Tuesday, August 5, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1971



ভালো লাগে ভালোবাসতে-পর্ব ১৩

0

#ভালো লাগে ভালোবাসতে
#পর্ব-১৩
Writer: ইশরাত জাহান সুপ্তি

“বোকা,চরম বোকা,পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বোকা মেয়ের প্রেমে আমি পরেছি।তাকে যদি আমি এখন সামনে গিয়েও বলি ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ তবুও সে তার চোখগুলো গোল গোল করে অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলবে,’আপনার কি হ্যালুসিনেশনের সমস্যা হচ্ছে?আমার ভেতর ঐ মেয়েকে দেখতে পাচ্ছেন?
‘তাই অন্য কথা তো আর বাদই দিলাম।শুনেছি মেয়েরা নাকি সহজেই বুঝতে পারে কে তাকে পছন্দ আর কে তাকে ঘৃণা করে,তাহলে এতকিছুর পরেও এই ঘুমকন্যা বুঝতে পারে না কেনো!
তাকে দেখেছি…!নাহ্ দেখেছি না, অনুভব করেছি,ঠিকমতো দেখার আগে আমি অনুভব করেছি তারে, আমার হৃদ মাঝারে।অনুভব করেছি তার হৃদস্পন্দনের মাঝে মিলিয়ে যাওয়া আমার হৃদস্পন্দনকে।প্রথম আলিঙ্গনে সিক্ত হয়ে পাওয়া প্রথম স্পর্শে আমার সর্বাঙ্গেই যেন এক অস্থিরতার স্বস্তিতা শুরু হয়ে গিয়েছিল।সমস্ত শরীর যেনো তৎপর হয়ে সংকেত পেয়ে যাচ্ছিলো তার অপূর্ণ অংশকে খুঁজে পাওয়ার।তার প্রথম স্পর্শেই আমার মনে হল এই তো আমার বাম পাঁজরের হাড়।আমার অপূর্ণ অংশের সম্পূরক।এবার যেনো আমি স্বয়ংসম্পূর্ণ হলাম।এ এক কেমন আকর্ষণ,বোঝানো যে বড্ড দায়!

আলিঙ্গন থেকে মুক্ত হয়ে তাকে আমি দেখতে লাগলাম খুবব খুঁটিয়ে।রাগে থরথর করে কাঁপতে থাকা তার পাতলা ঠোঁটগুলো,কপালের কার্ণিশে লেগে থাকা এক ছিটেফোটা কাঁদা,যেখানে মৃদু বাতাসে ঈষৎ কোঁকড়া চুলগুলো বারবার উড়ে এসে বারি খাচ্ছে।গাঢ় কাজলে ঢাকা পিটপিট করা তার চোখের চাহনি।নাহ্! ওটা কে কাজল বলবো না,সেটা তো ছিল এক মায়া,কোনো এক মেঘেদের দেশ থেকে চুরি করে আনা এক চিমটি মায়া।নির্বাক দৃষ্টিতে ঠায় দাঁড়িয়ে আমি শুধু ভাবতে লাগলাম যার চেহারায় আগে থেকেই রয়েছে উপচে পড়া মায়া তাকে শুধু শুধু আরেকটু মায়া চুরি করতে হলো কেনো!এক গভীর সম্মোহনী শক্তিতে যেনো সেই শ্যামবর্ণের ঘুমকন্যা আমায় নিঃশেষ করার প্রয়াসে প্রস্তুত হয়ে এসেছে!যেই গভীরতায় আমি নিজেই এখন ইচ্চকৃতভাবে নিঃশেষ হতে চাইছি।
খুব বিরক্ত হলাম,খুব।বিরক্ত আর রাগে আমার মাথা গরম হয়ে উঠলো যখন সে আমায় তাকে খুঁটিয়ে দেখার মাঝপথে থাপ্পড় মেরে বাঁধা প্রদান করলো।সবার সামনে থাপ্পড় মারার কারণ সেই রাগের কতটুকু অংশ ছিল জানি না তবে বিরক্ত করার কারণটাই ছিল প্রধান।
তাকে এক মুহুর্তের জন্যও যে দূরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।ইচ্ছে করে সর্বক্ষণ তাকে চোখের সামনে বসিয়ে রাখি।খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তাকে শুধু দেখতে থাকি।তার ঢোক গিলে চোখ পিটপিট করা ভয়ার্ত চাহনি,অবাক চোখে গোলগোল করে তাকিয়ে থাকা,ঈষৎ রাগমাখানো চোখে ঠোঁট ফুলিয়ে থাকা,সবকিছু….সবকিছু আমাকে বড্ড অস্থির করে রাখে।তার অবাক চোখের চাহনি আমার সবথেকে বেশি প্রিয়।কিছু বুঝতে না পেরে সে যখন তার চোখদুটো গোল গোল করে অবাক হয়ে মুখপানে তাকিয়ে থাকে….ইশ! ইচ্ছে করে সহস্র জনম শুধু তাকিয়েই থাকি।এক জনম যেনো কুলোবে না তাকে দেখায়।তাই তো হয়তো একটু বেশিই স্বার্থপরতা করে ফেলি!তার সেই অবাক চাহনির লোভে তাকে বারবার অবাক করে দেই।
তাকে দেখেছি এক বৃষ্টি ভেজা বিকেলে,বেখায়লি আনমনে অবিরাম বারি ধারায় মত্ত হয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করতে।কিন্তু হায়!আমার তৃষ্ণা কিভাবে নিবারণ হবে!এই তৃষ্ণা যে কখনো মিটবার নয়।এ যে ভালোবাসার তৃষ্ণা,ভালোবাসা পাবার তৃষ্ণা।
প্রাপ্তিতে হয় দ্বিগুণ।যতই মিলবে ততই বৃদ্ধি পাবে।যেদিন তাকে প্রথম দেখলাম কচুপাতা রঙের শাড়িতে,সে কি জানে কতটা যন্ত্রণা হচ্ছিলো এই বুকে!বারবার উড়ে এসে কপালে পড়া তার খোলা চুল সে যন্ত্রণাকে আরো বাড়িয়ে তুলছিলো।এক চিনচিনে ব্যাথায় ঘায়েল করে রাখছিলো খুব সন্তর্পণে।নিজেকে ঘায়েল হওয়া থেকে বাঁচাতেই তাকে বলেছিলাম বেঁধে ফেলতে সেই চুল যাকে খোলা দেখতেই আমার ভালো লাগে।করে ফেলেছিলাম তো বিরাট ভুল!
বাঁধা খোপায় বেলি ফুলের ছোঁয়ায় তাকে দেখতে যে আরো অনিন্দ্য সুন্দর লাগছিলো।যন্ত্রণা হ্রাসের সূত্র যে বিপরীতে গিয়ে ঠেকবে তাকি আমি জানতাম!
সেদিন বুঝলাম,এই ঘুমকন্যা গোপন ষড়যন্ত্রে আমার হৃদয়কে দগ্ধ করতেই এসেছে।এর থেকে আমার আর রক্ষে নেই…..কোনোভাবেই নেই।এই যন্ত্রণার ওষুধও সেই যে এই যন্ত্রণার পেছনের কারণ।তাকে আমার চাই….বৈধভাবেই চাই।তাকে দেখলেই যে শুধু পাগলামো করতে ইচ্ছে করে।ইচ্ছে করে কোনো এক পাগলামোর সাগরে তাকে নিয়ে ডুব দিতে।কোনো ভুল হোক তার আগেই তাকে বৈধ করে নিলাম।বড্ড অসহায় লাগে সে যখন ঠোঁট টিপে হাসে।নিজেকে সংযত রাখা যে তখন খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।তাকে যে সেই মুহুর্তে কি সুন্দর লাগে তা কি সে বোঝে!বোঝে না,নাকি আমি জ্বালাতেই সে বারবার সেই হাসি দেয়!
সে যে আমাকে একদন্ডও স্থির থাকতে দেয় না।
ঘুমপুত্রের রাজ্যে হানা দিয়ে সেই ঘুমকন্যা নিষ্ঠুর হৃদয় নিয়ে তার সর্বস্ব লুট করে নিয়ে গেল।হৃদয়ের এক কোণাও ছাড় দিল না,সমস্তটুকু দখল করে নিজের রাজ্য বিস্তার করে যাচ্ছে।ঘুমপুত্রের ঘুমকেই কেড়ে নিল।ইচ্ছে করে সবসময় তাকে একদম বুকের ভেতর ঢুকিয়ে রাখি,একদম নিশ্চুপ করে।কক্ষনো বের হতে না দেই।কিন্তু সে তো সুস্থির থাকে না শুধু ছটফট করে।আমাকে যন্ত্রণার অতল সাগরে ডুবিয়ে নিজে কি সুন্দর অবুঝ সেজে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়ায়।আর এদিকে আমার অবস্থা যে বেগতিক।মাঝে মাঝে মনে হয় তাকে একটা চরম শাস্তি দেই।আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে এই হৃদ কারাগারে তাকে বন্দি করে রাখি।একটা ধমক দিয়ে বলি ‘এই এত ছটফট করছো কেনো?চুপচাপ এই বুকে ঘুপটি মেরে বসে থাকো তো!’
সে কি শুনবে?সে কি বুঝবে?কবে আসবে সেই দিন?সে তো আবার নিজের অনুভূতিও বুঝতে পারে না।তার চোখে আমি স্পষ্ট দেখেছি আমাকে নিয়ে তার ভালো লাগা,হয়তো ভালোবাসাও।আমি চাই সে নিজে বুঝুক তার মনকে,তার অনুভূতিকে।
ততদিন না হয় আমি থাকবো আমার ঘুমহীন রাজ্যে ঘুমকন্যার খোঁজে।কিন্তু হ্যাঁ,বেশিদিন এই যন্ত্রণায় রাখলে কিন্তু সত্যি সত্যিই তাকে সেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে দেব!
সে কি কম বড় অপরাধ করেছে!আমার সমস্ত ভালো লাগাকে গ্রাস করে ফেলেছে।আমার যে এখন শুধু তাকেই ভালো লাগে,সেই নিদ্রর সুপ্তিকে।আমরা যে একই অর্থে,একই সূত্রে,একই আত্মায় গাঁথা।
তাকে যে আমার খুব খুব খুব ভালোবাসতে ইচ্ছে করে,ভিন্ন ভাবে, একইরকমে,সব উপায়েই ভালোবাসতে ইচ্ছে করে।তাকে ভালোবাসতে আমার ভালো লাগে।’

-‘সুপ্তি,তুমি কখন এলে?’
পেছন থেকে তার কন্ঠস্বর শুনতে পেয়ে পেছনে হাতের আড়ালে ডায়েরি লুকিয়ে তার দিকে ফিরে চাইলাম চোখে মুখে এক লাজুক হাসি নিয়ে।সে তার ভ্রুযুগোল কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে আমার নির্বাক অবস্থা দেখে।

-‘রিপোর্ট দিতে কি দেরি হবে?’

আমি মাথা নিচু করে আড়চোখে তার দিকে তাকিয়ে ঘাড় নাড়িয়ে সায় দিলাম।
সে তার ভাঁজরত ভ্রু আরেকটু ভাঁজ করে বলল,
-‘কি হয়েছে তুমি এমন মিটিমিটি হাসছো কেনো?’

আমি আরেকটু মাথা নিচু করে রইলাম।এই লাজুক হাসিকে যে কিছুতেই সংযত করা যাচ্ছে না।নিচ থেকে মা নিদ্রর নাম ধরে ডাক দিলে উনি একবার বাইরে তাকিয়ে আরেকবার আমার দিকে তাকিয়ে নিচে চলে গেলেন।আর আমি দ্রুত ডায়েরিটা মুখের কাছে চেপে ধরে খুশিতে আপ্লুত হয়ে গেলাম।নিজের নামের সাথে বোকার সর্বোচ্চ ডিগ্রী ধার্য করা এই ডায়েরিকে একশবার চুমুতে ভরিয়ে দিলাম।আমার যে ইচ্ছে করছে এখন নাচতে,লাফালাফি করতে,গান গাইতে।আমার খুশির যে আজ বাঁধ ভেঙেছে।

আজ যেনো আমি তার সাথে চোখই মেলাতে পারছি না।লজ্জারা যেনো সব ডানা মেলে আমাকে ঘিরে ধরেছে।আর উনি কৌতুহলী হলেও তার অভিমান ভেঙে আমাকে পরিষ্কার করে জিজ্ঞাসাও করতে পারছেন না।শুধু আমার মিটিমিটি হাসির পরিবর্তে ভ্রু কুঁচকে বারবার তাকিয়ে দেখছে।চোখ মেলাতে পারছি না অথচ শুধু ইচ্ছে করছে তার সাথে ঘেঁষে থাকি।তার কোলে গিয়ে বসে থাকি,তার গলায় ঝুলে থাকি।
তার হৃদ কারাগারে বন্দী হতে যে এবার আমার মনও ব্যাকুল।
রাতে যখন সে আমার পাশে এসে শুয়ে পড়ল অভিমানী মুখে আমি একটু হেসে তাকে শক্ত করে জাপ্টে ধরলাম।উনি অবাক হয়ে ভ্রু কুঁচকে বললেন,’একি কি হয়েছে সুপ্তি?এমন শক্ত করে ধরে রেখছো কেনো,ছাড়ো?’
আমি মনে মনে বললাম,’ইশ!এখন রাগ করে ন্যাকামো করা হচ্ছে।আমি ঘুমিয়ে পড়লে তো ঠিকই জড়িয়ে ধরে আর ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে,আমি ডায়েরি তে সব পড়েছি।
-‘কি হলো ছাড়ো!’
আমি চোখ বন্ধ করে আদুরে গলায় বললাম,’আমার ভয় লাগছে।’
তিনি আবারো কিছু বলতে চাইলেন কিন্তু আমি গভীর ঘুমের ভাণ ধরে পড়ে রইলাম।

ছুটির দিনের বিকেলে যদি এক ছুট ক্রিকেট খেলা যায় তবে ব্যাপারটা মন্দ হয় না।আইডিয়াটা আমিই দিলাম,স্নিগ্ধ শুনে উৎফুল্ল হয়ে উঠল।নিদ্র কোনো ভাবাবেগ না দেখিয়ে ল্যাপটপে মুখ গুঁজে জানিয়ে দিল সে খেলতে ইচ্ছুক নয়।আমিও পেছনে লেগে পড়ে তার হাত ধরে টানাটানি করতে লাগলাম।উনি কিছুক্ষণ হাতের দিকে আবার কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল,’তুমি আজকাল একটু বেশিই ধরাধরি করছো না?’
আমি গলার স্বর নামিয়ে ফিসফিসিয়ে বললাম,’স্নিগ্ধ দাঁড়িয়ে আছে,বাচ্চাদের সামনে এসব কি বলছেন।’
তিনি বিরক্তিসূচক শব্দ করে আমার টানাটানিতে আর থাকতে না পেরে ল্যাপটপ নামিয়ে খেলতে উঠলেন।বারান্দার কাছে আসতেই আমার মতিগতির পরিবর্তন শুরু হয়ে গেল।ইচ্ছে করছে তার কোলে চোড়ে বহুদূর যাই।এখন বহুদূর যেতে পারবো না তাতে কি!বারান্দা থেকে বাগানে তো যেতে পারব!
ইচ্ছে করেই নিজেকে এলিয়ে দিলাম তার গায়ের উপর।সে আমাকে ধরতে ধরতে বলল,’কি হল সুপ্তি!’
-‘পায়ে মোচ খেয়েছি।’
সে আমাকে ঠিকমতো দাঁড় করানোর চেষ্টায় চলতে থেকে বলল,’পায়ে মোচ খেলে কেউ এভাবে গায়ের উপর ঢেলে পরে নাকি!’
আমি টলতে টলতেই আবার তার উপর পরে দুঃখী গলায় জবাব দিলাম,’এখন আমার পায়ে মোচ পড়েছে সেটা নিয়েও আপনার এত সমস্যা?এখানেও দোষ খোঁজা শুরু করেছেন!’
-‘ঠিকাছে পায়ে মোচ পড়েছে এখন খেলা বাদ।’
-‘আমি উদ্বিগ্ন গলায় বললাম,’আরে খেলা বাদ হবে কেন?’
-‘তোমার পায়ে ব্যাথা তুমি খেলবে কিভাবে?’
-‘আপনারা খেলবেন আমি দেখবো।আমি না হয় আম্পায়ারই হব।’
উনি জেরার মত প্রশ্ন করতে লাগলেন,
-‘আচ্ছা!আর নিচে নামবে কিভাবে?’
আমি মুখ টিপে হেসে নরম গলায় বললাম,’আপনি কোলে করে নিয়ে যান না!’
আমার কথায় স্নিগ্ধ ওর হাতের খোলা গাড়ির পার্টস থেকে মুখ তুলে চাইলো।আমি আড়চোখে দেখে ওর মাথার ক্যাপটা নিচে নামিয়ে দিয়ে বললাম,’তুই তোর মেকানিকে মন দে।’
নিদ্র কপাল ঈষৎ ভাঁজ করে টন্ট মেরে বলল,’এখন বাচ্চাদের সামনে কোলে উঠবে কিভাবে!’
আমি তার দুই হাত দিয়ে তার হাত চেপে ধরে বারবার প্লিজ প্লিজ করতে লাগলাম।সে একটি বিরক্তিচাপা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে হলুদ শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত ভাঁজ করে আমাকে ঝট করে কোলে তুলে নিল।আমিও খুশিতে ঝলমল করে তারে গলা জড়িয়ে ধরলাম শক্ত করে।সে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে একবার তার গলা আরেকবার আমার মুচকি হাসির মুখপানে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
খেলার সময় আমি টেনেটুনে স্নিগ্ধর হাত থেকে গাড়ির পার্টস নিয়ে বল ধরিয়ে দিলাম।স্নিগ্ধ বোলিং করছে আর আমার নিদ্র ব্যাটিং।আমি নামের অ্যাম্পায়ার হয়ে নিদ্রর সামনে বাম পাশের একটু সাইডে দাঁড়িয়ে তাকে খেলতে দেখতে লাগলাম।হলুদ শার্টে নিচের ঠোঁট হালকা কামড়ে ধরে মনোযোগ দিয়ে সামনে তাকিয়ে সে বলের অপেক্ষা করছে।দৃশ্যটি দেখতে কি সুন্দর লাগছে!
আর এই ছেলেটি নাকি আমায় ভালোবাসে!ভাবতেই মনের ভেতর কে যেন সুড়সুড়ি দিচ্ছে।
একবার শুধু সে আমাকে এমন ভ্যাবলার মত তাকিয়ে থাকতে দেখে বলল,
-‘এভাবে এত সামনে জগতের কোন অ্যাম্পায়ার দাঁড়ায় একটু বল তো,বল লাগলে তো সোজা আকাশে উড়ে যাবে।’
-‘উড়লে উড়লাম।এই সুযোগে আপনার সাথে তো একটু আকাশে উড়া হবে।’
-‘কি?’
আমি থতমত খেয়ে বললাম,’কিছু না।’
প্রথম বল এই সে একটা ছক্কা মেরে দিল।আমি খুশিতে বাচ্চাদের মত কাছে গিয়ে তার গলা ধরে লাফাতে লাগলাম।সে সাংঘাতিক ভাবে ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো তারপর বলল,’এই,তুমি ঠিক আছো তো?কোনো অসুখ টসুখ হয়নি তো!’
আমি মনে মনে বলতে লাগলাম,’হ্যাঁ আমার অসুখ হয়েছে,সাংঘাতিক অসুখ।আপনাকে ভালোবাসার কোনো দিন সুস্থ না হওয়া এক দীর্ঘ অসুখ।যেই অসুখে এতদিন আপনি আক্রান্ত ছিলেন সেই অসুখ এখন ছোঁয়াচের ন্যায় আমাকেও আক্রান্ত করে দিয়েছে।
নিদ্র নিচের ঠোঁট আলতো কামড়ে ধরে ভ্রু কুঁচকে আনমনে সামনের দিকে তাকালো।তার ফর্সা মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়িগুলো দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে।ইচ্ছে করছে এখানে একটু ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে দেই।মনকে সবসময় অত দমিয়ে রাখতে হয় না।মাঝে মধ্যে মনের চাওয়াগুলোকেও স্বীকৃতি দিতে হয়।নয়তো একসময় মন অসুস্থ হয়ে যায়।
হাতের বাঁধনটা আরেকটু শক্ত করে পায়ের গোড়ালিতে ভর করে একপ্রকার লাফ দিয়েই আমি টুপ করে তার গালে একটা চুমু দিয়ে দিলাম।তারপর লাজুক মুখ নিয়ে এক ছুটে দৌড় দিলাম।আমার কান্ডে স্নিগ্ধ মুখ হা করে স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে হাত থেকে বল মাটিতে পড়ে গেল।আর উনার প্রতিক্রিয়া কি সেটা দেখার জন্য আমি আর পিছনে ফিরতে পারলাম না।আমি যে আজ শুধু উড়ছি।আমাকে আজ পায় কে!

