেহা টেষ্ট করার জন্য তার মুখে খাবার দিতেই ছিলো! হুট করেই রাহুল স্নেহার হাত থামিয়ে ফেলে, স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো রাহুলের দিক! ]

রাহুল : আরে কি করছো স্নেহা বললাম তো সব খাবার আমি খাবো…তুমি না একদম বেশি…আমার ক্ষিদে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছো [ বলেই স্নেহা থেকে প্লেটটা কেড়ে নিয়ে চামচ দিয়ে…খাওয়া শুরু করলো ]

রাহুল : স্নেহা! খাবারের স্মেলটা ও কিন্তু ওয়াও!

স্নেহা রাহুলের দিক হা করে তাকিয়ে আছে, এর আগে কখনো রাহুলকে এভাবে খেতে দেখেনি! স্নেহার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে রাহুলের কান্ড গুলো আসলেই কি এতোটা মজা হয়েছে খাবার…ইনফ্যাক্ট রাহুল স্নেহাকে ও একটু খেতে দিচ্ছে না!…

কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে স্নেহা রাহুলের কাছ থেকে খাবারের প্লেটটা টেনে নিয়ে নিলো…

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] আরে?.. [ বলেই প্লেটটা কেড়ে নিতে চাইলো সাথে সাথে স্নেহা প্লেটটা ওপাশ সরিয়ে ফেলে ]

স্নেহা : কি এমন মজা হয়েছে আমি ও একটু ট্রাই করি!

রাহুল : তোমার ট্রাই করতে হবে না তুমি নিজের রান্না অনেক খেয়েছো! এবার আমায় খেতে দাও!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে প্লেট থেকে খাবার নিয়ে মুখে তুলে নিলো,
এবং না চিবিয়ে স্নেহা অতোটুকুতেই মূর্তির মতো হয়ে গেলো, তা দেখে রাহুল তাড়াতাড়ি অন্যপাশ ফিরে যায়,…কিছুক্ষণ পর স্নেহা মুখে হাত দিয়ে কেশে উঠে… রাহুল তাড়াতাড়ি পানির গ্লাসটা নিয়ে স্নেহার মুখের সামনে এগিয়ে দিলো.. স্নেহা পানি খেয়ে অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে রইলো.. ]

রাহুল : [ ধীরেধীরে স্নেহার হাত থেকে প্লেটটা এগিয়ে নিয়ে কোণা চোখে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] খাইয়ে দিবে বলে খাওয়াচ্ছো না…আমি নিজে খাচ্ছিলাম..তাও টেনে নিয়ে ফেলছো! [ বলেই আবার চামচ দিয়ে খাবার মুখে দিতেই স্নেহা রাহুলের হাত ধরে থামিয়ে ফেলে ]

স্নেহা : কি জঘন্য খাবার! মিষ্টির জন্য মুখেই দেওয়া যাচ্ছে না! আর আপনি এসব কিভাবে খাচ্ছেন!

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে আবারো খেতে চাইলে স্নেহা টান দিয়ে হাত থেকে চামচটা কেড়ে নিয়ে ফেলে ]

রাহুল : আরে স্নেহা!

স্নেহা : স্টপ রাহুল! এসব খেলে ফুড পয়েজন হবে!
আর আপনার ওভারএক্টিং দেখে আমার এমনই মনে হয়েছিলো,

– যে খাবারে কিছু একটা হয়েছে!

রাহুল : [ স্নেহার চেয়ারটা একদম কাছে টেনে নিয়ে স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে সোজা করে ] খাবার যেমনটাই হবে হোক আমার জন্য তো এটা পৃথিবীর বড় বড় সেফ এর ডিশকে ও হার মানাবে! [ বলেই তেডি স্মাইল দিতে থাকে ]

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] কি গাধার কাজ করেছি আমি! চিনি আর লবণ এর পার্থক্যটাই ভুলে গেছি! এমনটা কেনো হয়েছে বুঝতে পারছিনা..

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! দ্যাটস্ ওকে নো প্রবলেম,আপসে্ট হচ্ছো কেনো?..

স্নেহা : আর আপনি কিভাবে খাচ্ছিলেন এসব ছিঃ!

রাহুল : ও হ্যা! খাওয়া কিন্তু এখনো শেষ হয়নি আমার…

[ বলেই আবার স্নেহা থেকে চামচটা কেড়ে নিতে চাইলে স্নেহা হাত পেছনে দিয়ে চামচটা লুকিয়ে ফেলে ]

স্নেহা : [ রাহুলের গালে হাত বুলিয়ে ] এতো ভালোবাসেন রাহুল?..

রাহুল : এনি ডাউট?.. [ With tedi smile ]

[ স্নেহার চোখে জল এসে জমে গেছে, মুখে হাসি ফুটছে সাথে ব্লাশিং হচ্ছে ]

রাহুল : হাগ করো!

[ স্নেহা হেসে রাহুলকে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : জানো! আজ প্রথম, মা আর দাদী ছাড়া অন্য কেউ খাইয়ে দিয়েছে!

[ স্নেহা রাহুলকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুমমম!

রাহুল : তোমাকে একটা জিনিষ দেওয়ার ছিলো!

স্নেহা : [ রাহুল থেকে ছুটে এসে ] কিহ?…

রাহুল : এক সেকেন্ড! [ বলেই পকেট থেকে একটি বক্স বের করে হাতে নিলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] এটাই কি?…

রাহুল : [ বক্সটা খুলে একটি রিং বের করে হাতে ধরলো ] তোমার হাতটা দাও!

স্নেহা : রার…রাহুল! এটা…

রাহুল স্নেহার হাতটা এগিয়ে নিয়ে স্নেহার আংগুলে রিংটি পড়িয়ে দিলো!

[ স্নেহার চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়লো ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হেই! হোয়াই আর ইউ ক্রায়িং?..[ বলেই স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিলো ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রাহুল!

রাহুল : শিসসস! ওক্কে..ওকে

[ বলেই ধীরেধীরে মুখ এগিয়ে নিয়ে স্নেহার গালে একটি চুমু দিলো ]

রাহুল : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] ফিলিং বেটার?..

[ স্নেহা হেসে মাথা নাড়ালো ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা! আমার তো অনেক খিধে পেয়েছে!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে খাবারের দিক তাকালো,আবার রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আচ্ছা?..আ… আমি আবার কিছু বানিয়ে দি? আই প্রমিস্ এবার সব দেখেশুনে করবো!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে মাথা নাড়িয়ে ] উম!হুম! এতে টাইম লেগে যাবে…আমার এক্ষুণি চাই! [ বলেই স্নেহার ঠোটের দিক তাকিয়ে থাকে ]

[ স্নেহা বুঝতে পেরে চুপ হয়ে নিচের দিক তাকিয়ে ফেলে, রাহুল ধীরেধীরে মুখ কাছে আনতেই স্নেহা উঠে যেতে চায় কিন্তু রাহুল স্নেহার হাত চেপে ধরে রাখে…রাহুল চোখ বন্ধ করে মুখ যতো কাছে এগুচ্ছে আর স্নেহার হার্টবিট ততো বাড়তে চলছে… স্নেহা ও চোখ বন্ধ করে গুটিশুটি হয়ে যায়! ]

রাহুল : [ স্নেহার নাকের সাথে নাক লাগিয়ে ] যদি করি!

– তাহলে রাগ করবা?…

স্নেহা : [ জোড়ে জোড়ে শাস ফেলে ] নাহ!

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] তোমার কেমন ফিল হয়?..

স্নেহা : যেয…যেমনকি…হাহ..হারিয়ে গেছি…

[ রাহুল স্নেহার ঠোটের সাথে ঠোট লাগাতেই স্নেহা মাথা পিছিয়ে নেয় ]

রাহুল : কামঅন স্নেহা!

– এর আগেও তো দু-বার করেছো…

– এতো ভয় পাচ্ছো কেনো!

স্নেহা : [ কাপা গলায় ] দুদ..দুবার ককবে…এ..একবার করেছি!

রাহুল : ভার্সেটিতে…

স্নেহা : জোজ…জোড় করে কক….করেছেন!

রাহুল : [ চোখ খুলে হেসে চেঁচিয়ে ] হোয়াট?..

স্নেহা ও চমকে উঠে চোখ খুলে তাড়াতাড়ি সোজা হয়ে রাহুল থেকে সরে বসে,

রাহুল : [ হেসে ] বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা পারমিশন নিয়ে করায় মজা কোথায় যেটা জোড় করে করেই পাওয়া যায়!

স্নেহা পানি ঢেলে হাত ধুয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে, এবং ওড়না ঠিক করে মাথা নিচু করে অন্যপাশ ফিরে আছে…

কিছুক্ষণ পর রাহুলের দিক তাকাতেই হার্টবিট আবার দ্রুত চলতে লাগলো…

রাহুল উঠে দাঁড়ালো… তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার একদম কাছে এসে দাঁড়ায়…

স্নেহা পা পিছিয়ে দিয়ে সরে দাঁড়ালো… রাহুল আবারো পা বাড়িয়ে কাছে এসে দাঁড়ায়…

স্নেহা পিছিয়ে গেলো… রাহুল এগিয়ে এলো… স্নেহা পেছাচ্ছে রাহুল এগুচ্ছে…

হুট করেই জানালার পাশের দেওয়ালের সাথে ধাক্ষা খেয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো স্নেহা! আড়চোখে পেছনের দিক তাকিয়ে দেখে আর পেছানোর জায়গা নেই!

বাতাস বেয়ে আসছে জানালা দিয়ে…পরদা গুলো ও বার বার উড়ে এসে গা ছুয়ে যাচ্ছে….

চোখ তুলে রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল স্নেহার এতোটাই কাছে এসে দাড়িয়েছে যে রাহুলের ছুড়ে দেওয়া প্রতিটা নিশাসই স্নেহার মুখে এসে পড়ছে…

রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে একহাত দেওয়ালে রেখে আরেক হাতে স্নেহার সামনের চুল গুলো কানে গুজে দিলো…

স্নেহা শিউরে উঠছে…

রাহুল স্নেহার কাছে মাথা এনে গাল দিয়ে স্নেহার গালে দাড়ি গুলো ঘষে দিলো… স্নেহা কেপে উঠছে বারবার, নাক দিয়ে মুখে স্লাইড করতেই স্নেহা ভোর কুচকে চোখ বন্ধ করে ফেললো….

ধীরেধীরে রাহুল মাথা নুয়ে…তার ঠোট দিয়ে স্নেহার পুরো ঠোট দখল করে নিলো…

সাথে সাথে স্নেহা রাহুলের…জ্যাকেটটা খামছে ধরলো….রাহুল স্নেহার পেটের দিক টি-শার্টের নিচে হাত দিয়ে স্লাইড করে কোমোড়ে জড়িয়ে ধরলো…

পা দিয়ে স্নেহার পায়ে স্লাইড করতেই স্নেহা শিউরে উঠে তার পা আলগে করে দাঁড়ায়…

চলবে….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 25

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 25

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : জি! আপনি?…

[ দারোয়ান কোনো জবাব না দিয়ে একটু হেসে তাকিয়ে থাকে স্নেহার দিক ]

তার হাসিতে কেমন যেন ভয় লেগে উঠলো স্নেহার! সাতপাঁচ না ভেবে দরজাটা লাগাতেই যাবে..তখনি দারোয়ান হাত দিয়ে চেপে দরজাটা খুলে রাখার চেষ্টা!
স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো তার দিকে…মনের ভয়ে দরজাটা জোড় করে লাগিয়ে দিবে…সেই শক্তিটুকু ও মরে গেছে…

স্নেহা : দেখ..দেখেন…আপনার কিছু দরকার হলে…সস..সকালে আসিয়েন…

দারোয়ান : দরকার তো আমার এখনই…আমার লগে ও কিছু দরকারি সময় কাটাইতে সমস্যা কি?.. [ রাগান্বিত ভাবে ] এক একটা চড় এর বদলা নিমু….এমন হাল করমু…[ বলেই ধাক্ষা দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে পা বাড়াতে লাগলো ]

স্নেহা : [ পিছিয়ে গিয়ে ] দেখ…দেখেন আংকেল… প্লিজ! [ বলতেই শকড হয়ে চুপ হয়ে গেলো, তা দেখে দারোয়ান পিছে মুড়ে তাকালো ]

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ]

রাহুল : [ হাত দিয়ে ইশারা করে ] হাইই!

– আরে স্নেহা?.. ওকে এক গ্লাস পানি দাও…বোধ হয় পিপাসা পেয়েছে..বারবার ঢোগ গিলছে…বেচারা!

[ স্নেহার আত্মায় পানি এলো রাহুলকে দেখে…]

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে দারোয়ানের কাছে এসে দাঁড়ালো, দারোয়ানের গালে হাত বুলিয়ে ] আমি..জানতাম তুই আবার ও আসবি…ঐ যে কথায় আছে না…কুকুরের লেজ বারো বছর সোজা করে ধরে রাখলেও নাকি যে বাকা ঐ বাকায় থেকে যায়, তুই ও ঠিক তেমনটাই…[ দু-বার তালি দিয়ে ] বাট তোর সাহসের তারিফ করতে হবে [ বলেই দারোয়ানের কলার ধরতে চাইলে সে রাহুলের হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে হুট করে দৌড় দেই ]

[ স্নেহা মূর্তির মতো হয়ে তাকিয়ে আছে, রাহুল একটু হেসে পকেট থেকে সেলফোনটা বের করে আসিফকে ফোন দিলো ]

আসিফ : হ্যা! বল রাহুল!

রাহুল : গেইট দিয়ে এখন একটা কুকুর ভাগতে ভাগতে বের হবে, তোর কাজ হচ্ছে ওকে ধরা, ওহ হে…কুকুরটা দেখতে কালো বাট আমি আসার আগে ওটা দেখতে লাল হয়ে যাওয়া চাই!

আসিফ : [ হেসে ] আচ্ছা! বুঝেছি!

[ রাহুল ফোন পকেটে ঢুকিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো ]

রাহুল : কিছুক্ষণ আগে নিচে এতোকিছু হয়ে যাওয়ার পরে ও বোকার মতো ওকে দেখে দরজা খুলে দিলে তাই না!
– আর আমি জানতাম তুমি এই বোকামিটা করবা! [ জোড়ে একটা শাস ফেলে ] স্নেহা কমোনসেন্স বলতে কিছু থাকা দরকার! [ রাগান্বিত ভাবে ] কি দরকার ছিলো দরজা খোলার?..তোমরা দুজন মেয়ে একা একটা ঘরে…একতো ওর সেন্সই নেই! তারউপর তোমার বোকামি!

আমি নাআসলে এখন কি কি হতে পারতো ভেবে দেখেছো! [ বলতেই স্নেহা মুখ চেপে ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

রাহুল : [ রাগ কন্ট্রোল করে জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আব..আবার কাদছো কেনো?…

[ স্নেহা নিচের দিক তাকিয়ে কেঁদেই চলছে ]

রাহুল : [ স্নেহার কোমড়ে হাত দিয়ে কাছে টেনে নিয়ে ] ডোন্ট ক্রাই!

[ বলতেই স্নেহা আরো ফুফিয়ে কেঁদে উঠে, রাহুল একটু হেসে স্নেহার মুখ থেকে হাত সরিয়ে মাথা তুলে তার দিক ফিরিয়ে নিয়ে দেখে…স্নেহার চোখ নাক মুখ সব লাল হয়ে আছে…চোখের পানিতে পুরো মুখ ভিজে যাচ্ছে ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] হেইই! হোয়াট আর ইউ ডুয়িং?..এইভাবে কাঁদছো কেনো?…[ স্নেহার চোখের পানি মুছে দিয়ে ] ওকে ওকে… I m sorry! I m sorry!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আম..আমি ভেবে..ছিলাম উনি এমন না! [ বলেই আবার কাঁদতে লাগলো ]

রাহুল : ওকে ওকেইই! রিলেক্স! আর কাঁদতে হবে না! Between তোমার সেলফোনকে একটা থেংক্স দেওয়া দরকার [ বলেই পকেট থেকে স্নেহার সেলফোনটা বের করে দিলো ] গাড়ীতে রয়েগিয়েছিলো! এটা দিতেই আসছিলাম! তখনি…দেখি! [ জোড়ে একটা শাস ফেলে ] কিন্তু স্নেহা তখন যদি তুমি আমাকে না আটকাতে না…তাহলে ওকে ঐদিকেই শিক্ষা দিয়ে দিতাম!
________________________________

এইদিকে, জারিফা এবং রিদোয়ান গাড়ী থেকে নামতেই অবাক হয়ে যায়,

জারিফা : [ আসিফের দিক দৌড়ে এসে ] আরে আরে…ওনাকে মাড়ছেন কেনো!

রিদোয়ান : What happen আসিফ?…

আসিফ : ইয়ার! I don’t know! what happen! রাহুল বলেছে ওকে লাল বানাতে তাই বানাচ্ছি!

জারিফা : হোয়াট?.. লাল বানাতে?..কিক…কিন্তু কি করেছে ওটাতো বলেন?.. [ দারোয়ানের দিক তাকিয়ে ] এই যে হ্যালো আপনি! কি করেছেন বলেন তো?..

দারোয়ান : কিক…কিছুনা…কিছুই করিনি! খোদার কসম!

রিদোয়ান : [ দারোয়ানের কলার ধরে ] কিছু না করলে তোকে এমনি এমনি লাল বানাতে বললো কেনো?..হ্যা?
ইয়ার আসিফ অনেকদিন ধরে কাউকে কেলিনি… ভাবছি আমিও একটু প্রাক্টিস্ করি! [ বলেই সে ও দারোয়ানকে থাপড়াতে লাগলো ]

জারিফা : আরে কি..করছেন আপনারা?.. রিদোয়ান স্টপ ইট!

রিদোয়ান : আরে দাঁড়াওনা…একটু!

জারিফা : উফফ!

[ বলেই দৌড়ে ঢুকে শিরি দিয়ে উপরে উঠলো, এবং উঠে ঘরে ঢুকতেই দেখে রাহুল আর স্নেহা জড়িয়ে ধরে আছে, জারিফাকে দেখে দু-জন ছুটে দাড়ালো! ]

জারিফা : [ হাপিয়ে উঠে ] আ…রাহুল! আপনি ওনাকে মারতে বললেন নাকি?…কিক..কি করেছে উনি?..

রাহুল : আগে বলো ওকে কেমন মেরেছে?..

জারিফা : আই কান্ট এক্সপ্লেইন! একটু পর ওনাকে হসপিটাল নিয়ে যেতে হবে আমার এমনই মনে হচ্ছে!

রাহুল : হোয়াট? একটু পর?…আমিতো ভেবেছি ওকে এতোক্ষণে লাশ বানিয়ে দিয়েছে! [ চেঁচিয়ে ] ওকে গাইস্ Now বাই! গুড নাইট কাল দেখা হচ্ছে! [ স্নেহার মাথা এগিয়ে নিয়ে কপালে একটি চুমু দিয়ে রাহুল তাড়াহুড়ো করে বেড়িয়ে আবার স্নেহার দিক ফিরে তাকায় ] Listen! ডোর অফ করো! আর Unknown person দেখলে ডোর ওপেন করবা না! [ বলেই দরজা লাগিয়ে চলে যায় ]

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা… [ বলেই স্নেহার দিক তাকাতেই শকড হয়ে যায় ] আরে স্নেহা?…তোর শরীর ঠিকাছে তো?..এভাবে হয়ে আছিস কেনো?..[ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] স্নেহা! কি হয়েছে?…

[ স্নেহা কাদো কাদো ভাবে জারিফাকে সব খুলে বললো ]

জারিফা : [ মুখে হাত দিয়ে শকড হয়ে ] ইয়া আল্লাহ! আমার তো গায়ের লোম সব দাঁড়িয়ে গেছে তোর কথা শুনে! আমি আরো ওদের মারতে বারণ করছিলাম! [ রেগে নাক ফুলিয়ে ] ওকে তো লাল আমি বানাবো [ বলেই হনহনিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি জারিফার হাত ধরে পথ আটিকিয়ে ] আরে জারিফা! পাগল নাকি কোথায় যাচ্ছিস?…রিলেক্স! ওরা করছে না…যা করার!

জারিফা : রাব্বিশ একটা…দেখতে তো অনেক ভালোই মনে হতো!

স্নেহা : [ জারিফাকে টেনে নিয়ে ] আচ্ছা তুই চল ভেতরে আয়!

[ ভেতরে গিয়ে দুজনেই খাটে বসলো ]

জারিফা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আচ্ছা তোর মোবাইলটা দেতো! আমার ব্যালেন্স শেষ তাই! [ স্নেহা ফোন এগিয়ে দিলে জারিফা রিদোয়ানকে কল করে, ]

রিদোয়ান : হ্যালো!

জারিফা : শুনেন! ওকে মেরেছেন?..

রিদোয়ান : [ হাসতে হাসতে ] হ্যা!

জারিফা : হাসছেন কেনো?..

রিদোয়ান : ওর মার খাওয়া দেখে!

জারিফা : [ রাগান্বিত ভাবে ] আমার তরফ থেকে আরো দুটো এক্সট্রা দেন! কুকুরটাকে!

রিদোয়ান : তাই নাকি?..তখন যে চেঁচাচ্ছিলে স্টপ ইট! রিদোয়ান!

জারিফা : আরে আমি তখন জানতাম নাকি!

রিদোয়ান : [ একটু হেসে ] মিস্ আপনি এমনভাবে চলে গেলেন আমাকে একটা বাই বললেন নাকি গুড নাইট বললেন?..

জারিফা : আরে হ্যা! তাই তো! ওকে…সরি!

রিদোয়ান : নো নো! সরি বললে এখন আর চলবে না!

জারিফা : আচ্ছা?..তাহলে?..

রিদোয়ান : ঐটা বলো!

জারিফা : [ একটু ভেবে ] কিক..কিন্তু ওটাতো বলেছিলাম!

রিদোয়ান : ওকে বাই!

জারিফা : আচ্ছা আচ্ছা! বলছি…[ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আ..আই লাভ ইউ!

রিদোয়ান : এতোক্ষণ চিন্তা করতে হয়?..[ একটু হেসে ] ওকে আই লাভ ইউ টু!

জারিফা : [ জিহ্বায় কামড় দিয়ে একটু ব্লাশিং হয়ে ] বাই! গুডনাইট!

রিদোয়ান : গুড নাইট!

জারিফা : [ টেবিলে ফোন রেখে ] উফফ! অনেক টায়ার্ড লাগছে আমি ফ্রেশ হয়ে আসি! [ বলেই উঠে দাঁড়ালো,হঠাৎ মার্জানের দিক চোখ পড়তেই ] আরে! এতো কি আরামে ঘুম! কোনো চিন্তা ধান্ধা নেই!

[ স্নেহা একটু হেসে জারিফাকে মার্জানের কান্ড সব খুলে বললো ]

জারিফা : [ হাসতে হাসতে খাটে শুয়ে পড়ে ] ইয়ার! i can’t stop my laughing!… কাল সকালে উঠতে দে ওকে…দেখ কি করি!
________________________________

পরদিন,ভোর হলো! মার্জান মুখ থেকে কম্বল সরিয়ে চোখ খুললো ধীরেধীরে, হাত দিয়ে মাথা চেপে উঠে বসলো…পাশফিরে তাকাতেই দেখে…

জারিফা আর স্নেহা কফির মগ হাতে নিয়ে বসে বসে তারদিক তাকিয়ে হাসছে,

মার্জান : [ বিরক্তি হয়ে মাথা জোড়ে চেপে ] ইয়ার! আমার মাথাটা এভাবে ভারী হয়ে আছে কেনো?…

জারিফা : [ মার্জানের পাশে এসে বসে ] এইভাবে ড্রিংক্স করলেতো মাথা ধরবেই!

মার্জান : হো..হোয়াট…? হোয়াট ডু ইউ মিন?..ড্রি..ড্রিংক্স করেছি মানে?…

জারিফা : কাল আমরা পার্টি থেকে চলে যাওয়ার পরে কি কি করেছিস মনে কর!

মার্জান : [ কিছুক্ষণ ভেবে কনফিউজড হয়ে চেঁচিয়ে ] ইয়ার! ট্রাষ্ট মি! কিছুই মনে আসছে না আমার!

জারিফা : [ মুখে হাত দিয়ে ] ইয়া আল্লাহ! তাইইইই?.. তাহলে না জানি কি কি করেছিস!

মার্জান : Shut-up জারিফা! [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! তুত…তুই কিছু জানিস?..

জারিফা : আরেহ ওতো রাহুলের সাথে বেড়িয়েছিলো! তুই কি কি করেছিস আসিফের সাথে তা ও কিভাবে জানবে! [ মার্জান শকড হয়ে চোখ বড় করে জারিফার দিক তাকিয়ে থাকে ]

মার্জান : আস..আসিফ…এইখানে আবার ওর কথা কিভাবে এলো?..

জারিফা : আরেহ! বুদ্ধু ওই তো তোকে এইখানে পৌছে দিয়েছিলো!

মার্জান : [ কাদো কন্ঠে ] ওহ! নো! কাল আমি শরবত ভেবে শেম্পিং খেয়ে ফেলেছিলাম!

জারিফা : ওহ মনে পড়ে গেছে! ধুর..আচ্ছা! আব..বাকি গুলা?..

মার্জান : তারপর?…

জারিফা : [ কনফিউজড হয়ে ] হ্যা তারপর বল?…

মার্জান : তারপর তারপর [ চেঁচিয়ে ] আরে মনে আসছে না তো!

স্নেহা : [ এগিয়ে এসে ] তারপর আমি বলছি… [ বলতেই জারিফা উঠে দাঁড়িয়ে স্নেহার মুখ চেপে ধরে ]

জারিফা : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] Shut-up স্নেহা! আল্লাহর ওয়াস্তে কিছুক্ষণ মুখ বন্ধ রাখ! [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] হিহি তারপর ও বলছে ও কিছু জানেনা…ইয়ার মার্জান কাল কোনো কিছু অনাথসনাথ হয়নি তো?..আমার তো অনেক ভয় করছে! আচ্ছা ভয় পেয়ে লাভ কি…আমরা খালামুণি হবো এটা তো খুশিরই খবর তাই না স্নেহা?..

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] খাখ…খাখ..খালামুণি?…

জারিফা : [ স্নেহাকে চোখ মেরে ] আরে হ্যা!

