Thursday, August 7, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1977



প্রিয় – নুসরাত জাহান

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০

প্রিয়,
তোমাকে আমি এখনো স্বচক্ষে দেখিনি, নামও জানা নেই। তাই শুধুই প্রিয় লিখলাম। শুনেছিলাম প্রত্যেকের জন্যই জীবন সখা নির্দিষ্ট করা থাকে। সে হিসেবে তুমি আছো এই বিশ্ব ভ্রম্মান্ডের যেকোনো এক স্থানে, হয়তোবা আমারই প্রতীক্ষায় ক্ষণ গুনছো! নিজেদের কক্ষপথে চলতে চলতেই হয়তো মিলবো তুমি আমি, তারপর শুরু হবে আমাদের যুগল পথচলা।
কোন জোৎস্নালোকিত রাতে, যখন পৃথিবী ভাসবে আলোকের ঝর্ণাধারায়, ভেসে যাবে বিশ্বচরাচর,
আর পথঘাট, প্রান্তর।
হাসনাহেনা কিংবা কাঁঠালচাপার উন্মাতাল ঘ্রাণে মাতোয়ারা থাকবে চারপাশ
তখন আমার হাতটি ধরে, পাশে থেকো তুমি।
আকাশ কাঁপিয়ে যখন নামবে বাদলধারা,
ভিজবো দুজনে সেই প্লাবনে খুব। বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল দিও আমায়। শাড়ি পরে চোখে কাজল আর কপালে টিপ এঁটে তোমার সামানে দাঁড়ালে একটুখানি মুগ্ধতা রেখো তোমার চোখে।

যদি কখনো জীবনে অযাচিতভাবে কোনো কালবৈশাখী আসে, ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চায় সব, তখন আমার হাত দুটি ধরে রেখো পরম নির্ভরতায়।
একই পথে চলার সময় হয়তো ঠোকাঠুকি হবে, ঝগড়া হবে, অভিমান হবে, মুখ কালো করে ঠোঁট ফুলানো চলবে, সেই মান-অভিমানের পালা মুছে ফেলব দ্রুতই। ভালোবাসা দিয়ে অভিমান কাটাবো। প্রবল বিশ্বাসের আশ্বাস চাওয়া থাকলো তোমার কাছে। জীবনের পরম সায়াহ্নে এসে চোখ বুঁজতে চাই তোমার হাত ধরেই, এখানে আমি হয়তো স্বার্থপর ভীষণ!

আর আমার দিক থেকে তোমার জন্য থাকবে সারাজীবন ধরে জমানো অফুরান ভালোবাসা, যার কোন খেই নেই, তল নেই আছে বিশ্বাস, নির্ভরতা আর পৃথিবী ভাসিয়ে নেওয়া আবেগ। এক পৃথিবী ভালোবাসা নিয়ে প্রতীক্ষায় আমি, কবে সামনে এসে হাত বাড়িয়ে নেবে তার অপেক্ষায়।
ভালো থেকো সে পর্যন্ত।

ইতি,
তোমার জন্য প্রতীক্ষারত
ভীষণ সাদামাটা আমি।

মাই ডিয়ার সোলমেট -ইনায়াত হাসান ইনায়া

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা
চিঠি নং: দুই

মাই ডিয়ার সোলমেট,

আমি আজ তোমায়
‘আমার প্রিয় শান’ বা ‘আমার প্রিয় শানকুমার’ বলে সম্বোধন না করে ‘মাই ডিয়ার সোলমেট’ বলে সম্বোধন করেছি সেটা কি খেয়াল করেছো শান?

এর পিছনের কারণটা হলো একটা কবিতা। যেটার প্রতিটা লাইন পড়লেই মনে হয় যেন আমাদেরকে নিয়েই লেখা হয়েছে। মানে কবিতার প্রতিটি লাইনে আমি আমার মনের কথাগুলো পড়তে পেয়েছি। মাই ডিয়ার সোলমেট শান, সেটার জের ধরেই আজ আমার পক্ষ থেকে তোমায় এই সম্বোধন।
কবিতাটা পড়েই মনে হলো তোমাকে কবিতাটা শোনানো প্রয়োজন। সাথে সাথে বসলাম তোমাকে চিঠি লিখার জন্য। তার জন্যই তোমাকে এই চিঠি লিখা। কবিতাটা শোনাই তাহলে…

“ডিয়ার সোলমেট
‘আই হোপ ইউর স্মাইল ইজ এজ বিউটিফুল এজ আই সি ইন মাই ড্রিমস’
‘আই এম ওয়েটিং ফর ইউ ইন অ্যা সী অফ সেভেন বিলিয়ন’
‘ডিয়ার সোলমেট’
‘আই অ্যাম হেয়ার’
‘আই অ্যাম লার্নিং টু টেক কেয়ার অফ মাইসেল্ফ,
সো দ্যাট আই কেন টেক কেয়ার অফ ইউ ইন দ্যা ফিউচার’
‘আই অ্যাম এলোন,
বাট আই অ্যাম নট লোনলি’
“দিস লিপস হ্যাভ কিসড,
অল দ্যা রং পিপল
সো দ্যাট আই কেন লার্ন টু…”

(না থাক এটা বাদ। এটা মিলেনি। কারণ তুমিই হবে আমার জীবনের প্রথম এবং শেষ পুরুষ। আমার জীবনে ভালোবাসার প্রথম স্পর্শ তোমারই হবে। আমি একজন মুসলিমা তাই বিয়ের আগে, তাও অন্য কারো সাথে এসবকিছু ট্রায়াল দেওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারিনা। তাই শুধু এটা মিলেনি)