চলবে,,

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :১৪ (শেষ পার্ট )

3

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :১৪ (শেষ পার্ট )

Urme prema (sajiana monir)

আরো বেশ কয়েক দিন সুবাহ আরোশ চিটাগাং এ কাটায় আজ তারা ঢাকায় ফিরবে আরোশ নিচে গিয়েছে আর সুবাহ রুমে ব্যাগ প্যাক করছে ।হঠাৎ আরোশের ফোনে ফোন আসে সুবাহ তা লক্ষ করে ইগনোর করে কিন্তু বেশ কয়েক কয়েক বার ফোন বেজেই যাচ্ছে তাই সুবাহ সুবাহ ফোনের কাছে এগিয়ে যায় ফোন হাতে নিয়ে ফোনের স্কিনের দিকে তাকাতেই দেখে নিদ্রার ফোন !
নিদ্রা বার বার আরোশেকে ফোন করছে ২০+ মেসেজ দেখা যাচ্ছে ।সুবাহ ইনবক্সে ডুকে দেখে সব মেসেজ নিদ্রা করছে প্রত্যেকটা মেসেজে আরোশ কে ভালোবাসে ,তার কাছে ফিরে যেতে বলছে ,সুবাহকে ছেড়ে দিতে বলছে !
মেসেন্জারে কিছু ছবিও আছে আরোশের আর নিদ্রার যা দেখে মনে হচ্ছে তাদের মধ্যে বেশ গভীর কোন সম্পর্ক রয়েছে যদিও প্রত্যেকটা ছবি আরোশের থেকে লুকিয়ে তোলা ।
সুবাহ সব কিছু দেখে যেন স্থব্দ হয়ে গেছে চোখের সামনে সব যেন ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে ।কি করে এত কিছুর পর ও নিদ্রা আরোশ কে এসব বলতে পারে !
আরোশ এখন সুবাহর স্বামী নিজের বোনের স্বামীকে কি করে এসব বলতে পারে বিয়ের আগে না হয় ব্যপারটা অন্য রকম ছিল কিন্তু এখন তো তাদের বিয়ে হয়ে গেছে তারা স্বামী স্ত্রী তার পর ও নিদ্রা কি করে এসব কিছু বলতে পারে !
সুবাহ ফোনটা হাতে নিয়ে কান্না করছে সে জানে এতে আরোশের কোন দোষ নেই কিন্তু তারপর ও বুকের কোথাও যন্ত্রনা হচ্ছে ।
আরোশ রুমে প্রবেশ করতেই দেখে সুবাহ বেডের উপর বসে কান্না করছে হাতে আরোশের ফোন আরোশ তা দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে যায় আরোশ তারাতারি করে সুবাহ র কাছে এসে সুবাহর সামনে হাটু গেড়েঁ বসে তার দু গালে নিজের দু হাত রেখে চোখের পানি মুছে দিয়ে বলতে লাগে
“কি হয়েছে তোমার ?
এভাবে কান্না করছো কেন ?
খারাপ লাগছে কি হয়েছে ।”
সুবাহ কোন উত্তর না দিয়ে কান্না করেই যাচ্ছে ।সুবাহ কিছু বলতে না তাই আরোশ সুবাহর হাতে ফোন দেখে তা হাতে নিলো ।সেখানে ছবি আর মেসেজ দেখে আরোশের রাগে শরীর কাপঁতে লাগে ।এই মূহুর্তে ইচ্ছে তো করছে নিদ্রাকে কোপাতে কি করে কেউ নিজের স্বর্থের জন্য এতটা নিচে নামতে পারে ?
আরোশের ভুল ছিলো পুলিশের উপর ভরসা করে তাকে ছেড়ে দেওয়া নিদ্রাকে তার নিজের হাতে শাস্তি দেওয়ার দরকার ছিলো তার সব কু কর্মের জন্য ।আরেশ এ মুহূর্তে নিজেকে হেল্পলেস মনে হচ্ছে আরোশ শুধু রাগে ফুসছে আরোশ ফোন হাতে নিয়ে নিদ্রাকে ফোন দেয় ফোন দেওয়ার সাথে সাথে নিদ্রা ফোন রিসিভ করে আরোশ নিদ্রাকে বেশ কিছুসময় শ্বাষিয়ে ফোন কেটে দেয় তার রাগে শরীর কাপছেঁ ।নিদ্রা কিছুদিন আগে সুবাহ হসপিটালে থাকাকালীন সময়ে তাকে মারার চেষ্টা করেছে যা আরোশ জানে কিন্তু মাঝে সুবাহ আর তার সম্পর্কটা এমন অগোছালো থাকার কারনে সুবাহকে আর তার বাড়ির লোকেদের কিছু জানায়নি নিজের মত করে আইনের আওতায় এনে নিদ্রাকে শাস্তি দিতে চেয়েছে কিন্তু পর্যাপ্ত প্রমানের অভাবে তা পারেনি কিন্তু এখন যখন আরোশের কাছে প্রমান আছে নিদ্রা তা জানতে পেরে তাকে ব্লাকমেইল করছে সুবাহকে তার থেকে দূরে সরিয়ে দিবে বলছে ।
আরোশ সুবাহর দিকে তাকাতেই দেখে সুবাহ নিচের তাকিয়ে নিজের চোখের জল ফেলছে কান্না করে যাচ্ছে ।আরোশের মনে কোথাও ভয় কাজ করছে সুবাহ আবার তাকে ভুল বুঝবেনাতো তাকে ছেড়ে চলে যাবে না তো !
আরোশ সুবাহর সামনে বসে কাপাঁ কাপাঁ কন্ঠে বলল
“সু..সু..সুবাহ শুন জান আ..মি সত্যি এ ব্যপারে কিছু জানি না কি করে কখন এসব ছবি তুলেছে আমি সত্যি ‌অজানা!
বিশ্বাস কর আমি এসবের ব্যপারে কিছু জানিনা ।
এগুলো সব নিদ্রার প্লান তোমাকে আমার কাছ থেকে দূর করার জন্য সে জানে তুমি আমার সাথে আছো তাই এসব করছে আমি……”
সুবাহ আর আরোশকে কিছু বলার সুযোগ দেয় না আরোশের বুকে ঝাপিয়ে পড়ে তার বুকে মুখ লুকিয়ে জরিয়ে ধরে কান্না করতে লাগে ।আরোশ সুবাহর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে আবার বলল
“সত্যি আমি কিছু জানি না ।
যা করেছে নিদ্রা করেছে !”
সুবাহ আরোশের বুকে মাথা রেখে ফুপিয়ে ফুপিয়ে বলল
“আমি জানি আপনার কোন দোষ নেই !
আমি মেসেন্জারে প্রত্যেকটা মেসেজ পরেছি আমার তো এভেবে কষ্ট লাগছে আমার বোন হয়ে সে কি করে করতে পারে আমার সাথে এমন আমি তো তার জন্য সব ত্যাগ করতে রাজি হয়ে গিয়েছিলাম আর সে আমাকে মারার প্লান পর্যন্ত করছে কতটা নিচে নামতে পারে সে !
আমার সত্যি কষ্ট লাগছে আমার বোন হয়ে নিদ্রা আমার থেকে আমার স্বামী কে আলাদা করার চেষ্টা করছে আমাকে খুন করার চেষ্টা করছে ।এত কিছু হওয়ার পর ও সে কি করে করতে পারে এমন কিছু ।
ভেবেছিলাম ঢাকায় ফিরে সব কিছু ঠিক করে নিবো নিদ্রা যাই করেছে না কেন সব কিছুর জন্য তাকে ক্ষমা করে দিবো নতুন করে সব কিছু শুরু করবো ।কিন্তু আফসোস যার জন্য এত কিছু ভাবছি সে তো আমাকে খুন করার প্লানে আমার থেকে আমার স্বামীকেই দূরে সরাতে চাচ্ছে !”
আরোশ সুবাহর মাথায় চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলতে লাগে
“নিদ্রা যা করেছে তার শাস্তি সে পাবে কঠিন শাস্তি পাবে সে শুধু ঢাকার ফেরার অপেক্ষা !
সে কি ভেবেছে এত সহজ আমার থেকে তোমাকে দূরে সরিয়ে দিবে !
এক বার নিজের থেকে তোমাকে দূরে সরিয়ে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি কিন্তু আর না আমার প্রথম আর শেষ ভালোবাসা তুমি তোমাতেই শুরু আর তোমাতেই শেষ !
চারটা বছর ধরে তোমাকে ভালোবেসে এসেছি ।”
চার বছরের কথা শুনে সুবাহ মাথা তুলে ফেলে তার দিকে ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকায় কারন সে তো আরোশকে ভারর্সিটি তে প্রথম দেখেছে তাহলে আরোশ কেন চার বছর কথা বললো ?
আরোশ সুবাহর জিগাসা দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে সে কি বলছে সে মুচকি হেসে সুবাহর সামনে থেকে উঠে নিজের ব্যাগ থেকে সুবাহ সেই পায়েলটা বের করে যা চার বছর আগে সুবাহ সমুদ্র পাড়ে সুবাহ ফেলে গিয়েছিলো !
আরোশ সুবাহর সামনে বসে তার পায়ে পড়িয়ে দিয়ে বলল
“পায়েলটা চিনো ?”
সুবাহ “না ”বোধক মাথা নাড়ায় আরোশ আবার মুচকি হেসে বলল
“মনে আছে চার বছর আগে কক্সবাজারে সমুদ্র পাড়ে তোমার একটা পায়েল হারিয়ে গিয়েছিলো এটা সেই পায়েল !”
সুবাহ যেন আসমান থেকে পড়ে সুবাহ অবাক হয়ে বলে
“তার মানে আপনি আমাকে চার বছর আগে থেকে চিনতেন ?
চার বছর ধরে আমাকে চিনতেন ‌অথচ আমি জানতামই না !”
আরোশ সুবাহকে নিজের বুকের মাঝে টেনে নিয়ে জরিয়ে ধরে বলল
“জানবে কি করে এত বেখেয়ালি হলে কিছু জানা যায় নাকি !
আচ্ছা তোমার কখনো সন্দেহ হয়নি ভার্সিটির এত মেয়েদের প্রোপোজ এসেছে কিন্তু কখনো কেউ তোমার দিকে তাকানোর সাহস পায়নি কোন ছেলে ঘেষার সাহস পায়নি
কোন ছেলে কেন বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করেনি ?”
সুবাহ ঠোঁট উচুঁ করে বলে
“কখনো তো সে ভাবে ভেবেই দেখিনি !”
আরোশ আবার বলতে লাগে
“জানো যখন তুমি মাঠে বসে তোমার বান্ধুবীর সাথে আড্ডা দিতে ঘন্টার পর ঘন্টা তোমাকে দেখিয়ে কাটিয়ে দিতাম অথচ তোমার কোন খেয়ালই ছিলোনা !
কতটা বেখেয়ালী তুমি ।”
সুবাহ মাথা উচুঁ করে বলে
“তারমানে আপনি আগের থেকে আমাকে চিনতেন আগের থেকে জানতেন আমিই প্রভা ?”
আরোশ মুচকি হেসে উত্তর দেয়
“জ্বি মেম”
সুবাহ রেগে বলতে লাগে
“তার মানে আপনি জেনে শুনে আমাকে এতদিন ইচ্ছে করে আমারে কষ্ট দিয়েছেন ?
আপনারে তো আমি কি যে করবো !”
রেগে দাতঁ কিট কিট করে আরোশের গলা কাছে হাত এগিয়ে নেয় ।আরোশ সুবাহকে আবার বুকে জরিয়ে নিয়ে বলল
“যা হয়েছে তা ভুলে যাও জান !
আমার যা কষ্ট পাওয়ার যা শাস্তি পাওয়ার তা পেয়েছি তোমার থেকে দূরে থেকে হারে হারে টের পেয়েছি তোমাকে ছাড়া বেচেঁ থাকাটা কতটা কষ্টের !
ভালোবাসি খুব বেশি ভালোবাসি তোমায় ।”
সুবাহ ও উচুঁ হয়ে আরোশের কপালে চুমু দিয়ে বলে
“আমিও আপনাকে খুব বেশি ভালোবাসি !”

সেদিন রাতেই আরোশ আর সুবাহ ঢাকায় ফিরে আসে ।ঢাকায় ফিরে পরেরদিন আরোশ নিদ্রাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয় সুবাহ কে মারার চেষ্টা করার অপরাধে সুবাহ বেশ কয়েক বার সুবাহ আরোশকে আটকায় কিন্তু আরোশ সুবাহর কথা শুনে না !
নিদ্রাকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয় ।সুবাহর দাদী থেকে তার পরিবারের সবাই দূরে সরে গেছে সুবাহর বাবা বাড়ি ছেড়ে যেতে চাইলে সুবার দাদা আটকিয়ে নেয় ।সুবার দাদীও নিজের অন্ধ ভালোবাসা জন্য নিজের অবিচারের জন্য নিজের পরিবারকে হারিয়েছে !
সুবাহর বাড়ির মানুষ ও আরোশকে ক্ষমা করে দিয়েছে তাদের মেনে নিয়েছে ।আদি নিজের মিস পার্ফেক্ট মানে মিষ্টিকে কে পেয়ে গেছে কিন্তু তাকে সুবাহর স্থান দিতে পারেনি !
খুব তারাতারি আদি আর মিষ্টির বিয়ে !

সন্ধ্যায় সুবাহ কফির কাপ নিয়ে বারান্ধায় দাড়িয়ে তাতে চুমুক দেয় বাতাসে তার খোলা চুল গুলো উড়তে লাগে বিকালের এই বাতাসটাকে চোখ বন্ধ করে অনুভব করতে লাগে !
আরোশ পিছন থেকে সুবাহর কমোড় চেপে ধরে তার ঘাড়ে নিজের মুখ ডুবায় সুবাহ আরোশের স্পর্শ টের পেয়ে মুচকি হেসে চোখ গুলো খুলে আরোশের উপর নিজের শরীরের ভর ছেড়ে দেয় ।তারপর সুবাহ মৃদ্যু হেসে বলে
“বাহ আজ এত রোমান্টিক ?
কি ব্যাপার !”
আরোশ চোখ বন্ধ করে সুবাহর ঘাড়ে চুমু দিতে দিতে মাতাল কন্ঠে বলতে লাগে
“আমি তো সব সময়ই তোমাতে ডুবে থাকতে চাই কিন্তু তুমি তো সে সুযোগটা দেও না !”
সুবাহ আরোশের দিকে ঘুরে তার শোল্ডারে নিজের দু হাত রেখে মুচকি হেসে বলে
“ও আচ্ছা তাই বুঝি !”
আরোশ সুবাহকে কমোড় টেনে আরো কাছে টেনে বলে
“হুম একদম তাই !“
বলেই আরোশের মুখের কাছে মুখ আনতে আনতে বলতে লাগে
“তো এখন কি একটা সুযোগ দেওয়া যাবে কাছে আসার !”
সুবাহ আরোশে মুখের সামনে হাত রেখে আটকিয়ে খিল খিল করে হেসে বলে
“একদম না !
আমি এখন গান শুনার মুডে আছি ।”
আরোশ বাচ্চাদের মত ফেস করে বলে
“এটা একদমই ঠিক না !
তুমি সব সময় এমন করো তোমার কাছে আসলেই তুমি এমন চিটিং করো পালানোর জন্য !”
সুবাহ আরোশের এমন ফেস দেখে আগের মত খিলখিল করে হাসতে হাসতে আরোশের গাল টেনে দিয়ে বলে
“কারন আমার আপনার এই বাচ্চাদের মত ফেস দেখতে বেশ ভালো লাগে !
এখন আমাকে একটা গান শুনান প্লিজজজজজজ”
আরোশ সুবাহকে বাচ্চাদের বলতে দেখে কপালে চুমু দিয়ে নিজের বুকের বা’পাশে হাত রেখে বলে
“জো খুকুম বেগম সাহেবা !”
তারপর রুম থেকে গিটার এনে চেয়ারে বসে সুবাহকে টান দিয়ে কোলে বসিয়ে গিটারে সুর তুলতে লাগে ।সুবাহ মুচকি আরোশে বুকে হেলান দিয়ে দেয় ।আরোশ গাইতে লাগে

আমার প্রান ধরিয়া মারো টান

মনটা করে আনচান

আমার প্রান ধরিয়া মারো টান

মনটা করে আনচান

জোয়ার নদীর উতল বুকে

প্রেমের নৌকা উজান বায়

জোয়ার নদীর উতল বুকে

প্রেমের নৌকা উজান বায়

বারে বারে বন্ধু তোমায়

দেখিতে মন চায়

বারে বারে বন্ধু তোমায়

দেখিতে মন চায়

আমার প্রান ধরিয়া মারো টান

মনটা করে আনচান

আমার প্রান ধরিয়া মারো টান

মনটা করে আনচান

জোয়ার নদীর উতল বুকে

প্রেমের নৌকা উজান বায়

বারে বারে বন্ধু তোমায়

দেখিতে মন চায়…………

সুবাহ চোখ বন্ধ করে আরোশের গান শুনছে আরোশের কন্ঠে এই গানই তো তাদের ভালোবাসার বন্ধনের প্রথম ডোর !
আরোশের এই ভালোবাসার ডোরে সে সারাজীবন বেধেঁ থাকতে চায় ।জীবনের শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত এই ভালোবাসার ডোরেই বেধেঁ থাকতে চায় !!!!

আমাদের আসেপাশে সুবাহর মত এমন অনেকেই আছে যারা পরিবারের জন্য নিজের ভালোবাসাকে বিসর্জন দেয় কিন্তু আমরা ভাবি যে সে হয়তো ইচ্ছে করে ঠকিয়েছে কিন্তু কখনো তার দিকটা ভাবিনা তাকে প্রতারক ভাবি ।কিন্তু একবার তার দিকটা ভেবে দেখিনা যে সে ও ঠি ক ততটাই কষ্ট পায় যতটা তার ভালোবাসার মানুষ পায় ।তাই তাকে প্রতারক না বলে তার এমন করার পিছনের কারনটা দেখার চেষ্টা করবেন !!!!!!!!

সমাপ্ত

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন❤️❤️❤️

সবার প্রশ্ন আমার গল্পের সব হিরোর মুখে কেন তিল থাকে আর তাদের পার্সোনালিটি এক কেন ?
উত্তর:আমি কারো তিলের উপর আর এমন একটা পার্সোনালিটির উপর গভীর ভাবে ক্রাশিত গল্পগুলো যেহেতু আমার কল্পনা থেকে হয় আমার কল্পনাতে তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভাবা আমার সম্ভব না ।
❤️❤️❤️

গল্প তারাতারি শেষ করার কারন হলো আমার জীবনে নতুন অধ্যায় শুরু হচ্ছে তা নিয়ে একটু বেস্ত আর সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন !
এপ্রিলে থেকে বড় গল্প দিবো মাঝে মাঝে ছোট গল্প দিবো insaallah ।
সবাই কে অনেক ধন্যবাদ এত এত ভালোবাসা দেওয়ার জন্য আর সাপোর্ট করার জন্য !
সবার জন্য অনেক ভালোবাসা রইলো ❤️❤️❤️

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :১৩

0

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :১৩

Urme prema (sajiana monir)

সুবাহ আর আরোশ ডাইনিং টেবিলে বসে ব্রেকফাস্ট করছে সুবাহ নিজের মত খাচ্ছে আরোশ পাশের চেয়ারে খাবার সামনে নিয়ে বসে আছে খাচ্ছেনা।
সুবাহ বেশ কিছুক্ষন ধরে লক্ষ করছে কিন্তু কিছু বলছেনা এতসময় ধরে সুবাহ আরোশকে এভাবে বসে থাকতে দেখে খেতে না দেখে কিছু না বলে থাকতে পারলোনা তাই সুবাহ আরোশের দিকে বেখেয়ালী ভাবে তাকিয়ে মৃদ্যু আওয়াজে বলতে লাগে
“কিছু খাচ্ছেন না যে
ভালো লাগছেনা বুঝি !”
আরোশ ঠোঁটের কোনে হালকা হাসি এনে নিজের দু হাত উপরে তুলে হাতের বেন্ডেজ দেখিয়ে বলল
“আসলে রান্না করতে যেয়ে হাতটা কিছুটা পুরে গেছে !
তাই খেতে পারছিনা !”
সুবাহ আরোশের হাতের বেন্ডেজ দেখে বেশ কষ্ট লাগছে ।আরোশ আবার বললো
“ইয়ে মানে তুমি যদি একটু কষ্ট করে খায়িয়ে দিতে তাহলে আমি ব্রেকফৈস্টটা করতে পারতাম আর কি !”
সুবাহর আরোশের কথায় বেশ মায়া হয় সুবাহ মৃদ্যু স্বরে বলতে লাগে
“ঠিক আছে আমি খায়িয়ে দিচ্ছি কিন্তু তা আবার অন্য কোন কিছু ভেবে নিবেন না প্লিজ !
আমি জাস্ট আপনার হেল্প করছি আর কিছুনা “
আরোশ বাদ্ধ ছেলের মত নিজের মাথা নাড়ালো ।সুবাহ প্লেট থেকে খাবার তুলে নিজ হাতে আরোশকে খায়িয়ে দেয় ।আরোশ মুগ্ধ নয়নে সুবাহর দিকে তাকিয়ে আছে সুবাহ সে দিকে নজর না দিয়ে আরোশ কে খায়িয়ে দিতে লাগে ।

বিকেলের দিকে সুবাহ বারান্ধায় দাড়িয়ে সমুদ্র দেখছিলো বারান্ধা থেকে সমুদ্র দেখতে বেশ ভালো লাগছে । আরোশ বারান্ধায় প্রবেশ করতেই তার নজর পরে সুবাহর দিকে ।পড়ন্ত বিকালের আবছা সূর্যের কিরন সুবাহ মুখে পড়তেই যেন অন্যরকম সৌন্দরর্য বিরাজ করছে লম্বা চুল গুলো বাতাসে উড়ছে চোখ বন্ধ করে আছে চেহারায় মুগ্ধতার ছায়া ।সব মিলিয়ে আরোশের নেশা ধরিয়ে দিচ্ছে !
আরোশের ইচ্ছে তো করছে সুবাহর মাঝে ডুব দিতে কিন্তু তা হয়তো এই মুহূর্তে সম্ভব না কারন সুবাহ রেগে যাবে আর আরোশ চায় সুবাহ নিজের মন থেকে সব মেনে নিয়ে তাকে আপন করুক তারপর না হয় নিজের সুবাহকে নিজের মনের মত করে ভালোবাসবে ।
আরোশ সুবাহর কাছে যেয়ে তার পাশ ঘেঁষে দাড়িয়ে সুবাহর দিকে তাকিয়ে বলে
“কি ভাবছো চোখ বুঝে ?”
সুবাহ আগের মত চোখ বন্ধ করেই মৃদ্যু হাসির রেখা ঠোঁটে ফুটিয়ে বলে
“কিছু ভাবছিনা !
সময়টাকে অনুভব করার চেষ্টা করছি তা বেধেঁ রাখার চেষ্টা করছি চোখের পাতায় কিন্তু কি অদ্ভুদ দেখেন বার বার সব ছুটে যাচ্ছে ।”
আরোশ আগের মত সুবাহর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলতে লাগে
“সময়কে কখনো বাধাঁ যায় না এটা করার চেষ্টা করা ও বৃথা সময়তো চলমান নদীর ধারার মত তা নিজ গতিতে বয়ে যাবে ।”
সুবাহ আরোশের কথায় চোখ খুলে ছোট একটা নিশ্বাস নিয়ে সমুদ্রোর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“তাই তো আমার জীবনটাও সময়ের সাথে সাথে সব কিছু অগোছালো করে দিলো কিছু ভয়ংকর স্মৃতি যা মনে করলে আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিতে লাগে ।যন্ত্রনা দেয় কষ্ট দেয় !
আফসোস যদি সময়টাকে বেধেঁ রাখতে পারতাম আর তা পরিবর্তন করতে পারতাম তাহলে নিজের জীবন থেকে সেই ভয়ংকর স্মৃতি গুলো মুছে ফেলতাম ”
বলেই রুমের দিকে পা বাড়ায় সুবাহ আরোশ এত সময় ধরে মাথা নিচু করে সব শুনছিলো সুবাহর প্রত্যেক টা কথা তাকে আঘাত দিচ্ছিল সে জানে সুবাহ কোন ভয়ংকর স্মৃতির কথা বলছে !
সুবাহ সেই রাতের কথা বলছে যেদিন আরোশ সুবাহর উপর হাত তুলেছিলো !
আরোশ পিছন থেকে সুবাহর হাত আটকিয়ে বলল
“পুরোনো স্মৃতি মুছা যাবেনা কিন্তু নতুন স্মৃতি তো গড়া যাবে যা পুরোনো ভয়ংকর স্মৃতি গুলোকে ভুলিয়ে দিবে নতুন করে সব শুরু করলে কি হয় না ?
আমাকে কি শেষ বারের মত সুযোগ দেওয়া যায় না ?”
সুবাহ আরোশের দিকে তাকিয়ে দেখে সে করুন চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে তার দিকে ।চোখে স্পষ্ট অনুতাপ দেখা যাচ্ছে ।
সুবাহ চাওয়ার পর ও তার চাহনি কে উপেক্ষা করতে পারছেনা !
সুবাহ আরোশের এই চাহনিকে উপেক্ষা করে কিছু করতে পারছেনা কোথাও সে নিজের মনের কাছে বাধাঁ পড়ে গেছে ।সুবাহ আরোশের কোন কথার উপর না দিয়ে আবারো আগের মত সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে গভীর ভাবে ।আরোশ সুবাহর মন খারাপ লক্ষ করে সুবাহর পাশে দাড়িয়ে তার দিকে তাকিয়ে বলে
“গান শুনবে ?”
সুবাহ আরোশের কথায় ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে আছে তার ও বেশ গান শুনতে ইচ্ছে করছে আরোশেক কন্ঠে গান শোনাটা তো তার নেশা !
যাতে বার বার সে মাতাল হয়ে পড়ে ।সুবাহ র কোন উত্তর না পেয়ে আরোশ মুচকি হেসে সুবাহকে নিজের কোলে উঠিয়ে নেয় সুবাহ আরোশের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ।আরোশ সুবাহকে কলে করে বারান্ধায় রাখা সোফায় বসে ।সুবাহ আরোশের কোল থেকে উঠতে চাইলে আরোশ পিছন থেকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে সুবাহকে সুবাহ নোড়তে পারেনা সুবাহ বেশ ভালো করেই বুঝে গেছে সে আরোশের বাহুডোর থেকে ছাড়া পাবেনা তাই এভাবেই বসে থাকা তার জন্য উত্তম তাই চুপচাপ সুবাহ আরোশের বুকে হেলান দিয়ে বসে থাকে ।আরোশ মুচকি হেসে সোফার পাশের থেকে গিটারটা হাতে নিয়ে গিটারে টুং টাং সুর তুলতে লাগে সুবাহ আরোশের বুকের উপর নিজের শরীরের পুরো ভর ছেড়ে দেয় চোখ বন্ধ করে নেয় আরোশ সুবাহর দিকে তাকিয়ে গাইতে লাগে

তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিবো ছেড়ে দেবো না

তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিবো ছেড়ে দেবো না

ওরে ছেড়ে দিলে সোনার গৌড় আর পাবোনা পাব না

ক্ষপা ছেড়ে দিলে সোনার গৌড় আর পাব না

না না আর পাব না

তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিবো ছেড়ে দেবো না

তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিবো ছেড়ে দেবো না

ভূবনো মোহনো গোরা …..আ

কোন মনিজনার মনোহরা

ভূবনো মোহনো গোরা

কোন মনিজনার মনোহরা

মনিজনার মনোহরা

ওরে রাধার প্রেমে মাতোয়ারা

চাঁদ গৌড় আমার রাধার প্রেমে মাতোয়ারা

ধূলায় যাই ভাই গড়াগড়ি

যেতে চাইলে যেতে দেবোনা না না না না

যেতে চাইলে যেতে দেবোনা না না না

যেতে দিবো না

তোমায় হৃদয় মাঝে

তোমায় হৃদয় মাঝে রাখিবো ছেড়ে দেবো না

তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিবো ছেড়ে দেবো না ………….

