Friday, August 22, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2368



সতীনের সংসার পর্ব ২

0
সতীনের সংসার 

সতীনের সংসার

পর্ব ২
Writer: তানজিন সুইটি

সতীনের সংসার -দূরে থাকো আমার থেকে।(একথা বলেই চলে গেলো কাঁদতে কাঁদতে।)?

_আনিকাআআআআ

আনিকা আর কোনো দিকে না তাকিয়ে সোজা ছাদে চলে গেলো দৌড়িয়ে।তার লজ্জায় ঘৃণায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছা করছে।তাদের এতো বছরের বিয়ের বয়সে এমন কর্ম কখনো দেখে নি রায়হানের কাছ থেকে।
ওর মনো মুগ্ধ স্বতব্যবহারে কারণেই বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলো আনিকা।

তখন হয় তো ওর ঐরকম ব্যবহার ছিলো বানোয়াট।
না হলে কি আজ দেখতে হতো এমন কুকাজ।

ছাদের এক কোণায় বসে দুপা মেলে দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বাধ ভাঙা ঝর্ণার মতো দুচোখ বেয়ে পানি ঝরে চলছে অবিরত ভাবে।হাজারও প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তার মনে।আসলেই কি সে এতোখন যাবত বাস্তবে মুখোমুখি হয়ে দেখেছে নাকি ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখার মতো হয়েছে?

যদি এই দৃশ্য দেখানোরই ছিলো আল্লাহর।তাহলে কেনো দুচোখ অন্ধ করে দিলোনা আগে তার?ভাবতে পারছে না আর সে।কি করবে,কোথায় যাবে,মরে গেলে দুধের শিশুটিকে কে দেখবে?

শুনেছে মা মরে গেলে বাপ হয় যেনো তাওই।আর সৎ মা করে বেড়ায় অঢাল অত্যাচার,শেষ পরিণতি হয় তার রাস্তায়।না না রায়হান এমন কাজ করতে পারে।তার কলিজার টুকরা আরিয়ানকে অনার্থ করতে পারে না।

এমন আরও অনেক কথা চিন্তা করতে করতে কখন যে আনিকা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে ছাদের কোণাতে বসে।

অন্যদিকে রায়হান রেডি হয়ে চলে গেলো বাহিরে।
যখন বাহিরে যায় তখন সদর দরজা দিয়ে রায়হানের বাবা মা আর এক মাত্র ছেলে আরিয়ান প্রবেশ করছে।

আরিয়ান: আব্বু কোথায় যাচ্ছো?

রায়হান: এই তো বাবা একটু বাহিরে।

-ওকে আমার জন্য মজা নিয়ে এসো কিন্তু?

-আচ্ছা বাবা।

রায়হানের মা: কি রে আজ তোর অফিস ছিলো না?

রায়হান: ছিলো।

রায়হানের মা: তাহলে এতো তাড়াতাড়ি যে আজকে?

রায়হান : একটু কাজ ছিলো তাই এসেছিলাম।

বলেই হু হু করে হাটতে লাগলো সামনে।পিছন থেকে রায়হানের আব্বু জিঙ্গাসা করলো বউমা কোথায় রে?
কিন্তু কে শুনে কার কথা?ও ওর মতো দূরুত্ব হেটে স্থান ত্যাগ করলো ঐখান থেকে।না হলে যে তার অনেক প্রশ্নের সম্মুখী হতে হতো এতোখনে।

সন্ধ্যা পার হয়ে রাত হতে চললো।আনিকার খোঁজ পাচ্ছে না বাসার কেউই?অন্যদিকে রায়হানও বাসায় ফিরছে না। এতবার কল করলো আশরাফ সাহেব রায়হানকে তবুও রিসিভ করছেই না।রেগে গিয়ে কয়েকটা কথা শুনে ফেললো মিসেস সালেহা বেগমকে।

-এই তোমার কারণে আজ এতো মাথায় উঠেছে।
ঘরে বউমার খবর নেই আর সে আছে আড্ডা বাজি নিয়ে রাতের বেলাও।আরে বিয়ে করেছিস,বাচ্চা হয়েছে, এখন আড্ডা দিবি বউ বাচ্চা নিয়ে।আমিও তো ইয়াং ছিলাম এক সময় কিন্তু দ্বায়িত্ব কাধে আসার পর থেকে প্রায়টাই বাদ দিয়ে দিয়েছি বদঅভ্যাস গুলো।
আজ আসুক ও বাড়ি,ওর খবর আছে বলে রাখছি রায়হানের মা তোমাকে। যদি বউমার কিছু হয়ে যায় না তাহলে……

এমন রাগান্বিত দেখে মিসেস সালেহা বেগম কিছু বলার সাহস পায় তা বলতে।তাই আরিয়ানকে কোলে নিয়ে চলে যায় নিজ রুমে চুপ করে।

আরিয়ানটাও আজ অনেক কেঁদেছে মা মা বলে।
সারা সন্ধ্যা পার করে দিছে কেঁদে কেঁদে।হয় তো কেঁদে অনেক ক্লান্ত হয়ে গেছে তাই ঘুমিয়ে পরেছে।শিশুর মন তো,মাকে না দেখলে কু মন ডাকবেই।

বাহিরে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো।হঠাৎ রায়হানের আগমন দরজা ভেদ করে ড্রয়িং রুমে।রাত প্রায় ১২টা
আশরাফ সাহেব সোফায় বসে বই পড়ছে।পায়ের শব্দ শুনে।

-দাড়াআআ (একটু উচ্চ সরে)

-জি আব্বু

-এতোখন কোথায় ছিলি?

-এইতো পাশেই….

-কোন পাশে??আর তোর ফোন কোথায়? কতবার কল করেছি সেইটা দেখেছিস একবার?

-কো..কো.. কোথায়?(বলে প্যান্টের পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে ৪০+ মিস কল।)

-কি হলো কথার উত্তর দিচ্ছিস না যে??

-ইয়ে মা..মানে ফোনটা সাইলেন্স হয়ে গেয়েছিলো, খেয়াল করি নি।

-সেটা খেয়াল করবি কি?তোর তো এখন আর সংসার ভালো লাগে না, ঠিক না?

-না মানে হ্যাঁ..

-চুপ???হারামজাদা।তোর বউকে পাওয়া যাচ্ছে না আর তুই হ্যাঁ না মানে খুঁজছিস?অন্যদিকে দুধের শিশুটা মা মা বলে কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে গেছে সেটা খোঁজ নিয়ে দেখেছিস?একটা কথা কান খুলে শুনে রাখ,আমার রক্তে মাংসে করা যা কিছু করেছি সব
কিছু বউমা আর আরিয়ানের নামে দিয়ে যাবো।
যদি শুনি এমন-তেমন কখনো করেছিস।

বলে চলে যেতে লাগে।পিছু ফিরে বলে।

-বউমাকে ভোর হওয়ার আগে দেখতে চাই বাড়িতে।
না হলে সকাল হলে ত্যাজ্যপুত্র করবো মনে যেনো থাকে।

থ হয়ে দাড়িয়ে থাকে রায়হান ঐখানেই।কোথায় গেলো আনিকা ওকে ছেড়ে।এতো ঝড়বৃষ্টি বাহিরে।যদি কিছু হয়ে যায় আনিকার,কিছুই ভাবতে পারছে না আর।ও যে বাঁচবে না আনিকাকে ছাড়া এক মূহুর্তে।হঠাৎ করে মনে পরে গেলো। আনিকা তো রাগ করলে ছাদে চলে যায় মাঝে মাঝে।আজ যায় নি তো,গিয়ে দেখে আসবে কি যেয়ে।দেড়ি না করে এক দৌড় দেয় ছাদে।

রাত বেরেছে অনেক,আধারও আছে বোটে। তার সাথে ঝড়বৃষ্টিত তো আছেই।হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকিয়ে আলোর আভাস পরলো ছাদের এক কোণে।গুটিশুটি হয়ে পরে আছে আনিকা যে।

রায়হানের বুকের একপাশে বিদ্যুৎ চমকানোর মতো করে উঠলো খনিকের মধ্যে।শ্বাসকষ্ট হচ্ছে ওর এমন অবস্থা দেখে চিৎকার করে কেঁদে উঠলো
আনিকাআআআআআআ???

চলবে…..

(বিঃদ্রঃ বার বার বলছি আপনাদের,যদি ভালো না লাগে তাহলে ইগনোর করুন,তবুও কথা শুনাতে আসবেন না please.দরকার নেই আপনাদের লাইক কমেন্টের যাদের আনিকার জীবন কাহিনী পড়তে না ইচ্ছুক।ভুলত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন অনুগ্রহ করে।ধন্যবাদ অগ্রিম আপনাদের সবাইকে)

 সতীনের সংসার পর্ব  ১

0
সতীনের সংসার পর্ব  ১
 

সতীনের সংসার

পর্ব  ১

তানজিন সুইটি

দরজা খুলেই এমন একটা দৃশ্য দেখবে ভাবতেও পারে নি। তারই বেড রুমে,তারই বিছানায় অন্য এক মেয়ের সঙ্গে উলঙ্গ হয়ে একে উপরের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে অনতরঙ্গ ভাবে ফিজিক্যাল রিলেশন করছে।তাদের শরীরে কোনো জামা-কাপড় নেই,এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

তার চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছে না,এটা কি সে
স্বপ্ন দেখছে নাকি বাস্তব?খনিকের মধ্যে তার সর্ব শরীর বরফের ন্যায় হয়ে গেছে।কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।পুরো পৃথিবী গোল গোল দেখছে রুমের মধ্যে।চোখ বেয়ে পানি পরছে। বুকের ভিতরে ঘূর্ণিঝড়ের মতো ভেঙে-চুরে,ডলে-মুচরে শেষ হয়ে যাচ্ছে।প্রায় ৫মিনিট অতিক্রম হওয়ার পর জোরে একটা চিৎকার করে উঠলো রায়হাননননননন।

চিৎকারের শব্দ শুনে একে-অপরকে ছেরে দিয়ে
ফ্লোর থেকে জামা-কাপড় তুলতে ব্যস্ত হয়ে গেলো তারা।মেয়েটা ওড়না হাতে নিয়ে শরীরের গোপনাঙ্গ
ঢাকার চেষ্টা করেই চলছে তারপর খনিকের মধ্যে
রুম থেকে দৌড়িয়ে বেড়িয়ে গেলো। আর অন্যদিকে রায়হান টাওয়ালটা প্যাচিয়ে নিলো তারপর একপা দু পা করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।

-আমার কথা শোনো একটু।
কাছে গিয়ে ধরার চেষ্টা।

-please আমাকে ঐ হাতে ছুবে না।শুধু কয়েক দিনের জন্য মা(শ্বাশুড়ী) ও বাবাকে(শ্বশুর) নিয়ে রুমানার
(ননদ) শ্বশুরবাড়ি গেয়েছিলাম ওকে দেখতে আর তার মধ্যে এমন একটা কান্ড করে ফেললে।ছিঃ আমার ঘৃণা করছে অনেক এসব দেখে। ভাগ্যিস ভালো মা-বাবা আরিয়ানকে নিয়ে পাশের বাড়ির স্বর্ণা আন্টি ও তার হাজবেন্ডের সাথে কথা বলতে গেছে। না হলে আজ তাদের কি অবস্থা হতো একবারও কি ভেবে দেখেছো রায়হান।একবারও কি আরিয়ানের কথা মনে পড়লো না।ওর নিশ্বপাপ মনে যদি একবার আঘাত হানে তোমার এমন কুকর্মের দৃশ্য দেখে। তাহলে বুঝো তার সামনে কিভাবে মুখ নিয়ে দাড়াবে।

-তুমি যা ভাবছো সেটা নয়….(কথা শেষ করার আগেই)

-দূরে থাকো আমার থেকে।একথা বলেই চলে গেলো কাঁদতে কাঁদতে ?????

-আনিকাআআআআআ????

চলবে…..