‘আই অ্যাম প্র‍্যাকটিসিং বিং এলোন, সো উই ক্যান বি এলোন টুগেদার’
হোয়েন সেল উই মিট?
‘মিট মি এট দ্যা রাইট প্লেস, এট দ্যা রাইট টাইম’
‘হোয়েন আই অ্যাম দ্যা রাইট পারসন’ ‘ফর নাউ’
‘আই উইল বি হিয়ার চেজিং মাই ড্রিম’
‘আই উইল বি হেয়ার গেদারিং এক্সপেরিয়েন্স’
‘ট্রায়িং টু আন্ডার্স্টেন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড’
মেকিং মাইসেল্ফ হ্যাপি এন্ড হোল।”

দেখেছো সব মিলে গেলো কেমন। কবিতাটা পড়ার পর থেকেই তোমাকে খুব বেশি করে মিস করছি। আমিও তোমার যোগ্য করে নিজেকে গড়ে তুলছি। আশেপাশের সবকিছু দেখছি আর শিখছি আর অপেক্ষা করছি আমার জীবনে তোমার আগমনের। আমিও বিশ্বাস করি আল্লাহ তোমাকে রেখেছে আমার জন্যই। সঠিক সময় এলেই আল্লাহ তোমাকে পাঠিয়ে দিবে আমার জীবনে। তাই আমিও অপেক্ষায় আছি আমার আদর্শ জীবনসঙ্গির।আমার সৃষ্টিকর্তা যাকে আমার জন্য রেখেছে! তবে তোমার সীমাবদ্ধতা এখন আর আমার চিন্তা বা কল্পনা পর্যন্ত না। আমার জীবনে, আশেপাশে, আমার বাস্তবে সব জায়গায় এখন তোমার বিচরণ। কেউ কেউ তো আমায় পাগল ভাবে, মনে করে তুমি একটা অসুখ। একবার শুধু পাই তোমায়, আমার সব অপেক্ষা আর কষ্টের শোধ আমি তুলবো। এই আমি বলে রাখলাম!
প্লীজ শান এবার দেখা দাও। অনেক তো অপেক্ষা করালে আমায়…

ইতি তোমার
স্বপ্নচারিনী

প্রিয় হবু জামাই – Lutfun Nahar Azmin

1

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগীতা_২০২০

প্রিয় হবু জামাই,

জানিনা তুমি বর্তমানে পৃথিবীর কোন জায়গায় আছো।জানিনা তুমি কেমন আছো!শুধু এতটুকু জানি ভবিষ্যতে তুমি আমার জামাই হবে।জানোই দেশ মানে পুরো পৃথিবীর অবস্থা ভালো না।করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবার কাছে অসহায় পুরো মানব জাতি।তুমি যেখানেই থাকো একটু সাবধানে থেকো।বার বার হাত ধুবা।বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করবা সাথে মানুষের কাছ থেকে তিন ফুট না ছয় ফুট দুরত্ব বজায় রাখবা।বলা যায় না আবার কখন তোমায় ভাইরাস এসে জড়িয়ে ধরে।

এইবার আসি ভবিষ্যত পরিকল্পনায়।তুমি হয়তো এখন জানো না বাট ভবিষতে তো জানতে পারবে তাই বলি আমি কিন্তু রান্নাবান্নায় পুরাই অকর্মার ঢেকি।রান্না ঘরে ঢুকলেই নিজের সৃজনশীল প্রতিভাকে কাজে লাগাই।একটা উদাহারন দেই শুনো..
এক বার তোমার দাদা শ্বশুর মানে আমার দাদা আমার কাছে মশলা চা খাইতে চেয়েছিলো।আমিও ভালো মেয়ের মতো সুড়সুড় করে রান্নাঘরে যাই আর চা বানাই।দাদা তখন অলরেডি চা খেয়ে ফেলছে।কিন্তু বিপত্তি বাজছে তোমার শাশুড়ি মা রান্না রুমে ঢুকার পর।রাতের খাবার রেডি করার জন্য আম্মু রান্না ঘরে ঢুকে জোরে চিৎকার দেয়। আমি দৌঁড়ে রান্না ঘরে যায়।গিয়ে দেখি তোমার শাশুড়ি মা আমার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আমি কারণ জানতে চাইলে আম্মু চায়ের পাতিল দেখিয়ে বলে
“এইগ্লা কি বানাইছিস?”
আমি একগাল হেসে উত্তর দেই বুঝতে পারো না আম্মু?এইটা মশলা চা!আম্মু আবার আমায় জিজ্ঞাস করে
“চায়ের মধ্যে আদা,দারুচিনি,এলাচ,লবঙ্গ ঠিক আছে।তার পরে আর কি কি দিছিস?”
“কেন?দেখাই তো যাচ্ছে।মরিচ,রসুন,পেঁয়াজ,গোলমরিচ,পাঁচফোড়ন, জিরা বলতে গেলে সব শুকনা মশলা।”