সুবাহ মুগ্ধ হয়ে আরোশের গান শুনছে তার কাছে আরোশের গান গাওয়াটা একটা নেশার মত কাজ করে যা শুনার পর সে দুনিয়াদারি সব ভুলে যায় !
আরোশ গান শেষ করে গিটারটা সোফার পাশে দাড় করিয়ে সুবাহর ঘাড়ে নিজের মুখ ডুবায় সেখানে আলতো করে নিজের ঠোটেঁর স্পর্শ দিতে লাগে ।আরোশের স্পর্শে সুবাহ আস্তে আস্তে আরোশের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে !
আরোশের ঠোঁটের স্পর্শ গুলো ক্রমশই গভীর হতে লাগে আজ সুবাহ ও আরোশ কে বাধাঁ দিচ্ছেনা আর দিবেই কি করে সে নিজেই তো আরোশের স্পর্শে ডুবে আছে আরোশ আরোশের ঠোঁট জোড়া সুবাহর ঠোঁট গুলোকে নিজের আয়ত্তে করে নিয়েছে তারপর হুট করে সুবাহকে কলে করে রুমের দিকে এগোতে লাগে ।আজ না হয় আর একবার তার ভালোবাসাকে ভালোবাসায় বেধেঁ রাখবে নিজের করে নিবে নতুন করে ।আগের বার আপন করে নিলেও ছিলো সংষয় প্রতিশোধ কিন্তু এবার না আছে কোন প্রতিশোধ না আছে কোন সংষয় শুধুই রয়েছে তাদের ভালোবাসা ।সুবাহর অভিমানের আবরন টা ও আজ হয়তো সরে গেছে নতুন করে আবার আবার এক হবে দুজন দুজনার হবে !

ঘড়িতে রাত ৭ টা বাজতে চলছে সুবাহ আরোশের খালি বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে আরোশ সুবাহর শরীরে চাদর দিয়ে ডেকে তাকে আরো গভীর ভাবে নিজের সাথে জরিয়ে নেয় ।আরোশের নজর সুবাহর দিকে গভীর ভাবে সুবাহকে দেখছে আজ তার বেশ শান্তি লাগছে সে তার ভালোবাসাকে হারিয়ে আবার নতুন করে পেয়েছে ।এই মেয়েকে ভুল বুঝে কতইনা কষ্ট দিয়েছে নিজের থেকে দূরে রেখেছে যাকে পাবার জন্য সে পাগল ছিলো সামান্য একটা ভুলবুঝাবুঝির জন্য তাকে পেয়েও সে হারিয়ে ।
অন্য কারো ভুলে অন্যায়ের শাস্তি তাকে দিয়ে গেছে তার সাথে অন্যায় করেছে ।
কিন্তু এখন থেকে কখনই নিজেদের মধ্যে না কোন ভুল বোঝাবুঝি আসতে দিবে না কোন তৃতীয় ব্যক্তিকে আসতে দিবে ।সুবাহকে তার প্রাপ্য পুরো ভালোবাসাটা দিবে যা থেকে সে তাকে বন্চিত রেখেছিলো !
এসব ভাবতে ভাবতে আরোশ সুবাহর কপালে চুমু দেয় কপালে আরোশের ঠোঁটের স্পর্শ পড়তেই সুবাহর ঘুম ভেঙ্গে যায় সুবাহ আলতো করে ঘুম ঘুম চোখে আরোশের দিকে তাকায় ।আরোশের চেহারায় ঠোঁটের কোনে মৃদ্যু হাসি দেখে সুবাহর মুখে হাসি ফুটে উঠে !
আরোশ সুবাহকে নিজের সাথে আলতো করে জরিয়ে ধরে তার কানের কাছে ফিস ফিসিয়ে বলে
“গুড ইভিনিং বউ
ঘুম কেমন হলো ? “
সুবাহ উত্তরে লজ্জা মাখা হাসি দিয়ে আবার আরোশের বুকে মুখ লুকায় ।আরোশ সুবাহর চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলে
“সরি জান তোমার সাথে খুব বেশি অন্যায় করে ফেলেছি !
তোমাকে না ভুল বুঝে খুব বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি যেখানে তোমার শুধু ভালোবাসা পাবার কথা ছিল সেখানে আমি তোমার সাথে বার বার খারাপ ব্যবহার করে গেছি !
আমি সত্যিটার আড়ালে ছিলাম নিদ্রার বলা মিথ্যা কথা গুলো মেনে নিয়েছিল আ…”
“হুসসসসসসসসস”
সুবাহ উচুঁ হয়ে আরোশের মুখে আঙ্গুল রেখে তাকে থামিয়ে দেয় তাকে বলতে না দিয়ে নিজে তার চোখে চোখ রেখে মৃদ্যু স্বরে বললো
“যা হয়েছে তাতে আপনার একার কোন দোষ ছিলোনা আমার ও দোষ আছে আমি পরিবারের কিছু মুখোশধারী আপন মানুষের কথায় আপনাকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ।একবার আপনার দিকটা ভেবে দেখিনি আপনার ভালোবাসার কথা ভেবে দেখিনি ।
স্বার্থপরের মত নিজের পরিবারের কথা ভেবে দাদীর আর নিদ্রার কথা মত আপনার কে ধোকা দিতে রাজী হয়ে গিয়েছি অথচ আপনার ভালোবাসার দিকটা ভেবে দেখিনি !
আপনার রাগ করাটা আমার সাথে স্বাভাবীক ছিলো কিন্তু সেদিন আপনার মুখে সে সব কথা গুলো মেনে নিতে পারিনি বেশ কষ্ট লাগছিলো তা শুনে ।সবার তাচ্ছিল অপমান মেনে নিতে পারবো কিন্তু আপনার মুখে সেসব কথা শুনতে পারবোনা ।সেদিন যখন আপনি আমাকে “চরিত্রহীন “ বলেছিলেন আমার নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করেছিলো বাচাঁর ইচ্ছেটা মরে গিয়েছিলো তাই এমন একটা স্টেপ নিয়েছিলাম !”
আরোশ সুবাহর মুখে কিছুটা চেপে ধরে নিজের মুখের কাছে এনে তার চোখে চোখ রেখে বলল
“তুমি জানো তোমাকে ঐ অবস্থায় দেখে আমার কি অবস্থা হয়েছিলো আমার জান বেরিয়ে গিয়েছিলো এক মুহূর্তের জন্য মনে হচ্ছিলো যে আমি তোমাকে সারাজীবনের জন্য হারিয়ে ফেলেছি ।
সেদিন রাতে যা বলেছিলাম তা রাগের মাথায় বলেছিলাম
উল্টা পাল্টা যা তা বলে ফেলেছি !
পরে যখন নিজের ভুলটা বুঝতে পেরে রুমে ফিরেছি তোমাকে এ অবস্থায় দেখে আমার যেন পুরো দুনিয়া থমকিয়ে গিয়েছিলো পাগলের মত হয়ে গিয়েছিলাম !
কথা দেও আর কখনো এমন কিছু করবেনা যত ভুল বোঝাবোঝি রাগারাগি হোক না কেন দুজন শান্ত ভাবে নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নিবো !
কথা দেও ”
সুবাহ মুচকি হেসে আরোশের হাতে হাত রেখে বলে কথা দিলাম আর কখনো এমন কিছু করবো না !
প্রমিজ “
আরোশ টুপ করে সুবাহর কপালে চুমু দিয়ে দেয় ।
হঠাৎ আরোশের হাত দিকে চোখ যেতেই সুবাহ বলতে লাগে
“আপনার না হাত পুরে গেছিলো ?
হাতে বেন্ডেজ ছিল !
এখন তো দেখছি হাত পুরো ঠি ক ।”
আরোশ মাথা চুলকাতে চুলকাতে চুলকাতে বলল
“ইয়ে মানে !
সুবাহ সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে
“ইয়ে মানে কি !”
আরোশ টেডি হাসি দিয়ে আমতা আমতা করে বলতে লাগে
“তোমার হাতে খাওয়া জন্য মিথ্যা বলেছি ।আমার হাত কিছু হয়নি !”
সুবাহ নাক ফুলিয়ে আরোশের গলার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল
“তার মানে আমাকে বোকা বানিয়েছেন ?
জানেন আমার কতটা খারাপ লাগছিলো আপনার হাতে বেন্ডেজ দেখে ?
আই উইল কিল ইউ !”
আরোশ সুবাহর হাতটা আটকিয়ে নিজের বুকের মাঝে সুবাহকে ফেলে চোখ টি প মেরে মাতাল কন্ঠে বলল
“এমনিতে ও আগের থেকে তোমাতে আমি ঘায়েল হয়েই আছি
তোমার হাতে মরতেও রাজী জাননননননন”…..

চলবে ……..

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন ???

আপনাদের কোন couple কে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে

প্রেমা ❤️ এরেন (vampire lover [ impossible love story ])

সায়রা ❤️ আরসাল (deewana [ A crazy lover])

সেহের ❤️ আরহাম (বিষাক্ত প্রেম )

সুবাহ ❤️আরোশ (তোমার আড়ালে )

খুব তারাতারি তোমার আড়ালে গল্প শেষ হয়ে যাবে ।নেক্সট শর্ট স্টোরি গুলো এদের মধ্যে থেকে নাম দেওয়া হবে গল্পের সর্বোচ্চ পার্ট ২-৩ পার্টের হবে ।❤️❤️❤️

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :১২

0

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :১২

Urme prema (sajiana monir)

এভাবে বেশ কয়েকদিন চলে গেল আরোশ আর তার পরিবারের লোক বেশ কয়েকবার সুবাহকে ফিরিয়ে নিতে এসেছে কিন্তু সুবাহ প্রত্যেকবারই তাদের না করেছে ফিরিয়ে দিয়েছে ।
এভাবে বারে বারে তাদের ফিরিয়ে দিতে দিতে সুবাহ ও বেশ ভেঙ্গে পড়েছে সে চায়না আরোশের পরিবারকে মুখোমুখি হতে কারন তাদের সামনে সে বারে বারে ভেঙ্গে পড়ে !
বার বার তাদের ফিরিয়ে দিতে সুবাহর ও ভালো লাগেনা তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় সে এ শহর ছেড়ে চলে যাবে তার ছোট খালামনির কাছে চিটাগাং চলে যাবে ।
তাই তার বাবা মাকে বাড়ির সবাইকে বুঝিয়ে তার খালামনি বাড়িতে যাওয়ার জন্য রাতে রওনা দেয় যাতে কেউ জানতে না পারে সে কোথায় আছে !
রাতের সুবাহর বাবা তাকে বাসে উঠিয়ে দেয় চিটাগাংয়র জন্য সুবাহর বাবা বেশ কয়েকবার সুবাহর সাথে যাওয়ার জন্য কিন্তু সুবাহ সাফ মানা করে দেয় ।সুবাহ বলে সে একাই যাবে !
সুবাহ বাসে উঠে বসে কিছুক্ষন পরই সুবাহর পাশে কেউ একজন চাদর মোড় দিয়ে সুবাহ পাশে বসে সুবাহর পাশে বেশ লেগে বসে সুবাহ তাকে দেখে কিছুটা দূরে সরে বসে পাশের লোকটা আরো কাছে ঘেষে বসে ।
সুবাহ কিছুটা বিরক্ত নিয়ে জানালার কাছে ঘেসে বসে জানালা খুলে চোখ বন্ধ করে রাতের প্রকৃতিকে অনুভব করতে লাগে ।আরোশের সাথে কাটানো সুন্দর মূহুর্তগুলোর কথা ভাবতে লাগে ।
কিছু কিছু মূহুর্ত গুলো বেশ সুন্দর হয় যা না চাইলেও তা নিয়ে ভাবনা মাথায় আসে আরোশের সাথে কাটানো সয়য়গুলো তেমন নি সুবাহর কাছে ।সুবাহ চোখ বন্ধ করে রাতের পরিবেশের ঠান্ডা হাওয়া অনুভব করছে বাসে প্রায় সবাই ঘুম !
সুবাহর বাতাতে উড়ন্ত চুল গুলো বারে বারে তার পাশে বসা ব্যক্তি র উপর পড়ছে সে ও বেশ ভালোভাবে চুলের সুবাস নিচ্ছে যেন এই সুবাস নেওয়াটা তার নেশা !
সুবাহ বেশ কিছু সময় পর চোখ খুলে পিছনে ঘুরতেই দেখে লোকটি তার বেশ কাছাকাছি সুবাহ বেশ ভয় পেয়ে যায় সুবাহ কিছু বলতে নিবে চিৎকার দিবে তার আগেই পাশে থাকা লোকটি তার নাকে রুমাল ধরে !
সুবাহ অজ্ঞান হয়ে যায় পাশে লোকটির গায়েঁর উপর হেলে পড়ে ।

সুবাহ নিজের আদো আদো চোখ খুলে চারদিকে তাকায় কোথায় আছে সে তা দেখার জন্য ।মাত্রই ঘুম থেকে উঠার কারনে সব ঝাপসা ঝাপসা মনে হচ্ছে ।সুবাহ চোখ চোখ ডলতে ডলতে ভালোভাবে তাকিয়ে দেখে হাতে ভর দিয়ে আরোশ তার দিকে কিছুটা ঝুকেঁ রয়েছে আরোশের মুখটা সুবাহর মুখের থেকে বেশ কাছে !
তার চোখের নজর সুবাহর উপর ঠোটেঁ মৃদ্যু হাসি ।সুবাহ আরোশকে এত কাছে দেখে ভূত দেখার মত চমকিয়ে গেল ।জোরে চিৎকার দিতে নিবে তার আগেই সুবাহ মুখের কাছে আরোশ হাত রেখে চেপে ধরে !
সুবাহ বার বার অস্বাভীবিক ভাবে চোখ খুলছে আর বুঝছে যেন আরোশেকে সে স্বপ্ন দেখছে ।সুবাহ আরোশের দিকে বড় বড় অবাক চোখে তাকিয়ে আছে !
আরোশ মুচকি হেসে সুবাহর মুখের উপর পড়ন্ত চুল গুলো কানের নিচে গুজেঁ দিতে দিতে বলতে লাগে
“এত ভয় পাবার কিছু নেই !
আমি ভূত ভাল্লুক না আমি তোমার হাসভেন্ড ।”
সুবাহ আরোশের কাছ থেকে ছাড়া পাবার জন্য হাত পা নাড়াতে লাগে ।আরোশ মুখের উপর থেকে হাত সরিয়ে বলে
“উপসসসসস সরি !”
সুবাহ লাফ দিয়ে উঠে বড় বড় শ্বাস নিতে লাগে তারপর আরোশের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আপনার সমস্যা কি ?
আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন !
আপনি কেন এমন করছেন এসব করে কি প্রমান করতে চান ।
যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন ?
কি ভেবেছেন আমি আপনার কাছে ফিরে যাবো ?
কখনই না !
আমি এখনই বাসায় চলে যাবো ।”
বলেই বেডে থেকে রেগে তারাতারি করে নামতে লাগে ।আরোশ চুপ করে নিরব দর্শকের মত এতসময় ধরে সুবাহর সব অভিযোগ শুনছিল কিন্তু এখন সুবাহকে উঠতে দেখে তারাতারি করে হাত টান দিয়ে তাকে বেডে বসিয়ে তার হাত গুলো নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে করুন ভাবে বলে
“সরি জান আ’ম সো সরি !
আমি জানি আমি অনেক বড় অপরাধ করেছি আর আমার অপরাধের এতো সহজে ক্ষমা নেই তাও জানি !
কিন্তু আমাকে একটা সুযোগ দেও আমি এবার তোমাকে কোন অভিযোগের সুযোগ দিবোনা ।
প্লিজ আমাকে আর একটি বার সুযোগ দেও !”
সুবাহ আরোশের এমন করুন চাহনিতে নিজে আরো দূর্বল হয়ে যাচ্ছে ।সুবাহ আরোশের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে
“সব কিছু মেনে নেওয়াটা কি এতই সহজ !
আমি আপনাকে কি করে আবার আগের মত মেনে নিবো ।
কি করে আপনার করা প্রত্যেকটা ব্যবহার ভুলে যাবো ?
আমি ভেঙ্গে গেছি আরোশ পুরোপুরি ভেঙ্গে গেছি আপনাকে মেনে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না !
আমাকে যেতে দিন ।”
আরোশের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে উঠতে নেয় পিছন থেকে আরোশ সুবাহর হাত আটকিয়ে বলতে লাগে “তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবেনা আমি তোমাকে যেতে দিবোনা !”
সুবাহ পিছন ফিরে আরোশের দিকে তাকিয়ে বলে
“আরোশ কি বাচ্চাদের মত কথা বলছেন !
আপনি কি সত্যি পাগল হয়ে গেছেন ?
আমি আপনার সাথে থাকতে চাইনা তাই বলে কি আপনি আমার সাথে জোর করবেন ?
আপনি কি ভেবেছেন আপনি যা খুশি তাই করবেন আর আমি চুপচাপ সব কিছু মেনে নিবো ?
না তা কখনই হবে না !
আমি এখন চলে যাবো ।”
আরোশ সুবাহ কে টান দিয়ে নিজের কাছে এনে নিজের কোলে বসিয়ে পিছন থেকে সুবাহকে নিজের সাথে জরিয়ে ধরে সুবাহ র কানের কাছে মুখ এনে স্লো ভয়েসে বলে
“হ্যা আমি পাগল হয়ে গেছি !
তোমার প্রেমে পাগল হয়ে গেছি আর এই পাগল কে সুস্থ করতে প্রভা কে প্রয়োজন আমার প্রভাকে ।
তোমাকে প্রয়োজন !
তাইতো তোমাকে কিডন্যাপ করে এনেছি নিজের কাছে রাখার জন্যে ।
নিজের বুকের মাঝে সারাজীবনের জন্য বন্ধি করতে !”
সুবাহ হালকা ঘাড় ঘুরিয়ে আরোশের দিকে ফিরে রেগে বলতে লাগে
“আপনার না কিডন্যপার হওয়া দরকার ছিলো !
কারন আপনাকে এই পেশায়ই ভালো মানাবে
গুন্ডা দের মত একদম !”
আরোশ দাতঁ বের করে হেসে বলতে লাগে
“আমার প্রসংসা করার জন্য ধন্যবাদ !”
সুবাহ নাক ফুলিয়ে সামনে ঘাড় ঘুরিয়ে ফেলে কাদোঁ কাদোঁ ফেস করে বির বির করে বলতে লাগে
“না জানি আব্বু আম্মু খালামনি সবাই কত টেনশন করছে আব্বু বার বার বলেছে পৌছিয়ে ফোন দিতে !
কিন্তু আমি কোথায় আছি তাই জানিনা !”
আরোশ সুবাহর ঘাড়ে নিজের থুতনি রেখে মুচকি হেসে সুবাহর গালের সাথে গাল লাগিয়ে বলে
“তা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবেনা জান আমি সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি আমরা হানিমুনে এসেছি !
শ্বশুর আব্বু শুনে একটু রেগে গিয়েছিলো কিন্তু জানি খুব তারাতারি উনার রাগ ভেঙ্গে যাবে !”
সুবাহ ভ্রু কুচঁকিয়ে আরোশের দিকে তাকায় তারপর বলতে লাগে
“আমরা কোথায় আছি !”
আরোশ হেসে উত্তর দেয়
“চিটাগাং আমার বন্ধুর গেস্ট হাউসে ।”
সুবাহ আবার বলে
“আমার ফোন কোথায় ?”
আরোশ উত্তরে বলে
“আমার কাছে আর আমার কাছেই থাকবে !
কারন আপনার কাছে থাকলেই আমার থেকে পালানোর চেষ্টা করবেন ।
যা আমি চাইনা !”
সুবাহ বির বির করে বলতে লাগে
“পন্ডিত !”
আরোশ হেসে বলতে লাগে
“তোমার হাসবেন্ড হই !”
সুবাহ নিজেকে আরোশের বাহুডোর থেকে ছাড়িয়ে ব্যাগ থেকে কাপড় বের করে বির বির করতে করতে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে !
সুবাহ ওয়াশরুমে যেতেই আরোশ কাউকে ফোন করে বলতে লাগে
“ঐ নিদ্রা জানো কঠিন শাস্তি পায় আর যা যা করছে তা সব কিছুর শাস্তি যে সে পায় ।
আর তার নানু কোন ঝামেলা করলে আমাকে জানাবে সব প্রমান নিদ্রার বিরুদ্ধে !”