মার্জান : [ জারিফাকে টেনে খাটে শুয়ে মুখের উপর বালিশ চেপে ] খালামুণি হওয়ার শখ তোর তাই না! বানাচ্ছি তোকে খালামুণি!

জারিফা : [ বালিশ সরানোর চেষ্টা করতে করতে ] ইয়ার! মেরি জান…মরে যাবো তো আমি!

মার্জান : মর তুই! তোর মতো ফ্রেন্ড মরে যাওয়ায় ভালো! শয়তান, রাব্বিশ,ইডিয়ট, দুনিয়ায় যতো জন্তু জানোয়ার আছে সবই ও…আই হেট হিম! আর তুই ওর সাথে আমার এতোকিছু ভেবে ফেলেছিস…

[ জারিফা ধাক্ষিয়ে মার্জানকে সরিয়ে উঠে বসে জোড়ে জোড়ে শাস ফেলতে থাকে ]

স্নেহা : ইউ ওকে জারিফা?..

জারিফা : ইয়া..ইয়াহ! আই এম অলরাইট! [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] আচ্ছা মার্জান! ও যদি জন্তু জানোয়ার সব হয়! হুম?..তাহলে তোর বাচ্চাটা কোন জন্তু হবে! [ কনফিউজড হয়ে ] বিড়াল, বানর, নাকি…হাতি…আর নাকি [ বলেই মার্জানের দিক তাকাতেই আরে বাপরে বলেই উঠে দৌড় দেই…আর মার্জান ও তাকে দৌড়ে তাড়িয়ে ছাড়লো! ]

[ স্নেহা তাদের কান্ড দেখে হাসতে হাসতে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায় আবার মনে পড়লো সে তো তার মাকে কথা দিয়েছিলো আজ টাকা পাঠাবে! হঠাৎ, ফোনটা বেজে উঠলো… রুমে ঢুকে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করতেই স্নেহা ব্লাশিং! ]

রাহুল : [ ঘুম কন্ঠে ] রাহুল! নামতো সুনাহি হোগা!

স্নেহা : সকাল সকাল শাহ-রুখ খানের ডায়লগ!

রাহুল : ওহ! সরি ভুলে গেলাম তুমি তো আবার সালমান খানের ফ্যান! উমম! সালমানেরটাই বলি.. “প্রেম নামহে মেরা প্রেমমম ”

[ স্নেহা হেসে উঠে, রাহুল ও ব্লাশিং হয়ে হাসে ]

রাহুল : গুডড মর্নিং!

স্নেহা : গুড মর্নিং! ব্রেকফাস্ট কমপ্লিট ?..

রাহুল : ওহো এখনো… কম্বলের ভেতর লেপ্টে আছি…ব্রেকফাস্ট কই করলাম!তুমি করেছো?…

স্নেহা : হুম করেছি!

রাহুল : আচ্ছা চলো স্নেহা! একটা মর্নিং কিস্ দাওনা! সকালটা যেনো…

স্নেহা : উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করেনিন! ভার্সেটিতে দেখা হচ্ছে এখন রাখি!

রাহুল : তোমরা মেয়েরা না, কথা ঘুরাতে Always ফার্ষ্ট প্রাইজটাই পাবা!

স্নেহা : [ মুখ চেপে হেসে ] ওকে বাই!

রাহুল : ওওওকে!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ফোনটা কেটে রাখতেই ছিলো টেবিলে..কিন্তু আবার হাতে নিয়ে মনে মনে ভাবতে লাগলো ওর নাম্বারটা কি নামে সে্ভ করা যায়! ] উমম! হ্যা! এটাই বেষ্ট হবে [ বলেই মিষ্টার তেডি স্মাইল দিয়ে রাহুলের নাম্বারটা সে্ভ করে রেডি হতে চলে গেলো ]
________________________________

ভার্সেটিতে,

মার্জান : [ নাকফুলিয়ে জারিফার দিক তাকিয়ে ] আরেকবার তুই ঐ শয়তানটার নাম আমার সামনে নিলে না…তোকে আমি…

জারিফা : আচ্ছা ওয়েট ওয়েট…ও তোকে কি এমন করেছে ওর উপর এভাবে ক্ষেপে আছিস কেনো বলতো! গতকাল তো পারলে ও তোকে হেল্প করেছে…তোর আরো উচিৎ ওকে গিয়ে থেংক্স বলা!

মার্জান : উফফফ! পেইন লাগছে এসব বাদ দে! চল ভেতরে,

[ স্নেহা পার্কিং এর দিক তাকাচ্ছিলো রাহুলের গাড়ী দেখা যাচ্ছে না! তার মানে রাহুল এখনো আসেনি ভাবতে ভাবতেই এগুচ্ছিলো হঠাৎ কারো পায়ের সাথে বেজে উপুড় হয়ে স্নেহা পড়ে যেতেই ছিলো,কিন্তু পড়লো না…কেউ পেটের দিক হাত দিয়ে ধরে আটকে ফেললো, স্নেহা ফিরে তাকালো..এবং অবাক হলো…কেউ কি তাকে পা দিয়ে ইচ্ছে করে ফেলেছে নাকি…সে ব্যালেন্স হারিয়ে পড়তে ছিলো…]

সামির : কেয়ারফুল স্নেহা!

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে দাঁড়ালো ]

মার্জান : স্নেহা ঠিকাছিস?..

স্নেহা : হুম! [ সামিরের দিক তাকিয়ে ] থেংক্স!

সামির : [ হেসে ] No No, স্নেহা! my pleasure!

মার্জান : [ জারিফার কানে ফিসফিসিয়ে ] এটা আবার কে?..স্নেহাকে নাম ধরে ডাকলো আই মিন স্নেহাকে চিনে কিভাবে!

জারিফা : [ ফিসফিসিয়ে ] Don’t know ইয়ার! কোথাও দেখেছি মনে হচ্ছে বাট মনে পড়ছে না!

মার্জান : ওকে চল স্নেহা! [ বলেই এগুচ্ছিলো ]

সামির : ওয়েট ওয়েট! আব..স্নেহা! তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো..ঐদিন তাড়াহুড়ো করে চলে গিয়েছিলে তাই বলতে পারিনি!

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] কি?..

সামির : [ ব্লাশিং হয়ে ] তোমার গাওয়া সংটা খুব দারুণ ছিলো! কি না ভয়েস্ ছিলো বলে বোঝাতে পারবো না!

স্নেহা : আপ..আপনি কিভাবে?..শুশ..শুনলেন…

সামির : স্পিকার দিয়ে গাইছিলে! সাউন্ড শিরি পর্যন্ত আসছিলো!

স্নেহা : ওহ!

সামির : [ হাত বাড়িয়ে ] আব..ফ্রেন্ডস?..

[ স্নেহার ইচ্ছে হচ্ছিলো না তাও হাতটা বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করলো ]

হঠাৎ, পাশ থেকে স্নেহা বলে আওয়াজ আসলো! সবাই একসাথে ফিরে তাকিয়ে দেখে রাহুল দাঁড়িয়ে আছে,চোখ থেকে সানগ্লাসটা খুলে শার্টে লাগিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এসে হাত বাড়ালো, স্নেহা তাড়াতাড়ি সামির থেকে হাত ছুটিয়ে নেয়! ধীরেধীরে রাহুলের বাড়িয়ে দেওয়া হাতের উপর হাত রাখলো, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে কাছে এনে দাড় করালো! এবং সামনে চলে আসা স্নেহার চুল গুলো কানে গুজে দিলো, সামির তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক…তা দেখে রাহুল শার্ট থেকে সানগ্লাসটা ছুটিয়ে আবার পড়ে স্নেহার হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে চলে যায়,

ভার্সেটির বারান্দায়,

রাহুল : Listen স্নেহা! এই সামিরের সাথে কথা বলার দরকার নেই! বুঝছো!

স্নেহা : কেনো কি হয়েছে?..

রাহুল : উফফ! বললাম ব্যাস follow করবা Enough!

স্নেহা : [ হেসে ] আচ্ছা ঠিকাছে!

রাহুল : ওকে তাহলে তুমি এখন ক্লাসে যাও! আর বাসায় যাওয়ার আগে আমার সাথে মিট করবা! আমি পার্কিং এর দিকই থাকবো!

স্নেহা : ওকে!

রাহুল : বাই! [ With tedi smile ]

[ স্নেহা ক্লাসে চলে এলো, একঘণ্টা পেড়িয়ে গেছে… হঠাৎ স্নেহার মনে পড়লো তার তো টাকা জমা দেওয়ার কথা ছিলো ]

স্নেহা : [ মার্জানের কানে ফিসফিসিয়ে ] আরে আমি তো মামাকে টাকা দেইনি!

মার্জান : কিসের টাকা?..

স্নেহা : ঐ যে বাসে্ বলেছিলাম না!

মার্জান : ওহ আচ্ছা! তো এখন যাবি?..

স্নেহা : হ্যা! যেতে তো হবে আমি মা কে কথা দিয়েছি! আজই দিবো!

মার্জান : আচ্ছা! আমি যাবো সাথে?..

স্নেহা : না নাহ! সমস্যা নেই আমি পারবো!

জারিফা : রাহুলকে সাথে নিয়ে যা! [ বলেই চোখ টিপ মারলো ]

স্নেহা : জারিফা রাহুলকে এসব জানানো যাবে না..বাসে্ই তো বলেছি তোদেরকে! [ বলেই দাঁড়িয়ে যায় ]

মার্জান : আচ্ছা ঠিকাছে তাড়াতাড়ি আসিস!

[ স্নেহা বেড়িয়ে গেলো, ]
________________________________

ভার্সেটি ছুটির পর,

রাহুল : [ পার্কিং এর দিক থেকে মার্জানের দিক এগিয়ে এসে ] স্নেহা! কোথায়?..

[ মার্জান চুপ হয়ে রইলো কি বলবে মাথায় আসছে না ]

জারিফা : আ…স্নেহা! ও তো ওয়াসরুমে!

রাহুল : ওহ!

মার্জান : [ জারিফাকে চিমটি দিয়ে ] ও ওয়াসরুমে না! [ দাত কিলিয়ে ] আমাদের বলে গিয়েছে না! [ রাহুলের দিক ফিরে ].. এক্সুলি স্নেহা! ভার্সেটি নেই!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] কোথায় গেছে ?…

মার্জান : কোথায়?.. হ্যা কোথায় গেছে যেনো [ চেঁচিয়ে ] ও হ্যা! হ্যা! মনে পড়েছে…ও না ডান্স ক্লাসে গেছে!

রাহুল : হোয়াট?..

মার্জান : মানে… ও ছেড়ে দিয়েছিলো…কিন্তু আবার জয়েন করছে..কারণ ডান্স প্রেকটিস্ থাকার জন্য! আর সাথে এক্সারসাইজ ও হয়ে যাবে তাই না!

[ বানিয়ে বানিয়ে বলতে বলতে হাপিয়ে উঠলো মার্জান, রাহুলের কেনো যেন ডাউট হচ্ছিলো তাদের কথায় তাও আর কিছু বললো না ওকে বলেই চলে গেলো ]

মার্জান : [ বুকে হাত দিয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে ] বাপরে! রাহুলের চোখে তাকিয়ে মিথ্যা বলছিলাম…এমন লাগছিলো গলায় মাছে কাটা আটকে গেছে! [ জারিফাকে চিমটিয়ে ] আর তুই গাধী একটা ওয়াসরুমে কেনো বললি?..

জারিফা : আআউ! আরে মাথায় কিছু আসছিলো না!

মার্জান : অন্য কিছু বানিয়ে বলতে পারতি! এটা কোনো বাহানা হলো..? পরে যখন ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে ও দেখতো স্নেহা বেরুচ্ছে না ওয়াসরুম থেকে তখন…?

জারিফা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] তখন ওয়াসরুম তো ভাংচুর করতো সাথে আমাদের মাথা ও ফাটাতো মিথ্যা বলার অপরাধে,
________________________________

এইদিকে, রাহুল স্নেহাকে বারবার ফোন দিচ্ছে আর স্নেহা বারবার কাটতে চলছে,

রাহুল : Damn it! ফোন কেনো কাটছে বারবার!

শ্রেয়া : আরে হয়তো কোনো কাজে বিজি্ আছে তাই!

রাহুল আর কোনো জবাব না দিয়ে সোজা গাড়ী নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে,ডান্স ক্লাসের বিল্ডিং এর নিচে দাঁড়িয়ে স্নেহাকে আবার ফোন দিতেই স্নেহা রিসি্ভ করলো,

রাহুল : কোথায় তুমি?.. এতোবার ফোন দিচ্ছি রিসি্বই করছো না!

স্নেহা : এক্সুলি রাহুল আপনি যখন ফোন দিচ্ছিলেন তখন মামা সামনে ছিলো তাই রিসি্ভ করতে পারিনি!

রাহুল : মামা?…কিন্তু তোমার ফ্রেন্ডসরা বললো তুমি ডান্স ক্লাসে…ইনফ্যাক্ট আমি এখন ওখানের নিচেই দাঁড়িয়ে আছি!

স্নেহা : [ জিহ্বায় কামড় দিয়ে ] আ..আসলে আমি ডান্স ক্লাসেই ছিলাম…ওখানে সিনিয়র ডান্সার যেটা আছে না ওনাকে আমরা মামা বলি তাই!

রাহুল : আচ্ছা ঠিকাছে নিচে নামো! একসাথে লাঞ্চ করবো!

স্নেহা : কিক…কিন্তু রাহুল! আমিতো বাসায় এসে গেছি!

রাহুল : হোয়াট?..

স্নেহা : সরি! রাহুল… আমি জানতাম না আপনি আসবেন!

রাহুল : ওকে! নো প্রবলেম! [ বলতেই ফোনটা কেটে গেলো ]

স্নেহা : আরে! এই ব্যাটারি লো হওয়ার আর সময় ছিলো না! উফফ [ মনে মনে ] একদিকে তো রাহুলকে মিথ্যে বলতে কি মসিবত! আর এইদিকে ফোনটাও,

– আর দেরী করা যাবে না এক্ষুণি বাসায় পৌছাতে হবে, [ বলেই স্নেহা টেক্সি ঠিক করে নিয়ে বাসায় এসে পৌছালো ]
________________________________

এইদিকে রাহুল, স্নেহাকে ফোন দিয়ে ট্রাই করতে করতে সুইচ অফ আসাতে রেগে মোবাইলটা অন্যসি্টে ছুড়ে মেরে বাড়ী এসে পৌছালো,
________________________________

স্নেহা রুমে ঢুকতেই,

মার্জান : এতো লেইট করলি কেনো!

স্নেহা : মামী ছাড়ছিলোই না…বলছে কতোদিন পড়ে এসেছিস! আরেকটু বয় আরেকটু বয় এভাবে টাইম চলে গেছে! আচ্ছা আমাকে তোর ফোনটা একটু দে!

মার্জান ফোন দিলে স্নেহা এগিয়ে নিয়ে রাহুলকে কল দিচ্ছিলো কিন্তু রাহুল রিসি্ভই করছে না!
________________________________

সন্ধ্যায় স্নেহা! ডান্স ক্লাস শেষ করে রাস্তার ধারে এসে দাঁড়ালো, কটা বাজছে তা দেখার জন্য বেগ থেকে ফোন বের করলো এবং দেখে মোবাইলটা বন্ধ হয়ে আছে, [ মনে মনে ] আরে চার্জ করে মোবাইলটা অন ও করা হয়নি! [ বলেই অন করলো ] হঠাৎ কিছুক্ষণ পর ফোনটা বেজে উঠলো,

স্নেহা : [ ফোন রিসি্ভ করে ] হ্যা! মার্জান বল!

মার্জান : কি বলেছে?..সব ঠিকটাক তো?

স্নেহা : হুম! কিন্তু এতোদিন Continue না করাতে ওরা নতুন টিচার নিয়ে ফেলেছে!

মার্জান : তাহলে?..

স্নেহা : বলেছে চাইলে আবার জয়েন করতে পারবো! কিন্তু নতুন করে এপোয়েটমেন্ট জমা দিতে হবে…ঐটাই ফিলাপ করে জমা দিয়ে আসছি!

মার্জান : থেংক গড!

স্নেহা : আচ্ছা আমি বাসায় এসে কথা বলছি এখন রাখি!

মার্জান : ওকে

স্নেহা : [ ফোন কেটে বেগে রাখতেই ছিলো হঠাৎ মনে পড়লো রাহুলকে একটা ফোন দিয়ে দেখি! আবার মনে মনে ] না থাক ফোন না…মিষ্টার তেডি স্মাইল নিশ্চয় রাগ করে আছে,বাসায় গিয়ে সারপ্রাইজ দি!

[ বলেই স্নেহা এক্সাইটেড হয়ে টেক্সি ঠিক করে রাহুলের বাসায় এসে পৌছালো! ]

দু-তিনবার বেল বাজতেই রাহুল এসে দরজা খুললো,

রাহুল : তুমি?…

স্নেহা : ইয়েস্! [ বলেই রাহুলকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত তাকিয়ে হেসে ] আপনি বাচ্চা ছেলের প্যান্ট পড়ে আছেন কেনো!

রাহুল : ইটস্ নট বাচ্চা ছেলের প্যান্ট! ওকে! এটাকে থ্রি কোয়াটার প্যান্ট বলে,

আর হ্যা! কে আপনি?..আমি আপনাকে চিনি?..

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে ] আচ্ছা?.. ওকে!

[ বলেই মোড় ফিরে চলে যাচ্ছিলো,রাহুল হেসে স্নেহার হাত ধরে টেনে ভেতরে ঢুকিয়ে নেয়! ]

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] আরে!

রাহুল : কই যাও!

স্নেহা : আপনি তো আমাকে চিনেন না তাই না?…সো্ থেকে কি লাভ?…

রাহুল : [ হেসে হেসে দরজা লাগিয়ে স্নেহাকে কাছে টেনে নেয় ] মজা করছিলাম! Between i am surprised তোমাকে দেখে!

স্নেহা : কেনো সারপ্রাইজড কেনো?..আমি কি আসতে পারিনা?..

রাহুল : [ স্নেহাকে কোলে তুলে নিয়ে ড্রইং রুমের দিক এগুতে এগুতে ] আরে তা হবে কেনো ?.. একবার আমাকে বলতে আমি নয়তো পিক করে নিতাম! তুমি একা এসেছো তাই বলছি!

স্নেহা : আচ্ছা তাই?….ফোন রিসি্ভ করছিলেন?…কতোবার ফোন দিয়েছিলাম!

রাহুল : [ স্নেহাকে সোফায় বসিয়ে ] এক্সকিউজ মি! আমি তোমাকে কতোবার ফোন করেছি জানো?..তোমার ফোন সুইচ অফ আসছিলো বার বার,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আচ্ছা! আমার ফোনের ব্যাটারি লো ছিলো তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো আর আমি তো মার্জানের ফোন থেকে ফোন দিচ্ছিলাম বারবার আপনি রিসি্ভই করছেন না!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] আচ্ছা ওটা তুমি ছিলে?…আমি Unknown দেখে রিসি্ভ করিনি!

স্নেহা : [ রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] অনেকসময় unknown নাম্বার ও রিসি্ভ করতে হয় মিষ্টার! যদি কেউ কখনো বিপদের পড়ে ফোন দেই!

রাহুল : ইয়াহ ইউ আর রাইট! [ বলে অন্যদিক ফিরে গিয়ে ] কিন্তু তখন আমার মাথা খারাপ ছিলো! একতো তোমাকে বলেছি দেখা করতে করোনি! আমি লাঞ্চ এর জন্য কতো কিছু বুকিং দিয়ে আ্যরেঞ্জ করে রেখেছিলাম ওটাও ক্যান্সেল…তার উপর না বলে হুট করে মোবাইল বন্ধ হয়ে যাওয়া!

স্নেহা : সরি রাহুল! আমি…আসলে বিকেলে ও ফোন করতে ছিলাম..ইশ! তখন যে কেনো করলাম না! ডান্স ক্লাসে যাওয়ার তাড়াহুড়োতে সব ওলটপালট হয়ে গেছে!

রাহুল : তুমি তো ডান্সক্লাসে সকালে গিয়েছিলে তাই না?..

স্নেহা : হ্যা! আ..আসলে দু-বার করেছি আজ! কারণ.. কাক..কারণ [ বলেই স্নেহা কনফিউজড হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে আছে মাথায় কিছু আসছিলো না কি বলবে! ]

রাহুল : ওকে! আই গট ইট!

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি অন্যদিক ফিরে যায় ]

রাহুল : স্নেহা! তুমি আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছো রাইট?..

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] সকালে গিয়েছিলাম..আজ কারণ আমাদের সিনিয়র টিচার এর বার্থডে ছিলো তাই! সত্যি!

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম! [ বলেই অন্যদিক ফিরে মাথা নিচু করে রাখে ]

স্নেহা : [ সোফার দিক রাহুলের কাপড় পড়ে থাকা দেখে ] রাহুল!

রাহুল : হুম?..

স্নেহা : আপনার কাপড়-চোপোড়গুলো এভাবে ফেলে রেখেছেন কেনো?..

রাহুল : অহ! ওগুলো servant রেখে গেছে! আয়রন করে!

স্নেহা : আপনি কোথাও যাচ্ছিলেন?..

রাহুল : হ্যা! তোমার ফোন সুইচ অফ দেখে ভেবেছি দেবদাস হয়ে বারে গিয়ে ড্রিংক্স খাবো!

স্নেহা : সিরিয়াসলি! রাহুল আই এম নট কিডিং!

রাহুল : হ্যা! যাচ্ছিলাম…একটা ফ্রেন্ড এর এংগেজমেন্ট প্লাস ওর বেবির বার্থডে!

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] এটা কেমন কথা! বেবি হয়ে গেছে বেবির বার্থডে কিন্তু আবার এংগেজমেন্ট! আই মিন বিয়ের আগে বেবি!

রাহুল : কেনো বিয়ের আগে বেবি হওয়া যায় না?..

স্নেহা : [ হেসে হেসে ] হোয়াট? বিয়ের আগে বেবি কিভাবে হবে রাহুল!

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে ] আচ্ছা?..দেখাবো নাকি কিভাবে হবে!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চিন্তাকরে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দিয়ে ] ছিঃ রাহুল!

রাহুল : [ হেসে হেসে ] You know স্নেহা! সবাইতো আর তোমার মতো ইন্নোসেন্ট না! তোমার মতো সে্ইম মাইন্ডের না!

স্নেহা : আচ্ছা! তাহলে আপনি বসে আছেন কেনো…আমি আসি! আপনি যান, [ বলেই উঠে দাঁড়ালো ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] ক্যান্সেল!

স্নেহা : মানে?..

রাহুল : মানে আমি প্রোগ্রামে যাচ্ছি না এইখানেই আছি! আর তুমি ও এইখান থেকে কোথাও যাচ্ছো না আমার সাথেই থাকছো!

স্নেহা : কিন্তু রাহুল! এটা…

রাহুল : [ স্নেহার মুখে আংগুল দিয়ে ] স্টপ!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আচ্ছা তাহলে ড্রেস গুলো পড়েন!

রাহুল : হোয়াট?..

স্নেহা : মনে আছে আমাকে জোড় করে মার্মিড ড্রেস্ পড়িয়েছিলেন!

রাহুল : তাই রেভেঞ্জ নিচ্ছো?..

স্নেহা : [ হেসে ] আরে না! এমনিতেই আমি দেখবো!

রাহুল : [ একটু হেসে ] ওকেই! [ বলে ড্রেস পড়ার জন্য হাতে নিচ্ছিলো ]

স্নেহা : এইখানে পড়বেন?…

রাহুল : হ্যা!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] হোয়াট…?

রাহুল : কেনো তোমার সামনে পড়লে কি তোমার কুচ কুচ হবে নাকি ?..[ with tedi smile ]

স্নেহা : [ ঢোগ গিলে ] এটা ড্রইং রুম! চেঞ্জিং রুম না!

রাহুল : হ্যা! কিন্তু এখন তো তুমি আমি ছাড়া আর কেউ নেই!

স্নেহা অবাক হয়ে হা করে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এসে হাত দিয়ে স্নেহার মুখ বন্ধ করে দিয়ে ] রিলেক্স স্নেহা! [ বলেই হেসে বেড রুমে চলে গেলো ]

[ স্নেহা মনে মনে ব্লাশিং হয়ে হাসতে লাগলো, এবং হেটে হেটে আশেপাশে ঘুরঘুর করে তাকাচ্ছিলো, চারদিক খালি গিটার আর গিটারে ভরা! টেবিলের উপর হাত রাখতেই দেখে রাহুলের সানগ্লাস, সাথে সাথে স্নেহার মনে পড়লো প্রথম যেদিন লাইব্রেরীতে রাহুল স্নেহাকে সানগ্লাস পড়িয়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলো, ]

কিছুক্ষণ পর, দেখে রাহুল হোয়াইট ডেনিম শার্ট, ব্লাক ডেনিম জিন্স, এবং ব্লাক লেদার জ্যাকেটটা পড়তে পড়তে বেডরুম থেকে বেড়িয়ে তার দিকই আসছে…

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে দাঁড়িয়ে ] সো স্নেহা! এবার রিভিউ দাও! কেমন লাগছে?…[ With tedi smile ]

স্নেহা : [ হেসে সানগ্লাসটা রাহুলকে পড়িয়ে দিয়ে ] এতোটাই হেন্ডস্যাম লাগছে যে রিভিউ দিলে কম পড়ে যাবে!

রাহুল : আচ্ছা! তো এখন কি বাসার মধ্যে সানগ্লাসটা ও পড়ে থাকতে হবে?..

স্নেহা : হোহ! আপনার জন্য নতুন কি?..আপনি রাতের আধারে সানগ্লাস পড়ে থাকতে পারলে, ঘরের ভেতর পড়ে থাকতে প্রবলেম কি?.. [ বলেই হাসতে লাগলো ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ] তাই?..অনেক হাসি পাচ্ছে তাই না?…আমার ফিক্সড করা সব আ্যরেঞ্জমেন্ট আজ বিগ্রে দিয়েছো…তুমি জানো আমি আজকে কতো কি ভেবেরেখেছিলাম

স্নেহা : আরে..! [ রাহুল থেকে সানগ্লাসটা খুলে নিয়ে ] আচ্ছা লাঞ্চ ক্যান্সেল হয়েছে তো কি হয়েছে?.. ডিনার একসাথে করি! আমি আপনার জন্য ডিনার রান্না করছি! তারপর দুপুরে যে লাঞ্চ আ্যরেঞ্জমেন্টটা ক্যান্সেল হয়ে গেছিলো ওটা পূরোণ হয়ে যাবে!