এখন নিশ্চয় বুঝতে পেরেছো পরে কি হয়েছে!তোমার শ্বাশুড়ি মা আমার পিঠে বেশি না ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিয়েছে।আর সেই মারের ব্যাথা তিনদিন পর্যন্ত ছিলো।এখন বুঝতেই পারছো আমি রান্না বান্নায় অকর্মার ঢেকি।রান্না আমার দ্বারা সম্ভব না।আমি রান্না জানি না দেখে তোমার শাশুড়ি মা খালি তোমায় আর আমার শ্বশুড়বাড়ি নিয়ে খোটা দেয়!যেহেতু আমি রান্না জানি না তাই বলছি।এখনো সময় আছে।আমি আসার আগেই তুমি রান্না শিখে নাও।তুমি রান্না করবে আমি খাবো!আর যদি অগোছালো হয়ে থাকো তাহলে এখনি গোছালো হয়ে যাও।কারণ আমি প্রচুর অলস।নিজের জন্য এক গ্লাস পানি ভরে খেতেও আমার কষ্ট হয়।আমি খুব ভালো মেয়ে। রাগ কম করি।কিন্তু যখন রাগ করি ওই রাগ কিন্তু অনেকদিন থাকে।যে কয়দিন রাগ থাকে সে কয়দিন বাসায় আম্পান, ফনি, নার্গিস,সিডর, আইলা বয়ে যায়।তাই আমাকে না রাগানোই ভালো।
একটা কথা বলে রাখি।আমার কিন্তু কোরিয়ান ছেলেদের হেবি ভাল্লাগে।তাই বলছি পারলে একটু কোরিয়ান ছেলেদের মতো কিউটের বস্তা হওয়ার চেষ্টা করো।তাহলে আর কোনো কোরিয়ান অপ্পার ওপর ক্রাশ খাবোনা।শুধু তোমার ওপরই খাবো।

অনেক কথাই লেখলাম।লেখতে লেখতে হাত ব্যাথা হয়ে গেছে।আরো অনেক কথাই জমে আছে। যা চিঠির মাধ্যমে জানানো সম্ভব নয়।আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে সামনাসামনি তোমায় আরো আমার মনের মধ্যে জমে থাকা কথাগুলো শুনাবো।ভালো থেকো প্রিয়।

ইতি
তোমার হবু বউ

প্রিয় তুমি – Rinku saha

0

#গল্প_পোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং:০১

প্রিয় তুমি,
শুভ জন্মদিন। জানি না আমার শুভ কামনাটুকু তুমি অবধি পৌঁছাবে কিনা,হয়তো পৌঁছাবে না। তবুও মন থেকে শুভেচ্ছা পাঠাচ্ছি এই চিঠিখানার মাধ্যমে। সবসময় ভালো থেকো, আর সবাইকে ভালো রেখো। আর হ্যাঁ, নিজের খেয়াল রাখবে সবসময়। সবার কথা ভাবতে ভাবতে নিজের খেয়ালটাই তো রাখা হয় না তোমার। আগে না হয় আমি তোমার খেয়াল রাখতাম।এখন তোহ্ নিজের খেয়াল নিজের রাখতে শিখতে হবে। সময় মতো খাবার খাবে, আর জ্বর আসলে ওষুধ না খেয়ে থাকবে না। নিজেকে কষ্ট দিতে তো তোমার আবার অনেক ভলো লাগে। অথচ বুঝো না তোমার কষ্ট আমি সহ্য করতে পারি না । এক আকাশের নিচে থেকেও আজ যেন কত দুরে তুমি। আজ ইচ্ছে করলেও তোমার কোনো বিশেষ দিনে তোমার কাছে থাকতে পারি না। এর কারণ অবশ্য আমি নিজে। জানো, সবাই বলে তাদের ভালোবাসার মানু্ষ তাদের মনের কথা বুঝতে পারে না। আর আমার তুমি সবটা নিজ থেকেই বুঝতে পারো, আমাকে কিছুই বলতে হয় না। তোমার এই সবটা বুঝে ফেলাই যে আমার ভালোবাসায় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে, তা যদি ঘুনাক্ষরেও টের পেতাম তাহলে কখনোই তোমায় জানতে দিতম না আমার মনের কথা। আমি জানি, তুমি আমাকে কখনোই নিজের প্রিয় কেউ ভাবতে পারোনি। অবশ্য সে কথা তুমি আমায় শুরুতেই জানিয়েছিলে, আমিও তখন মেনে নিয়েছিলাম তোমার কথা। কিন্তু এই অবুঝ মন যে তোমায় এত ভালোবেসে ফেলবে, তা সত্যিই বুঝতে পারি নি। এরই মাঝে কখন যে আমি আমার প্রিয় তুমিটার অপ্রিয় হয়ে গেলাম বুঝতেই পারি নি। সব-ই নিয়তির খেলা। যদি তুমি আমার ভাগ্যে থাকো, আমার ভালোবাসা পূর্ণতা পায়, সেই আশা নিয়ে-ই স্বপ্ন বুনে যাচ্ছি। অপেক্ষার প্রহর গুনে যাচ্ছি সেই দিনটার, যেদিন তোমার-আমারও লাল-নীল সংসার হবে।
ইতি-
তোমার
অপ্রিয় আমি।

প্রিয় তুমি – Tamanna Akter

0

#গল্পপোকা_চিঠি _প্রতিযোগিতা-২০২০
চিঠি নং-১

প্রিয় তুমি,
প্রথমেই তোমাকে অসংখ্য কামিনী ফুলের শুভেচ্ছা।আজ কিছু দীর্ঘশ্বাস নিয়ে লিখতে বসেছি, তোমার নিকট আমার শেষ অন্তঃকরণের কিছুটা। কেমন আছো তুমি?জানি তোমার উত্তর খুব ভালোই হবে।আমি কেমন আছি জানতে না চাইলেও বলব। জানো প্রিয় আমি ভালো আছি।হ্যাঁ এই মিথ্যেটা বলতে শিখে গেছি আমি। তুমি ছিলে আমার স্বল্পালোক মূখরিত জীবনকে আলোকিত করার প্রদীপ।প্রদীপটাই যখন নিভে যায় তখন আমি কেমন থাকতে পারি বলোতো।জানি তুমি অতীত, হ্যাঁ ঘোর অতীত। তাইতো পেছনে ফেলে হেটেঁ চলেছি প্রতিনিয়ত।তবুও নিস্তব্ধতায় ঘিরে নেয় সেই অতীতের স্মৃতিগুলো।
নিস্তব্ধতা ভুলে গেছি এমন রাত তুমি কখনো ছিলে না।
তোমার প্রত্যকটা স্মৃতি এক জলন্ত অগ্নিশিখা।
আমি জ্বলে যাচ্ছি প্রতি তীর্থে তীর্থে।