সুবাহ ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে চুল মুছতে মুছতে রুমের বাহিরে যায় হঠাৎ নিচে কোন কিছুর নিচে পড়ার শব্দ শুনতে পায় সুবাহ তারাতারি করে সেদিকে যায় গিয়ে দেখে আরোশ রান্না করছে !
রান্না করছে বললে ভুল হবে যুদ্ধ করছে কিচেনে !
সুবাহ কমোড়ে দু হাত কেখে অবাক চোখে আরোশের দিকে তাকিয়ে বলে
“আপনি কি করছেন ?”
আরোশ টেডি হাসি দিয়ে বলে
“রান্না করছি !
আসলে এ বাড়ির কুক অসুস্থ তাই আজ আসতে পারেনি তাই ভাবলাম আমি রান্না করি !”
সুবাহ ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আপনি রান্না করতে পারেন ?”
আরোশ আগের মত টেডি হাসি দিয়ে বলতে লাগে
“না পারিনা কিন্তু চেষ্টা করলে সব পারা যায় দেখবে ঠিক পাড়বো !”
সুবাহ ফিক করে হেসে উড়না কমোড়ে বাধতে বাধতে বলতে লাগে
“থাক আর চেষ্টা করতে হবেনা !
আমি করছি ।”
আরোশ সুবাহর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আরে না না তোমাকে করতে হবেনা আমি পারবো ।”
সুবাহ আরোশ কে কিচেন রুম থেকে বের করে দিয়ে বলতে লাগে
“আমি করছি !
আপনি বের হন গিয়ে ফ্রেশ হন আমি রান্না করছি ! ”
আরোশ যেতে চায়না সুবাহ টেনে কিচেন থেকে বের করে আরোশ আবার সুবাহর কাছে এসে কপালে চুমু দিয়ে মুচকি হেসে “আই লাভ ইউ “ বলে চলে যায় ।সুবাহ ঠাই সে ভাবে দাড়িয়ে থাকে ।

চলবে …….
❤️❤️❤️❤️

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন ???

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :১১

0

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :১১

Urme prema (sajiana monir)

(ছোট করে দেওয়ার জন্য সত্যি সরি আমি বাসায় ফিরেছি সন্ধ্যায় তাই বড় করে দিতে পারিনি ।)

কিছুসময় আগেই সুবাহর জ্ঞান ফিরেছে চোখ খুলে দেখে সে হসপিটালের বেডে সুবাহ তা দেখে বেশ অবাক হয়ে যায় সে তো রুমে ছিলো কিন্তু হসপিটালে কি করে আসলো !
চোখ ঘুরিয়ে দেখে তার বাবা মা তার বেডের পাশে বসা তার বাবা নিজের হাতের ভাজে তার হাত নিয়ে রেখেছে চোখে জল চিকচিক করছে আর তার মা বার বার উড়না দিয়ে নিজের চোখের জল মোচ্ছে ।কিছুটা দুরে জান্নাত দাড়িয়ে আছে ।সুবাহ হালকা আওয়াজ করে মুখে মুচকি হাসি ফুটিয়ে মৃদ্যু স্বরে বলে
“আম্মু আব্বু তোমরা কাদঁছো কেন !
আমি ঠিক আছি তো এই দেখ ।”
সুবাহর মা কান্না করতে করতে বলতে লাগে
“তুমি কোন কথা বলবেনা !
কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তোমার জানা আছে ?
যদি তোমার কিছু হতো তাহলে আমাদের কি হতো তোমার ধারনা আছে?
আমরা কি তোমার খুব পর হয়ে গিয়েছিলাম আমাদের কাছে তুমি কিছু শেয়ার করতে পারোনি এত বড় একটা স্টেপ নিয়েছো আত্নহত্যা করতে গেছো ?”
সুবাহ কিছু বলার জন্য মুখ খুলে কিন্তু তার আগেই তার বাবা ভাঙ্গা কাপা কাপা কন্ঠে বলে
“আমার ছোট বাবুটা যে এতটা বড় হয়ে গেছে আমার জানাই ছিলোনা ।যে সামান্য আঘাতে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলতো সে এত যন্ত্রনার মধ্যে আছে কাউকে আচ ও পেতে দেয়নি !
আমার যে মেয়েটা তার বাবার কাছে সব কিছু শেয়ার করতো সে এত কষ্ট নিজের মধ্যে দমিয়ে রেখে অথচ আমাকে বুঝতেও দেয়নি !
আমার বাবুটা এতটা কষ্টে আছে যে সে আত্নহত্যার পদ বেছে নিয়েছে আর আমি বাবা হয়ে তার কোন কষ্টাই বুঝতে পারিনি ।
সত্যি মা আমাকে ক্ষমা করে দেও আমি বাবা হয়ে নিজের মেয়ের কষ্টটা বুঝতে পারিনী উলটো ভুল বুঝেছি তোমাকে ।”
সুবাহ তার বাবার হাতের উপর আলতো হাত রেখে বলে
“আব্বু তোমার কোন দোষ নেই তুমি যা দেখেছো তাতে তোমার ঐ রকম রিয়েক্ট করা স্বাভাবীক ।কিন্তু আমি সত্যি মানুষিক চাপে ছিলাম ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলাম কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না তাই এমন একটা রাস্তা বেছে নিয়েছিলাম মুক্তির জন্য শান্তি র জন্য ।সরি আব্বু আমি এমন কিছু আর কখনই করবোনা !”
সুবাহর বাবা সুবাহর মাথায় হাত বুলাতে লাগে ।সুবাহ জান্নাতের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলতে লাগে
“পেত্নি তুই দেখি এখনই মরাকান্না করছিস !”
জান্নাত কান্না করতে করতে বলতে লাগে
“জানিস কত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম !
মনে হয়েছে আমরা তোকে হারিয়ে ফেলেছি ।”
সুবাহ মৃদ্যু হেসে মজা করে বলতে লাগে
“এত তারাতারি তোর পিছু ছাড়ছি না !
এখনো তো এক সাথে ক্রাশ খাওয়া বাকি আছে ।”
জান্নাত সুবাহ র কথা শুনে শব্দ করে হাসতে লাগে ।বাহির থেকে আরোশ গ্লাসের ভিতর থেকে সুবাহকে দেখছে তার সাহস নেই সুবাহর সামনে যেয়ে দাড়াতে সে যা করেছে তার জন্য সারাজীবন ও ক্ষমা চাইলে কম হবে ।সে বিনা দোষে সুবাহকে কষ্ট দিয়েছে বার বার তাকে আঘাত করেছে ।
সে শুধু নিজের দিকটাই দেখেছে কখনো সুবাহ র দিক থেকে দেখার চেষ্টা করেনি !
বিকালে সবাই বাড়িতে চলে যায় সুবাহ র কাছে তার বাবা মা ছোট বোন আর আরোশ রয়েছে ।আরোশ এর মধ্যে ও নিজের মধ্যে সাহস জোগাতে পারেনি ।কিন্তু সুবাহর কাছে না যেয়েও থাকতে পারছেনা তাই সাহস করে কেবিনের দিকে পা বাড়ায় !
সুবাহর বাবা দরজার সামনে আরোশের শোল্ডারে হাত রেখে তাকে থামিয়ে দেয় ।তাকে যেতে নিষেদ করে পাশ থেকেই সুবাহর মা সুবাহ র বাবাকে চোখের ইশারায় আরোশ কে ভিতরে যেতে দিতে বলে ।কারন সে চায় তাদের সমস্যা তারাই সমাধান করুক কারন একবার সুবাহ উপর সবার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে তার ফল তারা নিজেরা দেখে যা হয়েছে তা তারা পূর্রাবৃত্তি চায়না !
তাই সুবাহর মায়ের বেশ বুঝানোর পর সুবাহর বাবা আরোশ কে ভিতরে ডুকতে দেয় ।
আরোশ ভিতরে ডুকে দেখে সুবাহ চোখ বন্ধ করে বেডে হেলান দিয়ে বসে আছে ।আরেশ দরজা হালকা বিরিয়ে সুবাহর পাশে এসে বসে সুবাহকে নিক্ষুত ভাবে তাকে দেখতে লাগে ।সুবাহর চেহারা একদিনেই পরিবর্তন হয়ে গেছে মুখটা চুপসে গেছে ।সুবাহর এমন অবস্থা দেখে আরোশের বুক কেপেঁ উঠে !
আজ তার জন্যই তো সুবাহর এই ‌অবস্থা আরোশ আলতো করে সুবাহর হাতের উপর হাত রাখে আরোশের স্পর্শে সুবাহ চোখ খুলে তাকায় ।আরোশ মাথা নিচু করে সুবাহর হাতের দিকে তাকিয়ে আছে কাটা হাতের উপর স্পর্শ করছে সুবাহ বেশ কিছুসময় আরোশের দিকে তাকিয়ে আছে তার বুক ফেটে কান্না আসছে কিন্তু তা সে নিজের মধ্যে চেপে রেখে আরোশের হাতের মধ্যে থেকে নিজের হাত টান দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে থাকে ।আরোশ তা সুবাহর দিকে তাকিয়ে মৃদ্যু স্বরে বলতে লাগে
“আমি জানি আমার কোন ক্ষমা নেই !
আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইবোনা তুমি আমাকে শাস্তি দেও কিন্তু তা আমার কাছে থেকে আমি তোমার সব শাস্তি মেনে নিবো মাথা পেতে মেনে নিবো ।
আমাকে তুমি শাস্তি দেও আমি চাই !
কিন্তু আমার ছেড়ে যেওনা প্লিজ আমি বাচঁবোনা তোমাকে ছাড়া ।
আমি আমার চোখের সামনে যা দেখেছি তাই বিশ্বাস করেছি কিন্তু তার আড়ালে থাকা সত্যটা আমি দেখতে চাইনি ।
আমার এই ভুলে শাস্তি প্রত্যেকটা মুহূর্ত পাচ্ছি !”

সুবাহ মৃদ্যু হেসে বলতে লাগে
“না আছে আপনার প্রতি অভিমান না আছে রাগ না আছে অভিযোগ !
আমি নিজেই ভেঙ্গে গেছি আমি নতুন করে সব শুরু করতে চাই কিন্তু তা আপনার সাথে না নিজের মত করে আমি আর সবার মত স্বার্থপর হতে চাই নিজের জন্য ভাবতে চাই সবার কথা ভাবতে ভাবতে আজ আমি নিজেই সব হারিয়েছি পদে পদে অপমানীত হয়েছি চরিত্রহীন প্রমানীত হয়েছি আর চাইনা কোন অপবাদ !
না আমার জীবনে থাকবে কোন নিদ্রা না দাদী না আরোশ নামের কেউ আমি স্বাধীন হয়ে বাচঁতে চাই নিজের জন্য বাচঁতে চাই
আপনার আমার কাছে আসা আমাকে আরো কষ্ট দেয় আরোশ প্লিজ আমাকে আমার মত থাকতে দেন আমি নিজের মত করে থাকতে চাই । “
বলেই হু হু করে কান্না করে দেয় আরোশ তা দেখতে পারছেনা তার কষ্ট হচ্ছে খুব তাই আরোশ সুবাহর কাছে যেয়ে তাকে নিজের বুকের মধ্যে জরিয়ে ধরে আরোশ থেকে সুবাহ ছাড়া পাবার জন্য জোরাজুরি করে কিন্তু আরোশ তাকে নিজের বুকের সাথে আরো চেপে ধরে ।এখন আরোশের ও বেশ শান্তি লাগছে তার স্ত্রী তার সুবাহ তার বুকে রয়েছে তার কলিজায় শান্তি লাগছে !
সুবাহ ও আরোশের বুকে মাথা রেখে কান্না করে যাচ্ছে ।আস্তে আস্তে তার কান্নার বেগ কমছে
বেশ কিছু সময় পর সুবাহ আরোশকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় আরোশ দুরে সরে যায় তারপর আবার সুবাহর কাছে যেয়ে তার কপালে চোখ বন্ধ করে গভীর চুমু দিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে যায়।যাই হোক আরোশ কখনো হার মানবেনা সে তার সুবাহর মন ঠি কই জয় করে নিবে যে কোন ভাবেই হোক না কেন তার সুবাহকে ভালোবাসার চাদরে আবার জরিয়ে নিবে ……..

চলবে……
❤️❤️❤️❤️

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন ???

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :১০

0

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :১০

Urme prema (sajiana monir)

ফ্লোরে সুবাহ র নিথর দেহ পড়ে আছে হাতের কাটা স্থান থেকে রক্ত পড়ে ফ্লোর ভেসে আছে ।পড়নের সেই পার্টি পড়া কালো শাড়ি ।পাশেই রক্ত মাখা ছুড়িটা পড়ে আছে ।আরোশের এই দৃশ্যে দেখে যেন পুরো দুনিয়া থমকে গেছে।
সুবাহ র এমন অবস্থা সে কিছুতেই সয্য করতে পারছেনা ।তার মধ্যে ভয় কাজ করছে সামনে আগানোর শক্তি পাচ্ছে হাত পা কাপঁছে সুবাহর এই অবস্থা দেখে মাথা চক্কর মারছে !
নিজের ভালোবাসার মানুষ কে নিজের চোখের সামনে এ অবস্থায় দেখলে কি করে কেউ সুস্থ থাকে ?
আরোশ যা বলেছে সব রাগের মাথায় বলেছে তার মাথা ঠি ক ছিলোনা আদির কাছাকাছি সুবাহকে দেখে কিন্তু সুবাহ এটা কি করলো ?
তাকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য সে আত্নহত্যা করলো ! সে এখন কি করে বাচঁবে ?সে তো সব পারবে কিন্তু সুবাহকে ছাড়া বাচঁতে পারবেনা ।সুবাহ উপর রাগ অভিমান যাই করুক না কেন কিন্তু তাকে কখনো ছাড়তে পারবেনা চোখের আড়াল করতে পারবেনা ।
আরোশ আস্তে আস্তে সুবাহর দিকে পা বাড়ায় চেহারায় কোন ভাবনা চেন্তা নেই যেন সে পুরো নিশ্ব হয়ে গেছে সব কিছু হারিয়ে ফেলেছে !
তার নিজের কাছে নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছে ।
আরোশ সুবাহর কাছে যেয়ে হাটুঁ গেড়ে তার সামনে বসে সুবাহ কে নিজের বুকে জরিয়ে ধরে গালে হাত রেখে কান্না করেতে করতে পাগলের মত বলতে লাগে
“সুবাহহহহ!
সুবাহ !
জান উঠো প্লিজ জান উঠো আমি আর তোমার উপর রাগ করবোনা আর তোমাকে কিছু বলবোনা তুমি আমাকে যেই শাস্তি দেবে সব মাথা পেতে মেনে নিবো !
তুমি যা চাইবে ঠি ক সেই ভাবেই হবে জান প্লিজ তুমি উঠো !
আমি পারছিনা তোমাকে ভাবে দেখতে !
কেন করলে এমন তোমার তো আমার উপর রাগ ছিলো তাহলে আমাকে শাস্তি দিতে কেন নিজের ক্ষতি করলে ।”
বলেই হাউমাউ করে বুকে জরিয়ে কাদঁতে লাগে তারপর তারাতারি করে সুবাহকে কলে উঠিয়ে গাড়িতে নিয়ে যায় ।ড্রাইভারকে সামনে গাড়ি চালাতে বলে আর আরোশ পিছনের সিটে সুবাহকে কোলে করে বার বার তাকে উঠানোর চেষ্টা করছে ।সুবাহর এখনো হালকা শ্বাস চলছে কিছু সময়ের মধ্যেই আরোশ সুবাহকে নিয়ে হসপিটালে পৌছিয়ে যায় ।ডক্টোর তারাতারি করে সুবাহকে ও টি তে নিয়ে যায় !

আরোশ ও.টি র বাহিরে দাড়িয়ে আছে তার পুরো শরীর রক্তে ভিজে আছে ।আরোশের চোখ থেকে অঝোরে পানি ঝড়ছে ।তার নিশ্বাস মনে হচ্ছে থেমে যাবে এখনই ।সুবাহকে ছাড়া সে নিজেকে কল্পনা করতে পারে না ।আরোশ যা বলেছে সব রাতের মাথায় বলেছে সত্যিতো এটাই সে সুবাহকে ছাড়া নিজে বেচেঁ থাকার কথা ভাবতেও পারেনা । তার শুরুটা ও সুবাহ আর শেষটাও যে সেই তাই তো সুবাহকে আদির সাথে সয্য করতে পারেনি !
আদির সাথে সুবাহকে দেখে তার মাথা পুরো বিগরিয়ে গিয়েছে তাই রাগের মাথায় যাতা বলে দিয়েছে সুবাহকে আজ তার গায়েঁ হাত তুলে ফেলেছে !
সুবাহ যখন তাকে ছেড়ে যাবার কথা বলেছে তখন তার মাথা ঠিক রাখতে পারেনি তার গলা চেপে ধরেছে ।
আরোশ ও.টি র সামনে ফ্লোরে হাটুঁ গেড়ে বসে নিশব্দে নিজের চোখের জল ফেলছে । আরোশ পুরো স্থব্দ হয়ে গেছে সে যেকোন মূল্য সুবাহকে সুস্থ চায় তার সুবাহ কে চায়।

কিছুসময় পর সুবাহর বাড়ির মানুষ হসপিটালে চলে আসে সাথে জান্নাত ও আছে ।বাড়ির কাজের লোক সুবাহর বাসায় ফোন দিয়ে জানিয়েছে ।সুবাহর মা আরোশের সামনে এসে আরোশ কে তার দিকে আরোশের গালে রেগে জোরে থাপ্পর বসিয়ে দেয় তারপর রেগে বলতে লাগে
“আমার সবচেয়ে বড় ভুল ছিলো তোমাকে বিশ্বাস করে নিজের মেয়ে তোমার কাছে দিয়ে নিশ্চিত থাকা ।আমারই ভুল ছিলো যে আমি ভেবেছি আমার মেয়ে তোমার সাথে সুখে থাকবে !
কিন্তু তো আমার মেয়েকে বিয়ে করেছো শুধুই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য !
আমার মেয়ে যেই অন্যায় করনি তুমি দিনের পর দিন তার শাস্তি দিয়ে এসেছো !
এখন তাকে এখানে কেন এনেছো ?
মরতে দিতে !
শান্তি তো পেত আমার মেয়ে সকল যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতো !”
বলে হু হু কাদঁতে লাগে সুবাহর মা কান্না করতে করতে নিচে বসে পড়ে জান্নাত তার মায়ের কাছে বসে তাকে সামলাতে লাগে ।জান্নাত কান্না করতে করতে বলতে লাগে
“আন্টি দেখবে ঠিক আমাদের সুবাহ সুস্থ হয়ে যাবে ।ওর কিছু হবেনা ।”
সুবাহর মা সেখানে বসে থেকে জান্নাতের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আমার মেয়েটা ছোট থেকে শুধু কষ্টই পেয়ে আসলো সব সময় নিজে শুধু ত্যাগ করেই আসলো বিনিময়ে কিছু পেলো না ।পরিবারের জন্য নিজেকে শেষ করে দিলো কিন্তু সেই পরিবারই তাকে বুঝলো না ।যাকে ভালোবাসলো সে ভুল বুঝলো !”
বলেই আবার কান্না করতে লাগলো ।নিদ্রা আর সুবাহর দাদীকে হসপিটালে দেখে সুবাহর মা রেগে তাদের দিকে তেড়ে যায় ।নিদ্রার গালে জোরে থাপ্পর দেয় হসপিটালের সবাই হা করে আছে ।সুবাহর দাদী রেগে সুবাহর মা কে বলতে লাগে
“তোমার সাহস কি করে হয় নিদ্রার গাঁয়ে হাত তুলার !
কে দিয়েছে তোমাকে এত সাহস তোমাকে তো …..।”
সুবাহর মা সুবাহর দাদীকে থামিয়ে বলতে লাগে
“এটা আমার অনেক আগেই করার দরকার ছিলো তাহলে হয়তো আজ আমার মেয়েকে এই পরিস্থিতে দেখতে হতো না !
আজ আমার মেয়ের এই পরিস্থিতীর জন্য শুধু আপনারা দুজন দায়ী ।যেদিন সুবাহ কে আপনারা এসব কিছু করতে বাদ্ধ করেছেন সেদিন যদি আমি এমন স্টেপ নিতাম তাহলে হয়তো আমার মেয়ে ভালো থাকতো ।আপনারা দুজন সুবাহকে বাদ্ধ করেছেন আরোশের থেকে নিজেকে আড়াল করতে তাকে নিজের পরিচয় গোপন রাখতে আরোশের সামনে নিদ্রাকে প্রভা প্রমান করতে !
আজ ভার্সিটিতে যা যা হয়েছে তার সব কিছুর জন্য নিদ্রা দায় ছিল নিদ্রা প্লান করে সুবাহ আর আদিকে এক রুমে আটকিয়ে রেখেছে তাকে চরিত্রহীন প্রমান করার জন্য !
জান্নাত আর আদি আমাকে সব জানিয়েছে আজকে ভার্সিটিতে যাযা হয়েছে ।”
পাশ থেকেই সুবাহর বাবা জোর গলায় বলতে লাগে
“তুমি এসব কি বলছো ?
মা আর নিদ্রা কেন এসব করবে !”
সুবাহ র মা সুবার বাবার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“হ্যা এটাই সত্যি !
তোমার মা আর তোমার ভাগনী সব কিছু করেছে এসব কিছুর জন্য তারা দুজনই দায়ী !
আমার মেয়ের এই পরিস্থীতির জন্য তারা দায়ী তাদের জন্যই আজ আমার মেয়ের এই অবস্থা ।
এতদিন ২২ টা বছর আমি চুপ করে ছিলাম সব অন্যায় সয্য করেছি কিন্তু আর না আজ আমার মেয়ের জীবন নিয়ে প্রশ্ন আজ আমি উনাকে ছাড় দিবোনা এর ফলাফল যাই হোক না কেন তুমি আমাকে সাপোর্ট করো আর না কর !”
সুবাহর মা সব কিছু খুলে বলে সুবাহ র বাবাকে সুবার বাবা সব শুনে সুবাহর দাদীর দিকে তাকিয়ে রেগে চিৎকার করে বলতে লাগে
“তুমি যা করেছো মা এর পর থেকে তুমি আমাকে কি নিজের থেকে দূর করবে আমিই তোমার সাথে থাকবোনা !
এতদিন ভেবেছি তুমি আমার স্ত্রীকে অপছন্দ কর কিন্তু হয়তো আমার সন্তানদের মেনে নিয়েছো তাদের আপন ভাবো কিন্তু তুমি তো দেখছি তাদের সয্যই করতে পারো না !
আমি নিজে থেকেই তোমার কাছে থাকবেনা আমার স্ত্রী আর সন্তান কে তোমার আসে পাশে রাখবোনা !
তুমি আমার মেয়ের সাথে যদি এসব করতে পারো তাকে খুন করতেও তুমি একবার ভাববে না !
আর আমি আমার সন্তানের কখনই কোন ক্ষতি হতে দিবোনা তোমার থেকে দূরে থাকাই আমার সন্তানের মঙ্গল ।আমার স্ত্রী আর সন্তান নিয়ে তোমার থেকে দূরে চলে যাবো তোমার আর আমাদের চেহারা ও দেখতে হবেনা ।
তুমি তোমার মেয়ে আর নাতনীকে নিয়েই থাকো !”
আরোশ সব কিছু শুনে স্থব্দ রয়ে যায় তার পায়ের নিচ থেকে মাটি যেন সরে গেছে ।এত বড় ভুল সে কি করে করলো ?
সব কিছু করেছে নিদ্রা আর সুবাহর দাদী আর সে সুবাহকে বিনাদোষে শাস্তি দিলো !
সুবাহর তো কোন অন্যাই ছিলোনা সে তো যা করেছে সব কিছুর জন্য সে বাদ্ধ ছিলো ।কিন্তু আরোশের কি দোষ আরোশকে নিদ্রা যা দেখিয়েছে তাই তো সে দেখেছে ।আরোশের এখন নিদ্রাকে খুন করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু তার নিজেকে শাস্তি দিতে ইচ্ছে করছে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে ! সে কি করে নিদ্রার মত বেহায়া মেয়েকে বিশ্বাস করলো আর সুবাহকে ভুল বুঝলো !
নিজের ভালোবাসার উপর এখন তার নিজেরই সন্দেহ হচ্ছে সে কি করে নিজের ভালোবাসার মানুষকে অবিশ্বাস করলো !
আরোশ কোন ভাবেই সুবাহকে হারাতে পারবেনা সুবাহকে কারন সুবাহকে ছাড়া নিজেকে কল্পনা করতে পারেনা !
নিদ্রা যা করেছে তার শাস্তি তো আরোশ তাকে দিবেই কঠিন শাস্তি কিন্তু তার আগে সুবাহর সুস্থতা আগে !
সুবাহর কাছে তার ক্ষমা চেতে হবে সে যা করেছে তার জন্যে কোন ক্ষমা নেই সে জানে !
আদো সুবাহ তাকে ক্ষমা করবে কিনা তা তার জানা নেই কিন্তু সে শুধু জানে সুবাহকে ছাড়া থাকতে পারবেনা !
আরোশ নিদ্রার দিকে রক্ত চক্ষু তে তাকিয়ে আছে নিদ্রাকে সে কি করবে তার নিজের ও জানা নেই !
সুবাহর দাদাভাই সুবাহর দাদীর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“তুমি যা করেছো তার জন্য তোমার কোন দিন ক্ষমা করবো না !
তুমি তোমার এক নাতনীর শখের জন্য ‌অন্য নাতনীর জীবন নষ্ট করেছো ।
তোমার নাতনীর প্রতি অন্ধভালোবাসাতে তুমি তোমার পরিবার হারলে তোমার স্বামী সন্তান পরিবার সবাইকে হারালে তোমার সাথে আমাদের কারো কোন সম্পর্ক নেই !
তোমারা দুজন এখান থেকে বের হও হসপিটাল থেকে যাও তোমাদের দুজনকে দেখতে ইচ্ছে করছেনা ।
যাও এখান থেকে (ধমক দিয়ে )!”
সুবাহর দাদী আর নিদ্রা চলে যায় ।আরোশ ও.টি র সামনে মাথা নিচু করে বসে আছে ।কিছুসময় পর ডক্টোর বের হয় আরোশ তার দিকে এগিয়ে অস্তির হয়ে বলতে লাগে
“সুবাহ কেমন আছে
আমার সুবাহ সুস্থ আছে তো !”
ডাক্টার উত্তরে বলতে লাগে
“পেশেন্ট ঠিক আছে ছুড়ি আঘাত বেশি গভীরে যায়নি ।শরীর থেকে অনেক ব্লাড গিয়েছে প্রোপার রেস্ট নিতে হবে !
কিছুদিনের মধ্যেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে !”
সুবাহর বাবা বলতে লাগে
“ডক্টোর আমরা সুবাহর সাথে দেখা করতে পারবো !”
ডাক্টার বলতে লাগে
“জ্বি কিন্তু সাবধানে এখন উনি রেস্ট নিচ্ছে ঘুমের ঔষধ দেওয়া হয়েছে কোন হৈচৈ জাতে না হয় ।”
ডাক্টার চলে যায় সুবাহ কে দেখতে আরোশ প্রবেশ করতে নেয় সুবাহর বাবা আরোশকে যেতে না দিয়ে তাকে আটকিয়ে বলতে লাগে
“আমি চাইনা তুমি আমার মেয়ে র সাথে দেখা করো !
তোমাকে দেখে সে কষ্ট পাবে ।আমি কোন ঝামেলা চাচ্ছিনা তুমি চলে যাও ।আমার মেয়েকে আমি নিজের কাছে রাখবো আমি চাইনা পরবর্তিতে আমার মেয়ের এমন কোন কিছু হোক !
আমার মেয়ের জীবন থেকে জূরে সরে যাও ।”
বলেই তারা ভিতরে চলে যায় আরোশ সেখানেই দাড়িয়ে থাকে ….