রাহুল : রিয়েলি?…

স্নেহা : হুম!

রাহুল : ওকে!

[ স্নেহা কিচে্নে এসে কুকিং এর জন্য সব ঠিকটাক করে নিলো, আর রাহুল কুকিং টেবলের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে, কাটিং বোর্ড এগিয়ে নিয়ে স্নেহা ভেজিটেবল কাটা শুরু করলো…হঠাৎ স্নেহা খেয়াল করলো রাহুল তার পা দিয়ে স্নেহার পায়ের দিক স্কার্ট উঠিয়ে স্লাইড করছে… স্নেহার গা শিউরে উঠলো.. তাও ভেজিটেবল কাটাতে ধ্যান দিয়ে রাখলো…এবার রাহুল হাত এগিয়ে এনে আংগুল দিয়ে স্নেহার কোমোড় থেকে…হাত পর্যন্ত স্লাইড করতে লাগলো, স্নেহার বুকটা ধুপ ধুপ করছে সাথে কাটার স্পিডও বেড়ে গেলো… তা দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিতে লাগলো ]

স্নেহা ধীরেধীরে রাহুলের দিক তাকালে,

রাহুল : [ তাড়াতাড়ি হাত সরিয়ে তেডি স্মাইল দিয়ে ] আমি কিন্তু ডিস্টার্ব করছিনা! ওকে!

[ স্নেহা একটু হেসে আবারো ভেজিটেবল কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, কিছুক্ষণপর রাহুল স্নেহার পেছনে দাঁড়িয়ে ধীরেধীরে স্নেহার কাধ থেকে স্লাইড করে হাত পর্যন্ত এগুচ্ছিলো স্নেহা জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে, ভেজিটেবল কাটা বন্ধ করে দিলো ]

রাহুল : [ তা দেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাড়াতাড়ি পাশ থেকে পানির গ্লাস এগিয়ে নিয়ে ] আমি পানি নিচ্ছিলাম! [ বলেই পানি খেতে লাগলো ]

স্নেহা : [ নিচের দিক তাকিয়ে ] আপনি এমন করলে আমার ভেজিটেবল গুলো কাটা সুন্দর হচ্ছে না দেখেন একটা বড় একটা ছোট!

রাহুল : [ স্নেহার পেছন থেকে দু-হাত দিয়ে স্নেহার টি-শার্ট হালকা উঠিয়ে হাত দিয়ে কোমোড়ে স্লাইড করে জড়িয়ে নিলো, এবং কানে কানে ফিসফিসিয়ে ] আমিতো ভেজিটেবল গুলোকে কিছুই করছিনা…জাষ্ট তোমাকেই টাচ্ করছিলাম…

স্নেহা : [ চোখ বন্ধ করে কেপে উঠে ] কিক…কিন্তু রাহুল! আপনি টাচ্ করলে কেক..কেমন যেনো….

রাহুল : [ চোখ বন্ধ করে স্নেহার কাধের স্মেল নিয়ে ] বলো কেমন ফিল হচ্ছিলো…

[ স্নেহা চোখ খুলে তাড়াতাড়ি রাহুলকে ছুটিয়ে সরে দাড়ালো, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে আবারো কুকিং টেবিলে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো ]

স্নেহা : আপ..আপনি এগুলো কাটবেন এখন…এটাই আপনার কাজ…খালি হাত থাকলে আপনার হাত চুলকায়! সো্ এগুলো এখন আমাকে কেটে দিবেন..আমি রাইস্ ভয়েল করছি ওকে!

রাহুল : ওকেই! [ বলেই কাটতে শুরু করলো ]

[ স্নেহা মনে মনে হেসে রাইস্ কুকারে ঢালছিলো,কোণা চোখে তাকিয়ে দেখে রাহুল কাটছে আর কিছুক্ষণ পর পর তার দিক চেয়ে যাচ্ছে…স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে সরে যাচ্ছিলো, হঠাৎ রাহুলের চেঁচিয়ে উঠার শব্দ শুনে তাড়াতাড়ি ফিরে তাকালো ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত টেনে নিয়ে চেঁচিয়ে ] আরে! রাহুল দেখে কাটবেন না?..ভেজিটেবল কাটছেন নাকি নিজের আংগুল কাটছেন! [ রেগে নাকফুলিয়ে ] অবশ্যই হওয়ারি কথা!

– কাটছেন এইদিকে আর তাকাচ্ছিলেন আমার দিকে!

রাহুল : আআউ! স্নেহা! ব্লিডিং হচ্ছে তো চেচাচ্ছো কেনো!

স্নেহা : এর আগে কখনো ভেজিটেবল কেটেছিলেন?..

রাহুল : আমি আ্যপল ফ্রিজ থেকে নিয়ে দাত দিয়ে কেটে খাই…নাইফ ইউজ করিনা তেমন! লাগলে সার্ভেন্ট কেটে দেই! তাই, আই মিন ফার্ষ্ট টাইম তো!

স্নেহা : আপনি আমাকে বলবেন না..আপনি এসব আগে কখনো করেননি!

রাহুল : ওহো দ্যাটস্ ওকে স্নেহা সামান্য একটুই তো!

স্নেহা : ফার্ষ্ট এইড বক্স কোথায়?…

রাহুল : [ আঙুল চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে ] বে..বেড রুমে! টেবিলের ড্রয়ারে আছে!

[ স্নেহা তাড়াহুড়ো করে দৌড়ে যাচ্ছিলো হঠাৎ, ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! [ স্নেহা ফিরে তাকালে ] তুমি রাগছিলে না তখন তোমাকে অনেক কিউট লাগছিলো!

[ স্নেহা নাকফুলিয়ে একটু হেসে আবার ফার্ষ্ট এইড বক্স আনতে চলে গেলো ]
________________________________

স্নেহা : [ ড্রইং রুমে বসে রাহুলের আংগুলে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে ] এইখানে বসে থাকবেন কিচেনে আসবেন না!

রাহুল : আরে! তুমি কিচেনে আমি এইখানে এটা কেমন কথা!

স্নেহা : এমনই হবে! এইখানে বসে থাকুন! রান্না হলে আমি নিজেই এসে বলবো! [ বলেই স্নেহা কিচেনে চলে গেলো ]

আধঘন্টা পর,

স্নেহা ড্রইং রুমে এসে দেখে রাহুল নেই! ধীরেধীরে এগিয়ে বেডরুমে ঢুকতেই দেখে রাহুল ক্যান্ডেল লাইট! আর ফ্লাওয়ার দিয়ে পুরো রুম সাজিয়ে ভরে রেখেছে! মিডলে ছোট্ট একটি টেবিল! এর দুটি চেয়ার ও রেখেছে!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হেইই! কাম!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আপনি এসব কিভাবে…

রাহুল : [ স্নেহাকে টেনে এনে চেয়ারে বসিয়ে ] Listen! তুমি আমার থেকে একটা কথা লুকিয়েছিলে!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] কিক…কি কথা?…

রাহুল : তুমি গান গাইতে পারো গিটার বাজাতে পারো… আর আমাকে বলোনি কেনো?..

স্নেহা : আমি এসব কিছুই পারিনা!

রাহুল : আচ্ছা ঐ দিন যে গানটা গেয়েছিলে আমি শুনিনি মনে করেছো?..

স্নেহা : [ অন্যপাশ ফিরে গিয়ে ] ওটাতো এম…এমনিতে!

রাহুল : এমনিতে তাই না?..তাহলে আমাকে ও এমনিতেই আরেকটা শুনিয়ে দাও!

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] কি বলছেন আপনি আমি সত্যিই পারিনা!…

রাহুল : Lie!

স্নেহা : আ.. আসলে আমিতো ইউটিউবে…আপনার সিংগিং চ্যানেলে গানটা শুনেছিলাম! আর আপনার গিটার বাজানোটা দেখছিলাম বারবার! তাই…[ বলেই অন্যদিক ফিরে গেলো ]

রাহুল : [ কিছুক্ষণ চুপ হয়ে থেকে ] স্নেহা! You are so brilliant and you have a nice golden voice! just speechless!

– আচ্ছা যা হবে হোক! এবার আমাকে আরেকটা গান শুনিয়ে দাও!

স্নেহা : ট্রাষ্ট মি রাহুল! আমি…এসব…

রাহুল : ওকে আমি আগে গাইবো…then তুমি ফলো করে গাইবা! চলবে?

স্নেহা : রাহুল আমি এসব…

রাহুল : Not one more word just say! yes or not ?..

[ স্নেহা কোনো জবাব না দেওয়ায় রাহুল মন খারাপ করে অন্যপাশ ফিরে বসে থাকে, একটু পর দেখে স্নেহা গিটার হাতে নিয়ে চেয়ার রাহুলের পাশে এগিয়ে এনে বসলো ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : ওকে ডান!

[ রাহুল কিছু বললো না ]

স্নেহা : [ মন খারাপ করে ] আচ্ছা আপনি আগে গাইবেন তারপর আমি ও গাইবো!

– প্লিজ!

রাহুল : [ স্নেহার ফেইস রিয়েকশন দেখে একটু হেসে গিটারটা হাতে নিলো! ] স্মাইল করো!

[ স্নেহা হেসে রাহুলের হাত জড়িয়ে নেই ]

রাহুল : ওকে তাহলে! ফার্ষ্ট আমি তারপর তুমি!

স্নেহা : ওকে!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ?♪♪ গিটার বাজানো শুরু করলো ]

♪♪ আল্লাহ মুঝে দা্রদে্ কা্ কাবি্ল বানা্ দি্য়া ♪♪

♪♪ থুফান্ কো্ হি্ কাশথি্ কা্ সা্হিল্ বানা্ দি্য়া ♪♪
♪♪ বেচে্নিয়া্ সা্মেত্কে সা্রে জাহা্ কি্ ♪♪
♪♪ যাব্ কুচ্ না বান্ সা্কা তো্ মে্রা দি্ল বানা্ দি্য়া ♪♪

♪♪ ও সা্থি্ তে্রে বিনা্ রাহি্ কো্ রাহ্ দিখা্ না্ ♪♪

♪♪ ও সা্থি তে্রে বিনা্ হা সা্হিল্ ধুয়া্ ধুয়া্ ♪♪

[ স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ একটু হেসে স্নেহার মুখ বন্ধ করে দিয়ে ] Now your trun!

স্নেহা : আপনি এই গানটাও দিয়েছিলেন আপনার সিংগিং চ্যানেলে! রাইট!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] রাইট! আচ্ছা তুমি আমার আনপ্লাগড করা সব সং শুনেছো!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে মাথা নিচু করে ] হুম! শুনেছি ইনফ্যাক্ট সময় পেলেই শুনি! প্রথম যেদিন জানতে পেরেছিলাম আপনি আনপ্লাগড সিংগার তখন থেকেই!

রাহুল : ওয়াও! তাহলে আমি ধন্য!

স্নেহা : মানে?..

রাহুল : মানে কিছুনা! এবার চুপচাপ ট্রান পুরা করো,

[ বলেই রাহুল গিটার বাজাতে লাগলো,এবং চোখ দিয়ে ইশারা করলো গাইতে ]

স্নেহা : [ একটু ব্লাশিং হয়ে ]

♪♪ আল্লাহ মুঝে দা্রদে্ কা্ কাবি্ল বানা্ দি্য়া ♪♪
♪♪ থুফান্ কো্ হি্ কাশথি্ কা্ সা্হিল্ বানা্ দি্য়া ♪♪
♪♪ বেচে্নিয়া্ সা্মেত্কে সা্রে জাহা্ কি্ ♪♪
♪♪ যাব্ কুচ্ না বান্ সা্কা তো্ মে্রা দি্ল বানা্ দি্য়া ♪♪

♪♪ ও সা্থি্ তে্রে বিনা্ রাহি্ কো্ রাহ্ দিখা্ না্ ♪♪

♪♪ ও সা্থি তে্রে বিনা্ হা সা্হিল্ ধুয়া্ ধুয়া্ ♪♪

[ রাহুল গিটার হাতে নিয়ে তেডি স্মাইল দিয়ে এক পলকে চেয়ে আছে স্নেহার দিক ]

স্নেহা : কি হলো!

রাহুল : ভেবেছিলাম তুমি এক লাইন বলেই স্টপ হয়ে যাবা!

স্নেহা : বললামই তো আমি আপনার…আনপ্লাগড করা সব গানই শুনতে শুনতে… মুখস্থ করে ফেলেছি!

রাহুল : ব্রিলিয়ান্ট! [ with tedi smile ]

স্নেহা : আরে! কুকিং! [ বলেই স্নেহা তাড়াহুড়ো করে রুম থেকে বেড়িয়ে যায় ]

[ রাহুল ব্লাশিং হয়ে বসে থাকে,আর মুচকি মুচকি হাসছে একটু পর দেখে স্নেহা ট্রলি করে ডিনার নিয়ে আনলো ]

স্নেহা : [ ট্রলি থেকে দুটো প্লেট টেবিলে রেখে ] আমার রান্না তেমন ভালো না আগেই বলে দিচ্ছি!

রাহুল : [ স্নেহার দিক একধ্যানে চেয়ে ] এই হাতে poison দিলে না! ওটাও পৃথীবির সব ডিশকে হার মানাবে…..

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোয়াট?..

রাহুল : কিছুনা! [ with tedi smile ]

[ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো, স্নেহার কাধ থেকে চুল গুলো সরিয়ে বিলিয়ে দিলো,স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ধীরেধীরে হাত দিয়ে স্নেহার ঠোটে স্লাইড করতে লাগলো ]

স্নেহা : [ চোখ বন্ধ করে ফেলে ] রার..রাহুল! ডিনার…

রাহুল : কিন্তু আমার অন্যকিছু খেতে মন চাইছে! [ বলেই মুখটা স্নেহার ঠোটের দিক বাড়ালো ]

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] রার…রাহুল!

রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] রিলেক্স!

[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিক, রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে বুকে টেনে জড়িয়ে ধরে ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 24

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 24

writer-Jubaida Sobti

কানে শ্রোতের আওয়াজ ভেসে আসছে,
ঠান্ডা বাতাসে স্নেহা মুড়িয়ে যাচ্ছে রাহুলের বুকে,

রাহুল স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে জড়িয়ে নিলো… স্নেহা চোখ বন্ধ করে খামছে ধরে আছে রাহুলের জ্যাকেট,রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার ঠোটের স্পর্শ ত্যাগ করলো… মাথার উপর ঝাপিয়ে দেওয়া স্নেহার ওড়নাটি সরিয়ে স্নেহাকে গায়ে মুড়িয়ে দিলো,এবং আস্তে আস্তে আংগুল দিয়ে স্নেহার মুখে স্লাইড করে চুলগুলি সরিয়ে দেই,

স্নেহা ধীরেধীরে চোখ খুলে রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে থাকিয়ে আছে ,স্নেহা লজ্জা পেয়ে একটু হেসে রাহুল থেকে ছুটে…দৌড়ে ভেতরে চলে যাচ্ছিলো…সাথে সাথে রাহুল পেছন থেকে স্নেহার হাত ধরে আটকিয়ে ফেলে, স্নেহা জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে…

রাহুল : নিঝুম,নির্ঘুম, রাতের ঐ কালো ছায়া,

– [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা!

[ স্নেহা অবাক হয়ে ফিরে তাকালে ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] আপনার ঠোটের ছোয়াতে ভালো লাগা এ কি মায়া, [ স্নেহা ব্লাশিং ]

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে,] নিবুনিবু বাতাসে, ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা আভাসে, কুয়াশায় ভরা আকাশে,

[ স্নেহা একটু মুচকি হেসে দেই রাহুলের কান্ড দেখে ]

রাহুল : চাঁদনী বসে আছে তার সূর্যের আশায়, আর স্নেহা ডুবে আছে তার রাহুলের ভালোবাসায় [ বলেই মুখটা কাছে এনে স্নেহার নাকের সাথে নাকটা লাগিয়ে দেই ]

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে দেই ]

রাহুল : [ হেসে ] ওকে… ভেতরে চলো এইখানে ঠান্ডা, [ বলেই স্নেহাকে নিয়ে ভেতরের দিক এগুচ্ছে ] এত্তো কেয়ারলেস্ কেনো স্নেহা তুমি?..একটা সুয়েটার পড়ে আসতে পারতে,

স্নেহা : [ থেমে গিয়ে ] রাহুল! আমার না একটা কল করা দরকার!

রাহুল : কাকে?..

স্নেহা : ওদের..আ..আই মিন…

রাহুল : [ হেসে ] অও! Understand! আচ্ছা চলো ভেতরে গিয়েই করো!

স্নেহা : ওকেই!

দুজনেই ভেতরে গিয়ে লিভিং সোফায় বসে, স্নেহা মোবাইল বের করে জারিফাকে কল দিলো,

জারিফা : [ ফোন রিসি্ভ করে ] ওহো! স্নেহা.. মেরি জান! আমাদের কথা মনে আছে বুঝি?..

স্নেহা : [ ফিসফিসিয়ে ] Shut-up জারিফা! আচ্ছা শোন! তোরা আছিস নাকি বাসায় চলে এসেছিস?..

জারিফা : আ..এক..এক্সুলি [ মুখে হাত দিয়ে ফিসফিসিয়ে ] আমি না রিদোয়ানের সাথে বাইরে এসেছি!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] ওহ! আচ্ছা, ওকে তাহলে,

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আচ্ছা শোন!

স্নেহা : হ্যা! বল..

জারিফা : একটু রাহুলকে দে!

স্নেহা : [ হেসে রাহুলকে ফোন এগিয়ে দিয়ে ] জারিফা!

রাহুল : [ হেসে,স্নেহা থেকে ফোন এগিয়ে নিয়ে লাউডস্পিকারে দিয়ে স্নেহার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে, ] ইয়েস্ মেরি আধি ঘারওয়ালি!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওহো! জিজাজি, কি সুইট সুইট ভয়েস্ আসছে…

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে থেকে ] এক্সুলি! আমি না একটু আগেই সুইট খেয়েছি তাই সুইট ভয়েস আসছে!

[ স্নেহা লজ্জায় ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে যায় ]

জারিফা : [ মুখে হাত দিয়ে ফিসফিসিয়ে ] বাই দ্যা ওয়ে! জিজু.. আমি না সব ডিটেলে নিবো… কিন্তু!

রাহুল : হোহ-হো [ বলে চেঁচিয়ে হেসে উঠে ]

[ স্নেহা হুট করেই রাহুল থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে কেটে দেই ]

রাহুল : আরে স্নেহা! [ বলেই স্নেহার কোল থেকে মাথা তুলে বসে ] ও ডিটেল চাইছিলো! কেটে দিলে কেনো! [ চোখ মেরে ]

স্নেহা : [ আড় চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] যেমন আপনি তেমন ও! একফুটা ও লাজলজ্জা নেই আপনাদের!

রাহুল : [ স্নেহার পেছনে সোফার উপর হাত রেখে স্নেহার গায়ের সাথে লেগে বসে ] সো্ লজ্জা কিভাবে পাই?… [ বলেই স্নেহার কাধের দিক মুখ এনে স্নেহার চুলের স্মেল নিতে লাগলো ]

স্নেহা : [ হেসে মাথা সরিয়ে ] রাহুল! আমার আরেকটা ফোন করা বাকি আছে!

রাহুল : ওকে ওকেই!….[ বলেই সোজা হয়ে বসে ]

[ স্নেহা একটু হেসে মার্জানের মোবাইলের কল দেই! ]
________________________________

এইদিকে,
মার্জানের ফোনে রিং বেজে উঠায়!

মার্জান : [ হালকা হালকা চোখ খুলে আসিফের দিক তাকিয়ে ] হো..হোয়াটে..মিউজিক… হ্যা?..[ চেঁচিয়ে ] ডিস্…ডিস্গাষ্টিং মিউজিক…

আসিফ : [ হেসে ] তোমার ফোনেই বাজছে! ফোন ধরো!

মার্জান ফোন হাতে নিতে গেলে হঠাৎ হাত থেকে পিছলে ফোন নিচে পড়ে যায়, এদিক ওদিক খুঁজতে লাগলো সে!

আসিফ : ওয়েট! [ বলেই লাইট জালিয়ে দিয়ে ] এইবার নাও…

[ মার্জান ফোনটা দেখে ও আর নিচ্ছে না.. ]

আসিফ : আরে কি হলো! ফোন বাজছে তো…উঠাও..

মার্জান : No…[ চেঁচিয়ে ] আপনি আমার কক..কথা শুনেছেন?..আম..আমি ..কেনো শুনবো?.. [চেঁচিয়ে ] শুশ..শুনবো না…[ বলেই সি্টে হেলান দিয়ে ঢলে পড়ে ]

[ আসিফ বিরক্তি হয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে আবার ড্রাইভ করতে থাকে ]
________________________________

এইদিকে, স্নেহাকে চিন্তিতো দেখে,

রাহুল : হেই! কি হয়েছে?..

স্নেহা : [ সে্ড এক্সপ্রেশন নিয়ে ] মাম..মার্জান…কতোবার ফোন দিচ্ছি…রিসি্ভই করছে না!

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! আরে এটার জন্য এভাবে চেহেরা বানিয়ে আছো কেনো…হয়তো কোনো কারণে বিজি্ আছে তাই রিসি্ভ করতে পারছে না..

স্নেহা : কিক…কিন্তু রাহুল ও যতোই বিজি্ হোক এক রিং পড়তেই ফোন রিসি্ভ করে ফেলে!

রাহুল : ওকে ওয়েট!…আমি দেখছি! [ বলেই রাহুল পকেট থেকে ফোন বের করে আসিফকে কল দেই ]

আসিফ : [ ফোন রিসি্ভ করে ] হ্যা! রাহুল বল?…

রাহুল : আসিফ! মার্জান তোর আশেপাশে আছে?..

আসিফ : আশেপাশে না…আমার গাড়ীতেই আছে!

রাহুল : তোর গাড়ীতে?..আচ্ছা ড্রপ করে দিচ্ছিস?.. [ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

আসিফ : [ ফিসফিসিয়ে ] ইয়ার! She fully drunk!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হোয়াট?..

স্নেহা : কি হয়েছে রাহুল?..

আসিফ : আই থিংক ফার্ষ্ট টাইম খেয়েছে!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! মার্জান কি আগে কখনো ড্রিংক করেনি?…

স্নেহা : হোয়াট রাহুল পাগল নাকি?..এসব খাওয়া তো দূরের কথা ছুয়ে দেখেনি কখনো!

রাহুল : আচ্ছা ওকে তুই একটু খেয়াল রাখ…আমরা আসছি!

আসিফ : ওকে! [ বলেই ফোন রাখে ]

স্নেহা : কি হয়েছে রাহুল?..

রাহুল : তেমন কিছুইনা! মার্জান ড্রিংক করেছে…ডোন্ট ওয়ারি! আসিফ ওকে বাড়ী পৌছে দিচ্ছে…

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] ড্রিংক করেছে?.. মার্জান?…

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা!

স্নেহা : কিক..কিন্ত ও তো এসব খাইনা…[ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আচ্ছা রাহুল চলেন আমরা তাড়াতাড়ি যায়…

রাহুল : [ দাঁড়িয়ে স্নেহার হাত ধরে ] হ্যা আমরা যাচ্ছি স্নেহা! কিন্তু…তুমি রিলেক্স থাকো!

– ওকে?..

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো ]

রাহুল : আচ্ছা তুমি বসো..আমি এক্ষুণি আসছি…

[ বলেই স্নেহাকে সোফায় বসিয়ে দিয়ে রাহুল বেড়িয়ে ড্রাইবারকে শিপ ঘুড়িয়ে নিতে বললো… ]

একঘন্টা পরেই শিপ পাড়ে এসে পৌছায়,

রাহুল স্নেহাকে নিয়ে শিপ থেকে নেমে হেসে হেসে গাড়ীতে উঠে,

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ী স্টার্ট দিতে দিতে ] স্নেহা!

স্নেহা : [ আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] স্টপ!…আর হাসবেন না…বলেদিলাম…

রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] স্নেহা!সামান্য শিপ থেকে নামতে এভাবে ভয় পেতে আমি তোমাকেই দেখেছি ফার্ষ্ট! [ বলেই আবার হাসতে থাকে ]

স্নেহা : ভয় পাবো না?..মাঝে যে পানি দেখা যাচ্ছিলো! যদি পিছলে পড়ে যায়!

রাহুল : কেনো পড়বে! হাত তো আমিই ধরেছিলাম! [ বলেই স্নেহার দিক তাকালো ]

[ স্নেহা আর কোনো জবাব না দিয়ে একটু ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ী ড্রাইভ করতে শুরু করে দিলো, ]

কিছুক্ষণ পর,

স্নেহা : আপনাকে বারবার বলেছি এইদিকে তাকিয়ে ড্রাইভ করবেন না! সামনের দিক ফোকাস্ রাখুন! [ রাহুল হেসে উঠে ]

স্নেহা : [ ইমোশনাল হয়ে ] আর এমনিতেই আমাদের তাড়াতাড়ি যাওয়া দরকার! নাজানি মার্জান কি হালে আছে,

রাহুল : এক্সকিউজ মি! আমার ফ্রেন্ড এমন না! ওকে ?..

স্নেহা : [ একটা জোড়ে শাস ফেলে ] স্টপ ইট! রাহুল আমি ওটা মিন করিনি…

রাহুল : [ হেসে..উঠে ] ওকে ওকে আই জাষ্ট কিডিং,

– আচ্ছা! তোমার তাড়াতাড়ি পৌছানো চাই রাইট! সো্ লেটস্ গো [ বলেই রাহুল গাড়ীর স্পিড বাড়িয়ে আরো জোড়ে চালাতে লাগলো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] কিক..কি করছেন আপনি?..এতো ফার্ষ্ট ড্রাইভিং করছেন কেনো রাহুল?..