জানো প্রিয় এখন আমার প্রতিটা দিন বিষাদময় কাটে, এখন আর আগের মতো ধূসর সন্ধ্যায় বুনোহাঁসের দলের সাথে ছুটোছুটি হয় না।এখন আর কাঠপাটা রৌদ্দুরে ছুটে বেড়ানো হয়না, কারণ
এখন আর কেউ বাঁধা দিয়ে বলে না “আমার মিষ্টি পরীটা তো কালো হয়ে যাবে,তখন তো পরীটাকে পেত্নী লাগবে”।জানো তো তোমার আদরমাখা কথা গুলো এক প্রকার আনন্দ দিতো বলেই আরো বেশি ছুটোছুটি করতাম। যেদিন তুমি শ্যাওলা জন্মানু সিড়িটায় একা রেখে গিয়েছিলে সেদিনই আমার সব অনূভুতি ফিকে হয়ে গেছে। তাইতো এখন আর কবিতায় অনুভূতি প্রকাশ পায় না,প্রকাশ পায় একরাশ দীর্ঘশ্বাস।সেই কবিতাও এখন আর কাউকে আবৃত্তি করে শুনানো হয় না।

যখন তোমার ভালোবাসাটাই মিথ্যে ছিলো তখন এত নিখুঁতভাবে কেন বিষাক্ত স্মৃতি গুলো দিয়ে গেলে। যে স্মৃতিগুলো ভুলতে চেয়েও ভুলা যায় না। প্রতিটা স্মৃতি দহন সইছে অন্তঃকরণের প্রতিটা চত্বর। তোমাকে বলেছিলাম তুমি আমার শেষ একটা চিঠি পাবে, হ্যাঁ সেটাই এটা।
অন্তঃকরণের সভ্যতা ভেঙ্গে চলে গেছে যে ঐতিহ্য । তার পথেই তোমার দ্বিধা।বাধা হয়ে থাক।
ভালো থেকো প্রিয় খুব ভালো থেকো।আমার অনুরক্তি মাখা শেষ চিঠি।

ইতি
তোমার অপ্রিয় মিষ্টি পরী

প্রিয় বাবা – Sumaiya Afrin

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
প্রিয় বাবা,

হাজারো বিষণ্নতার বেড়াজাল ছিন্ন করে বলতে হচ্ছে তোমার সাথে দীর্ঘপথ হাঁটার সুযোগ হয়ে ওঠেনি ।
“তাই ঠিক কোন জায়গা থেকে শুরু করব বুঝতে পারছি না ।” তবুও, যেটুকু মনে আছে সেটুকুর স্মৃতিচারণ করেই আজকের তোমার তরে চিঠি লেখা । লেখার সময়ে এক অদ্ভূত অনুভূতি পুরো শরীর-মন জুড়ে বসে আছে। জানি না ! কেমন সেই অনুভূতি । তবে এতটুকু জানি সেই অনুভূতি প্রকাশ করার মতোন শব্দ চয়ণ আমার পক্ষে সম্ভব হবে না । তাই সেই ব্যর্থ প্রচেষ্টা নাই বা করলাম । কারণ আমি মনে করি, “অনুভূতি নামে মাত্র কোনো শব্দ নয় এর ভিতরে লুকিয়ে আছে অনুভবের গভীরতা । যা মাঝে মাঝে প্রকাশ না করে রেখে দিতে হয় নিজস্ব মন কুঠুরিতে । আবার কখনো বা এই জাগ্রত অনুভূতিই পুড়ে যায় কষ্টের তাপে, ধুয়ে যায় বৃষ্টির জলস্রোতে ।”

রাগ, শাসন আর রাশভারী চেহারার আবডালে যে মানুষটির কোমল হৃদয় ছিল, তুমি আমার সেই বাবা । জন্মের পর মায়ের পরেই তুমি তোমার নি:স্বার্থ স্নেহ-ভালোবাসা ও দায়িত্বশীলতার শৃঙ্খলা বেঁধে আমার জীবনকে নিরাপদ ও সুন্দর রাখতে চেয়েছো । “বাবা” আমার জীবনে তুমি ছিলে নির্ভরতার আকাশ, একরাশ নিরাপত্তার শক্ত কোনো প্রাচীর, নিদাঘ সূর্যের নিচে অমল-শীতল কোনো ছায়া।

জীবন পরিক্রমায় এসে আজ বুঝতে পারছি বাবাহীন জীবন ছোট্ট ডিঙ্গি নিয়ে উত্থাল সাগর পারি দেওয়ার দুঃসাহসিক চেষ্টার নাম । যার ‘বাবা’ নামক বটবৃক্ষের নিবিড় ছায়া নেই,সেই বুঝে ‘বাবা’ নামক শব্দের গভীরতা ঠিক কতটা ।
আজ আমার মনের দরজায় যেনো সবসময়ে কড়া নাড়তে থাকে, “অনন্ত পথ বাবাহীন চলতে হবে একা, জানি ভেঙে দিয়ে সব প্রতিবন্ধকতা ।” কারণ সর্বপ্রকার প্রতিবন্ধকতা কিংবা বিরূপ বিশ্বের অজানা বিপদের হাতছানি থেকে পরম আবেশে আগলে রেখেই স্বনির্ভরসম্পন্ন মানুষ করার স্বপ্ন সাধনাই যে ছিল তোমার জীবনের ব্রত, সেই তুমি আর আমার জীবনে নেই । আর নেই বলেই আজ একরাশ চাপা কষ্ট নিয়ে প্রতিনিয়ত নিজেকে টিকিয়ে রাখতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়তে হচ্ছে এই বিরূপ বিশ্বে । যেখানে নানা রকম অজানা আশংকায় আমায় চলতে হয়, প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হয় সৈনিকের বেশে । শুধু একটু ভালো থাকার প্রচেষ্টায় ।