(ভুলত্রুটি হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন কিন্তু ভুল বুঝবেন না?বাস্তব জীবন কাহিনী তুলে ধরার চেষ্টা যেনো অন্যদের এমন অবস্থা না হয় )

হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part 20

0
হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part 20

হারিয়ে যাওয়া, পথ খুজে পাওয়া part:20

লেখা –সুলতানা ইতি

 

ঘুম আর হলো না,নির্ঘুম রাত্রির মধ্যে আর ও একটি রাত যোগ হলো,

মসজিদ থেকে মুয়াজ্জিন এর সুমধুর কন্ঠে আযানের সুর ভেসে আসছে, আর শুয়ে থাকতে পারবো না যাই বারান্দায় গিয়ে একটু বসি,

আনুশা কি ভাবে অন্ধকার থেকে আলোতে পরিনত হয় সারা দুনিয়া সেটাই দেখছে, এতো সুন্দর সকাল আবছা আলো আবছা অন্ধকার,, কি যে মনোরঞ্জন করা দৃশ্য। উফ কি বলবো অনেক দিন হয়েছে সূর্য উঠা দেখিনা আজ দেখবো,কতো গুলো দিন বিদেশের বুকে কাটাতে হয়েছে,
এতো সুন্দর দেশ ছেড়ে থেকেছি,,

আনুশার প্রকৃতি দৃশ্য উপভোগ করতে করতে কখন যে আটটা বেজে গেছে সেই দিকে কোন খেয়াল ছিলো না,আজ অন্নি আমায় ডাকতে আসেনি কেনো তা হলে কি রাতের ব্যাপারটা নিয়ে অন্নি রেগে আছে,,যাই ফ্রেস হয়ে গিয়ে দেখি কি অবস্থা, অন্নির

আনুশা: ডাইনিং টেবিলে বসতে বসতে,কিরে অন্নি এতো বেলা হয়ে গেলো আমাকে ডাকতে যাসনি কেনো

অন্নি: উহ কি সখ উনার প্রতিদিন আমি গিয়ে ডেকে দিবো,রাগ দেখানোর সময় তো এগুলা মনে থাকে না(মনে মনে বল্লো)না এমনি অনেক রাতে শুয়েছিস তো তাই আর সকাল সকাল ডাকতে যাইনি

আনুশা: ওহ তাই বল,তাড়া তাড়ি রেডি হও আজ অফিসে অনেক কাজ আছে,
অন্নি: আমি রেডি,

আনুশা: তা হলে খেয়ে নে আমি গিয়ে গাড়িতে বসছি

সুমি: তুই তো কিছুই খেলিনা আনু

আনুশা: আর খাবো না আপু,গেলাম, মায়ের দিকে খেয়াল রাখিস

অন্নি: খাওয়া শেষ করি তাড়া তাড়ি নইলে ম্যাম রেগে যাবে

আনুশা: অন্নি আসতে লেইট হচ্ছে,ততক্ষনে আমি ল্যাপটপ টা নিয়ে অফিসের কাজ গুলো সেরে ফেলি,এ কি মেইল এসেছে কখন,ও রাতে,,,যাই হোক আগে চেক করি কি এসেছে, মেইল চেক করে তো আনুশা মাথায় বাজ পড়লো

অন্নি: কিরে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছিস কেনো, কি হইছে

আনুশা: কন্সট্রাকসান সাইডে যে কাজ চলছিলো সেখানে কিছু লোক জামেলা করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে
অন্নি: এখন কি হবে

আনুশা: তুই অফিসে যা আমি এদিক টা সামলে নিবো,

অন্নি: আমি ও তোর সাথে যাবো তুই একা পারবি না

আনুশা: অহ অন্নি কেন বুঝিস না আজ অফিসে ম্যানেজার সিলেক্ট করার ইন্টার্ভিউ,, তোকে এখানে দরকার, তুই এদিক সামলা, আমি সাইডে দেখছি

অন্নি: ঠিক আছে কোন প্রব্লেম হলে আমাকে জানাস কেমন

অন্নি আলাদা গাড়ি নিয়ে অফিসে চলে গেলো

সারা দিন আনুশা আর অন্নির খুব ব্যাস্ত সময় কেটেছে, অন্নি অফিস শেষ এ বাসায় এসে দেখে আনুশা এখন ও ফিরেনি, অন্নির খুব চিন্তা হতে লাগলো, বার বার ফোন করছে কিন্তু আনুশা ফোন ধরছেনা দেখে অন্নির টেনশন আর ও বেড়ে গেলো

আনুশা: যাক সব কাজ ভালোয় ভালোয় হয়ে গেছে একটু সময় লেগেছে বাট কোন ব্যাপার না,

মা মনে হয় টেনশন করছে আমার জন্য,অন্নিকে ফোন করে বলি আমি আসছি,একিইইই অন্নির এতো গুলো কল এক সাথে নিশ্চয় বাসায় সবাই আমার জন্য টেনশন করছে আর দেরি করা যাবে না এক্ষনি যেতে হবে,

ড্রাইভার যত দ্রুত সম্ভব গাড়ি ড্রাইভ করুন,
আর ও ১ ঘন্টা লেগে গেলো আনুশার বাসায় পৌছাতে,

অন্নি: ঐ তো গাড়ির শব্দ শুনা যাচ্ছে আনুশা এসেছে

সুমি: আমি গিয়ে দরজা খুলে দিচ্ছি

আনুশা: বাসায় ডুকে দেখি সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে,মনে হচ্ছে আমি কোন ভিন গ্রহের প্রানি,কি হলো তোমরা এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো

আনুশার আম্মু: তুই ফোন ধরছিলি না কেনো কতো টা চিন্তা হচ্ছিলো তোর জন্য

আনুশা: উহ মা আমি এখন আর ছোট আছি বলো,,এতো চিন্তার কি আছে কাজে গেছি কাজ শেষ হলেই ফিরে আসবো

সুমি: হুম বুঝেছি আপনি এখন অনেক বড় হয়েছেন সবার মুরুব্বী, এখন আসেন খেতে বসেন

আনুশা: হুম সারা দিন কিচ্ছু খাইনি খুব খিদা পেয়েছে,আমি ফ্রেস হয়ে আসছি

অন্নি: খিদা লাগবে না তোর তো কাজ করার সময় নিজের দিকে কোন খেয়াল থাকে না,

আনুশা: অন্নির কথায় কান দিলাম না ফ্রেস হয়ে খেতে বসলাম অন্নি ও খাচ্ছে আমার সাথে,,অন্নি কাকে সিলেক্ট করলি ম্যানেজার পদে

অন্নি: করেছি একজন কে, ফাইল নিয়ে এসেছি,জানতাম তুই দেখতে চাইবি তাই,,ফাইল টা তোর রুমেই রাখা আছে দেখে নিস

আনুশা: ওকে,,,,
খাওয়া শেষ করে রুমে গেলাম,রুমে যেতেই টেবিলে রাখা ফাইল এর দিকে নজর পড়লো, ফাইলটা খুলে দেখতে লাগলাম,একটা জায়গাতে এসে চোখ টা আটকে গেলো,,

তানভীর মাহমুদ নাহিয়ান,,এই নাম টা খুব পরিচিত লাগছে,কে হতে পারে কে, দূর মনে পড়ছেনা কেনো ক্লিয়ার করে, কোথায় যেন শুনেছি,উফফ আর ভাবতে পারছি না মাথা টা খুব ধরেছে কি যে করি, যেই হোক না কেনো আমার কি আমি আর ভাববোনা, আজকে ওষুধ খেয়ে ঘুমাবো, যথারিতী ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো আনুশা

সকালবেলা অন্নি ভাবছে আনুশা এখন ও ঘুম থেকে উঠছে না কেনো মিটিং এর কথা কি আনুর মনে নেই নাকি যাই আমি ঘুম থেকে জাগিয়ে দিই

অন্নি: এই আনুশা আনুশা উঠ,দেখ ৮:৪০ বেজে গেছে, আজ।মিটিং আছে তো

আনুশা: আড় মড় ভেংগে উঠলাম কাল রাতে ঘুমের ওষুধ টা ভালো একটা ঘুম উপহার দিয়েছে আমাকে

অন্নি: আনু তুই ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়েছিস তাই না

আনুশা: কি করবো বল ঘুম আসতেই চায় না,,তাই বাধ্য হয়ে খেয়েছি

অন্নি: আনু তোর পাস্ট তোকে এখন ও তাড়া করে তাই না না

আনুশা: অন্নির কথা শুনেই কাল রাতের কথা মনে পড়ে গেলো তানভীর মাহমুদ নাহিয়ান, কে এই ছেলে,নামটা যেন খুব পরিচিত

অন্নি: কোথায় হারিয়ে গেলি তুই, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখ কয়টা বাজে

আনুশা: উহ হুম এই তো আমি ফ্রেস হয়ে আসছি,,আনুশা ফ্রেস হয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলো

অন্নি: কিরে নাস্তা না খেয়েই যাবি

আনুশা: সময় নেই রে,তাড়া তাড়ি আয়

অন্নি : এই নে আন্টি খাবার প্যাক করে দিয়েছে,অফিসে খাবি, চল

অফিসে গিয়ে আনুশা,অন্নি কে বল্লো কাল যাকে এপয়েন্ট করেছেন উনি আসেনি এখন ও

অন্নি: ম্যাম এসে পড়বে, নতুন তো একটু তো ভুল হবেই,

আনুশা: অন্নি আপনি মিটিং এর জন্য সব রেডী করুন,আর মিঃ সানি কখন আসবে

অন্নি: ম্যাম উনি সাড়ে দশটার মধ্যে চলে আসবে উনি আসার আধ ঘন্টা পর মিটিং শুরু করলে কেমন হয়

আনুশা: ওয়েল, কাজের যেন গাফিলতি না থাকে,এই ডিল টা আমি কিছুতেই হাত ছাড়া করতে চাই না

অন্নি: ইয়া ম্যাম

মহনা: ম্যাম আসবো

অন্নি: ইয়া এসো

মহনা: আমাদের নতুন ম্যানেজার মিঃ তানভীর মাহমুদ নাহিয়ান,,,উনি অফিসে এসে গেছে,

আনুশা: ও এসে গেছে, উনাকে পাঠিয়ে দিন

মহনা: ওকে ম্যাম

অন্নি: ম্যাম আমি তা হলে যাই মিটিং এর সব এরেঞ্জ করি

আনুশা: ওকে

আনুশা আজকের মিটিং ফাইল গুলো আবার দেখছি,অন্নি সব দেখেছে তবু ও আরেকবার দেখে নেয়া ভালো,

এমন সময় কেউ নক করলো ভিতরে আসার জন্য,আনুশা না তাকিয়ে বলে দিলো ইয়েস কামিন

ম্যাম আমি আপনার কম্পানিতে ম্যানেজার হিসেবে আজই জয়েন করলাম

আনুশা: ওও বলে,আনুশা তার দিকে তাকিয়ে বিরাট একটা শকড খেলো,,,,,,আপনিইইইইইই

তানভীর : আনুশা তুমিইইইইইই,দু জন,দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে কারো মুখে কোন কথা নেই

কিছুক্ষন পর,তানভীর এর ঘোর কাটলো,আনুশার চিৎকারে,

আনুশা: অন্নি, অন্নিইইই

অন্নি: ধড় পড় করে ক্যাবিনে ডুকলো,ম্যাম কি হয়েছে, আপনি রেগে আছেন কেনো

আনুশা: এই লোকটা এখানে কি করছে,,কেনো এসেছে” হোয়াই এন্সার মি”

অন্নি: ম্যাম উনি তো আমাদের কম্পানির ম্যানেজার,আর কালকে উনি সিলেক্ট হয়েছে

আনুশা: উনি কি করে সিলেক্ট হয়,

অন্নি: কি করে সিলেক্ট হয় মানে একটা লোক তার সব যোগ্যতা থাকা সত্তেও সে সিলেক্ট হবে না

আনুশা: না হবে না,

অন্নি: প্লিজ মিঃ তানভীর আপনি এখন আসুন আমি ম্যাম এর সাথে কথা বলছি

তানভীর কিছু না বলে ক্যাবিন থেকে বেরিয়ে গেলো

অন্নি: আনু তোর কি হয়েছে বলবি,,তুই কি উনাকে ছিনিস

আনুশা: কি বলবো অন্নিকে এখন,তানভীর যে আমাকে ভালোবাসে আর আমি চাই না এই ভালোবাসাতে জড়াতে,,এতো গুলো বছর দূরে ছিলাম হে আল্লাহ এ তোমার কেমন লিলা,বার বার একটা মানুষ এর সাথে আমার কেনো দেখা করিয়ে দিচ্ছো,কেনো আমার সাথে এমন হয়

অন্নি: আনু বোন আমার চুপ করে আছিস কেনো বল,দেখ তুই তোর মনের কথা না বললে আমরা বুঝবো কি করে, তানভীর, এক মিনিট আনু,এই কি সে তানভীর নয় তো যে ছেলেটা তোকে কলেজে এ অনেক লাইক করতো,তুই একদিন বলেছিলি,আমাকে আমি ভুলে গেছি,বলনা আনু

আনুশা: হুম অন্নি এই সেই তানভীর, কিন্তু ও আমার অফিসে ই কেনো জয়েন করলো

অন্নি: ছেলেটার সব দিক খুটিয়ে দেখলাম,অনেক ব্রিলিয়েন্ট, আমাদের কম্পানির জন্য এমন লোক ই দরকার তাই নিয়েছি

আনুশা: কিন্তু এখন কি হবে আমি ওকে আমার চোখের সামনে দেখতে পারবো না

অন্নি: আমি তোর পিএ তোর যাবতীয় সব কিছু তো আমি দেখবো,ও হলো ম্যানেজার , ও তার মতো কাজ করবে এতে তোর ক্ষতি কি,বল