চলবে….
❤️❤️❤️❤️

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন ???

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :৯

0

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :৯

Urme prema (sajiana monir)

হঠাৎ সুবাহর গালে “ঠাসসস”করে চর পড়লো সাথে সাথে সুবাহর হাত তার গালে চলে যায়।সুবাহ পুরো থমকিয়ে গেছে তার সাথে কি এটা কি হল ?
পুরো ব্যপারটাই তার মাথার উপর দিয়ে গেল !
সুবাহ মাথা উচুঁ করে দেখে সামনে আরোশ দাড়িয়ে আছে তার চোখে মুখে ভয়ংকর রাগ মনে হচ্ছে এখনই তাকে পুরো গিলে খাবে ।
কিন্তু সুবাহ আরোশের এভাবে তার উপর রেগে থাকা আর তাকে চড় মারার কারন খুজেঁ পাচ্ছেনা ।সে কি এমন করেছে যে আরোশ নিদ্রা আদি জান্নাত সুহানের সামনে তাকে এভাবে থাপ্পর দিলো ?
সে তো নিদ্রার কথা ‌অনুযায়ী এখানে এসে এই রুমে আদির সাথে আটকিয়ে গেছে বাহির থেকে কেউ দরজা লক করে দিয়েছে তাই আদি আর সুবাহ একই রুমে আটকিয়ে গেছে এতে তার কি দোষ ?
সুবাহ তো অন্ধকারে ভয়ে আদির হাত ধরেছিলো আর ঠি ক তার কিছুসময় পর আরোশ দরজা খুলেছে ।
আরোশ কিছু না জিগাসা করে তার গায়েঁ হাত তুলে দিলো ?
সে কি করেছিলো !
গালে হাত দিয়ে সুবাহ আরোশের দিকে তাকিয়ে এসব ভাবতে লাগে ।আরোশ রেগে সুবাহর হাত শক্ত করে ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে পিছন থেকে জান্নাত সুহান আরোশকে থামানোর চেষ্টা করছে ।জান্নাত বার বার বলছে
“ভাইয়া প্লিজ একবার কথাটা শুনুন !”
কিন্তু আরোশ জান্নাতের কথায় তেক্কার না করে সুবাহকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে কারন এই মুহূর্তে আরোশ কথা শুনার মত পরিস্থীতিতে একদম নেই সে ভয়ংকর ভাবে রেগে আছে ।আদি ঠায় সেখানেই দাড়িয়ে আছে সব কিছু যেন তার মাথার উপর দিয়ে গেছে ।সে তো নিদ্রার কথায় সুবাহর হেল্প করতে উপরে এসেছে ।নিদ্রাইতো তাকে বলেছে যে “সুবাহ ভার্সিটির স্টোর রুমে আটকা পড়ে আছে সুবাহর হেল্পের প্রয়োজন !”এই কথা শুনেই তো আদি এখানে এসেছে সুবাহর হেল্প করতে ।
নিদ্রা দরজার সামনে দাড়িয়ে সব কিছু মজা নিচ্ছে সে এটাইতো চেয়েছিলো আরোশ সুবাহ কে ভুল
বুঝোক আদিকে নিয়ে ।তাই তো সে সুবাহকে স্টোর রুমে ডাকে আর আদিকে মিথ্যা বলে পাঠায় তারপর দুজনকে লক করে দেয় স্টোর রুমে আর আরোশ সুবাহ আর আদিকে অন্ধোকার স্টোর রুমে দেখে খারাপ কিছু ভেবে তাকে ভুল বুঝে তাকে থাপ্পর মারে সবার সামনে তাকে অপমান করে ।যা নিদ্রার মনে বেশ শান্তি লেগছে কারন সে তো চেয়েছেই তাই সব তার প্লান অনুযায়ী হচ্ছে আরোশ সুবাহ কে ঘৃনা করবে আর সেই সুযোগে আরোশকে নিদ্রা হাসিল করবে !

আরোশ সুবাহকে বাড়িতে টানতে টানতে নিয়ে আসে বিষন রেগে আছে সে !
বাড়িতে কেউ নেই সবাই আরোশের নানুর বাসায় একটা ফাংশন এটেন্ড করতে গেছে ২ দিন পর ফিরবে !
আরোশ সুবাহ টেনে নিয়ে বেডে ছুড়েঁ মারে তারপর দরজা লক করে তার কাছে যেয়ে তার চুলের মুঠোয় শক্ত করে ধরে ।সুবাহ ব্যথায় কুকঁড়িয়ে উঠে আরোশ সুবাহর চোখে চোখ রাখে ভয়ংকর লাল হয়ে আছে চোখ আরোশ চুলের মুঠি ঝাকিয়ে বলতে লাগে
“কি কমতি ছিলো আমার ভালোবাসায় ?
কি কমতি ছিল বল !!!!!
কেন তুই আদির কাছে গেলি ?
আমাকে দিয়ে তোর মন ভরছিলো না !”
সুবাহ হা হয়ে তাকিয়ে আছে আরোশের দিকে !
আরোশ তাকে এসব কি বলছে ?
সুবাহ কান্না করতে করতে বলতে লাগে
“আপনি এসব কি বলছেন ?
আমার আর আদির মধ্যে তেমন কোন সম্পর্ক নেই আমরা জাস্ট ভালো ফ্রেন্ড !
আপনার ভুল হচ্ছে ।
আমি তো আপনাকে ভালো….”
আরোশ সুবাহকে কিছু বলতে না দিয়ে তার চুল ছেড়ে দুই বাহু শক্ত করে ধরে বলতে লাগে
“চুপ একদম চুপ আদি তোর জাস্ট ফ্রেন্ড তাই তো ?
তাই বুঝি তাকে বিয়ে করতে গিয়েছিলি !
প্রথমে আমার সাথে টাইম পাস করিস তারপর তা নিজের বোনের মাথায় গছিয়ে দিয়ে নিজে নিজের আসল প্রেমিক আদির কাছে যাস !”
সুবাহ আরোশেকে বলতে লাগে
“আমার কথাটা একবার শুনার চোষ্টা করেন ।
আরোশ আমি আপনার সাথে টাইম পাস করিনি আমি বাদ্ধ ছিলাম এসব কিছু….”
আরোশ সুবাহর মুখ চেপে ধরে সুবাহ আর কিছু বলতে পারেনা ।আরোশ মুখ চেপে ধরে বলতে লাগে
“তোর মুখে কোন কথাই আমি শুনতে চাইনা ।বিয়ের পর নিজের স্বামীকে রেখে যে মেয়ে তার প্রেমিকের সাথে স্টোর রুমে সময় কাটাতে পারে তার থেকে আর কি শুনবো !
তোর চরিত্র এমন হবে তা আমার সত্যি ধারনার বাহিরে ছিলো !
ঘৃনা হয় নিজের প্রতি যে তোর মত মেয়েকে আমি ভালোবেসেছি ।”
সুবাহ আরোশেক দিকে তাকিয়ে আছে ভাবহীন ভাবে !
আরোশ ও তাকে চরিত্রহীন ভাবে ?
তার চরিত্র নিয়ে সে ও এসব কথা বললো !
সবাই না হয় তাকে ভুল বুঝে কিন্তু আরোশ থেকে সুবাহ এসব কিছু কখনো আশা করেনি ।
সুবাহ নিজেকে আরোশ থেকে ছাড়িয়ে নিজের চোখ মুছে রেগে চিৎকার করে বলতে লাগে
“অনেক হয়েছে আপনি অনেক বলেছেন আর আমিও অনেক শুনেছি !
আপনি আমার চরিত্র নিয়ে কি করে বলতে পারেন ?
কি ভাবেন আপনি আমাকে কোন রাস্তার মেয়ে ?
যে আপনি আমার চরিত্র নিয়ে যা বলবেন সব মেনে নিবো !
বিয়ের পর আপনার দেওয়া প্রত্যেকটা আঘাত মেনে নিয়েছি কারন আমি মনে করেছি কোথাও আমার দোষ আছে আপনার সাথে অন্যায় হয়েছে আর তার জন্য আমি দায় আছি !
তাই আপনাকে সত্যি জানাতে চেয়েছি কিন্তু আপনি যখন আমার কোন কথা শুনতেই নারাজ উলটো কিছু না জেনে আমার চরিত্রের উপর আঙ্গুল তুলেছেন !
বিচার বিবেচনা না করে নিজের রায় জানিয়ে দিয়েছেন আমি চরিত্রহীন !
তাহলে আমিও নিজের দিক থেকে আর কোন কৈফাত দিবোনা !
যেখানে আমার চরিত্রের উপর আঙ্গুল তোলে সেখানে আমি একমূহুর্ত ও থাকবোনা !
আমি তো চরিত্রহীন আমার মত চরিত্রহীন মেয়ে আপনার জীবনে না থাকাই ভালো।
আমি এক্ষনই আপনার এই বাড়ি থেকে আর আপনার জীবন থেকে চলে যাবো “
বলেই সুবাহ সামনে দিকে নিজের পা বাড়ায় বাহিরে যাবার জন্য আরোশ পিছন থেকে টান দিয়ে সুবাহকে বেডে ফেলে তার উপরে উঠে তার গলায় চাপ দিয়ে বলতে লাগে
“যাওয়ার কথা বললে খুন করে দিবো !
সব সময় আমার চোখের সামনে থাকবি তুই ।সারাজীবনের জন্য আমার সাথে থাকবি আমার হয়ে থাকবি !
মৃত্যু ছাড়া আমার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব না !”
বলেই আরোশ সুবাহর উপর থেকে উঠে বাহিরে চলে যায় ।সুবাহ বেডে শুয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগে আর কাশতে লাগে ।সুবাহ আরোশের এমন ব্যবহারে বেশ আঘাত পায় ।আরোশ রুমে থেকে চলে যেতেই সুবাহ বেডে মুখ গুজেঁ কান্না করতে লাগে ।
আজ আরোশের ব্যবহারে তাকে পুরোপুরি ভেঙ্গে দিয়েছে ।সে আরোশের কাছ থেকে কখনই এমন ব্যবহার আশা করেনি ।সে জানতো আরোশ তাকে ঘৃনা করে কিন্তু তাকে চরিত্রহীন ভাবে তা তার জানা ছিলোনা ।আজকের অপমানীত সুবাহ কখনই হয়নি ।আরোশ তাকে আজ পুরোপুরি ভেঙ্গে দিয়েছে ।
মানুষ সবার আঘাত সয্য করতে পারে কিন্তু নিজের ভালোবাসার মানুষের থেকে পাওয়া আঘাত কখনই সে সয্য করতে পারেনা ।
তা খুব বেশি যন্ত্রনার হয় !
ছোট থেকে দাদী আর নিদ্রার অপমান সয্য করেছে তার মায়ের সাপোর্ট ছিলো বলে সে তা সয্য করে নিয়েছে কিন্তু আরোশের আজ করা অপমান সারাজীবনের জন্য পরাজীত করে দিয়েছে ।সে নিজের ভালোবাসার মানুষের কাছে এমনটা আশা করেনি !
মানুষ যখন খুব বেশি ডিপ্রেশনে থাকে মানুষিক চাপে থাকে বা মানুষিক ভাবে যন্ত্রনায় থাকে একমাত্র সেসময়ই তার মাথায় আত্নহত্যার চিন্তা মাথায় আসে ।একমাত্র সে সময়ই সব যন্ত্রনা থেকে মুক্তির রাস্তা খুজেঁ নেয় ।আত্মহত্যা কখনো কোন কিছুর সমাধান হয়না কিন্তু জীবনে এমন কিছু সময় আসে যে এইটাই একমাত্র উপায় মনে হয় মুক্তির জন্য !
সব কিছু থেকে শান্তি পাবার জন্য ।আজ সুবাহর সকল ধর্য্যের বাধঁ ভেঙ্গে গেছে ।আর ধর্য্যে ধরা মত ক্ষমতা তার নেই !
ছোট থেকে কেবল মাত্র তিরস্কার পেয়েছে নিজের দাদী থেকে আর নিদ্রা থেকে ।আরোশকে ভালোবেসে আকড়ে ধরে বাচতেঁ চেয়েছে কিন্তু সবার ভালোর জন্য নিজের ভালোবাসাকে বলি দিয়ে তাকে যখন ছেড়ে দিতে চেয়েছে ঠিক সে সময় আরোশ তাকে নিজের করে নিয়েছে আর সবার কাছে সমাজের কাছে তখন সে চরিত্রহীন প্রমানীত হলো !
আজ নিজের ভালোবাসার মানুষ ও তাকে চরিত্রহীন নামক ট্যাগ টা লাগিয়ে দেয় !
তার চেয়ে বেশি তার কাছে মৃত্যু ও ভালো ।পরিবার থেকে ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে তিরস্কারীত হলে বাচারঁ কোন ইচ্ছে থাকেনা ।
সুবাহ সব যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে চায় ।আর চায়না সে কোন যন্ত্রনা পেতে ।
সে সবার জীবন থেকে চলে গিয়ে সবাইকে মুক্তি দিতে চায় নিজেও মুক্তি হতে চায় সুবাহ বেড থেকে উঠে আস্তে আস্তে রুমে রাখা ফলের ছুড়ির দিকে যায় ।ছুড়িটা হাতে নিয়ে নিজের হাতের শিরার উপরে টান দেয় তারপর ফ্লোরে বসে বেডের সাথে হেলান দিয়ে হাত ছড়িয়ে দেয় হাত থেকে গলগল করে রক্ত ঝোড়তে থাকে !
সুবাহ আরোশের সাথে কাটানো প্রত্যেকটা মুহুর্ত ভাবতে লাগে ।আস্তে আস্তে চোখের সামনে সব কিছু ঝপসা হয়ে যাচ্ছে ।সুবাহ মৃদ্যু হেসে আলতো সুরে বলতে লাগে
“আরোশ চলে যাচ্ছি আপনার জীবন থেকে সারাজীবনের জন্য ।কোন চরিত্রহীন মেয়ে আপনার জীবনে না থাকাই ভালো !”

বেশ কিছু সময় আরোশ রুমে ফিরে রুমে ফিরে দেখে পুরো রুম অন্ধকার আরোশ দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করে ঘরের লাইট জ্বালাতেই যা দেখলো তা দেখে তার দুনিয়া পুরো থমকিয়ে গেল ……….

চলবে…..
❤️❤️❤️❤️

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন ???

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :৮

0

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :৮

Urme prema (sajiana monir)

আরোশ তার স্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে এই মুখখানাতে হাজারো মায়া ভিড় করছে ।এই মায়া যেন তাকে এক ঘোরের মধ্যে নিয়ে যায় ।ভোরের আলো জানালার পর্দা ভেদ করে হালকা আলো রুমের মধ্যে এসে পড়ছে যা পুরো রুম আবছা আলোয় আলোকীত করে রেখেছে ।আরোশ নিজের হাতের বুরো আঙ্গুল নিয়ে সুবাহর ঠোঁটে ছোয়াচ্ছে আমার তার গালে আঙ্গুল দিয়ে স্লাইড করছে ।সুবাহ কপাল কুচকিঁয়ে কিছুটা নড়ে উঠে যেন সে কিছুটা ডিস্টার্ভ ফিল করছে আরোশ তা দেখে মুচকি হাসে তারপর আবার সুবাহর প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য পূনরায় একই কাজ করে এবার ও সুবাহ আগের মত নড়ে উঠে কিন্তু এবার আরোশের বুকে মুখ লুকায় তার আরোশকে বেশ শক্ত করে জরিয়ে ধরে ।আরোশ ও মুচকি হেসে সুবাহর মাথায় চুমু দিয়ে তার চুলে বিলি দিতে লাগে ।
আরোশ এই মূহুর্তে ঘোরে আছে সুবাহর মায়া জালে আটকিয়ে আছে ।কি করছে ?কেন করছে তা সে জানতে চায় না সে শুধু এই মুহূর্তটাকে আটকিয়ে রাখতে চায় ।সে এই সময়টাকে ধরে রাখতে চায় কিছু সময়ের জন্য সুবাহর মাঝে ডুবে যেতে চায় ।

সুবাহ র হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায় আদো আদো চোখ খুলে দেখে তার দিকে কেউ ঝুকেঁ রয়েছে সুবাহ তাকে ঝাপসা দেখছে তাই চোখ ডোলতে ডোলতে সামনে তাকিয়ে দেখে আরোশ তার দিকে ঝুকেঁ আছে ।এনজরে তাকে দেখছে পলকহীন ভাবে তার দিকে তাকিয়ে আছে ।সুবাহ কিছুটা নড়ে চড়ে উঠে তারপর উঠতে নিলে আরোশ সুবাহ কে উঠতে না দিয়ে আটকিয়ে আগের মত পলকহীন ভাবে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আমার দেখা শেষ হয়নি !
আজকের জন্য এখনো মন ভরে নি আরো কিছু সময় আমি দেখবো তোমায় !”
সুবাহ আরোশের কথায় আর এমন বযবহারে শক খায় তার সব মাথা উপর দিয়ে যাচ্ছে ।আর শুধু তার না আরোশ কি করছে কি বলছে সেনিজেই জানে না কারন এই মুহূর্তে সে নিজের মধ্যেই নেই সে সুবাহর ঘোরে আছে তার ভালোবাসার ঘোরে আছে !
সুবাহ ও আরোশের এই চাহনিতে কেমন জানো ঘোরে চলে যাচ্ছে ।সুবাহ আলতো হাতে মুচকি হেসে আরোশের ঠোঁটের নিচের তিলে স্পর্শ করে বেশ কিছু সময় সেখানে হাত বুলায় তার পর তার বাম গালের তিলে স্পর্শ করে বেশ কিছুসময় এভাবে কাটিয়ে দেয় হঠাৎ আরোশের রাগের কথা মনে পড়তেই তারাতারি করে উঠে চলে যেতে নেয় যেই বেড থেকে নামতে নিবে পিছন থেকে আরোশ সুবাহর হাত ধরে আটকিয়ে নেয় তার পর তাকে হেচকা টান দিয়ে নিজের কাছে আনে তারপর তার কপালে গভীর ভাবে চুমু দিয়ে বলতে লাগে
“যাও এবার !”
সুবাহ পুরো বোকা বনে গেলো ।তারপর বেশ কিছু সময় মনে মনে আরোশের হিসাব মিলাতে মিলাতে ওয়াশরুমে ডুকে পড়ে ফ্রেশ হতে ।
শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে দেখে আরোশ শুয়ে আছে সুবাহ আরোশকে ঘুমে ভেবে আলতো পায়ে একপা দুপা করে আরোশের দিকে আগাতে লাগে ।তার পর তার কাছে বসে তার হাত আরোশের কপালে ছুঁয়িয়ে চুল গুলো নেড়ে তার দিকে ঝুকেঁ তার কপালে গভীর চুমু দিয়ে উঠে নিচে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় ।সুবাহ যেতেই আরোশ মুচকি হেসে চোখ খুলে এতসময় ধরে সে ইচ্ছে করে চোখ বন্ধ করে ছিলো সুবাহর পগলামি দেখার জন্য !