জানো বাবা বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমার বর্তমানের তুমিহীনা জীবন কতটা আগোছালো সেটা তুমি থাকাকালীন সেই গোছালো অতীত খুব করে জানান দিয়ে যায় । আজকে তুমি নেই বলেই দুঃখের সাগরে পতিত হলেও কারো বুকে এসে একটু তীরের সন্ধান খুঁজে দেখা হয় না ; হয়ে ওঠে না ‘বাবা’ ডাকের সেই মিষ্টি ডাকটা ডাকতে পেরে তৃষ্ণা মেটানো হৃদয়ের অনুভূতির পূর্ণতা । চরম হতাশা কিংবা বিপদগ্রস্ত হলে কেউ এখন মাথায় হাত বুলিয়ে বলে না, “আমি তো আছি ‘মা’, চিন্তা বা ভয়ের কোনো অবকাশ নেই ।” আর কোনোদিন হয়তো তোমায় ‘বাবা’ বলে শান্তির পরশ মিশিয়ে আবেগের চাদর বিছিয়ে জড়িয়ে ধরে আলতো করে চুমু এঁকে দেওয়া হবে না । কারণ আমার যে সেই তুমিটা নেই ! আল্লাহ্‌ তায়ালার ডাকে সাড়া দিয়ে অবশেষে চলে গেলে না ফেরার দেশে ।”
তবুও তোমাকে নিয়ে মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে কিছু একটা লিখি কিন্তু লিখতে গিয়েও সেটা এর আগে কখনো হয়ে ওঠেনি । যেহেতু গল্প পোকা একটা সুবর্ণ সুযোগ করে দিলো তাই আজকে তোমাকে নিয়ে সেই অনুভূতির জানান দিব নিজের লেখা চিঠির দ্বারাই । যেটা এতদিন নিজের মনে স্মৃতির পাতায় লিখে রেখেছিলাম খুব যত্ন করে । যদিও জানি আজও সেই অনুভূতি লেখার পরেও তুমি অবধি সেটা পৌঁছাবে না । কিন্তু

“বাবা ! তোমাকে আর পাব না,
সে কথা জেনেও খুব যত্ন করে
সঙ্গপোনে অশ্রু ঝরাই হৃদয় কোণে ।”
মনপাঁজরে রক্ত ঝরে-
ডুকরে ডুকরে ভেতর কাঁদে ।
তুমি না-ই বা সেটা দেখলে ।
বাবা কেন জানি না তোমার মেয়ে যখন নিজের চোখের সামনে অন্য কাউকে তার বাবার সাথে খুনশুটিতে মেতে উঠতে দেখে, তখন এক রাশ কালো মেঘের ছায়া এসে ভর করে তার হৃদয় কোণে যেখানে তখন দীপ্তি জ্বেলে এক মুঠো রোদ ওঠার কথা ছিল । সেখানে আজ রোদ ওঠে না বরং আনন্দের রাশি বিরাজ না করেই মুখে থাকে ম্লান হাসি যা আমার চঞ্চলতাকে দমিয়ে দিয়ে করে ফেলে গৃহবন্দি । বুক ফেটে বেরিয়ে আসে না পাওয়ার, না ডাকতে পারার এক অতৃপ্ত আর্তনাদ । কিন্তু ওই যে আমাদের মতো বাবাহীনদের বুক চিঁরে বেরিয়ে আসে দীর্ঘশ্বাস কিন্তু বুক যতোই ফেটে যাক ; মুখ তো ফেটে যাওয়ার নয় তাই লোকসমাজে আমি হয়তো স্বাভাবিক ভাবেই চলে বেড়াচ্ছি দিনের পর দিন নিজের গড়া কোনো এক ছন্দে । কারণে অকারণে নিজের তৈরি করা নিয়মের মাঝে আজ নিজে থেকেই যেনো নিজেকে করেছি এক দুর্বোধ্য কঠিন বেড়াজালে বন্দি । কারন কষ্টের সাথেই যে প্রতিনিয়ত করে চলেছি সন্ধি।যখন কোনো কিছু চোখের সামনে দেখলেও হাজারো ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কিনতে না পারার ব্যর্থতা অনুভব করি, তখন বুঝি তুমি নামক বটবৃক্ষের অবদান আমার জীবনে কতখানি । নিজের ইচ্ছেগুলো সব সময়ে হয়তো পূরণ করা হয়ে উঠে না তখন ইচ্ছেশক্তিগুলো নিজের মন কুঠুরিতে রেখে দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে কান্না সামলিয়ে এগিয়ে যেতে হয় পরবর্তী সময়ে কি করব সেটা ভেবেই ।
বাবা তুমি যখন আমায় ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলে । তখন আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে জানান দিয়েছিল ঠিকই তুমি আর নেই । কিন্তু বুঝতে পারিনি সেদিন তুমি না থাকা কথাটার গভীরতা কতটা বিশাল ছিল । আজকে সেটা বুঝতে পারি কারণ সমাজে চলার পথে কতটা বাঁধা-বিপত্তির পাশ কাটিয়ে কোনোরকম সাপোর্ট ছাড়াই এগিয়ে যেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত । জানি সামনের দিনগুলোতেও অন্য সবার বাবার মতোন ভরসার হাত বাড়িয়ে দিবার মতোন কাউকে পাবো না কারণ সেটা যে আর কোনোদিন সম্ভব হবার নয় । মাঝে মাঝে নিজের কাছেই প্রশ্ন জুড়ে দেই, “বাবা থাকলে আমার জীবনটা ঠিক কেমন হত ?” কোনোদিন এই প্রশ্নের উত্তর পাই না । নিজের মনকে তখন নিজেরই সান্ত্বনা দিতে হয় যাতে পুরো পরিস্থিতি সামলে নিতে পারি । কিন্তু ভাবনার জগত জুড়ে কিছু প্রশ্নের রেশ থেকেই যায় হয়তো খুব বেশি ভালো হতে পারতো ; মাথার উপরে থাকতো এক প্রাচীর ঘেরা ছায়া ।