রাহুল : [ হেসে, মিউজিক ছেড়ে দিয়ে ] গান শুনো চোখ বন্ধ করে!আশেপাশে তাকিওনা…

স্নেহা : [ রেগে,মিউজিক বন্ধ করে দিয়ে ] আপনি আসলেই একটা! [ বলেই চুপ হয়ে যায় ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] বলো?..আমি আসলে একটা?.. ইডিয়ট?.. রাব্বিশ? ইউজলেস?… [ কিটকিটিয়ে হেসে সোজা তাকিয়ে ] স্নেহা! You know আমি যেটায় হই,যেমনি হই…তোমারিতো!

স্নেহা : [ মনে মনে ব্লাশিং হয়ে জানালার দিক ফিরে গিয়ে ] আমার ভয় করছে!

[ রাহুল একটু হেসে ড্রাইভ কিছুটা স্লো করে দিয়ে চালিয়ে এসে পৌছালো,এবং স্নেহার বাসার গেইটের সামনে আসতেই আসিফের গাড়ী চোখে পড়লো,]

রাহুল : এটা তো আসিফের গাড়ীই মনে হচ্ছে!

[ বলেই রাহুল তার গাড়ী এগিয়ে নিয়ে আসিফের গাড়ীর পেছনে পার্ক করে রাখে, স্নেহা তাড়াহুড়ো করে নেমে দৌড়ে এগিয়ে যায়, রাহুল নামতেই দেখে আসিফ ও গাড়ী থেকে নেমে তার দিক এগিয়ে আসছে ]

রাহুল : হেইই!

আসিফ : [ কপালে হাত দিয়ে ] কি মসি্বতরে বাবা!

রাহুল : [ হেসে পকেটে হাত দিয়ে ] কি হয়েছে?..

আসিফ : বললাম নামো তোমার বাসায় এসে পড়েছি! আর ও বলে,খালি পায়ে নামবে না, আমি বললাম তাহলে জুতা পড়ে নামো, [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আবার বলে জুতা পড়লে নাকি পা চুলকাচ্ছে! তারপর আমি আবার বললাম তাহলে খালি পায়েই নামো! তারপর ও কি বললো জানিস?..

রাহুল : [ হেসে ] হো..হোয়াট?…

আসিফ : কেনো আপনি আমার জুতা চুরি করে নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য?..

রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] সো্ ফানি ইয়ার!

[ বলেই আসিফকে নিয়ে মার্জানের দিক এগিয়ে আসে এবং দেখে মার্জান পা বটে গুটিসুটি হয়ে সিটের উপর বসে আছে ]

স্নেহা : আরে মার্জান কি হলো বাসায় যাবি না?..

মার্জান : ইয়েস্ বাব…বাসায় যাবো! আচ্ছা আমার বাসা…কোথায়?…

স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে মার্জানকে হাত ধরে টেনে বের করতে চাইলে মার্জান তার মাথা স্নেহার কাধে ঢলে দেই! স্নেহা বুঝতে পারলো..মার্জান উঠে দাড়ানোর শক্তিটাও হারিয়ে ফেলেছে, জোড়ে একটি শাস ফেলে হঠাৎ,পাশফিরে তাকাতেই দেখে আসিফ এবং রাহুল হেসে হেসে কান্ড দেখছে,

স্নেহা সে্ড হয়ে রাহুলের দিক তাকালে রাহুল হেসে এগিয়ে আসে এবং স্নেহাকে সরে যেতে বলে, স্নেহা রাহুলের কথা মতো সরে দাঁড়ায়, রাহুল মার্জানের পাশে এসে হাটু ভেংগে আধ বসা হয়ে বসে,

রাহুল : [ হাত তুলে ইশারা করে ] হেইই বেবি!

মার্জান : [ রাহুলের দিক ফিরে ] হাইইই! [ বলেই আবার সি্টে মাথা ঢলে দেই ]

রাহুল : ঘুম পাচ্ছে?..

মার্জান : হুমম! [ বলেই চোখ বন্ধ করে ফেলে ]

[ রাহুল হেসে উঠে দাঁড়িয়ে আসিফকে চোখ দিয়ে ইশারা করলো যাতে মার্জানকে কোলে তুলে নেয়!]

আসিফ : [ চেঁচিয়ে ] আর ইউ মেড?..আমার মাথা অলরেডি চলে গেছে ওর ডোন্ট টাচ্ মি,ডোন্ট টাচ্ মি বলে বলে চেঁচানোতে!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক এগিয়ে এসে ফিসফিসিয়ে ] অনেক তো বডি দেখাচ্ছিলেন! আব…আই মিন..আপনিই তুলে নেন না!

রাহুল : আরে ওকে তুলে নিতে আমার কোনো প্রবলেম নেই! [ মার্জানের দিক চোখ দিয়ে ইশারা করে ফিসফিসিয়ে ] ও ফ্রি আছে, [ আসিফের দিক ইশারা করে ] ওই ও ফ্রি আছে..সো্ [ বলেই স্নেহাকে চোখ টিপ মারলো ]

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের মাথায় বাড়ি দিয়ে ] আর ইউ ক্রেজি রাহুল?..

রাহুল : ইয়েস্! আচ্ছা তুমি ওর দিক খেয়াল রাখো আমি আসছি! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে আসিফের দিক এগিয়ে যায় ]

আসিফ : দেখ রাহুল তুই যদি আবার ও সে্ইম কথাটা বলতে আসিস না…তাহলে আম সরি! যা!

রাহুল : [ আসিফের কাধে হাত দিয়ে জড়িয়ে ] আরে দোস্ত বোঝার চেষ্টা কর! এভাবে এতো রাতে মেয়েটাকে একা রেখে তো আর চলে যেতে পারবো না…আর আমার চেয়েওতো এসব ব্যাপারে তোর ইমোশনাল বেশী…

আসিফ : আচ্ছা?..এখন তুই আমাকে ইমোশনাল ব্লাকমেইল করা বন্ধ কর!

রাহুল : আরে ব্লাকমেইল করবো কেনো? সিচুয়েশন বুঝাচ্ছি তোকে! [ বলেই আসিফকে ধাক্ষিয়ে গাড়ীর দিক পাঠিয়ে দেই ]

[ আসিফ একটা জোড়ে শাস ফেলে রাহুলের দিক তাকায়, আবার নাক ফুলিয়ে মার্জানকে কোলে নেওয়ার জন্য হাত বাড়ালো, ]

মার্জান : হেইইই ইউ! আই টোল্ড ইউ না! ডোন্ট টাচ্ মি!

[ আসিফ রাগান্বিতভাবে রাহুলের দিক তাকালো, রাহুলের হাসি আসাতে সে তাড়াতাড়ি অন্যদিক ফিরে যায়, ]

স্নেহা : [ আসিফের দিক এগিয়ে এসে ] আ…আপনি! জোড় করে তুলে নিন! আব..আই থিংক শি ইজ আউট অফ সেন্স তাই এমন… [ বলেই মুখ গোমড়া করে ফেলে স্নেহা, তা দেখে আসিফ মার্জানকে জোড় করেই কোলে তুলে নিলো ]

রাহুল : ওয়াও! [ with tedi smile ]

আসিফ : [ নাক ফুলিয়ে ] ওয়েট আমি আসি! [ বলেই এগিয়ে ভেতরে চলে গেলো ]

স্নেহা দৌড়ে আগে গিয়েই দরজা খুলে দিলো, আসিফ রুমে ঢুকে মার্জানকে খাটে শুয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছিলো!

হঠাৎ,

স্নেহা : থেংক্স!

আসিফ : [ হেসে ] দ্যাটস্ ওকে! নো প্রবলেম! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার থেমে গিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] আ…এক কাজ করো,ওকে লেবুর শরবত, অর তেঁতুলের শরবত বানিয়ে খাইয়ে দাও নাহলে অর্ধেক ঘুম থেকে উঠে আবার বমি করতে থাকবে….

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো ]

আসিফ : গুড নাইট!

স্নেহা : গুড নাইট,

[ চলে গেলো আসিফ, স্নেহা মার্জানকে বালিশ ঠিক করে শুয়ে দিয়ে গায়ে কম্বল টেনে দিয়ে, দরজা বন্ধ করতে গেলো হঠাৎ মনে পড়লো সে তো রাহুলকে বাই ও বলেনি! আর রাহুলের ফোন নাম্বারটাও নেই যে ফোন করে গুড নাইট বলবে, তাড়াতাড়ি দরজা খুলে আবার শিরি দিয়ে নিচে নেমে আসতেই দেখে রাহুল গেইট দিয়ে ঢুকছে.. স্নেহা হেসে দৌড়ে রাহুলের দিক এগিয়ে গিয়ে জোড়ে জোড়ে শাস ফেলে হাপাতে থাকে, ]

রাহুল : [ স্নেহার কান্ড দেখে হেসে,] এত্তো মেহনত গুড নাইট বলার জন্যে?..

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে উঠে রাহুলের কথা শুনে ]

রাহুল : [ হাত দিয়ে স্নেহার মাথা কাছে টেনে কপালে একটি চুমু খেয়ে ] গুড নাইট!

স্নেহা : গুড নাইট! [ With blushing ]

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চলে যাচ্ছে, স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে পাশ ফিরে দু-তিন কদম এগুতেই হঠাৎ আবার থেমে গিয়ে পেছন ফিরে তাকায়, সাথে সাথে রাহুল ও ফিরে তাকালো…]

স্নেহা : [ দৌড়ে রাহুলের দিক এগিয়ে এসে ] এক..এক্সুলি..

রাহুল : নাম্বার [ with tedi smile ]

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : 01827****** এটাইতো তোমার নাম্বার তাই না?…

স্নেহা : [ শকড হয়ে মাথা নাড়িয়ে ] হ্যা..এট…এটাই! আপনি কিক…কি করে?…

রাহুল : শকড হওয়ার কিছু নেই! You know আই লাভ ইউ স্নেহা! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ] ওকে বায়!

রাহুল : বায়! [ বলেই গেইট দিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে ]

[ স্নেহা ও হেসে ভেতরের দিক চলে যাচ্ছিলো,হঠাৎ কানে ভেসে এলো কেউ বলছে..পুরো বিল্ডিংটাই বাজারের মেয়ের আড্ডাখানা বানিয়ে রেখেছে! স্নেহা তাড়াতাড়ি ফিরে তাকালে দেখে দাড়োয়ান ঐদিকটাই কোনায় চেয়ারে বসে আছে, ]

দারোয়ান : কি দেখছেন?..১২টায় বিল্ডিং এর গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়! নিয়মটা জানেন না?.. এতো রাতে কই গেলেন টাকা কামাইতে নাকি?…

স্নেহার চোখের পানি টলমল করছে রাগে,

দারোয়ান : এমন টাকা কামানো এই বিল্ডিং এ চলবে না! অন্যদিক বাসা খুজো! বুঝলা… [ বলতেই হঠাৎ দারোয়ান চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে ঢোগ গিলতে থাকে, তা দেখে স্নেহা পাশ ফিরে গেইটের দিক তাকাতেই থমকে যায়, ]

স্নেহা : রার..রাহুল!

রাহুল চোখ রাংগিয়ে দারোয়ানের দিক তাকিয়ে আছে, এবার স্নেহা বুঝতে পারলো তার মানে রাহুল সব শুনতে পেয়েছে…তাই রাগান্বিত লাগছে,
স্নেহা দারোয়ানের দিক একবার রাহুলের দিক একবার তাকিয়ে যাচ্ছে..কি করবে কিছুই মাথায় আসছে…নাজানি রাহুল কি করে বসে!

হঠাৎ, স্নেহা খেয়াল করলো রাহুল দারোয়ানের দিক এগিয়ে যাওয়ার জন্যই পা বাড়াচ্ছে,

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে রাহুলের হাত ধরে ] আব..রার রাহুল! কাল ভার্সেটিতে দেখা হচ্ছে..তাহলে ওকে..গুগ..গুড নাইট!

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে স্নেহার হাত ধরে টেনে নিয়ে দারোয়ানের দিক এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ালো ]

দারোয়ান : সালাম! স্যার! [ বলেই ঢোগ গিলতে লাগলো ]

রাহুল : দেখে তো মনে হচ্ছে ওর সমান তোর ও ছেলেমেয়ে আছে!

দারোয়ান : জিজ! জি স্যার! দুই মাইয়া একটা ছোড়া!

রাহুল : [ নাকফুলিয়ে রেগে জোড়ে দারোয়ানের গালে একটা চড় মেরে ] তাহলে তোর মেয়েরা ও লেইট লাইটে কোনো ছেলের সাথে বাসায় ঢুকলে ওকে ও বাজারের মেয়ে বলবি?..

[ স্নেহা শকড হয়ে মুখে হাত দিয়ে দেই! ]

দারোয়ান : [ গালে হাত দিয়ে ডলতে ডলতে ] না স্যার! ভুল হইয়া গেসে্

রাহুল : [ দারোয়ানের কলার ধরে কাছে টেনে আরেক গালে চড় দিয়ে ] কেনো?..বল?.. ভুল কেনো হবে?..ও বাজারের মেয়ে হতে পারলে তোর মেয়ে হতে পারবে না কেনো?..

[ বলেই আবার মারতে লাগলো ]

স্নেহা : [ ঘাবড়ে গিয়ে তাড়াতাড়ি রাহুলের হাত ধরে আটকিয়ে ] রাহুল! নো্

[ বলেই রাহুলের জ্যাকেট ধরে টেনে সরিয়ে আনলো ]

স্নেহা : ওকে রাহুল! রিলেক্স…ভুল হয়ে গেছে ওনার..

রাহুল : [ নাকফুলিয়ে দারোয়ানের দিক তাকিয়ে ] Listen আগেও একবার ওয়ার্নিং দিয়েছিলাম! আর এটা লাষ্ট ওয়ার্নিং!

দারোয়ান : ভুল হয়সে্ স্যার আর হবে না!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] বাসায় যাও!

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম! কিক..কিন্তু আপনি আবার প্লিজ! এসব..

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] ওকে! করবো না প্রমিস্!

– বাসায় যাও!

দারোয়ান : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] আসেন মেডাম আমি দিয়া আসি…

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] হেইই! স্টপ ওকে! ওভার একটিং করবি না আমার সামনে [ দাত কিলিয়ে ] ইডিয়ট! দেখলেই ইচ্ছে করছে আরো কয়েকটা দি…[ বলেই আবার মারতে এগিয়ে যেতে চাইলে স্নেহা রাহলের জ্যাকেট টেনে ধরে রাখে ]

স্নেহা : ডোন্ট ডো দিস্ রাহুল! প্রমিস্ করেছেন আমাকে!

রাহুল আর কিছু না বলে ফুফিয়ে জোড়ে জোড়ে শাস ফেলতে লাগলো, স্নেহা তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক

হঠাৎ, রাহুল, স্নেহার হাত ধরে টেনে উপরে নিয়ে গিয়ে দরজা খুলে স্নেহাকে ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে দেই, স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে তাকিয়ে দেখে রাহুলের চোখেমুখে এখনো রাগ ভেসে আছে!

স্নেহা : [ রাহুলের হাতের উপর হাত রেখে একটু হেসে ] এইভাবে রেগে আছেন কেনো!

রাহুল : [ ফুফিয়ে অন্যপাশ ফিরে গিয়ে ] রেগে নেই! আচ্ছা ডোর অফ করে ভেতরে যাও! ঘুমিয়ে পড়ো! রাত অনেক হয়েছে! [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] বাই! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : রাহুল! [ বলেই রাহুলের হাত ধরে রাখে, রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে কাছে এসে দাঁড়ালো ]

[ স্নেহা রাহুলের জ্যাকেটের শোল্ডারের দিক ঝেড়ে দিয়ে ঠিক করে টেনে ধরে রাহুলের একদম কাছে এসে দাঁড়ায় ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে নিচের দিক তাকিয়ে থেকে ] সস..সত্যি রাহুল এভাবে গেলে আমার রার..রাতে ঘুম আসবে না…

[ রাহুল রাগ কন্ট্রোল করে..একটু হেসে দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে কপালে একটি চুমু দেই! সাথে সাথেই স্নেহার চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়লো,]

রাহুল : [ স্নেহার চোখের পানি মুছে দিয়ে দু-চোখের উপর চুমু খেয়ে ] এবার?.. আসবেতো ঘুম?..

স্নেহা : [ হেসে মাথা নাড়ালো ] নাহ!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] তাহলে?..

[ স্নেহা তেডি স্মাইল দিয়ে আংগুল দিয়ে ইশারা করলো ]

রাহুল : অও! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে জড়িয়ে ধরে ] Now ওকে?..

স্নেহা : ইয়েস্ [ মাথা তুলে ] আচ্ছা ঠিকাছে এবার! যান…নাহলে কাল ভার্সেটিতে লেইট হয়ে যাবেন!

রাহুল : ওকে ওকে! বাই

স্নেহা : বাই [ রাহুল চলে গেলো ]

[ স্নেহা ডোর অফ করে রুমে গিয়ে খাটে বসে রাহুলের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে করছে আর ব্লাশিং হচ্ছে,]

[ হঠাৎ, প্রায় কিছুক্ষণ পর দরজায় বেল বেজে উঠলো ]

স্নেহা : [ মনে মনে ] এতো রাতে আবার কে হতে পারে?..আই থিংক জারিফাই হবে,

[ বলেই এক্সাইটেড হয়ে উঠে গিয়ে দরজা খোলার জন্য দূরবীন দিয়ে তাকাতেই স্নেহা শকড হয়ে যায়, ভয়ে বুকটা কেপে উঠলো স্নেহার, ]

স্নেহা : [ মনে মনে ] দারোয়ান ?. উনি আবার কেনো এলো?.. মার্জানকে ডাকবো… কিন্তু ওর তো সেন্সই নেই! রার…রাহুল…উফফ! রাহুলের নাম্বারই তো নেই!
জারিফা ও এখনো আসলো না…

[ এসব ভাবতেই বেলটা আবার বেজে উঠলো, স্নেহা ঘাবড়ে উঠে ] জাজ…জারিফাকে ফোন দিবো.. না…নাহ ওকে ডিষ্টার্ব করা ঠিক হবে না… থাক স্নেহা! পজিটিভ ভাব..হয়তো উনি কোনো কাজে এসেছে… [ বলেই স্নেহা ঠিকটাক হয়ে ধীরেধীরে দরজাটা খুললো ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 23

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 23

writer-Jubaida Sobti

 

স্নেহা ধীরেধীরে মাথা ফিরিয়ে রাহুলের দিক তাকালো, রাহুল সাথে সাথে স্নেহাকে চোখ টিপ মারলো! স্নেহা লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি আবার অন্যপাশ ফিরে যায়,

রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার কাধে স্লাইড করে সব চুল একপাশ করে রাখলো, স্নেহা শিউরে উঠলো, হার্টবিট দ্রুত বাড়তে লাগলো স্নেহার,

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] ভয় পাচ্ছো স্নেহা! [ with tedi smile ]

[স্নেহা কোনো জবাব দিলোনা শুধু জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে ]

রাহুল : স্নেহা তোমার নাক!

[ স্নেহা অবাক হয়ে নাকে হাত দিলো,]

রাহুল : লাল হয়ে আছে! [ With tedi smile ]

[ স্নেহা লজ্জায় ব্লাশিং হয়ে মাথা নিচু করে একটু হেসে দেই, রাহুল ও হেসে পেছন থেকে স্নেহাকে শক্ত করে চেপে জড়িয়ে ধরে, আশেপাশে কিছুই দেখা যাচ্ছে না কুয়াশায়…শীতল ঠান্ডা বাতাস বইছে…দুজনেই সেই বাতাস উপভোগ করছে..]

রাহুল : [ স্নেহার কাধে মাথা রেখে ] ঠান্ডা লাগছে তাই তো ?…

স্নেহা : না..নাহ তো!

রাহুল : ওহ! রিয়েলি?..[ স্নেহাকে ছেড়ে দিয়ে ] এবার?..

[ স্নেহা হেসে উঠে, ]

রাহুল : [ আবার স্নেহাকে জড়িয়ে ] আচ্ছা তোমরা মেয়েরা এমন কেনো?..

স্নেহা : কেমন?..

রাহুল : অনেক কথায়, মনের মধ্যে জমিয়ে রাখো! যেমন এখন তোমার ঠান্ডা লাগছিলো..তাও মুখ ফুটে বলছিলেনা যে আমার ঠান্ডা লাগছে…

স্নেহা : কক..কই?… ঠা..ঠান্ডা লাগছিলো নাতো!

[ রাহুল স্নেহাকে একটানে তারদিক ফিরিয়ে নেয়, স্নেহা ঘাবড়ে উঠে রাহুলের দিক তাকিয়ে থাকে, ]

রাহুল : [ স্নেহার কপালের সাথে তার কপাল লাগিয়ে ] ইউ কান্ট লাই টু মি! স্নেহা! আই কেন্ ফিল ইউ!

[ স্নেহা রাহুলের চোখের দিক তাকিয়ে আছে, রাহুল স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে একদম কাছে টেনে নেই!…স্নেহা রাহুলের জ্যাকেট শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে ফেলেছে, স্নেহার চুলগুলো উড়ে এসে দুজনের মুখ ঝাঁপিয়ে দিচ্ছে বারবার…রাহুল ধীরে ধীরে স্নেহার নাকের সাথে নাক লাগিয়ে হাত দিয়ে স্নেহার পিঠে স্লাইড করতে লাগলো… স্নেহা তার চোখ বন্ধ করে ফেলেছে…রাহুল ও চোখ বন্ধ করে ধীরেধীরে স্নেহার ঠোটের দিক মুখ এগুতে নিলে,]

হঠাৎ,

স্নেহা : রার…রাহুল No!…

[ বলতেই রাহুল থেমে যায়, চোখ খুলে দেখে স্নেহা তার চোখ এবং ভোর কুঁচকে গুটিসুটি হয়ে আছে,…রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার কোমোড় থেকে তার হাত সরিয়ে নেয়! স্নেহা চোখ খুলে তাকালো রাহুলের দিক, রাহুল ও চুপ করে চেয়ে আছে স্নেহার দিক… ]

হঠাৎ,রাহুল কিটকিটিয়ে হেসে উঠে,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হা..হাস…হাসছেন কেনো?..

রাহুল : [ হেসে হেসে ] Oh my godness! স্নেহা! your expression was so cute!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া হয়ে মাথা নিচু করে ] এক্সুলি… রাহুল!…

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] ওকে রিলেক্স স্নেহা! It’s not a pressure!

[ Sneha blushing ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা! তোমার মুখটা অনেক শুকিয়ে আছে দেখেই মনে হচ্ছে দুদিন ধরে..কিছুই মুখে ও দাওনি! এম আই রাইট?…

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে দু-হাত দিয়ে রাহুলের মুখ ধরে কাদো কন্ঠে ] এমন লেগেছিলো যেনো!

রাহুল : আমি ও কিছু খায়নি! তাই তো?

[ বলতেই স্নেহার চোখে পানি টলমল করছিলো,রাহুল ও তার কপাল স্নেহার কপালে লাগিয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে,স্নেহার চোখের দিক তাকালো,]

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! উই কুড্ হেয়ার ইচ্ আদার্, ফিল ইচ্ আদা্র কে্ন ইভেন…..

স্নেহা : [ একটু হেসে ] টক্ উইথ ইচ্ আদা্র! [ বলতেই রাহুল ও মুচকি হেসে স্নেহাকে জড়িয়ে ধরে,স্নেহা ও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে রাহুলকে! ]

রাহুল : আচ্ছা চলো এখন ডিনার করবে!

[ বলেই রাহুল স্নেহাকে ছুটিয়ে হুট করে কোলে তুলে নিলো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] আরে রাহুল কি করছেন? কেউ…

রাহুল : ডোন্ট ওয়ারি এইখানে তুমি, আমি ছাড়া আর কেউই দেখছে না!

[ বলেই হেটে শীপের ভেতরের রুমে এগিয়ে যায়, আর স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলের দিক চেয়ে থাকে,

ভেতরে গিয়ে দেখে টেবিলে অলরেডি ডিনার সাজিয়ে রেডি করা আছে, রাহুল স্নেহাকে নামিয়ে একটা চেয়ার এগিয়ে দিয়ে স্নেহাকে বসিয়ে Opposite চেয়ারে সে ও বসে পড়ে,]

স্নেহা : [ চারদিক একবার চোখবুলিয়ে আবার রাহুলের দিক তাকিয়ে ] এসব ড্রাইভ করতে করতে ৫ মিনিটের জন্য মোবাইল টিপছিলেন তখনি করেছেন তাই না?..

রাহুল : ইয়েস্ [ বলেই স্নেহাকে চোখ টিপ মেরে প্লেট এগিয়ে দিলো, হঠাৎ চেঁচিয়ে ] ওহ! শিট্, ফ্রন!

– স্নেহা!

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : তোমার ফ্রনে এলার্জি তাই না?..

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] How do you know?..

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তার চেয়ারটি স্নেহার কাছে এগিয়ে এনে পাশে বসে স্নেহার দিক তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ, এবং স্নেহার সামনের চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে ধীরেধীরে মুখে স্লাইড করতে লাগলো, স্নেহার হার্টবিট আবারো দ্রুতগতিতে চলতে লাগলো রাহুলের ছোয়াতে, চোখ নামিয়ে নিচের দিক তাকিয়ে রইলো স্নেহা,]

রাহুল : তোমার হোয়াইট স্কিনের মাঝে যে রেডনেস্-টা ভেসে উঠে…ওটা দেখে বুঝেছি!

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালে, রাহুল কিটকিটিয়ে হেসে উঠে,]

রাহুল : ওকে ওকে!রিলেক্স এভাবে তাকাচ্ছো কেনো! আসলে মায়ের বার্থডেতে ঐদিন যখন তোমার সাথে লাঞ্চ করছিলাম…তখন তুমি ফ্রন রাইস্ থেকে চিংড়ি এভোয়ড করে খাচ্ছিলে,জাষ্ট ঐটা থেকে আইডিয়া করলাম!

স্নেহা : এতোকিছু খেয়াল করেছেন?…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] ওহো! স্নেহা আমিতো তোমার সবকিছুই খেয়াল করি [ বলেই নটি মাইন্ডে স্নেহাকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত বারবার দেখতে লাগলো ]

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের মাথায় একটি বারি দিয়ে ] ছিঃ রাহুল! স্টপ ইট!

রাহুল : আচ্ছা তুমি একমিনিট বসো আমি এক্ষুণি আসছি!

স্নেহা : কিন্তু কোথায় যাচ্ছেন?…

রাহুল : তোমার জন্য অন্য ডিশ আনতে!