সুবাহ বারান্ধায় রোদে বসে চুল গুলো সামনে একপাশে এনে শুকাচ্ছে হালকা মিষ্টি রোদ গায়ে মাখাতে বেশ ভালোই লাগছে ।সুবাহ চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে ।হঠাৎ কারো রুমে প্রবেশ করার শব্দে পিছনে ঘুরে তাকায় তাকিয়ে দেখে আরোশ রুমে এসেছে একবার পিছনে ঘুরে তাকিয়ে আবার সামনে ফিরে ।
আরোশ বারান্ধায় এসে দেখে সুবাহ নিজের চুল শুকাচ্ছে এক সাইডে চুল আনার কারনে সাদা পিঠ স্পর্শ দেখা যাচ্ছে আর সবচেয়ে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে মাঝের ছোট চিলটা।আরোশে সেই তিলটা ক্রোমশই টানছে ।আরোশ চাওয়ার পর ও নিজের উপর নিয়ন্ত্রন করতে পারছেনা !
হঠাৎ কেউ পিছন থেকে সুবাহর কমোড় জরিয়ে ধরতেই সুবাহ কেপে উঠে পিছনে থাকা ব্যক্তি আস্তে আস্তে তার মুখ সুবাহর ঘাড়ে গুজঁতে লাগে ।সুবাহ প্রথমে ভয় পেলেও পরক্ষনে ঠি কই বুঝে যায় সে কে !
তার গায়েঁ সেই চিরচেনা সুবাস তার আসার বার্তা জানিয়ে দিয়েছে ।সুবাহ জানে সে তার হাত থেকে ছাড়া পাবেনা তাই সে বৃথা চেষ্টা করেও না !
আরোশ সুবাহর ঘাড়ে মুখ গুজেঁ চোখ বন্ধ করে তার গায়েঁর সুবাশ নিচ্ছে সুবাহ ও তাকে আটকাচ্ছেনা না কারন তার ও আরোশের বাহু ডোরে আবাদ্ধ থাকতে বেশ ভালো লাগছে ।আরোশ নিচু কন্ঠে বলতে লাগে
“সন্ধ্যায় রেডি থেকো !”
সুবাহ ভ্রু কুচঁকিয়ে জিগাসা করে
“কেন ?”
আরোশ আগের মত মুখ গুজেঁ বলতে লাগে
“তুমি আমার সাথে আজ সন্ধ্যায় ভার্সিটির ফাংশনে যাচ্ছো !”
সুবাহ আরোশের মুখে কথাটা শুনে বেশ কিছু সময় চুপ থাকে কিছু একটা ভেবে নিচু স্বরে উত্তর দিয়ে বলতে লাগে
“আমি যাবো না !”
আরোশ সুবাহ র মুখে যাওয়ার জন্য না শুনে মুখ তুলে ঠি ক ভাবে তাকিয়ে স্বাভাবীক ভাবে বলতে লাগে
“কেন যাবেনা !”
সুবাহ নিচু হয়ে শান্ত ভাবে বলতে লাগে
“আমার ভালোলাগছে না আমি যাবো না !”
এবার আরোশ সুবাহর দিকে নিজের শান্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলতে লাগে
“আমি এত কিছু শুনতে চাইনা তুমি যাবে !
সন্ধ্যায় যেন পুরো রেডি দেখি ।”
বলেই হন হন করে চলে যায় ।আরোশের যাওয়ার দিকে সুবাহ তাকিয়ে থাকে ।সুবাহ তো যেতে নিষেধ করেছে শুধু মাত্র নিদ্রার জন্য কারন সে চায়নি নিদ্রার মুখোমুখি সে হোক !
নিদ্রার কাছে বার বার অপমানীত হওয়ার শখ তার নেই আর নিদ্রা কিছু বললে না সে সয্য করতে পারবে না সে তাকে কিছু বলতে পারবে ।নিদ্রা যদি আরোশ আর তাকে দেখে তাহলে আবার ঝামেলা করবে যা সে একদম চায়না তাই সে আরোশের সাথে যেতে চাচ্ছে না কিন্তু আরোশ তো আর তার কথা শুনতে চাচ্ছেনা !

সন্ধ্যায় আরোশ রুমে এসে দেখে সুবাহ ঘরের লাইট অফ করে ঘুমাচ্ছে ।আরোশের তা দেখে বেশ মেজাজ গরম হয়ে যায় ।কারন সে সুবাহ কে বলেছিলো রেডি থাকতে কিন্তু সে রেডি না হয়ে ঘুমাচ্ছে তাই রুমে ডুকে টান দিয়ে বেড থেকে উঠায় ।হঠাৎ ঘুমের মধ্যে কেউ হেচকা টান দিতেই সুবাহর ঘুম ভেঙ্গে যায় ।সে লাফ দিয়ে বেড থেকে উঠে বসে বড় বড় শ্বাস নিতে থাকে !
হঠাৎ সামনে তাকিয়ে দেখে আরোশ তার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে ।সুবাহ তা দেখে ভয়ে বেশ বড় একটা ডোক গিলে ।আরোশ রেগে হাত ধরে টান দিয়ে বেড থেকে নামিয়ে বলতে লাগে
“কি বলেছিলাম আমি তোমাকে ?”
সুবাহ ভয়ে ভয়ে উত্তর দেয়
“রে..রে…রেডি থাকতে ব..ব..বলেছেন !”
আরোশ চিৎকার করে রেগে বলতে লাগে
“তাহলে কেন রেডি হওনি ?”
সুবাহ আমতা আমতা করে বলতে লাগে
“আ..আমি যাবোনা !”
আরোশের তা শুনে যেন আরো রাগ বেড়ে গেল ।আরোশ সুবাহর বাহু শক্ত করে ধরে বলতে লাগে
“আমার কথার উপর কথা বলার সাহস পাও কোথা থেকে ?
তোমাকে যা বলেছি তা করো ।”
আরোশের কথা শুনে চোখ গোল গোল করে বলতে লাগে
“আমি যাবোনা মানে না !
আপনি কেন আমাকে জোর করছেন ?
তাছাড়া আপনি তো আমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য বিয়ে করেছেন ।তো আপনি আপনার সাথে না গেলেই কি আসে যায় ।”
আরোশ রেগে বলতে লাগে
“আমি কি করবো না করবো তা তোমাকে বলতে হবেনা ।”
বলেই কাবার্ড খুলে কাপড় খুঁজতে লাগে ।কিছু সময়ের মধ্যে একটা হোয়াইট স্টোনের পাড়ের কালো শাড়ি বের করে এনে সুবাহর হাতে ধরিয়ে দেয় ।তারপর বলতে লাগে
“৫ মিনিটের মধ্যে এটা পড়া দেখতে চাই !”
সুবাহ শাড়ি হাতে নিয়ে থম মেরে দাড়িয়েছে আছে আরোশ তা থেকে ধমকের স্বরে বলতে লাগে
“তুমি যাবে নাকি আমি পড়িয়ে দেব ?
অকে ঠিক আছে আমিই পড়িয়ে দিচ্ছি !”
বলেই সুবাহর শাড়িতে যেই হাত দিতে নেয় সুবাহ ভয়ে তারাতারি করে শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে দৌড় দেয় ।
কিছুসময় পর সুবাহ ওয়াশরুম থেকে বের হতেই আরোশ সুবাহর হাত ধরে টেনে ডেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে তার কানে দুল পড়াতে লাগে সুবাহ আরোশের কান্ড দেখে হা করে তাকিয়ে আছে ।আরোশ সেদিকে তেক্কার না করে ঘাড়ের চুল সরিয়ে গলায় নেকলেস পড়াতে লাগে ।
তারপর সুবাহ নিচের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“বাকিটা আমি রেডি হই ?”
আরোশ সুবাহর কথা শুনে দূরে সরে নিজে রেডি হতে লাগে ।সুবাহ চুল গুলো ব্রাশ করে ছেড়ে দেয় ঠোঁটে হালকা পিংক লিপস্টিক দেয় ।
তারপর দুজন বেরিয়ে যায় ভার্সিটির উদ্দেশ্য ।

ভার্সিটির গেটের সামনে নামতেই নিদ্রাকে গেটের সামনে দেখতে পায় ।সুবাহ মাথা নিচু করে ভিতরে চলে যায় আরোশ নিদ্রাকে দেখে আরোশকে সুবাহকে আলতো করে জরিয়ে ধরে বাকাঁ হেসে ভিতরে চলে যায় নিদ্রা তা দেখে রেগে ফুসতে লাগে ।
আরোশ ভিতরে যেতেই ফ্রেন্ডসরা তাকে ঘিরে ধরে আসে তো মেয়েরা আছেই ভার্সিটির rockstar বলে কথা ।আরোশের পাশে মেয়েদের দেখে সুবাহ র মোটেও ভালো লাগছেনা ।সুবাহর মন খারাপ হয়ে যায় সুবাহ আস্তে আস্তে আরোশের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে দূরে সরে যেতে নেয় ।আরোশ ভিড়ের মধ্যে খপ করে সুবাহর হাত ধরে কাছে এনে হালকা করে সুবাহর বাহু জরিয়ে ধরে মুচকি হেসে সামনে সবার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“মিড মাই ওয়াইফ সুবাহ খাঁন !”
সুবাহ এমন কিছু আশা করেনি ।আরোশ সবার সামনে সুবাহকে এমন ভাবে পরিচয় করিয়ে দিবে তা তার কল্পনার বাহিরে ছিলো ।সে আরোশের দিকে ছল ছল করে চোখে মুচকি হেসে তাকিয়ে থাকে ।আরোশ সুবাহর বাহুতে হাত রেখে জরিয়ে ধরে সবার সাথে কথা বলতে লাগে আর সুবাহ তা দিকে মুচকি হেসে তাকিয়ে থাকে !

চলবে….
❤️❤️❤️❤️

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন ???

সরি আমি রেগুলার গল্পটা দিতে পারছিনা তাই খুব তারাতারি গল্প শেষ করে দিবো আর কয়েকটা পার্টে শেষ করে দিবো ❤️❤️❤️

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :৭

0

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :৭

Urme prema (sajiana monir)

আরোশ থেকে বেশ দূরত্ব বজায় রেখে সুবাহ শুয়ে আছে ।সুবাহ অন্যদিকে ফিরেই নিজের চোখের জল ফেলছে আর নিশব্দে কান্না করে যাচ্ছে কিছু সময় আগেই আরোশ আর সুবাহ র মধ্যে ঝগড়া হয়েছে আর প্রত্যেকবারের মতই এবার আরোশ সুবাহকে রাগের মাথায় আঘাত করে কথা বসে ফেলেছে যা সুবাহ বেশ কষ্ট লেগেছে তা শুনার পর থেকেই মুখ ঘুরিয়ে কান্না করেই যাচ্ছে নিসব্দে !
আরোশ সুবাহর দিকে ঘুরে তাকে পিছন দিক থেকে তাকে দেখছে সুবাহ শব্দ না করে কাঁদলেও সে ঠি কই বুঝতে পারছে যে সুবাহ কাদঁছে !
আরোশের ও বেশ খারাপ লাগছে আরোশ সুবাহকে আঘাত করে কথা বলতে চায় নি কিন্তু রাগের বসে তাকে বলে ফেলেছে ।আরোশ বেশ কিছুসময় ধরেই তাকে পিছন থেকে দেখছে অবশেষে তা সয্য করতে না পেরে সুবাহর কাছে যেয়ে তাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে সুবাহ র খোলা চুলের ভাজে নিজের মুখ গুঁজে চোখ বন্ধ করে আলতো স্বরে বলতে লাগে
“সরি
আ’ম সো সরি
আমার তোমাকে আঘাত দেওয়ার ইচ্ছা ছিলো না !”
সুবাহ আরোশের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে আরো দূরে স্বরে শোয় ।আরোশ একটানে সুবাহ কে কাছে টেনে এনে সুবাহকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে সুবাহর কপালে কপাল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে নাকের সাথে নাক ঘষতে ঘষতে মাতাল কন্ঠে বলতে লাগে
“বললাম তো সরি !”
সুবাহ আস্তে আস্তে চোখ খুলে পিটপিট চোখে আরোশের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আপনি কেন সরি বলছেন !
আপনি তো আপনার কাজ করছেন যার জন্য আপনি আমাকে বিয়ে করেছেন ।
প্রতিশোধ নিচ্ছেন আঘাত দিচ্ছেন কষ্ট দিচ্ছেন যন্ত্রনা দিচ্ছেন ।
সবই তো ঠি কই চলছে তো সরি বলার কোন কারনই দেখিনা আপনি আপনার জায়গায় পার্ফেক্টলি রাইট !
আমি বেচে থাকি মরে..!”
আরকিছু বলতে পারেনা সুবাহ তার আগেই আরোশ তার ঠোঁট নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিয়েছে বেশ আবেশে তার উপর ঘ্রাশ করে যাচ্ছে বেশ কিছুসময় পর আরোশ তাকে ছাড়ে !
সুবাহ ঘন ঘন নিশ্বাস নিতে লাগে আরোশ সুবাহ র ঠোঁটে নিজের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে হাত বুলাতে বুলাতে বলতে লাগে
“তোমাকে কষ্ট দিবো ,আঘাত করবো ,যন্ত্রনা দিবো তোমার থেকে প্রতিশোধ নিবো কিন্তু তোমাকে কখনো দূরে যেতে দিবো না তোমাকে নিজের আড়াল হতে দিবোনা সারাজীবন আমার কাছেই থাকতে হবে আমার চোখের সামনে আমার স্ত্রি হয়ে !
তোমার সাথে সব কিছু করার অধিকার আমার আছে !”
সুবাহ চোখ উচুঁ করে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আর ভালোবাসা ?”
আরোশ এর উত্তরে সুবাহ কে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে রাখে ।সুবাহ ও আরোশের খালি বুকে নিজের ঠোঁটের আলতো স্পর্শ করে সেখানে নিজের মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে ফেলে কারন সুবাহ জানে আরোশ তার ভালোবাসা গুলো সুবাহ র আড়াল করে রাখতে চাইছে তাই সে আর কথা বাড়ায় না কারন তার যা উত্তর পাওয়ার ছিলো তা সে পেয়ে গেছে !
আরোশ সুবাহ এলোমেলো চুলে নিজের হাত গুজে মাথায় হাত বুলাতে লাগে আজ সারাদিন পর সে সুবাহ কে কাছে পেয়েছে এই মুহূর্তটাকে সে হাত ছাড়া করতে চাচ্ছেনা এখন সে সুবাহ তে ডুবে থাকতে চায় ।কাল রাতে সুবাহ কে আপন করে নেওয়ার পর তো তার নেশাটা আরো বেশি প্রক্ষর হয়ে গেছে এতো চাওয়ার পর ো তার থেকে দূরে থাকতে পারছেনা !
এসব ভাবতেই সুবাহর চেহারার দিকে চোখ পড়ে দুনিয়ার সব মায়া ভালোবাসা যেন তার মাঝে বিরাজ করছে !
বেশ মায়াবী লাগছে ।
আজ থেকে চার বছর আগের সেই দিনের কথা ভাবতেই বুকে কেমন জানো চিনচিন অনুভূতি জাগ্রত হয় !
বুকে শিতল হাওয়া বয়ে যায় কোন এক মেয়ে যে তাকে এতটা অগোছালো করে দিবে তা তার জানা ছিলোনা ।ভাবতে ভাবতেই কল্পনাতে ডুব দেয় !
আজ যদি তার বক্ত কথাগুলো সে না প্রকাশ করে তাহলে হয়তো তার দম আটকিয়ে যাবে নিজের মধ্যে বন্ধি হয়ে রয়ে যাবে তাই সে জানে সুবাহ ঘুমিয়ে গেছে তাই সে আস্তে আস্তে সুবাহকে সাবধানে শুয়িয়ে বেডথ্কে উঠে আলমারী থেকে একটা ডাইরী বের করে তাতে লিখতে থাকে !
মানুষ বলে নিজের মনের কথা ,কষ্ট কোন ভাবে প্রকাশ করলে তা কমে আরোশ ও সেই চেষ্টায় লেগে যায় তাহলে হয়তো তার কষ্ট কিছুটা লাঘব পাবে !

তখন সবে মাত্রই আমি ভার্সিটি তে অনার্স ফাস্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছি।নতুন ভার্সিটি জীবন নতুন বন্ধু বান্ধব সব মিলিয়ে দিন গুলো বেশ ভালোই যাচ্ছিলো !
হঠাৎ ভার্সিটিতে আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে ৭ দিনের ট্যুরের ব্যবস্থা করে ঢাকা টু কক্সবাজার ।আমি কিছুদিন ঢাকা বেস্ত শহরের বাহিরের খোলামেলা পরিবেশে কাটাতে চাইছিলাম !
২ দিন বেশ সুন্দর করেই কেটে যায় ।তৃতীয় দিন রাতে খালি পায়ে সমুদ্রের পাড়ে ঘুড়ছিলাম হঠাৎ কোন কিছু দেখে থমকিয়ে যাই একাএকাই দুই কদম পিছনে চলে যাই সামনে অপরূপ দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে থাকি !
একটি মেয়ে সমুদ্রতে নিজের পা ভিজাচ্ছে পড়নে কালো সেলোয়ার স্যুট লাল উড়না তার কোকড়ানো খোলা চুল গুলো সমুদ্রের পাড়ের বাতাসে এলো মেলো করে দিচ্ছে সামনে ছোট করে কাটা চুল গুলো বারে বারে মুখের সামনে এসে পোড়চ্ছে ঠোঁটে পাগল করা হাসি কানে এন্টিকের ঝুমকাটা বাতাসের সাথে দুলছে কপালে ছোট কালো টি প পূর্নিমার চাদেঁর আলো তার চেহারার মায়া যেন আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিলো সে সমুদ্রপাড়ে দাড়িয়ে নিজের পা ভিজাচ্ছিলো হাত দিয়ে সমুদ্রের পানি নিয়ে খেলছিলে আর খিলখিল করে হাসছিলো একদম ছোট বাচ্চাদের মত !মেয়েটা টি নএজার হবে হবে !
আমি ঠিক মুগ্ধ নয়নে তার দিকে কতসময় তাকিয়ে ছিলাম তা আমার মনে নেই ।তার বেশ কাছাকাছি দাড়িয়ে তাকে দেখছিলাম ।মেয়েটা দেখতে বেশ বাচ্চা বাচ্চা লাগছিলো চেহারায় পবিত্রতা বিরাজ করছিলো !কেন যানো এই অচেনা মেয়েকে দেখে মনে লোভের জন্ম হয়
খুব লোভ লাগছিলো তার একহাত ধরে তার পাশে দাড়িয়ে সময়টাকে উপভোগ করতে !
পরক্ষনেই নিজের চিন্তা আর ইচ্ছা শক্তির উপর কাবু করি !
কারন সে আমার জন্য একচেনা পথচারী ছিলো যাকে চলতে চলতে দেখেছি !
না জানি তার নাম না জানি পরিচয় কিন্তু তার পর ও তার প্রতি ছিলো অদ্ভুদটান !
কেন এই তা সত্যি আমার ধারনার বাহিরে ছিলো কেন জানি তার উপর একটা চাওয়া কাজ করছে মনে হচ্ছে আমার তাকে চাই ।বেশ কিছু সময় তার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকি কেমন যেন ভালো লাগছিলো এভাবে তাকিয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে ।হঠাৎ মেয়েটাকর চোখ আমার দিকে পড়তেই আমার এই চাহনিতে সে যেন কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে তাই আমার দিকে ছোটছোট চোখ করে তাকিয়ে সেখান থেকে চলে যায় !
আমি তার এমন কাজে ফিক করে হেসে দেই কারন তার চোখের চাহনিটাই ছিলো বেশ ইনোসেন্ট যা তার বাচ্চামো স্বভাবটাকে আরো ফুটিয়ে তুলেছে ।
আমি তার যাওয়ার দিকে বেশ কিছু সময় তাকিয়ে হোটেলে নিজের রুমে চলে আসি ।সেদিন রাতে আর চোখের পাতায় ঘুম নামে না বারবার সে মেয়েটির কথা মাথায় গুড়পাক খেতে লাগে !
সারাটা রাত তার ভাবনায় পাড় করে দেই ।
অচেনা মেয়ের প্রতি আমার এই অদ্ভুদটান আমাকে বেশ ভাবাচ্ছি নিজের মধ্যে উত্তর খুজছিলাম কিন্তু উত্তরটা পাচ্ছিলাম না ।পরের দিন আবারো সমুদ্র পাড়ে সূর্য অস্ত দেখতে গিয়ে আবারো সেই মেয়েকে দেখতে পাই এবার ও আগের দিনের মত দূর থেকে নিজের চোখের তৃপ্তি মেটাচ্ছিলাম ।কেমন জানো অদ্ভুদ মায়া তার প্রতি কাজ করছিলো !
সেদিন রাতে আমার বন্ধুদের সাথে সিবিজে গানের আড্ডা ছিলো ।গিটার বাজানোটা আর গান গাওয়াটা আমার হবি ছিলো সেদিন সবার আবদারে গান গাইতে হলো ।আমি নিজের চোখ বন্ধ করে গিটার বাজাতে বাজাতে গান গাইতে লাগলাম
“ “ভিতর ও বাহির অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে

ভিতর ও বাহির অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে………

ঢেকে রাখে যেমন কুসুম
পাপড়ির আবডালো ফসলের ঘুম

ঢেকে রাখে যেমন কুসুম
পাপড়ির আবডালো ফসলের ঘুম

তেমনি তোমার নিবিড় চলা……..