বাবা তুমি থাকাকালীন হয়তো কোনোদিন সেইভাবে বলতে পারিনি তোমায় কতটা ভালোবাসি । কারণ ভালোবাসার অনুভূতিটুকু ছিল সুপ্ত যার প্রকাশ করার সুযোগ হয়নি তবে আজকে বলছি এই চিঠির দ্বারা বলেছি , “বাবা, ভালোবাসি ! তোমায় ভীষণ ভালোবাসি ।”

আজ এখানেই শেষ করছি । কিন্তু মনের ভিতর যেন অজানা এক বাজনা বাজে । আর সেই বাজনাই যেন জানান দেয় শেষ হয়েও হলো না শেষ । কারণ তোমায় নিয়ে আমার সব অব্যক্ত কথামালা একটা চিঠিতে ব্যক্ত করা সম্ভব নয় । কিন্তু চিঠির যে ইতি টানতেই হবে একটু আগে কিংবা পরে । তাই আমার কথার ইতি না টেনে বরং চিঠির ইতি এখানেই টেনে দিলাম ।

ইতি,
তোমার ছোট্ট মেয়ে
সুমাইয়া আফরীন

শ্রদ্ধেয় আম্মা – Rimy islam

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#চিঠি_নং_০২

শ্রদ্ধেয় আম্মা,
শুরুতেই সালাম নিও। লোকমুখে প্রচলিত, ‘ শাশুড়ী কখনো মা হয় না ‘। কথাটি ভাবলে ভীষণ অবাক লাগে। প্রথম যেদিন তোমার মেয়ে হিসেবে বরণ করে নিলে, জানি না কেন মনে হয়েছিল তুমি অনন্যা একজন মা। ক’জন পারে ছেলের পছন্দের মেয়েকে এত সহজে মেনে নিতে! নিজের মেয়ের পরিচয়ে প্রথম সাদরে গ্রহণ করতে! তুমি পেরেছিলে। এরপর যেদিন কোনো এক ক্লান্ত, মনভাঙা দিনে মন খারাপের রূপের বহিঃপ্রকাশ করে তোমার কাছে ‘ আম্মা ‘ ডাকটা বলার অধিকার চেয়ে বসলাম, তোমার নিখুঁত সমর্থনে উচ্চারিত ‘ হ্যাঁ ‘ বাক্যটি আমার মন মনিকোঠায় গভীর দাগ কেটে দিয়েছিল। ভেবো না এই দাগ কষ্টের দাগ, কিংবা অভিমানের দাগ। এই দাগ আমার বুকে চিরস্থায়ী মা হিসেবে তোমাকে সিলমোহর করার দাগ। নিকষ আঁধার কালো রাজ্যে তুমি এলে প্রস্ফূটিত ভোর হয়ে। দেখতে দেখতে দশ বর্ষ গড়িয়ে আমি আজও তোমার ছেলের বউ হতে পারিনি। কারণ, আমি বা তুমি এটা কখনো চাইনি। আমি তোমার মেয়ে হয়েই রয়ে গেছি। তোমার কাছে কথা নিয়েছিলাম, ‘ আমি কিন্তু তোমার ছেলের বউ হলেও আমাকে মেয়ে হিসেবে রাখবে। ছেলের বউ হলে দু’ নজর হতে পারে।’ তুমি বলেছিলে, ‘ এমনটা হলে আমি সর্বোচ্চ খুশি হবো।’
তুমি তোমার কথা রেখেছ। জানি না আমি কতটুকু পেরেছি। শুধু জানি, তোমার মতো আমি পারবো না। শুরুতেই বলেছি তুমি অনন্যা। সেই ‘অনন্যা’ উপাধিটা নাহয় তোমারই থাক!
অবশেষে এইটুকু বলতেই হয়, লোকমুখে প্রচলিত কথার উদ্ভব ঘটে সচরাচর দেখা পার্শ্ববর্তী মানুষগুলোকে ঘিরে। এর মাঝেও তোমার মতো মানুষের সংখ্যা কম বলেই হয়তো এই প্রচলিত কথাটি এসেছিল।
আবারো বলবো, ‘ আম্মা তুমি অনন্যা ‘। অসংখ্য ভালোবাসা নিও।