স্নেহা : ইটস্ ওকে! রাহুল ডোন্ট ওয়ারি আমি ম্যানেজ করে নেবো!

রাহুল : নো! ওয়ে… [ বলেই উঠে বেড়িয়ে যায় ]

[ স্নেহা আর কিছু না বলে মনে মনে হেসে মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চারদিক তাকিয়ে দেখতে লাগলো, আশেপাশে জানালা দিয়ে কিছুই দেখা যাচ্ছে না..শিপ চলছে, চারদিক শুধু পানি আর পানি… ]

হঠাৎ, কিছুক্ষণ পর রাহুল এগিয়ে এসে টেবিলে একটি সুপের বাটি রাখলো,

রাহুল : স্নেহা! তোমার আবার চিকেনে এলার্জি নেই তো?..

স্নেহা : [ হেসে ] হাউ ফানি! রাহুল..চিকেনে এলার্জি থাকে নাকি?..

রাহুল : থেংক গড! [ বলেই চেয়ারে বসলো ]

স্নেহা : হ্যা! তবে চিকেনে ও একটা প্রবলেম আছে!

রাহুল : হুম! তা কি?..

স্নেহা : চিকেন ফ্যাট! তাই আমার ওয়াইট বাড়তে পারে!

রাহুল : হোহ হো! [ বলেই স্নেহার সামনে হাত তুলে বডি দেখিয়ে ] ডোন্ট ওয়ারি বেবি! কোলে চড়তে পারবে!

[ স্নেহা হাসতে থাকে রাহুলের কান্ড দেখে ]
________________________________
এইদিকে..আসিফ ড্রাইভ করতে লাগলো, আর মার্জান মাতাল অবস্থায় উলটা পালটা বক বক করে যাচ্ছে,

মার্জান : আমি আপনাকে….বল…বলেছি?..

আসিফ : ভালো করে দাঁড়াতে পারছো না আবার বলছো বাড়ী একা যাবা!

মার্জান : Lis…Listen! আপনার! তিতকরলার মতো কক…কথা গুলো না! আমার…সাস…সামনে বলবেন না! [ চেঁচিয়ে ] আই হেটটট তিতকরলা! ইয়াককক! [ বলেই আসিফের গায়ের দিক মুখ এনে বমি করার ট্রাই করতে লাগলো ]

আসিফ : [ তাড়াতাড়ি গাড়ী থামিয়ে চেঁচিয়ে ] হেই হেই! Listen.. কি করছো ওয়েট!

[ মার্জান আসিফের দিক তাকিয়ে কিটকিটিয়ে হেসে উঠে ]

আসিফ : থেংক গড! আমি ভেবেছি সত্যি সত্যি! [ বলেই একটি জোড়ে শাস ফেললো ]

মার্জান : উমম! আপনি ভাবলেন কেনো?.. হুম?.. আপনাকে ভা..ভাবতে?..[ চেঁচিয়ে ] বলেছি?.. আরে এভাবে ডায়নেসোর এর মতো হা কক..করে তাকিয়ে আছেন কেনো?..হুম?.. [ চেঁচিয়ে ] কামঅন! ড্রাইভিং ফাষ্ট!… [ বলেই আসিফের গাল টেনে ধরে বুমমম! উমম বুমমম! করে চেঁচাতে লাগলো ]

আসিফ : [ মার্জানের হাত সরিয়ে দিয়ে ] আর ইউ ক্রেজি?…হোয়াট আর ইউ ডোয়িং?..আমার ফেস্ দেখতে কি গাড়ীর গিয়ার মনে হচ্ছে তোমার ?…

মার্জান : [ কাদো কন্ঠে ] তাহলে আম…আমাকে ড্রাইভ করতে দেন!

আসিফ : ওহ ইয়াহ! দুনিয়া-দারি তো এখনো কিছুই দেখা হয়নি আমার, দুধের দাত পড়েছে কিনা ও এখনো সন্দেহ আছে…আর মহারাণী বলছে ড্রাংক অবস্থায় তাকে ড্রাইভিং করতে দিতে! এই যে মেম শুনুন! চুপচাপ সামনে তাকিয়ে বসে থাকুন, আর আমাকে সস্থি হয়ে একটু ড্রাইভ করতে দিন!

[ বলেই আসিফ গাড়ী স্টার্ট দিয়ে চালানো শুরু করলো, কিছুক্ষণ পর কোণা চোখে মার্জানের দিক তাকালে দেখে মার্জান তাকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে..যদি এখন ও কোনো ছোট প্রানী হতো গপ করেই গিলে খেয়ে ফেলতো! ]

মার্জান : [ সিটে্ পা তুলে বসে আসিফের দিক তাকিয়ে চেঁচিয়ে ] আইই! এইভাবে তাকাচ্ছেন কেনো?..হুমম?..[ আসিফের মাথায় হাত দিয়ে গুলি বানিয়ে ধরে ] আই উইল কিল ইউ! [ চিৎকার করে ] ডিস!

আসিফ : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] সো্ ফানি!

মার্জান : Why are you laughing?.. হ্যা?..[ চেঁচিয়ে ] Come on tell me!

[ চোখ বটে ] tell me…. tell me…

[ বলতেই মাথা ঢলে সি্টে শুয়ে পড়ে,]

আসিফ : [ তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে ] Mad girl! [ বলেই আবার সোজা তাকিয়ে ফেললো ]
________________________________
এইদিকে, রাহুল ডিনার করে মুখে হাত দিয়ে স্নেহার দিক এক পলকে চেয়ে আছে,

স্নেহা : আচ্ছা! কি হয়েছে বলুনতো কখন থেকেই তাকিয়ে আছেন!

রাহুল : [ ব্লাশিং হয়ে একটু হেসে দেই! ] আচ্ছা তুমি ডিনার করেছো এগুলো হয়েছে?..এসবে মশার পেট ও ভরবে না! [ বলেই স্নেহাকে আরো সুপ ঢেলে দিতে লাগলো ]

স্নেহা : আচ্ছা! এমনভাবে বলছেন যেনো নিজে কি খেয়ে তরিয়ে ফেলেছেন!

রাহুল : এক্সকিউজ মি! আমি কিন্তু তোমার চেয়ে ও বেশী খেয়েছি!

স্নেহা : হ্যা! তা আমি ভালো করেই দেখেছি…খেয়েছিলেন নাকি আমার দিকে চেয়েছিলেন!

রাহুল : [ স্নেহার একদম কাছে মুখ এনে স্নেহার চেয়ারের কাধে হাত রাখলো ] তো কি করবো বলো?..তুমি সুন্দরই এমন না তাকিয়ে থেকে পারছিলামই না!

স্নেহা : [ একটু ব্লাশিং হয়ে হেসে রাহুলের নাক টেনে দিয়ে ] আমাকে তাকিয়ে থাকলে কি পেট ভরে যাবে মিষ্টার?..

রাহুল : পেট ভরতে হবে না, পেট অলরেডি ভরা ছিলো, [ ব্লাশিং হয়ে ] Now! মন ভরলেই চলবে, [ with tedi smile ]

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] হ্যা! পেট ভরা ছিলো…আমি দেখেছি কিভাবে ভরা হয়েছে!

[ রাহুল ভোর কুচকে কনফিউজড হয়ে স্নেহার দিক চেয়ে রইলো ]

স্নেহা : রাহুল! এভাবে ড্রিংক করলে লিভারের ক্ষতি হবে!

[ রাহুল মাথা নিচু করে স্নেহার চেয়ারের কাধ থেকে হাত সরিয়ে সোজা হয়ে বসে ]

রাহুল : স্নেহা! যখন আমি একা হয়ে গিয়েছিলাম…

– বাবা-মা কেউই ছিলো না আমার পাশে, একটা অনাথ বাচ্চার মতোই বড় হয়েছিলাম!

You know! কিছুর অভাব ছিলোনা আমার কাছে…বড় বাড়ী, গাড়ী, গিটারহাউজ, রেসিং কার, [ একটু হেসে ] স্পাইডার ম্যানের সুইটার!
সব জিনিষই ছিলো আমার কাছে! [ স্নেহার দিক ফিরে ] কিন্তু স্নেহা! আমি যাদের সাথে চেয়েছিলাম, তারাই ছিলোনা!
স্কুলে সবাই পেরেন্টস্ ডে সেলেব্রেট করতো তাদের পেরেন্টসদের সাথে,

আর আমি…[ বলেই হেসে উঠে ] দূর থেকে দাঁড়িয়ে তাদের এঞ্জয়মেন্ট দেখতাম! সজ্য করতে না পেরে গাড়ীতে উঠে গিয়ে ড্রাইভারকে বকাঝকা করতাম! কেনো এনেছো আজ স্কুল? তোমার মনে নেই আজ পেরেন্টস্ ডে!আমার তো পেরেন্টস্ নেই আমাকে কি এইখানে লুডু খেলতে এনেছো?.. [ একটা জোড়ে শাস ফেলে ] দাদী অনেক বুঝাতো আমাকে, রাহুল এভাবে বলেনা পেরেন্টসদের ব্যাপারে এইসেই কতো কিছু! দাদী সবসময় আমার পাশে থাকার চেষ্টা করেছে, কিন্তু জানো স্নেহা! তাও কোনো একদিকে নিজেকে খুব একা একা মনে হতো!

অনেক ট্রাই করেছি দু-জনকে এক করতে, But, their attitude! killed me [ বলেই হেসে উঠে ] মায়ের কাছে যায় হাসি মুখে, কিন্তু এটা বলার সাহস হয়না! চলে এসো মা আবার, আমাদের সাথেই থাকো!

স্নেহা! যেইদিন থেকেই এসব পেইন আর সজ্য হচ্ছিলো না…তখন থেকে এটা বেচে নিয়েছি!

i swear স্নেহা আমি Addicted না! বাট, যখনি পেইন লাগে…সজ্য হয় না..তখনি এটাকে পার্টনার করেনি!

স্নেহা : [ রাহুলের হাত কাছে টেনে জড়িয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে কাধে মাথা রেখে ] এখন তো আর একা নয়! হুম?…

[ রাহুল মুচকি হেসে স্নেহার হাত মুঠি বেধে শক্ত করে তার হাতে ধরে স্নেহার দিক তাকিয়ে মাথা নাড়ালো! ]

স্নেহা : আজ থেকে আর খেতে হবে না!ওকে?…আর যখনি এসব সামনে থাকবে…আপনি আমার কথা মনে করবেন দেখবেন! আপনার খেতে ইচ্ছেই করবে না!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে স্নেহাকে বুকে টেনে নেয় ] স্নেহা! আমাকে প্রমিস করো! কখনো ছেড়ে যাবা না!

স্নেহা : [ রাহুলকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ] যাবো না! প্রমিস্ [ বলেই চোখ বন্ধ করে রাখে ]

হঠাৎ, স্নেহার ফোন বেজে উঠলো, স্নেহা মাথা তুলে ফোন হাতে নিয়ে রাহুলের দিক তাকালো,

রাহুল চোখ দিয়ে ইশারা করে জিজ্ঞেস করলো কে?..

স্নেহা : মা! [ বলেই ফোন রিসি্ভ করলো ] হ্যা! মা বলো!

মা : কেমন আছিস স্নেহা?..

স্নেহা : ভালো! তোমরা কেমন আছো?..রাশু এক্সাম দিচ্ছেতো?

মা : ভালোই আছি! হ্যা দিচ্ছে! [ বলেই চুপ করে রইলো ]

[ স্নেহা রাহুলের দিক তাকিয়ে আংগুল দিয়ে ইশারা করে দু-মিনিট সময় দিতে বললো ]

রাহুল : ইয়াহ! শিয়র..

স্নেহা : [ হেটে অন্যপাশ গিয়ে দাঁড়িয়ে ] কি হয়েছে মা?..সব ঠিকাছে তো?..

মা : [ কাদো কন্ঠে ] জমিটা বিক্রি করে দিয়েছি!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে চেঁচিয়ে ] কিন্তু মা কেনো?…

রাহুল স্নেহার চেঁচিয়ে উঠা দেখে অবাক হয়ে স্নেহার দিক তাকালো তা দেখে স্নেহা গোমড়া মুখে একটু হেসে অন্যপাশ ফিরে যায়,

মা : পাঁচবছর আগে যে লোন নিয়েছিলো না তোর বাবা! ওটার টাকা শোধ করা বাকি ছিলো…তাই আর রাস্তা খুজে পাচ্ছিলাম না! [ ফুফিয়ে কেদে ] এখন তো কোনো চাকরী ও নেই!

স্নেহা : কাঁদছো কেনো মা?..যাক! বিক্রি করে প্রবলেমই তো Solve করা হয়েছে! এখন আর টেনশন করো না!

মা : জমি বিক্রি করে ও পুরো টাকা মেলানো যায়নি স্নেহা! ওদের থেকে কাগজ এসেছে! একমাসের মধ্যে যদি পুরো টাকা শোধ করা না হয়, তাহলে বাড়ীটা ও নিলামে চলে যাবে!

[ স্নেহা কানে ফোন ধরে শকড হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ]

মা : স্নেহা! তুত…তুই পারলে তোর টিউশন থেকে রাশুর জন্য কিছু টা..টাকা পাঠাস! [ বলেই কেঁদে উঠে ]

স্নেহা : মা! আ..আমিতো টিট..টিউশন ছেড়ে দিয়েছি!

মা : [ ঢোক গিলে ] ছেড়ে দিয়েছিস! ওহ!

স্নেহা : কিক…কিন্তু মা! তুমি টেনশন করো না,আমি আবার জয়েন করে নেবো! আ..আমি টাকা পাঠাবো! আচ্ছা…বাবা কেমন আছে!

মা : টেনশনে অসুখ বাড়ছে আর কমছে এভাবেই!

স্নেহা : ঔষধ?..

মা : [ কাদো কন্ঠে ] যেটুকু টাকা ছিলো, রাশুর ফিস্ ভরে দিয়েছে!

[ স্নেহার চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে, কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না..]

স্নেহা : [ কান্না কন্ট্রোল করে ] টে..টেনশন করো না…আম..আমার ভার্সেটি ফিসে্র টাকাগুলো রয়ে গেছে..

ওগুলো কাল পাঠিয়ে দিবো!

মা : কিক…কিন্তু তুই?…

স্নেহা : বাবার চেয়ে ও ভার্সেটিতে পড়া ইম্পরট্যান্ট না মা! আর তুমিও চিন্তা করো না, আমি আরো কয়েকটা টিউশন বাড়িয়ে যা পারি পাঠানোর চেষ্ঠা করবো!

[ স্নেহার মা কোনো জবাব না দিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে উঠে, ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] দেখো মা বললাম তো কেদো না! নয়তো আমি ও কাঁদতে শুরু করবো এখন!

মা : [ কাদো কন্ঠে ] পাগলী একটা! ঠিকাছে আমি কাঁদছি না! তোর ও কাঁদতে হবে না!

স্নেহা : মা! তুমিই তো বলেছিলে কাঁদলে সব ঠিক করা যায় না মনে সাহস রাখতে হয়! [ চোখ মুছে হেসে ] সো্ গুড গার্লের মতো হেসে দাও! নাহলে আমি যেদিন আসবো না ঐদিন এমনভাবে শুরশুরি দিবো হাসি থামাতেই পারবে না!

মা : [ একটু হেসে উঠে ] খেয়েছিস?..

স্নেহা : হ্যা! তোমরা?..

মা : খেয়েছি! আর শোন রাতে একা কোথাও বের হবি না! তোর ফ্রেন্ডসরা কেমন আছে?

স্নেহা : হ্যা! মা সবাই ভালো!

মা : আচ্ছা তাহলে ঘুমিয়ে পড়! কাল ক্লাস আছে?..

স্নেহা : হ্যা! আছে!

মা : সাবধানে যাস! রাস্তাঘাট দেখে শুনে পাড় হবি!

স্নেহা : আচ্ছা মা! ঠিকাছে!

মা : আচ্ছা!

স্নেহা : গুড নাইট!

[ ফোন রেখে স্নেহা ভালো করে চোখ মুছে, মুখে হাসি ফুটিয়ে রাহুলের দিক এগিয়ে এসে বসলো, রাহুল অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ]

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] সরি! ওয়েট করানোর জন্য! এক্সুলি মা ফোন করেছিলো, তাই….

রাহুল : এমনভাবে একটিং করছো স্নেহা! যেনো আমি তোমার ফেইস্ পড়তে জানিনা!

[ স্নেহা অবাক চোখে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : তোমার হাসিটা আমাকে দেখানোর জন্যই ছিলো! তোমার ফেইস বলছে কিছুতো একটা হয়েছে!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] কক..কই নাতো! কিছুই হয়নি…জাষ্ট!

রাহুল : [ স্নেহার হাত কাছে টেনে নিয়ে ] স্নেহা! You know আই লাভ ইউ সো্ মাচ্! আমাকে বলতে প্রবলেম কি?…

স্নেহা : সত্যি রাহুল কিছুই হয়নি! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : [ স্নেহার গালে রয়ে যাওয়া পানির ফোটাটি আংগুল দিয়ে নিয়ে ছিটকে মারে, ] আগেও বলেছি স্নেহা! ইউ কান্ট লাই টু মি!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে আবার রাহুলের দিক ফিরে হেসে ]
আচ্ছা রাহুল! আমার না ঠান্ডা লাগছে অনেক!

রাহুল : বলো!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আসলে..বাবার শরীরটা তেমন ভালো না..আর উনিও কিনা ঠিক মতো ঔষধ নেই না! তাই আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছে! মা এটাই বলছিলো! [ রাহুল স্নেহাকে তার দিক ফেরালে দেখে স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে ]

স্নেহা : আই মিসিং দেম! রাহুল!

[ বলতেই চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো, রাহুল স্নেহার চোখের পানি মুছে দিয়ে বুকে টেনে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখলো,]

স্নেহা : [ মাথা তুলে ] ডোন্ট ওয়ারি! আই এম ওকে রাহুল!

রাহুল : শিয়র!

স্নেহা : হুম! [ বলেই হেসে মাথা নাড়ালো, রাহুল ও একটু সস্থি হয়ে হেসে স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে আবার জড়িয়ে ধরলো ]

হঠাৎ,

রাহুল : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে ] হেই!

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : চলো ডান্স করি!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] ডান্স?..

রাহুল : ইয়েস্

[ বলেই হুট করে উঠে এগিয়ে গিয়ে মোবাইলের সাথে কানেক্ট করে মিউজিক ছেড়ে দিলো, আর স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো রাহুলের কান্ড, রাহুল স্নেহার দিক এগিয়ে এসে হাত বাড়িয়ে স্নেহাকে টেনে দাড় করিয়ে কাছে টেনে নিলো…]

স্নেহা : সিস্ সি্রিয়াসলি রাহুল ডান্স?..

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে তার নাক স্নেহার নাকের সাথে লাগিয়ে স্নেহাকে অন্যপাশ ফিরিয়ে দিলো এবং ধীরেধীরে স্নেহার মুখের সাথে মুখ লাগিয়ে দাড়ি দিয়ে ঘষে দিলো,স্নেহা শিউরে উঠে একটু মুচকি হাসে,]

রাহুল : [ স্নেহার কানের দিক মাথা এনে ফু দিয়ে চুল সরিয়ে ] Now ওকে?..[ with tedi smile ]

[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না রাহুল এর জ্যাকেটটা শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রইলো… রাহুল স্লাইড করে স্নেহার একহাত তার হাতে মুঠি বেধে ধরে…আরে হাতে স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে ধরে, ধুলিয়ে ডান্স করাতে লাগলো স্নেহাকে, কিছুক্ষণ পর রাহুল…তার হাত স্নেহার কোমোড় থেকে স্লাইড করে পিঠের দিক এগিয়ে নিয়ে সব চুল এক পাশে এনে রাখলো,

স্নেহার হার্টবিট বাড়তে লাগলো…তবে ভালোই লাগছে তার রাহুলের ছোয়াতে…ধীরেধীরে স্নেহা তার মাথা রাহুলের কাধে নুয়ে রাখলো…রাহুল চোখ বন্ধ করে স্নেহার খালি কাধে স্মেল নিয়ে একটি চুমু বসিয়ে দিলো..স্নেহা কেপে উঠে চোখ বন্ধ করে রাহুলের জ্যাকেটটা আরো শক্ত করে চেপে ধরলো…

রাহুল স্নেহার হাত জ্যাকেট থেকে ছুটিয়ে নিয়ে হাতে স্লাইড করতেই স্নেহা তাড়াতাড়ি পেছন ফিরে গিয়ে জোড়ে জোড়ে শাস ফেলতে লাগলো…রাহুল পেছন থেকে এগিয়ে গিয়ে স্নেহার হাত ধরতেই স্নেহা হুট করে দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে শিপের কিনারায় গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো…স্নেহা চোখ বন্ধ করে তার বুকে হাত দিয়ে চেপে ধরে আছে ওড়না আর চুলগুলো বাতাসে বিলিয়ে দিচ্ছে..

রাহুল : [ ধীরেধীরে স্নেহার পাশে এগিয়ে এসে রিলিং ধরে পানির দিক তাকিয়ে ] আম সরি! স্নেহা…

স্নেহা : [ চোখ খুলে শক্ত করে শিপের রিলিং ধরে ] আপনি বলেছিলেন আমাদের টাইটানিক পোজটা কমপ্লিট করা হয়নি!

রাহুল : হ্যা! হয়নি!

স্নেহা : আপনি হয়তো শুনতে পাননি আমি বলছি আমাদের টাইটানিক পোজটা কমপ্লিট করা হয়নি!

রাহুল : ইয়া! You say টাইটানিক [ বলেই শকড হয়ে স্নেহার দিক তাকালো ] অওও! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে ]

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে, রাহুল ও ব্লাশিং হয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়, ]

কিছুক্ষণ পর, স্নেহার বুকটা ধুপ করে উঠলো…শরীরের লোম গুলো শিউরে উঠছে….কারো ছোয়ায়, রাহুল পেছন থেকে স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে স্লাইড করে দাঁড়ালো, এবং স্নেহার কাধের দিক মাথা এনে [ কানে কানে ] ইউ শিয়র স্নেহা?…

স্নেহা মাথা ঘুড়িয়ে রাহুলের দিক তাকালো…রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহাকে…

স্নেহা রাহুলের বুকে মাথা ঢলে দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো, রাহুল একটু হেসে ধীরেধীরে স্নেহার মুখের কাছে মুখ এনে…স্নেহার ঠোটে তার ঠোট মিশিয়ে দিলো,…পানি বয়ে চলছে…ঠান্ডা বাতাস গা ছুয়ে যাচ্ছে…রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার উড়ন্ত ওড়নাটা তাদের মুখের উপর ঝাঁপিয়ে দিলো…

সময়টা এমনই লাগছিলো তাদের যেন,হার্টবিটের সাথে সাথে শিপটা ও দ্রুতগতিতে চলতে শুরু করে দিয়েছে..

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 22

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 22

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : [ চোখ বন্ধ করে স্নেহার পিঠে স্লাইড করতে করতে ] স্নেহা! আমাকে ছেড়ে যাবানাতো?..

স্নেহা : [ ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ] নাহ! কখনো না!

[ রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে ছুটিয়ে এনে মুখের দুপাশে হাত রেখে আংগুল দিয়ে গাল বেয়ে পড়া পানি গুলো মুছে দেই ]

রাহুল : ওকে! রিলেক্স! আর কাঁদতে হবে না কাজল গুলো লেপ্টে যাচ্ছে…[ বলেই চোখের নিচের পানি গুলো ও মুছে দিতে লাগলো ]

স্নেহা : [ আবারো কেঁদে উঠে ] I m…[কাদো কন্ঠে ] I m sorry রাহুল!

রাহুল : শিসসস! [ বলেই বাতাসে চলে আসা স্নেহার মুখের উপর চুল গুলো নিয়ে নিয়ে কানে গুজে দিচ্ছে, ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] I hurt you রাহুল!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে ] I won’t be able to live without you স্নেহা!

[ স্নেহা কাঁদছে আর হাসছে, রাহুল আবারো স্নেহাকে টেনে ঝড়িয়ে ধরে… স্নেহা চোখ বন্ধ করে রাহুলের জ্যাকেট শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে আছে…আর চোখের পানিতে তার জ্যাকেট ভিজিয়ে দিচ্ছে….]

রাহুল : [ স্নেহার কানের দিক ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! Don’t cry! now rahul is your না?..এখন তো তোমারই!

[ স্নেহা হেসে চোখ খুলতেই গেইটের দিক নজর পড়ে….স্নেহা ধীরেধীরে রাহুল থেকে তার হাত সরিয়ে ছুটে আসতে চাইলে রাহুল তাকে আরো শক্ত করে ধরে রাখে… স্নেহা আবারো ছুটে আসার চেষ্টা! ]

রাহুল : What স্নেহা?…

স্নেহা : সি্..সি্ক…সি্কিউরিটি!

রাহুল : [ একটু হেসে ] Whatever!

[ বলেই স্নেহাকে আরো শক্ত করে ঝড়িয়ে পিটে স্লাইড করতে লাগলো… ]

স্নেহা : No রাহুল! প্লিজ..ছাড়েন…

রাহুল হেসে স্নেহাকে ছেড়ে তার দুহাত স্নেহার কাধে রেখে দাঁড়ালো…

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! এতো নার্ভাস্ হচ্ছো কেনো?..

স্নেহা : ওর…ওরা..হয়তো দেখছে…

[ রাহুল হেসে উঠে.. স্নেহার কান্ড দেখে, হঠাৎ…পাশথেকে ” ওয়াও ” বলে চিৎকারের শব্দ ভেসে আসে…স্নেহা এবং রাহুল দুজনেই ফিরে তাকিয়ে দেখে…জারিফা, মার্জান, রিদোয়ান, শ্রেয়া, আসিফ…সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে… ]

রিদোয়ান : আমরাতো টেনশন করছিলাম রাহুল…তুই যেভাবে দৌড়ে চলে এলি…

শ্রেয়া : আরে ওয়াহ! আজ শুধু নিউ নিউ কাপল ক্রেট হচ্ছে..