তেমনি তোমার নিবিড় চলা
মরনের মূল পথ ধরে……

আমার ভিতর ও বাহির অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে

আমার ভিতর ও বাহির অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে …………”

চোখ বন্ধ করে যখন গানটা গাইছিলাম সে সময় বার বার শুধু সেই মেয়েটার চেহারাটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো ।
আমার সাথে কি হচ্ছিলো তা আমার জানা ছিলোনা শুধু বার বার মনে হচ্ছিলো মেয়েটা আমার !
তার উপর আমার অধিকার রয়েছে ।
গান শেষ হয়ে পাশে ফিরতেই হঠাৎ দূরে মেয়েটাকে দেখতে পেলাম দূর থেকে হয়তো গান শুনছিলো হাতে একটা কফির মগ তাকে এসময় এখানে দেখে আবারো মনটা নাড়া দিয়ে উঠে !দূর থেকে তাকে দেখে গেলাম ।এভাবে আরো দুদিন কেটে যায় অচেনা মেয়েটা আমার নেশা হয়ে গিয়েছিলে যার নামটা পর্যন্ত আমি জানতাম না !
সেদিন আবারো তাকে সমুদ্র পাড়ে হাটতেঁ দেখে ডিসিশন নেই যে তার সাথে কথা বলেই ছাড়বো !
তাকে একা দেখে যখনই তার দিকে আঘাই ঠিক সে সময়ে একজন মহিলা চলে আসে হয়তো কার মা হবে আমিও আর হার মানিনা সেদিন সারাদিন তার সাথে কথা বলার জন্য তার আসে পাশেই থাকি কিন্তু সে তার আবাসও পায় না !
ঠিক কতটা বাচ্চা হলে এমন বেখেয়ালী হতে পারে কোন ছেলে তাকে ৪ দিন ধরে ফলো করে যাচ্ছে অথচ তার কোন খেয়ালই নেই ।যখন সে সমুদ্রের পাড়ে নিজের পা ভিজাচ্ছিলো হঠাৎ তার বাম পায়ের পায়েলটা সেখানেই রয়ে যায় ।সে সেখান থেকে যেতেই তার পায়েলটা আমি আমার হাতে উঠিয়ে নেই কেন জানো তা তাকে ফিরিয়ে দিতে ইচ্ছে করছিলোনা নিজের কাছেই রেখে দিতে ইচ্ছে করছিলো ।আর যে ভাবনা সেই কাজ নিজের কাছে পায়েল রেখে দেই !
সেদিন সারাদিন তার পিছন পিছন ঘুরে তার নামটা পর্যন্ত জানতে পারলাম না !
নিজের উপর বেশ মায়া হচ্ছিলো যে আমি কিনা মেয়েদের পিছনে তাকাইনা পর্যন্ত আজ ৪ দিন ধরে একটা মেয়ের পিছনে পাগল পাগল হয়ে ঘুরছি যা আমার কেরেক্টেরের পুরো বিপরীত !
মেয়েটার প্রতি যে আমার ভালোবাসা জন্মিয়ে ছিলো তা আমি ঠি কই টের পেয়েছি ।
সারাদিন ঘুরে শুধু তারা যে হটেলে উঠেছে তার নাম জানতে পেড়েছি ।আর আড়ালে তার বেশ কিছু ছবি তুলেছি যা সে টের পায়নি !
সেদিন হঠাৎ করে আমার চোখের আড়াল হয়ে যায় ।তার পরের দিন তাকে সিবিজে না দেখে যে হটেলে উঠেছে সেখানে তার ছবি দেখিয়ে খুজতেঁ লাগলাম পরে হোটেলের স্টাফ খেকে জানতে পারলাম তারা ঢাকায় ফিরে গেছে ।
কথা শুনেই কেমন জানো বুকে মোচড় দিয়ে উঠে ।যার প্রতি ভালোবাসার সৃষ্টি হয়েছে তার নামটাই পর্যন্ত জানতে পারলাম না !
তার পরের দিনই ঢাকায় ফিরে আসি !ঢাকায় ফিরে নিজেকে বেস্ত করে রাখতে শুরু করি কারন অবসর পেলেই তার কথা মাথা ঘুর পাক খেতে লাগে ।তার পাওয়াটা নাসিবের উপর ছেড়ে দেই ।কেন জানো মনে হচ্ছিলো তাকে আমি খুঁজে পাবো তার সাথে আবার দেখা হবে কোন একদিন এভাবে সময় কাটতে লাগে আমি তার সেই স্মৃতি আর নুপুর টা দেখেই দিন পাড় করতে লাগে তার পর কোন মেয়েকে কেন জানো চোখে লাগে নি !
বলে না ভালো তো একজনকেই বাসা যায় যাকে ভালোবাসার পর অন্য কারো দিকে তাকাতে পর্যন্ত ইচ্ছে হয়না আমার ও ঠি ক সেই ভালোবাসাটা হয়েছিল সে ‌অচেনা মেয়ের উপর !
এভাবে ৪ টি বছর কেটে যায় আর আমি তার খেয়ালে সে ভাবেই ডুবে থাকি ।

আমি যখন ফাইনাল ইয়ারে ফাস্ট ইয়ারের নবিন বরন অনুষ্টানে হাজারো লোকের ভিরে কাউকে দেখে পুরোপুরি শক হয়ে যাই !
বুঝতে পারছিলাম না সে কি আমার কল্পনা ?
নাকি আমি বাস্তবেই তাকে দেখছি !
আদো কি আমি তাকে দেখছি ?
হ্যা সে মেয়েটা ছিলো সমুদ্রপাড়ের সেই মেয়েটি যে আমার ভাবনা জুড়ে ছিলো আমার অস্তিত্বের মধ্যে বিলিন হয়ে ছিলো তাকে নিজের চোখের সামনে দেখে বিশ্বাস করতে পাড়ছিলাম না !
মনে হচ্ছিলো আমার স্বপ্নের জগৎ থেকে নেমে এসেছে ।৪ বছরে তার চেহারায় শরীরের গঠনে বেশ পরিবর্তন এসেছে তার পড়নে ছিলো জামদানী শাড়ি কোকড়ানো ঢেউ খেলা চুল গুলো স্টেট করে ছেড়ে দিয়েছে মনমুগ্ধকর সাজ হাতে মেচিং চুড়ি আর মুখে তার পাগল করা হাসি !
তাকে আমার চোখের সামনে দেখে নিজের বেশ খুশি লাগছিলো ! ইচ্ছে করছিলো তাকে এখনই সবার সামনে জরিয়ে ধরে নিজের মনের পিন্জিরায় আটকিয়ে রেখে দেই যাতে আর তাকে হারাতে না হয় !
সেদিন নবীনবরনে পুরোটা সময় আমার নজর তার দিকে ছিলো তার প্রত্যেকটা কাজ গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করছিলাম নিজের চার বছরের তৃষনা মিটাচ্ছিলাম ।খোজঁ নিয়ে জানতে পারি তার নাম“ সুবাহ” এবার অনার্স ফাস্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট !
আমি তার ব্যপারে সব খোজঁ খবর নেই সেদিন রাতেই তার ফেসবুক আইডির খোজেঁ পাই আমার এক মেয়ে ফ্রেন্ডের মাধ্যেমে ।জানতে পারি তার আইডির নাম “প্রভাতদিপ্তুি “ ।
সার্চ দিয়ে পেয়ে যাই আইডি তে ডুকতেই দেখি সে আমাকে আগের থেকে ফ্রেন্ডরিকুয়েস্ট দিয়ে রেখেছে আমি যেন আকাশ থেকে পরি তা দেখে আমি ১ সেকেন্ড ও দেরী না করে সাথে সাথে এক্সেপ্ট করে তাকে “হ্যায় “ দেয় তারপর বেশ কিছু সময় পরই সে উত্তর পাঠায় “হ্যালো “তারপর তার সাথে যোগাযোগ শুরু হয় প্রথমে বন্ধুত্ব তারপর প্রেম ।আমি জানতাম সুবাহই আমার প্রভা তাকে যখনই ভার্সিটিতে দেখতাম নিজেকে আটকাতে কষ্ট হতো তার কাছে ছুটে চলে যেতাম যখনই তার সামনে যেয়ে দাড়াতাম সে ঘাবড়িয়ে যেত হয়তো ভাবতো আমি তাকে চিনে ফেলেছি কিন্তু সে এটা জানতো না যে আমি যে তাকে সে কবে থেকে নিজের অস্তিত্বের সাথে জরিয়ে ফেলেছি । সে নিজেকে আমার আড়ালে রাখতে চাইতো আমিও তার ইচ্ছায় সায় দিয়ে তাকে বুঝতে দিতাম না যে আমি তাকে চিনি !
তার সামনে এমন ভঙ্গিমা করতাম যেন তাকে কখনো দেখিনি !
এভাবে আরো কয়েকমাস কেটে যায় আমাদের সম্পর্ক তখন বেশ গভীর হয়ে গেছে ।তাকে প্রায়ই দেখতাম যখন আমি গিটার বাজাতাম কেম্পাসের মাঠে সে ভিড়ের মাঝে থেকে মুগ্ধ হয়ে শুনতো !
তাকে দেখা করার কথা বললে সে বার বার না করে দিতো তাই আমিও তাকে জোর করতাম না !
হয়তো তার কিছু সময় দরকার তাই সে নিজেকে আড়াল করে রাখছে তার সময় হলে সে ঠি কই সামনে আসবে !
কিন্তু তাকে পাবার অপেক্ষায় ছিলাম নিজের করে একান্তই নিজেক করে !
হঠাৎ একদিন সে তার সাথে দেখা করার কথা বলে নিজের থেকে আমি তা শুনে বেশ খুশি হয়ে যাই কারন আমার এতদিনের অপেক্ষার পর তাকে নিজের করে পেতে যাচ্ছি তার সাথে সামনাসামনি দেখা করতে যাচ্ছি ।তাই তাকে আমার মনের মত করে সেজে আসতে বলি নীল শাড়িতে এর পরের দিন সকাল থেকে তার অপেক্ষা করতে লাগি রেস্টুরেন্টে কিন্তু তার আসার নাম নেই মেসেন্জারে ফোন দেই ফোন বাজছে কিন্তু তার উঠানোর নাম নেই !
২ দিন তাকে ফোন দিতে লাগি কিন্তু সে একাবরের জন্যও ফোন উঠায়নি ২ দিনে পাগল পাগল হয়ে গিয়েছিলাম তার সাথে কথা বলতে না পেরে তাকে না দেখে !
অবশেষে একদিন রাতে ফোন দিয়ে বলে সে আমার সাথে দেখা করতে চায় সেই আগের ঠিকাানাতে আমি বেশ খুশি হয়ে যাই অনেক অপেক্ষার পর তাকে পাবো তো তাই !হাতে ফুল নিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম খুব বেশি এক্সসাইডেমেন্ট কাজ করছিলো তার সাথে দেখা হবে তাই ।রেস্টুরেন্টের সামনে তার অপেক্ষা করছিলাম তাকে রিসিভ করবো বলে হঠাৎ সামনে চোখ পড়তেই দেখি সে নামছে সাথে একটা মেয়ে ।আমি তার দিকে এগিয়ে যেয়ে মুচকি হেসে ফুলের বুকেটা “সুবাহ”দিকে এগিয়ে দেই হঠাৎ পাশ থেকে টান দিয়ে মেয়েটা নিজের হাতে নিয়ে নেয় ।তারপর বলতে লাগে
“আমি নিদ্রা মানে “প্রভাতদিপ্তি “ও আমার মামাতো বোন সুবাহ !”আমি তা শুনে অবাক দিষ্টিতে তাকিয়ে থাকি তাদের দেখে বেশ বড় শক খেয়েছিলাম!
অন্যদিকে সুবাহ আমার দ চোখের দিকে তাকাচ্ছেনা মাথা নিচু করে আছে ।
আমি কাপাঁ কাপাঁ কন্ঠে নিদ্রার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“মানে তুমি “প্রভাতদিপ্তি “প্রভা ?”
নিদ্রা লজ্জামাখা মুখ নিয়ে বলতে লাগে
“হুম আমি তোমার প্রভা !”
আমি একবার সুবাহর দিকে তাকায় আর একবার নিদ্রার দিকে সে যেন থমকিয়ে গেছে ।সেদিন কোন মতে তাদের সাথে দেখা করে সেখান থেকে বের হয়ে যাই নিজেকে বেস অগোছালো লাগছিলো ।
আমি প্রভাকে সুবাহ ভেবেছি
সুবাহ কে ভালোবেশেছি আর আইডিও তার ছিলো তাহলে নিদ্রা আসলো কোথা থেকে বেশ অগোছালো হয়ে গিয়েছিলাম কি র্যকরবো কিছুই বুঝছিলামনা !
যদি নিদ্রা প্রভা না হয় তাহলে সে কেন মিথ্যা বলবে ।আর সুবাহ কেন মিথ্যা বলবে ?
উফফ সব কিছু অগোছালো লাগছিলো !
মনে হচ্ছিলো যা দেখছি তা সত্যি না সত্যিটা অন্যরকম ।
তার আবার নিদ্রার কথা চিন্তা করলাম যদি সে সত্যি প্রভা হয়ে থাকে তাহলে তাকে ঠকানো হবে তার সাথে অন্যায় হবে যা আমি করতে পারবোনা নিজের বিবেকের কাছে হেরে যাবো !
এভাবে বেশ কয়েকদিন যেতে লাগে আমি নিদ্রার সাথে যেগাযোগ করিনা সেই নিজের থেকে আমার সাথে যেগাযোগ করার চেষ্টা করে ।আমি বেশ কয়েকবার ইগনোর করি অবশেষে নিজের মধ্যে বিবেকবোধ কাজ করে নিজের কাছে নিজেকে ছোট মনে হতে লাগে মনে হচ্ছিলো আমি তাকে ঠকাচ্ছি ।তার তো দোষ ছিলো না দোষ তো ছিলো আমার যে আমি তাকে সুবাগ ভেবেছি তাহলে সে কেন তার মুসুল দিবে ।তাই সে ফোন দিলে তার সাথে টুকটাক কথা বলা শুরু করি কিন্তু তার সাথে কথা বলে আগের প্রভাকে খুজেঁ পেতাম না মনে হতো এটা আমার প্রভাই না বেশ কয়েকবার নিজের কাছে মনে হলো সে প্রভা না তাই তাকে যাচাই করতে আমার আর প্রভার মধ্যে বিভিন্ন কথোপকথোন জিগাসা করি কিন্তু সে প্রত্যেকটাই ভুল উত্তর দেয় ।যদি সে প্রভা হতো তাহলে সে জানতো কিন্তু সে আমার প্রভাই ছিলোনা !
রেগে কঠোর ভাবে নিদ্রাকে জিগাসা করলে সে ভয়ে ভয়ে বলতে লাগে
“সরি আমার কোন দোষ নেই যা করেছি সুবাহর কথায় করেছি ।সে বলেছে এসব করতে আমি কিছু করিনি ।সে আদিকে ভালোবাসতো আর তোমার সাথে অভিনয় করছিলো টাইম পাস করছিলো তাই আমি ওর কথা মত এসব করেছি ।
আসলে সে আদিকে বিয়ে করতে চায় তার ছোটবেলার ভালোবাসা আদি ।”
এই সব কথা শুনে আমার মাথা খারাপ হয়ে যায় সুবাহ কে খুন করে দিতে ইচ্ছে করে কিন্তু নিজের ভালোবাসার কাছে আমি অসহায় ছিলাম তাই সিদ্ধান্ত নেই তার সামনে নিদ্রাকে বিয়ে করবো সে আনাকে আর নিদ্রাকে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে দেখবে আর ভাববে সে কি হারিয়েছে ।পরের দিনই বাবা মাকে তাদের বাসায় বিয়ের প্রপোজাল পাঠাই আর তারা রাজিও হয়ে যায় ।কিন্তু এত কিছুর মধযে যতবারই সুবাহকে দেখতাম সব ভুলে যেতাম তাতে ডুবে যেতাম তার মাঝে হারিয়ে যেতাম ।
২ দিন পর জানতে পারি আদি আর সুবাহর বিয়ে ঠিক হয়েছে আমার আর নিদ্রার বিয়ের একদিন আগে !
যা আমার রাগ আরো বেড়ে যায় পদে পদে তাকে অপমান করতে লাগি নিচু দেখাতে লাগি ।তার সামনে নিদ্রাকে কাছে টেনে নিতাম কিন্তু সে জানো সব কিছু দেখেও অদেখা করে যেত !
সুবাহর আসেপাশে আদিকে দেখলে আমার মাথা ঠিক থাকতো না ।
এভাবে আরো বেশ কিছু সময় কেটে যায় আস্তে আস্তে বিয়ের দিন আগাতে লাগে ।হলুদের দিন সুবাহর পাশে যখন আদিকে দেখি সে সময় প্রত্যেকটা মূহুর্ত মরন যন্ত্রনার মত মনে হয়েছে ।হলুদে আদি যখন সুবাহ র হাত ধরছিলো তাকে কাছে টেনে নিয়েছিলো সেসময় ইচ্ছে হচ্ছিলো আদিকে খুন করে দি ।জিদের বসে সেদিন রাতে ডিংক্স করি ।ড্রিংক্স করে মাতাল হয়ে আমার সেই মুহূর্তে সুবাহ কে খুব দরকার ছিলো মনে হচ্ছিলো যদি তাকে আমার কাছে না রাখি তাহলে দম বন্ধ হয়ে যাবে ।
তাই সেদিন রাতে তার রুমে যাই তার পর কি হয় আমার তা জানা নেই ।
সকালে নিজেকে আমার বন্ধুদের সোহানের রুমে পাই মাথা ধরে আসছিলো সুহান বলে রাতে সুবাহর রুমে বেশ পাগলামি করেছি ।
হঠাৎ সুবাহর কথা মনে পড়তেই তারাতারি করে উঠে পড়ি কারন আমি হলুদের রাতে বুঝে গেছি যার আসে পাশে কাউকে সয্য করতে পারিনা তাকে অন্যকারো কি করে হতে দিবো?
সুবাহকে আমার চাই আমার নিজের করে চাই সারাজীবনের জন্য ।সুবাহ যা করেছে তা ভালো করেনি তার ফল তাকে পেতে হবে আমি তাকে নিজের করে তাকে সব কিছুর জন্য শাস্তি দিবো ।আমার সাথে অন্যায় করার শাস্তি দিবো ধোকা দেওয়ার শাস্তি দিবো ।
আমি হুঝে গেছি আমার সুবাহ কে ছাড়া চলবে আমি তাকে ছাড়া বাচঁতেই পারবোনা আর তাকে ‌অন্যকারো হতে দেওয়ার তো প্রশ্নই উঠেনা।
তাই তার বিয়ের দিন তাকে উঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করি ।কারন সব পারবো তাকে হারাতে পারবোনা ……..

চলবে……
❤️❤️❤️❤️

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন ???

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :৬

0

? তোমার আড়ালে ?পার্ট :৬

Urme prema (sajiana monir)

গান সেই কখনই শেষ কিন্তু সুবাহ তারপরও চোখ বন্ধ করে আছে যেন গানের শব্দ গুলো তার কানে ভাজছে ।হঠাৎ জান্নাতের ধাক্কায় তার ধ্যান ভাঙ্গে ।চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে সবাই চলে গেছে সে এখনো সেখানে রয়ে গেছে ।জান্নাত তাকে ঠেস মেরে বলতে লাগে
“ওওও আমার হিন্দি সিরিয়ালের হিরোইন স্বপ্ন থেকে বাস্তব দুনিয়ায় আয় ।
আরোশ ভাইয়া চলে গেছে !”
সুবাহ ভ্রু কুচঁকিয়ে তাকিয়ে চোখ ছোট ছোট করে বলতে লাগে
“কে আরোশ ?”
জান্নাত বলতে লাগে
“যার গান তুই চোখ বন্ধ করে দুনিয়াদারি ভুলে মুগ্ধ হয়ে শুনছিলি !
মানতে হবে তোকে শে মেয়ে কোন ছেলের দিকে তাকায় না আজ কাউকে দেখে সে দুনিয়াদারি ভুলে গেছে !”
সুবাহ জান্নাতের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“নাহ ইয়ার তাকে দেখে না তার কন্ঠে গান শুনে দুনিয়াদারি ভুলে গেছি ।এই সুর এই কন্ঠ আমি এর আগেও কোথাও শুনেছি কিন্তু কোথায় শুনেছি তা মনে পড়ছেনা ।
তার গানে কেমন যেন একটা টান আছে যার থেকে আমা নিজেকে আটকিয়ে রাখতে পারিনি !”
জান্নাত দাতঁ বের করে হাসি দিয়ে বলতে লাগে
“তাহলে আমি ধরে নিবো যে তুই তার প্রেমে পড়েছিস !”
সুবাহ বেখেয়ালি হয়ে বলতে লাগে
“প্রেমে পড়েছি কি না জানি না কিন্তু তাতে ঠিকই ডুবে গেছি !”
জান্নাত বলতে লাগে
“জানি উনি ভার্সিটির rockstar পুরো ভার্সিটির মেয়েরা আরোশ বলতেই পাগল ।এবার ফাইনাল ইয়ারে বাবা মায়ের একমাত্র সম্তান ।
ভার্সিটির যেই গ্রুপ গুলো আছে তাতে মেয়েদের তাকে নিয়ে যা পোষ্ট দেয় ভাপরে !
হ্যায় উনাকে যা লাগে না ।”
সুবাহ ভ্রু কুচঁকিয়ে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে লাগে
“তুই এতো কিছু কি করে জানিস আজই তো ভার্সিটিতে এসেছিস ।”
জান্নাত সুবাহর কথায় হেসে বলতে লাগে
“আমি তোর মত গাধাঁ না যে কোন কিছু খোজঁ খবর নেইনি। আমি এখানে আসার আগে সব খোজঁ খবর নিয়ে এসেছি হুম ওকে !”
সুবাহ হেসে বলতে লাগে
“হুম ওকে চল এবার দেরি হয়ে যাচ্ছে ।”
সেদিন বাড়িতে আসার পর থেকে ১ মুহূর্ত ও সুবাহ আরোশের চিন্তা ভাবনা নিজের থেকে দূর করতে পারেনি ।কেন যেন আরোশের কথা ভাবতেই মনটা নাড়া দিয়ে উঠতো ।সেদিন রাতেই সুবাহ নিজের আইডি তে আরোশের নাম সার্চ করে খুব সহজেই পেয়ে যায় ।সেদিন রাতে তার পুরো প্রফাইল গেটে দেখতে লাগে ।হঠাৎ তার প্রফাইলে একটা ছবি দেখে সে থমকিয়ে যায় একটা পায়েলের ছবি যেখানে কেপশন লিখা
“এক পায়ে নুপুর তার অন্য পা খালি
এক পাশে সাগর এক পাশে বালি……..”
কিন্তু সুবাহ আরো বেশি অবাক হল এই দেখে যে কো-ইন্সিডেন্টলি এমনই একটা পায়েল তার ছিল যা ৪ বছর আগে কক্সবাজারে সমুদ্রের পাড়ে হারিয়ে গেছে !
সুবাহ বেশ আগ্রহ নিয়ে নিজের প্রভাতদীপ্তি নামক আইডি দিয়ে তাকে ফ্রেন্ডরিকোয়েস্ট পাঠায় ।
২ দিন কেটে যায় কিন্তু আরোশ তা এক্সেপ্ট করার নাম নেই এদিকে সুবাহ অস্থির হয়ে আছে তার কেমন যেন অস্তিরতা কাজ করছে যা এর আগে কখনো কারো প্রতি অনুভব হয়নি ।অনেক ভেবে আর অপেক্ষা না করতে পেরে অবশেষে আরোশ কে মেসেজ দিয়েই বসে তারপর আবার আরোশ কি ভাববে তা ভেবে রিমুভ করে দেয় ।তারপর সিদ্ধান্ত নেয় সে আরোশের কথা আর ভাববে না তার থেকে তার চিন্তা থেকে দূরে থাকবে ।
এভাবে আরো ১ সাপ্তাহ কেটে যায় সুবাহ ভার্সিটিতে আরোশ কে দেখলে সে অন্যরাস্তায় ঘুরে যায় ।তার থেকে দূরে থাকতে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াতো যাতে তাকে দেখে দূর্বল না হয়ে পড়ে ।
হঠাৎ একদিন রাতে সুবাহ ফেসবুকে লগইন করে দেখে আরোশ তার রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করেছে আর মেসেজ ও
আরোশ মেসেজে লিখেছে “হ্যায়”
সুবাহ বেশ কিছু সময় ধরে ফোন হাতে নিয়ে থম মেরে বসে থাকে !
তাকে আরোশ মেসেজ দিয়েছে তা সে বিশ্বাসই করতে পারছিলো না ।সে ও কাপাঁ কাপাঁ হাতে মেসেজ টাইপ করে “হ্যালো “আরোশ সুবাহ কে একের পর এক প্রশ্ন করতে লাগে আর সুবাহও তার উত্তর দিতে লাগে !সেদিন রাত তার সাথে কথা বলে সারারাত পাড় করে দিলো ।এভাবে তাদের বন্ধুত্বের শুরু হয় তার যত সময় যেতে লাগে ততই তাদের সম্পর্ক গভীর হতে লাগে ।সুবাহ র প্রফাইলে তার কোন ছবি ছিলো না তাই সুবাহর ধারনা ছিলো আরোশ তাকে চিনে না ।আস্তে আস্তে তাদের বন্ধুত্ব প্রেমে জরিয়ে যায় ।তাদের সম্পর্কের ৬ মাস হয়ে যায় কিন্তু সুবাহ নিজেকে আরোশের আড়াল রাখে তার সামনে আসেনা সে আরোশের আড়ালে থেকেই তার জন্য আরোশের ভালোবাসা দেখতো ।কিন্তু মাঝে মাঝে যখন সুবাহ কেম্পাসে আরোশের সামনে পড়তো আরোশ তার দিকে অদ্ভুদ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো চোখে হাজারো ভালোবাসা থাকতো। অদ্ভুদ চাহনি তে তার দিকে চেয়ে থাকতো ।সে সময় সুবাহ বেশ ঘাবরিয়ে যেত সে ভাবতো হয়তো সে আরোশের কাছে ধরা পড়ে গেছে কিন্তু পরক্ষনেই আরোশ এমন ভঙ্গিমা করতো যে সে সুবাহ কে চিনেই না ।
আস্তে আস্তে এভাবে আরো ৬ মাস কেটে যায় তাদের সম্পর্কটাও বেশ গভীর হয়ে যায় ।আরোশ সুবাহর সাথে বেশ কয়েকবার দেখা করতে চায় কিন্তু সুবাহ প্রত্যেকবারই কোন না কোন বাহানা দিয়ে ইগনোর করতো কারন সে দেখতে চাইতো আরোশের ভালোবাসার জোর !
তাকে কতটা ভালোবাসে আরোশ তা ।
তার জন্যে আরোশ কতটা ধৈর্য ধরতে পারে কতটা অপেক্ষা করতে পারে তা !
সুবাহ আড়ালে থেকে প্রতিদিন আরোশের কন্ঠে গান শুনতো ।আরোশ যখন কেম্পাসের রিয়ার্সেল রুমে গিটার বাজাতো আর গান প্রেক্টিস করতো সুবাহ সেসময় তার আড়াল থেকে গান শুনতো এটা যেন রুটিন মাফিক তার নেশা হয়ে গিয়েছিলো ।যে নেশায় সে ডুবে থাকতো ভার্সিটিতে রেগুলার আসতে শুধু মাত্র আরোশকে দেখার জন্য !এটা যেন তার ধিরে ধিরে নেশা হয়ে গিয়েছিলো ।
একসময় সুবাহ সিদান্ত নেয় সে আরোশের সাথে সারাসরি দেখা করবে ।কিন্তু কে জানতো তার জীবনে কোন এক ঝড় এসে সব কিছু শেষ করে দিবে !
সবকিছুতো ঠি কই ছিলো সুবাহ নিজের মধ্যে সাহস জুটিয়ে নিয়েছিলো সে আরোশের সামনে যাবে তার সাথে দেখা করবে কিন্তু নিদ্রা নামের ঝড়টা সব কিছু উলোট পালোট করে দেয় ।

!