ইতি
তোমার টুনটুনি

প্রিয় বৃষ্টিমালা -Faiza Habib Nebula

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-০৪
প্রিয় বৃষ্টিমালা,
আজি ঝরো ঝরো মুখরো বাদল দিনে,
জানি নে,জানি নে
কিছুতে মনো নাহি লাগে না, লাগে না…………
আজকে যখন তোমাকে লিখতে বসেছি তখন আমি গাজীপুরে নানার বৃষ্টি দেখার জন্য বিশেষভাবে তৈরি বৃষ্টিবিলাসে বসে আছি।সামনে ডায়রির সাদা পাতা আর টিনের চালে বৃষ্টির মূর্চ্ছনা।এ যেন কোনো এক ওস্তাদের হাতের কারুকাজ, এ যেন করুণ এক সানাতুর, নাকি সেতার, জানি না আমি কিন্তু আমার মস্তিষ্কের প্রতিটি কণা থেকে রক্তের প্রতিটি অনু কণিকায় ছড়িয়ে পড়ছে তীব্র গতিতে।
আমার জানালা দিয়ে দেখা যায় এক বিশাল প্রান্তর যা আজ পানিতে প্লাবিত।এক নৌকার মাঝি বয়ে চলেছে বৈঠা কিন্তু চারিদিকে কেউ নেই।এ মাঝিকে দেখে মনে পড়ে গেল সোনার তরী কবিতাটি….
আমি যখন আমার সেই বৃষ্টিবিলাসে বসে অন্য দিকে তাকাই,তখন গাছের পাতার গায়ে বৃষ্টির পতনের ফলে যে চমৎকার সবুজাভ রং দেখি,বেলিফুলের গন্ধ পাই তা যেন অমূল্য।ফুলভর্তি গাছটাকে যেন সাদা ছোট পায়রার মতো লাগে।কামিনী,হাসনাহেনা,গন্ধরাজের গন্ধে যেমন বিমোহিত হই তেমনি যদি ধূমায়িত এক কাপ চা এর সাথে গজলসংগীত শুনি মনে হয় এ ত্রিভুবনে আমার চেয়ে সুখী আর কেউ নয়।
মাঝে মাঝে টানা বৃষ্টি এক সময় ক্লান্তির আমেজ নিয়ে আসে,তাই তো মন বিরহী হয়ে উঠে।
আজকের এ চিঠি শেষ করছি সেই বিরহী মনের প্রিয় গানের কিছু লাইন দিয়ে,
যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো,চলে এসো এক বরষায়………..
ইতি তোমার
বৃষ্টিপ্রেমি

প্রিয় অবন্তি – শুভদীপ হালদার

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#চিঠি নং-০২
#ভালোবাসার অন্য এক রূপ #

???
প্রিয় অবন্তি,

একটা সময় ছিল, যখন ভাবনার কারাগার থেকে বের হতে পারতাম না কোনোমতে। সেই সময়টা আমার আবার ফিরে এসেছে। এ কেমন অযোচিত যন্ত্রনা মনের গহীন কোনে, আরে না ভুল বলা হলো সত্যি, গহীন কোন না এইটা একটা বৃত্ত। সত্যি এই মধ্য বয়সী মনে প্রেম জেগেছে নতুন করে। প্রেম মানেইতো ভালোবাসার অন্য এক রূপ। কখনো মুগ্ধতা, কখনো নীরবতা, কখনো অপলক দৃষ্টিতে শুধুই চেয়ে থাকা। মুখ ফুটে ভালোবাসার কথা সবসময় হয়তো তোমার বলা হয়ে ওঠে না। বলা না গেলেও বুঝতে মোটেও অসুবিধা হয় না – ” ভালোবাসা কী, ভালোবাসা কাকে বলে? ” ভালোবাসা এমনই এক অনুভূতি যা কোন না কোন ভাবে মনকে ছুয়ে যায়, মনকে এলোমেলো করে দিয়ে যায়। ভালোবাসাকে ঘিরেই মনে এক অজানা আবেগ শিহরিত হয়। আমার মনেও তাই হয়। তুমি হয়তো মাঝে মাঝে এমন ভাবও -” আমি কী তবে ভালোবাসায় জড়িয়ে গেলাম! ” তোমার মনের মধ্যে সব উদ্ভট ভাবনা জট পাকাতে থাকে। আমাকে ঘিরে তোমার সব ভালোলাগা কখন যেন ভালোবাসা হয়ে যায়। মন তোমারও চায় আমার কাছে সেই ভালোবাসা ব্যক্ত করতে হয়তো। কিন্তু আমাকে বলা হয়ে ওঠে না। মন যে তোমারও চায়, এই কথা তুমি ভালো করেই জানো।
কিন্তু কিভাবে জানাবে ভেবে পাও না ঠিক বলছি না? আসলে তুমি সেভাবে আমার কাছে আসোনি কোনোদিনও, পাশে বসোনি, নির্জন কোনো প্রহর কাটাইনি কখনো দুজনে। তবে কী লিখে জানাবে, কী বলবে তাও খুঁজে পাও না? তোমারতো আবার চিঠি লেখায় এলার্জি আছে, মুখে বলতেও দ্বিধা। যাক তোমায় চিঠি লিখে জানাতে হবে না যে তুমি আমাকে ভালোবাসো। তুমি বলেছিলে কখনো তুমি চিঠি লেখোনি। এখন একবার চেষ্টা করে দেখো, এমন এক কবিতা লেখার যেখানে তোমার ভালোবাসার সবটুকু কবিতায় প্রকাশ পাবে ।
জানো, সেই সদ্য যুবক একটা ছেলের বুকের একটা কোনে তুমি বাসা বেধেছিলে। স্বল্প সময়ের দেখায় -তোমাকে ভালো লেগেছিল। সবকিছুই ভাল লেগেছিল আমার, যেমন – তোমার মৃগ নয়নের চাহনি, তোমার কথা বলার ভঙ্গি, তোমার মায়াবী হাসি আর ওই গোলাপী ঠোটের নীচে থাকা আর্কষনীয় তিলটা -সবকিছুতেই কেমন জানি ভাল লাগা জড়িয়ে ছিল। টুকরো টুকরো সেই ভালোলাগা সমষ্টিগতভাবে ভালোবাসারই রূপ যেন। ওটা কী সত্যিই একটা ভালো লাগা ছিল? কিংবা তার চেয়েও বেশি কিছু। আমার সেই ভালোলাগার কথা তোমাকে খুব দ্রুত জানিয়েও ছিলাম আমার এই অবচেতন মনকে।
ইতি,
তোমার শুভ