আনুশা: মনে মনে অন্নি তো ঠিকই বলেছে,আর তা ছাড়া ওকে এখন বের করে দিলে ও ভাববে আমি এর প্রতি দূর্বল হয়ে যাবো,এই ভয়ে বের করে দিয়েছি, না আমি এমন টা করবো না

অন্নি: ঠিক আছে তুই যখন চুপ করে আছিস,তখন ওকে আমি চলে যেতে বলি

আনুশা: না,, ও কাজ করবে ওর মতো আমি আমার মতো,বের করে দিতে হবে না

অন্নি:?????????????????

to be continue

হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part 19

0
হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part 19
হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part 19

হারিয়ে যাওয়া, পথ খুঁজে পাওয়া part:19

লেখা –সুলতানা ইতি

 

আনুশা আর অন্নি মামার বাড়িতে পৌছে গেলো

আনুশা: মনে মনে এই বাড়িতে ছোট বেলার কতো স্মৃতি জড়িয়ে আছে,, ভাবতেই চোখের কোনে এক বৃন্দু পানি এসে জমা হলো

অন্নি: আনুশা তো বাড়িটা দেখাতে ব্যাস্ত, যাই আমি দরজা টা নক করি,
দরজায় নক করার অনেক পরে দরজা খুলে দিলো আনুশার মামাতো বোন প্রিয়া

প্রিয়া: কে আপনি?
রাতের বেলা আর অনেক দিন হয়ে যাওয়াতে অন্নিকে প্রিয়া চিনতে পারছে না এমন নয় যে অন্নি এই বাড়িতে আসেনি কোন দিন,

আনুশা এতোক্ষনে দরজার সামনে এসে দাড়ালো

আনুশা: প্রিয়া আমি তোর আনু আপু

প্রিয়া: আনু আপু তুমি ভিতরে আসো, জানো বাবা তোমাদের জন্য চিন্তা করতে করতে সে যে বিছানায়য় পড়েছে আর উঠার শক্তি হয়নি

আনুশা আর অন্নি ভিতরে গিয়ে বসলো, আনুশা এই দিকে সেই দিকে তাকিয়ে ঘরটাকে লক্ষ করেছে,এক সময় অনেক পরিপাটি ছিলো এই ঘর,এখন কেমন এলো মেলো হয়ে আছে

আনুশা: মামা কি ঘুমাচ্ছে? আর মামি কই

প্রিয়া: মা আছে বাবার কাছেই আছে ডেকে দিচ্ছি দাড়া

অন্নি: আনু কিছু বুঝলি

আনুশা: কি বুঝবো বল

অন্নি: তোর মামির অহংকার, এখন আর আগের মতো নেই,থাকলে বাড়িটার এই অবস্থা হতো না

আনুশা: থাম তো তুই মামি আসছে বুঝতে পারলে প্রব্লেম আছে,,

আনুশা মামিকে সালাম করলো

মামি: আনুশাকে বুকে জড়িয়ে কান্না শুরু করে দিলো,, সেদিন যে তিনি অনেক বড় ভুল করেছিলো আনুশা আর তার মাকে বের করে দিয়ে তার জন্য আজ তিনি অনুতপ্ত,,

আনুশা: কি বলবো মামি কে বুঝতে পারছি না, অনেক কস্টে মামিকে থামালাম

মামি: তোর মাকে নিয়ে আসিসনি কেনো,এখন ও নিশ্চুয় আমার উপর রেগে আছে

আনুশা: মা আপনাদের কথা সব সময় বলে,রেগে থাকলি কি আর বলতো,মামি মামার সাথে কথা বলবো

মামি: হুম আয় আমার সাথে,
আনুশা তো মামাকে দেখেই অভাক একদম বিছানার সাথে মিশে গেছে,

মামা : কাপা কাপা গলায়, আনু তুই এসেছিস

আনুশা: মামার কাছে গিয়ে বসলো,মামা তুমি কি করে বুঝলে আমি এসেছি,আমি তো কোন কথা বলিনি,

মামা: বুঝবো না ছোট বেলা থেকে তোকে এই বুকে আগলে রেখে বড় করেছি, তুই যখন তোর মার সাথে এই বাড়িতে আসিস তখন তোর বোনেরা বড় ছিলো সব বুঝতো,আর তুই খুব ছোট ছিলি,কোন কিছুই বুঝতিস না,,তার পর তোকে ছোট থেকে বড় করলাম,তবুও তোর কতো অভিমান মামার উপর তাই না এই জন্য ই তো এতো গুলো বছর চোখের দেখা ও দেখতে আসিস নি

আনুশা: মামার কথা গুলো শুনছি বলুক উনি,অনেক বছরের কষ্ট জমা হয়ে আছে বুকের ভিতর,কিন্তু মামাকে এই রকম বিছানায় পড়ে থাকতে দেখতে পারছি না আমি,কালই আমার সাথে ঢাকায় নিয়ে যাবো ডাক্তার দেখালে ভালো হয়ে ঊঠতে ও পারে

মামা: কিরে চুপ করে আছিস কেনো কিছু বল

আনুশা: কেনো এখানে এসেছি সব কথা মামাকে বললাম

মামা: শফিক আর ভালো হইলো না,,না বুঝে না শুনে ভাগ্নিদের জীবনটা আমি শেষ করে দিলাম

আনুশা: এমন করে বলবেননা মামা,,এই টা আমাদের ভাগ্য,

মামা: আমার তো কি অবস্থা দেখতেই পারছিস, আজ অনেক বছর বিছানার সাথে আমার সম্পর্ক এই বিছানা ছাড়া আর কোথায় ও যাওয়ার ক্ষমতা আমার নেই

আনুশা: মামি আপনি ও এখানে আছেন একটা কথা বলি কাল মামা আপনি প্রিয়া আমার সাথে ঢাকায় চলুন,সেখানে মামার চিকিৎসা হবে,ভালো ডক্টর দেখালে মামা ভালো হয়ে যাবে

মামি: তুই তোর মামাকে নিয়ে যা আমি যাবো না

আনুশা: তা বললে আমি শুনছি না আমি সবাইকে নিয়ে যেতে চাই

তার পর আনুশা অন্নি কে নিয়ে ঘুমাতে গেলো,প্রিয়া আর অন্নির বক বক শুনতে শুনতে আনুশার ঘুমটাও ভালো হয়নি

সকাল বেলা আনুশা অন্নি কে নিয়ে বড় আপুর বাসায় গেলে,,

বৈঠক বসলো সেখানে মুরুব্বী দের সিন্ধান্ত হলো শফিক বউ চালানোর যোগ্য নয়,বউ এর বোন যখন বউকে নিয়ে যেতে চায় তা হলে নিয়ে যাক,,,

শফিক সবার কথা শুনে নিজের ভুল বুঝতে পারলো,সবার কাছে ক্ষমা ছেয়ে নিলো সে আর কখন ও খারাফ পথে যাবে না,,তবুও তার ছেলে মেয়েরা যেন মা হারা না হয়,

আনুশার শফিক এর কথা পছন্দ হয়,,আনুশা মুরুব্বী দের বল্লো উনি যখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে তখন উনাকে আরেকটা সান্স দেয়া উচিৎ,,

গ্রামের সব মুরুব্বী আনুশার কথায় শুনে খুশি হলো

,সব ঠিক করে আনুশা মুরুব্বীদের সম্মুখে বোনের জামাইর হাতে ১০ লক্ষ টাকা তুলে দিলো যেন। business শুরু করতে পারে তার বোন কে যেন ভালো রাখতে পারে,শফিক এখন টাকা নিতে নারাজ তবুও আনুশা বুঝিয়ে বলে দিলো

সব ঠিক ঠাক ভাবে করে আনুশা মামা মামি প্রিয়াকে নিয়ে ঢাকায় রওনা হলো

ঢাকায় পৌছানোর পর
আনুশার আম্মু ভাই, ভাবি, ভাইজী সবাইকে দেখে তার আনন্দ যেন ধরছেই না,,

অন্নি: আনুশা এই দিক টা তো হলো, অফিস থেকে ফোন এসেছে জরুরী ভাবে ম্যানেজার ছেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলো মহনা,এখন কি করবি

আনুশা: ঠিক আছে আমি অফিসে যাচ্ছি তুই থাক এখানে সবার সাথে

অন্নি: আমি থাকবো মানে আমি এখানে থেকে কি করবো

আনুশা: মামাকে কোন ডক্টর দেখালে ভালো হবে, কি করতে হবে তুই এগুলা দেখ
অন্নি: ওকে, তবে তাই হোক

আনুশা অফিসে চলে আসলো, অফিসটা এখন ও নিজের পছন্দে সাজায়নি,অন্নি যেমন সাজিয়েছে তেমন ই আছে,,যদি সাজটা আমার পছন্দ হয়নি,তবুও অন্নি কষ্ট পেতে পারে এই জন্য চেঞ্জ করতে ইচ্ছে করছে না

নিজের কেবিনে এসে বসলাম,,

মহনা: ম্যামম এর সামনে যেতে আমার ভয় লাগে,এই দিকে অন্নি ম্যাম ও আসেনি,কি আর করা যাই নক করি আগে,

আনুশা: কামিন,

মহনা: ম্যাম ইন্টার্ভিউ ডেইট টা কখন দিবো?

আনুশা: কালকে দিয়ে দিন,,কেননা পরশু একটা মিটিং আছে সো সময় হবে না আর

মহনা: ওকে ম্যাম

তার পর অফিসের কাজে মন দিলাম,সব কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতে লেইট হয়ে গেলো, আজকে অন্নির ভাষণ শুনতে শুনতে আমার প্রান যাবে,যদি ওকে সাথে নিয়ে আসতাম তা হলে এতো কাজ একা আমাকে করতে হতো না, যাই হোক বাসায় যাই

অন্নি: নাহ আজ আমি আর আনু কে কিচ্ছু বলবো না,

আচ্ছা আনুকে জানতে হবে ও কি সত্যি আর কোন দিন বিয়ে করবে না,
কি জানি বাপু,ওর জন্য তো আমার বিয়ে টা ও হচ্ছে না,আমি আমার বিয়ের কথা বললে যে ভাবে রেগে যায় না জানি নিজের বিয়ের কথা শুনলে কি করবে

আনুশা: দরজায় কলিং বেল বাজালাম,সুমি আপু দরজা খুলেছে,,যাক ভালোই হলো

সুমি; আয় তোকে খেতে দিচ্ছি সবাই ঘুমিয়ে গেছে

আনুশা: আপু খিদা নেই খাবো নারে তুই শুয়ে পড়,

সুমি আপু চলে গেলো ঘুমাতে, আর আমি আসলাম আমার রুমে,

ঘুম আসবে না জানি,সেই পাঁচ বছর আগে থেকেই চোখের ইচ্ছে হলে ঘুমের। পরীকে বসতে দেয়,ইচ্ছে না হলে দেয় না,
আমার সব কিছু পালটে গেছে ডায়েরী লিখার অভ্যাস টা পাল্টাতে পারিনি,রোজই কোন না কোন বিষয় নিয়ে ডায়েরী লিখা হয়,,আজ ও ডায়েরী টা নিয়ে লিখতে বসলাম

অন্নি: যা ভেবেছি তাই হলো তুই ঘুমাবি না জেগে জেগে ডায়েরী লিখবি তাই না

আনুশা: তুই এখানে এতো রাতে, তুই ঘুমাসনি কেনো

অন্নি: আমি ঘুমিয়ে ছিলাম,দরজায় বেল ভাজতে শুনে বুঝলাম তুই এসেছিস তাই,আচ্ছা আনু তুই ডায়েরী লিখিস কেনো

আনুশা: মানে এই টা কি ধরনের প্রশ্ন, আমার ইচ্ছে আমি লিখি

অন্নি: সেটাই তো কার জন্য লিখিস,তুই তো ঠিক করে রেখেছিস জীবনে আর সংসার করবি না বিয়ে করবি না তা হলে এতো কিছু কার জন্য

আনুশা:?????অন্নিইইইই এতো রাতে তোর সাথে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না

অন্নি: এই রে আবার রেগে গেলো পালাই,আমি এখান থেকে

আনুশা: (মনে মনে)অন্নি তুই আমার সব ছেয়ে কাছের বন্ধু আমার কষ্ট গুলো খুব কাছে থেকে দেখেছিস,তবু ও কেনো আমাকে এই সব কথা রাগিয়ে দিস,আমার অতিতকে মনে করিয়ে তুই কি সুখ পাস বলতো

অন্নি: বাবাহ নিজের রুমে চলে এসেছি এই ভালো নইলে আনু আমাকে খেয়ে নিতো আচ্ছা ওর সাথে বিয়ে নিয়ে কথা বলবে কে আন্টি তো আমাকে বলতে বলেই খালাস,উনার মেয়েকে যে এই ব্যাপারে কথা ছোঁয়ানোই যায় না,