!

!

নিদ্রা কোন ভাবে খবর পেয়ে যায় সুবাহ আরোশ কে ভালোবাসে তাদের মধ্যে রিলেশন চলছে তা শুনে নিদ্রা সয্য করতে পারেনা ।কারন আরোশের দিকে তার নজর প্রথম দিক থেকেই ছিলো আর আরোশের মত ছেলে তার জীবনে থাকলে আর কি দরকার হয় ?
কিন্তু আরোশ কখনই তাকে পাত্তা দিত না ।সেই আরোশের সাথে সুবাহ র রিলেশনের কথা শুনে নিদ্রা নিজের ঈষা ধরে রাখতে পারেনা ।কারন সে কোন ভাবেই সুবাহ কে আরোশকে পেতে দিবে না এক হতে দিবে না !
ছোট থেকে সকল ভালো কিছুর উপর সেই অধিকার বসিয়েছে নিদ্রাই নিয়েছে সুবাহ কে সব কিছু থেকে বন্চিত রেখেছে তাহলে আরোশ কে কি করে সুবাহর হতে দিবে তাই সে সবসময়ের মত সুবাহ র দাদীর কাছে আবদার করে বসে “আরোশ কে তার চাই “!তার দাদী প্রত্যেক বারের মত এবারো নিজের নাতনিকে কথা দেয় সে যা চায় তা তাকে দিবে ।

!

!

!
সেদিন সকালে ফুরফুরে মেজাজে সুবাহ আরোশের কথা অনুযায়ী রেডি হতে লাগে ।আজ সে আরোশের সামনে যেয়ে দাড়াবে ।তার সামনে যেয়ে পরিচয় দিবে যে প্রভাকে সে ভালোবাসে সুবাহ ই সে প্রভা !
আরোশের “প্রভা “।
“প্রভা “নামটা তাকে আরোশ দিয়েছে ।সুবাহ কে ভালোবেসে আরোশ “প্রভা” বলে ডাকে !
সুবাহ মুচকি হেসে হাতে কাচের চুরি পড়ছিলো কিন্তু হঠাৎ কেউ জোরে দরজা খুলে ।
ভয়ে সুবাহর হাত থেকে কাচের চুড়ি নিচে পড়ে ভেঙ্গে যায় দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে তার দাদী আর নিদ্রা দাড়িয়ে আছে চোখে মুখে বেশ রাগ ।সুবাহ তাদের মুখে রাগ দেখে কিছুটা ঘাবড়িয়ে যায় ।সুবাহ র দাদী রাগে দাতঁ কটকট করে বলতে লাগে
“এত সেজে গুজে সং সেজে কোথায় যাওয়া হচ্ছে শুনি ।”
সুবাহ বিচলিত হয়ে উত্তর দিতে লাগে
“ইয়ে মানে দাদী আমার এক ফ্রেন্ড আসছে তার সাথে দেখা করতে ।”
সুবাহর দাদী মুখ ভেংচি দিয়ে বলতে লাগে বন্ধু নাকি প্রেমিক ?”
সুবাহ দাদীর কথা শুনে চমকিয়ে যায় দাদীর দিকে ‌অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে ।সুবাহ র দাদী রেগে বলতে লাগে
“সবই বুঝি !
তুই যাবি না আজ তুই বাড়ি থেকে বের হবি না ।”
সুবাহ তার দাদীর কাছে যেয়ে বলতে লাগে
“কিন্তু দাদী কেন !”
সুবাহর দাদী বলতে লাগে
“কারন আমি চাই তুই ঐ ছেলের সাথে দেখা করবি না ।
ঐ ছেলের সামনে যাবিনা ।”
সুবাহ তার দাদীর কথায় আরো বেশি হয় আর সুবাহ বুঝে যায় এসব নিদ্রা করছে ।সুবাহর দাদী আবার কঠোর গলায় বলতে লাগে
“নিদ্রা আরোশ কে পছন্দ করে আর আমি চাই তুই তাদের মাঝে থেকে সরে যা ।
তাদের মাঝে আসবি না !”
সুবাহ দাদীর কথায় যেন আকাশ থেকে পড়ে ।তার দাদী এসব কি বলছে ?
সুবাহ সাথে সাথে উত্তর দেয়
“দাদী তুমি এসব কি বলছো ?
আরোশ আমাকে পছন্দ করে আমার সাথে তার সম্পর্ক আমাকে ভালোবাসে সে তো আর নিদ্রাকে ভালোবাসে না !
তো আমি ওদের মাঝের থেকে কি করে সরবো !”
সুবাহর দাদী বলতে লাগে
“আমি এত কিছু বুঝিনা তুই আরোশের সাথে দেখা করবিনা মানে না !
আরোশ তোকে চিনে না সে জানেনা যে তুই সেই মেয়ে তাই নিদ্রা আরোশের সামনে যাবে তুই না ।
নিদ্রা আরোশ কে চায় তো আরোশ তারই হবে ।”
সুবাহ তার দাদীর কথা শুনে রেগে বলতে লাগে
“দাদী তুমি বাচ্চামো কথা কেন বলছো ?
আরোশ কি কোন খেলনা যে নিদ্রা চেয়েছে বলেই তাকে দিতে হবে ।
আর সত্যি কখনো চাপা থাকেনা তা সামনে আসবেই আরোশ যদি সত্যি জানতে পারে সে কখনই নিদ্রাকে মেনে নিবেনা উলটো সব শেষ করে দিবে !
যাই বল আমি আরোশ কে ঠকাতে পারবোনা তার সাথে দেখা করতে যাবো ।”
সুবাহর দাদি তার বাহু ধরে টেনে সামনে আনে তারপর বলতে লাগে
“তোর তো আমার কথা মানতেই হবে ।
তুই যদি চাস পুরো পরিবার এক থাকুক তাহলে তোকে আমার কথা মানতেই হবে ।
নাহয় তোর বাবা কে এতটা বাদ্ধ করবো যে তোর বাবা বাদ্ধ হয়ে পুরো পরিবার ছেড়ে চলে যায় আর পরিবারটা ভেঙ্গে যায় ।
আর তা হয়তো তোর ভালো লাগবেনা !
নিজের বাবাকে কষ্টে দেখলে তা নিশ্চই সয্য করতে পারবিনা ।”
সুবাহর চোখ থেকে টপটপ করে পানি ঝড়তে থাকে কি করে পাড়ে কেউ নিজের ছেলের সাথে এমন করতে ?
কি করে নিজের নাতনীর স্বার্থের জন্য নিজেরই পরিবারকে শেষ করতে উঠে পড়ে লেগেছে ।নিজের পরিবার ভাঙ্গতে এক বারও বিবেচনা করবেনা !
সুবাহ তার দাদীকে বলতে লাগে
“দাদী তুমি নিদ্রার আবদারের জন্য তোমার পরিবার ভাঙ্গবে ?
নিজের ছেলেকে বাড়ি ছাড়তে বাদ্ধ করবে ?”
সুবাহর দাদী বলতে লাগে
“হুম আমি তাই করবো !
তোর বাবাকে তো সেদিন ত্যাগ করেছি যেদিন সে আমার কথার বিরুদ্ধে যেয়ে তোর মা কে বিয়ে করেছে ।
এখন আমি শুধু আমার নাতনীর ভবিষ্যত নিয়ে ভাববো ।
এখন তোর হাতে তুই পারবি সব ঠি ক করতে তুই যদি আমার কথা রাখিস তাহলে তোর বাবাকে আপন করে নিবো আর নয়তো বাড়ি থেকে বের হতে বাদ্ধ করবো ।”
সুবাহ বেশ কিছু সময় থম মেরে বসে থাকে কি বলবে সে ?
কি করবে সে ?
সে সব পারবে তার বাবাকে কষ্টে দেখতে পারবেনা ! তার বাবা বাড়ি থেকে পরিবার থেকে দূরে থাকলে কষ্টে থাকবে আর সুবাহ তা সয্য করতে পারবেনা !
তাই বেশ কিছুসময় পর সুবাহ ভেবে চিন্তে তার দাদী কে বলতে লাগে
“আমি যাবো আরোশের সাথে দেখা করতে তুমি যেভাবে চাইবে সব সেভাবেই হবে ।”
তা শুনেই নিদ্রার মুখে হাসি ফুটে উঠে কারন তার ইচ্ছে মত সব হচ্ছে সে আরোশকে পাবে ।সুবাহ হেরে যাবে !
তারপর সুবাহর দাদী আর নিদ্রা রুম থেকে চলে যায় ।
তাদের রুম থেকে চলে যেতেই সুবাহ হাটু গেড়ে মাটিতে বসে হৈ মাউ করে কান্না করতে লাগে !
অন্যদিকে আরোশ সুবাহ জন্য অপেক্ষা করছে অপেক্ষা করতে লাগে তার প্রভার জন্য কিন্তু তার আসার নাম নেই মেসেন্জারে বারে বারে ফোন দিতে লাগে কিন্তু সুবাহ উঠায় না ।সুবাহ নিজেকে পুরো ঘর বন্ধি করে রাখে সুবাহ র মা আচ করতে পেরে সুবাহ কে জিগাসা করলে সব বলে দেয় তার মা কে ।সুবাহর মা রেগে যায় সুবাহর দাদীর সাথে কথা বলতে যেতে চাইলে সুবাহ তার মাকে নিজের কসম দিয়ে আটকিয়ে দেয় তারপর ২ দিন পর তার দাদীর কথা মত আরোশের সাথে নিদ্রাকে দেখা করাতে নিয়ে যায় প্রভা সাজিয়ে ।
আরোশের সাথে দেখা করার জন্য রেস্টুরেন্টে যেতেই রেস্টুরেন্টের সামনে আরোশ কে সুবাহ দেখতে পায় তার বুক মোচড় দিয়ে উঠে আরোশের হাতে ফুলের বুকে মুখে হাসি ।আরোশ সুবাহ আর নিদ্রার কে দেখে তাদের দিকে এগিয়ে আসে ।আরোশ নিজের হাতে রাখা বুকেটা সুবাহর দিকে এগিয়ে দিয় কিন্তু তার আগে নিদ্রা তা নিজের হাতে নিয়ে বলতে লাগে
“আমি “প্রভাতদিপ্তি “ও আমার মামাতো বোন সুবাহ !”
আরোশ তা শুনে অবাক দিষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তাদের দিকে যেন সে বেশ বড় শক খেয়েছে !
অন্যদিকে সুবাহ আরোশের চোখের দিকে তাকাতে পাড়ছেনা যেন তার মনের সুপ্ত অনুভূতিগুলো আবার উকিঁ দিবে তাই নিচের দিকে তাকিয়ে রয়েছে ।
আরোশের চোখ চিকচিক করছে সে কাপাঁ কাপাঁ কন্ঠে নিদ্রার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“মানে তুমি “প্রভাতদিপ্তি “প্রভা ?”
নিদ্রা মুখে কৃত্রিম লজ্জা দেখি বলতে লাগে
“হুম আমি তোমার প্রভা !”
আরোশ একবার সুবাহর দিকে তাকায় আর একবার নিদ্রার দিকে সে যেন থমকিয়ে গেছে ।সেদিন কোন মতে তাদের সাথে দেখা করে আরোশ সেখান থেকে বের হয়ে যায় আরোশকে বেস অগোছালো লাগছিলো ।আরোশ বের হতেই নিদ্রা সুবাহর ফোন নিয়ে নেয় যাতে সে আরোশের সাথে যোগাযোগ করতে পারে !
এভাবে আস্তে আস্তে সময় কাটতে লাগে সুবাহ সেদিনের পর থেকে বাড়ি থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দেয় একপ্রকার ডিপ্রেশনে চলে যায় ।আর সুস্থ থাকারও কথা না নিজের ভালোবাসাকে ত্যাগ করে তার থেকে নিজেকে আড়াল রাখা আর অন্য কাউকে তাকে দিয়ে দেওয়া খুব সহজ ব্যপার না !
হঠাৎ একদিন জানতে পারে আরোশের বাড়ি থেকে নিদ্রার জন্য বিয়ের প্রোপোজাল এসেছে সুবাহ তা শুনার পর নিজের মধ্যে যেন মরন যন্ত্রনা অনুভব করে ।কি করে তার চোখে সামনে নিজের ভালোবাসার মানুষকে অন্যকারো হতে দেখবে সে ?
এক সময় সিদ্ধান্ত নেয় সে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে তার নানুর বাসায় চলে যাবে নিদ্রার বিয়েতে থাকবেনা ।
সে বাড়ির সবাই কে জানিয়ে দেয় যে সে তার নানুর বাসায় চলে যাবে কিছুদিনের জন্য ।কিন্তু তা শুনে যেন সুবাহর দাদী সয্য হলোনা সে না করে দেয় এবং বলে সুবাহর বিয়ে ঠিক করেছে আদির সাথে ।সুবাহ না করলে তাকে বাদ্ধ করে তার উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে ।অবশেষে সুবাহ বাদ্ধ হয়ে সব মেনে নেয় ।
বিয়ের ডেট ঠিক হয় নিদ্রার বিয়ের আগের দিন ।কারন নিদ্রা আর সুবাহর দাদী কোন মতেই বিয়েতে জামেলা চায়নি সুবাহ কে বিদায় করতে চেয়েছে ।
সব কিছু তো নিদ্রা আর সুবাহর দাদীর প্লান অনুযায়া হচ্ছিলো ।সুবাহ আরোশকে বেশ এরিয়ে চলতো ।কারন আরোশের তার প্রতি চোখের চাহনি ছিলো অস্বাভাবীক ।যতবারই সুবাহ আরোশের চোখে তাকাতো ততবারই মনে হত তাকে হয়তো কিছু বলতে চাচ্ছে আরোশ চোখে হাজারো না বলা কথা মায়া ভালোবাসা দেখতো ।কিন্তু সুবাহ এর কারন খুজাঁর কখনো চেষ্টা করেনি ।
কারন সে চায়নি সে আরোশের মায়ায় জরিয়ে আরো কষ্ট পাক !
বিয়ের অনুষ্টান শুরু হয়ে যায় সুবাহ আর নিদ্রার হলুদ একদিনই ছিলো ।হলুদের শেষে যখন সুবাহ নিজের অন্ধকার রুমে বসে আরোশের খেয়ালে বিভোর ছিলো হঠাৎ তার রুমে কারো প্রবেশ ঘটে !
সুবাহ দরজার দিকে তাকায় অন্ধকারে চেহারা দেখা যাচ্ছেনা কিন্তু কোন ছেলে প্রবেশ করেছে তা ঠি কই বুঝতে পারে ।সুবাহ হালকা আওয়াজ করে বলতে লাগে
“কে ঐ খানে ?
কে?”
হঠাৎ তার সামনে এসে কেউ বেডের সাথে মুখে চেপে ধরে ।তার গায়েঁর থেকে মদের গন্ধ আসছে ।সুবাহ নিজেকে তার থেকে ছাড়ানোর প্রানপন চেষ্টা করতে লাগে কিন্তু পারেনা !
হঠাৎ বাতাসে জানালার পর্দা সরে যেতেই বাহিরের মরিচা বাতির আলোয় ঘর আবছা আলোকীত হয়ে যায় ।সুবাহ সামনের ব্যক্তির চেহারা দেখে পুরো অভাক হয়ে যায় ।কারন তার সামনে আর কেউনা আরোশ ছিলো ।চোখে ভয়ংকর রাগ চোখ লাল হয়ে আছে ফুলে রয়েছে ।আরোশ কে দেখে সুবাহ থমকিয়ে যায় তার থেকে নিজেকে ছাড়ানোর কথা ভুলে যায় ।আরোশ সুবাহর কপালে গভীর চুমু দিয়ে তার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলতে লাগে
“ভালোবাসি প্রভা
তোমায় খুব বেশি ভালোবাসি ।
আমাকে ছেলে যেওনা
প্লিজজজজ “
বলেই সুবাহর ঘাড়ের কাছে নিজের মুখ নিয়ে সেখানে নিজের ঠোঁটের স্পর্শ দিতে লাগে ।সুবাহ আরোশের স্পর্শে কেপেঁ উঠে কার স্পর্শে সব ভুলে যায় নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলে ।চোখ বন্ধ করে তার স্পর্শ গুলো ‌অনুভব করতে লাগে ।আরোশ আস্তে আস্তে সুবাহর ঘাড়ে নিজের ঠোঁট ছুয়াঁতে ছোঁয়াতে সেখানে জোরে কামড় বসিয়ে দেয় ।সুবাহ ব্যথায় নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলে ।আরোশ আবার সেখানে নিজের ঠোটের স্পর্শ দিতে লাগে আস্তে আস্তে আরোশ বিরবির করে সুবাহর ঘাড়ে মুখ গুঁজে সুবাহকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে যায় ।বেশ কিছু সময় পর সুবাহর ধ্যান ফিরে সে কি করছে কাল ওর বিয়ে আদির সাথে আর সে আরোশের সাথে রয়েছে !
কেউ দেখলে কি ভাববে ?
তাই তারাতারি করে আরোশ কে নিজের উপর থেকে সরিয়ে বেডে ঠি ক ভাবে শুয়িয়ে দিয়ে জান্নাত কে ফোন দেয় জান্নাত কে সব খুলে বলে জান্নাত তার বয়ফ্রেন্ড কে নিয়ে আসে তারপর আরোশকে বাড়ির পিছন দিক দিয়ে সবার আড়াল করে নিয়ে যায় ।
সেদিন সারারাত সুবাহ কান্না করে কাটিয়ে দেয় নিজের ভালোবাসার মানুষকে পেয়েও তাকে হারানোর যন্ত্রনায় ।

(বর্তমানে)……

হঠাৎ সুবাহর পিঠে কেউ হাত রাখতেই সুবাহ র ধ্যান ভাঙ্গে সে কেপেঁ উঠে এতসময় ধরে সে কল্পনায় ছিলো পিছনে তাকিয়ে দেখে আরোশ ।আরোশ সুবাহকে জিগাসা করতে লাগে
“এখানে কি করছো ?
ঘুমাওনি কেন !”
সুবাহ আরোশের কথা শুনে তারাতারি করে উঠে যেতে নিলে হঠাৎ দরজার সাথে পা বারি খায় ।সুবাহ করে উঠে আবার বসে পড়ে নিচে ।বসে পা ডলতে লাগে আরোশ তা দেখে তার সামনে বসে হাতে সুবাহ র পা নিয়ে ডলতে লাগে আর অস্তির হয়ে পড়ে রেগে বলতে লাগে
“কখনো কি বড় হবেনা ?
বাচ্চাদের মত কেন এসব কর !”
সুবাহ আরোশের কথায় তেক্কার না করে নিজের পা ছাড়িয়ে দাড়িয়ে পড়ে হাটতেঁ চেষ্টা করে এক কদম যেতেই আবার বসে পড়ে ।আরোশ সুবাহ কে কোলে নিয়ে রুমের দিকে পা বাড়ায় সুবাহ বলতে লাগে
“আমি ঠি ক আছি !
আমি যেতে পারবো আপনাকে নামিয়ে দেন ।“
আরোশ ধমকের সুরে বলতে লাগে
“বেশি কথা বলতে নিষেধ করেছি ।
আমি দেখছিতো কতটা ঠি ক আছো !
বেশি কথা বললে মুখ বন্ধ করে দিবো আর তোমার মুখ বন্ধ করার পদ্ধতি আমার জানা আছে !”
সুবাহ কথা বাড়ায় না আরোশের গলা জরিয়ে ধরে আরোশ সুবাহকে নিয়ে রুমের দিকে আগাতে লাগে ……

চলবে…..
❤️❤️❤️❤️

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন ???

সুবাহর দৃষ্টিকোন থেকে অতীত তুলে ধরা হয়েছে আরোশের দৃষ্টিকোন থেকে অতীতটা একটু অন্যরকম আশা করি সবাই এ পার্টে আবাস পেয়েছেন ।খুব তারাতারি তা সামনে আসবে ???

সরি কাল দিতে পারিনি???