মার্জান : ইয়াহ! ইউ আর রাইট…আমাদের তো আজ কাপল ডে হিসাবে সেলেব্রেট করা উচিৎ… [ বলেই হেসে উঠে…স্নেহা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে রাখে…আর রাহুল ব্লাশিং হয়ে স্নেহাকে কাছে ঝড়িয়ে রাখে…]

আসিফ : কিন্তু এটা ঠিকনা রাহুল…আমরা আসতে লেইট করে ফেলেছি…কিছুই তো দেখলাম না..

জারিফা : [ লাফিয়ে চেঁচিয়ে উঠে ] ইয়াহ ইয়াহ! হি ইস্ রাইট… Once more রাহুল প্লিজ!

শ্রেয়া : ইয়েস্ রাহুল প্লিজ! প্লিজ!

[ রাহুল একটা তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক তাকালো, স্নেহা লজ্জায় ব্লাশিং হয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়… ধীরেধীরে রাহুল স্নেহার একহাত তার হাতে নিয়ে…এক পা বটে মাটিতে বসে…স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে….স্নেহা ও অবাক হয়ে চেয়ে থাকে রাহুলের দিক…দু-জন চোখাচোখি হয়ে আছে….]

রাহুল : হাইওয়ের মোরে বরফ ওয়ালা আইস্ক্রিম খাওয়ার জন্য তোমার পার্টনার হতে চাই স্নেহা! [ With tedi smile ]

[ সবাই একসাথে হেসে উঠে…আর স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে আইস্ক্রিম খাওয়ার মোমেন্টি মনে পড়াতে… ]

রাহুল : মার্মিড হাউস্ ঘুরে দেখার সময় তোমার হাত ধরে রাখার পার্টনার হতে চায়, স্নেহা!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] অউউ! হাউ কিউট!

রাহুল : গাড়ী ফার্ষ্ট ড্রাইভ করার সময়…ধীরে চালাতে বলার জন্য তোমাকে পাশে চাই! স্নেহা!

[ সব মোমেন্টগুলো চোখের সামনে ভাসছে স্নেহার, সাথে চোখ থেকে টপ টপ করে পানি ছুটে পড়ছে… সে জানেনা কেনো পড়ছে…তবে এটা জানে…এসব দূঃখ্যের কান্না নয়…সুখেরই কান্না! ]

রাহুল : ব্লাক সানগ্লাস পড়ে ড্রাইভিং করার সময় রুলস্ মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য তোমাকে পাশে চাই স্নেহা!

[ স্নেহা হেসে উঠে ]

রাহুল : স্নেহা! আই এম সরি! আই কাম লিটল লেইট ইন ইয়র লাইফ! [ কাদো কন্ঠে ] বাট আই হেড টু কাম না?..

[ জোড়ে একটা শাস ফেলে ] আই ওয়ান্ট টু স্পেন্ড এভ্রি মোমেন্ট অফ মাই লাইফ উইদ ইউ!

– স্নেহা! আই লাভ ইউ! ডো ইউ লাভ মি?..

[ স্নেহা হাত দিয়ে মুখ চেপে কান্না কন্ট্রোল করে মাথা নাড়ালো… রাহুল একটা তেডি স্মাইল দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে তাড়াতাড়ি স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরলো..]

[ বাকিরা তালি দিয়ে এক্সাইটেড হয়ে চেঁচিয়ে উঠলো…. ]

জারিফা : [ রিদোয়ানের দিক ফিসফিসিয়ে ] আপনার ও আমাদের মোমেন্ট মনে করিয়ে প্রপোজ করা উচিৎ ছিলো!

রিদোয়ান : এক্সকিউজ মি! আমি আগেই বলেছি..আমি লাভিং পোয়েট্রি পারিনা!

জারিফা : তাই! বুদ্ধু একটা..খেতে তো জানেন তাই না!

রিদোয়ান : হ্যা ওটা! মিস্ যাবে কেনো?..[ বলেই হেসে উঠে ]

জারিফা : Shut-up! [ বলেই চেঁচিয়ে উঠে ] আরে গাইস্ এমন মোমেন্টে… একটা সেল্ফি তো হওয়া জরুরি তাই না…[ বলেই মোবাইলের ক্যামেরা অন করে রাহুল আর স্নেহার দিক ছুটে এলো ]

শ্রেয়া : আরে আরে আমরা ও কেনো বাদ যাবো লেটস্ গো গাইস্ [ বলতেই সবাই একসাথে রাহুল আর স্নেহার দিক এসে…একত্র হলো ]

রাহুল : এ..এক এক সেকেন্ড… [ সবাই অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো, রাহুল স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে চোখের পানি গুলো ভালো করে মুছে দিলো ]

[ সবাই একত্রে হেসে উঠে, ]

জারিফা : অউউ! স্নেহা তুই এতো কেয়ারলেস্ কেনো?..আচ্ছা আচ্ছা কই বাত্ নেই! আবতো হামারি জিজাজি হে! হে না?..[ বলেই রাহুলকে চোখ টিপ মাড়লো ]

শ্রেয়া : বাই দ্যা! ওয়ে স্নেহা ইউ আর সো্ লাকি ইয়ার! তুমি এতো কেয়ারিং বয়ফ্রেন্ড পেয়েছো! [ স্নেহাকে ঝড়িয়ে ] কনগ্রেটস্ কনগ্রেটস্!

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে আবার লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলে ]

রিদোয়ান : আসলে রাহুল তুই ও কিন্তু অনেক লাকি! because তোরটা..আ আই মিন..স্নেহা অনেক সিম্পলি, সিধাসাধা…

জারিফা : [ নাকফুলিয়ে রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] ওহো! মিষ্টার প্রপোজ করেছো এখনো এক ঘন্টা ও হয়নি! মাইন্ড ইট! সো্ ব্রেকাপ করতে ও আমার এক ঘন্টা লাগবে না! [ বলতেই সবাই হেসে উঠে ]

রিদোয়ান : [ রাহুলের কাধে হাত রেখে ইমোশনাল হয়ে ] দেখলি?.. দেখলি তো?…

রাহুল : [ হেসে হেসে রিদোয়ানের পেটে একটি ঘুষি দিয়ে ] আবে ইয়ার! শালী কার দেখতে হবে তো [ বলেই চোখ টিপ মারলো ]

রিদোয়ান : [ অবাক হয়ে মুখে হাত দিয়ে ] আচ্ছা আচ্ছা…তাইতো বলি যখন তখন ট্রেড মারে কেনো তোর মতো!

[ জারিফা নাক ফুলিয়ে চুল ঠিক করে পার্ট মারতে থাকে, তা দেখে বাকিরা আবার হেসে উঠে ]

জারিফা : আরে এতো হাসার দরকার নেই আমার সেল্ফি মিস্ হয়ে যাবে… [ বলেই মোবাইল তুলে ধরলো বাকিরাও পোজ দিয়ে দাঁড়ালো…]

মার্জান : [ জারিফার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে ] আরে আরে…নায়ি নাভেলি কাপল আলাদা আলাদা দাঁড়াবে নাকি…তুই যা আমি তুলছি

[ বলেই জারিফাকে রিদোয়ানের দিক ধাক্ষা দিলো, রিদোয়ান জারিফাকে কাছে টেনে নিয়ে ঝড়িয়ে পোজ ধরলো, আর রাহুল স্নেহাকে ঝড়িয়ে…শ্রেয়া আর আসিফ দুটো কাপলকে মিডলে রেখে দু-জন দু-দিকে দাঁড়ালো! মার্জান সেল্ফি তুলছে ]

শ্রেয়া : [ চেঁচিয়ে ] আরে আমি কই?..ফ্রেমে আমি আসছি না তো!

আসিফ : [ হেসে ] আসলে দেড়-ফুটের মানুষ যদি ১০ ফুটের কাজ করতে চাই এমনি হয়!

[ সবাই হেসে উঠে ]

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে আসিফের দিক তাকিয়ে ] এক্সকিউজ মি! আই এম নট দেড় ফুট ওকে?..আমি ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি!

আসিফ : [ মার্জানের হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে চোখ মেরে ] পেছনে গিয়ে পোজ দাও..এর চেয়ে বেটার অপশন তোমার জন্য আর হতে পারে না…

মার্জান : [ ফুফিয়ে বিরবির করে ] এই ইডিয়ট নিজেকে কি মনে করে?..সবার সামনে আমাকে দেড় ফুট বলে ইন্সাল্ট করছে… হুহ! পরে দেখেনেবো মিষ্টার!

[ বলেই হনহনিয়ে রাহুলের পাশে এসে দাঁড়ায়, ]

রাহুল : আরে! Why are you angry?..

মার্জান : [ ইমোশনাল হয়ে ] আই এম নট দেড়ফুট রাহুল!

রাহুল : ওকে ওকে ডোন্ট বি সেড! হি জাষ্ট কিডিং [ বলেই একহাতে স্নেহাকে আরেকহাতে মার্জানকে ঝড়িয়ে নিয়ে পোজ দিয়ে দাঁড়ায়, ]

ছবি তোলার পর,
___________________________

জারিফা : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরলে রাহুল হেসে সরে রিদোয়ানদের দিক গিয়ে দাঁড়ায় ] স্নেহা! মেরি জান! এখন হ্যাপি তো?..

স্নেহা : অনেক!

[ হঠাৎ, মার্জান ও এসে তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ]

মার্জান : আরে..আমাকে ফেলে হাগ করা হচ্ছে! দিস্ ইস্ নট ফেয়ার! ওকে?..

[ বলতেই তিনজন একসাথে হয়ে ঝড়িয়ে ধরলো ]

মার্জান : এখন আমাদের স্নেহার সব প্রবলেমই শেষ! we are so happy now! আরে হ্যা! স্নেহা! ওকে দেখলি তো কিভাবে তলে তলে কাজ সারিয়েছে?..

[ স্নেহা হেসে উঠে, জারিফা ও মার্জানের গায়ে একটি চড় মেরে হেসে উঠে ]

শ্রেয়া : ওকে! গাইস্ আমাদের এখন পার্টিতে বেক করা উচিৎ…[ এক্সাইটেড হয়ে ] আরে ডান্স বাকি আছে তো তাই না…. কাম কাম লেটস্ গো!

সবাই এগিয়ে যাচ্ছে আবার রুফ-টপে,

হঠাৎ, রাহুল এসে স্নেহাকে পেছন থেকে টান মেরে কাছে টেনে নেয়,

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] আরে রাহুল!

রাহুল : শিসসস! [ বলেই স্নেহাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়ী করে বেড়িয়ে যায় ]

শ্রেয়া : [ হেসে ] I knew that! এমন তো হওয়ারি ছিলো! [ বাকিরা হেসে উঠে ]

রিদোয়ান : [ জারিফার কাছে এসে ঘাড় চুলকিয়ে চুলকিয়ে ] ভাবছি আমি ও…

শ্রেয়া : হ্যা! হ্যা! তোরাও বাদ যাবি কেনো যা যা তোরা ও পালা..

রিদোয়ান : [ জারিফার হাত ধরে টেনে নিয়ে ] কাম! [ বলেই জারিফাকে নিয়ে চলে গেলো ]
_________________________________
মার্জান : [ হেসে শ্রেয়ার দিক তাকিয়ে ] আহারে! তাহলে আজ আমদের সিংগেলদেরই পার্টি সেলেব্রেট করতে হবে!

শ্রেয়া : [ হেসে মার্জানকে ঝড়িয়ে নিয়ে রুফ টপের দিক এগুতে এগুতে ] ইয়াহ! ডিয়ার! ইউ আর রাইট!

সবাই রুফ-টপে গিয়ে চেয়ারে বসলো… খোলা আকাশের নিচে ঠান্ডা ঠান্ডা বাতাস ভালোই লাগছিলো! হঠাৎ, মার্জানের পিপাসা পাওয়াতে সে উঠে গিয়ে একটি ভরা গ্লাস এগিয়ে নিয়ে খেতে লাগলো,

মার্জান : আরে! এই পানি গুলো এতো মিষ্টি কেনো?.. শরবত বুঝি?..[ বলেই পিপাসায় আরো গড়গড় করে খেতে লাগলো ]

শ্রেয়া : [ হেসে ] সো্ ফানি ইয়ার! শরবত হতে যাবে কেনো?..

মার্জান : তাহলে?…

শ্রেয়া : শেম্পিং!

[ মার্জান অতোটুকুতেই রোবোট হয়ে গেলো, তা দেখে বাকিরা হেসে উঠে ]

শ্রেয়া : what happen মার্জান?…ফার্ষ্ট টাইম নাকি?…

[ মার্জান চোখ গুলো বড় বড় করে রেখে মুখ চেপে ধরে দাঁড়িয়ে আছে ]

শ্রেয়া : [ উঠে মার্জানের দিক এগিয়ে এসে তাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] ইউ ওকে?..

মার্জান : [ চমকে উঠে ] ই..ইয়া..ইয়াহ! আই…আই এম ওকে! [ বলেই চেহেরাটা গোমড়া করে ফেললো ]
_________________________________
এইদিকে গাড়ীতে,

স্নেহা : আপনি এভাবে সবার মাঝে থেকে নিয়ে আনলেন কেনো?…ওরা কি ভাববে?..

রাহুল : কিছুই ভাববে না তুমি এতো টেনশন নিচ্ছো কেন?..

স্নেহা : আপনি, ড্রাইভ করছেন তার মধ্যে মোবাইল টিপছেন কেনো বলেনতো ?…এইদিকে দেন মোবাইল [ বলেই রাহুল থেকে মোবাইল টানাটানি করছে ]

রাহুল : ওয়েট স্নেহা! জাষ্ট ফাইভ মিনিটস্!

স্নেহা : [ একটি জোড়ে শাস ফেলে ঠিক হয়ে বসে ] আচ্ছা কোথায় যাচ্ছি?….

রাহুল : সারপ্রাইজ [ with tedi smile ]

স্নেহা : অমনিই?..হ্যা? অমনিই সারপ্রাইজ হয়ে গেলো?…

[ রাহুল হাসতে থাকে স্নেহার কথা শুনে ]

স্নেহা : মানে.. আপনিতো আমার সামনেই ছিলেন! সারপ্রাইজটা কিভাবে রেডি করেছেন শুনি?…

রাহুল : [ হেসে হেসে ] কামঅন স্নেহা! তোমাকে আগেও বলেছিলাম! বললে তো আর ওটা সারপ্রাইজ থাকে না!

স্নেহা : আমি ও আপনাকে আগে বলেছিলাম! আমি সারপ্রাইজ লাইক করিনা! ওটাতে আমার এলার্জি!

রাহুল : ওকে রিলেক্স! স্নেহা! [ বলেই গাড়ীর সা্নরুফটা নামিয়ে দিলো ]

[ স্নেহা অবাক হয়ে উপরের আকাশের দিক তাকিয়ে রইলো, বাতাসে চুল গুলো এলো মেলো হয়ে যাচ্ছে স্নেহার! ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] নাইস্! [ বলেই আবার তেডি স্মাইল দিয়ে সোজা তাকিয়ে ড্রাইভ করতে থাকে ]

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] জানেন রাহুল! আমার না অনেক ইচ্ছে ছিলো! এমন…উইদাউট সা্নরুফ গাড়ীতে চড়ার, ইনফেক্ট! ছোটবেলায় যখন স্কুলে যেতাম তখন এমন গাড়ী দেখলে না, হা করে তাকিয়ে থাকতাম! [ একটু মুচকি হেসে ] আর রাশু, আমার ছোট ভাই, টিভিতে এমন গাড়ী দেখলে বাবাকে বলতো বাবা আমার ও এমন গাড়ী চাই!

রাহুল : [ অবাক হয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তোমার ছোট ভাই আছে?..

স্নেহা : [ হেসে ] হ্যা!

রাহুল : আচ্ছা! তাহলে আই হেভ ওয়ান শালা! [ বলেই হেসে উঠে ] কিসে পড়ে?…

স্নেহা : ফাইভে পড়ে,

রাহুল : ওকে ওতো তোমার সাথে রেখেদিলে পারতে,

স্নেহা : আমাকে পার্মিশন দিয়েছে বাবা অনেক কষ্টে, ও সহ তো ইম্পসিবল!

রাহুল : আচ্ছা তোমার পেরেন্টসরা সবাই গ্রামে থাকে?..

স্নেহা : শহরেই ছিলো! বাবার অসুস্থতার কারণে এবসে্ন থাকায় চাকরীটা চলে গেছে! তাই গ্রামে চলে যেতে হয়েছে সবার…

রাহুল : [ হেসে ] আচ্ছা ঐ দিন স্টেশনে তোমার পেরেন্টসদেরই বিদায় দিতে গিয়েছিলে রাইট!

স্নেহা : [ একটু হেসে ব্লাশিং হয়ে নিচের দিক তাকিয়ে ] হুম!
_______________________________
এইদিকে,

মার্জান রুফ-টপের রিলিং ধরে দাঁড়িয়ে ঢুলতে থাকে,

আসিফ : [ পেছন থেকে এগিয়ে এসে ] Listen! ঐ দিকটা গিয়ে বসো, এইদিকে তোমার জন্য রিস্কি!

মার্জান : [ আসিফের দিক ফিরে মাতাল কন্ঠে ] কেনো?..হুম?..বলেন [ বলতেই ঢুলতে লাগলো ]

আসিফ : [ তাড়াতাড়ি ধরে ] এই কারণে!

মার্জান : [ চেঁচিয়ে মাতালি অবস্থায় ] হেইই! ইউউউ! ডোন্ট টাচ্ মি! ওকে..ডোন্ট টাচ্ মি! [ বলে আসিফের শার্টটা শক্ত করে ধরে রাখে যাতে পড়ে না যায় ]

আসিফ : কাম! [ বলেই মার্জানকে ধরে এগিয়ে এনে একটি চেয়ারে বসিয়ে দিলো ]

শ্রেয়া : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] আসিফফ! এইতো গেছে! পুরোই ড্রাংক!

[ বলতেই মার্জান আবার টেবিল থেকে গ্লাসটা এগিয়ে নিতে গেলো, আসিফ তাড়াতাড়ি গ্লাসটা এগিয়ে নিয়ে সরিয়ে রাখলো ]

মার্জান : এইই! সস..সরালে কেনো?..হুম! আমি বলেছি সর…সরাতে?…

আসিফ : অনেক খেয়েছো আর খেতে হবে না!

মার্জান : [ উঠে দাঁড়িয়ে আসিফের মুখের উপর আংগুল দিয়ে ] Shutttt-up! ওকে?..[ চেঁচিয়ে ] জাষ্ট Shut-uppp!

[ সবাই হেসে উঠে মার্জানের কান্ড দেখে ]
____________________­_____________
এইদিকে,

জারিফা আর রিদোয়ান,দুজনেই গাছতলায় চেয়ারের উপর বসে আছে…সামনে টেবিলের উপর গরম গরম কফি দেওয়া আছে…

জারিফা : ওয়াও… শীতের রাতে কফি খাওয়ার মজাটাই আলাদা!

[ রিদোয়ান একপলকে তাকিয়েই আছে জারিফার দিকে ]

জারিফা : [ রিদোয়ানের গালটেনে দিয়ে ] ও হ্যালো! আছেন? নাকি গেছেন?..

[ রিদোয়ান হেসে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

জারিফা : জানেন! গ্রামে যখন রাতে গাছতলা দিয়ে হেটে যেতাম! তখন কি ভয় পেতাম…এমন মনে হতো যেনো গাছ থেকে নেমে ভয়ংকর কিছু ঝাঁপিয়ে পড়বে…

রিদোয়ান : [ জারিফার হাত তার হাতে নিয়ে ] আর এখন? ভয় লাগছে না?..

জারিফা : [ রিদোয়ানের বুকে মাথা রেখে ] না! লাগছে না…

রিদোয়ান : উমম! তা কেনো?..

জারিফা : কারণ আপনি সাথে আছেন তাই! [ বলেই লজ্জা পেয়ে মুখে হাত দিয়ে দেই ]

রিদোয়ান : [ হেসে ] তারমানে তোমার আমার উপর ভরসা আছে!

জারিফা : [ রিদোয়ানকে চিমটি দিয়ে ] না থাকলে কি হ্যা! বলতাম?..

রিদোয়ান : আআউউ! ওকে ওকে! সো্ কখন থেকে হলো ভরসাটা?..

জারিফা : উমম! যেদিন ডান্স রিহর্সেল হচ্ছিলো তখন আমি ডান্স করতে করতে পরে যেতে ছিলাম আর আপনি ধরে ফেলেছিলেন!

[ রিদোয়ান একটু হেসে শক্ত করে ঝড়িয়ে নেই জারিফাকে ]
___________________________________
এইদিকে,

রাহুল একটি ব্রীজের ধারে গাড়ী থামালো! এবং গাড়ী থেকে নেমে স্নেহার দিক এসে দরজা খুলে স্নেহাকে ও নামিয়ে নিলো!

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] Close your eyes! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] চোখ বন্ধ করবো?..কিন্তু কেনো?..

রাহুল : ওহো স্নেহা! ভরসা আছে আমার উপর!

স্নেহা : হ্যা! রাহুল কিন্তু!

রাহুল : Not one more word!

স্নেহা : ওকে! [ বলেই চোখ বন্ধ করলো ]

[ রাহুল স্নেহার পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে স্নেহাকে ধরে চোখে হাত দিয়ে ব্রীজের উপর এগিয়ে নিয়ে গিয়ে দাড় করালো… এবং ধীরেধীরে স্নেহার চোখ থেকে হাত সরিয়ে নেই…স্নেহা ও চোখ খুললো ধীরে ধীরে..এবং সে দেখতে পায়.. পানির মাঝে একটি বিশাল বড় ঝর্ণা যা বিভিন্ন কালারের লাইটিং দিয়ে সাজানো হয়েছে,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে উঠে… ] ওয়াও রাহুল! ইটস্ বিউটিফুল! জাষ্ট স্পিচলেস্!

রাহুল : ওকে! Listen এটাই এখন এক একটা ক্যাপিটাল উঠবে…আর আমি চোখ বন্ধ করে রাখবো.. সো্ তোমার কাজ হচ্ছে কি কি..উঠছে তা আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলবা! ডান?..

স্নেহা : [ একটু অবাক হয়ে আবার হেসে ] ওকে ডান!

রাহুল স্নেহার পেছনে দাঁড়িয়ে দু-হাতে ব্রীজের রিলিং ধরে স্নেহার কাধের দিক মাথা এনে তার চোখ বন্ধ করে কান পেতে রাখে…আর স্নেহা একপলকে ঝর্ণার দিক তাকিয়ে রইলো…

একটু পর রাহুলের কানে ভেসে আসলো..

স্নেহা : [ বলছে ] I

[ রাহুল ব্লাশিং ]

স্নেহা : ❤️?[ Love ]

[ Rahul give a tedi smile ]

স্নেহা : U

হঠাৎ,

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] বাট রাহুল! এটা কিন্তু চিটিং!

রাহুল : [ হেসে চোখ খুলে স্নেহার কোমোড়ে ঝড়িয়ে ] আই লাভ ইউ টু!

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : তুমি নিজ থেকে কবে বলতে এটা আইডিয়া করতে গেলে..বোধহয় আমি বুড়া হয়ে দাত সহ পড়ে যেতো… তাই প্লানটা কাজে লাগিয়ে দিলাম! [ বলেই তেডি স্মাইল দিতে লাগলো ]

[ স্নেহা হেসে রাহুলের মাথায় একটা বারি দেই ]

হঠাৎ, খেয়াল করে ঝর্ণার ধার থেকে কয়েকজন রাহুলকে হাত নারাচ্ছে…এবং তাদের দেখে রাহুল ও হাত নাড়িয়ে থেংক ইউউউউ বলে চেঁচিয়ে উঠলো,

রাহুল : [ স্নেহার দিক ফিরে ] এইদিকে এসো!

স্নেহা : আবার কোথায়?..
____________________­_____________
এইদিকে,

মার্জান রাস্তায় ঢুলে ঢুলে হাটছে…

আসিফ : [ দৌড়ে এগিয়ে এসে ] হেইই! Listen এভাবে একা কোথায় যাচ্ছো?..

মার্জান : Whyyy?..আপ..আপনা..কে­নো বলবো…হুমমম?..[ বলতেই হঠাৎ চোখের উপর গাড়ীর ফ্লাশ পড়ে, আর আসিফ মার্জানকে রাস্তার মাঝ থেকে টেনে একপাশ এনে দাড়করায়, মার্জান ভয়ে আসিফের বুকে মাথা ঢলে আছে আর জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে..]

আসিফ : গাড়ীতে উঠো আমি পৌছে দিচ্ছি!

মার্জান : [ আসিফকে ধাক্ষে সরিয়ে দিয়ে ] নেভার! আপনার গাড়িতে..কখ..কক্ষোনোই­ না…
[ বলেই পায়ের জুতা গুলো ছুরে মেরে মেরে খুলে নিলো,এবং আবার কুড়িয়ে নিলো ]

আসিফ : দেখো তুমি ভালো করে দাঁড়াতেই পারছো না..হাটা তো দূরের কথা!

মার্জান : Noooo neeeed yourrrr helppp [ চেঁচিয়ে ] ok?..[ বলতেই পড়ে যাচ্ছিলো, আসিফ তাড়াতাড়ি আবার ধরে ফেলে… এবং মার্জানের চেহেরার দিক তাকিয়ে দেখে সে চোখ বন্ধ করে আছে…শীতে শরীরটা ঠান্ডা হয়ে কাপছে মেয়েটার..তা দেখে আসিফ মার্জানের হাত থেকে জুতা গুলো ছুটিয়ে তার আংগুল দিয়ে ধরে নিলো এবং হুট করেই মার্জানকে কোলে তুলে নিয়ে নেই! ]

মার্জান : [ চোখ বন্ধে মাতাল অবস্থায় ] আপনি আমাকে…আমাকে আপনি কোলে নিলেন কেনো?..হুম?….

[ আসিফ কোনো জবাব না দিয়ে তাকে গাড়ীর দিক এগিয়ে নিয়ে ভেতরে বসিয়ে দেই ]
_________________________________
এইদিকে, রাহুল স্নেহাকে শিপের মধ্যে উঠানোর চেষ্টা!

স্নেহা : রাহুল! আমার ভয় করছে প্লিজ আমি পারবো না!