কি করি এখন,এই দিকে বাবা আমার বিয়ের জন্য পাত্র দেখছে আমি বিয়ে করে পেল্লে আনুশার কি হবে,ওতো বড্ড একা,
দূর এতো কিছু ভেবে কাজ নাই আমি ঘুমাই

আনুশা: ঘুম যেন আসতেই চায় না,অন্নি এসে ডায়েরী লিখার মুড টা নষ্ট করে দিলো,বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছি ঘুম যেন আসতেই চায়না,,উফফ ভালো লাগছে না আর

to be continue

হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part 18

0
হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part 19

হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part 18

লেখা –সুলতানা ইতি

 

বিকেল এর দিকে অন্নি আর আনুশা রওনা হলো গ্রামের উদ্দেশ্য

আনুশা: ভাবছি কি করবো সেখানে গিয়ে ঐ লোকটাকে তো আমার দুলা ভাই বলতে ও ঘেন্না লাগে,সারা দিন জুয়া খেলে টাকা নষ্ট করবে,,তার যে ৩ টা বাচ্ছা আছে তাদের ভবিষ্যৎ আছে সে দিকে তার কোন খেয়াল নেই,,,পারে শুধু ক্বাপুরুষ এর মতো বউ এর গায়ে হাত তুলতে,

কি করবো আমি এখন আপুকে নিয়ে আসলে বাচ্ছারা মা হারা হয়ে যাবে আমি চাইনা তারা কস্টে থাকুক,আবার যদি বাচ্ছাদের সহ নিয়ে আসি,,সেটা ও ভালো দেখাবে না,কারন লোকে তাদের পিতার পরিচয় চাইবে,তোখন কি বলবে ওরা ওহ ভাবতে পারছি না কিছু,কে জানে হয় তো এখন ও জুয়ার আসরে বসে আছে

অন্নি: আনুশা কি এতো ভাবছিস বলতো, আরে ওখানে যাবি দুলা ভাইকে টাকাটা দিয়ে চলে আসবি,এতে এতো গভীর ভাবনার কি আছে

আনুশা: নারে অন্নি চুপ চাপ টাকা দিয়ে আসলে হবে না,এবার এর একটা বিহিত করতে হবে, চুপ থেকে থেকে টাকা দিয়ে আসতে আসতে লোকটার লোভ বেড়ে গেছে,,হ্যা আমাদের সমাজে যৌতুক প্রথা আইনত অপরাধ,,কিন্তু আমি ওর নামে থানা পুলিশ করতে চাইছি না,, এতে বাচ্ছাদের তার প্রতি একটা খারাপ ধারণা জন্ম নিবে,, আমি চাইনা আমার মতো করে সব সন্তান তার বাবাকে ঘৃনা করুক

অন্নি: তুই তা হলে কি করবি ভাবছিস

আনুশা: দেখি কি করতে পারি,এই বার ধমকি দিবো,যদি তাতে কাজ না হয় তা হলে পরে ভেবে দেখবো

অন্নি: আচ্ছা গ্রামে তো যাচ্ছিস তোর মামার সাথে দেখা করবি

আনুশা: ওদের কথা মনে ও রাখতে চাইনা

অন্নি: দেখ আনু আমি তোর কষ্ট টা বুঝতে পারছি, সেই সাথে তুই কিন্তু এইটা ভুলে যাচ্ছিস, তোদের যখন কোন আশ্রয় ছিলো না তখন তোর মামা তোদেত আশ্রয় দিয়েছে, শুধু তাই নয় উনি যদি তোকে প্রথম থেকে লিখা পড়া না করাতো, তা হলে আজ যেই জায়গাতে আছিস,এখানে কিছুতেই আসতে পারতিস না,,হ্যা তোর মামি তোদের প্রতি একটু অন্যায় করেছে, তবুও তোর মামার দিক দিয়ে চিন্তা করলে উনাদের সাথে তোর দেখা করা উচিত,

আনুশা: হুম অন্নি তুই ঠিক বলেছিস,আসলে আমি রাগের মাথায় এতো কিছু ভেবে দেখিনি, ঠিক আছে মামার সাথে দেখা করবো

প্রায় রাত ৮ বেজে গেছে
ড্রাইভার: ম্যাম আমরা আমরা এসে পড়েছি

আনুশা: বাইরে তাকিয়ে দেখলো আপুদের বাড়ির সামনে দোকান,এর সামনে গাড়ি দাড় করিয়েছে ড্রাইভার,, কিন্তু আর ও ভিতরের দিকে যেতে হবে তো

ড্রাইভার : ম্যাম রাস্তা ভালো না গাড়ি বিতরে যাবে না, এখানে ই নামতে হবে আপনাদের

অন্নি: আনুশা নেমে পড় আমরা এখান থেকে হেটেই যাবো

আনুশার গায়ে টিশার্ট আর গলায় স্কার্ফ, তাই আনুশা দোকানের সামনে নামতে চাইছিলো না,কিন্তু না নেমে ও কোন উপায় নেই তাই নামতে হলো,শহরের মর্ডান ড্রেস গ্রামের মানুষ আড় চোখে চাইবে, তাতে ও কিছু করার নেই

অন্নি গাড়ি থেকে নেমেই হাটতে শুরু করলো, আনুশা অন্নিকে থামিয়ে দিলো
অন্নি: কি হলো চল

আনুশা: দোকানের ভিতরে কারো গলার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিস

অন্নি: কার আবার হবে দোকানে কতো লোক থাকে তাদের হবে হয় তো

আনুশা: না তুই আমার সাথে আয় তো

অন্নি:<মনে মনে)এতক্ষন নামতে চায়নি আর এখন দোকানে ডুকছে,ওকে নিয়ে আমি আর পারি না)ঠিক আছে চল

আনুশা দোকানে গিয়ে দোকানিকে জিজ্ঞাস করলো এখানে কি শফিক ভাই আছে,আনুশার দুলাভাইয়ের নাম শফিক

দোকানি: কেনো বলুন তো আর আপনারা কে

অন্নি: আমরা যে হই না কেনো সেটা পরে জানবেন, আপনি শফিক ভাইকে ডেকে দেন,দোকানের পিছনে বসে উনি কি করছে
দোকানদার শফিককে ডেকে দিলো

আনুশার আর বুঝতে বাকি রইলো না দোকানের পিছনে বসে ওরা কি করছিলো

শফিক: আরে আনুশা তুই কোন খবর দেয়া ছাড়াই এসে পড়লি

আনুশা: হুম খবর দিয়ে আসলে তো আপনার এই উন্নতি নিজের চোখে দেখতে পারতাম না, এতো দিন শুনেছি আজ দেখলাম

শফিক: রেগে গিয়ে তুই কি দেখেছিস বল

আনুশা: একদম চোখ রাঙিয়ে কথা বলবেন্না,এই টা আমার আপু নয় যে আপনার চোখ লাল দেখে ভয় পেয়ে চুপ করে যাবে, আর নয় অনেক হয়েছে,এই বার আমি এর একটা শেষ দেখতে চাই

শফিক: এই মেয়ে এই, বিদেশ থেকে কয় টাকার মালিক হয়েছ যে আমার এলাকায় এসে আমাকেই গরম দেখাচ্ছো

আনুশা: টাকা আপনার মতো লোকেরা তো টাকার ভাষাই বুঝে, অর্থলোভী একটা আপনি,

অন্নি: এই আনুশা কি করছিস এই টা পাব্লিক প্লেস, এখানে এতো বাড়াস না বাসায় চল, দুলা ভাই আপনি ও আসুন আপনার সাথে কথা আছে আমাদের

শফিক: এই দুই আঙুল এর মেয়ের সাথে আমি কি কথা বলবো

আনুশার তো শফিক এর কথা শুনে রাগে আগুন জ্বলছে মাথায়,

আনুশা: আপনি বড় বোনের জামাই তাই এখন ও আপনাকে সম্মান দেখিয়ে কিছু বলিনি নইলে এতক্ষনে অনেক কিছু ঘটে যেতো এখানে

দোকানে এতোক্ষনে অনেক লোকের ভীড় জমেছে তাদের মাঝখান থেকে একজন বলে উঠলো শফিক যা ওদের সাথে, ওরা তো তোর মেহমান, ওদের সাথে এই ভাবে কথা বলা ঠিক হয়নি তোর। আর আনুশা তোর ছোট বোনের মতো,
সবার কথাতে শফিক বাড়িতে আসলো ওদেরকে নিয়ে
শিলা তো বোনকে দেখেই কান্না শুরু করে দিলো

আনুশা: আপু কাঁদিস না,, আমাদের দুঃখের দিন আল্লাহ শেষ করে দিয়েছে,আর কাঁদিস না সব ঠিক হয়ে যাবে,
শিলা : কেদেই চলছে

আনুশা: আপু আমার দিকে তাকা আমি এসে গেছিতো কোন ভয় নেই আর

শফিক: বিদ্রূপ করে বল্লো এমন ভাবে কাদছে যেন উনি অনেক কস্টে ছিলো আমার কাছে,আরে তুই যত সুখে ছিলি তত সুখে তোর বাপ ও তোর মাকে রাখেনি,এই জন্য ই তোর বাপ তোর মাকে ছেড়ে চলে গেছে
আনুশা তো এই কথা শুনে আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেনি,

আনুশা: আপুকে ছেড়ে দিলাম ঠাস করে গালের মধ্যে পাঁচটা আঙুল বসিয়ে দিলাম,

আনুশার এই কান্ডে শফিক তো অভাকই উপস্থিত আশে পাশের সবাই কানা কানি শুরু করছে,, গ্রামে তো আবার পাশা পাশি ঘর তাই এক ঘরে কি হয় অন্য। ঘরের লোকেরা জানার জন্য ছুটে চলে আসে,প্রতিবেশী একজন তো বলেই দিলো বড় বোনের জামাই হচ্ছে বড় ভাইয়ের সমান, তার গায়ে হাত তুলেছে কি বেয়াদপ মেয়েরে বাবা শিক্ষা দিক্ষা কি কিছু নেই নাকি

অন্নি: সবার কথা শুনে আনুশাকে ফিস ফিস করে বল্লো কি করছিস কি তুই আনু, সবাই কি ভাবছে বল তো।

আনুশা: সবার উদ্দেশ্য বলল,বাহ এখন আপনারা আমার শিক্ষা নিয়ে কথা বলছেন,কিন্তু আপনাদের ছেলে কতো শিক্ষিত তা তো আমার বুঝার বাকি নেই,
যে ছেলে জুয়া খেলতে পারে যৌতুক নিয়ে বিয়ে করতে পারে,আবার বার বার বউকে মার ধর করে বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য, তখন আপনারা তাকে সঠিক শিক্ষাটা দিতে পারেননি, দিনের পর দিন আমার বোনকে যে টর্চার করেছে,তখন তো কেউ এসে বাধা দেননি,উলটো মজা নিয়েছেন সবাই,
মা বাবা মেয়ে বিয়ে দেয় মেয়েকে সুখে দেখার জন্য,আর যেখানে সুখের পরিবর্তে মেয়েকে লাঞ্ছিত হতে দেখে তখন, মায়েদের মনের অবস্থা কেমন হয় জানেন আপনারা,,
জানবেন কি করে আপনারা তো চোখ বন্ধ করে রাখেন তাই না এই যে কাকিমা আপনি যে বললেন আমাকে আমার মা শিক্ষা দেয়নি,

আজ আপনার মেয়ের সামনে আপনার আরেক মেয়ের জামাই যদি আপনাকে কথা শুনায় তা হলে আপনি চুপ করে থাকতে পারবেন কিন্তু, আপনার মেয়ে চুপ করে থাকতে পারবে না,,,

আনুশার কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেলো কারো মুখে কোন কথা নেই

আনুশা: যাই হোক অনেক বলে ফেলেছি, এই বার আসল কথা বলি আমি আমার বোনকে নিয়ে যেতে এসেছি, এখন বোনকে নিয়ে যাবো, আপনাদের ছেলের কাছে থেকে কোন টাকা পয়সা লাগবে না,
আমি আমার বোনকে নিয়ে যেতে চাই এই টুকুই,,আর হা শফিক ভাইয়ের তিন বাচ্ছার দায়িত্ব আমার বোন নিতে পারবে না,, কারন বাবা যেমন সন্তান তার মতোই হবে, আর আমার বোনের ও ভবিষ্যৎ আছে

এতোক্ষন শিলা কিছু বলেনি কিন্তুন আর চুপ করে থাকতে পারলো না

শিলা: তুই কি বলছিস আনু আমি আমার সন্তানদের রেখে এক মুহুর্ত থাকতে পারবো না

আনুশা: বোনের কথার কোন উত্তর না দিয়ে, একজন কে বল্লো মুরুব্বি আপনি এখানে সবার মুরুব্বী আপনি বলুন এতো যন্ত্রনার মাঝে একটা মেয়ে কি করে থাকবে