প্রিয় শানকুমার – ইনায়াত হাসান ইনায়া

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_2020
চিঠি নং: এক

প্রিয় শানকুমার,

তুমি আমার “আত্মার সাথের জোড়া, আমার অর্ধাঙ্গ, আমার ভবিষ্যৎ জীবন সঙ্গী!”
“তাতে কি হয়েছে তুমি একটা অদৃশ্য অনুভূতি, আমি কোনদিন তোমাকে দেখিনি, এখনো চিনিই না, ভালো করে কিছুই জানি না তোমার সম্পর্কে…”
কিন্তু তাও আমি সবসময় তোমাকে ভালোবাসে যাচ্ছি এবং যাবো। আল্লাহর কাছে প্রতিটি মোনাজাতে তোমাকে চেয়ে যাচ্ছি এবং চেয়ে যাবো। আমার এই ভালোবাসার শুরু কিন্তু ক্লাস নাইন এর সেই ইসলাম শিক্ষা ক্লাস থেকে। আর এখন আমি অনার্সে পড়ুয়া একটা মেয়ে। তুমি অদৃশ্য এক মায়া আর ভালোবাসা। যার নাম আমি নিজেই ‘শান’ রেখেছি। আবার ভালোবেসে মাঝেমাঝে শানকুমারও ডাকি।
পাচঁ বছর আগে সেদিন স্যার ইসলাম শিক্ষা পড়াতে গিয়ে বলেছিলেন,
“যে যেমন আল্লাহ তার সাথের জোড়াও তেমনি মিলায়। তাই ভালো এবং নেক কাউকে জীবনে পেতে হলে আগে তোদের নিজেদেরকে তেমনি ভাবে গড়তে হবে।”
“ব্যাস! শুরু হয়ে গেল তোমার সাথে পথচলা। আমার কল্পনায় সৃষ্টি হলো একজন আদর্শ জীবনসঙ্গির অবয়ব। যার নাম আমি রাখলাম শান। তখন থেকে যেন সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস বেড়ে গেল, ভাগ্যের উপর বিশ্বাসী হতে শুরু করলাম।
কথায় আছে না,
“বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর”
আস্তে আস্তে নিজেকে আর নিজের সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করলাম।
যখন জানলাম আমার সমস্ত রূপ, সব সৌন্দর্য শুধু তোমার জন্যেই বরাদ্দ করা।
তখন থেকেই নিজের সৌন্দর্য আর রূপকে সঞ্চয় করে রাখতে শুরু করলাম। তাদেরকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা শুরু করলাম, আব্রুর মধ্যে আনার চেষ্টা করলাম। যাতে করে তোমার হক আর তোমার জিনিস কেউ দেখতে না পারে।
“চোখের কাজল, ঠোঁটের লিপস্টিক, হাতের মেহেদী এবং শাড়ি পরার প্রবল শখ সবকিছু বাদ দিলাম। কেন জানি ইচ্ছে হয় না। মনে হয় যার জন্য এই সাজ সেই তো এখনো জীবনে এলোনা। দেখানোর মানুষটাই তো নেই। যে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে দেখবে আমায়। তাহলে আর এতো সাজসজ্জা করে কি লাভ!”
“কোন পরপুরুষের দিকে ভুলেও নজর তুলে তাকাই না। পাছে যদি তুমিও অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকাও!”

“মাঝেমাঝে খুব বেশি মিস করি তোমাকে। যখন খুব বেশি বৃষ্টি হয়, যখন অন্য কাউকে দেখি ট্র‍্যাভেলিং করতে তখন আমারও মন চায় তোমার সাথে পুরো পৃথিবীটা ঘুরে বেড়াতে। তোমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজতে। তখন তোমাকে প্রচণ্ড মিস করি…
নিজে নিজে খুব কষ্ট পাই।তারপর তোমায় প্রচুর বকাবকি করি। তোমার জন্যে শাস্তি ঠিক করি। এই সবই আমার ভালোবাসার পাগলামি।
“স্নিগ্ধ অনিলের ছোঁয়াতে, আমার প্রিয় করমচা ফুলের সুবাসে, আমার প্রতিটি প্রত্যুষে, নিঃসঙ্গ নিশীথে আমি তোমাকে পাই আমার অনুভবে!”
আমার যে করমচা ফুল এতো প্রিয় এটার কারণও কিন্তু তুমিই। কারণ এই ফুলটার বৈশিষ্ট্য একদম তোমার ই মতো। করমচা ফুলের রং হলো সাদা, আমার প্রিয় রং। আর আমার কাছে সাদা মনেই ‘শ্বেত, শুভ্র এবং পবিত্র’ একটা ব্যপার।
ঠিক যেমন শান মানেই একটা নির্ভেজাল পিউর অনুভূতি, একটা পিউরিটি, একটা পবিত্রতা, একটা খুব গভীর পবিত্র এবং শুদ্ধতম অনূভুতি…
তুমি কোথাও নেই কিন্তু সবখানে আছো, আমার অনূভুতি হয়ে।
আই কান্ট সি, কান্ট টাচ বাট আই কেন ফিল ইউ ইচ এন্ড এভরী সেকেন্ড ইন মাই লাইফ!

এই চিঠি আমার ভালোবাসার সাক্ষী। তোমার উপস্থিতি ছাড়াই তোমাকে ভালোবেসে যাওয়া এতগুলো বছরের স্মৃতিস্বরূপ এই চিঠিগুলো লিখি। যাতে তোমাকে পরবর্তীকালে দেখাতে পারি কিভাবে তোমার অপেক্ষায় ছিলাম…

ইতি তোমার
জীবনসঙ্গিনী