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা আমি আছিতো! [ বলেই রাহুল হাত বাড়ালো এবং স্নেহা রাহুলের হাতের উপর হাত রাখলো ] এবার ধীরেধীরে পা বাড়িয়ে দাও…[ স্নেহা রাহুলের কথা মতো ভয়ে ভয়ে পা বাড়ালে রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে টান দেই..এবং স্নেহা রাহুলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে…রাহুল হাসতে থাকে ]

স্নেহা : আপনি হাসছেন?..আমারতো ভয়ে জান বেড়িয়ে যাচ্ছিলো পানি দেখে…

রাহুল : আমি আছিনা এতো ভয় পাওয়ার কি আছে..তোমাকে পড়তে দিতাম নাকি পানিতে হুম? [ বলেই ড্রাইভারকে শিপ স্টার্ট দিতে বললো ]

রাহুল স্নেহার হাত ধরে শিপের কিনারায় নিয়ে গিয়ে দাড় করালো.. স্নেহাকে সামনে রেখে রাহুল স্নেহার পেছনে দাড়ালো!

[ শিপ চলছে… চারদিক বাতাস বয়ে যাচ্ছে শা-শা করে…রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে স্লাইড করে পেটের দিক এনে শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরে স্নেহার কাধে মাথা রেখে দাঁড়ালো…স্নেহা ও রাহুলের হাতের উপর হাত রেখে শক্ত করে ধরে চোখ বন্ধ করে জোড়ে একটি শাস ফেললো…রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখে স্নেহা চোখ বন্ধ করে আছে স্নেহার চুল গুলো উড়ে উড়ে বারবার রাহুলের মুখের সাথে বাড়ি খাচ্ছে…তা অবশ্যই রাহুলের ভালোই লাগছিলো…]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : আমরা কিন্তু আবার টাইটানিক পোজে আছি! আ..আই মিন ঐবার পোজটা পুরো কমপ্লিট করা হয়নি! [with tedi smile ] So… [ বলতেই স্নেহা হুট করে চোখ খুলে ফেললো ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 21

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 21

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা চোখ খুলে খেয়াল করলো গাড়ীর দরজা অর্ধেক খুলেছে…

স্নেহা : [ ভয়ে মনে মনে ] রাহুল গাড়ী থেকে নামছে কেনো?…ও কি আমাকে দেখেছে নাকি?..
_________________________________

এইদিকে, রাহুল ব্লাশিং হয়ে গাড়ী থেকে নামতেই ছিলো হঠাৎ আবার মনে পড়ে গেলো সে তো স্নেহাকে কথা দিয়েছিলো যদি একবার reason বলে তাহলে আর ওর চেহেরা কখনো স্নেহাকে দেখাবে না…

রাগে ধুম করে জোড়ে গাড়ীর দরজাটা আবার লাগিয়ে দিলো,

[ স্নেহা বুকে হাত দিয়ে একটি বড় শাস ফেললো…]

আর রাহুল রাগ কন্ট্রোলের জন্য জোড়ে জোড়ে গাড়ী স্টার্ট দিতে লাগলো,

স্নেহা : [ কান চেপে ধরে ] ইশ! কি বাজে শব্দ!

[ একটু পর রাহুল গাড়ী টান দিয়ে চলে গেলো, তা দেখে স্নেহা ধীরেধীরে গাছের কিনারা থেকে বেড়িয়ে আসে…এবং চেয়ে আছে রাহুলের গাড়ীর দিক,চলে যাচ্ছে রাহুল…হ্যা চলে গেছে রাহুল!… মুখটা গোমড়া করে, ব্যাগটা কাধ থেকে নামিয়ে হাতে ঝুলিয়ে..নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাটছে…আর ভাবছে, নেহা সত্যি বলছে নাকি রাহুল সত্যি বলছে…এইভাবে ভাবতে ভাবতে বাসায় এসে পৌছালো..]

স্নেহা : তোরা কবে এলি?..

মার্জান : আরে তুই? এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে?..

জারিফা : [ দৌড়ে এক্সাইটেড হয়ে এগিয়ে এসে ] হেইইই স্নেহা! বলেছিস?..

স্নেহা আপসে্ড হয়ে ভেতরে ঢুকে ব্যাগটা টেবিলের উপর ছুড়ে মেরে খাটে বসে পড়লো….

জারিফা : [ পাশে এসে বসে ] কি হলো স্নেহা! কিছু বলছিস না কেনো?..

স্নেহা : গিয়েছিলাম! কিন্তু!

জারিফা : [ বিরক্তি হয়ে ] আবার কিন্তু কি?..

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] সাহস হচ্ছিলো না আমার রাহুলের সামনে যেতে, মাথায় অনেক কিছু ঘুরছে…তুই এখন যা প্লিজ! আমায় একা থাকতে দে!

জারিফা : [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] ইয়া আল্লাহ! কি বলে এই মেয়ে…আমি আরো কি কি ভেবেফেলেছি!

– ধুর আবার সব মাটি!

স্নেহা : তুই আবার মন খারাপ করছিস কেনো তোর না আজ বার্থডে?..

জারিফা : মন ভালো থাকতে দিচ্ছিসই বা কই?..[ চেঁচিয়ে ] গিয়েছিলি ওকে বলতে বললি না কেনো?..

[ স্নেহা চুপ হয়ে থাকে! ]

মার্জান : আচ্ছা সমস্যা নেই! আজ আমরা সবাই তো রাহুলের বাসায়ই যাচ্ছি তাই না স্নেহা! [ চোখ মেরে ] …ওখানে সাহস করে বলে দিবি! ওকে?.

স্নেহা : আ..আম..আমি যাচ্ছিনা ওর বাসায়! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে যায় ]

মার্জান : তাই?..আচ্ছা তাহলে ঠিকাছে!

স্নেহা : [ মনে মনে ] আরে! এ কি?..যাবো না বলেছি তাই আমাকে একটু জোড় ও করলো না… [ জারিফা আর মার্জানের দিক একবার চেয়ে নাক ফুলিয়ে উঠে অন্যরুম চলে যায় স্নেহা ]

জারিফা : আরে মার্জান এর হলোটা কি বলতো?.. রাহুল যখন নিজ থেকে ওকে আই লাভ ইউ বলেছে তখন ও রিপ্লাই করেনি! আবার রাহুলকে ছাড়া থাকতেও পারছে না! রাহুলকে কিছু বলতেও পারছে না…এখন আবার বলছে আজ পার্টিতে যাবে না…[ চেঁচিয়ে ] Why?..

মার্জান : [ হেসে হেসে খাটে বসে ] আরে Don’t worry! যাবে যাবে…স্নেহা রাহুল থেকে দূরে থাকতে পারবে না!

জারিফা : নাজানি কি হচ্ছে এসব! উফফ [ বলেই জোড়ে একটি শাস ফেলে ]
_________________________________
সন্ধায়,

জারিফা আর মার্জান রেডি হচ্ছে পার্টিতে যাওয়ার জন্য!

স্নেহা : [ ধীরেধীরে তাদের দিক এগিয়ে এসে ] কোথায় যাচ্ছিস তোরা?..

মার্জান : কয়বার জিজ্ঞেস করবি বলতো?..

স্নেহা : ওহ ওকেই! আব…আস আসলে..তোকে আজ সুন্দর লাগছে…

মার্জান : থেংক ইউউ!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আর আমাকে?..

স্নেহা : [ ইমোশনাল হয়ে ] তোকেও..লাগছে..সুস..সুন্দর অনেক!

মার্জান : [ কোণা চোখে তাকিয়ে ] ইউ ওকে স্নেহা!

স্নেহা : ইয়ে..ইয়েস! আই এম অলরাইট! [ বলেই মুখ গোমড়া করে বারান্দায় চলে গেলো ]

জারিফা আর মার্জান মুখ চেপে হেসে উঠে, এবং কিছুক্ষণ পর দেখে…

স্নেহা : [ আবার এগিয়ে এসে ] জারিফা! তুই আমাকে ছাড়া বার্থডে সেলেব্রেট করবি?…

জারিফা : আরে আমার গ্রিন কালার ইয়ার রিংটা দেখেছিস?…[ বলেই খুজতে লাগলো ]

স্নেহা : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] তোর কানেই আছে!

জারিফা : অউউ! থেংক ইউ স্নেহা!

স্নেহা : আচ্ছা তোরা না গেলে কি হয়?..আমরা এইখানেই সেলেব্রেট করি!

মার্জান : আরে রাহুল এতো ভালোবেসে আমাদের জন্য পার্টি আরেঞ্জ করেছে! দেখ না গেলে খারাপ দেখায় না…?

জারিফা : আর তুকে তো বলেছে আসতে..তুই তো রেগে বললি আমি ওর বাসায় যাচ্ছিনা…

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] হ্যা! বলেছি..একবারই তো বলেছি…তাই বলে…

[ মার্জান আর জারিফা হেসে স্নেহার দিক এসে স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরে ]

জারিফা : [ স্নেহার কানে কানে ] ইউ মিসিং রাহুল…হ্যা না?..হুম? হুম?..[ বলেই চোখ টিপ মারে ]

[ স্নেহা মাথা নিচু করে আছে গাল বেয়ে চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো! ]

মার্জান : [ চোখ মুছে দিয়ে ] আচ্ছা হয়েছে অনেক..আর কাঁদতে হবে না! চল তাড়াতাড়ি রেডি হয়েনে…

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে তাকিয়ে ] সত…সত্যি যাবো?..

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আবার?..

স্নেহা : আচ্ছা ওকে! [ বলেই রেডি হতে চলে গেলো ]
_________________________________
রাহুলের বাসার গেইটের সামনে এসে,

মার্জান : দেখ স্নেহা! এতো ভাবছিস কেনো এসেই তো পড়েছিস…এখন আবার বলছিস যাবি না?..

স্নেহা : জানিনা! আমার কেমন যেন লাগছে ওর সামনে যেতে!

জারিফা রেগে আড়চোখে তাকিয়ে স্নেহার হাত ধরে টেনে ভেতরে…নিয়ে ঢুকে যায়,

স্নেহা : জারিফা কি করছিস আমার কথা শোন প্লিজ!

রিদোয়ান : হেইই গাইস্ কামঅন! [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] থেংক্স ফর কামিং!

জারিফা : [ মনে মনে ব্লাশিং হয়ে ] আহ..বাকিদের দেখছিনা?..

রিদোয়ান : রুফটপে আছে! কাম!

[ সবাই মিলে রুফটপে এগিয়ে গেলো জারিফা স্নেহার হাত ধরে টেনে টেনে নিয়ে আসে স্নেহা অনেকটাই নার্ভাস্ ফিল করছে…]

মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওয়াও! ইয়ার ওয়ান্ডারফুল ডেকোরেট!

আসিফ : ডান বাই মি! [ বলেই চোখ টিপ মারলো…]

মার্জান : [ রাগান্বিতভাবে নাক ফুলিয়ে ] ইউ…? [ বলতেই আসিফ জারিফার দিক এগিয়ে এসে হ্যান্ডশেক করে ]

আসিফ : হ্যাপি বার্থডে ডিয়ার! হেভ আ গ্রেট ডে!

জারিফা : থেংক ইউ!

আসিফ : হ্যালো স্নেহা!

স্নেহা : [ একটু হেসে ]..হাই!

শ্রেয়া : [ এগিয়ে এসে জারিফাকে ঝড়িয়ে ] হ্যাপি বার্থডে মাই ডিয়ার! ওহো! ওয়াও ইউ লুকিং বিউটিফুল… [ বলেই রিদোয়ানের দিক তাকালো রিদোয়ান ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

হঠাৎ, পেছন থেকে,

রাহুল : [ একটু স্লো ভয়েসে্ ] হাই গাইস্!

[ স্নেহার বুকটা কেপে উঠলো রাহুলের ভয়েস শুনে! স্নেহা ধীরেধীরে পেছন ফিরে তাকালো…রাহুল স্নেহাকে দেখে শকড হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো!… স্নেহা স্কাই কালারের একটি সালোয়ার কামিজ পড়েছে…চুল গুলো ছেড়ে রেখেছে…চশমা পড়েনি আজ..তাই কাজল কালো চোখ গুলো ও দেখা যাচ্ছে… মুখটা কেমন যেনো শুকিয়ে আছে…তাও দেখতে অপরুপ লাগছে স্নেহাকে…তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ফেললো রাহুল! ]

জারিফা : [ রাহুলের দিক এগিয়ে গিয়ে ] হেইই! রাহুল!

রাহুল : [ জারিফাকে হাগ করে ] হ্যাপি বার্থডে… [ জারিফার কানে ফিসফিসিয়ে ] আধি ঘার ওয়ালি!

জারিফা : থেংক ইউউ! [ রাহুলের কানে ফিসফিসিয়ে ] জিজাজি!

[ রাহুল মনে মনে হেসে উঠে,]

রিদোয়ান : ওকে! কাম গাইস্ এঞ্জয় দ্যা পার্টি!

[ বলেই জারিফার দিক হাত বাড়ালো… জারিফা একটু লজ্জা পাচ্ছিলো তাও হাত দিয়ে দিলো, মার্জান দূর থেকে জারিফাকে চোখ টিপ মারলো,]
_________________________

মার্জান : [ স্নেহার হাত ধরে ] চল স্নেহা!

[ সামনে এগিয়ে যেতেই স্নেহা অবাক হয়ে যায়…এতো বড় কেক..মানে এতো সুন্দর কেক সে এর আগে কখনো দেখেনি! ]
হঠাৎ, পেছন ফিরতেই রাহুলের সাথে চোখাচোখি হয়ে পড়ে, মানে রাহুল স্নেহার দিক চেয়েই ছিলো! স্নেহা তাকাতেই রাহুল তাড়াতাড়ি অন্যপাশ ফিরে চলে যাচ্ছিলো…

আসিফ : [ রাহুলের হাত ধরে ] কোথায় যাচ্ছিস?..

রাহুল : কোথ..কোথাওনা…

হঠাৎ..জারিফা দৌড়ে এগিয়ে এসে রাহুল আর স্নেহা দুজনকে দু-হাতে ধরে কেক এর পাশে নিয়ে গিয়ে দাড় করালো…

জারিফা : কি হলো দুজন এভাবে হা করে তাকিয়ে আছো কেনো?…আরে আমি কেক কাটবো আর তোমরা পাশে না থাকলে হয়?…[ বলেই বাকীদের ইশারা করে কাছে এসে দাড়াতে বলে… ]

সবাই হেসে উঠে পাশে এসে দাঁড়ালো… স্নেহা অনেকটা নার্ভাস ফিল করছে…সে রাহুলের কাছাকাছিই আছে অথচ রাহুলকে কিছু বলতে পারছে না…

রাহুল : [ মনে মনে ] এইখানে দাঁড়ালে স্নেহা থেকে দূরে থাকা সম্ভব না…আই কান্ট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ! [ বলেই রিদোয়ানকে জারিফার পাশে দাড়করিয়ে দিয়ে রাহুল সরে দাঁড়ায় ]

আর এইদিকে মার্জান আসিফের দিক এমনভাবে তাকিয়ে যাচ্ছে যেন তাকে চোখ দিয়েই গিলে খেয়ে ফেলবে…আর আসিফ তা দেখে শুধু হেসেই যাচ্ছে….
_________________________________
কেক কাটা শেষ হলো…সবাইকে খাইয়ে…জারিফা এক টুকরো হাতে নিয়ে রাহুলের দিক এগিয়ে গেলো!

জারিফা : [ কেক খাইয়ে দিয়ে ] থেংক্স রাহুল!

রাহুল : No need! থেংক্স ডিয়ার! it’s my pleasure!

হঠাৎ পেছন থেকে,

রিদোয়ান : আফসোস্ যদি আমাকে ও কেউ একটা থেংক্স দিতো আরকি!

[ রাহুল হেসে উঠে ]

জারিফা : [ রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] আপনাকে কেনো থেংক্স দিবো?..হুম?

রিদোয়ান : আরে আমি তোমাকে প্রমিস্ করে আনিয়েছি পার্টিতে!

জারিফা : এটার জন্য থেংক্স বলে আমি আমার সময় বরবাদ করতে চাইনা..[ বলেই মনে মনে হেসে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রিদোয়ান : [ জারিফার সামনে এসে ] ওকে সো্ মিস্ জারিফা! কি জন্যে থেংক্স দিলে আপনার সময় বরবাদ হবে না শুনি?..

জারিফা : দেখেন! রাহুল পার্টি আরেঞ্জ করেছে! হলোনা এটা সারপ্রাইজ গিফট?..

[ রাহুল হাসতে লাগলো তাদের কান্ড দেখে ]

রিদোয়ান : [ একটু ভেবে ] হ্যা হলো!

জারিফা : সো্ আপনিও ট্রাই করেন! থেংক্স পেয়ে যাবেন! [ বলেই জারিফা চলে যাচ্ছিলো ]

রিদোয়ান : [ জারিফার হাত ধরে ] সো্ তোমার সারপ্রাইজ গিফট চাই?…[ চোখ মেরে ]

জারিফা : [ হাত ছুটাতে ছুটাতে ] আরে! কিক..কি করছেন…

[ রিদোয়ান আর কোনো জবাব না দিয়ে জারিফাকে টেনে নিয়ে রুফটপের মাঝে এনে দাড় করালো…সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিক ]
_____________________________
স্নেহা এদিকওদিক তাকিয়ে খুঁজছে রাহুলকে… হঠাৎ দেখে রাহুল এক কোণায় দাঁড়িয়ে স্মোক করছে…আর জারিফা আর রিদোয়ানের কান্ড দেখে দেখে হাসছে…

স্নেহা : [ মনে মনে কাদো কন্ঠে ] চেহেরা দেখাবে না বলেছে তাই ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে…কি আজিব! [ বিরক্তি হয়ে ] নাকি ঐ নেহাকে ভাবছে কি জানি! ধুর! [ বলেই জারিফা আর রিদোয়ানের কান্ড দেখতে লাগলো ]

[ রিদোয়ান পকেট থেকে একটি ফিংগার রিং বের করে পায়ের হাটু ভেঙে মাটিতে আধবসা হয়ে বসে,

জারিফা শকড হয়ে তাকিয়ে আছে… মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পড়লো তার!… সপ্ন নাকি সত্যি কিছুই বুঝতে পারছে না…]

রিদোয়ান : [ রিংটি জারিফার দিক বাড়িয়ে দিয়ে মাথা নিচু করে ] জারিফা! i don’t know any loving poetry! তাই আমি আমার নিজ ভাষায় বলছি, জারিফা! তোমাকে দেখে আমার এমন কেনো ফিল হয় আমি জানিনা!..
জানিনা তোমার ও এমন ফিল হয় কিনা! তবে এটা জানি আমি তোমাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি!

মার্জান : [ স্নেহার কানে ] দেখলি তো লুকিয়ে লুকিয়ে আমাদের না বলে প্রেম করেছে এই দুনোটা! [ স্নেহা একটু হেসে উঠে ]

রিদোয়ান : আই লাভ ইউ জারিফা! ডো ইউ লাভ মি?..

[ বলেই মাথা তুলে জারিফার দিক তাকালো, জারিফার চোখে পানি টলমল করছে…পলক নড়তেই পানি গড়িয়ে পড়বে…হ্যা পড়েই গেলো পানি..]

রিদোয়ান : [ মুখ গোমড়া করে ] ট্রাষ্ট মি জারিফা! ভালোবাসা কি ভালোবাসার ফিলিংস্ কেমন এটা আমি তোমার সাথে দেখা হওয়ার পরে বুঝতে পেরেছিলাম! আই রিয়েলি লাভ ইউ!

জারিফা : [ কাদো কন্ঠে ] যদি বলি…. না?….

রিদোয়ান : তাহলে ভাববো! একটা দূসপ্ন ছিলো!

[ জারিফা চোখ মুছে একটা হাসি দিয়ে, পাশফিরে তাকালো…]

শ্রেয়া : [ হেসে হেসে চেঁচিয়ে ] No জারিফা! No…রিজেক্ট রিজেক্ট! [ রিদোয়ান আর জারিফা দুজনেই হেসে উঠে ]

আসিফ : [ চেঁচিয়ে ] আরে জারিফা! ছেলের অভাব পড়লো নাকি…এতো ভাবছো কেনো?…মন যখন না বলছে…তাহলে না বলে দাও!

[ বাকিরা হেসে উঠে, জারিফা রাহুলের দিক তাকালো… রাহুল একটু হেসে হাত দিয়ে ইশারা করে অল দ্যা বেষ্ট জানালো….]

জারিফা ধীরেধীরে রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো…

[ সবাই এক্সাইটেড হয়ে চেঁচিয়ে তালি দিয়ে উঠলো ]

[ খুশিতে স্নেহার চোখ বেয়ে কখন পানি গড়িয়ে পড়ছে..ঠেরই পাইনি! তাড়াতাড়ি চোখ মুছে আবার তালি দিতে লাগলো ]

[ রিদোয়ান জারিফাকে রিং পড়িয়ে ব্লাশিং হয়ে দাঁড়িয়ে যায়…জারিফা লজ্জায় লাল হয়ে হাতের রিংগের দিক তাকিয়ে আছে…ধীরেধীরে রিদোয়ান জারিফার কোমোড়ে হাত দিয়ে কাছে টেনে নিলে…জারিফা হেসে লজ্জায় রিদোয়ানের বুকের মাঝে মাথা লুকিয়ে রাখলো…রিদোয়ান ও হেসে শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরলো জারিফাকে… ]
[সবাই আরো এক্সাইটেড হয়ে শিস বাজিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো….]

[ স্নেহা একটু হেসে পাশফিরতেই দেখে রাহুল চলে যাচ্ছে…মুখটা গোমড়া করে ফেললো স্নেহা…]

শ্রেয়া : [ চেঁচিয়ে ] আরে রাহুল তুইই কোথায় যাচ্ছিস?..

রাহুল : [ নাকফুলিয়ে আড়চোখে শ্রেয়ার দিক তাকিয়ে ] জাষ্ট ঐদিকটাই….

শ্রেয়া : [ চোখ মেরে ] তাই!

জারিফা : জাষ্ট ঐদিকটাই মানে?..পার্টি এইখানে চলছে…আর আপনি ঐদিকটাই গিয়ে কি করবেন…

রাহুল : [ একটু হেসে টেবিল থেকে একটি শেম্পিং এর বোতোল নিয়ে জারিফা আর রিদোয়ানের দিক এগিয়ে তাদের মাঝে দাঁড়ালো ] ওকে গাইস্ আজকের পার্টি সেলেব্রেট হবে আমাদের নিউ কাপল এর জন্য! সো্ [ রিদোয়ানের পেটে ঘুষি মেরে ] Congratulations রিদ! [ জারিফাকে চোখ মেরে ] এন্ড জা~~রিফা [ বলতেই জারিফা লজ্জায় অন্যদিক ফিরে যায় ]

রাহুল গ্লাসে সবার জন্য শেম্পিং ঢেলে চিরস্ করে সেলেব্রেট করলো…

[ স্নেহা একপলকে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক…রাহুল ও তাকাতেই চোখে চোখ পড়লো…দুজনেই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নেয়, ]

কিছুক্ষণ পর,

স্নেহা বাকিদের দিক তাকিয়ে দেখে সবাই গ্লাস করেই অল্প অল্প খাচ্ছে…আর রাহুল পুরো এক বোতোল হাতে নিয়েই অন্যপাশ চলে গিয়ে গডগড করে গিলে খাচ্ছে…

জারিফা স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা মুখ গোমড়া করে আছে…আর রাহুল ওপাশ গিয়ে একা দাঁড়িয়ে শেম্পিং খাচ্ছে…জারিফা রাহুলের দিক এগুতে গেলে

রিদোয়ান : [ জারিফার হাত ধরে ] কোথায় যাচ্ছো?..

জারিফা : এক সেকেন্ড আসছি!

[ বলেই রাহুলের দিক এগিয়ে গিয়ে রাহুলকে হাত ধরে টেনে সবার সামনে এনে দাড় করাই ]

জারিফা : শুধু Congratulation দিয়ে কাজ হবে না মিষ্টার! আমাদের আজ একটা ফাটাফাটি সং শোনাতে হবে! [ বলেই রাহুলকে চোখ টিপ মারলো ]

রাহুল : [ একটু হেসে ] সরি! জারিফা! বাট্ আমি…গান ছেড়ে দিয়েছি…

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো,চোখে পানি টলমল করতে লাগলো স্নেহার…]

রিদোয়ান : ওহো! রাহুল এটা কোনো কথা হলো?..আমার স্পেশাল ডে…একটা স্পেশাল গানতো হওয়া জরুরি তাই না… [ চেঁচিয়ে ] কি বলো গাইস্?…

আসিফ : ইয়াহ! রাহুল He is right!

[ রাহুল কিছু না বলে চলে যাচ্ছিলো কারণ রাহুলের চোখ ভিজে আসছিলো,]

জারিফা : [ দৌড়ে রাহুলের সামনে এসে পথ আটকিয়ে ] আমি একটা ডায়লগ বলি ওকে…? দল ছেড়েছি! কাজ ভুলিনি বস্ [ বলেই রাহুলকে একটা চোখ টিপ মারলো ] তেমনি আপনি গান ছেড়েছেন, গান তো আর ভুলেননি! হুম? হুম?…

রাহুল : Shut-up জারিফা [ বলেই অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] Never! and no excuse ok?..[ বলেই রাহুলকে আবার টেনে এনে দাড় করাই ]

শ্রেয়া : এ…এক সেকেন্ড আমি আনছি গিটার [ বলেই শ্রেয়া দৌড়ে রাহুলের রুমে গিয়ে গিটারটা নিয়ে এনে রাহুলকে ধরিয়ে দেই ]

রাহুল কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে গিটারটা টেবিলের উপর রেখে দিয়ে চলে যাচ্ছিলো, হঠাৎ আবার দাঁড়িয়ে গিয়ে কি মনে করে ফুফিয়ে এসে গিটারটা হাতে নিয়ে একটি চেয়ারে বসে পড়লো…চোখ পানিতে ভরে আছে….নাক মুখ লাল হয়ে আছে রাহুলের, বাজাতে লাগলো গিটার? সবাই এক্সাইটেড হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক!