মুরুব্বী : দেখো মা আমরা সব জানি শফিক ভালো ছেলে নয়,কিন্তু আমাদেরই তো ছেলে আমরা চাইবো না তার সংসার টা ভেঙে যাক, তাই বলছি কাল সকালে আমরা গন্য মান্য কয়েকজন কে নিয়ে বসি দেখি সবাই কি বলে, তার পর না হয় তোমার বোনকে তুমি নিয়ে যেও,
আনুশা উনার কথা মেনে নিলো,

আনুশা: আপু আমি কিন্তু এখন এখানে থাকবো না

শিলা: থাকবি না মানে, এতো রাতে কই থাকবি

আনুশা: মামা তোকে বিয়ে দিয়েছে,সো কালকে মামাকে ও উপস্থিত থাকতে হবে,আর মামাদের সাথে তো এতো বছর যোগা যোগ ছিলো না দেখে আসি মামা কেমন আছে

শিলা: ঠিক আছে যা তা হলে

আনুশা অন্নি,মামার বাড়ির পথে রওনা হলো

to be continue

হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part:17

0
হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part:17

হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part:17

writer:  সুলতানা ইতি

 

 

এই ভাবে কেটে গেলো পাঁচটি বছর, পাঁচ বছর পর আজ আনুশা দেশে ফিরছে,
হুম এই পাঁচ বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে সব দিক দিয়ে,,আনুশা বিদেশ এ চার বছরের business মেনেজমেন্ট এর কোর্স শেষ করে
নিজের প্রচেষ্টায়য় একটা কম্পানিতে জয়েন হয়ে,কম্পানির এমডির বিশ্বাস অর্জন করে,
তার সাহায্য নিজে একটা হোটেল দেয়, আজ সেটা খুব নামি দামি হোটেল এ পরিচিত, বিদেশী ক্লাইন্টরা এসে এই,হোটেল উঠে,

যাই হোক আনুশার এখন কোন কিছুর অভাব নেই এতোদিন এমডি ছিলো না, তাই অন্নি ভার পাপ্ত এমডি হয়ে সব কিছু সামলে নিয়েছে
আজ আনুশা দেশে ফিরছে, কতো আয়োজন করা বাকি,অফিসে সবাই ব্যাস্ত, নতুন এমডি আসবে তাকে ওয়েলকাল করতে,হবে,অন্নি তো সকাল থেকে নিশ্বাস ফেলতে ও সময় পায়নি

এই দিকে বাড়িতে আনুশার আম্মু খুব ব্যাস্ত,আজ তার ছোট মেয়ে আদরের ধন বাড়িতে ফিরবে,

সুমি আনুশার মেঝো বোন শশুড় বাড়ি থেকে চলে আসছে প্রব্লেম তার বাচ্চা হয় না,এই নিয়ে শাশুড়ি নানান কথা শুনাতো,তার বর মায়ের কথাতে উঠে আর বসে, বউ এর প্রব্লেম টা বুঝতেই চায় না,আর সহ্য করতে না ফেরে কিছুদিন আগেই মায়ের কাছে চলে আসে

আনুশা আম্মু: সুমি এই সুমি কই গেলি,কতো দিন পর আজ আমার আনু দেশে ফিরছে ওর সব কিছু ঠিক করে রেখেছিস তো

সুমি: হ্যা মা তুমি চিন্তা করো না সব একদম আমাদের ছোট রানির মনের মতো করে রেখেছি,

আনুশার আম্মু: আমি আজ নিজের হাতে আমার মেয়ের জন্য রান্না করবো বুয়ারে দিয়ে আজ কাজ হবে না

অন্নি: স্টাফ দের বার বার তাড়া দিচ্ছে সব কিছু যেন ঠিক ভাবে হয়,দুপুর ১২ টায় আনুশার ভিমান এয়ারপোর্ট এ ল্যান্ড করবে, তার আগে সব রেডী করতে হবে

মহনা অফিস স্টাফ : ম্যাম আপনি তো নতুন এমডি কে এয়ারপোর্ট এ আনতে যাবেন,,স্টাফরা এখন ও জানে না তাদের নতুন এমডি স্যারর নাকি, ম্যাম, অন্নি এই কথা ইচ্ছে করে গোপন রেখেছে,যেন সবাই একটু অভাক হয়

অন্নি: হুম আমি বেরুচ্ছি অলরেডি টাইম হয়ে গেছে , এই দিকে যেন তোমাদের কোন ভুল না হয়, মনে রাখবে যিনি আসছে না উনি ডিসিপ্লিন ওর ডিসিপ্লিন, এর বাইরে কিছু উনি লাইক করে না
মহনা: ওকে ম্যাম,আপনি চিন্তা করবেন্না

দুপুর ১২ টায় আনুশার ফ্লাইট এয়ারপোর্ট এ ল্যান্ড করে

অন্নি: ওয়াও কি দেখতে লাগছে আনুশাকে পুরো হিরোইন, অন্নি আনুশাকে খুশিতে জড়িয়ে ধরলো

আনুশা: অন্নি কে থামিয়ে দিয়ে বললাম, এতো এক্সাইটেড হওয়ার কিছু হয়নি অন্নি,, এখন আমি অফিস এর কাজে যাবো সো আপনি সেখানে আমার পিএ, ফ্রেন্ড নন, বাসায় গিয়ে জড়িয়ে ধরবেন ওকে,

অন্নি: মনে মনে, যাক বাবা এখন অফিসে আমি আমার প্রিয়ো বান্ধুবীকে ম্যাম বলে ডাকবো এটা ও কি সম্ভব, আনুশার দারা সব সম্ভব যাই আবার রেগে যাবে

আনুশা অন্নি অফিসে পৌছে গেছে,
অফিস স্টাফ রা তো তাদের নতুন এমডি একজন মেয়ে,এটা দেখেই হা হয়ে গেলো তবু ও অন্নির বলা কথা গুলো মহনার মনে পড়তেই সে নিজেকে সামলে নিয়ে আনুশা কে ওয়েলকাম জানালো

আনুশা নিজের কেবিনে গিয়ে বসলো অন্নি ও পিছু পিছু গেলো

আনুশা: অন্নি আপনি গত মাসের হিসেব আমাকে মেইল করেননি,সো এখন আমি গত মাসের হিসেব গুলো দেখতে চাই

অন্নি: আনু তুই,(বলে মুখে হাত দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিলো, এই রে কি বলতে কি বলে ফেলি)না মা,মানে আপনি এখন এসেছেন একটু রেস্ট নিন ম্যাম তার পর না হয়,

আনুশা: মিস অন্নি কাজের সময় ফাউল কথা বলা আমি পছন্দ করি না, সো যা বলেছি তা করুন,

অন্নি: ওকে ম্যাম, অন্নি ফাইল গুলো আনুশা কে দিয়ে বল্লো ম্যাম একটা কথা বলবো,

আনুশা: বলুন

অন্নি: বাসা থেকে আপনার মা,মানে আন্টি ফোন করে জানতে চাইলো আপনি কখন বাসায় যাবেন,উনি আপনার জন্য অপেক্ষা করছে

আনুশা: আবার ফোন করলে বলে দিবেন যেন অপেক্ষা না করে কাজ শেষ করে ফিরতে দেরি হবে

অন্নি: ম্যাম যদি অনুমতি দেন তো কাজের বাইরে একটা কথা বলবো

আনুশা রাগি চোখে অন্নির দিকে তাকায়
অন্নি: ওকে ম্যাম আমি বলে দিবো আন্টি ফোন করলে, মনে মনে এই আনুশা টা এমন হয়ে গেলো, ওকে ঠিক করবে কে,কে জানে,

ফোন ভেজে উঠলো, আনুশার আম্মু কল দিয়েছে আচ্ছা উনার কি দোষ এতো বছর পর মেয়ে দেশে ফিরেছে তাকে না দেখে কি করে থাকবে,কিন্তু এই কথা টা উনার মেয়ের মাথায় ডুকাবে কে,

আনুশা: মিস অন্নি আপনার ফোন ভাজছে রিসিভ করুন,,কিসের ভাবনায় ডুবে থাকেন আপনি

অন্নি: ম্যাম আমি কথা বলে আসছি,অন্নি বেরিয়ে গেলো

আনুশা: মনে মনে আমি জানি এখন মা অন্নি কে ফোন দিয়েছে আর অন্নি এখন এতো গুলো কথা বলবে আমার নামে মাকে, এই অন্নিটা আর চেঞ্জ হলো না,,নাহ আমার কাজের জন্য অন্নির বিয়েটা আর আটকে রাখা যাবে না এই বার একে বিয়ে দিতেই হবে

অন্নি: কেবিন থেকে বের হতেই সব অফিস স্টাফ রা ওকে ঘিরে ধরলো,ম্যাম আপনি কেনো বলেননি আমাদের নতুন এমডি ম্যাম, স্যারর নয়
আরে এখানে বলার কি আছে, আর শুনো আমি আবার,বলছি, অফিসের সব কিছু যেনো রুলস অনুযায়ী হয়,আমাদের ম্যাম কিন্তু এই সব ব্যাপারে ভিশন পাংচুয়াল,,বুঝেছো,বিশেষ করে কাজের ক্ষেত্রে কোন ভুল উনি একদম মেনে নেয় না, সো বি কেয়ারফুল

আনুশা: কেবিন থেকে সব দেখতে পাচ্ছি, হায়রে অন্নি,স্টাফ দের এগুলা কি বলছিস, কেবিন থেকে বের হলাম,সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললাম, এই টা অফিস, কোন ক্যান্টিন নয় যে সবাই আড্ডা দিবেন, সো যে যার কাজে যান

অন্নি: ম্যাম আন্টি আপনার সাথে কথা বলতে চায়

আনুশা: মা কে বলেন আমরা আসছি

অন্নি: খুশি হয়ে যাক এতোক্ষনে সদ্বুদ্ধি হলো উনার,

অন্নি আর আনুশা বাসায় যাওয়ার জন্য, গাড়িতে উঠলো,এই মানে ম্যাম এখন কি আপনাকে নাম ধরে ডাকতে পারি,এই টা এখন অফিস নয়,আর আমরা কাজে ও যাচ্ছি না,,তো যদি একটু বলতেন

আনুশা: তোকে সব কথা বলে দিতে হবে কেনো কাজের জায়গাতে আমি তোর বস,এখন বন্ধু আন্ডারস্ট্যান্ড,

অন্নি: ওকে,আচ্ছা দোস্ত তুই যে সারাদিন এমন করে মুখটার পেছার মতো করে রাখিস তোর হাসতে ইচ্ছে হয় না

আনুশা: বাজে বক বকানি বন্ধ কর, তোর আম্মু আব্বুকে আমাদের বাসায় আসতে বলেছিস

অন্নি: বলেছিলাম, উনারা আজ আসতে পারবে না অন্য কোন এক দিন আসবে বলেছে
আনুশা : অন্য কোন দিন মানে,

অন্নি: আমি কি জানি,কি কাজ আছে তাই আসতে পারবে না

আনুশা: তার মানে তুই উনাদের আগে থেকে বলিসনি,আজই বলেছিস

অন্নি: ভয়ে ভয়ে কি করবো বল,তুই ছিলি না অফিস এর সব কিছু আমাকে দেখতে হতো কাজের মাঝে ভুলে গেছি বলতে

আনুশা: ইটস ওকে এতো ভয় পাবার কিচ্ছু হয়নি

অন্নি,উফ বাছা গেলো
বাসায় পৌছে আনুশা মাকে সালাম করে জড়িয়ে ধরলো, মায়ের যে কতো অভিযোগ, এতো দিন কেনো আসেনি,আর ও কতো কি আনুশা সব বাধ্য মেয়ের মতো শুনছে,

আনুশা: মা বাড়ি টা কেমন খালি খালি লাগছে, তুমি বড় আপুকে আসতে বলোনি,ওর বাচ্ছারা মিলে আসলে তো বাড়িটা পুরো ঘম ঘম করতো

আনুশার আম্মু: পরে বলবো তোকে সব আসছিস আগে একটু ঠান্ডা হও তার পর বলছি

সুমি: হা আনু মা ঠিকই বলেছে,চল খাবি আজ তোর পছন্দের সব খাবার মা নিজের হাতে রান্না করেছে

অন্নি: ওয়াও আন্টি রান্না করেছে তা হলে আমি আগে যাই খাওয়া শুরু করি

আনুশা: মনে মনে কি এমন হলো বড় আপুর,নিশ্চয় দুলা ভাই কিছু একটা করেছে,নাহ আর না আমার বোনেরা অনেক সহ্য করেছে এই বার একটা বিহিত করা দরকার

আনুশার আম্মু: আনু, কি ভাবছিস চল খাবি,
খাওয়ার টেবিলে বসে আনুশা অন্নি কে বল্লো, অন্নি অফিসের যাবতীয় হিসেব দেখা শুনার জন্য একজন ম্যানেজার এপয়েন্ট করতে বলেছিলাম,,করিস নি তাই না

অন্নি: খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো আনুশার কথা শুনে,, আনু খেতে বসছি খেতে দে,অফিসের কাজ নিয়ে পরে কথা বলিস

আনুশাঃএর তো দেখছি ভিশন পাখা গজিয়েছে,নতুন পিএ এপয়েন্ট করতে হবে যে আমার কথা মতো চলবে

সুমি: অন্নি তো ঠিকই বলেছে আনু,খাওয়ার সময় খেতে হয় কাজের কথা পরে হবে,
খাওয়া শেষ আনুশা সবাইকে নিয়ে ড্রইং রুমে বসলো

আনুশা: মা এই বার বলো বড় আপু কেনো আসেনি

আনুশার আম্মু: শিলার জামাই বলছে কিসের ব্যাবসা করবে, এই জন্য ওকে ৫ লক্ষ টাকা দিতে,কিন্তু শিলা আমাদের কাছে চাইতে নারাজ,তাই শিলাকে অনেক মার ধর করে, এই জন্য শিলা আসতে পারেনি

আনুশা: মা বিয়ের সময় তো ওকে দুই লক্ষ টাকা যৌতুক দিয়েছিলো মামা,তাই না

আনুশার আম্মু: হুম তবু ও ওর দাবির শেষ ছিলো না আজ ও শেষ হয়নি

আনুশা: ঠিক আছে মা তুমি চিন্তা করো না সব ঠিক হয়ে যাবে, অন্নি বিকেল এ তুই অফিসের দিকটা দেখিস,আমি গ্রামে বড় আপুর কাছে যাবো,আর হা ম্যানেজার ছেয়ে একটা বিজ্ঞাপন দিয়ে দিস ওকে

অন্নি: আনু অনেক দিন গ্রামে যাই না তুই যখন যাচ্ছিস আমি তোর সাথে যাবো,মহনাকে সব বুঝিয়ে বললে ও করতে পারবে

আনুশা: মহনা কে?
অন্নি: অফিস স্টাফ খুব ভালো মেয়ে,

আনুশা: তুই সিয়ুর ও সব পারবে

অন্নি : হুম পাক্কা,
আনুশা : ওকে তুই ওকে ফোন করে সব বুঝিয়ে বল, আমরা একটু পরেই বেরুবো
অন্নি: ওকে

to be continue

হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part:16

0

হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part:16
হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া

লেখা –সুলতানা ইতি

রাতে আনুশা মনে হলো কেউ ওর পাশে বসে কাঁদছে ,
চোখ না মেলেই বুঝার চেষ্টা করছে,কে কাদছে,কিছুক্ষন পর বুঝতে পারলো মা কাদছে
আসলে আমাকে ছেড়ে মা কখনো থাকেনি তো তাই,, আনুশা কি করবে বুঝতে পারছে না,এখন যদি আমি কান্না করি তা হলে মা আর ও বেশি কান্না করবে,আর কাঁদতে কাদতে শরির খারাফ করে পেলবে,, না আমি যে জেগে আছি এটা মাকে কিছুতেই বুঝতে দেয়া যাবে না,,তাই চুপ করে শুয়ে থাকলাম

অন্নি: উফফ আজ উঠতে দেরি হয়ে গেছে, আজকে মেয়েটা চলে যাবে ওর জন্য ভালো কিছু রান্না করা দরকার,

আনুশার আম্মু আর অন্নি মিলে গেলো কিচেন এ আজ সব আনুশার পছন্দের রান্না হবে।

আনুশা: ভালো লাগছে না কিছু সব কেমন উলট পালট লাগছে,,কি করে থাকবো আমি এতো দূরে গিয়ে,,।

অন্নি: আনু তুই উঠে গেছিস আয় ফ্রেস হয়ে নাস্তা খাবি চল, কিন্তু আনুশার খেতে ভালো লাগছে না,এই ভাবেই কেটে গেলো সারা দিন,

সন্ধায় আপুদের সাথে ফোনে কথা বলে নিয়েছে আনুশা,অন্নি,মা সবাইকে নিয়ে এয়ারপোর্ট এ রওনা হলো, রাত ৮ ফ্লাইট, একটু আগে যাওয়া উছিত তাই ওরা সন্ধার ৬ টায় গেলে

আনুশা:বুকের বিতরে মনে হচ্ছে কেউ হাতুড়ি পেটাচ্ছে, শুধু কান্না পাচ্ছে তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু কতোক্ষন পারবো নিজেকে কন্ট্রোল করতে

সবাই মিলে অপেক্ষা করছে ৭:২৫ ইমিগ্রেশনে এনাউন্সমেন্ট শুরু হয়ে গেছে,

অন্নি: আনু তুই একটু বস আমি আসছি

আনুশা: একটু পরেই আমি চলে যাচ্ছি তুই এখন কই যাবি,

অন্নি: তুই বস তো, আন্টি আপনি আমার সাথে একটু আসুন তো

আনুশা: তুই মাকে নিয়ে কোথায় যাচ্চিস

অন্নি: আরে বলছি তো একটু পরে এ আসছি,

আনুশা: যাক বাবা কিছু না বলেই মাকে নিয়ে চলে গেলো,পাশে ফিরতেই দেখলাম তানভীর
,লাফিয়ে উঠলাম ওকে দেখে, তানভীর এখানে কি করছে

তানভীর : আনুশা আমাকে দেখে মনে হয় ভুত দেখেছে এমন ভাবে দাঁড়িয়ে গেলো,

আনুশা: আপনি, আপনি এখানে কি করছেন

তানভীর : কিছুই না দেখতে এলাম,হয়তো আর কোন দিন আমাদের দেখা হবে না তাই শেষবার দেখতে এলাম

আনুশা: আমি চাইনা কোন দিন আপনার সাথে আমার দেখা হোক

তানভীর : সেটা আমি জানি,আফসোস আমি যাকে ভালোবেসেছি তার মন পাথরের থেকে ও কঠিন, পাথরের ও ক্ষয় হয়,বাট তার মনে আমার জন্য একটুও ক্ষয় আসেনি

আনুশা: স্টপ,যথেষ্ট হয়েছে চুপ করুন আপনি, আনুশা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো টাইম হয়ে গেছে তাই চলে যেতে চাইলে অন্নি এসে বাধা দেয়

অন্নি: কিরে আমাদের না বলেই চলে যাচ্ছিস

আনুশা: তুই কোথায় গিয়েছিলি মাকে নিয়ে

অন্নি: এই নে এটা আনতে গিয়েছিলাম,

আনুশা: কি আছে এতে

অন্নি: যাই থাকুক এখন খুলিস না,জায়গাতে পৌছে খুলে দেখিস কেমন এবার যা লেইট হয়ে যাচ্ছে,বাই দ্যা য়ে, এই ছেলেটা কেরে

আনুশা: তানভীর এর দিকে তাকিয়ে কিছু না বলে,মাকে জড়িয়ে কান্না করা শুরু করলো

আনুশার আম্মু: কাঁদিস না মা, সবই আল্লাহর ইচ্ছে, উনি যা চায় তাই তো হয়,কাঁদিস না লক্ষি মা আমার

আনুশা: মা আমি থাকবো কি করে তোমাকে ছেড়ে
কথাটি শুনে আনুশার মা ও মেয়ের সাথে কাদতে শুরু করলো, কাদবে না কেনো,জীবন কঠিন সময় গুলো মা মেয়ে এক সাথে পার করেছে,আর এখন মেয়েকে একা একটা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে,

অন্নি: আনু পরে কাঁদিস দেরি হয়ে যাচ্ছে চল

আনুশা: মাকে ছেড়ে দিলাম জীবনের কঠিন বাস্তবতা কে মেনে নিয়ে অজানা দেশে পা বাড়ালাম

কিছুক্ষন পরেই ফ্লেন ছেড়ে দিলো,, ফ্লেন এর সিটে বসে একটা কথাই শুধু ভাবছি,যদি আমার জীবন টা অন্যরক হতো, তা হলে আজ মাকে ছেড়ে আসতে হতো না

অন্নি: আন্টি কাদবেন্না আপনি যদি এতো কান্না করেন তা হলে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন,আর সেটা শুনে আনুশা আমার আস্ত ও রাখবে না

আনুশার আম্মু: মেয়েটা আমার পারবে তো সব কিছু সামলে নিতে

অন্নি: আন্টি আপনি আনুশাকে জানেন না,ও কেমন মেয়ে ও সব কিছু ঠিক সামলে নিবে
আনুশার আম্মু: হুম
অন্নি: এতো হুম হুম করবেন না তো আন্টি,চলুন আমরা বাসায় যাই,আম্মু ফোন করেছিলো বলেছে আপনাকে নিয়ে তাড়া তাড়ি ফিরতে

তানভীর : আনুশা তো চলে গেলে এই লক্ষকোটি মানুষের ভিড়ে আমাকে একা করে দিয়ে গেলো
কি করবো আমি এখন বসে পড়লাম মাটিতে, এখান থেকে উঠে যাওয়ার মতো শক্তি আমার নেই

তানিম: উফফ এই তানভীর কোথায় গেলো এখন ওকে কই পাই,,ওকি জানে না ওর আম্মু কতো টা টেনশন করছে ওকে না পেয়ে, আমি যত টুকু জানি,ওতো এয়ারপোর্ট এর দিকে আসার কথা, কিন্তু দেখতে পাচ্ছি না কেনো,এই আনুশা মেয়েটা আমার বন্ধুটার মাথা পুরো খেয়ে নিয়েছে, ঐ তো পেয়েছি তানভীর কে

তানভীর : কেউ একজন আমার পাশে এসে বসলো, কে আনুশা নয়তো, পাশে তাকিয়ে আশার আলোটা নিভে গেলো, ও তুই
তুই এখানে কি করছিস

তানিম: আন্টির তোর জন্য চিন্তা করছে চল বাসায় চল

তানভীর : তুই যা আমি পরে আসছি,আম্মুকে বলিস আমি ভালো আছি

তানিম: পরে আসছিস মানে, তোকে এখনি আমার সাথে যেতে হবে চল তো

তানভীর তানিম কে জড়িয়ে কান্না শুরু করে দিলো

তানিম: মনে মনে একটা ছেলে একটা মেয়েকে কতোটা ভালোবাসলে এই ভাবে কাঁদতে পারে, শুনেছি মেয়েদের মন খুব নরম,কিন্তু এই মেয়ের মন কি দিয়ে তৈরি কে জানে,, মুখে তানভীর কে কিছু বলে শান্তনা দেয়ার ভাষা আমার নেই, কাঁদুক কাদলে মন হালকা হবে

to be continue

হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part:15

0
হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part:15

হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া

part:15

লেখা –সুলতানা ইতি

 

পরদিন সকাল বেলা আনুশা ঘুমাচ্ছিলো,

অন্নি: কিইই আমার ঘুম ভেঙে গেছে আর আনুশা এখন ও ঘুমাচ্ছে এই টা আমি কি করে মেনে নিই বলো আল্লাহ,, আমার তো একটাই বন্ধু,একটাই বান্ধুবী, এই বলে অন্নি আনুশাকে ডাকতে লাগলো এই আনু দেখ ১০ টা বেজে গেছে, এমা তুই এখন কি করবি,তোর তো এখন ও অনেক কাজ বাকি, এই আনু, আনু দেখ ১১ টা বাজে

আনুশা: অন্নির ডাকে আমার ঘুম ভেঙে গেছে, কিন্তু ওর বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা বলা কথা গুলো শুনতে ভালো লাগছিলো তাই ঘুমের ভান করে শুয়ে আছি,আমি জানি এখন ১০-১১ টা কোনটাই বাজেনি,আমাকে ঘুম থেকে উঠানোর এক ধান্দা,আমি ও কম যাইনা,ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে বললাম,উফফ অনু ঘুমাতে দে তো, বিরক্ত করিস না

অন্নি: কি আমি বিরক্ত করি,তা হলে আজ তোকে ঘুমাতেই দিবো না, তুই উঠবি নাকি আমি পানি ডালবো গায়ে

আনুশা: এইরে এবার উঠতে হবে,আর ঘুমের ভান করে শুয়ে থাকা যাবে না,
অন্নি: কিরে ঘুম থেকে উঠে মিট মিট করে হাসছিস কেনো

আনুশা: অনু তুই আর পাল্টালি না বল,সেই ছোট্ট অনুই রয়ে গেলি

অন্নি: দেখ আনু আমি তোর মতো গোমরা মুখো হয়ে থাকতো পারবো না আমার কাছে লাইফ মানে হচ্ছে ইনজয় করা,যা সময় পেরিয়ে গেলে করতে পারবো না

আনুশা: সময় পেরিয়ে যাবে মানে

অন্নি: এই যেমন বিয়ে হয়ে গেলে। স্বামি সংসার প্যারা, এই সব এর মধ্যে ইনজয় করতে পারবো না

আনুশা: অন্নির মুখে স্বামি সংসার এর কথা শুনে মেজাজ গেলো বিগড়ে,অন্নিইইইইইইই

অন্নি: আনু তুই রেগে গেলি কেনো প্লিজ প্লিজ তুই রাগিস না,আমি তোর সামনে বলতে চাইনি,বাট কি করে যেন মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেলো

আনুশা:……………..