[ মার্জান স্নেহাকে একটু ধাক্ষিয়ে চোখ টিপ মাড়লো…স্নেহা নিস্তব্ধ হয়ে মাথা নিচু করে আছে…রাহুলের বাজানো গিটারের Softed tone কানে ভেসে আসছে…কান পেতে রইলো স্নেহা…. ]

রাহুল : ♪♪ তু আতি্ হে সি্নে মে্
~~যাব্ যাব্ সা্সে্ ভারতিহু্
তে্রে্ দি্ল কি্ গালি্ওসে্
মে্ হার রোয্ গুজা্রতা্ হু্
হাওয়া কে্ যে্ইসে্ চালতা্ হে্ তু্
মে রে্ত যে্ইসে্ উডতা্ হু
কন্ তুঝে্ ইউ পিয়া্রে্ কারে্গা্
যে্ইসে্ মে্ কারতা্ হু

ওও্ ~~ওও্ ~~ওও্ ~~ও~~~ ওও্ হা~~~আআ~~আআ~~~আ

[ চোখ থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে…কিন্তু তাও মুখে হাসি নিয়ে গান করে যাচ্ছে রাহুল! সবাই কোণা চোখে একবার স্নেহার দিক আরেকবার রাহুলের দিক তাকাচ্ছিলো বারবার, স্নেহা তা বুঝতে পেরে চোখের জল আটকিয়ে এপাশ ওপাশ ফিরে ছটফট করতে লাগলো…]

রাহুল : ♪♪ তু জো্ মুঝে্ আ্ মি্লা্
সা্পনে্ হুয়ে্ সা্রপি্রে
♪♪ হাতো্মে্ আতি্ নেহি্
উডতে্হে্ লামহে্ মে্রে্
মেরি্ হাসি্ তুঝ্সে্ মেরি্ খুশি্ তুঝ্সে্
তুঝে্ খাবা্র কি্য়া বেকা্দা্র

জিস্ দিন্ তুঝ্কো্ না্ দে্খু
পাগা্ল পাগা্ল পি্রতি্ হু
কন্ তুজে্ ইউ্ পিয়া্রে্ কারে্গা্
যে্ইসে্ মে্ কারতা্ হু…

ওও্ ~~ওও্ ~~ওও্ ~~ও্~~ হা্~~~আ্ ~~~আআ্ ~~~আ্

[ গান শেষ করে হঠাৎ, গিটারের তারটা জোড়ে টান মারলো রাহুল…

স্নেহা ভয়ে কেপে উঠলো…সবাই শকড হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক… চোখটা লাল হয়ে জলসে যাচ্ছে… গড়িয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে রাহুলের ]

[ হঠাৎ, স্নেহা ফুফিয়ে কেঁদে চোখে মুছে দৌড়ে রুফটপ থেকে নেমে চলে যায়, বাকিরা অবাক হয়ে স্নেহার চলে যাওয়া চেয়ে রইলো…রাহুল মাথা নিচু করে হাত মুঠি বেধে বসে আছে…]
_________________________________

স্নেহা : [ নিচে নেমে ফুফিয়ে কেঁদে কেঁদে হাটছে আর মনে মনে ভাবছে ] আমি রাহুলকে কিছু বলতে পারছিনা কেনো? রাহুল আমাকে কতো ভালোবেসেছে..আর আমি কিনা বুদ্ধু একটা…ওকে বারবার ফিরিয়ে দিলাম…আবার ও ঐ নেহার কথা নিয়ে মাথার মধ্যে খিচুরি পাকাচ্ছিলাম…কিক কিন্ত আমার মন বলছিলো.. রাহুল আমাকে সব সত্যি বলেছে…এবং তাই প্রমান হলো…রাহুল গান ছেড়ে দিয়েছে…তারপরে ও গান গাইলো! [ চোখ বটে পানি ফেলে ] রাহুল জানে না আমি কেমন?.. হ্যা আমি না করে দিয়েছি… তাই বলে আমাকে আর চেহেরায় দেখাবেনা..? আমারদিক তাকাতেই চোখ সরিয়ে ফেলছে বারবার…কেনো? গিটারের তারটাও আমার উপর রেগে ছিড়েছে আমি জানি… যদি রাহুল…[ ফুফিয়ে কেঁদে ] আরেকবার.. আমার কাছে এসে বলতো…

হঠাৎ, পেছন থেকে কাদো কন্ঠে, স্নেহা বলে আওয়াজ এলো…

স্নেহার বুকটা ধুপ করে উঠলো, শকড হয়ে ফিরে তাকালো, চোখের পানি আটকানো আর যাচ্ছেই না স্নেহার… আর মনে মনে ভাবছে…রাহুল কি এখন ও মনে মনে যা বলছিলো তা শুনতে পেয়েছিলো?…

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] আই কান্ট স্নেহা! কিন্তু ট্রাই করেছি! [ মাথা নিচু করে ] আম আমি… তোমার থেকে দূরে থাকার ট্রাই করেছিলাম স্নেহা কিন্তু…

স্নেহা : [ চোখ মুছে চেঁচিয়ে ] কেউ বলেছে ট্রাই করতে?

রাহুল : [ কাদো কাদো ভাবে ] তুমিই তো বলেছিলে আমি কারো ভালোবাসা ডিসার্ব করিনা…

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে কেঁদে ] হ্যা বলেছিলাম! কারণ তখন তো আমি ভেবেছিলাম আপনি নেহাকে… [ বলেই কেঁদে উঠে ]

[ রাহুল কিছুক্ষণ চুপ করে স্নেহার দিক তাকিয়ে একটু হেসে দেই, স্নেহাও চোখ মুছে হেসে উঠে ]

স্নেহা : [ কাঁদো কন্ঠে ] আপনাকে কাঁদলে একটু ও সুইট্ করে না…

রাহুল : [ অন্যপাশ ফিরে কান্না কন্ট্রোল করে আবার স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তাহলে কিসে সুইট্ করে বলে দাও!

স্নেহা : [ কাঁদছে আর হাসছে..] আপনার তেডি স্মাইল! [ বলতেই রাহুল হেসে উঠে, স্নেহা ও একসাথে হেসে উঠে,

হঠাৎ, আবার মুখ গোমড়া করে রাহুলের দিক চেয়ে থাকে…]

রাহুল : [ কিছুক্ষণ স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে যেন লাগছে স্নেহা তার চোখ দিয়েই রাহুলকে প্রশ্ন করছে! চোখ ভিজে আসতেই রাহুল বলে উঠে ] আ..আই.. আই লাভ ইউ স্নেহা!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে চেয়ে আছে আর চোখ থেকে পানি ফেলছে, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়… স্নেহা হেসে চোখ মুছে দৌড়ে এসে রাহুলকে ঝড়িয়ে ধরে… রাহুল ও স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরলো…]

রাহুল : [ একটা জোড়ে শাস ফেলে ] এতো হালকা করে ধরে নাকি কেউ? আরেকটু শক্ত করে ধরো না…

[ স্নেহা হেসে আরো শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরলো রাহুলকে!

আবার ও রাহুলের জ্যাকেট থেকে সেই স্মেল ভেসে আসছে স্নেহার নাকে…মন ভরে যাচ্ছে স্নেহার এই স্মেলে ]

[ আর রাহুল মুখের উপর চলে আসা স্নেহার চুল এবং কাধের স্মেল নিচ্ছে…আর শাস ফেলছে, যেন লাগছে আবার কতোটা বছর পর এই স্মেলের রাস্তা খুজে পেয়েছে! ]

রাহুল : স্নেহা আমার মনে এমন লাগছিলো যেন তুমি আমাকে ডাকছিলে!

স্নেহা : [ ফুফিয়ে কেঁদে রাহুলকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] হ্যা! ডেকেছিলাম!

[ রাহুল স্নেহার কানের দিক একটি চুমু খেয়ে আবার শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরে স্নেহাকে, শীতল ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছে…স্নেহা আর রাহুল নির্বাধায় দুজন দুজনকে ঝড়িয়ে ধরে আছে ]

চলবে. …….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 20

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 20

writer-Jubaida Sobti

 

স্নেহা…নিস্তব্ধ হয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিক চেয়ে আছে…এখনো…

মার্জান : [ বারন্দায় এগিয়ে এসে ] স্নেহা! ডিনার রেডি! খেতে চল,

স্নেহা : খিধে নেই আমার তোরা খেয়েনে!

মার্জান : আরে! সেই সকালে খেয়ে বেড়িয়েছিস! আর তো কিছুই খাসনি! খিধে নেই মানে?…

স্নেহা : [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] সত্যি খিধে নেই! [ বলেই ভেতরে চলে যায় ]

মার্জান ও আর কিছুই বললো না, সে জারিফাকে নিয়ে খেয়ে…রুমে ঘুমাতে চলে আসে,এবং রুমে ঢুকতেই দেখে..স্নেহা ফ্রেশ হয়ে কাপড় চেঞ্জ করে জানালার পাশে বসে আছে…

জারিফা : [ মার্জানকে ফিসফিসিয়ে ] নাক-মুখটা দেখ এখনো লাল হয়ে আছে! মুখটাও শুকিয়ে আছে! সেই লাষ্ট সকালে খেয়ে বেড়িয়ে ছিলো!

মার্জান : এখন কি করতে পারি?…

হঠাৎ, স্নেহার চোখ পড়লো তাদের উপর!

স্নেহা : আরে তোরা?.. খেয়েছিস?..

জারিফা,মার্জান দুজনই মাথা নাড়ালো! হ্যা খেয়েছে!

স্নেহা : আর হ্যা! শায়লা কোথায়?..সেই কবে থেকে দেখছিনা!

মার্জান : আংকেলকে আবার হসপিটাল এডমিট করেছে…তাই সে আর্জেন্ট বাড়ী চলে গেছে…

স্নেহা : [ অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আচ্ছা?..কখন গিয়েছে?…

মার্জান : ব্যাস! তুই আসার কিছুক্ষণ আগেই বেড়িয়ে ছিলো!

স্নেহা : অহ! i hope যেন আংকেল তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়!

জারিফা : [ এসে স্নেহার পাশে বসে, ইমোশনাল হয়ে ] স্নেহা! মেরি জান একটা কথা বলি!

স্নেহা : হ্যা! বল!

জারিফা : না থাক…বলে কোনো লাভ নেই [ বলেই মন খারাপ করে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

স্নেহা : [ জারিফার কাধে হাত রেখে ] বল?…

জারিফা : তুই এইভাবে সে্ড হয়ে আছিস! তা দেখতে আমাদের মোটেও ভালো লাগছে না…. [ স্নেহার দিক ফিরে ] তুই তো গিয়েছিলি রাহুলের কাছে তাই না?..তাহলে বলিসনি কেনো?..

স্নেহার চোখে জল জমে আসছে…ঠোট কাঁপছে তার…কিভাবে বলবে সে,মাথা নিচু করে কিছুক্ষণ চুপ হয়ে রইলো,

স্নেহা : আমি যখনি গিয়েছিলাম ততোক্ষণে…ও চলে গিয়েছিলো…[ কাদো কণ্ঠে ] দোষ আমারই ছিলো জারিফা,আমি রাহুলকে ভুল বুঝেছি.. ও আমাকে ভালোবেসেছে আর আমি কিনা..[ বলেই ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো ]

মার্জান : [ স্নেহার পাশে এসে বসে ] আরে কাঁদছিস কেনো?..রাহুল কোথাও পালিয়ে তো আর যায়নি! [ স্নেহার চোখ মুছে দিয়ে ] কাল ভার্সেটি গেলে তখন ওকে সব বুঝিয়ে বলে দিস! যে তুই ও ওকে ভালোবাসিস!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়ে ] ইয়েস্! কাল সব বলেদিবি…ঝড়-তুফান যায়…আসুক তোকে বলতেই হবে!

মার্জান : আচ্ছা! এবার গুড গার্লের মতো ডিনার করে ঘুমিয়ে পর!

[ স্নেহার চোখ থেকে আবার জল গড়িয়ে পড়ছে,]

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] আরে?.. আবার কাঁদছিস কেনো?..

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] ও নিশ্চয় কিছু খায়নি! আমি কিভাবে খাবো?… [ বলেই চোখ মুছে কম্বল টেনে নিয়ে ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়লো ]

মার্জান আর জারিফা অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে…তারাও শুয়ে পড়ে,

ভোর হলো, সূর্যের আনাগোনা ও নেই, চারদিক কুয়াশায় ভরপুর… পাখীরা কিচিরমিচির ডাকছে…

স্নেহা গায়ে শাল মুড়িয়ে চোখে চশমা লাগিয়ে, চুলে খোপা করতে করতে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়, পাখী গুলো কি নির্জনে গান করে যাচ্ছে..ভালোই লাগছে তা শুনতে…একদল শীতল বাতাস এসে গা ছুয়ে গেলো… চোখটা বন্ধ করে নিলো, শীতের সকালের আভাস মনে করে দিচ্ছে কারো কথা, চোখে ভেসে যাচ্ছে হাজারো সৃতি!…

হঠাৎ,টিট-টিট টিট-টিট করে ঘড়ির এলার্মটা বেজে উঠলো.. নিমিষেই চোখটা খুলে ফেললো স্নেহা! রুমের ভেতর এগিয়ে গিয়ে এলার্ম বন্ধ করলো,

[ জারিফা এলার্মের শব্দে কম্বল থেকে মাথা তুলে চোখ কচলে তাকাতেই শকড হয়ে গেলো,স্নেহা পাশে বসে তার দিক চেয়ে আছে ]

স্নেহা : [ একটু মুচকি হেসে জারিফার কপালে একটা চুমু দিয়ে ] হ্যাপি বার্থডে! জারিফা!

জারিফা : [ একটু হেসে উঠে বসে স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরে ] থেংক ইউউউউউ মেরি জাননন! [ বলেই মার্জানের দিক তাকায় ] ইয়ার! এক তো তুই সকাল সকাল উঠে আমায় উইস করছিস আর এইদিকে ও কি আরামের ঘুম ঘুমাচ্ছে…[ বলেই মার্জানের গায়ের কম্বলটা টান দিলো ] ইশ! কি ঘুম এখনো খবর নেই! [ ধীরে ধীরে চুল দিয়ে মার্জানের কানে শুরশুরি দিতে লাগলো ]

[ মার্জান কেপে উঠে চোখ খুললো, আর জারিফা তার সামনে গিয়ে দাত সব দেখিয়ে একটা হাসি দেই… ]

মার্জান : [ একটা জোড়ে শাস ফেলে ঘুম কন্ঠে ] I know that! অন্যের ভালো দেখাতো তোর সয় না…

জারিফা : [ হেসে হেসে ] Actually সবার না..কিন্তু তোরটা মোটেও সয় না.. [ নাক ফুলিয়ে ] আজ আমার কি?…

মার্জান : [ একটু চিন্তা করে জিহ্বায় কামড় খেয়ে উঠে বসে ] ওহো সরি! সরি! [ বলেই পাশের টেবিলের গ্লাসে পানি ঢেলে সাথে সাথে জারিফার মুখে পানি সব ছুড়ে মেরে ] হ্যাপি বার্থডে মাই ডিয়ার! জারিফা!

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] মার্জাননন!

মার্জান : [ তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়িয়ে ] সবাই কেক খাইয়ে উইশ করে! আমি পানি মেরে উইশ করলাম..You know জারিফা! মর্নিং ফ্রেশনেস্ এন্ড…

জারিফা : আচ্ছা?..[ বলেই লাফদিয়ে উঠে নেমে মার্জানকে দৌড়াতে শুরু করলো ]

স্নেহা বিছানা ঠিক করছে আর তাদের কান্ড দেখে হাসছে…হঠাৎ নিচ থেকে গাড়ীর হর্ণের শব্দ ভেসে এলো, স্নেহা একটু ব্লাশিং হয়ে তাড়াতাড়ি দৌড়ে বারান্দায় এগিয়ে গেলো, জারিফা আর মার্জান একটু অবাক হয়ে তারা ও পেছন পেছন এগিয়ে আসলো,

জারিফা : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] What happen স্নেহা?..এভাবে দৌড়ে এলি কেনো?..

[ স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে,কোনো জবাব দিলো না, জারিফার দিক একটু তাকিয়ে চোখ মুছে ভেতরে চলে গেলো ]

জারিফা : আরেহ স্নেহা!

মার্জান : ওয়েট জারিফা!

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] এর আবার কি হলো?..

মার্জান : ও মনে করেছে রাহুল এসেছে…

জারিফা : [ একটু চিন্তা করে ] আচ্ছা! হ্যা তাই তো! [ ইমোশনাল হয়ে ] নাজানি স্নেহা আর রাহুলের প্রবলেম কবে Solve হবে, আমারতো খালি এখন অপেক্ষা কখন ভার্সেটি যাবো! [ বলেই ফ্রেশ হতে চলে গেলো ]

নাশতা করে সবাই ভার্সেটির উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লো, জারিফা আর মার্জান খেয়াল করলো, স্নেহার চেহেরাটা এখনো আপসে্ট হয়ে আছে…

গেইট দিয়ে ঢুকতেই স্নেহা সবার আগে পার্কিং এর দিক তাকালো, সবাই আছে কিন্তু রাহুল নেই!

জারিফা : রাহুলকে তো দেখছিনা…নিশ্চয় হলের মধ্যেই হবে!

হঠাৎ তাদের দেখে,

রিদোয়ান : [ এগিয়ে এসে ] হ্যালো গার্লস্! [ বলেই জারিফাকে চোখ টিপ মেরে হ্যান্ডশেকের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়ে ] হ্যাপি বার্থডে! মিস্ জারিফা!

জারিফা : [ হ্যান্ডশেক করে ] হুম! থেংক ইউ! [ বলেই হাত ছুটিয়ে আনার চেষ্টা করে কিন্তু রিদোয়ান তার হাত শক্ত করে ধরে রাখে, ]

জারিফা : [ একটানে হাত ছুটিয়ে ভাব নিয়ে হাতে হাত বটে ] আমরা রাহুলকে খুজছিলাম…আপনি দেখেছেন রাহুলকে?…

রিদোয়ান : [ একটু হেসে ] অউ রাহুল? রাহুলতো এখনো আসেনি! I think ও আসবে না!

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] আচ্ছা?

[ বলেই স্নেহার দিক তাকালো, স্নেহা মন খারাপ করে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

জারিফা : কিন্তু কেনো বলতে পারেন?…

রিদোয়ান : কেনো সেটাতো বলেনি! তবে মনে হচ্ছে কোনো কারণে আপসে্ট হয়ে আছে!

জারিফা : কেমন ফ্রেন্ডস আপনারা?..আপনার ফ্রেন্ড আপসে্ট আছে বুঝতে পারলেন কিন্তু কি কারণে সেটা জানেন না?..

রিদোয়ান : ইয়াহ! এক্সুলি আমার ওর সাথে এখনো মিট্ হয়নি! আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম কিন্তু ও বললো তেমন কিছুই না!

জারিফা : তেমন কিছু না বললেই হয়ে গেলো?..

রিদোয়ান : রিলেক্স! চেঁচাচ্ছো কেনো?..সন্ধায় তো মিট হচ্ছে ওখানেই জিজ্ঞেস করে নিবো!

– ও হ্যা! সন্ধায় আসছো তো?..

জারিফা : সন্ধায়…কি?..আম­ার তো কিছুই মনে নেই!

রিদোয়ান : আহা..প্রমিস করেছিলে! মাইন্ড ইট! [ স্নেহা আর মার্জানের দিক তাকিয়ে ] গার্লস্ তোমরা ও কিন্তু ইভিনিং এ মনে থাকে যেনো! [ বলেই রিদোয়ান হেসে হেসে চলে গেলো ]

মার্জান : [ জারিফাকে চিমটিয়ে ] আই! ইভনিং এ কি?.. কোথায় আসতে বলছে?…

জারিফা : আআহ! এইভাবে চিমটি দিচ্ছিস কেনো?

মার্জান : [ চোখ মেরে ] অউ! ডেটে নিয়ে যাচ্ছে বুঝি?..

জারিফা : আরে নাহ! পাগল নাকি?..

মার্জান : হ্যা! তাও ঠিক! ডেটে নিয়ে গেলে আমাদের ইনভাইট করতো নাকি! [ চিন্তা করতে করতে ] আচ্ছা! সো্ ইউর বার্থডে সেলেব্রেশন! রাইট!

জারিফা : আ..আই থিংক বাট নট শিয়র!

মার্জান : আচ্ছা তোর বার্থডে পার্টি তো রাহুল দেওয়ার কথা ছিলো তাই না?..উলটা হয়ে গেলো কেনো?..

জারিফা : রাহুলের বাসায়িতো পার্টি!

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] হোয়াট?..

জারিফা : হুম!

মার্জান : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] ইয়ার! রাহুল কতো ওয়েল পার্সন তাই না…জারিফাকে কথা দিয়েছে এবং কথাটা ভাংগেনি!

স্নেহা : [ আনমনা হয়ে ] রাইট! কথা দিয়েছে তাই কথা ভাংগেনি!

[ মার্জান আর জারিফা কনফিউজড হয়ে স্নেহার দিক তাকালো ]

[ স্নেহা কিছু না বলে গার্ডেনের দিক হেটে গিয়ে গাছ তলায় বসলো, মার্জান আর জারিফা ও পাশে গিয়ে বসলো,]

[ স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে আর রাহুলের বলে যাওয়া কথাটি ভাবছে ]
____________________­_____________

রাহুল : একবার reason বলো স্নেহা এরপর আমার এই চেহেরা ও কখনো দেখাবো না তোমাকে…
____________________­_____________

ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো স্নেহা!

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] স্নেহা! ইউ ওকে?..

স্নেহা : [ চোখ মুছে দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আমি আসছি!

মার্জান : কিন্তু কোথায় যাচ্ছিস?..

স্নেহা : রাহুলের কাছে [ বলেই পা বাড়িয়ে হাটা শুরু করে ]

[ মার্জান আর জারিফা মুচকি হেসে দূর থেকে চেয়ে আছে স্নেহার চলে যাওয়া ]
____________________­_____________

স্নেহা কাধে ব্যাগ ঠিক করে নিয়ে টেক্সি থেকে নামলো, এবং রাহুলের বাসার গেইটের সামনে দাঁড়ালো, বুকটা কাঁপছে তো কাঁপছে সাথে হাত, পা গুলো ও কাঁপছে,…

পা বাড়াতে যাবে ঠিক তখনি দেখে গেইট দিয়ে কেউ বেরুচ্ছে, সাথে সাথে স্নেহা শকড হয়ে থেমে যায়,

নেহা : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] ওহো সারপ্রাইজ মি স্নেহা! তুমি?.. [ হঠাৎ নেহার ফোন বেজে উঠলো ] এক্সকিউজমি! [ ফোন রিসিভ করে ] ইয়েস! ড্রাইভার you can come now!

[ স্নেহা পাথর হয়ে গেছে…আর ভাবছে, নেহা রাহুলের বাসা থেকে?.. কি করে সম্ভব?….]

নেহা : [ স্নেহার মুখের সামনে হাত নাড়িয়ে ] ও হ্যালো স্নেহা! কোথায় হারিয়ে গেলে?…

স্নেহা : কিক..কিছুনা…!

নেহা : ভাবছো আমি এইখানে কি করে? রাইট?..

[ স্নেহা অবাকচোখে তাকালো ]

নেহা : এক্সুলি! তুমি ঐদিন রাহুলের প্রোপোজ এক্সেপ্ট করোনি! তাই রাহুল আপসে্ট ছিলো!..

ইনফেক্ট তুমি ভালোই করেছো…স্নেহা!

এখন রাহুল আর আমি আই মিন! [ একটু ব্লাশিং হয়ে ] আচ্ছা থাক ওসব তোমায় বলে কি হবে! ওকে বাই হুম! [ বলেই স্নেহাকে চোখ টিপ মারলো ]

[ নেহার গাড়ী চলে আসাতে নেহা গাড়ীতে উঠে চলে যায় ]

স্নেহা এখনো মূর্তির মতো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে…পানি গড়িয়ে পড়লো চোখ থেকে… [ মনে মনে ] তারমানে রাহুল কি আমায় মিথ্যে বলেছে?..নাহ তা কিভাবে সম্ভব?.. কিন্তু রাহুল সত্যি বললে নেহা রাহুলের…বাসায় কিভাবে সম্ভব!

হঠাৎ গেইট খোলার শব্দ,

স্নেহা তাড়াতাড়ি পাশের একটি বড় গাছের পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে…বুকটা ধুপধুপ করছে…আর এইদিকে চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে,

গাড়ির হর্ন ভেসে আসলো কানে, পাশ ফিরে তাকালে দেখে…রাহুলের গাড়ী বেরুচ্ছে…

গাড়ী স্নেহার দিক ক্রস্ করে যেতেই জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছে রাহুলকে, চোখে কালো সানগ্লাসটাও লাগিয়ে রেখেছে…

স্নেহার এমন লাগছে যেনো কতটা বছর পর রাহুলকে দেখছে! চোখে মুখে খুশির ঝলক ছুটছে স্নেহার…
গাছের ধার থেকে বেড়িয়ে চেয়ে আছে রাহুলের চলে যাওয়া…

হঠাৎ স্নেহা খেয়াল করলো রাহুলের গাড়ী কিছুটা এগিয়ে গিয়ে থেমে গেলো,
স্নেহা তাড়াতাড়ি আবার গাছের ওপাশ গিয়ে লুকে পড়ে,
____________________­_____________

এইদিকে,

রাহুল : [ গাড়ী থামিয়ে মনে মনে ] এমন কেনো মনে হচ্ছে যেনো স্নেহা আমার আশেপাশেই আছে! [ হঠাৎ সানগ্লাস খুলে লুকিং মিররে চোখ পড়তেই রাহুলের হার্টবিট দ্রুত চলতে থাকে ]

গাছের দিক স্নেহার স্কার্টের পার্ট উড়ছে…একটু পর পর স্নেহা মাথা বের করে উকি দিয়ে দিয়ে দেখছে,

রাহুল : [ চোখে পানি এসে জমে গেছে, মনেমনে একটু হেসে ] I knew that স্নেহা! তাই তো বলি এমন কেনো লাগছে! [ বলেই গাড়ী রেংকিং এ রেখে পেছনে ব্যাক দিলো ]

গাড়ী পেছনে যতো এগুচ্ছে স্নেহার হার্টবিট আরো দ্রুত দৌড়াচ্ছে,

গাছের দিক এসে গাড়ী থেমে গেলো…

স্নেহা চোখ বন্ধ করে বুক চেপে ধরে… আর মনে মনে ভাবছে কোনো রাহুল ওকে দেখে ফেলেনিতো!

একটু পর কানে আওয়াজ আসলো… এবং সাথে সাথে চোখ খুলে খেয়াল করলো…

চলবে……