অন্নি: এই যা অন্নিকে তো রাগিয়ে দিলাম এখন উপায়

আনুশা: মনে মনে (স্বামি এরা কে হয় অযোগ্য পুরুষ মানুষেরা,যোগ্য। দের তো খুজে পাওয়া যায় না,এরা মেয়েদের কে সারা জীবন পায়ের তলায় জুতো আর জুতোর তলায় পাপশ বানিয়ে রাখতে চায়,যেমন আমার দুই বোনের জামাই,আর আরেক জলন্ত প্রমান নিহাল,বোনেদের কথা না হয় বাদই দিলাম,কিন্তু আমার সাথে যা হয়েছে তা আমি কোন দিন ভুলতে পারবো না)

অন্নি: ইসস এখন কি হবে আনু তো আগুন চোখ করে ভাবনার জগতে ডুকে গেছে, কি করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করবো,ইউরেকা

আনুশা: অন্নির চিৎকার এর বাস্তবে ফিরে এলাম, ভ্রু কুঁচকে অন্নির দিকে তাকালাম

অন্নি: মানে আনু আমি কি বলছি শুননা অনেক বেলা হলো,তোকে নিয়ে আমার একটা জায়গাতে যাওয়ার ছিলো,চলনা আমরা যাই

আনুশা: নো য়ে,আজ আমি কোথায় ও যাবো না আজ আমি সারা দিন মায়ের সাথে কাটাবো

অন্নি; প্লিজ প্লিজ না করিস না,আমি তোর হাত ধরছি,তোর পা ধরছি

আনুশা: এই এই কি করছিস পাগল হয়ে গেলি নাকি তুই,আচ্ছা আমি যাবো, এবার তো শান্ত হও

অন্নি: সত্তিইই
আনুশা: হুম,
অন্নি: উঠ তা হলে রেডী হয়ে নিইই
আনুশা: এখন ই রেডী হতে হবে
অন্নি,হুম চল তো


তানভীর : শুনেছি কাল রাত আট টায় আনুশার ফ্লাইট, ওকে দূর থেকে হলে ও শেষ বারের মতো চোখের দেখা দেখতে হবে, নইলে মনটা যে শান্ত হবে না,
আর আনুশা আমাকে কোন দিন হয়তো ভালো বাসবে না,হয় তো কালকের পর ওর সাথে আমার কোন দিন দেখা হবে না,
হয়তো তানভীর নামে একটা ছেলে ওকে পাগলের মতো ভালো বাস তো এই টা তার মনেই পড়বে না কোন দিন,
কিন্তু আমি, আমি তো কোন দিন আনুশা কে ভুলতে পারবো না, আমার সুইট এঞ্জেল, I love you sweet angel, I love you sob mach তোকে এই খারাপ ছেলেটা খুব ভালোবাসেরে, তুই বুঝলি না

অন্নি আনুশাকে নিয়ে মার্কেট এ এলো

আনুশা: এই খানে নিয়ে আসলি কেনো,

অন্নি: এই খানে মানুষ কেনো আসে তুই জানিস না,,আমি ও সেই জন্যই এসেছি

আনুশা: কিন্তু তুই তো বললি তুই একটা জায়গাতে যাবি,এখানে আসবি সেটা তো বলিস নি

অন্নি: বলিনি তো কি হয়েছে এখন তো জানলি, আর কথা বলিস না তো ড্রেস, দেখতে দে,,

আনুশা; কিচ্ছু বুঝতে পারছি না সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে,

অন্নি: এটা দেখতো আনুশা এই ড্রেস টা তোকে খুব মানাবে

আনুশা: আমার কিছু লাগবে না অন্নি,তুই তোর জন্য নে

অন্নি: একদম চুপ থাক,কি লাগবে আর কি লাগবে না সেটা কি আমি জানি না

আনুশা: আর কিছু বললাম না,আর বলে যে কোন লাব হবে না,সেটা তো বুঝতেই পারছি

অন্নি: বেছে বেছে কয়েকটা ড্রেস নিলাম আনুশার জন্য,
অনেক বেলা হয়ে গেলো আনুশা কে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্ট এ খেতে ঢুকলাম

আনুশা: প্লিজ অন্নি আজকের দিন টা আমি মায়ের হাতের খাবার খেতে চাই,তুই আমাকে এখানে খেতে বলিস না

অন্নি: কিন্তু আমার যে খুব সখ আজকের দিনটা নিজের মতো করে তোর সাথে কাটাবো বলে

তুই,রাত আর সকালে এই দুইবেলা আন্টির হাতের খাবার খাস,কেমন
প্লিজ এখন আমাকে না করিস না

আনুশা: ওকে ফাইন তোকে নিয়ে আমি আর পারি না, খাবার দাবার গুরা গুরি সব শেষ করে সন্ধায় বাসায় ফিরলো ওরা

আনুশার আম্মু: এতোক্ষনে তোদের আসার সময় হলো

অন্নি: আন্টি আসলে কি বলেন তো অনেক দিন পর আনুশার সাথে দেখা,তা ও আবার একদিনের জন্য,কালতো ও চলেই যাবে তাই আজকের দিন টা স্মৃতি করে রাখলাম এই আর কি

,দুই বান্ধবি মিলে ফ্রেশ হয়ে,পেকিং এর কাজ টা সেরে পেল্লো, তার পর আনুশা অন্নির আনলিমেটেড বক বক শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়লো

to be continue

হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part:14

0
হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part:14

হারিয়ে যাওয়া, পথ খুজে পাওয়া part:14

লেখা –সুলতানা ইতি 
হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part:14

 

পরদিন সকালে আনুশার ঘুম ভাঙল,

আনুশা: এখন মনে হয় এখন বিকাল, দেখিতো কয়টা বাজে ৭ টা বাজে আচ্ছা,এটা কি সন্ধার ৭ টা, নাকি সকাল ৭ টা কিছুই তো বুঝতে পারছি না

আনুশার আম্মু: কিরে অবশেষ এ তোর ঘুম ভাঙল, তুই তো এতো ঘুমাস না, হঠ্যাৎ লম্বা সময় নিয়ে ঘুমানোর কারন কি

আনুশা: লম্বা সময় কই ঘুমালাম কয়েক ঘন্টা ই তো ঘুমালাম

আনুশার আম্মু: কয়েক ঘন্টা বলছিস,তুই গত কাল দুপুরে ঘুমিয়েছিস আর এখন সকাল

আনুশা: কিইই এখন সকাল জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম হুম সকালই তো ভালো হলো একটু হালকা লাগছে,দুপুরে যত চিন্তা ছিলো মাথায় এখন তা নেই

আনুশার আম্মু: তোর স্যার ফোন করেছিলো বলেছে আজ তোকে দেখা করতে অন্নি ফোন করেছিলো কেউই তোকে পাইনি ফোনে

আনুশা: আচ্ছা অন্নির সাথে পরে কথা বলবো স্যারর এর সাথে আগে দেখা করে আসি, ফ্রেশ হয়ে স্যার এর সাথে দেখা করতে গেলাম। স্যারর এর বাসায়, স্যার আমাকে নিয়ে পার্সপোর্ট অফিসে যায়,সেখানে ফর্মালিটি গুলো শেষ করে বাসায় আসলাম,
চিন্তায় আছি মাকে নিয়ে, মাকে কার কাছে রেখে যাবো, আপুদের কাছে রাখা যাবে না ওরা নিজেই কোন ভাবে শশুড় বাড়ি পড়ে আছে, তার মধ্যে মাকে সেখানে রাখা একদম সেভ নয়, কি করবো কিচ্ছু বুঝতে পারছি না

এই ভাবে গেলো কয়েক দিন, আনুশার চিন্তার কোন কুল কিনারা নেই,মাকে নিয়ে,।এর মধ্যে কাগজ পত্র সব ঠিক হয়ে গেছে দুই একদিনের মধ্য ডেট পড়বে যাওয়ার কথা, আনুশা শিন্ধান্ত নিলো সে যাবে না দেশের বাইরে পড়তে, মাকে একা রেখে যাওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়,,

আনুশার আম্মু:কিরে এতো কি ভাবছিস

আনুশা: ভাবছি যাবো না

আনুশার আম্মু: কোথায় যাবি না

আনুশা: বিদেশে পড়তে যাবো না,তোমাকে কার কাছে রেখে যাবো বলো মা,আমি ছাড়া তোমার আর কে আছে

আনুশার আম্মু: তুই কি বলছিস, পাগল হয়ে গেলি নাকি,সবাই তোকে কি ভাববে, যারা তোর জন্য এতো কিছু করছে তারা

আনুশা: কে কি ভাবলো না ভাবলো তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না, আমি তোমাকে একা রেখে যাবো এটা ই ফাইনাল

আনুশার আম্মু: এই মেয়ে কে নিয়ে কি করি আমি

আনুশা: স্যার কে ফোন করে জানিয়ে দিই সব ক্যানসেল করে দিতে,

স্যারঃতো আনুশার কথা শুনে অভাক এই মেয়ে বলেকি মন্ত্রী সাহেব এর কাছে আমার মুখ থাকবে না, কতো কি বলে মন্ত্রী সাহেব কে কনভেন্স করিয়েছি এখন কি হবে

আনুশা: যাক স্যারর কে জানিয়ে দিলাম, এইবার আমি আমার মতো একটা জব খুজে বের করবো,আবার আগের মতো রুটিং অনুযায়ী কাজ শুরু করবো

বিকেল হয়ে গেলো আনুশার আবার পড়ন্ত বিকেল সূর্যের রক্তিম আভা ধারন করাটা ভিশন প্রিয়,আনুশা সূর্যের দিকে আনমনা হয়ে তাকিয়ে আছে

আনুশার আম্মু: আনু তোর স্যার আর অন্নি এসেছে তোর সাথে দেখা করতে

আনুশা: স্যার, অন্নি কি বলছো, অন্নি এখানে আসবে কি করে ও তো গ্রামে

আনুশার আম্মু:তুই এসে দেখে যা,তা হলেই বুঝবি

আনুশা: আচ্ছা আমি আসছি, বস্তিতে থাকি তো তাই বস্তির পাশে একটা খোলা মাঠের মতো জায়গা আছে সেখানে সূর্য দেখছিলাম,মায়ের কথা শুনে রুমে গেলাম, অন্নিকে দেখে তো আমি অভাক অনেক দিন পর দেখা,কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না স্যারর অন্নি কে পেলো কই

অন্নি: কি অভাক হচ্ছিস তাই না, তোকে চমকে দিবো বলেই হঠ্যাৎ করে আসা, আর আংকেল এর সাথে তো আমার আগের ই জানা শুনা,তোকে বলেছিলাম না বাবার বন্ধু

আনুশা: মনে আছে,বাট

স্যার: কিন্তু কিছুই না আনুশা, তুই যখন বললি তুই দেশের বাইরে পড়তে যাবি না,তখন আমি ব্যাপার টা মেলাতে পারছিলাম না এতো ভালো একটা অফার কেউ রিজেক্ট করে,

তার পর আমি অন্নি কে সব বলি,

অন্নি :আংকেল প্রব্লেম হচ্ছে ওর আম্মু,আনুশা ওর আম্মু কে কই রেখে যাবে কার কাছে রেখে যাবে সেই জন্য নিষেধ করছে

আমি তখন ও সিয়ুর ছিলাম না,আমাকে কনফিউজড হতে দেখে

অন্নি,বলল ট্রাস্ট মি আংকেল,এই টা ই হবে কারন আমার ছেয়ে ভালো ওকে কেউ বুঝে না

তার পর তোদের বাসায় আসলাম অনেক্ষন হলো তোর মায়ের সাথে কথা বলে সিউর হলাম

আনুশা: অন্নি ঠিক বলেছে স্যারর এই জন্য ই আমি যাচ্ছি না, আপনি সব ক্যানসেল করে দিন

অন্নি: না আংকেল কিচ্ছু করতে হবে না,আন্টি আমাদের বাসায় থাকবে কোন প্রব্লেম হবে না

আনুশা: মা তোদের বাসায় থাকবে? কিন্তু তোর আম্মু আব্বু তারা কি ভাববে

অন্নি: তারা কিছুই ভাববে না,আমি তাদের সব বুঝিয়ে বলবো

আনুশা: কি বলবো বুঝতে পারছি না,অন্নি টা সব সময় আমার প্রয়োজনে যে ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওর এই ঋন আমি কি করে দেবো

অন্নি: কি ভাবছিস, এতো কিছু ভাবতে হবে না,পরশু তোর ফ্লাইট তুই ফেকিং করা শুরু কর

আনুশা: অভাক হয়ে পরশু

স্যারর: হুম পরশু আমি তোকে ফোন করে খবর টা দিতে চাইছিলাম,কিন্তু তার আগেই তুই জানিয়ে দিলি যাবি না,তাই তোকে বলা হয়নি

আনুশার আম্মু: তুই আর কিছু ভাবিস না মা,তুই যা,আমি অন্নির বাসায় থাকবো আর অন্নি কে তুই ভালো করেই চিনিস আমার কোন অসুবিধে হতে দিবে না

আনুশা: ওকে তোমরা সবাই যখন বলছো,তখন আমি যাবো,কিন্তু অন্নি তোকে কিন্তু আমার মায়ের খেয়াল রাখতে হবে

অন্নি: আচ্ছা বাবা রাখবো এই বার হলো তো

স্যার:আমি তা হলে আজ আসি,

স্যারর চলে গেলো

আনুশা: অন্নি তুই থাকবি আমার সাথে

অন্নি: থাকবো মানে পরশু তোকে এয়ারপোর্টে দিয়ে এসে আমি আর আন্টি বাসায় যাবো

আনুশা: কিন্তু তোরা ঢাকায় আসলি কবে

অন্নি: গত কাল,তুই তো আমার কোন খবর রাখিস না, আমি আংকেল এর কাছে থেকে তোর সব খবর পেয়েছি

আনুশা: ও তাইই ম্যাডাম, আপনি গোয়েন্দাগিরি করছেন কবে থেকে

অন্নি: গোয়েন্দাগিরি না করলে জানতে পারতাম আপনি ওতো ভালো একটা অফার হাত ছাড়া করে দিচ্ছেন

আনুশা: তো দিবো না, আমি মায়ের জন্য সব করতে পারি
অন্নি: হুম বুঝলাম,

আনুশা: চা খাবি করে দিবো
অন্নি: খাবো,চল দুজনে গিয়ে চা বানাই,তার পর খেতে খেতে আয়েশ করে গল্প করবো
আনুশা : চল


তানভীর : স্যার এর কাছে শুনলাম আনুশার যাওয়ার ডেট পড়ে গেছে আবার কতো বছরের জন্য ওকে দেখবো না কে জানে, যাই হোক এয়ারপোর্ট এ একবার গিয়ে দেখে আসবো

তানভীরের আব্বু: কিরে তানভীর কি ভাবছিস বাবা

তানভীর : না আব্বু কিছু না

তানভীরের আব্বু: মন খারাফ করে বসে আছিস যে

তানভীর : এমনি আব্বু,চুপ থাকতে ভালো লাগে তো তাই

তানভীরের আব্বু: তা বললে কি হয় বেটা চল, আজকে বাপ বেটা হাটতে বের হবো নিশ্চুপ সন্ধার মুগদ্ধতা নিবো

তানভীর : আব্বু আমার একদম যেতে ইচ্ছে করছে না

তানভীরের আব্বু: আমি তোর কোন কথা, শুনছি না চল তো

তানভীর : মনে মনে ওহ কি আর এখন যেতে হবে,,, ঠিক আছে চলো

to be continue

হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part:13

0
হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part:13
হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part:13

হারিয়ে যাওয়া পথ,খুজে পাওয়া

 part:13

লেখা –সুলতানা ইতি

 

১১:২২ মিনিটে অনুষঠান শুরু হলো, আনুশা & তার মা,তানভীর সহ সবাই প্রথম সারিতে বসলো, প্রথম সারিতে আনুশার শুভাকাঙ্ক্ষী দের বসতে দিলো,প্রিন্সিপাল স্যার এর ইচ্ছে অনুযায়ী,
তানভীর যখন আনুশার সাফল্য খুশি তা হলে তানভীর ও আনুশার শুভাকাঙ্ক্ষী তাই প্রথম সারিতে বসলো সবাই

অনুষঠান শুরু হলো একে একে সবাই তাদের বক্তব্য রাখলেন স্টুডেন্টদের উদ্দেশ্য করে,সবাই যেন আনুশার মতো এগিয়ে যেতে পারে, এই অনুপেরনা দিয়েছেন,

এইবার পুরস্কার দেয়ার পালা,আনুশাকে স্টেজ এ ডেকে নিলো
জেলা মন্ত্রী সাহেব আনুশার গলায় গোল্ড মেডেল পরিয়ে দিলো সে সাথে তিনি ঘোষণা করলেন আনুশাকে তিনি চীনে পাঠাচ্ছেন উচ্ছ ডিগ্রী অর্জনের জন্য

কথাটা শুনে দর্শকদের মাঝে হই চই পড়ে গেছে কেউ খুশি হলো কেউবা হিংসা করে বল্লো, দেখলি মেয়েটা কদিন হলো আমাদের কলেজ এসেছে এর মধ্যে সবাইকে পিছনে পেলে টেক্কা দিয়ে দিলো,
আনুশার সাথেই পড়তো লিমা, সে বল্লো চুপ চাপ থেকে যে মেয়েটা জল এতো দূর গড়িয়ে নিবে ভাবতেও পারিনি আমি,ক্লাসে তো কোন মেয়ে বা ছেলে। কারো সাথেই কথা বলতো না সব সময় নিজের মুড নিয়ে থাকতো,

আর এখন দেখ সবার চোখের মনি হয়ে গেলো উফফ গা জলে যাচ্ছে আমার এতো আদিক্ষেতা দেখানোর কি আছে এতে বঝি না,

মন্ত্রী সাহেব জানালেন কয়েক দিনের মধ্যেই আনুশার যাওয়ার ব্যাবস্থা করে দিবে

স্টেজ এ আনুশা অভাক হয়ে চেয়ে আছে কি শুনছি, আমি কি ঠিক শুনলাম নাকি আমার মনের ভুল এ, ও ছিলো আমার ভাগ্যে লিখা,খুশিতে কেদেই দিলো আনুশা

প্রিন্সিপাল স্যারর:সবার উদ্দেশ্য আনুশাকে কিছু বলতে বল্লো

আনুশা: মাইক হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি কি বলবো বুঝতে পারছি না কেমন স্টাচু হয়ে গেলাম তবু ও সবাইকে সালাম দিয়ে শুরু করলাম

জীবনে কিছু পেতে হলে সেটাকে লক্ষ্য হিসেবে নিতে হবে,এর মাঝে অনেক বাধা আসবে সব কিছু উপেক্ষা করে সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়াটা ই প্রকৃৃত কাজ,
বিপদে ঘাবড়ে গেলে চলবে না বরং শক্ত হাতে হাল ধরতে হবে, যে মানুষ টা বিপদে পড়তে দেখে ঠাট্রা বিদ্রুপ করেছে তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে আমি ভেঙে পড়ার মতো মানুষ নই তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে মনের শক্তিটা ই আসল,
এই রকম আর ও কিছুক্ষন বলার পর ষ্টেজ থেকে নেমে আসলাম,মা তো আমায় খুশিতেই জড়িয়ে ধরে কেদে দিলো

আমার ক্লাস ফ্রেন্ড রা কখন ই আমার সাথে কথা বলতে আসেনি,আজ ওরা সবাই এগিয়ে আসছে আমার সাথে কথা বলার জন্য
ছেলেদের মধ্যে অনেকই আমার কাছে ফোন নাম্বার চাইছে, বুঝলাম এরা আমার সুদিনের বন্ধু হতে চায়,এদের প্রয়োজন পুরিয়ে গেলে আবার এরা চলে যাবে, সবাকে উপেক্ষা করে যখন বাইরে এলাম তখন কারো Congress anusha, কথাটা শুনে পিছনে তাকালাম তানভীর,

তানভীর আমাকে শুভেচ্ছা জানালো,দেখলাম ওর চোখের দিকে তাকিয়ে পানিতে টল মল করছে চোখ

তানভীর : Congress আনুশা দেশের বাইরে পড়তে যাচ্ছো অনেক উন্নতি করবে তুমি জীবনে আমি জানি, উন্নতি করবে নাই বা কেনো,
আর তোমাকে তানভীর নামের এই বিরক্তিকর ছেলেটা বিরক্ত করবে না,,নিজের মনের মতো করে চলতে পারবে

আনুশা: নির্বাক হয়ে আমি ওর বলা কথা গুলো শুনছি, আমি আজ ও বুঝতে পারছি না আমার সাথে কেনো এই সব হচ্ছে

তানভীর : তুমি বিদেশ এ গেলে জানি আমার কথা তোমার মনে পড়বে না, তবু ও যদি কোন বৃষ্টি মূখর সন্ধ্যায় আমার কথা মনে পড়ে,কিংবা
কোন অমাবস্যার অন্ধকার রাতে আমার কথা একটু ভাবো তা হলে বুঝে নিও মেঘে ডাকা আকাশে,আর অমাবস্যার অন্ধারে আমি তারা হয়ে তোমাকে আলো দেয়ার অপেক্ষায় আছি,শুধু মেঘ কেটে গেলে,আর অন্ধকার কেটে আলো হওয়ার অপেক্ষায় আছি,,

আমি জানি না কেনো তোমার মন এতো পাথর,কেনো তুমি আমাকে মানতে পারছো না তুমি কি বুঝো না আমি তোমাকে কতো ভালোবাসি

আনুশা:( আর শুনতে পারছিলাম না তানভীরের বলা কথা গুলো,)ওকে থামিয়ে দিলাম,ব্যাস অনেক বলেছেন আপনি,এই বার আমি বলি,

আমি তো আপনাকে বলিনি ভালোবাসি,আপনি নিজের থেকে এতো দূর এগিয়েছেন,, এটা আমার নয়, আপনার প্রব্লেম, জীবনের কোন মুহুর্তে ও আপনার কথা আমার মনে পড়বে না, আমি সামনে হাটার সময়,পিছনে তাকাই না

তানভীর : আনুশার কথা শুনে আমি কাদতে ও ভুলে গেছি শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি

আনুশা: কথা গুলো বলা শেষ করে চলে আসলাম ওর সামনে থেকে কারন ওর চোখ যে অন্য। কথা বলছে, আমি কাউকে আমার এ জীবনের সাথে জড়াতে চাই না, আমি আমার মতো করে থাকতে চাই

মাকে নিয়ে চলে আসলাম বাসায়। মন টা ভালো লাগছে না কেমন যেন লাগছে, দুপুরের খেয়ে,সাথে একটা ঘুমের ওষুধ খেয়ে শুয়ে পড়লাম,জানি মরবো না আর আমি মরে যাওয়ার জন্য খাইনি শুধু একটু ঘুমাতে চাই,আচ্ছা আমার আজকের এই পাওনা টা কি পেপার এ চাপানো হবে,আমি চাই এই খবর টা নিহাল জানুক,আর ও বুঝুক। জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না,আর ভাবতে পারছি না চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসছে,বুঝতে পারছি ওষুধ কাজ করা শুরু করছে,


তানভীরের আম্মু: কিরে তানভীর তোর কি মন খারাপ

তানভীর : না আম্মু আমি ঠিক আছি,আব্বু আসেনি এখন ও

তানভীরের আম্মু: না এসে পড়বে কিছুক্ষনের মধ্যে
তানভীর : ওও আচ্ছা

তানভীরের আম্মু: আনুশা তো দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে ওকে আটকাবি না তুই

তানভীর : না আম্মু ওকে আটকিয়ে রাখার কোন অধিকার আমার নেই, ও নিজেরর মতো করে থাকুক আর আমি ওর কথা ভাবতে চাই না আমি আমার মতো ঠিক আছি আম্মু

আম্মু: তুই সত্যি ঠিক। আছিস তো

তানভীর : হুম আম্মু তুমি আমাকে নিয়ে চিন্তা করো না তো

আম্মু: চল খাবি,খেয়ে শুয়ে পড় ভালো লাগবে

তানভীর :খেতে ইচ্ছে করছে না আম্মু,আমি ঘুমাবো,ঘুম থেকে উঠে না হয় খাবো

আম্মু: ঠিক আছে, আমি তা হলে যাই আমার আবার একটু কাজ আছে

তানভীর : আম্মুকে চলে যাওয়ার জন্য ঘুমের কথা বলেছি,আমার তো ঘুম আর কখনোই আসবে না, আমার ঘুম যে আনুশার চোখে,থাক আমার ঘুমাতে হবে না ও ঘুমাক,ও ভালো থাকুক আমি না হয় ভালো থাকবো ওর ভালো থাকায়

to bee continue